উইকিবই
bnwikibooks
https://bn.wikibooks.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE
MediaWiki 1.45.0-wmf.8
first-letter
মিডিয়া
বিশেষ
আলাপ
ব্যবহারকারী
ব্যবহারকারী আলাপ
উইকিবই
উইকিবই আলোচনা
চিত্র
চিত্র আলোচনা
মিডিয়াউইকি
মিডিয়াউইকি আলোচনা
টেমপ্লেট
টেমপ্লেট আলোচনা
সাহায্য
সাহায্য আলোচনা
বিষয়শ্রেণী
বিষয়শ্রেণী আলোচনা
উইকিশৈশব
উইকিশৈশব আলাপ
বিষয়
বিষয় আলাপ
রন্ধনপ্রণালী
রন্ধনপ্রণালী আলোচনা
TimedText
TimedText talk
মডিউল
মডিউল আলাপ
ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS
3
16324
85683
85649
2025-07-05T15:39:20Z
Mehedi Abedin
7113
/* চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা */ উত্তর
85683
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
প্রিয় NusJaS, উইকিবইয়ে স্বাগত! [[চিত্র:Smiley oui.gif|30px|link=]] </br>
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Animated tools.gif|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কী?|উইকিবই কী]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:MdaNoman|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:OOjs UI icon signature-ltr.svg|22px|link=|alt=স্বাক্ষর আইকন]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগত এবং শুভেচ্ছা!<br>
— [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]]— [[ব্যবহারকারী:MdaNoman|নোমান]] <span>[[User talk:MdaNoman |(আলাপ)]]</span> ১৪:৪৭, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS, বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২
<br />১৩:৫৯, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52050-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLScOFXrwWd6r8bBuutYxDP2CLQaKUQXFpQD4jpwQwmYjIR4f6A/viewform?usp=send_form এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৬:৩২, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52070-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
:আপনি এখনও ফর্মটি পূরণ করেননি। অনুগ্রহ করে আগামী '''দুই দিনের''' মাঝে ফর্মটি পূরণ করুন, এরমাঝে পূরণ না করলে আপনি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত নাও হতে পারেন। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৫:৫৮, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ২০:৪৬, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfbU0XnUtQltWCaC59XqYCfjFicHrveyMOi_wW_g-I4FRnJMA/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১০:২১, ২৯ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69589-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS,<br />বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪
<br />১০:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69912-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== পুনঃপর্যালোচনা ==
আপনার বার্তা মতো ভুল অনুবাদ সংশোধন ও পরিমার্জিত বাংলায় [[লুইস ক্যারল/থ্রু দ্য লুকিং-গ্লাস]] পাতাটিকে গৃহীত করার মতো পর্যায়ে এনেছি। আশা করি সময় পেলে আমার বার্তাটি ও পাতাটি পুনরায় পর্যালোচনা করবেন। {{Thank you}} -- [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৪:৩৬, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ! [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১২:১৬, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] [[রন্ধনপ্রণালী:চাট]] পাতাটিকেও পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:১৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] নির্দেশনা অনুযায়ী হয়নি। [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] দেখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:২৫, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::মনে হয় সংক্ষিপ্ত করতে বলছেন? [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:৩৬, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] উক্ত পাতায় যেরকম ফরম্যাটে আছে, সেভাবেই লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:৩৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] দয়া করে [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/অবিচ্ছিন্ন সীমা]] পাতাটি দেখুন! সব ঠিক করেছি। শুরু থেকে শেষ। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১১:০৫, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/শিক্ষা]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১২:১০, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪১, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== লুইস ক্যারল/মিস্টার ডজসন ও মিস্টার ক্যারল ==
পাতাটি সম্পূর্ন অনুবাদ ও ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৩:২৭, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] এখনও ইংরেজি লেখা আছে। Minos, Niemand সহ আরও আছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪২, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/গোষ্ঠী ==
পাতার ফরম্যাটিং ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৫:২২, ২২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪৫, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/রেটিনাল ইমপ্লান্ট]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৪, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৮, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/ভেস্টিবুলার ইমপ্লান্ট]] ==
সংশোধন করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৫, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৭, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ ==
মহোদয় এই পাতাতে কি যান্ত্রিকতা আছে একটু নির্দিষ্ট করে বলুন [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ০৯:০৫, ২৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] কোনো ট্রান্সলেটর টুল বা এআই-এর মাধ্যমে অপরিশোধিত অনুবাদ। complex and compound sentences কে simple করা যান্ত্রিকতা দূর করার একটা সহজ উপায়। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৫:৫৩, ২৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সংশোধন ==
[[প্রাণীর অঙ্গসংস্থান ও শরীরবিদ্যা/পৌষ্টিকনালী ও পরিপাক/নিজের জ্ঞান যাচাইয়ের উত্তরমালা]] এবং [[তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ/দৃশ্যমান আলো]] অনুবাদ সংশোধন করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|আলাপ]]) ২০:০০, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৫:৪৪, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== মানব শারীরতত্ত্ব/সংবহন তন্ত্র ==
ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও পাতার ফরমেট ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৯:০৬, ১২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] না, এখনও সব বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা বাকি। পাঠ্যবইয়ে সেমিলুনার কপাটিকা>অর্ধচন্দ্রাকৃতির কপাটিকা, কার্ডিয়াক মাসল>হৃদপেশি, অ্যাওর্টা>মহাধমনী ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। পাতাটিতে এমন আরও ইংরেজি আছে। তাছাড়া অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডকে হৃদয় লেখা হয়না।
:আপনি মাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান বই ডাউনলোড করে সেখানে দেখে পরিভাষাগুলো ব্যবহার করুন। তবে যেগুলোর কোনও বাংলা পরিভাষা ব্যবহৃত হয় না, সেগুলো ইংরেজিতে রাখতে পারেন। আপনি পাঠকের সুবিধার্থে "মহাধমনী বা অ্যাওর্টা"/"মহাধমনী (অ্যাওর্টা)" যেকোনো একভাবে লেখতে পারেন।
:এছাড়াও লেখায় সামান্য যান্ত্রিকতা আছে। Complex and Compound Sentences কে Simple আকারে লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১০:২৭, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/সংঘর্ষকালীন রাজ্য যুগ ==
ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১৮:৪৯, ১৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৩:৫৭, ১৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা]] ==
ভালো অনুবাদ। তবে এই পাতায় বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ রয়ে গেছে। অনুবাদ ও ব্যাকরণেও কিছু ত্রুটি আছে। এগুলো দ্রুত ঠিক করে আমাকে মেনশন করে জানান। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৭:৪৫, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] অনেক ধন্যবাদ। আমি সবগুলো ঠিক করেছি। Cognitive Tutor® Algebra I এটাকে ইচ্ছা করেই ইংরেজিতে রেখেছিলাম যাতে হুবুহু নাম হয়। এখন আমি লিপ্যান্তর করেছি।
:আমার বাকি পাতাগুলোও পর্যালোচনা করার অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১২:১৫, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৫:৩৯, ৫ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
524ofr6skz6biuhm9luxxy9ui4m9koc
ব্যবহারকারী:R1F4T/খেলাঘর
2
18619
85678
85674
2025-07-05T13:19:34Z
R1F4T
9121
85678
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯০
|-
| ৪ || R1F4T || ১৯০
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ১৮৭
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪৫
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৬৬৭টি
|}
5l4gly15hlgoyqnzrqtekaoke8pfp2p
85701
85678
2025-07-05T16:35:17Z
R1F4T
9121
85701
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৩
|-
| ৪ || Mehedi Abedin || ১৯১
|-
| ৫ || R1F4T || ১৯০
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪৫
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৬৭৪টি
|}
8em3paszu1eczec9gueucf953n62gtn
85704
85701
2025-07-05T16:49:45Z
R1F4T
9121
85704
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৩
|-
| ৪ || R1F4T || ১৯২
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ১৯১
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪৫
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৬৭৬টি
|}
e9ihooydir366ccggw9lymyf29njiop
85707
85704
2025-07-05T17:08:41Z
R1F4T
9121
85707
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৩
|-
| ৪ || R1F4T || ১৯৩
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ১৯২
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪৫
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৬৭৮টি
|}
tr5950at5o2zctjx1zc76tyiwb41q82
85718
85707
2025-07-06T06:27:30Z
R1F4T
9121
85718
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৩
|-
| ৪ || R1F4T || ১৯৯
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ১৯২
|-
| ৬ || Tahmid || ১৪৫
|-
| ৭ || Yahya || ১৩৮
|-
| ৮ || Ishtiak Abdullah || ১১২
|-
| ৯ || Maruf || ৪
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৬৮৪টি
|}
feti3yl067cbva991rrbsk84e2huqjx
উইকিবই আলোচনা:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫
5
22675
85716
85268
2025-07-06T05:18:20Z
RDasgupta2020
8748
/* পুনরালোচনার অনুরোধ */ নতুন অনুচ্ছেদ
85716
wikitext
text/x-wiki
{{উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|সক্রিয়=6}}
== মাত্র দুুইটা ধরে রাখা যাবে? ==
@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] ভাই, দয়া করে এই ব্যাপারটি লক্ষ করুন। সাধারণত উইকিপিডিয়ার মতো উইকিও আপনাকে প্রতিযোগিতায় ৩টি নিবন্ধ একসাথে ধরে রাখার সুযোগ দেয়। তাই অনুরোধ করবো সংখ্যাটা বাড়াতে। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৪৮, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
:আমি একসাথে দুইয়ের অধিক পাতা ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখছি না। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৪:৫২, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] ২টি পাতা নাকি ২টি বই। তাহলেই পরিষ্কার হয়ে যাবো। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৫৩, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
:::আপনি কোনটা মনে করেন? —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৫:০৪, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] ঐখানে লেখা আছে '''পাতা''' তাই সেটাই মনে করি। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৫:৫৯, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::তাহলে অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করছেন কোন কারণে! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৬:৩৪, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
::::::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] এটা উইকিবই, এখানে বই থাকে নিবন্ধ নয়। উইকিপিডিয়ায় লেখা থাকে পাতা মানে নিবন্ধ, উক্তিতে পাতা মানে ভুক্তি, উইকিসংবাদে পাতা মানে প্রতিবেদন, উইকিভ্রমণে পাতা মানে ভ্রমণ নির্দেশিকা কিন্তু এখানে পাতা আর বই ভিন্ন ব্যাপার। তাই এই প্রশ্ন করা। এটা অপ্রয়োজনীয় হলে করতাম না কারণ আমিও এখন উক্তি প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৬:৩৭, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] উইকিবইয়ের পাতা মানে বইয়ের পাতা [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৮:৩৬, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ (ইউটিসি)
::ভাই আমি একটা পাতা অনুবাদ করে "প্রকাশ করুন" এ টিপ দিয়েছি।এরপর আর কিছু করা লাগবে? [[ব্যবহারকারী:Abdullah Al Hasan (Hasan)|Abdullah Al Hasan (Hasan)]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Abdullah Al Hasan (Hasan)|আলাপ]]) ১০:০২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:Abdullah Al Hasan (Hasan)|Abdullah Al Hasan (Hasan)]] পাতা জমা দিতে হবে তো [https://fountain.toolforge.org/editathons/wrcbn2025 এখানে] [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১০:১৩, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::sir ,"articles topic" e ki likhbo? [[ব্যবহারকারী:Abdullah Al Hasan (Hasan)|Abdullah Al Hasan (Hasan)]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Abdullah Al Hasan (Hasan)|আলাপ]]) ১০:২৫, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== অনুবাদ করতে চাই ==
Hello,I like vir.
I joint you.
Please answer my question.
https://en.m.wikibooks.org/wiki/Cognitive_Psychology_and_Cognitive_Neuroscience/Cognitive_Psychology_and_the_Brain [[ব্যবহারকারী:Ishrat Jahan Tahmid|Ishrat Jahan Tahmid]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Ishrat Jahan Tahmid|আলাপ]]) ২৩:৩৮, ৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:amio onubad korte chai [[ব্যবহারকারী:Khalid S Noor|Khalid S Noor]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Khalid S Noor|আলাপ]]) ২৩:০৪, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== রন্ধনপ্রণালী তালিকায় যুক্ত করুন ==
[[রন্ধনপ্রণালী:গ্রিলিং]] । মূল সমন্বয়ক @[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] কে ট্যাগ করলাম। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৩:৪৮, ৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== বিদেশি খাবার সম্পর্কে ==
বিদেশি (যেমন: ইউরোপীয়, জাপানিজ ইত্যাদি) খাবার সম্পর্কিত রন্ধনপ্রণালী প্রতিযোগিতায় গৃহীত হবে কি? বর্তমানে অনেক বিদেশী খাবার বাংলাদেশ, ভারতে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে । [[ব্যবহারকারী:Md Rashidul Hasan Biplob|Md Rashidul Hasan Biplob]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Rashidul Hasan Biplob|আলাপ]]) ১২:৪৭, ৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Md Rashidul Hasan Biplob|Md Rashidul Hasan Biplob]] ভাই, সব খাবার গণহারে দেওয়া হবে না (আমি যদ্দুর জানি)। আপনাকে নির্ধারিত তালিকা দিতে হবে যা আয়োজকদল গ্রহণ করবে অথবা নাও করতে পারে। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৫:১০, ৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== উক্ত কাজটি কিভাবে সম্পন্ন করবো? আপনার পছন্দসই পাতার পাশে থাকা ইংরেজি উইকিবইয়ের পাতাটি নতুন একটি ট্যাবে ওপেন করুন ও পাতায় থাকা সম্পাদনা আইকনে ক্লিক করে পুরো পাতার পাঠ্য কপি করুন। ==
আপনার পছন্দসই পাতার পাশে থাকা ইংরেজি উইকিবইয়ের পাতাটি নতুন একটি ট্যাবে ওপেন করুন ও পাতায় থাকা সম্পাদনা আইকনে ক্লিক করে পুরো পাতার পাঠ্য কপি করুন।দয়া করে জানাবেন [[ব্যবহারকারী:M.A. Fahad|M.A. Fahad]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.A. Fahad|আলাপ]]) ১৮:৪৮, ৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== অনুবাদ করতে চাই ==
একটির বেশি বই [[বিশেষ:অবদান/118.179.176.189|118.179.176.189]] ২১:১১, ৮ মে ২০২৫
== তালিকাতে নেই ==
[[:en:Electromagnetic_radiation|Electromagnetic radiation]], [[:en:Engineering_Acoustics|Engineering Acoustics]] - বই দুটো পুরো অনুবাদ করতে চাচ্ছি। [[ব্যবহারকারী:Somajyoti|Somajyoti]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Somajyoti|আলাপ]]) ২০:৫০, ৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
BTS ARMY
:@[[ব্যবহারকারী:Somajyoti|Somjyoti]] [[:en:Electromagnetic radiation|Electromagnetic radiation]] {{done}} [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৬:০৫, ১৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Somajyoti|Somajyoti]] Engineering Acoustics {{done}} [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৫:২৯, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== রন্ধনপ্রণালী নাম স্থানের পাতা সমূহ ==
রন্ধনপ্রণালী নাম স্থানের পাতায় আরও দেখুন থাকবে না, কিছু ক্ষেত্রে বহিঃসংযোগ থাকতে পারে তবে না থাকাটাই ভালো। রন্ধনপ্রণালী নিয়ে লিখতে চাইলে ফরম্যাট ও কীভাবে লিখতে হবে জানতে [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] পাতাটি দেখুন ও এটাই অনুসরণ করুন। আয়োজক দলের পক্ষে, —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৯:০০, ১১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== মুদ্রণযোগ্য সংস্করণ সম্বন্ধে ==
'''আয়োজক(দের/এর) প্রতি:''' আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী মুদ্রণযোগ্য সংস্করণগুলো প্রতিযোগিতায় গ্রহণযোগ্য নয়; যেহেতু এখানে টেমপ্লেটের মাধ্যমে অন্য পাতাগুলো দেখানো হয় মাত্র। যদিও বেশি সময় লাগে না, তারপরেও, প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্যে কেউ তৈরি করার পর গৃহীত না হলে খামোখা হতাশ হবেন। এই বিষয়টা প্রতিযোগীদের মধ্যে খোলসা করে দেওয়া উচিত। [[ব্যবহারকারী:কমলেশ মন্ডল|কমলেশ মন্ডল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:কমলেশ মন্ডল|আলাপ]]) ১৩:৩২, ১১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] ভাইকে মেনশন করলাম। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৪:০৮, ১৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::ওইরকম পাতা গৃহীত হবে না। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৫:১১, ১৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::সেক্ষেত্রে তালিকা থেকে ওই পাতাগুলো সরানো বা প্রতিযোগিতা পাতায় বিষয়টি উল্লেখ করলে ভালো হয় [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৪২, ১৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== মাসালা র কিতাব ==
যেকোনো মাস আলা জানার জন্য [[বিশেষ:অবদান/103.204.209.73|103.204.209.73]] ১৫:১৮, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকায় বই যোগ ==
দয়া করে বইয়ের তালিকায় [[Rhetoric and Writing in the Public Sphere: An Introduction]] ইংরেজি বইটা যোগ করে দেন। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ২০:১৬, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{করা হয়নি}} অসম্পূর্ণ বই [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৭:০৩, ১৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকায় যুক্তকরণ প্রসঙ্গে ==
[[en:C# Programming]] বইটি তালিকায় যুক্ত করলে ভালো হতো, বইটি অতীব জরুরী। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৫২, ১৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:আর এই বইটাকেও যুক্তকরণ করা যেতে পারে। [[en:OpenSSH]] [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৫৪, ১৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ভাইকে এই দিকে সক্রিয় দেখছি তাই ট্যাগ করলাম। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৮:৫২, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত পাতা যোগ করা হবে না আর [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১০:৪৬, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::কেন তা কি জানতে পারি? @[[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ভাই। একটি বই থাকার কারণে? [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১২:১১, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] না। বিভিন্ন কারণে প্রথমত কোড যাচাই করণ আমি যতদূর দেখেছি কোড কম্পাইল হয়না ইংরেজি সংস্করণেরটাই এছাড়াও বেশ কিছু সমস্যা [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৩:১৩, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== একটা বিষয় জানার ছিলো ==
আচ্ছা আমাদের যে সমস্ত পৃষ্ঠা গ্রহণ যোগ্য তার জন্য কি আমরা নম্বর পাবো না? এখনো আমাদের কোন নাম্বার যোগ হচ্ছে না কেন? বিশেষ করে আমার। আর গ্রহণযোগ্য না হলেও তো সেটও তো জানাবেন। [[ব্যবহারকারী:Editobd|Editobd]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Editobd|আলাপ]]) ০৮:০৬, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== নতুন বইয়ের প্রস্তাব ==
'''১. [https://en.wikibooks.org/wiki/High_school_physics High School Physics]'''
এই বইটি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ক একটি সহজবোধ্য পাঠ্যবই। এতে নিউটনের সূত্র, বল, গতি, শক্তি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি নিজে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, তাই এই বইটি অনুবাদ করা আমার পক্ষে সহজ ও উপযুক্ত হবে।
'''২. [https://en.m.wikibooks.org/wiki/Study_Skills/Managing_Your_Time Study Skills: Managing Your Time]'''
এই বইটি ছাত্রদের সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল শেখায়, যা এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আমি মনে করি এটি অনুবাদ করলে অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হবে। বইটি ছোট এবং সহজ, তাই কার্যকরভাবে অনুবাদ করা সম্ভব।
--[[ব্যবহারকারী:Torikul Islam Tarek|Torikul Islam Tarek]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Torikul Islam Tarek|আলাপ]]) ১৬:১৯, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Torikul Islam Tarek|Torikul Islam Tarek]] করা হয়েছে। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৪:২২, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== মোঃ জাফর ==
১২২৩৫৫৫৬৬ [[বিশেষ:অবদান/36.50.116.26|36.50.116.26]] ১৮:০১, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সংশোধিত পাতা পুনরায় চেক ==
@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]]S আমার রন্ধনপ্রণালীর গৃহীত না হওয়া পাতাগুলো সংশোধন করা হয়েছে, আবার চেক করার অনুরোধ করছি [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১২:২২, ১৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
==রন্ধনপ্রনালী সম্পর্কিত==
আচ্ছা রন্ধনপ্রনালীর পৃষ্ঠাতে কি তথ্যসূত্র দেওয়ার প্রয়োজন আছে? কারন নমুনা হিসাবে যে পাতাটি দেওয়া হয়েছে তাতে তথ্যসূত্র সংযোজিত নেই। [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৫:২৮, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:নমুনা পাতার চেয়ে কম সুসংগঠিত হলে তা সংশোধন করতে হবে। কিন্তু তথ্যসূত্র, অন্যান্য বিষয় যোগ করে উন্নত করতে পারলে তা অবশ্যই ভালো।@[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] [[ব্যবহারকারী:Md Rashidul Hasan Biplob|Md Rashidul Hasan Biplob]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Rashidul Hasan Biplob|আলাপ]]) ১০:০১, ২৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকায় যোগ ==
# {{eb|Movie Making Manual|চলচ্চিত্র নির্মাণ নির্দেশিকা}} (সম্পূর্ণ বই)
# {{eb|Visual Arts Of The Indian Subcontinent|ভারতীয় উপমহাদেশের দৃশ্যকলা}}
# {{eb|Chromolithography|ক্রোমোলিথোগ্রাফি}}
# {{eb|Chromolithography/Estimating, Assessing and Producing|ক্রোমোলিথোগ্রাফি/অনুমান, মূল্যায়ন এবং উৎপাদন}}
তালিকায় যোগ করার আবেদন রইল। [[ব্যবহারকারী:কমলেশ মন্ডল|কমলেশ মন্ডল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:কমলেশ মন্ডল|আলাপ]]) ০৭:০৯, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকার বাইরে একটি পাতা অনুবাদ করতে চাই ==
History of the Nawabs of Bengal/List of Conflicts এই পাতাটি অনুবাদ করতে চাই [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৩:৫৪, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{করা হয়নি}} একেবারে অসম্পূর্ণ বই। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৪:২৩, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== বই যুক্তের আবেদন ==
US History বইটি যুক্ত করার আবেদন করছি [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৩:৫৮, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] বইটি যোগ করা হবে। তার আগে আপনি [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস]] নামে পাতাটির অনুবাদ শেষ করুন। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১৫:২৬, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::অনুবাদ করেছি [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৮:৪০, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] তালিকাভুক্তির জন্য গ্রহণযোগ্য। আপনিই তালিকায় যুক্ত করতে পারেন অথবা এখান ্থেকেই অনুবাদ করতে থাকুন। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৫৯, ২৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::::প্রস্তাব পাতা থেকেই অনুবাদ শুরু করে দিলে, অন্য প্রতিযোগীরা কীভাবে সেই বই নিয়ে কাজ করবে? নতুন অবদানকারীরা হয়তো এই প্রস্তাব পাতায় আসবেও না।
::::আমার মতো অনেকে হয়তো, অবদান রাখার জন্য তালিকায় নতুন বই যুক্তের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই ফাঁকে কেবল প্রস্তাবনা দিয়েই যদি কেউ সেই বই নিয়ে কাজ শুরু করে দেয়, তাহলে সেটা কি আদৌ ন্যায্য হলো? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৮:৪৪, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== অনুবাদ করতে চাই ==
অনুবাদ করতে চাই [[ব্যবহারকারী:Taysirul Islam Shuvo|Taysirul Islam Shuvo]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Taysirul Islam Shuvo|আলাপ]]) ১৩:৩৮, ২৩ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== ভুলক্রমে তালিকায় না থাকা বই যোগের অনুরোধ==
নিম্নের সূচিপত্র বিশিষ্ট বইটি আমি অনুবাদ করেছি। "শুধুমাত্র আয়োজকরা প্রতিযোগিতার জন্য বই যোগ করতে পারবে" —এটা প্রকল্প পাতা থেকে স্পষ্ট না হতে পেরে তালিকায় তোলা হয়নি।
তবে আমি ধ্বংসাত্মক কিছু না করায় তালিকায় যোগ করার অনুরোধ করছি। আর প্রকল্প পাতায় নিয়মটি স্পষ্ট করার অনুরোধ করছি।
=== [[সম্পর্ক]] ===
# {{eb|Relationships|সম্পর্ক}}
# {{eb|Relationships/The Evolution of the Human Brain|সম্পর্ক/মানব মস্তিষ্কের বিকাশ}}
# {{eb|Relationships/The_Evolution_of_the_Human_Brain#The_Triune_Brain|সম্পর্ক/মানব মস্তিষ্কের বিকাশ/ত্রয়ী মস্তিষ্ক}}
# {{eb|Relationships/The_Evolution_of_the_Human_Brain#Natural vs. Sexual Selection|সম্পর্ক/মানব মস্তিষ্কের বিকাশ/প্রাকৃতিক বনাম যৌন নির্বাচন}}
# {{eb|Relationships/The_Evolution_of_the_Human_Brain#Did cerebral Cortex evolve by sexual selection?|সম্পর্ক/মানব মস্তিষ্কের বিকাশ/সেরিব্রাল কর্টেক্স কি যৌন নির্বাচনে বিকশিত?}}
# {{eb|Relationships/Hormones#Do Men and Women Have Different Sex Drives?|সম্পর্ক/হরমোন/পুরুষ এবং মহিলাদের ভিন্ন যৌনতা?}}
# {{eb|Relationships/Hormones#Pheromones|সম্পর্ক/হরমোন/ফেরোমন}}
# {{eb|Relationships/Hormones#Oxytocin|সম্পর্ক/হরমোন/অক্সিটোসিন}}
# {{eb|Relationships/Hormones#Testosterone|সম্পর্ক/হরমোন/টেস্টোস্টেরন}}
# {{eb|Relationships/Hormones#Estrogen and Progesterone|সম্পর্ক/হরমোন/ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন}}
# {{eb|Relationships/Hormones|সম্পর্ক/হরমোন}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Industrial-Information Society|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/শিল্প-তথ্য সমিতি}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Idyllic Lifestyle|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/মনোরম জীবনধারা}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Egalitarian Groups|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/সমতাবাদী গোষ্ঠী}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Limited Polygyny|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/সীমিত বহুবিবাহ}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Were Our Ancestors Monogamous or Polygamous?|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/আমাদের পূর্বপুরুষরা কি একগামী ছিলেন নাকি বহুগামী ছিলেন?}}
# {{eb|Relationships/How Our Ancestors Lived#Agricultural Societies|সম্পর্ক/পূর্বপুরুষ/কৃষি সমিতি}}
# {{eb|Relationships/Communication Styles|সম্পর্ক/যোগাযোগ}}
# {{eb|Relationships/Communication Styles#The Great Male Hierarchy|সম্পর্ক/যোগাযোগ/মহান পুরুষ শ্রেণিবিন্যাস}}
# {{eb|Relationships/Communication Styles#Women’s Support Circles|সম্পর্ক/যোগাযোগ/নারীর সহযোগী চক্র}}
# {{eb|Relationships/Communication Styles#Women's Culture, Men's Culture|সম্পর্ক/যোগাযোগ/নারীর রীতি, পুরুষের রীতি}}
# {{eb|Relationships/How Men Select Women|সম্পর্ক/পুরুষের নারী নির্বাচন}}
# {{eb|How Men Select Women#Youth|সম্পর্ক/পুরুষের নারী নির্বাচন/যৌবন}}
# {{eb|How Men Select Women#Beauty|সম্পর্ক/পুরুষের নারী নির্বাচন/সৌন্দর্য}}
# {{eb|How Men Select Women#Education and Employment|সম্পর্ক/পুরুষের নারী নির্বাচন/শিক্ষা ও কর্মজীবন}}
# {{eb|How Men Select Women#Emotional Connection|সম্পর্ক/পুরুষের নারী নির্বাচন/আবেগ}}
# {{eb|Relationships/How Women Select Men|সম্পর্ক/নারীর পুরুষ নির্বাচন}}
# {{eb|Relationships/How Women Select Men#Trait preferences|সম্পর্ক/নারীর পুরুষ নির্বাচন/পছন্দের বৈশিষ্ট্য}}
# {{eb|Relationships/How Women Select Men#Relationship Skills|সম্পর্ক/নারীর পুরুষ নির্বাচন/সম্পর্কের দক্ষতা}}
# {{eb|Relationships/How Women Select Men#Emotional Connection|সম্পর্ক/নারীর পুরুষ নির্বাচন/আবেগ}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Women-Egalitarian Sisterhood|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/মহিলা-সমকালীন বোনতা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Women's Power|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/নারীর ক্ষমতায়ন}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Increasing Status via Hypergamy|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/হাইপারগ্যামির মাধ্যমে স্ট্যাটাস বৃদ্ধি}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Careers vs. Motherhood|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/ক্যারিয়ার বনাম মাতৃত্ব}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Men-Masters, Slaves, and Welfare Cheats|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/পুরুষ-দক্ষ , দাস, এবং কল্যাণ প্রতারণা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Class Stratification|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/শ্রেণী স্তরবিন্যাস}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Incest, Child Abuse, and Wife Battering|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/অজাচার, শিশু নির্যাতন, এবং স্ত্রী নির্যাতন}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Welfare Fraud |সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/কল্যাণ জালিয়াতি}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Violence in Polygynous Societies|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/বহুগামী সমাজে সহিংসতা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Judaism, Christianity, Islam, and Polygyny|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/ইহুদি, খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম এবং বহুবিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Contemporary Monogamy and Polygamy|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/সমসাময়িক একবিবাহ এবং বহুবিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Men's and Women's Desired Number of Partners|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/পুরুষ এবং মহিলাদের কাঙ্ক্ষিত সঙ্গীর সংখ্যা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#When Masculine Sexuality Is Acceptable|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/যখন পুরুষতান্ত্রিক যৌনতা গ্রহণযোগ্য}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Stress and Promiscuity|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/মানসিক চাপ এবং অশ্লীলতা}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Sexual Satisfaction in Monogamous Relationships|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/একগামী সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌন তৃপ্তি}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Is There a "Marriage Crisis"?|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/"বিবাহ সংকট" কি আছে?}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#Serial Monogamy Tends Toward Polyandry|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/ধারাবাহিক একবিবাহ বহুপতিত্বের দিকে ঝোঁক দেয়}}
# {{eb|Relationships/Monogamy and Polygamy#African-American Marriage and Polygyny|সম্পর্ক/একগামিতা এবং বহুগামিতা/আফ্রিকান-আমেরিকান বিবাহ এবং বহুবিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Childhood|সম্পর্ক/শৈশব}}
# {{eb|Relationships/Adolescence|সম্পর্ক/কৈশোর}}
# {{eb|Relationships/Adolescence#Anima and Animus|সম্পর্ক/কৈশোর/পুরুষের মাতৃত্ববোধ ও কুসংস্কার}}
# {{eb|Relationships/Adolescence#Projection|সম্পর্ক/কৈশোর/প্রদর্শন}}
# {{eb|Relationships/Adolescence#Becoming Your Object of Desire|সম্পর্ক/কৈশোর/আকাঙ্ক্ষার বস্তু হয়ে উঠুন}}
# {{eb|Relationships/Adolescence#Developing an Adult Identity|সম্পর্ক/কৈশোর/প্রাপ্তবয়স্কদের পরিচয় গড়ে তোলা}}
# {{eb|Relationships/Adolescence#Adolescent Friendship|সম্পর্ক/কৈশোর/কিশোর বন্ধুত্ব}}
# {{eb|Relationships/Adulthood|সম্পর্ক/প্রাপ্তবয়স্কতা}}
# {{eb|Relationships/Adulthood#30s: Stuck Between Adolescence and Adulthood|সম্পর্ক/প্রাপ্তবয়স্কতা/৩০ এর দশক: কৈশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কতার মধ্যে আটকে থাকা}}
# {{eb|Relationships/Adulthood#Adult Friendship|সম্পর্ক/প্রাপ্তবয়স্কতা/বন্ধুত্ব}}
# {{eb|Relationships/Adulthood#Companionate Marriages|সম্পর্ক/প্রাপ্তবয়স্কতা/জীবনসঙ্গী}}
# {{eb|Relationships/Adulthood#Your Village of Relationships|সম্পর্ক/প্রাপ্তবয়স্কতা/সম্পর্কের স্থল}}
# {{eb|Relationships/Agape|সম্পর্ক/অ্যাগাপে}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Who Introduced Couples|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/পরিচয় করায় কে?}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Similarity and Dissimilarity|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/সাদৃশ্য এবং বৈষম্য}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Where to Meet Single Men and Women|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/বসবেন কোথায়?}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Two Contradictory Rules for Attracting Women|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/নারীদের আকৃষ্ট করার দুটি অদ্ভুত নিয়ম}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Man Shortage or Woman Shortage?|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/পুরুষের অভাব নাকি নারীর অভাব?}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Man Shortage or Commitment Shortage?|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/পুরুষের অভাব নাকি প্রতিশ্রুতির অভাব?}}
# {{eb|Relationships/Where Couples Met#Create Your Own Man- or Woman-Advantage|সম্পর্ক/দম্পতিরা কোথায় মিলিত হয়/আপনার নিজের পুরুষ- অথবা নারী-সুবিধা তৈরি করুন}}
# {{eb|Relationships/Flirting|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Babysitting Lessons|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/বেবিসিটিং পাঠ}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Flirt with Everyone|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/সবার সাথে প্রেমের ভান}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Peek-a-Boo|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/উঁকি দিয়ে দেখুন}}
# {{eb|Relationships/Flirting#"Speed Dating"|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/"স্পিড ডেটিং"}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Compliments|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/প্রশংসা}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Transition Points|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/মোর নিন}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Making a Date|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/স্পষ্ট হোন}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Dress for Sex|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/পোশাক}}
# {{eb|Relationships/Flirting#Dream Houses, Dream Relationships|সম্পর্ক/প্রণয়চাতুর্য/স্বপ্নের ঘর, স্বপ্নের সম্পর্ক}}
# {{eb|Relationships/How to Write a Personal Ad|সম্পর্ক/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন}}
# {{eb|Relationships/How to Write a Personal Ad#Examples|সম্পর্ক/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন/উদাহরণ}}
# {{eb|Relationships/How to Write a Personal Ad#Making Personal Ads Work|সম্পর্ক/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন কার্যকর করা}}
# {{eb|Relationships/How to Write a Personal Ad#Responding to Personal Ads|সম্পর্ক/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনের প্রতিক্রিয়া জানানো}}
# {{eb|Relationships/How to Write a Personal Ad#The Future of Personal Ads|সম্পর্ক/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন/ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনের ভবিষ্যৎ}}
# {{eb|Relationships/Dating|সম্পর্ক/ডেটিং}}
# {{eb|Relationships/Dating#Emotional Range|সম্পর্ক/ডেটিং/আবেগের পরিসর}}
# {{eb|Relationships/Dating#What to Do on a Date|সম্পর্ক/ডেটিং/ডেটে কী করবেন?}}
# {{eb|Relationships/Dating#Group Dates|সম্পর্ক/ডেটিং/গ্রুপ ডেট}}
# {{eb|Relationships/Dating#The Best Date a Man Can Take a Woman On|সম্পর্ক/ডেটিং/একজন পুরুষ কোন নারীকে যে সেরা ডেটে নিতে পারে}}
# {{eb|Relationships/Dating#The Best Date a Woman Can Take a Man On|সম্পর্ক/ডেটিং/একজন নারী কোন পুরুষকে যে সেরা ডেটে নিতে পারে}}
# {{eb|Relationships/Dating#Ending the Date|সম্পর্ক/ডেটিং/ডেটের শেষটা}}
# {{eb|Relationships/Dating#Alcohol and Sexual Intimacy|সম্পর্ক/ডেটিং/অ্যালকোহল এবং যৌন ঘনিষ্ঠতা}}
# {{eb|Relationships/Dating#11 Dating Mistakes Men Make|সম্পর্ক/ডেটিং/পুরুষদের ডেটিংয়ে করা ১১টি ভুল}}
# {{eb|Relationships/Dating#3 Dating Mistakes Women Make|সম্পর্ক/ডেটিং/ডেটিংয়ে নারীদের করা ৩টি ভুল}}
# {{eb|Relationships/Sex|সম্পর্ক/যৌনতা}}
# {{eb|Relationships/Sex#Physiological aspects|সম্পর্ক/যৌনতা/শারীরবৃত্তীয় দিক}}
# {{eb|Relationships/Sex#Social and cultural aspects|সম্পর্ক/যৌনতা/সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক}}
# {{eb|Relationships/Couples|সম্পর্ক/দম্পতি}}
# {{eb|Relationships/Couples#Permanently Passive Women|সম্পর্ক/দম্পতি/স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় নারী}}
# {{eb|Relationships/Couples#Permanent Pursuers|সম্পর্ক/দম্পতি/স্থায়ী অনুসরণকারীরা}}
# {{eb|Relationships/Couples#Switch Genders Roles for Commitment|সম্পর্ক/দম্পতি/প্রতিশ্রুতির জন্য ভূমিকা বদলান}}
# {{eb|Relationships/Couples#"Our Relationship" Talks|সম্পর্ক/দম্পতি/"আমাদের সম্পর্ক" নিয়ে আলোচনা}}
# {{eb|Relationships/Couples#Resistance to Commitment|সম্পর্ক/দম্পতি/প্রতিশ্রুতির বাধা}}
# {{eb|Relationships/Couples#Life Stages Conflict|সম্পর্ক/দম্পতি/জীবনের নানা দ্বন্দ্ব}}
# {{eb|Relationships/Couples#Deciding Whom to Marry vs. Deciding When to Marry|সম্পর্ক/দম্পতি/কাকে বিয়ে, কখন বিয়ে?}}
# {{eb|Relationships/Conflict|সম্পর্ক/সংঘাত}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Conjunct Relationships|সম্পর্ক/সংঘাত/সংযুক্ত সম্পর্ক}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Opposite Relationships|সম্পর্ক/সংঘাত/বিপরীত সম্পর্ক}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Triangular Relationships|সম্পর্ক/সংঘাত/ত্রিভুজাকার সম্পর্ক}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Square Relationships|সম্পর্ক/সংঘাত/চতুর্ভুজ রিলেশনশিপস}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Larger Groups|সম্পর্ক/সংঘাত/বৃহত্তর গোষ্ঠী}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Dyad Trouble|সম্পর্ক/সংঘাত/দুজনের সমস্যা}}
# {{eb|Relationships/Conflict#Staying in Relationships|সম্পর্ক/সংঘাত/সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা}}
# {{eb|Relationships/Emotional Control Systems|সম্পর্ক/আবেগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা}}
# {{eb|Relationships/Emotional Control Systems#Archetypes|সম্পর্ক/আবেগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/আর্ক-টাইপ}}
# {{eb|Relationships/Emotional Control Systems#Opposites Attract|সম্পর্ক/আবেগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/বিপরীতমুখী আকর্ষণ}}
# {{eb|Relationships/Zeus-Hera|সম্পর্ক/জিউস-হেরা}}
# {{eb|Relationships/Zeus-Hera#Zeus|সম্পর্ক/জিউস-হেরা/জিউস}}
# {{eb|Relationships/Zeus-Hera#Hera|সম্পর্ক/জিউস-হেরা/হেরা}}
# {{eb|Relationships/Zeus-Hera#Zeus-Hera Marriage|সম্পর্ক/জিউস-হেরা/জিউস-হেরার বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Poseidon-Athena|সম্পর্ক/পসেইডন-অ্যাথেনা}}
# {{eb|Relationships/Poseidon-Athena#Poseidon|সম্পর্ক/পসেইডন-অ্যাথেনা/পসেইডন}}
# {{eb|Relationships/Poseidon-Athena#Athena|সম্পর্ক/পসেইডন-অ্যাথেনা/এথেনা}}
# {{eb|Relationships/Poseidon-Athena#Poseidon-Athena|সম্পর্ক/পসেইডন-অ্যাথেনা/পসেইডন-অ্যাথেনা}}
# {{eb|Relationships/Apollo-Artemis|সম্পর্ক/অ্যাপোলো-আর্টেমিস}}
# {{eb|Relationships/Apollo-Artemis#Artemis|সম্পর্ক/অ্যাপোলো-আর্টেমিস/আর্টেমিস}}
# {{eb|Relationships/Apollo-Artemis#Apollo-Artemis Marriage|সম্পর্ক/অ্যাপোলো-আর্টেমিস/অ্যাপোলো-আর্টেমিসের বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Hermes-Hestia|সম্পর্ক/হার্মিস-হেস্টিয়া}}
# {{eb|Relationships/Hermes-Hestia#Hermes|সম্পর্ক/হার্মিস-হেস্টিয়া/হার্মিস}}
# {{eb|Relationships/Hermes-Hestia#Hestia|সম্পর্ক/হার্মিস-হেস্টিয়া/হেস্টিয়া}}
# {{eb|Relationships/Hermes-Hestia#Hermes-Hestia Marriage|সম্পর্ক/হার্মিস-হেস্টিয়া/হার্মিস-হেস্টিয়া বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite|সম্পর্ক/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইট}}
# {{eb|Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite#Ares|সম্পর্ক/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইট/এরেস}}
# {{eb|Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite#Hephaestus|সম্পর্ক/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইট/হেফেস্টাস}}
# {{eb|Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite#Aphrodite|সম্পর্ক/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইট/অ্যাফ্রোডাইট}}
# {{eb|Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite#Ares-Hephaestus-Aphrodite Marriage|সম্পর্ক/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইট/এরেস-হেফেস্টাস-অ্যাফ্রোডাইটের বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Relationships/Dionysus-Demeter|সম্পর্ক/ডায়োনিসাস-ডিমিটার}}
# {{eb|Relationships/Dionysus-Demeter/Dionysus|সম্পর্ক/ডায়োনিসাস-ডিমিটার/ডায়োনিসাস}}
# {{eb|Relationships/Dionysus-Demeter/Demeter|সম্পর্ক/ডায়োনিসাস-ডিমিটার/ডিমিটার}}
# {{eb|Relationships/Dionysus-Demeter/Dionysus-Demeter Marriage|সম্পর্ক/ডায়োনিসাস-ডিমিটার/ডায়োনিসাস-ডিমিটারের বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Hades-Persephone|সম্পর্ক/হেডিস-পার্সিফোন}}
# {{eb|Relationships/Hades-Persephone#Hades|সম্পর্ক/হেডিস-পার্সিফোন/হেডিস}}
# {{eb|Relationships/Hades-Persephone#Persephone|সম্পর্ক/হেডিস-পার্সিফোন/পার্সেফোন}}
# {{eb|Relationships/Hades-Persephone#Hades-Persephone Marriage|সম্পর্ক/হেডিস-পার্সিফোন/হেডিস-পার্সেফোনের বিবাহ}}
# {{eb|Relationships/Hades-Persephone#The Hades-Persephone Relationship|সম্পর্ক/হেডিস-পার্সিফোন/হেডিস-পার্সেফোনের সম্পর্ক}}
{{ping|Md Rashidul Hasan Biplob}} আপনি নতুন ব্যবহারকারী হওয়ায় Benefit of doubt দিয়ে তালিকাটি '''গ্রহণ করা হলো'''। এরপর থেকে প্রতিযোগিতার নিয়মকানুন ভালো করে দেখে কাজ করবেন। এরকম সুযোগ দ্বিতীয়বার দেওয়া হবে না। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০৬:৪৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:জি আমি অবশ্যই সতর্ক থাকব। নিয়মের বিরুদ্ধে আমি নিজেও যেতে আগ্রহী নই। আয়োজক দলকে অনেক ধন্যবাদ। [[ব্যবহারকারী:Md Rashidul Hasan Biplob|Md Rashidul Hasan Biplob]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Rashidul Hasan Biplob|আলাপ]]) ০৬:৫২, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকায় নেই এমন একটি বই অনুবাদ করতে চাই ==
https://en.m.wikibooks.org/wiki/Climatology
এই বইটি অনুবাদ করতে চাচ্ছি, অনুগ্রহ করে বই টি তালিকায় যুক্ত করবেন। [[ব্যবহারকারী:Dark1618|Dark1618]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Dark1618|আলাপ]]) ০৯:০৮, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== Seeing What Others Don’t ==
বইটির সম্পর্কে বিস্তারিত:
লেখক: Gary Klein
প্রকাশকাল: ২০১৩
বিষয়বস্তু: কগনিটিভ সাইকোলজি, ডিসিশন মেকিং, ইনসাইট ডেভেলপমেন্ট
বইটির মূল থিম:
গ্যারি ক্লেইন তার গবেষণার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন, মানুষ কীভাবে হঠাৎ করে কোনো সমস্যা বা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উপলব্ধি বা insight লাভ করে — যা সাধারণ চিন্তাধারার বাইরে।
তিনি ১২০টিরও বেশি কেস স্টাডি বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে:
অনেক সময় তথ্য থাকার পরেও মানুষ বুঝতে পারে না আসল বিষয়টি কী,
আবার অনেক সময় সাধারণ মানুষও অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টি পেতে পারে।
তিনি তিনটি প্রধান পন্থা দেখিয়েছেন, যেভাবে ইনসাইট জন্ম নেয়:
Contradiction – যখন বাস্তবতা আমাদের বিশ্বাসের বিরোধিতা করে
Connection – দুটি অসংযুক্ত ধারণাকে যুক্ত করা হয়
Creative Desperation – যখন অন্য সব বিকল্প ব্যর্থ হলে হঠাৎ এক নতুন সমাধান মাথায় আসে
আপনি অনুবাদ করতে চাইলে কীভাবে এগোবেন?
১. উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন:
আপনি কি ব্যক্তিগত পাঠের জন্য অনুবাদ করবেন, নাকি প্রকাশনার উদ্দেশ্যে?
প্রকাশনার জন্য হলে কপিরাইট অনুমতি লাগবে।
২. অনুবাদের ধরন ঠিক করুন:
কি আপনি শব্দ-বাক্য ভিত্তিক সঠিক অনুবাদ চান?
না কি ভাবানুবাদ— অর্থ বজায় রেখে সহজ বাংলায় প্রকাশ করবেন?
৩. অধ্যায়ভিত্তিক কাজ করলে ভালো হয়:
আমি চাইলে আপনাকে প্রতি অধ্যায়ের সারাংশ বা পূর্ণ অনুবাদ দিতে পারি — যেমন:
অধ্যায় ১: "Insight as a Flash" (বাংলা অনুবাদে: হঠাৎ প্রাপ্ত অন্তর্দৃষ্টি)
অধ্যায় ২: "The Curious Nature of Insight"
...
৪. লেখার ধরন বজায় রাখা:
Gary Klein-এর লেখায় অনেক বাস্তব কেস স্টাডি ও সংলাপ থাকে, অনুবাদে সেগুলো বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরা জরুরি। [[ব্যবহারকারী:Humayun.faruque|Humayun.faruque]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Humayun.faruque|আলাপ]]) ১০:৩৬, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:সেগুলোকে বিস্তারিত আলোচনা করে তুলে ধরা হবে [[ব্যবহারকারী:Humayun.faruque|Humayun.faruque]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Humayun.faruque|আলাপ]]) ১০:৪৪, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== তালিকায় যোগ ==
# {{eb|Movie Making Manual}}
# {{eb|3D Printing}}
[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৫:২৩, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] প্রথম বইটি সম্পূর্ণ নয় দ্বিতীয় বইটি যাচাই করে যুক্ত করা হবে। যুক্ত করা হলে এখানে জানিয়ে দিব। [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৭:০৬, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ২য় বইটি যোগ করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১২:০৯, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== নতুন পাতা অনুবাদ ==
Applications of ICT in Libraries এই পাতাটি অনুবাদ করতে চাই, পাতাটি তালিকায় যুক্ত করার অনুরোধ করছি, পাতাটির লিংক: [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৮:২৯, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:1111 [[বিশেষ:অবদান/37.111.239.140|37.111.239.140]] ১২:৩৫, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::01714638936
::MD suman sadar [[বিশেষ:অবদান/37.111.242.105|37.111.242.105]] ১৩:২১, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== নতুন বই যুক্ত করার অনুরোধ ==
Java programming ( ''জাভা প্রোগ্রামিং) বইটি যুক্ত করার অনুরোধ করছি।'' [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ২২:৪২, ২৮ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== কুইজ টেমপ্লেটটি কাজ করছেনা ==
বাংলা উইকিবইয়ের পাতাতে কুইজ টেমপ্লেট যোগ করতে চাইলে সেটি ঠিকমতো কাজ করছেনা। প্রশ্ন এবং উত্তর কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। খালি '''টেমপ্লেট:কুইজ''' -এরকম দেখাচ্ছে। কেউ কি বলতে পারেন যে কুইজ টেমপ্লেট কিভাবে ব্যবহার করা যাবে, অথবা এর বিকল্প কি? [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৫:৫১, ৩০ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] বাংলা উইকিবইয়ে এক্সটেনশনটি আপাতত নেই [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৭:০৪, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::তাহলে কি কুইজের প্রশ্ন উত্তর গুলো আলাধাভাবে প্যারার আকারে লিখে দেব না কি যেমন আছে সেরকম রেখে দেব? [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৯:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] যেমন আছে সেরকমই আপাতত রেখে দিন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১১:২৬, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== দুই পাতার এক শিরোনাম ==
সুধী বিচারকগন, একটি ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, নিম্নের এই দুটি উইকিবই...
# {{eb|Engineering Acoustics/Forced Oscillations (Simple Spring-Mass System)|প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/বলকৃত দোলন (সাধারণ স্প্রিং-ভর সিস্টেম)}} - [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ১১:১৪, ৩০ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
# {{eb|Engineering Acoustics/Forced Oscillations(Simple Spring-Mass System)|প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/বলকৃত দোলন (সাধারণ স্প্রিং-ভর সিস্টেম)}}
এই দুটি ইংরেজি উইকিবইয়ের শিরোনাম এক থাকলেও তাদের বিষয়বস্তু ভিন্ন। আমি প্রথম বইটির বাংলা তর্জমা করেছিলাম, কিন্তু দুটি বইয়ের শিরোনাম এক থাকার দরুন আমি যখন প্রথম বইটির লাল লিংক -এ ক্লিক করে অনুবাদ প্রকাশ করি, তখন সাথে সাথে দ্বিতীয় বইটিরও বাংলা অনুবাদে একই বিষয়বস্তু যুক্ত হয়ে গেছে। দুটি পাতার এক শিরোনাম থাকার কারনে হয়তো এটা হয়েছে কিন্তু দুটি বইয়ের বিষয়বস্তু আলাদা করা দরকার। এই বিষয়ে কেউ কি সাহায্য করতে পারবেন? [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৪:২১, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] দুটি পাতার বিষয়বস্তু একত্রীকরণ করে ফেলুন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৭:০৩, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::একত্রীকরণ করব কি ভাবে ঠিক বুঝলামনা। দুটো পাতারই বিষয়বস্তু একসাথে অনুবাদ করে একটা পাতায় লিখব কি? [[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৯:২০, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] সামঞ্জস্য করে দুই পাতার বিষয়বস্তু একসাথে লিখুন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১১:২৫, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== বই যোগ ==
https://en.m.wikibooks.org/wiki/Communication_Theory
Communication Theory বইটি অনুবাদ করতে চাই। [[ব্যবহারকারী:Anisvai|Anisvai]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Anisvai|আলাপ]]) ০৮:১৮, ১ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Anisvai|Anisvai]] বইটি ইতোমধ্যে বিদ্যমান [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৯:৩০, ১ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== বই যোগ ==
https://en.m.wikibooks.org/wiki/Professional_and_Technical_Writing
Professional and Technical Writing
বইটি অনুবাদ করতে চাই [[ব্যবহারকারী:Anisvai|Anisvai]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Anisvai|আলাপ]]) ০৯:৪৫, ১ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== বই যোগ ==
https://en.m.wikibooks.org/wiki/Introduction_to_Philosophy
Introduction to Philosophy
বইটি অনুবাদ করতে চাই [[ব্যবহারকারী:Anisvai|Anisvai]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Anisvai|আলাপ]]) ১০:০৪, ১ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Anisvai|Anisvai]] যোগ করা হয়েছে। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৯:২৪, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== নতুন বই যুক্তকরণ প্রয়োজন ==
@[[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] দয়া করে <S>[[en:History of Islam]]</s> [[en:United Nations History]] বইটি যুক্ত করুন। আর এমনিতেই বইয়ের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:৩০, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
#[[en:History of the National Hockey League]] এবং [[en:History of Florida]] কেও যুক্ত করতে পারেন [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:৩৫, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== নতুন বই যুক্তকরণ প্রয়োজন ==
Java programming ( ''জাভা প্রোগ্রামিং) বইটি যুক্ত করার অনুরোধ করছি'' [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৭:২১, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== Recheck ejected pages ==
@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] i have corrected two pages you rejected
# [[রন্ধনপ্রণালী:আমের চাটনি|আমের চাটনি - উইকিবই]]
# [[রন্ধনপ্রণালী:টমেটো চাটনি|টমেটো চাটনি - উইকিবই]]
requesting to recheck them again [[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sheikh Mehedi Hassan|আলাপ]]) ১৯:২২, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] দুঃখিত, ভাষাটা বুঝতে পারিনি। বাংলায় বলুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৫:৪২, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] পুনঃ পর্যালোচনা করতে বলেছে :/ [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৩:১৭, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== bokthiar ==
আমার সাইডে আমি ঢুকতে পারতেছি না কেন কারণ কি [[বিশেষ:অবদান/2401:1900:8051:92B5:0:0:0:1|2401:1900:8051:92B5:0:0:0:1]] ০০:১৭, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== article topic finding problem ==
আমি "Article Topic" এ যেয়ে কিভাবে সাবমিট করব? [[ব্যবহারকারী:Abdullah Al Hasan (Hasan)|Abdullah Al Hasan (Hasan)]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Abdullah Al Hasan (Hasan)|আলাপ]]) ১৫:৫৬, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== নিবন্ধ পুনরালোচনার অনুরোধ ==
সুধী বিচারকগন,
আমার [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/মডুলার প্রোগ্রামিং]] নামক নিবন্ধটি প্রোগ্রামিং -এর কোডে ভুল থাকার কারনে অগৃহীত হয়েছে। আমি ভুল সংশোধন করে দিয়েছি। আমার বিনীত অনুরোধ, নিবন্ধটি আরেকবার পর্যালোচনা করা হোক।[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ১৮:১০, ১০ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:প্লীজ একটু দেখুন যদি [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/মডুলার প্রোগ্রামিং]] নিবন্ধটি আরেকবার পর্যালোচনা করা যায়। আমি ভুল সংশোধন করে দিয়েছি।[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ১৫:৩১, ১৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::{{ping|Tahmid}} [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৫:৫১, ২৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== পুনরালোচনার অনুরোধ ==
@[[ব্যবহারকারী:MS Sakib|MS Sakib]] ভাই, আমার [[রন্ধনপ্রণালী:চিতল মাছের কালিয়া]] নিবন্ধটি আরেকবার পর্যালোচনা করা যাবে? ভুলবশতঃ কিছু ইংরেজি অক্ষর ছিল। আমি সেগুলো বাদ দিয়ে দিয়েছি।[[ব্যবহারকারী:RDasgupta2020|RDasgupta2020]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:RDasgupta2020|আলাপ]]) ০৫:১৮, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
dv75f469tpzhg2ha0imd2t58rqroyq0
ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25
3
22719
85686
85588
2025-07-05T15:44:19Z
Mehedi Abedin
7113
/* জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি */ উত্তর
85686
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ১৯:৪০, ৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি]] ==
[[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি]] পাতাটি প্রতিযোগিতায় পর্যালোচনার সময় প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। পাতায় অনুবাদে কিছু সমস্যা আছে। তার পাশাপাশি আপনি সূত্রের শিরোনাম সরাসরি অনুবাদ করেছেন। খেয়াল করুন যে বইগুলো ইংরেজি তাই সরাসরি অনুবাদের বদলে বইয়ের নাম অনুবাদের সময় বাংলা অক্ষরে নামগুলো লিখতে হবে।
যেমন, আপনি অনুবাদ করেছিলেন
* গার্ডিনার, কে ১৯৬৪, খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে ৩১৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কোরীয় রাষ্ট্র কোগুরিও-র উত্থান ও সূচনা, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল গবেষণাপত্র
অথচ লিখতে হতো,
* গার্ডিনার, কে ১৯৬৪, দ্য অরিজিন অ্যান্ড রাইজ অফ দ্য কোরিয়ান কিংডম অফ কোগুরিও ফ্রম দ্য ফার্স্ট সেঞ্চুরি বিসি টু ৩১৩ এডি, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল গবেষণাপত্র
আপনি যদি প্রতিযোগিতা পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে পাতাটি ঠিক করে আমাকে মেনশন করে জানাতে পারেন তাহলে আমি পুনঃপর্যালোচনা করে পাতাটি গ্রহণ করতে পারবো। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৫:৩৯, ২ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:ঠিক করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৭:৪৪, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৫:৪৪, ৫ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
2q1m75bopg66a2v6dzbwl1ru285m2e4
কোয়ান্টাম জগৎ/আপেক্ষিকতা/লরেন্জ সংকোচন ও সময় সম্প্রসারণ
0
24828
85699
77905
2025-07-05T16:31:44Z
MdsShakil
7280
85699
wikitext
text/x-wiki
===লোরেন্টজ সংকোচন, সময় প্রসারণ===
কল্পনা করুন একটি মিটার স্টিক স্থির অবস্থায় আছে <math>\mathcal{F}'.</math> সেই সময়ে <math>t'=0,</math>এর প্রান্তগুলি বিন্দুতে অবস্থিত <math>O</math> এবং <math>C.</math>সেই সময়ে <math>t=0,</math> তারা বিন্দুতে অবস্থিত <math>O</math>এবং <math>A,</math>যেগুলো এক মিটারেরও কম দূরে অবস্থিত। এখন কল্পনা করুন একটি লাঠি ("মিটার" লাঠি নয়) স্থির অবস্থায় আছে <math>\mathcal{F},</math>সেই সময়ে যার শেষ বিন্দু <math>t'=0</math>O এবং C. In <math>\mathcal{F}'</math>তারা এক মিটার দূরে, কিন্তু লাঠির বিশ্রাম-কাঠামোতে তারা আছে <math>O</math> এবং <math>B</math>এবং এভাবে এক মিটারেরও বেশি দূরে। মূল কথা: একটি চলমান বস্তু যে দিকে গতিশীল, সেই দিকেই সংকুচিত (সংক্ষিপ্ত) হয়।
[[image:Lctd.png|400px]]
এরপর দুটি ঘড়ি কল্পনা করুন, একটি(<math>\mathcal{C}</math>)বিশ্রামে <math>\mathcal{F}</math> এবং অবস্থিত <math>x=0,</math>এবং একটি (<math>\mathcal{C}'</math>) বিশ্রামে <math>\mathcal{F}'</math>এবং অবস্থিত <math>x'=0.</math> এ <math>D,</math> <math>\mathcal{C}'</math> নির্দেশ করে যে এক সেকেন্ড কেটে গেছে, যখন <math>E</math>(যার মধ্যে <math>\mathcal{F}</math> এর সাথে একযোগে <math>D</math>), <math>\mathcal{C}</math> নির্দেশ করে যে এক সেকেন্ডেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে, এ <math>F</math> (যার মধ্যে <math>\mathcal{F}'</math> এর সাথে একযোগে <math>D</math>), <math>\mathcal{C}</math> ইঙ্গিত দেয় যে এক সেকেন্ডেরও কম সময় অতিবাহিত হয়েছে। মূল কথা: একটি চলমান ঘড়ি স্থির ঘড়ির চেয়ে ধীর গতিতে চলে।
উদাহরণ: মিউওনস (<math>\mu</math> particles) মহাজাগতিক উৎসের উচ্চ-শক্তি কণাগুলি বায়ুমণ্ডলে আঘাত করলে বায়ুমণ্ডলের শীর্ষের কাছাকাছি, প্রায় দশ কিলোমিটার উপরে তৈরি হয়। যেহেতু মিউয়নগুলি গড়ে ২.২ মাইক্রোসেকেন্ডের জীবনকাল পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাই তারা ৬০০ মিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ করে না। তবুও অনেকগুলি সমুদ্রপৃষ্ঠে পাওয়া যায়। তারা কীভাবে এত দূরে যায়?
এর উত্তর এই যে, তাদের বেশিরভাগই আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে ভ্রমণ করে। যদিও তার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে (অর্থাৎ, এটি যে জড়তা ব্যবস্থায় বিশ্রাম নেয় তার সাপেক্ষে), একটি মিউয়ন মাত্র ২ মাইক্রোসেকেন্ড বেঁচে থাকে, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে (অর্থাৎ, একটি জড়তা ব্যবস্থা যেখানে এটি আলোর গতির কাছাকাছি ভ্রমণ করে তার সাপেক্ষে), এটি অনেক বেশি সময় বেঁচে থাকে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট সময় পায়।
{{BookCat}}
2jjkgwj79iycu9jc3yagrr7oc3php04
85700
85699
2025-07-05T16:32:06Z
MdsShakil
7280
85700
wikitext
text/x-wiki
===লোরেন্টজ সংকোচন, সময় প্রসারণ===
কল্পনা করুন একটি মিটার স্টিক স্থির অবস্থায় আছে <math>\mathcal{F}'.</math> সেই সময়ে <math>t'=0,</math>এর প্রান্তগুলি বিন্দুতে অবস্থিত <math>O</math> এবং <math>C.</math>সেই সময়ে <math>t=0,</math> তারা বিন্দুতে অবস্থিত <math>O</math>এবং <math>A,</math>যেগুলো এক মিটারেরও কম দূরে অবস্থিত। এখন কল্পনা করুন একটি লাঠি ("মিটার" লাঠি নয়) স্থির অবস্থায় আছে <math>\mathcal{F},</math>সেই সময়ে যার শেষ বিন্দু <math>t'=0</math>O এবং C. In <math>\mathcal{F}'</math>তারা এক মিটার দূরে, কিন্তু লাঠির বিশ্রাম-কাঠামোতে তারা আছে <math>O</math> এবং <math>B</math>এবং এভাবে এক মিটারেরও বেশি দূরে। মূল কথা: একটি চলমান বস্তু যে দিকে গতিশীল, সেই দিকেই সংকুচিত (সংক্ষিপ্ত) হয়।
[[image:Lctd.png|400px|থাম্ব]]
এরপর দুটি ঘড়ি কল্পনা করুন, একটি(<math>\mathcal{C}</math>)বিশ্রামে <math>\mathcal{F}</math> এবং অবস্থিত <math>x=0,</math>এবং একটি (<math>\mathcal{C}'</math>) বিশ্রামে <math>\mathcal{F}'</math>এবং অবস্থিত <math>x'=0.</math> এ <math>D,</math> <math>\mathcal{C}'</math> নির্দেশ করে যে এক সেকেন্ড কেটে গেছে, যখন <math>E</math>(যার মধ্যে <math>\mathcal{F}</math> এর সাথে একযোগে <math>D</math>), <math>\mathcal{C}</math> নির্দেশ করে যে এক সেকেন্ডেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে, এ <math>F</math> (যার মধ্যে <math>\mathcal{F}'</math> এর সাথে একযোগে <math>D</math>), <math>\mathcal{C}</math> ইঙ্গিত দেয় যে এক সেকেন্ডেরও কম সময় অতিবাহিত হয়েছে। মূল কথা: একটি চলমান ঘড়ি স্থির ঘড়ির চেয়ে ধীর গতিতে চলে।
উদাহরণ: মিউওনস (<math>\mu</math> particles) মহাজাগতিক উৎসের উচ্চ-শক্তি কণাগুলি বায়ুমণ্ডলে আঘাত করলে বায়ুমণ্ডলের শীর্ষের কাছাকাছি, প্রায় দশ কিলোমিটার উপরে তৈরি হয়। যেহেতু মিউয়নগুলি গড়ে ২.২ মাইক্রোসেকেন্ডের জীবনকাল পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাই তারা ৬০০ মিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ করে না। তবুও অনেকগুলি সমুদ্রপৃষ্ঠে পাওয়া যায়। তারা কীভাবে এত দূরে যায়?
এর উত্তর এই যে, তাদের বেশিরভাগই আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে ভ্রমণ করে। যদিও তার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে (অর্থাৎ, এটি যে জড়তা ব্যবস্থায় বিশ্রাম নেয় তার সাপেক্ষে), একটি মিউয়ন মাত্র ২ মাইক্রোসেকেন্ড বেঁচে থাকে, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে (অর্থাৎ, একটি জড়তা ব্যবস্থা যেখানে এটি আলোর গতির কাছাকাছি ভ্রমণ করে তার সাপেক্ষে), এটি অনেক বেশি সময় বেঁচে থাকে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট সময় পায়।
{{BookCat}}
lw3f8f0t1mylige5f57xpgphlhik003
ব্যবহারকারী:R1F4T/common.css
2
24926
85705
78157
2025-07-05T17:00:05Z
R1F4T
9121
85705
css
text/css
body.skin-vector .mw-body h1,
body.skin-vector .mw-body-content h2 {
font-family: serif !important;
}
sa3uopphywcr0285sv9jhlykfsfutdf
সম্পর্ক/মানব মস্তিষ্কের বিকাশ
0
25111
85702
84947
2025-07-05T16:45:51Z
Mehedi Abedin
7113
85702
wikitext
text/x-wiki
মানুষের বৃহৎ মস্তিষ্ক তাদের সবচেয়ে স্বতন্ত্র শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য, যা আমাদেরকে অন্যান্য প্রাইমেট থেকে পৃথক করে। মানুষের মস্তিষ্কের গড় আয়তন প্রায় ১,৩৫০ ঘন সেন্টিমিটার, যা আমাদের নিকটতম আত্মীয়, শিম্পাঞ্জি এবং গরিলার মস্তিষ্কের তুলনায় প্রায় চারগুণ বড়, যাদের মস্তিষ্কের গড় আয়তন ৩০০–৪০০ ঘন সেন্টিমিটার। মস্তিষ্কের আকারের এই উল্লেখযোগ্য পার্থক্য মানুষের বিবর্তনের একটি বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের উন্নত জ্ঞানীয় ক্ষমতার ভিত্তি।
বৃহৎ মস্তিষ্কের শক্তির চাহিদা যথেষ্ট। বিশ্রামের সময়, মানুষের মস্তিষ্ক শরীরের মোট শক্তির প্রায় ২০–২৫% ব্যবহার করে, যা বিশ্রামের সময় কঙ্কালের পেশীর তুলনায় প্রায় বিশ গুণ বেশি। বৃহৎ মস্তিষ্ক বজায় রাখতে গ্লুকোজ এবং অক্সিজেনের ধ্রুবক সরবরাহ এবং সর্বোত্তম কার্যকারিতার জন্য একটি স্থিতিশীল তাপমাত্রা প্রয়োজন। এই উচ্চ বিপাকীয় ব্যয় বৃহৎ মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা, যেমন জটিল সমস্যা সমাধান, ভাষা এবং সামাজিক সহযোগিতার জন্য একটি বিনিময়।
তবে, বৃহৎ মস্তিষ্কের সাথে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলি সূক্ষ্ম এবং আঘাতের ঝুঁকিপ্রবণ, যার জন্য মাথার খুলির মতো শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো প্রয়োজন। এছাড়াও, মানুষের মস্তিষ্কের আকার প্রসবকে জটিল করে তোলে, কারণ মানব শিশুর বড় মাথাটি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ জন্মনালীর মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যা অন্যান্য প্রাইমেটের তুলনায় দীর্ঘ এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রসবের কারণ হয়। এই শারীরবৃত্তীয় ব্যয়গুলি এনসেফালাইজেশনের সাথে সম্পর্কিত বিবর্তনীয় বিনিময়কে তুলে ধরে।
বুদ্ধিমত্তা, যদিও তাৎক্ষণিক বেঁচে থাকার কাজে যেমন দ্রুত দৌড়ানো বা কঠোর পরিবেশগত অবস্থা সহ্য করার ক্ষেত্রে সরাসরি সাহায্য করে না, তবুও উন্নত অভিযোজনযোগ্যতার মাধ্যমে পরোক্ষ সুবিধা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, বুদ্ধিমত্তা মানুষকে সরঞ্জাম তৈরি, শিকার এবং সংগ্রহের কৌশল উন্নয়ন এবং জটিল সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে সক্ষম করে, যা আমাদের প্রজাতির বেঁচে থাকা এবং আধিপত্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষের মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি প্রায় দুই মিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল, "হোমো" গণের উত্থানের সময়। "হোমো হ্যাবিলিস" এবং "হোমো ইরেক্টাস"-এর মাথার খুলির মতো জীবাশ্ম প্রমাণ এই সময়কালে ক্র্যানিয়াল ক্ষমতার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি দেখায়। বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই তুলনামূলকভাবে দ্রুত বৃদ্ধি সরঞ্জাম ব্যবহার, সামাজিক সংগঠন এবং সম্ভবত প্রাথমিক ভাষার উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত ছিল। বিবর্তনীয় সময়ে দুই মিলিয়ন বছর একটি সংক্ষিপ্ত সময়, যা মানুষের মস্তিষ্কের বিবর্তনের অসাধারণ গতি এবং আমাদের প্রজাতির উন্নয়নে এর গভীর প্রভাবকে তুলে ধরে।
<big> পঠিতব্য বিষয়সমূহ</big>
==ত্রয়ী মস্তিষ্ক==
আমাদের মস্তিষ্ক তিনটি স্বতন্ত্র অংশ নিয়ে গঠিত, যা তিনটি ভিন্ন বিবর্তনীয় সময়কালের প্রতিনিধিত্ব করে।<ref>MacLean, Paul. ''The Triune Brain in Evolution: Role in Paleocerebral Functions'' (Plenum, 1990, {{ISBN|0306431688}}).</ref>
সবচেয়ে প্রাচীন, গভীর এবং ক্ষুদ্রতম অংশটি হলো ''সরীসৃপ মস্তিষ্ক''।<ref>অন্য নামে বেসাল গ্যাংলিয়া বা এক্সট্রাপিরামিডাল মোটর সিস্টেম। Panksepp, Jaak. ''Affective Neuroscience: The Foundations of Human and Animal Emotions'' (Oxford, 1998, {{ISBN|0-19-509673-8}}, পৃ. ৪২)।</ref>সরীসৃপ মস্তিষ্ক হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আগ্রাসন, সঙ্গম এবং তাৎক্ষণিক বিপদের প্রতিক্রিয়া সক্ষম করে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ''লিম্বিক সিস্টেম'' বিবর্তিত করেছে। এটি আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী স্তর, যা সরীসৃপ মস্তিষ্ককে ঘিরে রয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জন্য অনন্য শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যগুলো লিম্বিক মস্তিষ্কে রয়েছে, যেমন আমাদের উষ্ণ রাখার জন্য হাইপোথ্যালামাস সিস্টেম।
লিম্বিক মস্তিষ্ক আবেগও উৎপন্ন করে। আবেগ সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে। সরীসৃপদের বিপরীতে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের সন্তানদের যত্ন নেয়। স্তন্যপায়ীদের মস্তিষ্ক মা-সন্তান এবং অন্যান্য সম্পর্কের জন্য সহজাতভাবে তৈরি হয়েছে।
<blockquote>একটি সরীসৃপের তার সন্তানের প্রতি সবচেয়ে সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো উদাসীনতা; এটি ডিম পাড়ে এবং হেঁটে (বা গড়িয়ে) চলে যায়। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ঘনিষ্ঠ, পারস্পরিক পুষ্টিকর সামাজিক গোষ্ঠী—পরিবার—গঠন করে, যেখানে সদস্যরা একে অপরের সাথে স্পর্শ করে এবং যত্ন নেয়। পিতামাতারা তাদের সন্তানদের এবং একে অপরকে গোষ্ঠীর বাইরের প্রতিকূল বিশ্ব থেকে পুষ্টি ও সুরক্ষা দেয়। একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী তার সন্তান বা সঙ্গীকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে জীবনের ঝুঁকি নেয় এবং কখনও কখনও জীবন হারায়। একটি গার্টার সাপ বা সালামান্ডার তার আত্মীয়ের মৃত্যুকে নির্বিকার দৃষ্টিতে দেখে।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ২৫-২৬)।</ref>|থমাস লুইস, ফারি আমিনি, এবং রিচার্ড ল্যানন<br/>''A General Theory of Love'' (২০০০)</blockquote>
''সেরিব্রাল কর্টেক্স'' (বা ''নিওকর্টেক্স'') আমাদের মস্তিষ্কের সবচেয়ে নতুন, বাইরের অংশ। প্রাচীনতম স্তন্যপায়ী প্রাণী, যেমন ওপসাম, তাদের কেবল একটি পাতলা সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে। খরগোশের একটু বেশি, বিড়ালের আরও কিছুটা বেশি। বানরদের সেরিব্রাল কর্টেক্স যথেষ্ট বড়। মানুষ—এবং কেবল মানুষ—এর বিশাল সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ৪৩)।</ref>
মানুষের সরীসৃপ মস্তিষ্ক এবং লিম্বিক সিস্টেম অন্যান্য প্রাণীদের মতো আকার এবং গঠনে একই রকম। অর্থাৎ, আমাদের পূর্বপুরুষরা বিশাল সেরিব্রাল কর্টেক্স বিবর্তিত করেছে, যখন পুরোনো মস্তিষ্কের অংশগুলো পরিবর্তিত হয়নি।
সেরিব্রাল কর্টেক্স নতুন জিনিস শেখে। সামান্য বা কোনো সেরিব্রাল কর্টেক্স নেই এমন প্রাণীরা কেবল তাদের জিনের প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ করে। সেরিব্রাল কর্টেক্স থাকা প্রাণীরা নতুন খাবার খুঁজে পায়, নতুন পরিবেশে বেঁচে থাকে, বা প্রজনন সাফল্য বাড়াতে তাদের সঙ্গম কৌশল পরিবর্তন করে।
মানুষের সেরিব্রাল কর্টেক্স নতুন খাবার এবং বেঁচে থাকার দক্ষতা শেখার বাইরেও যায়। আমাদের মস্তিষ্ক বিমূর্তভাবে চিন্তা করতে পারে। আমরা প্রতীকের মাধ্যমে যোগাযোগ করি (যেমন ভাষা), অতীত ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা করি, এবং আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করি শুধুমাত্র আমাদের পরিবারের জন্যই নয় (যেমন অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীরা করে) বরং ধারণার জন্যও (যেমন সম্মান এবং দেশ)।
মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে দ্বন্দ্ব সম্পর্কের সমস্যা সৃষ্টি করে। একটি দ্বন্দ্বপূর্ণ মস্তিষ্কে, পুরোনো অংশ জয়ী হয়। বিপরীতে, একটি ''সমন্বিত'' মস্তিষ্ক—অর্থাৎ, যিনি তার বা তার পুরো মস্তিষ্ক ব্যবহার করেন—সম্পর্কের সমস্যা সমাধান করেন।
=== অনটোজেনি ফিলোজেনিকে পুনরাবৃত্তি করে ===
একটি শিশুর বিকাশ তার প্রজাতির বিবর্তনের অনুকরণ করে।
শিশুরা তাদের সরীসৃপ মস্তিষ্কে বাস করে। তারা খায়, শ্বাস নেয়, হামাগুড়ি দেয়, ঘুমায় ইত্যাদি।
শিশুরা তাদের লিম্বিক মস্তিষ্কে বাস করে। তারা তীব্রভাবে আবেগ অনুভব করে। তারা সম্পর্ক গঠনের জন্য আবেগ ব্যবহার করে।
কিশোর-কিশোরীরা তাদের সেরিব্রাল কর্টেক্সে বাস করে। তারা অনন্য ব্যক্তি হওয়ার জন্য সংগ্রাম করে। তারা জীবনযাপনের জন্য বিমূর্ত নীতি খুঁজে বেড়ায়।
প্রাপ্তবয়স্ক সম্পর্ক শৈশবের বিকাশকে উল্টে দেয় পুরুষ এবং মহিলারা বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গীদের আকর্ষণ করতে সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিমূর্ত ধারণা (যেমন লিঙ্গ ভূমিকা) ব্যবহার করে। যদি একটি দম্পতি তখন লিম্বিক মস্তিষ্কের আবেগীয়ভাবে সংযুক্ত "রসায়ন" অনুভব করে, তারা একটি সম্পর্ক গঠন করে। যদি সম্পর্কটি ভালোভাবে চলে, তবে শীঘ্রই বা পরে তারা বিছানায়, তাদের সরীসৃপ মস্তিষ্ক ব্যবহার করে।
ভালোবাসা একটি শিশুর লিম্বিক মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ৪৩)।</ref> যেসব শিশু ভালোবাসা পায় না, তাদের লিম্বিক মস্তিষ্ক আবেগীয় ঘনিষ্ঠতার জন্য সক্ষম হয়ে ওঠে না। এমন একজন ব্যক্তি সরীসৃপ স্তরে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে—যেমন খাবার, উষ্ণতা, যৌনতা—অথবা সেরিব্রাল কর্টেক্স স্তরে—যেমন হিসাবরক্ষণ বা আইনে পারদর্শী হওয়া—কিন্তু ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়।
==প্রাকৃতিক বনাম যৌন নির্বাচন==
চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে ''অরিজিন অফ স্পিসিস''-এ লিখেছিলেন যে প্রজাতিগুলো এলোমেলো মিউটেশনের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়। পরিবেশগত পরিবর্তন—যেমন খাদ্য উৎসের পরিবর্তন, শিকার, জলবায়ু—একটি মিউটেশনকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দেয়। তিনি এই প্রক্রিয়াটিকে ''প্রাকৃতিক নির্বাচন'' নাম দিয়েছিলেন।
প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি হলো যে আমাদের বুদ্ধিমান, বড় মস্তিষ্কের পূর্বপুরুষরা সরঞ্জাম আবিষ্কার করেছিলেন এবং তারপর তাদের ছোট মস্তিষ্কের আত্মীয়দের উপর প্রাধান্য বিস্তার করেছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যগুলো এই "মানুষ সরঞ্জাম নির্মাতা" হাইপোথিসিসকে সমর্থন করে না।
আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রথমে ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে, বা ১০০,০০০ প্রজন্ম আগে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার শুরু করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 53.</ref> এই বইটিতে প্রায় ৫০,০০০ শব্দ রয়েছে। প্রথম মানুষকে আপনার "মহান-মহান-মহান…পূর্বপুরুষ" হিসেবে উল্লেখ করতে হলে, এই বইয়ের প্রতিটি শব্দকে "মহান" দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং আপনার দুটি বইয়ের প্রয়োজন হবে।
এক মিলিয়ন বছর পরে, বা প্রথম বইয়ের শেষের কাছাকাছি, আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্কের আকার দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছিল। প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাদের পাথরের সরঞ্জামে সামান্য উন্নতি দেখতে পান।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 55.</ref>
৫০০,০০০ বছর আগে—দ্বিতীয় বইয়ের অর্ধেক পথে—আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক আমাদের মস্তিষ্কের প্রায় সমান আকারের হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষরা আগুন ব্যবহার শুরু করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 55.</ref> আগুন তাদের আফ্রিকা থেকে ঠান্ডা ইউরোপ এবং এশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল।
৫০,০০০ বছর আগে—দ্বিতীয় বইয়ের শেষ থেকে আট পৃষ্ঠা—আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক আধুনিক আকারে পৌঁছেছিল। তাদের পাথরের সরঞ্জামগুলো পাতলা এবং তীক্ষ্ণ হয়েছিল। তারা হাতির দাঁত, শেল এবং পাথর থেকে ছোট অলঙ্কারিক মূর্তি খোদাই করেছিলেন। তারা সুন্দর গুহাচিত্র তৈরি করেছিলেন। তারা প্রথম সমুদ্রগামী নৌকা তৈরি করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 61.</ref>
৫,০০০-১০,০০০ বছর আগে—দ্বিতীয় বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা—আমাদের পূর্বপুরুষরা কৃষি উন্নয়ন করেছিলেন। দুর্বল পুষ্টি কৃষকদের দেহ এবং মস্তিষ্ককে ছোট করেছিল। তারা লেখা এবং ধাতব সরঞ্জাম আবিষ্কার করেছিলেন। তারা ধনুক এবং তীর আবিষ্কার করেছিলেন—একটি অস্ত্র যা আমাদের কাছে আদিম মনে হয়।<ref>http://www.archery.org/what_is_archery/history.htm, http://www.usarchery.org/naapub/history.htm.</ref>
আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ''আগে'' বড় হয়েছিল। প্রতিটি নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জন্য আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্কের প্রয়োজন ছিল। সরঞ্জাম ব্যবহার আমাদের বড় মস্তিষ্কের অনেক ব্যবহারের মধ্যে একটি ছিল। অন্য কিছু মানুষের মস্তিষ্কের বিবর্তনকে চালিত করেছিল।
=== যৌন নির্বাচন ===
১৮৭১ সালে ''দ্য ডিসেন্ট অফ ম্যান''-এ ডারউইন লিখেছিলেন যে প্রাকৃতিক নির্বাচন মানুষের বিবর্তন ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিবর্তে, তিনি একটি বিকল্প তত্ত্ব প্রস্তাব করেছিলেন। প্রজাতিগুলো বিবর্তিত হয় যখন পুরুষ এবং নারী একে অপরকে নির্দিষ্ট গুণাবলীর জন্য নির্বাচন করে। তিনি এটিকে ''যৌন নির্বাচন'' নাম দিয়েছিলেন। জীববিজ্ঞানীরা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই ধারণাটিকে উপেক্ষা করেছিলেন।<ref>Miller, Geoffrey F. ''The Mating Mind: How Sexual Choice Shaped the Evolution of Human Nature'' (Doubleday, 2000, {{ISBN|0385495161}}, p.33.</ref>
সাধারণত, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি নির্বাচনশীল। অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রজাতির নারীরা সন্তান উৎপাদন এবং লালন-পালনের বেশিরভাগ কাজ করে। বিপরীতে, সন্তান জন্মদানের কাজ কম, তাই পুরুষরা ততটা নির্বাচনশীল নয়।
{{quote|নারীর পক্ষ থেকে কিছু পছন্দের প্রয়োগ প্রায় পুরুষের আগ্রহের মতোই সাধারণ নিয়ম।<ref>Darwin, Charles. [http://www.literature.org/authors/darwin-charles/the-descent-of-man/ The Descent of Man] (Prometheus, 1871, {{ISBN|1573921769}}.</ref>|চার্লস ডারউইন, ''দ্য ডিসেন্ট অফ ম্যান'' (১৮৭১)}}
নারীরা এমন পুরুষদের বেছে নেয় যাদের বৈশিষ্ট্য তাদের বেঁচে থাকার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।<ref>Trivers, R.L. (1972). "Parental investment and sexual selection," in B. Campbell (ed.), ''Sexual selection and the descent of man 1871-1971''. (Aldine, 1972).</ref> উদাহরণস্বরূপ, ময়ূরের উজ্জ্বল রঙ তাকে শিকারীদের কাছে দৃশ্যমান করে এবং তার বিশাল লেজ তার পালানোকে ধীর করে। তার সুন্দর লেজ ময়ূরীদের কাছে বোঝায় যে সে একজন বিশেষভাবে সুস্থ ব্যক্তি, অর্থাৎ সে এত দ্রুত যে ভারী লেজ থাকা সত্ত্বেও সে শিকারীদের থেকে পালাতে পারে। যৌন নির্বাচন সাধারণত প্রাকৃতিক নির্বাচনের বিপরীত।
প্রাকৃতিক নির্বাচন ধীর পরিবেশগত পরিবর্তনের মাধ্যমে অগ্রসর হয়। প্রাকৃতিক নির্বাচন কেবল কঠিন পরিবেশে (যেমন শিকার, জলবায়ু পরিবর্তন) বিবর্তনকে অগ্রসর করে। প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন প্রাণী উৎপন্ন করে যারা বেঁচে থাকার জন্য ভালোভাবে সক্ষম—সাধারণত ছোট, বেশি দক্ষ এবং কম দৃশ্যমান।
বিপরীতে, যৌন নির্বাচন প্রতিটি প্রজন্মের সাথে অগ্রসর হয়। যৌন নির্বাচন দ্রুত বিবর্তনীয় পরিবর্তন ঘটায়। যৌন নির্বাচন স্থিতিশীল পরিবেশে বিবর্তনকে অগ্রসর করে। যৌন নির্বাচন এমন প্রাণী উৎপন্ন করে (বিশেষত পুরুষ) যারা বেঁচে থাকার জন্য কম সক্ষম, বড়, উজ্জ্বল বা অতিরঞ্জিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।
==সেরিব্রাল কর্টেক্স কি যৌন নির্বাচনে বিকশিত?==
মানুষের অতিরিক্ত বড় মস্তিষ্ক যৌন নির্বাচনের কারণে দ্রুত বিবর্তিত হতে পারে। বৃহত্তর সেরিব্রাল কর্টেক্স এবং এটি ব্যবহার করার ক্ষমতার বিবর্তন মানুষকে প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ দেয়, প্রকৃতি মানুষের উপর নয়। এটি দুর্বল এবং অল্পবয়সী নবজাতকের লালনপালনের জন্য অপরিহার্য। সম্ভবত নারীরা এমন পুরুষদের পছন্দ করতে শুরু করেছিল যারা শিকারীদের থেকে আশ্রয় তৈরি করতে পারত এবং শক্তিশালী না হলেও শিশুদের শিকারীদের থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছিল। এবং পুরুষরাও সম্ভবত এমন নারীদের পছন্দ করতে শুরু করেছিল যারা শিকারীদের থেকে নিজেকে লুকাতে পারত এবং শিশুদের জন্য একটি সহায়ক এবং পুষ্টিকর পরিবেশ তৈরি করতে পারত।
আমাদের সেরিব্রাল কর্টেক্স অনেক আচরণ সক্ষম করে, যেমন বক্তৃতা এবং ভাষা। কিন্তু সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিষয়ে যা আকর্ষণীয় তা হলো এর কতটা নির্দিষ্ট আচরণের জন্য নিবেদিত নয়। মানুষের সেরিব্রাল কর্টেক্সে বিলিয়ন বিলিয়ন সাধারণ-উদ্দেশ্য নিউরন রয়েছে, যা যেকোনো নতুন ধারণা শিখতে সক্ষম। কেন আমাদের পূর্বপুরুষ মা এবং বাবারা—অন্য কোনো প্রাণীর বিপরীতে—যৌনভাবে এমন সঙ্গীদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল যারা নতুন ধারণা শিখতে পারত?
=== একগামিতা এবং মিথ্যা ===
বেশিরভাগ অ-মানব স্তন্যপায়ী পিতারা তাদের সন্তানদের সাথে সামান্য বা কোনো সম্পৃক্ততা রাখে না।<ref>Diamond, Jared. [http://www.calacademy.org/calwild/summer2000/html/diamond.html Diamond's Hope: An Interview with Science's Multifaceted Storyteller], ''California Wild'', Summer 2000.</ref> পুরুষ গরিলারা অন্য পুরুষদের দ্বারা জন্মানো শিশুদের হত্যা করে। পুরুষ চিম্পাঞ্জিরা তাদের দলের সকল শিশুদের সাহায্য করে, কিন্তু তারা জানে না কোন শিশুর পিতা কে।
মানুষের বিবর্তন শুরু হতে পারে যখন পিতারা তাদের সন্তানদের লালনপালনে সাহায্য করতে শুরু করে, যা শিশুদের বেঁচে থাকার সুবিধা দেয়। আজকের শিকারী-সংগ্রাহকদের মধ্যে, পিতাহীন শিশুদের শৈশবে মৃত্যুর সম্ভাবনা দ্বিগুণেরও বেশি।<ref>Hurtado, A.M., Hill, K.R. "Paternal effect on offspring survivorship among Aché and Hiwi hunter-gatherer: Implications for modeling pair-bond stability," in B.S. Hewlett (ed.), ''Father-child relations: Cultural and biosocial contexts'' (Aldine de Gruyter, 1992), pages 31-55.</ref>
একগামিতা দুটি প্রজনন কৌশলের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। একজন পুরুষ অনেক নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টা করতে পারে, যা নারীদের প্রত্যাখ্যান, অন্য পুরুষদের থেকে সহিংসতা, বা তার পিতাহীন সন্তানদের বেঁচে না থাকার ঝুঁকি নিয়ে আসে। যদিও এভাবে প্রাথমিকভাবে বেশি সন্তান জন্ম নিতে পারে, তবে এমন পুরুষের কোনো সন্তান বেঁচে নাও থাকতে পারে।
অথবা একজন পুরুষ একগামী সম্পর্কে থাকতে পারে এবং তার সন্তানদের সক্রিয়ভাবে লালনপালন করতে পারে। এমন পুরুষের কেবল কয়েকটি সন্তান হবে, কিন্তু তার সন্তানরা সম্ভবত বেঁচে থাকবে এবং সমৃদ্ধ হবে।
একজন নারী কাঙ্ক্ষিত (যেমন উচ্চ-মর্যাদাসম্পন্ন, লম্বা, শক্তিশালী, সুদর্শন) পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারে, এবং ঝুঁকি নিতে পারে যে প্রতিদ্বন্দ্বী নারীরা তাকে কেড়ে নেবে। অথবা সে একজন স্থিতিশীল, একগামী সম্পর্কে থাকতে পারে এমন একজন পুরুষের সাথে যাকে অন্য কোনো নারী চায় না।
=== যৌন মিথ্যা সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিকাশকে চালিত করতে পারে ===
ধরা পড়লে মিথ্যাবাদীর প্রজনন সাফল্য হ্রাস পায়। মিথ্যা ধরতে পারলে মিথ্যা ধরার প্রজনন সাফল্য বৃদ্ধি পায়।
মিথ্যা বলার জন্য কল্পনা, দ্রুত চিন্তাভাবনা এবং সর্বোপরি নতুন মিথ্যা ভাবার প্রয়োজন। মিথ্যা ধরতে কল্পনা, দ্রুত চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘ স্মৃতির প্রয়োজন।
এগুলো সেরিব্রাল কর্টেক্সের কার্যকলাপ। কার্যকর মিথ্যাবাদীরা তাদের আবেগকেও তাদের মিথ্যার সাথে মেলায়। আপনি মিথ্যা ধরেন যখন একজন ব্যক্তির আবেগীয় অবস্থা তার বা তার কথার সাথে মেলে না। কার্যকর মিথ্যা বলার জন্য একজনের সেরিব্রাল কর্টেক্সকে তার লিম্বিক মস্তিষ্কের সাথে সমন্বয় করা প্রয়োজন।
যে পুরুষ বা নারীর বৃহত্তর সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে, যা তার বা তার লিম্বিক মস্তিষ্কের সাথে ভালোভাবে সমন্বিত, সে যৌন মিথ্যা বলতে এবং যৌন মিথ্যা ধরতে বেশি সক্ষম। এমন পুরুষ এবং নারীরাই আমাদের পূর্বপুরুষ হয়েছেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
{{সম্পর্ক/পরিভ্রমণ|সম্পর্কের বিজ্ঞান|এই বই সম্পর্কে|যেভাবে নারীরা পুরুষ বাছাই করে}}
</noinclude>
7eexp3fv3sjjj1vhstuxpaok5jp31ul
85706
85702
2025-07-05T17:05:42Z
Mehedi Abedin
7113
85706
wikitext
text/x-wiki
মানুষের বৃহৎ মস্তিষ্ক তাদের সবচেয়ে স্বতন্ত্র শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য, যা তাদেরকে অন্যান্য প্রাইমেট থেকে পৃথক করে। মানুষের মস্তিষ্কের গড় আয়তন প্রায় ১,৩৫০ ঘন সেন্টিমিটার, যা তাদের নিকটতম আত্মীয় শিম্পাঞ্জি এবং গরিলার মস্তিষ্কের তুলনায় প্রায় চারগুণ বড় (যাদের মস্তিষ্কের গড় আয়তন ৩০০–৪০০ ঘন সেন্টিমিটার)। মস্তিষ্কের আকারের এই উল্লেখযোগ্য পার্থক্য মানুষের বিবর্তনের একটি বৈশিষ্ট্য এবং আমাদের উন্নত জ্ঞানীয় ক্ষমতার ভিত্তি।
বৃহৎ মস্তিষ্কের শক্তির চাহিদা যথেষ্ট। বিশ্রামের সময়, মানুষের মস্তিষ্ক শরীরের মোট শক্তির প্রায় ২০–২৫% ব্যবহার করে, যা বিশ্রামের সময় কঙ্কালের পেশীর তুলনায় প্রায় বিশ গুণ বেশি। বৃহৎ মস্তিষ্ক বজায় রাখতে গ্লুকোজ এবং অক্সিজেনের ধ্রুবক সরবরাহ এবং সর্বোত্তম কার্যকারিতার জন্য একটি স্থিতিশীল তাপমাত্রা প্রয়োজন। এই উচ্চ বিপাকীয় ব্যয় বৃহৎ মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা, যেমন জটিল সমস্যা সমাধান, ভাষা এবং সামাজিক সহযোগিতার জন্য একটি বিনিময়।
তবে, বৃহৎ মস্তিষ্কের সাথে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলি সূক্ষ্ম এবং আঘাতের ঝুঁকিপ্রবণ, যার জন্য মাথার খুলির মতো শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামো প্রয়োজন। এছাড়াও, মানুষের মস্তিষ্কের আকার প্রসবকে জটিল করে তোলে, কারণ মানব শিশুর বড় মাথাটি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ জন্মনালীর মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যা অন্যান্য প্রাইমেটের তুলনায় দীর্ঘ এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রসবের কারণ হয়। এই শারীরবৃত্তীয় ব্যয়গুলি এনসেফালাইজেশনের সাথে সম্পর্কিত বিবর্তনীয় বিনিময়কে তুলে ধরে।
যদিও তাৎক্ষণিক বেঁচে থাকার কাজে যেমন দ্রুত দৌড়ানো বা কঠোর পরিবেশগত অবস্থা সহ্য করার ক্ষেত্রে সরাসরি বুদ্ধিমত্তা সাহায্য করে না, তবুও উন্নত অভিযোজনযোগ্যতার মাধ্যমে পরোক্ষ সুবিধা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, বুদ্ধিমত্তা মানুষকে সরঞ্জাম তৈরি, শিকার এবং সংগ্রহের কৌশল উন্নয়ন এবং জটিল সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে সক্ষম করে, যা আমাদের প্রজাতির বেঁচে থাকা এবং আধিপত্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষের মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি প্রায় দুই মিলিয়ন বছর আগে শুরু হয়েছিল, "হোমো" গণের উত্থানের সময়। "হোমো হ্যাবিলিস" এবং "হোমো ইরেক্টাস"-এর মাথার খুলির মতো জীবাশ্ম প্রমাণ এই সময়কালে ক্র্যানিয়াল ক্ষমতার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি দেখায়। বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই তুলনামূলকভাবে দ্রুত বৃদ্ধি সরঞ্জাম ব্যবহার, সামাজিক সংগঠন এবং সম্ভবত প্রাথমিক ভাষার উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত ছিল। বিবর্তনীয় সময়ে দুই মিলিয়ন বছর একটি সংক্ষিপ্ত সময়, যা মানুষের মস্তিষ্কের বিবর্তনের অসাধারণ গতি এবং আমাদের প্রজাতির উন্নয়নে এর গভীর প্রভাবকে তুলে ধরে।
<big> পঠিতব্য বিষয়সমূহ</big>
==ত্রয়ী মস্তিষ্ক==
আমাদের মস্তিষ্ক তিনটি স্বতন্ত্র অংশ নিয়ে গঠিত, যা তিনটি ভিন্ন বিবর্তনীয় সময়কালের প্রতিনিধিত্ব করে।<ref>MacLean, Paul. ''The Triune Brain in Evolution: Role in Paleocerebral Functions'' (Plenum, 1990, {{ISBN|0306431688}}).</ref>
সবচেয়ে প্রাচীন, গভীর এবং ক্ষুদ্রতম অংশটি হলো ''সরীসৃপ মস্তিষ্ক''।<ref>অন্য নামে বেসাল গ্যাংলিয়া বা এক্সট্রাপিরামিডাল মোটর সিস্টেম। Panksepp, Jaak. ''Affective Neuroscience: The Foundations of Human and Animal Emotions'' (Oxford, 1998, {{ISBN|0-19-509673-8}}, পৃ. ৪২)।</ref> সরীসৃপ মস্তিষ্ক হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আগ্রাসন, সঙ্গম এবং তাৎক্ষণিক বিপদের প্রতিক্রিয়া সক্ষম করে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মাঝে ''লিম্বিক সিস্টেম'' বিবর্তিত হয়েছে। এটি আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী স্তর, যা সরীসৃপ মস্তিষ্ককে ঘিরে রয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জন্য অনন্য শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যগুলো লিম্বিক মস্তিষ্কে রয়েছে, যেমন আমাদের উষ্ণ রাখার জন্য হাইপোথ্যালামাস সিস্টেম।
লিম্বিক মস্তিষ্ক আবেগও উৎপন্ন করে। আবেগ সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে। সরীসৃপদের বিপরীতে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের সন্তানদের যত্ন নেয়। স্তন্যপায়ীদের মস্তিষ্ক মা-সন্তান এবং অন্যান্য সম্পর্কের জন্য সহজাতভাবে তৈরি হয়েছে।
<blockquote>একটি সরীসৃপের জন্য তার সন্তানের প্রতি সবচেয়ে সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো উদাসীনতা; এটি ডিম পাড়ে এবং হেঁটে (বা গড়িয়ে) চলে যায়। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ঘনিষ্ঠ, পারস্পরিক পুষ্টিকর সামাজিক গোষ্ঠী—পরিবার—গঠন করে, যেখানে সদস্যরা একে অপরের সাথে স্পর্শ করে এবং যত্ন নেয়। পিতামাতারা তাদের সন্তানদের এবং একে অপরকে গোষ্ঠীর বাইরের প্রতিকূল বিশ্ব থেকে পুষ্টি ও সুরক্ষা দেয়। একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী তার সন্তান বা সঙ্গীকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে জীবনের ঝুঁকি নেয় এবং কখনও কখনও জীবন হারায়। একটি গার্টার সাপ বা সালামান্ডার তার আত্মীয়ের মৃত্যুকে নির্বিকার দৃষ্টিতে দেখে।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ২৫-২৬)।</ref>|থমাস লুইস, ফারি আমিনি, এবং রিচার্ড ল্যানন<br/>''A General Theory of Love'' (২০০০)</blockquote>
''সেরিব্রাল কর্টেক্স'' (বা ''নিওকর্টেক্স'') আমাদের মস্তিষ্কের সবচেয়ে নতুন, বাইরের অংশ। প্রাচীনতম স্তন্যপায়ী প্রাণীদের (যেমন ওপসাম) কেবল একটি পাতলা সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে। এটি খরগোশের চেয়ে একটু বেশি বড়, বিড়ালের আরও কিছুটা বেশি বড়। বানরদের সেরিব্রাল কর্টেক্স যথেষ্ট বড়। কেবল মানুষের বিশাল সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ৪৩)।</ref>
মানুষের সরীসৃপ মস্তিষ্ক এবং লিম্বিক সিস্টেম অন্যান্য প্রাণীদের মতো আকার এবং গঠনে একই রকম। অর্থাৎ, আমাদের পূর্বপুরুষদের বিশাল সেরিব্রাল কর্টেক্স বিবর্তিত হয়েছে, যখন পুরোনো মস্তিষ্কের অংশগুলো পরিবর্তিত হয়নি।
সেরিব্রাল কর্টেক্স নতুন জিনিস শেখে। সামান্য বা কোনো সেরিব্রাল কর্টেক্স নেই এমন প্রাণীরা কেবল তাদের জিনের প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ করে। সেরিব্রাল কর্টেক্স থাকা প্রাণীরা নতুন খাবার খুঁজে পায়, নতুন পরিবেশে বেঁচে থাকে, বা প্রজনন সাফল্য বাড়াতে তাদের সঙ্গম কৌশল পরিবর্তন করে।
মানুষের সেরিব্রাল কর্টেক্স নতুন খাবার এবং বেঁচে থাকার দক্ষতা শেখার বাইরেও যায়। আমাদের মস্তিষ্ক বিমূর্তভাবে চিন্তা করতে পারে। আমরা প্রতীকের মাধ্যমে যোগাযোগ করি (যেমন ভাষা), অতীত ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা করি, এবং আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করি শুধুমাত্র আমাদের পরিবারের জন্যই নয় (যেমন অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীরা করে) বরং ধারণার জন্যও (যেমন সম্মান এবং দেশ)।
মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে দ্বন্দ্ব সম্পর্কের সমস্যা সৃষ্টি করে। একটি দ্বন্দ্বপূর্ণ মস্তিষ্কে, পুরোনো অংশ জয়ী হয়। বিপরীতে, একটি ''সমন্বিত'' মস্তিষ্ক, অর্থাৎ যিনি তার বা তার পুরো মস্তিষ্ক ব্যবহার করেন তিনি সম্পর্কের সমস্যা সমাধান করেন।
=== অনটোজেনি ফিলোজেনিকে পুনরাবৃত্তি করে ===
একটি শিশুর বিকাশ তার প্রজাতির বিবর্তনের অনুকরণ করে।
শিশুরা তাদের সরীসৃপ মস্তিষ্কে বাস করে। তারা খায়, শ্বাস নেয়, হামাগুড়ি দেয়, ঘুমায় ইত্যাদি।
শিশুরা তাদের লিম্বিক মস্তিষ্কে বাস করে। তারা তীব্রভাবে আবেগ অনুভব করে। তারা সম্পর্ক গঠনের জন্য আবেগ ব্যবহার করে।
কিশোর-কিশোরীরা তাদের সেরিব্রাল কর্টেক্সে বাস করে। তারা অনন্য ব্যক্তি হওয়ার জন্য সংগ্রাম করে। তারা জীবনযাপনের জন্য বিমূর্ত নীতি খুঁজে বেড়ায়।
প্রাপ্তবয়স্ক সম্পর্ক শৈশবের বিকাশকে উল্টে দেয় পুরুষ এবং মহিলারা বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গীদের আকর্ষণ করতে সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিমূর্ত ধারণা (যেমন লিঙ্গ ভূমিকা) ব্যবহার করে। যদি একটি দম্পতি তখন লিম্বিক মস্তিষ্কের আবেগীয়ভাবে সংযুক্ত "রসায়ন" অনুভব করে, তাহলে তারা একটি সম্পর্ক গঠন করে। যদি সম্পর্কটি ভালোভাবে চলে, তবে শীঘ্রই বা পরে তারা বিছানায় যায়। এই সকল ক্ষেত্রে তারা নিজেদের সরীসৃপ মস্তিষ্ক ব্যবহার করে।
ভালোবাসা একটি শিশুর লিম্বিক মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়।<ref>Lewis, T., Amini, F., Lannon, R. ''A General Theory of Love'' (Random House, 2000, {{ISBN|0375503897}}, ৪৩)।</ref> যেসব শিশু ভালোবাসা পায় না, তাদের লিম্বিক মস্তিষ্ক আবেগীয় ঘনিষ্ঠতার জন্য সক্ষম হয়ে ওঠে না। এমন একজন ব্যক্তি সরীসৃপ স্তরে (যেমন খাবার, উষ্ণতা, যৌনতা) অথবা সেরিব্রাল কর্টেক্স স্তরে (যেমন হিসাবরক্ষণ বা আইনে পারদর্শী হওয়া) সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, কিন্তু ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়।
==প্রাকৃতিক বনাম যৌন নির্বাচন==
চার্লস ডারউইন ১৮৫৯ সালে ''অরিজিন অফ স্পিসিস''-এ লিখেছিলেন যে প্রজাতিগুলো এলোমেলো মিউটেশনের মাধ্যমে বিবর্তিত হয়। পরিবেশগত পরিবর্তন (যেমন খাদ্য উৎসের পরিবর্তন, শিকার, জলবায়ু) একটি মিউটেশনকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দেয়। তিনি এই প্রক্রিয়াটিকে ''প্রাকৃতিক নির্বাচন'' নাম দিয়েছিলেন।
প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি হলো যে আমাদের বুদ্ধিমান, বড় মস্তিষ্কের পূর্বপুরুষরা সরঞ্জাম আবিষ্কার করেছিলেন এবং তারপর তাদের ছোট মস্তিষ্কের আত্মীয়দের উপর প্রাধান্য বিস্তার করেছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যগুলো এই "মানুষ সরঞ্জাম নির্মাতা" তত্ত্বকে সমর্থন করে না।
আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রথমে ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে বা ১০০,০০০ প্রজন্ম আগে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার শুরু করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 53.</ref> এই বইটিতে প্রায় ৫০,০০০ শব্দ রয়েছে। প্রথম মানুষকে আপনার "মহান-মহান-মহান…পূর্বপুরুষ" হিসেবে উল্লেখ করতে হলে, এই বইয়ের প্রতিটি শব্দকে "মহান" দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং আপনার দুটি বইয়ের প্রয়োজন হবে।
এক মিলিয়ন বছর পরে বা প্রথম বইয়ের শেষের কাছাকাছি, আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্কের আকার দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছিল। প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাদের পাথরের সরঞ্জামে সামান্য উন্নতি দেখতে পান।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 55.</ref>
৫০০,০০০ বছর আগে (দ্বিতীয় বইয়ের অর্ধেক পথে) আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক আমাদের মস্তিষ্কের প্রায় সমান আকারের হয়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষরা আগুন ব্যবহার শুরু করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 55.</ref> আগুন তাদের আফ্রিকা থেকে ঠান্ডা ইউরোপ এবং এশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল।
৫০,০০০ বছর আগে (দ্বিতীয় বইয়ের শেষ থেকে আট পৃষ্ঠা) আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক আধুনিক আকারে পৌঁছেছিল। তাদের পাথরের সরঞ্জামগুলো পাতলা এবং তীক্ষ্ণ হয়েছিল। তারা হাতির দাঁত, শেল এবং পাথর থেকে ছোট অলঙ্কারিক মূর্তি খোদাই করেছিলেন। তারা সুন্দর গুহাচিত্র তৈরি করেছিলেন। তারা প্রথম সমুদ্রগামী নৌকা তৈরি করেছিলেন।<ref>Kehoe, Alice B. ''Humans: An Introduction to Four-Field Anthropology'' (Routledge, 1998, {{ISBN|0-415-91985-1}}, p. 61.</ref>
৫,০০০-১০,০০০ বছর আগে (দ্বিতীয় বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা) আমাদের পূর্বপুরুষরা কৃষি উন্নয়ন করেছিলেন। দুর্বল পুষ্টি কৃষকদের দেহ এবং মস্তিষ্ককে ছোট করেছিল। তারা লেখা এবং ধাতব সরঞ্জাম আবিষ্কার করেছিলেন। তারা ধনুক এবং তীর আবিষ্কার করেছিলেন—একটি অস্ত্র যা আমাদের কাছে আদিম মনে হয়।<ref>http://www.archery.org/what_is_archery/history.htm, http://www.usarchery.org/naapub/history.htm.</ref>
আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্ক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ''আগে'' বড় হয়েছিল। প্রতিটি নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জন্য আমাদের পূর্বপুরুষদের মস্তিষ্কের প্রয়োজন ছিল। সরঞ্জাম ব্যবহার আমাদের বড় মস্তিষ্কের অনেক ব্যবহারের মধ্যে একটি ছিল। অন্য কিছু মানুষের মস্তিষ্কের বিবর্তনকে চালিত করেছিল।
=== যৌন নির্বাচন ===
১৮৭১ সালে ''দ্য ডিসেন্ট অফ ম্যান''-এ ডারউইন লিখেছিলেন যে প্রাকৃতিক নির্বাচন মানুষের বিবর্তন ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিবর্তে, তিনি একটি বিকল্প তত্ত্ব প্রস্তাব করেছিলেন। প্রজাতিগুলো বিবর্তিত হয় যখন পুরুষ এবং নারী একে অপরকে নির্দিষ্ট গুণাবলীর জন্য নির্বাচন করে। তিনি এটিকে ''যৌন নির্বাচন'' নাম দিয়েছিলেন। জীববিজ্ঞানীরা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই ধারণাটিকে উপেক্ষা করেছিলেন।<ref>Miller, Geoffrey F. ''The Mating Mind: How Sexual Choice Shaped the Evolution of Human Nature'' (Doubleday, 2000, {{ISBN|0385495161}}, p.33.</ref>
সাধারণত, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি নির্বাচনশীল। অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রজাতির নারীরা সন্তান উৎপাদন এবং লালন-পালনের বেশিরভাগ কাজ করে। বিপরীতে, সন্তান জন্মদানের কাজ কম, তাই পুরুষরা ততটা নির্বাচনশীল নয়।
{{quote|নারীর পক্ষ থেকে কিছু পছন্দের প্রয়োগ প্রায় পুরুষের আগ্রহের মতোই সাধারণ নিয়ম।<ref>Darwin, Charles. [http://www.literature.org/authors/darwin-charles/the-descent-of-man/ The Descent of Man] (Prometheus, 1871, {{ISBN|1573921769}}.</ref>|চার্লস ডারউইন, ''দ্য ডিসেন্ট অফ ম্যান'' (১৮৭১)}}
নারীরা এমন পুরুষদের বেছে নেয় যাদের বৈশিষ্ট্য তাদের বেঁচে থাকার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।<ref>Trivers, R.L. (1972). "Parental investment and sexual selection," in B. Campbell (ed.), ''Sexual selection and the descent of man 1871-1971''. (Aldine, 1972).</ref> উদাহরণস্বরূপ, ময়ূরের উজ্জ্বল রঙ তাকে শিকারীদের কাছে দৃশ্যমান করে এবং তার বিশাল লেজ তার পালানোকে ধীর করে। তার সুন্দর লেজ ময়ূরীদের কাছে বোঝায় যে সে একজন বিশেষভাবে সুস্থ ব্যক্তি, অর্থাৎ সে এত দ্রুত যে ভারী লেজ থাকা সত্ত্বেও সে শিকারীদের থেকে পালাতে পারে। যৌন নির্বাচন সাধারণত প্রাকৃতিক নির্বাচনের বিপরীত।
প্রাকৃতিক নির্বাচন ধীর পরিবেশগত পরিবর্তনের মাধ্যমে অগ্রসর হয়। প্রাকৃতিক নির্বাচন কেবল কঠিন পরিবেশে (যেমন শিকার, জলবায়ু পরিবর্তন) বিবর্তনকে অগ্রসর করে। প্রাকৃতিক নির্বাচন এমন প্রাণী উৎপন্ন করে যারা বেঁচে থাকার জন্য ভালোভাবে সক্ষম—সাধারণত ছোট, বেশি দক্ষ এবং কম দৃশ্যমান।
বিপরীতে, যৌন নির্বাচন প্রতিটি প্রজন্মের সাথে অগ্রসর হয়। যৌন নির্বাচন দ্রুত বিবর্তনীয় পরিবর্তন ঘটায়। যৌন নির্বাচন স্থিতিশীল পরিবেশে বিবর্তনকে অগ্রসর করে। যৌন নির্বাচন এমন প্রাণী উৎপন্ন করে (বিশেষত পুরুষ) যারা বেঁচে থাকার জন্য কম সক্ষম, বড়, উজ্জ্বল বা অতিরঞ্জিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।
==সেরিব্রাল কর্টেক্স কি যৌন নির্বাচনে বিকশিত?==
মানুষের অতিরিক্ত বড় মস্তিষ্ক যৌন নির্বাচনের কারণে দ্রুত বিবর্তিত হতে পারে। বৃহত্তর সেরিব্রাল কর্টেক্স এবং এটি ব্যবহার করার ক্ষমতার বিবর্তন মানুষকে প্রকৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ দেয়, প্রকৃতি মানুষের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে না। এটি দুর্বল এবং অল্পবয়সী নবজাতকের লালনপালনের জন্য অপরিহার্য। সম্ভবত নারীরা এমন পুরুষদের পছন্দ করতে শুরু করেছিল যারা শিকারীদের থেকে আশ্রয় তৈরি করতে পারত এবং শক্তিশালী না হলেও শিশুদের শিকারীদের থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছিল। এবং পুরুষরাও সম্ভবত এমন নারীদের পছন্দ করতে শুরু করেছিল যারা শিকারীদের থেকে নিজেকে লুকাতে পারত এবং শিশুদের জন্য একটি সহায়ক এবং পুষ্টিকর পরিবেশ তৈরি করতে পারত।
আমাদের সেরিব্রাল কর্টেক্স অনেক আচরণ সক্ষম করে, যেমন বক্তৃতা এবং ভাষা। কিন্তু সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিষয়ে যা আকর্ষণীয় তা হলো এর কতটা নির্দিষ্ট আচরণের জন্য নিবেদিত নয়। মানুষের সেরিব্রাল কর্টেক্সে বিলিয়ন বিলিয়ন সাধারণ-উদ্দেশ্য নিউরন রয়েছে, যা যেকোনো নতুন ধারণা শিখতে সক্ষম। কেন আমাদের পূর্বপুরুষ মা এবং বাবারা—অন্য কোনো প্রাণীর বিপরীতে—যৌনভাবে এমন সঙ্গীদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল যারা নতুন ধারণা শিখতে পারত?
