উইকিবই
bnwikibooks
https://bn.wikibooks.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE
MediaWiki 1.45.0-wmf.8
first-letter
মিডিয়া
বিশেষ
আলাপ
ব্যবহারকারী
ব্যবহারকারী আলাপ
উইকিবই
উইকিবই আলোচনা
চিত্র
চিত্র আলোচনা
মিডিয়াউইকি
মিডিয়াউইকি আলোচনা
টেমপ্লেট
টেমপ্লেট আলোচনা
সাহায্য
সাহায্য আলোচনা
বিষয়শ্রেণী
বিষয়শ্রেণী আলোচনা
উইকিশৈশব
উইকিশৈশব আলাপ
বিষয়
বিষয় আলাপ
রন্ধনপ্রণালী
রন্ধনপ্রণালী আলোচনা
TimedText
TimedText talk
মডিউল
মডিউল আলাপ
ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid
3
7783
85626
84164
2025-07-03T21:43:16Z
MS Sakib
6561
/* নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম */ উত্তর
85626
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
ihu37qjzoylkwn12yble5gh0nku6ll2
85637
85626
2025-07-04T06:00:10Z
Tahmid
4464
/* নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম */ উত্তর
85637
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{উত্তর|SMontaha32|MS Sakib}} ''[[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]]'' পাতাটি গৃহীত হয়েছে। ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]]'' এবং ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]]'' পাতাদুটির সমীকরণে ভুল আছে আর কাঠামো ঠিক নেই। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদে যান্ত্রিকতা রয়ে গেছে। তাই, পাতাদুটি গৃহীত হয়নি। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
l98ennmwsjuljee153wgy5yrrg9zf4b
85642
85637
2025-07-04T06:48:41Z
MS Sakib
6561
/* নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম */ উত্তর
85642
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{উত্তর|SMontaha32|MS Sakib}} ''[[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]]'' পাতাটি গৃহীত হয়েছে। ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]]'' এবং ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]]'' পাতাদুটির সমীকরণে ভুল আছে আর কাঠামো ঠিক নেই। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদে যান্ত্রিকতা রয়ে গেছে। তাই, পাতাদুটি গৃহীত হয়নি। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ধন্যবাদ। তবে এতদিন দেরি করার কারণ কী? প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছিল। কিন্তু আপনি ২৫+ দিন পর রেসপন্স করেছেন। এখন প্রতিযোগিতা ক্লোজ হয়ে গেলে প্রতিযোগীর কিছুই করার থাকবে না! ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০৬:৪৮, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
hw2ns4vfqs6llyu7fvxoc5qtniw3xih
85645
85642
2025-07-04T08:46:31Z
Tahmid
4464
/* নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম */ উত্তর
85645
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{উত্তর|SMontaha32|MS Sakib}} ''[[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]]'' পাতাটি গৃহীত হয়েছে। ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]]'' এবং ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]]'' পাতাদুটির সমীকরণে ভুল আছে আর কাঠামো ঠিক নেই। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদে যান্ত্রিকতা রয়ে গেছে। তাই, পাতাদুটি গৃহীত হয়নি। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ধন্যবাদ। তবে এতদিন দেরি করার কারণ কী? প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছিল। কিন্তু আপনি ২৫+ দিন পর রেসপন্স করেছেন। এখন প্রতিযোগিতা ক্লোজ হয়ে গেলে প্রতিযোগীর কিছুই করার থাকবে না! ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০৬:৪৮, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::{{উত্তর|MS Sakib}} প্রথমত, [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫/পর্যালোচনা নীতিমালা|পর্যালোচনার নিয়মানুযায়ী]] একটি পাতা কেবল একবার সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। তাই, ২য় পর্যালোচনার পরে এখন উক্ত পাতাগুলো যদি ব্যবহারকারী সংশোধন করেনও, তবুও তা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হবে না। দ্বিতীয়ত, পাতা যে আমাকেই পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে এমন না। আপনিও চাইলে পর্যালোচনা করতে পারতেন। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৮:৪৬, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
79ddpe8s8jvb8ljfxmrh2herm3xf4rh
85646
85645
2025-07-04T11:24:58Z
MS Sakib
6561
/* নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম */ উত্তর
85646
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{উত্তর|SMontaha32|MS Sakib}} ''[[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]]'' পাতাটি গৃহীত হয়েছে। ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]]'' এবং ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]]'' পাতাদুটির সমীকরণে ভুল আছে আর কাঠামো ঠিক নেই। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদে যান্ত্রিকতা রয়ে গেছে। তাই, পাতাদুটি গৃহীত হয়নি। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ধন্যবাদ। তবে এতদিন দেরি করার কারণ কী? প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছিল। কিন্তু আপনি ২৫+ দিন পর রেসপন্স করেছেন। এখন প্রতিযোগিতা ক্লোজ হয়ে গেলে প্রতিযোগীর কিছুই করার থাকবে না! ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০৬:৪৮, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::{{উত্তর|MS Sakib}} প্রথমত, [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫/পর্যালোচনা নীতিমালা|পর্যালোচনার নিয়মানুযায়ী]] একটি পাতা কেবল একবার সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। তাই, ২য় পর্যালোচনার পরে এখন উক্ত পাতাগুলো যদি ব্যবহারকারী সংশোধন করেনও, তবুও তা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হবে না। দ্বিতীয়ত, পাতা যে আমাকেই পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে এমন না। আপনিও চাইলে পর্যালোচনা করতে পারতেন। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৮:৪৬, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] পর্যালোচনার ক্ষেত্রে এই নিয়মটা পুরোপুরি স্ট্রিক্টলি ফলো করা হচ্ছে না। বড় কোনো সমস্যা না থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] পাতায় যেমনটা বললেন, সমীকরণে ভুল (আমি কেবল ১টায় পেলাম), এটা ঠিক করা ১ মিনিটেরর কম সময়ের ব্যাপার। এটা আমরা পর্যালোচকেরাই ঠিক করে দেই। এই তুচ্ছ বিষয়ে পুরো পাতা রিজেক্ট করার কোনো মানে হয় না। তাছাড়া প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছে।
::::::দ্বিতীয়ত, '''পাতা আপনাকেই পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে'''। একান্তই কোনও সমস্যার কারণে কারণে আপনি পুনঃপর্যালোচনা করতে না পারলে সেটা তো অন্তত জানাতে হবে। আপনাকে প্রতিযোগী এখানে দুইবার মেনশন করেছে, আমি টেলিগ্রামে ২ বার জানিয়েছি, একবারও ন্যূনতম কোনো রেসপন্স করেননি। এটার কারণ কী? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১১:২৪, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
tppp80di0cklvu29jpqumup9uff8n1r
উইকিবই:সম্পাদনার সংখ্যা অনুযায়ী উইকিবইয়ের সম্পাদকগণ/১-১০০
4
10682
85635
85354
2025-07-04T05:50:26Z
KanikBot
8129
হালনাগাদ
85635
wikitext
text/x-wiki
:সর্বশেষ হালনাগাদ: ০৫:৫০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
{| class="wikitable"
! নং !! ব্যবহারকারী নাম !! মোট সম্পাদনা
|-
|১||{{u|MdsShakil}}||১১০৮৯
|-
|২||{{u|ShahadatHossain}}||৪২১৫
|-
|৩||{{u|Aishik Rehman}}||৩৭০৪
|-
|৪||{{u|Salil Kumar Mukherjee}}||৩৫৮২
|-
|৫||{{u|Tahmid}}||৩৫৭৮
|-
|৬||{{u|মোহাম্মদ জনি হোসেন}}||২৩১৯
|-
|৭||{{u|R1F4T}}||১৪৬৬
|-
|৮||{{u|IqbalHossain}}||১২৭৯
|-
|৯||{{u|RDasgupta2020}}||১১৫০
|-
|১০||{{u|Asikur.rahman25}}||১১২৮
|-
|১১||{{u|SHEIKH}}||১১১৬
|-
|১২||{{u|Sumasa}}||১০৫৬
|-
|১৩||{{u|কমলেশ মন্ডল}}||১০৪৬
|-
|১৪||{{u|Sheikh Mehedi Hassan}}||১০২৯
|-
|১৫||{{u|MD Abu Siyam}}||১০২৫
|-
|১৬||{{u|Jonoikobangali}}||১০০৪
|-
|১৭||{{u|SMontaha32}}||৯৪০
|-
|১৮||{{u|Md.Farhan Mahmud}}||৯৩২
|-
|১৯||{{u|আ হ ম সাকিব}}||৯১৭
|-
|২০||{{u|Md Rashidul Hasan Biplob}}||৯১৫
|-
|২১||{{u|Alphaa Noman}}||৯১২
|-
|২২||{{u|Rajan chandra Saha Raju}}||৮৩৩
|-
|২৩||{{u|MS Sakib}}||৭৮৯
|-
|২৪||{{u|আফতাবুজ্জামান}}||৭৮৯
|-
|২৫||{{u|AstroWizard}}||৭৬৫
|-
|২৬||{{u|Yahya}}||৭২৫
|-
|২৭||{{u|Mehedi Abedin}}||৭০৮
|-
|২৮||{{u|শরদিন্দু ভট্টাচার্য্য}}||৬৪৬
|-
|২৯||{{u|Md Mobashir Hossain}}||৬১৬
|-
|৩০||{{u|Firuz Ahmmed}}||৫৮৯
|-
|৩১||{{u|Nettime Sujata}}||৫০১
|-
|৩২||{{u|Jayantanth}}||৪৮৩
|-
|৩৩||{{u|NusJaS}}||৪৭৪
|-
|৩৪||{{u|Bosesukla}}||৪৪০
|-
|৩৫||{{u|MdaNoman}}||৪৩৪
|-
|৩৬||{{u|Pathoschild}}||৩৭৩
|-
|৩৭||{{u|Szilard}}||৩৫৭
|-
|৩৮||{{u|Ei to ami akash}}||৩৫১
|-
|৩৯||{{u|RiazACU}}||৩৪৪
|-
|৪০||{{u|Mcepy}}||৩৪০
|-
|৪১||{{u|NahidSultan}}||৩১৮
|-
|৪২||{{u|ZI Jony}}||৩১৪
|-
|৪৩||{{u|Mahbubslt}}||৩১০
|-
|৪৪||{{u|Gallileo2k}}||৩০৬
|-
|৪৫||{{u|স্বপ্নীল কর্মকার কাব্য}}||২৯৮
|-
|৪৬||{{u|Muhammad}}||২৯৭
|-
|৪৭||{{u|Md Aahradul Islam Tasin}}||২৮৫
|-
|৪৮||{{u|The Piash}}||২৫৮
|-
|৪৯||{{u|M.Asaduzzaman sahed}}||২৩৩
|-
|৫০||{{u|Pratyya Ghosh}}||২৩৩
|-
|৫১||{{u|Safuan12616}}||২২৯
|-
|৫২||{{u|AbuSayeed}}||২২৩
|-
|৫৩||{{u|Somajyoti}}||২২০
|-
|৫৪||{{u|Sheikh MD. Obaidul Hossain}}||২১৩
|-
|৫৫||{{u|তুষার কান্তি ষন্নিগ্রহী}}||২০৮
|-
|৫৬||{{u|মো. মাহমুদুল আলম}}||২০৮
|-
|৫৭||{{u|নিয়াজ ইসলাম}}||২০১
|-
|৫৮||{{u|Shuvo Hulk}}||১৯৬
|-
|৫৯||{{u|Sajidmahamud835}}||১৮৮
|-
|৬০||{{u|Obangmoy}}||১৭৬
|-
|৬১||{{u|Shakibul Alam Risvy}}||১৬৫
|-
|৬২||{{u|Greatder}}||১৬০
|-
|৬৩||{{u|Safi Mahfouz}}||১৫৯
|-
|৬৪||{{u|মোহাম্মদ হাসানুর রশিদ}}||১৪২
|-
|৬৫||{{u|Wikitanvir}}||১৪০
|-
|৬৬||{{u|Belayet73}}||১৩০
|-
|৬৭||{{u|Maruf}}||১৩০
|-
|৬৮||{{u|Masud1395}}||১২৮
|-
|৬৯||{{u|Asked42}}||১২৭
|-
|৭০||{{u|Hasan muntaseer}}||১২০
|-
|৭১||{{u|Anubhab91}}||১০৬
|-
|৭২||{{u|Bono.Ruma}}||১০৫
|-
|৭৩||{{u|FARMER}}||১০২
|-
|৭৪||{{u|Moheen}}||৯৮
|-
|৭৫||{{u|MR.ANABRATA GUCHAIT}}||৯৪
|-
|৭৬||{{u|Sammati Das}}||৯০
|-
|৭৭||{{u|Mohithasan61}}||৮৯
|-
|৭৮||{{u|Timeontask}}||৮৫
|-
|৭৯||{{u|BadhonCR}}||৮৩
|-
|৮০||{{u|খাত্তাব হাসান}}||৮২
|-
|৮১||{{u|কায়সার আহমাদ}}||৭৭
|-
|৮২||{{u|Ams riyad}}||৭৩
|-
|৮৩||{{u|Md Nayed Ahmed Riaj}}||৭০
|-
|৮৪||{{u|Rahul amin roktim}}||৬৮
|-
|৮৫||{{u|Ishrat Jahan Tahmid}}||৬৮
|-
|৮৬||{{u|Ladsgroup}}||৬৭
|-
|৮৭||{{u|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ}}||৬৭
|-
|৮৮||{{u|Mahir256}}||৬৫
|-
|৮৯||{{u|Nakul Chandra Barman}}||৬৫
|-
|৯০||{{u|Anik Kanti Dey}}||৬২
|-
|৯১||{{u|হাম্মাদ}}||৬০
|-
|৯২||{{u|WikimediaNotifier}}||৬০
|-
|৯৩||{{u|RUBEL SHAIKH}}||৫৮
|-
|৯৪||{{u|Morshed RC}}||৫৬
|-
|৯৫||{{u|Md. Golam Mukit Khan}}||৫৬
|-
|৯৬||{{u|Ishtiak Abdullah}}||৫৩
|-
|৯৭||{{u|Kwamikagami}}||৫৩
|-
|৯৮||{{u|Anisvai}}||৫৩
|-
|৯৯||{{u|Nil Nandy}}||৫০
|-
|১০০||{{u|Sadi2202}}||৫০
|}
juxkbr9b1fpkxeewdp57i74yibqqu6g
ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin
3
11928
85636
61191
2025-07-04T05:57:37Z
Asikur.rahman25
11164
/* জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি */ নতুন অনুচ্ছেদ
85636
wikitext
text/x-wiki
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৫, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== [[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি]] ==
ঠিক করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনা করার জন্য অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|আশিকুর রহমান]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৫:৫৭, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
q57pxhw2z7dmqvjsez2mw0whgplv8tb
ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS
3
16324
85610
84836
2025-07-03T17:45:29Z
Mehedi Abedin
7113
/* চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা */ নতুন অনুচ্ছেদ
85610
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
প্রিয় NusJaS, উইকিবইয়ে স্বাগত! [[চিত্র:Smiley oui.gif|30px|link=]] </br>
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Animated tools.gif|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কী?|উইকিবই কী]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:MdaNoman|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:OOjs UI icon signature-ltr.svg|22px|link=|alt=স্বাক্ষর আইকন]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগত এবং শুভেচ্ছা!<br>
— [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]]— [[ব্যবহারকারী:MdaNoman|নোমান]] <span>[[User talk:MdaNoman |(আলাপ)]]</span> ১৪:৪৭, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS, বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২
<br />১৩:৫৯, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52050-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLScOFXrwWd6r8bBuutYxDP2CLQaKUQXFpQD4jpwQwmYjIR4f6A/viewform?usp=send_form এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৬:৩২, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52070-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
:আপনি এখনও ফর্মটি পূরণ করেননি। অনুগ্রহ করে আগামী '''দুই দিনের''' মাঝে ফর্মটি পূরণ করুন, এরমাঝে পূরণ না করলে আপনি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত নাও হতে পারেন। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৫:৫৮, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ২০:৪৬, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfbU0XnUtQltWCaC59XqYCfjFicHrveyMOi_wW_g-I4FRnJMA/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১০:২১, ২৯ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69589-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS,<br />বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪
<br />১০:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69912-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== পুনঃপর্যালোচনা ==
আপনার বার্তা মতো ভুল অনুবাদ সংশোধন ও পরিমার্জিত বাংলায় [[লুইস ক্যারল/থ্রু দ্য লুকিং-গ্লাস]] পাতাটিকে গৃহীত করার মতো পর্যায়ে এনেছি। আশা করি সময় পেলে আমার বার্তাটি ও পাতাটি পুনরায় পর্যালোচনা করবেন। {{Thank you}} -- [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৪:৩৬, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ! [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১২:১৬, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] [[রন্ধনপ্রণালী:চাট]] পাতাটিকেও পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:১৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] নির্দেশনা অনুযায়ী হয়নি। [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] দেখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:২৫, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::মনে হয় সংক্ষিপ্ত করতে বলছেন? [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:৩৬, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] উক্ত পাতায় যেরকম ফরম্যাটে আছে, সেভাবেই লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:৩৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] দয়া করে [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/অবিচ্ছিন্ন সীমা]] পাতাটি দেখুন! সব ঠিক করেছি। শুরু থেকে শেষ। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১১:০৫, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/শিক্ষা]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১২:১০, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪১, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== লুইস ক্যারল/মিস্টার ডজসন ও মিস্টার ক্যারল ==
পাতাটি সম্পূর্ন অনুবাদ ও ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৩:২৭, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] এখনও ইংরেজি লেখা আছে। Minos, Niemand সহ আরও আছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪২, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/গোষ্ঠী ==
পাতার ফরম্যাটিং ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৫:২২, ২২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪৫, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/রেটিনাল ইমপ্লান্ট]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৪, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৮, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/ভেস্টিবুলার ইমপ্লান্ট]] ==
সংশোধন করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৫, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৭, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ ==
মহোদয় এই পাতাতে কি যান্ত্রিকতা আছে একটু নির্দিষ্ট করে বলুন [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ০৯:০৫, ২৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] কোনো ট্রান্সলেটর টুল বা এআই-এর মাধ্যমে অপরিশোধিত অনুবাদ। complex and compound sentences কে simple করা যান্ত্রিকতা দূর করার একটা সহজ উপায়। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৫:৫৩, ২৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সংশোধন ==
[[প্রাণীর অঙ্গসংস্থান ও শরীরবিদ্যা/পৌষ্টিকনালী ও পরিপাক/নিজের জ্ঞান যাচাইয়ের উত্তরমালা]] এবং [[তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ/দৃশ্যমান আলো]] অনুবাদ সংশোধন করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|আলাপ]]) ২০:০০, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৫:৪৪, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== মানব শারীরতত্ত্ব/সংবহন তন্ত্র ==
ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও পাতার ফরমেট ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৯:০৬, ১২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] না, এখনও সব বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা বাকি। পাঠ্যবইয়ে সেমিলুনার কপাটিকা>অর্ধচন্দ্রাকৃতির কপাটিকা, কার্ডিয়াক মাসল>হৃদপেশি, অ্যাওর্টা>মহাধমনী ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। পাতাটিতে এমন আরও ইংরেজি আছে। তাছাড়া অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডকে হৃদয় লেখা হয়না।
:আপনি মাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান বই ডাউনলোড করে সেখানে দেখে পরিভাষাগুলো ব্যবহার করুন। তবে যেগুলোর কোনও বাংলা পরিভাষা ব্যবহৃত হয় না, সেগুলো ইংরেজিতে রাখতে পারেন। আপনি পাঠকের সুবিধার্থে "মহাধমনী বা অ্যাওর্টা"/"মহাধমনী (অ্যাওর্টা)" যেকোনো একভাবে লেখতে পারেন।
:এছাড়াও লেখায় সামান্য যান্ত্রিকতা আছে। Complex and Compound Sentences কে Simple আকারে লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১০:২৭, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/সংঘর্ষকালীন রাজ্য যুগ ==
ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১৮:৪৯, ১৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৩:৫৭, ১৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা]] ==
ভালো অনুবাদ। তবে এই পাতায় বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ রয়ে গেছে। অনুবাদ ও ব্যাকরণেও কিছু ত্রুটি আছে। এগুলো দ্রুত ঠিক করে আমাকে মেনশন করে জানান। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৭:৪৫, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
3oxajmlf4xbao8nveiqf446323gye4q
ব্যবহারকারী:Nettime Sujata
2
16953
85632
70484
2025-07-04T05:47:22Z
Nettime Sujata
5690
সম্প্রসারণ
85632
wikitext
text/x-wiki
আমি সুজাতা। বাংলায় কাজ করতে ভালোবাসি। আমি নিয়মিতভাবে উইকিপিডিয়া ও উইকিসংকলনে অবদান রাখি।
[[File:Nettime Sujata at TTT 2024.jpg|থাম্ব|250px]]
[https://bn.wikibooks.org/wiki/বিশেষ:কেন্দ্রীয়_প্রমাণী/Nettime_Sujata বৈশ্বিক অবদান]
[[উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] [https://bn.wikibooks.org/wiki/উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২২/ফলাফল ফলাফল]
[[উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
[https://fountain.toolforge.org/editathons/wrcbn2025 উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]
7ke6rbzszicc7xqbvhuzi5zkkle9rno
85634
85632
2025-07-04T05:49:27Z
Nettime Sujata
5690
সংশোধন
85634
wikitext
text/x-wiki
আমি সুজাতা। বাংলায় কাজ করতে ভালোবাসি। আমি নিয়মিতভাবে উইকিপিডিয়া ও উইকিসংকলনে অবদান রাখি।
[[File:Nettime Sujata at TTT 2024.jpg|থাম্ব|250px]]
[https://bn.wikibooks.org/wiki/বিশেষ:কেন্দ্রীয়_প্রমাণী/Nettime_Sujata বৈশ্বিক অবদান]
[[উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] [https://bn.wikibooks.org/wiki/উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২২/ফলাফল ফলাফল]
[[উইকিবই:উইকিবই_লিখন_প্রতিযোগিতা_২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
[https://w.wiki/DzA6 উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]
3qnilp6ajps7o0hnz3l3up1036yyc57
ব্যবহারকারী:R1F4T/খেলাঘর
2
18619
85590
85537
2025-07-03T14:08:51Z
R1F4T
9121
85590
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MdsShakil || ২৮৩
|-
| ২ || MS Sakib || ২৭৫
|-
| ৩ || NusJaS || ২৫১
|-
| ৪ || Mehedi Abedin || ১৮১
|-
| ৫ || R1F4T || ১৭২
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪০
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৫৫৬টি
|}
47no2tgc2rqo12oiobuv4ens6ycgzso
ব্যবহারকারী আলাপ:Mononesh Das Bangladesh
3
22170
85643
70661
2025-07-04T06:50:45Z
DAS Bangladesh
11771
/* Mononesh Das */ নতুন অনুচ্ছেদ
85643
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০৫:৪০, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ (ইউটিসি)
== Mononesh Das ==
Facebook Reels Superstar refers to the "Stars" feature, which allows viewers to send virtual "Stars" to creators on their Reels, videos, live broadcasts, photos, and text posts, and creators can then monetize these Stars. Each Star is worth $0.01 USD.
Here's a more detailed overview:
Monetization: Facebook Stars are a way for creators to earn money from their content.
How it works: Viewers purchase Stars and send them to creators they appreciate.
Creator earnings: Creators earn $0.01 USD for each Star received.
Wider application: Stars can be sent on various content types, including Reels, videos, live broadcasts, photos, and text posts.
Availability: The feature is available in many regions for both non-gaming and gaming partners.
Community focus: There is also a Facebook group called "FACEBOOK REELS SUPERSTAR" which is a community for creators and enthusiasts focused on content creation and social media marketing for Facebook Reels.
মনোনেশ - বাংলা ভাষা facebook reels superstar - Facebook
Mar 30, 2025 — 3 mos. 1. মনোনেশ দাস AI Overview +3 Facebook Reels "Superstar" refers to the Facebook Stars feature, allowing viewers to send Stars (virtual currency)
Facebook ·
মনোনেশ দাস
মনোনেশ - facebook reels superstar
Mar 24, 2025 — 3 mos. মনোনেশ দাস AI Overview Facebook Reels "Superstar" refers to the monetization feature called "Stars", where viewers can buy and send virtual Star...
Facebook ·
মনোনেশ দাস
FACEBOOK REELS SUPERSTAR
The FACEBOOK REELS SUPERSTAR group is a community focused on creating and sharing engaging content on Facebook Reels, with an emphasis on social media marketing...
Facebook ·
FACEBOOK REELS SUPERSTAR
About Facebook Stars | Meta Business Help Center
Stars are currently available for Facebook non-gaming and gaming partners. * Algeria. * Argentina. * Austria. * Australia. * Bangladesh. * Belgium. * Belize. *
Facebook
AI responses may include mistakes. Learn more
Featured snippet from the web
Facebook Reels Superstar is a feature that lets creators earn money when viewers send them Stars for their Reels. Viewers can also send gifts.Jun 25, 2025 [[ব্যবহারকারী:DAS Bangladesh|DAS Bangladesh]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:DAS Bangladesh|আলাপ]]) ০৬:৫০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
evemtmne7aylvi4r8juf1vhs3al9p28
ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed
3
22720
85600
72199
2025-07-03T17:02:19Z
Mehedi Abedin
7113
/* প্রতিযোগিতা সম্পর্কে */ নতুন অনুচ্ছেদ
85600
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ১৯:৪০, ৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== প্রতিযোগিতা সম্পর্কে ==
সুধী, আপনার অনুবাদ করা [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি]] পাতার প্রথম "শেয়ার বাজারের ধস" নামক অনুচ্ছেদে "dynamic navigation" টেমপ্লেট দ্বিতীয় চিহ্নিত করা টেবিলটি ইংরেজি "US History/Great Depression and New Deal/Timeline" থেকে সম্ভবত অনুবাদ করেননি। অসম্পূর্ণ অনুবাদ হওয়ায় আমি পাতাটি প্রত্যাখ্যান করেছি৷ প্রতিযোগিতার সম্পূর্ণ পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে যদি আপনি অনুবাদ সম্পূর্ণ করে আমাকে মেনশন করে জানান (কারণ মেনশন না করলে আমি নোটিফিকেশন পাবো না) আমি পাতাটি আবার পর্যালোচনা করে গ্রহণ করে নিতে পারবো। আর হ্যাঁ, অনুবাদেও বেশ কিছু ইস্যু আছে। সেগুলোও সমাধান করতে হবে। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৭:০২, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
icmhu0o086kxkqsuoc77lh2q313qss6
মানব শারীরতত্ত্ব/অনাক্রম্যতন্ত্র
0
22979
85594
74541
2025-07-03T14:28:34Z
NusJaS
8394
/* ইমিউন সিস্টেম: একটি দুর্গের মতো */
85594
wikitext
text/x-wiki
{{Human Physiology|The cardiovascular system|The Urinary System}}
[[চিত্র:How_does_your_body_beat_a_virus.webm|থাম্ব|অ্যালেক্সান্দ্রা ক্লোহার্টির ইমিউন সিস্টেম সম্পর্কিত বক্তৃতা।]]
== সংক্ষিপ্ত বিবরণ ==
ইমিউন সিস্টেম একটি জটিল ব্যবস্থা। এটি আমাদের সংক্রমণ এবং বাইরের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে। এর তিনটি প্রতিরক্ষা স্তর রয়েছে। প্রথম স্তর বাইরের আক্রমণকারীদের প্রবেশে বাধা দেয়। এটি ত্বক, শ্লেষ্মা ঝিল্লি ইত্যাদির মাধ্যমে কাজ করে। দ্বিতীয় স্তরে অ-নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। এটি প্রথম স্তর ভেদ করে আসা প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে কাজ করে। উদাহরণ হলো প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া এবং জ্বর। তৃতীয় স্তর নির্দিষ্ট প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি রোগ সৃষ্টি করে। বি-সেল ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এটি কোষের বাইরের তরলে কাজ করে। টি-সেল সংক্রমিত কোষ ধ্বংস করে। ইমিউন সিস্টেম লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। বি এবং টি লিম্ফোসাইট প্রধানত লিম্ফ নোডে থাকে। টনসিল এবং থাইমাস গ্রন্থিও লিম্ফ অঙ্গ। এগুলো রোগ প্রতিরোধে জড়িত। আমরা প্রায়ই বুঝতে পারি না ইমিউন সিস্টেম কতটা কার্যকর। এটি ব্যর্থ হলে বা ত্রুটিপূর্ণ হলে আমরা বুঝতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, এইডস রোগীর ক্ষেত্রে এইচআইভি লিম্ফোসাইট আক্রমণ করে।
== ইমিউন সিস্টেম: একটি দুর্গের মতো ==
ইমিউন সিস্টেম একটি নীরব বিস্ময়। আমরা আমাদের হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের বিষয়ে খুব সচেতন। কিন্তু ইমিউন সিস্টেম সম্পর্কে আমরা অনেক কম সচেতন। এটি আমাদের প্রতিদিন হাজার হাজার সম্ভাব্য মারাত্মক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
এই অধ্যায়ে আমরা ইমিউন সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করব। এটি আমাদের দিনরাত রোগ এবং মৃত্যু থেকে রক্ষা করে।
[[চিত্র:Suecia_3-126_;_Tavastehus_slott.png|ডান]]
ইমিউন সিস্টেমকে বোঝার জন্য এটিকে একটি দুর্গের সাথে তুলনা করা যায়। আমাদের শরীরের মতো একটি দুর্গও একটি দুর্ভেদ্য কাঠামো। দুর্গের তিনটি প্রতিরক্ষা স্তর রয়েছে:
প্রথমে থাকে একটি পরিখা ও ঝুলন্ত সেতু। আমাদের শরীরে প্রাথমিক প্রতিরক্ষা হলো ভৌত ও রাসায়নিক বাধা। এটি ত্বক, পাকস্থলীর অ্যাসিড, শ্লেষ্মা, অশ্রু, যোনিপথ। এর মধ্যে শেষ তিনটি লাইসোজাইম উৎপন্ন করে। এটি ক্ষতিকর প্যাথোজেন ধ্বংস করে।
দ্বিতীয়, দুর্গের দেয়ালে প্রহরী ও তীরন্দাজ। আমাদের শরীরে দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা হলো অ-নির্দিষ্ট ইমিউন প্রতিক্রিয়া। এটি ম্যাক্রোফেজ, নিউট্রোফিল, ইন্টারফেরন, এবং কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন। এই স্তরে জ্বর এবং প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়াও অ-নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
তৃতীয়, দুর্গের ভেতরের সৈন্য। আমাদের তৃতীয় প্রতিরক্ষা হলো নির্দিষ্ট ইমিউন প্রতিক্রিয়া। এটি টি-সেল এবং বি-সেল। এদের অনেক প্রকার রয়েছে। তারা একটি ঘনিষ্ঠ দলের মতো কাজ করে। তারা প্যাথোজেন ধ্বংস করে।
যদি প্যাথোজেন (আক্রমণকারী) প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর ভেদ করতে সফল হয়, তবে দ্বিতীয় স্তর কাজ শুরু করে। যদি প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তর ব্যর্থ হয়, তবে তৃতীয় স্তর কাজ করে। যখন তিনটি স্তরই ভেদ করা হয়, তখন আমরা অসুস্থ হই। তখন রোগের শিকার হই।
ইমিউন সিস্টেম হলো প্রতিরক্ষার একটি ব্যবস্থা। এটি প্যাথোজেন শনাক্ত করে এবং আক্রমণ করে। এটি জীবকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এটি একটি কঠিন কাজ। কারণ প্যাথোজেন ভাইরাস থেকে পরজীবী কৃমি পর্যন্ত বিভিন্ন রূপে থাকে। এগুলো সাধারণ কোষ এবং টিস্যুর মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তাই এগুলো অবশ্যই নিখুঁতভাবে শনাক্ত করতে হয়। প্যাথোজেন নিজেদের ক্রমাগত পরিবর্তন করে। এটি শনাক্তকরণ এড়াতে এবং হোস্টকে সংক্রমিত করতে সাহায্য করে।
== লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম ==
[[চিত্র:Lymphatic_system.png|ডান|ফ্রেম|মানব লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম]]
লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম এবং ইমিউন সিস্টেম একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। এটি শরীরকে প্যাথোজেন থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা বোঝায়। লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের তিনটি আন্তঃসম্পর্কিত কাজ রয়েছে: ১. শরীরের টিস্যু থেকে অতিরিক্ত তরল, লিম্ফ, অপসারণ। ২. ফ্যাটি অ্যাসিড শোষণ এবং চর্বি, কাইল, রক্ত সংবহন ব্যবস্থায় পরিবহন। ৩. শ্বেত রক্তকণিকা (WBC) তৈরি এবং অ্যান্টিবডি গঠনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শুরু। এটি প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে।
=== লিম্ফ্যাটিক পথ ===
লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম একটি গৌণ সংবহন ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। এটি লিম্ফ নোডে শ্বেত রক্তকণিকার সাথে সহযোগিতা করে। এটি শরীরকে ক্যান্সার কোষ, ছত্রাক, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। রক্ত সংবহন ব্যবস্থার বিপরীতে, লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম বন্ধ নয়। এটির কোনো কেন্দ্রীয় পাম্প নেই। লিম্ফ ধীরে ধীরে এবং কম চাপে চলে। এটি পেরিস্টালসিস, লিম্ফ শিরায় অর্ধচন্দ্রাকার ভালভের কার্যকারিতা এবং পেশীগুলোর দুধ দেওয়ার ক্রিয়ার মাধ্যমে চলে। শিরার মতো, লিম্ফ নালীগুলোতে একমুখী, অর্ধচন্দ্রাকার ভালভ রয়েছে। এটি পেশীগুলোর নড়াচড়ার ওপর নির্ভর করে তরল চেপে বের করে। নালীর দেয়ালের ছন্দবদ্ধ সংকোচন তরলকে লিম্ফ কৈশিকগুলোতে টানতে সাহায্য করতে পারে। এই তরল তারপর ক্রমশ বড় লিম্ফ নালীতে পরিবহন হয়। এটি ডান লিম্ফ্যাটিক নালী (ডান উপরের শরীরের লিম্ফের জন্য) এবং থোরাসিক নালীতে (শরীরের বাকি অংশের জন্য) পৌঁছায়। এই নালীগুলো রক্ত সংবহন ব্যবস্থায় ডান এবং বাম সাবক্ল্যাভিয়ান শিরায় প্রবাহিত হয়।
[[চিত্র:Illu_lymph_capillary.png|বাম|থাম্ব]]
=== লিম্ফ ===
লিম্ফের উৎপত্তি রক্তের প্লাজমা থেকে। এটি রক্ত সংবহন ব্যবস্থার কৈশিক থেকে বেরিয়ে আসে। এটি ইন্টারস্টিশিয়াল তরল হয়ে যায়। এটি টিস্যুর পৃথক কোষের মধ্যবর্তী স্থান পূর্ণ করে। হাইড্রোস্ট্যাটিক চাপে প্লাজমা কৈশিক থেকে বেরিয়ে আসে। এটি ইন্টারস্টিশিয়াল তরলের সাথে মিশে যায়। এই তরলের পরিমাণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। বেশিরভাগ তরল অসমোসিসের মাধ্যমে কৈশিকে ফিরে যায়। প্রায় ৯০% প্লাজমা অসমোসিসের মাধ্যমে রক্ত সংবহন ব্যবস্থায় ফিরে যায়। প্রায় ১০% অতিরিক্ত তরল হিসেবে জমা হয়। লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম এই অতিরিক্ত ইন্টারস্টিশিয়াল তরল সংগ্রহ করে। এটি লিম্ফ কৈশিকে প্রসারণের মাধ্যমে হয়। লিম্ফ নোডে প্রক্রিয়াকরণের পর এটি রক্ত সংবহন ব্যবস্থায় ফিরে যায়। লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমে প্রবেশের পর তরলকে লিম্ফ বলা হয়। এটির গঠন প্রায় মূল ইন্টারস্টিশিয়াল তরলের মতো।
=== ইডিমা ===
ইডিমা হলো ফোলা। এটি তখন হয় যখন টিস্যুতে অতিরিক্ত তরল জমা হয়। অথবা যথেষ্ট তরল অপসারিত হয় না। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া (অতিরিক্ত ভাসোডিলেশন), অপুষ্টি (রক্তে অ্যালবুমিনের অভাব অসমোটিক চাপ কমায় এবং কৈশিকে ফিরে যাওয়া তরলের পরিমাণ কমায়), এবং লিম্ফ্যাটিক সমস্যা (যেমন এলিফ্যান্টিয়াসিসে পরজীবীর কারণে বাধা, বা র্যাডিকাল মাস্টেকটমির কারণে লিম্ফ নোড অপসারণ)। ইডিমা নিম্নাঙ্গে সাধারণ। এটি তখন হয় যখন মানুষ অনেক সময় বসে থাকে। কারণ তরল ফিরে যাওয়া পেশীগুলোর ম্যাসাজিং ক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে।
=== লিম্ফ্যাটিক নালী এবং নাল ===
লিম্ফ্যাটিক নালীগুলো রক্ত সংবহন শিরার মতো গঠনের। এগুলোতেও ভালভ রয়েছে। এগুলো পেশী সংকোচন, শ্বাসযন্ত্রের নড়াচড়া এবং ভালভের ওপর নির্ভর করে। ভালভ পিছনের দিকে প্রবাহ বন্ধ করে। নালীগুলো দুটি নালের মধ্যে একটিতে প্রবেশের আগে একত্রিত হয়।
*থোরাসিক নালী: এই নালীটি লিম্ফ্যাটিক নালীর চেয়ে অনেক বড়। এটি উদর, নিম্নাঙ্গ এবং উপরের শরীরের বাম দিক (মাথা, ঘাড় এবং বাহু) পরিবেশন করে।
* ডান লিম্ফ্যাটিক নালী: এটি উপরের শরীরের ডান দিক এবং বক্ষ অঞ্চল (মাথা, ঘাড়) পরিবেশন করে।
== ইমিউন সিস্টেমের অঙ্গ, টিস্যু এবং কোষ ==
ইমিউন সিস্টেমে লিম্ফ্যাটিক অঙ্গ, টিস্যু এবং কোষের একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে। এই কাঠামোগুলো রেটিকুলোইন্ডোথেলিয়াল সিস্টেম দ্বারা সমর্থিত। এটি রেটিকুলার ফাইবারের নেটওয়ার্ক সহ আলগা সংযোগ টিস্যু। ফ্যাগোসাইটিক কোষ, যেমন মনোসাইট এবং ম্যাক্রোফেজ, রেটিকুলার সংযোগ টিস্যুতে থাকে। যখন অণুজীব শরীরে প্রবেশ করে, অথবা শরীর অ্যান্টিজেনের (যেমন পরাগ) মুখোমুখি হয়, তখন অ্যান্টিজেন লিম্ফে পরিবহন হয়। লিম্ফ লিম্ফ নালী দিয়ে আঞ্চলিক লিম্ফ নোডে যায়। লিম্ফ নোডে ম্যাক্রোফেজ এবং ডেনড্রাইটিক কোষ অ্যান্টিজেন ফ্যাগোসাইটোজ করে। তারা এটি প্রক্রিয়া করে। তারপর লিম্ফোসাইটের কাছে অ্যান্টিজেন উপস্থাপন করে। লিম্ফোসাইট তখন অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু করে। অথবা মেমরি সেল হিসেবে কাজ করে। মেমরি সেলের কাজ ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন শনাক্ত করা।
''' প্রাথমিক লিম্ফ্যাটিক অঙ্গ''' প্রাথমিক লসিকা অঙ্গ হলো লাল অস্থিমজ্জা এবং থাইমাস। এখানেই লসিকাণুর উৎপত্তি ও পরিপক্বতা ঘটে। লসিকাণু একটি বিশেষ ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা, যা প্রতিরোধ ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পাদন করে।
*'''রেড বোন ম্যারো'''
রেড বোন ম্যারো হচ্ছে একটি নরম, স্পঞ্জের মতো, পুষ্টি-সমৃদ্ধ টিস্যু যা কিছু দীর্ঘ অস্থির গহ্বরে থাকে। এটি রক্তকণিকা তৈরির অঙ্গ।
ম্যারোতে তৈরি কিছু শ্বেত রক্তকণিকা হলো: নিউট্রোফিল, ব্যাসোফিল, ইওসিনোফিল, মনোসাইট এবং লসিকাণু।
লসিকাণু দুটি ভাগে বিভক্ত হয়: বি লসিকাণু এবং টি লসিকাণু।
বি লসিকাণুর পরিপক্বতা ঘটে রেড বোন ম্যারোতে।
টি লসিকাণু থাইমাসে পরিপক্ব হয়।
[[image:Gray1217.png|thumb|Side of thorax, showing surface markings for bones, lungs (purple), pleura (blue), and spleen (green)]].
*'''থাইমাস গ্রন্থি'''
থাইমাস গ্রন্থি অবস্থিত বুকের উপরের অংশে, স্টার্নামের পেছনে এবং অ্যাসেন্ডিং অর্টার সামনে।
শিশুদের দেহে থাইমাস বেশি সক্রিয় থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি সঙ্কুচিত হয়।
সংযোজক টিস্যু থাইমাসকে ছোট ছোট লোবুলে বিভক্ত করে, যেখানে লসিকাণু থাকে।
থাইমাস গ্রন্থিতে থাইমোসিন নামক হরমোন উৎপন্ন হয়।
থাইমোসিন টি লসিকাণুর পরিপক্বতায় সাহায্য করে বলে মনে করা হয়।
'''থাইমাস''' প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
থাইমাস না থাকলে, শরীর কোনো বহিরাগত পদার্থকে প্রতিরোধ করতে পারে না।
রক্তে লসিকাণুর পরিমাণ খুব কম থাকে এবং অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিক্রিয়া হয় না বা খুব দুর্বল হয়।
অপরিপক্ব টি লসিকাণু অস্থিমজ্জা থেকে রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে থাইমাসে পৌঁছে।
এখানে তারা পরিপক্ব হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থাইমাসেই থেকে যায়।
মাত্র ৫% টি লসিকাণু থাইমাস ত্যাগ করে।
তারা তখনই বের হয় যদি তারা একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়।
যদি তারা নিজের শরীরের কোষের সাথে প্রতিক্রিয়া করে, তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
তবে যদি তারা বহিরাগত কোষের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হয়, তাহলেই তারা থাইমাস ত্যাগ করে।
'''গৌণ লসিকাগত অঙ্গ'''
গৌণ লসিকাগত অঙ্গগুলোও প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এখানে লসিকাণুরা অ্যান্টিজেনের সঙ্গে মেলে এবং আবদ্ধ হয়।
এরপর তারা সক্রিয় হয় এবং সংখ্যায় বাড়ে।
এই অঙ্গগুলোর মধ্যে রয়েছে প্লীহা, লসিকাগ্রন্থি, টনসিল, পেয়ার্স প্যাচ এবং অ্যাপেন্ডিক্স।
*'''প্লীহা'''
প্লীহা হলো একটি নালীবিহীন গ্রন্থি যা রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
এটি পুরাতন রক্তকণিকা ধ্বংস করে এবং রক্তের একটি সংরক্ষণাগার হিসেবে কাজ করে।
এটি অবস্থিত পেটের উপরের বাম দিকে।
প্লীহা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত থাকে।
প্রত্যেক ভাগে দুটি ধরনের টিস্যু থাকে: হোয়াইট পাল্প এবং রেড পাল্প।
হোয়াইট পাল্পে থাকে লসিকাণু।
রেড পাল্প রক্ত পরিশোধনে কাজ করে।
রক্ত যখন প্লীহায় প্রবেশ করে এবং সাইনাসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন লসিকাণু প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানায়।
ম্যাক্রোফেজ ময়লা ও পুরাতন রক্তকণিকা গ্রাস করে ফেলে।
যাদের প্লীহা নেই, তারা সহজে সংক্রমণের শিকার হয়।
তাদের আজীবন অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
[[Image:Illu lymph node structure.png|left|thumb|342px|লিম্ফ নোডের গঠন। ১. বহির্গত লিম্ফ্যাটিক জাহাজ ২. সাইনাস ৩. নোডিউল ৪. ক্যাপসুল ৫. মেডুলা ৬. ব্যাকফ্লো প্রতিরোধের জন্য ভালভ ৭. বহির্গত লিম্ফ্যাটিক জাহাজ।]]
*'''লসিকাগ্রন্থি'''
লসিকাগ্রন্থি হলো ছোট, ডিম্বাকৃতির গঠন যা লসিকানালীর পাশে অবস্থিত।
এগুলোর ব্যাস সাধারণত ১ থেকে ২৫ মিলিমিটার হয়।
লসিকাগ্রন্থি ফিল্টারের মতো কাজ করে।
এর অভ্যন্তরে সংযোগকারী টিস্যুর জাল থাকে, যা লসিকায় পূর্ণ থাকে।
এই লসিকাগুলো ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে সংগ্রহ করে এবং ধ্বংস করে।
এগুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত, প্রতিটি ভাগে থাকে বি লসিকাণু এবং একটি সাইনাস।
লসিকা সাইনাসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলে, ম্যাক্রোফেজ তা ফিল্টার করে।
তারা প্যাথোজেন এবং ময়লা গ্রাস করে।
সাইনাসে টি লসিকাণুও থাকে।
তারা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
লসিকাগ্রন্থি শরীরের সব কুঠুরিতে থাকে, dorsal cavity ছাড়া।
চিকিৎসকেরা প্রায়ই আর্মপিট এবং গলার নিচে স্পর্শ করে ফুলে থাকা ও ব্যথাযুক্ত লসিকাগ্রন্থি দেখে সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া নির্ণয় করেন।
কারণ সংক্রমণ চলাকালীন লসিকাণু দ্রুত সংখ্যায় বৃদ্ধি পায় এবং গ্রন্থিগুলো ফুলে যায়।
*'''টনসিল'''
টনসিল সাধারণত প্রথম অঙ্গ যা মুখ বা নাক দিয়ে প্রবেশকারী প্যাথোজেন ও অ্যান্টিজেনের মুখোমুখি হয়।
গলদেশের চারপাশে তিন জোড়া টনসিল একটি বৃত্ত তৈরি করে।
*'''পেয়ার্স প্যাচ'''
পেয়ার্স প্যাচ অন্ত্রের প্রাচীরে অবস্থিত।
অ্যাপেন্ডিক্স যা বৃহৎ অন্ত্রের সিসাম অংশের সঙ্গে যুক্ত, সেখানেও এটির অবস্থান আছে।
এগুলো অন্ত্রপথ দিয়ে শরীরে প্রবেশকারী প্যাথোজেনকে থামিয়ে দেয়।
== লিউকোসাইট ==
ইমিউন সিস্টেমের প্রাথমিক কোষ হলো লিউকোসাইট বা শ্বেত রক্তকণিকা (WBC)। বেশিরভাগ লিউকোসাইট লোহিত রক্তকণিকার চেয়ে অনেক বড়। কিন্তু এদের সংখ্যা অনেক কম। পুরো রক্তের এক মাইক্রোলিটারে প্রায় ৫০ লাখ লোহিত রক্তকণিকা থাকে। কিন্তু মাত্র প্রায় ৭০০০ লিউকোসাইট থাকে।
বেশিরভাগ লিউকোসাইট রক্তে সঞ্চালন করে। কিন্তু তারা সাধারণত কৈশিক ছেড়ে বাইরে কাজ করে। এটি এক্সট্রাভাসকুলার (নালীর বাইরে) কাজ। কিছু ধরনের লিউকোসাইট টিস্যুতে কয়েক মাস বাঁচতে পারে। কিন্তু অন্যরা কয়েক ঘণ্টা বা দিন বাঁচে। দাগযুক্ত টিস্যু নমুনায় লিউকোসাইটকে একে অপরের থেকে আলাদা করা যায়। এটি নিউক্লিয়াসের আকৃতি এবং আকার, সাইটোপ্লাজমের দাগের বৈশিষ্ট্য, সাইটোপ্লাজমিক অন্তর্ভুক্তি এবং কোষের সীমানার নিয়মিততার মাধ্যমে হয়।
লিউকোসাইট ছয়টি মৌলিক প্রকারে বিভক্ত: ইওসিনোফিল, বেসোফিল, নিউট্রোফিল, মনোসাইট, লিম্ফোসাইট এবং ডেনড্রাইটিক কোষ।
লিউকোসাইটের একটি কার্যকরী গ্রুপ হলো '''ফ্যাগোসাইট'''। এটি শ্বেত রক্তকণিকা যা ফ্যাগোসাইটোসিসের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য গ্রাস করে এবং হজম করে। এই গ্রুপে নিউট্রোফিল, ম্যাক্রোফেজ, মনোসাইট (যা ম্যাক্রোফেজের পূর্বসূরী) এবং ইওসিনোফিল রয়েছে। দ্বিতীয় কার্যকরী গ্রুপ হলো '''সাইটোটক্সিক কোষ'''। এদের নাম এমন কারণ তারা যে কোষকে আক্রমণ করে তা হত্যা করে। এই গ্রুপে ইওসিনোফিল এবং কিছু ধরনের লিম্ফোসাইট রয়েছে।
আসুন ছয়টি মৌলিক লিউকোসাইটের দিকে নজর দিই।
''' ইওসিনোফিল'''
ইওসিনোফিল পরজীবীর বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ায় অবদান রাখে। এদের সাইটোপ্লাজমে উজ্জ্বল গোলাপী দাগযুক্ত দানা থাকে। এটি সহজেই চেনা যায়। সাধারণত পেরিফেরাল রক্ত সংবহনে খুব কম ইওসিনোফিল থাকে। এটি সমস্ত লিউকোসাইটের মাত্র ১-৩%। রক্তে একটি সাধারণ ইওসিনোফিলের জীবনকাল প্রায় ৬-১২ ঘণ্টা। ইওসিনোফিল বড় পরজীবীর সাথে সংযুক্ত হয়। এরা তাদের দানা থেকে পদার্থ নির্গত করে। এটি পরজীবীকে ক্ষতি করে বা হত্যা করে। ইওসিনোফিল প্যাথোজেন হত্যা করে। তাই এদের সাইটোটক্সিক কোষ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। ইওসিনোফিল অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয়। এরা বিষাক্ত এনজাইম নির্গত করে প্রদাহ এবং টিস্যু ক্ষতি করে।
''' বেসোফিল'''
বেসোফিল হিস্টামিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক নির্গত করে। (হিস্টামিন মাস্ট কোষ নামক অন্যান্য কোষ থেকেও নির্গত হয়।) বেসোফিল রক্তে বিরল। কিন্তু দাগযুক্ত রক্তের স্মিয়ারে সহজেই চেনা যায়। এদের সাইটোপ্লাজমে বড়, গাঢ় নীল দানা থাকে। এরা প্রদাহে অবদান রাখে এমন মধ্যস্থতাকারী নির্গত করে। দানাগুলোতে হিস্টামিন, হেপারিন (একটি অ্যান্টিকোয়াগুলান্ট), সাইটোকাইন এবং অ্যালার্জিক এবং ইমিউন প্রতিক্রিয়ায় জড়িত অন্যান্য রাসায়নিক থাকে।
[[চিত্র:Phagocytosis.png|বাম|থাম্ব|ফ্যাগোসাইটোসিসের সময় একটি কোষের চিত্র।]]
''' নিউট্রোফিল'''
নিউট্রোফিল ব্যাকটেরিয়া “খায়” এবং সাইটোকাইন নির্গত করে। নিউট্রোফিল সবচেয়ে প্রচুর শ্বেত রক্তকণিকা। এটি মোটের ৫০-৭০%। এদের খণ্ডিত নিউক্লিয়াস দিয়ে সহজেই চেনা যায়। নিউট্রোফিল বোন ম্যারোতে গঠিত হয়। এরা ফ্যাগোসাইটিক কোষ। এরা সাধারণত ব্যাকটেরিয়া গ্রাস করে এবং হত্যা করে। বেশিরভাগ নিউট্রোফিল রক্তে থাকে। কিন্তু ক্ষতি বা সংক্রমণের এক্সট্রাভাসকুলার স্থানে আকৃষ্ট হলে রক্ত ছেড়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া এবং বাইরের কণা গ্রাস ছাড়াও, নিউট্রোফিল বিভিন্ন সাইটোকাইন নির্গত করে।
''' মনোসাইট'''
মনোসাইট টিস্যু ম্যাক্রোফেজের পূর্বসূরী কোষ। মনোসাইট রক্তে ততটা সাধারণ নয়। এটি শ্বেত রক্তকণিকার ১-৬%। রক্তের বাইরে গেলে মনোসাইট বড় হয় এবং ম্যাক্রোফেজে রূপান্তরিত হয়। কিছু টিস্যু ম্যাক্রোফেজ টিস্যুতে ঘুরে বেড়ায়। এরা অ্যামিবয়েড গতিতে চলে। অন্যরা একটি স্থানে থেকে স্থির থাকে। ম্যাক্রোফেজ টিস্যুর মধ্যে প্রাথমিক স্ক্যাভেঞ্জার। ম্যাক্রোফেজ বড় কণা অপসারণ করে। যেমন পুরানো লোহিত রক্তকণিকা এবং মৃত নিউট্রোফিল। ম্যাক্রোফেজ অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা আণবিক বা কোষীয় অ্যান্টিজেন গ্রাস করে এবং হজম করে। প্রক্রিয়াকৃত অ্যান্টিজেনের টুকরো ম্যাক্রোফেজ ঝিল্লিতে পৃষ্ঠ প্রোটিন কমপ্লেক্সের অংশ হিসেবে ঢোকানো হয়।
''' লিম্ফোসাইট'''
লিম্ফোসাইট শরীরের অর্জিত ইমিউন প্রতিক্রিয়া পরিচালনার মূল কোষ। রক্তে মাত্র ৫% লিম্ফোসাইট থাকে। এরা সমস্ত শ্বেত রক্তকণিকার ২০-৩০%। বেশিরভাগ লিম্ফোসাইট লিম্ফয়েড টিস্যুতে থাকে। সেখানে তারা আক্রমণকারীদের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। একটি অনুমানে, প্রাপ্তবয়স্ক শরীরে যেকোনো সময়ে এক ট্রিলিয়ন লিম্ফোসাইট থাকে।
''' ডেনড্রাইটিক কোষ'''
ডেনড্রাইটিক কোষ লিম্ফোসাইট সক্রিয় করে। এরা অ্যান্টিজেন-উপস্থাপনকারী কোষ। এদের লম্বা, পাতলা প্রক্রিয়া থাকে। এটি নিউরোনাল ডেনড্রাইটের মতো। ডেনড্রাইটিক কোষ ত্বকে ল্যাঙ্গারহ্যান্স কোষ নামে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন অঙ্গেও থাকে। যখন ডেনড্রাইটিক কোষ অ্যান্টিজেন শনাক্ত করে এবং ধরে, তখন তারা গৌণ লিম্ফয়েড টিস্যুতে চলে যায়। সেখানে তারা লিম্ফোসাইটের কাছে অ্যান্টিজেন উপস্থাপন করে।
== সংক্রমণের বিরুদ্ধে তিনটি প্রতিরক্ষা ==
=== জন্মগত প্রতিরক্ষা – প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর ===
শারীরিক এবং রাসায়নিক বাধা শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর।
''' শারীরিক বা যান্ত্রিক বাধা'''
*'''ত্বক'''
ত্বক ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা। এটি একটি বাধা। এটি সংক্রমণকে শরীরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। লক্ষ লক্ষ অণুজীব আমাদের ত্বকে এবং আমাদের চারপাশের বাতাসে নিরীহভাবে বাস করে। ত্বকের সেবেসিয়াস গ্রন্থি ঘাম এবং সেবাম উৎপন্ন করে। এগুলো একত্রে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এই দুটি পদার্থেই অ্যান্টিসেপটিক অণু থাকে। প্রধানত লাইসোজাইম ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর ভেঙে দেয়। ত্বক ভালো প্রতিরক্ষা হলেও এটি নিখুঁত নয়। ত্বক নিজেই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক বা ক্ষুদ্র পরজীবী দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। উদাহরণ হলো: ফোড়া, ইমপেটিগো; রিংওয়ার্ম, অ্যাথলিটস ফুট; কোল্ড সোর, ওয়ার্ট, ভেরুকা; এবং স্ক্যাবিস।
*'''শ্লেষ্মা ঝিল্লি'''
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম প্রতিরক্ষা হলো আমাদের শ্লেষ্মা ঝিল্লি। শ্লেষ্মা ঝিল্লি (বা মিউকোসা; একবচন: মিউকোসা) শরীরের বিভিন্ন গহ্বর এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গে থাকে। এটি বাইরের পরিবেশের সংস্পর্শে থাকে। এটি নাকের ছিদ্র, ঠোঁট, কান, যৌনাঙ্গ এবং মলদ্বারে ত্বকের সাথে সংযুক্ত। নাক এবং মুখ ফুসফুসে বাতাসের জন্য পথ হিসেবে কাজ করে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শ্লেষ্মা ঝিল্লি এই পথগুলোকে উষ্ণ এবং আর্দ্র করে। বলা হয়, মানুষের মুখে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সব মানুষের যোগফলের চেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। শ্লেষ্মা ঝিল্লি বিভিন্ন কাজ করে। তবে এদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো শ্লেষ্মা নিঃসরণ। এটি ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য বাইরের ধ্বংসাবশেষ আটকে ফেলে। এটি শ্বাসনালীর আস্তরণে জ্বালা করে। শ্লেষ্মা সাইনাসে উৎপন্ন হয় এবং সঞ্চিত হয়। সাইনাস গহ্বরে অতিরিক্ত তরল হলে আমরা নাক বন্ধ অনুভব করি। এটি শ্লেষ্মা নিঃসরণ বৃদ্ধি এবং নাক এবং সাইনাসের শ্লেষ্মা ঝিল্লির রক্তনালী থেকে তরল বৃদ্ধির ফল। ত্বকের মাধ্যমে কীটনাশক এবং অ্যানথ্রাক্সের মতো অনেক রাসায়নিক শোষিত হয়। কিছু শ্লেষ্মা ঝিল্লি সিলিয়েটেড। '''সিলিয়া''' পাতলা, লেজের মতো প্রক্রিয়া। এটি কোষের দেহ থেকে প্রায় ৫-১০ মাইক্রোমিটার বাইরের দিকে প্রসারিত। এদের প্রধান কাজ হলো পৃষ্ঠ জুড়ে জিনিস সরানো।
শ্বাসনালীর মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স বাইরের ধ্বংসাবশেষ এবং শ্বাস নেওয়া প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। উপরের এবং নিচের শ্বাসনালীতে সিলিয়া থাকে। এগুলো শ্লেষ্মার পাতলা স্তরে আবৃত। এগুলো দ্রুত স্পন্দিত হয়। এটি শ্লেষ্মা স্তরে আটকে থাকা কণাকে ফ্যারিনক্সে নিয়ে যায়। ত্রুটিপূর্ণ মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স শ্বাসনালীকে পুনরাবৃত্ত সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে। এই সিলিয়া ত্রুটি জন্মগত বা সংক্রমণ, বিষ বা ওষুধের কারণে অর্জিত হতে পারে।
''' রাসায়নিক প্রতিরক্ষা'''
*'''অশ্রু, লালা'''
অশ্রু এবং লালায় '''লাইসোজাইম''' থাকে। এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক এনজাইম। এটি ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর আক্রমণ করে এবং ভেঙে দেয়।
*'''পাকস্থলীর এসিড'''
পাকস্থলীর আস্তরণের গ্রন্থি হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। এই অ্যাসিড বেশিরভাগ আক্রমণকারী জীবাণুকে হত্যা করে। এরা গিলে ফেলা হয় এবং সেখানে বাস করে।
=== সংক্রমণের অ-নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া - দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা স্তর ===
আমরা জন্মগতভাবে অ-নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা নিয়ে জন্মাই। এগুলো আক্রমণকারী প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে একইভাবে প্রতিক্রিয়া করে। আমাদের শরীরের বাইরের প্রতিরক্ষা হলো ত্বক। সেবেসিয়াস গ্রন্থি ঘাম এবং সেবাম উৎপন্ন করে। এগুলোতে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য থাকে। এটি রক্ষা করে। লাইসোজাইম নামক ব্যাকটেরিয়া-হত্যাকারী পদার্থ অশ্রু এবং লালায় পাওয়া যায়। মূত্রনালীতে অ্যাসিডিক প্রস্রাব এবং যৌনাঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকর জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করে। পাকস্থলীতে বেশিরভাগ আক্রমণকারী জীবাণু গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দ্বারা মারা যায়। এগুলো বাইরের প্রতিরক্ষা আমাদের রক্ষা করার কয়েকটি উদাহরণ। সমস্ত বাইরের প্রতিরক্ষা একসাথে শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর হিসেবে কাজ করে।
==== প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া ====
ত্বকে কোনো ভাঙন হলে ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এই বাইরের অণুজীব ক্ষতস্থানে ফোলা এবং লালভাব সৃষ্টি করে। শরীরের এই প্রতিক্রিয়াকে ''প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া'' বা ''প্রদাহ'' বলা হয়।
*ফোলা, লালভাব, তাপ এবং ব্যথা
প্রদাহ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত: ফোলা (টিউমার), লালভাব (রুবর), তাপ (ক্যালর), ব্যথা (ডলর) এবং জড়িত অঙ্গের কার্যকারিতা হ্রাস (ফাংশিও লায়েসা)। যখন ক্ষত হয়, তখন একটি কৈশিক এবং বেশ কয়েকটি টিস্যু কোষ ফেটে যায়। এটি হিস্টামিন এবং কাইনিন নির্গত করে। এগুলো কৈশিককে প্রসারিত করে। এটি আরও ভেদ্য করে। এটি টিস্যুতে তরল ফাঁস করে। প্রসারণ এবং টিস্যুতে তরল ফাঁস ফোলা, লালভাব এবং তাপ সৃষ্টি করে। ফোলা এবং কাইনিন স্নায়ু প্রান্তকে উদ্দীপিত করে। এটি ব্যথা সৃষ্টি করে। যদি ক্ষতের কারণে ত্বক ভেঙে যায়, তবে আক্রমণকারী অণুজীব প্রবেশ করতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর প্রদাহের একটি সাধারণ কারণ হলো সিরাস তরল। এটি প্লাজমা, লিম্ফ এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ এবং নালী থেকে বেরিয়ে আসা ইন্টারস্টিশিয়াল তরলের মিশ্রণ। যদি পর্যাপ্ত সিরাস তরল জমা হয়, তবে একটি সিরোমা নামক ভর তৈরি হতে পারে। সিরোমার চিকিৎসায় সূঁচ এবং সিরিঞ্জ দিয়ে তরল অপসারণ করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে অ্যাসপিরেশন বলা হয়।
*নিউট্রোফিল এবং ম্যাক্রোফেজ দ্বারা ফ্যাগোসাইটোসিস
ত্বক ভাঙার ক্ষেত্রে নিউট্রোফিল, মনোসাইট (এবং ম্যাক্রোফেজ) এসে আক্রমণকারীদের গ্রাস করে এবং ধ্বংস করে। ফ্যাগোসাইটোসিস একটি রিসেপ্টর-মধ্যস্থ ঘটনা। এটি নিশ্চিত করে যে শুধুমাত্র অবাঞ্ছিত কণা গ্রাস করা হয়। উদ্দীপিত ম্যাক্রোফেজ কলোনি স্টিমুলেটিং ফ্যাক্টর (CSFs) উৎপন্ন করে। এটি লিউকোসাইটের সংখ্যা বিস্ফোরকভাবে বাড়ায়। CSF রক্তের মাধ্যমে বোন ম্যারোতে যায়। সেখানে এটি শ্বেত রক্তকণিকা, প্রধানত নিউট্রোফিল, উৎপাদন এবং নির্গমনকে উদ্দীপিত করে। কাছাকাছি লিম্ফ নোডে লিম্ফোসাইট নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এটি অণুজীবকে আক্রমণ করে। সংঘর্ষের সময় কিছু নিউট্রোফিল মারা যায়। এটি মৃত টিস্যু, ব্যাকটেরিয়া, জীবিত শ্বেত কোষ ইত্যাদির সাথে মিশে যায়। এই ঘন হলুদ-সাদা তরলকে '''পুঁজ''' বলা হয়। যখন একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়, তখন তাদের রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা এবং প্রকারের পরীক্ষা খুব উপকারী হতে পারে।
==== কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম ====
[[চিত্র:Complement_death.PNG|ডান|থাম্ব|কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন কোষ ঝিল্লি আক্রমণ করছে।]]
কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম ইমিউন সিস্টেমের একটি জৈব রাসায়নিক ক্যাসকেড। এটি জীব থেকে প্যাথোজেন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি নিরাময় প্রচার করে। এটি অনেক ছোট প্লাজমা প্রোটিন থেকে উৎপন্ন। এরা একত্রে কাজ করে। এটি সাইটোলাইসিসের প্রাথমিক ফলাফল গঠন করে। এটি লক্ষ্য কোষের প্লাজমা ঝিল্লি বিঘ্নিত করে।
কমপ্লিমেন্ট অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি কমপ্লেক্স দ্বারা সক্রিয় হয়। এটি বাইরের অণুজীব বা কোষের প্লাজমা ঝিল্লিতে ছিদ্র তৈরি করে (লাইসিস)। কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম অ-নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এটি নির্দিষ্ট অণুজীবের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে পারে। এগুলো অ্যান্টিবডি দিয়ে চিহ্নিত হয়। হেমোলাইটিক ট্রান্সফিউশন প্রতিক্রিয়া কমপ্লিমেন্ট সক্রিয়তার কারণে হয়। এটি তখন হয় যখন একজন ব্যক্তি অযথা দানকৃত রক্তের অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি প্রকাশ করে। নবজাতকের হেমোলাইটিক রোগ (HDN) মায়ের Rh ফ্যাক্টরের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির কারণে হয়। এটি প্ল্যাসেন্টা অতিক্রম করে। এটি শিশুর লোহিত রক্তকণিকার সাথে বাঁধে। এটি শিশুর নিজস্ব কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। এটি শিশুর লোহিত রক্তকণিকা লাইসিস করে।
==== ভাইরাল সংক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারফেরন ====
ইন্টারফেরন (IFNs) প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন গ্লাইকোপ্রোটিন। এটি অ-নির্দিষ্ট ইমিউন প্রতিক্রিয়ায় জড়িত। ইন্টারফেরন তাদের নাম অনুসারে কাজ করে। এরা ভাইরাল বৃদ্ধিতে “হস্তক্ষেপ” করে। ইন্টারফেরন একটি কোষ থেকে শুরু হয়। এটি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। যখন একটি কোষ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়, তখন ভাইরাস কোষটিকে ভাইরাল নিউক্লিক অ্যাসিড তৈরি করতে বাধ্য করে। এই নিউক্লিক অ্যাসিড একটি সংকেত হিসেবে কাজ করে। এটি কোষকে বুঝতে দেয় যে এটি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত। তাই কোষটি ইন্টারফেরন তৈরি এবং পাঠাতে শুরু করে। কোষ যে IFN পাঠায় তা কাছাকাছি সুস্থ কোষে যায়। এটি তাদের ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে। সুস্থ কোষ তখন অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন শুরু করে। এটি কোষগুলোকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে আরও প্রতিরোধী করে।
=== অভিযোজিত প্রতিরক্ষা (নির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা - তৃতীয় প্রতিরক্ষা স্তর) ===
ইমিউন সিস্টেমের এই অংশটি সরাসরি আক্রমণকারী অণুজীবকে লক্ষ্য করে। আমাদের নির্দিষ্ট ইমিউন প্রতিরক্ষা ''অ্যান্টিজেন'' এর প্রতিক্রিয়া করে। অ্যান্টিজেন একটি প্রোটিন (বা পলিস্যাকারাইড) অণু। এটি সাধারণত কোষ ঝিল্লিতে থাকে। শরীর এটিকে '''ননসেলফ''' হিসেবে চেনে। এগুলো অণুজীব, বাইরের কোষ, বা ক্যান্সার কোষে পাওয়া যায়। সাধারণত আমাদের ইমিউন সিস্টেম নিজের অ্যান্টিজেনের প্রতিক্রিয়া করে না। যদি করে, তবে এটি একটি অটোইমিউন রোগ। কখনও কখনও আমরা নিরীহ অ্যান্টিজেনের প্রতি ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করি। যেমন পরাগ বা বিড়ালের খুশকি। এটি একটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া।
==== লিম্ফোসাইট ====
নির্দিষ্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুই ধরনের লিম্ফোসাইটের ওপর নির্ভর করে। এরা হলো বি-সেল এবং টি-সেল। তাদের নাম শরীরে কোথায় পরিপক্ক হয় তার ওপর ভিত্তি করে। বি-সেল বোন ম্যারোতে পরিপক্ক হয়। টি-সেল থাইমাস গ্রন্থিতে পরিপক্ক হয়। তুলনায়, বি এবং টি-সেল উভয়ই অ্যান্টিজেন-ধারণকারী কোষ শনাক্ত করতে এবং লক্ষ্য করতে পারে। তবে তারা ভিন্ন উপায়ে এটি করে। বি এবং টি-সেল লিম্ফোসাইট একটি অ্যান্টিজেন শনাক্ত করতে পারে। কারণ তাদের পৃষ্ঠে নির্দিষ্ট রিসেপ্টর অণু থাকে। এগুলো পৃথক অ্যান্টিজেনের সাথে ঠিক মানানসই (যেমন তালা এবং চাবি)। যেকোনো বি বা টি-সেল শুধুমাত্র এক ধরনের অ্যান্টিজেনের প্রতিক্রিয়া করতে পারে। শরীর আগে থেকে জানে না কোন অ্যান্টিজেনের মুখোমুখি হবে। তাই এটি সম্ভাব্য অ্যান্টিজেনের জন্য বিপুল সংখ্যক রিসেপ্টর সাইট তৈরি করে। অনুমান করা হয়, আমরা আমাদের জীবদ্দশায় যে এক মিলিয়ন বা তার বেশি অ্যান্টিজেনের মুখোমুখি হই, তার জন্য আমাদের সমান সংখ্যক নির্দিষ্ট লিম্ফোসাইট থাকে।
===== বি-সেল অ্যান্টিবডি তৈরি করে =====
'' বি-সেল'' লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি-মধ্যস্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (হিউমোরাল ইমিউনিটি) এর জন্য দায়ী। তারা অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এগুলো প্রোটিন। এটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের সাথে বাঁধে এবং নিষ্ক্রিয় করে। অ্যান্টিবডি সরাসরি ব্যাকটেরিয়া হত্যা করে না। কিন্তু এটি ধ্বংসের জন্য চিহ্নিত করে। যখন অ্যান্টিবডি ভাইরাসের সাথে বাঁধে, তখন এটি ভাইরাসকে কোষে সংক্রমিত করতে বাধা দেয়। যখন অ্যান্টিবডি বিষের সাথে বাঁধে, তখন এটি বিষ নিষ্ক্রিয় করে। এজন্য আমরা টিটেনাস বিষের বিরুদ্ধে টিকা নিই। হিউমোরাল ইমিউনিটি লক্ষ্য ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং রক্ত এবং লিম্ফে
'' দ্রবণীয় বাইরের অণুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। এটি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস কোষে প্রবেশের ''আগে'' (এক্সট্রাসেলুলার ব্যাকটেরিয়া এবং এক্সট্রাসেলুলার ভাইরাস) কাজ করে।
বি-সেল দুই ধরনের কোষ তৈরি করে:
* প্লাজমা কোষ
* মেমরি কোষ
'''প্লাজমা কোষ'''
ভ্রূণের বিকাশের সময় বি-সেল পরিপক্ক হয়। তারা পৃষ্ঠে রিসেপ্টর তৈরি করে। এটি তাদের নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন শনাক্ত করতে দেয়। তারপর তারা রক্তপ্রবাহে চলে যায়। তারা লিম্ফ নোড, প্লীহা এবং টনসিলে ছড়িয়ে পড়ে। গন্তব্যে পৌঁছে বি-সেল নিষ্ক্রিয় থাকে। তারা তাদের নির্দিষ্ট রিসেপ্টরের সাথে মিলে এমন বাইরের কোষের অ্যান্টিজেনের মুখোমুখি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে। বেশিরভাগ বি-সেল সারাজীবন নিষ্ক্রিয় থাকে। বাইরের অ্যান্টিজেন সরাসরি বি-সেলের কাছে উপস্থাপিত হতে পারে। তবে সাধারণত ম্যাক্রোফেজ এবং টি-সেল লিম্ফোসাইট (হেল্পার টি-সেল) অ্যান্টিজেন উপস্থাপনকারী কোষ হিসেবে বি-সেলের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। এটি অ্যান্টিবডি উৎপাদনে সাহায্য করে। এমন মুখোমুখি হলে, বি-সেলের রিসেপ্টর অ্যান্টিজেনের সাথে বাঁধে। উপযুক্ত বি-সেল ''চালু'' বা উদ্দীপিত হয়। এটি তখন বড় হয়। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি একটি বড় একজাতীয় গ্রুপে (ক্লোন) রূপান্তরিত হয়। এই কোষগুলোর বেশিরভাগই ''প্লাজমা কোষ''। এরা সক্রিয়ভাবে অ্যান্টিবডি নিঃসরণ করে। এই অ্যান্টিবডি মূল উদ্দীপক অ্যান্টিজেনের সাথে বাঁধে। বেশিরভাগ বি-সেল লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমে থাকে। কিন্তু অ্যান্টিবডি লিম্ফ তরলে নিঃসৃত হয়। এটি রক্তের প্লাজমায় প্রবেশ করে। এটি সারা শরীরে সঞ্চালিত হয়। ক্লোন কোষগুলো মাত্র কয়েকদিন বাঁচে। কিন্তু তাদের অ্যান্টিবডি থেকে যায়। এটি রক্ত এবং লিম্ফে সঞ্চালিত হয়। এটি ধীরে ধীরে সংখ্যায় কমে।
''' অ্যান্টিবডির গঠন এবং কার্যকারিতা'''
অ্যান্টিবডি বা ইমিউনোগ্লোবুলিন (Ig) এর বিভিন্ন শ্রেণী রয়েছে। যেমন IgA, IgG, IgE, এবং IgM। এরা অণুজীবের পৃষ্ঠে সংযুক্ত হয়। এটি নিউট্রোফিল, মনোসাইট এবং ম্যাক্রোফেজ দ্বারা ফ্যাগোসাইটাইজড হওয়া সহজ করে। যেকোনো কিছু যা ফ্যাগোসাইটোসিস সহজ করে তাকে ''অপসোনিন'' বলা হয়। অ্যান্টিবডি আক্রমণকারীর সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ''অপসোনাইজেশন'' বলা যায়। কিছু অ্যান্টিবডি নির্দিষ্ট বিষ বা টক্সিনের সাথে বাঁধে। এটি তাদের নিষ্ক্রিয় করে। এগুলোকে ''অ্যান্টিটক্সিন'' বলা হয়। টিটেনাস টিকা আমাদের শরীরকে টিটেনাস বিষের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে উদ্দীপিত করে। এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে নয়, যে ব্যাকটেরিয়া বিষ তৈরি করে। অন্যান্য অ্যান্টিবডি অণুজীবের পৃষ্ঠে বাঁধে। এটি তাদের শরীরের কোষে সংযুক্ত হতে বাধা দেয়। এটি ভাইরাসকে হোস্ট কোষে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। কিছু অ্যান্টিবডি প্লাজমায় পাওয়া নয়টি প্রোটিনকে উদ্দীপিত করে। এগুলোকে ''কমপ্লিমেন্ট'' বলা হয়।
''' মেমরি বি-সেল'''
সক্রিয়তার সময় কিছু ক্লোন মেমরি বি-সেল হয়ে যায়। এই কোষগুলো দীর্ঘজীবী। এরা বাইরের অ্যান্টিজেন সম্পর্কে তথ্য রেকর্ড করে। এটি দ্বিতীয়বার সংস্পর্শে এলে অ্যান্টিবডি দ্রুত এবং বেশি পরিমাণে তৈরি করতে পারে। দ্বিতীয় প্রতিক্রিয়া প্রথমটির চেয়ে অনেক শক্তিশালী। এটি বেশি অ্যান্টিবডি সঞ্চালনে রাখে। তাই আমরা প্রায়ই টিকার জন্য “বুস্টার শট” নিই।
===== টি-সেল সংক্রমিত কোষ আক্রমণ করে =====
[[চিত্র:Antigen_presentation.svg|থাম্ব|250x250পিক্সেল]]
ইন্ট্রাসেলুলার প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করা টি-লিম্ফোসাইটের ভূমিকা। এরা ''সেল-মিডিয়েটেড ইমিউনিটি'' (CMI) পরিচালনা করে। ম্যাক্রোফেজ আক্রমণকারী অণুজীব ফ্যাগোসাইটাইজ করে। তারা অণুজীবের অংশ (অ্যান্টিজেন) টি-সেল লিম্ফোসাইটের কাছে উপস্থাপন করে। উপযুক্ত টি-সেল ''চালু'' বা উদ্দীপিত হয়। সক্রিয় টি-সেল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি ''সাইটোটক্সিক টি-সেল'' (Tc কোষ) এর একটি বড় একজাতীয় গ্রুপে (ক্লোন) রূপান্তরিত হয়।
*(ক) সরাসরি জীবাণু আক্রমণ করে। এটি সংক্রমিত কোষ হত্যা করে।
সাইটোটক্সিক টি-সেল সংক্রমণ (বা রোগ) এর স্থানে চলে যায়। এরা রাসায়নিক উৎপন্ন করে। এটি সরাসরি আক্রমণকারীকে হত্যা করে। সাইটোটক্সিক টি-সেল “পারফোরিন” নির্গত করে। এটি লক্ষ্য কোষের প্লাজমা ঝিল্লিতে ছিদ্র সৃষ্টি করে। এটি লাইসিস ঘটায়।
* (খ) টি-সেল বোন ম্যারো থেকে অপরিপক্ক পূর্বসূরী কোষ থেকে থাইমাস গ্রন্থিতে বিকশিত হয়।
* (গ) কিলার এবং হেল্পার টি-সেল।
* (ঘ) মেমরি টি-সেল।
এই সক্রিয় টি-সেলের একটি অংশ ''মেমরি''টি-সেল (Tm) হয়ে যায়। এই কোষগুলো বাইরের অ্যান্টিজেন সম্পর্কে তথ্য রেকর্ড করে। দ্বিতীয়বার সংস্পর্শে এলে টি-সেল দ্রুত এবং শক্তিশালীভাবে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। টি-সেলের একটি অংশ ''হেল্পার টি-সেল'' (TH) বা ''সাপ্রেসর টি-সেল'' (Ts) হয়ে যায়। TH কোষ অন্যান্য টি-সেল এবং বি-সেলকে উদ্দীপিত করে। এরা ''সাইটোকাইন'' এবং অন্যান্য উদ্দীপক রাসায়নিক নির্গত করে। Ts কোষ ইমিউন প্রতিক্রিয়া দমন করে। অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে যে সেল-মিডিয়েটেড ইমিউনিটি শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী। এটি:আমাদের দেহের কোষের ভিতরে থাকা জীবাণুদের (ইনট্রাসেলুলার ব্যাকটেরিয়া ও ইনট্রাসেলুলার ভাইরাস) বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান।
ছত্রাকজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান।
প্রোটোজোয়া পরজীবীদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান।
ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান।
== ইমিউন প্রতিক্রিয়া পথ ==
জন্মগত প্রতিক্রিয়া প্রথমে শুরু হয়। এটি আরও নির্দিষ্ট অর্জিত প্রতিক্রিয়া দ্বারা শক্তিশালী হয়। এই দুটি পথ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। তাই সহযোগিতা এবং যোগাযোগ অপরিহার্য।
=== প্রদাহ ===
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে কী হয়? যদি প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর ব্যর্থ হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া এক্সট্রাসেলুলার তরলে পৌঁছায়। সেখানে তারা সাধারণত প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই প্রতিক্রিয়া ব্যাকটেরিয়ার পৃষ্ঠে অ্যান্টিজেনকে অ্যান্টিবডি দিয়ে আবৃত করে। তারপর অ্যান্টিবডি ফ্যাগোসাইটিক কোষ দিয়ে অ্যান্টিজেন গ্রাস করে। এটি লাল, ফোলা, উষ্ণ এবং স্পর্শে ব্যথাযুক্ত এলাকা দ্বারা চিহ্নিত। অ-নির্দিষ্ট প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া ছাড়াও, এলাকায় আকৃষ্ট লিম্ফোসাইট নির্দিষ্ট ধরনের ব্যাকটেরিয়ার জন্য তৈরি অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সংক্রমণ চলতে থাকলে এটি জ্বর সৃষ্টি করে।
*জ্বরের কারণ কী?
সংক্রমণের সময় ম্যাক্রোফেজ ''সাইটোকাইন'' নির্গত করতে পারে। যেমন ইন্টারলিউকিন-১। এটি হাইপোথ্যালামাসে যায়। এটি ''থার্মোস্ট্যাট'' সেটিং পরিবর্তন করে। যখন থার্মোস্ট্যাট নতুন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় উঠে, তখন আগের শরীরের তাপমাত্রা ঠান্ডা মনে হয়। নতুন তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য, শরীর ত্বক থেকে রক্ত সরিয়ে নেয়। এটি ঠান্ডা এবং ক্ল্যামি অনুভূতি দেয়। হৃৎস্পন্দন বাড়ে। আমরা কাঁপি। এটি তাপ উৎপন্ন করে। এটি নতুন সেট পয়েন্টে পৌঁছানো পর্যন্ত চলে। হাইপোথ্যালামাস পরে থার্মোস্ট্যাট কমাতে পারে। তখন আমরা হঠাৎ গরম অনুভব করি। আমরা ঘামতে শুরু করি। শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা করে। সংক্রমণের সময় একজন ব্যক্তি ঠান্ডা এবং ঘামের মধ্যে চক্রাকারে থাকতে পারে। জ্বর যদি খুব বেশি হয় বা রোগী দুর্বল হয় বা হৃদরোগ থাকে, তবে এটি বিপজ্জনক হতে পারে। তবে কিছু প্রমাণ আছে যে জ্বরকে তার পথে চলতে দিলে শরীর দ্রুত সংক্রমণ কাটিয়ে উঠতে পারে।
=== ইন্ট্রাসেলুলার প্রতিরক্ষা ===
ভাইরাস শরীরে আক্রমণ করলে কী হয়?
প্রথমে তারা ব্যাকটেরিয়ার মতো একটি এক্সট্রাসেলুলার পর্যায়ের মুখোমুখি হয়। ভাইরাল সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে, জন্মগত ইমিউন প্রতিক্রিয়া এবং অ্যান্টিবডি ভাইরাসের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ভাইরাস শরীরের হোস্ট কোষে প্রবেশ করলে সাইটোটক্সিক টি-লিম্ফোসাইট ইন্ট্রাসেলুলার ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিরক্ষা। এই কোষগুলো সংক্রমিত হোস্ট কোষ খুঁজে বের করে। তারপর তাদের ধ্বংস করে।
=== অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: অ্যান্টিজেন-নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া ===
অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অ্যান্টিজেন-নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া। শরীর একটি বাইরের পদার্থ শনাক্ত করে। এটি নির্বাচনীভাবে এর প্রতিক্রিয়া করে। এটি প্রধানত লিম্ফোসাইট দ্বারা পরিচালিত হয়। অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মগত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে ওভারল্যাপ করে। অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুই ভাগে বিভক্ত: সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
''' সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা'''
সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখন ঘটে যখন শরীর একটি প্যাথোজেনের মুখোমুখি হয়। এটি নিজের অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় কারণ এটি আপনার ইমিউন সিস্টেমের “সক্রিয়তা”। সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে ঘটতে পারে। এটি তখন হয় যখন একটি প্যাথোজেন শরীরে আক্রমণ করে। এটি কৃত্রিমভাবেও ঘটতে পারে। যেমন যখন আমরা নিষ্ক্রিয় বা মৃত প্যাথোজেন ধারণকারী টিকা নিই। সক্রিয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিকাশের জন্য শরীরের অ্যান্টিজেনের পূর্ব সংস্পর্শ প্রয়োজন। কিছু অভিভাবক তাদের শিশুদের কিছু অ্যান্টিজেনের সংস্পর্শে আনেন। এটি যাতে তারা পরবর্তী জীবনে এই রোগগুলোর প্রতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
''' প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা'''
প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তখন ঘটে যখন আমরা অন্য মানুষ বা প্রাণী দ্বারা তৈরি অ্যান্টিবডি গ্রহণ করি। প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্যাসিভ কারণ এটি ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেম থেকে কোনো প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন হয় না। প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় শরীরের সামনে বাইরের অ্যান্টিজেন উপস্থাপন করা হয় না। তাই ইমিউন সিস্টেমকে বি-সেল ব্যবহার করতে হয় না। আমরা জানি, যদি বি-সেল কখনো পরিচিত না হয়, তবে শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে না। এটি মেমরি বি-সেলও তৈরি করে না। মায়ের থেকে ভ্রূণে প্ল্যাসেন্টার মাধ্যমে অ্যান্টিবডি স্থানান্তর একটি উদাহরণ। অ্যান্টিবডি ধারণকারী ইনজেকশন আরেকটি উদাহরণ। কখনও কখনও বিদেশ ভ্রমণকারীরা গামা গ্লোবুলিন ইনজেকশন নেন। কিন্তু এই প্যাসিভ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মাত্র তিন মাস স্থায়ী হয়। প্যাসিভ টিকা সংক্রমণ বা বিষ, যেমন সাপের বিষ বা টিটেনাস, এর সংস্পর্শে আসা মানুষকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
=== অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া/প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া ===
অ্যালার্জি হলো অ-প্যাথোজেনিক অ্যান্টিজেনের প্রতি প্রদাহজনক ইমিউন প্রতিক্রিয়া। একা থাকলে, অ্যান্টিজেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। কিন্তু কেউ যদি অ্যান্টিজেনের প্রতি সংবেদনশীল হয়, তবে শরীর প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। এটি এটি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়। অ্যালার্জিক প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া হালকা টিস্যু ক্ষতি থেকে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। অ্যালার্জির ইমিউন প্রতিক্রিয়াকে অ্যান্টিজেনের প্রতি '''সংবেদনশীলতা''' বা '''হাইপারসেনসিটিভিটি''' বলা হয়। '''তাৎক্ষণিক হাইপারসেনসিটিভিটি প্রতিক্রিয়া''' অ্যান্টিবডি দ্বারা মধ্যস্থতা করা হয়। এটি অ্যান্টিজেন, যাকে অ্যালার্জেন বলা হয়, এর সংস্পর্শে এলে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটে। '''বিলম্বিত হাইপারসেনসিটিভিটি প্রতিক্রিয়া''' হেল্পার টি-সেল এবং ম্যাক্রোফেজ দ্বারা মধ্যস্থতা করা হয়। এটি বিকাশে কয়েক দিন সময় নিতে পারে। [[চিত্র:Antigens_presentation.svg]]
''' তাৎক্ষণিক হাইপারসেনসিটিভিটি প্রতিক্রিয়ার সময় কী হয়?'''
: ১. বাইরের প্রোটিন বা অ্যান্টিজেন প্রবেশ করে।
: ২. ম্যাক্রোফেজ কোষ এটি গ্রাস করে (ফ্যাগোসাইটোসিস)।
: ৩. Th লিম্ফোসাইট সক্রিয় হয়।
: ৪. Th (হেল্পার) লিম্ফোসাইট।
: ৫. ঝিল্লি অ্যান্টিবডি দ্বারা বাইরের প্রোটিন বাঁধা হয়।
: ৬. বি-লিম্ফোসাইট।
: ৭. অ্যান্টিজেন প্রক্রিয়াকরণ (MHC II টাইপ)।
: ৮. অ্যান্টিজেন-MHC II কমপ্লেক্স (অ্যান্টিজেন উপস্থাপন)।
: ৯. অ্যান্টিজেন-নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি উৎপাদন।
: ১০. সক্রিয় Th সহ বি-লিম্ফোসাইট সক্রিয়তা।
২. পুনরায় সংস্পর্শে এলে শরীর আরও শক্তিশালী এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া করে। অ্যালার্জেন মাস্ট কোষে ইতিমধ্যে উপস্থিত IgE এর সাথে বাঁধে। এটি তাৎক্ষণিকভাবে হিস্টামিন, সাইটোকাইন এবং অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী নির্গত করে। এটি অ্যালার্জির লক্ষণ সৃষ্টি করে। প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা পরিবর্তিত হয়। এটি অ্যালার্জেন প্রবেশের কাছাকাছি স্থানীয় প্রতিক্রিয়া, যেমন ফুসকুড়ি, থেকে শুরু হয়। সবচেয়ে গুরুতর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়াকে ''অ্যানাফিল্যাক্সিস'' বলা হয়। অ্যানাফিল্যাক্টিক প্রতিক্রিয়ায়, হিস্টামিন এবং অন্যান্য সাইটোকাইনের বিপুল নির্গমন ব্যাপক ভাসোডিলেশন, রক্ত সংবহন পতন এবং গুরুতর ব্রঙ্কোকনস্ট্রিকশন সৃষ্টি করে। দ্রুত চিকিৎসা না করলে অ্যানাফিল্যাক্সিস মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
নির্দিষ্ট অ্যালার্জেনের জন্য ত্বক পরীক্ষা করা যায়। অ্যালার্জেন ত্বকে ইনজেকশন করা হয়। এটি কারো অ্যালার্জির কারণ খুঁজে বের করার ভালো উপায়। এটি তাদের আরও সংস্পর্শ এড়াতে সাহায্য করে। তাৎক্ষণিক হাইপারসেনসিটিভিটি সৃষ্টিকারী অ্যালার্জেনের মধ্যে রয়েছে মৌমাছির হুল, পরাগ এবং নির্দিষ্ট খাবার। দীর্ঘস্থায়ী অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এবং অ্যাজমার কারণ প্রায়ই ধুলোর মাইট (ডার্মাটোফ্যাগয়েডস)। এটি তাদের শরীর নয়, বরং তাদের মল যা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অ্যালার্জিক আক্রমণ সাধারণত হিস্টামিন শেষ হলে বন্ধ হয়। এটি অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ বা নাকের স্প্রে দিয়ে দ্রুত বন্ধ করা যায়।
বিলম্বিত হাইপারসেনসিটিভিটিতে কী হয়?
বিলম্বিত হাইপারসেনসিটিভিটিতে লক্ষণ দেখা দিতে ঘণ্টা বা দিন লাগতে পারে। এটি সেল-মিডিয়েটেড। এটি টি-লিম্ফোসাইট প্রতিক্রিয়া দ্বারা হয়। হিস্টামিনের পরিবর্তে লিম্ফোকাইন নিঃসরণ ঘটে। তাই চিকিৎসা হবে কর্টিকোস্টেরয়েড। অ্যান্টিহিস্টামিন নয়। বিলম্বিত হাইপারসেনসিটিভিটির উদাহরণ হলো পয়জন সুমাক, পয়জন ওক এবং পয়জন আইভি। নির্দিষ্ট রোগের জন্য ত্বক পরীক্ষাও এর উদাহরণ। যেমন টিবি পরীক্ষা এবং ম্যানটক্স পরীক্ষা।
== সংক্রামক জীবাণু এবং টিকাদান ==
''' উপকারী জীবাণু অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া'''
*ব্যাকটেরিয়া হল্রোক্যারিওটিক (নিউক্লিয়াসের আগে) কোষ। আমরা এদের সাধারণত ব্যাসিলি (রড) বা কক্সি (গোলাকার) হিসেবে দেখি। এরা অনেক রোগের প্রধান কারণ। এগুলো মারাত্মক বা হালকা হতে পারে। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া আমাদের বন্ধুও। এরা আমাদের জন্য বড় সেবা দিতে পারে। আমাদের শরীরে অনেক ব্যাকটেরিয়া প্যাথোজেনকে প্রতিষ্ঠিত হতে বাধা দেয়। “ভালো ব্যাকটেরিয়া” আমাদের “খারাপ ব্যাকটেরিয়া” থেকে রক্ষা করে। বৃহৎ অন্ত্রে '''স্াভাবিক মাইক্রোফ্লোরা''' থকে। এরা এমন পদার্থ হজম করে যা অন্যথায় হজম হয় না। এই প্রক্রিয়া আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। আরেকটি উদাহরণ হলো যোনিতে মাইক্রোফ্লোরা। এটি অ্যাসিডিক pH বজায় রাখে। এটি সংক্রামক জীবাণুর বৃদ্ধিকে নিরুৎসাহিত করে। এগুলো আমাদের ইমিউন সিস্টেমের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তরের উদাহরণ।
''' ক্ষতিকর জীবাণু'''
''' ভাইরাস'''
* ভাইরাস জীবন্ত কণা নয়। এরা প্রোটিন এবং নিউক্লিক অ্যাসিড দিয়ে গঠিত। এরা জৈব জীবের কোষে সংক্রমণ করে। এরা শুধুমাত্র অন্য কোষে আক্রমণ করে এবং দখল করে পুনরুৎপাদন করতে পারে। এদের নিজস্ব পুনরুৎপাদনের জন্য কোষীয় যন্ত্রপাতি নেই। একটি ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে প্রায় দশ গুণ ছোট। কিছু পরিচিত ভাইরাস হলো: ''ইনফ্লুয়েঞ্জা, হারপিস, হাম এবং সাধারণ সর্দি''। কিছু ভাইরাস বিশেষভাবে বিপজ্জনক। কারণ এরা সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে। এই সময় এরা কোষে লুকিয়ে থাকে এবং পুনরুৎপাদন করে না। ''ইনফ্লুয়েঞ্জা'' এবং ''এইচআইভি'' এমন ভাইরাসের উদাহরণ যা প্রায়ই মিউটেট করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনকে প্রায় অসম্ভব করে।
''' ব্যাকটেরিয়া'''
* ব্যাকটেরিয়া মারাত্মক হতে পারে। এরা প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমণ এবং মৃত্যুর প্রধান কারণ। কিছু পরিচিত রোগ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট: ''স্ট্যাফ সংক্রমণ, স্ট্রেপ সংক্রমণ, যক্ষ্মা, খাদ্যে বিষক্রিয়া, টিটেনাস, কুষ্ঠ এবং নিউমোনিয়া''। ব্যাকটেরিয়া কোষ মানুষের কোষ থেকে ভিন্ন। তাই এমন যৌগ পাওয়া যায় যা নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া লক্ষ্যকে হত্যা করে। এটি মানুষের রোগীকে ক্ষতি না করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ নিশ্চিহ্ন করতে সফল হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিকের সমস্যা হলো অনেক ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন এদের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এছাড়া, আমাদের শরীর নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার প্রতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করার সুযোগ পায় না। অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর এতটা নির্ভর না করে প্রোবায়োটিক ব্যবহার করা ভালো হতে পারে। প্রোবায়োটিক নতুন সম্পূরক যা স্বাস্থ্যকর এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রচার করে।
''' প্রোটোজোয়ান'''
* প্রোটোজোয়ান বেশিরভাগই ইউক্যারিওটিক এককোষী জীব। এদের অর্গানেল এবং নিউক্লিয়াস থাকে।
* ম্যালেরিয়া প্রোটোজোয়ান দ্বারা সৃষ্ট সবচেয়ে বিপজ্জনক রোগ। এটি পৃথিবীর প্রায় ৫০% জনসংখ্যার মধ্যে স্থানীয়। প্রতি বছর দুই থেকে চার মিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ায় মারা যায়। এর মধ্যে এক মিলিয়ন পাঁচ বছরের কম বয়সী। ম্যালেরিয়া “প্লাসমোডিয়াম” জেনাসের একটি প্রোটোজোয়ান দ্বারা সৃষ্ট। এটি মহিলা অ্যানোফেলিস মশার মাধ্যমে বাহিত হয়।
''' ছত্রাক'''
* ছত্রাক মানুষ এবং প্রাণীর চেয়ে ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে বেশি মিল। কারণ এদের ইউক্যারিওটিক কোষ থাকে। যদিও এরা পুরানো রুটিতে বড়, দৃশ্যমান কলোনি তৈরি করে, তবু মোল্ড এবং ইস্ট মাইক্রোস্কোপিক ছত্রাকের বিভাগে পড়ে। ইস্ট এককোষী এবং বাডিং দ্বারা পুনরুৎপাদন করে। মোল্ড কোষের চেইন হিসেবে থাকে। এগুলোকে হাইফি বলা হয়।
* ''মাইকোসিস'' ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট রোগ। মানুষের কোষ এবং ছত্রাক কোষের মিলের কারণে বিজ্ঞানীদের জন্য ছত্রাকের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক ডিজাইন করা কঠিন। এটি মানুষের ক্ষতি না করে। ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট কিছু রোগ হলো: ''টিনিয়াস'', ''যোনি সংক্রমণ'' (ক্যান্ডিডিয়াসিস), এবং ''হিস্টোপ্লাজমোসিস''।
''' রোগ নির্ণয়'''
সংক্রামক রোগ ল্যাবরেটরি কৌশল দ্বারা নির্ণয় করা হয়। যেমন মাইক্রোস্কোপি এবং কালচার। অনেক ব্যাকটেরিয়ার রঙ থাকে না। তাই বিজ্ঞানীরা বিশেষ দাগের পদ্ধতি তৈরি করেছেন। এটি আরও নির্ভুলভাবে নির্ণয়ে সাহায্য করে।
* কালচার
ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাককে প্লেটে জন্মানো যায়। এটি কলোনি দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত চলে। ভাইরাস ডিম বা জীবিত কোষে কালচার করা হয়।
* অ্যান্টিবায়োটিক সংবেদনশীলতা
ব্যাকটেরিয়ার কলোনি প্লেটে জন্মানোর পর, বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ধারণকারী ডিস্ক প্লেটে রাখা হয়। ব্যাকটেরিয়া সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের চারপাশে জন্মায় না।
* ভাইরাসের জন্য পরীক্ষা
ভাইরাস আলোর মাইক্রোস্কোপে দেখা যায় না। তাই ভাইরাল সংক্রমণ পরোক্ষভাবে কোষে তাদের প্রভাব দ্বারা নির্ণয় করা হয়। কিছু ভাইরাস কালচার করা কোষের পৃষ্ঠে পরিবর্তন ঘটায়। এটি তাদের একসাথে আটকে যেতে বাধ্য করে।
* টিকাদান
কিছু সংক্রামক রোগ সাধারণ। এগুলো একই ব্যক্তির মধ্যে অনেকবার ঘটতে পারে। অন্যগুলো জীবনে মাত্র একবার ঘটে। এটি ইমিউন সিস্টেম এবং জীবাণু মনে রাখার ক্ষমতার জন্য। পোলিওর মতো গুরুতর রোগের মহামারী এড়াতে, রোগ অর্জনের আগে, টিকাদান একটি কৃত্রিম “মেমরি” তৈরি করতে পারে।
* সক্রিয় টিকাদান
একজন ব্যক্তি ইনজেকশন (টিকা) নেন। এটি মৃত বা নিরীহ জীবন্ত জীবাণুর ফর্ম ধারণ করে। টিকা ইমিউন সিস্টেমকে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে এবং জীবাণু মনে রাখতে উদ্দীপিত করে। পরে এই জীবাণুর সংস্পর্শ এবং সংক্রমণ হলে, অ্যান্টিবডি সংক্রমণ বন্ধ করে।
* প্যাসিভ টিকাদান
সম্প্রতি সংক্রমণ হওয়া প্রাণী বা মানুষের থেকে অ্যান্টিবডি ধারণকারী রক্ত নেওয়া হয়। রক্তের সিরাম তৈরি করা হয়। এটি অ্যান্টিবডি ধারণ করে। তারপর এটি ব্যক্তির মধ্যে ইনজেকশন করা হয়। অ্যান্টিবডি হয় বর্তমান সংক্রমণ আক্রমণ করে। অথবা স্বল্পমেয়াদী সুরক্ষা প্রদান করে।
* জিনগতভাবে প্রকৌশলী ভাইরাস
জিনগত প্রকৌশল একটি কৌশল। এটি একটি উদ্ভিদ বা প্রাণীর ডিএনএ পরিবর্তন বা পরিবর্তন করে। এটি অন্য জীব থেকে নতুন জিনগত তথ্য ঢোকানোর মাধ্যমে হয়। এই জীবাণু পুনরুৎপাদনের পর, টিকা এবং হরমোন তৈরি হয়। এটি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
* হেপাটাইটিস বি টিকা
হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের পৃষ্ঠ অ্যান্টিজেনের জিন একটি একক ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ-তে প্রতিস্থাপিত হয়। ব্যাকটেরিয়া ভাইরাল অ্যান্টিজেন তৈরি করে। এটি ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করতে প্রতিস্থাপিত হয়।
== ইমিউন সিস্টেমের ব্যাধি ==
ইমিউন সিস্টেম খুব জটিল এবং উচ্চ বিকশিত ব্যবস্থা। তবু এর একটি খুব সহজ মিশন রয়েছে: আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করা এবং ধ্বংস করা। ইমিউন সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীর বিভিন্ন রোগের আক্রমণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। আমরা এগুলোকে তিনটি বিস্তৃত বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করি: অটোইমিউনিটি, ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি এবং হাইপারসেনসিটিভিটি।
ইমিউন প্রতিক্রিয়া ট্রিগার করতে পারে এমন যেকোনো কিছুকে অ্যান্টিজেন বলা হয়। অ্যান্টিজেন একটি অণুজীব, যেমন ভাইরাস, বা এমনকি অণুজীবের একটি অংশ হতে পারে। অন্য ব্যক্তির টিস্যু বা কোষেও ননসেলফ মার্কার থাকে। এটি অ্যান্টিজেন হিসেবে কাজ করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন টিস্যু প্রতিস্থাপন প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, ইমিউন সিস্টেম সেলফকে ননসেলফ ভুল করে। এটি শরীরের নিজের কোষ বা টিস্যুর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। ফলাফলকে অটোইমিউন রোগ বলা হয়। কিছু ধরনের আর্থ্রাইটিস এবং ডায়াবেটিস অটোইমিউন রোগ। অন্য ক্ষেত্রে, ইমিউন সিস্টেম ধুলোর মাইটের মতো নিরীহ বাইরের পদার্থের প্রতি প্রতিক্রিয়া করে। ফলাফল হলো অ্যালার্জি। এই ধরনের অ্যান্টিজেনকে অ্যালার্জেন বলা হয়।
== অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ==
টাইপ ১ হাইপারসেনসিটিভিটি হলো একটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া। এটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের পুনরায় সংস্পর্শে উদ্দীপিত হয়। সংস্পর্শ গ্রাস, শ্বাস নেওয়া, ইনজেকশন বা সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে হতে পারে। প্রতিক্রিয়া IgE অ্যান্টিবডি দ্বারা মধ্যস্থতা করা হয়। এটি বেসোফিল এবং মাস্ট কোষ দ্বারা হিস্টামিন, ট্রিপটেস, অ্যারাকিডোনেট এবং ডেরিভেটিভের তাৎক্ষণিক নির্গমন দ্বারা উৎপন্ন হয়। এটি একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এটি তাৎক্ষণিক (কয়েক সেকেন্ড থেকে মিনিটের মধ্যে) প্রতিক্রিয়ার দিকে নিয়ে যায়।
প্রতিক্রিয়া স্থানীয় বা সিস্টেমিক হতে পারে। লক্ষণ হালকা জ্বালা থেকে অ্যানাফিল্যাক্টিক শক থেকে হঠাৎ মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসায় সাধারণত এপিনেফ্রিন, অ্যান্টিহিস্টামিন এবং কর্টিকোস্টেরয়েড জড়িত।
* হে ফিভার
হে ফিভার পরাগের প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া জড়িত। এটি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস (নাকের মিউকোসার প্রদাহ) সৃষ্টি করে। এটি ফসল কাটার মরসুমে সবচেয়ে সাধারণ। এজন্য এই অসুস্থতার নাম হে ফিভার। ছাঁচ, প্রাণীর খুশকি, ধুলো এবং অনুরূপ শ্বাস নেওয়া অ্যালার্জেনের সাথে প্রায় অভিন্ন প্রতিক্রিয়া ঘটে। দূষিত বাতাসে কণা এবং ক্লোরিন এবং ডিটারজেন্টের মতো রাসায়নিক, যা সাধারণত সহ্য করা যায়, এই অবস্থাকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে। হে ফিভার সৃষ্টিকারী পরাগ ব্যক্তি এবং অঞ্চলভেদে ভিন্ন হয়। সাধারণত, বায়ু-পরাগায়িত উদ্ভিদের ক্ষুদ্র, প্রায় অদৃশ্য পরাগ প্রধান দোষী।
== অটোইমিউন ব্যাধি ==
আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারি না কেন। কিন্তু কখনও কখনও ইমিউন সিস্টেম শরীরকে আক্রমণ করে। এটি সাধারণত জীবাণু বা বাইরের পদার্থের মতো আক্রমণ করে। কিছু মানুষের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জিন অটোইমিউন রোগের প্রতি তাদের সংবেদনশীলতায় অবদান রাখতে পারে। বেশিরভাগ অটোইমিউন রোগ পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি প্রভাবিত করে।
*'''জুভেনাইল-অনসেট ডায়াবেটিস'''-এ ইমিউন সিস্টেম অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোর উপর আক্রমণ চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করতে শুরু করে।
*'''মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস''' হলো কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের একটি দীর্ঘস্থায়ী অবক্ষয়জনিত রোগ। এতে ইমিউন সিস্টেম মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের গুরুত্বপূর্ণ মাইলিনকে আক্রমণ করে ধ্বংস করতে শুরু করে। এর ফলে মাইলিন শিথের উপর অনেকগুলো স্ক্লেরোসিস বা দাগ তৈরি হয়। এতে স্নায়ুর কার্যক্ষমতা হারিয়ে যায়।
*আরেকটি বেশ পরিচিত রোগ হলো '''রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস'''। এই রোগে ইমিউন সিস্টেম শরীরের জয়েন্টের অভ্যন্তরের টিস্যুগুলোর উপর আক্রমণ করে।
*একটি ভিন্নধরনের রোগ আছে, '''অর্গান ও টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট'''। এটি ইমিউনো-ডিফিশিয়েন্সি ক্যাটাগরিতে পড়লেও আসলে এটি ইমিউন সিস্টেমের ব্যর্থতা নয়। ট্রান্সপ্লান্টে শরীরের মধ্যে বাইরের টিস্যু প্রতিস্থাপন করা হয়। এই টিস্যুগুলো শরীরের কোষের সাথে পুরোপুরি মেলে না। শরীর একে একটি অচেনা বস্তু হিসেবে দেখে এবং এটিকে ধ্বংস করার জন্য ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে। এই কারণে ট্রান্সপ্লান্ট অনেক সময় অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলেও, ডোনারের টিস্যু ও গ্রহীতার টিস্যুর মধ্যে যতটা সম্ভব মিল থাকা নিশ্চিত করে এই ঝুঁকি কিছুটা কমানো যায়। এছাড়া, রোগীকে ইমিউনো-সাপ্রেসিং ওষুধ দেওয়া হয় যাতে ইমিউন সিস্টেম নতুন অঙ্গ বা টিস্যুকে আক্রমণ না করে বা প্রত্যাখ্যান না করে।
*'''ভিটিলিগো''' একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে ইমিউন সিস্টেম শরীরের মেলানোসাইট নামক রঙ্গ উৎপাদনকারী কোষগুলিকে ধ্বংস করে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অনিয়মিত আকৃতির দুধে-সাদা দাগ দেখা যায়। মাইকেল জ্যাকসন দাবি করেছিলেন যে, তিনি এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
== ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি রোগ ==
যখন ইমিউন সিস্টেম ডেনড্রাইটিক কোষের সাথে বাইরের অ্যান্টিজেনের সংস্পর্শে আসে, তখন একটি শক্তিশালী ইমিউন প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। (অ্যান্টিজেন হলো আক্রমণকারী কোষের পৃষ্ঠে অণু। এটি তাদের শরীরের কোষ থেকে ভিন্ন হিসেবে ঘোষণা করে।) বিকল্পভাবে, ডেনড্রাইটিক কোষ অনেক ইমিউন-ভিত্তিক রোগের বিকাশের সময় শোষিত হতে পারে।
* '''এইডস এবং এইচআইভি'''
অর্জিত ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি রোগ (এইডস) একটি সুপরিচিত ইমিউন সিস্টেম রোগ। অর্জিত ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম বা এইডস হলো লক্ষণ এবং সংক্রমণের একটি সংগ্রহ। এটি মানব ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) দ্বারা ইমিউন সিস্টেমের নির্দিষ্ট ক্ষতির ফলে হয়। এই অবস্থার শেষ পর্যায়ে ব্যক্তিরা সুবিধাবাদী সংক্রমণ এবং টিউমারের প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এইডস এবং এইচআইভির জন্য চিকিৎসা রয়েছে। এটি ভাইরাসের অগ্রগতি ধীর করে। কিন্তু কোনো পরিচিত নিরাময় নেই। এইচআইভি শ্লেষ্মা ঝিল্লি বা রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে এইচআইভি ধারণকারী শারীরিক তরলের সরাসরি সংস্পর্শে সংক্রমিত হয়। এটি রক্ত, বীর্য, যোনি তরল, প্রিসেমিনাল তরল এবং বুকের দুধ হতে পারে। এই সংক্রমণ পায়ু, যোনি বা মৌখিক যৌনতা, রক্ত সঞ্চালন, দূষিত হাইপোডার্মিক সূঁচ, গর্ভাবস্থা, প্রসব বা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মা এবং শিশুর মধ্যে বিনিময়, বা উপরের শারীরিক তরলের অন্যান্য সংস্পর্শের মাধ্যমে হতে পারে। এইডস হলো এইচআইভি সংক্রমণের সবচেয়ে গুরুতর প্রকাশ। এইচআইভি একটি রেট্রোভাইরাস। এটি মানব ইমিউন সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেমন CD4+ টি-সেল (টি-সেলের একটি উপসেট), ম্যাক্রোফেজ এবং ডেনড্রাইটিক কোষকে প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত করে। এটি সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে CD4+ টি-সেল ধ্বংস করে। CD4+ টি-সেল ইমিউন সিস্টেমের সঠিক কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজন। যখন এইচআইভি CD4+ টি-সেল হত্যা করে, তখন প্রতি মাইক্রোলিটার (µL) রক্তে ২০০টিরও কম CD4+ টি-সেল থাকে। এটি সেলুলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারায়। এটি এইডস নামক অবস্থার দিকে নিয়ে যায়। তীব্র এইচআইভি সংক্রমণ সময়ের সাথে ক্লিনিকাল সুপ্ত এইচআইভি সংক্রমণে অগ্রসর হয়। তারপর প্রাথমিক লক্ষণীয় এইচআইভি সংক্রমণে। পরে এইডসে। এটি রক্তে CD4+ টি-সেলের পরিমাণ এবং নির্দিষ্ট সংক্রমণের উপস্থিতির ভিত্তিতে শনাক্ত করা হয়।
অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপির অনুপস্থিতিতে, এইচআইভি সংক্রমণ থেকে এইডসে অগ্রগতির গড় সময় নয় থেকে দশ বছর। এইডস হওয়ার পর গড় বেঁচে থাকার সময় মাত্র ৯.২ মাস। তবে, ক্লিনিকাল রোগের অগ্রগতির হার ব্যক্তিভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এটি দুই সপ্তাহ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। অনেক কারণ অগ্রগতির হারকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে এইচআইভির বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এমন কারণ রয়েছে। যেমন সংক্রমিত ব্যক্তির সাধারণ ইমিউন ফাংশন। বয়স্ক মানুষের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল। তাই তাদের তরুণদের তুলনায় দ্রুত রোগের অগ্রগতির ঝুঁকি বেশি। স্বাস্থ্যসেবায় দুর্বল প্রবেশাধিকার এবং যক্ষ্মার মতো সহাবস্থানকারী সংক্রমণও মানুষকে দ্রুত রোগের অগ্রগতির জন্য প্রবণ করে। সংক্রমিত ব্যক্তির জিনগত উত্তরাধিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু মানুষ এইচআইভির নির্দিষ্ট স্ট্রেনের প্রতি প্রতিরোধী।
== টি-লিম্ফোসাইট কোষের বিভিন্ন প্রকার ==
টি-সেলের বেশ কয়েকটি ভিন্ন উপসেট বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিটির স্বতন্ত্র কার্য রয়েছে।
''' ''সাইটোটক্সিক টি-সেল'' ''' (Tc কোষ)
এরা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কোষ এবং টিউমার কোষ ধ্বংস করে। এরা প্রতিস্থাপন প্রত্যাখ্যানেও জড়িত। এদের CD8+ টি-সেল বলা হয়। কারণ এরা তাদের পৃষ্ঠে CD8 গ্লাইকোপ্রোটিন প্রকাশ করে।
''' ''হেল্পার টি-সেল'' ''' (Th কোষ)
এরা অভিযোজিত ইমিউন সিস্টেমের “মধ্যস্থতাকারী”। সক্রিয় হলে, এরা দ্রুত বিভক্ত হয়। এরা সাইটোকাইন নামক ছোট প্রোটিন নিঃসরণ করে। এটি ইমিউন প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে বা “সাহায্য” করে। এই কোষগুলোকে CD4+ টি-সেল বলা হয়। এরা এইচআইভি সংক্রমণের লক্ষ্য। ভাইরাস CD4 প্রোটিন ব্যবহার করে কোষে প্রবেশ করে। এইচআইভি সংক্রমণের ফলে Th কোষের ক্ষতি এইডসের লক্ষণ সৃষ্টি করে।
''' '' মেমরি টি-সেল '' '''
এরা অ্যান্টিজেন-নির্দিষ্ট টি-সেলের একটি উপসেট। সংক্রমণ সমাধানের পর এরা দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকে। পুনরায় তাদের সম্পর্কিত অ্যান্টিজেনের সংস্পর্শে এলে এরা দ্রুত প্রভাবক টি-সেলের বড় সংখ্যায় প্রসারিত হয়। এটি ইমিউন সিস্টেমকে অতীতের সংক্রমণের বিরুদ্ধে “মেমরি” প্রদান করে। মেমরি কোষ CD4+ বা CD8+ হতে পারে।
''' ''রেগুলেটরি টি-সেল'' ''' (Treg কোষ)
এদের পূর্বে সাপ্রেসর টি-সেল বলা হতো। এরা ইমিউনোলজিকাল টলারেন্স বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রধান ভূমিকা হলো ইমিউন প্রতিক্রিয়া শেষে টি-সেল মধ্যস্থতা ইমিউনিটি বন্ধ করা। এরা থাইমাসে বিকশিত হয়। এছাড়াও, পেরিফেরাল টিস্যুতে বিভিন্ন পরিবেশগত উদ্দীপনার প্রভাবে তৈরি হতে পারে। Treg কোষ অটোইমিউন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। এরা ইমিউন সিস্টেমকে শরীরের নিজস্ব কোষের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা থেকে বিরত রাখে। এরা সাইটোকাইন নিঃসরণ করে এবং অন্যান্য ইমিউন কোষের সাথে সরাসরি মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ইমিউন প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
''' ''ন্যাচারাল কিলার টি-সেল '' ''' (NKT কোষ)
এরা টি-সেল এবং ন্যাচারাল কিলার (NK) কোষের বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ। এরা ইন্ট্রাসেলুলার প্যাথোজেন এবং টিউমার কোষের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। NKT কোষ সাইটোকাইন নিঃসরণ করে এবং সাইটোটক্সিক কার্যকলাপের মাধ্যমে ইমিউন প্রতিক্রিয়ায় অবদান রাখে। এদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো লিপিড এবং গ্লাইকোলিপিড অ্যান্টিজেন শনাক্ত করার ক্ষমতা। এটি তাদের অন্যান্য টি-সেল থেকে আলাদা করে।
''' টি লিম্ফোসাইটের কার্যাবলী '''
টি লিম্ফোসাইট কোষগুলো ইমিউন সিস্টেমের সব উপাদানে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে কিলার টি কোষ দ্বারা কোষ নির্মূল করা এবং হেল্পার ও সাপ্রেসর টি কোষ দ্বারা ভূমিকা পালন করা। বিভিন্ন ধরনের টি কোষের সক্রিয়করণ প্রক্রিয়া সামান্য ভিন্ন হলেও, CD4+ টি কোষের "দুই-সংকেত মডেল" বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সত্য।
==ইমিউন সিস্টেমের পথপ্রদর্শকরা==
'''ইলিয়া মেচনিকভ এবং ফ্যাগোসাইট কোষ
১৮৮২ সালে রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইলিয়া মেচনিকভ স্টারফিশের লার্ভা নিয়ে পরীক্ষা করছিলেন। তিনি লার্ভার মধ্যে একটি কাঁটা প্রবেশ করান। এরপর তিনি লক্ষ্য করেন, কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। অদ্ভুত কোষগুলো কাঁটার প্রবেশস্থানের কাছে জড়ো হতে শুরু করে। এই কোষগুলো ফাটা চামড়া দিয়ে প্রবেশ করা যেকোনো বাইরের পদার্থ খেয়ে ফেলছিল। মেচনিকভ এই নতুন কোষগুলোর নাম দেন "ফ্যাগোসাইট", যার গ্রিক অর্থ "গ্রাসকারী কোষ"।
এই আবিষ্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি বিজ্ঞানীদের বুঝতে সাহায্য করেছিল যে শরীর কীভাবে রোগের বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করে। ফ্যাগোসাইট যদি কোনো বাইরের পদার্থের মুখোমুখি হয়, তবে তারা এটিকে আক্রমণ করে, আটকায় বা ধ্বংস করে। এটি বাইরের পদার্থের ধরনের উপর নির্ভর করে। ফ্যাগোসাইট শরীরের বাকি অংশে ইমিউন প্রতিক্রিয়া সক্রিয় করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
'''পল এরলিখ এবং সাইড-চেইন তত্ত্ব
এরলিখ ধারণা করেছিলেন যে জীবন্ত কোষের সাইড-চেইন থাকে। এই সাইড-চেইনগুলো নির্দিষ্ট টক্সিনের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। এটি এমিল ফিশারের মতোই, যিনি বলেছিলেন যে এনজাইমগুলো তাদের রিসেপ্টরের সাথে "তালা-চাবির মতো" বাঁধে।
তিনি তত্ত্ব দিয়েছিলেন যে হুমকির মুখে থাকা কোষ অতিরিক্ত সাইড-চেইন তৈরি করে টক্সিন বাঁধতে। এই অতিরিক্ত সাইড-চেইনগুলো ভেঙে গিয়ে অ্যান্টিবডি হয়ে শরীরে সঞ্চালিত হয়। এরলিখ প্রথম এই অ্যান্টিবডিগুলোকে "ম্যাজিক বুলেট" হিসেবে বর্ণনা করেন, যারা টক্সিনের খোঁজে থাকে।
এরলিখ মনে করতেন, যদি এমন একটি যৌগ তৈরি করা যায় যা নির্বাচিতভাবে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে লক্ষ্য করে, তবে সেই জীবাণুর জন্য টক্সিন নির্বাচক এজেন্টের সাথে পৌঁছে দেওয়া যায়। এভাবে একটি "ম্যাজিক বুলেট" তৈরি হবে, যা শুধুমাত্র লক্ষ্যবস্তু জীবাণুকে হত্যা করবে।
এরলিখ অটোইমিউনিটির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তিনি এটিকে "হরর অটোটক্সিকাস" নাম দিয়েছিলেন।
১৯০৮ সালে এরলিখ এবং মেচনিকভ নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
==পর্যালোচনা প্রশ্ন==
;এই প্রশ্নের উত্তরগুলো [http://en.wikibooks.org/wiki/Human_Physiology/Appendix_1:_answers_to_review_questions#The_Immune_System এখানে] পাওয়া যাবে
১- যখন নিউট্রোফিল এবং ম্যাক্রোফেজ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কৈশিক থেকে বেরিয়ে আসে, তখন তাকে বলা হয়:
:A) ফ্যাগোসাইটোসিস
:B) হিমোলাইসিস
:C) ইন্টারলিউকিন
:D) ডায়াপেডেসিস
:E) ফলিকুলাইটিস
২- আপনার শ্বেত রক্তকণিকা এবং একটি আক্রমণাত্মক জীবাণুর মধ্যে তুমুল যুদ্ধের সময় একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। লালভাব এবং ফোলাভাব শুরু হয়। শরীর নিজেকে রক্ষা করতে আর কী করে?
:A) হিস্টামিন ভাসোডিলেশন ঘটায়
:B) হাইপোথ্যালামাস তাপমাত্রা বাড়ায়
:C) নিউট্রোফিল জীবাণু গ্রাস করে এবং ধ্বংস করে
:D) জীবিত এবং মৃত শ্বেত রক্তকণিকা এবং ব্যাকটেরিয়া জমা হয়
:E) উপরের সবগুলো
৩- নির্দিষ্টতা এবং মেমরি কোন শরীরের প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত?
:A) প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া
:B) ম্যাক্রোফেজ এবং নিউট্রোফিল দ্বারা ফ্যাগোসাইটোসিস
:C) ইন্টারফেরন
:D) টি কোষ এবং বি কোষ প্রতিক্রিয়া
:E) শরীরের শারীরবৃত্তীয় বাধা
৪- চোখের জল এবং লালায় পাওয়া অতিরিক্ত রাসায়নিক প্রতিরক্ষা কী?
:A) টি লিম্ফোসাইট
:B) স্যালাইন
:C) লাইসোজাইম
:D) EFC
৫- কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন নিচের কোনটি সম্পাদন করে?
:A) তারা অ্যান্টিবডি নিঃসরণ ঘটায়
:B) টি কোষের বিকাশ
:C) হিস্টামিন নিঃসরণ
:D) টিস্যু মেরামত প্রচার করে
:E) মাস্ট কোষ ডিগ্রানুলেশন
৬- কোন পদার্থ জ্বর সৃষ্টি করে?
:A) পাইরোজেন
:B) পুঁজ
:C) মনোসাইট
:D) এডিমা
:E) ইন্টারফেরন
৭- লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমের প্রধান কাজ কী?
:A) বহির্কোষীয় তরল ফেরতের পথ প্রদান করে
:B) প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়ার জন্য নিষ্কাশন হিসেবে কাজ করে
:C) লিম্ফোসাইট, ফ্যাগোসাইট এবং অ্যান্টিবডির মাধ্যমে বাইরের পদার্থের বিরুদ্ধে নজরদারি, শনাক্তকরণ এবং সুরক্ষা প্রদান করে
:D) a এবং c
:E) উপরের সবগুলো
৮- অ্যান্টিজেন হলো:
:A) ভাইরাস-সংক্রমিত কোষ দ্বারা নিঃসৃত একটি রাসায়নিক বার্তাবাহক
:B) কোষ-মধ্যস্থ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী একটি লিম্ফোসাইট
:C) ফুসফুসের ভিতরে আবরণ তৈরি করে সংক্রমণ ঘটায়
:D) নিজের নয় এমন একটি প্রোটিন বা অন্য অণু যা শরীর শনাক্ত করে
:E) একটি ঘন হলুদ-সাদা তরল
৯- একটি বাইরের পদার্থ, সাধারণত একটি প্রোটিন, যা ইমিউন সিস্টেমকে অ্যান্টিবডি উৎপাদনের মতো প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্দীপ্ত করে, তাকে বলা হয় ______________।
:A) অ্যালার্জেন
:B) অ্যান্টিজেন
:C) হিস্টামিন
:D) মাস্ট কোষ
:E) ইন্টারফেরন
১০- যখন একটি ম্যাক্রোফেজ আক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়া গ্রাস করে এবং অ্যান্টিজেনটি লিম্ফ নোডে নিয়ে যায়, তখন কী হয়?
:A) ম্যাক্রোফেজ এটিকে প্রথম যে বি-কোষের সাথে মিলবে তাকে উপস্থাপন করবে, এবং বি-কোষ তার পৃষ্ঠের রিসেপ্টর পরিবর্তন করে অ্যান্টিজেনের সাথে মিলিয়ে নেবে
:B) একটি বি-কোষ শুধুমাত্র তখনই সক্রিয় হবে যদি এটির ইতিমধ্যে অ্যান্টিজেনের সাথে মিল থাকে
:C) মিলে যাওয়া একটি বি-কোষ সক্রিয় হয়ে সাইটোটক্সিক টি-কোষে পরিণত হবে
:D) লিম্ফ নোডের কোষগুলো হিস্টামিন নিঃসরণ করবে
:E) লিম্ফ নোড নিউট্রোফিল উৎপাদন বাড়াবে
১১- রোগের জন্য শরীরে প্রবেশের সবচেয়ে সাধারণ পথ কোনটি?
:A) শ্বাসতন্ত্র
:B) এন্ডোক্রাইন সিস্টেম
:C) হেমাটাক্রিট সিস্টেম
:D) শরীরের যেকোনো খোলা অংশ
১২- এই গ্রন্থি প্রাপ্তবয়সে আকারে ছোট হয়ে যায় এবং টি-লিম্ফোসাইটের পরিপক্কতায় কাজ করে এমন হরমোন রয়েছে:
:A) লিম্ফ নোড
:B) থাইমাস
:C) প্লীহা
:D) GALT
:E) টনসিল
১৩- নিচের কোনটি ত্বক এবং শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার যান্ত্রিক উপায় নয়?
:A) কোষের স্তর
:B) চোখের জল
:C) লালা
:D) লাইসোজাইম
:E) উপরের কোনোটিই নয়
১৪- বি কোষের পরিপক্কতার স্থান কোথায়?
:A) থাইমাস
:B) অস্থি মজ্জা
:C) প্যানক্রিয়াস
:D) কর্টেক্স
১৫- অ-নির্দিষ্ট প্রতিরোধ কী?
:A) শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা
:B) যেকোনো ধরনের প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা
:C) নির্দিষ্ট প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা
:D) প্রতিরোধের অভাব
:E) উপরের কোনোটিই নয়
১৬. অ্যান্টিবডি কী?
:A) সংক্রমণ প্রতিরোধে জীবন্ত টিস্যুতে প্রয়োগ করা একটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পদার্থ
:B) প্রোগ্রামড কোষ মৃত্যু
:C) বাইরের পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় ইমিউন সিস্টেম দ্বারা উৎপন্ন একটি প্রোটিন
:D) প্রদাহের সাথে জড়িত একটি রাসায়নিক
=শব্দকোষ=
'''অ্যান্টিবডি''': অ্যান্টিবডি বা ইমিউনোগ্লোবুলিন হলো একটি প্রোটিন। এটি ইমিউন সিস্টেম (বি কোষ) দ্বারা বাইরের পদার্থ (অ্যান্টিজেন) এর প্রতিক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।
'''অ্যান্টিবডি টাইটার''': টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য একটি পরীক্ষা। যদি টিকার প্রতি কম প্রতিরোধ ক্ষমতা শনাক্ত হয়, তবে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বুস্টার শট দেওয়া যায়।
'''অ্যান্টিজেন''': প্রোটিন (বা পলিস্যাকারাইড) অণু যা শরীর নিজের নয় বলে শনাক্ত করে। শরীর এটিকে বাইরের পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত করে। যেমন, ছত্রাক, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া, পরজীবী কৃমি, পরাগ, পয়জন আইভি গাছের রজন, পোকার বিষ, এবং প্রতিস্থাপিত অঙ্গ।
'''অ্যান্টিসেপটিক''': অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পদার্থ। এটি জীবন্ত টিস্যু বা ত্বকে সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োগ করা হয়।
'''অ্যাপোপটোসিস''': প্রোগ্রামড কোষ মৃত্যু।
'''বি কোষ''': লিম্ফোসাইট যারা অ্যান্টিবডি-মধ্যস্থ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী।
'''বেসোফিল''': শ্বেত রক্তকণিকা যারা হিস্টামিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক নিঃসরণ করে।
'''কেমোট্যাক্সিস''': কোষের চলাচল, বিশেষ করে ফ্যাগোসাইট। এরা একটি নির্দিষ্ট দিকে ঘূর্ণায়মানভাবে চলে। এটি একটি রাসায়নিক উদ্দীপনার কারণে ঘটে।
'''কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম''': ইমিউন সিস্টেমের একটি জৈব রাসায়নিক ক্যাসকেড। এটি জীব থেকে প্যাথোজেন দূর করতে সাহায্য করে এবং নিরাময় প্রচার করে।
'''সাইটোকাইন''': নিয়ন্ত্রক পেপটাইড। এটি কোষের বিকাশ, পার্থক্য এবং ইমিউন প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
'''ডেনড্রাইটিক''': কোষ যারা লিম্ফোসাইট সক্রিয় করে।
'''ডায়াপেডেসিস''': শ্বেত রক্তকণিকার রক্ত থেকে আশেপাশের টিস্যুতে চলাচল। এটি ফ্যাগোসাইটের একটি প্রক্রিয়া। তারা রক্তপ্রবাহ থেকে সংক্রমণের স্থানে হেঁটে বা হামাগুড়ি দিয়ে যায়।
'''এডিমা''': ফোলাভাব। এটি তৈরি হয় যখন খুব বেশি টিস্যু তরল জমা হয় বা পর্যাপ্ত তরল দূর হয় না।
'''ইওসিনোফিল''': শ্বেত রক্তকণিকা। এরা পরজীবীর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ায় অবদান রাখে।
'''হিস্টামিন''': প্রদাহের সাথে জড়িত একটি রাসায়নিক। এটি কৈশিকগুলোকে ফুটো করে। এতে আরও তরল টিস্যু স্পেসে চলে যায়।
'''IgA''': এটি বুকের দুধ, শ্লেষ্মা, লালা এবং চোখের জলে পাওয়া যায়। এই ইমিউনোগ্লোবুলিন প্যাথোজেনকে অভ্যন্তরীণ পরিবেশে প্রবেশের আগে থামায়।
'''IgD''': এই ইমিউনোগ্লোবুলিন বি-কোষে পাওয়া যায়। এর কার্যকারিতা জানা নেই।
'''IgE''': এই ইমিউনোগ্লোবুলিন মাস্ট কোষের সাথে মিলিত হয়। এটি হিস্টামিন নিঃসরণ করে। এটি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া বা পরজীবী সংক্রমণের উপস্থিতিতে নিঃসৃত হয়।
'''IgG''': এই ইমিউনোগ্লোবুলিন বহির্কোষীয় তরলে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকাংশের জন্য দায়ী।
'''IgM''': এই ইমিউনোগ্লোবুলিন ABO এবং Rh ফ্যাক্টর গ্রুপিংয়ের অসঙ্গতির সাথে প্রতিক্রিয়া জানায়।
'''ইমিউনোগ্লোবুলিন''': প্রোটিন যা বি-কোষের পৃষ্ঠে অ্যান্টিবডি রিসেপ্টর হিসেবে কাজ করে। এর পাঁচটি শ্রেণী রয়েছে।
'''কাইনিন''': প্রদাহের সাথে জড়িত একটি রাসায়নিক। এটি রক্তের প্লাজমায় নিষ্ক্রিয় থাকে। কিন্তু টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হলে সক্রিয় হয় এবং ত্বকে ব্যথা রিসেপ্টরকে উদ্দীপ্ত করে।
'''লিউকোসাইট''': ইমিউন সিস্টেমের প্রাথমিক কোষ। এদের শ্বেত রক্তকণিকাও বলা হয়।
'''লিম্ফ''': লিম্ফ সিস্টেমের তরল। এটি রক্তের প্লাজমা হিসেবে শুরু হয়। এটি সংবহন সিস্টেমের কৈশিক থেকে ফুটো হয়ে ইন্টারস্টিশিয়াল তরল হয়। এটি টিস্যুর পৃথক কোষের মাঝের স্থান পূর্ণ করে।
'''লিম্ফোসাইট''': শরীরের অর্জিত ইমিউন প্রতিক্রিয়া পরিচালনাকারী মূল কোষ।
'''লিম্ফ নোড''': লিম্ফ্যাটিক শিরার পাশে অবস্থিত ছোট ডিম্বাকৃতির গঠন।
'''লাইসোজাইম''': এনজাইম যা ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর আক্রমণ করে এবং ভেঙে দেয়। এটি শরীরের প্রথম প্রতিরক্ষা স্তরে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় (যেমন, লালা, চোখের জল, ঘাম ইত্যাদি)।
'''ম্যাক্রোফেজ''': শ্বেত রক্তকণিকা। এরা টিস্যুর মধ্যে প্রাথমিক স্ক্যাভেঞ্জার হিসেবে কাজ করে।
'''মেমব্রেন অ্যাটাক কমপ্লেক্স (MAC)''': এটি এনকে কোষের পারফোরিনের মতো কাজ করে। এটি ঝিল্লিতে ছিদ্র সৃষ্টি করে যা লাইসিস ঘটায়।
'''নিউট্রোফিল''': শ্বেত রক্তকণিকা। এরা ব্যাকটেরিয়া "খায়" এবং সাইটোকাইন নিঃসরণ করে।
'''অপসোনিন''': যেকোনো পদার্থ যা জীবাণুকে ফ্যাগোসাইটের সাথে বাঁধার মাধ্যমে ফ্যাগোসাইটোসিস প্রচার করে।
'''পারফোরিন''': সাইটোটক্সিক টি কোষ দ্বারা নিঃসৃত প্রোটিন। এটি লক্ষ্য কোষের প্লাজমা ঝিল্লিতে ছিদ্র সৃষ্টি করে, যা লাইসিস ঘটায়।
'''পেয়ার্স প্যাচেস''': অন্ত্রের দেয়ালে এবং অ্যাপেন্ডিক্সে অবস্থিত। এটি বৃহৎ অন্ত্রের সিকামের সাথে সংযুক্ত। এটি অন্ত্রের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করা প্যাথোজেনকে আটকায়।
'''ফ্যাগোসাইট''': শ্বেত রক্তকণিকা। এরা ফ্যাগোসাইটোসিসের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য গ্রাস করে এবং হজম করে।
'''পাইরোজেন''': বাইরের পদার্থ বা জীবাণু। এটি হাইপোথ্যালামিক থার্মোরেগুলেটরি সেন্টারকে বাড়ায় এবং জ্বর (পাইরেক্সিয়া) সৃষ্টি করে।
'''ডান লিম্ফ্যাটিক নালী''': লিম্ফ্যাটিক নালী। এটি শরীরের ডান দিকের উপরের অংশ এবং বক্ষদেশ (মাথা, ঘাড়) পরিবেশন করে।
'''প্লীহা''': নালীবিহীন মেরুদণ্ডী গ্রন্থি। এটি সংবহন সিস্টেমের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এটি পুরানো লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস করে এবং রক্তের সংরক্ষণাগার ধরে রাখে।
'''টি কোষ''': কোষ যারা কোষ-মধ্যস্থ প্রতিরোধ ক্ষমতা পরিচালনা করে।
'''থোরাসিক নালী''': লিম্ফ্যাটিক নালী। এটি পেট, নিম্ন অঙ্গ এবং শরীরের বাম দিকের উপরের অংশ (মাথা, ঘাড়, এবং বাহু) পরিবেশন করে।
'''থাইমাস গ্রন্থি''': গ্রন্থি যাতে লিম্ফোসাইট থাকে। এটি থাইমোসিন উৎপন্ন করে। এটি টি লিম্ফোসাইটের পরিপক্কতায় সাহায্য করে বলে মনে করা হয়।''' গামা ডেল্টা টি-সেল''' (γδ T কোষ)
7gzjpe7iltro6iezf0o81yl2oeikntd
সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/রাজনীতি
0
23113
85592
73199
2025-07-03T14:26:21Z
NusJaS
8394
/* অতিরিক্ত পাঠ */
85592
wikitext
text/x-wiki
{| style="width:80%; text-align:left; background-color:#F2F5A9;" align="center"
|আমি যখন করিডোর দিয়ে হাঁটছিলাম, তখন আমার মাথা ঘুরছিল। এই করিডোরে ফেডারেল সরকারের পূর্ণ ক্ষমতা নিয়মিত প্রয়োগ হয়। আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, একটি দেশের ফেডারেল সরকারের চেয়ে বড় কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমি টানির প্যাসচার ভ্রমণ করছিলাম। এটি কানাডিয়ান পাবলিক পলিসি বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট স্কুলের একটি সপ্তাহব্যাপী ফিল্ড ট্রিপের অংশ ছিল। টানির প্যাসচার হলো কানাডার অটোয়ার একটি এলাকা। এখানে কানাডার ফেডারেল সরকারের অনেক ভবন রয়েছে। পশ্চিম কানাডার প্রেইরিতে হাজার হাজার মাইল দূরে বেড়ে ওঠা এক তরুণের জন্য, মনে হচ্ছিল আমি অবশেষে সফল হয়েছি।
আমার হাতের তালু ঘামছিল। আমি দেয়ালে হাত ঠেকিয়ে একটি ছোট বার্তা পড়ার চেষ্টা করছিলাম। বার্তাটি সম্ভবত একজন ফেডারেল কর্মচারী দেয়ালে পোস্ট করেছিলেন। বার্তায় লেখা ছিল, “মনে করছেন আপনি অপরিবর্তনীয়? এই পরীক্ষাটি করে দেখুন: একটি পানির বাটিতে আপনার আঙুল ডুবান। আঙুল বের করার পর যে চিহ্ন থাকে, তা হলো আপনি এই জায়গা ছেড়ে গেলে আপনাকে কতটা মিস করা হবে।” আমি বিস্ময়ে মাথা নাড়লাম। আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রে ক্ষমতা এবং দায়িত্ব কতটা বিক্ষিপ্ত তা বুঝতে আমার কয়েক সপ্তাহ লেগেছিল। এমনকি রাজনৈতিক কেন্দ্রেও কেউ কতটা তুচ্ছ বোধ করতে পারে, তা আমি বুঝেছিলাম।
|}
== রাজনীতি কী? ==
রাজনীতি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষের দলগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়। এই শব্দটি সাধারণত [[w:civil governments|নাগরিক সরকার]]-এর মধ্যে আচরণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়। তবে, রাজনীতি মানুষের সব দলীয় মিথস্ক্রিয়ায় দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে কর্পোরেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় সংগঠন। রাজনীতি হলো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব জড়িত সামাজিক সম্পর্ক। এটি রাজনৈতিক ইউনিট নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া, সামাজিক নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগের জন্য পদ্ধতি এবং কৌশল ব্যবহার করে।
== ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং সহিংসতা ==
[[চিত্র:Official_portrait_of_Barack_Obama.jpg|ডান|থাম্ব|204x204পিক্সেল|বারাক ওবামা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তিনি তার কর্তৃত্ব পান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান নামে একটি আনুষ্ঠানিক দলিলে বর্ণিত যুক্তিবাদী-আইনি ব্যবস্থা থেকে।]]
=== ক্ষমতা ===
রাজনৈতিক ক্ষমতা হলো একটি সমাজে কোনো দলের হাতে থাকা ক্ষমতা। এই ক্ষমতা তাদের জনসাধারণের সম্পদ বিতরণ পরিচালনা করতে দেয়। এর মধ্যে রয়েছে শ্রম এবং সম্পদ। রাজনৈতিক ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তবে, কোনো ব্যক্তি বা দল, যেমন বিদ্রোহী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, বা বহুজাতিক কর্পোরেশনের এই ক্ষমতা কতটা আছে, তা নির্ভর করে তারা সমাজে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে। ক্ষমতাকে প্রায়ই অন্যদের আচরণকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, প্রতিরোধের সাথে বা ছাড়াই।
[[চিত্র:King_Abdullah_bin_Abdul_al-Saud_Jan2007.jpg|ডান|থাম্ব|151x151পিক্সেল|রাজা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আল-সৌদ, সৌদি আরবের রাজা। তিনি তার কর্তৃত্ব পান ঐতিহ্য থেকে।]]
=== কর্তৃত্ব ===
সরকারে, কর্তৃত্ব প্রায়ই “ক্ষমতা” শব্দের সাথে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তাদের অর্থ ভিন্ন। কর্তৃত্ব বলতে বৈধতার দাবি বোঝায়। এটি ক্ষমতা প্রয়োগের ন্যায্যতা এবং অধিকার। উদাহরণস্বরূপ, একটি জনতার ক্ষমতা আছে একজন অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার, যেমন লিঞ্চিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু যারা আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাসী, তারা মনে করেন শুধুমাত্র আদালতেরই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ার কর্তৃত্ব আছে।
[[চিত্র:Joseph_Smith,_Jr._portrait_owned_by_Joseph_Smith_III.jpg|ডান|থাম্ব|201x201পিক্সেল|জোসেফ স্মিথ জুনিয়র, মরমনবাদের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তার কর্তৃত্ব পান তার ক্যারিশমা থেকে।]]
ম্যাক্স ওয়েবার তিন ধরনের বৈধ কর্তৃত্ব চিহ্নিত করেছেন।
* প্রথম প্রকারটি হলো '''যুক্তিবাদী-আইনি''' কর্তৃত্ব। এই কর্তৃত্ব তার বৈধতার জন্য রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠিত আইনের উপর নির্ভর করে। এগুলো সাধারণত লিখিত হয় এবং প্রায়ই খুব জটিল। যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের ক্ষমতা একটি দলিলে উল্লেখ থাকে, যেমন সংবিধান বা সংঘের নিবন্ধ। আধুনিক সমাজ যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের উপর নির্ভর করে। সরকারি কর্মকর্তারা, যেমন [[w:President of the United States|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট]], এই ধরনের কর্তৃত্বের ভালো উদাহরণ।
* দ্বিতীয় প্রকারটি হলো '''ঐতিহ্যবাহী''' কর্তৃত্ব। এটি দীর্ঘ-প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি, অভ্যাস এবং সামাজিক কাঠামো থেকে আসে। যখন ক্ষমতা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয়, তখন তাকে ঐতিহ্যবাহী কর্তৃত্ব বলা হয়। বংশগত [[w:monarchy|রাজাদের]] শাসনের অধিকার, যেমন [[w:King_of_Saudi_Arabia|সৌদি আরবের রাজা]], এর উদাহরণ।
* তৃতীয় প্রকারটি হলো '''ক্যারিশমাটিক''' কর্তৃত্ব। এখানে ব্যক্তি বা নেতার [[w:charisma|ক্যারিশমা]] গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যারিশমাটিক কর্তৃত্ব একটি অনুগ্রহের দান, ব্যক্তিত্বের ক্ষমতা, বা নেতার দাবি থেকে আসে যে তার কর্তৃত্ব একটি “উচ্চতর শক্তি” (যেমন, ঈশ্বর) থেকে এসেছে। এটি ঐতিহ্যবাহী এবং যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের বৈধতার চেয়ে উচ্চতর। অনুসারীরা এটি গ্রহণ করে এবং এই উচ্চতর বা অনুপ্রাণিত কর্তৃত্বের পক্ষে পূর্বের কর্তৃত্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে। ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ক্যারিশমাটিক নেতাদের স্পষ্ট উদাহরণ দেখা যায়। [[w:Joseph Smith, Jr.|জোসেফ স্মিথ জুনিয়র]], [[w:The Church of Jesus Christ of Latter-day Saints|দ্য চার্চ অফ জিসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেইন্টস (এলডিএস বা মরমন)]]-এর প্রতিষ্ঠাতা, ক্যারিশমাটিক হিসেবে বিবেচিত হন। আরেকজন ব্যক্তি যিনি তার ক্যারিশমা ব্যবহার করে অনুসারী সংগ্রহ করেছিলেন, যদিও অশুভ উদ্দেশ্যে, তিনি হলেন [[w:Jeffrey Lundgren|জেফ্রি লান্ডগ্রেন]]।
=== সহিংসতা ===
বেশিরভাগ আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রে, সরকারের কর্তৃত্ব থাকে। এটি রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যবহারের মাধ্যমে বজায় রাখা হয়। এটি সরকারকে ক্ষমতা দেয়। আশ্চর্যজনকভাবে, সরকারের কর্তৃত্ব থাকার কারণে এটি নাগরিকদের বাধ্য করতে ক্ষমতা ব্যবহার করার অধিকার পায়। অর্থাৎ, সরকারের কর্তৃত্বের ভিত্তিতে মানুষকে নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে বাধ্য করার অধিকার রয়েছে। সরকারের নির্দেশ অমান্য করলে সরকার সহিংসতা ব্যবহার করে ব্যক্তিদের সম্মতি প্রদানে বাধ্য করতে পারে।
একই সময়ে, একটি দেশের সরকারের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার থাকার ফলে, যা তাত্ত্বিকভাবে প্রায় একচেটিয়া অধিকার, সরকারের কর্তৃত্বের দাবি আরও শক্তিশালী হয়। অন্যরা শুধুমাত্র সরকারি অনুমোদন পেলে সহিংসতা ব্যবহার করতে পারে। যেমন, শিকারের লাইসেন্স কেনা বা সরকার অনুমোদিত ফাইটিং লীগে অংশগ্রহণ, যেমন [[w:Ultimate Fighting Championship|UFC]]। তাই, একটি প্যারাডক্স তৈরি হয়: সরকারের কি কর্তৃত্ব থাকবে যদি তাদের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার না থাকে? এবং, সরকার কি তাদের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার থেকে কর্তৃত্ব পায়? এই রাজনৈতিক বিষয়টি ভিন্নভাবে ভাবতে পারেন: আপনি কি আইন মানবেন যদি আপনার আচরণের কোনো পরিণতি না থাকে? আপনি অন্য কারণে (যেমন, হবসিয়ান [[w:Social_contract|সামাজিক চুক্তি]]) তা মানতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, বৈধ সহিংসতার হুমকিই সরকারের কর্তৃত্বকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
== সরকারের প্রকারভেদ ==
বৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার বিভিন্ন উপায় ছাড়াও, সরকারের বিভিন্ন রূপ রয়েছে।
=== রাজতন্ত্র ===
[[চিত্র:Elizabeth_II_greets_NASA_GSFC_employees,_May_8,_2007_edit.jpg|ডান|থাম্ব|208x208পিক্সেল|রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্যের রাজা।]]
[[w:Monarchy|রাজতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা একজন ব্যক্তির হাতে থাকে, যিনি রাষ্ট্রপ্রধান। এই ক্ষমতা প্রায়ই আজীবন বা পদত্যাগ পর্যন্ত থাকে। যিনি রাজতন্ত্রের প্রধান, তাকে রাজা বলা হয়। প্রাচীন এবং [[w:medieval|মধ্যযুগে]] এটি বিশ্বে সরকারের একটি সাধারণ রূপ ছিল। রাজতন্ত্রের কোনো স্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। রাষ্ট্রে সীমাহীন রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকা এর সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য নয়। অনেক সাংবিধানিক রাজতন্ত্র, যেমন [[w:United Kingdom|যুক্তরাজ্য]] এবং [[w:Thailand|থাইল্যান্ড]], রাজতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে তাদের রাজাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা সীমিত। বংশগত শাসন প্রায়ই একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। কিন্তু নির্বাচিত রাজতন্ত্রও রাজতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় (যেমন, [[w:The Pope|পোপ]])। কিছু রাষ্ট্রে বংশগত শাসক থাকে, কিন্তু তারা গণতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় (যেমন, [[w:Dutch Republic|ডাচ রিপাবলিক]])। বর্তমানে, বিশ্বের ৪৪টি দেশে রাজা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬টি [[w:Commonwealth|কমনওয়েলথ]] রাষ্ট্র, যারা যুক্তরাজ্যের রাজাকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
=== গণতন্ত্র ===
[[w:Democracy|গণতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে শাসনের অধিকার বা সার্বভৌমত্ব দেশ বা রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকাংশের হাতে থাকে। রাজনৈতিক তত্ত্বে, গণতন্ত্র সরকারের কয়েকটি সম্পর্কিত রূপ এবং একটি রাজনৈতিক দর্শন বর্ণনা করে। ‘গণতন্ত্র’-এর কোনো সর্বজনীনভাবে গৃহীত সংজ্ঞা নেই। তবে, গণতন্ত্রের যেকোনো সংজ্ঞায় দুটি নীতি অন্তর্ভুক্ত থাকে। প্রথম নীতি হলো, সমাজের সব সদস্য (নাগরিক) ক্ষমতায় সমান প্রবেশাধিকার পায়। দ্বিতীয় নীতি হলো, সব সদস্য (নাগরিক) সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত স্বাধীনতা এবং অধিকার উপভোগ করে।<ref name="Dahl2003">R. Alan Dahl, I. Shapiro, J. A. Cheibub, The Democracy Sourcebook, MIT Press 2003, {{ISBN|0262541475}}</ref>
গণতন্ত্রের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। এর মধ্যে কিছু নাগরিকদের জন্য আরও ভালো প্রতিনিধিত্ব এবং বেশি স্বাধীনতা প্রদান করে।<ref name="Gaus2004">G. F. Gaus, C. Kukathas, Handbook of Political Theory, SAGE, 2004, p. 143-145, {{ISBN|0761967877}}</ref> তবে, যদি গণতন্ত্র সাবধানে আইন প্রণয়ন না করে যাতে ক্ষমতার অসম বণ্টন এড়ানো যায়, যেমন ক্ষমতার পৃথকীকরণ, তবে শাসন ব্যবস্থার একটি শাখা ক্ষমতা সঞ্চয় করতে পারে। এটি গণতন্ত্রের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। “সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন” প্রায়ই গণতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু দায়িত্বশীল সরকার ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠের “স্বৈরাচার” দ্বারা সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। এটি মৌলিক এবং প্রক্রিয়াগতভাবে ন্যায্য হতে হবে। এছাড়া, রাজনৈতিক অভিব্যক্তির স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং প্রেসের স্বাধীনতা অপরিহার্য। এটি নাগরিকদের অবহিত করে এবং তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেয়।
=== সমগ্রতাবাদ ===
সমগ্রতাবাদ (বা সমগ্রতাবাদী শাসন) হলো একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা। এটি জনসাধারণ এবং ব্যক্তিগত জীবনের প্রায় প্রতিটি দিক নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সমগ্রতাবাদী শাসন বা আন্দোলন রাজনৈতিক ক্ষমতায় টিকে থাকে। এটি একটি সর্বব্যাপী আদর্শ এবং রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে হয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি একক দল যা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করে, ব্যক্তিত্বের পূজা, অর্থনীতির উপর নিয়ন্ত্রণ, মুক্ত আলোচনা এবং সমালোচনার নিয়ন্ত্রণ ও সীমাবদ্ধতা, গণ নজরদারির ব্যবহার, এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ব্যাপক ব্যবহার।
=== অলিগার্কি ===
[[w:Oligarchy|অলিগার্কি]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে ক্ষমতা সমাজের একটি ছোট অভিজাত অংশের হাতে থাকে। এরা রাজকীয়তা, সম্পদ, পরিবার, সামরিক বা ধর্মীয় আধিপত্য দ্বারা আলাদা। এই ধরনের রাষ্ট্র প্রায়ই রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী পরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাদের সন্তানরা অলিগার্কির ক্ষমতার উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত এবং পরামর্শিত হয়। ইতিহাস জুড়ে অলিগার্কিগুলো স্বৈরাচারী ছিল। এগুলো সম্পূর্ণভাবে জনগণের দাসত্বের উপর নির্ভর করে টিকে থাকে।
[[চিত্র:Communist_states_(DPRK_striped).svg|ডান|থাম্ব|300x300পিক্সেল|বর্তমান কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর মানচিত্র। এগুলো হলো চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনাম।]]
[[চিত্র:Communist_countries.svg|ডান|থাম্ব|300x300পিক্সেল|যেসব দেশ নিজেদের বা অন্যদের দ্বারা মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বা মাওবাদী সংজ্ঞায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল, তাদের মানচিত্র। মানচিত্রটি বর্তমান সীমানা ব্যবহার করে। লক্ষ্য করুন, এই সব দেশ একই সময়ে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বা মাওবাদী ছিল না।]]
=== কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ===
কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হলো এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সরকারের রূপ একটি কমিউনিস্ট দলের একক দলীয় শাসন দ্বারা চিহ্নিত। এটি [[w:Communism|কমিউনিজম]]-এর আদর্শের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে, যা রাষ্ট্রের নির্দেশক নীতি হিসেবে কাজ করে। কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে একাধিক বৈধ রাজনৈতিক দল থাকতে পারে। কিন্তু কমিউনিস্ট দলকে সাধারণত সরকারে বিশেষ বা প্রভাবশালী ভূমিকা দেওয়া হয়। এটি প্রায়ই আইন বা সংবিধানের মাধ্যমে হয়। ফলে, রাষ্ট্র এবং কমিউনিস্ট দলের প্রতিষ্ঠানগুলো ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে সমান্তরাল প্রতিষ্ঠানের বিকাশও রয়েছে।
প্রায় সবাই মার্কসবাদী চিন্তাধারার বংশধর দাবি করে। তবে, কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের অনেক প্রকার রয়েছে, স্থানীয় অভিযোজন সহ। মার্কসবাদী-লেনিনবাদীদের জন্য, রাষ্ট্র এবং কমিউনিস্ট দল শিল্প শ্রমিক শ্রেণির ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে বলে দাবি করে। মাওবাদীদের জন্য, রাষ্ট্র এবং দল কৃষকদের অনুযায়ী কাজ করে বলে দাবি করে। ডেং শিয়াওপিং-এর অধীনে, চীনের গণপ্রজাতন্ত্রী “চীনা বৈশিষ্ট্যসহ সমাজতন্ত্র” নীতি ঘোষণা করে। বেশিরভাগ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে, সরকার দাবি করে যে তারা প্রলেতারিয়েতের গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের প্রতিনিধিত্ব করে।
=== ধর্মতন্ত্র ===
[[w:Theocracy|ধর্মতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে একটি দেবতা বা ঐশ্বরিক সত্তাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বৃহত্তর অর্থে, এটি এমন একটি সরকার যেখানে রাষ্ট্র ঐশ্বরিক নির্দেশনা বা ঐশ্বরিকভাবে পরিচালিত কর্মকর্তাদের দ্বারা শাসিত হয়। ধর্মতান্ত্রিক সরকার ধর্মীয় আইন প্রয়োগ করে। ধর্মতন্ত্রকে অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের রূপ থেকে আলাদা করতে হবে, যেগুলোর একটি রাষ্ট্রীয় ধর্ম আছে বা ধর্মীয় বা নৈতিক ধারণা দ্বারা প্রভাবিত। এছাড়া, “ঈশ্বরের অনুগ্রহে” পরিচালিত রাজতন্ত্র থেকেও এটি আলাদা। বিভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহ্যে ধর্মতান্ত্রিক প্রবণতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইহুদি ধর্ম, ইসলাম, কনফুসিয়ানিজম, হিন্দু ধর্ম, এবং খ্রিস্টধর্মের মধ্যে ক্যাথলিক, ইস্টার্ন অর্থোডক্সি, প্রোটেস্টান্টিজম এবং মরমনবাদ। খ্রিস্টান ধর্মতন্ত্রের ঐতিহাসিক উদাহরণ হলো বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য (খ্রিস্টাব্দ ৩৩০-১৪৫৩) এবং ক্যারোলিংিয়ান সাম্রাজ্য (খ্রিস্টাব্দ ৮০০-৮৮৮)।
== রাজনৈতিক দল ==
রাজনৈতিক দল হলো একটি রাজনৈতিক সংগঠন। এটি সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন এবং বজায় রাখতে চায়। এটি সাধারণত নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে হয়। দলগুলো প্রায়ই একটি সুস্পষ্ট আদর্শ বা দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সহ একটি লিখিত প্ল্যাটফর্ম দ্বারা সমর্থিত হয়। এটি ভিন্ন স্বার্থের মধ্যে জোট গঠন করে।
=== মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ===
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রাজনৈতিক সংগঠনের বিষয়ে নীরব। এর প্রধান কারণ হলো, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠাতা পিতা এগুলো পছন্দ করতেন না। তবুও, প্রধান এবং গৌণ রাজনৈতিক দল এবং গোষ্ঠী শীঘ্রই উদ্ভূত হয়। এটি মূলত এই প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে হয়। দলীয় নির্বাচনে, প্রার্থীদের একটি রাজনৈতিক দল মনোনয়ন দেয় বা তারা স্বতন্ত্র হিসেবে জনপদে প্রার্থী হয়। প্রতিটি রাজ্যের প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিবেচনার স্বাধীনতা রয়েছে। এটি নির্ধারণ করে কারা নির্বাচনের ব্যালটে উপস্থিত হওয়ার যোগ্য। সাধারণত, প্রধান দলের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দলীয় প্রাইমারি বা কনভেনশনে বেছে নেওয়া হয়। তবে, গৌণ দলের প্রতিনিধি এবং স্বতন্ত্রদের একটি পিটিশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
[[চিত্র:Political_Party_Affiliations_in_the_US_-_2014.png|ডান|থাম্ব|400x400পিক্সেল|নিবন্ধিত [[w:Democratic Party (United States)|ডেমোক্র্যাট]], [[w:Republican Party (United States)|রিপাবলিকান]] এবং [[w:Independent (politics)|স্বতন্ত্র]] ভোটারদের শতকরা হার।]]
[[File:|thumb|এই পাই চার্টটি ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত আমেরিকানদের দলীয় সংশ্লিষ্টতা দেখায়।]] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে [[w:list of political parties in the United States|রাজনৈতিক দলের তালিকা]] বিশাল। তবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুটি প্রধান দল হলো:
* [[w:Democratic Party (United States)|ডেমোক্র্যাটিক পার্টি]]
* [[w:Republican Party (United States)|রিপাবলিকান পার্টি]]
এই দুটি দলের প্রত্যেকটি জাতীয় মনোযোগের একটি অংশ পায়। কারণ, তাদের মনোনীত প্রার্থীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার গাণিতিক সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ, তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য ব্যালট অ্যাক্সেস রয়েছে। এটি এমন রাজ্যগুলোতে হয় যেখানে মোট [[w:U.S. Electoral College|ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট]]-এর অন্তত অর্ধেক থাকে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকান রাজনৈতিক দলগুলো আরও শিথিলভাবে সংগঠিত। বিশেষ করে, দুটি প্রধান দলের জাতীয় পর্যায়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সংগঠন নেই যা সদস্যপদ, কার্যক্রম, বা নীতি অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও কিছু রাজ্য সংযুক্তি তা করে। তাই, একজন আমেরিকানের জন্য এটা বলা যে তিনি ডেমোক্র্যাটিক বা রিপাবলিকান দলের সদস্য, তা একজন ব্রিটিশের [[w:Labour party|লেবার পার্টি]]-র সদস্য বলার থেকে বেশ ভিন্ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কেউ প্রায়ই শুধু এই সত্যটি বলে একটি দলের “সদস্য” হতে পারে। কিছু মার্কিন রাজ্যে, একজন ভোটার একটি দলের সদস্য হিসেবে নিবন্ধন করতে পারে এবং/বা একটি দলের প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দিতে পারে। কিন্তু এই অ|দলীয় অংশগ্রহণ তাদের পছন্দকে কোনোভাবে সীমাবদ্ধ করে না। এটি তাদের দলের প্রতি কোনো বিশেষ অধিকার বা বাধ্যবাধকতা দেয় না। শুধুমাত্র সম্ভবত তাদের সেই দলের প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেয়। এটি নির্ধারণ করে কে দলের প্রার্থী হবে। একজন ব্যক্তি একদিন একটি স্থানীয় দলীয় কমিটির সভায় যোগ দিতে পারে এবং পরের দিন অন্য দলের কমিটির সভায় যেতে পারে। একজনকে “ক্রিয়াকলাপের কাছাকাছি” নিয়ে যাওয়ার একমাত্র বিষয় হলো দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পরিমাণ এবং গুণমান বা দলের জন্য আর্থিক অনুদান। এছাড়া, উপস্থিত অন্যদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করার ক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় পরিচয় কিছুটা আনুষ্ঠানিক হয়ে ওঠে যখন একজন ব্যক্তি দলীয় পদের জন্য প্রার্থী হন। বেশিরভাগ রাজ্যে, এর অর্থ নিজেকে একটি নির্দিষ্ট দলের মনোনয়নের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করা এবং সেই দলের প্রাইমারি নির্বাচনে প্রবেশের অভিপ্রায়। একটি দলীয় কমিটি মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে একজন বা অন্য কাউকে সমর্থন করতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাদের হাতে যারা প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য বেছে নেয়। প্রায়ই বলা কঠিন কে ভোট দেবে।
ফলাফল হলো, আমেরিকান রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় সংগঠন দুর্বল এবং কেন্দ্রীয় আদর্শ খুব কম। এটি শুধুমাত্র ঐকমত্যের মাধ্যমে হয়। একটি দল সত্যিই এমন কাউকে দলের সদস্যপদ দাবি করতে বাধা দিতে পারে না যিনি দলের অধিকাংশ অবস্থানের সাথে একমত নন বা দলের লক্ষ্যের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। এটি ততক্ষণ সম্ভব যতক্ষণ প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য যারা বেছে নেয়, তারা সেই ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে। একবার পদে নির্বাচিত হলে, একজন নির্বাচিত কর্মকর্তা কেবল এই অভিপ্রায় ঘোষণা করে দল পরিবর্তন করতে পারেন।
ফেডারেল পর্যায়ে, দুটি প্রধান দলের প্রত্যেকটির একটি জাতীয় কমিটি রয়েছে (দেখুন, [[w:Democratic National Committee|ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি]], [[w:Republican National Committee|রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি]])। এটি তহবিল সংগ্রহ এবং প্রচারণার কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এই কমিটিগুলোর সঠিক গঠন প্রতিটি দলের জন্য ভিন্ন। কিন্তু এগুলো মূলত রাজ্য দল, সংযুক্ত সংগঠন এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। তবে, জাতীয় কমিটিগুলোর দলের পৃথক সদস্যদের কার্যক্রম নির্দেশ করার ক্ষমতা নেই।
নিচের মানচিত্রটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে [[w:United States presidential election, 2012|২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন]]-এর ফলাফল দেখায়। এটি দেখায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্রধান দলের শক্তি ভৌগলিক অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হয়। রিপাবলিকানরা দক্ষিণ, মধ্যপশ্চিম এবং কিছু পার্বত্য রাজ্যে শক্তিশালী। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা উপকূলীয় অঞ্চলে শক্তিশালী।
[[চিত্র:ElectoralCollege2012.svg|কেন্দ্র|থাম্ব|600x600পিক্সেল|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেক্টোরাল কলেজ ফলাফল।]]
=== সুইডেন ===
সুইডেনে একটি [[w:List of political parties in Sweden|বহুদলীয় ব্যবস্থা]] রয়েছে। এতে অনেকগুলো দল রয়েছে। কোনো একটি দল একা ক্ষমতা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায়ই থাকে না। তাই, দলগুলোকে জোট সরকার গঠনের জন্য একে অপরের সাথে কাজ করতে হয়। বহুদলীয় ব্যবস্থা হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে তিন বা ততোধিক রাজনৈতিক দল স্বতন্ত্রভাবে বা জোটে সরকারের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার ক্ষমতা রাখে।
একক দলীয় ব্যবস্থা (বা অ-দলীয় গণতন্ত্র) থেকে ভিন্ন, এটি সাধারণ জনগোষ্ঠীকে একাধিক স্বতন্ত্র, সরকারিভাবে স্বীকৃত গোষ্ঠী গঠন করতে উৎসাহিত করে। এগুলো সাধারণত রাজনৈতিক দল বলা হয়। প্রতিটি দল ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকদের (যারা ভোট দিতে পারে) কাছ থেকে ভোটের জন্য প্রতিযোগিতা করে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থা অপরিহার্য। কারণ, এটি একটি একক দলের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছাড়া নীতি নির্ধারণ থেকে বাধা দেয়।
যদি সরকারে একটি নির্বাচিত কংগ্রেস বা পার্লামেন্ট থাকে, তবে দলগুলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট ব্যবস্থা অনুযায়ী ক্ষমতা ভাগ করে নিতে পারে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে, প্রতিটি দল তার প্রাপ্ত ভোটের সমানুপাতে আসন জিতে। ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্টে, ভোটারদের বিভিন্ন জেলায় ভাগ করা হয়। প্রতিটি জেলা একজন ব্যক্তিকে একটি আসন পূরণের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত করে। ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট দলের বিস্তারের জন্য উপযোগী নয়। এটি স্বাভাবিকভাবে দুই দলীয় ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকে। এতে শুধুমাত্র দুটি দলের প্রার্থীদের পদে নির্বাচিত হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা থাকে। এই ঝোঁকটি [[w:Duverger's_law|ডুভার্জারের আইন]] হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের এই প্রবণতা নেই। এটি একাধিক প্রধান দলের উত্থানের অনুমতি দেয়।
[[চিত্র:Piratpartiet.svg|ডান|থাম্ব|150x150পিক্সেল|পাইরেট পার্টির প্রতীক।]]
এই পার্থক্যের প্রভাব নেই এমন নয়। দুই দলীয় ব্যবস্থা ভোটারদের বড় বড় ব্লকে নিজেদের সারিবদ্ধ করতে বাধ্য করে। কখনো কখনো এই ব্লকগুলো এত বড় হয় যে তারা কোনো সর্বজনীন নীতির উপর একমত হতে পারে না। এই চিন্তাধারায়, কিছু তত্ত্ব দাবি করে যে এটি মধ্যপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ পেতে দেয়। অন্যদিকে, যদি একাধিক প্রধান দল থাকে, প্রত্যেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের চেয়ে কম পায়, তবে দলগুলোকে কার্যকর সরকার গঠনের জন্য একসাথে কাজ করতে হয়। এটিও মধ্যপন্থার একটি রূপ প্রচার করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি উদাহরণ যেখানে বহুদলীয় ব্যবস্থা থাকতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র দুটি দলই কখনো সরকার গঠন করেছে। জার্মানি, ভারত, ফ্রান্স এবং ইসরায়েল এমন দেশের উদাহরণ যারা তাদের গণতন্ত্রে বহুদলীয় ব্যবস্থা কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছে। তবে, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুটি দল অন্য সব দলের চেয়ে বড়। এমনকি বেশিরভাগ সময় কোনো দল নিজে থেকে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না। এই দেশগুলোতে, একাধিক রাজনৈতিক দল প্রায়ই শাসনের জন্য ক্ষমতার ব্লক তৈরির উদ্দেশ্যে জোট গঠন করেছে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বহুদলীয় ব্যবস্থা একটি ছোট তৃতীয় দল, [[w:Pirate Party|পাইরেট পার্টি]], সুইডেনে প্রাধান্য পেতে দিয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খুবই অসম্ভব হবে। পাইরেট পার্টি কপিরাইট এবং পেটেন্ট সম্পর্কিত আইন সংস্কারের জন্য চেষ্টা করে। এর এজেন্ডায় ইন্টারনেট এবং দৈনন্দিন জীবনে গোপনীয়তার অধিকার জোরদার করা এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতার সমর্থন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দলটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঐতিহ্যবাহী বাম-ডান স্কেলে ব্লক স্বাধীন থাকতে বেছে নিয়েছে। এটি সব মূলধারার দলের সাথে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসরণ করে। সদস্য সংখ্যার দিক থেকে পাইরেট পার্টি সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম দল। এর হঠাৎ জনপ্রিয়তা ইউরোপ এবং বিশ্বব্যাপী একই নাম এবং অনুরূপ লক্ষ্য নিয়ে দলগুলোর উত্থান ঘটিয়েছে।
== ভোট দেওয়ার ধরন এবং অসমতা ==
যেকোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যেখানে ভোট দেওয়ার অনুমতি আছে, কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। (এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য [[w:Voter turnout|ভোটার টার্নআউট]]-এর উপর এই উইকিপিডিয়া নিবন্ধটি দেখুন)। এছাড়া, কিছু মানুষের রাজনৈতিক ক্ষমতায় প্রবেশের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় বেশি। রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার স্তরবিন্যাস বোঝার জন্য সমাজতাত্ত্বিক কল্পনা বিশেষভাবে উপযোগী।
=== রাজনীতি এবং লিঙ্গ ===
উন্নত দেশগুলোতে মহিলারা সাধারণত পুরুষদের মতোই ভোট দেন। এমনকি কখনো কখনো তারা বেশি ভোট দেন। কিন্তু রাজনৈতিক পদে মহিলারা অপ্রতিনিধিত্ব করা হয়। নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে স্থানীয় এবং জাতীয় উভয় পর্যায়ে মহিলারা খুবই কম শতাংশ। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ১০৯তম কংগ্রেসে (২০০৫-২০০৭) মাত্র ১৪ জন মহিলা সিনেটর ছিলেন (১০০ জনের মধ্যে) এবং ৭০ জন কংগ্রেসনাল প্রতিনিধি ছিলেন (৪৩৫ জনের মধ্যে)। এটি নিচের গ্রাফে চিত্রিত হয়েছে:
[[চিত্র:Percentages_of_Representatives_and_Senators_who_were_Female_-_1975-2011.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|এই চিত্রটি ১৯৭৫-২০১১ সাল পর্যন্ত মার্কিন ফেডারেল সরকারে প্রতিনিধি এবং সিনেটরদের মধ্যে মহিলাদের শতকরা হার দেখায়।]]
২০১০ সালে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছিল। হাউসের ১৭.২% এবং সিনেটের ১৭% মহিলা ছিলেন। তবে, দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারসাম্যহীনতা ছিল।<ref name="Roberts2010">Roberts, Sam. 2010. “Congress and Country: Behold the Differences.” The New York Times, February 10 http://www.nytimes.com/2010/02/10/us/politics/10congress.html (Accessed February 10, 2010).</ref>
মানুষ কীভাবে ভোট দেয়, তা পূর্বাভাস দেওয়ার একটি বিষয় হলো লিঙ্গ সমতার প্রতি মনোভাব।<ref name="McVeigh2007">McVeigh, Rory, and Juliana M. Sobolewski. 2007. “Red Counties, Blue Counties, and Occupational Segregation by Sex and Race.” American Journal of Sociology 113:446-506.</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কাউন্টিতে লিঙ্গভিত্তিক পেশাগত বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, সেখানে রিপাবলিকানদের জন্য ১১% বেশি ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি মিশ্র-লিঙ্গ পেশার কাউন্টির তুলনায়। ম্যাকভি এবং সোবোলেভস্কি (২০০৭) যুক্তি দেন যে লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন কাউন্টির শ্বেতাঙ্গ পুরুষরা রক্ষণশীল প্রার্থীদের জন্য ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, তারা মনে করে তাদের পেশাগত নিরাপত্তা মহিলা এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন।
=== রাজনীতি এবং বয়স ===
তরুণরা বয়স্কদের তুলনায় অনেক কম ভোট দেয়। তারা রাজনীতিক হওয়ার সম্ভাবনাও কম।<ref name="Roberts2010" /> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের জন্য এটি নিচের গ্রাফে চিত্রিত হয়েছে:
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Age_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|তরুণরা বয়স্কদের তুলনায় অনেক কম ভোট দেয়।]]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের কম ভোট দেওয়ার হার ব্যাখ্যা করে কেন মেডিকেয়ার এবং সোশ্যাল সিকিউরিটির মতো বিষয়গুলো সংকটের মুখোমুখি। বয়স্করা এই প্রোগ্রামগুলোর অনেক সুবিধা ধরে রাখবে। তারা এগুলো পরিবর্তনের অনুমতি দিতে অনিচ্ছুক। যদিও তরুণরাই এই সংকটের পরিণতি ভোগ করবে। বয়স্করা [[w:AARP|AARP]]-এর মতো সংগঠনের মাধ্যমে বেশি সংগঠিত। তারা তাদের সরাসরি প্রভাবিত বিষয়গুলোতে ব্লক হিসেবে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বয়স্ক ব্যক্তিদের তরুণদের তুলনায় বেশি ক্ষমতা রয়েছে।
=== রাজনীতি এবং জাতি ===
সাধারণত, জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কম। তারা রাজনৈতিক পদেও অপ্রতিনিধিত্ব করা হয়। তবে, এই সংখ্যাগুলো প্রায়ই আমেরিকান ইতিহাস জুড়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য ভোট দেওয়া কঠিন (এবং কখনো কখনো অসম্ভব) করার চলমান প্রচেষ্টার দ্বারা প্রভাবিত হয়। নিচের গ্রাফটি ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত/নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভোট দেওয়ার হারের পার্থক্য চিত্রিত করে:
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Race-Ethnicity_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার তুলনায় কম ভোট দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, এর অর্থ শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান এবং হিস্পানিকদের তুলনায় বেশি ভোট দেয়।]]
জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা রাজনৈতিক পদে থাকার সম্ভাবনাও কম। যদি কৃষ্ণাঙ্গরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করত, তবে ১২ জন সিনেটর এবং ৫২ জন হাউসের সদস্য থাকত। ২০০৯ সালে ১ জন কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর ([[w:Roland Burris|রোল্যান্ড বারিস]]) এবং ৩৯ জন হাউসের সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে হাউসের সংখ্যা কিছুটা বেড়ে ৪১ (৭.৮%) হয়। কিন্তু সিনেটে মাত্র ১% ছিল।<ref name="Roberts2010" />
=== রাজনীতি এবং শ্রেণি ===
রাজনৈতিক ক্ষমতার আরেকটি স্তরবিন্যাস হলো আয় এবং শিক্ষার মাধ্যমে। ধনী এবং বেশি শিক্ষিত মানুষ ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার সময় এবং স্থান সাধারণত মধ্যবিত্ত এবং তার উপরের পেশাগত এবং শিক্ষাগত সময়সূচির পক্ষে থাকে (ডানদিকের চিত্রগুলো দেখুন)। এছাড়া, ধনী এবং বেশি শিক্ষিত মানুষ রাজনৈতিক পদে থাকার সম্ভাবনা বেশি। এটির একটি ভালো উদাহরণ হলো ২০০৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রার্থীরা ছিলেন [[w:John Kerry|জন কেরি]] এবং [[w:George W. Bush|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]]। উভয়েই [[w:Yale University|ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়]]-এর প্রাক্তন ছাত্র। জন কেরি একজন আইনজীবী এবং জর্জ ডব্লিউ. বুশ হার্ভার্ড থেকে [[w:MBA|এমবিএ]] ডিগ্রি পেয়েছেন। উভয়েই শ্বেতাঙ্গ, লাখ লাখ ডলারের মালিক, এবং রাজনীতিতে জড়িত পরিবার থেকে এসেছেন।
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Education_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল]]
== রাজনীতি ও মতাদর্শ ==
সম্প্রতিকালে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতাদর্শে একটি ক্রমবর্ধমান বিভাজনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। রক্ষণশীল মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রগতিশীল মতাদর্শে বিশ্বাসীদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। এই পার্থক্য গত অন্তত বিশ বছরে সবচেয়ে বড় বলে ধরা হচ্ছে।<ref name="Pew20142">Pew Research Center. 2014. Political Polarization in the American Public: How Increasing Ideological Uniformity and Partisan Antipathy Affect Politics, Compromise and Everyday Life. Washington, DC: Pew Research Center. Retrieved (http://www.people-press.org/files/2014/06/6-12-2014-Political-Polarization-Release.pdf).</ref>
এই মতাদর্শগত বিভাজনের একটি পরিণতি হলো জনসংখ্যার অভ্যন্তরে ভৌগোলিক বিভাজন। মানুষ এখন এমন জায়গায় বাস করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যেখানে তারা মনে করে প্রতিবেশীদের রাজনৈতিক বিশ্বাস তাদের নিজের সঙ্গে মিলবে।<ref name="Gimpel2015">Gimpel, James G. and Iris S. Hui. 2015. Seeking politically compatible neighbors? The role of neighborhood partisan composition in residential sorting. Political Geography. doi:10.1016/j.polgeo.2014.11.003</ref>
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখন রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংবাদমাধ্যম, ইন্টারনেট এবং সহকর্মীদের চেয়ে পারিবারিক সদস্য, চার্চ, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্থানীয় সংবাদপত্রের তথ্যের ওপর বেশি ভরসা করছে।<ref name="Smith2013">Smith, Jordan W. 2013. “Information Networks in Amenity Transition Communities: A Comparative Case Study.” Human Ecology 41(6):885–903.</ref>
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম এবং বড় বড় কর্পোরেশন এই বিশ্বাসের পরিবর্তনের সুযোগ নিচ্ছে। তারা ব্যক্তির সামাজিক নেটওয়ার্কের সদস্যদের ব্যবহার করে নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন সেই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।<ref name="Sengupta2012">Sengupta, Somini. 2012. “So Much for Sharing His ‘Like.’” The New York Times, May 31. Retrieved June 20, 2014 (http://www.nytimes.com/2012/06/01/technology/so-much-for-sharing-his-like.html).</ref>
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও নির্বাচনের ফলাফলের প্রত্যাশা একত্রে গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য জটিলতা তৈরি করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মনে করেছিল তাদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জয়ী হবেন—মূলত পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়ার কারণে—তাদের মধ্যে সরকার ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাহীনতা বেড়েছে যখন তাদের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে, যারা আগে থেকেই জানতেন তাদের প্রার্থী জিতবেন না, তাদের মধ্যে এই আস্থা হ্রাস দেখা যায়নি।<ref name="Hollander2014">Hollander, Barry A. 2014. “The Surprised Loser The Role of Electoral Expectations and News Media Exposure in Satisfaction with Democracy.” Journalism & Mass Communication Quarterly 1077699014543380.</ref>
সংবাদমাধ্যমের বিস্তার—বিশেষ করে কেবল টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর—যেগুলো নির্দিষ্ট পক্ষপাতকে উৎসাহ দেয়, তা পরোক্ষভাবে হলেও গণতন্ত্রে আস্থা ক্ষয়ে দিচ্ছে।
== অতিরিক্ত পাঠ ==
Campbell, John. 1993. “The State and Fiscal Sociology.” Annual Review of Sociology. 19: 163-85.
# Gilbert, Jess and Carolyn Howe. 1991. “Beyond State vs. Society: Theories of the State and New Deal Agriculture Policies.” American Sociological Review 56:204-220.
# Goodwin, Jeff. 2001. No Other Way Out: States and Revolutionary Movements, 1945 – 1991. Cambridge: Cambridge University Press.
# Markoff, James. 1996. Waves of Democracy. New York: Routledge.
# Quadagno, Jill. 2004. ”Why the United States Has No National Health Insurance: Stakeholder Mobilization Against the Welfare State, 1945-1996.” Journal of Health and Social Behavior. 45:25-44
# Brooks, Clem. 2000. "Civil Rights Liberalism and the Suppression of a Republican Political Realignment in the United States, 1972 to 1996." American Sociological Review 65:483-505.
# Brooks, Clem. 2004. "A Great Divide? Religion and Political Change in U.S. National Elections, 1972-2000." The Sociological Quarterly 45:421-50.
# Brooks, Clem and Jeff Manza. 1997. "Social Cleavages and Political Alignments: U.S. Presidential Elections, 1960 to 1992." American Sociological Review 62:937-46.
# Campbell, John L. 2002. “Ideas, Politics, and Public Policy.” Annual Review of Sociology 28:21-38.
# Burstein, Paul and April Linton. 2002. “The Impact of Political Parties, Interest Groups, and Social Movement Organizations on Public Policy: Some Recent Evidence and Theoretical Concerns.” Social Forces 81:380-408.
# Burstein, Paul and April Linton. 2002. “The Impact of Political Parties, Interest Groups, and Social Movement Organizations on Public Policy: Some Recent Evidence and Theoretical Concerns.” Social Forces 81:380-408.
# Jacobs, David and Daniel Tope. 2007. “The Politics of Resentment in the Post Civil-Rights Era: Minority Threat, Homicide, and Ideological Voting in Congress.” American Journal of Sociology 112: 1458-1494.
# Skrentny, John. 2002. The Minority Rights Revolution. Cambridge: Harvard.
== আলোচনার প্রশ্ন ==
* যদিও [[w:Forms_of_government|সরকারের বিভিন্ন ধরণ]] আছে, আপনি কী মনে করেন কোনো একটি ধরণ অন্যগুলোর চেয়ে ভালো? হলে কেন?
* যুক্তরাষ্ট্রে কেন কেবল দুটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল রয়েছে? এর পরিণতি কী?
* কেন তরুণরা বয়স্কদের চেয়ে কম ভোট দেয়? এর প্রভাব কী?
* কীভাবে তরুণদের ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা যায়?
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}{{chapter navigation|Health and Medicine|Collective Behavior}}{{BookCat}}
b0ina035kifsmfmi697wot0ed491em7
85593
85592
2025-07-03T14:26:42Z
NusJaS
8394
/* অতিরিক্ত পাঠ */
85593
wikitext
text/x-wiki
{| style="width:80%; text-align:left; background-color:#F2F5A9;" align="center"
|আমি যখন করিডোর দিয়ে হাঁটছিলাম, তখন আমার মাথা ঘুরছিল। এই করিডোরে ফেডারেল সরকারের পূর্ণ ক্ষমতা নিয়মিত প্রয়োগ হয়। আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, একটি দেশের ফেডারেল সরকারের চেয়ে বড় কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমি টানির প্যাসচার ভ্রমণ করছিলাম। এটি কানাডিয়ান পাবলিক পলিসি বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট স্কুলের একটি সপ্তাহব্যাপী ফিল্ড ট্রিপের অংশ ছিল। টানির প্যাসচার হলো কানাডার অটোয়ার একটি এলাকা। এখানে কানাডার ফেডারেল সরকারের অনেক ভবন রয়েছে। পশ্চিম কানাডার প্রেইরিতে হাজার হাজার মাইল দূরে বেড়ে ওঠা এক তরুণের জন্য, মনে হচ্ছিল আমি অবশেষে সফল হয়েছি।
আমার হাতের তালু ঘামছিল। আমি দেয়ালে হাত ঠেকিয়ে একটি ছোট বার্তা পড়ার চেষ্টা করছিলাম। বার্তাটি সম্ভবত একজন ফেডারেল কর্মচারী দেয়ালে পোস্ট করেছিলেন। বার্তায় লেখা ছিল, “মনে করছেন আপনি অপরিবর্তনীয়? এই পরীক্ষাটি করে দেখুন: একটি পানির বাটিতে আপনার আঙুল ডুবান। আঙুল বের করার পর যে চিহ্ন থাকে, তা হলো আপনি এই জায়গা ছেড়ে গেলে আপনাকে কতটা মিস করা হবে।” আমি বিস্ময়ে মাথা নাড়লাম। আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রে ক্ষমতা এবং দায়িত্ব কতটা বিক্ষিপ্ত তা বুঝতে আমার কয়েক সপ্তাহ লেগেছিল। এমনকি রাজনৈতিক কেন্দ্রেও কেউ কতটা তুচ্ছ বোধ করতে পারে, তা আমি বুঝেছিলাম।
|}
== রাজনীতি কী? ==
রাজনীতি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষের দলগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়। এই শব্দটি সাধারণত [[w:civil governments|নাগরিক সরকার]]-এর মধ্যে আচরণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়। তবে, রাজনীতি মানুষের সব দলীয় মিথস্ক্রিয়ায় দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে কর্পোরেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় সংগঠন। রাজনীতি হলো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব জড়িত সামাজিক সম্পর্ক। এটি রাজনৈতিক ইউনিট নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া, সামাজিক নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগের জন্য পদ্ধতি এবং কৌশল ব্যবহার করে।
== ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং সহিংসতা ==
[[চিত্র:Official_portrait_of_Barack_Obama.jpg|ডান|থাম্ব|204x204পিক্সেল|বারাক ওবামা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তিনি তার কর্তৃত্ব পান যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান নামে একটি আনুষ্ঠানিক দলিলে বর্ণিত যুক্তিবাদী-আইনি ব্যবস্থা থেকে।]]
=== ক্ষমতা ===
রাজনৈতিক ক্ষমতা হলো একটি সমাজে কোনো দলের হাতে থাকা ক্ষমতা। এই ক্ষমতা তাদের জনসাধারণের সম্পদ বিতরণ পরিচালনা করতে দেয়। এর মধ্যে রয়েছে শ্রম এবং সম্পদ। রাজনৈতিক ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তবে, কোনো ব্যক্তি বা দল, যেমন বিদ্রোহী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, বা বহুজাতিক কর্পোরেশনের এই ক্ষমতা কতটা আছে, তা নির্ভর করে তারা সমাজে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে। ক্ষমতাকে প্রায়ই অন্যদের আচরণকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, প্রতিরোধের সাথে বা ছাড়াই।
[[চিত্র:King_Abdullah_bin_Abdul_al-Saud_Jan2007.jpg|ডান|থাম্ব|151x151পিক্সেল|রাজা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আল-সৌদ, সৌদি আরবের রাজা। তিনি তার কর্তৃত্ব পান ঐতিহ্য থেকে।]]
=== কর্তৃত্ব ===
সরকারে, কর্তৃত্ব প্রায়ই “ক্ষমতা” শব্দের সাথে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তাদের অর্থ ভিন্ন। কর্তৃত্ব বলতে বৈধতার দাবি বোঝায়। এটি ক্ষমতা প্রয়োগের ন্যায্যতা এবং অধিকার। উদাহরণস্বরূপ, একটি জনতার ক্ষমতা আছে একজন অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার, যেমন লিঞ্চিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু যারা আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাসী, তারা মনে করেন শুধুমাত্র আদালতেরই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ার কর্তৃত্ব আছে।
[[চিত্র:Joseph_Smith,_Jr._portrait_owned_by_Joseph_Smith_III.jpg|ডান|থাম্ব|201x201পিক্সেল|জোসেফ স্মিথ জুনিয়র, মরমনবাদের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তার কর্তৃত্ব পান তার ক্যারিশমা থেকে।]]
ম্যাক্স ওয়েবার তিন ধরনের বৈধ কর্তৃত্ব চিহ্নিত করেছেন।
* প্রথম প্রকারটি হলো '''যুক্তিবাদী-আইনি''' কর্তৃত্ব। এই কর্তৃত্ব তার বৈধতার জন্য রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক নিয়ম এবং প্রতিষ্ঠিত আইনের উপর নির্ভর করে। এগুলো সাধারণত লিখিত হয় এবং প্রায়ই খুব জটিল। যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের ক্ষমতা একটি দলিলে উল্লেখ থাকে, যেমন সংবিধান বা সংঘের নিবন্ধ। আধুনিক সমাজ যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের উপর নির্ভর করে। সরকারি কর্মকর্তারা, যেমন [[w:President of the United States|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট]], এই ধরনের কর্তৃত্বের ভালো উদাহরণ।
* দ্বিতীয় প্রকারটি হলো '''ঐতিহ্যবাহী''' কর্তৃত্ব। এটি দীর্ঘ-প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি, অভ্যাস এবং সামাজিক কাঠামো থেকে আসে। যখন ক্ষমতা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয়, তখন তাকে ঐতিহ্যবাহী কর্তৃত্ব বলা হয়। বংশগত [[w:monarchy|রাজাদের]] শাসনের অধিকার, যেমন [[w:King_of_Saudi_Arabia|সৌদি আরবের রাজা]], এর উদাহরণ।
* তৃতীয় প্রকারটি হলো '''ক্যারিশমাটিক''' কর্তৃত্ব। এখানে ব্যক্তি বা নেতার [[w:charisma|ক্যারিশমা]] গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যারিশমাটিক কর্তৃত্ব একটি অনুগ্রহের দান, ব্যক্তিত্বের ক্ষমতা, বা নেতার দাবি থেকে আসে যে তার কর্তৃত্ব একটি “উচ্চতর শক্তি” (যেমন, ঈশ্বর) থেকে এসেছে। এটি ঐতিহ্যবাহী এবং যুক্তিবাদী-আইনি কর্তৃত্বের বৈধতার চেয়ে উচ্চতর। অনুসারীরা এটি গ্রহণ করে এবং এই উচ্চতর বা অনুপ্রাণিত কর্তৃত্বের পক্ষে পূর্বের কর্তৃত্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে। ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ক্যারিশমাটিক নেতাদের স্পষ্ট উদাহরণ দেখা যায়। [[w:Joseph Smith, Jr.|জোসেফ স্মিথ জুনিয়র]], [[w:The Church of Jesus Christ of Latter-day Saints|দ্য চার্চ অফ জিসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেইন্টস (এলডিএস বা মরমন)]]-এর প্রতিষ্ঠাতা, ক্যারিশমাটিক হিসেবে বিবেচিত হন। আরেকজন ব্যক্তি যিনি তার ক্যারিশমা ব্যবহার করে অনুসারী সংগ্রহ করেছিলেন, যদিও অশুভ উদ্দেশ্যে, তিনি হলেন [[w:Jeffrey Lundgren|জেফ্রি লান্ডগ্রেন]]।
=== সহিংসতা ===
বেশিরভাগ আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রে, সরকারের কর্তৃত্ব থাকে। এটি রাজনৈতিক সহিংসতার ব্যবহারের মাধ্যমে বজায় রাখা হয়। এটি সরকারকে ক্ষমতা দেয়। আশ্চর্যজনকভাবে, সরকারের কর্তৃত্ব থাকার কারণে এটি নাগরিকদের বাধ্য করতে ক্ষমতা ব্যবহার করার অধিকার পায়। অর্থাৎ, সরকারের কর্তৃত্বের ভিত্তিতে মানুষকে নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে বাধ্য করার অধিকার রয়েছে। সরকারের নির্দেশ অমান্য করলে সরকার সহিংসতা ব্যবহার করে ব্যক্তিদের সম্মতি প্রদানে বাধ্য করতে পারে।
একই সময়ে, একটি দেশের সরকারের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার থাকার ফলে, যা তাত্ত্বিকভাবে প্রায় একচেটিয়া অধিকার, সরকারের কর্তৃত্বের দাবি আরও শক্তিশালী হয়। অন্যরা শুধুমাত্র সরকারি অনুমোদন পেলে সহিংসতা ব্যবহার করতে পারে। যেমন, শিকারের লাইসেন্স কেনা বা সরকার অনুমোদিত ফাইটিং লীগে অংশগ্রহণ, যেমন [[w:Ultimate Fighting Championship|UFC]]। তাই, একটি প্যারাডক্স তৈরি হয়: সরকারের কি কর্তৃত্ব থাকবে যদি তাদের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার না থাকে? এবং, সরকার কি তাদের সহিংসতা ব্যবহারের অধিকার থেকে কর্তৃত্ব পায়? এই রাজনৈতিক বিষয়টি ভিন্নভাবে ভাবতে পারেন: আপনি কি আইন মানবেন যদি আপনার আচরণের কোনো পরিণতি না থাকে? আপনি অন্য কারণে (যেমন, হবসিয়ান [[w:Social_contract|সামাজিক চুক্তি]]) তা মানতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, বৈধ সহিংসতার হুমকিই সরকারের কর্তৃত্বকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
== সরকারের প্রকারভেদ ==
বৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার বিভিন্ন উপায় ছাড়াও, সরকারের বিভিন্ন রূপ রয়েছে।
=== রাজতন্ত্র ===
[[চিত্র:Elizabeth_II_greets_NASA_GSFC_employees,_May_8,_2007_edit.jpg|ডান|থাম্ব|208x208পিক্সেল|রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্যের রাজা।]]
[[w:Monarchy|রাজতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা একজন ব্যক্তির হাতে থাকে, যিনি রাষ্ট্রপ্রধান। এই ক্ষমতা প্রায়ই আজীবন বা পদত্যাগ পর্যন্ত থাকে। যিনি রাজতন্ত্রের প্রধান, তাকে রাজা বলা হয়। প্রাচীন এবং [[w:medieval|মধ্যযুগে]] এটি বিশ্বে সরকারের একটি সাধারণ রূপ ছিল। রাজতন্ত্রের কোনো স্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। রাষ্ট্রে সীমাহীন রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকা এর সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য নয়। অনেক সাংবিধানিক রাজতন্ত্র, যেমন [[w:United Kingdom|যুক্তরাজ্য]] এবং [[w:Thailand|থাইল্যান্ড]], রাজতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে তাদের রাজাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা সীমিত। বংশগত শাসন প্রায়ই একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। কিন্তু নির্বাচিত রাজতন্ত্রও রাজতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় (যেমন, [[w:The Pope|পোপ]])। কিছু রাষ্ট্রে বংশগত শাসক থাকে, কিন্তু তারা গণতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয় (যেমন, [[w:Dutch Republic|ডাচ রিপাবলিক]])। বর্তমানে, বিশ্বের ৪৪টি দেশে রাজা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রয়েছেন। এর মধ্যে ১৬টি [[w:Commonwealth|কমনওয়েলথ]] রাষ্ট্র, যারা যুক্তরাজ্যের রাজাকে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
=== গণতন্ত্র ===
[[w:Democracy|গণতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে শাসনের অধিকার বা সার্বভৌমত্ব দেশ বা রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকাংশের হাতে থাকে। রাজনৈতিক তত্ত্বে, গণতন্ত্র সরকারের কয়েকটি সম্পর্কিত রূপ এবং একটি রাজনৈতিক দর্শন বর্ণনা করে। ‘গণতন্ত্র’-এর কোনো সর্বজনীনভাবে গৃহীত সংজ্ঞা নেই। তবে, গণতন্ত্রের যেকোনো সংজ্ঞায় দুটি নীতি অন্তর্ভুক্ত থাকে। প্রথম নীতি হলো, সমাজের সব সদস্য (নাগরিক) ক্ষমতায় সমান প্রবেশাধিকার পায়। দ্বিতীয় নীতি হলো, সব সদস্য (নাগরিক) সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত স্বাধীনতা এবং অধিকার উপভোগ করে।<ref name="Dahl2003">R. Alan Dahl, I. Shapiro, J. A. Cheibub, The Democracy Sourcebook, MIT Press 2003, {{ISBN|0262541475}}</ref>
গণতন্ত্রের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। এর মধ্যে কিছু নাগরিকদের জন্য আরও ভালো প্রতিনিধিত্ব এবং বেশি স্বাধীনতা প্রদান করে।<ref name="Gaus2004">G. F. Gaus, C. Kukathas, Handbook of Political Theory, SAGE, 2004, p. 143-145, {{ISBN|0761967877}}</ref> তবে, যদি গণতন্ত্র সাবধানে আইন প্রণয়ন না করে যাতে ক্ষমতার অসম বণ্টন এড়ানো যায়, যেমন ক্ষমতার পৃথকীকরণ, তবে শাসন ব্যবস্থার একটি শাখা ক্ষমতা সঞ্চয় করতে পারে। এটি গণতন্ত্রের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। “সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন” প্রায়ই গণতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু দায়িত্বশীল সরকার ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠের “স্বৈরাচার” দ্বারা সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। এটি মৌলিক এবং প্রক্রিয়াগতভাবে ন্যায্য হতে হবে। এছাড়া, রাজনৈতিক অভিব্যক্তির স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং প্রেসের স্বাধীনতা অপরিহার্য। এটি নাগরিকদের অবহিত করে এবং তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেয়।
=== সমগ্রতাবাদ ===
সমগ্রতাবাদ (বা সমগ্রতাবাদী শাসন) হলো একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা। এটি জনসাধারণ এবং ব্যক্তিগত জীবনের প্রায় প্রতিটি দিক নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সমগ্রতাবাদী শাসন বা আন্দোলন রাজনৈতিক ক্ষমতায় টিকে থাকে। এটি একটি সর্বব্যাপী আদর্শ এবং রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে হয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি একক দল যা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করে, ব্যক্তিত্বের পূজা, অর্থনীতির উপর নিয়ন্ত্রণ, মুক্ত আলোচনা এবং সমালোচনার নিয়ন্ত্রণ ও সীমাবদ্ধতা, গণ নজরদারির ব্যবহার, এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ব্যাপক ব্যবহার।
=== অলিগার্কি ===
[[w:Oligarchy|অলিগার্কি]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে ক্ষমতা সমাজের একটি ছোট অভিজাত অংশের হাতে থাকে। এরা রাজকীয়তা, সম্পদ, পরিবার, সামরিক বা ধর্মীয় আধিপত্য দ্বারা আলাদা। এই ধরনের রাষ্ট্র প্রায়ই রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী পরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাদের সন্তানরা অলিগার্কির ক্ষমতার উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত এবং পরামর্শিত হয়। ইতিহাস জুড়ে অলিগার্কিগুলো স্বৈরাচারী ছিল। এগুলো সম্পূর্ণভাবে জনগণের দাসত্বের উপর নির্ভর করে টিকে থাকে।
[[চিত্র:Communist_states_(DPRK_striped).svg|ডান|থাম্ব|300x300পিক্সেল|বর্তমান কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর মানচিত্র। এগুলো হলো চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনাম।]]
[[চিত্র:Communist_countries.svg|ডান|থাম্ব|300x300পিক্সেল|যেসব দেশ নিজেদের বা অন্যদের দ্বারা মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বা মাওবাদী সংজ্ঞায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল, তাদের মানচিত্র। মানচিত্রটি বর্তমান সীমানা ব্যবহার করে। লক্ষ্য করুন, এই সব দেশ একই সময়ে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী বা মাওবাদী ছিল না।]]
=== কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ===
কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হলো এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে সরকারের রূপ একটি কমিউনিস্ট দলের একক দলীয় শাসন দ্বারা চিহ্নিত। এটি [[w:Communism|কমিউনিজম]]-এর আদর্শের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে, যা রাষ্ট্রের নির্দেশক নীতি হিসেবে কাজ করে। কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে একাধিক বৈধ রাজনৈতিক দল থাকতে পারে। কিন্তু কমিউনিস্ট দলকে সাধারণত সরকারে বিশেষ বা প্রভাবশালী ভূমিকা দেওয়া হয়। এটি প্রায়ই আইন বা সংবিধানের মাধ্যমে হয়। ফলে, রাষ্ট্র এবং কমিউনিস্ট দলের প্রতিষ্ঠানগুলো ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে সমান্তরাল প্রতিষ্ঠানের বিকাশও রয়েছে।
প্রায় সবাই মার্কসবাদী চিন্তাধারার বংশধর দাবি করে। তবে, কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের অনেক প্রকার রয়েছে, স্থানীয় অভিযোজন সহ। মার্কসবাদী-লেনিনবাদীদের জন্য, রাষ্ট্র এবং কমিউনিস্ট দল শিল্প শ্রমিক শ্রেণির ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে বলে দাবি করে। মাওবাদীদের জন্য, রাষ্ট্র এবং দল কৃষকদের অনুযায়ী কাজ করে বলে দাবি করে। ডেং শিয়াওপিং-এর অধীনে, চীনের গণপ্রজাতন্ত্রী “চীনা বৈশিষ্ট্যসহ সমাজতন্ত্র” নীতি ঘোষণা করে। বেশিরভাগ কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে, সরকার দাবি করে যে তারা প্রলেতারিয়েতের গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের প্রতিনিধিত্ব করে।
=== ধর্মতন্ত্র ===
[[w:Theocracy|ধর্মতন্ত্র]] হলো সরকারের একটি রূপ। এতে একটি দেবতা বা ঐশ্বরিক সত্তাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বৃহত্তর অর্থে, এটি এমন একটি সরকার যেখানে রাষ্ট্র ঐশ্বরিক নির্দেশনা বা ঐশ্বরিকভাবে পরিচালিত কর্মকর্তাদের দ্বারা শাসিত হয়। ধর্মতান্ত্রিক সরকার ধর্মীয় আইন প্রয়োগ করে। ধর্মতন্ত্রকে অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের রূপ থেকে আলাদা করতে হবে, যেগুলোর একটি রাষ্ট্রীয় ধর্ম আছে বা ধর্মীয় বা নৈতিক ধারণা দ্বারা প্রভাবিত। এছাড়া, “ঈশ্বরের অনুগ্রহে” পরিচালিত রাজতন্ত্র থেকেও এটি আলাদা। বিভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহ্যে ধর্মতান্ত্রিক প্রবণতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইহুদি ধর্ম, ইসলাম, কনফুসিয়ানিজম, হিন্দু ধর্ম, এবং খ্রিস্টধর্মের মধ্যে ক্যাথলিক, ইস্টার্ন অর্থোডক্সি, প্রোটেস্টান্টিজম এবং মরমনবাদ। খ্রিস্টান ধর্মতন্ত্রের ঐতিহাসিক উদাহরণ হলো বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য (খ্রিস্টাব্দ ৩৩০-১৪৫৩) এবং ক্যারোলিংিয়ান সাম্রাজ্য (খ্রিস্টাব্দ ৮০০-৮৮৮)।
== রাজনৈতিক দল ==
রাজনৈতিক দল হলো একটি রাজনৈতিক সংগঠন। এটি সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন এবং বজায় রাখতে চায়। এটি সাধারণত নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে হয়। দলগুলো প্রায়ই একটি সুস্পষ্ট আদর্শ বা দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সহ একটি লিখিত প্ল্যাটফর্ম দ্বারা সমর্থিত হয়। এটি ভিন্ন স্বার্থের মধ্যে জোট গঠন করে।
=== মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ===
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রাজনৈতিক সংগঠনের বিষয়ে নীরব। এর প্রধান কারণ হলো, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠাতা পিতা এগুলো পছন্দ করতেন না। তবুও, প্রধান এবং গৌণ রাজনৈতিক দল এবং গোষ্ঠী শীঘ্রই উদ্ভূত হয়। এটি মূলত এই প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে হয়। দলীয় নির্বাচনে, প্রার্থীদের একটি রাজনৈতিক দল মনোনয়ন দেয় বা তারা স্বতন্ত্র হিসেবে জনপদে প্রার্থী হয়। প্রতিটি রাজ্যের প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিবেচনার স্বাধীনতা রয়েছে। এটি নির্ধারণ করে কারা নির্বাচনের ব্যালটে উপস্থিত হওয়ার যোগ্য। সাধারণত, প্রধান দলের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দলীয় প্রাইমারি বা কনভেনশনে বেছে নেওয়া হয়। তবে, গৌণ দলের প্রতিনিধি এবং স্বতন্ত্রদের একটি পিটিশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
[[চিত্র:Political_Party_Affiliations_in_the_US_-_2014.png|ডান|থাম্ব|400x400পিক্সেল|নিবন্ধিত [[w:Democratic Party (United States)|ডেমোক্র্যাট]], [[w:Republican Party (United States)|রিপাবলিকান]] এবং [[w:Independent (politics)|স্বতন্ত্র]] ভোটারদের শতকরা হার।]]
[[File:|thumb|এই পাই চার্টটি ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত আমেরিকানদের দলীয় সংশ্লিষ্টতা দেখায়।]] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে [[w:list of political parties in the United States|রাজনৈতিক দলের তালিকা]] বিশাল। তবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুটি প্রধান দল হলো:
* [[w:Democratic Party (United States)|ডেমোক্র্যাটিক পার্টি]]
* [[w:Republican Party (United States)|রিপাবলিকান পার্টি]]
এই দুটি দলের প্রত্যেকটি জাতীয় মনোযোগের একটি অংশ পায়। কারণ, তাদের মনোনীত প্রার্থীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার গাণিতিক সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ, তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য ব্যালট অ্যাক্সেস রয়েছে। এটি এমন রাজ্যগুলোতে হয় যেখানে মোট [[w:U.S. Electoral College|ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট]]-এর অন্তত অর্ধেক থাকে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকান রাজনৈতিক দলগুলো আরও শিথিলভাবে সংগঠিত। বিশেষ করে, দুটি প্রধান দলের জাতীয় পর্যায়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সংগঠন নেই যা সদস্যপদ, কার্যক্রম, বা নীতি অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও কিছু রাজ্য সংযুক্তি তা করে। তাই, একজন আমেরিকানের জন্য এটা বলা যে তিনি ডেমোক্র্যাটিক বা রিপাবলিকান দলের সদস্য, তা একজন ব্রিটিশের [[w:Labour party|লেবার পার্টি]]-র সদস্য বলার থেকে বেশ ভিন্ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কেউ প্রায়ই শুধু এই সত্যটি বলে একটি দলের “সদস্য” হতে পারে। কিছু মার্কিন রাজ্যে, একজন ভোটার একটি দলের সদস্য হিসেবে নিবন্ধন করতে পারে এবং/বা একটি দলের প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দিতে পারে। কিন্তু এই অ|দলীয় অংশগ্রহণ তাদের পছন্দকে কোনোভাবে সীমাবদ্ধ করে না। এটি তাদের দলের প্রতি কোনো বিশেষ অধিকার বা বাধ্যবাধকতা দেয় না। শুধুমাত্র সম্ভবত তাদের সেই দলের প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেয়। এটি নির্ধারণ করে কে দলের প্রার্থী হবে। একজন ব্যক্তি একদিন একটি স্থানীয় দলীয় কমিটির সভায় যোগ দিতে পারে এবং পরের দিন অন্য দলের কমিটির সভায় যেতে পারে। একজনকে “ক্রিয়াকলাপের কাছাকাছি” নিয়ে যাওয়ার একমাত্র বিষয় হলো দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পরিমাণ এবং গুণমান বা দলের জন্য আর্থিক অনুদান। এছাড়া, উপস্থিত অন্যদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করার ক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় পরিচয় কিছুটা আনুষ্ঠানিক হয়ে ওঠে যখন একজন ব্যক্তি দলীয় পদের জন্য প্রার্থী হন। বেশিরভাগ রাজ্যে, এর অর্থ নিজেকে একটি নির্দিষ্ট দলের মনোনয়নের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করা এবং সেই দলের প্রাইমারি নির্বাচনে প্রবেশের অভিপ্রায়। একটি দলীয় কমিটি মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে একজন বা অন্য কাউকে সমর্থন করতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাদের হাতে যারা প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য বেছে নেয়। প্রায়ই বলা কঠিন কে ভোট দেবে।
ফলাফল হলো, আমেরিকান রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় সংগঠন দুর্বল এবং কেন্দ্রীয় আদর্শ খুব কম। এটি শুধুমাত্র ঐকমত্যের মাধ্যমে হয়। একটি দল সত্যিই এমন কাউকে দলের সদস্যপদ দাবি করতে বাধা দিতে পারে না যিনি দলের অধিকাংশ অবস্থানের সাথে একমত নন বা দলের লক্ষ্যের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। এটি ততক্ষণ সম্ভব যতক্ষণ প্রাইমারি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য যারা বেছে নেয়, তারা সেই ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে। একবার পদে নির্বাচিত হলে, একজন নির্বাচিত কর্মকর্তা কেবল এই অভিপ্রায় ঘোষণা করে দল পরিবর্তন করতে পারেন।
ফেডারেল পর্যায়ে, দুটি প্রধান দলের প্রত্যেকটির একটি জাতীয় কমিটি রয়েছে (দেখুন, [[w:Democratic National Committee|ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটি]], [[w:Republican National Committee|রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি]])। এটি তহবিল সংগ্রহ এবং প্রচারণার কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি গুরুত্বপূর্ণ। এই কমিটিগুলোর সঠিক গঠন প্রতিটি দলের জন্য ভিন্ন। কিন্তু এগুলো মূলত রাজ্য দল, সংযুক্ত সংগঠন এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। তবে, জাতীয় কমিটিগুলোর দলের পৃথক সদস্যদের কার্যক্রম নির্দেশ করার ক্ষমতা নেই।
নিচের মানচিত্রটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে [[w:United States presidential election, 2012|২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন]]-এর ফলাফল দেখায়। এটি দেখায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্রধান দলের শক্তি ভৌগলিক অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হয়। রিপাবলিকানরা দক্ষিণ, মধ্যপশ্চিম এবং কিছু পার্বত্য রাজ্যে শক্তিশালী। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা উপকূলীয় অঞ্চলে শক্তিশালী।
[[চিত্র:ElectoralCollege2012.svg|কেন্দ্র|থাম্ব|600x600পিক্সেল|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেক্টোরাল কলেজ ফলাফল।]]
=== সুইডেন ===
সুইডেনে একটি [[w:List of political parties in Sweden|বহুদলীয় ব্যবস্থা]] রয়েছে। এতে অনেকগুলো দল রয়েছে। কোনো একটি দল একা ক্ষমতা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায়ই থাকে না। তাই, দলগুলোকে জোট সরকার গঠনের জন্য একে অপরের সাথে কাজ করতে হয়। বহুদলীয় ব্যবস্থা হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে তিন বা ততোধিক রাজনৈতিক দল স্বতন্ত্রভাবে বা জোটে সরকারের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার ক্ষমতা রাখে।
একক দলীয় ব্যবস্থা (বা অ-দলীয় গণতন্ত্র) থেকে ভিন্ন, এটি সাধারণ জনগোষ্ঠীকে একাধিক স্বতন্ত্র, সরকারিভাবে স্বীকৃত গোষ্ঠী গঠন করতে উৎসাহিত করে। এগুলো সাধারণত রাজনৈতিক দল বলা হয়। প্রতিটি দল ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকদের (যারা ভোট দিতে পারে) কাছ থেকে ভোটের জন্য প্রতিযোগিতা করে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থা অপরিহার্য। কারণ, এটি একটি একক দলের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছাড়া নীতি নির্ধারণ থেকে বাধা দেয়।
যদি সরকারে একটি নির্বাচিত কংগ্রেস বা পার্লামেন্ট থাকে, তবে দলগুলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট ব্যবস্থা অনুযায়ী ক্ষমতা ভাগ করে নিতে পারে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বে, প্রতিটি দল তার প্রাপ্ত ভোটের সমানুপাতে আসন জিতে। ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্টে, ভোটারদের বিভিন্ন জেলায় ভাগ করা হয়। প্রতিটি জেলা একজন ব্যক্তিকে একটি আসন পূরণের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত করে। ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট দলের বিস্তারের জন্য উপযোগী নয়। এটি স্বাভাবিকভাবে দুই দলীয় ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকে। এতে শুধুমাত্র দুটি দলের প্রার্থীদের পদে নির্বাচিত হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা থাকে। এই ঝোঁকটি [[w:Duverger's_law|ডুভার্জারের আইন]] হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের এই প্রবণতা নেই। এটি একাধিক প্রধান দলের উত্থানের অনুমতি দেয়।
[[চিত্র:Piratpartiet.svg|ডান|থাম্ব|150x150পিক্সেল|পাইরেট পার্টির প্রতীক।]]
এই পার্থক্যের প্রভাব নেই এমন নয়। দুই দলীয় ব্যবস্থা ভোটারদের বড় বড় ব্লকে নিজেদের সারিবদ্ধ করতে বাধ্য করে। কখনো কখনো এই ব্লকগুলো এত বড় হয় যে তারা কোনো সর্বজনীন নীতির উপর একমত হতে পারে না। এই চিন্তাধারায়, কিছু তত্ত্ব দাবি করে যে এটি মধ্যপন্থীদের নিয়ন্ত্রণ পেতে দেয়। অন্যদিকে, যদি একাধিক প্রধান দল থাকে, প্রত্যেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের চেয়ে কম পায়, তবে দলগুলোকে কার্যকর সরকার গঠনের জন্য একসাথে কাজ করতে হয়। এটিও মধ্যপন্থার একটি রূপ প্রচার করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি উদাহরণ যেখানে বহুদলীয় ব্যবস্থা থাকতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র দুটি দলই কখনো সরকার গঠন করেছে। জার্মানি, ভারত, ফ্রান্স এবং ইসরায়েল এমন দেশের উদাহরণ যারা তাদের গণতন্ত্রে বহুদলীয় ব্যবস্থা কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছে। তবে, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুটি দল অন্য সব দলের চেয়ে বড়। এমনকি বেশিরভাগ সময় কোনো দল নিজে থেকে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না। এই দেশগুলোতে, একাধিক রাজনৈতিক দল প্রায়ই শাসনের জন্য ক্ষমতার ব্লক তৈরির উদ্দেশ্যে জোট গঠন করেছে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বহুদলীয় ব্যবস্থা একটি ছোট তৃতীয় দল, [[w:Pirate Party|পাইরেট পার্টি]], সুইডেনে প্রাধান্য পেতে দিয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খুবই অসম্ভব হবে। পাইরেট পার্টি কপিরাইট এবং পেটেন্ট সম্পর্কিত আইন সংস্কারের জন্য চেষ্টা করে। এর এজেন্ডায় ইন্টারনেট এবং দৈনন্দিন জীবনে গোপনীয়তার অধিকার জোরদার করা এবং রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতার সমর্থন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দলটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঐতিহ্যবাহী বাম-ডান স্কেলে ব্লক স্বাধীন থাকতে বেছে নিয়েছে। এটি সব মূলধারার দলের সাথে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসরণ করে। সদস্য সংখ্যার দিক থেকে পাইরেট পার্টি সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম দল। এর হঠাৎ জনপ্রিয়তা ইউরোপ এবং বিশ্বব্যাপী একই নাম এবং অনুরূপ লক্ষ্য নিয়ে দলগুলোর উত্থান ঘটিয়েছে।
== ভোট দেওয়ার ধরন এবং অসমতা ==
যেকোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যেখানে ভোট দেওয়ার অনুমতি আছে, কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। (এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য [[w:Voter turnout|ভোটার টার্নআউট]]-এর উপর এই উইকিপিডিয়া নিবন্ধটি দেখুন)। এছাড়া, কিছু মানুষের রাজনৈতিক ক্ষমতায় প্রবেশের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় বেশি। রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার স্তরবিন্যাস বোঝার জন্য সমাজতাত্ত্বিক কল্পনা বিশেষভাবে উপযোগী।
=== রাজনীতি এবং লিঙ্গ ===
উন্নত দেশগুলোতে মহিলারা সাধারণত পুরুষদের মতোই ভোট দেন। এমনকি কখনো কখনো তারা বেশি ভোট দেন। কিন্তু রাজনৈতিক পদে মহিলারা অপ্রতিনিধিত্ব করা হয়। নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে স্থানীয় এবং জাতীয় উভয় পর্যায়ে মহিলারা খুবই কম শতাংশ। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ১০৯তম কংগ্রেসে (২০০৫-২০০৭) মাত্র ১৪ জন মহিলা সিনেটর ছিলেন (১০০ জনের মধ্যে) এবং ৭০ জন কংগ্রেসনাল প্রতিনিধি ছিলেন (৪৩৫ জনের মধ্যে)। এটি নিচের গ্রাফে চিত্রিত হয়েছে:
[[চিত্র:Percentages_of_Representatives_and_Senators_who_were_Female_-_1975-2011.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|এই চিত্রটি ১৯৭৫-২০১১ সাল পর্যন্ত মার্কিন ফেডারেল সরকারে প্রতিনিধি এবং সিনেটরদের মধ্যে মহিলাদের শতকরা হার দেখায়।]]
২০১০ সালে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছিল। হাউসের ১৭.২% এবং সিনেটের ১৭% মহিলা ছিলেন। তবে, দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারসাম্যহীনতা ছিল।<ref name="Roberts2010">Roberts, Sam. 2010. “Congress and Country: Behold the Differences.” The New York Times, February 10 http://www.nytimes.com/2010/02/10/us/politics/10congress.html (Accessed February 10, 2010).</ref>
মানুষ কীভাবে ভোট দেয়, তা পূর্বাভাস দেওয়ার একটি বিষয় হলো লিঙ্গ সমতার প্রতি মনোভাব।<ref name="McVeigh2007">McVeigh, Rory, and Juliana M. Sobolewski. 2007. “Red Counties, Blue Counties, and Occupational Segregation by Sex and Race.” American Journal of Sociology 113:446-506.</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কাউন্টিতে লিঙ্গভিত্তিক পেশাগত বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, সেখানে রিপাবলিকানদের জন্য ১১% বেশি ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি মিশ্র-লিঙ্গ পেশার কাউন্টির তুলনায়। ম্যাকভি এবং সোবোলেভস্কি (২০০৭) যুক্তি দেন যে লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন কাউন্টির শ্বেতাঙ্গ পুরুষরা রক্ষণশীল প্রার্থীদের জন্য ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, তারা মনে করে তাদের পেশাগত নিরাপত্তা মহিলা এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন।
=== রাজনীতি এবং বয়স ===
তরুণরা বয়স্কদের তুলনায় অনেক কম ভোট দেয়। তারা রাজনীতিক হওয়ার সম্ভাবনাও কম।<ref name="Roberts2010" /> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের জন্য এটি নিচের গ্রাফে চিত্রিত হয়েছে:
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Age_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|তরুণরা বয়স্কদের তুলনায় অনেক কম ভোট দেয়।]]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তরুণদের কম ভোট দেওয়ার হার ব্যাখ্যা করে কেন মেডিকেয়ার এবং সোশ্যাল সিকিউরিটির মতো বিষয়গুলো সংকটের মুখোমুখি। বয়স্করা এই প্রোগ্রামগুলোর অনেক সুবিধা ধরে রাখবে। তারা এগুলো পরিবর্তনের অনুমতি দিতে অনিচ্ছুক। যদিও তরুণরাই এই সংকটের পরিণতি ভোগ করবে। বয়স্করা [[w:AARP|AARP]]-এর মতো সংগঠনের মাধ্যমে বেশি সংগঠিত। তারা তাদের সরাসরি প্রভাবিত বিষয়গুলোতে ব্লক হিসেবে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বয়স্ক ব্যক্তিদের তরুণদের তুলনায় বেশি ক্ষমতা রয়েছে।
=== রাজনীতি এবং জাতি ===
সাধারণত, জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কম। তারা রাজনৈতিক পদেও অপ্রতিনিধিত্ব করা হয়। তবে, এই সংখ্যাগুলো প্রায়ই আমেরিকান ইতিহাস জুড়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য ভোট দেওয়া কঠিন (এবং কখনো কখনো অসম্ভব) করার চলমান প্রচেষ্টার দ্বারা প্রভাবিত হয়। নিচের গ্রাফটি ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত/নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভোট দেওয়ার হারের পার্থক্য চিত্রিত করে:
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Race-Ethnicity_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল|জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার তুলনায় কম ভোট দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, এর অর্থ শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান এবং হিস্পানিকদের তুলনায় বেশি ভোট দেয়।]]
জাতিগত এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা রাজনৈতিক পদে থাকার সম্ভাবনাও কম। যদি কৃষ্ণাঙ্গরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করত, তবে ১২ জন সিনেটর এবং ৫২ জন হাউসের সদস্য থাকত। ২০০৯ সালে ১ জন কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর ([[w:Roland Burris|রোল্যান্ড বারিস]]) এবং ৩৯ জন হাউসের সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে হাউসের সংখ্যা কিছুটা বেড়ে ৪১ (৭.৮%) হয়। কিন্তু সিনেটে মাত্র ১% ছিল।<ref name="Roberts2010" />
=== রাজনীতি এবং শ্রেণি ===
রাজনৈতিক ক্ষমতার আরেকটি স্তরবিন্যাস হলো আয় এবং শিক্ষার মাধ্যমে। ধনী এবং বেশি শিক্ষিত মানুষ ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোট দেওয়ার সময় এবং স্থান সাধারণত মধ্যবিত্ত এবং তার উপরের পেশাগত এবং শিক্ষাগত সময়সূচির পক্ষে থাকে (ডানদিকের চিত্রগুলো দেখুন)। এছাড়া, ধনী এবং বেশি শিক্ষিত মানুষ রাজনৈতিক পদে থাকার সম্ভাবনা বেশি। এটির একটি ভালো উদাহরণ হলো ২০০৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রার্থীরা ছিলেন [[w:John Kerry|জন কেরি]] এবং [[w:George W. Bush|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]]। উভয়েই [[w:Yale University|ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়]]-এর প্রাক্তন ছাত্র। জন কেরি একজন আইনজীবী এবং জর্জ ডব্লিউ. বুশ হার্ভার্ড থেকে [[w:MBA|এমবিএ]] ডিগ্রি পেয়েছেন। উভয়েই শ্বেতাঙ্গ, লাখ লাখ ডলারের মালিক, এবং রাজনীতিতে জড়িত পরিবার থেকে এসেছেন।
[[চিত্র:Voter_Turnout_by_Education_2012_US_Presidential_Election.png|কেন্দ্র|থাম্ব|800x800পিক্সেল]]
== রাজনীতি ও মতাদর্শ ==
সম্প্রতিকালে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতাদর্শে একটি ক্রমবর্ধমান বিভাজনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। রক্ষণশীল মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রগতিশীল মতাদর্শে বিশ্বাসীদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। এই পার্থক্য গত অন্তত বিশ বছরে সবচেয়ে বড় বলে ধরা হচ্ছে।<ref name="Pew20142">Pew Research Center. 2014. Political Polarization in the American Public: How Increasing Ideological Uniformity and Partisan Antipathy Affect Politics, Compromise and Everyday Life. Washington, DC: Pew Research Center. Retrieved (http://www.people-press.org/files/2014/06/6-12-2014-Political-Polarization-Release.pdf).</ref>
এই মতাদর্শগত বিভাজনের একটি পরিণতি হলো জনসংখ্যার অভ্যন্তরে ভৌগোলিক বিভাজন। মানুষ এখন এমন জায়গায় বাস করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যেখানে তারা মনে করে প্রতিবেশীদের রাজনৈতিক বিশ্বাস তাদের নিজের সঙ্গে মিলবে।<ref name="Gimpel2015">Gimpel, James G. and Iris S. Hui. 2015. Seeking politically compatible neighbors? The role of neighborhood partisan composition in residential sorting. Political Geography. doi:10.1016/j.polgeo.2014.11.003</ref>
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বিশ্বাসের ক্ষেত্রে। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখন রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংবাদমাধ্যম, ইন্টারনেট এবং সহকর্মীদের চেয়ে পারিবারিক সদস্য, চার্চ, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং স্থানীয় সংবাদপত্রের তথ্যের ওপর বেশি ভরসা করছে।<ref name="Smith2013">Smith, Jordan W. 2013. “Information Networks in Amenity Transition Communities: A Comparative Case Study.” Human Ecology 41(6):885–903.</ref>
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম এবং বড় বড় কর্পোরেশন এই বিশ্বাসের পরিবর্তনের সুযোগ নিচ্ছে। তারা ব্যক্তির সামাজিক নেটওয়ার্কের সদস্যদের ব্যবহার করে নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন সেই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।<ref name="Sengupta2012">Sengupta, Somini. 2012. “So Much for Sharing His ‘Like.’” The New York Times, May 31. Retrieved June 20, 2014 (http://www.nytimes.com/2012/06/01/technology/so-much-for-sharing-his-like.html).</ref>
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ও নির্বাচনের ফলাফলের প্রত্যাশা একত্রে গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য জটিলতা তৈরি করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মনে করেছিল তাদের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জয়ী হবেন—মূলত পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়ার কারণে—তাদের মধ্যে সরকার ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাহীনতা বেড়েছে যখন তাদের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে, যারা আগে থেকেই জানতেন তাদের প্রার্থী জিতবেন না, তাদের মধ্যে এই আস্থা হ্রাস দেখা যায়নি।<ref name="Hollander2014">Hollander, Barry A. 2014. “The Surprised Loser The Role of Electoral Expectations and News Media Exposure in Satisfaction with Democracy.” Journalism & Mass Communication Quarterly 1077699014543380.</ref>
সংবাদমাধ্যমের বিস্তার—বিশেষ করে কেবল টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর—যেগুলো নির্দিষ্ট পক্ষপাতকে উৎসাহ দেয়, তা পরোক্ষভাবে হলেও গণতন্ত্রে আস্থা ক্ষয়ে দিচ্ছে।
== অতিরিক্ত পাঠ ==
# Campbell, John. 1993. “The State and Fiscal Sociology.” Annual Review of Sociology. 19: 163-85.
# Gilbert, Jess and Carolyn Howe. 1991. “Beyond State vs. Society: Theories of the State and New Deal Agriculture Policies.” American Sociological Review 56:204-220.
# Goodwin, Jeff. 2001. No Other Way Out: States and Revolutionary Movements, 1945 – 1991. Cambridge: Cambridge University Press.
# Markoff, James. 1996. Waves of Democracy. New York: Routledge.
# Quadagno, Jill. 2004. ”Why the United States Has No National Health Insurance: Stakeholder Mobilization Against the Welfare State, 1945-1996.” Journal of Health and Social Behavior. 45:25-44
# Brooks, Clem. 2000. "Civil Rights Liberalism and the Suppression of a Republican Political Realignment in the United States, 1972 to 1996." American Sociological Review 65:483-505.
# Brooks, Clem. 2004. "A Great Divide? Religion and Political Change in U.S. National Elections, 1972-2000." The Sociological Quarterly 45:421-50.
# Brooks, Clem and Jeff Manza. 1997. "Social Cleavages and Political Alignments: U.S. Presidential Elections, 1960 to 1992." American Sociological Review 62:937-46.
# Campbell, John L. 2002. “Ideas, Politics, and Public Policy.” Annual Review of Sociology 28:21-38.
# Burstein, Paul and April Linton. 2002. “The Impact of Political Parties, Interest Groups, and Social Movement Organizations on Public Policy: Some Recent Evidence and Theoretical Concerns.” Social Forces 81:380-408.
# Burstein, Paul and April Linton. 2002. “The Impact of Political Parties, Interest Groups, and Social Movement Organizations on Public Policy: Some Recent Evidence and Theoretical Concerns.” Social Forces 81:380-408.
# Jacobs, David and Daniel Tope. 2007. “The Politics of Resentment in the Post Civil-Rights Era: Minority Threat, Homicide, and Ideological Voting in Congress.” American Journal of Sociology 112: 1458-1494.
# Skrentny, John. 2002. The Minority Rights Revolution. Cambridge: Harvard.
== আলোচনার প্রশ্ন ==
* যদিও [[w:Forms_of_government|সরকারের বিভিন্ন ধরণ]] আছে, আপনি কী মনে করেন কোনো একটি ধরণ অন্যগুলোর চেয়ে ভালো? হলে কেন?
* যুক্তরাষ্ট্রে কেন কেবল দুটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল রয়েছে? এর পরিণতি কী?
* কেন তরুণরা বয়স্কদের চেয়ে কম ভোট দেয়? এর প্রভাব কী?
* কীভাবে তরুণদের ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা যায়?
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}{{chapter navigation|Health and Medicine|Collective Behavior}}{{BookCat}}
sd23vwd9bldjc5u6in2jqn7mfcf45lp
ইন্দ্রিয়তন্ত্র/পতঙ্গ/ঘ্রাণতন্ত্র
0
24083
85591
76086
2025-07-03T14:20:56Z
NusJaS
8394
85591
wikitext
text/x-wiki
যদিও মানুষের সংবেদনশীল ব্যবস্থা আমাদের গতিবিধি এবং পরিবেশ উপলব্ধির জন্য অসাধারণ উপায় প্রদান করে, তবুও পোকামাকড় এবং মাকড়সার সংবেদনশীল ব্যবস্থা কম আকর্ষণীয় নয়। কিছু উদাহরণ দেওয়ার জন্য, মাকড়সার আটটি পর্যন্ত চোখ থাকে। কিছু মাকড়সা প্রায় মানুষের মতো তীক্ষ্ণভাবে দেখতে পায়। মৌমাছিরা অন্য মৌমাছিদের মৌচাকে নাচ দেখে "তাল অনুভব" করে। এর মাধ্যমে তারা খাদ্যের উৎসের অবস্থান জানতে পারে। মশারা গন্ধের মাধ্যমে তাদের শিকার খুঁজে বের করে। এছাড়া, পোকামাকড় নিয়ে গবেষণায় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের তুলনায় অনেক কম নৈতিক বা পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা থাকে। বিশেষ করে মাছিতে, আণবিক জেনেটিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে যেকোনো জিনকে লক্ষ্য করা যায় (যেমন, নিষ্ক্রিয় করা বা অতিরিক্ত প্রকাশ করা)। এই ব্যবস্থা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
[[File:Insect antennae comparison.jpg|thumb|right|200px|বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টেনা।]]
[[File:Drosophila melanogaster antenna microscopic.jpg|thumb|ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টারের অ্যান্টেনা আলোক মাইক্রোস্কোপে। ঘ্রাণ সংবেদী সেন্সিলা দেখা যায় (অ্যান্টেনায় চুলের মতো)। অ্যান্টেনাটি একটি কাচের কৈশিক দিয়ে স্থির করা হয়েছে। উপরের ডানদিকে একটি রেকর্ডিং ইলেক্ট্রোড দেখা যায়। অ্যান্টেনার ব্যাস প্রায় ৯০ মাইক্রোমিটার।]]
[[File:Schematic insect basiconic sensillum.png|thumb|একটি বেসিকনিক সেন্সিলার সরলীকৃত চিত্র, যেমন ফ্রুট ফ্লাইয়ে পাওয়া যায়।]]
[[File:Response profile drosophila odorant receptors.PNG|thumb|500px|নির্বাচিত ড্রোসোফিলা ঘ্রাণ রিসেপ্টরের দুটি গন্ধের প্রতি প্রতিক্রিয়ার প্রোফাইল। তথ্যের উৎস: DoOR ডাটাবেস [http://neuro.uni-konstanz.de/DoOR/default.html]]]
==পোকার ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থা==
এই সংবেদনশীল ব্যবস্থার বইটি মূলত মানুষের সংবেদনশীল ব্যবস্থা নিয়ে। এতে ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থার একটি অধ্যায় রয়েছে। তাহলে কেন পোকার ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থার উপর একটি অধ্যায় দরকার?
ফ্রুট ফ্লাই (''ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টার''), যার উপর আমরা এখানে মনোযোগ দেব, জীববিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মডেল প্রাণী। সংবেদনশীল ব্যবস্থার উপর অনেক গবেষণা এই ফ্রুট ফ্লাইয়ের উপর করা হয়। এর দৃষ্টিশক্তি এবং ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থার উপর গভীরভাবে গবেষণা হয়। এতে নৈতিক বা পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা কম। আণবিক জেনেটিক সরঞ্জাম দিয়ে মাছির যেকোনো জিনকে লক্ষ্য করা যায় (যেমন, নিষ্ক্রিয় করা বা অতিরিক্ত প্রকাশ করা)। এই ব্যবস্থা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। যদিও ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থা মানুষের থেকে বেশ ভিন্নভাবে কাজ করে, তবুও কিছু সাধারণ নীতি খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এছাড়া, পোকার ঘ্রাণশক্তি ব্যবস্থা রোবোটিক্স, চিকিৎসা এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে প্রকৌশলের জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়।
===গন্ধের প্রকৃতি==
গন্ধ সংবেদনের বিশেষত্ব বোঝার জন্য জানতে হবে যে গন্ধ অন্যান্য উদ্দীপক থেকে বেশ আলাদা। এটি আলো এবং শব্দ থেকে ভিন্ন। গন্ধ তরঙ্গের মাধ্যমে বাহিত হয় না। এটি ছড়িয়ে পড়ে বাতাসের প্রবাহ এবং ঘূর্ণনের মাধ্যমে। এছাড়া, আলো এবং শব্দের শুধুমাত্র ফ্রিকোয়েন্সি গঠন এবং প্রশস্ততা নামে দুটি উপলব্ধিগত বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু গন্ধে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পৃথক গন্ধকণা এবং বিভিন্ন ঘনত্বে আরও অনেক সম্ভাব্য মিশ্রণ।
===সংক্ষিপ্ত বিবরণ===
পোকামাকড়ে (এবং বেশিরভাগ মেরুদণ্ডী প্রাণীতেও) সংবেদনশীল ব্যবস্থা দিকনির্দেশনা এবং খাদ্য সংগ্রহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি সামাজিক (যেমন পিঁপড়েদের মধ্যে বাসার সঙ্গী চেনা) এবং যৌন (ফেরোমোনের মাধ্যমে সঙ্গী খোঁজা এবং নির্বাচন) ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
গন্ধের তথ্যের প্রধান পথ শুরু হয় ঘ্রাণ সংবেদী সেন্সিলা থেকে। এটি পোকার সংবেদী অঙ্গ যেখানে সংবেদী নিউরন থাকে। বেশিরভাগ পোকার অ্যান্টেনায় এটি পাওয়া যায়। মাছিতে এটি ছোট চুলের মতো দেখায় (চিত্র দেখুন)। অ্যান্টেনার বিভিন্ন ধরন এবং সেন্সিলার অনেক প্রকার রয়েছে।
সাধারণ নীতি বোঝার জন্য ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টারের বেসিকনিক সেন্সিলার উদাহরণই যথেষ্ট।
গন্ধকণা কিউটিকলের ফাটল বা ছিদ্র দিয়ে সেন্সিলার তরল লিম্ফে প্রবেশ করে। কিছু গন্ধকণা গন্ধ-বাঁধন প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর এটি ঘ্রাণ রিসেপ্টর নিউরনের (ওআরএন) ডেনড্রাইটের দিকে যায়। অন্যান্য গন্ধকণা লিম্ফে ছড়িয়ে ডেনড্রাইটের দিকে যায়। ডেনড্রাইটের ঝিল্লিতে ঘ্রাণ রিসেপ্টর (ওআর) থাকে। এটি গন্ধকণার সঙ্গে যুক্ত হয়। এটি সংকেতকে ঝিল্লির কারেন্টে রূপান্তরিত করে। এই কারেন্ট ডেনড্রাইট থেকে কোষের মূল অংশে যায়। সেখানে (অ্যাক্সন হিলে) একটি অ্যাকশন পটেনশিয়াল তৈরি হয়। এই অ্যাকশন পটেনশিয়াল ওআরএন অ্যাক্সনের মাধ্যমে অ্যান্টেনাল লোবে যায়। অ্যান্টেনাল লোব মেরুদণ্ডী প্রাণীর ঘ্রাণ বাল্বের মতো। সেখানে ওআরএন স্থানীয় ইন্টারনিউরন এবং প্রজেকশন নিউরনের সঙ্গে সিন্যাপ্স তৈরি করে। অ্যান্টেনাল লোব গ্লোমেরুলি নামে সংগঠিত। গ্লোমেরুলির প্যাটার্ন সনাক্তকরণ কীভাবে কাজ করে তা পুরোপুরি বোঝা যায়নি। তবে গ্লোমেরুলির সক্রিয়তার প্যাটার্ন মাছির কাছে উপস্থাপিত গন্ধ সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে।
প্রজেকশন নিউরন ল্যাটারাল হর্নে যায়। সেখানে সম্ভবত সহজাত গন্ধের প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া করা হয়। এছাড়া এটি মাশরুম বডির কেনিয়ন কোষেও যায়। মাশরুম বডি হল পোকার মস্তিষ্কের একটি নিউরোপিল। এর নাম মাশরুমের সঙ্গে সাদৃশ্য থেকে এসেছে। সেখানে গন্ধ অন্যান্য সংবেদনশীল পদ্ধতি এবং আচরণের সঙ্গে যুক্ত হয়। এ কারণে মাশরুম বডি শেখা এবং স্মৃতি অধ্যয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মডেল ব্যবস্থা।
===ওআরএন-এ গন্ধ গ্রহণ===
পোকার ঘ্রাণ সেন্সিলামে এক বা একাধিক ঘ্রাণ রিসেপ্টর নিউরন থাকে। এটি গন্ধের তথ্যকে বৈদ্যুতিক সংকেতে (অ্যাকশন পটেনশিয়াল) রূপান্তরিত করে। বেশিরভাগ ওআরএন-এ শুধুমাত্র এক ধরনের রিসেপ্টর থাকে। তবে প্রতিটি রিসেপ্টর ধরন অনেক গন্ধের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখায় (চিত্র দেখুন)। কিছু রিসেপ্টর অবশ্য বেশি নির্দিষ্ট। এগুলো এমন গন্ধ সনাক্ত করে যা পোকার আচরণে গুরুত্বপূর্ণ বা রাসায়নিকভাবে অনন্য। উদাহরণস্বরূপ, CO2-এর জন্য রিসেপ্টর। অন্যান্য গন্ধকণা এটিকে দুর্বলভাবে সক্রিয় করে। এটি মাছিতে সরাসরি এড়িয়ে চলার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে <ref>Suh GS, Ben-Tabou de Leon S, Tanimoto H, Fiala A, Benzer S, Anderson DJ: Light activation of an innate olfactory avoidance response in Drosophila. Curr Biol 2007, 17:905-908.</ref>। রিসেপ্টরের নির্দিষ্টতা গন্ধকণার সঙ্গে রিসেপ্টরের সখ্যতার উপর নির্ভর করে। সখ্যতা যত বেশি, গন্ধ প্রয়োগের সময় তত বেশি রিসেপ্টর দখল হয়। ফলে কারেন্টের প্রতিক্রিয়া তত শক্তিশালী হয়। তবে ওআরএন উদ্দীপনার প্রতি রৈখিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় না। ধরে নেওয়া হয় যে বেশিরভাগ ওআরএন তাদের কার্যকরী পরিসরে লগারিদমিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। এটি তাদের গতিশীল পরিসর বাড়ায়। লগারিদমিক সম্পর্ক সনাক্তকরণ সীমার নিচে বা সম্পৃক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
বেশিরভাগ ওআরএন ফেসিক-টনিক প্রতিক্রিয়া দেখায়। অর্থাৎ, উদ্দীপনা প্রয়োগের সময় তাদের ফায়ারিং হার দ্রুত বৃদ্ধি পায়। উদ্দীপনা থাকলে হার অভিযোজন দেখায়।
=== তথ্যসূত্র ===
{{reflist}}
{{Chapter navigation|||Sensory_Systems}}
{{BookCat}}
gmuedr0c9xjknepnel183m1efcx7e4s
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
0
24703
85611
77675
2025-07-03T17:47:34Z
Mehedi Abedin
7113
85611
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|আমেরিকার আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিং-এর ইতিহাস|ওয়াইয়োমিং-এর ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|History of the United States}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
6vpibbolvh3p2ds3m2h4q3dlzfsseme
85612
85611
2025-07-03T17:48:03Z
Mehedi Abedin
7113
85612
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিং-এর ইতিহাস|ওয়াইয়োমিং-এর ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|History of the United States}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
jkml1hm8loe8hda7uf94q0dso4ei7vz
85613
85612
2025-07-03T17:48:25Z
Mehedi Abedin
7113
85613
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|কনফেডারেট যুক্তরাষ্ট্রের সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|History of the United States}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
qbrio8jyl1zaq109pk5fipnu44b5q1q
85614
85613
2025-07-03T17:49:30Z
Mehedi Abedin
7113
85614
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|History of the United States}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
kl7ruei7xn8hmeouq7lk1xaal5wxflr
85615
85614
2025-07-03T17:49:48Z
Mehedi Abedin
7113
85615
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
thvwk3l0badgb5sit8a58u9wjp65rlb
85616
85615
2025-07-03T17:49:57Z
Mehedi Abedin
7113
85616
wikitext
text/x-wiki
{{Former featured book}}<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
1x0zh0zu28qbt47k26eayd68gnz2wur
85617
85616
2025-07-03T17:50:15Z
Mehedi Abedin
7113
85617
wikitext
text/x-wiki
<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
g6w4b9piuz3vah8i9s5ghymk9kzznsm
85618
85617
2025-07-03T17:50:52Z
Mehedi Abedin
7113
85618
wikitext
text/x-wiki
<gallery mode="packed-overlay" heights="400px">
চিত্র:Aldrin_Apollo_11.jpg|alt=মার্কিন ইতিহাস|{{Book title|{{BOOKNAME}}|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
</gallery>
== সূচিপত্র ==
{{Print version}}{{PDF version|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস|ফাইলের আকার: ৫১.৭ এমবি}}{{Book Search|prefix=US History}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ভূমিকা|ভূমিকা]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পরিচিতি|পরিচিতি]] {{stage short|৭৫%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬৯০–১৭৫৪) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রাক-কলম্বীয়|প্রাক-কলম্বীয় সমাজ (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইউরোপীয় ইতিহাস|ইউরোপীয় ইতিহাস (১৪৯২-এর পূর্বে)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/অন্বেষণ|আটলান্টিক পারাপার ও ঔপনিবেশিক সূচনা (১৪৯২–১৬২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইংরেজ উপনিবেশ|উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ (১৬২০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ঔপনিবেশিক ধর্ম|ঔপনিবেশিক ধর্মীয় প্রেক্ষাপট (১৬৯০–১৭৫৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রারম্ভিক প্রজাতন্ত্র (১৭৫৪–১৮৩৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বিপ্লবের পথে|বিপ্লবের পথে (১৭৫৪–১৭৭৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান বিপ্লব|আমেরিকান বিপ্লব (১৭৭৫–১৭৮৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংবিধানের প্রাথমিক বছরগুলি|ফেডারেল সময়কাল (১৭৮৭–১৮০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/জেফারসনীয় গণতন্ত্র|জেফারসনীয় গণতন্ত্র (১৮০০–১৮১২)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন|যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন (১৮১২–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ধর্মীয় আন্দোল|ধর্মীয় আন্দোলন (১৭৫৪–১৮৩৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== প্রজাতন্ত্রের সংকট (১৮৩৭–১৮৭৭) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ এবং প্রকাশ্য নিয়তি|প্রকাশ্য নিয়তি এবং দাসত্বের প্রশ্ন (১৮৩৭–১৮৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/গৃহযুদ্ধ|গৃহযুদ্ধ: বিভক্ত আমেরিকা (১৮৬১–১৮৬৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/পুনর্গঠন|পুনর্গঠন (১৮৬৫–১৮৭৭)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
=== সম্পদ, উদ্ভাবন ও বিশ্বক্ষমতা (১৮৭৭–১৯১৩) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ|আবিষ্কারের যুগ ও গিল্ডেড যুগ (১৮৭৭–১৯০০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের প্রেসিডেন্সি, বর্ণবাদ, শিল্পায়ন, কৃষি, নগরায়ন, সাম্রাজ্যবাদ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রগতিশীল যুগ|প্রগতিশীল যুগ (১৯০০–১৯১৪)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফট ও উড্রো উইলসনের শাসনামল, প্রগতিশীলতা, নারী ভোটাধিকার, শ্রম সংস্কার
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/উন্নয়নসমূহ|উন্নয়নসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: রাইট ভাইদের উড়োজাহাজ, রকেট প্রযুক্তি, পরিবহন উন্নতি, হলিউডের উত্থান
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আমেরিকান জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি|আমেরিকায় জাতিগত সম্পর্কের অধোগতি]] {{stage short|২৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: বর্ণবাদ, জাতিগত দাঙ্গা
=== আমেরিকান শতাব্দীতে প্রবেশ (১৯১৩–১৯৪৫) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯২০)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা|উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী]]
: নিষেধাজ্ঞা, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি|মহামন্দা এবং নতুন চুক্তি (১৯২৯–১৯৩৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: অর্থনৈতিক মন্দা, সরকারি কর্মসূচি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ|স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ (১৯৩৬–১৯৩৯)]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আমেরিকার অংশগ্রহণ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক যুগের উত্থান (১৯৩৯–১৯৪৫)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ, ম্যানহাটন প্রকল্প
=== শীতল যুদ্ধ যুগে আমেরিকা (১৯৪৫–১৯৮৯) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রুম্যান এবং ঠান্ডা যুদ্ধ|শীতল যুদ্ধের সূচনা (১৯৪৫–১৯৫৩)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: হ্যারি ট্রুম্যান, শীতল যুদ্ধের সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আইজেনহাওয়ার নাগরিক অধিকার পঞ্চাশের দশক|পঞ্চাশের দশক (১৯৫৩–১৯৬১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: আইজেনহাওয়ার, নাগরিক অধিকার আন্দোলন, রক অ্যান্ড রোল
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কেনেডি এবং জনসন|ষাটের দশক (১৯৬১–১৯৬৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: কেনেডি, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, জনসন, মহাকাশ প্রতিযোগিতা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/নিক্সন এবং ইন্দোচীন|জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট (১৯৬৯–১৯৮১)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: নিক্সনের শাসন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কেন্ট স্টেট, ইমপিচমেন্ট
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ফোর্ড কার্টার রিগ্যান|রিগ্যান বিপ্লব (১৯৮১–১৯৮৯)]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ফোর্ড, কার্টার, রিগ্যান, নিক্সনকে ক্ষমা, মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট, ইরান সংকট, ইরান-কন্ট্রা কেলেঙ্কারি
=== নতুন শতকের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ (১৯৮৯–২০১৬) ===
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বুশ ক্লিনটন|বুশ ও ক্লিনটনের শাসন]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রথম গালফ যুদ্ধ, মনিকা লিউইনস্কি কেলেঙ্কারি
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ডব্লিউ. বুশ|জর্জ ডব্লিউ. বুশ]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ১১ই সেপ্টেম্বর হামলা, দ্বিতীয় গালফ যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, মন্দার সূচনা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০০৮ সালের নির্বাচন|২০০৮ সালের নির্বাচন]] {{stage short|১০০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ওবামা বনাম ম্যাককেইন
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা|ওবামা]] {{stage short|৭৫%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: গ্রেট রিসেশন মোকাবিলা, স্বাস্থ্যসেবা আইন, LGBTQ অধিকার
=== সাম্প্রতিক ইতিহাস (২০১৬–বর্তমান) ===
{{Warning|এই অধ্যায়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আলোচিত হওয়ায় একাডেমিক গবেষণার জন্য এটি উপযোগী নাও হতে পারে।}}
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০১৬ সালের নির্বাচন|২০১৬ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: ট্রাম্প বনাম হিলারি, তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ট্রাম্প|ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন]] {{Stage short|৫০%|২৬ ডিসেম্বর, ২০২০}}
: সুপ্রিম কোর্ট, নাগরিক অধিকার, স্পেস ফোর্স, কোভিড-১৯, ৬ জানুয়ারি হামলা
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/বাইডেন|জো বাইডেন প্রশাসন]] {{Stage short|০%|২০ জানুয়ারি, ২০২১}}
: কোভিড-১৯ অব্যাহত, আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার, ইউক্রেন যুদ্ধ
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/২০২৪ সালের নির্বাচন|২০২৪ সালের নির্বাচন]] {{Stage short|১০০%|২ মে, ২০২৫}}
: ট্রাম্প বনাম কমলা হ্যারিস, বিতর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়
; [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/আশা|আশা ও সংকট: বর্তমান ও ভবিষ্যতের আমেরিকা]] {{stage short|০%|২৫ জুন, ২০১৭}}
=== পরিশিষ্ট ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/রাষ্ট্রপতিরা|পরিশিষ্ট ক: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্টগণ]] {{stage short|৫০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ|পরিশিষ্ট খ: সুপ্রিম কোর্টের রায়সমূহ]] {{stage short|১০০%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/প্রধান বিচারপতগণ|পরিশিষ্ট গ: প্রধান বিচারপতির তালিকা]] {{stage short|৫০%|২২ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/তৃতীয় পক্ষ|পরিশিষ্ট ঘ: উল্লেখযোগ্য তৃতীয় পক্ষের দলসমূহ]] {{stage short|৭৫%|২১ মার্চ, ২০০৮}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ইরান|ইরান সংকট (২০০২-বর্তমান)]] {{stage short|১০০%|৬ এপ্রিল, ২০০৬}}
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/লেখক|লেখক]] {{stage short|১০০%|১৬ জানুয়ারি, ২০০৫}}
=== মূল শব্দাবলি (ব্যক্তি, ঘটনা ইত্যাদি) ===
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড|কি-ওয়ার্ড]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড১|কি-ওয়ার্ড১]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড২|কি-ওয়ার্ড২]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৩|কি-ওয়ার্ড৩]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৪|কি-ওয়ার্ড৪]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৫|কি-ওয়ার্ড৫]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৬|কি-ওয়ার্ড৬]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৭|কি-ওয়ার্ড৭]]
# [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড৮|কি-ওয়ার্ড৮]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিবই ==
=== সাধারণ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার/মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টীকাযুক্ত সংবিধান]]
* [[মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা|মার্কিন ইতিহাসের রূপরেখা]]
* [[এপি মার্কিন ইতিহাস|এপি মার্কিন ইতিহাস]]
=== নির্দিষ্ট মার্কিন ইতিহাস ===
* [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি জনগণের ইতিহাস]]
* [[মার্কিন বিপ্লব|মার্কিন বিপ্লব]]
=== প্রাদেশিক ইতিহাস ===
* [[হাওয়াইয়ের ইতিহাস|হাওয়াইয়ের ইতিহাস]]
** [[হাওয়াইয়ান সম্রাট|হাওয়াইয়ান সম্রাট]]
* [[ফ্লোরিডার ইতিহাস|ফ্লোরিডার ইতিহাস]]
* [[নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইতিহাস|নিউ ইয়র্ক রাজ্যের ইতিহাস]]
* [[ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস|ওয়াইয়োমিংয়ের ইতিহাস]]
* [[টেনেসির ইতিহাস|টেনেসির ইতিহাস]]
* [[নেভাদার ইতিহাস|নেভাদার ইতিহাস]]
* [[আলাস্কার ইতিহাস|আলাস্কার ইতিহাস]]
=== বিবিধ মার্কিন ইতিহাস ===
* [[আইবি আমেরিকা ইতিহাস|আইবি আমেরিকা ইতিহাস]]
* [[মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার|মিত্রসঙ্ঘীয় মার্কিন সরকার]]
== সংশ্লিষ্ট উইকিপিডিয়া নিবন্ধ ==
{{Wikipedia|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস}}
* [[w:United States Declaration of Independence|স্বাধীনতার ঘোষণা]]
* [[w:United States Constitution|মার্কিন সংবিধান]]
* [[w:United States Bill of Rights|অধিকার সনদ]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [https://www.usa.gov/history USA.gov/history] – মার্কিন সরকারের ইতিহাসবিষয়ক সংস্থান
* [https://americanhistory.si.edu/ National Museum of American History] – স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের তত্ত্বাবধানে
* [https://www.ushistory.org/ ushistory.org] – ইন্ডিপেনডেন্স হল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ
[[es:Historia de los Estados Unidos de América]]
[[fr:Histoire des États-Unis d'Amérique]]
[[ja:アメリカ合衆国史]]
[[nl:De geschiedenis van de Verenigde Staten van Amerika]]
77fautmdv4u0hkd5f7l8b00ewna7brb
ইন্দ্রিয়তন্ত্র/পতঙ্গ/হ্যালটেরেস
0
24712
85623
79714
2025-07-03T21:40:39Z
MS Sakib
6561
/* তর্জনীসমূহ */
85623
wikitext
text/x-wiki
== হ্যালটিয়ার (মাছির জন্য জাইরোস্কোপ) ==
=== ভূমিকা ===
[[File:Crane_fly_halteres.jpg|thumb|ক্রেন ফ্লাইয়ের হ্যালটিয়ার]]
হ্যালটিয়ার হলো অনেক উড়ন্ত পোকামাকড়ের একটি সংবেদনশীল অঙ্গ। ধারণা করা হয়, এটি পশ্চাদবর্তী ডানার বিবর্তনীয় রূপান্তর, যা মাছির উড়ান নিয়ন্ত্রণে অতীব গুরুত্বপূর্ণ জাইরোস্কোপিক তথ্য প্রদান করে। যদিও মাছির উড়ানের সহায়তায় অন্যান্য ব্যবস্থাও বিদ্যমান, এর দৃষ্টিশক্তি অতিদ্রুত গতিবিধি চিহ্নিত করার জন্য খুব ধীর। উপরন্তু, অল্প আলোয় উড়ে বেড়ানোর সক্ষমতা—যা শিকারীদের এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয়—হ্যালটিয়ারকে অপরিহার্য করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে, হ্যালটিয়ার ছাড়া মাছি নিয়ন্ত্রিত ও স্থায়ীভাবে উড়তে পারে না। ১৮শ শতক থেকেই বিজ্ঞানীরা হ্যালটিয়ারের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন, তবে এর কার্যপ্রণালী সম্পর্কে বিশদভাবে গবেষণা সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
<ref name="Fox_Daniel_2008">
{{cite
|title = A neural basis for gyroscopic force measurement in the halteres of Holorusia.
|author = J. L. Fox and T. L. Daniel
|journal=J Comp Physiol
|year=2008
|volume=194
|pages=887-897}}
</ref>
<ref name="R_Thompson_2009">
{{cite
|title = Haltere Mediated Flight Stabilization in Diptera: Rate Decoupling, Sensory Encoding, and Control Realization.
|author = Rhoe A. Thompson
|journal= PhD thesis
|year=2009
|publisher=University of Florida}}
</ref>
=== শারীরবৃত্ত ===
হ্যালটিয়ার মাছির দুই জোড়া ডানার মধ্যে পশ্চাদবর্তী জোড়া ডানা থেকে বিবর্তিত হয়েছে। যেখানে সামনের ডানা এখনও উড়ান কার্যে ব্যবহৃত হয়, সেখানে পশ্চাদবর্তী জোড়া তাদের উড়ান ক্ষমতা হারিয়ে ভিন্ন গঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। হ্যালটিয়ার দৃশ্যত তিনটি কাঠামোগত অংশ নিয়ে গঠিত: একপ্রান্তে একটি গাঁটযুক্ত বলের মতো অংশ, একটি সরু ডাঁটা, এবং একটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত ভিত্তি। বল অংশে প্রায় ১৩টি স্নায়ুযুক্ত লোম থাকে, এবং ভিত্তিতে দুটি কর্ডোটোনাল অঙ্গ থাকে, প্রতিটিতে প্রায় ২০–৩০টি স্নায়ু থাকে। কর্ডোটোনাল অঙ্গগুলো প্রসারণে সংবেদনশীল বলে ধারণা করা হয়, যদিও এগুলোর বিষয়ে এখনও অনেক কিছু অজানা। ভিত্তির ওপর প্রায় ৩৪০টি ক্যাম্পানিফর্ম সেন্সিলা থাকে, যা স্নায়ুযুক্ত তন্তু এবং নির্দিষ্ট দিকের চাপের প্রতি সাড়া দেয়। এই অঙ্গগুলোর অবস্থান প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণে, যা হ্যালটিয়ারে বেন্ডিং বল পরিমাপের জন্য উপযোগী। উড়ানের সময় হ্যালটিয়ার ডানার বিপরীত দিকে (অ্যান্টি-ফেজ) দুলে ওঠে। সংবেদনশীল উপাদানগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় <ref name="Pringle_1948">
{{cite
|title = The gyroscopic mechanism of the halteres of diptera.
|author = J. W. S. Pringle
|journal=Phil Trans R Soc Lond B
|year=1948
|volume=233
|number=602
|pages=347-384}}
</ref>: উল্লম্ব কম্পনের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন স্ক্যাপাল প্লেট ও হিক্স প্যাপিলা), জাইরোস্কোপিক টর্কের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন বাসাল প্লেট ও বড় কর্ডোটোনাল অঙ্গ), এবং একটি অপ্রভেদ্য প্যাপিলা গোষ্ঠী, যা যেকোনো রকম চাপের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেয়। এটি হ্যালটিয়ারে বলের দিক চিহ্নিত করতে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে।
==== জিনগত দিক ====
হোমিওবক্স জিন আবিষ্কারের সময় দেখা যায় যে *আল্টাবিথোরাসক্স* নামক হক্স জিন নিষ্ক্রিয় করলে হ্যালটিয়ার একটি স্বাভাবিক ডানায় রূপান্তরিত হয়। এটি হক্স জিনের কার্যপ্রণালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। অনুরূপভাবে, *এ্যান্টেনাপিডিয়া* জিনে পরিবর্তন করলে পা বিকৃত হতে পারে, এমনকি মাথায় অ্যান্টেনার স্থলে পা তৈরি হতে পারে।
=== কার্যপ্রণালী ===
হ্যালটিয়ার *কোরিওলিস বল* শনাক্ত করে মাছির ঘূর্ণন বুঝতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের কৌণিক বেগ হ্যালটিয়ার দ্বারা পরিমাপিত কোরিওলিস বল দ্বারা এনকোড করা হয় <ref name="Pringle_1948"/>। হ্যালটিয়ার আশেপাশের স্নায়ু বা পেশীগুলোর ক্রিয়া উদ্দীপিত করতে পারে, ফলে মাছির উড়ান গতিবিধিতে পরিবর্তন আনে। এর প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত, যা মাছিকে খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে, যা দৃষ্টিশক্তি দিয়ে সম্ভব নয়। মাছি তার দুই হ্যালটিয়ারের সংকেত একত্র করে ঘূর্ণনের দিক (যেমন পিচ ও রোল) চিহ্নিত করতে পারে। হ্যালটিয়ার মাছির মাথা ও ডানার প্রতিক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে, ফলে দৃষ্টিক্ষেত্র স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
=== গাণিতিক বিশ্লেষণ ===
গবেষণায় দেখা গেছে, হ্যালটিয়ার এমন সংকেতে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে, যা কোরিওলিস বলের দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সির সমান। এটি হ্যালটিয়ারের মাধ্যমে বল পরিমাপের সম্ভাবনা প্রমাণ করে। কোরিওলিস বল, হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ ও মাছির ঘূর্ণনের ভেক্টর ক্রস-প্রোডাক্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়। উল্লম্ব ও অনুভূমিক ঘূর্ণন হারের হিসাব হ্যালটিয়ারের চলাচল থেকে নির্ণয়যোগ্য। কারণ উল্লম্ব ও অনুভূমিক চলাচলের মাঝে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে, উল্লম্ব উপাদান দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করে।
হ্যালটিয়ারের কৌণিক অবস্থান γ অনুমান করা যায় এভাবে:
<math>
\gamma = \frac{\pi}{ 2}\sin(\omega t)
</math>
এখানে ω হলো হ্যালটিয়ারের বিট ফ্রিকোয়েন্সি, আর অ্যাম্প্লিটিউড ১৮০ ডিগ্রি।
মাছির শরীরের ঘূর্ণনের বিভিন্ন উপাদান (W₁, W₂, W₃) হ্যালটিয়ার থেকে নির্ণয় করা যায়, যেখানে Ω<sub>b</sub> ও Ω<sub>c</sub> বাম ও ডান হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ:
<math>
W_{1} = - \frac{\Omega_{b3} + \Omega_{c3} }{2\sin(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{2} = \frac{\Omega_{b3} - \Omega_{c3} }{2\cos(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{3} = - \frac{\Omega_{b1} + \Omega_{c1} }{2}
</math><br />
এখানে α হলো হ্যালটিয়ারের দোলনের কৌণিক দিক। এক্ষেত্রে হ্যালটিয়ারের শেষ প্রান্তে প্রয়োগকৃত বল হিসাব করা যায়:
<math>
F = mg - ma_{i} - ma_{F} - m\dot{\Omega_{i}}\times r_{i} -m\Omega_{i}\times (\Omega_{i}\times r_{i} ) - 2m\Omega_{i} \times v_{i}
</math><br />
এখানে, *m* হলো হ্যালটিয়ারের গাঁটের ভর, *g* হলো মাধ্যাকর্ষণ ত্বরণ, *r<sub>i</sub>*, *v<sub>i</sub>*, *a<sub>i</sub>* যথাক্রমে অবস্থান, বেগ ও ত্বরণ (মাছির শরীরের তুলনায়), *a<sub>F</sub>* মাছির ত্বরণ, এবং Ω<sub>i</sub>, Ώ<sub>i</sub> হলো কৌণিক বেগ ও ত্বরণ। এই সমীকরণে ২mΩ × v<sub>i</sub> টার্মটি কোরিওলিস বল উপস্থাপন করে। প্রতিটি হ্যালটিয়ারের জন্য আলাদাভাবে এই সমীকরণ ব্যবহার করতে হবে।
=== তথ্যসূত্র===
{{reflist}}
{{BookCat}}
9dw73zpwrnjqymjlmocvs2mu7r2hrl1
85624
85623
2025-07-03T21:41:47Z
MS Sakib
6561
85624
wikitext
text/x-wiki
== হ্যালটিয়ার (মাছির জন্য জাইরোস্কোপ) ==
=== ভূমিকা ===
[[File:Crane_fly_halteres.jpg|thumb|ক্রেন ফ্লাইয়ের হ্যালটিয়ার]]
হ্যালটিয়ার হলো অনেক উড়ন্ত পোকামাকড়ের একটি সংবেদনশীল অঙ্গ। ধারণা করা হয়, এটি পশ্চাদবর্তী ডানার বিবর্তনীয় রূপান্তর। এটি মাছির উড়ান নিয়ন্ত্রণে অতীব গুরুত্বপূর্ণ জাইরোস্কোপিক তথ্য প্রদান করে। যদিও মাছির উড়ানের সহায়তায় অন্যান্য ব্যবস্থাও বিদ্যমান, এর দৃষ্টিশক্তি অতিদ্রুত গতিবিধি চিহ্নিত করার জন্য খুব ধীর। উপরন্তু, অল্প আলোয় উড়ে বেড়ানোর সক্ষমতা—যা শিকারীদের এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয়—হ্যালটিয়ারকে অপরিহার্য করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে, হ্যালটিয়ার ছাড়া মাছি নিয়ন্ত্রিত ও স্থায়ীভাবে উড়তে পারে না। ১৮শ শতক থেকেই বিজ্ঞানীরা হ্যালটিয়ারের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন, তবে এর কার্যপ্রণালী সম্পর্কে বিশদভাবে গবেষণা সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
<ref name="Fox_Daniel_2008">
{{cite
|title = A neural basis for gyroscopic force measurement in the halteres of Holorusia.
|author = J. L. Fox and T. L. Daniel
|journal=J Comp Physiol
|year=2008
|volume=194
|pages=887-897}}
</ref>
<ref name="R_Thompson_2009">
{{cite
|title = Haltere Mediated Flight Stabilization in Diptera: Rate Decoupling, Sensory Encoding, and Control Realization.
|author = Rhoe A. Thompson
|journal= PhD thesis
|year=2009
|publisher=University of Florida}}
</ref>
=== শারীরবৃত্ত ===
হ্যালটিয়ার মাছির দুই জোড়া ডানার মধ্যে পশ্চাদবর্তী জোড়া ডানা থেকে বিবর্তিত হয়েছে। যেখানে সামনের ডানা এখনও উড়ান কার্যে ব্যবহৃত হয়, সেখানে পশ্চাদবর্তী জোড়া তাদের উড়ান ক্ষমতা হারিয়ে ভিন্ন গঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। হ্যালটিয়ার দৃশ্যত তিনটি কাঠামোগত অংশ নিয়ে গঠিত: একপ্রান্তে একটি গাঁটযুক্ত বলের মতো অংশ, একটি সরু ডাঁটা, এবং একটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত ভিত্তি। বল অংশে প্রায় ১৩টি স্নায়ুযুক্ত লোম থাকে, এবং ভিত্তিতে দুটি কর্ডোটোনাল অঙ্গ থাকে, প্রতিটিতে প্রায় ২০–৩০টি স্নায়ু থাকে। কর্ডোটোনাল অঙ্গগুলো প্রসারণে সংবেদনশীল বলে ধারণা করা হয়, যদিও এগুলোর বিষয়ে এখনও অনেক কিছু অজানা। ভিত্তির ওপর প্রায় ৩৪০টি ক্যাম্পানিফর্ম সেন্সিলা থাকে। এটি স্নায়ুযুক্ত তন্তু এবং নির্দিষ্ট দিকের চাপের প্রতি সাড়া দেয়। এই অঙ্গগুলোর অবস্থান প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণে। এটি হ্যালটিয়ারে বেন্ডিং বল পরিমাপের জন্য উপযোগী। উড়ানের সময় হ্যালটিয়ার ডানার বিপরীত দিকে (অ্যান্টি-ফেজ) দুলে ওঠে। সংবেদনশীল উপাদানগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় <ref name="Pringle_1948">
{{cite
|title = The gyroscopic mechanism of the halteres of diptera.
|author = J. W. S. Pringle
|journal=Phil Trans R Soc Lond B
|year=1948
|volume=233
|number=602
|pages=347-384}}
</ref>: উল্লম্ব কম্পনের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন স্ক্যাপাল প্লেট ও হিক্স প্যাপিলা), জাইরোস্কোপিক টর্কের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন বাসাল প্লেট ও বড় কর্ডোটোনাল অঙ্গ), এবং একটি অপ্রভেদ্য প্যাপিলা গোষ্ঠী। এটি যেকোনো রকম চাপের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেয়। এটি হ্যালটিয়ারে বলের দিক চিহ্নিত করতে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে।
==== জিনগত দিক ====
হোমিওবক্স জিন আবিষ্কারের সময় দেখা যায় যে ''আল্টাবিথোরাসক্স'' নামক হক্স জিন নিষ্ক্রিয় করলে হ্যালটিয়ার একটি স্বাভাবিক ডানায় রূপান্তরিত হয়। এটি হক্স জিনের কার্যপ্রণালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। অনুরূপভাবে, ''এ্যান্টেনাপিডিয়া'' জিনে পরিবর্তন করলে পা বিকৃত হতে পারে, এমনকি মাথায় অ্যান্টেনার স্থলে পা তৈরি হতে পারে।
=== কার্যপ্রণালী ===
হ্যালটিয়ার ''কোরিওলিস বল'' শনাক্ত করে মাছির ঘূর্ণন বুঝতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের কৌণিক বেগ হ্যালটিয়ার দ্বারা পরিমাপিত কোরিওলিস বল দ্বারা এনকোড করা হয় <ref name="Pringle_1948"/>। হ্যালটিয়ার আশেপাশের স্নায়ু বা পেশীগুলোর ক্রিয়া উদ্দীপিত করতে পারে, ফলে মাছির উড়ান গতিবিধিতে পরিবর্তন আনে। এর প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত। এটি মাছিকে খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে। এটি দৃষ্টিশক্তি দিয়ে সম্ভব নয়। মাছি তার দুই হ্যালটিয়ারের সংকেত একত্র করে ঘূর্ণনের দিক (যেমন পিচ ও রোল) চিহ্নিত করতে পারে। হ্যালটিয়ার মাছির মাথা ও ডানার প্রতিক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে, ফলে দৃষ্টিক্ষেত্র স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
=== গাণিতিক বিশ্লেষণ ===
গবেষণায় দেখা গেছে, হ্যালটিয়ার এমন সংকেতে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এটি কোরিওলিস বলের দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সির সমান। এটি হ্যালটিয়ারের মাধ্যমে বল পরিমাপের সম্ভাবনা প্রমাণ করে। কোরিওলিস বল, হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ ও মাছির ঘূর্ণনের ভেক্টর ক্রস-প্রোডাক্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়। উল্লম্ব ও অনুভূমিক ঘূর্ণন হারের হিসাব হ্যালটিয়ারের চলাচল থেকে নির্ণয়যোগ্য। কারণ উল্লম্ব ও অনুভূমিক চলাচলের মাঝে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে, উল্লম্ব উপাদান দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করে।
হ্যালটিয়ারের কৌণিক অবস্থান γ অনুমান করা যায় এভাবে:
<math>
\gamma = \frac{\pi}{ 2}\sin(\omega t)
</math>
এখানে ω হলো হ্যালটিয়ারের বিট ফ্রিকোয়েন্সি, আর অ্যাম্প্লিটিউড ১৮০ ডিগ্রি।
মাছির শরীরের ঘূর্ণনের বিভিন্ন উপাদান (W₁, W₂, W₃) হ্যালটিয়ার থেকে নির্ণয় করা যায়, যেখানে Ω<sub>b</sub> ও Ω<sub>c</sub> বাম ও ডান হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ:
<math>
W_{1} = - \frac{\Omega_{b3} + \Omega_{c3} }{2\sin(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{2} = \frac{\Omega_{b3} - \Omega_{c3} }{2\cos(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{3} = - \frac{\Omega_{b1} + \Omega_{c1} }{2}
</math><br />
এখানে α হলো হ্যালটিয়ারের দোলনের কৌণিক দিক। এক্ষেত্রে হ্যালটিয়ারের শেষ প্রান্তে প্রয়োগকৃত বল হিসাব করা যায়:
<math>
F = mg - ma_{i} - ma_{F} - m\dot{\Omega_{i}}\times r_{i} -m\Omega_{i}\times (\Omega_{i}\times r_{i} ) - 2m\Omega_{i} \times v_{i}
</math><br />
এখানে, ''m'' হলো হ্যালটিয়ারের গাঁটের ভর, ''g'' হলো মাধ্যাকর্ষণ ত্বরণ, ''r<sub>i</sub>'', ''v<sub>i</sub>'', ''a<sub>i</sub>'' যথাক্রমে অবস্থান, বেগ ও ত্বরণ (মাছির শরীরের তুলনায়), ''a<sub>F</sub>'' মাছির ত্বরণ, এবং Ω<sub>i</sub>, Ώ<sub>i</sub> হলো কৌণিক বেগ ও ত্বরণ। এই সমীকরণে ২mΩ × v<sub>i</sub> টার্মটি কোরিওলিস বল উপস্থাপন করে। প্রতিটি হ্যালটিয়ারের জন্য আলাদাভাবে এই সমীকরণ ব্যবহার করতে হবে।
=== তথ্যসূত্র===
{{reflist}}
{{BookCat}}
in0rinbjoeeh85hpz1l6cb1l50x9eeq
85625
85624
2025-07-03T21:42:40Z
MS Sakib
6561
85625
wikitext
text/x-wiki
== হ্যালটিয়ার (মাছির জন্য জাইরোস্কোপ) ==
=== ভূমিকা ===
[[File:Crane_fly_halteres.jpg|thumb|ক্রেন ফ্লাইয়ের হ্যালটিয়ার]]
হ্যালটিয়ার হলো অনেক উড়ন্ত পোকামাকড়ের একটি সংবেদনশীল অঙ্গ। ধারণা করা হয়, এটি পশ্চাদবর্তী ডানার বিবর্তনীয় রূপান্তর। এটি মাছির উড়ান নিয়ন্ত্রণে অতীব গুরুত্বপূর্ণ জাইরোস্কোপিক তথ্য প্রদান করে। যদিও মাছির উড়ানের সহায়তায় অন্যান্য ব্যবস্থাও বিদ্যমান, এর দৃষ্টিশক্তি অতিদ্রুত গতিবিধি চিহ্নিত করার জন্য খুব ধীর। উপরন্তু, অল্প আলোয় উড়ে বেড়ানোর সক্ষমতা শিকারীদের এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয়। এটি হ্যালটিয়ারকে অপরিহার্য করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে, হ্যালটিয়ার ছাড়া মাছি নিয়ন্ত্রিত ও স্থায়ীভাবে উড়তে পারে না। ১৮শ শতক থেকেই বিজ্ঞানীরা হ্যালটিয়ারের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন, তবে এর কার্যপ্রণালী সম্পর্কে বিশদভাবে গবেষণা সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে।
<ref name="Fox_Daniel_2008">
{{cite
|title = A neural basis for gyroscopic force measurement in the halteres of Holorusia.
|author = J. L. Fox and T. L. Daniel
|journal=J Comp Physiol
|year=2008
|volume=194
|pages=887-897}}
</ref>
<ref name="R_Thompson_2009">
{{cite
|title = Haltere Mediated Flight Stabilization in Diptera: Rate Decoupling, Sensory Encoding, and Control Realization.
|author = Rhoe A. Thompson
|journal= PhD thesis
|year=2009
|publisher=University of Florida}}
</ref>
=== শারীরবৃত্ত ===
হ্যালটিয়ার মাছির দুই জোড়া ডানার মধ্যে পশ্চাদবর্তী জোড়া ডানা থেকে বিবর্তিত হয়েছে। যেখানে সামনের ডানা এখনও উড়ান কার্যে ব্যবহৃত হয়, সেখানে পশ্চাদবর্তী জোড়া তাদের উড়ান ক্ষমতা হারিয়ে ভিন্ন গঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। হ্যালটিয়ার দৃশ্যত তিনটি কাঠামোগত অংশ নিয়ে গঠিত: একপ্রান্তে একটি গাঁটযুক্ত বলের মতো অংশ, একটি সরু ডাঁটা, এবং একটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত ভিত্তি। বল অংশে প্রায় ১৩টি স্নায়ুযুক্ত লোম থাকে, এবং ভিত্তিতে দুটি কর্ডোটোনাল অঙ্গ থাকে, প্রতিটিতে প্রায় ২০–৩০টি স্নায়ু থাকে। কর্ডোটোনাল অঙ্গগুলো প্রসারণে সংবেদনশীল বলে ধারণা করা হয়, যদিও এগুলোর বিষয়ে এখনও অনেক কিছু অজানা। ভিত্তির ওপর প্রায় ৩৪০টি ক্যাম্পানিফর্ম সেন্সিলা থাকে। এটি স্নায়ুযুক্ত তন্তু এবং নির্দিষ্ট দিকের চাপের প্রতি সাড়া দেয়। এই অঙ্গগুলোর অবস্থান প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণে। এটি হ্যালটিয়ারে বেন্ডিং বল পরিমাপের জন্য উপযোগী। উড়ানের সময় হ্যালটিয়ার ডানার বিপরীত দিকে (অ্যান্টি-ফেজ) দুলে ওঠে। সংবেদনশীল উপাদানগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় <ref name="Pringle_1948">
{{cite
|title = The gyroscopic mechanism of the halteres of diptera.