=== একগামিতা এবং মিথ্যা ===
বেশিরভাগ অ-মানব স্তন্যপায়ী পিতারা তাদের সন্তানদের সাথে সামান্য বা কোনো সম্পৃক্ততা রাখে না।<ref>Diamond, Jared. [http://www.calacademy.org/calwild/summer2000/html/diamond.html Diamond's Hope: An Interview with Science's Multifaceted Storyteller], ''California Wild'', Summer 2000.</ref> পুরুষ গরিলারা অন্য পুরুষদের দ্বারা জন্মানো শিশুদের হত্যা করে। পুরুষ চিম্পাঞ্জিরা তাদের দলের সকল শিশুদের সাহায্য করে, কিন্তু তারা জানে না কোন শিশুর পিতা কে।
মানুষের বিবর্তন শুরু হতে পারে যখন পিতারা তাদের সন্তানদের লালনপালনে সাহায্য করতে শুরু করে, যা শিশুদের বেঁচে থাকার সুবিধা দেয়। আজকের শিকারী-সংগ্রাহকদের মধ্যে পিতাহীন শিশুদের শৈশবে মৃত্যুর সম্ভাবনা দ্বিগুণেরও বেশি।<ref>Hurtado, A.M., Hill, K.R. "Paternal effect on offspring survivorship among Aché and Hiwi hunter-gatherer: Implications for modeling pair-bond stability," in B.S. Hewlett (ed.), ''Father-child relations: Cultural and biosocial contexts'' (Aldine de Gruyter, 1992), pages 31-55.</ref>
একগামিতা দুটি প্রজনন কৌশলের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। একজন পুরুষ অনেক নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টা করতে পারে যা নারীদের প্রত্যাখ্যান, অন্য পুরুষদের থেকে সহিংসতা, বা তার পিতাহীন সন্তানদের বেঁচে না থাকার ঝুঁকি নিয়ে আসে। যদিও এভাবে প্রাথমিকভাবে বেশি সন্তান জন্ম নিতে পারে, তবে এমন পুরুষের কোনো সন্তান বেঁচে নাও থাকতে পারে।
অথবা একজন পুরুষ একগামী সম্পর্কে থাকতে পারে এবং তার সন্তানদের সক্রিয়ভাবে লালনপালন করতে পারে। এমন পুরুষের কেবল কয়েকটি সন্তান হবে, কিন্তু তার সন্তানরা সম্ভবত বেঁচে থাকবে এবং সমৃদ্ধ হবে।
একজন নারী কাঙ্ক্ষিত (যেমন উচ্চ-মর্যাদাসম্পন্ন, লম্বা, শক্তিশালী, সুদর্শন) পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারে এবং এমন ঝুঁকি নিতে পারে যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী নারীরা তার পুরুষকে কেড়ে নেবে। অথবা সে একজন স্থিতিশীল, একগামী সম্পর্কে থাকতে পারে এমন একজন পুরুষের সাথে যাকে অন্য কোনো নারী চায় না।
=== যৌন সম্পর্কিত মিথ্যা সেরিব্রাল কর্টেক্সের বিকাশকে চালিত করতে পারে ===
ধরা পড়লে মিথ্যাবাদীর প্রজনন সাফল্য হ্রাস পায়। মিথ্যা ধরতে পারলে মিথ্যা ধরার প্রজনন সাফল্য বৃদ্ধি পায়।
মিথ্যা বলার জন্য কল্পনা, দ্রুত চিন্তাভাবনা এবং সর্বোপরি নতুন মিথ্যা ভাবার প্রয়োজন। মিথ্যা ধরতে কল্পনা, দ্রুত চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘ স্মৃতির প্রয়োজন।
এগুলো সেরিব্রাল কর্টেক্সের কার্যকলাপ। কার্যকর মিথ্যাবাদীরা তাদের আবেগকেও তাদের মিথ্যার সাথে মেলায়। আপনি মিথ্যা ধরেন যখন একজন ব্যক্তির আবেগীয় অবস্থা তার বা তার কথার সাথে মেলে না। কার্যকর মিথ্যা বলার জন্য একজনের সেরিব্রাল কর্টেক্সকে তার লিম্বিক মস্তিষ্কের সাথে সমন্বয় করা প্রয়োজন।
যে পুরুষ বা নারীর বৃহত্তর সেরিব্রাল কর্টেক্স রয়েছে, যা তার বা তার লিম্বিক মস্তিষ্কের সাথে ভালোভাবে সমন্বিত, সে যৌন সম্পর্কিত মিথ্যা বলতে এবং যৌন সম্পর্কিত মিথ্যা ধরতে বেশি সক্ষম। এমন পুরুষ এবং নারীরাই আমাদের পূর্বপুরুষ হয়েছেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
{{সম্পর্ক/পরিভ্রমণ|সম্পর্কের বিজ্ঞান|এই বই সম্পর্কে|যেভাবে নারীরা পুরুষ বাছাই করে}}
</noinclude>
kd1q9950owhr4q7ejl1jgf8ie12em2n
রন্ধনপ্রণালী:চিতল মাছের কালিয়া
104
25390
85717
84042
2025-07-06T05:20:57Z
RDasgupta2020
8748
85717
wikitext
text/x-wiki
{{রন্ধনপ্রণালী সারাংশ
| রন্ধনপ্রণালী বিভাগ = মাছ রন্ধনপ্রণালী
| পরিবেশন = ৪ জন
| তৈরির সময় = ৩৫ মিনিট
| কষ্টসাধ্য = 4
| চিত্র =
}}
{{রন্ধনপ্রণালী}}
<center><big>'''চিতল মাছের কালিয়া'''</big></center>
চিতল মাছের কালিয়া একটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি মাছের ঝোল জাতীয় মশলাদার ও সুস্বাদু পদ। এই রান্নাটি মূলত চিতল মাছের গাঢ় মশলাদার ঘন ও তেলে-ঝালে কষানো একটি পদ। এই রান্নায় পেঁয়াজ, আদা-রসুন, টমেটো এবং নানান গরম মসলা দিয়ে একটি ঘন মশলাদার রসা প্রস্তুত করা হয়, যাতে ভেজে রাখা চিতল মাছের টুকরো যোগ করে রান্না করা হয়। এটি সাধারণত উৎসব, অতিথি আপ্যায়ন বা বিশেষ রোজকার খাবারে পরিবেশন করা হয় পোলাও বা গরম ভাতের সঙ্গে। ঝাল-ঝোলের ভারসাম্য এবং চিতল মাছের নিজস্ব স্বাদ—সব মিলিয়ে এটি এক অনন্য বাঙালি রান্নার নিদর্শন।
==উপকরন==
{| class="wikitable"
! উপকরন !! পরিমান
|-
| চিতল মাছ || চার টুকরো
|-
| সরষের তেল || ৩০ মিলি লিটার
|-
| হলুদ গুঁড়ো || এক চা চামচ
|-
| লঙ্কা গুঁড়ো || অর্ধেক চা চামচ
|-
| কাশ্মিরি লঙ্কার গুঁড়ো || অর্ধেক চা চামচ
|-
| নুন || পরিমাণ মতো
|-
| কাঁচা লঙ্কা|| পাঁচ থেকে ছটা
|-
| কাজুবাদাম || ১০-১২ টা
|-
| কিশমিশ|| ছটা
|-
| জিরে || এক চা চামচ
|-
| আদা || ১ টা অর্ধেক কাটা
|-
| গোটা গরম মশলা || এক চা চামচ (বাটা)
|-
| হালকা গরম জল || এক কাপ
|-
| পেঁয়াজ || একটা বড় আকারের
|-
| টম্যাটো || দুটো
|}
== রন্ধনপ্রণালী ==
# প্রথমেই পেঁয়াজ ও টম্যাটো আলাদা আলাদা করে বেটে করে রাখতে হবে।
# জিরে আদা ও কাঁচা লঙ্কা একসঙ্গে বেতে রাখুন
# চিতল মাছের টুকরোগুলো ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর এতে হলুদ আর লবণ ভালো করে মাখিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে।
# এরপর আঁচ মাঝারি করে কড়াইয়ে সরষের তেল দিন। তেল গরম হয়ে এলে তেলে এক চিমটে লবণ দিন।
# তেলে লবণ দিলে মাছ ভাজার সময় কড়াইয়ে লেগে যায় না।
# এবার সাবধানে মাছের টুকরো ওই গরম তেলে ভেজে নিয়ে তুলে রাখুন।
# এবার ওই মাছ ভাজা তেলেই তিনটে কাঁচা লঙ্কা ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
# তারপর জিরে আদা ও কাঁচা লঙ্কার বাটা কড়াইয়ে দিয়ে কষান।
# এরপর টম্যাটো বাটা, লঙ্কা, হলুদ ও কাশ্মিরি লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে কষান।
# মশলার তেল ছেড়ে এলে কাজুবাদাম ও কিশমিশ দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে কড়াইয়ে এক কাপ জল ঢালুন।
#কড়াই ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ জল ফুটিয়ে নিয়ে তাতে মাছগুলো একে একে ছেড়ে দিন।
#এরপর গরম মশলা বাটা দিয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি চিতল মাছের কালিয়া।<span style=color:red;><center>'''গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন চিতল মাছের কালিয়া'''</center></span>
[[বিষয়শ্রেণী:মাছ রন্ধনপ্রণালী]]
h660buqbujmskptqwhneyobtoatffyg
আইবি আমেরিকা ইতিহাস
0
25583
85677
79695
2025-07-05T13:18:40Z
R1F4T
9121
85677
wikitext
text/x-wiki
{{book title|
আইবি আমেরিকা ইতিহাস}}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #3399FF 5px; background:#000000"
|-
| style="background:#CCFF99; vertical-align:top; padding:10px;" | [[File:Gaspee_Affair.jpg|100px]]
| style="vertical-align:middle; padding: 0px 15px 0px 15px; color:white;" | আইবি আমেরিকার ইতিহাস সাধারণত সেই শিক্ষার্থীরা নিয়ে থাকে যারা আইবি ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের পূর্বে এক বছরব্যাপী মার্কিন ইতিহাস অধ্যয়ন করেছে। এটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা উভয় মহাদেশের অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত করে, যা এসএল এবং এইচএল উভয় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। এসএল ও এইচএল উভয় শিক্ষার্থীদের একটি ঐতিহাসিক অনুসন্ধান (Historical Investigation) সম্পন্ন করতে হয় যা তারা পরীক্ষার আগে আইবিও-তে জমা দেয়। এইচএল শিক্ষার্থীরা ইতিহাসকে আরও গভীরভাবে অন্বেষণ করে একটি একক-পার্টির রাষ্ট্র নিয়ে অধ্যয়ন করে, যা সাধারণত শিক্ষক দ্বারা নির্ধারিত হয়।
| style="background:#99FFFF; vertical-align:middle; padding:10px;" | [[File:Flag_of_Brazil.svg|100px]]
|}
<big>[[IB History of the Americas/Comprehensive Course Syllabus|সম্পূর্ণ পাঠক্রমের সিলেবাস]]</big>
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 1|অধ্যায় ১]]: '''ঔপনিবেশিক যুগ'''</big>
*ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহ (ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস)-এর সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক
*অভিবাসী জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংগঠন
*নতুন বিশ্বের ধর্মীয় ভূমিকা
*আদিবাসীদের প্রতি আচরণ
*দাসত্বের উত্স
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 2|অধ্যায় ২]]: '''স্বাধীনতা আন্দোলনসমূহ'''</big>
*কারণসমূহ—রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, বৌদ্ধিক, ধর্মীয়—ও যুদ্ধের দিকে ধাবিত সংঘর্ষসমূহ
*বহিঃশক্তির ভূমিকা
*সামাজিক শ্রেণিগুলোর ভূমিকা
*নেতৃত্বের ভূমিকা: ওয়াশিংটন, জেফারসন, বলিভার, সান মার্টিন
*স্বাধীনতা ঘোষণা
*ব্রাজিলের স্বাধীনতা
*হাইতির বিপ্লব ও প্রজাতন্ত্র: তুসাঁ লুভেরচ্যুর
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 3|অধ্যায় ৩]]: '''নতুন সরকার ও কনফেডারেশনের বিকাশ'''</big>
*মার্কিন সংবিধান: কনফেডারেশনের অনুচ্ছেদ, দার্শনিক ভিত্তি, প্রধান আপস
*১৮৩০-এর পূর্ব পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব
*নির্বাহী শাখার ভূমিকা এবং কউডিল্লোদের উত্থান ও শাসন
*আঞ্চলিকতা ও কর্তৃত্বের সংজ্ঞা
*১৮৩৭ সালের বিদ্রোহ: ডারহাম প্রতিবেদন ও কানাডায় দায়িত্বশীল সরকার
*কানাডায় কনফেডারেশন পর্ব
*১৮৬৭ সালের ব্রিটিশ নর্থ আমেরিকা আইন: আপস, অনিষ্পন্ন বিষয়, বিভাজন ও প্রভাব
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 4|অধ্যায় ৪]]: '''আমেরিকায় দাসত্ব'''</big>
*দাসত্বের অবস্থা: অভিযোজন ও প্রতিরোধ
*দাসপন্থীদের যুক্তি
*বিদ্রোহ ও প্রতিক্রিয়া
*মুক্ত আফ্রিকান-আমেরিকানদের জীবন
*দাসপ্রথা বিলুপ্তির পক্ষে যুক্তি
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 5|অধ্যায় ৫]]: '''মার্কিন গৃহযুদ্ধ: কারণ, পথ ও প্রভাব'''</big>
*রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণ
*যুদ্ধের গতি, আফ্রিকান-আমেরিকান সৈন্যদের ভূমিকা, নারীদের ভূমিকা
*যুদ্ধের সমাজে প্রভাব
*আব্রাহাম লিঙ্কন ও নেতৃত্বের ভূমিকা
*রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
*পুনর্গঠন ও পুনঃপুনর্গঠনের পর দক্ষিণ
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 4|অধ্যায় ৪]]: '''আমেরিকায় দাসপ্রথা'''</big>
* দাসত্বের অবস্থা: অভিযোজন ও প্রতিরোধ
* দাসপন্থী যুক্তিসমূহ
* বিদ্রোহ ও প্রতিক্রিয়াসমূহ
* মুক্ত আফ্রিকান–আমেরিকানদের জীবন
* দাসপ্রথাবিরোধী যুক্তিসমূহ
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 5|অধ্যায় ৫]]: '''মার্কিন গৃহযুদ্ধ: কারণ, ধারা ও প্রভাব'''</big>
* রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণ
* যুদ্ধের ধারা, আফ্রিকান–আমেরিকান সৈন্যদের ভূমিকা, নারীদের ভূমিকা
* যুদ্ধের সমাজে প্রভাব
* আব্রাহাম লিংকন ও নেতৃত্বের ভূমিকা
* রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
* পুনর্গঠন ও পুনর্গঠনোত্তর দক্ষিণ
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 6|অধ্যায় ৬]]: '''উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন'''</big>
* অর্থনৈতিক আধুনিকায়ন: নীতিমালা, বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব
* নবঔপনিবেশিকতা ও নির্ভরশীলতা
* শিল্প উন্নয়ন ও তার প্রভাব
* ভৌগোলিক সম্প্রসারণ ও রেলপথের বিকাশ
* শ্রম ও কৃষি আন্দোলন
* অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত জনসংখ্যার স্থানান্তর: অভিবাসী ও আদিবাসী জনগণ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
* নারী ও সংস্কার
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 7|অধ্যায় ৭]]: '''উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় রাজনৈতিক উন্নয়ন'''</big>
* রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ও আদর্শিক ধারা ও আন্দোলনের বিবর্তন
* প্রগ্রেসিভরা
* বৈদেশিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক: ব্রিটেন ও ফ্রান্স
* অভ্যন্তরীণ নীতিমালা
* প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া
* আফ্রিকান–আমেরিকানরা: বুকার টি. ওয়াশিংটন ও ডব্লিউ.ই.বি. ডু বোয়িস
* নেতৃত্বের ভূমিকা: থিওডোর রুজভেল্ট, উড্রো উইলসন, জন এ. ম্যাকডোনাল্ড, অথবা প্রার্থীর পছন্দের কোনো লাতিন আমেরিকান নেতা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 8|অধ্যায় ৮]]: '''উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত আমেরিকায় সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ'''</big>
* উদারবাদ, জাতীয়তাবাদ, পজিটিভিজম, রোমান্টিসিজম, সামাজিক ডারউইনবাদের প্রভাব
* শিল্প, সঙ্গীত ও সাহিত্য
* শিক্ষা সংস্কার ও সম্প্রসারণ
* প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 9|অধ্যায় ৯]]: '''লাতিন আমেরিকায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি, ১৮৯৮ থেকে ১৯৪৫'''</big>
* মার্কিন নীতির পটভূমি
* মনরো নীতি ও তার পুনর্নির্ধারণ
* প্রভাব বলয়ের প্রতিষ্ঠা, স্প্যানিশ–আমেরিকান যুদ্ধ, বিগ স্টিক, ডলার কূটনীতি
* সুসম্পর্ক নীতি ও যুদ্ধকালীন মৈত্রী, ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট
* মধ্য আমেরিকা, অন্তর্ভুক্ত: পানামা, নিকারাগুয়া ও কিউবা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 10|অধ্যায় ১০]]: '''মেক্সিকান বিপ্লব, ১৯১০ থেকে ১৯৪০'''</big>
* বিপ্লবের কারণ ও ধারা
* নেতাদের উদ্দেশ্য ও ভূমিকা, যেমন সাপাতা ও প্যানচো ভিলা
* ১৯১৭ সালের সংবিধান
* প্রভাব: তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি; রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 11|অধ্যায় ১১]]: '''আমেরিকায় মহামন্দা'''</big>
* প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব
* ১৯২০-এর দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
* মন্দার কারণ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং লাতিন আমেরিকা
* সমাজে প্রভাব: সরকারের অর্থনীতিতে ভূমিকাবিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন; সংখ্যালঘুদের ওপর প্রভাব
* সমাধানের প্রকৃতি ও কার্যকারিতা:
* কানাডা: ম্যাকেঞ্জি কিং ও আর.বি. বেনেট
* লাতিন আমেরিকা: ব্রাজিলের ভার্গাস ও আর্জেন্টিনার কনকর্ডান্সিয়া
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: হুভার, ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট ও নিউ ডিল
* লাতিন আমেরিকায় আমদানি বিকল্প শিল্পায়ন (ISI): কারণ ও প্রভাব
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 12|অধ্যায় ১২]]: '''২০শ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কানাডার রাজনীতি'''</big>
* ফরাসি–কানাডীয় জাতীয়তাবাদ
* বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব: জোরপূর্বক নিয়োগ, জাতীয়তাবাদ, সার্বভৌমত্ব
* আঞ্চলিকতা ও সংখ্যালঘুদের অবস্থা
* যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্ক
* কমনওয়েলথ অব নেশনস
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 13|অধ্যায় ১৩]]: '''২০শ শতাব্দীর প্রথমার্ধে লাতিন আমেরিকার রাজনীতি'''</big>
* জাতীয়তাবাদ, আদিবাসীবাদ ও জনতাবাদ (পপুলিজম)-এর বিকাশ
* সামরিক বাহিনীর ভূমিকা
* নেতা, একদলীয় রাষ্ট্র ও জনতাবাদ: ভার্গাস, পেরোন
* মতপার্থক্যের প্রকৃতি ও কার্যকারিতা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 14|অধ্যায় ১৪]]: '''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও আমেরিকা'''</big>
* মহাদেশীয় সহযোগিতা বা নিরপেক্ষতা
* আঞ্চলিক দেশগুলোর কূটনৈতিক ও সামরিক ভূমিকা
* যুদ্ধের প্রভাব
* অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্র: নারীদের ভূমিকা, সংখ্যালঘুদের উপর প্রভাব
* জাপানি–আমেরিকান ও জাপানি–কানাডীয়দের প্রতি আচরণ
* আমেরিকা ও হলোকাস্ট
* পারমাণবিক যুগের সূচনা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 15|অধ্যায় ১৫]]: '''লাতিন আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫; কানাডার পররাষ্ট্রনীতি, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫'''</big>
* যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার সম্পর্ক: মতাদর্শ ও নীতির প্রভাব
* যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্ক: মতাদর্শ ও নীতির প্রভাব
* লাতিন আমেরিকায় শীতল যুদ্ধের প্রভাব
* কানাডায় শীতল যুদ্ধের প্রভাব
* পররাষ্ট্র সম্পর্ক
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 16|অধ্যায় ১৬]]: '''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন'''</big>
* নির্বাহী, আইনপ্রণেতা ও বিচার বিভাগীয় শাখাগুলোর ভূমিকা
* রাষ্ট্রপতির নেতৃত্ব: ট্রুম্যান থেকে বুশ পর্যন্ত
* রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের প্রচেষ্টা
* ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির প্রভাব
* অর্থনৈতিক প্রবণতা
* নতুন রক্ষণশীলতা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 17|অধ্যায় ১৭]]: '''যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫'''</big>
* শীতল যুদ্ধের সূচনা: ট্রুম্যান মতবাদ, মার্শাল পরিকল্পনা, বার্লিন অবরোধ ও বিমান সহায়তা
* ন্যাটো ও কোরিয়া যুদ্ধ
* আইজেনহাওয়ার ও ডালেস
* কেনেডি: বে অফ পিগস, বার্লিন, কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট
* জনসন, নিক্সন ও ভিয়েতনাম
* নিক্সন–কিসিঞ্জার নীতি, ডিটেন্টে, চীনের সাথে সম্পর্ক
* যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্য
* রোনাল্ড রেগান, জর্জ বুশ ও শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 18|অধ্যায় ১৮]]: '''মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলন, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫'''</big>
* নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উত্থান ও বিস্তার: কারণ, আইনগত বিষয়, কৌশল, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, ওয়াশিংটন মার্চ
* আন্দোলনের রূপান্তর: ব্ল্যাক প্যান্থার, ব্ল্যাক মুসলিম, ব্ল্যাক পাওয়ার ও ম্যালকম এক্স
* আদিবাসীদের নাগরিক অধিকার আন্দোলন
* হিস্পানিক–আমেরিকানদের সক্রিয়তা
* নতুন নারীবাদ
* সুপ্রিম কোর্টের রায়, গুরুত্বপূর্ণ আইন, নির্বাহী শাখার প্রতিক্রিয়া
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 19|অধ্যায় ১৯]]: '''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লাতিন আমেরিকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন'''</big>
* বিপ্লব ও তাদের কারণ ও প্রভাব: রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মতাদর্শিক
* নেতৃত্বের ভূমিকা
* কিউবান বিপ্লব ও ক্যাস্ত্রোর শাসন
* অর্থনৈতিক পরিবর্তন
* গুয়েতমালা, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া, চিলি বা প্রার্থীর পছন্দের অন্য কোনো দেশ
* সামরিক শাসন: কারণ ও প্রভাব
* গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন
* ক্যাথলিক চার্চের ভূমিকা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 20|অধ্যায় ২০]]: '''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কানাডায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন'''</big>
* সরকারের ভূমিকা
* অভ্যন্তরীণ নীতিমালা
* সম্পদ ও প্রতিবন্ধকতা
* নগরায়ন, শিল্পায়ন ও আঞ্চলিকতা
* বাণিজ্য কাঠামোর পরিবর্তন, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বহুজাতিক কোম্পানির ভূমিকা, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অবস্থান
* জনসংখ্যা বৃদ্ধি, সামাজিক আইন, শিক্ষা
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 21|অধ্যায় ২১]]: '''২০শ শতাব্দীতে আমেরিকায় পরিবর্তনশীল সমাজসমূহ'''</big>
* সচেতনতার উত্থান: আদিবাসী, কুইবেকোয়া, সংখ্যালঘু (জাতিগত, ধর্মীয়)
* আইনগত ও সাংবিধানিক প্রতিকার ও প্রভাব
* আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের পরিবর্তিত ভূমিকা ও অবস্থা
* সাংস্কৃতিক বিকাশ: বুদ্ধিবৃত্তিক ধারা, সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত
* প্রযুক্তি, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও শিল্প, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে প্রভাব
<big>[[IB History of the Americas/Chapter 22|অধ্যায় ২২]]: '''হেমিস্ফেরিক সম্পর্ক, ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫'''</big>
* আন্তর্জাতিক জোট ও সংগঠনসমূহ, যেমন আমেরিকান রাষ্ট্রসমূহের সংস্থা (OAS)
* আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল: সরকারি ও বেসরকারি
* আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পণ্যের চুক্তির প্রচেষ্টা, প্যাক্টো আন্দিনো, এনএএফটিএ, মারকোসুর
* উত্তেজনার উৎস, হস্তক্ষেপবাদ
<big>[[IB History of the Americas/Appendix 1|পরিশিষ্ট ১]]: '''গ্রন্থপঞ্জি'''</big>
==অতিরিক্ত উইকিবই==
*[[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস]]
koe6sox34fffkb8elt8v2yu5j57zocx
কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/কানাডায় শরণার্থী প্রক্রিয়ার ইতিহাস
0
25652
85675
83899
2025-07-05T12:04:11Z
MS Sakib
6561
85675
wikitext
text/x-wiki
== আশ্রয়ের ইতিহাস এবং নিরাপদ স্থানের ধারণা ==
আন্তর্জাতিক ও কানাডীয় উভয় প্রেক্ষাপটেই শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থার অস্তিত্ব সাম্প্রতিক একটি উন্নয়ন। অনাদিকাল থেকে মানুষ নিপীড়ন, যুদ্ধ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সরকারি অস্থিতিশীলতা এবং অপরাধমূলক নিষেধাজ্ঞা থেকে পালিয়ে এসেছে। তবে বিংশ শতাব্দীতেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ধরণের ব্যক্তিদের ভ্রমণের সময় সংগঠিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। এর ফলে শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থা তৈরি হয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 13.</ref>
"asylum" বা আশ্রয় শব্দটি এর ধারণা ও অনুশীলনের চেয়ে ছোট।<ref name=":902">W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 11.</ref> ইভ লেস্টার বলেন, যাত্রা, আতিথেয়তা ও আশ্রয়ের অনুরোধ মানবজীবনের মতোই পুরনো ধারণা।<ref name=":332">Eve Lester, Australian responses to refugee journeys: Matters of perspective and context, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1> (Accessed March 20, 2021), at page 26.</ref> এই ধরণের জনসংখ্যা স্থানান্তরের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ১২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মিশরীয় এবং হিট্টীয়রা একটি চুক্তিতে সম্মত হয়। ওই চুক্তিতে প্রত্যর্পণের বিধান রাখে: এতে শর্ত ছিল, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না। তবে এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রত্যাবর্তিত শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে শাস্তি দেওয়া হবে না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 36.</ref> ৭২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আসিরীয় রাজা দ্বিতীয় সার্গন ইসরায়েল ও এর রাজধানী সামেরিয়া জয় করার পর হাজার হাজার ইস্রায়েলীয়কে নির্বাসিত করে আসিরীয় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে তারা স্থানীয়দের সাথে মিশে যায়।<ref name=":723">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> ৩৭৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট ভ্যালেন্স হাজার হাজার গথদের আশ্রয় দেন। এরা তাদের অঞ্চল আক্রমণকারী হুন উপজাতি থেকে পালিয়ে আসছিল।<ref name=":722">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> পরবর্তী উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৪৯২ সালে স্পেন থেকে ইহুদিদের বহিষ্কার: ১৪৯২ সালের মার্চ মাসে আলহাম্বরা ডিক্রি জারি করা হয়েছিল। এটি সমস্ত স্প্যানিশ ইহুদিদের চার মাসের মধ্যে হয় বাপ্তিস্ম নিতে অথবা স্পেন ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। ফলস্বরূপ, এক লক্ষেরও বেশি ইহুদি স্পেন ছেড়ে পর্তুগাল, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, অটোমান সাম্রাজ্য এবং অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নেয়।<ref>Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 111.</ref> সেই সময়ে, সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ ইহুদিদের নিরাপদে অটোমান ভূমিতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্পেনে অটোমান নৌবাহিনী পাঠান।<ref>Egger, Vernon O. (2008). ''A History of the Muslim World Since 1260: The Making of a Global Community''. Prentice Hall. p. 82. ISBN <bdi>978-0-13-226969-8</bdi>.</ref> ১৫৫৩ থেকে ১৫৫৮ সাল পর্যন্ত প্রোটেস্ট্যান্ট বিরোধীদের কাছে "ব্লাডি মেরি" নামে পরিচিত ম্যারি টিউডরের রাজত্বকালে ৩০,০০০ ইংরেজ হল্যান্ডে পালিয়ে যায়,<ref name=":922">Mayes D. Strange brethren. Refugees, religious bonds, and reformation in Frankfurt, 1554–1608. By Maximilian Miguel Scholz. (Studies in Early Modern German History.) Pp. xvi + 246 incl. 8 ills and 1 map. Charlottesville, Va–London: University of Virginia Press, 2022. £39.95. 978 0 8139 4675 7. ''The Journal of Ecclesiastical History''. 2024;75(2):380-382. doi:10.1017/S0022046924000277</ref> এবং আরও অনেকে ইউরোপের অন্যান্য অংশে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মুক্ত শহর ফ্রাঙ্কফুর্টে। অস্থিতিশীলতা থেকে বাঁচতে অন্যান্য গণ-জনসংখ্যার আন্দোলন ঘটেছিল, যেমন ১৬৪৯-১৬৬০ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে অনেক ইংরেজ ফ্রান্সে পালিয়ে যায়।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), page 8 of document.</ref>
ঐতিহাসিকভাবে আশ্রয়স্থল এবং নিরাপদ স্থান এমন নির্দিষ্ট স্থানের সাথে সম্পর্কিত ছিল যেখানে পৌঁছানোর পর একজন ব্যক্তি অলঙ্ঘনীয় এবং আইনের নাগালের বাইরে ছিলেন। এই ধরনের স্থানগুলোর মধ্যে ছিল বেদী, মন্দির, গির্জা, নির্দিষ্ট শহর এবং জাহাজ। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন গ্রিসে নিবেদিতপ্রাণ মন্দিরে আশ্রয় প্রদানের জন্য একটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ছিল। প্রকৃতপক্ষে "asylum" শব্দটি এই সময় থেকেই এসেছে। গ্রিক শব্দ "''asylia"'' থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যাকে আটক করা যাবে না বা যাকে আটক করা উচিত নয়।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 27.</ref> বিশেষ করে ক্রিয়াপদ ''"asylao" এর'' অর্থ লঙ্ঘন করা বা নষ্ট করা। সেখানে বিশেষণ ''"asylos/asylon" এর'' বিপরীত অর্থ, অর্থাৎ। এটি অলঙ্ঘনীয় তা বোঝায়।<ref name=":90" /> অন্যদিকে, হিব্রু শব্দ ''মিকলাত'' আশ্রয় বা আশ্রয়ের জন্য নির্ধারিত বিশেষ শহরগুলোকে বোঝায়।<ref name=":90" /> গণনা পুস্তকে ছয়টি নির্দিষ্ট শহর ''আরেই মিকলাত'', বা "আশ্রয় নগর" বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকারী ব্যক্তি শাসক মহাযাজকের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা পেতে পারতেন।<ref>Chapter 35 of the Book of Numbers, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 18.</ref> মধ্যযুগে সমগ্র পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে ধর্মীয় আশ্রয়স্থল বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 31.</ref> এটি বাইবেলের বেদীর পবিত্রতাকে তার নিজস্ব রাজ্যে স্থানান্তরিত করেছিল এবং গির্জা বা মঠে আশ্রয় নেওয়া লোকদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করেছিল।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 19.</ref> গির্জার আশ্রয় হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত আশ্রয় থেকে ভিন্ন ছিল কারণ এটি এমনকি যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধ করেছিল তাদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল।
যদিও এই লেখাটি পশ্চিমা এবং উত্তর আমেরিকার আশ্রয়ের ঐতিহ্যের উপর আলোকপাত করে, তবুও আশ্রয় সারা বিশ্বে একটি প্রাচীন প্রথা হিসেবে বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> গিল লোয়েশার বলেন, প্রতিটি প্রধান বিশ্ব ধর্মেই অভাবীদের সুরক্ষা প্রদানের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা রয়েছে।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 22.</ref> ইহুদি তোরাহর একটি প্রধান বিষয় হলো অভিবাসন। রাব্বিনিকাল পণ্ডিতরা যুক্তি দিয়েছেন, ''পুনর্বাসন না করার'' ধারণাটি প্রাচীন বাইবেলের ইহুদি শরণার্থী সুরক্ষার আইনি নীতিগুলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।<ref>Gilad Ben-Nun, ''Migration and Society: Advances in Research'' 4 (2021): 124–136, doi:10.3167/arms.2021.040112, at page 126.</ref> উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৬ পদ বলে: " ''যে দাস তার প্রভুর কাছ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাকে তুমি তার প্রভুর হাতে তুলে দিও না। সে তোমার সাথে তোমার মধ্যে যে কোন স্থানে বাস করবে। সেখানে সে ইচ্ছা সেখানেই বাস করবে; তুমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করো না।'' " বাইবেলে নিপীড়িত ও অভাবীদের আশ্রয়স্থলের জন্য অনেক উল্লেখ রয়েছে,<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> এবং বলা হয় যে নতুন নিয়মে যীশু এবং তার পরিবারকে শরণার্থী হিসেবে বলা হয়েছে, যাদের মিশরে গ্রহণ করা হয়েছিল।<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> ইসলাম সপ্তম শতাব্দীর পূর্বে বিদ্যমান আরব সভ্যতার আশ্রয়ের প্রাচীন ঐতিহ্যও অব্যাহত রেখেছে।<ref name=":743">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিস্তার হয় নবী মুহাম্মদের মদিনায় নির্বাসনের সময় থেকে। সেখানে মক্কার শাসকদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর নবী এবং তাঁর অনুসারীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।<ref name=":612">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এরপর ইসলাম আশ্রয়কে এমনভাবে আইনে রূপান্তরিত করে, যা কুরআন মুসলমানদের উপর সকলকে আশ্রয় প্রদানের যে কর্তব্য আরোপ করেছে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।<ref name=":74">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> বলা হয় যে সাধারণত ''দিজওয়ার'' (সুরক্ষা) এর জন্য অনুরোধ গ্রহণ করতে হবে (কোরআন ৯:৬), কিন্তু এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা কোনও কঠোর বা দ্রুত নিয়ম দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 21.</ref> চীনের আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। সেখানে এটি হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। চীনারা পলাতক এবং অপরিচিতদের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি চুক্তিও সম্পাদন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চেংয়ের রাজপুত্র তার অঞ্চল আক্রমণকারী রাজপুত্রদের একটি জোটের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ভবিষ্যতে বিচার থেকে পলাতকদের আত্মসমর্পণ করা হবে। অভিজাত ও রাজপরিবারের সদস্যদের জড়িত অন্যান্য জাতি কর্তৃক জোরপূর্বক বা স্বেচ্ছায় নির্বাসন গ্রহণের অনেক লিপিবদ্ধ চীনা উদাহরণও রয়েছে।<ref>Regarding Chinese examples dating from the eighth century BCE: Roswell S. Britton, ''Chinese Interstate Intercourse Before 700 BC,'' The American Journal of International Law, Vol. 29, No. 4 (Oct., 1935), pp. 616-635 (20 pages), at 616ff, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 51, at endnote 7.</ref> ভারতেরও হাজার হাজার বছরের পুরনো আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে।<ref name=":932">Bassiouni MC, International Extradition and World Public Order (AW Sijthoff, 1974), 88.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮৩৯ সালে যখন ইহুদিরা পারস্যে গণহত্যা থেকে পালিয়ে আসে, তখন তারা শিখ সাম্রাজ্যের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে আশ্রয় পায়।<ref>Dr. Yvette Alt Miller, ''When Jews Found Refuge in the Sikh Empire'', September 3, 2023, <https://aish.com/when-jews-found-refuge-in-the-sikh-empire/> (Accessed May 12, 2024).</ref> অ্যাজটেকদেরও আশ্রয় দেওয়ার ঐতিহ্য ছিল বলে জানা যায়।<ref name=":90" /> বেহরম্যান উল্লেখ করেছেন যে কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে ''উবুন্টুর'' দক্ষিণ আফ্রিকান দর্শন। এটি মানবাধিকারের প্রতি সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দেয় এবং সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের চাহিদার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, তাতে গ্লোবাল নর্থে সাধারণত বোঝা যায় এমন আশ্রয়ের ধারণার ঊর্ধ্বে এবং বাইরে অপরিচিত ব্যক্তির প্রতি আতিথেয়তার নীতি রয়েছে।<ref name=":742">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref>
== শরণার্থী ধারণার ইতিহাস ==
উপরে আলোচনা করা হয়েছে, ইতিহাস জুড়েই বিদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া পরিস্থিতির শিকারদের পরিচিতি রয়েছে।<ref name=":862">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Ottawa: Studies in Social Policy, Institute for Research on Public Policy, page 88.</ref> এই ঘটনাটিকে বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আশ্রয়, অভিবাসন, নির্বাসন, আশ্রয়স্থল, পলাতক, নির্বাসিত এবং ''অভিবাসী।'' 'শরণার্থী' শব্দটির উৎপত্তি আরও সাম্প্রতিক। এটি প্রথম ফ্রান্সে ১৬০০ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল। ধারণাটির বংশতালিকা ইউরোপে সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির উত্থানের সাথে জড়িত। এই বিভাগে এই দুটি ধারণার ইতিহাস এবং ১৭ শতকের শরণার্থীরা কীভাবে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে আলাদা ছিল তা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব আজ দুইশ'র কাছাকাছি সার্বভৌম রাষ্ট্রে বিভক্ত। সকল ব্যক্তিকে জনসংখ্যায় সংগঠিত করতে হবে এবং এসব দেশের মধ্যে আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত করতে হবে। এইভাবে, আন্তর্জাতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা রাজনৈতিক ক্ষমতা সংগঠিত করার একটি উপায়। উভয়ই জনগণকে সংগঠিত করার একটি মাধ্যম।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 48.</ref> ১৬৪৮ সালের ওয়েস্টফালিয়া চুক্তির মাধ্যমেই এই ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে আন্তঃরাষ্ট্রীয় আইনি ও রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্যযুগীয় বিশ্বের সামন্ততান্ত্রিক সমাজের স্থান দখল করে সার্বভৌম আঞ্চলিক রাষ্ট্রের এই আধুনিক সমাজ।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 49.</ref> এই সময়ে আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ধারণাগুলো আবির্ভূত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা ও স্থিরতা এবং বিদেশী সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা। এইভাবে ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি চুক্তির মাধ্যমে উদ্ভূত রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাটি রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণা তৈরিতে সহায়তা করেছিল। এটি বিশ্বকে স্বাধীন আঞ্চলিক ইউনিটের বিশাল সংমিশ্রণে বিভক্ত করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 16.</ref> এই ব্যবস্থার একটি দিক ছিল, একটি সার্বভৌম সরকারের অধীনে ভূখণ্ডকে একীভূত ও কেন্দ্রীভূত করা হতো এবং ভূখণ্ডের জনগণ এখন এই সার্বভৌম সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্যের অধিকারী হত। সার্বভৌম রাষ্ট্র এই ধরনের আনুগত্য নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ধর্মীয় এবং ভাষাগত সঙ্গতি দাবি করতে পারে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 50.</ref>
ওয়েস্টফালিয়া শান্তি চুক্তির কয়েক দশকের মধ্যেই "শরণার্থী" শব্দটির প্রচলন ঘটে। "শরণার্থী" শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ''"réfugié"'' থেকে। এটি হুগেনটদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল, অর্থাৎ ১৬৮৫ সালে লুই চতুর্দশের নান্টেসের আদেশ বাতিলের সময় ফরাসি ক্যাথলিক রাজার কাছ থেকে পালিয়ে অ-ক্যাথলিক ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যাওয়া লক্ষ লক্ষ<ref>Melanie Baak, Once a Refugee, Always a Refugee? The haunting of the refugee label in resettlement, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <<nowiki>https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1</nowiki>> (Accessed March 20, 2021), at page 56.</ref><ref>Reports of the number of people who left France at this time vary. Julia Morris cites a figure of 1 million in Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 4. Emma Haddad writes "From the 1670s to the start of the eighteenth century it is estimated that between 200,000 and 500,000 French Protestants left France as refugees to seek protection abroad" in Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52. Aleshkovski, et. al., write: "By the time the Edict of Nantes was cancelled, there were approximately 800 thousand Protestants in France. The vast majority was forced to leave France for Britain, the Nether- lands, Switzerland, and German States." in Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 113. In contrast, Hazal Barbaros writes: “The number of immigrants varies according to sources. To begin with, the total number of members of the Reformed Church of France is estimated to be around 900,000. Some sources indicate that the most likely number of emigrants is 200,000 approximately, whereas the others give hyper-inflated figures like 800,000 which basically means France was deprived of nearly the whole of its Protestant population. Concerning those who chose England as their destination, the number is approximated to be between 40,000 to 50,000.” See Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), pages 9-10 of document.</ref> প্রোটেস্ট্যান্ট ফরাসি অভিবাসী।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, page 7 of document.</ref> এই আদেশ পূর্বে প্রোটেস্ট্যান্ট হুগেনটদের প্রকাশ্যে তাদের ধর্ম পালনের অনুমতি দিয়েছিল।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 23.</ref> এই আদেশ বাতিলের সাথে সাথে, ফ্রান্সে এক শতাব্দী ধরে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় অনুশীলনকে সুরক্ষিত রেখে আসা আইনি নিশ্চয়তার অবসান ঘটে। ক্যালভিনিস্ট গির্জা ধ্বংস করা হয়েছিল, মন্ত্রীদের জোরপূর্বক নির্বাসিত করা হয়েছিল, প্রোটেস্ট্যান্টদের ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সরকারি পদ এবং পেশায় তাদের প্রবেশাধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52.</ref> এই হুগেনটরা ইংল্যান্ডে আসার সাথে সাথে "শরণার্থী" শব্দটি ইংরেজি ভাষায় গৃহীত হয়েছিল।<ref name=":602">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 28.</ref> নতুন ফ্রান্সের প্রোটেস্ট্যান্টরাও একইভাবে প্রভাবিত হয়েছিল - হয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম ত্যাগ করতে, ফ্রান্সে ফিরে যেতে, অথবা নতুন বিশ্বে একটি ইংরেজ প্রোটেস্ট্যান্ট উপনিবেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।<ref>Jaenen, Cornelius J.. "Huguenots". ''The Canadian Encyclopedia'', 16 December 2013, ''Historica Canada''. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huguenots. Accessed 06 April 2021.</ref>
শরণার্থীদের ঘটনাটিকে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে তর্কযোগ্যভাবে আলাদা করার কারণ হলো তাদের আন্দোলনগুলো নতুন উদীয়মান রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করেছিল। এইভাবে, এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয় যে "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের এই সময়ে রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণার উত্থানের সাথে সাথে উদ্ভূত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে হর্ষ ওয়ালিয়া একজন আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটিকেই "রাষ্ট্র-কেন্দ্রিক শ্রেণীবিন্যাস" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ সীমান্তকে শাসনের একটি বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেটস এবং কোলিয়ারের যুক্তি অনুসারে, ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি-পরবর্তী নতুন বিষয় ছিল যে সরকারগুলো নিজেদেরকে শরণার্থী আন্দোলন পরিচালনা করতে সক্ষম বলে ধারণা করতে শুরু করেছিল।<ref>Betts, Alexander, and Paul Collier. ''Refuge: Rethinking Refugee Policy in a Changing World''. 2017: New York, NY: Oxford University Press. Page 36.</ref> এর ফলে দুটি প্রধান প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: রাষ্ট্রগুলো কখন আশ্রয় দিতে পারে এবং কখন হবু শরণার্থীরা এটি আশা করতে পারে?
রাজ্যগুলো কখন এবং কখন আশ্রয় দিতে পারবে কিনা এই প্রশ্নটি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেক রাজ্য অভিবাসন নিষিদ্ধ করা তাদের ক্ষমতার মধ্যে বিবেচনা করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৪৯০-এর দশকে স্পেন এবং পর্তুগাল থেকে লক্ষ লক্ষ ইহুদির আগমনের পর অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ তার ভূমি থেকে ইহুদিদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করেন এই কারণে যে এটি অর্থনীতি এবং সুলতানের কোষাগার উভয়েরই উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করবে। ঐতিহাসিকভাবে। নীচে প্রাক-কনফেডারেশন কানাডার অংশে আলোচনা করা হয়েছে, দাসত্ব এবং দাসত্বের প্রতিষ্ঠানগুলোও যে কোনও দিকে অগ্রসর হওয়ার অধিকারের উপর প্রধান বিধিনিষেধ ছিল। ১৬০০ সালের দিকে হুগেনটরা ফ্রান্স থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়, লুই চতুর্দশ এই "বিশ্বাসঘাতকদের" ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান কারণ তাদের বেশিরভাগই তার অনুমতি ছাড়াই ফ্রান্স ছেড়ে চলে গিয়েছিল। যখন সুইসরা এই শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের আদেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়, তখন সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ফরাসিরা সুইসদের যুদ্ধের হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত, জেনেভায় যাওয়া বেশিরভাগ হুগেনট শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এর কারণ সম্ভবত কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করেছিল যে ফরাসিরা এই ধরনের "অপরাধের" প্রতিশোধ নেবে - এবং সুইসরা শরণার্থীদের অন্যত্র স্থায়ী আশ্রয় চাইতে উৎসাহিত করতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে কোনও সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়নি। তা সত্ত্বেও রাজ্যগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার এবং রাজ্যগুলোর প্রস্থান সীমিত করার ক্ষমতার প্রশ্নটি আন্তঃরাজ্য বিরোধের কারণ হিসাবে রয়ে গেছে। ১৮৪০-এর দশক থেকে, রাষ্ট্রগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার আরও স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়ে ওঠে। ১৮৪৮ সালের হাঙ্গেরীয় বিদ্রোহের দমন-পীড়নের পর অনেক হাঙ্গেরীয় অটোমান সাম্রাজ্যে (তুরস্ক) পালিয়ে যায়। রাশিয়া (যার বিদ্রোহ দমনে ভূমিকা ছিল) এবং অস্ট্রিয়া শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অনুরোধ করেছিল। তুরস্ক জবাব দেয় যে তাদের সম্মান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, সেইসাথে সুলতানের মানবতাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেহেতু ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই তুরস্কের পক্ষে ছিল, তাই রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়া নমনীয় হয়ে ওঠে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 39.</ref>
এই সময়ে আরেকটি প্রশ্ন উঠে আসে, হবু শরণার্থীরা কখন আশ্রয় পাওয়ার আশা করতে পারে। রেবেকা হ্যামলিন শরণার্থীর ধারণার তুলনা করেছেন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে একটি রাষ্ট্রের কাছে সুরক্ষার জন্য আবেদন করা অন্তর্ভুক্ত, ইউরোপীয় ইতিহাসের আগের রীতিগুলোর সাথে যেখানে সুরক্ষার জন্য আবেদন করা যেতে পারে পরিবার, ব্যক্তি এবং ধর্মীয় নেতাদের কাছে, কেবল রাষ্ট্রের কাছে নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কারা আশ্রয় নিতে পারবে এই প্রশ্নটি গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করা হয়নি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, কেবলমাত্র আতিথেয়তা প্রদান করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যেই আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে; উদাহরণস্বরূপ, ১৫৫০-এর দশকে যখন প্রোটেস্ট্যান্টরা ইংল্যান্ড থেকে ফ্রাঙ্কফুর্টে পালিয়ে যায়, তখন শরণার্থীদের প্রাথমিক আলিঙ্গন শীঘ্রই তাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় অস্বস্তিতে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শরণার্থীদের উপাসনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ফলে অনেকেই আরও অতিথিপরায়ণ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হন। নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে, ১৯২০ সালের আগে শরণার্থী শব্দটির পরিধি এবং কোন ব্যক্তিরা এই মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী হতে পারেন তা নির্ধারণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ ছিল। এমা হাদ্দাদ এই বিবর্তনকে আরও বিশদভাবে তুলে ধরেন এবং যুক্তি দেন যে "শরণার্থী"-এর ঘটনাটি। এটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার পাশাপাশি আবির্ভূত হয়েছিল এবং বিংশ শতাব্দীতে বিকশিত হয়েছিল, তার নতুন মাত্রা, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা, নতুনভাবে বন্ধ সীমানা এবং ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল হিসেবে জাতিরাষ্ট্র সম্পর্কে ধারণা এবং জাতীয় পরিচয় হিসেবে স্পষ্ট গ্রহণকারী দেশগুলোর অভাব, ধর্মীয় পরিচয়ের চেয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে বেশি।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 62.</ref>
== প্রাক-কনফেডারেশন কানাডায় শরণার্থী এবং জনসংখ্যার চলাচল ==
কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়া বিভিন্ন ধরণের। এর মধ্যে আশ্রয় খোঁজার প্রক্রিয়াও রয়েছে। এই অঞ্চলে এটি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। কানাডার ভূখণ্ডে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জনসংখ্যা প্রবাহের দিকে তাকালে কে শরণার্থী হিসেবে যোগ্য হবে সে সম্পর্কে একটি সত্তাতাত্ত্বিক প্রশ্ন উত্থাপন করে। শরণার্থীদের বৈষম্য, সীমান্তের ওপারে স্থানচ্যুতি, ব্যক্তি এবং তাদের সরকারের মধ্যে বন্ধন ছিন্ন করা এবং তাদের নিজ সম্প্রদায়ে নিপীড়নের আশঙ্কার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এই ধরনের মানদণ্ড পূরণকারী ব্যক্তিদের এই দেশে দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা বলে, উপরে বর্ণিত শরণার্থীর ধারণাটি প্রকৃতপক্ষে একটি আধুনিক ধারণা। কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার জনসংখ্যার চলাচলের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা অবশ্যই কালানুক্রমিক। রেবেকা হ্যামলিনের ভাষায়, "পিছনে ফিরে তাকানো এবং অতীতের ক্রসিংগুলোতে শরণার্থী/অভিবাসী দ্বিধা স্থাপন করা সেই ঘটনাগুলোর বাস্তবতাকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে না।" তবুও কানাডার ভূখণ্ডে আদিবাসী এবং ঔপনিবেশিক উভয় ক্ষেত্রেই জনসংখ্যার আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করা (মুছে ফেলা নয়) এবং শরণার্থীর সমসাময়িক ধারণাটি আধুনিক ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের সাথে কীভাবে গভীরভাবে যুক্ত হয়েছে তা চিত্রিত করা উপযুক্ত। প্রকৃতপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে যদি এই ধরনের যোগসূত্রগুলো অপর্যাপ্তভাবে তুলে ধরা হয়, তাহলে মাইগ্রেশন স্টাডিজ স্কলারশিপ "ইচ্ছাকৃত স্মৃতিভ্রংশ"-এর সাথে জড়িত হতে পারে যা প্রথম জাতির দাবি এবং অধিকারগুলোকে "কল্পনা করে"।<ref>Stephanie J. Silverman, Immigration Detention in Canada: Concepts and Controversies, Forced Migration in/to Canada: From Colonization to Refugee Resettlement, Edited by Christina R. Clark-Kazak, <nowiki>ISBN 9780228022176</nowiki>, page 298.</ref>
শুরুতেই বলতে চাই, কানাডার ভূখণ্ডে মানুষের চলাচল এবং স্থানচ্যুতি নতুন কিছু নয়। কিছু ফার্স্ট নেশনস অত্যন্ত ভ্রমণপ্রিয় ছিল, যেমন ব্ল্যাকফুট যারা প্রেইরি পেরিয়ে শিকারের ক্ষেত্রগুলোতে বাইসনের পিছনে পিছনে যেত যেখানে তারা বাইসন লাফিয়ে দৌড়ে দৌড়াত।<ref>Dempsey, Hugh A.. "Blackfoot Confederacy". The Canadian Encyclopedia, 18 July 2019, Historica Canada. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/blackfoot-nation</nowiki>. Accessed 25 October 2021.</ref> ব্ল্যাকফুট কনফেডারেসি কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট প্লেইন অঞ্চলে অবস্থিত ব্ল্যাকফুট, ব্লাড এবং পাইগান জাতির সাথে যোগ দেয়। তারা বাইসনের চলাচলের উপর ভিত্তি করে একটি সাধারণ যাযাবর জীবনযাপন ভাগ করে নিত। এর উপর তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্ভর করত।
প্রথম জাতিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের ফলে আদিবাসীরা আগ্রাসন থেকে পালিয়ে নতুন অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ষোড়শ শতাব্দীতে, হাউডেনোসাউনি (ইরোকুইস) প্রতিবেশী গোষ্ঠীগুলোকে দমন বা ছত্রভঙ্গ করার জন্য অভিযান শুরু করে এবং একটি প্রাচীন আদর্শ অনুসরণ করে যে তারা তাদের প্রতিবেশীদের একটি জাতিতে আবদ্ধ করে "দীর্ঘ ঘরের ছাদ প্রসারিত করে" এবং এর ফলে একটি সর্বজনীন শান্তি তৈরি করে।<ref>Heidenreich, C.E.. "Huron-Wendat". The Canadian Encyclopedia, 10 October 2018, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huron. Accessed 01 January 2021.</ref> ১৬৪৯ সালে হাউডেনোসাউনিরা গ্রাম ধ্বংস করে ফরাসি-মিত্র হুরন-ওয়েন্ডাতকে তাদের মাতৃভূমি থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ১৬৫০-এর দশকে হাউডেনোসাউনি বিচ্ছুরণ অভিযান পেটুন, নিউট্রাল এবং এরি-তে প্রভাব ফেলে। এর ফলে এই জাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং তাদের সদস্যরা হয় একত্রিত হয়ে নতুন সম্প্রদায় গঠন করে অথবা পূর্বে বিদ্যমান ইরোকোয়িয়ান জাতিগুলোতে যোগদান করে।<ref name=":212">Peter G. Ramsden and Zach Parrott, "Haudenosaunee (Iroquois)" ''in The Canadian Encyclopedia'', August 28, 2015 <https://thecanadianencyclopedia.ca/en/article/iroquois> (Accessed December 30, 2020).</ref>
কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্তৃত্বকারী ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার কর্মকাণ্ডের ফলেও আদিবাসীদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। ইউরোপীয় শক্তিগুলো পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসী জাতিগুলোর কাছ থেকে দখল করা জমিগুলোতে তাদের উত্তর আমেরিকার উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। এই জব্দকরণের মধ্যে সীমানা আরোপ এবং এর সাথে শারীরিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতি জড়িত ছিল। নিচে আলোচনা করা হয়েছে, এর বেশ কিছু পরিণতি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে রোগ এবং যুদ্ধের কারণে অনেক প্রথম জাতির ব্যক্তি নিহত হয়েছিল এবং এই নতুন ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার কারণে তাদের গতিশীলতা এবং জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল।
পরিশেষে, শরণার্থীর ধারণাটিকে একটি আইনি ধারণা হিসেবেও ভাবা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে কানাডার প্রথম জাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রদায়ের সদস্যপদের শর্তগুলোকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত এবং ন্যায্যতা দেওয়া যায় সে সম্পর্কে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। আজকাল কানাডার আইনি ব্যবস্থায় এই ধরনের প্রশ্নগুলোকে প্রাথমিকভাবে অভিবাসন এবং নাগরিকত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। তবে আদিবাসী আইনি ব্যবস্থায় পারিবারিক আইন, গৃহ গোষ্ঠীর সদস্যপদ এবং আত্মীয়তার অধিকারের ধারণাগুলোর মাধ্যমেও এগুলোকে সমানভাবে দেখা যেতে পারে।<ref>For a discussion of the universality of such concepts, see: Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 3.</ref> প্রকৃতপক্ষে কানাডার ভূখণ্ডগুলোতে প্রচুর আদিবাসী আইন এবং আইনি ঐতিহ্য টিকে আছে, এই দেশের ঔপনিবেশিক আইনি ব্যবস্থার আগে এবং পরে পাশাপাশি। জন বোরোজ লিখেছেন, উত্তর আমেরিকার আদিবাসীরা ছিলেন আইনের প্রথম দিকের অনুশীলনকারীরা।<ref>John Borrows, Canada’s Indigenous Constitution (Toronto: University of Toronto Press, 2010) at 301.</ref> এই আদিবাসী আইন এবং আইনি ঐতিহ্যগুলো তাদের বৈচিত্র্য, ধারাবাহিকতা, দমন, টিকে থাকা এবং অভিযোজনযোগ্যতার দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।<ref name=":323">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ভাটিয়া নাগরিকত্ব এবং অন্যদের স্বাগত জানানোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রথম জাতির আইনি নীতি সম্পর্কে লিখেছেন,<ref name=":322">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> যেমন ডিশ উইথ ওয়ান স্পুন ওয়াম্পাম চুক্তি, ১৭০১ সালে হাউডেনোসাউনি এবং আনিশিনাবে জাতির মধ্যে প্রণীত একটি আদিবাসী নাগরিকত্ব আইন।<ref>Craft, A. 2013. Breathing Life into the Stone Fort Treaty An Anishinabe Understanding of Treaty One. Vancouver, BC: Purich Publishing.</ref> আরিমা তাদের পক্ষ থেকে পারিবারিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত ফার্স্ট নেশনসের আইনি নীতি সম্পর্কে লেখেন, যেমন ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপের নুটকা কীভাবে মূল ভূখণ্ডের উপকূলীয় স্যালিশ গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হত, যদিও অন্যথায় জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল না।<ref>Arima, E.Y., "Nuu-chah-nulth (Nootka)". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published February 07, 2006; Last Edited November 12, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/nootka-nuu-chah-nulth</nowiki></ref> এইভাবে, অন্যকে স্বাগত জানানোর শর্তাবলী নির্ধারণের কানাডায় কেবল ব্যবহারিক নয়, বরং দীর্ঘ আইনি ইতিহাস রয়েছে।
উত্তর আমেরিকার ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার দিকে ফিরে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক সীমানা তৈরির জন্য শক্তি প্রয়োগ করেছিল। কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৪৬ সালে সম্মত হয়েছিল কিন্তু প্রেইরিতে জরিপ এবং চিহ্নিতকরণ ১৮৭৪ সালের আগে সম্পন্ন হয়নি।<ref name=":952">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> এই সীমান্তগুলো প্রথম জাতিদের গতিশীলতা সীমিত করেছে - ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম জাতিগুলোকে এই উদীয়মান সত্তাগুলোর অধীনে থাকতে বাধ্য করেছিল, এমনকি যেখানে পূর্ব-বিদ্যমান জীবনযাত্রার ব্যবস্থা সীমান্তের একপাশে বা অন্য দিকে সুন্দরভাবে খাপ খায় না। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার ক্রিস এবং চিপ্পেওয়াসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "বিদেশী ভারতীয়" হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমির সাথে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তাদের "অবৈধ অভিবাসী" হিসেবে নির্বাসিত করা হয়।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 25.</ref> "আমরা সীমান্ত অতিক্রম করিনি, সীমান্ত আমাদের অতিক্রম করেছে" এই ধ্বংসাত্মক স্লোগানটি এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণরূপে উপযুক্ত।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 23.</ref>
তাদের পক্ষ থেকে ডাকোটা এবং লাকোটা জাতিগুলোকে আমেরিকান "ভারতীয়" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল যারা ১৮৬০-এর দশকে কানাডায় "শরণার্থী" হিসেবে এসেছিল, যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ, ঐতিহাসিক রেকর্ড এবং মৌখিক জ্ঞান থেকে জানা যায় যে বর্তমান কানাডায় তাদের উপস্থিতি কমপক্ষে ৮০০ বছর আগের। এর পটভূমি ছিল ১৮৫১ সালে ডাকোটা আমেরিকান সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ডাকোটা তাদের সমস্ত জমি আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ১৮৬২ সালের গ্রীষ্মে ডাকোটা একটি সশস্ত্র বিদ্রোহের সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ১৮৬২ সালের ডাকোটা যুদ্ধ বা সিউক্স বিদ্রোহ নামে পরিচিত ঘটনাটি সফল হয়নি এবং সেই বছরের নভেম্বরে প্রায় ১০০০ ডাকোটা আমেরিকান সেনাবাহিনীর হাত থেকে আশ্রয় নিতে রেড নদীর (বর্তমানে উইনিপেগ শহর) তীরে ফোর্ট গ্যারির গেটের বাইরে এসে পৌঁছায়। তারা এসে দাবি করেছিল যে ব্রিটিশ মাটিতে থাকার তাদের ঐতিহাসিক অধিকার রয়েছে এবং জমিগুলো আসলে তাদের ঐতিহ্যবাহী ভূখণ্ডের অংশ। সেই সময়, কানাডীয় সরকার ডাকোটাদের কানাডীয় জমির মালিকানা আছে কিনা তা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিল, বরং কানাডায় ডাকোটার উপস্থিতি "সহ্য" করেছিল এবং তাদের থাকার অনুমতি দিয়েছিল। এটি আংশিকভাবে অনুগ্রহের বিষয় ছিল। তবে মূলত এই কারণে যে ডাকোটা বাহিনীকে চলে যেতে বাধ্য করার জন্য কানাডায় পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী ছিল না। আজ কানাডায় নয়টি ডাকোটা এবং লাকোটা ব্যান্ড রয়েছে—সাসকাচোয়ানে চারটি এবং ম্যানিটোবায় পাঁচটি।<ref name=":962">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref> এই প্রসঙ্গে সরকারের "শরণার্থী" শব্দটির ব্যবহার বিতর্কিত থেকে আক্রমণাত্মক বলে বিবেচিত হয়েছে, ডাকোটার একজন প্রবীণ এই মর্মস্পর্শী প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছেন: "আপনার নিজের দেশে আপনি কীভাবে শরণার্থী হিসেবে পরিচিত হতে চান?"<ref name=":953">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> ২০২৪ সাল থেকে, কানাডীয় সরকার ডাকোটা এবং লাকোটার সাথে কানাডায় অধিকারের সাথে আচরণ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কেবল শরণার্থী হিসেবে নয়।<ref name=":96">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref>
আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা সৃষ্ট স্থানচ্যুতি থেকে জাতীয় সীমানার মধ্যে যা ঘটেছিল তার দিকে অগ্রসর হয়ে, ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা সীমানা তৈরি করেছিল যা গতিশীলতাকে সীমিত করেছিল। এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যবস্থার সাথে জড়িত সীমানাও ছিল। এটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলগুলোর সাথে অনেক সম্পর্ক বাতিল করেছিল এবং সম্পর্কিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক স্থানচ্যুতি জড়িত করেছিল।<ref>Melissa May Ling Chung, ''The Relationships Between Racialized Immigrants And Indigenous Peoples In Canada: A Literature Review'', MA Thesis, 2012 <https://digital.library.ryerson.ca/islandora/object/RULA%3A1429> (Accessed December 30, 2020).</ref> অনেক আদিবাসী ব্যক্তিকে রিজার্ভে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৮৮৫ সালের উত্তর-পশ্চিম বিদ্রোহের পর ফেডারেল সরকার একটি পাস সিস্টেম তৈরি করে - একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আদিবাসীদের তাদের রিজার্ভে ফিরে যাওয়ার জন্য একজন ভারতীয় এজেন্ট দ্বারা অনুমোদিত একটি ভ্রমণ নথি উপস্থাপন করতে হত।<ref>Nestor, Rob, "Pass System in Canada". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published July 10, 2018; Last Edited July 13, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/pass-system-in-canada</nowiki></ref> রিজার্ভ ব্যবস্থা ছাড়াও অনেক ফার্স্ট নেশনস ব্যক্তির চলাচল কানাডার বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত, যেমন ১৮৬২ সালে যখন গুটিবসন্তের আগমনের পর ভিক্টোরিয়া, বিসি-তে এক জেনোফোবিক হিস্টিরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পুলিশ বন্দুকের মুখে কাছাকাছি আদিবাসী শিবিরগুলো খালি করে, সেগুলো পুড়িয়ে দেয় এবং গুটিবসন্তে আক্রান্ত আদিবাসীদের ভর্তি নৌকাগুলো উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। পরের বছর ধরে, এই আদিবাসীরা যখন তাদের নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে আসে, তখন তারা গুটিবসন্ত তাদের সাথে নিয়ে যায় এবং কমপক্ষে ৩০,০০০ আদিবাসী এই রোগে মারা যায় বলে জানা গেছে। এটি বর্তমান প্রথম জাতির জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ।<ref>Joshua Ostroff, ''How a smallpox epidemic forged modern British Columbia,'' August 1, 2017, Maclean's, <https://www.macleans.ca/news/canada/how-a-smallpox-epidemic-forged-modern-british-columbia/> (Accessed October 30, 2021).</ref> প্রকৃতপক্ষে ঔপনিবেশিকতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি ছিল কানাডায় বিপুল সংখ্যক প্রথম জাতির ব্যক্তি যারা ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীদের দ্বারা প্রবর্তিত রোগে মারা গিয়েছিলেন। এই ধরনের মৃত্যুর একটি প্রভাব ছিল যোগাযোগ-পরবর্তী সম্প্রদায়ের উত্থান, যেমন আবেনাকি, বর্তমান নিউ ব্রান্সউইক এবং ক্যুবেকের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। এটি তখন আবির্ভূত হয়েছিল যখন অসংখ্য ছোট গোষ্ঠী এবং উপজাতি। এরা ভাষাগত, ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ভাগ করে নিয়েছিল, রোগ এবং যুদ্ধের দ্বারা তাদের মূল উপজাতিগুলো ধ্বংস হওয়ার পরে একটি নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে একত্রিত হয়েছিল।<ref>Lee Sultzman (July 21, 1997). "Abenaki History". Archived from the original on April 11, 2010. Retrieved March 20, 2010.</ref>
এই ধরনের মহামারী এবং জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রভাব ছাড়াও নবনির্মিত কানাডা জাতি পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতিকেও প্রভাবিত করেছিল। স্থানচ্যুতি এবং আত্তীকরণ সম্পর্কিত ''আদিবাসী জনগণের উপর রয়েল কমিশনের'' চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অংশের ভাষায়:<blockquote>[আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর উপনিবেশবাদের প্রভাব ছিল গভীর।] সম্ভবত সেই প্রভাব বর্ণনা করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত শব্দ হলো 'স্থানচ্যুতি'। আদিবাসীদের শারীরিকভাবে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিল - তাদের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এবং অনেক ক্ষেত্রেই ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাদের জন্য নির্বাচিত নতুন স্থানে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, তীব্র মিশনারি কার্যকলাপ এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার কারণে - যা তাদের সন্তানদের কাছে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ প্রেরণের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করেছিল, পুরুষ-কেন্দ্রিক ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধ আরোপ করেছিল এবং উল্লেখযোগ্য নৃত্য এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো ঐতিহ্যবাহী কার্যকলাপগুলোকে আক্রমণ করেছিল। উত্তর আমেরিকাতেও তারা রাজনৈতিকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, ঔপনিবেশিক আইনের দ্বারা বাধ্য হয়েছিল যে তারা ঐতিহ্যবাহী শাসন কাঠামো এবং প্রক্রিয়াগুলো ত্যাগ করতে বা অন্তত ঔপনিবেশিক-শৈলীর পৌর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লুকিয়ে থাকতে পারে।<ref>Report of the Royal Commission on Aboriginal Peoples. Ottawa: The Commission, 1996. Print, at page 132 <http://data2.archives.ca/e/e448/e011188230-01.pdf> (Accessed January 1, 2021).</ref></blockquote>অনেক সময় আদিবাসী সম্প্রদায়গুলো এই ধরনের স্থানচ্যুতি থেকে আশ্রয় নেওয়ার সময় নবনির্মিত আন্তর্জাতিক সীমানার উপর নির্ভর করত। উদাহরণস্বরূপ, ১৭৭৯ সালে আমেরিকান সৈন্যরা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪০-৫০টি কায়ুগা গ্রাম ধ্বংস করার পর কায়ুগা উপজাতির অনেক মানুষ ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং এর ফলে তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টির জন্য এই নতুন সীমান্তের উপর নির্ভর করে।<ref>Emerson Klees. ''Persons, Places, and Things around the Finger Lakes Region''. Rochester, Finger Lakes Publishing, 1994. Page 10.</ref>
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে ব্রিটিশরা ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় অভিবাসনকে উৎসাহিত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে। ব্রিটিশরা যাদেরকে স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত করেছিল তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও ছিলেন যাদেরকে আজ যথাযথভাবে শরণার্থী বলা হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৫০,০০০ সংযুক্ত সাম্রাজ্যের অনুগত। এরা আমেরিকান বিপ্লবে ব্রিটিশদের সমর্থক, আমেরিকান প্রজাতন্ত্রবাদের প্রতিক্রিয়ায় উত্তরে স্থানান্তরিত হয়েছিল।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 6.</ref> তাদের অনেকেই উত্তর দিকে পাড়ি জমান কারণ তারা নতুন আমেরিকান প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হতে চাননি অথবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের প্রতি তাদের জনসমর্থনের জন্য প্রতিশোধের ভয়ে।<ref name=":232">Troper, Harold. "Immigration in Canada". The Canadian Encyclopedia, 19 September 2017, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/immigration. Accessed 30 December 2020.</ref> এর মধ্যে মোহাক এবং সিক্স নেশনস ইন্ডিয়ানসের অন্যান্য সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের ওহিও উপত্যকায় তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কারণ তারা আমেরিকান বিপ্লবের সময় ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 2.</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুগতদের প্রতি যে প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল মারধর, কারাদণ্ড এবং অন্যান্য ধরণের হয়রানি।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 36.</ref> উত্তর দিকে অভিবাসিত অনুগতদের মধ্যে তেরো উপনিবেশের সীমান্তবর্তী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২০০০ সদস্য ছিলেন যারা ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিলেন, বিশ্বাস করতেন যে ব্রিটিশদের সাথে জোট তাদের স্বাধীনতা রক্ষা এবং ভূমিক্ষুধার্ত উপনিবেশবাদীদের হাত থেকে তাদের অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তম আশা প্রদান করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 40.</ref>
বিশ্বাসঘাতকরা তাদের দাসদের আজকের কানাডায় নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছিল। পরবর্তীতে বিশ্বাসঘাতকরা হাজার হাজার মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিরও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি যুদ্ধের শুরুতে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ ঘোষণায় সাড়া দিয়েছিল যা বিপ্লবের সময় আমেরিকান মাস্টারকে ত্যাগ করে রাজাদের বাহিনীর সাথে পরিষেবা দেওয়ার জন্য মুক্তির প্রস্তাব দেয়। নতুন কৃষ্ণাঙ্গ আগন্তুকদের অধিকাংশই সংঘর্ষের শেষের দিকে করা একটি প্রস্তাবে সাড়া দেয় যা নিশ্চিত করে যে সকল দাস যারা ব্রিটিশ সীমার মধ্যে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক দাবি করে তারা তাদের মুক্তি পাবেন।<ref name=":242">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> আগমনের পর এই কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্বাসঘাতকদের অনেকেই নোভা স্কোটিয়াতে বর্ণবিদ্বেষ এবং হতাশাজনক কৃষি সম্ভাবনার সম্মুখীন হন। সেখানে তারা মূলত বসবাস করেছিল। খুব হতাশ হয়ে, ১,২০০ জন সিয়েরা লিওনের জন্য পালিয়ে যায় আফ্রিকার পশ্চিম তীর থেকে নতুন করে শুরু করতে ১৭৯২ সালে।<ref name=":243">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> তবুও, পরবর্তী এক শতাব্দীতে প্রায় ৩০,০০০ আফ্রিকান আমেরিকান কানাডায় এসেছিলেন যার ফলে অনানুষ্ঠানিক রেলপথ শেষ হয়, যে দেশটিতে দাসত্ব থেকে সুরক্ষা খুঁজছিলেন।<ref name=":63">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> যদিও তারা আইনগতভাবে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন। তবে তারা সর্বদা বাস্তবিক নিরাপত্তা পাননি কারণ কানাডায় কালো মুক্ত মানব শরণার্থীদের অবৈধভাবে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তাদের দক্ষিণী রাজ্যে পুরানো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।<ref>Henry, Natasha. "Fugitive Slave Act of 1850". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 June 2023, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/fugitive-slave-act-of-1850. Accessed 25 February 2024.</ref>
যদিও কৃষ্ণাঙ্গ এবং আদিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পালিয়ে গিয়েছিল, তবুও বাস্তবতা হলো যে কানাডীয় ঔপনিবেশিক প্রকল্পে একটি বর্ণগত যুক্তি কাজ করছিল যা শাসনব্যবস্থা কাকে স্বাগত জানাতে উপযুক্ত মনে করেছিল তা নির্ধারণ করেছিল।<ref name=":652">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 47.</ref> কানাডার ইতিহাসে আমরা উপনিবেশবাদের এই যুক্তি দেখতে পাই, প্রথম জাতিদের সাথে কীভাবে আচরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্র কীভাবে জাতিগত এবং জাতীয় বহিরাগতদের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তা উভয় ক্ষেত্রেই। ১৭০০ সালের দিকে, ব্রিটিশরা উত্তর আমেরিকার সম্পত্তির ব্রিটিশ চরিত্রকে শক্তিশালী করার জন্য ইচ্ছাকৃত নীতিমালা প্রণয়ন করে। এর মধ্যে বর্তমান নোভা স্কটিয়া থেকে ফরাসিভাষী আকাদিয়ানদের জোরপূর্বক নির্বাসন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৫৫ সালে লেফটেন্যান্ট-গভর্নর লরেন্স এবং তার কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেন যে জোরপূর্বক ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে আকাদিয়ানদের মহাদেশের বেশ কয়েকটি উপনিবেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। সেই বছর ৩০০০ এরও বেশি একাডিয়ানকে বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ব্রিটিশ উপনিবেশে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মোট, নোভা স্কটিয়ার আকাদিয়ান জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাহাজগুলোতে এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী মারা যান। অনেক একাডিয়ান প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপ এবং কেপ ব্রেটনে আশ্রয় চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা কেবল সাময়িক অবকাশ পেয়েছিলেন। ১৭৫৮ সালে লুইসবার্গের বিরুদ্ধে আরেকটি ব্রিটিশ অভিযান তাদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে; এরপর আরও ৬০০০ আকাদিয়ানকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 34-35.</ref> এরপর কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অধিকন্তু, ইউনাইটেড সাম্রাজ্যের অনুগতদের মুকুট দ্বারা প্রদত্ত জমির অনুদানের মধ্যে প্রায়ই পূর্বে আকাদিয়ানদের দখলকৃত অঞ্চলগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে আকাদিয়ানরা জমিগুলো পুনরায় দখল করতে ফিরে আসতে বাধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ফোর্ট সেন্ট-অ্যান অঞ্চলে, বর্তমানে ফ্রেডেরিকটন। নোভা স্কটিয়ার আনাপোলিস নদীর আশেপাশের এলাকায়। সেখানে পূর্বে আকাদিয়ান জমিগুলো ১৭৫৯ সাল থেকে নিউ ইংল্যান্ড থেকে বসতি স্থাপনকারীদের দেওয়া হয়েছিল।
যদিও কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার সরকারগুলো স্পষ্টভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের দেশে আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তারা সাধারণত "সঠিক দেশ" থেকে আসা এবং পছন্দসই জাতি, ধর্ম এবং জাতীয়তার অধিকারী ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আপার কানাডার প্রথম লেফটেন্যান্ট-গভর্নর জন গ্রেভস সিমকো ১৭৯২ সালে একটি ঘোষণা জারি করেন যেখানে আমেরিকানদের আপার কানাডায় অভিবাসনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে ছিল কোয়েকার, মেনোনাইট এবং ডানকার্ড সহ শান্তিবাদী ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি একটি বিশেষ আবেদন। সেখানে তাদের সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 45-46.</ref>
== ঔপনিবেশিক কানাডায় অভিবাসনের উপর আইনি বিধিনিষেধের উত্থান ==
তার প্রথম শতাব্দীতে, কানাডা এবং তার ঔপনিবেশিক পূর্বপুরুষদের কোন আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নীতি ছিল না, না সীমান্তে ব্যক্তিদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের উপায় ছিল। এটি সেই সময়ের অন্যান্য পশ্চিমা রাজ্যগুলোর অভিজ্ঞতা ট্র্যাক করে। চেটেইলের সারসংক্ষেপে, ১৭ শতকের জাতিরাষ্ট্রের উত্থান এবং এর অন্তর্নিহিত পরিণাম - আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব - সাধারণত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রবর্তনের সাথে মিলেনি। এর বিপরীতে (সঠিক ধরণের) বিদেশীদের প্রবেশকে মূলত জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক কারণে আয়োজক রাষ্ট্রের শক্তি শক্তিশালী করার একটি উপায় হিসাবে দেখা হত। ফলস্বরূপ, ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী সহজেই নতুন অঞ্চলে নতুন চাকরি এবং সুযোগের দিকে চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল। ''১৮৬৭ সালের সংবিধান আইনের'' ৯১(২৫) ধারা অনুসারে "প্রাকৃতিকীকরণ এবং ভিনগ্রহীদের" উপর ফেডারেল পার্লামেন্টকে এখতিয়ার দেওয়া হলেও, কানাডার প্রথম কনফেডারেশন-পরবর্তী অভিবাসন আইন '','' ১৮৬৯ সালের ''অভিবাসন এবং অভিবাসীদের সম্মানকারী আইন'', কোন শ্রেণীর অভিবাসীদের ভর্তি করা উচিত এবং কোন শ্রেণীর নিষিদ্ধ করা উচিত সে সম্পর্কে কিছুই না বলে অবাধে প্রচলিত ধারণাকে প্রতিফলিত করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 71.</ref> উদাহরণস্বরূপ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপীয় এবং উত্তর আমেরিকা ভ্রমণের জন্য সাধারণত পাসপোর্টের প্রয়োজন ছিল না।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 5.</ref> এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থীর সংজ্ঞা নির্ধারণ ক্ষমতাসীন শক্তিগুলোর জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল না।
যদিও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে মানুষ বিশ্বে চলাচলের একটি নির্দিষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করত, তবুও এই তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন অনুশীলনগুলো কোনওভাবেই সকলের জন্য ব্যবহারিক এবং বৈষম্যহীন চলাচলের স্বাধীনতা প্রদান করেনি। চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছিল। রাজ্যগুলো কর্তৃক আরোপিত চলাচলের উপর প্রাথমিক কিছু বিধিনিষেধ প্রতিটি রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে নাগরিক এবং অ-জাতীয় উভয়ের ''অভ্যন্তরীণ'' চলাচলের উপর আরোপ করা হয়েছিল। ইউরোপে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বিধিনিষেধ মূলত করের উদ্দেশ্যে আরোপ করা হয়েছিল,<ref name=":412">Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 39.</ref> এবং ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায়, যেমন উপরে আলোচনা করা হয়েছে, এই ধরনের বিধিনিষেধের একটি প্রধান কারণ ছিল রিজার্ভ এবং পাস সিস্টেমের মাধ্যমে আদিবাসী জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ।
তাছাড়া, এই সময়েও, কানাডীয় সমাজ সকল অভিবাসীকে স্বাগত জানায়নি। যদিও সমস্ত ব্রিটিশ প্রজাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্যের যেকোনো স্থানে বসতি স্থাপনের অধিকার ছিল। এর মধ্যে কানাডার ব্রিটিশ অধিরাজ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন জান রাস্কা বর্ণনা করেছেন, কানাডীয় সরকার 'আকাঙ্ক্ষিত' অভিবাসীর প্রচলিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে অভিবাসীদের গ্রহণ করেছিল। প্রাথমিক কানাডার আপাতদৃষ্টিতে ''অবাধ'' অভিবাসন নীতিগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে বিদ্যমান ছিল। কারণ ''কার্যত'' ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ করে "অবাঞ্ছিত জাতি"দের জন্য কানাডায় ভ্রমণ সীমিত করেছিল। এর মধ্যে কয়েকটি শতাব্দী ধরে পশ্চিম ইউরোপ ছাড়া অন্য কোথাও থেকে নতুন বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্য অর্থনৈতিক পরিবহন ব্যবস্থার অভাব ছিল। এমনকি যারা এই সময়ে নতুন দেশে অভিবাসন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন পদ্ধতির ফলে ঐতিহাসিক শরণার্থীরা আধুনিক শরণার্থী কনভেনশনে বর্ণিত অধিকারের স্যুট উপভোগ করতে পারেননি। উদাহরণস্বরূপ, এমা বোরল্যান্ড লিখেছেন, ১৭ শতকের ফরাসি হুগেনটরা যুক্তরাজ্যে পুরোপুরি স্বাগতপূর্ণ অভ্যর্থনা পায়নি এবং তাদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর বদলে হুগেনটরা 'প্রজা' হিসেবে বিবেচিত না হয়ে বিদেশীর মর্যাদা বজায় রেখেছিল। তাই সেই সময়ে ইংল্যান্ডে তাদের সীমিত অধিকার ছিল।<ref>Bernard Cottret, ''The Huguenots in England: Immigration and Settlement C.1550-1700'' (Cambridge University Press 1991) 53.</ref>
যাই হোক না কেন, অভিবাসনের প্রতি তুলনামূলকভাবে ''উদার'' মনোভাব। এটি আগে প্রচলিত ছিল, তা ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। কারণ রাষ্ট্রের জনগণের উপর নজরদারি ও শাসনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ১৮০০ সালের দিকে ইউরোপে আশ্রয়ের ধারণাটি নতুন করে গুরুত্ব পায়। কারণ দেশগুলো অপরাধীদের প্রত্যর্পণের জন্য দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করতে শুরু করে। এটি ব্যক্তিদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা সীমিত করে। রাষ্ট্রগুলো রাজনৈতিক অপরাধ সংঘটিত ব্যক্তিদের এই ধরনের প্রত্যর্পণ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ার উপযুক্ত মনে করেছিল, এই ভিত্তিতে যে তাদের বিচার থেকে যথাযথভাবে আশ্রয় দেওয়া উচিত।<ref>Laabidi, A and Nacir, R. (2021) Asylum Between Yesterday and Today, A Comparison Between Islamic Law and International Law. Review of International Geographical Education (RIGEO), 11(5), [tel:3602-3611 3602-3611]. doi: 10.48047/rigeo.11.05.246, page 3607.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮২৬ সালের ''ভিনগ্রহী নিবন্ধন আইন'' ব্রিটিশ সরকারকে রাজনৈতিক শরণার্থীদের বহিষ্কার করতে বাধা দেয়। এর ফলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যে একবার আশ্রয় দেওয়া হলে, একজন শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো যাবে না।<ref name=":732">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 114.</ref> একইভাবে, ১৮৩৩ সালে বেলজিয়ামের প্রত্যর্পণ আইনের (' ''Loi sur les extraditions'' ') ধারা ৬-এ জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ শরণার্থীদের ব্যতীত, কোনও রাজনৈতিক শরণার্থীর প্রত্যর্পণ না করার নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ল্যাটিন আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটি ১৮৮৯ সালের আন্তর্জাতিক দণ্ড আইন সংক্রান্ত কনভেনশন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক কনভেনশনের একটি সিরিজে একইভাবে কোড করা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আধুনিক কল্যাণ ব্যবস্থার উত্থানের সাথে সাথে আরও কঠোর অভিবাসন নীতি আরোপ করা শুরু হয়। থেরিওল্টের কালানুক্রমিকভাবে, রাজ্যগুলো তাদের জনসংখ্যার কল্যাণে আর্থিকভাবে আরও বেশি জড়িত হওয়ার সাথে সাথে, নতুন অভিবাসী এবং শরণার্থীদের অতিরিক্ত বোঝা নিয়ে তারা ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf?sequence=2> (Accessed July 10, 2021), page 18.</ref> অধিকন্তু, এই সময়ে বিশ্বব্যাপী গতিশীলতা বৃদ্ধির ফলে অভিবাসন সম্পর্কে জাতিগতভাবে প্রভাবিত উদ্বেগ আরও তীব্র হয়ে ওঠে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 34.</ref>
রাজ্যগুলো যে বাধাগুলো তৈরি করতে শুরু করেছিল তা ক্রমবর্ধমানভাবে তাদের উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল যাদের আজ শরণার্থী বলা হবে; কানাডার ক্রমবর্ধমান অভিবাসন বিধিনিষেধের ব্যতিক্রম সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিল তার কারণের ভিত্তিতে করা হতো না। জেমস হ্যাথওয়ে বলেছেন, "অভিবাসনের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং কানাডার উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদান রাখার সম্ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল"।<ref>Hathaway, James C., 1988. "Selective Concern: An Overview of Refugee Law in Canada", ''McGill Law Journal'' 33, no. 4: 676-715, at 679.</ref>
এত কিছুর পরেও শরণার্থী নীতিমালা না থাকা সত্ত্বেও সরকার মাঝে মাঝে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের প্রবেশ সহজ এবং সহজতর করার চেষ্টা করেছে।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 15.</ref> এই সময়কালে কানাডার সরকার বিশেষভাবে যাদের কানাডায় আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে, ঘটনাক্রমে, যথাযথভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
* ১৮৭০ এবং ১৮৮০-এর দশকে কানাডীয় সরকার মেনোনাইটদের পশ্চিম কানাডায় বসতি স্থাপনের জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। ইউক্রেনের স্কুলগুলোতে। সেখানে তারা বাস করত, সেখানে রুশীকরণ নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে এবং সর্বজনীন সৈন্য নিয়োগের মাধ্যমে নতুন বাড়ির সন্ধানে মেনোনাইটদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। এটি তাদের শান্তিবাদী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছিল।<ref name=":253">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> কানাডীয় সরকার তাদের কেবল সামরিক চাকরি থেকে মুক্তি দেয়নি, বরং আনুগত্যের শপথ গ্রহণের স্বাধীনতাও দেয়। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।<ref name=":252">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> মেনোনাইটরা ছিল প্রথম অ-ব্রিটিশ গোষ্ঠী যারা কানাডায় আসার জন্য কানাডীয় সরকারের কাছ থেকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 37.</ref> ১৮৭০-এর দশকে ৭৫০০ জন ম্যানিটোবাতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 45.</ref>
* ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের হত্যার পর রাশিয়া জুড়ে সহিংস গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং শত শত ইহুদিদের হত্যা করা হয়, অন্যদের পরিকল্পিতভাবে তাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং তাদের গ্রাম থেকে আদেশ দেওয়া হয়। এই সময়ে, লক্ষ লক্ষ রাশিয়ান আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে যায়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 99.</ref> তাদের মধ্যে শত শত পশ্চিম কানাডায় দলবদ্ধভাবে বসতি স্থাপনের সুযোগ গ্রহণ করেছে। ১৮৮২ সালে কানাডায় আগত ২০০ জনেরও বেশি রাশিয়ান ইহুদি শরণার্থীর প্রথম দলটি তাদের পুনর্বাসনের পথে "ভয়াবহ বাধা" হিসেবে ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন।<ref name=":523">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যখন ফেডারেল সরকার এবং ইহুদি সম্প্রদায় নতুন আগতদের জন্য উপযুক্ত জমিতে বসতি স্থাপন করে, তখন প্রতিবেশী মেনোনাইটরা ইহুদিদের পাশে বসবাসের আপত্তি জানালে পরিকল্পনাটি বাতিল করা হয়। অবশেষে, বেশ কয়েকটি বসতি সফল হয় এবং শতাব্দীর শুরুতে কানাডার ইহুদি জনসংখ্যা প্রায় ১৭,০০০ হয়ে যায়। এটি ১৮৮০ সালের তুলনায় প্রায় দশগুণ বেশি।<ref name=":522">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> এরপর ১৯০০ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত, আরও ১,৩৮,০০০ ইহুদি কানাডায় অভিবাসিত হন। তাদের অনেকেই জারবাদী রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে আরও গণহত্যা থেকে পালিয়ে শরণার্থী হন।<ref name=":163">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
* এই সময়ে রাশিয়া থেকেও নির্যাতিত ডুখোবোররা আসতে শুরু করে।<ref name=":162">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আদিবাসীরাও উত্তর দিকে অভিবাসিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৮৭৬ সালে বর্তমানে মন্টানা রাজ্যের লিটল বিগহর্নে যুদ্ধের পর সিটিং বুলের ডাকোটা (সিওক্স) বাহিনী আমেরিকান লেফটেন্যান্ট-কর্নেল জর্জ আর্মস্ট্রং কাস্টার এবং তার ২৬২ জন সৈন্যকে হত্যা করে। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হয়ে, সিটিং বুল শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেন, কিন্তু আমেরিকানদের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর অনেক সিওক্স সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায় প্রবেশ করতে শুরু করে, উড মাউন্টেনের কাছে, এসকে (তখন উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের অংশ)। ১৮৭৭ সালে নর্থ-ওয়েস্ট মাউন্টেড পুলিশ ইন্সপেক্টর জেমস মরো ওয়ালশ সিটিং বুলের সাথে দেখা করেন এবং কানাডীয় আইনের শান্তিপূর্ণভাবে মেনে চলার বিনিময়ে তাকে মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে সুরক্ষার আশ্বাস দেন। তবে অভ্যর্থনাটি অতিথিপরায়ণতার থেকে অনেক দূরে ছিল। কানাডীয় সরকার, ভীত ছিল যে প্রধানের উপস্থিতি আন্তঃউপজাতি যুদ্ধকে উস্কে দেবে এবং শ্বেতাঙ্গ বসতি স্থাপনের জন্য প্রেইরিগুলো পরিষ্কার করতে আগ্রহী, সিটিং বুলের তার লোকদের জন্য একটি রিজার্ভের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। খাদ্যের অভাব ধীরে ধীরে সিউক্সকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে বাধ্য করে এবং রেশনের আমেরিকান প্রতিশ্রুতি মেনে নেয়।
সময়ের সাথে সাথে, কানাডার অভিবাসন আইনের সংশোধনীগুলো দেশটির বৈষম্যমূলক নীতিগুলোকে আইনে স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করে। এই সংশোধনীগুলো এই সময়ে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে এই ধরনের বিধিনিষেধের উত্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। প্রকৃতপক্ষে ১৯৩০ সালের মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধের প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্র জাতিগত কারণে অভিবাসন সীমিত করার আইন পাস করেছিল। তবে সোমানি বলেছেন, কানাডার সীমান্তে বর্ণবাদকে বৈধতার প্রদর্শনের মাধ্যমে ঢেকে রাখা হয়েছিল। কানাডার প্রাথমিক রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য ছিল এই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং মূল্যবোধকে ব্রিটিশ মাতৃভূমির আদলে গড়ে তোলা। কানাডা তার অভিবাসন আইনে জাতিগত বিধিনিষেধ খুব বেশি প্রকাশ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে অনিচ্ছুক ছিল, পাছে এটি একটি সুসংহত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ধারণাকে ক্ষুণ্ন করে এবং জাপানিদের সাথে ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষুণ্ন করে, অথবা স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করে। উদাহরণস্বরূপ ভারতে। এই লক্ষ্যে, শ্রেণী, জাতি, লিঙ্গ এবং অক্ষমতার ভিত্তিতে ''কার্যত'' বৈষম্যমূলক কানাডীয় নীতিগুলো নিরপেক্ষ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছিল, যেমন মন্ত্রিসভাকে যেকোনো শ্রেণীর অভিবাসীকে বাদ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল যেখানে তারা মনে করেছিল যে এই ধরনের বর্জন "দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে"।
কানাডায় ব্যবহৃত নির্দিষ্ট বর্জনীয় ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* <u>ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজনীয়তা</u>: বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনেক রাজ্যের মতো কানাডাও কানাডায় ভ্রমণকারীদের পাসপোর্ট বহন করার একটি বাধ্যবাধকতা কার্যকর করেছিল। ক্যাপ্রিলিয়ান-চার্চিল লিখেছেন, পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা বহির্ভূতকরণের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে মনে হয়।<ref>Kaprielian-Churchill, I. (1994). Rejecting “Misfits:” Canada and the Nansen Passport. ''International Migration Review'', ''28''(2), 281–306. <nowiki>https://doi.org/10.1177/019791839402800203</nowiki> at page 282.</ref> উদাহরণস্বরূপ, এটি এশীয় অভিবাসীদের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল, যদিও অভিবাসীদের আরও পছন্দের শ্রেণীর জন্য এটি বাধ্যতামূলক ছিল না। আমি এই ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকর করার নির্দেশ দিচ্ছি, সরকার সেন্ট্রাল কানাডা জেলার কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত বরাবর ৩৭টি প্রবেশপথে একটি অভিবাসন পরিদর্শন পরিষেবা চালু করেছে। এটি টরন্টো, অন্টারিও থেকে প্রাগ, ম্যানিটোবা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 48.</ref>
* জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর সহ জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর: অভিবাসীদের এই গোষ্ঠীগুলোকে বেছে বেছে বাদ দেওয়ার জন্য চীনা মাথা কর ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":64">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> এটি প্রথমে ১৮৮৫ সালের চীনা অভিবাসন আইন দ্বারা আরোপ করা হয়েছিল। এটি জাতিগত উৎসের ভিত্তিতে অভিবাসীদের বাদ দেওয়ার জন্য কানাডীয় আইনের প্রথম অংশ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।<ref name=":664">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> চীনা অভিবাসীদের উপর মাথা কর ১৮৮৫ সালে $৫০ নির্ধারণ করা হয়েছিল, ১৯০০ সালে $১০০ করা হয়েছিল,<ref>''An Act respecting and restricting Chinese Immigration,'' SC 1900, c 32, s 6.</ref> এবং তারপর ১৯০৩ সালে $৫০০ করা হয়েছিল।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 144.</ref> বিপরীতে, অন্যান্য অভিবাসীদের জন্য দেশে প্রবেশের জন্য আদর্শ ভাড়া ছিল এক বছরের বেশি বয়সী প্রতি যাত্রীর জন্য এক ডলার।<ref>Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 297.</ref> সেই $৫০০ আজ প্রায় $১২,৯০০ হবে। এটি দুই বছরের বেতন থেকে সঞ্চয়ের সমতুল্য ছিল এবং বলা হয়েছিল যে মন্ট্রিলে দুটি বাড়ি কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল। ১৮৮৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে প্রায় ৯৭,০০০ চীনা নাগরিক কানাডায় আসার জন্য কর প্রদান করেছিলেন।<ref>David How, et. al., ''100 Years of Resilience: Reflections on the “Chinese Exclusion Act”'', The Advocate, Vol. 82 Part 1 January 2024, at page 20.</ref> পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন পূর্ববর্তী চীনা অভিবাসীদের উপর আরোপিত শুল্ক বাতিল করে দেয়,<ref name=":663">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> কিন্তু পরিবর্তে প্রায় সকল চীনা অভিবাসীর স্থায়ী বসতি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে। যদিও কূটনীতিক, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় কমপক্ষে $২,৫০০ বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী (এবং তাদের স্ত্রী),<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952): Lobbying, Humanitarianism, and Enlightened Self-Interest (Part 2),'' CIHS Bulletin, June 2021, Issue 97, <[https://docs.google.com/viewerng/viewer?url=http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf&hl=en_GB http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf]> (Accessed July 18, 2021), at page 16.</ref> কানাডায় জন্মগ্রহণকারী চীনা বংশোদ্ভূত ব্যক্তি<ref>''An Act respecting Chinese Immigration'', SC 1923, c 38, s 5.</ref> এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যতিক্রম করা হয়েছিল, এই আইনের পরের ২৩ বছরে মাত্র ১৫ জন চীনা অভিবাসী কানাডায় প্রবেশ করতে পেরেছিলেন।<ref name=":662">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> এটি ১৯৪৭ সালে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Laura Madokoro, ''Erasing Exclusion: Adrienne Clarkson and the Promise of the Refugee Experience'', Chapter 3 in Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 72.</ref>
* "কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত রেস" এর উপর বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ৩৮ (সি) ধারা গভর্নর-ইন-কাউন্সিলকে "নিষিদ্ধ ... কানাডায় অবতরণ... কানাডার জলবায়ু বা প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত যে কোনও জাতির অভিবাসীদের। কালো আমেরিকান অভিবাসীদের নিয়মিতভাবে কানাডার "জলবায়ুর জন্য অনুপযুক্ত" বলে বাদ দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী স্যার উইলফ্রিড লরিয়ারের মন্ত্রিসভা ১৯১১ সালে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের বাদ দিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেছে: "''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ এর উপধারা (সি) এর কারণে কাউন্সিলে মহামান্য আদেশ দিতে পেরে সন্তুষ্ট এবং এটি নিম্নরূপ আদেশ দেওয়া হয়েছে: ... কানাডায় অবতরণের তারিখ থেকে এবং তার পরে এক বছরের জন্য কানাডায় অবতরণ করা হবে এবং নিগ্রো জাতির অন্তর্গত যে কোনও অভিবাসীর জন্য এটি নিষিদ্ধ। এটি জাতি কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে মনে করা হয়।'' বলা হয়েছে, কাউন্সিলের আদেশটি সরকারিভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। স্ট্যাসিউলিস যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি পশ্চিম গোলার্ধে প্রথম স্পষ্টতই জাতিগত বর্জনীয় নীতি ছিল এবং এটি ওকলাহোমার ক্লু ক্লাক্স ক্লান থেকে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষ্ণাঙ্গ কৃষকদের প্রবেশ বন্ধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ (সি) কানাডীয় সরকার ১৯৬৭৬৭ সালে নতুন বিধিমালা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্যান-এশিয়ান অভিবাসনকে সীমাবদ্ধ করে এমন নীতিগুলো প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতেও ব্যবহার করবে।
* অভিবাসন প্রণোদনা এবং ঋণ প্রোগ্রামের উপর জাতিগত বিধিনিষেধ: ঋণ একটি প্রণোদনা প্রোগ্রাম, যেমন ১৯৫০ এর দশকের সহায়ক উত্তরণ ঋণ প্রকল্প। এরা কানাডায় তাদের নিজস্ব পরিবহন বহন করতে পারে না তাদের ঋণ প্রদান করে। ঋণ ইউরোপের লোকদের দেওয়া হয়েছিল। তবে আফ্রিকা বা এশিয়া থেকে নয়।
* কানাডায় পুনঃপ্রবেশে বিধিনিষেধ: ১৯২৩ সালের চীনা ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পরে, কানাডার মধ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যমান চীনা অভিবাসীদের সাধারণত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা কেবল একমুখী ভ্রমণের জন্য চীনে ফিরে আসতে পারে।
* জাতিগত ভিত্তিক অন্তরীণ: ইউক্রেনীয়দের অন্তরীণ করার জন্য এই অভিবাসীদের বাদ দেওয়া এবং নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর আগে কানাডার অনেক অংশের চায়নাটাউনে চীনা নাগরিকদের বসবাস সীমাবদ্ধ ছিল। জাপানি কানাডীয়রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের ইন্টার্নশিপের পরে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত উপকূলে ফিরে আসতে পারেনি।
* জাতিগত কারণে অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে অস্বীকার: ১৮৯৬ এবং ১৯১১ এর মধ্যে কানাডায় চলে আসা ১ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান অভিবাসীদের মধ্যে ১০০০ এরও কম আফ্রিকান আমেরিকান ছিলেন। ট্রেবিলকক এবং কেলি রিপোর্ট করেছেন যে আফ্রিকান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের দ্বারা প্রদর্শিত কানাডায় বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সীমিত আগ্রহ ছিল এবং কানাডীয় সরকার এ জাতীয় আগ্রহ গড়ে তোলার জন্য কিছুই করেনি। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে যখন বিভাগের কর্মকর্তা বা অভিবাসন এজেন্টরা কানাডায় অভিবাসন করতে ইচ্ছুক আফ্রিকান আমেরিকানদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, তখন সরকারী নীতি সীমাবদ্ধ ছিল। কখনও কখনও, অনুরোধগুলো কানাডীয় ইমিগ্রেশন এজেন্টদের দ্বারা উপেক্ষা করা হয়েছিল বা অনির্দিষ্টকালের জন্য 'ফাইলে' রাখা হয়েছিল।
* স্বাস্থ্য ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯০৬ সালে পাস হওয়া অভিবাসন আইন "উন্মাদ", "নির্বোধ" বা "মৃগীরোগী" হিসাবে নির্ণয় করা ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। মুখের নিরপেক্ষ আইনী বিধানগুলোও বৈষম্যমূলক উপায়ে নিযুক্ত করা হয়েছিল; উদাহরণস্বরূপ, ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের'' কোনও কিছুই বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নিষিদ্ধ করেনি, যে কোনও অভিবাসীকে আইনের চিকিত্সা বিধানের অধীনে স্বাস্থ্যগত কারণে কানাডায় প্রবেশাধিকার কার্যকরভাবে অস্বীকার করা যেতে পারে। ১৯১১ সালে সরকার আমেরিকান সীমান্তে অভিবাসন পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছিল যে সমস্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে চিকিত্সার কারণে ভর্তির জন্য অযোগ্য হিসাবে প্রত্যাখ্যান করতে। হ্যারল্ড ট্রপার যেমন নোট করেছেন, "কোনও আবেদন ছিল না।
* শ্রেণি ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৮৭৯ সালে "আদিবাসী ও দরিদ্রদের" কানাডায় অবতরণ নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আদেশ-ইন-কাউন্সিল পাস করা হয়েছিল যদি না তাদের বহনকারী জাহাজের মাস্টার অস্থায়ী সহায়তা সরবরাহ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় কাটাতে পর্যাপ্ত তহবিল জমা না দেয়। তারপরে, ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন ও অভিবাসীদের সম্মান জানিয়ে'' সংসদ "দরিদ্র" বা "নিঃস্ব" বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। সরকার ১৯১০ সালে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' সংশোধন করে অটোয়ার ইমিগ্রেশন সুপারিনটেনডেন্ট বা লন্ডনে কানাডার অভিবাসনের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট থেকে কানাডায় অভিবাসনের লিখিত কর্তৃত্ব না পাওয়া সমস্ত "দাতব্য মামলা" নিষিদ্ধ করে। ভ্যালেরি নোলস লিখেছেন, এই ধারাটি বিপুল সংখ্যক দরিদ্র ব্রিটিশ অভিবাসীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল যারা ব্রিটেনকে দরিদ্রদের থেকে মুক্তি দিতে এবং কানাডায় একটি নতুন সূচনা দেওয়ার জন্য আগ্রহী দাতব্য সংস্থার সহায়তায় কানাডায় এসেছিল।
* কানাডায় আসার পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে বিধিনিষেধ: বর্ণবাদী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করার জন্য ব্যক্তিরা যেভাবে কানাডায় এসেছিলেন সে সম্পর্কে কানাডা মুখের নিরপেক্ষ আইন ব্যবহার করেছিল। ১৮৮৫ সালের ''চীনা অভিবাসন আইন'' প্রতি পঞ্চাশ টন পণ্যসম্ভারের জন্য একটি জাহাজ বহন করতে পারে এমন চীনা ব্যক্তির সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে। সেখানে প্রতি দুই টন পণ্যসম্ভারের জন্য একজন ইউরোপীয়ের তুলনায়। পরে, ১৯০৬ সালের "অবিচ্ছিন্ন যাত্রা বিধিমালা" মন্ত্রীকে অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেয় যদি না তারা তাদের জন্ম বা নাগরিকত্বের দেশ থেকে কানাডায় আসে "দেশ ছাড়ার আগে কেনা টিকিটের মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের মাধ্যমে" (শব্দটি পরে কিছুটা সংশোধন করা হয়েছিল)। এই বিধিমালা ১৯১৪ সালে এসএস কোমাগাতা মারুতে ৩৭৬ জন যাত্রীর মধ্যে ২০ (বা ২৪) যাত্রী। তাদের বেশিরভাগই শিখ ছিল, বাদে সকলের অবতরণ নিষিদ্ধ করেছিল। নৌকাটিকে ভ্যাঙ্কুভারে ডক করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং দুই মাসের অচলাবস্থার পরে কোমাগাতা মারু ঘুরে প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যদিও এই হবু অভিবাসীরা শরণার্থী হিসাবে শুরু করেনি, এর ২৬ জন যাত্রী ভারতে পৌঁছানোর পরে ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশ দ্বারা নিহত হয়েছিল,[ যারা সন্দেহ করেছিল যে যাত্রীরা উত্তর আমেরিকা ভিত্তিক একটি গোষ্ঠীর সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল যা ভারতে ব্রিটিশ রাজকে উৎখাত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। এই অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের নিয়মটি জাতি নির্বিশেষে শরণার্থীদের জন্য বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। কারণ জন্মের দেশে বা কানাডায় টিকিট কেনার প্রয়োজনীয়তা, বেশিরভাগ শরণার্থীদের জন্য একটি অসম্ভব প্রয়োজনীয়তা। এরা সংজ্ঞা অনুসারে, কানাডায় যাত্রা শুরু করার জন্য তাদের দেশে ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করবে। তদুপরি, অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণ নিয়মের পিছনে সীমাবদ্ধ অভিপ্রায়টি ভারত ও কানাডার মধ্যে একমাত্র সরাসরি জাহাজ পরিষেবা, কানাডীয় প্যাসিফিক শিপিং লাইনের কলকাতা-ভ্যাঙ্কুভার পরিষেবা বন্ধ করার জন্য কানাডা সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা দ্বারা উদাহরণ দেওয়া হয়েছিল। পরে, ফেডারেল সরকার ১৯১৩ সালে পশ্চিমা সমুদ্রবন্দরগুলোতে "দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের" অবতরণ নিষিদ্ধ করতে আসবে; প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে কানাডায় কে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে তা বিবেচনা করে এই বিধিনিষেধের অনুমানযোগ্য জাতিগত প্রভাব ছিল। ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে আরেকটি কানাডীয় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় কর্তৃপক্ষ আফ্রিকান-আমেরিকান বসতি স্থাপনকারীদের সম্ভাব্য আগমন সম্পর্কে প্রেইরি বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল যাতে রেলওয়ে কর্মীদের আমেরিকা থেকে আগত কৃষ্ণাঙ্গদের কাছে ট্রেনের টিকিট বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে কানাডায় আবদ্ধ আফ্রিকান-আমেরিকানদের বসতি স্থাপনের হার হ্রাসের পরিবর্তে ট্রেন ভ্রমণের জন্য পুরো ভাড়া নেওয়া হয়।
* ধর্মীয় বিধিনিষেধ: ১৯১৯ সালে শুরু হওয়া তিন বছরের সময়কালে, ডৌখোবার্স, মেনোনাইটস এবং হুটেরাইটসকে কানাডায় প্রবেশ বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ প্রাসঙ্গিক অর্ডার-ইন-কাউন্সিলের কথায়, "তাদের অদ্ভুত রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার পদ্ধতি এবং সম্পত্তি ধরে রাখার পদ্ধতি এবং তাদের প্রবেশের পরে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সহজেই একীভূত হতে বা কানাডার নাগরিকত্বের দায়িত্ব ও দায়িত্ব গ্রহণ করতে তাদের সম্ভাব্য অক্ষমতার কারণে। কথিত আছে যে হুটেরাইটরা তাদের শান্তিবাদ এবং ফলস্বরূপ বিশ্বযুদ্ধে অস্ত্র বহন করতে অস্বীকার করার কারণে এই সময়ে কানাডায় বিশেষ অসন্তোষ জাগিয়ে তুলেছিল।
* লিঙ্গ ভিত্তিক নীতি: ১৯৩৮ সালে কানাডার পুরুষ বাসিন্দারা যারা তাদের উদ্দিষ্ট স্ত্রীদের সমর্থন করতে সক্ষম হয়েছিল তারা বাগদত্তাকে স্পনসর করতে সক্ষম হয়েছিল। কানাডার মহিলা বাসিন্দাদের স্বামী বা স্ত্রীকে স্পনসর করার মতো ক্ষমতা বাড়ানো হয়নি। কানাডার ১৯৪৭ সালের ''নাগরিকত্ব আইন'' কানাডীয় মহিলাদের যারা অ-কানাডীয়দের বিয়ে করেছিলেন তাদের নাগরিকত্ব বজায় রাখার অনুমতি দেয়। তবে এই মহিলারা বিদেশে জন্মগ্রহণকারী তাদের সন্তানদের কাছে তাদের কানাডীয় নাগরিকত্ব দিতে পারেননি, যেহেতু এই শিশুরা তাদের নাগরিকত্ব দায়ী পিতামাতা, তাদের বাবার কাছ থেকে পেয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল।
* রাজনৈতিক-মতামত ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট সংশোধন করা হয়েছিল যাতে নৈরাজ্যবাদী মতামত প্রকাশকারীদের বাদ দেওয়া এবং নির্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কানাডায় অস্থায়ী মর্যাদাপ্রাপ্তদের জন্য এই বিধিনিষেধমূলক নীতির ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, দেশের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথ নির্মাণের জন্য পনের হাজার চীনা পুরুষকে কানাডায় আনা হয়েছিল। তবে সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তার উপর ভিত্তি করে ব্যতিক্রম করা হতো না - প্রকৃতপক্ষে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত, কানাডা শরণার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিক পার্থক্য করত না।
== লীগ অফ নেশনস যুগ ==
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং রুশ বিপ্লবের পর থেকেই "শরণার্থী" শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। যদিও "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের, তবুও এই বিন্দু পর্যন্ত এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। ১৯২০-এর দশকে "শরণার্থী" শব্দটি আরও ঘন ঘন আবির্ভূত হতে শুরু করে এবং আশ্রয়, সুরক্ষা এবং আতিথেয়তার মতো দীর্ঘস্থায়ী "প্রতিযোগী শব্দ" "বিস্মৃতির অতলে" চলে যেতে শুরু করে। হ্যামলিন বর্ণনা করেছেন, শরণার্থী শব্দটি "এই সময়ের একটি ফসল ছিল।" এই বিষয়টি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বেগ বৃদ্ধির মধ্যে এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির আবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, লীগ অফ নেশনস-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯২১ সালে একটি শরণার্থী অফিস তৈরির অনুমোদন দেয় এবং ফ্রিডটজফ ন্যানসেনকে শরণার্থীদের জন্য প্রথম হাই কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করে। ১৯২২ সালে নানসেন রাশিয়ান শরণার্থীদের জন্য তথাকথিত 'নানসেন পাসপোর্ট' তৈরি করেন। এটি ছিল একটি আন্তর্জাতিক পরিচয়পত্র যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, রাশিয়ান বিপ্লব এবং তুরস্কে আর্মেনীয় গণহত্যার ঘটনাবলীর কারণে উচ্ছেদ হওয়া শরণার্থীদের চলাচল এবং পুনর্বাসনের সুবিধা প্রদান করে। এই প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কয়েক মিলিয়ন ইউরোপীয় শরণার্থীকে সুরক্ষা এবং সহায়তা পাওয়ার উপায় প্রদান করেছিল।<ref name=":31" /> এটি কে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের সূচনা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯২৫ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শরণার্থী পরিষেবা এই ন্যানসেন পাসপোর্টগুলো ইস্যু করার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পাঁচ বছর পর ন্যানসেনের মৃত্যুর পর লীগ অফ নেশনস হাই কমিশনারের পদ বাতিল করে এবং শরণার্থী কাজের এই মানবিক দিকটি ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজি বা সংক্ষেপে আন্তর্জাতিক শরণার্থী অফিসের উপর অর্পণ করে।
থেরিওল্ট বলেন যে প্রথমে সাধারণত ধরে নেওয়া হতো যে শরণার্থী সমস্যাটি অস্থায়ী এবং দেশগুলো স্বেচ্ছায় শরণার্থীদের তুলনামূলকভাবে উদার সুবিধা প্রদান করে। তবে ১৯২০-এর দশকের শেষের দিকে, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী প্রকৃতি স্বীকার করতে শুরু করে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে শরণার্থীদের একীভূত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনে পরিবর্তন আসে। কারণ রাশিয়ান এবং আর্মেনিয়ান শরণার্থীদের জন্য ন্যানসেন পাসপোর্ট প্রদানের বিষয়ে ১৯২২ এবং ১৯২৪ সালের ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বাধ্যবাধকতা আরোপকারী চুক্তিগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত করার প্রচেষ্টা সীমিত রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সাথে মিলিত হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোর কোনওটিতেই স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। কানাডীয় সরকার ন্যানসেন পাসপোর্টকে স্বীকৃতি দিতে দৃঢ়ভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এই ভিত্তিতে যে কানাডা কেবল তখনই এই ধরনের পাসপোর্টধারীদের গ্রহণ করবে যদি তারা অপরাধী বা পাগল হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দেশে ফেরত পাঠানোর যোগ্য হয়। এটি ক্যাপ্রিয়েলিয়ান-চার্চিল শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করার একটি ধোঁয়াশা এবং উপায় হিসাবে বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য দেশগুলো যখন কানাডার প্রত্যাবাসনযোগ্যতার দাবি পূরণের জন্য প্রচেষ্টা করেছিল, তখনও কানাডীয় কর্মকর্তারা শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করতে থাকে, প্রত্যাখ্যানের অন্যান্য কারণ খুঁজে বের করে। ১৯৩১ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা গর্বের সাথে বলেছিলেন যে লীগ অফ নেশনস-এর ন্যানসেন পাসপোর্টে কানাডায় মাত্র "এক ডজন শরণার্থী" প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
ন্যানসেন পাসপোর্টের ভিত্তি স্থাপনকারী চুক্তিগুলো চুক্তি আইনের মর্যাদার অভাবের বিষয়টি মোকাবেলা করার জন্য, লীগ অফ নেশনস ১৯৩৩ সালে ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত একটি কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করে। ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কানাডা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল, অর্থাৎ তার আগে "কানাডীয় পররাষ্ট্র নীতি" বলে কিছু ছিল না। কারণ ব্রিটেন তার উপনিবেশগুলোকে লন্ডনের অনুমোদন ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর, জোট গঠন বা অন্য দেশের সাথে প্রায় কোনও অর্থপূর্ণভাবে যোগাযোগের অনুমতি দিত না। ১৯৩১ সালে যুক্তরাজ্য ওয়েস্টমিনস্টারের সংবিধি পাস করে যার ফলে তার স্ব-শাসিত শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশগুলোকে তাদের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি পছন্দ করার অধিকার দেওয়া হয়। তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ, দুই বছর পর কানাডা ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দেয়নি, অথবা পরবর্তী চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেনি। তা সত্ত্বেও এই কনভেনশনটিকে শরণার্থীদের সুরক্ষার জন্য একটি ব্যাপক আইনি কাঠামো তৈরির প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে স্মরণ করা হয় এবং যে সময়ে আন্তর্জাতিক আইনে ''অ-প্রত্যাবাসনের'' নীতিটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সংখ্যালঘুদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলো লীগ অফ নেশনস গ্রহণ করেছিল। এটি অতীতের দিকে তাকালে বলা হয় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শরণার্থী শাসনের একটি স্পষ্ট উৎস ছিল।
এই সময়ের মধ্যে আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়া প্রধান শরণার্থী গোষ্ঠীগুলোর দিকে তাকালে কানাডার শরণার্থীদের গ্রহণের ইচ্ছার উপর তীব্র সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ইরভিং অ্যাবেলা এবং পেত্রা মোলনার লিখেছেন, বিদেশীদের প্রতি ঘৃণা এবং ইহুদি-বিদ্বেষ কানাডায় ছড়িয়ে পড়েছিল এবং "[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে] শরণার্থীদের ভর্তির পক্ষে জনসমর্থন খুব কম ছিল এবং এর বিরোধিতাও অনেক বেশি ছিল"। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩০-এর দশকে কানাডা ইউরোপীয় ইহুদিদের প্রবেশাধিকার সীমিত করে যারা ইহুদি-বিদ্বেষ এবং জার্মানিতে ফ্যাসিবাদের উত্থান থেকে নিরাপদ আশ্রয় চেয়েছিল, কিন্তু চেকোস্লোভাকিয়া থেকে আশ্রয়ের সন্ধানে সুডেটেন জার্মানদের স্বাগত জানায় কারণ তাদের আরও "আকাঙ্ক্ষিত" অভিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হত। আর্মেনিয়ান শরণার্থীরাও কানাডার বর্জনীয় নীতির শিকার হয়েছিল। ১৯১৫ সালে অটোমান সাম্রাজ্য তার আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর গণহত্যা, স্থানান্তর এবং নির্বাসন শুরু করে। এতে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং অর্ধ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যেখানে ৮০,০০০ আর্মেনীয় শরণার্থী ফ্রান্সে এবং ২৩,০০০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাবে, সেখানে ১,৩০০ জনেরও কমকে কানাডায় ভর্তি করা হয়েছিল।
কানাডা তার সীমাবদ্ধ পুনর্বাসন নীতিগুলোকে ন্যায্যতা দিয়েছে শরণার্থী সুরক্ষার জন্য কারা যোগ্য তার একটি সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করে (যতদূর পর্যন্ত তারা শ্রেণীবিভাগ নিয়ে আলোচনা করেছে)। উদাহরণস্বরূপ, যখন কানাডার ইহুদি সংগঠনগুলো ইউরোপে বাস্তুচ্যুত ইহুদি শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কানাডীয় সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল, তখন সরকার দ্বিধা প্রকাশ করে দাবি করে, যেহেতু অনেকেই কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে রাশিয়া ছেড়ে চলে গেছেন, তাই তাদের শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। কে আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য সেই ধারণাটি সম্প্রসারণের প্রচেষ্টাকেও কানাডা সমর্থন করেনি। ১৯৩৮ সালে মার্কিন সরকার ইউরোপের ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পরিস্থিতির বিষয়ে একটি সম্মেলনের জন্য ৩০টি দেশকে একত্রিত করে। কানাডা অংশগ্রহণে অনিচ্ছুক ছিল, ফ্রান্সের ইভিয়ান অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মার্কিন আমন্ত্রণ গ্রহণ করার আগে কয়েক মাস অপেক্ষা করেছিল। ভ্যালেরি নোলস ১৯৩৮ সালের গ্রীষ্মকালীন সম্মেলনে কানাডার অংশগ্রহণকে "ন্যূনতম" বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে কানাডার জন্য স্বস্তির বিষয় ছিল যে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কেবল উচ্চ নীতির একটি বিবৃতি তৈরি করতে পেরেছিলেন যা আসলে আরও উদার অভিবাসন নীতির প্রয়োজন ছিল না। এই বছর ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজিজ বা আইআরও-এর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, মূলত ইউএসএসআর-এর অবস্থানের কারণে। প্রায় ৬০০,০০০ শরণার্থী এখনও অফিসের সুরক্ষার অধীনে থাকা সত্ত্বেও। তা সত্ত্বেও শরণার্থীদের জন্য লীগ অফ নেশনস-এর হাই কমিশনারের পৃথক অফিস ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কাজ করে চলেছিল। সেই বছর প্রতিষ্ঠিত আন্তঃসরকার শরণার্থী কমিটি (ICR)। এটি জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া থেকে আসা ইহুদিদের সহায়তা করার জন্য নির্ধারিত হয়েছিল, কানাডার জড়িততা ছাড়াই পরিচালিত হয়েছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 9.</ref> তা সত্ত্বেও ইভিয়ানের উত্তরাধিকারের একটি দিক হলো এটি কে হ্যাথাওয়ে "শরণার্থী আইনের ব্যক্তিকরণ" বলে অভিহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখা হয়। কারণ যখন আইসিআর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছিল যা প্রথমবারের মতো কেন মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। এটি ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনকে প্রভাবিত করবে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, pages 39-40.</ref>
কানাডা তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ''রিফুলমেন্টের'' ধারণাটিকেও উপেক্ষা করেছে বলে মনে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কমিউনিস্টদের বহিষ্কারের উৎসাহে, কানাডা তাদের নিজ দেশে নির্যাতিত ব্যক্তিদের বহিষ্কার করেছিল। কানাডা থেকে জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানোর পর হান্স কিস্ট নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান বলে জানা গেছে। কেলি এবং ট্রেবিলকক লিখেছেন যে ইতালি, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার মতো ফ্যাসিবাদী দেশগুলোতে পাঠানো অনেক কর্মীও ফিরে আসার সময় তাদের জীবন হারানোর ঝুঁকিতে ছিলেন।<ref name=":532">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 248.</ref>
তবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত কিছু মানুষ এই সময়ে কানাডার নিয়মিত অভিবাসন প্রবাহের মাধ্যমে কানাডায় চলে এসেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ১৯৩২ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশকারী বেশিরভাগ অভিবাসীই শরণার্থী ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯২৩ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে প্রায় ২০,০০০ মেনোনাইটকে কানাডায় বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কেলি এবং ট্রেবিলকক যখন ইতিহাস বর্ণনা করেছিলেন, তখন রাশিয়া থেকে জার্মান-ভাষী মেনোনাইট শরণার্থীরা রাশিয়ান বিপ্লবের পর যে কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছিলেন তা থেকে বাঁচতে কানাডায় এসেছিলেন। বিপ্লবের সময় অস্ত্র হাতে নিতে তাদের অস্বীকৃতি সংঘাতের উভয় পক্ষকে বিচ্ছিন্ন ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল এবং মেনোনাইটরা ক্রমশ নৃশংস আক্রমণ এবং ভয় দেখানোর শিকার হতে থাকে। এটি গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও অব্যাহত ছিল। ১৯২০-এর দশক জুড়ে, জমি দখল, তাদের ধর্মের প্রতি সরকারী অসহিষ্ণুতা এবং সাইবেরিয়ায় জোরপূর্বক স্থানান্তরের হুমকি হাজার হাজার মানুষকে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে প্ররোচিত করেছিল।
== দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শরণার্থী নীতি ==
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জুড়ে কানাডার শরণার্থী নীতি ইহুদি-বিদ্বেষ এবং বিদেশীদের প্রতি বিদ্বেষের দ্বারা চিহ্নিত ছিল। অনেক পছন্দের জাতিগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের, বিশেষ করে ব্রিটিশদের, আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যদের তা দেওয়া হয়নি।
যুদ্ধের শুরুতে কানাডা বিদেশে বিপদগ্রস্ত ব্রিটিশ শিশুদের ভর্তির অনুমতি দিতে শুরু করে। সরকার ৫,০০০ ব্রিটিশ শিশু এবং তাদের মায়েদের ভর্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং ৪,৫০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ শিশু এবং ১,০০০ মা কানাডায় এসেছেন। ১৯৪০ সালে কানাডায় শিশুদের বহনকারী দুটি জাহাজ টর্পেডোতে ধ্বস নামানোর পর এই আন্দোলন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 269.</ref>
অ-ব্রিটিশ ব্যক্তিদের প্রবেশের সুবিধা একইভাবে দেওয়া হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী নীতিতে ইহুদি-বিদ্বেষের একটি দৃশ্যমান প্রকাশ ছিল ১৯৩৯ সালে নাৎসি জার্মানি থেকে আশ্রয় প্রার্থনাকারী এসএস সেন্ট লুইসে ৯৩০ জন ইহুদি শরণার্থীকে প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত। এর বদলে এই শরণার্থীদের জার্মানিতে তাদের জন্য অপেক্ষা করা জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধের শেষের দিকে, ১৯৪৩ সালে কানাডা যখন ঘোষণা করে যে তারা আইবেরিয়ান উপদ্বীপে আসা কিছু ইহুদি শরণার্থীকে ভর্তি করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন বলা হয় যে এটি "শরণার্থী-বিরোধী স্বার্থের প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল"। কুইবেকের বিরোধীদলীয় নেতা মরিস ডুপ্লেসিস সমাবেশ করে অভিযোগ করেন যে প্রাদেশিক এবং ফেডারেল উদারপন্থীরা নির্বাচনী অর্থায়নের বিনিময়ে "আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্রাদারহুড" কে কুইবেকে ১০০,০০০ ইহুদি শরণার্থী বসতি স্থাপনের অনুমতি দিতে প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা ৫,০০০ এরও কম ইহুদি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়, যাকে ট্রেবিলকক এবং কেলি ইউরোপের নির্যাতিত ইহুদিদের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে যেকোনো গণতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড বলে অভিহিত করেন। এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৪০,০০০, ব্রিটেন ৮৫,০০০, চীন ২৫,০০০, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ২৫,০০০ এর বেশি অনুমতি দিয়েছে এবং মেক্সিকো এবং কলম্বিয়া তাদের মধ্যে প্রায় ৪০,০০০ পেয়েছে। যখন একজন কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে যুদ্ধের পরে দেশটি কতজন ইহুদিকে গ্রহণ করবে, তখন তাদের বিখ্যাত উত্তর ছিল, "কেউই খুব বেশি নয়।"<ref>Marlene Epp, “Refugees in Canada: A Brief History,” Immigration And Ethnicity In Canada 35 (2017), <https://cha-shc.ca/_uploads/5c374fb005cf0.pdf> (Accessed May 9, 2020), at 8 and Noakes, Taylor. "None Is Too Many". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 July 2022, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/none-is-too-many. Accessed 25 February 2024.</ref>
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় "শত্রু এলিয়েন" হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার এবং সীমাবদ্ধ করার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কানাডা গণ-বন্দী নীতি প্রণয়ন করে যার ফলে তথাকথিত জার্মান শত্রু বিদেশীদের - নাৎসি সহানুভূতিশীল এবং ইহুদি শরণার্থীদের - ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। যুদ্ধ ব্যবস্থা আইনের অধীনে প্রবিধানগুলো জাপানি অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল, জাপানি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিকদের নির্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল, এবং জাপানি ব্যক্তিদের অন্তরীণ করে রেখেছিল। ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের ১০০ মাইল এলাকা থেকে প্রায় ২২,০০০ জাপানি কানাডীয়কে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়। বেশিরভাগকেই ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অভ্যন্তরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, প্রায়ই বিচ্ছিন্ন ভূতের শহরে আটক শিবিরে। যুদ্ধের শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাপানি কানাডীয়দের এই আটক শিবিরগুলোতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারপর শত্রুতা শেষ হওয়ার পর প্রায় ৪,০০০ জন চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করবে এবং ফেডারেল সরকারের "প্রত্যাবাসন" প্রকল্পের অধীনে কানাডা ছেড়ে জাপানে যাবে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কানাডীয় বংশোদ্ভূত এবং দুই-তৃতীয়াংশ কানাডীয় নাগরিক ছিলেন।