|author = J. W. S. Pringle
|journal=Phil Trans R Soc Lond B
|year=1948
|volume=233
|number=602
|pages=347-384}}
</ref>: উল্লম্ব কম্পনের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন স্ক্যাপাল প্লেট ও হিক্স প্যাপিলা), জাইরোস্কোপিক টর্কের প্রতি সংবেদনশীল (যেমন বাসাল প্লেট ও বড় কর্ডোটোনাল অঙ্গ), এবং একটি অপ্রভেদ্য প্যাপিলা গোষ্ঠী। এটি যেকোনো রকম চাপের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেয়। এটি হ্যালটিয়ারে বলের দিক চিহ্নিত করতে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে।
==== জিনগত দিক ====
হোমিওবক্স জিন আবিষ্কারের সময় দেখা যায় যে ''আল্টাবিথোরাসক্স'' নামক হক্স জিন নিষ্ক্রিয় করলে হ্যালটিয়ার একটি স্বাভাবিক ডানায় রূপান্তরিত হয়। এটি হক্স জিনের কার্যপ্রণালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। অনুরূপভাবে, ''এ্যান্টেনাপিডিয়া'' জিনে পরিবর্তন করলে পা বিকৃত হতে পারে, এমনকি মাথায় অ্যান্টেনার স্থলে পা তৈরি হতে পারে।
=== কার্যপ্রণালী ===
হ্যালটিয়ার ''কোরিওলিস বল'' শনাক্ত করে মাছির ঘূর্ণন বুঝতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের কৌণিক বেগ হ্যালটিয়ার দ্বারা পরিমাপিত কোরিওলিস বল দ্বারা এনকোড করা হয় <ref name="Pringle_1948"/>। হ্যালটিয়ার আশেপাশের স্নায়ু বা পেশীগুলোর ক্রিয়া উদ্দীপিত করতে পারে, ফলে মাছির উড়ান গতিবিধিতে পরিবর্তন আনে। এর প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত। এটি মাছিকে খুবই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে। এটি দৃষ্টিশক্তি দিয়ে সম্ভব নয়। মাছি তার দুই হ্যালটিয়ারের সংকেত একত্র করে ঘূর্ণনের দিক (যেমন পিচ ও রোল) চিহ্নিত করতে পারে। হ্যালটিয়ার মাছির মাথা ও ডানার প্রতিক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে, ফলে দৃষ্টিক্ষেত্র স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
=== গাণিতিক বিশ্লেষণ ===
গবেষণায় দেখা গেছে, হ্যালটিয়ার এমন সংকেতে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এটি কোরিওলিস বলের দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সির সমান। এটি হ্যালটিয়ারের মাধ্যমে বল পরিমাপের সম্ভাবনা প্রমাণ করে। কোরিওলিস বল, হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ ও মাছির ঘূর্ণনের ভেক্টর ক্রস-প্রোডাক্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়। উল্লম্ব ও অনুভূমিক ঘূর্ণন হারের হিসাব হ্যালটিয়ারের চলাচল থেকে নির্ণয়যোগ্য। কারণ উল্লম্ব ও অনুভূমিক চলাচলের মাঝে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে, উল্লম্ব উপাদান দ্বিগুণ ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করে।
হ্যালটিয়ারের কৌণিক অবস্থান γ অনুমান করা যায় এভাবে:
<math>
\gamma = \frac{\pi}{ 2}\sin(\omega t)
</math>
এখানে ω হলো হ্যালটিয়ারের বিট ফ্রিকোয়েন্সি, আর অ্যাম্প্লিটিউড ১৮০ ডিগ্রি।
মাছির শরীরের ঘূর্ণনের বিভিন্ন উপাদান (W₁, W₂, W₃) হ্যালটিয়ার থেকে নির্ণয় করা যায়, যেখানে Ω<sub>b</sub> ও Ω<sub>c</sub> বাম ও ডান হ্যালটিয়ারের কৌণিক বেগ:
<math>
W_{1} = - \frac{\Omega_{b3} + \Omega_{c3} }{2\sin(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{2} = \frac{\Omega_{b3} - \Omega_{c3} }{2\cos(\alpha)}
</math><br />
<math>
W_{3} = - \frac{\Omega_{b1} + \Omega_{c1} }{2}
</math><br />
এখানে α হলো হ্যালটিয়ারের দোলনের কৌণিক দিক। এক্ষেত্রে হ্যালটিয়ারের শেষ প্রান্তে প্রয়োগকৃত বল হিসাব করা যায়:
<math>
F = mg - ma_{i} - ma_{F} - m\dot{\Omega_{i}}\times r_{i} -m\Omega_{i}\times (\Omega_{i}\times r_{i} ) - 2m\Omega_{i} \times v_{i}
</math><br />
এখানে, ''m'' হলো হ্যালটিয়ারের গাঁটের ভর, ''g'' হলো মাধ্যাকর্ষণ ত্বরণ, ''r<sub>i</sub>'', ''v<sub>i</sub>'', ''a<sub>i</sub>'' যথাক্রমে অবস্থান, বেগ ও ত্বরণ (মাছির শরীরের তুলনায়), ''a<sub>F</sub>'' মাছির ত্বরণ, এবং Ω<sub>i</sub>, Ώ<sub>i</sub> হলো কৌণিক বেগ ও ত্বরণ। এই সমীকরণে ২mΩ × v<sub>i</sub> টার্মটি কোরিওলিস বল উপস্থাপন করে। প্রতিটি হ্যালটিয়ারের জন্য আলাদাভাবে এই সমীকরণ ব্যবহার করতে হবে।
=== তথ্যসূত্র===
{{reflist}}
{{BookCat}}
blqcinngfcecrrpyv01sealp5uo3dyl
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত
0
24719
85605
77933
2025-07-03T17:34:03Z
Mehedi Abedin
7113
85605
wikitext
text/x-wiki
== প্রাক-ঔপনিবেশিক আমেরিকা ==
অ্যাজটেক<br>
ইনকা<br>
মায়া<br>
মানব বলিদান<br>
উপজাতি<br>
==যাযাবর এবং বর্বর==
ভাইকিং<br>
গথ<br>
ভিসাগোথ<br>
ভ্যান্ডাল<br>
কোনান<br>
হুন<br>
কুট্রিগুরি
আরামথিয়ার জোসেফ
ব্রিটানিয়া<br>
নর্ডিক তত্ত্ব<br>
আইসল্যান্ড<br>
==ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬০০-১৭৬৩)==
[[উইকিপিডিয়া:জেমসটাউন|জেমসটাউন]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জন রোল্ফ|জন রোল্ফ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:ক্যাপ্টেন জন স্মিথ|ক্যাপ্টেন জন স্মিথ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পাওয়াটন|পাওয়াটন]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:হাউস অফ বার্গেসেস|হাউস অফ বার্গেসেস]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:মেফ্লাওয়ার কম্প্যাক্ট|মেফ্লাওয়ার কম্প্যাক্ট]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পিলগ্রিমস|পিলগ্রিমস]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:প্লাইমাউথ|প্লাইমাউথ]] (ম্যাসাচুসেটস বে কলোনি)<br>
[[উইকিপিডিয়া:উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড|উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:বিচ্ছিন্নতাবাদী|বিচ্ছিন্নতাবাদী]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পিউরিটান্স|পিউরিটান্স]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জন উইনথ্রপ|জন উইনথ্রপ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:হাফওয়ে কভেন্যান্ট|হাফওয়ে কভেন্যান্ট]]<br>
রজার উইলিয়ামস এবং অ্যান হাচিনসন<br>
[[উইকিপিডিয়া:দেববাদ|দেববাদ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:মহাজাগরণ|মহাজাগরণ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জর্জ হোয়াইটফিল্ড|জর্জ হোয়াইটফিল্ড]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জোনাথন এডওয়ার্ডস|জোনাথন এডওয়ার্ডস]]<br>
[http://www.nhsbluedevils.org/sanchez/Outlines/Chapter%205%20Outline.doc পুরাতন আলো বনাম নতুন আলো ]<br>
অনুমোদিত দাসত্ব<br>
উপকারী অবহেলা<br>
আলোকিতকরণ<br>
মহিমান্বিত বিপ্লব<br>
লেইসলারের বিদ্রোহ<br>
স্যার এডমন্ড অ্যান্ড্রোস<br>
ব্যাকনের বিদ্রোহ<br>
ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধ<br>
১৭৬৩ সালের ঘোষণা
উইলিয়াম পেন<br>
বাণিজ্যবাদ<br>
সহনশীলতা আইন, ১৬৪৯<br>
ন্যাভিগেশন আইন<br>
মোলাসেস আইন<br>
টুপি আইন<br>
লোহা আইন<br>
স্ট্যাম্প আইন<br>
==মার্কিন বিপ্লব (১৭৫০-১৮০০)==
[[উইকিপিডিয়া:১৭৬৩ সালের ঘোষণাপত্র|১৭৬৩ সালের ঘোষণাপত্র]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:প্যাক্সটন বয়েজ|প্যাক্সটন বয়েজ]]<br>
নিয়ন্ত্রক<br>
ডাকটিকেট আইন<br>
স্ট্যাক্ট কংগ্রেস<br>
ভার্চুয়াল বনাম প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব<br>
স্যামুয়েল অ্যাডামস<br>
চা আইন<br>
বোস্টন টি পার্টি<br>
জবরদস্তিমূলক আইন অসহনীয়<br>
টমাস পেইনের 'সাধারণ জ্ঞান'<br>
স্বাধীনতার পুত্র<br>
প্যাট্রিক হেনরি<br>
ফ্রাঙ্কো-মার্কিন জোট (১৭৭৮)<br>
প্যারিস চুক্তি (১৭৮৩)<br>
[[উইকিপিডিয়া:শে'স বিদ্রোহ|শে'স বিদ্রোহ]]
== একটি জাতির জন্ম (১৭৮০-এর দশক)==
মিত্রসংঘের ধারা<br>
১৭৮৫ সালের উত্তর-পশ্চিম অধ্যাদেশ<br>
শে'স বিদ্রোহ<br>
মহান আপোষ<br>
তিন-পঞ্চম আপোষ<br>
ফেডারেলবাদী<br>
ফেডারেলবিরোধী<br>
ফেডারেলবাদী কাগজপত্র<br>
অধিকার বিল<br>
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ব্যাংক<br>
আলেকজান্ডার হ্যামিলশন<br>
ফেডারেলবাদী দল<br>
১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন<br>
পিঙ্কনি চুক্তি<br>
জে'স চুক্তি<br>
বিদেশী এবং রাষ্ট্রদ্রোহ আইন<br>
ভার্জিনিয়া ও কেনটাকি প্রস্তাব<br>
ওয়াশিংটনের নিরপেক্ষতা ঘোষণা<br>
ওয়াশিংটনের বিদায়ী ভাষণ<br><br>
{{chapnav|লেখক|সংকেত১}}
kaeglxw7yp6ephlngvm0mttu358iqn2
85606
85605
2025-07-03T17:34:20Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড]] কে [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85605
wikitext
text/x-wiki
== প্রাক-ঔপনিবেশিক আমেরিকা ==
অ্যাজটেক<br>
ইনকা<br>
মায়া<br>
মানব বলিদান<br>
উপজাতি<br>
==যাযাবর এবং বর্বর==
ভাইকিং<br>
গথ<br>
ভিসাগোথ<br>
ভ্যান্ডাল<br>
কোনান<br>
হুন<br>
কুট্রিগুরি
আরামথিয়ার জোসেফ
ব্রিটানিয়া<br>
নর্ডিক তত্ত্ব<br>
আইসল্যান্ড<br>
==ঔপনিবেশিক আমেরিকা (১৬০০-১৭৬৩)==
[[উইকিপিডিয়া:জেমসটাউন|জেমসটাউন]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জন রোল্ফ|জন রোল্ফ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:ক্যাপ্টেন জন স্মিথ|ক্যাপ্টেন জন স্মিথ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পাওয়াটন|পাওয়াটন]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:হাউস অফ বার্গেসেস|হাউস অফ বার্গেসেস]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:মেফ্লাওয়ার কম্প্যাক্ট|মেফ্লাওয়ার কম্প্যাক্ট]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পিলগ্রিমস|পিলগ্রিমস]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:প্লাইমাউথ|প্লাইমাউথ]] (ম্যাসাচুসেটস বে কলোনি)<br>
[[উইকিপিডিয়া:উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড|উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:বিচ্ছিন্নতাবাদী|বিচ্ছিন্নতাবাদী]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:পিউরিটান্স|পিউরিটান্স]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জন উইনথ্রপ|জন উইনথ্রপ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:হাফওয়ে কভেন্যান্ট|হাফওয়ে কভেন্যান্ট]]<br>
রজার উইলিয়ামস এবং অ্যান হাচিনসন<br>
[[উইকিপিডিয়া:দেববাদ|দেববাদ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:মহাজাগরণ|মহাজাগরণ]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জর্জ হোয়াইটফিল্ড|জর্জ হোয়াইটফিল্ড]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:জোনাথন এডওয়ার্ডস|জোনাথন এডওয়ার্ডস]]<br>
[http://www.nhsbluedevils.org/sanchez/Outlines/Chapter%205%20Outline.doc পুরাতন আলো বনাম নতুন আলো ]<br>
অনুমোদিত দাসত্ব<br>
উপকারী অবহেলা<br>
আলোকিতকরণ<br>
মহিমান্বিত বিপ্লব<br>
লেইসলারের বিদ্রোহ<br>
স্যার এডমন্ড অ্যান্ড্রোস<br>
ব্যাকনের বিদ্রোহ<br>
ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধ<br>
১৭৬৩ সালের ঘোষণা
উইলিয়াম পেন<br>
বাণিজ্যবাদ<br>
সহনশীলতা আইন, ১৬৪৯<br>
ন্যাভিগেশন আইন<br>
মোলাসেস আইন<br>
টুপি আইন<br>
লোহা আইন<br>
স্ট্যাম্প আইন<br>
==মার্কিন বিপ্লব (১৭৫০-১৮০০)==
[[উইকিপিডিয়া:১৭৬৩ সালের ঘোষণাপত্র|১৭৬৩ সালের ঘোষণাপত্র]]<br>
[[উইকিপিডিয়া:প্যাক্সটন বয়েজ|প্যাক্সটন বয়েজ]]<br>
নিয়ন্ত্রক<br>
ডাকটিকেট আইন<br>
স্ট্যাক্ট কংগ্রেস<br>
ভার্চুয়াল বনাম প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব<br>
স্যামুয়েল অ্যাডামস<br>
চা আইন<br>
বোস্টন টি পার্টি<br>
জবরদস্তিমূলক আইন অসহনীয়<br>
টমাস পেইনের 'সাধারণ জ্ঞান'<br>
স্বাধীনতার পুত্র<br>
প্যাট্রিক হেনরি<br>
ফ্রাঙ্কো-মার্কিন জোট (১৭৭৮)<br>
প্যারিস চুক্তি (১৭৮৩)<br>
[[উইকিপিডিয়া:শে'স বিদ্রোহ|শে'স বিদ্রোহ]]
== একটি জাতির জন্ম (১৭৮০-এর দশক)==
মিত্রসংঘের ধারা<br>
১৭৮৫ সালের উত্তর-পশ্চিম অধ্যাদেশ<br>
শে'স বিদ্রোহ<br>
মহান আপোষ<br>
তিন-পঞ্চম আপোষ<br>
ফেডারেলবাদী<br>
ফেডারেলবিরোধী<br>
ফেডারেলবাদী কাগজপত্র<br>
অধিকার বিল<br>
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ব্যাংক<br>
আলেকজান্ডার হ্যামিলশন<br>
ফেডারেলবাদী দল<br>
১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন<br>
পিঙ্কনি চুক্তি<br>
জে'স চুক্তি<br>
বিদেশী এবং রাষ্ট্রদ্রোহ আইন<br>
ভার্জিনিয়া ও কেনটাকি প্রস্তাব<br>
ওয়াশিংটনের নিরপেক্ষতা ঘোষণা<br>
ওয়াশিংটনের বিদায়ী ভাষণ<br><br>
{{chapnav|লেখক|সংকেত১}}
kaeglxw7yp6ephlngvm0mttu358iqn2
অধ্যয়ন দক্ষতা/বিকল্প কৌশল
0
24733
85602
77747
2025-07-03T17:15:29Z
Mehedi Abedin
7113
85602
wikitext
text/x-wiki
{{TOCright}}
==অধ্যয়ন প্রযুক্তি==
প্রত্যেক ব্যক্তির একটি নির্দিষ্ট শেখার ধরণ থাকে, যা কেবল অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই আবিষ্কার করা যায়। নতুন প্রযুক্তির মিশ্রণ আপনার শেখার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে পারে। এখানে কিছু উপায় অন্বেষণ করা হল:
===টেক্সট টু স্পিচ===
আপনি যদি টেক্সট ফাইল বা ইন্টারনেটে পাওয়া যায় এমন কোনও টেক্সট অধ্যয়ন করেন, তাহলে আপনি সম্ভবত এটিকে কম বা বিনামূল্যে কথ্য উপস্থাপনায় রূপান্তর করতে পারেন। তবে সেরা ফলাফলের জন্য কেবল এটি শুনবেন না, একই সাথে পড়ুন এবং শুনুন। বহু-সংবেদী অভিজ্ঞতার প্রভাব বেশি। এছাড়াও, স্পিচ-টু-টেক্সট পড়ার সময় শোনা আধুনিক পাঠকদের একটি স্বল্প-পরিচিত সমস্যার সমাধান করে, যারা পড়ার সময়ও এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা রাখে।
ডাউনলোড.কম ("টেক্সট" এবং "স্পিচ" কীওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করুন) এর মতো সাইটগুলিতে পাওয়া টেক্সট-টু-স্পিচ প্রোগ্রামগুলি গতকালের আবেগহীন কম্পিউটারাইজড কণ্ঠস্বর থেকে অনেক উন্নতি করেছে। উইকিপিডিয়ায় [[w:eSpeak|ইস্পিক]] নামক একটি ওপেন সোর্স টেক্সট টু স্পিচ প্রোগ্রাম সম্পর্কে আরও পডতে পারেন।
===মাইন্ড ম্যাপিং===
[[File:Water mind mapping.png|thumb|মাইন্ড ম্যাপ একটি বিষয় সম্পর্কিত তথ্য পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে।]]
অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের রূপরেখা দক্ষতা শেখানোর চেষ্টা করেছে। জ্ঞানের "হাড় লিখে রাখার" ক্ষমতাকে এটি বোঝার একটি চাবিকাঠি বলে মনে করা হত। ব্যক্তিগত কম্পিউটারের আবির্ভাবের সাথে সাথে বিস্তৃত রূপরেখা প্রোগ্রাম প্রকাশ করা হয়েছিল যা সম্পর্কিত পরিশ্রম কমানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রূপরেখার প্রবণতা ম্লান হয়ে যায়। (খুব সহজ, দরকারী এবং সস্তা সফ্টওয়্যার রূপরেখা প্রোগ্রাম হল ভল্ট, মূল্যায়নের জন্য উপলব্ধ [http://www.swreg.org/soft_shop/2423/shopscr2.shtml এখানে])
একটি খুব সহজে ব্যবহারযোগ্য বিনামূল্যের ওপেন-সোর্স জাভা-ভিত্তিক মাইন্ড ম্যাপিং স্টাইল অ্যাপ্লিকেশন হল [[w:FreeMind|ফ্রিমাইন্ড]]। মাইন্ড ম্যাপিং সম্পর্কে প্রথম শেখার সময় আপনার মাইন্ড ম্যাপের প্রতিটি লিঙ্কে একটি করে কীওয়ার্ড নির্ধারণের অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ।<ref>http://www.geosoc.org/schools/pass/memory/memmindmap.htm নোট নেওয়ার পার্থক্য</ref>
===টেক্সটে বক্তৃতা===
আপনি আপনার বক্তৃতা লিখে নিতে পারেন এবং স্পিচ রিকগনিশন সফ্টওয়্যার দিয়ে টাইপ করা লেখায় রূপান্তর করতে পারেন, যা আপনার বক্তৃতাকে টাইপিংয়ে রূপান্তর করে। [https://simon.kde.org/ KDE Simon]-এ একটি ওপেন সোর্স এবং ফ্রি স্পিচ টু টেক্সট সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
==স্বাধীন অধ্যয়ন==
স্কুলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায়শই আপনার কোর্সওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলির স্বাধীন অধ্যয়ন জড়িত থাকে। যদিও এটি আমাদের বেশিরভাগের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে যারা শিক্ষকের নির্দেশনার উপর নির্ভর করার জন্য প্রশিক্ষিত, স্বাধীন বৃত্তিতে জড়িত হওয়ার সুবিধাগুলি প্রচেষ্টার যোগ্য।
স্বাধীন বৃত্তির সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:
*আরও ব্যক্তিগতকৃত বিষয়বস্তু
*বিষয়বস্তুর দ্রুত এবং আরও দক্ষ কভারেজ
*সামগ্রিকভাবে অধ্যয়ন দক্ষতার উন্নতি
*স্ব-পরিচালিত অধ্যয়ন আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত শেখার ধরণ আবিষ্কার করতে সাহায্য করে
*স্বাধীন অধ্যয়ন থেকে অর্জিত দক্ষতা আপনার অন্যান্য কোর্সওয়ার্কে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই দক্ষতাগুলির মধ্যে রয়েছে সময় ব্যবস্থাপনা, সংগঠন, গবেষণা এবং লেখার দক্ষতা এবং উপাদানের সাথে সৃজনশীলভাবে জড়িত হওয়া।
*আপনার আগ্রহগুলি অন্বেষণ করতে সাহায্য করতে পারে এবং এমনকি প্রধান বিষয়গুলিতে পরিবর্তন আনতে পারে
*একটি কোর্সের ধারণাগুলি মনোবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানের মতো অন্যদের সম্পর্কে সৃজনশীলভাবে চিন্তা করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে; একটি আন্তঃবিষয়ক প্রধান বিষয় হিসাবে অধ্যয়ন করা যেতে পারে
স্বাধীন অধ্যয়নের একমাত্র নেতিবাচক দিক হল আপনি আপনার কাজের জন্য প্রকৃত কৃতিত্ব নাও পেতে পারেন। যদি এটি আপনার জন্য একটি সমস্যা হয়, তাহলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার জন্য অধ্যয়ন করতে বেছে নিতে পারেন যা আপনার একাডেমিক পেশাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে, জেনে রাখুন যে বেশিরভাগ অধ্যাপক তাদের ক্লাসে এমন লোকদের পেয়ে রোমাঞ্চিত হবেন যারা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ব্যাপকভাবে পড়েছেন এবং ক্লাস আলোচনায় অবদান রাখার জন্য কিছু মৌলিক বিষয় রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী কেবল এই কারণেই সেখানে থাকে যে তাদের চাকরি পেতে ডিগ্রি নিতে হয়, এবং অধ্যাপকরা মুগ্ধ হবেন যে আপনি কেবল শেখার জন্য বিষয়গুলি নিজে নিজে অধ্যয়ন করেছেন। আপনি সিএলইপি, বা কলেজ স্তরের পরীক্ষা প্রোগ্রাম থেকে স্বাধীন অধ্যয়নের জন্য কৃতিত্বও পেতে পারেন। সিএলইপি সম্পর্কে তাদের নীতি কী তা জানতে আপনার স্কুলের সাথে যোগাযোগ করুন।
স্ব-পরিচালিত অধ্যয়নে একটি নাটকীয় দৃষ্টান্ত পরিবর্তন জড়িত যেখানে একজন ব্যক্তি নিজের শেখার জন্য দায়ী। এটি একজনের ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ়তার একটি দুর্দান্ত পরীক্ষা এবং এটি বিষয়ের প্রতি এবং সাধারণভাবে শেখার প্রতি আপনার মনোভাবের উপর নির্ভর করে।
সাধারণ স্কুলে শেখাকে ছোট ধারণা থেকে প্রধান ধারণা তৈরি হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ বীজগণিতের পৃথক কাজগুলি কীভাবে করতে হয় তা শেখে এবং তারপরে বীজগণিতের সামগ্রিক ধারণার প্রকৃতি উপলব্ধি করতে আসে।
স্ব-পরিচালিত শিক্ষার বিপরীত দাবি করে, আপনি প্রথমে যে বিষয়ের বিষয়ে অধ্যয়ন করতে চান তার মূল ধারণাটি উপলব্ধি করুন এবং তারপরে সমস্ত শূন্যস্থান পূরণ করুন। এটি এমন একটি দক্ষতা যা বিকাশে সময় নেয়।
==আরও দেখুন==
*[[স্পিড রিডিং]]
*[[ইন্টেলিজেন্স ইনটেনসিফিকেশন]]
== তথ্যসূত্র ==
{{Reflist}}
{{Bookcat}}
pm4797mp13eecp8s0hpz4ouwxp5hfov
85603
85602
2025-07-03T17:17:45Z
Mehedi Abedin
7113
85603
wikitext
text/x-wiki
{{TOCright}}
==অধ্যয়ন প্রযুক্তি==
প্রত্যেক ব্যক্তির একটি নির্দিষ্ট শেখার ধরণ থাকে, যা কেবল অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই আবিষ্কার করা যায়। নতুন প্রযুক্তির মিশ্রণ আপনার শেখার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে পারে। এখানে কিছু উপায় অন্বেষণ করা হল:
===টেক্সট টু স্পিচ===
আপনি যদি টেক্সট ফাইল বা ইন্টারনেটে পাওয়া যায় এমন কোনও টেক্সট অধ্যয়ন করেন, তাহলে আপনি সম্ভবত এটিকে কম বা বিনামূল্যে কথ্য উপস্থাপনায় রূপান্তর করতে পারেন। তবে সেরা ফলাফলের জন্য কেবল এটি শুনবেন না, একই সাথে পড়ুন এবং শুনুন। বহু-সংবেদী অভিজ্ঞতার প্রভাব বেশি। এছাড়াও, স্পিচ-টু-টেক্সট পড়ার সময় শোনা আধুনিক পাঠকদের একটি স্বল্প-পরিচিত সমস্যার সমাধান করে, যারা পড়ার সময়ও এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা রাখে।
ডাউনলোড.কম ("টেক্সট" এবং "স্পিচ" কীওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করুন) এর মতো সাইটগুলিতে পাওয়া টেক্সট-টু-স্পিচ প্রোগ্রামগুলি গতকালের আবেগহীন কম্পিউটারাইজড কণ্ঠস্বর থেকে অনেক উন্নতি করেছে। উইকিপিডিয়ায় [[w:eSpeak|ইস্পিক]] নামক একটি ওপেন সোর্স টেক্সট টু স্পিচ প্রোগ্রাম সম্পর্কে আরও পডতে পারেন।
===মাইন্ড ম্যাপিং===
[[File:Water mind mapping.png|thumb|মাইন্ড ম্যাপ একটি বিষয় সম্পর্কিত তথ্য পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে।]]
অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের রূপরেখা দক্ষতা শেখানোর চেষ্টা করেছে। জ্ঞান "মজ্জাগতভাবে অর্জনের" ক্ষমতাকে এটি বোঝার একটি চাবিকাঠি বলে মনে করা হত। ব্যক্তিগত কম্পিউটারের আবির্ভাবের সাথে সাথে বিস্তৃত রূপরেখা প্রোগ্রাম প্রকাশ করা হয়েছিল যা সম্পর্কিত পরিশ্রম কমানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রূপরেখার প্রবণতা ম্লান হয়ে যায়। (খুব সহজ, দরকারী এবং সস্তা সফ্টওয়্যার রূপরেখা প্রোগ্রাম হল ভল্ট, মূল্যায়নের জন্য উপলব্ধ [http://www.swreg.org/soft_shop/2423/shopscr2.shtml এখানে])
একটি খুব সহজে ব্যবহারযোগ্য বিনামূল্যের ওপেন-সোর্স জাভা-ভিত্তিক মাইন্ড ম্যাপিং স্টাইল অ্যাপ্লিকেশন হল [[w:FreeMind|ফ্রিমাইন্ড]]। মাইন্ড ম্যাপিং সম্পর্কে প্রথম শেখার সময় আপনার মাইন্ড ম্যাপের প্রতিটি লিঙ্কে একটি করে কীওয়ার্ড নির্ধারণের অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ।<ref>http://www.geosoc.org/schools/pass/memory/memmindmap.htm নোট নেওয়ার পার্থক্য</ref>
===টেক্সটে বক্তৃতা===
আপনি আপনার বক্তৃতা লিখে নিতে পারেন এবং স্পিচ রিকগনিশন সফ্টওয়্যার দিয়ে টাইপ করা লেখায় রূপান্তর করতে পারেন, যা আপনার বক্তৃতাকে টাইপিংয়ে রূপান্তর করে। [https://simon.kde.org/ KDE Simon]-এ একটি ওপেন সোর্স এবং ফ্রি স্পিচ টু টেক্সট সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে।
==স্বাধীন অধ্যয়ন==
স্কুলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায়শই আপনার কোর্সওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলির স্বাধীন অধ্যয়ন জড়িত থাকে। যদিও এটি আমাদের বেশিরভাগের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে যারা শিক্ষকের নির্দেশনার উপর নির্ভর করার জন্য প্রশিক্ষিত, স্বাধীন বৃত্তিতে জড়িত হওয়ার সুবিধাগুলি প্রচেষ্টার যোগ্য।
স্বাধীন বৃত্তির সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:
*আরও ব্যক্তিগতকৃত বিষয়বস্তু
*বিষয়বস্তুর দ্রুত এবং আরও দক্ষ কভারেজ
*সামগ্রিকভাবে অধ্যয়ন দক্ষতার উন্নতি
*স্ব-পরিচালিত অধ্যয়ন আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত শেখার ধরণ আবিষ্কার করতে সাহায্য করে
*স্বাধীন অধ্যয়ন থেকে অর্জিত দক্ষতা আপনার অন্যান্য কোর্সওয়ার্কে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই দক্ষতাগুলির মধ্যে রয়েছে সময় ব্যবস্থাপনা, সংগঠন, গবেষণা এবং লেখার দক্ষতা এবং উপাদানের সাথে সৃজনশীলভাবে জড়িত হওয়া।
*আপনার আগ্রহগুলি অন্বেষণ করতে সাহায্য করতে পারে এবং এমনকি প্রধান বিষয়গুলিতে পরিবর্তন আনতে পারে
*একটি কোর্সের ধারণাগুলি মনোবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞানের মতো অন্যদের সম্পর্কে সৃজনশীলভাবে চিন্তা করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে; একটি আন্তঃবিষয়ক প্রধান বিষয় হিসাবে অধ্যয়ন করা যেতে পারে
স্বাধীন অধ্যয়নের একমাত্র নেতিবাচক দিক হল আপনি আপনার কাজের জন্য প্রকৃত কৃতিত্ব নাও পেতে পারেন। যদি এটি আপনার জন্য একটি সমস্যা হয়, তাহলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার জন্য অধ্যয়ন করতে বেছে নিতে পারেন যা আপনার একাডেমিক পেশাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে, জেনে রাখুন যে বেশিরভাগ অধ্যাপক তাদের ক্লাসে এমন লোকদের পেয়ে রোমাঞ্চিত হবেন যারা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ব্যাপকভাবে পড়েছেন এবং ক্লাস আলোচনায় অবদান রাখার জন্য কিছু মৌলিক বিষয় রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী কেবল এই কারণেই সেখানে থাকে যে তাদের চাকরি পেতে ডিগ্রি নিতে হয়, এবং অধ্যাপকরা মুগ্ধ হবেন যে আপনি কেবল শেখার জন্য বিষয়গুলি নিজে নিজে অধ্যয়ন করেছেন। আপনি সিএলইপি, বা কলেজ স্তরের পরীক্ষা প্রোগ্রাম থেকে স্বাধীন অধ্যয়নের জন্য কৃতিত্বও পেতে পারেন। সিএলইপি সম্পর্কে তাদের নীতি কী তা জানতে আপনার স্কুলের সাথে যোগাযোগ করুন।
স্ব-পরিচালিত অধ্যয়নে একটি নাটকীয় দৃষ্টান্ত পরিবর্তন জড়িত যেখানে একজন ব্যক্তি নিজের শেখার জন্য দায়ী। এটি একজনের ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ়তার একটি দুর্দান্ত পরীক্ষা এবং এটি বিষয়ের প্রতি এবং সাধারণভাবে শেখার প্রতি আপনার মনোভাবের উপর নির্ভর করে।
সাধারণ স্কুলে শেখাকে ছোট ধারণা থেকে প্রধান ধারণা তৈরি হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ বীজগণিতের পৃথক কাজগুলি কীভাবে করতে হয় তা শেখে এবং তারপরে বীজগণিতের সামগ্রিক ধারণার প্রকৃতি উপলব্ধি করতে আসে।
স্ব-পরিচালিত শিক্ষার বিপরীত দাবি করে, আপনি প্রথমে যে বিষয়ের বিষয়ে অধ্যয়ন করতে চান তার মূল ধারণাটি উপলব্ধি করুন এবং তারপরে সমস্ত শূন্যস্থান পূরণ করুন। এটি এমন একটি দক্ষতা যা বিকাশে সময় নেয়।
==আরও দেখুন==
*[[স্পিড রিডিং]]
*[[ইন্টেলিজেন্স ইনটেনসিফিকেশন]]
== তথ্যসূত্র ==
{{Reflist}}
{{Bookcat}}
kbmsx9bq1gq98x5zadgf26xaw3y9udj
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ ও বিভাজন
0
24886
85597
85576
2025-07-03T16:51:17Z
Mehedi Abedin
7113
85597
wikitext
text/x-wiki
== ১৮১২ সালের যুদ্ধ ==
ওয়াশিংটন, অ্যাডামস এবং জেফারসন চেষ্টা করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নেপোলিয়নের ফ্রান্স ও তার মিত্রদের এবং গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও তাদের মিত্রদের মধ্যে সংঘাতে নিরপেক্ষ রাখতে। বিপ্লবী যুদ্ধের সময় ফ্রান্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্য ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। ব্রিটেন ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যকার বাণিজ্যে বাধা দিতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিধিনিষেধগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে বিরোধিতা করেছিল। মার্কিন কংগ্রেস ১৮১২ সালের ১৮ জুন ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর কারণ ছিল ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে হাজার হাজার মার্কিন নাবিককে জোরপূর্বক নিয়োগ, নিরপেক্ষ বাণিজ্যে ব্রিটিশ বিধিনিষেধ এবং মার্কিন বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের সমর্থনে ব্রিটিশ সামরিক সহায়তার প্রতি ক্ষোভ।
ইতিহাসবিদ রবিন রেইলি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ফরাসি কূটনীতির জয় ছিল। এটি ব্রিটেনকে ইউরোপীয় বিষয় থেকে মনোযোগ এবং কিছু সম্পদ সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছিল। ব্রিটেনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধের কোনো কারণ ছিল না। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্রিটেন মার্কিন সরবরাহ, যেমন গরুর মাংস এবং ওক কাঠের উপর নির্ভর করত। উত্তর আমেরিকায় যেকোনো যুদ্ধ ডিউক অফ ওয়েলিংটনের সেনাবাহিনীর জন্য স্পেনে ফরাসিদের পরাজিত করার প্রচেষ্টায় বিঘ্ন সৃষ্টি করত।
=== যুদ্ধের রাজনীতি ===
[[File:James Madison.jpg|thumb|upright|১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যাডিসনের ১৮১৬ সালের প্রতিকৃতি।]]
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জেফারসন এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ম্যাডিসন উভয়েই ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকান ছিলেন, তারা ব্রিটিশ আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং কানাডা দখলের আশায় যুদ্ধ সমর্থন করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি ম্যাডিসন এবং তার উপদেষ্টারা ভেবেছিলেন কানাডা দখল করা সহজ হবে। তারা আশা করেছিলেন নেপোলিয়নের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে ব্রিটিশরা মার্কিনদের জমি দিয়ে দেবে। (প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি থমাস জেফারসন বলেছিলেন, "এই বছর কুইবেকের আশেপাশে কানাডা দখল করা শুধুমাত্র অগ্রসর হওয়ার ব্যাপার। এটি আমাদের হ্যালিফ্যাক্স আক্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে এবং আমেরিকান মহাদেশ থেকে ইংল্যান্ডকে চূড়ান্তভাবে বিতাড়িত করবে।") নিউ ইংল্যান্ডের ফেডারেলিস্ট যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। এই যুদ্ধ দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের আরও জমি দখলের ইচ্ছা থেকে কিছুটা প্রভাবিত ছিল। নিউ ইংল্যান্ডে যুদ্ধ খুবই অজনপ্রিয় ছিল। কারণ, নিউ ইংল্যান্ডের অর্থনীতি বাণিজ্যের উপর নির্ভর করত, বিশেষ করে গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে। যুদ্ধ ঘোষণা অত্যন্ত সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে পাস হয়েছিল। অ্যাডামস প্রশাসনের শেষে দুর্বল হয়ে পড়া ফেডারেলিস্ট পার্টি নিউ ইংল্যান্ডের নাগরিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা ফিরে পায়। এদিকে, গ্রেট ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী স্পেন্সার পার্সিভাল একজন ক্ষুব্ধ প্রাক্তন বণিকের গুলিতে নিহত হন। এর ফলে লর্ড লিভারপুল সরকারের দায়িত্ব নেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চেয়েছিলেন। তিনি জোরপূর্বক নিয়োগের আদেশ বাতিল করেন। কিন্তু ততক্ষণে যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ফেডারেলিস্টরা বিদ্রোহী ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকানদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ১৮১২ সালের নির্বাচনে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র ডিউইট ক্লিনটনকে প্রেসিডেন্ট পদে সমর্থন করেন। ক্লিনটন রাষ্ট্রপতি ম্যাডিসনের কাছে ১২৮-৮৯ ভোটে হেরে যান। এটি একজন যুদ্ধকালীন রাষ্ট্রপতি বিরুদ্ধে সম্মানজনক ফলাফল ছিল। ফেডারেলিস্টরা কংগ্রেসের কিছু আসন জিতেছিল এবং অনেক স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হয়। কিন্তু যুদ্ধের সমর্থক দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল দৃঢ়ভাবে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকানদের পক্ষে ছিল।
=== ১৮১২ সালের যুদ্ধ ===
[[File:Principal Campaigns of the War of 1812.gif|thumb|১৮১২ সালের যুদ্ধের প্রধান প্রচারণার মানচিত্র।]]
'''১৮১২ সালের যুদ্ধ''' ১৮১২ থেকে ১৮১৫ সাল পর্যন্ত চলেছিল। এতে স্থল ও নৌযুদ্ধ উভয়ই হয়েছিল। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের মধ্যে ছিল তাদের আমেরিকান উপনিবেশ, বিশেষ করে আপার কানাডা (বর্তমানে অন্টারিও), লোয়ার কানাডা (কুইবেক), নোভা স্কটিয়া এবং বারমুডা। ব্রিটিশরা আটলান্টিক মহাসাগর থেকে মিসিসিপি নদী পর্যন্ত সমস্ত মার্কিন ভূমি স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছিল (স্প্যানিশ ফ্লোরিডা বাদ ছিল)। তারা তখনো মার্কিন ভূখণ্ডে দুর্গ বজায় রেখেছিল। ব্রিটিশরা টেকুমসেহের মতো আদিবাসীদের নিয়োগ করেছিল মার্কিন বসতি স্থাপনকারীদের বিরক্ত করতে। তারা মার্কিন মাটিতে দুর্গ বজায় রেখেছিল। ব্রিটিশরা আদিবাসী উপজাতিদের মার্কিন বসতি স্থাপনকারীদের হয়রানি করতে উৎসাহিত করেছিল। ওহাইও উপত্যকা এবং কেনটাকি অঞ্চলে পশম বাণিজ্যের জন্য ব্রিটিশরা আগ্রহী ছিল।
কোনো দেশই এই সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত ছিল না। মার্কিনরা সৈন্য নিয়োগের জন্য বোনাস এবং তিন মাসের বেতন ও পশ্চিমে ১৬০ একর জমি কেনার অধিকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এতে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল। এটি মার্কিন সীমান্ত এবং সমুদ্রে বিশেষভাবে সত্য ছিল। সেখানে মার্কিন নাবিকদের ব্রিটিশ রাজকীয় নেভিতে জোরপূর্বক নিয়োগ করা হয়েছিল। ব্রিটিশরা নেপোলিয়নের ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল। ব্রিটিশদের উত্তর আমেরিকায় মাত্র ৫,০০০ সৈন্য ছিল। নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ ইউরোপে চলছিল। ব্রিটিশ নৌবাহিনী ইউরোপের উপকূলের বেশিরভাগ অংশ অবরোধ করেছিল। ১৮১২ সালে ওয়েস্ট পয়েন্টে মার্কিন সামরিক একাডেমি (১৮০২ সালে প্রতিষ্ঠিত) মাত্র ৮৯ জন নিয়মিত অফিসার তৈরি করেছিল। সিনিয়র সেনা অফিসাররা ছিলেন বিপ্লবী যুদ্ধের প্রবীণ বা রাজনৈতিকভাবে নিযুক্ত। মার্কিন সামরিক বাহিনী ব্রিটিশদের তুলনায় এখনও অসংগঠিত এবং অশৃঙ্খল ছিল। নিউ ইংল্যান্ড এবং নিউ ইয়র্কের মিলিশিয়ারা প্রায়ই তাদের নিজ নিজ রাজ্যের বাইরে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করত। তারা যখন যুদ্ধ করত, তখন প্রায়ই পিছু হটত। সৈন্যের জন্য মরিয়া হয়ে নিউ ইয়র্ক দাসদের মুক্তির প্রস্তাব দেয় যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হত। মার্কিন সেনাবাহিনী ওল্ড নর্থওয়েস্ট এবং কানাডায় দাসদের জন্য একই প্রস্তাব দিয়েছিল। ফিলাডেলফিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ নেতারা শহর রক্ষার জন্য একটি কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিগেড গঠন করেছিল। কিন্তু দূরবর্তী দক্ষিণে দাসদের অস্ত্র দেওয়ার ভয় তাদের সামরিক বাহিনী থেকে দূরে রেখেছিল। এমনকি স্প্যানিশ নিয়ন্ত্রণের সময় লুইজিয়ানায় প্রতিষ্ঠিত নিউ অরলিন্সের মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ মিলিশিয়াকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশরা দাসদের মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়োগ করতে পারত। মার্কিনদের শৃঙ্খলার অভাব এবং নিউ ইংল্যান্ডের যুদ্ধের প্রতি বিতৃষ্ণা রাষ্ট্রপতি ল ম্যাডিসনের পক্ষে যুদ্ধ পরিচালনাকে আরও কঠিন করে তুলেছিল।
==== আটলান্টিক থিয়েটার ====
মার্কিন নৌবাহিনী তখনও বিশ বছরের পুরনো ছিল না। এর মাত্র ২২টি জাহাজ ছিল। যুদ্ধের প্রথম দিকে ব্রিটিশরা তাদের নেপোলিয়ন বিরোধী নৌবহর থেকে অনেক জাহাজ ছাড়তে পারেনি। মার্কিনদের নিয়মিত নৌবাহিনী ছাড়াও সরকার ব্যক্তিগত জাহাজকে অনুমতি দিয়েছিল। এই ব্যক্তিগত জাহাজগুলো ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ আক্রমণ ও ধ্বংস করতে পারত। তারা জাহাজে পাওয়া যেকোনো মাল নিতে পারত। এটি মূলত বৈধ জলদস্যুতা ছিল। ব্রিটিশরাও ব্যক্তিগত জাহাজ ব্যবহার করত। ব্রিটিশরা কানাডায় তাদের জাহাজ রক্ষা করার পরিকল্পনা করেছিল। তারা মার্কিন বন্দরগুলো অবরোধ করেছিল। তবে যুদ্ধের প্রথম দিকে আটলান্টিকে মার্কিন নৌবিজয়ের একটি ধারা ছিল।
[[File:USS Constitution v HMS Guerriere.jpg|thumb|ইউএসএস কনস্টিটিউশন এইচএমএস গুয়েরিয়েরকে ধ্বংস করে। এই যুদ্ধে ইউএসএস কনস্টিটিউশনের ডাকনাম হয় ''ওল্ড আয়রনসাইডস''।]]
১৯ আগস্ট নোভা স্কটিয়ার উপকূলে ইউএসএস ''কনস্টিটিউশন'' এইচএমএস ''গুয়েরিয়ের''-এর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এটি ছিল প্রথম নৌযুদ্ধ। এইচএমএস গুয়েরিয়েরের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন ড্যাক্রেস। তিনি নিশ্চিত ছিলেন ব্রিটিশ নৌবাহিনী মার্কিন কনস্টিটিউশন দখল করতে পারবে। তিনি বলেছিলেন, "৪৫ মিনিটে একটি ইয়াঙ্কি ফ্রিগেট আসছে, এটি নিশ্চিতভাবে আমাদের হবে। পনেরো মিনিটে তাকে নিয়ে নাও, আমি তোমাদের চার মাসের বেতন দেব।" কনস্টিটিউশন ২৫ ফুট দূরে না আসা পর্যন্ত গুলি ছোড়েনি। তারা কামান এবং গ্রেপ শট উভয়ই ছুড়েছিল। যুদ্ধের মাঝখানে গুয়েরিয়েরের একটি কামানের গোলা কনস্টিটিউশনের পাশে লেগে ফিরে আসে। একজন মার্কিন নাবিক চিৎকার করে বলেন, "হুজ্জা! এর পাশগুলো লোহার তৈরি!" গুয়েরিয়ের ব্রিটিশ অবরোধ কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি নির্দয়ভাবে পরাজিত হয়। তার ক্রুদের বন্দী হিসেবে জাহাজে আনা হয়। মার্কিন ক্যাপ্টেন হাল বুঝতে পারেন ব্রিটিশ জাহাজটি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে তা উদ্ধার করা যাবে না। তাই এটিকে আগুন ধরিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। এই বিজয়ের খবরে বোস্টন উৎসবে মেতে ওঠে।
কিন্তু আটলান্টিকে কিছু বিজয় সত্ত্বেও মার্কিন নৌবাহিনী শক্তিশালী ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সঙ্গে পেরে ওঠেনি। ব্রিটিশরা আটলান্টিক এবং উপসাগরীয় উপকূলে প্রায় প্রতিটি মার্কিন বন্দর অবরোধ করেছিল। ব্রিটিশরা মার্কিনীদের এতটাই অবরোধ করেছিল যে ১৮১১ সালে মার্কিন বাণিজ্য প্রায় ৯০% কমে যায়। এই বড় ক্ষতি মার্কিন সরকারকে দেউলিয়া করার হুমকি দেয়।
১৮১২ সালের অক্টোবরে ক্যাপ্টেন উইলিয়াম বেইনব্রিজের নেতৃত্বে ''কনস্টিটিউশন'' ব্রাজিলের উপকূলে এইচএমএস ''জাভা''-এর বিরুদ্ধে আরেকটি বিজয় অর্জন করে। এই দ্বিতীয় ব্রিটিশ জাহাজটিও উদ্ধারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু কনস্টিটিউশন অক্ষত থাকে। এই প্রবীণ জাহাজটি সমুদ্রে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে প্রথম কিছু বিজয়ে ''ওল্ড আয়রনসাইডস'' ডাকনাম পায়। জেনারেল হালের নেতৃত্বে বিজয় মার্কিনদের নতুন আশা জাগায়। এটি ১৮১২ সালের ১৫ আগস্ট ওহাইওর ফোর্ট ডিয়ারবর্নের যুদ্ধে হারের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়। এই যুদ্ধে জেনারেল হাল আহত হন এবং আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।
বারবারি যুদ্ধে খ্যাতি অর্জনকারী মার্কিন ক্যাপ্টেন স্টিফেন ডেকাটুরও প্রাথমিক নৌবিজয়ে সক্ষম হন। ১৮১২ সালের ২৫ অক্টোবর ডেকাটুর ইউএসএস ''ইউনাইটেড স্টেটস''-এর নেতৃত্বে এইচএমএস ''ম্যাসিডোনিয়ান'' দখল করেন। ১৮১৩ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপ্টেন ডেভিড পোর্টার ইউএসএস ''এসেক্স''-কে প্রশান্ত মহাসাগরে নিয়ে যান। তিনি আমেরিকান তিমি শিকার শিল্পে ব্রিটিশ তিমি শিকারী জাহাজের হয়রানির জবাব দেন। এসেক্স ব্রিটিশ তিমি শিকারী জাহাজের প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করে। অবশেষে ১৮১৪ সালের ২৮ মার্চ চিলির উপকূলে এটি ধরা পড়ে।
তবে আটলান্টিক উপকূলে স্যার জন কোপ শেরব্রুক ১৮১৪ সালের সেপ্টেম্বরে পেনোবস্কট অভিযান শুরু করেন। তিনি পাঁচশ ব্রিটিশ নাবিকের নেতৃত্ব দেন। এটি মেইনের উপকূলে (তখন ম্যাসাচুসেটসের অংশ) ছিল। এটি ব্রিটিশ এবং আমেরিকানদের মধ্যে চোরাচালানের প্রধান কেন্দ্র ছিল। ছাব্বিশ দিনে শেরব্রুক বেশ কয়েকটি শহরে হামলা ও লুটপাট করে। তারা সতেরোটি আমেরিকান জাহাজ ধ্বংস করে। তারা হ্যাম্পডেনের যুদ্ধে জয়ী হয় এবং যুদ্ধের বাকি সময় কাস্টিন দখল করে রাখে।
==== গ্রেট লেক/কানাডিয়ান/পশ্চিমা থিয়েটার ====
[[File:Battle erie.jpg|thumb|লেক ইরি যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ ছিল। এটি মার্কিনদের ডেট্রয়েট পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।]]
যুক্তরাষ্ট্রের কানাডায় স্থলপথে আক্রমণের প্রচেষ্টা ছিল ব্যর্থ। পশ্চিমা থিয়েটারে যুদ্ধ মূলত মিশিগান, ওহাইও এবং কানাডার সীমান্ত এলাকায় হয়েছিল। ভূগোল এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান নির্ধারণ করেছিল। এটি প্রধানত লেক ইরি, নায়াগ্রা নদী, লেক অন্টারিও, সেন্ট লরেন্স নদী এবং লেক চ্যামপ্লেইনের আশেপাশে ছিল।
==== চেসাপিক অভিযান ====
[[File:British Burning Washington.jpg|thumb|ব্রিটিশরা ওয়াশিংটন ডিসি পুড়িয়ে দেয়।]]
চেসাপিক উপসাগর ছিল বাণিজ্য, ব্যবসা এবং সরকারের কেন্দ্র। ব্রিটিশরা ১৮১৩ এবং ১৮১৪ সালে চেসাপিক এলাকায় যুদ্ধ নিয়ে আসে।<ref>http://starspangled200.org/History/Pages/ChesapeakeCampaign.aspx</ref> ১৮১৩ সালের ৪ জুলাই জোশুয়া বার্নি নৌবিভাগকে বিশটি বার্জ তৈরি করতে রাজি করান। এগুলো চেসাপিক উপসাগর রক্ষার জন্য ছিল। এই বার্জগুলো রয়্যাল নেভিকে হয়রানিতে সফল হয়। কিন্তু যুদ্ধের সামগ্রিক গতিপথে এগুলো অকেজো ছিল।
১৮১৪ সালে নেপোলিয়ন পরাজিত হলে ব্রিটিশরা যুক্তরাষ্ট্রে আরও জাহাজ পাঠায়। ওই বছরের ২৪ আগস্ট ব্রিটিশ সৈন্যরা ওয়াশিংটন শহরে অগ্রসর হয়। নৌবাহিনী তাদের সমর্থন দিতে প্রস্তুত ছিল। ব্রিটিশরা হোয়াইট হাউস, ক্যাপিটল এবং বন্দরে থাকা মার্কিন জাহাজ পুড়িয়ে দেয়। লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। সেই সন্ধ্যায় বৃষ্টি না হলে শহরের আরও অংশ পুড়ে যেত। রাষ্ট্রপতি জেমস ম্যাডিসনের স্ত্রী ডলি ম্যাডিসনকে কয়েক ঘণ্টা আগে চিঠির মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি, তার স্ত্রী এবং তার মন্ত্রিসভা পালিয়ে যান। ডলি ম্যাডিসন প্রথমে গিলবার্ট স্টুয়ার্টের জর্জ ওয়াশিংটনের একটি জীবন্ত আকারের চিত্র নিয়ে যান। (প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি থমাস জেফারসন লাইব্রেরির ধ্বংসের কথা শুনে এটি পুনরায় তৈরির প্রস্তাব দেন। ১৮১৫ সালের মে মাসে সরকার জেফারসনের নিজের লাইব্রেরির ৬,৭০০টি বই ২৩,৯৫০ ডলারে কিনে নেয়।) ভবনগুলো সারা রাত জ্বলতে থাকে। তবে এই ব্রিটিশ আক্রমণ ছিল বাল্টিমোরের যুদ্ধের জন্য একটি বিভ্রান্তি। এখানে ব্রিটিশরা বন্দর অবরোধ করে এবং একই সময়ে স্থল ও সমুদ্রপথে তিনটি দুর্গে আক্রমণ করে। তবে এই অপ্রতিরোধ্য আক্রমণ সত্ত্বেও সব দুর্গ সামান্য ক্ষতি নিয়ে টিকে থাকে। ফোর্ট ম্যাকহেনরি সকালে তার পতাকা উত্তোলন করে। ব্রিটিশ সৈন্যরা প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের নৌবহর নিউ অরলিন্সে পুনরায় সংগঠিত হতে এবং যুদ্ধ করতে চলে যায়। ফ্রান্সিস স্কট কি নামে একজন মার্কিনীকে একটি ব্রিটিশ জাহাজে রাতভর আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি একজন মার্কিন নাগরিকের মানবিক মুক্তির জন্য অনুরোধ করেছিলেন। পতাকা উত্তোলন দেখে তার হৃদয় উত্তেজিত হয়। তিনি এই উপলক্ষ্যে কিছু কবিতা লেখেন। একটি পুরনো ব্রিটিশ পানশালার গানের সুরে সেট করা হয়। এটি পরে মার্কিন জাতীয় সঙ্গীত “দ্য স্টার-স্প্যাঙ্গলড ব্যানার” হয়।
==== দক্ষিণ থিয়েটার ====
[[File:Battle Horseshoe Bend 1814.jpg|thumb|upright|হর্সশু বেন্ডের যুদ্ধ।]]
১৮১৪ সালে মার্কিন বন্দরের অবরোধ এতটাই শক্ত হয়েছিল যে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজগুলো শক্তিশালী বাহিনীর মুখোমুখি না হয়ে যাত্রা করতে পারছিল না। ১৮১৪ সালের আগস্টে মার্কিন এবং ব্রিটিশ আলোচকরা বেলজিয়ামের ঘেন্টে শান্তি আলোচনার জন্য মিলিত হন। '''ঘেন্টের চুক্তি''' ডিসেম্বরে যুদ্ধ শেষ করে। কিন্তু এটি যুদ্ধের আগের নীতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে না। খবর দ্রুত পাঠানোর কোনো উপায় না থাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কয়েক সপ্তাহ ধরে চুক্তির খবর পায়নি।
মার্কিনদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আদিবাসীদের সমর্থনের নীতির অংশ হিসেবে ব্রিটিশরা দক্ষিণে ক্রিক ইন্ডিয়ানদের সাহায্য করছিল। ১৮১৪ সালের মার্চে জেনারেল অ্যান্ড্রু জ্যাকসন এবং জেনারেল জন কফি প্রায় ২,০০০ টেনেসি মিলিশিয়া, চক্টো, চেরোকি এবং মার্কিন নিয়মিত সৈন্য নিয়ে ক্রিক ইন্ডিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। প্রধান মেনাওয়ার নেতৃত্বে ১,০০০ ক্রিকের মধ্যে ৮০০ জন হর্সশু বেন্ডের যুদ্ধে নিহত হন। জ্যাকসনের বাহিনীর মাত্র ৪৯ জন নিহত হয়। জ্যাকসন বাকি ক্রিকদের তাড়া করেন যতক্ষণ না তারা আত্মসমর্পণ করে।
বছরের শেষে জেনারেল জ্যাকসন আবার অগ্রসর হন। এবার তিনি নিউ অরলিন্স, লুইজিয়ানায় ব্রিটিশ আক্রমণের বিরুদ্ধে রক্ষার জন্য বাহিনী নেতৃত্ব দেন। যুদ্ধের শেষ এবং সবচেয়ে বড় যুদ্ধগুলোর একটিতে জ্যাকসন ব্রিটিশ বাহিনীকে নির্দয়ভাবে পরাজিত করেন। ১,৭৮৪ ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়। আমেরিকানরা মাত্র ২১০ জন হারায়। ব্রিটিশরা নিউ অরলিন্স ত্যাগ করে। এই যুদ্ধ জেনারেল জ্যাকসনকে নায়ক করে তোলে। ব্রিটিশরা মোবাইল উপসাগর দখল করে এবং ফোর্ট বোয়ারের যুদ্ধে জয়ী হয়। কিন্তু পরে তাদের শুধু চলে যেতে হয়।
==== যুদ্ধের সমাপ্তি ====
[[File:Battle of New Orleans.jpg|thumb|নিউ অরলিন্সের যুদ্ধ]]
যুদ্ধ শেষ হলে ১,৬০০ ব্রিটিশ এবং ২,২৬০ মার্কিন সৈন্য নিহত হয়। ধীর যোগাযোগের কারণে নিউ ইংল্যান্ডে নিউ অরলিন্সের যুদ্ধে মার্কিন সাফল্যের খবর পৌঁছায়নি। নিরাশাবাদীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচ্ছিন্নতা বা পরাজয়ের আশঙ্কা করেছিল। কিন্তু ১৮১৫ সালের প্রথম দিকে ঘেন্টের চুক্তির খবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছলে ভয় কেটে যায়। কোনো পক্ষই সম্পূর্ণ বিজয় দাবি করতে পারেনি। তবে মার্কিনীরা এই ভেবে উৎসাহিত হয় যে তারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে টলেনি।
মার্কিন কূটনীতি বিজয়ী হয়েছিল। এটি বিপ্লব এবং লুইজিয়ানা ক্রয়ের মতোই ছিল। যদি ১৮১৫ সালে নেপোলিয়নের যুদ্ধ শেষ না হতো তবে ব্রিটিশরা এক লক্ষ প্রবীণ সৈন্য এবং তাদের নৌবাহিনীর পূর্ণ শক্তি সংগঠিত করতে পারত।
=== হার্টফোর্ড সম্মেলন ===
নিউ ইংল্যান্ডের বণিক এবং জাহাজ মালিকরা জেফারসন প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি (১৮০৭ সালের এমবার্গো আইন) এবং ম্যাডিসন প্রশাসনের (১৮০৯ সালের নন-ইন্টারকোর্স আইন) নীতির জন্য ইতিমধ্যেই বিরক্ত ছিল। তারা গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেছিল। তারা নিউ ইংল্যান্ডের শিল্পের ক্ষতির আশঙ্কা করেছিল। বাণিজ্য অবৈধ এবং ব্রিটিশ অবরোধের কারণে নিউ ইংল্যান্ড অঙ্গরাজ্য (বিশেষ করে ম্যাসাচুসেটস এবং কানেকটিকাট) রাষ্ট্রপতি ম্যাডিসনের যুদ্ধকালীন নীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি ভোগ করেছিল। রাষ্ট্রপতি ম্যাডিসন নিউ ইংল্যান্ডের সামরিক প্রতিরক্ষার নির্বাহী নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিলেন। তিনি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরদের নিয়ন্ত্রণ নিতে দেননি। অনেক নিউ ইংল্যান্ডবাসী এটিকে তাদের অঙ্গরাজ্যের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ হিসেবে দেখেছিল।
১৮১৪ সালের ১০ অক্টোবর ম্যাসাচুসেটস আইনসভা পাঁচটি নিউ ইংল্যান্ড রাজ্যের প্রতিনিধিদের ১৫ ডিসেম্বরে কানেকটিকাটের হার্টফোর্ডে মিলিত হওয়ার জন্য ভোট দেয়। তারা নিউ ইংল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের স্বার্থ সংক্রান্ত সাংবিধানিক সংশোধনী নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল। ছাব্বিশ জন প্রতিনিধি হার্টফোর্ডে জড়ো হন। সভাগুলো গোপনে অনুষ্ঠিত হয় এবং কোনো নথি রাখা হয়নি। একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে হার্টফোর্ড সম্মেলন সম্পন্ন হয়। এতে বলা হয়, অঙ্গরাজ্যগুলোর অতিক্রমকারী এবং অসাংবিধানিক ফেডারেল নীতির বিরুদ্ধে তাদের সার্বভৌমত্ব জাহির করার দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। এছাড়া, কিছু প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনী প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ছিল:
# ৬০ দিনের বেশি সময় ধরে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিষিদ্ধ করা;
# আক্রমণাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা, নতুন রাজ্যের প্রবেশ এবং বিদেশী বাণিজ্যে বাধা দেওয়ার জন্য কংগ্রেসে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা;
# দাসদের তিন-পঞ্চমাংশ প্রতিনিধিত্ব বাতিল করা (এটি দক্ষিণের জন্য সুবিধা হিসেবে দেখা হতো);
# যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য এক মেয়াদের সীমা;
# প্রতিটি পরবর্তী রাষ্ট্রপতিকে তার পূর্বসূরীর থেকে ভিন্ন রাজ্যের হতে হবে।
কিছু প্রতিনিধি ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্নতা চাইলেও সম্মেলন এমন কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
১৮১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ম্যাসাচুসেটস থেকে তিনজন কমিশনার এই শর্তাদি নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয়। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হওয়ার এবং নিউ অরলিন্সে জেনারেল জ্যাকসনের বিজয়ের খবর তাদের আগেই পৌঁছে যায়। এই কাজটি অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য হিসেবে দেখা হয়। কমিশনাররা ম্যাসাচুসেটসে ফিরে যান। হার্টফোর্ড সম্মেলন ফেডারেলিস্ট পার্টির পতন নিশ্চিত করে।
== দ্বিতীয় বারবারি যুদ্ধ ==
প্রথম বারবারি যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র গ্রেট ব্রিটেন সম্পর্কিত পরিস্থিতির দিকে মনোযোগ দেয়। এটি বারবারি উপকূলের জলদস্যু রাষ্ট্রগুলোকে সেই যুদ্ধ সমাপ্তকারী চুক্তির শর্ত মানতে না দেওয়ার সুযোগ দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলে সামরিক সম্পদ না থাকায় তাদের ক্রুদের জন্য মুক্তিপণ দিতে বাধ্য হয়। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা সব মার্কিন জাহাজকে ভূমধ্যসাগর থেকে বিতাড়িত করে। এটি জলদস্যু রাষ্ট্রগুলোকে আরও উৎসাহিত করে। আলজিয়ার্সের ডে উমর বিন মুহাম্মদ মার্কিন কনস্যুলার টোবিয়াস লিয়ারকে বহিষ্কার করেন। তিনি শ্রদ্ধা জানানোর ব্যর্থতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক সম্পদের অভাবে পরিস্থিতি অমীমাংসিত থেকে যায়।
১৮১২ সালের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন স্বার্থের দিকে মনোযোগ দিতে সক্ষম হয়। ১৮১৫ সালের ৩ মার্চ কংগ্রেস আলজিয়ার্সের বিরুদ্ধে নৌবাহিনীর ব্যবহার অনুমোদন করে। কমোডোর স্টিফেন ডেকাটুর, জুনিয়র এবং উইলিয়াম বেইনব্রিজের নেতৃত্বে দশটি জাহাজের একটি বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ডেকাটুরের স্কোয়াড্রন প্রথমে ভূমধ্যসাগরে রওনা দেয়।
কমোডোর ডেকাটুর দ্রুত স্কোয়াড্রনকে নির্ণায়ক বিজয়ের দিকে নিয়ে যান। তারা আলজিয়ার্সের পথে দুটি আলজেরীয় পতাকাযুক্ত জাহাজ দখল করে। জুন মাসের শেষে ডেকাটুর আলজিয়ার্সে পৌঁছান। তিনি ক্ষতিপূরণের দাবি করেন নয়তো ডের ধ্বংসের হুমকি দেন। ডে সম্মত হন। একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে আলজেরীয় জাহাজগুলো ফেরত দেওয়া হয়। বিনিময়ে প্রায় দশজন মার্কিন বন্দী ফেরত দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন আলজেরীয় বন্দীর বিনিময়ে বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় বন্দী ফেরত দেওয়া হয়। দখলকৃত জাহাজের জন্য ১০,০০০ ডলার দেওয়া হয়। শ্রদ্ধা জানানোর অর্থ প্রদান বন্ধ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পূর্ণ জাহাজ চলাচলের অধিকার দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
== জেমস মনরোর রাষ্ট্রপতিত্ব ও গুড ফিলিংসের যুগ ==
[[File:James Monroe White House portrait 1819.jpg|thumb|upright|রাষ্ট্রপতি জেমস মনরোর ১৮১৯ সালের প্রতিকৃতি]]
যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়তাবাদের নতুন ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা নিজেদেরকে তাদের নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যের নাগরিক হিসেবে দেখত (যেমন নিউ ইয়র্কবাসী বা জর্জিয়াবাসী)। এখন তারা নিজেদেরকে মার্কিন হিসেবে দেখতে শুরু করে। তাদের নতুন দেশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে পরাজিত করেছিল।
১৮১২ সালের যুদ্ধ এবং হার্টফোর্ড সম্মেলনের বিরোধিতা ফেডারেলিস্ট পার্টির জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে। কিছু ফেডারেলিস্ট বিরোধী তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে ডাকত। শেষ গুরুতর ফেডারেলিস্ট প্রার্থী রুফাস কিং ১৮১৬ সালে রাষ্ট্রপতিত্বের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি জেমস ম্যাডিসনের রাজ্যসচিব জেমস মনরোর কাছে হেরে যান। দলটি ১৮২৫ সালে ভেঙে যায়।
জাতীয় গর্ব এবং দলীয়তার শান্তি বোস্টনের ''কলম্বিয়ান সেন্টিনাল''-এর সাংবাদিক বেঞ্জামিন রাসেলের নামকরণ করা '''গুড ফিলিংসের যুগ'''-এর দিকে নিয়ে যায়। নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মনরো ১৮১৭ সালে একটি শুভেচ্ছা সফরে আসেন।
=== মার্কিন ব্যবস্থা ===
জাতীয় গর্বের নতুন ঢেউয়ে উঠে, কেনটাকির হেনরি ক্লে, সাউথ ক্যারোলাইনার জন সি ক্যালহাউন এবং ম্যাসাচুসেটসের জন কিউ. অ্যাডামস এরা আলেকজান্ডার হ্যামিলটনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তারা জাতিকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করার জন্য একটি পরিকল্পনা প্রচার করেন। এই পরিকল্পনা '''মার্কিন ব্যবস্থা''' নামে পরিচিত হয়। এটি মার্কিন শিল্প রক্ষার জন্য উচ্চ শুল্ক এবং অতিরিক্ত ফেডারেল রাজস্ব সংগ্রহের জন্য উচ্চ জমির দামের আহ্বান জানায়। পরিকল্পনাটি জাতির অবকাঠামো, যেমন রাস্তা ও খাল, শক্তিশালী করার কথা বলে। এগুলো শুল্ক ও জমির রাজস্ব দিয়ে অর্থায়ন করা হবে বলা হয়। এই উন্নতিগুলো বাণিজ্যকে আরও সহজ ও দ্রুত করবে। পরিকল্পনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ব্যাংক অফ (১৮১৬ সালে ২০ বছরের জন্য চার্টার্ড) বজায় রাখার কথা বলে। এটি মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্থিতিশীল করবে এবং সার্বভৌম ঋণ জারি করবে। কংগ্রেস ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় সমৃদ্ধ শিল্পগুলোকে সাহায্য করার জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক শুল্ক পাস করে। এই শিল্পগুলো বিদেশী বাণিজ্য পুনরায় শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে পড়ে। ১৮১৬ সালের শুল্ক আমদানিকৃত উল, তুলা, লোহা, চামড়া, টুপি, কাগজ এবং চিনির উপর কর আরোপ করে।
যদিও ব্যবস্থার কিছু অংশ গৃহীত হয় (উদাহরণস্বরূপ, বিদেশী পণ্যের উপর ২০-২৫% কর, যা তুলনামূলকভাবে সস্তা মার্কিন পণ্যের ব্যবহারকে উৎসাহিত করে), অন্যান্য অংশে বাধার সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে অবকাঠামো প্রস্তাবের ক্ষেত্রে। ফেডারেল সরকারের এই ক্ষমতা আছে কিনা তা নিয়ে সাংবিধানিকতার প্রশ্ন ওঠে। তবুও কাম্বারল্যান্ড রোড এবং ইরি খালের আকারে দুটি বড় অবকাঠামো অর্জন করা হয়। কাম্বারল্যান্ড রোড বাল্টিমোর থেকে ওহাইও নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এটি ভ্রমণের সুবিধা দেয় এবং পশ্চিমে বসতি স্থাপনের প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করে। ইরি খাল নিউ ইয়র্কের অ্যালবানির হাডসন নদী থেকে নিউ ইয়র্কের বাফেলো পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এটি উত্তর-পূর্বে জলপথে ভ্রমণের গতি ও দক্ষতা বাড়ায়।
মার্কিন ব্যবস্থার বিরোধিতা মূলত পশ্চিম ও দক্ষিণ থেকে আসে। ক্লে যুক্তি দেন, পশ্চিমের উচিত এই পরিকল্পনা সমর্থন করা। কারণ, উত্তর-পূর্বের শহুরে শ্রমিকরা পশ্চিমের খাদ্যের ভোক্তা হবে। দক্ষিণের উচিত এটি সমর্থন করা। কারণ, উত্তর-পূর্বের কারখানায় তুলার জন্য বাজার রয়েছে। তবে, দক্ষিণ শুল্কের তীব্র বিরোধিতা করে। তাদের তুলার জন্য ইতিমধ্যেই একটি শক্তিশালী বাজার ছিল।
সংক্ষেপে, ১৮১০ এবং ১৮২০-এর দশকে মার্কিন ব্যবস্থা বিভিন্ন বাধার কারণে মিশ্র ফলাফল পায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন শিল্প উপকৃত হয় এবং উন্নতি ঘটে।
=== প্রযুক্তি ===
১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিকে পৃথক অঙ্গরাজ্যগুলো অবশেষে উন্নত অবকাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হয়। ১৭৯০-এর দশকে পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়া ও ল্যাঙ্কাস্টার টার্নপাইক এবং নিউ ইয়র্ক স্টেটের গ্রেট ওয়েস্টার্ন টার্নপাইক নামে দুটি টোল ভিত্তিক রাস্তা নির্মিত হয়। তখন ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং ম্যাসাচুসেটসের মতো অঙ্গরাজ্যগুলো খাল তৈরি করে। এই বিশাল কৃত্রিম জলপথে প্রচুর পরিমাণে পণ্য ও মানুষ পরিবহন করা হতো। নদীর বিপরীতে, খালগুলোতে অগভীর জায়গা বা র্যাপিড ছিল না। লক এবং বাঁধ ব্যবহার করে জলের উচ্চতা বজায় রাখা হতো। স্টিমবোটগুলোকে স্রোতের বিরুদ্ধে লড়তে হতো। কিন্তু খালের নৌকাগুলো ঘোড়া বা গরু দিয়ে শান্তভাবে টানা হতো। ১৮১৭ সালে নিউ ইয়র্ক স্টেট ইরি খাল নির্মাণের অনুমোদন দেয়। রাস্তা, স্টিমশিপ এবং খালের সাহায্যে মানুষ ও পণ্য অভ্যন্তরীণ শহর থেকে পূর্ব উপকূলের বড় বাজারে এবং বিদেশগামী জাহাজে দ্রুত পৌঁছাতে পারত।
এই লাভ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানুষ তখনো ঔপনিবেশিক দিনগুলোতে ব্রিটিশ বাণিজ্য আইনের কথা মনে রাখত। বিদেশ থেকে আসা ম্যাগাজিন এবং সংবাদপত্র '''শিল্প বিপ্লব'''-এর খবর নিয়ে আসতো। এটি কাজ এবং শ্রমিকদের সংগঠনে যা অলৌকিক ফলাফল তৈরি করেছিল। ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে মার্কিন বিপ্লবী যুদ্ধের সমসাময়িক সময়ে ইংল্যান্ডের শ্রপশায়ারে একটি লোহার সেতু নির্মিত হয়েছিল। ব্রিটিশ সিরামিক শিল্প বাড়ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রিটেনেরও তুলা-বয়ন শিল্প ছিল। এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উপনিবেশ থেকে সরবরাহ পেত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শৈশবে এর সুবিধা ছিল। বিপুল সম্পদ, তুলনামূলকভাবে শিক্ষিত শ্রমশক্তি এবং দেশীয় রাইফেল শিল্পে উদ্ভাবিত বিনিময়যোগ্য অংশের ব্যবস্থা ছিল। বিদেশী অগ্রগতি অতিক্রম করার চেষ্টায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব শিল্প বিপ্লব গড়ে তুলতে থাকে।
=== ১৮১৯ সালের আতঙ্ক ===
১৮১২ সালের যুদ্ধের সমাপ্তি, অবকাঠামোর উন্নতি এবং রাজনৈতিক দলাদলির আপেক্ষিক অনুপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি সময় দেয়। তবে, ওয়াশিংটনে দলাদলি ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি তার প্রথম বড় আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়। ১৭৮০ এবং ১৭৯০-এর দশকের মন্দার ফলে এই আতঙ্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপন্ন হয়। এটি জব্দ, ব্যাংক ব্যর্থতা, বেকারত্ব এবং কৃষি ও উৎপাদন থেকে কম উৎপাদনের কারণ হয়।
=== ১৮১৯ সালের অ্যাডামস-ওনিস চুক্তি ===
১৮০৩ সালে লুইজিয়ানা অঞ্চল কেনার কাজ, ১৮১৯ সালে অ্যাডামস-ওনিস চুক্তি (ফ্লোরিডা অঞ্চল কেনা) এবং ১৮৪৭ সালে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় অঞ্চলগুলো যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে (মেক্সিকান সেশন), যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাথলিকদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়।
=== মনরো ডকট্রিন এবং বিদেশী বিষয় ===
১৮২৩ সালের ২ ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতি মনরো কংগ্রেসে স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণে তার বিদেশ নীতির সবচেয়ে বিখ্যাত দিকটি প্রকাশ করেন। '''মনরো ডকট্রিন''' বলে যে পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর (বিশেষ করে লাতিন আমেরিকা) বিষয়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলোর আরও কোনো হস্তক্ষেপের চেষ্টাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের কাজ হিসেবে দেখা হবে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজন হবে। মনরো ডকট্রিন এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের আশঙ্কা থেকে। তারা ভয় পেয়েছিল যে স্পেন তার প্রাক্তন লাতিন আমেরিকার উপনিবেশগুলোর উপর তার ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে। রাষ্ট্রপতি মনরো মূলত ঘোষণা দেন যে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা আর ইউরোপীয় শক্তিগুলোর উপনিবেশের জন্য উন্মুক্ত নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখনও একটি তরুণ দেশ ছিল। এর নৌশক্তি খুবই কম ছিল। তাই এই সতর্কবাণী বড় শক্তিগুলো মূলত উপেক্ষা করে। তবুও, ব্রিটিশরা এই নীতির সমর্থন করে। তারা প্যাক্স ব্রিটানিকার অংশ হিসেবে এটি মূলত কার্যকর করে। এতে ব্রিটিশ নৌবাহিনী উচ্চ সমুদ্রের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে। মূলত এই সমর্থনের মাধ্যমে মনরো ডকট্রিনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এককভাবে নয় বরং লাতিন আমেরিকান দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত ও বজায় রাখা হয়।
তবুও, মনরো ডকট্রিন লাতিন আমেরিকান নেতাদের কাছে প্রশংসা পায়। যদিও তারা জানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশদের সমর্থন ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করতে পারবে না। ১৮২৬ সালে, লাতিন আমেরিকান বিপ্লবী নায়ক সাইমন বলিভার পানামায় প্রথম সর্ব-আমেরিকান সম্মেলনের আহ্বান জানান। এটি সর্ব-আমেরিকান সম্পর্কের যুগ শুরু করে।
=== সেমিনোল যুদ্ধ ===
[[File:Nea-Math-La, A Seminole Chief.jpg|thumb|upright|প্রধান নিয়ামাথলা]]
দক্ষিণ জর্জিয়ায়, ফাউলটাউনের মিকোসুকি উপজাতির প্রধান নিয়ামাথলা ফোর্ট স্কটের কমান্ডার জেনারেল এডমন্ড পেন্ডলটন গেইনসের সঙ্গে জমি বিরোধে জড়িত ছিলেন। ফোর্ট জ্যাকসন চুক্তিতে ক্রিকরা এই জমি হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু মিকোসুকিরা নিজেদের আলাদা উপজাতি মনে করত। তারা বলত ক্রিকদের মিকোসুকি জমি হস্তান্তরের অধিকার ছিল না। ১৮১৭ সালের নভেম্বরে জেনারেল গেইনস ২৫০ জনের একটি বাহিনী পাঠান নিয়ামাথলাকে ধরতে। কিন্তু তারা ফিরে আসে। একই মাসে দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল হয়। মিকোসুকিদের ফাউলটাউন থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
ফাউলটাউনে হামলার এক সপ্তাহ পর, ফোর্ট স্কটে সরবরাহ, অসুস্থ সৈন্য এবং সৈন্যদের পরিবার পরিবহনকারী একটি সামরিক নৌকা আপালাচিকোলা নদীতে আক্রমণের শিকার হয়। জাহাজে শিশু ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়। জাহাজের বেশিরভাগ যাত্রী নিহত হয়। একজন মহিলাকে ধরা হয়। ছয়জন বেঁচে থাকা ব্যক্তি ফোর্ট স্কটে পৌঁছায়।
জেনারেল গেইনসকে স্প্যানিশ ফ্লোরিডায় আক্রমণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ছোটখাটো অভিযানের অনুমতি ছিল। স্কট গণহত্যার খবর ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছালে গেইনসকে সেমিনোলদের তাড়া করতে স্প্যানিশ ফ্লোরিডায় আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু স্প্যানিশ স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করা যাবে না। তবে, গেইনসকে পূর্ব ফ্লোরিডায় জলদস্যুতার সমস্যা মোকাবেলার জন্য পাঠানো হয়। তাই যুদ্ধ সচিব জন সি. ক্যালহাউন জেনারেল অ্যান্ড্রু জ্যাকসনকে আক্রমণের নেতৃত্ব দিতে নির্দেশ দেন। তিনি ইতিমধ্যে ১৮১২ সালের যুদ্ধের নায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
জেনারেল জ্যাকসন ১৮১৮ সালের মার্চে ফোর্ট স্কটে তার বাহিনী জড়ো করেন। তার যোদ্ধারা ছিল ৮০০ নিয়মিত সৈন্য, ১,০০০ টেনেসি স্বেচ্ছাসেবক, ১,০০০ জর্জিয়া মিলিশিয়া এবং ১,৪০০ বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রিক যোদ্ধা। জ্যাকসনের বাহিনী ১৩ মার্চ ফ্লোরিডায় প্রবেশ করে। তারা আপালাচিকোলা নদী অনুসরণ করে ফোর্ট গ্যাডসডেন তৈরি করে। ৩১ মার্চ তালাহাসি শহর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন মিকোসুকি শহর দখল করা হয়। মার্কিন এবং ক্রিক বাহিনী ৩০০ ইন্ডিয়ান বাড়ি ধ্বংস করে। তারা ৬ এপ্রিল স্প্যানিশ ফোর্ট সেন্ট মার্কস দখল করে।
মার্কিন বাহিনী সেন্ট মার্কস ত্যাগ করে ইন্ডিয়ান গ্রামগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে যায়। তারা আলেকজান্ডার জর্জ আরবুথনটকে ধরে। তিনি বাহামাস থেকে কাজ করা একজন স্কটিশ ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ইন্ডিয়ানদের সরবরাহ দিতেন। তারা রবার্ট আমব্রিস্টারকেও ধরে। তিনি ছিলেন প্রাক্তন রাজকীয় মেরিন এবং স্ব-নিযুক্ত ব্রিটিশ এজেন্ট। ইন্ডিয়ান নেতা জোসিয়া ফ্রান্সিস এবং হোমাথলেমিকোকেও ধরা হয়। চারজনকেই শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। জ্যাকসনের বাহিনী সুয়ানি নদীর তীরে পলাতক দাসদের দখলকৃত গ্রামগুলোতেও আক্রমণ করে।
বিজয় ঘোষণা করে জ্যাকসন জর্জিয়া মিলিশিয়া এবং ক্রিক যোদ্ধাদের বাড়ি পাঠান। বাকি সেনাবাহিনীকে সেন্ট মার্কসে ফেরত পাঠান। সেখানে তিনি একটি সেনাদল রেখে ফোর্ট গ্যাডসডেনে ফিরে যান। ৭ মে তিনি ১,০০০ সৈন্য নিয়ে পেনসাকোলায় অগ্রসর হন। তিনি বিশ্বাস করতেন ইন্ডিয়ানরা সেখানে জড়ো হচ্ছে এবং স্প্যানিশরা তাদের সরবরাহ দিচ্ছে। ওয়েস্ট ফ্লোরিডার গভর্নর প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, সেখানে থাকা ইন্ডিয়ানরা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জ্যাকসন ২৩ মে পেনসাকোলায় পৌঁছান। গভর্নর এবং স্প্যানিশ সেনাদল ফোর্ট বারানকাসে পিছু হটে। একদিন কামানের গোলা বিনিময়ের পর স্প্যানিশরা আত্মসমর্পণ করে। কর্নেল উইলিয়াম কিংককে ওয়েস্ট ফ্লোরিডার সামরিক গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। জেনারেল জ্যাকসন টেনেসিতে ফিরে যান। তিনি ১৮২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেন।
== ১৮২৪ সালের নির্বাচন এবং জন কিউ. অ্যাডামসের রাষ্ট্রপতিত্ব ==
[[File:JQA Photo.tif|thumb|upright|১৮৪০-এর দশকে জন কুইন্সি অ্যাডামসের পরবর্তী জীবনের ছবি।]]
ফেডারেলিস্ট পার্টির বিলুপ্তির সঙ্গে ১৮২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক দল ছিল না। চারজন ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান প্রার্থী এই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। টেনেসি আইনসভা এবং পেনসিলভানিয়া ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকানদের একটি সম্মেলন ১৮২২ এবং ১৮২৪ সালে জেনারেল থেকে সিনেটর হওয়া অ্যান্ড্রু জ্যাকসনকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়। কংগ্রেসীয় ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান ককাস রাজস্ব সচিব উইলিয়াম এইচ ক্রফোর্ডকে রাষ্ট্রপতি এবং অ্যালবার্ট গ্যালাটিনকে উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়। রাজ্যসচিব জন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি অ্যাডামসের পুত্র কিউ অ্যাডামস এবং সংসদের স্পিকার হেনরি ক্লেও এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেন। ক্রফোর্ড নির্বাচনের সময় একটি দুর্বল হৃদাঘাতের কারণে জিততে পারেননি।
যখন ইলেক্টোরাল ভোট গণনা করা হয় তখন দেখা যায় কোনো প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জ্যাকসন সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা যথেষ্ট ছিল না। শীর্ষ তিন প্রার্থীর ভোট হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে যায়। ক্লে সবচেয়ে কম ভোট পাওয়ায় অযোগ্য ছিলেন। তবে স্পিকার হিসেবে তার অনেক ক্ষমতা ছিল। ক্লে জ্যাকসনকে ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করতেন। তিনি অ্যাডামসের অনেক নীতি সমর্থন করতেন, যা তার মার্কিন ব্যবস্থার মতো ছিল। ক্লে অ্যাডামসকে সমর্থন করেন। অ্যাডামস রাষ্ট্রপতি পদে জয়ী হন। এটি জ্যাকসনের জন্য বিরক্তির কারণ হয়, কারণ তিনি সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল এবং জনপ্রিয় ভোট পেয়েছিলেন। অ্যাডামস ক্লেকে রাজ্যসচিব নিযুক্ত করলে জ্যাকসনের সমর্থকরা প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন, এখানে একটি ''দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তি'' হয়েছে। এখানে ১৮২৪ সালের নির্বাচন সম্পর্কিত উইকিপিডিয়া নিবন্ধ থেকে একটি টেবিল দেওয়া হল:
{| class="wikitable" border="1" width="88%"
|-
! width="25%" | রাষ্ট্রপতি প্রার্থী
! width="25%" | দল
! width="12%" | অঙ্গরাজ্য
! width="13%" | ভোট সংখ্যা:
! width="13%" | ইলেক্টোরাল ভোট:
|-
| width="25%" | জন কুইন্সি অ্যাডামস
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | ম্যাসাচুসেটস
| width="13%" align="center" | ১০৮,৭৪০
| width="13%" align="center" | ৮৪
|-
| width="25%" | অ্যান্ড্রু জ্যাকসন
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | টেনেসি
| width="13%" align="center" | ১৫৩,৫৪৪
| width="13%" align="center" | ৯৯
|-
| width="25%" | উইলিয়াম হ্যারিস ক্রফোর্ড
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | জর্জিয়া
| width="13%" align="center" | ৪৬,৬১৮
| width="13%" align="center" | ৪১
|-
| width="25%" | হেনরি ক্লে
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | কেনটাকি
| width="13%" align="center" | ৪৭,১৩৬
| width="13%" align="center" | ৩৭
|-
! width="25%" | ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী
! width="25%" | দল
! width="12%" | রাজ্য
! width="13%" | জনপ্রিয় ভোট:
! width="13%" | ইলেক্টোরাল ভোট:
|-
| width="25%" | জন ক্যাল্ডওয়েল ক্যালহাউন
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | সাউথ ক্যারোলাইনা
| width="13%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ১৮২
|-
| width="25%" | নাথান স্যানফোর্ড
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | নিউ ইয়র্ক স্টেট
| width="13%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ৩০
|-
| width="25%" | নাথানিয়েল ম্যাকন
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | নর্থ ক্যারোলাইনা
| width="12%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ২৪
|-
| width="25%" | অ্যান্ড্রু জ্যাকসন
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | টেনেসি
| width="13%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ১৩
|-
| width="25%" | মার্টিন ভ্যান বুরেন
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | নিউ ইয়র্ক স্টেট
| width="13%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ৯
|-
| width="25%" | হেনরি ক্লে
| width="25%" | ডেমোক্র্যাটিক-রিপাবলিকান পার্টি
| width="12%" | কেনটাকি
| width="13%" align="center" | অজানা
| width="13%" align="center" | ২
|}
১৮২৪ সালের নির্বাচন আমেরিকায় রাজনৈতিক দলগুলোর পুনরুত্থান ঘটায়। জ্যাকসনের অনুসারীরা তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্যরা জ্যাকসনীয় নামে পরিচিত হয়। অ্যাডামস, ক্লে এবং তাদের সমর্থকরা ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে দলীয় রাজনীতি আবার ফিরে আসে।
জন কুইন্সি অ্যাডামসের রাষ্ট্রপতিত্বের সময়ে একটি উচ্চাভিলাষী অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি মার্কিন ব্যবস্থার অনেক দিক বাস্তবায়ন করেন। কাম্বারল্যান্ড রোড সম্প্রসারিত হয়। বেশ কয়েকটি খাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। এর মধ্যে ছিল চেসাপিক এবং ওহাইও খাল, ডেলাওয়্যার এবং চেসাপিক খাল, পোর্টল্যান্ড থেকে লুইসভিল খাল, গ্রেট লেকসের সঙ্গে ওহাইও নদী ব্যবস্থার সংযোগ এবং নর্থ ক্যারোলাইনায় ডিসমাল সোয়াম্প খালের সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণ। অ্যাডামস রাস্তা, খাল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণাগারের মতো অভ্যন্তরীণ উন্নতি আধুনিকীকরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। এই অভ্যন্তরীণ উন্নতিগুলো শুল্কের মাধ্যমে অর্থায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ইস্যু অ্যাডামস প্রশাসনকে বিভক্ত করে। সচিব ক্লে শুল্ক সমর্থন করলেও উপরাষ্ট্রপতি জন সি ক্যালহাউন এর বিরোধিতা করেন।
রাষ্ট্রপতি অ্যাডামসের জন্য দুর্ভাগ্যবশত তার পরিকল্পনা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়। অ্যাডামসের ধারণাগুলো তার নিজের দলের মধ্যেও খুব জনপ্রিয় ছিল না। তবে অ্যাডামসের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় সমস্যা ছিল ১৮২৪ সালের নির্বাচনের পর জ্যাকসনীয়দের ক্ষোভ। ১৮২৭ সালে জ্যাকসনীয়রা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ জিতে নেয়। এটি বাস্তবায়ন কাজকে আরও কঠিন করে তোলে। কিন্তু অ্যাডামস বিশ্বাস করতেন যে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের শুধুমাত্র অযোগ্যতার কারণে অপসারণ করা যেতে পারে, এমনকি তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও। অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসলে অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের সমর্থক ছিল। অ্যাডামসের ইন্ডিয়ানদের প্রতি উদার নীতি জনগণকে আরও ক্ষুব্ধ করে। যখন ফেডারেল সরকার চেরোকিদের পক্ষে কর্তৃত্ব জাহির করতে চায়, জর্জিয়া ক্ষুব্ধ হয়। অ্যাডামস প্রশাসনের চূড়ান্ত পতন ঘটে যখন রাষ্ট্রপতি অ্যাডামস ১৮২৮ সালের শুল্ক আইনে স্বাক্ষর করেন। এই আইন উত্তরের শিল্প রক্ষার জন্য ছিল। কিন্তু দক্ষিণীরা এটিকে ঘৃণা করে। "ট্যারিফ অফ অ্যাবোমিনেশনস" নামে পরিচিত এই আইন প্রশাসনকে তার শেষ বছরে কার্যত পঙ্গু করে দেয়।
পরবর্তী নির্বাচন প্রচারণা ছিল নির্মম, তিক্ত এবং ব্যক্তিগত। এমনকি জ্যাকসনের স্ত্রীকেও আক্রমণ করা হয়। তাকে দ্বিবিবাহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। শেষ পর্যন্ত অ্যাডামস হারেন। তিনি ইলেক্টোরাল কলেজে মাত্র ৮৩ ভোট পান। জ্যাকসন ১৭৮ ভোট পান। অ্যাডামস অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। ঠিক যেমন অ্যাডামসের পিতা থমাস জেফারসনের উদ্বোধনে যোগ দেননি। তবে অ্যাডামসের রাষ্ট্রপতিত্ব তার শেষ ভূমিকা ছিল না। ১৮৩০ সালে তিনি প্রথম প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হিসেবে কংগ্রেসে নির্বাচিত হন।
== জনগণের রাষ্ট্রপতি -- অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের যুগ ==
[[File:Andrew jackson head.jpg|thumb|upright|রাষ্ট্রপতি অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের প্রতিকৃতি]]
'''জ্যাকসনীয় গণতন্ত্র''' ১৮২৮ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত ছিল। এটি সর্বজনীন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ ভোটাধিকার এবং "সাধারণ মানুষ"-এর উত্থানের আন্দোলন দ্বারা চিহ্নিত হয়। এটি অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের (১৮২৯-১৮৩৭) বিতর্কিত রাষ্ট্রপতিত্ব দ্বারা প্রভাবিত ছিল। প্রথম আধুনিক মার্কিন রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জ্যাকসন প্রশাসনের শেষের দিকে গঠিত হয়। এই সময়ে মার্কিন সীমান্ত উন্মুক্ত হয়। ভোটাধিকার প্রায় সব শ্বেতাঙ্গ পুরুষের কাছে প্রসারিত হয়। এটি শুধুমাত্র শিক্ষিত ও সম্পত্তির মালিক সংখ্যালঘুদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল না। (এই সময়ে মজুরি-আয়কারীদের সংখ্যাও বাড়ে। কৃষি ছাড়াও, জমি-নিবিড় শিল্পের বিকল্প ছিল।) নারী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুরা আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় শিক্ষিত হয়। তবুও সরকারি নিপীড়নও বাড়ে। ট্রেইল অফ টিয়ার্স ওয়াশিংটন থেকে নির্দেশিত হয়। দাসত্ব সম্পর্কে কংগ্রেসে বক্তৃতার উপর নিষেধাজ্ঞা দাসত্বের প্রতি মনোভাবের কঠোরতার ইঙ্গিত দেয়।
=== নির্বাচন ও উদ্বোধন ===
অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের টেনেসির ন্যাশভিল থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে তিন সপ্তাহের যাত্রা উৎসবমুখর ছিল। মানুষ নতুন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে এক ঝলক দেখতে ভীড় করে জড়ো হয়। পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সবই ছিল ঘরের মধ্যে ও শুধুমাত্র আমন্ত্রিতদের জন্য। তবে ১৮২৯ সালের ২৯ মার্চে জ্যাকসনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলের ইস্ট পোর্টিকোতে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২১,০০০ মানুষ ঘটনাটি দেখতে জড়ো হয়।
নতুন রাষ্ট্রপতি ক্যাপিটলের পশ্চিম দিক দিয়ে বের হন। তিনি একটি সাদা ঘোড়ায় চড়ে নির্বাহী ভবনে অভ্যর্থনার জন্য যান। তিনি পৌঁছানোর আগেই হোয়াইট হাউসে সমর্থকরা ভিড় করে। উৎসব জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জোসেফ স্টোরি বলেন, "আমি এমন মিশ্রণ কখনো দেখিনি। রাজা মবের শাসন বিজয়ী মনে হয়।" নতুন রাষ্ট্রপরিকে হোয়াইট হাউস থেকে গোপনে বের হতে হয়। তিনি ভার্জিনিয়ার আলেকজান্ড্রিয়ায় যান। তবে, ভিড় তখনও থেকে যায়। মদের ব্যবস্থা সামনের লনে সরানো পর্যন্ত তাড়া থাকে। হোয়াইট হাউসে হাজার হাজার ডলারের ভাঙা চীনামাটির বাসন ফেলে রাখা হয়।
=== পেটিকোট ঘটনা ও কিচেন মন্ত্রিসভা ===
পেটিকোট ঘটনা ইটন ঘটনা নামেও পরিচিত। এটি ১৮৩০-১৮৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে। এটি রাষ্ট্রপতি অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের মন্ত্রিসভা এবং তার স্ত্রী জড়িত একটি কেলেঙ্কারি ছিল। যদিও এটি একটি ব্যক্তিগত বিষয় ছিল, তবুও এটি বেশ কয়েকজন পুরুষের রাজনৈতিক পেশায় সমস্যা সৃষ্টি করে।<ref>http://www.talkingstreet.com/Petticoat_affair</ref> পেটিকোট ঘটনায় পেগি ইটন জড়িত ছিলেন। তাকে জন ইটনের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। তখন তিনি পার্সার জন টিম্বারলেকের স্বামী ছিলেন। উইলিয়াম ও'নিলের কন্যা পেগি রাজনীতির কাছাকাছি ছিলেন। তার পিতা ওয়াশিংটন ডিসিতে রাজনীতিবিদদের জন্য প্রতিষ্ঠিত বোর্ডিং হাউসের মালিক ছিলেন। পেগি সেখানে কাজ করতেন। পেগি প্রায়ই বোর্ডিং হাউসে যেতেন। এটি পরে দর্শকদের চোখে পেগির চরিত্রে আরও অসঙ্গতি এনে দেয়। এতে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। পেগির স্বামী সমুদ্রে থাকাকালীন মারা যান। অনেকে বিশ্বাস করত এটি আত্মহত্যা ছিল। কারণ, তার স্ত্রী পেগির জন ইটনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশিত হয়েছিল। জন ইটন দম্পতির বন্ধু ছিলেন। যদিও টিম্বারলেকের মৃত্যু নিউমোনিয়ার কারণে বলা হয়। পেগি তার স্বামীর মৃত্যুর এক বছরেরও কম সময়ে জন ইটনকে বিয়ে করেন। অনেক মহিলা মনে করত পেগি এবং জন ইটনের বিয়ে সঠিক কাজ ছিল না। কথিত সম্পর্কের বিতর্ক অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের মন্ত্রিসভার অনেক পুরুষকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে সহায়তা করে। এর মধ্যে জন ইটন নিজেও ছিলেন। মানুষ জ্যাকসনের এই বিয়ের উপর তার অবস্থানের ভিত্তিতে বিচার করতে শুরু করে। অ্যান্ড্রু জ্যাকসন পরামর্শ দেন যে জন ইটন ও পেগি বিয়ে করুক। জ্যাকসনের দৃষ্টিভঙ্গি তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আসে। ফ্লোরাইড ক্যালহাউনের নেতৃত্বে একদল মহিলা পেগি বিরোধী হিসেবে আবির্ভূত হয়। এই মহিলারা স্বামীর মৃত্যুর পর নারীদের জন্য নিয়ম ও নির্দেশিকা ঘোষণা করে। এর মধ্যে ছিল মৃত্যুর পর এক বছর শোক পালন এবং কালো পোশাক পরা।
=== বিলুপ্তিকরণ সংকট ===
জ্যাকসন প্রশাসনের প্রাথমিক সংকটগুলোর একটি ছিল বিলুপ্তিকরণ ইস্যু। ১৮২৮ সালে কংগ্রেস ইউরোপ থেকে আমদানির উপর ইতিমধ্যে উচ্চ শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি শিল্পায়িত উত্তরকে ইউরোপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সাহায্য করার জন্য ছিল। কিন্তু কৃষিপ্রধান দক্ষিণ এটিকে ঘৃণা করে। তারা ইউরোপের সঙ্গে ব্যাপকভাবে বাণিজ্য করত। দক্ষিণ এটিকে "ট্যারিফ অফ অ্যাবোমিনেশনস' বলে ডাকে।
দক্ষিণ নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে মনে করা বিলুপ্তিকরণ ধারণা (যে অঙ্গরাজ্যগুলোর অধিকার আছে কোনো ফেডারেল আইন বাতিল করার) প্রথম ১৭৯৮ সালে ভার্জিনিয়া এবং কেনটাকি প্রস্তাবে প্রকাশ পায়। শুল্কের জবাবে দক্ষিণ ক্যারোলাইনা এটিকে অবৈধ ঘোষণা করে। উপরাষ্ট্রপতি জন সি. ক্যালহাউন অঙ্গরাজ্যের অধিকারের এই ধারণার সঙ্গে একমত হন। তিনি দক্ষিণ ক্যারোলাইনাকে শুল্ক ইস্যুতে অবস্থান নিতে উৎসাহিত করেন।
এর আগ পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত ছিল না জ্যাকসন অঙ্গরাজ্যের অধিকারের ইস্যুতে কোথায় দাঁড়িয়েছেন। তারপর ১৮৩০ সালের এপ্রিলে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি এই ক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্যের অধিকারের বিরোধিতা করেন। রাষ্ট্রপতি জ্যাকসন শুল্কের উপর দক্ষিণের অবস্থানের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও তিনি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ক্ষমতার সঙ্গে একটি শক্তিশালী ইউনিয়নে বিশ্বাস করতেন। ফলে জ্যাকসন এবং ক্যালহাউনের মধ্যে গভীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ১৮৩০ সালের ১৩ এপ্রিল জেফারসন দিবসের প্রাতঃরাশের একটি ঘটনায় প্রকাশ পায়। দক্ষিণ ক্যারোলাইনার সিনেটর রবার্ট হেইন একটি টোস্ট করেন এই বলে, "অঙ্গরাজ্যগুলোর ইউনিয়ন এবং রাজ্যগুলোর সার্বভৌমত্ব।" রাষ্ট্রপতি জ্যাকসন যোগ করেন (এবং স্পষ্টতই উপরাষ্ট্রপতির দিকে ইঙ্গিত করে), "আমাদের ফেডারেল ইউনিয়ন: এটি অবশ্যই সংরক্ষিত হবে!" এর জবাবে উপরাষ্ট্রপতি ক্যালহাউন বলেন: "ইউনিয়ন: আমাদের স্বাধীনতার পরে, সবচেয়ে প্রিয়!"
১৮৩১ সালে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাক্তন রাজ্যসচিব মার্টিন ভ্যান বুরেন (যিনি তখনো রাষ্ট্রপতির "কিচেন মন্ত্রিসভা"-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন) ১৮৩২ সালের নির্বাচনে ক্যালহাউনের পরিবর্তে উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পান। উপরাষ্ট্রপতি ১৮৩২ সালের ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন। তিনি সাউথ ক্যারোলাইনার মার্কিন সিনেট আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
দক্ষিণ এই কম শুল্কে আপস করেনি। দক্ষিণ ক্যারোলাইনা বিলুপ্তিকরণ আইন পাস করে। এটি ঘোষণা করে যে অঙ্গরাজ্য আর "অবৈধ" শুল্ক দেবে না। দক্ষিণ ক্যারোলাইনা হুমকি দেয় যে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করলে তারা ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।
রাষ্ট্রপতি জ্যাকসন বিলুপ্তিকরণের বিরোধিতা চালিয়ে যান। তিনি বলেন, "সংবিধান... একটি সরকার গঠন করে, সংঘ নয়... কোনো অঙ্গরাজ্য ইচ্ছামতো ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে এটা বলার মতো যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি দেশ নয়।" ১৮৩২ সালে তিনি কংগ্রেসকে একটি "জবরদস্তি বিল” পাস করতে বলেন। এটি শুল্ক আইন কার্যকর করতে সামরিক বাহিনী ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। বিলটি কংগ্রেসে আটকে যায়। তবে মহান আপসকারী হেনরি ক্লে এবং সুরক্ষাবাদীরা একটি আপস শুল্ক বিলে সম্মত হন। আপস শুল্কে কম কিন্তু তবুও বেশ উচ্চ শুল্ক ছিল। ১৮৩৩ সালের ১ মার্চ উভয় বিল পাস হয়। রাষ্ট্রপতি উভয় বিলে স্বাক্ষর করেন।
সামরিক বাহিনীর হুমকির মুখে দক্ষিণ ক্যারোলাইনা দ্রুত কম আপস শুল্কে সম্মত হয়। তারা বিলুপ্তি আইন বাতিল করে। সংকট আরেক দিনের জন্য এড়ানো হয়।
=== ইন্ডিয়ান অপসারণ এবং গণহত্যা ===
[[File:Stephens.jpg|thumb|upright|ট্রেইল অফ টিয়ার্সের একজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির ছবি।]]
যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিমে বিস্তারের সময় অনেক স্থানীয় আমেরিকানকে তাদের জমি থেকে জোরপূর্বক অপসারণ করে বা হত্যা করে। এটি উভয় পক্ষের সম্মত চুক্তি এবং ইন্ডিয়ান অধিকার লঙ্ঘন করে। এভাবে শ্বেতাঙ্গ জমির মালিকদের স্বার্থকে ইন্ডিয়ানদের স্বার্থের উপরে প্রাধান্য দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, জর্জিয়ায় গভর্নর চেরোকিদের তাদের জমি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই জমি গরিব জর্জিয়াবাসীদের মধ্যে পুনর্বণ্টন করা হবে। চেরোকিরা এটি প্রত্যাখ্যান করে। তারা বলে, পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি তাদের জমির অধিকার নিশ্চিত করে। উপজাতির একজন বন্ধুর মাধ্যমে তারা তাদের মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যায়।
১৮৩২ সালে, যখন অ্যান্ড্রু জ্যাকসন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে জর্জিয়া অসাংবিধানিকভাবে কাজ করেছে। কিন্তু জ্যাকসন এই রায় কার্যকর করতে অস্বীকার করেন। এদিকে, কংগ্রেস ইন্ডিয়ান অপসারণ আইন পাস করে। এটি মিসিসিপি নদীর পশ্চিমে অঞ্চলে স্থানান্তরিত স্থানীয় আমেরিকানদের আশ্রয় দেওয়ার অনুমতি দেয়। স্থানীয় আমেরিকানরা থাকতে পারত এবং তাদের নিজ অঙ্গরাজ্যের নাগরিক হতে পারত। অপসারণটি শান্তিপূর্ণ এবং তাদের নিজের ইচ্ছায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জ্যাকসন তাদের পশ্চিমে যেতে বাধ্য করে।
চেরোকিদের জর্জিয়া থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। তারা বর্তমান ওকলাহোমা অঞ্চলে যাওয়ার জন্য একটি নির্মম ও মারাত্মক যাত্রা সহ্য করে। এই যাত্রাকে তারা "ট্রেইল অফ টিয়ার্স" বলে। ১৬,০০০ অভিবাসী চেরোকির মধ্যে ২,০০০ থেকে ৪,০০০ মারা যায়। এর মধ্যে নারী, শিশু এবং উপজাতির বয়স্ক সদস্যরা ছিল। পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। তারা রোগ এবং অনাহারের শিকার হয়। তারা যেখানে থাকত সেখানে অস্থায়ী দুর্গে পৌঁছায়। চেরোকিরা একমাত্র উপজাতি ছিল না যাদের নিজ ভূমি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। চক্টো, ক্রিক, সেমিনোল এবং চিকাসোদেরও পশ্চিমে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়। চক্টোদের ১৮৩১ এবং ১৮৩২ সালের শীতে প্রথমে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়। অনেকে জোরপূর্বক মিছিলে মারা যায়। ক্রিক জাতি ১৮৩৬ সাল পর্যন্ত আলাবামায় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। কিন্তু সেনাবাহিনী তাদের ওকলাহোমার দিকে ঠেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত, স্থানান্তরিত স্থানীয়রা প্রায় ১০ কোটি একর জমির বিনিময়ে প্রায় ৩.২ কোটি একর এবং সমস্ত স্থানীয় উপজাতিদের জন্য মোট ৬.৫ কোটি ডলার পায়। মার্কিন সরকার স্থানীয়দের প্রতি যে নিষ্ঠুরতা দেখায়, এই জোরপূর্বক স্থানান্তর তার একটি অধ্যায় মাত্র। এই জোরপূর্বক অভিবাসন স্থানীয়দের উপর ভয়ানক প্রভাব ফেলে। অনেকে রোগ, অনাহার এবং মৃত্যুর শিকার হয়।
=== সেমিনোল যুদ্ধ ===
ফ্লোরিডার সেমিনোল জাতি জোরপূর্বক অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে। ১৮৩৫ সালে সেমিনোলদের নেতা ওসিওলা ফেডারেল সৈন্যদের বিরুদ্ধে তীব্র গেরিলা যুদ্ধ চালায়। সেমিনোল বাহিনীতে ক্রিক, সেমিনোল এবং এমনকি আফ্রিকান আমেরিকানরাও ছিল। ওসিওলাকে মার্কিন সেনাবাহিনী শ্বেত পতাকার অধীনে ধরে। তিনি ১৮৩৮ সালে যুদ্ধবন্দী শিবিরে মারা যান। তবে, সেমিনোলরা প্রধান কোয়াকুচি এবং অন্যান্য নেতাদের অধীনে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। অবশেষে ১৮৪২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপসারণ প্রচেষ্টা বন্ধ করে। সেমিনোলরা আজও ফ্লোরিডায় এভারগ্লেডসের কাছে রয়ে গেছে।
=== টলেডো যুদ্ধ ===
<!--TODO: Note how this war shows the general internal conflicts between states, territories, and the federal government typical of the time-->
১৮৩৫ থেকে ১৮৩৬ সাল পর্যন্ত ওহাইও অঙ্গরাজ্য তৎকালীন মিশিগান অঞ্চলের বিরুদ্ধে বিতর্কিত জমি নিয়ে একটি রক্তহীন যুদ্ধ করে। [[w:Toledo War|টলেডো যুদ্ধ]] ফেডারেল হস্তক্ষেপের মাধ্যমে শেষ হয়। তারা একটি আপস করে। ওহাইও বিতর্কিত জমি পায়, আর মিশিগান উপরের উপদ্বীপ পায়। এটি তৎকালীন অঙ্গরাজ্য এবং অঞ্চলগুলোর মধ্যে সাধারণ সংঘাতকে তুলে ধরে। এটি তৎকালীন অভ্যন্তরীণ সংঘাতের পূর্বাভাস দেয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, ফেডারেল হস্তক্ষেপ এই সংঘাত দমনে সফল হয়। কিন্তু সরকার শীঘ্রই পরবর্তী বছরগুলোতে অনেক রক্তক্ষয়ী অভ্যন্তরীণ সংঘাত বন্ধ করতে অক্ষম হয়।
=== গ্যাগ নিয়ম ===
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্ববিরোধী আন্দোলন শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি জনসাধারণের বিতর্কে পরিণত হয় এবং পিটিশনে প্রকাশ পায়। ১৮৩০ সালে একটি দাসত্ববিরোধী পিটিশন অভিযান কংগ্রেসে ১,৩০,০০০ পিটিশন পৌঁছে দেয়।<ref>The U.S. Capitol Visitor Center at http://www.visitthecapitol.gov/exhibition-hall/archives/images/992</ref> দাসত্বপন্থী স্বার্থগুলোর প্রতিক্রিয়া ছিল কংগ্রেসে দাসত্ব নিয়ে আলোচনার বিরুদ্ধে নিয়ম তৈরি করা। প্রথমটি ছিল '''১৮৩৬ সালের গ্যাগ নিয়ম'''।<ref>A People and A Nation, Eighth Edition</ref> গ্যাগ নিয়ম জনসাধারণের পিটিশন গ্রহণের বিরোধিতা করে। এটি প্রথম সংশোধনীর অধিকারের বিরুদ্ধে যায়। এই অধিকার মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরকারের কাছে পিটিশন করার অনুমতি দেয়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জন কুইন্সি অ্যাডামস গ্যাগ নিয়মের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দেন। শেষ গ্যাগ নিয়ম ১৮৪৪ সালে সংসদে বাতিল করা হয়।
=== দ্বিতীয় জাতীয় ব্যাংক এবং ১৮৩৭ সালের আতঙ্ক ===
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ব্যাংক প্রথম ব্যাংক পতনের প্রায় পাঁচ বছর পর শুরু হয়। এটি প্রথম ব্যাংকের স্থানে তথা ফিলাডেলফিয়ার কার্পেন্টার্স হলে একই স্থানে শুরু হয়। প্রথম ব্যাংকের পতন ঘটে যখন এটির পরিচালকরা এর চার্টার নবায়ন করতে অস্বীকার করে। প্রথম ব্যাংকের অনেক পরিচালকই দ্বিতীয় ব্যাংকে ছিল। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় এটি উদ্ভূত হয়। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভয়ানক মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হয়। সামরিক অভিযানের জন্য অর্থায়নের প্রয়োজন ছিল। এটির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে শাখা ছিল।
অ্যান্ড্রু জ্যাকসন জাতীয় ব্যাংককে ঘৃণা করতেন। তিনি নিজেকে একজন স্ব-নির্মিত "সাধারণ" মানুষ হিসেবে গর্বিত ছিলেন। তিনি যুক্তি দেন যে ব্যাংক ধনীদের পক্ষপাত করে। একজন পশ্চিমার হিসেবে, তিনি পূর্বের ব্যবসায়িক স্বার্থের বিস্তার এবং পশ্চিম থেকে মূল্যবান ধাতু নিষ্কাশনের ভয় করতেন। তিনি ব্যাংককে "হাইড্রা-হেডেড" দানব হিসেবে চিত্রিত করেন। একজন জাতীয়তাবাদী হিসেবে তিনি ব্যাংক বোর্ডের বিদেশী সদস্যদের উপর অবিশ্বাস করতেন। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় ব্যাংকের উপর ভরসা করা যায় না। হেনরি ক্লে এবং ড্যানিয়েল ওয়েবস্টার এই দুই সিনেটর জ্যাকসনকে অপছন্দ করতেন। তারা চাইতেন জ্যাকসন ১৮৩২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হারুক। তারা ব্যাংকের সভাপতি নিকোলাস বিডলকে বোঝান যে ব্যাংকের জন্য নতুন চার্টারের জন্য আগাম আবেদন করুক। যদিও ব্যাংকের চার্টার ১৮৩৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ শেষ হবে না। তারা বিশ্বাস করত অনেক মার্কিন ব্যাংক এটি সমর্থন করে। তারা মনে করত জ্যাকসনের ব্যাংকের চার্টার নবায়নের ভেটো তাকে নির্বাচনে হারাবে। জ্যাকসন চার্টার ভেটো করেন। কিন্তু জনমত এতটা কমেনি যে তিনি নির্বাচনে হারবেন।
রাষ্ট্রপতি জ্যাকসন ''স্পেসি সার্কুলার'' জারি করেন। এটি সরকারি জমির জন্য অর্থপ্রদান স্বর্ণ এবং রৌপ্যে করতে হবে বলে নির্দেশ দেয়। তিনি রাজস্ব সচিবকে নির্দেশ দেন জাতীয় ব্যাংক থেকে টাকা বের করে "পেট ব্যাংক" গুলোতে রাখতে। এই পেট ব্যাংকগুলো জ্যাকসনের বন্ধুদের মালিকানাধীন অঙ্গরাজ্য ব্যাংক ছিল। এই ব্যাংকগুলো গরিব কৃষকদের ঋণ দেয়। তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। এর ফলে একটি গুরুতর অর্থনৈতিক মন্দা হয়, যা '''১৮৩৭ সালের আতঙ্ক''' নামে পরিচিত। ব্যবসা তলানিতে পৌঁছে যায় ও বেকারত্ব বেড়ে যায়। পণ্যের দাম এত বেড়ে যায় যে পরিবারগুলো অনেক মৌলিক প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে পারেনি। মন্দা ছয় বছর স্থায়ী হয়। জ্যাকসনের পর নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মার্টিন ভ্যান বুরেন এর প্রভাব কমাতে প্রায় কিছুই করেননি। এই আতঙ্ক নিশ্চিত করে যে ভ্যান বুরেন পরবর্তী নির্বাচনে হারবেন।
=== ক্যারোলিন ঘটনা ===
[[File:Destruction of the Caroline.jpg|thumb|ক্যারোলিন জ্বলছে এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতের দিকে ভেসে যাচ্ছে এমন চিত্র।]]
১৮৩৭ সাল থেকে শুরু হওয়া ঘটনাগুলো '''ক্যারোলিন ঘটনা''' নামে পরিচিত। এটি ক্যারোলিন মামলা নামেও পরিচিত। এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করে। উইলিয়াম লিয়ন ম্যাকেঞ্জির নেতৃত্বে কানাডীয় বিদ্রোহীদের একটি দল আপার কানাডায় (বর্তমান অন্টারিও) বিদ্রোহের সূচনা করে। তারা একটি প্রজাতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছিল। আপার কানাডায় বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর বিদ্রোহীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায়। তারা নায়াগ্রা নদী পর্যন্ত পালায়। এই নদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (এবং নিউ ইয়র্ক স্টেট) এবং কানাডাকে আলাদা করে। তারা কানাডার বোট দ্বীপে আশ্রয় নেয়। মার্কিন সহানুভূতিশীলরা এই বিদ্রোহকে মার্কিন বিপ্লবী যুদ্ধের বিলম্বিত ধারাবাহিকতা মনে করত, তারা তাদের এস.এস. ক্যারোলিন স্টিমবোটের মাধ্যমে টাকা, খাদ্য এবং অস্ত্র সরবরাহ করে।
২৯ ডিসেম্বর কানাডীয় ভৃত্যবাদী কর্নেল স্যার অ্যালান ম্যাকনাব মিলিশিয়ার একটি দলকে নদী পার হয়ে ক্যারোলিনে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দেন। তারা জাহাজটিকে নিউ ইয়র্কের ফোর্ট শ্লোসারে নোঙর করা অবস্থায় পায়। তারা জাহাজটি দখল করে স্রোতে টেনে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতের উপর দিয়ে ভাসিয়ে দেয়। এই ঘটনায় অ্যামোস ডারফ্রি নামে একজন মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হয়। যদিও জাহাজটি ভাসানোর আগে পরিত্যক্ত ছিল, মার্কিন সংবাদপত্র মিথ্যা প্রতিবেদন করে যে জাহাজে আটকা পড়া কয়েক ডজন নাগরিক নিহত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মার্টিন ভ্যান বুরেন জীবনহানির জন্য আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানান। প্রতিশোধ হিসেবে ১৮৩৮ সালের ২৯ মে একজন মার্কিন নদীর জলদস্যু এবং তার লোকজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ব্রিটিশ স্টিমার স্যার রবার্ট পিল পুড়িয়ে দেয়। ক্যারোলিন পোড়ানোর পর ম্যাকেঞ্জি দল সরবরাহ পাওয়ার কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে।
[[File:Martin Van Buren.jpg|thumb|upright|রাষ্ট্রপতি মার্টিন ভ্যান বুরেন]]
ক্যারোলিন ঘটনা ওয়েবস্টার-অ্যাশবার্টন চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। এই চুক্তি উভয় জাতির সীমানা নির্ধারণে সহায়তা করে। রাষ্ট্রপতি ভ্যান বুরেন জেনারেল উইনফিল্ড স্কটকে পাঠান। তিনি ১৮১২ সালের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি কানাডায় আরও মার্কিন হামলা প্রতিরোধ করেন। চুক্তি প্রণয়নে সহায়তা করার সময় ড্যানিয়েল ওয়েবস্টার লিখেন যে ক্যারোলিন পোড়ানো স্ব-প্রতিরক্ষার দ্বারা ন্যায্য ছিল না। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের কাছে লেখা চিঠি "পূর্বাভাসমূলক স্ব-প্রতিরক্ষা" নীতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। এই নীতি বলে যে সামরিক পদক্ষেপ শুধুমাত্র আনুপাতিক হুমকির দ্বারা ন্যায্য হতে পারে। ক্যারোলিনের অবস্থা পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি অপরিহার্য মতবাদ হয়ে ওঠে। এটি নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল সহ পরবর্তী অনেক রায়ে নিশ্চিত হয়।
== আরুস্টুক যুদ্ধ ==
আরুস্টুক যুদ্ধ (১৮৩৮-১৮৩৯) ছিল একটি অঘোষিত এবং রক্তহীন যুদ্ধ। এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেনের মধ্যে নিউ ব্রান্সউইক এবং বর্তমান মেইনের মধ্যে উত্তর-পূর্ব সীমানা নির্ধারণে ব্যর্থতার কারণে ঘটে। ১৮২০ সালে মেইন অঙ্গরাজ্য হওয়ার পর, মেইন আইনসভা ম্যাসাচুসেটসের সঙ্গে যৌথভাবে আরুস্টুক নদীর উভয় শাখায় বসতি স্থাপনকারীদের জমি দেয়। এটি ব্রিটিশদের দাবিকে উপেক্ষা করে। ১৮৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন সীমানা নিয়ে আপস করার চেষ্টা করে। তারা এই বিষয়টি নেদারল্যান্ডের রাজার কাছে সালিশের জন্য পাঠায়। একটি চুক্তি হয়, কিন্তু ১৮৩২ সালে মার্কিন সিনেট এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে। ১৮৩৯ সালের জানুয়ারিতে মার্কিনদের একটি দল বিতর্কিত এলাকায় প্রবেশ করে। তারা সেখানে কাজ করা কানাডীয় কাঠুরেদের বিতাড়িত করে। কানাডীয়রা দলের নেতাকে গ্রেপ্তার করে। দুই মাসের মধ্যে ১০,০০০ মেইন সৈন্য হয় আরুস্টুক নদীর তীরে শিবির স্থাপন করে, নয়তো সেখানে যাচ্ছিল। মেইনের কংগ্রেসম্যানদের জোরাজুরিতে ফেডারেল সরকার যুদ্ধের ক্ষেত্রে ৫০,০০০ সৈন্য এবং ১০ মিলিয়ন ডলারের বাহিনী প্রদানের জন্য ভোট দেয়। সংঘর্ষ এড়াতে জেনারেল উইনফিল্ড স্কটকে নিউ ব্রান্সউইকের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য পাঠানো হয়। গ্রেট ব্রিটেন পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে একটি সীমানা কমিশনের সঙ্গে সম্মত হয়। এর ফলাফল ওয়েবস্টার-অ্যাশবার্টন চুক্তিতে (১৮৪২) অন্তর্ভুক্ত হয়। এই চুক্তি অন্যান্য বিতর্কিত সীমানা সমস্যাগুলোরও সমাধান করে।
== সংস্কার ও মার্কিন সমাজ ==
=== শিক্ষা ===
[[File:Horace Mann - Daguerreotype by Southworth & Hawes, c1850.jpg|thumb|left|upright|১৮৫০ সালে হোরেস ম্যান।]]
নিউ ইংল্যান্ডে পাবলিক শিক্ষা সাধারণ ছিল। তবে এটি শ্রেণিভিত্তিক ছিল। শ্রমিক শ্রেণি ন্যূনতম সুবিধা পেত। স্কুলগুলো ধর্মীয় মূল্যবোধ শেখাত। এটি ক্যালভিনিস্ট শৃঙ্খলার দর্শন শেখাত, যার মধ্যে শারীরিক শাস্তি এবং জনসমক্ষে অপমান অন্তর্ভুক্ত ছিল। হোরেস ম্যানকে "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার পিতা" হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি এমন একটি স্কুল গড়তে চেয়েছিলেন যা ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার পার্থক্য দূর করবে। তিনি মনে করতেন এটি অপরাধের হার কমাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি ১৮৩৭-১৮৪৮ সালে ম্যাসাচুসেটসে শিক্ষা বোর্ডের প্রথম সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি ১৮৩৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকদের শিক্ষার জন্য প্রথম স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন।<ref>http://en.wikipedia.org/wiki/New_England</ref>
১৮৩৩ সালে ওবারলিন কলেজে ২৯ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারী পড়ত। ওবারলিন কলেজ প্রথম কলেজ হিসেবে পরিচিত হয় যা নারীদের পড়ার অনুমতি দেয়।<ref>A People and A Nation, Eighth Edition</ref>
পাঁচ বছরের মধ্যে বত্রিশটি বোর্ডিং স্কুল মার্কিন ইন্ডিয়ান ছাত্রদের ভর্তি করে। তারা আমেরিকান ইন্ডিয়ান ভাষার পরিবর্তে ইংরেজি শেখাতো। তারা কৃষি ও খ্রিস্টান সুসমাচার শেখাতো।<ref>A People and A Nation, Eighth Edition</ref>
=== মানসিক হাসপাতাল আন্দোলন ===
[[File:WTP2 Mike Reali 08b.jpg|thumb|[[w:Friends Hospital|দ্য আসাইলাম ফর দ্য রিলিফ অফ পার্সনস ডিপ্রাইভড অফ দ্য ইউজ অফ দেয়ার রিজন]], যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বেসরকারি আসাইলাম। এটি ১৮১৭ সালে পেনসিলভানিয়ার ফ্রাঙ্কফোর্টের কাছে নির্মিত হয়। এটি আজও হাসপাতাল হিসেবে কাজ করে।]]
১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিকে মানসিক হাসপাতাল আন্দোলন মানসিক অসুস্থতা এবং এর চিকিৎসার সচেতনতা বাড়ায়।<ref>http://www.anxiety-depression-treatment.com/articles/asylum-movement.html</ref> আন্দোলনের প্রথম নেতাদের অনেকেই ছিলেন কোয়েকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ স্বাধীনভাবে কাজ এবং উপাসনা করতে পারত। কিন্তু ইউরোপের সব দেশে এটি সত্য ছিল না। কিছু দেশে ধর্মীয় "উৎসাহীদের" পাগল মনে করে পাগলখানায় বন্দী করা হতো। কোয়েকাররা সেই জায়গাগুলোর ভয়ানক অবস্থা জানত।
প্রথম মার্কিন মানসিক হাসপাতাল ১৮১৭ সালে পেনসিলভানিয়ার ফ্রাঙ্কফোর্টের কাছে কোয়েকাররা প্রতিষ্ঠা করে। এটি প্রাথমিকভাবে বন্দী করার জায়গা হিসেবে ছিল না। বরং (নাম অনুসারে) এটি মানসিক রোগীদের জন্য আশ্রয়স্থল ছিল। এখানে শিকল এবং স্ট্রেইট-জ্যাকেট চিকিৎসার প্রথম উপায় ছিল না। সংগঠকরা ব্যক্তিগত সহিংসতা মোকাবেলায় বিচ্ছিন্ন করাকে ব্যবহার করত। তারা মানসিক অসুস্থতা থেকে মানুষকে বের করে আনতে "নৈতিক চিকিৎসা" ব্যবহার করত। ১৮১৭ সালে আরেকটি মানসিক হাসপাতাল কানেকটিকাটের হার্টফোর্ডে প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এগুলো সামর্থ্যবান মানুষের জন্য ছিল। কিন্তু মানসিক হাসপাতালগুলো জনপ্রিয়তা পায়। এই জনপ্রিয়তা অন্যান্য অঙ্গরাজ্যকে প্রভাবিত করে। ১৮৪০ সালের আগে গরিবদের জন্য চিকিৎসার কোনো উপায় ছিল না। অনেক মানসিক রোগীদের জেল এবং দানশালায় বন্দী করা হতো, যাদের সামর্থ্য ছিল না। সেখানে তাদের প্রায়ই মারধর, বেঁধে রাখা এবং উপহাস করা হতো।
=== দ্বিতীয় মহাজাগরণ ===
[[File:1839-meth.jpg|thumb|দ্বিতীয় মহাজাগরণের সময় ১৮৩৯ সালে একটি মেথডবাদী ক্যাম্প।]]
দ্বিতীয় মহাজাগরণ পূর্ববর্তী ধর্মীয় উত্থানের প্রভাবকে প্রসারিত করে। ১৭৯০-এর দশক থেকে শুরু করে এটি প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় পুনর্জাগরণের ঘটনাকে প্রসারিত করে। "পুনর্জাগরণ একটি বৈপরীত্যের নাটক [. . .] নিজেকে পাপী হিসেবে অনুভব করা এবং তারপর ঈশ্বরের ভালোবাসা ও পাপীর গ্রহণযোগ্যতায় আনন্দ করা।"<ref>Bednarowski, Mary Farrell. American Religion: a Cultural Perspective. Englewood Cliffs, New Jersey: Prentice-Hall, 1984. P. 30.</ref> এই ঘটনা বাপ্তিস্মবাদী, মেথডবাদী এবং প্রেসবিটেরীয়দের মধ্যে ঘটে। কিছু কোয়েকার গির্জাও এই অভিজ্ঞতা লাভ করে। এমনকি ইউনিটারীয়দের মধ্যে একটি প্রচারমূলক গোষ্ঠী ছিল।<ref>Bedell, George C., Leo Sandon, Jr., and Charles T. Wellborn. ''Religion In America.'' Second Edition. New York: Macmillan, 1982 (1975). p. 171</ref> কয়েক দশক আগে জনাথন এডওয়ার্ডস, ওয়েসলি এবং হোয়াইটফিল্ড ভিত্তি তৈরি করেছিল। প্রথমজন ''পূর্বনির্ধারণ''ে বিশ্বাস করতেন। এই ধারণা ছিল যে শুধুমাত্র ঈশ্বর জানেন কে মুক্তি পাবে এবং আগে থেকে মুক্তি পেয়েছে। ব্যক্তিগত ধর্মান্তর ঈশ্বরের নকশা উন্মোচন করে। পরের তিনজন প্রচারক ক্রমশ এডওয়ার্ডসের ''আর্মিনিয়াবাদ'' দ্বারা প্রভাবিত হন। এই ধারণা ছিল যে ব্যক্তিরা নিজেদের মুক্তি বেছে নিতে পারে। একটি জনপ্রিয় স্তোত্রের উদ্ধৃতি: "যদি তুমি আরও উপযুক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা কর, তুমি কখনোই আসতে পারবে না।" দ্বিতীয় মহাজাগরণের প্রধান সুর ছিল আর্মিনিয়ানের জরুরিতা এবং অচর্চিতদের কাছে পৌঁছানো।
পূর্ব ও উত্তরে এবং নতুন মিল শহরের জনসাধারণের চত্বরে পুনর্জাগরণীয় আন্দোলন শুরু হয়। দক্ষিণ এবং পশ্চিমে এটি মেথডিস্ট সার্কিট রাইডার এবং অন্যান্য ভ্রাম্যমাণ প্রচারকদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়েসলিদের উদ্ভাবন অব্যাহত রেখে, সার্কিট রাইডাররা প্রায়শই সাধারণ প্রচারক ছিলেন। তারা উদ্দেশ্যমূলক শ্রোতার মতো সামাজিক স্তর থেকে আসত। এটি কুখ্যাত ''ক্যাম্প মিটিং''-এর মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি ছিল প্রচারক এবং শ্রোতাদের একটি বিশাল সমাবেশ, যা কয়েক দিন ধরে চলতে পারত। সমালোচক যেমন "সাট লাভিংগুড" (জর্জ ওয়াশিংটন হ্যারিস) প্রচারকদের নিরক্ষর দুর্বৃত্ত বলে ডাকতেন। তারা বলতেন, তারা মানুষকে ঠকায় এবং স্তোত্র গায়, যেমন "শোক হবে, এখানে শোক, সেখানে শোক, সেই ভয়ানক দিনে।"<ref>Harris, George Washington. "Parson John Bullen's Lizards." Yarns Spun by a Nat'ral-Born Durn'd Fool, Warped and Wove For Public Wear. [Google Books, http://books.google.com/books?id=YTjQAAAAMAAJ&printsec=frontcover&dq=sut+lovingood&hl=en&ei=5YlmTcDeOMOB8gbtj9WiCw&sa=X&oi=book_result&ct=result&resnum=2&ved=0CDEQ6AEwAQ#v=onepage&q&f=false ] New York: Dick and Fitzgerald, 1867. P. 52.</ref>
কখনো কখনো পুনর্জাগরণের পরে নতুন গির্জা ভবন তৈরি হতো। এই সময়ে সীমান্তে অনেক বাপ্তিস্মবাদী এবং মেথডবাদী গির্জা নির্মিত হয়। এটি গির্জার মধ্যে "নারী সমিতি" অনুসরণ করে প্রবেশ করত। এই গোষ্ঠী তখন ভোট দিতে পারত না। সমাজ তাদের নীরব থাকতে বলত। (প্রকৃতপক্ষে, পুনর্জাগরণ কখনো কখনো নারী এবং আফ্রিকান-মার্কিন প্রচারকদের দ্বারা ছড়িয়ে পড়ত।) পুনর্জাগরণ ১৯শ শতাব্দীর অনেক রাজনৈতিক আন্দোলনের উৎস ছিল। এর মধ্যে কিছু নিচে আলোচনা করা হয়েছে। আর্মিনীয় প্রভাব ''সহস্রবাদ''-এ বিশ্বাস জাগায়। এটি ছিল পৃথিবীতে ঈশ্বরের শাসন বা একটি আসন্ন স্বপ্নলোকে বিশ্বাস। এটি সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট এবং চার্চ অফ ল্যাটার-ডে সেইন্টস সহ বেশ কয়েকটি নতুন মার্কিন ধর্মের জন্য প্রেরণা দেয়। দ্বিতীয় মহাজাগরণ ছিল একটি বিশাল আন্দোলন। এটি লাইমান বিচার, চার্লস গ্র্যান্ডিসন ফিনি এবং থিওডোর ওয়েল্ডের মতো পবিত্র পুরোহিতদের দ্বারা উৎসাহিত হয়েছিল, কিন্তু এটি তাদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়নি। ১৮৩১ সালের মধ্যে গির্জার সদস্যপদ ১০০,০০০ বৃদ্ধি পায়।
=== টেম্পারেন্স ===
[[File:The Drunkard's Progress - Color.jpg|thumb|''দ্য ড্রাঙ্কার্ডস প্রোগ্রেস'' ১৮৪৬ সালের টেম্পারেন্সপন্থী লিথোগ্রাফ। এটি দেখায় কীভাবে মাতালতা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।]]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মদের পরিস্থিতি ছিল জটিল। পিলগ্রিমরা মদ্যপানের বিরোধিতা করেননি। কিন্তু তাদের চার্চ অফ ইংল্যান্ডের বিশপদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ছিল: মাতালতা।<ref>Gonzales, Justo L. ''The Story of Cristianity, Volume 2: The Reformation to the Present Day.'' HarperSanFrancisco. HarperCollins, 1985. p. 150</ref> মদ সরকারের রাজস্বের একটি প্রধান উৎস ছিল। এটি সব সম্প্রদায়কে একত্রিত করত। তবে ১৭০০-এর দশকের শেষ এবং ১৮০০-এর দশকে গরিবদের মাতালতা নিয়ে মন্তব্য করা শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক প্রচারণা মাতালতাকে উৎসাহিত করত। কিছু লোক বলত যে ভোটের বিনিময়ে পানীয় দেওয়া হতো। অনেক গির্জা বিশ্বাস করত যে ট্যাভার্নগুলো একমাত্র কাজবিহীন দিন রবিবারে ব্যবসাকে উৎসাহিত করে। যারা গির্জায় যেত তারা তাদের টাকা বারে খরচ করত। এই বিশ্বাসের ফলে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে মদের ব্যবহার কমানোর জন্য গোষ্ঠী তৈরি হয়। যদিও '''টেম্পারেন্স''' আন্দোলন ব্যবহার সীমিত করার উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল, কিছু টেম্পারেন্স নেতা (যেমন কানেকটিকাটের মন্ত্রী লাইমান বিচার) ১৮২৫ সালে সহনাগরিকদের মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করেন। ১৮২৬ সালে আমেরিকান টেম্পারেন্স সোসাইটি ধর্ম এবং নৈতিকতার পুনরুত্থানে গঠিত হয়। ১৮৩০-এর দশকের শেষ নাগাদ আমেরিকান টেম্পারেন্স সোসাইটির সদস্যপদ ছিল ১,৫০০,০০০। অনেক প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জা টেম্পারেন্স প্রচার শুরু করে।
=== দাসত্ববিরোধী আন্দোলন ===
[[File:Undergroundrailroadsmall2.jpg|thumb|কানাডায় আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোডের যাত্রাপথ। একজন দাস যদি দেশ ছেড়ে না যায়, তবে মুক্ত অঙ্গরাজ্যেও দাস শিকারীরা তাদের তাড়া করত।]]
আফ্রিকান-মার্কিনদের কাছে পৌঁছানোর বর্ধিত প্রচেষ্টা (যার মধ্যে প্রাক্তন দাস যারা সার্কিট রাইডার ছিল) দাসত্বের অবিচারের জন্য একটি বিস্তৃত শ্রোতা প্রদান করে। কিছু প্রচারক এবং কিছু নারী সমিতি দাসদের সাহায্য করতে শুরু করে যারা তাদের মালিকদের কাছ থেকে পালাতে সাহস করত। এটি একটি সংগঠিত '''দাসত্ববিরোধী''' আন্দোলনে পরিণত হয়। এটি ছিল দাসত্ব বিলুপ্ত করার একটি রাজনৈতিক প্রচেষ্টা। মার্কিন কোয়েকাররা ১৬৮৮ সালের জার্মানটাউন কোয়েকার পিটিশন অ্যাগেইনস্ট স্লেভারির জন্য দাসত্ববিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন কিছু ইভানজেলিকাল সম্প্রদায় এই কারণ গ্রহণ করে। কারো কারো জন্য এটি স্বল্পস্থায়ী ছিল। আমেরিকান মেথডিস্ট চার্চ ১৭৮৪ সালের সেই সম্মেলনে নিজেকে দাসত্ববিরোধী ঘোষণা করে, যা এটিকে চার্চ অফ ইংল্যান্ড থেকে আলাদা গির্জা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ১৮৪৩ সালের মধ্যে "এক হাজারেরও বেশি মেথডবাদী মন্ত্রী এবং প্রচারক দাসের মালিক ছিল।"<ref>Gonzalez, Justo L. ''The Story of Christianity. Volume 2.'' Pp. 250-251</ref> এটি বিরোধিতাও উদ্দীপিত করে। প্রত্যেক খ্রিস্টান যিনি বিশ্বাস করতেন যে বাইবেল তাদের দাসত্বের অবসান ঘটাতে বলে, সেখানে আরেকজন থাকতে পারতেন যিনি জোর দিয়ে বলতেন যে এটি দাসত্বকে ঈশ্বরের ভালো উপকরণ হিসেবে দেখায়। দক্ষিণের সম্প্রদায়গুলো উত্তরের তাদের সহধর্মীদের থেকে বিভক্ত হয়। "যখন, ১৮৪৪ সালে, মেথডবাদী জেনারেল কনফারেন্স জর্জিয়ার বিশপকে দাস রাখার জন্য নিন্দা করে, গির্জা বিভক্ত হয়। পরের বছর মেথডিস্ট এপিস্কোপাল চার্চ, সাউথের জন্ম হয়।" প্রেসবিটেরীয়রা ১৮৬১ সালে বিভক্ত হয়।<ref>Gonzalez, ''The Story of Christianity. Volume 2.'' p. 251</ref> দক্ষিণে দাসদের ধর্মান্তরিত করা অবৈধ করার জন্য আইন তৈরি করা হয়। তবুও দাসত্ববিরোধী আন্দোলনের বিস্তৃত প্রভাব ছিল। দাসত্ববিরোধীরা দাস এবং প্রাক্তন দাসদের সঙ্গে যোগ দেয় (যেমন হ্যারিয়েট টাবম্যান) আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড তৈরি করতে। সোজর্নার ট্রুথ এবং ফ্রেডরিক ডগলাসের মতো আফ্রিকান-মার্কিনরা দাসত্ববিরোধী কারণের জন্য কথা বলতে সাহস করেন। বই এবং ম্যাগাজিন তাদের কথা দাস অঙ্গরাজ্যগুলোতে পৌঁছে দেয়।
১৮১৭ সালে আমেরিকান কোলোনাইজেশন সোসাইটি গঠিত হয়। এটি আফ্রিকায় প্রাক্তন মার্কিন দাস এবং মুক্ত আফ্রিকান-মার্কিনদের একটি উপনিবেশ গঠনের চেষ্টা করে।<ref name="loc_colonization">{{cite web |last1=Cuffee |first1=Paul |last2=Ashmun |first2=Jehudi |title=Colonization - The African-American Mosaic Exhibition Exhibitions (Library of Congress) |url=https://www.loc.gov/exhibits/african/afam002.html |website=www.loc.gov |accessdate=19 September 2020 |date=23 July 2010}}</ref> ১৮২২ সালের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকায় একটি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৮৪৭ সালে লাইবেরিয়া হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।<ref name="loc_colonization"/> ১৮৩০-এর দশকে কোলোনাইজেশন সোসাইটির বিরুদ্ধে দাসত্ববিরোধীদের বিরোধিতা তীব্র হয়। তারা এটিকে দাসত্বের একটি উপকরণ হিসেবে দেখত।<ref name="loc_colonization"/>
== পর্যালোচনার জন্য প্রশ্ন ==
# ১৮১২ সালের যুদ্ধে আটলান্টিকের প্রারম্ভিক লড়াইয়ে মার্কিন নৌবাহিনী কেন সফল হয়েছিল?
# "গুড ফিলিংসের যুগ" কী ছিল? এই নামকরণের কারণগুলো কী ছিল?
# ১৯শ শতাব্দীর প্রথম দিকের সমৃদ্ধি এবং ১৮৩৭ সালের আতঙ্কের কারণগুলোর নাম বলুন।
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}
{{chapnav|জেফারসনীয় গণতন্ত্র|ধর্মীয় আন্দোলন}}
{{status|100%}}
{{BookCat}}
8yapifixp21qi7pxdb72yg0rykg0ewy
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ উদ্দীপনাময় বিংশ শতাব্দী এবং নিষেধাজ্ঞা
0
24901
85627
79409
2025-07-03T21:46:31Z
MS Sakib
6561
85627
wikitext
text/x-wiki
== রাজনীতি ও সরকার ==
=== ওয়ারেন জি. হার্ডিংয়ের রাষ্ট্রপতি পদ ===
ব্যবসার প্রতি এক নতুন সহানুভূতির প্রকাশ ঘটে ১৯২০ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী ওয়ারেন জি. হার্ডিংয়ের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে। তার প্রশাসন ১৯২১ সালের বাজেটিং ও হিসাব আইন প্রণয়নের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যয় ব্যবস্থাপনা সহজতর করে। তারা গণপিটুনির বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের সমর্থন জানায় (যদিও তা কংগ্রেসে পাস হয়নি) এবং কৃষক সমবায় ও কৃষি ঋণ ব্যবস্থাকে সহজ করার জন্য কিছু বিল অনুমোদন করে।
==== কেলেঙ্কারি ====
হার্ডিংয়ের প্রশাসন বিভিন্ন কেলেঙ্কারির জন্যও পরিচিত ছিল। তিনি ওহাইওর এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এই সম্পর্ক থেকে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের কথা কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়নি। তিনি এমন কিছু ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে উচ্চপদে নিয়োগ দেন যারা এসব পদকে নিজেদের লাভের উৎস হিসেবে দেখতেন। এদের একজন ছিলেন ভেটেরান্স ব্যুরোর প্রধান চার্লস ফরবস। তিনি সরকারি চুক্তি নিয়ে জালিয়াতি ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন এবং কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। আরেকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল হ্যারি ডরটি। তিনি অবৈধ মদ পাচার চক্রে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু নিজেই নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিচার এড়িয়ে যান।
===== টিপট ডোম কেলেঙ্কারি =====
এই কেলেঙ্কারিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল টিপট ডোম কেলেঙ্কারি। এতে জানা যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলবার্ট ফল ঘুষ গ্রহণ করে সরকারি জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন তেল কোম্পানিগুলোর কাছে ইজারা দিয়েছিলেন। তার আগে হার্ডিংয়ের পূর্বসূরি রাষ্ট্রপতি থিওডোর রুজভেল্ট, উইলিয়াম টাফট ও উড্রো উইলসন একটি জনপ্রিয় সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেছিলেন। ওই আইন অনুযায়ী ওয়াইওমিং ও ক্যালিফোর্নিয়ার কিছু নৌবাহিনীর জন্য নির্ধারিত খনিজ তেল সংরক্ষিত এলাকাকে ভবিষ্যতের জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। তিনটি সংরক্ষিত তেল ক্ষেত্র ছিল ক্যালিফোর্নিয়ার এল্ক হিলস ও বুয়েনা ভিস্তা হিলস এবং ওয়াইওমিংয়ের টিপট ডোম। এই জমিগুলো ছিল জনসাধারণের মালিকানাধীন এবং কেবলমাত্র নিয়মিত তেলের জোগান ফুরিয়ে গেলে নৌবাহিনীর জরুরি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত। টিপট ডোম নামটি এসেছে একটি পাথর থেকে যেটি দেখতে একটি চায়ের পাত্রের মতো এবং তেলের স্তরের ওপর অবস্থিত ছিল। রাজনীতিক ও বেসরকারি তেল কোম্পানিগুলো এই সংরক্ষণনীতি মানতে চাননি। তারা বলেছিল এসব সংরক্ষণ অপ্রয়োজনীয় এবং মার্কিন তেল কোম্পানিগুলোই নৌবাহিনীর চাহিদা পূরণ করতে পারবে।<ref>http://www.montgomerycollege.edu/Departments/hpolscrv/jzeck.html</ref><ref>Mary Beth Norton et al., “A People and A Nation: A History of the United States; The New Era:1920-1929,” ed. Mary Beth Norton et al. (Boston: Cengage Learning 2009).</ref>
টিপট ডোম কেলেঙ্কারিকে ঘিরে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা ১৯২০-এর দশকজুড়ে চলতে থাকে। ১৯২৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে তেলের ইজারাগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে পাওয়া হয়েছে। সেই বছর ফেব্রুয়ারিতে এল্ক হিলসের ইজারা ও অক্টোবরে টিপট ডোমের ইজারা বাতিল ঘোষণা করা হয়। নৌবাহিনী আবার টিপট ডোম ও এল্ক হিলস তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। আলবার্ট ফল ১৯২৯ সালে ঘুষ গ্রহণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। তাকে এক লাখ ডলার জরিমানা ও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হ্যারি সিনক্লেয়ার তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেন এজন্য তাকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় এবং জুরি প্রভাবিত করার অভিযোগে স্বল্পমেয়াদী দণ্ড দেওয়া হয়। এডওয়ার্ড ডোহেনি অবশ্য ১৯৩০ সালে আলবার্ট ফলকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ থেকে খালাস পান।
টিপট ডোম কেলেঙ্কারি কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই বিজয় বয়ে আনেনি। ১৯২৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এটি বড় একটি ইস্যু হয়ে ওঠে। তবে কোনো দলই পুরোপুরি এই দুর্নীতির তথ্য উন্মোচনের কৃতিত্ব নিতে পারেনি। এটি ছিল মার্কিন সরকারের দুর্নীতির প্রথম বাস্তব প্রমাণ। এই কেলেঙ্কারি প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতির সমস্যা তুলে ধরে এবং ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ জরুরি এই বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলে। রাষ্ট্রপতি হার্ডিংয়ের মৃত্যুর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সমস্যাটির মোকাবিলা করেন এবং তার প্রশাসনের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন থাকে।
==প্রযুক্তি==
যদিও এ সময়ে অসংখ্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ঘটেছিল আমেরিকার জীবনে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছিল তার দুটি প্রধান প্রযুক্তিগত ভিত্তি ছিল গণউৎপাদন (অ্যাসেম্বলি লাইন) এবং গণপরীক্ষা।
বৃহৎ স্টিল কারখানা ও বস্ত্রকলাগুলোতে মানুষকে যন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হতো। সামান্য ভুলই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারত যা কখনও প্রাণঘাতীও হতে পারত। হেনরি ফোর্ডের অ্যাসেম্বলি লাইন একই নীতিতে কাজ করত তবে আরও অনেক দূর এগিয়েছিল। একটি গাড়ি এক কর্মী থেকে আরেক কর্মীর কাছে, এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে যেত। প্রতিটি কর্মীর কাজ ছিল নির্দিষ্ট স্ক্রু টাইট করা কোনো যন্ত্রাংশ যোগ করা এবং তিনি কেবল সেই কাজটিই করতেন যেন তিনিও এক ধরনের যন্ত্র। তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল সেই কাজটি সবচেয়ে দক্ষভাবে করা। (এই ব্যবস্থায় কাজের দক্ষতা বিশ্লেষকদের, যেমন ফ্রেডারিক উইন্সলো টেলর এবং গিলব্রেথদের ধারণা ব্যবহার করা হয়েছিল।)
এই চরম পদ্ধতির সুফল ছিল মৌলিক। বস্ত্রকলার মতো এখানে দিনরাত যেকোনো সময়ে দ্রব্য দ্রুত তৈরি করা যেত। এই কাজে বেশি প্রশিক্ষণেরও দরকার হতো না। এই ব্যবস্থার প্রভাব ছিল দীর্ঘস্থায়ী। মডেল টি গাড়ি ছিল টেকসই। "টিন লিজি" নামে পরিচিত এই গাড়ি আত্মপ্রসাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এমনকি যখন নতুন গাড়িতে সেলফ-স্টার্টার যুক্ত হলো তখনও। গাড়িগুলো ছিল সাশ্রয়ী। হেনরি ফোর্ড নিয়মিত মজুরি বাড়াতেন এবং বলতেন যারা গাড়ি তৈরি করে তারা যেন নিজেরাও তা কিনতে পারে।
তবে একটি সমস্যা ছিল এই গাড়িগুলো দেখতে খুব একটা আকর্ষণীয় ছিল না। স্ট্যানলি স্টিমার দেখতে মসৃণ ও স্টাইলিশ ছিল। ডুসেনবার্গ ও পিয়ার্স-অ্যারো ছিল নানা রঙের এবং কিছুতে ফুলদানি পর্যন্ত ছিল। ফোর্ড বিখ্যাতভাবে বলেছিলেন ক্রেতারা যেকোনো রঙ নিতে পারেন "যতক্ষণ না তা কালো!" পরে যখন মানুষ ধনী হলো তারা নিজের রুচি অনুযায়ী রঙিন গাড়ি কিনতে শুরু করল। তবে এটি ছিল ফোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছুটা বিচ্যুতি।
এর চেয়েও বড় বিষয় ছিল অ্যাসেম্বলি লাইনে কাজ করা শ্রমিকদের জন্য এটি ছিল অত্যন্ত ক্লান্তিকর। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে কিছু নির্দিষ্ট পেশী ব্যবহার করে কাজ করতে হতো। মানুষ এমনভাবে তৈরি হয়নি যে সে এভাবে কাজ করবে। যেহেতু কাজ ছিল খুব নির্দিষ্ট এবং সহজ শ্রমিকদের বদলে দেওয়াও ছিল সহজ। সব মালিক কিন্তু ফোর্ডের মতো ভালো বেতন দিতেন না।
গণপরীক্ষা ছিল অ্যাসেম্বলি লাইনের অপরিহার্য অংশ একটি খারাপ যন্ত্রাংশ মানেই খারাপ পণ্য। তবে এই ধারণার শুরু মানবসম্পর্কিত ছিল ১৯ শতকের শেষের আদমশুমারিতে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উপযুক্ত সৈনিক বাছাইয়ের প্রয়োজনে এই পরীক্ষা আরও গুরুত্ব পায়। মনোবিজ্ঞানীরা বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের পরীক্ষা তৈরি করেন। অস্ত্রও ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হতো কারণ সামান্য ত্রুটিপূর্ণ পণ্য যুদ্ধক্ষেত্রে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারত।
যুদ্ধোত্তর যুগে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ তৈরি করে। কোনো পরিবর্তন আনার আগে প্রোটোটাইপ তৈরি হতো এবং জনগণের উপর প্রভাব খুঁটিয়ে দেখা হতো। অর্থনীতি তখন আর শুধু সমৃদ্ধির প্রশ্ন ছিল না বরং যত বেশি মানুষকে বিক্রি করা যায় সেই লক্ষ্যেই এগোতো। ("গণবাজার" শব্দটির উৎপত্তি ঘটে ১৯২০-এর দশকে।)
=== অটোমোবাইল ===
[[File:Crowds on Lafayette Street Bridge -Tampa.jpg|thumb|ফ্লোরিডার ট্যাম্পা শহরের একটি দৃশ্য। এখানে পথচারী, ট্রলি ও স্ট্রিট কার একসঙ্গে সেতু পার হচ্ছে।]]
১৯২০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল শিল্প অ্যাসেম্বলি লাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাপক প্রসার লাভ করে। গাড়ি আমেরিকান জীবনযাত্রার ধরন পাল্টে দেয়। ১৯২৯ সালে প্রতি পাঁচজন আমেরিকানের মধ্যে একজনের গাড়ি ছিল। তারা স্ট্রিট কারের বদলে নিজের গাড়ি ব্যবহার করতে শুরু করে। ঘোড়ার পরিবর্তে গাড়ি চলে আসে। এতে রাস্তা আরও পরিষ্কার হয় কারণ ঘোড়ার মল কমে যায়। (তবে এর বদলে অন্য ধরনের সূক্ষ্ম দূষণ শুরু হয়। ১৯২০-এর দশকে গ্যাসোলিন কোম্পানিগুলো ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বাড়াতে জ্বালানিতে সিসা যোগ করতে শুরু করে।)
এই সময়ে "চাকা-ওয়ালা ঘরবাড়ি" ধারণার সূচনা হয়। মানুষ খাবার ও ক্যাম্পিং সরঞ্জাম গাড়িতে নিয়ে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ত।<ref>"A People and A Nation" the eighth edition</ref> ১৯২০-এর দশকে অধিকাংশ গাড়িতে কাপড় বা স্টিলের ছাদ যোগ হয় যা প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য কিছুটা ব্যক্তিগত স্থান তৈরি করে দেয়। নারীরা এই গাড়ি বিপ্লব থেকে উপকৃত হয়। যারা গাড়ি চালানো শিখেছিল তারা স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করত, কাদাযুক্ত রাস্তা পেরিয়ে যেত এবং প্রয়োজনে গাড়ি মেরামতও করত। ধনী আফ্রিকান-আমেরিকানরা স্থানীয় বৈষম্য এড়িয়ে কিছুটা স্বাধীনতা পায়। তারা গাড়িতে করে "বন্ধ" শ্বেতাঙ্গ এলাকাগুলো অতিক্রম করে সৈকত, ক্যাম্প ও অন্যান্য ছুটির গন্তব্যে যেতে পারত। (তবে তাদের গাড়িতে খাবার, পানি ও জ্বালানি নিয়ে যেতে হতো, মাঝপথে থামা নিরাপদ ছিল না। আফ্রিকান-আমেরিকানদের জন্য নিরাপদ ব্যবসার তালিকা, নিগ্রো মোটরিস্ট গ্রিন বুক ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয়।) গাড়ি ছিল এক ধরনের সামাজিক সমতা আনয়নকারী।
[[File:Last of the Model T's (1217111877).jpg|left|thumb|১৯২৭ সালের ফোর্ড মডেল টি]]
১৯২৩ সালে ১০৮টি অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ছিল এবং মালিকেরা নিজের রুচি অনুযায়ী রঙ বেছে নিতে পারত। তখন জ্বালানির প্রাচুর্য ছিল। ১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মোট তেলের ৬৫ শতাংশ উৎপাদন করত। রাস্তাঘাট নির্মাণ ছিল ব্যাপক। প্রথম সময় নির্ধারিত ট্র্যাফিক বাতি চালু হয় ১৯২৪ সালে।<ref>Mary Beth Norton et al., “A People and A Nation: A History of the United States; The New Era; 1920-1929,” ed. Mary Beth Norton et al. (Boston: Cengage Learning 2009).</ref>
অটোমোবাইল উৎপাদন ও ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত শিল্পগুলোও বাড়তে থাকে পেট্রোলিয়াম, ইস্পাত ও কাচের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। রাজ্য সরকারগুলো গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা ও মহাসড়ক নির্মাণ শুরু করে। দেশজুড়ে গ্যাসোলিন স্টেশন স্থাপন করা হয় যা তেল শিল্পের দ্রুত প্রবৃদ্ধির সাক্ষ্য। গাড়ি বিক্রেতারা কিস্তিতে কেনার ব্যবস্থা চালু করে যা পরে অন্য ব্যবসায়েও ব্যবহৃত হয়। তাই গাড়ি শিল্পের প্রসার গোটা দেশেই প্রভাব ফেলেছিল। হেনরি ফোর্ডের অ্যাসেম্বলি লাইনের উন্নত নকশার ফলে সাধারণ মানুষের কাছেও গাড়ি কেনা সম্ভব হয়। গাড়ি কারখানায় অনেক মানুষ কাজ পায়।
==স্বাস্থ্য ও আয়ু==
খাদ্য ও স্বাস্থ্যের সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই জানা ছিল। উদাহরণস্বরূপ ১৮শ শতক থেকেই জানা ছিল স্কার্ভি রোধে ফল খেতে হয় তাই নাবিকরা দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রায় ফল সঙ্গে রাখত। তবে স্কার্ভি যে ভিটামিন সি এর ঘাটতির কারণে হয় তা জানা যায় ১৯৩২ সালে।
১৯১৫ সাল থেকে ১৯২০-এর দশকের শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ ভিটামিন আবিষ্কৃত হয়। খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আইন নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে শুরু করে। দ্রুত পরিবহন ও রেফ্রিজারেশনের কারণে মানুষ আরও ভালো ও নানা ধরনের খাবারের নাগালে আসে। ১৯৩০ সাল নাগাদ পুষ্টিবিদরা প্রতিদিন কোন খাবার ও কোন ভিটামিন-মিনারেল গ্রহণ করা দরকার তা জনগণকে বোঝাতে শুরু করেন। খাদ্য কোম্পানিগুলোও তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপনে জানাতে থাকে কোন পণ্যে কতটুকু ভিটামিন আছে। তবে অনেক বিজ্ঞাপনে পুষ্টি নিয়ে ভুল ধারণাও দেওয়া হতো। যেমন কিছু চকলেট বারকে বলা হতো "খাদ্যমূল্য" সমৃদ্ধ। ওয়েলচস গ্রেপ জুসে পুষ্টি ও ভিটামিনের কথা বলা হলেও চিনি যে অনেক বেশি তা উল্লেখ করা হতো না।
তবে পুষ্টি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেওয়ায় অনেক আমেরিকান আরও স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে। এই দশকেই পেনিসিলিন ও ইনসুলিন আবিষ্কৃত হয়। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ু ৫৪ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত বাড়ে এবং শিশু মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। তবে অশ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এ পরিস্থিতি প্রযোজ্য ছিল না। তাদের শিশু মৃত্যুহার শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি ছিল। (দারিদ্র্যপীড়িত ও কৃষ্ণাঙ্গ গ্রামীণ জনগণের মধ্যে রিকেটস রোগকে খারাপ বংশগতি বা "দুষ্ট রক্ত" হিসেবে দেখা হতো। এই সময়ে আমেরিকায় ইউজেনিক্স ও জোরপূর্বক বন্ধ্যাত্বকরণের প্রবণতাও বেড়ে যায়।) দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুর হারও প্রায় ১৫০ শতাংশ বেড়ে যায় কারণ গাড়ি তখন আরও দ্রুতগতির ও সাধারণ হয়ে উঠেছিল।
=== বয়স্ক আমেরিকানরা ও অবসরজীবন ===
যেহেতু বেশি মানুষ বার্ধক্যে পৌঁছাতে শুরু করে তাই পেনশন ও বৃদ্ধ সহায়তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ে। ২০শ শতকের তৃতীয় দশকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের এক-তৃতীয়াংশ অর্থনৈতিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। গত ৫০ বছরে অনেক ইউরোপীয় দেশ রাষ্ট্র-সমর্থিত পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছিল। তবে ১৯২৩ সালে পেনসিলভানিয়া চেম্বার অব কমার্স বৃদ্ধ সহায়তাকে বলেছিল "অ-আমেরিকান ও সমাজতান্ত্রিক"। এরপরও ১৯২০-এর দশকে রাজ্যগুলোর এই বিরোধিতা ধীরে ধীরে কমে যায়। আইজ্যাক ম্যাক্স রুবিনো ও আব্রাহাম এপস্টেইন আইন প্রণেতা ও শ্রম ইউনিয়নগুলোকে বৃদ্ধ সহায়তার পক্ষে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। ১৯৩৩ সালের মধ্যে প্রায় সব রাজ্যই দারিদ্র্যপীড়িত বৃদ্ধদের জন্য কিছু না কিছু সহায়তা দিত।
==১৯২০-এর দশকের সংস্কৃতি==
[[File:Violet Romer in flapper dress, LC-DIG-ggbain-12393 crop.jpg|thumb|ফ্ল্যাপার পোশাক ১৯২০-এর দশকের এক প্রতীক হয়ে ওঠে]]
এই সময়কালে সমাজে নতুন সামাজিক মূল্যবোধের উন্মেষ ঘটে। কী ধরনের আচরণ সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ তরুণ-তরুণীরা ধূমপান, মদ্যপান এবং যৌনতা সম্পর্কে খোলামেলা চিন্তাভাবনা শুরু করে। তারা আগের মতো বাবা-মার প্রভাবাধীন না থেকে সহপাঠী ও বন্ধুদের প্রভাবে বেশি চলতে শুরু করে। শহরের স্কুলগুলো ব্যাপক শিক্ষাব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হয়। একই বয়সী শিশুদের একসঙ্গে পড়ানো শুরু হয়। তরুণদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের নজরদারি ছাড়াই প্রেম-ডেটিং করার প্রবণতা একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে ওঠে।
এই পরিবর্তনের নারী প্রতীক ছিল "ফ্ল্যাপার" আর তরুণ পুরুষদের মধ্যে "র্যাকুন কোট পরা শেইখ" ছিল এই পরিবর্তনের প্রতীক। সে সময়ের ফ্যাশনের পোশাকগুলো স্তনের জায়গাকে গুরুত্ব না দিয়ে পেটের অংশ সমান রাখত এটিকে বলা হতো “ছেলেসুলভ গড়ন”। ফ্ল্যাপার নারীদের চুল তাদের মা-নানীদের মতো লম্বা ছিল না। বরং তারা ছোট করে ছাঁটা "বব কাট" রাখত। তারা পুরুষদের মতো মদ্যপান ও ধূমপান করত সব আধুনিক নাচ ও গানের সুর জানত, খোলাখুলি গালি দিত এবং যৌনতা নিয়ে কথা বলত। ফ্ল্যাপাররা কতটা সাধারণ ছিল তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় না। তবে ছোট চুল সেই সময়ে অনেক মেয়ে ও নারীর মধ্যেই জনপ্রিয় ছিল। যদিও এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট পরিমাপ ছিল না। লুইস ব্রুকস এবং ক্লারা বো-র মতো চলচ্চিত্র অভিনেত্রীদের সিনেমায় মদ্যপান করতে দেখা যেত। আর লেখক এফ. স্কট ফিটজেরাল্ডের রচনায় ফ্ল্যাপার নিয়ে সাহিত্যিক আগ্রহের প্রতিফলন দেখা যায়।
যুদ্ধের সময় সৈনিকদের যৌন রোগ প্রতিরোধ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এর ফলে তারা গর্ভনিরোধক নিয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ হয়ে ওঠে। সে সময়ে পশুর টিস্যুর বদলে ল্যাটেক্স দিয়ে কনডম তৈরি হতে শুরু করে। এগুলো এখন উৎপাদনশীলভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আরও সহজলভ্য এবং সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। শিশুদের টিকে থাকার হার বাড়ায় এবং জন্মের সময় ঠিক করার সুযোগ থাকায় মধ্যবিত্ত পরিবারে সন্তানসংখ্যা চার-পাঁচ থেকে নেমে দুই-তিনে দাঁড়ায়। দুর্ভাগ্যবশত এই প্রবণতা ইউজেনিক্স আন্দোলনের সঙ্গে মিশে যায়।
মধ্যবিত্ত শ্রেণি যখন বেশি গতিশীল হয়ে ওঠে তখন তারা দাদা-দাদী কিংবা আত্মীয়দের পরামর্শের ওপর নির্ভরতা হারাতে থাকে। এর পরিবর্তে "বিশেষজ্ঞ"দের শিশু পরিচর্যার পরামর্শ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে সে সময়কার এই পরামর্শগুলো আজকের ব্যবহৃত পদ্ধতির চেয়ে ছিল ভিন্ন। ১৯২৮ সালে জন বি. ওয়াটসন তার বইয়ে পরামর্শ দেন শিশু কাঁদলে কোলে না নিতে অতিরিক্ত আদর না করতে এবং তাদের খুব বেশি প্রশ্রয় না দিতে।
===রেডিও===
[[File:Brox (Sisters) LCCN2014717186.tif|thumb|রেডিও ব্যবহার করছে কিছু মানুষ]]
রেডিও প্রথমে জাহাজ ও স্থলের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা হতো যেমন টাইটানিক যখন মোরস কোডে এস-ও-এস পাঠায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও এটি দুই পক্ষের হাতিয়ার ছিল। প্রেসিডেন্ট উইলসন রেডিও জাতীয়করণ করতে চেয়েছিলেন যেমন পরে গ্রেট ব্রিটেন [[W:ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন|বিবিসি]] জাতীয়করণ করে। তবে কর্পোরেট মহলের প্রতিবাদে উইলসনের পরিকল্পনা বাতিল হয়।<ref>Jones, Gerard. ''Honey, I'm Home! Sitcoms: Selling the American Dream.'' First edition. New York: Grove Weidenfeld (Grove Press), 1992. p. 7</ref> ১৯২০ সালের দিকে হাজারো কৌতূহলী যন্ত্রের শব্দ শোনা যেত। মাঝে মাঝে দূরবর্তী কণ্ঠস্বর কিংবা সঙ্গীতের টুকরো শোনা যেত। ওই বছরেই অ্যাসেম্বলি লাইনের মাধ্যমে আরসিএ "ক্যাটস হুইস্কার" নামক রিসিভার চার ডলারেরও কম দামে বাজারে আসে। ১৯২০ সালের অক্টোবরে ওয়েস্টিংহাউস প্রথম রেডিও স্টেশন কেডিকে তৈরি করে। নভেম্বরে এটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সরাসরি সম্প্রচার করে।<ref>Jones, Gerard. p. 8</ref>
১৯২০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান প্রচার হতো। ১৯২৪ সালে নিউ ইয়র্ক ও বোস্টনের মধ্যে [[W:ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কোম্পানি|ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কোম্পানি]] প্রথম রেডিও নেটওয়ার্ক গঠন করে। ১৯২৭ সালে [[W:কলাম্বিয়া ব্রডকাস্টিং সিস্টেম|কলাম্বিয়া ব্রডকাস্টিং সিস্টেম]] চালু হয়। ১৯২৬ সালে [[W:ফেডারেল রেডিও কমিশন|ফেডারেল রেডিও কমিশন]] গঠন করা হয় এবং ১৯২৭ সালের [[W:রেডিও আইন, ১৯২৭|রেডিও আইনের]] মাধ্যমে এটি সংগঠিত হয়। বিজ্ঞাপনদাতারা অনুষ্ঠান স্পন্সর করত। জনপ্রিয় একটি সংগীতানুষ্ঠান ছিল "দি এ অ্যান্ড পি জিপসিস" যা এ অ্যান্ড পি গ্রোসারি স্টোরের জন্য সারা দেশে প্রচারিত হতো। সংবাদ ও বিনোদনের বিষয়বস্তু বিজ্ঞাপনদাতারা যাচাই করত। কোনো কিছু তাদের অপছন্দ হলে তা প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। তবে এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অনেক কিছু সম্প্রচার করা যেত। মাঝেমধ্যে উচ্চ সংস্কৃতির অনুষ্ঠানও শোনা যেত (যদিও মেট্রোপলিটন অপেরার সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৩১ সালের শেষে)। কিন্তু মূলত মাঝারি মানের গানই প্রচার করা হতো যেমন “দ্য লস্ট কর্ড” বা “ড্রিংক টু মি অনলি উইথ থাইন আইজ”। জনপ্রিয় গান বাজানো হলেও জ্যাজ সঙ্গীত খুব একটা শোনা যেত না। তথাকথিত “জ্যাজের রাজা” পল হুইটম্যানকেও ঠিক জ্যাজ সঙ্গীতশিল্পী বলা যায় না। তবে এর ব্যতিক্রম ছিল। মেক্সিকোর কিছু শক্তিশালী রেডিও স্টেশন জ্যাজ “কালোদের সঙ্গীত” এবং বিষাক্ত ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার করত। দেশের অনেক সংস্কৃতি তখনও রেডিওতে আসেনি। তবে ১৯২৫ সালে [[W:গ্র্যান্ড ওলে অপরি|গ্র্যান্ড ওলে অপরি]] অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিদ্যুতায়নের প্রসারে রেডিওর বাজারও বাড়তে থাকে। কিছু স্টেশন পরীক্ষামূলক প্রচার শুরু করে। দুই শ্বেতাঙ্গ কমেডিয়ান ফ্রিম্যান গসডেন ও চার্লস কোরেল একটি সেন্টিমেন্টাল ও হাস্যরসাত্মক ধারাবাহিক শুরু করেন নাম ছিল ‘‘আমোস 'এন' অ্যান্ডি’’। তখন এমনকি ওহাইয়োর মতো উত্তর রাজ্যেও আফ্রিকান আমেরিকানদের লিঞ্চ করা হতো। সেই সময়ে এই কমেডি ছিল দুইজন “অজ্ঞ” আফ্রিকান আমেরিকানকে নিয়ে যারা ভুলভাল উচ্চারণ করত। তবে এই অনুষ্ঠান তাদের প্রতি সহানুভূতিও তৈরি করত। “এক পর্বে দেখা যায় আমোস ও অ্যান্ডির খুব দরকার একটা টাইপরাইটার। সাথে সাথে শ্রোতারা প্রায় দুই হাজার টাইপরাইটার পাঠিয়ে দেন। ” তবে ‘‘আমোস 'এন' অ্যান্ডি’’ এর জনপ্রিয়তা আসলে এই নতুন জাতীয় অভিজ্ঞতার প্রতি মানুষের উত্তেজনা থেকেই আসে। “এই প্রথম আমেরিকানরা একসঙ্গে, একই মুহূর্তে, একটি অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে পারছিল।”<ref>Jones, Gerard, p. 19</ref>
=== সিনেমা ===
[[File:Chaplin the gold rush boot.jpg|thumb|চার্লি চ্যাপলিন, ১৯২০-এর দশকে একজন খ্যাতনামা ব্রিটিশ চলচ্চিত্র তারকা, একটি প্রাথমিক [[w:Jim Henson Company Lot|হলিউড স্টুডিও]] প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন।<ref>{{cite web |last1=Jarrett |first1=Steve |title=The Cinema Century — February 16, 1918 {{!}} {{!}} Wake Forest University |url=https://faculty.sites.wfu.edu/steve-jarrett/uncategorized/the-cinema-century-february-16-1918 |accessdate=18 September 2020}}</ref>]]
১৯২০-এর দশকে সিনেমা জনপ্রিয় বিনোদনের একটি মাধ্যমে পরিণত হয়। ১৯২২ সালের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪ কোটি মানুষ সিনেমা দেখতে যেত। দশকের শেষ দিকে এ সংখ্যা প্রায় ১০ কোটিতে পৌঁছে যায়। ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কস, মেরি পিকফোর্ড এবং চার্লি চ্যাপলিনের মতো চলচ্চিত্র তারকারা সারা বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
আটটি স্টুডিও এই শিল্পে আধিপত্য বিস্তার করে এবং একটি চলচ্চিত্রের উৎপাদনের সব দিক একত্রিত করে নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯২৯ সালের মধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পে যেসব প্রতিষ্ঠান আধিপত্য বিস্তার করেছিল সেগুলো ছিল ‘বড় পাঁচ’ বা ‘দ্য বিগ ফাইভ’ নামে পরিচিত প্রধান স্টুডিও। এই ‘বিগ ফাইভ’ ছিল ওয়ার্নার ব্রাদার্স, আরকেও, প্যারামাউন্ট, মেট্রো-গোল্ডউইন-মেয়ার এবং ফক্স ফিল্ম কর্পোরেশন। তারা আমেরিকার ৯০ শতাংশেরও বেশি কল্পকাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্র তৈরি করত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিতরণ করত। প্রতিটি স্টুডিও তাদের প্রযোজিত চলচ্চিত্রকে কিছুটা স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপন করত।
প্রতিটি সিনেমা হল কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট স্টুডিওর চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে পারত। যেমন নিউ ইয়র্কের প্যারামাউন্ট থিয়েটার কেবল প্যারামাউন্ট স্টুডিওর কার্টুন, সংবাদচিত্র এবং কাহিনিচিত্র দেখাত। (১৯২০-এর দশকে প্যারামাউন্ট ম্যাক্স ফ্লেইশার স্টুডিওর কো-দ্য ক্লাউন কার্টুন বিতরণ করত।) স্টুডিওর প্রতিটি বিভাগকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক চলচ্চিত্র তৈরি করতে হতো। কোনো সিনেমা হল যদি গ্লোরিয়া সোয়ানসন বা রুডলফ ভ্যালেনটিনোর সিনেমা পেতে চাইত তবে তাকে একটি কম জনপ্রিয় তারকার কিছু সিনেমাও নিতে হতো। এই ‘ব্লক বুকিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে কিছু তারকাকে প্রচার দেওয়া হতো এবং সিনেমা হলগুলো স্টুডিওর নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। তবে এর বিনিময়ে প্রতিটি থিয়েটার প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা পাওয়ার নিশ্চয়তা পেত এবং স্টুডিওর পূর্ণ সমর্থনও থাকত। প্রজেকশনিস্ট, উশার, মিষ্টি ও সিগারেট বিক্রেতা ছাড়াও প্যারামাউন্ট থিয়েটারে নিযুক্ত থাকত এক জন বিশাল অর্গানের সহায়তায় নির্বাক চলচ্চিত্রে সঙ্গত করার জন্য একজন প্রতিভাবান সঙ্গীতজ্ঞ। হলের দেয়াল হাতে আঁকা ছবিতে সজ্জিত থাকত। এমন উচ্চমানের থিয়েটারগুলোকে বলা হতো "সিনেমা প্রাসাদ"।
সবচেয়ে জনপ্রিয় স্টুডিও সিনেমাগুলোর কাহিনি হতো বিদেশি রোমান্টিক পরিবেশে। যেমন ১৯২১ সালের ''দ্য ফোর হর্সম্যান অব দ্য অ্যাপোক্যালিপস'' এ আর্জেন্টিনা এবং ১৯২৪ সালের ''দ্য থিফ অব বাগদাদ'' এ পারস্য। ১৯২৫ সালের ''বেন হুর'' ছবির কিছু অংশ ইতালিতে এবং কিছু অংশ ক্যালিফোর্নিয়ার বিশাল সেটে চিত্রায়িত হয়। ছবির বিখ্যাত রথের দৌড়ের দৃশ্য ধারণে ৪২টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। অতিরিক্ত চরিত্র হিসেবে সেখানে ছিলেন ব্যারিমোর ভাইয়েরা, লিলিয়ান ও ডরোথি গিশ, কৌতুক অভিনেতা হ্যারল্ড লয়েড, মিডিয়া ব্যবসায়ী উইলিয়াম র্যান্ডলফ হার্স্টের প্রেয়সী ম্যারিয়ন ডেভিস, এবং স্টুডিও প্রধান স্যামুয়েল গোল্ডউইন। ধর্মীয় দৃশ্যগুলোতে দ্বি-টোন টেকনিকালার ব্যবহার করা হয়। এটি ছিল তখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র।<ref>IMDB trivia page for ''Ben Hur: A Tale of the Christ'' (1925), http://www.imdb.com/title/tt0016641/trivia?ref_=tt_ql_2 Retrieved on August 15, 2014.</ref>
== নিষেধাজ্ঞা ==
[[File:5 Prohibition Disposal(9) (cropped).jpg|thumb|একটি অভিযানের পর এজেন্টরা মদের বোতল নর্দমায় ঢালছে।]]
যদিও মোট মদ্যপানের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছিল তবে অনেকেই নিষেধাজ্ঞাকে প্রকাশ্যেই অমান্য করত। নিষেধাজ্ঞা সংজ্ঞায়িত করা ২২ পৃষ্ঠার আইন ‘ভলস্টেড আইন’ এ বেশ কিছু ফাঁকফোকর ছিল। গির্জাগুলো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মদ ব্যবহার করতে পারত। এছাড়া ওষুধ হিসেবে মদপানও অনুমোদিত ছিল যেহেতু তা এখনো চিকিৎসার অংশ ছিল। হঠাৎ করেই ‘ধর্মীয়’ ও ‘ঔষধি’ মদের ব্যবহার বেড়ে যায়।
কিছু অবৈধ মদ আমদানি হতো কানাডা, কিউবা ও মেক্সিকো থেকে, যেখানে মদ নিষিদ্ধ ছিল না। কিছু মদ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে তৈরি। দেশজুড়ে অনেক জায়গায় ‘বুটলেগার’রা (অবৈধভাবে মদ সরবরাহকারী) সক্রিয় ছিল। পাহাড়ি অঞ্চলের গোপন স্থানে হুইস্কির অবৈধ উৎপাদন চালু ছিল ‘হুইস্কি বিদ্রোহ’ এর সময় থেকেই। শহরাঞ্চলে তৈরি হতো ‘বাথটাব জিন’। ভলস্টেড আইনে বলা হয়েছিল নিজের বাড়িতে ব্যক্তিগতভাবে মদ পান বৈধ তবে প্রকাশ্যে একত্র হয়ে মদ্যপান নিষিদ্ধ। শহরাঞ্চলে গোপনে গড়ে ওঠা ‘স্পিকইজি’ নামে বারগুলো ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব স্থাপনার পেছনে ছিল অর্থ। ফলে একটি নতুন অপরাধচক্র গড়ে ওঠে যারা এসব বার পরিচালনা করে লাভ করত। তারা পুলিশের ঘুষ নিত যাতে আইন প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। এই গোপন অর্থনীতিতে গ্যাংরা ফুলে-ফেঁপে ওঠে। নিষেধাজ্ঞা থেকে অনেক চাকরির সুযোগ তৈরি হয়। কিছু কাজ মদ সংক্রান্ত এবং কিছু বৈধ ব্যবসার ছদ্মবেশে ছিল যা স্পিকইজি থেকে আয় করা অর্থ সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হতো। তবে এসব কাজ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও সহিংসতা ছিল নিয়মিত ঘটনা। অনেক সমালোচক মনে করতেন যে নিষেধাজ্ঞা অতিরিক্ত কঠোর ছিল। এতে সাধারণ মানুষও অপরাধী হয়ে উঠছিল যারা মূলত বৈধভাবে মদ কিনত যদি তা বৈধ থাকত।
== গ্যাং ও সহিংসতা ==
[[File:George machine gun kelly 1933.gif|thumb|মেশিন গান কেলি, পুলিশ কর্তৃক আটক]]
১৯২০-এর দশকে মদ ছিল অবৈধ অথচ তার বিশাল বাজার ছিল। এই পণ্য সরবরাহ করত গ্যাংস্টাররা। এ সময়ের কয়েকজন কুখ্যাত গ্যাংস্টার ছিলেন চার্লস "লাকি" লুচিয়ানো, মেয়ার ল্যানস্কি ও "ডাচ" শাল্টজ। তবে সবচেয়ে বিপদজনক ছিলেন শিকাগোর আল ক্যাপোন। তিনি গোটা মিডওয়েস্ট জুড়ে মদ পাচার করতেন। তিনি মাদক পাচার ও খুনের দায়েও অভিযুক্ত ছিলেন এবং পুলিশ ও রাজনীতিবিদদের ঘুষ দিতেন।
যদিও অনেকেই ক্যাপোনকে ভয় পেত তবুও অন্য গ্যাংদের সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল। তিনি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চলতেন এবং সবসময় সশস্ত্র দেহরক্ষী সঙ্গে রাখতেন। শিকাগোতে প্রতিদিনই সহিংসতা ঘটত। মাত্র চার বছরে ২২৭ জন গ্যাংস্টার খুন হয়। ১৯২৯ সালের ভালেন্টাইনস ডে তে পুলিশের ছদ্মবেশে গ্যাংস্টাররা ও’ব্যানিয়ন গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে।
১৯৩১ সালে সরকার ক্যাপোনকে সরাসরি সহিংসতার অভিযোগে নয় বরং কর ফাঁকির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। তিনি ১১ বছরের জেল পান এবং জেল থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার শারীরিক অবস্থা ভেঙে পড়ে।
=== বনি ও ক্লাইড ===
[[File:Bonnieclyde f.jpg|thumb|upright|বনি ও ক্লাইড]]
বনি ও ক্লাইডও ১৯২০-এর দশকের নিষেধাজ্ঞা যুগের একটি কুখ্যাত অপরাধী জুটি ছিল। ক্লাইড চ্যাম্পিয়ন ব্যারো ও তার সঙ্গিনী বনি পার্কার একদল গ্যাং নিয়ে বিভিন্ন খুন ও ডাকাতি করত। ১৯৩৪ সালের ২৩ মে লুইজিয়ানার সাইলসের কাছে এক অতর্কিত অভিযানে পুলিশ তাদের গুলি করে হত্যা করে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর অপরাধী ধরার ঘটনা।
ব্যারোর বিরুদ্ধে অসংখ্য খুন ডাকাতি ও অপহরণের অভিযোগ ছিল। ১৯৩২ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘বুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ (পরবর্তীতে এফবিআই নামে পরিচিত) ব্যারো ও বনি পার্কারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। সেপ্টেম্বরে জ্যাকসন মিশিগানের কাছে এক ফোর্ড গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় যেটি ওকলাহোমার পাওহাসকা থেকে চুরি হয়েছিল। পাওহাসকায় আরও একটি ফোর্ড গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় যেটি ইলিনয় থেকে চুরি হয়েছিল। গাড়ির ভেতরে পুরুষ ও নারীর উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই গাড়ি থেকে একটি ওষুধের বোতল পাওয়া যায় যা অনুসরণ করে তদন্তকারীরা টেক্সাসের ন্যাকোগডোসেস শহরের একটি ফার্মেসিতে পৌঁছে যায়। জানা যায় ওষুধটি ক্লাইড ব্যারোর এক খালার নামে নেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে জানা যায় ক্লাইড ব্যারো, বনি পার্কার এবং ক্লাইডের ভাই এল. সি. ব্যারো সম্প্রতি সেই নারীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তারা যে গাড়িতে করে এসেছিল সেটিই ছিল ইলিনয় থেকে চুরি হওয়া ফোর্ড। আরও জানা যায় ওষুধের বোতলটি খালার ছেলের কাছ থেকে এল. সি. ব্যারো নিয়েছিল।
১৯৩৩ সালের ২০ মে ডালাসের একজন মার্কিন কমিশনার ক্লাইড ব্যারো ও বনি পার্কারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। অভিযোগ ছিল তারা ইলিনয় থেকে চুরি করা গাড়ি আন্তঃরাজ্য পরিবহন করে ডালাস থেকে ওকলাহোমা নিয়ে গিয়েছিল। এরপর এফবিআই এই জুটিকে ধরার অভিযান শুরু করে।
== ধর্ম ও পুনর্জাগরণবাদ ==
সংবাদপত্রের ধর্মীয় বিভাগ দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় ছিল। ১৯২০-এর দশকে রেডিও নতুন একটি মাধ্যম হয়ে ওঠে যার মাধ্যমে ধর্মীয় বার্তা সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। গির্জাগুলো রেডিও স্টেশন থেকে সম্প্রচারের সময় কিনত। এতে করে তারা নিজেদের প্রতিবেশীবান্ধব হিসেবে উপস্থাপন করতে পারত। শহরের রেডিও স্টেশনগুলো ক্যাথলিক, ইহুদি, এমনকি সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠী বা উপাসনালয়ের অনুষ্ঠানও সম্প্রচার করত। এতে করে ধর্মীয় বিষয়বস্তু সরাসরি শ্রোতাদের ঘরে পৌঁছাত যা ছাপা মিডিয়ার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
ধর্মীয় পুনর্জাগরণ তখন মূলধারার ধর্মীয় গোষ্ঠী ও ছোট ছোট ধর্মীয় সম্প্রদায় দু'দিকেই দৃশ্যমান ছিল। প্রচারকরা মানুষকে আনন্দ-বিনোদন ত্যাগ করে খাঁটি বিশ্বাসের দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানাতেন। তাদের অনেকেই সিনেমা, থিয়েটার, উপন্যাস, তাস খেলা, মদ্যপান, এবং আধুনিক ফ্যাশনযেমন নারীদের ছোট পোশাক ও মেকআপ এর বিরোধিতা করতেন। তারা প্রায়শই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ছিলেন। ১৯২০-এর দশকে ধর্মীয় পুনর্জাগরণে বিদ্যুৎ আলোকসজ্জা মাইক্রোফোন ও রেডিও সম্প্রচার যুক্ত হয়। কিছু জনপ্রিয় ধর্মপ্রচারক ট্রেনে বা গাড়িতে দেশজুড়ে ভ্রমণ করতেন এবং শহর ও গ্রামে ধর্মীয় সভা করতেন। এই ধরনের বিখ্যাত ধর্মপ্রচারকদের মধ্যে ছিলেন আইমি সেম্পল ম্যাকফারসন ও বিলি সানডে যাঁরা নানা বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিলেন।
== জ্যাজ ==
[[File:Louis Armstrong restored.jpg|thumb|right|লুইস আর্মস্ট্রং]]
জ্যাজ হলো একটি আমেরিকান সংগীতশৈলী যা ২০শ শতকের শুরুর দিকে দক্ষিণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে আফ্রিকান ও ইউরোপীয় সঙ্গীত ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে গঠিত হয়। জ্যাজের "জন্মভূমি" হিসেবে নিউ অরলিন্স শহরকে বিবেচনা করা হয়। অনেক প্রাথমিক জ্যাজ সংগীতশিল্পী নিউ অরলিন্সকে নিজেদের বাড়ি বলে দাবি করতেন এমনকি যদি তারা কখনো সেখানে না গিয়েও থাকতেন। জ্যাজ বহু কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও পুরুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়। জ্যাজ খুব দ্রুত সারা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে।<ref>http://www.d.umn.edu/cla/faculty/tbacig/studproj/is3099/jazzcult/20sjazz/upriver.html</ref> এই ধারার পশ্চিম আফ্রিকান উৎস স্পষ্ট যেমন ব্লু নোট,কল-অ্যান্ড-রেসপন্স, তৎক্ষণাৎ সৃষ্ট সংগীত (ইম্প্রোভাইজেশন), বহু-তাল , ছন্দচ্যুতি , এবং র্যাগটাইমের সুইং নোট সংগীত। ১৯২২ সাল থেকে জেনেট রেকর্ডস শিকাগোতে জ্যাজ ব্যান্ডদের রেকর্ড করা শুরু করে। তারা প্রথম রেকর্ড করে নিউ অরলিন্স রিদম কিংস নামের একটি দলকে। ১৯২৩ সালে তারা কিং অলিভারের ক্রেওল জ্যাজ ব্যান্ডের রেকর্ড করে যেখানে ছিলেন লুইস আর্মস্ট্রং। শিকাগোর আরেকটি স্বতন্ত্র কোম্পানি প্যারামাউন্ট রেকর্ডস, জেনেট ও ওকেহ রেকর্ডসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছিল জ্যাজ প্রতিভা সংগ্রহে।<ref>Some famous early jazz musicians include King Oliver, Louis Armstrong, Kid Ory, and Duke Ellington.</ref> কৃষ্ণাঙ্গ সমাজও জ্যাজের প্রভাব অনুভব করেছিল। লেখক ল্যাংস্টন হিউজ প্রায়ই তার কবিতায় জ্যাজ সংগীতের উল্লেখ করেছেন কখনো প্রশংসাসূচক, কখনো সমালোচনামূলকভাবে।
== বিদেশে ব্যবসা ==
যুদ্ধের পর বহু উৎপাদনকারী কোম্পানি সমস্যায় পড়ে। তারা অস্ত্র ও বিমান তৈরির যুদ্ধকালীন উৎপাদন থেকে যুদ্ধ-পূর্ব পণ্যে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হার্ডিং ও পরে কুলিজের ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা ব্যবসা পরিচালনায় সহায়ক হয়। দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসা ভালো চললেও শুল্কহার ২৭% থেকে (আন্ডারউড-সিমন্স শুল্ক অনুযায়ী) ৪১% এ বাড়ানোয় উপকার হয়। পাশাপাশি বহু বড় কোম্পানি বিদেশেও ভালো লাভ করে। যুদ্ধের আগেই যেমন করছিল তারা বিভিন্ন দেশে কারখানা স্থাপন করে যেখানে নির্দিষ্ট সম্পদ পাওয়া যায়। গোশত প্রক্রিয়াকারক গুস্তাভাস সুইফ্ট যান আর্জেন্টিনায়। ফল উৎপাদনকারীরা যান কোস্টারিকা, হন্ডুরাস ও গুয়াতেমালায়। চিনি বাগানের মালিকরা যান কিউবায়। রাবার বাগানের মালিকরা যান ফিলিপাইন, সুমাত্রা ও মালয়ায়। তামা কোম্পানিগুলো চিলিতে যায়। তেল কোম্পানিগুলো যায় মেক্সিকো ও ভেনেজুয়েলায় যা এখনও তেলের একটি বড় উৎস। স্টিমশিপ ও টেলিগ্রাফের কারণে যোগাযোগ ও পরিবহন সহজ হয়ে পড়ে।
== সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন ==
[[File:Blair-miner.jpg|thumb|left|রাইফেল হাতে ব্লেয়ার পর্বতের একজন খনি শ্রমিক। মেটওয়ান হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো অস্ত্র তুলে নেয়। যার জবাবে সরকার ও ইউনিয়ন-বিরোধী শক্তিগুলো সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে।]]
১৯২০-এর দশকে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন বড় ধরণের সংকটে পড়ে। এই সময়ে আমেরিকায় [[W:কমিউনিজম|কমিউনিজম]] ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল হয়। ফলে যারা শ্রমিক শ্রেণির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বাধা দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে জনমত নেতিবাচক হয়ে ওঠে। জনমত এতটাই ইউনিয়নবিরোধী ছিল যে ১৯২২ সালে প্রেসিডেন্ট হার্ডিং প্রশাসন প্রায় ৪ লক্ষ শ্রমিকের রেল ধর্মঘট দমন করতে আদালতের আদেশ নেয়। একই বছর প্রায় ৬.৫ লক্ষ খনি শ্রমিকের একটি জাতীয় ধর্মঘট দমনেও সরকার ভূমিকা রাখে। ফেডারেল ও অঙ্গরাজ্য সরকার ধর্মঘটের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখায়নি এবং ধর্মঘটের সময় কোনো ক্ষতির জন্য কোম্পানিগুলোকে ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয়।
== গুরুত্বপূর্ণ মামলা ==
সাক্কো-ভানজেট্টি বিচার, লিওপোল্ড ও লোয়েব মামলা, স্কোপস বিচার এবং ব্ল্যাক সক্স মামলা ছিল ১৯২০-এর দশকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদালত মামলা। প্রতিটি মামলাই নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।
=== স্কোপস বিচার ===
[[File:Tennessee v. John T. Scopes Trial- Outdoor proceedings on July 20, 1925, showing William Jennings Bryan and Clarence Darrow. (2 of 4 photos) (2898243103) crop.jpg|thumb|বিচার কার্যক্রমের একটি ছবি।]]
১৯২৫ সালে জন টমাস স্কোপস নামের একজন জীববিজ্ঞান শিক্ষক টেনেসিতে বিচারাধীন হন। তিনি তার পাবলিক স্কুলে মানব উদ্ভব বিষয়ে বিবর্তনবাদ শেখানোর দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। সে সময়ের আইন অনুযায়ী বাইবেলের আদম ও হাওয়ার কাহিনিই ছিল মানব উৎপত্তির একমাত্র গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা। এই মামলা বেশ বিতর্ক সৃষ্টি করে এবং উইলিয়াম জেনিংস ব্রায়ানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ব্রায়ান মামলার পক্ষ থেকে যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বিবর্তনবাদকে ক্ষতিকর ভাবার পাশাপাশি এটিকে ইউজেনিক্সের (জাতি শুদ্ধি) মঞ্চ হিসেবেও দেখতেন। স্কোপস যে ''সিভিক বায়োলজি'' বইটি ব্যবহার করতেন তাতে "জাতিগত স্বাস্থ্যবিধি" সমর্থিত ছিল। যদিও আধুনিকপন্থীরা মামলায় হেরে যায় তারা খুশি হয়েছিল কারণ তারা প্রমাণ করতে পেরেছিল যে বিকল্প তত্ত্ব শেখানো নিষিদ্ধ করার আইনটি যুক্তিহীন। তারা এতেও খুশি হয় যে এই রায় মৌলবাদী চিন্তার বিস্তারে কোনো প্রভাব ফেলেনি। স্কোপস বিচার পরবর্তী সময়ে [[W:সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশন|সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশন]] খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে। এটি প্রমাণ করে যে বিচারটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছিল। এদের বিশ্বাস থেকে জন্ম নেয় একটি স্বতন্ত্র উপ-সংস্কৃতি যেখানে ছিল নিজেদের স্কুল, রেডিও অনুষ্ঠান ও মিশনারি সংস্থা।
== সংখ্যালঘু নারীরা ==
১৯২০-এর দশকে কর্মজীবী সংখ্যালঘু নারীর সংখ্যা শ্বেতাঙ্গ নারীদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ছিল। সংখ্যালঘু নারীরা বিশেষ করে যেসব নারী কারখানায় কাজ করতেন তারা সবচেয়ে কম পারিশ্রমিকের ও অপ্রিয় কাজ করতেন। কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা সাধারণত গৃহস্থালির কাজ যেমন রান্না, পরিষ্কার ও কাপড় ধোয়ার মতো পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সে সময় শিক্ষিত সংখ্যালঘু নারীদের জন্য সমাজসেবা, শিক্ষকতা ও নার্সিং পেশায় কিছু সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু তারা ব্যাপক বৈষম্যের মুখোমুখি হন। পারিবারিক আর্থিক প্রয়োজনে হাজার হাজার সংখ্যালঘু নারী কাজ করতে বাধ্য হন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মেক্সিকান নারীরা গৃহপরিচারিকা, পোশাক কারখানার শ্রমিক ও কৃষিকাজে নিয়োজিত ছিলেন। মেক্সিকান সংস্কৃতিতে নারীদের কাজ করাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হতো। আফ্রিকান নারীদের পরেই জাপানি নারীরা সবচেয়ে বেশি নিম্নবেতনের চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। তারা নিয়মিতভাবে বর্ণবাদ ও বৈষম্যের শিকার হতেন।
== আফ্রিকান-আমেরিকান এবং কু ক্লাক্স ক্ল্যান ==
=== কু ক্লাক্স ক্ল্যানের পুনর্জন্ম ===
দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে গণপরিবহনসহ অনেক পাবলিক স্থাপনায় কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা ছিল। দক্ষিণের অর্ধেক এলাকায় ১০ শতাংশেরও কম কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাধিকার পেত।
১৯২১ থেকে ১৯২৬ সালের মধ্যে কু ক্লাক্স ক্ল্যান ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়। তখন মিলিয়ন সংখ্যক প্রোটেস্ট্যান্ট এতে যুক্ত ছিল। কু ক্লাক্স ক্ল্যান কেবল দক্ষিণেই নয় ওহাইও, ওরেগন এবং ইন্ডিয়ানার মতো উত্তর রাজ্যগুলোতেও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ছিল। ইন্ডিয়ানার গভর্নর ও ওরেগনের এক মেয়র কেএকে কেএকের সদস্য ছিলেন। নারীরাও এতে যুক্ত হয় নারীদের সহযোগী সংগঠনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য ছিল। ক্ল্যান সদস্যরা আফ্রিকান-আমেরিকান, ক্যাথলিক ও ইহুদি জনগণের বিরুদ্ধে মিছিল ও সহিংসতা চালায়। মদ চোরাচালানকারী ও পরকীয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও তারা তৎপর ছিল। ১৯০০-এর দশকের শুরুতে উত্তর-পূর্বে ব্যাপক অভিবাসনের বিরোধিতা করা জাতীয়তাবাদীরা ক্ল্যানকে নতুন করে সমর্থন দিতে থাকে।
ক্ল্যানের পুনরুত্থান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরে বিভাজন সৃষ্টি করে যার সুযোগে রক্ষণশীল রিপাবলিকান ক্যালভিন কুলিজ ১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন।
কৃষ্ণাঙ্গদের কু ক্লাক্স ক্ল্যান ব্যাপকভাবে নির্যাতন করে। তবে তারা একমাত্র লক্ষ্য ছিল না। ক্ল্যান "স্থানীয়, শ্বেতাঙ্গ, প্রোটেস্ট্যান্ট শ্রেষ্ঠত্বে" বিশ্বাস করত। তারা মেক্সিকান, ইহুদি এবং ক্যাথলিকদেরও আক্রমণ করত। কু ক্লাক্স ক্ল্যানের একটি সংবাদপত্রে একটি হাস্যরসাত্মক কবিতা প্রকাশিত হয় যেখানে পোপ ও শয়তানের কথোপকথনে শয়তান বলে কেএকে কেএ "তোমার জন্য নরকে আমার থেকেও বেশি গরম করে দেবে।"<ref>"The Pope's Last Call," "Elsie Thornton." Originally printed in Alabama KKK Newsletter, June 1926. p. 4. Box 16, Folder 11: Association Records, Ku Klux Klan, Alabama Department of Archives and History, Montgomery. Recalled on October 18, 2014: http://www1.assumption.edu/users/McClymer/his261/Pope'sLastCall.html</ref> ক্ল্যান মদ চোরাচালানকারী, স্ত্রীকে মারধরকারী, পরকীয়া জড়িত ব্যক্তি এবং এমনকি নাইটস অব কলম্বাসের বিরুদ্ধেও নিজের হাতে শাস্তি দিতে চাইত।<ref>A People and A Nation Eighth Edition</ref>
=== গ্রেট মাইগ্রেশন ===
বেশিরভাগ শহরে কৃষ্ণাঙ্গরা জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ঘনবসতির চাপে পড়ে যায়। এই চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারা আশেপাশের শ্বেতাঙ্গ পাড়াগুলোতে বসতি গড়ে তুলতে শুরু করে। এতে শ্বেতাঙ্গ প্রতিবেশীরা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। কারণ তারা ভাবত কৃষ্ণাঙ্গরা এলাকা দখল করলে সম্পত্তির মূল্য কমে যাবে। দক্ষিণ ও উত্তর উভয় শহরেই কৃষ্ণাঙ্গদের উপস্থিতি এবং বসতি, চাকরি, এমনকি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে প্রতিযোগিতা বিভিন্ন জাতিগত দাঙ্গার জন্ম দেয়। ১৯২১ সালের তুলসা জাতিগত দাঙ্গা এবং ১৯২৩ সালের রোজউড গণহত্যা যেখানে একটি শহর পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয় এই ঘৃণার চরম উদাহরণ। তুলসা দাঙ্গায় স্থানীয় শ্বেতাঙ্গরা একটি সমৃদ্ধ কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ে হামলা চালায়। তারা দোকান ও ঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং এমনকি বিমান থেকে বোমা ফেলে কমিউনিটিকে ধ্বংস করে দেয়।<ref>{{cite news |title=The 1921 Tulsa Race Massacre and its enduring financial fallout |url=https://news.harvard.edu/gazette/story/2020/06/the-1921-tulsa-race-massacre-and-its-enduring-financial-fallout/ |accessdate=18 September 2020 |work=Harvard Gazette |date=18 June 2020}}</ref>
এই গ্রেট মাইগ্রেশন উত্তরের বড় শহরগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়। তারা নিউ ইয়র্ক, শিকাগো ও ডেট্রয়েটের মতো শহরে এবং পশ্চিমে লস অ্যাঞ্জেলেস ও সান ডিয়েগোতে গিয়ে বসবাস শুরু করে। যদিও অধিকাংশ অভিবাসী দরিদ্র ছিল এবং নিম্নমানের ঘরে থাকত কেউ কেউ ভালো ঘর কিনতেও সক্ষম হয়। কিন্তু সম্পদশালী হলেও শ্বেতাঙ্গ এলাকায় বসবাস করতে পারত না। বর্ণবৈষম্য কখনো সরাসরি প্রকাশ পেত যেমন বিজ্ঞাপনে লেখা থাকত "কৃষ্ণাঙ্গদের প্রয়োজন নেই" আবার কখনো রিয়েল এস্টেট এজেন্টের চুপচাপ অস্বীকৃতির মাধ্যমে। যে সাহসী কৃষ্ণাঙ্গ পরিবার এই এলাকায় ঘর কিনত তারা প্রতিবেশীদের অবজ্ঞা স্থানীয় ব্যবসার পরিষেবা না পাওয়া এবং কখনো কখনো গোপন বা প্রকাশ্য সহিংসতার মুখে পড়ত। (এর একটি উদাহরণ হল ১৯২৫ সালের ডেট্রয়েটের অসিয়ান সুইট মামলায় দেখা যায়।)
<gallery mode="packed">
File:TulsaRaceRiot-1921.png|১৯২১ সালে তুলসা শহর জ্বলছে।
File:Soldiers with Black Resident of Washington, D.C., 1919.png|ওয়াশিংটন ডিসিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সশস্ত্র সৈন্যরা, ১৯১৯।
File:Chicago Race Riot 1919 stoning.png|১৯১৯ সালের শিকাগো জাতিগত দাঙ্গার সময় এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে পাথর নিক্ষেপ করছে শ্বেতাঙ্গরা।
File:ChicagoRaceRiot 1919 wagon.png|দাঙ্গার পর ভাঙচুর হওয়া ঘর থেকে পালিয়ে যাচ্ছে একটি পরিবার।
</gallery>
=== সংগঠিত হওয়া ===
এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন গড়ে ওঠে। মার্কাস গারভি একজন জ্যামাইকান অভিবাসী তিনি হারলেমে ইউনিভার্সাল নিগ্রো ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (UNIA) গঠন করেন। গারভি সমতা ও মর্যাদার এক বার্তা প্রচার করতেন যা অনেকেই এমনকি কিছু কৃষ্ণাঙ্গ নেতারাও চরমপন্থী বলে মনে করতেন। তিনি কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের জন্য বিভিন্ন কোম্পানি ও সংবাদপত্র চালু করেন। তার অনুসারীরা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশেষত শহরগুলোতে। অমৃতজিৎ সিং [https://books.google.com/books?id=F8oVNhl4sKwC&pg=PA10&lpg=PA10&dq=who+estimates+that+Garvey+and+the+UNIA+had+over+half+a+million+followers&source=bl&ots=EAgFq5DvGL&sig=kM6A1bs0u89Mpw4x-0BduZni5MQ&hl=en&sa=X&ved=0CCcQ6AEwA2oVChMI7_OI-tH5yAIVWNNjCh3z2QX2#v=onepage&q=who%20estimates%20that%20Garvey%20and%20the%20UNIA%20had%20over%20half%20a%20million%20followers&f=false] ধারণা করেন গারভি ও UNIA এর অনুসারীর সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি ছিল। গারভি কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে একতা তৈরি করেন এবং তাদের প্রতিবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। তবে W.E.B. ডু বোয়া সহ অনেক প্রখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ চিন্তাবিদ গারভির পন্থা চরম মনে করতেন। তারা বিশ্বাস করতেন এভাবে করলে উল্টো ক্ষতি হতে পারে। ডু বোয়া ধাপে ধাপে পরিবর্তন শিক্ষা ও আইনি পথে লড়াইয়ে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ও আরও কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেলকে অনুরোধ করে গারভিকে জামাইকা ফেরত পাঠান। তবে গারভির বার্তা বহুবছর বেঁচে ছিল এবং ১৯৬০ সালের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা ম্যালকম এক্সের অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস হয়ে ওঠে।
===হারলেম রেনেসাঁ===
[[File:Three Harlem Women, ca. 1925.png|thumb|upright|১৯২৫ সালে হারলেমে আফ্রিকান-আমেরিকান নারী।]]
নিউ ইয়র্ক সিটির হারলেম এবং আরও কয়েকটি উত্তরাঞ্চলীয় শহরে কৃষ্ণাঙ্গ সংস্কৃতি গড়ে উঠতে শুরু করে। এর পেছনে ছিল গ্রেট মাইগ্রেশনের মাধ্যমে কিছুটা অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত সুযোগ-সুবিধা লাভ। কৃষ্ণাঙ্গ ব্যবসা, আইন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং শিল্পসংগঠনগুলো বিকশিত হয়। এখানে "দ্য ট্যালেন্টেড টেন্থ" নামে পরিচিত একটি শিক্ষিত কৃষ্ণাঙ্গ শ্রেণি নিজেদের ব্যবসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। কবি ল্যাংস্টন হিউজ, ক্লড ম্যাকে ও জিন টুমার এবং সংগীতশিল্পী চিক ওয়েব ও ডিউক এলিংটন মূলধারার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হন। তাদের সংগীত শোনা যেত শ্বেতাঙ্গদের যাতায়াত করা (যদিও অনেক সময় বিভাজিত) ক্লাবে। '''হারলেম রেনেসাঁ''' সমসাময়িক কৃষ্ণাঙ্গ সমাজের আশা,ভয় ও আত্মপ্রকাশের একটি নিদর্শন ছিল।
== ১৯২০-এর দশকে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী ==
[[W:Indian Citizenship Act|১৯২৪ সালের ইন্ডিয়ান সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট]] যুক্তরাষ্ট্রে আদিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়।<ref>{{cite web |title=Education from LVA: Indian Citizenship Act |url=https://edu.lva.virginia.gov/online_classroom/shaping_the_constitution/doc/indian_citizenship_act |website=edu.lva.virginia.gov |accessdate=18 September 2020}}</ref>
[[W:Immigration Act of 1924|১৯২৪ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট]] কার্যত এশিয়া থেকে অভিবাসন বন্ধ করে দেয়। এটি ইহুদি, ইতালীয় ও পূর্ব ইউরোপীয়দের অভিবাসনও সীমিত করে দেয়।<ref>{{cite web |title=An "Un-American Bill": A Congressman Denounces Immigration Quotas |url=http://historymatters.gmu.edu/d/5079/ |website=historymatters.gmu.edu |accessdate=18 September 2020}}</ref><ref>{{cite web |title=Asians and Asian Exclusion |url=https://pluralism.org/asians-and-asian-exclusion |website=pluralism.org |accessdate=18 September 2020 |language=en}}</ref>
== সমৃদ্ধির অবসান ও ১৯২৯ সালের স্টক মার্কেট বিপর্যয় ==
[[File:Crowd outside nyse.jpg|thumb|upright|স্টক মার্কেট বিপর্যয়ের পর নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের বাইরে ভিড়।]]
১৯২০-এর দশকে কৃষকরা খুব একটা ভালো অবস্থায় ছিল না। অনেক খামারে বিদ্যুৎ বা পানির ব্যবস্থা ছিল না। ফসলের অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে দাম কমে যায় এবং কৃষকদের আয়ও কমে যায়। [[W:World War I|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ]] ইউরোপের কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল। ফলে যুদ্ধরত ইউরোপীয় দেশগুলো আমেরিকার খাদ্য উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।<ref>Shmoop Editorial Team. "Economy in The 1920s" Shmoop University, Inc..11 November 2008. http://www.shmoop.com/1920s/economy.html (accessed November 22, 2013).</ref> যুদ্ধ শেষ হলে হঠাৎ করে তুলা ও শস্যের চাহিদা কমে যায়। কিন্তু কৃষকরা তখনো যুদ্ধকালীন হারে ফসল ফলাতে থাকে।<ref>Katers, Nicholas. "The Roaring Twenties and the Struggles of Immigrants, Farmers, and Other Interest Groups." ''Yahoo! Voices''. Yahoo!, 30 Mar. 2006. Web. 22 Nov. 2013.</ref> ফলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে বা নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে পারেনি।
অনেক কৃষক তুলার ওপর নির্ভর করত। কিন্তু বিশের দশকে কৃত্রিম তন্তুর আগমনে তুলার দাম পড়ে যায়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন বল উইভিল নামের এক ধরনের পোকা তুলার কুঁড়িতে ডিম পেড়ে তা খেয়ে ফেলতে শুরু করে। এই বিপর্যয় থেকে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিকে কিছুটা রক্ষা করে বিজ্ঞানী জর্জ ওয়াশিংটন কারভার। তিনি তুলার বদলে চিনাবাদাম চাষে উৎসাহ দেন। ১৯২৫-১৯২৭ সালের মধ্যে তিনি চিনাবাদাম দিয়ে দুটি ব্যবহারিক পদ্ধতির পেটেন্ট নেন। এছাড়াও সয়াবিন, পেকান বাদাম ও মিষ্টি আলু দিয়ে তিনি শত শত উদ্ভাবন করেন। চিনাবাদাম ও সয়াবিন দিয়ে তিনি যেসব জিনিস তৈরি করেন তার মধ্যে ছিল কাগজ, ইনস্ট্যান্ট কফি, শেভিং ক্রিম, মেয়োনিজ, সাবান এবং ট্যালকম পাউডার। তবে তিনি এসব প্রক্রিয়া কখনোই নোটবুকে লিখে রাখেননি। তিনি কৃষি শিক্ষায় কৃষ্ণাঙ্গদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
১৯২৯ সালের ২৪ অক্টোবর যেটি আজ "ব্ল্যাক থার্সডে" নামে পরিচিত সেদিন স্টক মার্কেট পতনের শুরু হয়। প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই দামে ভয়ানক পতন ঘটে। অনেকে ভেবেছিল এটি আগের মতোই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু দাম পড়তেই থাকে। অক্টোবর ২৯, ১৯২৯ তারিখে "ব্ল্যাক টিউসডে" তে ১ কোটি ৬০ লক্ষ শেয়ার বিক্রি হয়। দিনের শেষে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম পূর্বের চেয়ে অনেক নিচে নেমে যায়। কিছু শেয়ার একেবারেই মূল্যহীন হয়ে পড়ে। নভেম্বর ১৩ এ দাম একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। যেমন এ.টি. অ্যান্ড টি. কোম্পানির শেয়ার ৩০৪ ডলার থেকে কমে ১৯৭ ডলারে এসে দাঁড়ায়। টানা আট বছর ধরে আমেরিকায় যে অতুলনীয় সমৃদ্ধি চলছিল স্টক মার্কেটের এই বিপর্যয়ে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তার অবসান ঘটে।
== পর্যালোচনার জন্য প্রশ্ন ==
১। নিচের যেকোনো একটি বিষয়ের অর্থনৈতিক প্রভাব ব্যাখ্যা করো: অটোমোবাইল; সামগ্রিকভাবে ব্যাপক উৎপাদন; বল উইভিল।
← [[US History/World War I|প্রথম বিশ্বযুদ্ধ]] · '''[[US History]]''' · [[US History/Great Depression and New Deal|মহামন্দা ও নিউ ডিল]] →
==তথ্যসূত্র==
{{reflist}}
{{chapnav|World War I|Great Depression and New Deal}}
{{BookCat}}
{{status|100%}}
8jm8ptp7vg1wd9qkt87jzbi7ba9sfqt
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/ওবামা
0
25433
85621
79737
2025-07-03T19:45:39Z
MS Sakib
6561
/* রেফারেন্সসমূহ */
85621
wikitext
text/x-wiki
[[File:President_Barack_Obama.jpg|thumb|upright=2|প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা]]
== প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ==
[[w:Obama|বারাক হুসেইন ওবামা]] দ্বিতীয় (জন্মঃ ৪ আগস্ট, ১৯৬১) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। তিনি প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।<ref>{{cite web |last1=Capatosto |first1=Victoria |title=A Brief History of Civil Rights in the United States |url=https://library.law.howard.edu/civilrightshistory/blackrights/obamaadmin |website=library.law.howard.edu |accessdate=20 September 2020 |language=en}}</ref> ২০০৫ সালে তিনি ইলিনয়ের জুনিয়র সেনেটর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথম মেয়াদের একাংশ শেষ করে তিনি ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ১৬ নভেম্বর ২০০৮-এ সেনেটর পদ থেকে ইস্তফা দেন।
=== প্রাথমিক জীবন ও কর্ম ===
ওবামা ছিলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, যেখানে তিনি হার্ভার্ড ল কলেজ রিভিউয়ের সভাপতি ছিলেন।<ref>{{cite web |title=Barack Obama: Life Before the Presidency Miller Center |url=https://millercenter.org/president/obama/life-before-the-presidency |website=millercenter.org |accessdate=21 September 2020 |language=en |date=4 October 2016}}</ref><ref>{{cite news |last1=Butterfield |first1=Fox |title=First Black Elected to Head Harvard's Law Review |url=https://www.nytimes.com/1990/02/06/us/first-black-elected-to-head-harvard-s-law-review.html |accessdate=21 September 2020 |work=The New York Times |date=6 February 1990}}</ref> ১৯৯২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবিধানগত আইন পাঠিয়েছেন।<ref>{{cite web |title=Obama Returns to the Law School University of Chicago Law School |url=https://www.law.uchicago.edu/news/obama-returns-law-school |website=www.law.uchicago.edu |accessdate=21 September 2020}}</ref>
২০০৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সেনেটে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন, ২০০৪ সালের মার্চে প্রাথমিক নির্বাচন জিতে নভেম্বর মাসে নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের জুলাইয়ে তিনি ডেমোক্র্যাটিক জাতীয় কনভেনশনে ভাষণ দেন। ১০৯তম কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক সংখ্যালঘু দলের একজন সদস্য হিসেবে তিনি প্রচলিত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং ফেডারেল তহবিল ব্যবহারে জনসাধারণের অধিক দায়িত্ব নিশ্চিতকরণে আইন প্রণয়নে সহায়তা করেন। তিনি ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা সফরও করেন। ১১০তম কংগ্রেসে তিনি প্রণীত আইনসমূহের মধ্যে ছিল প্রণোদনা, নির্বাচনী প্রতারণা, জলবায়ু পরিবর্তন, পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদস্যদের যত্ন সম্পর্কিত আইন।
=== শখ ===
[[File:Barack Obama playing basketball with members of Congress and Cabinet secretaries 2.jpg|thumb|upright|কংগ্রেস সদস্য এবং মন্ত্রিসভার সাথে বাস্কেটবল খেলছেন ওবামা।]]
বারাক ওবামা একজন প্রবল ক্রীড়াপ্রেমী, তিনি শিকাগো বেয়ার্স, বুলস, ব্ল্যাকহকস এবং হোয়াইট সোক্সের সমর্থক। তিনি একজন দক্ষ বাস্কেটবল খেলোয়াড়ও এবং নিয়মিত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উপদেষ্টাদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশ নেন। নির্বাচনের দিন তার একটি রীতি আছে, যেখানে তিনি যেখানেই থাকেন, ঐ শহরে বাস্কেটবল খেলার জন্য ছেড়ে যান।
=== প্রথম ১০০ দিন ===
মন্দার সময়কালীন প্রেসিডেন্ট এফডিআর-এর প্রথম ১০০ দিনের কাজের নকল করতে চেয়ে, ওবামা তার প্রথম ১০০ দিন অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় ব্যয় করতে উদ্যোগ নেন। এর প্রধান নীতি ছিল [[w:American Recovery and Reinvestment Act of 2009|২০০৯ সালের আমেরিকান রিকভারি অ্যান্ড রিইনভেস্টমেন্ট আইন]], যা সাধারণত "স্টিমুলাস প্যাকেজ" নামে পরিচিত। এই আইনের আওতায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিছু কর কর্তন, শিক্ষায় অর্থায়ন, এবং মেডিকেড সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে বেসরকারি খাতে চাকরির সুযোগ বাড়তে শুরু করে এবং শেয়ার বাজারে উত্থান দেখা দেয়। তবে কিছু ক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধি খুবই সীমিত ছিল।
ওবামার প্রথম ১০০ দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল অত্যাচারের ব্যবহার বন্ধ করা।<ref>{{cite news |last1=Shane |first1=Scott |last2=Mazzetti |first2=Mark |last3=Cooper |first3=Helene |title=Obama Reverses Key Bush Security Policies |url=https://www.nytimes.com/2009/01/23/us/politics/23obama.html |accessdate=21 September 2020 |work=The New York Times |date=22 January 2009}}</ref>
=== অভ্যন্তরীণ নীতি ===
২০১৪ সালে ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র ডিজিটাল সার্ভিস এবং ১৮এফ প্রতিষ্ঠা করে, যা আমেরিকান সরকারের ডিজিটাল উদ্যোগে সহায়তা করে।<ref>{{cite news |last1=Scola |first1=Nancy |title=White House launches ‘U.S. Digital Service,’ with HealthCare.gov fixer at the helm |url=https://www.washingtonpost.com/news/the-switch/wp/2014/08/11/white-house-launches-u-s-digital-service-with-healthcare-gov-fixer-at-the-helm/ |accessdate=25 September 2020 |work=Washington Post}}</ref>
== ওবামাকেয়ার ==
[[File:Obama signs health care-20100323.jpg|thumb|২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামা অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট-এ স্বাক্ষর করছেন।]]
===পটভূমি===
ওবামা ও কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা ২০০৯ সালের বেশিরভাগ সময় কাটান এমন একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক করে, যেগুলোর লক্ষ্য ছিল সব আমেরিকান নাগরিককে স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। এর ফলাফল ছিল 'ওবামাকেয়ার', যা ২০১০ সালের শুরুতে আইন হিসেবে স্বাক্ষরিত হয় এবং ওবামা প্রশাসনের সময়কালজুড়ে ধাপে ধাপে কার্যকর করা হয়।
===ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা===
ওবামাকেয়ারের মূল স্তম্ভ ছিল ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা, যার মাধ্যমে প্রায় সকল আমেরিকান নাগরিককে স্বাস্থ্য বীমা কিনতে বাধ্য করা হয় যদি না তারা তাদের নিয়োগকর্তার মাধ্যমে এটি পায় বা মেডিকেইডের জন্য যোগ্য হয়। এই আইনে বিমা কোম্পানিগুলো কীভাবে কভারেজ অস্বীকার করতে পারে, তা সীমিত করা হয়, বিশেষ করে আগে থেকে বিদ্যমান রোগের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক আচরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এটি স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রণয়ন করে এবং স্বাস্থ্য বীমা কেনার জন্য একটি এক্সচেঞ্জ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করে।
== সঙ্কট মোকাবেলা ==
===পরিবেশগত বিপর্যয়===
২০১০ সালের ২০ এপ্রিল, *ডীপওয়াটার হরাইজন* নামক একটি তেল-খনন রিগ বিস্ফোরণে ধ্বংস হয় এবং মেক্সিকো উপসাগরে প্রায় ৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ছড়িয়ে পড়ে, যা মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক তেল দূষণের ঘটনা ছিল।<ref>https://www.epa.gov/enforcement/deepwater-horizon-bp-gulf-mexico-oil-spill</ref><ref>https://www.noaa.gov/education/resource-collections/ocean-coasts/oil-spills</ref>
২০১২ সালে *হারিকেন স্যান্ডি* আমেরিকার পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে এবং শহুরে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।<ref>https://www.nasa.gov/mission_pages/hurricanes/archives/2012/h2012_Sandy.html</ref>
এই সময়ে অনেক আমেরিকান পানির প্রাপ্যতা বা মান সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া একটি [[w:2011–2017 California drought|দীর্ঘস্থায়ী খরার]] মুখোমুখি হয়।<ref>{{cite web |title=California Droughts Compared USGS California Water Science Center |url=https://ca.water.usgs.gov/california-drought/california-drought-comparisons.html |website=ca.water.usgs.gov |accessdate=18 September 2020}}</ref> ২০১৪ সালে লেক ইরি-তে একটি বিশাল শৈবাল বৃদ্ধির ফলে ওহাইওর টলেডো শহরের আশেপাশে প্রায় ৪ লাখ মানুষের জন্য পানযোগ্য পানি অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।<ref>{{cite news |last1=Capelouto |first1=Susanna |last2=Morgenstein |first2=Mark |title=Water scare affects 400,000-plus in Toledo, Ohio |url=https://www.cnn.com/2014/08/02/us/toledo-water-warning/index.html |accessdate=18 September 2020 |work=CNN}}</ref><ref>{{cite news |last1=Wines |first1=Michael |title=Behind Toledo’s Water Crisis, a Long-Troubled Lake Erie |url=https://www.nytimes.com/2014/08/05/us/lifting-ban-toledo-says-its-water-is-safe-to-drink-again.html |accessdate=18 September 2020 |work=The New York Times |date=4 August 2014}}</ref> ২০১৬ সালের শুরুতে জানা যায় যে ফ্লিন্ট, মিশিগানের পানি সিসা দ্বারা দূষিত, যা জাতীয়ভাবে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করে।<ref>{{cite news |title=Lead-Laced Water In Flint: A Step-By-Step Look At The Makings Of A Crisis |url=https://www.npr.org/sections/thetwo-way/2016/04/20/465545378/lead-laced-water-in-flint-a-step-by-step-look-at-the-makings-of-a-crisis |accessdate=18 September 2020 |work=NPR.org |language=en}}</ref> ফ্লিন্টের বিশুদ্ধ পানির অভাব *পরিবেশগত অবিচারের* প্রতীক হয়ে ওঠে।<ref>{{cite news |title=Five years later: Flint water crisis most egregious example of environmental injustice, U-M researcher says |url=https://news.umich.edu/five-years-later-flint-water-crisis-most-egregious-example-of-environmental-injustice-u-m-researcher-says/ |accessdate=20 September 2020 |work=University of Michigan News |date=23 April 2019}}</ref>
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Deepwater Horizon offshore drilling unit on fire 2010.jpg|জ্বলন্ত অবস্থায় ডীপওয়াটার হরাইজন, ২০১০
File:Deepwater Horizon oil spill - May 24, 2010 - with locator.jpg|মহাকাশ থেকে ডীপওয়াটার হরাইজন তেল দূষণ – ২৪ মে, ২০১০
File:Sandy Poweroutage 1.jpg|হারিকেন স্যান্ডির সময় ম্যানহাটনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা
File:Toxic Algae Bloom in Lake Erie.jpg|লেক ইরির ২০১১ সালের শৈবাল বৃদ্ধি, ২০১৪ সালের ঘটনার সদৃশ
File:Ohio National Guard activated to support water emergency in Lucas, Wood and Fulton Counties 140803-Z-ZJ624-093.jpg|ওহাইওর টলেডোতে পানির সংকটে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সহায়তা
File:Barack Obama speaks with farmers about California drought, 2014.jpg|ক্যালিফোর্নিয়ার খরা নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছেন ওবামা, ২০১৪
File:20140917-FS-UNK-0002 (15094082650).jpg|ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল, ২০১৪
File:President Obama sips filtered water from Flint.jpg|ফ্লিন্ট, মিশিগান থেকে পরিশোধিত পানি পান করছেন ওবামা, ২০১৬
File:Make Detroit the Engine of the Green New Deal! img 100 (18) (48422994607).jpg|ফ্লিন্টের এক প্রতিবাদকারী, ২০১৯; সমস্যার সমাধান এখনো হয়নি
</gallery>
===রোগ ও মাদক===
[[w:2009 swine flu pandemic|২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু মহামারিতে]] বিশ্বব্যাপী প্রায় ২,০৩,০০০ মানুষ মারা যায়,<ref>https://www.npr.org/sections/health-shots/2013/11/26/247379604/2009-flu-pandemic-was-10-times-more-deadly-than-previously-thought</ref> যার মধ্যে ১২,৪৬৯ জন ছিলেন আমেরিকান।<ref>https://web.archive.org/web/20200318191813/https://www.cdc.gov/flu/pandemic-resources/2009-h1n1-pandemic.html</ref> এটি ছিল ওবামা প্রশাসনের সময় সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলা রোগ। এরপর আরও কয়েকটি রোগ ছড়ানোর হুমকি সৃষ্টি করলেও সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। [[w:Western African Ebola virus epidemic|২০১৪ সালের ইবোলা মহামারী]] আমেরিকায় ছড়ানোর পথে ছিল, কিন্তু তা আটকানো হয়। [[w:2015–2016 Zika virus epidemic|২০১৫–২০১৬ সালের জিকা ভাইরাস মহামারী]] দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্র ও পুয়ের্তো রিকোর কিছু এলাকায় আঘাত হানে, তবে ২০১৭ সালের শুরুতে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
এছাড়াও আরও কিছু স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা বেড়েই চলেছে। [[w:Opioid epidemic in the United States|ওপিওয়েড মহামারী]] ওবামা প্রশাসনের সময় আরও তীব্র হয়। [[w:Vaccine hesitancy|টিকা-বিরোধী আন্দোলনের]] কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু আগে নির্মূল হওয়া রোগ পুনরায় ফিরে আসে।
===গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ঘটনা===
এই সময়ের উল্লেখযোগ্য গুলি ও গৃহমধ্যস্থ ঘটনা হল: [[w:2009 Fort Hood shooting|২০০৯ সালের ফোর্ট হুডে গুলিবর্ষণ]], [[w:2012 Aurora, Colorado shooting|২০১২ সালের কলোরাডোর অরোরায় গুলি]], [[w:Sandy Hook Elementary School shooting|২০১২ সালের স্যান্ডি হুক স্কুলে গুলিবর্ষণ]], [[w:Boston Marathon bombing|২০১৩ সালের বস্টন ম্যারাথন বোমা হামলা]], [[w:2014 Fort Hood shooting|২০১৪ সালের ফোর্ট হুড গুলিবর্ষণ]], [[w:Bundy standoff|২০১৪ সালের বান্ডি সংঘর্ষ]], [[w:2015 San Bernardino attack|২০১৫ সালের সান বার্নার্ডিনো হামলা]], এবং [[w:Orlando nightclub shooting|২০১৬ সালের অরল্যান্ডো নাইটক্লাব গুলিবর্ষণ]]।
এই সময়ের আরও কিছু বিতর্কিত ঘটনা ছিল: [[w:2011 Zanesville, Ohio animal escape|২০১১ সালের ওহাইওর জেইন্সভিল প্রাণী পালানো ঘটনা]], [[w:2011 end times prediction|২০১১ সালের মহাপ্রলয়ের ভবিষ্যদ্বাণী]], [[w:United States federal government credit-rating downgrades|২০১১ সালের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঋণমান অবনতি]], এবং [[w:Petraeus scandal|২০১২ সালের পেট্রেয়াস কেলেঙ্কারী]]।
== টি পার্টি আন্দোলন ==
[[File:9.12 tea party in DC.jpg|thumb|২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে একটি টি পার্টি বিক্ষোভ।]]
টি পার্টি আন্দোলন সাধারণত ছোট সরকার, কম কর, এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ কমানোর পক্ষে ছিল, বিশেষ করে আগ্নেয়াস্ত্র ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে। এই আন্দোলন রক্ষণশীল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থায়ন পেয়েছিল, বিশেষ করে কোক ভাইদের কাছ থেকে। টি পার্টি আন্দোলনের বিশ্বাস ছিল যে অনেক প্রচলিত রিপাবলিকান নেতা যথেষ্ট রক্ষণশীল নন, এবং তারা প্রাথমিক নির্বাচনে একাধিক রিপাবলিকান নেতাকে পরাজিত করেছিল। টি পার্টির উদ্দীপনা এবং ওবামাকেয়ারের প্রতি অসন্তোষের ফলে ২০১০ সালে রিপাবলিকানরা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস পুনরুদ্ধার করে।
=== বারথারবাদ ===
ওবামার প্রচারণা এবং প্রশাসনের সময়, কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ ছিল যে বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেননি। তার লাইভ বার্থ সার্টিফিকেটে জন্মস্থান হাওয়াই বলে উল্লেখ রয়েছে<ref>[http://latimesblogs.latimes.com/.a/6a00d8341c630a53ef0134803281ac970c-600wi Hawaii Certificate of Live Birth, Barack Obama]</ref>, কিন্তু বহু আমেরিকান, যার মধ্যে তার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পও রয়েছেন, তা বিশ্বাস করেননি। আরও কিছু আমেরিকান বিশ্বাস করতেন একটি ভিত্তিহীন দাবি যে ওবামা একজন মুসলিম। এই "বারথার" ও "ট্রুথার" গোষ্ঠীর অনেকেই টি পার্টি আন্দোলনের অংশ ছিলেন।
== ওবামার সামরিক নীতি ==
=== ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ ===
ওবামা দায়িত্ব গ্রহণ করেন যখন ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলছিল। যদিও তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে সেনা সংখ্যা কমিয়েছিলেন, দেশগুলোর অস্থিরতার কারণে তিনি পুরোপুরি প্রত্যাহার করেননি। ওবামার সময় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ড্রোন হামলা অব্যাহত রাখে।
সেপ্টেম্বর ১১-এর সন্ত্রাসী হামলার দশ বছর পর, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ওবামাকে একটি সূত্র দেন যে ওসামা বিন লাদেন তাদের দেশের একটি ঘনবসতিপূর্ণ শহরে লুকিয়ে রয়েছে। ১ মে প্রেসিডেন্ট ওবামা একটি গোপন অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন এবং ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সফল হন।
=== ইউএস সাইবার কমান্ড ===
২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে [[w:United States Cyber Command|যুক্তরাষ্ট্র সাইবার কমান্ড]] গঠিত হয় সাইবার প্রতিরক্ষা কার্যক্রম একত্রিত করার উদ্দেশ্যে।<ref>https://www.npr.org/templates/story/story.php?storyId=105962021</ref>
== এলজিবিটি অধিকার ==
ওবামা প্রশাসনের সময়, বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে স্থানীয়ভাবে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করা হয়, যা ব্যালটের মাধ্যমে অথবা রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ঘটেছিল।<ref>https://guides.ll.georgetown.edu/c.php?g=592919&p=4182201</ref> বিশেষভাবে, ওবামা প্রশাসনের ঠিক আগে, ২০০৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যে সমলিঙ্গ বিবাহ নিষিদ্ধকরণ বাতিল করে দেয়,<ref>https://www.nytimes.com/2008/05/16/us/16marriage.html</ref> কিন্তু সেই একই বছরের নির্বাচনে প্রস্তাবনা ৮ দ্বারা তা পুনরায় নিষিদ্ধ করা হয়।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/the-fix/wp/2013/03/26/how-proposition-8-passed-in-california-and-why-it-wouldnt-today/</ref> ২০০৯ সালে কংগ্রেস [[w:Matthew Shepard and James Byrd Jr. Hate Crimes Prevention Act|ম্যাথু শেফার্ড এবং জেমস বায়ার্ড জুনিয়র হেইট ক্রাইম প্রতিরোধ আইন]] পাশ করে, যা ঘৃণামূলক অপরাধের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করে এতে যৌন প্রবণতা এবং লিঙ্গ পরিচয় সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>https://www.apa.org/news/press/releases/2009/10/hate-crimes</ref><ref>https://www.mtsu.edu/first-amendment/article/1517/matthew-shepard-and-james-byrd-jr-hate-crimes-prevention-act</ref> ওবামা ২০১১ সালে সামরিক বাহিনীতে প্রচলিত "ডোন্ট আস্ক, ডোন্ট টেল" নীতিটি বাতিল করেন।<ref>https://www.nytimes.com/2011/07/23/us/23military.html</ref> ২০১২ সালের নির্বাচনের আগে, ওবামা সমগ্র দেশে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানানো প্রথম রাষ্ট্রপতি হন।<ref>https://time.com/3816952/obama-gay-lesbian-transgender-lgbt-rights/</ref><ref>https://abcnews.go.com/Politics/transcript-robin-roberts-abc-news-interview-president-obama/story?id=16316043</ref>
এই সময়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে এলজিবিটি অধিকার নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, এবং ২০১২ সালের পর জরিপে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে সমর্থন এর বিপক্ষে অবস্থানের চেয়ে বেশি দেখা যায়।<ref>https://news.gallup.com/poll/1651/gay-lesbian-rights.aspx</ref> বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমলিঙ্গ মন্ত্রীদের অভিষেক অনুমোদন দিতে শুরু করে, যেমন [[w:Evangelical Lutheran Church in America|ইভানজেলিক্যাল লুথেরান চার্চ]] ২০০৯ সালে<ref>https://www.nytimes.com/2010/07/26/us/26lutheran.html</ref> এবং প্রেসবিটারিয়ান চার্চ ২০১১ সালে।<ref>https://www.nytimes.com/2011/05/11/us/11presbyterian.html</ref>
২০১৫ সালে, সুপ্রিম কোর্ট সমগ্র দেশে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ ঘোষণা করে।<ref>https://www.npr.org/sections/thetwo-way/2015/06/26/417731614/obama-supreme-court-ruling-on-gay-marriage-a-victory-for-america</ref>
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Garden State Equality May 2011 protest (5694200900).jpg|২০১১ সালে সমতার পক্ষে এক প্রতিবাদ।
File:Crowd in the Minnesota captiol for the same sex marriage vote in the Minnesota Senate.jpg|২০১৩ সালে মিনেসোটা সিনেটে সমলিঙ্গ বিবাহ ভোটের সময় মিনেসোটা রাজ্য ক্যাপিটলে জমায়েত।
File:SCOTUS Marriage Equality 2015 (Obergefell v. Hodges) - 26 June 2015.jpg|২০১৫ সালের ২৬ জুন Obergefell v. Hodges মামলার রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্টের বাইরে উদযাপনরত জনতা।
File:White House rainbow for SCOTUS ruling on same-sex marriage.jpg|২০১৫ সালের ২৬ জুন সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজ রেইনবো রঙে আলোকিত।
</gallery>
== শিক্ষা ==
ওবামা প্রশাসনের সময় চার্টার স্কুলে উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়, এবং তিনি রাজ্যগুলোর মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল তুলনীয় করার জন্য কমন কোর মানদণ্ড চালু করার উদ্যোগ নেন, যদিও উভয় বিষয়ই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/answer-sheet/wp/2016/10/21/obamas-real-education-legacy-common-core-testing-charter-schools/</ref>
== অর্থনৈতিক সংস্কার ==
২০১০ সালে [[w:Dodd–Frank Wall Street Reform and Consumer Protection Act|ডড-ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল স্ট্রিট সংস্কার ও ভোক্তা সুরক্ষা আইন]] মহামন্দার পর আর্থিক খাতের বিধিবিধান পুনর্গঠিত করে।<ref>https://www.npr.org/2013/05/08/181999098/nearly-three-years-after-dodd-frank-reforms-happen-slowly</ref> এই প্রশাসনের অধীনেই [[w:Consumer Financial Protection Bureau|ভোক্তা আর্থিক সুরক্ষা ব্যুরো]] প্রতিষ্ঠিত হয়।<ref>https://www.pbs.org/newshour/economy/making-sense/what-is-the-consumer-financial-protection-bureau-anyway</ref>
== ২০১২ নির্বাচন ==
[[File:ElectoralCollege2012.svg|thumb|right|ওবামা পুনর্নির্বাচিত হতে মিট রমনিকে পরাজিত করেন]]
=== প্রাইমারি নির্বাচন ===
বারাক ওবামা ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন পুনরায় লাভ করেন।<ref>https://www.nytimes.com/2012/09/07/us/politics/obama-in-democratic-convention-speech-asks-for-more-time.html</ref> রিপাবলিকান প্রাইমারিতে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন: মিশেল বাকম্যান, নিউট গিংরিচ, জন হান্টসম্যান, রন পল, রিক পেরি, মিট রমনি এবং রিক স্যানটোরাম। সারা পেইলিন এবং ক্রিস ক্রিস্টির মতো অন্যান্য বিশিষ্ট রিপাবলিকানরা নির্বাচন করেননি, আর হারম্যান কেইন ও গ্যারি জনসন প্রাথমিক ভোটের আগেই তাদের প্রচারণা বন্ধ করে দেন।
=== মিট রমনি ===
প্রাইমারি পর্বে বেশিরভাগ সময় রমনিই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, যদিও তিনি প্রথম তিনটি রাজ্যে স্যানটোরাম এবং গিংরিচের সঙ্গে বিজয় ভাগ করে নেন। প্রাথমিক পর্বে দুর্বল ফলাফলের কারণে বাকম্যান, হান্টসম্যান এবং পেরি নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। রমনির প্রতি অধিকাংশ রিপাবলিকান নেতৃত্বের সমর্থন ছিল, অপরদিকে স্যানটোরাম কেবল আইওয়াতে কেন্দ্রীভূত প্রচারণা শুরু করে পরবর্তীতে ধর্মীয় রক্ষণশীলদের লক্ষ্য করে জাতীয় পর্যায়ে প্রসারিত হন। পলের সমর্থন মূলত উদারপন্থী এবং তরুণ রিপাবলিকানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, আর গিংরিচের সমর্থন গভীর দক্ষিণাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত ছিল। মার্চের শেষ নাগাদ রমনির ডেলিগেট সংখ্যায় বড় লিড তৈরি হয়; স্যানটোরাম কয়েকটি রাজ্যে জয় লাভ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। গিংরিচ মার্চের পর কেবল ডেলাওয়্যারেই সক্রিয় প্রচারণা চালান এবং সেখানে রমনির কাছে পরাজিত হওয়ার পর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এপ্রিলের শেষ নাগাদ রমনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন।
=== ফলাফল ===
ওবামা ও রমনির মধ্যে সাধারণ নির্বাচনটি অত্যন্ত কাছাকাছি হওয়ার কথা ছিল।<ref>https://election.princeton.edu/2012/11/06/presidential-prediction-2012-final/</ref> শেষ পর্যন্ত ওবামা ২০০৮ সালে জয়ী সব রাজ্যেই বিজয়ী হন, ব্যতিক্রম ছিল উত্তর ক্যারোলাইনা এবং ইন্ডিয়ানা, এবং তিনি রমনিকে পরাজিত করেন।
== ঋণের সীমা নিয়ে বিতর্ক ও সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়া ==
টি পার্টি আন্দোলনের প্রভাব এবং ঋণসীমা সংকট শেষ পর্যন্ত জন বেনারের স্পিকার পদে পতন ঘটায়, এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন আরেক রিপাবলিকান, পল রায়ান।
== একটি পরিবর্তিত দেশ ==
=== মাদক বিরোধী যুদ্ধের পরিবর্তন ===
ওবামা প্রশাসনের সময় বিচার বিভাগ মারিজুয়ানা নিয়ে তুলনামূলক নরম মনোভাব নিয়েছিল, স্থানীয় পর্যায়ে নীতিমালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, যদিও ফেডারেল স্তরে তা অবৈধ রাখা হয়েছিল।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/wonk/wp/2016/11/30/obama-says-marijuana-should-be-treated-like-cigarettes-or-alcohol/</ref> ২০১৪ সালে কলোরাডো প্রথম রাজ্য হয়ে মারিজুয়ানা বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য বৈধতা দেয়।<ref>https://www.npr.org/2014/01/01/258889992/starting-today-you-can-legally-sell-marijuana-in-colorado</ref>
=== জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ===
যখন যুক্তরাষ্ট্র ২১ শতকে প্রবেশ করল, তখন এটি জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছিল। এর মধ্যে দুইটি ছিল আমেরিকার "ব্রাউনিং" এবং "গ্রেইং": বেবি বুম প্রজন্মের বয়স বাড়ার সঙ্গে আমেরিকানদের গড় বয়স বৃদ্ধি পেয়েছিল, অন্যদিকে ১৯৮০-এর দশক বা তার পরবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া অর্ধেক মানুষের বর্ণ সাদা নয়, অনেকেই মেক্সিকো এবং অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশ থেকে অভিবাসীদের সন্তান। আমেরিকার জনগোষ্ঠীর বৃদ্ধ বয়স স্বাস্থ্যসেবা খাতের অর্থনীতিতে বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। উৎপাদন ও খনন শিল্পে কর্মরত মানুষের সংখ্যা কমে গিয়েছিল, যখন সেবা খাত ও অস্থায়ী "গিগ অর্থনীতি" তে কাজ করতেন বেশি মানুষ।
=== প্রযুক্তি ===
এই সময়ে প্রযুক্তি ক্রমাগত উন্নতি করেছিল। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল, তেমনই সামাজিক নেটওয়ার্কে সদস্যপদ এবং ইন্টারনেটে মিডিয়া ভোগের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছিল।<ref>https://www.statista.com/statistics/201183/forecast-of-smartphone-penetration-in-the-us/</ref> গুগল গ্লাস বা মাইক্রোসফট হোলোলেন্সের মতো স্মার্ট গ্লাসের নতুন ধরনের ডিভাইসগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়নি, তবে জনসাধারণের কল্পনাশক্তি ছুঁয়েছিল।
এই সময় স্পেস এক্সপ্লোরেশন রোবটিক অনুসন্ধানের দিকে ঝুঁকে পড়ে, ২০১১ সালে স্পেস শাটল প্রোগ্রাম অবসর নেয়। নাসার মঙ্গল অনুসন্ধানী উপগ্রহ ২০১১ সালে মঙ্গলে জলের প্রমাণ পায়, যা ২০১৫ সালে কারিওসিটি রোভার নিশ্চিত করে। নিউ হরাইজনস_probe, যা বুশ প্রশাসনের সময় ২০০৬ সালে লঞ্চ হয়েছিল, ২০১৫ সালে প্লুটোর উপর ফ্লাইবাই করে মানবজাতিকে প্লুটোর প্রথম উচ্চ-মানের ছবি দেয়।
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Steve Jobs with the Apple iPad no logo (cropped).jpg|২০১০ সালে স্টিভ জবস আইপ্যাড পরিচয় করাচ্ছেন, যা প্রথম জনপ্রিয় ট্যাবলেট কম্পিউটারগুলোর মধ্যে একটি।
File:Facebook on Nasdaq.jpeg|২০১২ সালে ফেসবুক NASDAQ এ যোগ দেয়। এই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
File:Google Glass detail.jpg|ভোক্তা অগমেন্টেড রিয়েলিটি প্ল্যাটফর্ম, যেমন এই হেডসেট, ওবামা প্রশাসনের সময় উপলব্ধ হতে শুরু করেছিল, তবে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি।
File:Pluto by LORRI and Ralph, 13 July 2015.jpg|নিউ হরাইজনস ২০১৫ সালে প্লুটোর প্রথম উচ্চ-মানের ছবি ধারণ করে।
</gallery>
== জাতিগত বৈষম্যহীন সমাজ... নাকি নয়? ==
অনেকেই আশাবাদী ছিলেন যে ওবামার নির্বাচনের ফলে এমন একটি সমাজ গড়ে উঠবে যেখানে জাতিগত বৈষম্য থাকবে না, যা দেশের ইতিহাসের অংশ ছিল।<ref name="washingtonpostonracism">https://www.washingtonpost.com/graphics/national/obama-legacy/racism-during-presidency.html</ref> তবে, ওবামা প্রশাসনের সময় আমেরিকানদের মধ্যে জাতিগত উত্তেজনা অব্যাহত থাকে।<ref name="washingtonpostonracism"/>
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}
{{chapnav|2008 Vote|2016 Vote}}
{{status|75%}}
{{BookCat}}
dm8ijbw5qzh4qid7cqcftmgvc6hl87o
85622
85621
2025-07-03T19:56:54Z
MS Sakib
6561
85622
wikitext
text/x-wiki
[[File:President_Barack_Obama.jpg|thumb|upright=2|প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা]]
== প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ==
[[w:বারাক ওবামা|বারাক হুসেইন ওবামা]] দ্বিতীয় (জন্ম: ৪ আগস্ট, ১৯৬১) ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি প্রথম আফ্রো-আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।<ref>{{cite web |last1=Capatosto |first1=Victoria |title=A Brief History of Civil Rights in the United States |url=https://library.law.howard.edu/civilrightshistory/blackrights/obamaadmin |website=library.law.howard.edu |accessdate=20 September 2020 |language=en}}</ref> ২০০৫ সালে তিনি ইলিনয়ের জুনিয়র সেনেটর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথম মেয়াদের একাংশ শেষ করে তিনি ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ১৬ নভেম্বর ২০০৮-এ সেনেটর পদ থেকে ইস্তফা দেন।
=== প্রাথমিক জীবন ও কর্ম ===
ওবামা ছিলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, যেখানে তিনি হার্ভার্ড ল কলেজ রিভিউয়ের সভাপতি ছিলেন।<ref>{{cite web |title=Barack Obama: Life Before the Presidency Miller Center |url=https://millercenter.org/president/obama/life-before-the-presidency |website=millercenter.org |accessdate=21 September 2020 |language=en |date=4 October 2016}}</ref><ref>{{cite news |last1=Butterfield |first1=Fox |title=First Black Elected to Head Harvard's Law Review |url=https://www.nytimes.com/1990/02/06/us/first-black-elected-to-head-harvard-s-law-review.html |accessdate=21 September 2020 |work=The New York Times |date=6 February 1990}}</ref> ১৯৯২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবিধানগত আইন পাঠিয়েছেন।<ref>{{cite web |title=Obama Returns to the Law School University of Chicago Law School |url=https://www.law.uchicago.edu/news/obama-returns-law-school |website=www.law.uchicago.edu |accessdate=21 September 2020}}</ref>
২০০৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সেনেটে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। ২০০৪ সালের মার্চে প্রাথমিক নির্বাচন জিতে নভেম্বর মাসে নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের জুলাইয়ে তিনি ডেমোক্র্যাটিক জাতীয় কনভেনশনে ভাষণ দেন। ১০৯তম কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক সংখ্যালঘু দলের একজন সদস্য হিসেবে তিনি প্রচলিত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং ফেডারেল তহবিল ব্যবহারে জনসাধারণের অধিক দায়িত্ব নিশ্চিতকরণে আইন প্রণয়নে সহায়তা করেন। তিনি ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা সফরও করেন। ১১০তম কংগ্রেসে তিনি প্রণীত আইনসমূহের মধ্যে ছিল প্রণোদনা, নির্বাচনী প্রতারণা, জলবায়ু পরিবর্তন, পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদস্যদের যত্ন সম্পর্কিত আইন।
=== শখ ===
[[File:Barack Obama playing basketball with members of Congress and Cabinet secretaries 2.jpg|thumb|upright|কংগ্রেস সদস্য এবং মন্ত্রিসভার সাথে বাস্কেটবল খেলছেন ওবামা।]]
বারাক ওবামা একজন প্রবল ক্রীড়াপ্রেমী। তিনি শিকাগো বেয়ার্স, বুলস, ব্ল্যাকহকস এবং হোয়াইট সোক্সের সমর্থক। তিনি একজন দক্ষ বাস্কেটবল খেলোয়াড়। নিয়মিত তিনি ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উপদেষ্টাদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশ নেন। নির্বাচনের দিন তার একটি রীতি আছে, যেখানে তিনি যেখানেই থাকেন, ঐ শহরে বাস্কেটবল খেলার জন্য ছেড়ে যান।
=== প্রথম ১০০ দিন ===
মন্দার সময়কালীন প্রেসিডেন্ট এফডিআর-এর প্রথম ১০০ দিনের কাজের নকল করতে চেয়ে, ওবামা তার প্রথম ১০০ দিন অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় ব্যয় করতে উদ্যোগ নেন। এর প্রধান নীতি ছিল [[w:২০০৯ সালের আমেরিকান রিকভারি অ্যান্ড রিইনভেস্টমেন্ট আইন|২০০৯ সালের আমেরিকান রিকভারি অ্যান্ড রিইনভেস্টমেন্ট আইন]]। এটি সাধারণত "স্টিমুলাস প্যাকেজ" নামে পরিচিত। এই আইনের আওতায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কিছু কর কর্তন, শিক্ষায় অর্থায়ন, এবং মেডিকেড সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে বেসরকারি খাতে চাকরির সুযোগ বাড়তে শুরু করে এবং শেয়ার বাজারে উত্থান দেখা দেয়। তবে কিছু ক্ষেত্রের প্রবৃদ্ধি খুবই সীমিত ছিল।
ওবামার প্রথম ১০০ দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল অত্যাচারের ব্যবহার বন্ধ করা।<ref>{{cite news |last1=Shane |first1=Scott |last2=Mazzetti |first2=Mark |last3=Cooper |first3=Helene |title=Obama Reverses Key Bush Security Policies |url=https://www.nytimes.com/2009/01/23/us/politics/23obama.html |accessdate=21 September 2020 |work=The New York Times |date=22 January 2009}}</ref>
=== অভ্যন্তরীণ নীতি ===
২০১৪ সালে ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র ডিজিটাল সার্ভিস এবং ১৮এফ প্রতিষ্ঠা করে। এটি আমেরিকান সরকারের ডিজিটাল উদ্যোগে সহায়তা করে।<ref>{{cite news |last1=Scola |first1=Nancy |title=White House launches ‘U.S. Digital Service,’ with HealthCare.gov fixer at the helm |url=https://www.washingtonpost.com/news/the-switch/wp/2014/08/11/white-house-launches-u-s-digital-service-with-healthcare-gov-fixer-at-the-helm/ |accessdate=25 September 2020 |work=Washington Post}}</ref>
== ওবামাকেয়ার ==
[[File:Obama signs health care-20100323.jpg|thumb|২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামা অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট-এ স্বাক্ষর করছেন।]]
===পটভূমি===
ওবামা ও কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা ২০০৯ সালের বেশিরভাগ সময় কাটান এমন একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক করে। এগুলোর লক্ষ্য ছিল সব আমেরিকান নাগরিককে স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। এর ফলাফল ছিল 'ওবামাকেয়ার'। এটি ২০১০ সালের শুরুতে আইন হিসেবে স্বাক্ষরিত হয়ে ওবামা প্রশাসনের সময়কালজুড়ে ধাপে ধাপে কার্যকর করা হয়।
===ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা===
ওবামাকেয়ারের মূল স্তম্ভ ছিল ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতা। এরমাধ্যমে প্রায় সকল আমেরিকান নাগরিককে স্বাস্থ্য বীমা কিনতে বাধ্য করা হয় যদি না তারা তাদের নিয়োগকর্তার মাধ্যমে এটি পায় বা মেডিকেইডের জন্য যোগ্য হয়। এই আইনে বিমা কোম্পানিগুলো কীভাবে কভারেজ অস্বীকার করতে পারে, তা সীমিত করা হয়, বিশেষ করে আগে থেকে বিদ্যমান রোগের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক আচরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এটি স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা প্রণয়ন করে এবং স্বাস্থ্য বীমা কেনার জন্য একটি এক্সচেঞ্জ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করে।
== সঙ্কট মোকাবেলা ==
===পরিবেশগত বিপর্যয়===
২০১০ সালের ২০ এপ্রিল, *ডীপওয়াটার হরাইজন* নামক একটি তেল-খনন রিগ বিস্ফোরণে ধ্বংস হয় এবং মেক্সিকো উপসাগরে প্রায় ৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ছড়িয়ে পড়ে। এটি মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক তেল দূষণের ঘটনা ছিল।<ref>https://www.epa.gov/enforcement/deepwater-horizon-bp-gulf-mexico-oil-spill</ref><ref>https://www.noaa.gov/education/resource-collections/ocean-coasts/oil-spills</ref>
২০১২ সালে *হারিকেন স্যান্ডি* আমেরিকার পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে এবং শহুরে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।<ref>https://www.nasa.gov/mission_pages/hurricanes/archives/2012/h2012_Sandy.html</ref>
এই সময়ে অনেক আমেরিকান পানির প্রাপ্যতা বা মান সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া একটি [[w:2011–2017 California drought|দীর্ঘস্থায়ী খরার]] মুখোমুখি হয়।<ref>{{cite web |title=California Droughts Compared USGS California Water Science Center |url=https://ca.water.usgs.gov/california-drought/california-drought-comparisons.html |website=ca.water.usgs.gov |accessdate=18 September 2020}}</ref> ২০১৪ সালে লেক ইরি-তে একটি বিশাল শৈবাল বৃদ্ধির ফলে ওহাইওর টলেডো শহরের আশেপাশে প্রায় ৪ লাখ মানুষের জন্য পানযোগ্য পানি অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।<ref>{{cite news |last1=Capelouto |first1=Susanna |last2=Morgenstein |first2=Mark |title=Water scare affects 400,000-plus in Toledo, Ohio |url=https://www.cnn.com/2014/08/02/us/toledo-water-warning/index.html |accessdate=18 September 2020 |work=CNN}}</ref><ref>{{cite news |last1=Wines |first1=Michael |title=Behind Toledo’s Water Crisis, a Long-Troubled Lake Erie |url=https://www.nytimes.com/2014/08/05/us/lifting-ban-toledo-says-its-water-is-safe-to-drink-again.html |accessdate=18 September 2020 |work=The New York Times |date=4 August 2014}}</ref> ২০১৬ সালের শুরুতে জানা যায় যে ফ্লিন্ট, মিশিগানের পানি সিসা দ্বারা দূষিত। এটি জাতীয়ভাবে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করে।<ref>{{cite news |title=Lead-Laced Water In Flint: A Step-By-Step Look At The Makings Of A Crisis |url=https://www.npr.org/sections/thetwo-way/2016/04/20/465545378/lead-laced-water-in-flint-a-step-by-step-look-at-the-makings-of-a-crisis |accessdate=18 September 2020 |work=NPR.org |language=en}}</ref> ফ্লিন্টের বিশুদ্ধ পানির অভাব *পরিবেশগত অবিচারের* প্রতীক হয়ে ওঠে।<ref>{{cite news |title=Five years later: Flint water crisis most egregious example of environmental injustice, U-M researcher says |url=https://news.umich.edu/five-years-later-flint-water-crisis-most-egregious-example-of-environmental-injustice-u-m-researcher-says/ |accessdate=20 September 2020 |work=University of Michigan News |date=23 April 2019}}</ref>
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Deepwater Horizon offshore drilling unit on fire 2010.jpg|জ্বলন্ত অবস্থায় ডীপওয়াটার হরাইজন, ২০১০
File:Deepwater Horizon oil spill - May 24, 2010 - with locator.jpg|মহাকাশ থেকে ডীপওয়াটার হরাইজন তেল দূষণ – ২৪ মে, ২০১০
File:Sandy Poweroutage 1.jpg|হারিকেন স্যান্ডির সময় ম্যানহাটনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা
File:Toxic Algae Bloom in Lake Erie.jpg|লেক ইরির ২০১১ সালের শৈবাল বৃদ্ধি, ২০১৪ সালের ঘটনার সদৃশ
File:Ohio National Guard activated to support water emergency in Lucas, Wood and Fulton Counties 140803-Z-ZJ624-093.jpg|ওহাইওর টলেডোতে পানির সংকটে জাতীয় রক্ষীবাহিনীর সহায়তা
File:Barack Obama speaks with farmers about California drought, 2014.jpg|ক্যালিফোর্নিয়ার খরা নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছেন ওবামা, ২০১৪
File:20140917-FS-UNK-0002 (15094082650).jpg|ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল, ২০১৪
File:President Obama sips filtered water from Flint.jpg|ফ্লিন্ট, মিশিগান থেকে পরিশোধিত পানি পান করছেন ওবামা, ২০১৬
File:Make Detroit the Engine of the Green New Deal! img 100 (18) (48422994607).jpg|ফ্লিন্টের এক প্রতিবাদকারী, ২০১৯; সমস্যার সমাধান এখনো হয়নি
</gallery>
===রোগ ও মাদক===
[[w:2009 swine flu pandemic|২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু মহামারিতে]] বিশ্বব্যাপী প্রায় ২,০৩,০০০ মানুষ মারা যায়,<ref>https://www.npr.org/sections/health-shots/2013/11/26/247379604/2009-flu-pandemic-was-10-times-more-deadly-than-previously-thought</ref> যার মধ্যে ১২,৪৬৯ জন ছিলেন আমেরিকান।<ref>https://web.archive.org/web/20200318191813/https://www.cdc.gov/flu/pandemic-resources/2009-h1n1-pandemic.html</ref> এটি ছিল ওবামা প্রশাসনের সময় সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলা রোগ। এরপর আরও কয়েকটি রোগ ছড়ানোর হুমকি সৃষ্টি করলেও সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। [[w:Western African Ebola virus epidemic|২০১৪ সালের ইবোলা মহামারী]] আমেরিকায় ছড়ানোর পথে ছিল, কিন্তু তা আটকানো হয়। [[w:2015–2016 Zika virus epidemic|২০১৫–২০১৬ সালের জিকা ভাইরাস মহামারী]] দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্র ও পুয়ের্তো রিকোর কিছু এলাকায় আঘাত হানে, তবে ২০১৭ সালের শুরুতে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
এছাড়াও আরও কিছু স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা বেড়েই চলেছে। [[w:ওপিওয়েড মহামারী|ওপিওয়েড মহামারী]] ওবামা প্রশাসনের সময় আরও তীব্র হয়। [[w:টিকা-বিরোধী আন্দোলন|টিকা-বিরোধী আন্দোলনের]] কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু আগে নির্মূল হওয়া রোগ পুনরায় ফিরে আসে।
===গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ ঘটনা===
এই সময়ের উল্লেখযোগ্য গুলি ও গৃহমধ্যস্থ ঘটনা হল: [[w:২০০৯ সালের ফোর্ট হুডে গুলিবর্ষণ|২০০৯ সালের ফোর্ট হুডে গুলিবর্ষণ]], [[w:২০১২ সালের কলোরাডোর অরোরায় গুলি|২০১২ সালের কলোরাডোর অরোরায় গুলি]], [[w:স্যান্ডি হুক স্কুলে গুলিবর্ষ|২০১২ সালের স্যান্ডি হুক স্কুলে গুলিবর্ষণ]], [[w:বস্টন ম্যারাথন বোমা হামলা|২০১৩ সালের বস্টন ম্যারাথন বোমা হামলা]], [[w:২০১৪ সালের ফোর্ট হুড গুলিবর্ষণ|২০১৪ সালের ফোর্ট হুড গুলিবর্ষণ]], [[w:বান্ডি সংঘর্ষ|২০১৪ সালের বান্ডি সংঘর্ষ]], [[w:২০১৫ সালের সান বার্নার্ডিনো হামলা|২০১৫ সালের সান বার্নার্ডিনো হামলা]], এবং [[w:২০১৬ সালের অরল্যান্ডো নাইটক্লাব গুলিবর্ষণ|২০১৬ সালের অরল্যান্ডো নাইটক্লাব গুলিবর্ষণ]]।
এই সময়ের আরও কিছু বিতর্কিত ঘটনা ছিল: [[w:২০১১ সালের ওহাইওর জেইন্সভিল প্রাণী পালানো|২০১১ সালের ওহাইওর জেইন্সভিল প্রাণী পালানো ঘটনা]], [[w:২০১১ সালের মহাপ্রলয়ের ভবিষ্যদ্বাণী|২০১১ সালের মহাপ্রলয়ের ভবিষ্যদ্বাণী]], [[w:যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঋণমান অবনতি|২০১১ সালের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঋণমান অবনতি]], এবং [[w:Petraeus scandal|২০১২ সালের পেট্রেয়াস কেলেঙ্কারী]]।
== টি পার্টি আন্দোলন ==
[[File:9.12 tea party in DC.jpg|thumb|২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে একটি টি পার্টি বিক্ষোভ।]]
টি পার্টি আন্দোলন সাধারণত ছোট সরকার, কম কর, এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ কমানোর পক্ষে ছিল, বিশেষ করে আগ্নেয়াস্ত্র ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে। এই আন্দোলন রক্ষণশীল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থায়ন পেয়েছিল, বিশেষ করে কোক ভাইদের কাছ থেকে। টি পার্টি আন্দোলনের বিশ্বাস ছিল যে অনেক প্রচলিত রিপাবলিকান নেতা যথেষ্ট রক্ষণশীল নন, এবং তারা প্রাথমিক নির্বাচনে একাধিক রিপাবলিকান নেতাকে পরাজিত করেছিল। টি পার্টির উদ্দীপনা এবং ওবামাকেয়ারের প্রতি অসন্তোষের ফলে ২০১০ সালে রিপাবলিকানরা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস পুনরুদ্ধার করে।
=== বারথারবাদ ===
ওবামার প্রচারণা এবং প্রশাসনের সময়, কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ ছিল যে বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেননি। তার লাইভ বার্থ সার্টিফিকেটে জন্মস্থান হাওয়াই বলে উল্লেখ রয়েছে<ref>[http://latimesblogs.latimes.com/.a/6a00d8341c630a53ef0134803281ac970c-600wi Hawaii Certificate of Live Birth, Barack Obama]</ref>। কিন্তু বহু আমেরিকান (যেমন তার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পও), তা বিশ্বাস করেননি। আরও কিছু আমেরিকান বিশ্বাস করতেন একটি ভিত্তিহীন দাবি যে ওবামা একজন মুসলিম। এই "বারথার" ও "ট্রুথার" গোষ্ঠীর অনেকেই টি পার্টি আন্দোলনের অংশ ছিলেন।
== ওবামার সামরিক নীতি ==
=== ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ ===
ওবামা দায়িত্ব গ্রহণ করেন যখন ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলছিল। যদিও তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে সেনা সংখ্যা কমিয়েছিলেন, দেশগুলোর অস্থিরতার কারণে তিনি পুরোপুরি প্রত্যাহার করেননি। ওবামার সময় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ড্রোন হামলা অব্যাহত রাখে।
সেপ্টেম্বর ১১-এর সন্ত্রাসী হামলার দশ বছর পর, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্ট ওবামাকে একটি সূত্র দেন যে ওসামা বিন লাদেন তাদের দেশের একটি ঘনবসতিপূর্ণ শহরে লুকিয়ে রয়েছে। ১ মে প্রেসিডেন্ট ওবামা একটি গোপন অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন এবং ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সফল হন।
=== ইউএস সাইবার কমান্ড ===
২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে [[w:যুক্তরাষ্ট্র সাইবার কমান্ড|যুক্তরাষ্ট্র সাইবার কমান্ড]] গঠিত হয় সাইবার প্রতিরক্ষা কার্যক্রম একত্রিত করার উদ্দেশ্যে।<ref>https://www.npr.org/templates/story/story.php?storyId=105962021</ref>
== এলজিবিটি অধিকার ==
ওবামা প্রশাসনের সময়, বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে স্থানীয়ভাবে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করা হয়। এটি ব্যালটের মাধ্যমে অথবা রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ঘটেছিল।<ref>https://guides.ll.georgetown.edu/c.php?g=592919&p=4182201</ref> বিশেষভাবে, ওবামা প্রশাসনের ঠিক আগে, ২০০৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যে সমলিঙ্গ বিবাহ নিষিদ্ধকরণ বাতিল করে দেয়,<ref>https://www.nytimes.com/2008/05/16/us/16marriage.html</ref> কিন্তু সেই একই বছরের নির্বাচনে প্রস্তাবনা ৮ দ্বারা তা পুনরায় নিষিদ্ধ করা হয়।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/the-fix/wp/2013/03/26/how-proposition-8-passed-in-california-and-why-it-wouldnt-today/</ref> ২০০৯ সালে কংগ্রেস [[w:Matthew Shepard and James Byrd Jr. Hate Crimes Prevention Act|ম্যাথু শেফার্ড এবং জেমস বায়ার্ড জুনিয়র হেইট ক্রাইম প্রতিরোধ আইন]] পাশ করে। এটি ঘৃণামূলক অপরাধের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করে এতে যৌন প্রবণতা এবং লিঙ্গ পরিচয় সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>https://www.apa.org/news/press/releases/2009/10/hate-crimes</ref><ref>https://www.mtsu.edu/first-amendment/article/1517/matthew-shepard-and-james-byrd-jr-hate-crimes-prevention-act</ref> ওবামা ২০১১ সালে সামরিক বাহিনীতে প্রচলিত "ডোন্ট আস্ক, ডোন্ট টেল" নীতিটি বাতিল করেন।<ref>https://www.nytimes.com/2011/07/23/us/23military.html</ref> ২০১২ সালের নির্বাচনের আগে, ওবামা সমগ্র দেশে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানানো প্রথম রাষ্ট্রপতি হন।<ref>https://time.com/3816952/obama-gay-lesbian-transgender-lgbt-rights/</ref><ref>https://abcnews.go.com/Politics/transcript-robin-roberts-abc-news-interview-president-obama/story?id=16316043</ref>
এই সময়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে এলজিবিটি অধিকার নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, এবং ২০১২ সালের পর জরিপে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে সমর্থন এর বিপক্ষে অবস্থানের চেয়ে বেশি দেখা যায়।<ref>https://news.gallup.com/poll/1651/gay-lesbian-rights.aspx</ref> বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমলিঙ্গ মন্ত্রীদের অভিষেক অনুমোদন দিতে শুরু করে, যেমন [[w:Evangelical Lutheran Church in America|ইভানজেলিক্যাল লুথেরান চার্চ]] ২০০৯ সালে<ref>https://www.nytimes.com/2010/07/26/us/26lutheran.html</ref> এবং প্রেসবিটারিয়ান চার্চ ২০১১ সালে।<ref>https://www.nytimes.com/2011/05/11/us/11presbyterian.html</ref>
২০১৫ সালে, সুপ্রিম কোর্ট সমগ্র দেশে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ ঘোষণা করে।<ref>https://www.npr.org/sections/thetwo-way/2015/06/26/417731614/obama-supreme-court-ruling-on-gay-marriage-a-victory-for-america</ref>
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Garden State Equality May 2011 protest (5694200900).jpg|২০১১ সালে সমতার পক্ষে এক প্রতিবাদ।
File:Crowd in the Minnesota captiol for the same sex marriage vote in the Minnesota Senate.jpg|২০১৩ সালে মিনেসোটা সিনেটে সমলিঙ্গ বিবাহ ভোটের সময় মিনেসোটা রাজ্য ক্যাপিটলে জমায়েত।
File:SCOTUS Marriage Equality 2015 (Obergefell v. Hodges) - 26 June 2015.jpg|২০১৫ সালের ২৬ জুন Obergefell v. Hodges মামলার রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্টের বাইরে উদযাপনরত জনতা।
File:White House rainbow for SCOTUS ruling on same-sex marriage.jpg|২০১৫ সালের ২৬ জুন সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজ রেইনবো রঙে আলোকিত।
</gallery>
== শিক্ষা ==
ওবামা প্রশাসনের সময় চার্টার স্কুলে উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়, এবং তিনি রাজ্যগুলোর মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল তুলনীয় করার জন্য কমন কোর মানদণ্ড চালু করার উদ্যোগ নেন, যদিও উভয় বিষয়ই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/answer-sheet/wp/2016/10/21/obamas-real-education-legacy-common-core-testing-charter-schools/</ref>
== অর্থনৈতিক সংস্কার ==
২০১০ সালে [[w:Dodd–Frank Wall Street Reform and Consumer Protection Act|ডড-ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল স্ট্রিট সংস্কার ও ভোক্তা সুরক্ষা আইন]] মহামন্দার পর আর্থিক খাতের বিধিবিধান পুনর্গঠিত করে।<ref>https://www.npr.org/2013/05/08/181999098/nearly-three-years-after-dodd-frank-reforms-happen-slowly</ref> এই প্রশাসনের অধীনেই [[w:Consumer Financial Protection Bureau|ভোক্তা আর্থিক সুরক্ষা ব্যুরো]] প্রতিষ্ঠিত হয়।<ref>https://www.pbs.org/newshour/economy/making-sense/what-is-the-consumer-financial-protection-bureau-anyway</ref>
== ২০১২ নির্বাচন ==
[[File:ElectoralCollege2012.svg|thumb|right|ওবামা পুনর্নির্বাচিত হতে মিট রমনিকে পরাজিত করেন]]
=== প্রাইমারি নির্বাচন ===
বারাক ওবামা ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন পুনরায় লাভ করেন।<ref>https://www.nytimes.com/2012/09/07/us/politics/obama-in-democratic-convention-speech-asks-for-more-time.html</ref> রিপাবলিকান প্রাইমারিতে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন: মিশেল বাকম্যান, নিউট গিংরিচ, জন হান্টসম্যান, রন পল, রিক পেরি, মিট রমনি এবং রিক স্যানটোরাম। সারা পেইলিন এবং ক্রিস ক্রিস্টির মতো অন্যান্য বিশিষ্ট রিপাবলিকানরা নির্বাচন করেননি, আর হারম্যান কেইন ও গ্যারি জনসন প্রাথমিক ভোটের আগেই তাদের প্রচারণা বন্ধ করে দেন।
=== মিট রমনি ===
প্রাইমারি পর্বে বেশিরভাগ সময় রমনিই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, যদিও তিনি প্রথম তিনটি রাজ্যে স্যানটোরাম এবং গিংরিচের সঙ্গে বিজয় ভাগ করে নেন। প্রাথমিক পর্বে দুর্বল ফলাফলের কারণে বাকম্যান, হান্টসম্যান এবং পেরি নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান। রমনির প্রতি অধিকাংশ রিপাবলিকান নেতৃত্বের সমর্থন ছিল, অপরদিকে স্যানটোরাম কেবল আইওয়াতে কেন্দ্রীভূত প্রচারণা শুরু করে পরবর্তীতে ধর্মীয় রক্ষণশীলদের লক্ষ্য করে জাতীয় পর্যায়ে প্রসারিত হন। পলের সমর্থন মূলত উদারপন্থী এবং তরুণ রিপাবলিকানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, আর গিংরিচের সমর্থন গভীর দক্ষিণাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত ছিল। মার্চের শেষ নাগাদ রমনির ডেলিগেট সংখ্যায় বড় লিড তৈরি হয়; স্যানটোরাম কয়েকটি রাজ্যে জয় লাভ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। গিংরিচ মার্চের পর কেবল ডেলাওয়্যারেই সক্রিয় প্রচারণা চালান এবং সেখানে রমনির কাছে পরাজিত হওয়ার পর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এপ্রিলের শেষ নাগাদ রমনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন।
=== ফলাফল ===
ওবামা ও রমনির মধ্যে সাধারণ নির্বাচনটি অত্যন্ত কাছাকাছি হওয়ার কথা ছিল।<ref>https://election.princeton.edu/2012/11/06/presidential-prediction-2012-final/</ref> শেষ পর্যন্ত ওবামা ২০০৮ সালে জয়ী সব রাজ্যেই বিজয়ী হন, ব্যতিক্রম ছিল উত্তর ক্যারোলাইনা এবং ইন্ডিয়ানা, এবং তিনি রমনিকে পরাজিত করেন।
== ঋণের সীমা নিয়ে বিতর্ক ও সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়া ==
টি পার্টি আন্দোলনের প্রভাব এবং ঋণসীমা সংকট শেষ পর্যন্ত জন বেনারের স্পিকার পদে পতন ঘটায়, এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন আরেক রিপাবলিকান, পল রায়ান।
== একটি পরিবর্তিত দেশ ==
=== মাদক বিরোধী যুদ্ধের পরিবর্তন ===
ওবামা প্রশাসনের সময় বিচার বিভাগ মারিজুয়ানা নিয়ে তুলনামূলক নরম মনোভাব নিয়েছিল, স্থানীয় পর্যায়ে নীতিমালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা দিয়েছিল, যদিও ফেডারেল স্তরে তা অবৈধ রাখা হয়েছিল।<ref>https://www.washingtonpost.com/news/wonk/wp/2016/11/30/obama-says-marijuana-should-be-treated-like-cigarettes-or-alcohol/</ref> ২০১৪ সালে কলোরাডো প্রথম রাজ্য হয়ে মারিজুয়ানা বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য বৈধতা দেয়।<ref>https://www.npr.org/2014/01/01/258889992/starting-today-you-can-legally-sell-marijuana-in-colorado</ref>
=== জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ===
যখন যুক্তরাষ্ট্র ২১ শতকে প্রবেশ করল, তখন এটি জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছিল। এর মধ্যে দুইটি ছিল আমেরিকার "ব্রাউনিং" এবং "গ্রেইং": বেবি বুম প্রজন্মের বয়স বাড়ার সঙ্গে আমেরিকানদের গড় বয়স বৃদ্ধি পেয়েছিল, অন্যদিকে ১৯৮০-এর দশক বা তার পরবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া অর্ধেক মানুষের বর্ণ সাদা নয়, অনেকেই মেক্সিকো এবং অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশ থেকে অভিবাসীদের সন্তান। আমেরিকার জনগোষ্ঠীর বৃদ্ধ বয়স স্বাস্থ্যসেবা খাতের অর্থনীতিতে বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। উৎপাদন ও খনন শিল্পে কর্মরত মানুষের সংখ্যা কমে গিয়েছিল, যখন সেবা খাত ও অস্থায়ী "গিগ অর্থনীতি" তে কাজ করতেন বেশি মানুষ।
=== প্রযুক্তি ===
এই সময়ে প্রযুক্তি ক্রমাগত উন্নতি করেছিল। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট কম্পিউটার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল, তেমনই সামাজিক নেটওয়ার্কে সদস্যপদ এবং ইন্টারনেটে মিডিয়া ভোগের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছিল।<ref>https://www.statista.com/statistics/201183/forecast-of-smartphone-penetration-in-the-us/</ref> গুগল গ্লাস বা মাইক্রোসফট হোলোলেন্সের মতো স্মার্ট গ্লাসের নতুন ধরনের ডিভাইসগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়নি, তবে জনসাধারণের কল্পনাশক্তি ছুঁয়েছিল।
এই সময় স্পেস এক্সপ্লোরেশন রোবটিক অনুসন্ধানের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ২০১১ সালে স্পেস শাটল প্রোগ্রাম অবসর নেয়। নাসার মঙ্গল অনুসন্ধানী উপগ্রহ ২০১১ সালে মঙ্গলে জলের প্রমাণ পায়। এটি ২০১৫ সালে কারিওসিটি রোভার নিশ্চিত করে। নিউ হরাইজনস_প্রোব। এটি বুশ প্রশাসনের সময় ২০০৬ সালে লঞ্চ হয়েছিল, ২০১৫ সালে প্লুটোর উপর ফ্লাইবাই করে মানবজাতিকে প্লুটোর প্রথম উচ্চ-মানের ছবি দেয়।
<gallery mode="packed" heights="150px">
File:Steve Jobs with the Apple iPad no logo (cropped).jpg|২০১০ সালে স্টিভ জবস আইপ্যাড পরিচয় করাচ্ছেন। এটি প্রথম জনপ্রিয় ট্যাবলেট কম্পিউটারগুলোর মধ্যে একটি।
File:Facebook on Nasdaq.jpeg|২০১২ সালে ফেসবুক NASDAQ এ যোগ দেয়। এই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
File:Google Glass detail.jpg|ভোক্তা অগমেন্টেড রিয়েলিটি প্ল্যাটফর্ম, যেমন এই হেডসেট, ওবামা প্রশাসনের সময় উপলব্ধ হতে শুরু করেছিল, তবে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি।
File:Pluto by LORRI and Ralph, 13 July 2015.jpg|নিউ হরাইজনস ২০১৫ সালে প্লুটোর প্রথম উচ্চ-মানের ছবি ধারণ করে।
</gallery>
== জাতিগত বৈষম্যহীন সমাজ... নাকি নয়? ==
অনেকেই আশাবাদী ছিলেন যে ওবামার নির্বাচনের ফলে এমন একটি সমাজ গড়ে উঠবে যেখানে জাতিগত বৈষম্য থাকবে না। এটি দেশের ইতিহাসের অংশ ছিল।<ref name="washingtonpostonracism">https://www.washingtonpost.com/graphics/national/obama-legacy/racism-during-presidency.html</ref> তবে, ওবামা প্রশাসনের সময় আমেরিকানদের মধ্যে জাতিগত উত্তেজনা অব্যাহত থাকে।<ref name="washingtonpostonracism"/>
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}
{{chapnav|2008 Vote|2016 Vote}}
{{status|75%}}
{{BookCat}}
czsurtwt18q6hj88vi19b8gdqid7cke
প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শক-তরঙ্গের গুণগত বর্ণনা
0
25821
85601
80562
2025-07-03T17:14:21Z
NusJaS
8394
85601
wikitext
text/x-wiki
==একটি শক-তরঙ্গ সংজ্ঞায়িতকরণ==
যান্ত্রিক তরঙ্গের প্রসারণের সাধারণ ক্ষেত্রে ধরা হয় যে, মাধ্যমের গুণগত বৈশিষ্ট্যসমূহ স্থান ও সময়ের একটি ধারাবাহিক ফাংশন হিসেবে বর্ণনা করা যায়। কিন্তু যখন চাপের প্রশস্ততা খুব বেশি হয়ে যায়, তখন তরঙ্গের প্রসারণ এমন রূপ নিতে পারে যেখানে তরঙ্গ সম্মুখভাগটি বিঘ্নিত হয়ে যায় এবং এটিকে তরঙ্গের সম্মুখে অবস্থিত অক্ষত উষ্ণতাত্ত্বিক অবস্থান থেকে তরঙ্গের পশ্চাতে চূড়ান্ত উষ্ণতাত্ত্বিক অবস্থানে একটি হঠাৎ পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করতে হয়।
এই ধরনের একটি প্রসারিত বিঘ্ন যা চাপ, তাপমাত্রা, এনথালপি, অভ্যন্তরীণ শক্তি, ঘনত্ব এবং কণার বেগে একটি বিঘ্নিত পরিবর্তন ঘটায় তাকে শক-তরঙ্গ (শক ওয়েভ) বলা হয়। নিচের চিত্রে একটি শক-তরঙ্গের রৈখিক চিত্রায়ন দেখানো হয়েছে:
<center>[[Image:Basic_Shock_Sketch.png|350px]]</center>
একটি শক-তরঙ্গকে শেষ পর্যন্ত একটি অনির্ধারিত পালস তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ঋজু যান্ত্রিক তরঙ্গ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়, যা মাধ্যমের অবস্থা আকস্মিকভাবে পরিবর্তন করে এবং যার গতি মাধ্যমের শব্দগত গতির চেয়ে অনেক বেশি।
==শক গঠনের প্রক্রিয়া ও ক্ষয়==
==="শকিং আপ"===
শক-তরঙ্গ কীভাবে গঠিত হয় তা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এটি একটি ইলাস্টিক কঠিন পদার্থে কীভাবে ঘটে তা দেখা, যেহেতু এই আচরণটি তরলে সম্প্রসারিত করা যায়। একটি রৈখিক-ইলাস্টিক বস্তুতে, চাপে লোড দিলে এর আচরণ মূলত দুটি অবস্থায় পড়ে: ইলাস্টিক অবস্থা এবং প্লাস্টিক অবস্থা। ইলাস্টিক অবস্থায় বিকৃতি চাপের সাথে সরাসরি অনুপাতিক। একটি নির্দিষ্ট সীমার (উৎপাদন চাপ) পর চাপের সাথে আর সরাসরি অনুপাত বজায় থাকে না এবং বস্তুটি নন-লিনিয়ার আচরণ শুরু করে, এটিই প্লাস্টিক অবস্থা।
যদি আমরা বস্তুতে শব্দগত বেগ এভাবে সংজ্ঞায়িত করি:
<center><math>C^2=\frac{\partial P}{\partial \rho}</math></center>
তাহলে দেখা যায়, ইলাস্টিক অবস্থায় চাপ ও ঘনত্ব একটি রৈখিক সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাই তরঙ্গের গতি স্থির থাকে যদি চাপের প্রশস্ততা উৎপাদন চাপ-এর নিচে থাকে। কিন্তু যদি আমরা এমন একটি তরঙ্গ বিবেচনা করি যার প্রশস্ততা উৎপাদন চাপ অতিক্রম করেছে, তখন নিচের চিত্র অনুযায়ী গতি আর অপরিবর্তিত থাকে না:
<center>[[Image:stressstrainVSwave.png|550px]]</center>
এখানে দেখা যায় যে তরঙ্গটি যেহেতু স্ট্রেইন ও স্ট্রেস-এর রৈখিক অনুপাতের সীমা ছাড়িয়ে গেছে, তরঙ্গের গতি চাপের সাথে বেড়ে যায়। ফলে, তরঙ্গের সি বিন্দুর গতি সর্বনিম্ন, বি ও এ বিন্দুর গতি ক্রমান্বয়ে বেশি। ফলে উচ্চচাপ অংশ দ্রুততর গতিতে চলতে থাকে এবং ধীর অংশগুলোকে অতিক্রম করে। এই প্রক্রিয়ার সময়চিত্র নিচে দেখানো হয়েছে:
<center>[[Image:ShockingUp.png|550px]]</center>
তরঙ্গ যতই প্রসারিত হয়, দ্রুতগামী অংশ ধীর অংশকে ধরে ফেলে এবং তরঙ্গ ধীরে ধীরে একটি খাড়া ও বিঘ্নিত প্রোফাইলে পরিণত হয়, যেটিই একটি শক-তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য। তাই কোনো তরঙ্গে যদি চাপের প্রশস্ততা Yield Strength অতিক্রম করে, তবে সেটি "শকিং আপ" হয়ে বিঘ্নিত হয়ে যাবে, কারণ গতি চাপ বৃদ্ধির সাথে অরৈখিকভাবে বৃদ্ধি পায়।
হতে পারে আপনি ভাবছেন, যদি আমরা সময়ে আরও এগিয়ে যাই, তবে এই খাড়া রেখার উপরের অংশ নিচের অংশের তুলনায় দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং শক ফ্রন্টটি ঢালু হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে এটি ঘটে না কারণ একইসাথে এমন একটি প্রতিদ্বন্দ্বী তরঙ্গ প্রক্রিয়া ঘটে যা শককে ক্ষয় করে।
===শক রেয়ারিফ্যাকশন===
একবার একটি শক-তরঙ্গ কোন মাধ্যমে স্থাপিত হলে তা চিরকাল স্থায়ী হতে পারে না যদি না এটি যান্ত্রিকভাবে কোনো পিস্টনের মাধ্যমে চালিত হয় বা ডিটোনেশন তরঙ্গে যৌগিক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে স্ব-সমর্থিত হয়। দেখা যায়, শক-তরঙ্গের ক্ষয় ও অবসানও উপরের সীমার পর চাপ, ঘনত্ব এবং তরঙ্গগতির মধ্যকার অরৈখিক সম্পর্কের একটি প্রাকৃতিক ফলাফল।
নিচের বর্গাকার পালস শক-তরঙ্গ বিবেচনা করুন:
<center>[[Image:ShockPulse.png|350px]]</center>
A' বিন্দু অবশিষ্ট (un-shocked) অঞ্চলে প্রবেশ করছে শব্দগত বেগ <math>C_{0}</math> এবং কণার বেগ <math>\nu_{0}</math> সহ। A বিন্দু ইতোমধ্যে শকপ্রাপ্ত অঞ্চলে প্রবেশ করছে, যেখানে চাপ ও ঘনত্ব বেশি এবং তাই কণার বেগ <math>\nu_{A'}</math> ও তরঙ্গগতিও <math>C_{A'}</math> বেশি। ফলে A বিন্দুটি A' থেকে দ্রুততর এবং অচিরেই ফ্রন্টকে অতিক্রম করবে। অপরদিকে C বিন্দুটি চারপাশের পরিবেশে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়েছে এবং এর তরঙ্গগতি কম, ফলে এটি পিছিয়ে পড়বে। এই প্রক্রিয়ায় A থেকে C রেখাটি প্রসারিত হয়ে নিচের দিকে ঢালু হয়ে যাবে।
এই প্রক্রিয়ায় শক পালসটি বিস্তৃত হয় এবং চাপের গড় মান ক্রমশ কমে যায় যতক্ষণ না তা ইলাস্টিক সীমার নিচে নেমে আসে এবং শক-তরঙ্গ একটি ধ্বনিতরঙ্গে পরিণত হয়। রেখাটি A-C একটি দ্রুতগামী তরঙ্গ যা শক ফ্রন্টের চেয়ে দ্রুত চলে এবং একে রেয়ারিফ্যাকশন তরঙ্গ বলা হয়। এটি শক-তরঙ্গ প্রক্রিয়ার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য। এই ক্ষয় প্রক্রিয়াটি নিচে চিত্রায়িত হয়েছে:
<center>[[Image:ShockAttenuation.png|350]]</center>
==চরিত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে শক বর্ণনা==
যদিও উপরের আলোচনা শক আচরণ বুঝতে অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন, তবুও এসব ফলাফল সরাসরি অরৈখিক তরঙ্গ সমীকরণের গাণিতিক সমাধানের মাধ্যমে [[w:method of characteristics|চরিত্রিক পদ্ধতি]] এবং রিম্যান অব্যয় সমূহের মাধ্যমে পাওয়া যায়। চরিত্রিক পদ্ধতি আংশিক গাণিতিক সমীকরণ ([[w:partial differential equations|PDE]]) সমাধানের একটি কৌশল যা বিদ্যমান স্থান-কাল কোঅর্ডিনেট সিস্টেমকে একটি নতুন সিস্টেমে রূপান্তর করে যেখানে PDE-এর ধর্মসমূহ নির্দিষ্ট রেখা বরাবর অপরিবর্তিত থাকে।
প্রাথমিক অরৈখিক-ইলাস্টিক তরঙ্গ সমীকরণগুলো বিবেচনা করুন:
:<math>\ \epsilon = \frac{\rho_0}{\rho}</math> চাপ-ঘনত্ব সম্পর্ক
:<math>\ \sigma = \sigma (\epsilon)</math> গঠনতাত্ত্বিক সমীকরণ
:<math>\ \frac{\partial \rho}{\partial t} + \nu \frac{\partial \rho}{\partial x} +\rho \frac{\partial \nu}{\partial t} = 0 </math> ভরের সংরক্ষণ
:<math>\ \rho \left(\frac{\partial \nu}{\partial t} + \nu \frac{\partial \nu}{\partial x}\right) = \frac{\partial \sigma}{\partial x}</math> ভরবেগের সংরক্ষণ
চরিত্রিক স্থানাঙ্ক:
:<math>\ \xi = \xi(x,t)</math>
:<math>\ \zeta = \zeta(x,t)</math>
যেখানে <math>\ x = x(X,t)</math>, নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে:
:<math>\ \frac{\partial \zeta}{\partial t} = C\frac{\partial \zeta}{\partial X}</math>
:<math>\ \frac{\partial \xi}{\partial t} = -C\frac{\partial \xi}{\partial X}</math>
এখানে আমরা তরঙ্গগতিকে চাপ ও ঘনত্বের ফাংশন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছি:
:<math>\ C = \left( \frac{1}{\rho_{0}} \frac {d \sigma}{d \epsilon} \right)^{ \frac{1}{2}}</math>
ফলে শর্তসমূহ:
:<math>\ \frac{\partial \zeta}{\partial t} = (C \epsilon - \nu)\frac{\partial \zeta}{\partial x}</math>
:<math>\ \frac{\partial \xi}{\partial t} = -(C\epsilon + \nu)\frac{\partial \xi}{\partial x}</math>
এই সমীকরণগুলো ব্যবহার করে আমরা পাই:
:<math>d \zeta = \frac{\partial \zeta}{\partial x} [dx - (\nu - C \epsilon)dt]</math>
:<math>d \xi = \frac{\partial \xi}{\partial x} [dx - (\nu + C \epsilon)dt]</math>
এগুলো দ্বারা নতুন কোঅর্ডিনেট সিস্টেমের রেখার ঢাল পাওয়া যায়:
:<math> \ \frac{d x}{d t} = \nu + C\epsilon</math> যখন <math>\ d \xi = 0</math>
:<math> \ \frac{d x}{d t} = \nu - C\epsilon</math> যখন <math>\ d \zeta = 0</math>
এখন তরঙ্গ সমীকরণগুলোকে <math>\ (x , t)</math> থেকে <math>\ (\zeta , \xi)</math> তে রূপান্তর করতে হবে। গঠনতাত্ত্বিক সমীকরণের কাল-ব্যুৎপন্ন নিয়ে এবং চরিত্রিক রেখার ঢাল বসিয়ে পাই:
:<math>\ \frac{\partial \sigma}{\partial x} = - (C \epsilon)^{2}\frac{\partial \rho}{\partial x}</math>
:<math>\ \frac{\partial \sigma}{\partial t} = - (C \epsilon)^{2}\frac{\partial \rho}{\partial y}</math>
সরলতার জন্য বসাই: <math>\ c = C \epsilon </math>
ভরের সংরক্ষণ ও ভরবেগের সংরক্ষণ সমীকরণে বসিয়ে পাই:
:<math>\ \frac{\partial \sigma}{\partial t} +\nu \frac{\partial \sigma}{\partial x} = \rho c^{2} \frac{\partial \nu}{\partial x}</math>
:<math> \frac{\partial \nu}{\partial t} + \nu \frac{\partial \nu}{\partial x} = \frac{1}{\rho} \frac{\partial \sigma}{\partial x}</math>
এগুলোকে একত্রে ও আংশিক ডিফারেন্সিয়াল সূত্রের মাধ্যমে পাই:
:<math>\ \frac{\partial \nu '}{\partial \zeta} = \frac{1}{\rho c}\frac{\partial \sigma '}{\partial \zeta '}</math>
:<math>\ \frac{\partial \nu '}{\partial \xi} = -\frac{1}{\rho c}\frac{\partial \sigma '}{\partial \xi '}</math>
এই সমীকরণগুলোই <math>\zeta </math> এবং <math>\xi</math> স্থানে চরিত্রিক সমীকরণ।
চরিত্রিক রেখাগুলোর সমাধান পেতে হলে রেফারেন্স থেকে চূড়ান্ত অবস্থায় রিম্যান অব্যয় ব্যবহার করে একীকরণ করতে হবে:
:<math>\ J_{+}(\xi) = \nu - \nu^{0} - \int_1^\epsilon{C(\epsilon)\,d\epsilon}</math>
:<math>\ J_{-}(\zeta)= \nu - \nu^{0} + \int_1^\epsilon{C(\epsilon)\,d\epsilon}</math>
এই দুটি সমীকরণ তরঙ্গ পদ্ধতির রিম্যান অব্যয় প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলো একত্রে করলে পাই:
:<math>\ \nu - \nu^{0} = \frac{1}{2}(J_{+}(\xi) +J_{-}(\zeta))</math>
:<math>\ \int_1^\epsilon{C(\epsilon)\,d\epsilon} = \frac{1}{2}(-J_{+}(\xi) + J_{-}(\zeta))</math>
===সরল তরঙ্গ সমাধান===
সরল তরঙ্গ একটি এমন সমাধান যা তরঙ্গ সমীকরণকে চরিত্রগত স্থানাঙ্কে সমাধান করে যেখানে একটি ইনভ্যারিয়েন্ট ধ্রুবক থাকে। একটি অরৈখিক তরঙ্গ ধরা যাক যেখানে:
:<math>\ J_{-}(\zeta) = 0</math>
এই সমীকরণ অনুযায়ী চাপ, বিকৃতি, কণার বেগ এবং শব্দের বেগ কেবলমাত্র <math>\xi</math> এর ফাংশন হিসেবে থাকে। পূর্বে প্রাপ্ত স্থানাঙ্ক রেখার ঢাল থেকে পাওয়া যায়:
:<math>\ \frac{d X}{dt} = \nu(\xi^{i})+c(\xi^{i})</math>
এই রেখাগুলোর সমাকলন করলে পাই:
:<math>\ \xi = t - \frac{x}{\nu(\xi)+c(\xi)}</math>
অতএব, অরৈখিক সমীকরণের চরিত্রগত স্থানে সরল তরঙ্গ সমাধানটি একটি নির্দিষ্ট আনুভূমিক গতিশীল তরঙ্গকে বিভিন্ন ঢালের সোজা রেখায় রূপান্তরের মাধ্যমে বর্ণনা করা যায়। প্রতিটি রেখা হল x-t স্থানে কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুর ইতিহাস।
যদি আমরা রিম্যান ইনভ্যারিয়েন্টের সমাকলন করি:
:<math>\ \nu - \nu^{0} = \frac{1}{2}J_{+}\left[ t-\frac{x}{\nu+c}\right]</math>
:<math>\ \int_1^\epsilon{C(\epsilon)\,d\epsilon} = -\frac{1}{2}J_{+}\left[ t-\frac{x}{\nu+c}\right]</math>
তাহলে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল পাই:
:<math>\ \frac{d(v+c)}{d\epsilon} \le 0 </math>
এই অসমতা গাণিতিকভাবে প্রমাণ করে যে অরৈখিক (প্লাস্টিক) সীমায় চাপ বাড়ার সাথে তরঙ্গের গতি বৃদ্ধি পায়, এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রতিষ্ঠা করে: তরঙ্গ গতি হল কণার বেগ এবং শব্দের বেগের যোগফল।
চরিত্রগত স্থানে সরল তরঙ্গ সমাধানের সম্পর্ক তরঙ্গ থেকে ধাক্কার (shock) সৃষ্টির সাথে যুক্ত — কারণ ভিন্ন ঢালের চরিত্রগত রেখাগুলি এক সময় এসে ছেদ করতে বাধ্য।
===তরঙ্গ থেকে ধাক্কা (শক) সৃষ্টি===
গাণিতিকভাবে প্রমাণ করা যায় যে অরৈখিক তরঙ্গের চরিত্রগত রেখাগুলোর ছেদবিন্দু হল একটি গাণিতিক বিচ্ছিন্নতা, যা থেকে আমরা বুঝি যে শক-তরঙ্গ একটি রৈখিক অবস্থা বিচ্ছিন্নতা।
সহজতার জন্য ধরা যাক কণার বেগ অবস্থানের বিপরীতে একটি ঢালাকৃত তরঙ্গ আছে — এটি প্রথম অংশের গুণগত উদাহরণের সদৃশ, তবে এখানে চাপের পরিবর্তে কণার বেগ চিত্রিত হয়েছে (যেখানে উভয়ের সম্পর্ক বিদ্যমান)। এই ঢালাকৃত তরঙ্গের সমীকরণ:
<math>\ \nu = -mx</math>
সরল তরঙ্গের চরিত্রগত সমাধান প্রয়োগ করলে পাই:
<math>\ \nu = m[(\nu+c)t -x]</math>
এই সমাধান ব্যবহারযোগ্য করতে হলে আমাদের একটি অবস্থা সমীকরণ প্রয়োজন যা তরঙ্গের বেগ ও কণার বেগকে গাণিতিকভাবে যুক্ত করে। উপাদান নির্দিষ্ট না থাকায় ধরা যাক সম্পর্কটি রৈখিক:
:<math>\ c = \lambda u + c_{0}</math>
এটি আমাদের সমীকরণে প্রতিস্থাপন করলে পাই:
:<math> \nu = \frac{m(c_{0}t-x)}{1-\lambda m t}</math>
স্পষ্টতই, যখন <math> t = \frac{1}{\lambda m}</math>, তখন কণার বেগ অসীম হয়ে যায় এবং সরল তরঙ্গ সমাধান ভেঙে পড়ে, ফলে শক-তরঙ্গ গঠিত হয়। তবে যখন <math>m </math> ঋণাত্মক হয়, তখন <math>\nu</math> কখনোই অসীমে পৌঁছায় না এবং এটি একটি সম্প্রসারণ তরঙ্গ হয়ে যায়।
আমরা যদি এক্স-টি রেখাচিত্রে ঢালের নিচের প্রান্ত (পূর্ব আলোচনার C বিন্দু) এবং ঢালের উপরের প্রান্ত (A বিন্দু) চিহ্নিত করি, তাহলে দেখতে পাবো এই চরিত্রগত রেখাগুলির আচরণ কেমন:
<center>[[Image:XTShockvsRare.png|700px]]</center>
এখানে লক্ষ্যণীয় যে আমাদের গাণিতিক এবং ধারণাগত আলোচনা অবশেষে শক-তরঙ্গ গঠনের অনুরূপ ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। গাণিতিক আলোচনায় প্রতিটি চরিত্রগত রেখা তরঙ্গরূপের একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর গতিপথকে উপস্থাপন করে, যা <math>(P,x)</math> অথবা <math>(P,t)</math> স্থানে চিত্রিত করা যায়। এই রেখাগুলোর ইতিহাস দেখায় তরঙ্গের নির্দিষ্ট অংশ কিভাবে একে অপরকে ছাড়িয়ে যায় বা পিছিয়ে পড়ে। যদি রেখাগুলো একত্রিত হয়, তবে ছেদবিন্দুতে একটি গাণিতিক এককত্ব ঘটে এবং শক-তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, যদি রেখাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়, তবে তরঙ্গরূপ ছড়িয়ে পড়ে — যা সম্প্রসারণ তরঙ্গের গুণগত বর্ণনার সঙ্গে সদৃশ।
===দুর্বল ও শক্তিশালী শক===
চরিত্রগত পদ্ধতির প্রেক্ষাপটে, যেকোনো শক-তরঙ্গ হল এমন একটি বিচ্ছিন্নতা যা চরিত্রগত রেখার একত্রিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়। দুটি প্রকারভেদের শক সমাধান বিদ্যমান, যা তাপ-গতিবিদ্যাগত অবস্থা রেখার উপর প্রভাব ফেলে।
একটি দুর্বল শক হল এমন একটি অবস্থা যেখানে চূড়ান্ত ও প্রাথমিক অবস্থার মধ্যে পরিবর্তন সরল চরিত্রগত তরঙ্গের সমতুল্য। এ অবস্থায় অবস্থা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হল সমবিপাকীয় এবং বস্তুটি যেভাবে প্রাথমিক অবস্থা থেকে চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছায় তা একটি সমবিপাক রেখা দ্বারা বর্ণিত।
অন্যদিকে, একটি শক্তিশালী শক হল এমন একটি অপ্রত্যাবর্তনযোগ্য সমাধান যেখানে সম্ভাব্য অবস্থার রেখা সমবিপাক রেখার সাথে মেলে না বরং একটি ভিন্ন লোডিং পথ অনুসরণ করে।
এই অবস্থা রেখা সম্পর্কিত আলোচনা হুগোনিও রেখার মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হবে।
==তথ্যসূত্র==
# ইন্ট্রোডাকশন টু ওয়েভ প্রোপাগেশন ইন ননলিনিয়ার ফ্লুইড এন্ড সলিডস ; ডি.এস. ড্রামহেলার; ১৯৯৮
# এক্সপ্লোসিভ ইঞ্জিনিয়ারিং; পল ডাব্লিউ. কুপার; ১৯৯৬
# শক ওয়েভ এন্ড এক্সপ্লোশানস; পি.এল. সাচদেব; ২০০৪
{{BookCat}}
dbh0loywf1cz4o5gt79jij5ycf9t38d
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/জুরি পরীক্ষা
0
26063
85599
81200
2025-07-03T16:59:45Z
NusJaS
8394
85599
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|Routh-Hurwitz Criterion|Root Locus}}
== ডিজিটাল সিস্টেমে রাউথ-হুরউইটজ নীতি ==
Z ডোমেইন এবং S ডোমেইনের মধ্যে পার্থক্যের কারণে, রাউথ-হুরউইটজ নীতিগুলো সরাসরি ডিজিটাল সিস্টেমের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না। এর কারণ হলো ডিজিটাল সিস্টেম ও ধারাবাহিক-সময় সিস্টেমের স্থিতিশীলতার অঞ্চল ভিন্ন। তবে, ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণের জন্য কিছু বিকল্প পদ্ধতি বিদ্যমান। আমাদের প্রথম বিকল্প (যা খুব একটা ভালো নয়) হলো ডিজিটাল সিস্টেমকে ধারাবাহিক-সময় রূপে রূপান্তর করা, যা করা হয় '''দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর''' ব্যবহার করে। এই রূপান্তরটি Z ডোমেইনের একটি সমীকরণকে W ডোমেইনে রূপান্তর করে, যার বৈশিষ্ট্য S ডোমেইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আরেকটি বিকল্প হলো '''জুরির স্থিতিশীলতা পরীক্ষণ''' ব্যবহার করা। জুরির পরীক্ষা রাউথ-হুরউইটজ পরীক্ষার অনুরূপ একটি পদ্ধতি, যা Z ডোমেইনে সরাসরি ডিজিটাল সিস্টেম বিশ্লেষণ করার জন্য পরিবর্তিত হয়েছে।
=== দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর ===
Z-ডোমেইনে ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণের একটি প্রচলিত, কিন্তু সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি হলো দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর ব্যবহার করে স্থানান্তর ফাংশনকে z-ডোমেইন থেকে w-ডোমেইনে রূপান্তর করা। W-ডোমেইন নিম্নলিখিত দিক থেকে S-ডোমেইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ:
* ডান-অর্ধ সমতলে মেরুগুলো অস্থিতিশীল
* বাম-অর্ধ সমতলে মেরুগুলো স্থিতিশীল
* কাল্পনিক অক্ষে থাকা মেরুগুলো আংশিকভাবে স্থিতিশীল
তবে, W-ডোমেইনটি S-ডোমেইনের তুলনায় বিকৃত, এবং মেরুগুলোর অবস্থান, কাল্পনিক অক্ষের সঙ্গে আপেক্ষিক অবস্থান ছাড়া, ঠিক S-ডোমেইনের মতো থাকে না।
মনে রাখতে হবে, রাউথ-হুরউইটজ নীতি কেবল বলতে পারে একটি মেরু স্থিতিশীল কি না, এর বেশি কিছু নয়। তাই, মেরুর অবস্থান কোথায় তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতক্ষণ তা সঠিক অর্ধ-সমতলে থাকে। যেহেতু আমরা জানি W-ডোমেইনের এবং S-ডোমেইনের বাম পাশে মেরু স্থিতিশীল এবং ডান পাশে অস্থিতিশীল, তাই W-ডোমেইনে রাউথ-হুরউইটজ পরীক্ষা S-ডোমেইনের মতোই প্রয়োগযোগ্য।
=== অন্যান্য রূপান্তর ===
Z ডোমেইনের একটি সমীকরণকে S ডোমেইন বা অনুরূপ কোনো ডোমেইনে রূপান্তর করার আরও কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আমরা এই বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব '''পরিশিষ্ট''' অংশে।
== জুরির পরীক্ষা ==
জুরির পরীক্ষা রাউথ-হুরউইটজ নীতির অনুরূপ একটি পরীক্ষা, তবে এটি Z ডোমেইনে এলটিআই (LTI) ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণ করতে ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল সিস্টেম স্থিতিশীল কি না তা নির্ধারণ করতে হলে, আমাদের Z ডোমেইনের বৈশিষ্ট্য সমীকরণটিকে কয়েকটি নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্তের ভিত্তিতে যাচাই করতে হবে। যদি সমীকরণটি কোনো একটি নিয়ম ব্যর্থ করে, তাহলে সেটি অস্থিতিশীল। যদি সমস্ত শর্ত পূরণ করে, তাহলে সেটি স্থিতিশীল। জুরির পরীক্ষা ডিজিটাল সিস্টেমে স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনীয় এবং যথেষ্ট শর্ত।
আমরা D(z) কে সিস্টেমের '''বৈশিষ্ট্য বহুপদী''' বলব। এটি Z ডোমেইনের স্থানান্তর ফাংশনের গুণিতক বহুপদী। জুরির পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে এই বৈশিষ্ট্য বহুপদীকেই ঘিরে আবর্তিত। জুরির পরীক্ষা সম্পাদন করতে হলে, আমাদের একাধিক ছোট ছোট পরীক্ষা করতে হবে। যেকোনো একটিতে ব্যর্থ হলে সিস্টেমটি অস্থিতিশীল।
=== জুরির পরীক্ষাগুলো ===
ধরা যাক বৈশিষ্ট্য সমীকরণ নিম্নরূপ:
:<math>D(z) = a_0 + a_1z + a_2z^2 + \cdots + a_Nz^N</math>
নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো নির্ধারণ করে যে সিস্টেমটির কোনো মেরু একক বৃত্তের বাইরে (অস্থিতিশীলতা অঞ্চল) আছে কি না। এখানে N হচ্ছে বহুপদীর ঘাত।
{{TextBox|1=একটি সিস্টেমকে স্থিতিশীল বিবেচনা করার জন্য অবশ্যই নিচের সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যেকোনো একটিতে ব্যর্থ হলে অবিলম্বে থেমে যেতে হবে; পরবর্তী পরীক্ষার প্রয়োজন নেই।
;নিয়ম ১: যদি z = 1 হয়, তাহলে আউটপুট ধনাত্মক হতে হবে:
::<math>D(1) > 0</math>
;নিয়ম ২: যদি z = -1 হয়, তাহলে নিচের সম্পর্কটি সন্তুষ্ট হতে হবে:
::<math>(-1)^ND(-1) > 0</math>
;নিয়ম ৩: ধ্রুব পদ (a<sub>0</sub>) এর মানের পরম মান অবশ্যই সর্বোচ্চ গুণক (a<sub>N</sub>) এর পরম মানের চেয়ে কম হতে হবে:
::<math>|a_0| < |a_N|</math>
যদি '''নিয়ম ১''', '''নিয়ম ২''' এবং '''নিয়ম ৩''' পূরণ হয়, তাহলে '''জুরি অ্যারে''' (নিচে বর্ণিত) নির্মাণ করতে হবে।
;নিয়ম ৪: জুরি অ্যারে গঠনের পরে, নিচের সম্পর্কগুলো অ্যারেটির শেষ পর্যন্ত সন্তুষ্ট থাকতে হবে:
::<math>|b_0| > |b_{N-1}|</math>
::<math>|c_0| > |c_{N-2}|</math>
::<math>|d_0| > |d_{N-3}|</math>
:এভাবে অ্যারেটির শেষ সারি পর্যন্ত। যদি সব শর্ত পূরণ হয়, তাহলে সিস্টেমটি স্থিতিশীল।}}
জুরি অ্যারে তৈরি করার সময়, '''নিয়ম ৪'''-এর পরীক্ষাগুলোও একসাথে করা যায়। যদি কোনো পর্যায়ে '''নিয়ম ৪''' ব্যর্থ হয়, তাহলে অ্যারে গণনা বন্ধ করে দেওয়া উচিত; সিস্টেমটি অস্থিতিশীল।
=== জুরি অ্যারে ===
প্রথমে গুণকের একটি সারি লিখে, এরপর সেই গুণকগুলো উল্টো ক্রমে আরেকটি সারি লিখে জুরি অ্যারে তৈরি করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি বহুপদীটি তৃতীয় ঘাতের হয়, তাহলে প্রথম দুটি সারি হবে:
:<math>\overline{\underline{
\begin{matrix} z^0 & z^1 & z^2 & z^3 & \ldots & z^N
\\ a_0 & a_1 & a_2 & a_3 & \ldots& a_N
\\ a_N & \ldots & a_3 & a_2 & a_1 & a_0
\end{matrix}}}</math>
এরপর, আমরা নতুন গুণকের সারি ('''b''' এবং '''c''' নামকরণে) যোগ করব এবং উপরের সারি থেকে নিচের সারির মান নির্ণয় করব। প্রতিটি নতুন সারির গুণক সংখ্যা পূর্ববর্তী সারির চেয়ে এক কম হবে:
:<math>\overline{\underline{
\begin{matrix} 1) & a_0 & a_1 & a_2 & a_3 & \ldots & a_N
\\ 2) & a_N & \ldots & a_3 & a_2 & a_1 & a_0
\\ 3) & b_0 & b_1 & b_2 & \ldots & b_{N-1}
\\ 4) & b_{N-1}& \ldots & b_2 & b_1 & b_0
\\ \vdots & \vdots & \vdots & \vdots
\\ 2N-3) & v_0 & v_1 & v_2
\end{matrix}}}</math>
নোট: শেষ সারি হলো (2N-3) সংখ্যক সারি, এবং এতে সর্বদা ৩টি উপাদান থাকে। যদি N = 1 হয়, তাহলে এই পরীক্ষা প্রাসঙ্গিক নয়, কারণ আপনি মেরুটা জানেন!
যখন আমরা ২টি উপাদানবিশিষ্ট সারিতে পৌঁছাই, তখন অ্যারে নির্মাণ বন্ধ করতে পারি।
বিজোড় সংখ্যক সারির উপাদান নির্ণয় করতে আমরা নিচের সূত্র ব্যবহার করব। জোড় সংখ্যক সারি হবে ঠিক আগের সারির উল্টো ক্রম। এখানে k একটি যেকোনো উপসূচক।
:<math>b_k = \begin{vmatrix} a_0 & a_{N-k}
\\ a_N & a_k
\end{vmatrix}</math>
:<math>c_k = \begin{vmatrix} b_0 & b_{N-1-k}
\\ b_{N-1} & b_k
\end{vmatrix}</math>
:<math>d_k = \begin{vmatrix} c_0 & c_{N-2-k}
\\ c_{N-2} & c_k
\end{vmatrix}</math>
এই ধারা নিচের সারিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যায়, প্রয়োজনে।
=== উদাহরণ: e<sub>5</sub> গণনা করা ===
{{TextBox|1=ধরা যাক মূল বহুপদী যথেষ্ট বড় যার জন্য জুরি অ্যারেতে e<sub>5</sub> সদস্য দরকার, তাহলে তার সমীকরণ হবে:
:<math>e_k = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-R-k}
\\ d_{N-R} & d_k
\end{vmatrix}</math>
যেখানে R ধারা অনুযায়ী আগের স্তরের মান। যেহেতু c সারিতে R = 1, এবং d সারিতে R = 2, তাই e সারিতে R = 3 হবে। সেই মান বসিয়ে:
:<math>e_k = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-3-k}
\\ d_{N-3} & d_k
\end{vmatrix}</math>
এবং আমরা চাই e<sub>5</sub> মান, তাই k = 5 বসিয়ে পাই:
:<math>e_5 = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-3-5}
\\ d_{N-3} & d_5
\end{vmatrix}
= \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-8}
\\ d_{N-3} & d_5
\end{vmatrix}</math>
ডিটারমিন্যান্ট নিলে সমীকরণ হয়:
:<math>e_5 = d_0d_5 - d_{N-8}d_{N-3}</math>}}
== আরও পড়ুন ==
দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর এবং লাপ্লাস ডোমেইন ও Z ডোমেইনের মধ্যে রূপান্তর নিয়ে আমরা আলোচনা করব পরিশিষ্টে:
* [[Control Systems/Z Transform Mappings|Z রূপান্তর রূপান্তরণসমূহ]]
{{Control Systems/Nav|Routh-Hurwitz Criterion|Root Locus}}
sgy6jpcpcm7wpvy8zrpbr21srl8pgvu
85629
85599
2025-07-04T03:37:55Z
SMontaha32
11242
/* ডিজিটাল সিস্টেমে রাউথ-হুরউইটজ নীতি */
85629
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|Routh-Hurwitz Criterion|Root Locus}}
== ডিজিটাল সিস্টেমে রাউথ-হুরউইটজ নীতি ==
Z ডোমেইন এবং S ডোমেইনের মধ্যে পার্থক্যের কারণে, রাউথ-হুরউইটজ নীতিগুলো সরাসরি ডিজিটাল সিস্টেমের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না। এর কারণ হলো ডিজিটাল সিস্টেম ও ধারাবাহিক-সময় সিস্টেমের স্থিতিশীলতার অঞ্চল ভিন্ন। তবে, ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণের জন্য কিছু বিকল্প পদ্ধতি বিদ্যমান। আমাদের প্রথম বিকল্প (যা খুব একটা ভালো নয়) হলো ডিজিটাল সিস্টেমকে ধারাবাহিক-সময় রূপে রূপান্তর করা, যা করা হয় '''দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর''' ব্যবহার করে। এই রূপান্তরটি Z ডোমেইনের একটি সমীকরণকে W ডোমেইনে রূপান্তর করে, যার বৈশিষ্ট্য S ডোমেইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আরেকটি বিকল্প হলো '''জুরির স্থিতিশীলতা পরীক্ষণ''' ব্যবহার করা। জুরির পরীক্ষা রাউথ-হুরউইটজ পরীক্ষার অনুরূপ একটি পদ্ধতি, যা Z ডোমেইনে সরাসরি ডিজিটাল সিস্টেম বিশ্লেষণ করার জন্য পরিবর্তিত হয়েছে।
=== দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর ===
Z-ডোমেইনে ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণের একটি প্রচলিত।কিন্তু সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি হলো দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর ব্যবহার করে স্থানান্তর ফাংশনকে z-ডোমেইন থেকে w-ডোমেইনে রূপান্তর করা। W-ডোমেইন নিম্নলিখিত দিক থেকে S-ডোমেইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ:
* ডান-অর্ধ সমতলে মেরুগুলো অস্থিতিশীল
* বাম-অর্ধ সমতলে মেরুগুলো স্থিতিশীল
* কাল্পনিক অক্ষে থাকা মেরুগুলো আংশিকভাবে স্থিতিশীল
তবে, W-ডোমেইনটি S-ডোমেইনের তুলনায় বিকৃত, এবং মেরুগুলোর অবস্থান, কাল্পনিক অক্ষের সঙ্গে আপেক্ষিক অবস্থান ছাড়া, ঠিক S-ডোমেইনের মতো থাকে না।
মনে রাখতে হবে, রাউথ-হুরউইটজ নীতি কেবল বলতে পারে একটি মেরু স্থিতিশীল কি না, এর বেশি কিছু নয়। তাই, মেরুর অবস্থান কোথায় তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতক্ষণ তা সঠিক অর্ধ-সমতলে থাকে। যেহেতু আমরা জানি W-ডোমেইনের এবং S-ডোমেইনের বাম পাশে মেরু স্থিতিশীল এবং ডান পাশে অস্থিতিশীল, তাই W-ডোমেইনে রাউথ-হুরউইটজ পরীক্ষা S-ডোমেইনের মতোই প্রয়োগযোগ্য।
=== অন্যান্য রূপান্তর ===
Z ডোমেইনের একটি সমীকরণকে S ডোমেইন বা অনুরূপ কোনো ডোমেইনে রূপান্তর করার আরও কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আমরা এই বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব '''পরিশিষ্ট''' অংশে।
== জুরির পরীক্ষা ==
জুরির পরীক্ষা রাউথ-হুরউইটজ নীতির অনুরূপ একটি পরীক্ষা, তবে এটি Z ডোমেইনে এলটিআই (LTI) ডিজিটাল সিস্টেমের স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণ করতে ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল সিস্টেম স্থিতিশীল কি না তা নির্ধারণ করতে হলে, আমাদের Z ডোমেইনের বৈশিষ্ট্য সমীকরণটিকে কয়েকটি নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্তের ভিত্তিতে যাচাই করতে হবে। যদি সমীকরণটি কোনো একটি নিয়ম ব্যর্থ করে, তাহলে সেটি অস্থিতিশীল। যদি সমস্ত শর্ত পূরণ করে, তাহলে সেটি স্থিতিশীল। জুরির পরীক্ষা ডিজিটাল সিস্টেমে স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনীয় এবং যথেষ্ট শর্ত।
আমরা D(z) কে সিস্টেমের '''বৈশিষ্ট্য বহুপদী''' বলব। এটি Z ডোমেইনের স্থানান্তর ফাংশনের গুণিতক বহুপদী। জুরির পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে এই বৈশিষ্ট্য বহুপদীকেই ঘিরে আবর্তিত। জুরির পরীক্ষা সম্পাদন করতে হলে, আমাদের একাধিক ছোট ছোট পরীক্ষা করতে হবে। যেকোনো একটিতে ব্যর্থ হলে সিস্টেমটি অস্থিতিশীল।
=== জুরির পরীক্ষাগুলো ===
ধরা যাক বৈশিষ্ট্য সমীকরণ নিম্নরূপ:
:<math>D(z) = a_0 + a_1z + a_2z^2 + \cdots + a_Nz^N</math>
নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো নির্ধারণ করে যে সিস্টেমটির কোনো মেরু একক বৃত্তের বাইরে (অস্থিতিশীলতা অঞ্চল) আছে কি না। এখানে N হচ্ছে বহুপদীর ঘাত।
{{TextBox|1=একটি সিস্টেমকে স্থিতিশীল বিবেচনা করার জন্য অবশ্যই নিচের সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যেকোনো একটিতে ব্যর্থ হলে অবিলম্বে থেমে যেতে হবে; পরবর্তী পরীক্ষার প্রয়োজন নেই।
;নিয়ম ১: যদি z = 1 হয়, তাহলে আউটপুট ধনাত্মক হতে হবে:
::<math>D(1) > 0</math>
;নিয়ম ২: যদি z = -1 হয়, তাহলে নিচের সম্পর্কটি সন্তুষ্ট হতে হবে:
::<math>(-1)^ND(-1) > 0</math>
;নিয়ম ৩: ধ্রুব পদ (a<sub>0</sub>) এর মানের পরম মান অবশ্যই সর্বোচ্চ গুণক (a<sub>N</sub>) এর পরম মানের চেয়ে কম হতে হবে:
::<math>|a_0| < |a_N|</math>
যদি '''নিয়ম ১''', '''নিয়ম ২''' এবং '''নিয়ম ৩''' পূরণ হয়, তাহলে '''জুরি অ্যারে''' (নিচে বর্ণিত) নির্মাণ করতে হবে।
;নিয়ম ৪: জুরি অ্যারে গঠনের পরে, নিচের সম্পর্কগুলো অ্যারেটির শেষ পর্যন্ত সন্তুষ্ট থাকতে হবে:
::<math>|b_0| > |b_{N-1}|</math>
::<math>|c_0| > |c_{N-2}|</math>
::<math>|d_0| > |d_{N-3}|</math>
:এভাবে অ্যারেটির শেষ সারি পর্যন্ত। যদি সব শর্ত পূরণ হয়, তাহলে সিস্টেমটি স্থিতিশীল।}}
জুরি অ্যারে তৈরি করার সময়, '''নিয়ম ৪'''-এর পরীক্ষাগুলোও একসাথে করা যায়। যদি কোনো পর্যায়ে '''নিয়ম ৪''' ব্যর্থ হয়, তাহলে অ্যারে গণনা বন্ধ করে দেওয়া উচিত; সিস্টেমটি অস্থিতিশীল।
=== জুরি অ্যারে ===
প্রথমে গুণকের একটি সারি লিখে, এরপর সেই গুণকগুলো উল্টো ক্রমে আরেকটি সারি লিখে জুরি অ্যারে তৈরি করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি বহুপদীটি তৃতীয় ঘাতের হয়, তাহলে প্রথম দুটি সারি হবে:
:<math>\overline{\underline{
\begin{matrix} z^0 & z^1 & z^2 & z^3 & \ldots & z^N
\\ a_0 & a_1 & a_2 & a_3 & \ldots& a_N
\\ a_N & \ldots & a_3 & a_2 & a_1 & a_0
\end{matrix}}}</math>
এরপর, আমরা নতুন গুণকের সারি ('''b''' এবং '''c''' নামকরণে) যোগ করব এবং উপরের সারি থেকে নিচের সারির মান নির্ণয় করব। প্রতিটি নতুন সারির গুণক সংখ্যা পূর্ববর্তী সারির চেয়ে এক কম হবে:
:<math>\overline{\underline{
\begin{matrix} 1) & a_0 & a_1 & a_2 & a_3 & \ldots & a_N
\\ 2) & a_N & \ldots & a_3 & a_2 & a_1 & a_0
\\ 3) & b_0 & b_1 & b_2 & \ldots & b_{N-1}
\\ 4) & b_{N-1}& \ldots & b_2 & b_1 & b_0
\\ \vdots & \vdots & \vdots & \vdots
\\ 2N-3) & v_0 & v_1 & v_2
\end{matrix}}}</math>
নোট: শেষ সারি হলো (2N-3) সংখ্যক সারি, এবং এতে সর্বদা ৩টি উপাদান থাকে। যদি N = 1 হয়, তাহলে এই পরীক্ষা প্রাসঙ্গিক নয়, কারণ আপনি মেরুটা জানেন!
যখন আমরা ২টি উপাদানবিশিষ্ট সারিতে পৌঁছাই, তখন অ্যারে নির্মাণ বন্ধ করতে পারি।
বিজোড় সংখ্যক সারির উপাদান নির্ণয় করতে আমরা নিচের সূত্র ব্যবহার করব। জোড় সংখ্যক সারি হবে ঠিক আগের সারির উল্টো ক্রম। এখানে k একটি যেকোনো উপসূচক।
:<math>b_k = \begin{vmatrix} a_0 & a_{N-k}
\\ a_N & a_k
\end{vmatrix}</math>
:<math>c_k = \begin{vmatrix} b_0 & b_{N-1-k}
\\ b_{N-1} & b_k
\end{vmatrix}</math>
:<math>d_k = \begin{vmatrix} c_0 & c_{N-2-k}
\\ c_{N-2} & c_k
\end{vmatrix}</math>
এই ধারা নিচের সারিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যায়, প্রয়োজনে।
=== উদাহরণ: e<sub>5</sub> গণনা করা ===
{{TextBox|1=ধরা যাক মূল বহুপদী যথেষ্ট বড় যার জন্য জুরি অ্যারেতে e<sub>5</sub> সদস্য দরকার, তাহলে তার সমীকরণ হবে:
:<math>e_k = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-R-k}
\\ d_{N-R} & d_k
\end{vmatrix}</math>
যেখানে R ধারা অনুযায়ী আগের স্তরের মান। যেহেতু c সারিতে R = 1, এবং d সারিতে R = 2, তাই e সারিতে R = 3 হবে। সেই মান বসিয়ে:
:<math>e_k = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-3-k}
\\ d_{N-3} & d_k
\end{vmatrix}</math>
এবং আমরা চাই e<sub>5</sub> মান, তাই k = 5 বসিয়ে পাই:
:<math>e_5 = \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-3-5}
\\ d_{N-3} & d_5
\end{vmatrix}
= \begin{vmatrix} d_0 & d_{N-8}
\\ d_{N-3} & d_5
\end{vmatrix}</math>
ডিটারমিন্যান্ট নিলে সমীকরণ হয়:
:<math>e_5 = d_0d_5 - d_{N-8}d_{N-3}</math>}}
== আরও পড়ুন ==
দ্বৈতরৈখিক রূপান্তর এবং লাপ্লাস ডোমেইন ও Z ডোমেইনের মধ্যে রূপান্তর নিয়ে আমরা আলোচনা করব পরিশিষ্টে:
* [[Control Systems/Z Transform Mappings|Z রূপান্তর রূপান্তরণসমূহ]]
{{Control Systems/Nav|Routh-Hurwitz Criterion|Root Locus}}
1sojrs5jib654epno3cgb9e61js8zi0
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/শব্দচালিত সিস্টেম
0
26064
85598
81201
2025-07-03T16:58:41Z
NusJaS
8394
85598
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|Common Nonlinearities|}}{{info|এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তুসমূহ সম্ভাব্যতা তত্ত্বের ক্যালকুলাস-ভিত্তিক পটভূমির উপর গুরুতরভাবে নির্ভরশীল। বর্তমানে এমন কোনো উইকিবই নেই যাতে এই তথ্যগুলো অন্তর্ভুক্ত আছে। পাঠককে নিম্নোক্ত ধারণাগুলোর সাথে পরিচিত হতে হবে: গাউসীয় র্যান্ডম ভেরিয়েবল, গড়, প্রত্যাশা অপারেশন।}}
== শব্দ-চালিত সিস্টেম ==
সিস্টেমগুলো প্রায়ই কেবলমাত্র নিয়ন্ত্রণ ইনপুট ''u''-র সাথেই নয়, বরং একটি র্যান্ডম শব্দ ইনপুট ''v''-এর সাথেও কাজ করতে হয়। কিছু শাস্ত্রে, যেমন বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা অধ্যয়নে, শব্দ এবং ডেটা সংকেতকে একত্র করে একটি যৌগিক ইনপুট ''r = u + v'' হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অধ্যয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে এই ইনপুটগুলোকে একত্রিত করা যায় না:
# নিয়ন্ত্রণ ইনপুট সিস্টেমকে স্থিতিশীল করতে কাজ করে, আর শব্দ ইনপুট সিস্টেমকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
# এই দুটি ইনপুট স্বাধীন র্যান্ডম ভেরিয়েবল।
# এই দুটি ইনপুট সিস্টেমের উপর সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে কাজ করতে পারে।
আমরা পরবর্তী উদাহরণে দেখাব, নিয়ন্ত্রণ ইনপুট এবং শব্দ ইনপুট আলাদাভাবে বিবেচনা করাটা প্রায়ই একটি ভালো ধারণা:{{TextBox|'''উদাহরণ:''' একটি চলন্ত গাড়িকে বিবেচনা করুন। গাড়ির নিয়ন্ত্রণ সংকেতগুলো হলো বেগবৃদ্ধি (গ্যাস প্যাডেল) এবং বেগহ্রাস (ব্রেক প্যাডেল), যেগুলো চাকায় প্রভাব ফেলে এবং সামনের দিকে গতি তৈরি করে। শব্দ ইনপুট হতে পারে হাওয়া যা গাড়ির উল্লম্ব মুখে ধাক্কা দেয়, অসমান বা ধুলাযুক্ত রাস্তা যা টায়ারের নিচে পড়ে, গাড়ির সামনের কাঁচে পতঙ্গ বা ধ্বংসাবশেষ আঘাত করে ইত্যাদি। দেখা যাচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ ইনপুটগুলো চাকায় প্রভাব ফেলে, আর শব্দ ইনপুট বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে।}}
== সম্ভাব্যতা পুনঃস্মরণ ==
এখানে আমরা ক্যালকুলাস-ভিত্তিক সম্ভাব্যতার একটি সংক্ষিপ্ত পুনঃস্মরণ করবো, বিশেষ করে যেসব বিষয় আমরা এই অধ্যায়ে ব্যবহার করবো সেগুলোর উপর গুরুত্ব দিয়ে।
=== প্রত্যাশা ===
'''E''' প্রতীকটি একটি র্যান্ডম ভেরিয়েবলের ''প্রত্যাশিত বা গড় মান'' বের করতে ব্যবহৃত হয়। প্রত্যাশা অপারেটরটি সংজ্ঞায়িত:
: <math>E[x] = \int_{-\infty}^\infty x f_x(x)dx</math>
যদি আমাদের দুটি র্যান্ডম ভেরিয়েবল একে অপরের থেকে স্বাধীন হয়, তাহলে তাদের গুণফলের প্রত্যাশা শূন্য হবে।
=== কোভেরিয়েন্স ===
'''কোভেরিয়েন্স ম্যাট্রিক্স''', ''Q'' হল একটি র্যান্ডম ভেক্টরের সাথে তার ট্রান্সপোজের গুণফলের প্রত্যাশা:
: <math>E[x(t)x'(t)] = Q(t)</math>
যদি আমরা ''x''-এর ট্রান্সপোজের মান ভিন্ন সময়ে নিই, তাহলে কোভেরিয়েন্স হবে:
: <math>E[x(t)x'(s)] = Q(t)\delta(t-s)</math>
এখানে δ একটি ইমপালস ফাংশন।
== শব্দ-চালিত সিস্টেমের বিবরণ ==
আমরা শব্দ ভেক্টর ''v'' যুক্ত করে একটি সিস্টেমের অবস্থা সমীকরণ সংজ্ঞায়িত করতে পারি:
: <math>x'(t) = A(t)x(t) + H(t)u(t) +B(t)v(t)</math>
সাধারণতা রক্ষার্থে আমরা টাইম-ভ্যারিয়েন্ট সিস্টেম বিবেচনা করবো। টাইম-ইনভ্যারিয়েন্ট সিস্টেম তার একটি সরলীকরণ হবে। এছাড়া, আমরা ধরে নেব ''v'' একটি '''গাউসীয় র্যান্ডম ভেরিয়েবল'''। কারণ বাস্তবিক সিস্টেমগুলো প্রায়ই গাউসীয় প্রক্রিয়ার সন্নিকটে থাকে, এবং গাউসীয় প্রক্রিয়ার জন্য অনেক গাণিতিক সরঞ্জাম বিদ্যমান। আমরা ধরে নেব আমাদের গাউসীয় প্রক্রিয়াটি শূন্য-মধ্যমান বিশিষ্ট।
== গড় সিস্টেম প্রতিক্রিয়া ==
আমরা জানতে চাই আমাদের সিস্টেম নতুন শব্দ ইনপুটে কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। প্রতিটি সিস্টেম পুনরাবৃত্তি শব্দ ইনপুটের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ফলাফল দিবে, কিন্তু সব পুনরাবৃত্তির গড় একটি নির্দিষ্ট মানে উপনীত হবে।
যদি নিয়ন্ত্রণ ইনপুট শূন্য হয়, তাহলে:
: <math>x'(t) = A(t)x(t) + B(t)v(t)</math>
যার সাধারণ সমাধান:
: <math>x(t) = \phi(t, t_0)x_0 + \int_{t_0}^t \phi(t, \tau)B(\tau)v(\tau)d\tau</math>
এই ফাংশনের '''প্রত্যাশিত মান''' নিলে আমরা সিস্টেম আউটপুটের প্রত্যাশিত মান পাই। অর্থাৎ, আমরা জানতে চাই যে শব্দ ইনপুট যোগ করে সিস্টেমের প্রত্যাশিত আউটপুট কী হবে।
: <math>E[x(t)] = E[\phi(t, t_0)x_0] + E[\int_{t_0}^t \phi(t, \tau)B(\tau)v(\tau)d\tau]</math>
এই সমীকরণের দ্বিতীয় পদে φ এবং B র্যান্ডম ভেরিয়েবল নয়, তাই তারা প্রত্যাশার বাইরে চলে যেতে পারে। যেহেতু ''v''-এর গড় শূন্য, তাই তার প্রত্যাশা শূন্য। তাই দ্বিতীয় পদ শূন্য হবে। প্রথম পদে φ র্যান্ডম নয়, তবে x<sub>0</sub> সিস্টেম আউটপুটের উপর নির্ভরতা তৈরি করে, তাই সেটার প্রত্যাশা নিতে হবে। এর ফলে:
: <math>E[x(t)] = \phi(t, t_0)E[x_0]</math>
অর্থাৎ, সিস্টেমের প্রত্যাশিত আউটপুট হল সেই আউটপুট যা শব্দ না থাকলে হতো। লক্ষ্য করুন, যদি শব্দ ভেক্টর ''v'' শূন্য-মধ্যমান না হতো, অথবা গাউসীয় না হতো, তাহলে এই ফলাফল থাকতো না।
== সিস্টেম কোভেরিয়েন্স ==
এখন আমরা শব্দ-চালিত সিস্টেমের কোভেরিয়েন্স বিশ্লেষণ করবো। আমরা সিস্টেম সমাধানকে তার ট্রান্সপোজের সাথে গুণ করবো এবং প্রত্যাশা নেবো: <small>(এই সমীকরণটি লম্বা এবং একাধিক লাইনে ভেঙে যেতে পারে)</small>
: <math>E[x(t)x'(t)] = E[\phi(t, t_0)x_0 + \int_{t_0}^t\phi(\tau, t_0)B(\tau)v(\tau)d\tau]</math><math>E[(\phi(t, t_0)x_0 + \int_{t_0}^t\phi(\tau, t_0)B(\tau)v(\tau)d\tau)']</math>
যদি আমরা ধাপে ধাপে গুণ করি এবং যেসব প্রত্যাশা শূন্য সেগুলো বাদ দিই, তাহলে পাই:
: <math>E[x(t)x'(t)] = \phi(t, t_0)E[x_0x_0']\phi'(t, t_0) = P</math>
এই ফলাফলকে ''P'' বলা হয়, এবং আমরা চেইন রুল ব্যবহার করে P-এর প্রথম ডেরিভেটিভ বের করতে পারি:
: <math>P'(t) = A(t)\phi(t, t_0)P_0\phi(t, t_0) + \phi(t, t_0)P_0\phi'(t, t_0)A'(t)</math>
যেখানে,
: <math>P_0 = E[x_0x_0']</math>
এটি সরলীকরণ করলে পাই:
: <math>P'(t) = A(t)P(t) + P(t)A'(t) + B(t)Q(t)B'(t)</math>
অর্থাৎ, আমরা সিস্টেম বিশ্লেষণ করতে পারি ''স্টেট-ট্রানজিশন ম্যাট্রিক্স'' গণনা না করেই। এটি ভালো কারণ স্টেট-ট্রানজিশন ম্যাট্রিক্স অনেক সময় খুব কঠিন হয়।
== বিকল্প বিশ্লেষণ ==
আবার দেখুন সাধারণ সমাধানটি:
: <math>x(t) = \phi(t, t_0)x(t_0) + \int_{t_0}^t \phi(t, \tau)B(\tau)v(\tau)d\tau</math>
গাউসীয় বণ্টনে, বিশেষ করে যেখানে ভ্যারিয়েন্স অনেক বেশি (বা অসীম), ''v''-এর মান ক্ষণিকের জন্য অনির্ধারিত (অসীম) হয়ে যেতে পারে, ফলে ''x''-এর মানও অনির্ধারিত হয়ে যায়। এটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং বিশ্লেষণ কঠিন করে তোলে। আবার দেখুন মূল সমীকরণটি, যেখানে নিয়ন্ত্রণ ইনপুট শূন্য:
: <math>x'(t) = A(t)x(t)+B(t)v(t)</math>
উভয় পাশে ''dt'' দ্বারা গুণ করলে পাই:
: <math>dx = A(t)x(t)dt + B(t)v(t)dt</math>
{{SideBox|এই নতুন পদ, ''dw'', একটি র্যান্ডম প্রক্রিয়া যাকে '''ভিনার প্রক্রিয়া''' বলা হয়, যা গাউসীয় প্রক্রিয়াকে এইভাবে রূপান্তরিত করার ফলাফল।}}আমরা একটি নতুন অন্তরক, ''dw(t)'', সংজ্ঞায়িত করতে পারি, যা সময়ের একটি অতি ক্ষুদ্র ফাংশন:
: <math>dw(t) = v(t)dt</math>
এখন উভয় পাশে ইন্টিগ্রেশন করলে পাই:
: <math>x(t) = x(t_0) + \int_{t_0}^t A(\tau)x(\tau)d\tau + \int_{t_0}^tB(\tau)dw(\tau)</math>
{{wikipedia|Ito Calculus}}তবে এটি আমাদের একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি করে, যার জন্য আমরা (সম্ভবত) প্রস্তুত নই: তৃতীয় পদে, আমরা একটি ''ফাংশন''-এর সাথে ইন্টিগ্রেশন করার চেষ্টা করছি, ''ভেরিয়েবল''-এর সাথে নয়। এই ক্ষেত্রে, সাধারণ রিম্যান ইন্টিগ্রাল এই সমীকরণ সমাধান করতে পারে না। তবে '''ইতো ক্যালকুলাস''' নামে কিছু উন্নত কৌশল আছে যেগুলো এই সমীকরণ সমাধান করতে পারে, কিন্তু সেগুলো এই বইয়ের পরিধির বাইরে।{{Control Systems/Nav|Common Nonlinearities|}}
53mzyrqweud2e9s1ikplb5kt5lukxl4
দর্শনের সাথে পরিচয়/বৌদ্ধ দর্শন কী?
0
26280
85604
81861
2025-07-03T17:29:04Z
Mehedi Abedin
7113
85604
wikitext
text/x-wiki
{{npov}}
==ভূমিকা==
বুদ্ধ তাঁর দর্শন প্রকাশ করেছিলেন এটা বলার মাধ্যমে: "''হে শিষ্যগণ, আমি কেবল দুটি জিনিস শিক্ষা দিই, দুঃখের প্রকৃতি এবং দুঃখের নিবারণ।''"
বুদ্ধ বিখ্যাত "চারটি মহৎ সত্য" এবং "অষ্টগুণ পথ" শিক্ষা দিয়েছিলেন, যা মানুষকে ''জ্ঞান'' অর্জন করতে সাহায্য করে। জ্ঞানার্জন (নির্বাণ, জাগরণ, উপলব্ধি, সাতোরি) হল দুঃখের নিবারণ, শর্তাধীন অস্তিত্ব (''সংসার'') থেকে মুক্তি। বুদ্ধ শিক্ষা দিয়েছিলেন যে প্রতিটি কর্মের একটি পরিণতি রয়েছে; সবকিছু পূর্ববর্তী অবস্থার কারণে ঘটে। যদি কেউ চারটি মহৎ সত্য এবং অষ্টগুণ পথ অনুশীলন করে, তাহলে সে আর অস্তিত্বের ''সংসার'' চক্রের অধীন থাকবে না।
"আমার শিক্ষা কোন দর্শন নয়। এটি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ফলাফল...
আমার শিক্ষা অনুশীলনের একটি মাধ্যম, ধরে রাখার বা উপাসনা করার কিছু নয়।
আমার শিক্ষা নদী পার হওয়ার জন্য ব্যবহৃত ভেলার মতো।
মুক্তির অপর তীরে পৌঁছানোর পরে কেবল একজন বোকাই ভেলাটি বহন করে বেড়াবে।"
বুদ্ধ একবার তাঁর প্রিয় শিষ্য আনন্দকে বলেছিলেন (থেকে: পুরাতন পথ, থিচ নাট হানহের সাদা মেঘ):
==অস্তিত্বের তিনটি চিহ্ন==
#''''আন্নিকা'' - সবকিছুই পরিবর্তনের সাপেক্ষে।
#''''দুঃখ'' - সমস্ত বিস্তৃত অসন্তুষ্টি।
#''''অনাত্মা'' - সবকিছুই একটি পৃথক স্ব থেকে শূন্য।
==চারটি মহৎ সত্য==
#''''দুঃখ'' - জীবন অসন্তুষ্ট, বিচ্ছিন্ন, কষ্ট।
#''''সমুদয়'''' - দুঃখের একটি কারণ আছে, যা আসক্তি বা আকাঙ্ক্ষা (তন্হা)।
#''''নিরোধ'''' - দুঃখের একটি অবসান আছে, যা আসক্তি এবং আকাঙ্ক্ষাকে দূর করে।
#''''মার্গ'''' - দুঃখ থেকে মুক্তির পথকে বলা হয় মহৎ অষ্টমুখী পথ।
বুদ্ধ শিক্ষা দিয়েছিলেন যে জ্ঞানার্জন অর্জনের জন্য, মানুষকে তার অহংকার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে এবং সমস্ত আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে। তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে এত আকাঙ্ক্ষা (যেমন আনন্দ, সম্পদ, সুখ, নিরাপত্তা, সাফল্য, দীর্ঘ জীবন ইত্যাদি) থাকার মাধ্যমে, মানুষ নিজেকে দুঃখের কাছে অর্পণ করে এবং পুনর্জন্মের চক্র থেকে কখনও রেহাই পাবে না।
অতএব, বৌদ্ধধর্ম বিশ্বাস করে যে দুঃখ স্ব-সৃষ্ট।
==আটগুণী পথ==
=== জ্ঞান - প্রজ্ঞা ===
# সঠিক বোধগম্যতা (অথবা ''সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি'', অথবা ''সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি'')
"আর, ভিক্ষুগণ, সঠিক বোধগম্যতা কী? দুঃখ সম্পর্কে জ্ঞান, দুঃখের উৎপত্তি সম্পর্কে জ্ঞান, দুঃখ বন্ধ করার জ্ঞান, অনুশীলনের পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান যা দুঃখ বন্ধ করার দিকে পরিচালিত করে: ভিক্ষুগণ, একে সঠিক বোধগম্যতা বলা হয়।
# সঠিক চিন্তা (অথবা ''সঠিক অভিপ্রায়'', অথবা ''সঠিক সংকল্প'')
"এবং সঠিক চিন্তা কী? ত্যাগ, বিদ্বেষ থেকে মুক্তি, নিরীহতার উপর সংকল্পবদ্ধ হওয়া: একে সঠিক চিন্তা বলা হয়।
=== নীতি - শীল ===
৩. সঠিক বক্তৃতা
"আর সঠিক বক্তৃতা কী? মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকা, বিভেদ সৃষ্টিকারী কথা বলা থেকে বিরত থাকা, অশ্লীল কথা বলা থেকে বিরত থাকা, অসার কথা বলা থেকে বিরত থাকা: ভিক্ষুরা, একে সঠিক বক্তৃতা বলে।
৪. সঠিক কর্ম
"আর, ভিক্ষুরা, সঠিক কর্ম কী? প্রাণনাশ থেকে বিরত থাকা, চুরি করা থেকে বিরত থাকা, অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা: এটিকে, ভিক্ষুরা, সঠিক কর্ম বলে।
৫. সঠিক জীবিকা
"আর, ভিক্ষুরা, সঠিক জীবিকা কী? এমনও ঘটনা আছে যেখানে একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির শিষ্য, অসৎ জীবিকা ত্যাগ করে, সঠিক জীবিকা নিয়ে তার জীবন চালিয়ে যান: এটিকে, ভিক্ষুরা, সঠিক জীবিকা বলে।
=== একাগ্রতা - সমাধি ===
৬. সঠিক প্রচেষ্টা (অথবা ''সঠিক প্রচেষ্টা'')
"আর, ভিক্ষুরা, সঠিক প্রচেষ্টা কী? ''''(১)'''' এমন একটি ঘটনা আছে যেখানে একজন সন্ন্যাসী ইচ্ছা, প্রভাব, প্রচেষ্টা, অধ্যবসায় সক্রিয় করেন, তার অভিপ্রায়কে সমর্থন করেন এবং যা এখনও উদ্ভূত হয়নি এমন মন্দ, অদক্ষ গুণাবলীর উদ্ভব না করার জন্য প্রয়োগ করেন। ''''(২)'''' তিনি উদ্ভূত মন্দ, অদক্ষ গুণাবলীর পরিত্যাগের জন্য ইচ্ছা, প্রচেষ্টা, অধ্যবসায় সক্রিয় করেন, সমর্থন করেন এবং প্রয়োগ করেন। ''''(৩)'''' তিনি এখনও উদ্ভূত হয়নি এমন দক্ষ গুণাবলীর উদ্ভবের জন্য ইচ্ছা, প্রচেষ্টা, অধ্যবসায় সক্রিয় করেন, সমর্থন করেন এবং প্রয়োগ করেন। ''''(৪)'''' তিনি উদ্ভূত দক্ষ গুণাবলীর রক্ষণাবেক্ষণ, বিভ্রান্তি, বৃদ্ধি, প্রাচুর্য, বিকাশ এবং চূড়ান্ত পরিণতির জন্য ইচ্ছা, প্রচেষ্টা, অধ্যবসায় সক্রিয় করেন, সমর্থন করেন এবং প্রয়োগ করেন: ভিক্ষুগণ, একে সঠিক প্রচেষ্টা বলা হয়।
৭. সঠিক মননশীলতা
"আর, ভিক্ষুগণ, সঠিক মননশীলতা কী? ''''(১)'''' এমনও ঘটনা আছে যেখানে একজন ভিক্ষু নিজের দেহের উপর মনোযোগী থাকেন -- উৎসাহী, সচেতন এবং সচেতন -- জগতের সাথে লোভ এবং যন্ত্রণা দূর করে। ''''(২)'''' তিনি নিজের এবং অনুভূতির উপর মনোযোগী থাকেন -- উৎসাহী, সচেতন এবং সচেতন -- জগতের সাথে লোভ এবং যন্ত্রণা দূর করে। ''''(৩)'''' তিনি নিজের এবং মনের উপর মনোযোগী থাকেন -- উৎসাহী, সচেতন এবং সচেতন -- জগতের সাথে লোভ এবং যন্ত্রণা দূর করে। ''''(৪)'''' তিনি নিজের এবং মানসিক গুণাবলীর উপর মনোযোগী থাকেন -- উৎসাহী, সচেতন এবং সচেতন -- জগতের সাথে লোভ এবং যন্ত্রণা দূর করে। এটাকে, ভিক্ষুগণ, সঠিক মননশীলতা বলা হয়।
৮. সঠিক একাগ্রতা
"আর, ভিক্ষুগণ, সঠিক একাগ্রতা কী? ''''(১)'''' এমন একটি ঘটনা আছে যেখানে একজন ভিক্ষু -- ইন্দ্রিয় থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন, অদক্ষ (মানসিক) গুণাবলী থেকে বিচ্ছিন্ন -- প্রথম ধ্যানে প্রবেশ করেন এবং থাকেন: বিচ্ছিন্নতা থেকে উৎপন্ন পরমানন্দ এবং আনন্দ, নির্দেশিত চিন্তাভাবনা এবং মূল্যায়নের সাথে। ''''(২)'''' নির্দেশিত চিন্তাভাবনা এবং মূল্যায়নের স্থবিরতার সাথে, তিনি দ্বিতীয় ধ্যানে প্রবেশ করেন এবং থাকেন: একাগ্রতা থেকে উৎপন্ন পরমানন্দ এবং আনন্দ, নির্দেশিত চিন্তাভাবনা এবং মূল্যায়ন থেকে মুক্ত সচেতনতার একমুখীতা -- অভ্যন্তরীণ আশ্বাস। ''''(৩)'''' পরমানন্দের ম্লান হওয়ার সাথে সাথে, তিনি সমতা, সচেতন এবং সম্পূর্ণ সচেতন এবং আনন্দের প্রতি শারীরিকভাবে সংবেদনশীল থাকেন। তিনি তৃতীয় ধ্যানে প্রবেশ করেন এবং থাকেন, যার বিষয়ে মহামানবরা ঘোষণা করেন, 'সমতা এবং সচেতন, তার একটি আনন্দদায়ক অবস্থান রয়েছে।' ''''(৪)'''' আনন্দ ও দুঃখ ত্যাগ করার সাথে সাথে -- যেমন আনন্দ ও দুঃখের পূর্বে অন্তর্ধানের সাথে -- তিনি চতুর্থ ধ্যানে প্রবেশ করেন এবং থাকেন: সমতা ও মননশীলতার বিশুদ্ধতা, আনন্দ বা দুঃখ নয়। এটিকে বলা হয় সঠিক একাগ্রতা।"
==বৌদ্ধধর্মের বিশ্বদৃষ্টি==
বুদ্ধ শিক্ষা দিয়েছিলেন যে অতীত কর্মের কারণে প্রাণীরা তাদের অবস্থানে জন্মগ্রহণ করে। তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে অস্তিত্বের ছয়টি রাজ্য রয়েছে: নরক, অতৃপ্ত-আত্মা, প্রাণী, যুদ্ধ-আত্মা, মানুষ এবং স্বর্গীয়-সত্তা। একটি মানব জন্ম সবচেয়ে বেশি কাঙ্ক্ষিত ছিল কারণ আপনার জ্ঞানার্জনের সর্বোত্তম সুযোগ রয়েছে।
==সারাংশ==
*জীবন হল 'দুঃখ' (কষ্ট)
*কর্ম: কারণ-কার্য সম্পর্ক।
*আলোকিতকরণ: সংসার থেকে মুক্তি।
*সবকিছুই দুঃখ, পরিবর্তন এবং শূন্যতা দ্বারা চিহ্নিত
*এই প্রসঙ্গে শূন্যতার অর্থ হল একটি অপরিবর্তনীয় সারাংশ বা স্বর্গ বা আত্মার শূন্যতা।
* বুদ্ধের নিম্নলিখিত উক্তিটি তাঁর অনেক বিশ্বাসের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে <sup>[[#টীকা|1]]</sup>:
:অজ্ঞতার উপর কর্ম নির্ভর করে;
কর্মের উপর চেতনা নির্ভর করে;
চেতনার উপর নাম এবং রূপ নির্ভর করে;
নাম এবং রূপের উপর ইন্দ্রিয়ের ছয়টি অঙ্গ নির্ভর করে;
ইন্দ্রিয়ের ছয়টি অঙ্গের উপর যোগাযোগ নির্ভর করে;
সংযোগের উপর সংবেদন নির্ভর করে;
সংবেদনের উপর ইচ্ছা নির্ভর করে;
আকাঙ্ক্ষার উপর আসক্তি নির্ভর করে;
আসক্তির উপর অস্তিত্ব নির্ভর করে;
অস্তিত্বের উপর জন্ম নির্ভর করে;
জন্মের উপর বার্ধক্য এবং মৃত্যু, দুঃখ, বিলাপ, দুঃখ, শোক এবং হতাশা নির্ভর করে।
==টীকা==
# http://www.sacred-texts.com/bud/bits/bits009.htm থেকে সংগৃহীত
==সূত্র==
*[[w:Four Noble Truths|চার মহৎ সত্য]] (উইকিপিডিয়া)
*[[w:Eightfold Path|আটগুণ পথ]] (উইকিপিডিয়া)
{{BookCat}}
i3xscc7mw6onwp447wb3o96qqwcsae2
দর্শনের সাথে পরিচয়/ধর্মতত্ত্ব
0
26282
85620
82043
2025-07-03T19:44:56Z
MS Sakib
6561
85620
wikitext
text/x-wiki
==পরিচিতি==
ধর্মতত্ত্বের দর্শন হলো ধর্ম ও ধর্মীয় বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির উপর দার্শনিক তত্ত্ব ও যুক্তির প্রয়োগ। পৃথিবীতে যত বৈচিত্র্যময় দর্শন ও ধর্ম রয়েছে, তা বিবেচনায় নিলে বোঝা যায় যে এই ক্ষেত্রটি কতটা জটিল হতে পারে।
স্পষ্টতা বজায় রাখার জন্য নিচের সংজ্ঞাগুলি ব্যবহার করা হবে:
*[[w:ঈশ্বর|ঈশ্বর]] বলতে একক, সর্বশক্তিমান সত্ত্বার ধারণাকে বোঝানো হবে, যাকে [[w:খ্রিস্টধর্ম|খ্রিস্টধর্ম]], [[w:ইহুদি ধর্ম|ইহুদি ধর্ম]], এবং [[w:ইসলাম|ইসলাম]]—এই একেশ্বরবাদী ধর্মগুলোতে বর্ণনা করা হয়েছে।
*[[w:শয়তান|শয়তান]] বলতে একক, দুষ্ট সত্ত্বার ধারণাকে বোঝানো হবে, যিনি [[w:ঈশ্বর|ঈশ্বরের]] বিরোধিতা করেন।
*[[w:দেবতা|দেবতা]]/[[w:দেব-দেবী|দেবতারা]] বলতে এক বা একাধিক অতিপ্রাকৃত সত্ত্বার ধারণা বোঝানো হবে, যাদের গুণাবলি বিভিন্ন রকমের হতে পারে।
==ঈশ্বরের অস্তিত্ব==
===অন্টোলজিক্যাল (যুক্তিবাদী) যুক্তি===
[[w:Anselm of Canterbury|সেন্ট অ্যানসেলম অফ ক্যান্টারবুরি]] প্রথম এই যুক্তি উপস্থাপন করেন, যা ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করে ঈশ্বরকে সর্বোচ্চ কল্পনাযোগ্য সত্তা হিসেবে বিবেচনার মাধ্যমে। যুক্তিটি নিম্নরূপ:
ঈশ্বরকে সর্বোচ্চ কল্পনাযোগ্য সত্তা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
বাস্তবে বিদ্যমান কোনো সত্তা কেবল মনের মধ্যে বিদ্যমান সত্তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ।
ঈশ্বর হয় বাস্তবে বিদ্যমান, নয়তো কেবল মনের মধ্যে বিদ্যমান।
যদি ঈশ্বর কেবল মনের মধ্যেই বিদ্যমান থাকতেন, তবে এমন এক কল্পনাযোগ্য সত্তা বিদ্যমান থাকতো, যার সব গুণ ঈশ্বরের মতো কিন্তু বাস্তবেও বিদ্যমান।
অতএব, ঈশ্বর কেবল মনের মধ্যে বিদ্যমান থাকতে পারেন না।
সুতরাং, ঈশ্বর বাস্তবেও বিদ্যমান।
এই যুক্তি [[w:মনোলোজি|মনোলোজি]]-এ প্রকাশের পর একজন সন্ন্যাসী গনিলো "ফলের বেহাল্ফের উত্তর দিন" গ্রন্থে এর সমালোচনা করেন। তিনি যুক্তিটির কাঠামো ব্যবহার করে একটি "নিখুঁত দ্বীপ" এর অস্তিত্ব প্রমাণের মতো হাস্যকর উপসংহারও টানার সম্ভাবনা দেখান। [[w:ইমানুয়েল কান্ট|ইমানুয়েল কান্ট]] পরবর্তীতে যুক্তিটির সমালোচনা করে বলেন যে, অস্তিত্ব কোনো বস্তুর গুণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নয়।
বর্তমান কালে [[w:নরম্যান ম্যালকম|নরম্যান ম্যালকম]] এবং [[w:অ্যালভিন প্ল্যান্টিঙ্গা|অ্যালভিন প্ল্যান্টিঙ্গা]]সহ অনেক দার্শনিক এই যুক্তির আধুনিক রূপ উপস্থাপন করেছেন।
===কসমোলজিক্যাল (সৃষ্টিতাত্ত্বিক) যুক্তি===
[[w:সেন্ট থমাস অ্যাকুইনাস|সেন্ট থমাস অ্যাকুইনাস]] (১২২৫-১২৭৪) তার [[w:সুমা থিওলজিকা|সুমা থিওলজিকা]]-তে এই যুক্তির পাঁচটি রূপ প্রদান করেন।
====প্রথম কারণ====
এই যুক্তিটি বলে যে, যেহেতু বহু কিছুই কোনো না কোনো কারণে ঘটে, তাই ঈশ্বরকে সেই প্রাথমিক কারণ হতে হবে।
যুক্তিটি নিম্নরূপ:
অনেক কিছুই কোনো কারণে ঘটছে।
কিছুই নিজের দ্বারা সৃষ্টি হতে পারে না।
কারণগুলোর একটি অনন্ত শৃঙ্খলা থাকতে পারে না।
একটি প্রথম কারণ থাকতে হবে যা নিজে কোনো কারণে ঘটে না।
“ঈশ্বর” মানে সেই অনাকারিত প্রথম কারণ।
অতএব, ঈশ্বর বিদ্যমান।
====নির্ভরতাজনিত যুক্তি====
প্রতিটি সত্তা হয় নির্ভরশীল, নয়তো অপরিহার্য।
সব সত্তা নির্ভরশীল হতে পারে না।
একটি অপরিহার্য সত্তা আছে যার ওপর নির্ভরশীল সত্তাগুলো নির্ভর করে।
“ঈশ্বর” সেই অপরিহার্য সত্তা হিসেবে সংজ্ঞায়িত।
অতএব, ঈশ্বর বিদ্যমান।
===টেলিওলজিক্যাল (উদ্দেশ্য-ভিত্তিক) যুক্তি===
[[w:উইলিয়াম প্যালি|উইলিয়াম প্যালি]] (১৭৪৩-১৮০৫) তার বই প্রাকৃতিক ধর্মতত্ত্ব (১৮০২)-তে ঘড়ির নির্মাতা উপমা দিয়ে এই যুক্তি সবচেয়ে বিখ্যাতভাবে উপস্থাপন করেন। যেমন একটি জটিল ঘড়ি দেখে বোঝা যায় এটি একজন বুদ্ধিমান নির্মাতা তৈরি করেছে, তেমনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জটিলতা দেখে বোঝা যায় এটি একজন বুদ্ধিমান এবং শক্তিশালী স্রষ্টার তৈরি।
এই যুক্তি [[w:ডেভিড হিউম|ডেভিড হিউম]] (১৭১১–১৭৭৬) প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, এটি একটি দুর্বল উপমার ওপর নির্ভর করে এবং এক ধরনের জিনিসকে অন্য ধরনের জিনিসের সঙ্গে তুলনা করছে। আরও বলেন, আমরা অন্য কোনো মহাবিশ্বের সঙ্গে তুলনা করতে পারি না।
বর্তমান কালে জীববৈজ্ঞানিক নকশা ভিত্তিক টেলিওলজিক্যাল যুক্তি [[w:ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন|ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন]] আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলোর সমালোচনা করা হয়েছে কারণ সেগুলো সাধারণত বিবর্তন তত্ত্ব অস্বীকারের ওপর নির্ভর করে। এছাড়াও, সূক্ষ্ম সমন্বয়ের যুক্তিও আছে — যেখানে বলা হয় মহাবিশ্বের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ধ্রুবক (যেমন মহাকর্ষ বল, তড়িৎচুম্বকীয় বল) সুনির্দিষ্টভাবে এমন যে, বুদ্ধিমান প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব হয়েছে। এই যুক্তির বিরোধিতা করা হয়েছে [[w:অ্যানথ্রপিক নীতি|অ্যানথ্রপিক নীতির]] মাধ্যমে, যেখানে বলা হয় আমাদের অস্তিত্ব সম্ভব এমন ধ্রুবকই আমরা পরিমাপ করতে পারি।
===অন্যান্য যুক্তি===
ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে আরও অনেক রকম যুক্তি ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে, যেমন:
অলৌকিক ঘটনা ও প্রায়-মৃত্যু অভিজ্ঞতার অস্তিত্ব ও ব্যাখ্যার অসম্ভবতা।
পরম নৈতিক সত্যগুলোকে মান্য করার জন্য ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা।
[[w:Transcendental argument for the existence of God|ট্রান্সসেনডেন্টাল যুক্তি]] – যুক্তি ও যুক্তিবিজ্ঞানের অস্তিত্ব ঈশ্বর ছাড়া ব্যাখ্যাতীত।
[[w:প্যাসকেলের বাজি|প্যাসকেলের বাজি]] – যদিও ঈশ্বর থাকেন না, তবুও ঈশ্বরে বিশ্বাস করা লাভজনক কারণ যদি তিনি থেকে থাকেন তবে পরকালে সুফল মিলবে। এটি মূলত ঈশ্বরের অস্তিত্ব নয়, ঈশ্বরে বিশ্বাসের উপকারিতা নিয়ে যুক্তি।
উল্লেখ্য, এই সব যুক্তি বিতর্কিত এবং প্রায়শই অত্যন্ত জটিল।
==ঈশ্বরের প্রকৃতি==
===থিইজম===
থিইজম শব্দটি "থি" (ঈশ্বর) এবং "ইজম" (ব্যবস্থা) নিয়ে গঠিত। থিইজম হল ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস, যদিও ঈশ্বরের গুণাবলি এখানে নির্দিষ্ট নয়।
===একেশ্বরবাদ===
একেশ্বরবাদ হল বিশ্বাস যে মাত্র একজন ঈশ্বর আছেন, যিনি [[w:সর্বশক্তিমান|সর্বশক্তিমান]], [[w:সর্বজ্ঞ|সর্বজ্ঞ]] এবং [[w:পরম দয়ালু|পরম দয়ালু]]।
===বহুঈশ্বরবাদ===
বহুঈশ্বরবাদ হল বিশ্বাস যে একাধিক দেবতা আছেন। [[w:অশত্রু|অশত্রু]], [[w:শিন্তো|শিন্তো]], এবং [[w:হিন্দুধর্ম|হিন্দুধর্ম]] বহুঈশ্বরবাদী ধর্ম হিসেবে গণ্য হয়।
===ডিইজম===
ডিইজম হল এমন বিশ্বাস যা যুক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে গ্রহণ করে, ধর্মীয় বিশ্বাস বা অলৌকিকতার ওপর নির্ভর না করে। এখানে ট্রিনিটি বা ঈশ্বরের অবতার ধারণা অনুপস্থিত। ডিইস্টরা মনে করে ঈশ্বর বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, তারপর সেটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। ১৭শ শতকে ইংল্যান্ডে ডিইস্ট আন্দোলন শুরু হয়।
প্রসিদ্ধ ডিইস্টদের মধ্যে রয়েছেন: জ্যাঁ জ্যাক রুশো, থমাস জেফারসন, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন।
===প্যানথিইজম===
"সবই ঈশ্বর" — এই ধারণা অনুযায়ী সকল পদার্থ ও শক্তি ঈশ্বরেরই রূপ। প্রকৃতি বা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে ঈশ্বর বা পবিত্র হিসেবে দেখা হয়।
===প্যানএনথিইজম===
এই মত অনুযায়ী ঈশ্বর বিশ্বজগত থেকে আলাদা, এবং প্যানথিইজম সম্ভব নয় কারণ "সব কিছু" যদি ঈশ্বর হয়, তবে ঈশ্বর আলাদা হতে পারেন না।
===নাস্তিকতা===
নাস্তিকতার দুটি রূপ আছে — শক্তিশালী ও দুর্বল নাস্তিকতা। শক্তিশালী নাস্তিকতা হল বিশ্বাস করা যে কোনো ঈশ্বর নেই; দুর্বল নাস্তিকতা হল ঈশ্বরে বিশ্বাস না করা। দুর্বল নাস্তিকতায় কোনো বিশ্বাস না করলেও চলবে।
"ঈশ্বর নেই" — এই বিশ্বাসটি প্রমাণযোগ্য নয়, তবে যেহেতু ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে প্রমাণের প্রয়োজন হয় না, তাই নাস্তিকদের থেকে অতিরিক্ত প্রমাণ চাওয়া যৌক্তিক নয়। যেমন আমরা দৈনন্দিন জীবনে বহু অপ্রমাণিত বিষয়ে (যেমন পরীদের অস্তিত্ব) বিশ্বাস করি না — ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কেও অনেক নাস্তিক একই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন।
==অন্যান্য বিষয়==
===অসুন্দরের সমস্যা/থিওডিসি===
“অসুন্দরের সমস্যা” হল – দয়ালু ও ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং বাস্তবে বিদ্যমান দুঃখ-কষ্ট-অসুন্দরের মধ্যে বৈপরীত্য কিভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
একটি প্রচলিত উত্তর হল: ঈশ্বর মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন; মানুষই এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুঃখ সৃষ্টি করেছে।
তবে, এই যুক্তি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এমন অনেক কষ্টের ব্যাখ্যা দিতে পারে না।
===আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা===
একটি ট্রান্সসেনডেন্টালিস্ট (অতিবাস্তববাদী) দৃষ্টিভঙ্গি
**[[রহস্যময় অভিজ্ঞতা]]
===অলৌকিক ঘটনা===
===বিশ্বাস এবং যুক্তি===
===ট্রান্সসেনডেন্টালিজম===
*[[ট্রান্সেন্ডেন্টালিস্ট ধর্মতত্ত্ব]]
==তথ্যসূত্র ও অতিরিক্ত পাঠ==
[http://religion.wikia.com/ রিলিজন উইকি] - ধর্ম নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য
{{wikipedia-inline|Philosophy of Religion}} {{BookCat}}
cwwvlf2gq8xpfcmzuwl1lh5tcxiuq3j
পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/অলঙ্করণ/লেখক/রীতিনীতি
0
26302
85619
82198
2025-07-03T19:39:09Z
MS Sakib
6561
85619
wikitext
text/x-wiki
=নিজস্ব ভয়েস তৈরি করার নির্দেশিকা=
লেখার শৈলী অনেক কিছু বোঝায়। এক প্রান্তে রয়েছে লেখকের লেখাকে অনন্য করে তোলার বৈশিষ্ট্যসমূহ। অপর প্রান্তে রয়েছে আইনি বা বৈজ্ঞানিক লেখার শৈলী, যা নির্দিষ্ট কিছু পেশাজীবী—যেমন আইনজীবী বা বিজ্ঞানীদের—মধ্যে প্রচলিত লেখার বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে। শৈলী বলতে একটি লেখার পাঠযোগ্যতাও বোঝায়—যদি তা পরিষ্কার, দুর্বোধ্য বা অনুপ্রেরণাদায়কভাবে লেখা হয়।
কর্মক্ষেত্রে আপনি একদিকে আপনার পেশাগত শৈলীর প্রচলিত রীতি এবং আপনার নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের স্টাইল মেনে চলেন, অন্যদিকে ব্যক্তিগত অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেন। এতে পাঠকের জন্য পড়া সহজ হয় এবং তারা পড়ার সময় প্রভাবিত হন। আপনার বিকল্পগুলো বিবেচনা করুন এই দৃষ্টিকোণ থেকে যে, তা পাঠকের কাছে আপনার লেখার ব্যবহারযোগ্যতা ও প্রভাবশীলতা কেমনভাবে উপস্থাপন করবে। পাঠক যা দেখেন, তার ভিত্তিতে তারা আপনার সম্পর্কে এবং আপনার মনোভাব নিয়ে একটি ধারণা তৈরি করেন—যা আপনার যোগাযোগের প্রভাব বাড়াতে বা কমাতে পারে। আপনার লেখনীতে নিজের ভয়েস গঠন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আপনার লেখার সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
== নির্দেশিকা ১: কী প্রত্যাশিত তা খুঁজে বের করুন ==
<div style="width:60%; min-width: 550px;">
একটি কার্যকরী ভয়েস বা কণ্ঠস্বর হলো এমন একটি যা পাঠকের দৃষ্টিকোণে প্রাসঙ্গিক ও উপযুক্ত। তবে, আপনি বিষয়বস্তু, শব্দচয়ন এবং আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আপনার শ্রোতাদের নির্ধারণ করতে পারেন। আপনার কণ্ঠস্বর ও শৈলী পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। কণ্ঠস্বরটি স্পষ্ট হওয়া জরুরি যে, এটি কার উদ্দেশ্যে রচিত।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা আনুষ্ঠানিক ভাববে?