যুদ্ধের সময়, ব্রিটিশ সরকার ২,৫০০ "শত্রু এলিয়েন" কানাডায় পরিবহন করেছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এরা ছিল জার্মান এবং অস্ট্রিয়ান নাগরিক। তাদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত ইহুদি। এরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় গ্রেট ব্রিটেনে বসবাস করছিলেন। ভ্যালেরি নোলস কানাডায় তাদের অভ্যর্থনার বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন:<blockquote>কানাডীয় সরকার এই পুরুষ বেসামরিক বন্দীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছিল এই বিশ্বাসে যে এটি "সম্ভাব্য বিপজ্জনক শত্রু এলিয়েনদের" হেফাজত গ্রহণ করে কঠিন চাপে থাকা ব্রিটেনকে সহায়তা করবে। তাই কানাডীয় কর্তৃপক্ষ কিশোর ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, পুরোহিত এবং রাব্বিদের একটি বিশাল দলকে কুইবেকে তীরে পা রাখতে দেখে অবাক হয়ে গেল। তবে তাদের সন্দেহ সত্ত্বেও কানাডীয়রা সকলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগারের মতো শিবিরে রাখতে এগিয়ে যায়। এবং এখানেই বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ত্ববিদ, সঙ্গীতজ্ঞ, শিক্ষক, শিল্পী এবং লেখক সহ অন্যান্যদের আগামী মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে বাধ্য করা হবে। </blockquote>নোলস উল্লেখ করেছেন, সৌভাগ্যবশত এই বন্দীদের জন্য, ব্রিটিশ সরকার শীঘ্রই বুঝতে পেরেছিল যে তারা অনেক অন্তরীণদের প্রতি সম্ভবত গুরুতর অবিচার করেছে এবং তাদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ১৯৪৫ সালে কানাডা এই এককালীন বন্দীদের "যুক্তরাজ্য থেকে আন্তঃদেশীয় শরণার্থী (বন্ধুত্বপূর্ণ এলিয়েন)" হিসাবে পুনর্বিবেচনা করে এবং তাদের কানাডার নাগরিক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ৯৭২ তাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা সীমিত সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু এই সময়ে অন্যান্য দেশে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি ছিল: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী ১৭৫ মিলিয়ন মানুষ - বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ - বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী পরিবেশে তাদের কীভাবে সাড়া দেওয়া যায় তা মিত্রশক্তির ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।
== জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রশাসন (UNRRA) এবং আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা (IRO) ==
১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি সামনে আসার সাথে সাথে, মিত্রশক্তিগুলো যুদ্ধোত্তর শরণার্থী শাসনের ভিত্তি স্থাপন শুরু করে। সেই বছর, তারা ইউরোপের মুক্তির প্রস্তুতির জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংস্থা (UNRRA) প্রতিষ্ঠা করে। যুদ্ধের ফলে শুধুমাত্র ইউরোপেই কমপক্ষে ১ কোটি। সম্ভবত ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি রাষ্ট্রহীন ব্যক্তির শরণার্থী সংকট তৈরি হয়েছিল। যুদ্ধের শেষে, ইউরোপে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দশ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি এবং শরণার্থী ছিল। এই লোকদের মধ্যে কিছু ছিল কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা, অন্যরা ছিল এমন ব্যক্তি যাদের জার্মানি এবং অস্ট্রিয়ার শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। আরও কিছু ছিল যারা কমিউনিস্ট শাসনে প্রত্যাবাসন করতে অস্বীকার করেছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 157.</ref> কানাডা UNRRA-কে তহবিল প্রদান করে। এটি ইউরোপে ৮০০ টিরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবির পরিচালনা করে;<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952),'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 8.</ref> তীব্র বিশ্বব্যাপী ঘাটতির সময়ে প্রায় $৪ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য, খাদ্য, ওষুধ এবং সরঞ্জাম বিতরণ করে; এবং ১৯৪৫-৪৬ সালে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের তাদের নিজ দেশে ইউরোপে প্রত্যাবাসনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 155.</ref>
UNRRA-এর কার্যক্রম তৎক্ষণাৎ শীতল যুদ্ধের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সংগঠনটি বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের মুখোমুখি হয়েছিল যারা কমিউনিস্ট দলগুলো দৃঢ়ভাবে দখল করে থাকা দেশগুলোতে ফিরে যেতে অনিচ্ছুক ছিল। অনেক পোলিশ, ইউক্রেনীয় এবং বাল্টিক ব্যক্তি এইভাবে শিবিরে বসবাস করছিলেন, তাদের নাগরিকত্বের দেশের পরিবর্তে একটি অ-কমিউনিস্ট দেশে পাঠানোর অনুরোধ করছিলেন। সোভিয়েত কর্মকর্তারা এই ধরনের দাবি মেনে নেওয়ার যে কোনও ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপত্তি জানান। যদিও UNRRA এই মুহূর্তে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দেশে ফিরিয়ে দিচ্ছিল - সম্ভবত প্রায় ২০ লক্ষ - এটি ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠছিল। যাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল তাদের অনেকেই স্ট্যালিনের রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার ভয়ে ভীত ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং/অথবা শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা সরকারগুলো UNRRA-কে অর্থায়ন বন্ধ করার এবং পুনর্বাসন কাজ পরিচালনার কাজ UNRRA থেকে একটি নতুন সত্তা, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। UNRRA-এর বিপরীতে, IRO-এর কোনও সোভিয়েত অংশগ্রহণ ছিল না এবং এর প্রধান কাজ ছিল প্রত্যাবাসন নয়, বরং শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের বিদেশে পুনর্বাসন করা। আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার ১৯৪৬ সালের সংবিধানে অক্ষশক্তি দেশগুলোর সাথে সহযোগিতাকারী, প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধকারী বা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সুরক্ষা অস্বীকার করে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটি কিছুটা স্পষ্ট করা হয়েছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
শাওনা ল্যাবম্যান লিখেছেন, এই মুহূর্তে শরণার্থী আইন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোযোগ একজন ব্যক্তির বাড়ি ফিরে যেতে ''অক্ষমতা'' থেকে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে ''অনিচ্ছার'' দিকে সরে যায়। অতীতের দিকে তাকালে, কমিউনিস্ট দেশগুলোতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি আছে এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ার এই পদক্ষেপ শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিরাট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে। পূর্বে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শরণার্থী গোষ্ঠী, যেমন রাশিয়ান বা জার্মান শরণার্থীদের সাথে কাজ করত। গিল লোয়েশারের ভাষায়, সরকারগুলো কখনও 'শরণার্থী' শব্দটির একটি সাধারণ সংজ্ঞা প্রণয়নের চেষ্টা করেনি। তাই, প্রথমবারের মতো, আইআরও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শরণার্থী যোগ্যতাকে গোষ্ঠী সদস্যতার পরিবর্তে ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল করে তুলছিল এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে নিরাপদ দেশে পালিয়ে যাওয়ার ব্যক্তির অধিকারকে মেনে নিয়েছিল। অ্যালান ন্যাশ তৎকালীন রাজনীতির মধ্যে এটি স্থাপন করেছেন, উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমারা প্রত্যাবাসন প্রত্যাখ্যানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছিল ''অ-প্রত্যাবাসন'' নীতি বিকাশের মাধ্যমে। এটি পূর্বে পূর্ববর্তী শরণার্থী চুক্তিগুলোতে খুব কমই ছিল, শরণার্থীদের পরিচালনার জন্য এমন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে যা তাদের নিজস্ব দেশের মতাদর্শের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অক্ষম বা অনিচ্ছুকদের জন্য ত্রাণ প্রদান করে এবং যাদের জন্য সেখানে অব্যাহত বসবাস অসহনীয় ছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
তার কার্যভার অর্জনের জন্য, IRO-এর নিজস্ব বিশেষায়িত কর্মী, ৪০ টিরও বেশি জাহাজের একটি বহর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, উন্নত বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা ছিল। এই IRO পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হওয়ার সাথে সাথে, পূর্ব ইউরোপে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা সামান্য হ্রাস পেয়েছে এবং IRO এমন কার্যক্রম শুরু করেছে যা ১০ লক্ষেরও বেশি ইউরোপীয়কে আমেরিকা, ইসরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওশেনিয়ায় স্থানান্তরিত করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কানাডার সরকার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার মানবিক দায়িত্ব পালনের জন্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ পেতে শুরু করে। ১৯৪৬ সালে কানাডীয় সরকার একটি আদেশ-কাউন্সিল স্বাক্ষর করে যা কানাডীয়দের ইউরোপে বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অনুমতি দেয়। ১৯৪৭ সালে কানাডা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা থেকে শরণার্থীদের রেফারেল গ্রহণ শুরু করে। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে কানাডা বিদেশে নিজস্ব অভিবাসন কর্মকর্তাদেরও মোতায়েন করেছে। সম্মিলিতভাবে, এই আগমনকারীদের মধ্যে ছিল বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আন্দোলন। এটি ছয় বছরের মধ্যে ১৮৬,১৫৪ জনকে কানাডায় সফলভাবে পুনর্বাসিত করেছে।<ref name=":5" /> এর মধ্যে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ১০০,০০০ জন কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন, যাকে বলা হতো শ্রম-স্পন্সরিত আন্দোলনের মাধ্যমে। সেখানে একজন নিয়োগকর্তা সরকারকে দেখাতে পারতেন যে স্থানীয়ভাবে কোনও চাকরি পূরণ করা সম্ভব নয় এবং সরকার প্রতি প্রয়োজনীয় শ্রমিকের জন্য উপলব্ধ শরণার্থীদের মধ্য থেকে দুই বা তিনজন সম্ভাব্য অভিবাসীকে IRO-তে পাঠাতে পারত। আইআরও-এর সাড়ে চার বছরের কার্যক্রমের সময়, কানাডা সংস্থা কর্তৃক পুনর্বাসিত সমস্ত শরণার্থীর ১২% গ্রহণ করবে। সেখানে অস্ট্রেলিয়া ১৮%, ইসরায়েল ১৩% এবং ব্রিটেন ৮% গ্রহণ করবে। এই সময়ে ব্যবহৃত পরিভাষাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়: কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটিকে শরণার্থীর সাথে তুলনা করা হত। কারণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা ছিলেন যুদ্ধের পরে তাদের জাতীয়তার দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। সেখানে শরণার্থীরা ছিলেন না; কখনও কখনও 'শরণার্থী' এবং 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি সমার্থক হিসাবে ব্যবহৃত হত; এবং কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি ব্যবহার করা হতো যাকে আমরা এখন 'অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' হিসাবে ভাবি, 'শরণার্থীদের' বিপরীতে যারা তাদের নিজ রাজ্য থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে এসেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 135.</ref>
১৯৪৭ সালের ১ মে যুদ্ধে বেঁচে যাওয়াদের কানাডায় স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরকারের ইচ্ছার কথা ঘোষণা করার সময়, প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং সরকারের অবস্থান এইভাবে স্পষ্ট করেছিলেন: "কানাডায় প্রবেশ করা কোনও বিদেশীর 'মৌলিক মানবাধিকার' নয়। এটি একটি বিশেষাধিকার। এটি অভ্যন্তরীণ নীতির বিষয়। অভিবাসন কানাডার সংসদের নিয়ন্ত্রণাধীন।" বিপরীতে এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই ভাষণকে তৎকালীন নতুন জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত মানবাধিকারের ধারণাকে কানাডার স্বীকৃতি দেওয়ার সূচনা হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘ সনদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, ম্যাকেঞ্জি কিং ঘোষণা করেছিলেন যে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন বাতিল করা হবে এবং কানাডার চীনা বাসিন্দারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে, এই সময়ে কানাডা মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনায় জড়িত ছিল। এটি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হবে এবং স্বীকৃতি দেবে যে "প্রত্যেকেরই নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে অন্য দেশে আশ্রয় চাওয়ার এবং উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।" মানবাধিকারের বক্তৃতার প্রতি এই ক্রমবর্ধমান সহনশীলতা সত্ত্বেও কিং-এর বাস্তব-রাজনীতি কানাডার কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয়েছিল: যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কানাডা যে দশ হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল তাদের "সাবধানে নির্বাচিত করা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই যদি অভিবাসী হিসেবে আবেদন করত তবে আমাদের মান পূরণ করত", একজন সমসাময়িক লেখকের মতে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 34.</ref> অধিকন্তু, এটা যুক্তিযুক্ত যে যুদ্ধ-পরবর্তী দশকগুলোতে হলোকাস্ট শরণার্থী নীতির উপর আশ্চর্যজনকভাবে খুব কম প্রভাব ফেলেছিল, বিশেষ করে কানাডার কর্মকাণ্ডের উপর ঠান্ডা যুদ্ধের ক্ষমতার রাজনীতির প্রভাবের তুলনায়।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 21.</ref>
১৯৪৭ সালে কানাডীয় নাগরিকত্বের ধারণার জন্ম হয়, সেই জানুয়ারিতে ''কানাডীয় নাগরিকত্ব আইন'' কার্যকর হয় ''।'' নাগরিকত্ব আইনের আগে, এই দেশের মানুষ ব্রিটিশ প্রজা ছিল। নতুন আইন "ব্রিটিশ প্রজা" শ্রেণীবিভাগ বাদ দেয় এবং "জাতীয়তা" এবং "নাগরিকত্ব" এর পূর্ব-বিদ্যমান আইনি ধারণাগুলোকে "কানাডীয় নাগরিক" এর একক মর্যাদায় একীভূত করে। এর মাধ্যমে কানাডীয়দের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতীক তৈরি করার চেষ্টা করে।
== ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠা, শরণার্থী কনভেনশনের আলোচনা এবং ক্রমবর্ধমান শরণার্থী গ্রহণ ==
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার একটি সময়-সীমিত ম্যান্ডেট ছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধারণা ছিল যে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা যুদ্ধের সৃষ্টি, তাই যুদ্ধের অবসান মানে এই ধরনের ব্যক্তিদের অস্তিত্বের অবসান।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 129.</ref> তবে ১৯৫০ সালের জুনে আইআরও-এর সমাপ্তির তারিখ যত ঘনিয়ে আসতে থাকে, ইউরোপে শরণার্থীদের আগমন অব্যাহত থাকে। প্রকৃতপক্ষে তারা পূর্ব ব্লক থেকে পশ্চিম ইউরোপীয় সীমান্ত পেরিয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে আসছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 10.</ref> ফলস্বরূপ, ১৯৪৯ সালের ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (UNHCR) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়।<ref name=":613">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এক বছর পর ১৯৫০ সালের ১৪ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ''জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সংবিধি'' পাস হয়। এটি শরণার্থী এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান এবং তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন, স্থানীয় আত্তীকরণ বা তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য UNHCR-এর আদেশকে সংজ্ঞায়িত করে।<ref>Mark Rook, ''Identifying Better Refugee Policies for an Evolving Crisis'', April 21, 2020, University of Pennsylvania Honors Thesis, <https://repository.upenn.edu/cgi/viewcontent.cgi?article=1037&context=ppe_honors> (Accessed May 9, 2020), page 6.</ref> UNHCR ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী ৯৯ জন কর্মী এবং ৩০০,০০০ ডলার বাজেট নিয়ে তার কাজ শুরু করে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 79.</ref> এটি একটি মানবিক আদেশ এবং সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক চরিত্রের ছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 5.</ref> সেই সময়ে, আইআরও তার কার্যক্রমের একটি বর্ধিত পরিসমাপ্তিতে নিযুক্ত ছিল। এটি এটি ১৯৫২ সালে সম্পন্ন করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref> UNHCR-কেও অস্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বাস্তুচ্যুত ইউরোপীয়দের চাহিদা পূরণের জন্য সংস্থাটিকে ৩ বছরের ম্যান্ডেট দিয়েছিল।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref>
একই সময়ে, আধুনিক শরণার্থী সুরক্ষার জন্য ভিত্তি চুক্তি, ১৯৫১ সালের ''জাতিসংঘের শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'', কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর অধ্যয়ন' শুরু হওয়ার মাধ্যমে<ref>Terje Einarsen, ‘Drafting History of the 1951 Convention and the 1967 Protocol’ in Andreas Zimmermann (ed), ''The 1951 Convention relating to the Status of Refugees and Its 1967 Protocol: A Commentary'' (OUP 2011).</ref> কনভেনশনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়।<ref name=":572">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> শরণার্থী কনভেনশনের খসড়া প্রণয়নের প্রথম দফার আলোচনা শুরু হয় ''রাষ্ট্রহীনতা এবং সম্পর্কিত সমস্যা সম্পর্কিত অ্যাডহক কমিটি নামে''। এটি ৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়েছিল। প্রাসঙ্গিক ECOSOC রেজোলিউশনের ভাষায়, ''অ্যাডহক'' কমিটিতে এই বিষয়ে 'বিশেষ দক্ষতা' সম্পন্ন সরকারি প্রতিনিধিদের একটি ছোট বৃত্ত থাকবে বলে জানা গেছে। মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর গবেষণা'-এ প্রদত্ত সুপারিশগুলো বিবেচনা এবং কার্যকর করার জন্য এটি কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।<ref name=":57">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> এই আলোচনার সময় ঠান্ডা যুদ্ধের রাজনীতি অনুভূত হয়েছিল মূলত পূর্ব ব্লকের দেশগুলোর অনুপস্থিতির মাধ্যমে - ইউএসএসআর এবং পোল্যান্ড প্রথমে 'ওয়াক আউট' করে এবং তারপর (জাতীয়তাবাদী) চীনের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ''অ্যাডহক'' কমিটি বয়কট করে। কানাডীয় লেসলি চান্সের সভাপতিত্বে কমিটি ১৯৫০ সালের ১৬ জানুয়ারী থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক করে এবং একটি শরণার্থী কনভেনশনের প্রথম খসড়া প্রস্তুত করে।<ref>Molloy, M. J., & Madokoro, L. (2017). Effecting Change: Civil Servants and Refugee Policy in 1970s Canada. ''Refuge: Canada’s Journal on Refugees'', ''33''(1), 52–61. https://doi.org/10.25071/1920-7336.40448, page 53.</ref>
এরপর ''অ্যাডহক'' কমিটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সামাজিক কমিটিতে তার প্রতিবেদন জমা দেয়। ১৯৫০ সালের ৩১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আটটি বৈঠকে সামাজিক কমিটির ১৫টি দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখান থেকে, কনভেনশনের উপর চূড়ান্ত আলোচনা পরিচালনার জন্য ''"শরণার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের অবস্থা সম্পর্কিত জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাসম্পন্ন সম্মেলন"'' শীর্ষক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শরণার্থী কনভেনশনের বহুল আলোচিত ''পদক্ষেপগুলো'' এই সভাগুলো থেকে এসেছে। এটি ২ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই, ১৯৫১ পর্যন্ত চলেছিল। তিন দিন পরে ২৮ জুলাই কনভেনশনটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।<ref>United Nations, ''Final Act of the United Nations Conference of Plenipotentiaries on the Status of Refugees and Stateless Persons'', 25 July 1951, United Nations, Treaty Series, vol. 189, p. 137, available at: https://www.refworld.org/docid/3e2becbb4.html [accessed 3 August 2021]</ref>
এই শরণার্থী কনভেনশন অনুসারে, শরণার্থী মর্যাদা ছিল ব্যক্তিদের দ্বারা তাদের ব্যক্তিগত পরিস্থিতির ভিত্তিতে ধারণ করা একটি লেবেল। এটি পূর্ববর্তী সংজ্ঞাগুলোর সাথে বিপরীত ছিল যা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের সমস্ত নাগরিক বা সেই রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট জাতিগত গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। এর ফলে আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মূল দেশের সাধারণ পরিস্থিতির আরও ব্যক্তিগতকৃত বিবরণ প্রদান করতে হত। এর ফলে, সুরক্ষার পরিধি সংকুচিত হয়েছিল এবং পৃথক স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল।<ref>Karin Åberg, ''Examining the Vulnerability Procedure: Group-based Determinations at the EU Border'', Refugee Survey Quarterly, September 2021, https://doi.org/10.1093/rsq/hdab011, page 16.</ref>
এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোতে শীতল যুদ্ধের রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল—যদিও ২৬টি দেশ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিল, যুগোস্লাভিয়া ছাড়া, কোনও সোভিয়েত ব্লক দেশ উপস্থিত ছিল না। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মেলন থেকে উদ্ভূত ব্যক্তিকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি চেয়েছিল, আলোচনায় এর অনুপস্থিতির কারণে পশ্চিমা দেশগুলো শরণার্থী সুরক্ষার কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য হিসাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার সন্ধানের উপর জোর দিতে শুরু করে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 57.</ref> সেই দেশের ১৯৭৬ সালের সংবিধানে একটি বিপরীত সোভিয়েত দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়:<blockquote>'''ধারা ৩৮।''' ইউএসএসআর শ্রমিক জনগণের স্বার্থ এবং শান্তির কারণ রক্ষার জন্য, অথবা বিপ্লবী ও জাতীয়-মুক্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য, অথবা প্রগতিশীল সামাজিক ও রাজনৈতিক, বৈজ্ঞানিক বা অন্যান্য সৃজনশীল কার্যকলাপের জন্য নির্যাতিত বিদেশীদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করে।</blockquote>কনভেনশনের খসড়া তৈরির সম্মেলনে কানাডাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল: সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি পাঠানো ছাব্বিশটি দেশের মধ্যে এটি একটি ছিল;<ref name=":202">Jan Raska, ''Canada’s Refugee Determination System'', Canadian Museum of Immigration at Pier 21, August 21, 2020, <https://pier21.ca/research/immigration-history/canada-s-refugee-determination-system> (Accessed January 1, 2021).</ref> কানাডীয় লেসলি চান্স, সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন;<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 35.</ref> আমেরিকার দেশ কানাডা ছিল কনভেনশনের খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব পেশ করেছিল, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর দ্বারা প্রভাবিত আলোচনার সময় মন্তব্য করেছিল; এবং কানাডা ছিল সেই কর্মী গোষ্ঠীর একটি অংশ যা যুক্তিসঙ্গতভাবে কনভেনশনের মূল অংশ - নথির অনুচ্ছেদ ১-এ শরণার্থীর সংজ্ঞা - খসড়া তৈরির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Regional Developments: Americas'', at p. 210 (para. 19).</ref> কানাডীয় চেয়ারম্যান লেসলি চান্স রিপোর্ট করেছেন যে "আমাদেরকে সর্বত্র অগ্রগামী মনোভাব পোষণকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।"<ref name=":22">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> অন্যদিকে, সম্মেলনে কানাডার গৃহীত পরিবর্তনশীল অবস্থানের কারণে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের ''বিরুদ্ধে'' যুক্তি দিয়ে, কনভেনশনে সাময়িক এবং ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, সেই অবস্থান পরিবর্তন করে এবং এই ধরনের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে যুক্তি দেওয়ার আগে, চ্যান্সের বক্তব্যকে কিছুটা স্বার্থপরতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যাই হোক না কেন, কানাডা শেষ পর্যন্ত সম্মেলনে "সর্বোচ্চ সম্ভাব্য সংজ্ঞার পক্ষে" সমর্থন করেছিল এবং এই অবস্থান গ্রহণ করেছিল যে "কনভেনশনের উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া, রাষ্ট্রগুলোকে নয়।"
পরবর্তী কনভেনশনটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা প্রদান করে এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের অধিকারের রূপরেখা দেয়। এই অধিকারগুলো হলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যক্তিরা যে দাবিগুলো করতে পারে তার একটি সিরিজ: প্রধানত, এমন একটি দেশে জোরপূর্বক ফেরত না পাঠানোর অধিকার যেখানে গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে ( ''অ-রিফাউলমেন্ট'' )। সেইসাথে, শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃতদের জন্য, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার। অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের মতো অন্যান্য কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলো এই ফলস্বরূপ কনভেনশনটি অনুমোদন করলেও কানাডা তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাখ্যা হিসেবে, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেস্টার বি. পিয়ারসন ঘোষণা করেছিলেন যে সরকার উদ্বিগ্ন যে কনভেনশন শরণার্থীকে "নির্বাসনের বিরুদ্ধে তার আপিলের শুনানিতে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার" দেবে এবং আরও, কনভেনশন "কমিউনিস্টদের বা মৌলিক মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা ধ্বংসে বিশ্বাসী অন্যান্য ব্যক্তিদের অধিকার প্রদান করবে।" কানাডীয় সরকার উদ্বেগের সাথে আরও উল্লেখ করেছে, "কনভেনশনের কিছু ধারা রাষ্ট্রগুলোকে 'সত্যিকারের' শরণার্থীদের নির্বাসন থেকে নিষিদ্ধ করেছে, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার কারণেও"। এটি RCMP-এর বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে কনভেনশনটি নিরাপত্তার কারণে কানাডার শরণার্থীদের বহিষ্কারের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করবে এবং সরকারের সন্দেহ যে আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় কমিউনিস্টরা অনুপ্রবেশ করেছে। কানাডাকে ছাড়াই শরণার্থী কনভেনশনটি ২২ এপ্রিল, ১৯৫৪ তারিখে কার্যকর হয়।<ref>UNHCR, ''States Parties to the 1951 Convention relating to the Status of Refugees and the 1967 Protocol'', <https://www.unhcr.org/protection/basic/3b73b0d63/states-parties-1951-convention-its-1967-protocol.html> (Accessed August 28, 2020).</ref>
কনভেনশনে স্বাক্ষর না করলেও, পরবর্তী বছরগুলোতে কানাডা শরণার্থী সংক্রান্ত বিষয়ে আরও বেশি জড়িত হয়ে ওঠে:
* অ-প্রত্যাবাসনের বাধ্যবাধকতাগুলো সম্মান করার প্রতিশ্রুতি: কনভেনশনে স্বাক্ষর না করা সত্ত্বেও কানাডা তবুও কনভেনশনের অ-প্রত্যাহারের বাধ্যবাধকতা বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাস্তবে কানাডার কনভেনশনের প্রয়োজনীয়তাগুলোর সাথে সম্মতি নিশ্চিত করতে কোনও অসুবিধা হয়নি কারণ ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিক থেকে এবং মার্কিন অনুশীলনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কানাডার ইমিগ্রেশন শাখা যে কোনও কমিউনিস্ট দেশে নির্বাসনের উপর প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হাদ্দাদ নোট করেছেন যে এই জাতীয় প্রতিশ্রুতি কঠিন ছিল না কারণ আয়রন কার্টেনের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা সংখ্যাগুলো "শরণার্থীরা পালাতে পারে না" এই সাধারণ কারণে ন্যূনতম ছিল।
* ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানঃ কানাডা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। এই সময়কালে শরণার্থীদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইউএনএইচসিআর-এ কানাডার অবদানকে "ন্যূনতম" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং ১৯৫২ সালে কানাডীয় সরকার ইউএনএইচসিআর-এর কানাডীয় অফিসকে সরিয়ে দিয়েছে।
* UNHCR ExCom এর সদস্য হওয়াঃ ১৯৫৯ সালে তৎকালীন নতুন ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটিতে বসতে শুরু করেন। এটি রাষ্ট্রগুলোর এমন একটি উপদেষ্টা সংস্থা যা হাই কমিশনারকে দিকনির্দেশনা দেয়। ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার বেশ কয়েক বছর পর ১৯৫৮ সালে জাতিসংঘের শরণার্থীদের জন্য হাইকমিশনারের কর্মসূচির নির্বাহী কমিটি প্রতিষ্ঠা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এক্সকম অফিসের বার্ষিক বাজেট এবং প্রোগ্রাম অনুমোদন, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সুরক্ষা নীতি ইস্যুতে মান নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য এবং ইউএনএইচসিআর-এর পরিচালনা, উদ্দেশ্য এবং অগ্রাধিকার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য দায়বদ্ধ। ১৯৫০-এর দশকে ২৪টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। এক্সকম সদস্যদের শরণার্থী ''কনভেনশন'' অনুমোদনের প্রয়োজন নেই, বরং 'শরণার্থী সমস্যার সমাধানের প্রতি তাদের প্রদর্শিত আগ্রহ এবং নিষ্ঠার ভিত্তিতে' নির্বাচিত করা হয়েছে।
* ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পুনর্বাসন এবং ভর্তি: ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার সময়, এর অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ইউরোপের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবিরের পরিস্থিতি সমাধান করা। এটি দ্রুত সম্পন্ন করা যেতে পারে এমন প্রাথমিক প্রত্যাশা সত্ত্বেও ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য ইউরোপে শরণার্থী শিবির পরিচালনা করছিল। তার অংশ হিসাবে, এই সময়ের মধ্যে কানাডা ইউরোপ থেকে প্রায় ২৫০,০০০ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল। তাদের অনেকের কানাডা ভ্রমণ একটি উদীয়মান অর্থনীতির জন্য আরও শ্রমিক নিয়োগের জন্য কানাডীয় সরকার দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল। ইউএনএইচসিআর গঠনের পরের বছরগুলোতে, কানাডা অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুতদের জন্য এবং অন্যান্য কারণে অ্যাড-হক ভিত্তিতে শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল, ছোট গ্রুপ থেকে শুরু করে, যেমন যখন কানাডা ইস্রায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ফলে বাস্তুচ্যুতির প্রেক্ষিতে ৩৯ টি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ভর্তি করেছিল, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য, ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লবের পরে কানাডা ভর্তি হওয়া ৩৭,০০০ হাঙ্গেরিয়ান শরণার্থী সহ। প্রকৃতপক্ষে, কানাডা ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অবিলম্বে সম্মত না হলেও, মন্ত্রিসভা পুনর্বাসনের জন্য শরণার্থীদের নির্বাচন করার সময় শরণার্থীর কনভেনশন সংজ্ঞা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার জন্য দ্রুত ছিল।
* কানাডায় অভিবাসীদের জন্য পদ্ধতিগত ন্যায্যতা বৃদ্ধি: কানাডায় অভিবাসীদের দেওয়া পদ্ধতিগত ন্যায্যতার পরিমাণ বাড়ানোর দিকেও কানাডা একটি আন্দোলন দেখেছিল, ১৯৫২ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড তৈরির ব্যবস্থা করেছিল যা এলিয়েনদের নির্বাসনের সিদ্ধান্তের আপিল শুনতে পারে। আইএবিগুলোর বিশদ বিবরণ এবং তাদের ইতিহাস নীচে অনুসরণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কানাডার সামগ্রিক অভিবাসন আইনগুলো জাতি, শ্রেণি এবং স্বাস্থ্যের কারণে এবং কমিউনিজমের ভয় সম্পর্কিত "জাতীয় সুরক্ষা" উদ্বেগের কারণে ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে চলেছে। এটি ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।<ref name=":17" />
== বৈষম্যহীন ব্যবস্থা ==
১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন কানাডার বৈষম্যমূলক নীতির জন্য অনুমোদিত বিপুল সংখ্যক কারণের কারণে মন্ত্রিসভাকে অভিবাসীদের প্রবেশ সীমিত করার ক্ষমতা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে:<blockquote>(i) জাতীয়তা, নাগরিকত্ব, জাতিগত গোষ্ঠী, পেশা, শ্রেণী বা ভৌগোলিক অঞ্চল,
(ii) বিশেষ রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরণ বা সম্পত্তি ধারণের পদ্ধতি,
(iii) জলবায়ু, অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিল্প, শিক্ষা, শ্রম, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ততা অথবা বিদ্যমান অন্যান্য শর্ত বা প্রয়োজনীয়তা ... কানাডায়... অথবা
(iv) কানাডীয় নাগরিকত্বের কর্তব্য এবং দায়িত্বগুলো সহজেই আত্মস্থ করতে বা গ্রহণ করতে সম্ভাব্য অক্ষমতা ...<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 330.</ref></blockquote>অধিকন্তু, এই মুহুর্তে কানাডার অভিবাসন পরিষেবা ব্যাপক দুর্নীতিতে জর্জরিত ছিল। ডেপুটি মিনিস্টার কিনলেসাইড উল্লেখ করেছেন, আবেদনকারীদের মধ্যে একটি ব্যাপক বিশ্বাস ছিল যে "সহজতম এবং সবচেয়ে সঠিক অনুরোধগুলোকেও আর্থিক বা আরও ব্যক্তিগত অনুগ্রহ দিয়ে তৈলাক্ত করতে হয়।"
১৯৬০-এর দশকের মধ্যে, কানাডা এবং বিশ্বজুড়ে মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির প্রতি কানাডার বর্ণ-ভিত্তিক, ইউরোকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দেশটি কীভাবে নিজেকে দেখে এবং কীভাবে নিজেকে দেখাতে চায় তার সাথে ক্রমশ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছিল। কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের উপর কানাডার অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার ফলে সদ্য স্বাধীন প্রাক্তন উপনিবেশগুলোর সাথে তাদের কূটনৈতিক বৈধতা নষ্ট হচ্ছিল এবং ১৯৬১ সালের মধ্যে, ব্রিটেন কানাডাকে তার নীতি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো অভিবাসীদের জন্য কানাডায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 337.</ref> অধিকন্তু, এই জাতি-ভিত্তিক পদ্ধতি স্পষ্টতই তৎকালীন নতুন কানাডীয় বিল অফ রাইটসের বিরোধিতা করে। এটি জাতি, জাতীয় উৎপত্তি, বর্ণ, ধর্ম বা লিঙ্গের কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছিল।<ref>Clare Glassco, ''Before the Sun Comes Up: The Making of Canadian Refugee Policy amidst the Refugee Crisis in Southeast Asia, 1975-1980'', April 1, 2020 <https://heartsoffreedom.org/wp-content/uploads/2020/04/Revised-FINAL-April-3-Before-the-Sun-Comes-Up.pdf> (Accessed April 17, 2020), page 9 of the document.</ref>
কানাডা বারবার উদারীকরণ শুরু করে কাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। উদাহরণস্বরূপ ১৯৬০ সালের দিকে ৩২৫ জন যক্ষ্মা শরণার্থী এবং তাদের পরিবারকে গ্রহণ করা, প্রথমবারের মতো কানাডা শরণার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করে। ১৯৬২ সালে প্রধানমন্ত্রী ডিফেনবেকারের অভিবাসন মন্ত্রী হাউসে নতুন নিয়মকানুন উত্থাপন করেন যা কানাডার অভিবাসন নীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে জাতিগত বৈষম্য দূর করে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে, ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে অভিবাসন বিধিমালায় বৈষম্যের শেষ চিহ্ন ছিল এমন একটি বিধান যা ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বিস্তৃত পরিসরের আত্মীয়স্বজনদের স্পনসর করার অনুমতি দেয়। এটি শেষ মুহূর্তে এই আশঙ্কায় সন্নিবেশিত করা হয়েছিল যে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের দ্বারা স্পনসরশিপের আগমন ঘটবে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 187.</ref> ১৯৬৫ সালে কানাডা চারটি জেনেভা কনভেনশন অনুমোদন করে যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ভিত্তি তৈরি করে,<ref>Humanrightscommitments.ca, ''Geneva Conventions and Protocols'', <http://humanrightscommitments.ca/wp-content/uploads/2019/03/Geneva-Conventions.pdf> (Accessed September 26, 2021).</ref> যার মধ্যে রয়েছে ১৯৪৯ সালের ''জেনেভা কনভেনশন যা যুদ্ধের সময় ব্যক্তিদের সুরক্ষা সম্পর্কিত''। সেখানে একটি বিধান রয়েছে যে শরণার্থীদের যদি পূর্বে কোনও শত্রু শক্তির জাতীয়তা থাকে তবে তাদের শত্রু বিদেশী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 78.</ref> এরপর ১৯৬৬ সালে লেস্টার বি. পিয়ারসনের সরকার ''জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ'' তৈরি করে এবং "জাতি, দেশ বা ধর্মের বৈষম্য ছাড়াই" শরণার্থীদের প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব দেয়।<ref name=":29">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> সেই বিভাগটি কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৭ সালে অভিবাসন বিধিমালা থেকে, যদি আইন থেকেও না হয়, বৈষম্যের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলা হয় এবং সরকার বিভিন্ন শ্রেণীর অভিবাসী নির্বাচনের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রবিধানগুলোতে তার বহুল প্রচারিত 'পয়েন্ট সিস্টেম' বাস্তবায়ন করে।<ref name=":262">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 111.</ref>
তা সত্ত্বেও কানাডার অভিবাসন আইন "অবাঞ্ছিত" ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল। এটি সম্ভাব্য অভিবাসীদের "জাতীয় নিরাপত্তা" সম্পর্কিত উদ্বেগের জন্য যাচাই করার জন্য একটি ভিত্তি হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল কমিউনিস্ট বিদ্রোহের আশঙ্কা।<ref>Reginald Whitaker, ''Double Standard: The Secret History of Canadian Immigration'', 1987, Toronto: Lester and Orpen Denys Ltd., at page 33.</ref> ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":172">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref>
== ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড ==
অভিবাসন আপিল বোর্ড। এরা বিদেশীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শুনতে পারত, ১৯৫২ সালে ''অভিবাসন আইনের'' একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। প্রতিটি বোর্ডে অভিবাসন বিভাগের তিনজন কর্মী থাকবেন যারা নির্বাহী কর্তৃক ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। একটি অভিবাসন আপিল বোর্ড তৈরির সময় থেকেই তাদের কাছে আবেদন করার ক্ষমতা সীমিত ছিল: সমস্ত আপিল মন্ত্রীর দ্বারা শুনানি করা হত, যদি না, মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে, আপিলটি একটি IAB-তে পাঠানো হত। অধিকন্তু, মন্ত্রী IAB-এর যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারেন।
১৯৬২ সালের প্রবিধানগুলো এই বোর্ডগুলোর এখতিয়ার সম্প্রসারিত করে আইনের অধীনে সমস্ত নির্বাসন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল অন্তর্ভুক্ত করে। এইভাবে, কানাডায় অভিবাসনকে অধিকার নয় বরং একটি বিশেষাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, মৌলিক যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষাগুলো এলিয়েনদের জন্য যথাযথভাবে প্রসারিত হিসাবে দেখা হতে শুরু করে। বিশেষ করে, ট্রেবিলকক এবং কেলি যেমন উল্লেখ করেছেন, এটি গৃহীত হতে শুরু করে যে বিদেশীদের ভর্তি বা নির্বাসন নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে সুনির্দিষ্ট এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত এবং নির্বাসনের সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত একটি নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালে চ্যালেঞ্জ করার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত। তবে এই মুহুর্তে, ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডগুলো অভিবাসন সিদ্ধান্তে "খুবই গৌণ ভূমিকা" পালন করেছিল যা ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন কারণ তাদের এখতিয়ার আইন সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং অভিবাসন বিভাগকে প্রদত্ত বিশাল বিবেচনামূলক ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের ত্রুটিগুলো বেশ বিরল ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 349.</ref> অধিকন্তু, যেহেতু বোর্ডগুলো অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল, তাই তাদের নিরপেক্ষ বা স্বাধীন বলে বিবেচনা করা যাবে না।
১৯৬৭ সালের মার্চ মাসে, ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' এটি পরিবর্তন করে। এই আইনটি জোসেফ সেডগউইক, কিউসি কর্তৃক প্রণীত সেডগউইক রিপোর্ট থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, এটি ছিল এক সদস্যের তদন্ত বোর্ড যা সরকার কর্তৃক অত্যন্ত বিতর্কিত নির্বাসনের একটি সিরিজ অধ্যয়ন করার জন্য কমিশন করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সালের জুন মাসে, সেডগউইককে হাউস অফ কমন্স এবং অন্যান্য স্থানে করা গুরুতর অভিযোগগুলোর তদন্ত করতে বলা হয়েছিল যে কিছু বিদেশীকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আইনজীবীর অ্যাক্সেস থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।<ref>Statistics Canada, Immigration Policy and Administration, 223, <https://www66.statcan.gc.ca/eng/1966/196602510223_p.%20223.pdf> (Accessed October 21, 2024).</ref>
১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' পাসের পর নবগঠিত বোর্ডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল:
* <u>স্বাধীনতা:</u> সুপারিশগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড প্রতিষ্ঠা।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 191-192.</ref> বোর্ডটি আর অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না, বরং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের থেকে স্বাধীন একটি আধা-বিচারিক সত্তা ছিল। গভর্নর ইন কাউন্সিল এখন IAB-এর সদস্যদের নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করেছেন।<ref name=":703">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref> ১৯৭৩ সালে আইএবি-র স্বাধীনতা আরও জোরদার করা হয় আইন সংশোধনের মাধ্যমে। এর ফলে কিছু আইএবি সদস্য স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হবেন, অন্যরা নবায়নযোগ্য দুই বছরের মেয়াদে নিযুক্ত হবেন।<ref name=":702">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref>
* <u>বিস্তৃত এখতিয়ার:</u> বোর্ড একটি রেকর্ড আদালতের মর্যাদা গ্রহণ করেছে।<ref>''Immigration Appeal Board Act'', SC 1966-67, c 90, s. 11.</ref> কানাডা থেকে বহিষ্কারের আদেশপ্রাপ্ত সকলের জন্য এবং কানাডীয় নাগরিকদের পারিবারিক স্পনসরশিপ আবেদন প্রত্যাখ্যানের জন্য বোর্ডের কাছে আপিলের অধিকার তৈরি করা হয়েছিল।<ref>Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 4.</ref> আইন, তথ্য, মিশ্র তথ্য এবং আইন,<ref name=":542">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> অথবা করুণার ভিত্তিতে ব্যক্তিরা IAB-তে আপিল করতে পারবেন।<ref name=":164">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref> ১৯৭২ সালের হিসাবে, নির্বাসন স্থগিত করা যেতে পারে যেখানে এই বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল যে আদেশ কার্যকর করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রাজনৈতিক চরিত্রের কার্যকলাপের জন্য শাস্তি পাবেন অথবা অস্বাভাবিক কষ্ট ভোগ করবেন, অথবা বোর্ডের মতে সহানুভূতিশীল বা মানবিক বিবেচনার কারণে বিশেষ ত্রাণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।<ref>''Boulis v. Minister of Manpower and Immigration,'' 1972 CanLII 4 (SCC), [1974] SCR 875, <https://canlii.ca/t/1nfn8>, retrieved on 2024-05-22.</ref> নিচে বর্ণিত হিসাবে, ১৯৭৩ সাল থেকে আপিলের ক্ষেত্রে সেইসব ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা ১৯৫১ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুসারে নিজেদেরকে শরণার্থী বলে মনে করতেন। তবে এই সময়ের আগেও, যে কোনও ব্যক্তিকে অবতরণ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল এবং নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তিনি IAB-তে আপিল করতে পারতেন এবং বোর্ড সেই ব্যক্তিকে অবতরণ করার আদেশ দিতে পারত। যেহেতু বোর্ডের একটি নমনীয় এবং উদার সহানুভূতিশীল এখতিয়ার ছিল, প্লাউটের দৃষ্টিতে, শরণার্থীদের "ব্যাপক পরিমাণে" IAB-এর পদ্ধতির অধীনে স্থান দেওয়া হয়েছিল। "অতএব, একটি নির্দিষ্ট শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার প্রকৃত প্রয়োজন ছিল না"।<ref name=":832">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
* <u>নির্বাসন সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব:</u> ১৯৫২ সালের ''ইমিগ্রেশন আইনের'' অধীনে, IAB-তে ইমিগ্রেশন শাখার কর্মকর্তারা ছিলেন যারা মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করতেন। এটি মন্ত্রী তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। নবগঠিত IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল (কেবলমাত্র বিচারিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে, নীচে উল্লেখ করা হয়েছে)।<ref name=":552">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 340-341.</ref>
* <u>বিচারিক পর্যালোচনার জন্য ছুটির প্রয়োজনীয়তা:</u> IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল, এখতিয়ার সহ আইনগত প্রশ্নগুলোর উপর কানাডার সুপ্রিম কোর্টে আপিলের অনুমতি সাপেক্ষে।<ref name=":54">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> মন্তব্যকারীরা উল্লেখ করেছেন, এই ছুটির প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকরভাবে বিচারিক পর্যালোচনা থেকে এই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোকে "অন্তরক" করার জন্য কাজ করেছে।<ref>Molly Joeck, ''Canadian Exclusion Jurisprudence post-Febles'', International Journal of Refugee Law, 17 September 2021; Advance Article, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeab034, page 17.</ref>
১৯৬৭ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডে করা পরিবর্তনগুলো অভিবাসন নীতিকে অভূতপূর্ব মাত্রায় প্রক্রিয়াগত এবং বিচারিকীকরণ করেছে এবং শরণার্থী দাবি নির্ধারণে অনুরূপ যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বলে জানা গেছে।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 357.</ref> তা সত্ত্বেও বোর্ডের বিধিবদ্ধ সীমা ছিল ৭ থেকে ৯ জন বিচারক<ref name=":442">David Vinokur, ''30 Years of Changes at the Immigration and Refugee Board of Canada'', CIHS Bulletin, Issue #88, March 2019, <https://senate-gro.ca/wp-content/uploads/2019/03/Bulletin-88-Final.pdf> (Accessed May 13, 2021), page 7.</ref> (পরে বৃদ্ধি করে ১০ করা হয়েছে) এবং অপসারণের আদেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অক্ষম ছিল।<ref name=":393">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref> প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে, বোর্ড এমন এক জটলায় জর্জরিত হয়ে পড়ে যায় যা বিদ্যমান কেস প্রসেসিং হারে কাটিয়ে উঠতে কয়েক দশক সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত IAB-এর কাছে ১৭,০০০ মামলা জমে ছিল। এটি তারা প্রতি মাসে ১০০টি মামলার হারে নিষ্পত্তি করছিল।<ref name=":562">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 373.</ref> বাস্তবে কানাডায় ''কার্যত'' স্থায়ী বসবাস অর্জন করতে ইচ্ছুক যে কেউ ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে তাদের নির্বাসনের আবেদন দায়ের করতে পারত, যাতে বোর্ডের জমা পড়া অর্থের সাথে এটি যুক্ত হয়। এটি একবিংশ শতাব্দীতেও প্রসারিত হতে শুরু করে।<ref name=":392">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref>
ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালে সরকার কানাডার সকল ব্যক্তির জন্য আপিলের সার্বজনীন অধিকার বাতিল করার জন্য ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে। এর বদলে শুধুমাত্র স্থায়ী বাসিন্দা, বৈধ ভিসাধারী এবং শরণার্থী বা কানাডীয় নাগরিক বলে দাবি করা ব্যক্তিদের আপিলের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য, সরকার একটি এককালীন সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচিও চালু করেছে। এর সুবিধা ৩৯,০০০ জনেরও বেশি মানুষ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মার্কিন ড্রাফট ফাঁকিদাতাও রয়েছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202-203.</ref>
== ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলের আলোচনা ==
১৯৫১ সালের কনভেনশনকে অনেকেই ইউরোপীয় অভিজ্ঞতার প্রতিফলনকারী একটি কনভেনশন হিসেবে দেখেছিলেন - এবং এর শর্তাবলী '১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার ফলে' নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৫০-এর দশকে বিশ্বের অন্যান্য অংশে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় শরণার্থীর আবির্ভাব ঘটছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৫০-এর দশকে কমিউনিস্ট-বিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী চীনা শরণার্থীরা বিপুল সংখ্যক হংকংয়ে পালিয়ে যায়। ১৯৬০-এর দশকে আফ্রিকায় উপনিবেশমুক্তকরণের ফলে সেখানে শরণার্থী ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ১৯৬৪ সালে আফ্রিকার মোট শরণার্থী জনসংখ্যা ছিল ৪০০,০০০। এটি দশকের শেষ নাগাদ দশ লক্ষে পৌঁছেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 149.</ref> প্রসঙ্গত, ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে, ১৫০,০০০ তুতসি শরণার্থী রুয়ান্ডা থেকে উগান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়া এবং জাইরে পালিয়ে যায়; ১৯৬৬ সালের মধ্যে জাইরে থেকে ৮০,০০০-এরও বেশি শরণার্থী বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান, উগান্ডা এবং তানজানিয়ায় পাওয়া যায়; ১৯৭২ সালে শেষ হওয়া প্রথম সুদানী যুদ্ধ ১৭০,০০০ শরণার্থী তৈরি করে; এবং ১৯৭০-এর দশকের শেষ নাগাদ রোডেশিয়া থেকে মোজাম্বিক, জাম্বিয়া এবং বতসোয়ানায় ২৫০,০০০ শরণার্থী ছিল।
ইউএনএইচসিআর বিভিন্নভাবে সাড়া দিয়েছে। ১৯৫৭ সালে এটি 'ভালো কাজের' ম্যান্ডেট তৈরি করে। এটি সংস্থাটিকে জেনেভা কনভেনশনের ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা এড়িয়ে যেতে এবং ''অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে'' হংকংয়ে সহায়তা করার অনুমতি দেয়। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে, ১৯৫১ সালের ''শরণার্থী কনভেনশনের'' সময়গত এবং ভৌগোলিক পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা শুরু হয়। আফ্রিকার জন্য একটি আঞ্চলিক শরণার্থী কনভেনশন নিয়ে আলোচনার জন্য অর্গানাইজেশন অফ আফ্রিকান ইউনিটির পদক্ষেপকে UNHCR আশঙ্কা করেছিল যে এটি তাদের কর্তৃত্ব সীমিত করতে পারে এবং (অনুমিত) তাদের পরিচালিত সার্বজনীন শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। ১৯৬৭ সালের প্রোটোকল ছিল ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিক্রিয়া। UNHCR-এর বক্তব্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের পেছনের প্রেরণা ছিল ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত ''ডি-ফ্যাক্টো'' জাতিগত বৈষম্য যাতে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য-বিরোধী উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগের দিকে ঝুঁকে পড়ে তা নিশ্চিত করা:<blockquote>এই কনভেনশনের ফলে বিভিন্ন শরণার্থী গোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে আফ্রিকান শরণার্থীদের ক্ষেত্রে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধরনের বৈষম্য তার অফিসের সংবিধির সাথে সাংঘর্ষিক এবং কনভেনশনের সার্বজনীন চেতনার পরিপন্থী।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 14.</ref></blockquote>ফলস্বরূপ প্রোটোকলটি ১৯৬৭ সালের জানুয়ারিতে নিউ ইয়র্কে স্বাক্ষরিত হয়। এটি সেই অক্টোবরে কার্যকর হয়। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে প্রোটোকল যে পরিবর্তনগুলো এনেছিল তা ছিল সহজবোধ্য: ইউরোপের বাইরের শরণার্থী এবং নতুন উদ্ভূত কারণে বাস্তুচ্যুতদের আওতাভুক্ত করার জন্য শরণার্থী কনভেনশনের আঞ্চলিক এবং সাময়িক পরিধি সম্প্রসারণ করা। চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে কানাডা পিছিয়ে ছিল। এটি প্রাথমিকভাবে ''শরণার্থী কনভেনশনের'' একটি প্রোটোকল নিয়ে আলোচনার উদ্যোগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে অস্বীকৃতি জানায় এই ভিত্তিতে যে এটি ''অভিবাসন সম্পর্কিত শ্বেতপত্র তৈরি করছে।'' ১৯৬৬ সালে কানাডা এই ''শ্বেতপত্র'' প্রকাশ করে, গবেষক ক্লেয়ার গ্লাসকোর ভাষায়, অভিবাসন ব্যবস্থায় আরও মৌলিক পরিবর্তন আনার জন্য "জল পরীক্ষা করে দেখুন"। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল মৃদু থেকে নেতিবাচক। ফলস্বরূপ, কানাডা ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলে স্বাক্ষর করতে তিন বছর সময় লাগবে।
== কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশন'' এবং ''প্রোটোকল'' অনুমোদন ==
অনেক উদ্যোগের মধ্যে, ১৯৬৬ সালের ''অভিবাসন সংক্রান্ত শ্বেতপত্রে'' "জাতি, বর্ণ বা ধর্ম" এর ভিত্তিতে বৈষম্যমুক্ত একটি অভিবাসন ভর্তি নীতি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অধিকন্তু, এই গবেষণাপত্রে কানাডার সীমান্তের মধ্যে একটি শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়া প্রবর্তনের পাশাপাশি ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশনের অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে অভিবাসন কর্মকর্তা ইপি বিসলি উল্লেখ করেছিলেন, একটি স্পষ্ট শরণার্থী নীতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে, তার মতে কানাডা "প্রথম আশ্রয়ের দেশ হয়ে উঠেছে"। এইভাবে, "এই পৃথক মামলাগুলো আরও সুনির্দিষ্ট এবং আরও ন্যায্যভাবে নির্ধারণের জন্য আইনী যন্ত্রপাতি এবং পদ্ধতি নির্ধারণের সময় এসেছে।" এই প্রসঙ্গে "প্রথম আশ্রয়ের দেশ" ধারণাটি এমন একটি পরিস্থিতিকে বোঝায় যেখানে কানাডা প্রথম দেশ যা কোনও ব্যক্তিকে সুরক্ষা প্রদান করে, অন্যত্র ইতিমধ্যেই অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিপরীতে। কানাডার শরণার্থী ভর্তি নীতিগুলোকে ঐতিহ্যগতভাবে একটি সামগ্রিক 'নিয়ন্ত্রণের ধারণা' দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা হত। এটি ভর্তিকৃতদের 'মান' নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, বিদেশে শরণার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য এবং কানাডায় অনিয়ন্ত্রিত চলাচল রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে দেখছিল। কারণ শীতল যুদ্ধের সংকটের কারণে হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছিল। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র নেতিবাচক, যা অভিবাসন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনতে আরও তিন বছর সময় লেগেছে বলে মনে করে।
১৯৬৯ সালের মে মাসে কানাডা ১৯৫৭ সালের ''শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তিটি'' অনুমোদন করে।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref> তারপর এক মাস পর ১৯৬৯ সালের জুন মাসে কানাডা ১৯৫১ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' এবং ১৯৬৭ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত প্রোটোকল'' অনুমোদন করে।<ref>Canada acceded to the Refugee Convention on June 4, 1969: Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 295. See also: Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 34.</ref> সেই সময় জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, কানাডার যোগদান "ঐতিহ্যগতভাবে শরণার্থীদের প্রতি কানাডার উদার আচরণের কোনও পরিবর্তন আনবে না"।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 38.</ref> প্রকৃতপক্ষে সেই সময়ে, বেশিরভাগ শরণার্থী পূর্ব ইউরোপ থেকে এসেছিলেন। কানাডার নীতি ছিল তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো না করা। তাই তাদের সাধারণত অভিবাসী মর্যাদা দেওয়া হত। সেই সময়ে বিশ্বের যেসব অংশ আজ শরণার্থী-উৎপাদনকারী প্রধান স্থান, সেখান থেকে খুব কম লোকই কানাডায় প্রবেশ করত। অধিকন্তু, সেই সময়ে শরণার্থীরা কানাডার ভেতর থেকে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন এবং আমাদের সাধারণ অভিবাসন নীতির অধীনে বিবেচনা করা হত।<ref name=":833">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
১৯৬৯ সালে শরণার্থীদের বিষয়ে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক দলিলগুলো অনুমোদন করা সত্ত্বেও ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত কানাডায় ইতিবাচক দাবির জন্য কোনও আইন-ভিত্তিক, সরকারী শরণার্থী নীতি বিদ্যমান ছিল না। এর বদলে তৎকালীন জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ কর্তৃক শরণার্থীদের দাবিগুলো ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে কানাডার ভেতর থেকে অভিবাসন আবেদন করার অনুমতি দেওয়া নিয়ম বাতিল করা হয়। এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে কানাডায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যারা বহিষ্কার হতে চাননি, তাদের দেশটির নবজাতক শরণার্থী নির্ধারণ পদ্ধতির সুবিধা নিতে উৎসাহিত করা হবে। ১৯৭৩ সালে কানাডীয় সরকার শরণার্থী দাবিদারদের মোকাবেলা করার জন্য প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। একজন শরণার্থী দাবিদার কানাডায় থাকতে পারবেন নাকি তাকে নির্বাসিত করা হবে তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা রাখেন জনশক্তি ও অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে পৃথক দাবি মূল্যায়ন এবং তাদের সুপারিশ পাঠানোর জন্য বিদেশ বিষয়ক এবং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তঃবিভাগীয় কমিটি। অধিকন্তু, সেই বছর ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল যাতে বোর্ডকে কনভেনশন শরণার্থী হিসাবে নির্ধারিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাসন আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ ত্রাণ প্রদান করা হয় কারণ দাবিদার অযথা কষ্ট ভোগ করবেন অথবা যেখানে মানবিক ও সহানুভূতিশীল বিবেচনা করা যেতে পারে। শরণার্থীদের আইএবি-তে আপিলের আইনগত অধিকার দেওয়া হলেও, "শরণার্থী" শব্দটি সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
এই সময়ে, অভ্যন্তরীণ দাবি প্রতি বছর শত শত পর্যায়ে ঘটেছিল। কানাডায় ব্যক্তিগত আদেশ-পরামর্শ মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে একজন ব্যক্তির মর্যাদা প্রদান করে এবং আংশিকভাবে মানবিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিবেচনার ভিত্তিতে তা করা হয়। হ্যাথওয়ে বলেছেন যে এটি সিস্টেমের একটি ত্রুটি ছিল: কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অবতরণ মঞ্জুর করা বা আটকানো সম্পূর্ণরূপে বোর্ডের (অথবা মন্ত্রীর) বিচক্ষণতার মধ্যে ছিল; ফলস্বরূপ, শরণার্থীরা কানাডা থেকে সুরক্ষা পাবে এমন কোনও গ্যারান্টি ছিল না।<ref name=":782">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 39. See also W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 15.</ref> এই কানাডার অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা তখন চলমান বিদেশী মূল্যায়নের পরিপূরক ছিল। কানাডা ১৯৭০ সালে "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নির্দেশিকা" জারি করে, যাতে বিদেশে শরণার্থী নির্বাচনের জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের মানদণ্ড দেওয়া হয়।<ref>Canadian Council for Refugees, ''Brief History of Canada’s Responses to Refugees'', 2009, Canadian Council for Refugees, <https://ccrweb.ca/sites/ccrweb.ca/files/static-files/canadarefugeeshistory2.htm> (Accessed May 9, 2020).</ref> সেই বছর মন্ত্রিসভা নিপীড়িত সংখ্যালঘু নীতি নামে পরিচিত একটি নীতিও অনুমোদন করে। এর মধ্যে নিপীড়িত মানুষদের নির্বাচনের বিধান ছিল যারা কনভেনশন শরণার্থী ছিলেন না কারণ তারা এখনও তাদের নিজ দেশে ছিলেন।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref>
কানাডা শরণার্থী কনভেনশন এবং প্রোটোকলের অধীনে তার বাধ্যবাধকতাগুলোকে দেশীয় আইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে, একই সময়ে যখন এই চুক্তিগুলোর পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চলছে। এই আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার কিছু সফল হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ কানাডা ১৯৭৫ সালে শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তির প্রোটোকল অনুমোদন করে।<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Protocol to the Agreement relating to Refugee Seamen'', 30 March 1975, available at: https://www.refworld.org/docid/3ae6b38218.html [accessed 25 September 2021].</ref> অন্যান্য প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘ আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্র<ref>UN General Assembly, ''Declaration on Territorial Asylum'', 14 December 1967, A/RES/2312(XXII), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/3b00f05a2c.html</nowiki> [accessed 28 December 2020].</ref> গ্রহণ করে। এর ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১৪ নং অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করার অধিকারী কোনও ব্যক্তিকে সীমান্তে প্রত্যাখ্যানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়। এরপর ১৯৭৭ সালে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যাতে এটি এবং অন্যান্য বিধানগুলোকে একটি সংশোধিত কনভেনশন, প্রস্তাবিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Background: Interpretation of the 1951 Convention'', at p. 104 (para. 87). See also the following discussion of contemporary thinking about the needs for a new treaty: Richard Plender, ''Admission of Refugees: Draft Convention on Territorial Asylum,'' 15 San Diego L. Rev. 45 (1977). Available at: <nowiki>https://digital.sandiego.edu/sdlr/vol15/iss1/6</nowiki></ref> একটি খসড়া তৈরি করা হলেও,<ref>UNHCR, ''Note on International Protection Addendum 1: Draft Convention on Territorial Asylum (Submitted by the High Commissioner)'', 26 September 1974, A/AC.96/508/Add.1 <https://www.unhcr.org/afr/excom/excomrep/3ae68c023/note-international-protection-addendum-1-draft-convention-territorial-asylum.html> (Accessed December 28, 2020).</ref> সম্মেলনটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।<ref>''Regina v. Immigration Officer at Prague Airport and another (Respondents) ex parte European Roma Rights Centre and others (Appellants),'' [2004] UKHL 55, <https://publications.parliament.uk/pa/ld200405/ldjudgmt/jd041209/roma-1.htm> para. 17.</ref>
== ফেডারেল আদালত প্রতিষ্ঠা এবং অভিবাসন সিদ্ধান্তের বিচারিক তদন্ত বৃদ্ধি করা ==
কানাডার জাতীয়তা প্রতিষ্ঠার প্রথম শতাব্দীতে অভিবাসন আইন "অত্যন্ত বিবেচনামূলক এবং মূলত জবাবদিহিহীন" পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। পূর্বে এমন ঘটনা ঘটেছে যে ''অভিবাসন আইনে'' একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তিগত ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি আদালতগুলো মূলত সম্মান করত। ১৯১০ সালের আইনে বলা হয়েছে, "কোনও আদালত এবং তার কোনও বিচারক বা কর্মকর্তার মন্ত্রী বা কোনও তদন্ত বোর্ড, অথবা দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার ... যে কোনও কারণেই কোনও প্রত্যাখ্যাত অভিবাসীর আটক বা নির্বাসন সম্পর্কিত ... কোনও কার্যধারা, সিদ্ধান্ত বা আদেশ পর্যালোচনা, বাতিল, বিপরীত, স্থগিত বা অন্যথায় হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার থাকবে না, যদি না সেই ব্যক্তি কানাডীয় নাগরিক হন বা তার কানাডীয় স্থায়ী বাসস্থান থাকে।" ট্রেবিলকক এবং কেলি সংক্ষেপে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে, তৎকালীন আদালতগুলো তাদের উপর আরোপিত এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে সম্মান করত। ১৯২১ সালের একটি সিদ্ধান্তের এই ব্যক্তিগত ধারা সম্পর্কে কুইবেক সুপিরিয়র কোর্টের একজন বিচারকের মন্তব্য উদাহরণ স্বরূপ:<blockquote>... পার্লামেন্টের উদ্দেশ্য ছিল। এই আইনের ভাষায় পার্লামেন্ট আসলে যা প্রদান করেছিল, তা হলো কানাডায় অভিবাসীদের প্রবেশ সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্ন কেবলমাত্র ইমিগ্রেশন বিভাগের যন্ত্রপাতি দ্বারা, অর্থাৎ তদন্ত বোর্ড এবং ইমিগ্রেশন অফিসারদের দ্বারা নির্ধারিত হবে, শুধুমাত্র মন্ত্রীর কাছে আপিলের সাপেক্ষে। আদালতের পর্যালোচনা বা নিয়ন্ত্রণের কোনও ক্ষমতা ছাড়াই... ... কোনও আদালত বা বিচারক তদন্ত বোর্ডের কার্যধারায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না, তা হোক আইন, বা প্রবিধানের ভুল বোঝাবুঝি বা ভুল উপস্থাপনার কারণে, অবৈধ প্রমাণ গ্রহণের কারণে, বা শোনা প্রমাণের মূল্যায়নে ত্রুটির কারণে, অথবা কোনও অনানুষ্ঠানিকতা বা ভুলের কারণে যা কার্যপ্রণালী বা বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণের বিষয় হিসাবে ন্যায্যভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। </blockquote>এটি এমনভাবে পরিবর্তিত হতে শুরু করে যে ন্যায্যতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার নীতিগুলো ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব গ্রহণ করতে শুরু করে। ১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' অনুসারে, IAB সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ সরাসরি কানাডার সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা যেতে পারে, সেই আদালতের অনুমতি নিয়ে। এরপর আইনের ব্যক্তিগত ধারার পরিধি হ্রাস করা হয় এবং ১৯৭১ সালে ফেডারেল আদালত, বিচার এবং আপিল উভয়ই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মুহুর্তে, সংসদ ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে আইএবি-র যেকোনো আইনগত প্রশ্নের বিচারিক পর্যালোচনার জন্য আবেদনগুলো ফেডারেল আপিল আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এটি কোনও বিষয়ের অনুমতি দেওয়ার এবং শুনানির বিচক্ষণতা পাবে। অধিকন্তু, কনভেনশন শরণার্থী মর্যাদার দাবি প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তটি এই সময়ে ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশন দ্বারা পর্যালোচনাযোগ্য ছিল। কারণ ট্রায়াল ডিভিশনের ঐতিহ্যবাহী বিশেষাধিকারমূলক রিট জারি করার এখতিয়ার ছিল যেখানে আপিল আদালতের এখতিয়ার ছিল না। তা সত্ত্বেও ফেডারেল আদালতের তত্ত্বাবধানের এখতিয়ার সাধারণত ফেডারেল আদালতের আপিল আদালতে IAB সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনার মাধ্যমে আবেদন করা হত, ফেডারেল আদালতের বিচার বিভাগে মন্ত্রীর পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার মাধ্যমে নয়।
রাফায়েল গিরার্ড আদালতের সিদ্ধান্তগুলোকে অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে পদ্ধতিগত ন্যায্যতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বচ্ছতার নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কৃতিত্ব দেন। ফেডারেল কোর্টের অভিবাসন মামলার চাপ তার কাজের একটি বিরাট অংশের জন্য দায়ী হবে এবং বিচারিক পর্যালোচনার জন্য মামলার দীর্ঘ সারি তৈরি করবে। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, যখন ফেডারেল আপিল আদালতের তিন সদস্যের প্যানেলে বিচারিক পর্যালোচনা পাঠানো হয়েছিল, তখন সেই আদালতের সামনে প্রায় ৭৫% বিচারিক পর্যালোচনা আবেদন ছিল IAB কর্তৃক শরণার্থী নির্ধারণের পর্যালোচনার জন্য। দুই দশক পর ২০১২ সালে আইআরবিতে শরণার্থী আপিল বিভাগ বাস্তবায়নের আগের বছরগুলোতে, অভ্যন্তরীণ শরণার্থী বিষয়গুলোর বিচারিক পর্যালোচনা ফেডারেল আদালতের মামলার প্রায় অর্ধেক ছিল।
== ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' ==
১৯৭৬ সালে পার্লামেন্টে সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' প্রবর্তিত হয় এবং দুই বছর পর কার্যকর হয়। এটি কানাডার অভিবাসন নীতির জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল। এটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রথমবারের মতো আইনটিকে পুনর্বিবেচনা করে, আইনে প্রকাশ্য বৈষম্যের শেষ চিহ্নগুলো মুছে ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, সমকামী পুরুষ এবং মহিলাদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে, এবং, একটি বিস্তৃত জাতীয় বিতর্কের পর আইনটিতে একাধিক উদ্দেশ্য প্রবর্তন করে যা মূলত আজও বহাল রয়েছে। এটি এই সমস্ত কিছু করেছে এমন বিধানের মাধ্যমে যা তাদের বিশদ এবং সুনির্দিষ্টতার সাথে নির্বাহী সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে তোলে। ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' সংসদে প্রবর্তনের মাধ্যমেই সরকার শরণার্থী পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গ্রহণের ইচ্ছাকে আরও জোরদার করে। এই আইনটিই প্রথমবারের মতো কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশনের'' বাধ্যবাধকতাগুলোকে আইনগত আকারে অন্তর্ভুক্ত করে। আইনে বর্ণিত উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল "শরণার্থীদের প্রতি কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিতদের প্রতি তার মানবিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা"। নতুন আইনে কনভেনশন শরণার্থীদের অভিবাসীদের একটি শ্রেণী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যারা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বিদেশে নির্বাচিত হতে পারতেন। এই আইনটি সীমান্তে বা কানাডায় বসবাসকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত শরণার্থী দাবির বিষয়ে অভিবাসন মন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পূর্ব-বিদ্যমান ''অ্যাডহক'' কমিটি, শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি (RSAC) কে আইনি মর্যাদা দিয়েছে।<ref name=":43" />
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত আরএসএসি প্রক্রিয়াটি ছিল নিম্নরূপ: যারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়েছিলেন তাদের প্রথমে একজন অভিবাসন কর্মকর্তার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে হত। যদি তাদের অগ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় ( সাধারণত হয়), তাহলে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত কিনা তা নির্ধারণের জন্য তাদের অভিবাসন তদন্তে পাঠানো হবে। এই পর্যায়েই ব্যক্তি শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করতে পারতেন, এই ক্ষেত্রে অপসারণের আদেশ স্থগিত করা হতো এবং শরণার্থী দাবির সারবস্তু সম্পর্কে সাক্ষাৎকারের জন্য ব্যক্তিকে একজন ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তার সামনে আনা হত। এরপর সিনিয়র ইমিগ্রেশন অফিসার সাক্ষাৎকারের ট্রান্সক্রিপ্টটি RSAC-তে পাঠান। আরএসএসি আবেদনটি পর্যালোচনা করে এবং সুরক্ষার দাবি গ্রহণ করা বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত কিনা সে বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে একটি সুপারিশ করে।<ref name=":462">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই প্রোগ্রামটি খুবই ছোট ছিল: ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে এটি প্রতি বছর মাত্র কয়েকশ দাবি প্রক্রিয়া করত।<ref name=":12">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যে বছর সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' কার্যকর হয়েছিল, সেই বছর ৪,১৩০ জন শরণার্থী কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন। তাদের সবাই কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসছিলেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 239.</ref>
যাদের আরএসএসি বা মন্ত্রী শরণার্থী মর্যাদা দেননি, তাদের মানবিক ও সহানুভূতির ভিত্তিতে আবেদন করার সুযোগ ছিল। এই ধরনের আবেদনগুলো বিশেষ পর্যালোচনা কমিটি দ্বারা বিবেচনা করা হত। এটি মন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করত।<ref name=":464">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> অধিকন্তু, মন্ত্রী নির্ধারণ করতে পারেন যে কোনও ব্যক্তিকে, যদিও তাকে শরণার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, কানাডায় থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 28.</ref> উভয় গ্রুপেরই ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' কাছে আপিল করার অধিকার ছিল। এর কার্যক্রম জনসমক্ষে পরিচালিত হত।<ref name=":45">Neil Yeates, ''Report of the Independent Review of the Immigration and Refugee Board'', Government of Canada, April 10, 2018, <https://www.canada.ca/content/dam/ircc/migration/ircc/english/pdf/pub/irb-report-en.pdf> (Accessed April 27, 2020), page 7.</ref> IAB ডকুমেন্টারি রেকর্ড পর্যালোচনা করেছে এবং যে কোনও আবেদনকারী, যিনি ডকুমেন্টারি রেকর্ডের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন যে দাবিটি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে, তার জন্য দাবির যোগ্যতার উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুমোদিত হয়েছে।<ref name=":463">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই আইনী বিধানটি ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে IAB কেবল তখনই আবেদনের উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দিতে পারে যদি IAB নির্ধারণ করে যে আবেদনটি সম্ভবত সফল হবে। এই ব্যবস্থার অধীনে, এর কার্যক্রমের শেষ বছরে, মন্ত্রী কর্তৃক শরণার্থী নন বলে নির্ধারিত প্রায় নয় শতাংশ দাবিদারকে বোর্ড কর্তৃক শরণার্থী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।<ref>David Matas, ''Closing the Doors'', 1989, Summerhill Press, Toronto, <nowiki>ISBN 0-920197-81-7</nowiki>, page 141.</ref>
পুরো সিস্টেমে প্রবেশাধিকার এই সত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল যে একজন ব্যক্তি তার অভিবাসন অবস্থা সম্পর্কে তদন্তের বিষয়। এর মূলত অর্থ ছিল কানাডায় থাকার জন্য তাদের আইনি মর্যাদার অভাব ছিল। কানাডায় শারীরিকভাবে উপস্থিত কিন্তু কিছু ধরণের (অস্থায়ী) মর্যাদা সম্পন্ন অন্যান্য ব্যক্তিদের শরণার্থী দাবি প্রক্রিয়ার অধীনে দাবি করার বা বিবেচনা করার কোনও অধিকার ছিল না। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাব্বি গুন্থার প্লট "প্রশাসনিক দুঃস্বপ্ন" বলে অভিহিত করেছেন। কানাডায় বৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ প্রক্রিয়ার সুবিধা প্রদানের প্রচেষ্টায়, অভিবাসন মন্ত্রণালয় "ইন-স্ট্যাটাস" দাবি নামে পরিচিত একটি অতিরিক্ত আইনি প্রক্রিয়া চালু করেছে। দাবিদারকে অভিবাসন অবস্থা তদন্তের সময় দাবি করা ব্যক্তির মতোই বিবেচনা করা হত। এতে সমস্যা ছিল। প্রথমত, এতে চূড়ান্ততার অভাব ছিল: যদি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তাহলে ব্যক্তি দ্বিতীয় দাবি করতে পারতেন এবং আইন দ্বারা প্রদত্ত পুরো প্রক্রিয়াটি নতুন করে করতে পারতেন। অধিকন্তু, "ইন-স্ট্যাটাস" দাবিদাররা তাদের দাবি প্রক্রিয়াকরণের জন্য অপেক্ষা করার সময় কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য অযোগ্য ছিলেন, তাদের কাজ করার যোগ্যতা কানাডায় তাদের পূর্ব-বিদ্যমান অভিবাসন অবস্থা দ্বারা প্রদত্ত কাজের অনুমতি (অথবা এর অভাব) এর উপর নির্ভর করত।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, pages 36-37.</ref>
১৯৭০-এর দশকে কানাডা যেসব শরণার্থী গ্রহণ করেছিল, তারা কানাডার অভ্যন্তরে আশ্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নয়, বরং বিদেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে এসেছিল। ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে কানাডা ২২৮ জন তিব্বতি শরণার্থীর একটি দলকে পুনর্বাসিত করে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য একটি "তিব্বতি শরণার্থী কর্মসূচি" তৈরি করে তার প্রথম অ-ইউরোপীয় শরণার্থীদের গ্রহণ করে। তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয়দান অন্যান্য শরণার্থী পুনর্বাসনের দ্বার উন্মোচন করে। কারণ কানাডা ১৯৭২-৭৩ সালে ইদি আমিনের একনায়কতন্ত্রের অধীনে উগান্ডা থেকে বহিষ্কৃত ৭,০০০ এরও বেশি জাতিগত দক্ষিণ এশীয়দের গ্রহণ করে। এরা কানাডায় বিপুল সংখ্যক অ-শ্বেতাঙ্গ শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছিল। এরপর কানাডা ১৯৭৩ সালে পিনোশেটের শাসনামলে পালিয়ে আসা ৭,০০০ চিলির শরণার্থী এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় পালিয়ে আসা প্রায় ১০,০০০ লেবাননি শরণার্থীকে স্বীকার করে। ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল অভিবাসনের বৃহত্তম উৎস দেশ। এর একটি কারণ ছিল বিপুল সংখ্যক ড্রাফট ডজার্স এবং ভিয়েতনামে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক পলাতক যারা কানাডায় আশ্রয় পেয়েছিল। ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় কানাডায় পালিয়ে আসা ড্রাফট রেজিস্টার এবং পলাতকদের সংখ্যার জন্য সঠিক সংখ্যায় পৌঁছানো অসম্ভব। তবে "ড্রাফট রেজিস্টার" এবং লেখক মার্ক ফ্রুটকিনের মতে, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের অনুমান ৩০,০০০-৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০-২০০,০০০ এর মধ্যে। সেই দশকের শেষের দিকে, ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ৬০,০০০ শরণার্থীকে গ্রহণ করা হয়েছিল - যা এই বছরগুলোতে গৃহীত অভিবাসীর সংখ্যার ২৫ শতাংশ।<ref name=":173">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref> এই সময়ে, মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে কানাডা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বিদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের পুনর্বাসিত করেছে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 41.</ref> কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তারা এল সালভাদরেও গিয়েছিলেন আধাসামরিক ডেথ স্কোয়াডের ঝুঁকিতে থাকা বন্দীদের সাক্ষাৎকার নিতে এবং ঝুঁকিতে থাকা কিছু বন্দীকে কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য। এটি অন্য দেশে দাবি প্রক্রিয়াকরণের একটি উদাহরণ।<ref>Claire Higgins, ''In-country programs: procedure and politics'', in Satvinder Singh Just (ed.), ''Research handbook on international refugee law,'' 2019, Northhampton, MA, USA: Edward Elgar Publishing, at page 55.</ref>
তা সত্ত্বেও এই ব্যক্তিদের গোষ্ঠীগুলোকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্তগুলো ছিল ''অ্যাডহক'' এবং অত্যন্ত রাজনৈতিক; উদাহরণস্বরূপ, চিলির বেশিরভাগ রাজনৈতিক শরণার্থী খুব বেশি বামপন্থী ছিলেন এবং আমেরিকান বা নতুন চিলির প্রশাসনকে বিচ্ছিন্ন করতে চাননি এই আশঙ্কায়, কানাডীয় সরকার তাদের সংখ্যা সীমিত করে। এটি কানাডাকে সেই ৩০ বছরের সংঘাতের সময় মাত্র ৭,০০০ চিলির নাগরিককে গ্রহণ করতে সীমাবদ্ধ করে। একইভাবে, কানাডা কিছু উগান্ডার এশীয় শরণার্থীকে গ্রহণ করার পর এই পদক্ষেপের তীব্র জনমত দেখা দেয়। ১৯৭২ সালের এক জরিপে দেখা যায় যে মাত্র ৪৫ শতাংশ কানাডীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন; সরকারের কেউ কেউ এই উদ্যোগকে সেই বছরের নির্বাচনে সরকারি আসনের ক্ষতি হিসেবে দেখেছেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 213.</ref>
১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পর এবং ১ এপ্রিল ১৯৭৮ সালে এটি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে, অভিবাসীদের নির্বাচনের নিয়মাবলী সংজ্ঞায়িত করার জন্য কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডা (EIC)-এর উপর ক্ষমতা অর্পণ বাতিল করা হয় এবং আইন এবং প্রবিধানে গ্রহণযোগ্য শ্রেণী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংসদে বহাল রাখা হয়। ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন অনুসারে কানাডায় অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সময় EIC আর মানবিক পুনর্বাসন কর্মসূচি বা প্রশাসনিকভাবে অন্য কোনও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে পারত না। ১৯৭৬ সালের আইনটি কনভেনশন শরণার্থীদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য শ্রেণী তৈরি করেছিল এবং ধারা ৬(২) এর মাধ্যমে এটি অন্যান্য মানবিক শ্রেণীর জন্য নিয়ন্ত্রণ-প্রণয়নের কর্তৃত্ব প্রদান করেছিল যা মনোনীত করা যেতে পারে। ১৯৭৮ সালের ১ এপ্রিল আইন ঘোষণার সময়, কোনও পদবী ঘোষণা করা হয়নি তবে তিনটি পুনর্বাসন কর্মসূচি চলমান ছিল। এর মধ্যে পূর্ব ইউরোপীয়, চিলি/আর্জেন্টিনা এবং ইন্দোচীন অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রায় সাথে সাথেই কার্যক্ষম সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিটি ভিয়েতনামী আবেদনকারীর গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণের আগে কনভেনশনের যোগ্যতা পরীক্ষা করা খুবই ঝামেলার ছিল এবং উৎপাদনশীলতা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আগত ইহুদি অভিবাসীরা শরণার্থী মর্যাদার দাবি অগ্রসর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন কারণ তারা এই শব্দটিকে আপত্তিকর বলে মনে করেছিলেন। চিলি এবং আর্জেন্টিনাররা স্পষ্টতই কনভেনশন শরণার্থী ছিল না কারণ তারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে ছিল। নতুন আইন পাস হওয়ার আগে অনুমোদিত কর্মসূচিগুলোর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য, EIC নভেম্বর মাসে কাউন্সিলের একটি আদেশ প্রণয়ন করে যা ধারা ৬(২) অনুসারে তিনটি অতিরিক্ত মানবিক শ্রেণী মনোনীত করে। স্ব-নির্বাসিত শ্রেণীর মধ্যে ছিল সোভিয়েত ইহুদি এবং অন্যান্য পূর্ব ইউরোপীয়রা; ইন্দোচীন মনোনীত শ্রেণী কনভেনশনের যোগ্যতার জন্য প্রতিটি আবেদনকারীর পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করেছিল; এবং ল্যাটিন আমেরিকান মনোনীত শ্রেণী (LADC) নির্যাতিত চিলি এবং আর্জেন্টিনার নাগরিকদের ক্ষেত্রে আবেদন করেছিল যারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে বসবাস করছে। এর মধ্যে কারাগারে থাকা ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।<ref>Raphael Girard, Canadian Immigration Historical Society, CIHS Bulletin Issue #110, September 2024, ISSN 1485-8460, <<nowiki>https://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2024/10/Bulletin-110-2024-09.pdf</nowiki>>, page 3.</ref>
শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতায় নাগরিক সমাজের আরও বেশি ভূমিকা রাখার দাবি এবং সরকারি শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতা সিদ্ধান্তের সমালোচনা মোকাবেলা করার জন্য, ১৯৭৮ সালে কানাডা একটি ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতা কর্মসূচি চালু করে যার মাধ্যমে নাগরিকরা নতুন শরণার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে সহায়তা করতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩০০,০০০ এরও বেশি শরণার্থী কানাডায় এসেছেন।
== ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ডের প্রতিষ্ঠা ==
কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড গঠনের পটভূমি ছিল ১৯৮০-এর দশকে পূর্ব-বিদ্যমান শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থার কঠোরতা, ক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং ন্যায্যতা নিয়ে উদ্বেগ।
প্রথমত, ১৯৮০-এর দশক জুড়ে কানাডার আশ্রয় ব্যবস্থার কঠোরতা এবং ব্যবস্থার সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ ছিল। ডেবোরা আঙ্কারের ভাষায়, ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে সরকার 'অবৈধ' অভিবাসীদের দ্বারা সুবিধা গ্রহণের কারণে ভঙ্গুর আশ্রয় ব্যবস্থার সুযোগ নেওয়ার বিষয়টি সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়। আইআরবি তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে উদ্ভূত সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি, যখন ১৭৪ জন শিখ ব্যক্তি নোভা স্কটিয়ার চার্লসভিলের জেলে গ্রামের কাছে লাইফবোটে করে আসার পর ফেডারেল সরকার ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধনের জন্য জরুরি অধিবেশনের জন্য সংসদকে আহ্বান করে। সেই সময়ে, কানাডীয় কর্মসংস্থান ও অভিবাসন উপদেষ্টা কাউন্সিল রিপোর্ট করেছিল যে বেশিরভাগ ব্যবসা ও শ্রমিক নেতারা মনে করেছিলেন যে সরকার "সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে"। ব্যবস্থার অখণ্ডতা সম্পর্কে এই ধরনের উদ্বেগের উদাহরণ ১৯৮০-এর দশকে রিফর্ম পার্টির প্ল্যাটফর্মে দেখা গিয়েছিল। সেখানে "অভিবাসন নির্যাতন, ভুয়া শরণার্থী, [এবং] অভিবাসীদের অনুপযুক্ত নির্বাচন" সম্পর্কে "প্রদাহজনক ভাষা" হিসাবে চিহ্নিত একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল। তৎকালীন প্রগতিশীল রক্ষণশীল সরকার বলেছিল যে "অনেক দাবি প্রতারণামূলক। সাম্প্রতিক তথ্য দেখায় যে গড়ে ৭০ শতাংশ দাবি ভিত্তিহীন"। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাস্তবায়িত এই উদ্বেগগুলোর একটি প্রতিক্রিয়া ছিল ডেবোরা অ্যাঙ্কার যাকে একাধিক বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে শরণার্থী দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থান অনুমোদন এবং বিভিন্ন সামাজিক পরিষেবা বাতিল করা। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় শুনানির তারিখ না আসা পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই দেশে ফেরত পাঠানোর একটি নতুন অনুশীলন।<ref name=":50" />
দশকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শরণার্থী দাবির ফলে প্রাক-আইআরবি সিস্টেমের ক্ষমতা নিয়েও উদ্বেগ ছিল। রেবেকা হ্যামলিন বলেন যে কানাডা নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে বিবেচনা করার আগে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী তার তীরে আসতে শুরু করার আগে শরণার্থী সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপরোক্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেছিল। ১৯৮০ সালে কানাডায় ১,৪৮৮টি শরণার্থী দাবি জমা পড়েছিল। এটি আজকের মতো খুবই সামান্য। তবে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, এই সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে এত বেশি সংখ্যক মানুষ দেশে আশ্রয়ের দাবি জানাচ্ছিল যে ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণরূপে অতিরিক্ত চাপে পড়ে গিয়েছিল, ১৯৮৫ সালে ৮,২৬০টি দাবি করা হয়েছিল।<ref name=":4" /> ১৯৮৭ সালে প্রায় ২৭,০০০ শরণার্থী দাবি শুরু হয়েছিল। দাবির এই বৃদ্ধি এবং শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নিবেদিত সম্পদের প্রভাবে, ১৯৮৮ সাল নাগাদ একটি দাবি প্রক্রিয়াকরণে গড়ে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগছিল। কানাডায় এই বৃদ্ধি বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও একই রকম বৃদ্ধির প্রতিফলন ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৬ সালে পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে ২০,০০০ আশ্রয়প্রার্থী এসেছিলেন, ১৯৮০ সালে ১৫৮,০০০ জন আবেদনকারী ছিলেন এবং ১৯৮৬ সাল নাগাদ, বার্ষিক ২০০,০০০ এরও বেশি আবেদন জমা পড়ছিল।
এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যার প্রতিক্রিয়ায়। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে দাবির সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্ভাব্য প্রভাব পড়ার আশঙ্কায়, ১৯৮২ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব একটি নবগঠিত শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়, যা প্রথমবারের মতো অভিবাসন বিভাগ থেকে স্পষ্টভাবে স্বাধীন করা হয়েছিল। এর নিজস্ব চেয়ারম্যান এবং বর্ধিত বাজেট ছিল। এর স্বাধীনতা কাঠামোগতভাবে এই কারণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে এটি CEIC-এর বৈদেশিক শাখার একটি অংশ না হয়ে সরাসরি মন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করত। এর ফলে, প্রথমবারের মতো, বিশ্বজুড়ে শরণার্থী-উৎপাদনকারী পরিস্থিতির উপর প্রামাণিক এবং স্বাধীন ডকুমেন্টেশন সংকলন করা সম্ভব হয়েছিল। এই ব্যবস্থায় কেবল লিখিত দাখিল অন্তর্ভুক্ত ছিল, কমিটি ব্যক্তিগতভাবে মূল্যায়ন করত। কমিটি শেষ পর্যন্ত অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করত। ১৯৮৩ সালে টরন্টো এবং মন্ট্রিলে এই ধরনের দাবিদারদের মৌখিক শুনানির ব্যবস্থা করার জন্য একটি পাইলট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এতে কেবল একজন RSAC সদস্য জড়িত ছিলেন যিনি পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং যিনি দাবিদার এবং আইনজীবীর সাথে তাদের যেকোনো উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন। এই মডেলের অধীনে, প্রক্রিয়াটি এখনও দ্বিখণ্ডিত ছিল কারণ সেই সদস্য নিজেই প্রকৃত সিদ্ধান্ত নেননি; সিদ্ধান্তটি এখনও মন্ত্রী কর্তৃক একটি RSAC প্যানেলের পরামর্শে নেওয়া হয়েছিল যারা নিজেরাই দাবিদারকে দেখেননি। কমিটিতে ব্যক্তিগত জীবনের সদস্য, অভিবাসন বিভাগ এবং বিদেশ বিষয়ক বিভাগ সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে, কানাডার পররাষ্ট্র নীতি থেকে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত ছিল। শরণার্থী মর্যাদা প্রদানকে উৎপত্তিস্থলের অবস্থা সম্পর্কে একটি বিবৃতি হিসেবে দেখা যেতে পারে। যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে কানাডার রাজনৈতিক কারণে শরণার্থী মর্যাদা প্রদান সীমিত করার ইতিহাস রয়েছে, বিশেষ করে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর উপর এটি কে কেন্দ্র করে এবং নতুন উদীয়মান ঔপনিবেশিক-পরবর্তী রাষ্ট্রগুলো থেকে আসা শরণার্থীদের স্বীকৃতি দিতে অনীহা প্রদর্শন করে, পাছে শরণার্থী সুরক্ষার এই অনুদানকে পশ্চিমা শক্তির নীতি এবং কর্মকাণ্ড শরণার্থী প্রবাহের কারণ বলে স্বীকার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে বিদেশ বিষয়ক বিভাগ RSAC-এর সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করার চেষ্টা করেছিল। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সিস্টেমটি কতটা পর্যবেক্ষণাধীন ছিল।
পরিবর্তনের এই প্রেরণা আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছিল যা শরণার্থী ব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সেই সময় পর্যন্ত, সিস্টেমটি "স্থিতিতে থাকা" এবং "স্থিতির বাইরে থাকা" ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য করেছিল, শুধুমাত্র ''অভিবাসন আইন'' লঙ্ঘনের জন্য তদন্তাধীন ব্যক্তিদের জন্য শরণার্থী দাবি বিবেচনা করেছিল। ১৯৮৫ সালে ফেডারেল আদালত এই পার্থক্যকে অন্যায্য এবং অকার্যকর বলে রায় দেয়। অধিকন্তু, ১৯৮৫ সালের আরেকটি সিদ্ধান্ত, ''সিং বনাম কর্মসংস্থান ও অভিবাসন মন্ত্রী'', প্রতিষ্ঠিত করে যে যেখানে একজন দাবিদারের বিশ্বাসযোগ্যতা ঝুঁকির মধ্যে থাকে, সেখানে তৎকালীন ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' সামনে মৌখিক শুনানি প্রয়োজন। এই রায়ে, কানাডার সুপ্রিম কোর্ট পূর্ববর্তী ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় যার অধীনে মৌখিক শুনানির জন্য আবেদন করতে হত। ''সিং-'' এর সিদ্ধান্তকে প্রায়ই কানাডার মাটিতে আগমনের সময় অভিবাসীদের জন্য ''কানাডীয় অধিকার ও স্বাধীনতা সনদের'' সুরক্ষা কার্যকর করার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। এর ফলে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পুনর্গঠন প্রয়োজন যাতে স্বাভাবিকভাবেই সুষ্ঠু মৌখিক শুনানি শুরু হয়। ''সিং-এর'' সিদ্ধান্তের একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল মৌখিক শুনানির সুযোগ সম্প্রসারণ করা এবং এই ধরনের সুবিধা সহজতর করার জন্য ব্যবস্থার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ১৯৮৫ সালে বিল সি-৫৫ আইএবি সংশোধন করে যাতে সকল শরণার্থী তাদের আপিলের সময় মৌখিক শুনানির সুযোগ পান এবং বিলটি আইএবি সদস্যের সংখ্যা আঠারো থেকে পঞ্চাশে উন্নীত করে।
এই চ্যালেঞ্জের সমষ্টি মোকাবেলা করার জন্য, তৎকালীন কানাডীয় সরকারগুলো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা পরিচালনা করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮১ সালের অভিবাসন অনুশীলন ও পদ্ধতি সম্পর্কিত টাস্ক ফোর্স, ১৯৮১ সালের ম্যাকডোনাল্ড রয়্যাল কমিশন অফ ইনকোয়ারি কনসার্নিং সার্টেইন অ্যাক্টিভিটিজ অফ দ্য আরসিএমপি যা অভিবাসনে নিরাপত্তা পরীক্ষা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে, ১৯৮৩ সালের রবিনসন রিপোর্ট ''"ইলিগ্যাল মাইগ্রেন্টস ইন কানাডা"'' শিরোনামে, ১৯৮৪ সালের রাটুশনি রিপোর্ট ''"এ নিউ রিফিউজি স্ট্যাটাস ডিটারমিনেশন প্রসেস ফর কানাডা" শিরোনামে'', ১৯৮৪ সালের ডেসচেনেস কমিশন অফ ইনকোয়ারি অন ওয়ার ক্রিমিনালস ইন কানাডা" শিরোনামে এবং ১৯৮৫ সালের রাব্বি গুন্থার প্লাউটের রিপোর্ট ''"রিফিউজি ডিটারমিনেশন ইন কানাডা"'' শিরোনামে। এই প্রতিটি প্রতিবেদনে একটি নতুন আশ্রয় নির্ধারণ ব্যবস্থার জন্য পদ্ধতির সুপারিশ করা হয়েছে যা শোনার অধিকার উভয়কেই সম্বোধন করবে এবং ন্যায্যতা এবং দক্ষতার প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখবে। ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ প্রক্রিয়া" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রদান করে যা তিনটি প্রধান সুপারিশ করে: ১) আরএসএসি অভিবাসন এবং বহিরাগত নীতি বিবেচনা থেকে স্বাধীন হওয়া উচিত, ২) কনভেনশন শরণার্থী সংজ্ঞার ব্যবহারে আইনের মূলনীতির পাশাপাশি নীতিমালাও মেনে চলা উচিত। ৩) প্রাথমিক নির্ধারণ পর্যায়ে দাবিদারের মৌখিক শুনানি করা উচিত। পরিশেষে, প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে "বর্তমান নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি কেন্দ্রীয় ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হোক যা শরণার্থীদের দাবি শুনবে এবং নির্ধারণ করবে।" ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় সরকার কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কনভেনশনের শরণার্থী সংজ্ঞার মূলনীতি পালনের সুপারিশের ক্ষেত্রে, মন্ত্রী নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন যা দাবিদারদের সন্দেহের সুবিধা প্রদানের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করেছে। শরণার্থী দাবিদারদের জন্য ব্যবস্থার ন্যায্যতা বৃদ্ধির জন্য সরকার অন্যান্য পদক্ষেপও গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে চাকরি-নির্দিষ্ট কর্মসংস্থানের নথিগুলোকে জেনেরিক অনুমোদন দিয়ে প্রতিস্থাপন করা<ref name=":79" /> এবং একজন দাবিদার নিয়োগ অনুমোদনের জন্য যোগ্য হওয়ার আগে তদন্ত আহ্বানের প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়া - এর ফলে কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য আট মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার বাধা দূর করা হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকের এই সমস্ত প্রতিবেদন, ঘটনাবলী এবং সম্পর্কিত আইনী কৌশল থেকে শেষ পর্যন্ত যা বেরিয়ে আসে তা হলো একটি ট্রাইব্যুনাল মডেলকে কেন্দ্র করে একটি নতুন আশ্রয় ব্যবস্থা। প্রাসঙ্গিক আইন, বিল সি-৫৫, বা ''শরণার্থী সংস্কার আইন'', ১৯৮৬ সালে হাউস অফ কমন্সে উত্থাপন করা হয়েছিল। এই বিলটি বিল সি-৮৪, ''শরণার্থী প্রতিরোধ ও আটক আইন দ্বারা পরিপূরক ছিল।'' এই পরবর্তী, আরও বিধিনিষেধমূলক আইনটি কানাডার উপকূলে জাহাজের আগমন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং মানুষ পাচার সম্পর্কে উদ্বেগের প্রতি সাড়া দেয়। সংসদের জরুরি অধিবেশনে এই বিলগুলো নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিল। সিনেট বিল সি-৮৪ সম্পর্কে একটি বিস্তৃত তদন্ত পরিচালনা করে এবং বিলটি দুবার প্রত্যাখ্যান করে। অবশেষে, একজন নতুন অভিবাসন মন্ত্রী অতিরিক্ত সংশোধনীতে সম্মত হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে হাউস অফ কমন্স এবং সিনেট বিল দুটি পাস করে এবং সেই বছরের ২১ জুলাই রাজকীয় সম্মতি প্রদান করে। নতুন সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য এবং দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* <u>Creation of an independent tribunal:</u> The Immigration and Refugee Board of Canada came into existence as an independent administrative tribunal on January ১, ১৯৮৯ with ১১৫ members. At that time, the IRB consisted of two divisions: the Convention Refugee Determination Division and the Immigration Appeal Division, which replaced the previous Immigration Appeal Board. Gordon Fairweather, a former Attorney General of New Brunswick and the first Chief Commissioner of the Canadian Human Rights Commission, was appointed as the first Chairman of the IRB. As the respective names imply, one of the biggest changes was the move from a Refugee Status ''Advisory Committee'' which had left ultimate decision-making in the hands of the Minister it advised, to a fully independent tribunal.
* <u>CRDD Oral hearings:</u> The new refugee determination process included an oral refugee claim hearing with two IRB members presiding.
* <u>Eligibility criteria:</u> In ১৯৮৮, the Canadian Parliament ‘introduced the concept of eligibility criteria into the legislation’ governing refugee claimants by revising the Immigration Act. The eligibility criteria have since been a prerequisite to claim refugee status in Canada.
* <u>Eligibility and credible basis screening procedure:</u> The ''Immigration Act'' included a procedure whereby all applicants had a hearing before a panel of two in which a claimant had the burden of proving that they were eligible to have their claim determined and that there was a credible basis for the claim. The panel included an immigration officer and a member of the CRDD. If either of the two panel members were persuaded, then the claim would be heard at a full hearing before the CRDD. The Minister was represented at such proceedings by a case presenting officer (CPO). In port-of-entry cases, “designated counsel” was provided for refugee claimants at first-level hearings, at the expense of the Minister, for the purpose of avoiding delay in processing claims. When this system was being introduced, the government estimated that this screening process could be completed in between three and seven days. Reasons were required to be provided for decisions in this screening process. There was a low threshold for a credible basis finding: the ''Immigration Act'' provided that if either the adjudicator or the CRDD Member was of the opinion that there was any credible or trustworthy evidence on which the Refugee Division might determine the claimant to be a Convention refugee, they were to determine that the claimant had a credible basis for the claim. As of October ১৯৮৯, ৫% of claims had been determined to lack a credible basis pursuant to this process.
* <u>Governor-in-Council appointees:</u> Up to ৬৫ full-time Members of the Convention Refugee Determination Division could be appointed by the Governor in Council. If workload required, additional part-time Members could be recruited.
* <u>Non-adversarial processes:</u> The CRDD hearing into a claim was to be conducted in a non-adversarial manner. As part of this, the Minister was entitled only to present evidence and could not cross-examine the claimant or make representations, save where exclusion was at issue.<ref name=":44" /> Panels of the CRDD were assisted by an IRB employee called a Refugee Hearing Officer (RHO).<ref name=":44" /> The RHO was the new name for what had been referred to as the case presenting officer under the previous Refugee Status Advisory Committee system.
* <u>Private proceedings:</u> In contrast to the public proceedings at the former IAB, CRDD proceedings were normally conducted ''in camera''.<ref name=":44" />
* <u>Informal processes:</u> IRB management aimed to ensure that the Board respected its quasi-judicial status and avoided the trappings of a conventional court system, pushing the idea of brief written decisions and also supporting oral decisions.
* <u>No countries designated pursuant to the safe third country regime:</u> One concern raised by civil society with the new legislation was the Safe Third Country Regime that it introduced. In response to public criticism of the Safe Third Country Regime, Barbara McDougall, who was then Minister of Employment and Immigration, became persuaded that the United States might send refugee claimants deported from Canada back to Central America where their lives would be in jeopardy. As a result, she announced in December ১৯৮৮ that she was "prepared to proceed with no country on the safe third country list ... We think the new system will be able to function without it."
* <u>Limitations on judicial review:</u> As was the case for the IAB, judicial review of determinations made by the IRB could only proceed with leave. However, the act provided that deportations would not take place until the Court had made a decision on the application for judicial review.
* <u>Post-determination risk assessment:</u> The government instituted a policy in ১৯৮৯ to conduct a risk review for refused refugee claimants where time had passed between their refusal and deportation to assess claims regarding new risks. Specifically, unsuccessful refugee claimants were able to apply for post-determination review by an immigration official to evaluate whether removal would result in compelling personal risk. This review assessed "risk to life, inhumane treatment, or extreme sanctions," and could provide protection to persons not covered by the ১৯৫১ Convention and Protocol. Approximately ২-৩% of such applications were accepted. As discussed below, this process eventually became the foundation for what is now s. ৯৭ of the IRPA.
* <u>Cessation and vacation provisions:</u> Under this new law, the Minister was able to apply to the Refugee Division for a determination, before a panel of three of its members, that a person was no longer a Convention refugee on the grounds that the refugee obtained their status by fraudulent means or misrepresentation, or that the refugee no longer needs protection. An application for vacation first required leave from the Chairperson.
আইআরবি কানাডায় আশ্রয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি নতুন সূচনার প্রতিনিধিত্ব করে। নতুন ব্যবস্থায় রূপান্তরের অংশ হিসেবে, সরকার আশ্রয় আবেদন মুলতুবি থাকা ব্যক্তিদের জন্য বেশ কয়েকটি ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচি চালু করেছে। প্রথমটি ছিল সীমিত আকারে ১৯৮৬-৮৭ সালের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ১৯৮৯ সালে আইআরবি-র পাশাপাশি কার্যকর হওয়া পরবর্তী একটি আইন "সমস্যা সমাধান" এবং আশ্রয় নীতি নির্ধারণে নতুন করে শুরু করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।<ref name=":13">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> যদিও সরকার এই শব্দটি পরিত্যাগ করেছিল,<ref name=":942">Minister of Employment and Immigration, Press Release, March 20, 1990, 90-04.</ref> এটি মূলত ১৯৮৬ সালের ২১ মে এর আগে কানাডায় প্রবেশকারী শরণার্থী দাবিদারদের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমা ছিল। সেখানে ব্যক্তিদের কানাডায় থাকতে এবং স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো যদি তারা ইতিমধ্যেই নিযুক্ত থাকে বা নিকট ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার সম্ভাবনা থাকে এবং তাদের কোনও চিকিৎসা, নিরাপত্তা বা অপরাধমূলক উদ্বেগ না থাকে। আনুষ্ঠানিকভাবে, দাবিগুলোকে চারটি দলে ভাগ করা হয়েছিল:
* গ্রুপ I: যাদের দাবি আগে শপথের অধীনে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সাধারণত, এই দাবিগুলো প্রথমে এই যুক্তির ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হতো যে এই দাবিদাররা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কানাডায় ছিলেন। কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডার কর্মকর্তারা ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে এই দাবিগুলো পর্যালোচনা শুরু করেন। যদি, পর্যালোচনার পর শরণার্থী দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি সুপারিশ করা হয়, তাহলে মামলাটি একজন বিচারক এবং CRDD-এর একজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ প্যানেলে পাঠানো হবে। যদি সেই প্যানেলগুলো বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তিতে সুপারিশের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে দাবিদাররা পরবর্তী শুনানির প্রয়োজন ছাড়াই স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হত।
* দ্বিতীয় দল: যারা ১৯৮৬ সালের মে থেকে ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কানাডায় এসেছিলেন এবং যাদের মন্ত্রীর পারমিট দেওয়া হয়েছিল।
* গ্রুপ III: যাদের অভিবাসন তদন্ত শপথের অধীনে তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য স্থগিত করা হয়েছিল কিন্তু এই পরীক্ষাগুলো পরিচালিত হয়নি।
* গ্রুপ IV: যেসব ব্যক্তির দাবির তদন্ত এখনও খোলা হয়নি বা তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য এখনও স্থগিত করা হয়নি।
গ্রুপ I এর দাবিদারদের তাদের দাবির পক্ষে কোন বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি পাওয়া যায়নি এবং গ্রুপ II-IV এর দাবিদারদের কানাডা ইমিগ্রেশন সেন্টারে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। যদি সেই দাবিদাররা কানাডায় থাকার জন্য পর্যাপ্ত মানবিক এবং সহানুভূতিশীল কারণ দেখাতে পারতেন, যেমন পারিবারিক ক্লাস লিঙ্ক, তাহলে আর কোনও পর্যালোচনার প্রয়োজন হতো না এবং দাবিদাররা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন।<ref name=":913">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
পূর্ববর্তী ব্যবস্থায় ৩০% আবেদনকারী গৃহীত হয়েছিল, ত্বরিত পর্যালোচনা কর্মসূচির অধীনে, গ্রহণযোগ্যতার হার অনেক বেশি ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৬ সালে প্রক্রিয়াকৃত ২৮,০০০ আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় ৮৫% গৃহীত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সরকার এই সাধারণ ক্ষমার সমতুল্য বলে যে কোনও পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে, ১৯৯০ সালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলে যে "'একটি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা মানে বিশ্বকে জানানো যে কানাডা তার আইনের প্রতি অসম্মান সহ্য করে। আমি তা করতে পারি না,' মন্ত্রী বলেন।" সর্বোপরি, ''সিং-এর'' সিদ্ধান্ত এবং ১৯৮৯ সালে সংস্কারকৃত শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার মধ্যে ১,২৫,০০০ মামলা জমে ছিল, যে মামলাগুলো এই ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। যদিও দ্রুত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে বকেয়া আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হওয়ার কথা ছিল, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের নির্বাহী পরিচালক জ্যানেট ডেঞ্চের ভাষায়, "শরণার্থীরা বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন এবং তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন", তাই এটি করতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। এই ব্যাকলগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাদের বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের কানাডায় দর্শনার্থী বা অভিবাসী হিসেবে ফিরে আসার জন্য মন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন ছিল।<ref name=":912">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
== শরণার্থী ব্যবস্থার আইনগত নির্ধারণ এবং শরণার্থী সংজ্ঞার বিস্তৃত ব্যাখ্যা ==
''সিং-'' এর সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং এর ফলে শরণার্থী ব্যবস্থায় পরিবর্তন। এর মধ্যে আইআরবি তৈরি অন্তর্ভুক্ত, যুক্তিসঙ্গতভাবে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ক্রমবর্ধমান 'আইনব্যবস্থা' হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কলিন স্কট বিচারব্যবস্থাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন "যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য মূল্যবোধ এবং প্রত্যাশা দ্বারা পরিচালিত সম্পর্কগুলো আইনি মূল্যবোধ এবং নিয়মের অধীন হয়"। আশ্রয়ের একটি আইনি ধারণা প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কিত অন্যান্য ধারণাগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে আশ্রয়ের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ধারণাগুলোও রয়েছে যা পূর্বে প্রাধান্য পেয়েছিল। এই পরিবর্তনের ফলে সিস্টেমটি কীভাবে পরিচালিত হতো তার উপর প্রভাব পড়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক সিদ্ধান্তের জন্য যে কারণগুলো দেওয়া হয়েছিল তা খুব কম ছিল; শরণার্থী আইনজীবী ডেভিড ম্যাটাস বর্ণনা করেছেন। কারণগুলো প্রায়ই "কেবল কয়েকটি বাক্য" ছিল যা "কদাচিৎ সেই তথ্যের ফলাফলের সাথে সম্পর্কিত ছিল যার উপর তাদের সিদ্ধান্ত ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল"। সংক্ষেপে, তিনি বলেন। এটি প্রস্তাব করা হয়েছিল তা ছিল সিদ্ধান্ত, যুক্তির বিপরীতে। আইআরবি কর্তৃক প্রদত্ত কারণগুলো সাধারণত আরও পূর্ণাঙ্গ হবে। এই পরিবর্তনটি সেই সময়ের আন্তর্জাতিক প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৪ সালের আগে পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে বাধ্য করা হয়নি।
এইভাবে, ব্যবস্থার বিচারব্যবস্থায় ব্যক্তিদের জন্য পরামর্শ গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল, তাই ১৯৮৬ সালে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের একটি দল কানাডার অভিবাসন শিল্প সমিতি, অ্যাসোসিয়েশন অফ ইমিগ্রেশন কাউন্সেল অফ কানাডা গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছিল, এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। ১৯৭৮ সাল থেকে, অভিবাসন আইন অভিবাসন পরামর্শদাতাদের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে প্রবিধান প্রণয়নের অনুমতি দেয়, কিন্তু তা করা হয়নি। ১৯৯০-এর দশকে ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট ব্যবস্থার বৈধতা নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠেছিল, তার অবসান ঘটে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ল সোসাইটি ওয়েস্টকোস্ট ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড পরিচালনাকারী যশবন্ত সিং মাঙ্গাতের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে, যিনি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ডের সামনে ফি দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বারে মাঙ্গাতকে ডাকা হয়নি এই ভিত্তিতে একজন বিসি বিচারক এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর তার মামলাটি একটি পরীক্ষামূলক মামলায় পরিণত হয়। এটি শেষ পর্যন্ত ২০০১ সালে নিষ্পত্তি হয় যখন কানাডার সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে আইনজীবী নয় এমন অভিবাসন পরামর্শদাতারা আসলে বৈধ এবং ''ইমিগ্রেশন আইন'' দ্বারা অনুমোদিত।<ref name=":66" /> সেই সময়ে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না এবং কানাডীয় আইনে এমন কোনও কিছুই ছিল না যা লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিকে অভিবাসন বিষয়ে ক্লায়েন্টের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ফি নেওয়া থেকে বিরত রাখবে।<ref name=":66" /> এটি ২০০২ সালের পরে আসবে না।
শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি এবং শরণার্থী ব্যবস্থার এই বিচারব্যবস্থার সাথে সাথে, শরণার্থী হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তার প্রকৃতি পরিবর্তিত হতে শুরু করে - ধারণাটি মূলত কমিউনিজম থেকে পালিয়ে যাওয়ার ধারণা থেকে কে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী তার একটি বৃহত্তর মানবাধিকার-ভিত্তিক ধারণায় চলে যায়। শরণার্থী পণ্ডিত গিল লোয়েশার যুক্তি দিয়েছিলেন, "১৯৫০ এবং ১৯৭০ এর দশকের মধ্যে নিপীড়নকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করা কোনও মাথাব্যথার কারণ ছিল না এবং আশ্রয় প্রদান সাধারণত কমিউনিজমের ব্যর্থতা এবং পশ্চিমাদের দানশীলতা পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হত।" নতুন আবিষ্কৃত আইআরবি ''শরণার্থী কনভেনশনকে'' এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে যা "বিস্তৃত" এবং "প্রগতিশীল" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে কানাডা বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে যারা যৌন অভিমুখিতা-সম্পর্কিত নিপীড়নকে আশ্রয় দাবির ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৩ সালে ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধন করে চেয়ারপারসনকে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। আইনটির সংশোধনী কার্যকর হয় ১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩ সালে। এরপর কানাডা ৯ মার্চ, ১৯৯৩ তারিখে লিঙ্গ-ভিত্তিক আশ্রয় দাবি পরিচালনার জন্য নির্দেশিকা জারি করে,<ref name=":80" /> যা লিঙ্গ-ভিত্তিক নিপীড়নের সাথে সম্পর্কিত দাবির ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার সাথে সম্পর্কিত ছিল। ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী প্রবেশকারীদের ৮০% পুরুষ থাকলেও, ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এই ব্যবস্থা আরও লিঙ্গ ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৯৬ সালে আইআরবি শিশু শরণার্থী দাবিদারদের উপর নির্দেশিকা গ্রহণ করে। এটি কোনও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কর্তৃক গৃহীত এই ধরণের প্রথম নীতিগত উদ্যোগ বলে জানা গেছে। অনেক পর ২০১৭ সালে বোর্ড যৌন অভিমুখীকরণ এবং লিঙ্গ পরিচয় এবং অভিব্যক্তি (SOGIE) সম্পর্কিত দাবির বিচারের জন্য নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করে। দাবির গ্রহণযোগ্যতার হারও নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল - ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদার জন্য করা প্রায় ৭০ শতাংশ দাবি পরীক্ষার পর প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল; ১৯৯০-এর দশক এবং পরবর্তীকালে গ্রহণযোগ্যতার হার বৃদ্ধি পায়।
কানাডার শরণার্থী বাধ্যবাধকতার এই প্রগতিশীল ব্যাখ্যাগুলো কানাডার মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পদ্ধতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল যা শরণার্থী দাবিদাররা অ্যাক্সেস করতে পারে। কানাডা সরকার ১৯৯১ সালে শিশু অধিকার সনদ অনুমোদন করে। এটি কানাডা কর্তৃক অনুমোদিত পূর্ববর্তী দলিলগুলোর পরিপূরক। এর মধ্যে রয়েছে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি। আজ দাবিদাররা এই চুক্তি অনুসারে প্রতিষ্ঠিত সাতটি জাতিসংঘ চুক্তি সংস্থার কাছে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশেষ পদ্ধতিতে, বিশেষ করে অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূতের কাছে ব্যক্তিগত অভিযোগ আনতে পারেন। নির্যাতন বিরোধী কমিটি হলো এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে বেশি অনুরোধকৃত চুক্তি সংস্থা এবং তাদের কাছে জমা দেওয়া ব্যক্তিগত অভিযোগের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই কনভেনশনের ৩ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ''নন-রিফাউলমেন্ট'' নীতির লঙ্ঘনের অভিযোগে।
মানবিক ও সহানুভূতির কারণে কানাডায় থাকার জন্য আবেদনপত্র তৈরির ক্ষেত্রেও একই রকম পরিবর্তন এসেছে। এটি অনেকেই শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করার বিকল্প হিসেবে অথবা শরণার্থী দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে আবেদন করে। এক পর্যায়ে, শরণার্থী আইনজীবীরা অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো অকেজো। ১৯৯৩ সালে মেরি জো লেডি অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো "শরণার্থীদের জন্য অকেজো" এবং বলেছিলেন যে গত বছর অন্টারিওতে মানবিক এবং সহানুভূতিশীল পর্যালোচনার জন্য কোনও অনুরোধ মঞ্জুর করা হয়নি।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 136.</ref>
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং দক্ষতার পরিমাপ ==
শরণার্থী সংজ্ঞার এই বিস্তৃত ধারণার বিতর্কিত ফলাফল ছিল অন্যান্য অভিবাসীদের থেকে শরণার্থীদের আলাদা করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান অসুবিধা।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 165.</ref> প্রকৃতপক্ষে যেহেতু দারিদ্র্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে, তাই অনেক শরণার্থী উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে অভিবাসন করবে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 2.</ref> এই ধরনের চ্যালেঞ্জ, কানাডায় ব্যবহৃত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যমূলক অবস্থা নির্ধারণ মডেল। সেই সাথে দাবির সংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত বকেয়া মামলার ফলাফল হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এটি বছরে কয়েক হাজারের হারে ছিল। এটি ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছেছিল।<ref name=":482">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 381. See also the following statement that Canada "received more than 40,000 refugees in 1992" in Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 302.</ref> এটি বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী সংকটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১-৯২ সালে প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার বিস্ফোরণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি কানাডায় এসে আশ্রয় দাবি করেছিলেন। এই মুহুর্তে, কানাডা তার পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে বসনিয়া থেকে ২৫,০০০ এরও বেশি শরণার্থীর ভর্তির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করেছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 282.</ref> যদিও মূলত ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অনুমান করেছিল যে মামলাগুলো মাত্র আট সপ্তাহ এবং কয়েক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে, ক্রমবর্ধমানভাবে এটি ঘটছিল না।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 10.</ref>
১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সিনেট কর্তৃক পাস হওয়া বিল সি-৮৬ ছিল দাবিদারদের এই স্রোতের প্রতিক্রিয়া। বিলটি মূলত সিস্টেমের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়েছিল। এটি বিভিন্ন উপায়ে এটি করেছে:
* প্রথমত, আইআরবিতে দাবির জন্য একটি স্ক্রিনিং সিস্টেম বাতিল করে এবং আবেদনকারী শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার যোগ্য কিনা তা নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষ বোর্ড থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা। দক্ষতার নামে, বিল সি-৮৬ যোগ্যতা নির্ধারণের ধাপটি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে এবং "কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি" ছাড়াই দাবিগুলো বাদ দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটি পরিত্যাগ করে। যখন দুই-পর্যায়ের স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া বাদ দেওয়ার জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল, তখন দাবির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি নেই তা নির্ধারণের জন্য একটি নতুন পরীক্ষা আইনে যুক্ত করা হয়েছিল। তবে এটি একটি ভিন্ন ভূমিকা পালন করেছিল: প্রাথমিক পর্যায়ে দাবিগুলো স্ক্রিন করার এর বদলে এটি ব্যর্থ দাবিদারদের সিদ্ধান্ত-পরবর্তী অধিকার সীমিত করার জন্য কাজ করেছিল যাদের দাবিগুলো কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়।<ref>''Rahaman v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2002 FCA 89, [2002] 3 FC 537, <[https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html?searchUrlHash=AAAAAQAaUmFoYW1hbiBhbmQgY3JlZGlibGUgYmFzaXMAAAAAAQ&resultIndex=1 https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html]> at paras 14-16.</ref>
* সিআরডিডিকে মৌখিক শুনানি না করেই দাবি গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়, যাকে "দ্রুত প্রক্রিয়া" বলা হত। দ্রুত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, একজন RHO দাবিদারের সাক্ষাৎকার নেবেন এবং একজন CRDD সদস্যের কাছে সুপারিশ করবেন যে দাবিটি শুনানি ছাড়াই গ্রহণ করা উচিত কিনা অথবা শুনানির প্রয়োজন আছে কিনা। ১৯৯৩ সালে সমস্ত দাবির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এই দ্রুত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছিল। দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/RPD Rule 23 - Allowing a Claim Without a Hearing|কানাডীয় রিফিউজি প্রসিডিওর/আরপিডি রুল ২৩ - শুনানি ছাড়াই দাবি অনুমোদন করা#শুনানি ছাড়াই দাবি গ্রহণের জন্য বোর্ডের প্রক্রিয়াগুলোর ইতিহাস কী?]]