: যখন আপনি সংকোচন (যেমন না, না) এবং কথ্য শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহার করেন, তখন লেখাটি অনানুষ্ঠানিক, কথোপকথনের মতো শোনায়।
: ''নোট: ছোট শব্দ ব্যবহারে লেখাটি অনানুষ্ঠানিক হয় না। বাস্তবে, অনেকেই সহজ ভাষা পছন্দ করেন যাতে জটিল ধারণাগুলো পড়তে সহজ হয়। বড় শব্দ পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে পারে, বা লেখাটিকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ শোনাতে পারে। এটি দীর্ঘ বাক্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় ধরনের লেখাতেই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।''
: আনুষ্ঠানিক শৈলীতে সঠিক শব্দচয়ন, বাক্যগঠন, আনুষ্ঠানিক বাক্যরীতি ও উপযুক্ত ভাষা ব্যবহার করা হয়। আপনার লেখার শৈলী নির্ধারণে সবসময় আপনার শ্রোতাদের কথা বিবেচনায় রাখুন। আনুষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহারের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেমন বক্তৃতা, সেবা, শোকবার্তা এবং প্রবন্ধ। এই ধরনের লেখাগুলিতে শ্রোতার বয়স যতই হোক না কেন, আনুষ্ঠানিক ভাষা সব বয়সের জন্য উপযুক্ত হতে পারে। অনানুষ্ঠানিক ভাষার ব্যবহার যেমন বন্ধুকে চিঠি লেখা বা ডায়েরিতে লেখার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। কখনও কখনও অনানুষ্ঠানিক লেখা আরও আন্তরিক মনে হতে পারে, কারণ এতে আবেগ স্পষ্ট হয়।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা ব্যক্তিক বা নিরপেক্ষ মনে করবে?
: ব্যক্তিগত বা সাবজেকটিভ শৈলীতে আপনি “আমি” ব্যবহার করে নিজের মতামত দেন এবং নিজেকে লেখায় উপস্থাপন করেন। নিরপেক্ষ বা অবজেকটিভ শৈলীতে আপনি নিজের উপস্থিতিকে গোপন করেন, মতামতকে তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং নিজের কাজগুলো তৃতীয় পুরুষে বা নির্বিকার কণ্ঠে বলেন। নিরপেক্ষ লেখা বেশি আনুষ্ঠানিক এবং পেশাদার ও কারিগরি লেখার ক্ষেত্রে এটি প্রত্যাশিত।
আমার পাঠকেরা আমার সাথে কতটা "দূরত্ব" প্রত্যাশা করে?
: ব্যক্তিগত শৈলীতে আপনি পাঠকের খুব কাছাকাছি থাকেন, কারণ আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম ব্যবহার করেন এবং পাঠকদের সরাসরি সম্বোধন করেন। লেখার কথোপকথনধর্মী ধরণও এই ঘনিষ্ঠতা বোঝাতে পারে। অন্যদিকে, অপারসোনাল বা নিঃসঙ্গ শৈলীতে আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম এড়িয়ে যান এবং নিজের ও পাঠকদের তৃতীয় পুরুষে উল্লেখ করেন, যাতে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আপনি কোন শৈলী ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে লেখার উদ্দেশ্য এবং শ্রোতার উপর।
::<u>পাঠকের শৈলীগত প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়সমূহ:</u>
::* পাঠকের সঙ্গে আপনার পেশাগত সম্পর্ক।
::* আপনার উদ্দেশ্য।
::* বিষয়বস্তু।
::* আপনার ব্যক্তিত্ব।
::* আপনার নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানের রীতিনীতি।
::* আপনার ক্ষেত্র, পেশা বা শাখার রীতিনীতি।
যদি প্রত্যাশিত শৈলী অকার্যকর হয়?
: ''নোট: কখনও কখনও প্রত্যাশিত শৈলী অন্যান্য বিকল্প অপেক্ষা কম কার্যকর হতে পারে।''
: উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রত্যাশিত শৈলী একটি বহুল নিন্দিত শৈলী—''ব্যুরোক্রেটিজ'' নামে পরিচিত। এই ধরনের লেখায় অপ্রয়োজনীয় শব্দ ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ঢেকে ফেলা হয়, দুর্বল ক্রিয়া ব্যবহারে কার্যকলাপ অস্পষ্ট হয়, এবং বিমূর্ত শব্দে লেখাটি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
: প্রায়ই এই শৈলীতে অতিরঞ্জিত শব্দভাণ্ডার এবং অহঙ্কারপূর্ণ গাম্ভীর্য থাকে, যা লেখকের বক্তব্য বোঝা কঠিন করে তোলে বা পুরোপুরি বাধাগ্রস্ত করে।
ব্যুরোক্রেটিজ: উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের অনুশীলন অনুসারে, প্রতিটি উপাদানকে তার সরবরাহকারী বা উৎস থেকে পাওয়ার পর কিন্তু চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা ও যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ ভাষা: কার্যকর গুণগত নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি উপাদান চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা করতে হয়।
ব্যুরোক্রেটিজ: সর্বশেষ মাসিক সময়কালে, ধীর গতির পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের করা অভিযোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণ ভাষা: গত মাসে অনেক বেশি গ্রাহক ধীর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
: ব্যুরোক্রেটিজ একটি এতটাই গুরুতর প্রতিবন্ধকতা যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে সরকারি প্রকাশনা এবং অন্যান্য দলিল (যেমন বীমা নীতি)–এ সাধারণ ইংরেজি ব্যবহারের জন্য আইন পাস হয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলো আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ এড়াতে সাহায্য করবে। তবে, কিছু ব্যবস্থাপক ও প্রতিষ্ঠান এখনো ভাবেন যে, এই ফুলানো শৈলী খুবই প্রভাবশালী শোনায়। যদি আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ লেখার অনুরোধ করা হয়, তাহলে আপনি কেন সহজবোধ্য শৈলী বেশি কার্যকর তা বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি বোঝাতে ব্যর্থ হন, তবে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনীয় শৈলী ব্যবহার করুন। এমনকি সাধারণভাবে ব্যুরোক্রেটিক শৈলীর মধ্যেও আপনি কিছু উন্নতি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার নিয়োগকর্তা শব্দবহুল ও বিমূর্ত শৈলী প্রত্যাশা করেন, তবুও আপনি অপেক্ষাকৃত কম ফুলানো শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
</div>
==='''নির্দেশিকা ২: আপনার ক্রিয়াপদে কর্মটি যুক্ত করুন'''===
অধিকাংশ বাক্যই কর্ম নিয়ে। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপকরা অনুমোদন দেন। অথচ অনেকেই কর্মকে লুকিয়ে রাখেন বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে।
নিম্নের বাক্যটি বিবেচনা করুন: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও সক্রিয় করা যায় যদি "রূপান্তর" ক্রিয়াপদে ব্যবহার করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যকে ক্রিয়ার উপর কেন্দ্রীভূত করা</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া বা তার রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
''হতে'' ক্রিয়াটি প্রায়শই বলে কিছু কী *আছে*, কিন্তু কী *করে* তা নয়।
'''মূল''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>সুরক্ষা প্রদান করে</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': কাঁচামালের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণেই সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''মূল''': বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রকৌশলীদের প্রশ্ন তোলার পেছনে <u>কয়েকটি কারণ রয়েছে</u>।
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' ইত্যাদি প্রত্যয়যুক্ত শব্দে কর্মকে নামজ করে ফেললে তা এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': অতএব, আমি একটি <u>সুপারিশ</u> করতে চাই যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': অতএব, আমি <u>সুপারিশ করছি</u> যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্য কর্ম সম্পর্কিত, কিছু বাক্য নয়। উদাহরণস্বরূপ, বিষয় এবং পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়শই তালিকা উপস্থাপন বা আলোচনার গঠন ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: এই বাক্যে ''হতে'' উপযুক্ত—
কোম্পানির উচিত প্রধান দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার তিনটি প্রধান কারণ আছে।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন যদি না নিষ্ক্রিয় বাক্য ব্যবহার করার সঙ্গত কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যকে কর্ম এবং কর্মকারীর উপর কেন্দ্রীভূত করার আরেকটি উপায় হলো ''সক্রিয় রচনারীতি'' ব্যবহার করা, নিষ্ক্রিয় রচনারীতি নয়। অ্যাকটিভ বাক্য লেখার জন্য, কর্মকারীর—যিনি কাজটি করেন—তাকে বিষয়বস্তু হিসেবে রাখুন। আপনার ক্রিয়াপদটি তখন সেই কর্মকারীর কাজকে প্রকাশ করবে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলো সুপারিশ করেছেন।
নিষ্ক্রিয় রচনায়, বাক্যের বিষয় এবং কর্মকারী আলাদা। বিষয়টি কোনো কাজের দ্বারা প্রভাবিত হয়।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': এই পরিবর্তনগুলো পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশকৃত হয়েছিল।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': কোরিয়ান আকরিকটি আমাদের দ্বারা ক্রয় করা হয়েছিল।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান আকরিকটি ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠকেরা অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। সক্রিয় রচনায় অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা কম থাকে, যা নিষ্ক্রিয় রচনায় বেশি দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ,(বলটি মারা হয়েছিল) ব্যাকরণগতভাবে সঠিক হলেও, কে বলটি মারল তা বলা হয়নি। কিন্তু সক্রিয় রচনায় লেখক এটি পরিষ্কার করেন:(লিন্ডা বলটি মারলেন)।
যদিও নিষ্ক্রিয় রচনায় পাঠযোগ্যতা কমে, কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহার উপযোগী। যেমন, আপনি যদি কর্মকারীর নাম গোপন রাখতে চান তবে এটি কার্যকর হতে পারে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে নিষ্ক্রিয় রচনায় কারো পরিচয় ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করে নৈতিকভাবে ভুল কাজ না করা হয়, বিশেষ করে যখন কোনো দায়িত্ব এড়াতে তা ব্যবহার করা হয়।
===''নির্দেশনা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দিন''===
পরিষ্কার, জোরালো বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হলো আপনার পাঠকদের মনোযোগ আপনার বার্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটির দিকে পরিচালিত করা।
<u>সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দেওয়ার কৌশল</u>
1. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি বাক্যের শেষে রাখুন
বাক্যের শেষে মূল তথ্য রাখার জন্য কখনও কখনও খসড়া নতুনভাবে সাজাতে হতে পারে।
'''মূল''': বিভাগের কার্যকারিতা সব ক্ষেত্রেই চমৎকার হয়েছে।
'''পরিমার্জিত''': সব ক্ষেত্রেই, বিভাগের কার্যকারিতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল''': <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা</u> হলো কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''পরিমার্জিত''': কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো এর <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা।</u>
2. মূল তথ্যটি প্রধান উপবাক্যে রাখুন
যদি আপনার বাক্যে একাধিক উপবাক্য থাকে, তাহলে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা প্রধান উপবাক্যে রাখুন।
উদাহরণ তুলনা করুন:
যদিও আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে, আমাদের লাভ বেড়েছে।
যদিও আমাদের লাভ বেড়েছে, আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে।
প্রথম বাক্যে প্রধান উপবাক্যে ''লাভ'' বিষয়বস্তু হওয়ায় জোর পড়েছে লাভের ওপর। দ্বিতীয় বাক্যে জোর পড়েছে উৎপাদনশীলতার ওপর, কারণ সেটি প্রধান উপবাক্যের বিষয়বস্তু।
3. টাইপোগ্রাফি ব্যবহার করে জোর দিন
বোল্ড ও ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে সচেতন থাকুন যেন অতিরিক্তভাবে ব্যবহার না হয়। অনেক কিছু একসাথে জোর দিলে কিছুই আলাদা করে নজরে পড়ে না।
4. পাঠককে সরাসরি বলে দিন কোন তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ
মূল তথ্যের তাৎপর্য পাঠককে সরাসরি জানানোও এক ধরনের জোর দেওয়া।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদেরা শেয়ারবাজারে পতনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের মজুদ বৃদ্ধি এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মূল্যস্ফীতির লক্ষণ।
5. অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা পরিহার করুন
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা তথ্য ব্যবসায়িক লেখায় বিশেষভাবে পরিহারযোগ্য। ব্যবসায়িক জগতে সময় মানেই টাকা। আপনার বস বা ক্লায়েন্ট যদি আপনার অতিরিক্ত শব্দে ভরা ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করেন, তাহলে সেটি অপ্রয়োজনীয় ব্যয়। লেখার পর পুনঃপড়ে দেখুন কোনটি সহজবোধ্য বা সুস্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে কি না।
উদাহরণ: ঘড়ির কাঁটায় দেখা গেল যে সে তার কাজে পৌঁছাতে দেরি করেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
এটি স্পষ্ট যে সময় ঘড়ির কাঁটায় দেখায় এবং কাজের জায়গায় মানুষ সাধারণত কাজই করে। এই রূঢ় উদাহরণটি দেখায় যে লেখার দৈর্ঘ্য মান বাড়ানোর গ্যারান্টি নয়। বেশিরভাগ ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য লেখা বেশি কার্যকর।
===''নির্দেশনা ৫: বাক্যের দৈর্ঘ্য ও গঠন বৈচিত্র্যময় করুন''===
একই রকম গঠনের সব বাক্য ব্যবহার করলে দুটি সমস্যা দেখা দেয়: একঘেয়েমি আসে, এবং (সব বাক্য একই রকম হওয়ায়) গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলাদা করে জোর দেওয়া যায় না।
এই সমস্যা এড়াতে দুটি উপায় আছে:
• বাক্যের দৈর্ঘ্যে বৈচিত্র্য আনুন।
– দীর্ঘ বাক্য বিভিন্ন ধারণার মধ্যে সম্পর্ক দেখাতে ব্যবহার করা যায়। সংক্ষিপ্ত বাক্যগুলোর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অংশে জোর দেওয়া যায়।
• বাক্য গঠনে বৈচিত্র্য আনুন।
– উদাহরণস্বরূপ, বাক্যের ব্যাকরণগত বিষয়বস্তু সব সময় প্রথম শব্দ হতে হবে না। যদি তা হতো, তাহলে ইংরেজি ভাষা অনেকটা তার গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলত। একটি বিকল্প হলো যুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক বোঝাতে উপবাক্য দিয়ে বাক্য শুরু করা।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমাদের জরিপ সম্পন্ন করার পর</u>, আমরা নিশ্চিতভাবে জানব প্রস্তাবিত নতুন কারখানার স্থানটি এক সময় আদিবাসীদের ক্যাম্পিং এলাকা ছিল কি না।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমরা সব বিকল্প ভালোভাবে পর্যালোচনা করায়</u>, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে একটি নিউম্যাটিক ড্রাইভই সবচেয়ে ভালো কাজ করবে এবং নির্ভরযোগ্য সেবা দেবে।
===''নির্দেশনা ৬: সার্বিক নির্দেশনা: আপনার পাঠক যদি আপনার ভাষায় দক্ষ না হয়, তাহলেতাদের সুবিধার্থে বাক্যগঠনে পরিবর্তন আনুন''===
আপনার বাক্যের গঠন পাঠকদের—যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয়—বোঝার সুবিধা-অসুবিধাকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও কম্পিউটার শিল্পসহ অনেক খাতে কোম্পানিগুলো বিদেশি পাঠকদের জন্য সরল ইংরেজি রচনার নিয়ম তৈরি করেছে। এই ধরনের ভাষার একটি সীমিত শব্দভাণ্ডার থাকে এবং এটি এমন ব্যাকরণগত নিয়ম অনুসরণ করে যা পাঠকদের বোঝা সহজ করে।
সব পাঠকের জন্য এতটা সরলীকরণ প্রয়োজন নাও হতে পারে। তাই আপনার নির্দিষ্ট পাঠকদের সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, বাক্যের গঠন সরল করার অর্থ এই নয় যে চিন্তাধারাটিকেও সরলীকরণ করতে হবে।
<u>যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকদের জন্য বাক্য লেখার নির্দেশনা</u>
• সহজ বাক্যগঠন ব্যবহার করুন। – যত বেশি জটিল হবে, পাঠকদের বোঝা তত কঠিন হবে।
• বাক্য সংক্ষিপ্ত রাখুন। – দীর্ঘ বাক্য, গঠন সহজ হলেও, বোঝা কঠিন হতে পারে। ২০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
• অ্যাকটিভ ভয়েস ব্যবহার করুন। – ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকেরা প্যাসিভ ভয়েসের তুলনায় অ্যাকটিভ ভয়েস অনেক সহজে বোঝে।
==শব্দ বাছাই==
শব্দ বাছাইয়ের সময়, আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত পাঠকেরা যেন দ্রুত ও সঠিকভাবে আপনার বক্তব্য বুঝতে পারে। একইসঙ্গে, মনে রাখবেন, আপনার শব্দের পছন্দ পাঠকের ওপর আপনার এবং আপনার বিষয়ে মনোভাবও প্রভাবিত করে। তাই এমন শব্দ ব্যবহার করুন যা আপনার যোগাযোগকে আরও প্রভাবশালী করে তোলে। শব্দের ব্যবহার আপনার কণ্ঠস্বর কেমন শোনা যায়, কতটা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, তাও নির্ধারণ করতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ১: আপনার বাক্যগুলো সরল করুন'''===
ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনার বাক্যগুলো সরল করা। পড়া একটি '''কঠিন কাজ'''। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এই কাজের অনেকটাই শর্ট-টার্ম মেমোরি করে থাকে। এটি প্রতিটি বাক্যের শব্দগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট অর্থ তৈরি করে তা বুঝতে চেষ্টা করে। কম শব্দ মানে কম পরিশ্রম। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে যে যখন '''আমরা''' আমাদের বার্তাটি সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করি, তখন '''আমরা''' এটিকে আরও শক্তিশালী, স্মরণযোগ্য এবং প্রভাবশালী করে তুলি।
<u>বাক্য সরল করার কৌশল</u>
১. অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিন।
সরাসরি অর্থ প্রকাশ করতে পারেন এমন অংশগুলো খুঁজুন।
'''উদাহরণ''': কাজের ঘরের <u>শারীরিক আকার</u> এতটাই ছোট যে এই যন্ত্রপাতি <u>স্থাপন করা সম্ভব নয়</u>।
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিয়ে, বাক্যটি আগের মতোই স্পষ্ট এবং আরও জোরালো: কাজের ঘরটি এই যন্ত্রপাতির জন্য খুব ছোট।
২. বিশেষণ বা বিশেষ্য বিশেষনের অবস্থান ঠিক রাখুন।
শর্ট-টার্ম মেমোরি অর্থ বোঝাতে শব্দের ক্রমের উপর নির্ভর করে। সম্পর্কযুক্ত শব্দগুলো একত্রে না রাখলে বাক্যটি আপনার আসল অর্থের চেয়ে ভিন্ন কিছু বোঝাতে পারে।
'''বিচ্ছিন্ন''': ফাইল ক্যাবিনেটে একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক পাওয়া গেছে, যেগুলোর মূল্য ছিল ৪১,০০০ ডলারের বেশি।
'''সুসংগঠিত''': ৪১,০০০ ডলারের বেশি মূল্যের একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক ফাইল ক্যাবিনেটে পাওয়া গেছে।
৩. ছোট ছোট বাক্য একত্র করুন।
প্রায়শই, দুটি বা ততোধিক ছোট বাক্য একত্র করলে পড়া সহজ হয়, কারণ এতে মোট শব্দের সংখ্যা কমে যায় এবং পাঠক বিষয়বস্তুর মধ্যকার সম্পর্ক সহজে বুঝতে পারে।
'''আলাদা''': মার্চ মাসে হক নদীর পানি মানের অবনতি ঘটে। এই অবনতি ঘটেছিল মাসটির ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে। অতিরিক্ত পানি টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্টকে অতিভার করে তোলে।
'''একত্র''': মার্চ মাসে ভারী বৃষ্টির কারণে টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট অতিভার হয়ে পড়ায় হক নদীর পানির মানের অবনতি ঘটে।
==='''নির্দেশিকা ২: ক্রিয়া পদে কর্ম প্রকাশ করুন'''===
বেশিরভাগ বাক্যই কোনো না কোনো কর্মের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপক অনুমোদন দেন। কিন্তু অনেকেই এই ক্রিয়াকে বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে লুকিয়ে ফেলেন।
উদাহরণস্বরূপ: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও কার্যকর করা যায় যদি "রূপান্তর"কে সরাসরি ক্রিয়ায় রূপান্তর করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যে কর্মকে কেন্দ্রে রাখার কৌশল</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া এবং এর রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') পরিহার করুন।
''হতে'' ক্রিয়া সাধারণত বলে কিছু কী, কিন্তু তা কী করে না।
'''মূল বাক্য''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>সুরক্ষা দেয়</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য পরিহার করুন।
'''মূল বাক্য''':<u>এটা</u> কারণ কাঁচামালের খরচ বেড়েছে যে সমাপ্ত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রস্তুত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''মূল বাক্য''': <u>আছে</u>: বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে যা প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে.
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• যেসব শব্দের শেষে ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' থাকে, সেগুলোতে ক্রিয়া আটকে যায়—এই ধরনের গঠনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এরা কাজের ভাবটি বিশেষ্যে রূপান্তর করে।
'''মূল বাক্য''': তাই আমি একটি <u>প্রস্তাবনা</u> দিতে চাই যে বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': তাই আমি <u>প্রস্তাব করছি</u>, বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্যই কোনো কর্ম প্রকাশ করে, কিছু বাক্য কর্ম-ভিত্তিক নয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিষয়ের সারাংশ বা পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়ই তালিকা শুরু করে বা আলোচনার গঠন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
যেমন একটি যথার্থ ''হতে'' ব্যবহার: কোম্পানিকে কেন কর্পোরেট সদর দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের কারখানাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করতে বিনিয়োগ করা উচিত, তার তিনটি প্রধান কারণ <u>আছে</u>।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন, যদি না প্যাসিভ বাক্য ব্যবহারের ভাল কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যে কর্ম এবং কর্মীকে স্পষ্ট করতে আরেকটি পদ্ধতি হল ''অ্যাকটিভ বাক্য'' ব্যবহার করা, প্যাসিভ বাক্যের পরিবর্তে। সক্রিয় বাক্যে, কর্মী — অর্থাৎ যিনি বা যা কর্মটি করছে — বাক্যের বিষয় হিসেবে থাকে। এরপর ক্রিয়া ওই কর্মীর কর্মকে বর্ণনা করে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলি সুপারিশ করেছেন।
প্যাসিভ বাক্যে, বাক্যের বিষয় এবং কর্তা আলাদা হয়। বিষয়ের উপর কর্তা কর্তৃক কাজ করা হয়।
'''প্যাসিভ বাক্য''': পরিবর্তনগুলি পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশ করা হয়েছিল।
'''প্যাসিভ বাক্য''': কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করা হয়েছে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠক প্যাসিভ বাক্যের তুলনায় অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। এছাড়াও, অ্যাকটিভ বাক্য অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা দূর করে, যা প্রায়ই প্যাসিভ বাক্যে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, "বলটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে" একটি ব্যাকরণগতভাবে সঠিক প্যাসিভ বাক্য, কিন্তু বলটি কে বা কী আঘাত করেছে তা জানায় না। সক্রিয় বাক্যে লেখক স্পষ্টভাবে কর্মীকে চিহ্নিত করেন: "লিন্ডা বলটি আঘাত করলো।"
যদিও প্যাসিভ বাক্য সাধারণত পড়া কঠিন করে, তবে এর কিছু ভালো ব্যবহারও আছে। যেমন, যখন আপনি কর্মীকে উল্লেখ করতে চান না তখন প্যাসিভ বাক্য কার্যকর হয়। যদি লেখক সিদ্ধান্ত নেন যে, রিপোর্টটি যে করেছে তার নাম না বলে তথ্যটি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, তখন তিনি প্যাসিভ বাক্য সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন। আবার, নৈতিকতার পরিপন্থী হলে প্যাসিভ বাক্য ব্যবহার করে কর্মীর দায় এড়ানো উচিত নয় — যেমন যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এড়াতে চেষ্টা করা হয়।
==='''নির্দেশিকা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন'''===
পরিষ্কার এবং শক্তিশালী বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হল পাঠকের মনোযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দিকে কেন্দ্রীভূত করা।
<u>গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর জোর দেওয়া</u>
১. বাক্যের শেষে প্রধান তথ্য রাখুন
প্রধান তথ্য বাক্যের শেষে রাখতে চাইলে প্রাথমিক খসড়া কিছুটা পুনর্বিন্যাস করতে হতে পারে।
'''মূল বাক্য''': বিভাগের কর্মক্ষমতা সব ক্ষেত্রে চমৎকার হয়েছে।
'''সংশোধিত বাক্য''': সব ক্ষেত্রে, বিভাগের কর্মক্ষমতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল বাক্য''': উজ্জ্বল বাইরের নকশা কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''সংশোধিত বাক্য''': কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হল উজ্জ্বল বাইরের নকশা।
২. প্রধান বাক্যে প্রধান তথ্য রাখুন
যদি বাক্যে একাধিক বাক্যাংশ থাকে, তবে প্রধান তথ্য প্রধান বাক্যাংশে রাখুন। নিচের দুইটি বাক্যের তুলনা করুন:
আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল, তবে লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল।
প্রথম বাক্যে জোর দেয়া হয়েছে লাভের উপর কারণ ‘লাভ’ প্রধান বাক্যের বিষয়। দ্বিতীয় বাক্যে ‘উৎপাদনশীলতা’ প্রধান বিষয় হওয়ায় তা বেশি গুরুত্ব পায়। (মনোযোগ দিন, গুরুত্বপ্রাপ্ত তথ্যটি প্রধান বাক্যাংশে এবং বাক্যের শেষে থাকে।)
৩. টাইপোগ্রাফিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে হাইলাইট করুন
বোল্ড এবং ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে, অতিরিক্ত হাইলাইটিং এড়িয়ে চলুন। অনেক কিছু হাইলাইট করলে কোনো কিছুই আলাদা করে চোখে পড়ে না।
৪. পাঠককে স্পষ্টভাবে জানান কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আপনি পাঠকদের জানিয়ে দিতে পারেন কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদরা স্টক মার্কেটের পতনের তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের ইনভেন্টরির বৃদ্ধি, এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মুদ্রাস্ফীতির লক্ষণ।
৫. অবাঞ্ছিত বাক্যাংশ এড়িয়ে চলুন
অধিকাংশ লেখায় এটি সত্য হলেও, ব্যবসায়িক লেখায় এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায় সময় অর্থ। যদি আপনার বস বা ক্লায়েন্টরা আপনার অবাঞ্ছিত বাক্যে ভর্তি ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করে, তাহলে সেটি সময়ের অপচয়।
উদাহরণ: ঘড়ির মুখে সময় দেখাচ্ছিল যে সে তার কাজে দেরিতে পৌঁছেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
ঘড়িতে অবশ্যই সময় থাকে এবং কাজের জায়গায় ছাড়া আর কি করা হয়? এটি একটি সরল উদাহরণ, কিন্তু এটি দেখায় যে একটি নথির দৈর্ঘ্য তার গুণগত মান বাড়ায় না। অধিকাংশ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত ও সরল নথি শব্দবহুল, দীর্ঘ নথির তুলনায় ভাল কাজ করে।
==='''নির্দেশিকা ৫: উপযুক্ত সম্বন্ধ বা অনুভূতির সঙ্গে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
গত তিনটি নির্দেশিকা ছিল শব্দের শাব্দিক বা অভিধানগত অর্থ সম্পর্কে। কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে আপনার শব্দগুলোর পাঠকের সঙ্গে কোন ধরনের সম্বন্ধ বা অনুভূতি জড়িত আছে কিনা। বিশেষ করে, শব্দের ''অনুভূতি'' এবং ''নিবন্ধন'' সম্পর্কে বিশেষ যত্নবান হোন।
<u> (অনুভূতি বা ইঙ্গিত)</u>
অনুভূতি হলো কোনো শব্দের শাব্দিক অর্থের বাইরে থাকা প্রস্তাবিত বা বিস্তৃত অর্থ। উদাহরণস্বরূপ, অভিধান অনুযায়ী ''ফ্ল্যাটফুট'' এবং ''পুলিশ গোয়েন্দা'' সমার্থক হলেও, তারা বিভিন্ন অনুভূতি তৈরি করে: ''ফ্ল্যাটফুট'' এমন এক ধরনের পুলিশকে বোঝায় যে ধীর, হয়তো তেমন বুদ্ধিমান নয়, যেখানে ''পুলিশ গোয়েন্দা'' বোঝায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদারকে।
ক্রিয়াপদগুলোরও অনুভূতি থাকে। যেমন, কারো ভুল তথ্য না দেখার কথা ''পরামর্শ দেওয়া'' করা এবং ''ইঙ্গিত করা'' করা একই নয়। কোনো ক্লায়েন্টের প্রকল্পে সময় ''উৎসর্গ করা'' করা এবং ''অবসর'' করা একই নয়।
আপনার শব্দের অনুভূতি আপনার বিষয়বস্তুর প্রতি শ্রোতাদের ধারণা গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।
'''প্রথম সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চেষ্টা করছে।
'''দ্বিতীয় সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চালিত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নমনীয় শব্দ ''চেষ্টা'' ব্যবহারে পাঠকরা মনে করেন কোম্পানি কর্মচারীদের মঙ্গল ও উদ্বেগের প্রতি সচেতন, নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য ইতিবাচক কর্মসূচিতে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়, কম শ্রমশিকायत পায় এবং কর্মচারীদের ভালো পারিশ্রমিক দেয়। আর কঠোর শব্দ ''ড্রাইভিং'' ব্যবহারে এই মতামত উল্টো হয়। মাত্র সাতটি শব্দের পার্থক্যে পাঠকদের দৃষ্টিভঙ্গি এতটা বদলায়—এটাই দেখায় শব্দের অনুভূতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
<u>নিবন্ধন(ব্যবহারের প্রসঙ্গ)</u>
নিবন্ধন বলতে বোঝায় শব্দের নির্দিষ্ট ধরনের যোগাযোগ পরিস্থিতি বা প্রসঙ্গে ব্যবহারের সাথে সংযুক্ত ভাব। উদাহরণস্বরূপ, কোনো রেস্তোরাঁর বিজ্ঞাপনে ''আশ্চর্যজনকভাবে '' সুস্বাদু খাবারের কথা আশা করা যায়। কিন্তু গবেষণার প্রস্তাবে কোনো সংস্থার জন্য বলা হবে যে তারা ''আশ্চর্যজনকভাবে '' ভালো গবেষণা করতে পারে, তা আমরা আশা করব না। ''আশ্চর্যজনকভাবে '' শব্দটি ভোক্তা বিজ্ঞাপনের নিবন্ধন-এ পড়ে, গবেষণা প্রস্তাবের নয়।
যদি ভুল নিবন্ধন-এর শব্দ ব্যবহার করেন, পাঠক ভাবতে পারেন আপনি আপনার ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার পদ্ধতি বুঝেন না, আর এতে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ৬: পাঠকের সাংস্কৃতিক পটভূমি মাথায় রেখে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকদের জন্য লিখলে বিশেষ যত্ন নিন। আপনার নিজের সংস্কৃতিতে স্পষ্ট শব্দ অন্য সংস্কৃতির পাঠকের কাছে ভুল বোঝাবুঝি বা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এমনকি ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকের ক্ষেত্রে ও এ সমস্যা হতে পারে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল মানে একটি আন্ডাকারাকৃতির বল নিয়ে গোল করার খেলা, আর ইংল্যান্ড, ভারত ও অনেক স্থানে ফুটবল মানে গোল নেটের মধ্যে গোল করার জন্য গোলাকার বল নিয়ে খেলা।
পাঠকের ভাষাগত দক্ষতা ভিন্ন, তাই নির্দেশিকাগুলো প্রয়োগ করুন যতটুকু তাদের জন্য প্রয়োজন।
'''আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের জন্য শব্দ বাছাইয়ের নির্দেশিকা:'''
১) সহজ শব্দ ব্যবহার করুন। যত বেশি জটিল শব্দ ব্যবহার করবেন, ইংরেজিতে অপ্রভৃত পাঠকের জন্য বোঝা কঠিন হবে।
২) একই বস্তু বা বিষয়ের জন্য একই শব্দ ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, কোনো যন্ত্রাংশের জন্য একবার “ডায়াল” আরেকবার “কন্টোল” বলবেন না, কারণ অনুবাদে ভিন্ন শব্দ হতে পারে।
৩) পাঠক না-জানার মতো সংক্ষিপ্ত শব্দ এড়িয়ে চলুন। যেমন AI (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা), ACL (পূর্ববর্তী ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট)।
৪) বাগধারা ও সালসলুকি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যেমন, "আমরা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই" বলার বদলে "আমরা চাই সিদ্ধান্তটা মোটামুটি করা হোক" বলুন।
সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য যেকোনো সংস্কৃতিতে অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিন আপনার শব্দ বাছাই পর্যালোচনার জন্য।
==='''নির্দেশিকা ৭: নৈতিক নির্দেশিকা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষা ব্যবহার করুন'''===
আপনার কণ্ঠস্বর গঠন করার সময় এমন ভাষা ব্যবহার করুন যা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে, কারো বঞ্চনা না করে। যেমন, লিঙ্গভিত্তিক বা পক্ষপাতপূর্ণ ভাষা এড়িয়ে চলুন কারণ তা নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থন করে। এটি নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হলেও, পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেমন নার্সিং পেশায়।
নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থনকারী ভাষা পাঠকদের সক্ষম মানুষের ক্ষমতা ও সাফল্যের প্রতি অন্ধ করে দিতে পারে। অক্ষমতা, অসুস্থতা বা অন্যান্য সীমাবদ্ধতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংবেদনশীল বর্ণনাও এড়াতে হবে।
'''অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষার ব্যবহার'''
১) লিঙ্গনিরপেক্ষ বিশেষ্য ও সর্বনাম ব্যবহার করুন, “man” শব্দযুক্ত শব্দের পরিবর্তে।
'''বদলে ব্যবহার করুন''': businessman, workman, mailman, salesman
'''ব্যবহার করুন''': businessperson, worker, mail carrier, sales person
'''বদলে ব্যবহার করুন''': man made, man hours, man-sized job
'''ব্যবহার করুন''': synthetic, working hours, large job
২) সাধারণ মানুষের জন্য লিঙ্গভিত্তিক সর্বনাম এড়িয়ে plural pronouns বা he or she ব্যবহার করুন।
'''বদলে বলুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. She looks for premium products and appreciates a stylish design."
'''ব্যবহার করুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. They look for premium products and appreciate a stylish design."
'''বদলে বলুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he might be wise to seek advice from a certified public accountant."
'''ব্যবহার করুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he or she might be wise to seek advice from a certified public accountant."
৩) পুরুষ ও নারীদের সমান মাত্রায় উল্লেখ করুন।
'''বদলে বলুন''': "Mr. Sundquist and Anna represented us at the trade fair."
'''ব্যবহার করুন''': "Mr. Sundquist and Ms. Tokagawa represented us at the trade fair" অথবা "Christopher and Anna represented us at the trade fair."
৪) পত্রের শুভেচ্ছা শুরুতে লিঙ্গভিত্তিক সম্বোধন এড়ান।
'''বদলে বলুন''': Dear Sir, Gentlemen
'''ব্যবহার করুন''': সংশ্লিষ্ট বিভাগের নাম, কোম্পানির নাম বা ব্যক্তির পদবী ব্যবহার করুন: Dear Personnel Department, Dear Switzer Plastics Corporation, Dear Director of Research
৫) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বর্ণনায় প্রথমে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করুন, তারপর প্রতিবন্ধকতার কথা।
'''বদলে বলুন''': the disabled, mentally retarded people
'''ব্যবহার করুন''': people with disabilities, people with mental retardation
== “মিস," "মিসেস," এবং "মিসেস” সম্পর্কে ==
অনেকেই নিশ্চিত নন ঐতিহ্যবাহী “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করবেন কি না, নাকি আধুনিক “সুশ্রী.” ব্যবহার করবেন। “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করলে মনে হতে পারে কোনো নারীর বৈবাহিক অবস্থা তার কাজের দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরুষদের ক্ষেত্রে সব সময় “জনাব.” ব্যবহার হয়, বৈবাহিক অবস্থা নির্বিশেষে। অন্যদিকে, কিছু নারী “মিস” বা “মিসেস.” পছন্দ করেন। ব্যক্তির পছন্দ জানা থাকলে সেটাই অনুসরণ করুন। না জানা থাকলে আধুনিক এবং লিঙ্গপক্ষপাত মুক্ত শব্দ ""সুশ্রী"" ব্যবহার করুন, যা আজকাল কর্মক্ষেত্রে স্বীকৃত।
=উপসংহার=
লিখনশৈলী সুগঠিত করা সফল, প্রযুক্তিগত ও পেশাগত লেখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কণ্ঠস্বর, বাক্যগঠন এবং শব্দ নির্বাচনের প্রতি যত্নবান হলে আপনি পাঠকদের সঙ্গে ভাল সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন এবং তাদের লেখা গুরুত্বসহকারে নেবার জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারবেন।
{{BookCat}}
gramt2etuqx0zrx3itzq0cu4ma5m5v3
85628
85619
2025-07-04T03:32:37Z
SMontaha32
11242
/* নির্দেশনা ৫: বাক্যের দৈর্ঘ্য ও গঠন বৈচিত্র্যময় করুন */
85628
wikitext
text/x-wiki
=নিজস্ব ভয়েস তৈরি করার নির্দেশিকা=
লেখার শৈলী অনেক কিছু বোঝায়। এক প্রান্তে রয়েছে লেখকের লেখাকে অনন্য করে তোলার বৈশিষ্ট্যসমূহ। অপর প্রান্তে রয়েছে আইনি বা বৈজ্ঞানিক লেখার শৈলী, যা নির্দিষ্ট কিছু পেশাজীবী—যেমন আইনজীবী বা বিজ্ঞানীদের—মধ্যে প্রচলিত লেখার বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে। শৈলী বলতে একটি লেখার পাঠযোগ্যতাও বোঝায়—যদি তা পরিষ্কার, দুর্বোধ্য বা অনুপ্রেরণাদায়কভাবে লেখা হয়।
কর্মক্ষেত্রে আপনি একদিকে আপনার পেশাগত শৈলীর প্রচলিত রীতি এবং আপনার নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের স্টাইল মেনে চলেন, অন্যদিকে ব্যক্তিগত অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেন। এতে পাঠকের জন্য পড়া সহজ হয় এবং তারা পড়ার সময় প্রভাবিত হন। আপনার বিকল্পগুলো বিবেচনা করুন এই দৃষ্টিকোণ থেকে যে, তা পাঠকের কাছে আপনার লেখার ব্যবহারযোগ্যতা ও প্রভাবশীলতা কেমনভাবে উপস্থাপন করবে। পাঠক যা দেখেন, তার ভিত্তিতে তারা আপনার সম্পর্কে এবং আপনার মনোভাব নিয়ে একটি ধারণা তৈরি করেন—যা আপনার যোগাযোগের প্রভাব বাড়াতে বা কমাতে পারে। আপনার লেখনীতে নিজের ভয়েস গঠন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আপনার লেখার সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
== নির্দেশিকা ১: কী প্রত্যাশিত তা খুঁজে বের করুন ==
<div style="width:60%; min-width: 550px;">
একটি কার্যকরী ভয়েস বা কণ্ঠস্বর হলো এমন একটি যা পাঠকের দৃষ্টিকোণে প্রাসঙ্গিক ও উপযুক্ত। তবে, আপনি বিষয়বস্তু, শব্দচয়ন এবং আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আপনার শ্রোতাদের নির্ধারণ করতে পারেন। আপনার কণ্ঠস্বর ও শৈলী পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। কণ্ঠস্বরটি স্পষ্ট হওয়া জরুরি যে, এটি কার উদ্দেশ্যে রচিত।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা আনুষ্ঠানিক ভাববে?
: যখন আপনি সংকোচন (যেমন না, না) এবং কথ্য শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহার করেন, তখন লেখাটি অনানুষ্ঠানিক, কথোপকথনের মতো শোনায়।
: ''নোট: ছোট শব্দ ব্যবহারে লেখাটি অনানুষ্ঠানিক হয় না। বাস্তবে, অনেকেই সহজ ভাষা পছন্দ করেন যাতে জটিল ধারণাগুলো পড়তে সহজ হয়। বড় শব্দ পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে পারে, বা লেখাটিকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ শোনাতে পারে। এটি দীর্ঘ বাক্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় ধরনের লেখাতেই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।''
: আনুষ্ঠানিক শৈলীতে সঠিক শব্দচয়ন, বাক্যগঠন, আনুষ্ঠানিক বাক্যরীতি ও উপযুক্ত ভাষা ব্যবহার করা হয়। আপনার লেখার শৈলী নির্ধারণে সবসময় আপনার শ্রোতাদের কথা বিবেচনায় রাখুন। আনুষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহারের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেমন বক্তৃতা, সেবা, শোকবার্তা এবং প্রবন্ধ। এই ধরনের লেখাগুলিতে শ্রোতার বয়স যতই হোক না কেন, আনুষ্ঠানিক ভাষা সব বয়সের জন্য উপযুক্ত হতে পারে। অনানুষ্ঠানিক ভাষার ব্যবহার যেমন বন্ধুকে চিঠি লেখা বা ডায়েরিতে লেখার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। কখনও কখনও অনানুষ্ঠানিক লেখা আরও আন্তরিক মনে হতে পারে, কারণ এতে আবেগ স্পষ্ট হয়।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা ব্যক্তিক বা নিরপেক্ষ মনে করবে?
: ব্যক্তিগত বা সাবজেকটিভ শৈলীতে আপনি “আমি” ব্যবহার করে নিজের মতামত দেন এবং নিজেকে লেখায় উপস্থাপন করেন। নিরপেক্ষ বা অবজেকটিভ শৈলীতে আপনি নিজের উপস্থিতিকে গোপন করেন, মতামতকে তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং নিজের কাজগুলো তৃতীয় পুরুষে বা নির্বিকার কণ্ঠে বলেন। নিরপেক্ষ লেখা বেশি আনুষ্ঠানিক এবং পেশাদার ও কারিগরি লেখার ক্ষেত্রে এটি প্রত্যাশিত।
আমার পাঠকেরা আমার সাথে কতটা "দূরত্ব" প্রত্যাশা করে?
: ব্যক্তিগত শৈলীতে আপনি পাঠকের খুব কাছাকাছি থাকেন, কারণ আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম ব্যবহার করেন এবং পাঠকদের সরাসরি সম্বোধন করেন। লেখার কথোপকথনধর্মী ধরণও এই ঘনিষ্ঠতা বোঝাতে পারে। অন্যদিকে, অপারসোনাল বা নিঃসঙ্গ শৈলীতে আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম এড়িয়ে যান এবং নিজের ও পাঠকদের তৃতীয় পুরুষে উল্লেখ করেন, যাতে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আপনি কোন শৈলী ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে লেখার উদ্দেশ্য এবং শ্রোতার উপর।
::<u>পাঠকের শৈলীগত প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়সমূহ:</u>
::* পাঠকের সঙ্গে আপনার পেশাগত সম্পর্ক।
::* আপনার উদ্দেশ্য।
::* বিষয়বস্তু।
::* আপনার ব্যক্তিত্ব।
::* আপনার নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানের রীতিনীতি।
::* আপনার ক্ষেত্র, পেশা বা শাখার রীতিনীতি।
যদি প্রত্যাশিত শৈলী অকার্যকর হয়?
: ''নোট: কখনও কখনও প্রত্যাশিত শৈলী অন্যান্য বিকল্প অপেক্ষা কম কার্যকর হতে পারে।''
: উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রত্যাশিত শৈলী একটি বহুল নিন্দিত শৈলী—''ব্যুরোক্রেটিজ'' নামে পরিচিত। এই ধরনের লেখায় অপ্রয়োজনীয় শব্দ ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ঢেকে ফেলা হয়, দুর্বল ক্রিয়া ব্যবহারে কার্যকলাপ অস্পষ্ট হয়, এবং বিমূর্ত শব্দে লেখাটি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
: প্রায়ই এই শৈলীতে অতিরঞ্জিত শব্দভাণ্ডার এবং অহঙ্কারপূর্ণ গাম্ভীর্য থাকে, যা লেখকের বক্তব্য বোঝা কঠিন করে তোলে বা পুরোপুরি বাধাগ্রস্ত করে।
ব্যুরোক্রেটিজ: উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের অনুশীলন অনুসারে, প্রতিটি উপাদানকে তার সরবরাহকারী বা উৎস থেকে পাওয়ার পর কিন্তু চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা ও যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ ভাষা: কার্যকর গুণগত নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি উপাদান চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা করতে হয়।
ব্যুরোক্রেটিজ: সর্বশেষ মাসিক সময়কালে, ধীর গতির পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের করা অভিযোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণ ভাষা: গত মাসে অনেক বেশি গ্রাহক ধীর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
: ব্যুরোক্রেটিজ একটি এতটাই গুরুতর প্রতিবন্ধকতা যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে সরকারি প্রকাশনা এবং অন্যান্য দলিল (যেমন বীমা নীতি)–এ সাধারণ ইংরেজি ব্যবহারের জন্য আইন পাস হয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলো আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ এড়াতে সাহায্য করবে। তবে, কিছু ব্যবস্থাপক ও প্রতিষ্ঠান এখনো ভাবেন যে, এই ফুলানো শৈলী খুবই প্রভাবশালী শোনায়। যদি আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ লেখার অনুরোধ করা হয়, তাহলে আপনি কেন সহজবোধ্য শৈলী বেশি কার্যকর তা বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি বোঝাতে ব্যর্থ হন, তবে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনীয় শৈলী ব্যবহার করুন। এমনকি সাধারণভাবে ব্যুরোক্রেটিক শৈলীর মধ্যেও আপনি কিছু উন্নতি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার নিয়োগকর্তা শব্দবহুল ও বিমূর্ত শৈলী প্রত্যাশা করেন, তবুও আপনি অপেক্ষাকৃত কম ফুলানো শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
</div>
==='''নির্দেশিকা ২: আপনার ক্রিয়াপদে কর্মটি যুক্ত করুন'''===
অধিকাংশ বাক্যই কর্ম নিয়ে। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপকরা অনুমোদন দেন। অথচ অনেকেই কর্মকে লুকিয়ে রাখেন বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে।
নিম্নের বাক্যটি বিবেচনা করুন: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও সক্রিয় করা যায় যদি "রূপান্তর" ক্রিয়াপদে ব্যবহার করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যকে ক্রিয়ার উপর কেন্দ্রীভূত করা</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া বা তার রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
''হতে'' ক্রিয়াটি প্রায়শই বলে কিছু কী *আছে*, কিন্তু কী *করে* তা নয়।
'''মূল''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>সুরক্ষা প্রদান করে</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': কাঁচামালের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণেই সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''মূল''': বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রকৌশলীদের প্রশ্ন তোলার পেছনে <u>কয়েকটি কারণ রয়েছে</u>।
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' ইত্যাদি প্রত্যয়যুক্ত শব্দে কর্মকে নামজ করে ফেললে তা এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': অতএব, আমি একটি <u>সুপারিশ</u> করতে চাই যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': অতএব, আমি <u>সুপারিশ করছি</u> যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্য কর্ম সম্পর্কিত, কিছু বাক্য নয়। উদাহরণস্বরূপ, বিষয় এবং পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়শই তালিকা উপস্থাপন বা আলোচনার গঠন ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: এই বাক্যে ''হতে'' উপযুক্ত—
কোম্পানির উচিত প্রধান দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার তিনটি প্রধান কারণ আছে।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন যদি না নিষ্ক্রিয় বাক্য ব্যবহার করার সঙ্গত কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যকে কর্ম এবং কর্মকারীর উপর কেন্দ্রীভূত করার আরেকটি উপায় হলো ''সক্রিয় রচনারীতি'' ব্যবহার করা, নিষ্ক্রিয় রচনারীতি নয়। অ্যাকটিভ বাক্য লেখার জন্য, কর্মকারীর—যিনি কাজটি করেন—তাকে বিষয়বস্তু হিসেবে রাখুন। আপনার ক্রিয়াপদটি তখন সেই কর্মকারীর কাজকে প্রকাশ করবে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলো সুপারিশ করেছেন।
নিষ্ক্রিয় রচনায়, বাক্যের বিষয় এবং কর্মকারী আলাদা। বিষয়টি কোনো কাজের দ্বারা প্রভাবিত হয়।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': এই পরিবর্তনগুলো পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশকৃত হয়েছিল।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': কোরিয়ান আকরিকটি আমাদের দ্বারা ক্রয় করা হয়েছিল।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান আকরিকটি ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠকেরা অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। সক্রিয় রচনায় অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা কম থাকে, যা নিষ্ক্রিয় রচনায় বেশি দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ,(বলটি মারা হয়েছিল) ব্যাকরণগতভাবে সঠিক হলেও, কে বলটি মারল তা বলা হয়নি। কিন্তু সক্রিয় রচনায় লেখক এটি পরিষ্কার করেন:(লিন্ডা বলটি মারলেন)।
যদিও নিষ্ক্রিয় রচনায় পাঠযোগ্যতা কমে, কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহার উপযোগী। যেমন, আপনি যদি কর্মকারীর নাম গোপন রাখতে চান তবে এটি কার্যকর হতে পারে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে নিষ্ক্রিয় রচনায় কারো পরিচয় ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করে নৈতিকভাবে ভুল কাজ না করা হয়, বিশেষ করে যখন কোনো দায়িত্ব এড়াতে তা ব্যবহার করা হয়।
===''নির্দেশনা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দিন''===
পরিষ্কার, জোরালো বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হলো আপনার পাঠকদের মনোযোগ আপনার বার্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটির দিকে পরিচালিত করা।
<u>সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দেওয়ার কৌশল</u>
1. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি বাক্যের শেষে রাখুন
বাক্যের শেষে মূল তথ্য রাখার জন্য কখনও কখনও খসড়া নতুনভাবে সাজাতে হতে পারে।
'''মূল''': বিভাগের কার্যকারিতা সব ক্ষেত্রেই চমৎকার হয়েছে।
'''পরিমার্জিত''': সব ক্ষেত্রেই, বিভাগের কার্যকারিতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল''': <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা</u> হলো কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''পরিমার্জিত''': কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো এর <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা।</u>
2. মূল তথ্যটি প্রধান উপবাক্যে রাখুন
যদি আপনার বাক্যে একাধিক উপবাক্য থাকে, তাহলে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা প্রধান উপবাক্যে রাখুন।
উদাহরণ তুলনা করুন:
যদিও আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে, আমাদের লাভ বেড়েছে।
যদিও আমাদের লাভ বেড়েছে, আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে।
প্রথম বাক্যে প্রধান উপবাক্যে ''লাভ'' বিষয়বস্তু হওয়ায় জোর পড়েছে লাভের ওপর। দ্বিতীয় বাক্যে জোর পড়েছে উৎপাদনশীলতার ওপর, কারণ সেটি প্রধান উপবাক্যের বিষয়বস্তু।
3. টাইপোগ্রাফি ব্যবহার করে জোর দিন
বোল্ড ও ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে সচেতন থাকুন যেন অতিরিক্তভাবে ব্যবহার না হয়। অনেক কিছু একসাথে জোর দিলে কিছুই আলাদা করে নজরে পড়ে না।
4. পাঠককে সরাসরি বলে দিন কোন তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ
মূল তথ্যের তাৎপর্য পাঠককে সরাসরি জানানোও এক ধরনের জোর দেওয়া।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদেরা শেয়ারবাজারে পতনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের মজুদ বৃদ্ধি এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মূল্যস্ফীতির লক্ষণ।
5. অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা পরিহার করুন
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা তথ্য ব্যবসায়িক লেখায় বিশেষভাবে পরিহারযোগ্য। ব্যবসায়িক জগতে সময় মানেই টাকা। আপনার বস বা ক্লায়েন্ট যদি আপনার অতিরিক্ত শব্দে ভরা ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করেন, তাহলে সেটি অপ্রয়োজনীয় ব্যয়। লেখার পর পুনঃপড়ে দেখুন কোনটি সহজবোধ্য বা সুস্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে কি না।
উদাহরণ: ঘড়ির কাঁটায় দেখা গেল যে সে তার কাজে পৌঁছাতে দেরি করেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
এটি স্পষ্ট যে সময় ঘড়ির কাঁটায় দেখায় এবং কাজের জায়গায় মানুষ সাধারণত কাজই করে। এই রূঢ় উদাহরণটি দেখায় যে লেখার দৈর্ঘ্য মান বাড়ানোর গ্যারান্টি নয়। বেশিরভাগ ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য লেখা বেশি কার্যকর।
===''নির্দেশনা ৫: বাক্যের দৈর্ঘ্য ও গঠন বৈচিত্র্যময় করুন''===
একই রকম গঠনের সব বাক্য ব্যবহার করলে দুটি সমস্যা দেখা দেয়। একঘেয়েমি আসে এবং (সব বাক্য একই রকম হওয়ায়) গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলাদা করে জোর দেওয়া যায় না।
এই সমস্যা এড়াতে দুটি উপায় আছে:
• বাক্যের দৈর্ঘ্যে বৈচিত্র্য আনুন।
– দীর্ঘ বাক্য বিভিন্ন ধারণার মধ্যে সম্পর্ক দেখাতে ব্যবহার করা যায়। সংক্ষিপ্ত বাক্যগুলোর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অংশে জোর দেওয়া যায়।
• বাক্য গঠনে বৈচিত্র্য আনুন।
– উদাহরণস্বরূপ, বাক্যের ব্যাকরণগত বিষয়বস্তু সব সময় প্রথম শব্দ হতে হবে না। যদি তা হতো, তাহলে ইংরেজি ভাষা অনেকটা তার গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলত। একটি বিকল্প হলো যুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক বোঝাতে উপবাক্য দিয়ে বাক্য শুরু করা।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমাদের জরিপ সম্পন্ন করার পর</u>, আমরা নিশ্চিতভাবে জানব প্রস্তাবিত নতুন কারখানার স্থানটি এক সময় আদিবাসীদের ক্যাম্পিং এলাকা ছিল কি না।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমরা সব বিকল্প ভালোভাবে পর্যালোচনা করায়</u>, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে একটি নিউম্যাটিক ড্রাইভই সবচেয়ে ভালো কাজ করবে এবং নির্ভরযোগ্য সেবা দেবে।
===''নির্দেশনা ৬: সার্বিক নির্দেশনা: আপনার পাঠক যদি আপনার ভাষায় দক্ষ না হয়, তাহলেতাদের সুবিধার্থে বাক্যগঠনে পরিবর্তন আনুন''===
আপনার বাক্যের গঠন পাঠকদের—যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয়—বোঝার সুবিধা-অসুবিধাকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও কম্পিউটার শিল্পসহ অনেক খাতে কোম্পানিগুলো বিদেশি পাঠকদের জন্য সরল ইংরেজি রচনার নিয়ম তৈরি করেছে। এই ধরনের ভাষার একটি সীমিত শব্দভাণ্ডার থাকে এবং এটি এমন ব্যাকরণগত নিয়ম অনুসরণ করে যা পাঠকদের বোঝা সহজ করে।
সব পাঠকের জন্য এতটা সরলীকরণ প্রয়োজন নাও হতে পারে। তাই আপনার নির্দিষ্ট পাঠকদের সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, বাক্যের গঠন সরল করার অর্থ এই নয় যে চিন্তাধারাটিকেও সরলীকরণ করতে হবে।
<u>যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকদের জন্য বাক্য লেখার নির্দেশনা</u>
• সহজ বাক্যগঠন ব্যবহার করুন। – যত বেশি জটিল হবে, পাঠকদের বোঝা তত কঠিন হবে।
• বাক্য সংক্ষিপ্ত রাখুন। – দীর্ঘ বাক্য, গঠন সহজ হলেও, বোঝা কঠিন হতে পারে। ২০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
• অ্যাকটিভ ভয়েস ব্যবহার করুন। – ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকেরা প্যাসিভ ভয়েসের তুলনায় অ্যাকটিভ ভয়েস অনেক সহজে বোঝে।
==শব্দ বাছাই==
শব্দ বাছাইয়ের সময়, আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত পাঠকেরা যেন দ্রুত ও সঠিকভাবে আপনার বক্তব্য বুঝতে পারে। একইসঙ্গে, মনে রাখবেন, আপনার শব্দের পছন্দ পাঠকের ওপর আপনার এবং আপনার বিষয়ে মনোভাবও প্রভাবিত করে। তাই এমন শব্দ ব্যবহার করুন যা আপনার যোগাযোগকে আরও প্রভাবশালী করে তোলে। শব্দের ব্যবহার আপনার কণ্ঠস্বর কেমন শোনা যায়, কতটা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, তাও নির্ধারণ করতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ১: আপনার বাক্যগুলো সরল করুন'''===
ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনার বাক্যগুলো সরল করা। পড়া একটি '''কঠিন কাজ'''। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এই কাজের অনেকটাই শর্ট-টার্ম মেমোরি করে থাকে। এটি প্রতিটি বাক্যের শব্দগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট অর্থ তৈরি করে তা বুঝতে চেষ্টা করে। কম শব্দ মানে কম পরিশ্রম। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে যে যখন '''আমরা''' আমাদের বার্তাটি সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করি, তখন '''আমরা''' এটিকে আরও শক্তিশালী, স্মরণযোগ্য এবং প্রভাবশালী করে তুলি।
<u>বাক্য সরল করার কৌশল</u>
১. অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিন।
সরাসরি অর্থ প্রকাশ করতে পারেন এমন অংশগুলো খুঁজুন।
'''উদাহরণ''': কাজের ঘরের <u>শারীরিক আকার</u> এতটাই ছোট যে এই যন্ত্রপাতি <u>স্থাপন করা সম্ভব নয়</u>।
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিয়ে, বাক্যটি আগের মতোই স্পষ্ট এবং আরও জোরালো: কাজের ঘরটি এই যন্ত্রপাতির জন্য খুব ছোট।
২. বিশেষণ বা বিশেষ্য বিশেষনের অবস্থান ঠিক রাখুন।
শর্ট-টার্ম মেমোরি অর্থ বোঝাতে শব্দের ক্রমের উপর নির্ভর করে। সম্পর্কযুক্ত শব্দগুলো একত্রে না রাখলে বাক্যটি আপনার আসল অর্থের চেয়ে ভিন্ন কিছু বোঝাতে পারে।
'''বিচ্ছিন্ন''': ফাইল ক্যাবিনেটে একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক পাওয়া গেছে, যেগুলোর মূল্য ছিল ৪১,০০০ ডলারের বেশি।
'''সুসংগঠিত''': ৪১,০০০ ডলারের বেশি মূল্যের একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক ফাইল ক্যাবিনেটে পাওয়া গেছে।
৩. ছোট ছোট বাক্য একত্র করুন।
প্রায়শই, দুটি বা ততোধিক ছোট বাক্য একত্র করলে পড়া সহজ হয়, কারণ এতে মোট শব্দের সংখ্যা কমে যায় এবং পাঠক বিষয়বস্তুর মধ্যকার সম্পর্ক সহজে বুঝতে পারে।
'''আলাদা''': মার্চ মাসে হক নদীর পানি মানের অবনতি ঘটে। এই অবনতি ঘটেছিল মাসটির ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে। অতিরিক্ত পানি টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্টকে অতিভার করে তোলে।
'''একত্র''': মার্চ মাসে ভারী বৃষ্টির কারণে টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট অতিভার হয়ে পড়ায় হক নদীর পানির মানের অবনতি ঘটে।
==='''নির্দেশিকা ২: ক্রিয়া পদে কর্ম প্রকাশ করুন'''===
বেশিরভাগ বাক্যই কোনো না কোনো কর্মের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপক অনুমোদন দেন। কিন্তু অনেকেই এই ক্রিয়াকে বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে লুকিয়ে ফেলেন।
উদাহরণস্বরূপ: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও কার্যকর করা যায় যদি "রূপান্তর"কে সরাসরি ক্রিয়ায় রূপান্তর করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যে কর্মকে কেন্দ্রে রাখার কৌশল</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া এবং এর রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') পরিহার করুন।
''হতে'' ক্রিয়া সাধারণত বলে কিছু কী, কিন্তু তা কী করে না।
'''মূল বাক্য''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>সুরক্ষা দেয়</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য পরিহার করুন।
'''মূল বাক্য''':<u>এটা</u> কারণ কাঁচামালের খরচ বেড়েছে যে সমাপ্ত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রস্তুত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''মূল বাক্য''': <u>আছে</u>: বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে যা প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে.
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• যেসব শব্দের শেষে ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' থাকে, সেগুলোতে ক্রিয়া আটকে যায়—এই ধরনের গঠনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এরা কাজের ভাবটি বিশেষ্যে রূপান্তর করে।
'''মূল বাক্য''': তাই আমি একটি <u>প্রস্তাবনা</u> দিতে চাই যে বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': তাই আমি <u>প্রস্তাব করছি</u>, বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্যই কোনো কর্ম প্রকাশ করে, কিছু বাক্য কর্ম-ভিত্তিক নয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিষয়ের সারাংশ বা পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়ই তালিকা শুরু করে বা আলোচনার গঠন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
যেমন একটি যথার্থ ''হতে'' ব্যবহার: কোম্পানিকে কেন কর্পোরেট সদর দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের কারখানাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করতে বিনিয়োগ করা উচিত, তার তিনটি প্রধান কারণ <u>আছে</u>।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন, যদি না প্যাসিভ বাক্য ব্যবহারের ভাল কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যে কর্ম এবং কর্মীকে স্পষ্ট করতে আরেকটি পদ্ধতি হল ''অ্যাকটিভ বাক্য'' ব্যবহার করা, প্যাসিভ বাক্যের পরিবর্তে। সক্রিয় বাক্যে, কর্মী — অর্থাৎ যিনি বা যা কর্মটি করছে — বাক্যের বিষয় হিসেবে থাকে। এরপর ক্রিয়া ওই কর্মীর কর্মকে বর্ণনা করে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলি সুপারিশ করেছেন।
প্যাসিভ বাক্যে, বাক্যের বিষয় এবং কর্তা আলাদা হয়। বিষয়ের উপর কর্তা কর্তৃক কাজ করা হয়।
'''প্যাসিভ বাক্য''': পরিবর্তনগুলি পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশ করা হয়েছিল।
'''প্যাসিভ বাক্য''': কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করা হয়েছে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠক প্যাসিভ বাক্যের তুলনায় অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। এছাড়াও, অ্যাকটিভ বাক্য অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা দূর করে, যা প্রায়ই প্যাসিভ বাক্যে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, "বলটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে" একটি ব্যাকরণগতভাবে সঠিক প্যাসিভ বাক্য, কিন্তু বলটি কে বা কী আঘাত করেছে তা জানায় না। সক্রিয় বাক্যে লেখক স্পষ্টভাবে কর্মীকে চিহ্নিত করেন: "লিন্ডা বলটি আঘাত করলো।"
যদিও প্যাসিভ বাক্য সাধারণত পড়া কঠিন করে, তবে এর কিছু ভালো ব্যবহারও আছে। যেমন, যখন আপনি কর্মীকে উল্লেখ করতে চান না তখন প্যাসিভ বাক্য কার্যকর হয়। যদি লেখক সিদ্ধান্ত নেন যে, রিপোর্টটি যে করেছে তার নাম না বলে তথ্যটি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, তখন তিনি প্যাসিভ বাক্য সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন। আবার, নৈতিকতার পরিপন্থী হলে প্যাসিভ বাক্য ব্যবহার করে কর্মীর দায় এড়ানো উচিত নয় — যেমন যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এড়াতে চেষ্টা করা হয়।
==='''নির্দেশিকা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন'''===
পরিষ্কার এবং শক্তিশালী বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হল পাঠকের মনোযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দিকে কেন্দ্রীভূত করা।
<u>গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর জোর দেওয়া</u>
১. বাক্যের শেষে প্রধান তথ্য রাখুন
প্রধান তথ্য বাক্যের শেষে রাখতে চাইলে প্রাথমিক খসড়া কিছুটা পুনর্বিন্যাস করতে হতে পারে।
'''মূল বাক্য''': বিভাগের কর্মক্ষমতা সব ক্ষেত্রে চমৎকার হয়েছে।
'''সংশোধিত বাক্য''': সব ক্ষেত্রে, বিভাগের কর্মক্ষমতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল বাক্য''': উজ্জ্বল বাইরের নকশা কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''সংশোধিত বাক্য''': কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হল উজ্জ্বল বাইরের নকশা।
২. প্রধান বাক্যে প্রধান তথ্য রাখুন
যদি বাক্যে একাধিক বাক্যাংশ থাকে, তবে প্রধান তথ্য প্রধান বাক্যাংশে রাখুন। নিচের দুইটি বাক্যের তুলনা করুন:
আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল, তবে লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল।
প্রথম বাক্যে জোর দেয়া হয়েছে লাভের উপর কারণ ‘লাভ’ প্রধান বাক্যের বিষয়। দ্বিতীয় বাক্যে ‘উৎপাদনশীলতা’ প্রধান বিষয় হওয়ায় তা বেশি গুরুত্ব পায়। (মনোযোগ দিন, গুরুত্বপ্রাপ্ত তথ্যটি প্রধান বাক্যাংশে এবং বাক্যের শেষে থাকে।)
৩. টাইপোগ্রাফিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে হাইলাইট করুন
বোল্ড এবং ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে, অতিরিক্ত হাইলাইটিং এড়িয়ে চলুন। অনেক কিছু হাইলাইট করলে কোনো কিছুই আলাদা করে চোখে পড়ে না।
৪. পাঠককে স্পষ্টভাবে জানান কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আপনি পাঠকদের জানিয়ে দিতে পারেন কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদরা স্টক মার্কেটের পতনের তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের ইনভেন্টরির বৃদ্ধি, এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মুদ্রাস্ফীতির লক্ষণ।
৫. অবাঞ্ছিত বাক্যাংশ এড়িয়ে চলুন
অধিকাংশ লেখায় এটি সত্য হলেও, ব্যবসায়িক লেখায় এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায় সময় অর্থ। যদি আপনার বস বা ক্লায়েন্টরা আপনার অবাঞ্ছিত বাক্যে ভর্তি ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করে, তাহলে সেটি সময়ের অপচয়।
উদাহরণ: ঘড়ির মুখে সময় দেখাচ্ছিল যে সে তার কাজে দেরিতে পৌঁছেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
ঘড়িতে অবশ্যই সময় থাকে এবং কাজের জায়গায় ছাড়া আর কি করা হয়? এটি একটি সরল উদাহরণ, কিন্তু এটি দেখায় যে একটি নথির দৈর্ঘ্য তার গুণগত মান বাড়ায় না। অধিকাংশ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত ও সরল নথি শব্দবহুল, দীর্ঘ নথির তুলনায় ভাল কাজ করে।
==='''নির্দেশিকা ৫: উপযুক্ত সম্বন্ধ বা অনুভূতির সঙ্গে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
গত তিনটি নির্দেশিকা ছিল শব্দের শাব্দিক বা অভিধানগত অর্থ সম্পর্কে। কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে আপনার শব্দগুলোর পাঠকের সঙ্গে কোন ধরনের সম্বন্ধ বা অনুভূতি জড়িত আছে কিনা। বিশেষ করে, শব্দের ''অনুভূতি'' এবং ''নিবন্ধন'' সম্পর্কে বিশেষ যত্নবান হোন।
<u> (অনুভূতি বা ইঙ্গিত)</u>
অনুভূতি হলো কোনো শব্দের শাব্দিক অর্থের বাইরে থাকা প্রস্তাবিত বা বিস্তৃত অর্থ। উদাহরণস্বরূপ, অভিধান অনুযায়ী ''ফ্ল্যাটফুট'' এবং ''পুলিশ গোয়েন্দা'' সমার্থক হলেও, তারা বিভিন্ন অনুভূতি তৈরি করে: ''ফ্ল্যাটফুট'' এমন এক ধরনের পুলিশকে বোঝায় যে ধীর, হয়তো তেমন বুদ্ধিমান নয়, যেখানে ''পুলিশ গোয়েন্দা'' বোঝায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদারকে।
ক্রিয়াপদগুলোরও অনুভূতি থাকে। যেমন, কারো ভুল তথ্য না দেখার কথা ''পরামর্শ দেওয়া'' করা এবং ''ইঙ্গিত করা'' করা একই নয়। কোনো ক্লায়েন্টের প্রকল্পে সময় ''উৎসর্গ করা'' করা এবং ''অবসর'' করা একই নয়।
আপনার শব্দের অনুভূতি আপনার বিষয়বস্তুর প্রতি শ্রোতাদের ধারণা গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।
'''প্রথম সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চেষ্টা করছে।
'''দ্বিতীয় সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চালিত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নমনীয় শব্দ ''চেষ্টা'' ব্যবহারে পাঠকরা মনে করেন কোম্পানি কর্মচারীদের মঙ্গল ও উদ্বেগের প্রতি সচেতন, নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য ইতিবাচক কর্মসূচিতে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়, কম শ্রমশিকायत পায় এবং কর্মচারীদের ভালো পারিশ্রমিক দেয়। আর কঠোর শব্দ ''ড্রাইভিং'' ব্যবহারে এই মতামত উল্টো হয়। মাত্র সাতটি শব্দের পার্থক্যে পাঠকদের দৃষ্টিভঙ্গি এতটা বদলায়—এটাই দেখায় শব্দের অনুভূতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
<u>নিবন্ধন(ব্যবহারের প্রসঙ্গ)</u>
নিবন্ধন বলতে বোঝায় শব্দের নির্দিষ্ট ধরনের যোগাযোগ পরিস্থিতি বা প্রসঙ্গে ব্যবহারের সাথে সংযুক্ত ভাব। উদাহরণস্বরূপ, কোনো রেস্তোরাঁর বিজ্ঞাপনে ''আশ্চর্যজনকভাবে '' সুস্বাদু খাবারের কথা আশা করা যায়। কিন্তু গবেষণার প্রস্তাবে কোনো সংস্থার জন্য বলা হবে যে তারা ''আশ্চর্যজনকভাবে '' ভালো গবেষণা করতে পারে, তা আমরা আশা করব না। ''আশ্চর্যজনকভাবে '' শব্দটি ভোক্তা বিজ্ঞাপনের নিবন্ধন-এ পড়ে, গবেষণা প্রস্তাবের নয়।
যদি ভুল নিবন্ধন-এর শব্দ ব্যবহার করেন, পাঠক ভাবতে পারেন আপনি আপনার ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার পদ্ধতি বুঝেন না, আর এতে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ৬: পাঠকের সাংস্কৃতিক পটভূমি মাথায় রেখে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকদের জন্য লিখলে বিশেষ যত্ন নিন। আপনার নিজের সংস্কৃতিতে স্পষ্ট শব্দ অন্য সংস্কৃতির পাঠকের কাছে ভুল বোঝাবুঝি বা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এমনকি ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকের ক্ষেত্রে ও এ সমস্যা হতে পারে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল মানে একটি আন্ডাকারাকৃতির বল নিয়ে গোল করার খেলা, আর ইংল্যান্ড, ভারত ও অনেক স্থানে ফুটবল মানে গোল নেটের মধ্যে গোল করার জন্য গোলাকার বল নিয়ে খেলা।
পাঠকের ভাষাগত দক্ষতা ভিন্ন, তাই নির্দেশিকাগুলো প্রয়োগ করুন যতটুকু তাদের জন্য প্রয়োজন।
'''আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের জন্য শব্দ বাছাইয়ের নির্দেশিকা:'''
১) সহজ শব্দ ব্যবহার করুন। যত বেশি জটিল শব্দ ব্যবহার করবেন, ইংরেজিতে অপ্রভৃত পাঠকের জন্য বোঝা কঠিন হবে।
২) একই বস্তু বা বিষয়ের জন্য একই শব্দ ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, কোনো যন্ত্রাংশের জন্য একবার “ডায়াল” আরেকবার “কন্টোল” বলবেন না, কারণ অনুবাদে ভিন্ন শব্দ হতে পারে।
৩) পাঠক না-জানার মতো সংক্ষিপ্ত শব্দ এড়িয়ে চলুন। যেমন AI (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা), ACL (পূর্ববর্তী ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট)।
৪) বাগধারা ও সালসলুকি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যেমন, "আমরা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই" বলার বদলে "আমরা চাই সিদ্ধান্তটা মোটামুটি করা হোক" বলুন।
সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য যেকোনো সংস্কৃতিতে অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিন আপনার শব্দ বাছাই পর্যালোচনার জন্য।
==='''নির্দেশিকা ৭: নৈতিক নির্দেশিকা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষা ব্যবহার করুন'''===
আপনার কণ্ঠস্বর গঠন করার সময় এমন ভাষা ব্যবহার করুন যা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে, কারো বঞ্চনা না করে। যেমন, লিঙ্গভিত্তিক বা পক্ষপাতপূর্ণ ভাষা এড়িয়ে চলুন কারণ তা নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থন করে। এটি নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হলেও, পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেমন নার্সিং পেশায়।
নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থনকারী ভাষা পাঠকদের সক্ষম মানুষের ক্ষমতা ও সাফল্যের প্রতি অন্ধ করে দিতে পারে। অক্ষমতা, অসুস্থতা বা অন্যান্য সীমাবদ্ধতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংবেদনশীল বর্ণনাও এড়াতে হবে।
'''অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষার ব্যবহার'''
১) লিঙ্গনিরপেক্ষ বিশেষ্য ও সর্বনাম ব্যবহার করুন, “man” শব্দযুক্ত শব্দের পরিবর্তে।
'''বদলে ব্যবহার করুন''': businessman, workman, mailman, salesman
'''ব্যবহার করুন''': businessperson, worker, mail carrier, sales person
'''বদলে ব্যবহার করুন''': man made, man hours, man-sized job
'''ব্যবহার করুন''': synthetic, working hours, large job
২) সাধারণ মানুষের জন্য লিঙ্গভিত্তিক সর্বনাম এড়িয়ে plural pronouns বা he or she ব্যবহার করুন।
'''বদলে বলুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. She looks for premium products and appreciates a stylish design."
'''ব্যবহার করুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. They look for premium products and appreciate a stylish design."
'''বদলে বলুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he might be wise to seek advice from a certified public accountant."
'''ব্যবহার করুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he or she might be wise to seek advice from a certified public accountant."
৩) পুরুষ ও নারীদের সমান মাত্রায় উল্লেখ করুন।
'''বদলে বলুন''': "Mr. Sundquist and Anna represented us at the trade fair."
'''ব্যবহার করুন''': "Mr. Sundquist and Ms. Tokagawa represented us at the trade fair" অথবা "Christopher and Anna represented us at the trade fair."
৪) পত্রের শুভেচ্ছা শুরুতে লিঙ্গভিত্তিক সম্বোধন এড়ান।
'''বদলে বলুন''': Dear Sir, Gentlemen
'''ব্যবহার করুন''': সংশ্লিষ্ট বিভাগের নাম, কোম্পানির নাম বা ব্যক্তির পদবী ব্যবহার করুন: Dear Personnel Department, Dear Switzer Plastics Corporation, Dear Director of Research
৫) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বর্ণনায় প্রথমে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করুন, তারপর প্রতিবন্ধকতার কথা।
'''বদলে বলুন''': the disabled, mentally retarded people
'''ব্যবহার করুন''': people with disabilities, people with mental retardation
== “মিস," "মিসেস," এবং "মিসেস” সম্পর্কে ==
অনেকেই নিশ্চিত নন ঐতিহ্যবাহী “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করবেন কি না, নাকি আধুনিক “সুশ্রী.” ব্যবহার করবেন। “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করলে মনে হতে পারে কোনো নারীর বৈবাহিক অবস্থা তার কাজের দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরুষদের ক্ষেত্রে সব সময় “জনাব.” ব্যবহার হয়, বৈবাহিক অবস্থা নির্বিশেষে। অন্যদিকে, কিছু নারী “মিস” বা “মিসেস.” পছন্দ করেন। ব্যক্তির পছন্দ জানা থাকলে সেটাই অনুসরণ করুন। না জানা থাকলে আধুনিক এবং লিঙ্গপক্ষপাত মুক্ত শব্দ ""সুশ্রী"" ব্যবহার করুন, যা আজকাল কর্মক্ষেত্রে স্বীকৃত।
=উপসংহার=
লিখনশৈলী সুগঠিত করা সফল, প্রযুক্তিগত ও পেশাগত লেখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কণ্ঠস্বর, বাক্যগঠন এবং শব্দ নির্বাচনের প্রতি যত্নবান হলে আপনি পাঠকদের সঙ্গে ভাল সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন এবং তাদের লেখা গুরুত্বসহকারে নেবার জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারবেন।
{{BookCat}}
3hwx31r7vxsjdh4ttjn3ejwskszvhlh
আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত
1
26346
85608
82010
2025-07-03T17:34:20Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড]] কে [[আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
82010
wikitext
text/x-wiki
{{আলাপ পাতা}}
{{আলাপ পাতা/উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫}}
8vxn9zum7n3tju9ayrerhr25vm4kljv
জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ
0
26475
85595
82560
2025-07-03T16:40:35Z
NusJaS
8394
/* যোদ্ধা (বুশি) শ্রেণির সূচনা */
85595
wikitext
text/x-wiki
আমি এই পর্বের শুরু গণ্য করি কাম্মু তেন্নো-র মৃত্যুর (৮০৬ খ্রি.) পর থেকে ফুজিওয়ারা নো তোকিহিরা-র মৃত্যুর (৯০৯ খ্রি.) সময় পর্যন্ত। যদিও এ সময়সীমার সমাপ্তির জন্য একাধিক সম্ভাব্য পয়েন্ট রয়েছে, এই সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়াকে এক অর্থে টেন্চি তেন্নো এবং তেম্মু তেন্নো কর্তৃক আসুকা যুগে প্রবর্তিত শাসনব্যবস্থা ও সামাজিক সংগঠনের মডেল পুনরুজ্জীবিত করার শেষ প্রচেষ্টার সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ স্পষ্টভাবে নারা যুগের ধারাবাহিকতা ছিল, কারণ এই সময় জুড়েই সরকার ৬৯৪ ও ৭০১ সালের আইন-সংহিতায় প্রবর্তিত "রিতসু-রিও" ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। অন্যদিকে, নারা যুগের তুলনায় প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগে সরকার নতুন যে সব পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে পারেনি, সেগুলো ধীরে ধীরে সমাজকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে ঠেলে দিয়েছিল—একটি পথ, যা শেষ পর্যন্ত মধ্যযুগীয় যুগের সামন্ততান্ত্রিক সমাজে রূপান্তরিত হয়।
এই সময়ের সমস্যাগুলোকে মোটামুটি তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
প্রথমত ছিল শোয়েন ব্যবস্থার বিকাশ ও বিস্তার। শোয়েন বলতে এমন এক ধরনের আইনি ভূমি মালিকানাকে বোঝায়, যা জমির পুনর্বণ্টন ব্যবস্থা ও কর আদায়ের আওতাভুক্ত "সরকারি" জমি থেকে পৃথক হয়ে আংশিকভাবে করমুক্ত এবং প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত "ব্যক্তিগত" জমিতে পরিণত হতো। নারা যুগে শোমু তেন্নো টোদাইজি মন্দির নির্মাণের জন্য প্রথম শোয়েন তৈরি করেন। কিন্তু এই ব্যবস্থা হেইয়ান যুগেই এমন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়, যা মূল শাসনব্যবস্থার অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগের শেষ নাগাদ শোয়েনগুলো "সরকারি" জমি থেকে প্রাপ্ত করের পরিবর্তে রাজধানীর শাসক শ্রেণির মূল অর্থনৈতিক ভিত্তি হয়ে উঠতে শুরু করে। কর তখনও আদায় হতো, কিন্তু তা আর রাষ্ট্রের বাজেট অনুযায়ী ব্যয় হতো না; বরং গভর্নর এবং তার অধস্তন কর্মকর্তাদের হাতে ব্যক্তিগত আয়ের মতো সরাসরি প্রবাহিত হতো।
দ্বিতীয় প্রধান বিষয় ছিল শাসক-পদপ্রথার (রিজেন্সি সিস্টেম) বিকাশ। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগে দীর্ঘ সময় ধরে সম্রাটীয় পরিবার সরকারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুজিওয়ারা বংশের হাতে ক্ষমতা চলে যায়। এর প্রাতিষ্ঠানিক দিকটি ছিল সেশ্শো ও কাম্পাকু নামক পদদ্বয়ের সৃষ্টি। উভয় পদই "রিজেন্ট" হিসেবে অনূদিত হয়—সেশ্শো যখন সম্রাট নাবালক এবং কাম্পাকু যখন প্রাপ্তবয়স্ক হন—কিন্তু উভয়ের কার্যক্ষমতা ছিল সমান: সম্রাটের পরিবর্তে নিজের নামে নির্বিচারে রাজাদেশ জারি করার ক্ষমতা। এর সামাজিক ভিত্তি নিহিত ছিল অভিজাত বংশের বিবাহপ্রথায়, যেখানে কন্যারা বিবাহের পরও পিতার গৃহে থাকতেন এবং সন্তানরাও সেখানেই প্রতিপালিত হতো। শিশু কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক হলেই পিতার নিয়ন্ত্রণে আসতো। ফলে একজন পুরুষের সঙ্গে তার শ্বশুরের সম্পর্ক তার নিজের পিতার চেয়ে ঘনিষ্ঠ হতো, এবং একটি পুত্র সন্তান মূলত দাদার অধীনেই বড় হতো। ফুজিওয়ারা রিজেন্ট সাধারণত সম্রাটের দাদা, অথবা দাদা না থাকলে মামা হতেন। কখনও যদি এমন কোনো সম্রাট সিংহাসনে আরোহণ করতেন যিনি ফুজিওয়ারা বংশের নাতি না হতেন, তবে ফুজিওয়ারা আধিপত্য ভাঙার সম্ভাবনা থাকতো—যা শেষ পর্যন্ত ঘটেছিল, যদিও এই আলোচিত সময়ে নয়।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ছিল প্রাদেশিক অভিজাতদের জীবনধারায় রূপান্তর, যার ফলে তারা রাজধানীর অভিজাতদের থেকে অনেক বেশি স্বতন্ত্র এবং নিজ নিজ অঞ্চলে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এর একটি দিক ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—এই শ্রেণির সামরিকীকরণ, যার ফলে গড়ে ওঠে পরবর্তী কালের বুশি বা সমুরাই নামে পরিচিত সামাজিক শ্রেণি। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগে সমুরাই শব্দটির অর্থ ছিল "পরিচারক" এবং এতে সামরিক কিংবা উচ্চ মর্যাদার কোনো ইঙ্গিত ছিল না। বরং তখন বেশি ব্যবহৃত হতো রোদো শব্দটি, যার অর্থও ছিল পরিচারক। যখন প্রাদেশিক অভিজাতরা নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠনে উদ্যোগী হন, তারা তাদের কৃষক ও পরিচারক রোদোদের অস্ত্রে সজ্জিত করেন। এই রোদোরা তাদের প্রভুর দ্বারা বাসস্থান, খাদ্য ও অস্ত্রসজ্জা পেতেন এবং সামাজিক মর্যাদায় নীচু ছিলেন, কিন্তু কালক্রমে তারাই উন্নীত হয়ে ভবিষ্যতের আত্মগর্বিত সমুরাই শ্রেণিতে পরিণত হন। এই বিবর্তনের প্রাথমিক পর্যায় নিয়ে আমাদের হাতে কিছু মূল্যবান তথ্যসূত্র আছে, বিশেষ করে নবম শতকের শেষভাগে জাপানি ভাষায় গদ্য সাহিত্য উদ্ভবের ফলে।
==রাজনৈতিক ইতিহাসের রূপরেখা==
এই সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাসকে তিনটি স্পষ্ট পর্যায়ে ভাগ করা যায়।
৮০৯ সাল থেকে প্রাক্তন সম্রাট সাগার মৃত্যুর (৮৪২) পূর্ব পর্যন্ত কাম্মুর পুত্রগণ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে ছিলেন। সম্রাট হেইজেই ও সাগা সম্পূর্ণরূপে সরকার পরিচালনা করেন। সম্রাট জুন্না ও নিম্মিও অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন এবং সাগার কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করার কোনো প্রচেষ্টা করেননি।
৮৪২ সালে সাগার মৃত্যুর পর, নিম্মিও তেন্নো সরকার পরিচালনার দায়িত্ব ফুজিওয়ারা ইয়োশিফুসার হাতে তুলে দেন। ইয়োশিফুসা তার প্রভাবকে "শাসক প্রতিনিধি" নামক নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় রূপান্তর করেন। ৮৫৭ সালে তিনি দাইজৌদাইজিন উপাধি গ্রহণ করেন, যা ডকিওর পর থেকে শূন্য ছিল। ৮৬৬ সালে তিনি নতুন একটি উপাধি "সেশ্শো" উদ্ভাবন করেন, যার অর্থ রিজেন্ট। ৮৬২ সালে তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী মোতোসুনে এই ক্ষমতা ধরে রাখেন। ৮৮৭ সালে মোতোসুনে "কাম্পাকু" নামক আরেকটি উপাধি চালু করেন, যা প্রাপ্তবয়স্ক সম্রাটের পক্ষে রিজেন্সিকে নির্দেশ করে। মোতোসুনের মৃত্যুর (৮৯১) পরে রিজেন্সি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
৮৯১ সাল থেকে এই যুগের শেষ পর্যন্ত সম্রাট উদা তেন্নো কার্যকর শাসক হিসেবে আধিপত্য করেন। তিনি মোতোসুনের মৃত্যুর পর নতুন কোনো রিজেন্ট নিয়োগ না করেই শাসন চালিয়ে যান এবং সফলভাবে ক্ষমতা তার পুত্র সম্রাট দাইগোর হাতে হস্তান্তর করেন।
===কাম্মুর পুত্রগণ===
কাম্মু তেন্নোর রাজত্বকালে তিনি নিরঙ্কুশভাবে সরকার পরিচালনা করতেন। তিনি সচেতনভাবে অনেক সংগি স্তরের পদ খালি রাখেন এবং পুরো শাসনকালে শুধুমাত্র একজন "উচ্চমন্ত্রী" (উদাইজিন) নিযুক্ত করেন, যিনি ফুজিওয়ারা বংশেরই ছিলেন। কিছু সূত্র মতে, তিনি উত্তরাধিকার পদ্ধতিতে প্রাচীন প্রথা পুনঃপ্রবর্তনের চেষ্টা করেন, যেখানে প্রজন্ম ধরে উত্তরাধিকারী নির্ধারিত হতো। একটি যোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক উত্তরসূরি না থাকলে, রাজা মারা গেলে তার ভাই সিংহাসনে আরোহণ করতেন। এর একটি সুবিধা ছিল, রাজপরিবারের বিভিন্ন শাখার সদস্যরা সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে উচ্চ মর্যাদা পেতেন, যা থেকে দক্ষ শাসক নির্বাচন সহজ হতো। অবশ্য, এর ফলে উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও বৃদ্ধি পেত।
কাম্মুর মৃত্যুর পর, তার পুত্র প্রিন্স আতেই (হেইজেই তেন্নো) রাজা হন এবং দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স কামিনো (সাগা তেন্নো) উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত হন। হেইজেই ৩৩ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সরকার বেশ সক্রিয় হয়। পরিদর্শকদের পাঠানো হয়, যারা সরকারি সেচব্যবস্থা থেকে পানি চুরি করে ব্যক্তিগত জমিতে ব্যবহারের ঘটনা অনুসন্ধান করে। একই বছর, একটি ফরমান জারি করা হয় যাতে কেউ নতুন মন্দির স্থাপন করে তা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার না করতে পারে।
ফুজিওয়ারা বংশের তিনটি শাখা রাজদরবারে সক্রিয় ছিল এবং তারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। একসময় চারটি শাখা থাকলেও, ফুজিওয়ারা নাকামারোর শাখা বাতিল হয়ে যায়। প্রিন্স ইয়ো, সম্রাটের ভাই, ছিলেন ফুজিওয়ারা কোরেকিমির নাতি ও ফুজিওয়ারা ওতোমোর ভাগ্নে। তারা "শিকি" শাখার অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। বর্তমান উদাইজিন ছিলেন ফুজিওয়ারা উচিমারো, "উত্তর" শাখার। প্রিন্স ইয়ো ছিলেন রাজপ্রাসাদের প্রশাসক, একটি জ্যেষ্ঠ পদ। ওতোমো ছিলেন "দক্ষিণ" শাখার প্রধান ও সংগির সদস্য।
আধিকারিক ইতিহাস মতে, ওতোমো উচিমারোকে জানান যে মুনেনারি নামক এক দক্ষিণ শাখার সদস্য গোপনে প্রিন্স ইয়ো-কে বিদ্রোহের জন্য প্ররোচিত করেছেন। প্রিন্স ইয়ো এ বিষয়ে অবগত হয়ে সম্রাটকে অভিযোগ করেন। মুনেনারিকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং তিনি দাবি করেন যে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন প্রিন্স ইয়ো। ফলস্বরূপ, প্রিন্স ইয়ো ও তার মা (কোরেকিমির কন্যা) আত্মহত্যা করেন। মুনেনারিকে নির্বাসনে পাঠানো হয়, এবং ওতোমোকেও পদচ্যুত করে নির্বাসিত করা হয়। এতে দক্ষিণ শাখার রাজনৈতিক প্রভাব কার্যত বিলুপ্ত হয়। এই ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি দেখায় যে হেইজেই তার পিতার মতো যেকোনো হুমকি কঠোরভাবে দমন করতেন।
৮০৯ সালের প্রথমদিকে হেইজেই তার ভাই সাগার অনুকূলে সিংহাসন ত্যাগের ঘোষণা দেন। তার নিজ পুত্র প্রিন্স তাকাওকাকে উত্তরাধিকারী নিযুক্ত করা হয়। হেইজেই অসুস্থতার অজুহাতে পদত্যাগ করেন, তবে ধারণা করা হয় তিনি মৃত্যুর আগে নিজের পুত্রদের সিংহাসনের বাইরে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পদত্যাগ করেন।
পরবর্তী কয়েক মাসে প্রাক্তন সম্রাট পাঁচবার বাসস্থান পরিবর্তন করেন "ভালো ফেং-শুই" অনুসন্ধানে। শেষে তিনি নারা ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং বছরের শেষে একটি ধারকৃত বাড়িতে উঠে যান। একই সময়ে সাগা তেন্নো-ও অসুস্থ হয়ে পড়েন, যার ফলে নববর্ষের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। তখনই কাম্মুর আমলে প্রতিষ্ঠিত 'কুরোদো' অফিস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়, যা সাগা নিজ বাসস্থান থেকেই কাজ চালাতে সক্ষম হন এবং এটি পরবর্তীকালে স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
৮১০ সালের ৯ম চন্দ্রমাসের ৬ষ্ঠ দিনে হেইজেই একটি ফরমান জারি করেন যাতে হেইয়ানক্যো বাতিল করে রাজধানী হিসেবে নারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সাকানোউয়ে তামুরামারো ও ফুজিওয়ারা ফুয়ুতসুগুকে সাগা তেন্নোর দেহরক্ষী নিযুক্ত করেন। এটি একটি ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতও হতে পারে। ১০ম দিনে সাগা এই ফরমান বাতিল করেন এবং সেনা তলব করেন। হেইজেই পালাতে চাইলেও সেনাদের দেখে ভয় পেয়ে ফেরত যান এবং ভিক্ষু হয়ে মাথা মুণ্ডন করেন। কোনো যুদ্ধ হয়নি। হেইজেই ও তার সঙ্গীরা নির্বাসিত হন। হেইজেই আরও ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন। তার পুত্র সিংহাসন হারান এবং পরিবর্তে জুন্না তেন্নো মনোনীত হন। পরবর্তী উত্তরাধিকার সাগার পুত্র নিম্মিওর মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। সাগা পরে নারা নগর ধ্বংসের নির্দেশ দেন যাতে এটি আর বিদ্রোহের কেন্দ্র না হয়। যদিও আনুষ্ঠানিক শহরটি ধ্বংস হয়, মন্দির-কেন্দ্রিক অঞ্চল পরবর্তীকালে আধুনিক নারা শহরে পরিণত হয়।
এই ঘটনাটি ইতিহাসবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও এর বিস্তারিত তথ্য কম। ধারণা করা হয়, হেইজেই মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন এবং সিংহাসন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। তবে সাগা সুস্থ হয়ে দীর্ঘকাল শাসন করেন (৮২৩ সালে পদত্যাগ এবং ৮৪২ সালে মৃত্যু পর্যন্ত)। তিনি কট্টর দায়িত্বশীল শাসক হিসেবে পরিচিত এবং কাম্মুর নীতিগুলোরই ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন।
তবে সমস্যা ছিল। ৮১০ ও ৮২৮ সালে (জুন্নার নামে) জমি পুনঃবণ্টন কার্যক্রম হলেও কাম্মুর নির্ধারিত ১২ বছর অন্তর চক্র অনুসরণ হয়নি। সম্ভবত এগুলো কেবল রাজধানীর নিকটবর্তী অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। ৮৪৪ সালে আদমশুমারি হলেও জমি পুনঃবণ্টন হয়নি। ৮৭৯ সালের পূর্বে পুনরায় এমন প্রচেষ্টা দেখা যায় না। মনে করা হয়, এই পদ্ধতি পরিত্যক্ত হয় কারণ নিবন্ধনপত্রগুলোর মূল উদ্দেশ্যই ছিল জমি বণ্টন।
এটি সরকারকে কৃষিকাজ থেকে বিযুক্ত করেনি। ৮৪১ সালে ইয়ামাতোর উডা জেলার কৃষকদের উদ্ভাবিত ধান শুকানোর কাঠের মাচার সুপারিশ করে একটি ফরমান জারি করা হয়। ৮২৯ সালে সেচ পাম্প চালাতে চীনা উদ্ভাবিত জলচক্র ব্যবহারের সুপারিশও করা হয়। ফসল কম হওয়ায় সরকার কৃষকদের একাধিক ফসল (বাজরা, হিয়েমুগি, কিবি প্রভৃতি) চাষে উৎসাহিত করে, কিন্তু কৃষকেরা তা উপেক্ষা করেন। ফিউডাল যুগেই একাধিক ফসলের চাষ সাধারণ হয়ে ওঠে।
সাগা তেন্নো প্রশাসনিক কোড সংশোধনের উদ্দেশ্যে একটি অফিসিয়াল সংকলন সম্পন্ন করেন। এগুলোর মধ্যে "ক্যাকু" ছিল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এবং "শিকি" ছিল আইনগত ব্যাখ্যা। ৮২০ সালে ১০ খণ্ডের ক্যাকু ও ৪০ খণ্ডের শিকি সম্পন্ন হয় এবং দশ বছর ধরে তা বিতরণ করা হয়। ৮২১ সালে ফুজিওয়ারা ফুয়ুতসুগু সাগার ফরমানগুলোর সংকলন করেন এবং ৮৩৩ সালে ১০ খণ্ডের রিও নো গিগে রচনা করা হয়। এই সময়ই ৭১৮ সালের ইয়োরো বিধিবদ্ধ সংহিতা কপি করা হয়, যার মাধ্যমে আজও তা আংশিকভাবে সংরক্ষিত আছে। "জাতীয় ইতিহাস" রচনাও চালু থাকে। ৮১৯ সালে শোকু নিহোঙ্গি-র ধারাবাহিক রচনার নির্দেশ দেন সাগা, যা ৮৪০ সালে নিহোন কোকি নামে ৪০ খণ্ডে সম্পন্ন হয় (বর্তমানে মাত্র ১০টি খণ্ড অবশিষ্ট)।
সাগার সময়ের আরেকটি নতুন সংযোজন ছিল কেবিশি অফিস। রাজধানীতে আগে থেকেই ছয়টি সেনাদল ছিল, যা প্রাসাদ পাহারা ও গেট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। কেবিশি ছিল নগর পুলিশের মতো। ৮৩৭ সালে বন্যার সময় তারা শৃঙ্খলা বজায় রাখে এবং ৮৩৯ সালে সকল পুলিশি কার্যক্রম তাদের অধীনে আনা হয়। ৮৫০ সাল নাগাদ তারা কারাগার পরিচালনা করে এবং ৮৫৭ সালে দুইজন শিরচ্ছেদকারী নিযুক্ত হয়। ৮৩০-এর দশকে কিয়োতোতে অপরাধ বেড়ে গেলে তারা অপরাধ দমনেও নিযুক্ত হয়। তবে সাফল্য সীমিত ছিল — ৮৩৭ সালে দুইজন নারী চোর প্রাসাদে চুরি করতে গিয়ে সম্রাটের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সাগা তেন্নো সিংহাসন ত্যাগ করেছিলেন যখন তাঁর বয়স ছিল ৩৮। তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী ফুজিওয়ারা ফুয়ুতসুগু এর বিরোধিতা করেছিলেন এই যুক্তিতে যে সরকার দুইটি প্রাসাদ ও দুইজন সম্রাটের খরচ বহন করতে পারবে না। কিন্তু সাগা জোর দিয়ে ত্যাগ করেন। তিনি প্রশাসনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন এবং কোমল স্বভাব ও বিদ্বান জুন্না তেন্নো এর বিরোধিতা করেছেন এমন কোনো প্রমাণ নেই। জুন্না সিংহাসন ত্যাগ করেন সাগার পুত্র মাসায়োশি যথেষ্ট বড় হয়ে সম্রাট হওয়ার পরপরই, এবং এরপর তাঁর নিজের পুত্র সুনেসাদা রাজপুত্র হিসেবে মনোনীত হন। ফুজিওয়ারা ফুয়ুতসুগুর উদ্বেগ সঠিকই ছিল, কারণ সাগা ও জুন্না (পরবর্তীতে নিম্মিওও) বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন এবং প্রায়ই ব্যয়বহুল পার্টির আয়োজন করতেন।
সাগা তেন্নো দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন এবং বহু স্ত্রী ছিল। এর ফলে তাঁর প্রায় ৫০ জন সন্তান জন্মেছিল। এত সংখ্যক সন্তান থাকার কারণে, তিনি নিম্নস্তরের মায়েদের সন্তানদের নিয়ে একটি নতুন গোত্র গঠন করেন — মিনামোতো। পরবর্তীতে কয়েকজন সম্রাট এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেন, যার ফলে একাধিক মিনামোতো ও তাইরা গোত্রের উৎপত্তি ঘটে। সাগা থেকে আগত মিনামোতোদের পরবর্তীতে "সাগা গেনজি" নামে ডাকা হয়। "গেনজি" হলো মিনামোতো গোত্রের চীনা উচ্চারণ। এই সাগা গেনজিদের মধ্যে অনেকে নিম্মিওর শাসনকাল থেকে রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাঁদের অতি অল্প বয়সেই উচ্চপদে নিয়োগ দেওয়া হতো। যেমন, মিনামোতো তোকিওয়া মাত্র ২৯ বছর বয়সে উদ্যাইজিন (উজির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী) পদে আসীন হন, যেখানে সাদাইজিন (উজির প্রধান মন্ত্রী) ছিলেন ৬৯ বছর বয়সী ফুজিওয়ারা ওৎসুগু। অথচ ভবিষ্যতের স্বৈরশাসক ফুজিওয়ারা ইয়োশিফুসা তখন মাত্র ৩৭ বছর বয়সে চুনাগন (মাঝারি স্তরের মন্ত্রী) ছিলেন।
কাম্মু ও হেইজেইর শাসনকালে উচ্চপদে নিযুক্ত অধিকাংশ ব্যক্তি সাধারণত নীচু পর্যায়ের কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছিলেন, যা তাঁদেরকে সাধারণ জনজীবনের সংস্পর্শে এনেছিল। প্রায়শই তাঁদের মাঠপর্যায়ে সামরিক অফিসার বা প্রাদেশিক গভর্নর হিসেবে কাজ করতে হতো। এই সময়ের এক সাংগি (উচ্চপদস্থ সভাসদ) ওনো মিনেমোরি, দাজাইফুতে কাজ করেছিলেন এবং সেখানে কর্বে (কর-পরিশোধকারী) শ্রমিকদের জন্য পথিমধ্যে ব্যবহারের উপযোগী হোস্টেলের শৃঙ্খল গড়ে তুলেছিলেন। তিনি কিউশু অঞ্চলে কুয়েইদেন নামক একটি পরীক্ষামূলক ব্যবস্থার সাথেও যুক্ত ছিলেন। এটি ছিল একটি প্রকল্প যার উদ্দেশ্য ছিল সরকার সরাসরি কৃষিকাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কিনা তা যাচাই করা। সরকার একটি নির্দিষ্ট জমি এবং চাষীদের বরাদ্দ দেয়। এরপর সরকার শ্রমিকদের খাদ্য ও সমস্ত ব্যয় বহন করে, সম্পূর্ণ ফসল সংগ্রহ করে, সেখান থেকে কর ও ব্যয় পরিশোধ করে এবং অবশিষ্ট অংশ লাভ হিসেবে রাখে। লক্ষ্য ছিল কৃষক ও সরকারের মধ্যে সম্পদ ভাগাভাগি করে স্থানীয় অভিজাতদের প্রভাব হ্রাস করা, যারা সাধারণত অধিকাংশ লাভ আত্মসাৎ করত। শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়করাও কৃষক শ্রেণির হলেও অতিরিক্ত পারিশ্রমিক পেতেন। প্রকল্পটি সফল বলে বিবেচিত হলেও এটি আর অনুসরণ করা হয়নি। ওনো মিনেমোরির মতো কেউ যখন উচ্চপদে পৌঁছাতেন, তখন তিনি বাস্তব জগতের ভালো ধারণা রাখতেন। কিন্তু মিনামোতো তোকিওয়া’র মতো কেউ, যিনি প্রাসাদের বিলাসময় পরিবেশ থেকে সরাসরি উচ্চ পদে নিযুক্ত হন, তাঁর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।
৮৪২ সাল একটি বড় পরিবর্তনের সূচক, কারণ এ বছরই সিংহাসন ত্যাগকারী সাগা সম্রাটের মৃত্যু ঘটে, যিনি ৮০৯ সালে সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে সরকারে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। জুন্না দুই বছর আগেই মৃত্যুবরণ করেন এবং নিম্মিও তেন্নো একাই শাসন করছিলেন। কিন্তু তিনি এই দায়িত্ব সামলাতে অক্ষম ছিলেন এবং শাসনক্ষমতা দ্রুতই ফুজিওয়ারা ইয়োশিফুসার হাতে চলে যায়। তিনি তখন উচ্চপদস্থ হলেও শীর্ষস্থানীয় ছিলেন না, কিন্তু খুব দ্রুতই উচ্চমাত্রার ষড়যন্ত্রমূলক দক্ষতা প্রদর্শন করেন এবং এরপর দীর্ঘ সময় ধরে সহজেই তাঁর কর্তৃত্ব বজায় রাখেন। স্পষ্টতই, তিনি জানতেন তিনি কী করছেন।
=== প্রথম ফুজিওয়ারা শাসনকাল ===
সাগা সম্রাটের মৃত্যুর আট দিন পর নিনম্যো সম্রাট সুনেসাদাকে গ্রেফতার করে তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করেন। অনেক সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদচ্যুত করা হয় এবং অন্যদের উন্নীত করে তাদের জায়গায় বসানো হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন ফুজিওয়ারা ইয়োশিফুসা। এক মাস পরে নিনম্যো সম্রাটের পুত্র প্রিন্স মিচিয়াসুকে যুবরাজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার সবচেয়ে অদ্ভুত দিকটি হল যে সুনেসাদাকে হত্যা করা হয়নি। হেইজেই সম্রাটের মতো তাকেও বেঁচে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এটি লক্ষণীয় যে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উভয় যুবরাজ, সুনেসাদা এবং মিচিয়াসুর মা-ই ছিলেন ফুজিওয়ারা বংশীয়। তবে সুনেসাদার মা ইয়োশিফুসার প্রতিদ্বন্দ্বী এক শাখার সদস্যা ছিলেন, আর মিচিয়াসুর মা ছিলেন ইয়োশিফুসার বোন।
ইয়োশিফুসা ছিলেন সাদাইজিন ফুজিওয়ারা ফুয়ুৎসুগুর দ্বিতীয় পুত্র। তবে ফুয়ুৎসুগু ইয়োশিফুসা তরুণ থাকাকালেই মারা যান, ফলে তিনি কেবল একজন মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন যাঁর ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল ছিল না। তাকে যখন যুবরাজের প্রাসাদে কাজ করার জন্য নিযুক্ত করা হয়, তখন তার সাথে ভবিষ্যতের নিনম্যো সম্রাটের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। নিনম্যো সম্রাট হওয়ার পর ইয়োশিফুসার দ্রুত উত্থান শুরু হয়। যখন মিচিয়াসুকে যুবরাজ করা হয়, তিনি তখন বিবাহিত এবং তাঁর তিন সন্তান ছিল, যাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিলেন প্রিন্স কোরেতাকা। ৮৪৩ সালে ইয়োশিফুসা তাঁর কন্যাকে এই পরিবারে বিবাহের মাধ্যমে প্রবেশ করাতে সক্ষম হন। এই কন্যা ছিলেন সাগা সম্রাটের নাতনি, কারণ ইয়োশিফুসা একসময় সম্রাটের কন্যাকে বিয়ে করতে সক্ষম হন—সেই সময়ে যা কেবল ফুজিওয়ারা অভিজাতদের জন্যই অনুমোদিত ছিল। এই কন্যা অল্প সময়ের মধ্যেই একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন, যে পরে ইয়োশিফুসাকে রাজনৈতিকভাবে লাভবান করে তোলে।
নিনম্যো সম্রাটের রাজত্ব সফল ছিল না। ৮৪৪ সালে ভূমি বিতরণের জন্য সমস্ত নথি ও মানচিত্র প্রস্তুত করা হয়েছিল, কিন্তু এটি আর কখনও বাস্তবায়িত হয়নি। কেন তা হয়নি সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। পরবর্তী ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আর কোনো চেষ্টা হয়নি। রাজধানীর জীবনমান দৃশ্যতই অবনতি ঘটছিল। সর্বত্র চোর এবং ডাকাতদের উপদ্রব ছিল, এবং প্রায়ই অগ্নিকাণ্ড ঘটত। মনে হয় চোরেরা প্রায়শই আগুন লাগিয়ে বিপদ সংকেত দিত, এবং যখন গৃহবাসীরা এক পাশ দিয়ে পালাতো, তখন অন্য পাশ দিয়ে চোরেরা ঢুকে পড়ে লুটপাট করত। মাঝে মাঝে এ জাতীয় আগুন ছড়িয়ে পড়ে শহরের বড় অংশ ধ্বংস করে দিত। কেবিইশি এই সমস্যার মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায়, কিছু সময়ের জন্য নিয়মিত প্রহরীদের প্রাসাদের আশপাশে রাস্তার টহলে মোতায়েন করা হয়।
নিনম্যো ৮৫০ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত্যুর দুই দিন আগে তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুর শপথ গ্রহণ করেন। তাঁর বয়স তখন মাত্র ৪১। তাঁর মা বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী হন এবং তাঁর দুই ভাই বৌদ্ধ ভিক্ষু হন। এটি ছিল নজিরবিহীন, কারণ কাম্মু সম্রাট এবং তাঁর তিন পুত্র সবাই প্রকাশ্য কনফুসিয়ান ছিলেন। তাঁরা কবিতা লিখলে তা চীনা ভাষায় লিখতেন। তবে এই সময়ে সাধারণ মানুষ এবং অভিজাতদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব স্পষ্টভাবে বেড়ে যাচ্ছিল। এটি প্রখ্যাত ভিক্ষু কুকাইয়ের (যিনি পরে সাধুর মর্যাদা পান) সঙ্গে যুক্ত হলেও, এর পরিধি কেবল একজন ব্যক্তির প্রভাবের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। এই সময় থেকে রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়া সাধারণ হয়ে ওঠে এবং বহু অভিজাতও জীবন সায়াহ্নে সরকারি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার প্রতীক হিসেবে সন্ন্যাস গ্রহণ করতে থাকেন।
মন্তোকু সম্রাট যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ২৪। ইয়োশিফুসার কন্যার মাধ্যমে তাঁর যে পুত্র জন্মেছিল, তাকে সঙ্গে সঙ্গে এক বছর বয়সে যুবরাজ ঘোষণা করা হয়। এটি ছিল সম্পূর্ণ নজিরবিহীন, বিশেষ করে কাম্মু সম্রাট যে উত্তরাধিকার ব্যবস্থার চেষ্টা করেছিলেন তার পরিপন্থী। যেহেতু সাগা সম্রাটের প্রায় ৫০ জন সন্তান ছিল, তাই নিনম্যোর কোনো ভাইকে সম্রাট হিসেবে নিযুক্ত করতে কোনো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে আমরা আবার সেই পরিস্থিতিতে ফিরে এসেছি, যেমনটা সোগা আধিপত্য বা নারা যুগে মাঝে মাঝে দেখা গিয়েছিল, যখন দরবারে প্রভাবশালী অভিজাত পরিবারই উত্তরাধিকার নির্ধারণ করত। অবশ্য, কেউই আশা করেননি যে মন্তোকু সম্রাট অল্পবয়সে মারা যাবেন, তবে ঝুঁকিটি ছিল স্পষ্ট। সে সময় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন মিনামোতো তোকিওয়া এবং দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন ইয়োশিফুসা। তবে তোকিওয়া ৮৫৪ সালে মারা যান।
এই সময়ে সরকারের প্রধান সমস্যা ছিল কর রাজস্বের দ্রুত পতন। এর প্রতিক্রিয়ায় কৃষির দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে একাধিক ফরমান জারি করা হয়। প্রকৃত কারণ ছিল শোয়েন ব্যবস্থার বিস্তার এবং কর নিবন্ধন থেকে জমি প্রত্যাহার। সরকার ভূমি পুনর্বিতরণের প্রয়াসে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এবং সাগার শাসনকালে পরীক্ষামূলক সরাসরি চাষ ব্যবস্থার অনুসরণও করেনি।
৮৫৭ সালে দেশজুড়ে অসন্তোষের বিভিন্ন উদাহরণ দেখা যায়। জাপানের দ্বীপ ও প্রদেশ তসুশিমায়, ৩০০ জনের একটি জনতা, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা, গভর্নরের বাসভবনে হামলা চালিয়ে সেটি পুড়িয়ে দেন এবং গভর্নরসহ ১৬ জনকে হত্যা করেন। অন্য কিছু স্থানে স্থানীয় জনগণ শাসনের বিরুদ্ধে পিটিশন পাঠিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেন। একই বছরে ইয়োশিফুসাকে দাইজোডাইজিন পদে নিযুক্ত করা হয়, যা ৭৬৫ সালে সন্ন্যাসী ডোকিওর পরে প্রথমবার কাউকে দেওয়া হলো। এটি সম্ভবত সংকট মোকাবিলার একটি প্রচেষ্টা ছিল। মন্তোকুর এই নিয়োগ সংক্রান্ত ফরমানটি সরাসরি উল্লেখ করে যে ইয়োশিফুসা ছিলেন তাঁর আত্মীয়। এটি সম্ভবত সেই রিজেন্সির (শাসনপ্রতিনিধিত্বের) একটি সূচনা যা শীঘ্রই শুরু হয়। কয়েক মাস পরে সম্রাট গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৮৫৮ সালের ৮ম মাসে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে মারা যান। ধারণা করা হয় তিনি সবসময়ই শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন এবং খুব কমই প্রাসাদের বাইরে যেতেন। তাঁর পুত্র সিংহাসনে বসে সেইওয়া সম্রাট হন। তাঁর বয়স ছিল ৯, যা পূর্বের সর্বনিম্ন রেকর্ড (মোম্মু সম্রাট, ১৫ বছর বয়সে) ভেঙে দেয়।
অল্প বয়স সত্ত্বেও সেইওয়া সম্রাটের আগে থেকেই একজন ফুজিওয়ারা স্ত্রী ছিলেন, যাঁর পিতা ছিলেন ইয়োশিফুসার ছোট ভাই নাগায়োশি। এই নারী পরে ইয়োযেই সম্রাটের মা হন। নাগায়োশি ছিলেন ইয়োশিফুসার উত্তরসূরি মোতোৎসুনের পিতাও। ইয়োশিফুসার কোনো পুত্র ছিল না, এবং তাঁর কোনো অতিরিক্ত কন্যাও ছিল না যাকে সেইওয়া সম্রাটকে বিয়ে দেওয়া যেত। আনুষ্ঠানিক বংশানুক্রমে মোতোৎসুনে ইয়োশিফুসার পুত্র হিসেবে গণ্য হলেও তিনি ছিলেন পালিত সন্তান।
৮৬২ সালে একটি অদ্ভুত ফরমান জারি করা হয়, যেখানে বলা হয়, মোটামুটি, সবকিছু ভয়াবহ অবস্থায় আছে এবং সমস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। তবে বাস্তবে কিছু নির্দিষ্ট কার্যক্রমের কোনো প্রমাণ নেই। এটাই সেই সময়ের সূচনা যখন প্রাদেশিক প্রশাসন কার্যত সরকারের জন্য না চালিয়ে গভর্নরের ব্যক্তিগত লুণ্ঠনের ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। এই সময় থেকেই রেকর্ডে "ভালো কর্মকর্তার" উল্লেখ পাওয়া যায়—যাঁরা সৎ ছিলেন এবং সবার জন্য ন্যায়সংগতভাবে শাসন করার চেষ্টা করতেন। এটি চীনা ধারণা থেকে এসেছে, যে একটি সফল সরকারের জন্য নৈতিক কর্মকর্তাই যথেষ্ট।
৮৬৩ সালে একটি বড় ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জার মহামারী ছড়িয়ে পড়ে এবং জনসাধারণের মধ্যে বিশ্বাস ছড়িয়ে পড়ে যে এটি সম্রাটীয় কেলেঙ্কারির কারণে প্রতিহিংসাপরায়ণ আত্মারা ঘটিয়েছে, যার উৎস ছিল তেনচি তেন্নোর পুত্র প্রিন্স সাওয়ারার পতনের ঘটনা পর্যন্ত। সরকার রাজধানীর দক্ষিণ পাশে প্রাসাদের পাশে যুক্ত বিশাল উদ্যান শিনসেনেনে একটি সর্বজনীন শান্তি প্রার্থনার অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই উদ্যানের একটি অংশ এখনও নিঞ্জো দুর্গের ঠিক দক্ষিণে বিদ্যমান, যা প্রাচীন রাজপ্রাসাদের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত। অনেক ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়, যেগুলোর কিছুতে বিপুল জনসমাগম ঘটে। এই জমায়েতগুলো অব্যাহত থাকলে সরকার ৮৬৫ সালে এগুলো নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করে। ৮৬৬ সালে সম্রাট এবং সমস্ত প্রধান অভিজাত ব্যক্তি যোশিফুসার প্রাসাদে একটি জাঁকজমকপূর্ণ চেরি ফুলের উৎসবে অংশ নেন। দশ দিন পর ওতেমন নামে প্রাসাদের একটি ফটকে আগুন ধরে যায়। এটি সাধারণভাবে ঈশ্বরের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি অসন্তোষ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সরকার এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্যন্তরীণ সাগরের জলদস্যু ও বিভিন্ন অঞ্চলের দস্যুদের দমন করতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে। এই পরিস্থিতিতে এক কর্মকর্তা আরেকজনকে জানায় যে সে শুনেছে মিনামোতো তোকিওয়ার নির্দেশে আগুন লাগানো হয়েছিল। দ্বিতীয় কর্মকর্তা সঙ্গে সঙ্গে তোকিওয়ার গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এই আদেশটি যিনি পান তিনি ছিলেন ফুজিওয়ারা মোটোৎসুনে। কিন্তু তিনি এটি কার্যকর না করে যোশিফুসার মতামত জানতে যান। যোশিফুসা নিশ্চিতভাবে জানান যে তোকিওয়া নির্দোষ এবং লোকজনকে শান্ত করার জন্য প্রাসাদ চত্বরে ঘুরে বেড়াতে লোক পাঠান।
এই গুজব রটনাকারী ব্যক্তি ছিলেন ওতোমো ইয়োশিও। পাঁচ মাস পরে একজন গোয়েন্দা অভিযোগ করেন যে ওতোমো নিজেই ফটকে আগুন লাগিয়েছিলেন। তিনি নির্যাতনের মুখেও নিজের নির্দোষিতা দাবি করে যান, কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হন এবং তার চার আত্মীয়সহ নির্বাসিত হন। তিনি ছিলেন এমন একজনের নাতি যিনি ৭৮৫ সালে ফুজিওয়ারা তানেৎসুগুর হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে নির্বাসিত হয়েছিলেন।
৮৭২ সালে যোশিফুসা মৃত্যুবরণ করলে সরকার একে সংকট হিসেবে বিবেচনা করে এবং রক্ষীবাহিনী মোতায়েন করে ও প্রধান সড়কগুলোতে প্রতিবন্ধকতা আরোপ করে, যা সাধারণত কেবল সম্রাটের মৃত্যুর পরই করা হতো। তবে কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি এবং তার উত্তরসূরি মোটোৎসুনে অবিলম্বে রিজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৮৭৬ সালে সেইওয়া তেন্নো সিংহাসনত্যাগ করেন এবং তার স্থানে মোটোৎসুনের ভাগ্নে, ৯ বছর বয়সী ইয়োযেই তেন্নো সিংহাসনে বসেন। রিজেন্সি চলতে থাকে।
৮৭৮ সালে দেবা প্রদেশে এমিশি জনগণের একটি বৃহৎ বিদ্রোহ ঘটে। সাগা তেন্নোর শাসনামলের শুরুর পর উত্তরাঞ্চলে এটি প্রথম গুরুতর যুদ্ধ। পাশের মুৎসু প্রদেশের এক কর্মকর্তা, যিনি ওরিওশি উপাধিধারী ছিলেন (যা কেবিইশির প্রাদেশিক রূপ), নিজের উদ্যোগে ২০০০ সৈন্য নিয়ে দেবায় পৌঁছান এবং সেখানে ৫০০০ সৈন্য পান। এক মাস পর বিদ্রোহীরা আক্রমণ করলে সেনারা পালিয়ে যায়। কেবল ফুন্যা আরিফুসার নেতৃত্বাধীন একটি ছোট ইউনিট লড়াই চালায় কিন্তু পরাজিত হয়। বিদ্রোহীরা বিপুল অস্ত্রশস্ত্র দখল করে।
রাজধানীতে ফুজিওয়ারা ইয়াসুনোরি নামে একজন "সৎ কর্মকর্তা" যিনি সেনাবাহিনীতে কাজ করেননি, তাকে গভর্নর করে বিদ্রোহ দমনে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে মাত্র ৬০০ জন ছিল, তবে তিনি দেবায় পৌঁছে আরও ৩০০ জন পান এবং পরে আরও ২০০০ সৈন্য সহায়তায় আসে। সরকার তাকে আক্রমণের চাপ দিলেও তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে এবং ভালো শাসনের মাধ্যমে তিনি যুদ্ধ ছাড়াই সমস্যা সমাধান করতে পারেন। কৃষকদের কাজে ফিরিয়ে আনা, শরণার্থীদের পুনর্বাসন এবং সম্পদ সংগৃহীত করাই ছিল তার লক্ষ্য। সরকার তাকে অনুমতি দেয় এবং বাস্তবে কোনো যুদ্ধ ছাড়াই বিদ্রোহের অবসান ঘটে। ৮৭৯ সালের মধ্যেই তিনি রাজধানীতে ফিরে আসেন। এটাই সীমান্ত যুদ্ধগুলোর শেষ ঘটনা। এরপরও উত্তর-পূর্বাঞ্চল বহুদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অঞ্চল রয়ে যায়, কিন্তু প্রশাসনিকভাবে তা জাপানের স্থায়ী অংশে পরিণত হয়। "এমিশি" শব্দটি অচিরেই ব্যবহার থেকে উঠে যায়।
ফুজিওয়ারা মোটোৎসুনে যোশিফুসার চেয়ে অধিক সক্রিয়ভাবে সমস্যা মোকাবেলায় সচেষ্ট ছিলেন। তিনি দেবায় ইয়াসুনোরির নীতিকে সমর্থন করেন এবং গভর্নরদের স্বেচ্ছাচার বন্ধ করার চেষ্টা করেন। তবে তার লক্ষ্য ছিল নৈতিক ব্যক্তিদের পদে বসানো, প্রশাসনিক পদ্ধতির পরিবর্তন নয়। তিনি ভূমি পুনর্বণ্টন ব্যবস্থার শেষ সংস্করণের দায়িত্বে ছিলেন। তার ফরমানে বলা হয়, এই ব্যবস্থার বিলুপ্তির কারণে সরকার প্রদেশগুলোর সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছে। নিবন্ধন রাখা হচ্ছিল না, ফলে কৃষি জমির মানচিত্র বা করদাতাদের অবস্থান জানা যাচ্ছিল না, ফলে কর ব্যবস্থাপনা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
পাঁচটি অভ্যন্তরীণ প্রদেশে সরকার পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে (সবাই সাংগি) নিয়োগ দেয় তদারকির জন্য। মূল আইনে নারীদের ভূমি পুরুষদের ২/৩ অংশ পাওয়ার কথা ছিল, যা ৮২৮ সালে ১/৩-এ নামানো হয় এবং ৮৮০ সালে তা বাতিল করা হয়। পুরুষদের জন্য বরাদ্দ সম্পূর্ণ ধানক্ষেত না রেখে ধান ও গম বা শস্যের শুকনো জমির মিশ্রণ করে। পুনর্বণ্টন পুরো দেশে প্রযোজ্য হলেও অভ্যন্তরীণ প্রদেশ ছাড়া অন্যত্র বিস্তারিত সিদ্ধান্ত গভর্নরের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেক অভিযোগ ওঠে, তবে কমপক্ষে ৭টি প্রদেশে পুনর্বণ্টনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
৮৮২ সালে ইয়োযেই তেন্নো ১৫ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হন এবং রিজেন্সি শেষ করতে চান। পরিবর্তে "কাম্পাকু" নামে একটি নতুন উপাধি তৈরি হয়, যা প্রাপ্তবয়স্ক সম্রাটের অধীনে রিজেন্সিকে বোঝায়। এক বছর পর মোটোৎসুনে ও সম্রাটের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয় এবং তারা একে অপরের প্রস্তাব বাধাগ্রস্ত করতে থাকে। মোটোৎসুনে রিজেন্সি শেষ করার প্রস্তাব দিলে ইয়োযেই তা প্রত্যাখ্যান করেন। ইয়োযেই দুর্বল সম্রাটদের ব্যতিক্রম ছিলেন এবং ৮২ বছর বেঁচে ছিলেন। তার মানসিক স্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ৮৮৩ সালের শেষ দিকে প্রাসাদে একটি রহস্যজনক হত্যা হয়, যা সম্রাটের ক্রোধের ফল বলে রটনা ছড়ায়। ৮৮৪ সালের শুরুতে ইয়োযেই সিংহাসনত্যাগ করেন। উত্তরসূরি মনোনীত ছিলেন না। একটি প্রস্তাবিত প্রার্থী ছিলেন মোটোৎসুনের নাতি সাতাতোকি, কিন্তু তিনি ইয়োযেইর পুত্র হওয়ায় বাদ পড়েন। শেষ পর্যন্ত মন্তোকু তেন্নোর ভাই প্রিন্স তোকিয়াসুকে সম্রাট করা হয়, যিনি ফুজিওয়ারা বংশীয় হলেও মোটোৎসুনের শাখা থেকে নন। তিনি ৫৫ বছর বয়সী ও সরকারি কর্মজীবী ছিলেন এবং 'কোকো তেন্নো' হিসেবে পরিচিত হন। যদিও তিনি অভিজ্ঞ ছিলেন, রিজেন্সি চলমান থাকে। বলা হয়, সম্রাট নিজেই মোটোৎসুনেকে উপযুক্ত শাসক হিসেবে রেখে দেন।
৮৮৫ সালে মোটোৎসুনের পুত্র তোকিহিরা প্রাপ্তবয়স্ক হন এবং সরকারি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।
কোকো তেন্নোর উত্তরাধিকার তখনো নির্ধারিত হয়নি। সম্রাট তার সপ্তম পুত্র মিনামোতো সাদামিকে চেয়েছিলেন, যিনি মিনামোতো পদবি পাওয়ায় আইনত রাজবংশ থেকে বাদ পড়েছিলেন। মোটোৎসুনে একবার এরকম এক প্রার্থীকে আগেই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তবে এবার তিনি সম্মত হন। সাদামিকে রাজবংশে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে যুবরাজ ঘোষণা করা হয়। একই দিন সম্রাট মৃত্যুবরণ করেন এবং সাদামি ‘উদা তেন্নো’ হিসেবে সিংহাসনে বসেন। ইয়োযেই সম্রাট শুনে বলেন, “কিন্তু সে তো চাকর ছিল না?” মিনামোতো সাদামি হিসেবে তিনি প্রাসাদে একজন পেজ ছিলেন। এ ঘটনা ঘটে ৮৮৭ সালে।
উদা তেন্নোর প্রথম ফরমানেই "কাম্পাকু" শব্দটির প্রথম ব্যবহার দেখা যায়। ফরমানটি মোটোৎসুনের পদকে "আকো" নামে পরিবর্তন করে, কিন্তু মোটোৎসুনে প্রতিবাদ জানান যে শব্দটির কোনো অর্থ নেই। উভয়ের মধ্যে ছয় মাস ধরে তর্ক চলে এবং শেষে উদা সবকিছু আগের মতো করে দেন। এক ইতিহাসবিদ এটিকে “আকো যুদ্ধ” নামে অভিহিত করেছেন। এটি দেখায় যে উদা ছিলেন একটি স্বাধীনচেতা সম্রাট।
মোটোৎসুনে ৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন, উত্তরসূরি নির্বাচনের আগেই। তার চার পুত্র ছিল—তোকিহিরা, কানেহিরা, নাকাহিরা ও তাদাহিরা—এবং চার কন্যা। দুজন সেয়োয়া তেন্নোর স্ত্রী হন, একজন উদা তেন্নোর স্ত্রী, এবং একজন পরবর্তীতে দৈগো তেন্নোর স্ত্রী হন। তখন ২১ বছর বয়সী তোকিহিরা এখনো সাংগি পদে পৌঁছাননি। উত্তরাঞ্চলীয় ফুজিওয়ারা বংশের নেতৃত্বে মোটোৎসুনে যোশিফুসার অর্জিত অবস্থানকে সঠিকভাবে রক্ষা করতে ব্যর্থ হন।
এই সময়ে শুরু হয় জাপানি সাহিত্যের ক্লাসিক যুগ। এর আগে জাপানি সাহিত্য মানেই ছিল চীনা সাহিত্য। যদিও নিহোন শোকি ও কোজিকি–তে কিছু অংশ চীনা অক্ষরের ধ্বনিগত ব্যবহার করে জাপানি ভাষায় লেখা হয়েছে, এবং মানইয়োশু নামক কাব্যগ্রন্থে একই কৌশল ব্যবহৃত হয়েছে। এখন জাপানিতে লেখার জন্য প্রায় ৫০টি ছন্দিক চিহ্নের (সঠিক সংখ্যা কিছু সময়ে পরিবর্তিত হয়) একটি সরল ও মার্জিত ধ্বনিমালা উদ্ভাবিত হয়। এটি চীনা অক্ষরের সরলীকরণ থেকে উদ্ভূত। নারীদের চীনা ভাষা শেখার প্রয়োজন নেই বলে ধরা হতো, তাই নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য উপযোগী সাহিত্য জাপানিতেই রচিত হতে লাগল। প্রথম গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ছিল ইসে মনোগাতারি, যা কবি আরিওয়ারা নারিহিরার (মৃত্যু ৮৮০) জীবন ও রচনার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। বইটির নির্দিষ্ট তারিখ অজানা হলেও এটি দশম শতকের শুরুতে রচিত। এ যুগের আরেক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হলো কঞ্জাকু মনোগাতারি, যা ১০৭৭ সালে সম্পন্ন হয় বলে ধারণা করা হয়, তবে এতে বহু পুরনো গল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—অনেকগুলো এই সময়ের বলেই মনে হয়।
মোটোৎসুনের মৃত্যুর পর সম্রাট উদা দ্রুত ঘোষণা করেন যে সম্রাটই শাসক। কাম্পাকু পদটি লুপ্ত হয় এবং পরবর্তী চল্লিশ বছর তা পুনরায় চালু হয়নি।
== ইয়াসুনোরি, মিচিজানে এবং তোকিহিরা ==
সম্রাট নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যে শাসনক্ষমতা রাজবংশের হাতেই থাকবে। এজন্য তিনি ফুজিওয়ারা বংশের একাধিক শাখার লোকদের উচ্চ পদে উন্নীত করেন যাতে তারা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়, এবং একই সময়ে তিনি তাঁর অনেক আত্মীয়কে মিনামোতো বংশে স্থানান্তর করেন এবং তাদের উচ্চ পদে নিযুক্ত করেন। ২১ বছর বয়সে ফুজিওয়ারা তোকিহিরাকে সাংগি (参議) পদে উন্নীত করার সময়ে, উদা সম্রাট তাঁর ভাই মিনামোতো নো ওসামোতোকেও একই পদে উন্নীত করেন। পরবর্তী কয়েক বছরে ওসামোতো-র পর সাদাতসুনে, তাতো, মারে এবং নোবোরু-কে একইভাবে উচ্চ পদে উন্নীত করা হয়। ৮৯৩ সালে, সম্রাট ৯ বছর বয়সী আতসুহিতোকে যুবরাজ হিসাবে ঘোষণা করেন, যার মা ফুজিওয়ারা হলেও তোকিহিরার কেবল চাচাতো বোন ছিলেন। তার পিতা তাকাফুজিকে এই সময় সাংগি পদে উন্নীত করা হয়, সম্ভবত তোকিহিরার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। অবশেষে, সম্রাট দুটি অপেক্ষাকৃত অজ্ঞাত "সুশাসক" ব্যক্তিকে উচ্চ পদে উন্নীত করেন — তারা হলেন ফুজিওয়ারা ইয়াসুনোরি (মোতোৎসুনের মৃত্যুর এক বছর পর) এবং সুগাওয়ারা নো মিচিজানে (তারও এক বছর পর)। যোশিফুসা ও মোতোৎসুনে ৩০ বছর ধরে সরকার চালিয়েছেন, এবং উদা তখন এক ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে চাচ্ছিলেন।
সরকারের শীর্ষ স্তরে তখন ছিলেন ৭ জন ফুজিওয়ারা, ৬ জন মিনামোতো এবং একটি প্রাচীন অভিজাত বংশের একমাত্র প্রতিনিধি সুগাওয়ারা নো মিচিজানে। সাদাইজিন ছিলেন মিনামোতো তোওরু, বয়স ৭২, এরপর ছিলেন ফুজিওয়ারা যোশিয়ো (৭২), মিনামোতো ইয়োশিআরি (৫০), মিনামোতো হিকারু (৪৯), ফুজিওয়ারা মোরোকাতসু (৬৬), এবং ফুজিওয়ারা তোকিহিরা (২৩)। যোশিয়ো তখন ফুজিওয়ারা বংশের প্রধান হলেও তোকিহিরার ভবিষ্যৎ ভালোই ছিল, কারণ তিনি নিশ্চিতভাবেই সকলকে অতিক্রম করে একসময় শীর্ষে উঠবেন, যদি না কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটে। উদার জন্য কেবল নিজের কর্তৃত্ব জারি করাই যথেষ্ট ছিল না; তাকে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিকভাবে তা বাস্তবায়ন করেও দেখাতে হতো। এজন্য ইয়াসুনোরি ও মিচিজানেকে উচ্চ পদে উন্নীত করা তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ পরিকল্পনার সফলতা অপরিহার্য ছিল। কারণ, তখন অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে হচ্ছিল। এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, নারা যুগে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ শাসনের কাঠামো ভেঙে পড়েছে।
ফুজিওয়ারা ইয়াসুনোরি ছিলেন ফুজিওয়ারার “দক্ষিণ” শাখা থেকে, যারা দীর্ঘকাল আগেই শীর্ষ অভিজাত শ্রেণি থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। তাঁর দাদু ছিলেন চুনাগোন, কিন্তু তার বাবা কেবল একটি রক্ষী ইউনিটের উপ-কমান্ডার হয়েছিলেন, কোনোমতে অভিজাত মর্যাদা ধরে রেখেছিলেন। ৮৫৫ সালে ইয়াসুনোরি কেন্দ্রীয় আমলায় এক নিম্নপদে নিযুক্ত হন এবং ৮৭১ সালে তিনি বিচু প্রদেশের জুরিও (শুল্কপ্রধান) হিসেবে নিযুক্ত হন, পরে তিনি বিঙ্গোতে বদলি হন। ৮৭৮ সালে যখন দেওয়া প্রদেশে বিদ্রোহ ঘটে, তখন মোতোৎসুনে তাকে সেখানে পাঠান বিদ্রোহ দমনকারী বাহিনীর সমর্থনকারী গভর্নর হিসেবে। তিনি খুব অল্প সম্পদ এবং অল্প সহিংসতা ব্যবহার করেই বিদ্রোহ দমন করেন। এরপর তিনি আবার জুরিও হিসেবে কাজ করতে থাকেন, তবে তিনি সানুকি প্রদেশে এবং দাজাইফুর উপ-সামরিক কমান্ডার হিসেবে একজন “সুশাসক কর্মকর্তা” হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে থাকেন। মোতোৎসুনের মৃত্যুর পরপরই সম্রাট উদা তাঁকে রাজধানীতে ফিরিয়ে আনেন এবং পরের বছর তাঁকে সাংগি পদে উন্নীত করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬৮ (এবং তাই তোকিহিরার জন্য কোনো হুমকি ছিলেন না)।
ইয়াসুনোরি সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হতে উপযুক্ত ছিলেন, কারণ তিনি বহু বছর গ্রামীণ পরিস্থিতি নিয়ে সাফল্যের সাথে কাজ করেছিলেন এবং শান্তি বজায় রাখতে পেরেছিলেন।
সুগাওয়ারা নো মিচিজানের উচ্চপদে উন্নীত হওয়ার পথ ছিল কিছুটা আলাদা। তার দাদু ও পিতা উভয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত পণ্ডিত ছিলেন এবং মিচিজানে নিজেও ১১ বছর বয়স থেকে বিখ্যাত কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার দাদা ও বাবা কেউই রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কোনো পদে ছিলেন না। তবে তার পিতা কোরেয়োশিকে ৮৭২ সালে সাংগি পদে উন্নীত করা হয়, যখন মিচিজানের বয়স ছিল ২৮, এবং এটি তাঁর জন্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পথ উন্মুক্ত করে। ৮৭৪ সালে তিনি পঞ্চম শ্রেণির পদমর্যাদা পান, এবং কয়েকটি নিম্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক পদে কাজ করেন। ৮৭৭ সালে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৮৮৬ সালে তিনি সানুকি প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন এবং প্রকৃতপক্ষে প্রদেশে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এজন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অন্য তিনটি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
তিনি চার বছর সানুকিতে ছিলেন। সেখানে তিনি ১৪০টি কবিতার একটি গ্রন্থ রচনা করেন এবং ইয়াসুনোরির আদর্শ অনুসরণ করে “সুশাসক” হিসেবে কাজ করেন, যার প্রমাণ অনেক কবিতায় দেখা যায়। রাজধানীতে ফিরে আসার পর তিনি প্রাপ্তবয়স্ক সম্রাটের অধীনেও মোতোৎসুনের কামপাকু হিসেবে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। এই কারণে সম্রাট উদার নজরে পড়েন।
সম্রাট উদা সমস্যাগুলোর মোকাবিলায় একটি কৌশল গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তা নতুন কোনো ব্যবস্থা প্রবর্তনের উপর নির্ভর করছিল না। বরং তিনি নারা যুগের ব্যবস্থাগুলো পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। মূল ধারণাটি ছিল, যদি সরকার মানবিকভাবে পরিচালিত হয়, তবে জনগণ তা মেনে নেবে। এই ধারণাটি খুবই কনফুসীয়ান, যেখানে নৈতিকতাই হলো সরকার পরিচালনার কাঠামোর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর শাসনামলের নামও “উদারতা” ও “শান্তি”-র চিহ্ন বহন করে।
তাৎক্ষণিক লক্ষ্য ছিল মোতোৎসুনের শাসনের প্রারম্ভিক বছর (৮৭৭–৮৮৪) পুনরুদ্ধার করা এবং হ্যান্ডেন ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা। ইয়াসুনোরি তখন জুরিও হিসেবে মাঠে ছিলেন, যখন শেষবার এই জমি বণ্টন হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের ধারণা, এই সংস্কার প্রচেষ্টা শুধুমাত্র শীর্ষস্থানীয়দের উপর নির্ভর করছিল না, বরং মধ্য ও নিম্ন স্তরের কর্মকর্তারাও বুঝতে পারছিলেন, যদি কর আদায় ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়, তাহলে তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ কেবলমাত্র সর্বোচ্চ শ্রেণির মানুষরাই শোওএন তৈরি করতে পারতেন। যদিও তখন জুরিও-রা ভালো করছিলেন, তবু স্থানীয় অভিজাত, কৃষক ও শোওএন মালিকদের বিরোধিতা যদি দুর্বল না হয়, তবে তাদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ফুজিওয়ারা তোকিহিরা এই চিন্তার বিরোধী ছিলেন না এবং এক সময় সংস্কারপন্থীদের মধ্যে গণ্য হতে শুরু করেন।
৮৯২ থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিন বছর ইয়াসুনোরি গ্রামীণ প্রশাসন সংস্কারের নেতৃত্ব দেন। তারপর মিচিজানে ও তোকিহিরা এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথম পদক্ষেপ ছিল, যেমনটি তেনচি তেন্নোর সময় থেকে বহুবার করা হয়েছে, তেমন করে পুনরায় গ্রামে পরিদর্শক পাঠিয়ে সেখানে কী অবস্থা এবং জনগণের মতামত সংগ্রহ করা। বাস্তবে জেলা প্রশাসকরা স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পরিদর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। সুনির্দিষ্টভাবে কী করা হয়েছিল, তার বিশদ বিবরণ নেই, তবে সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, শোওএন-গুলো উপেক্ষা করা হতো, কারণ লক্ষ্য ছিল জুরিওদের কার্যক্রম এবং তারা সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নিরীক্ষা করা।
=== কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কার ও চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করার প্রচেষ্টা ===
প্রশাসনিক খরচ কমানোর লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল অপ্রয়োজনীয় দপ্তর বিলুপ্ত করে তাদের দায়িত্ব অবশিষ্ট অফিসগুলোর মধ্যে একত্রিত করা। বিভিন্ন প্রহরী বাহিনীর সদস্যসংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়।
এই সময়ে চীনের সাথে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হয়। সর্বশেষ দূতাবSendingা ছিল ৬০ বছরেরও বেশি আগে। ৮৯৪ সালে একটি নতুন দূতাবSendingা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সুগাওয়ারার মিচিজানে-কে দূত নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু মাত্র এক মাস পরে তিনি নিজেই এই পরিকল্পনা পরিত্যাগের পরামর্শ দেন এবং পরিকল্পনাটি বাতিল করা হয়। সে সময় তাং রাজবংশ ধ্বংসপ্রাপ্তির পথে ছিল এবং সফল একটি দূতাবSendingা পাঠানোর সম্ভাবনা কম ছিল। কোরিয়ার শিল্লা রাজ্যও তখন পতনের পথে ছিল। ৮৯০ সালের পর থেকে তাদের প্রাদেশিক শাসনের ওপর প্রায় কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না এবং স্থানীয় গোষ্ঠীগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। ৯০০ সালে একটি ব্যাপক গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যার ফলাফল ছিল ৯৩৬ সালে একটি নতুন রাজবংশের অধীনে একীকরণ। এই বিশৃঙ্খলার ফলে কোরিয়ান জলদস্যুদের দ্বারা জাপানে হামলার ঘটনা বেড়ে যায়, প্রথমে শুধুমাত্র তসুশিমা দ্বীপে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে কিউশু দ্বীপের উত্তরাংশেও ছড়িয়ে পড়ে। ৮৯৩ সালে হিগো প্রদেশে একটি বড়সড় লুণ্ঠন হয় এবং বহু কৃষকের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়। ৮৯৪ সালে সরকার তসুশিমায় অতিরিক্ত সৈন্য প্রেরণ করে এবং জাপান সাগরের উপকূলবর্তী প্রদেশগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়। এটি প্রমাণ করে যে সরকার তখনও এমন পরিস্থিতির মোকাবেলায় সক্ষম ছিল।
৮৯৬ সালে সুগাওয়ারা নো ইয়াসুনোরি মারা যান, এরপর সাদাইজিন মিনামোতো নো তোরা এবং একই বছরের শেষ দিকে সদ্যোন্নীত সাদাইজিন ফুজিওয়ারা নো ইয়োশিও-ও মারা যান। ৮৯৭ সালে উদাইজিন মিনামোতো নো ইয়োশিআরি মারা যান। হঠাৎ করেই ২৬ বছর বয়সে ফুজিওয়ারা নো তোকিহিরা সরকারের সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন। সম্রাট উদা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে মিচিজানের সাথে পরামর্শ করেন। সিদ্ধান্ত হয়, অবিলম্বে সম্রাটের পুত্রকে সিংহাসনে বসানো হবে। উদা সিংহাসন ত্যাগ করেন এবং সম্রাট ডাইগো মাত্র ১৩ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন। এটি স্পষ্টভাবে তোকিহিরার দ্বারা উত্তরাধিকার হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার জন্য করা হয়েছিল। সম্রাট কোকোর কন্যাকে অবিলম্বে নতুন সম্রাটের সাথে বিবাহ দিয়ে সম্রাজ্ঞী করা হয়। মিচিজানের কন্যাদের একজনকে উদার দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স তোকিও-র সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। পূর্বের রীতির মতো, উদা সিংহাসন ত্যাগ করেও শাসন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
৮৯৯ সালে তোকিহিরা সাদাইজিন এবং মিচিজানে উদাইজিন নিযুক্ত হন। ফুজিওয়ারা নো তাকাফুজি এবং মিনামোতো নো হিকারুকে দাইনাগন করা হয়। তাকাফুজি অল্প সময়ের মধ্যে নাইদাইজিন পদে উন্নীত হন কিন্তু দ্রুতই মারা যান। তবে তার পুত্র সাদাকুনি অবিলম্বে সাঙ্গি হিসেবে পদোন্নতি পান।
এমন ধারণা রয়েছে যে এই সময় তোকিহিরা সক্রিয়ভাবে মিচিজানেকে সরানোর ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তাঁর প্রধান অভিযোগ ছিল, মিচিজানে তাঁর বংশমর্যাদার উপযুক্ত নয় এমন পদে অতি দ্রুত উন্নীত হয়েছেন, যা সম্রাট উদার পক্ষপাতের কারণে ঘটেছে। ফলে অন্য অভিজাতদের মধ্যে মিচিজানের প্রতি ঈর্ষা উসকে দেওয়া সহজ হয়। উদা মিচিজানেকে দয়াপরবশ হয়ে একের পর এক অনুগ্রহ করতে থাকায় ষড়যন্ত্র আরও সহজ হয়। অবশেষে ৯০১ সালের শুরুতে তোকিহিরা ফাঁদ পাতেন। মিনামোতো নো হিকারুর সঙ্গে মিত্রতা গড়ে তুলে তাঁরা সম্রাট ডাইগোর কাছে যান এবং বলেন যে মিচিজানে সম্রাটকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার জামাতা প্রিন্স তোকিও-কে সিংহাসনে বসাতে চান, এবং এ বিষয়ে প্রাক্তন সম্রাট উদার সম্মতিও আছে। কয়েকদিনের মধ্যে তারা মিচিজানের বিরুদ্ধে এক ফরমান জারি করিয়ে তাকে কিউশুতে নির্বাসনে পাঠায়, যেখানে তিনি দাজাইফু-তে কোনো বেতনহীন অতিরিক্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত হন। ৫ দিন পর উদা রাজপ্রাসাদে গিয়ে সম্রাটের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইলে তোকিহিরা ব্যবস্থা করেন যাতে তাঁকে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়। এখানে তোকিহিরা উদার সিংহাসন ত্যাগকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা নেন। পরে সময়ে প্রাক্তন সম্রাটরা নিজে থেকেই ফরমান জারি করতে পারলেও, এই সময়ে কেবল রাজরত সম্রাটই বৈধ ফরমান জারি করতে পারতেন।
এই অভ্যুত্থান সত্ত্বেও, উদা তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সরকার চালিয়ে যান এবং তোকিহিরা তাঁর সাথে মানিয়ে চলেন। তবে মিচিজানে রাজনীতি থেকে চূড়ান্তভাবে ছিটকে পড়েন। এই ঘটনাটি আজও জাপানে সুপরিচিত। মিচিজানে ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি, ফলে সাহিত্যিক ও শিল্পীরা তাঁর পক্ষেই ছিলেন, এবং তাঁর ভাগ্য নিয়ে বহু সাহিত্য ও শিল্পকর্ম সৃষ্টি হয়েছে। ৯০৩ সালে দাজাইফুতে তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, বয়স হয়েছিল ৫৯। নির্বাসনে থাকার সময় তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখেন।
=== প্রদেশ প্রশাসনের সংস্কার এবং ভূমি বিতরণ ===
এই অভ্যুত্থানের পর সম্রাট ডাইগোর স্ত্রী ও তোকিহিরার বোন অনশি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন — প্রিন্স মুনেকাতা, যিনি পরবর্তী সম্রাট সুজাকু হন। এর ফলে ফুজিওয়ারা পরিবার আবারো সিংহাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ পায়। মাত্র তিন মাস পরেই এই রাজপুত্রকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা হয়।
৯০২ সাল থেকে সরকার একাধিক ফরমান জারি করতে শুরু করে প্রাদেশিক প্রশাসনের সংস্কারের লক্ষ্যে। এসব উদ্যোগ মূলত রিও-ব্যবস্থার মূল কাঠামো পুনরুদ্ধার এবং পরবর্তীকালে সংযোজিত কিয়াকু ও শিকি অনুসারে তা সংশোধনের লক্ষ্যে নেওয়া হয়। এবং সরকার হানডেন (ভূমি বণ্টন) বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। ৮৮১ সালের পর থেকে এ বিষয়ে কিছুই করা হয়নি, যদিও ইয়াসুনোরি ও মিচিজানে সংস্কারের জন্য আগ্রহী ছিলেন। এই অচলাবস্থা স্থানীয় শাসনের ওপর বড় প্রভাব ফেলে।
জনসংখ্যা ও জমি বণ্টনের সম্পর্ক এতটাই বদলে যায় যে কেউ কেউ বেশি জমি পেয়ে যায়, আবার কেউ কেউ কম, ফলে কর নির্ধারণ ও সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ে। সরকার সকল প্রদেশকে আদেশ দেয় একটি পূর্ণাঙ্গ আদমশুমারি পরিচালনা করতে, যার ১২ বছর পর জমি বিতরণ করা হবে। এটি ছিল এক অস্বাভাবিক দীর্ঘ ব্যবধান। পূর্ববর্তী সকল বিতরণ তিন বছরের মধ্যে আদমশুমারি থেকে কার্যকর হতো। কেন এত বিলম্ব নির্ধারণ করা হয়েছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
ফরমানসমূহ থেকে বোঝা যায় যে সরকার কর প্রদানে পণ্যের মান ও নির্ধারিত সময়ের ক্ষেত্রে পূর্বতন বিধানগুলো কঠোরভাবে মানতে চায়। আগে যেভাবে কর নেওয়া হতো, সেভাবেই সম্পূর্ণভাবে তা কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়।
তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছু প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। “দুষ্ট কৃষকরা কর ফাঁকি দিতে নিজেরাই রাজধানীতে চলে গিয়ে ধনীদের গৃহে আশ্রয় নেয়, কিংবা মিথ্যা দাবি করে যে জমি দান করা হয়েছে, বা ঘরবাড়ি বিক্রি হয়েছে, কিংবা কোনো অভিজাতের জাল দলিল দেখিয়ে করমুক্তির দাবি করে। গভর্নররা এগুলোর জালিয়াতি সন্দেহ করলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভয়ে কিছু বলেন না এবং এসব অপরাধ প্রতিরোধ করেন না।”
এছাড়া আদমশুমারি ও জমি বণ্টনের অভাবে স্থানীয়ভাবে খুলে ফেলা নতুন জমিগুলো কার্যত বেসরকারি জমিতে পরিণত হয়, এবং সেগুলো রেকর্ডে না থাকায় এগুলো শোয়েন জমির মতো আচরণ পায়, যদিও এগুলোর বৈধ দলিল ছিল না। একটি পূর্ণাঙ্গ শুমারি ও জরিপ এসব জমি খুঁজে বের করতে পারত, কিন্তু তা সাধারণ জনগণের মধ্যে অপ্রিয় হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
সরকার এখন গ্রামাঞ্চলের মানুষদের মন্দির ও শ্রাইনে জমি বা বাড়ি দান নিষিদ্ধ করে এবং নতুন জমি খোলার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কেবলমাত্র সেসব শোয়েন যা দৈজোকান ও মিনবুশো থেকে বৈধ অনুমোদন প্রাপ্ত, সেগুলো বজায় রাখা হয়। কিন্তু এসব সংস্কারের কী ফল হতে পারত তা পরিষ্কার নয়, কারণ ৯০৯ সালে তোকিহিরা মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এবং তাঁর সাথে সাথেই সংস্কার প্রচেষ্টাও থেমে যায়।
==শোয়েন ব্যবস্থার বিকাশ==
শোয়েন বলতে বোঝানো হয় ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তিকে, যা জমি পুনর্বণ্টন প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি পেয়েছিল এবং কিছু ক্ষেত্রে সব ধরনের কর থেকে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার থেকেও মুক্ত ছিল। বেশিরভাগ ইতিহাসবিদদের মতে, হেইয়ান যুগে শোয়েন এতটাই সাধারণ হয়ে উঠেছিল যে "শোয়েন ব্যবস্থা" শব্দটি প্রায়শই হেইয়ান যুগেরই সমার্থক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি নারা যুগের রিতসুরিও (আইন-প্রশাসন) ব্যবস্থার সঙ্গে এবং পরবর্তী যুগগুলোর হোকেন (সামন্ততান্ত্রিক) ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করে দেখা হয়।
যদিও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির উপর নিষেধাজ্ঞা কখনোই সম্পূর্ণরূপে বলবৎ ছিল না, কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য ছিল এই ব্যবস্থাকে অপ্রচলিত এবং বিশেষ প্রয়োজনে সীমাবদ্ধ রাখা। নারা যুগে কিছু অভিজাত ব্যক্তিকে নতুন জমি আবাদ করার বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যক্তিগত মালিকানার অধিকার দেওয়া হয়, পরে তা আবার রাষ্ট্রের জমি হিসাবে পুনর্বণ্টিত হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন ফরমান নির্দেশ করে যে এই ব্যবস্থার অপব্যবহার হয়েছিল—লোকজন সরকারি জমি দখল করে নিজেদের আবাদ করা জমি বলে দাবি করত, কিংবা রাষ্ট্রের সম্পদ ও করের শ্রমিক ব্যবহার করে নিজেদের জন্য জমি পুনরুদ্ধার করত।
এই ধরনের ব্যক্তিগত জমির সুবিধা যেমন ছিল, তেমনি অসুবিধাও ছিল—এই জমি করযোগ্য থাকত এবং প্রাদেশিক বা জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকত।
সম্রাট শোমু তাঁর নতুন তোদাইজি মন্দির পরিচালনার জন্য করমুক্ত জমি বরাদ্দ দিয়ে এই জমির করের অর্থ মন্দিরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য মন্দিরগুলোকেও এভাবে অর্থায়ন করা হয় এবং ভিক্ষুরা স্থানীয় কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ নিয়ে অভিযোগ জানালে এসব জমিকে বিভিন্ন মাত্রায় প্রশাসনিক ও করমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়। অভিজাতরা এই সুবিধাজনক ব্যবস্থা লক্ষ্য করেন। যেহেতু ভিক্ষুরা নিজেরা কৃষিকাজে আগ্রহী ছিলেন না, তাই জমি পরিচালনার জন্য সাধারণত স্থানীয় কোনো অভিজাত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হতো। তিনি জমি পরিচালনা করে মুনাফার একটি অংশ পেতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিজাত ব্যক্তি নতুন জমি আবাদ করতেন এবং তা "উপহার" হিসেবে মন্দিরে দান করতেন, যার বিনিময়ে তিনি পরিচালকের চুক্তি পেতেন। এর ফলে জমিটি স্থায়ীভাবে করের আওতার বাইরে চলে যেত।
প্রায় সব শোয়েন-সংক্রান্ত দলিলপত্র মন্দিরের সংরক্ষণাগারে সংরক্ষিত ছিল, বিশেষ করে তোদাইজি মন্দিরে, এবং এই জমি অভিজাতদের হাতে কীভাবে চলে যেতে শুরু করেছিল, তার নির্দিষ্ট দলিল নেই, কিন্তু এটি যে ঘটেছিল তা নিশ্চিত। সম্ভবত এটি সম্রাট সাগার শাসনামলে শুরু হয়, তবে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন ফুজিওয়ারা ইয়োশিফুসা এই প্রক্রিয়াকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছিলেন। একটি জমিকে শোয়েন হিসেবে ঘোষণা করতে সম্রাটের পক্ষ থেকে একটি চার্টার পেলেই চলত, যা ইয়োশিফুসা একজন রিজেন্ট হিসেবে নিজেই জারি করতে পারতেন। এতে করে তিনি নিজেকে এবং তাঁর মিত্র অভিজাতদের জন্য বিপুল সম্পদ অর্জনের সুযোগ করে দেন।
এই সময় থেকেই প্রাদেশিক গভর্নররা শোয়েন সৃষ্টি ও চার্টার প্রদানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে। গভর্নররা রাজধানীতে তাদের রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে সহজেই চার্টার নিতে পারতেন এবং নিজেরাও মুনাফা অর্জন করতেন। সরকার একাধিক ফরমান জারি করে গভর্নরদের অবসর নেওয়ার পর সেই প্রদেশে থেকে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, কারণ আশঙ্কা ছিল তারা অবসরকালীন জীবিকা নির্বাহের জন্য শোয়েন জমি সংগ্রহ করবেন।
শোয়েন ব্যবস্থা ধীরে ধীরে জটিল হয়ে ওঠে। এ ব্যবস্থায় একাধিক ব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন "অধিকার" (শিকি, 式) পেতেন। রাজধানীতে অবস্থিত রিয়োশু (মূল মালিক), স্থানীয় পরিচালকের নিজস্ব শিকি থাকত, এবং রাজস্ব সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও নির্দিষ্ট শিকি অধিকার পেতেন। এই অধিকারগুলি উত্তরাধিকারসূত্রে হস্তান্তরযোগ্য ও বিক্রয়যোগ্য হয়ে ওঠে। ফলে কোনো ব্যক্তি, উদাহরণস্বরূপ, ভাড়ার আদায়কারী অফিসের এক-চতুর্থাংশ শিকি পেতে পারতেন—ব্যক্তিগতভাবে সেই কাজ না করেও। এই শিকি হয়ে উঠেছিল নির্দিষ্ট আয় পাওয়ার একটি অধিকার। স্বাভাবিকভাবেই, এটি অসংখ্য মামলা-মোকদ্দমার কারণ হয়ে ওঠে।
প্রতিপত্তিশালী রিয়োশু সাধারণত শোয়েন-ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ শিকি বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্বে থাকতেন, যার জন্য হেইয়ান যুগের অভিজাতরা নিজেদের প্রাসাদে "ব্যবসা অফিস" স্থাপন করেন। কখনো কখনো শোয়েনবাসীরা রিয়োশুর বিরুদ্ধে কিংবা রিয়োশু শোয়েনবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করত।
রাষ্ট্রীয় আইনকাঠামো এই ধরনের মামলা পরিচালনার উপযুক্ত ছিল না। প্রশাসনিক আইনে "মামলা"র কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না। কেউ অভিযোগ করলে তা দাইজোকান-এ পেশ করা হতো এবং তারা একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিত। এই সিদ্ধান্তপত্রই ছিল শিকি। শোয়েন সংক্রান্ত সম্পত্তি অধিকার হিসেবেও এই শিকি ঠিক একই ধারণা বহন করত—নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য গ্রহণযোগ্য নিয়মের লিখিত বর্ণনা।
সম্রাট সাগার সময় সম্ভবত এই মামলা কুরোদো দপ্তরে পাঠানো হতো। সম্রাট নামমাত্র সিদ্ধান্তদাতা হলেও বাস্তবে তা দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা দিতেন। রিজেন্ট ইয়োশিফুসা তাঁর নিজের একটি কুরোদো দপ্তর স্থাপন করেন, যেহেতু "রিজেন্ট" পদটি আইনি ছিল না এবং নির্ধারিত বাজেট বা দপ্তর ছিল না। ফলে যিনি তখনকার সময়ে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি হতেন, তাঁকে একটি নিজস্ব আদালত বজায় রাখতে হতো, যেখানে তাঁর নিযুক্ত কর্মকর্তারা দলিলপত্র ও সাক্ষ্য পরীক্ষা করে শিকি নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করতেন। এই আদালতকে নিরপেক্ষ ও দক্ষ দেখাতে হতো, নইলে জনগণ এর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলত। সরকারি প্রশাসনিক কাঠামোর পতনের পর এই আদালতগুলোই কার্যত একমাত্র নিয়মিত কার্যকর শাসনযন্ত্র হিসেবে টিকে ছিল।
তবে এমনকি ইয়োশিফুসার সময়েও এবং পরবর্তীতে আরও বেশি করে এই আদালতের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সরকারের নিজস্ব বলপ্রয়োগকারী ব্যবস্থা ছিল না। ধরা হতো যে উভয় পক্ষ আদালতের রায় মেনে চলবে। একমাত্র চাপ ছিল এই যে, যদি কেউ রায় অমান্য করত, আদালত শোয়েন বাতিল করে তার চার্টার রদ করতে পারত এবং জমিটি গভর্নরের দখলে দিয়ে দিত। অপরাধীকে আউটল ঘোষণাও করা যেত, যাতে প্রতিবেশী সশস্ত্র জমিদাররা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত।
গ্রামাঞ্চলে ইয়োশিফুসার সময় থেকেই সহিংসতা বাড়তে শুরু করে। আইনহীনতা কেউই চায় না, তাই একটি ভারসাম্য বজায় রাখা হতো। সরকারের পক্ষে বাস্তব পুলিশ বাহিনী রাখা সম্ভব ছিল না, তাই জনগণকেই নিজেদের রক্ষা করতে হতো—এটি স্বভাবতই বিশৃঙ্খল এবং দুর্নীতিপ্রবণ ছিল, কিন্তু আদালতের রায় মান্য করে জনগণ প্রভাবশালী ভূমিধারীদের কিছুটা শৃঙ্খলিত রাখতে পারত। একে বলা যায় সংযত বিশৃঙ্খলা।
জেলা ও প্রাদেশিক প্রশাসনেও একই ধরণের ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। অধিকাংশ স্থানীয় পদ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যেত, কিন্তু এখন তা আইনি সম্পত্তি-অধিকার হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করে এবং উত্তরাধিকার, বিক্রয় ও বিভাজনযোগ্য হয়ে ওঠে। ১০ম শতকের মধ্যে এই প্রক্রিয়া এতটাই অগ্রসর হয় যে, আইনি পরিভাষা আলাদা হলেও, শোয়েন ও "সরকারি" জমিতে বসবাসকারীদের জীবনে কার্যত কোনো পার্থক্য থাকেনি। একমাত্র বড় পার্থক্য ছিল গভর্নর পদটি কখনো উত্তরাধিকারসূত্রে হয়নি; এটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য বরাদ্দ হতো। তবে পরে গভর্নর নিজে আর প্রদেশে যেতেন না, বরং একজন জুরিও (প্রতিনিধি) পাঠাতেন। ১২শ শতকে, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি একসঙ্গে ছয়-আটটি গভর্নর পদ দখলে রাখতে পারতেন, শুধুমাত্র রাজস্বের অংশ পাওয়ার জন্য।
এটি একটি খুবই অদ্ভুত ব্যবস্থা। একে বোঝার সেরা উপায় হচ্ছে এটিকে এক ধরনের ধীর পতনের প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা। সবকিছু কেবল খারাপের দিকে এগিয়েছিল—আদালতের কার্যকারিতা কমেছে, সহিংসতা বেড়েছে। একপর্যায়ে এই ব্যবস্থার পুরোপুরি পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে, এবং অনেকে তা বুঝতে পেরে বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলতে শুরু করেন। তবে এই হেইয়ান যুগের প্রাথমিক অংশ ছিল পতনের যুগ; নতুন ধরণের ব্যবস্থার লক্ষণ দেখা দেয় তার পরবর্তী শতকে।
৮৯৪ সালে কিই প্রদেশের এক জুরিও একটি স্মারকলিপিতে জানান, পুরনো কর-আইন অনুসরণ করা সম্ভব নয়, তাই তিনি জমির পরিমাণ অনুযায়ী সবার উপর সমান হারে খাজনা ধার্য করেছেন। এই করের মধ্যে ফসল কর, মস্তিষ্ক কর এবং করের শ্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল। দাইজোকান এই পদ্ধতিকে অনুমোদন করে, যা কার্যত বিদ্যমান আইনকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেছিল। এই সময়ে তাইহো বিধিব্যবস্থা কার্যত বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৮৮৪ সালে ইওয়ামি প্রদেশে ১৭০ কৃষকের এক দল, দুইজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে, জুরিওর উপর আক্রমণ করে। তদন্ত শেষে দুই বছর পর বিচার হয়। জুরিওকে নির্বাসনে পাঠানো হয়, কারণ তার অবৈধ আচরণ বিদ্রোহের কারণ ছিল। ম্যাজিস্ট্রেটদের শুধু এক বছরের বরখাস্তি দেওয়া হয়। অপর এক ঘটনায় এক গভর্নরকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও পরে তাকে আবার গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয়, এবং নতুন প্রদেশেও অভিযোগ ওঠে, তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
৮৯২ থেকে ৯০৯ সালের মধ্যে প্রাদেশিক সরকারের সংস্কারের এক বড় প্রচেষ্টা হয়, যার মধ্যে পুনরায় জমি পুনর্বণ্টনের উদ্যোগ ছিল। এর বাস্তব প্রভাব স্পষ্ট নয়, তবে ৯০৯ সালে ফুজিওয়ারা তোকিহিরা মারা যাওয়ার পর এই প্রচেষ্টা শেষ হয়। এরপর থেকে শোয়েন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে এবং রাষ্ট্রীয় কর ব্যবস্থার সমান মর্যাদা অর্জন করে। আনুমানিকভাবে দেশের অর্ধেক কৃষিজমি কখনোই শোয়েনে পরিণত হয়নি, তবে বাকি "সরকারি" জমিতে বসবাসকারী কৃষকদের জন্য বাস্তব পার্থক্য দিনদিন কমে আসে।
শোয়েন ব্যবস্থা বহুদিন টিকে ছিল এবং ধীরে ধীরে ১৩শ শতকে পতনের পথে যায়, যখন নতুন ধরনের ভূমি-মালিকানা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে—এটি আধুনিক মালিকানার সূচনা, যেখানে জমি ব্যক্তিমালিকানার স্বীকৃতি পায় এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্তি, বিক্রয়, কিংবা ভাড়ার অধিকার সম্পূর্ণভাবে মালিকের বিবেচনার বিষয় হয়ে ওঠে। সরকারের ভূমিকার সীমা হয়ে দাঁড়ায় শুধুমাত্র কর আদায়।
==রিজেন্সি (সেশ্শো ও কামপাকু)==
সম্রাটের পক্ষে কথা বলার ক্ষমতা প্রদানকারী সেশ্শো ও কামপাকু পদগুলো চিরকালই ফুজিওয়ারা বংশের সদস্যদের একচেটিয়া সম্পত্তি ছিল। প্রাচীন সময়ে সম্রাটীয় বংশকে ঘিরে নানা মর্যাদার অনেক গোত্র ছিল। আমরা যখন এমন এক সময়ে প্রবেশ করি যেখানে রাজনীতির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়, তখনই দেখা যায় ওতোমো, মোনোনোবি ও সোঙ্গা গোত্রগুলোর মধ্যে আদালতে আধিপত্যের জন্য এক তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। কখনও সম্রাট নিজেই শাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, কিন্তু কখনও তিনি সে যোগ্য নন এবং তখন অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হয়। সোঙ্গা গোত্র সম্ভবত প্রথম এমন কৌশল গ্রহণ করে যাতে সম্রাটীয় উত্তরাধিকার এমনভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় যে পরপর শাসকেরা সকলেই সোঙ্গা মাতার সন্তান হন। তারা তিন প্রজন্ম পর্যন্ত এটা করতে সক্ষম হয়, কিন্তু পরে তারা রাজপুত্র নাকা নো ওয়ে-র দ্বারা পরাজিত হন, যাকে সহায়তা করেন নাকাতোমি নো কামাতারি। কামাতারি এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যে মৃত্যুর পর কৃতজ্ঞ সম্রাটীয় পরিবার তাঁর বংশধরদের জন্য এক নতুন গোত্র সৃষ্টি করে। এই গোত্রের নামই ছিল ফুজিওয়ারা। তখন সম্রাটের প্রাসাদ ফুজিওয়ারা নামক স্থানে ছিল, সম্ভবত সেখান থেকেই নামটির উৎপত্তি।
কামাতারির পুত্র ফুহিতো নতুন শাসনব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর চার পুত্র চারটি শাখা গোত্র গঠন করেন, কিন্তু এদের মধ্যে কেবল ফুসাসাকি বংশীয় "উত্তর শাখা" নারা যুগে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়। প্রথম সেশ্শো ইয়োশিফুসা ছিলেন ফুসাসাকির প্রপৌত্র। তাঁর জীবদ্দশায় ফুসাসাকি তাঁর বড় ভাই মুচিমারোর অধীন ছিলেন, তবে নিজেও সফল রাজনৈতিক জীবন কাটান। মুচিমারোর পুত্র তোয়োনারি সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তবে ফুসাসাকির পুত্র মাতাতে 'সাংগি' পদ পর্যন্ত পৌঁছান। তিনি ৭৬৬ সালে দকিও যুগে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পুত্র উচিমারো ৮০৬ সালে সম্রাট কাম্মুর মৃত্যুর পর সম্রাট হেইজেই-এর আমলে নাইদাইজিন পদে পৌঁছান। তিনি ৮১২ সালে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পুত্র ফুইৎসুগু ৮১০ সালের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই বছরের শুরুতে সম্রাট সাগা তাঁকে কুরোডো দপ্তরের প্রধান নিযুক্ত করেন এবং তিনি সেই দুই কর্মকর্তার একজন ছিলেন যাঁর কাছে হেইজেই সম্রাট সাগার বিরুদ্ধে সমর্থন চাইলে, তিনি সাগার প্রতি আনুগত্য বজায় রাখেন। ফুইৎসুগু ৮২১ সালে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হন এবং ৮২৬ সালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর পুত্র ইয়োশিফুসা তখনও অপেক্ষাকৃত নিচু পদে ছিলেন। ৮৫০ সালে সিংহাসনে আরোহণকারী মন্তোকু সম্রাট ফুইৎসুগুর নাতি হলেও ফুইৎসুগুর দীর্ঘকাল আগে মৃত্যুর কারণে এর বাস্তব প্রভাব ছিল না।
ইয়োশিফুসা ৮৪২ সালে অবসরপ্রাপ্ত সম্রাট সাগার মৃত্যুতে অপেক্ষাকৃত নিচু অবস্থান থেকে ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হন। তিনি তখন রাজপুত্রের প্রাসাদে নিযুক্ত ছিলেন, যিনি পরে নিম্মিও সম্রাট হন। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, ফলে ইয়োশিফুসা সম্রাটকে একটি ষড়যন্ত্রের খবর দিলে সেটি বিশ্বাস করা হয়। এ ঘটনার সত্যতা আমাদের জানা নেই, কিন্তু এর ফলাফল ছিল একটি কর্মকর্তা গোষ্ঠীর পতন ও ইয়োশিফুসার নেতৃত্বে অন্য গোষ্ঠীর উত্থান। ৮৪৮ সালে তিনি জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হন ও মন্তোকু সম্রাটের আমলেও সেই পদ ধরে রাখেন। ৮৫৭ সালে তিনি সর্বোচ্চ পদ দাইজোদাইজিন-এ অধিষ্ঠিত হন, যা এর আগে ফুজিওয়ারা নাকামারো ও সন্ন্যাসী দকিও-র দুঃখজনক উদাহরণের পর কেউ পাননি। তিনি সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁর একরত্তি নাতিকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। মন্তোকু সম্রাটের মৃত্যু ও সেই শিশুর ৯ বছর বয়সে সম্রাট (সেইওয়া সম্রাট) হওয়ার পর স্পষ্টতই এক রিজেন্টের প্রয়োজন হয় এবং একমাত্র সম্ভাব্য ব্যক্তি ছিলেন ইয়োশিফুসা। এটা ঘটে ৮৫৮ সালে। ৮৬৬ সালে ইয়োশিফুসা আনুষ্ঠানিকভাবে সেশ্শো পদে নিয়োগ লাভ করেন, যদিও নারা যুগে এর একটি উদাহরণ ছিল কিন্তু সেই রিজেন্ট ছিলেন এক সম্রাটীয় রাজপুত্র।
ইয়োশিফুসা ৮৭২ সালে মৃত্যুবরণ করেন যখন সেইওয়া সম্রাটের বয়স ছিল ২৩, কিন্তু রিজেন্সি তাঁর পুত্র মোতোসুনের অধীনে চলতে থাকে সেইওয়ার গদিচ্যুতি (৮৭৬) পর্যন্ত। নতুন সম্রাট ইয়োজেইও শিশু ছিলেন এবং রিজেন্সি চলতেই থাকে। ইয়োজেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে মনে হয় এবং ৮৮৪ সালে তাঁকে বাধ্য করা হয় কোকো সম্রাটের পক্ষে সিংহাসন ছাড়তে। কোকোর বয়স ছিল ৫৫, তবুও রিজেন্সি চালু থাকে, এমনকি ২১ বছর বয়সে উদা সম্রাট হলেও তা চলতে থাকে। কেবল ৮৯১ সালে মোতোসুনের মৃত্যুর পর উদা একজন নতুন রিজেন্ট নিয়োগে অস্বীকৃতি জানালে তা বন্ধ হয়।
এই পদটি উদা ও দৈগোর রাজত্বকালে (৯৩০ সাল পর্যন্ত) অনুপস্থিত থাকে। তবে তা আবার শুরু হয় ফুজিওয়ারা তাদাহিরার অধীনে, যিনি ছিলেন মোতোসুনের পুত্র এবং ৮ বছর বয়সি সুজাকু সম্রাটের দাদু। এবার এই পদ স্থায়ী হয়ে যায়, এমনকি ফুজিওয়ারা বংশের শক্তিও একে বিলুপ্ত করতে পারেনি। এটি ১৮৬৮ সালে বিলুপ্ত হয়, কিন্তু ১৮৮৯ সালের মেইজি সংবিধানে আবার চালু হয়, যদিও এবার এটি ফুজিওয়ারা বংশ থেকে সরিয়ে কেবল সম্রাটীয় বংশের জন্য সংরক্ষিত হয়। তাইশো সম্রাট (মুতসুহিতো) মানসিক প্রতিবন্ধী বিবেচিত হওয়ায় তাঁর পুত্র হিরোহিতো (ভবিষ্যৎ শোওয়া সম্রাট) ১৯২১ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত সেশ্শো হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ সালের আইনে, যা ইম্পেরিয়াল হাউসহোল্ড এজেন্সি-কে সংজ্ঞায়িত করে, এই পদটি এখনও স্বীকৃত রয়েছে।
==যোদ্ধা (বুশি) শ্রেণির সূচনা==
খ্রিস্টীয় ৪০০ সাল থেকে জাপানে একটি অভিজাত শ্রেণি আধিপত্য বিস্তার করেছিল, যাদের ধারণাগতভাবে যোদ্ধা শ্রেণি হিসেবে দেখা হতো। যখন আমরা প্রথমবার তাদের সম্পর্কে নিহোন শোকি–তে জানতে পারি, তখন তারা সবসময় তলোয়ার বহন করত এবং প্রায়ই তা ব্যবহার করত। যুদ্ধে তারা বর্ম পরিধান করত, ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করত এবং তাদের প্রধান অস্ত্র ছিল ধনুক। এই বর্ণনা ১২শ ও ১৩শ শতকের গ্রামীণ অভিজাতদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে, প্রাচীন যুগ থেকে সামন্ত যুগের সূচনার মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটে। তবুও শান্তিপূর্ণ হেইয়ান যুগেও অভিজাতদের অনেকেই নিয়মিত অস্ত্রচর্চা করত। এই বিষয়টি প্রায়ই অনালোচিত থেকে যায়, কারণ হেইয়ান যুগের শেষভাগের অধিকাংশ সাহিত্য রচয়িতাই ছিলেন নারী। তাদের পুরুষ অভিজাতদের দৈনন্দিন জীবনের ওপর পর্যবেক্ষণ সীমিত ছিল। তরুণ অভিজাতরা হিংস্র খেলার অনুশীলন করত, তরবারি ও তিরধনুক চর্চা করত এবং দীর্ঘ শিকারে যেত—যেখানে তারা ঘোড়ায় চড়ে হরিণ শিকার করত ও পায়ে হেঁটে বন্য শূকর শিকার করত বর্শা দিয়ে।
৭ম শতকে চীনা ধাঁচে সরকার প্রতিষ্ঠার ফলে পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন আসে। একটি সরকারি সেনাবাহিনী গঠিত হয়, যার অফিসাররা ছিলেন অভিজাত শ্রেণির এবং সৈনিকরা ছিলেন徴兵কৃত কৃষক, যাদের প্রত্যাশা করা হতো চীনা রীতিতে পায়ে হেঁটে বর্শা ও ধনুক নিয়ে যুদ্ধ করবে। ৭ম শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ চীন বা কোরিয়া থেকে আক্রমণের আশঙ্কা ছিল। তবে ৬৬০-এর দশকের পর আক্রমণের হুমকি না থাকায় সেনাবাহিনী প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়, রাজধানীর প্রহরী বাহিনী ছাড়া। সরকার অস্ত্রাগারে সব অস্ত্র সংরক্ষণ করতে চেয়েছিল, যাতে প্রয়োজনে তা বিতরণ করা যায়।
মাত্র কয়েকটি নিয়মিত সশস্ত্র বাহিনী টিকে ছিল—কিউশুর উত্তর উপকূলে সীমান্ত প্রহরী ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সৈন্যরা, যারা প্রায়ই "বর্বর" জনগোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করত যারা জাপানি সীমান্তের বাইরে বাস করত। এই বাহিনী মূলত মিলিশিয়া ছিল, যা নিয়মিত সেনাবাহিনীর মতো পরিচালিত হতো—অভিজাত অফিসার এবং সাধারণ পায়ে হেঁটে যুদ্ধরত সৈন্য (যেহেতু সাধারণরা ঘোড়ায় চড়তে জানত না)। হেইয়ান যুগে একটি উল্লেখযোগ্য নোট পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয় ইমিশি বর্বরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পায়ে হাঁটা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ কঠিন ছিল, কারণ ইমিশি যোদ্ধারা ঘোড়ায় চড়ে ধনুক চালাত। এর সমাধান হিসেবে চীনা শক্তিশালী ক্রসবো সৈন্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যার অংশবিশেষ উত্তরাঞ্চলের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে পাওয়া গেছে। যখনই রাজধানীতে কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ সংঘটিত হতো, সংশ্লিষ্টরা পূর্বাঞ্চলে পালিয়ে যেত বা অভিজ্ঞ সৈন্য সংগ্রহের জন্য বার্তা পাঠাত। এমনও হয়েছে যে, অফিসাররা রাজধানীর আশেপাশে কৃষকদের ধরে এনে তাদের হাতে বর্শা ধরিয়ে “সেনাবাহিনী” ঘোষণা করেছে—যেমনটি ঘটেছিল নারা যুগের "নাকামারোর বিদ্রোহ"-এর সময়।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে শোয়েন ব্যবস্থা বিস্তারের ফলে এবং প্রদেশ ও জেলার প্রশাসনিক কাঠামোর পতনের মধ্য দিয়ে। কর্তৃপক্ষ কৃষকদের স্বল্পমেয়াদী সামরিক প্রশিক্ষণে নিয়োগ দিত, যাদের কেউ কেউ পুলিশ কার্যক্রমে অংশ নিত। তবে ৯ম শতকের অর্থনৈতিক পরিবর্তনে বিশাল পরিমাণ জমি শোয়েন হয়ে যায়, ফলে তা প্রাদেশিক বা জেলাশাসকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শোয়েন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের নিজস্ব পুলিশবাহিনী গঠন করতে হতো। অপরদিকে “সরকারি” জমির (যা তখনো প্রায় অর্ধেক ছিল) প্রশাসনিক পদের কাজ কেবল আয়ের উৎসে পরিণত হয়; বাস্তবে কোনো কাজ করতে হতো না। প্রাদেশিক গভর্নররা আর নিজের প্রদেশে যেত না, বরং লুটপাটের জন্য প্রতিনিধি পাঠাত। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় জমিদারেরা নিজেদের লোকদের সশস্ত্র করে ব্যক্তিগত মিলিশিয়া গঠন করতে শুরু করে।
কোনজাকু মনোগাতারি নামে একটি গল্পসংগ্রহ late ৯ম শতকের অবস্থা তুলে ধরে, যেখানে অনেক গল্প গ্রামীণ জমিদারদের ঘিরে। একটি মজার গল্পে দুই ব্যক্তি একে অপরকে অপছন্দ করে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তারা নিজেদের সশস্ত্র কৃষকদের নিয়ে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে যায়। প্রধান দুই ব্যক্তি ঘোড়া, বর্ম ও ধনুকে সজ্জিত ছিল; অনুসারীরা ছিল বর্শাধারী পদাতিক। তবে বাস্তবে যা ঘটে তা হলো—দুই বাহিনী দূর থেকে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ উপভোগ করে এবং দুই নেতা ঘোড়ায় চড়ে ধনুক দিয়ে একে অপরকে আঘাত করে। কেউই প্রতিপক্ষের বর্ম ভেদ করতে পারে না। তারা বিশ্রাম নেয়, পরস্পরের রাইডিং ও শুটিং দক্ষতার প্রশংসা করে এবং বন্ধু হয়ে যায়। যুদ্ধ বাতিল হয়।
৫ম ও ৬ষ্ঠ শতকের যুদ্ধনীতির অনেক দিক এই গ্রামীণ অভিজাতদের মধ্যে টিকে ছিল, যা নির্দেশ করে যে নতুন শাসনব্যবস্থার প্রভাব বাস্তব জীবনে আইনগত পরিবর্তনের মতো গভীর ছিল না। সামাজিকভাবে বুশি (যা ইংরেজিতে সাধারণত "সামুরাই" বলা হয়) শ্রেণির বিকাশের সব উপাদান এই সময়ে ছিল।
কোনজাকু মনোগাতারি–র দৃশ্য আর হেইকে মনোগাতারি (১৩শ শতক) বা তাইহেইকি (১৪শ শতক)–র মধ্যে পার্থক্য হলো—পরবর্তী সময়ে যোদ্ধা ঐতিহ্য গ্রামীণ জনগণের মধ্যে আরও বিস্তৃত হয়। প্রাচীন যুগে সব যোদ্ধা অভিজাত ছিল, যা সাধারণ কৃষকদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা শ্রেণি। পরে, যে কোনো জমিদার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেকে ও কিছু অনুসারীকে যোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করত—প্রধানত ঘোড়ায় চড়া তীরন্দাজের রীতিতে।
শুরুতে এই ব্যক্তিদের সামাজিক অবস্থান ছিল নিম্ন এবং তাদের "রোদো" বলা হতো—যারা নিজের জমি না থাকায় শ্রমের বিনিময়ে আহার ও বাসস্থান পেত। তবে যখন একজন রোদো অভিজাত ধাঁচে যুদ্ধশিক্ষা লাভ করত এবং প্রভুর পাশে যুদ্ধ করত, তখন তার মর্যাদা দ্রুত বাড়ত। "রোদো" শব্দটি হারিয়ে যায়, আর "সামুরাই" শব্দটি—যার মূল অর্থ "পরিসেবা করা" (যেমন খাবার পরিবেশন করা)—ক্রমে গর্বের উপাধিতে পরিণত হয়।
একজন যোদ্ধার আসল সামাজিক মর্যাদা উচ্চ বা নিম্ন হতে পারত। কেউ কেউ ছিল প্রকৃত অভিজাত, সম্রাট বা সেনাপতির বংশধর; কেউ ছিল বড় বা ছোট জমির মালিক, যাদের ব্যক্তিগত বাহিনী ছিল; আবার কেউ নিজে কোনো জমি না রেখে প্রভুর আশ্রয়ে থাকত। তবে সবাই ছিল যোদ্ধা এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান দেখাত।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—নিজের নির্ভরশীলদের নিয়ে একটি ব্যক্তিগত মিলিশিয়া গঠন করা এবং একটি প্রকৃত সেনাবাহিনী গঠন করা ভিন্ন জিনিস। সেনাবাহিনীতে এমন লোক থাকবে, যারা আপনার ব্যক্তিগত পরিচিত নয়। এর সমাধানে তৈরি হয় পৃষ্ঠপোষকতার ভিত্তিতে একটি ব্যবস্থা। আমেরিকান শহুরে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যেমন—নেতা নির্বাচনের জন্য লোকজন নিয়োগ করেন এবং নির্বাচনে জিতলে তাদের পুরস্কার দেন। "তুমি আমাকে সাহায্য করো, আমি তোমাকে করব"—এই নীতিই ফিউডালিজমের মূল কথা।
একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিজাত যোদ্ধা চাইলে অন্য জমিদারদের আকৃষ্ট করত এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে—“তুমি আমার জন্য যুদ্ধ করো, আমি তোমার জমি রক্ষা করব।” সে সমর্থন দাবি করতে পারত না, তাকে সমর্থন আদায় করতে হতো, এবং এজন্য দরকার ছিল সমঝোতা। সামন্ত সম্পর্ক হলো পারস্পরিক সহায়তা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠিত চুক্তি। যদি কোনো সামন্ত নেতা তার লোকদের খারাপভাবে ব্যবহার করে, তারা দলত্যাগ করতে পারে এবং তা বিশ্বাসঘাতকতা বলে বিবেচিত হবে না।
আপনি বলতে পারেন, “কিন্তু এটা তো সামুরাই সিনেমায় দেখা যায় না!” —তবে উত্তরে বলা যায়, সামুরাই সিনেমাগুলি ফিউডাল যুগের নয়, বরং পরবর্তী সময়ের। তখন বর্ম ছিল একইরকম, কিন্তু নিয়ম ছিল ভিন্ন। সেই সমাজে সেনাবাহিনী আবারো পরিণত হয় পদাতিক কৃষকে—যারা বর্শা বা বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করে, আর সামুরাইরা হয় অফিসার শ্রেণি। এটি অনেকটাই সম্রাটের অধীনে সেবা করার মতো ছিল, ফিউডাল ব্যান্ডের মতো নয়।
এই অনুচ্ছেদের শেষে, অর্থাৎ ৯০৯ সালের মধ্যে, এখনো কোনো প্রকৃত সামন্ত সেনাবাহিনী গঠিত হয়নি—ছিল কেবল সশস্ত্র জমিদার, কেউ ছিল আইন ও শৃঙ্খলার রক্ষক, কেউ আবার পাড়ার গুণ্ডা। কিছু সন্ত্রাসী দল ছিল যারা যা পেত তাই লুটে নিত, আবার কিছু নির্যাতিত জনগণ দুর্নীতিগ্রস্ত গভর্নরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলত। আমরা প্রথম সত্যিকারের সামন্ত যুদ্ধের উদাহরণ দেখতে পাব আরও ৪০ বছর পরে।
<noinclude>{{Japanese HistoryTOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
tpsb1bkcg9l2msa92jehd2oq9w61kcm
দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন কী?