* শরণার্থী বিভাগের প্রতি পনেরো সদস্যের জন্য একজন সিএম অনুপাতে শরণার্থী বিভাগের পূর্ণ-সময়ের সদস্যদের মধ্য থেকে সমন্বয়কারী সদস্য (সিএম) হিসেবে মনোনীত করার ক্ষমতা জিআইসিকে দেওয়া হয়েছিল।
* বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা চাওয়ার প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইআরবি তৈরির সময় থেকে, ফেডারেল আপিল আদালতের প্যানেলগুলো বিচারিক পর্যালোচনা পরিচালনা করে আসছিল। সেখানে তারা অনুমতি মঞ্জুর করেছিল। ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ সালে ''ফেডারেল কোর্টস অ্যাক্টের'' সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তির সিদ্ধান্তের উপর বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৯৩ সালে ''অভিবাসন আইনের'' সংশোধনী কার্যকর হয় যা কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগের সমস্ত সিদ্ধান্তের উপর ট্রায়াল বিভাগের একক বিচারকদের মূল বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার প্রদান করে। বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার জন্য বহু-সদস্যের প্যানেল থেকে একক বিচারকের দিকে স্থানান্তর ছিল এই উচ্চ ভলিউম সিস্টেমের জন্য বাস্তবায়িত আরেকটি দক্ষতার পরিমাপ।
এই সময়ে নতুন IRB অনুশীলনের নিয়মও তৈরি করা হয়েছিল, ''কনভেনশন রিফিউজি ডিটারমিনেশন ডিভিশন রুলস'' SOR/৯৩-৪৫।
১৯৯৪ সালে বাস্তববাদের প্রতি ছাড় হিসেবে, সরকার কিছু প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের তাদের মূল দেশে, বিশেষ করে চীন থেকে আসা কিছু দাবিদারদের ফেরত না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি ডিফার্ড রিমুভাল অর্ডারস ক্লাস (DROC) চালু করে এটি করেছে। এটি কিছু শর্ত সাপেক্ষে তিন বছর পরেও অপসারণ না করা প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের ল্যান্ডিংয়ের জন্য আবেদনগুলোকে অনুমোদন করে। এই ক্লাসটি বিশেষভাবে অনিশ্চিত অবস্থায় থাকা প্রায় ৪,৫০০ চীনা দাবিদারের পরিস্থিতি সমাধানের লক্ষ্যে করা হয়েছিল। এইভাবে, এই উদ্যোগটি ছিল একটি আপস: তিয়ানানমেন স্কয়ার হত্যাকাণ্ডের পর চীনে নির্বাসন স্থগিত হওয়ার সময় অপেক্ষা করা দাবিদারদের বিদ্যমান জমা পড়া দাবিদারদের জন্য এক ধরণের সাধারণ ক্ষমা প্রদান। একই সাথে ঘোষণা করা হয়েছিল যে নতুন প্রত্যাখ্যাত দাবিদারদের নির্বাসন পুনরায় শুরু হবে। পরবর্তীতে কানাডা নিয়মিত পদ্ধতির মাধ্যমে স্বীকৃতি না পাওয়া দাবিদারদের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও চালু করে। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে সরকার আনডকুমেন্টেড কনভেনশন রিফিউজিজ ইন কানাডা ক্লাস (UCRCC) চালু করে। এটি সোমালিয়া এবং আফগানিস্তানের কিছু শরণার্থীর জন্য একটি উপায় প্রদান করে যারা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য তাদের পরিচয় সন্তোষজনকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে অক্ষম ছিল, কিন্তু তাদের শরণার্থী নির্ধারণের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের অপেক্ষা আরোপ করে।
অধিকন্তু, শরণার্থী শুনানি কর্মকর্তার পদটিকে ব্যবস্থার দক্ষতা এবং সততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা অব্যাহত ছিল। এই পদটি সিআরডিডি সদস্যদের গবেষণা পরিচালনা এবং শুনানির সময় প্রশ্নোত্তরের জন্য দায়িত্ব পালনে সহায়তা করেছে। ১৯৯৫ সালে পদটির নাম পরিবর্তন করে শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা রাখা হয়।
অধিকন্তু, কানাডায় আশ্রয় প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য, পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থাকে পেশাদারীকরণ করার জন্য এবং কানাডায় আশ্রয় দাবি কম আকাঙ্ক্ষিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>আপিলের সীমাবদ্ধতা:</u> আইআরবি প্রতিষ্ঠার সময় কার্যকর করা একটি দক্ষতা পরিমাপ ছিল যে শরণার্থী দাবিদারদের এই সংশোধিত ব্যবস্থার অধীনে তাদের দাবির প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আর আপিল করার ক্ষমতা ছিল না। ডেভিড ম্যাটাস লিখেছেন, নতুন প্রক্রিয়ার এই দিকটি সেই সময়ে শরণার্থীদের জন্য আইনি পরামর্শদাতাদের দ্বারা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। যেসব দাবিদারদের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, তারা ফেডারেল আদালতে বিচারিক পর্যালোচনার আশ্রয় নিতে থাকে। তবে ১৯৮৯ সালে ''ইমিগ্রেশন আইনের'' সংশোধনীতে ছুটির প্রয়োজনীয়তা চালু করা হয়েছিল ''।'' এর ফলে, ফেডারেল আদালতে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার আবেদনকারীদের তাদের মামলার শুনানির জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছিল। প্রায় ১০ শতাংশ মামলায় আপিলের অনুমতি মঞ্জুর করা হয়েছে এবং ছুটি প্রত্যাখ্যানের কোনও কারণ মঞ্জুর করা হয়নি।
* <u>দাবি করার যোগ্যতার উপর বিস্তৃত বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯৪ সালে নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রীকে গুরুতর অপরাধের ভিত্তিতে একজন শরণার্থী আবেদনকারীর বিরুদ্ধে বিপদের মতামত জারি করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। এর ফলে শরণার্থী কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়, মামলাটি আইআরবির এখতিয়ার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিল সি-৪৪ ১০ জুলাই, ১৯৯৫ তারিখে কার্যকর হয়। এটি শরণার্থী বিভাগে দাবি পাঠানোর যোগ্যতা পুনর্নির্ধারণের বিধান রাখে। এর ফলে CRDD-তে দাবির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা সম্ভব হয়েছিল এবং যদি কোনও ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তা দাবিটি CRDD-তে পাঠানোর অযোগ্য বলে নির্ধারণ করেন, তাহলে CRDD-তে দাবির রেফারেল প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছিল।
* <u>দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থানের উপর বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার শরণার্থী দাবিদারদের কাজ করতে বাধা দেয়। ১৯৯০-এর দশকের পরে এটি পরিবর্তন করা হয়েছিল।
* <u>দুই ব্যক্তির প্যানেল থেকে এক ব্যক্তির প্যানেলে স্থানান্তর করুন:</u> কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগটি মূলত ধারণা করা হয়েছিল, শরণার্থী দাবিদারদের দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্যানেলের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তাদের মধ্যে কেবল একজনকে তাদের আবেদন সফল করার জন্য তাদের দাবি গ্রহণ করতে হবে। পূর্ববর্তী শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির তিন সদস্যের প্যানেল এবং পূর্ববর্তী ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের তিন সদস্যের প্যানেলের তুলনা করলে, সেই সময়ে এটি কে একটি খরচ-সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হিসেবে কল্পনা করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে দুই সদস্যের প্যানেল থেকে এক সদস্যের প্যানেলে স্থানান্তরের জন্য আরও একটি খরচ-সাশ্রয়ী উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তী দশক পর্যন্ত এক-ব্যক্তি প্যানেলকে আদর্শ করার জন্য আইন পরিবর্তন করা হবে না, তবুও ১৯৯০-এর দশকে ''কার্যত'' এক-ব্যক্তি প্যানেল আদর্শ হয়ে ওঠে। সেই সময়কালে, শরণার্থী নির্ধারণ সাধারণত একজন সদস্য একা বসে করতেন, আবেদনকারীর "সম্মতি" নিয়ে। ক্যাথেরিন ডাউভার্গেন লিখেছেন যে ২০০২ সালে আইন সংশোধনের সময়। এটি এই অনুশীলনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপ দেয়, দুই ব্যক্তির প্যানেল ইতিমধ্যেই বিরল হয়ে পড়েছিল।
* <u>অপসারণ কার্যকর করার উপর বর্ধিত মনোযোগ:</u> নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন কানাডা শরণার্থী ব্যবস্থার মধ্যে অপসারণকে একটি মূল হাতিয়ার হিসাবে বর্ণনা করে।
* <u>অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণ:</u> আইআরবির সামনে ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম নন-আইনজীবী অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৬ সালে অন্টারিওর সেনেকা কলেজে একটি ইমিগ্রেশন প্র্যাকটিশনারস সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম তৈরি করা। এটি কানাডায় এই ধরণের প্রথম প্রোগ্রাম ছিল।
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ==
একটা সময় ছিল যখন শরণার্থী "সমস্যা" সমাধানযোগ্য বলে মনে করা হত। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় মূলত মাত্র তিন বছরের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক এই পদটি নবায়ন করা হয়, কিন্তু কেবল টানা পাঁচ বছরের জন্য। ইউএনএইচসিআরের অস্থায়ী প্রকৃতি এবং বারবার নবায়ন ২০০৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সেই সময়ে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ করে এবং শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করে যা "শরণার্থী সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত" অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে।<ref name=":29" /> শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, ইউএনএইচসিআর-এর ম্যান্ডেটের উপর থেকে সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ এই ধরনের একটি প্রস্তাবের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার স্বীকৃতি দেয়।<ref name=":29" /> শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে, আশ্রয় দাবিদারদের আগমন আরও দূরবর্তী স্থান থেকে এবং একই সাথে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমান ভ্রমণের খরচ হ্রাস এবং স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির ফলে এটি ঘটেছে। এর সাথে সাথে (যেমন বার্লিন প্রাচীরের পতন) নাগরিকদের তাদের রাজ্য ত্যাগ করার ক্ষমতার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপকারী দেশের সংখ্যা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।
এর জবাবে, ব্রিদ নি ঘ্রাইনের ভাষায়, রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করার জন্য এবং শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা সীমিত করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে "সৃজনশীল" উপায় ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে শরণার্থীদের তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ কমানো। এটি তিনি "তুলনামূলকভাবে অদৃশ্য - এবং তাই রাজনৈতিকভাবে সমীচীন ''- অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থা"<ref name=":3" /> বলে অভিহিত করেছেন। এটি সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কানাডা ক্রমবর্ধমান পরিমাণে প্রয়োগ করেছে। কানাডার ভৌগোলিক অবস্থান। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং তিনটি মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য তার অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশে দাবিদারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিম্নলিখিত ''অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থাগুলোর দিকে ঝুঁকছে:
* সীমাবদ্ধ ভিসা নীতি: ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে কানাডায় অন্যান্য দেশ থেকে অনেক কম সরাসরি ফ্লাইট ছিল এবং পশ্চিম গোলার্ধের কোনও দেশের জন্য এটি র কোনও ভিসার প্রয়োজন ছিল না। এর বদলে কানাডায় অনেক ভ্রমণকারীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট পরিবর্তন করতে হয়েছিল, এমন কিছু যা সাধারণত সেই দেশে ভিসার প্রয়োজন হয়। ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে, অন্যান্য দেশ থেকে কানাডায় সরাসরি ফ্লাইটগুলো বসন্ত শুরু করে এবং কানাডা কানাডায় একটি আশ্রয় ব্যবস্থা বাস্তবায়ন শুরু করে। কানাডা একই সাথে কানাডায় প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন শুরু করে। এটি আশ্রয় প্রক্রিয়ায় অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করে। ১৯৮৭ সালে সরকার বাধ্যতামূলক করতে শুরু করে যে কানাডা হয়ে অন্য দেশে ভ্রমণকারী ব্যক্তিদের কানাডার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রানজিট ভিসা থাকতে হবে যদি তারা এমন কোনও দেশ থেকে আসে যার নাগরিকদের কানাডায় ভ্রমণের জন্য দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয়। এই জাতীয় ভিসার প্রয়োজনীয়তাগুলো এই পর্যায়ে প্রসারিত হয়েছিল যে আজ "শরণার্থী উত্পাদনকারী" হিসাবে বিবেচিত রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদের সাধারণত দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয় যা "পাওয়া অত্যন্ত কঠিন" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সোমালিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্তান এবং সিরিয়ার মতো শরণার্থী উৎপাদনকারী দেশগুলো থেকে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
* ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞা: ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞাগুলো এয়ারলাইনস এবং অন্যান্য পরিবহন পরিষেবাগুলোর উপর আরোপিত বাধ্যবাধকতাগুলোকে বোঝায় যাতে তারা ভিসা ছাড়া কাউকে পরিবহন না করে, যদি তাদের প্রয়োজন হয়। দ্য নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন বিভাগ একটি ক্যারিয়ারকে "মোটা" প্রশাসনিক ফি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে অনুপযুক্ত নথি নিয়ে আগত প্রতিটি ভ্রমণকারীর জন্য।
* মানব পাচারের অপরাধীকরণ: কানাডা আশ্রয়ের দাবি প্রতিরোধের উপায় হিসাবে মানব পাচারকে অপরাধী করার বিধান ব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরূপ মার্কিন মানবিক কর্মীর বিরুদ্ধে চোরাচালানের জন্য অভিযোগ আনা (আইআরপিএর অধীনে একটি অপরাধ যা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহন করে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে বারোজন হাইতিয়ান আশ্রয়প্রার্থীকে পরিবহনের জন্য। তদুপরি, ১৯৯৩ সালে বিল সি -৮৬ এর উত্তরণ মানদণ্ডের একটি প্রসারিত তালিকা প্রতিষ্ঠা করেছিল যার দ্বারা কোনও আবেদনকারীকে অগ্রহণযোগ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে।
* বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তা: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার আশ্রয় আবেদনকারীদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার একটি প্রয়োজনীয়তা চালু করেছিল। এরপরে সরকার ভিসা আবেদনকারীদের জন্য বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তাও চালু করে এবং ধীরে ধীরে প্রসারিত করে; ২০১৮ এর শেষের দিকে, ভিসার প্রয়োজন এমন সমস্ত দর্শনার্থীদেরও বায়োমেট্রিক্স প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের সাথে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তির অংশ হিসাবে এই জাতীয় বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী ব্যবহারের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালের ডিসেম্বরের কানাডা-মার্কিন স্মার্ট সীমান্ত ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক সনাক্তকারী বিকাশ করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দুই দেশের মধ্যে '''শেয়ারিং অব ইনফরমেশন অন অ্যাসাইল''<nowiki/>''াম অ্যান্ড রিফিউজি স্ট্যাটাস ক্লেইমস''' শীর্ষক একটি চুক্তিতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক ও বায়োগ্রাফিক তথ্যসহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, নিয়মতান্ত্রিক তথ্য ভাগাভাগি করার সুযোগ দেওয়া হয়।
* আশ্রয় নীতির প্রথম দেশ: কানাডার অভিবাসন আইন ১৯৮৮ সাল থেকে নিরাপদ দেশের নামকরণের অনুমতি দিয়েছে। এই বিধানটি ২০০৪ সালে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি অনুমোদনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল (নীচে দেখুন)।
* কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার এবং সুরক্ষা স্ক্রিনিং: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার সহ শরণার্থী দাবির সংখ্যা হ্রাস করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নকশা চালু করেছিল। এরপর ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন অভিবাসন মন্ত্রী ঘোষণা দেন, কানাডায় আসা শরণার্থীদের জন্য ফ্রন্ট-এন্ড সিকিউরিটি স্ক্রিনিং (এফইএসএস) কৌশলের আরও বেশি ব্যবহার করা হবে। এফইএসএস স্ক্রিনিং সম্পর্কে আরও বিশদ এখানে পাওয়া যায়: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আরপিডি বিধি ৫৪ - কোনও কার্যধারার তারিখ বা সময় পরিবর্তন করা # রেগুলেশন ১৫৯.৯ (৩) (বি): আইনের ধারা ৩৪ থেকে ৩৭ সম্পর্কিত তদন্ত এবং অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াটিকে এফইএসএস প্রক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়।'''<ref>Obiora Chinedu Okafor, ''Refugee Law After 9/11: Sanctuary and Security in Canada and the United States'', UBC Press 2020, Law and Society Series, <nowiki>ISBN 9780774861465</nowiki>, page 91.</ref>'''
* পুশব্যাক অপারেশন: ১৯৮০ এর দশকের ''ইমিগ্রেশন আইনে'' মন্ত্রীর পক্ষে কানাডার জলে প্রবেশ না করার জন্য একটি জাহাজকে নির্দেশ দেওয়ার কর্তৃত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল যেখানে মন্ত্রী যুক্তিসঙ্গত ভিত্তিতে বিশ্বাস করেছিলেন যে জাহাজটি আইন বা বিধিবিধান লঙ্ঘন করে কোনও ব্যক্তিকে কানাডায় নিয়ে আসছে; এই বিধানটি ছয় মাসের "সূর্যাস্ত ধারা" সাপেক্ষে ছিল এবং এটি র মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ব্যবহার করা হয়নি। সাম্প্রতিককালে, পুশব্যাক এবং ইন্টারসেপশন অপারেশনগুলো বিদেশে ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৮ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা শ্রীলঙ্কা থেকে ১৯২ জন তামিল ব্যক্তিকে বহনকারী একটি নৌকার সেনেগালিজ নৌবাহিনী দ্বারা বাধা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তাদের কানাডায় পৌঁছানোর আগেই কলম্বোতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ কানাডার মানব পাচারের খাম কর্মসূচির অর্থায়নে ৮৪ জন শ্রীলঙ্কান তামিলকে বহনকারী অ্যালিসিয়াকে আটক করেছিল। মানব পাচারের খামের তহবিল ২০১২ সালে ঘানায় রুভুমার আটকানোকেও সমর্থন করেছিল। এটি কর্তৃপক্ষের মতে টোগো এবং বেনিনের জন্য আবদ্ধ ছিল। সেখানে শত শত শ্রীলঙ্কান শরণার্থী আটকা পড়েছিল।<ref>Idil Atak and Claire Ellis, ''The externalization of Canada’s border policies: extending control, restricting mobility'', in Ervis Martani and Denise Helly, ''Asylum and resettlement in Canada: Historical development, successes, challenges and lessons'', Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 122.</ref>
* বিদেশে হস্তক্ষেপ: সিবিএসএ কর্মীরা মাইগ্রেশন ইন্টিগ্রিটি অফিসারদের বিদেশে কাজ বলে অভিহিত করেছেন। এরা কানাডায় ভ্রমণ করছেন তাদের যথাযথ ভ্রমণের ডকুমেন্টেশন রয়েছে তা নিশ্চিত করে। বিদেশে কানাডার হস্তক্ষেপ প্রোগ্রামগুলো তার একাধিক সীমান্ত কৌশল (এমবিএস) নামে পরিচিত একটি উপাদান। এমবিএসের অধীনে, লিয়াজোঁ অফিসারদের কানাডার অনুমোদন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কানাডাগামী বিমান বা নৌকায় উঠতে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালে সরকার জানিয়েছিল যে বিশ্বব্যাপী ৪৯ টি স্থানে ৬৩ জন কর্মকর্তা ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ধরনের লিয়াজোঁ অফিসাররা ৮৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে অফশোরে আটক করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ৭,২০৮ জন, বেশিরভাগ রোমানিয়া, মেক্সিকো, ভারত, হাঙ্গেরি এবং ইরান থেকে "অনুপযুক্ত ডকুমেন্টেশন" এর কারণে কানাডায় ফ্লাইটে উঠতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 88.</ref>
* ট্রানজিট দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থা এবং সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল এবং সহায়তা: কানাডা প্রস্থান রোধ করতে গ্লোবাল সাউথে সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল দেয়। এটি ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অফ কানাডার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদানের জন্য প্রেরণ করে; সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন যে এটি "নিজেই এক ধরণের নিয়ন্ত্রণ নীতি হিসাবে কাজ করে।<ref>Senate of Canada, ''Ripped from Home: The Global Crisis of Forced Displacement,'' December 2024, <https://sencanada.ca/content/sen/committee/441/RIDR/Reports/GlobalForcedDisplacement_e.pdf>, page 54.</ref>
রেবেকা হ্যামলিন আশ্রয় দাবি রোধের জন্য এই ব্যবস্থার উত্থানকে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: "প্রতিরোধ ব্যবস্থার উত্থান আংশিকভাবে অপ্রত্যাশিত পরিণতির গল্প। কারণ প্রতিটি দেশের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মুহূর্তে করা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভবিষ্যত প্রজন্মের নীতিনির্ধারকদের তাড়িত করে। যদি এই দেশগুলোর নেতারা বর্তমান পরিস্থিতির আর্থিক, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো আগে থেকেই অনুমান করতেন, তাহলে তারা হয়তো সেই সময়ে মূলত একটি বিমূর্ত প্রতিশ্রুতি দিতে এতটা আগ্রহী ছিলেন না।"
== ২০০২ সালের অভিবাসন আইন থেকে IRPA-তে স্থানান্তর ==
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে, ফেডারেল সরকার তৎকালীন ''অভিবাসন আইন সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া শুরু করে''। এর মধ্যে দীর্ঘ জনসাধারণের পরামর্শও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ''"নট জাস্ট নাম্বারস: আ কানাডীয় ফ্রেমওয়ার্ক ফর ফিউচার ইমিগ্রেশন"'' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। সেখানে সংস্কারকৃত ব্যবস্থার জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু গৃহীত হয়েছিল এবং অন্যগুলো (যেমন আইআরবি থেকে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের এখতিয়ার অপসারণ এবং এটি বেসামরিক কর্মচারীদের কাছে স্থানান্তর করা ) গৃহীত হয়নি। ফলস্বরূপ প্রণীত ''ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট'' ("IRPA") ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি আইন এবং ১৯৭৮ সালের পর কানাডায় অভিবাসন আইনের প্রথম সম্পূর্ণ সংশোধন। এটি বিল সি-১১ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর শিরোনাম ছিল ''কানাডায় অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত বা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের শরণার্থী সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত একটি আইন।'' IRPA ১ নভেম্বর, ২০০১<ref name=":88" /> (অথবা ডিসেম্বর ২০০১ ) তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে এবং ২৮ জুন, ২০০২ তারিখে কার্যকর হয়। জুন মাসে ''ইমিগ্রেশন আইন'' থেকে IRPA-তে স্থানান্তর কানাডায় আশ্রয় নীতির একটি নতুন যুগের সূচনা করে - যা প্রশাসনিক বোঝা কমানোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বর্ণনা করা হয়েছে। আইআরপিএ-র খসড়া প্রণয়ন এবং উন্নয়নের সময়, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিচালনার জন্য একটি আইন এবং শরণার্থী আইন পরিচালনার জন্য একটি পৃথক আইন থাকা উচিত কিনা এই প্রশ্নের প্রতি যথেষ্ট জনসাধারণের মনোযোগ নিবদ্ধ করা হয়েছিল। অভিবাসন এবং শরণার্থী আইনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে উদ্বেগের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে সমর্থন করা এই ধারণাটি শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল; তবে আইনের নতুন শিরোনাম এবং শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত আইনের একটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠা এই উদ্বেগকে প্রতিফলিত করে। নতুন আইনী কাঠামোর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে
* কাঠামো আইন: পূর্ববর্তী আইনের তুলনায়, আইআরপিএকে কাঠামো আইন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল, প্রবিধানগুলোতে আরও বিশদ পাওয়া যাবে।
* শরণার্থী সুরক্ষার জন্য সুসংহত ভিত্তি: আইআরপিএ শরণার্থী সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী ব্যক্তিদের বিভাগগুলো প্রসারিত করেছে। প্রাক্তন অভিবাসন আইনের অধীনে, আইআরবিতে স্পষ্টভাবে সুরক্ষার অধিকারী একমাত্র শ্রেণির ব্যক্তি ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি "কনভেনশন শরণার্থী" এর সংজ্ঞার মধ্যে পড়েছিলেন। আইআরপিএ কভারেজের পরিধি প্রসারিত করেছে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যারা তাদের জাতীয়তার দেশে বা প্রাক্তন অভ্যাসগত বাসস্থানে নির্বাসনের পরে নির্যাতন, মৃত্যু এবং নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। কানাডা ১৯৮৭ সালে ''নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশন'' অনুমোদন করেছিল। তবে এই মুহুর্ত পর্যন্ত কানাডার দেশীয় আইনে এটি সরাসরি প্রয়োগ করেনি''।'' রেবেকা হ্যামলিন লিখেছেন যে ২০০২ সালে ভোটের আগে আইনটি নিয়ে আলোচনা করার সময় সংসদ আইআরপিএ ধারা ৯৭ প্রবর্তনকে স্মরণীয় বলে মনে করেছিল এমন পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও প্রমাণ নেই। বিলটি নিয়ে যখন বিতর্ক চলছিল, তখন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান সংসদ সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আইআরপিএ "আমাদের পদ্ধতিগুলো সহজতর করার ক্ষমতা দেয়, যাতে যাদের আমাদের সুরক্ষার সত্যিকারের প্রয়োজন তাদের আরও দ্রুত কানাডায় স্বাগত জানানো হবে এবং যাদের সুরক্ষার প্রয়োজন নেই তাদের আরও দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হবে। এই স্ট্রিমলাইনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরপরই, আইআরবি আইনী পরিষেবা বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য ধারা ৯৭ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে একটি দীর্ঘ গাইড তৈরি করেছিল; গাইডটিতে বলা হয়েছে যে পূর্ববর্তী "খণ্ডিত" এবং "বহুস্তরীয় পদ্ধতির" "বিলম্ব এবং অসঙ্গতি" এড়াতে এই সিদ্ধান্তগুলো আইআরবি ম্যান্ডেটের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
* আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে সম্মতির উপর ফোকাস করুন: আইআরপিএ কানাডার অভিবাসন আইনে একটি বিধান প্রবর্তন করেছিল যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে এটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হবে এবং প্রয়োগ করা হবে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে মেনে চলে যেখানে কানাডা স্বাক্ষর করে।
* সিআরডিডি থেকে আরপিডিতে স্থানান্তর: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগ (সিআরডিডি) এর নামকরণ করা হয়েছিল শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ (আরপিডি), এই সত্যটি প্রতিফলিত করার জন্য যে এখন শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একীভূত ভিত্তিতে এখতিয়ার রয়েছে। অ্যাডজুডিকেশন ডিভিশনের নামও পরিবর্তন করে ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি) রাখা হয়।
* আরএডি তৈরি: আইআরপিএ শরণার্থী আপিল বিভাগ (আরএডি) তৈরি করেছে। এটি তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতিবাচক সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করবে, যদিও এটি পুরোপুরি বাস্তবায়নে দশ বছর সময় লেগেছিল। বিশেষত, আইনটি পাস হওয়ার পর ''নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডা'' ঘোষণা করেছিল যে "সিস্টেমের উপর চাপ" এর ফলে আরএডি বাস্তবায়নে বিলম্ব হবে।
* একক সদস্যের আরপিডি প্যানেলে স্থানান্তর করুন: যেহেতু আইআরবি ব্যাকলগ একটি বিশাল উদ্বেগ ছিল, আরএডিকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীদের সময়টি দুই সদস্যের প্যানেল থেকে একক সদস্যের শুনানিতে (বা, মাঝে মাঝে, তিন সদস্যের আরপিডি প্যানেল) স্থানান্তরের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল যাতে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাধারণত বোর্ডের অর্ধেক সদস্যের প্রয়োজন হয়। এটি দুই সদস্যের সিআরডিডি প্যানেল বা পূর্বে বিদ্যমান সম্মতিতে একক সদস্য সিআরডিডি প্যানেল ব্যবহারের বিপরীতে ছিল।
* পিআরআরএ: আইআরপিএ কানাডা ক্লাসে পোস্ট-ডিটারমিনেশন রিফিউজি ক্লেইমারেন্ট (পিডিআরসিসি) থেকে প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (পিআরআরএ) প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত হয়েছে। পদ্ধতিটি দাবিদারদের দ্বিতীয় শরণার্থী দাবি করতে অক্ষমতার জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়, এমনকি যখন প্রথম দাবি অস্বীকার করার পরে মূল দেশের পরিস্থিতিতে পরিবর্তন ঘটেছিল। পিআরআরএ যেভাবে কাজ করে তা হ'ল একজন প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থী তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরে শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিবর্তন হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে পারেন। পিআরআরএ হ'ল লিখিত জমা দেওয়ার ভিত্তিতে করা আবেদনের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ২০০৩ সালে সরকার যখন সিবিএসএ তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল, মূলত পরিকল্পনাটি ছিল পিআরআরএর দায়িত্ব তাদের কাছে হস্তান্তর করা। তবে এনজিওগুলোর চাপের পরিপ্রেক্ষিতে পিআরআরএর দায়িত্ব নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডার সাথে থেকে যায়। নীচে আলোচনা করা হয়েছে, ২০১২ সালে দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করা হয়েছিল। একই সময়ে, আইআরপিএর আগে, শরণার্থী দাবিদারদের কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য কানাডার বাইরে থাকলে সিআরডিডি-তে দ্বিতীয় দাবি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে দাবিদাররা দেশ ছেড়ে ফিরে এলেও আরপিডিতে কেবল একটি দাবি জমা দিতে পারে।
* চেয়ারপার্সনের ক্ষমতার ব্যাখ্যা: সমন্বয়কারী সদস্যদের মনোনীত করার ক্ষমতা সহ আইআরবি চেয়ারপারসনের ক্ষমতাগুলো স্পষ্ট এবং যুক্ত করা হয়েছিল; কতিপয় ক্ষমতা অর্পণ করা; একটি বিভাগে জিআইসি-নিয়োগকারীদের নিয়োগ করা; আইআরবি সদস্যরা যাতে দক্ষতার সাথে এবং অযৌক্তিক বিলম্ব ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া; এবং, সদস্যদের লিখিতভাবে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা ছাড়াও চেয়ারপারসনকে এখন সদস্যদের তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য আইআরবি সিদ্ধান্তগুলোকে "আইনশাস্ত্র গাইড" হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষমতাও ছিল।
* নিরাপত্তা বিধান বৃদ্ধি: শারিন আইকেন, এট। আল, লিখেছেন যে আইআরপিএ দ্বারা সংকেত দেওয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি হ'ল এটি কানাডীয় অভিবাসন আইনে একটি উল্লেখযোগ্য সুরক্ষা মোড় প্রদর্শন করেছে। তারা উল্লেখ করেছেন যে "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ এর হামলার তাত্ক্ষণিক পরিণতিতে পাস হওয়া আইনটিতে এটি খুব কমই আশ্চর্যজনক ছিল। পিটার শোলার লিখেছেন যে সরকার শরণার্থীদের উপর আরও কঠোর আইন প্রবর্তনের জন্য আইআরপিএ প্রায় বাতিল করে দিয়েছিল, কিন্তু অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান শেষ পর্যন্ত আইআরপিএ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই আইনে বেশ কয়েকটি সুরক্ষা সম্পর্কিত ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
** দাবিদারদের আটক করার ক্ষমতা বৃদ্ধি: আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের আটক করার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব প্রসারিত করেছিল যেখানে তারা ফ্লাইটের ঝুঁকি, জনসাধারণের জন্য বিপদ এবং / অথবা তাদের পরিচয় সন্দেহের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। এই প্রসারিত কর্তৃত্বের ফলে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' অনুসারে আটক ব্যক্তিদের সংখ্যা ২০০০ সালে ৮,০০০ জন থেকে ২০০৩ সালে প্রায় ১১,৫০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
** অপরাধের কারণে শরণার্থী সুরক্ষা দাবি করার অযোগ্যতার বিস্তৃত ভিত্তি: ১৯৭৬ সালের আইনের সাথে তুলনা করলে, আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণের যোগ্যতা সীমাবদ্ধ করে বিস্তৃত ভিত্তি অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
** চোরাচালান বিরোধী ব্যবস্থা: গত শতাব্দীতে গিল লোয়েশার মানব পাচার এবং আন্তঃমহাদেশীয় মানব পাচারের ক্ষেত্রে "নাটকীয় বৃদ্ধি" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আইআরপিএর বিধানগুলো প্রথমবারের মতো ''পালেরমো কনভেনশনের'' অধীনে কানাডার বাধ্যবাধকতাগুলো কার্যকর করেছে এবং এর ''চোরাচালান প্রোটোকল'' এবং ''ব্যক্তি, বিশেষত মহিলা ও শিশুদের পাচার প্রতিরোধ, দমন এবং শাস্তি দেওয়ার প্রোটোকল'' সহ। পাচারকারীরা অপরাধমূলক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের যোগ্য হয়ে ওঠে।<ref>Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 37 (Page 46 of PDF).</ref>
** মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ: আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে মন্ত্রীকে সমস্ত শরণার্থী দাবিতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
* আপিলের সীমাবদ্ধতা: ২০০২ সাল থেকে, ফেডারেল কোর্টের সিদ্ধান্তগুলো কেবল ফেডারেল কোর্ট অফ আপিলে আপিল করা যেতে পারে যদি ফেডারেল কোর্ট নিজেই প্রত্যয়িত করে যে তারা সাধারণ গুরুত্বের একটি গুরুতর প্রশ্ন জড়িত।<ref>Pia Zambelli, Internal Flight Anarchy: Points of Divergence from UNHCR Guidelines in Canadian Decision Making, ''International Journal of Refugee Law'', 2024;, eeae032, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae032, page 13.</ref>
যদিও সিস্টেমের উপরোক্ত সংস্কারটি যথেষ্ট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে, এটি ও উল্লেখযোগ্য যে ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে যুক্তিযুক্ত কিছু পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, সেই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছিল যে বিদেশী এবং অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির প্রক্রিয়াকরণকে একটি একক ব্যবস্থার মধ্যে একত্রিত করা উচিত যেখানে উভয়ের জন্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা ভাগ করে নেবেন। একটি একক ব্যবস্থা থাকা শরণার্থীর মর্যাদার বিষয়ে আরও সুসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, কিন্তু শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, "বিদেশী পুনর্বাসনে নির্বাচনের দিকের অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তা [উপেক্ষা করা হয়েছে]।" প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
== IRPA-পরবর্তী ব্যবস্থা ==
IRPA প্রবর্তনের পর সিস্টেমের অখণ্ডতা, দক্ষতা এবং RPD-তে ব্যাকলগ কমানোর উপর অব্যাহত দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>বিপরীত ক্রম প্রশ্নোত্তর:</u> IRPA প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে IRB চেয়ারপারসন শুনানি পরিচালনার উপর নির্দেশিকা ৭ জারি করেন। এটি RPD শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করে। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশ ছিল, যদি মন্ত্রী পক্ষ না হন, তাহলে দাবিদার সহ যেকোনো সাক্ষীকে প্রথমে RPD এবং তারপর দাবিদারের আইনজীবী জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
* রিভার্স-অর্ডার প্রশ্ন: আইআরপিএ প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে আইআরবি চেয়ারপারসন একটি শুনানি পরিচালনার বিষয়ে গাইডলাইন ৭ জারি করেছিলেন। এটি আরপিডি শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করেছিল। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশটি ছিল, মন্ত্রী যদি কোনও পক্ষ না হন তবে দাবিদার সহ যে কোনও সাক্ষীকে প্রথমে আরপিডি এবং তারপরে দাবিদারের পরামর্শদাতা দ্বারা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
* আরএডি প্রবর্তন করতে অস্বীকার: আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরের দশক ধরে, ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে খুব কাছাকাছি সাফল্য সহ আরএডি বাস্তবায়নে বাধ্য করে আরও একটি আইন পাস করার জন্য কিছু সংসদ সদস্যের বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা হয়েছিল।
* সিবিএসএ তৈরি: কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি অংশ হিসাবে কাজ করে জননিরাপত্তা কানাডা বিভাগ, এছাড়াও ২০০৩ সালে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মডেল অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছিল।
* ক্রমবর্ধমান মেধাভিত্তিক সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া: অতিরিক্তভাবে, বিভাগের কাউন্সিল সদস্যদের গভর্নর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ছিল। আইআরবিতে এই জাতীয় জিআইসি নিয়োগগুলো সর্বদা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, যদিও ১৯৯০ এর দশকে বাস্তবায়িত সংস্কারগুলো আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সদস্যদের নির্বাচন ও পুনরায় নিয়োগে অংশ নিতে আইআরবি পরিচালনার জন্য বৃহত্তর সুযোগ সরবরাহ করতে শুরু করে। এই প্রচেষ্টাগুলো ২০০ ২০০৬ সালের শীতে বিপরীত হয়েছিল যখন নবনির্বাচিত সরকার মন্ত্রীকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং বিচক্ষণতা দেওয়ার জন্য পরিবর্তনগুলো প্রবর্তন করেছিল। আইআরবির চেয়ারম্যান, জিন-গাই ফ্লিউরি, তার ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার আট মাস আগে এই সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেছিলেন। এর ফলে জল্পনা শুরু হয়েছিল যে তিনি প্রতিবাদে এটি করেছিলেন, আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে শক্তিশালী উকিল ছিলেন। একইভাবে, একজন ডেপুটি চেয়ার এবং আইআরবি নির্বাহী পরিচালকের প্রাথমিক প্রস্থান ছিল, পাশাপাশি ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডের বিচারকদের নির্বাচিত একটি উপদেষ্টা প্যানেলের পাঁচ সদস্যের পদত্যাগ ছিল। এরা একটি প্রকাশ্য চিঠি প্রকাশ করেছিল যা ইঙ্গিত দিয়েছিল যে তারা প্রতিবাদে পদত্যাগ করছে।
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির ভূমিকা: এসটিসিএ হ'ল দ্বি- বা বহু-পাক্ষিক চুক্তি যা শরণার্থীদের প্রথম দেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এটি তাদের চুক্তির অন্য রাষ্ট্র (গুলো) দলে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে। ১৯৮০ এর দশকে কানাডার ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে'' নিরাপদ তৃতীয় দেশের চুক্তির একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কানাডা পরবর্তী দশকগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই জাতীয় চুক্তি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছিল, প্রাথমিকভাবে সাফল্য ছাড়াই। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৩ সালে কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে ঘোষণা করার অভিপ্রায় নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে প্রবেশ করেছিল,[ তবে ১৯৯৮ সালে কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে সেই স্মারকলিপি অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করা হয়েছিল, আলোচনার লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ ডিজাইন করেছে, পরিত্যক্ত হচ্ছিল। ৯/১১ এর পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা সফলভাবে এই জাতীয় আলোচনা শেষ করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষত, ৫ ডিসেম্বর, ২০০২-এ, কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার এসটিসিএ স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিটি ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৪ এ কার্যকর হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডার অভিবাসন আইনে নিরাপদ তৃতীয় দেশের শাসন প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ''সদস্য দেশগুলোর'' মধ্যে বহুপাক্ষিক ডাবলিন রেগুলেশনের উপর ভিত্তি করে এই চুক্তি,[ বেশিরভাগ ব্যক্তিকে উভয় দেশে প্রবেশের নিয়মিত স্থলবন্দরে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে যদি তারা প্রথম অন্য একটিতে অবতরণ করে। এসটিসিএর তাত্ক্ষণিক প্রভাব ছিল কানাডায় অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা; চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে দাবি কমেছে ৪৯ শতাংশ। তবে এই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি। যারা কানাডার সীমান্তে দাবি করেছিলেন, তাদের জন্য বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ চুক্তির ব্যতিক্রমগুলোর মধ্যে একটি ফিট করা হয়েছিল - ২০০৫ সালে সীমান্তে করা ৪০৩৩ টি দাবির মধ্যে কেবল ৩০৩ শরণার্থী দাবিদারকে কানাডায় আবেদনের অযোগ্য হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
* ইউএনএইচসিআর এক্সকমের সম্প্রসারণ: কানাডা ইউএনএইচসিআর এক্সকমে বসা অব্যাহত রেখেছে। এর আকার ১৯৫০ এর দশকে ২৫ টি রাজ্য থেকে আজ ১০৬ এ বেড়েছে। ফলস্বরূপ, গিল লোশার লিখেছেন, এক্সকম খুব বড় এবং রাজনীতিকরণ হয়ে উঠেছে এবং এটি প্রায়ই কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা নয়।
* ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের নিয়ন্ত্রণঃ কানাডীয় সোসাইটি অফ ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস ২০০৪ সালে একটি ফি প্রদানের জন্য ইমিগ্রেশন পরামর্শদাতাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডায় এই জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পাশাপাশি, ২২শে জুন ২০০৬ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী হাউস অফ কমন্সে হেড ট্যাক্স এবং পূর্ববর্তী বর্জনীয় আইন দ্বারা প্রভাবিত চীনা-কানাডীয় সম্প্রদায়ের কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সরকার বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের, অথবা তাদের স্ত্রীদের। এরা হেড ট্যাক্স পরিশোধ করেছিলেন, তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০,০০০ ডলার দিতে সম্মত হয়েছিল; সেই সময়ে প্রায় ২০ জন জীবিত ছিলেন।
== ২০১০ এবং ২০১২ সালে শরণার্থী সংস্কার ==
২০১০ এবং ২০১২ সালে দুটি আইন শরণার্থী ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছিল, ''ব্যালেন্সড রিফিউজি রিফর্ম অ্যাক্ট'' (BRRA, ২০১০) এবং ''প্রোটেক্টিং কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট'' (PCISA, জুন ২০১২)। বিআরআরএ ২৯ জুন, ২০১০ তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে। এটি একটি সংখ্যালঘু সরকারের সময় সংসদে পাস হয়েছিল এবং আইআরপিএ-তে এর উল্লেখযোগ্য সংশোধনীর মধ্যে বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাবিত কিছু আপস ছিল। পরবর্তীতে ২রা মে, ২০১১ তারিখে একটি ফেডারেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনের পর ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে BRRA-এর উল্লেখযোগ্য বিধান কার্যকর হওয়ার আগে, সংসদে নতুন সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার BRRA সংশোধন করে। পরবর্তী সংশোধনীগুলো পিসিআইএসএ আকারে এসেছিল। পিসিআইএসএ-এর মূল অংশগুলো মূলত ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট (হিউম্যান স্মাগলার্স অ্যাক্ট) থেকে অপব্যবহার প্রতিরোধের'' অংশ ছিল। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে বিল সি-৪৯ নামে চালু করা হয়েছিল। ২০১১ সালের মে মাসে কানাডীয় ফেডারেল নির্বাচনের ফলে বিল সি-৪৯ অর্ডার পেপারে মারা যাওয়ার পর নবগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ২০১১ সালের জুন মাসে বিল সি-৪ হিসাবে বিধানগুলো পুনরায় চালু করে। এই ''মানব পাচারকারী আইনটি'' ২০১২ সালের জুন মাসে বিল সি-৩১, পিসিআইএসএ-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
নীল ইয়েটস বর্ণনা করেছেন, এই সংস্কারগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল দাবিগুলোর দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ। এর লক্ষ্য ছিল ''প্রকৃত'' দাবিদারদের আরও দ্রুত অনুমোদন দেওয়া এবং ব্যর্থ দাবিদারদের, আইআরবির নতুন শরণার্থী আপিল বিভাগে প্রবেশাধিকারের পর কানাডা থেকে আরও দ্রুত সরিয়ে নেওয়া। এটি কে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* শুনানির জন্য আইনী সময়সীমা: আইনটিতে শরণার্থী শুনানির সময় নির্ধারণের জন্য ত্বরান্বিত সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত ছিল,[ তাদের দাবি করার ৬০০ দিনের মধ্যে শুনানি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সহ। আরপিডি শুনানির জন্য এই প্রাথমিক তারিখটি একজন ইমিগ্রেশন অফিসার দ্বারা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
* রিফিউজি আপিল ডিভিশন (আরএডি) বাস্তবায়ন। এই সংস্কারের অংশ হিসাবে, আরএডি ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ এ কার্যকর হয়েছিল। আরএডি, এই মুহুর্তে বাস্তবায়িত হিসাবে, আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার সময় আরএডির আইনী বিধানগুলো মূলত কার্যকর হওয়ার সময় প্রণীত হওয়ার কল্পনার চেয়ে বৃহত্তর ম্যান্ডেট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আইআরপিএ মূলত মন্ত্রী এবং আপিলের বিষয় ব্যক্তিকে কেবল লিখিত জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। পরবর্তীকালে এটি বিআরআরএ দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল যাতে তারা দালিলিক প্রমাণও জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়, যদিও "কেবলমাত্র প্রমাণ যা তাদের দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে উদ্ভূত হয়েছিল বা যা যুক্তিসঙ্গতভাবে উপলভ্য ছিল না, বা উপস্থাপিত পরিস্থিতিতে ব্যক্তিটি যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রত্যাশিত হতে পারে না।
* সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী: আইআরবির শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে প্রথম স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগকারীদের বিপরীতে ''পাবলিক সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্ট'' অনুসারে নিযুক্ত সরকারী কর্মচারী হতে শুরু করেছিলেন। গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগপ্রাপ্তদের থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে সরকারের নিজস্ব অভিবাসন-আইন উপদেষ্টা কমিটির একটি মূল সুপারিশ প্রতিফলিত হয়েছে, যথা যোগ্য সরকারী কর্মচারীদের ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে নাম দেওয়া উচিত, রাজনৈতিক নিয়োগকারীদের নয়।
* শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তার পদ বিলোপ: শরণার্থী শ্রবণ কর্মকর্তা (<abbr>আরএইচও),</abbr> শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা (<abbr>আরসিও</abbr>) এবং শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তা (<abbr>আরপিও</abbr>) নামে বিভিন্নভাবে চলে যাওয়া একটি পদ এই ভিত্তিতে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যে দক্ষতা থাকবে তার ভিত্তিতে এটি আর প্রয়োজন হবে না। এই ভূমিকাগুলো এর আগে শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করে সদস্যদের সহায়তা করেছিল।
* ডেজিগনেটেড কান্ট্রিজ অফ অরিজিন (ডিসিও) এর একটি তালিকা তৈরি করা, যে দেশগুলো সাধারণত শরণার্থী-উত্পাদনকারী হিসাবে বিবেচিত হতো না এবং যেখানে এই জাতীয় দাবিগুলো প্রতিরোধ ও ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপগুলো ফলস্বরূপ আইন করা হয়েছিল। ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম প্রোটেকটিং অ্যাক্টের'' অংশ হিসাবে ২০১২ সালে ডেজিগনেটেড কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকাটি চালু করা হয়েছিল। এই উদ্যোগটি ইউরোপিয়ান সেফ কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকার আদলে তৈরি করা হয়েছিল। এটি সেই আশ্রয় ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়। ডিসিও থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রভাবগুলোর মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা সহ একটি দ্রুত শুনানি প্রক্রিয়া, শরণার্থী আপিল বিভাগে অ্যাক্সেস না থাকা, বিচারিক পর্যালোচনা চাওয়া ব্যর্থ দাবিদারদের অপসারণের কোনও স্বয়ংক্রিয় স্থগিতাদেশ না থাকা, পিআরআরএতে সীমিত অ্যাক্সেস এবং প্রথম ১৮০ দিনের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনও যোগ্যতা নেই যার মধ্যে তারা তাদের দাবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। একটি নিরাপদ দেশ হিসাবে তকমা দেশগুলোর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার রেকর্ডের স্তরের গুণগত পর্যবেক্ষণের সংমিশ্রণের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং দুটি পরিমাণগত থ্রেশহোল্ডের উপর নির্ভরশীল ছিল, যখন কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবিগুলোর ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি আইআরবি প্রত্যাখ্যান করেছিল বা কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবির ৬০ শতাংশ বা তারও বেশি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। প্রাথমিক ডিসিও তালিকায় ২৫ টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ৪২ টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছিল। ১৭ ই মে, ২০১৯, ফেডারেল কোর্টের একাধিক রায় অনুসরণ করে যেখানে ডিসিও নীতির নির্দিষ্ট বিধানগুলো মেনে না চলার জন্য বাতিল করা হয়েছিল অধিকার ও স্বাধীনতার কানাডীয় সনদ, কানাডা সরকার ঘোষণা করেছিল যে এটি সমস্ত দেশকে ডিসিও তালিকা থেকে সরিয়ে দেবে এবং ডিসিও শাসন শেষ পর্যন্ত আইনী সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হবে।
* মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের ধারণা তৈরি করা: পিসিআইএসএ সংস্কারগুলো মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের জন্য একটি শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ডিএফএন, আইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, চোরাচালানকারীদের সহায়তায় জননিরাপত্তা মন্ত্রীর দ্বারা 'অনিয়মিত আগমন' সন্দেহভাজন দুই বা ততোধিক শরণার্থী দাবিদারের গ্রুপ। এইভাবে মনোনীত হওয়ার প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে যে ডিএফএনগুলো তাদের ষোল বছর বা তার বেশি বয়সী হলে তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে আটক করা হবে। ২০১০ সালে এমভি ''ওশান লেডি'' এবং এমভি ''সান সাগরে'' তামিল শরণার্থীদের আগমনের পরে কানাডায় বাধ্যতামূলক আটকাদেশ ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছিল। তদুপরি, তাদের দাবি গৃহীত হলেও, ডিএফএনরা পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী বাসিন্দার স্থিতির জন্য আবেদন করতে অক্ষম,[ পাশাপাশি ভ্রমণের নথি পেতে অক্ষম এবং পরিবারের সদস্যদের স্পনসর করতে অক্ষম। আইনে এই বিধানগুলো প্রবর্তনের পরপরই সরকার একাধিক ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োগ করেছিল।
* পিআরআরএ সংস্কার: ২০১২ সালে সংসদ একটি দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করে। এখন থেকে, পিআরআরএ যেভাবে কাজ করেছে তা হ'ল যদি কোনও প্রত্যাখ্যানকারী আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের শরণার্থী দাবির বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্তের এক বছরের মধ্যে কানাডা থেকে সরানো না হয়। তবে তারা শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিমাণ সেই বছরের মধ্যে পরিবর্তিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য যোগ্য হতে পারে। ডিসিওদের দাবিদারদের জন্য এই ১২ মাসের বারের ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। এরা তাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের পরে ৩৬ মাসের জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে নিষেধ করেছিলেন; এই দীর্ঘ পিআরআরএ বারটি ''ফেহের বনাম কানাডায়'' ''সনদের'' এস ১৫ এর লঙ্ঘন হিসাবে বাতিল করা হয়েছিল। ''সুষম শরণার্থী সংস্কার আইনও পিআরআরএর'' উপর কর্তৃত্ব মন্ত্রীর কাছ থেকে আইআরবিতে স্থানান্তরিত করে, যদিও এই স্থানান্তরটি আসলে কখনও কার্যকর করা হয়নি,[ এবং শেষ পর্যন্ত ২০২২ কার্যকর হয়ে বাতিল করা হয়েছিল।
* অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের সীমাবদ্ধতা: অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল হেলথ প্রোগ্রাম শরণার্থী দাবিদারদের তাদের দাবি মুলতুবি থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস সরবরাহ করে। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় আসার জন্য নিরুৎসাহিত করার কৌশলের অংশ হিসাবে, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে সরকার কিছু শ্রেণীর দাবিদারদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেয়। এই নীতি পরিবর্তনটি অর্ডার ইন কাউন্সিলের মাধ্যমে চালু করা হয়েছিল যা কানাডায় স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করেছিল যখন নির্বাচিত শরণার্থী দাবি মুলতুবি ছিল, মূলত ডিসিও থেকে উদ্ভূত দাবিদারদের দাবি। এই জাতীয় দাবিদাররা অন্যান্য দাবিদারদের তুলনায় অনেক কম স্তরের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকারী ছিল। এই নীতিটি ২০১৫ সালে ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছিল, আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে ফলস্বরূপ শাসন ''কানাডীয়'' ''চার্টার অফ রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস'' দ্বারা নিষিদ্ধ "নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণ" ছিল। এই সিদ্ধান্তটি বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ আশ্রয় আইনের বিরুদ্ধে পিছিয়ে যাওয়া আদালতগুলোর অনুরূপ মামলার একটি লাইন। উদাহরণস্বরূপ, ''লিম্বুয়েলায়'' যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডস দেখা গেছে যে আশ্রয়প্রার্থীদের সমর্থন প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্তগুলো অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঝুঁকির কারণে "রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য, সম্ভবত স্বল্প এবং অদূরদর্শী সীমাবদ্ধ সময়ের জন্য বাদে, বা গুরুতরভাবে ক্ষুধার্ত ছিল, বা স্বাস্থ্যবিধির সবচেয়ে প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে অক্ষম ছিল"।
* অবসান: নতুন আইনে বলা হয়েছে, আরপিডি যদি তাদের শরণার্থী সুরক্ষা বন্ধের জন্য মন্ত্রীর আবেদনের অনুমতি দেয় তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা হারাতে হবে। এটি এই জাতীয় ব্যক্তিদের কানাডায় অগ্রহণযোগ্য করে তোলে।
এই আইন কার্যকর হওয়ার পর শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগের নিয়মের বর্তমান সংস্করণটি ২৬ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে কার্যকর হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড, তাদের জনসাধারণের মন্তব্যে, এই নিয়মগুলো এবং সেগুলো দ্বারা পরিচালিত সিদ্ধান্তের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। এটি সেই সময়কার অভিবাসন মন্ত্রী জেসন কেনির এই ধরণের মন্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল: "আমি মনে করি বেশিরভাগ কানাডীয় স্বজ্ঞাতভাবে বোঝেন যে অভিবাসনের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন।, সত্যি বলতে, আমাদের সমাজের বৈচিত্র্য একটি সুপরিচালিত, নিয়ম-ভিত্তিক, ন্যায্য অভিবাসন ব্যবস্থা থাকার উপর নির্ভরশীল। আমি মনে করি তারা বোঝেন যে এই ধরনের ব্যবস্থা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই ভূমিকা রয়েছে"। ২০১২ সালে এই নতুন আইন এবং RPD নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর আশ্রয় দাবির সংখ্যা ৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উপরোক্ত আইন ছাড়াও ২০১১ সালে বিল সি-৩৫—যাকে মূলত ''ক্র্যাকিং ডাউন অন ক্রুকড কনসালট্যান্টস অ্যাক্ট'' বলা হত—আইআরপিএ-র ধারা ৯১ সংশোধন করে। নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী কর্তৃক প্রণীত প্রবিধানের মাধ্যমে, ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস অফ কানাডা রেগুলেটরি কাউন্সিল (ICCRC) পরবর্তীতে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে।
== ২০১০-এর দশকের শরণার্থী সুরক্ষা উদ্যোগ ==
=== অপরাধমূলক রেকর্ডধারীদের জন্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন ===
২০১৩ সালের আগে, ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে বলা হয়েছিল যে কানাডায় কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে যদি স্থায়ী বাসিন্দা অগ্রহণযোগ্য হন তবে ইমিগ্রেশন আপিল বিভাগে কোনও আপিল করা সম্ভব ছিল না। ১৯ জুন, ২০১৩ তারিখে, ''বিদেশী অপরাধীদের দ্রুত অপসারণ আইন'' রাজকীয় সম্মতি পেয়েছে। এটি IRPA-এর উপধারা ৬৪(১)-এ গুরুতর অপরাধের ভিত্তিকে "কমপক্ষে দুই বছরের" পরিবর্তে "কমপক্ষে ছয় মাস" এ পরিবর্তন করে, IAD-এর কাছে আপিল সীমাবদ্ধ করে। তাদের অপসারণ কার্যকর করা হবে কিনা সে বিষয়ে বিচক্ষণতা রয়েছে।
=== সুরক্ষিত ব্যক্তিদের নির্ভরশীল শিশুদের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন ===
একবার একজন ব্যক্তি সুরক্ষা ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেলে, কানাডায় অস্থায়ী বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার সময় তার উপর নির্ভরশীল সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে শিশুটিকে অবশ্যই বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে এবং নির্ভরশীল সন্তানের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে, এই বয়সসীমা পরিবর্তন করা হয়েছে: "১৯ বছরের কম" থেকে "২২ বছরের কম" করা হয়েছে।
=== পুনর্বাসন কর্মসূচি ===
কানাডা স্বেচ্ছাসেবী বোঝা ভাগাভাগি প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর হাজার হাজার শরণার্থীকে সক্রিয়ভাবে পুনর্বাসিত করে। এই আইনের ফলে কানাডা বিশ্বব্যাপী প্রায় ত্রিশটি দেশের একটি ছোট দলের শীর্ষে স্থান পেয়েছে যারা ''শরণার্থী কনভেনশনে পুনর্বাসনের মাধ্যমে শরণার্থীদের সুরক্ষা প্রদান করতে ইচ্ছুক, পাশাপাশি পুনর্বাসন চুক্তিতে'' ''পুনর্বাসন না'' করার প্রতিশ্রুতিও প্রদান করে। ঐতিহ্যগতভাবে তিনটি রাজ্য পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয়: কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্মিলিতভাবে, তারা UNHCR-এর পুনর্বাসন রেফারেলের প্রায় ৯০ শতাংশ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ ক্যালেন্ডার বছরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩৩,৪০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। সেখানে কানাডা ২৬,৬০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে এবং অস্ট্রেলিয়া ১৫,১০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। এই ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে, কানাডা ২০১৫ সালে ২৫,০০০ এরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থীকে পুনর্বাসনের জন্য একটি কর্মসূচি চালু করে।
=== অভয়ারণ্য শহর চলাচল ===
অনেক মানুষ আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে না কিন্তু গ্রেফতার, নির্বাসন এবং অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভয়ে অ-নথিভুক্ত স্ব-বসতিবদ্ধ অভিবাসী হিসেবে সমাজের প্রান্তিক স্তরে বাস করে। ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' পৌর কর্তৃপক্ষের কর্তব্য ছিল যে তারা অপসারণযোগ্য অভিবাসীদের নির্দিষ্ট শ্রেণীর প্রতিবেদন করবে। এর মধ্যে রয়েছে যারা সরকারি তহবিল বা কোনও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উপর দায়বদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরবর্তীতে কানাডার অভিবাসন আইন থেকে এই শুল্কটি বাদ দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কানাডায় বৈধ অভিবাসন মর্যাদাবিহীন ব্যক্তিরা, তা সে শরণার্থী, শরণার্থী দাবিদার, বা অন্য কোনও ব্যক্তিই হোক না কেন, সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হন। কারণ তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হয় না, অথবা তাদের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয় এবং তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কানাডায়, ২০১৩ সাল থেকে, টরন্টো, লন্ডন, ভ্যাঙ্কুভার, এডমন্টন, মন্ট্রিল, আয়াক্স, এবং হ্যামিল্টন নিজেদেরকে অভয়ারণ্য শহর ঘোষণা করেছে। এই অভয়ারণ্য শহর নীতিগুলোতে সাধারণত অধ্যাদেশ জারি করা হয় যাতে নথিভুক্ত নয় এমনদের জন্য পৌর পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা যায়, যদিও ফেডারেল সীমান্ত প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সাথে তথ্য ভাগাভাগি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়নি।
=== ফাইভ আইজ দেশগুলোর মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি সম্প্রসারিত হয়েছে ===
২০১০-এর দশকে বিশ্বজুড়ে আশ্রয় ব্যবস্থায় বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা একাই ৭.১ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের রিপোর্ট দিয়েছে। কানাডা দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থী দাবিদারদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে আসছে এবং এই সময়ে তারা অংশীদার দেশগুলোর সাথে এই ধরনের তথ্য আরও বেশি করে বিনিময় করতে শুরু করেছে। কানাডার দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি রয়েছে যার মাধ্যমে শরণার্থী দাবিদারদের তথ্য বিনিময় করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে কানাডা-মার্কিন স্মার্ট বর্ডার ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী তৈরি করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দেশগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি যার শিরোনাম ছিল ''আশ্রয় এবং শরণার্থী স্থিতি দাবি সম্পর্কিত তথ্য ভাগাভাগি'' কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক এবং জীবনী সংক্রান্ত তথ্য সহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, পদ্ধতিগত তথ্য ভাগাভাগি করার অনুমতি দেয়।<ref name=":64" /> বিনিময়কৃত তথ্যের মধ্যে রয়েছে: পরিচয়-সম্পর্কিত তথ্য। উদাহরণস্বরূপ জীবনী এবং বায়োমেট্রিক তথ্য; পূর্ববর্তী শরণার্থী দাবির অবস্থা (অস্বীকৃত, পরিত্যক্ত, বা মঞ্জুর); এমন তথ্য যা ইঙ্গিত দেয় যে দাবিটি অগ্রহণযোগ্য; এবং পূর্ববর্তী আবেদনের সমর্থনে জমা দেওয়া যেকোনো প্রমাণ।<ref name=":64" /> ২০০৯ সালে "ফাইভ আইজ" দেশগুলো বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অল্প সংখ্যক "অভিবাসন পরীক্ষা" পরিচালনা করার জন্য একটি ডেটা শেয়ারিং প্রোটোকল স্বাক্ষর করে। এই ব্যবস্থাটি স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এতে বার্ষিক ৩০০০ আঙুলের ছাপ ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর কানাডা যুক্তরাজ্য (২০১৫), অস্ট্রেলিয়া (২০১৬) এবং নিউজিল্যান্ড (২০১৬) এর সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তিতে পৌঁছায় যা পাইলট মডেল থেকে তথ্যের স্বয়ংক্রিয় ভাগাভাগিতে স্থানান্তরিত হয়।<ref name=":64" />
== অনিয়মিত সীমান্ত ক্রসিং বিতর্ক ==
১৯৮৯ সালে বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে, কানাডা এবং আন্তর্জাতিকভাবে শরণার্থী দাবিকারীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী সংখ্যার দিকে তাকালে, ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী আশ্রয়ের জন্য ২.৩ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়েছিল। এর বেশিরভাগই পশ্চিম ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়। ১৯৯০-এর দশকে এই সংখ্যা বেড়ে ৬.১ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়ে এবং আবেদন গ্রহণকারী দেশগুলোর তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং দক্ষিণ ইউরোপ অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০০ সালের দশকে বিশ্বব্যাপী ৫৫ লক্ষ নতুন আবেদন জমা পড়ে এবং আয়ারল্যান্ড, গ্রীস, পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো জনপ্রিয় নতুন গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে। আজ, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় দশ লক্ষ ব্যক্তি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন, যাদের শরণার্থী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে তারা বিশ্বব্যাপী অভিবাসী জনসংখ্যার ৭-৮ শতাংশ। একইভাবে, কানাডায়, নতুন দাবির পরিমাণ চক্রাকারে চলে গেলেও, সময়ের সাথে সাথে পরিমাণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বছরে কয়েক হাজার থেকে বেড়ে ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছে। তারপর থেকে, তিনটি উল্লেখযোগ্য মামলার সিদ্ধান্তের জন্য স্থগিত মামলা দেখা দিয়েছে: ২০০২ সালে ৫৭,০০০-এরও বেশি দাবি, ২০০৯ সালে ৬২,০০০-এরও বেশি বিচারাধীন দাবি, এবং ২০১৭ সালের পর যেখানে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে ৯০,০০০ দাবি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে, ২০১৭ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় অনিয়মিতভাবে প্রবেশকারী ব্যক্তিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে ওঠে। এই ধরনের ক্রসিং মূলত ক্যুবেক-নিউ ইয়র্ক সীমান্তের রক্সহ্যাম রোড এবং ম্যানিটোবার এমারসনে ঘটেছিল। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫৯,০০০ এরও বেশি মানুষ অনিয়মিতভাবে কানাডা-মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ এড়াতে কানাডায় আশ্রয় দাবি করেছে,<ref name=":11" /> । এর মধ্যে ২০১৭ সালে ২০,৫৯৩ জন দাবিদার, ২০১৮ সালে ১৯,৪১৯ জন দাবিদার এবং ২০১৯ সালে ১৬,০৭৭ জন দাবিদার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কুইবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমকারীদের প্রায় ৯৫% পেয়েছে। একইভাবে এই সময়ের মধ্যে কানাডায় মোট আশ্রয় দাবির সংখ্যাও বেড়েছে, ২০১৬ সালে ২৩,৮৭০টি থেকে, ২০১৭ সালে ৫০,৩৯০টি, ২০১৮ সালে ৫৫,০৪০টি এবং ২০১৯ সালে ৬৪,০৪৫টিতে।
শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ (RSD) এর জন্য বিশ্বব্যাপী নিবেদিত সম্পদকে যথাযথভাবে অপরিসীম হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে রাষ্ট্র এবং UNHCR ১.৫ মিলিয়ন ব্যক্তিগত আশ্রয় দাবির সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং ২০১৮ সালের হিসাবে বিশ্বে ৩.৫ মিলিয়ন আশ্রয়প্রার্থী ছিল। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা কঠিন, তবুও শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে রাষ্ট্র এবং UNHCR দ্বারা সম্পাদিত RSD-এর সম্মিলিত খরচ UNHCR দ্বারা শরণার্থীদের সরাসরি মানবিক সহায়তার মোট খরচকে ছাড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে থেরিওল্ট এবং হ্যাথওয়ে অনুমান করে যে গ্লোবাল নর্থ একাই আরএসডি-তে ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, যা ইউএনএইচসিআর-এর বাজেটের একাধিক, এবং তাদের অনুমান অনুসারে, গ্লোবাল সাউথের শরণার্থী জনসংখ্যার যত্ন নেওয়ার জন্য দায়ী সংস্থাগুলোকে দেওয়া বাজেটের চারগুণ, যদিও ৮৫% শরণার্থী সেখানে বাস করে।
বিশ্বজুড়ে, অনিয়মিত আগমনকারীদের আশ্রয় দাবির সাফল্যের হার সাধারণত অন্য কোনও অস্থায়ী ভিসায় আসার পরে আবেদনকারীদের তুলনায় বেশি থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায়, নৌকায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ঐতিহাসিক গড় সাফল্যের হার ৮০ শতাংশেরও বেশি। শিক্ষাবিদ ড্যানিয়েল ঘেজেলবাশ বলেছেন যে এটি মূলত সম্ভাব্য আশ্রয় দাবিদার ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ এবং তাদের নিয়মিতভাবে দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয় এমন ভিসা না দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা ব্যবস্থার কার্যকারিতার কারণে। এই ধরনের দাবিদারদের তুলনামূলক ''সততা'' সত্ত্বেও দাবিদারদের অনিয়মিতভাবে একটি দেশে আগমন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দ্বারা প্রয়োজনীয় ভ্রমণগুলো প্রায়ই বিপজ্জনক হয়। উদাহরণস্বরূপ, কানাডায় প্রবেশকারী বেশ কয়েকজন ক্রসিংয়ে হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটার পর তুষারপাতের কারণে হাত-পা হারিয়েছেন এবং ২০১৭ সালে কানাডা-মার্কিন সীমান্তের কাছে একটি খাদে হাইপোথার্মিয়ার কারণে মৃত অবস্থায় ঘানার ৫৭ বছর বয়সী দাদী মাভিস ওটুতেয়কে পাওয়া গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্যে সীমান্ত ক্রসিংয়ের এই বৃদ্ধির রাজনৈতিক, পদ্ধতিগত এবং আইনি পরিণতি ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির চ্যালেঞ্জ: ২০১৭ সালের পর সেফ থার্ড কান্ট্রি এগ্রিমেন্ট স্থগিত বা শেষ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর মধ্যে এই চুক্তির আইনি চ্যালেঞ্জ ছিল। এটি কানাডার সুপ্রিম কোর্টের ২০২৩ সালের সিদ্ধান্তের পরে ফেডারেল কোর্টে চলছে। ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ# মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির সাংবিধানিকতা।
* দাবি বৃদ্ধি: দাবি বৃদ্ধির ফলে সরকার আইআরবি ক্ষমতা বাড়িয়েছে। শরণার্থী দাবির এই বৃদ্ধির প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি হ'ল কানাডার ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে প্রক্রিয়া করার দাবির ক্রমবর্ধমান ব্যাকলগ। ২০১৭ সালে আইআরবি ২০ জন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সাথে একটি "অনিয়মিত বর্ডার ক্রসিং রেসপন্স টিম" চালু করেছিল। তার ২০১৯-২০ বিভাগীয় পরিকল্পনায়, আইআরবি উল্লেখ করেছে যে "৭৫,০০০ এরও বেশি দাবির একটি তালিকা জমা হয়েছে। এটি বর্তমান তহবিলের স্তরে দুই বছরেরও বেশি কাজের প্রতিনিধিত্ব করে"। দাবির এই উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় ফেডারেল সরকারের অন্যতম উদ্যোগ ছিল অস্থায়ীভাবে আইআরবির প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা প্রসারিত করা। সরকার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে সম্পদ বাড়িয়েছে যাতে ২০২১ সালের মধ্যে বার্ষিক ৫০ হাজার আশ্রয় দাবি মোকাবেলা করতে পারে।
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান: পুরো কানাডা-মার্কিন সীমান্ত জুড়ে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির প্রয়োগ প্রসারিত করার জন্য ২০১৭-পরবর্তী আহ্বান ছিল। ২০১৭ হিসাবে, জরিপগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে যে ৭০ শতাংশ কানাডীয় মনে করেন যে কানাডা-মার্কিন সীমান্তে সুরক্ষা বাড়ানো উচিত। একটি ২০১৮ অ্যাঙ্গাস রিড জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে অর্ধেকেরও বেশি উত্তরদাতারা বলেছেন যে কানাডা অনিয়মিতভাবে কানাডায় প্রবেশ করা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি খুব উদার ছিল। তাদের ২০১৯ প্ল্যাটফর্মে, কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি "অর্থনৈতিক অভিবাসন" কে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং "ভুয়া" শরণার্থী দাবিদারদের চেয়ে "সত্যিকারের নিপীড়নের" মুখোমুখি হওয়া লোকদের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কনজারভেটিভ পার্টি ইঙ্গিত দিয়েছে, নির্বাচিত হলে তারা আরও ২৫০ জন সিবিএসএ কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে এবং প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে আইআরবি সদস্যদের ক্রসিং সাইটগুলোর কাছাকাছি নিয়ে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি বিস্তৃত নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি ২০২৩ সালে কার্যকর হয়েছিল: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আইআরপিআর এস ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ # নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির পাঠ্য।
* আইআরবিতে রেফারেলের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন: অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের ফলে সংসদ এমন পরিবর্তন করেছিল যার দাবিদাররা আইআরবির সামনে শুনানির জন্য যোগ্য ছিল। জুন ২০১৯ এ, বিল সি -৯৭, ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' এ ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে সংশোধন করা হয়েছিল। এই পরিবর্তনগুলো শরণার্থী দাবিদারদের জন্য অযোগ্যতার নতুন ভিত্তি প্রবর্তন করেছে যদি তারা পূর্বে এমন কোনও দেশে আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে থাকে যার সাথে কানাডার তথ্য-ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি বা ব্যবস্থা রয়েছে। বাস্তবে এর অর্থ হ'ল যে ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে ("পাঁচ চোখের দেশ") পূর্ববর্তী দাবি করেছেন তারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার অযোগ্য এবং তাদের দাবিগুলো ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ড দ্বারা শুনেছেন, যদিও যদি তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি অন্যান্য দেশের সাথে করা হয় তবে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পূর্ববর্তী দাবির বিষয়ে কখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিনা তা নির্বিশেষে এটি তাই। যারা আইআরবিতে দাবি করার অযোগ্য বলে মনে করেন তারা পরিবর্তে প্রাক-অপসারণের ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য একটি আবেদন জমা দিতে পারেন। ইদিল আতাক এই অমনিবাস বিলটিকে "অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের প্রতিক্রিয়া জানাতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ২০১৯ ফেডারেল নির্বাচনের নেতৃত্বে তাড়াহুড়ো করে গৃহীত হয়েছে" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং এটি নতুন অভিবাসন আইন দিয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে কানাডা সরকারের দক্ষতার উদাহরণ হিসাবে দেখা যেতে পারে।
* আরপিডিতে দাবি উল্লেখ করার প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন: ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' আরপিডিতে রেফার করা দাবির যোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন দিনের সময়সীমা অপসারণের জন্য আইআরপিএ সংশোধন করেছে এবং সেই সময়ের মধ্যে যোগ্যতার সিদ্ধান্ত না নিলে আরপিডিতে "গণ্য রেফারেল" সরিয়ে দিয়েছে। কিউবেকে পর্যাপ্ত পরামর্শের অভাবের কারণে, আইআরবি একটি অস্থায়ী অনুশীলন নোটিশ জারি করে নির্দেশ দিয়েছিল যে নির্দিষ্ট দাবিদারদের তাদের স্বাভাবিক সময়সীমার মধ্যে তাদের দাবির ভিত্তিতে কেবলমাত্র কিছু প্রাথমিক তথ্য জমা দিতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ বিবরণ পরবর্তী তারিখে যুক্ত করা যেতে পারে।
* আইআরবি সময়সূচীতে পরিবর্তন: আইআরবিতে দাবির ব্যাকলগ বাড়ার সাথে সাথে আরপিডিতে প্রথম শুনানির জন্য গড় অপেক্ষার সময়টি দুই বছরে বেড়েছে, বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুই মাসের বিধিবদ্ধ সময়সীমার বিপরীতে। দাবির বৃদ্ধি আইআরবি কীভাবে দাবির সময়সূচী এবং অগ্রাধিকার দেয় তাতে পরিবর্তনের সূত্রপাত করেছিল। ''ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন রেগুলেশন'' অপারেশনাল সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রে আরপিডির শুনানি করার সময়সীমার ব্যতিক্রমের অনুমতি দেয়। এর ব্যাকলগ মোকাবেলা করার জন্য, আইআরবি নতুন মামলার আগে সময়সূচী করার জন্য পুরানো মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে এবং প্রবিধানগুলোতে মামলা প্রক্রিয়াকরণের সময়সীমা ত্যাগ করে। পূর্বে, যখন আইআরসিসি বা সিবিএসএ আরপিডিতে একটি ফাইল উল্লেখ করেছিল, দাবিদারকে শুনানির তারিখও সরবরাহ করা হয়েছিল; আরপিডি তখন সময়সীমার মধ্যে এটি করার ক্ষমতা না থাকায় সেই শুনানি স্থগিত করে। আগস্ট ২৯, ২০১৮ পর্যন্ত, দাবিদারদের রেফারেলের সময় আর শুনানির তারিখ সরবরাহ করা হয়নি।
== কোভিড-১৯ ==
২০২০ সালে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিক্রিয়ায়, ৫৭টি দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। প্রথমে, কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে প্রবেশ বন্দরের বাইরে থেকে আগত সকল আবেদনকারীর ভাইরাসের জন্য স্ক্রিনিং করা হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক হলে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। কানাডীয় সরকার কয়েকদিন পরে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, ঘোষণা করে যে সমস্ত দাবিদারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হবে। এর অংশ হিসেবে, দুই দেশ একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছে যা কানাডাকে আশ্রয় দাবি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশকারী ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেয়। চুক্তিটি স্থল সীমান্ত বরাবর সরকারী প্রবেশ বন্দর এবং বিমান ও সামুদ্রিক প্রবেশ বন্দরের মধ্যে প্রযোজ্য। সরকার নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির উদ্দেশ্যে রক্সহ্যাম রোডকে প্রবেশের বন্দর হিসেবে মনোনীত করে এবং সেই সময়ে শরণার্থী দাবিদারদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো শুরু করে। এই পদক্ষেপগুলোর প্রতিক্রিয়ায়, অনিয়মিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টাকারীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৬ মার্চ, যখন সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং ৮ মে, ২০২০ এর মধ্যে ২৪ জন অনিয়মিত অভিবাসী দাবি করতে চেয়েছিলেন<ref>Monica Boyd & Nathan T.B. Ly (2021) Unwanted and Uninvited: Canadian Exceptionalism in Migration and the 2017-2020 Irregular Border Crossings, American Review of Canadian Studies, 51:1, 95-121, DOI: 10.1080/02722011.2021.1899743 at page 113.</ref>
মহামারীর কারণে বেশ কয়েকটি রাজ্য সাময়িকভাবে আশ্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। কানাডা ছিল তাদের মধ্যে একটি। মহামারীর ফলে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ কয়েক মাস ধরে সমস্ত শুনানি বন্ধ করে দেয়, ২০২০ সালের গ্রীষ্মে পুনরায় শুরু করে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল (দূরবর্তী) শুনানি চালু করা হয়। আইআরসিসি এবং সিবিএসএ কর্তৃক আইআরবি-তে দাবির রেফারেলগুলো অনেক বেশি সময়ের জন্য বিলম্বিত বা স্থগিত করা হয়েছিল।<ref>Jay Turnbull, ''They want to work, but thousands of asylum seekers are waiting on the sidelines,'' CBC News, Feb 22, 2021 <https://www.cbc.ca/news/canada/montreal/asylum-seekers-work-permits-delay-pandemic-1.5921285> (Accessed March 7, 2021).</ref>
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় কানাডীয় সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পর্যায়ক্রমিক সাধারণ ক্ষমা অভিযান বাস্তবায়ন করেছিল, এই ক্ষেত্রে একটি প্রোগ্রাম যা গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস উদ্যোগ নামে পরিচিতি পেয়েছিল যা মহামারী চলাকালীন ফ্রন্ট-লাইন কেয়ারগিভিংয়ের সাথে জড়িত আশ্রয়প্রার্থীদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা প্রদান করেছিল। ''কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত কিছু শরণার্থী দাবিদারদের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের সুবিধার্থে এই নীতিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্থায়ী পাবলিক নীতি বলা হত।''<ref>''Kolawole v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1384 (CanLII), at para 7, <https://canlii.ca/t/k0wrg#par7>, retrieved on 2023-12-28.</ref> এই প্রোগ্রামটি ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কার্যকর হয় এবং ৩১ আগস্ট, ২০২১ তারিখে শেষ হয়।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিল S-৮ IRPA এবং প্রবিধান সংশোধন করেছে, যাতে ''বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আইনের'' অধীনে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা বিদেশী নাগরিকরা কানাডায় প্রবেশ করতে পারবেন না।<ref>Bill S-8, “An Act to amend the Immigration and Refugee Protection Act, to make consequential amendments to other Acts and to amend the Immigration and Refugee Protection Regulations”, S.C. 2023, c. 19.</ref> এই সংশোধনীগুলো শরণার্থী দাবিকে RPD-তে রেফার করার যোগ্যতাকেও প্রভাবিত করেছে। এর ফলে এটি আরও বিস্তৃত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারী এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পুনরায় শুরু হওয়ার পর দাবির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে সর্বকালের সর্বোচ্চ ১৪৪,৮৬০টি দাবিতে পৌঁছেছে।<ref>Lisa Barkova, Office of the Parliamentary Budget Officer, ''Costing Asylum Claims from Visa-Exempt Countries'', Published on May 31, 2024, <https://www.pbo-dpb.ca/en/publications/RP-2425-007-S--costing-asylum-claims-from-visa-exempt-countries--analyse-couts-demandeurs-asile-pays-dispenses-obligation-visa>.</ref>
== কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস তৈরি করা ==
২০১৭ সালের জুন মাসে, হাউস অফ কমন্সের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি (CIMM) ''"পুনরায় শুরু: অভিবাসন পরামর্শদাতাদের উপর সরকারের নজরদারি উন্নত করা"'' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জারি করে। এটি সুপারিশ করেছে যে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের জন্য নতুন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা তৈরি করবে। সেখানে সর্বোচ্চ স্তরটি আইআরবির সামনে মামলার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। পরবর্তী কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে খোলা হয়। ২০১৯ সালে সংসদ একটি আইন পাস করে যা স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়। ফলস্বরূপ, কলেজের উপ-আইন অনুসারে, IRB-তে প্রতিনিধিত্বের জন্য "১ জুলাই, ২০২২ এর পর অথবা বোর্ড কর্তৃক রেজুলেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত অন্য কোনও তারিখের পরে" ক্লাস L৩ লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। ২০২২ সালের জুন মাসে, কলেজের পরিচালনা পর্ষদ একটি প্রস্তাব পাস করে যার মাধ্যমে ১ জুলাই, ২০২৩ তারিখকে ক্লাস L৩ লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তার নতুন তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই ক্লাস L৩ লাইসেন্সটিকে "IRB-সার্টিফিকেশন" বা "স্পেশালাইজেশন প্রোগ্রাম"ও বলা হয়।<ref>College of Immigration and Citizenship Consultants, 2023, ''Specialization Program'', <https://college-ic.ca/licensee-obligations/ongoing-education-for-rcics/specialization-program> (Accessed December 29, 2023).</ref>
== ওয়েব-ভিত্তিক এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির বর্ধিত ব্যবহার ==
২০২০ সালের দিকে, স্বাভাবিক শরণার্থী গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পরিবর্তন করা শুরু হয়। এর মধ্যে এটি কে আরও ওয়েব-ভিত্তিক করাও অন্তর্ভুক্ত। ২০২০ সালে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি কানাডায় একটি বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Agency|প্রথমাংশ=Canada Border Services|তারিখ=2019-07-11|শিরোনাম=Entry/Exit initiative|ইউআরএল=https://www.canada.ca/en/border-services-agency/news/2019/07/entryexit-initiative.html|সংগ্রহের-তারিখ=2025-01-07|ওয়েবসাইট=www.canada.ca}}</ref> আইআরসিসি একটি শরণার্থী দাবি পোর্টালও চালু করেছে। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে, IRCC IRCC পোর্টালের মাধ্যমে নতুন আশ্রয় অনলাইন আবেদন (eApp) চালু করে। এটি অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবি করার প্রধান উপায় হিসেবে কানাডীয় শরণার্থী সুরক্ষা পোর্টাল (CRPP) কে প্রতিস্থাপন করে।<ref>IRCC, ''Program delivery update: Launch of the new asylum eApp via the IRCC Portal'', January 11, 2023, <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/publications-manuals/operational-bulletins-manuals/updates/2022-asylum-eapp.html> (Accessed December 12, 2024).</ref> CBSA কুইবেক অঞ্চলে কম ঝুঁকিপূর্ণ, যোগ্য দাবিদারদের জন্য "ওয়ান টাচ" নামে একটি নতুন শরণার্থী প্রক্রিয়াকরণ মডেল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে যা ২০২২ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছিল।<ref name=":023">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref> পাইলট শরণার্থী দাবিদারদের যোগ্যতার সাক্ষাৎকার স্থগিত না করে পরবর্তী তারিখে স্থানান্তরিত করেছেন। এটি সেই মডেলের পরিবর্তে এমন একটি মডেল চালু করেছে যেখানে কর্মকর্তারা ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে নির্ধারণ করে যে একজন দাবিদার কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং IRB-তে রেফার করার যোগ্য কিনা। যেসব কর্মকর্তা দাবিদারকে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং শরণার্থী দাবি করার যোগ্য বলে মূল্যায়ন করেন, তারা কাগজ-ভিত্তিক আবেদন (যেমন IMM০০০৮, তফসিল A এবং তফসিল ১২) সম্পূর্ণ না করেই দাবিটি IRB-তে পাঠাবেন। ওয়ান টাচ মডেল ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাত দাবিদারদের তাদের দাবি যোগ্য বলে প্রমাণিত হওয়ার এবং IRB-তে রেফার করার ৪৫ দিনের মধ্যে IRCC পোর্টাল ব্যবহার করে তাদের শরণার্থী দাবির আবেদন পূরণ করতে হবে। পাইলট প্রকল্পটি সফল বলে বিবেচিত হয় এবং সিবিএসএ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয়ভাবে ওয়ান টাচ মডেলটি চালু করে।<ref name=":022">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref>
সিবিএসএ ২০২৪ সালে রিপোর্টইন অ্যাপও চালু করে। এটি মুখের স্বীকৃতি প্রযুক্তি এবং অবস্থানের ডেটা ব্যবহার করে পরিচয় এবং ব্যক্তির অবস্থান নিশ্চিত করে। এটি সরকারের পূর্ববর্তী ভয়েস রিপোর্টিং সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করেছে। এটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Nicholas Keung, ''Facial recognition app to help CBSA track immigration status,'' Toronto Star, published: 2024-12-20, <https://www.thestar.com/news/canada/canada-border-agency-launches-facial-recognition-app-to-track-migrants/article_4ddd57ec-bbde-11ef-9f0d-ab0b80692041.html>.</ref>
এই ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের অন্যতম চালিকা শক্তি ছিল দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি। দাবি প্রক্রিয়ার কিছু অংশ ধীর হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, দাবির যোগ্যতার সিদ্ধান্তের একটি ব্যাকলগ জমা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত, যোগ্যতার সিদ্ধান্তের জন্য মোট প্রক্রিয়াকরণ সময় ছিল ১৩৬ দিন। সেই সময়ে, ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনগুলো ১০ দিনের মধ্যে অনুমোদিত হবে, ৮০% ক্ষেত্রে, একবার ইতিবাচক যোগ্যতার সিদ্ধান্ত রেকর্ড করা হবে এবং একটি মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।<ref>Government of Canada, ''CIMM – Asylum System Processing and Innovations – October 24, 2023'', <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/transparency/committees/cimm-october-24-2023/asylum-processing-innovations.html> (Accessed December 12, 2024).</ref>
== উপসংহার ==
কানাডায় শরণার্থী সুরক্ষা পদ্ধতির গল্পের পরবর্তী অধ্যায়গুলো লেখা বাকি। যা বলা যেতে পারে তা হলো, 'শরণার্থী' ধারণাটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মতোই পুরনো। শিক্ষাবিদ ইভ লেস্টারের ভাষায়, এটি আমাদের সাথে ততদিন থাকবে যতদিন রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকবে। এমা হাদ্দাদ লিখেছেন, শরণার্থীরা রাজনৈতিক সীমানা তৈরি এবং নাগরিক হিসেবে সকল ব্যক্তিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার ফল। এর ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শর্তগুলো প্রযোজ্য - রাজনৈতিক সীমানা পৃথক রাষ্ট্র গঠন করে এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা তৈরি করে। সুরক্ষার ব্যর্থতা - ততক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থী থাকবে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, pages 7 and 213.</ref> অ্যালান ন্যাশ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, শরণার্থীদের সুরক্ষার কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ এবং একাধিক বিপরীতমুখী উত্তেজনার শিকার। তা সত্ত্বেও এই কাঠামোটি শরণার্থীদের অধিকার এবং বাধ্যবাধকতার একটি সনদ নির্ধারণ করে এবং এর মাধ্যমে তাদের সাথে আচরণের মান নির্ধারণ করে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 9.</ref>
== তথ্যসূত্র ==
<references responsive="" />
f49r426v0cuwsarwzurf77ov6w0v1zj
85676
85675
2025-07-05T12:18:12Z
MS Sakib
6561
/* ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ডের প্রতিষ্ঠা */
85676
wikitext
text/x-wiki
== আশ্রয়ের ইতিহাস এবং নিরাপদ স্থানের ধারণা ==
আন্তর্জাতিক ও কানাডীয় উভয় প্রেক্ষাপটেই শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থার অস্তিত্ব সাম্প্রতিক একটি উন্নয়ন। অনাদিকাল থেকে মানুষ নিপীড়ন, যুদ্ধ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সরকারি অস্থিতিশীলতা এবং অপরাধমূলক নিষেধাজ্ঞা থেকে পালিয়ে এসেছে। তবে বিংশ শতাব্দীতেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ধরণের ব্যক্তিদের ভ্রমণের সময় সংগঠিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। এর ফলে শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থা তৈরি হয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 13.</ref>
"asylum" বা আশ্রয় শব্দটি এর ধারণা ও অনুশীলনের চেয়ে ছোট।<ref name=":902">W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 11.</ref> ইভ লেস্টার বলেন, এটিত্রা, আতিথেয়তা ও আশ্রয়ের অনুরোধ মানবজীবনের মতোই পুরনো ধারণা।<ref name=":332">Eve Lester, Australian responses to refugee journeys: Matters of perspective and context, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1> (Accessed March 20, 2021), at page 26.</ref> এই ধরণের জনসংখ্যা স্থানান্তরের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ১২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মিশরীয় এবং হিট্টীয়রা একটি চুক্তিতে সম্মত হয়। ওই চুক্তিতে প্রত্যর্পণের বিধান রাখে: এতে শর্ত ছিল, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না। তবে এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রত্যাবর্তিত শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে শাস্তি দেওয়া হবে না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 36.</ref> ৭২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আসিরীয় রাজা দ্বিতীয় সার্গন ইসরায়েল ও এর রাজধানী সামেরিয়া জয় করার পর হাজার হাজার ইস্রায়েলীয়কে নির্বাসিত করে আসিরীয় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে তারা স্থানীয়দের সাথে মিশে যায়।<ref name=":723">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> ৩৭৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট ভ্যালেন্স হাজার হাজার গথদের আশ্রয় দেন। এরা তাদের অঞ্চল আক্রমণকারী হুন উপজাতি থেকে পালিয়ে আসছিল।<ref name=":722">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> পরবর্তী উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৪৯২ সালে স্পেন থেকে ইহুদিদের বহিষ্কার: ১৪৯২ সালের মার্চ মাসে আলহাম্বরা ডিক্রি জারি করা হয়েছিল। এটি সমস্ত স্প্যানিশ ইহুদিদের চার মাসের মধ্যে হয় বাপ্তিস্ম নিতে অথবা স্পেন ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। ফলস্বরূপ, এক লক্ষেরও বেশি ইহুদি স্পেন ছেড়ে পর্তুগাল, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, অটোমান সাম্রাজ্য এবং অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নেয়।<ref>Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 111.</ref> সেই সময়ে, সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ ইহুদিদের নিরাপদে অটোমান ভূমিতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্পেনে অটোমান নৌবাহিনী পাঠান।<ref>Egger, Vernon O. (2008). ''A History of the Muslim World Since 1260: The Making of a Global Community''. Prentice Hall. p. 82. ISBN <bdi>978-0-13-226969-8</bdi>.</ref> ১৫৫৩ থেকে ১৫৫৮ সাল পর্যন্ত প্রোটেস্ট্যান্ট বিরোধীদের কাছে "ব্লাডি মেরি" নামে পরিচিত ম্যারি টিউডরের রাজত্বকালে ৩০,০০০ ইংরেজ হল্যান্ডে পালিয়ে যায়,<ref name=":922">Mayes D. Strange brethren. Refugees, religious bonds, and reformation in Frankfurt, 1554–1608. By Maximilian Miguel Scholz. (Studies in Early Modern German History.) Pp. xvi + 246 incl. 8 ills and 1 map. Charlottesville, Va–London: University of Virginia Press, 2022. £39.95. 978 0 8139 4675 7. ''The Journal of Ecclesiastical History''. 2024;75(2):380-382. doi:10.1017/S0022046924000277</ref> এবং আরও অনেকে ইউরোপের অন্যান্য অংশে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মুক্ত শহর ফ্রাঙ্কফুর্টে। অস্থিতিশীলতা থেকে বাঁচতে অন্যান্য গণ-জনসংখ্যার আন্দোলন ঘটেছিল, যেমন ১৬৪৯-১৬৬০ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে অনেক ইংরেজ ফ্রান্সে পালিয়ে যায়।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), page 8 of document.</ref>
ঐতিহাসিকভাবে আশ্রয়স্থল এবং নিরাপদ স্থান এমন নির্দিষ্ট স্থানের সাথে সম্পর্কিত ছিল যেখানে পৌঁছানোর পর একজন ব্যক্তি অলঙ্ঘনীয় এবং আইনের নাগালের বাইরে ছিলেন। এই ধরনের স্থানগুলোর মধ্যে ছিল বেদী, মন্দির, গির্জা, নির্দিষ্ট শহর এবং জাহাজ। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন গ্রিসে নিবেদিতপ্রাণ মন্দিরে আশ্রয় প্রদানের জন্য একটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ছিল। প্রকৃতপক্ষে "asylum" শব্দটি এই সময় থেকেই এসেছে। গ্রিক শব্দ "''asylia"'' থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যাকে আটক করা যাবে না বা যাকে আটক করা উচিত নয়।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 27.</ref> বিশেষ করে ক্রিয়াপদ ''"asylao" এর'' অর্থ লঙ্ঘন করা বা নষ্ট করা। সেখানে বিশেষণ ''"asylos/asylon" এর'' বিপরীত অর্থ, অর্থাৎ। এটি অলঙ্ঘনীয় তা বোঝায়।<ref name=":90" /> অন্যদিকে, হিব্রু শব্দ ''মিকলাত'' আশ্রয় বা আশ্রয়ের জন্য নির্ধারিত বিশেষ শহরগুলোকে বোঝায়।<ref name=":90" /> গণনা পুস্তকে ছয়টি নির্দিষ্ট শহর ''আরেই মিকলাত'', বা "আশ্রয় নগর" বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকারী ব্যক্তি শাসক মহাযাজকের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা পেতে পারতেন।<ref>Chapter 35 of the Book of Numbers, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 18.</ref> মধ্যযুগে সমগ্র পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে ধর্মীয় আশ্রয়স্থল বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 31.</ref> এটি বাইবেলের বেদীর পবিত্রতাকে তার নিজস্ব রাজ্যে স্থানান্তরিত করে গির্জা বা মঠে আশ্রয় নেওয়া লোকদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করেছিল।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 19.</ref> গির্জার আশ্রয় হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত আশ্রয় থেকে ভিন্ন ছিল কারণ এটি এমনকি যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধ করেছিল তাদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল।
যদিও এই লেখাটি পশ্চিমা এবং উত্তর আমেরিকার আশ্রয়ের ঐতিহ্যের উপর আলোকপাত করে, তবুও আশ্রয় সারা বিশ্বে একটি প্রাচীন প্রথা হিসেবে বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> গিল লোয়েশার বলেন, প্রতিটি প্রধান বিশ্ব ধর্মেই অভাবীদের সুরক্ষা প্রদানের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা রয়েছে।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 22.</ref> ইহুদি তোরাহর একটি প্রধান বিষয় হলো অভিবাসন। রাব্বিনিকাল পণ্ডিতরা যুক্তি দিয়েছেন, ''পুনর্বাসন না করার'' ধারণাটি প্রাচীন বাইবেলের ইহুদি শরণার্থী সুরক্ষার আইনি নীতিগুলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।<ref>Gilad Ben-Nun, ''Migration and Society: Advances in Research'' 4 (2021): 124–136, doi:10.3167/arms.2021.040112, at page 126.</ref> উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৬ পদ বলে: " ''যে দাস তার প্রভুর কাছ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাকে তুমি তার প্রভুর হাতে তুলে দিও না। সে তোমার সাথে তোমার মধ্যে যে কোন স্থানে বাস করবে। সেখানে সে ইচ্ছা সেখানেই বাস করবে; তুমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করো না।'' " বাইবেলে নিপীড়িত ও অভাবীদের আশ্রয়স্থলের জন্য অনেক উল্লেখ রয়েছে,<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> এবং বলা হয় যে নতুন নিয়মে যীশু এবং তার পরিবারকে শরণার্থী হিসেবে বলা হয়েছে। তাদের মিশরে গ্রহণ করা হয়েছিল।<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> ইসলাম সপ্তম শতাব্দীর পূর্বে বিদ্যমান আরব সভ্যতার আশ্রয়ের প্রাচীন ঐতিহ্যও অব্যাহত রেখেছে।<ref name=":743">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিস্তার হয় নবী মুহাম্মদের মদিনায় নির্বাসনের সময় থেকে। সেখানে মক্কার শাসকদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর নবী এবং তাঁর অনুসারীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।<ref name=":612">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এরপর ইসলাম আশ্রয়কে এমনভাবে আইনে রূপান্তরিত করে, যা কুরআন মুসলমানদের উপর সকলকে আশ্রয় প্রদানের যে কর্তব্য আরোপ করেছে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।<ref name=":74">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> বলা হয় যে সাধারণত ''দিজওয়ার'' (সুরক্ষা) এর জন্য অনুরোধ গ্রহণ করতে হবে (কোরআন ৯:৬), কিন্তু এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা কোনও কঠোর বা দ্রুত নিয়ম দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 21.</ref> চীনের আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। সেখানে এটি হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। চীনারা পলাতক এবং অপরিচিতদের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি চুক্তিও সম্পাদন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চেংয়ের রাজপুত্র তার অঞ্চল আক্রমণকারী রাজপুত্রদের একটি জোটের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ভবিষ্যতে বিচার থেকে পলাতকদের আত্মসমর্পণ করা হবে। অভিজাত ও রাজপরিবারের সদস্যদের জড়িত অন্যান্য জাতি কর্তৃক জোরপূর্বক বা স্বেচ্ছায় নির্বাসন গ্রহণের অনেক লিপিবদ্ধ চীনা উদাহরণও রয়েছে।<ref>Regarding Chinese examples dating from the eighth century BCE: Roswell S. Britton, ''Chinese Interstate Intercourse Before 700 BC,'' The American Journal of International Law, Vol. 29, No. 4 (Oct., 1935), pp. 616-635 (20 pages), at 616ff, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 51, at endnote 7.</ref> ভারতেরও হাজার হাজার বছরের পুরনো আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে।<ref name=":932">Bassiouni MC, International Extradition and World Public Order (AW Sijthoff, 1974), 88.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮৩৯ সালে যখন ইহুদিরা পারস্যে গণহত্যা থেকে পালিয়ে আসে, তখন তারা শিখ সাম্রাজ্যের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে আশ্রয় পায়।<ref>Dr. Yvette Alt Miller, ''When Jews Found Refuge in the Sikh Empire'', September 3, 2023, <https://aish.com/when-jews-found-refuge-in-the-sikh-empire/> (Accessed May 12, 2024).</ref> অ্যাজটেকদেরও আশ্রয় দেওয়ার ঐতিহ্য ছিল বলে জানা যায়।<ref name=":90" /> বেহরম্যান উল্লেখ করেছেন যে কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে ''উবুন্টুর'' দক্ষিণ আফ্রিকান দর্শন। এটি মানবাধিকারের প্রতি সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দেয় এবং সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের চাহিদার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, তাতে গ্লোবাল নর্থে সাধারণত বোঝা যায় এমন আশ্রয়ের ধারণার ঊর্ধ্বে এবং বাইরে অপরিচিত ব্যক্তির প্রতি আতিথেয়তার নীতি রয়েছে।<ref name=":742">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref>
== শরণার্থী ধারণার ইতিহাস ==
উপরে আলোচনা করা হয়েছে, ইতিহাস জুড়েই বিদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া পরিস্থিতির শিকারদের পরিচিতি রয়েছে।<ref name=":862">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Ottawa: Studies in Social Policy, Institute for Research on Public Policy, page 88.</ref> এই ঘটনাটিকে বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আশ্রয়, অভিবাসন, নির্বাসন, আশ্রয়স্থল, পলাতক, নির্বাসিত এবং ''অভিবাসী।'' 'শরণার্থী' শব্দটির উৎপত্তি আরও সাম্প্রতিক। এটি প্রথম ফ্রান্সে ১৬০০ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল। ধারণাটির বংশতালিকা ইউরোপে সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির উত্থানের সাথে জড়িত। এই বিভাগে এই দুটি ধারণার ইতিহাস এবং ১৭ শতকের শরণার্থীরা কীভাবে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে আলাদা ছিল তা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব আজ দুইশ'র কাছাকাছি সার্বভৌম রাষ্ট্রে বিভক্ত। সকল ব্যক্তিকে জনসংখ্যায় সংগঠিত করতে হবে এবং এসব দেশের মধ্যে আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত করতে হবে। এইভাবে, আন্তর্জাতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা রাজনৈতিক ক্ষমতা সংগঠিত করার একটি উপায়। উভয়ই জনগণকে সংগঠিত করার একটি মাধ্যম।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 48.</ref> ১৬৪৮ সালের ওয়েস্টফালিয়া চুক্তির মাধ্যমেই এই ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে আন্তঃরাষ্ট্রীয় আইনি ও রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্যযুগীয় বিশ্বের সামন্ততান্ত্রিক সমাজের স্থান দখল করে সার্বভৌম আঞ্চলিক রাষ্ট্রের এই আধুনিক সমাজ।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 49.</ref> এই সময়ে আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ধারণাগুলো আবির্ভূত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা ও স্থিরতা এবং বিদেশী সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা। এইভাবে ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি চুক্তির মাধ্যমে উদ্ভূত রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাটি রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণা তৈরিতে সহায়তা করেছিল। এটি বিশ্বকে স্বাধীন আঞ্চলিক ইউনিটের বিশাল সংমিশ্রণে বিভক্ত করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 16.</ref> এই ব্যবস্থার একটি দিক ছিল, একটি সার্বভৌম সরকারের অধীনে ভূখণ্ডকে একীভূত ও কেন্দ্রীভূত করা হতো এবং ভূখণ্ডের জনগণ এখন এই সার্বভৌম সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্যের অধিকারী হত। সার্বভৌম রাষ্ট্র এই ধরনের আনুগত্য নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ধর্মীয় এবং ভাষাগত সঙ্গতি দাবি করতে পারে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 50.</ref>
ওয়েস্টফালিয়া শান্তি চুক্তির কয়েক দশকের মধ্যেই "শরণার্থী" শব্দটির প্রচলন ঘটে। "শরণার্থী" শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ''"réfugié"'' থেকে। এটি হুগেনটদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল, অর্থাৎ ১৬৮৫ সালে লুই চতুর্দশের নান্টেসের আদেশ বাতিলের সময় ফরাসি ক্যাথলিক রাজার কাছ থেকে পালিয়ে অ-ক্যাথলিক ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যাওয়া লক্ষ লক্ষ<ref>Melanie Baak, Once a Refugee, Always a Refugee? The haunting of the refugee label in resettlement, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <<nowiki>https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1</nowiki>> (Accessed March 20, 2021), at page 56.</ref><ref>Reports of the number of people who left France at this time vary. Julia Morris cites a figure of 1 million in Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 4. Emma Haddad writes "From the 1670s to the start of the eighteenth century it is estimated that between 200,000 and 500,000 French Protestants left France as refugees to seek protection abroad" in Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52. Aleshkovski, et. al., write: "By the time the Edict of Nantes was cancelled, there were approximately 800 thousand Protestants in France. The vast majority was forced to leave France for Britain, the Nether- lands, Switzerland, and German States." in Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 113. In contrast, Hazal Barbaros writes: “The number of immigrants varies according to sources. To begin with, the total number of members of the Reformed Church of France is estimated to be around 900,000. Some sources indicate that the most likely number of emigrants is 200,000 approximately, whereas the others give hyper-inflated figures like 800,000 which basically means France was deprived of nearly the whole of its Protestant population. Concerning those who chose England as their destination, the number is approximated to be between 40,000 to 50,000.” See Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), pages 9-10 of document.</ref> প্রোটেস্ট্যান্ট ফরাসি অভিবাসী।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, page 7 of document.</ref> এই আদেশ পূর্বে প্রোটেস্ট্যান্ট হুগেনটদের প্রকাশ্যে তাদের ধর্ম পালনের অনুমতি দিয়েছিল।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 23.</ref> এই আদেশ বাতিলের সাথে সাথে, ফ্রান্সে এক শতাব্দী ধরে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় অনুশীলনকে সুরক্ষিত রেখে আসা আইনি নিশ্চয়তার অবসান ঘটে। ক্যালভিনিস্ট গির্জা ধ্বংস করে মন্ত্রীদের জোরপূর্বক নির্বাসিত করে প্রোটেস্ট্যান্টদের ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সরকারি পদ ও পেশায় তাদের প্রবেশাধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52.</ref> এই হুগেনটরা ইংল্যান্ডে আসার সাথে সাথে "শরণার্থী" শব্দটি ইংরেজি ভাষায় গৃহীত হয়েছিল।<ref name=":602">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 28.</ref> নতুন ফ্রান্সের প্রোটেস্ট্যান্টরাও একইভাবে প্রভাবিত হয়েছিল - হয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম ত্যাগ করতে, ফ্রান্সে ফিরে যেতে, অথবা নতুন বিশ্বে একটি ইংরেজ প্রোটেস্ট্যান্ট উপনিবেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।<ref>Jaenen, Cornelius J.. "Huguenots". ''The Canadian Encyclopedia'', 16 December 2013, ''Historica Canada''. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huguenots. Accessed 06 April 2021.</ref>
শরণার্থীদের ঘটনাটিকে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে তর্কযোগ্যভাবে আলাদা করার কারণ হলো তাদের আন্দোলনগুলো নতুন উদীয়মান রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করেছিল। এইভাবে, এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয় যে "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের এই সময়ে রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণার উত্থানের সাথে সাথে উদ্ভূত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে হর্ষ ওয়ালিয়া একজন আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটিকেই "রাষ্ট্র-কেন্দ্রিক শ্রেণীবিন্যাস" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ সীমান্তকে শাসনের একটি বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেটস এবং কোলিয়ারের যুক্তি অনুসারে, ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি-পরবর্তী নতুন বিষয় ছিল যে সরকারগুলো নিজেদেরকে শরণার্থী আন্দোলন পরিচালনা করতে সক্ষম বলে ধারণা করতে শুরু করেছিল।<ref>Betts, Alexander, and Paul Collier. ''Refuge: Rethinking Refugee Policy in a Changing World''. 2017: New York, NY: Oxford University Press. Page 36.</ref> এর ফলে দুটি প্রধান প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: রাষ্ট্রগুলো কখন আশ্রয় দিতে পারে এবং কখন হবু শরণার্থীরা এটি আশা করতে পারে?
রাজ্যগুলো কখন এবং কখন আশ্রয় দিতে পারবে কিনা এই প্রশ্নটি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেক রাজ্য অভিবাসন নিষিদ্ধ করা তাদের ক্ষমতার মধ্যে বিবেচনা করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৪৯০-এর দশকে স্পেন এবং পর্তুগাল থেকে লক্ষ লক্ষ ইহুদির আগমনের পর অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ তার ভূমি থেকে ইহুদিদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করেন এই কারণে যে এটি অর্থনীতি এবং সুলতানের কোষাগার উভয়েরই উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করবে। ঐতিহাসিকভাবে। নীচে প্রাক-কনফেডারেশন কানাডার অংশে আলোচনা করা হয়েছে, দাসত্ব এবং দাসত্বের প্রতিষ্ঠানগুলোও যে কোনও দিকে অগ্রসর হওয়ার অধিকারের উপর প্রধান বিধিনিষেধ ছিল। ১৬০০ সালের দিকে হুগেনটরা ফ্রান্স থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়, লুই চতুর্দশ এই "বিশ্বাসঘাতকদের" ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান কারণ তাদের বেশিরভাগই তার অনুমতি ছাড়াই ফ্রান্স ছেড়ে চলে গিয়েছিল। যখন সুইসরা এই শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের আদেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়, তখন সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ফরাসিরা সুইসদের যুদ্ধের হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত, জেনেভায় যাওয়া বেশিরভাগ হুগেনট শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এর কারণ সম্ভবত কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করেছিল যে ফরাসিরা এই ধরনের "অপরাধের" প্রতিশোধ নেবে - এবং সুইসরা শরণার্থীদের অন্যত্র স্থায়ী আশ্রয় চাইতে উৎসাহিত করতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে কোনও সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়নি। তা সত্ত্বেও রাজ্যগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার এবং রাজ্যগুলোর প্রস্থান সীমিত করার ক্ষমতার প্রশ্নটি আন্তঃরাজ্য বিরোধের কারণ হিসাবে রয়ে গেছে। ১৮৪০-এর দশক থেকে, রাষ্ট্রগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার আরও স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়ে ওঠে। ১৮৪৮ সালের হাঙ্গেরীয় বিদ্রোহের দমন-পীড়নের পর অনেক হাঙ্গেরীয় অটোমান সাম্রাজ্যে (তুরস্ক) পালিয়ে যায়। রাশিয়া (যার বিদ্রোহ দমনে ভূমিকা ছিল) এবং অস্ট্রিয়া শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অনুরোধ করেছিল। তুরস্ক জবাব দেয় যে তাদের সম্মান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, সেইসাথে সুলতানের মানবতাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেহেতু ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই তুরস্কের পক্ষে ছিল, তাই রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়া নমনীয় হয়ে ওঠে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 39.</ref>
এই সময়ে আরেকটি প্রশ্ন উঠে আসে, হবু শরণার্থীরা কখন আশ্রয় পাওয়ার আশা করতে পারে। রেবেকা হ্যামলিন শরণার্থীর ধারণার তুলনা করেছেন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে একটি রাষ্ট্রের কাছে সুরক্ষার জন্য আবেদন করা অন্তর্ভুক্ত, ইউরোপীয় ইতিহাসের আগের রীতিগুলোর সাথে যেখানে সুরক্ষার জন্য আবেদন করা যেতে পারে পরিবার, ব্যক্তি এবং ধর্মীয় নেতাদের কাছে, কেবল রাষ্ট্রের কাছে নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কারা আশ্রয় নিতে পারবে এই প্রশ্নটি গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করা হয়নি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, কেবলমাত্র আতিথেয়তা প্রদান করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যেই আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে; উদাহরণস্বরূপ, ১৫৫০-এর দশকে যখন প্রোটেস্ট্যান্টরা ইংল্যান্ড থেকে ফ্রাঙ্কফুর্টে পালিয়ে যায়, তখন শরণার্থীদের প্রাথমিক আলিঙ্গন শীঘ্রই তাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় অস্বস্তিতে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শরণার্থীদের উপাসনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ফলে অনেকেই আরও অতিথিপরায়ণ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হন। নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে, ১৯২০ সালের আগে শরণার্থী শব্দটির পরিধি এবং কোন ব্যক্তিরা এই মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী হতে পারেন তা নির্ধারণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ ছিল। এমা হাদ্দাদ এই বিবর্তনকে আরও বিশদভাবে তুলে ধরেন এবং যুক্তি দেন যে "শরণার্থী"-এর ঘটনাটি। এটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার পাশাপাশি আবির্ভূত হয়েছিল এবং বিংশ শতাব্দীতে বিকশিত হয়েছিল, তার নতুন মাত্রা, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা, নতুনভাবে বন্ধ সীমানা এবং ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল হিসেবে জাতিরাষ্ট্র সম্পর্কে ধারণা এবং জাতীয় পরিচয় হিসেবে স্পষ্ট গ্রহণকারী দেশগুলোর অভাব, ধর্মীয় পরিচয়ের চেয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে বেশি।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 62.</ref>
== প্রাক-কনফেডারেশন কানাডায় শরণার্থী এবং জনসংখ্যার চলাচল ==
কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়া বিভিন্ন ধরণের। এর মধ্যে আশ্রয় খোঁজার প্রক্রিয়াও রয়েছে। এই অঞ্চলে এটি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। কানাডার ভূখণ্ডে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জনসংখ্যা প্রবাহের দিকে তাকালে কে শরণার্থী হিসেবে যোগ্য হবে সে সম্পর্কে একটি সত্তাতাত্ত্বিক প্রশ্ন উত্থাপন করে। শরণার্থীদের বৈষম্য, সীমান্তের ওপারে স্থানচ্যুতি, ব্যক্তি এবং তাদের সরকারের মধ্যে বন্ধন ছিন্ন করা এবং তাদের নিজ সম্প্রদায়ে নিপীড়নের আশঙ্কার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এই ধরনের মানদণ্ড পূরণকারী ব্যক্তিদের এই দেশে দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা বলে, উপরে বর্ণিত শরণার্থীর ধারণাটি প্রকৃতপক্ষে একটি আধুনিক ধারণা। কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার জনসংখ্যার চলাচলের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা অবশ্যই কালানুক্রমিক। রেবেকা হ্যামলিনের ভাষায়, "পিছনে ফিরে তাকানো এবং অতীতের ক্রসিংগুলোতে শরণার্থী/অভিবাসী দ্বিধা স্থাপন করা সেই ঘটনাগুলোর বাস্তবতাকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে না।" তবুও কানাডার ভূখণ্ডে আদিবাসী এবং ঔপনিবেশিক উভয় ক্ষেত্রেই জনসংখ্যার আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করা (মুছে ফেলা নয়) এবং শরণার্থীর সমসাময়িক ধারণাটি আধুনিক ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের সাথে কীভাবে গভীরভাবে যুক্ত হয়েছে তা চিত্রিত করা উপযুক্ত। প্রকৃতপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে যদি এই ধরনের যোগসূত্রগুলো অপর্যাপ্তভাবে তুলে ধরা হয়, তাহলে মাইগ্রেশন স্টাডিজ স্কলারশিপ "ইচ্ছাকৃত স্মৃতিভ্রংশ"-এর সাথে জড়িত হতে পারে যা প্রথম জাতির দাবি এবং অধিকারগুলোকে "কল্পনা করে"।<ref>Stephanie J. Silverman, Immigration Detention in Canada: Concepts and Controversies, Forced Migration in/to Canada: From Colonization to Refugee Resettlement, Edited by Christina R. Clark-Kazak, <nowiki>ISBN 9780228022176</nowiki>, page 298.</ref>
শুরুতেই বলতে চাই, কানাডার ভূখণ্ডে মানুষের চলাচল এবং স্থানচ্যুতি নতুন কিছু নয়। কিছু ফার্স্ট নেশনস অত্যন্ত ভ্রমণপ্রিয় ছিল, যেমন ব্ল্যাকফুট যারা প্রেইরি পেরিয়ে শিকারের ক্ষেত্রগুলোতে বাইসনের পিছনে পিছনে যেত যেখানে তারা বাইসন লাফিয়ে দৌড়ে দৌড়াত।<ref>Dempsey, Hugh A.. "Blackfoot Confederacy". The Canadian Encyclopedia, 18 July 2019, Historica Canada. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/blackfoot-nation</nowiki>. Accessed 25 October 2021.</ref> ব্ল্যাকফুট কনফেডারেসি কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট প্লেইন অঞ্চলে অবস্থিত ব্ল্যাকফুট, ব্লাড এবং পাইগান জাতির সাথে যোগ দেয়। তারা বাইসনের চলাচলের উপর ভিত্তি করে একটি সাধারণ যাযাবর জীবনযাপন ভাগ করে নিত। এর উপর তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্ভর করত।
প্রথম জাতিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের ফলে আদিবাসীরা আগ্রাসন থেকে পালিয়ে নতুন অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ষোড়শ শতাব্দীতে, হাউডেনোসাউনি (ইরোকুইস) প্রতিবেশী গোষ্ঠীগুলোকে দমন বা ছত্রভঙ্গ করার জন্য অভিযান শুরু করে এবং একটি প্রাচীন আদর্শ অনুসরণ করে যে তারা তাদের প্রতিবেশীদের একটি জাতিতে আবদ্ধ করে "দীর্ঘ ঘরের ছাদ প্রসারিত করে" এবং এর ফলে একটি সর্বজনীন শান্তি তৈরি করে।<ref>Heidenreich, C.E.. "Huron-Wendat". The Canadian Encyclopedia, 10 October 2018, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huron. Accessed 01 January 2021.</ref> ১৬৪৯ সালে হাউডেনোসাউনিরা গ্রাম ধ্বংস করে ফরাসি-মিত্র হুরন-ওয়েন্ডাতকে তাদের মাতৃভূমি থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ১৬৫০-এর দশকে হাউডেনোসাউনি বিচ্ছুরণ অভিযান পেটুন, নিউট্রাল এবং এরি-তে প্রভাব ফেলে। এর ফলে এই জাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং তাদের সদস্যরা হয় একত্রিত হয়ে নতুন সম্প্রদায় গঠন করে অথবা পূর্বে বিদ্যমান ইরোকোয়িয়ান জাতিগুলোতে যোগদান করে।<ref name=":212">Peter G. Ramsden and Zach Parrott, "Haudenosaunee (Iroquois)" ''in The Canadian Encyclopedia'', August 28, 2015 <https://thecanadianencyclopedia.ca/en/article/iroquois> (Accessed December 30, 2020).</ref>
কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্তৃত্বকারী ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার কর্মকাণ্ডের ফলেও আদিবাসীদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। ইউরোপীয় শক্তিগুলো পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসী জাতিগুলোর কাছ থেকে দখল করা জমিগুলোতে তাদের উত্তর আমেরিকার উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। এই জব্দকরণের মধ্যে সীমানা আরোপ এবং এর সাথে শারীরিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতি জড়িত ছিল। নিচে আলোচনা করা হয়েছে, এর বেশ কিছু পরিণতি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে রোগ এবং যুদ্ধের কারণে অনেক প্রথম জাতির ব্যক্তি নিহত হয়েছিল এবং এই নতুন ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার কারণে তাদের গতিশীলতা এবং জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল।
পরিশেষে, শরণার্থীর ধারণাটিকে একটি আইনি ধারণা হিসেবেও ভাবা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে কানাডার প্রথম জাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রদায়ের সদস্যপদের শর্তগুলোকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত এবং ন্যায্যতা দেওয়া যায় সে সম্পর্কে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। আজকাল কানাডার আইনি ব্যবস্থায় এই ধরনের প্রশ্নগুলোকে প্রাথমিকভাবে অভিবাসন ও নাগরিকত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। তবে আদিবাসী আইনি ব্যবস্থায় পারিবারিক আইন, গৃহ গোষ্ঠীর সদস্যপদ এবং আত্মীয়তার অধিকারের ধারণাগুলোর মাধ্যমেও এগুলোকে সমানভাবে দেখা যেতে পারে।<ref>For a discussion of the universality of such concepts, see: Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 3.</ref> প্রকৃতপক্ষে এই দেশের ঔপনিবেশিক আইনি ব্যবস্থার আগে এবং পরে পাশাপাশি কানাডার ভূখণ্ডগুলোতে প্রচুর আদিবাসী আইন ও আইনি ঐতিহ্য টিকে আছে। জন বোরোজ লিখেছেন, উত্তর আমেরিকার আদিবাসীরা ছিলেন আইনের প্রথম দিকের অনুশীলনকারী।<ref>John Borrows, Canada’s Indigenous Constitution (Toronto: University of Toronto Press, 2010) at 301.</ref> এই আদিবাসী আইন ও আইনি ঐতিহ্যগুলো তাদের বৈচিত্র্য, ধারাবাহিকতা, দমন, টিকে থাকা এবং অভিযোজনযোগ্যতার দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।<ref name=":323">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ভাটিয়া নাগরিকত্ব এবং অন্যদের স্বাগত জানানোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রথম জাতির আইনি নীতি সম্পর্কে লিখেছেন,<ref name=":322">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> যেমন ডিশ উইথ ওয়ান স্পুন ওয়াম্পাম চুক্তি, ১৭০১ সালে হাউডেনোসাউনি এবং আনিশিনাবে জাতির মধ্যে প্রণীত একটি আদিবাসী নাগরিকত্ব আইন।<ref>Craft, A. 2013. Breathing Life into the Stone Fort Treaty An Anishinabe Understanding of Treaty One. Vancouver, BC: Purich Publishing.</ref> আরিমা তাদের পক্ষ থেকে পারিবারিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত ফার্স্ট নেশনসের আইনি নীতি সম্পর্কে লেখেন, যেমন ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপের নুটকা কীভাবে মূল ভূখণ্ডের উপকূলীয় স্যালিশ গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হত, যদিও অন্যথায় জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল না।<ref>Arima, E.Y., "Nuu-chah-nulth (Nootka)". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published February 07, 2006; Last Edited November 12, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/nootka-nuu-chah-nulth</nowiki></ref> এইভাবে, অন্যকে স্বাগত জানানোর শর্তাবলী নির্ধারণের কানাডায় কেবল ব্যবহারিক নয়, বরং দীর্ঘ আইনি ইতিহাস রয়েছে।
উত্তর আমেরিকার ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার দিকে ফিরে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক সীমানা তৈরির জন্য শক্তি প্রয়োগ করেছিল। কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৪৬ সালে সম্মত হয়েছিল কিন্তু প্রেইরিতে জরিপ এবং চিহ্নিতকরণ ১৮৭৪ সালের আগে সম্পন্ন হয়নি।<ref name=":952">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> এই সীমান্তগুলো প্রথম জাতিদের গতিশীলতা সীমিত করেছে - ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম জাতিগুলোকে এই উদীয়মান সত্তাগুলোর অধীনে থাকতে বাধ্য করেছিল। এমনকি যেখানে পূর্ব-বিদ্যমান জীবনযাত্রার ব্যবস্থা সীমান্তের একপাশে বা অন্য দিকে সুন্দরভাবে খাপ খায় না, সেখানেঈ। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার ক্রিস ও চিপ্পেওয়াসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "বিদেশী ইন্ডিয়ান" হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমির সাথে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তাদের "অবৈধ অভিবাসী" হিসেবে নির্বাসিত করা হয়।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 25.</ref> "আমরা সীমান্ত অতিক্রম করিনি, সীমান্ত আমাদের অতিক্রম করেছে" এই ধ্বংসাত্মক স্লোগানটি এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণরূপে উপযুক্ত।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 23.</ref>
তাদের পক্ষ থেকে ডাকোটা ও লাকোটা জাতিগুলোকে আমেরিকান "ইন্ডিয়ান" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল যারা ১৮৬০-এর দশকে কানাডায় "শরণার্থী" হিসেবে এসেছিল, যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ, ঐতিহাসিক রেকর্ড এবং মৌখিক জ্ঞান থেকে জানা যায় যে বর্তমান কানাডায় তাদের উপস্থিতি কমপক্ষে ৮০০ বছর আগের। এর পটভূমি ছিল ১৮৫১ সালে ডাকোটা আমেরিকান সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ডাকোটা তাদের সমস্ত জমি আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ১৮৬২ সালের গ্রীষ্মে ডাকোটা একটি সশস্ত্র বিদ্রোহের সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ১৮৬২ সালের ডাকোটা যুদ্ধ বা সিউক্স বিদ্রোহ নামে পরিচিত ঘটনাটি সফল হয়নি এবং সেই বছরের নভেম্বরে প্রায় ১০০০ ডাকোটা আমেরিকান সেনাবাহিনীর হাত থেকে আশ্রয় নিতে রেড নদীর (বর্তমানে উইনিপেগ শহর) তীরে ফোর্ট গ্যারির গেটের বাইরে এসে পৌঁছায়। তারা এসে দাবি করেছিল যে ব্রিটিশ মাটিতে থাকার তাদের ঐতিহাসিক অধিকার রয়েছে এবং জমিগুলো আসলে তাদের ঐতিহ্যবাহী ভূখণ্ডের অংশ। সেই সময়, কানাডীয় সরকার ডাকোটাদের কানাডীয় জমির মালিকানা আছে কিনা তা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিল, বরং কানাডায় ডাকোটার উপস্থিতি "সহ্য" করে তাদের থাকার অনুমতি দিয়েছিল। এটি আংশিকভাবে অনুগ্রহের বিষয় ছিল। তবে মূলত এই কারণে যে ডাকোটা বাহিনীকে চলে যেতে বাধ্য করার জন্য কানাডায় পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী ছিল না। আজ কানাডায় নয়টি ডাকোটা এবং লাকোটা ব্যান্ড রয়েছে—সাসকাচোয়ানে চারটি এবং ম্যানিটোবায় পাঁচটি।<ref name=":962">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref> এই প্রসঙ্গে সরকারের "শরণার্থী" শব্দটির ব্যবহার বিতর্কিত থেকে আক্রমণাত্মক বলে বিবেচিত হয়েছে, ডাকোটার একজন প্রবীণ এই মর্মস্পর্শী প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছেন: "আপনার নিজের দেশে আপনি কীভাবে শরণার্থী হিসেবে পরিচিত হতে চান?"<ref name=":953">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> ২০২৪ সাল থেকে, কানাডীয় সরকার ডাকোটা এবং লাকোটার সাথে কানাডায় অধিকারের সাথে আচরণ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কেবল শরণার্থী হিসেবে নয়।<ref name=":96">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref>
আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা সৃষ্ট স্থানচ্যুতি থেকে জাতীয় সীমানার মধ্যে যা ঘটেছিল তার দিকে অগ্রসর হয়ে, ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা সীমানা তৈরি করেছিল যা গতিশীলতাকে সীমিত করেছিল। এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যবস্থার সাথে জড়িত সীমানাও ছিল। এটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলগুলোর সাথে অনেক সম্পর্ক বাতিল করে সম্পর্কিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক স্থানচ্যুতি জড়িত করেছিল।<ref>Melissa May Ling Chung, ''The Relationships Between Racialized Immigrants And Indigenous Peoples In Canada: A Literature Review'', MA Thesis, 2012 <https://digital.library.ryerson.ca/islandora/object/RULA%3A1429> (Accessed December 30, 2020).</ref> অনেক আদিবাসী ব্যক্তিকে রিজার্ভে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৮৮৫ সালের উত্তর-পশ্চিম বিদ্রোহের পর ফেডারেল সরকার একটি পাস সিস্টেম তৈরি করে - একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আদিবাসীদের তাদের রিজার্ভে ফিরে যাওয়ার জন্য একজন ভারতীয় এজেন্ট দ্বারা অনুমোদিত একটি ভ্রমণ নথি উপস্থাপন করতে হত।<ref>Nestor, Rob, "Pass System in Canada". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published July 10, 2018; Last Edited July 13, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/pass-system-in-canada</nowiki></ref> রিজার্ভ ব্যবস্থা ছাড়াও অনেক ফার্স্ট নেশনস ব্যক্তির চলাচল কানাডার বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত, যেমন ১৮৬২ সালে যখন গুটিবসন্তের আগমনের পর ভিক্টোরিয়া, বিসি-তে এক জেনোফোবিক হিস্টিরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পুলিশ বন্দুকের মুখে কাছাকাছি আদিবাসী শিবিরগুলো খালি করে, সেগুলো পুড়িয়ে দেয় এবং গুটিবসন্তে আক্রান্ত আদিবাসীদের ভর্তি নৌকাগুলো উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। পরের বছর ধরে, এই আদিবাসীরা যখন তাদের নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে আসে, তখন তারা গুটিবসন্ত তাদের সাথে নিয়ে যায় এবং কমপক্ষে ৩০,০০০ আদিবাসী এই রোগে মারা যায় বলে জানা গেছে। এটি বর্তমান প্রথম জাতির জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ।<ref>Joshua Ostroff, ''How a smallpox epidemic forged modern British Columbia,'' August 1, 2017, Maclean's, <https://www.macleans.ca/news/canada/how-a-smallpox-epidemic-forged-modern-british-columbia/> (Accessed October 30, 2021).</ref> প্রকৃতপক্ষে ঔপনিবেশিকতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি ছিল কানাডায় বিপুল সংখ্যক প্রথম জাতির ব্যক্তি যারা ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীদের দ্বারা প্রবর্তিত রোগে মারা গিয়েছিলেন। এই ধরনের মৃত্যুর একটি প্রভাব ছিল যোগাযোগ-পরবর্তী সম্প্রদায়ের উত্থান, যেমন আবেনাকি, বর্তমান নিউ ব্রান্সউইক এবং ক্যুবেকের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। এটি তখন আবির্ভূত হয়েছিল যখন অসংখ্য ছোট গোষ্ঠী এবং উপজাতি। এরা ভাষাগত, ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ভাগ করে নিয়েছিল, রোগ এবং যুদ্ধের দ্বারা তাদের মূল উপজাতিগুলো ধ্বংস হওয়ার পরে একটি নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে একত্রিত হয়েছিল।<ref>Lee Sultzman (July 21, 1997). "Abenaki History". Archived from the original on April 11, 2010. Retrieved March 20, 2010.</ref>
এই ধরনের মহামারী এবং জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রভাব ছাড়াও নবনির্মিত কানাডা জাতি পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতিকেও প্রভাবিত করেছিল। স্থানচ্যুতি এবং আত্তীকরণ সম্পর্কিত ''আদিবাসী জনগণের উপর রয়েল কমিশনের'' চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অংশের ভাষায়:<blockquote>[আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর উপনিবেশবাদের প্রভাব ছিল গভীর।] সম্ভবত সেই প্রভাব বর্ণনা করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত শব্দ হলো 'স্থানচ্যুতি'। আদিবাসীদের শারীরিকভাবে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিল - তাদের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল এবং অনেক ক্ষেত্রেই ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাদের জন্য নির্বাচিত নতুন স্থানে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, তীব্র মিশনারি কার্যকলাপ এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার কারণে - যা তাদের সন্তানদের কাছে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ প্রেরণের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করেছিল, পুরুষ-কেন্দ্রিক ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধ আরোপ করে উল্লেখযোগ্য নৃত্য এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো ঐতিহ্যবাহী কার্যকলাপগুলোকে আক্রমণ করেছিল। উত্তর আমেরিকাতেও তারা রাজনৈতিকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, ঔপনিবেশিক আইনের দ্বারা বাধ্য হয়েছিল যে তারা ঐতিহ্যবাহী শাসন কাঠামো এবং প্রক্রিয়াগুলো ত্যাগ করতে বা অন্তত ঔপনিবেশিক-শৈলীর পৌর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লুকিয়ে থাকতে পারে।<ref>Report of the Royal Commission on Aboriginal Peoples. Ottawa: The Commission, 1996. Print, at page 132 <http://data2.archives.ca/e/e448/e011188230-01.pdf> (Accessed January 1, 2021).</ref></blockquote>অনেক সময় আদিবাসী সম্প্রদায়গুলো এই ধরনের স্থানচ্যুতি থেকে আশ্রয় নেওয়ার সময় নবনির্মিত আন্তর্জাতিক সীমানার উপর নির্ভর করত। উদাহরণস্বরূপ, ১৭৭৯ সালে আমেরিকান সৈন্যরা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪০-৫০টি কায়ুগা গ্রাম ধ্বংস করার পর কায়ুগা উপজাতির অনেক মানুষ ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং এর ফলে তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টির জন্য এই নতুন সীমান্তের উপর নির্ভর করে।<ref>Emerson Klees. ''Persons, Places, and Things around the Finger Lakes Region''. Rochester, Finger Lakes Publishing, 1994. Page 10.</ref>
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে ব্রিটিশরা ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় অভিবাসনকে উৎসাহিত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে। ব্রিটিশরা যাদেরকে স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত করেছিল তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও ছিলেন যাদেরকে আজ যথাযথভাবে শরণার্থী বলা হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৫০,০০০ সংযুক্ত সাম্রাজ্যের অনুগত। এরা আমেরিকান বিপ্লবে ব্রিটিশদের সমর্থক, আমেরিকান প্রজাতন্ত্রবাদের প্রতিক্রিয়ায় উত্তরে স্থানান্তরিত হয়েছিল।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 6.</ref> তাদের অনেকেই উত্তর দিকে পাড়ি জমান কারণ তারা নতুন আমেরিকান প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হতে চাননি অথবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের প্রতি তাদের জনসমর্থনের জন্য প্রতিশোধের ভয়ে।<ref name=":232">Troper, Harold. "Immigration in Canada". The Canadian Encyclopedia, 19 September 2017, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/immigration. Accessed 30 December 2020.</ref> এর মধ্যে মোহাক এবং সিক্স নেশনস ইন্ডিয়ানসের অন্যান্য সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের ওহিও উপত্যকায় তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কারণ তারা আমেরিকান বিপ্লবের সময় ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 2.</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুগতদের প্রতি যে প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল মারধর, কারাদণ্ড এবং অন্যান্য ধরণের হয়রানি।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 36.</ref> উত্তর দিকে অভিবাসিত অনুগতদের মধ্যে তেরো উপনিবেশের সীমান্তবর্তী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২০০০ সদস্য ছিলেন যারা ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিলেন, বিশ্বাস করতেন যে ব্রিটিশদের সাথে জোট তাদের স্বাধীনতা রক্ষা এবং ভূমিক্ষুধার্ত উপনিবেশবাদীদের হাত থেকে তাদের অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তম আশা প্রদান করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 40.</ref>
বিশ্বাসঘাতকরা তাদের দাসদের আজকের কানাডায় নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছিল। পরবর্তীতে বিশ্বাসঘাতকরা হাজার হাজার মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিরও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি যুদ্ধের শুরুতে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ ঘোষণায় সাড়া দিয়েছিল যা বিপ্লবের সময় আমেরিকান মাস্টারকে ত্যাগ করে রাজাদের বাহিনীর সাথে পরিষেবা দেওয়ার জন্য মুক্তির প্রস্তাব দেয়। নতুন কৃষ্ণাঙ্গ আগন্তুকদের অধিকাংশই সংঘর্ষের শেষের দিকে করা একটি প্রস্তাবে সাড়া দেয় যা নিশ্চিত করে যে সকল দাস যারা ব্রিটিশ সীমার মধ্যে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক দাবি করে তারা তাদের মুক্তি পাবেন।<ref name=":242">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> আগমনের পর এই কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্বাসঘাতকদের অনেকেই নোভা স্কোটিয়াতে বর্ণবিদ্বেষ এবং হতাশাজনক কৃষি সম্ভাবনার সম্মুখীন হন। সেখানে তারা মূলত বসবাস করেছিল। খুব হতাশ হয়ে, ১,২০০ জন সিয়েরা লিওনের জন্য পালিয়ে যায় আফ্রিকার পশ্চিম তীর থেকে নতুন করে শুরু করতে ১৭৯২ সালে।<ref name=":243">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> তবুও, পরবর্তী এক শতাব্দীতে প্রায় ৩০,০০০ আফ্রিকান আমেরিকান কানাডায় এসেছিলেন যার ফলে অনানুষ্ঠানিক রেলপথ শেষ হয়, যে দেশটিতে দাসত্ব থেকে সুরক্ষা খুঁজছিলেন।<ref name=":63">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> যদিও তারা আইনগতভাবে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন। তবে তারা সর্বদা বাস্তবিক নিরাপত্তা পাননি কারণ কানাডায় কালো মুক্ত মানব শরণার্থীদের অবৈধভাবে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তাদের দক্ষিণী রাজ্যে পুরানো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।<ref>Henry, Natasha. "Fugitive Slave Act of 1850". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 June 2023, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/fugitive-slave-act-of-1850. Accessed 25 February 2024.</ref>
যদিও কৃষ্ণাঙ্গ এবং আদিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পালিয়ে গিয়েছিল, তবুও বাস্তবতা হলো যে কানাডীয় ঔপনিবেশিক প্রকল্পে একটি বর্ণগত যুক্তি কাজ করছিল যা শাসনব্যবস্থা কাকে স্বাগত জানাতে উপযুক্ত মনে করেছিল তা নির্ধারণ করেছিল।<ref name=":652">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 47.</ref> কানাডার ইতিহাসে আমরা উপনিবেশবাদের এই যুক্তি দেখতে পাই, প্রথম জাতিদের সাথে কীভাবে আচরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্র কীভাবে জাতিগত এবং জাতীয় বহিরাগতদের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তা উভয় ক্ষেত্রেই। ১৭০০ সালের দিকে, ব্রিটিশরা উত্তর আমেরিকার সম্পত্তির ব্রিটিশ চরিত্রকে শক্তিশালী করার জন্য ইচ্ছাকৃত নীতিমালা প্রণয়ন করে। এর মধ্যে বর্তমান নোভা স্কটিয়া থেকে ফরাসিভাষী আকাদিয়ানদের জোরপূর্বক নির্বাসন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৫৫ সালে লেফটেন্যান্ট-গভর্নর লরেন্স এবং তার কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেন যে জোরপূর্বক ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে আকাদিয়ানদের মহাদেশের বেশ কয়েকটি উপনিবেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। সেই বছর ৩০০০ এরও বেশি একাডিয়ানকে বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ব্রিটিশ উপনিবেশে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মোট, নোভা স্কটিয়ার আকাদিয়ান জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাহাজগুলোতে এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী মারা যান। অনেক একাডিয়ান প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপ এবং কেপ ব্রেটনে আশ্রয় চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা কেবল সাময়িক অবকাশ পেয়েছিলেন। ১৭৫৮ সালে লুইসবার্গের বিরুদ্ধে আরেকটি ব্রিটিশ অভিযান তাদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে; এরপর আরও ৬০০০ আকাদিয়ানকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 34-35.</ref> এরপর কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অধিকন্তু, ইউনাইটেড সাম্রাজ্যের অনুগতদের মুকুট দ্বারা প্রদত্ত জমির অনুদানের মধ্যে প্রায়ই পূর্বে আকাদিয়ানদের দখলকৃত অঞ্চলগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে আকাদিয়ানরা জমিগুলো পুনরায় দখল করতে ফিরে আসতে বাধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ফোর্ট সেন্ট-অ্যান অঞ্চলে, বর্তমানে ফ্রেডেরিকটন। নোভা স্কটিয়ার আনাপোলিস নদীর আশেপাশের এলাকায়। সেখানে পূর্বে আকাদিয়ান জমিগুলো ১৭৫৯ সাল থেকে নিউ ইংল্যান্ড থেকে বসতি স্থাপনকারীদের দেওয়া হয়েছিল।
যদিও কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার সরকারগুলো স্পষ্টভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের দেশে আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তারা সাধারণত "সঠিক দেশ" থেকে আসা এবং পছন্দসই জাতি, ধর্ম এবং জাতীয়তার অধিকারী ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আপার কানাডার প্রথম লেফটেন্যান্ট-গভর্নর জন গ্রেভস সিমকো ১৭৯২ সালে একটি ঘোষণা জারি করেন যেখানে আমেরিকানদের আপার কানাডায় অভিবাসনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে ছিল কোয়েকার, মেনোনাইট এবং ডানকার্ড সহ শান্তিবাদী ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি একটি বিশেষ আবেদন। সেখানে তাদের সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 45-46.</ref>
== ঔপনিবেশিক কানাডায় অভিবাসনের উপর আইনি বিধিনিষেধের উত্থান ==
তার প্রথম শতাব্দীতে, কানাডা এবং তার ঔপনিবেশিক পূর্বপুরুষদের কোন আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নীতি ছিল না, না সীমান্তে ব্যক্তিদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের উপায় ছিল। এটি সেই সময়ের অন্যান্য পশ্চিমা রাজ্যগুলোর অভিজ্ঞতা ট্র্যাক করে। চেটেইলের সারসংক্ষেপে, ১৭ শতকের জাতিরাষ্ট্রের উত্থান এবং এর অন্তর্নিহিত পরিণাম - আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব - সাধারণত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রবর্তনের সাথে মিলেনি। এর বিপরীতে (সঠিক ধরণের) বিদেশীদের প্রবেশকে মূলত জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক কারণে আয়োজক রাষ্ট্রের শক্তি শক্তিশালী করার একটি উপায় হিসাবে দেখা হত। ফলস্বরূপ, ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী সহজেই নতুন অঞ্চলে নতুন চাকরি এবং সুযোগের দিকে চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল। ''১৮৬৭ সালের সংবিধান আইনের'' ৯১(২৫) ধারা অনুসারে "প্রাকৃতিকীকরণ এবং ভিনগ্রহীদের" উপর ফেডারেল পার্লামেন্টকে এখতিয়ার দেওয়া হলেও, কানাডার প্রথম কনফেডারেশন-পরবর্তী অভিবাসন আইন '','' ১৮৬৯ সালের ''অভিবাসন এবং অভিবাসীদের সম্মানকারী আইন'', কোন শ্রেণীর অভিবাসীদের ভর্তি করা উচিত এবং কোন শ্রেণীর নিষিদ্ধ করা উচিত সে সম্পর্কে কিছুই না বলে অবাধে প্রচলিত ধারণাকে প্রতিফলিত করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 71.</ref> উদাহরণস্বরূপ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপীয় এবং উত্তর আমেরিকা ভ্রমণের জন্য সাধারণত পাসপোর্টের প্রয়োজন ছিল না।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 5.</ref> এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থীর সংজ্ঞা নির্ধারণ ক্ষমতাসীন শক্তিগুলোর জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল না।
যদিও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে মানুষ বিশ্বে চলাচলের একটি নির্দিষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করত, তবুও এই তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন অনুশীলনগুলো কোনওভাবেই সকলের জন্য ব্যবহারিক এবং বৈষম্যহীন চলাচলের স্বাধীনতা প্রদান করেনি। চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছিল। রাজ্যগুলো কর্তৃক আরোপিত চলাচলের উপর প্রাথমিক কিছু বিধিনিষেধ প্রতিটি রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে নাগরিক এবং অ-জাতীয় উভয়ের ''অভ্যন্তরীণ'' চলাচলের উপর আরোপ করা হয়েছিল। ইউরোপে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বিধিনিষেধ মূলত করের উদ্দেশ্যে আরোপ করা হয়েছিল,<ref name=":412">Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 39.</ref> এবং ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায়, যেমন উপরে আলোচনা করা হয়েছে, এই ধরনের বিধিনিষেধের একটি প্রধান কারণ ছিল রিজার্ভ এবং পাস সিস্টেমের মাধ্যমে আদিবাসী জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ।
তাছাড়া, এই সময়েও, কানাডীয় সমাজ সকল অভিবাসীকে স্বাগত জানায়নি। যদিও সমস্ত ব্রিটিশ প্রজাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্যের যেকোনো স্থানে বসতি স্থাপনের অধিকার ছিল। এর মধ্যে কানাডার ব্রিটিশ অধিরাজ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন জান রাস্কা বর্ণনা করেছেন, কানাডীয় সরকার 'আকাঙ্ক্ষিত' অভিবাসীর প্রচলিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে অভিবাসীদের গ্রহণ করেছিল। প্রাথমিক কানাডার আপাতদৃষ্টিতে ''অবাধ'' অভিবাসন নীতিগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে বিদ্যমান ছিল। কারণ ''কার্যত'' ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ করে "অবাঞ্ছিত জাতি"দের জন্য কানাডায় ভ্রমণ সীমিত করেছিল। এর মধ্যে কয়েকটি শতাব্দী ধরে পশ্চিম ইউরোপ ছাড়া অন্য কোথাও থেকে নতুন বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্য অর্থনৈতিক পরিবহন ব্যবস্থার অভাব ছিল। এমনকি যারা এই সময়ে নতুন দেশে অভিবাসন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন পদ্ধতির ফলে ঐতিহাসিক শরণার্থীরা আধুনিক শরণার্থী কনভেনশনে বর্ণিত অধিকারের স্যুট উপভোগ করতে পারেননি। উদাহরণস্বরূপ, এমা বোরল্যান্ড লিখেছেন, ১৭ শতকের ফরাসি হুগেনটরা যুক্তরাজ্যে পুরোপুরি স্বাগতপূর্ণ অভ্যর্থনা পায়নি এবং তাদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর বদলে হুগেনটরা 'প্রজা' হিসেবে বিবেচিত না হয়ে বিদেশীর মর্যাদা বজায় রেখেছিল। তাই সেই সময়ে ইংল্যান্ডে তাদের সীমিত অধিকার ছিল।<ref>Bernard Cottret, ''The Huguenots in England: Immigration and Settlement C.1550-1700'' (Cambridge University Press 1991) 53.</ref>
যাই হোক না কেন, অভিবাসনের প্রতি তুলনামূলকভাবে ''উদার'' মনোভাব। এটি আগে প্রচলিত ছিল, তা ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। কারণ রাষ্ট্রের জনগণের উপর নজরদারি ও শাসনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ১৮০০ সালের দিকে ইউরোপে আশ্রয়ের ধারণাটি নতুন করে গুরুত্ব পায়। কারণ দেশগুলো অপরাধীদের প্রত্যর্পণের জন্য দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করতে শুরু করে। এটি ব্যক্তিদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা সীমিত করে। রাষ্ট্রগুলো রাজনৈতিক অপরাধ সংঘটিত ব্যক্তিদের এই ধরনের প্রত্যর্পণ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ার উপযুক্ত মনে করেছিল, এই ভিত্তিতে যে তাদের বিচার থেকে যথাযথভাবে আশ্রয় দেওয়া উচিত।<ref>Laabidi, A and Nacir, R. (2021) Asylum Between Yesterday and Today, A Comparison Between Islamic Law and International Law. Review of International Geographical Education (RIGEO), 11(5), [tel:3602-3611 3602-3611]. doi: 10.48047/rigeo.11.05.246, page 3607.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮২৬ সালের ''ভিনগ্রহী নিবন্ধন আইন'' ব্রিটিশ সরকারকে রাজনৈতিক শরণার্থীদের বহিষ্কার করতে বাধা দেয়। এর ফলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যে একবার আশ্রয় দেওয়া হলে, একজন শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো যাবে না।<ref name=":732">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 114.</ref> একইভাবে, ১৮৩৩ সালে বেলজিয়ামের প্রত্যর্পণ আইনের (' ''Loi sur les extraditions'' ') ধারা ৬-এ জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ শরণার্থীদের ব্যতীত, কোনও রাজনৈতিক শরণার্থীর প্রত্যর্পণ না করার নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ল্যাটিন আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটি ১৮৮৯ সালের আন্তর্জাতিক দণ্ড আইন সংক্রান্ত কনভেনশন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক কনভেনশনের একটি সিরিজে একইভাবে কোড করা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আধুনিক কল্যাণ ব্যবস্থার উত্থানের সাথে সাথে আরও কঠোর অভিবাসন নীতি আরোপ করা শুরু হয়। থেরিওল্টের কালানুক্রমিকভাবে, রাজ্যগুলো তাদের জনসংখ্যার কল্যাণে আর্থিকভাবে আরও বেশি জড়িত হওয়ার সাথে সাথে, নতুন অভিবাসী এবং শরণার্থীদের অতিরিক্ত বোঝা নিয়ে তারা ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf?sequence=2> (Accessed July 10, 2021), page 18.</ref> অধিকন্তু, এই সময়ে বিশ্বব্যাপী গতিশীলতা বৃদ্ধির ফলে অভিবাসন সম্পর্কে জাতিগতভাবে প্রভাবিত উদ্বেগ আরও তীব্র হয়ে ওঠে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 34.</ref>
রাজ্যগুলো যে বাধাগুলো তৈরি করতে শুরু করেছিল তা ক্রমবর্ধমানভাবে তাদের উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল যাদের আজ শরণার্থী বলা হবে; কানাডার ক্রমবর্ধমান অভিবাসন বিধিনিষেধের ব্যতিক্রম সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিল তার কারণের ভিত্তিতে করা হতো না। জেমস হ্যাথওয়ে বলেছেন, "অভিবাসনের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং কানাডার উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদান রাখার সম্ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল"।<ref>Hathaway, James C., 1988. "Selective Concern: An Overview of Refugee Law in Canada", ''McGill Law Journal'' 33, no. 4: 676-715, at 679.</ref>
এত কিছুর পরেও শরণার্থী নীতিমালা না থাকা সত্ত্বেও সরকার মাঝে মাঝে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের প্রবেশ সহজ এবং সহজতর করার চেষ্টা করেছে।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 15.</ref> এই সময়কালে কানাডার সরকার বিশেষভাবে যাদের কানাডায় আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে, ঘটনাক্রমে, যথাযথভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
* ১৮৭০ এবং ১৮৮০-এর দশকে কানাডীয় সরকার মেনোনাইটদের পশ্চিম কানাডায় বসতি স্থাপনের জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। ইউক্রেনের স্কুলগুলোতে। সেখানে তারা বাস করত, সেখানে রুশীকরণ নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে এবং সর্বজনীন সৈন্য নিয়োগের মাধ্যমে নতুন বাড়ির সন্ধানে মেনোনাইটদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। এটি তাদের শান্তিবাদী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছিল।<ref name=":253">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> কানাডীয় সরকার তাদের কেবল সামরিক চাকরি থেকে মুক্তি দেয়নি, বরং আনুগত্যের শপথ গ্রহণের স্বাধীনতাও দেয়। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।<ref name=":252">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> মেনোনাইটরা ছিল প্রথম অ-ব্রিটিশ গোষ্ঠী যারা কানাডায় আসার জন্য কানাডীয় সরকারের কাছ থেকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 37.</ref> ১৮৭০-এর দশকে ৭৫০০ জন ম্যানিটোবাতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 45.</ref>
* ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের হত্যার পর রাশিয়া জুড়ে সহিংস গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং শত শত ইহুদিদের হত্যা করা হয়, অন্যদের পরিকল্পিতভাবে তাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং তাদের গ্রাম থেকে আদেশ দেওয়া হয়। এই সময়ে, লক্ষ লক্ষ রাশিয়ান আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে যায়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 99.</ref> তাদের মধ্যে শত শত পশ্চিম কানাডায় দলবদ্ধভাবে বসতি স্থাপনের সুযোগ গ্রহণ করেছে। ১৮৮২ সালে কানাডায় আগত ২০০ জনেরও বেশি রাশিয়ান ইহুদি শরণার্থীর প্রথম দলটি তাদের পুনর্বাসনের পথে "ভয়াবহ বাধা" হিসেবে ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন।<ref name=":523">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যখন ফেডারেল সরকার এবং ইহুদি সম্প্রদায় নতুন আগতদের জন্য উপযুক্ত জমিতে বসতি স্থাপন করে, তখন প্রতিবেশী মেনোনাইটরা ইহুদিদের পাশে বসবাসের আপত্তি জানালে পরিকল্পনাটি বাতিল করা হয়। অবশেষে, বেশ কয়েকটি বসতি সফল হয় এবং শতাব্দীর শুরুতে কানাডার ইহুদি জনসংখ্যা প্রায় ১৭,০০০ হয়ে যায়। এটি ১৮৮০ সালের তুলনায় প্রায় দশগুণ বেশি।<ref name=":522">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> এরপর ১৯০০ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত, আরও ১,৩৮,০০০ ইহুদি কানাডায় অভিবাসিত হন। তাদের অনেকেই জারবাদী রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে আরও গণহত্যা থেকে পালিয়ে শরণার্থী হন।<ref name=":163">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
* এই সময়ে রাশিয়া থেকেও নির্যাতিত ডুখোবোররা আসতে শুরু করে।<ref name=":162">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আদিবাসীরাও উত্তর দিকে অভিবাসিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৮৭৬ সালে বর্তমানে মন্টানা রাজ্যের লিটল বিগহর্নে যুদ্ধের পর সিটিং বুলের ডাকোটা (সিওক্স) বাহিনী আমেরিকান লেফটেন্যান্ট-কর্নেল জর্জ আর্মস্ট্রং কাস্টার এবং তার ২৬২ জন সৈন্যকে হত্যা করে। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হয়ে, সিটিং বুল শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেন, কিন্তু আমেরিকানদের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর অনেক সিওক্স সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায় প্রবেশ করতে শুরু করে, উড মাউন্টেনের কাছে, এসকে (তখন উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের অংশ)। ১৮৭৭ সালে নর্থ-ওয়েস্ট মাউন্টেড পুলিশ ইন্সপেক্টর জেমস মরো ওয়ালশ সিটিং বুলের সাথে দেখা করেন এবং কানাডীয় আইনের শান্তিপূর্ণভাবে মেনে চলার বিনিময়ে তাকে মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে সুরক্ষার আশ্বাস দেন। তবে অভ্যর্থনাটি অতিথিপরায়ণতার থেকে অনেক দূরে ছিল। কানাডীয় সরকার, ভীত ছিল যে প্রধানের উপস্থিতি আন্তঃউপজাতি যুদ্ধকে উস্কে দেবে এবং শ্বেতাঙ্গ বসতি স্থাপনের জন্য প্রেইরিগুলো পরিষ্কার করতে আগ্রহী, সিটিং বুলের তার লোকদের জন্য একটি রিজার্ভের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। খাদ্যের অভাব ধীরে ধীরে সিউক্সকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে বাধ্য করে এবং রেশনের আমেরিকান প্রতিশ্রুতি মেনে নেয়।
সময়ের সাথে সাথে, কানাডার অভিবাসন আইনের সংশোধনীগুলো দেশটির বৈষম্যমূলক নীতিগুলোকে আইনে স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করে। এই সংশোধনীগুলো এই সময়ে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে এই ধরনের বিধিনিষেধের উত্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। প্রকৃতপক্ষে ১৯৩০ সালের মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধের প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্র জাতিগত কারণে অভিবাসন সীমিত করার আইন পাস করেছিল। তবে সোমানি বলেছেন, কানাডার সীমান্তে বর্ণবাদকে বৈধতার প্রদর্শনের মাধ্যমে ঢেকে রাখা হয়েছিল। কানাডার প্রাথমিক রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য ছিল এই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং মূল্যবোধকে ব্রিটিশ মাতৃভূমির আদলে গড়ে তোলা। কানাডা তার অভিবাসন আইনে জাতিগত বিধিনিষেধ খুব বেশি প্রকাশ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে অনিচ্ছুক ছিল, পাছে এটি একটি সুসংহত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ধারণাকে ক্ষুণ্ন করে এবং জাপানিদের সাথে ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষুণ্ন করে, অথবা স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করে। উদাহরণস্বরূপ ভারতে। এই লক্ষ্যে, শ্রেণী, জাতি, লিঙ্গ এবং অক্ষমতার ভিত্তিতে ''কার্যত'' বৈষম্যমূলক কানাডীয় নীতিগুলো নিরপেক্ষ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছিল, যেমন মন্ত্রিসভাকে যেকোনো শ্রেণীর অভিবাসীকে বাদ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল যেখানে তারা মনে করেছিল যে এই ধরনের বর্জন "দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে"।
কানাডায় ব্যবহৃত নির্দিষ্ট বর্জনীয় ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* <u>ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজনীয়তা</u>: বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনেক রাজ্যের মতো কানাডাও কানাডায় ভ্রমণকারীদের পাসপোর্ট বহন করার একটি বাধ্যবাধকতা কার্যকর করেছিল। ক্যাপ্রিলিয়ান-চার্চিল লিখেছেন, পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা বহির্ভূতকরণের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে মনে হয়।<ref>Kaprielian-Churchill, I. (1994). Rejecting “Misfits:” Canada and the Nansen Passport. ''International Migration Review'', ''28''(2), 281–306. <nowiki>https://doi.org/10.1177/019791839402800203</nowiki> at page 282.</ref> উদাহরণস্বরূপ, এটি এশীয় অভিবাসীদের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল, যদিও অভিবাসীদের আরও পছন্দের শ্রেণীর জন্য এটি বাধ্যতামূলক ছিল না। আমি এই ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকর করার নির্দেশ দিচ্ছি, সরকার সেন্ট্রাল কানাডা জেলার কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত বরাবর ৩৭টি প্রবেশপথে একটি অভিবাসন পরিদর্শন পরিষেবা চালু করেছে। এটি টরন্টো, অন্টারিও থেকে প্রাগ, ম্যানিটোবা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 48.</ref>
* জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর সহ জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর: অভিবাসীদের এই গোষ্ঠীগুলোকে বেছে বেছে বাদ দেওয়ার জন্য চীনা মাথা কর ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":64">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> এটি প্রথমে ১৮৮৫ সালের চীনা অভিবাসন আইন দ্বারা আরোপ করা হয়েছিল। এটি জাতিগত উৎসের ভিত্তিতে অভিবাসীদের বাদ দেওয়ার জন্য কানাডীয় আইনের প্রথম অংশ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।<ref name=":664">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> চীনা অভিবাসীদের উপর মাথা কর ১৮৮৫ সালে $৫০ নির্ধারণ করা হয়েছিল, ১৯০০ সালে $১০০ করা হয়েছিল,<ref>''An Act respecting and restricting Chinese Immigration,'' SC 1900, c 32, s 6.</ref> এবং তারপর ১৯০৩ সালে $৫০০ করা হয়েছিল।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 144.</ref> বিপরীতে, অন্যান্য অভিবাসীদের জন্য দেশে প্রবেশের জন্য আদর্শ ভাড়া ছিল এক বছরের বেশি বয়সী প্রতি যাত্রীর জন্য এক ডলার।<ref>Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 297.</ref> সেই $৫০০ আজ প্রায় $১২,৯০০ হবে। এটি দুই বছরের বেতন থেকে সঞ্চয়ের সমতুল্য ছিল এবং বলা হয়েছিল যে মন্ট্রিলে দুটি বাড়ি কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল। ১৮৮৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে প্রায় ৯৭,০০০ চীনা নাগরিক কানাডায় আসার জন্য কর প্রদান করেছিলেন।<ref>David How, et. al., ''100 Years of Resilience: Reflections on the “Chinese Exclusion Act”'', The Advocate, Vol. 82 Part 1 January 2024, at page 20.</ref> পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন পূর্ববর্তী চীনা অভিবাসীদের উপর আরোপিত শুল্ক বাতিল করে দেয়,<ref name=":663">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> কিন্তু পরিবর্তে প্রায় সকল চীনা অভিবাসীর স্থায়ী বসতি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে। যদিও কূটনীতিক, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় কমপক্ষে $২,৫০০ বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী (এবং তাদের স্ত্রী),<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952): Lobbying, Humanitarianism, and Enlightened Self-Interest (Part 2),'' CIHS Bulletin, June 2021, Issue 97, <[https://docs.google.com/viewerng/viewer?url=http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf&hl=en_GB http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf]> (Accessed July 18, 2021), at page 16.</ref> কানাডায় জন্মগ্রহণকারী চীনা বংশোদ্ভূত ব্যক্তি<ref>''An Act respecting Chinese Immigration'', SC 1923, c 38, s 5.</ref> এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যতিক্রম করা হয়েছিল, এই আইনের পরের ২৩ বছরে মাত্র ১৫ জন চীনা অভিবাসী কানাডায় প্রবেশ করতে পেরেছিলেন।<ref name=":662">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> এটি ১৯৪৭ সালে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Laura Madokoro, ''Erasing Exclusion: Adrienne Clarkson and the Promise of the Refugee Experience'', Chapter 3 in Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 72.</ref>
* "কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত রেস" এর উপর বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ৩৮ (সি) ধারা গভর্নর-ইন-কাউন্সিলকে "নিষিদ্ধ ... কানাডায় অবতরণ... কানাডার জলবায়ু বা প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত যে কোনও জাতির অভিবাসীদের। কালো আমেরিকান অভিবাসীদের নিয়মিতভাবে কানাডার "জলবায়ুর জন্য অনুপযুক্ত" বলে বাদ দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী স্যার উইলফ্রিড লরিয়ারের মন্ত্রিসভা ১৯১১ সালে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের বাদ দিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেছে: "''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ এর উপধারা (সি) এর কারণে কাউন্সিলে মহামান্য আদেশ দিতে পেরে সন্তুষ্ট এবং এটি নিম্নরূপ আদেশ দেওয়া হয়েছে: ... কানাডায় অবতরণের তারিখ থেকে এবং তার পরে এক বছরের জন্য কানাডায় অবতরণ করা হবে এবং নিগ্রো জাতির অন্তর্গত যে কোনও অভিবাসীর জন্য এটি নিষিদ্ধ। এটি জাতি কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে মনে করা হয়।'' বলা হয়েছে, কাউন্সিলের আদেশটি সরকারিভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। স্ট্যাসিউলিস যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি পশ্চিম গোলার্ধে প্রথম স্পষ্টতই জাতিগত বর্জনীয় নীতি ছিল এবং এটি ওকলাহোমার ক্লু ক্লাক্স ক্লান থেকে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষ্ণাঙ্গ কৃষকদের প্রবেশ বন্ধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ (সি) কানাডীয় সরকার ১৯৬৭৬৭ সালে নতুন বিধিমালা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্যান-এশিয়ান অভিবাসনকে সীমাবদ্ধ করে এমন নীতিগুলো প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতেও ব্যবহার করবে।
* অভিবাসন প্রণোদনা এবং ঋণ প্রোগ্রামের উপর জাতিগত বিধিনিষেধ: ঋণ একটি প্রণোদনা প্রোগ্রাম, যেমন ১৯৫০ এর দশকের সহায়ক উত্তরণ ঋণ প্রকল্প। এরা কানাডায় তাদের নিজস্ব পরিবহন বহন করতে পারে না তাদের ঋণ প্রদান করে। ঋণ ইউরোপের লোকদের দেওয়া হয়েছিল। তবে আফ্রিকা বা এশিয়া থেকে নয়।
* কানাডায় পুনঃপ্রবেশে বিধিনিষেধ: ১৯২৩ সালের চীনা ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পরে, কানাডার মধ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যমান চীনা অভিবাসীদের সাধারণত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা কেবল একমুখী ভ্রমণের জন্য চীনে ফিরে আসতে পারে।
* জাতিগত ভিত্তিক অন্তরীণ: ইউক্রেনীয়দের অন্তরীণ করার জন্য এই অভিবাসীদের বাদ দেওয়া এবং নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর আগে কানাডার অনেক অংশের চায়নাটাউনে চীনা নাগরিকদের বসবাস সীমাবদ্ধ ছিল। জাপানি কানাডীয়রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের ইন্টার্নশিপের পরে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত উপকূলে ফিরে আসতে পারেনি।
* জাতিগত কারণে অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে অস্বীকার: ১৮৯৬ এবং ১৯১১ এর মধ্যে কানাডায় চলে আসা ১ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান অভিবাসীদের মধ্যে ১০০০ এরও কম আফ্রিকান আমেরিকান ছিলেন। ট্রেবিলকক এবং কেলি রিপোর্ট করেছেন যে আফ্রিকান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের দ্বারা প্রদর্শিত কানাডায় বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সীমিত আগ্রহ ছিল এবং কানাডীয় সরকার এ জাতীয় আগ্রহ গড়ে তোলার জন্য কিছুই করেনি। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে যখন বিভাগের কর্মকর্তা বা অভিবাসন এজেন্টরা কানাডায় অভিবাসন করতে ইচ্ছুক আফ্রিকান আমেরিকানদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, তখন সরকারী নীতি সীমাবদ্ধ ছিল। কখনও কখনও, অনুরোধগুলো কানাডীয় ইমিগ্রেশন এজেন্টদের দ্বারা উপেক্ষা করা হয়েছিল বা অনির্দিষ্টকালের জন্য 'ফাইলে' রাখা হয়েছিল।
* স্বাস্থ্য ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯০৬ সালে পাস হওয়া অভিবাসন আইন "উন্মাদ", "নির্বোধ" বা "মৃগীরোগী" হিসাবে নির্ণয় করা ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। মুখের নিরপেক্ষ আইনী বিধানগুলোও বৈষম্যমূলক উপায়ে নিযুক্ত করা হয়েছিল; উদাহরণস্বরূপ, ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের'' কোনও কিছুই বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নিষিদ্ধ করেনি, যে কোনও অভিবাসীকে আইনের চিকিত্সা বিধানের অধীনে স্বাস্থ্যগত কারণে কানাডায় প্রবেশাধিকার কার্যকরভাবে অস্বীকার করা যেতে পারে। ১৯১১ সালে সরকার আমেরিকান সীমান্তে অভিবাসন পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছিল যে সমস্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে চিকিত্সার কারণে ভর্তির জন্য অযোগ্য হিসাবে প্রত্যাখ্যান করতে। হ্যারল্ড ট্রপার যেমন নোট করেছেন, "কোনও আবেদন ছিল না।
* শ্রেণি ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৮৭৯ সালে "আদিবাসী ও দরিদ্রদের" কানাডায় অবতরণ নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আদেশ-ইন-কাউন্সিল পাস করা হয়েছিল যদি না তাদের বহনকারী জাহাজের মাস্টার অস্থায়ী সহায়তা সরবরাহ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় কাটাতে পর্যাপ্ত তহবিল জমা না দেয়। তারপরে, ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন ও অভিবাসীদের সম্মান জানিয়ে'' সংসদ "দরিদ্র" বা "নিঃস্ব" বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। সরকার ১৯১০ সালে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' সংশোধন করে অটোয়ার ইমিগ্রেশন সুপারিনটেনডেন্ট বা লন্ডনে কানাডার অভিবাসনের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট থেকে কানাডায় অভিবাসনের লিখিত কর্তৃত্ব না পাওয়া সমস্ত "দাতব্য মামলা" নিষিদ্ধ করে। ভ্যালেরি নোলস লিখেছেন, এই ধারাটি বিপুল সংখ্যক দরিদ্র ব্রিটিশ অভিবাসীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল যারা ব্রিটেনকে দরিদ্রদের থেকে মুক্তি দিতে এবং কানাডায় একটি নতুন সূচনা দেওয়ার জন্য আগ্রহী দাতব্য সংস্থার সহায়তায় কানাডায় এসেছিল।
* কানাডায় আসার পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে বিধিনিষেধ: বর্ণবাদী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করার জন্য ব্যক্তিরা যেভাবে কানাডায় এসেছিলেন সে সম্পর্কে কানাডা মুখের নিরপেক্ষ আইন ব্যবহার করেছিল। ১৮৮৫ সালের ''চীনা অভিবাসন আইন'' প্রতি পঞ্চাশ টন পণ্যসম্ভারের জন্য একটি জাহাজ বহন করতে পারে এমন চীনা ব্যক্তির সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে। সেখানে প্রতি দুই টন পণ্যসম্ভারের জন্য একজন ইউরোপীয়ের তুলনায়। পরে, ১৯০৬ সালের "অবিচ্ছিন্ন যাত্রা বিধিমালা" মন্ত্রীকে অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেয় যদি না তারা তাদের জন্ম বা নাগরিকত্বের দেশ থেকে কানাডায় আসে "দেশ ছাড়ার আগে কেনা টিকিটের মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের মাধ্যমে" (শব্দটি পরে কিছুটা সংশোধন করা হয়েছিল)। এই বিধিমালা ১৯১৪ সালে এসএস কোমাগাতা মারুতে ৩৭৬ জন যাত্রীর মধ্যে ২০ (বা ২৪) যাত্রী। তাদের বেশিরভাগই শিখ ছিল, বাদে সকলের অবতরণ নিষিদ্ধ করেছিল। নৌকাটিকে ভ্যাঙ্কুভারে ডক করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং দুই মাসের অচলাবস্থার পরে কোমাগাতা মারু ঘুরে প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যদিও এই হবু অভিবাসীরা শরণার্থী হিসাবে শুরু করেনি, এর ২৬ জন যাত্রী ভারতে পৌঁছানোর পরে ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশের হাতে নিহত হয়েছিল,[ তারা সন্দেহ করেছিল যে যাত্রীরা উত্তর আমেরিকা ভিত্তিক একটি গোষ্ঠীর সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল যা ভারতে ব্রিটিশ রাজকে উৎখাত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। এই অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের নিয়মটি জাতি নির্বিশেষে শরণার্থীদের জন্য বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। কারণ জন্মের দেশে বা কানাডায় টিকিট কেনার প্রয়োজনীয়তা, বেশিরভাগ শরণার্থীদের জন্য একটি অসম্ভব প্রয়োজনীয়তা। এরা সংজ্ঞা অনুসারে, কানাডায় যাত্রা শুরু করার জন্য তাদের দেশে ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করবে। তদুপরি, অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণ নিয়মের পিছনে সীমাবদ্ধ অভিপ্রায়টি ভারত ও কানাডার মধ্যে একমাত্র সরাসরি জাহাজ পরিষেবা, কানাডীয় প্যাসিফিক শিপিং লাইনের কলকাতা-ভ্যাঙ্কুভার পরিষেবা বন্ধ করার জন্য কানাডা সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা দ্বারা উদাহরণ দেওয়া হয়েছিল। পরে, ফেডারেল সরকার ১৯১৩ সালে পশ্চিমা সমুদ্রবন্দরগুলোতে "দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের" অবতরণ নিষিদ্ধ করতে আসবে; প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে কানাডায় কে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে তা বিবেচনা করে এই বিধিনিষেধের অনুমানযোগ্য জাতিগত প্রভাব ছিল। ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে আরেকটি কানাডীয় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় কর্তৃপক্ষ আফ্রিকান-আমেরিকান বসতি স্থাপনকারীদের সম্ভাব্য আগমন সম্পর্কে প্রেইরি বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল যাতে রেলওয়ে কর্মীদের আমেরিকা থেকে আগত কৃষ্ণাঙ্গদের কাছে ট্রেনের টিকিট বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে কানাডায় আবদ্ধ আফ্রিকান-আমেরিকানদের বসতি স্থাপনের হার হ্রাসের পরিবর্তে ট্রেন ভ্রমণের জন্য পুরো ভাড়া নেওয়া হয়।
* ধর্মীয় বিধিনিষেধ: ১৯১৯ সালে শুরু হওয়া তিন বছরের সময়কালে, ডৌখোবার্স, মেনোনাইটস এবং হুটেরাইটসকে কানাডায় প্রবেশ বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ প্রাসঙ্গিক অর্ডার-ইন-কাউন্সিলের কথায়, "তাদের অদ্ভুত রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার পদ্ধতি এবং সম্পত্তি ধরে রাখার পদ্ধতি এবং তাদের প্রবেশের পরে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সহজেই একীভূত হতে বা কানাডার নাগরিকত্বের দায়িত্ব ও দায়িত্ব গ্রহণ করতে তাদের সম্ভাব্য অক্ষমতার কারণে। কথিত আছে যে হুটেরাইটরা তাদের শান্তিবাদ এবং ফলস্বরূপ বিশ্বযুদ্ধে অস্ত্র বহন করতে অস্বীকার করার কারণে এই সময়ে কানাডায় বিশেষ অসন্তোষ জাগিয়ে তুলেছিল।
* লিঙ্গ ভিত্তিক নীতি: ১৯৩৮ সালে কানাডার পুরুষ বাসিন্দারা যারা তাদের উদ্দিষ্ট স্ত্রীদের সমর্থন করতে সক্ষম হয়েছিল তারা বাগদত্তাকে স্পনসর করতে সক্ষম হয়েছিল। কানাডার মহিলা বাসিন্দাদের স্বামী বা স্ত্রীকে স্পনসর করার মতো ক্ষমতা বাড়ানো হয়নি। কানাডার ১৯৪৭ সালের ''নাগরিকত্ব আইন'' কানাডীয় মহিলাদের যারা অ-কানাডীয়দের বিয়ে করেছিলেন তাদের নাগরিকত্ব বজায় রাখার অনুমতি দেয়। তবে এই মহিলারা বিদেশে জন্মগ্রহণকারী তাদের সন্তানদের কাছে তাদের কানাডীয় নাগরিকত্ব দিতে পারেননি, যেহেতু এই শিশুরা তাদের নাগরিকত্ব দায়ী পিতামাতা, তাদের বাবার কাছ থেকে পেয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল।
* রাজনৈতিক-মতামত ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট সংশোধন করা হয়েছিল যাতে নৈরাজ্যবাদী মতামত প্রকাশকারীদের বাদ দেওয়া এবং নির্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কানাডায় অস্থায়ী মর্যাদাপ্রাপ্তদের জন্য এই বিধিনিষেধমূলক নীতির ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, দেশের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথ নির্মাণের জন্য পনের হাজার চীনা পুরুষকে কানাডায় আনা হয়েছিল। তবে সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তার উপর ভিত্তি করে ব্যতিক্রম করা হতো না - প্রকৃতপক্ষে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত, কানাডা শরণার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিক পার্থক্য করত না।
== লীগ অফ নেশনস যুগ ==
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং রুশ বিপ্লবের পর থেকেই "শরণার্থী" শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। যদিও "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের, তবুও এই বিন্দু পর্যন্ত এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। ১৯২০-এর দশকে "শরণার্থী" শব্দটি আরও ঘন ঘন আবির্ভূত হতে শুরু করে এবং আশ্রয়, সুরক্ষা এবং আতিথেয়তার মতো দীর্ঘস্থায়ী "প্রতিযোগী শব্দ" "বিস্মৃতির অতলে" চলে যেতে শুরু করে। হ্যামলিন বর্ণনা করেছেন, শরণার্থী শব্দটি "এই সময়ের একটি ফসল ছিল।" এই বিষয়টি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বেগ বৃদ্ধির মধ্যে এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির আবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, লীগ অফ নেশনস-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯২১ সালে একটি শরণার্থী অফিস তৈরির অনুমোদন দেয় এবং ফ্রিডটজফ ন্যানসেনকে শরণার্থীদের জন্য প্রথম হাই কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করে। ১৯২২ সালে নানসেন রাশিয়ান শরণার্থীদের জন্য তথাকথিত 'নানসেন পাসপোর্ট' তৈরি করেন। এটি ছিল একটি আন্তর্জাতিক পরিচয়পত্র যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, রাশিয়ান বিপ্লব এবং তুরস্কে আর্মেনীয় গণহত্যার ঘটনাবলীর কারণে উচ্ছেদ হওয়া শরণার্থীদের চলাচল এবং পুনর্বাসনের সুবিধা প্রদান করে। এই প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কয়েক মিলিয়ন ইউরোপীয় শরণার্থীকে সুরক্ষা এবং সহায়তা পাওয়ার উপায় প্রদান করেছিল।<ref name=":31" /> এটি কে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের সূচনা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯২৫ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শরণার্থী পরিষেবা এই ন্যানসেন পাসপোর্টগুলো ইস্যু করার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পাঁচ বছর পর ন্যানসেনের মৃত্যুর পর লীগ অফ নেশনস হাই কমিশনারের পদ বাতিল করে এবং শরণার্থী কাজের এই মানবিক দিকটি ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজি বা সংক্ষেপে আন্তর্জাতিক শরণার্থী অফিসের উপর অর্পণ করে।
থেরিওল্ট বলেন যে প্রথমে সাধারণত ধরে নেওয়া হতো যে শরণার্থী সমস্যাটি অস্থায়ী এবং দেশগুলো স্বেচ্ছায় শরণার্থীদের তুলনামূলকভাবে উদার সুবিধা প্রদান করে। তবে ১৯২০-এর দশকের শেষের দিকে, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী প্রকৃতি স্বীকার করতে শুরু করে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে শরণার্থীদের একীভূত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনে পরিবর্তন আসে। কারণ রাশিয়ান এবং আর্মেনিয়ান শরণার্থীদের জন্য ন্যানসেন পাসপোর্ট প্রদানের বিষয়ে ১৯২২ এবং ১৯২৪ সালের ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বাধ্যবাধকতা আরোপকারী চুক্তিগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত করার প্রচেষ্টা সীমিত রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সাথে মিলিত হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোর কোনওটিতেই স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। কানাডীয় সরকার ন্যানসেন পাসপোর্টকে স্বীকৃতি দিতে দৃঢ়ভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এই ভিত্তিতে যে কানাডা কেবল তখনই এই ধরনের পাসপোর্টধারীদের গ্রহণ করবে যদি তারা অপরাধী বা পাগল হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দেশে ফেরত পাঠানোর যোগ্য হয়। এটি ক্যাপ্রিয়েলিয়ান-চার্চিল শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করার একটি ধোঁয়াশা এবং উপায় হিসাবে বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য দেশগুলো যখন কানাডার প্রত্যাবাসনযোগ্যতার দাবি পূরণের জন্য প্রচেষ্টা করেছিল, তখনও কানাডীয় কর্মকর্তারা শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করতে থাকে, প্রত্যাখ্যানের অন্যান্য কারণ খুঁজে বের করে। ১৯৩১ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা গর্বের সাথে বলেছিলেন যে লীগ অফ নেশনস-এর ন্যানসেন পাসপোর্টে কানাডায় মাত্র "এক ডজন শরণার্থী" প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
ন্যানসেন পাসপোর্টের ভিত্তি স্থাপনকারী চুক্তিগুলো চুক্তি আইনের মর্যাদার অভাবের বিষয়টি মোকাবেলা করার জন্য, লীগ অফ নেশনস ১৯৩৩ সালে ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত একটি কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করে। ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কানাডা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল, অর্থাৎ তার আগে "কানাডীয় পররাষ্ট্র নীতি" বলে কিছু ছিল না। কারণ ব্রিটেন তার উপনিবেশগুলোকে লন্ডনের অনুমোদন ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর, জোট গঠন বা অন্য দেশের সাথে প্রায় কোনও অর্থপূর্ণভাবে যোগাযোগের অনুমতি দিত না। ১৯৩১ সালে যুক্তরাজ্য ওয়েস্টমিনস্টারের সংবিধি পাস করে যার ফলে তার স্ব-শাসিত শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশগুলোকে তাদের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি পছন্দ করার অধিকার দেওয়া হয়। তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ, দুই বছর পর কানাডা ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দেয়নি, অথবা পরবর্তী চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেনি। তা সত্ত্বেও এই কনভেনশনটিকে শরণার্থীদের সুরক্ষার জন্য একটি ব্যাপক আইনি কাঠামো তৈরির প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে স্মরণ করা হয় এবং যে সময়ে আন্তর্জাতিক আইনে ''অ-প্রত্যাবাসনের'' নীতিটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সংখ্যালঘুদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলো লীগ অফ নেশনস গ্রহণ করেছিল। এটি অতীতের দিকে তাকালে বলা হয় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শরণার্থী শাসনের একটি স্পষ্ট উৎস ছিল।
এই সময়ের মধ্যে আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়া প্রধান শরণার্থী গোষ্ঠীগুলোর দিকে তাকালে কানাডার শরণার্থীদের গ্রহণের ইচ্ছার উপর তীব্র সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ইরভিং অ্যাবেলা এবং পেত্রা মোলনার লিখেছেন, বিদেশীদের প্রতি ঘৃণা এবং ইহুদি-বিদ্বেষ কানাডায় ছড়িয়ে পড়েছিল এবং "[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে] শরণার্থীদের ভর্তির পক্ষে জনসমর্থন খুব কম ছিল এবং এর বিরোধিতাও অনেক বেশি ছিল"। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩০-এর দশকে কানাডা ইউরোপীয় ইহুদিদের প্রবেশাধিকার সীমিত করে যারা ইহুদি-বিদ্বেষ এবং জার্মানিতে ফ্যাসিবাদের উত্থান থেকে নিরাপদ আশ্রয় চেয়েছিল, কিন্তু চেকোস্লোভাকিয়া থেকে আশ্রয়ের সন্ধানে সুডেটেন জার্মানদের স্বাগত জানায় কারণ তাদের আরও "আকাঙ্ক্ষিত" অভিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হত। আর্মেনিয়ান শরণার্থীরাও কানাডার বর্জনীয় নীতির শিকার হয়েছিল। ১৯১৫ সালে অটোমান সাম্রাজ্য তার আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর গণহত্যা, স্থানান্তর এবং নির্বাসন শুরু করে। এতে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং অর্ধ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যেখানে ৮০,০০০ আর্মেনীয় শরণার্থী ফ্রান্সে এবং ২৩,০০০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাবে, সেখানে ১,৩০০ জনেরও কমকে কানাডায় ভর্তি করা হয়েছিল।
কানাডা তার সীমাবদ্ধ পুনর্বাসন নীতিগুলোকে ন্যায্যতা দিয়েছে শরণার্থী সুরক্ষার জন্য কারা যোগ্য তার একটি সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করে (যতদূর পর্যন্ত তারা শ্রেণীবিভাগ নিয়ে আলোচনা করেছে)। উদাহরণস্বরূপ, যখন কানাডার ইহুদি সংগঠনগুলো ইউরোপে বাস্তুচ্যুত ইহুদি শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কানাডীয় সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল, তখন সরকার দ্বিধা প্রকাশ করে দাবি করে, যেহেতু অনেকেই কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে রাশিয়া ছেড়ে চলে গেছেন, তাই তাদের শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। কে আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য সেই ধারণাটি সম্প্রসারণের প্রচেষ্টাকেও কানাডা সমর্থন করেনি। ১৯৩৮ সালে মার্কিন সরকার ইউরোপের ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পরিস্থিতির বিষয়ে একটি সম্মেলনের জন্য ৩০টি দেশকে একত্রিত করে। কানাডা অংশগ্রহণে অনিচ্ছুক ছিল, ফ্রান্সের ইভিয়ান অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মার্কিন আমন্ত্রণ গ্রহণ করার আগে কয়েক মাস অপেক্ষা করেছিল। ভ্যালেরি নোলস ১৯৩৮ সালের গ্রীষ্মকালীন সম্মেলনে কানাডার অংশগ্রহণকে "ন্যূনতম" বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে কানাডার জন্য স্বস্তির বিষয় ছিল যে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কেবল উচ্চ নীতির একটি বিবৃতি তৈরি করতে পেরেছিলেন যা আসলে আরও উদার অভিবাসন নীতির প্রয়োজন ছিল না। এই বছর ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজিজ বা আইআরও-এর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, মূলত ইউএসএসআর-এর অবস্থানের কারণে। প্রায় ৬০০,০০০ শরণার্থী এখনও অফিসের সুরক্ষার অধীনে থাকা সত্ত্বেও। তা সত্ত্বেও শরণার্থীদের জন্য লীগ অফ নেশনস-এর হাই কমিশনারের পৃথক অফিস ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কাজ করে চলেছিল। সেই বছর প্রতিষ্ঠিত আন্তঃসরকার শরণার্থী কমিটি (ICR)। এটি জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া থেকে আসা ইহুদিদের সহায়তা করার জন্য নির্ধারিত হয়েছিল, কানাডার জড়িততা ছাড়াই পরিচালিত হয়েছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 9.</ref> তা সত্ত্বেও ইভিয়ানের উত্তরাধিকারের একটি দিক হলো এটি কে হ্যাথাওয়ে "শরণার্থী আইনের ব্যক্তিকরণ" বলে অভিহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখা হয়। কারণ যখন আইসিআর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছিল যা প্রথমবারের মতো কেন মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। এটি ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনকে প্রভাবিত করবে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, pages 39-40.</ref>
কানাডা তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ''রিফুলমেন্টের'' ধারণাটিকেও উপেক্ষা করেছে বলে মনে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কমিউনিস্টদের বহিষ্কারের উৎসাহে, কানাডা তাদের নিজ দেশে নির্যাতিত ব্যক্তিদের বহিষ্কার করেছিল। কানাডা থেকে জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানোর পর হান্স কিস্ট নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান বলে জানা গেছে। কেলি এবং ট্রেবিলকক লিখেছেন যে ইতালি, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার মতো ফ্যাসিবাদী দেশগুলোতে পাঠানো অনেক কর্মীও ফিরে আসার সময় তাদের জীবন হারানোর ঝুঁকিতে ছিলেন।<ref name=":532">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 248.</ref>
তবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত কিছু মানুষ এই সময়ে কানাডার নিয়মিত অভিবাসন প্রবাহের মাধ্যমে কানাডায় চলে এসেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ১৯৩২ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশকারী বেশিরভাগ অভিবাসীই শরণার্থী ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯২৩ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে প্রায় ২০,০০০ মেনোনাইটকে কানাডায় বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কেলি এবং ট্রেবিলকক যখন ইতিহাস বর্ণনা করেছিলেন, তখন রাশিয়া থেকে জার্মান-ভাষী মেনোনাইট শরণার্থীরা রাশিয়ান বিপ্লবের পর যে কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছিলেন তা থেকে বাঁচতে কানাডায় এসেছিলেন। বিপ্লবের সময় অস্ত্র হাতে নিতে তাদের অস্বীকৃতি সংঘাতের উভয় পক্ষকে বিচ্ছিন্ন ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল এবং মেনোনাইটরা ক্রমশ নৃশংস আক্রমণ এবং ভয় দেখানোর শিকার হতে থাকে। এটি গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও অব্যাহত ছিল। ১৯২০-এর দশক জুড়ে, জমি দখল, তাদের ধর্মের প্রতি সরকারী অসহিষ্ণুতা এবং সাইবেরিয়ায় জোরপূর্বক স্থানান্তরের হুমকি হাজার হাজার মানুষকে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে প্ররোচিত করেছিল।
== দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শরণার্থী নীতি ==
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জুড়ে কানাডার শরণার্থী নীতি ইহুদি-বিদ্বেষ এবং বিদেশীদের প্রতি বিদ্বেষের দ্বারা চিহ্নিত ছিল। অনেক পছন্দের জাতিগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের, বিশেষ করে ব্রিটিশদের, আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যদের তা দেওয়া হয়নি।
যুদ্ধের শুরুতে কানাডা বিদেশে বিপদগ্রস্ত ব্রিটিশ শিশুদের ভর্তির অনুমতি দিতে শুরু করে। সরকার ৫,০০০ ব্রিটিশ শিশু এবং তাদের মায়েদের ভর্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং ৪,৫০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ শিশু এবং ১,০০০ মা কানাডায় এসেছেন। ১৯৪০ সালে কানাডায় শিশুদের বহনকারী দুটি জাহাজ টর্পেডোতে ধ্বস নামানোর পর এই আন্দোলন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 269.</ref>
অ-ব্রিটিশ ব্যক্তিদের প্রবেশের সুবিধা একইভাবে দেওয়া হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী নীতিতে ইহুদি-বিদ্বেষের একটি দৃশ্যমান প্রকাশ ছিল ১৯৩৯ সালে নাৎসি জার্মানি থেকে আশ্রয় প্রার্থনাকারী এসএস সেন্ট লুইসে ৯৩০ জন ইহুদি শরণার্থীকে প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত। এর বদলে এই শরণার্থীদের জার্মানিতে তাদের জন্য অপেক্ষা করা জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধের শেষের দিকে, ১৯৪৩ সালে কানাডা যখন ঘোষণা করে যে তারা আইবেরিয়ান উপদ্বীপে আসা কিছু ইহুদি শরণার্থীকে ভর্তি করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন বলা হয় যে এটি "শরণার্থী-বিরোধী স্বার্থের প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল"। কুইবেকের বিরোধীদলীয় নেতা মরিস ডুপ্লেসিস সমাবেশ করে অভিযোগ করেন যে প্রাদেশিক এবং ফেডারেল উদারপন্থীরা নির্বাচনী অর্থায়নের বিনিময়ে "আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্রাদারহুড" কে কুইবেকে ১০০,০০০ ইহুদি শরণার্থী বসতি স্থাপনের অনুমতি দিতে প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা ৫,০০০ এরও কম ইহুদি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়, এটিকে ট্রেবিলকক এবং কেলি ইউরোপের নির্যাতিত ইহুদিদের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে যেকোনো গণতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড বলে অভিহিত করেন। এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৪০,০০০, ব্রিটেন ৮৫,০০০, চীন ২৫,০০০, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ২৫,০০০ এর বেশি অনুমতি দিয়েছে এবং মেক্সিকো এবং কলম্বিয়া তাদের মধ্যে প্রায় ৪০,০০০ পেয়েছে। যখন একজন কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে যুদ্ধের পরে দেশটি কতজন ইহুদিকে গ্রহণ করবে, তখন তাদের বিখ্যাত উত্তর ছিল, "কেউই খুব বেশি নয়।"<ref>Marlene Epp, “Refugees in Canada: A Brief History,” Immigration And Ethnicity In Canada 35 (2017), <https://cha-shc.ca/_uploads/5c374fb005cf0.pdf> (Accessed May 9, 2020), at 8 and Noakes, Taylor. "None Is Too Many". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 July 2022, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/none-is-too-many. Accessed 25 February 2024.</ref>
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় "শত্রু এলিয়েন" হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার এবং সীমাবদ্ধ করার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কানাডা গণ-বন্দী নীতি প্রণয়ন করে যার ফলে তথাকথিত জার্মান শত্রু বিদেশীদের - নাৎসি সহানুভূতিশীল এবং ইহুদি শরণার্থীদের - ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। যুদ্ধ ব্যবস্থা আইনের অধীনে প্রবিধানগুলো জাপানি অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল, জাপানি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিকদের নির্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল, এবং জাপানি ব্যক্তিদের অন্তরীণ করে রেখেছিল। ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের ১০০ মাইল এলাকা থেকে প্রায় ২২,০০০ জাপানি কানাডীয়কে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়। বেশিরভাগকেই ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অভ্যন্তরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, প্রায়ই বিচ্ছিন্ন ভূতের শহরে আটক শিবিরে। যুদ্ধের শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাপানি কানাডীয়দের এই আটক শিবিরগুলোতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারপর শত্রুতা শেষ হওয়ার পর প্রায় ৪,০০০ জন চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করবে এবং ফেডারেল সরকারের "প্রত্যাবাসন" প্রকল্পের অধীনে কানাডা ছেড়ে জাপানে যাবে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কানাডীয় বংশোদ্ভূত এবং দুই-তৃতীয়াংশ কানাডীয় নাগরিক ছিলেন।
যুদ্ধের সময়, ব্রিটিশ সরকার ২,৫০০ "শত্রু এলিয়েন" কানাডায় পরিবহন করেছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এরা ছিল জার্মান এবং অস্ট্রিয়ান নাগরিক। তাদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত ইহুদি। এরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় গ্রেট ব্রিটেনে বসবাস করছিলেন। ভ্যালেরি নোলস কানাডায় তাদের অভ্যর্থনার বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন:<blockquote>কানাডীয় সরকার এই পুরুষ বেসামরিক বন্দীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছিল এই বিশ্বাসে যে এটি "সম্ভাব্য বিপজ্জনক শত্রু এলিয়েনদের" হেফাজত গ্রহণ করে কঠিন চাপে থাকা ব্রিটেনকে সহায়তা করবে। তাই কানাডীয় কর্তৃপক্ষ কিশোর ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, পুরোহিত এবং রাব্বিদের একটি বিশাল দলকে কুইবেকে তীরে পা রাখতে দেখে অবাক হয়ে গেল। তবে তাদের সন্দেহ সত্ত্বেও কানাডীয়রা সকলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগারের মতো শিবিরে রাখতে এগিয়ে যায়। এবং এখানেই বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ত্ববিদ, সঙ্গীতজ্ঞ, শিক্ষক, শিল্পী এবং লেখক সহ অন্যান্যদের আগামী মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে বাধ্য করা হবে। </blockquote>নোলস উল্লেখ করেছেন, সৌভাগ্যবশত এই বন্দীদের জন্য, ব্রিটিশ সরকার শীঘ্রই বুঝতে পেরেছিল যে তারা অনেক অন্তরীণদের প্রতি সম্ভবত গুরুতর অবিচার করেছে এবং তাদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ১৯৪৫ সালে কানাডা এই এককালীন বন্দীদের "যুক্তরাজ্য থেকে আন্তঃদেশীয় শরণার্থী (বন্ধুত্বপূর্ণ এলিয়েন)" হিসাবে পুনর্বিবেচনা করে এবং তাদের কানাডার নাগরিক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ৯৭২ তাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা সীমিত সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু এই সময়ে অন্যান্য দেশে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি ছিল: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী ১৭৫ মিলিয়ন মানুষ - বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ - বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী পরিবেশে তাদের কীভাবে সাড়া দেওয়া যায় তা মিত্রশক্তির ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।
== জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রশাসন (UNRRA) এবং আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা (IRO) ==
১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি সামনে আসার সাথে সাথে, মিত্রশক্তিগুলো যুদ্ধোত্তর শরণার্থী শাসনের ভিত্তি স্থাপন শুরু করে। সেই বছর, তারা ইউরোপের মুক্তির প্রস্তুতির জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংস্থা (UNRRA) প্রতিষ্ঠা করে। যুদ্ধের ফলে শুধুমাত্র ইউরোপেই কমপক্ষে ১ কোটি। সম্ভবত ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি রাষ্ট্রহীন ব্যক্তির শরণার্থী সংকট তৈরি হয়েছিল। যুদ্ধের শেষে, ইউরোপে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দশ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি এবং শরণার্থী ছিল। এই লোকদের মধ্যে কিছু ছিল কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা, অন্যরা ছিল এমন ব্যক্তি যাদের জার্মানি এবং অস্ট্রিয়ার শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। আরও কিছু ছিল যারা কমিউনিস্ট শাসনে প্রত্যাবাসন করতে অস্বীকার করেছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 157.</ref> কানাডা UNRRA-কে তহবিল প্রদান করে। এটি ইউরোপে ৮০০ টিরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবির পরিচালনা করে;<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952),'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 8.</ref> তীব্র বিশ্বব্যাপী ঘাটতির সময়ে প্রায় $৪ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য, খাদ্য, ওষুধ এবং সরঞ্জাম বিতরণ করে; এবং ১৯৪৫-৪৬ সালে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের তাদের নিজ দেশে ইউরোপে প্রত্যাবাসনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 155.</ref>
UNRRA-এর কার্যক্রম তৎক্ষণাৎ শীতল যুদ্ধের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সংগঠনটি বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের মুখোমুখি হয়েছিল যারা কমিউনিস্ট দলগুলো দৃঢ়ভাবে দখল করে থাকা দেশগুলোতে ফিরে যেতে অনিচ্ছুক ছিল। অনেক পোলিশ, ইউক্রেনীয় এবং বাল্টিক ব্যক্তি এইভাবে শিবিরে বসবাস করছিলেন, তাদের নাগরিকত্বের দেশের পরিবর্তে একটি অ-কমিউনিস্ট দেশে পাঠানোর অনুরোধ করছিলেন। সোভিয়েত কর্মকর্তারা এই ধরনের দাবি মেনে নেওয়ার যে কোনও ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপত্তি জানান। যদিও UNRRA এই মুহূর্তে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দেশে ফিরিয়ে দিচ্ছিল - সম্ভবত প্রায় ২০ লক্ষ - এটি ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠছিল। যাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল তাদের অনেকেই স্ট্যালিনের রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার ভয়ে ভীত ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং/অথবা শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা সরকারগুলো UNRRA-কে অর্থায়ন বন্ধ করার এবং পুনর্বাসন কাজ পরিচালনার কাজ UNRRA থেকে একটি নতুন সত্তা, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। UNRRA-এর বিপরীতে, IRO-এর কোনও সোভিয়েত অংশগ্রহণ ছিল না এবং এর প্রধান কাজ ছিল প্রত্যাবাসন নয়, বরং শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের বিদেশে পুনর্বাসন করা। আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার ১৯৪৬ সালের সংবিধানে অক্ষশক্তি দেশগুলোর সাথে সহযোগিতাকারী, প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধকারী বা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সুরক্ষা অস্বীকার করে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটি কিছুটা স্পষ্ট করা হয়েছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
শাওনা ল্যাবম্যান লিখেছেন, এই মুহূর্তে শরণার্থী আইন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোযোগ একজন ব্যক্তির বাড়ি ফিরে যেতে ''অক্ষমতা'' থেকে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে ''অনিচ্ছার'' দিকে সরে যায়। অতীতের দিকে তাকালে, কমিউনিস্ট দেশগুলোতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি আছে এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ার এই পদক্ষেপ শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিরাট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে। পূর্বে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শরণার্থী গোষ্ঠী, যেমন রাশিয়ান বা জার্মান শরণার্থীদের সাথে কাজ করত। গিল লোয়েশারের ভাষায়, সরকারগুলো কখনও 'শরণার্থী' শব্দটির একটি সাধারণ সংজ্ঞা প্রণয়নের চেষ্টা করেনি। তাই, প্রথমবারের মতো, আইআরও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শরণার্থী যোগ্যতাকে গোষ্ঠী সদস্যতার পরিবর্তে ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল করে তুলছিল এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে নিরাপদ দেশে পালিয়ে যাওয়ার ব্যক্তির অধিকারকে মেনে নিয়েছিল। অ্যালান ন্যাশ তৎকালীন রাজনীতির মধ্যে এটি স্থাপন করেছেন, উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমারা প্রত্যাবাসন প্রত্যাখ্যানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছিল ''অ-প্রত্যাবাসন'' নীতি বিকাশের মাধ্যমে। এটি পূর্বে পূর্ববর্তী শরণার্থী চুক্তিগুলোতে খুব কমই ছিল, শরণার্থীদের পরিচালনার জন্য এমন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে যা তাদের নিজস্ব দেশের মতাদর্শের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অক্ষম বা অনিচ্ছুকদের জন্য ত্রাণ প্রদান করে এবং যাদের জন্য সেখানে অব্যাহত বসবাস অসহনীয় ছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
তার কার্যভার অর্জনের জন্য, IRO-এর নিজস্ব বিশেষায়িত কর্মী, ৪০ টিরও বেশি জাহাজের একটি বহর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, উন্নত বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা ছিল। এই IRO পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হওয়ার সাথে সাথে, পূর্ব ইউরোপে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা সামান্য হ্রাস পেয়েছে এবং IRO এমন কার্যক্রম শুরু করেছে যা ১০ লক্ষেরও বেশি ইউরোপীয়কে আমেরিকা, ইসরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওশেনিয়ায় স্থানান্তরিত করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কানাডার সরকার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার মানবিক দায়িত্ব পালনের জন্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ পেতে শুরু করে। ১৯৪৬ সালে কানাডীয় সরকার একটি আদেশ-কাউন্সিল স্বাক্ষর করে যা কানাডীয়দের ইউরোপে বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অনুমতি দেয়। ১৯৪৭ সালে কানাডা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা থেকে শরণার্থীদের রেফারেল গ্রহণ শুরু করে। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে কানাডা বিদেশে নিজস্ব অভিবাসন কর্মকর্তাদেরও মোতায়েন করেছে। সম্মিলিতভাবে, এই আগমনকারীদের মধ্যে ছিল বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আন্দোলন। এটি ছয় বছরের মধ্যে ১৮৬,১৫৪ জনকে কানাডায় সফলভাবে পুনর্বাসিত করেছে।<ref name=":5" /> এর মধ্যে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ১০০,০০০ জন কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন, এটিকে বলা হতো শ্রম-স্পন্সরিত আন্দোলনের মাধ্যমে। সেখানে একজন নিয়োগকর্তা সরকারকে দেখাতে পারতেন যে স্থানীয়ভাবে কোনও চাকরি পূরণ করা সম্ভব নয় এবং সরকার প্রতি প্রয়োজনীয় শ্রমিকের জন্য উপলব্ধ শরণার্থীদের মধ্য থেকে দুই বা তিনজন সম্ভাব্য অভিবাসীকে IRO-তে পাঠাতে পারত। আইআরও-এর সাড়ে চার বছরের কার্যক্রমের সময়, কানাডা সংস্থা কর্তৃক পুনর্বাসিত সমস্ত শরণার্থীর ১২% গ্রহণ করবে। সেখানে অস্ট্রেলিয়া ১৮%, ইসরায়েল ১৩% এবং ব্রিটেন ৮% গ্রহণ করবে। এই সময়ে ব্যবহৃত পরিভাষাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়: কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটিকে শরণার্থীর সাথে তুলনা করা হত। কারণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা ছিলেন যুদ্ধের পরে তাদের জাতীয়তার দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। সেখানে শরণার্থীরা ছিলেন না; কখনও কখনও 'শরণার্থী' এবং 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি সমার্থক হিসাবে ব্যবহৃত হত; এবং কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি ব্যবহার করা হতো যাকে আমরা এখন 'অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' হিসাবে ভাবি, 'শরণার্থীদের' বিপরীতে যারা তাদের নিজ রাজ্য থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে এসেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 135.</ref>
১৯৪৭ সালের ১ মে যুদ্ধে বেঁচে যাওয়াদের কানাডায় স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরকারের ইচ্ছার কথা ঘোষণা করার সময়, প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং সরকারের অবস্থান এইভাবে স্পষ্ট করেছিলেন: "কানাডায় প্রবেশ করা কোনও বিদেশীর 'মৌলিক মানবাধিকার' নয়। এটি একটি বিশেষাধিকার। এটি অভ্যন্তরীণ নীতির বিষয়। অভিবাসন কানাডার সংসদের নিয়ন্ত্রণাধীন।" বিপরীতে এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই ভাষণকে তৎকালীন নতুন জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত মানবাধিকারের ধারণাকে কানাডার স্বীকৃতি দেওয়ার সূচনা হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘ সনদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, ম্যাকেঞ্জি কিং ঘোষণা করেছিলেন যে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন বাতিল করা হবে এবং কানাডার চীনা বাসিন্দারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে, এই সময়ে কানাডা মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনায় জড়িত ছিল। এটি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হবে এবং স্বীকৃতি দেবে যে "প্রত্যেকেরই নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে অন্য দেশে আশ্রয় চাওয়ার এবং উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।" মানবাধিকারের বক্তৃতার প্রতি এই ক্রমবর্ধমান সহনশীলতা সত্ত্বেও কিং-এর বাস্তব-রাজনীতি কানাডার কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয়েছিল: যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কানাডা যে দশ হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল তাদের "সাবধানে নির্বাচিত করা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই যদি অভিবাসী হিসেবে আবেদন করত তবে আমাদের মান পূরণ করত", একজন সমসাময়িক লেখকের মতে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 34.</ref> অধিকন্তু, এটা যুক্তিযুক্ত যে যুদ্ধ-পরবর্তী দশকগুলোতে হলোকাস্ট শরণার্থী নীতির উপর আশ্চর্যজনকভাবে খুব কম প্রভাব ফেলেছিল, বিশেষ করে কানাডার কর্মকাণ্ডের উপর ঠান্ডা যুদ্ধের ক্ষমতার রাজনীতির প্রভাবের তুলনায়।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 21.</ref>
১৯৪৭ সালে কানাডীয় নাগরিকত্বের ধারণার জন্ম হয়, সেই জানুয়ারিতে ''কানাডীয় নাগরিকত্ব আইন'' কার্যকর হয় ''।'' নাগরিকত্ব আইনের আগে, এই দেশের মানুষ ব্রিটিশ প্রজা ছিল। নতুন আইন "ব্রিটিশ প্রজা" শ্রেণীবিভাগ বাদ দেয় এবং "জাতীয়তা" এবং "নাগরিকত্ব" এর পূর্ব-বিদ্যমান আইনি ধারণাগুলোকে "কানাডীয় নাগরিক" এর একক মর্যাদায় একীভূত করে। এর মাধ্যমে কানাডীয়দের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতীক তৈরি করার চেষ্টা করে।
== ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠা, শরণার্থী কনভেনশনের আলোচনা এবং ক্রমবর্ধমান শরণার্থী গ্রহণ ==
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার একটি সময়-সীমিত ম্যান্ডেট ছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধারণা ছিল যে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা যুদ্ধের সৃষ্টি, তাই যুদ্ধের অবসান মানে এই ধরনের ব্যক্তিদের অস্তিত্বের অবসান।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 129.</ref> তবে ১৯৫০ সালের জুনে আইআরও-এর সমাপ্তির তারিখ যত ঘনিয়ে আসতে থাকে, ইউরোপে শরণার্থীদের আগমন অব্যাহত থাকে। প্রকৃতপক্ষে তারা পূর্ব ব্লক থেকে পশ্চিম ইউরোপীয় সীমান্ত পেরিয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে আসছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 10.</ref> ফলস্বরূপ, ১৯৪৯ সালের ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়।<ref name=":613">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এক বছর পর ১৯৫০ সালের ১৪ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ''জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সংবিধি'' পাস হয়। এটি শরণার্থী এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান এবং তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন, স্থানীয় আত্তীকরণ বা তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য ইউএনএইচসিআর-এর আদেশকে সংজ্ঞায়িত করে।<ref>Mark Rook, ''Identifying Better Refugee Policies for an Evolving Crisis'', April 21, 2020, University of Pennsylvania Honors Thesis, <https://repository.upenn.edu/cgi/viewcontent.cgi?article=1037&context=ppe_honors> (Accessed May 9, 2020), page 6.</ref> ইউএনএইচসিআর ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী ৯৯ জন কর্মী এবং ৩০০,০০০ ডলার বাজেট নিয়ে তার কাজ শুরু করে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 79.</ref> এটি একটি মানবিক আদেশ এবং সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক চরিত্রের ছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 5.</ref> সেই সময়ে, আইআরও তার কার্যক্রমের একটি বর্ধিত পরিসমাপ্তিতে নিযুক্ত ছিল। এটি এটি ১৯৫২ সালে সম্পন্ন করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref> ইউএনএইচসিআর-কেও অস্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বাস্তুচ্যুত ইউরোপীয়দের চাহিদা পূরণের জন্য সংস্থাটিকে ৩ বছরের ম্যান্ডেট দিয়েছিল।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref>
একই সময়ে, আধুনিক শরণার্থী সুরক্ষার জন্য ভিত্তি চুক্তি, ১৯৫১ সালের ''জাতিসংঘের শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'', কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর অধ্যয়ন' শুরু হওয়ার মাধ্যমে<ref>Terje Einarsen, ‘Drafting History of the 1951 Convention and the 1967 Protocol’ in Andreas Zimmermann (ed), ''The 1951 Convention relating to the Status of Refugees and Its 1967 Protocol: A Commentary'' (OUP 2011).</ref> কনভেনশনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়।<ref name=":572">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> শরণার্থী কনভেনশনের খসড়া প্রণয়নের প্রথম দফার আলোচনা শুরু হয় ''রাষ্ট্রহীনতা এবং সম্পর্কিত সমস্যা সম্পর্কিত অ্যাডহক কমিটি নামে''। এটি ৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়েছিল। প্রাসঙ্গিক ECOSOC রেজোলিউশনের ভাষায়, ''অ্যাডহক'' কমিটিতে এই বিষয়ে 'বিশেষ দক্ষতা' সম্পন্ন সরকারি প্রতিনিধিদের একটি ছোট বৃত্ত থাকবে বলে জানা গেছে। মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর গবেষণা'-এ প্রদত্ত সুপারিশগুলো বিবেচনা এবং কার্যকর করার জন্য এটি কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।<ref name=":57">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> এই আলোচনার সময় ঠান্ডা যুদ্ধের রাজনীতি অনুভূত হয়েছিল মূলত পূর্ব ব্লকের দেশগুলোর অনুপস্থিতির মাধ্যমে - ইউএসএসআর এবং পোল্যান্ড প্রথমে 'ওয়াক আউট' করে এবং তারপর (জাতীয়তাবাদী) চীনের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ''অ্যাডহক'' কমিটি বয়কট করে। কানাডীয় লেসলি চান্সের সভাপতিত্বে কমিটি ১৯৫০ সালের ১৬ জানুয়ারী থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক করে এবং একটি শরণার্থী কনভেনশনের প্রথম খসড়া প্রস্তুত করে।<ref>Molloy, M. J., & Madokoro, L. (2017). Effecting Change: Civil Servants and Refugee Policy in 1970s Canada. ''Refuge: Canada’s Journal on Refugees'', ''33''(1), 52–61. https://doi.org/10.25071/1920-7336.40448, page 53.</ref>
এরপর ''অ্যাডহক'' কমিটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সামাজিক কমিটিতে তার প্রতিবেদন জমা দেয়। ১৯৫০ সালের ৩১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আটটি বৈঠকে সামাজিক কমিটির ১৫টি দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখান থেকে, কনভেনশনের উপর চূড়ান্ত আলোচনা পরিচালনার জন্য ''"শরণার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের অবস্থা সম্পর্কিত জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাসম্পন্ন সম্মেলন"'' শীর্ষক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শরণার্থী কনভেনশনের বহুল আলোচিত ''পদক্ষেপগুলো'' এই সভাগুলো থেকে এসেছে। এটি ২ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই, ১৯৫১ পর্যন্ত চলেছিল। তিন দিন পরে ২৮ জুলাই কনভেনশনটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।<ref>United Nations, ''Final Act of the United Nations Conference of Plenipotentiaries on the Status of Refugees and Stateless Persons'', 25 July 1951, United Nations, Treaty Series, vol. 189, p. 137, available at: https://www.refworld.org/docid/3e2becbb4.html [accessed 3 August 2021]</ref>
এই শরণার্থী কনভেনশন অনুসারে, শরণার্থী মর্যাদা ছিল ব্যক্তিদের দ্বারা তাদের ব্যক্তিগত পরিস্থিতির ভিত্তিতে ধারণ করা একটি লেবেল। এটি পূর্ববর্তী সংজ্ঞাগুলোর সাথে বিপরীত ছিল যা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের সমস্ত নাগরিক বা সেই রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট জাতিগত গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। এর ফলে আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মূল দেশের সাধারণ পরিস্থিতির আরও ব্যক্তিগতকৃত বিবরণ প্রদান করতে হত। এর ফলে, সুরক্ষার পরিধি সংকুচিত হয়েছিল এবং পৃথক স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল।<ref>Karin Åberg, ''Examining the Vulnerability Procedure: Group-based Determinations at the EU Border'', Refugee Survey Quarterly, September 2021, https://doi.org/10.1093/rsq/hdab011, page 16.</ref>
এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোতে শীতল যুদ্ধের রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল—যদিও ২৬টি দেশ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিল, যুগোস্লাভিয়া ছাড়া, কোনও সোভিয়েত ব্লক দেশ উপস্থিত ছিল না। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মেলন থেকে উদ্ভূত ব্যক্তিকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি চেয়েছিল, আলোচনায় এর অনুপস্থিতির কারণে পশ্চিমা দেশগুলো শরণার্থী সুরক্ষার কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য হিসাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার সন্ধানের উপর জোর দিতে শুরু করে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 57.</ref> সেই দেশের ১৯৭৬ সালের সংবিধানে একটি বিপরীত সোভিয়েত দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়:<blockquote>'''ধারা ৩৮।''' ইউএসএসআর শ্রমিক জনগণের স্বার্থ এবং শান্তির কারণ রক্ষার জন্য, অথবা বিপ্লবী ও জাতীয়-মুক্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য, অথবা প্রগতিশীল সামাজিক ও রাজনৈতিক, বৈজ্ঞানিক বা অন্যান্য সৃজনশীল কার্যকলাপের জন্য নির্যাতিত বিদেশীদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করে।</blockquote>কনভেনশনের খসড়া তৈরির সম্মেলনে কানাডাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল: সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি পাঠানো ছাব্বিশটি দেশের মধ্যে এটি একটি ছিল;<ref name=":202">Jan Raska, ''Canada’s Refugee Determination System'', Canadian Museum of Immigration at Pier 21, August 21, 2020, <https://pier21.ca/research/immigration-history/canada-s-refugee-determination-system> (Accessed January 1, 2021).</ref> কানাডীয় লেসলি চান্স, সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন;<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 35.</ref> আমেরিকার দেশ কানাডা ছিল কনভেনশনের খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব পেশ করেছিল, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর দ্বারা প্রভাবিত আলোচনার সময় মন্তব্য করেছিল; এবং কানাডা ছিল সেই কর্মী গোষ্ঠীর একটি অংশ যা যুক্তিসঙ্গতভাবে কনভেনশনের মূল অংশ - নথির অনুচ্ছেদ ১-এ শরণার্থীর সংজ্ঞা - খসড়া তৈরির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Regional Developments: Americas'', at p. 210 (para. 19).</ref> কানাডীয় চেয়ারম্যান লেসলি চান্স রিপোর্ট করেছেন যে "আমাদেরকে সর্বত্র অগ্রগামী মনোভাব পোষণকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।"<ref name=":22">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> অন্যদিকে, সম্মেলনে কানাডার গৃহীত পরিবর্তনশীল অবস্থানের কারণে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের ''বিরুদ্ধে'' যুক্তি দিয়ে, কনভেনশনে সাময়িক এবং ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, সেই অবস্থান পরিবর্তন করে এবং এই ধরনের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে যুক্তি দেওয়ার আগে, চ্যান্সের বক্তব্যকে কিছুটা স্বার্থপরতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যাই হোক না কেন, কানাডা শেষ পর্যন্ত সম্মেলনে "সর্বোচ্চ সম্ভাব্য সংজ্ঞার পক্ষে" সমর্থন করে এই অবস্থান গ্রহণ করেছিল যে "কনভেনশনের উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া, রাষ্ট্রগুলোকে নয়।"
পরবর্তী কনভেনশনটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা প্রদান করে এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের অধিকারের রূপরেখা দেয়। এই অধিকারগুলো হলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যক্তিরা যে দাবিগুলো করতে পারে তার একটি সিরিজ: প্রধানত, এমন একটি দেশে জোরপূর্বক ফেরত না পাঠানোর অধিকার যেখানে গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে ( ''অ-রিফাউলমেন্ট'' )। সেইসাথে, শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃতদের জন্য, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার। অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের মতো অন্যান্য কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলো এই ফলস্বরূপ কনভেনশনটি অনুমোদন করলেও কানাডা তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাখ্যা হিসেবে, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেস্টার বি. পিয়ারসন ঘোষণা করেছিলেন যে সরকার উদ্বিগ্ন যে কনভেনশন শরণার্থীকে "নির্বাসনের বিরুদ্ধে তার আপিলের শুনানিতে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার" দেবে এবং আরও, কনভেনশন "কমিউনিস্টদের বা মৌলিক মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা ধ্বংসে বিশ্বাসী অন্যান্য ব্যক্তিদের অধিকার প্রদান করবে।" কানাডীয় সরকার উদ্বেগের সাথে আরও উল্লেখ করেছে, "কনভেনশনের কিছু ধারা রাষ্ট্রগুলোকে 'সত্যিকারের' শরণার্থীদের নির্বাসন থেকে নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার কারণেও"। এটি RCMP-এর বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে কনভেনশনটি নিরাপত্তার কারণে কানাডার শরণার্থীদের বহিষ্কারের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করবে এবং সরকারের সন্দেহ যে আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় কমিউনিস্টরা অনুপ্রবেশ করেছে। কানাডাকে ছাড়াই শরণার্থী কনভেনশনটি ২২ এপ্রিল, ১৯৫৪ তারিখে কার্যকর হয়।<ref>UNHCR, ''States Parties to the 1951 Convention relating to the Status of Refugees and the 1967 Protocol'', <https://www.unhcr.org/protection/basic/3b73b0d63/states-parties-1951-convention-its-1967-protocol.html> (Accessed August 28, 2020).</ref>
কনভেনশনে স্বাক্ষর না করলেও, পরবর্তী বছরগুলোতে কানাডা শরণার্থী সংক্রান্ত বিষয়ে আরও বেশি জড়িত হয়ে ওঠে:
* অ-প্রত্যাবাসনের বাধ্যবাধকতাগুলো সম্মান করার প্রতিশ্রুতি: কনভেনশনে স্বাক্ষর না করা সত্ত্বেও কানাডা তবুও কনভেনশনের অ-প্রত্যাহারের বাধ্যবাধকতা বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাস্তবে কানাডার কনভেনশনের প্রয়োজনীয়তাগুলোর সাথে সম্মতি নিশ্চিত করতে কোনও অসুবিধা হয়নি কারণ ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিক থেকে এবং মার্কিন অনুশীলনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কানাডার ইমিগ্রেশন শাখা যে কোনও কমিউনিস্ট দেশে নির্বাসনের উপর প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হাদ্দাদ নোট করেছেন যে এই জাতীয় প্রতিশ্রুতি কঠিন ছিল না কারণ আয়রন কার্টেনের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা সংখ্যাগুলো "শরণার্থীরা পালাতে পারে না" এই সাধারণ কারণে ন্যূনতম ছিল।
* ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানঃ কানাডা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। এই সময়কালে শরণার্থীদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইউএনএইচসিআর-এ কানাডার অবদানকে "ন্যূনতম" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং ১৯৫২ সালে কানাডীয় সরকার ইউএনএইচসিআর-এর কানাডীয় অফিসকে সরিয়ে দিয়েছে।
* ইউএনএইচসিআর ExCom এর সদস্য হওয়াঃ ১৯৫৯ সালে তৎকালীন নতুন ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটিতে বসতে শুরু করেন। এটি রাষ্ট্রগুলোর এমন একটি উপদেষ্টা সংস্থা যা হাই কমিশনারকে দিকনির্দেশনা দেয়। ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার বেশ কয়েক বছর পর ১৯৫৮ সালে জাতিসংঘের শরণার্থীদের জন্য হাইকমিশনারের কর্মসূচির নির্বাহী কমিটি প্রতিষ্ঠা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এক্সকম অফিসের বার্ষিক বাজেট এবং প্রোগ্রাম অনুমোদন, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সুরক্ষা নীতি ইস্যুতে মান নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য এবং ইউএনএইচসিআর-এর পরিচালনা, উদ্দেশ্য এবং অগ্রাধিকার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য দায়বদ্ধ। ১৯৫০-এর দশকে ২৪টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। এক্সকম সদস্যদের শরণার্থী ''কনভেনশন'' অনুমোদনের প্রয়োজন নেই, বরং 'শরণার্থী সমস্যার সমাধানের প্রতি তাদের প্রদর্শিত আগ্রহ এবং নিষ্ঠার ভিত্তিতে' নির্বাচিত করা হয়েছে।
* ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পুনর্বাসন এবং ভর্তি: ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার সময়, এর অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ইউরোপের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবিরের পরিস্থিতি সমাধান করা। এটি দ্রুত সম্পন্ন করা যেতে পারে এমন প্রাথমিক প্রত্যাশা সত্ত্বেও ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য ইউরোপে শরণার্থী শিবির পরিচালনা করছিল। তার অংশ হিসাবে, এই সময়ের মধ্যে কানাডা ইউরোপ থেকে প্রায় ২৫০,০০০ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল। তাদের অনেকের কানাডা ভ্রমণ একটি উদীয়মান অর্থনীতির জন্য আরও শ্রমিক নিয়োগের জন্য কানাডীয় সরকার দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল। ইউএনএইচসিআর গঠনের পরের বছরগুলোতে, কানাডা অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুতদের জন্য এবং অন্যান্য কারণে অ্যাড-হক ভিত্তিতে শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল, ছোট গ্রুপ থেকে শুরু করে, যেমন যখন কানাডা ইস্রায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ফলে বাস্তুচ্যুতির প্রেক্ষিতে ৩৯ টি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ভর্তি করেছিল, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য, ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লবের পরে কানাডা ভর্তি হওয়া ৩৭,০০০ হাঙ্গেরিয়ান শরণার্থী সহ। প্রকৃতপক্ষে, কানাডা ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অবিলম্বে সম্মত না হলেও, মন্ত্রিসভা পুনর্বাসনের জন্য শরণার্থীদের নির্বাচন করার সময় শরণার্থীর কনভেনশন সংজ্ঞা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার জন্য দ্রুত ছিল।
* কানাডায় অভিবাসীদের জন্য পদ্ধতিগত ন্যায্যতা বৃদ্ধি: কানাডায় অভিবাসীদের দেওয়া পদ্ধতিগত ন্যায্যতার পরিমাণ বাড়ানোর দিকেও কানাডা একটি আন্দোলন দেখেছিল, ১৯৫২ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড তৈরির ব্যবস্থা করেছিল যা এলিয়েনদের নির্বাসনের সিদ্ধান্তের আপিল শুনতে পারে। আইএবিগুলোর বিশদ বিবরণ এবং তাদের ইতিহাস নীচে অনুসরণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কানাডার সামগ্রিক অভিবাসন আইনগুলো জাতি, শ্রেণি এবং স্বাস্থ্যের কারণে এবং কমিউনিজমের ভয় সম্পর্কিত "জাতীয় সুরক্ষা" উদ্বেগের কারণে ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে চলেছে। এটি ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।<ref name=":17" />
== বৈষম্যহীন ব্যবস্থা ==
১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন কানাডার বৈষম্যমূলক নীতির জন্য অনুমোদিত বিপুল সংখ্যক কারণের কারণে মন্ত্রিসভাকে অভিবাসীদের প্রবেশ সীমিত করার ক্ষমতা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে:<blockquote>(i) জাতীয়তা, নাগরিকত্ব, জাতিগত গোষ্ঠী, পেশা, শ্রেণী বা ভৌগোলিক অঞ্চল,
(ii) বিশেষ রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরণ বা সম্পত্তি ধারণের পদ্ধতি,
(iii) জলবায়ু, অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিল্প, শিক্ষা, শ্রম, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ততা অথবা বিদ্যমান অন্যান্য শর্ত বা প্রয়োজনীয়তা ... কানাডায়... অথবা
(iv) কানাডীয় নাগরিকত্বের কর্তব্য এবং দায়িত্বগুলো সহজেই আত্মস্থ করতে বা গ্রহণ করতে সম্ভাব্য অক্ষমতা ...<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 330.</ref></blockquote>অধিকন্তু, এই মুহুর্তে কানাডার অভিবাসন পরিষেবা ব্যাপক দুর্নীতিতে জর্জরিত ছিল। ডেপুটি মিনিস্টার কিনলেসাইড উল্লেখ করেছেন, আবেদনকারীদের মধ্যে একটি ব্যাপক বিশ্বাস ছিল যে "সহজতম এবং সবচেয়ে সঠিক অনুরোধগুলোকেও আর্থিক বা আরও ব্যক্তিগত অনুগ্রহ দিয়ে তৈলাক্ত করতে হয়।"
১৯৬০-এর দশকের মধ্যে, কানাডা এবং বিশ্বজুড়ে মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির প্রতি কানাডার বর্ণ-ভিত্তিক, ইউরোকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দেশটি কীভাবে নিজেকে দেখে এবং কীভাবে নিজেকে দেখাতে চায় তার সাথে ক্রমশ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছিল। কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের উপর কানাডার অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার ফলে সদ্য স্বাধীন প্রাক্তন উপনিবেশগুলোর সাথে তাদের কূটনৈতিক বৈধতা নষ্ট হচ্ছিল এবং ১৯৬১ সালের মধ্যে, ব্রিটেন কানাডাকে তার নীতি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো অভিবাসীদের জন্য কানাডায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 337.</ref> অধিকন্তু, এই জাতি-ভিত্তিক পদ্ধতি স্পষ্টতই তৎকালীন নতুন কানাডীয় বিল অফ রাইটসের বিরোধিতা করে। এটি জাতি, জাতীয় উৎপত্তি, বর্ণ, ধর্ম বা লিঙ্গের কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছিল।<ref>Clare Glassco, ''Before the Sun Comes Up: The Making of Canadian Refugee Policy amidst the Refugee Crisis in Southeast Asia, 1975-1980'', April 1, 2020 <https://heartsoffreedom.org/wp-content/uploads/2020/04/Revised-FINAL-April-3-Before-the-Sun-Comes-Up.pdf> (Accessed April 17, 2020), page 9 of the document.</ref>
কানাডা বারবার উদারীকরণ শুরু করে কাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। উদাহরণস্বরূপ ১৯৬০ সালের দিকে ৩২৫ জন যক্ষ্মা শরণার্থী এবং তাদের পরিবারকে গ্রহণ করা, প্রথমবারের মতো কানাডা শরণার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করে। ১৯৬২ সালে প্রধানমন্ত্রী ডিফেনবেকারের অভিবাসন মন্ত্রী হাউসে নতুন নিয়মকানুন উত্থাপন করেন যা কানাডার অভিবাসন নীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে জাতিগত বৈষম্য দূর করে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে, ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে অভিবাসন বিধিমালায় বৈষম্যের শেষ চিহ্ন ছিল এমন একটি বিধান যা ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বিস্তৃত পরিসরের আত্মীয়স্বজনদের স্পনসর করার অনুমতি দেয়। এটি শেষ মুহূর্তে এই আশঙ্কায় সন্নিবেশিত করা হয়েছিল যে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের দ্বারা স্পনসরশিপের আগমন ঘটবে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 187.</ref> ১৯৬৫ সালে কানাডা চারটি জেনেভা কনভেনশন অনুমোদন করে যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ভিত্তি তৈরি করে,<ref>Humanrightscommitments.ca, ''Geneva Conventions and Protocols'', <http://humanrightscommitments.ca/wp-content/uploads/2019/03/Geneva-Conventions.pdf> (Accessed September 26, 2021).</ref> যার মধ্যে রয়েছে ১৯৪৯ সালের ''জেনেভা কনভেনশন যা যুদ্ধের সময় ব্যক্তিদের সুরক্ষা সম্পর্কিত''। সেখানে একটি বিধান রয়েছে যে শরণার্থীদের যদি পূর্বে কোনও শত্রু শক্তির জাতীয়তা থাকে তবে তাদের শত্রু বিদেশী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 78.</ref> এরপর ১৯৬৬ সালে লেস্টার বি. পিয়ারসনের সরকার ''জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ'' তৈরি করে এবং "জাতি, দেশ বা ধর্মের বৈষম্য ছাড়াই" শরণার্থীদের প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব দেয়।<ref name=":29">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> সেই বিভাগটি কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৭ সালে অভিবাসন বিধিমালা থেকে, যদি আইন থেকেও না হয়, বৈষম্যের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলা হয় এবং সরকার বিভিন্ন শ্রেণীর অভিবাসী নির্বাচনের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রবিধানগুলোতে তার বহুল প্রচারিত 'পয়েন্ট সিস্টেম' বাস্তবায়ন করে।<ref name=":262">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 111.</ref>
তা সত্ত্বেও কানাডার অভিবাসন আইন "অবাঞ্ছিত" ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল। এটি সম্ভাব্য অভিবাসীদের "জাতীয় নিরাপত্তা" সম্পর্কিত উদ্বেগের জন্য যাচাই করার জন্য একটি ভিত্তি হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল কমিউনিস্ট বিদ্রোহের আশঙ্কা।<ref>Reginald Whitaker, ''Double Standard: The Secret History of Canadian Immigration'', 1987, Toronto: Lester and Orpen Denys Ltd., at page 33.</ref> ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":172">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref>
== ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড ==
অভিবাসন আপিল বোর্ড। এরা বিদেশীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শুনতে পারত, ১৯৫২ সালে ''অভিবাসন আইনের'' একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। প্রতিটি বোর্ডে অভিবাসন বিভাগের তিনজন কর্মী থাকবেন যারা নির্বাহী কর্তৃক ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। একটি অভিবাসন আপিল বোর্ড তৈরির সময় থেকেই তাদের কাছে আবেদন করার ক্ষমতা সীমিত ছিল: সমস্ত আপিল মন্ত্রীর দ্বারা শুনানি করা হত, যদি না, মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে, আপিলটি একটি IAB-তে পাঠানো হত। অধিকন্তু, মন্ত্রী IAB-এর যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারেন।
১৯৬২ সালের প্রবিধানগুলো এই বোর্ডগুলোর এখতিয়ার সম্প্রসারিত করে আইনের অধীনে সমস্ত নির্বাসন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল অন্তর্ভুক্ত করে। এইভাবে, কানাডায় অভিবাসনকে অধিকার নয় বরং একটি বিশেষাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, মৌলিক যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষাগুলো এলিয়েনদের জন্য যথাযথভাবে প্রসারিত হিসাবে দেখা হতে শুরু করে। বিশেষ করে, ট্রেবিলকক এবং কেলি যেমন উল্লেখ করেছেন, এটি গৃহীত হতে শুরু করে যে বিদেশীদের ভর্তি বা নির্বাসন নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে সুনির্দিষ্ট এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত এবং নির্বাসনের সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত একটি নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালে চ্যালেঞ্জ করার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত। তবে এই মুহুর্তে, ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডগুলো অভিবাসন সিদ্ধান্তে "খুবই গৌণ ভূমিকা" পালন করেছিল যা ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন কারণ তাদের এখতিয়ার আইন সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং অভিবাসন বিভাগকে প্রদত্ত বিশাল বিবেচনামূলক ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের ত্রুটিগুলো বেশ বিরল ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 349.</ref> অধিকন্তু, যেহেতু বোর্ডগুলো অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল, তাই তাদের নিরপেক্ষ বা স্বাধীন বলে বিবেচনা করা যাবে না।
১৯৬৭ সালের মার্চ মাসে, ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' এটি পরিবর্তন করে। এই আইনটি জোসেফ সেডগউইক, কিউসি কর্তৃক প্রণীত সেডগউইক রিপোর্ট থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, এটি ছিল এক সদস্যের তদন্ত বোর্ড যা সরকার কর্তৃক অত্যন্ত বিতর্কিত নির্বাসনের একটি সিরিজ অধ্যয়ন করার জন্য কমিশন করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সালের জুন মাসে, সেডগউইককে হাউস অফ কমন্স এবং অন্যান্য স্থানে করা গুরুতর অভিযোগগুলোর তদন্ত করতে বলা হয়েছিল যে কিছু বিদেশীকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আইনজীবীর অ্যাক্সেস থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।<ref>Statistics Canada, Immigration Policy and Administration, 223, <https://www66.statcan.gc.ca/eng/1966/196602510223_p.%20223.pdf> (Accessed October 21, 2024).</ref>
১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' পাসের পর নবগঠিত বোর্ডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল:
* <u>স্বাধীনতা:</u> সুপারিশগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড প্রতিষ্ঠা।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 191-192.</ref> বোর্ডটি আর অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না, বরং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের থেকে স্বাধীন একটি আধা-বিচারিক সত্তা ছিল। গভর্নর ইন কাউন্সিল এখন IAB-এর সদস্যদের নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করেছেন।<ref name=":703">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref> ১৯৭৩ সালে আইএবি-র স্বাধীনতা আরও জোরদার করা হয় আইন সংশোধনের মাধ্যমে। এর ফলে কিছু আইএবি সদস্য স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হবেন, অন্যরা নবায়নযোগ্য দুই বছরের মেয়াদে নিযুক্ত হবেন।<ref name=":702">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref>
* <u>বিস্তৃত এখতিয়ার:</u> বোর্ড একটি রেকর্ড আদালতের মর্যাদা গ্রহণ করেছে।<ref>''Immigration Appeal Board Act'', SC 1966-67, c 90, s. 11.</ref> কানাডা থেকে বহিষ্কারের আদেশপ্রাপ্ত সকলের জন্য এবং কানাডীয় নাগরিকদের পারিবারিক স্পনসরশিপ আবেদন প্রত্যাখ্যানের জন্য বোর্ডের কাছে আপিলের অধিকার তৈরি করা হয়েছিল।<ref>Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 4.</ref> আইন, তথ্য, মিশ্র তথ্য এবং আইন,<ref name=":542">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> অথবা করুণার ভিত্তিতে ব্যক্তিরা IAB-তে আপিল করতে পারবেন।<ref name=":164">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref> ১৯৭২ সালের হিসাবে, নির্বাসন স্থগিত করা যেতে পারে যেখানে এই বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল যে আদেশ কার্যকর করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রাজনৈতিক চরিত্রের কার্যকলাপের জন্য শাস্তি পাবেন অথবা অস্বাভাবিক কষ্ট ভোগ করবেন, অথবা বোর্ডের মতে সহানুভূতিশীল বা মানবিক বিবেচনার কারণে বিশেষ ত্রাণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।<ref>''Boulis v. Minister of Manpower and Immigration,'' 1972 CanLII 4 (SCC), [1974] SCR 875, <https://canlii.ca/t/1nfn8>, retrieved on 2024-05-22.</ref> নিচে বর্ণিত হিসাবে, ১৯৭৩ সাল থেকে আপিলের ক্ষেত্রে সেইসব ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা ১৯৫১ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুসারে নিজেদেরকে শরণার্থী বলে মনে করতেন। তবে এই সময়ের আগেও, যে কোনও ব্যক্তিকে অবতরণ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল এবং নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তিনি IAB-তে আপিল করতে পারতেন এবং বোর্ড সেই ব্যক্তিকে অবতরণ করার আদেশ দিতে পারত। যেহেতু বোর্ডের একটি নমনীয় এবং উদার সহানুভূতিশীল এখতিয়ার ছিল, প্লাউটের দৃষ্টিতে, শরণার্থীদের "ব্যাপক পরিমাণে" IAB-এর পদ্ধতির অধীনে স্থান দেওয়া হয়েছিল। "অতএব, একটি নির্দিষ্ট শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার প্রকৃত প্রয়োজন ছিল না"।<ref name=":832">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
* <u>নির্বাসন সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব:</u> ১৯৫২ সালের ''ইমিগ্রেশন আইনের'' অধীনে, IAB-তে ইমিগ্রেশন শাখার কর্মকর্তারা ছিলেন যারা মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করতেন। এটি মন্ত্রী তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। নবগঠিত IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল (কেবলমাত্র বিচারিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে, নীচে উল্লেখ করা হয়েছে)।<ref name=":552">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 340-341.</ref>
* <u>বিচারিক পর্যালোচনার জন্য ছুটির প্রয়োজনীয়তা:</u> IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল, এখতিয়ার সহ আইনগত প্রশ্নগুলোর উপর কানাডার সুপ্রিম কোর্টে আপিলের অনুমতি সাপেক্ষে।<ref name=":54">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> মন্তব্যকারীরা উল্লেখ করেছেন, এই ছুটির প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকরভাবে বিচারিক পর্যালোচনা থেকে এই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোকে "অন্তরক" করার জন্য কাজ করেছে।<ref>Molly Joeck, ''Canadian Exclusion Jurisprudence post-Febles'', International Journal of Refugee Law, 17 September 2021; Advance Article, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeab034, page 17.</ref>
১৯৬৭ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডে করা পরিবর্তনগুলো অভিবাসন নীতিকে অভূতপূর্ব মাত্রায় প্রক্রিয়াগত এবং বিচারিকীকরণ করেছে এবং শরণার্থী দাবি নির্ধারণে অনুরূপ যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বলে জানা গেছে।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 357.</ref> তা সত্ত্বেও বোর্ডের বিধিবদ্ধ সীমা ছিল ৭ থেকে ৯ জন বিচারক<ref name=":442">David Vinokur, ''30 Years of Changes at the Immigration and Refugee Board of Canada'', CIHS Bulletin, Issue #88, March 2019, <https://senate-gro.ca/wp-content/uploads/2019/03/Bulletin-88-Final.pdf> (Accessed May 13, 2021), page 7.</ref> (পরে বৃদ্ধি করে ১০ করা হয়েছে) এবং অপসারণের আদেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অক্ষম ছিল।<ref name=":393">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref> প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে, বোর্ড এমন এক জটলায় জর্জরিত হয়ে পড়ে যায় যা বিদ্যমান কেস প্রসেসিং হারে কাটিয়ে উঠতে কয়েক দশক সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত IAB-এর কাছে ১৭,০০০ মামলা জমে ছিল। এটি তারা প্রতি মাসে ১০০টি মামলার হারে নিষ্পত্তি করছিল।<ref name=":562">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 373.</ref> বাস্তবে কানাডায় ''কার্যত'' স্থায়ী বসবাস অর্জন করতে ইচ্ছুক যে কেউ ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে তাদের নির্বাসনের আবেদন দায়ের করতে পারত, এটিতে বোর্ডের জমা পড়া অর্থের সাথে এটি যুক্ত হয়। এটি একবিংশ শতাব্দীতেও প্রসারিত হতে শুরু করে।<ref name=":392">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref>
ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালে সরকার কানাডার সকল ব্যক্তির জন্য আপিলের সার্বজনীন অধিকার বাতিল করার জন্য ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে। এর বদলে শুধুমাত্র স্থায়ী বাসিন্দা, বৈধ ভিসাধারী এবং শরণার্থী বা কানাডীয় নাগরিক বলে দাবি করা ব্যক্তিদের আপিলের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য, সরকার একটি এককালীন সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচিও চালু করেছে। এর সুবিধা ৩৯,০০০ জনেরও বেশি মানুষ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মার্কিন ড্রাফট ফাঁকিদাতাও রয়েছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202-203.</ref>
== ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলের আলোচনা ==
১৯৫১ সালের কনভেনশনকে অনেকেই ইউরোপীয় অভিজ্ঞতার প্রতিফলনকারী একটি কনভেনশন হিসেবে দেখেছিলেন - এবং এর শর্তাবলী '১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার ফলে' নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৫০-এর দশকে বিশ্বের অন্যান্য অংশে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় শরণার্থীর আবির্ভাব ঘটছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৫০-এর দশকে কমিউনিস্ট-বিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী চীনা শরণার্থীরা বিপুল সংখ্যক হংকংয়ে পালিয়ে যায়। ১৯৬০-এর দশকে আফ্রিকায় উপনিবেশমুক্তকরণের ফলে সেখানে শরণার্থী ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ১৯৬৪ সালে আফ্রিকার মোট শরণার্থী জনসংখ্যা ছিল ৪০০,০০০। এটি দশকের শেষ নাগাদ দশ লক্ষে পৌঁছেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 149.</ref> প্রসঙ্গত, ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে, ১৫০,০০০ তুতসি শরণার্থী রুয়ান্ডা থেকে উগান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়া এবং জাইরে পালিয়ে যায়; ১৯৬৬ সালের মধ্যে জাইরে থেকে ৮০,০০০-এরও বেশি শরণার্থী বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান, উগান্ডা এবং তানজানিয়ায় পাওয়া যায়; ১৯৭২ সালে শেষ হওয়া প্রথম সুদানী যুদ্ধ ১৭০,০০০ শরণার্থী তৈরি করে; এবং ১৯৭০-এর দশকের শেষ নাগাদ রোডেশিয়া থেকে মোজাম্বিক, জাম্বিয়া এবং বতসোয়ানায় ২৫০,০০০ শরণার্থী ছিল।
ইউএনএইচসিআর বিভিন্নভাবে সাড়া দিয়েছে। ১৯৫৭ সালে এটি 'ভালো কাজের' ম্যান্ডেট তৈরি করে। এটি সংস্থাটিকে জেনেভা কনভেনশনের ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা এড়িয়ে যেতে এবং ''অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে'' হংকংয়ে সহায়তা করার অনুমতি দেয়। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে, ১৯৫১ সালের ''শরণার্থী কনভেনশনের'' সময়গত এবং ভৌগোলিক পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা শুরু হয়। আফ্রিকার জন্য একটি আঞ্চলিক শরণার্থী কনভেনশন নিয়ে আলোচনার জন্য অর্গানাইজেশন অফ আফ্রিকান ইউনিটির পদক্ষেপকে ইউএনএইচসিআর আশঙ্কা করেছিল যে এটি তাদের কর্তৃত্ব সীমিত করতে পারে এবং (অনুমিত) তাদের পরিচালিত সার্বজনীন শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। ১৯৬৭ সালের প্রোটোকল ছিল ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিক্রিয়া। ইউএনএইচসিআর-এর বক্তব্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের পেছনের প্রেরণা ছিল ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত ''ডি-ফ্যাক্টো'' জাতিগত বৈষম্য যাতে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য-বিরোধী উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগের দিকে ঝুঁকে পড়ে তা নিশ্চিত করা:<blockquote>এই কনভেনশনের ফলে বিভিন্ন শরণার্থী গোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে আফ্রিকান শরণার্থীদের ক্ষেত্রে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধরনের বৈষম্য তার অফিসের সংবিধির সাথে সাংঘর্ষিক এবং কনভেনশনের সার্বজনীন চেতনার পরিপন্থী।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 14.</ref></blockquote>ফলস্বরূপ প্রোটোকলটি ১৯৬৭ সালের জানুয়ারিতে নিউ ইয়র্কে স্বাক্ষরিত হয়। এটি সেই অক্টোবরে কার্যকর হয়। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে প্রোটোকল যে পরিবর্তনগুলো এনেছিল তা ছিল সহজবোধ্য: ইউরোপের বাইরের শরণার্থী এবং নতুন উদ্ভূত কারণে বাস্তুচ্যুতদের আওতাভুক্ত করার জন্য শরণার্থী কনভেনশনের আঞ্চলিক এবং সাময়িক পরিধি সম্প্রসারণ করা। চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে কানাডা পিছিয়ে ছিল। এটি প্রাথমিকভাবে ''শরণার্থী কনভেনশনের'' একটি প্রোটোকল নিয়ে আলোচনার উদ্যোগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে অস্বীকৃতি জানায় এই ভিত্তিতে যে এটি ''অভিবাসন সম্পর্কিত শ্বেতপত্র তৈরি করছে।'' ১৯৬৬ সালে কানাডা এই ''শ্বেতপত্র'' প্রকাশ করে, গবেষক ক্লেয়ার গ্লাসকোর ভাষায়, অভিবাসন ব্যবস্থায় আরও মৌলিক পরিবর্তন আনার জন্য "জল পরীক্ষা করে দেখুন"। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল মৃদু থেকে নেতিবাচক। ফলস্বরূপ, কানাডা ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলে স্বাক্ষর করতে তিন বছর সময় লাগবে।
== কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশন'' এবং ''প্রোটোকল'' অনুমোদন ==
অনেক উদ্যোগের মধ্যে, ১৯৬৬ সালের ''অভিবাসন সংক্রান্ত শ্বেতপত্রে'' "জাতি, বর্ণ বা ধর্ম" এর ভিত্তিতে বৈষম্যমুক্ত একটি অভিবাসন ভর্তি নীতি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অধিকন্তু, এই গবেষণাপত্রে কানাডার সীমান্তের মধ্যে একটি শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়া প্রবর্তনের পাশাপাশি ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশনের অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে অভিবাসন কর্মকর্তা ইপি বিসলি উল্লেখ করেছিলেন, একটি স্পষ্ট শরণার্থী নীতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে, তার মতে কানাডা "প্রথম আশ্রয়ের দেশ হয়ে উঠেছে"। এইভাবে, "এই পৃথক মামলাগুলো আরও সুনির্দিষ্ট এবং আরও ন্যায্যভাবে নির্ধারণের জন্য আইনী যন্ত্রপাতি এবং পদ্ধতি নির্ধারণের সময় এসেছে।" এই প্রসঙ্গে "প্রথম আশ্রয়ের দেশ" ধারণাটি এমন একটি পরিস্থিতিকে বোঝায় যেখানে কানাডা প্রথম দেশ যা কোনও ব্যক্তিকে সুরক্ষা প্রদান করে, অন্যত্র ইতিমধ্যেই অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিপরীতে। কানাডার শরণার্থী ভর্তি নীতিগুলোকে ঐতিহ্যগতভাবে একটি সামগ্রিক 'নিয়ন্ত্রণের ধারণা' দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা হত। এটি ভর্তিকৃতদের 'মান' নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, বিদেশে শরণার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য এবং কানাডায় অনিয়ন্ত্রিত চলাচল রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে দেখছিল। কারণ শীতল যুদ্ধের সংকটের কারণে হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছিল। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র নেতিবাচক, যা অভিবাসন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনতে আরও তিন বছর সময় লেগেছে বলে মনে করে।
১৯৬৯ সালের মে মাসে কানাডা ১৯৫৭ সালের ''শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তিটি'' অনুমোদন করে।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref> তারপর এক মাস পর ১৯৬৯ সালের জুন মাসে কানাডা ১৯৫১ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' এবং ১৯৬৭ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত প্রোটোকল'' অনুমোদন করে।<ref>Canada acceded to the Refugee Convention on June 4, 1969: Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 295. See also: Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 34.</ref> সেই সময় জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, কানাডার যোগদান "ঐতিহ্যগতভাবে শরণার্থীদের প্রতি কানাডার উদার আচরণের কোনও পরিবর্তন আনবে না"।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 38.</ref> প্রকৃতপক্ষে সেই সময়ে, বেশিরভাগ শরণার্থী পূর্ব ইউরোপ থেকে এসেছিলেন। কানাডার নীতি ছিল তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো না করা। তাই তাদের সাধারণত অভিবাসী মর্যাদা দেওয়া হত। সেই সময়ে বিশ্বের যেসব অংশ আজ শরণার্থী-উৎপাদনকারী প্রধান স্থান, সেখান থেকে খুব কম লোকই কানাডায় প্রবেশ করত। অধিকন্তু, সেই সময়ে শরণার্থীরা কানাডার ভেতর থেকে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন এবং আমাদের সাধারণ অভিবাসন নীতির অধীনে বিবেচনা করা হত।<ref name=":833">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
১৯৬৯ সালে শরণার্থীদের বিষয়ে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক দলিলগুলো অনুমোদন করা সত্ত্বেও ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত কানাডায় ইতিবাচক দাবির জন্য কোনও আইন-ভিত্তিক, সরকারী শরণার্থী নীতি বিদ্যমান ছিল না। এর বদলে তৎকালীন জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ কর্তৃক শরণার্থীদের দাবিগুলো ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে কানাডার ভেতর থেকে অভিবাসন আবেদন করার অনুমতি দেওয়া নিয়ম বাতিল করা হয়। এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে কানাডায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যারা বহিষ্কার হতে চাননি, তাদের দেশটির নবজাতক শরণার্থী নির্ধারণ পদ্ধতির সুবিধা নিতে উৎসাহিত করা হবে। ১৯৭৩ সালে কানাডীয় সরকার শরণার্থী দাবিদারদের মোকাবেলা করার জন্য প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। একজন শরণার্থী দাবিদার কানাডায় থাকতে পারবেন নাকি তাকে নির্বাসিত করা হবে তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা রাখেন জনশক্তি ও অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে পৃথক দাবি মূল্যায়ন এবং তাদের সুপারিশ পাঠানোর জন্য বিদেশ বিষয়ক এবং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তঃবিভাগীয় কমিটি। অধিকন্তু, সেই বছর ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল যাতে বোর্ডকে কনভেনশন শরণার্থী হিসাবে নির্ধারিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাসন আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ ত্রাণ প্রদান করা হয় কারণ দাবিদার অযথা কষ্ট ভোগ করবেন অথবা যেখানে মানবিক ও সহানুভূতিশীল বিবেচনা করা যেতে পারে। শরণার্থীদের আইএবি-তে আপিলের আইনগত অধিকার দেওয়া হলেও, "শরণার্থী" শব্দটি সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
এই সময়ে, অভ্যন্তরীণ দাবি প্রতি বছর শত শত পর্যায়ে ঘটেছিল। কানাডায় ব্যক্তিগত আদেশ-পরামর্শ মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে একজন ব্যক্তির মর্যাদা প্রদান করে এবং আংশিকভাবে মানবিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিবেচনার ভিত্তিতে তা করা হয়। হ্যাথওয়ে বলেছেন যে এটি সিস্টেমের একটি ত্রুটি ছিল: কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অবতরণ মঞ্জুর করা বা আটকানো সম্পূর্ণরূপে বোর্ডের (অথবা মন্ত্রীর) বিচক্ষণতার মধ্যে ছিল; ফলস্বরূপ, শরণার্থীরা কানাডা থেকে সুরক্ষা পাবে এমন কোনও গ্যারান্টি ছিল না।<ref name=":782">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 39. See also W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 15.</ref> এই কানাডার অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা তখন চলমান বিদেশী মূল্যায়নের পরিপূরক ছিল। কানাডা ১৯৭০ সালে "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নির্দেশিকা" জারি করে, এটিতে বিদেশে শরণার্থী নির্বাচনের জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের মানদণ্ড দেওয়া হয়।<ref>Canadian Council for Refugees, ''Brief History of Canada’s Responses to Refugees'', 2009, Canadian Council for Refugees, <https://ccrweb.ca/sites/ccrweb.ca/files/static-files/canadarefugeeshistory2.htm> (Accessed May 9, 2020).</ref> সেই বছর মন্ত্রিসভা নিপীড়িত সংখ্যালঘু নীতি নামে পরিচিত একটি নীতিও অনুমোদন করে। এর মধ্যে নিপীড়িত মানুষদের নির্বাচনের বিধান ছিল যারা কনভেনশন শরণার্থী ছিলেন না কারণ তারা এখনও তাদের নিজ দেশে ছিলেন।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref>
কানাডা শরণার্থী কনভেনশন এবং প্রোটোকলের অধীনে তার বাধ্যবাধকতাগুলোকে দেশীয় আইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে, একই সময়ে যখন এই চুক্তিগুলোর পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চলছে। এই আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার কিছু সফল হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ কানাডা ১৯৭৫ সালে শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তির প্রোটোকল অনুমোদন করে।<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Protocol to the Agreement relating to Refugee Seamen'', 30 March 1975, available at: https://www.refworld.org/docid/3ae6b38218.html [accessed 25 September 2021].</ref> অন্যান্য প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘ আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্র<ref>UN General Assembly, ''Declaration on Territorial Asylum'', 14 December 1967, A/RES/2312(XXII), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/3b00f05a2c.html</nowiki> [accessed 28 December 2020].</ref> গ্রহণ করে। এর ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১৪ নং অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করার অধিকারী কোনও ব্যক্তিকে সীমান্তে প্রত্যাখ্যানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়। এরপর ১৯৭৭ সালে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যাতে এটি এবং অন্যান্য বিধানগুলোকে একটি সংশোধিত কনভেনশন, প্রস্তাবিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Background: Interpretation of the 1951 Convention'', at p. 104 (para. 87). See also the following discussion of contemporary thinking about the needs for a new treaty: Richard Plender, ''Admission of Refugees: Draft Convention on Territorial Asylum,'' 15 San Diego L. Rev. 45 (1977). Available at: <nowiki>https://digital.sandiego.edu/sdlr/vol15/iss1/6</nowiki></ref> একটি খসড়া তৈরি করা হলেও,<ref>UNHCR, ''Note on International Protection Addendum 1: Draft Convention on Territorial Asylum (Submitted by the High Commissioner)'', 26 September 1974, A/AC.96/508/Add.1 <https://www.unhcr.org/afr/excom/excomrep/3ae68c023/note-international-protection-addendum-1-draft-convention-territorial-asylum.html> (Accessed December 28, 2020).</ref> সম্মেলনটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।<ref>''Regina v. Immigration Officer at Prague Airport and another (Respondents) ex parte European Roma Rights Centre and others (Appellants),'' [2004] UKHL 55, <https://publications.parliament.uk/pa/ld200405/ldjudgmt/jd041209/roma-1.htm> para. 17.</ref>
== ফেডারেল আদালত প্রতিষ্ঠা এবং অভিবাসন সিদ্ধান্তের বিচারিক তদন্ত বৃদ্ধি করা ==
কানাডার জাতীয়তা প্রতিষ্ঠার প্রথম শতাব্দীতে অভিবাসন আইন "অত্যন্ত বিবেচনামূলক এবং মূলত জবাবদিহিহীন" পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। পূর্বে এমন ঘটনা ঘটেছে যে ''অভিবাসন আইনে'' একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তিগত ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি আদালতগুলো মূলত সম্মান করত। ১৯১০ সালের আইনে বলা হয়েছে, "কোনও আদালত এবং তার কোনও বিচারক বা কর্মকর্তার মন্ত্রী বা কোনও তদন্ত বোর্ড, অথবা দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার ... যে কোনও কারণেই কোনও প্রত্যাখ্যাত অভিবাসীর আটক বা নির্বাসন সম্পর্কিত ... কোনও কার্যধারা, সিদ্ধান্ত বা আদেশ পর্যালোচনা, বাতিল, বিপরীত, স্থগিত বা অন্যথায় হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার থাকবে না, যদি না সেই ব্যক্তি কানাডীয় নাগরিক হন বা তার কানাডীয় স্থায়ী বাসস্থান থাকে।" ট্রেবিলকক এবং কেলি সংক্ষেপে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে, তৎকালীন আদালতগুলো তাদের উপর আরোপিত এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে সম্মান করত। ১৯২১ সালের একটি সিদ্ধান্তের এই ব্যক্তিগত ধারা সম্পর্কে কুইবেক সুপিরিয়র কোর্টের একজন বিচারকের মন্তব্য উদাহরণ স্বরূপ:<blockquote>... পার্লামেন্টের উদ্দেশ্য ছিল। এই আইনের ভাষায় পার্লামেন্ট আসলে যা প্রদান করেছিল, তা হলো কানাডায় অভিবাসীদের প্রবেশ সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্ন কেবলমাত্র ইমিগ্রেশন বিভাগের যন্ত্রপাতি দ্বারা, অর্থাৎ তদন্ত বোর্ড এবং ইমিগ্রেশন অফিসারদের দ্বারা নির্ধারিত হবে, শুধুমাত্র মন্ত্রীর কাছে আপিলের সাপেক্ষে। আদালতের পর্যালোচনা বা নিয়ন্ত্রণের কোনও ক্ষমতা ছাড়াই... ... কোনও আদালত বা বিচারক তদন্ত বোর্ডের কার্যধারায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না, তা হোক আইন, বা প্রবিধানের ভুল বোঝাবুঝি বা ভুল উপস্থাপনার কারণে, অবৈধ প্রমাণ গ্রহণের কারণে, বা শোনা প্রমাণের মূল্যায়নে ত্রুটির কারণে, অথবা কোনও অনানুষ্ঠানিকতা বা ভুলের কারণে যা কার্যপ্রণালী বা বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণের বিষয় হিসাবে ন্যায্যভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। </blockquote>এটি এমনভাবে পরিবর্তিত হতে শুরু করে যে ন্যায্যতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার নীতিগুলো ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব গ্রহণ করতে শুরু করে। ১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' অনুসারে, IAB সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ সরাসরি কানাডার সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা যেতে পারে, সেই আদালতের অনুমতি নিয়ে। এরপর আইনের ব্যক্তিগত ধারার পরিধি হ্রাস করা হয় এবং ১৯৭১ সালে ফেডারেল আদালত, বিচার এবং আপিল উভয়ই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মুহুর্তে, সংসদ ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে আইএবি-র যেকোনো আইনগত প্রশ্নের বিচারিক পর্যালোচনার জন্য আবেদনগুলো ফেডারেল আপিল আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এটি কোনও বিষয়ের অনুমতি দেওয়ার এবং শুনানির বিচক্ষণতা পাবে। অধিকন্তু, কনভেনশন শরণার্থী মর্যাদার দাবি প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তটি এই সময়ে ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশন দ্বারা পর্যালোচনাযোগ্য ছিল। কারণ ট্রায়াল ডিভিশনের ঐতিহ্যবাহী বিশেষাধিকারমূলক রিট জারি করার এখতিয়ার ছিল যেখানে আপিল আদালতের এখতিয়ার ছিল না। তা সত্ত্বেও ফেডারেল আদালতের তত্ত্বাবধানের এখতিয়ার সাধারণত ফেডারেল আদালতের আপিল আদালতে IAB সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনার মাধ্যমে আবেদন করা হত, ফেডারেল আদালতের বিচার বিভাগে মন্ত্রীর পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার মাধ্যমে নয়।
রাফায়েল গিরার্ড আদালতের সিদ্ধান্তগুলোকে অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে পদ্ধতিগত ন্যায্যতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বচ্ছতার নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কৃতিত্ব দেন। ফেডারেল কোর্টের অভিবাসন মামলার চাপ তার কাজের একটি বিরাট অংশের জন্য দায়ী হবে এবং বিচারিক পর্যালোচনার জন্য মামলার দীর্ঘ সারি তৈরি করবে। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, যখন ফেডারেল আপিল আদালতের তিন সদস্যের প্যানেলে বিচারিক পর্যালোচনা পাঠানো হয়েছিল, তখন সেই আদালতের সামনে প্রায় ৭৫% বিচারিক পর্যালোচনা আবেদন ছিল IAB কর্তৃক শরণার্থী নির্ধারণের পর্যালোচনার জন্য। দুই দশক পর ২০১২ সালে আইআরবিতে শরণার্থী আপিল বিভাগ বাস্তবায়নের আগের বছরগুলোতে, অভ্যন্তরীণ শরণার্থী বিষয়গুলোর বিচারিক পর্যালোচনা ফেডারেল আদালতের মামলার প্রায় অর্ধেক ছিল।
== ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' ==
১৯৭৬ সালে পার্লামেন্টে সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' প্রবর্তিত হয় এবং দুই বছর পর কার্যকর হয়। এটি কানাডার অভিবাসন নীতির জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল। এটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রথমবারের মতো আইনটিকে পুনর্বিবেচনা করে, আইনে প্রকাশ্য বৈষম্যের শেষ চিহ্নগুলো মুছে ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, সমকামী পুরুষ এবং মহিলাদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে, এবং, একটি বিস্তৃত জাতীয় বিতর্কের পর আইনটিতে একাধিক উদ্দেশ্য প্রবর্তন করে যা মূলত আজও বহাল রয়েছে। এটি এই সমস্ত কিছু করেছে এমন বিধানের মাধ্যমে যা তাদের বিশদ এবং সুনির্দিষ্টতার সাথে নির্বাহী সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে তোলে। ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' সংসদে প্রবর্তনের মাধ্যমেই সরকার শরণার্থী পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গ্রহণের ইচ্ছাকে আরও জোরদার করে। এই আইনটিই প্রথমবারের মতো কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশনের'' বাধ্যবাধকতাগুলোকে আইনগত আকারে অন্তর্ভুক্ত করে। আইনে বর্ণিত উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল "শরণার্থীদের প্রতি কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিতদের প্রতি তার মানবিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা"। নতুন আইনে কনভেনশন শরণার্থীদের অভিবাসীদের একটি শ্রেণী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যারা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বিদেশে নির্বাচিত হতে পারতেন। এই আইনটি সীমান্তে বা কানাডায় বসবাসকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত শরণার্থী দাবির বিষয়ে অভিবাসন মন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পূর্ব-বিদ্যমান ''অ্যাডহক'' কমিটি, শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি (RSAC) কে আইনি মর্যাদা দিয়েছে।<ref name=":43" />
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত আরএসএসি প্রক্রিয়াটি ছিল নিম্নরূপ: যারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়েছিলেন তাদের প্রথমে একজন অভিবাসন কর্মকর্তার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে হত। যদি তাদের অগ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় ( সাধারণত হয়), তাহলে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত কিনা তা নির্ধারণের জন্য তাদের অভিবাসন তদন্তে পাঠানো হবে। এই পর্যায়েই ব্যক্তি শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করতে পারতেন, এই ক্ষেত্রে অপসারণের আদেশ স্থগিত করা হতো এবং শরণার্থী দাবির সারবস্তু সম্পর্কে সাক্ষাৎকারের জন্য ব্যক্তিকে একজন ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তার সামনে আনা হত। এরপর সিনিয়র ইমিগ্রেশন অফিসার সাক্ষাৎকারের ট্রান্সক্রিপ্টটি RSAC-তে পাঠান। আরএসএসি আবেদনটি পর্যালোচনা করে এবং সুরক্ষার দাবি গ্রহণ করা বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত কিনা সে বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে একটি সুপারিশ করে।<ref name=":462">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই প্রোগ্রামটি খুবই ছোট ছিল: ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে এটি প্রতি বছর মাত্র কয়েকশ দাবি প্রক্রিয়া করত।<ref name=":12">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যে বছর সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' কার্যকর হয়েছিল, সেই বছর ৪,১৩০ জন শরণার্থী কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন। তাদের সবাই কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসছিলেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 239.</ref>
যাদের আরএসএসি বা মন্ত্রী শরণার্থী মর্যাদা দেননি, তাদের মানবিক ও সহানুভূতির ভিত্তিতে আবেদন করার সুযোগ ছিল। এই ধরনের আবেদনগুলো বিশেষ পর্যালোচনা কমিটি দ্বারা বিবেচনা করা হত। এটি মন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করত।<ref name=":464">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> অধিকন্তু, মন্ত্রী নির্ধারণ করতে পারেন যে কোনও ব্যক্তিকে, যদিও তাকে শরণার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, কানাডায় থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 28.</ref> উভয় গ্রুপেরই ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' কাছে আপিল করার অধিকার ছিল। এর কার্যক্রম জনসমক্ষে পরিচালিত হত।<ref name=":45">Neil Yeates, ''Report of the Independent Review of the Immigration and Refugee Board'', Government of Canada, April 10, 2018, <https://www.canada.ca/content/dam/ircc/migration/ircc/english/pdf/pub/irb-report-en.pdf> (Accessed April 27, 2020), page 7.</ref> IAB ডকুমেন্টারি রেকর্ড পর্যালোচনা করেছে এবং যে কোনও আবেদনকারী, যিনি ডকুমেন্টারি রেকর্ডের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন যে দাবিটি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে, তার জন্য দাবির যোগ্যতার উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুমোদিত হয়েছে।<ref name=":463">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই আইনী বিধানটি ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে IAB কেবল তখনই আবেদনের উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দিতে পারে যদি IAB নির্ধারণ করে যে আবেদনটি সম্ভবত সফল হবে। এই ব্যবস্থার অধীনে, এর কার্যক্রমের শেষ বছরে, মন্ত্রী কর্তৃক শরণার্থী নন বলে নির্ধারিত প্রায় নয় শতাংশ দাবিদারকে বোর্ড কর্তৃক শরণার্থী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।<ref>David Matas, ''Closing the Doors'', 1989, Summerhill Press, Toronto, <nowiki>ISBN 0-920197-81-7</nowiki>, page 141.</ref>
পুরো সিস্টেমে প্রবেশাধিকার এই সত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল যে একজন ব্যক্তি তার অভিবাসন অবস্থা সম্পর্কে তদন্তের বিষয়। এর মূলত অর্থ ছিল কানাডায় থাকার জন্য তাদের আইনি মর্যাদার অভাব ছিল। কানাডায় শারীরিকভাবে উপস্থিত কিন্তু কিছু ধরণের (অস্থায়ী) মর্যাদা সম্পন্ন অন্যান্য ব্যক্তিদের শরণার্থী দাবি প্রক্রিয়ার অধীনে দাবি করার বা বিবেচনা করার কোনও অধিকার ছিল না। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাব্বি গুন্থার প্লট "প্রশাসনিক দুঃস্বপ্ন" বলে অভিহিত করেছেন। কানাডায় বৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ প্রক্রিয়ার সুবিধা প্রদানের প্রচেষ্টায়, অভিবাসন মন্ত্রণালয় "ইন-স্ট্যাটাস" দাবি নামে পরিচিত একটি অতিরিক্ত আইনি প্রক্রিয়া চালু করেছে। দাবিদারকে অভিবাসন অবস্থা তদন্তের সময় দাবি করা ব্যক্তির মতোই বিবেচনা করা হত। এতে সমস্যা ছিল। প্রথমত, এতে চূড়ান্ততার অভাব ছিল: যদি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তাহলে ব্যক্তি দ্বিতীয় দাবি করতে পারতেন এবং আইন দ্বারা প্রদত্ত পুরো প্রক্রিয়াটি নতুন করে করতে পারতেন। অধিকন্তু, "ইন-স্ট্যাটাস" দাবিদাররা তাদের দাবি প্রক্রিয়াকরণের জন্য অপেক্ষা করার সময় কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য অযোগ্য ছিলেন, তাদের কাজ করার যোগ্যতা কানাডায় তাদের পূর্ব-বিদ্যমান অভিবাসন অবস্থা দ্বারা প্রদত্ত কাজের অনুমতি (অথবা এর অভাব) এর উপর নির্ভর করত।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, pages 36-37.</ref>
১৯৭০-এর দশকে কানাডা যেসব শরণার্থী গ্রহণ করেছিল, তারা কানাডার অভ্যন্তরে আশ্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নয়, বরং বিদেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে এসেছিল। ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে কানাডা ২২৮ জন তিব্বতি শরণার্থীর একটি দলকে পুনর্বাসিত করে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য একটি "তিব্বতি শরণার্থী কর্মসূচি" তৈরি করে তার প্রথম অ-ইউরোপীয় শরণার্থীদের গ্রহণ করে। তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয়দান অন্যান্য শরণার্থী পুনর্বাসনের দ্বার উন্মোচন করে। কারণ কানাডা ১৯৭২-৭৩ সালে ইদি আমিনের একনায়কতন্ত্রের অধীনে উগান্ডা থেকে বহিষ্কৃত ৭,০০০ এরও বেশি জাতিগত দক্ষিণ এশীয়দের গ্রহণ করে। এরা কানাডায় বিপুল সংখ্যক অ-শ্বেতাঙ্গ শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছিল। এরপর কানাডা ১৯৭৩ সালে পিনোশেটের শাসনামলে পালিয়ে আসা ৭,০০০ চিলির শরণার্থী এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় পালিয়ে আসা প্রায় ১০,০০০ লেবাননি শরণার্থীকে স্বীকার করে। ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল অভিবাসনের বৃহত্তম উৎস দেশ। এর একটি কারণ ছিল বিপুল সংখ্যক ড্রাফট ডজার্স এবং ভিয়েতনামে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক পলাতক যারা কানাডায় আশ্রয় পেয়েছিল। ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় কানাডায় পালিয়ে আসা ড্রাফট রেজিস্টার এবং পলাতকদের সংখ্যার জন্য সঠিক সংখ্যায় পৌঁছানো অসম্ভব। তবে "ড্রাফট রেজিস্টার" এবং লেখক মার্ক ফ্রুটকিনের মতে, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের অনুমান ৩০,০০০-৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০-২০০,০০০ এর মধ্যে। সেই দশকের শেষের দিকে, ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ৬০,০০০ শরণার্থীকে গ্রহণ করা হয়েছিল - যা এই বছরগুলোতে গৃহীত অভিবাসীর সংখ্যার ২৫ শতাংশ।<ref name=":173">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref> এই সময়ে, মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে কানাডা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বিদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের পুনর্বাসিত করেছে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 41.</ref> কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তারা এল সালভাদরেও গিয়েছিলেন আধাসামরিক ডেথ স্কোয়াডের ঝুঁকিতে থাকা বন্দীদের সাক্ষাৎকার নিতে এবং ঝুঁকিতে থাকা কিছু বন্দীকে কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য। এটি অন্য দেশে দাবি প্রক্রিয়াকরণের একটি উদাহরণ।<ref>Claire Higgins, ''In-country programs: procedure and politics'', in Satvinder Singh Just (ed.), ''Research handbook on international refugee law,'' 2019, Northhampton, MA, USA: Edward Elgar Publishing, at page 55.</ref>
তা সত্ত্বেও এই ব্যক্তিদের গোষ্ঠীগুলোকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্তগুলো ছিল ''অ্যাডহক'' এবং অত্যন্ত রাজনৈতিক; উদাহরণস্বরূপ, চিলির বেশিরভাগ রাজনৈতিক শরণার্থী খুব বেশি বামপন্থী ছিলেন এবং আমেরিকান বা নতুন চিলির প্রশাসনকে বিচ্ছিন্ন করতে চাননি এই আশঙ্কায়, কানাডীয় সরকার তাদের সংখ্যা সীমিত করে। এটি কানাডাকে সেই ৩০ বছরের সংঘাতের সময় মাত্র ৭,০০০ চিলির নাগরিককে গ্রহণ করতে সীমাবদ্ধ করে। একইভাবে, কানাডা কিছু উগান্ডার এশীয় শরণার্থীকে গ্রহণ করার পর এই পদক্ষেপের তীব্র জনমত দেখা দেয়। ১৯৭২ সালের এক জরিপে দেখা যায় যে মাত্র ৪৫ শতাংশ কানাডীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন; সরকারের কেউ কেউ এই উদ্যোগকে সেই বছরের নির্বাচনে সরকারি আসনের ক্ষতি হিসেবে দেখেছেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 213.</ref>
১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পর এবং ১ এপ্রিল ১৯৭৮ সালে এটি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে, অভিবাসীদের নির্বাচনের নিয়মাবলী সংজ্ঞায়িত করার জন্য কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডা (EIC)-এর উপর ক্ষমতা অর্পণ বাতিল করা হয় এবং আইন এবং প্রবিধানে গ্রহণযোগ্য শ্রেণী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংসদে বহাল রাখা হয়। ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন অনুসারে কানাডায় অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সময় EIC আর মানবিক পুনর্বাসন কর্মসূচি বা প্রশাসনিকভাবে অন্য কোনও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে পারত না। ১৯৭৬ সালের আইনটি কনভেনশন শরণার্থীদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য শ্রেণী তৈরি করে ধারা ৬(২) এর মাধ্যমে এটি অন্যান্য মানবিক শ্রেণীর জন্য নিয়ন্ত্রণ-প্রণয়নের কর্তৃত্ব প্রদান করেছিল যা মনোনীত করা যেতে পারে। ১৯৭৮ সালের ১ এপ্রিল আইন ঘোষণার সময়, কোনও পদবী ঘোষণা করা হয়নি তবে তিনটি পুনর্বাসন কর্মসূচি চলমান ছিল। এর মধ্যে পূর্ব ইউরোপীয়, চিলি/আর্জেন্টিনা এবং ইন্দোচীন অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রায় সাথে সাথেই কার্যক্ষম সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিটি ভিয়েতনামী আবেদনকারীর গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণের আগে কনভেনশনের যোগ্যতা পরীক্ষা করা খুবই ঝামেলার ছিল এবং উৎপাদনশীলতা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আগত ইহুদি অভিবাসীরা শরণার্থী মর্যাদার দাবি অগ্রসর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন কারণ তারা এই শব্দটিকে আপত্তিকর বলে মনে করেছিলেন। চিলি এবং আর্জেন্টিনাররা স্পষ্টতই কনভেনশন শরণার্থী ছিল না কারণ তারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে ছিল। নতুন আইন পাস হওয়ার আগে অনুমোদিত কর্মসূচিগুলোর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য, EIC নভেম্বর মাসে কাউন্সিলের একটি আদেশ প্রণয়ন করে যা ধারা ৬(২) অনুসারে তিনটি অতিরিক্ত মানবিক শ্রেণী মনোনীত করে। স্ব-নির্বাসিত শ্রেণীর মধ্যে ছিল সোভিয়েত ইহুদি এবং অন্যান্য পূর্ব ইউরোপীয়রা; ইন্দোচীন মনোনীত শ্রেণী কনভেনশনের যোগ্যতার জন্য প্রতিটি আবেদনকারীর পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করেছিল; এবং ল্যাটিন আমেরিকান মনোনীত শ্রেণী (LADC) নির্যাতিত চিলি এবং আর্জেন্টিনার নাগরিকদের ক্ষেত্রে আবেদন করেছিল যারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে বসবাস করছে। এর মধ্যে কারাগারে থাকা ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।<ref>Raphael Girard, Canadian Immigration Historical Society, CIHS Bulletin Issue #110, September 2024, ISSN 1485-8460, <<nowiki>https://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2024/10/Bulletin-110-2024-09.pdf</nowiki>>, page 3.</ref>
শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতায় নাগরিক সমাজের আরও বেশি ভূমিকা রাখার দাবি এবং সরকারি শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতা সিদ্ধান্তের সমালোচনা মোকাবেলা করার জন্য, ১৯৭৮ সালে কানাডা একটি ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতা কর্মসূচি চালু করে যার মাধ্যমে নাগরিকরা নতুন শরণার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে সহায়তা করতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩০০,০০০ এরও বেশি শরণার্থী কানাডায় এসেছেন।
== ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ডের প্রতিষ্ঠা ==
কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড গঠনের পটভূমি ছিল ১৯৮০-এর দশকে পূর্ব-বিদ্যমান শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থার কঠোরতা, ক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং ন্যায্যতা নিয়ে উদ্বেগ।
প্রথমত, ১৯৮০-এর দশক জুড়ে কানাডার আশ্রয় ব্যবস্থার কঠোরতা এবং ব্যবস্থার সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ ছিল। ডেবোরা আঙ্কারের ভাষায়, ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে সরকার 'অবৈধ' অভিবাসীদের দ্বারা সুবিধা গ্রহণের কারণে ভঙ্গুর আশ্রয় ব্যবস্থার সুযোগ নেওয়ার বিষয়টি সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়। আইআরবি তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে উদ্ভূত সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি, যখন ১৭৪ জন শিখ ব্যক্তি নোভা স্কটিয়ার চার্লসভিলের জেলে গ্রামের কাছে লাইফবোটে করে আসার পর ফেডারেল সরকার ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধনের জন্য জরুরি অধিবেশনের জন্য সংসদকে আহ্বান করে। সেই সময়ে, কানাডীয় কর্মসংস্থান ও অভিবাসন উপদেষ্টা কাউন্সিল রিপোর্ট করেছিল যে বেশিরভাগ ব্যবসা ও শ্রমিক নেতারা মনে করেছিলেন যে সরকার "সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে"। ব্যবস্থার অখণ্ডতা সম্পর্কে এই ধরনের উদ্বেগের উদাহরণ ১৯৮০-এর দশকে রিফর্ম পার্টির প্ল্যাটফর্মে দেখা গিয়েছিল। সেখানে "অভিবাসন নির্যাতন, ভুয়া শরণার্থী, [এবং] অভিবাসীদের অনুপযুক্ত নির্বাচন" সম্পর্কে "প্রদাহজনক ভাষা" হিসাবে চিহ্নিত একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল। তৎকালীন প্রগতিশীল রক্ষণশীল সরকার বলেছিল যে "অনেক দাবি প্রতারণামূলক। সাম্প্রতিক তথ্য দেখায় যে গড়ে ৭০ শতাংশ দাবি ভিত্তিহীন"। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাস্তবায়িত এই উদ্বেগগুলোর একটি প্রতিক্রিয়া ছিল ডেবোরা অ্যাঙ্কার যাকে একাধিক বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে শরণার্থী দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থান অনুমোদন এবং বিভিন্ন সামাজিক পরিষেবা বাতিল করা। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় শুনানির তারিখ না আসা পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই দেশে ফেরত পাঠানোর একটি নতুন অনুশীলন।<ref name=":50" />
দশকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শরণার্থী দাবির ফলে প্রাক-আইআরবি সিস্টেমের ক্ষমতা নিয়েও উদ্বেগ ছিল। রেবেকা হ্যামলিন বলেন যে কানাডা নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে বিবেচনা করার আগে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী তার তীরে আসতে শুরু করার আগে শরণার্থী সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপরোক্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেছিল। ১৯৮০ সালে কানাডায় ১,৪৮৮টি শরণার্থী দাবি জমা পড়েছিল। এটি আজকের মতো খুবই সামান্য। তবে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, এই সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে এত বেশি সংখ্যক মানুষ দেশে আশ্রয়ের দাবি জানাচ্ছিল যে ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণরূপে অতিরিক্ত চাপে পড়ে গিয়েছিল, ১৯৮৫ সালে ৮,২৬০টি দাবি করা হয়েছিল।<ref name=":4" /> ১৯৮৭ সালে প্রায় ২৭,০০০ শরণার্থী দাবি শুরু হয়েছিল। দাবির এই বৃদ্ধি এবং শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নিবেদিত সম্পদের প্রভাবে, ১৯৮৮ সাল নাগাদ একটি দাবি প্রক্রিয়াকরণে গড়ে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগছিল। কানাডায় এই বৃদ্ধি বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও একই রকম বৃদ্ধির প্রতিফলন ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৬ সালে পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে ২০,০০০ আশ্রয়প্রার্থী এসেছিলেন, ১৯৮০ সালে ১৫৮,০০০ জন আবেদনকারী ছিলেন এবং ১৯৮৬ সাল নাগাদ, বার্ষিক ২০০,০০০ এরও বেশি আবেদন জমা পড়ছিল।
এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যার প্রতিক্রিয়ায়। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে দাবির সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্ভাব্য প্রভাব পড়ার আশঙ্কায়, ১৯৮২ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব একটি নবগঠিত শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়, যা প্রথমবারের মতো অভিবাসন বিভাগ থেকে স্পষ্টভাবে স্বাধীন করা হয়েছিল। এর নিজস্ব চেয়ারম্যান এবং বর্ধিত বাজেট ছিল। এর স্বাধীনতা কাঠামোগতভাবে এই কারণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে এটি CEIC-এর বৈদেশিক শাখার একটি অংশ না হয়ে সরাসরি মন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করত। এর ফলে, প্রথমবারের মতো, বিশ্বজুড়ে শরণার্থী-উৎপাদনকারী পরিস্থিতির উপর প্রামাণিক এবং স্বাধীন ডকুমেন্টেশন সংকলন করা সম্ভব হয়েছিল। এই ব্যবস্থায় কেবল লিখিত দাখিল অন্তর্ভুক্ত ছিল, কমিটি ব্যক্তিগতভাবে মূল্যায়ন করত। কমিটি শেষ পর্যন্ত অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করত। ১৯৮৩ সালে টরন্টো এবং মন্ট্রিলে এই ধরনের দাবিদারদের মৌখিক শুনানির ব্যবস্থা করার জন্য একটি পাইলট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এতে কেবল একজন RSAC সদস্য জড়িত ছিলেন যিনি পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং যিনি দাবিদার এবং আইনজীবীর সাথে তাদের যেকোনো উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন। এই মডেলের অধীনে, প্রক্রিয়াটি এখনও দ্বিখণ্ডিত ছিল কারণ সেই সদস্য নিজেই প্রকৃত সিদ্ধান্ত নেননি; সিদ্ধান্তটি এখনও মন্ত্রী কর্তৃক একটি RSAC প্যানেলের পরামর্শে নেওয়া হয়েছিল যারা নিজেরাই দাবিদারকে দেখেননি। কমিটিতে ব্যক্তিগত জীবনের সদস্য, অভিবাসন বিভাগ এবং বিদেশ বিষয়ক বিভাগ সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে, কানাডার পররাষ্ট্র নীতি থেকে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত ছিল। শরণার্থী মর্যাদা প্রদানকে উৎপত্তিস্থলের অবস্থা সম্পর্কে একটি বিবৃতি হিসেবে দেখা যেতে পারে। যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে কানাডার রাজনৈতিক কারণে শরণার্থী মর্যাদা প্রদান সীমিত করার ইতিহাস রয়েছে, বিশেষ করে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর উপর এটি কে কেন্দ্র করে এবং নতুন উদীয়মান ঔপনিবেশিক-পরবর্তী রাষ্ট্রগুলো থেকে আসা শরণার্থীদের স্বীকৃতি দিতে অনীহা প্রদর্শন করে, পাছে শরণার্থী সুরক্ষার এই অনুদানকে পশ্চিমা শক্তির নীতি এবং কর্মকাণ্ড শরণার্থী প্রবাহের কারণ বলে স্বীকার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে বিদেশ বিষয়ক বিভাগ RSAC-এর সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করার চেষ্টা করেছিল। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সিস্টেমটি কতটা পর্যবেক্ষণাধীন ছিল।
পরিবর্তনের এই প্রেরণা আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছিল যা শরণার্থী ব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সেই সময় পর্যন্ত, সিস্টেমটি "স্থিতিতে থাকা" এবং "স্থিতির বাইরে থাকা" ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য করেছিল, শুধুমাত্র ''অভিবাসন আইন'' লঙ্ঘনের জন্য তদন্তাধীন ব্যক্তিদের জন্য শরণার্থী দাবি বিবেচনা করেছিল। ১৯৮৫ সালে ফেডারেল আদালত এই পার্থক্যকে অন্যায্য এবং অকার্যকর বলে রায় দেয়। অধিকন্তু, ১৯৮৫ সালের আরেকটি সিদ্ধান্ত, ''সিং বনাম কর্মসংস্থান ও অভিবাসন মন্ত্রী'', প্রতিষ্ঠিত করে যে যেখানে একজন দাবিদারের বিশ্বাসযোগ্যতা ঝুঁকির মধ্যে থাকে, সেখানে তৎকালীন ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' সামনে মৌখিক শুনানি প্রয়োজন। এই রায়ে, কানাডার সুপ্রিম কোর্ট পূর্ববর্তী ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় যার অধীনে মৌখিক শুনানির জন্য আবেদন করতে হত। ''সিং-'' এর সিদ্ধান্তকে প্রায়ই কানাডার মাটিতে আগমনের সময় অভিবাসীদের জন্য ''কানাডীয় অধিকার ও স্বাধীনতা সনদের'' সুরক্ষা কার্যকর করার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। এর ফলে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পুনর্গঠন প্রয়োজন যাতে স্বাভাবিকভাবেই সুষ্ঠু মৌখিক শুনানি শুরু হয়। ''সিং-এর'' সিদ্ধান্তের একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল মৌখিক শুনানির সুযোগ সম্প্রসারণ করা এবং এই ধরনের সুবিধা সহজতর করার জন্য ব্যবস্থার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ১৯৮৫ সালে বিল সি-৫৫ আইএবি সংশোধন করে যাতে সকল শরণার্থী তাদের আপিলের সময় মৌখিক শুনানির সুযোগ পান এবং বিলটি আইএবি সদস্যের সংখ্যা আঠারো থেকে পঞ্চাশে উন্নীত করে।
এই চ্যালেঞ্জের সমষ্টি মোকাবেলা করার জন্য, তৎকালীন কানাডীয় সরকারগুলো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা পরিচালনা করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮১ সালের অভিবাসন অনুশীলন ও পদ্ধতি সম্পর্কিত টাস্ক ফোর্স, ১৯৮১ সালের ম্যাকডোনাল্ড রয়্যাল কমিশন অফ ইনকোয়ারি কনসার্নিং সার্টেইন অ্যাক্টিভিটিজ অফ দ্য আরসিএমপি যা অভিবাসনে নিরাপত্তা পরীক্ষা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে, ১৯৮৩ সালের রবিনসন রিপোর্ট ''"ইলিগ্যাল মাইগ্রেন্টস ইন কানাডা"'' শিরোনামে, ১৯৮৪ সালের রাটুশনি রিপোর্ট ''"এ নিউ রিফিউজি স্ট্যাটাস ডিটারমিনেশন প্রসেস ফর কানাডা" শিরোনামে'', ১৯৮৪ সালের ডেসচেনেস কমিশন অফ ইনকোয়ারি অন ওয়ার ক্রিমিনালস ইন কানাডা" শিরোনামে এবং ১৯৮৫ সালের রাব্বি গুন্থার প্লাউটের রিপোর্ট ''"রিফিউজি ডিটারমিনেশন ইন কানাডা"'' শিরোনামে। এই প্রতিটি প্রতিবেদনে একটি নতুন আশ্রয় নির্ধারণ ব্যবস্থার জন্য পদ্ধতির সুপারিশ করা হয়েছে যা শোনার অধিকার উভয়কেই সম্বোধন করবে এবং ন্যায্যতা এবং দক্ষতার প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখবে। ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ প্রক্রিয়া" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রদান করে যা তিনটি প্রধান সুপারিশ করে: ১) আরএসএসি অভিবাসন এবং বহিরাগত নীতি বিবেচনা থেকে স্বাধীন হওয়া উচিত, ২) কনভেনশন শরণার্থী সংজ্ঞার ব্যবহারে আইনের মূলনীতির পাশাপাশি নীতিমালাও মেনে চলা উচিত। ৩) প্রাথমিক নির্ধারণ পর্যায়ে দাবিদারের মৌখিক শুনানি করা উচিত। পরিশেষে, প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে "বর্তমান নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি কেন্দ্রীয় ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হোক যা শরণার্থীদের দাবি শুনবে এবং নির্ধারণ করবে।" ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় সরকার কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কনভেনশনের শরণার্থী সংজ্ঞার মূলনীতি পালনের সুপারিশের ক্ষেত্রে, মন্ত্রী নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন যা দাবিদারদের সন্দেহের সুবিধা প্রদানের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করেছে। শরণার্থী দাবিদারদের জন্য ব্যবস্থার ন্যায্যতা বৃদ্ধির জন্য সরকার অন্যান্য পদক্ষেপও গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে চাকরি-নির্দিষ্ট কর্মসংস্থানের নথিগুলোকে জেনেরিক অনুমোদন দিয়ে প্রতিস্থাপন করা<ref name=":79" /> এবং একজন দাবিদার নিয়োগ অনুমোদনের জন্য যোগ্য হওয়ার আগে তদন্ত আহ্বানের প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়া - এর ফলে কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য আট মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার বাধা দূর করা হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকের এই সমস্ত প্রতিবেদন, ঘটনাবলী এবং সম্পর্কিত আইনী কৌশল থেকে শেষ পর্যন্ত যা বেরিয়ে আসে তা হলো একটি ট্রাইব্যুনাল মডেলকে কেন্দ্র করে একটি নতুন আশ্রয় ব্যবস্থা। প্রাসঙ্গিক আইন, বিল সি-৫৫, বা ''শরণার্থী সংস্কার আইন'', ১৯৮৬ সালে হাউস অফ কমন্সে উত্থাপন করা হয়েছিল। এই বিলটি বিল সি-৮৪, ''শরণার্থী প্রতিরোধ ও আটক আইন দ্বারা পরিপূরক ছিল।'' এই পরবর্তী, আরও বিধিনিষেধমূলক আইনটি কানাডার উপকূলে জাহাজের আগমন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং মানুষ পাচার সম্পর্কে উদ্বেগের প্রতি সাড়া দেয়। সংসদের জরুরি অধিবেশনে এই বিলগুলো নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিল। সিনেট বিল সি-৮৪ সম্পর্কে একটি বিস্তৃত তদন্ত পরিচালনা করে এবং বিলটি দুবার প্রত্যাখ্যান করে। অবশেষে, একজন নতুন অভিবাসন মন্ত্রী অতিরিক্ত সংশোধনীতে সম্মত হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে হাউস অফ কমন্স এবং সিনেট বিল দুটি পাস করে এবং সেই বছরের ২১ জুলাই রাজকীয় সম্মতি প্রদান করে। নতুন সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য এবং দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গঠনঃ কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড ১লা জানুয়ারি, ১৯৮৯ সালে ১১৫ সদস্য নিয়ে একটি স্বাধীন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল হিসাবে অস্তিত্ব লাভ করে। সেই সময়, আইআরবি দুটি বিভাগ নিয়ে গঠিত: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগ এবং ইমিগ্রেশন আপিল বিভাগ, এটি পূর্ববর্তী ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডকে প্রতিস্থাপন করেছিল। গর্ডন ফেয়ারওয়েদার, নিউ ব্রান্সউইকের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং কানাডিয়ান মানবাধিকার কমিশনের প্রথম প্রধান কমিশনার, আইআরবির প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন। সংশ্লিষ্ট নামগুলি থেকে বোঝা যায়, সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হ'ল শরণার্থী স্থিতি ''উপদেষ্টা কমিটি'' থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি মন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, এটি একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ট্রাইব্যুনালের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল।
* সিআরডিডি মৌখিক শুনানি: নতুন শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় দু'জন আইআরবি সদস্যের সভাপতিত্বে একটি মৌখিক শরণার্থী দাবির শুনানি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
* যোগ্যতার মানদণ্ড: ১৯৮৮-এ কানাডিয়ান সংসদ অভিবাসন আইন সংশোধন করে শরণার্থী দাবিদারদের নিয়ন্ত্রণকারী আইনে 'যোগ্যতার মানদণ্ডের ধারণাটি প্রবর্তন করে'। যোগ্যতার মানদণ্ডটি তখন থেকে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার পূর্বশর্ত ছিল।
* যোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তিতে স্ক্রিনিং পদ্ধতি: ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে'' এমন একটি পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ছিল যার মাধ্যমে সমস্ত আবেদনকারীর দু'জনের একটি প্যানেলের সামনে শুনানি ছিল যেখানে দাবিদারের প্রমাণ করার বোঝা ছিল যে তারা তাদের দাবি নির্ধারণ করার যোগ্য এবং দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি ছিল। প্যানেলে একজন ইমিগ্রেশন অফিসার এবং সিআরডিডির একজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। প্যানেলের দুই সদস্যের যে কোনও একজনকে রাজি করানো গেলে সিআরডিডি-র সামনে পূর্ণাঙ্গ শুনানিতে এই দাবির শুনানি হবে। মন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন একজন কেস প্রেজেন্টিং অফিসার (সিপিও)। পোর্ট-অফ-এন্ট্রি মামলায়, দাবির প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব এড়ানোর উদ্দেশ্যে, মন্ত্রীর ব্যয়ে প্রথম স্তরের শুনানিতে শরণার্থী দাবিদারদের জন্য "মনোনীত পরামর্শ" সরবরাহ করা হয়েছিল। যখন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছিল, তখন সরকার অনুমান করেছিল যে এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটি তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে শেষ করা যেতে পারে। এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্তের জন্য কারণ সরবরাহ করা দরকার ছিল। একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি অনুসন্ধানের জন্য একটি নিম্ন থ্রেশহোল্ড ছিল: ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' সরবরাহ করেছিল যে যদি বিচারক বা সিআরডিডি সদস্য উভয়ই মতামত দেন যে এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যার ভিত্তিতে শরণার্থী বিভাগ দাবিদারকে কনভেনশন শরণার্থী হিসাবে নির্ধারণ করতে পারে, তবে তারা নির্ধারণ করতে হবে যে দাবিদারের দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি ছিল। অক্টোবর ১৯৮৯ পর্যন্ত, ৫% দাবিগুলি এই প্রক্রিয়া অনুসারে বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তির অভাব হিসাবে নির্ধারিত হয়েছিল।
* গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগকারী: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগের ৬৫ জন পূর্ণকালীন সদস্যকে গভর্নর ইন কাউন্সিল দ্বারা নিয়োগ করা যেতে পারে। কাজের চাপের প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত খণ্ডকালীন সদস্য নিয়োগ করা যেতে পারে।
* অ-প্রতিকূল প্রক্রিয়া: একটি দাবির বিষয়ে সিআরডিডি শুনানি একটি অ-প্রতিকূল পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল। এর অংশ হিসাবে, মন্ত্রী কেবল প্রমাণ উপস্থাপনের অধিকারী ছিলেন এবং দাবিদারকে জেরা করতে বা উপস্থাপনা করতে পারতেন না, যেখানে বাদ দেওয়ার বিষয়টি ছিল তা ছাড়া। সিআরডিডি-র প্যানেলগুলিকে শরণার্থী হিয়ারিং অফিসার (আরএইচও) নামে পরিচিত একজন আইআরবি কর্মচারী সহায়তা করেছিলেন। পূর্ববর্তী রিফিউজি স্ট্যাটাস অ্যাডভাইজরি কমিটি সিস্টেমের অধীনে কেস প্রেজেন্টিং অফিসার হিসাবে যা উল্লেখ করা হয়েছিল তার জন্য আরএইচও নতুন নাম ছিল।
* ব্যক্তিগত কার্যধারা: প্রাক্তন আইএবিতে জনসাধারণের কার্যক্রমের বিপরীতে, সিআরডিডি কার্যক্রম সাধারণত ''ক্যামেরায় পরিচালিত'' হত।
* অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া: আইআরবি পরিচালনার লক্ষ্য ছিল এটি নিশ্চিত করা যে বোর্ড তার আধা-বিচারিক অবস্থানকে সম্মান করে এবং একটি প্রচলিত আদালত ব্যবস্থার ফাঁদ এড়ায়, সংক্ষিপ্ত লিখিত সিদ্ধান্তের ধারণাকে চাপ দেয় এবং মৌখিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে।
* নিরাপদ তৃতীয় দেশের শাসন অনুসারে মনোনীত কোনও দেশ নেই: নতুন আইনটি নিয়ে নাগরিক সমাজ দ্বারা উত্থাপিত একটি উদ্বেগ হ'ল নিরাপদ তৃতীয় দেশ শাসন যা এটি চালু করেছিল। নিরাপদ তৃতীয় দেশ শাসনের জনসাধারণের সমালোচনার জবাবে, বারবারা ম্যাকডুগাল, যিনি তখন কর্মসংস্থান ও অভিবাসন মন্ত্রী ছিলেন, বোঝানো হয়েছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা থেকে নির্বাসিত শরণার্থী দাবিদারদের মধ্য আমেরিকায় ফেরত পাঠাতে পারে যেখানে তাদের জীবন বিপন্ন হবে। ফলস্বরূপ, তিনি ডিসেম্বর 188 সালে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি "নিরাপদ তৃতীয় দেশের তালিকায় কোনও দেশ ছাড়াই এগিয়ে যেতে প্রস্তুত ... আমরা মনে করি নতুন সিস্টেমটি এটি ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম হবে।
* বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সীমাবদ্ধতা: আইএবির ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছিল, আইআরবি দ্বারা প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনা কেবল ছুটির সাথে এগিয়ে যেতে পারে। তবে, আইনটি বিধান করেছিল যে আদালত বিচারিক পর্যালোচনার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত নির্বাসন ঘটবে না।
* নির্ধারণ-পরবর্তী ঝুঁকি মূল্যায়ন: সরকার প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের জন্য ঝুঁকি পর্যালোচনা করার জন্য ১৯৮৯ সালে একটি নীতি প্রবর্তন করেছিল যেখানে নতুন ঝুঁকি সম্পর্কিত দাবিগুলি মূল্যায়ন করার জন্য তাদের প্রত্যাখ্যান এবং নির্বাসনের মধ্যে সময় অতিবাহিত হয়েছিল। বিশেষত, ব্যর্থ শরণার্থী দাবিদাররা অপসারণের ফলে বাধ্যতামূলক ব্যক্তিগত ঝুঁকি হবে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তার দ্বারা নির্ধারণ-পরবর্তী পর্যালোচনার জন্য আবেদন করতে সক্ষম হয়েছিল। এই পর্যালোচনাটি "জীবনের ঝুঁকি, অমানবিক আচরণ, বা চরম নিষেধাজ্ঞাগুলি" মূল্যায়ন করেছে এবং ১৯৫১ কনভেনশন এবং প্রোটোকলের আওতাভুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। এ ধরনের আবেদনের প্রায় ২-৩ শতাংশ গ্রহণ করা হয়। নীচে আলোচনা করা হয়েছে, এই প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত আইআরপিএর এখন এস 97 এর ভিত্তি হয়ে ওঠে।
* অবসান এবং ছুটির বিধান: এই নতুন আইনের অধীনে, মন্ত্রী তার তিন সদস্যের একটি প্যানেলের সামনে শরণার্থী বিভাগে এই সিদ্ধান্তের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে কোনও ব্যক্তি আর কনভেনশন শরণার্থী নন এই ভিত্তিতে যে শরণার্থী প্রতারণামূলক উপায়ে বা ভুল উপস্থাপনার মাধ্যমে তাদের মর্যাদা অর্জন করেছে, বা শরণার্থীর আর সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। ছুটির জন্য আবেদনের জন্য প্রথমে চেয়ারপারসনের কাছ থেকে ছুটির প্রয়োজন হয়।
আইআরবি কানাডায় আশ্রয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি নতুন সূচনার প্রতিনিধিত্ব করে। নতুন ব্যবস্থায় রূপান্তরের অংশ হিসেবে, সরকার আশ্রয় আবেদন মুলতুবি থাকা ব্যক্তিদের জন্য বেশ কয়েকটি ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচি চালু করেছে। প্রথমটি ছিল সীমিত আকারে ১৯৮৬-৮৭ সালের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ১৯৮৯ সালে আইআরবি-র পাশাপাশি কার্যকর হওয়া পরবর্তী একটি আইন "সমস্যা সমাধান" এবং আশ্রয় নীতি নির্ধারণে নতুন করে শুরু করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।<ref name=":13">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> যদিও সরকার এই শব্দটি পরিত্যাগ করেছিল,<ref name=":942">Minister of Employment and Immigration, Press Release, March 20, 1990, 90-04.</ref> এটি মূলত ১৯৮৬ সালের ২১ মে এর আগে কানাডায় প্রবেশকারী শরণার্থী দাবিদারদের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমা ছিল। সেখানে ব্যক্তিদের কানাডায় থাকতে এবং স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো যদি তারা ইতিমধ্যেই নিযুক্ত থাকে বা নিকট ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার সম্ভাবনা থাকে এবং তাদের কোনও চিকিৎসা, নিরাপত্তা বা অপরাধমূলক উদ্বেগ না থাকে। আনুষ্ঠানিকভাবে, দাবিগুলোকে চারটি দলে ভাগ করা হয়েছিল:
* গ্রুপ I: যাদের দাবি আগে শপথের অধীনে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সাধারণত, এই দাবিগুলো প্রথমে এই যুক্তির ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হতো যে এই দাবিদাররা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কানাডায় ছিলেন। কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডার কর্মকর্তারা ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে এই দাবিগুলো পর্যালোচনা শুরু করেন। যদি, পর্যালোচনার পর শরণার্থী দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি সুপারিশ করা হয়, তাহলে মামলাটি একজন বিচারক এবং সিআরডিডি-এর একজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ প্যানেলে পাঠানো হবে। যদি সেই প্যানেলগুলো বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তিতে সুপারিশের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে দাবিদাররা পরবর্তী শুনানির প্রয়োজন ছাড়াই স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হত।
* দ্বিতীয় দল: যারা ১৯৮৬ সালের মে থেকে ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কানাডায় এসেছিলেন এবং যাদের মন্ত্রীর পারমিট দেওয়া হয়েছিল।
* গ্রুপ III: যাদের অভিবাসন তদন্ত শপথের অধীনে তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য স্থগিত করা হয়েছিল কিন্তু এই পরীক্ষাগুলো পরিচালিত হয়নি।
* গ্রুপ IV: যেসব ব্যক্তির দাবির তদন্ত এখনও খোলা হয়নি বা তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য এখনও স্থগিত করা হয়নি।
গ্রুপ I এর দাবিদারদের তাদের দাবির পক্ষে কোন বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি পাওয়া যায়নি এবং গ্রুপ II-IV এর দাবিদারদের কানাডা ইমিগ্রেশন সেন্টারে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। যদি সেই দাবিদাররা কানাডায় থাকার জন্য পর্যাপ্ত মানবিক এবং সহানুভূতিশীল কারণ দেখাতে পারতেন, যেমন পারিবারিক ক্লাস লিঙ্ক, তাহলে আর কোনও পর্যালোচনার প্রয়োজন হতো না এবং দাবিদাররা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন।<ref name=":913">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
পূর্ববর্তী ব্যবস্থায় ৩০% আবেদনকারী গৃহীত হয়েছিল, ত্বরিত পর্যালোচনা কর্মসূচির অধীনে, গ্রহণযোগ্যতার হার অনেক বেশি ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৬ সালে প্রক্রিয়াকৃত ২৮,০০০ আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় ৮৫% গৃহীত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সরকার এই সাধারণ ক্ষমার সমতুল্য বলে যে কোনও পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে, ১৯৯০ সালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলে যে "'একটি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা মানে বিশ্বকে জানানো যে কানাডা তার আইনের প্রতি অসম্মান সহ্য করে। আমি তা করতে পারি না,' মন্ত্রী বলেন।" সর্বোপরি, ''সিং-এর'' সিদ্ধান্ত এবং ১৯৮৯ সালে সংস্কারকৃত শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার মধ্যে ১,২৫,০০০ মামলা জমে ছিল, যে মামলাগুলো এই ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। যদিও দ্রুত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে বকেয়া আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হওয়ার কথা ছিল, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের নির্বাহী পরিচালক জ্যানেট ডেঞ্চের ভাষায়, "শরণার্থীরা বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন এবং তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন", তাই এটি করতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। এই ব্যাকলগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাদের বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের কানাডায় দর্শনার্থী বা অভিবাসী হিসেবে ফিরে আসার জন্য মন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন ছিল।<ref name=":912">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
== শরণার্থী ব্যবস্থার আইনগত নির্ধারণ এবং শরণার্থী সংজ্ঞার বিস্তৃত ব্যাখ্যা ==
''সিং-'' এর সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং এর ফলে শরণার্থী ব্যবস্থায় পরিবর্তন। এর মধ্যে আইআরবি তৈরি অন্তর্ভুক্ত, যুক্তিসঙ্গতভাবে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ক্রমবর্ধমান 'আইনব্যবস্থা' হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কলিন স্কট বিচারব্যবস্থাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন "যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য মূল্যবোধ এবং প্রত্যাশা দ্বারা পরিচালিত সম্পর্কগুলো আইনি মূল্যবোধ এবং নিয়মের অধীন হয়"। আশ্রয়ের একটি আইনি ধারণা প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কিত অন্যান্য ধারণাগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে আশ্রয়ের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ধারণাগুলোও রয়েছে যা পূর্বে প্রাধান্য পেয়েছিল। এই পরিবর্তনের ফলে সিস্টেমটি কীভাবে পরিচালিত হতো তার উপর প্রভাব পড়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক সিদ্ধান্তের জন্য যে কারণগুলো দেওয়া হয়েছিল তা খুব কম ছিল; শরণার্থী আইনজীবী ডেভিড ম্যাটাস বর্ণনা করেছেন। কারণগুলো প্রায়ই "কেবল কয়েকটি বাক্য" ছিল যা "কদাচিৎ সেই তথ্যের ফলাফলের সাথে সম্পর্কিত ছিল যার উপর তাদের সিদ্ধান্ত ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল"। সংক্ষেপে, তিনি বলেন। এটি প্রস্তাব করা হয়েছিল তা ছিল সিদ্ধান্ত, যুক্তির বিপরীতে। আইআরবি কর্তৃক প্রদত্ত কারণগুলো সাধারণত আরও পূর্ণাঙ্গ হবে। এই পরিবর্তনটি সেই সময়ের আন্তর্জাতিক প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৪ সালের আগে পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে বাধ্য করা হয়নি।
এইভাবে, ব্যবস্থার বিচারব্যবস্থায় ব্যক্তিদের জন্য পরামর্শ গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল, তাই ১৯৮৬ সালে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের একটি দল কানাডার অভিবাসন শিল্প সমিতি, অ্যাসোসিয়েশন অফ ইমিগ্রেশন কাউন্সেল অফ কানাডা গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছিল, এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। ১৯৭৮ সাল থেকে, অভিবাসন আইন অভিবাসন পরামর্শদাতাদের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে প্রবিধান প্রণয়নের অনুমতি দেয়, কিন্তু তা করা হয়নি। ১৯৯০-এর দশকে ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট ব্যবস্থার বৈধতা নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠেছিল, তার অবসান ঘটে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ল সোসাইটি ওয়েস্টকোস্ট ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড পরিচালনাকারী যশবন্ত সিং মাঙ্গাতের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে, যিনি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ডের সামনে ফি দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বারে মাঙ্গাতকে ডাকা হয়নি এই ভিত্তিতে একজন বিসি বিচারক এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর তার মামলাটি একটি পরীক্ষামূলক মামলায় পরিণত হয়। এটি শেষ পর্যন্ত ২০০১ সালে নিষ্পত্তি হয় যখন কানাডার সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে আইনজীবী নয় এমন অভিবাসন পরামর্শদাতারা আসলে বৈধ এবং ''ইমিগ্রেশন আইন'' দ্বারা অনুমোদিত।<ref name=":66" /> সেই সময়ে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না এবং কানাডীয় আইনে এমন কোনও কিছুই ছিল না যা লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিকে অভিবাসন বিষয়ে ক্লায়েন্টের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ফি নেওয়া থেকে বিরত রাখবে।<ref name=":66" /> এটি ২০০২ সালের পরে আসবে না।
শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি এবং শরণার্থী ব্যবস্থার এই বিচারব্যবস্থার সাথে সাথে, শরণার্থী হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তার প্রকৃতি পরিবর্তিত হতে শুরু করে - ধারণাটি মূলত কমিউনিজম থেকে পালিয়ে যাওয়ার ধারণা থেকে কে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী তার একটি বৃহত্তর মানবাধিকার-ভিত্তিক ধারণায় চলে যায়। শরণার্থী পণ্ডিত গিল লোয়েশার যুক্তি দিয়েছিলেন, "১৯৫০ এবং ১৯৭০ এর দশকের মধ্যে নিপীড়নকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করা কোনও মাথাব্যথার কারণ ছিল না এবং আশ্রয় প্রদান সাধারণত কমিউনিজমের ব্যর্থতা এবং পশ্চিমাদের দানশীলতা পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হত।" নতুন আবিষ্কৃত আইআরবি ''শরণার্থী কনভেনশনকে'' এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে যা "বিস্তৃত" এবং "প্রগতিশীল" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে কানাডা বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে যারা যৌন অভিমুখিতা-সম্পর্কিত নিপীড়নকে আশ্রয় দাবির ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৩ সালে ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধন করে চেয়ারপারসনকে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। আইনটির সংশোধনী কার্যকর হয় ১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩ সালে। এরপর কানাডা ৯ মার্চ, ১৯৯৩ তারিখে লিঙ্গ-ভিত্তিক আশ্রয় দাবি পরিচালনার জন্য নির্দেশিকা জারি করে,<ref name=":80" /> যা লিঙ্গ-ভিত্তিক নিপীড়নের সাথে সম্পর্কিত দাবির ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার সাথে সম্পর্কিত ছিল। ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী প্রবেশকারীদের ৮০% পুরুষ থাকলেও, ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এই ব্যবস্থা আরও লিঙ্গ ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৯৬ সালে আইআরবি শিশু শরণার্থী দাবিদারদের উপর নির্দেশিকা গ্রহণ করে। এটি কোনও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কর্তৃক গৃহীত এই ধরণের প্রথম নীতিগত উদ্যোগ বলে জানা গেছে। অনেক পর ২০১৭ সালে বোর্ড যৌন অভিমুখীকরণ এবং লিঙ্গ পরিচয় এবং অভিব্যক্তি (SOGIE) সম্পর্কিত দাবির বিচারের জন্য নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করে। দাবির গ্রহণযোগ্যতার হারও নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল - ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদার জন্য করা প্রায় ৭০ শতাংশ দাবি পরীক্ষার পর প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল; ১৯৯০-এর দশক এবং পরবর্তীকালে গ্রহণযোগ্যতার হার বৃদ্ধি পায়।
কানাডার শরণার্থী বাধ্যবাধকতার এই প্রগতিশীল ব্যাখ্যাগুলো কানাডার মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পদ্ধতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল যা শরণার্থী দাবিদাররা অ্যাক্সেস করতে পারে। কানাডা সরকার ১৯৯১ সালে শিশু অধিকার সনদ অনুমোদন করে। এটি কানাডা কর্তৃক অনুমোদিত পূর্ববর্তী দলিলগুলোর পরিপূরক। এর মধ্যে রয়েছে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি। আজ দাবিদাররা এই চুক্তি অনুসারে প্রতিষ্ঠিত সাতটি জাতিসংঘ চুক্তি সংস্থার কাছে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশেষ পদ্ধতিতে, বিশেষ করে অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূতের কাছে ব্যক্তিগত অভিযোগ আনতে পারেন। নির্যাতন বিরোধী কমিটি হলো এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে বেশি অনুরোধকৃত চুক্তি সংস্থা এবং তাদের কাছে জমা দেওয়া ব্যক্তিগত অভিযোগের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই কনভেনশনের ৩ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ''নন-রিফাউলমেন্ট'' নীতির লঙ্ঘনের অভিযোগে।
মানবিক ও সহানুভূতির কারণে কানাডায় থাকার জন্য আবেদনপত্র তৈরির ক্ষেত্রেও একই রকম পরিবর্তন এসেছে। এটি অনেকেই শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করার বিকল্প হিসেবে অথবা শরণার্থী দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে আবেদন করে। এক পর্যায়ে, শরণার্থী আইনজীবীরা অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো অকেজো। ১৯৯৩ সালে মেরি জো লেডি অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো "শরণার্থীদের জন্য অকেজো" এবং বলেছিলেন যে গত বছর অন্টারিওতে মানবিক এবং সহানুভূতিশীল পর্যালোচনার জন্য কোনও অনুরোধ মঞ্জুর করা হয়নি।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 136.</ref>
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং দক্ষতার পরিমাপ ==
শরণার্থী সংজ্ঞার এই বিস্তৃত ধারণার বিতর্কিত ফলাফল ছিল অন্যান্য অভিবাসীদের থেকে শরণার্থীদের আলাদা করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান অসুবিধা।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 165.</ref> প্রকৃতপক্ষে যেহেতু দারিদ্র্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে, তাই অনেক শরণার্থী উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে অভিবাসন করবে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 2.</ref> এই ধরনের চ্যালেঞ্জ, কানাডায় ব্যবহৃত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যমূলক অবস্থা নির্ধারণ মডেল। সেই সাথে দাবির সংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত বকেয়া মামলার ফলাফল হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এটি বছরে কয়েক হাজারের হারে ছিল। এটি ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছেছিল।<ref name=":482">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 381. See also the following statement that Canada "received more than 40,000 refugees in 1992" in Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 302.</ref> এটি বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী সংকটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১-৯২ সালে প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার বিস্ফোরণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি কানাডায় এসে আশ্রয় দাবি করেছিলেন। এই মুহুর্তে, কানাডা তার পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে বসনিয়া থেকে ২৫,০০০ এরও বেশি শরণার্থীর ভর্তির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করেছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 282.</ref> যদিও মূলত ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অনুমান করেছিল যে মামলাগুলো মাত্র আট সপ্তাহ এবং কয়েক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে, ক্রমবর্ধমানভাবে এটি ঘটছিল না।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 10.</ref>
১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সিনেট কর্তৃক পাস হওয়া বিল সি-৮৬ ছিল দাবিদারদের এই স্রোতের প্রতিক্রিয়া। বিলটি মূলত সিস্টেমের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়েছিল। এটি বিভিন্ন উপায়ে এটি করেছে:
* প্রথমত, আইআরবিতে দাবির জন্য একটি স্ক্রিনিং সিস্টেম বাতিল করে এবং আবেদনকারী শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার যোগ্য কিনা তা নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষ বোর্ড থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা। দক্ষতার নামে, বিল সি-৮৬ যোগ্যতা নির্ধারণের ধাপটি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে এবং "কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি" ছাড়াই দাবিগুলো বাদ দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটি পরিত্যাগ করে। যখন দুই-পর্যায়ের স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া বাদ দেওয়ার জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল, তখন দাবির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি নেই তা নির্ধারণের জন্য একটি নতুন পরীক্ষা আইনে যুক্ত করা হয়েছিল। তবে এটি একটি ভিন্ন ভূমিকা পালন করেছিল: প্রাথমিক পর্যায়ে দাবিগুলো স্ক্রিন করার এর বদলে এটি ব্যর্থ দাবিদারদের সিদ্ধান্ত-পরবর্তী অধিকার সীমিত করার জন্য কাজ করেছিল যাদের দাবিগুলো কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়।<ref>''Rahaman v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2002 FCA 89, [2002] 3 FC 537, <[https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html?searchUrlHash=AAAAAQAaUmFoYW1hbiBhbmQgY3JlZGlibGUgYmFzaXMAAAAAAQ&resultIndex=1 https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html]> at paras 14-16.</ref>
* সিআরডিডিকে মৌখিক শুনানি না করেই দাবি গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়, এটিকে "দ্রুত প্রক্রিয়া" বলা হত। দ্রুত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, একজন RHO দাবিদারের সাক্ষাৎকার নেবেন এবং একজন সিআরডিডি সদস্যের কাছে সুপারিশ করবেন যে দাবিটি শুনানি ছাড়াই গ্রহণ করা উচিত কিনা অথবা শুনানির প্রয়োজন আছে কিনা। ১৯৯৩ সালে সমস্ত দাবির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এই দ্রুত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছিল। দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/RPD Rule 23 - Allowing a Claim Without a Hearing|কানাডীয় রিফিউজি প্রসিডিওর/আরপিডি রুল ২৩ - শুনানি ছাড়াই দাবি অনুমোদন করা#শুনানি ছাড়াই দাবি গ্রহণের জন্য বোর্ডের প্রক্রিয়াগুলোর ইতিহাস কী?]]