0
26537
85633
82519
2025-07-04T05:47:54Z
Asikur.rahman25
11164
85633
wikitext
text/x-wiki
"দর্শন" একটি শব্দ যার বহু ভিন্ন অর্থ রয়েছে। এই শব্দের বিভিন্ন সংজ্ঞা একে অপরের সঙ্গে সব সময় সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং তা অনেকটাই বিস্তৃত। আজকাল অনেকেই "দর্শন" বলতে বোঝে একজন ব্যক্তির জীবনের নীতিমূলক দিকনির্দেশনা মানে সে কীভাবে জীবন পরিচালনা করবে এবং পরিকল্পনা করবে সেই চিন্তাধারার ভিত্তি। তবে বুদ্ধিবৃত্তিক বা একাডেমিক অর্থে "দর্শন" সাধারণত এই অর্থে ব্যবহৃত হয় না। বরং একে বোঝানো হয় এমন একটি পরিচালিত জ্ঞানের অনুসন্ধান যা এই ধরনের বিষয় ব্যাখ্যা করে অস্তিত্বের প্রকৃতি, অস্তিত্বের কারণ, ব্যক্তির প্রকৃতি ও কারণ, জ্ঞানের প্রকৃতি ও কারণ এবং আরও অসংখ্য জটিল বিষয়।
এই অসংখ্য বিষয়ই দর্শনের মূল রূপ বা "অনুভব" গঠনে ভূমিকা রাখে। এগুলিই দর্শনকে পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এমনকি সঙ্গীতের মতো অন্যান্য পরিচালিত গবেষণার ক্ষেত্র থেকে আলাদা করে। অথচ এক সময় এসবই দর্শনের অংশ হিসেবে বিবেচিত হতো। আপনি যখন এই পাঠ পড়বেন তখন আপনি বুঝতে পারবেন পশ্চিমা জগতে দর্শনের প্রশ্নগুলো কীভাবে গঠিত ও বিকশিত হয়েছে এবং দর্শন মানব বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে কীভাবে সংযুক্ত।
আমরা আজকে যাকে "পশ্চিমা দর্শন" বলে জানি তার উৎপত্তি সাধারণভাবে ধরা হয় প্রাচীন গ্রিসে। সেখানে মানুষের বিশ্বসৃষ্টির কল্পকাহিনীগুলো থেকেই এর সূচনা। মিলেটাসের থেলিস প্রাচীন মিশর থেকে কিছু প্রাথমিক জ্ঞানের বীজ নিয়ে আসেন যা গ্রিকরা সময়ের সঙ্গে পরিণত করে প্রথম দর্শনে রূপান্তরিত করে যা আজও আমরা দর্শন হিসেবে চিনি। কাজেই এটি বিস্ময়ের বিষয় নয় যে "philosophy" শব্দটির মূল গ্রিক ভাষায়। "Philo" এসেছে গ্রিক শব্দ ''philein'' থেকে যার অর্থ ‘ভালোবাসা’, আর "sophy" এসেছে ''sophia'' থেকে যার অর্থ ‘জ্ঞান’ বা ‘প্রজ্ঞা’। সুতরাং '''Philosophy''' মানে দাঁড়ায় "জ্ঞান বা প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসা"।
ফলে দার্শনিকেরা মানবজাতিকে ঘিরে থাকা সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবেন কী বিদ্যমান? কী বাস্তব? বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রকৃতি কী? ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কি? মানুষের আত্মা আছে কি? জ্ঞান কী? সত্য কী? একজন মানুষ নিজেকে কীভাবে শাসন করবে? চেতনার প্রকৃতি কী? দর্শনের প্রশ্নগুলোও অন্য অনেক অনুসন্ধানের মতো জীবনের প্রকৃতি ও বাস্তবতা সম্পর্কে একধরনের কৌতূহল থেকে জন্ম নেয়।দর্শনের অনেক অংশই অত্যন্ত বিমূর্ত ধারণা নিয়ে কাজ করে। তাই বিজ্ঞান বা অন্যান্য একাডেমিক শাস্ত্রের মতোভাবে দার্শনিকেরা সব সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেন না। তবে দার্শনিকদের জন্য অন্যান্য বহু পদ্ধতি রয়েছে। যেমন: আনুষ্ঠানিক যুক্তি, চিন্তানির্ভর পরীক্ষণ, যুক্তিপূর্ণ প্রবন্ধ, আলোচনাসভা, অভিজ্ঞানতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং আরও অনেক কিছু।
[দার্শনিক প্রজ্ঞার অনুসন্ধানকে দুই ধরনের জ্ঞানের সন্ধান হিসেবে বোঝা যায়। এরিস্টোটল একে দুটি ভাগে ভাগ করেছিলেন: তাত্ত্বিক প্রজ্ঞা এবং ব্যবহারিক প্রজ্ঞা। তাত্ত্বিক প্রজ্ঞা অনুসন্ধান করে শুধু বোঝার জন্য আর ব্যবহারিক প্রজ্ঞা বোঝার মাধ্যমে কিছু করবার উদ্দেশ্যে। এই পার্থক্য অন্যান্য ক্ষেত্রেও দেখা যায়। একজন পদার্থবিজ্ঞানী পদার্থ ও গতি বোঝার চেষ্টা করেন কেবল জ্ঞানের পরিসীমা বাড়ানোর জন্য। আর একজন প্রকৌশলী তা বোঝেন কিছু তৈরি করার জন্য। ঠিক তেমনি একজন দার্শনিক যিনি মহাবিশ্বের অস্তিত্বের আধ্যাত্মিক প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেন তিনি দর্শনের তাত্ত্বিক শাখায় কাজ করছেন। অন্যদিকে যার লক্ষ্য ব্যবসার নৈতিক আচরণ বোঝা তিনি দর্শনের ব্যবহারিক দিক নিয়ে কাজ করছেন। এ ধরনের ব্যবহারিক প্রশ্ন নিয়ে কাজ করাকে সাধারণত "প্রয়োগযোগ্য দর্শন" বলা হয়।]
বিষয়বস্তুর দিক থেকে দর্শন সম্ভবত একমাত্র শাস্ত্র যেখানে সীমাবদ্ধতা প্রায় নেই বললেই চলে। এমন প্রায় সব চিন্তাভাবনা যা কল্পনা করা যায় দর্শন তাতে প্রবেশ করেছে বা করবে। আর যেগুলোতে করে না তার অনেকগুলোই একসময় দর্শনের অঙ্গ ছিল যা পরিণত হয়ে এখন আলাদা শাস্ত্র হয়েছে। যেমন পদার্থবিজ্ঞান একসময় "প্রাকৃতিক দর্শন" নামে পরিচিত ছিল। তাছাড়া দার্শনিকেরা সাধারণত এমন প্রশ্ন তোলেন যেগুলো প্রায় প্রতিটি একাডেমিক শাস্ত্রকে স্পর্শ করে। আসলে দর্শনের একটি বড় ভূমিকা হলো অন্যান্য শাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করা যেমন সেই শাস্ত্রে গবেষণার নিয়মকানুন কিংবা তা অন্যান্য মানবিক চেষ্টার সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত। সে কারণে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই অন্যান্য শাস্ত্রের "দর্শন" বিষয়ক কোর্স থাকে যা দার্শনিক ও ঐ নির্দিষ্ট শাস্ত্রের শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী। যদিও দর্শনের আগ্রহ অনেক বিস্তৃত তবুও এর অনুসন্ধানে কিছু সাধারণ ঐক্য রয়েছে...
<noinclude>{{chapnavtoc|Why Study Philosophy?|The Branches of Philosophy|Mini TOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
awz49lakuhfbx2frbwlzkle0pd808ut
জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/জাপানে বৌদ্ধধর্ম
0
26662
85596
82795
2025-07-03T16:43:46Z
NusJaS
8394
85596
wikitext
text/x-wiki
[[File:Daibutsu of Todaiji 2.jpg|thumb|right|তোদাই-জির দাইবুত্সু।]]
খ্রিস্টপূর্ব ৫ম বা ৬ষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের উদ্ভব হয়। সিদ্ধার্থ গৌতম (বুদ্ধ) নামে এক রাজপুত্রের দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি সম্ভবত বর্তমান নেপালের অন্তর্গত এক ক্ষুদ্র রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নিজের ঘর ও পরিবার ত্যাগ করেন এবং কঠোর তপস্যা ও ধ্যানে নিমগ্ন হন। তার উদ্দেশ্য ছিল জগৎ এত দুঃখে পরিপূর্ণ কেন এবং এই ধরনের একটি জগতে কীভাবে মানুষ সুখ খুঁজে পেতে পারে, তা বোঝা। বোধি লাভের পর তিনি তার উপদেশ প্রচার করতে শুরু করেন, এবং তার চারপাশে একটি আন্দোলন গড়ে ওঠে যা তার মৃত্যুর পরও ক্রমাগত প্রসারিত হতে থাকে। সাধারণভাবে বলা যায়, বৌদ্ধ ধর্মের দুটি প্রধান শাখা রয়েছে। প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থগুলোর সংগ্রহ পালি ভাষায় রচিত। এই কারণে একে পালি ক্যানন বলা হয়। এটি অভ্যন্তরীণভাবে বেশ সঙ্গতিপূর্ণ এবং ধারণা করা হয়। এটি ঐতিহাসিক গৌতমের প্রকৃত উপদেশগুলিকে ঘনিষ্ঠভাবে প্রতিফলিত করে।
বৌদ্ধ ধর্মের মূল শিক্ষাটি হলো চতুরার্য্য সত্য: (১) দুঃখ রয়েছে, (২) দুঃখের কারণ হলো তৃষ্ণা, (৩) দুঃখ থেকে মুক্তি আছে, এবং (৪) মুক্তির পথ হলো অষ্টাঙ্গিক মার্গ। প্রথম ও দ্বিতীয় সত্যের কেন্দ্রবিন্দু হলো এই উপলব্ধি যে আমরা যেসব বস্তু বা অবস্থার প্রতি আকৃষ্ট হই এবং আসক্তি জন্মায়, সেগুলো মূলত অনিত্য। আমরা এমন জিনিস চাই যা আমরা পেতে পারি না, ফলে দুঃখ পাই। আর যদি কিছু পাইও, সেগুলো হয় আমরা হারাই, নাহয় সবসময় হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে থাকি—ফলে তাও দুঃখের কারণ হয়। সর্বোপরি, আমরা দুঃখ পাই জন্ম ও মৃত্যুর চক্রের কারণে। একটি শিক্ষাকে বলা হয় "সত্যের দৃষ্টি"—এর সার কথা হলো: যার শুরু আছে, তার শেষও আছে। আমরা জন্মাই, এবং যদি দীর্ঘজীবী হই, তবে বার্ধক্যে উপনীত হই, দুর্বল হয়ে পড়ি এবং মারা যাই—আমরা এই বাস্তবতাকে ঘৃণা করি এবং দুঃখ পাই। তৃতীয় ও চতুর্থ সত্য আমাদের শেখায়, কীভাবে অনিত্য বস্তু বা অবস্থার প্রতি আকাঙ্ক্ষা ও আসক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়। এর জন্য অনুসরণ করতে হয় অষ্টাঙ্গিক মার্গ—শীল (নৈতিকতা), সমাধি (মনোসংযম) ও প্রজ্ঞার (বিবেক) পথ: সম্যক দৃষ্টি, সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক প্রয়াস, সম্যক স্মৃতি ও সম্যক সমাধি। পালি ক্যাননের ধর্মগ্রন্থে কোথাও বলা হয়নি যে এই পথ সহজ। সাফল্য লাভের অর্থ এমন এক চরিত্রে পরিণত হওয়া, যাকে মানুষ সাধু হিসেবে দেখবে—এবং বাস্তবে, খুব কম মানুষই তা অর্জনে সক্ষম হয়।
মানব প্রকৃতি যেমন, দুঃখের অবসান কীভাবে ঘটানো যায় সেই প্রশ্নের এই উত্তর বহু মানুষের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। তাই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস মূলত এমন বিকল্প পথ নির্মাণের ইতিহাস, যেগুলো অনুসরণে অপেক্ষাকৃত সহজ। বৌদ্ধ ধর্মের এই বিস্তৃত রূপটি সংশ্লিষ্ট একটি দ্বিতীয় ও অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় ধর্মগ্রন্থসমূহের সঙ্গে, যেগুলো সংস্কৃত ভাষায় পালি ক্যানন সম্পূর্ণ হওয়ার পর কয়েক শতাব্দী ধরে রচিত হয়।
==প্রারম্ভিক বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশ==
এক সময় বৌদ্ধ ধর্ম ভারতজুড়ে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ছিল এবং প্রাচীন দুটি রাজবংশ এটিকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা বিবেচনাও করেছিল। তবে হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ দর্শনের অনেকটাই আত্মসাৎ করে নেয় এবং ধীরে ধীরে এর প্রভাব কমে আসে। পরে ইসলামি আক্রমণকারীরা যেসব অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্ম সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল, সেসব এলাকায় হামলা চালালে ভারতে বৌদ্ধ ধর্ম কার্যত ধ্বংস হয়ে যায়।
একটি আন্দোলন হিসেবে, প্রারম্ভিক বৌদ্ধ ধর্ম গঠিত হয়েছিল দুটি গোষ্ঠী নিয়ে—একটি হলো তারা। তারা গৌতমের পথ অনুসরণ করতে চেয়েছিল এবং সাধারণ সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে উপলব্ধির সন্ধানে লিপ্ত হয়েছিল; আর অন্যটি হলো সাধারণ গৃহস্থ জনগণ। তারা বুদ্ধের বার্তাকে সম্মান করত কিন্তু বুঝত যে নিজেরা এ পথে সুখ লাভের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। তারা সেই সাধকদের শ্রদ্ধা ও সহায়তা করত যারা চেষ্টা করছিল। বৌদ্ধ ধর্ম এমন এক সমাজে বিকশিত হয়েছিল যেখানে পুনর্জন্মের ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ফলে এমন একটি ধারণা জন্ম নেয় যে গৃহস্থরা "সংঘ"—অর্থাৎ ভিক্ষুসংঘ—কে সমর্থন করে পুণ্য লাভ করতে পারে, যা পরবর্তী জীবনে উন্নত পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে, এবং শেষ পর্যন্ত হয়তো এমন এক জীবনে জন্ম লাভ করতে পারে, যাতে তারা বোধি লাভের জন্য প্রয়োজনীয় দৃঢ় সংকল্প অর্জন করতে পারে। প্রারম্ভিক বৌদ্ধ সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো "জাতক" কাহিনিগুলো, যেখানে গৌতমের পূর্বজন্মের গল্প বলা হয়েছে—এইসব গল্পে তার ধারাবাহিক নৈতিক বীরত্বপূর্ণ কাজ বর্ণিত হয়েছে, যেগুলো ধীরে ধীরে তাকে গৌতম রূপে জন্মগ্রহণ এবং বোধি লাভের উপযুক্ত করে তোলে। একটি বিখ্যাত উদাহরণ, যা প্রায়ই চিত্রিত হয় (জাপানেও), হলো সেই ঘটনা যখন তিনি একটি অনাহারী বাঘিনীকে দেখে নিজেই খাদ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে একটি পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেন।
যদি সমগ্র মানবজাতি গৌতমের মতোই বোধি লাভ করত, তবে মানব প্রজাতির অস্তিত্ব দ্রুতই বিলীন হয়ে যেত, কারণ আর কোনো সন্তান জন্মাত না। প্রাথমিক বৌদ্ধ ধর্ম ছিল এক বিষণ্ন দর্শন, এবং এমনকি বোধির আনন্দকেও বলা যেতে পারে যন্ত্রণা বা কষ্টের অনুপস্থিতি, কোনো ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নয়। বৌদ্ধ ধর্মের পরবর্তী ইতিহাস মূলত এমন লোকদের নিয়ে গঠিত। তারা পরিত্রাণের দ্রুততর, সহজতর, এবং সম্ভবত আরও আকর্ষণীয় উপায় উদ্ভাবনের চেষ্টা করেছে।
এই প্রচেষ্টার ফলাফল মূলত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত: মায়াজাল-নির্ভর মুক্তি, বিশ্বাস-নির্ভর মুক্তি, এবং সৎকর্ম-নির্ভর মুক্তি।
মায়াজাল-নির্ভর মুক্তি এমন আকার ধারণ করে যেমন গৌতম বা কোনো সাধুর দেহাবশেষ (রিলিক), জাদুমন্ত্র, বা নির্দিষ্ট আচার-বিধি; কিংবা এমন গোপন শিক্ষার অনুসরণ যা দুর্বোধ্য ও জটিল গ্রন্থে লুকিয়ে থাকে অথবা সরাসরি কোনো গুরু থেকে শেখা যায়।
বিশ্বাস-নির্ভর মুক্তি নির্ভর করে দেবতা বা দেবতাতুল্য সত্তাদের ওপর। তারা মানুষকে বোধি লাভে সহায়তা করতে পারে বা অনেক সময় সরাসরি তা প্রদান করতে পারে। কিংবা তারা এমন স্বর্গীয় পুনর্জন্মের সুযোগ দিতে পারে, যেখানে পার্থিব বিভ্রান্তি থেকে দূরে থেকে দুর্বল ব্যক্তিরাও বোধির পথে এগোতে পারে। অনেক মানুষ এতটাই নিরাশ থাকে যে তারা এমন দেবতার উপাসনা করে যারা অন্তত তাদের নরকে পুনর্জন্ম থেকে রক্ষা করতে পারে। আবার অনেকেই এমন দেবতার সাহায্যে খুশি হয় যারা রোগ সারিয়ে দিতে পারে কিংবা মাঝে মাঝে লটারি জিতিয়ে দিতে পারে।
সৎকর্ম-নির্ভর মুক্তি হলো ভিক্ষুদের সমর্থনের মাধ্যমে পুণ্য অর্জনের ধারণার সম্প্রসারণ। এটি মানুষকে অনৈতিক জীবনের পরিবর্তে নৈতিক জীবনযাপনের উৎসাহ দেয় এবং প্রতিশ্রুতি দেয় যে যারা সফল হবে, তারা মৃত্যুর পর পুরস্কারস্বরূপ উন্নত পুনর্জন্ম পাবে। এই পথ সাধারণত প্রার্থনা বা আচার-অনুষ্ঠানের কার্যকারিতা অস্বীকার করে। এর মধ্যে বড় অঙ্কের অর্থ মন্দিরে দান করাকে একটি অত্যন্ত নৈতিক কর্ম বলে গণ্য করা হয়। ৫৮৭ সালে প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনোবে গোত্রের সঙ্গে এক জীবন-মৃত্যুর যুদ্ধে যাওয়ার আগে সোগা নো ইমামে ও তার মিত্র যুবরাজ উমায়াদো পৃথকভাবে প্রতিজ্ঞা করেন যে বিজয়ী হলে তারা বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ করবেন। উভয়েই তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। এটি সম্ভবত বিভিন্ন মুক্তির পদ্ধতির সংমিশ্রণ—একদিকে একটি নৈতিক কাজ (মন্দির নির্মাণ), অন্যদিকে ঈশ্বরীয় হস্তক্ষেপে শুভফল লাভের আশা।
==জাপানে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার==
বৌদ্ধ ধর্ম এক পর্যায়ে একধরনের প্রচারমূলক ধর্মে পরিণত হয়। এটি উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারতে এবং সেখান থেকে সিলোন (বর্তমান শ্রীলঙ্কা) ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এই তরঙ্গটি শুরু হয় বেশ আগেই এবং এতে পালি ক্যানন ও বৌদ্ধ ধর্মের একটি অপেক্ষাকৃত কম ধর্মীয় (প্রচলিত অর্থে) রূপ প্রতিষ্ঠিত হয়, বিশেষত আধুনিক শ্রীলঙ্কা, বার্মা (মিয়ানমার), থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ায়। পরে কয়েক শতক পর আরেকটি তরঙ্গ শুরু হয়, যা সংস্কৃতভাষী বৌদ্ধ ধর্মকে প্রথমে আফগানিস্তানে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে মধ্য এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল হয়ে চীনে প্রবেশ করে। চীনে বৌদ্ধ ধর্মের নিজস্ব বিকাশ ঘটে এবং সেখানে এমন কিছু নতুন মতবাদ তৈরি হয় যা ভারতে পরিচিত ছিল না। সেখান থেকে এই ধর্ম কোরিয়া, জাপান এবং ভিয়েতনামে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতের শেষদিকের প্রচারকরা এক বিশেষ ধরনের চূড়ান্ত রূপের বৌদ্ধ ধর্ম বহন করেন, যা তিব্বত ও মঙ্গোলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়; এটি চীনের মধ্য দিয়ে গেলেও সেখানে তেমন প্রভাব ফেলেনি, কিন্তু জাপানে তা বিস্তৃতভাবে বিকশিত হয় এবং কোনওভাবে জাভায়ও পৌঁছে যায়।
জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম বিশেষভাবে গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, এমনকি চীনের চেয়েও বেশি, কারণ সেখানে আগেই শক্তিশালী স্থানীয় দার্শনিক ও ধর্মীয় প্রথা বিদ্যমান ছিল। জাপানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় গঠিত হয় যা বিশ্বের অন্যত্র বিদ্যমান বৌদ্ধ ধর্মীয় রূপ থেকে ভিন্ন। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু জাপানি বৌদ্ধও প্রচারক হয়ে উঠেছেন এবং কিছু জাপানি সম্প্রদায় আধুনিক বিশ্বে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে লক্ষণীয় হলো জেন এবং নিছিরেন শোশু।
চীনে খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে বৌদ্ধ ধর্মের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছিল, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু এটি প্রকৃত অর্থে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতকে চিন রাজবংশ পতনের পর, যখন মধ্য এশীয় বিভিন্ন বার্বারিক (আদিবাসী) গোষ্ঠী উত্তর চীন আক্রমণ করে, যাদের মধ্যে কিছু মহাযান বৌদ্ধ ছিল। তুর্কি বংশোদ্ভূত কয়েকটি রাজবংশ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে বিপুল সম্পদ ও শক্তি বিনিয়োগ করে এবং এতে তারা উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করে। তাং রাজবংশের উৎপত্তি এই তুর্কি-প্রভাবিত উত্তর অঞ্চল থেকে এবং অন্তত এই রাজবংশের প্রথমার্ধে বৌদ্ধ ধর্ম প্রধান ধর্ম হিসেবে বিবেচিত ছিল। তবে, ভারতের মতোই, চীনের স্থানীয় ধর্ম তাওবাদ এবং স্থানীয় দর্শন কনফুসীয়বাদের অভিযোজন ঘটে এবং ধীরে ধীরে তারা বৌদ্ধ ধর্মকে একটি অধস্তন অবস্থানে ঠেলে দেয়। তবে, কমিউনিস্টদের ভয়াবহ দমন-পীড়নের পরও চীনে বৌদ্ধ ধর্ম আজও সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়নি।
বৌদ্ধ ধর্ম কোরিয়ায় সম্ভবত ৫ম শতকে এবং জাপানে ৬ষ্ঠ শতকে প্রবেশ করে। জাপানি শাসকদের কাছে বৌদ্ধ ধর্ম প্রথম (পরিচিত) উপস্থাপন করেন পেকচের রাজা সঙ। প্রচলিত মতে, এই ঘটনার সময়কাল ৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ। সঙ ছিলেন পেকচের প্রথম শাসক যিনি বৌদ্ধ ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করার চেষ্টা করেন। তিনি জাপানি শাসকদের জানান যে বৌদ্ধ ধর্ম রাজ্যের জন্য এক শক্তিশালী জাদুকরী সুরক্ষার উৎস যা মহামারী ও বিদেশি আগ্রাসনের মতো দুর্যোগ প্রতিহত করতে সক্ষম—এটি মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের জাদুবাদী দিককে তুলে ধরে। এই দিকটি চীনের শাসকরাও গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন।
এ বিষয়ে সন্দেহের খুব একটা অবকাশ নেই যে, বৌদ্ধ ধর্মের জাপানে প্রসার অনেকাংশে ঘটেছিল কারণ এটি চীনা ছিল, এবং জাপান তখন চীনের মতো হওয়ার প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষায় ছিল। এই পরিস্থিতি অনেকটা সেইরকম, যখন কোনও ইউরোপীয় বর্বর শাসক খ্রিষ্টধর্ম সম্পর্কে অল্প জ্ঞান নিয়ে নিজেকে ও তার জনগণকে খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করতেন, যেন খ্রিষ্টীয় রোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। তবে, একবার জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মানুষ উপলব্ধি করতে শুরু করে যে এটি প্রথমে যেভাবে উপস্থাপিত হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল ও আকর্ষণীয়। আরও একটি বিষয় হলো, জাপানের স্থানীয় ধর্মের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মের মতো কোনও দার্শনিক স্তর ছিল না, এবং তা ব্যক্তির সুখ বা মহাজাগতিক পরিণতি নিয়ে চিন্তা করত না। এসব ক্ষেত্রে বৌদ্ধ ধর্মের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না, শুধু অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিক সময়ে চীনা কনফুসীয়বাদ কিছু প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করে।
==জাপানে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার==
জাপানে বৌদ্ধ ধর্মের প্রথম সক্রিয় প্রচারক ছিলেন সোগা-নো উমাকো এবং প্রিন্স উমায়াদো (যিনি শোটোকু তাইশি নামে অধিক পরিচিত)। তারা মন্দির নির্মাণ করেন এবং সেগুলোর পরিচালনা ও সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীদের প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ প্রদান করতেন। তবে প্রায় ৫০ বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো সম্রাট একটি মন্দির নির্মাণ করেন, এবং তারও দুই প্রজন্ম পরে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্ম বিষয়ক দুটি দপ্তর প্রতিষ্ঠা করে—একটি বৌদ্ধ ধর্মের তত্ত্বাবধানের জন্য এবং অন্যটি শিন্তোর জন্য। এই সময় থেকে, যা নারা যুগের শুরুতে ঘটেছিল, বলা যায় যে বৌদ্ধ ধর্ম ও শিন্তো যৌথভাবে জাপানের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে কাজ করত। প্রকৃতপক্ষে, নারা যুগ থেকে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত বৌদ্ধ ধর্মই প্রধান অবস্থানে ছিল। তবে ১৭শ শতকে শিন্তোর পুনরুজ্জীবন শুরু হয়, এবং ১৮৮৫ সালের পর শিন্তো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত একমাত্র ধর্মে পরিণত হয়, বৌদ্ধ ধর্মকে সরিয়ে দিয়ে। অবশ্য ১৯৪৫ সালে সেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বাতিল করা হয় এবং আধুনিক জাপানে এই দুই ধর্ম নিজ নিজ ভিত্তিতে টিকে আছে—বিভিন্ন দেশীয় ও বিদেশি প্রতিযোগী ধর্মের সঙ্গে সমানতালে। আধুনিক জাপান অসংখ্য "নতুন ধর্ম" সৃষ্টি করেছে—কিছু নামমাত্র বৌদ্ধ উৎস থেকে উদ্ভূত, কিছু শিন্তো থেকে, আবার কিছু সম্পূর্ণ নতুন ভিত্তিতে গঠিত।
যখন বৌদ্ধ ধর্ম প্রথম জাপানে প্রবেশ করে, তখন চীনে অনেকগুলো "সম্প্রদায়" স্বীকৃত ছিল। এই শব্দটি শুনে মনে করা উচিত নয় যে এগুলো ছিল গণমানুষের আন্দোলন; বরং এরা ছিল দার্শনিক প্রবণতা বা শিক্ষাপদ্ধতির একটি ধারা, যা বৌদ্ধ ক্যাননের নির্দিষ্ট কিছু গ্রন্থকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা করত। বহু কোরীয় এবং কিছু চীনা ভিক্ষু, এমনকি একজন খমের (কম্বোডিয়ান) এবং এক বা দুইজন তিব্বতি ভিক্ষু জাপানে আসেন এবং বসবাস শুরু করেন, প্রায়শই গ্রন্থপুঁথি সঙ্গে নিয়ে আসতেন। পাশাপাশি বহু জাপানিকে চীন ও কোরিয়ায় পাঠানো হতো শিক্ষালাভের জন্য, এবং তারা ফিরলে সাধারণত পুঁথি সঙ্গে করে আনতেন। ফলে প্রাচীন জাপানি নথিতে একাধিকবার একই "সম্প্রদায়" প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ থাকতে দেখা যায়—যার অর্থ হলো কেউ গ্রন্থ নিয়ে এসেছে এবং সেগুলোর ওপর বক্তৃতা দেওয়া শুরু করেছে। এই প্রাচীন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর অধিকাংশই এখন জাপান ও চীনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
==নারা যুগের বৌদ্ধ ধর্ম==
নারা যুগের প্রারম্ভিক সময়ে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ সম্প্রদায় ছিল হোস্সো, যা এখনও স্বল্প পরিসরে বিদ্যমান এবং আধুনিক নারার দুটি বিখ্যাত মন্দির— ইয়াকুশিজি এবং কোফুকুজি এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পূর্বে এটি শোটোকু তাইশির প্রাসাদ-স্থিত ইকারুগার হোর্যুজি মন্দির এবং কিয়োটোর কিয়োমিজুদেরা (কিয়মিযুদেরা) মন্দিরেরও নিয়ন্ত্রণে ছিল, তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেগুলো স্বতন্ত্র হয়ে যায়। হোস্সো সেই সময়কার সম্প্রদায়গুলোর একটি আদর্শ উদাহরণ, যেটি মূলত চীনে প্রতিষ্ঠিত হয় এক ভিক্ষুর মাধ্যমে যিনি ভারত সফর করে অজস্র অজানা ধর্মগ্রন্থ নিয়ে ফিরে আসেন এবং সেগুলোকে চীনা ভাষায় অনুবাদ করে ব্যাখ্যা করেন। ফলে এটি প্রকৃত অর্থে জনসাধারণের সম্প্রদায় ছিল না, বরং ভারতীয় সংস্কৃত সূত্রভিত্তিক গ্রন্থসমূহের উপর জ্ঞানচর্চার উৎস ছিল।
এই সম্প্রদায়ের প্রধান মতবাদ হলো—আমাদের চারপাশে যে বিশ্ব দৃশ্যমান, তা প্রকৃত বাস্তব নয়; বরং তা আমাদের মন দ্বারা নির্মিত একটি বিভ্রম, কারণ মানব মস্তিষ্ক প্রকৃত বাস্তবতাকে উপলব্ধি করতে অক্ষম। কোয়ান্টাম তত্ত্বের আলোকে, এই বক্তব্যকে পুরোপুরি ভুল বলা কঠিন।
হোস্সোর গুরুত্ব জাপানে এই কারণে যে এটি অনেক দক্ষ ভিক্ষুদের সঙ্গে নিয়ে আসে অথবা স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়, যাঁরা স্থাপত্য ও প্রকৌশলবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। ফুজিওয়ারা হিরোৎসুগুর রোষের কারণ হওয়া ভিক্ষু গেনবো ছিলেন কোফুকুজির হোস্সো প্রধান।
ভক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে, জাপানে হোস্সো সম্প্রদায় মূলত ভবিষ্যতের বুদ্ধ (বোধিসত্ত্ব) মৈত্রেয় (জাপানে মিরোকু) পূজার সঙ্গে যুক্ত। তিনি এক প্রকার মেসায়াহস্বরূপ, যিনি সেই যুগের শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মগুলোর অনুপ্রেরণা ছিলেন (যার অনেকটাই পেকচে রাজ্যে নির্মিত)। ভক্তদের লক্ষ্য ছিল মৈত্রেয়ের হস্তক্ষেপ লাভ করা যাতে তারা এমন এক স্বর্গলোকে পুনর্জন্ম লাভ করতে পারে, যেখানে তারা ভবিষ্যতের বিশ্ব রূপান্তরের জন্য অপেক্ষা করতে পারবে—যেখানে সাধারণ মানুষেরাও নির্বাণের আশা করতে পারে।
পরবর্তীকালে হোস্সো সম্প্রদায়ের প্রভাব ম্লান হয়ে যায়, তবে যেসব সূত্র এরা প্রচারে এনেছিল সেগুলো অন্য অনেক সম্প্রদায়ে চর্চিত হতে থাকে।
এ সময় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রদায় ছিল কেগন। এটি গঠিত হয় যখন একজন হোস্সো প্রধান চীনা এক ভিক্ষুকে আমন্ত্রণ জানান অবতাংশক সূত্র নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। জাপানে যিনি 'শিনজো' নামে পরিচিত সেই ভিক্ষু পরে তোদাইজি মন্দিরে বসবাস শুরু করেন। সম্রাট শোমু তোদাইজিতে যে দৈনিকি ন্যোরাই মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন, তা কেগন সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় বুদ্ধ বীরোচন-কে উপস্থাপন করে। বীরোচন সেই মতবাদের প্রতীক, যা হোস্সোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত—যেখানে বলা হয়েছে যে বিশ্ব মৌলিকভাবে শূন্য এবং যা কিছু আমরা দেখি, তা একটি বিভ্রম।
==তেনদাই ও শিংগন==
হোস্সো এবং কেগোন দ্বারা উদাহরণস্বরূপ বৌদ্ধধর্মের যে মৌলিক দার্শনিক প্রবণতা প্রতিফলিত হয় (এবং যা ভারতীয় ভিক্ষু নাগার্জুনের নামের সাথে যুক্ত, যাঁর নাম বহু মহাযান সূত্রের সঙ্গে জড়িত), তা জাপানে সবচেয়ে পরিচিত হয়ে ওঠে হেইয়ান যুগে প্রভাবশালী দুইটি সম্প্রদায়—তেনদাই ও শিংগন—এর মাধ্যমে। উভয় সম্প্রদায়ই ৯ম শতাব্দীর গোড়ার দিকে চীন ভ্রমণকারী জাপানি ভিক্ষুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তেনদাই-এর প্রতিষ্ঠাতা সাইচো, যাঁকে মৃত্যুর পরে দেংগ্যো দাইশি উপাধি দেওয়া হয়, এবং শিংগনের প্রতিষ্ঠাতা কুকাই, যিনি পরে কোবো দাইশি নামে খ্যাত হন। জাপানি বৌদ্ধধর্মে এটিই সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান যেখানে কাউকে 'সন্ত' বলে বিবেচনা করা যায়। তেনদাই চীনের থিয়েন-তাই সম্প্রদায় থেকে নাম গ্রহণ করেছে। এটি একটি স্বতন্ত্র চীনা সম্প্রদায় যা বৌদ্ধধর্মের সকল রূপকে একত্রিত করে একটি বাস্তবতার বিভিন্ন দিক হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছিল। এর কেন্দ্রে ছিল লোটাস সূত্র। এটি তাং রাজবংশীয় চীনে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রদায় ছিল। বিপরীতে, শিংগন হচ্ছে ভারতের দেরী বৌদ্ধধারার (মন্ত্রযান) একটি শাখা, যা পরবর্তীকালে বর্তমান তিব্বতি চার্চের জন্ম দেয়, এবং চীনে অপেক্ষাকৃত অস্পষ্ট ছিল।
সাইচো কিয়োতো শহরের উত্তর-পূর্বে হিয়েই পাহাড়ে এনরিয়াকুজি মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, যা ১৫৭১ সালে ওদা নোবুনাগা কর্তৃক ধ্বংস হওয়া পর্যন্ত দেশের অন্যতম শক্তিশালী মন্দির হিসেবে টিকে ছিল। পরবর্তীতে এটি পুনর্নির্মাণ করা হয়, যদিও পূর্বের তুলনায় অনেক ছোট পরিসরে, এবং বর্তমানে এটি একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। অন্যদিকে, কুকাই নারা শহরের তোদাইজি মন্দিরের প্রধান অভিভাবক হন এবং পরে নারা শহরের দক্ষিণে কোয়াসানে পাহাড়ের চূড়ায় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে আরেকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। তিনি কিয়োতোর অন্যতম প্রধান মন্দির তোউজি-তেও নেতৃত্ব দেন।
হোস্সো ও কেগোনের বিপরীতে। তারা শিক্ষা দিত যে বোধি লাভ এতই কঠিন যে একজন সাধারণ ব্যক্তি কেবল একটি অনুকূল পুনর্জন্মের আশা করতে পারে, তেনদাই ও শিংগন এমন অনুশীলন প্রস্তাব করে যা সবার নাগালে এবং এক জীবনে বোধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। এজন্য হেইয়ান যুগে অনেক ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি জীবনের শেষ ভাগে, সংসার থেকে অবসর গ্রহণের পরে, সন্ন্যাস গ্রহণ করতেন এবং ধ্যান ও বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন।
শিংগন বিশেষভাবে "গুপ্ত" ধর্মীয় রূপ, যেখানে সাধারণ বিশ্বাসীদের জন্য একটি বহিরঙ্গ উপদেশ বিদ্যমান, তবে রয়েছে একটি "গুপ্ত" অন্তর্নিহিত তত্ত্ব, যা কেবল দীক্ষিতদের জন্য। এটির উদ্দেশ্য মিথ্যা প্রচার নয় বরং সাধারণ মানুষের উপলব্ধির সীমার মধ্যেই জ্ঞানের উপস্থাপন। যারা বহু বছর অধ্যয়ন করেন, তারা পরবর্তীকালে এই জটিল গূঢ় তত্ত্বগুলি বুঝতে সক্ষম হন। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণ মানুষ দাইনিচি নিয়োরাই বা বৈরোচন নামক বুদ্ধের মূর্তি পূজা করেন, কিন্তু গুপ্ততত্ত্ব অনুসারে বৈরোচন পুরো জাগতিক জগতের প্রতীক। মন্দিরে প্রদর্শিত জটিল মণ্ডলচিত্রের প্রতিটি উপাদান জগতের কোনো না কোনো দিক উপস্থাপন করে, তবে এর প্রতীকবাদের চাবিকাঠি ছাড়া সেগুলি অনুধাবন করা যায় না। তেনদাই-ও একটি গুপ্তধর্মীয় ধারা হিসেবে বিবেচিত, কারণ এতে পাঁচ স্তরের বৌদ্ধ উপদেশ বা তত্ত্ব রয়েছে, যা পাঁচ স্তরের উপলব্ধির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। সর্বোচ্চ স্তরেই লোটাস সূত্র অনুধাবন সম্ভব। তেনদাই এর বহুবাদী চরিত্রের কারণে শিংগনের তত্ত্বকেও বৈধ রূপে গ্রহণ করে। বাস্তবে, সাধারণ জাপানিদের মধ্যে যাঁরা সন্ন্যাসী ছিলেন না, তাঁদের জন্য তেনদাই ও শিংগনের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য ছিল না—তাঁরা একে অপরকে প্রায় একই জিনিস মনে করতেন, কেবল প্রতিষ্ঠাতাদের ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে পৃথক সম্প্রদায় হিসেবে গড়ে উঠেছে।
বৌদ্ধধর্ম মূলত একটি আত্মজ্ঞান ভিত্তিক ধর্ম, যেখানে দেবতা ও রীতির সঙ্গে সম্পর্ক অপেক্ষাকৃত গৌণ। প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে এবং প্রতিটি গুরুতে পৃথক বাণী বিদ্যমান; মতভেদ স্বাভাবিক। 'বিধর্মিতা' বৌদ্ধধর্মে প্রায় অচেনা একটি ধারণা। মানব সীমাবদ্ধতা ও ভুল অনিবার্য—এই বোধ থেকেই জাপানে বৌদ্ধধর্মের বিস্তার স্থানীয় ধর্ম শিন্তোর নিশ্চিহ্নতা দাবি করেনি, যেমন খ্রিস্টধর্ম বহু স্থানে করেছে। শুরু থেকেই বৌদ্ধরা শিন্তো দেবতাদের বাস্তবতার আরেক রূপ হিসেবে মেনে নিয়েছিল। তদুপরি, জাপানে আগত বৌদ্ধধর্ম পূর্ব থেকেই বহু হিন্দু দেবতাকে গ্রহণ করেছিল, ফলে শিন্তো দেবতাদের গ্রহণে কোনো বাধা ছিল না। শিন্তো ছিল না উপাসনা বা মোক্ষের ধর্ম; এটি ছিল মূলত প্রাকৃতিক শক্তিকে শান্ত রাখার জন্য অনুষ্ঠানভিত্তিক এক ব্যবস্থা। লক্ষ্য ছিল বিপদ এড়ানো, সুবিধা লাভ নয়।
<i>নিহন শোকি</i>-তে কয়েকটি স্থানে দেখা যায় যে প্রাচীন ধর্মীয় আচারগুলি স্থায়ী স্থানে নয় বরং অস্থায়ী মঞ্চে সম্পন্ন হতো, যেগুলি পরে খুলে ফেলা হতো। কফুন যুগের প্রত্নতত্ত্বও খোলা আকাশের নিচে উৎসবের নিদর্শন দেয়—বিশেষ পাত্রে আহার, তারপর সেগুলি ভেঙে ফেলে দেওয়া। <i>নিহন শোকি</i>তে সূর্যদেবী আমাতেরাসু ওমিকামিকে কোথায় পূজা করা উচিত—এ নিয়ে মতবিরোধের কথাও আছে। প্রথমে তাঁকে রাজপ্রাসাদে পূজা করা হতো, কিন্তু সুজিন তেন্নো এটিকে ভীতিজনক মনে করেন এবং আচার অন্যত্র সরিয়ে নিতে চান। পরবর্তী পুরোহিত নারীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়ান, শেষ পর্যন্ত তিন প্রজন্ম পরে তাঁরা ইসে-তে পৌঁছান, যা স্থায়ী তীর্থস্থানে রূপ নেয়। তবে বৌদ্ধরা স্থায়ী মন্দির নির্মাণ শুরু করলে, শিন্তোও স্থায়ী উপাসনালয় নির্মাণ শুরু করে। যেমন, ফুজিওয়ারা পরিবার যখন নারার কোফুকুজি মন্দির নির্মাণে অর্থায়ন করে, তখনই কাছাকাছি কাসুগা শিন্তো মন্দিরও নির্মাণ করে। অনেক বৌদ্ধ মন্দিরে শিন্তো দেবতার উল্লেখ থাকত, এবং শিন্তো মন্দিরেও বৌদ্ধ উপাদান থাকত। তবে পার্থক্য রয়ে যায়। সামন্ত যুগে কোনো বৌদ্ধ সন্ন্যাসী শিন্তো মন্দিরে তীর্থ করতে চাইলে তাঁকে টাকঢাকা পরচুলা পরতে হতো। জনপ্রিয় মন্দিরের আশেপাশে এই ধরনের দোকান থাকত। এটি বোঝায় যে বহু ভিক্ষুই শিন্তো তীর্থে যেতেন।
বৌদ্ধধর্মের স্বতন্ত্র চিন্তার স্বাধীনতা থেকেই জাপানে বহু ধর্মীয় সম্প্রদায় গঠিত হয়েছে—প্রায় ৫০টিরও বেশি, যদিও প্রধান সম্প্রদায়ের সংখ্যা অনেক কম। এগুলিকে শ্রেণীকরণ করা যায়। ২০শ শতাব্দীর পূর্বে, প্রধান সম্প্রদায়গুলো হল: তেনদাই ও শিংগন, আমিদাবাদ (প্রথমে তেনদাই-এর একটি অংশ), নিছিরেন (বিশেষভাবে জাপানি উদ্ভাবন), এবং জেন (যা পরবর্তীতে চীনে গড়ে উঠে এবং জাপানি যোদ্ধাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়)।
তেনদাই ও নিছিরেন উভয়েই লোটাস সূত্র বা হোক্কেক্যো-কে কেন্দ্র করে গঠিত। এই সূত্র প্রচার করে যে সব মানুষ বুদ্ধ হতে পারে এবং হওয়া উচিত। এর পদ্ধতি হল সৎকর্ম (দান ও সহিষ্ণুতা) এবং "সব কিছুর শূন্যতা" বোঝা। তেনদাই অন্য সব সূত্রকেও স্বীকৃতি দিয়ে সেগুলিকে একটি বোধির স্তরভিত্তিক কাঠামোয় বিন্যস্ত করে, যেখানে নিছিরেন কেবল লোটাস সূত্র-কে গ্রহণ করে। তেনদাই-এর বহুবাদী রূপ ব্যাখ্যা করে কেন পরবর্তী অধিকাংশ সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতারা তেনদাই মঠে শিক্ষিত ছিলেন। এনরিয়াকুজি ছিল এক ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নানা ধরনের শিক্ষক ও উপদেশ বিদ্যমান ছিল। তেনদাই-ও শিন্তোকে নিজেদের ধর্মতত্ত্বে সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছিল।
তেনদাই অনুসারে ইতিহাসবোধ্ধ (শাকা, অর্থাৎ গৌতম বুদ্ধ) এমন সত্যকে উপস্থাপন করেন যা সাধারণ ভাষায় প্রকাশ করা যায়। আমিদা (অমিতাভ) একটি উচ্চতর স্তরের প্রতীক, যা ধ্যানের সঙ্গে যুক্ত। বৈরোচন চূড়ান্ত স্তরের প্রতীক, যা শুধুমাত্র বুদ্ধপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা উপলব্ধি করতে পারেন। তেনদাই চারটি "স্বর্গ" বা পুণর্জন্মের স্তরের কথা বলে—এর মধ্যে একটিতে সাধারণ মানুষও পুনর্জন্ম লাভ করতে পারে। পরে গঠিত আমিদাবাদ সম্প্রদায় এই স্তরটিকেই কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এই ধারণা ধর্মীয় চিত্রকলায় বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়।
শিংগন তেনদাই-এর খুব কাছাকাছি হলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। তেনদাই-র নেতৃত্বস্থানীয় মঠগুলো রাজধানীর নিকটে অবস্থিত ছিল এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার দুর্বলতায় নিজেদের সামরিক বাহিনী গড়ে তোলে। এনরিয়াকুজি প্রায় এক শতাব্দী ধরে কাছাকাছি মিদেইরা মন্দিরের সঙ্গে যুদ্ধ করে, যদিও তফাত কেবল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ছিল, মতাদর্শগত নয়। শিংগন দূরবর্তী কোয়াসানে গড়ে ওঠে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজে বোঝার মতো আচার প্রদান করে—যেমন, অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা। পরবর্তীতে ধর্মীয় সংস্কারকরা একে কুসংস্কার বলে নিন্দা করলেও সাধারণ মানুষের মাঝে এর জনপ্রিয়তা ছিল প্রবল। শিংগন শিন্তো উপাসনালয়গুলোর প্রতিরক্ষাতেও ভূমিকা রাখে।
শিংগন তিনটি সূত্রের উপর ভিত্তি করে গঠিত, যেগুলো চীনে ৭২৫ সালের পরে আসে এবং অধিকতর ভারতীয় রূপে উপস্থাপিত। এর ফলে হিন্দু দেবতা ও সংস্কৃত লিপি শিংগনে স্থান পায়। বলা হয়, কুকাই নিজে সংস্কৃত শিখেছিলেন এবং শিংগন-এর জন্য একটি রূপান্তরিত লিপি তৈরি করেছিলেন। এটি তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের মতোই নরক বিষয়ক চিত্র ও ধারণাকে গুরুত্ব দেয়—জাপানি শিল্পে নরকের যত ছবি দেখা যায়, বেশিরভাগই শিংগন উৎস।
শিংগন ধর্মগ্রন্থসমূহ সমস্তই তথাকথিত “সর্বজনীন শিক্ষা” বা প্রকাশ্য শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। গোপন মতবাদগুলি কেবল মৌখিকভাবে শেখানো হয়, ফলে সেগুলো বর্ণনা করা কঠিন। তবে, উপলব্ধ তথ্য অনুসারে এই গোপন শিক্ষাগুলি জেন (禅) মতবাদের মতোই বলে মনে হয়। বিশুদ্ধ জেন শিক্ষা অনুযায়ী, একজন অন্বেষককে শেষ পর্যন্ত নিজের পথ নিজেই খুঁজে নিতে হয়, কারণ কেউ অন্য কাউকে আলোকপ্রাপ্তির উপায় কিংবা আলোকপ্রাপ্তির অনুভূতি কী তা কার্যকরভাবে বোঝাতে পারে না। শিংগনের গোপন মতবাদের পার্থক্য হলো, এটি ভিক্ষুকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত প্রদান করে, যা তাকে নিজ পথ আবিষ্কার করতে সহায়তা করে—এবং তাকে সেটাই করতে হয়।
হোস্সো (法相) এবং কেগন (華厳) মতবাদ শিক্ষা দেয় যে অধিকাংশ মানুষই আলোকপ্রাপ্তি অর্জনে সম্পূর্ণ অক্ষম, তারা যতবারই পুনর্জন্ম গ্রহণ করুক না কেন। এর বিপরীতে, শিংগন এবং তেনদাই (天台) মতবাদ বিশ্বাস করে যে প্রত্যেকের মধ্যেই বুদ্ধত্বের মৌলিক প্রকৃতি বিদ্যমান, এবং সঠিক পরিবেশে এটি মুক্তি পেতে সক্ষম।
কুকাই (空海) দশটি ভিন্ন মাত্রার বোধগম্যতার স্তর নির্ধারণ করেছিলেন। এর মধ্যেই মানুষ অবস্থান করে থাকে, এবং তিনি শিক্ষা দিয়েছিলেন যে একজন ব্যক্তির নিজেকে এক স্তর উন্নীত করাও একটি মূল্যবান সাধনা। কুকাই হোস্সোর শিক্ষাকে ষষ্ঠ স্তরে, তেনদাইকে অষ্টম স্তরে, এবং স্বভাবতই শিংগনকে দশম স্তরে রেখেছিলেন। প্রথম নয়টি স্তর অতিক্রম করা মানে ভুলগুলো দূর করা। এর ফলে অবশেষে সত্য উপলব্ধি সম্ভব হয়। এই চূড়ান্ত স্তরটি হল এই উপলব্ধি—আপনি নিজেই আসলে বৈরোচন।
অনেক তেনদাই মন্দির এখনও টিকে আছে, তবে আধুনিককালে এটি আর জনসাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় ধর্ম হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। অপরদিকে, শিংগন আজও দৃশ্যমানভাবে সক্রিয়, এর প্রায় ৩০০০ মন্দির আছে। এটি প্রায়ই তৃতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ সম্প্রদায় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রাচীন যুগের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রদায়গুলির মধ্যে একমাত্র জীবিত ঐতিহ্য হিসাবে গণ্য।
বৌদ্ধ মন্দিরগুলো সাধারণত বহু প্রকার বোধিসত্ত্ব, বুদ্ধ এবং অন্যান্য পবিত্র সত্ত্বার মূর্তি প্রদর্শন করে, তবে শিংগন মন্দিরগুলিতে সেগুলোর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যেখানে অনেক চীনা দেবতাও অন্তর্ভুক্ত। শিংগন ধর্ম "ম্যো-ও" (明王) বা স্বর্গীয় রাজাদের বিভিন্ন রূপের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, যাদের মধ্যে ফুদো (不動明王) সবচেয়ে বেশি পূজিত হন। তিনি এক ভয়ংকর, দানব-নির্যাতনকারী রূপে চিত্রিত হন।
অনেক মন্দিরে কান্নন (চীনা কুয়ান-ইন, সংস্কৃত অবলোকিতেশ্বর) এর উপস্থিতি থাকে, যিনি বর্তমানে সম্ভবত জনসাধারণের পূজায় কেন্দ্রীয়তম চরিত্র। ভারতীয় মূর্তিগুলো পুরুষ হলেও, চীন ও জাপানে কান্ননকে সাধারণত নারীরূপে উপস্থাপন করা হয়। তিনি দুঃখীদের প্রতি সহানুভূতির দেবী। অপর এক বহুল পূজিত বোধিসত্ত্ব হচ্ছেন জিজো (地蔵菩薩), যিনি সংস্কৃতে ক্ষিতিগর্ভ। তিনিও এক দয়ালু দেবতা, যিনি বিশেষভাবে মৃতদের প্রতি অনুকম্পাশীল। জাপানে তিনি বিশেষভাবে মৃত শিশুদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে উঠেছেন।
==আমিদা==
জাপানে আমিদিবাদ বৌদ্ধধর্মের বিশ্বাসের ধর্ম হিসেবে প্রধান প্রবাহকে প্রতিনিধিত্ব করে। অমিতাভ একটি দয়ালু দেবতা, যিনি ভারতের বাইরের মহাযান বৌদ্ধধর্মে, বিশেষ করে জাপানের টেনদাই ও শিংগন মন্দিরগুলোতে পাওয়া যায়। ব্যাপক সন্দেহ করা হয় যে অমিতাভের উৎপত্তি ইরানীয় এবং তিনি একটি সূর্য দেবতা প্রতিনিধিত্ব করেন। এই সংযোগটি জাপানের আমিদিবাদের প্রতীকচিত্রে খুব স্পষ্ট, যেখানে আমিদাকে প্রায়শই অস্তমিত সূর্য হিসেবে দেখানো হয়, যিনি উপাসকের মুখে আলো ফেলেন। অমিতাভ একটি "পুণ্যের স্থানান্তর" তত্ত্বের সাথে যুক্ত, যা অনেক বৌদ্ধধর্ম দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। যদি আমরা জ্ঞানের অর্জনের প্রক্রিয়াকে বারবার ভ্রমণকারী মাইলস জমানোর মতো কিছু মনে করি, তাহলে সহজেই দেখা যায় যে বুদ্ধত্ব অর্জনকারী একটি প্রাণী তার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি পয়েন্ট জমাতে পারে। অমিতাভ সেই পয়েন্ট ভাগ করার জন্য ইচ্ছুক। জাপানে হোসো, কেগন, টেনদাই এবং শিংগন সবাই পুণ্যের স্থানান্তর প্রত্যাখ্যান করে। যদি আপনি বুদ্ধ হতেই চান, আপনাকে নিজেরাই সব করতে হবে। টেনদাই এবং শিংগন আমিদাকে সম্মান করলেও পুণ্যের স্থানান্তর অনুমোদন করেনি। টেনদাই মনে করত যে আমিদায় বিশ্বাস একজনকে এমন উচ্চতর সত্য উপলব্ধি করার আত্মবিশ্বাস দিতে পারে যা সে অন্যথায় পেত না। এটি সফল ধ্যানের জন্য সঠিক মানসিকতা অর্জনে সাহায্য হিসেবে ব্যবহৃত হত। হেইয়ান যুগের মধ্যে আমিদার উপাসনা ধীরে ধীরে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং হেইয়ান যুগের শেষে বিশেষত অগণ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি একটি প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে। ধারণাটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয় যে আমিদার প্রতি ভক্তি জন্মান্তরে পরশুভ বর্ণিত স্বর্গস্থান, জাপানে যা জোডো নামে পরিচিত, সেখানে পুনর্জন্মের পথ খুলে দেয়। টেনদাই ধারার অন্তর্গত আমিদার প্রতি ভক্তি ধ্যানের উপর ভিত্তি করে ছিল, প্রার্থনার উপর নয়।
সন্ন্যাসী গেনশিন (৯৪২–১০১৭) সাধারণত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হন যিনি আমিদিবাদকে একটি স্বতন্ত্র শিক্ষার স্তরে উন্নীত করেন এবং অন্ততপক্ষে সেই মতবাদকে গ্রহণ করেন যে আমিদার নামের প্রার্থনামূলক উচ্চারণই পুনর্জন্ম লাভের জন্য যথেষ্ট। গেনশিন একটি জনপ্রিয় বই লিখেছিলেন এবং একজন পরিচিত চিত্রশিল্পীও ছিলেন, তবে তিনি কোনও সম্প্রদায় গঠনের চেষ্টা করেননি। প্রথম যিনি এ কাজটি করেন তিনি ছিলেন রোনিন (১০৭২–১১৩২)। তার সম্প্রদায় ইউজু নম্বুতসু নামে পরিচিত এবং আজও রয়েছে কিন্তু সবসময়ই ছোট ছিল। এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ পথপ্রদর্শক ছিলেন হোনেন (১১৩৩–১২১২), যিনি গেনশিনের বই দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হন। তার লক্ষ্য ছিল সকলের মুক্তি নিশ্চিত করা আমিদার পরশুভ জগতের মাধ্যমে পুনর্জন্মের মাধ্যমে, যা "নামু আমিদা বৎসু" নম্বুতসুর জপের মাধ্যমে সাধিত হত। হোনেনের দৃষ্টিতে নম্বুতসুর উচ্চারণ একটি জাদুকরী কর্ম যা পাপপূর্ণ মানুষের জন্যও লক্ষ্য পূরণ করবে। তিনি ১১৭৫ সালে প্রচার শুরু করেন এবং সম্রাট ও রাজবংশীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালান। তিনি প্রাচীন জ্ঞানের অবজ্ঞা করেননি কিন্তু বলেন যে বিশ্বের অবনতি এতটাই যে সেগুলো সম্ভবত সফল হবে না। একমাত্র বাস্তব আশা ছিল পরশুভ জগতে পুনর্জন্ম, যেখানে সবাই জ্ঞানার্জন করতে পারবে। নম্বুতসু পদ্ধতিকে বৈধতামূলক সূত্রটি বলে যে ১০ বার উচ্চারণ করলেই যথেষ্ট, এবং হোনেন স্বীকার করতেন যে একবার জপ করলেই সম্ভব। তবে, তার অনুসারীরা নম্বুতসুর উচ্চারণকে জীবনের প্রধান কাজ হিসেবে গণ্য করতে উৎসাহিত হতেন, অন্য কিছু দ্বিতীয় স্থানে রাখতে পারতেন না। ধারণা করতাম যে যদি সঠিক মনোভাব নিয়ে একবার জপ করেন এবং সে মুহূর্তে মৃত্যু হয়, তবে আপনি পরশুভ জগতে যেতে পারবেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আপনার পাপগ্রস্ত প্রকৃতি আপনাকে সত্যিকারের বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে ফেলাতে পারে এবং আপনি আবার বিপদে পড়বেন। নম্বুতসু খুব বেশি উচ্চারণ করাও যায় না, এবং প্রায়শই সংগঠিত অধিবেশনগুলোতে গোষ্ঠীগতভাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক জপের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা হত। এক মিলিয়ন জপকে একটি মহৎ লক্ষ্য মনে করা হত। একটি সম্রাট এক মিলিয়ন জপ বিংশ বার সম্পন্ন করার কথা বলা হয়।
হোনেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে যদি একটি পাপগ্রস্ত মানুষ শুধু নম্বুতসু উচ্চারণের মাধ্যমে রক্ষা পেতে পারে, তাহলে কেন সে অপরাধী জীবন কাটিয়ে মৃত্যু শয্যায় পাপমুক্ত হতে পারে না? এটি ছিল সম্প্রদায়ের একটি জটিল বিষয়, কিন্তু হোনেন জবাব দিতেন যে বিশ্বাস আন্তরিক হতে হবে, ভান নয়, এবং যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে তার পাপের প্রতি অনুতপ্ত, সে অপরাধী জীবন কাটাবে না। এছাড়াও তিনি বলেছিলেন যে যিনি প্রতিটি অবসর সময়ে নম্বুতসু জপে ব্যস্ত থাকেন, তার সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
হোনেন ব্যতিক্রমী ছিলেন কারণ তিনি টেনদাই সম্প্রদায় এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা অত্যাচার প্ররোচিত করেছিলেন, যা বৌদ্ধ বিশ্বের মধ্যে বিরল ঘটনা। ১২০৪ সালে এনরাকুজি একটি সম্মেলন আয়োজন করেছিল যা টেনদাই প্রধান সন্ন্যাসীকে হোনেনের শিক্ষার নিন্দা করতে অনুরোধ করেছিল। হোনেন একটি প্রকাশিত পত্রের মাধ্যমে তার অনুসারীদের অন্য ধর্মের অবমাননা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন এবং বিশ্বাস দ্বারা রক্ষা পাওয়া ব্যক্তিরা অবাধে পাপ করেও মুক্তি পেতে পারে এমন তত্ত্বকে নিন্দা করেন। ফুজিওয়ারা কানেজানে, রেজেন্ট, হোনেনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন এবং আবেদন থেকে কিছু হয়নি। তবে পরের বছর কোফুকুজি (একটি শিংগন মন্দির) এর সন্ন্যাসীরা হোনেনের কিছু শিষ্যদের দোষারোপ করিয়ে সরকার থেকে শাস্তি করাতে সক্ষম হয়। আবার হোনেন উত্তর দেন এবং তার উত্তর থেকে স্পষ্ট যে বিষয়টি ছিল তার শিক্ষা অনৈতিকতা ক্ষমা করে কি না তা নিয়ে বিতর্ক। ১২০৭ সালে অবসরপ্রাপ্ত সম্রাট গো-তোবা, যিনি তখনকার কার্যত শাসক ছিলেন, হোনেনের শিষ্যদের কিছু অংশের সঙ্গে মতবিরোধে পড়েন। সরাসরি যাদের প্রতি তার ক্রোধ ছিল তারা মৃত্যুদণ্ড পায় এবং হোনেন নির্বাসিত হন। ফুজিওয়ারা কানেজানে তার প্রভাব ব্যবহার করে নির্বাসনের জন্য হোনেনের জন্য তুলনামূলক আরামদায়ক অবস্থান পান। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা হোনেনের স্বার্থে কাজ চালিয়ে যান এবং নতুন একটি মন্দির উৎসর্গের উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা কাজে লাগিয়ে হোনেনের নির্বাসন বছরের শেষে শিথিল হয়। তিনি যেখানে খুশি যেতে পারতেন, তবে রাজধানীতে ফিরে যেতে পারতেন না। অবশেষে ১২১১ সালে তিনি কিয়োটো ফিরে আসার অনুমতি পান, কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে মারা যান। তার বহু শিষ্য ছিল এবং আজ একটি বড় জোডো সম্প্রদায় তার মতবাদ অনুসরণ করে।
তবে তার একজন শিষ্য, শিনরান (১১৭৩–১২৬৩), নিজস্ব একটি সম্প্রদায় গঠন করেন যা অত্যন্ত সফল হয় এবং জাপানে ব্যাপক ব্যবধানের সঙ্গে বৃহত্তম বৌদ্ধ আন্দোলন হয়ে থাকে। এটি জোডো শিনশু বা বলা যায় সংস্কারকৃত জোডো নামে পরিচিত। শিনরান জটিলতা ও দ্বিধা ত্যাগ করে একমাত্র বিশ্বাসের দ্বারা মুক্তির মতবাদ ঘোষণা করেন। নম্বুতসুর সঙ্গে সম্পর্কিত সকল জাদুকরী ক্ষমতা বাতিল করা হয়, তেমনি মুক্তির অন্য সকল পথও বাতিল করা হয়। তিনি সম্পূর্ণরূপে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী পরম্পরাও পরিত্যাগ করেন। তিনি বিয়ে করেন ও সন্তান করেন এবং জোডো শিনশু পুরোহিতরা শুরু থেকেই বিবাহিত পুরুষ ছিলেন। একটি জোডো শিনশু মন্দির বা গির্জা পুরোহিত বা প্রচারকের ব্যক্তিগত সম্পত্তি, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রোটেস্ট্যান্ট প্রচারকের মতো তার অনুসারীদের দান থেকে জীবনধারণ করেন।
নিশিনানের জীবনকথার ঐতিহ্যগুলো কিছুটা বিভ্রান্তিকর। তিনি রাজবংশের বংশধর ছিলেন, শৈশব থেকে এনর্যাকুজি মঠে ভিক্ষু হিসেবে প্রশিক্ষিত হন, এবং ১২০১ সালে হোণেনের শিষ্য হন। বলা হয়, ফুজিওয়ারা কানেজানে হোণেনের সঙ্গে এমন একটি ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন যে, একজন পুরুষ পুরোহিত হিসেবে কাজ করতে পারবে এবং স্বামী ও পিতার সাধারণ জীবনযাপন করতে পারবে, এবং তিনি তার কন্যাকে এমন এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। হোণেন এই কথায় বিস্মিত হননি এবং নিশিনানের পরামর্শ দিলেন। নিশিনান এক বছর সময় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করলেন। নিশিনান এবং হোণেন অবশ্যই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং ১২০৭ সালে একই সময়ে নিশিনানকে উত্তর দিকে নির্বাসিত করা হয় এবং হোণেনকে দক্ষিণ দিকে পাঠানো হয়। উভয়কেই ১২১১ সালে রাজধানীতে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু নিশিনান প্রথমে সেই প্রস্তাবকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের মাঝে দীর্ঘ মিশনারি যাত্রায় বের হন। নিশিনানের প্রচারের বিশেষ লক্ষ্য ছিল সর্বদা সাধারণ মানুষ, ধনী রাজতন্ত্র নয়। তিনি প্রসিদ্ধ তার এই পর্যবেক্ষণের জন্য যে, একজন সৎ মানুষের পুনর্জন্ম সম্ভব হওয়ার মানে হলো একজন পাপীর সুযোগ আরও বেশি। সৎ মানুষ তার নিজের সদ্গুণের সচেতনতার কারণে আন্তরিক বিশ্বাস থেকে আটকায়, যেখানে পাপী জানে তার মাত্র একটাই সুযোগ আছে, বিশ্বাস করে যে আমিদার প্রতিজ্ঞা অযোগ্যদের জন্যও যথেষ্ট। নিশিনান তার সক্রিয় প্রচার জীবনের বেশির ভাগ সময় গ্রামে কাটিয়েছেন এবং ১২৩০ সালে প্রবীণ বয়সের দিকে আসতে সচেতন হয়ে কিয়োটো ফিরে আসেন। তিনি প্রায় নব্বই বছর পূর্ণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
জোদো শিনশু নিশিনানের জীবদ্দশায় বিকাশ লাভ করেছিল, কিন্তু তার মৃত্যুর পর কিছুটা বিভ্রান্তির শিকার হয়। কিয়োটোতে একটি প্রধান মন্দির, হোঙ্গানজি নামে পরিচিত, নির্মিত হয়েছিল, কিন্তু অনেক গ্রামীণ গোষ্ঠী এই মন্দিরের অধীনে শাসিত হতে পছন্দ করেনি এবং নিজেদের পথ বেছে নিয়েছিল। এই সেক্টের পুনর্গঠন ঘটে ৮ম উত্তরাধিকারী হোঙ্গানজির নেতার, যিনি রেন্নিও (১৪১৫-১৪৯৯) নামে পরিচিত। তিনি স্পষ্টতই একজন গতিশীল বক্তা এবং দক্ষ সংগঠক ছিলেন, এবং সেক্টকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছিলেন। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে, যখন সরকার ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছিল এবং দেশব্যাপী অরাজক নাগরিক যুদ্ধে মেতে উঠেছিল, সেক্ট প্রায় অজান্তে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিল। রেন্নিও এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। ১৪৬৫ সালে এনর্যাকুজির ভিক্ষুরা, রেন্নিওর প্রচারে বিরক্ত হয়ে, হোঙ্গানজিতে আক্রমণ চালিয়ে এটি দগ্ধ করে। রেন্নিও গ্রামাঞ্চলে পালিয়ে যান, যেখানে ধনী কৃষকদের মধ্যে তাকে স্বাগত জানানো হয়। সেই সময়ের অস্থির অবস্থায় এই ব্যক্তিরা ভারী অস্ত্রশস্ত্রধারী ছিল। কিছু জায়গায় তারা নিম্নস্তরের সামুরাই হিসেবে কাজ করতো, যাদের বলা হতো জিজামুরাই। তারা গ্রামেই হীনবর্ণ কৃষকদের সঙ্গে বাস করতো। অন্যত্র, যেখানে ফিউডাল শাসন কমজোরি বা অনুপস্থিত, গ্রামেরা ধনী কৃষকদের নেতৃত্বে লিগ গঠন করত। এই লিগগুলো আত্মরক্ষার জন্য মিলিশিয়া তৈরি করতো এবং কয়েকটি জায়গায় তারা প্রদেশের বৃহৎ অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো।
রেন্নিও এমন ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক ভক্ত পেয়েছিলেন এবং স্থানীয় জোদো শিনশু পুরোহিত প্রায়ই গ্রামের নেতৃত্বে থাকতো। যেখানে গ্রামীণ লিগ এবং জোদো শিনশু রূপান্তরিতদের অঞ্চল মিলতো, সেখানে রেন্নিও অনিবার্যভাবে ফিউডাল রাজনীতি ও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তেন। তিনি জোরালোভাবে বিরোধিতা করলেও এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁর উত্তরসূরিরা পরিস্থিতি মেনে নিয়ে হোঙ্গানজিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। ১৪৬৫ সালে কিয়োটো ত্যাগ করার পর রেন্নিও এচিজেন প্রদেশের ইয়োশিজাকি নামক স্থানে অবস্থান গ্রহণ করেন, যেখানে তিনি অনেক অনুসারী পান। ইয়োশিজাকি স্থানীয় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং রেন্নিও ১৪৭১ সালে পালিয়ে ফিরে কিয়োটো এসে নতুন হোঙ্গানজি মন্দির নির্মাণ করেন। কিন্তু ইয়োশিজাকির আশেপাশের রেন্নিওর অনুসারীরা ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। তারা একটি লিগ গঠন করে এবং দ্রুত কাগা প্রদেশের পুরো এলাকা দখল করে, যা ইয়োশিজাকির উত্তরদিকে অবস্থিত। তারা প্রায় এক শতাব্দী ধরে কাগা ধরে রাখতে সক্ষম হয়, দক্ষ ফিউডাল শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা করে, যেমন দক্ষিণে আসাকুরা গোত্র (এচিজেন), এবং উত্তরে উএসুগি গোত্র (এচু এবং ইচিগো)। তাদের যথেষ্ট শক্তি ছিল কিয়োটোতে সৈন্য পাঠানোর জন্য যাতে হোঙ্গানজিকে রক্ষা করা যায়। এই সময়ে জোদো শিনশুর একটি বিকল্প নাম ছিল ইক্কোশু। এর অর্থ “একাগ্রচিত্ত সেক্ট” বা সম্ভবত “এক পথের সেক্ট,” কারণ তারা কেবল বিশ্বাসের মাধ্যমে মুক্তির শিক্ষা দিত, অন্য কোনো মাধ্যম অগ্রাহ্য করে। হোঙ্গানজি অনুসারীদের অস্ত্রধারী লিগগুলোকে বলা হত ইক্কো ইক্কি বা ইক্কো লিগ। কাগা ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়। কেন্দ্রীয় জাপানে আরও অনেক ইক্কো লিগ ছিল, পাশাপাশি হোঙ্গানজির সাথে যুক্ত নয় এমন অন্যান্য অনুরূপ লিগও ছিল। সবচেয়ে শক্তিশালী একটি আসলে শিংগন মঠ নেগোরো থেকে পরিচালিত হতো। ব্যক্তিগত কথা: আমার পিএইচডি থিসিস কাগা ইক্কো ইক্কি এবং রেন্নিও সম্পর্কে, বিশেষ করে ইয়োশিজাকির সময়কালটি এতে বড় ভূমিকা রাখে।
কিয়োটোর হোঙ্গানজি দ্বিতীয়বার ধ্বংস করা হয়েছিল নতুন মধ্যযুগীয় অন্য একটি সেক্ট, নিচিরেন সেক্টের শত্রুতার কারণে, এবং এটি ওসাকায় চলে যায়, যেখানে বর্তমান ওসাকা কেল্লার স্থানেই একটি বড় কেল্লা নির্মিত হয়। ওসাকা হোঙ্গানজি ঐক্য রণকাণ্ডে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে, যা শেষ পর্যন্ত টোকুগাওয়া বকুফুর প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখে। হোঙ্গানজি আগুনের অস্ত্র গ্রহণে আগ্রহী ও সফল প্রথম সংগঠনের মধ্যে অন্যতম ছিল। সব ধরনের ইক্কি সংগঠন দেশের পুনর্মিলনের যুদ্ধে দমন করা হয় এবং অবশেষে ওসাকা একাকী থাকে। দীর্ঘ অবরোধ সহ্য করে শেষমেষ পরাজয়ের জন্য আলোচনা চালায়। এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায় এবং সকল সাময়িক ও সামরিক ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। ১৬০২ সালে টোকুগাওয়া ইেয়াসু আদেশ দেন সেক্টটি দুই ভাগে ভাগ করতে (কোনও মতবৈষম্য ছিল না, কেবল দুইটি সংগঠন) এবং কিয়োটো ফিরে যেতে, যেখানে দুটি নতুন হোঙ্গানজি মন্দির নির্মিত হয়, একটি পূর্ব ও একটি পশ্চিম, একে অপরের খুব কাছাকাছি। সেগুলো এখনও রয়েছে, কিয়োটো রেলওয়ে স্টেশন থেকে সামান্য হাঁটার দূরত্বে। ১৮৬৮ সালের পরে সরকার পূর্ব হোঙ্গানজিকে দমন করার চেষ্টা করেছিল, এটি নিশিনানের স্মৃতিসৌধে রূপান্তরিত করে, কারণ মন্দিরটি তার সমাধির স্থানে নির্মিত। এতে প্রতিরোধ ও বিভ্রান্তি হয় এবং বেশ কয়েকটি নতুন সেক্টের জন্ম হয়, যেখানে পশ্চিম হোঙ্গানজি স্থিতিশীল থাকে। পশ্চিম হোঙ্গানজি জাপানে অনুসারীর সংখ্যায় বৃহত্তম বৌদ্ধ সংগঠন হিসেবে বিরাজমান। সম্ভবত হোঙ্গানজি সেই অবস্থান অর্জন করেছিল রেন্নিওর জীবদ্দশায় এবং সেখান থেকেই অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ সংগঠন, বৌদ্ধ চার্চ অব আমেরিকা, পশ্চিম হোঙ্গানজির অংশ।
==নিশিরেন==
একই সময়ে জাপানের জোদো সেক্টগুলির মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেক্ট প্রতিষ্ঠা করেন নির্শিরেন (১২২২-১২৮২)। হোনেন এবং শিনরানের মতো, নির্শিরেন এনরাকুজি মঠে তেন্ডাই ধারার সন্ন্যাসী হিসেবে প্রশিক্ষিত হন। নির্শিরেন এবং তার অনুসারীরা অন্যান্য বৌদ্ধ ধারার প্রতি তীব্র বিদ্বেষ প্রদর্শন করেছেন। নির্শিরেন একবার দাবি করেছিলেন যে, যেকেউ একবারও নেম্বুতসু (একটি বৌদ্ধ মন্ত্র) উচ্চারণ করলে তাকে নরকে দীর্ঘকালীন শাস্তি ভোগ করতে হবে। তিনি ক্রমাগত সরকারের কাছে অন্যান্য বৌদ্ধ সেক্টগুলিকে দমন করার দাবি জানান। এর ফলে মানুষ তার থেকে বিরক্ত হয়ে তাকে দুইবার নির্বাসিত করে এবং একবার মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির সম্মুখীন হতে হয় (নিজের বর্ণনা অনুযায়ী)। তিনি বিশ্বাস করতেন যে একটি রাষ্ট্রধর্ম থাকা উচিত যা সবাই মেনে চলবে। এটা এমনই যেন মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় পোপ ভুলবশত অন্য দিকে জন্ম নিয়েছেন। আজও তার অনুসারীরা ধর্মীয় মিশনারি কার্যক্রমে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম আগ্রাসী।
দশ বছর এনরাকুজিতে অধ্যয়নের পর ১২৫৩ সালে নির্শিরেন তেন্ডাই ধারাকে তার বিশুদ্ধ রূপে সংস্কারের ধারণা পোষণ করেন। তিনি ‘লোতাস সূত্র’ (ম্যোহো রেঞ্জে কিও) বা সদ্ধর্মপুন্ডারিকা এর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব স্বীকার করেন এবং নেম্বুতসুর বিরুদ্ধে নিজের মন্ত্র ‘নাম ম্যোহো রেঞ্জে কিও’ প্রচলন করেন। তিনি এতটাই জোরালো ও প্রবল ছিলেন যে কোন মঠ তাকে সহ্য করতে পারেনি, ফলে তিনি একসময় ঘুরেফিরে একাকী বসবাস শুরু করেন কামাকুরার নিকটে। তিনি প্রধানত একটি পর্যটক উপাসক হিসেবে কাজ করেন এবং দ্রুতই খ্যাতি অর্জন করেন।
১২৬০ সালে তিনি একটি গ্রন্থ লিখে হোজো রিজেন্টের কাছে উপস্থাপন করেন, যিনি তখন জাপানের কার্যত শাসক ছিলেন। সেই গ্রন্থে তিনি বলেন, ধর্মভ্রষ্টদের হত্যা অপরাধ নয় এবং হোনেনের অনুসারীদের ধ্বংস করার জন্য তরবারি ব্যবহারের দাবি জানায়। শিনরানের উল্লেখ ছিল না, সম্ভবত তখন তাকে আলাদা সেক্টের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দেখা হয়নি। পরবর্তী লেখায় তিনি জেন ও শিঙ্গনের বিরুদ্ধেও একই ধরনের কঠোর আক্রমণ চালান। হোজো রিজেন্ট তার চরমপন্থায় চমকে যান এবং তিনি আক্রমণ করা ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো তার আয়বাতশালা ধ্বংস করে দেয়। নির্শিরেন দ্রুত গ্রেপ্তার হয়ে নির্বাসিত হন, কিন্তু কিছুদিন পরে মুক্তি পেয়ে কামাকুরায় ফিরে আসেন। তিনি আপোষ করেননি এবং সফলভাবে প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যান।
প্রথম মঙ্গোলীয় আক্রমণের সময় তিনি ঘোষণা দেন যে জাপান ধ্বংস হয়ে যাবে যদি তা সত্য ধর্মে ফিরে না আসে। তার প্রচারণায় অনেক সময় হোজো পরিবারের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় আক্রমণ ছিল। ১২৭১ সালে আবার তাকে গ্রেপ্তার করে নির্বাসিত করা হয়। গ্রেপ্তারকারীরা তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঐশ্বরিক সাহায্যে তাকে রক্ষা করা হয়। বাস্তবে তাকে সাদো দ্বীপে নির্বাসিত করা হয়, যা তখনকার ‘অ্যালক্যাট্রাজ’, যেখানে সবচেয়ে বড় অপরাধীরা কঠোর শর্তে বন্দী থাকতেন।
দুই বছর পর মুক্তি পেয়ে তার বন্ধুদের সাহায্যে সরকার তাকে অনুরোধ করে অন্য সেক্টের প্রতি শিষ্টাচার প্রদর্শন করলে তার নিজস্ব সেক্ট প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেবে। কিন্তু তার জবাব ছিল কামাকুরা ছেড়ে মাউন্ট ফুজির ঢালে ছোট একটি আশ্রম স্থাপন করা। এ সময় তিনি মিনোবু এবং ইকেগামি নামক স্থানে দুটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও তার সেক্টের প্রধান কেন্দ্র। ১২৮২ সালে তিনি ইকেগামিতে মৃত্যুবরণ করেন। তার ছয়জন প্রধান শিষ্য ছিলেন সবাই অভিজ্ঞ মিশনারি এবং সেক্ট ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
সেক্টটি আগ্রাসী থেকেই যায়। দ্বিতীয় বার কিয়োটোর হোংগাঞ্জি ধ্বংসের পেছনে এটি ছিল, এবং ১৫৩০-এর দশকে তেন্ডাই ধারার বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধও লড়েছিল (যা হারায়)। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিভক্ত ছিল অনেক প্রধান ও প্রতিদ্বন্দ্বী শাখায়। একটি শাখাকে ১৬১৪ সালে টোকুগাওয়া সরকার নিষিদ্ধ করে, কারণ তারা অন্য সেক্টকে মানতে অস্বীকার করেছিল এবং সরকারী আদেশ মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল যাতে সব জাপানিকে নিকটস্থ হোংগাঞ্জি মন্দিরে নিবন্ধন করতে হয়, যা সরকারের জনগণনা ও বিবাহ ও মৃত্যুর রেকর্ড সহজ করার জন্য করা হয়েছিল।
আজ নিশিরেন সেক্ট সবচেয়ে বেশি পরিচিত আধুনিক সংগঠন নিশিরেন শোশু সোকাগাক্কাই এর জন্য। এটি একটি অত্যন্ত সক্রিয় সেক্ট যা বিশ্বজুড়ে প্রচার কাজ করে। নিশিরেন শোশু, ‘সত্য নিশিরেন সেক্ট’, নিশিরেনের মৃত্যুর পর তার একজন শিষ্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তারা নিশিরেনকে শাক্যমুনি বুদ্ধের পরিবর্তে উদ্ধারকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। এই সেক্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত টিকে ছিল।
১৯২৮ সালে এই সেক্টে পরিণত দুই পুরুষ সোকাগাক্কাই নামে একজন laymen সংস্থা গঠন করে। তারা আইসে মন্দিরে শ্রদ্ধা প্রদর্শনে অস্বীকার করে কারাগারে যায়, যা তখন সামরিক শাসনকালের নির্দেশ ছিল। একজন ১৯৪৪ সালে মারা যায়, অপরজন মুক্তির পর আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করেন। ১৯৪৫ সালের পর নতুন পরিবেশে এটি (অন্যান্য অনেক নতুন আন্দোলনের মতো) অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। ১৯৫৩ সালে এর সদস্য সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ এবং ১৯৫৯ সালে ৪ মিলিয়ন। এটি একটি কঠোর শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্তৃত্ববাদী আন্দোলন। এর নিজস্ব রাজনৈতিক দলও গঠিত। এটি “শাকু-বুকু” নামে পরিচিত ছিল, যা ছিল জোরপূর্বক ধর্মান্তরণের একটি পদ্ধতি। অজ্ঞাত একজন ব্যক্তিকে অনুসারীদের মাঝে নিয়ে এসে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি করানো হত। ধারণা করা হয় যে এটি বর্তমানে আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত জ্ঞান ১৯৬০-এর দশকের কথা, সোকাগাক্কাই কীভাবে পরবর্তীতে বিকশিত হয়েছে তা আমি জানি না।
==জেন==
[[File:BodhidharmaYoshitoshi1887.jpg|thumb|upright| ১৮৮৭ সালের ইয়োশিতোশির বোধিধর্মার একটি কাঠের ব্লক ছাপ।]]
জাপানি বৌদ্ধধর্মের শেষ উল্লেখযোগ্য শাখাটি কমপক্ষে নাম হিসেবে সবার কাছে পরিচিত, সেটি হলো জেন। এটি মূলত একটি রহস্যময় ভারতীয় সন্ন্যাসীর বংশপরম্পরার দাবি করে, যিনি বোধিধর্মা নামে চিনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তিনি রহস্যময় কারণ তার জীবনীতে অনেক ঐতিহাসিকের মতে কাল্পনিক উপাদান রয়েছে। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন তিনি কাল্পনিকই। তবু তার হাজার হাজার চিত্রকর্ম বিদ্যমান। জাপানে তাকে দারুমা নামে ডাকা হয়, সাধারণত তাকে একজন ছিঁড়ে ফেলা ভিক্ষুক বা কমিক চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। বলা হয় জেন ৬৫৪ সাল থেকে জাপানে প্রচারিত হয়েছে, কিন্তু যদি তাই হয় তবুও এটি জনপ্রিয়তা পায়নি। জাপানে আসল প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আইসাই (১১৪১-১২১৫), যিনি দুইবার চীন গিয়ে সেখানে অধ্যয়ন করেছিলেন। তখন জাপান ও চীনের মধ্যে কোনো সংগঠিত যোগাযোগ ছিল না, কেবল কিছু চীনা ব্যবসায়ী জাহাজ মাঝে মাঝে আসত। তখন চীনে চান (জেন) বৌদ্ধধর্মের ঝোঁক ছিল এবং এটি আইসাইকে আকৃষ্ট করেছিল। কিছু দাবি রয়েছে যে আইসাই চা বাগানও চীনের থেকে নিয়ে এসেছিলেন, তবে তা সত্য বলে মনে হয় না, তবে তিনি চা পানের প্রচলন করেন এবং জেনের সঙ্গে সংযুক্ত চা আয়োজন প্রবর্তন করেন। চীনে সাধুদের মধ্যরাতে জাগার জন্য চা পান করার রীতি ছিল, যা পরবর্তীতে নিজস্ব আনুষ্ঠানিক রূপ পায়। আইসাই চা নিয়ে একটি বই লিখেছেন এবং মানুষকে সাকের চেয়ে চা পানের পক্ষে প্ররোচিত করেছেন।
আইসাই ছিলেন মিনামোতো নো ইয়োরিতোমোর সমকালীন এবং তার ও তার উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। ১২০৩ সালে শোগুন ইয়োরিই তাকে শোগুনের সর্বোচ্চ ধর্মীয় পদে নিয়োগ দেন। তিনি কামাকুরায় নতুন মন্দির নির্মাণ তদারকি করছিলেন যখন ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। জেনের কয়েকটি শাখা রয়েছে। আইসাই যে শাখাটি চালু করেন তাকে রিনজাই বলা হয়। জেনের দ্বিতীয় প্রধান শাখা হলো সোতো, যা জাপানে এনেছিলেন ডোগেন (১২০০-১২৫৩), আইসাইয়ের শিষ্য, যিনি চীনও গিয়েছিলেন। আরও একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রারম্ভিক ব্যক্তি ছিলেন চীনের সন্ন্যাসী দোরিউ, যিনি ১২৪৭ সালে জাপানে আসেন এবং বিভিন্ন মন্দিরের প্রধান সন্ন্যাসী ছিলেন।
সোতো জেনের সবচেয়ে বড় শাখা এবং এর কোন উপশাখা নেই (রিনজাইয়ের অন্তত দশটি আছে)। এটি সবচেয়ে নিয়মশৃঙ্খলাবদ্ধ শাখা, যা অপচয় এড়ায় এবং ভাল আচরণ ও নৈতিকতার উপর জোর দেয়। রিনজাই হঠাৎ আলোকপ্রাপ্তির গুরুত্ব আরোপ করে এবং তার পূর্ববর্তী কিছু বড় তা মনে করে না।
বোধিধর্মা থাকলেও জেন ও ভারতের মধ্যে কোনো সুস্পষ্ট সংযোগ নিশ্চিত নয়। সংস্কৃত কোনো উৎসে জেনের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না, আর চীনা প্রেক্ষাপটে দেখা যায় এটি দার্শনিক তাওবাদ দ্বারা ব্যাপক প্রভাবিত। জেনের সমস্ত শাস্ত্র ও গাইডলাইন প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে মানানসই নয়। জেন তৎকালীন জাপানের নবীন সৈন্য শ্রেণির জন্য খুবই আকর্ষণীয় ছিল। বই পড়ার অব্যবহারযোগ্যতা এর প্রধান কারণ; একজন ব্যস্ত সৈন্যও সময় কম থাকলে অনুসরণ করতে পারতো। এর প্রধান দাবি ছিল শৃঙ্খলা ও সংকল্প, যা সামরিক মানসিকতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সুজুকি দাইসেটসুর লেখা <i>জেন অ্যান্ড আর্চারি</i> বইটি এই সম্পর্কটি ভালভাবে ব্যাখ্যা করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে জেনের পদ্ধতি আমার গলফ সুইং উন্নত করতে ব্যবহার করছি — বেশি চিন্তা করো না; মস্তিষ্ক খালি রাখো এবং শরীর যা জানে তাই করো।
হোজো যুগে কামাকুরায় তিনটি ও কিয়োটোতে দুইটি জেন মন্দির ছিল। আশিকাগা যুগের শুরুতে প্রতি স্থানে পাঁচটি করে মোট দশটি ছিল। আশিকাগা যুগে জেন অনেক বেশি প্রাধান্য পেয়েছিল। প্রভাবশালী পুরোহিত সোসেকি (১২৭১-১৩৪৬) নিশ্চিত করেছিলেন যে জাপানের প্রতিটি প্রদেশে একটি জেন মঠ ও মন্দির নির্মিত হয় এবং সামগ্রিকভাবে শাখাটি অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল হয়। জেন সেই সময়ের চিত্রকলা, ভাস্কর্য এবং সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। জেন সম্পূর্ণ রাজকীয় স্বাদ ছিল এবং এটি কখনোই জনপদের ধর্ম হয়নি, সশস্ত্র পিপাসু কৃষক সৈন্যদল জেনের হয়ে লড়াই করেনি।
জেন অনেকাংশে হোসো শাখার মত ধারণা অনুসরণ করে যে বিশ্ব খুব জটিল এবং মানুষ তা বুঝতে পারে না। যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা সর্বদা ব্যর্থ হবে। আলোকপ্রাপ্তি আসতে হবে অযৌক্তিক, অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ উপায়ে। প্রাথমিক শাখাগুলো ধ্যানকে আলোকপ্রাপ্তির পথ হিসেবে শিক্ষা দিয়েছে, জেনও তাই করে। তবে এটি বাস্তবতার সরল রূপ ও সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে। আলোকপ্রাপ্তি এক ধরনের বিস্ময় এবং শিক্ষক হয়তো মাথায় মারলেও বা কথা বললেও তা ঘটতে পারে। কিছু জেন শিক্ষক বলেন এটি সম্পূর্ণ আকস্মিক হতে পারে: যেমন আকস্মিকভাবে কুণ্ডলী সাপ কামড়ালে হঠাৎ আলোকপ্রাপ্তি ঘটতে পারে। তবে অধিকাংশ শিক্ষকের মতামত, যতই না জানো কেন বা কীভাবে কাজ করছ, তবুও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
জেন মন্দির দেখতে অন্যান্য জাপানি বৌদ্ধ মন্দিরের মতই। তবেসর্বদা অমিদা বাদে বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বাদের মূর্তি থাকে। মন্দিরগুলোতে শাকা, কানন ও জিজোর মূর্তি সাধারণ। আধুনিক জেনের তিনটি প্রধান বিভাগ রয়েছে। এগুলো কখনও কখনও আলাদা শাখা হিসেবেও গণ্য হয়। রিনজাই ও সোতো প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ছিল, ওবাকু ১৭শ শতকে এসেছে। এসব মতবাদে খুব বেশি পার্থক্য নেই। ওবাকু চীনের ফুজিয়ান প্রদেশ থেকে আসা সন্ন্যাসীদের প্রভাবে গড়ে উঠেছে। তারা মিঙ রাজবংশের মাঞ্চু বিজয়ের ফলে পালিয়ে এসেছিলেন। চীনা পড়ার সময় তারা ফুজিয়ান উপভাষার উচ্চারণ ব্যবহার করেন। বাকিগুলোতে এটি রিনজাইয়ের সঙ্গে অভিন্ন। সোতো জেন বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপানে হোংগাঞ্জির পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী ছিল (শিঙ্গন তৃতীয়)। টোকুগাওয়া যুগ জুড়ে এবং ২০শ শতকের দিকে আস্তে আস্তে এর সাধারণ লোকসমাগম বেড়েছে। চা আয়োজনের জনপ্রিয়তাও এর পরিচায়ক। সাধারণ অনুসারীরা আলোকপ্রাপ্তির আশা করে না, তবে তারা সততা ও অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তি পছন্দ করে। চার্লস এলিয়টের মতামত অনুযায়ী, যা আমার জন্য যুক্তিসঙ্গত মনে হয়, জেনের অনুশীলনকারীরা মনে করেন তারা যে চেষ্টা করছে তা আসলে বৌদ্ধধর্মের আগেও গৌতম বুদ্ধ যা করেছিলেন, অর্থাৎ সম্পূর্ণ নির্ভরশীলভাবে আলোকপ্রাপ্তি লাভ করার কঠিন পথ অনুসরণ। বেশিরভাগ জেন শিক্ষক মনে করেন সফল হওয়া কঠিন, কিন্তু চেষ্টা করাই তোমাকে ভালো মানুষ বানায়। সাধারণ মানুষকে শেখানো হয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের পাপ স্বীকার করা — অর্থাৎ বুদ্ধদের কাছে নয়, নিজের কাছে — কারণ কোনো কবুলোক্তা নেই, এবং সৎ আচরণ পালন করা, যেমন দানশীলতা, ভদ্র ভাষা, দয়া, সোনালী নিয়ম অনুসরণ ও কৃতজ্ঞতা। একমাত্র প্রকৃত মতবাদ হলো, "মানুষ, পশু, উদ্ভিদ ও গাছপালা" সবাই বুদ্ধ হতে পারে। জেন কোনো শাস্ত্র বা পবিত্র গ্রন্থকে স্বীকার করে না।
<noinclude>{{Japanese HistoryTOC}}</noinclude>
psw1l5rpxr56ax4lomhty53p5x1ca5l
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)
0
27197
85631
85575
2025-07-04T04:05:32Z
Jonoikobangali
676
85631
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন|বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন]]
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
====বৈষ্ণব পদাবলি: বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস====
# [[/বিদ্যাপতি|বিদ্যাপতি]]
# [[/চণ্ডীদাস|চণ্ডীদাস]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
12ed10qg1ke8vl7vil1y05a5dkvaxqc
85639
85631
2025-07-04T06:14:18Z
Jonoikobangali
676
85639
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন|বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন]]
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
====বৈষ্ণব পদাবলি: বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস====
# [[/বিদ্যাপতি|বিদ্যাপতি]]
# [[/চণ্ডীদাস|চণ্ডীদাস]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
dclxl91vlu8imurjxr7286t1y268yog
85640
85639
2025-07-04T06:16:28Z
Jonoikobangali
676
85640
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ (প্রথম পর্ব): ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন|বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন]]
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
====বৈষ্ণব পদাবলি: বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস====
# [[/বিদ্যাপতি|বিদ্যাপতি]]
# [[/চণ্ডীদাস|চণ্ডীদাস]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
pbtmo2jpwgj4dqxv2wobglsxwopl2er
85641
85640
2025-07-04T06:19:10Z
Jonoikobangali
676
85641
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন|বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন]]
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
====বৈষ্ণব পদাবলি: বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস====
# [[/বিদ্যাপতি|বিদ্যাপতি]]
# [[/চণ্ডীদাস|চণ্ডীদাস]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
dp2m2kzxi0bmn7llx0hlm4no5ztfjza
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)/চর্যাপদ
0
27231
85630
85574
2025-07-04T04:04:47Z
Jonoikobangali
676
/* সন্ধ্যাভাষা */
85630
wikitext
text/x-wiki
বিশ শতকের গোড়ায় চর্যাপদের আবিষ্কার বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ার পর প্রাচীন বাংলার এক অমূল্য লুপ্ত সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের কৃতিত্ব প্রাচ্যবিদ্যার বিশিষ্ট গবেষক মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর। কিন্তু তাঁর ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' পুথি আবিষ্কারের পিছনে বাঙালির প্রাচীন সংস্কৃতি চর্চার একটি ইতিহাস আছে। উনিশ শতকে বাংলায় যে নবজাগরণ ঘটেছিল, তার অন্যতম বৈশিষ্ট্যই ছিল দেশের অতীত ইতিহাসের ভাবসম্পদ পুনরুদ্ধার ও তার নবমূল্যায়ন। এর সূচনা ঘটেছিল ১৭৮৪ সালে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। প্রথম দিকে কেবল ইউরোপীয় গবেষকেরাই প্রাচীন ভারতের লুপ্ত সম্পদ উদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। যেমন, বি. এইচ. হজসন ও ড্যানিয়েল রাইট উনিশ শতকের প্রথমার্ধে নেপাল থেকে কিছু প্রাচীন পুথি উদ্ধার করে ইউরোপের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেরণ করেন, যার ফলে ইউরোপীয় গবেষকেরা ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চায় উৎসাহী হয়ে উঠতে শুরু করেন। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি গবেষকেরাও এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। গবেষক রাজেন্দ্রলাল মিত্র নেপালে গিয়ে সংস্কৃত ভাষায় রচিত কিছু পুথি উদ্ধার করে আনেন এবং ''দ্য সংস্কৃত বুদ্ধিস্ট লিটারেচার ইন নেপাল'' (১৮৮২) শীর্ষক পুস্তিকায় সেগুলির নাম প্রকাশ করেন। ১৮৯২ সালে শরৎচন্দ্র দাসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় বুদ্ধিস্ট টেক্সট সোসাইটি। রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর প্রাচীন পুথি উদ্ধারের ভার গ্রহণ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ সালে নেপালে গিয়ে বৌদ্ধধর্ম-বিষয়ক কয়েকটি সংস্কৃত পুথি তিনি কলকাতায় নিয়ে আসেন। এরপর ১৯০৭ সালে তৃতীয়বার নেপাল যাত্রা করে তিনি নেপালের রাজদরবারের পুথিশালা থেকে আবিষ্কার করেন চর্যাপদের প্রাচীন পুথি ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'', সরহপাদের ''দোহাকোষ'' ও কাহ্নপাদের ''দোহাকোষ''। এই তিনটি পুথির সঙ্গে পূর্বাবিষ্কৃত ''ডাকার্ণব'' পুথিটিকে যুক্ত করে শাস্ত্রী মহাশয় ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে নিজের সম্পাদনায় প্রকাশ করেন ''হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা'' গ্রন্থটি। ভূমিকায় তিনি চারটি পুথির ভাষাকেই বাংলা বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ভাষাতাত্ত্বিকেরা কেবল চর্যাগীতিগুলির ভাষাকেই বাংলা বলে স্বীকৃতি দেন। সেই দিক থেকে প্রাচীনতম বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন হল এই চর্যাপদ।
চর্যাপদের পুথি তালপাতায় লেখা হয়েছিল। নেপাল থেকে আনা পুথি আবার রাজদরবারে ফেরত দেওয়ার আগে শাস্ত্রী মহাশয় সেটির অনেকগুলি ফোটোকপি করে নিয়েছিলেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, তালপাতার উভয় পৃষ্ঠাতেই পদগুলি লেখা হয়েছে। প্রতি পৃষ্ঠায় আছে পাঁচটি করে টানা লাইন। মাঝখানে সামান্য একটু ফাঁক, সম্ভবত সেখানে ফুটো করে সুতো বা ওই জাতীয় কিছু পরাবার জন্য। পাতাগুলি সংখ্যাযুক্ত এবং সংখ্যাটি লিখিত পাতার শেষ পৃষ্ঠায়। এইভাবে প্রাপ্ত পুথির শেষ পাতার অঙ্ক ৬৯। কিন্তু তার পরেও যে পুথি বাকি ছিল তার প্রমাণ ওই পাতার পদটি অসমাপ্ত থেকে যাওয়ায়। শুধু শেষ পাতা নয়, মাঝের ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮ ও ৬৬ সংখ্যক পাতাগুলিও পাওয়া যায়নি। লুপ্ত পাতা বাদে প্রাপ্ত পুথিটি মোট ৬৪ পৃষ্ঠার। পুথিটিতে আরও একধরনের ক্রমিক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়েছে, যেটি মোট পদের সংখ্যা নির্দেশক। বলা বাহুল্য, লুপ্ত পাতার পদগুলি পাওয়া যায়নি। এই রকম অপ্রাপ্ত পদের সংখ্যা সাড়ে তিনটি। শেষ পাতার যে পদসংখ্যা পাওয়া যায় সেটি ৪৯। সেখানেই শুরু হয়েছে ৫০ সংখ্যক পদটি, যার বাকি অংশ লুপ্ত পাতার সঙ্গেই হারিয়ে গিয়েছে। মুনিদত্তের টীকার সূত্রে জানা যায়, কোনও একটি শতপদী সংকলন থেকে অর্ধেক সংখ্যক পদ নিয়ে সেটির টীকা রচনার উদ্দেশ্যে এই গ্রন্থের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অর্থাৎ চর্যার পুথিটি ছিল মোট ৫০টি পদের সংকলন। সাড়ে তিনটি পদ না পাওয়ায় প্রাপ্ত পদের সংখ্যা এখানে সাড়ে ছেচল্লিশ। অবশ্য পরবর্তীকালে এই গ্রন্থের তিব্বতি অনুবাদ পাওয়া গিয়েছে। অনুবাদক ছিলেন কীর্তিচন্দ্র। সেই পুথিটি অক্ষত। তার থেকে লুপ্ত সাড়ে তিনটি পদের বিষয় ও তার ব্যাখ্যা জানা গিয়েছে।
টীকার পুথিটি সংকলনে একটি বিশেষ রীতি অবলম্বিত হয়েছে। এখানে একই সঙ্গে মূল গান ও তার টীকা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত টীকার পুথিতে মূল গান সম্পূর্ণ উদ্ধৃত হয় না। কিন্তু এখানে তার ব্যতিক্রম দেখা যায়। সমগ্র পদ উদ্ধৃত করে টীকাকার পরে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। পদগুলি বাংলা ভাষায় লেখা, টীকার ভাষা সংস্কৃত। টীকার নাম ''নির্মলগিরা টীকা''। টীকাকারের নাম মুনিদত্ত। গানগুলি একক পদকর্তার নয়, বিভিন্ন জনের রচনা। প্রত্যেকটি পদের সূচনায় রাগের উল্লেখ ও পদকর্তার নাম পাওয়া যায়। তারপর দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ পদটি। সব শেষে রয়েছে তার ব্যাখ্যা বা টীকা। টীকার পরে আছে গানের ক্রমিক সংখ্যা। অবশ্য গ্রন্থসূচনার পদটিতে একটু ভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষিত হয়। প্রথমে নমস্ক্রিয়ার পর সদ্গুরু বন্দনা ও বস্তুনির্দেশ, তারপর “কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল” পদটির দ্বারা মূল চর্যাগীতির আরম্ভ। তারপর গানটির রাগের উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য ধরনের ব্যতিক্রমও দেখা যায়। যেমন, ৯ সংখ্যক পদে চর্যাকারের নাম উল্লিখিত হয়নি, যদিও গানের মাঝে ভণিতা থেকে জানা যায় এটি কাহ্নপাদের রচনা। ১০ সংখ্যক চর্যার পরে টীকাকার বা লিপিকর লিখে রেখেছেন, “লাড়ীডোম্বীপাদানাম্ সূনেত্যাদি। চর্য্যায়া ব্যাখ্যা নাস্তি।” অর্থাৎ এখানে অপেক্ষিত ব্যাখ্যাটি নেই। তাছাড়া মূল গানগুলির পাঠ ও টীকায় উদ্ধৃত অংশগুলির পাঠে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। তাই কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, মূল গান সংকলন ও তার টীকা রচনা দুই স্বতন্ত্র ব্যক্তির কাজ। আবার কেউ কেউ অনুমান করেন, মুনিদত্তের টীকা পরে কারও দ্বারা পরিমার্জিত হয়েছিল। সেই পরবর্তী সংস্কার-কর্তাও অন্য কোনও গীতিসংগ্রহ থেকে মূল গানগুলিকে নিয়ে ব্যাখ্যার আগে সংযোজিত করে থাকতে পারেন। টীকারম্ভের প্রথম বাক্যটি রচনা এবং গানের সূচনায় কবি ও রাগরাগিণীর নামের উল্লেখ সম্ভবত এই সংস্কার-কর্তারই কাজ। পুথির পাঁচটি পাতা হারিয়ে যাওয়ায় ২৩ সংখ্যক গানের ছটি চরণ এবং ২৪, ২৫ ও ৪৮ সংখ্যক গান সম্পূর্ণ লুপ্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ২৩ ও ২৪ সংখ্যক গানের সম্পূর্ণ টীকা এবং ২৫ সংখ্যক গানের টীকার প্রথমাংশটিও সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ৪৭ সংখ্যক গানের ব্যাখ্যার সামান্য অংশ হারিয়ে গিয়েছে এবং ৪৮ সংখ্যক গানের শেষ পদটির ব্যাখ্যা ছাড়া গান সহ সমগ্র টীকাটিই লুপ্ত। তিব্বতি অনুবাদটির আবিষ্কারক ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী গানগুলি সংস্কৃত ভাষায় রূপান্তরিত করেছিলেন। পরে তিব্বতি অনুবাদের ছায়া অনুসরণে ড. সুকুমার সেন লুপ্ত গানগুলির সম্ভাব্য রূপ পুনর্গঠন করে তাঁর সম্পাদিত ''চর্যাগীতি পদাবলী'' গ্রন্থে প্রকাশ করেন।
==রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার==
১৯১৬ সালে ''হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা'' গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর নানা বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। ফলে অনেক রকম বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চর্যাগীতির ভাষা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে যেমন মতান্তর ছিল, তেমনই এগুলির রচনাকাল ও প্রাপ্ত পুথির প্রকৃত নাম নিয়েও ছিল নানা সংশয়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দাবি করেছিলেন, গানগুলির রচনাকাল খ্রিস্টীয় দশম শতক এবং সেই কারণেই সম্পাদিত গ্রন্থের নামে তিনি ‘হাজার বছরের পুরাণ’ এই সময়-জ্ঞাপক বিশেষণটি জুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সকলে সেই কথা নিঃসন্দিগ্ধভাবে মেনে নিতে চাননি। সামগ্রিক দৃষ্টিতে চর্যাপদের রচনাকাল নিয়ে দুটি প্রশ্ন ওঠে। প্রথম প্রশ্ন, চর্যার মূল গানগুলি কোন সময়ে লেখা হয়েছিল? এবং দ্বিতীয় প্রশ্ন, টীকা-সম্বলিত যে সংগ্রহটি পাওয়া গিয়েছে, সেটিই বা কোন সময়ে লেখা হয়? মুনিদত্তের টীকা অনুসারে বলা যায়, গানগুলি আগে লেখা হয়েছিল এবং পরে তার থেকে কয়েকটি গান বেছে নিয়ে সেগুলির ব্যাখ্যা রচিত হয়। তাই প্রথম প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে হবে দুটি প্রশ্নের নিরিখে। প্রথমত, চর্যাকারেরা কবে আবির্ভূত হন? এবং দ্বিতীয়ত, ভাষাতত্ত্বের নিরিখে চর্যায় প্রাপ্ত ভাষার জন্ম কোন সময়ে? বিভিন্ন গবেষক এই দুই বিষয়ে কিছু আলোকপাত করেছেন।
ইতিহাস-বিস্মৃত জাতির বাস্তব ঐতিহাসিক সকল ঘটনারই লিখিত ইতিহাস পাওয়া সম্ভব নয়। এই কারণেই চর্যাপদ, চর্যাপদের কবিগণ, তাঁদের জন্ম ও মৃত্যু এবং সেই সংক্রান্ত তারিখ-যুক্ত কোনও তথ্য পাওয়া কঠিন। তাই জনশ্রুতি, কল্পকাহিনি ও লোকপরম্পরাগত ঐতিহ্য সত্যাসত্য নির্বিশেষে সেই শূন্যস্থান ভরিয়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে। চর্যাকারেরা নিছক কবি বা গীতিকার ছিলেন না, ছিলেন বৌদ্ধধর্মের এক বিশেষ ধারার সাধক। সেই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে তাঁর খ্যাত হয়েছিলেন সিদ্ধাচার্য নামে। তাঁদের নিয়ে তাই নানা অলৌকিক জনশ্রুতি ছড়িয়ে পড়েছিল। সেগুলি সংগ্রহ করে পরবর্তীকালে কিছু গ্রন্থও রচিত হয়। সুম্পাখন্পো-র ''Pag Sam Jon Zang'' ও লামা তারানাথের ''Khabad Dun Dan'' হল তিব্বতি ভাষায় লেখা এই সংক্রান্ত দুটি গ্রন্থ। ভারতেও সিদ্ধাচার্যদের নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত ছিল। ভারতে যোগী সিদ্ধসাধকদের আবির্ভাব ঘটে। নাথপন্থা ও সহজযান বৌদ্ধধর্মের মধ্যে যে তাত্ত্বিক এবং দেহসাধনা ও যোগাচারকেন্দ্রিক ক্রিয়াকাণ্ডগুলির আদান-প্রদান ঘটেছিল তার অজস্র প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। দেহসাধনা এই উভয় মতেরই ভিত্তিস্বরূপ। নাথপন্থীদের সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের নাম পাওয়া যায়। ‘চৌরাসী সিদ্ধ’ অর্থাৎ চুরাশিজন সিদ্ধাচার্যেরা মধ্যে ছিয়াত্তর জনের নাম পাওয়া যায় চতুর্দশ শতকের মৈথিল কবি জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থে। এছাড়া তন্ত্রগ্রন্থ ''কৌলজ্ঞাননির্ণয়'' এবং নাথপন্থীদের গুরুশিষ্য-পরম্পরা সম্পর্কিত গ্রন্থাদিতেও সিদ্ধাচার্যেরা কথা অল্পবিস্তর বর্ণিত হয়েছে। ড. জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী তাঁর ''চর্যাগীতির ভূমিকা'' গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, জনশ্রুতিগুলি যে সব ক্ষেত্রে কল্পনাপ্রসূত নয়, তার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। প্রাপ্ত ঐতিহাসিক তথ্যের সঙ্গে এই লোকপরম্পরাগত ঐতিহ্যের মিল যথেষ্টই আছে।
চর্যাগীতির রচনাকাল বিষয়ে তিনজন বিশিষ্ট গবেষক তিনটি পৃথক মত প্রকাশ করেছেন। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ''দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ'' গ্রন্থে বিভিন্ন সম্ভাব্য যুক্তি প্রদর্শন করে মন্তব্য করেছেন, “The period 950-1200 A.D. would thus seem to be a reasonable date to give to these poems.” অর্থাৎ তাঁর মতে দশম শতকের মধ্যভাগ থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সময়কালে চর্যাগীতিগুলি রচিত হয়েছিল। সময় নির্ধারণে তিনি আদি সিদ্ধাচার্য লুইপাদ ও শেষ সিদ্ধাচার্য কাহ্নপাদের জীবৎকালকে প্রমাণস্বরূপ ধরেছেন। এই দুই কবির জীবনেতিহাস স্পষ্ট নয়। কিংবদন্তিই এক্ষেত্রে মুখ্য আশ্রয়। সিদ্ধাচার্যদের একটি গুরুশিষ্য-পরম্পরা ছিল। তিব্বতি ঐতিহ্যে লুইপাদ প্রথম গুরু বা আদি সিদ্ধাচার্য। মুনিদত্তের টীকাতেও লুইপাদকে সেই সম্মান জানিয়ে বলা হয়েছে “শ্রীলূয়ীচরণাদিসুদ্ধ রচিতেঽপ্যাশ্চর্য্যচর্য্যাচয়ে…” এবং তাঁর পদ দিয়েই গ্রন্থারম্ভ করা হয়েছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন যে, বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান লুইপাদের ''অভিসময়বিহঙ্গ'' গ্রন্থ রচনায় সাহায্য করেছিলেন। দীপঙ্কর ১০৩৮ সালে বিক্রমশীলা বিহার থেকে তিব্বতি যাত্রা করেন। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ৫৮। সেই হিসেবে লুইপাদের আবির্ভাবকাল তাঁর মতে দশম শতকের মাঝামাঝি। অন্যদিকে ঐতিহ্য অনুসারে কাহ্নপাদ ছিলেন জালন্ধরীপাদের শিষ্য। কাহ্নপাদ রচিত ৩৬ সংখ্যক চর্যাগীতিটিতেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। কাহ্নপাদ চর্যাগীতি ছাড়াও আরও অনেক গ্রন্থ রচনা করেন, যেগুলির মধ্যে অন্যতম ''হেবজ্রপঞ্জিকাযোগরত্নমালা''। এই গ্রন্থটির অনুলিপির কাল জানা গিয়েছে। রাজা গোবিন্দপালের ৩৯ রাজ্যাঙ্ক অর্থাৎ ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটির অনুলিপি করা হয়। তাই সুনীতিকুমার দ্বাদশ শতককেই চর্যাগীতির সময়সীমা ধরতে চান। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই গবেষকেরা বিরুদ্ধ যুক্তি দিয়েছেন। তাঁদের মতে, দীপঙ্কর সম্পর্কে শাস্ত্রী মহাশকের উক্ত তথ্যের তেমন কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। পি. কর্ডিয়ার ''তেঙ্গুর'' গ্রন্থমালার যে তালিকা দিয়েছেন, তাতে লুইপাদ ও দীপঙ্কর উভয়ের নামেই ''অভিসময়বিহঙ্গ'' গ্রন্থের নাম পাওয়া যায়। আসলে লুইপাদের এই গ্রন্থটি এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যা অন্যান্য বৌদ্ধ পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ''তেঙ্গুর'' তালিকা থেকে জানা যায় যে, কম্বলাম্বরপাদ, প্রজ্ঞারক্ষিত, সুমতিকীর্তি, প্রভাকরগুপ্ত, রত্নবজ্র, দানশীল, বিভূতিচন্দ্রের ন্যায় অসংখ্য বৌদ্ধ পণ্ডিত এই গ্রন্থটির উপর নানা সময়ে বৃত্তি, ক্রম, মঞ্জরী, টীকা ইত্যাদি রচনা করেন। দীপঙ্করের নাম এভাবেই উল্লিখিত হতে পারে। তিনি লুইপাদকে সরাসরি গ্রন্থরচনায় সাহায্য করেননি, বরং লুইপাদের গ্রন্থটির অনুবাদ করেছিলেন মাত্র। অন্যদিকে কাহ্নপাদের গ্রন্থটির অনুলিপির কাল ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দ স্থিরীকৃত হলেও অনুলিপির সময় যে লেখকের জীবৎকালের কাছাকাছি হবেই এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। ষোড়শ শতকের কোনও গ্রন্থের অনুলিপি অষ্টাদশ শতকেও হতে দেখা গিয়েছে। এইসব বিরুদ্ধ যুক্তির বলে সুনীতিকুমারের সিদ্ধান্ত অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয় মতের প্রবক্তা হিন্দিভাষী পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন। তিনি ''দোহাকোষ''-এর ভূমিকায় লিখেছেন যে, সিদ্ধাচার্যেরা আবির্ভূত হয়েছিলেন অষ্টম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে। তিনি আরও মনে করেন যে, লুইপাদ নন, আদি সিদ্ধাচার্য ছিলেন রাহুলভদ্র সরহপাদ, যিনি বৌদ্ধ আচার্য শান্তরক্ষিতের সমসাময়িক ছিলেন। শান্তরক্ষিত ভোট সম্রাট খি স্রোঙ দে চন্-এর রাজত্বকালে (৭৫৫—৭৮০ খ্রিস্টাব্দ) রাজার আহ্বানে তিব্বতে গিয়েছিলেন। আর-একটি প্রমাণ হল, সরহপাদের শিক্ষক ছিলেন নালন্দার পণ্ডিত ধর্মকীর্তি, যিনি শান্তরক্ষিতের শিষ্য এবং গৌড়াধিপতি ধর্মপালের (রাজত্বকাল ৭৭০—৮১৫ খ্রিস্টাব্দ) বন্ধু। এইসব তথ্যের ভিত্তিতে সরহপাদকে অষ্টম শতকের ব্যক্তি বলে গণ্য করা চলে। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, লুইপাদ ছিলেন সরহপাদের প্রশিষ্য—সরহপাদের শিষ্য শবরপাদ, তাঁর শিষ্য লুইপাদ। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী কর্তৃক ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত ''জার্নাল অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট অফ লেটারস'' (২৮শ খণ্ড) থেকে জানা যায় যে, সরহপাদের দোহাগুলি ‘বিনষ্ট-প্রণষ্ট’ (‘বিণট্ঠা-পণট্ঠা-পউ’) হতে দেখে দিবাকর চন্দ নামে এক পণ্ডিত ২২১ নেপাল সম্বৎ অর্থাৎ ১১০১ খ্রিস্টাব্দে সেগুলি একটি পুথিতে সংকলিত করেন: “সমস্তো জহালব্ধা দোহাকোসো এসো সংহহিত্ত… পণ্ডিত সিরি দিবাকর চন্দেনেত্তি। সম্বৎ ২২১ শ্রাবণ শুক্লপূর্ণমাস্যাং।” এই বিষয়টিও পরোক্ষে প্রমাণ করে যে সরহপাদ খুব প্রাচীন সময়ের কবি; নইলে দ্বাদশ শতকের সূচনাতেই তাঁর ''দোহাকোষ'' বিনষ্ট হতে পারে না।
তৃতীয় মতটি দিয়েছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। তাঁর মতে চর্যাপদ রচনার সূচনা সপ্তম শতকে। এই মতের ব্যাখ্যায় তিনি ২১ সংখ্যক গানের টীকায় মুনিদত্ত মীননাথের লেখা একটি গানের কিছু অংশ উদ্ধৃত করেছেন: “কহন্তি গুরু পরমার্থের বাট।/ কর্মকূরঙ্গ সমাধিকপট।।” মীননাথ নাথগুরুদের অন্যতম এবং উদ্ধৃত অংশটি লেখা হয়েছে আদি স্তরের বাংলা ভাষায়। মীননাথই মৎস্যেন্দ্রনাথ নামে পরিচিত। ড. শহীদুল্লাহ এঁকেই লুইপাদ বলে ধরেছেন। ফারসি গবেষক সিলভ্যাঁ লেভি ''লে নেপাল'' (১ম খণ্ড) গ্রন্থে বলেছেন, মৎস্যেন্দ্রনাথ ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে রাজা নরেন্দ্রদেবের রাজত্বকালে নেপালে গিয়েছিলেন। ড. শহীদুল্লাহ এই তথ্যের ভিত্তিতে চর্যাগীতির সূচনাকাল ধরেছেন সপ্তম শতককে। তবে এই মত মানতে গেলে ভাষাতাত্ত্বিকদের ভাষার বিবর্তন-সংক্রান্ত আলোচনাকে অগ্রাহ্য করতে হয়। সপ্তম শতক অপভ্রংশ ভাষারই কাল। খ্রিস্টীয় নবম শতক নাগাদ এই ভাষা থেকেই বাংলার মতো নব্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলির উদ্ভব ঘটেছিল।
চর্যাপদের কালনির্ণয়ে গৌড়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটিও বিবেচ্য। এমনকি যে সময়ে মহাযানী বৌদ্ধধর্ম তন্ত্রের প্রভাবে মন্ত্রনয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে বজ্রযান, কালচক্রযান ও সহজযানে পরিণত হল, সেটিও আলোচনা করা কর্তব্য। সেই সঙ্গে কেউ কেউ আর-একটি বাহ্য প্রমাণ উপস্থিত করেছেন। সেটি হল প্রাচীন বাংলা সংগীত-বিষয়ক গ্রন্থের সাক্ষ্য। বিষয়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক। চর্যাপদ বৌদ্ধধর্মের সাধন-সংক্রান্ত গীতিগুচ্ছ হলেও তাতে বিশুদ্ধ বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব উপস্থাপিত হয়নি। চর্যাগীতির মূল অবলম্বন মহাযানী বৌদ্ধধর্মের এক বিশেষ বিকারগ্রস্থ রূপ। এই বিকৃতি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের। গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর চারটি বৌদ্ধসংগীতি বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের মতান্তর সূচিত করেন। পরিণামে বৌদ্ধসমাজ হীনযান ও মহাযান নামে দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। হীনযানীরা পরে সৌত্রান্তিক ও বৈভাষিক উপদলে বিভক্ত হয়ে যান। দার্শনিক মতভেদের কারণে মহাযানীরাও মাধ্যমিক ও যোগাচার শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়। এই যোগাচার মতের উদ্ভব খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে। সপ্তম শতক পর্যন্ত উত্তর ভারতে বৌদ্ধ দার্শনিকদের মধ্যে মাধ্যমিক ও যোগাচার মত বিশেষ জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিল। এরপর অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্য ও কুমারিল ভট্ট বৌদ্ধধর্মের বিরুদ্ধে বৈদিক তথা পৌরাণিক ব্রাহ্মণ্যধর্মকে পুনরুজ্জীবিত করতে সচেষ্ট হলেন। শঙ্করাচার্যের অদ্বৈত বেদান্ত ও কুমারিল ভট্টের পূর্ব মীমাংসা দর্শনের চাপে বৌদ্ধধর্ম কোণঠাসা হয়ে পড়ল। অবস্থার সঙ্গে সামাল দিতে গিয়ে মহাযানী বৌদ্ধধর্মে হিন্দু পুরাণের দেবদেবীদের অনুরূপ নানা দেবদেবীর আবির্ভাব ঘটল এবং ব্রাহ্মণ্য তান্ত্রিক রহস্যাচার গ্রাস করে ফেলল যোগাচারীদের। তন্ত্রের প্রভাবে দেহসাধনা-নির্ভর বৌদ্ধধর্ম কথিত হল ‘মন্ত্রযান’ নামে, যার শেষ পরিণতি বজ্রযান, কালচক্রযান ও সহজযান। চর্যাগীতিতে এই শেষোক্ত তিনটি মতেরই ছায়া লক্ষ্য করা যায়। এসব ঘটতে কমপক্ষে এক শতাব্দীর কেটে যাওয়ার কথা। তাই বলা চলে, নবম শতকের আগে মহাযানী বৌদ্ধধর্মে এই বিকৃতি ঘটেনি। নতুন তত্ত্ব ও সেই অনুযায়ী আচার-সংস্কার গড়ে উঠলে নবদীক্ষিতদের কাছে এর রহস্যময়তা তথা গূঢ় তাৎপর্য ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন সিদ্ধাচার্যেরা। তাঁদের রচনার ভাষা আলো-আঁধারি সন্ধ্যাভাষা বা কেবলমাত্র নির্দিষ্ট অভিপ্রায়কেই ব্যক্ত করার জন্য বিশেষ প্রযত্নে নির্মিত ভাষা। যৌনাচার-ভিত্তিক এই যোগসাধনপ্রণালী অন্যের কাছে প্রকাশ করতে সম্ভবত তাঁরা কুণ্ঠিত ছিলেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দিক থেকেও এই সময়টি ছিল বেশ অনুকূল। বাংলার সিংহাসনে তখন আসীন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল সম্রাটেরা। এই অনুকূল পরিবেশে বসে বৌদ্ধ পণ্ডিতেরা অসংখ্য গ্রন্থ ও পদ রচনা করেন। তাঁদের রচিত অধিকাংশ পদের ভাষা নবসৃজ্যমান বাংলা ভাষা এবং টীকা ও ভাষ্যের মাধ্যম ছিল সংস্কৃত বা বৌদ্ধ-সংস্কৃত। অতএব সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, খ্রিস্টীয় নবম শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময়কালে চর্যার মূল গানগুলি রচিত হয়েছিল।
এবার মুনিদত্তের টীকাগ্রন্থটির কাল অনুসন্ধান করা যাক। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুথিটি যে বেশ পরবর্তীকালে লিখিত, তা গ্রন্থের বিষয় ও লিপির আদর্শ থেকেই স্পষ্ট। চর্যাগীতিগুলি তত্ত্বের বাহক। কিন্তু সেগুলি এমনই আভিপ্রায়িক বচনে পরিপূর্ণ যে, দীক্ষিত ব্যক্তিদের কাছেও তা দুর্বোধ্য ছিল। তত্ত্ব ও সাংকেতিকতার দুরূহতার জন্য এগুলির ব্যাখ্যার প্রয়োজন দিল। মুনিদত্তই সেই অগ্রণী বৌদ্ধ পণ্ডিত যিনি একশোটি চর্যার একটি গীতিগুচ্ছ থেকে অর্ধেক পদ নিয়ে সেগুলির ব্যাখ্যায় অগ্রসর হলেন। বিশ্বভারতী প্রকাশিত ''চর্যাগীতিকোষ'' গ্রন্থে আছে: “তত্রাহৃতানাং চ বিচারিতানাং চর্যাশতেনাহৃত গীতিকানাম্। সত্ত্বৈস্তু সংবোধি বিচারাণার্থং কোষং বুধাঃ সংরচয়াংবভূবঃ।।” মূল গানগুলি রচিত হওয়ার অনেক পরে যে মুনিদত্তের টীকা লিখিত হয়েছিল, তার প্রমাণ পুথিতে উদ্ধৃত গীতিগুলির পাঠভেদ। এই বিষয়ে ড. সত্যব্রত দেব লিখেছেন, “মূল গীতিরচনার যুগ হইতে টীকা বা অনুলিপি রচনার যুগ পর্যন্ত মধ্যবর্তীকালে এই জনপ্রিয় গীতিগুলি নিশ্চয়ই গায়কদের মুখে মুখে এবং/অথবা লিপিকরদের অনুলিপির মাধ্যমে প্রচারিত ছিল। সুতরাং মূল রচনার সময়কার রূপ হইতে চর্যাগীতিগুলির ভাষা পরিবর্তিত হওয়াই স্বাভাবিক, যেমনভাবে মধ্যযুগের অনেক জনপ্রিয় সাহিত্যকৃতির ভাষা বিকৃত হইয়া গিয়াছে।” লিপির আদর্শ বিচার করে পুথির কালনির্দেশের ক্ষেত্রে লিপিবিশারদদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা যায়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে পুথির লিপিকাল দ্বাদশ শতক, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে পঞ্চদশ-ষোড়শ শতক, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে চতুর্দশ শতকের পরবর্তী সময়, ড. সুকুমার সেনের মতে চতুর্দশ থেকে ষোড়শ শতক এবং তারাদাস মুখোপাধ্যায়ের মতে দ্বাদশ শতকের শেষার্ধ। মুনিদত্তের আবির্ভাবকাল জানা যায়নি। অতএব এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমান-নির্ভর হতে বাধ্য। খুব সম্ভবত, চতুর্দশ শতকের কিছু আগে বা পরে কোনও এক সময়ে মুনিদত্তের মূল গ্রন্থটির অনুলিপি করা হয়েছিল। প্রাপ্ত পুথিটি যে টীকাকারের স্বহস্তে লিখিত তারও কোনও উপযুক্ত প্রমাণ নেই। বরং গানগুলির পাঠভেদ থেকে অনুমিত হয় যে, গানগুলি গায়কদের মুখে মুখে কম-বেশি পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার পরে অন্য কোনও ব্যক্তি মূল পুথির অনুলিপি করেছিলেন।
চর্যাপদের রচনাকালের ন্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুথিটির গ্রন্থ নিয়েও গবেষকেরা আজ পর্যন্ত কোনও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। প্রাপ্ত পুথিটির মলাটের পাতা ও শেষে পুষ্পিকার পাতা পাওয়া যায়নি বলে প্রকৃত তথ্য অজ্ঞাতে থেকে গিয়েছে। শাস্ত্রী মহাশয় তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের যে নামকরণ করেছেন তা স্পষ্টতই বিষয়-নির্দেশক অভিধা, যা একই সঙ্গে সময়কেও ইঙ্গিত করছে। নাম মাত্রেই বিশেষ্য, সেখানে এই ধরনের বিশেষণের প্রয়োগ অর্থ-ব্যঞ্জনার সূক্ষ্মতার পক্ষে ক্ষতিকারক। শাস্ত্রী মহাশয় অবশ্য বিকল্প একটি নাম দিয়েছিলেন ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। এই নামটির উৎস জানা যায়নি। পুথির কোথাও এই নামটি নেই। এটি সম্পাদকের স্ব-নির্ধারিত নাম হতে পারে, তবে একান্তই যে তাঁর স্ব-উদ্ভাবিত নাম নয়, তার প্রমাণ অদ্বয়বজ্রের ''প্রজ্ঞোপায়বিনিশ্চয়সিদ্ধ'' নামের গ্রন্থটি। টীকাগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত বৌদ্ধ গ্রন্থগুলির নামের সঙ্গে এই ‘বিনিশ্চয়’ শব্দটি যুক্ত থাকত। প্রাপ্ত পুথিটিও একটি টীকাগ্রন্থ। মুনিদত্ত বাংলা ভাষায় লেখা পঞ্চাশটি চর্যাগীতির টীকা লিখেছিলেন সংস্কৃত ভাষায়। নাম দিয়েছিলেন ''নির্মলগিরা টীকা''। সেদিক থেকে শাস্ত্রী মহাশয়ের দেওয়া নামটি সংগতিপূর্ণ। অথচ এই নামটি নিয়েও গবেষকদের মধ্যে অনেক বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।
চর্যাগীতিগুচ্ছের প্রথম পদের সংস্কৃত টীকায় বলা হয়েছে: “শ্রীলূয়ীচরণাদিসিদ্ধরচিতেঽপ্যাশ্চর্য্যচর্য্যাচয়ে। সদ্বর্ত্মাবগমায় নির্ম্মলগিরাং টীকাং বিধাস্যে স্ফুটনম।।” ১৯২৮ সালে বিধুশেখর শাস্ত্রী ''ইন্ডিয়ান হিস্টোরিক্যাল কোয়ার্টারলি'' পত্রিকার চতুর্থ খণ্ডে এই শ্লোকটির নিরিখে দেখাতে চেষ্টা করেছেন যে, এখানে উক্ত ‘আশ্চর্য্যচর্য্যাচয়’ শব্দবন্ধটিই প্রকৃত গ্রন্থনাম, যার অর্থ হল ‘আশ্চর্য চর্যাসমূহের সংকলন’। কিন্তু এটিকে ঠিক গ্রন্থনাম হিসেবে স্বীকার করা যায় না। বরং উপরিউক্ত বাক্য থেকে টীকাকার এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, এই আশ্চর্য বা অদ্ভুত চর্যাসমূহে প্রবেশের ‘সদ্বর্ত্ম’ নির্দেশের জন্য তিনি টীকা রচনা করেছেন। ‘আশ্চর্য’ শব্দটি গানগুলির প্রকৃতি নির্দেশক, যা অবশ্যই বিশেষণ। অন্যদিকে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী তাঁর ''স্টাডিজ ইন তন্ত্রজ'' (১ম খণ্ড) গ্রন্থে তিব্বতি অনুবাদটির প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছেন যে, শাস্ত্রী মহাশয় একটি ভুল পাঠের উপর ভিত্তি করে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' নাম দিয়েছেন; গ্রন্থটির আসল নাম হবে ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়''। অবশ্য ড. বাগচী নেপাল রাজদরবারে রক্ষিত পুথিতে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' নামটি আছে বলেও উল্লেখ করেছেন। ড. সুকুমার সেনও মনে করেন যে, গ্রন্থটির মূল নাম ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়'', কিন্তু লিপিকরের ভুলে তা হয়েছে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। কিন্তু ড. বাগচী ও ড. সেন সমর্থিত ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়'' নামটি প্রাপ্ত পুথিতে তো নেই-ই, এমনকি ''তেঙ্গুর'' গ্রন্থমালার পি. কর্ডিয়ার কৃত তালিকাতেও পাওয়া যায় না। এই নামটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। মুনিদত্তের যে শ্লোকটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, তাতে ‘আশ্চর্য’ শব্দটি থাকলেও চর্যার ‘আশ্চর্য বিনিশ্চয়’ অর্থাৎ অপূর্ব অর্থনির্ধারণের ব্যাপারটি কষ্টকল্পিত বলেই মনে হয়। বরং হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর দেওয়ার নামটির পিছনে কিছু যুক্তি আছে। ‘চর্য্যাচর্য্য’ শব্দটি একটি সমাসবদ্ধ পদ, যার পূর্বপদ ‘চর্য্য’, অর্থাৎ আচরণীয় এবং উত্তরপদ ‘অচর্য্য’ অর্থাৎ যা আচরণীয় নয়। যে গ্রন্থ আচরণীয় ও অনাচরণীয় তত্ত্বকে বিশেষরূপে নিশ্চয়ই করে তার নাম দেওয়া যেতে পারে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। এই কারণে বিশ্বভারতী প্রকাশিত ''চর্যাগীতিকোষ'' গ্রন্থের ভূমিকায় বৌদ্ধ পণ্ডিত শান্তি ভিক্ষু শাস্ত্রী মন্তব্য করেছেন, “I see no justification to invent a new name when the old one conveys the better meaning, that is, Viniscaya ‘Determination’ of carya ‘that to be practiced’ and acarya ‘that not to be practiced’.”