* শরণার্থী বিভাগের প্রতি পনেরো সদস্যের জন্য একজন সিএম অনুপাতে শরণার্থী বিভাগের পূর্ণ-সময়ের সদস্যদের মধ্য থেকে সমন্বয়কারী সদস্য (সিএম) হিসেবে মনোনীত করার ক্ষমতা জিআইসিকে দেওয়া হয়েছিল।
* বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা চাওয়ার প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইআরবি তৈরির সময় থেকে, ফেডারেল আপিল আদালতের প্যানেলগুলো বিচারিক পর্যালোচনা পরিচালনা করে আসছিল। সেখানে তারা অনুমতি মঞ্জুর করেছিল। ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ সালে ''ফেডারেল কোর্টস অ্যাক্টের'' সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তির সিদ্ধান্তের উপর বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৯৩ সালে ''অভিবাসন আইনের'' সংশোধনী কার্যকর হয় যা কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগের সমস্ত সিদ্ধান্তের উপর ট্রায়াল বিভাগের একক বিচারকদের মূল বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার প্রদান করে। বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার জন্য বহু-সদস্যের প্যানেল থেকে একক বিচারকের দিকে স্থানান্তর ছিল এই উচ্চ ভলিউম সিস্টেমের জন্য বাস্তবায়িত আরেকটি দক্ষতার পরিমাপ।
এই সময়ে নতুন আইআরবি অনুশীলনের নিয়মও তৈরি করা হয়েছিল, ''কনভেনশন রিফিউজি ডিটারমিনেশন ডিভিশন রুলস'' SOR/৯৩-৪৫।
১৯৯৪ সালে বাস্তববাদের প্রতি ছাড় হিসেবে, সরকার কিছু প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের তাদের মূল দেশে, বিশেষ করে চীন থেকে আসা কিছু দাবিদারদের ফেরত না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি ডিফার্ড রিমুভাল অর্ডারস ক্লাস (DROC) চালু করে এটি করেছে। এটি কিছু শর্ত সাপেক্ষে তিন বছর পরেও অপসারণ না করা প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের ল্যান্ডিংয়ের জন্য আবেদনগুলোকে অনুমোদন করে। এই ক্লাসটি বিশেষভাবে অনিশ্চিত অবস্থায় থাকা প্রায় ৪,৫০০ চীনা দাবিদারের পরিস্থিতি সমাধানের লক্ষ্যে করা হয়েছিল। এইভাবে, এই উদ্যোগটি ছিল একটি আপস: তিয়ানানমেন স্কয়ার হত্যাকাণ্ডের পর চীনে নির্বাসন স্থগিত হওয়ার সময় অপেক্ষা করা দাবিদারদের বিদ্যমান জমা পড়া দাবিদারদের জন্য এক ধরণের সাধারণ ক্ষমা প্রদান। একই সাথে ঘোষণা করা হয়েছিল যে নতুন প্রত্যাখ্যাত দাবিদারদের নির্বাসন পুনরায় শুরু হবে। পরবর্তীতে কানাডা নিয়মিত পদ্ধতির মাধ্যমে স্বীকৃতি না পাওয়া দাবিদারদের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও চালু করে। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে সরকার আনডকুমেন্টেড কনভেনশন রিফিউজিজ ইন কানাডা ক্লাস (UCRCC) চালু করে। এটি সোমালিয়া এবং আফগানিস্তানের কিছু শরণার্থীর জন্য একটি উপায় প্রদান করে যারা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য তাদের পরিচয় সন্তোষজনকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে অক্ষম ছিল, কিন্তু তাদের শরণার্থী নির্ধারণের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের অপেক্ষা আরোপ করে।
অধিকন্তু, শরণার্থী শুনানি কর্মকর্তার পদটিকে ব্যবস্থার দক্ষতা এবং সততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা অব্যাহত ছিল। এই পদটি সিআরডিডি সদস্যদের গবেষণা পরিচালনা এবং শুনানির সময় প্রশ্নোত্তরের জন্য দায়িত্ব পালনে সহায়তা করেছে। ১৯৯৫ সালে পদটির নাম পরিবর্তন করে শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা রাখা হয়।
অধিকন্তু, কানাডায় আশ্রয় প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য, পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থাকে পেশাদারীকরণ করার জন্য এবং কানাডায় আশ্রয় দাবি কম আকাঙ্ক্ষিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>আপিলের সীমাবদ্ধতা:</u> আইআরবি প্রতিষ্ঠার সময় কার্যকর করা একটি দক্ষতা পরিমাপ ছিল যে শরণার্থী দাবিদারদের এই সংশোধিত ব্যবস্থার অধীনে তাদের দাবির প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আর আপিল করার ক্ষমতা ছিল না। ডেভিড ম্যাটাস লিখেছেন, নতুন প্রক্রিয়ার এই দিকটি সেই সময়ে শরণার্থীদের জন্য আইনি পরামর্শদাতাদের দ্বারা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। যেসব দাবিদারদের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, তারা ফেডারেল আদালতে বিচারিক পর্যালোচনার আশ্রয় নিতে থাকে। তবে ১৯৮৯ সালে ''ইমিগ্রেশন আইনের'' সংশোধনীতে ছুটির প্রয়োজনীয়তা চালু করা হয়েছিল ''।'' এর ফলে, ফেডারেল আদালতে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার আবেদনকারীদের তাদের মামলার শুনানির জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছিল। প্রায় ১০ শতাংশ মামলায় আপিলের অনুমতি মঞ্জুর করা হয়েছে এবং ছুটি প্রত্যাখ্যানের কোনও কারণ মঞ্জুর করা হয়নি।
* <u>দাবি করার যোগ্যতার উপর বিস্তৃত বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯৪ সালে নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রীকে গুরুতর অপরাধের ভিত্তিতে একজন শরণার্থী আবেদনকারীর বিরুদ্ধে বিপদের মতামত জারি করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। এর ফলে শরণার্থী কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়, মামলাটি আইআরবির এখতিয়ার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিল সি-৪৪ ১০ জুলাই, ১৯৯৫ তারিখে কার্যকর হয়। এটি শরণার্থী বিভাগে দাবি পাঠানোর যোগ্যতা পুনর্নির্ধারণের বিধান রাখে। এর ফলে সিআরডিডি-তে দাবির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা সম্ভব হয়েছিল এবং যদি কোনও ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তা দাবিটি সিআরডিডি-তে পাঠানোর অযোগ্য বলে নির্ধারণ করেন, তাহলে সিআরডিডি-তে দাবির রেফারেল প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছিল।
* <u>দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থানের উপর বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার শরণার্থী দাবিদারদের কাজ করতে বাধা দেয়। ১৯৯০-এর দশকের পরে এটি পরিবর্তন করা হয়েছিল।
* <u>দুই ব্যক্তির প্যানেল থেকে এক ব্যক্তির প্যানেলে স্থানান্তর করুন:</u> কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগটি মূলত ধারণা করা হয়েছিল, শরণার্থী দাবিদারদের দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্যানেলের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তাদের মধ্যে কেবল একজনকে তাদের আবেদন সফল করার জন্য তাদের দাবি গ্রহণ করতে হবে। পূর্ববর্তী শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির তিন সদস্যের প্যানেল এবং পূর্ববর্তী ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের তিন সদস্যের প্যানেলের তুলনা করলে, সেই সময়ে এটি কে একটি খরচ-সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হিসেবে কল্পনা করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে দুই সদস্যের প্যানেল থেকে এক সদস্যের প্যানেলে স্থানান্তরের জন্য আরও একটি খরচ-সাশ্রয়ী উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তী দশক পর্যন্ত এক-ব্যক্তি প্যানেলকে আদর্শ করার জন্য আইন পরিবর্তন করা হবে না, তবুও ১৯৯০-এর দশকে ''কার্যত'' এক-ব্যক্তি প্যানেল আদর্শ হয়ে ওঠে। সেই সময়কালে, শরণার্থী নির্ধারণ সাধারণত একজন সদস্য একা বসে করতেন, আবেদনকারীর "সম্মতি" নিয়ে। ক্যাথেরিন ডাউভার্গেন লিখেছেন যে ২০০২ সালে আইন সংশোধনের সময়। এটি এই অনুশীলনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপ দেয়, দুই ব্যক্তির প্যানেল ইতিমধ্যেই বিরল হয়ে পড়েছিল।
* <u>অপসারণ কার্যকর করার উপর বর্ধিত মনোযোগ:</u> নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন কানাডা শরণার্থী ব্যবস্থার মধ্যে অপসারণকে একটি মূল হাতিয়ার হিসাবে বর্ণনা করে।
* <u>অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণ:</u> আইআরবির সামনে ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম নন-আইনজীবী অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৬ সালে অন্টারিওর সেনেকা কলেজে একটি ইমিগ্রেশন প্র্যাকটিশনারস সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম তৈরি করা। এটি কানাডায় এই ধরণের প্রথম প্রোগ্রাম ছিল।
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ==
একটা সময় ছিল যখন শরণার্থী "সমস্যা" সমাধানযোগ্য বলে মনে করা হত। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় মূলত মাত্র তিন বছরের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক এই পদটি নবায়ন করা হয়, কিন্তু কেবল টানা পাঁচ বছরের জন্য। ইউএনএইচসিআরের অস্থায়ী প্রকৃতি এবং বারবার নবায়ন ২০০৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সেই সময়ে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ করে এবং শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করে যা "শরণার্থী সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত" অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে।<ref name=":29" /> শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, ইউএনএইচসিআর-এর ম্যান্ডেটের উপর থেকে সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ এই ধরনের একটি প্রস্তাবের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার স্বীকৃতি দেয়।<ref name=":29" /> শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে, আশ্রয় দাবিদারদের আগমন আরও দূরবর্তী স্থান থেকে এবং একই সাথে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমান ভ্রমণের খরচ হ্রাস এবং স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির ফলে এটি ঘটেছে। এর সাথে সাথে (যেমন বার্লিন প্রাচীরের পতন) নাগরিকদের তাদের রাজ্য ত্যাগ করার ক্ষমতার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপকারী দেশের সংখ্যা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।
এর জবাবে, ব্রিদ নি ঘ্রাইনের ভাষায়, রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করার জন্য এবং শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা সীমিত করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে "সৃজনশীল" উপায় ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে শরণার্থীদের তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ কমানো। এটি তিনি "তুলনামূলকভাবে অদৃশ্য - এবং তাই রাজনৈতিকভাবে সমীচীন ''- অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থা"<ref name=":3" /> বলে অভিহিত করেছেন। এটি সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কানাডা ক্রমবর্ধমান পরিমাণে প্রয়োগ করেছে। কানাডার ভৌগোলিক অবস্থান। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং তিনটি মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য তার অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশে দাবিদারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিম্নলিখিত ''অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থাগুলোর দিকে ঝুঁকছে:
* সীমাবদ্ধ ভিসা নীতি: ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে কানাডায় অন্যান্য দেশ থেকে অনেক কম সরাসরি ফ্লাইট ছিল এবং পশ্চিম গোলার্ধের কোনও দেশের জন্য এটি র কোনও ভিসার প্রয়োজন ছিল না। এর বদলে কানাডায় অনেক ভ্রমণকারীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট পরিবর্তন করতে হয়েছিল, এমন কিছু যা সাধারণত সেই দেশে ভিসার প্রয়োজন হয়। ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে, অন্যান্য দেশ থেকে কানাডায় সরাসরি ফ্লাইটগুলো বসন্ত শুরু করে এবং কানাডা কানাডায় একটি আশ্রয় ব্যবস্থা বাস্তবায়ন শুরু করে। কানাডা একই সাথে কানাডায় প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন শুরু করে। এটি আশ্রয় প্রক্রিয়ায় অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করে। ১৯৮৭ সালে সরকার বাধ্যতামূলক করতে শুরু করে যে কানাডা হয়ে অন্য দেশে ভ্রমণকারী ব্যক্তিদের কানাডার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রানজিট ভিসা থাকতে হবে যদি তারা এমন কোনও দেশ থেকে আসে যার নাগরিকদের কানাডায় ভ্রমণের জন্য দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয়। এই জাতীয় ভিসার প্রয়োজনীয়তাগুলো এই পর্যায়ে প্রসারিত হয়েছিল যে আজ "শরণার্থী উত্পাদনকারী" হিসাবে বিবেচিত রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদের সাধারণত দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয় যা "পাওয়া অত্যন্ত কঠিন" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সোমালিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্তান এবং সিরিয়ার মতো শরণার্থী উৎপাদনকারী দেশগুলো থেকে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
* ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞা: ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞাগুলো এয়ারলাইনস এবং অন্যান্য পরিবহন পরিষেবাগুলোর উপর আরোপিত বাধ্যবাধকতাগুলোকে বোঝায় যাতে তারা ভিসা ছাড়া কাউকে পরিবহন না করে, যদি তাদের প্রয়োজন হয়। দ্য নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন বিভাগ একটি ক্যারিয়ারকে "মোটা" প্রশাসনিক ফি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে অনুপযুক্ত নথি নিয়ে আগত প্রতিটি ভ্রমণকারীর জন্য।
* মানব পাচারের অপরাধীকরণ: কানাডা আশ্রয়ের দাবি প্রতিরোধের উপায় হিসাবে মানব পাচারকে অপরাধী করার বিধান ব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরূপ মার্কিন মানবিক কর্মীর বিরুদ্ধে চোরাচালানের জন্য অভিযোগ আনা (আইআরপিএর অধীনে একটি অপরাধ যা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহন করে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে বারোজন হাইতিয়ান আশ্রয়প্রার্থীকে পরিবহনের জন্য। তদুপরি, ১৯৯৩ সালে বিল সি -৮৬ এর উত্তরণ মানদণ্ডের একটি প্রসারিত তালিকা প্রতিষ্ঠা করেছিল যার দ্বারা কোনও আবেদনকারীকে অগ্রহণযোগ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে।
* বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তা: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার আশ্রয় আবেদনকারীদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার একটি প্রয়োজনীয়তা চালু করেছিল। এরপরে সরকার ভিসা আবেদনকারীদের জন্য বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তাও চালু করে এবং ধীরে ধীরে প্রসারিত করে; ২০১৮ এর শেষের দিকে, ভিসার প্রয়োজন এমন সমস্ত দর্শনার্থীদেরও বায়োমেট্রিক্স প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের সাথে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তির অংশ হিসাবে এই জাতীয় বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী ব্যবহারের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালের ডিসেম্বরের কানাডা-মার্কিন স্মার্ট সীমান্ত ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক সনাক্তকারী বিকাশ করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দুই দেশের মধ্যে '''শেয়ারিং অব ইনফরমেশন অন অ্যাসাইল''<nowiki/>''াম অ্যান্ড রিফিউজি স্ট্যাটাস ক্লেইমস''' শীর্ষক একটি চুক্তিতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক ও বায়োগ্রাফিক তথ্যসহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, নিয়মতান্ত্রিক তথ্য ভাগাভাগি করার সুযোগ দেওয়া হয়।
* আশ্রয় নীতির প্রথম দেশ: কানাডার অভিবাসন আইন ১৯৮৮ সাল থেকে নিরাপদ দেশের নামকরণের অনুমতি দিয়েছে। এই বিধানটি ২০০৪ সালে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি অনুমোদনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল (নীচে দেখুন)।
* কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার এবং সুরক্ষা স্ক্রিনিং: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার সহ শরণার্থী দাবির সংখ্যা হ্রাস করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নকশা চালু করেছিল। এরপর ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন অভিবাসন মন্ত্রী ঘোষণা দেন, কানাডায় আসা শরণার্থীদের জন্য ফ্রন্ট-এন্ড সিকিউরিটি স্ক্রিনিং (এফইএসএস) কৌশলের আরও বেশি ব্যবহার করা হবে। এফইএসএস স্ক্রিনিং সম্পর্কে আরও বিশদ এখানে পাওয়া যায়: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আরপিডি বিধি ৫৪ - কোনও কার্যধারার তারিখ বা সময় পরিবর্তন করা # রেগুলেশন ১৫৯.৯ (৩) (বি): আইনের ধারা ৩৪ থেকে ৩৭ সম্পর্কিত তদন্ত এবং অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াটিকে এফইএসএস প্রক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়।'''<ref>Obiora Chinedu Okafor, ''Refugee Law After 9/11: Sanctuary and Security in Canada and the United States'', UBC Press 2020, Law and Society Series, <nowiki>ISBN 9780774861465</nowiki>, page 91.</ref>'''
* পুশব্যাক অপারেশন: ১৯৮০ এর দশকের ''ইমিগ্রেশন আইনে'' মন্ত্রীর পক্ষে কানাডার জলে প্রবেশ না করার জন্য একটি জাহাজকে নির্দেশ দেওয়ার কর্তৃত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল যেখানে মন্ত্রী যুক্তিসঙ্গত ভিত্তিতে বিশ্বাস করেছিলেন যে জাহাজটি আইন বা বিধিবিধান লঙ্ঘন করে কোনও ব্যক্তিকে কানাডায় নিয়ে আসছে; এই বিধানটি ছয় মাসের "সূর্যাস্ত ধারা" সাপেক্ষে ছিল এবং এটি র মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ব্যবহার করা হয়নি। সাম্প্রতিককালে, পুশব্যাক এবং ইন্টারসেপশন অপারেশনগুলো বিদেশে ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৮ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা শ্রীলঙ্কা থেকে ১৯২ জন তামিল ব্যক্তিকে বহনকারী একটি নৌকার সেনেগালিজ নৌবাহিনী দ্বারা বাধা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তাদের কানাডায় পৌঁছানোর আগেই কলম্বোতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ কানাডার মানব পাচারের খাম কর্মসূচির অর্থায়নে ৮৪ জন শ্রীলঙ্কান তামিলকে বহনকারী অ্যালিসিয়াকে আটক করেছিল। মানব পাচারের খামের তহবিল ২০১২ সালে ঘানায় রুভুমার আটকানোকেও সমর্থন করেছিল। এটি কর্তৃপক্ষের মতে টোগো এবং বেনিনের জন্য আবদ্ধ ছিল। সেখানে শত শত শ্রীলঙ্কান শরণার্থী আটকা পড়েছিল।<ref>Idil Atak and Claire Ellis, ''The externalization of Canada’s border policies: extending control, restricting mobility'', in Ervis Martani and Denise Helly, ''Asylum and resettlement in Canada: Historical development, successes, challenges and lessons'', Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 122.</ref>
* বিদেশে হস্তক্ষেপ: সিবিএসএ কর্মীরা মাইগ্রেশন ইন্টিগ্রিটি অফিসারদের বিদেশে কাজ বলে অভিহিত করেছেন। এরা কানাডায় ভ্রমণ করছেন তাদের যথাযথ ভ্রমণের ডকুমেন্টেশন রয়েছে তা নিশ্চিত করে। বিদেশে কানাডার হস্তক্ষেপ প্রোগ্রামগুলো তার একাধিক সীমান্ত কৌশল (এমবিএস) নামে পরিচিত একটি উপাদান। এমবিএসের অধীনে, লিয়াজোঁ অফিসারদের কানাডার অনুমোদন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কানাডাগামী বিমান বা নৌকায় উঠতে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালে সরকার জানিয়েছিল যে বিশ্বব্যাপী ৪৯ টি স্থানে ৬৩ জন কর্মকর্তা ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ধরনের লিয়াজোঁ অফিসাররা ৮৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে অফশোরে আটক করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ৭,২০৮ জন, বেশিরভাগ রোমানিয়া, মেক্সিকো, ভারত, হাঙ্গেরি এবং ইরান থেকে "অনুপযুক্ত ডকুমেন্টেশন" এর কারণে কানাডায় ফ্লাইটে উঠতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 88.</ref>
* ট্রানজিট দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থা এবং সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল এবং সহায়তা: কানাডা প্রস্থান রোধ করতে গ্লোবাল সাউথে সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল দেয়। এটি ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অফ কানাডার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদানের জন্য প্রেরণ করে; সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন যে এটি "নিজেই এক ধরণের নিয়ন্ত্রণ নীতি হিসাবে কাজ করে।<ref>Senate of Canada, ''Ripped from Home: The Global Crisis of Forced Displacement,'' December 2024, <https://sencanada.ca/content/sen/committee/441/RIDR/Reports/GlobalForcedDisplacement_e.pdf>, page 54.</ref>
রেবেকা হ্যামলিন আশ্রয় দাবি রোধের জন্য এই ব্যবস্থার উত্থানকে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: "প্রতিরোধ ব্যবস্থার উত্থান আংশিকভাবে অপ্রত্যাশিত পরিণতির গল্প। কারণ প্রতিটি দেশের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মুহূর্তে করা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভবিষ্যত প্রজন্মের নীতিনির্ধারকদের তাড়িত করে। যদি এই দেশগুলোর নেতারা বর্তমান পরিস্থিতির আর্থিক, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো আগে থেকেই অনুমান করতেন, তাহলে তারা হয়তো সেই সময়ে মূলত একটি বিমূর্ত প্রতিশ্রুতি দিতে এতটা আগ্রহী ছিলেন না।"
== ২০০২ সালের অভিবাসন আইন থেকে আইআরপিএ-তে স্থানান্তর ==
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে, ফেডারেল সরকার তৎকালীন ''অভিবাসন আইন সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া শুরু করে''। এর মধ্যে দীর্ঘ জনসাধারণের পরামর্শও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ''"নট জাস্ট নাম্বারস: আ কানাডীয় ফ্রেমওয়ার্ক ফর ফিউচার ইমিগ্রেশন"'' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। সেখানে সংস্কারকৃত ব্যবস্থার জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু গৃহীত হয়েছিল এবং অন্যগুলো (যেমন আইআরবি থেকে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের এখতিয়ার অপসারণ এবং এটি বেসামরিক কর্মচারীদের কাছে স্থানান্তর করা ) গৃহীত হয়নি। ফলস্বরূপ প্রণীত ''ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট'' ("আইআরপিএ") ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি আইন এবং ১৯৭৮ সালের পর কানাডায় অভিবাসন আইনের প্রথম সম্পূর্ণ সংশোধন। এটি বিল সি-১১ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর শিরোনাম ছিল ''কানাডায় অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত বা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের শরণার্থী সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত একটি আইন।'' আইআরপিএ ১ নভেম্বর, ২০০১<ref name=":88" /> (অথবা ডিসেম্বর ২০০১ ) তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে এবং ২৮ জুন, ২০০২ তারিখে কার্যকর হয়। জুন মাসে ''ইমিগ্রেশন আইন'' থেকে আইআরপিএ-তে স্থানান্তর কানাডায় আশ্রয় নীতির একটি নতুন যুগের সূচনা করে - যা প্রশাসনিক বোঝা কমানোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বর্ণনা করা হয়েছে। আইআরপিএ-র খসড়া প্রণয়ন এবং উন্নয়নের সময়, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিচালনার জন্য একটি আইন এবং শরণার্থী আইন পরিচালনার জন্য একটি পৃথক আইন থাকা উচিত কিনা এই প্রশ্নের প্রতি যথেষ্ট জনসাধারণের মনোযোগ নিবদ্ধ করা হয়েছিল। অভিবাসন এবং শরণার্থী আইনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে উদ্বেগের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে সমর্থন করা এই ধারণাটি শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল; তবে আইনের নতুন শিরোনাম এবং শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত আইনের একটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠা এই উদ্বেগকে প্রতিফলিত করে। নতুন আইনী কাঠামোর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে
* কাঠামো আইন: পূর্ববর্তী আইনের তুলনায়, আইআরপিএকে কাঠামো আইন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল, প্রবিধানগুলোতে আরও বিশদ পাওয়া যাবে।
* শরণার্থী সুরক্ষার জন্য সুসংহত ভিত্তি: আইআরপিএ শরণার্থী সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী ব্যক্তিদের বিভাগগুলো প্রসারিত করেছে। প্রাক্তন অভিবাসন আইনের অধীনে, আইআরবিতে স্পষ্টভাবে সুরক্ষার অধিকারী একমাত্র শ্রেণির ব্যক্তি ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি "কনভেনশন শরণার্থী" এর সংজ্ঞার মধ্যে পড়েছিলেন। আইআরপিএ কভারেজের পরিধি প্রসারিত করেছে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যারা তাদের জাতীয়তার দেশে বা প্রাক্তন অভ্যাসগত বাসস্থানে নির্বাসনের পরে নির্যাতন, মৃত্যু এবং নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। কানাডা ১৯৮৭ সালে ''নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশন'' অনুমোদন করেছিল। তবে এই মুহুর্ত পর্যন্ত কানাডার দেশীয় আইনে এটি সরাসরি প্রয়োগ করেনি''।'' রেবেকা হ্যামলিন লিখেছেন যে ২০০২ সালে ভোটের আগে আইনটি নিয়ে আলোচনা করার সময় সংসদ আইআরপিএ ধারা ৯৭ প্রবর্তনকে স্মরণীয় বলে মনে করেছিল এমন পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও প্রমাণ নেই। বিলটি নিয়ে যখন বিতর্ক চলছিল, তখন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান সংসদ সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আইআরপিএ "আমাদের পদ্ধতিগুলো সহজতর করার ক্ষমতা দেয়, এটিতে যাদের আমাদের সুরক্ষার সত্যিকারের প্রয়োজন তাদের আরও দ্রুত কানাডায় স্বাগত জানানো হবে এবং যাদের সুরক্ষার প্রয়োজন নেই তাদের আরও দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হবে। এই স্ট্রিমলাইনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরপরই, আইআরবি আইনী পরিষেবা বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য ধারা ৯৭ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে একটি দীর্ঘ গাইড তৈরি করেছিল; গাইডটিতে বলা হয়েছে যে পূর্ববর্তী "খণ্ডিত" এবং "বহুস্তরীয় পদ্ধতির" "বিলম্ব এবং অসঙ্গতি" এড়াতে এই সিদ্ধান্তগুলো আইআরবি ম্যান্ডেটের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
* আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে সম্মতির উপর ফোকাস করুন: আইআরপিএ কানাডার অভিবাসন আইনে একটি বিধান প্রবর্তন করেছিল যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে এটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হবে এবং প্রয়োগ করা হবে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে মেনে চলে যেখানে কানাডা স্বাক্ষর করে।
* সিআরডিডি থেকে আরপিডিতে স্থানান্তর: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগ (সিআরডিডি) এর নামকরণ করা হয়েছিল শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ (আরপিডি), এই সত্যটি প্রতিফলিত করার জন্য যে এখন শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একীভূত ভিত্তিতে এখতিয়ার রয়েছে। অ্যাডজুডিকেশন ডিভিশনের নামও পরিবর্তন করে ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি) রাখা হয়।
* আরএডি তৈরি: আইআরপিএ শরণার্থী আপিল বিভাগ (আরএডি) তৈরি করেছে। এটি তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতিবাচক সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করবে, যদিও এটি পুরোপুরি বাস্তবায়নে দশ বছর সময় লেগেছিল। বিশেষত, আইনটি পাস হওয়ার পর ''নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডা'' ঘোষণা করেছিল যে "সিস্টেমের উপর চাপ" এর ফলে আরএডি বাস্তবায়নে বিলম্ব হবে।
* একক সদস্যের আরপিডি প্যানেলে স্থানান্তর করুন: যেহেতু আইআরবি ব্যাকলগ একটি বিশাল উদ্বেগ ছিল, আরএডিকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীদের সময়টি দুই সদস্যের প্যানেল থেকে একক সদস্যের শুনানিতে (বা, মাঝে মাঝে, তিন সদস্যের আরপিডি প্যানেল) স্থানান্তরের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল যাতে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাধারণত বোর্ডের অর্ধেক সদস্যের প্রয়োজন হয়। এটি দুই সদস্যের সিআরডিডি প্যানেল বা পূর্বে বিদ্যমান সম্মতিতে একক সদস্য সিআরডিডি প্যানেল ব্যবহারের বিপরীতে ছিল।
* পিআরআরএ: আইআরপিএ কানাডা ক্লাসে পোস্ট-ডিটারমিনেশন রিফিউজি ক্লেইমারেন্ট (পিডিআরসিসি) থেকে প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (পিআরআরএ) প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত হয়েছে। পদ্ধতিটি দাবিদারদের দ্বিতীয় শরণার্থী দাবি করতে অক্ষমতার জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়। এমনকি যখন প্রথম দাবি অস্বীকার করার পরে মূল দেশের পরিস্থিতিতে পরিবর্তন ঘটেছিল। পিআরআরএ যেভাবে কাজ করে তা হ'ল একজন প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থী তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরে শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিবর্তন হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে পারেন। পিআরআরএ হ'ল লিখিত জমা দেওয়ার ভিত্তিতে করা আবেদনের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ২০০৩ সালে সরকার যখন সিবিএসএ তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল, মূলত পরিকল্পনাটি ছিল পিআরআরএর দায়িত্ব তাদের কাছে হস্তান্তর করা। তবে এনজিওগুলোর চাপের পরিপ্রেক্ষিতে পিআরআরএর দায়িত্ব নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডার সাথে থেকে যায়। নীচে আলোচনা করা হয়েছে, ২০১২ সালে দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করা হয়েছিল। একই সময়ে, আইআরপিএর আগে, শরণার্থী দাবিদারদের কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য কানাডার বাইরে থাকলে সিআরডিডি-তে দ্বিতীয় দাবি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে দাবিদাররা দেশ ছেড়ে ফিরে এলেও আরপিডিতে কেবল একটি দাবি জমা দিতে পারে।
* চেয়ারপার্সনের ক্ষমতার ব্যাখ্যা: সমন্বয়কারী সদস্যদের মনোনীত করার ক্ষমতা সহ আইআরবি চেয়ারপারসনের ক্ষমতাগুলো স্পষ্ট এবং যুক্ত করা হয়েছিল; কতিপয় ক্ষমতা অর্পণ করা; একটি বিভাগে জিআইসি-নিয়োগকারীদের নিয়োগ করা; আইআরবি সদস্যরা যাতে দক্ষতার সাথে এবং অযৌক্তিক বিলম্ব ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া; এবং, সদস্যদের লিখিতভাবে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা ছাড়াও চেয়ারপারসনকে এখন সদস্যদের তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য আইআরবি সিদ্ধান্তগুলোকে "আইনশাস্ত্র গাইড" হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষমতাও ছিল।
* নিরাপত্তা বিধান বৃদ্ধি: শারিন আইকেন, এট। আল, লিখেছেন যে আইআরপিএ দ্বারা সংকেত দেওয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি হ'ল এটি কানাডীয় অভিবাসন আইনে একটি উল্লেখযোগ্য সুরক্ষা মোড় প্রদর্শন করেছে। তারা উল্লেখ করেছেন যে "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ এর হামলার তাত্ক্ষণিক পরিণতিতে পাস হওয়া আইনটিতে এটি খুব কমই আশ্চর্যজনক ছিল। পিটার শোলার লিখেছেন যে সরকার শরণার্থীদের উপর আরও কঠোর আইন প্রবর্তনের জন্য আইআরপিএ প্রায় বাতিল করে দিয়েছিল, কিন্তু অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান শেষ পর্যন্ত আইআরপিএ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই আইনে বেশ কয়েকটি সুরক্ষা সম্পর্কিত ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
** দাবিদারদের আটক করার ক্ষমতা বৃদ্ধি: আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের আটক করার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব প্রসারিত করেছিল যেখানে তারা ফ্লাইটের ঝুঁকি, জনসাধারণের জন্য বিপদ এবং / অথবা তাদের পরিচয় সন্দেহের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। এই প্রসারিত কর্তৃত্বের ফলে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' অনুসারে আটক ব্যক্তিদের সংখ্যা ২০০০ সালে ৮,০০০ জন থেকে ২০০৩ সালে প্রায় ১১,৫০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
** অপরাধের কারণে শরণার্থী সুরক্ষা দাবি করার অযোগ্যতার বিস্তৃত ভিত্তি: ১৯৭৬ সালের আইনের সাথে তুলনা করলে, আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণের যোগ্যতা সীমাবদ্ধ করে বিস্তৃত ভিত্তি অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
** চোরাচালান বিরোধী ব্যবস্থা: গত শতাব্দীতে গিল লোয়েশার মানব পাচার এবং আন্তঃমহাদেশীয় মানব পাচারের ক্ষেত্রে "নাটকীয় বৃদ্ধি" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আইআরপিএর বিধানগুলো প্রথমবারের মতো ''পালেরমো কনভেনশনের'' অধীনে কানাডার বাধ্যবাধকতাগুলো কার্যকর করেছে এবং এর ''চোরাচালান প্রোটোকল'' এবং ''ব্যক্তি, বিশেষত মহিলা ও শিশুদের পাচার প্রতিরোধ, দমন এবং শাস্তি দেওয়ার প্রোটোকল'' সহ। পাচারকারীরা অপরাধমূলক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের যোগ্য হয়ে ওঠে।<ref>Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 37 (Page 46 of PDF).</ref>
** মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ: আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে মন্ত্রীকে সমস্ত শরণার্থী দাবিতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
* আপিলের সীমাবদ্ধতা: ২০০২ সাল থেকে, ফেডারেল কোর্টের সিদ্ধান্তগুলো কেবল ফেডারেল কোর্ট অফ আপিলে আপিল করা যেতে পারে যদি ফেডারেল কোর্ট নিজেই প্রত্যয়িত করে যে তারা সাধারণ গুরুত্বের একটি গুরুতর প্রশ্ন জড়িত।<ref>Pia Zambelli, Internal Flight Anarchy: Points of Divergence from UNHCR Guidelines in Canadian Decision Making, ''International Journal of Refugee Law'', 2024;, eeae032, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae032, page 13.</ref>
যদিও সিস্টেমের উপরোক্ত সংস্কারটি যথেষ্ট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে, এটি ও উল্লেখযোগ্য যে ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে যুক্তিযুক্ত কিছু পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, সেই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছিল যে বিদেশী এবং অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির প্রক্রিয়াকরণকে একটি একক ব্যবস্থার মধ্যে একত্রিত করা উচিত যেখানে উভয়ের জন্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা ভাগ করে নেবেন। একটি একক ব্যবস্থা থাকা শরণার্থীর মর্যাদার বিষয়ে আরও সুসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, কিন্তু শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, "বিদেশী পুনর্বাসনে নির্বাচনের দিকের অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তা [উপেক্ষা করা হয়েছে]।" প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
== আইআরপিএ-পরবর্তী ব্যবস্থা ==
আইআরপিএ প্রবর্তনের পর সিস্টেমের অখণ্ডতা, দক্ষতা এবং আরপিডি-তে ব্যাকলগ কমানোর উপর অব্যাহত দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>বিপরীত ক্রম প্রশ্নোত্তর:</u> আইআরপিএ প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে আইআরবি চেয়ারপারসন শুনানি পরিচালনার উপর নির্দেশিকা ৭ জারি করেন। এটি আরপিডি শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করে। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশ ছিল, যদি মন্ত্রী পক্ষ না হন, তাহলে দাবিদার সহ যেকোনো সাক্ষীকে প্রথমে আরপিডি এবং তারপর দাবিদারের আইনজীবী জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
* রিভার্স-অর্ডার প্রশ্ন: আইআরপিএ প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে আইআরবি চেয়ারপারসন একটি শুনানি পরিচালনার বিষয়ে গাইডলাইন ৭ জারি করেছিলেন। এটি আরপিডি শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করেছিল। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশটি ছিল, মন্ত্রী যদি কোনও পক্ষ না হন তবে দাবিদার সহ যে কোনও সাক্ষীকে প্রথমে আরপিডি এবং তারপরে দাবিদারের পরামর্শদাতা দ্বারা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
* আরএডি প্রবর্তন করতে অস্বীকার: আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরের দশক ধরে, ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে খুব কাছাকাছি সাফল্য সহ আরএডি বাস্তবায়নে বাধ্য করে আরও একটি আইন পাস করার জন্য কিছু সংসদ সদস্যের বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা হয়েছিল।
* সিবিএসএ তৈরি: কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি অংশ হিসাবে কাজ করে জননিরাপত্তা কানাডা বিভাগ, এছাড়াও ২০০৩ সালে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মডেল অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছিল।
* ক্রমবর্ধমান মেধাভিত্তিক সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া: অতিরিক্তভাবে, বিভাগের কাউন্সিল সদস্যদের গভর্নর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ছিল। আইআরবিতে এই জাতীয় জিআইসি নিয়োগগুলো সর্বদা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, যদিও ১৯৯০ এর দশকে বাস্তবায়িত সংস্কারগুলো আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সদস্যদের নির্বাচন ও পুনরায় নিয়োগে অংশ নিতে আইআরবি পরিচালনার জন্য বৃহত্তর সুযোগ সরবরাহ করতে শুরু করে। এই প্রচেষ্টাগুলো ২০০ ২০০৬ সালের শীতে বিপরীত হয়েছিল যখন নবনির্বাচিত সরকার মন্ত্রীকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং বিচক্ষণতা দেওয়ার জন্য পরিবর্তনগুলো প্রবর্তন করেছিল। আইআরবির চেয়ারম্যান, জিন-গাই ফ্লিউরি, তার ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার আট মাস আগে এই সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেছিলেন। এর ফলে জল্পনা শুরু হয়েছিল যে তিনি প্রতিবাদে এটি করেছিলেন, আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে শক্তিশালী উকিল ছিলেন। একইভাবে, একজন ডেপুটি চেয়ার এবং আইআরবি নির্বাহী পরিচালকের প্রাথমিক প্রস্থান ছিল, পাশাপাশি ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডের বিচারকদের নির্বাচিত একটি উপদেষ্টা প্যানেলের পাঁচ সদস্যের পদত্যাগ ছিল। এরা একটি প্রকাশ্য চিঠি প্রকাশ করেছিল যা ইঙ্গিত দিয়েছিল যে তারা প্রতিবাদে পদত্যাগ করছে।
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির ভূমিকা: এসটিসিএ হ'ল দ্বি- বা বহু-পাক্ষিক চুক্তি যা শরণার্থীদের প্রথম দেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এটি তাদের চুক্তির অন্য রাষ্ট্র (গুলো) দলে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে। ১৯৮০ এর দশকে কানাডার ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে'' নিরাপদ তৃতীয় দেশের চুক্তির একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কানাডা পরবর্তী দশকগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই জাতীয় চুক্তি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছিল, প্রাথমিকভাবে সাফল্য ছাড়াই। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৩ সালে কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে ঘোষণা করার অভিপ্রায় নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে প্রবেশ করেছিল,[ তবে ১৯৯৮ সালে কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে সেই স্মারকলিপি অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করা হয়েছিল, আলোচনার লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ ডিজাইন করেছে, পরিত্যক্ত হচ্ছিল। ৯/১১ এর পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা সফলভাবে এই জাতীয় আলোচনা শেষ করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষত, ৫ ডিসেম্বর, ২০০২-এ, কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার এসটিসিএ স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিটি ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৪ এ কার্যকর হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডার অভিবাসন আইনে নিরাপদ তৃতীয় দেশের শাসন প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ''সদস্য দেশগুলোর'' মধ্যে বহুপাক্ষিক ডাবলিন রেগুলেশনের উপর ভিত্তি করে এই চুক্তি,[ বেশিরভাগ ব্যক্তিকে উভয় দেশে প্রবেশের নিয়মিত স্থলবন্দরে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে যদি তারা প্রথম অন্য একটিতে অবতরণ করে। এসটিসিএর তাত্ক্ষণিক প্রভাব ছিল কানাডায় অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা; চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে দাবি কমেছে ৪৯ শতাংশ। তবে এই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি। যারা কানাডার সীমান্তে দাবি করেছিলেন, তাদের জন্য বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ চুক্তির ব্যতিক্রমগুলোর মধ্যে একটি ফিট করা হয়েছিল - ২০০৫ সালে সীমান্তে করা ৪০৩৩ টি দাবির মধ্যে কেবল ৩০৩ শরণার্থী দাবিদারকে কানাডায় আবেদনের অযোগ্য হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
* ইউএনএইচসিআর এক্সকমের সম্প্রসারণ: কানাডা ইউএনএইচসিআর এক্সকমে বসা অব্যাহত রেখেছে। এর আকার ১৯৫০ এর দশকে ২৫ টি রাজ্য থেকে আজ ১০৬ এ বেড়েছে। ফলস্বরূপ, গিল লোশার লিখেছেন, এক্সকম খুব বড় এবং রাজনীতিকরণ হয়ে উঠেছে এবং এটি প্রায়ই কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা নয়।
* ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের নিয়ন্ত্রণঃ কানাডীয় সোসাইটি অফ ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস ২০০৪ সালে একটি ফি প্রদানের জন্য ইমিগ্রেশন পরামর্শদাতাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডায় এই জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পাশাপাশি, ২২শে জুন ২০০৬ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী হাউস অফ কমন্সে হেড ট্যাক্স এবং পূর্ববর্তী বর্জনীয় আইন দ্বারা প্রভাবিত চীনা-কানাডীয় সম্প্রদায়ের কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সরকার বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের, অথবা তাদের স্ত্রীদের। এরা হেড ট্যাক্স পরিশোধ করেছিলেন, তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০,০০০ ডলার দিতে সম্মত হয়েছিল; সেই সময়ে প্রায় ২০ জন জীবিত ছিলেন।
== ২০১০ এবং ২০১২ সালে শরণার্থী সংস্কার ==
২০১০ এবং ২০১২ সালে দুটি আইন শরণার্থী ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছিল, ''ব্যালেন্সড রিফিউজি রিফর্ম অ্যাক্ট'' (বিআরআরএ, ২০১০) এবং ''প্রোটেক্টিং কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট'' (PCISA, জুন ২০১২)। বিআরআরএ ২৯ জুন, ২০১০ তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে। এটি একটি সংখ্যালঘু সরকারের সময় সংসদে পাস হয়েছিল এবং আইআরপিএ-তে এর উল্লেখযোগ্য সংশোধনীর মধ্যে বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাবিত কিছু আপস ছিল। পরবর্তীতে ২রা মে, ২০১১ তারিখে একটি ফেডারেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনের পর ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে বিআরআরএ-এর উল্লেখযোগ্য বিধান কার্যকর হওয়ার আগে, সংসদে নতুন সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার বিআরআরএ সংশোধন করে। পরবর্তী সংশোধনীগুলো পিসিআইএসএ আকারে এসেছিল। পিসিআইএসএ-এর মূল অংশগুলো মূলত ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট (হিউম্যান স্মাগলার্স অ্যাক্ট) থেকে অপব্যবহার প্রতিরোধের'' অংশ ছিল। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে বিল সি-৪৯ নামে চালু করা হয়েছিল। ২০১১ সালের মে মাসে কানাডীয় ফেডারেল নির্বাচনের ফলে বিল সি-৪৯ অর্ডার পেপারে মারা যাওয়ার পর নবগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ২০১১ সালের জুন মাসে বিল সি-৪ হিসাবে বিধানগুলো পুনরায় চালু করে। এই ''মানব পাচারকারী আইনটি'' ২০১২ সালের জুন মাসে বিল সি-৩১, পিসিআইএসএ-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
নীল ইয়েটস বর্ণনা করেছেন, এই সংস্কারগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল দাবিগুলোর দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ। এর লক্ষ্য ছিল ''প্রকৃত'' দাবিদারদের আরও দ্রুত অনুমোদন দেওয়া এবং ব্যর্থ দাবিদারদের, আইআরবির নতুন শরণার্থী আপিল বিভাগে প্রবেশাধিকারের পর কানাডা থেকে আরও দ্রুত সরিয়ে নেওয়া। এটি কে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* শুনানির জন্য আইনী সময়সীমা: আইনটিতে শরণার্থী শুনানির সময় নির্ধারণের জন্য ত্বরান্বিত সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত ছিল,[ তাদের দাবি করার ৬০০ দিনের মধ্যে শুনানি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সহ। আরপিডি শুনানির জন্য এই প্রাথমিক তারিখটি একজন ইমিগ্রেশন অফিসার দ্বারা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
* রিফিউজি আপিল ডিভিশন (আরএডি) বাস্তবায়ন। এই সংস্কারের অংশ হিসাবে, আরএডি ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ এ কার্যকর হয়েছিল। আরএডি, এই মুহুর্তে বাস্তবায়িত হিসাবে, আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার সময় আরএডির আইনী বিধানগুলো মূলত কার্যকর হওয়ার সময় প্রণীত হওয়ার কল্পনার চেয়ে বৃহত্তর ম্যান্ডেট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আইআরপিএ মূলত মন্ত্রী এবং আপিলের বিষয় ব্যক্তিকে কেবল লিখিত জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। পরবর্তীকালে এটি বিআরআরএ দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল যাতে তারা দালিলিক প্রমাণও জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়, যদিও "কেবলমাত্র প্রমাণ যা তাদের দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে উদ্ভূত হয়েছিল বা যা যুক্তিসঙ্গতভাবে উপলভ্য ছিল না, বা উপস্থাপিত পরিস্থিতিতে ব্যক্তিটি যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রত্যাশিত হতে পারে না।
* সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী: আইআরবির শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে প্রথম স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগকারীদের বিপরীতে ''পাবলিক সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্ট'' অনুসারে নিযুক্ত সরকারী কর্মচারী হতে শুরু করেছিলেন। গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগপ্রাপ্তদের থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে সরকারের নিজস্ব অভিবাসন-আইন উপদেষ্টা কমিটির একটি মূল সুপারিশ প্রতিফলিত হয়েছে, যথা যোগ্য সরকারী কর্মচারীদের ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে নাম দেওয়া উচিত, রাজনৈতিক নিয়োগকারীদের নয়।
* শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তার পদ বিলোপ: শরণার্থী শ্রবণ কর্মকর্তা (<abbr>আরএইচও),</abbr> শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা (<abbr>আরসিও</abbr>) এবং শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তা (<abbr>আরপিও</abbr>) নামে বিভিন্নভাবে চলে যাওয়া একটি পদ এই ভিত্তিতে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যে দক্ষতা থাকবে তার ভিত্তিতে এটি আর প্রয়োজন হবে না। এই ভূমিকাগুলো এর আগে শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করে সদস্যদের সহায়তা করেছিল।
* ডেজিগনেটেড কান্ট্রিজ অফ অরিজিন (ডিসিও) এর একটি তালিকা তৈরি করা, যে দেশগুলো সাধারণত শরণার্থী-উত্পাদনকারী হিসাবে বিবেচিত হতো না এবং যেখানে এই জাতীয় দাবিগুলো প্রতিরোধ ও ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপগুলো ফলস্বরূপ আইন করা হয়েছিল। ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম প্রোটেকটিং অ্যাক্টের'' অংশ হিসাবে ২০১২ সালে ডেজিগনেটেড কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকাটি চালু করা হয়েছিল। এই উদ্যোগটি ইউরোপিয়ান সেফ কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকার আদলে তৈরি করা হয়েছিল। এটি সেই আশ্রয় ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়। ডিসিও থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রভাবগুলোর মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা সহ একটি দ্রুত শুনানি প্রক্রিয়া, শরণার্থী আপিল বিভাগে অ্যাক্সেস না থাকা, বিচারিক পর্যালোচনা চাওয়া ব্যর্থ দাবিদারদের অপসারণের কোনও স্বয়ংক্রিয় স্থগিতাদেশ না থাকা, পিআরআরএতে সীমিত অ্যাক্সেস এবং প্রথম ১৮০ দিনের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনও যোগ্যতা নেই যার মধ্যে তারা তাদের দাবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। একটি নিরাপদ দেশ হিসাবে তকমা দেশগুলোর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার রেকর্ডের স্তরের গুণগত পর্যবেক্ষণের সংমিশ্রণের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং দুটি পরিমাণগত থ্রেশহোল্ডের উপর নির্ভরশীল ছিল, যখন কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবিগুলোর ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি আইআরবি প্রত্যাখ্যান করেছিল বা কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবির ৬০ শতাংশ বা তারও বেশি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। প্রাথমিক ডিসিও তালিকায় ২৫ টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ৪২ টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছিল। ১৭ ই মে, ২০১৯, ফেডারেল কোর্টের একাধিক রায় অনুসরণ করে যেখানে ডিসিও নীতির নির্দিষ্ট বিধানগুলো মেনে না চলার জন্য বাতিল করা হয়েছিল অধিকার ও স্বাধীনতার কানাডীয় সনদ, কানাডা সরকার ঘোষণা করেছিল যে এটি সমস্ত দেশকে ডিসিও তালিকা থেকে সরিয়ে দেবে এবং ডিসিও শাসন শেষ পর্যন্ত আইনী সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হবে।
* মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের ধারণা তৈরি করা: পিসিআইএসএ সংস্কারগুলো মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের জন্য একটি শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ডিএফএন, আইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, চোরাচালানকারীদের সহায়তায় জননিরাপত্তা মন্ত্রীর দ্বারা 'অনিয়মিত আগমন' সন্দেহভাজন দুই বা ততোধিক শরণার্থী দাবিদারের গ্রুপ। এইভাবে মনোনীত হওয়ার প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে যে ডিএফএনগুলো তাদের ষোল বছর বা তার বেশি বয়সী হলে তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে আটক করা হবে। ২০১০ সালে এমভি ''ওশান লেডি'' এবং এমভি ''সান সাগরে'' তামিল শরণার্থীদের আগমনের পরে কানাডায় বাধ্যতামূলক আটকাদেশ ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছিল। তদুপরি, তাদের দাবি গৃহীত হলেও, ডিএফএনরা পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী বাসিন্দার স্থিতির জন্য আবেদন করতে অক্ষম,[ পাশাপাশি ভ্রমণের নথি পেতে অক্ষম এবং পরিবারের সদস্যদের স্পনসর করতে অক্ষম। আইনে এই বিধানগুলো প্রবর্তনের পরপরই সরকার একাধিক ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োগ করেছিল।
* পিআরআরএ সংস্কার: ২০১২ সালে সংসদ একটি দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করে। এখন থেকে, পিআরআরএ যেভাবে কাজ করেছে তা হ'ল যদি কোনও প্রত্যাখ্যানকারী আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের শরণার্থী দাবির বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্তের এক বছরের মধ্যে কানাডা থেকে সরানো না হয়। তবে তারা শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিমাণ সেই বছরের মধ্যে পরিবর্তিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য যোগ্য হতে পারে। ডিসিওদের দাবিদারদের জন্য এই ১২ মাসের বারের ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। এরা তাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের পরে ৩৬ মাসের জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে নিষেধ করেছিলেন; এই দীর্ঘ পিআরআরএ বারটি ''ফেহের বনাম কানাডায়'' ''সনদের'' এস ১৫ এর লঙ্ঘন হিসাবে বাতিল করা হয়েছিল। ''সুষম শরণার্থী সংস্কার আইনও পিআরআরএর'' উপর কর্তৃত্ব মন্ত্রীর কাছ থেকে আইআরবিতে স্থানান্তরিত করে, যদিও এই স্থানান্তরটি আসলে কখনও কার্যকর করা হয়নি,[ এবং শেষ পর্যন্ত ২০২২ কার্যকর হয়ে বাতিল করা হয়েছিল।
* অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের সীমাবদ্ধতা: অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল হেলথ প্রোগ্রাম শরণার্থী দাবিদারদের তাদের দাবি মুলতুবি থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস সরবরাহ করে। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় আসার জন্য নিরুৎসাহিত করার কৌশলের অংশ হিসাবে, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে সরকার কিছু শ্রেণীর দাবিদারদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেয়। এই নীতি পরিবর্তনটি অর্ডার ইন কাউন্সিলের মাধ্যমে চালু করা হয়েছিল যা কানাডায় স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করেছিল যখন নির্বাচিত শরণার্থী দাবি মুলতুবি ছিল, মূলত ডিসিও থেকে উদ্ভূত দাবিদারদের দাবি। এই জাতীয় দাবিদাররা অন্যান্য দাবিদারদের তুলনায় অনেক কম স্তরের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকারী ছিল। এই নীতিটি ২০১৫ সালে ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছিল, আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে ফলস্বরূপ শাসন ''কানাডীয়'' ''চার্টার অফ রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস'' দ্বারা নিষিদ্ধ "নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণ" ছিল। এই সিদ্ধান্তটি বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ আশ্রয় আইনের বিরুদ্ধে পিছিয়ে যাওয়া আদালতগুলোর অনুরূপ মামলার একটি লাইন। উদাহরণস্বরূপ, ''লিম্বুয়েলায়'' যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডস দেখা গেছে যে আশ্রয়প্রার্থীদের সমর্থন প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্তগুলো অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঝুঁকির কারণে "রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য, সম্ভবত স্বল্প এবং অদূরদর্শী সীমাবদ্ধ সময়ের জন্য বাদে, বা গুরুতরভাবে ক্ষুধার্ত ছিল, বা স্বাস্থ্যবিধির সবচেয়ে প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে অক্ষম ছিল"।
* অবসান: নতুন আইনে বলা হয়েছে, আরপিডি যদি তাদের শরণার্থী সুরক্ষা বন্ধের জন্য মন্ত্রীর আবেদনের অনুমতি দেয় তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা হারাতে হবে। এটি এই জাতীয় ব্যক্তিদের কানাডায় অগ্রহণযোগ্য করে তোলে।
এই আইন কার্যকর হওয়ার পর শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগের নিয়মের বর্তমান সংস্করণটি ২৬ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে কার্যকর হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড, তাদের জনসাধারণের মন্তব্যে, এই নিয়মগুলো এবং সেগুলো দ্বারা পরিচালিত সিদ্ধান্তের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। এটি সেই সময়কার অভিবাসন মন্ত্রী জেসন কেনির এই ধরণের মন্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল: "আমি মনে করি বেশিরভাগ কানাডীয় স্বজ্ঞাতভাবে বোঝেন যে অভিবাসনের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন।, সত্যি বলতে, আমাদের সমাজের বৈচিত্র্য একটি সুপরিচালিত, নিয়ম-ভিত্তিক, ন্যায্য অভিবাসন ব্যবস্থা থাকার উপর নির্ভরশীল। আমি মনে করি তারা বোঝেন যে এই ধরনের ব্যবস্থা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই ভূমিকা রয়েছে"। ২০১২ সালে এই নতুন আইন এবং আরপিডি নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর আশ্রয় দাবির সংখ্যা ৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উপরোক্ত আইন ছাড়াও ২০১১ সালে বিল সি-৩৫—যাকে মূলত ''ক্র্যাকিং ডাউন অন ক্রুকড কনসালট্যান্টস অ্যাক্ট'' বলা হত—আইআরপিএ-র ধারা ৯১ সংশোধন করে। নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী কর্তৃক প্রণীত প্রবিধানের মাধ্যমে, ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস অফ কানাডা রেগুলেটরি কাউন্সিল (ICCRC) পরবর্তীতে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে।
== ২০১০-এর দশকের শরণার্থী সুরক্ষা উদ্যোগ ==
=== অপরাধমূলক রেকর্ডধারীদের জন্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন ===
২০১৩ সালের আগে, ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে বলা হয়েছিল যে কানাডায় কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে যদি স্থায়ী বাসিন্দা অগ্রহণযোগ্য হন তবে ইমিগ্রেশন আপিল বিভাগে কোনও আপিল করা সম্ভব ছিল না। ১৯ জুন, ২০১৩ তারিখে, ''বিদেশী অপরাধীদের দ্রুত অপসারণ আইন'' রাজকীয় সম্মতি পেয়েছে। এটি আইআরপিএ-এর উপধারা ৬৪(১)-এ গুরুতর অপরাধের ভিত্তিকে "কমপক্ষে দুই বছরের" পরিবর্তে "কমপক্ষে ছয় মাস" এ পরিবর্তন করে, IAD-এর কাছে আপিল সীমাবদ্ধ করে। তাদের অপসারণ কার্যকর করা হবে কিনা সে বিষয়ে বিচক্ষণতা রয়েছে।
=== সুরক্ষিত ব্যক্তিদের নির্ভরশীল শিশুদের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন ===
একবার একজন ব্যক্তি সুরক্ষা ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেলে, কানাডায় অস্থায়ী বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার সময় তার উপর নির্ভরশীল সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে শিশুটিকে অবশ্যই বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে এবং নির্ভরশীল সন্তানের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে, এই বয়সসীমা পরিবর্তন করা হয়েছে: "১৯ বছরের কম" থেকে "২২ বছরের কম" করা হয়েছে।
=== পুনর্বাসন কর্মসূচি ===
কানাডা স্বেচ্ছাসেবী বোঝা ভাগাভাগি প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর হাজার হাজার শরণার্থীকে সক্রিয়ভাবে পুনর্বাসিত করে। এই আইনের ফলে কানাডা বিশ্বব্যাপী প্রায় ত্রিশটি দেশের একটি ছোট দলের শীর্ষে স্থান পেয়েছে যারা ''শরণার্থী কনভেনশনে পুনর্বাসনের মাধ্যমে শরণার্থীদের সুরক্ষা প্রদান করতে ইচ্ছুক, পাশাপাশি পুনর্বাসন চুক্তিতে'' ''পুনর্বাসন না'' করার প্রতিশ্রুতিও প্রদান করে। ঐতিহ্যগতভাবে তিনটি রাজ্য পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয়: কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্মিলিতভাবে, তারা ইউএনএইচসিআর-এর পুনর্বাসন রেফারেলের প্রায় ৯০ শতাংশ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ ক্যালেন্ডার বছরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩৩,৪০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। সেখানে কানাডা ২৬,৬০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে এবং অস্ট্রেলিয়া ১৫,১০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। এই ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে, কানাডা ২০১৫ সালে ২৫,০০০ এরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থীকে পুনর্বাসনের জন্য একটি কর্মসূচি চালু করে।
=== অভয়ারণ্য শহর চলাচল ===
অনেক মানুষ আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে না কিন্তু গ্রেফতার, নির্বাসন এবং অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভয়ে অ-নথিভুক্ত স্ব-বসতিবদ্ধ অভিবাসী হিসেবে সমাজের প্রান্তিক স্তরে বাস করে। ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' পৌর কর্তৃপক্ষের কর্তব্য ছিল যে তারা অপসারণযোগ্য অভিবাসীদের নির্দিষ্ট শ্রেণীর প্রতিবেদন করবে। এর মধ্যে রয়েছে যারা সরকারি তহবিল বা কোনও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উপর দায়বদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরবর্তীতে কানাডার অভিবাসন আইন থেকে এই শুল্কটি বাদ দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কানাডায় বৈধ অভিবাসন মর্যাদাবিহীন ব্যক্তিরা, তা সে শরণার্থী, শরণার্থী দাবিদার, বা অন্য কোনও ব্যক্তিই হোক না কেন, সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হন। কারণ তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হয় না, অথবা তাদের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয় এবং তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কানাডায়, ২০১৩ সাল থেকে, টরন্টো, লন্ডন, ভ্যাঙ্কুভার, এডমন্টন, মন্ট্রিল, আয়াক্স, এবং হ্যামিল্টন নিজেদেরকে অভয়ারণ্য শহর ঘোষণা করেছে। এই অভয়ারণ্য শহর নীতিগুলোতে সাধারণত অধ্যাদেশ জারি করা হয় যাতে নথিভুক্ত নয় এমনদের জন্য পৌর পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা যায়, যদিও ফেডারেল সীমান্ত প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সাথে তথ্য ভাগাভাগি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়নি।
=== ফাইভ আইজ দেশগুলোর মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি সম্প্রসারিত হয়েছে ===
২০১০-এর দশকে বিশ্বজুড়ে আশ্রয় ব্যবস্থায় বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা একাই ৭.১ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের রিপোর্ট দিয়েছে। কানাডা দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থী দাবিদারদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে আসছে এবং এই সময়ে তারা অংশীদার দেশগুলোর সাথে এই ধরনের তথ্য আরও বেশি করে বিনিময় করতে শুরু করেছে। কানাডার দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি রয়েছে যার মাধ্যমে শরণার্থী দাবিদারদের তথ্য বিনিময় করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে কানাডা-মার্কিন স্মার্ট বর্ডার ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী তৈরি করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দেশগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি যার শিরোনাম ছিল ''আশ্রয় এবং শরণার্থী স্থিতি দাবি সম্পর্কিত তথ্য ভাগাভাগি'' কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক এবং জীবনী সংক্রান্ত তথ্য সহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, পদ্ধতিগত তথ্য ভাগাভাগি করার অনুমতি দেয়।<ref name=":64" /> বিনিময়কৃত তথ্যের মধ্যে রয়েছে: পরিচয়-সম্পর্কিত তথ্য। উদাহরণস্বরূপ জীবনী এবং বায়োমেট্রিক তথ্য; পূর্ববর্তী শরণার্থী দাবির অবস্থা (অস্বীকৃত, পরিত্যক্ত, বা মঞ্জুর); এমন তথ্য যা ইঙ্গিত দেয় যে দাবিটি অগ্রহণযোগ্য; এবং পূর্ববর্তী আবেদনের সমর্থনে জমা দেওয়া যেকোনো প্রমাণ।<ref name=":64" /> ২০০৯ সালে "ফাইভ আইজ" দেশগুলো বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অল্প সংখ্যক "অভিবাসন পরীক্ষা" পরিচালনা করার জন্য একটি ডেটা শেয়ারিং প্রোটোকল স্বাক্ষর করে। এই ব্যবস্থাটি স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এতে বার্ষিক ৩০০০ আঙুলের ছাপ ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর কানাডা যুক্তরাজ্য (২০১৫), অস্ট্রেলিয়া (২০১৬) এবং নিউজিল্যান্ড (২০১৬) এর সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তিতে পৌঁছায় যা পাইলট মডেল থেকে তথ্যের স্বয়ংক্রিয় ভাগাভাগিতে স্থানান্তরিত হয়।<ref name=":64" />
== অনিয়মিত সীমান্ত ক্রসিং বিতর্ক ==
১৯৮৯ সালে বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে, কানাডা এবং আন্তর্জাতিকভাবে শরণার্থী দাবিকারীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী সংখ্যার দিকে তাকালে, ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী আশ্রয়ের জন্য ২.৩ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়েছিল। এর বেশিরভাগই পশ্চিম ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়। ১৯৯০-এর দশকে এই সংখ্যা বেড়ে ৬.১ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়ে এবং আবেদন গ্রহণকারী দেশগুলোর তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং দক্ষিণ ইউরোপ অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০০ সালের দশকে বিশ্বব্যাপী ৫৫ লক্ষ নতুন আবেদন জমা পড়ে এবং আয়ারল্যান্ড, গ্রীস, পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো জনপ্রিয় নতুন গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে। আজ, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় দশ লক্ষ ব্যক্তি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন, যাদের শরণার্থী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে তারা বিশ্বব্যাপী অভিবাসী জনসংখ্যার ৭-৮ শতাংশ। একইভাবে, কানাডায়, নতুন দাবির পরিমাণ চক্রাকারে চলে গেলেও, সময়ের সাথে সাথে পরিমাণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বছরে কয়েক হাজার থেকে বেড়ে ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছে। তারপর থেকে, তিনটি উল্লেখযোগ্য মামলার সিদ্ধান্তের জন্য স্থগিত মামলা দেখা দিয়েছে: ২০০২ সালে ৫৭,০০০-এরও বেশি দাবি, ২০০৯ সালে ৬২,০০০-এরও বেশি বিচারাধীন দাবি, এবং ২০১৭ সালের পর যেখানে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে ৯০,০০০ দাবি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে, ২০১৭ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় অনিয়মিতভাবে প্রবেশকারী ব্যক্তিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে ওঠে। এই ধরনের ক্রসিং মূলত ক্যুবেক-নিউ ইয়র্ক সীমান্তের রক্সহ্যাম রোড এবং ম্যানিটোবার এমারসনে ঘটেছিল। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫৯,০০০ এরও বেশি মানুষ অনিয়মিতভাবে কানাডা-মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ এড়াতে কানাডায় আশ্রয় দাবি করেছে,<ref name=":11" /> । এর মধ্যে ২০১৭ সালে ২০,৫৯৩ জন দাবিদার, ২০১৮ সালে ১৯,৪১৯ জন দাবিদার এবং ২০১৯ সালে ১৬,০৭৭ জন দাবিদার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কুইবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমকারীদের প্রায় ৯৫% পেয়েছে। একইভাবে এই সময়ের মধ্যে কানাডায় মোট আশ্রয় দাবির সংখ্যাও বেড়েছে, ২০১৬ সালে ২৩,৮৭০টি থেকে, ২০১৭ সালে ৫০,৩৯০টি, ২০১৮ সালে ৫৫,০৪০টি এবং ২০১৯ সালে ৬৪,০৪৫টিতে।
শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ (আরএসডি) এর জন্য বিশ্বব্যাপী নিবেদিত সম্পদকে যথাযথভাবে অপরিসীম হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে রাষ্ট্র এবং ইউএনএইচসিআর ১.৫ মিলিয়ন ব্যক্তিগত আশ্রয় দাবির সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং ২০১৮ সালের হিসাবে বিশ্বে ৩.৫ মিলিয়ন আশ্রয়প্রার্থী ছিল। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা কঠিন, তবুও শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে রাষ্ট্র এবং ইউএনএইচসিআর দ্বারা সম্পাদিত আরএসডি-এর সম্মিলিত খরচ ইউএনএইচসিআর দ্বারা শরণার্থীদের সরাসরি মানবিক সহায়তার মোট খরচকে ছাড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে থেরিওল্ট এবং হ্যাথওয়ে অনুমান করে যে গ্লোবাল নর্থ একাই আরএসডি-তে ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, যা ইউএনএইচসিআর-এর বাজেটের একাধিক, এবং তাদের অনুমান অনুসারে, গ্লোবাল সাউথের শরণার্থী জনসংখ্যার যত্ন নেওয়ার জন্য দায়ী সংস্থাগুলোকে দেওয়া বাজেটের চারগুণ, যদিও ৮৫% শরণার্থী সেখানে বাস করে।
বিশ্বজুড়ে, অনিয়মিত আগমনকারীদের আশ্রয় দাবির সাফল্যের হার সাধারণত অন্য কোনও অস্থায়ী ভিসায় আসার পরে আবেদনকারীদের তুলনায় বেশি থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায়, নৌকায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ঐতিহাসিক গড় সাফল্যের হার ৮০ শতাংশেরও বেশি। শিক্ষাবিদ ড্যানিয়েল ঘেজেলবাশ বলেছেন যে এটি মূলত সম্ভাব্য আশ্রয় দাবিদার ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ এবং তাদের নিয়মিতভাবে দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয় এমন ভিসা না দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা ব্যবস্থার কার্যকারিতার কারণে। এই ধরনের দাবিদারদের তুলনামূলক ''সততা'' সত্ত্বেও দাবিদারদের অনিয়মিতভাবে একটি দেশে আগমন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দ্বারা প্রয়োজনীয় ভ্রমণগুলো প্রায়ই বিপজ্জনক হয়। উদাহরণস্বরূপ, কানাডায় প্রবেশকারী বেশ কয়েকজন ক্রসিংয়ে হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটার পর তুষারপাতের কারণে হাত-পা হারিয়েছেন এবং ২০১৭ সালে কানাডা-মার্কিন সীমান্তের কাছে একটি খাদে হাইপোথার্মিয়ার কারণে মৃত অবস্থায় ঘানার ৫৭ বছর বয়সী দাদী মাভিস ওটুতেয়কে পাওয়া গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্যে সীমান্ত ক্রসিংয়ের এই বৃদ্ধির রাজনৈতিক, পদ্ধতিগত এবং আইনি পরিণতি ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির চ্যালেঞ্জ: ২০১৭ সালের পর সেফ থার্ড কান্ট্রি এগ্রিমেন্ট স্থগিত বা শেষ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর মধ্যে এই চুক্তির আইনি চ্যালেঞ্জ ছিল। এটি কানাডার সুপ্রিম কোর্টের ২০২৩ সালের সিদ্ধান্তের পরে ফেডারেল কোর্টে চলছে। ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ# মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির সাংবিধানিকতা।
* দাবি বৃদ্ধি: দাবি বৃদ্ধির ফলে সরকার আইআরবি ক্ষমতা বাড়িয়েছে। শরণার্থী দাবির এই বৃদ্ধির প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি হ'ল কানাডার ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে প্রক্রিয়া করার দাবির ক্রমবর্ধমান ব্যাকলগ। ২০১৭ সালে আইআরবি ২০ জন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সাথে একটি "অনিয়মিত বর্ডার ক্রসিং রেসপন্স টিম" চালু করেছিল। তার ২০১৯-২০ বিভাগীয় পরিকল্পনায়, আইআরবি উল্লেখ করেছে যে "৭৫,০০০ এরও বেশি দাবির একটি তালিকা জমা হয়েছে। এটি বর্তমান তহবিলের স্তরে দুই বছরেরও বেশি কাজের প্রতিনিধিত্ব করে"। দাবির এই উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় ফেডারেল সরকারের অন্যতম উদ্যোগ ছিল অস্থায়ীভাবে আইআরবির প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা প্রসারিত করা। সরকার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে সম্পদ বাড়িয়েছে যাতে ২০২১ সালের মধ্যে বার্ষিক ৫০ হাজার আশ্রয় দাবি মোকাবেলা করতে পারে।
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান: পুরো কানাডা-মার্কিন সীমান্ত জুড়ে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির প্রয়োগ প্রসারিত করার জন্য ২০১৭-পরবর্তী আহ্বান ছিল। ২০১৭ হিসাবে, জরিপগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে যে ৭০ শতাংশ কানাডীয় মনে করেন যে কানাডা-মার্কিন সীমান্তে সুরক্ষা বাড়ানো উচিত। একটি ২০১৮ অ্যাঙ্গাস রিড জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে অর্ধেকেরও বেশি উত্তরদাতারা বলেছেন যে কানাডা অনিয়মিতভাবে কানাডায় প্রবেশ করা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি খুব উদার ছিল। তাদের ২০১৯ প্ল্যাটফর্মে, কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি "অর্থনৈতিক অভিবাসন" কে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং "ভুয়া" শরণার্থী দাবিদারদের চেয়ে "সত্যিকারের নিপীড়নের" মুখোমুখি হওয়া লোকদের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কনজারভেটিভ পার্টি ইঙ্গিত দিয়েছে, নির্বাচিত হলে তারা আরও ২৫০ জন সিবিএসএ কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে এবং প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে আইআরবি সদস্যদের ক্রসিং সাইটগুলোর কাছাকাছি নিয়ে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি বিস্তৃত নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি ২০২৩ সালে কার্যকর হয়েছিল: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আইআরপিআর এস ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ # নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির পাঠ্য।
* আইআরবিতে রেফারেলের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন: অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের ফলে সংসদ এমন পরিবর্তন করেছিল যার দাবিদাররা আইআরবির সামনে শুনানির জন্য যোগ্য ছিল। জুন ২০১৯ এ, বিল সি -৯৭, ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' এ ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে সংশোধন করা হয়েছিল। এই পরিবর্তনগুলো শরণার্থী দাবিদারদের জন্য অযোগ্যতার নতুন ভিত্তি প্রবর্তন করেছে যদি তারা পূর্বে এমন কোনও দেশে আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে থাকে যার সাথে কানাডার তথ্য-ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি বা ব্যবস্থা রয়েছে। বাস্তবে এর অর্থ হ'ল যে ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে ("পাঁচ চোখের দেশ") পূর্ববর্তী দাবি করেছেন তারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার অযোগ্য এবং তাদের দাবিগুলো ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ড দ্বারা শুনেছেন, যদিও যদি তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি অন্যান্য দেশের সাথে করা হয় তবে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পূর্ববর্তী দাবির বিষয়ে কখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিনা তা নির্বিশেষে এটি তাই। যারা আইআরবিতে দাবি করার অযোগ্য বলে মনে করেন তারা পরিবর্তে প্রাক-অপসারণের ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য একটি আবেদন জমা দিতে পারেন। ইদিল আতাক এই অমনিবাস বিলটিকে "অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের প্রতিক্রিয়া জানাতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ২০১৯ ফেডারেল নির্বাচনের নেতৃত্বে তাড়াহুড়ো করে গৃহীত হয়েছে" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং এটি নতুন অভিবাসন আইন দিয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে কানাডা সরকারের দক্ষতার উদাহরণ হিসাবে দেখা যেতে পারে।
* আরপিডিতে দাবি উল্লেখ করার প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন: ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' আরপিডিতে রেফার করা দাবির যোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন দিনের সময়সীমা অপসারণের জন্য আইআরপিএ সংশোধন করেছে এবং সেই সময়ের মধ্যে যোগ্যতার সিদ্ধান্ত না নিলে আরপিডিতে "গণ্য রেফারেল" সরিয়ে দিয়েছে। কিউবেকে পর্যাপ্ত পরামর্শের অভাবের কারণে, আইআরবি একটি অস্থায়ী অনুশীলন নোটিশ জারি করে নির্দেশ দিয়েছিল যে নির্দিষ্ট দাবিদারদের তাদের স্বাভাবিক সময়সীমার মধ্যে তাদের দাবির ভিত্তিতে কেবলমাত্র কিছু প্রাথমিক তথ্য জমা দিতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ বিবরণ পরবর্তী তারিখে যুক্ত করা যেতে পারে।
* আইআরবি সময়সূচীতে পরিবর্তন: আইআরবিতে দাবির ব্যাকলগ বাড়ার সাথে সাথে আরপিডিতে প্রথম শুনানির জন্য গড় অপেক্ষার সময়টি দুই বছরে বেড়েছে, বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুই মাসের বিধিবদ্ধ সময়সীমার বিপরীতে। দাবির বৃদ্ধি আইআরবি কীভাবে দাবির সময়সূচী এবং অগ্রাধিকার দেয় তাতে পরিবর্তনের সূত্রপাত করেছিল। ''ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন রেগুলেশন'' অপারেশনাল সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রে আরপিডির শুনানি করার সময়সীমার ব্যতিক্রমের অনুমতি দেয়। এর ব্যাকলগ মোকাবেলা করার জন্য, আইআরবি নতুন মামলার আগে সময়সূচী করার জন্য পুরানো মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে এবং প্রবিধানগুলোতে মামলা প্রক্রিয়াকরণের সময়সীমা ত্যাগ করে। পূর্বে, যখন আইআরসিসি বা সিবিএসএ আরপিডিতে একটি ফাইল উল্লেখ করেছিল, দাবিদারকে শুনানির তারিখও সরবরাহ করা হয়েছিল; আরপিডি তখন সময়সীমার মধ্যে এটি করার ক্ষমতা না থাকায় সেই শুনানি স্থগিত করে। আগস্ট ২৯, ২০১৮ পর্যন্ত, দাবিদারদের রেফারেলের সময় আর শুনানির তারিখ সরবরাহ করা হয়নি।
== কোভিড-১৯ ==
২০২০ সালে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিক্রিয়ায়, ৫৭টি দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। প্রথমে, কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে প্রবেশ বন্দরের বাইরে থেকে আগত সকল আবেদনকারীর ভাইরাসের জন্য স্ক্রিনিং করা হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক হলে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। কানাডীয় সরকার কয়েকদিন পরে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, ঘোষণা করে যে সমস্ত দাবিদারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হবে। এর অংশ হিসেবে, দুই দেশ একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছে যা কানাডাকে আশ্রয় দাবি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশকারী ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেয়। চুক্তিটি স্থল সীমান্ত বরাবর সরকারী প্রবেশ বন্দর এবং বিমান ও সামুদ্রিক প্রবেশ বন্দরের মধ্যে প্রযোজ্য। সরকার নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির উদ্দেশ্যে রক্সহ্যাম রোডকে প্রবেশের বন্দর হিসেবে মনোনীত করে এবং সেই সময়ে শরণার্থী দাবিদারদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো শুরু করে। এই পদক্ষেপগুলোর প্রতিক্রিয়ায়, অনিয়মিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টাকারীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৬ মার্চ, যখন সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং ৮ মে, ২০২০ এর মধ্যে ২৪ জন অনিয়মিত অভিবাসী দাবি করতে চেয়েছিলেন<ref>Monica Boyd & Nathan T.B. Ly (2021) Unwanted and Uninvited: Canadian Exceptionalism in Migration and the 2017-2020 Irregular Border Crossings, American Review of Canadian Studies, 51:1, 95-121, DOI: 10.1080/02722011.2021.1899743 at page 113.</ref>
মহামারীর কারণে বেশ কয়েকটি রাজ্য সাময়িকভাবে আশ্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। কানাডা ছিল তাদের মধ্যে একটি। মহামারীর ফলে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ কয়েক মাস ধরে সমস্ত শুনানি বন্ধ করে দেয়, ২০২০ সালের গ্রীষ্মে পুনরায় শুরু করে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল (দূরবর্তী) শুনানি চালু করা হয়। আইআরসিসি এবং সিবিএসএ কর্তৃক আইআরবি-তে দাবির রেফারেলগুলো অনেক বেশি সময়ের জন্য বিলম্বিত বা স্থগিত করা হয়েছিল।<ref>Jay Turnbull, ''They want to work, but thousands of asylum seekers are waiting on the sidelines,'' CBC News, Feb 22, 2021 <https://www.cbc.ca/news/canada/montreal/asylum-seekers-work-permits-delay-pandemic-1.5921285> (Accessed March 7, 2021).</ref>
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় কানাডীয় সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পর্যায়ক্রমিক সাধারণ ক্ষমা অভিযান বাস্তবায়ন করেছিল, এই ক্ষেত্রে একটি প্রোগ্রাম যা গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস উদ্যোগ নামে পরিচিতি পেয়েছিল যা মহামারী চলাকালীন ফ্রন্ট-লাইন কেয়ারগিভিংয়ের সাথে জড়িত আশ্রয়প্রার্থীদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা প্রদান করেছিল। ''কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত কিছু শরণার্থী দাবিদারদের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের সুবিধার্থে এই নীতিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্থায়ী পাবলিক নীতি বলা হত।''<ref>''Kolawole v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1384 (CanLII), at para 7, <https://canlii.ca/t/k0wrg#par7>, retrieved on 2023-12-28.</ref> এই প্রোগ্রামটি ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কার্যকর হয় এবং ৩১ আগস্ট, ২০২১ তারিখে শেষ হয়।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিল S-৮ আইআরপিএ এবং প্রবিধান সংশোধন করেছে, এটিতে ''বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আইনের'' অধীনে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা বিদেশী নাগরিকরা কানাডায় প্রবেশ করতে পারবেন না।<ref>Bill S-8, “An Act to amend the Immigration and Refugee Protection Act, to make consequential amendments to other Acts and to amend the Immigration and Refugee Protection Regulations”, S.C. 2023, c. 19.</ref> এই সংশোধনীগুলো শরণার্থী দাবিকে আরপিডি-তে রেফার করার যোগ্যতাকেও প্রভাবিত করেছে। এর ফলে এটি আরও বিস্তৃত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারী এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পুনরায় শুরু হওয়ার পর দাবির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে সর্বকালের সর্বোচ্চ ১৪৪,৮৬০টি দাবিতে পৌঁছেছে।<ref>Lisa Barkova, Office of the Parliamentary Budget Officer, ''Costing Asylum Claims from Visa-Exempt Countries'', Published on May 31, 2024, <https://www.pbo-dpb.ca/en/publications/RP-2425-007-S--costing-asylum-claims-from-visa-exempt-countries--analyse-couts-demandeurs-asile-pays-dispenses-obligation-visa>.</ref>
== কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস তৈরি করা ==
২০১৭ সালের জুন মাসে, হাউস অফ কমন্সের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি (CIMM) ''"পুনরায় শুরু: অভিবাসন পরামর্শদাতাদের উপর সরকারের নজরদারি উন্নত করা"'' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জারি করে। এটি সুপারিশ করেছে যে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের জন্য নতুন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা তৈরি করবে। সেখানে সর্বোচ্চ স্তরটি আইআরবির সামনে মামলার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। পরবর্তী কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে খোলা হয়। ২০১৯ সালে সংসদ একটি আইন পাস করে যা স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়। ফলস্বরূপ, কলেজের উপ-আইন অনুসারে, আইআরবি-তে প্রতিনিধিত্বের জন্য "১ জুলাই, ২০২২ এর পর অথবা বোর্ড কর্তৃক রেজুলেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত অন্য কোনও তারিখের পরে" ক্লাস L৩ লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। ২০২২ সালের জুন মাসে, কলেজের পরিচালনা পর্ষদ একটি প্রস্তাব পাস করে যার মাধ্যমে ১ জুলাই, ২০২৩ তারিখকে ক্লাস L৩ লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তার নতুন তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই ক্লাস L৩ লাইসেন্সটিকে "আইআরবি-সার্টিফিকেশন" বা "স্পেশালাইজেশন প্রোগ্রাম"ও বলা হয়।<ref>College of Immigration and Citizenship Consultants, 2023, ''Specialization Program'', <https://college-ic.ca/licensee-obligations/ongoing-education-for-rcics/specialization-program> (Accessed December 29, 2023).</ref>
== ওয়েব-ভিত্তিক এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির বর্ধিত ব্যবহার ==
২০২০ সালের দিকে, স্বাভাবিক শরণার্থী গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পরিবর্তন করা শুরু হয়। এর মধ্যে এটি কে আরও ওয়েব-ভিত্তিক করাও অন্তর্ভুক্ত। ২০২০ সালে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি কানাডায় একটি বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Agency|প্রথমাংশ=Canada Border Services|তারিখ=2019-07-11|শিরোনাম=Entry/Exit initiative|ইউআরএল=https://www.canada.ca/en/border-services-agency/news/2019/07/entryexit-initiative.html|সংগ্রহের-তারিখ=2025-01-07|ওয়েবসাইট=www.canada.ca}}</ref> আইআরসিসি একটি শরণার্থী দাবি পোর্টালও চালু করেছে। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে, আইআরসিসি আইআরসিসি পোর্টালের মাধ্যমে নতুন আশ্রয় অনলাইন আবেদন (eApp) চালু করে। এটি অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবি করার প্রধান উপায় হিসেবে কানাডীয় শরণার্থী সুরক্ষা পোর্টাল (সিআরপিপি) কে প্রতিস্থাপন করে।<ref>IRCC, ''Program delivery update: Launch of the new asylum eApp via the IRCC Portal'', January 11, 2023, <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/publications-manuals/operational-bulletins-manuals/updates/2022-asylum-eapp.html> (Accessed December 12, 2024).</ref> সিবিএসএ কুইবেক অঞ্চলে কম ঝুঁকিপূর্ণ, যোগ্য দাবিদারদের জন্য "ওয়ান টাচ" নামে একটি নতুন শরণার্থী প্রক্রিয়াকরণ মডেল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে যা ২০২২ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছিল।<ref name=":023">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref> পাইলট শরণার্থী দাবিদারদের যোগ্যতার সাক্ষাৎকার স্থগিত না করে পরবর্তী তারিখে স্থানান্তরিত করেছেন। এটি সেই মডেলের পরিবর্তে এমন একটি মডেল চালু করেছে যেখানে কর্মকর্তারা ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে নির্ধারণ করে যে একজন দাবিদার কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং আইআরবি-তে রেফার করার যোগ্য কিনা। যেসব কর্মকর্তা দাবিদারকে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং শরণার্থী দাবি করার যোগ্য বলে মূল্যায়ন করেন, তারা কাগজ-ভিত্তিক আবেদন (যেমন IMM০০০৮, তফসিল A এবং তফসিল ১২) সম্পূর্ণ না করেই দাবিটি আইআরবি-তে পাঠাবেন। ওয়ান টাচ মডেল ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাত দাবিদারদের তাদের দাবি যোগ্য বলে প্রমাণিত হওয়ার এবং আইআরবি-তে রেফার করার ৪৫ দিনের মধ্যে আইআরসিসি পোর্টাল ব্যবহার করে তাদের শরণার্থী দাবির আবেদন পূরণ করতে হবে। পাইলট প্রকল্পটি সফল বলে বিবেচিত হয় এবং সিবিএসএ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয়ভাবে ওয়ান টাচ মডেলটি চালু করে।<ref name=":022">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref>
সিবিএসএ ২০২৪ সালে রিপোর্টইন অ্যাপও চালু করে। এটি মুখের স্বীকৃতি প্রযুক্তি এবং অবস্থানের ডেটা ব্যবহার করে পরিচয় এবং ব্যক্তির অবস্থান নিশ্চিত করে। এটি সরকারের পূর্ববর্তী ভয়েস রিপোর্টিং সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করেছে। এটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Nicholas Keung, ''Facial recognition app to help CBSA track immigration status,'' Toronto Star, published: 2024-12-20, <https://www.thestar.com/news/canada/canada-border-agency-launches-facial-recognition-app-to-track-migrants/article_4ddd57ec-bbde-11ef-9f0d-ab0b80692041.html>.</ref>
এই ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের অন্যতম চালিকা শক্তি ছিল দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি। দাবি প্রক্রিয়ার কিছু অংশ ধীর হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, দাবির যোগ্যতার সিদ্ধান্তের একটি ব্যাকলগ জমা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত, যোগ্যতার সিদ্ধান্তের জন্য মোট প্রক্রিয়াকরণ সময় ছিল ১৩৬ দিন। সেই সময়ে, ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনগুলো ১০ দিনের মধ্যে অনুমোদিত হবে, ৮০% ক্ষেত্রে, একবার ইতিবাচক যোগ্যতার সিদ্ধান্ত রেকর্ড করা হবে এবং একটি মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।<ref>Government of Canada, ''CIMM – Asylum System Processing and Innovations – October 24, 2023'', <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/transparency/committees/cimm-october-24-2023/asylum-processing-innovations.html> (Accessed December 12, 2024).</ref>
== উপসংহার ==
কানাডায় শরণার্থী সুরক্ষা পদ্ধতির গল্পের পরবর্তী অধ্যায়গুলো লেখা বাকি। যা বলা যেতে পারে তা হলো, 'শরণার্থী' ধারণাটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মতোই পুরনো। শিক্ষাবিদ ইভ লেস্টারের ভাষায়, এটি আমাদের সাথে ততদিন থাকবে যতদিন রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকবে। এমা হাদ্দাদ লিখেছেন, শরণার্থীরা রাজনৈতিক সীমানা তৈরি এবং নাগরিক হিসেবে সকল ব্যক্তিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার ফল। এর ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শর্তগুলো প্রযোজ্য - রাজনৈতিক সীমানা পৃথক রাষ্ট্র গঠন করে এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা তৈরি করে। সুরক্ষার ব্যর্থতা - ততক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থী থাকবে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, pages 7 and 213.</ref> অ্যালান ন্যাশ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, শরণার্থীদের সুরক্ষার কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ এবং একাধিক বিপরীতমুখী উত্তেজনার শিকার। তা সত্ত্বেও এই কাঠামোটি শরণার্থীদের অধিকার এবং বাধ্যবাধকতার একটি সনদ নির্ধারণ করে এবং এর মাধ্যমে তাদের সাথে আচরণের মান নির্ধারণ করে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 9.</ref>
== তথ্যসূত্র ==
<references responsive="" />
gkb4c2wg2mocq0b1c7sbdjegchxsodj
85708
85676
2025-07-05T18:16:35Z
MS Sakib
6561
85708
wikitext
text/x-wiki
== আশ্রয়ের ইতিহাস এবং নিরাপদ স্থানের ধারণা ==
আন্তর্জাতিক ও কানাডীয় উভয় প্রেক্ষাপটেই শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থার অস্তিত্ব সাম্প্রতিক একটি উন্নয়ন। অনাদিকাল থেকে মানুষ নিপীড়ন, যুদ্ধ, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সরকারি অস্থিতিশীলতা এবং অপরাধমূলক নিষেধাজ্ঞা থেকে পালিয়ে এসেছে। তবে বিংশ শতাব্দীতেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ধরণের ব্যক্তিদের ভ্রমণের সময় সংগঠিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। এর ফলে শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থা তৈরি হয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 13.</ref>
"asylum" বা আশ্রয় শব্দটি এর ধারণা ও অনুশীলনের চেয়ে ছোট।<ref name=":902">W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 11.</ref> ইভ লেস্টার বলেন, এটিত্রা, আতিথেয়তা ও আশ্রয়ের অনুরোধ মানবজীবনের মতোই পুরনো ধারণা।<ref name=":332">Eve Lester, Australian responses to refugee journeys: Matters of perspective and context, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1> (Accessed March 20, 2021), at page 26.</ref> এই ধরণের জনসংখ্যা স্থানান্তরের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ১২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মিশরীয় এবং হিট্টীয়রা একটি চুক্তিতে সম্মত হয়। ওই চুক্তিতে প্রত্যর্পণের বিধান রাখে: এতে শর্ত ছিল, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না। তবে এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রত্যাবর্তিত শরণার্থীকে তাদের নিজ দেশে শাস্তি দেওয়া হবে না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 36.</ref> ৭২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আসিরীয় রাজা দ্বিতীয় সার্গন ইসরায়েল ও এর রাজধানী সামেরিয়া জয় করার পর হাজার হাজার ইস্রায়েলীয়কে নির্বাসিত করে আসিরীয় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে তারা স্থানীয়দের সাথে মিশে যায়।<ref name=":723">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> ৩৭৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট ভ্যালেন্স হাজার হাজার গথদের আশ্রয় দেন। এরা তাদের অঞ্চল আক্রমণকারী হুন উপজাতি থেকে পালিয়ে আসছিল।<ref name=":722">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 110.</ref> পরবর্তী উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৪৯২ সালে স্পেন থেকে ইহুদিদের বহিষ্কার: ১৪৯২ সালের মার্চ মাসে আলহাম্বরা ডিক্রি জারি করা হয়েছিল। এটি সমস্ত স্প্যানিশ ইহুদিদের চার মাসের মধ্যে হয় বাপ্তিস্ম নিতে অথবা স্পেন ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। ফলস্বরূপ, এক লক্ষেরও বেশি ইহুদি স্পেন ছেড়ে পর্তুগাল, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, অটোমান সাম্রাজ্য এবং অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নেয়।<ref>Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 111.</ref> সেই সময়ে, সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ ইহুদিদের নিরাপদে অটোমান ভূমিতে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্পেনে অটোমান নৌবাহিনী পাঠান।<ref>Egger, Vernon O. (2008). ''A History of the Muslim World Since 1260: The Making of a Global Community''. Prentice Hall. p. 82. ISBN <bdi>978-0-13-226969-8</bdi>.</ref> ১৫৫৩ থেকে ১৫৫৮ সাল পর্যন্ত প্রোটেস্ট্যান্ট বিরোধীদের কাছে "ব্লাডি মেরি" নামে পরিচিত ম্যারি টিউডরের রাজত্বকালে ৩০,০০০ ইংরেজ হল্যান্ডে পালিয়ে যায়,<ref name=":922">Mayes D. Strange brethren. Refugees, religious bonds, and reformation in Frankfurt, 1554–1608. By Maximilian Miguel Scholz. (Studies in Early Modern German History.) Pp. xvi + 246 incl. 8 ills and 1 map. Charlottesville, Va–London: University of Virginia Press, 2022. £39.95. 978 0 8139 4675 7. ''The Journal of Ecclesiastical History''. 2024;75(2):380-382. doi:10.1017/S0022046924000277</ref> এবং আরও অনেকে ইউরোপের অন্যান্য অংশে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মুক্ত শহর ফ্রাঙ্কফুর্টে। অস্থিতিশীলতা থেকে বাঁচতে অন্যান্য গণ-জনসংখ্যার আন্দোলন ঘটেছিল, যেমন ১৬৪৯-১৬৬০ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে অনেক ইংরেজ ফ্রান্সে পালিয়ে যায়।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), page 8 of document.</ref>
ঐতিহাসিকভাবে আশ্রয়স্থল এবং নিরাপদ স্থান এমন নির্দিষ্ট স্থানের সাথে সম্পর্কিত ছিল যেখানে পৌঁছানোর পর একজন ব্যক্তি অলঙ্ঘনীয় এবং আইনের নাগালের বাইরে ছিলেন। এই ধরনের স্থানগুলোর মধ্যে ছিল বেদী, মন্দির, গির্জা, নির্দিষ্ট শহর এবং জাহাজ। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন গ্রিসে নিবেদিতপ্রাণ মন্দিরে আশ্রয় প্রদানের জন্য একটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ছিল। প্রকৃতপক্ষে "asylum" শব্দটি এই সময় থেকেই এসেছে। গ্রিক শব্দ "''asylia"'' থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যাকে আটক করা যাবে না বা যাকে আটক করা উচিত নয়।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 27.</ref> বিশেষ করে ক্রিয়াপদ ''"asylao" এর'' অর্থ লঙ্ঘন করা বা নষ্ট করা। সেখানে বিশেষণ ''"asylos/asylon" এর'' বিপরীত অর্থ, অর্থাৎ। এটি অলঙ্ঘনীয় তা বোঝায়।<ref name=":90" /> অন্যদিকে, হিব্রু শব্দ ''মিকলাত'' আশ্রয় বা আশ্রয়ের জন্য নির্ধারিত বিশেষ শহরগুলোকে বোঝায়।<ref name=":90" /> গণনা পুস্তকে ছয়টি নির্দিষ্ট শহর ''আরেই মিকলাত'', বা "আশ্রয় নগর" বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকারী ব্যক্তি শাসক মহাযাজকের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা পেতে পারতেন।<ref>Chapter 35 of the Book of Numbers, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 18.</ref> মধ্যযুগে সমগ্র পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে ধর্মীয় আশ্রয়স্থল বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 31.</ref> এটি বাইবেলের বেদীর পবিত্রতাকে তার নিজস্ব রাজ্যে স্থানান্তরিত করে গির্জা বা মঠে আশ্রয় নেওয়া লোকদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করেছিল।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 19.</ref> গির্জার আশ্রয় হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত আশ্রয় থেকে ভিন্ন ছিল কারণ এটি এমনকি যারা ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধ করেছিল তাদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল।
যদিও এই লেখাটি পশ্চিমা এবং উত্তর আমেরিকার আশ্রয়ের ঐতিহ্যের উপর আলোকপাত করে, তবুও আশ্রয় সারা বিশ্বে একটি প্রাচীন প্রথা হিসেবে বিদ্যমান ছিল।<ref>Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> গিল লোয়েশার বলেন, প্রতিটি প্রধান বিশ্ব ধর্মেই অভাবীদের সুরক্ষা প্রদানের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা রয়েছে।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 22.</ref> ইহুদি তোরাহর একটি প্রধান বিষয় হলো অভিবাসন। রাব্বিনিকাল পণ্ডিতরা যুক্তি দিয়েছেন, ''পুনর্বাসন না করার'' ধারণাটি প্রাচীন বাইবেলের ইহুদি শরণার্থী সুরক্ষার আইনি নীতিগুলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।<ref>Gilad Ben-Nun, ''Migration and Society: Advances in Research'' 4 (2021): 124–136, doi:10.3167/arms.2021.040112, at page 126.</ref> উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৬ পদ বলে: " ''যে দাস তার প্রভুর কাছ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাকে তুমি তার প্রভুর হাতে তুলে দিও না। সে তোমার সাথে তোমার মধ্যে যে কোন স্থানে বাস করবে। সেখানে সে ইচ্ছা সেখানেই বাস করবে; তুমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করো না।'' " বাইবেলে নিপীড়িত ও অভাবীদের আশ্রয়স্থলের জন্য অনেক উল্লেখ রয়েছে,<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> এবং বলা হয় যে নতুন নিয়মে যীশু এবং তার পরিবারকে শরণার্থী হিসেবে বলা হয়েছে। তাদের মিশরে গ্রহণ করা হয়েছিল।<ref>Deuteronomy 10:19, 19:1–13, 23:16–17, 24:17–18; Exodus 21:12–14, 22:21, 23:9; Leviticus 19:33–34; Numbers 35:9–34, as cited in Behrman, S. (2018). Law and Asylum: Space, Subject, Resistance (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 3.</ref> ইসলাম সপ্তম শতাব্দীর পূর্বে বিদ্যমান আরব সভ্যতার আশ্রয়ের প্রাচীন ঐতিহ্যও অব্যাহত রেখেছে।<ref name=":743">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিস্তার হয় নবী মুহাম্মদের মদিনায় নির্বাসনের সময় থেকে। সেখানে মক্কার শাসকদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর নবী এবং তাঁর অনুসারীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।<ref name=":612">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এরপর ইসলাম আশ্রয়কে এমনভাবে আইনে রূপান্তরিত করে, যা কুরআন মুসলমানদের উপর সকলকে আশ্রয় প্রদানের যে কর্তব্য আরোপ করেছে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।<ref name=":74">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref> বলা হয় যে সাধারণত ''দিজওয়ার'' (সুরক্ষা) এর জন্য অনুরোধ গ্রহণ করতে হবে (কোরআন ৯:৬), কিন্তু এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা কোনও কঠোর বা দ্রুত নিয়ম দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল না।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum : A Moral Dilemma'', Westport, Conn. : Praeger, 1995, page 21.</ref> চীনের আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। সেখানে এটি হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। চীনারা পলাতক এবং অপরিচিতদের সাথে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি চুক্তিও সম্পাদন করেছিল। উদাহরণস্বরূপ ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চেংয়ের রাজপুত্র তার অঞ্চল আক্রমণকারী রাজপুত্রদের একটি জোটের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ভবিষ্যতে বিচার থেকে পলাতকদের আত্মসমর্পণ করা হবে। অভিজাত ও রাজপরিবারের সদস্যদের জড়িত অন্যান্য জাতি কর্তৃক জোরপূর্বক বা স্বেচ্ছায় নির্বাসন গ্রহণের অনেক লিপিবদ্ধ চীনা উদাহরণও রয়েছে।<ref>Regarding Chinese examples dating from the eighth century BCE: Roswell S. Britton, ''Chinese Interstate Intercourse Before 700 BC,'' The American Journal of International Law, Vol. 29, No. 4 (Oct., 1935), pp. 616-635 (20 pages), at 616ff, as cited in W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 51, at endnote 7.</ref> ভারতেরও হাজার হাজার বছরের পুরনো আশ্রয়ের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে।<ref name=":932">Bassiouni MC, International Extradition and World Public Order (AW Sijthoff, 1974), 88.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮৩৯ সালে যখন ইহুদিরা পারস্যে গণহত্যা থেকে পালিয়ে আসে, তখন তারা শিখ সাম্রাজ্যের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে আশ্রয় পায়।<ref>Dr. Yvette Alt Miller, ''When Jews Found Refuge in the Sikh Empire'', September 3, 2023, <https://aish.com/when-jews-found-refuge-in-the-sikh-empire/> (Accessed May 12, 2024).</ref> অ্যাজটেকদেরও আশ্রয় দেওয়ার ঐতিহ্য ছিল বলে জানা যায়।<ref name=":90" /> বেহরম্যান উল্লেখ করেছেন যে কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে ''উবুন্টুর'' দক্ষিণ আফ্রিকান দর্শন। এটি মানবাধিকারের প্রতি সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গির উপর জোর দেয় এবং সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের চাহিদার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, তাতে গ্লোবাল নর্থে সাধারণত বোঝা যায় এমন আশ্রয়ের ধারণার ঊর্ধ্বে এবং বাইরে অপরিচিত ব্যক্তির প্রতি আতিথেয়তার নীতি রয়েছে।<ref name=":742">Behrman, S. (2018). ''Law and Asylum: Space, Subject, Resistance'' (1st ed.). Routledge. <nowiki>https://doi.org/10.4324/9780203730348</nowiki> at page 4.</ref>
== শরণার্থী ধারণার ইতিহাস ==
উপরে আলোচনা করা হয়েছে, ইতিহাস জুড়েই বিদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া পরিস্থিতির শিকারদের পরিচিতি রয়েছে।<ref name=":862">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Ottawa: Studies in Social Policy, Institute for Research on Public Policy, page 88.</ref> এই ঘটনাটিকে বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আশ্রয়, অভিবাসন, নির্বাসন, আশ্রয়স্থল, পলাতক, নির্বাসিত এবং ''অভিবাসী।'' 'শরণার্থী' শব্দটির উৎপত্তি আরও সাম্প্রতিক। এটি প্রথম ফ্রান্সে ১৬০০ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল। ধারণাটির বংশতালিকা ইউরোপে সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির উত্থানের সাথে জড়িত। এই বিভাগে এই দুটি ধারণার ইতিহাস এবং ১৭ শতকের শরণার্থীরা কীভাবে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে আলাদা ছিল তা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব আজ দুইশ'র কাছাকাছি সার্বভৌম রাষ্ট্রে বিভক্ত। সকল ব্যক্তিকে জনসংখ্যায় সংগঠিত করতে হবে এবং এসব দেশের মধ্যে আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত করতে হবে। এইভাবে, আন্তর্জাতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা রাজনৈতিক ক্ষমতা সংগঠিত করার একটি উপায়। উভয়ই জনগণকে সংগঠিত করার একটি মাধ্যম।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 48.</ref> ১৬৪৮ সালের ওয়েস্টফালিয়া চুক্তির মাধ্যমেই এই ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে আন্তঃরাষ্ট্রীয় আইনি ও রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্যযুগীয় বিশ্বের সামন্ততান্ত্রিক সমাজের স্থান দখল করে সার্বভৌম আঞ্চলিক রাষ্ট্রের এই আধুনিক সমাজ।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 49.</ref> এই সময়ে আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ধারণাগুলো আবির্ভূত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা ও স্থিরতা এবং বিদেশী সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা। এইভাবে ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি চুক্তির মাধ্যমে উদ্ভূত রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাটি রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণা তৈরিতে সহায়তা করেছিল। এটি বিশ্বকে স্বাধীন আঞ্চলিক ইউনিটের বিশাল সংমিশ্রণে বিভক্ত করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 16.</ref> এই ব্যবস্থার একটি দিক ছিল, একটি সার্বভৌম সরকারের অধীনে ভূখণ্ডকে একীভূত ও কেন্দ্রীভূত করা হতো এবং ভূখণ্ডের জনগণ এখন এই সার্বভৌম সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্যের অধিকারী হত। সার্বভৌম রাষ্ট্র এই ধরনের আনুগত্য নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ধর্মীয় এবং ভাষাগত সঙ্গতি দাবি করতে পারে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 50.</ref>
ওয়েস্টফালিয়া শান্তি চুক্তির কয়েক দশকের মধ্যেই "শরণার্থী" শব্দটির প্রচলন ঘটে। "শরণার্থী" শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ''"réfugié"'' থেকে। এটি হুগেনটদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল, অর্থাৎ ১৬৮৫ সালে লুই চতুর্দশের নান্টেসের আদেশ বাতিলের সময় ফরাসি ক্যাথলিক রাজার কাছ থেকে পালিয়ে অ-ক্যাথলিক ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যাওয়া লক্ষ লক্ষ<ref>Melanie Baak, Once a Refugee, Always a Refugee? The haunting of the refugee label in resettlement, in Jordana Silverstein and Rachel Stevens ''Refugee Journals: Histories of Resettlement, Representation, and Resistance'', Feb. 4, 2021, ANU Press, <<nowiki>https://library.oapen.org/bitstream/handle/20.500.12657/47330/book.pdf?sequence=1</nowiki>> (Accessed March 20, 2021), at page 56.</ref><ref>Reports of the number of people who left France at this time vary. Julia Morris cites a figure of 1 million in Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 4. Emma Haddad writes "From the 1670s to the start of the eighteenth century it is estimated that between 200,000 and 500,000 French Protestants left France as refugees to seek protection abroad" in Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52. Aleshkovski, et. al., write: "By the time the Edict of Nantes was cancelled, there were approximately 800 thousand Protestants in France. The vast majority was forced to leave France for Britain, the Nether- lands, Switzerland, and German States." in Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 113. In contrast, Hazal Barbaros writes: “The number of immigrants varies according to sources. To begin with, the total number of members of the Reformed Church of France is estimated to be around 900,000. Some sources indicate that the most likely number of emigrants is 200,000 approximately, whereas the others give hyper-inflated figures like 800,000 which basically means France was deprived of nearly the whole of its Protestant population. Concerning those who chose England as their destination, the number is approximated to be between 40,000 to 50,000.” See Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, <http://repository.bilkent.edu.tr/bitstream/handle/11693/76474/10412602.pdf?sequence=1> (Accessed August 28, 2021), pages 9-10 of document.</ref> প্রোটেস্ট্যান্ট ফরাসি অভিবাসী।<ref>Hazal Barbaros, ''Post Tenebras Lux: The Huguenot Diaspora in Early Modern London and its Reflections in Refugee Wills'', Master’s Thesis, August 2021, Department of History, İhsan Doğramacı Bilkent University, Ankara, page 7 of document.</ref> এই আদেশ পূর্বে প্রোটেস্ট্যান্ট হুগেনটদের প্রকাশ্যে তাদের ধর্ম পালনের অনুমতি দিয়েছিল।<ref>Gil Loescher, ''Refugees: A Very Short Introduction'', May 2021, Oxford, ISBN: 9780198811787, page 23.</ref> এই আদেশ বাতিলের সাথে সাথে, ফ্রান্সে এক শতাব্দী ধরে প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মীয় অনুশীলনকে সুরক্ষিত রেখে আসা আইনি নিশ্চয়তার অবসান ঘটে। ক্যালভিনিস্ট গির্জা ধ্বংস করে মন্ত্রীদের জোরপূর্বক নির্বাসিত করে প্রোটেস্ট্যান্টদের ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সরকারি পদ ও পেশায় তাদের প্রবেশাধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351 at page 52.</ref> এই হুগেনটরা ইংল্যান্ডে আসার সাথে সাথে "শরণার্থী" শব্দটি ইংরেজি ভাষায় গৃহীত হয়েছিল।<ref name=":602">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 28.</ref> নতুন ফ্রান্সের প্রোটেস্ট্যান্টরাও একইভাবে প্রভাবিত হয়েছিল - হয় প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম ত্যাগ করতে, ফ্রান্সে ফিরে যেতে, অথবা নতুন বিশ্বে একটি ইংরেজ প্রোটেস্ট্যান্ট উপনিবেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।<ref>Jaenen, Cornelius J.. "Huguenots". ''The Canadian Encyclopedia'', 16 December 2013, ''Historica Canada''. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huguenots. Accessed 06 April 2021.</ref>
শরণার্থীদের ঘটনাটিকে পূর্ববর্তী নির্বাসিত এবং স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের থেকে তর্কযোগ্যভাবে আলাদা করার কারণ হলো তাদের আন্দোলনগুলো নতুন উদীয়মান রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করেছিল। এইভাবে, এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয় যে "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের এই সময়ে রাষ্ট্রের আধুনিক ধারণার উত্থানের সাথে সাথে উদ্ভূত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে হর্ষ ওয়ালিয়া একজন আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটিকেই "রাষ্ট্র-কেন্দ্রিক শ্রেণীবিন্যাস" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ সীমান্তকে শাসনের একটি বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেটস এবং কোলিয়ারের যুক্তি অনুসারে, ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি-পরবর্তী নতুন বিষয় ছিল যে সরকারগুলো নিজেদেরকে শরণার্থী আন্দোলন পরিচালনা করতে সক্ষম বলে ধারণা করতে শুরু করেছিল।<ref>Betts, Alexander, and Paul Collier. ''Refuge: Rethinking Refugee Policy in a Changing World''. 2017: New York, NY: Oxford University Press. Page 36.</ref> এর ফলে দুটি প্রধান প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: রাষ্ট্রগুলো কখন আশ্রয় দিতে পারে এবং কখন হবু শরণার্থীরা এটি আশা করতে পারে?
রাজ্যগুলো কখন এবং কখন আশ্রয় দিতে পারবে কিনা এই প্রশ্নটি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেক রাজ্য অভিবাসন নিষিদ্ধ করা তাদের ক্ষমতার মধ্যে বিবেচনা করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৪৯০-এর দশকে স্পেন এবং পর্তুগাল থেকে লক্ষ লক্ষ ইহুদির আগমনের পর অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ তার ভূমি থেকে ইহুদিদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করেন এই কারণে যে এটি অর্থনীতি এবং সুলতানের কোষাগার উভয়েরই উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করবে। ঐতিহাসিকভাবে। নীচে প্রাক-কনফেডারেশন কানাডার অংশে আলোচনা করা হয়েছে, দাসত্ব এবং দাসত্বের প্রতিষ্ঠানগুলোও যে কোনও দিকে অগ্রসর হওয়ার অধিকারের উপর প্রধান বিধিনিষেধ ছিল। ১৬০০ সালের দিকে হুগেনটরা ফ্রান্স থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়, লুই চতুর্দশ এই "বিশ্বাসঘাতকদের" ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান কারণ তাদের বেশিরভাগই তার অনুমতি ছাড়াই ফ্রান্স ছেড়ে চলে গিয়েছিল। যখন সুইসরা এই শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের আদেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়, তখন সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ফরাসিরা সুইসদের যুদ্ধের হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত, জেনেভায় যাওয়া বেশিরভাগ হুগেনট শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এর কারণ সম্ভবত কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করেছিল যে ফরাসিরা এই ধরনের "অপরাধের" প্রতিশোধ নেবে - এবং সুইসরা শরণার্থীদের অন্যত্র স্থায়ী আশ্রয় চাইতে উৎসাহিত করতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে কোনও সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়নি। তা সত্ত্বেও রাজ্যগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার এবং রাজ্যগুলোর প্রস্থান সীমিত করার ক্ষমতার প্রশ্নটি আন্তঃরাজ্য বিরোধের কারণ হিসাবে রয়ে গেছে। ১৮৪০-এর দশক থেকে, রাষ্ট্রগুলোর আশ্রয় প্রদানের অধিকার আরও স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়ে ওঠে। ১৮৪৮ সালের হাঙ্গেরীয় বিদ্রোহের দমন-পীড়নের পর অনেক হাঙ্গেরীয় অটোমান সাম্রাজ্যে (তুরস্ক) পালিয়ে যায়। রাশিয়া (যার বিদ্রোহ দমনে ভূমিকা ছিল) এবং অস্ট্রিয়া শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অনুরোধ করেছিল। তুরস্ক জবাব দেয় যে তাদের সম্মান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, সেইসাথে সুলতানের মানবতাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেহেতু ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই তুরস্কের পক্ষে ছিল, তাই রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়া নমনীয় হয়ে ওঠে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 39.</ref>
এই সময়ে আরেকটি প্রশ্ন উঠে আসে, হবু শরণার্থীরা কখন আশ্রয় পাওয়ার আশা করতে পারে। রেবেকা হ্যামলিন শরণার্থীর ধারণার তুলনা করেছেন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে একটি রাষ্ট্রের কাছে সুরক্ষার জন্য আবেদন করা অন্তর্ভুক্ত। এটি ইউরোপীয় ইতিহাসের আগের রীতিগুলোর সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে কেবল রাষ্ট্রের কাছে নয়, পরিবার, ব্যক্তি এবং ধর্মীয় নেতাদের কাছেও সুরক্ষার জন্য আবেদন করা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, কারা আশ্রয় নিতে পারবে এই প্রশ্নটি গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করা হয়নি। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, কেবলমাত্র আতিথেয়তা প্রদান করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যেই আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১৫৫০-এর দশকে যখন প্রোটেস্ট্যান্টরা ইংল্যান্ড থেকে ফ্রাঙ্কফুর্টে পালিয়ে যায়, তখন শরণার্থীদের প্রাথমিক আলিঙ্গন শীঘ্রই তাদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় অস্বস্তিতে পরিণত হয়। শেষ পর্যন্ত শরণার্থীদের উপাসনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ফলে অনেকেই আরও অতিথিপরায়ণ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হন। নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে, ১৯২০ সালের আগে শরণার্থী শব্দটির পরিধি এবং কোন ব্যক্তিরা এই মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী হতে পারেন তা নির্ধারণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ ছিল। এমা হাদ্দাদ এই বিবর্তনকে আরও বিশদভাবে তুলে ধরেন। শরনার্থীদের এই ঘটনাটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার পাশাপাশি আবির্ভূত হয়ে বিংশ শতাব্দীতে বিকশিত হয়েছিল। এর নতুন মাত্রা, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা, নতুনভাবে বন্ধ সীমানা এবং ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল হিসেবে জাতিরাষ্ট্র সম্পর্কে ধারণা এবং জাতীয় পরিচয় হিসেবে স্পষ্ট গ্রহণকারী দেশগুলোর অভাব, ধর্মীয় পরিচয়ের চেয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে বেশি।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 62.</ref>
== প্রাক-কনফেডারেশন কানাডায় শরণার্থী এবং জনসংখ্যার চলাচল ==
কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়া বিভিন্ন ধরণের। এর মধ্যে আশ্রয় খোঁজার প্রক্রিয়াও রয়েছে। এই অঞ্চলে এটি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। কানাডার ভূখণ্ডে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জনসংখ্যা প্রবাহের দিকে তাকালে কে শরণার্থী হিসেবে যোগ্য হবে সে সম্পর্কে একটি সত্তাতাত্ত্বিক প্রশ্ন উত্থাপন করে। শরণার্থীদের বৈষম্য, সীমান্তের ওপারে স্থানচ্যুতি, ব্যক্তি এবং তাদের সরকারের মধ্যে বন্ধন ছিন্ন করা এবং তাদের নিজ সম্প্রদায়ে নিপীড়নের আশঙ্কার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এই ধরনের মানদণ্ড পূরণকারী ব্যক্তিদের এই দেশে দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা বলে, উপরে বর্ণিত শরণার্থীর ধারণাটি প্রকৃতপক্ষে একটি আধুনিক ধারণা। কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার জনসংখ্যার চলাচলের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা অবশ্যই কালানুক্রমিক। রেবেকা হ্যামলিনের ভাষায়, "পিছনে ফিরে তাকানো এবং অতীতের ক্রসিংগুলোতে শরণার্থী/অভিবাসী দ্বিধা স্থাপন করা সেই ঘটনাগুলোর বাস্তবতাকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে না।" তবুও কানাডার ভূখণ্ডে আদিবাসী এবং ঔপনিবেশিক উভয় ক্ষেত্রেই জনসংখ্যার আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করা (মুছে ফেলা নয়) এবং শরণার্থীর সমসাময়িক ধারণাটি আধুনিক ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের সাথে কীভাবে গভীরভাবে যুক্ত হয়েছে তা চিত্রিত করা উপযুক্ত। প্রকৃতপক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় যে যদি এই ধরনের যোগসূত্রগুলো অপর্যাপ্তভাবে তুলে ধরা হয়, তাহলে মাইগ্রেশন স্টাডিজ স্কলারশিপ "ইচ্ছাকৃত স্মৃতিভ্রংশ"-এর সাথে জড়িত হতে পারে যা প্রথমে আগমণকারী জাতির দাবি এবং অধিকারগুলোকে "কল্পনা করে"।<ref>Stephanie J. Silverman, Immigration Detention in Canada: Concepts and Controversies, Forced Migration in/to Canada: From Colonization to Refugee Resettlement, Edited by Christina R. Clark-Kazak, <nowiki>ISBN 9780228022176</nowiki>, page 298.</ref>
শুরুতেই বলতে চাই, কানাডার ভূখণ্ডে মানুষের চলাচল এবং স্থানচ্যুতি নতুন কিছু নয়। কিছু ফার্স্ট নেশনস অত্যন্ত ভ্রমণপ্রিয় ছিল, যেমন ব্ল্যাকফুট যারা প্রেইরি পেরিয়ে শিকারের ক্ষেত্রগুলোতে বাইসনের পিছনে পিছনে যেত যেখানে তারা বাইসন লাফিয়ে দৌড়ে দৌড়াত।<ref>Dempsey, Hugh A.. "Blackfoot Confederacy". The Canadian Encyclopedia, 18 July 2019, Historica Canada. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/blackfoot-nation</nowiki>. Accessed 25 October 2021.</ref> ব্ল্যাকফুট কনফেডারেসি কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট প্লেইন অঞ্চলে অবস্থিত ব্ল্যাকফুট, ব্লাড এবং পাইগান জাতির সাথে যোগ দেয়। তারা বাইসনের চলাচলের উপর ভিত্তি করে একটি সাধারণ যাযাবর জীবনযাপন ভাগ করে নিত। এর উপর তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্ভর করত।
প্রথমে আগমণকারী জাতিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের ফলে আদিবাসীরা আগ্রাসন থেকে পালিয়ে নতুন অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ষোড়শ শতাব্দীতে, হাউডেনোসাউনি (ইরোকুইস) প্রতিবেশী গোষ্ঠীগুলোকে দমন বা ছত্রভঙ্গ করার জন্য অভিযান শুরু করে এবং একটি প্রাচীন আদর্শ অনুসরণ করে যে তারা তাদের প্রতিবেশীদের একটি জাতিতে আবদ্ধ করে "দীর্ঘ ঘরের ছাদ প্রসারিত করে" এবং এর ফলে একটি সর্বজনীন শান্তি তৈরি করে।<ref>Heidenreich, C.E.. "Huron-Wendat". The Canadian Encyclopedia, 10 October 2018, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/huron. Accessed 01 January 2021.</ref> ১৬৪৯ সালে হাউডেনোসাউনিরা গ্রাম ধ্বংস করে ফরাসি-মিত্র হুরন-ওয়েন্ডাতকে তাদের মাতৃভূমি থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ১৬৫০-এর দশকে হাউডেনোসাউনি বিচ্ছুরণ অভিযান পেটুন, নিউট্রাল এবং এরি-তে প্রভাব ফেলে। এর ফলে এই জাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং তাদের সদস্যরা হয় একত্রিত হয়ে নতুন সম্প্রদায় গঠন করে অথবা পূর্বে বিদ্যমান ইরোকোয়িয়ান জাতিগুলোতে যোগদান করে।<ref name=":212">Peter G. Ramsden and Zach Parrott, "Haudenosaunee (Iroquois)" ''in The Canadian Encyclopedia'', August 28, 2015 <https://thecanadianencyclopedia.ca/en/article/iroquois> (Accessed December 30, 2020).</ref>
কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্তৃত্বকারী ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার কর্মকাণ্ডের ফলেও আদিবাসীদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। ইউরোপীয় শক্তিগুলো পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসী জাতিগুলোর কাছ থেকে দখল করা জমিগুলোতে তাদের উত্তর আমেরিকার উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। এই জব্দকরণের মধ্যে সীমানা আরোপ এবং এর সাথে শারীরিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতি জড়িত ছিল। নিচে এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর বেশ কিছু পরিণতিও হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে রোগবালাই এবং যুদ্ধের কারণে অনেক প্রথমে আগমণকারী জাতির বিভিন্ন ব্যক্তি নিহত হয়েছিল। এই নতুন ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার কারণে তাদের গতিশীলতা এবং জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল।
পরিশেষে, শরণার্থীর ধারণাটিকে একটি আইনি ধারণা হিসেবেও ভাবা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে কানাডার প্রথমে আগমণকারী জাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রদায়ের সদস্যপদের শর্তগুলোকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত এবং ন্যায্যতা দেওয়া যায় সে সম্পর্কে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। আজকাল কানাডার আইনি ব্যবস্থায় এই ধরনের প্রশ্নগুলোকে প্রাথমিকভাবে অভিবাসন ও নাগরিকত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়। তবে আদিবাসী আইনি ব্যবস্থায় পারিবারিক আইন, গৃহ গোষ্ঠীর সদস্যপদ এবং আত্মীয়তার অধিকারের ধারণাগুলোর মাধ্যমেও এগুলোকে সমানভাবে দেখা যেতে পারে।<ref>For a discussion of the universality of such concepts, see: Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 3.</ref> প্রকৃতপক্ষে এই দেশের ঔপনিবেশিক আইনি ব্যবস্থার আগে এবং পরে পাশাপাশি কানাডার ভূখণ্ডগুলোতে প্রচুর আদিবাসী আইন ও আইনি ঐতিহ্য টিকে আছে। জন বোরোজ লিখেছেন, উত্তর আমেরিকার আদিবাসীরা ছিলেন আইনের প্রথম দিকের অনুশীলনকারী।<ref>John Borrows, Canada’s Indigenous Constitution (Toronto: University of Toronto Press, 2010) at 301.</ref> এই আদিবাসী আইন ও আইনি ঐতিহ্যগুলো তাদের বৈচিত্র্য, ধারাবাহিকতা, দমন, টিকে থাকা এবং অভিযোজনযোগ্যতার দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।<ref name=":323">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ভাটিয়া নাগরিকত্ব এবং অন্যদের স্বাগত জানানোর সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রথমে আগমণকারী জাতির আইনি নীতি সম্পর্কে লিখেছেন।<ref name=":322">Bhatia, Amar. "We Are All Here to Stay? Indigeneity, Migration, and ‘Decolonizing’ the Treaty Right to Be Here." Windsor Yearbook of Access to Justice, vol. 13, no. 2, 2013, p. 61.</ref> যেমন ডিশ উইথ ওয়ান স্পুন ওয়াম্পাম চুক্তি, ১৭০১ সালে হাউডেনোসাউনি এবং আনিশিনাবে জাতির মধ্যে প্রণীত একটি আদিবাসী নাগরিকত্ব আইন।<ref>Craft, A. 2013. Breathing Life into the Stone Fort Treaty An Anishinabe Understanding of Treaty One. Vancouver, BC: Purich Publishing.</ref> আরিমা তাদের পক্ষ থেকে পারিবারিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত ফার্স্ট নেশনসের আইনি নীতি সম্পর্কে লেখেন, যেমন ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপের নুটকা কীভাবে মূল ভূখণ্ডের উপকূলীয় স্যালিশ গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হত, যদিও অন্যথায় জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল না।<ref>Arima, E.Y., "Nuu-chah-nulth (Nootka)". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published February 07, 2006; Last Edited November 12, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/nootka-nuu-chah-nulth</nowiki></ref> এইভাবে, অন্যকে স্বাগত জানানোর শর্তাবলী নির্ধারণের কানাডায় কেবল ব্যবহারিক নয়, বরং দীর্ঘ আইনি ইতিহাস রয়েছে।
উত্তর আমেরিকার ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার দিকে ফিরে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক সীমানা তৈরির জন্য বল প্রয়োগ করেছিল। কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮৪৬ সালে সম্মত হয়। কিন্তু প্রেইরিতে জরিপ এবং তা চিহ্নিতকরণ ১৮৭৪ সালের আগে সম্পন্ন হয়নি।<ref name=":952">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> এই সীমান্তগুলো প্রথমে আগমণকারী জাতিদের গতিশীলতা সীমিত করেছে। ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে আগমণকারী জাতিগুলোকে এই উদীয়মান সত্তাগুলোর অধীনে থাকতে বাধ্য করেছিল। এমনকি যেখানে পূর্ব-বিদ্যমান জীবনযাত্রার ব্যবস্থা সীমান্তের একপাশে বা অন্য দিকে সুন্দরভাবে খাপ খায় না, সেখানেও তা-ই। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার ক্রিস ও চিপ্পেওয়াসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "বিদেশী ইন্ডিয়ান" হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমির সাথে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তাদের "অবৈধ অভিবাসী" হিসেবে নির্বাসিত করা হয়।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 25.</ref> "আমরা সীমান্ত অতিক্রম করিনি, সীমান্ত আমাদের অতিক্রম করেছে" এই ধ্বংসাত্মক স্লোগানটি এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণরূপে উপযুক্ত।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 23.</ref>
তাদের পক্ষ থেকে ডাকোটা ও লাকোটা জাতিগুলোকে আমেরিকান "ইন্ডিয়ান" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল যারা ১৮৬০-এর দশকে কানাডায় "শরণার্থী" হিসেবে এসেছিল, যদিও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ, ঐতিহাসিক রেকর্ড এবং মৌখিক জ্ঞান থেকে জানা যায় যে বর্তমান কানাডায় তাদের উপস্থিতি কমপক্ষে ৮০০ বছর আগের। এর পটভূমি ছিল ১৮৫১ সালে ডাকোটা আমেরিকান সরকারের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যেখানে ডাকোটা তাদের সমস্ত জমি আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ১৮৬২ সালের গ্রীষ্মে ডাকোটা একটি সশস্ত্র বিদ্রোহের সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ১৮৬২ সালের ডাকোটা যুদ্ধ বা সিউক্স বিদ্রোহ নামে পরিচিত ঘটনাটি সফল হয়নি এবং সেই বছরের নভেম্বরে প্রায় ১০০০ ডাকোটা আমেরিকান সেনাবাহিনীর হাত থেকে আশ্রয় নিতে রেড নদীর (বর্তমানে উইনিপেগ শহর) তীরে ফোর্ট গ্যারির গেটের বাইরে এসে পৌঁছায়। তারা এসে দাবি করেছিল যে ব্রিটিশ মাটিতে থাকার তাদের ঐতিহাসিক অধিকার রয়েছে এবং জমিগুলো আসলে তাদের ঐতিহ্যবাহী ভূখণ্ডের অংশ। সেই সময়, কানাডীয় সরকার ডাকোটাদের কানাডীয় জমির মালিকানা আছে কিনা তা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিল, বরং কানাডায় ডাকোটার উপস্থিতি "সহ্য" করে তাদের থাকার অনুমতি দিয়েছিল। এটি আংশিকভাবে অনুগ্রহের বিষয় ছিল। তবে মূলত এই কারণে যে ডাকোটা বাহিনীকে চলে যেতে বাধ্য করার জন্য কানাডায় পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী ছিল না। আজ কানাডায় নয়টি ডাকোটা এবং লাকোটা ব্যান্ড রয়েছে—সাসকাচোয়ানে চারটি এবং ম্যানিটোবায় পাঁচটি।<ref name=":962">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref> এই প্রসঙ্গে সরকারের "শরণার্থী" শব্দটির ব্যবহার বিতর্কিত থেকে আক্রমণাত্মক বলে বিবেচিত হয়েছে, ডাকোটার একজন প্রবীণ এই মর্মস্পর্শী প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছেন: "আপনার নিজের দেশে আপনি কীভাবে শরণার্থী হিসেবে পরিচিত হতে চান?"<ref name=":953">Turtle Mountain – Souris Plains Heritage Association, Heritage Explorer, ''Dakota Claim in Canada'', <https://vantagepoints.ca/stories/dakota-claim-canada/> (Accessed July 15, 2024).</ref> ২০২৪ সাল থেকে, কানাডীয় সরকার ডাকোটা এবং লাকোটার সাথে কানাডায় অধিকারের সাথে আচরণ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কেবল শরণার্থী হিসেবে নয়।<ref name=":96">CBC News, ''Canada to formally apologize to 9 Dakota, Lakota Nations for historic designation as refugees,'' Jul 14, 2024 <https://www.cbc.ca/news/canada/manitoba/manitoba-sask-apology-dakota-lakota-1.7263101>.</ref>
আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা সৃষ্ট স্থানচ্যুতি থেকে জাতীয় সীমানার মধ্যে যা ঘটেছিল সেদিকে অগ্রসর হয়ে ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা সীমানা তৈরি করেছিল। এটি সেখানকার গতিশীলতা সীমিত করেছিল। এর মধ্যে রিজার্ভ ব্যবস্থার সাথে জড়িত সীমানাও ছিল। এটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলগুলোর সাথে অনেক সম্পর্ক বাতিল করে সম্পর্কিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক স্থানচ্যুতি জড়িত করেছিল।<ref>Melissa May Ling Chung, ''The Relationships Between Racialized Immigrants And Indigenous Peoples In Canada: A Literature Review'', MA Thesis, 2012 <https://digital.library.ryerson.ca/islandora/object/RULA%3A1429> (Accessed December 30, 2020).</ref> অনেক আদিবাসী ব্যক্তিকে রিজার্ভে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৮৮৫ সালের উত্তর-পশ্চিম বিদ্রোহের পর ফেডারেল সরকার একটি পাস সিস্টেম তৈরি করে - একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আদিবাসীদের তাদের রিজার্ভে ফিরে যাওয়ার জন্য একজন ভারতীয় এজেন্ট দ্বারা অনুমোদিত একটি ভ্রমণ নথি উপস্থাপন করতে হত।<ref>Nestor, Rob, "Pass System in Canada". In The Canadian Encyclopedia. Historica Canada. Article published July 10, 2018; Last Edited July 13, 2018. <nowiki>https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/pass-system-in-canada</nowiki></ref> রিজার্ভ ব্যবস্থা ছাড়াও অনেক ফার্স্ট নেশনস ব্যক্তির চলাচল কানাডার বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত, যেমন ১৮৬২ সালে যখন গুটিবসন্তের আগমনের পর ভিক্টোরিয়া, বিসি-তে এক জেনোফোবিক হিস্টিরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে পুলিশ বন্দুকের মুখে কাছাকাছি আদিবাসী শিবিরগুলো খালি করে, সেগুলো পুড়িয়ে দেয় এবং গুটিবসন্তে আক্রান্ত আদিবাসীদের ভর্তি নৌকাগুলো উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। পরের বছর ধরে, এই আদিবাসীরা যখন তাদের নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে আসে, তখন তারা গুটিবসন্ত তাদের সাথে নিয়ে যায় এবং কমপক্ষে ৩০,০০০ আদিবাসী এই রোগে মারা যায় বলে জানা গেছে। এটি বর্তমান প্রথমে আগমণকারী জাতির জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ।<ref>Joshua Ostroff, ''How a smallpox epidemic forged modern British Columbia,'' August 1, 2017, Maclean's, <https://www.macleans.ca/news/canada/how-a-smallpox-epidemic-forged-modern-british-columbia/> (Accessed October 30, 2021).</ref> প্রকৃতপক্ষে ঔপনিবেশিকতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি ছিল কানাডায় বিপুল সংখ্যক প্রথমে আগমণকারী জাতির ব্যক্তি যারা ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীদের দ্বারা প্রবর্তিত রোগে মারা গিয়েছিলেন। এই ধরনের মৃত্যুর একটি প্রভাব ছিল যোগাযোগ-পরবর্তী সম্প্রদায়ের উত্থান, যেমন আবেনাকি, বর্তমান নিউ ব্রান্সউইক এবং ক্যুবেকের একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। এটি তখন আবির্ভূত হয়েছিল যখন অসংখ্য ছোট গোষ্ঠী এবং উপজাতি। এরা ভাষাগত, ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ভাগ করে নিয়েছিল, রোগ এবং যুদ্ধের দ্বারা তাদের মূল উপজাতিগুলো ধ্বংস হওয়ার পরে একটি নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে একত্রিত হয়েছিল।<ref>Lee Sultzman (July 21, 1997). "Abenaki History". Archived from the original on April 11, 2010. Retrieved March 20, 2010.</ref>
এই ধরনের মহামারী ও জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রভাব ছাড়াও নবনির্মিত কানাডা জাতি পূর্ব-বিদ্যমান আদিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতিকেও প্রভাবিত করেছিল। স্থানচ্যুতি এবং আত্তীকরণ সম্পর্কিত ''আদিবাসী জনগণের উপর রয়েল কমিশনের'' চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অংশের ভাষায়:<blockquote>[আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর উপনিবেশবাদের প্রভাব ছিল গভীর।] সম্ভবত সেই প্রভাব বর্ণনা করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত শব্দ হলো 'স্থানচ্যুতি'। আদিবাসীদের শারীরিকভাবে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিল। তাদের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাদের জন্য নির্বাচিত নতুন স্থানে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। তীব্র মিশনারি কার্যকলাপ এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার কারণে তাদের সন্তানদের কাছে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ প্রেরণের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করেছিল। এটি সেখানে তাদের উপর পুরুষ-কেন্দ্রিক ভিক্টোরিয়ান মূল্যবোধ আরোপ করেতাদের উল্লেখযোগ্য নৃত্যসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো ঐতিহ্যবাহী কার্যকলাপগুলোকেও আক্রমণ করেছিল। উত্তর আমেরিকাতেও তারা রাজনৈতিকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। ঔপনিবেশিক আইনের দ্বারা বাধ্য হয়ে তারা ঐতিহ্যবাহী শাসন কাঠামো ও প্রক্রিয়া ত্যাগ করতে বা অন্তত ঔপনিবেশিক-শৈলীর পৌর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে লুকিয়ে থাকতে পারে।<ref>Report of the Royal Commission on Aboriginal Peoples. Ottawa: The Commission, 1996. Print, at page 132 <http://data2.archives.ca/e/e448/e011188230-01.pdf> (Accessed January 1, 2021).</ref></blockquote>অনেক সময় আদিবাসী সম্প্রদায়গুলো এই ধরনের স্থানচ্যুতি থেকে আশ্রয় নেওয়ার সময় নবনির্মিত আন্তর্জাতিক সীমানার উপর নির্ভর করত। উদাহরণস্বরূপ, ১৭৭৯ সালে আমেরিকান সৈন্যরা বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪০-৫০টি কায়ুগা গ্রাম ধ্বংস করার পর কায়ুগা উপজাতির অনেক মানুষ ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং এর ফলে তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টির জন্য এই নতুন সীমান্তের উপর নির্ভর করে।<ref>Emerson Klees. ''Persons, Places, and Things around the Finger Lakes Region''. Rochester, Finger Lakes Publishing, 1994. Page 10.</ref>
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে ব্রিটিশরা ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায় অভিবাসনকে উৎসাহিত করার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে। ব্রিটিশরা যাদেরকে স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত করেছিল তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও ছিলেন যাদেরকে আজ যথাযথভাবে শরণার্থী বলা হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৫০,০০০ সংযুক্ত সাম্রাজ্যের অনুগত। এরা আমেরিকান বিপ্লবে ব্রিটিশদের সমর্থক, আমেরিকান প্রজাতন্ত্রবাদের প্রতিক্রিয়ায় উত্তরে স্থানান্তরিত হয়েছিল।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 6.</ref> তাদের অনেকেই উত্তর দিকে পাড়ি জমান কারণ তারা নতুন আমেরিকান প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হতে চাননি অথবা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের প্রতি তাদের জনসমর্থনের জন্য প্রতিশোধের ভয়ে।<ref name=":232">Troper, Harold. "Immigration in Canada". The Canadian Encyclopedia, 19 September 2017, Historica Canada. https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/immigration. Accessed 30 December 2020.</ref> এর মধ্যে মোহাক এবং সিক্স নেশনস ইন্ডিয়ানসের অন্যান্য সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের ওহিও উপত্যকায় তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কারণ তারা আমেরিকান বিপ্লবের সময় ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 2.</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুগতদের প্রতি যে প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল মারধর, কারাদণ্ড এবং অন্যান্য ধরণের হয়রানি।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 36.</ref> উত্তর দিকে অভিবাসিত অনুগতদের মধ্যে তেরো উপনিবেশের সীমান্তবর্তী আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২০০০ সদস্য ছিলেন যারা ব্রিটিশদের সমর্থন করেছিলেন, বিশ্বাস করতেন যে ব্রিটিশদের সাথে জোট তাদের স্বাধীনতা রক্ষা এবং ভূমিক্ষুধার্ত উপনিবেশবাদীদের হাত থেকে তাদের অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তম আশা প্রদান করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 40.</ref>
বিশ্বাসঘাতকরা তাদের দাসদের আজকের কানাডায় নিয়ে আসার অনুমতি পেয়েছিল। পরবর্তীতে বিশ্বাসঘাতকরা হাজার হাজার মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিরও অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি যুদ্ধের শুরুতে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ ঘোষণায় সাড়া দিয়েছিল যা বিপ্লবের সময় আমেরিকান মাস্টারকে ত্যাগ করে রাজাদের বাহিনীর সাথে পরিষেবা দেওয়ার জন্য মুক্তির প্রস্তাব দেয়। নতুন কৃষ্ণাঙ্গ আগন্তুকদের অধিকাংশই সংঘর্ষের শেষের দিকে করা একটি প্রস্তাবে সাড়া দেয় যা নিশ্চিত করে যে সকল দাস যারা ব্রিটিশ সীমার মধ্যে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক দাবি করে তারা তাদের মুক্তি পাবেন।<ref name=":242">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> আগমনের পর এই কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্বাসঘাতকদের অনেকেই নোভা স্কোটিয়াতে বর্ণবিদ্বেষ এবং হতাশাজনক কৃষি সম্ভাবনার সম্মুখীন হন। সেখানে তারা মূলত বসবাস করেছিল। খুব হতাশ হয়ে, ১,২০০ জন সিয়েরা লিওনের জন্য পালিয়ে যায় আফ্রিকার পশ্চিম তীর থেকে নতুন করে শুরু করতে ১৭৯২ সালে।<ref name=":243">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 42.</ref> তবুও, পরবর্তী এক শতাব্দীতে প্রায় ৩০,০০০ আফ্রিকান আমেরিকান কানাডায় এসেছিলেন যার ফলে অনানুষ্ঠানিক রেলপথ শেষ হয়, যে দেশটিতে দাসত্ব থেকে সুরক্ষা খুঁজছিলেন।<ref name=":63">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> যদিও তারা আইনগতভাবে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন। তবে তারা সর্বদা বাস্তবিক নিরাপত্তা পাননি কারণ কানাডায় কালো মুক্ত মানব শরণার্থীদের অবৈধভাবে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তাদের দক্ষিণী রাজ্যে পুরানো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।<ref>Henry, Natasha. "Fugitive Slave Act of 1850". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 June 2023, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/fugitive-slave-act-of-1850. Accessed 25 February 2024.</ref>
যদিও কৃষ্ণাঙ্গ এবং আদিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পালিয়ে গিয়েছিল, তবুও বাস্তবতা হলো যে কানাডীয় ঔপনিবেশিক প্রকল্পে একটি বর্ণগত যুক্তি কাজ করছিল যা শাসনব্যবস্থা কাকে স্বাগত জানাতে উপযুক্ত মনে করেছিল তা নির্ধারণ করেছিল।<ref name=":652">Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 47.</ref> কানাডার ইতিহাসে আমরা উপনিবেশবাদের এই যুক্তি দেখতে পাই, প্রথমে আগমণকারী জাতিদের সাথে কীভাবে আচরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্র কীভাবে জাতিগত এবং জাতীয় বহিরাগতদের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তা উভয় ক্ষেত্রেই। ১৭০০ সালের দিকে, ব্রিটিশরা উত্তর আমেরিকার সম্পত্তির ব্রিটিশ চরিত্রকে শক্তিশালী করার জন্য ইচ্ছাকৃত নীতিমালা প্রণয়ন করে। এর মধ্যে বর্তমান নোভা স্কটিয়া থেকে ফরাসিভাষী আকাদিয়ানদের জোরপূর্বক নির্বাসন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৫৫ সালে লেফটেন্যান্ট-গভর্নর লরেন্স এবং তার কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেন যে জোরপূর্বক ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে আকাদিয়ানদের মহাদেশের বেশ কয়েকটি উপনিবেশের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। সেই বছর ৩০০০ এরও বেশি একাডিয়ানকে বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ব্রিটিশ উপনিবেশে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মোট, নোভা স্কটিয়ার আকাদিয়ান জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাহাজগুলোতে এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী মারা যান। অনেক একাডিয়ান প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপ এবং কেপ ব্রেটনে আশ্রয় চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা কেবল সাময়িক অবকাশ পেয়েছিলেন। ১৭৫৮ সালে লুইসবার্গের বিরুদ্ধে আরেকটি ব্রিটিশ অভিযান তাদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে; এরপর আরও ৬০০০ আকাদিয়ানকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 34-35.</ref> এরপর কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অধিকন্তু, ইউনাইটেড সাম্রাজ্যের অনুগতদের মুকুট দ্বারা প্রদত্ত জমির অনুদানের মধ্যে প্রায়ই পূর্বে আকাদিয়ানদের দখলকৃত অঞ্চলগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে আকাদিয়ানরা জমিগুলো পুনরায় দখল করতে ফিরে আসতে বাধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ফোর্ট সেন্ট-অ্যান অঞ্চলে, বর্তমানে ফ্রেডেরিকটন। নোভা স্কটিয়ার আনাপোলিস নদীর আশেপাশের এলাকায়। সেখানে পূর্বে আকাদিয়ান জমিগুলো ১৭৫৯ সাল থেকে নিউ ইংল্যান্ড থেকে বসতি স্থাপনকারীদের দেওয়া হয়েছিল।
যদিও কনফেডারেশন-পূর্ব কানাডার সরকারগুলো স্পষ্টভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের দেশে আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তারা সাধারণত "সঠিক দেশ" থেকে আসা এবং পছন্দসই জাতি, ধর্ম এবং জাতীয়তার অধিকারী ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আপার কানাডার প্রথম লেফটেন্যান্ট-গভর্নর জন গ্রেভস সিমকো ১৭৯২ সালে একটি ঘোষণা জারি করেন যেখানে আমেরিকানদের আপার কানাডায় অভিবাসনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে ছিল কোয়েকার, মেনোনাইট এবং ডানকার্ড সহ শান্তিবাদী ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি একটি বিশেষ আবেদন। সেখানে তাদের সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 45-46.</ref>
== ঔপনিবেশিক কানাডায় অভিবাসনের উপর আইনি বিধিনিষেধের উত্থান ==
তার প্রথম শতাব্দীতে, কানাডা এবং তার ঔপনিবেশিক পূর্বপুরুষদের কোন আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নীতি ছিল না, না সীমান্তে ব্যক্তিদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের উপায় ছিল। এটি সেই সময়ের অন্যান্য পশ্চিমা রাজ্যগুলোর অভিজ্ঞতা ট্র্যাক করে। চেটেইলের সারসংক্ষেপে, ১৭ শতকের জাতিরাষ্ট্রের উত্থান এবং এর অন্তর্নিহিত পরিণাম - আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব - সাধারণত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রবর্তনের সাথে মিলেনি। এর বিপরীতে (সঠিক ধরণের) বিদেশীদের প্রবেশকে মূলত জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক কারণে আয়োজক রাষ্ট্রের শক্তি শক্তিশালী করার একটি উপায় হিসাবে দেখা হত। ফলস্বরূপ, ঊনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী সহজেই নতুন অঞ্চলে নতুন চাকরি এবং সুযোগের দিকে চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল। ''১৮৬৭ সালের সংবিধান আইনের'' ৯১(২৫) ধারা অনুসারে "প্রাকৃতিকীকরণ এবং ভিনগ্রহীদের" উপর ফেডারেল পার্লামেন্টকে এখতিয়ার দেওয়া হলেও, কানাডার প্রথম কনফেডারেশন-পরবর্তী অভিবাসন আইন '','' ১৮৬৯ সালের ''অভিবাসন এবং অভিবাসীদের সম্মানকারী আইন'', কোন শ্রেণীর অভিবাসীদের ভর্তি করা উচিত এবং কোন শ্রেণীর নিষিদ্ধ করা উচিত সে সম্পর্কে কিছুই না বলে অবাধে প্রচলিত ধারণাকে প্রতিফলিত করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 71.</ref> উদাহরণস্বরূপ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপীয় এবং উত্তর আমেরিকা ভ্রমণের জন্য সাধারণত পাসপোর্টের প্রয়োজন ছিল না।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 5.</ref> এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থীর সংজ্ঞা নির্ধারণ ক্ষমতাসীন শক্তিগুলোর জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল না।
যদিও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে মানুষ বিশ্বে চলাচলের একটি নির্দিষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করত, তবুও এই তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন অনুশীলনগুলো কোনওভাবেই সকলের জন্য ব্যবহারিক এবং বৈষম্যহীন চলাচলের স্বাধীনতা প্রদান করেনি। চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছিল। রাজ্যগুলো কর্তৃক আরোপিত চলাচলের উপর প্রাথমিক কিছু বিধিনিষেধ প্রতিটি রাজ্যের ভূখণ্ডের মধ্যে নাগরিক এবং অ-জাতীয় উভয়ের ''অভ্যন্তরীণ'' চলাচলের উপর আরোপ করা হয়েছিল। ইউরোপে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ অভিবাসন বিধিনিষেধ মূলত করের উদ্দেশ্যে আরোপ করা হয়েছিল,<ref name=":412">Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 39.</ref> এবং ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকায়, যেমন উপরে আলোচনা করা হয়েছে, এই ধরনের বিধিনিষেধের একটি প্রধান কারণ ছিল রিজার্ভ এবং পাস সিস্টেমের মাধ্যমে আদিবাসী জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রণ।
তাছাড়া, এই সময়েও, কানাডীয় সমাজ সকল অভিবাসীকে স্বাগত জানায়নি। যদিও সমস্ত ব্রিটিশ প্রজাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্যের যেকোনো স্থানে বসতি স্থাপনের অধিকার ছিল। এর মধ্যে কানাডার ব্রিটিশ অধিরাজ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন জান রাস্কা বর্ণনা করেছেন, কানাডীয় সরকার 'আকাঙ্ক্ষিত' অভিবাসীর প্রচলিত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে অভিবাসীদের গ্রহণ করেছিল। প্রাথমিক কানাডার আপাতদৃষ্টিতে ''অবাধ'' অভিবাসন নীতিগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে বিদ্যমান ছিল। কারণ ''কার্যত'' ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশেষ করে "অবাঞ্ছিত জাতি"দের জন্য কানাডায় ভ্রমণ সীমিত করেছিল। এর মধ্যে কয়েকটি শতাব্দী ধরে পশ্চিম ইউরোপ ছাড়া অন্য কোথাও থেকে নতুন বিশ্বের সাথে যোগাযোগের জন্য অর্থনৈতিক পরিবহন ব্যবস্থার অভাব ছিল। এমনকি যারা এই সময়ে নতুন দেশে অভিবাসন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অভিবাসন পদ্ধতির ফলে ঐতিহাসিক শরণার্থীরা আধুনিক শরণার্থী কনভেনশনে বর্ণিত অধিকারের স্যুট উপভোগ করতে পারেননি। উদাহরণস্বরূপ, এমা বোরল্যান্ড লিখেছেন, ১৭ শতকের ফরাসি হুগেনটরা যুক্তরাজ্যে পুরোপুরি স্বাগতপূর্ণ অভ্যর্থনা পায়নি এবং তাদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর বদলে হুগেনটরা 'প্রজা' হিসেবে বিবেচিত না হয়ে বিদেশীর মর্যাদা বজায় রেখেছিল। তাই সেই সময়ে ইংল্যান্ডে তাদের সীমিত অধিকার ছিল।<ref>Bernard Cottret, ''The Huguenots in England: Immigration and Settlement C.1550-1700'' (Cambridge University Press 1991) 53.</ref>
যাই হোক না কেন, অভিবাসনের প্রতি তুলনামূলকভাবে ''উদার'' মনোভাব। এটি আগে প্রচলিত ছিল, তা ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। কারণ রাষ্ট্রের জনগণের উপর নজরদারি ও শাসনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ১৮০০ সালের দিকে ইউরোপে আশ্রয়ের ধারণাটি নতুন করে গুরুত্ব পায়। কারণ দেশগুলো অপরাধীদের প্রত্যর্পণের জন্য দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করতে শুরু করে। এটি ব্যক্তিদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা সীমিত করে। রাষ্ট্রগুলো রাজনৈতিক অপরাধ সংঘটিত ব্যক্তিদের এই ধরনের প্রত্যর্পণ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ার উপযুক্ত মনে করেছিল, এই ভিত্তিতে যে তাদের বিচার থেকে যথাযথভাবে আশ্রয় দেওয়া উচিত।<ref>Laabidi, A and Nacir, R. (2021) Asylum Between Yesterday and Today, A Comparison Between Islamic Law and International Law. Review of International Geographical Education (RIGEO), 11(5), [tel:3602-3611 3602-3611]. doi: 10.48047/rigeo.11.05.246, page 3607.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৮২৬ সালের ''ভিনগ্রহী নিবন্ধন আইন'' ব্রিটিশ সরকারকে রাজনৈতিক শরণার্থীদের বহিষ্কার করতে বাধা দেয়। এর ফলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় যে একবার আশ্রয় দেওয়া হলে, একজন শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো যাবে না।<ref name=":732">Aleshkovski, I. A., Botcharova, Z. S., & Grebenyuk, A. (2021). The Evolution of the International Protection of Refugees between the World Wars. In Social Evolution & History (Vol. 20, Issue 2). Uchitel Publishing House. <nowiki>https://doi.org/10.30884/seh/2021.02.05</nowiki> at page 114.</ref> একইভাবে, ১৮৩৩ সালে বেলজিয়ামের প্রত্যর্পণ আইনের (' ''Loi sur les extraditions'' ') ধারা ৬-এ জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ শরণার্থীদের ব্যতীত, কোনও রাজনৈতিক শরণার্থীর প্রত্যর্পণ না করার নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ল্যাটিন আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর ধারণাটি ১৮৮৯ সালের আন্তর্জাতিক দণ্ড আইন সংক্রান্ত কনভেনশন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক কনভেনশনের একটি সিরিজে একইভাবে কোড করা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আধুনিক কল্যাণ ব্যবস্থার উত্থানের সাথে সাথে আরও কঠোর অভিবাসন নীতি আরোপ করা শুরু হয়। থেরিওল্টের কালানুক্রমিকভাবে, রাজ্যগুলো তাদের জনসংখ্যার কল্যাণে আর্থিকভাবে আরও বেশি জড়িত হওয়ার সাথে সাথে, নতুন অভিবাসী এবং শরণার্থীদের অতিরিক্ত বোঝা নিয়ে তারা ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf?sequence=2> (Accessed July 10, 2021), page 18.</ref> অধিকন্তু, এই সময়ে বিশ্বব্যাপী গতিশীলতা বৃদ্ধির ফলে অভিবাসন সম্পর্কে জাতিগতভাবে প্রভাবিত উদ্বেগ আরও তীব্র হয়ে ওঠে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 34.</ref>
রাজ্যগুলো যে বাধাগুলো তৈরি করতে শুরু করেছিল তা ক্রমবর্ধমানভাবে তাদের উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল যাদের আজ শরণার্থী বলা হবে; কানাডার ক্রমবর্ধমান অভিবাসন বিধিনিষেধের ব্যতিক্রম সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিল তার কারণের ভিত্তিতে করা হতো না। জেমস হ্যাথওয়ে বলেছেন, "অভিবাসনের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, বরং কানাডার উন্নয়নে অভিবাসীদের অবদান রাখার সম্ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল"।<ref>Hathaway, James C., 1988. "Selective Concern: An Overview of Refugee Law in Canada", ''McGill Law Journal'' 33, no. 4: 676-715, at 679.</ref>
এত কিছুর পরেও শরণার্থী নীতিমালা না থাকা সত্ত্বেও সরকার মাঝে মাঝে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের প্রবেশ সহজ এবং সহজতর করার চেষ্টা করেছে।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 15.</ref> এই সময়কালে কানাডার সরকার বিশেষভাবে যাদের কানাডায় আসার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে, ঘটনাক্রমে, যথাযথভাবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
* ১৮৭০ এবং ১৮৮০-এর দশকে কানাডীয় সরকার মেনোনাইটদের পশ্চিম কানাডায় বসতি স্থাপনের জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। ইউক্রেনের স্কুলগুলোতে। সেখানে তারা বাস করত, সেখানে রুশীকরণ নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে এবং সর্বজনীন সৈন্য নিয়োগের মাধ্যমে নতুন বাড়ির সন্ধানে মেনোনাইটদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। এটি তাদের শান্তিবাদী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ছিল।<ref name=":253">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> কানাডীয় সরকার তাদের কেবল সামরিক চাকরি থেকে মুক্তি দেয়নি, বরং আনুগত্যের শপথ গ্রহণের স্বাধীনতাও দেয়। এটি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।<ref name=":252">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 75.</ref> মেনোনাইটরা ছিল প্রথম অ-ব্রিটিশ গোষ্ঠী যারা কানাডায় আসার জন্য কানাডীয় সরকারের কাছ থেকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 37.</ref> ১৮৭০-এর দশকে ৭৫০০ জন ম্যানিটোবাতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 45.</ref>
* ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের হত্যার পর রাশিয়া জুড়ে সহিংস গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং শত শত ইহুদিদের হত্যা করা হয়, অন্যদের পরিকল্পিতভাবে তাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং তাদের গ্রাম থেকে আদেশ দেওয়া হয়। এই সময়ে, লক্ষ লক্ষ রাশিয়ান আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে যায়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 99.</ref> তাদের মধ্যে শত শত পশ্চিম কানাডায় দলবদ্ধভাবে বসতি স্থাপনের সুযোগ গ্রহণ করেছে। ১৮৮২ সালে কানাডায় আগত ২০০ জনেরও বেশি রাশিয়ান ইহুদি শরণার্থীর প্রথম দলটি তাদের পুনর্বাসনের পথে "ভয়াবহ বাধা" হিসেবে ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন।<ref name=":523">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যখন ফেডারেল সরকার এবং ইহুদি সম্প্রদায় নতুন আগতদের জন্য উপযুক্ত জমিতে বসতি স্থাপন করে, তখন প্রতিবেশী মেনোনাইটরা ইহুদিদের পাশে বসবাসের আপত্তি জানালে পরিকল্পনাটি বাতিল করা হয়। অবশেষে, বেশ কয়েকটি বসতি সফল হয় এবং শতাব্দীর শুরুতে কানাডার ইহুদি জনসংখ্যা প্রায় ১৭,০০০ হয়ে যায়। এটি ১৮৮০ সালের তুলনায় প্রায় দশগুণ বেশি।<ref name=":522">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock, ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 75-76.</ref> এরপর ১৯০০ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত, আরও ১,৩৮,০০০ ইহুদি কানাডায় অভিবাসিত হন। তাদের অনেকেই জারবাদী রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে আরও গণহত্যা থেকে পালিয়ে শরণার্থী হন।<ref name=":163">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
* এই সময়ে রাশিয়া থেকেও নির্যাতিত ডুখোবোররা আসতে শুরু করে।<ref name=":162">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref>
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আদিবাসীরাও উত্তর দিকে অভিবাসিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৮৭৬ সালে বর্তমানে মন্টানা রাজ্যের লিটল বিগহর্নে যুদ্ধের পর সিটিং বুলের ডাকোটা (সিওক্স) বাহিনী আমেরিকান লেফটেন্যান্ট-কর্নেল জর্জ আর্মস্ট্রং কাস্টার এবং তার ২৬২ জন সৈন্যকে হত্যা করে। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হয়ে, সিটিং বুল শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেন, কিন্তু আমেরিকানদের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর অনেক সিওক্স সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায় প্রবেশ করতে শুরু করে, উড মাউন্টেনের কাছে, এসকে (তখন উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের অংশ)। ১৮৭৭ সালে নর্থ-ওয়েস্ট মাউন্টেড পুলিশ ইন্সপেক্টর জেমস মরো ওয়ালশ সিটিং বুলের সাথে দেখা করেন এবং কানাডীয় আইনের শান্তিপূর্ণভাবে মেনে চলার বিনিময়ে তাকে মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে সুরক্ষার আশ্বাস দেন। তবে অভ্যর্থনাটি অতিথিপরায়ণতার থেকে অনেক দূরে ছিল। কানাডীয় সরকার, ভীত ছিল যে প্রধানের উপস্থিতি আন্তঃউপজাতি যুদ্ধকে উস্কে দেবে এবং শ্বেতাঙ্গ বসতি স্থাপনের জন্য প্রেইরিগুলো পরিষ্কার করতে আগ্রহী, সিটিং বুলের তার লোকদের জন্য একটি রিজার্ভের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। খাদ্যের অভাব ধীরে ধীরে সিউক্সকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে বাধ্য করে এবং রেশনের আমেরিকান প্রতিশ্রুতি মেনে নেয়।
সময়ের সাথে সাথে, কানাডার অভিবাসন আইনের সংশোধনীগুলো দেশটির বৈষম্যমূলক নীতিগুলোকে আইনে স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করে। এই সংশোধনীগুলো এই সময়ে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে এই ধরনের বিধিনিষেধের উত্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। প্রকৃতপক্ষে ১৯৩০ সালের মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধের প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্র জাতিগত কারণে অভিবাসন সীমিত করার আইন পাস করেছিল। তবে সোমানি বলেছেন, কানাডার সীমান্তে বর্ণবাদকে বৈধতার প্রদর্শনের মাধ্যমে ঢেকে রাখা হয়েছিল। কানাডার প্রাথমিক রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য ছিল এই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং মূল্যবোধকে ব্রিটিশ মাতৃভূমির আদলে গড়ে তোলা। কানাডা তার অভিবাসন আইনে জাতিগত বিধিনিষেধ খুব বেশি প্রকাশ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে অনিচ্ছুক ছিল, পাছে এটি একটি সুসংহত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ধারণাকে ক্ষুণ্ন করে এবং জাপানিদের সাথে ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ককে ক্ষুণ্ন করে, অথবা স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করে। উদাহরণস্বরূপ ভারতে। এই লক্ষ্যে, শ্রেণী, জাতি, লিঙ্গ এবং অক্ষমতার ভিত্তিতে ''কার্যত'' বৈষম্যমূলক কানাডীয় নীতিগুলো নিরপেক্ষ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছিল, যেমন মন্ত্রিসভাকে যেকোনো শ্রেণীর অভিবাসীকে বাদ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল যেখানে তারা মনে করেছিল যে এই ধরনের বর্জন "দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে"।
কানাডায় ব্যবহৃত নির্দিষ্ট বর্জনীয় ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* <u>ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজনীয়তা</u>: বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনেক রাজ্যের মতো কানাডাও কানাডায় ভ্রমণকারীদের পাসপোর্ট বহন করার একটি বাধ্যবাধকতা কার্যকর করেছিল। ক্যাপ্রিলিয়ান-চার্চিল লিখেছেন, পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা বহির্ভূতকরণের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে মনে হয়।<ref>Kaprielian-Churchill, I. (1994). Rejecting “Misfits:” Canada and the Nansen Passport. ''International Migration Review'', ''28''(2), 281–306. <nowiki>https://doi.org/10.1177/019791839402800203</nowiki> at page 282.</ref> উদাহরণস্বরূপ, এটি এশীয় অভিবাসীদের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল, যদিও অভিবাসীদের আরও পছন্দের শ্রেণীর জন্য এটি বাধ্যতামূলক ছিল না। আমি এই ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকর করার নির্দেশ দিচ্ছি, সরকার সেন্ট্রাল কানাডা জেলার কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত বরাবর ৩৭টি প্রবেশপথে একটি অভিবাসন পরিদর্শন পরিষেবা চালু করেছে। এটি টরন্টো, অন্টারিও থেকে প্রাগ, ম্যানিটোবা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।<ref>Knowles, V. (2016), Strangers at our gates: Canadian immigration and immigration policy, 1540-2015, 4th edn., Toronto: Dundurn Press, 212, as cited in ''Canadian immigration and immigration policy 1867-2020,'' Valerie Knowles, in Ervis Martani and Denise Helly, Asylum and resettlement in Canada, Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 48.</ref>
* জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর সহ জাতিগতভাবে নির্বাচনী কর: অভিবাসীদের এই গোষ্ঠীগুলোকে বেছে বেছে বাদ দেওয়ার জন্য চীনা মাথা কর ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":64">Irving Abella and Petra Molnar, ''Refugees'', The Canadian Encyclopedia, June 21, 2019, <https://www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/refugees> (Accessed May 9, 2020).</ref> এটি প্রথমে ১৮৮৫ সালের চীনা অভিবাসন আইন দ্বারা আরোপ করা হয়েছিল। এটি জাতিগত উৎসের ভিত্তিতে অভিবাসীদের বাদ দেওয়ার জন্য কানাডীয় আইনের প্রথম অংশ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।<ref name=":664">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> চীনা অভিবাসীদের উপর মাথা কর ১৮৮৫ সালে $৫০ নির্ধারণ করা হয়েছিল, ১৯০০ সালে $১০০ করা হয়েছিল,<ref>''An Act respecting and restricting Chinese Immigration,'' SC 1900, c 32, s 6.</ref> এবং তারপর ১৯০৩ সালে $৫০০ করা হয়েছিল।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 144.</ref> বিপরীতে, অন্যান্য অভিবাসীদের জন্য দেশে প্রবেশের জন্য আদর্শ ভাড়া ছিল এক বছরের বেশি বয়সী প্রতি যাত্রীর জন্য এক ডলার।<ref>Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 297.</ref> সেই $৫০০ আজ প্রায় $১২,৯০০ হবে। এটি দুই বছরের বেতন থেকে সঞ্চয়ের সমতুল্য ছিল এবং বলা হয়েছিল যে মন্ট্রিলে দুটি বাড়ি কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল। ১৮৮৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে প্রায় ৯৭,০০০ চীনা নাগরিক কানাডায় আসার জন্য কর প্রদান করেছিলেন।<ref>David How, et. al., ''100 Years of Resilience: Reflections on the “Chinese Exclusion Act”'', The Advocate, Vol. 82 Part 1 January 2024, at page 20.</ref> পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন পূর্ববর্তী চীনা অভিবাসীদের উপর আরোপিত শুল্ক বাতিল করে দেয়,<ref name=":663">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> কিন্তু পরিবর্তে প্রায় সকল চীনা অভিবাসীর স্থায়ী বসতি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে। যদিও কূটনীতিক, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় কমপক্ষে $২,৫০০ বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী (এবং তাদের স্ত্রী),<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952): Lobbying, Humanitarianism, and Enlightened Self-Interest (Part 2),'' CIHS Bulletin, June 2021, Issue 97, <[https://docs.google.com/viewerng/viewer?url=http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf&hl=en_GB http://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2021/07/Bulletin-97-June-2021.pdf]> (Accessed July 18, 2021), at page 16.</ref> কানাডায় জন্মগ্রহণকারী চীনা বংশোদ্ভূত ব্যক্তি<ref>''An Act respecting Chinese Immigration'', SC 1923, c 38, s 5.</ref> এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যতিক্রম করা হয়েছিল, এই আইনের পরের ২৩ বছরে মাত্র ১৫ জন চীনা অভিবাসী কানাডায় প্রবেশ করতে পেরেছিলেন।<ref name=":662">CAPIC ACCPI, ''The History of Canadian Immigration Consulting'', Oct. 15 2017, Kindle Edition, North York: ON, ISBN 978-1-7751648-0-0-7.</ref> এটি ১৯৪৭ সালে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Laura Madokoro, ''Erasing Exclusion: Adrienne Clarkson and the Promise of the Refugee Experience'', Chapter 3 in Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 72.</ref>
* "কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত রেস" এর উপর বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ৩৮ (সি) ধারা গভর্নর-ইন-কাউন্সিলকে "নিষিদ্ধ ... কানাডায় অবতরণ... কানাডার জলবায়ু বা প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত যে কোনও জাতির অভিবাসীদের। কালো আমেরিকান অভিবাসীদের নিয়মিতভাবে কানাডার "জলবায়ুর জন্য অনুপযুক্ত" বলে বাদ দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী স্যার উইলফ্রিড লরিয়ারের মন্ত্রিসভা ১৯১১ সালে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের বাদ দিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেছে: "''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ এর উপধারা (সি) এর কারণে কাউন্সিলে মহামান্য আদেশ দিতে পেরে সন্তুষ্ট এবং এটি নিম্নরূপ আদেশ দেওয়া হয়েছে: ... কানাডায় অবতরণের তারিখ থেকে এবং তার পরে এক বছরের জন্য কানাডায় অবতরণ করা হবে এবং নিগ্রো জাতির অন্তর্গত যে কোনও অভিবাসীর জন্য এটি নিষিদ্ধ। এটি জাতি কানাডার জলবায়ু এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য অনুপযুক্ত বলে মনে করা হয়।'' বলা হয়েছে, কাউন্সিলের আদেশটি সরকারিভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। স্ট্যাসিউলিস যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি পশ্চিম গোলার্ধে প্রথম স্পষ্টতই জাতিগত বর্জনীয় নীতি ছিল এবং এটি ওকলাহোমার ক্লু ক্লাক্স ক্লান থেকে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষ্ণাঙ্গ কৃষকদের প্রবেশ বন্ধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। ১৯১০ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৩৮ (সি) কানাডীয় সরকার ১৯৬৭৬৭ সালে নতুন বিধিমালা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত প্যান-এশিয়ান অভিবাসনকে সীমাবদ্ধ করে এমন নীতিগুলো প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতেও ব্যবহার করবে।
* অভিবাসন প্রণোদনা এবং ঋণ প্রোগ্রামের উপর জাতিগত বিধিনিষেধ: ঋণ একটি প্রণোদনা প্রোগ্রাম, যেমন ১৯৫০ এর দশকের সহায়ক উত্তরণ ঋণ প্রকল্প। এরা কানাডায় তাদের নিজস্ব পরিবহন বহন করতে পারে না তাদের ঋণ প্রদান করে। ঋণ ইউরোপের লোকদের দেওয়া হয়েছিল। তবে আফ্রিকা বা এশিয়া থেকে নয়।
* কানাডায় পুনঃপ্রবেশে বিধিনিষেধ: ১৯২৩ সালের চীনা ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পরে, কানাডার মধ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যমান চীনা অভিবাসীদের সাধারণত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা কেবল একমুখী ভ্রমণের জন্য চীনে ফিরে আসতে পারে।
* জাতিগত ভিত্তিক অন্তরীণ: ইউক্রেনীয়দের অন্তরীণ করার জন্য এই অভিবাসীদের বাদ দেওয়া এবং নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর আগে কানাডার অনেক অংশের চায়নাটাউনে চীনা নাগরিকদের বসবাস সীমাবদ্ধ ছিল। জাপানি কানাডীয়রা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের ইন্টার্নশিপের পরে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত উপকূলে ফিরে আসতে পারেনি।
* জাতিগত কারণে অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে অস্বীকার: ১৮৯৬ এবং ১৯১১ এর মধ্যে কানাডায় চলে আসা ১ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান অভিবাসীদের মধ্যে ১০০০ এরও কম আফ্রিকান আমেরিকান ছিলেন। ট্রেবিলকক এবং কেলি রিপোর্ট করেছেন যে আফ্রিকান-আমেরিকান সম্প্রদায়ের দ্বারা প্রদর্শিত কানাডায় বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সীমিত আগ্রহ ছিল এবং কানাডীয় সরকার এ জাতীয় আগ্রহ গড়ে তোলার জন্য কিছুই করেনি। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে যখন বিভাগের কর্মকর্তা বা অভিবাসন এজেন্টরা কানাডায় অভিবাসন করতে ইচ্ছুক আফ্রিকান আমেরিকানদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, তখন সরকারী নীতি সীমাবদ্ধ ছিল। কখনও কখনও, অনুরোধগুলো কানাডীয় ইমিগ্রেশন এজেন্টদের দ্বারা উপেক্ষা করা হয়েছিল বা অনির্দিষ্টকালের জন্য 'ফাইলে' রাখা হয়েছিল।
* স্বাস্থ্য ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯০৬ সালে পাস হওয়া অভিবাসন আইন "উন্মাদ", "নির্বোধ" বা "মৃগীরোগী" হিসাবে নির্ণয় করা ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। মুখের নিরপেক্ষ আইনী বিধানগুলোও বৈষম্যমূলক উপায়ে নিযুক্ত করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের'' কোনও কিছুই বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নিষিদ্ধ করেনি, যে কোনও অভিবাসীকে আইনের চিকিত্সা বিধানের অধীনে স্বাস্থ্যগত কারণে কানাডায় প্রবেশাধিকার কার্যকরভাবে অস্বীকার করা যেতে পারে। ১৯১১ সালে সরকার আমেরিকান সীমান্তে অভিবাসন পরিদর্শকদের নির্দেশ দিয়েছিল যে সমস্ত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে চিকিত্সার কারণে ভর্তির জন্য অযোগ্য হিসাবে প্রত্যাখ্যান করতে। হ্যারল্ড ট্রপার যেমন নোট করেছেন, "কোনও আবেদন ছিল না।
* শ্রেণি ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৮৭৯ সালে "আদিবাসী ও দরিদ্রদের" কানাডায় অবতরণ নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আদেশ-ইন-কাউন্সিল পাস করা হয়েছিল যদি না তাদের বহনকারী জাহাজের মাস্টার অস্থায়ী সহায়তা সরবরাহ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় কাটাতে পর্যাপ্ত তহবিল জমা না দেয়। তারপরে, ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন ও অভিবাসীদের সম্মান জানিয়ে'' সংসদ "দরিদ্র" বা "নিঃস্ব" বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা কঠোর করে। সরকার ১৯১০ সালে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' সংশোধন করে অটোয়ার ইমিগ্রেশন সুপারিনটেনডেন্ট বা লন্ডনে কানাডার অভিবাসনের সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট থেকে কানাডায় অভিবাসনের লিখিত কর্তৃত্ব না পাওয়া সমস্ত "দাতব্য মামলা" নিষিদ্ধ করে। ভ্যালেরি নোলস লিখেছেন, এই ধারাটি বিপুল সংখ্যক দরিদ্র ব্রিটিশ অভিবাসীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল যারা ব্রিটেনকে দরিদ্রদের থেকে মুক্তি দিতে এবং কানাডায় একটি নতুন সূচনা দেওয়ার জন্য আগ্রহী দাতব্য সংস্থার সহায়তায় কানাডায় এসেছিল।
* কানাডায় আসার পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে বিধিনিষেধ: বর্ণবাদী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করার জন্য ব্যক্তিরা যেভাবে কানাডায় এসেছিলেন সে সম্পর্কে কানাডা মুখের নিরপেক্ষ আইন ব্যবহার করেছিল। ১৮৮৫ সালের ''চীনা অভিবাসন আইন'' প্রতি পঞ্চাশ টন পণ্যসম্ভারের জন্য একটি জাহাজ বহন করতে পারে এমন চীনা ব্যক্তির সংখ্যা সীমাবদ্ধ করে। সেখানে প্রতি দুই টন পণ্যসম্ভারের জন্য একজন ইউরোপীয়ের তুলনায়। পরে, ১৯০৬ সালের "অবিচ্ছিন্ন যাত্রা বিধিমালা" মন্ত্রীকে অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেয় যদি না তারা তাদের জন্ম বা নাগরিকত্বের দেশ থেকে কানাডায় আসে "দেশ ছাড়ার আগে কেনা টিকিটের মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের মাধ্যমে" (শব্দটি পরে কিছুটা সংশোধন করা হয়েছিল)। এই বিধিমালা ১৯১৪ সালে এসএস কোমাগাতা মারুতে ৩৭৬ জন যাত্রীর মধ্যে ২০ (বা ২৪) যাত্রী। তাদের বেশিরভাগই শিখ ছিল, বাদে সকলের অবতরণ নিষিদ্ধ করেছিল। নৌকাটিকে ভ্যাঙ্কুভারে ডক করার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং দুই মাসের অচলাবস্থার পরে কোমাগাতা মারু ঘুরে প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যদিও এই হবু অভিবাসীরা শরণার্থী হিসাবে শুরু করেনি, এর ২৬ জন যাত্রী ভারতে পৌঁছানোর পরে ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশের হাতে নিহত হয়েছিল,[ তারা সন্দেহ করেছিল যে যাত্রীরা উত্তর আমেরিকা ভিত্তিক একটি গোষ্ঠীর সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল যা ভারতে ব্রিটিশ রাজকে উৎখাত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। এই অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণের নিয়মটি জাতি নির্বিশেষে শরণার্থীদের জন্য বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। কারণ জন্মের দেশে বা কানাডায় টিকিট কেনার প্রয়োজনীয়তা, বেশিরভাগ শরণার্থীদের জন্য একটি অসম্ভব প্রয়োজনীয়তা। এরা সংজ্ঞা অনুসারে, কানাডায় যাত্রা শুরু করার জন্য তাদের দেশে ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করবে। তদুপরি, অবিচ্ছিন্ন ভ্রমণ নিয়মের পিছনে সীমাবদ্ধ অভিপ্রায়টি ভারত ও কানাডার মধ্যে একমাত্র সরাসরি জাহাজ পরিষেবা, কানাডীয় প্যাসিফিক শিপিং লাইনের কলকাতা-ভ্যাঙ্কুভার পরিষেবা বন্ধ করার জন্য কানাডা সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তা দ্বারা উদাহরণ দেওয়া হয়েছিল। পরে, ফেডারেল সরকার ১৯১৩ সালে পশ্চিমা সমুদ্রবন্দরগুলোতে "দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের" অবতরণ নিষিদ্ধ করতে আসবে; প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে কানাডায় কে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে তা বিবেচনা করে এই বিধিনিষেধের অনুমানযোগ্য জাতিগত প্রভাব ছিল। ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে আরেকটি কানাডীয় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় কর্তৃপক্ষ আফ্রিকান-আমেরিকান বসতি স্থাপনকারীদের সম্ভাব্য আগমন সম্পর্কে প্রেইরি বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল যাতে রেলওয়ে কর্মীদের আমেরিকা থেকে আগত কৃষ্ণাঙ্গদের কাছে ট্রেনের টিকিট বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে কানাডায় আবদ্ধ আফ্রিকান-আমেরিকানদের বসতি স্থাপনের হার হ্রাসের পরিবর্তে ট্রেন ভ্রমণের জন্য পুরো ভাড়া নেওয়া হয়।
* ধর্মীয় বিধিনিষেধ: ১৯১৯ সালে শুরু হওয়া তিন বছরের সময়কালে, ডৌখোবার্স, মেনোনাইটস এবং হুটেরাইটসকে কানাডায় প্রবেশ বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ প্রাসঙ্গিক অর্ডার-ইন-কাউন্সিলের কথায়, "তাদের অদ্ভুত রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার পদ্ধতি এবং সম্পত্তি ধরে রাখার পদ্ধতি এবং তাদের প্রবেশের পরে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে সহজেই একীভূত হতে বা কানাডার নাগরিকত্বের দায়িত্ব ও দায়িত্ব গ্রহণ করতে তাদের সম্ভাব্য অক্ষমতার কারণে। কথিত আছে যে হুটেরাইটরা তাদের শান্তিবাদ এবং ফলস্বরূপ বিশ্বযুদ্ধে অস্ত্র বহন করতে অস্বীকার করার কারণে এই সময়ে কানাডায় বিশেষ অসন্তোষ জাগিয়ে তুলেছিল।
* লিঙ্গ ভিত্তিক নীতি: ১৯৩৮ সালে কানাডার পুরুষ বাসিন্দারা যারা তাদের উদ্দিষ্ট স্ত্রীদের সমর্থন করতে সক্ষম হয়েছিল তারা বাগদত্তাকে স্পনসর করতে সক্ষম হয়েছিল। কানাডার মহিলা বাসিন্দাদের স্বামী বা স্ত্রীকে স্পনসর করার মতো ক্ষমতা বাড়ানো হয়নি। কানাডার ১৯৪৭ সালের ''নাগরিকত্ব আইন'' কানাডীয় মহিলাদের যারা অ-কানাডীয়দের বিয়ে করেছিলেন তাদের নাগরিকত্ব বজায় রাখার অনুমতি দেয়। তবে এই মহিলারা বিদেশে জন্মগ্রহণকারী তাদের সন্তানদের কাছে তাদের কানাডীয় নাগরিকত্ব দিতে পারেননি, যেহেতু এই শিশুরা তাদের নাগরিকত্ব দায়ী পিতামাতা, তাদের বাবার কাছ থেকে পেয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল।
* রাজনৈতিক-মতামত ভিত্তিক বিধিনিষেধ: ১৯১০ সালে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট সংশোধন করা হয়েছিল যাতে নৈরাজ্যবাদী মতামত প্রকাশকারীদের বাদ দেওয়া এবং নির্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কানাডায় অস্থায়ী মর্যাদাপ্রাপ্তদের জন্য এই বিধিনিষেধমূলক নীতির ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, দেশের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথ নির্মাণের জন্য পনের হাজার চীনা পুরুষকে কানাডায় আনা হয়েছিল। তবে সাধারণত কোনও ব্যক্তি কেন তার নিজ রাজ্য ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তার উপর ভিত্তি করে ব্যতিক্রম করা হতো না - প্রকৃতপক্ষে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত, কানাডা শরণার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিক পার্থক্য করত না।
== লীগ অফ নেশনস যুগ ==
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং রুশ বিপ্লবের পর থেকেই "শরণার্থী" শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। যদিও "শরণার্থী" শব্দটি ১৭ শতকের, তবুও এই বিন্দু পর্যন্ত এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। ১৯২০-এর দশকে "শরণার্থী" শব্দটি আরও ঘন ঘন আবির্ভূত হতে শুরু করে এবং আশ্রয়, সুরক্ষা এবং আতিথেয়তার মতো দীর্ঘস্থায়ী "প্রতিযোগী শব্দ" "বিস্মৃতির অতলে" চলে যেতে শুরু করে। হ্যামলিন বর্ণনা করেছেন, শরণার্থী শব্দটি "এই সময়ের একটি ফসল ছিল।" এই বিষয়টি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বেগ বৃদ্ধির মধ্যে এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির আবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, লীগ অফ নেশনস-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯২১ সালে একটি শরণার্থী অফিস তৈরির অনুমোদন দেয় এবং ফ্রিডটজফ ন্যানসেনকে শরণার্থীদের জন্য প্রথম হাই কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করে। ১৯২২ সালে নানসেন রাশিয়ান শরণার্থীদের জন্য তথাকথিত 'নানসেন পাসপোর্ট' তৈরি করেন। এটি ছিল একটি আন্তর্জাতিক পরিচয়পত্র যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, রাশিয়ান বিপ্লব এবং তুরস্কে আর্মেনীয় গণহত্যার ঘটনাবলীর কারণে উচ্ছেদ হওয়া শরণার্থীদের চলাচল এবং পুনর্বাসনের সুবিধা প্রদান করে। এই প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কয়েক মিলিয়ন ইউরোপীয় শরণার্থীকে সুরক্ষা এবং সহায়তা পাওয়ার উপায় প্রদান করেছিল।<ref name=":31" /> এটি কে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনের সূচনা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯২৫ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শরণার্থী পরিষেবা এই ন্যানসেন পাসপোর্টগুলো ইস্যু করার দায়িত্ব গ্রহণ করে। পাঁচ বছর পর ন্যানসেনের মৃত্যুর পর লীগ অফ নেশনস হাই কমিশনারের পদ বাতিল করে এবং শরণার্থী কাজের এই মানবিক দিকটি ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজি বা সংক্ষেপে আন্তর্জাতিক শরণার্থী অফিসের উপর অর্পণ করে।
থেরিওল্ট বলেন যে প্রথমে সাধারণত ধরে নেওয়া হতো যে শরণার্থী সমস্যাটি অস্থায়ী এবং দেশগুলো স্বেচ্ছায় শরণার্থীদের তুলনামূলকভাবে উদার সুবিধা প্রদান করে। তবে ১৯২০-এর দশকের শেষের দিকে, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী প্রকৃতি স্বীকার করতে শুরু করে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে শরণার্থীদের একীভূত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনে পরিবর্তন আসে। কারণ রাশিয়ান এবং আর্মেনিয়ান শরণার্থীদের জন্য ন্যানসেন পাসপোর্ট প্রদানের বিষয়ে ১৯২২ এবং ১৯২৪ সালের ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বাধ্যবাধকতা আরোপকারী চুক্তিগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত করার প্রচেষ্টা সীমিত রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সাথে মিলিত হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগগুলোর কোনওটিতেই স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। কানাডীয় সরকার ন্যানসেন পাসপোর্টকে স্বীকৃতি দিতে দৃঢ়ভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এই ভিত্তিতে যে কানাডা কেবল তখনই এই ধরনের পাসপোর্টধারীদের গ্রহণ করবে যদি তারা অপরাধী বা পাগল হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দেশে ফেরত পাঠানোর যোগ্য হয়। এটি ক্যাপ্রিয়েলিয়ান-চার্চিল শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করার একটি ধোঁয়াশা এবং উপায় হিসাবে বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য দেশগুলো যখন কানাডার প্রত্যাবাসনযোগ্যতার দাবি পূরণের জন্য প্রচেষ্টা করেছিল, তখনও কানাডীয় কর্মকর্তারা শরণার্থীদের প্রত্যাখ্যান করতে থাকে, প্রত্যাখ্যানের অন্যান্য কারণ খুঁজে বের করে। ১৯৩১ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা গর্বের সাথে বলেছিলেন যে লীগ অফ নেশনস-এর ন্যানসেন পাসপোর্টে কানাডায় মাত্র "এক ডজন শরণার্থী" প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
ন্যানসেন পাসপোর্টের ভিত্তি স্থাপনকারী চুক্তিগুলো চুক্তি আইনের মর্যাদার অভাবের বিষয়টি মোকাবেলা করার জন্য, লীগ অফ নেশনস ১৯৩৩ সালে ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত একটি কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করে। ১৯৩১ সাল পর্যন্ত কানাডা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল, অর্থাৎ তার আগে "কানাডীয় পররাষ্ট্র নীতি" বলে কিছু ছিল না। কারণ ব্রিটেন তার উপনিবেশগুলোকে লন্ডনের অনুমোদন ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর, জোট গঠন বা অন্য দেশের সাথে প্রায় কোনও অর্থপূর্ণভাবে যোগাযোগের অনুমতি দিত না। ১৯৩১ সালে যুক্তরাজ্য ওয়েস্টমিনস্টারের সংবিধি পাস করে যার ফলে তার স্ব-শাসিত শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশগুলোকে তাদের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি পছন্দ করার অধিকার দেওয়া হয়। তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ, দুই বছর পর কানাডা ''শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দেয়নি, অথবা পরবর্তী চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেনি। তা সত্ত্বেও এই কনভেনশনটিকে শরণার্থীদের সুরক্ষার জন্য একটি ব্যাপক আইনি কাঠামো তৈরির প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে স্মরণ করা হয় এবং যে সময়ে আন্তর্জাতিক আইনে ''অ-প্রত্যাবাসনের'' নীতিটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সংখ্যালঘুদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলো লীগ অফ নেশনস গ্রহণ করেছিল। এটি অতীতের দিকে তাকালে বলা হয় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শরণার্থী শাসনের একটি স্পষ্ট উৎস ছিল।
এই সময়ের মধ্যে আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়া প্রধান শরণার্থী গোষ্ঠীগুলোর দিকে তাকালে কানাডার শরণার্থীদের গ্রহণের ইচ্ছার উপর তীব্র সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ইরভিং অ্যাবেলা এবং পেত্রা মোলনার লিখেছেন, বিদেশীদের প্রতি ঘৃণা এবং ইহুদি-বিদ্বেষ কানাডায় ছড়িয়ে পড়েছিল এবং "[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে] শরণার্থীদের ভর্তির পক্ষে জনসমর্থন খুব কম ছিল এবং এর বিরোধিতাও অনেক বেশি ছিল"। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩০-এর দশকে কানাডা ইউরোপীয় ইহুদিদের প্রবেশাধিকার সীমিত করে যারা ইহুদি-বিদ্বেষ এবং জার্মানিতে ফ্যাসিবাদের উত্থান থেকে নিরাপদ আশ্রয় চেয়েছিল, কিন্তু চেকোস্লোভাকিয়া থেকে আশ্রয়ের সন্ধানে সুডেটেন জার্মানদের স্বাগত জানায় কারণ তাদের আরও "আকাঙ্ক্ষিত" অভিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হত। আর্মেনিয়ান শরণার্থীরাও কানাডার বর্জনীয় নীতির শিকার হয়েছিল। ১৯১৫ সালে অটোমান সাম্রাজ্য তার আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর গণহত্যা, স্থানান্তর এবং নির্বাসন শুরু করে। এতে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং অর্ধ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যেখানে ৮০,০০০ আর্মেনীয় শরণার্থী ফ্রান্সে এবং ২৩,০০০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাবে, সেখানে ১,৩০০ জনেরও কমকে কানাডায় ভর্তি করা হয়েছিল।
কানাডা তার সীমাবদ্ধ পুনর্বাসন নীতিগুলোকে ন্যায্যতা দিয়েছে শরণার্থী সুরক্ষার জন্য কারা যোগ্য তার একটি সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করে (যতদূর পর্যন্ত তারা শ্রেণীবিভাগ নিয়ে আলোচনা করেছে)। উদাহরণস্বরূপ, যখন কানাডার ইহুদি সংগঠনগুলো ইউরোপে বাস্তুচ্যুত ইহুদি শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কানাডীয় সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল, তখন সরকার দ্বিধা প্রকাশ করে দাবি করে, যেহেতু অনেকেই কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে রাশিয়া ছেড়ে চলে গেছেন, তাই তাদের শরণার্থী হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। কে আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য সেই ধারণাটি সম্প্রসারণের প্রচেষ্টাকেও কানাডা সমর্থন করেনি। ১৯৩৮ সালে মার্কিন সরকার ইউরোপের ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পরিস্থিতির বিষয়ে একটি সম্মেলনের জন্য ৩০টি দেশকে একত্রিত করে। কানাডা অংশগ্রহণে অনিচ্ছুক ছিল, ফ্রান্সের ইভিয়ান অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মার্কিন আমন্ত্রণ গ্রহণ করার আগে কয়েক মাস অপেক্ষা করেছিল। ভ্যালেরি নোলস ১৯৩৮ সালের গ্রীষ্মকালীন সম্মেলনে কানাডার অংশগ্রহণকে "ন্যূনতম" বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে কানাডার জন্য স্বস্তির বিষয় ছিল যে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কেবল উচ্চ নীতির একটি বিবৃতি তৈরি করতে পেরেছিলেন যা আসলে আরও উদার অভিবাসন নীতির প্রয়োজন ছিল না। এই বছর ন্যানসেন ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর রিফিউজিজ বা আইআরও-এর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, মূলত ইউএসএসআর-এর অবস্থানের কারণে। প্রায় ৬০০,০০০ শরণার্থী এখনও অফিসের সুরক্ষার অধীনে থাকা সত্ত্বেও। তা সত্ত্বেও শরণার্থীদের জন্য লীগ অফ নেশনস-এর হাই কমিশনারের পৃথক অফিস ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কাজ করে চলেছিল। সেই বছর প্রতিষ্ঠিত আন্তঃসরকার শরণার্থী কমিটি (ICR)। এটি জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া থেকে আসা ইহুদিদের সহায়তা করার জন্য নির্ধারিত হয়েছিল, কানাডার জড়িততা ছাড়াই পরিচালিত হয়েছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 9.</ref> তা সত্ত্বেও ইভিয়ানের উত্তরাধিকারের একটি দিক হলো এটি কে হ্যাথাওয়ে "শরণার্থী আইনের ব্যক্তিকরণ" বলে অভিহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখা হয়। কারণ যখন আইসিআর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছিল যা প্রথমবারের মতো কেন মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। এটি ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনকে প্রভাবিত করবে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, pages 39-40.</ref>
কানাডা তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ''রিফুলমেন্টের'' ধারণাটিকেও উপেক্ষা করেছে বলে মনে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কমিউনিস্টদের বহিষ্কারের উৎসাহে, কানাডা তাদের নিজ দেশে নির্যাতিত ব্যক্তিদের বহিষ্কার করেছিল। কানাডা থেকে জার্মান কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানোর পর হান্স কিস্ট নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান বলে জানা গেছে। কেলি এবং ট্রেবিলকক লিখেছেন যে ইতালি, জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার মতো ফ্যাসিবাদী দেশগুলোতে পাঠানো অনেক কর্মীও ফিরে আসার সময় তাদের জীবন হারানোর ঝুঁকিতে ছিলেন।<ref name=":532">Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 248.</ref>
তবে শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত কিছু মানুষ এই সময়ে কানাডার নিয়মিত অভিবাসন প্রবাহের মাধ্যমে কানাডায় চলে এসেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং জোর দিয়ে বলেছিলেন যে ১৯৩২ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশকারী বেশিরভাগ অভিবাসীই শরণার্থী ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ১৯২৩ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে প্রায় ২০,০০০ মেনোনাইটকে কানাডায় বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কেলি এবং ট্রেবিলকক যখন ইতিহাস বর্ণনা করেছিলেন, তখন রাশিয়া থেকে জার্মান-ভাষী মেনোনাইট শরণার্থীরা রাশিয়ান বিপ্লবের পর যে কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছিলেন তা থেকে বাঁচতে কানাডায় এসেছিলেন। বিপ্লবের সময় অস্ত্র হাতে নিতে তাদের অস্বীকৃতি সংঘাতের উভয় পক্ষকে বিচ্ছিন্ন ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল এবং মেনোনাইটরা ক্রমশ নৃশংস আক্রমণ এবং ভয় দেখানোর শিকার হতে থাকে। এটি গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও অব্যাহত ছিল। ১৯২০-এর দশক জুড়ে, জমি দখল, তাদের ধর্মের প্রতি সরকারী অসহিষ্ণুতা এবং সাইবেরিয়ায় জোরপূর্বক স্থানান্তরের হুমকি হাজার হাজার মানুষকে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে প্ররোচিত করেছিল।
== দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শরণার্থী নীতি ==
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জুড়ে কানাডার শরণার্থী নীতি ইহুদি-বিদ্বেষ এবং বিদেশীদের প্রতি বিদ্বেষের দ্বারা চিহ্নিত ছিল। অনেক পছন্দের জাতিগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের, বিশেষ করে ব্রিটিশদের, আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যদের তা দেওয়া হয়নি।
যুদ্ধের শুরুতে কানাডা বিদেশে বিপদগ্রস্ত ব্রিটিশ শিশুদের ভর্তির অনুমতি দিতে শুরু করে। সরকার ৫,০০০ ব্রিটিশ শিশু এবং তাদের মায়েদের ভর্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং ৪,৫০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ শিশু এবং ১,০০০ মা কানাডায় এসেছেন। ১৯৪০ সালে কানাডায় শিশুদের বহনকারী দুটি জাহাজ টর্পেডোতে ধ্বস নামানোর পর এই আন্দোলন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।<ref>Ninette Kelley and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 269.</ref>
অ-ব্রিটিশ ব্যক্তিদের প্রবেশের সুবিধা একইভাবে দেওয়া হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী নীতিতে ইহুদি-বিদ্বেষের একটি দৃশ্যমান প্রকাশ ছিল ১৯৩৯ সালে নাৎসি জার্মানি থেকে আশ্রয় প্রার্থনাকারী এসএস সেন্ট লুইসে ৯৩০ জন ইহুদি শরণার্থীকে প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত। এর বদলে এই শরণার্থীদের জার্মানিতে তাদের জন্য অপেক্ষা করা জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধের শেষের দিকে, ১৯৪৩ সালে কানাডা যখন ঘোষণা করে যে তারা আইবেরিয়ান উপদ্বীপে আসা কিছু ইহুদি শরণার্থীকে ভর্তি করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন বলা হয় যে এটি "শরণার্থী-বিরোধী স্বার্থের প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল"। কুইবেকের বিরোধীদলীয় নেতা মরিস ডুপ্লেসিস সমাবেশ করে অভিযোগ করেন যে প্রাদেশিক এবং ফেডারেল উদারপন্থীরা নির্বাচনী অর্থায়নের বিনিময়ে "আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্রাদারহুড" কে কুইবেকে ১০০,০০০ ইহুদি শরণার্থী বসতি স্থাপনের অনুমতি দিতে প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা ৫,০০০ এরও কম ইহুদি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়, এটিকে ট্রেবিলকক এবং কেলি ইউরোপের নির্যাতিত ইহুদিদের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে যেকোনো গণতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড বলে অভিহিত করেন। এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৪০,০০০, ব্রিটেন ৮৫,০০০, চীন ২৫,০০০, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ২৫,০০০ এর বেশি অনুমতি দিয়েছে এবং মেক্সিকো এবং কলম্বিয়া তাদের মধ্যে প্রায় ৪০,০০০ পেয়েছে। যখন একজন কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে যুদ্ধের পরে দেশটি কতজন ইহুদিকে গ্রহণ করবে, তখন তাদের বিখ্যাত উত্তর ছিল, "কেউই খুব বেশি নয়।"<ref>Marlene Epp, “Refugees in Canada: A Brief History,” Immigration And Ethnicity In Canada 35 (2017), <https://cha-shc.ca/_uploads/5c374fb005cf0.pdf> (Accessed May 9, 2020), at 8 and Noakes, Taylor. "None Is Too Many". ''The Canadian Encyclopedia'', 21 July 2022, ''Historica Canada''. www.thecanadianencyclopedia.ca/en/article/none-is-too-many. Accessed 25 February 2024.</ref>
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় "শত্রু এলিয়েন" হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার এবং সীমাবদ্ধ করার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কানাডা গণ-বন্দী নীতি প্রণয়ন করে যার ফলে তথাকথিত জার্মান শত্রু বিদেশীদের - নাৎসি সহানুভূতিশীল এবং ইহুদি শরণার্থীদের - ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। যুদ্ধ ব্যবস্থা আইনের অধীনে প্রবিধানগুলো জাপানি অভিবাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল, জাপানি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিকদের নির্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল, এবং জাপানি ব্যক্তিদের অন্তরীণ করে রেখেছিল। ১৯৪২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের ১০০ মাইল এলাকা থেকে প্রায় ২২,০০০ জাপানি কানাডীয়কে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়। বেশিরভাগকেই ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অভ্যন্তরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, প্রায়ই বিচ্ছিন্ন ভূতের শহরে আটক শিবিরে। যুদ্ধের শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাপানি কানাডীয়দের এই আটক শিবিরগুলোতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারপর শত্রুতা শেষ হওয়ার পর প্রায় ৪,০০০ জন চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করবে এবং ফেডারেল সরকারের "প্রত্যাবাসন" প্রকল্পের অধীনে কানাডা ছেড়ে জাপানে যাবে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কানাডীয় বংশোদ্ভূত এবং দুই-তৃতীয়াংশ কানাডীয় নাগরিক ছিলেন।
যুদ্ধের সময়, ব্রিটিশ সরকার ২,৫০০ "শত্রু এলিয়েন" কানাডায় পরিবহন করেছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এরা ছিল জার্মান এবং অস্ট্রিয়ান নাগরিক। তাদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত ইহুদি। এরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় গ্রেট ব্রিটেনে বসবাস করছিলেন। ভ্যালেরি নোলস কানাডায় তাদের অভ্যর্থনার বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন:<blockquote>কানাডীয় সরকার এই পুরুষ বেসামরিক বন্দীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছিল এই বিশ্বাসে যে এটি "সম্ভাব্য বিপজ্জনক শত্রু এলিয়েনদের" হেফাজত গ্রহণ করে কঠিন চাপে থাকা ব্রিটেনকে সহায়তা করবে। তাই কানাডীয় কর্তৃপক্ষ কিশোর ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, পুরোহিত এবং রাব্বিদের একটি বিশাল দলকে কুইবেকে তীরে পা রাখতে দেখে অবাক হয়ে গেল। তবে তাদের সন্দেহ সত্ত্বেও কানাডীয়রা সকলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগারের মতো শিবিরে রাখতে এগিয়ে যায়। এবং এখানেই বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ত্ববিদ, সঙ্গীতজ্ঞ, শিক্ষক, শিল্পী এবং লেখক সহ অন্যান্যদের আগামী মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে বাধ্য করা হবে। </blockquote>নোলস উল্লেখ করেছেন, সৌভাগ্যবশত এই বন্দীদের জন্য, ব্রিটিশ সরকার শীঘ্রই বুঝতে পেরেছিল যে তারা অনেক অন্তরীণদের প্রতি সম্ভবত গুরুতর অবিচার করেছে এবং তাদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ১৯৪৫ সালে কানাডা এই এককালীন বন্দীদের "যুক্তরাজ্য থেকে আন্তঃদেশীয় শরণার্থী (বন্ধুত্বপূর্ণ এলিয়েন)" হিসাবে পুনর্বিবেচনা করে এবং তাদের কানাডার নাগরিক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ৯৭২ তাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডা সীমিত সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, কিন্তু এই সময়ে অন্যান্য দেশে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি ছিল: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী ১৭৫ মিলিয়ন মানুষ - বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ - বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী পরিবেশে তাদের কীভাবে সাড়া দেওয়া যায় তা মিত্রশক্তির ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।
== জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রশাসন (UNRRA) এবং আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা (IRO) ==
১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি সামনে আসার সাথে সাথে, মিত্রশক্তিগুলো যুদ্ধোত্তর শরণার্থী শাসনের ভিত্তি স্থাপন শুরু করে। সেই বছর, তারা ইউরোপের মুক্তির প্রস্তুতির জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংস্থা (UNRRA) প্রতিষ্ঠা করে। যুদ্ধের ফলে শুধুমাত্র ইউরোপেই কমপক্ষে ১ কোটি। সম্ভবত ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি রাষ্ট্রহীন ব্যক্তির শরণার্থী সংকট তৈরি হয়েছিল। যুদ্ধের শেষে, ইউরোপে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দশ লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি এবং শরণার্থী ছিল। এই লোকদের মধ্যে কিছু ছিল কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা, অন্যরা ছিল এমন ব্যক্তি যাদের জার্মানি এবং অস্ট্রিয়ার শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। আরও কিছু ছিল যারা কমিউনিস্ট শাসনে প্রত্যাবাসন করতে অস্বীকার করেছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 157.</ref> কানাডা UNRRA-কে তহবিল প্রদান করে। এটি ইউরোপে ৮০০ টিরও বেশি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবির পরিচালনা করে;<ref>Robert J. Shalka, ''The Resettlement of Displaced Persons in Canada (1947-1952),'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 8.</ref> তীব্র বিশ্বব্যাপী ঘাটতির সময়ে প্রায় $৪ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য, খাদ্য, ওষুধ এবং সরঞ্জাম বিতরণ করে; এবং ১৯৪৫-৪৬ সালে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের তাদের নিজ দেশে ইউরোপে প্রত্যাবাসনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 155.</ref>
UNRRA-এর কার্যক্রম তৎক্ষণাৎ শীতল যুদ্ধের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সংগঠনটি বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের মুখোমুখি হয়েছিল যারা কমিউনিস্ট দলগুলো দৃঢ়ভাবে দখল করে থাকা দেশগুলোতে ফিরে যেতে অনিচ্ছুক ছিল। অনেক পোলিশ, ইউক্রেনীয় এবং বাল্টিক ব্যক্তি এইভাবে শিবিরে বসবাস করছিলেন, তাদের নাগরিকত্বের দেশের পরিবর্তে একটি অ-কমিউনিস্ট দেশে পাঠানোর অনুরোধ করছিলেন। সোভিয়েত কর্মকর্তারা এই ধরনের দাবি মেনে নেওয়ার যে কোনও ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপত্তি জানান। যদিও UNRRA এই মুহূর্তে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দেশে ফিরিয়ে দিচ্ছিল - সম্ভবত প্রায় ২০ লক্ষ - এটি ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠছিল। যাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল তাদের অনেকেই স্ট্যালিনের রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার ভয়ে ভীত ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং/অথবা শ্রম শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা সরকারগুলো UNRRA-কে অর্থায়ন বন্ধ করার এবং পুনর্বাসন কাজ পরিচালনার কাজ UNRRA থেকে একটি নতুন সত্তা, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। UNRRA-এর বিপরীতে, IRO-এর কোনও সোভিয়েত অংশগ্রহণ ছিল না এবং এর প্রধান কাজ ছিল প্রত্যাবাসন নয়, বরং শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের বিদেশে পুনর্বাসন করা। আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার ১৯৪৬ সালের সংবিধানে অক্ষশক্তি দেশগুলোর সাথে সহযোগিতাকারী, প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধকারী বা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সুরক্ষা অস্বীকার করে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটি কিছুটা স্পষ্ট করা হয়েছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
শাওনা ল্যাবম্যান লিখেছেন, এই মুহূর্তে শরণার্থী আইন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোযোগ একজন ব্যক্তির বাড়ি ফিরে যেতে ''অক্ষমতা'' থেকে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে ''অনিচ্ছার'' দিকে সরে যায়। অতীতের দিকে তাকালে, কমিউনিস্ট দেশগুলোতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি আছে এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ার এই পদক্ষেপ শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এক বিরাট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে। পূর্বে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শরণার্থী গোষ্ঠী, যেমন রাশিয়ান বা জার্মান শরণার্থীদের সাথে কাজ করত। গিল লোয়েশারের ভাষায়, সরকারগুলো কখনও 'শরণার্থী' শব্দটির একটি সাধারণ সংজ্ঞা প্রণয়নের চেষ্টা করেনি। তাই, প্রথমবারের মতো, আইআরও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শরণার্থী যোগ্যতাকে গোষ্ঠী সদস্যতার পরিবর্তে ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল করে তুলছিল এবং রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে নিরাপদ দেশে পালিয়ে যাওয়ার ব্যক্তির অধিকারকে মেনে নিয়েছিল। অ্যালান ন্যাশ তৎকালীন রাজনীতির মধ্যে এটি স্থাপন করেছেন, উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমারা প্রত্যাবাসন প্রত্যাখ্যানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছিল ''অ-প্রত্যাবাসন'' নীতি বিকাশের মাধ্যমে। এটি পূর্বে পূর্ববর্তী শরণার্থী চুক্তিগুলোতে খুব কমই ছিল, শরণার্থীদের পরিচালনার জন্য এমন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে যা তাদের নিজস্ব দেশের মতাদর্শের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অক্ষম বা অনিচ্ছুকদের জন্য ত্রাণ প্রদান করে এবং যাদের জন্য সেখানে অব্যাহত বসবাস অসহনীয় ছিল।<ref>Colin Grey, Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F, ''International Journal of Refugee Law'', 2024; eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025, at page 8.</ref>
তার কার্যভার অর্জনের জন্য, IRO-এর নিজস্ব বিশেষায়িত কর্মী, ৪০ টিরও বেশি জাহাজের একটি বহর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, উন্নত বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা ছিল। এই IRO পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হওয়ার সাথে সাথে, পূর্ব ইউরোপে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা সামান্য হ্রাস পেয়েছে এবং IRO এমন কার্যক্রম শুরু করেছে যা ১০ লক্ষেরও বেশি ইউরোপীয়কে আমেরিকা, ইসরায়েল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওশেনিয়ায় স্থানান্তরিত করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কানাডার সরকার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার মানবিক দায়িত্ব পালনের জন্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ পেতে শুরু করে। ১৯৪৬ সালে কানাডীয় সরকার একটি আদেশ-কাউন্সিল স্বাক্ষর করে যা কানাডীয়দের ইউরোপে বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অনুমতি দেয়। ১৯৪৭ সালে কানাডা আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা থেকে শরণার্থীদের রেফারেল গ্রহণ শুরু করে। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে কানাডা বিদেশে নিজস্ব অভিবাসন কর্মকর্তাদেরও মোতায়েন করেছে। সম্মিলিতভাবে, এই আগমনকারীদের মধ্যে ছিল বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের আন্দোলন। এটি ছয় বছরের মধ্যে ১৮৬,১৫৪ জনকে কানাডায় সফলভাবে পুনর্বাসিত করেছে।<ref name=":5" /> এর মধ্যে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ১০০,০০০ জন কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন, এটিকে বলা হতো শ্রম-স্পন্সরিত আন্দোলনের মাধ্যমে। সেখানে একজন নিয়োগকর্তা সরকারকে দেখাতে পারতেন যে স্থানীয়ভাবে কোনও চাকরি পূরণ করা সম্ভব নয় এবং সরকার প্রতি প্রয়োজনীয় শ্রমিকের জন্য উপলব্ধ শরণার্থীদের মধ্য থেকে দুই বা তিনজন সম্ভাব্য অভিবাসীকে IRO-তে পাঠাতে পারত। আইআরও-এর সাড়ে চার বছরের কার্যক্রমের সময়, কানাডা সংস্থা কর্তৃক পুনর্বাসিত সমস্ত শরণার্থীর ১২% গ্রহণ করবে। সেখানে অস্ট্রেলিয়া ১৮%, ইসরায়েল ১৩% এবং ব্রিটেন ৮% গ্রহণ করবে। এই সময়ে ব্যবহৃত পরিভাষাটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়: কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটিকে শরণার্থীর সাথে তুলনা করা হত। কারণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা ছিলেন যুদ্ধের পরে তাদের জাতীয়তার দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক। সেখানে শরণার্থীরা ছিলেন না; কখনও কখনও 'শরণার্থী' এবং 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি সমার্থক হিসাবে ব্যবহৃত হত; এবং কখনও কখনও 'বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' শব্দটি ব্যবহার করা হতো যাকে আমরা এখন 'অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি' হিসাবে ভাবি, 'শরণার্থীদের' বিপরীতে যারা তাদের নিজ রাজ্য থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে এসেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 135.</ref>
১৯৪৭ সালের ১ মে যুদ্ধে বেঁচে যাওয়াদের কানাডায় স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরকারের ইচ্ছার কথা ঘোষণা করার সময়, প্রধানমন্ত্রী ম্যাকেঞ্জি কিং সরকারের অবস্থান এইভাবে স্পষ্ট করেছিলেন: "কানাডায় প্রবেশ করা কোনও বিদেশীর 'মৌলিক মানবাধিকার' নয়। এটি একটি বিশেষাধিকার। এটি অভ্যন্তরীণ নীতির বিষয়। অভিবাসন কানাডার সংসদের নিয়ন্ত্রণাধীন।" বিপরীতে এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই ভাষণকে তৎকালীন নতুন জাতিসংঘ সনদে অন্তর্ভুক্ত মানবাধিকারের ধারণাকে কানাডার স্বীকৃতি দেওয়ার সূচনা হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘ সনদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, ম্যাকেঞ্জি কিং ঘোষণা করেছিলেন যে ১৯২৩ সালের চীনা অভিবাসন আইন বাতিল করা হবে এবং কানাডার চীনা বাসিন্দারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একইভাবে, এই সময়ে কানাডা মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনায় জড়িত ছিল। এটি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হবে এবং স্বীকৃতি দেবে যে "প্রত্যেকেরই নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে অন্য দেশে আশ্রয় চাওয়ার এবং উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।" মানবাধিকারের বক্তৃতার প্রতি এই ক্রমবর্ধমান সহনশীলতা সত্ত্বেও কিং-এর বাস্তব-রাজনীতি কানাডার কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয়েছিল: যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কানাডা যে দশ হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল তাদের "সাবধানে নির্বাচিত করা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই যদি অভিবাসী হিসেবে আবেদন করত তবে আমাদের মান পূরণ করত", একজন সমসাময়িক লেখকের মতে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 34.</ref> অধিকন্তু, এটা যুক্তিযুক্ত যে যুদ্ধ-পরবর্তী দশকগুলোতে হলোকাস্ট শরণার্থী নীতির উপর আশ্চর্যজনকভাবে খুব কম প্রভাব ফেলেছিল, বিশেষ করে কানাডার কর্মকাণ্ডের উপর ঠান্ডা যুদ্ধের ক্ষমতার রাজনীতির প্রভাবের তুলনায়।<ref>Bon Tempo, Carl J. 2008. ''Americans at the gate: the United States and refugees during the Cold War''. Princeton, N.J.: Princeton University Press. Page 21.</ref>
১৯৪৭ সালে কানাডীয় নাগরিকত্বের ধারণার জন্ম হয়, সেই জানুয়ারিতে ''কানাডীয় নাগরিকত্ব আইন'' কার্যকর হয় ''।'' নাগরিকত্ব আইনের আগে, এই দেশের মানুষ ব্রিটিশ প্রজা ছিল। নতুন আইন "ব্রিটিশ প্রজা" শ্রেণীবিভাগ বাদ দেয় এবং "জাতীয়তা" এবং "নাগরিকত্ব" এর পূর্ব-বিদ্যমান আইনি ধারণাগুলোকে "কানাডীয় নাগরিক" এর একক মর্যাদায় একীভূত করে। এর মাধ্যমে কানাডীয়দের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্রতীক তৈরি করার চেষ্টা করে।
== ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠা, শরণার্থী কনভেনশনের আলোচনা এবং ক্রমবর্ধমান শরণার্থী গ্রহণ ==
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার একটি সময়-সীমিত ম্যান্ডেট ছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধারণা ছিল যে শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা যুদ্ধের সৃষ্টি, তাই যুদ্ধের অবসান মানে এই ধরনের ব্যক্তিদের অস্তিত্বের অবসান।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 129.</ref> তবে ১৯৫০ সালের জুনে আইআরও-এর সমাপ্তির তারিখ যত ঘনিয়ে আসতে থাকে, ইউরোপে শরণার্থীদের আগমন অব্যাহত থাকে। প্রকৃতপক্ষে তারা পূর্ব ব্লক থেকে পশ্চিম ইউরোপীয় সীমান্ত পেরিয়ে ক্রমবর্ধমানভাবে আসছিল।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 10.</ref> ফলস্বরূপ, ১৯৪৯ সালের ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়।<ref name=":613">John Aku Ambi, ''Appraisal of The Principle of Burden-Sharing in Refugee Protection'', NAUJILJ 12(2) 21, <https://www.ajol.info/index.php/naujilj/article/download/215310/203063> (Accessed October 9, 2021), page 18.</ref> এক বছর পর ১৯৫০ সালের ১৪ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ''জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সংবিধি'' পাস হয়। এটি শরণার্থী এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান এবং তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন, স্থানীয় আত্তীকরণ বা তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনে সহায়তা করার জন্য ইউএনএইচসিআর-এর আদেশকে সংজ্ঞায়িত করে।<ref>Mark Rook, ''Identifying Better Refugee Policies for an Evolving Crisis'', April 21, 2020, University of Pennsylvania Honors Thesis, <https://repository.upenn.edu/cgi/viewcontent.cgi?article=1037&context=ppe_honors> (Accessed May 9, 2020), page 6.</ref> ইউএনএইচসিআর ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী ৯৯ জন কর্মী এবং ৩০০,০০০ ডলার বাজেট নিয়ে তার কাজ শুরু করে।<ref>Rebecca Hamlin, ''Crossing: How We Label and React to People on the Move'', Stanford, CA: Stanford University Press, 2021, <nowiki>ISBN 9781503627888</nowiki>, page 79.</ref> এটি একটি মানবিক আদেশ এবং সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক চরিত্রের ছিল।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 5.</ref> সেই সময়ে, আইআরও তার কার্যক্রমের একটি বর্ধিত পরিসমাপ্তিতে নিযুক্ত ছিল। এটি এটি ১৯৫২ সালে সম্পন্ন করে।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref> ইউএনএইচসিআর-কেও অস্থায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বাস্তুচ্যুত ইউরোপীয়দের চাহিদা পূরণের জন্য সংস্থাটিকে ৩ বছরের ম্যান্ডেট দিয়েছিল।<ref>Chetail, V. (2019). ''International Migration Law''. London, England: Oxford University Press, page 58.</ref>
একই সময়ে, আধুনিক শরণার্থী সুরক্ষার জন্য ভিত্তি চুক্তি, ১৯৫১ সালের ''জাতিসংঘের শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'', কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর অধ্যয়ন' শুরু হওয়ার মাধ্যমে<ref>Terje Einarsen, ‘Drafting History of the 1951 Convention and the 1967 Protocol’ in Andreas Zimmermann (ed), ''The 1951 Convention relating to the Status of Refugees and Its 1967 Protocol: A Commentary'' (OUP 2011).</ref> কনভেনশনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়।<ref name=":572">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> শরণার্থী কনভেনশনের খসড়া প্রণয়নের প্রথম দফার আলোচনা শুরু হয় ''রাষ্ট্রহীনতা এবং সম্পর্কিত সমস্যা সম্পর্কিত অ্যাডহক কমিটি নামে''। এটি ৮ আগস্ট ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়েছিল। প্রাসঙ্গিক ECOSOC রেজোলিউশনের ভাষায়, ''অ্যাডহক'' কমিটিতে এই বিষয়ে 'বিশেষ দক্ষতা' সম্পন্ন সরকারি প্রতিনিধিদের একটি ছোট বৃত্ত থাকবে বলে জানা গেছে। মহাসচিবের 'রাষ্ট্রহীনতার উপর গবেষণা'-এ প্রদত্ত সুপারিশগুলো বিবেচনা এবং কার্যকর করার জন্য এটি কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।<ref name=":57">Giladi, R. (August 2021). ''Jews, sovereignty, and International Law: Ideology and ambivalence in early Israeli legal diplomacy''. Oxford University Press, <nowiki>ISBN 9780198857396</nowiki>, page 229.</ref> এই আলোচনার সময় ঠান্ডা যুদ্ধের রাজনীতি অনুভূত হয়েছিল মূলত পূর্ব ব্লকের দেশগুলোর অনুপস্থিতির মাধ্যমে - ইউএসএসআর এবং পোল্যান্ড প্রথমে 'ওয়াক আউট' করে এবং তারপর (জাতীয়তাবাদী) চীনের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ''অ্যাডহক'' কমিটি বয়কট করে। কানাডীয় লেসলি চান্সের সভাপতিত্বে কমিটি ১৯৫০ সালের ১৬ জানুয়ারী থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক করে এবং একটি শরণার্থী কনভেনশনের প্রথম খসড়া প্রস্তুত করে।<ref>Molloy, M. J., & Madokoro, L. (2017). Effecting Change: Civil Servants and Refugee Policy in 1970s Canada. ''Refuge: Canada’s Journal on Refugees'', ''33''(1), 52–61. https://doi.org/10.25071/1920-7336.40448, page 53.</ref>
এরপর ''অ্যাডহক'' কমিটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সামাজিক কমিটিতে তার প্রতিবেদন জমা দেয়। ১৯৫০ সালের ৩১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আটটি বৈঠকে সামাজিক কমিটির ১৫টি দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখান থেকে, কনভেনশনের উপর চূড়ান্ত আলোচনা পরিচালনার জন্য ''"শরণার্থী এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের অবস্থা সম্পর্কিত জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাসম্পন্ন সম্মেলন"'' শীর্ষক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শরণার্থী কনভেনশনের বহুল আলোচিত ''পদক্ষেপগুলো'' এই সভাগুলো থেকে এসেছে। এটি ২ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই, ১৯৫১ পর্যন্ত চলেছিল। তিন দিন পরে ২৮ জুলাই কনভেনশনটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।<ref>United Nations, ''Final Act of the United Nations Conference of Plenipotentiaries on the Status of Refugees and Stateless Persons'', 25 July 1951, United Nations, Treaty Series, vol. 189, p. 137, available at: https://www.refworld.org/docid/3e2becbb4.html [accessed 3 August 2021]</ref>
এই শরণার্থী কনভেনশন অনুসারে, শরণার্থী মর্যাদা ছিল ব্যক্তিদের দ্বারা তাদের ব্যক্তিগত পরিস্থিতির ভিত্তিতে ধারণ করা একটি লেবেল। এটি পূর্ববর্তী সংজ্ঞাগুলোর সাথে বিপরীত ছিল যা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের সমস্ত নাগরিক বা সেই রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট জাতিগত গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। এর ফলে আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মূল দেশের সাধারণ পরিস্থিতির আরও ব্যক্তিগতকৃত বিবরণ প্রদান করতে হত। এর ফলে, সুরক্ষার পরিধি সংকুচিত হয়েছিল এবং পৃথক স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল।<ref>Karin Åberg, ''Examining the Vulnerability Procedure: Group-based Determinations at the EU Border'', Refugee Survey Quarterly, September 2021, https://doi.org/10.1093/rsq/hdab011, page 16.</ref>
এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোতে শীতল যুদ্ধের রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল—যদিও ২৬টি দেশ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিল, যুগোস্লাভিয়া ছাড়া, কোনও সোভিয়েত ব্লক দেশ উপস্থিত ছিল না। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মেলন থেকে উদ্ভূত ব্যক্তিকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি চেয়েছিল, আলোচনায় এর অনুপস্থিতির কারণে পশ্চিমা দেশগুলো শরণার্থী সুরক্ষার কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য হিসাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার সন্ধানের উপর জোর দিতে শুরু করে।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 57.</ref> সেই দেশের ১৯৭৬ সালের সংবিধানে একটি বিপরীত সোভিয়েত দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়:<blockquote>'''ধারা ৩৮।''' ইউএসএসআর শ্রমিক জনগণের স্বার্থ এবং শান্তির কারণ রক্ষার জন্য, অথবা বিপ্লবী ও জাতীয়-মুক্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য, অথবা প্রগতিশীল সামাজিক ও রাজনৈতিক, বৈজ্ঞানিক বা অন্যান্য সৃজনশীল কার্যকলাপের জন্য নির্যাতিত বিদেশীদের আশ্রয়ের অধিকার প্রদান করে।</blockquote>কনভেনশনের খসড়া তৈরির সম্মেলনে কানাডাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল: সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি পাঠানো ছাব্বিশটি দেশের মধ্যে এটি একটি ছিল;<ref name=":202">Jan Raska, ''Canada’s Refugee Determination System'', Canadian Museum of Immigration at Pier 21, August 21, 2020, <https://pier21.ca/research/immigration-history/canada-s-refugee-determination-system> (Accessed January 1, 2021).</ref> কানাডীয় লেসলি চান্স, সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন;<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 35.</ref> আমেরিকার দেশ কানাডা ছিল কনভেনশনের খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব পেশ করেছিল, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর দ্বারা প্রভাবিত আলোচনার সময় মন্তব্য করেছিল; এবং কানাডা ছিল সেই কর্মী গোষ্ঠীর একটি অংশ যা যুক্তিসঙ্গতভাবে কনভেনশনের মূল অংশ - নথির অনুচ্ছেদ ১-এ শরণার্থীর সংজ্ঞা - খসড়া তৈরির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Regional Developments: Americas'', at p. 210 (para. 19).</ref> কানাডীয় চেয়ারম্যান লেসলি চান্স রিপোর্ট করেছেন যে "আমাদেরকে সর্বত্র অগ্রগামী মনোভাব পোষণকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।"<ref name=":22">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> অন্যদিকে, সম্মেলনে কানাডার গৃহীত পরিবর্তনশীল অবস্থানের কারণে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের ''বিরুদ্ধে'' যুক্তি দিয়ে, কনভেনশনে সাময়িক এবং ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, সেই অবস্থান পরিবর্তন করে এবং এই ধরনের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে যুক্তি দেওয়ার আগে, চ্যান্সের বক্তব্যকে কিছুটা স্বার্থপরতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যাই হোক না কেন, কানাডা শেষ পর্যন্ত সম্মেলনে "সর্বোচ্চ সম্ভাব্য সংজ্ঞার পক্ষে" সমর্থন করে এই অবস্থান গ্রহণ করেছিল যে "কনভেনশনের উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া, রাষ্ট্রগুলোকে নয়।"
পরবর্তী কনভেনশনটি শরণার্থীর একটি সংজ্ঞা প্রদান করে এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের অধিকারের রূপরেখা দেয়। এই অধিকারগুলো হলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যক্তিরা যে দাবিগুলো করতে পারে তার একটি সিরিজ: প্রধানত, এমন একটি দেশে জোরপূর্বক ফেরত না পাঠানোর অধিকার যেখানে গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে ( ''অ-রিফাউলমেন্ট'' )। সেইসাথে, শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃতদের জন্য, গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকার। অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের মতো অন্যান্য কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলো এই ফলস্বরূপ কনভেনশনটি অনুমোদন করলেও কানাডা তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাখ্যা হিসেবে, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেস্টার বি. পিয়ারসন ঘোষণা করেছিলেন যে সরকার উদ্বিগ্ন যে কনভেনশন শরণার্থীকে "নির্বাসনের বিরুদ্ধে তার আপিলের শুনানিতে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার" দেবে এবং আরও, কনভেনশন "কমিউনিস্টদের বা মৌলিক মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা ধ্বংসে বিশ্বাসী অন্যান্য ব্যক্তিদের অধিকার প্রদান করবে।" কানাডীয় সরকার উদ্বেগের সাথে আরও উল্লেখ করেছে, "কনভেনশনের কিছু ধারা রাষ্ট্রগুলোকে 'সত্যিকারের' শরণার্থীদের নির্বাসন থেকে নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার কারণেও"। এটি RCMP-এর বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে কনভেনশনটি নিরাপত্তার কারণে কানাডার শরণার্থীদের বহিষ্কারের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করবে এবং সরকারের সন্দেহ যে আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থায় কমিউনিস্টরা অনুপ্রবেশ করেছে। কানাডাকে ছাড়াই শরণার্থী কনভেনশনটি ২২ এপ্রিল, ১৯৫৪ তারিখে কার্যকর হয়।<ref>UNHCR, ''States Parties to the 1951 Convention relating to the Status of Refugees and the 1967 Protocol'', <https://www.unhcr.org/protection/basic/3b73b0d63/states-parties-1951-convention-its-1967-protocol.html> (Accessed August 28, 2020).</ref>
কনভেনশনে স্বাক্ষর না করলেও, পরবর্তী বছরগুলোতে কানাডা শরণার্থী সংক্রান্ত বিষয়ে আরও বেশি জড়িত হয়ে ওঠে:
* অ-প্রত্যাবাসনের বাধ্যবাধকতাগুলো সম্মান করার প্রতিশ্রুতি: কনভেনশনে স্বাক্ষর না করা সত্ত্বেও কানাডা তবুও কনভেনশনের অ-প্রত্যাহারের বাধ্যবাধকতা বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাস্তবে কানাডার কনভেনশনের প্রয়োজনীয়তাগুলোর সাথে সম্মতি নিশ্চিত করতে কোনও অসুবিধা হয়নি কারণ ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিক থেকে এবং মার্কিন অনুশীলনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কানাডার ইমিগ্রেশন শাখা যে কোনও কমিউনিস্ট দেশে নির্বাসনের উপর প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। হাদ্দাদ নোট করেছেন যে এই জাতীয় প্রতিশ্রুতি কঠিন ছিল না কারণ আয়রন কার্টেনের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা সংখ্যাগুলো "শরণার্থীরা পালাতে পারে না" এই সাধারণ কারণে ন্যূনতম ছিল।
* ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানঃ কানাডা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএনএইচসিআরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। এই সময়কালে শরণার্থীদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইউএনএইচসিআর-এ কানাডার অবদানকে "ন্যূনতম" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং ১৯৫২ সালে কানাডীয় সরকার ইউএনএইচসিআর-এর কানাডীয় অফিসকে সরিয়ে দিয়েছে।
* ইউএনএইচসিআর ExCom এর সদস্য হওয়াঃ ১৯৫৯ সালে তৎকালীন নতুন ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটিতে বসতে শুরু করেন। এটি রাষ্ট্রগুলোর এমন একটি উপদেষ্টা সংস্থা যা হাই কমিশনারকে দিকনির্দেশনা দেয়। ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার বেশ কয়েক বছর পর ১৯৫৮ সালে জাতিসংঘের শরণার্থীদের জন্য হাইকমিশনারের কর্মসূচির নির্বাহী কমিটি প্রতিষ্ঠা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এক্সকম অফিসের বার্ষিক বাজেট এবং প্রোগ্রাম অনুমোদন, আন্তর্জাতিক শরণার্থী সুরক্ষা নীতি ইস্যুতে মান নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য এবং ইউএনএইচসিআর-এর পরিচালনা, উদ্দেশ্য এবং অগ্রাধিকার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য দায়বদ্ধ। ১৯৫০-এর দশকে ২৪টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। এক্সকম সদস্যদের শরণার্থী ''কনভেনশন'' অনুমোদনের প্রয়োজন নেই, বরং 'শরণার্থী সমস্যার সমাধানের প্রতি তাদের প্রদর্শিত আগ্রহ এবং নিষ্ঠার ভিত্তিতে' নির্বাচিত করা হয়েছে।
* ক্রমবর্ধমান শরণার্থী পুনর্বাসন এবং ভর্তি: ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠার সময়, এর অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ইউরোপের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের শিবিরের পরিস্থিতি সমাধান করা। এটি দ্রুত সম্পন্ন করা যেতে পারে এমন প্রাথমিক প্রত্যাশা সত্ত্বেও ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য ইউরোপে শরণার্থী শিবির পরিচালনা করছিল। তার অংশ হিসাবে, এই সময়ের মধ্যে কানাডা ইউরোপ থেকে প্রায় ২৫০,০০০ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে গ্রহণ করেছিল। তাদের অনেকের কানাডা ভ্রমণ একটি উদীয়মান অর্থনীতির জন্য আরও শ্রমিক নিয়োগের জন্য কানাডীয় সরকার দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল। ইউএনএইচসিআর গঠনের পরের বছরগুলোতে, কানাডা অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুতদের জন্য এবং অন্যান্য কারণে অ্যাড-হক ভিত্তিতে শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল, ছোট গ্রুপ থেকে শুরু করে, যেমন যখন কানাডা ইস্রায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ফলে বাস্তুচ্যুতির প্রেক্ষিতে ৩৯ টি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ভর্তি করেছিল, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য, ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লবের পরে কানাডা ভর্তি হওয়া ৩৭,০০০ হাঙ্গেরিয়ান শরণার্থী সহ। প্রকৃতপক্ষে, কানাডা ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অবিলম্বে সম্মত না হলেও, মন্ত্রিসভা পুনর্বাসনের জন্য শরণার্থীদের নির্বাচন করার সময় শরণার্থীর কনভেনশন সংজ্ঞা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার জন্য দ্রুত ছিল।
* কানাডায় অভিবাসীদের জন্য পদ্ধতিগত ন্যায্যতা বৃদ্ধি: কানাডায় অভিবাসীদের দেওয়া পদ্ধতিগত ন্যায্যতার পরিমাণ বাড়ানোর দিকেও কানাডা একটি আন্দোলন দেখেছিল, ১৯৫২ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড তৈরির ব্যবস্থা করেছিল যা এলিয়েনদের নির্বাসনের সিদ্ধান্তের আপিল শুনতে পারে। আইএবিগুলোর বিশদ বিবরণ এবং তাদের ইতিহাস নীচে অনুসরণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কানাডার সামগ্রিক অভিবাসন আইনগুলো জাতি, শ্রেণি এবং স্বাস্থ্যের কারণে এবং কমিউনিজমের ভয় সম্পর্কিত "জাতীয় সুরক্ষা" উদ্বেগের কারণে ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে চলেছে। এটি ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।<ref name=":17" />
== বৈষম্যহীন ব্যবস্থা ==
১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন কানাডার বৈষম্যমূলক নীতির জন্য অনুমোদিত বিপুল সংখ্যক কারণের কারণে মন্ত্রিসভাকে অভিবাসীদের প্রবেশ সীমিত করার ক্ষমতা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে:<blockquote>(i) জাতীয়তা, নাগরিকত্ব, জাতিগত গোষ্ঠী, পেশা, শ্রেণী বা ভৌগোলিক অঞ্চল,
(ii) বিশেষ রীতিনীতি, অভ্যাস, জীবনযাত্রার ধরণ বা সম্পত্তি ধারণের পদ্ধতি,
(iii) জলবায়ু, অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিল্প, শিক্ষা, শ্রম, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ততা অথবা বিদ্যমান অন্যান্য শর্ত বা প্রয়োজনীয়তা ... কানাডায়... অথবা
(iv) কানাডীয় নাগরিকত্বের কর্তব্য এবং দায়িত্বগুলো সহজেই আত্মস্থ করতে বা গ্রহণ করতে সম্ভাব্য অক্ষমতা ...<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 330.</ref></blockquote>অধিকন্তু, এই মুহুর্তে কানাডার অভিবাসন পরিষেবা ব্যাপক দুর্নীতিতে জর্জরিত ছিল। ডেপুটি মিনিস্টার কিনলেসাইড উল্লেখ করেছেন, আবেদনকারীদের মধ্যে একটি ব্যাপক বিশ্বাস ছিল যে "সহজতম এবং সবচেয়ে সঠিক অনুরোধগুলোকেও আর্থিক বা আরও ব্যক্তিগত অনুগ্রহ দিয়ে তৈলাক্ত করতে হয়।"