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর পর চর্যাপদের পুথি আরও কয়েকজন বিদগ্ধ গবেষক কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছিল। যেমন, মনীন্দ্রমোহন বসুর ''চর্য্যাপদ'', ড. সুকুমার সেনের ''চর্যাগীতি পদাবলী'', ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও শান্তি ভিক্ষু শাস্ত্রীর যুগ্ম সম্পাদনায় ''চর্যাগীতিকোষ'' এবং ড. নীলরতন সেনের ''চর্যাগীতিকোষ'' (ফ্যাক্সিমিলি সংস্করণ)। লক্ষণীয়, সকলেই সম্পাদিত গ্রন্থের নামকরণে গানের দিকেই লক্ষ্য রেখেছেন এবং শাস্ত্রী মহাশয়ের দেওয়া নামটি বর্জন করেছেন। এই বিষয়ে জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী বলেন, “কিন্তু গ্রন্থনাম বিচারে প্রথম বিচার্য গ্রন্থের প্রতিপাদ্য বিষয় এবং গ্রন্থের উদ্দেশ্য। যে গ্রন্থখানি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা চর্যাগীতির সঙ্কলন মাত্র নহে, গীতিগুলির অর্থ বা টীকা। গ্রন্থখানির আরম্ভ টীকাকারের বন্দনা ও বস্তুনির্দেশক শ্লোক লইয়া। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতী অনুবাদের যে সংস্কৃত ছায়া দিয়াছেন, তাহাতে দেখা যায়, তাহাও টীকাকার মুনিদত্তের উক্তি লইয়াই পরিসমাপ্ত।” অথচ সম্পাদিত সব কটি গ্রন্থেই এই ব্যাপারটি অগ্রাহ্য করা হয়েছে এবং নামকরণে গানের ভূমিকাকেই দেওয়া হয়েছে প্রাধান্য। প্রাপ্ত পুথিটিতে গানগুলির উপস্থিতি যে একটি বিশিষ্ট ঘটনা তা অস্বীকার করা যায় না; কিন্তু টীকাকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল গানগুলির সূত্রে সহজযান বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব ও আচরণ ব্যাখ্যা করা। মূল পুথিতে গান আদৌ যুক্ত ছিল কিনা তা নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যেভাবে সাহিত্যের অর্থপুস্তক লেখা হয় সেইভাবে, অর্থাৎ প্রতিটি পদের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পদের প্রথম শব্দটি উল্লেখ করে এখানে ব্যাখ্যা শুরু হয়েছে। এই রীতি বৌদ্ধসাহিত্যে যে সুপ্রচলিত ছিল তার প্রমাণ কাহ্নপাদ রচিত ''যোগরত্নমালা'' টীকা, অদ্বয়বজ্রের ''দোহাকোষপঞ্জিকা'' এবং নারোপা রচিত ''সেকোদ্দেশ টীকা''। মুনিদত্তও সেই ধারাতে অর্থবোধের জন্য ''নির্মলগিরা টীকা'' রচনা করেছিলেন। সূচনায় “বিধাস্যে স্ফুটম্” ও অন্তে “কোষস্য চার্থঃ প্রকটিকৃতোঽএ” প্রভৃতি উক্তিই তার প্রমাণ। অতএব টীকাকারের উদ্দেশ্য বিচার করলে পূর্বোক্ত সমস্ত নামই অপ্রাসঙ্গিক ও অবান্তর মনে হবে। তিনি যে এর ভিন্ন একটি নামকরণ বৌদ্ধধর্মের গূঢ় তত্ত্বসমূহের ভাষ্য তথা ব্যাখ্যা-সংক্রান্ত ''তাঞ্জুর'' গ্রন্থমালার তালিকা থেকে পাওয়া যায়। সেখানে মুনিদত্তের নামে ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি'' গ্রন্থটির উল্লেখ আছে। মুনিদত্তের গ্রন্থটির তিব্বতি অনুবাদক কীর্তিচন্দ্রের নামেও একই নামে একটি গ্রন্থের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। পি. কর্ডিয়ার কৃত তালিকাও এই তত্ত্বকে সমর্থন করে। অতএব সিদ্ধান্ত করা যায় যে, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত গ্রন্থটির প্রকৃত নাম ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি''। উল্লেখ্য যে, তিব্বতি ভাষান্তরেও গ্রন্থের নাম দেওয়া হয়েছিল ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি''। আশ্চর্যের বিষয়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯১৬ সালে তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের পরিশিষ্টে যে ''তাঞ্জুর'' তালিকা সন্নিবিষ্ট করেছিলেন, তাতেও মুনিদত্তের নামের পাশে ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি'' গ্রন্থের উল্লেখ আছে।
==কবি==
চর্যাগীতিগুলির ভণিতায় যেমন পদকর্তাদের নাম স্পষ্টভাবে উল্লিখিত হয়েছে, তেমনই টীকাগ্রন্থটিতে ব্যাখ্যার সঙ্গে রচয়িতাদের নামও দেওয়া হয়েছে। মোট সাড়ে ছেচল্লিশটি গানের তেইশজন পদকর্তার নাম পাওয়া যায়। এঁরা সবাই ছিলেন মহাযানী বৌদ্ধধর্মের যোগাচার শাখার সাধক-কবি। সম্ভবত তন্ত্রযোগ সাধনায় এঁরা সকলেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, তাই প্রত্যেকেই সিদ্ধাচার্য নামে খ্যাত ছিলেন। মুখ্যত বজ্রযান ও সহজযানের গুরুরাই এই অভিধায় ভূষিত হতেন। তিব্বতি ইতিহাসে চুরাশি জন সিদ্ধাচার্যের নাম সুপ্রসিদ্ধ। লামা তারানাথের গ্রন্থ, মৈথিল কবি জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' ও বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধনামানুসরণ'' গ্রন্থে এই সব সিদ্ধাচার্যের নাম ও তাঁদের সম্পর্কে কিছু জনশ্রুতি উল্লিখিত হয়েছে।
===লুইপাদ===
টীকাকার মুনিদত্ত লুইপাদকে আদি সিদ্ধাচার্য বলেছেন। তিব্বতি তালিকায় তাঁর নামই সর্বাগ্রে পাওয়া যায়। অবশ্য তারানাথ বলেছেন, লুইপাদ চতুর্থ সিদ্ধাচার্য। তিনি উড্ডীয়ান-রাজ উদয়নের করণিক ছিলেন। পরে মহাসিদ্ধ শবরীপাদের কাছে তন্ত্রাভিষেক লাভ করেন এবং নির্বিঘ্নে ধ্যান করার জন্য বাংলার গঙ্গাতীরে আসেন। সাধনরত অবস্থায় তিনি মৎস্যের অন্ত্র ছাড়া আর কিছুই খেতেন না। এইজন্য নাথধর্মের অন্যতম গুরু মৎস্যেন্দ্রনাথ বা মীননাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। ‘মৎস্যেন্দ্র’ শব্দের অর্থ হল মাছেদের রাজা অর্থাৎ রুই। পাণিনির “ন র লয়োর্ভেদঃ” সূত্র অনুযায়ী বলা যায়, রুই ও লুইয়ের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। এইভাবে মীননাথ ও লুইপাদ অভিন্ন ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। অবশ্য সেটি বাস্তব সত্য কিনা সে নিয়ে সংশয় আছে। লুইপাদ বজ্রযান মতে বজ্রবারাহীর ধ্যান করতেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা অবশ্য লুইপাদকে ‘বাঙালি’ বলে ঘোষণা করেছে। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, লুইপাদ ছিলেন পাল সম্রাট ধর্মপালের কায়স্থ বা মুখ্য করণিক। সরহপাদ রচিত দোহাকোষের অদ্বয়বজ্র কৃত পঞ্জিকায় লুইপাদকে ‘কৈবর্ত’ বলা হয়েছে। চর্যাগীতি ও ''তত্ত্বস্বভাবদোহাকোষগীতিকাদৃষ্টি'' নামক দোহাকোষ ছাড়া লুইপাদ রচনা করেন ''শ্রীভগবদভিসময়'', ''অভিসময়বিভঙ্গ'', ''বুদ্ধোদয়'' ও ''বজ্রসত্ত্বসাধন''। প্রথম দুটি গ্রন্থ খুবই বিখ্যাত। বিশেষত দ্বিতীয় গ্রন্থটির উপর পরবর্তীকালে অনেক টীকা, ব্যাখ্যা, বৃত্তি, পঞ্জিকা ইত্যাদি রচিত হয়। চর্যার পুথিতে তাঁর দুটি গান (১ ও ২৯ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত।
===শবরীপাদ===
মহাসিদ্ধ শবরীপাদ ছিলেন লুইপাদের গুরু। শবরীপাদের গুরু ছিলেন রসসিদ্ধ নাগার্জুন। তারানাথের বিবরণে পাওয়া যায়, প্রথম জীবনে শবরীপাদ ছিলেন বঙ্গের এক নটাচার্য। নাগার্জুন তাঁকে শ্রীপর্বতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সেখানে তিনি শবরসুলভ জীবন যাপন করে ‘শবরীশ্বর’ বা ‘সিদ্ধ শবর’ উপাধি লাভ করেন। তন্ত্রমতে, শবর বা সবর শব্দের অর্থ বজ্রধর। তিনি কনিষ্ঠ সরোহ নামেও পরিচিত। ''তাঞ্জুর'' তালিকা অনুসারে, তিনি বজ্রযোগিনী সাধন-বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এছাড়া ষড়ঙ্গ যোগের উপরেও তাঁর অধিকার বিভিন্ন রচনায় প্রমাণিত। তিনি ‘আচার্য’ ও ‘মহাচার্য’ বিশেষণেও ভূষিত। ''মহামুদ্রাবজ্রগীতি'', ''চিত্তগুহ্যগম্ভীরার্থগীতি'' প্রভৃতি তাঁর রচিত তত্ত্বগ্রন্থ। বৌদ্ধ সাধনমালায় ''সিতকুরুকুল্লাসাধন'' ও ''বজ্রযোগিনী আরাধনাবিধি'' নামে দুটি রচনায় তাঁর ভণিতা পাওয়া যায়। চর্যাপদের পুথিতে তাঁর দুটি গান (২৮ ও ৫০ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত।
===ভুসুকুপাদ===
অন্যতম শ্রেষ্ঠ চর্যাকার ভুসুকুপাদের ব্যক্তিগত ও প্রাচীনত্ব নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। মহাযান মধ্যমক শূন্যবাদের প্রবক্তা শান্তিদেব ও চর্যাকার ভুসুকুপাদ অভিন্ন ব্যক্তি কিনা তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে কিছু মতান্তর আছে। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ''শিক্ষাসমুচ্চয়'' ও ''বোধিচর্যাবতার''। তারানাথ এই সকল গ্রন্থের রচয়িতাকে সৌরাষ্ট্রের অধিবাসী বলেছেন। কিন্তু হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘বাঙালি’ বলে স্বীকার করেছেন। শাস্ত্রী মহাশয় এশিয়াটিক সোসাইটির ৯৯৯০ সংখ্যক তালপাতার পুথি থেকে শান্তিদেবের যে জীবনী উদ্ধার করেছেন, সেটি এইরকম: শান্তিদেব ছিলেন রাজপুত্র। যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হওয়ার প্রাক্কালে তাঁর মা তাঁকে বোধিসত্ত্ব মঞ্জুবজ্রের নিকট উপদেশ নিতে বলেন। শান্তিদেব ঘোড়ায় চড়ে মঞ্জুবজ্রের নিকট যাত্রা করলেন। পথে মঞ্জুবজ্রের এক শিষ্যের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল এবং তারপর বারো বছর মঞ্জুবজ্রের কাছে থেকে তিনি মঞ্জুশ্রী মন্ত্রে সিদ্ধ হলেন। তারপরে তিনি ‘রাউত’ বা অশ্বারোহীর বেশে মগধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। মগধরাজের নিকট ‘অচল সেন’ নামে নিজের পরিচয় দিলেন। মগধরাজ অশ্বারোহী তরবারিধারী অচলকে সেনাপতি পদে বরণ করলেন। তরবারিকে আশ্রয় করে তাঁর অদ্ভুত সিদ্ধি প্রকাশ পেল। তখন তিনি রাজকার্য ত্যাগ করে ভিক্ষুর বেশে নালন্দায় প্রবেশ করলেন। এখানেই তিনি তাঁর গ্রন্থদ্বয় রচনা করেন। ভোজনকালে, সুপ্ত অবস্থায় ও কুটি গমনে অর্থাৎ বিশ্রামকালে ‘প্রভাস্বর’ বা সমাধি সমাপন্ন থাকতেন বলে তিনি ‘ভুসুকু’ নামে খ্যাতি লাভ করেন। এই নামেই তিনি চর্যাগীতি রচনা করেন। পদকর্তা ভুসুকুর গানে আছে “রাউতু ভনই কট”। এই ভণিতাই দুই ব্যক্তিত্বকে এক করে দিয়েছে। তাছাড়া নারোপা রচিত ''সেকোদ্দেশ টীকা'' গ্রন্থে শান্তিদেব ও ভুসুকুপাদকে একই ব্যক্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বিধুশেখর শাস্ত্রী ও ড. সুকুমার সেন এই দুজনকে পৃথক ব্যক্তি বলে মনে করেন। ড. সেনের মতে, ভুসুকুপাদ শান্তিদেবের তুলনায় অনেক পরবর্তীকালের ব্যক্তি। তিনি সহজযানী সিদ্ধাচার্য। তাঁর রচিত ''চতুরাভরণ'' গ্রন্থের লিপিকাল ১২৯৫ খ্রিস্টাব্দ ধরে ড. সেন তাঁকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষার্ধের ব্যক্তি মনে করেছেন। কিন্তু এই ধারণা সম্ভবত সঠিক নয়। ভুসুকুপাদ ত্রয়োদশ শতকের কবি হলে দ্বাদশ শতকের পূর্বে রচিত কোনও গ্রন্থে তাঁর পদ স্থান লাভ করতে পারে না। তাছাড়া ভুসুকুপাদ যে রাজপুত্র ও রাউত ছিলেন, তার প্রমাণ তাঁর পদেই পাওয়া যায়। “আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী” ভণিতার সূত্রে তাঁকে বাঙালি মনে করা হয়। তাঁর পদে দু-একটি বঙ্গীয় বাগ্বিধিও লক্ষণীয়। চর্যার পুথিতে ভুসুকুপাদের ৮টি গান সংকলিত হয়েছে: ৬, ২১, ২৩, ২৭, ৩০, ৪১, ৪৩ ও ৪৯ সংখ্যক চর্যা।
===সরহপাদ===
লামা তারানাথ সরহপাদকে আদি সিদ্ধাচার্য বলে উল্লেখ করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় সরহপাদকে বলা হয়েছে ‘আচার্য’, ‘মহাচার্য’, ‘সিদ্ধ মহাচার্য’, ‘মহাব্রাহ্মণ’, ‘যোগী’, ‘মহাযোগী’, ‘যোগীশ্বর’ ও ‘মহাশবর’ (‘শবর’ শব্দটি বজ্রযানে বজ্রধরের প্রতীক)। সরহপাদ উড়িষ্যায় ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেদাদি শাস্ত্রে পারঙ্গম ছিলেন। নালন্দায় তাঁর শিক্ষাগুরু ছিলেন ধর্মকীর্তি হরিভদ্র। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, হরিভদ্র ছিলেন গৌড়াধিপতি ধর্মপালের (রাজত্বকাল ৭৭০—৮১৫ খ্রিস্টাব্দ) সমসাময়িক। সেই হিসেবে সরহপাদ অষ্টম শতাব্দীর ব্যক্তি ছিলেন এবং সম্ভবত তাঁর মৃত্যু হয় ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে। আচার্য স্থবিরকালের নিকট সরহপাদ অভিষিক্ত হন। দাক্ষিণাত্যে এক শরকারের (arrow-smith) কন্যাকে মুদ্রা রূপে গ্রহণ করায় তাঁর নাম হয় শরহ বা সরহ। তাঁর অপর নাম রাহুলভদ্র, সরোরুহবজ্র ও সরোজবজ্র। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, সরহপাদের ভিক্ষুনাম রাহুলভদ্র। বজ্রযানের সঙ্গে সম্পর্ক বোঝাতে সরোরুহবজ্র বা সরোজবজ্র নাম ব্যবহার করা হয়েছে। রাহুল সাংস্কৃত্যায়ন বলেছেন, ‘পূর্বদিশা’ অঞ্চলের অন্তর্গত ‘রাজ্ঞী’ (বর্তমান বিহারের ভাগলপুর) নামক স্থানে তাঁর জন্ম। অবশ্য অনেকেই মনে করেন, সরহপাদ ছিলেন বরেন্দ্রভূমির ব্যক্তি। তাঁর লেখা ৩৯ সংখ্যক চর্যাটির বাহ্য অর্থ থেকে জানা যায় যে, তিনি বঙ্গে জায়া গ্রহণ করেছিলেন: “বঙ্গে জাআ নিলেসি”। তাঁর পদে ব্যবহৃত প্রবাদ-প্রবচন ও বাগ্বিধির বিচারেও তাঁকে গৌড়ের অধিবাসী মনে হয়। রসসিদ্ধ নাগার্জুনকে তিনি সহজ মতে অভিষিক্ত করেন। সংস্কৃত, অপভ্রংশ ও প্রত্ন বাংলা তিন ভাষাতেই সরহপাদ গ্রন্থাদি রচনা করেন। সংস্কৃতে তিনি রচনা করেন ''বুদ্ধকপালসাধন'', ''হেবজ্রতন্ত্রপঞ্জিকাপদ্মিনীনাম'' প্রভৃতি গ্রন্থ। অপভ্রংশে রচিত তাঁর সহজতত্ত্ব ও সহজ-সাধনা বিষয়ক দোহা ও দোহাজাতীয় গীতি সংকলনগুলির মধ্যে ''দোহাকোষগীতি'', ''ক-খ দোহা'' (ক-কারাদি বর্ণকে আদ্যক্ষর করে বর্ণার্থমূলক দোহা), ''মহামুদ্রোপদেশবজ্রগুহ্যগীতি'', ''কায়বাক্চিত্তঅমনসিকার'', ''ডাকিনীগুহ্যগীতি'' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চর্যাগীতির পুথিতে তাঁর ৪টি পদ (২২, ৩২, ৩৮ ও ৩৯ সংখ্যক পদ) সংকলিত।
===কাহ্নপাদ===
চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত ৫০টি পদের মধ্যে ১৩টি পদই (৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ৩৬, ৪০, ৪২ ও ৪৫ সংখ্যক চর্যা; এবং টীকা অনুসারে, মূল পুথিতে লুপ্ত ২৪ সংখ্যক চর্যাটি) কাহ্নপাদের রচনা। তিব্বতি ইতিহাস, ''তাঞ্জুর'' তালিকা, চর্যাগীতি ও বাংলা সিদ্ধাচার্য-গীতিকায় (নাথগীতিকা) কাহ্নপাদ একটি বিশিষ্ট নাম। টীকাকার তাঁকে ‘কাহ্নপাদ’, ‘কৃষ্ণপাদ’, ‘কৃষ্ণাচার্যপাদ’, ‘কৃষ্ণবজ্রপাদ’, ‘কৃষ্ণাচার্য’, ‘কৃষ্ণাচার্য চরণ’ ইত্যাদি নামে উল্লেখ করেছেন। তিনি সিদ্ধ সাধক, মহাপণ্ডিত ও মণ্ডলাচার্যদের ভিতর সিদ্ধাচার্য। তবে কাহ্নপাদ দুই জন কবির নাম কিনা এবং তাঁর সময়কাল নিয়ে বিতর্ক আছে। ড. সুকুমার সেনের মতে, ১০, ১১, ১৮, ১৯, ৩৬ ও ৪২ সংখ্যক পদগুলি জালন্ধরীপাদের শিষ্য তান্ত্রিক যোগী কাহ্নপাদের এবং ৭, ৯, ১২, ১৩, ৪০ ও ৪৫ সংখ্যক পদগুলি অপর এক কাহ্নপাদের রচনা। কয়েকটি গানে ‘জ্ঞান উপদেশের প্রবণতা’ এবং অন্য গানগুলিতে ডোম্বী-বিবাহের সন্ধ্যা-সংকেতের ভিত্তিতে দুই কাহ্নের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হলেও, একই সাধক-কবি দুই ভিন্ন শ্রেণির গান রচনা করেছেন—এই যুক্তিতে কেউ কেউ দুই কাহ্নের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন। কাহ্নপাদের পরিচয় নিয়েও অনেকগুলি জনশ্রুতি আছে। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে ভারতবাসী ও উড়িষ্যা থেকে আগত বলা হয়েছে। তিব্বতের ইতিহাস অনুসারে, তাঁর জন্মস্থান কর্ণ-নগর। জনশ্রুতিতে বলা হয়েছে তাঁর জন্ম পদ্মনগর বা বিদ্যানগর বা বিজয়নগরে। এই স্থানগুলির অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। নাথগীতিকায় তাঁর একটি কীর্তিস্থল হিসেবে বঙ্গ মেহারকুলের উল্লেখ আছে। কাহ্নপাদের পদে বাংলা শব্দভাণ্ডারের প্রাচুর্যও লক্ষণীয়। কাহ্নপাদের জীবনকাহিনিও বিচিত্র। প্রথম জীবনে বিরূপপাদ বা বিরুআপাদের শিষ্য কাহ্নপাদ ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে চারটি পাপ করার পর জালন্ধরীপাদের শরণ নেন। জালন্ধরীপাদের নির্দেশে বজ্রবারাহীর উপাসনার করে তিনি শাপমুক্ত হন। বিরূপপাদের সঙ্গে কাহ্নপাদের যোগের ইঙ্গিত তাঁর পদেই পাওয়া যায়। তবে জালন্ধরীপাদের সঙ্গেই তাঁর যোগ বেশি। চর্যাগীতিতে কাহ্নপাদ জালন্ধরীপাদকে সাক্ষী মেনে মেনেছেন: “শাখি করিব জালন্ধরী পাএ”। তিব্বতি ইতিহাসে আছে, জালন্ধরীর শ্রেষ্ঠ শিষ্য কৃষ্ণ অঙ্গে হাড়ের মালা ও হস্তে ডমরু ধারণ করবেন। চর্যাগানে কাহ্নপাদ তাই করেছেন বলে উল্লিখিত। আবার নাথগীতিকায় বলা হয়েছে হাড়িফাকে (জালন্ধরীপাদ) নিত্য সেবা করেন কানফা যোগাই (কাহ্নপাদ)। কাহ্নপাদ ''দোহাকোষপঞ্জিকা'' সহ অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ''হেবজ্রতন্ত্র'' গ্রন্থের উপর একটি গ্রন্থও তাঁর নামে পাওয়া যায়।
===বিরূপপাদ===
বিরূপপাদ বা বিরুআপাদ ছিলেন বজ্রযোগিনীর সাধক। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে ‘আচার্য’, ‘মহাচার্য’, ‘যোগীশ্বর’ ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করা হয়েছে। সিদ্ধ সাধক হিসেবে তিনি এত বিখ্যাত ছিলেন যে, পরবর্তীকালে অনেকেই তাঁর নাম করেছেন। তাঁর কোনও গুরু ছিল না। জনশ্রুতি অনুসারে, তিনি ছিলেন সিদ্ধাচার্য কাহ্নপাদের প্রথম জীবনের গুরু। তাঁর নামে ''গীতিকা'', ''কর্মচণ্ডালিকাদোহাকোষগীতি'' প্রভৃতি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। লামা তারানাথের গ্রন্থে তাঁর মদ্যপানে আসক্তি ও শুণ্ডিনী সাহচর্যের কথা পাওয়া যায়। চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত তাঁর একমাত্র চর্যাটিতে (৩ সংখ্যক পদ) সেই শুণ্ডিনীর মদ চোলাইয়ের একটি বাস্তব চিত্র অঙ্কিত হয়েছে।
===শান্তিপাদ===
শান্তিপাদ প্রাচীন সিদ্ধাচার্য। ড. সুকুমার সেনও তাঁকে প্রাচীন চর্যাকার বলে স্বীকার করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা মতে, রত্নাকর শান্তিই শান্তিপাদ। তিব্বতি তালিকায় রত্নাকর শান্তি ‘আচার্য’, ‘আচার্যপাদ’ ও ‘মহাপণ্ডিত’ বিশেষণে ভূষিত। লামা তারানাথের বিবরণ অনুসারে, তিনি শবরীপাদের সমসাময়িক, অর্থাৎ অষ্টম শতকের মধ্যভাগের ব্যক্তিত্ব। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁর নামে ''মুক্তাবলী নামি হেবজ্র পঞ্জিকা'' ও ''কুসুমাঞ্জলি নাম গুহ্যসমাজ নিবন্ধ'' নামে দুই গ্রন্থ উল্লিখিত হয়েছে। এগুলি সহজ-সাধনার ভিত্তি ''হেবজ্রতন্ত্র'' ও ''গুহ্যসমাজ তন্ত্র'' গ্রন্থদ্বয়ের টীকা। সহজযানের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগের সাক্ষর বহন করছে ''সহজরতিসংযোগ'' ও ''সহজ যোগক্রম'' গ্রন্থ দুটি। তাঁর অপর গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ''সুখদুঃখপরিত্যাগদৃষ্টি''। এছাড়া তিনি বজ্রতারা ও মহামায়ার সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থও রচনা করেন। শান্তিদেব ও শান্তিপাদকে কেউ কেউ অভিন্ন মনে করেন। কিন্তু এঁরা যে পৃথক ব্যক্তি তা নানা সূত্র থেকে জানা যায়। শান্তিদেবের দুটি পদ (১৫ ও ২৬ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত হয়েছে চর্যাগীতির পুথিতে।
===দারিকপাদ===
দারিকপাদকে অভিষিক্ত করেন লুইপাদ। গানের ভণিতাতেও দারিকপাদ বলেছেন, “লুইপাঅ পসাএঁ দারিক”। লামা তারানাথের মতে, দারিকপাদ ছিলেন উড়িষ্যার রাজা। তিনি সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় দারিকপাদের নামে ''শ্রীচক্রতন্ত্ররাজ'' গ্রন্থের ''সেকপ্রক্রিয়াবৃত্তি'' ও ''শ্রীচক্রসম্বরসাধন'' গ্রন্থের নাম পাওয়া যায়। চর্যাগীতির পুথিতে তাঁর একটি মাত্র পদই (৩৪ সংখ্যক চর্যা) পাওয়া গিয়েছে।
===ডোম্বীপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য ডোম্বী, আচার্য ডোম্বীপাদ এবং আচার্য বা মহাচার্য ডোম্বী-হেরুকের নামে একাধিক গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়। লামা তারানাথের মতে, এঁরা সবাই একই ব্যক্তি এবং এই ডোম্বী-হেরুক ছিলেন বিরূপপাদের শিষ্য কাল বিরূপ বা কাহ্নপাদের শিষ্য। তিব্বতি তালিকায় সিদ্ধ ডোম্বী-হেরুককে সন্ন্যাসী ও মগধের রাজা বলা হয়েছে। তারানাথ অবশ্য বলেন, ডোম্বী-হেরুক ছিলেন ত্রিপুরার রাজপুত্র। মুদ্রিকা নিয়ে সাধনা করতেন বলে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন। কিন্তু রাজ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ডোম্বী-হেরুক আশ্চর্য সিদ্ধাই দেখিয়ে দুর্ভিক্ষ নিবারণ করেন। তখন লোকে তাঁর সিদ্ধির কথা বুঝতে পারে। ডোম্বী-হেরুকের শিষ্যবর্গ ছিলেন ডোম্বী (আধ্যাত্মিক অর্থে বায়ুরূপা অবধূতিকা) ধরার সাধক। তারানাথ আরও বলেছেন যে, ডোম্বী-হেরুক রাঢ়ের রাজাকেও অভিষিক্ত করেন, ফলে রাঢ় অঞ্চল থেকে তীর্থিক ধর্ম লোপ পায়। মুনিদত্তও ডোম্বীপাদকে ‘লাড়ী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাই ড. সুকুমার সেন তাঁর রাঢ় অঞ্চলের মানুষ মনে করেন। ড. বিনয়তোষ ভট্টাচার্যের মতে, তিনি ছিলেন অষ্টম শতকের লোক। চর্যাগীতির পুথিতে ডোম্বীপাদের মাত্র একটি পদ (১৪ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত হয়েছে। টীকাকার এটির ব্যাখ্যা দেননি। তবে কাহ্নপাদের অনেক পদে ডোম্বীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
===কুক্কুরীপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য কুক্কুরীপাদ কুকুরাজ বা কুক্কুররাজ নামে অভিহিত হয়েছেন। তাঁর নামে অনেকগুলি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। ''গুহ্যার্থধর ব্যুহ'' নামে তিনি বজ্রসত্ত্ব, বজ্রহেরুক, পদ্মরত্নেশ্বর প্রমুখের সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থ রচনা করেছেন। তারানাথের ভাষ্য অনুসারে, সর্বদা সঙ্গে একটি কুক্কুরী থাকত বলে তিনি কুক্কুরীপাদ নামে পরিচিত হয়েছেন। ড. সুকুমার সেন অবশ্য কুক্কুটিকপাদ থেকে কুক্কুরীপাদ শব্দটি নিষ্পন্ন করতে চান। চর্যাপদের পুথিতে তাঁর তিনটি চর্যা সংকলিত হয়েছিল; তার মধ্যে ২ ও ২০ সংখ্যক চর্যাটি পাওয়া গিয়েছে এবং ৪৮ সংখ্যক চর্যাটি লুপ্ত।
===চাটিলপাদ===
পদকর্তা চাটিলপাদের অস্তিত্ব তাঁর একটি পদের (৫ সংখ্যক চর্যা) উপর নির্ভরশীল। কারণ তারানাথের বর্ণনায় বা ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁর নাম দেখা যায় না। কেবল জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থের সিদ্ধা-বর্ণনায় ‘চাটল’ এবং বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধনামানুসরণ'' গ্রন্থে ‘চাটলা’ নাম পাওয়া যায়। ৫ সংখ্যক পদে তিনি নিজেকে ‘অনুত্তর সামী’ বলে আত্মপ্রশংসা করেছেন বলে, ড. সুকুমার সেন এটিকে চাটিলপাদের কোনও শিষ্যের রচনা বলে মনে করেন। কিন্তু প্রাচীন বা মধ্যযুগীয় সাহিত্যে কবির আত্মপ্রশংসা বিরল নয় বলেই ড. সেনের মত অনেকে গ্রহণ করতে পারেননি।
===আর্যদেব===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আর্যদেব বা আজদেবকে ‘আচার্য’ ও ‘মহাচার্য’ বলা হয়েছে। তিনি সংস্কৃতে সুপণ্ডিত ছিলেন। চতুষ্পীঠ যোগতন্ত্র সাধন সম্পর্কে তিনি গ্রন্থ রচনা করেন। সহজ-সাধনায় চিত্তশোধন-বিষয়ক মূল্যবান গ্রন্থ ''চিত্তাবরণবিশোধন নামপ্রকরণ'' তাঁর রচনা। অপভ্রংশ ভাষায় তিনি রচনা করেন ''কাণেরি গীতিকা''। প্রভুভাই প্যাটেলের মতে, আর্যদেব অষ্টম শতকের প্রথমার্ধে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন উড়িষ্যারাজ ইন্দ্রভূতি এবং সরহপাদের শিষ্য নাগার্জুনের সমসাময়িক। আর্যদেবের একটি মাত্র চর্যা (৩১ সংখ্যক পদ) সংকলিত হয়েছে চর্যাগীতির পুথিতে।
===কম্বলাম্বরপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য বা মহাচার্য কম্বলের নাম পাওয়া যায়; সেই সঙ্গে প্রজ্ঞারক্ষিতের গুরু মহাসিদ্ধ কম্বলাম্বরপাদের নামও উল্লিখিত হয়েছে এখানে। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ''অভিসময়নামপঞ্জিকা''। লামা তারানাথের বিবরণ থেকে অনুমান করা হয় যে, লুইপাদের শিষ্য দারিকপাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল এবং সেই সূত্রে লুইপাদের গ্রন্থটির পঞ্জিকা রচনা করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়। তারানাথ কম্বলাম্বরপাদকে বজ্রঘণ্টের শিষ্য বলেছেন। ডোম্বী-হেরুক, জালন্ধরীপাদ প্রমুখের সঙ্গে কম্বলাম্বরপাদের যোগাযোগ ছিল। একটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, কম্বলাম্বরপাদ ছিলেন ঊড়িষ্যার এক রাজকুমার। শ্মশানে সাধনা করে তিনি মন্ত্রসিদ্ধ হয়েছিলেন। মন্ত্রবতী শ্মশান-ডাকিনী তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হলে শ্মশানে একটি কম্বল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। তাতেই তিনি ‘কম্বল’ নামে খ্যাত হন। তাঁর কিছু সংস্কৃত রচনার অংশ উদ্ধৃত হয়েছে সরহপাদ রচিত দোহার অদ্বয়বজ্র কৃত টীকায়। সেখানে তিনি শাস্ত্রের শব্দাক্ষরের অসারতা প্রতিপন্ন করেছেন। চর্যাগীতির পুথিতে ৮ সংখ্যক পদটি কম্বলাম্বরপাদের রচনা। এটিতে তিনি ‘কামলি’ নামে আত্মপরিচয় দিয়েছেন। পদটি সাধনতত্ত্বের রূপক। নৌকা বাওয়ার রূপকে কবি মহাসুখচক্রের উদ্দেশ্যে বোধিচিত্তের যাত্রা বর্ণনা করেছেন। বিভিন্ন পংক্তিতে নৌকা বাওয়ার বাস্তব চিত্র এই বিষয়ে কবির বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিচায়ক। সন্ধ্যা-সংকেতে ও উৎপ্রেক্ষায় পদটি বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে।
===বীণাপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় বিরুআপাদের বংশধর রূপে বীণাপাদের নাম উল্লিখিত হয়েছে। অবশ্য লামা তারানাথের মতে, তিনি ছিলেন অশ্বপাদের শিষ্য। ডোম্বী-হেরুকের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। সেই হিসেবে তিনি অষ্টম শতকের শেষার্ধের ব্যক্তি। ড. সুকুমার সেন বলেছেন, “টীকাকারের অনুকরণে একটি চর্যা (১৭) অকারণে বীণাপাদের রচিত বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছে। কিন্তু ভণিতা বলিয়া নির্দেশ করিতে পারি এমন কোন নাম চর্যাটিতে নাই।” কিন্তু অধ্যাপক জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তীর মতে, “চর্যাগানে অনেক ক্ষেত্রে লেখক রূপকের আবরণে আত্মগোপন করিয়াছেন, কোথায়ও বা সরাসরি ভণিতা না দিয়া নিজেই গীতিকবিতার নায়ক সাজিয়াছেন। কাহ্নপাদের ১০ সংখ্যক চর্যায় ও শবরপাদের ২৮ ও ৫০ সংখ্যক চর্যায় এই রীতিই অবলম্বিত হইয়াছে। কাজেই বীণাপাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না।” গুহ্যাভিষেক, মহাভিষেক ও বজ্রডাকিনী নিষ্পন্নক্রম বিষয়ে বীণাপাদ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ১৭ সংখ্যক চর্যাটিও নিষ্পন্নক্রমের সাধন-সংক্রান্ত চর্যা। সেকমণ্ডলে আলি-কালির দ্বার রুদ্ধ হয়ে চিত্ত অবধূতী মার্গে প্রবিষ্ট হলে কীভাবে হেরুক-বীণায় শূন্যতার ধ্বনি ওঠে এবং কীভাবে যোগিনী-অভিষঙ্গে যোগী বজ্রনৃত্যে ও বজ্রগীতে তন্ময় হন, তারই একটি ছবি ধরা পড়েছে ১৭ সংখ্যক চর্যাটিতে। সাধকসত্ত্বাই এখানে বীণাযন্ত্র-স্বরূপ। বীণার রূপকল্পনায় নীরস দেহতত্ত্ব এই পদে সরস হয়ে উঠেছে। গানটি শুধু তত্ত্ববাহীই নয়, নানা তথ্যে সমৃদ্ধ এবং কবির বস্তুদৃষ্টির পরিচায়ক।
===ভাদেপাদ===
কাহ্নপাদের যে ছয়জন শিষ্যের একটি করে গান চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত হয়েছে, তাঁদের অন্যতম ভাদেপাদ বা ভদ্রপাদ। অন্যত্র তিনি ভদ্রচন্দ্র বা ভদ্রদত্ত বা ভদ্রোক নামেও পরিচিত। লামা তারানাথ তাঁর ‘গুহ্য’ নামটির কথা উল্লেখ করেছেন। বাংলা গোপীচন্দ্রের গানে উল্লিখিত কৃষ্ণাচার্যের শিষ্য ‘বাইল ভাদাই’ সম্ভবত ভদ্রপাদ। কানফা গোপীচন্দ্রকে উদ্ধার করতে সোনার গোপীচন্দ্র মূর্তি ক্রুদ্ধ হাড়িপার সম্মুখে স্থাপনের উপদেশ দেন। হাড়িপার ক্রোধে সেই স্বর্ণমূর্তি ভস্ম হয়ে যায়। গুরু জালন্ধরী এই কথা জানতে পেরে কানফাকে শাপ দেন। শেষে ময়নামতীর অনুনয়ে সিদ্ধ হাড়িপা বলেন যে, ‘বাইল ভাদাই’ শাপমুক্ত করবেন কানফাকে। সিদ্ধাচার্যদের অনেকেই শিষ্য কর্তৃক উদ্ধার লাভ করেছিলেন। গোরক্ষনাথ যেমন গুরু মীননাথকে কামবাসনায় ঘেরা কদলীরাজ্য থেকে মুক্ত করেছিলেন, তেমনই হয়তো গুরু কানফা বা কাহ্নপাদকে শাপমুক্ত করে থাকবেন ‘বাইল ভাদাই’ বা ভদ্রপাদ। নাথপন্থার সঙ্গে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মের যোগ এই কাহিনির মাধ্যমে বোঝা গিয়েছে। কিন্তু ভাদেপাদের গানে তান্ত্রিকতার ছাপ স্পষ্ট নয়, পারিভাষিক শব্দের ব্যবহারও কম। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় ভাদেপাদকে বলা হয়েছে ‘ভাণ্ডারিন্’ (আচার্য)। তাঁর রচিত গ্রন্থটির নাম ''সহজানন্দদোহাকোষগীতিকাদৃষ্টি''। ৩৫ সংখ্যক চর্যাগীতিটি ভাদেপাদের রচনা। গুরু উপদেশে কীভাবে তিনি সহজচিত্ত লাভ করেছিলেন, তা উল্লিখিত হয়েছে এই পদে। টীকাকার বলেছেন, ভদ্রপাদ ‘জ্ঞানানন্দপ্রমোদ’-যুক্ত সিদ্ধাচার্য। পদটিতেও সর্বধর্ম-অনুপলম্ভরূপ চরম জ্ঞানের স্বরূপ বিধৃত হয়েছে। পদটিতে ‘বাজুল’ (বজ্রকুল) শব্দটির প্রয়োগ দেখে মনে হয়, ভাদেপাদ বজ্রকুলের সাধক ছিলেন।
===মহীধরপাদ===
চর্যাগীতির পুথিতে প্রাপ্ত ১৬ সংখ্যক পদটির রচয়িতা মহিণ্ডা। ভণিতায় ‘মহিণ্ডা’ নামটি পাওয়া গেলেও টীকায় তাঁর নাম মহীধরপাদ। লামা তারানাথ তাঁকে ‘মহিল’ বলে উল্লেখ করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা বলা হয়েছে যে, ‘মহিপাদ’ ছিলেন আচার্য কৃষ্ণের অর্থাৎ কাহ্নপাদের বংশধর (শিষ্য)। ''বায়ুতত্ত্ব দোহাগীতিকা'' গ্রন্থটি মহীধরপাদের রচনা। তাঁর রচিত চর্যাগীতিটি ধ্বনিগাম্ভীর্যে, ২৬ মাত্রার দীর্ঘায়িত ছন্দের গজগতিতে এবং রূপক-কল্পনার সৌন্দর্যে বেশ উপভোগ্য। টীকাকার বলেছেন, "জ্ঞানপানপ্রমত্তো হি সিদ্ধাচার্য মহীধর”। এই জ্ঞানদৃষ্টির সঙ্গে কবির শিল্পদৃষ্টিও প্রশংসনীয়। পদটির সঙ্গে কাহ্নপাদ রচিত ৯ সংখ্যক পদের ভাব ও চিত্র-সাদৃশ্য কাহ্নপাদের সঙ্গে মহীধরপাদের নিকট সম্পর্কেরই সূচক। তবে ড. নির্মল দাশ এই পদের ভণিতায় ক্রিয়াপদে বহুবচন দেখে অনুমান করেন যে, পদটি মহীধরপাদের “শিষ্যানুশিষ্যদেরও” রচনা হতে পারে।
===ধামপাদ===
লামা তারানাথের মতে, ধম্মপাদ বা ধামপাদ ছিলেন কাহ্নপাদের শিষ্য। কাহ্নপাদ যখন গুরুকে উদ্ধার করতে শিষ্যদের নিয়ে গোবিন্দচন্দ্রের রাজ্যে আসেন, তখন রাজা তাঁদের উদ্দেশ্যে এক ভোজের আয়োজন করেন। কাহ্নপাদ বলেন, শিষ্য ধম্ম ও ধূমকে ভোজনে তৃপ্ত করলেই সকলে পরিতৃপ্ত হবেন। রাজার সংগৃহীত সমস্ত ভোজ্যদ্রব্য ধম্ম ও ধূম নিঃশেষ করেন। এতে সবাই তাঁদের সিদ্ধি বুঝতে পারেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য ধর্মপাদকে কৃষ্ণ অর্থাৎ কাহ্নপাদের বংশধর বলা হয়েছে। ধামপাদ ''সুগত দৃষ্টি গীতিকা'', ''মহাযান নিষ্পন্নক্রম'', ''হুঙ্কার চিত্তবিন্দু ভাবনাক্রম'' প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত ৪৭ সংখ্যক পদটি তাঁর রচনা। এই পদেও নিষ্পন্নক্রম সাধনের কথাই বিবৃত হয়েছে: প্রজ্ঞোপায় সমতাযোগে চণ্ডালী প্রজ্বলিত হয়, অপরিশুদ্ধা নাড়ী দগ্ধ হয় এবং তখন নাড়ীর অধিদেবতা ও চিত্ত বিশ্রাম লাভ করে মহাসুখচক্রে। প্রকারান্তরে কাহ্নপাদ কথিত ‘কামচণ্ডালী’ সাধনার কথাই এখানে পুনর্কথিত হয়েছে। গানটি ''হেবজ্রতন্ত্র''-এর ‘চণ্ডালী জ্বলিতা নাভৌ’ শ্লোকটির ভাষা-অনুবাদ।
===কঙ্কণ===
চর্যাগীতির পুথিতে ৪৪ সংখ্যক পদটি কঙ্কণের রচনা। পুথিতে তাঁর নাম কোঙ্কণ বলে উল্লিখিত। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীও তাঁকে সেই নামেই অভিহিত করেছেন। কিন্তু ড. সুকুমার সেনের মতে, তাঁর নাম কৌঙ্কণ। ড. নির্মল দাশের মতে, কঙ্কণ কবির ছদ্মনাম। সম্ভবত কঙ্কণ ছিল তাঁর লব্ধ-উপঢৌকন। সেকালে কবিরা এভাবে প্রাপ্ত উপঢৌকনের নামে ছদ্মনাম গ্রহণ করতেন। কথিত আছে, তিনি আচার্য কম্বলের বংশধর। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে সিদ্ধ সাধক বলা হয়েছে। টীকাকার তাঁকে পরম করুণাসব পানে প্রমুদিত ‘কঙ্কণ সিদ্ধাচার্য’ বলেছেন। কঙ্কণের পদটিতে মধ্যমা নিরোধের যুগনদ্ধ ফলোদয়ের অবস্থাটির বর্ণনা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র মাপের মাত্রা ছন্দ (১১ মাত্রার রসিকা) কঙ্কণই ব্যবহার করেছেন। ছন্দে বৈচিত্র্য এনেছে ষোড়শ-মাত্রিক বন্ধনের সঙ্গে ১১ মাত্রার চরণ: “সুনে সুন মিলিআ জবেঁ। সঅল ধাম উইআ তবেঁ।।” ''চর্যাদোহাকোষগীতিকা'' তাঁর রচনা। সম্ভবত আর কোনও গ্রন্থ তিনি রচনা করেননি।
===গুণ্ডরীপাদ===
৪ সংখ্যক চর্যাগীতিটি গুণ্ডরীপাদের রচনা। গানটিতে ‘গুড়রী’ ভণিতা দেওয়া হয়েছে। অ্যালবার্ট গ্রানওয়েডেল সিদ্ধাচার্যদের যে তালিকা প্রস্তুত করেছেন, তাতে গুণ্ডরী নামটি আছে। বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধবন্দনা'' গ্রন্থেও তাঁর নাম পাওয়া যায়। কিন্তু ''তাঞ্জুর'' তালিকায় এই নামের কোনও লেখকের কথা উল্লিখিত হয়নি। ড. সুকুমার সেনের মতে, গুণ্ডরী সম্ভবত ব্যক্তিনাম নয়, কবির জাতি বা পেশাবাচক নামক এবং সম্ভবত মশলা ইত্যাদি গুঁড়ো করা ছিল কবির পেশা। পুথিতে সংকলিত চর্যাটিতে কুন্দুরু যোগের একটি সংকেত পাওয়া যায়। পদটিতে নরনারীর প্রেম-মিলনের স্থূল বর্ণনা আছে। ড. সেন গানটিতে যৌন-তান্ত্রিকতার স্পষ্ট ইঙ্গিত ও পারিভাষিক শব্দের আধিক্যের কারণে পদকর্তাকে অপেক্ষাকৃত অর্বাচীন বলে বিবেচনা করেছেন। পদের শেষে কবির আত্মপ্রশংসা লক্ষণীয়।
===তাড়কপাদ===
৩৭ সংখ্যক চর্যাগীতির রচয়িতা হিসেবে তাড়কের নাম উল্লিখিত হয়েছে। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় যে মহাপণ্ডিত তারশ্রী ও উপাধ্যায় তারপাদের নাম পাওয়া যায়, তাড়ক তাঁদেরই মধ্যে কেউ হতে পারেন। টীকাকার তাঁকে সিদ্ধাচার্য বলেছেন: “সিদ্ধাচার্য হি তাড়ক।” পদটিতে সহজজ্ঞানের অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। কবির বস্তুদৃষ্টির পরিচয়ও পাওয়া যায় এতে। নৌকা-পারাপার ও পারানির কড়ি খোঁজার ছবিটি মনোজ্ঞ।
===জয়নন্দী===
৪৬ সংখ্যক চর্যাগীতিটি জয়নন্দীর রচনা। তিনি ‘জঅনন্দি’ নামেও পরিচিত। লামা তারানাথের গ্রন্থে জয়নন্দীর নাম পাওয়া যায় না। গ্রানওয়েডেল কৃত সিদ্ধাচার্যদের নামের তালিকায় ‘জয়নন্দ’ নামটি পাওয়া যায়। টীকাকার তাঁকে পরম করুণা অর্জনের নিমিত্ত ‘অভিজ্ঞালাভী’ বলেছেন। প্রাপ্ত পদটিতে পরমার্থ চিত্তের অদাহ্য অপ্লাব্য অচ্ছেদ্য রূপের বর্ণনা এবং পরমার্থতত্ত্বে লক্ষণ কথিত হয়েছে। পদটি অলংকার-বর্জিত ও সোজাসুজি তত্ত্ববাহী।
===ঢেণ্ঢণপাদ===
৩৩ সংখ্যক পদটি ঢেণ্ঢণপাদের রচনা। তিনি চেণ্ঢনপা বা টেণ্টনপা নামেও পরিচিত। তিব্বতি ইতিহাসে ঢেণ্ঢণপাদের নাম নেই। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে, ভোট উচ্চারণে যিনি ধেতন, তিনিই ঢেণ্ঢণ। আবার ড. নির্মল দাশের মতে, টেণ্টনপা নামটি ছদ্মনাম। তাঁর পদটিতে যে ‘টেণ্টন’ অর্থাৎ ধূর্ত-সুলভ চাতুর্যের পরিচয় আছে, সেটিকে ড. দাশ কবির ব্যক্তিচরিত্রের নয়, বরং রীতিচরিত্রের পরিচায়ক বলেছেন। আগাগোড়া সন্ধ্যাভাষায় রচিত ঢেণ্ঢণপাদের চর্যাগীতিটিতে সন্ধ্যা-সংকেতে সংসারচিত্ত ও সহজচিত্তের স্বরূপ বর্ণিত হয়েছে। পদে পদে পরস্পর-বিরোধী উক্তি এবং বিরোধালংকারের সমাবেশে পদটি দুরূহ হলেও উপভোগ্য। সাধক-কবির সূক্ষ্ম বস্তুদৃষ্টি ও পর্যবেক্ষণ শক্তিও প্রশংসনীয়। পদটিতে গৌড়ের দরিদ্র পরিবারের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। কবীরের একটি কবিতায় এবং সহদেব চক্রবর্তী ও লক্ষ্মণের ''অনিলপুরাণ'' ও ''গোর্খবিজয়'' কাব্যেও ঢেণ্ঢণপাদের পদটির প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়।
===তন্ত্রীপাদ===
তন্ত্রীপাদ রচিত ২৫ সংখ্যক চর্যাগীতিটি লুপ্ত। টীকা থেকে গানের শেষাংশের কিছু আভাস পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে যে, নৈরাত্মা যোগিনীর অভিষঙ্গে জাতিধর্ম লুপ্ত হয়ে যায়—হীন বৃত্তিধারী তন্ত্রী হন বজ্রধর। তিব্বতি অনুবাদ থেকে বোঝা যায় যে, গানটির বিষয় তাঁত বোনা। ‘তন্ত্রী’ নামটি জাতি-বৃত্তির স্মারক। ড. নির্মল দাশের মতে ‘তন্ত্রী’ ব্যক্তিনাম নয়, জাতিবাচক নাম। সিদ্ধাচার্যদের তালিকা ‘তান্তি’ শব্দটি আছে। জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থে ‘তান্তিপা’ নামটি পাওয়া যায়।
==ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব==
সভ্যতার উষালগ্নে মানুষ ছিল অসহায়। তখন থেকেই সাহিত্যের সঙ্গে ধর্মের একটি গভীর সম্পর্ক সূচিত হয়। বিশ্বের সকল ভাষার সাহিত্যেই তাই দেখা যায়, মানবীয় অনুভূতিগুলি প্রকাশিত হয়েছে অধ্যাত্মচেতনার আবরণে। প্রাচীন ভারতে বেদ, উপনিষদ্, মহাকাব্য, পুরাণ সর্বত্রই এই দৃষ্টান্ত দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন চর্যাপদও ছিল এক বিশেষ ধর্মসম্প্রদায়ের সাধনসংগীত। পদগুলি রচনার ক্ষেত্রে পদকর্তারা বিশুদ্ধ সাহিত্যবোধের দ্বারা চালিত না হয়ে যে অন্যরকম সাধ্য ও সাধনপ্রণালীর কথাই বলতে চেয়েছিলেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী যদিও তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের ভূমিকায় বলেছেন, “যাঁহারা সাধনভজন করেন তাঁহারাই সেই কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই”, তবু প্রাচীন বাংলার ধর্মসাধনার অঙ্গ হিসেবে রচিত এই সংগীতের অর্থবোধ ব্যতীত প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সংগীত বা কাব্য ছিল সেযুগের ধর্মসাধনার অন্যতম সোপান। মঙ্গলকাব্য, নাথসাহিত্য, বৈষ্ণব পদাবলি, বাউল গান, শাক্ত পদাবলি প্রভৃতি মধ্যযুগের বিভিন্ন সাহিত্যধারাতেও এই একই বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। চর্যার সাহিত্যমূল্য যেমন পরিমাপযোগ্য, তেমনই এই গানগুলিতে অবলম্বিত ধর্মের গূঢ় তত্ত্বও প্রণিধানযোগ্য। আধুনিক গবেষকেরা বৌদ্ধধর্মের নানা পুথি অনুসন্ধান করে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম ও সহজ-সাধনার স্বরূপ নির্ণয়ে প্রয়াসী হয়েছেন। এই বিষয়ে বিদেশি গবেষকদের পাশাপাশি ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও ড. শশিভূষণ দাশগুপ্তের ভূমিকাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ড. বাগচী বাংলায় ''বৌদ্ধধর্ম ও সাহিত্য'' এবং ইংরেজিতে ''স্টাডিজ ইন তন্ত্রজ'' এবং ড. দাশগুপ্ত ইংরেজিতে ''অবস্কিওর রিলিজিয়াস কাল্টস অ্যাজ ব্যাকগ্রাউন্ড অফ বেঙ্গলি লিটারেচার'' ও ''ইন্ট্রোডাকশন টু তান্ত্রিক বুদ্ধিজম'' গ্রন্থের রচয়িতা। পরবর্তীকালে সকল গবেষক এঁদের প্রদর্শিত পথে অগ্রসর হয়ে সিদ্ধাচার্যদের নির্দেশিত ও অনুশীলিত ধর্মাচারের বিস্তৃত পরিচয় দিতে সমর্থ হয়েছেন।
গৌতম বুদ্ধের দেহত্যাগের পর তাঁর অনুগামীদের মধ্যে নানা মতভেদের কারণে বৌদ্ধধর্মে ভাঙন দেখা দেয়। ধর্মীয় আদর্শ পর্যালোচনার জন্য পরপর চারটি বৌদ্ধ মহাসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু প্রবল মতবিরোধের প্রেক্ষিতে বৌদ্ধসমাজ হীনযান ও মহাযান নামে দুই সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রাচীনপন্থী হীনযানীদের ভাবনা তুলনামূলকভাবে কিছুটা সংকীর্ণ ছিল। তাঁরা ‘অর্হৎ’ অর্থাৎ নিজেদের মুক্তিকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। এঁদের মধ্যে পদ্ধতির ভিন্নতা অনুযায়ী শ্রাবকযান ও প্রত্যেকবুদ্ধযান নামে দুটি উপদল গড়ে ওঠে। শ্রাবকযানীরা বুদ্ধত্বলাভের দুরাশা পোষণ করতেন না, কেবল নির্ধারিত আচার-আচরণ পালন করে ধর্মের পথে পুণ্য অর্জনে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। যাঁরা বুদ্ধত্বলাভের উচ্চাশা পোষণ করতেন, তাঁরা প্রত্যেকবুদ্ধযানী নামে পরিচিত ছিলেন। এঁদের নিরিখে মহাযানীদের আদর্শ ছিল অনেক উদার। তাঁরা গৌতম বুদ্ধের ন্যায় পরোপকারে জীবন উৎসর্গ করে বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভ এবং তার মধ্যে দিয়ে বুদ্ধত্ব অর্জনকেই আদর্শ বলে মনে করতেন। বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভের উপায় হল শূন্যতা ও করুণার অভিন্নতায় বোধিচিত্তের জাগরণ ঘটানো। বোধিপ্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে বুদ্ধত্বলাভের একমাত্র সোপান বোধিসত্ত্বাবস্থায় উন্নীত হওয়া সহজ হত। বোধিচিত্ত কী এবং কীভাবে তাকে জাগরিত করা যায়, সে আলোচনা আবশ্যক। মহাযানীদের মতে, জাগতিক কোনও বস্তুরই নিজস্ব কোনও ধর্ম বা স্বরূপ নেই। অথচ প্রত্যেকের যে প্রাতিভাসিক স্বরূপ দেখা যায়, তা অন্য কোনও স্বরূপের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং পার্থিব সকল বস্তুই প্রকৃত অস্তিত্বহীন। বস্তু সম্পর্কে এই জাতীয় জ্ঞানই শূন্যতাজ্ঞান। যখন সাধক জগৎ-সংসারে উক্ত শূন্যতাজ্ঞান এবং বিশ্বব্যাপী করুণাকে একত্র সংযুক্ত করেন, তখন যে মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয় সেটিই হল বোধিচিত্ত (“শূন্যতা করুণাভিন্নং বোধিচিত্তম্”)। সাধকের মনে বিশ্বব্যাপী করুণার উদয় ঘটলে তিনি কেবল নিজের মুক্তিপ্রয়াসী হন না, পরোপকারের মধ্যে দিয়ে জগতের সকলের মুক্তিপ্রয়াসী হয়ে ওঠেন। বস্তুত মহাযানী মতের জনপ্রিয়তার কারণ নিহিত হয়ে রয়েছে তাঁর আদর্শে, সকল জীবের মধ্যে বুদ্ধত্ব কল্পনায় এবং সদাচারী পন্থায়। বিশ্বের সকল জীবের মুক্তির জন্য এভাবে পরোপকারে আত্মোৎসর্গ করার কথা অন্য কোনও ধর্মমতে বিশেষ দেখা যায় না। মৈত্রী, করুণা, অহিংসা প্রভৃতি মানবিক সদ্বৃত্তির অনুশীলনও মহাযানকে সকলের কাছে গ্রহণীয় করে তুলেছিল। বৌদ্ধ পরিভাষায় উক্ত সদ্বৃত্তিগুলিকে বলা হয় ‘পারমিতা’। জগতের শূন্যস্বভাবে বিশ্বাস হেতু মহাযানীরা ‘শূন্যবাদী’ নামে পরিচিত হন। দার্শনিক মত বিচারের সূক্ষ্মতায় মহাযানীদের মধ্যেও দুটি উপদল ছিল। যাঁরা প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তির মধ্যবর্তী পথ ধরে চলতে চাইলেন, তাঁরা ‘মধ্যমক’ শাখার অন্তর্গত ছিলেন। অন্যদিকে যাঁরা বস্তুসত্তাকে চিৎসত্তায় পরিণত করে চৈতন্যরূপী জ্ঞানের মধ্যেই সমস্ত জগৎকে ধারণ করতে চাইলেন, তাঁরা গণ্য হতেন যোগাচার শাখার দার্শনিক হিসেবে। মধ্যমক মতের প্রবর্তক নাগার্জুন। যোগাচার মতের সাধন-পথের দিকটিতে অসঙ্গ বিশেষ গুরুত্ব দিলেও এটির দার্শনিক দিকটি গড়ে ওঠে বসুবন্ধুর নেতৃত্বে। যোগাচারবাদীরা বলতেন, “সর্বং বুদ্ধিময়ং জগৎ”। এই কারণে এই মতটি ‘বিজ্ঞানবাদ’ নামেও পরিচিত ছিল।
মহাযান বৌদ্ধধর্মের যোগাচার তথা বিজ্ঞানবাদ থেকে সহজযানে এই মতের রূপান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক পদক্ষেপ। এর পিছনে বৈদিক ও পৌরাণিক হিন্দুধর্মের প্রভাব ছিল বলেই গবেষকদের ধারণা। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্য ও কুমারিল ভট্টের দ্বারা ভারতীয় সমাজে ব্রাহ্মণ্য সংস্কার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে নাস্তিক্যবাদী বৌদ্ধধর্মেও দেবদেবীদের অনুপ্রবেশ শুরু হয়। এই দুর্বলতার সুযোগে হিন্দু তন্ত্রের দেহকেন্দ্রিক যোগসাধনার প্রক্রিয়াটি যোগাচার মতে গ্রাস করে। ইতিপূর্বে যাঁরা ‘পারমিতা’ অর্থাৎ দান, শীল, ক্ষান্তি, বীর্য প্রভৃতি পরম গুণের অনুশীলনের মাধ্যমে বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভের কথা বলতেন, তন্ত্রের প্রভাবে তাঁরাই মন্ত্রশক্তির প্রয়োগে আকাঙ্ক্ষিত বোধিসত্ত্বাবস্থাকে স্থায়ী করার কথা বললেন। এভাবে মন্ত্রের সংযোগে যোগাচার মত প্রথমে ‘মন্ত্রনয়’-এ পরিণত হল, তারপর এই পথেই নানাপ্রকার তান্ত্রিক গুহ্যাচার প্রবেশ করল এই মতে। বলা বাহুল্য, ভারতের বিভিন্ন শ্রেণির ধর্মসাধনার মধ্যে তন্ত্রের আচারনিষ্ঠা প্রশ্নাতীত এবং এই মত বুদ্ধিগ্রাহ্য আলোচনা অপেক্ষা অধিক প্রাধান্য দেয় কার্যকরী আচার-পদ্ধতিকেই। তন্ত্রের হাত ধরে মন্ত্র, মণ্ডল ও মুদ্রা এভাবেই ঢুকে পড়ল শীল ও সদাচার-নির্ভর বৌদ্ধধর্মে। যৌনযোগাচার-কেন্দ্রিক সাধনপদ্ধতিও বাদ গেল না। মন্ত্রনয় বা মন্ত্রযান পরিচিত হল বজ্রযান নামে। কালক্রমে বজ্রযানেও সাধনার তারতম্যে কিছু উপবিভাগ গড়ে উঠল: ক্রিয়াতন্ত্র, যোগতন্ত্র, চর্যাতন্ত্র, অনুত্তরতন্ত্র। বজ্রযানের পরবর্তী পরিণতি কালচক্রযান ও সহজযান। চর্যাপদের প্রাপ্ত পুথিতে উক্ত তিন যানের প্রভাব থাকলেও বেশি প্রাধান্য পেয়েছে সহজযানী বৌদ্ধ মত। তাই এই সহজযান মতটি আলোচনা করা প্রয়োজন।
মহাযানী মতের শূন্যের ধারণাটি পূর্বেই বজ্রে পরিণত হয়েছিল। এবার বজ্র পরিণত হল ‘সহজ’-এ। ''হেবজ্রতন্ত্র'' মতে, জন্মের সঙ্গেই যা উৎপন্ন হয় তাই ‘সহজ’ (“সহজাত্যং যদুৎপন্নং সহজং তৎ প্রকীর্তিতম্।”)। দেহ হল সেই সহ-জ উপাদান, যা জীব জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই প্রাপ্ত হয়। হিন্দু তন্ত্রেও দেহের প্রাধান্য স্বীকার করে বলা হয়েছে, “যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে, তা আছে দেহভাণ্ডে”। মহাযান মতে, শূন্যতা ও করুণার মিলনে যে বোধিচিত্তের উদ্ভব ঘটত, সহজযানে তা হল প্রজ্ঞা ও উপায়ের সংযুক্তিতে। প্রজ্ঞা ‘প্রকৃতি’ রূপে এবং উপায় ‘পুরুষ’ রূপে বিবেচিত হল এই মতে। তন্ত্র মতে, পরমার্থ সত্য দুই রূপে প্রতিভাত—নিবৃত্তিরূপ পুরুষ বা শিব এবং প্রবৃত্তিরূপ প্রকৃতি বা শক্তি। যখন শিব ও শক্তি অর্থাৎ পুরুষ ও প্রকৃতি অদ্বয়স্বরূপে মিলিত হয় তখন পরমার্থ সত্য লাভ করা যায়। এই মিথুন বা মিলিতাবস্থাই জীবের কাম্য। কারণ এই মিলন বিশ্বের সৃষ্টিপ্রবাহের কারণ। ''হঠযোগপ্রদীপিকা'' গ্রন্থে বলা হয়েছে, কায়াসাধনায় দেহস্থ বামগা নাড়ী ঈড়া ও দক্ষিণগা নাড়ী পিঙ্গলা যথাক্রমে শক্তি ও শিবের প্রতীক। এই দুই নাড়ীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত প্রাণ ও অপান বায়ুকে দেহমধ্যস্থিত নাড়ী সুষুম্নার পথে চালিত করে মস্তকে স্থিত সহস্রারে প্রেরণ করতে পারলেই অদ্বয় সিদ্ধি ঘটে। এই বিশুদ্ধ দার্শনিক বিষয়টির সঙ্গে পার্থিব নরনারীর যৌনমিলনকে এক করে ফেলা হয়েছে তন্ত্রের আর-একটি অপার্থ (malicious) ধারণায়। সেটি হল, প্রতিটি নারী ও পুরুষের মধ্যে শক্তি ও শিব বিদ্যমান থাকলেও শিব-প্রাধান্যে যে-কোনও পুরুষই শিব এবং শক্তি-প্রাধান্যে নারীমাত্রেই শক্তি। অতএব শিব-শক্তির মিলন বলতে প্রাকৃত নরনারীর যৌনসংযোগকেই বোঝায়। চর্যার সাধকেরা যে সাধনসঙ্গিনী নিয়ে সাধনায় অগ্রসর হতেন, তার পিছনে তন্ত্রের এই প্ররোচনা বিপুলভাবে কাজ করেছে।
সহজযানের পরম লক্ষ্য অদ্বয় মহাসুখের উপলব্ধি। মহাসুখের অপর নাম সহজ বা সহজানন্দ। নির্বাণ ও মহাসুখ এক্ষেত্রে প্রায় অভিন্ন। তাই সহজযানী সিদ্ধাচার্যেরা তাঁদের গানে বারবার মহাসুখের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। চর্যাকার লুইপাদ চিত্তকে দৃঢ় করে মহাসুখ পরিমাণ করতে নির্দেশ দেন। ভুসুকুপাদ বলেন, তিনি মিলনলীলার মধ্যেই সহজানন্দ মহাসুখকে উপলব্ধি করেছেন। কম্বলাম্বরপাদ জানান, বাম ও দক্ষিণকে চেপে সুষুম্নার সঙ্গে মিলিয়ে দিতেই মহাসুখ মিলন। এইভাবে কাহ্নপাদ, শবরীপাদ, দারিকপাদ প্রমুখ কবিদের রচনায় মহাসুখের স্বরূপ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তাতে বোঝা যায়, মহাসুখ বা সহজানন্দ একটি অচিন্ত্যনীয় মহাসুখকর অনুভব। এই সহজসুখ উৎপন্ন হয় যে স্থানে, সেই চরমকেন্দ্রটিকে কেউ জিনপুর, কেউ বা কামরূপ, আবার কেউ অনুত্তরধাম, পারিমকুল, কিংবা জোহ্নাবাড়ি ইত্যাদি নানা নামে অভিহিত করেছেন। মহাসুখের লক্ষ্যে পৌঁছাতে শাস্ত্রপাঠ, জপতপ, প্রব্রজ্যা বা সন্ন্যাসগ্রহণের মতো বাহ্যানুষ্ঠান ত্যাগ করার কথাও বলে হয়েছে। প্রজ্ঞা ও উপায়ের মিলিত রূপই যুগনদ্ধ বলে কথিত। এই অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে ও ক্ষণে ভিন্ন ভিন্ন আনন্দের উদ্ভব ঘটে। সহজ মহাসুখের অপর লক্ষণ হল শূন্যতা। সাধকের অবস্থানভেদেও শূন্যতার প্রকারভেদ আছে। কায়, বাক্ ও চিত্তের সমবায়ে জীবের সত্তাবোধ। যখন এগুলির অস্তিত্ব শূন্য হয়ে পড়ে তখনই বোধিচিত্তের সর্বশূন্যতার প্রতিষ্ঠা ঘটে। এই অবস্থাকে চর্যাকারেরা নানা ভাবে প্রতীকায়িত করেছেন। কখনও বলেছেন শূন্য প্রান্তর, কখনও বা প্রতিবেশীহীন পর্বতের টিলা। বর্ণচিহ্নরূপহীন চরম শূন্যস্বভাব এই মহাসুখ। এর সর্বরিক্ত রূপ ভুসুকুপাদের ৪৯ সংখ্যক চর্যাটিতে প্রতীকী উপস্থাপনায় উজ্জ্বল। নির্দয় বঙ্গাল দেশ লুণ্ঠন করে সেখানে। পঞ্চপাটন, ইন্দ্রের মতো বিষয়-আশয় সব বিনষ্ট হয়, সোনা-রুপো আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। চর্যার মহাসুখের ধারণাকে নানা মাত্রায় দেখা সম্ভব। কখনও তা মিলনজনিত একটি সহজ আনন্দঘন অবস্থা, আবার কখনও তা সর্বশূন্যের সার্থক পরিণাম। যেহেতু বিজ্ঞানবাদ থেকেই এর সূচনা, তাই এর মধ্যে নিরালম্ব বিশুদ্ধ বিজ্ঞানকেও পাওয়া যায়। এবং এই মহাসুখবৃক্ষের ফল হল মহাকরুণা। দেহের মধ্যে চারটি অবস্থান কল্পনা করে চক্র, ক্ষণ, আনন্দ, শূন্যতা ইত্যাদি ভেদে মহাসুখের ক্রমোৎকর্ষের বিভিন্ন অভিধা কল্পনা করা হয়েছে। নিচের ছকটিতে তারই আভাস দেওয়া হল:
{| class="wikitable"
|-
| মস্তক || মহাসুখচক্র || সহজানন্দ || বিলক্ষণ || সর্বশূন্য || নৈরাত্মা || চতুষ্কোটি বিনির্মুক্ত
|-
| হৃদয় || ধর্মচক্র || বিরমানন্দ || বিমর্দ || মহাশূন্য || চিত্ত || গ্রাহ্য ও গ্রাহক শূন্য
|-
| কণ্ঠ || সম্ভোগচক্র || পরমানন্দ || বিপাক || অতিশূন্য || বাক্ || গ্রাহক শূন্য
|-
| নাভি || নির্মাণচক্র || প্রথমানন্দ || বিচিত্র || শূন্য || কায় || গ্রাহ্যশূন্য
|}
সাধ্য এই মহাসুখকে সাধক কীভাবে লাভ করেন অর্থাৎ চতুষ্কোটি বিনির্মুক্ত সাধনার পথটি কী তাও আলোচনা করা হয়েছে। চর্যার হেঁয়ালিপূর্ণ রহস্যময় ভাষা ভেদ করে যেটুকু বোঝা গিয়েছে তা হল, এই ঈড়া ও পিঙ্গলা নাড়ী যখন মুক্ত অবস্থায় থাকে তখন যাবতীয় সুখদুঃখের অনুভূতি জীবের অস্তিত্বকে মথিত করে। আর যখন পরস্পর সংযুক্ত হয় এবং মধ্যনাড়ী সুষুম্নার পথে চালিত হয়, তখন বাহ্যেন্দ্রিয়ের দ্বার রুদ্ধ হয়ে অন্তর্লোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। সাংবৃতিক বোধিচিত্ত এইভাবে পারমার্থিক বোধিচিত্তে পরিণত হওয়ার অবস্থায় পৌঁছায়। সম্পূর্ণ মননপ্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল এই সাধনপথটি কবিরা রূপকের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন। এই রূপক কোথাও নৌকা বাওয়ার, কোথাও ইঁদুর মারার, কোথাও মত্ত হাতির পদ্মবন বিনষ্ট করার, আবার কোথাও তুলো ধোনা কিংবা মদ চোলাইয়ের। পুদ্গলচিত্তকে নিঃস্বভাবীকৃত করতে পারলেই জিনপুরে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। ডোম্বীপাদ তাঁর একটি পদে এই নাড়ীদ্বয় ও মধ্যপথে তাদের প্রবেশ করানোর বিষয়টি প্রতীকী আভাসে ব্যঞ্জিত করে তুলেছেন:
<poem>
:: গঙ্গা জউনা মাঝেঁ রে বহই নাঈ।
:: তঁহি বুড়িলী মাতঙ্গী পোইআ লীলেঁ পার করেই।।...
:: চন্দ সূজ্জ দুই চকা সিঠি সংহার পুলিন্দা।
:: বাম দাহিন দুই মাগ ন রেবই বাহতু ছন্দা।।
</poem>
এমন বহু পদেই কায়াসাধনার তত্ত্বটি সুন্দরভাবে প্রকাশিত। কাহ্নপাদের একটি পদে কাপালিক যোগীর সাধনায় দেহপ্রাধান্য সরাসরি উচ্চারিত: “দেহ নঅরী বিহরই একাকারেঁ”। চর্যাগীতিগুলিতে গুরুবাদের প্রসঙ্গও এসেছে। গুহ্য সাধনপ্রক্রিয়া মাত্রেই গুরুগম্য জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। বিশেষত তান্ত্রিক আচারে অনভিজ্ঞ বালযোগীকে দেহকেন্দ্রিক কৃত্যাদিতে সাহায্য করেন গুরু। তাই চর্যাকারেরা বলেছেন: “বাহতু কামলি সদ্গুরু পুচ্ছি”, কিংবা “সদ্গুরু বোহেঁ জিতেল ভববল”, অথবা “সদ্গুরু পাঅপএঁ জাইব পুনু জিনউরা” ইত্যাদি। কোথাও আবার গুরুর অপ্রয়োজনীতা ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে “গুরু বোব সিসা কাল”। আসলে বিশুদ্ধ তত্ত্বকথায় গুরুর ভূমিকা ন্যূনতম, কিন্তু তান্ত্রিক গুহ্যাচার পালনে গুরুই পথনির্দেশক। চর্যায় সাধকের নানা অবস্থার বর্ণনা আছে। যখন তিনি বিষয়বদ্ধ তখন একরকম, সাধনার প্রাথমিক স্তরে অন্যরকম, ক্রমশ প্রবৃত্তিনাশে তাঁর স্বভাব পরিবর্তিত, মস্তক বা উষ্ণীষকমলে যখন তাঁর চিত্তের অবস্থান তখন সে অনুভূতি ভিন্ন ধরনের, আবার সহজানন্দ লাভের পর সিদ্ধ সাধকের অভিব্যক্তি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। প্রতিটি স্তরে সাধক এক-একজন শক্তি বা সাধনসঙ্গিনীর অস্তিত্ব অনুভব করেন। এঁরাই সংকলিত পদগুলিতে শবরী, ডোম্বী, চণ্ডালী, যোগিনী, নৈরামণি ইত্যাদি নামে খ্যাত। সম্ভোগচক্রের নৈরামণি মহাসুখচক্রে উন্নীত হয়ে সহজসুন্দরীতে পরিণত হন। এইভাবে প্রেমের রূপকে সাধনকথা পরিবেশিত হয়েছে এখানে। বস্তুত এই পথ ধরেই সহজিয়া বৌদ্ধধর্মের অবশ্যম্ভাবী পতনের বীজও অঙ্কুরিত হয়েছিল। মূলত ব্যভিচারের কারণে বৃহত্তর সমাজ সেই আমলে এদের বর্জন করতে চেয়েছিল। তুর্কি আক্রমণের পর মুণ্ডিতমস্তক বৌদ্ধ সহজিয়ারা ‘নেড়া-নেড়ী’ নামে অভিহিত হয়ে সমাজবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিনযাপন করতে থাকেন। পরবর্তীকালে নিত্যানন্দের পুত্র বীরভদ্র এঁদের বৈষ্ণবধর্মের দীক্ষিত করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। বীরভদ্রের বৈষ্ণব সাধনায় কিছুটা সহজিয়া প্রভাব পড়েছিল বলে গবেষকদের ধারণা।
==ভাষা==
চর্যাপদের ভাষাপ্রসঙ্গটি বিতর্কিত। বিশেষত চর্যাপদ কোন ভাষায় রচিত তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সম্পাদিত গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পরই। উক্ত বইটি ছিল চারটি পুথির সংকলন: মুনিদত্তের সংস্কৃত টীকা সহ চর্যাপদের পুথি, সরহপাদ ও কাহ্নপাদের ''দোহাকোষ'' পুথিদ্বয় এবং ''ডাকার্ণব''। শাস্ত্রী মহাশয় চারটি পুথিই হাজার বছরের পুরোনো বাংলা ভাষার লেখা বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এই মত সবাই মেনে নেননি। বিতর্কের সূচনা সেই থেকেই। আসলে চর্যাপদ যে সময়ে রচিত হয়েছে, ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্বের বিচারে সেই সময়টি নব্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলির উদ্ভবকাল। সবে তখন অপভ্রংশের গর্ভ থেকে বাংলা, ওড়িয়া, অসমিয়া, মগহি, অওধি, ভোজপুরি প্রভৃতি ভাষা ভূমিষ্ঠ হতে শুরু করেছে। একই জঠরে বেড়ে ওঠার ফলে এগুলির মধ্যে ধ্বনিতাত্ত্বিক, রূপতাত্ত্বিক ও শব্দভাণ্ডারগত পার্থক্য খুবই কম। গবেষকদের বিভ্রান্তির কারণ সেটাই। ভাষা সাবালক হলে তার এমন কিছু নিজস্ব চিহ্ন প্রকাশিত হয়, যেগুলি ভাষার প্রভেদকারী বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু বাংলা ভাষায় তা ঘটার আগেই চর্যাপদ রচিত হয়েছে, ফলে সংশয়ের জাল সহজেই বিস্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ১৯২০ সালে ভাষাতাত্ত্বিক বিজয়চন্দ্র মজুমদার ''বঙ্গবাণী'' মাসিক পত্রিকায় কয়েকটি প্রবন্ধে এবং ''হিস্ট্রি অফ বেঙ্গল ল্যাংগুয়েজ'' গ্রন্থে বলেন যে, চর্যাগীতিগুলি পুরনো বাংলা ভাষায় রচিত হয়নি, এতে দু-চারটি বাংলা, ওড়িয়া ও অসমিয়া পদ থাকলেও মূল ভাষাছাঁদ হিন্দির। ১৯২১ সালে জার্মান ভাষাতত্ত্ববিদ হারমান জেকবি তাঁর সম্পাদিত ''সনৎকুমারচিতম্'' গ্রন্থের ভূমিকায় চর্যাপদের ভাষাকে “All Bengalishch” বা প্রত্ন-বাংলা বলে নির্দেশ করেন, কিন্তু কোনও খাঁটি যুক্তি তিনি দিতে পারেননি। ১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর বিখ্যাত ''দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ'' গবেষণাগ্রন্থে চর্যাগীতির ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ, ছন্দ, বাগ্বিধি ইত্যাদি বিচার করে প্রথম একটি সুনিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। তিনি স্পষ্ট জানালেন যে, ''দোহাকোষ'' দুটির ও ''ডাকার্ণব'' পুথির ভাষা শৌরসেনী অপভ্রংশ, কিন্তু চর্যাগানের ভাষা আদিতম বাংলা। অবশ্য এই বাংলায় কিছু পশ্চিমা অপভ্রংশ এবং দু-চারটি ওড়িয়া-মৈথিলী শব্দ মিশে আছে। তাঁর তীক্ষ্ণ, শক্তিশালী ও বাস্তবসিদ্ধ যুক্তিগুলি মেনে নিতে কোনও অসুবিধাই হল না। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহও তাঁর ''Les Chants Mystique de Saraha et de Kanha'' গবেষণাগ্রন্থে সুনীতিকুমারের মতটি মেনে নেন।
অন্যান্য ভাষার গবেষকেরাও অবশ্য চর্যাপদ তাঁদের ভাষায় রচিত বলে দাবি করেছিলেন। রাহুল সাংকৃত্যায়ন, জয়কান্ত মিশ্র ও কাশীপ্রসাদ জয়সওয়াল বলেন, চর্যাপদের ভাষা বিহারি এবং সিদ্ধাচার্যদের অধিকাংশই মগধ অঞ্চলের বাসিন্দা। ১৯৩৫ সালে বরোদায় অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া ওরিয়েন্টাল কনফারেন্সের সপ্তম অধিবেশনে উক্ত তিন হিন্দিভাষী পণ্ডিত চর্যাপদের উপর বাংলা ভাষার দাবিকে অস্বীকার করেন। চর্যায় ‘জো’, ‘সো’, ‘তো’, ‘মই’ প্রভৃতি সর্বনাম, ‘অইসন’, ‘জইসন’, ‘ঐছে’, ‘তৈছে’, ‘জিস’, ‘তিস’, ‘জসু’, ‘তসু’ প্রভৃতি সর্বনামীয় ক্রিয়াবিশেষণ, ‘রাতি পোহাইলী’-র ন্যায় ক্রিয়াপদের স্ত্রীলিঙ্গীকরণে হিন্দি ও মৈথিলীর বিশেষত্ব আছে ঠিকই, কিন্তু এর পাশাপাশি এটাও দেখার যে এই দুই ভাষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ‘-ক’, ‘-কো’ বিভক্তি যোগে ষষ্ঠীর পদগঠন এবং ‘-অল’, ‘-অব’ বিভক্তি যোগে যথাক্রমে অতীত ও ভবিষ্যৎকালের ক্রিয়াপদ গঠনের দৃষ্টান্ত চর্যাপদে নেই। ভাষাগত সাদৃশ্যের কারণে ওড়িয়া ও অসমিয়া ভাষার দাবিও চর্যাপদের উপর আছে। যেমন, ওড়িয়াতে সংস্কৃত প্রভাবজাত বর্তমান কালবাচক ক্রিয়াপদে ‘-অন্তি’ বিভক্তির ব্যবহার চর্যায় দেখা যায়: “নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী” কিংবা “ভনন্তি মহিণ্ডা”। কিন্তু এটাও লক্ষণীয় যে, ‘-রু’ দিয়ে অপাদানের পদগঠন, সর্বত্র ‘-র’ বিভক্তি দ্বারা ষষ্ঠীর পদগঠন, ‘-মানে’ পরসর্গ যোগে বহুবচনের পদনির্মাণ, যা ওড়িয়া ভাষার বিশিষ্ট লক্ষণ, তার একটি দৃষ্টান্তও চর্যাগানে পাওয়া যায় না। অসমিয়া ভাষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দু-একটি ক্ষেত্রে অসমিয়া ভাষার ব্যাকরণগত বৈশিষ্ট্য দেখা গেলেও কয়েকটি বিশিষ্ট ও প্রধান ক্ষেত্রে চর্যাগীতির বাক্যগঠন রীতি অসমিয়া ভাষার তুলনায় পৃথক। চর্যার ভাষায় শৌরসেনী অপভ্রংশের লক্ষণ ও শব্দের ব্যবহারও স্বাভাবিক। কারণ, মাগধী প্রাকৃত থেকে জাত মাগধী অপভ্রংশ প্রাত্যহিক ব্যবহারে প্রচলিত থাকলেও শিষ্ট সাহিত্যের ভাষা হিসেবে অষ্টম-নবম শতকে ব্যবহৃত হত শৌরসেনী অপভ্রংশ। চর্যাকারেরা যে যুগের মানুষ ছিলেন সেই যুগের বাংলার ভৌগোলিক সীমা আজকের তুলনায় অনেক বেশি প্রসারিত ছিল। সেযুগের বাংলা-বিহারের বৌদ্ধ সংঘগুলিতে ভারতের নানা প্রান্তের মানুষ একত্র হতেন শিক্ষা ও ধর্মলাভের উদ্দেশ্যে। ভাষা হিসেবে শৌরসেনী অপভ্রংশের গ্রহণযোগ্যতা সেযুগে ছিল প্রশ্নাতীত। কিন্তু চর্যাপদে বাংলা ভাষার লক্ষণ, যা ত্রিস্তরীয় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেও আধুনিক যুগেও সমানভাবে উপস্থিত, তা এমনভাবে সেঁটে রয়েছে যে তার পরিমাণগত প্রাচুর্যে একে অবশ্যই প্রাচীন বাংলা ভাষা বলে চিহ্নিত করা যায়। বিশিষ্ট গবেষকদের আলোচনার সারাৎসারটুকু উপস্থিত করে বাংলার এই বিশিষ্ট লক্ষণগুলিকে বুঝে নেওয়া যেতে পারে:
; (ক) ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:
# সংস্কৃত বর্ণমালা থেকে ঈ, ঊ, ঋ, ৯ প্রভৃতি বর্ণ বাংলা বর্ণমালায় এলেও বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনির উচ্চারণে হ্রস্ব-দীর্ঘ পার্থক্য রক্ষিত হয় না। চর্যার বানানেও এই বিশেষ লক্ষণটি দেখা যায়। যেমন, চিএ, চিঅ; হোহী, হোহি; লুই, লূই; বোহী, বোহি ইত্যাদি।
# স্বরবর্ণের মতো ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ষেত্রেও দেখা যায় স্বতন্ত্র ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন থাকলেও বাংলায় সেগুলির উচ্চারণে বিশেষ পার্থক্য নেই। জ-য, ণ-ন, শ-ষ-স ইত্যাদি ক্ষেত্রে উচ্চারণে কোনও পার্থক্য দেখা যায় না। চর্যাতেও স্বভাবতই এইসব বর্ণের লিপি-বিপর্যয় লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেমন, জোইনি, যোইনী; যাই, জাই; নাবী, ণাবী; শবর, সবর; শূন, সূণ; ষিআলা, শিয়ালী ইত্যাদি।
# অর্থপার্থক্য সৃষ্টি কিংবা বিশেষ কোনও আবেগ প্রকাশের জন্য বাংলায় ব্যঞ্জনধ্বনির দ্বিত্ব উচ্চারণ করা হয়। চর্যার ভাষায় তার ছাপ সুস্পষ্ট। যেমন, ফাড্ডিঅ, নিঅড্ডী, চ্ছাড়ী ইত্যাদি।
; (খ) রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:
# বাংলা ভাষার সমস্ত কারকে ‘-এ’ বিভক্তির প্রয়োগ লক্ষিত হয়। চর্যার ভাষাতেও ‘-এ’ বা ‘-এঁ’ বিভক্তির এইরকম প্রয়োগ দেখা যায়। যেমন, কর্তৃকারকে—কুম্ভীরে খাঅ; কর্মকারকে—গঅবরেঁ তোলিআ; করণকারকে—কুঠারে ছিজঅ; সম্প্রদান কারকে—ধামার্থে চাটিল; অপাদান কারকে—জামে কাম কি কামে জাম; অধিকরণ কারকে—ঘরে সান্ধঅ।
# আধুনিক বাংলায় যেমন কর্ম-কর্তৃ বাচ্য গঠন করা হয়ে থাকে, চর্যাতেও অবিকল তারই প্রতিরূপ দেখা যায়। যেমন, নানা তরুবর মৌলিল রে, ডমরু বাজএ বীরনাদে।
# বাংলা ভাষার বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ চর্যাতেও বিভিন্ন কারকে দেখা যায়। যেমন, তৃতীয়াতে ‘-তেঁ’ বিভক্তি (সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরিঅই); চতুর্থীতে ‘-রেঁ’ বিভক্তি (সো করউ রস রসানেরে কংখা); ষষ্ঠীতে ‘-র’/‘এর’ বিভক্তি (সাঙ্কমত চড়িলে; দুধিল দুধ কি বেণ্টে ধামায়) ইত্যাদি।
# বাংলার নিজস্ব কিছু অনুসর্গ (মাঝে, অন্তরে, সঙ্গে ইত্যাদি) আছে। চর্যায় এগুলির প্রয়োগও অপ্রতুল নয়। যেমন, কোড়ি মাঝেঁ একু; তোহার অন্তরে; দুজ্জন সাঙ্গে অবসরি জাই ইত্যাদি।
# স্বাধীন অব্যয় রূপে উপসর্গের প্রয়োগেও বাংলার বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। উপসর্গগুলি অব্যয় হিসেবে বিশেষ্যের পূর্বে বসে বিচিত্র অর্থপ্রকাশে সাহায্য করে। চর্যাপদেও এই লক্ষণ দৃশ্যমান। যেমন, <u>নি</u>সারা, <u>বি</u>আলী, <u>স</u>চ্চড়ে, <u>বি</u>মনা ইত্যাদি।
# আধুনিক বাংলায় ‘সে’ শব্দটি মুখ্যত সর্বনাম হিসেবে, আবার কখনও বা বাক্যালংকার অব্যয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্য ভাষায় শব্দটি বসে বিশেষণ ও সর্বনাম হিসেবেই। বাক্যকে অলংকৃত করার উদ্দেশ্যে বাংলা ছাড়া আর কোথাও ‘সে’ বসে না। চর্যায় ‘সে’ ও একই অর্থে ‘সো’-এর ব্যবহার দেখা যায় যত্রতত্র। যেমন, এক সে শুণ্ডিনী, এক সো পদুমা, গুরু বোস সে সীসা কাল ইত্যাদি।
; (গ) ক্রিয়াপদের বৈশিষ্ট্য
# বিভিন্ন ক্রিয়ার কাল গঠনে ধাতুরূপে বিশিষ্ট বিভক্তির প্রয়োগ করা হয় বাংলায়। পুরুষ ও বচন ভেদেও তা পৃথক। ভবিষৎকালে ‘-ইব’ বিভক্তি প্রযুক্ত হয় উত্তম পুরুষে, অতীতকালে প্রথম পুরুষে বসে ‘-ইল’ বিভক্তি এবং অসমাপিকায় ‘-ইয়া’ বা ‘-ইলে’ ইত্যাদি প্রযুক্ত হয়। এইসব লক্ষণ চর্যার ভাষাতেও পাওয়া যায়। যেমন, জই তুম্হে লোঅ হে হেইব পারগামী; কাহ্নু কহি গই করিব নিবাস; কানেট চৌরি নিল অধরাতি; সসুরা নিদ গেল; মাঅ মারিআ কাহ্ন ভইঅ কবালী; সাঙ্কমত চড়িলে ইত্যাদি।
# বাংলা ক্রিয়াপদের অপর বিশেষত্ব হল যৌগিক বা সংযোগমূলক ক্রিয়াপদ গঠন। দুভাবে এই পদ গঠিত হয়। অসমাপিকার সঙ্গে সমাপিকার সংযোগে অথবা বিশেষ্য বা বিশেষণ পদের সঙ্গে সমাপিকার সংযোগে। কেউ কেউ এই জাতীয় ক্রিয়াপদকে বাংলা ভাষার দুর্বলতা বলেও নির্দেশ করেছেন। চর্যাপদেও আছে—গুণিআ লেহুঁ; টুটি গেল, ধরণ ন জাই; নিদ গেল; কহন ন জাই; ভান্তি ন বাসসি; ছই ছোই যাই ইত্যাদি।
# বাংলা ভাষায় বিশিষ্ট ভঙ্গির জন্ম হয়েছে বাক্যে ক্রিয়াপদের বাহ্যিক অনুপস্থিতি থেকে। এই লক্ষণ বাংলা গদ্যের সূচনাতেই লক্ষ্য করা যায়। চর্যাপদের ভাষাতেও এর দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন, কায়া তরুবর পঞ্চ বি ডাল; ছড়গই সঅল সহাবে সুধ; গন্ধ পরস রস জইসো তইসো।
# বাংলার বিভিন্ন বাগ্বিধির ব্যবহারেও চর্যাপদের ভাষা সহজে অলংকৃত। এইসব বিশিষ্টার্থক বাক্যরীতি পরে কালবাহিত হয়ে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে স্থান পেয়েছে। যেমন, আপনা মাংসে হরিণা বৈরী, হাথেরে কাঙ্কন মা লেউ দাপন, ভান্তি ন বাসসি জাংতে, তু লো ডোম্বী হাঁউ কপালী, বর-সুণ গোহালী কিমো দুঠ বলন্দেঁ ইত্যাদি।
এইসব বাস্তব প্রমাণের ভিত্তিতে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, “The language of the charyas is the genuine vernacular of Bengal at its basis.” চর্যাপদের উপর অন্যান্য ভাষার দাবি নিরপেক্ষভাবে বিচার করে এটুকুই বলা যায় যে, চর্যাগীতিতে বিক্ষিপ্তভাবে ওড়িয়া, অসমিয়া, হিন্দি ও মৈথিলী শব্দ ছড়িয়ে থাকলেও এর মূল প্রকাশ্য ছাঁদটিই ছিল মাগধী অপভ্রংশের গুটি কেটে বেরিয়ে আসা সদ্যোজাত বাংলা ভাষার। তখনও তার পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠিত না হলেও তার নিজস্বতার অস্ফুট চিহ্নগুলি চর্যাপদের শারীরিক গড়নে ঠিকই ধরা পড়ে।
===সন্ধ্যাভাষা===
চর্যাপদের ভাষার আরও একটি দিক রয়েছে। ভাষা ভাবপ্রকাশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলেও সব ভাষা একইভাবে সংযোগ স্থাপন করে না। যে ভাষা ইঙ্গিতপ্রধান তার চালচলন আলাদা, আবার যে ভাষা ধ্বনিনির্ভর ও বাচ্যার্থপ্রধান তার আবেদন ভিন্ন প্রকার। ভাষাতাত্ত্বিকেরা ভাষার দেহময় রূপের কথাও বলেছেন, আবার প্রায়-ভাষার (para-language) কথাও বলেছেন। চর্যাপদের ভাষা-সংক্রান্ত আলোচনায় এইসব ভাবনা এই কারণেই প্রাসঙ্গিক যে, এখানে কোনও বক্তব্য স্পষ্টভাবে উপস্থিত করার পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত জটিল পথ অবলম্বন করা হয়েছে। ফলে চর্যাকার ও পাঠকের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে একটি প্রাচীর। এটা বোধহয় চর্যাকারদের অভিপ্রায়সিদ্ধ ধরন। কারণ, তাঁরাও কোনও কারণে চাইতেন এইসব গানে পরিবেশিত তত্ত্ব ও তথ্য অল্পসংখ্যক লোকের কাছেই পৌঁছাক। ঢেণ্ঢণপাদ যেমন বলেন, “ঢেণ্ডনপাএর গীত বিরলে বুঝঅ”। কুক্কুরীপাদও তাঁর চর্যার ভণিতার শেষ চরণে স্বীকার করেছেন যে, কোটির মধ্যে গুটিকতক লোকই তাঁর বক্তব্য বুঝবেন: “কোড়ি মাঝেঁ একু হিঅহিঁ সমাইউ”। এইভাবে মুষ্টিমেয় পাঠক নির্বাচনের কারণ অনুসন্ধান করতে হলে চর্যাপদের নিগূঢ় তত্ত্ব ও রহস্যময় আচারের দিকে দৃষ্টি দিতে হয়। তন্ত্রও এমনই ‘শাম্ভবী বিদ্যা’, যা ‘গোপ্যা কুলবধূরিব’। সহজযানীরা তন্ত্রের কায়াসাধনাকে প্রাধান্য দেওয়ায় সকলের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন তাঁদের সাধনতত্ত্বটিকে। কেবল দীক্ষিত ব্যক্তিদের কাছেই তাঁরা পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন সেই সাধনার প্রণালী ও অধ্যাত্মচেতনার প্রকৃত রহস্যকে। তাই তাঁরা এমন একপ্রকার সাংকেতিক ভাষা অবলম্বন করেছিলেন, যে ভাষার সংকেত শুধু সংশ্লিষ্ট ধর্মের সাধকেরাই বুঝবেন, অন্যরা নয়। এই সংকেতপূর্ণ ভাষার তাঁর অন্য নামও দিয়েছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে এই ভাষার নাম ‘সন্ধ্যাভাষা’। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের ভূমিকায় সন্ধ্যাভাষার উল্লেখ করে এই ভাষার প্রকৃতি সম্পর্কে লিখেছিলেন, “আলো-আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না।” ফারসি গবেষক ইউজিন বুর্নফ ''সদ্ধর্ম্পুণ্ডরীকসূত্র'' গ্রন্থের অনুবাদের ভূমিকায় সন্ধ্যাভাষাকে বলেছেন “Language Enigmatique” বা প্রহেলিকাময় ভাষা। আসলে রহস্যময় হেঁয়ালির ভাষাতে তত্ত্বপ্রকাশের রীতি খুবই প্রাচীন। বেদ-উপনিষদেও স্থানে স্থানে হেঁয়ালি ব্যবহার করা হয়েছে। গোপনীয়তার কারণে এবং গুহ্য তত্ত্ব বহন করার জন্য এই ভাষাকে এইচ. কার্ন মন্ত্রের সগোত্র বলে মনে করেছেন। অবশ্য প্রকৃতি অনুসারে সন্ধ্যাভাষাকে ঠিক মন্ত্র বলা চলে না। কারণ অলৌকিক শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা এই ভাষার আছে, এমন দাবি কোথাও করা হয়নি।
চর্যার আভিপ্রায়িক সাংকেতিক বচনের নাম সন্ধ্যাভাষা। এর উল্লেখ প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে পাওয়া যায়। শব্দটির বানান, ব্যুৎপত্তি ও অর্থ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতভেদ আছে। মহাযানী ধর্মগ্রন্থে ও সেগুলির ভাষ্যে সর্বত্র ‘সন্ধ্যা’ বানানই দেখা যায়। কিন্তু বিধুশেখর শাস্ত্রী এই বানানকে লিপিকরের প্রমাদ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, যথার্থ বানানটি হল ‘সন্ধা’। ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, চর্যাপদের ভাষার মধ্যে একটি প্রচ্ছন্ন অর্থ রয়ে গিয়েছে। সেই লুক্কায়িত তাৎপর্যই আভিপ্রায়িক বচন (Intentional language)। এটি শব্দের বাচ্যার্থ থেকে পৃথক। তাঁর কথায়, “Abhiprayika means that it is intended to imply or suggest something different from what is expressed by the words.” অর্থাৎ এই ভাষাতে রয়েছে কোনও নিগূঢ় ব্যঞ্জনা বা ভিন্ন অর্থের অভিসন্ধি। যে শব্দের মূল ব্যুৎপত্তি ছিল ‘সম্-✓ধৈ+আ’, সেটি বিধুশেখরের ভাষ্যে পরিবর্তিত হয়ে হল ‘সম্-[]✓ধা+ঙ’। এই মত সমর্থন করেন ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচীও। এঁদের দুজনেরই মতে, সন্ধ্যাভাষা অবশ্যই সাংকেতিক ভাষা, যা শব্দগুলির নিজস্ব আভিধানিক অর্থ পরিহার করে ভিন্নতর অর্থের ব্যঞ্জনা এনে দেয় এবং সেই অর্থ কোটির মধ্যে গুটিকতকের হৃদয়েই প্রবেশ করে। চর্যায় গুরুর ভূমিকা এখানেই। তিনি সেই শ্লিষ্ট অর্থটি শিষ্যের কাছে পরিস্ফুট করে তোলেন।
বিধুশেখর শাস্ত্রী ও ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচীর বক্তব্য কিছুটা সঠিক হলেও সমস্যা অন্যত্র। তাঁরা বলেছেন, লিপিকরের প্রমাদে ‘সন্ধা’ শব্দটি ‘সন্ধ্যা’ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রাচীন পুথিগুলি লক্ষ্য করলে প্রায় সর্বত্রই ‘সন্ধ্যা’ বানানই পাওয়া যায়। একটি বিশেষ বানানে সমস্ত লিপিকর প্রমাদগ্রস্থ হবেন, এটা নিতান্তই কষ্ট-কল্পনা। তাছাড়া মুনিদত্ত তাঁর টীকায় বারবার 'সন্ধ্যাবচন’-এর কথা বলেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রাকৃতিক সন্ধ্যার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে অর্থের ক্ষেত্রে যে আলো-আঁধারি প্রেক্ষাপটের কথা বলেছেন, তার গুরুত্ব এখানেই। শ্লিষ্ট শব্দে একটি জানা অর্থ বা বাচ্যার্থ সংযুক্ত থাকে, অন্যটি হয় লক্ষণার্থ বা ব্যঞ্জনার্থ। হয়তো সিদ্ধাচার্যগণ তাঁদের ব্যবহৃত ভাষার এই দ্বিবিধ স্বভাব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং সেই তাৎপর্যে ‘সন্ধ্যা’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেউ কেউ ‘সম্-✓ধা+আ’ থেকে নিষ্পন্ন শব্দটির “সম্যক ধ্যায়তে অস্যাম্ ধ্যায়তে ইতি সন্ধ্যা” সংজ্ঞা নির্দেশ করেছেন। অর্থাৎ, যে অর্থ অনুধ্যান করে বুঝতে হয়, তাই-ই সন্ধ্যা। এটিও সত্য হতে পারে। তবে সাহিত্যিক পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে অর্ধকল্পিত এক সন্ধি অঞ্চলের (আর্যাবর্ত ও পূর্ব ভারতের সন্ধিস্থল বীরভূম-সাঁওতাল পরগনার পশ্চিমাঞ্চল) ভাষা বলে সন্ধ্যাভাষাকে নির্দেশ করেছেন, তার পিছনে কোনও বলিষ্ঠ যুক্তি নেই।
চর্যাগানে সন্ধ্যাভাষার প্রয়োগকৌশল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সব গানেই যে আগাগোড়া এই হেঁয়ালিপূর্ণ আভিপ্রায়িক বচন ব্যবহার করা হয়েছে তা নয়। কয়েকটি গান আদ্যোপান্ত সন্ধ্যা শব্দে রচিত। যেমন, ২ ও ৩৩ সংখ্যক চর্যা। আবার কয়েকটি গানের অংশবিশেষ সন্ধ্যাভাষিত, কোনও বিচ্ছিন্ন শব্দ হয়তো সন্ধ্যা অর্থে প্রযুক্ত। আবার এমন গানও দুর্লভ নয়, যেখানে সন্ধ্যাশব্দের ব্যবহার একেবারেই নেই। যেমন, ৪০ ও ৪২ সংখ্যক চর্যা। নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, যে সমস্ত গানে দার্শনিকতার বাহুল্য, সেখানে সন্ধ্যাভাষা তেমন প্রযুক্ত হয়নি। কিন্তু তান্ত্রিক কৃত্যের নির্দেশ সমৃদ্ধ পদগুলিতে সন্ধ্যাবচনের বাহুল্য লক্ষিত হয়। হয়তো আপাতদৃষ্টিতে আপত্তিকর বা কুরুচিপূর্ণ কয়েকটি বিষয় গোপন করার জন্যই সন্ধ্যাভাষার আড়াল খুঁজেছিলেন চর্যাকারেরা। মুনিদত্তের টীকা রচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই লুকানো অর্থটিকে পরিস্ফুট করা। তাই তিনি বারবার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ‘সন্ধ্যাভাষয়া’, সন্ধ্যাবচনেন’, ‘সন্ধ্যাসংকেতম্’, ‘সন্ধ্যাজ্ঞানেন’, ‘সন্ধ্যয়া’ ইত্যাদি বাক্যাংশ ব্যবহার করেছেন। মধ্যযুগের সন্তসাধকদের গানেও ভাষার এই হেঁয়ালিপূর্ণ ভাব লক্ষ্য করা যায়। আসলে সিদ্ধাচার্য কিংবা সন্তসাধক সকলেই ছিলেন বাক্পথাতীত এক অ-কথনবেদ্য ভাবানুভূতির শরিক। তাঁর কথা বলেছেন রূপক-প্রতীকের ঘেরাটোপে। মরমিয়া সাধক মাত্রেরই স্বভাবধর্ম এই। এঁদের সম্পর্কে সেন্ট মার্টিন যথার্থ বলেছেন, “All mystics speak the same language for they come from the same country.” সন্ধ্যাভাষা এই বিশেষ ‘দেশ’-এরই ভাষা। স্বসংবেদ্য, অচিন্ত্য তত্ত্বের রূপময়তা ফুটিয়ে তোলার জন্য রূপক-প্রতীকের আয়োজন, তেমনই মহাসুখের স্বরূপ, মহাসুখ লাভের পথ, লাভের পর যোগীর মানসিক অবস্থা, পারমার্থিক ও সাংবৃতিক বোধিচিত্তের প্রকৃতি ইত্যাদি বর্ণনা করতে গিয়ে প্রায় প্রতি পদে সন্ধ্যাভাষার আশ্রয় নিয়েছেন চর্যাকারেরা। অধ্যাপক জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী তাঁর ''চর্যাগীতির ভূমিকা'' গ্রন্থে চর্যায় ব্যবহৃত শব্দগুলির উৎসগত শ্রেণিবিন্যাস করে একটি সামগ্রিক পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাতে দেখা যায়, জিনপুর, মাঙ্গ, নিবান, দশবল, তিশরণ, তথাগত ইত্যাদি শব্দগুলি প্রাচীন বৌদ্ধশাস্ত্র থেকে সংগৃহীত। আবার চন্দ্রসূর্য, দশমী দুয়ার, অণহা, বিণানা, তথতা, গগণ, কমলকুলিশ, ধমনচমন, কামরু, জোইনি, আলিকালি ইত্যাদি শব্দ গৃহীত হয়েছে হিন্দু যোগতন্ত্র এবং বৌদ্ধ মহাযানের অন্তর্গত মধ্যমক দর্শন, যোগাচার, বজ্রযান ইত্যাদি থেকে। এছাড়া চর্যাগানের ব্যবহৃত শুণ্ডিনী, বিআলী, সাঙ্কম, কোঞ্জাতালা, রূপা, খুণ্টি, কাচ্ছি, কেড়ুয়াল, তান্তি, ঠাকুর, কণ্ঠ কমলিনী, সবরসবরী, বঙ্গাল, গুঞ্জামালী ইত্যাদি কিছু পরিচিত শব্দ নেওয়া হয়েছে পরিচিত গৃহস্থালি ও লোকজীবনের প্রেক্ষাপট থেকে। বলা বাহুল্য, এইসব শব্দপ্রয়োগের ফলে চর্যাপদ সকল শ্রেণির পাঠকের কাছে বোধগম্য হয়ে ওঠেনি। তবে তাতে একদিকে যেমন নিজেদের আচরিত কায়াসাধনার গুহ্য রহস্যকে অতি সহজে ঢাকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে, তেমনই অন্যদিকে প্রাচীন বাঙালির কাব্যসৃষ্টির অভূতপূর্ব ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। মুনিদত্তের টীকাটি পাওয়া না গেলে গানগুলির অর্থোদ্ধারের জন্য পরবর্তীকালের গবেষকদের যে অন্ধকারে হাতড়ে ফিরতে হত, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
==সাহিত্যমূল্য==
সাহিত্যের অঙ্কুরোদ্গম ধর্মের আশ্রয়ের ঘটলেও উভয়ের উদ্দেশ্য পৃথক। অনির্বচনীয় অনুভূতির ক্রিয়া হয়তো উভয়ের মূলেই উপস্থিত; তবু ধর্মের লক্ষ্য পরমার্থ তত্ত্ব, যার আশ্রয় পরলোক এবং সাহিত্যের উদ্দেশ্য জীবনরসের আস্বাদন, যার লীলাভূমি ইহলোক। ধর্মের প্রবক্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জীবনবিবিক্তার কথা বলেছেন, যেখানে মুক্তি বৈরাগ্যসাধনে। কিন্তু সাহিত্যিক বলেছেন জীবনের প্রতি আসক্তির কথা, জীবন-সংগ্রাম ও জয়-পরাজয়ের মধ্যে দিয়েছেন জীবন-মাধুর্যের সন্ধান। আনন্দই সাহিত্যের পরম লক্ষ্য। যে-কোনও রস সেই আনন্দেরই বাহক মাত্র।
সিদ্ধাচার্যদের লেখা চর্যাগীতিগুলি বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন। কিন্তু একই সঙ্গে সেগুলি বাংলা সাহিত্যেরও আদিতম নিদর্শন কিনা এবং এগুলির সত্যই কোনও কাব্যমূল্য আছে কিনা, সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ, বৌদ্ধ সাধকেরা তাঁদের ধর্মতত্ত্বকে গানের ভাষায় রূপ দিতে চেয়েছেন, তা নিয়ে আলাদা করে রসসাহিত্য নির্মাণের কথা কখনও ভাবেননি। অথচ দেখা যায়, তাঁদের অজ্ঞাতসারেই চর্যাগীতিতে সঞ্চারিত হয়েছে সাহিত্যধর্ম। কাব্যের কাব্যত্ব নির্ভর করে যে দুই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের উপর, সেই সৌন্দর্যব্যঞ্জনা ও রসদৃষ্টি সিদ্ধাচার্যদের অধ্যাত্ম-অনুভূতির সমান্তরালে কোথাও কোথাও উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছে। আসলে অধ্যাত্মসংগীত মাত্রেই নীরস তত্ত্বের কচকচি নয়। ঋগ্বেদের সূক্তগুলিও কবিত্বের আকর। চর্যাপদ কেবল সিদ্ধসাধকের ধর্মীয় অনুভবের ঘনিষ্ঠ রূপায়ণ নয়, একই সঙ্গে তা সাধক-কবির মন্ময় অনুভূতির অলংকৃত প্রকাশও বটে। কাব্যের প্রকাশরীতি বিশ্লেষণ করার যে প্রথা দীর্ঘকাল এদেশে প্রচলিত, তারই ফলে এককালে গড়ে উঠেছিল নানা কাব্যপ্রস্থান। তার ভাববস্তুর বিচার চলেছে দুটি মাত্রায়—ধ্বনি ও রসের মানদণ্ডে। বিশেষ সাধনপদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে সিদ্ধাচার্যেরা নিছক তত্ত্বকথা লিখলেও তাকে ভাষাময় রূপ দিতে গিয়ে এই ভাব ও প্রকাশকলার গুরুত্ব সৃষ্টিতেও যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁরা তত্ত্বের এক কাব্যরস-সমন্বিত মূর্তিই অঙ্কন করতে চেয়েছেন, রচনাকে নিছক দার্শনিক পরিভাষা-কণ্টকিত করে ধর্মানুশাসনের কঠিন দুষ্প্রবেশ্য আবেষ্টনীর মধ্যে ধরে রাখতে চাননি। সাধনতত্ত্ব বলতে গিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা কিংবা অন্য যে-কোনও কারণেই হোক তাঁরা কয়েকটি চিত্রপ্রতীকের সাহায্য নেন। এইসব রূপক-প্রতীক তাঁদের দুরুহ তত্ত্বপ্রকাশ যেমন সহজ করেছেন, তেমনই আকর হয়ে উঠেছে কবিত্বেরও। অবশ্য এও সত্য যে, সব পদেই কবিত্বের স্পর্শ নেই, কোথাও কোথাও রয়েছে দার্শনিক প্রত্যয়ের নিরাবরণ উচ্চারণও। সে যাই হোক, সাধনতত্ত্ব কতটা শিল্পশ্রীমণ্ডিত করে সাধকেরা প্রকাশ করতে পেয়েছেন, সেটাই এখানে আমাদের আলোচ্য বিষয়।
প্রথমেই আসা যাক রূপকর্মের আলোচনায়। অলংকৃত বাক্যই যে কাব্য সেকথার প্রমাণই চর্যার কবিরা রেখেছেন তাঁদের পদে। উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, বিরোধ, বক্রভাষণ, বিপরীত বাচন, চিত্রকল্প ইত্যাদি প্রয়োগে তাঁরা ছিলেন সিদ্ধহস্ত। গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই তাঁদের এই পথ বেছে নিতে হয়েছিল। সাদৃশ্যমূলক অলংকারের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ উপমাই প্রথাসিদ্ধ ও গতানুগতিক। জগতের মিথ্যাত্ব বোঝাতে ৪১ সংখ্যক চর্যায় ভুসুকুপাদ মরু-মরীচিকা, গন্ধর্বনগরী, দর্শন-প্রতিবিম্ব, বন্ধ্যাপুত্র, বালুকাতৈল, শশকশৃঙ্গ, আকাশকুসুমের উপমা টেনে এনেছেন। অন্যত্র চঞ্চল চিত্তের প্রতীক হয়ে উঠেছে হরিণ ও মূষিক। অবধূতীকে বোঝাতে আনা হয়েছে ডোম্বী ও কমলিনীকে এবং জিনপুর প্রতীকায়িত হয়েছে পদ্মবন ও জ্যোৎস্নাবাড়ির দ্বারা। সহজানন্দে পরিপূর্ণ সহজচিত্তকে তুলনা করা হয়েছে গজেন্দ্রের সঙ্গে। চিত্তচালনা ও নৌচালনা অগ্রগমনের সূত্রে কবিদৃষ্টিতে অভিন্ন হয়ে উঠেছে। তুলো ধোনা, মদ চোলাই আসলে সংবৃতি বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবীকৃত করার রূপক। একই অর্থ প্রকাশ করছে মাদী কচ্ছপের দোহনের রূপকটিও। এইসব অলংকারের প্রয়োগে বক্তব্য সরস হয়েছে, তত্ত্বের শুষ্কতা ঘুচে গিয়ে আস্বাদ্যমান সাহিত্যের বস্তুতে পরিণত হয়েছে চর্যার দেহকেন্দ্রিক যৌনযোগতান্ত্রিক ধর্মাচার।
এছাড়া চর্যার অধিকাংশ পদেই আছে জীবনের টুকরো টুকরো ছবি। যেমন, ৩ সংখ্যক পদে শুণ্ডিনীর মদ চোলাই, ৫ সংখ্যক পদে নদী পারাপারের দৃশ্য, ৬ সংখ্যক পদে হরিণ শিকারের আরণ্যক পরিবেশ, ১০ ও ২৮ সংখ্যক পদে ডোম্বী ও শবরীর অনুসষঙ্গ, ১২ সংখ্যক পদে দাবা খেলা, ২০ সংখ্যক পদে ‘খমন ভতারী’ নারীর গর্ভযন্ত্রণা ও মনোবেদনা, ২১ সংখ্যক পদে ইঁদুরের আনাগোনা, ২৬ সংখ্যক পদে ধুনুরির তুলো ধোনা, ৩৩ সংখ্যক পদে পর্বতশিখরে প্রতিবেশীহীন মানুষের একাকীত্ব, ৪৯ সংখ্যক পদে জলদস্যুর অত্যাচারে সাধারণ মানুষের হৃতসর্বস্ব হওয়া, ৫০ সংখ্যক পদে শবর-শবরীর মদমত্ত উল্লাস ইত্যাদি। কাব্যের কাব্যত্ব যদি স্বভাবোক্ত অলংকারের উপর কিছু অংশে নির্ভর করে থাকে, তবে চর্যাপদে তার সুপ্রচুর প্রয়োগ দৃষ্টে চর্যাকারদের কবি বলে অভিনন্দিত করতে দ্বিধা হওয়ার কোনও কারণ নেই। ৫ সংখ্যক চর্যাটির কথাই ধরা যাক। ভবনদীর আধ্যাত্মিক অর্থ যাই হোক না কেন, সেই নদীর বাস্তব রূপটি সব কিছু ছাপিয়ে পাঠকহৃদয়ে অন্য এক অনুভূতি সঞ্চারিত করে। দু-কূল হারানো বর্ষার নদী আর তার বেগবান উন্মত্ত স্রোত পাঠকের বাসনালোক আলোড়িত করে আতঙ্ক-মিশ্রিত আনন্দ জাগিয়ে তোলে। পদকর্তা চাটিলপাদ লেখেন:
<poem>
:: ভবণই গহন গম্ভীর বেগেঁ বাহী।
:: দু আন্তে চিখিল মাঝেঁ ন থাহী।।
</poem>
৬ সংখ্যক পদে নিশ্চিন্তভাবে তৃণভোজনে রত এক হরিণের প্রসঙ্গ এসেছে। কোনও দিকে তার দৃষ্টি নেই। এমন সময় ব্যাধ হাঁক পাড়ল। হরিণ যে তার সুস্বাদু মাংসের জন্য নিজেই নিজের শত্রু। হাঁক শুনে হরিণের প্রাণ উড়ে যায়। তৃণ আর স্পর্শ করে না, পানীয়ে অরুচি ধরে। এমন সময়ে অকুস্থলে হরিণীর আবির্ভাব। সে পরামর্শ দেয়, “এ বন চ্ছাড়ী হোহু ভান্তে।” সেই কথা শুনে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায় হরিণ, এত দ্রুত যে তার ক্ষুরও দৃশ্যমান হয় না। এর মধ্যে নিগূঢ় সাধনতত্ত্ব যাই থাকুক, অরণ্যের চিত্র হিসেবে এটি অনবদ্য। তত্ত্বনিরপেক্ষভাবে এই পদের রসাবেদন যে-কোনও পাঠককেই মুগ্ধ করবে।
সাহিত্যের অন্যতম উপজীব্য হল প্রেম। এটি দেশকাল-নিরপেক্ষ যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক নরনারীর দেহবাসনা-সঞ্জাত একপ্রকার মানসিক অবস্থা। আলংকারিকদের ভাষ্য অনুসারে, রতিভারের পরিপুষ্টি ঘটে শৃঙ্গার রসে, যা সাধারণ্যে প্রেম বলে কথিত। এই শৃঙ্গারকে আবার সম্ভোগ ও অভিলাস এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। চর্যার কবিরা শৃঙ্গার-রসাত্মক পদে সিদ্ধহস্ত। বিশেষত কায়াসাধনার প্রসঙ্গ থাকায় নারীপুরুষের শারীরিক মিলনের প্রসঙ্গ অনেকবার এসেছে চর্যায়। স্থানে স্থানে আধুনিক রুচির নিরিখে তা অশ্লীল মনে হতে পারে। যেমন, ৪ সংখ্যক পদে চুম্বনের বিবরণ খুব স্বল্পকথায় বর্ণিত। পদকর্তা গুণ্ডরীপাদ যোগিনীকে ছাড়া এক মুহূর্তও প্রাণধারণে অক্ষম। তাঁর আকাঙ্ক্ষা প্রেমিকার মুখচুম্বন করে কমলরস পান করেন। তিনি যে সুরতক্রিয়ায় পারদর্শী সেকথা স্বীকার করেন মুক্তকণ্ঠে, “ভনই গুণ্ডরী অহ্মে কুন্দুরে বীরা”। ১০ সংখ্যক পদে পদকর্তা কাহ্নপাদ প্রেমিকাকে প্রেম নিবেদন করেন সরাসরি। ডোম্বীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। নির্ঘৃণ কাপালীর বলতে বাধে না, “আলো ডোম্বী তোএ সম করিব ম সঙ্গ”। অন্তেবাসী এই ডোম-রমণীকে পাওয়ার জন্য তাঁর ত্যাগস্বীকারও কম নয়, “তোহোর অন্তরে ছাড়ি নড় এড়া।… তোহোর অন্তরে মোএ ঘলিলি হাড়েরি মালা।” এসব কথার মধ্যে যথেষ্ট নাটকীয় উপাদান সংগুপ্ত রয়েছে। আবার দেখা যায়, এরই অনুবৃত্তিস্বরূপ ১৯ সংখ্যক পদে কাহ্নপাদ চলেছেন ডোম্বীকে বিবাহ করতে। বাজছে মাদল, পটহ, দুন্দুভি। পালকিতে বরবেশী কাহ্ন। জাত খুইয়ে পাত্রের যৌতুক মিল অনুত্তর ধাম। তারপর দিনরাত কাটতে লাগল ‘সুরঅ পসংগে’। তত্ত্ব ছাড়াই এই আখ্যান পাঠকের কাছে পরমরমণীয়। আবার ২৮ সংখ্যক পদে শবরীপাদ বেশ বিস্তারিতভাবেই সঙ্গিনীমিলনের আনন্দ ব্যক্ত করেছেন। দুই মিলনকাতর নরনারীর পরিশ্লেষ এক মনোহর প্রাকৃতিক পরিবেশে চিত্রিত। তখন তরুশাখাগুলি মঞ্জরিত, তার পুষ্পিত ডালগুলি স্পর্শ করছে গগন, সেই অনুপম পরিবেশে ফুল্ল কাননে ময়ূরপুচ্ছ পরিহিতা, কণ্ঠে গুঞ্জামালাধারিণী ও কর্ণকুণ্ডলে সজ্জিতা শবরী একা বিচরণ করছে বনমধ্যে। ত্রিধাতুর খাট পেতে শয্যারচনা করে শবর। অবশেষে ভুজঙ্গ নায়ক শবর নৈরামণি শবরীকে নিয়ে কেলিরসে রাত্রিযাপন করে। সিদ্ধাচার্যের এই পদে জ্ঞানমুদ্রা সাধনতত্ত্বের নিগূঢ় রহস্যই সন্ধ্যাভাষায় কথিত, কিন্তু সেসব অতিক্রম করে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে লৌকিক শবর-শবরীর আরণ্যক জীবনযাত্রা, তাদের নিবিড় আশ্লেষ, উপগূঢ়ের অব্যক্ত আনন্দ। শবরীপাদের একটি চর্যা আছে গ্রন্থশেষে (৫০ সংখ্যক চর্যা), যেখানে তিনি পরমার্থ সত্যের সাক্ষাৎ লাভ করে অন্যের উপকারার্থে সেই সংবেদনের কথা জানাচ্ছেন শূন্যতাসম্বোধি চর্যায়। তাঁর সব ভারী তত্ত্বই চিত্রসৌন্দর্যে বিগলিত হয়ে যায়, যখন দেখা যায় কবি বাক্যজাল বুনে বুনে এক অপূর্ব মায়াময় রাত্রির দৃশ্য নির্মাণ করছেন। বাড়ির পাশে কাপাস ফুল ফুটেছে, সারা আকাশ ভরে গেছে অসংখ্য তারা ফুলে, অন্ধকার দ্রবীভূত হয়েছে প্লাবিত মেদুর জ্যোৎস্নায়। আর মাঠে ভবিষৎ প্রাচুর্যের ইঙ্গিত বহন করে স্বর্ণশীর্ষে আন্দোলিত হচ্ছে পাকা ধানের মঞ্চরী। এই ধরনের রোম্যান্টিক কাব্যকথার কাছে অন্য কোনও ভাবের কথা পৌঁছাতে পারেনি।
কিন্তু কেবল সুখের কথাতেই নয়, দুঃখ বর্ণনাতেও চর্যাকারেরা দক্ষ। যন্ত্রণার মহিমাময় উপলব্ধি থেকেই উৎসারিত হয় মধুরতম সংগীত। সেই বেদনা মানুষকে যেমন মুহ্যমান করেন, তেমনই দেয় এক অব্যক্ত আনন্দ। চর্যাকারেরা সিদ্ধাচার্য। তাঁদের নির্দিষ্ট ধর্মসাধনার বাইরে কোনও গার্হস্থ্যজীবন না থাকলেও ছিল বহুল ব্যাপ্ত সামাজিক অভিজ্ঞতা। মানুষের সংসারে অভাব, দারিদ্র্য, দুঃখ ও বঞ্চনা তাই তাঁদের দৃষ্টি এড়ায় না। রচিত পদেও পাওয়া যায় এইসব ভাবনারই বহিপ্রকাশ। ৪৯ সংখ্যক চর্যায় ভুসুকুপাদ নির্দয় দস্যু কর্তৃক লুণ্ঠিত এক ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের কথা লিখেছেন। ৩৩ সংখ্যক পদে ঢেণ্ঢণপাদ লোকালয় থেকে দূরে টিলায় বাস করা আর-এক দরিদ্র সংসারের ক্লিন্ন ছবি আঁকেন। সেখানে তার কোনও পড়শি নেই, নেই কাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছলতাও। গৃহে নিত্য অন্নাভাব, তবু অতিথির বিরাম নেই; সংসারও বেড়ে চলেছে দিনে দিনে। ২০ সংখ্যক চর্যায় কবি এক হতভাগিনী নারীর কথা বলেছেন। তার স্বামী উদাসীন বিবাগী। এতটুকু জীবনে সে নারীর কত দুঃখ। সেই দুঃখের কথা সে কাকে বলবে, আর বলবেই বা কোন মুখে। এই তার প্রথম সন্তানপ্রসব। কিন্তু কোথায় আঁতুড়, কোথায় সাহায্য। এই পদের আধ্যাত্মিক অর্থ যাই হোক না কেন, স্বামীবঞ্চিতা নারীজীবনের এই দুঃখানুভূতির তীব্রতা কবিতাটিকে প্রাণ দিয়েছে। কবিত্বের বিচারে সমগ্র পদসংকলনে এই পদটির স্থান অনেক উঁচুতে।
চর্যাপদে সামাজিক জীবনের ছবিও পাওয়া যায়। ২ সংখ্যক পদে তত্ত্ব অতিক্রান্ত হয় একটি আখ্যানের আভাসে। চোরে বধূর কর্ণভূষণ চুরি করে, সে অলংকার সে কোথায় খুঁজবে ভেবে পায় না। শ্বশুর নিদ্রামগ্ন কিন্তু বধূটি জেগে আছে। ৩ সংখ্যক পদে আছে সেকালের শুঁড়িখানার বর্ণনা। শুঁড়ি-বউ চিকন বাকলে মদ বানায়। তার দোকানের সাংকেতিক চিহ্ন দেখে খদ্দের এসে ভিড় করে। সার দেওয়া চৌষট্টি ঘড়াতে মদ রাখা আছে। দোকানে ঢুকে খদ্দের মদ খেতে শুরু করে আর বাইরে বের হয় না। ছোটো ঘড়ায় সরু নল দিয়ে মদ্যপান করে তারা। বলা বাহুল্য, এইসব কথা ব্যঞ্জনাবিহীনভাবে বলার জন্য চর্যার কবিরা কাব্যরচনার আয়োজন করেননি। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অন্য। কিন্তু সে উদ্দেশ্য ছাপিয়ে মানুষের লৌকিক জীবনের মর্মমূলে পৌঁছে গিয়েছে সিদ্ধাচার্যদের গান। তাঁদের পদ নন্দিত করে আজকের পাঠকের চিত্ত। এর ছন্দ, এর অলংকার, এর অজস্র বাক্প্রতিমা সাজিয়ে দেয় কথাগুলি, আর সে অলংকৃত কথা পাঠককে টেনে নিয়ে চলে বিশুদ্ধ রসের জগতে। চর্যাপদ তাই একই আধারে ধর্মকথা ও কাব্যকথা।
kjw52udrbo1va6v6hmg68x4ylhxoh13
85638
85630
2025-07-04T06:13:28Z
Jonoikobangali
676
/* সাহিত্যমূল্য */
85638
wikitext
text/x-wiki
বিশ শতকের গোড়ায় চর্যাপদের আবিষ্কার বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। চর্যাপদ আবিষ্কৃত হওয়ার পর প্রাচীন বাংলার এক অমূল্য লুপ্ত সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের কৃতিত্ব প্রাচ্যবিদ্যার বিশিষ্ট গবেষক মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর। কিন্তু তাঁর ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' পুথি আবিষ্কারের পিছনে বাঙালির প্রাচীন সংস্কৃতি চর্চার একটি ইতিহাস আছে। উনিশ শতকে বাংলায় যে নবজাগরণ ঘটেছিল, তার অন্যতম বৈশিষ্ট্যই ছিল দেশের অতীত ইতিহাসের ভাবসম্পদ পুনরুদ্ধার ও তার নবমূল্যায়ন। এর সূচনা ঘটেছিল ১৭৮৪ সালে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। প্রথম দিকে কেবল ইউরোপীয় গবেষকেরাই প্রাচীন ভারতের লুপ্ত সম্পদ উদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। যেমন, বি. এইচ. হজসন ও ড্যানিয়েল রাইট উনিশ শতকের প্রথমার্ধে নেপাল থেকে কিছু প্রাচীন পুথি উদ্ধার করে ইউরোপের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেরণ করেন, যার ফলে ইউরোপীয় গবেষকেরা ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চায় উৎসাহী হয়ে উঠতে শুরু করেন। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি গবেষকেরাও এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। গবেষক রাজেন্দ্রলাল মিত্র নেপালে গিয়ে সংস্কৃত ভাষায় রচিত কিছু পুথি উদ্ধার করে আনেন এবং ''দ্য সংস্কৃত বুদ্ধিস্ট লিটারেচার ইন নেপাল'' (১৮৮২) শীর্ষক পুস্তিকায় সেগুলির নাম প্রকাশ করেন। ১৮৯২ সালে শরৎচন্দ্র দাসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় বুদ্ধিস্ট টেক্সট সোসাইটি। রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর প্রাচীন পুথি উদ্ধারের ভার গ্রহণ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ সালে নেপালে গিয়ে বৌদ্ধধর্ম-বিষয়ক কয়েকটি সংস্কৃত পুথি তিনি কলকাতায় নিয়ে আসেন। এরপর ১৯০৭ সালে তৃতীয়বার নেপাল যাত্রা করে তিনি নেপালের রাজদরবারের পুথিশালা থেকে আবিষ্কার করেন চর্যাপদের প্রাচীন পুথি ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'', সরহপাদের ''দোহাকোষ'' ও কাহ্নপাদের ''দোহাকোষ''। এই তিনটি পুথির সঙ্গে পূর্বাবিষ্কৃত ''ডাকার্ণব'' পুথিটিকে যুক্ত করে শাস্ত্রী মহাশয় ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে নিজের সম্পাদনায় প্রকাশ করেন ''হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা'' গ্রন্থটি। ভূমিকায় তিনি চারটি পুথির ভাষাকেই বাংলা বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ভাষাতাত্ত্বিকেরা কেবল চর্যাগীতিগুলির ভাষাকেই বাংলা বলে স্বীকৃতি দেন। সেই দিক থেকে প্রাচীনতম বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন হল এই চর্যাপদ।
চর্যাপদের পুথি তালপাতায় লেখা হয়েছিল। নেপাল থেকে আনা পুথি আবার রাজদরবারে ফেরত দেওয়ার আগে শাস্ত্রী মহাশয় সেটির অনেকগুলি ফোটোকপি করে নিয়েছিলেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, তালপাতার উভয় পৃষ্ঠাতেই পদগুলি লেখা হয়েছে। প্রতি পৃষ্ঠায় আছে পাঁচটি করে টানা লাইন। মাঝখানে সামান্য একটু ফাঁক, সম্ভবত সেখানে ফুটো করে সুতো বা ওই জাতীয় কিছু পরাবার জন্য। পাতাগুলি সংখ্যাযুক্ত এবং সংখ্যাটি লিখিত পাতার শেষ পৃষ্ঠায়। এইভাবে প্রাপ্ত পুথির শেষ পাতার অঙ্ক ৬৯। কিন্তু তার পরেও যে পুথি বাকি ছিল তার প্রমাণ ওই পাতার পদটি অসমাপ্ত থেকে যাওয়ায়। শুধু শেষ পাতা নয়, মাঝের ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮ ও ৬৬ সংখ্যক পাতাগুলিও পাওয়া যায়নি। লুপ্ত পাতা বাদে প্রাপ্ত পুথিটি মোট ৬৪ পৃষ্ঠার। পুথিটিতে আরও একধরনের ক্রমিক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়েছে, যেটি মোট পদের সংখ্যা নির্দেশক। বলা বাহুল্য, লুপ্ত পাতার পদগুলি পাওয়া যায়নি। এই রকম অপ্রাপ্ত পদের সংখ্যা সাড়ে তিনটি। শেষ পাতার যে পদসংখ্যা পাওয়া যায় সেটি ৪৯। সেখানেই শুরু হয়েছে ৫০ সংখ্যক পদটি, যার বাকি অংশ লুপ্ত পাতার সঙ্গেই হারিয়ে গিয়েছে। মুনিদত্তের টীকার সূত্রে জানা যায়, কোনও একটি শতপদী সংকলন থেকে অর্ধেক সংখ্যক পদ নিয়ে সেটির টীকা রচনার উদ্দেশ্যে এই গ্রন্থের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অর্থাৎ চর্যার পুথিটি ছিল মোট ৫০টি পদের সংকলন। সাড়ে তিনটি পদ না পাওয়ায় প্রাপ্ত পদের সংখ্যা এখানে সাড়ে ছেচল্লিশ। অবশ্য পরবর্তীকালে এই গ্রন্থের তিব্বতি অনুবাদ পাওয়া গিয়েছে। অনুবাদক ছিলেন কীর্তিচন্দ্র। সেই পুথিটি অক্ষত। তার থেকে লুপ্ত সাড়ে তিনটি পদের বিষয় ও তার ব্যাখ্যা জানা গিয়েছে।
টীকার পুথিটি সংকলনে একটি বিশেষ রীতি অবলম্বিত হয়েছে। এখানে একই সঙ্গে মূল গান ও তার টীকা দেওয়া হয়েছে। সাধারণত টীকার পুথিতে মূল গান সম্পূর্ণ উদ্ধৃত হয় না। কিন্তু এখানে তার ব্যতিক্রম দেখা যায়। সমগ্র পদ উদ্ধৃত করে টীকাকার পরে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। পদগুলি বাংলা ভাষায় লেখা, টীকার ভাষা সংস্কৃত। টীকার নাম ''নির্মলগিরা টীকা''। টীকাকারের নাম মুনিদত্ত। গানগুলি একক পদকর্তার নয়, বিভিন্ন জনের রচনা। প্রত্যেকটি পদের সূচনায় রাগের উল্লেখ ও পদকর্তার নাম পাওয়া যায়। তারপর দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ পদটি। সব শেষে রয়েছে তার ব্যাখ্যা বা টীকা। টীকার পরে আছে গানের ক্রমিক সংখ্যা। অবশ্য গ্রন্থসূচনার পদটিতে একটু ভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োগ লক্ষিত হয়। প্রথমে নমস্ক্রিয়ার পর সদ্গুরু বন্দনা ও বস্তুনির্দেশ, তারপর “কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল” পদটির দ্বারা মূল চর্যাগীতির আরম্ভ। তারপর গানটির রাগের উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য ধরনের ব্যতিক্রমও দেখা যায়। যেমন, ৯ সংখ্যক পদে চর্যাকারের নাম উল্লিখিত হয়নি, যদিও গানের মাঝে ভণিতা থেকে জানা যায় এটি কাহ্নপাদের রচনা। ১০ সংখ্যক চর্যার পরে টীকাকার বা লিপিকর লিখে রেখেছেন, “লাড়ীডোম্বীপাদানাম্ সূনেত্যাদি। চর্য্যায়া ব্যাখ্যা নাস্তি।” অর্থাৎ এখানে অপেক্ষিত ব্যাখ্যাটি নেই। তাছাড়া মূল গানগুলির পাঠ ও টীকায় উদ্ধৃত অংশগুলির পাঠে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। তাই কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, মূল গান সংকলন ও তার টীকা রচনা দুই স্বতন্ত্র ব্যক্তির কাজ। আবার কেউ কেউ অনুমান করেন, মুনিদত্তের টীকা পরে কারও দ্বারা পরিমার্জিত হয়েছিল। সেই পরবর্তী সংস্কার-কর্তাও অন্য কোনও গীতিসংগ্রহ থেকে মূল গানগুলিকে নিয়ে ব্যাখ্যার আগে সংযোজিত করে থাকতে পারেন। টীকারম্ভের প্রথম বাক্যটি রচনা এবং গানের সূচনায় কবি ও রাগরাগিণীর নামের উল্লেখ সম্ভবত এই সংস্কার-কর্তারই কাজ। পুথির পাঁচটি পাতা হারিয়ে যাওয়ায় ২৩ সংখ্যক গানের ছটি চরণ এবং ২৪, ২৫ ও ৪৮ সংখ্যক গান সম্পূর্ণ লুপ্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ২৩ ও ২৪ সংখ্যক গানের সম্পূর্ণ টীকা এবং ২৫ সংখ্যক গানের টীকার প্রথমাংশটিও সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ৪৭ সংখ্যক গানের ব্যাখ্যার সামান্য অংশ হারিয়ে গিয়েছে এবং ৪৮ সংখ্যক গানের শেষ পদটির ব্যাখ্যা ছাড়া গান সহ সমগ্র টীকাটিই লুপ্ত। তিব্বতি অনুবাদটির আবিষ্কারক ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী গানগুলি সংস্কৃত ভাষায় রূপান্তরিত করেছিলেন। পরে তিব্বতি অনুবাদের ছায়া অনুসরণে ড. সুকুমার সেন লুপ্ত গানগুলির সম্ভাব্য রূপ পুনর্গঠন করে তাঁর সম্পাদিত ''চর্যাগীতি পদাবলী'' গ্রন্থে প্রকাশ করেন।
==রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার==
১৯১৬ সালে ''হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা'' গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর নানা বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। ফলে অনেক রকম বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চর্যাগীতির ভাষা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে যেমন মতান্তর ছিল, তেমনই এগুলির রচনাকাল ও প্রাপ্ত পুথির প্রকৃত নাম নিয়েও ছিল নানা সংশয়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দাবি করেছিলেন, গানগুলির রচনাকাল খ্রিস্টীয় দশম শতক এবং সেই কারণেই সম্পাদিত গ্রন্থের নামে তিনি ‘হাজার বছরের পুরাণ’ এই সময়-জ্ঞাপক বিশেষণটি জুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সকলে সেই কথা নিঃসন্দিগ্ধভাবে মেনে নিতে চাননি। সামগ্রিক দৃষ্টিতে চর্যাপদের রচনাকাল নিয়ে দুটি প্রশ্ন ওঠে। প্রথম প্রশ্ন, চর্যার মূল গানগুলি কোন সময়ে লেখা হয়েছিল? এবং দ্বিতীয় প্রশ্ন, টীকা-সম্বলিত যে সংগ্রহটি পাওয়া গিয়েছে, সেটিই বা কোন সময়ে লেখা হয়? মুনিদত্তের টীকা অনুসারে বলা যায়, গানগুলি আগে লেখা হয়েছিল এবং পরে তার থেকে কয়েকটি গান বেছে নিয়ে সেগুলির ব্যাখ্যা রচিত হয়। তাই প্রথম প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে হবে দুটি প্রশ্নের নিরিখে। প্রথমত, চর্যাকারেরা কবে আবির্ভূত হন? এবং দ্বিতীয়ত, ভাষাতত্ত্বের নিরিখে চর্যায় প্রাপ্ত ভাষার জন্ম কোন সময়ে? বিভিন্ন গবেষক এই দুই বিষয়ে কিছু আলোকপাত করেছেন।
ইতিহাস-বিস্মৃত জাতির বাস্তব ঐতিহাসিক সকল ঘটনারই লিখিত ইতিহাস পাওয়া সম্ভব নয়। এই কারণেই চর্যাপদ, চর্যাপদের কবিগণ, তাঁদের জন্ম ও মৃত্যু এবং সেই সংক্রান্ত তারিখ-যুক্ত কোনও তথ্য পাওয়া কঠিন। তাই জনশ্রুতি, কল্পকাহিনি ও লোকপরম্পরাগত ঐতিহ্য সত্যাসত্য নির্বিশেষে সেই শূন্যস্থান ভরিয়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে। চর্যাকারেরা নিছক কবি বা গীতিকার ছিলেন না, ছিলেন বৌদ্ধধর্মের এক বিশেষ ধারার সাধক। সেই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে তাঁর খ্যাত হয়েছিলেন সিদ্ধাচার্য নামে। তাঁদের নিয়ে তাই নানা অলৌকিক জনশ্রুতি ছড়িয়ে পড়েছিল। সেগুলি সংগ্রহ করে পরবর্তীকালে কিছু গ্রন্থও রচিত হয়। সুম্পাখন্পো-র ''Pag Sam Jon Zang'' ও লামা তারানাথের ''Khabad Dun Dan'' হল তিব্বতি ভাষায় লেখা এই সংক্রান্ত দুটি গ্রন্থ। ভারতেও সিদ্ধাচার্যদের নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত ছিল। ভারতে যোগী সিদ্ধসাধকদের আবির্ভাব ঘটে। নাথপন্থা ও সহজযান বৌদ্ধধর্মের মধ্যে যে তাত্ত্বিক এবং দেহসাধনা ও যোগাচারকেন্দ্রিক ক্রিয়াকাণ্ডগুলির আদান-প্রদান ঘটেছিল তার অজস্র প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। দেহসাধনা এই উভয় মতেরই ভিত্তিস্বরূপ। নাথপন্থীদের সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের নাম পাওয়া যায়। ‘চৌরাসী সিদ্ধ’ অর্থাৎ চুরাশিজন সিদ্ধাচার্যেরা মধ্যে ছিয়াত্তর জনের নাম পাওয়া যায় চতুর্দশ শতকের মৈথিল কবি জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থে। এছাড়া তন্ত্রগ্রন্থ ''কৌলজ্ঞাননির্ণয়'' এবং নাথপন্থীদের গুরুশিষ্য-পরম্পরা সম্পর্কিত গ্রন্থাদিতেও সিদ্ধাচার্যেরা কথা অল্পবিস্তর বর্ণিত হয়েছে। ড. জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী তাঁর ''চর্যাগীতির ভূমিকা'' গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, জনশ্রুতিগুলি যে সব ক্ষেত্রে কল্পনাপ্রসূত নয়, তার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। প্রাপ্ত ঐতিহাসিক তথ্যের সঙ্গে এই লোকপরম্পরাগত ঐতিহ্যের মিল যথেষ্টই আছে।
চর্যাগীতির রচনাকাল বিষয়ে তিনজন বিশিষ্ট গবেষক তিনটি পৃথক মত প্রকাশ করেছেন। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর ''দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ'' গ্রন্থে বিভিন্ন সম্ভাব্য যুক্তি প্রদর্শন করে মন্তব্য করেছেন, “The period 950-1200 A.D. would thus seem to be a reasonable date to give to these poems.” অর্থাৎ তাঁর মতে দশম শতকের মধ্যভাগ থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সময়কালে চর্যাগীতিগুলি রচিত হয়েছিল। সময় নির্ধারণে তিনি আদি সিদ্ধাচার্য লুইপাদ ও শেষ সিদ্ধাচার্য কাহ্নপাদের জীবৎকালকে প্রমাণস্বরূপ ধরেছেন। এই দুই কবির জীবনেতিহাস স্পষ্ট নয়। কিংবদন্তিই এক্ষেত্রে মুখ্য আশ্রয়। সিদ্ধাচার্যদের একটি গুরুশিষ্য-পরম্পরা ছিল। তিব্বতি ঐতিহ্যে লুইপাদ প্রথম গুরু বা আদি সিদ্ধাচার্য। মুনিদত্তের টীকাতেও লুইপাদকে সেই সম্মান জানিয়ে বলা হয়েছে “শ্রীলূয়ীচরণাদিসুদ্ধ রচিতেঽপ্যাশ্চর্য্যচর্য্যাচয়ে…” এবং তাঁর পদ দিয়েই গ্রন্থারম্ভ করা হয়েছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন যে, বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান লুইপাদের ''অভিসময়বিহঙ্গ'' গ্রন্থ রচনায় সাহায্য করেছিলেন। দীপঙ্কর ১০৩৮ সালে বিক্রমশীলা বিহার থেকে তিব্বতি যাত্রা করেন। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ৫৮। সেই হিসেবে লুইপাদের আবির্ভাবকাল তাঁর মতে দশম শতকের মাঝামাঝি। অন্যদিকে ঐতিহ্য অনুসারে কাহ্নপাদ ছিলেন জালন্ধরীপাদের শিষ্য। কাহ্নপাদ রচিত ৩৬ সংখ্যক চর্যাগীতিটিতেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। কাহ্নপাদ চর্যাগীতি ছাড়াও আরও অনেক গ্রন্থ রচনা করেন, যেগুলির মধ্যে অন্যতম ''হেবজ্রপঞ্জিকাযোগরত্নমালা''। এই গ্রন্থটির অনুলিপির কাল জানা গিয়েছে। রাজা গোবিন্দপালের ৩৯ রাজ্যাঙ্ক অর্থাৎ ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটির অনুলিপি করা হয়। তাই সুনীতিকুমার দ্বাদশ শতককেই চর্যাগীতির সময়সীমা ধরতে চান। কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই গবেষকেরা বিরুদ্ধ যুক্তি দিয়েছেন। তাঁদের মতে, দীপঙ্কর সম্পর্কে শাস্ত্রী মহাশকের উক্ত তথ্যের তেমন কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। পি. কর্ডিয়ার ''তেঙ্গুর'' গ্রন্থমালার যে তালিকা দিয়েছেন, তাতে লুইপাদ ও দীপঙ্কর উভয়ের নামেই ''অভিসময়বিহঙ্গ'' গ্রন্থের নাম পাওয়া যায়। আসলে লুইপাদের এই গ্রন্থটি এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যা অন্যান্য বৌদ্ধ পণ্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ''তেঙ্গুর'' তালিকা থেকে জানা যায় যে, কম্বলাম্বরপাদ, প্রজ্ঞারক্ষিত, সুমতিকীর্তি, প্রভাকরগুপ্ত, রত্নবজ্র, দানশীল, বিভূতিচন্দ্রের ন্যায় অসংখ্য বৌদ্ধ পণ্ডিত এই গ্রন্থটির উপর নানা সময়ে বৃত্তি, ক্রম, মঞ্জরী, টীকা ইত্যাদি রচনা করেন। দীপঙ্করের নাম এভাবেই উল্লিখিত হতে পারে। তিনি লুইপাদকে সরাসরি গ্রন্থরচনায় সাহায্য করেননি, বরং লুইপাদের গ্রন্থটির অনুবাদ করেছিলেন মাত্র। অন্যদিকে কাহ্নপাদের গ্রন্থটির অনুলিপির কাল ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দ স্থিরীকৃত হলেও অনুলিপির সময় যে লেখকের জীবৎকালের কাছাকাছি হবেই এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। ষোড়শ শতকের কোনও গ্রন্থের অনুলিপি অষ্টাদশ শতকেও হতে দেখা গিয়েছে। এইসব বিরুদ্ধ যুক্তির বলে সুনীতিকুমারের সিদ্ধান্ত অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয় মতের প্রবক্তা হিন্দিভাষী পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন। তিনি ''দোহাকোষ''-এর ভূমিকায় লিখেছেন যে, সিদ্ধাচার্যেরা আবির্ভূত হয়েছিলেন অষ্টম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে। তিনি আরও মনে করেন যে, লুইপাদ নন, আদি সিদ্ধাচার্য ছিলেন রাহুলভদ্র সরহপাদ, যিনি বৌদ্ধ আচার্য শান্তরক্ষিতের সমসাময়িক ছিলেন। শান্তরক্ষিত ভোট সম্রাট খি স্রোঙ দে চন্-এর রাজত্বকালে (৭৫৫—৭৮০ খ্রিস্টাব্দ) রাজার আহ্বানে তিব্বতে গিয়েছিলেন। আর-একটি প্রমাণ হল, সরহপাদের শিক্ষক ছিলেন নালন্দার পণ্ডিত ধর্মকীর্তি, যিনি শান্তরক্ষিতের শিষ্য এবং গৌড়াধিপতি ধর্মপালের (রাজত্বকাল ৭৭০—৮১৫ খ্রিস্টাব্দ) বন্ধু। এইসব তথ্যের ভিত্তিতে সরহপাদকে অষ্টম শতকের ব্যক্তি বলে গণ্য করা চলে। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, লুইপাদ ছিলেন সরহপাদের প্রশিষ্য—সরহপাদের শিষ্য শবরপাদ, তাঁর শিষ্য লুইপাদ। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী কর্তৃক ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত ''জার্নাল অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট অফ লেটারস'' (২৮শ খণ্ড) থেকে জানা যায় যে, সরহপাদের দোহাগুলি ‘বিনষ্ট-প্রণষ্ট’ (‘বিণট্ঠা-পণট্ঠা-পউ’) হতে দেখে দিবাকর চন্দ নামে এক পণ্ডিত ২২১ নেপাল সম্বৎ অর্থাৎ ১১০১ খ্রিস্টাব্দে সেগুলি একটি পুথিতে সংকলিত করেন: “সমস্তো জহালব্ধা দোহাকোসো এসো সংহহিত্ত… পণ্ডিত সিরি দিবাকর চন্দেনেত্তি। সম্বৎ ২২১ শ্রাবণ শুক্লপূর্ণমাস্যাং।” এই বিষয়টিও পরোক্ষে প্রমাণ করে যে সরহপাদ খুব প্রাচীন সময়ের কবি; নইলে দ্বাদশ শতকের সূচনাতেই তাঁর ''দোহাকোষ'' বিনষ্ট হতে পারে না।
তৃতীয় মতটি দিয়েছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। তাঁর মতে চর্যাপদ রচনার সূচনা সপ্তম শতকে। এই মতের ব্যাখ্যায় তিনি ২১ সংখ্যক গানের টীকায় মুনিদত্ত মীননাথের লেখা একটি গানের কিছু অংশ উদ্ধৃত করেছেন: “কহন্তি গুরু পরমার্থের বাট।/ কর্মকূরঙ্গ সমাধিকপট।।” মীননাথ নাথগুরুদের অন্যতম এবং উদ্ধৃত অংশটি লেখা হয়েছে আদি স্তরের বাংলা ভাষায়। মীননাথই মৎস্যেন্দ্রনাথ নামে পরিচিত। ড. শহীদুল্লাহ এঁকেই লুইপাদ বলে ধরেছেন। ফারসি গবেষক সিলভ্যাঁ লেভি ''লে নেপাল'' (১ম খণ্ড) গ্রন্থে বলেছেন, মৎস্যেন্দ্রনাথ ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে রাজা নরেন্দ্রদেবের রাজত্বকালে নেপালে গিয়েছিলেন। ড. শহীদুল্লাহ এই তথ্যের ভিত্তিতে চর্যাগীতির সূচনাকাল ধরেছেন সপ্তম শতককে। তবে এই মত মানতে গেলে ভাষাতাত্ত্বিকদের ভাষার বিবর্তন-সংক্রান্ত আলোচনাকে অগ্রাহ্য করতে হয়। সপ্তম শতক অপভ্রংশ ভাষারই কাল। খ্রিস্টীয় নবম শতক নাগাদ এই ভাষা থেকেই বাংলার মতো নব্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলির উদ্ভব ঘটেছিল।
চর্যাপদের কালনির্ণয়ে গৌড়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটিও বিবেচ্য। এমনকি যে সময়ে মহাযানী বৌদ্ধধর্ম তন্ত্রের প্রভাবে মন্ত্রনয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে বজ্রযান, কালচক্রযান ও সহজযানে পরিণত হল, সেটিও আলোচনা করা কর্তব্য। সেই সঙ্গে কেউ কেউ আর-একটি বাহ্য প্রমাণ উপস্থিত করেছেন। সেটি হল প্রাচীন বাংলা সংগীত-বিষয়ক গ্রন্থের সাক্ষ্য। বিষয়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক। চর্যাপদ বৌদ্ধধর্মের সাধন-সংক্রান্ত গীতিগুচ্ছ হলেও তাতে বিশুদ্ধ বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব উপস্থাপিত হয়নি। চর্যাগীতির মূল অবলম্বন মহাযানী বৌদ্ধধর্মের এক বিশেষ বিকারগ্রস্থ রূপ। এই বিকৃতি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের। গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর চারটি বৌদ্ধসংগীতি বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের মতান্তর সূচিত করেন। পরিণামে বৌদ্ধসমাজ হীনযান ও মহাযান নামে দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। হীনযানীরা পরে সৌত্রান্তিক ও বৈভাষিক উপদলে বিভক্ত হয়ে যান। দার্শনিক মতভেদের কারণে মহাযানীরাও মাধ্যমিক ও যোগাচার শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়। এই যোগাচার মতের উদ্ভব খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে। সপ্তম শতক পর্যন্ত উত্তর ভারতে বৌদ্ধ দার্শনিকদের মধ্যে মাধ্যমিক ও যোগাচার মত বিশেষ জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিল। এরপর অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্য ও কুমারিল ভট্ট বৌদ্ধধর্মের বিরুদ্ধে বৈদিক তথা পৌরাণিক ব্রাহ্মণ্যধর্মকে পুনরুজ্জীবিত করতে সচেষ্ট হলেন। শঙ্করাচার্যের অদ্বৈত বেদান্ত ও কুমারিল ভট্টের পূর্ব মীমাংসা দর্শনের চাপে বৌদ্ধধর্ম কোণঠাসা হয়ে পড়ল। অবস্থার সঙ্গে সামাল দিতে গিয়ে মহাযানী বৌদ্ধধর্মে হিন্দু পুরাণের দেবদেবীদের অনুরূপ নানা দেবদেবীর আবির্ভাব ঘটল এবং ব্রাহ্মণ্য তান্ত্রিক রহস্যাচার গ্রাস করে ফেলল যোগাচারীদের। তন্ত্রের প্রভাবে দেহসাধনা-নির্ভর বৌদ্ধধর্ম কথিত হল ‘মন্ত্রযান’ নামে, যার শেষ পরিণতি বজ্রযান, কালচক্রযান ও সহজযান। চর্যাগীতিতে এই শেষোক্ত তিনটি মতেরই ছায়া লক্ষ্য করা যায়। এসব ঘটতে কমপক্ষে এক শতাব্দীর কেটে যাওয়ার কথা। তাই বলা চলে, নবম শতকের আগে মহাযানী বৌদ্ধধর্মে এই বিকৃতি ঘটেনি। নতুন তত্ত্ব ও সেই অনুযায়ী আচার-সংস্কার গড়ে উঠলে নবদীক্ষিতদের কাছে এর রহস্যময়তা তথা গূঢ় তাৎপর্য ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন সিদ্ধাচার্যেরা। তাঁদের রচনার ভাষা আলো-আঁধারি সন্ধ্যাভাষা বা কেবলমাত্র নির্দিষ্ট অভিপ্রায়কেই ব্যক্ত করার জন্য বিশেষ প্রযত্নে নির্মিত ভাষা। যৌনাচার-ভিত্তিক এই যোগসাধনপ্রণালী অন্যের কাছে প্রকাশ করতে সম্ভবত তাঁরা কুণ্ঠিত ছিলেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দিক থেকেও এই সময়টি ছিল বেশ অনুকূল। বাংলার সিংহাসনে তখন আসীন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল সম্রাটেরা। এই অনুকূল পরিবেশে বসে বৌদ্ধ পণ্ডিতেরা অসংখ্য গ্রন্থ ও পদ রচনা করেন। তাঁদের রচিত অধিকাংশ পদের ভাষা নবসৃজ্যমান বাংলা ভাষা এবং টীকা ও ভাষ্যের মাধ্যম ছিল সংস্কৃত বা বৌদ্ধ-সংস্কৃত। অতএব সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত করা যায় যে, খ্রিস্টীয় নবম শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময়কালে চর্যার মূল গানগুলি রচিত হয়েছিল।
এবার মুনিদত্তের টীকাগ্রন্থটির কাল অনুসন্ধান করা যাক। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুথিটি যে বেশ পরবর্তীকালে লিখিত, তা গ্রন্থের বিষয় ও লিপির আদর্শ থেকেই স্পষ্ট। চর্যাগীতিগুলি তত্ত্বের বাহক। কিন্তু সেগুলি এমনই আভিপ্রায়িক বচনে পরিপূর্ণ যে, দীক্ষিত ব্যক্তিদের কাছেও তা দুর্বোধ্য ছিল। তত্ত্ব ও সাংকেতিকতার দুরূহতার জন্য এগুলির ব্যাখ্যার প্রয়োজন দিল। মুনিদত্তই সেই অগ্রণী বৌদ্ধ পণ্ডিত যিনি একশোটি চর্যার একটি গীতিগুচ্ছ থেকে অর্ধেক পদ নিয়ে সেগুলির ব্যাখ্যায় অগ্রসর হলেন। বিশ্বভারতী প্রকাশিত ''চর্যাগীতিকোষ'' গ্রন্থে আছে: “তত্রাহৃতানাং চ বিচারিতানাং চর্যাশতেনাহৃত গীতিকানাম্। সত্ত্বৈস্তু সংবোধি বিচারাণার্থং কোষং বুধাঃ সংরচয়াংবভূবঃ।।” মূল গানগুলি রচিত হওয়ার অনেক পরে যে মুনিদত্তের টীকা লিখিত হয়েছিল, তার প্রমাণ পুথিতে উদ্ধৃত গীতিগুলির পাঠভেদ। এই বিষয়ে ড. সত্যব্রত দেব লিখেছেন, “মূল গীতিরচনার যুগ হইতে টীকা বা অনুলিপি রচনার যুগ পর্যন্ত মধ্যবর্তীকালে এই জনপ্রিয় গীতিগুলি নিশ্চয়ই গায়কদের মুখে মুখে এবং/অথবা লিপিকরদের অনুলিপির মাধ্যমে প্রচারিত ছিল। সুতরাং মূল রচনার সময়কার রূপ হইতে চর্যাগীতিগুলির ভাষা পরিবর্তিত হওয়াই স্বাভাবিক, যেমনভাবে মধ্যযুগের অনেক জনপ্রিয় সাহিত্যকৃতির ভাষা বিকৃত হইয়া গিয়াছে।” লিপির আদর্শ বিচার করে পুথির কালনির্দেশের ক্ষেত্রে লিপিবিশারদদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা যায়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে পুথির লিপিকাল দ্বাদশ শতক, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে পঞ্চদশ-ষোড়শ শতক, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে চতুর্দশ শতকের পরবর্তী সময়, ড. সুকুমার সেনের মতে চতুর্দশ থেকে ষোড়শ শতক এবং তারাদাস মুখোপাধ্যায়ের মতে দ্বাদশ শতকের শেষার্ধ। মুনিদত্তের আবির্ভাবকাল জানা যায়নি। অতএব এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমান-নির্ভর হতে বাধ্য। খুব সম্ভবত, চতুর্দশ শতকের কিছু আগে বা পরে কোনও এক সময়ে মুনিদত্তের মূল গ্রন্থটির অনুলিপি করা হয়েছিল। প্রাপ্ত পুথিটি যে টীকাকারের স্বহস্তে লিখিত তারও কোনও উপযুক্ত প্রমাণ নেই। বরং গানগুলির পাঠভেদ থেকে অনুমিত হয় যে, গানগুলি গায়কদের মুখে মুখে কম-বেশি পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার পরে অন্য কোনও ব্যক্তি মূল পুথির অনুলিপি করেছিলেন।
চর্যাপদের রচনাকালের ন্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুথিটির গ্রন্থ নিয়েও গবেষকেরা আজ পর্যন্ত কোনও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। প্রাপ্ত পুথিটির মলাটের পাতা ও শেষে পুষ্পিকার পাতা পাওয়া যায়নি বলে প্রকৃত তথ্য অজ্ঞাতে থেকে গিয়েছে। শাস্ত্রী মহাশয় তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের যে নামকরণ করেছেন তা স্পষ্টতই বিষয়-নির্দেশক অভিধা, যা একই সঙ্গে সময়কেও ইঙ্গিত করছে। নাম মাত্রেই বিশেষ্য, সেখানে এই ধরনের বিশেষণের প্রয়োগ অর্থ-ব্যঞ্জনার সূক্ষ্মতার পক্ষে ক্ষতিকারক। শাস্ত্রী মহাশয় অবশ্য বিকল্প একটি নাম দিয়েছিলেন ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। এই নামটির উৎস জানা যায়নি। পুথির কোথাও এই নামটি নেই। এটি সম্পাদকের স্ব-নির্ধারিত নাম হতে পারে, তবে একান্তই যে তাঁর স্ব-উদ্ভাবিত নাম নয়, তার প্রমাণ অদ্বয়বজ্রের ''প্রজ্ঞোপায়বিনিশ্চয়সিদ্ধ'' নামের গ্রন্থটি। টীকাগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত বৌদ্ধ গ্রন্থগুলির নামের সঙ্গে এই ‘বিনিশ্চয়’ শব্দটি যুক্ত থাকত। প্রাপ্ত পুথিটিও একটি টীকাগ্রন্থ। মুনিদত্ত বাংলা ভাষায় লেখা পঞ্চাশটি চর্যাগীতির টীকা লিখেছিলেন সংস্কৃত ভাষায়। নাম দিয়েছিলেন ''নির্মলগিরা টীকা''। সেদিক থেকে শাস্ত্রী মহাশয়ের দেওয়া নামটি সংগতিপূর্ণ। অথচ এই নামটি নিয়েও গবেষকদের মধ্যে অনেক বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।
চর্যাগীতিগুচ্ছের প্রথম পদের সংস্কৃত টীকায় বলা হয়েছে: “শ্রীলূয়ীচরণাদিসিদ্ধরচিতেঽপ্যাশ্চর্য্যচর্য্যাচয়ে। সদ্বর্ত্মাবগমায় নির্ম্মলগিরাং টীকাং বিধাস্যে স্ফুটনম।।” ১৯২৮ সালে বিধুশেখর শাস্ত্রী ''ইন্ডিয়ান হিস্টোরিক্যাল কোয়ার্টারলি'' পত্রিকার চতুর্থ খণ্ডে এই শ্লোকটির নিরিখে দেখাতে চেষ্টা করেছেন যে, এখানে উক্ত ‘আশ্চর্য্যচর্য্যাচয়’ শব্দবন্ধটিই প্রকৃত গ্রন্থনাম, যার অর্থ হল ‘আশ্চর্য চর্যাসমূহের সংকলন’। কিন্তু এটিকে ঠিক গ্রন্থনাম হিসেবে স্বীকার করা যায় না। বরং উপরিউক্ত বাক্য থেকে টীকাকার এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, এই আশ্চর্য বা অদ্ভুত চর্যাসমূহে প্রবেশের ‘সদ্বর্ত্ম’ নির্দেশের জন্য তিনি টীকা রচনা করেছেন। ‘আশ্চর্য’ শব্দটি গানগুলির প্রকৃতি নির্দেশক, যা অবশ্যই বিশেষণ। অন্যদিকে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী তাঁর ''স্টাডিজ ইন তন্ত্রজ'' (১ম খণ্ড) গ্রন্থে তিব্বতি অনুবাদটির প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছেন যে, শাস্ত্রী মহাশয় একটি ভুল পাঠের উপর ভিত্তি করে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' নাম দিয়েছেন; গ্রন্থটির আসল নাম হবে ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়''। অবশ্য ড. বাগচী নেপাল রাজদরবারে রক্ষিত পুথিতে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'' নামটি আছে বলেও উল্লেখ করেছেন। ড. সুকুমার সেনও মনে করেন যে, গ্রন্থটির মূল নাম ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়'', কিন্তু লিপিকরের ভুলে তা হয়েছে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। কিন্তু ড. বাগচী ও ড. সেন সমর্থিত ''চর্য্যাশ্চর্য্যবিনিশ্চয়'' নামটি প্রাপ্ত পুথিতে তো নেই-ই, এমনকি ''তেঙ্গুর'' গ্রন্থমালার পি. কর্ডিয়ার কৃত তালিকাতেও পাওয়া যায় না। এই নামটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। মুনিদত্তের যে শ্লোকটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, তাতে ‘আশ্চর্য’ শব্দটি থাকলেও চর্যার ‘আশ্চর্য বিনিশ্চয়’ অর্থাৎ অপূর্ব অর্থনির্ধারণের ব্যাপারটি কষ্টকল্পিত বলেই মনে হয়। বরং হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর দেওয়ার নামটির পিছনে কিছু যুক্তি আছে। ‘চর্য্যাচর্য্য’ শব্দটি একটি সমাসবদ্ধ পদ, যার পূর্বপদ ‘চর্য্য’, অর্থাৎ আচরণীয় এবং উত্তরপদ ‘অচর্য্য’ অর্থাৎ যা আচরণীয় নয়। যে গ্রন্থ আচরণীয় ও অনাচরণীয় তত্ত্বকে বিশেষরূপে নিশ্চয়ই করে তার নাম দেওয়া যেতে পারে ''চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়''। এই কারণে বিশ্বভারতী প্রকাশিত ''চর্যাগীতিকোষ'' গ্রন্থের ভূমিকায় বৌদ্ধ পণ্ডিত শান্তি ভিক্ষু শাস্ত্রী মন্তব্য করেছেন, “I see no justification to invent a new name when the old one conveys the better meaning, that is, Viniscaya ‘Determination’ of carya ‘that to be practiced’ and acarya ‘that not to be practiced’.”
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর পর চর্যাপদের পুথি আরও কয়েকজন বিদগ্ধ গবেষক কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছিল। যেমন, মনীন্দ্রমোহন বসুর ''চর্য্যাপদ'', ড. সুকুমার সেনের ''চর্যাগীতি পদাবলী'', ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও শান্তি ভিক্ষু শাস্ত্রীর যুগ্ম সম্পাদনায় ''চর্যাগীতিকোষ'' এবং ড. নীলরতন সেনের ''চর্যাগীতিকোষ'' (ফ্যাক্সিমিলি সংস্করণ)। লক্ষণীয়, সকলেই সম্পাদিত গ্রন্থের নামকরণে গানের দিকেই লক্ষ্য রেখেছেন এবং শাস্ত্রী মহাশয়ের দেওয়া নামটি বর্জন করেছেন। এই বিষয়ে জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী বলেন, “কিন্তু গ্রন্থনাম বিচারে প্রথম বিচার্য গ্রন্থের প্রতিপাদ্য বিষয় এবং গ্রন্থের উদ্দেশ্য। যে গ্রন্থখানি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা চর্যাগীতির সঙ্কলন মাত্র নহে, গীতিগুলির অর্থ বা টীকা। গ্রন্থখানির আরম্ভ টীকাকারের বন্দনা ও বস্তুনির্দেশক শ্লোক লইয়া। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতী অনুবাদের যে সংস্কৃত ছায়া দিয়াছেন, তাহাতে দেখা যায়, তাহাও টীকাকার মুনিদত্তের উক্তি লইয়াই পরিসমাপ্ত।” অথচ সম্পাদিত সব কটি গ্রন্থেই এই ব্যাপারটি অগ্রাহ্য করা হয়েছে এবং নামকরণে গানের ভূমিকাকেই দেওয়া হয়েছে প্রাধান্য। প্রাপ্ত পুথিটিতে গানগুলির উপস্থিতি যে একটি বিশিষ্ট ঘটনা তা অস্বীকার করা যায় না; কিন্তু টীকাকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল গানগুলির সূত্রে সহজযান বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব ও আচরণ ব্যাখ্যা করা। মূল পুথিতে গান আদৌ যুক্ত ছিল কিনা তা নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যেভাবে সাহিত্যের অর্থপুস্তক লেখা হয় সেইভাবে, অর্থাৎ প্রতিটি পদের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পদের প্রথম শব্দটি উল্লেখ করে এখানে ব্যাখ্যা শুরু হয়েছে। এই রীতি বৌদ্ধসাহিত্যে যে সুপ্রচলিত ছিল তার প্রমাণ কাহ্নপাদ রচিত ''যোগরত্নমালা'' টীকা, অদ্বয়বজ্রের ''দোহাকোষপঞ্জিকা'' এবং নারোপা রচিত ''সেকোদ্দেশ টীকা''। মুনিদত্তও সেই ধারাতে অর্থবোধের জন্য ''নির্মলগিরা টীকা'' রচনা করেছিলেন। সূচনায় “বিধাস্যে স্ফুটম্” ও অন্তে “কোষস্য চার্থঃ প্রকটিকৃতোঽএ” প্রভৃতি উক্তিই তার প্রমাণ। অতএব টীকাকারের উদ্দেশ্য বিচার করলে পূর্বোক্ত সমস্ত নামই অপ্রাসঙ্গিক ও অবান্তর মনে হবে। তিনি যে এর ভিন্ন একটি নামকরণ বৌদ্ধধর্মের গূঢ় তত্ত্বসমূহের ভাষ্য তথা ব্যাখ্যা-সংক্রান্ত ''তাঞ্জুর'' গ্রন্থমালার তালিকা থেকে পাওয়া যায়। সেখানে মুনিদত্তের নামে ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি'' গ্রন্থটির উল্লেখ আছে। মুনিদত্তের গ্রন্থটির তিব্বতি অনুবাদক কীর্তিচন্দ্রের নামেও একই নামে একটি গ্রন্থের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। পি. কর্ডিয়ার কৃত তালিকাও এই তত্ত্বকে সমর্থন করে। অতএব সিদ্ধান্ত করা যায় যে, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত গ্রন্থটির প্রকৃত নাম ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি''। উল্লেখ্য যে, তিব্বতি ভাষান্তরেও গ্রন্থের নাম দেওয়া হয়েছিল ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি''। আশ্চর্যের বিষয়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯১৬ সালে তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের পরিশিষ্টে যে ''তাঞ্জুর'' তালিকা সন্নিবিষ্ট করেছিলেন, তাতেও মুনিদত্তের নামের পাশে ''চর্যাগীতিকোষবৃত্তি'' গ্রন্থের উল্লেখ আছে।
==কবি==
চর্যাগীতিগুলির ভণিতায় যেমন পদকর্তাদের নাম স্পষ্টভাবে উল্লিখিত হয়েছে, তেমনই টীকাগ্রন্থটিতে ব্যাখ্যার সঙ্গে রচয়িতাদের নামও দেওয়া হয়েছে। মোট সাড়ে ছেচল্লিশটি গানের তেইশজন পদকর্তার নাম পাওয়া যায়। এঁরা সবাই ছিলেন মহাযানী বৌদ্ধধর্মের যোগাচার শাখার সাধক-কবি। সম্ভবত তন্ত্রযোগ সাধনায় এঁরা সকলেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, তাই প্রত্যেকেই সিদ্ধাচার্য নামে খ্যাত ছিলেন। মুখ্যত বজ্রযান ও সহজযানের গুরুরাই এই অভিধায় ভূষিত হতেন। তিব্বতি ইতিহাসে চুরাশি জন সিদ্ধাচার্যের নাম সুপ্রসিদ্ধ। লামা তারানাথের গ্রন্থ, মৈথিল কবি জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' ও বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধনামানুসরণ'' গ্রন্থে এই সব সিদ্ধাচার্যের নাম ও তাঁদের সম্পর্কে কিছু জনশ্রুতি উল্লিখিত হয়েছে।
===লুইপাদ===
টীকাকার মুনিদত্ত লুইপাদকে আদি সিদ্ধাচার্য বলেছেন। তিব্বতি তালিকায় তাঁর নামই সর্বাগ্রে পাওয়া যায়। অবশ্য তারানাথ বলেছেন, লুইপাদ চতুর্থ সিদ্ধাচার্য। তিনি উড্ডীয়ান-রাজ উদয়নের করণিক ছিলেন। পরে মহাসিদ্ধ শবরীপাদের কাছে তন্ত্রাভিষেক লাভ করেন এবং নির্বিঘ্নে ধ্যান করার জন্য বাংলার গঙ্গাতীরে আসেন। সাধনরত অবস্থায় তিনি মৎস্যের অন্ত্র ছাড়া আর কিছুই খেতেন না। এইজন্য নাথধর্মের অন্যতম গুরু মৎস্যেন্দ্রনাথ বা মীননাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। ‘মৎস্যেন্দ্র’ শব্দের অর্থ হল মাছেদের রাজা অর্থাৎ রুই। পাণিনির “ন র লয়োর্ভেদঃ” সূত্র অনুযায়ী বলা যায়, রুই ও লুইয়ের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। এইভাবে মীননাথ ও লুইপাদ অভিন্ন ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। অবশ্য সেটি বাস্তব সত্য কিনা সে নিয়ে সংশয় আছে। লুইপাদ বজ্রযান মতে বজ্রবারাহীর ধ্যান করতেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা অবশ্য লুইপাদকে ‘বাঙালি’ বলে ঘোষণা করেছে। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, লুইপাদ ছিলেন পাল সম্রাট ধর্মপালের কায়স্থ বা মুখ্য করণিক। সরহপাদ রচিত দোহাকোষের অদ্বয়বজ্র কৃত পঞ্জিকায় লুইপাদকে ‘কৈবর্ত’ বলা হয়েছে। চর্যাগীতি ও ''তত্ত্বস্বভাবদোহাকোষগীতিকাদৃষ্টি'' নামক দোহাকোষ ছাড়া লুইপাদ রচনা করেন ''শ্রীভগবদভিসময়'', ''অভিসময়বিভঙ্গ'', ''বুদ্ধোদয়'' ও ''বজ্রসত্ত্বসাধন''। প্রথম দুটি গ্রন্থ খুবই বিখ্যাত। বিশেষত দ্বিতীয় গ্রন্থটির উপর পরবর্তীকালে অনেক টীকা, ব্যাখ্যা, বৃত্তি, পঞ্জিকা ইত্যাদি রচিত হয়। চর্যার পুথিতে তাঁর দুটি গান (১ ও ২৯ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত।
===শবরীপাদ===
মহাসিদ্ধ শবরীপাদ ছিলেন লুইপাদের গুরু। শবরীপাদের গুরু ছিলেন রসসিদ্ধ নাগার্জুন। তারানাথের বিবরণে পাওয়া যায়, প্রথম জীবনে শবরীপাদ ছিলেন বঙ্গের এক নটাচার্য। নাগার্জুন তাঁকে শ্রীপর্বতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সেখানে তিনি শবরসুলভ জীবন যাপন করে ‘শবরীশ্বর’ বা ‘সিদ্ধ শবর’ উপাধি লাভ করেন। তন্ত্রমতে, শবর বা সবর শব্দের অর্থ বজ্রধর। তিনি কনিষ্ঠ সরোহ নামেও পরিচিত। ''তাঞ্জুর'' তালিকা অনুসারে, তিনি বজ্রযোগিনী সাধন-বিষয়ক কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এছাড়া ষড়ঙ্গ যোগের উপরেও তাঁর অধিকার বিভিন্ন রচনায় প্রমাণিত। তিনি ‘আচার্য’ ও ‘মহাচার্য’ বিশেষণেও ভূষিত। ''মহামুদ্রাবজ্রগীতি'', ''চিত্তগুহ্যগম্ভীরার্থগীতি'' প্রভৃতি তাঁর রচিত তত্ত্বগ্রন্থ। বৌদ্ধ সাধনমালায় ''সিতকুরুকুল্লাসাধন'' ও ''বজ্রযোগিনী আরাধনাবিধি'' নামে দুটি রচনায় তাঁর ভণিতা পাওয়া যায়। চর্যাপদের পুথিতে তাঁর দুটি গান (২৮ ও ৫০ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত।
===ভুসুকুপাদ===
অন্যতম শ্রেষ্ঠ চর্যাকার ভুসুকুপাদের ব্যক্তিগত ও প্রাচীনত্ব নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। মহাযান মধ্যমক শূন্যবাদের প্রবক্তা শান্তিদেব ও চর্যাকার ভুসুকুপাদ অভিন্ন ব্যক্তি কিনা তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে কিছু মতান্তর আছে। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ''শিক্ষাসমুচ্চয়'' ও ''বোধিচর্যাবতার''। তারানাথ এই সকল গ্রন্থের রচয়িতাকে সৌরাষ্ট্রের অধিবাসী বলেছেন। কিন্তু হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘বাঙালি’ বলে স্বীকার করেছেন। শাস্ত্রী মহাশয় এশিয়াটিক সোসাইটির ৯৯৯০ সংখ্যক তালপাতার পুথি থেকে শান্তিদেবের যে জীবনী উদ্ধার করেছেন, সেটি এইরকম: শান্তিদেব ছিলেন রাজপুত্র। যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হওয়ার প্রাক্কালে তাঁর মা তাঁকে বোধিসত্ত্ব মঞ্জুবজ্রের নিকট উপদেশ নিতে বলেন। শান্তিদেব ঘোড়ায় চড়ে মঞ্জুবজ্রের নিকট যাত্রা করলেন। পথে মঞ্জুবজ্রের এক শিষ্যের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল এবং তারপর বারো বছর মঞ্জুবজ্রের কাছে থেকে তিনি মঞ্জুশ্রী মন্ত্রে সিদ্ধ হলেন। তারপরে তিনি ‘রাউত’ বা অশ্বারোহীর বেশে মগধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। মগধরাজের নিকট ‘অচল সেন’ নামে নিজের পরিচয় দিলেন। মগধরাজ অশ্বারোহী তরবারিধারী অচলকে সেনাপতি পদে বরণ করলেন। তরবারিকে আশ্রয় করে তাঁর অদ্ভুত সিদ্ধি প্রকাশ পেল। তখন তিনি রাজকার্য ত্যাগ করে ভিক্ষুর বেশে নালন্দায় প্রবেশ করলেন। এখানেই তিনি তাঁর গ্রন্থদ্বয় রচনা করেন। ভোজনকালে, সুপ্ত অবস্থায় ও কুটি গমনে অর্থাৎ বিশ্রামকালে ‘প্রভাস্বর’ বা সমাধি সমাপন্ন থাকতেন বলে তিনি ‘ভুসুকু’ নামে খ্যাতি লাভ করেন। এই নামেই তিনি চর্যাগীতি রচনা করেন। পদকর্তা ভুসুকুর গানে আছে “রাউতু ভনই কট”। এই ভণিতাই দুই ব্যক্তিত্বকে এক করে দিয়েছে। তাছাড়া নারোপা রচিত ''সেকোদ্দেশ টীকা'' গ্রন্থে শান্তিদেব ও ভুসুকুপাদকে একই ব্যক্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বিধুশেখর শাস্ত্রী ও ড. সুকুমার সেন এই দুজনকে পৃথক ব্যক্তি বলে মনে করেন। ড. সেনের মতে, ভুসুকুপাদ শান্তিদেবের তুলনায় অনেক পরবর্তীকালের ব্যক্তি। তিনি সহজযানী সিদ্ধাচার্য। তাঁর রচিত ''চতুরাভরণ'' গ্রন্থের লিপিকাল ১২৯৫ খ্রিস্টাব্দ ধরে ড. সেন তাঁকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষার্ধের ব্যক্তি মনে করেছেন। কিন্তু এই ধারণা সম্ভবত সঠিক নয়। ভুসুকুপাদ ত্রয়োদশ শতকের কবি হলে দ্বাদশ শতকের পূর্বে রচিত কোনও গ্রন্থে তাঁর পদ স্থান লাভ করতে পারে না। তাছাড়া ভুসুকুপাদ যে রাজপুত্র ও রাউত ছিলেন, তার প্রমাণ তাঁর পদেই পাওয়া যায়। “আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী” ভণিতার সূত্রে তাঁকে বাঙালি মনে করা হয়। তাঁর পদে দু-একটি বঙ্গীয় বাগ্বিধিও লক্ষণীয়। চর্যার পুথিতে ভুসুকুপাদের ৮টি গান সংকলিত হয়েছে: ৬, ২১, ২৩, ২৭, ৩০, ৪১, ৪৩ ও ৪৯ সংখ্যক চর্যা।
===সরহপাদ===
লামা তারানাথ সরহপাদকে আদি সিদ্ধাচার্য বলে উল্লেখ করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় সরহপাদকে বলা হয়েছে ‘আচার্য’, ‘মহাচার্য’, ‘সিদ্ধ মহাচার্য’, ‘মহাব্রাহ্মণ’, ‘যোগী’, ‘মহাযোগী’, ‘যোগীশ্বর’ ও ‘মহাশবর’ (‘শবর’ শব্দটি বজ্রযানে বজ্রধরের প্রতীক)। সরহপাদ উড়িষ্যায় ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেদাদি শাস্ত্রে পারঙ্গম ছিলেন। নালন্দায় তাঁর শিক্ষাগুরু ছিলেন ধর্মকীর্তি হরিভদ্র। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, হরিভদ্র ছিলেন গৌড়াধিপতি ধর্মপালের (রাজত্বকাল ৭৭০—৮১৫ খ্রিস্টাব্দ) সমসাময়িক। সেই হিসেবে সরহপাদ অষ্টম শতাব্দীর ব্যক্তি ছিলেন এবং সম্ভবত তাঁর মৃত্যু হয় ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে। আচার্য স্থবিরকালের নিকট সরহপাদ অভিষিক্ত হন। দাক্ষিণাত্যে এক শরকারের (arrow-smith) কন্যাকে মুদ্রা রূপে গ্রহণ করায় তাঁর নাম হয় শরহ বা সরহ। তাঁর অপর নাম রাহুলভদ্র, সরোরুহবজ্র ও সরোজবজ্র। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, সরহপাদের ভিক্ষুনাম রাহুলভদ্র। বজ্রযানের সঙ্গে সম্পর্ক বোঝাতে সরোরুহবজ্র বা সরোজবজ্র নাম ব্যবহার করা হয়েছে। রাহুল সাংস্কৃত্যায়ন বলেছেন, ‘পূর্বদিশা’ অঞ্চলের অন্তর্গত ‘রাজ্ঞী’ (বর্তমান বিহারের ভাগলপুর) নামক স্থানে তাঁর জন্ম। অবশ্য অনেকেই মনে করেন, সরহপাদ ছিলেন বরেন্দ্রভূমির ব্যক্তি। তাঁর লেখা ৩৯ সংখ্যক চর্যাটির বাহ্য অর্থ থেকে জানা যায় যে, তিনি বঙ্গে জায়া গ্রহণ করেছিলেন: “বঙ্গে জাআ নিলেসি”। তাঁর পদে ব্যবহৃত প্রবাদ-প্রবচন ও বাগ্বিধির বিচারেও তাঁকে গৌড়ের অধিবাসী মনে হয়। রসসিদ্ধ নাগার্জুনকে তিনি সহজ মতে অভিষিক্ত করেন। সংস্কৃত, অপভ্রংশ ও প্রত্ন বাংলা তিন ভাষাতেই সরহপাদ গ্রন্থাদি রচনা করেন। সংস্কৃতে তিনি রচনা করেন ''বুদ্ধকপালসাধন'', ''হেবজ্রতন্ত্রপঞ্জিকাপদ্মিনীনাম'' প্রভৃতি গ্রন্থ। অপভ্রংশে রচিত তাঁর সহজতত্ত্ব ও সহজ-সাধনা বিষয়ক দোহা ও দোহাজাতীয় গীতি সংকলনগুলির মধ্যে ''দোহাকোষগীতি'', ''ক-খ দোহা'' (ক-কারাদি বর্ণকে আদ্যক্ষর করে বর্ণার্থমূলক দোহা), ''মহামুদ্রোপদেশবজ্রগুহ্যগীতি'', ''কায়বাক্চিত্তঅমনসিকার'', ''ডাকিনীগুহ্যগীতি'' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চর্যাগীতির পুথিতে তাঁর ৪টি পদ (২২, ৩২, ৩৮ ও ৩৯ সংখ্যক পদ) সংকলিত।
===কাহ্নপাদ===
চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত ৫০টি পদের মধ্যে ১৩টি পদই (৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ৩৬, ৪০, ৪২ ও ৪৫ সংখ্যক চর্যা; এবং টীকা অনুসারে, মূল পুথিতে লুপ্ত ২৪ সংখ্যক চর্যাটি) কাহ্নপাদের রচনা। তিব্বতি ইতিহাস, ''তাঞ্জুর'' তালিকা, চর্যাগীতি ও বাংলা সিদ্ধাচার্য-গীতিকায় (নাথগীতিকা) কাহ্নপাদ একটি বিশিষ্ট নাম। টীকাকার তাঁকে ‘কাহ্নপাদ’, ‘কৃষ্ণপাদ’, ‘কৃষ্ণাচার্যপাদ’, ‘কৃষ্ণবজ্রপাদ’, ‘কৃষ্ণাচার্য’, ‘কৃষ্ণাচার্য চরণ’ ইত্যাদি নামে উল্লেখ করেছেন। তিনি সিদ্ধ সাধক, মহাপণ্ডিত ও মণ্ডলাচার্যদের ভিতর সিদ্ধাচার্য। তবে কাহ্নপাদ দুই জন কবির নাম কিনা এবং তাঁর সময়কাল নিয়ে বিতর্ক আছে। ড. সুকুমার সেনের মতে, ১০, ১১, ১৮, ১৯, ৩৬ ও ৪২ সংখ্যক পদগুলি জালন্ধরীপাদের শিষ্য তান্ত্রিক যোগী কাহ্নপাদের এবং ৭, ৯, ১২, ১৩, ৪০ ও ৪৫ সংখ্যক পদগুলি অপর এক কাহ্নপাদের রচনা। কয়েকটি গানে ‘জ্ঞান উপদেশের প্রবণতা’ এবং অন্য গানগুলিতে ডোম্বী-বিবাহের সন্ধ্যা-সংকেতের ভিত্তিতে দুই কাহ্নের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হলেও, একই সাধক-কবি দুই ভিন্ন শ্রেণির গান রচনা করেছেন—এই যুক্তিতে কেউ কেউ দুই কাহ্নের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন। কাহ্নপাদের পরিচয় নিয়েও অনেকগুলি জনশ্রুতি আছে। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে ভারতবাসী ও উড়িষ্যা থেকে আগত বলা হয়েছে। তিব্বতের ইতিহাস অনুসারে, তাঁর জন্মস্থান কর্ণ-নগর। জনশ্রুতিতে বলা হয়েছে তাঁর জন্ম পদ্মনগর বা বিদ্যানগর বা বিজয়নগরে। এই স্থানগুলির অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। নাথগীতিকায় তাঁর একটি কীর্তিস্থল হিসেবে বঙ্গ মেহারকুলের উল্লেখ আছে। কাহ্নপাদের পদে বাংলা শব্দভাণ্ডারের প্রাচুর্যও লক্ষণীয়। কাহ্নপাদের জীবনকাহিনিও বিচিত্র। প্রথম জীবনে বিরূপপাদ বা বিরুআপাদের শিষ্য কাহ্নপাদ ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে চারটি পাপ করার পর জালন্ধরীপাদের শরণ নেন। জালন্ধরীপাদের নির্দেশে বজ্রবারাহীর উপাসনার করে তিনি শাপমুক্ত হন। বিরূপপাদের সঙ্গে কাহ্নপাদের যোগের ইঙ্গিত তাঁর পদেই পাওয়া যায়। তবে জালন্ধরীপাদের সঙ্গেই তাঁর যোগ বেশি। চর্যাগীতিতে কাহ্নপাদ জালন্ধরীপাদকে সাক্ষী মেনে মেনেছেন: “শাখি করিব জালন্ধরী পাএ”। তিব্বতি ইতিহাসে আছে, জালন্ধরীর শ্রেষ্ঠ শিষ্য কৃষ্ণ অঙ্গে হাড়ের মালা ও হস্তে ডমরু ধারণ করবেন। চর্যাগানে কাহ্নপাদ তাই করেছেন বলে উল্লিখিত। আবার নাথগীতিকায় বলা হয়েছে হাড়িফাকে (জালন্ধরীপাদ) নিত্য সেবা করেন কানফা যোগাই (কাহ্নপাদ)। কাহ্নপাদ ''দোহাকোষপঞ্জিকা'' সহ অনেকগুলি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ''হেবজ্রতন্ত্র'' গ্রন্থের উপর একটি গ্রন্থও তাঁর নামে পাওয়া যায়।
===বিরূপপাদ===
বিরূপপাদ বা বিরুআপাদ ছিলেন বজ্রযোগিনীর সাধক। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে ‘আচার্য’, ‘মহাচার্য’, ‘যোগীশ্বর’ ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করা হয়েছে। সিদ্ধ সাধক হিসেবে তিনি এত বিখ্যাত ছিলেন যে, পরবর্তীকালে অনেকেই তাঁর নাম করেছেন। তাঁর কোনও গুরু ছিল না। জনশ্রুতি অনুসারে, তিনি ছিলেন সিদ্ধাচার্য কাহ্নপাদের প্রথম জীবনের গুরু। তাঁর নামে ''গীতিকা'', ''কর্মচণ্ডালিকাদোহাকোষগীতি'' প্রভৃতি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। লামা তারানাথের গ্রন্থে তাঁর মদ্যপানে আসক্তি ও শুণ্ডিনী সাহচর্যের কথা পাওয়া যায়। চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত তাঁর একমাত্র চর্যাটিতে (৩ সংখ্যক পদ) সেই শুণ্ডিনীর মদ চোলাইয়ের একটি বাস্তব চিত্র অঙ্কিত হয়েছে।
===শান্তিপাদ===
শান্তিপাদ প্রাচীন সিদ্ধাচার্য। ড. সুকুমার সেনও তাঁকে প্রাচীন চর্যাকার বলে স্বীকার করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা মতে, রত্নাকর শান্তিই শান্তিপাদ। তিব্বতি তালিকায় রত্নাকর শান্তি ‘আচার্য’, ‘আচার্যপাদ’ ও ‘মহাপণ্ডিত’ বিশেষণে ভূষিত। লামা তারানাথের বিবরণ অনুসারে, তিনি শবরীপাদের সমসাময়িক, অর্থাৎ অষ্টম শতকের মধ্যভাগের ব্যক্তিত্ব। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁর নামে ''মুক্তাবলী নামি হেবজ্র পঞ্জিকা'' ও ''কুসুমাঞ্জলি নাম গুহ্যসমাজ নিবন্ধ'' নামে দুই গ্রন্থ উল্লিখিত হয়েছে। এগুলি সহজ-সাধনার ভিত্তি ''হেবজ্রতন্ত্র'' ও ''গুহ্যসমাজ তন্ত্র'' গ্রন্থদ্বয়ের টীকা। সহজযানের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগের সাক্ষর বহন করছে ''সহজরতিসংযোগ'' ও ''সহজ যোগক্রম'' গ্রন্থ দুটি। তাঁর অপর গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ''সুখদুঃখপরিত্যাগদৃষ্টি''। এছাড়া তিনি বজ্রতারা ও মহামায়ার সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থও রচনা করেন। শান্তিদেব ও শান্তিপাদকে কেউ কেউ অভিন্ন মনে করেন। কিন্তু এঁরা যে পৃথক ব্যক্তি তা নানা সূত্র থেকে জানা যায়। শান্তিদেবের দুটি পদ (১৫ ও ২৬ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত হয়েছে চর্যাগীতির পুথিতে।
===দারিকপাদ===
দারিকপাদকে অভিষিক্ত করেন লুইপাদ। গানের ভণিতাতেও দারিকপাদ বলেছেন, “লুইপাঅ পসাএঁ দারিক”। লামা তারানাথের মতে, দারিকপাদ ছিলেন উড়িষ্যার রাজা। তিনি সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় দারিকপাদের নামে ''শ্রীচক্রতন্ত্ররাজ'' গ্রন্থের ''সেকপ্রক্রিয়াবৃত্তি'' ও ''শ্রীচক্রসম্বরসাধন'' গ্রন্থের নাম পাওয়া যায়। চর্যাগীতির পুথিতে তাঁর একটি মাত্র পদই (৩৪ সংখ্যক চর্যা) পাওয়া গিয়েছে।
===ডোম্বীপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য ডোম্বী, আচার্য ডোম্বীপাদ এবং আচার্য বা মহাচার্য ডোম্বী-হেরুকের নামে একাধিক গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়। লামা তারানাথের মতে, এঁরা সবাই একই ব্যক্তি এবং এই ডোম্বী-হেরুক ছিলেন বিরূপপাদের শিষ্য কাল বিরূপ বা কাহ্নপাদের শিষ্য। তিব্বতি তালিকায় সিদ্ধ ডোম্বী-হেরুককে সন্ন্যাসী ও মগধের রাজা বলা হয়েছে। তারানাথ অবশ্য বলেন, ডোম্বী-হেরুক ছিলেন ত্রিপুরার রাজপুত্র। মুদ্রিকা নিয়ে সাধনা করতেন বলে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন। কিন্তু রাজ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ডোম্বী-হেরুক আশ্চর্য সিদ্ধাই দেখিয়ে দুর্ভিক্ষ নিবারণ করেন। তখন লোকে তাঁর সিদ্ধির কথা বুঝতে পারে। ডোম্বী-হেরুকের শিষ্যবর্গ ছিলেন ডোম্বী (আধ্যাত্মিক অর্থে বায়ুরূপা অবধূতিকা) ধরার সাধক। তারানাথ আরও বলেছেন যে, ডোম্বী-হেরুক রাঢ়ের রাজাকেও অভিষিক্ত করেন, ফলে রাঢ় অঞ্চল থেকে তীর্থিক ধর্ম লোপ পায়। মুনিদত্তও ডোম্বীপাদকে ‘লাড়ী’ বলে অভিহিত করেছেন। তাই ড. সুকুমার সেন তাঁর রাঢ় অঞ্চলের মানুষ মনে করেন। ড. বিনয়তোষ ভট্টাচার্যের মতে, তিনি ছিলেন অষ্টম শতকের লোক। চর্যাগীতির পুথিতে ডোম্বীপাদের মাত্র একটি পদ (১৪ সংখ্যক চর্যা) সংকলিত হয়েছে। টীকাকার এটির ব্যাখ্যা দেননি। তবে কাহ্নপাদের অনেক পদে ডোম্বীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
===কুক্কুরীপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য কুক্কুরীপাদ কুকুরাজ বা কুক্কুররাজ নামে অভিহিত হয়েছেন। তাঁর নামে অনেকগুলি গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। ''গুহ্যার্থধর ব্যুহ'' নামে তিনি বজ্রসত্ত্ব, বজ্রহেরুক, পদ্মরত্নেশ্বর প্রমুখের সাধন-সংক্রান্ত গ্রন্থ রচনা করেছেন। তারানাথের ভাষ্য অনুসারে, সর্বদা সঙ্গে একটি কুক্কুরী থাকত বলে তিনি কুক্কুরীপাদ নামে পরিচিত হয়েছেন। ড. সুকুমার সেন অবশ্য কুক্কুটিকপাদ থেকে কুক্কুরীপাদ শব্দটি নিষ্পন্ন করতে চান। চর্যাপদের পুথিতে তাঁর তিনটি চর্যা সংকলিত হয়েছিল; তার মধ্যে ২ ও ২০ সংখ্যক চর্যাটি পাওয়া গিয়েছে এবং ৪৮ সংখ্যক চর্যাটি লুপ্ত।
===চাটিলপাদ===
পদকর্তা চাটিলপাদের অস্তিত্ব তাঁর একটি পদের (৫ সংখ্যক চর্যা) উপর নির্ভরশীল। কারণ তারানাথের বর্ণনায় বা ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁর নাম দেখা যায় না। কেবল জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থের সিদ্ধা-বর্ণনায় ‘চাটল’ এবং বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধনামানুসরণ'' গ্রন্থে ‘চাটলা’ নাম পাওয়া যায়। ৫ সংখ্যক পদে তিনি নিজেকে ‘অনুত্তর সামী’ বলে আত্মপ্রশংসা করেছেন বলে, ড. সুকুমার সেন এটিকে চাটিলপাদের কোনও শিষ্যের রচনা বলে মনে করেন। কিন্তু প্রাচীন বা মধ্যযুগীয় সাহিত্যে কবির আত্মপ্রশংসা বিরল নয় বলেই ড. সেনের মত অনেকে গ্রহণ করতে পারেননি।
===আর্যদেব===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আর্যদেব বা আজদেবকে ‘আচার্য’ ও ‘মহাচার্য’ বলা হয়েছে। তিনি সংস্কৃতে সুপণ্ডিত ছিলেন। চতুষ্পীঠ যোগতন্ত্র সাধন সম্পর্কে তিনি গ্রন্থ রচনা করেন। সহজ-সাধনায় চিত্তশোধন-বিষয়ক মূল্যবান গ্রন্থ ''চিত্তাবরণবিশোধন নামপ্রকরণ'' তাঁর রচনা। অপভ্রংশ ভাষায় তিনি রচনা করেন ''কাণেরি গীতিকা''। প্রভুভাই প্যাটেলের মতে, আর্যদেব অষ্টম শতকের প্রথমার্ধে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন উড়িষ্যারাজ ইন্দ্রভূতি এবং সরহপাদের শিষ্য নাগার্জুনের সমসাময়িক। আর্যদেবের একটি মাত্র চর্যা (৩১ সংখ্যক পদ) সংকলিত হয়েছে চর্যাগীতির পুথিতে।
===কম্বলাম্বরপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য বা মহাচার্য কম্বলের নাম পাওয়া যায়; সেই সঙ্গে প্রজ্ঞারক্ষিতের গুরু মহাসিদ্ধ কম্বলাম্বরপাদের নামও উল্লিখিত হয়েছে এখানে। তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ''অভিসময়নামপঞ্জিকা''। লামা তারানাথের বিবরণ থেকে অনুমান করা হয় যে, লুইপাদের শিষ্য দারিকপাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল এবং সেই সূত্রে লুইপাদের গ্রন্থটির পঞ্জিকা রচনা করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়। তারানাথ কম্বলাম্বরপাদকে বজ্রঘণ্টের শিষ্য বলেছেন। ডোম্বী-হেরুক, জালন্ধরীপাদ প্রমুখের সঙ্গে কম্বলাম্বরপাদের যোগাযোগ ছিল। একটি কিংবদন্তি অনুযায়ী, কম্বলাম্বরপাদ ছিলেন ঊড়িষ্যার এক রাজকুমার। শ্মশানে সাধনা করে তিনি মন্ত্রসিদ্ধ হয়েছিলেন। মন্ত্রবতী শ্মশান-ডাকিনী তাঁকে হত্যা করতে উদ্যত হলে শ্মশানে একটি কম্বল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। তাতেই তিনি ‘কম্বল’ নামে খ্যাত হন। তাঁর কিছু সংস্কৃত রচনার অংশ উদ্ধৃত হয়েছে সরহপাদ রচিত দোহার অদ্বয়বজ্র কৃত টীকায়। সেখানে তিনি শাস্ত্রের শব্দাক্ষরের অসারতা প্রতিপন্ন করেছেন। চর্যাগীতির পুথিতে ৮ সংখ্যক পদটি কম্বলাম্বরপাদের রচনা। এটিতে তিনি ‘কামলি’ নামে আত্মপরিচয় দিয়েছেন। পদটি সাধনতত্ত্বের রূপক। নৌকা বাওয়ার রূপকে কবি মহাসুখচক্রের উদ্দেশ্যে বোধিচিত্তের যাত্রা বর্ণনা করেছেন। বিভিন্ন পংক্তিতে নৌকা বাওয়ার বাস্তব চিত্র এই বিষয়ে কবির বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিচায়ক। সন্ধ্যা-সংকেতে ও উৎপ্রেক্ষায় পদটি বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে।
===বীণাপাদ===
''তাঞ্জুর'' তালিকায় বিরুআপাদের বংশধর রূপে বীণাপাদের নাম উল্লিখিত হয়েছে। অবশ্য লামা তারানাথের মতে, তিনি ছিলেন অশ্বপাদের শিষ্য। ডোম্বী-হেরুকের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। সেই হিসেবে তিনি অষ্টম শতকের শেষার্ধের ব্যক্তি। ড. সুকুমার সেন বলেছেন, “টীকাকারের অনুকরণে একটি চর্যা (১৭) অকারণে বীণাপাদের রচিত বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছে। কিন্তু ভণিতা বলিয়া নির্দেশ করিতে পারি এমন কোন নাম চর্যাটিতে নাই।” কিন্তু অধ্যাপক জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তীর মতে, “চর্যাগানে অনেক ক্ষেত্রে লেখক রূপকের আবরণে আত্মগোপন করিয়াছেন, কোথায়ও বা সরাসরি ভণিতা না দিয়া নিজেই গীতিকবিতার নায়ক সাজিয়াছেন। কাহ্নপাদের ১০ সংখ্যক চর্যায় ও শবরপাদের ২৮ ও ৫০ সংখ্যক চর্যায় এই রীতিই অবলম্বিত হইয়াছে। কাজেই বীণাপাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না।” গুহ্যাভিষেক, মহাভিষেক ও বজ্রডাকিনী নিষ্পন্নক্রম বিষয়ে বীণাপাদ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ১৭ সংখ্যক চর্যাটিও নিষ্পন্নক্রমের সাধন-সংক্রান্ত চর্যা। সেকমণ্ডলে আলি-কালির দ্বার রুদ্ধ হয়ে চিত্ত অবধূতী মার্গে প্রবিষ্ট হলে কীভাবে হেরুক-বীণায় শূন্যতার ধ্বনি ওঠে এবং কীভাবে যোগিনী-অভিষঙ্গে যোগী বজ্রনৃত্যে ও বজ্রগীতে তন্ময় হন, তারই একটি ছবি ধরা পড়েছে ১৭ সংখ্যক চর্যাটিতে। সাধকসত্ত্বাই এখানে বীণাযন্ত্র-স্বরূপ। বীণার রূপকল্পনায় নীরস দেহতত্ত্ব এই পদে সরস হয়ে উঠেছে। গানটি শুধু তত্ত্ববাহীই নয়, নানা তথ্যে সমৃদ্ধ এবং কবির বস্তুদৃষ্টির পরিচায়ক।
===ভাদেপাদ===
কাহ্নপাদের যে ছয়জন শিষ্যের একটি করে গান চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত হয়েছে, তাঁদের অন্যতম ভাদেপাদ বা ভদ্রপাদ। অন্যত্র তিনি ভদ্রচন্দ্র বা ভদ্রদত্ত বা ভদ্রোক নামেও পরিচিত। লামা তারানাথ তাঁর ‘গুহ্য’ নামটির কথা উল্লেখ করেছেন। বাংলা গোপীচন্দ্রের গানে উল্লিখিত কৃষ্ণাচার্যের শিষ্য ‘বাইল ভাদাই’ সম্ভবত ভদ্রপাদ। কানফা গোপীচন্দ্রকে উদ্ধার করতে সোনার গোপীচন্দ্র মূর্তি ক্রুদ্ধ হাড়িপার সম্মুখে স্থাপনের উপদেশ দেন। হাড়িপার ক্রোধে সেই স্বর্ণমূর্তি ভস্ম হয়ে যায়। গুরু জালন্ধরী এই কথা জানতে পেরে কানফাকে শাপ দেন। শেষে ময়নামতীর অনুনয়ে সিদ্ধ হাড়িপা বলেন যে, ‘বাইল ভাদাই’ শাপমুক্ত করবেন কানফাকে। সিদ্ধাচার্যদের অনেকেই শিষ্য কর্তৃক উদ্ধার লাভ করেছিলেন। গোরক্ষনাথ যেমন গুরু মীননাথকে কামবাসনায় ঘেরা কদলীরাজ্য থেকে মুক্ত করেছিলেন, তেমনই হয়তো গুরু কানফা বা কাহ্নপাদকে শাপমুক্ত করে থাকবেন ‘বাইল ভাদাই’ বা ভদ্রপাদ। নাথপন্থার সঙ্গে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মের যোগ এই কাহিনির মাধ্যমে বোঝা গিয়েছে। কিন্তু ভাদেপাদের গানে তান্ত্রিকতার ছাপ স্পষ্ট নয়, পারিভাষিক শব্দের ব্যবহারও কম। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় ভাদেপাদকে বলা হয়েছে ‘ভাণ্ডারিন্’ (আচার্য)। তাঁর রচিত গ্রন্থটির নাম ''সহজানন্দদোহাকোষগীতিকাদৃষ্টি''। ৩৫ সংখ্যক চর্যাগীতিটি ভাদেপাদের রচনা। গুরু উপদেশে কীভাবে তিনি সহজচিত্ত লাভ করেছিলেন, তা উল্লিখিত হয়েছে এই পদে। টীকাকার বলেছেন, ভদ্রপাদ ‘জ্ঞানানন্দপ্রমোদ’-যুক্ত সিদ্ধাচার্য। পদটিতেও সর্বধর্ম-অনুপলম্ভরূপ চরম জ্ঞানের স্বরূপ বিধৃত হয়েছে। পদটিতে ‘বাজুল’ (বজ্রকুল) শব্দটির প্রয়োগ দেখে মনে হয়, ভাদেপাদ বজ্রকুলের সাধক ছিলেন।
===মহীধরপাদ===
চর্যাগীতির পুথিতে প্রাপ্ত ১৬ সংখ্যক পদটির রচয়িতা মহিণ্ডা। ভণিতায় ‘মহিণ্ডা’ নামটি পাওয়া গেলেও টীকায় তাঁর নাম মহীধরপাদ। লামা তারানাথ তাঁকে ‘মহিল’ বলে উল্লেখ করেছেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকা বলা হয়েছে যে, ‘মহিপাদ’ ছিলেন আচার্য কৃষ্ণের অর্থাৎ কাহ্নপাদের বংশধর (শিষ্য)। ''বায়ুতত্ত্ব দোহাগীতিকা'' গ্রন্থটি মহীধরপাদের রচনা। তাঁর রচিত চর্যাগীতিটি ধ্বনিগাম্ভীর্যে, ২৬ মাত্রার দীর্ঘায়িত ছন্দের গজগতিতে এবং রূপক-কল্পনার সৌন্দর্যে বেশ উপভোগ্য। টীকাকার বলেছেন, "জ্ঞানপানপ্রমত্তো হি সিদ্ধাচার্য মহীধর”। এই জ্ঞানদৃষ্টির সঙ্গে কবির শিল্পদৃষ্টিও প্রশংসনীয়। পদটির সঙ্গে কাহ্নপাদ রচিত ৯ সংখ্যক পদের ভাব ও চিত্র-সাদৃশ্য কাহ্নপাদের সঙ্গে মহীধরপাদের নিকট সম্পর্কেরই সূচক। তবে ড. নির্মল দাশ এই পদের ভণিতায় ক্রিয়াপদে বহুবচন দেখে অনুমান করেন যে, পদটি মহীধরপাদের “শিষ্যানুশিষ্যদেরও” রচনা হতে পারে।
===ধামপাদ===
লামা তারানাথের মতে, ধম্মপাদ বা ধামপাদ ছিলেন কাহ্নপাদের শিষ্য। কাহ্নপাদ যখন গুরুকে উদ্ধার করতে শিষ্যদের নিয়ে গোবিন্দচন্দ্রের রাজ্যে আসেন, তখন রাজা তাঁদের উদ্দেশ্যে এক ভোজের আয়োজন করেন। কাহ্নপাদ বলেন, শিষ্য ধম্ম ও ধূমকে ভোজনে তৃপ্ত করলেই সকলে পরিতৃপ্ত হবেন। রাজার সংগৃহীত সমস্ত ভোজ্যদ্রব্য ধম্ম ও ধূম নিঃশেষ করেন। এতে সবাই তাঁদের সিদ্ধি বুঝতে পারেন। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় আচার্য ধর্মপাদকে কৃষ্ণ অর্থাৎ কাহ্নপাদের বংশধর বলা হয়েছে। ধামপাদ ''সুগত দৃষ্টি গীতিকা'', ''মহাযান নিষ্পন্নক্রম'', ''হুঙ্কার চিত্তবিন্দু ভাবনাক্রম'' প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন। চর্যাগীতির পুথিতে সংকলিত ৪৭ সংখ্যক পদটি তাঁর রচনা। এই পদেও নিষ্পন্নক্রম সাধনের কথাই বিবৃত হয়েছে: প্রজ্ঞোপায় সমতাযোগে চণ্ডালী প্রজ্বলিত হয়, অপরিশুদ্ধা নাড়ী দগ্ধ হয় এবং তখন নাড়ীর অধিদেবতা ও চিত্ত বিশ্রাম লাভ করে মহাসুখচক্রে। প্রকারান্তরে কাহ্নপাদ কথিত ‘কামচণ্ডালী’ সাধনার কথাই এখানে পুনর্কথিত হয়েছে। গানটি ''হেবজ্রতন্ত্র''-এর ‘চণ্ডালী জ্বলিতা নাভৌ’ শ্লোকটির ভাষা-অনুবাদ।
===কঙ্কণ===
চর্যাগীতির পুথিতে ৪৪ সংখ্যক পদটি কঙ্কণের রচনা। পুথিতে তাঁর নাম কোঙ্কণ বলে উল্লিখিত। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীও তাঁকে সেই নামেই অভিহিত করেছেন। কিন্তু ড. সুকুমার সেনের মতে, তাঁর নাম কৌঙ্কণ। ড. নির্মল দাশের মতে, কঙ্কণ কবির ছদ্মনাম। সম্ভবত কঙ্কণ ছিল তাঁর লব্ধ-উপঢৌকন। সেকালে কবিরা এভাবে প্রাপ্ত উপঢৌকনের নামে ছদ্মনাম গ্রহণ করতেন। কথিত আছে, তিনি আচার্য কম্বলের বংশধর। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় তাঁকে সিদ্ধ সাধক বলা হয়েছে। টীকাকার তাঁকে পরম করুণাসব পানে প্রমুদিত ‘কঙ্কণ সিদ্ধাচার্য’ বলেছেন। কঙ্কণের পদটিতে মধ্যমা নিরোধের যুগনদ্ধ ফলোদয়ের অবস্থাটির বর্ণনা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র মাপের মাত্রা ছন্দ (১১ মাত্রার রসিকা) কঙ্কণই ব্যবহার করেছেন। ছন্দে বৈচিত্র্য এনেছে ষোড়শ-মাত্রিক বন্ধনের সঙ্গে ১১ মাত্রার চরণ: “সুনে সুন মিলিআ জবেঁ। সঅল ধাম উইআ তবেঁ।।” ''চর্যাদোহাকোষগীতিকা'' তাঁর রচনা। সম্ভবত আর কোনও গ্রন্থ তিনি রচনা করেননি।
===গুণ্ডরীপাদ===
৪ সংখ্যক চর্যাগীতিটি গুণ্ডরীপাদের রচনা। গানটিতে ‘গুড়রী’ ভণিতা দেওয়া হয়েছে। অ্যালবার্ট গ্রানওয়েডেল সিদ্ধাচার্যদের যে তালিকা প্রস্তুত করেছেন, তাতে গুণ্ডরী নামটি আছে। বিনয়শ্রীর ''সিদ্ধবন্দনা'' গ্রন্থেও তাঁর নাম পাওয়া যায়। কিন্তু ''তাঞ্জুর'' তালিকায় এই নামের কোনও লেখকের কথা উল্লিখিত হয়নি। ড. সুকুমার সেনের মতে, গুণ্ডরী সম্ভবত ব্যক্তিনাম নয়, কবির জাতি বা পেশাবাচক নামক এবং সম্ভবত মশলা ইত্যাদি গুঁড়ো করা ছিল কবির পেশা। পুথিতে সংকলিত চর্যাটিতে কুন্দুরু যোগের একটি সংকেত পাওয়া যায়। পদটিতে নরনারীর প্রেম-মিলনের স্থূল বর্ণনা আছে। ড. সেন গানটিতে যৌন-তান্ত্রিকতার স্পষ্ট ইঙ্গিত ও পারিভাষিক শব্দের আধিক্যের কারণে পদকর্তাকে অপেক্ষাকৃত অর্বাচীন বলে বিবেচনা করেছেন। পদের শেষে কবির আত্মপ্রশংসা লক্ষণীয়।
===তাড়কপাদ===
৩৭ সংখ্যক চর্যাগীতির রচয়িতা হিসেবে তাড়কের নাম উল্লিখিত হয়েছে। ''তাঞ্জুর'' তালিকায় যে মহাপণ্ডিত তারশ্রী ও উপাধ্যায় তারপাদের নাম পাওয়া যায়, তাড়ক তাঁদেরই মধ্যে কেউ হতে পারেন। টীকাকার তাঁকে সিদ্ধাচার্য বলেছেন: “সিদ্ধাচার্য হি তাড়ক।” পদটিতে সহজজ্ঞানের অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। কবির বস্তুদৃষ্টির পরিচয়ও পাওয়া যায় এতে। নৌকা-পারাপার ও পারানির কড়ি খোঁজার ছবিটি মনোজ্ঞ।
===জয়নন্দী===
৪৬ সংখ্যক চর্যাগীতিটি জয়নন্দীর রচনা। তিনি ‘জঅনন্দি’ নামেও পরিচিত। লামা তারানাথের গ্রন্থে জয়নন্দীর নাম পাওয়া যায় না। গ্রানওয়েডেল কৃত সিদ্ধাচার্যদের নামের তালিকায় ‘জয়নন্দ’ নামটি পাওয়া যায়। টীকাকার তাঁকে পরম করুণা অর্জনের নিমিত্ত ‘অভিজ্ঞালাভী’ বলেছেন। প্রাপ্ত পদটিতে পরমার্থ চিত্তের অদাহ্য অপ্লাব্য অচ্ছেদ্য রূপের বর্ণনা এবং পরমার্থতত্ত্বে লক্ষণ কথিত হয়েছে। পদটি অলংকার-বর্জিত ও সোজাসুজি তত্ত্ববাহী।
===ঢেণ্ঢণপাদ===
৩৩ সংখ্যক পদটি ঢেণ্ঢণপাদের রচনা। তিনি চেণ্ঢনপা বা টেণ্টনপা নামেও পরিচিত। তিব্বতি ইতিহাসে ঢেণ্ঢণপাদের নাম নেই। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে, ভোট উচ্চারণে যিনি ধেতন, তিনিই ঢেণ্ঢণ। আবার ড. নির্মল দাশের মতে, টেণ্টনপা নামটি ছদ্মনাম। তাঁর পদটিতে যে ‘টেণ্টন’ অর্থাৎ ধূর্ত-সুলভ চাতুর্যের পরিচয় আছে, সেটিকে ড. দাশ কবির ব্যক্তিচরিত্রের নয়, বরং রীতিচরিত্রের পরিচায়ক বলেছেন। আগাগোড়া সন্ধ্যাভাষায় রচিত ঢেণ্ঢণপাদের চর্যাগীতিটিতে সন্ধ্যা-সংকেতে সংসারচিত্ত ও সহজচিত্তের স্বরূপ বর্ণিত হয়েছে। পদে পদে পরস্পর-বিরোধী উক্তি এবং বিরোধালংকারের সমাবেশে পদটি দুরূহ হলেও উপভোগ্য। সাধক-কবির সূক্ষ্ম বস্তুদৃষ্টি ও পর্যবেক্ষণ শক্তিও প্রশংসনীয়। পদটিতে গৌড়ের দরিদ্র পরিবারের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। কবীরের একটি কবিতায় এবং সহদেব চক্রবর্তী ও লক্ষ্মণের ''অনিলপুরাণ'' ও ''গোর্খবিজয়'' কাব্যেও ঢেণ্ঢণপাদের পদটির প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়।
===তন্ত্রীপাদ===
তন্ত্রীপাদ রচিত ২৫ সংখ্যক চর্যাগীতিটি লুপ্ত। টীকা থেকে গানের শেষাংশের কিছু আভাস পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে যে, নৈরাত্মা যোগিনীর অভিষঙ্গে জাতিধর্ম লুপ্ত হয়ে যায়—হীন বৃত্তিধারী তন্ত্রী হন বজ্রধর। তিব্বতি অনুবাদ থেকে বোঝা যায় যে, গানটির বিষয় তাঁত বোনা। ‘তন্ত্রী’ নামটি জাতি-বৃত্তির স্মারক। ড. নির্মল দাশের মতে ‘তন্ত্রী’ ব্যক্তিনাম নয়, জাতিবাচক নাম। সিদ্ধাচার্যদের তালিকা ‘তান্তি’ শব্দটি আছে। জ্যোতিরীশ্বর ঠাকুরের ''বর্ণনরত্নাকর'' গ্রন্থে ‘তান্তিপা’ নামটি পাওয়া যায়।
==ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব==
সভ্যতার উষালগ্নে মানুষ ছিল অসহায়। তখন থেকেই সাহিত্যের সঙ্গে ধর্মের একটি গভীর সম্পর্ক সূচিত হয়। বিশ্বের সকল ভাষার সাহিত্যেই তাই দেখা যায়, মানবীয় অনুভূতিগুলি প্রকাশিত হয়েছে অধ্যাত্মচেতনার আবরণে। প্রাচীন ভারতে বেদ, উপনিষদ্, মহাকাব্য, পুরাণ সর্বত্রই এই দৃষ্টান্ত দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন চর্যাপদও ছিল এক বিশেষ ধর্মসম্প্রদায়ের সাধনসংগীত। পদগুলি রচনার ক্ষেত্রে পদকর্তারা বিশুদ্ধ সাহিত্যবোধের দ্বারা চালিত না হয়ে যে অন্যরকম সাধ্য ও সাধনপ্রণালীর কথাই বলতে চেয়েছিলেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী যদিও তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের ভূমিকায় বলেছেন, “যাঁহারা সাধনভজন করেন তাঁহারাই সেই কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই”, তবু প্রাচীন বাংলার ধর্মসাধনার অঙ্গ হিসেবে রচিত এই সংগীতের অর্থবোধ ব্যতীত প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের আলোচনা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সংগীত বা কাব্য ছিল সেযুগের ধর্মসাধনার অন্যতম সোপান। মঙ্গলকাব্য, নাথসাহিত্য, বৈষ্ণব পদাবলি, বাউল গান, শাক্ত পদাবলি প্রভৃতি মধ্যযুগের বিভিন্ন সাহিত্যধারাতেও এই একই বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। চর্যার সাহিত্যমূল্য যেমন পরিমাপযোগ্য, তেমনই এই গানগুলিতে অবলম্বিত ধর্মের গূঢ় তত্ত্বও প্রণিধানযোগ্য। আধুনিক গবেষকেরা বৌদ্ধধর্মের নানা পুথি অনুসন্ধান করে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম ও সহজ-সাধনার স্বরূপ নির্ণয়ে প্রয়াসী হয়েছেন। এই বিষয়ে বিদেশি গবেষকদের পাশাপাশি ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী ও ড. শশিভূষণ দাশগুপ্তের ভূমিকাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ড. বাগচী বাংলায় ''বৌদ্ধধর্ম ও সাহিত্য'' এবং ইংরেজিতে ''স্টাডিজ ইন তন্ত্রজ'' এবং ড. দাশগুপ্ত ইংরেজিতে ''অবস্কিওর রিলিজিয়াস কাল্টস অ্যাজ ব্যাকগ্রাউন্ড অফ বেঙ্গলি লিটারেচার'' ও ''ইন্ট্রোডাকশন টু তান্ত্রিক বুদ্ধিজম'' গ্রন্থের রচয়িতা। পরবর্তীকালে সকল গবেষক এঁদের প্রদর্শিত পথে অগ্রসর হয়ে সিদ্ধাচার্যদের নির্দেশিত ও অনুশীলিত ধর্মাচারের বিস্তৃত পরিচয় দিতে সমর্থ হয়েছেন।
গৌতম বুদ্ধের দেহত্যাগের পর তাঁর অনুগামীদের মধ্যে নানা মতভেদের কারণে বৌদ্ধধর্মে ভাঙন দেখা দেয়। ধর্মীয় আদর্শ পর্যালোচনার জন্য পরপর চারটি বৌদ্ধ মহাসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু প্রবল মতবিরোধের প্রেক্ষিতে বৌদ্ধসমাজ হীনযান ও মহাযান নামে দুই সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রাচীনপন্থী হীনযানীদের ভাবনা তুলনামূলকভাবে কিছুটা সংকীর্ণ ছিল। তাঁরা ‘অর্হৎ’ অর্থাৎ নিজেদের মুক্তিকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। এঁদের মধ্যে পদ্ধতির ভিন্নতা অনুযায়ী শ্রাবকযান ও প্রত্যেকবুদ্ধযান নামে দুটি উপদল গড়ে ওঠে। শ্রাবকযানীরা বুদ্ধত্বলাভের দুরাশা পোষণ করতেন না, কেবল নির্ধারিত আচার-আচরণ পালন করে ধর্মের পথে পুণ্য অর্জনে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। যাঁরা বুদ্ধত্বলাভের উচ্চাশা পোষণ করতেন, তাঁরা প্রত্যেকবুদ্ধযানী নামে পরিচিত ছিলেন। এঁদের নিরিখে মহাযানীদের আদর্শ ছিল অনেক উদার। তাঁরা গৌতম বুদ্ধের ন্যায় পরোপকারে জীবন উৎসর্গ করে বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভ এবং তার মধ্যে দিয়ে বুদ্ধত্ব অর্জনকেই আদর্শ বলে মনে করতেন। বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভের উপায় হল শূন্যতা ও করুণার অভিন্নতায় বোধিচিত্তের জাগরণ ঘটানো। বোধিপ্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে বুদ্ধত্বলাভের একমাত্র সোপান বোধিসত্ত্বাবস্থায় উন্নীত হওয়া সহজ হত। বোধিচিত্ত কী এবং কীভাবে তাকে জাগরিত করা যায়, সে আলোচনা আবশ্যক। মহাযানীদের মতে, জাগতিক কোনও বস্তুরই নিজস্ব কোনও ধর্ম বা স্বরূপ নেই। অথচ প্রত্যেকের যে প্রাতিভাসিক স্বরূপ দেখা যায়, তা অন্য কোনও স্বরূপের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং পার্থিব সকল বস্তুই প্রকৃত অস্তিত্বহীন। বস্তু সম্পর্কে এই জাতীয় জ্ঞানই শূন্যতাজ্ঞান। যখন সাধক জগৎ-সংসারে উক্ত শূন্যতাজ্ঞান এবং বিশ্বব্যাপী করুণাকে একত্র সংযুক্ত করেন, তখন যে মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয় সেটিই হল বোধিচিত্ত (“শূন্যতা করুণাভিন্নং বোধিচিত্তম্”)। সাধকের মনে বিশ্বব্যাপী করুণার উদয় ঘটলে তিনি কেবল নিজের মুক্তিপ্রয়াসী হন না, পরোপকারের মধ্যে দিয়ে জগতের সকলের মুক্তিপ্রয়াসী হয়ে ওঠেন। বস্তুত মহাযানী মতের জনপ্রিয়তার কারণ নিহিত হয়ে রয়েছে তাঁর আদর্শে, সকল জীবের মধ্যে বুদ্ধত্ব কল্পনায় এবং সদাচারী পন্থায়। বিশ্বের সকল জীবের মুক্তির জন্য এভাবে পরোপকারে আত্মোৎসর্গ করার কথা অন্য কোনও ধর্মমতে বিশেষ দেখা যায় না। মৈত্রী, করুণা, অহিংসা প্রভৃতি মানবিক সদ্বৃত্তির অনুশীলনও মহাযানকে সকলের কাছে গ্রহণীয় করে তুলেছিল। বৌদ্ধ পরিভাষায় উক্ত সদ্বৃত্তিগুলিকে বলা হয় ‘পারমিতা’। জগতের শূন্যস্বভাবে বিশ্বাস হেতু মহাযানীরা ‘শূন্যবাদী’ নামে পরিচিত হন। দার্শনিক মত বিচারের সূক্ষ্মতায় মহাযানীদের মধ্যেও দুটি উপদল ছিল। যাঁরা প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তির মধ্যবর্তী পথ ধরে চলতে চাইলেন, তাঁরা ‘মধ্যমক’ শাখার অন্তর্গত ছিলেন। অন্যদিকে যাঁরা বস্তুসত্তাকে চিৎসত্তায় পরিণত করে চৈতন্যরূপী জ্ঞানের মধ্যেই সমস্ত জগৎকে ধারণ করতে চাইলেন, তাঁরা গণ্য হতেন যোগাচার শাখার দার্শনিক হিসেবে। মধ্যমক মতের প্রবর্তক নাগার্জুন। যোগাচার মতের সাধন-পথের দিকটিতে অসঙ্গ বিশেষ গুরুত্ব দিলেও এটির দার্শনিক দিকটি গড়ে ওঠে বসুবন্ধুর নেতৃত্বে। যোগাচারবাদীরা বলতেন, “সর্বং বুদ্ধিময়ং জগৎ”। এই কারণে এই মতটি ‘বিজ্ঞানবাদ’ নামেও পরিচিত ছিল।
মহাযান বৌদ্ধধর্মের যোগাচার তথা বিজ্ঞানবাদ থেকে সহজযানে এই মতের রূপান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক পদক্ষেপ। এর পিছনে বৈদিক ও পৌরাণিক হিন্দুধর্মের প্রভাব ছিল বলেই গবেষকদের ধারণা। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্য ও কুমারিল ভট্টের দ্বারা ভারতীয় সমাজে ব্রাহ্মণ্য সংস্কার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে নাস্তিক্যবাদী বৌদ্ধধর্মেও দেবদেবীদের অনুপ্রবেশ শুরু হয়। এই দুর্বলতার সুযোগে হিন্দু তন্ত্রের দেহকেন্দ্রিক যোগসাধনার প্রক্রিয়াটি যোগাচার মতে গ্রাস করে। ইতিপূর্বে যাঁরা ‘পারমিতা’ অর্থাৎ দান, শীল, ক্ষান্তি, বীর্য প্রভৃতি পরম গুণের অনুশীলনের মাধ্যমে বোধিসত্ত্বাবস্থা লাভের কথা বলতেন, তন্ত্রের প্রভাবে তাঁরাই মন্ত্রশক্তির প্রয়োগে আকাঙ্ক্ষিত বোধিসত্ত্বাবস্থাকে স্থায়ী করার কথা বললেন। এভাবে মন্ত্রের সংযোগে যোগাচার মত প্রথমে ‘মন্ত্রনয়’-এ পরিণত হল, তারপর এই পথেই নানাপ্রকার তান্ত্রিক গুহ্যাচার প্রবেশ করল এই মতে। বলা বাহুল্য, ভারতের বিভিন্ন শ্রেণির ধর্মসাধনার মধ্যে তন্ত্রের আচারনিষ্ঠা প্রশ্নাতীত এবং এই মত বুদ্ধিগ্রাহ্য আলোচনা অপেক্ষা অধিক প্রাধান্য দেয় কার্যকরী আচার-পদ্ধতিকেই। তন্ত্রের হাত ধরে মন্ত্র, মণ্ডল ও মুদ্রা এভাবেই ঢুকে পড়ল শীল ও সদাচার-নির্ভর বৌদ্ধধর্মে। যৌনযোগাচার-কেন্দ্রিক সাধনপদ্ধতিও বাদ গেল না। মন্ত্রনয় বা মন্ত্রযান পরিচিত হল বজ্রযান নামে। কালক্রমে বজ্রযানেও সাধনার তারতম্যে কিছু উপবিভাগ গড়ে উঠল: ক্রিয়াতন্ত্র, যোগতন্ত্র, চর্যাতন্ত্র, অনুত্তরতন্ত্র। বজ্রযানের পরবর্তী পরিণতি কালচক্রযান ও সহজযান। চর্যাপদের প্রাপ্ত পুথিতে উক্ত তিন যানের প্রভাব থাকলেও বেশি প্রাধান্য পেয়েছে সহজযানী বৌদ্ধ মত। তাই এই সহজযান মতটি আলোচনা করা প্রয়োজন।
মহাযানী মতের শূন্যের ধারণাটি পূর্বেই বজ্রে পরিণত হয়েছিল। এবার বজ্র পরিণত হল ‘সহজ’-এ। ''হেবজ্রতন্ত্র'' মতে, জন্মের সঙ্গেই যা উৎপন্ন হয় তাই ‘সহজ’ (“সহজাত্যং যদুৎপন্নং সহজং তৎ প্রকীর্তিতম্।”)। দেহ হল সেই সহ-জ উপাদান, যা জীব জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই প্রাপ্ত হয়। হিন্দু তন্ত্রেও দেহের প্রাধান্য স্বীকার করে বলা হয়েছে, “যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে, তা আছে দেহভাণ্ডে”। মহাযান মতে, শূন্যতা ও করুণার মিলনে যে বোধিচিত্তের উদ্ভব ঘটত, সহজযানে তা হল প্রজ্ঞা ও উপায়ের সংযুক্তিতে। প্রজ্ঞা ‘প্রকৃতি’ রূপে এবং উপায় ‘পুরুষ’ রূপে বিবেচিত হল এই মতে। তন্ত্র মতে, পরমার্থ সত্য দুই রূপে প্রতিভাত—নিবৃত্তিরূপ পুরুষ বা শিব এবং প্রবৃত্তিরূপ প্রকৃতি বা শক্তি। যখন শিব ও শক্তি অর্থাৎ পুরুষ ও প্রকৃতি অদ্বয়স্বরূপে মিলিত হয় তখন পরমার্থ সত্য লাভ করা যায়। এই মিথুন বা মিলিতাবস্থাই জীবের কাম্য। কারণ এই মিলন বিশ্বের সৃষ্টিপ্রবাহের কারণ। ''হঠযোগপ্রদীপিকা'' গ্রন্থে বলা হয়েছে, কায়াসাধনায় দেহস্থ বামগা নাড়ী ঈড়া ও দক্ষিণগা নাড়ী পিঙ্গলা যথাক্রমে শক্তি ও শিবের প্রতীক। এই দুই নাড়ীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত প্রাণ ও অপান বায়ুকে দেহমধ্যস্থিত নাড়ী সুষুম্নার পথে চালিত করে মস্তকে স্থিত সহস্রারে প্রেরণ করতে পারলেই অদ্বয় সিদ্ধি ঘটে। এই বিশুদ্ধ দার্শনিক বিষয়টির সঙ্গে পার্থিব নরনারীর যৌনমিলনকে এক করে ফেলা হয়েছে তন্ত্রের আর-একটি অপার্থ (malicious) ধারণায়। সেটি হল, প্রতিটি নারী ও পুরুষের মধ্যে শক্তি ও শিব বিদ্যমান থাকলেও শিব-প্রাধান্যে যে-কোনও পুরুষই শিব এবং শক্তি-প্রাধান্যে নারীমাত্রেই শক্তি। অতএব শিব-শক্তির মিলন বলতে প্রাকৃত নরনারীর যৌনসংযোগকেই বোঝায়। চর্যার সাধকেরা যে সাধনসঙ্গিনী নিয়ে সাধনায় অগ্রসর হতেন, তার পিছনে তন্ত্রের এই প্ররোচনা বিপুলভাবে কাজ করেছে।
সহজযানের পরম লক্ষ্য অদ্বয় মহাসুখের উপলব্ধি। মহাসুখের অপর নাম সহজ বা সহজানন্দ। নির্বাণ ও মহাসুখ এক্ষেত্রে প্রায় অভিন্ন। তাই সহজযানী সিদ্ধাচার্যেরা তাঁদের গানে বারবার মহাসুখের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। চর্যাকার লুইপাদ চিত্তকে দৃঢ় করে মহাসুখ পরিমাণ করতে নির্দেশ দেন। ভুসুকুপাদ বলেন, তিনি মিলনলীলার মধ্যেই সহজানন্দ মহাসুখকে উপলব্ধি করেছেন। কম্বলাম্বরপাদ জানান, বাম ও দক্ষিণকে চেপে সুষুম্নার সঙ্গে মিলিয়ে দিতেই মহাসুখ মিলন। এইভাবে কাহ্নপাদ, শবরীপাদ, দারিকপাদ প্রমুখ কবিদের রচনায় মহাসুখের স্বরূপ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তাতে বোঝা যায়, মহাসুখ বা সহজানন্দ একটি অচিন্ত্যনীয় মহাসুখকর অনুভব। এই সহজসুখ উৎপন্ন হয় যে স্থানে, সেই চরমকেন্দ্রটিকে কেউ জিনপুর, কেউ বা কামরূপ, আবার কেউ অনুত্তরধাম, পারিমকুল, কিংবা জোহ্নাবাড়ি ইত্যাদি নানা নামে অভিহিত করেছেন। মহাসুখের লক্ষ্যে পৌঁছাতে শাস্ত্রপাঠ, জপতপ, প্রব্রজ্যা বা সন্ন্যাসগ্রহণের মতো বাহ্যানুষ্ঠান ত্যাগ করার কথাও বলে হয়েছে। প্রজ্ঞা ও উপায়ের মিলিত রূপই যুগনদ্ধ বলে কথিত। এই অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে ও ক্ষণে ভিন্ন ভিন্ন আনন্দের উদ্ভব ঘটে। সহজ মহাসুখের অপর লক্ষণ হল শূন্যতা। সাধকের অবস্থানভেদেও শূন্যতার প্রকারভেদ আছে। কায়, বাক্ ও চিত্তের সমবায়ে জীবের সত্তাবোধ। যখন এগুলির অস্তিত্ব শূন্য হয়ে পড়ে তখনই বোধিচিত্তের সর্বশূন্যতার প্রতিষ্ঠা ঘটে। এই অবস্থাকে চর্যাকারেরা নানা ভাবে প্রতীকায়িত করেছেন। কখনও বলেছেন শূন্য প্রান্তর, কখনও বা প্রতিবেশীহীন পর্বতের টিলা। বর্ণচিহ্নরূপহীন চরম শূন্যস্বভাব এই মহাসুখ। এর সর্বরিক্ত রূপ ভুসুকুপাদের ৪৯ সংখ্যক চর্যাটিতে প্রতীকী উপস্থাপনায় উজ্জ্বল। নির্দয় বঙ্গাল দেশ লুণ্ঠন করে সেখানে। পঞ্চপাটন, ইন্দ্রের মতো বিষয়-আশয় সব বিনষ্ট হয়, সোনা-রুপো আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। চর্যার মহাসুখের ধারণাকে নানা মাত্রায় দেখা সম্ভব। কখনও তা মিলনজনিত একটি সহজ আনন্দঘন অবস্থা, আবার কখনও তা সর্বশূন্যের সার্থক পরিণাম। যেহেতু বিজ্ঞানবাদ থেকেই এর সূচনা, তাই এর মধ্যে নিরালম্ব বিশুদ্ধ বিজ্ঞানকেও পাওয়া যায়। এবং এই মহাসুখবৃক্ষের ফল হল মহাকরুণা। দেহের মধ্যে চারটি অবস্থান কল্পনা করে চক্র, ক্ষণ, আনন্দ, শূন্যতা ইত্যাদি ভেদে মহাসুখের ক্রমোৎকর্ষের বিভিন্ন অভিধা কল্পনা করা হয়েছে। নিচের ছকটিতে তারই আভাস দেওয়া হল:
{| class="wikitable"
|-
| মস্তক || মহাসুখচক্র || সহজানন্দ || বিলক্ষণ || সর্বশূন্য || নৈরাত্মা || চতুষ্কোটি বিনির্মুক্ত
|-
| হৃদয় || ধর্মচক্র || বিরমানন্দ || বিমর্দ || মহাশূন্য || চিত্ত || গ্রাহ্য ও গ্রাহক শূন্য
|-
| কণ্ঠ || সম্ভোগচক্র || পরমানন্দ || বিপাক || অতিশূন্য || বাক্ || গ্রাহক শূন্য
|-
| নাভি || নির্মাণচক্র || প্রথমানন্দ || বিচিত্র || শূন্য || কায় || গ্রাহ্যশূন্য
|}
সাধ্য এই মহাসুখকে সাধক কীভাবে লাভ করেন অর্থাৎ চতুষ্কোটি বিনির্মুক্ত সাধনার পথটি কী তাও আলোচনা করা হয়েছে। চর্যার হেঁয়ালিপূর্ণ রহস্যময় ভাষা ভেদ করে যেটুকু বোঝা গিয়েছে তা হল, এই ঈড়া ও পিঙ্গলা নাড়ী যখন মুক্ত অবস্থায় থাকে তখন যাবতীয় সুখদুঃখের অনুভূতি জীবের অস্তিত্বকে মথিত করে। আর যখন পরস্পর সংযুক্ত হয় এবং মধ্যনাড়ী সুষুম্নার পথে চালিত হয়, তখন বাহ্যেন্দ্রিয়ের দ্বার রুদ্ধ হয়ে অন্তর্লোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। সাংবৃতিক বোধিচিত্ত এইভাবে পারমার্থিক বোধিচিত্তে পরিণত হওয়ার অবস্থায় পৌঁছায়। সম্পূর্ণ মননপ্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল এই সাধনপথটি কবিরা রূপকের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন। এই রূপক কোথাও নৌকা বাওয়ার, কোথাও ইঁদুর মারার, কোথাও মত্ত হাতির পদ্মবন বিনষ্ট করার, আবার কোথাও তুলো ধোনা কিংবা মদ চোলাইয়ের। পুদ্গলচিত্তকে নিঃস্বভাবীকৃত করতে পারলেই জিনপুরে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। ডোম্বীপাদ তাঁর একটি পদে এই নাড়ীদ্বয় ও মধ্যপথে তাদের প্রবেশ করানোর বিষয়টি প্রতীকী আভাসে ব্যঞ্জিত করে তুলেছেন:
<poem>
:: গঙ্গা জউনা মাঝেঁ রে বহই নাঈ।
:: তঁহি বুড়িলী মাতঙ্গী পোইআ লীলেঁ পার করেই।।...
:: চন্দ সূজ্জ দুই চকা সিঠি সংহার পুলিন্দা।
:: বাম দাহিন দুই মাগ ন রেবই বাহতু ছন্দা।।
</poem>
এমন বহু পদেই কায়াসাধনার তত্ত্বটি সুন্দরভাবে প্রকাশিত। কাহ্নপাদের একটি পদে কাপালিক যোগীর সাধনায় দেহপ্রাধান্য সরাসরি উচ্চারিত: “দেহ নঅরী বিহরই একাকারেঁ”। চর্যাগীতিগুলিতে গুরুবাদের প্রসঙ্গও এসেছে। গুহ্য সাধনপ্রক্রিয়া মাত্রেই গুরুগম্য জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। বিশেষত তান্ত্রিক আচারে অনভিজ্ঞ বালযোগীকে দেহকেন্দ্রিক কৃত্যাদিতে সাহায্য করেন গুরু। তাই চর্যাকারেরা বলেছেন: “বাহতু কামলি সদ্গুরু পুচ্ছি”, কিংবা “সদ্গুরু বোহেঁ জিতেল ভববল”, অথবা “সদ্গুরু পাঅপএঁ জাইব পুনু জিনউরা” ইত্যাদি। কোথাও আবার গুরুর অপ্রয়োজনীতা ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে “গুরু বোব সিসা কাল”। আসলে বিশুদ্ধ তত্ত্বকথায় গুরুর ভূমিকা ন্যূনতম, কিন্তু তান্ত্রিক গুহ্যাচার পালনে গুরুই পথনির্দেশক। চর্যায় সাধকের নানা অবস্থার বর্ণনা আছে। যখন তিনি বিষয়বদ্ধ তখন একরকম, সাধনার প্রাথমিক স্তরে অন্যরকম, ক্রমশ প্রবৃত্তিনাশে তাঁর স্বভাব পরিবর্তিত, মস্তক বা উষ্ণীষকমলে যখন তাঁর চিত্তের অবস্থান তখন সে অনুভূতি ভিন্ন ধরনের, আবার সহজানন্দ লাভের পর সিদ্ধ সাধকের অভিব্যক্তি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। প্রতিটি স্তরে সাধক এক-একজন শক্তি বা সাধনসঙ্গিনীর অস্তিত্ব অনুভব করেন। এঁরাই সংকলিত পদগুলিতে শবরী, ডোম্বী, চণ্ডালী, যোগিনী, নৈরামণি ইত্যাদি নামে খ্যাত। সম্ভোগচক্রের নৈরামণি মহাসুখচক্রে উন্নীত হয়ে সহজসুন্দরীতে পরিণত হন। এইভাবে প্রেমের রূপকে সাধনকথা পরিবেশিত হয়েছে এখানে। বস্তুত এই পথ ধরেই সহজিয়া বৌদ্ধধর্মের অবশ্যম্ভাবী পতনের বীজও অঙ্কুরিত হয়েছিল। মূলত ব্যভিচারের কারণে বৃহত্তর সমাজ সেই আমলে এদের বর্জন করতে চেয়েছিল। তুর্কি আক্রমণের পর মুণ্ডিতমস্তক বৌদ্ধ সহজিয়ারা ‘নেড়া-নেড়ী’ নামে অভিহিত হয়ে সমাজবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিনযাপন করতে থাকেন। পরবর্তীকালে নিত্যানন্দের পুত্র বীরভদ্র এঁদের বৈষ্ণবধর্মের দীক্ষিত করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। বীরভদ্রের বৈষ্ণব সাধনায় কিছুটা সহজিয়া প্রভাব পড়েছিল বলে গবেষকদের ধারণা।
==ভাষা==
চর্যাপদের ভাষাপ্রসঙ্গটি বিতর্কিত। বিশেষত চর্যাপদ কোন ভাষায় রচিত তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সম্পাদিত গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পরই। উক্ত বইটি ছিল চারটি পুথির সংকলন: মুনিদত্তের সংস্কৃত টীকা সহ চর্যাপদের পুথি, সরহপাদ ও কাহ্নপাদের ''দোহাকোষ'' পুথিদ্বয় এবং ''ডাকার্ণব''। শাস্ত্রী মহাশয় চারটি পুথিই হাজার বছরের পুরোনো বাংলা ভাষার লেখা বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এই মত সবাই মেনে নেননি। বিতর্কের সূচনা সেই থেকেই। আসলে চর্যাপদ যে সময়ে রচিত হয়েছে, ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্বের বিচারে সেই সময়টি নব্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলির উদ্ভবকাল। সবে তখন অপভ্রংশের গর্ভ থেকে বাংলা, ওড়িয়া, অসমিয়া, মগহি, অওধি, ভোজপুরি প্রভৃতি ভাষা ভূমিষ্ঠ হতে শুরু করেছে। একই জঠরে বেড়ে ওঠার ফলে এগুলির মধ্যে ধ্বনিতাত্ত্বিক, রূপতাত্ত্বিক ও শব্দভাণ্ডারগত পার্থক্য খুবই কম। গবেষকদের বিভ্রান্তির কারণ সেটাই। ভাষা সাবালক হলে তার এমন কিছু নিজস্ব চিহ্ন প্রকাশিত হয়, যেগুলি ভাষার প্রভেদকারী বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু বাংলা ভাষায় তা ঘটার আগেই চর্যাপদ রচিত হয়েছে, ফলে সংশয়ের জাল সহজেই বিস্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ১৯২০ সালে ভাষাতাত্ত্বিক বিজয়চন্দ্র মজুমদার ''বঙ্গবাণী'' মাসিক পত্রিকায় কয়েকটি প্রবন্ধে এবং ''হিস্ট্রি অফ বেঙ্গল ল্যাংগুয়েজ'' গ্রন্থে বলেন যে, চর্যাগীতিগুলি পুরনো বাংলা ভাষায় রচিত হয়নি, এতে দু-চারটি বাংলা, ওড়িয়া ও অসমিয়া পদ থাকলেও মূল ভাষাছাঁদ হিন্দির। ১৯২১ সালে জার্মান ভাষাতত্ত্ববিদ হারমান জেকবি তাঁর সম্পাদিত ''সনৎকুমারচিতম্'' গ্রন্থের ভূমিকায় চর্যাপদের ভাষাকে “All Bengalishch” বা প্রত্ন-বাংলা বলে নির্দেশ করেন, কিন্তু কোনও খাঁটি যুক্তি তিনি দিতে পারেননি। ১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর বিখ্যাত ''দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ'' গবেষণাগ্রন্থে চর্যাগীতির ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ, ছন্দ, বাগ্বিধি ইত্যাদি বিচার করে প্রথম একটি সুনিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। তিনি স্পষ্ট জানালেন যে, ''দোহাকোষ'' দুটির ও ''ডাকার্ণব'' পুথির ভাষা শৌরসেনী অপভ্রংশ, কিন্তু চর্যাগানের ভাষা আদিতম বাংলা। অবশ্য এই বাংলায় কিছু পশ্চিমা অপভ্রংশ এবং দু-চারটি ওড়িয়া-মৈথিলী শব্দ মিশে আছে। তাঁর তীক্ষ্ণ, শক্তিশালী ও বাস্তবসিদ্ধ যুক্তিগুলি মেনে নিতে কোনও অসুবিধাই হল না। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহও তাঁর ''Les Chants Mystique de Saraha et de Kanha'' গবেষণাগ্রন্থে সুনীতিকুমারের মতটি মেনে নেন।
অন্যান্য ভাষার গবেষকেরাও অবশ্য চর্যাপদ তাঁদের ভাষায় রচিত বলে দাবি করেছিলেন। রাহুল সাংকৃত্যায়ন, জয়কান্ত মিশ্র ও কাশীপ্রসাদ জয়সওয়াল বলেন, চর্যাপদের ভাষা বিহারি এবং সিদ্ধাচার্যদের অধিকাংশই মগধ অঞ্চলের বাসিন্দা। ১৯৩৫ সালে বরোদায় অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া ওরিয়েন্টাল কনফারেন্সের সপ্তম অধিবেশনে উক্ত তিন হিন্দিভাষী পণ্ডিত চর্যাপদের উপর বাংলা ভাষার দাবিকে অস্বীকার করেন। চর্যায় ‘জো’, ‘সো’, ‘তো’, ‘মই’ প্রভৃতি সর্বনাম, ‘অইসন’, ‘জইসন’, ‘ঐছে’, ‘তৈছে’, ‘জিস’, ‘তিস’, ‘জসু’, ‘তসু’ প্রভৃতি সর্বনামীয় ক্রিয়াবিশেষণ, ‘রাতি পোহাইলী’-র ন্যায় ক্রিয়াপদের স্ত্রীলিঙ্গীকরণে হিন্দি ও মৈথিলীর বিশেষত্ব আছে ঠিকই, কিন্তু এর পাশাপাশি এটাও দেখার যে এই দুই ভাষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ‘-ক’, ‘-কো’ বিভক্তি যোগে ষষ্ঠীর পদগঠন এবং ‘-অল’, ‘-অব’ বিভক্তি যোগে যথাক্রমে অতীত ও ভবিষ্যৎকালের ক্রিয়াপদ গঠনের দৃষ্টান্ত চর্যাপদে নেই। ভাষাগত সাদৃশ্যের কারণে ওড়িয়া ও অসমিয়া ভাষার দাবিও চর্যাপদের উপর আছে। যেমন, ওড়িয়াতে সংস্কৃত প্রভাবজাত বর্তমান কালবাচক ক্রিয়াপদে ‘-অন্তি’ বিভক্তির ব্যবহার চর্যায় দেখা যায়: “নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী” কিংবা “ভনন্তি মহিণ্ডা”। কিন্তু এটাও লক্ষণীয় যে, ‘-রু’ দিয়ে অপাদানের পদগঠন, সর্বত্র ‘-র’ বিভক্তি দ্বারা ষষ্ঠীর পদগঠন, ‘-মানে’ পরসর্গ যোগে বহুবচনের পদনির্মাণ, যা ওড়িয়া ভাষার বিশিষ্ট লক্ষণ, তার একটি দৃষ্টান্তও চর্যাগানে পাওয়া যায় না। অসমিয়া ভাষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দু-একটি ক্ষেত্রে অসমিয়া ভাষার ব্যাকরণগত বৈশিষ্ট্য দেখা গেলেও কয়েকটি বিশিষ্ট ও প্রধান ক্ষেত্রে চর্যাগীতির বাক্যগঠন রীতি অসমিয়া ভাষার তুলনায় পৃথক। চর্যার ভাষায় শৌরসেনী অপভ্রংশের লক্ষণ ও শব্দের ব্যবহারও স্বাভাবিক। কারণ, মাগধী প্রাকৃত থেকে জাত মাগধী অপভ্রংশ প্রাত্যহিক ব্যবহারে প্রচলিত থাকলেও শিষ্ট সাহিত্যের ভাষা হিসেবে অষ্টম-নবম শতকে ব্যবহৃত হত শৌরসেনী অপভ্রংশ। চর্যাকারেরা যে যুগের মানুষ ছিলেন সেই যুগের বাংলার ভৌগোলিক সীমা আজকের তুলনায় অনেক বেশি প্রসারিত ছিল। সেযুগের বাংলা-বিহারের বৌদ্ধ সংঘগুলিতে ভারতের নানা প্রান্তের মানুষ একত্র হতেন শিক্ষা ও ধর্মলাভের উদ্দেশ্যে। ভাষা হিসেবে শৌরসেনী অপভ্রংশের গ্রহণযোগ্যতা সেযুগে ছিল প্রশ্নাতীত। কিন্তু চর্যাপদে বাংলা ভাষার লক্ষণ, যা ত্রিস্তরীয় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেও আধুনিক যুগেও সমানভাবে উপস্থিত, তা এমনভাবে সেঁটে রয়েছে যে তার পরিমাণগত প্রাচুর্যে একে অবশ্যই প্রাচীন বাংলা ভাষা বলে চিহ্নিত করা যায়। বিশিষ্ট গবেষকদের আলোচনার সারাৎসারটুকু উপস্থিত করে বাংলার এই বিশিষ্ট লক্ষণগুলিকে বুঝে নেওয়া যেতে পারে:
; (ক) ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:
# সংস্কৃত বর্ণমালা থেকে ঈ, ঊ, ঋ, ৯ প্রভৃতি বর্ণ বাংলা বর্ণমালায় এলেও বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনির উচ্চারণে হ্রস্ব-দীর্ঘ পার্থক্য রক্ষিত হয় না। চর্যার বানানেও এই বিশেষ লক্ষণটি দেখা যায়। যেমন, চিএ, চিঅ; হোহী, হোহি; লুই, লূই; বোহী, বোহি ইত্যাদি।
# স্বরবর্ণের মতো ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ষেত্রেও দেখা যায় স্বতন্ত্র ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন থাকলেও বাংলায় সেগুলির উচ্চারণে বিশেষ পার্থক্য নেই। জ-য, ণ-ন, শ-ষ-স ইত্যাদি ক্ষেত্রে উচ্চারণে কোনও পার্থক্য দেখা যায় না। চর্যাতেও স্বভাবতই এইসব বর্ণের লিপি-বিপর্যয় লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেমন, জোইনি, যোইনী; যাই, জাই; নাবী, ণাবী; শবর, সবর; শূন, সূণ; ষিআলা, শিয়ালী ইত্যাদি।
# অর্থপার্থক্য সৃষ্টি কিংবা বিশেষ কোনও আবেগ প্রকাশের জন্য বাংলায় ব্যঞ্জনধ্বনির দ্বিত্ব উচ্চারণ করা হয়। চর্যার ভাষায় তার ছাপ সুস্পষ্ট। যেমন, ফাড্ডিঅ, নিঅড্ডী, চ্ছাড়ী ইত্যাদি।
; (খ) রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:
# বাংলা ভাষার সমস্ত কারকে ‘-এ’ বিভক্তির প্রয়োগ লক্ষিত হয়। চর্যার ভাষাতেও ‘-এ’ বা ‘-এঁ’ বিভক্তির এইরকম প্রয়োগ দেখা যায়। যেমন, কর্তৃকারকে—কুম্ভীরে খাঅ; কর্মকারকে—গঅবরেঁ তোলিআ; করণকারকে—কুঠারে ছিজঅ; সম্প্রদান কারকে—ধামার্থে চাটিল; অপাদান কারকে—জামে কাম কি কামে জাম; অধিকরণ কারকে—ঘরে সান্ধঅ।
# আধুনিক বাংলায় যেমন কর্ম-কর্তৃ বাচ্য গঠন করা হয়ে থাকে, চর্যাতেও অবিকল তারই প্রতিরূপ দেখা যায়। যেমন, নানা তরুবর মৌলিল রে, ডমরু বাজএ বীরনাদে।
# বাংলা ভাষার বিভিন্ন বিভক্তির প্রয়োগ চর্যাতেও বিভিন্ন কারকে দেখা যায়। যেমন, তৃতীয়াতে ‘-তেঁ’ বিভক্তি (সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরিঅই); চতুর্থীতে ‘-রেঁ’ বিভক্তি (সো করউ রস রসানেরে কংখা); ষষ্ঠীতে ‘-র’/‘এর’ বিভক্তি (সাঙ্কমত চড়িলে; দুধিল দুধ কি বেণ্টে ধামায়) ইত্যাদি।
# বাংলার নিজস্ব কিছু অনুসর্গ (মাঝে, অন্তরে, সঙ্গে ইত্যাদি) আছে। চর্যায় এগুলির প্রয়োগও অপ্রতুল নয়। যেমন, কোড়ি মাঝেঁ একু; তোহার অন্তরে; দুজ্জন সাঙ্গে অবসরি জাই ইত্যাদি।
# স্বাধীন অব্যয় রূপে উপসর্গের প্রয়োগেও বাংলার বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। উপসর্গগুলি অব্যয় হিসেবে বিশেষ্যের পূর্বে বসে বিচিত্র অর্থপ্রকাশে সাহায্য করে। চর্যাপদেও এই লক্ষণ দৃশ্যমান। যেমন, <u>নি</u>সারা, <u>বি</u>আলী, <u>স</u>চ্চড়ে, <u>বি</u>মনা ইত্যাদি।
# আধুনিক বাংলায় ‘সে’ শব্দটি মুখ্যত সর্বনাম হিসেবে, আবার কখনও বা বাক্যালংকার অব্যয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্য ভাষায় শব্দটি বসে বিশেষণ ও সর্বনাম হিসেবেই। বাক্যকে অলংকৃত করার উদ্দেশ্যে বাংলা ছাড়া আর কোথাও ‘সে’ বসে না। চর্যায় ‘সে’ ও একই অর্থে ‘সো’-এর ব্যবহার দেখা যায় যত্রতত্র। যেমন, এক সে শুণ্ডিনী, এক সো পদুমা, গুরু বোস সে সীসা কাল ইত্যাদি।
; (গ) ক্রিয়াপদের বৈশিষ্ট্য
# বিভিন্ন ক্রিয়ার কাল গঠনে ধাতুরূপে বিশিষ্ট বিভক্তির প্রয়োগ করা হয় বাংলায়। পুরুষ ও বচন ভেদেও তা পৃথক। ভবিষৎকালে ‘-ইব’ বিভক্তি প্রযুক্ত হয় উত্তম পুরুষে, অতীতকালে প্রথম পুরুষে বসে ‘-ইল’ বিভক্তি এবং অসমাপিকায় ‘-ইয়া’ বা ‘-ইলে’ ইত্যাদি প্রযুক্ত হয়। এইসব লক্ষণ চর্যার ভাষাতেও পাওয়া যায়। যেমন, জই তুম্হে লোঅ হে হেইব পারগামী; কাহ্নু কহি গই করিব নিবাস; কানেট চৌরি নিল অধরাতি; সসুরা নিদ গেল; মাঅ মারিআ কাহ্ন ভইঅ কবালী; সাঙ্কমত চড়িলে ইত্যাদি।
# বাংলা ক্রিয়াপদের অপর বিশেষত্ব হল যৌগিক বা সংযোগমূলক ক্রিয়াপদ গঠন। দুভাবে এই পদ গঠিত হয়। অসমাপিকার সঙ্গে সমাপিকার সংযোগে অথবা বিশেষ্য বা বিশেষণ পদের সঙ্গে সমাপিকার সংযোগে। কেউ কেউ এই জাতীয় ক্রিয়াপদকে বাংলা ভাষার দুর্বলতা বলেও নির্দেশ করেছেন। চর্যাপদেও আছে—গুণিআ লেহুঁ; টুটি গেল, ধরণ ন জাই; নিদ গেল; কহন ন জাই; ভান্তি ন বাসসি; ছই ছোই যাই ইত্যাদি।
# বাংলা ভাষায় বিশিষ্ট ভঙ্গির জন্ম হয়েছে বাক্যে ক্রিয়াপদের বাহ্যিক অনুপস্থিতি থেকে। এই লক্ষণ বাংলা গদ্যের সূচনাতেই লক্ষ্য করা যায়। চর্যাপদের ভাষাতেও এর দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন, কায়া তরুবর পঞ্চ বি ডাল; ছড়গই সঅল সহাবে সুধ; গন্ধ পরস রস জইসো তইসো।
# বাংলার বিভিন্ন বাগ্বিধির ব্যবহারেও চর্যাপদের ভাষা সহজে অলংকৃত। এইসব বিশিষ্টার্থক বাক্যরীতি পরে কালবাহিত হয়ে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে স্থান পেয়েছে। যেমন, আপনা মাংসে হরিণা বৈরী, হাথেরে কাঙ্কন মা লেউ দাপন, ভান্তি ন বাসসি জাংতে, তু লো ডোম্বী হাঁউ কপালী, বর-সুণ গোহালী কিমো দুঠ বলন্দেঁ ইত্যাদি।
এইসব বাস্তব প্রমাণের ভিত্তিতে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, “The language of the charyas is the genuine vernacular of Bengal at its basis.” চর্যাপদের উপর অন্যান্য ভাষার দাবি নিরপেক্ষভাবে বিচার করে এটুকুই বলা যায় যে, চর্যাগীতিতে বিক্ষিপ্তভাবে ওড়িয়া, অসমিয়া, হিন্দি ও মৈথিলী শব্দ ছড়িয়ে থাকলেও এর মূল প্রকাশ্য ছাঁদটিই ছিল মাগধী অপভ্রংশের গুটি কেটে বেরিয়ে আসা সদ্যোজাত বাংলা ভাষার। তখনও তার পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠিত না হলেও তার নিজস্বতার অস্ফুট চিহ্নগুলি চর্যাপদের শারীরিক গড়নে ঠিকই ধরা পড়ে।
===সন্ধ্যাভাষা===
চর্যাপদের ভাষার আরও একটি দিক রয়েছে। ভাষা ভাবপ্রকাশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলেও সব ভাষা একইভাবে সংযোগ স্থাপন করে না। যে ভাষা ইঙ্গিতপ্রধান তার চালচলন আলাদা, আবার যে ভাষা ধ্বনিনির্ভর ও বাচ্যার্থপ্রধান তার আবেদন ভিন্ন প্রকার। ভাষাতাত্ত্বিকেরা ভাষার দেহময় রূপের কথাও বলেছেন, আবার প্রায়-ভাষার (para-language) কথাও বলেছেন। চর্যাপদের ভাষা-সংক্রান্ত আলোচনায় এইসব ভাবনা এই কারণেই প্রাসঙ্গিক যে, এখানে কোনও বক্তব্য স্পষ্টভাবে উপস্থিত করার পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত জটিল পথ অবলম্বন করা হয়েছে। ফলে চর্যাকার ও পাঠকের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে একটি প্রাচীর। এটা বোধহয় চর্যাকারদের অভিপ্রায়সিদ্ধ ধরন। কারণ, তাঁরাও কোনও কারণে চাইতেন এইসব গানে পরিবেশিত তত্ত্ব ও তথ্য অল্পসংখ্যক লোকের কাছেই পৌঁছাক। ঢেণ্ঢণপাদ যেমন বলেন, “ঢেণ্ডনপাএর গীত বিরলে বুঝঅ”। কুক্কুরীপাদও তাঁর চর্যার ভণিতার শেষ চরণে স্বীকার করেছেন যে, কোটির মধ্যে গুটিকতক লোকই তাঁর বক্তব্য বুঝবেন: “কোড়ি মাঝেঁ একু হিঅহিঁ সমাইউ”। এইভাবে মুষ্টিমেয় পাঠক নির্বাচনের কারণ অনুসন্ধান করতে হলে চর্যাপদের নিগূঢ় তত্ত্ব ও রহস্যময় আচারের দিকে দৃষ্টি দিতে হয়। তন্ত্রও এমনই ‘শাম্ভবী বিদ্যা’, যা ‘গোপ্যা কুলবধূরিব’। সহজযানীরা তন্ত্রের কায়াসাধনাকে প্রাধান্য দেওয়ায় সকলের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন তাঁদের সাধনতত্ত্বটিকে। কেবল দীক্ষিত ব্যক্তিদের কাছেই তাঁরা পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন সেই সাধনার প্রণালী ও অধ্যাত্মচেতনার প্রকৃত রহস্যকে। তাই তাঁরা এমন একপ্রকার সাংকেতিক ভাষা অবলম্বন করেছিলেন, যে ভাষার সংকেত শুধু সংশ্লিষ্ট ধর্মের সাধকেরাই বুঝবেন, অন্যরা নয়। এই সংকেতপূর্ণ ভাষার তাঁর অন্য নামও দিয়েছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে এই ভাষার নাম ‘সন্ধ্যাভাষা’। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের ভূমিকায় সন্ধ্যাভাষার উল্লেখ করে এই ভাষার প্রকৃতি সম্পর্কে লিখেছিলেন, “আলো-আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না।” ফারসি গবেষক ইউজিন বুর্নফ ''সদ্ধর্ম্পুণ্ডরীকসূত্র'' গ্রন্থের অনুবাদের ভূমিকায় সন্ধ্যাভাষাকে বলেছেন “Language Enigmatique” বা প্রহেলিকাময় ভাষা। আসলে রহস্যময় হেঁয়ালির ভাষাতে তত্ত্বপ্রকাশের রীতি খুবই প্রাচীন। বেদ-উপনিষদেও স্থানে স্থানে হেঁয়ালি ব্যবহার করা হয়েছে। গোপনীয়তার কারণে এবং গুহ্য তত্ত্ব বহন করার জন্য এই ভাষাকে এইচ. কার্ন মন্ত্রের সগোত্র বলে মনে করেছেন। অবশ্য প্রকৃতি অনুসারে সন্ধ্যাভাষাকে ঠিক মন্ত্র বলা চলে না। কারণ অলৌকিক শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা এই ভাষার আছে, এমন দাবি কোথাও করা হয়নি।
চর্যার আভিপ্রায়িক সাংকেতিক বচনের নাম সন্ধ্যাভাষা। এর উল্লেখ প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে পাওয়া যায়। শব্দটির বানান, ব্যুৎপত্তি ও অর্থ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতভেদ আছে। মহাযানী ধর্মগ্রন্থে ও সেগুলির ভাষ্যে সর্বত্র ‘সন্ধ্যা’ বানানই দেখা যায়। কিন্তু বিধুশেখর শাস্ত্রী এই বানানকে লিপিকরের প্রমাদ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, যথার্থ বানানটি হল ‘সন্ধা’। ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, চর্যাপদের ভাষার মধ্যে একটি প্রচ্ছন্ন অর্থ রয়ে গিয়েছে। সেই লুক্কায়িত তাৎপর্যই আভিপ্রায়িক বচন (Intentional language)। এটি শব্দের বাচ্যার্থ থেকে পৃথক। তাঁর কথায়, “Abhiprayika means that it is intended to imply or suggest something different from what is expressed by the words.” অর্থাৎ এই ভাষাতে রয়েছে কোনও নিগূঢ় ব্যঞ্জনা বা ভিন্ন অর্থের অভিসন্ধি। যে শব্দের মূল ব্যুৎপত্তি ছিল ‘সম্-✓ধৈ+আ’, সেটি বিধুশেখরের ভাষ্যে পরিবর্তিত হয়ে হল ‘সম্-[]✓ধা+ঙ’। এই মত সমর্থন করেন ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচীও। এঁদের দুজনেরই মতে, সন্ধ্যাভাষা অবশ্যই সাংকেতিক ভাষা, যা শব্দগুলির নিজস্ব আভিধানিক অর্থ পরিহার করে ভিন্নতর অর্থের ব্যঞ্জনা এনে দেয় এবং সেই অর্থ কোটির মধ্যে গুটিকতকের হৃদয়েই প্রবেশ করে। চর্যায় গুরুর ভূমিকা এখানেই। তিনি সেই শ্লিষ্ট অর্থটি শিষ্যের কাছে পরিস্ফুট করে তোলেন।
বিধুশেখর শাস্ত্রী ও ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচীর বক্তব্য কিছুটা সঠিক হলেও সমস্যা অন্যত্র। তাঁরা বলেছেন, লিপিকরের প্রমাদে ‘সন্ধা’ শব্দটি ‘সন্ধ্যা’ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রাচীন পুথিগুলি লক্ষ্য করলে প্রায় সর্বত্রই ‘সন্ধ্যা’ বানানই পাওয়া যায়। একটি বিশেষ বানানে সমস্ত লিপিকর প্রমাদগ্রস্থ হবেন, এটা নিতান্তই কষ্ট-কল্পনা। তাছাড়া মুনিদত্ত তাঁর টীকায় বারবার 'সন্ধ্যাবচন’-এর কথা বলেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রাকৃতিক সন্ধ্যার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে অর্থের ক্ষেত্রে যে আলো-আঁধারি প্রেক্ষাপটের কথা বলেছেন, তার গুরুত্ব এখানেই। শ্লিষ্ট শব্দে একটি জানা অর্থ বা বাচ্যার্থ সংযুক্ত থাকে, অন্যটি হয় লক্ষণার্থ বা ব্যঞ্জনার্থ। হয়তো সিদ্ধাচার্যগণ তাঁদের ব্যবহৃত ভাষার এই দ্বিবিধ স্বভাব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং সেই তাৎপর্যে ‘সন্ধ্যা’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেউ কেউ ‘সম্-✓ধা+আ’ থেকে নিষ্পন্ন শব্দটির “সম্যক ধ্যায়তে অস্যাম্ ধ্যায়তে ইতি সন্ধ্যা” সংজ্ঞা নির্দেশ করেছেন। অর্থাৎ, যে অর্থ অনুধ্যান করে বুঝতে হয়, তাই-ই সন্ধ্যা। এটিও সত্য হতে পারে। তবে সাহিত্যিক পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে অর্ধকল্পিত এক সন্ধি অঞ্চলের (আর্যাবর্ত ও পূর্ব ভারতের সন্ধিস্থল বীরভূম-সাঁওতাল পরগনার পশ্চিমাঞ্চল) ভাষা বলে সন্ধ্যাভাষাকে নির্দেশ করেছেন, তার পিছনে কোনও বলিষ্ঠ যুক্তি নেই।
চর্যাগানে সন্ধ্যাভাষার প্রয়োগকৌশল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সব গানেই যে আগাগোড়া এই হেঁয়ালিপূর্ণ আভিপ্রায়িক বচন ব্যবহার করা হয়েছে তা নয়। কয়েকটি গান আদ্যোপান্ত সন্ধ্যা শব্দে রচিত। যেমন, ২ ও ৩৩ সংখ্যক চর্যা। আবার কয়েকটি গানের অংশবিশেষ সন্ধ্যাভাষিত, কোনও বিচ্ছিন্ন শব্দ হয়তো সন্ধ্যা অর্থে প্রযুক্ত। আবার এমন গানও দুর্লভ নয়, যেখানে সন্ধ্যাশব্দের ব্যবহার একেবারেই নেই। যেমন, ৪০ ও ৪২ সংখ্যক চর্যা। নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, যে সমস্ত গানে দার্শনিকতার বাহুল্য, সেখানে সন্ধ্যাভাষা তেমন প্রযুক্ত হয়নি। কিন্তু তান্ত্রিক কৃত্যের নির্দেশ সমৃদ্ধ পদগুলিতে সন্ধ্যাবচনের বাহুল্য লক্ষিত হয়। হয়তো আপাতদৃষ্টিতে আপত্তিকর বা কুরুচিপূর্ণ কয়েকটি বিষয় গোপন করার জন্যই সন্ধ্যাভাষার আড়াল খুঁজেছিলেন চর্যাকারেরা। মুনিদত্তের টীকা রচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই লুকানো অর্থটিকে পরিস্ফুট করা। তাই তিনি বারবার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ‘সন্ধ্যাভাষয়া’, সন্ধ্যাবচনেন’, ‘সন্ধ্যাসংকেতম্’, ‘সন্ধ্যাজ্ঞানেন’, ‘সন্ধ্যয়া’ ইত্যাদি বাক্যাংশ ব্যবহার করেছেন। মধ্যযুগের সন্তসাধকদের গানেও ভাষার এই হেঁয়ালিপূর্ণ ভাব লক্ষ্য করা যায়। আসলে সিদ্ধাচার্য কিংবা সন্তসাধক সকলেই ছিলেন বাক্পথাতীত এক অ-কথনবেদ্য ভাবানুভূতির শরিক। তাঁর কথা বলেছেন রূপক-প্রতীকের ঘেরাটোপে। মরমিয়া সাধক মাত্রেরই স্বভাবধর্ম এই। এঁদের সম্পর্কে সেন্ট মার্টিন যথার্থ বলেছেন, “All mystics speak the same language for they come from the same country.” সন্ধ্যাভাষা এই বিশেষ ‘দেশ’-এরই ভাষা। স্বসংবেদ্য, অচিন্ত্য তত্ত্বের রূপময়তা ফুটিয়ে তোলার জন্য রূপক-প্রতীকের আয়োজন, তেমনই মহাসুখের স্বরূপ, মহাসুখ লাভের পথ, লাভের পর যোগীর মানসিক অবস্থা, পারমার্থিক ও সাংবৃতিক বোধিচিত্তের প্রকৃতি ইত্যাদি বর্ণনা করতে গিয়ে প্রায় প্রতি পদে সন্ধ্যাভাষার আশ্রয় নিয়েছেন চর্যাকারেরা। অধ্যাপক জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী তাঁর ''চর্যাগীতির ভূমিকা'' গ্রন্থে চর্যায় ব্যবহৃত শব্দগুলির উৎসগত শ্রেণিবিন্যাস করে একটি সামগ্রিক পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাতে দেখা যায়, জিনপুর, মাঙ্গ, নিবান, দশবল, তিশরণ, তথাগত ইত্যাদি শব্দগুলি প্রাচীন বৌদ্ধশাস্ত্র থেকে সংগৃহীত। আবার চন্দ্রসূর্য, দশমী দুয়ার, অণহা, বিণানা, তথতা, গগণ, কমলকুলিশ, ধমনচমন, কামরু, জোইনি, আলিকালি ইত্যাদি শব্দ গৃহীত হয়েছে হিন্দু যোগতন্ত্র এবং বৌদ্ধ মহাযানের অন্তর্গত মধ্যমক দর্শন, যোগাচার, বজ্রযান ইত্যাদি থেকে। এছাড়া চর্যাগানের ব্যবহৃত শুণ্ডিনী, বিআলী, সাঙ্কম, কোঞ্জাতালা, রূপা, খুণ্টি, কাচ্ছি, কেড়ুয়াল, তান্তি, ঠাকুর, কণ্ঠ কমলিনী, সবরসবরী, বঙ্গাল, গুঞ্জামালী ইত্যাদি কিছু পরিচিত শব্দ নেওয়া হয়েছে পরিচিত গৃহস্থালি ও লোকজীবনের প্রেক্ষাপট থেকে। বলা বাহুল্য, এইসব শব্দপ্রয়োগের ফলে চর্যাপদ সকল শ্রেণির পাঠকের কাছে বোধগম্য হয়ে ওঠেনি। তবে তাতে একদিকে যেমন নিজেদের আচরিত কায়াসাধনার গুহ্য রহস্যকে অতি সহজে ঢাকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে, তেমনই অন্যদিকে প্রাচীন বাঙালির কাব্যসৃষ্টির অভূতপূর্ব ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। মুনিদত্তের টীকাটি পাওয়া না গেলে গানগুলির অর্থোদ্ধারের জন্য পরবর্তীকালের গবেষকদের যে অন্ধকারে হাতড়ে ফিরতে হত, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
==সাহিত্যমূল্য==
সাহিত্যের অঙ্কুরোদ্গম ধর্মের আশ্রয়ের ঘটলেও উভয়ের উদ্দেশ্য পৃথক। অনির্বচনীয় অনুভূতির ক্রিয়া হয়তো উভয়ের মূলেই উপস্থিত; তবু ধর্মের লক্ষ্য পরমার্থ তত্ত্ব, যার আশ্রয় পরলোক এবং সাহিত্যের উদ্দেশ্য জীবনরসের আস্বাদন, যার লীলাভূমি ইহলোক। ধর্মের প্রবক্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জীবনবিবিক্তার কথা বলেছেন, যেখানে মুক্তি বৈরাগ্যসাধনে। কিন্তু সাহিত্যিক বলেছেন জীবনের প্রতি আসক্তির কথা, জীবন-সংগ্রাম ও জয়-পরাজয়ের মধ্যে দিয়েছেন জীবন-মাধুর্যের সন্ধান। আনন্দই সাহিত্যের পরম লক্ষ্য। যে-কোনও রস সেই আনন্দেরই বাহক মাত্র।
সিদ্ধাচার্যদের লেখা চর্যাগীতিগুলি বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন। কিন্তু একই সঙ্গে সেগুলি বাংলা সাহিত্যেরও আদিতম নিদর্শন কিনা এবং এগুলির সত্যই কোনও কাব্যমূল্য আছে কিনা, সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ, বৌদ্ধ সাধকেরা তাঁদের ধর্মতত্ত্বকে গানের ভাষায় রূপ দিতে চেয়েছেন, তা নিয়ে আলাদা করে রসসাহিত্য নির্মাণের কথা কখনও ভাবেননি। অথচ দেখা যায়, তাঁদের অজ্ঞাতসারেই চর্যাগীতিতে সঞ্চারিত হয়েছে সাহিত্যধর্ম। কাব্যের কাব্যত্ব নির্ভর করে যে দুই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের উপর, সেই সৌন্দর্যব্যঞ্জনা ও রসদৃষ্টি সিদ্ধাচার্যদের অধ্যাত্ম-অনুভূতির সমান্তরালে কোথাও কোথাও উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছে। আসলে অধ্যাত্মসংগীত মাত্রেই নীরস তত্ত্বের কচকচি নয়। ঋগ্বেদের সূক্তগুলিও কবিত্বের আকর। চর্যাপদ কেবল সিদ্ধসাধকের ধর্মীয় অনুভবের ঘনিষ্ঠ রূপায়ণ নয়, একই সঙ্গে তা সাধক-কবির মন্ময় অনুভূতির অলংকৃত প্রকাশও বটে। কাব্যের প্রকাশরীতি বিশ্লেষণ করার যে প্রথা দীর্ঘকাল এদেশে প্রচলিত, তারই ফলে এককালে গড়ে উঠেছিল নানা কাব্যপ্রস্থান। তার ভাববস্তুর বিচার চলেছে দুটি মাত্রায়—ধ্বনি ও রসের মানদণ্ডে। বিশেষ সাধনপদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে সিদ্ধাচার্যেরা নিছক তত্ত্বকথা লিখলেও তাকে ভাষাময় রূপ দিতে গিয়ে এই ভাব ও প্রকাশকলার গুরুত্ব সৃষ্টিতেও যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁরা তত্ত্বের এক কাব্যরস-সমন্বিত মূর্তিই অঙ্কন করতে চেয়েছেন, রচনাকে নিছক দার্শনিক পরিভাষা-কণ্টকিত করে ধর্মানুশাসনের কঠিন দুষ্প্রবেশ্য আবেষ্টনীর মধ্যে ধরে রাখতে চাননি। সাধনতত্ত্ব বলতে গিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা কিংবা অন্য যে-কোনও কারণেই হোক তাঁরা কয়েকটি চিত্রপ্রতীকের সাহায্য নেন। এইসব রূপক-প্রতীক তাঁদের দুরুহ তত্ত্বপ্রকাশ যেমন সহজ করেছেন, তেমনই আকর হয়ে উঠেছে কবিত্বেরও। অবশ্য এও সত্য যে, সব পদেই কবিত্বের স্পর্শ নেই, কোথাও কোথাও রয়েছে দার্শনিক প্রত্যয়ের নিরাবরণ উচ্চারণও। সে যাই হোক, সাধনতত্ত্ব কতটা শিল্পশ্রীমণ্ডিত করে সাধকেরা প্রকাশ করতে পেয়েছেন, সেটাই এখানে আমাদের আলোচ্য বিষয়।
প্রথমেই আসা যাক রূপকর্মের আলোচনায়। অলংকৃত বাক্যই যে কাব্য সেকথার প্রমাণই চর্যার কবিরা রেখেছেন তাঁদের পদে। উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, বিরোধ, বক্রভাষণ, বিপরীত বাচন, চিত্রকল্প ইত্যাদি প্রয়োগে তাঁরা ছিলেন সিদ্ধহস্ত। গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই তাঁদের এই পথ বেছে নিতে হয়েছিল। সাদৃশ্যমূলক অলংকারের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ উপমাই প্রথাসিদ্ধ ও গতানুগতিক। জগতের মিথ্যাত্ব বোঝাতে ৪১ সংখ্যক চর্যায় ভুসুকুপাদ মরু-মরীচিকা, গন্ধর্বনগরী, দর্শন-প্রতিবিম্ব, বন্ধ্যাপুত্র, বালুকাতৈল, শশকশৃঙ্গ, আকাশকুসুমের উপমা টেনে এনেছেন। অন্যত্র চঞ্চল চিত্তের প্রতীক হয়ে উঠেছে হরিণ ও মূষিক। অবধূতীকে বোঝাতে আনা হয়েছে ডোম্বী ও কমলিনীকে এবং জিনপুর প্রতীকায়িত হয়েছে পদ্মবন ও জ্যোৎস্নাবাড়ির দ্বারা। সহজানন্দে পরিপূর্ণ সহজচিত্তকে তুলনা করা হয়েছে গজেন্দ্রের সঙ্গে। চিত্তচালনা ও নৌচালনা অগ্রগমনের সূত্রে কবিদৃষ্টিতে অভিন্ন হয়ে উঠেছে। তুলো ধোনা, মদ চোলাই আসলে সংবৃতি বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবীকৃত করার রূপক। একই অর্থ প্রকাশ করছে মাদী কচ্ছপের দোহনের রূপকটিও। এইসব অলংকারের প্রয়োগে বক্তব্য সরস হয়েছে, তত্ত্বের শুষ্কতা ঘুচে গিয়ে আস্বাদ্যমান সাহিত্যের বস্তুতে পরিণত হয়েছে চর্যার দেহকেন্দ্রিক যৌনযোগতান্ত্রিক ধর্মাচার।
এছাড়া চর্যার অধিকাংশ পদেই আছে জীবনের টুকরো টুকরো ছবি। যেমন, ৩ সংখ্যক পদে শুণ্ডিনীর মদ চোলাই, ৫ সংখ্যক পদে নদী পারাপারের দৃশ্য, ৬ সংখ্যক পদে হরিণ শিকারের আরণ্যক পরিবেশ, ১০ ও ২৮ সংখ্যক পদে ডোম্বী ও শবরীর অনুসষঙ্গ, ১২ সংখ্যক পদে দাবা খেলা, ২০ সংখ্যক পদে ‘খমন ভতারী’ নারীর গর্ভযন্ত্রণা ও মনোবেদনা, ২১ সংখ্যক পদে ইঁদুরের আনাগোনা, ২৬ সংখ্যক পদে ধুনুরির তুলো ধোনা, ৩৩ সংখ্যক পদে পর্বতশিখরে প্রতিবেশীহীন মানুষের একাকীত্ব, ৪৯ সংখ্যক পদে জলদস্যুর অত্যাচারে সাধারণ মানুষের হৃতসর্বস্ব হওয়া, ৫০ সংখ্যক পদে শবর-শবরীর মদমত্ত উল্লাস ইত্যাদি। কাব্যের কাব্যত্ব যদি স্বভাবোক্ত অলংকারের উপর কিছু অংশে নির্ভর করে থাকে, তবে চর্যাপদে তার সুপ্রচুর প্রয়োগ দৃষ্টে চর্যাকারদের কবি বলে অভিনন্দিত করতে দ্বিধা হওয়ার কোনও কারণ নেই। ৫ সংখ্যক চর্যাটির কথাই ধরা যাক। ভবনদীর আধ্যাত্মিক অর্থ যাই হোক না কেন, সেই নদীর বাস্তব রূপটি সব কিছু ছাপিয়ে পাঠকহৃদয়ে অন্য এক অনুভূতি সঞ্চারিত করে। দু-কূল হারানো বর্ষার নদী আর তার বেগবান উন্মত্ত স্রোত পাঠকের বাসনালোক আলোড়িত করে আতঙ্ক-মিশ্রিত আনন্দ জাগিয়ে তোলে। পদকর্তা চাটিলপাদ লেখেন:
<poem>
:: ভবণই গহন গম্ভীর বেগেঁ বাহী।
:: দু আন্তে চিখিল মাঝেঁ ন থাহী।।
</poem>
৬ সংখ্যক পদে নিশ্চিন্তভাবে তৃণভোজনে রত এক হরিণের প্রসঙ্গ এসেছে। কোনও দিকে তার দৃষ্টি নেই। এমন সময় ব্যাধ হাঁক পাড়ল। হরিণ যে তার সুস্বাদু মাংসের জন্য নিজেই নিজের শত্রু। হাঁক শুনে হরিণের প্রাণ উড়ে যায়। তৃণ আর স্পর্শ করে না, পানীয়ে অরুচি ধরে। এমন সময়ে অকুস্থলে হরিণীর আবির্ভাব। সে পরামর্শ দেয়, “এ বন চ্ছাড়ী হোহু ভান্তে।” সেই কথা শুনে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায় হরিণ, এত দ্রুত যে তার ক্ষুরও দৃশ্যমান হয় না। এর মধ্যে নিগূঢ় সাধনতত্ত্ব যাই থাকুক, অরণ্যের চিত্র হিসেবে এটি অনবদ্য। তত্ত্বনিরপেক্ষভাবে এই পদের রসাবেদন যে-কোনও পাঠককেই মুগ্ধ করবে।
সাহিত্যের অন্যতম উপজীব্য হল প্রেম। এটি দেশকাল-নিরপেক্ষ যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক নরনারীর দেহবাসনা-সঞ্জাত একপ্রকার মানসিক অবস্থা। আলংকারিকদের ভাষ্য অনুসারে, রতিভারের পরিপুষ্টি ঘটে শৃঙ্গার রসে, যা সাধারণ্যে প্রেম বলে কথিত। এই শৃঙ্গারকে আবার সম্ভোগ ও অভিলাস এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। চর্যার কবিরা শৃঙ্গার-রসাত্মক পদে সিদ্ধহস্ত। বিশেষত কায়াসাধনার প্রসঙ্গ থাকায় নারীপুরুষের শারীরিক মিলনের প্রসঙ্গ অনেকবার এসেছে চর্যায়। স্থানে স্থানে আধুনিক রুচির নিরিখে তা অশ্লীল মনে হতে পারে। যেমন, ৪ সংখ্যক পদে চুম্বনের বিবরণ খুব স্বল্পকথায় বর্ণিত। পদকর্তা গুণ্ডরীপাদ যোগিনীকে ছাড়া এক মুহূর্তও প্রাণধারণে অক্ষম। তাঁর আকাঙ্ক্ষা প্রেমিকার মুখচুম্বন করে কমলরস পান করেন। তিনি যে সুরতক্রিয়ায় পারদর্শী সেকথা স্বীকার করেন মুক্তকণ্ঠে, “ভনই গুণ্ডরী অহ্মে কুন্দুরে বীরা”। ১০ সংখ্যক পদে পদকর্তা কাহ্নপাদ প্রেমিকাকে প্রেম নিবেদন করেন সরাসরি। ডোম্বীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। নির্ঘৃণ কাপালীর বলতে বাধে না, “আলো ডোম্বী তোএ সম করিব ম সঙ্গ”। অন্তেবাসী এই ডোম-রমণীকে পাওয়ার জন্য তাঁর ত্যাগস্বীকারও কম নয়, “তোহোর অন্তরে ছাড়ি নড় এড়া।… তোহোর অন্তরে মোএ ঘলিলি হাড়েরি মালা।” এসব কথার মধ্যে যথেষ্ট নাটকীয় উপাদান সংগুপ্ত রয়েছে। আবার দেখা যায়, এরই অনুবৃত্তিস্বরূপ ১৯ সংখ্যক পদে কাহ্নপাদ চলেছেন ডোম্বীকে বিবাহ করতে। বাজছে মাদল, পটহ, দুন্দুভি। পালকিতে বরবেশী কাহ্ন। জাত খুইয়ে পাত্রের যৌতুক মিল অনুত্তর ধাম। তারপর দিনরাত কাটতে লাগল ‘সুরঅ পসংগে’। তত্ত্ব ছাড়াই এই আখ্যান পাঠকের কাছে পরমরমণীয়। আবার ২৮ সংখ্যক পদে শবরীপাদ বেশ বিস্তারিতভাবেই সঙ্গিনীমিলনের আনন্দ ব্যক্ত করেছেন। দুই মিলনকাতর নরনারীর পরিশ্লেষ এক মনোহর প্রাকৃতিক পরিবেশে চিত্রিত। তখন তরুশাখাগুলি মঞ্জরিত, তার পুষ্পিত ডালগুলি স্পর্শ করছে গগন, সেই অনুপম পরিবেশে ফুল্ল কাননে ময়ূরপুচ্ছ পরিহিতা, কণ্ঠে গুঞ্জামালাধারিণী ও কর্ণকুণ্ডলে সজ্জিতা শবরী একা বিচরণ করছে বনমধ্যে। ত্রিধাতুর খাট পেতে শয্যারচনা করে শবর। অবশেষে ভুজঙ্গ নায়ক শবর নৈরামণি শবরীকে নিয়ে কেলিরসে রাত্রিযাপন করে। সিদ্ধাচার্যের এই পদে জ্ঞানমুদ্রা সাধনতত্ত্বের নিগূঢ় রহস্যই সন্ধ্যাভাষায় কথিত, কিন্তু সেসব অতিক্রম করে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে লৌকিক শবর-শবরীর আরণ্যক জীবনযাত্রা, তাদের নিবিড় আশ্লেষ, উপগূঢ়ের অব্যক্ত আনন্দ। শবরীপাদের একটি চর্যা আছে গ্রন্থশেষে (৫০ সংখ্যক চর্যা), যেখানে তিনি পরমার্থ সত্যের সাক্ষাৎ লাভ করে অন্যের উপকারার্থে সেই সংবেদনের কথা জানাচ্ছেন শূন্যতাসম্বোধি চর্যায়। তাঁর সব ভারী তত্ত্বই চিত্রসৌন্দর্যে বিগলিত হয়ে যায়, যখন দেখা যায় কবি বাক্যজাল বুনে বুনে এক অপূর্ব মায়াময় রাত্রির দৃশ্য নির্মাণ করছেন। বাড়ির পাশে কাপাস ফুল ফুটেছে, সারা আকাশ ভরে গেছে অসংখ্য তারা ফুলে, অন্ধকার দ্রবীভূত হয়েছে প্লাবিত মেদুর জ্যোৎস্নায়। আর মাঠে ভবিষৎ প্রাচুর্যের ইঙ্গিত বহন করে স্বর্ণশীর্ষে আন্দোলিত হচ্ছে পাকা ধানের মঞ্চরী। এই ধরনের রোম্যান্টিক কাব্যকথার কাছে অন্য কোনও ভাবের কথা পৌঁছাতে পারেনি।
কিন্তু কেবল সুখের কথাতেই নয়, দুঃখ বর্ণনাতেও চর্যাকারেরা দক্ষ। যন্ত্রণার মহিমাময় উপলব্ধি থেকেই উৎসারিত হয় মধুরতম সংগীত। সেই বেদনা মানুষকে যেমন মুহ্যমান করেন, তেমনই দেয় এক অব্যক্ত আনন্দ। চর্যাকারেরা সিদ্ধাচার্য। তাঁদের নির্দিষ্ট ধর্মসাধনার বাইরে কোনও গার্হস্থ্যজীবন না থাকলেও ছিল বহুল ব্যাপ্ত সামাজিক অভিজ্ঞতা। মানুষের সংসারে অভাব, দারিদ্র্য, দুঃখ ও বঞ্চনা তাই তাঁদের দৃষ্টি এড়ায় না। রচিত পদেও পাওয়া যায় এইসব ভাবনারই বহিপ্রকাশ। ৪৯ সংখ্যক চর্যায় ভুসুকুপাদ নির্দয় দস্যু কর্তৃক লুণ্ঠিত এক ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের কথা লিখেছেন। ৩৩ সংখ্যক পদে ঢেণ্ঢণপাদ লোকালয় থেকে দূরে টিলায় বাস করা আর-এক দরিদ্র সংসারের ক্লিন্ন ছবি আঁকেন। সেখানে তার কোনও পড়শি নেই, নেই কাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছলতাও। গৃহে নিত্য অন্নাভাব, তবু অতিথির বিরাম নেই; সংসারও বেড়ে চলেছে দিনে দিনে। ২০ সংখ্যক চর্যায় কবি এক হতভাগিনী নারীর কথা বলেছেন। তার স্বামী উদাসীন বিবাগী। এতটুকু জীবনে সে নারীর কত দুঃখ। সেই দুঃখের কথা সে কাকে বলবে, আর বলবেই বা কোন মুখে। এই তার প্রথম সন্তানপ্রসব। কিন্তু কোথায় আঁতুড়, কোথায় সাহায্য। এই পদের আধ্যাত্মিক অর্থ যাই হোক না কেন, স্বামীবঞ্চিতা নারীজীবনের এই দুঃখানুভূতির তীব্রতা কবিতাটিকে প্রাণ দিয়েছে। কবিত্বের বিচারে সমগ্র পদসংকলনে এই পদটির স্থান অনেক উঁচুতে।
চর্যাপদে সামাজিক জীবনের ছবিও পাওয়া যায়। ২ সংখ্যক পদে তত্ত্ব অতিক্রান্ত হয় একটি আখ্যানের আভাসে। চোরে বধূর কর্ণভূষণ চুরি করে, সে অলংকার সে কোথায় খুঁজবে ভেবে পায় না। শ্বশুর নিদ্রামগ্ন কিন্তু বধূটি জেগে আছে। ৩ সংখ্যক পদে আছে সেকালের শুঁড়িখানার বর্ণনা। শুঁড়ি-বউ চিকন বাকলে মদ বানায়। তার দোকানের সাংকেতিক চিহ্ন দেখে খদ্দের এসে ভিড় করে। সার দেওয়া চৌষট্টি ঘড়াতে মদ রাখা আছে। দোকানে ঢুকে খদ্দের মদ খেতে শুরু করে আর বাইরে বের হয় না। ছোটো ঘড়ায় সরু নল দিয়ে মদ্যপান করে তারা। বলা বাহুল্য, এইসব কথা ব্যঞ্জনাবিহীনভাবে বলার জন্য চর্যার কবিরা কাব্যরচনার আয়োজন করেননি। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল অন্য। কিন্তু সে উদ্দেশ্য ছাপিয়ে মানুষের লৌকিক জীবনের মর্মমূলে পৌঁছে গিয়েছে সিদ্ধাচার্যদের গান। তাঁদের পদ নন্দিত করে আজকের পাঠকের চিত্ত। এর ছন্দ, এর অলংকার, এর অজস্র বাক্প্রতিমা সাজিয়ে দেয় কথাগুলি, আর সে অলংকৃত কথা পাঠককে টেনে নিয়ে চলে বিশুদ্ধ রসের জগতে। চর্যাপদ তাই একই আধারে ধর্মকথা ও কাব্যকথা।
==সমাজচিত্র==
সাহিত্য সমাজের দর্পণ। কবির সৃষ্টি তাঁর অনুভূতিলোকের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফল হলেও ভুলে গেলে চলবে না যে, কবিও সামাজিক সত্তা। সামাজিক সমস্ত বাস্তব অভিজ্ঞতাই তাঁকে সমৃদ্ধ করে। যে সাহিত্য তিনি রচনা করেন সেও এই সমাজের পাঠকের জন্য। ফলে তাঁর চেনা গণ্ডীর বাইরে যাওয়ার বিশেষ প্রয়োজন নেই। অন্যান্যরা সমাজকে হয়তো দেখেন খণ্ডিত ভাবে, অনেক ক্ষেত্রেই সেই দেখা তাৎক্ষণিক, তার কোনও স্থায়িত্ব থাকে না। কিন্তু কবির দেখা সমাজ আকারে বড়ো, সাহিত্য রূপে আবদ্ধ হওয়ায় কালান্তরে স্থানান্তরে সঞ্চারিত হওয়ার সুযোগ থাকে তার। চর্যাকারেরা এক বিশেষ ধর্মের সাধক ছিলেন, কিন্তু সামাজিক অভিজ্ঞতাও তাঁদের ছিল। অনেকেরই সাধনপূর্ব গার্হস্থ্য জীবনেতিহাস সম্পর্কে অস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়। ফলে তাঁদের রচনায় সমাজ-প্রসঙ্গ যে উঠে আসবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এক আশ্চর্য বিরোধাভাস আছে তাঁদের রচনায় ও বিশ্বাসগত দর্শনে। সহজযানী সিদ্ধাচার্যেরা জগৎকে মনে করতেন শূন্যস্বভাব (“আইএ অনুঅনাএ জগরে ভাংতিএঁ সো গড়িহাই”), অথচ জগতের সেই মিথ্যাস্বরূপ প্রমাণের জন্য যেসব রূপক, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, ব্যতিরেকের সাহায্য গ্রহণ করেছিলেন তার অধিকাংশেরই অবস্থান পরিদৃশ্যমান সৎ-স্বভাব জগতেরই। যাকে তাঁরা আধ্যাত্মিক তত্ত্বে অস্বীকার করতে চেয়েছেন, তাকেই প্রকারান্তরে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন সাহিত্যের রূপসৃষ্টিতে। যাই হোক, সিদ্ধাচার্যেরা চোখ-কান খোলা রেখে সামাজিক অভিজ্ঞতাগুলি লাভ করেছিলেন বলেই যে গানে সেগুলি বারবার ব্যবহার করতে পেরেছেন, তা নিয়ে কোনও মতান্তর নেই। এই দর্পণেই ধরা পড়ে নবম থেকে দ্বাদশ শতকের বৃহত্তর বাংলার সামাজিক চিত্র। বৃহত্তর বাংলাই যে চর্যাগুলিকে লালন করেছে এ বিষয়ে অনেক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, চর্যার ভাষা প্রত্ন-বাংলা, চর্যার কবিরা কম-বেশি বাঙালি, প্রাচীন বাংলার অনেক তথ্যের সঙ্গে তাঁদের পরিবেশিত তথ্য ঐক্য রক্ষা করে চলে। সামাজিক ইতিহাসের যে-সব উপকরণ বাংলার তাম্রপট্টলিপি ও সন্ধ্যাকর নন্দীর ''রামচরিত''-এ পাওয়া যায়, চর্যাগানের ঐতিহাসিক ও সামাজিক চিত্রের সঙ্গে তার মিল রয়েছে।
চর্যাগানের উৎপত্তির ভিত্তিমূলে একটি সুস্পষ্ট ঐতিহাসিক পটভূমি আছে, যার সঙ্গে তার সামাজিক বাস্তবতাও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। নবম থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত রচিত গানগুলিতে সেই সময়পর্বের জনজীবনই প্রতিফলিত হয়েছে। রাজনৈতিক ইতিবৃত্তের সূত্রে বলা যায়, ওই সময়ে বাংলায় পাল ও সেন বংশের রাজত্বকাল। ধর্মবিশ্বাসে এই দুই রাজবংশ বিপ্রতীপ। পাল রাজারা বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষক, অন্যদিকে সেন রাজারা ব্রাহ্মণ্যধর্মের। অবশ্য বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজন্যবর্গ ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি ও সামাজিক জাতিবিভাজনকে কোথাও অস্বীকার করেননি। চতুর্বর্ণে বিন্যস্ত বৈদিক সমাজব্যবস্থার তাঁরাও যে পরোক্ষ সমর্থক ছিলেন তা বোঝা যায় তাঁদের খোদিত শিলালিপি, দানকর্মের প্রকৃতি ইত্যাদি দেখে। বস্তুত বাংলার আর্যীকরণের পথ প্রশস্ত হলে আর্য-অনার্য মিলনের ফলে সমাজে বর্ণসংকরত্ব দেখা দেয়। তখন বর্ণবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন ব্রাহ্মণ্য সমাজপতিরা। সেন আমলে এই বর্ণব্যবস্থা আরও প্রখরতা লাভ করে কৌলীন্য প্রথার প্রবর্তনে। সর্বভারতীয় স্বীকৃত চতুর্বর্ণ বাংলায় এসে বর্ণসাংকর্যের কারণে মাত্র দুটি বর্ণে পরিণত হয়—ব্রাহ্মণ ও শূদ্র। সংকরত্বের অনুপাত ও ব্রাহ্মণ্যবিধি গ্রহণের মাত্রা অনুযায়ী শূদ্রেরও সৎ-অসৎ বিভাগ গড়ে ওঠে। তাছাড়া ছিল বর্ণপ্রথার বাইরে পড়ে থাকা অসংখ্য অন্ত্যজ অস্পৃশ্যেরাও। স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামসমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি বর্ণের জন্য স্মৃতিশাস্ত্র-বিহিত ভিন্ন ভিন্ন বৃত্তি নির্ধারিত হয়। সমাজে বর্ণবৈষম্যের কারণে ঘৃণা, অবজ্ঞা ইত্যাদিরও সূচনা হয়। চর্যাগানে অন্ত্যজ বলে কথিত ডোম, শবর, চণ্ডালদের প্রসঙ্গ এসেছে বারবার। এরাই সেকালের সামাজিক স্তরবিন্যাসে শেষ ধাপে অবস্থান করছিল। এরা অস্পৃশ্য। সিদ্ধাচার্যেরা সাধারণ চিত্তের পক্ষের অস্পর্শযোগ্য সহজসুন্দরীকে চণ্ডালী, ডোম্বী, শবরী ইত্যাদি নামে অভিহিত করেছেন এইজন্য। সামাজিক ভাবনার রূপকে আধ্যাত্মিক সত্যকে ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে তৎকালীন সমাজের বাস্তব দিকটি এভাবেই উদ্ঘাটিত হয়েছে। নিম্নকোটির সমাজশ্রমিক এরা, আর্থিক দিক থেকেও অনগ্রসর। উচ্চবর্ণের বসতির বাইরে এইসব জল-অচল অন্ত্যজ গোষ্ঠীর অবস্থান। সমাজের তথাকথিত উচ্চকোটির মানুষ এদের স্পর্শ বাঁচিয়ে চলে। গ্রামপ্রান্তে টিলার উপরে শবরেরা যে বসবাস করত তার পরিচয় ধরা আছে ২৮ সংখ্যক চর্যায়। এদের জীবিকার পরিচয়ও পাওয়া যায় গানগুলিতে। কোনওটাই তেমন সম্মানজনক বা অর্থকরী নয়। তাঁত বোনা, চাঙারি প্রস্তুত করা, মাছ ধরা, নৌকা চালনা ইত্যাদি ছিল ডোম, শবরদের পেশা। নদনদীবেষ্টিত বাংলায় সেকালেও নৌযানের বহুল ব্যবহার ছিল। পণ্য পরিবহণ, যাত্রীবহন, মাছ ধরা ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হত নৌকা। পূর্ববঙ্গে মৎস্যশিকারে দড়াজাল ব্যবহৃত হত এক সময়ে। ৮ সংখ্যক চর্যায় তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় ‘কামালি’ শব্দে। যে সমস্ত জেলে-শ্রমিক ওই জাল টেনে নিয়ে চলে, তারা এখনও ‘কামলা’ নামে পরিচিত। খুঁটি, কাছি, কেড়ুয়াল, পতবাল, দুখোল ইত্যাদির উল্লেখ থেকে বোঝা যায় কবি এসবের সঙ্গে বাস্তবে পরিচিত ছিলেন। চর্যায় অন্যান্য বৃত্তির কথাও এসেছে। যেমন, ব্যাধ কর্তৃক পশুশিকার, ধুনুরির তুলো ধোনা, কাঠুরের গাছ কাটা, শুঁড়ির মদ চোলাই, নটের নটবৃত্তি, ডোম-রমণীদের নৃত্যগীত ইত্যাদি। চণ্ডালেরা শবদাহ করত। ৫০ সংখ্যক পদে শবরের মৃত্যু হলে চণ্ডালীকে দিয়ে শবদাহের কথা জানানো হয়েছে।
কেবল অন্ত্যজ বর্ণ ও তাদের দারিদ্র্যই কথাই চর্যাপদে নেই, আছে ডোমনীর কুঁড়ে স্পর্শ করে চলা ব্রাহ্মণ বটুর প্রসঙ্গও। এতে ধরা পড়ে বটুর চারিত্রিক শিথিলতা। সেকালের বহির্বাণিজ্য ছিল নৌ-নির্ভর। নানা দ্রব্যে পরিপূর্ণ বাণিজ্যসম্ভার নিয়ে দূর দেশে যেত বণিকেরা, নিয়ে আসত মূল্যবান বিনিময়ে-সামগ্রী। বজরা নৌকায় পাড়ি দেওয়ার কথা জানা যায় ৪৯ সংখ্যক চর্যায়। নদীপথে সমৃদ্ধিশালী বণিকদের নৌকা যে মাঝে মাঝে দস্যুর হাতে আক্রান্ত হত সেই খবরই পাওয়া যায় এই গানে। সমৃদ্ধ বাণিজ্যের কারণে গড়ে উঠেছিল সম্পন্ন নগরীও। সেই নগরে বাস করত নানা শ্রেণির মানুষ। ছিল ধনবান লোক, যারা পঞ্চপাটনের মালিক, কারও বা সঞ্চয় চতুষ্কোটি মুদ্রার ভাণ্ডার। সে সময় দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। রাজারা নাগরিক সম্পত্তি রক্ষার জন্য নগরপাল বা কোতোয়াল নিয়োগ করতেন। কিন্তু অনেক সময় প্রহরীরা নিজেই হত চোর। একটি লুপ্ত গানের সংস্কৃত ছায়া থেকে বোঝা যায় যে, রাজ্য আক্রমণ, দুর্গজয়, তূর্যধ্বনি, নগরী লুণ্ঠন ইত্যাদিও হত সেকালে।
চর্যাপদে সবচেয়ে সার্থকভাবে প্রতিবিম্বিত হয়েছে সেকালের সাধারণ গৃহস্থজীবনের ছবি। মোটা ভাত-কাপড়েই সন্তুষ্ট ছিল সবাই। শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ ইত্যাদি নিয়ে বাঙালি গৃহবধূর একান্নবর্তী সংসার। কারও স্বামী বিবাগী, উদাসী; দারিদ্র্য সত্ত্বেও জন্ম হচ্ছে সন্তানের। চর্যায় কৃষির কথা সরাসরি না এলেও বলদের প্রসঙ্গ উত্থাপনে কৃষি-সমৃদ্ধির কথা অনুমান করা যায়। গোয়ালে ছিল গোরুও। পাত্রে ভরে তিনবার দুধ দোহন করা হত তার। বধূরা ভয় করে চলত বয়স্ক গুরুজনেদের। সমাজে নৈতিক মান সব ক্ষেত্রে উঁচুতে ছিল না। চোর-ডাকাতে পথে ঘাটে লুটপাট করত, রাতে সুযোগ বুঝে গৃহস্থের ঘরে চুরিও করত। এর জন্য থানা-কাছারিরও যে প্রচলন ছিল তা বোঝা যায় ‘উআরি’ ও ‘দুষাধি’ শব্দ দুটির প্রয়োগ থেকে। ব্যভিচারের ইঙ্গিত পাওয়া যায় ব্রাহ্মণের ডোম্বী-আসক্তিতে। দুশ্চরিত্রা নারীও ছিল সমাজে। ২ সংখ্যক চর্যায় কবি লেখেন, যে বধূটি দিনের বেলায় কাক দেখলে ডরায়, সেই রাতে কামনা-তাড়িত হয়ে পরপুরুষের সন্ধানে বাইরে যায়। চর্যাগানে বিধৃত কিছু খণ্ডচিত্র থেকে সেকালের অনেক আচার-ব্যবহার, রীতিনীতির আভাস পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিবাহের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত হলেও বেশ উজ্জ্বল। বাদ্য সহকারে বর বিবাহ করতে চলেছে, বিবাহে রয়েছে যৌতুকদানের প্রথা, বিবাহের পর মহিলাদের বাসর জাগার প্রসঙ্গও আছে চর্যায়। নরনারীর শারীরিক মিলনের আনন্দঘন শাশ্বত চিত্র অনেকগুলি পদে উপস্থিত। রয়েছে সৎকার প্রথারও বর্ণনা। সেকালেও চারটি বাঁশে চেঁচাড়ি দিয়ে শবের খাট নির্মাণ করা হত। দাবা খেলা ছিল অবসর বিনোদনের একটি উপায়। আর ছিল মদ্যপানের চল। মদের দোকানে চিহ্ন দেওয়া থাকত, যা দেখে ক্রেতারা হাজির হত সেখানে। কর্পূর দিয়ে পান খাওয়াও ছিল এক ধরনের বিলাসিতা। এছাড়া গৃহস্থালির নিত্য-ব্যবহার্য অনেক সামগ্রীর নাম পাওয়া যায় চর্যাপদে। যেমন, হাঁড়ি, ঘড়া, ঘড়ুলি বা গাড়ু, কানেট, কঙ্কণ, মুক্তাহার, কুণ্ডল, আরশি, পটহ, মাদল, করণ্ড, কসাল, ডমরু, বীণা, বাঁশি, কুঠার, তালাচাবি, টাঙ্গি, পিঁড়ি, সোনা, রুপো ইত্যাদি। ১৩ সংখ্যক চর্যায় ‘শূন মেহেরী’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, সেকালে মেয়েদের জন্য স্থানবিশেষে মহিলামহলও থাকত। চর্যাগানে আর আছে সমকালীন সমাজের ধর্মীয় রূপের চিত্র। সমাজে তখন কাপালিক, যোগী, ক্ষপণকদের অবস্থান। তত্ত্ব ও আচার-অনুষ্ঠানের দিক দিয়ে এদের মধ্যে বেশ কিছু মিল ছিল। উলঙ্গ হয়ে হাড়ের মালা পরে সাধনসঙ্গিনী নিয়ে কাপালিকেরা যে সাধনভজনে রত থাকতেন, তার উল্লেখ চর্যাপদে পাওয়া যায়। চর্যাপদের ভূগোল স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও বঙ্গ ও কামরূপ অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়। গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গে সেই সময়ের মানুষ পরিচিত ছিল। পদ্মার উল্লেখ থাকলেও তাকে ‘খাল’ বলে নির্দেশ করা হয়েছে। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মনে করেন যে, চর্যাপদ লেখা হয়েছে নগরজীবনের পটভূমিতে। তাই এই পদগুলিতে কৃষির তেমন উল্লেখ নেই, বা গ্রামজীবনের সুস্পষ্ট পরিচয়ও নেই। তাঁর মতে, “টিলায় বসবাসকারী ব্যাধদের জীবনচিত্র বাদ দিলে চর্যাগীতির সবটাই নগরজীবনের চিত্র। অন্ত্যজ অস্পৃশ্য ডোমদের বাস নগরের বাইরে হলেও নগর-সন্নিহিত স্থানেই। নগর বলেই এখানে ধনোৎপাদক বিভিন্ন শ্রেণীর কথা তেমন নেই। নগর বলেই এখানে নানা ধর্মের লোকের বাস, তাই নানা ধর্মোপজীবীর কথা আছে। নগর বলেই এখানে নৈতিক জীবন শিথিল এবং সেই শিথিলতা এত প্রকাশ্য। অলংকারের যে বর্ণনা আছে, তাও নাগরিক।” এই মত নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এটা নিশ্চিত যে, চর্যার সিদ্ধাচার্যেরা আধ্যাত্মিক সাধনসংগীত রচনা করতে গিয়ে অবচেতন মনে তুলে ধরেছেন একটি বিশেষ যুগের বাংলার সমাজজীবনের লুপ্তপ্রায় ইতিহাস। আজও ওই সব রীতিনীতি, প্রথা ও সংস্কারের কিছু অংশ লক্ষিত হয় বাঙালির জীবনচর্যায়। ঐতিহ্যের সেই প্রাচীনতাকে পরিমাপ করতে গিয়ে হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো চর্যাপদ হয়ে উঠতে পারে একটি নির্ভুল কালজ্ঞাপক তুলাদণ্ড।
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
gahkb0y619j8yl0zr94gg1pasee0z89
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড
0
27239
85607
2025-07-03T17:34:20Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড]] কে [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85607
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]]
or13ftv646o1hmvqs07p4jbr1tej2j8
আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড
1
27240
85609
2025-07-03T17:34:20Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/কি-ওয়ার্ড]] কে [[আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85609
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[আলাপ:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সংকেত]]
ondsj01yfv0bi6kyze7adq4qh66gl61
ব্যবহারকারী আলাপ:DAS Bangladesh
3
27241
85644
2025-07-04T07:40:46Z
KanikBot
8129
স্বাগতম!
85644
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০৭:৪০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
0pxq5uzntk6jwu7qup3xb92ez9b10xp