১৯৬০-এর দশকের মধ্যে, কানাডা এবং বিশ্বজুড়ে মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির প্রতি কানাডার বর্ণ-ভিত্তিক, ইউরোকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দেশটি কীভাবে নিজেকে দেখে এবং কীভাবে নিজেকে দেখাতে চায় তার সাথে ক্রমশ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছিল। কৃষ্ণাঙ্গ অভিবাসীদের উপর কানাডার অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার ফলে সদ্য স্বাধীন প্রাক্তন উপনিবেশগুলোর সাথে তাদের কূটনৈতিক বৈধতা নষ্ট হচ্ছিল এবং ১৯৬১ সালের মধ্যে, ব্রিটেন কানাডাকে তার নীতি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো অভিবাসীদের জন্য কানাডায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 337.</ref> অধিকন্তু, এই জাতি-ভিত্তিক পদ্ধতি স্পষ্টতই তৎকালীন নতুন কানাডীয় বিল অফ রাইটসের বিরোধিতা করে। এটি জাতি, জাতীয় উৎপত্তি, বর্ণ, ধর্ম বা লিঙ্গের কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছিল।<ref>Clare Glassco, ''Before the Sun Comes Up: The Making of Canadian Refugee Policy amidst the Refugee Crisis in Southeast Asia, 1975-1980'', April 1, 2020 <https://heartsoffreedom.org/wp-content/uploads/2020/04/Revised-FINAL-April-3-Before-the-Sun-Comes-Up.pdf> (Accessed April 17, 2020), page 9 of the document.</ref>
কানাডা বারবার উদারীকরণ শুরু করে কাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। উদাহরণস্বরূপ ১৯৬০ সালের দিকে ৩২৫ জন যক্ষ্মা শরণার্থী এবং তাদের পরিবারকে গ্রহণ করা, প্রথমবারের মতো কানাডা শরণার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করে। ১৯৬২ সালে প্রধানমন্ত্রী ডিফেনবেকারের অভিবাসন মন্ত্রী হাউসে নতুন নিয়মকানুন উত্থাপন করেন যা কানাডার অভিবাসন নীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে জাতিগত বৈষম্য দূর করে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে, ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে অভিবাসন বিধিমালায় বৈষম্যের শেষ চিহ্ন ছিল এমন একটি বিধান যা ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বিস্তৃত পরিসরের আত্মীয়স্বজনদের স্পনসর করার অনুমতি দেয়। এটি শেষ মুহূর্তে এই আশঙ্কায় সন্নিবেশিত করা হয়েছিল যে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের দ্বারা স্পনসরশিপের আগমন ঘটবে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 187.</ref> ১৯৬৫ সালে কানাডা চারটি জেনেভা কনভেনশন অনুমোদন করে যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ভিত্তি তৈরি করে,<ref>Humanrightscommitments.ca, ''Geneva Conventions and Protocols'', <http://humanrightscommitments.ca/wp-content/uploads/2019/03/Geneva-Conventions.pdf> (Accessed September 26, 2021).</ref> যার মধ্যে রয়েছে ১৯৪৯ সালের ''জেনেভা কনভেনশন যা যুদ্ধের সময় ব্যক্তিদের সুরক্ষা সম্পর্কিত''। সেখানে একটি বিধান রয়েছে যে শরণার্থীদের যদি পূর্বে কোনও শত্রু শক্তির জাতীয়তা থাকে তবে তাদের শত্রু বিদেশী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 78.</ref> এরপর ১৯৬৬ সালে লেস্টার বি. পিয়ারসনের সরকার ''জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ'' তৈরি করে এবং "জাতি, দেশ বা ধর্মের বৈষম্য ছাড়াই" শরণার্থীদের প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব দেয়।<ref name=":29">As quoted in Christopher Anderson, “Restricting Rights, Losing Control: The Politics of Control over Asylum Seekers in Liberal Democratic States – Lessons from the Canadian Case, 1951-1989,” ''Canadian Journal of Political Science'', 43.4 (2010): 945.</ref> সেই বিভাগটি কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৭ সালে অভিবাসন বিধিমালা থেকে, যদি আইন থেকেও না হয়, বৈষম্যের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলা হয় এবং সরকার বিভিন্ন শ্রেণীর অভিবাসী নির্বাচনের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রবিধানগুলোতে তার বহুল প্রচারিত 'পয়েন্ট সিস্টেম' বাস্তবায়ন করে।<ref name=":262">Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 111.</ref>
তা সত্ত্বেও কানাডার অভিবাসন আইন "অবাঞ্ছিত" ব্যক্তিদের সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল। এটি সম্ভাব্য অভিবাসীদের "জাতীয় নিরাপত্তা" সম্পর্কিত উদ্বেগের জন্য যাচাই করার জন্য একটি ভিত্তি হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল কমিউনিস্ট বিদ্রোহের আশঙ্কা।<ref>Reginald Whitaker, ''Double Standard: The Secret History of Canadian Immigration'', 1987, Toronto: Lester and Orpen Denys Ltd., at page 33.</ref> ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে কানাডায় প্রবেশের জন্য ২৯,০০০ এরও বেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।<ref name=":172">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref>
== ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড ==
অভিবাসন আপিল বোর্ড। এরা বিদেশীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শুনতে পারত, ১৯৫২ সালে ''অভিবাসন আইনের'' একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। প্রতিটি বোর্ডে অভিবাসন বিভাগের তিনজন কর্মী থাকবেন যারা নির্বাহী কর্তৃক ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। একটি অভিবাসন আপিল বোর্ড তৈরির সময় থেকেই তাদের কাছে আবেদন করার ক্ষমতা সীমিত ছিল: সমস্ত আপিল মন্ত্রীর দ্বারা শুনানি করা হত, যদি না, মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে, আপিলটি একটি IAB-তে পাঠানো হত। অধিকন্তু, মন্ত্রী IAB-এর যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারেন।
১৯৬২ সালের প্রবিধানগুলো এই বোর্ডগুলোর এখতিয়ার সম্প্রসারিত করে আইনের অধীনে সমস্ত নির্বাসন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল অন্তর্ভুক্ত করে। এইভাবে, কানাডায় অভিবাসনকে অধিকার নয় বরং একটি বিশেষাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, মৌলিক যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষাগুলো এলিয়েনদের জন্য যথাযথভাবে প্রসারিত হিসাবে দেখা হতে শুরু করে। বিশেষ করে, ট্রেবিলকক এবং কেলি যেমন উল্লেখ করেছেন, এটি গৃহীত হতে শুরু করে যে বিদেশীদের ভর্তি বা নির্বাসন নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে সুনির্দিষ্ট এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত এবং নির্বাসনের সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত একটি নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালে চ্যালেঞ্জ করার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত। তবে এই মুহুর্তে, ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডগুলো অভিবাসন সিদ্ধান্তে "খুবই গৌণ ভূমিকা" পালন করেছিল যা ট্রেবিলকক এবং কেলি বর্ণনা করেছেন কারণ তাদের এখতিয়ার আইন সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং অভিবাসন বিভাগকে প্রদত্ত বিশাল বিবেচনামূলক ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের ত্রুটিগুলো বেশ বিরল ছিল।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 349.</ref> অধিকন্তু, যেহেতু বোর্ডগুলো অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল, তাই তাদের নিরপেক্ষ বা স্বাধীন বলে বিবেচনা করা যাবে না।
১৯৬৭ সালের মার্চ মাসে, ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' এটি পরিবর্তন করে। এই আইনটি জোসেফ সেডগউইক, কিউসি কর্তৃক প্রণীত সেডগউইক রিপোর্ট থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, এটি ছিল এক সদস্যের তদন্ত বোর্ড যা সরকার কর্তৃক অত্যন্ত বিতর্কিত নির্বাসনের একটি সিরিজ অধ্যয়ন করার জন্য কমিশন করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সালের জুন মাসে, সেডগউইককে হাউস অফ কমন্স এবং অন্যান্য স্থানে করা গুরুতর অভিযোগগুলোর তদন্ত করতে বলা হয়েছিল যে কিছু বিদেশীকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আইনজীবীর অ্যাক্সেস থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।<ref>Statistics Canada, Immigration Policy and Administration, 223, <https://www66.statcan.gc.ca/eng/1966/196602510223_p.%20223.pdf> (Accessed October 21, 2024).</ref>
১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' পাসের পর নবগঠিত বোর্ডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল:
* <u>স্বাধীনতা:</u> সুপারিশগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড প্রতিষ্ঠা।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 191-192.</ref> বোর্ডটি আর অভিবাসন কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না, বরং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের থেকে স্বাধীন একটি আধা-বিচারিক সত্তা ছিল। গভর্নর ইন কাউন্সিল এখন IAB-এর সদস্যদের নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করেছেন।<ref name=":703">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref> ১৯৭৩ সালে আইএবি-র স্বাধীনতা আরও জোরদার করা হয় আইন সংশোধনের মাধ্যমে। এর ফলে কিছু আইএবি সদস্য স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হবেন, অন্যরা নবায়নযোগ্য দুই বছরের মেয়াদে নিযুক্ত হবেন।<ref name=":702">Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 300.</ref>
* <u>বিস্তৃত এখতিয়ার:</u> বোর্ড একটি রেকর্ড আদালতের মর্যাদা গ্রহণ করেছে।<ref>''Immigration Appeal Board Act'', SC 1966-67, c 90, s. 11.</ref> কানাডা থেকে বহিষ্কারের আদেশপ্রাপ্ত সকলের জন্য এবং কানাডীয় নাগরিকদের পারিবারিক স্পনসরশিপ আবেদন প্রত্যাখ্যানের জন্য বোর্ডের কাছে আপিলের অধিকার তৈরি করা হয়েছিল।<ref>Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 4.</ref> আইন, তথ্য, মিশ্র তথ্য এবং আইন,<ref name=":542">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> অথবা করুণার ভিত্তিতে ব্যক্তিরা IAB-তে আপিল করতে পারবেন।<ref name=":164">Janet Dench, "A Hundred Years of Immigration to Canada, 1900-1999: A Chronology Focusing on Refugees and Discrimination" (2000), online: ''Canadian Council for Refugees'' <https://ccrweb.ca/en/hundred-years-immigration-canada-1900-1999>.</ref> ১৯৭২ সালের হিসাবে, নির্বাসন স্থগিত করা যেতে পারে যেখানে এই বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল যে আদেশ কার্যকর করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রাজনৈতিক চরিত্রের কার্যকলাপের জন্য শাস্তি পাবেন অথবা অস্বাভাবিক কষ্ট ভোগ করবেন, অথবা বোর্ডের মতে সহানুভূতিশীল বা মানবিক বিবেচনার কারণে বিশেষ ত্রাণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।<ref>''Boulis v. Minister of Manpower and Immigration,'' 1972 CanLII 4 (SCC), [1974] SCR 875, <https://canlii.ca/t/1nfn8>, retrieved on 2024-05-22.</ref> নিচে বর্ণিত হিসাবে, ১৯৭৩ সাল থেকে আপিলের ক্ষেত্রে সেইসব ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা ১৯৫১ সালের জেনেভা কনভেনশন অনুসারে নিজেদেরকে শরণার্থী বলে মনে করতেন। তবে এই সময়ের আগেও, যে কোনও ব্যক্তিকে অবতরণ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল এবং নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তিনি IAB-তে আপিল করতে পারতেন এবং বোর্ড সেই ব্যক্তিকে অবতরণ করার আদেশ দিতে পারত। যেহেতু বোর্ডের একটি নমনীয় এবং উদার সহানুভূতিশীল এখতিয়ার ছিল, প্লাউটের দৃষ্টিতে, শরণার্থীদের "ব্যাপক পরিমাণে" IAB-এর পদ্ধতির অধীনে স্থান দেওয়া হয়েছিল। "অতএব, একটি নির্দিষ্ট শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার প্রকৃত প্রয়োজন ছিল না"।<ref name=":832">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
* <u>নির্বাসন সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব:</u> ১৯৫২ সালের ''ইমিগ্রেশন আইনের'' অধীনে, IAB-তে ইমিগ্রেশন শাখার কর্মকর্তারা ছিলেন যারা মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করতেন। এটি মন্ত্রী তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারতেন। নবগঠিত IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল (কেবলমাত্র বিচারিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে, নীচে উল্লেখ করা হয়েছে)।<ref name=":552">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Pages 340-341.</ref>
* <u>বিচারিক পর্যালোচনার জন্য ছুটির প্রয়োজনীয়তা:</u> IAB-এর সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত ছিল, এখতিয়ার সহ আইনগত প্রশ্নগুলোর উপর কানাডার সুপ্রিম কোর্টে আপিলের অনুমতি সাপেক্ষে।<ref name=":54">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 371.</ref> মন্তব্যকারীরা উল্লেখ করেছেন, এই ছুটির প্রয়োজনীয়তাগুলো কার্যকরভাবে বিচারিক পর্যালোচনা থেকে এই ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোকে "অন্তরক" করার জন্য কাজ করেছে।<ref>Molly Joeck, ''Canadian Exclusion Jurisprudence post-Febles'', International Journal of Refugee Law, 17 September 2021; Advance Article, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeab034, page 17.</ref>
১৯৬৭ সালে ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডে করা পরিবর্তনগুলো অভিবাসন নীতিকে অভূতপূর্ব মাত্রায় প্রক্রিয়াগত এবং বিচারিকীকরণ করেছে এবং শরণার্থী দাবি নির্ধারণে অনুরূপ যথাযথ প্রক্রিয়া সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বলে জানা গেছে।<ref>Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 357.</ref> তা সত্ত্বেও বোর্ডের বিধিবদ্ধ সীমা ছিল ৭ থেকে ৯ জন বিচারক<ref name=":442">David Vinokur, ''30 Years of Changes at the Immigration and Refugee Board of Canada'', CIHS Bulletin, Issue #88, March 2019, <https://senate-gro.ca/wp-content/uploads/2019/03/Bulletin-88-Final.pdf> (Accessed May 13, 2021), page 7.</ref> (পরে বৃদ্ধি করে ১০ করা হয়েছে) এবং অপসারণের আদেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অক্ষম ছিল।<ref name=":393">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref> প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে, বোর্ড এমন এক জটলায় জর্জরিত হয়ে পড়ে যায় যা বিদ্যমান কেস প্রসেসিং হারে কাটিয়ে উঠতে কয়েক দশক সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছিল।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত IAB-এর কাছে ১৭,০০০ মামলা জমে ছিল। এটি তারা প্রতি মাসে ১০০টি মামলার হারে নিষ্পত্তি করছিল।<ref name=":562">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 373.</ref> বাস্তবে কানাডায় ''কার্যত'' স্থায়ী বসবাস অর্জন করতে ইচ্ছুক যে কেউ ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে তাদের নির্বাসনের আবেদন দায়ের করতে পারত, এটিতে বোর্ডের জমা পড়া অর্থের সাথে এটি যুক্ত হয়। এটি একবিংশ শতাব্দীতেও প্রসারিত হতে শুরু করে।<ref name=":392">Raphael Girard, ''Effects of Postwar Immigration Selection Policy on Ethnocultural Diversity in Canada,'' in Canadian Immigration Historical Society, Bulletin 96, March 2021, <http://cihs-shic.ca/bulletin-96-march-2021/> (Accessed April 17, 2021), page 5.</ref>
ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালে সরকার কানাডার সকল ব্যক্তির জন্য আপিলের সার্বজনীন অধিকার বাতিল করার জন্য ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে। এর বদলে শুধুমাত্র স্থায়ী বাসিন্দা, বৈধ ভিসাধারী এবং শরণার্থী বা কানাডীয় নাগরিক বলে দাবি করা ব্যক্তিদের আপিলের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া টাকা মেটানোর জন্য, সরকার একটি এককালীন সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচিও চালু করেছে। এর সুবিধা ৩৯,০০০ জনেরও বেশি মানুষ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মার্কিন ড্রাফট ফাঁকিদাতাও রয়েছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 202-203.</ref>
== ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলের আলোচনা ==
১৯৫১ সালের কনভেনশনকে অনেকেই ইউরোপীয় অভিজ্ঞতার প্রতিফলনকারী একটি কনভেনশন হিসেবে দেখেছিলেন - এবং এর শর্তাবলী '১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারী আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার ফলে' নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৫০-এর দশকে বিশ্বের অন্যান্য অংশে ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় শরণার্থীর আবির্ভাব ঘটছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৫০-এর দশকে কমিউনিস্ট-বিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী চীনা শরণার্থীরা বিপুল সংখ্যক হংকংয়ে পালিয়ে যায়। ১৯৬০-এর দশকে আফ্রিকায় উপনিবেশমুক্তকরণের ফলে সেখানে শরণার্থী ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ১৯৬৪ সালে আফ্রিকার মোট শরণার্থী জনসংখ্যা ছিল ৪০০,০০০। এটি দশকের শেষ নাগাদ দশ লক্ষে পৌঁছেছিল।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 149.</ref> প্রসঙ্গত, ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে, ১৫০,০০০ তুতসি শরণার্থী রুয়ান্ডা থেকে উগান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়া এবং জাইরে পালিয়ে যায়; ১৯৬৬ সালের মধ্যে জাইরে থেকে ৮০,০০০-এরও বেশি শরণার্থী বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান, উগান্ডা এবং তানজানিয়ায় পাওয়া যায়; ১৯৭২ সালে শেষ হওয়া প্রথম সুদানী যুদ্ধ ১৭০,০০০ শরণার্থী তৈরি করে; এবং ১৯৭০-এর দশকের শেষ নাগাদ রোডেশিয়া থেকে মোজাম্বিক, জাম্বিয়া এবং বতসোয়ানায় ২৫০,০০০ শরণার্থী ছিল।
ইউএনএইচসিআর বিভিন্নভাবে সাড়া দিয়েছে। ১৯৫৭ সালে এটি 'ভালো কাজের' ম্যান্ডেট তৈরি করে। এটি সংস্থাটিকে জেনেভা কনভেনশনের ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা এড়িয়ে যেতে এবং ''অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে'' হংকংয়ে সহায়তা করার অনুমতি দেয়। ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে, ১৯৫১ সালের ''শরণার্থী কনভেনশনের'' সময়গত এবং ভৌগোলিক পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আলোচনা শুরু হয়। আফ্রিকার জন্য একটি আঞ্চলিক শরণার্থী কনভেনশন নিয়ে আলোচনার জন্য অর্গানাইজেশন অফ আফ্রিকান ইউনিটির পদক্ষেপকে ইউএনএইচসিআর আশঙ্কা করেছিল যে এটি তাদের কর্তৃত্ব সীমিত করতে পারে এবং (অনুমিত) তাদের পরিচালিত সার্বজনীন শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। ১৯৬৭ সালের প্রোটোকল ছিল ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিক্রিয়া। ইউএনএইচসিআর-এর বক্তব্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগের পেছনের প্রেরণা ছিল ১৯৫১ সালের কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত ''ডি-ফ্যাক্টো'' জাতিগত বৈষম্য যাতে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য-বিরোধী উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগের দিকে ঝুঁকে পড়ে তা নিশ্চিত করা:<blockquote>এই কনভেনশনের ফলে বিভিন্ন শরণার্থী গোষ্ঠীর মধ্যে, বিশেষ করে আফ্রিকান শরণার্থীদের ক্ষেত্রে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ধরনের বৈষম্য তার অফিসের সংবিধির সাথে সাংঘর্ষিক এবং কনভেনশনের সার্বজনীন চেতনার পরিপন্থী।<ref>Julia Morris, ''The Value of Refugees: UNHCR and the Growth of the Global Refugee Industry'', Journal of Refugee Studies, 11 January 2021, https://doi-org.ez.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa135 at page 14.</ref></blockquote>ফলস্বরূপ প্রোটোকলটি ১৯৬৭ সালের জানুয়ারিতে নিউ ইয়র্কে স্বাক্ষরিত হয়। এটি সেই অক্টোবরে কার্যকর হয়। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনে প্রোটোকল যে পরিবর্তনগুলো এনেছিল তা ছিল সহজবোধ্য: ইউরোপের বাইরের শরণার্থী এবং নতুন উদ্ভূত কারণে বাস্তুচ্যুতদের আওতাভুক্ত করার জন্য শরণার্থী কনভেনশনের আঞ্চলিক এবং সাময়িক পরিধি সম্প্রসারণ করা। চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে কানাডা পিছিয়ে ছিল। এটি প্রাথমিকভাবে ''শরণার্থী কনভেনশনের'' একটি প্রোটোকল নিয়ে আলোচনার উদ্যোগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে অস্বীকৃতি জানায় এই ভিত্তিতে যে এটি ''অভিবাসন সম্পর্কিত শ্বেতপত্র তৈরি করছে।'' ১৯৬৬ সালে কানাডা এই ''শ্বেতপত্র'' প্রকাশ করে, গবেষক ক্লেয়ার গ্লাসকোর ভাষায়, অভিবাসন ব্যবস্থায় আরও মৌলিক পরিবর্তন আনার জন্য "জল পরীক্ষা করে দেখুন"। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল মৃদু থেকে নেতিবাচক। ফলস্বরূপ, কানাডা ১৯৬৭ সালের শরণার্থী প্রোটোকলে স্বাক্ষর করতে তিন বছর সময় লাগবে।
== কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশন'' এবং ''প্রোটোকল'' অনুমোদন ==
অনেক উদ্যোগের মধ্যে, ১৯৬৬ সালের ''অভিবাসন সংক্রান্ত শ্বেতপত্রে'' "জাতি, বর্ণ বা ধর্ম" এর ভিত্তিতে বৈষম্যমুক্ত একটি অভিবাসন ভর্তি নীতি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অধিকন্তু, এই গবেষণাপত্রে কানাডার সীমান্তের মধ্যে একটি শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়া প্রবর্তনের পাশাপাশি ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশনের অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে অভিবাসন কর্মকর্তা ইপি বিসলি উল্লেখ করেছিলেন, একটি স্পষ্ট শরণার্থী নীতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে, তার মতে কানাডা "প্রথম আশ্রয়ের দেশ হয়ে উঠেছে"। এইভাবে, "এই পৃথক মামলাগুলো আরও সুনির্দিষ্ট এবং আরও ন্যায্যভাবে নির্ধারণের জন্য আইনী যন্ত্রপাতি এবং পদ্ধতি নির্ধারণের সময় এসেছে।" এই প্রসঙ্গে "প্রথম আশ্রয়ের দেশ" ধারণাটি এমন একটি পরিস্থিতিকে বোঝায় যেখানে কানাডা প্রথম দেশ যা কোনও ব্যক্তিকে সুরক্ষা প্রদান করে, অন্যত্র ইতিমধ্যেই অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিপরীতে। কানাডার শরণার্থী ভর্তি নীতিগুলোকে ঐতিহ্যগতভাবে একটি সামগ্রিক 'নিয়ন্ত্রণের ধারণা' দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করা হত। এটি ভর্তিকৃতদের 'মান' নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, বিদেশে শরণার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য এবং কানাডায় অনিয়ন্ত্রিত চলাচল রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে দেখছিল। কারণ শীতল যুদ্ধের সংকটের কারণে হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছিল। তবে শ্বেতপত্রের প্রতি প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র নেতিবাচক, যা অভিবাসন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংস্কার আনতে আরও তিন বছর সময় লেগেছে বলে মনে করে।
১৯৬৯ সালের মে মাসে কানাডা ১৯৫৭ সালের ''শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তিটি'' অনুমোদন করে।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref> তারপর এক মাস পর ১৯৬৯ সালের জুন মাসে কানাডা ১৯৫১ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত কনভেনশন'' এবং ১৯৬৭ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত প্রোটোকল'' অনুমোদন করে।<ref>Canada acceded to the Refugee Convention on June 4, 1969: Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 295. See also: Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 34.</ref> সেই সময় জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, কানাডার যোগদান "ঐতিহ্যগতভাবে শরণার্থীদের প্রতি কানাডার উদার আচরণের কোনও পরিবর্তন আনবে না"।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 38.</ref> প্রকৃতপক্ষে সেই সময়ে, বেশিরভাগ শরণার্থী পূর্ব ইউরোপ থেকে এসেছিলেন। কানাডার নীতি ছিল তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো না করা। তাই তাদের সাধারণত অভিবাসী মর্যাদা দেওয়া হত। সেই সময়ে বিশ্বের যেসব অংশ আজ শরণার্থী-উৎপাদনকারী প্রধান স্থান, সেখান থেকে খুব কম লোকই কানাডায় প্রবেশ করত। অধিকন্তু, সেই সময়ে শরণার্থীরা কানাডার ভেতর থেকে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন এবং আমাদের সাধারণ অভিবাসন নীতির অধীনে বিবেচনা করা হত।<ref name=":833">W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 54.</ref>
১৯৬৯ সালে শরণার্থীদের বিষয়ে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক দলিলগুলো অনুমোদন করা সত্ত্বেও ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত কানাডায় ইতিবাচক দাবির জন্য কোনও আইন-ভিত্তিক, সরকারী শরণার্থী নীতি বিদ্যমান ছিল না। এর বদলে তৎকালীন জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগ কর্তৃক শরণার্থীদের দাবিগুলো ''অ্যাডহক'' ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে কানাডার ভেতর থেকে অভিবাসন আবেদন করার অনুমতি দেওয়া নিয়ম বাতিল করা হয়। এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে কানাডায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যারা বহিষ্কার হতে চাননি, তাদের দেশটির নবজাতক শরণার্থী নির্ধারণ পদ্ধতির সুবিধা নিতে উৎসাহিত করা হবে। ১৯৭৩ সালে কানাডীয় সরকার শরণার্থী দাবিদারদের মোকাবেলা করার জন্য প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে। একজন শরণার্থী দাবিদার কানাডায় থাকতে পারবেন নাকি তাকে নির্বাসিত করা হবে তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা রাখেন জনশক্তি ও অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে পৃথক দাবি মূল্যায়ন এবং তাদের সুপারিশ পাঠানোর জন্য বিদেশ বিষয়ক এবং জনশক্তি ও অভিবাসন বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তঃবিভাগীয় কমিটি। অধিকন্তু, সেই বছর ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল যাতে বোর্ডকে কনভেনশন শরণার্থী হিসাবে নির্ধারিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাসন আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ ত্রাণ প্রদান করা হয় কারণ দাবিদার অযথা কষ্ট ভোগ করবেন অথবা যেখানে মানবিক ও সহানুভূতিশীল বিবেচনা করা যেতে পারে। শরণার্থীদের আইএবি-তে আপিলের আইনগত অধিকার দেওয়া হলেও, "শরণার্থী" শব্দটি সংজ্ঞায়িত করা হয়নি।
এই সময়ে, অভ্যন্তরীণ দাবি প্রতি বছর শত শত পর্যায়ে ঘটেছিল। কানাডায় ব্যক্তিগত আদেশ-পরামর্শ মন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে একজন ব্যক্তির মর্যাদা প্রদান করে এবং আংশিকভাবে মানবিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিবেচনার ভিত্তিতে তা করা হয়। হ্যাথওয়ে বলেছেন যে এটি সিস্টেমের একটি ত্রুটি ছিল: কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অবতরণ মঞ্জুর করা বা আটকানো সম্পূর্ণরূপে বোর্ডের (অথবা মন্ত্রীর) বিচক্ষণতার মধ্যে ছিল; ফলস্বরূপ, শরণার্থীরা কানাডা থেকে সুরক্ষা পাবে এমন কোনও গ্যারান্টি ছিল না।<ref name=":782">Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 39. See also W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 15.</ref> এই কানাডার অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা তখন চলমান বিদেশী মূল্যায়নের পরিপূরক ছিল। কানাডা ১৯৭০ সালে "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নির্দেশিকা" জারি করে, এটিতে বিদেশে শরণার্থী নির্বাচনের জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের মানদণ্ড দেওয়া হয়।<ref>Canadian Council for Refugees, ''Brief History of Canada’s Responses to Refugees'', 2009, Canadian Council for Refugees, <https://ccrweb.ca/sites/ccrweb.ca/files/static-files/canadarefugeeshistory2.htm> (Accessed May 9, 2020).</ref> সেই বছর মন্ত্রিসভা নিপীড়িত সংখ্যালঘু নীতি নামে পরিচিত একটি নীতিও অনুমোদন করে। এর মধ্যে নিপীড়িত মানুষদের নির্বাচনের বিধান ছিল যারা কনভেনশন শরণার্থী ছিলেন না কারণ তারা এখনও তাদের নিজ দেশে ছিলেন।<ref>Whatconvention.org: International Legal Search Engine, ''Ratifications of the Agreement relating to Refugee Seamen, 1957'', <https://www.whatconvention.org/en/ratifications/47?sort_by=comments&order=asc> (Accessed September 25, 2021).</ref>
কানাডা শরণার্থী কনভেনশন এবং প্রোটোকলের অধীনে তার বাধ্যবাধকতাগুলোকে দেশীয় আইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে, একই সময়ে যখন এই চুক্তিগুলোর পরিধি সম্প্রসারণের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চলছে। এই আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার কিছু সফল হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ কানাডা ১৯৭৫ সালে শরণার্থী নাবিকদের সাথে সম্পর্কিত চুক্তির প্রোটোকল অনুমোদন করে।<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Protocol to the Agreement relating to Refugee Seamen'', 30 March 1975, available at: https://www.refworld.org/docid/3ae6b38218.html [accessed 25 September 2021].</ref> অন্যান্য প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘ আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্র<ref>UN General Assembly, ''Declaration on Territorial Asylum'', 14 December 1967, A/RES/2312(XXII), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/3b00f05a2c.html</nowiki> [accessed 28 December 2020].</ref> গ্রহণ করে। এর ৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১৪ নং অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করার অধিকারী কোনও ব্যক্তিকে সীমান্তে প্রত্যাখ্যানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়। এরপর ১৯৭৭ সালে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যাতে এটি এবং অন্যান্য বিধানগুলোকে একটি সংশোধিত কনভেনশন, প্রস্তাবিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref>Andreas Zimmermann (editor), ''The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary''. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, <nowiki>ISBN 978-0-19-954251-2</nowiki>, ''Background: Interpretation of the 1951 Convention'', at p. 104 (para. 87). See also the following discussion of contemporary thinking about the needs for a new treaty: Richard Plender, ''Admission of Refugees: Draft Convention on Territorial Asylum,'' 15 San Diego L. Rev. 45 (1977). Available at: <nowiki>https://digital.sandiego.edu/sdlr/vol15/iss1/6</nowiki></ref> একটি খসড়া তৈরি করা হলেও,<ref>UNHCR, ''Note on International Protection Addendum 1: Draft Convention on Territorial Asylum (Submitted by the High Commissioner)'', 26 September 1974, A/AC.96/508/Add.1 <https://www.unhcr.org/afr/excom/excomrep/3ae68c023/note-international-protection-addendum-1-draft-convention-territorial-asylum.html> (Accessed December 28, 2020).</ref> সম্মেলনটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।<ref>''Regina v. Immigration Officer at Prague Airport and another (Respondents) ex parte European Roma Rights Centre and others (Appellants),'' [2004] UKHL 55, <https://publications.parliament.uk/pa/ld200405/ldjudgmt/jd041209/roma-1.htm> para. 17.</ref>
== ফেডারেল আদালত প্রতিষ্ঠা এবং অভিবাসন সিদ্ধান্তের বিচারিক তদন্ত বৃদ্ধি করা ==
কানাডার জাতীয়তা প্রতিষ্ঠার প্রথম শতাব্দীতে অভিবাসন আইন "অত্যন্ত বিবেচনামূলক এবং মূলত জবাবদিহিহীন" পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। পূর্বে এমন ঘটনা ঘটেছে যে ''অভিবাসন আইনে'' একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তিগত ধারা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি আদালতগুলো মূলত সম্মান করত। ১৯১০ সালের আইনে বলা হয়েছে, "কোনও আদালত এবং তার কোনও বিচারক বা কর্মকর্তার মন্ত্রী বা কোনও তদন্ত বোর্ড, অথবা দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার ... যে কোনও কারণেই কোনও প্রত্যাখ্যাত অভিবাসীর আটক বা নির্বাসন সম্পর্কিত ... কোনও কার্যধারা, সিদ্ধান্ত বা আদেশ পর্যালোচনা, বাতিল, বিপরীত, স্থগিত বা অন্যথায় হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার থাকবে না, যদি না সেই ব্যক্তি কানাডীয় নাগরিক হন বা তার কানাডীয় স্থায়ী বাসস্থান থাকে।" ট্রেবিলকক এবং কেলি সংক্ষেপে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে, তৎকালীন আদালতগুলো তাদের উপর আরোপিত এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে সম্মান করত। ১৯২১ সালের একটি সিদ্ধান্তের এই ব্যক্তিগত ধারা সম্পর্কে কুইবেক সুপিরিয়র কোর্টের একজন বিচারকের মন্তব্য উদাহরণ স্বরূপ:<blockquote>... পার্লামেন্টের উদ্দেশ্য ছিল। এই আইনের ভাষায় পার্লামেন্ট আসলে যা প্রদান করেছিল, তা হলো কানাডায় অভিবাসীদের প্রবেশ সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্ন কেবলমাত্র ইমিগ্রেশন বিভাগের যন্ত্রপাতি দ্বারা, অর্থাৎ তদন্ত বোর্ড এবং ইমিগ্রেশন অফিসারদের দ্বারা নির্ধারিত হবে, শুধুমাত্র মন্ত্রীর কাছে আপিলের সাপেক্ষে। আদালতের পর্যালোচনা বা নিয়ন্ত্রণের কোনও ক্ষমতা ছাড়াই... ... কোনও আদালত বা বিচারক তদন্ত বোর্ডের কার্যধারায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না, তা হোক আইন, বা প্রবিধানের ভুল বোঝাবুঝি বা ভুল উপস্থাপনার কারণে, অবৈধ প্রমাণ গ্রহণের কারণে, বা শোনা প্রমাণের মূল্যায়নে ত্রুটির কারণে, অথবা কোনও অনানুষ্ঠানিকতা বা ভুলের কারণে যা কার্যপ্রণালী বা বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণের বিষয় হিসাবে ন্যায্যভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। </blockquote>এটি এমনভাবে পরিবর্তিত হতে শুরু করে যে ন্যায্যতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার নীতিগুলো ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব গ্রহণ করতে শুরু করে। ১৯৬৭ সালের ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' অনুসারে, IAB সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ সরাসরি কানাডার সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা যেতে পারে, সেই আদালতের অনুমতি নিয়ে। এরপর আইনের ব্যক্তিগত ধারার পরিধি হ্রাস করা হয় এবং ১৯৭১ সালে ফেডারেল আদালত, বিচার এবং আপিল উভয়ই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মুহুর্তে, সংসদ ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড আইন'' সংশোধন করে আইএবি-র যেকোনো আইনগত প্রশ্নের বিচারিক পর্যালোচনার জন্য আবেদনগুলো ফেডারেল আপিল আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এটি কোনও বিষয়ের অনুমতি দেওয়ার এবং শুনানির বিচক্ষণতা পাবে। অধিকন্তু, কনভেনশন শরণার্থী মর্যাদার দাবি প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তটি এই সময়ে ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশন দ্বারা পর্যালোচনাযোগ্য ছিল। কারণ ট্রায়াল ডিভিশনের ঐতিহ্যবাহী বিশেষাধিকারমূলক রিট জারি করার এখতিয়ার ছিল যেখানে আপিল আদালতের এখতিয়ার ছিল না। তা সত্ত্বেও ফেডারেল আদালতের তত্ত্বাবধানের এখতিয়ার সাধারণত ফেডারেল আদালতের আপিল আদালতে IAB সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনার মাধ্যমে আবেদন করা হত, ফেডারেল আদালতের বিচার বিভাগে মন্ত্রীর পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার মাধ্যমে নয়।
রাফায়েল গিরার্ড আদালতের সিদ্ধান্তগুলোকে অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে পদ্ধতিগত ন্যায্যতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বচ্ছতার নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কৃতিত্ব দেন। ফেডারেল কোর্টের অভিবাসন মামলার চাপ তার কাজের একটি বিরাট অংশের জন্য দায়ী হবে এবং বিচারিক পর্যালোচনার জন্য মামলার দীর্ঘ সারি তৈরি করবে। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, যখন ফেডারেল আপিল আদালতের তিন সদস্যের প্যানেলে বিচারিক পর্যালোচনা পাঠানো হয়েছিল, তখন সেই আদালতের সামনে প্রায় ৭৫% বিচারিক পর্যালোচনা আবেদন ছিল IAB কর্তৃক শরণার্থী নির্ধারণের পর্যালোচনার জন্য। দুই দশক পর ২০১২ সালে আইআরবিতে শরণার্থী আপিল বিভাগ বাস্তবায়নের আগের বছরগুলোতে, অভ্যন্তরীণ শরণার্থী বিষয়গুলোর বিচারিক পর্যালোচনা ফেডারেল আদালতের মামলার প্রায় অর্ধেক ছিল।
== ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' ==
১৯৭৬ সালে পার্লামেন্টে সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' প্রবর্তিত হয় এবং দুই বছর পর কার্যকর হয়। এটি কানাডার অভিবাসন নীতির জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল। এটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রথমবারের মতো আইনটিকে পুনর্বিবেচনা করে, আইনে প্রকাশ্য বৈষম্যের শেষ চিহ্নগুলো মুছে ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, সমকামী পুরুষ এবং মহিলাদের অভিবাসন নিষিদ্ধ করার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে, এবং, একটি বিস্তৃত জাতীয় বিতর্কের পর আইনটিতে একাধিক উদ্দেশ্য প্রবর্তন করে যা মূলত আজও বহাল রয়েছে। এটি এই সমস্ত কিছু করেছে এমন বিধানের মাধ্যমে যা তাদের বিশদ এবং সুনির্দিষ্টতার সাথে নির্বাহী সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে তোলে। ১৯৭৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' সংসদে প্রবর্তনের মাধ্যমেই সরকার শরণার্থী পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গ্রহণের ইচ্ছাকে আরও জোরদার করে। এই আইনটিই প্রথমবারের মতো কানাডার ''শরণার্থী কনভেনশনের'' বাধ্যবাধকতাগুলোকে আইনগত আকারে অন্তর্ভুক্ত করে। আইনে বর্ণিত উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল "শরণার্থীদের প্রতি কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিতদের প্রতি তার মানবিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা"। নতুন আইনে কনভেনশন শরণার্থীদের অভিবাসীদের একটি শ্রেণী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যারা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বিদেশে নির্বাচিত হতে পারতেন। এই আইনটি সীমান্তে বা কানাডায় বসবাসকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত শরণার্থী দাবির বিষয়ে অভিবাসন মন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য পূর্ব-বিদ্যমান ''অ্যাডহক'' কমিটি, শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি (RSAC) কে আইনি মর্যাদা দিয়েছে।<ref name=":43" />
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত আরএসএসি প্রক্রিয়াটি ছিল নিম্নরূপ: যারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা চেয়েছিলেন তাদের প্রথমে একজন অভিবাসন কর্মকর্তার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে হত। যদি তাদের অগ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় ( সাধারণত হয়), তাহলে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা উচিত কিনা তা নির্ধারণের জন্য তাদের অভিবাসন তদন্তে পাঠানো হবে। এই পর্যায়েই ব্যক্তি শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করতে পারতেন, এই ক্ষেত্রে অপসারণের আদেশ স্থগিত করা হতো এবং শরণার্থী দাবির সারবস্তু সম্পর্কে সাক্ষাৎকারের জন্য ব্যক্তিকে একজন ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তার সামনে আনা হত। এরপর সিনিয়র ইমিগ্রেশন অফিসার সাক্ষাৎকারের ট্রান্সক্রিপ্টটি RSAC-তে পাঠান। আরএসএসি আবেদনটি পর্যালোচনা করে এবং সুরক্ষার দাবি গ্রহণ করা বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত কিনা সে বিষয়ে মন্ত্রীর কাছে একটি সুপারিশ করে।<ref name=":462">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই প্রোগ্রামটি খুবই ছোট ছিল: ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে এটি প্রতি বছর মাত্র কয়েকশ দাবি প্রক্রিয়া করত।<ref name=":12">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যে বছর সংশোধিত ''অভিবাসন আইন'' কার্যকর হয়েছিল, সেই বছর ৪,১৩০ জন শরণার্থী কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন। তাদের সবাই কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসছিলেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 239.</ref>
যাদের আরএসএসি বা মন্ত্রী শরণার্থী মর্যাদা দেননি, তাদের মানবিক ও সহানুভূতির ভিত্তিতে আবেদন করার সুযোগ ছিল। এই ধরনের আবেদনগুলো বিশেষ পর্যালোচনা কমিটি দ্বারা বিবেচনা করা হত। এটি মন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করত।<ref name=":464">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> অধিকন্তু, মন্ত্রী নির্ধারণ করতে পারেন যে কোনও ব্যক্তিকে, যদিও তাকে শরণার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, কানাডায় থাকার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 28.</ref> উভয় গ্রুপেরই ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' কাছে আপিল করার অধিকার ছিল। এর কার্যক্রম জনসমক্ষে পরিচালিত হত।<ref name=":45">Neil Yeates, ''Report of the Independent Review of the Immigration and Refugee Board'', Government of Canada, April 10, 2018, <https://www.canada.ca/content/dam/ircc/migration/ircc/english/pdf/pub/irb-report-en.pdf> (Accessed April 27, 2020), page 7.</ref> IAB ডকুমেন্টারি রেকর্ড পর্যালোচনা করেছে এবং যে কোনও আবেদনকারী, যিনি ডকুমেন্টারি রেকর্ডের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন যে দাবিটি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে, তার জন্য দাবির যোগ্যতার উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুমোদিত হয়েছে।<ref name=":463">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 401.</ref> এই আইনী বিধানটি ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে IAB কেবল তখনই আবেদনের উপর মৌখিক শুনানির অনুমতি দিতে পারে যদি IAB নির্ধারণ করে যে আবেদনটি সম্ভবত সফল হবে। এই ব্যবস্থার অধীনে, এর কার্যক্রমের শেষ বছরে, মন্ত্রী কর্তৃক শরণার্থী নন বলে নির্ধারিত প্রায় নয় শতাংশ দাবিদারকে বোর্ড কর্তৃক শরণার্থী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।<ref>David Matas, ''Closing the Doors'', 1989, Summerhill Press, Toronto, <nowiki>ISBN 0-920197-81-7</nowiki>, page 141.</ref>
পুরো সিস্টেমে প্রবেশাধিকার এই সত্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল যে একজন ব্যক্তি তার অভিবাসন অবস্থা সম্পর্কে তদন্তের বিষয়। এর মূলত অর্থ ছিল কানাডায় থাকার জন্য তাদের আইনি মর্যাদার অভাব ছিল। কানাডায় শারীরিকভাবে উপস্থিত কিন্তু কিছু ধরণের (অস্থায়ী) মর্যাদা সম্পন্ন অন্যান্য ব্যক্তিদের শরণার্থী দাবি প্রক্রিয়ার অধীনে দাবি করার বা বিবেচনা করার কোনও অধিকার ছিল না। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাব্বি গুন্থার প্লট "প্রশাসনিক দুঃস্বপ্ন" বলে অভিহিত করেছেন। কানাডায় বৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ প্রক্রিয়ার সুবিধা প্রদানের প্রচেষ্টায়, অভিবাসন মন্ত্রণালয় "ইন-স্ট্যাটাস" দাবি নামে পরিচিত একটি অতিরিক্ত আইনি প্রক্রিয়া চালু করেছে। দাবিদারকে অভিবাসন অবস্থা তদন্তের সময় দাবি করা ব্যক্তির মতোই বিবেচনা করা হত। এতে সমস্যা ছিল। প্রথমত, এতে চূড়ান্ততার অভাব ছিল: যদি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তাহলে ব্যক্তি দ্বিতীয় দাবি করতে পারতেন এবং আইন দ্বারা প্রদত্ত পুরো প্রক্রিয়াটি নতুন করে করতে পারতেন। অধিকন্তু, "ইন-স্ট্যাটাস" দাবিদাররা তাদের দাবি প্রক্রিয়াকরণের জন্য অপেক্ষা করার সময় কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য অযোগ্য ছিলেন, তাদের কাজ করার যোগ্যতা কানাডায় তাদের পূর্ব-বিদ্যমান অভিবাসন অবস্থা দ্বারা প্রদত্ত কাজের অনুমতি (অথবা এর অভাব) এর উপর নির্ভর করত।<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, pages 36-37.</ref>
১৯৭০-এর দশকে কানাডা যেসব শরণার্থী গ্রহণ করেছিল, তারা কানাডার অভ্যন্তরে আশ্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নয়, বরং বিদেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে এসেছিল। ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে কানাডা ২২৮ জন তিব্বতি শরণার্থীর একটি দলকে পুনর্বাসিত করে এবং তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য একটি "তিব্বতি শরণার্থী কর্মসূচি" তৈরি করে তার প্রথম অ-ইউরোপীয় শরণার্থীদের গ্রহণ করে। তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয়দান অন্যান্য শরণার্থী পুনর্বাসনের দ্বার উন্মোচন করে। কারণ কানাডা ১৯৭২-৭৩ সালে ইদি আমিনের একনায়কতন্ত্রের অধীনে উগান্ডা থেকে বহিষ্কৃত ৭,০০০ এরও বেশি জাতিগত দক্ষিণ এশীয়দের গ্রহণ করে। এরা কানাডায় বিপুল সংখ্যক অ-শ্বেতাঙ্গ শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছিল। এরপর কানাডা ১৯৭৩ সালে পিনোশেটের শাসনামলে পালিয়ে আসা ৭,০০০ চিলির শরণার্থী এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় পালিয়ে আসা প্রায় ১০,০০০ লেবাননি শরণার্থীকে স্বীকার করে। ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল অভিবাসনের বৃহত্তম উৎস দেশ। এর একটি কারণ ছিল বিপুল সংখ্যক ড্রাফট ডজার্স এবং ভিয়েতনামে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক পলাতক যারা কানাডায় আশ্রয় পেয়েছিল। ইতিহাসবিদ ভ্যালেরি নোলস বলেছেন যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় কানাডায় পালিয়ে আসা ড্রাফট রেজিস্টার এবং পলাতকদের সংখ্যার জন্য সঠিক সংখ্যায় পৌঁছানো অসম্ভব। তবে "ড্রাফট রেজিস্টার" এবং লেখক মার্ক ফ্রুটকিনের মতে, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের অনুমান ৩০,০০০-৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০-২০০,০০০ এর মধ্যে। সেই দশকের শেষের দিকে, ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ৬০,০০০ শরণার্থীকে গ্রহণ করা হয়েছিল - যা এই বছরগুলোতে গৃহীত অভিবাসীর সংখ্যার ২৫ শতাংশ।<ref name=":173">Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: [tel:1772556319 1772556319], at page 20.</ref> এই সময়ে, মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে কানাডা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বিদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের পুনর্বাসিত করেছে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 41.</ref> কানাডীয় অভিবাসন কর্মকর্তারা এল সালভাদরেও গিয়েছিলেন আধাসামরিক ডেথ স্কোয়াডের ঝুঁকিতে থাকা বন্দীদের সাক্ষাৎকার নিতে এবং ঝুঁকিতে থাকা কিছু বন্দীকে কানাডায় আশ্রয় দেওয়ার জন্য। এটি অন্য দেশে দাবি প্রক্রিয়াকরণের একটি উদাহরণ।<ref>Claire Higgins, ''In-country programs: procedure and politics'', in Satvinder Singh Just (ed.), ''Research handbook on international refugee law,'' 2019, Northhampton, MA, USA: Edward Elgar Publishing, at page 55.</ref>
তা সত্ত্বেও এই ব্যক্তিদের গোষ্ঠীগুলোকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্তগুলো ছিল ''অ্যাডহক'' এবং অত্যন্ত রাজনৈতিক। উদাহরণস্বরূপ, চিলির বেশিরভাগ রাজনৈতিক শরণার্থী খুব বেশি বামপন্থী ছিলেন এবং আমেরিকান বা নতুন চিলির প্রশাসনকে বিচ্ছিন্ন করতে চাননি এই আশঙ্কায়, কানাডীয় সরকার তাদের সংখ্যা সীমিত করে। এটি কানাডাকে সেই ৩০ বছরের সংঘাতের সময় মাত্র ৭,০০০ চিলির নাগরিককে গ্রহণ করতে সীমাবদ্ধ করে। একইভাবে, কানাডা কিছু উগান্ডার এশীয় শরণার্থীকে গ্রহণ করার পর এই পদক্ষেপের তীব্র জনমত দেখা দেয়। ১৯৭২ সালের এক জরিপে দেখা যায় যে মাত্র ৪৫ শতাংশ কানাডীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন; সরকারের কেউ কেউ এই উদ্যোগকে সেই বছরের নির্বাচনে সরকারি আসনের ক্ষতি হিসেবে দেখেছেন।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 213.</ref>
১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন আইন পাস হওয়ার পর এবং ১ এপ্রিল ১৯৭৮ সালে এটি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে, অভিবাসীদের নির্বাচনের নিয়মাবলী সংজ্ঞায়িত করার জন্য কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডা (EIC)-এর উপর ক্ষমতা অর্পণ বাতিল করা হয় এবং আইন এবং প্রবিধানে গ্রহণযোগ্য শ্রেণী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংসদে বহাল রাখা হয়। ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন আইন অনুসারে কানাডায় অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সময় EIC আর মানবিক পুনর্বাসন কর্মসূচি বা প্রশাসনিকভাবে অন্য কোনও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে পারত না। ১৯৭৬ সালের আইনটি কনভেনশন শরণার্থীদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য শ্রেণী তৈরি করে ধারা ৬(২) এর মাধ্যমে এটি অন্যান্য মানবিক শ্রেণীর জন্য নিয়ন্ত্রণ-প্রণয়নের কর্তৃত্ব প্রদান করেছিল যা মনোনীত করা যেতে পারে। ১৯৭৮ সালের ১ এপ্রিল আইন ঘোষণার সময়, কোনও পদবী ঘোষণা করা হয়নি তবে তিনটি পুনর্বাসন কর্মসূচি চলমান ছিল। এর মধ্যে পূর্ব ইউরোপীয়, চিলি/আর্জেন্টিনা এবং ইন্দোচীন অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রায় সাথে সাথেই কার্যক্ষম সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিটি ভিয়েতনামী আবেদনকারীর গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণের আগে কনভেনশনের যোগ্যতা পরীক্ষা করা খুবই ঝামেলার ছিল এবং উৎপাদনশীলতা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আগত ইহুদি অভিবাসীরা শরণার্থী মর্যাদার দাবি অগ্রসর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন কারণ তারা এই শব্দটিকে আপত্তিকর বলে মনে করেছিলেন। চিলি এবং আর্জেন্টিনাররা স্পষ্টতই কনভেনশন শরণার্থী ছিল না কারণ তারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে ছিল। নতুন আইন পাস হওয়ার আগে অনুমোদিত কর্মসূচিগুলোর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য, EIC নভেম্বর মাসে কাউন্সিলের একটি আদেশ প্রণয়ন করে যা ধারা ৬(২) অনুসারে তিনটি অতিরিক্ত মানবিক শ্রেণী মনোনীত করে। স্ব-নির্বাসিত শ্রেণীর মধ্যে ছিল সোভিয়েত ইহুদি এবং অন্যান্য পূর্ব ইউরোপীয়রা; ইন্দোচীন মনোনীত শ্রেণী কনভেনশনের যোগ্যতার জন্য প্রতিটি আবেদনকারীর পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করেছিল; এবং ল্যাটিন আমেরিকান মনোনীত শ্রেণী (LADC) নির্যাতিত চিলি এবং আর্জেন্টিনার নাগরিকদের ক্ষেত্রে আবেদন করেছিল যারা এখনও তাদের নিজস্ব দেশে বসবাস করছে। এর মধ্যে কারাগারে থাকা ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।<ref>Raphael Girard, Canadian Immigration Historical Society, CIHS Bulletin Issue #110, September 2024, ISSN 1485-8460, <<nowiki>https://cihs-shic.ca/wp-content/uploads/2024/10/Bulletin-110-2024-09.pdf</nowiki>>, page 3.</ref>
শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতায় নাগরিক সমাজের আরও বেশি ভূমিকা রাখার দাবি এবং সরকারি শরণার্থী পৃষ্ঠপোষকতা সিদ্ধান্তের সমালোচনা মোকাবেলা করার জন্য, ১৯৭৮ সালে কানাডা একটি ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতা কর্মসূচি চালু করে যার মাধ্যমে নাগরিকরা নতুন শরণার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে সহায়তা করতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩০০,০০০ এরও বেশি শরণার্থী কানাডায় এসেছেন।
== ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ডের প্রতিষ্ঠা ==
কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড গঠনের পটভূমি ছিল ১৯৮০-এর দশকে পূর্ব-বিদ্যমান শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ ব্যবস্থার কঠোরতা, ক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং ন্যায্যতা নিয়ে উদ্বেগ।
প্রথমত, ১৯৮০-এর দশক জুড়ে কানাডার আশ্রয় ব্যবস্থার কঠোরতা এবং ব্যবস্থার সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ ছিল। ডেবোরা আঙ্কারের ভাষায়, ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে সরকার 'অবৈধ' অভিবাসীদের দ্বারা সুবিধা গ্রহণের কারণে ভঙ্গুর আশ্রয় ব্যবস্থার সুযোগ নেওয়ার বিষয়টি সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়। আইআরবি তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে উদ্ভূত সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি, যখন ১৭৪ জন শিখ ব্যক্তি নোভা স্কটিয়ার চার্লসভিলের জেলে গ্রামের কাছে লাইফবোটে করে আসার পর ফেডারেল সরকার ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধনের জন্য জরুরি অধিবেশনের জন্য সংসদকে আহ্বান করে। সেই সময়ে, কানাডীয় কর্মসংস্থান ও অভিবাসন উপদেষ্টা কাউন্সিল রিপোর্ট করেছিল যে বেশিরভাগ ব্যবসা ও শ্রমিক নেতারা মনে করেছিলেন যে সরকার "সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে"। ব্যবস্থার অখণ্ডতা সম্পর্কে এই ধরনের উদ্বেগের উদাহরণ ১৯৮০-এর দশকে রিফর্ম পার্টির প্ল্যাটফর্মে দেখা গিয়েছিল। সেখানে "অভিবাসন নির্যাতন, ভুয়া শরণার্থী, [এবং] অভিবাসীদের অনুপযুক্ত নির্বাচন" সম্পর্কে "প্রদাহজনক ভাষা" হিসাবে চিহ্নিত একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল। তৎকালীন প্রগতিশীল রক্ষণশীল সরকার বলেছিল যে "অনেক দাবি প্রতারণামূলক। সাম্প্রতিক তথ্য দেখায় যে গড়ে ৭০ শতাংশ দাবি ভিত্তিহীন"। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বাস্তবায়িত এই উদ্বেগগুলোর একটি প্রতিক্রিয়া ছিল ডেবোরা অ্যাঙ্কার যাকে একাধিক বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে শরণার্থী দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থান অনুমোদন এবং বিভিন্ন সামাজিক পরিষেবা বাতিল করা। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় শুনানির তারিখ না আসা পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই দেশে ফেরত পাঠানোর একটি নতুন অনুশীলন।<ref name=":50" />
দশকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শরণার্থী দাবির ফলে প্রাক-আইআরবি সিস্টেমের ক্ষমতা নিয়েও উদ্বেগ ছিল। রেবেকা হ্যামলিন বলেন যে কানাডা নিজেকে প্রথম আশ্রয়ের দেশ হিসেবে বিবেচনা করার আগে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী তার তীরে আসতে শুরু করার আগে শরণার্থী সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপরোক্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোতে স্বাক্ষর করেছিল। ১৯৮০ সালে কানাডায় ১,৪৮৮টি শরণার্থী দাবি জমা পড়েছিল। এটি আজকের মতো খুবই সামান্য। তবে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, এই সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে এত বেশি সংখ্যক মানুষ দেশে আশ্রয়ের দাবি জানাচ্ছিল যে ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণরূপে অতিরিক্ত চাপে পড়ে গিয়েছিল, ১৯৮৫ সালে ৮,২৬০টি দাবি করা হয়েছিল।<ref name=":4" /> ১৯৮৭ সালে প্রায় ২৭,০০০ শরণার্থী দাবি শুরু হয়েছিল। দাবির এই বৃদ্ধি এবং শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য নিবেদিত সম্পদের প্রভাবে, ১৯৮৮ সাল নাগাদ একটি দাবি প্রক্রিয়াকরণে গড়ে পাঁচ থেকে সাত বছর সময় লাগছিল। কানাডায় এই বৃদ্ধি বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও একই রকম বৃদ্ধির প্রতিফলন ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৬ সালে পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে ২০,০০০ আশ্রয়প্রার্থী এসেছিলেন, ১৯৮০ সালে ১৫৮,০০০ জন আবেদনকারী ছিলেন এবং ১৯৮৬ সাল নাগাদ, বার্ষিক ২০০,০০০ এরও বেশি আবেদন জমা পড়ছিল।
এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যার প্রতিক্রিয়ায়। রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে দাবির সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্ভাব্য প্রভাব পড়ার আশঙ্কায়, ১৯৮২ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব একটি নবগঠিত শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়, যা প্রথমবারের মতো অভিবাসন বিভাগ থেকে স্পষ্টভাবে স্বাধীন করা হয়েছিল। এর নিজস্ব চেয়ারম্যান এবং বর্ধিত বাজেট ছিল। এর স্বাধীনতা কাঠামোগতভাবে এই কারণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে এটি CEIC-এর বৈদেশিক শাখার একটি অংশ না হয়ে সরাসরি মন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করত। এর ফলে, প্রথমবারের মতো, বিশ্বজুড়ে শরণার্থী-উৎপাদনকারী পরিস্থিতির উপর প্রামাণিক এবং স্বাধীন ডকুমেন্টেশন সংকলন করা সম্ভব হয়েছিল। এই ব্যবস্থায় কেবল লিখিত দাখিল অন্তর্ভুক্ত ছিল, কমিটি ব্যক্তিগতভাবে মূল্যায়ন করত। কমিটি শেষ পর্যন্ত অভিবাসন মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করত। ১৯৮৩ সালে টরন্টো এবং মন্ট্রিলে এই ধরনের দাবিদারদের মৌখিক শুনানির ব্যবস্থা করার জন্য একটি পাইলট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এতে কেবল একজন RSAC সদস্য জড়িত ছিলেন যিনি পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং যিনি দাবিদার এবং আইনজীবীর সাথে তাদের যেকোনো উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন। এই মডেলের অধীনে, প্রক্রিয়াটি এখনও দ্বিখণ্ডিত ছিল কারণ সেই সদস্য নিজেই প্রকৃত সিদ্ধান্ত নেননি; সিদ্ধান্তটি এখনও মন্ত্রী কর্তৃক একটি RSAC প্যানেলের পরামর্শে নেওয়া হয়েছিল যারা নিজেরাই দাবিদারকে দেখেননি। কমিটিতে ব্যক্তিগত জীবনের সদস্য, অভিবাসন বিভাগ এবং বিদেশ বিষয়ক বিভাগ সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে, কানাডার পররাষ্ট্র নীতি থেকে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ অব্যাহত ছিল। শরণার্থী মর্যাদা প্রদানকে উৎপত্তিস্থলের অবস্থা সম্পর্কে একটি বিবৃতি হিসেবে দেখা যেতে পারে। যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে কানাডার রাজনৈতিক কারণে শরণার্থী মর্যাদা প্রদান সীমিত করার ইতিহাস রয়েছে, বিশেষ করে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলোর উপর এটি কে কেন্দ্র করে এবং নতুন উদীয়মান ঔপনিবেশিক-পরবর্তী রাষ্ট্রগুলো থেকে আসা শরণার্থীদের স্বীকৃতি দিতে অনীহা প্রদর্শন করে, পাছে শরণার্থী সুরক্ষার এই অনুদানকে পশ্চিমা শক্তির নীতি এবং কর্মকাণ্ড শরণার্থী প্রবাহের কারণ বলে স্বীকার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে বিদেশ বিষয়ক বিভাগ RSAC-এর সিদ্ধান্তগুলো বাতিল করার চেষ্টা করেছিল। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সিস্টেমটি কতটা পর্যবেক্ষণাধীন ছিল।
পরিবর্তনের এই প্রেরণা আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছিল যা শরণার্থী ব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সেই সময় পর্যন্ত, সিস্টেমটি "স্থিতিতে থাকা" এবং "স্থিতির বাইরে থাকা" ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য করেছিল, শুধুমাত্র ''অভিবাসন আইন'' লঙ্ঘনের জন্য তদন্তাধীন ব্যক্তিদের জন্য শরণার্থী দাবি বিবেচনা করেছিল। ১৯৮৫ সালে ফেডারেল আদালত এই পার্থক্যকে অন্যায্য এবং অকার্যকর বলে রায় দেয়। অধিকন্তু, ১৯৮৫ সালের আরেকটি সিদ্ধান্ত, ''সিং বনাম কর্মসংস্থান ও অভিবাসন মন্ত্রী'', প্রতিষ্ঠিত করে যে যেখানে একজন দাবিদারের বিশ্বাসযোগ্যতা ঝুঁকির মধ্যে থাকে, সেখানে তৎকালীন ''ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের'' সামনে মৌখিক শুনানি প্রয়োজন। এই রায়ে, কানাডার সুপ্রিম কোর্ট পূর্ববর্তী ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় যার অধীনে মৌখিক শুনানির জন্য আবেদন করতে হত। ''সিং-'' এর সিদ্ধান্তকে প্রায়ই কানাডার মাটিতে আগমনের সময় অভিবাসীদের জন্য ''কানাডীয় অধিকার ও স্বাধীনতা সনদের'' সুরক্ষা কার্যকর করার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। এর ফলে শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পুনর্গঠন প্রয়োজন যাতে স্বাভাবিকভাবেই সুষ্ঠু মৌখিক শুনানি শুরু হয়। ''সিং-এর'' সিদ্ধান্তের একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল মৌখিক শুনানির সুযোগ সম্প্রসারণ করা এবং এই ধরনের সুবিধা সহজতর করার জন্য ব্যবস্থার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ১৯৮৫ সালে বিল সি-৫৫ আইএবি সংশোধন করে যাতে সকল শরণার্থী তাদের আপিলের সময় মৌখিক শুনানির সুযোগ পান এবং বিলটি আইএবি সদস্যের সংখ্যা আঠারো থেকে পঞ্চাশে উন্নীত করে।
এই চ্যালেঞ্জের সমষ্টি মোকাবেলা করার জন্য, তৎকালীন কানাডীয় সরকারগুলো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা পরিচালনা করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮১ সালের অভিবাসন অনুশীলন ও পদ্ধতি সম্পর্কিত টাস্ক ফোর্স, ১৯৮১ সালের ম্যাকডোনাল্ড রয়্যাল কমিশন অফ ইনকোয়ারি কনসার্নিং সার্টেইন অ্যাক্টিভিটিজ অফ দ্য আরসিএমপি যা অভিবাসনে নিরাপত্তা পরীক্ষা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে, ১৯৮৩ সালের রবিনসন রিপোর্ট ''"ইলিগ্যাল মাইগ্রেন্টস ইন কানাডা"'' শিরোনামে, ১৯৮৪ সালের রাটুশনি রিপোর্ট ''"এ নিউ রিফিউজি স্ট্যাটাস ডিটারমিনেশন প্রসেস ফর কানাডা" শিরোনামে'', ১৯৮৪ সালের ডেসচেনেস কমিশন অফ ইনকোয়ারি অন ওয়ার ক্রিমিনালস ইন কানাডা" শিরোনামে এবং ১৯৮৫ সালের রাব্বি গুন্থার প্লাউটের রিপোর্ট ''"রিফিউজি ডিটারমিনেশন ইন কানাডা"'' শিরোনামে। এই প্রতিটি প্রতিবেদনে একটি নতুন আশ্রয় নির্ধারণ ব্যবস্থার জন্য পদ্ধতির সুপারিশ করা হয়েছে যা শোনার অধিকার উভয়কেই সম্বোধন করবে এবং ন্যায্যতা এবং দক্ষতার প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখবে। ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স "শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ প্রক্রিয়া" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রদান করে যা তিনটি প্রধান সুপারিশ করে: ১) আরএসএসি অভিবাসন এবং বহিরাগত নীতি বিবেচনা থেকে স্বাধীন হওয়া উচিত, ২) কনভেনশন শরণার্থী সংজ্ঞার ব্যবহারে আইনের মূলনীতির পাশাপাশি নীতিমালাও মেনে চলা উচিত। ৩) প্রাথমিক নির্ধারণ পর্যায়ে দাবিদারের মৌখিক শুনানি করা উচিত। পরিশেষে, প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে "বর্তমান নির্ধারণ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি কেন্দ্রীয় ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হোক যা শরণার্থীদের দাবি শুনবে এবং নির্ধারণ করবে।" ১৯৮১ সালের টাস্ক ফোর্স রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় সরকার কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কনভেনশনের শরণার্থী সংজ্ঞার মূলনীতি পালনের সুপারিশের ক্ষেত্রে, মন্ত্রী নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন যা দাবিদারদের সন্দেহের সুবিধা প্রদানের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করেছে। শরণার্থী দাবিদারদের জন্য ব্যবস্থার ন্যায্যতা বৃদ্ধির জন্য সরকার অন্যান্য পদক্ষেপও গ্রহণ করে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে চাকরি-নির্দিষ্ট কর্মসংস্থানের নথিগুলোকে জেনেরিক অনুমোদন দিয়ে প্রতিস্থাপন করা<ref name=":79" /> এবং একজন দাবিদার নিয়োগ অনুমোদনের জন্য যোগ্য হওয়ার আগে তদন্ত আহ্বানের প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়া - এর ফলে কর্মসংস্থান অনুমোদনের জন্য আট মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার বাধা দূর করা হয়েছিল।
১৯৮০-এর দশকের এই সমস্ত প্রতিবেদন, ঘটনাবলী এবং সম্পর্কিত আইনী কৌশল থেকে শেষ পর্যন্ত যা বেরিয়ে আসে তা হলো একটি ট্রাইব্যুনাল মডেলকে কেন্দ্র করে একটি নতুন আশ্রয় ব্যবস্থা। প্রাসঙ্গিক আইন, বিল সি-৫৫, বা ''শরণার্থী সংস্কার আইন'', ১৯৮৬ সালে হাউস অফ কমন্সে উত্থাপন করা হয়েছিল। এই বিলটি বিল সি-৮৪, ''শরণার্থী প্রতিরোধ ও আটক আইন দ্বারা পরিপূরক ছিল।'' এই পরবর্তী, আরও বিধিনিষেধমূলক আইনটি কানাডার উপকূলে জাহাজের আগমন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং মানুষ পাচার সম্পর্কে উদ্বেগের প্রতি সাড়া দেয়। সংসদের জরুরি অধিবেশনে এই বিলগুলো নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছিল। সিনেট বিল সি-৮৪ সম্পর্কে একটি বিস্তৃত তদন্ত পরিচালনা করে এবং বিলটি দুবার প্রত্যাখ্যান করে। অবশেষে, একজন নতুন অভিবাসন মন্ত্রী অতিরিক্ত সংশোধনীতে সম্মত হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে হাউস অফ কমন্স এবং সিনেট বিল দুটি পাস করে এবং সেই বছরের ২১ জুলাই রাজকীয় সম্মতি প্রদান করে। নতুন সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য এবং দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল গঠনঃ কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড ১লা জানুয়ারি, ১৯৮৯ সালে ১১৫ সদস্য নিয়ে একটি স্বাধীন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল হিসাবে অস্তিত্ব লাভ করে। সেই সময়, আইআরবি দুটি বিভাগ নিয়ে গঠিত: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগ এবং ইমিগ্রেশন আপিল বিভাগ, এটি পূর্ববর্তী ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডকে প্রতিস্থাপন করেছিল। গর্ডন ফেয়ারওয়েদার, নিউ ব্রান্সউইকের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং কানাডিয়ান মানবাধিকার কমিশনের প্রথম প্রধান কমিশনার, আইআরবির প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন। সংশ্লিষ্ট নামগুলি থেকে বোঝা যায়, সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হ'ল শরণার্থী স্থিতি ''উপদেষ্টা কমিটি'' থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি মন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, এটি একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ট্রাইব্যুনালের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল।
* সিআরডিডি মৌখিক শুনানি: নতুন শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় দু'জন আইআরবি সদস্যের সভাপতিত্বে একটি মৌখিক শরণার্থী দাবির শুনানি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
* যোগ্যতার মানদণ্ড: ১৯৮৮-এ কানাডিয়ান সংসদ অভিবাসন আইন সংশোধন করে শরণার্থী দাবিদারদের নিয়ন্ত্রণকারী আইনে 'যোগ্যতার মানদণ্ডের ধারণাটি প্রবর্তন করে'। যোগ্যতার মানদণ্ডটি তখন থেকে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার পূর্বশর্ত ছিল।
* যোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তিতে স্ক্রিনিং পদ্ধতি: ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে'' এমন একটি পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ছিল যার মাধ্যমে সমস্ত আবেদনকারীর দু'জনের একটি প্যানেলের সামনে শুনানি ছিল যেখানে দাবিদারের প্রমাণ করার বোঝা ছিল যে তারা তাদের দাবি নির্ধারণ করার যোগ্য এবং দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি ছিল। প্যানেলে একজন ইমিগ্রেশন অফিসার এবং সিআরডিডির একজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। প্যানেলের দুই সদস্যের যে কোনও একজনকে রাজি করানো গেলে সিআরডিডি-র সামনে পূর্ণাঙ্গ শুনানিতে এই দাবির শুনানি হবে। মন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করেন একজন কেস প্রেজেন্টিং অফিসার (সিপিও)। পোর্ট-অফ-এন্ট্রি মামলায়, দাবির প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব এড়ানোর উদ্দেশ্যে, মন্ত্রীর ব্যয়ে প্রথম স্তরের শুনানিতে শরণার্থী দাবিদারদের জন্য "মনোনীত পরামর্শ" সরবরাহ করা হয়েছিল। যখন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছিল, তখন সরকার অনুমান করেছিল যে এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটি তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে শেষ করা যেতে পারে। এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্তের জন্য কারণ সরবরাহ করা দরকার ছিল। একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি অনুসন্ধানের জন্য একটি নিম্ন থ্রেশহোল্ড ছিল: ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' সরবরাহ করেছিল যে যদি বিচারক বা সিআরডিডি সদস্য উভয়ই মতামত দেন যে এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যার ভিত্তিতে শরণার্থী বিভাগ দাবিদারকে কনভেনশন শরণার্থী হিসাবে নির্ধারণ করতে পারে, তবে তারা নির্ধারণ করতে হবে যে দাবিদারের দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি ছিল। অক্টোবর ১৯৮৯ পর্যন্ত, ৫% দাবিগুলি এই প্রক্রিয়া অনুসারে বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তির অভাব হিসাবে নির্ধারিত হয়েছিল।
* গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগকারী: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগের ৬৫ জন পূর্ণকালীন সদস্যকে গভর্নর ইন কাউন্সিল দ্বারা নিয়োগ করা যেতে পারে। কাজের চাপের প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত খণ্ডকালীন সদস্য নিয়োগ করা যেতে পারে।
* অ-প্রতিকূল প্রক্রিয়া: একটি দাবির বিষয়ে সিআরডিডি শুনানি একটি অ-প্রতিকূল পদ্ধতিতে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল। এর অংশ হিসাবে, মন্ত্রী কেবল প্রমাণ উপস্থাপনের অধিকারী ছিলেন এবং দাবিদারকে জেরা করতে বা উপস্থাপনা করতে পারতেন না, যেখানে বাদ দেওয়ার বিষয়টি ছিল তা ছাড়া। সিআরডিডি-র প্যানেলগুলিকে শরণার্থী হিয়ারিং অফিসার (আরএইচও) নামে পরিচিত একজন আইআরবি কর্মচারী সহায়তা করেছিলেন। পূর্ববর্তী রিফিউজি স্ট্যাটাস অ্যাডভাইজরি কমিটি সিস্টেমের অধীনে কেস প্রেজেন্টিং অফিসার হিসাবে যা উল্লেখ করা হয়েছিল তার জন্য আরএইচও নতুন নাম ছিল।
* ব্যক্তিগত কার্যধারা: প্রাক্তন আইএবিতে জনসাধারণের কার্যক্রমের বিপরীতে, সিআরডিডি কার্যক্রম সাধারণত ''ক্যামেরায় পরিচালিত'' হত।
* অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া: আইআরবি পরিচালনার লক্ষ্য ছিল এটি নিশ্চিত করা যে বোর্ড তার আধা-বিচারিক অবস্থানকে সম্মান করে এবং একটি প্রচলিত আদালত ব্যবস্থার ফাঁদ এড়ায়, সংক্ষিপ্ত লিখিত সিদ্ধান্তের ধারণাকে চাপ দেয় এবং মৌখিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে।
* নিরাপদ তৃতীয় দেশের শাসন অনুসারে মনোনীত কোনও দেশ নেই: নতুন আইনটি নিয়ে নাগরিক সমাজ দ্বারা উত্থাপিত একটি উদ্বেগ হ'ল নিরাপদ তৃতীয় দেশ শাসন যা এটি চালু করেছিল। নিরাপদ তৃতীয় দেশ শাসনের জনসাধারণের সমালোচনার জবাবে, বারবারা ম্যাকডুগাল, যিনি তখন কর্মসংস্থান ও অভিবাসন মন্ত্রী ছিলেন, বোঝানো হয়েছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা থেকে নির্বাসিত শরণার্থী দাবিদারদের মধ্য আমেরিকায় ফেরত পাঠাতে পারে যেখানে তাদের জীবন বিপন্ন হবে। ফলস্বরূপ, তিনি ডিসেম্বর 188 সালে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি "নিরাপদ তৃতীয় দেশের তালিকায় কোনও দেশ ছাড়াই এগিয়ে যেতে প্রস্তুত ... আমরা মনে করি নতুন সিস্টেমটি এটি ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম হবে।
* বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সীমাবদ্ধতা: আইএবির ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছিল, আইআরবি দ্বারা প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনা কেবল ছুটির সাথে এগিয়ে যেতে পারে। তবে, আইনটি বিধান করেছিল যে আদালত বিচারিক পর্যালোচনার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত নির্বাসন ঘটবে না।
* নির্ধারণ-পরবর্তী ঝুঁকি মূল্যায়ন: সরকার প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের জন্য ঝুঁকি পর্যালোচনা করার জন্য ১৯৮৯ সালে একটি নীতি প্রবর্তন করেছিল যেখানে নতুন ঝুঁকি সম্পর্কিত দাবিগুলি মূল্যায়ন করার জন্য তাদের প্রত্যাখ্যান এবং নির্বাসনের মধ্যে সময় অতিবাহিত হয়েছিল। বিশেষত, ব্যর্থ শরণার্থী দাবিদাররা অপসারণের ফলে বাধ্যতামূলক ব্যক্তিগত ঝুঁকি হবে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তার দ্বারা নির্ধারণ-পরবর্তী পর্যালোচনার জন্য আবেদন করতে সক্ষম হয়েছিল। এই পর্যালোচনাটি "জীবনের ঝুঁকি, অমানবিক আচরণ, বা চরম নিষেধাজ্ঞাগুলি" মূল্যায়ন করেছে এবং ১৯৫১ কনভেনশন এবং প্রোটোকলের আওতাভুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। এ ধরনের আবেদনের প্রায় ২-৩ শতাংশ গ্রহণ করা হয়। নীচে আলোচনা করা হয়েছে, এই প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত আইআরপিএর এখন এস 97 এর ভিত্তি হয়ে ওঠে।
* অবসান এবং ছুটির বিধান: এই নতুন আইনের অধীনে, মন্ত্রী তার তিন সদস্যের একটি প্যানেলের সামনে শরণার্থী বিভাগে এই সিদ্ধান্তের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে কোনও ব্যক্তি আর কনভেনশন শরণার্থী নন এই ভিত্তিতে যে শরণার্থী প্রতারণামূলক উপায়ে বা ভুল উপস্থাপনার মাধ্যমে তাদের মর্যাদা অর্জন করেছে, বা শরণার্থীর আর সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। ছুটির জন্য আবেদনের জন্য প্রথমে চেয়ারপারসনের কাছ থেকে ছুটির প্রয়োজন হয়।
আইআরবি কানাডায় আশ্রয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি নতুন সূচনার প্রতিনিধিত্ব করে। নতুন ব্যবস্থায় রূপান্তরের অংশ হিসেবে, সরকার আশ্রয় আবেদন মুলতুবি থাকা ব্যক্তিদের জন্য বেশ কয়েকটি ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচি চালু করেছে। প্রথমটি ছিল সীমিত আকারে ১৯৮৬-৮৭ সালের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ১৯৮৯ সালে আইআরবি-র পাশাপাশি কার্যকর হওয়া পরবর্তী একটি আইন "সমস্যা সমাধান" এবং আশ্রয় নীতি নির্ধারণে নতুন করে শুরু করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।<ref name=":13">Hamlin, Rebecca. ''Let Me Be a Refugee: Administrative Justice and the Politics of Asylum in the United States, Canada, and Australia''. New York: Oxford University Press, 2014. Print. Page 47.</ref> যদিও সরকার এই শব্দটি পরিত্যাগ করেছিল,<ref name=":942">Minister of Employment and Immigration, Press Release, March 20, 1990, 90-04.</ref> এটি মূলত ১৯৮৬ সালের ২১ মে এর আগে কানাডায় প্রবেশকারী শরণার্থী দাবিদারদের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমা ছিল। সেখানে ব্যক্তিদের কানাডায় থাকতে এবং স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো যদি তারা ইতিমধ্যেই নিযুক্ত থাকে বা নিকট ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার সম্ভাবনা থাকে এবং তাদের কোনও চিকিৎসা, নিরাপত্তা বা অপরাধমূলক উদ্বেগ না থাকে। আনুষ্ঠানিকভাবে, দাবিগুলোকে চারটি দলে ভাগ করা হয়েছিল:
* গ্রুপ I: যাদের দাবি আগে শপথের অধীনে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সাধারণত, এই দাবিগুলো প্রথমে এই যুক্তির ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হতো যে এই দাবিদাররা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কানাডায় ছিলেন। কর্মসংস্থান ও অভিবাসন কানাডার কর্মকর্তারা ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে এই দাবিগুলো পর্যালোচনা শুরু করেন। যদি, পর্যালোচনার পর শরণার্থী দাবির জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি সুপারিশ করা হয়, তাহলে মামলাটি একজন বিচারক এবং সিআরডিডি-এর একজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ প্যানেলে পাঠানো হবে। যদি সেই প্যানেলগুলো বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তিতে সুপারিশের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে দাবিদাররা পরবর্তী শুনানির প্রয়োজন ছাড়াই স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে সক্ষম হত।
* দ্বিতীয় দল: যারা ১৯৮৬ সালের মে থেকে ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কানাডায় এসেছিলেন এবং যাদের মন্ত্রীর পারমিট দেওয়া হয়েছিল।
* গ্রুপ III: যাদের অভিবাসন তদন্ত শপথের অধীনে তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য স্থগিত করা হয়েছিল কিন্তু এই পরীক্ষাগুলো পরিচালিত হয়নি।
* গ্রুপ IV: যেসব ব্যক্তির দাবির তদন্ত এখনও খোলা হয়নি বা তাদের দাবি পরীক্ষা করার জন্য এখনও স্থগিত করা হয়নি।
গ্রুপ I এর দাবিদারদের তাদের দাবির পক্ষে কোন বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি পাওয়া যায়নি এবং গ্রুপ II-IV এর দাবিদারদের কানাডা ইমিগ্রেশন সেন্টারে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। যদি সেই দাবিদাররা কানাডায় থাকার জন্য পর্যাপ্ত মানবিক এবং সহানুভূতিশীল কারণ দেখাতে পারতেন, যেমন পারিবারিক ক্লাস লিঙ্ক, তাহলে আর কোনও পর্যালোচনার প্রয়োজন হতো না এবং দাবিদাররা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারতেন।<ref name=":913">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
পূর্ববর্তী ব্যবস্থায় ৩০% আবেদনকারী গৃহীত হয়েছিল, ত্বরিত পর্যালোচনা কর্মসূচির অধীনে, গ্রহণযোগ্যতার হার অনেক বেশি ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৬ সালে প্রক্রিয়াকৃত ২৮,০০০ আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় ৮৫% গৃহীত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সরকার এই সাধারণ ক্ষমার সমতুল্য বলে যে কোনও পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে, ১৯৯০ সালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলে যে "'একটি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা মানে বিশ্বকে জানানো যে কানাডা তার আইনের প্রতি অসম্মান সহ্য করে। আমি তা করতে পারি না,' মন্ত্রী বলেন।" সর্বোপরি, ''সিং-এর'' সিদ্ধান্ত এবং ১৯৮৯ সালে সংস্কারকৃত শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার মধ্যে ১,২৫,০০০ মামলা জমে ছিল, যে মামলাগুলো এই ত্বরান্বিত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। যদিও দ্রুত পর্যালোচনা কর্মসূচির মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে বকেয়া আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হওয়ার কথা ছিল, কানাডীয় কাউন্সিল ফর রিফিউজিজের নির্বাহী পরিচালক জ্যানেট ডেঞ্চের ভাষায়, "শরণার্থীরা বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন এবং তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন", তাই এটি করতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। এই ব্যাকলগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাদের বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের কানাডায় দর্শনার্থী বা অভিবাসী হিসেবে ফিরে আসার জন্য মন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন ছিল।<ref name=":912">Employment and Immigration Canada, ''The backlog clearance process: Refugee claims made in Canada before January 1, 1989'' (pamphlet), 1989, document IM 059/12/89, Cat. No. MP23-109/1989, <nowiki>ISBN 0-662-57178-9</nowiki>.</ref>
== শরণার্থী ব্যবস্থার আইনগত নির্ধারণ এবং শরণার্থী সংজ্ঞার বিস্তৃত ব্যাখ্যা ==
''সিং-'' এর সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং এর ফলে শরণার্থী ব্যবস্থায় পরিবর্তন। এর মধ্যে আইআরবি তৈরি অন্তর্ভুক্ত, যুক্তিসঙ্গতভাবে শরণার্থী প্রক্রিয়ার ক্রমবর্ধমান 'আইনব্যবস্থা' হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কলিন স্কট বিচারব্যবস্থাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন "যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য মূল্যবোধ এবং প্রত্যাশা দ্বারা পরিচালিত সম্পর্কগুলো আইনি মূল্যবোধ এবং নিয়মের অধীন হয়"। আশ্রয়ের একটি আইনি ধারণা প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া সম্পর্কিত অন্যান্য ধারণাগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে আশ্রয়ের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ধারণাগুলোও রয়েছে যা পূর্বে প্রাধান্য পেয়েছিল। এই পরিবর্তনের ফলে সিস্টেমটি কীভাবে পরিচালিত হতো তার উপর প্রভাব পড়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০-এর দশকে শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক সিদ্ধান্তের জন্য যে কারণগুলো দেওয়া হয়েছিল তা খুব কম ছিল; শরণার্থী আইনজীবী ডেভিড ম্যাটাস বর্ণনা করেছেন। কারণগুলো প্রায়ই "কেবল কয়েকটি বাক্য" ছিল যা "কদাচিৎ সেই তথ্যের ফলাফলের সাথে সম্পর্কিত ছিল যার উপর তাদের সিদ্ধান্ত ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল"। সংক্ষেপে, তিনি বলেন। এটি প্রস্তাব করা হয়েছিল তা ছিল সিদ্ধান্ত, যুক্তির বিপরীতে। আইআরবি কর্তৃক প্রদত্ত কারণগুলো সাধারণত আরও পূর্ণাঙ্গ হবে। এই পরিবর্তনটি সেই সময়ের আন্তর্জাতিক প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল - উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮৪ সালের আগে পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে বাধ্য করা হয়নি।
এইভাবে, ব্যবস্থার বিচারব্যবস্থায় ব্যক্তিদের জন্য পরামর্শ গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল, তাই ১৯৮৬ সালে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের একটি দল কানাডার অভিবাসন শিল্প সমিতি, অ্যাসোসিয়েশন অফ ইমিগ্রেশন কাউন্সেল অফ কানাডা গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছিল, এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। ১৯৭৮ সাল থেকে, অভিবাসন আইন অভিবাসন পরামর্শদাতাদের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে প্রবিধান প্রণয়নের অনুমতি দেয়, কিন্তু তা করা হয়নি। ১৯৯০-এর দশকে ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট ব্যবস্থার বৈধতা নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠেছিল, তার অবসান ঘটে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ল সোসাইটি ওয়েস্টকোস্ট ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড পরিচালনাকারী যশবন্ত সিং মাঙ্গাতের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে, যিনি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ডের সামনে ফি দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বারে মাঙ্গাতকে ডাকা হয়নি এই ভিত্তিতে একজন বিসি বিচারক এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর তার মামলাটি একটি পরীক্ষামূলক মামলায় পরিণত হয়। এটি শেষ পর্যন্ত ২০০১ সালে নিষ্পত্তি হয় যখন কানাডার সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে আইনজীবী নয় এমন অভিবাসন পরামর্শদাতারা আসলে বৈধ এবং ''ইমিগ্রেশন আইন'' দ্বারা অনুমোদিত।<ref name=":66" /> সেই সময়ে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ব্যবস্থা ছিল না এবং কানাডীয় আইনে এমন কোনও কিছুই ছিল না যা লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিকে অভিবাসন বিষয়ে ক্লায়েন্টের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ফি নেওয়া থেকে বিরত রাখবে।<ref name=":66" /> এটি ২০০২ সালের পরে আসবে না।
শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি এবং শরণার্থী ব্যবস্থার এই বিচারব্যবস্থার সাথে সাথে, শরণার্থী হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তার প্রকৃতি পরিবর্তিত হতে শুরু করে - ধারণাটি মূলত কমিউনিজম থেকে পালিয়ে যাওয়ার ধারণা থেকে কে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী তার একটি বৃহত্তর মানবাধিকার-ভিত্তিক ধারণায় চলে যায়। শরণার্থী পণ্ডিত গিল লোয়েশার যুক্তি দিয়েছিলেন, "১৯৫০ এবং ১৯৭০ এর দশকের মধ্যে নিপীড়নকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করা কোনও মাথাব্যথার কারণ ছিল না এবং আশ্রয় প্রদান সাধারণত কমিউনিজমের ব্যর্থতা এবং পশ্চিমাদের দানশীলতা পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হত।" নতুন আবিষ্কৃত আইআরবি ''শরণার্থী কনভেনশনকে'' এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে যা "বিস্তৃত" এবং "প্রগতিশীল" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে কানাডা বিশ্বের প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে যারা যৌন অভিমুখিতা-সম্পর্কিত নিপীড়নকে আশ্রয় দাবির ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৩ সালে ''ইমিগ্রেশন আইন'' সংশোধন করে চেয়ারপারসনকে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। আইনটির সংশোধনী কার্যকর হয় ১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩ সালে। এরপর কানাডা ৯ মার্চ, ১৯৯৩ তারিখে লিঙ্গ-ভিত্তিক আশ্রয় দাবি পরিচালনার জন্য নির্দেশিকা জারি করে,<ref name=":80" /> যা লিঙ্গ-ভিত্তিক নিপীড়নের সাথে সম্পর্কিত দাবির ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার সাথে সম্পর্কিত ছিল। ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী প্রবেশকারীদের ৮০% পুরুষ থাকলেও, ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে এই ব্যবস্থা আরও লিঙ্গ ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৯৬ সালে আইআরবি শিশু শরণার্থী দাবিদারদের উপর নির্দেশিকা গ্রহণ করে। এটি কোনও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কর্তৃক গৃহীত এই ধরণের প্রথম নীতিগত উদ্যোগ বলে জানা গেছে। অনেক পর ২০১৭ সালে বোর্ড যৌন অভিমুখীকরণ এবং লিঙ্গ পরিচয় এবং অভিব্যক্তি (SOGIE) সম্পর্কিত দাবির বিচারের জন্য নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করে। দাবির গ্রহণযোগ্যতার হারও নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল - ১৯৮০-এর দশকে কানাডায় শরণার্থী মর্যাদার জন্য করা প্রায় ৭০ শতাংশ দাবি পরীক্ষার পর প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল; ১৯৯০-এর দশক এবং পরবর্তীকালে গ্রহণযোগ্যতার হার বৃদ্ধি পায়।
কানাডার শরণার্থী বাধ্যবাধকতার এই প্রগতিশীল ব্যাখ্যাগুলো কানাডার মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পদ্ধতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল যা শরণার্থী দাবিদাররা অ্যাক্সেস করতে পারে। কানাডা সরকার ১৯৯১ সালে শিশু অধিকার সনদ অনুমোদন করে। এটি কানাডা কর্তৃক অনুমোদিত পূর্ববর্তী দলিলগুলোর পরিপূরক। এর মধ্যে রয়েছে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি। আজ দাবিদাররা এই চুক্তি অনুসারে প্রতিষ্ঠিত সাতটি জাতিসংঘ চুক্তি সংস্থার কাছে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশেষ পদ্ধতিতে, বিশেষ করে অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূতের কাছে ব্যক্তিগত অভিযোগ আনতে পারেন। নির্যাতন বিরোধী কমিটি হলো এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে বেশি অনুরোধকৃত চুক্তি সংস্থা এবং তাদের কাছে জমা দেওয়া ব্যক্তিগত অভিযোগের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই কনভেনশনের ৩ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ''নন-রিফাউলমেন্ট'' নীতির লঙ্ঘনের অভিযোগে।
মানবিক ও সহানুভূতির কারণে কানাডায় থাকার জন্য আবেদনপত্র তৈরির ক্ষেত্রেও একই রকম পরিবর্তন এসেছে। এটি অনেকেই শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করার বিকল্প হিসেবে অথবা শরণার্থী দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে আবেদন করে। এক পর্যায়ে, শরণার্থী আইনজীবীরা অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো অকেজো। ১৯৯৩ সালে মেরি জো লেডি অভিযোগ করেছিলেন যে এই ধরনের আবেদনগুলো "শরণার্থীদের জন্য অকেজো" এবং বলেছিলেন যে গত বছর অন্টারিওতে মানবিক এবং সহানুভূতিশীল পর্যালোচনার জন্য কোনও অনুরোধ মঞ্জুর করা হয়নি।<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 136.</ref>
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং দক্ষতার পরিমাপ ==
শরণার্থী সংজ্ঞার এই বিস্তৃত ধারণার বিতর্কিত ফলাফল ছিল অন্যান্য অভিবাসীদের থেকে শরণার্থীদের আলাদা করার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান অসুবিধা।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 165.</ref> প্রকৃতপক্ষে যেহেতু দারিদ্র্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে, তাই অনেক শরণার্থী উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে অভিবাসন করবে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 2.</ref> এই ধরনের চ্যালেঞ্জ, কানাডায় ব্যবহৃত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যমূলক অবস্থা নির্ধারণ মডেল। সেই সাথে দাবির সংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত বকেয়া মামলার ফলাফল হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এটি বছরে কয়েক হাজারের হারে ছিল। এটি ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছেছিল।<ref name=":482">Kelley, Ninette, and Michael J. Trebilcock. ''The Making of the Mosaic: A History of Canadian Immigration Policy''. Toronto: University of Toronto Press, 2010 (Second Edition). Print. Page 381. See also the following statement that Canada "received more than 40,000 refugees in 1992" in Martine Valois and Henri Barbeau, ''The Federal Courts and Immigration and Refugee Law,'' in Martine Valois, et. al., eds., The Federal Court of Appeal and the Federal Court: 50 Years of History, Toronto: Irwin Law, 2021, at page 302.</ref> এটি বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী সংকটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১-৯২ সালে প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার বিস্ফোরণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ফলে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি কানাডায় এসে আশ্রয় দাবি করেছিলেন। এই মুহুর্তে, কানাডা তার পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে বসনিয়া থেকে ২৫,০০০ এরও বেশি শরণার্থীর ভর্তির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করেছে।<ref>Valerie Knowles, ''Strangers at Our Gates: Canadian Immigration and Immigration Policy, 1540-2015'', March 2016, <nowiki>ISBN 978-1-45973-285-8</nowiki>, Dundurn Press: Toronto, p. 282.</ref> যদিও মূলত ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অনুমান করেছিল যে মামলাগুলো মাত্র আট সপ্তাহ এবং কয়েক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে, ক্রমবর্ধমানভাবে এটি ঘটছিল না।<ref>Government of Canada, ''Refugee Determination: What it is and how it works'', Pamphlet, 1989, Immigration and Refugee Board, page 10.</ref>
১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে সিনেট কর্তৃক পাস হওয়া বিল সি-৮৬ ছিল দাবিদারদের এই স্রোতের প্রতিক্রিয়া। বিলটি মূলত সিস্টেমের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়েছিল। এটি বিভিন্ন উপায়ে এটি করেছে:
* প্রথমত, আইআরবিতে দাবির জন্য একটি স্ক্রিনিং সিস্টেম বাতিল করে এবং আবেদনকারী শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার যোগ্য কিনা তা নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষ বোর্ড থেকে ইমিগ্রেশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা। দক্ষতার নামে, বিল সি-৮৬ যোগ্যতা নির্ধারণের ধাপটি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে এবং "কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি" ছাড়াই দাবিগুলো বাদ দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটি পরিত্যাগ করে। যখন দুই-পর্যায়ের স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া বাদ দেওয়ার জন্য ''অভিবাসন আইন'' সংশোধন করা হয়েছিল, তখন দাবির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি নেই তা নির্ধারণের জন্য একটি নতুন পরীক্ষা আইনে যুক্ত করা হয়েছিল। তবে এটি একটি ভিন্ন ভূমিকা পালন করেছিল: প্রাথমিক পর্যায়ে দাবিগুলো স্ক্রিন করার এর বদলে এটি ব্যর্থ দাবিদারদের সিদ্ধান্ত-পরবর্তী অধিকার সীমিত করার জন্য কাজ করেছিল যাদের দাবিগুলো কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়।<ref>''Rahaman v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2002 FCA 89, [2002] 3 FC 537, <[https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html?searchUrlHash=AAAAAQAaUmFoYW1hbiBhbmQgY3JlZGlibGUgYmFzaXMAAAAAAQ&resultIndex=1 https://www.canlii.org/en/ca/fca/doc/2002/2002fca89/2002fca89.html]> at paras 14-16.</ref>
* সিআরডিডিকে মৌখিক শুনানি না করেই দাবি গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়, এটিকে "দ্রুত প্রক্রিয়া" বলা হত। দ্রুত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, একজন RHO দাবিদারের সাক্ষাৎকার নেবেন এবং একজন সিআরডিডি সদস্যের কাছে সুপারিশ করবেন যে দাবিটি শুনানি ছাড়াই গ্রহণ করা উচিত কিনা অথবা শুনানির প্রয়োজন আছে কিনা। ১৯৯৩ সালে সমস্ত দাবির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এই দ্রুত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছিল। দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/RPD Rule 23 - Allowing a Claim Without a Hearing|কানাডীয় রিফিউজি প্রসিডিওর/আরপিডি রুল ২৩ - শুনানি ছাড়াই দাবি অনুমোদন করা#শুনানি ছাড়াই দাবি গ্রহণের জন্য বোর্ডের প্রক্রিয়াগুলোর ইতিহাস কী?]]
* শরণার্থী বিভাগের প্রতি পনেরো সদস্যের জন্য একজন সিএম অনুপাতে শরণার্থী বিভাগের পূর্ণ-সময়ের সদস্যদের মধ্য থেকে সমন্বয়কারী সদস্য (সিএম) হিসেবে মনোনীত করার ক্ষমতা জিআইসিকে দেওয়া হয়েছিল।
* বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা চাওয়ার প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইআরবি তৈরির সময় থেকে, ফেডারেল আপিল আদালতের প্যানেলগুলো বিচারিক পর্যালোচনা পরিচালনা করে আসছিল। সেখানে তারা অনুমতি মঞ্জুর করেছিল। ফেব্রুয়ারী ১৯৯২ সালে ''ফেডারেল কোর্টস অ্যাক্টের'' সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তির সিদ্ধান্তের উপর বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার ফেডারেল কোর্ট ট্রায়াল ডিভিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৯৩ সালে ''অভিবাসন আইনের'' সংশোধনী কার্যকর হয় যা কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগের সমস্ত সিদ্ধান্তের উপর ট্রায়াল বিভাগের একক বিচারকদের মূল বিচারিক পর্যালোচনার এখতিয়ার প্রদান করে। বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার জন্য বহু-সদস্যের প্যানেল থেকে একক বিচারকের দিকে স্থানান্তর ছিল এই উচ্চ ভলিউম সিস্টেমের জন্য বাস্তবায়িত আরেকটি দক্ষতার পরিমাপ।
এই সময়ে নতুন আইআরবি অনুশীলনের নিয়মও তৈরি করা হয়েছিল, ''কনভেনশন রিফিউজি ডিটারমিনেশন ডিভিশন রুলস'' SOR/৯৩-৪৫।
১৯৯৪ সালে বাস্তববাদের প্রতি ছাড় হিসেবে, সরকার কিছু প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের তাদের মূল দেশে, বিশেষ করে চীন থেকে আসা কিছু দাবিদারদের ফেরত না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি ডিফার্ড রিমুভাল অর্ডারস ক্লাস (DROC) চালু করে এটি করেছে। এটি কিছু শর্ত সাপেক্ষে তিন বছর পরেও অপসারণ না করা প্রত্যাখ্যাত শরণার্থী দাবিদারদের ল্যান্ডিংয়ের জন্য আবেদনগুলোকে অনুমোদন করে। এই ক্লাসটি বিশেষভাবে অনিশ্চিত অবস্থায় থাকা প্রায় ৪,৫০০ চীনা দাবিদারের পরিস্থিতি সমাধানের লক্ষ্যে করা হয়েছিল। এইভাবে, এই উদ্যোগটি ছিল একটি আপস: তিয়ানানমেন স্কয়ার হত্যাকাণ্ডের পর চীনে নির্বাসন স্থগিত হওয়ার সময় অপেক্ষা করা দাবিদারদের বিদ্যমান জমা পড়া দাবিদারদের জন্য এক ধরণের সাধারণ ক্ষমা প্রদান। একই সাথে ঘোষণা করা হয়েছিল যে নতুন প্রত্যাখ্যাত দাবিদারদের নির্বাসন পুনরায় শুরু হবে। পরবর্তীতে কানাডা নিয়মিত পদ্ধতির মাধ্যমে স্বীকৃতি না পাওয়া দাবিদারদের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও চালু করে। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে সরকার আনডকুমেন্টেড কনভেনশন রিফিউজিজ ইন কানাডা ক্লাস (UCRCC) চালু করে। এটি সোমালিয়া এবং আফগানিস্তানের কিছু শরণার্থীর জন্য একটি উপায় প্রদান করে যারা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য তাদের পরিচয় সন্তোষজনকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে অক্ষম ছিল, কিন্তু তাদের শরণার্থী নির্ধারণের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের অপেক্ষা আরোপ করে।
অধিকন্তু, শরণার্থী শুনানি কর্মকর্তার পদটিকে ব্যবস্থার দক্ষতা এবং সততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা অব্যাহত ছিল। এই পদটি সিআরডিডি সদস্যদের গবেষণা পরিচালনা এবং শুনানির সময় প্রশ্নোত্তরের জন্য দায়িত্ব পালনে সহায়তা করেছে। ১৯৯৫ সালে পদটির নাম পরিবর্তন করে শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা রাখা হয়।
অধিকন্তু, কানাডায় আশ্রয় প্রক্রিয়া সহজতর করার জন্য, পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থাকে পেশাদারীকরণ করার জন্য এবং কানাডায় আশ্রয় দাবি কম আকাঙ্ক্ষিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>আপিলের সীমাবদ্ধতা:</u> আইআরবি প্রতিষ্ঠার সময় কার্যকর করা একটি দক্ষতা পরিমাপ ছিল যে শরণার্থী দাবিদারদের এই সংশোধিত ব্যবস্থার অধীনে তাদের দাবির প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আর আপিল করার ক্ষমতা ছিল না। ডেভিড ম্যাটাস লিখেছেন, নতুন প্রক্রিয়ার এই দিকটি সেই সময়ে শরণার্থীদের জন্য আইনি পরামর্শদাতাদের দ্বারা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। যেসব দাবিদারদের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, তারা ফেডারেল আদালতে বিচারিক পর্যালোচনার আশ্রয় নিতে থাকে। তবে ১৯৮৯ সালে ''ইমিগ্রেশন আইনের'' সংশোধনীতে ছুটির প্রয়োজনীয়তা চালু করা হয়েছিল ''।'' এর ফলে, ফেডারেল আদালতে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার আবেদনকারীদের তাদের মামলার শুনানির জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হয়েছিল। প্রায় ১০ শতাংশ মামলায় আপিলের অনুমতি মঞ্জুর করা হয়েছে এবং ছুটি প্রত্যাখ্যানের কোনও কারণ মঞ্জুর করা হয়নি।
* <u>দাবি করার যোগ্যতার উপর বিস্তৃত বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯৪ সালে নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রীকে গুরুতর অপরাধের ভিত্তিতে একজন শরণার্থী আবেদনকারীর বিরুদ্ধে বিপদের মতামত জারি করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। এর ফলে শরণার্থী কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়, মামলাটি আইআরবির এখতিয়ার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিল সি-৪৪ ১০ জুলাই, ১৯৯৫ তারিখে কার্যকর হয়। এটি শরণার্থী বিভাগে দাবি পাঠানোর যোগ্যতা পুনর্নির্ধারণের বিধান রাখে। এর ফলে সিআরডিডি-তে দাবির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা সম্ভব হয়েছিল এবং যদি কোনও ঊর্ধ্বতন অভিবাসন কর্মকর্তা দাবিটি সিআরডিডি-তে পাঠানোর অযোগ্য বলে নির্ধারণ করেন, তাহলে সিআরডিডি-তে দাবির রেফারেল প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়েছিল।
* <u>দাবিদারদের জন্য কর্মসংস্থানের উপর বিধিনিষেধ:</u> ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার শরণার্থী দাবিদারদের কাজ করতে বাধা দেয়। ১৯৯০-এর দশকের পরে এটি পরিবর্তন করা হয়েছিল।
* <u>দুই ব্যক্তির প্যানেল থেকে এক ব্যক্তির প্যানেলে স্থানান্তর করুন:</u> কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগটি মূলত ধারণা করা হয়েছিল, শরণার্থী দাবিদারদের দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্যানেলের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তাদের মধ্যে কেবল একজনকে তাদের আবেদন সফল করার জন্য তাদের দাবি গ্রহণ করতে হবে। পূর্ববর্তী শরণার্থী অবস্থা উপদেষ্টা কমিটির তিন সদস্যের প্যানেল এবং পূর্ববর্তী ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের তিন সদস্যের প্যানেলের তুলনা করলে, সেই সময়ে এটি কে একটি খরচ-সাশ্রয়ী ব্যবস্থা হিসেবে কল্পনা করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে দুই সদস্যের প্যানেল থেকে এক সদস্যের প্যানেলে স্থানান্তরের জন্য আরও একটি খরচ-সাশ্রয়ী উদ্যোগ ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তী দশক পর্যন্ত এক-ব্যক্তি প্যানেলকে আদর্শ করার জন্য আইন পরিবর্তন করা হবে না, তবুও ১৯৯০-এর দশকে ''কার্যত'' এক-ব্যক্তি প্যানেল আদর্শ হয়ে ওঠে। সেই সময়কালে, শরণার্থী নির্ধারণ সাধারণত একজন সদস্য একা বসে করতেন, আবেদনকারীর "সম্মতি" নিয়ে। ক্যাথেরিন ডাউভার্গেন লিখেছেন যে ২০০২ সালে আইন সংশোধনের সময়। এটি এই অনুশীলনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপ দেয়, দুই ব্যক্তির প্যানেল ইতিমধ্যেই বিরল হয়ে পড়েছিল।
* <u>অপসারণ কার্যকর করার উপর বর্ধিত মনোযোগ:</u> নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন কানাডা শরণার্থী ব্যবস্থার মধ্যে অপসারণকে একটি মূল হাতিয়ার হিসাবে বর্ণনা করে।
* <u>অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণ:</u> আইআরবির সামনে ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম নন-আইনজীবী অভিবাসন পরামর্শদাতাদের পেশাদারীকরণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৬ সালে অন্টারিওর সেনেকা কলেজে একটি ইমিগ্রেশন প্র্যাকটিশনারস সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম তৈরি করা। এটি কানাডায় এই ধরণের প্রথম প্রোগ্রাম ছিল।
== ক্রমবর্ধমান দাবির সংখ্যা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ==
একটা সময় ছিল যখন শরণার্থী "সমস্যা" সমাধানযোগ্য বলে মনে করা হত। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় মূলত মাত্র তিন বছরের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক এই পদটি নবায়ন করা হয়, কিন্তু কেবল টানা পাঁচ বছরের জন্য। ইউএনএইচসিআরের অস্থায়ী প্রকৃতি এবং বারবার নবায়ন ২০০৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সেই সময়ে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ করে এবং শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করে যা "শরণার্থী সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত" অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে।<ref name=":29" /> শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, ইউএনএইচসিআর-এর ম্যান্ডেটের উপর থেকে সাময়িক সীমাবদ্ধতা অপসারণ এই ধরনের একটি প্রস্তাবের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার স্বীকৃতি দেয়।<ref name=":29" /> শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে, আশ্রয় দাবিদারদের আগমন আরও দূরবর্তী স্থান থেকে এবং একই সাথে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে শরণার্থী সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমান ভ্রমণের খরচ হ্রাস এবং স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির ফলে এটি ঘটেছে। এর সাথে সাথে (যেমন বার্লিন প্রাচীরের পতন) নাগরিকদের তাদের রাজ্য ত্যাগ করার ক্ষমতার উপর সীমাবদ্ধতা আরোপকারী দেশের সংখ্যা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।
এর জবাবে, ব্রিদ নি ঘ্রাইনের ভাষায়, রাষ্ট্রগুলো শরণার্থী প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করার জন্য এবং শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা সীমিত করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে "সৃজনশীল" উপায় ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে শরণার্থীদের তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ কমানো। এটি তিনি "তুলনামূলকভাবে অদৃশ্য - এবং তাই রাজনৈতিকভাবে সমীচীন ''- অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থা"<ref name=":3" /> বলে অভিহিত করেছেন। এটি সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কানাডা ক্রমবর্ধমান পরিমাণে প্রয়োগ করেছে। কানাডার ভৌগোলিক অবস্থান। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং তিনটি মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য তার অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন করে তুলেছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশে দাবিদারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, কানাডা ক্রমবর্ধমানভাবে নিম্নলিখিত ''অ-প্রবেশ'' ব্যবস্থাগুলোর দিকে ঝুঁকছে:
* সীমাবদ্ধ ভিসা নীতি: ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে কানাডায় অন্যান্য দেশ থেকে অনেক কম সরাসরি ফ্লাইট ছিল এবং পশ্চিম গোলার্ধের কোনও দেশের জন্য এটি র কোনও ভিসার প্রয়োজন ছিল না। এর বদলে কানাডায় অনেক ভ্রমণকারীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট পরিবর্তন করতে হয়েছিল, এমন কিছু যা সাধারণত সেই দেশে ভিসার প্রয়োজন হয়। ১৯ ১৯৭০০ এর দশকের শেষের দিকে, অন্যান্য দেশ থেকে কানাডায় সরাসরি ফ্লাইটগুলো বসন্ত শুরু করে এবং কানাডা কানাডায় একটি আশ্রয় ব্যবস্থা বাস্তবায়ন শুরু করে। কানাডা একই সাথে কানাডায় প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন শুরু করে। এটি আশ্রয় প্রক্রিয়ায় অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করে। ১৯৮৭ সালে সরকার বাধ্যতামূলক করতে শুরু করে যে কানাডা হয়ে অন্য দেশে ভ্রমণকারী ব্যক্তিদের কানাডার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রানজিট ভিসা থাকতে হবে যদি তারা এমন কোনও দেশ থেকে আসে যার নাগরিকদের কানাডায় ভ্রমণের জন্য দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয়। এই জাতীয় ভিসার প্রয়োজনীয়তাগুলো এই পর্যায়ে প্রসারিত হয়েছিল যে আজ "শরণার্থী উত্পাদনকারী" হিসাবে বিবেচিত রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদের সাধারণত দর্শনার্থী ভিসার প্রয়োজন হয় যা "পাওয়া অত্যন্ত কঠিন" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সোমালিয়া, ইয়েমেন, আফগানিস্তান এবং সিরিয়ার মতো শরণার্থী উৎপাদনকারী দেশগুলো থেকে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
* ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞা: ক্যারিয়ার নিষেধাজ্ঞাগুলো এয়ারলাইনস এবং অন্যান্য পরিবহন পরিষেবাগুলোর উপর আরোপিত বাধ্যবাধকতাগুলোকে বোঝায় যাতে তারা ভিসা ছাড়া কাউকে পরিবহন না করে, যদি তাদের প্রয়োজন হয়। দ্য নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন বিভাগ একটি ক্যারিয়ারকে "মোটা" প্রশাসনিক ফি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে অনুপযুক্ত নথি নিয়ে আগত প্রতিটি ভ্রমণকারীর জন্য।
* মানব পাচারের অপরাধীকরণ: কানাডা আশ্রয়ের দাবি প্রতিরোধের উপায় হিসাবে মানব পাচারকে অপরাধী করার বিধান ব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরূপ মার্কিন মানবিক কর্মীর বিরুদ্ধে চোরাচালানের জন্য অভিযোগ আনা (আইআরপিএর অধীনে একটি অপরাধ যা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহন করে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে বারোজন হাইতিয়ান আশ্রয়প্রার্থীকে পরিবহনের জন্য। তদুপরি, ১৯৯৩ সালে বিল সি -৮৬ এর উত্তরণ মানদণ্ডের একটি প্রসারিত তালিকা প্রতিষ্ঠা করেছিল যার দ্বারা কোনও আবেদনকারীকে অগ্রহণযোগ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে।
* বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তা: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার আশ্রয় আবেদনকারীদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার একটি প্রয়োজনীয়তা চালু করেছিল। এরপরে সরকার ভিসা আবেদনকারীদের জন্য বায়োমেট্রিক প্রয়োজনীয়তাও চালু করে এবং ধীরে ধীরে প্রসারিত করে; ২০১৮ এর শেষের দিকে, ভিসার প্রয়োজন এমন সমস্ত দর্শনার্থীদেরও বায়োমেট্রিক্স প্রয়োজন। অন্যান্য দেশের সাথে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তির অংশ হিসাবে এই জাতীয় বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী ব্যবহারের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালের ডিসেম্বরের কানাডা-মার্কিন স্মার্ট সীমান্ত ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক সনাক্তকারী বিকাশ করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দুই দেশের মধ্যে '''শেয়ারিং অব ইনফরমেশন অন অ্যাসাইল''<nowiki/>''াম অ্যান্ড রিফিউজি স্ট্যাটাস ক্লেইমস''' শীর্ষক একটি চুক্তিতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক ও বায়োগ্রাফিক তথ্যসহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, নিয়মতান্ত্রিক তথ্য ভাগাভাগি করার সুযোগ দেওয়া হয়।
* আশ্রয় নীতির প্রথম দেশ: কানাডার অভিবাসন আইন ১৯৮৮ সাল থেকে নিরাপদ দেশের নামকরণের অনুমতি দিয়েছে। এই বিধানটি ২০০৪ সালে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি অনুমোদনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল (নীচে দেখুন)।
* কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার এবং সুরক্ষা স্ক্রিনিং: ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে, সরকার কঠোর পোর্ট-অফ-এন্ট্রি সাক্ষাত্কার সহ শরণার্থী দাবির সংখ্যা হ্রাস করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নকশা চালু করেছিল। এরপর ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন অভিবাসন মন্ত্রী ঘোষণা দেন, কানাডায় আসা শরণার্থীদের জন্য ফ্রন্ট-এন্ড সিকিউরিটি স্ক্রিনিং (এফইএসএস) কৌশলের আরও বেশি ব্যবহার করা হবে। এফইএসএস স্ক্রিনিং সম্পর্কে আরও বিশদ এখানে পাওয়া যায়: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আরপিডি বিধি ৫৪ - কোনও কার্যধারার তারিখ বা সময় পরিবর্তন করা # রেগুলেশন ১৫৯.৯ (৩) (বি): আইনের ধারা ৩৪ থেকে ৩৭ সম্পর্কিত তদন্ত এবং অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াটিকে এফইএসএস প্রক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়।'''<ref>Obiora Chinedu Okafor, ''Refugee Law After 9/11: Sanctuary and Security in Canada and the United States'', UBC Press 2020, Law and Society Series, <nowiki>ISBN 9780774861465</nowiki>, page 91.</ref>'''
* পুশব্যাক অপারেশন: ১৯৮০ এর দশকের ''ইমিগ্রেশন আইনে'' মন্ত্রীর পক্ষে কানাডার জলে প্রবেশ না করার জন্য একটি জাহাজকে নির্দেশ দেওয়ার কর্তৃত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল যেখানে মন্ত্রী যুক্তিসঙ্গত ভিত্তিতে বিশ্বাস করেছিলেন যে জাহাজটি আইন বা বিধিবিধান লঙ্ঘন করে কোনও ব্যক্তিকে কানাডায় নিয়ে আসছে; এই বিধানটি ছয় মাসের "সূর্যাস্ত ধারা" সাপেক্ষে ছিল এবং এটি র মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ব্যবহার করা হয়নি। সাম্প্রতিককালে, পুশব্যাক এবং ইন্টারসেপশন অপারেশনগুলো বিদেশে ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৮ সালে কানাডীয় কর্মকর্তারা শ্রীলঙ্কা থেকে ১৯২ জন তামিল ব্যক্তিকে বহনকারী একটি নৌকার সেনেগালিজ নৌবাহিনী দ্বারা বাধা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। তাদের কানাডায় পৌঁছানোর আগেই কলম্বোতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ কানাডার মানব পাচারের খাম কর্মসূচির অর্থায়নে ৮৪ জন শ্রীলঙ্কান তামিলকে বহনকারী অ্যালিসিয়াকে আটক করেছিল। মানব পাচারের খামের তহবিল ২০১২ সালে ঘানায় রুভুমার আটকানোকেও সমর্থন করেছিল। এটি কর্তৃপক্ষের মতে টোগো এবং বেনিনের জন্য আবদ্ধ ছিল। সেখানে শত শত শ্রীলঙ্কান শরণার্থী আটকা পড়েছিল।<ref>Idil Atak and Claire Ellis, ''The externalization of Canada’s border policies: extending control, restricting mobility'', in Ervis Martani and Denise Helly, ''Asylum and resettlement in Canada: Historical development, successes, challenges and lessons'', Genova University Press, <https://gup.unige.it/sites/gup.unige.it/files/pagine/Asylum_and_resettlement_in_Canada_ebook.pdf>, page 122.</ref>
* বিদেশে হস্তক্ষেপ: সিবিএসএ কর্মীরা মাইগ্রেশন ইন্টিগ্রিটি অফিসারদের বিদেশে কাজ বলে অভিহিত করেছেন। এরা কানাডায় ভ্রমণ করছেন তাদের যথাযথ ভ্রমণের ডকুমেন্টেশন রয়েছে তা নিশ্চিত করে। বিদেশে কানাডার হস্তক্ষেপ প্রোগ্রামগুলো তার একাধিক সীমান্ত কৌশল (এমবিএস) নামে পরিচিত একটি উপাদান। এমবিএসের অধীনে, লিয়াজোঁ অফিসারদের কানাডার অনুমোদন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কানাডাগামী বিমান বা নৌকায় উঠতে বাধা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালে সরকার জানিয়েছিল যে বিশ্বব্যাপী ৪৯ টি স্থানে ৬৩ জন কর্মকর্তা ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এ ধরনের লিয়াজোঁ অফিসাররা ৮৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে অফশোরে আটক করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ৭,২০৮ জন, বেশিরভাগ রোমানিয়া, মেক্সিকো, ভারত, হাঙ্গেরি এবং ইরান থেকে "অনুপযুক্ত ডকুমেন্টেশন" এর কারণে কানাডায় ফ্লাইটে উঠতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।<ref>Harsha Walia, ''Border & Rule'', Winnipeg: Fernwood Publishing, ISBN: 9781773634524, page 88.</ref>
* ট্রানজিট দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থা এবং সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল এবং সহায়তা: কানাডা প্রস্থান রোধ করতে গ্লোবাল সাউথে সীমান্ত প্রয়োগের জন্য তহবিল দেয়। এটি ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি বোর্ড অফ কানাডার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে আশ্রয় ব্যবস্থার প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদানের জন্য প্রেরণ করে; সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন যে এটি "নিজেই এক ধরণের নিয়ন্ত্রণ নীতি হিসাবে কাজ করে।<ref>Senate of Canada, ''Ripped from Home: The Global Crisis of Forced Displacement,'' December 2024, <https://sencanada.ca/content/sen/committee/441/RIDR/Reports/GlobalForcedDisplacement_e.pdf>, page 54.</ref>
রেবেকা হ্যামলিন আশ্রয় দাবি রোধের জন্য এই ব্যবস্থার উত্থানকে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: "প্রতিরোধ ব্যবস্থার উত্থান আংশিকভাবে অপ্রত্যাশিত পরিণতির গল্প। কারণ প্রতিটি দেশের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মুহূর্তে করা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভবিষ্যত প্রজন্মের নীতিনির্ধারকদের তাড়িত করে। যদি এই দেশগুলোর নেতারা বর্তমান পরিস্থিতির আর্থিক, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো আগে থেকেই অনুমান করতেন, তাহলে তারা হয়তো সেই সময়ে মূলত একটি বিমূর্ত প্রতিশ্রুতি দিতে এতটা আগ্রহী ছিলেন না।"
== ২০০২ সালের অভিবাসন আইন থেকে আইআরপিএ-তে স্থানান্তর ==
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে, ফেডারেল সরকার তৎকালীন ''অভিবাসন আইন সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া শুরু করে''। এর মধ্যে দীর্ঘ জনসাধারণের পরামর্শও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ''"নট জাস্ট নাম্বারস: আ কানাডীয় ফ্রেমওয়ার্ক ফর ফিউচার ইমিগ্রেশন"'' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। সেখানে সংস্কারকৃত ব্যবস্থার জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু গৃহীত হয়েছিল এবং অন্যগুলো (যেমন আইআরবি থেকে শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের এখতিয়ার অপসারণ এবং এটি বেসামরিক কর্মচারীদের কাছে স্থানান্তর করা ) গৃহীত হয়নি। ফলস্বরূপ প্রণীত ''ইমিগ্রেশন এবং রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট'' ("আইআরপিএ") ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি আইন এবং ১৯৭৮ সালের পর কানাডায় অভিবাসন আইনের প্রথম সম্পূর্ণ সংশোধন। এটি বিল সি-১১ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর শিরোনাম ছিল ''কানাডায় অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত বা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের শরণার্থী সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত একটি আইন।'' আইআরপিএ ১ নভেম্বর, ২০০১<ref name=":88" /> (অথবা ডিসেম্বর ২০০১ ) তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে এবং ২৮ জুন, ২০০২ তারিখে কার্যকর হয়। জুন মাসে ''ইমিগ্রেশন আইন'' থেকে আইআরপিএ-তে স্থানান্তর কানাডায় আশ্রয় নীতির একটি নতুন যুগের সূচনা করে - যা প্রশাসনিক বোঝা কমানোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বর্ণনা করা হয়েছে। আইআরপিএ-র খসড়া প্রণয়ন এবং উন্নয়নের সময়, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিচালনার জন্য একটি আইন এবং শরণার্থী আইন পরিচালনার জন্য একটি পৃথক আইন থাকা উচিত কিনা এই প্রশ্নের প্রতি যথেষ্ট জনসাধারণের মনোযোগ নিবদ্ধ করা হয়েছিল। অভিবাসন এবং শরণার্থী আইনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য সম্পর্কে উদ্বেগের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে সমর্থন করা এই ধারণাটি শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল; তবে আইনের নতুন শিরোনাম এবং শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত আইনের একটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠা এই উদ্বেগকে প্রতিফলিত করে। নতুন আইনী কাঠামোর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে
* কাঠামো আইন: পূর্ববর্তী আইনের তুলনায়, আইআরপিএকে কাঠামো আইন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল, প্রবিধানগুলোতে আরও বিশদ পাওয়া যাবে।
* শরণার্থী সুরক্ষার জন্য সুসংহত ভিত্তি: আইআরপিএ শরণার্থী সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী ব্যক্তিদের বিভাগগুলো প্রসারিত করেছে। প্রাক্তন অভিবাসন আইনের অধীনে, আইআরবিতে স্পষ্টভাবে সুরক্ষার অধিকারী একমাত্র শ্রেণির ব্যক্তি ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি "কনভেনশন শরণার্থী" এর সংজ্ঞার মধ্যে পড়েছিলেন। আইআরপিএ কভারেজের পরিধি প্রসারিত করেছে এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যারা তাদের জাতীয়তার দেশে বা প্রাক্তন অভ্যাসগত বাসস্থানে নির্বাসনের পরে নির্যাতন, মৃত্যু এবং নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। কানাডা ১৯৮৭ সালে ''নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশন'' অনুমোদন করেছিল। তবে এই মুহুর্ত পর্যন্ত কানাডার দেশীয় আইনে এটি সরাসরি প্রয়োগ করেনি''।'' রেবেকা হ্যামলিন লিখেছেন যে ২০০২ সালে ভোটের আগে আইনটি নিয়ে আলোচনা করার সময় সংসদ আইআরপিএ ধারা ৯৭ প্রবর্তনকে স্মরণীয় বলে মনে করেছিল এমন পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনও প্রমাণ নেই। বিলটি নিয়ে যখন বিতর্ক চলছিল, তখন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান সংসদ সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আইআরপিএ "আমাদের পদ্ধতিগুলো সহজতর করার ক্ষমতা দেয়, এটিতে যাদের আমাদের সুরক্ষার সত্যিকারের প্রয়োজন তাদের আরও দ্রুত কানাডায় স্বাগত জানানো হবে এবং যাদের সুরক্ষার প্রয়োজন নেই তাদের আরও দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হবে। এই স্ট্রিমলাইনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরপরই, আইআরবি আইনী পরিষেবা বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য ধারা ৯৭ সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে একটি দীর্ঘ গাইড তৈরি করেছিল; গাইডটিতে বলা হয়েছে যে পূর্ববর্তী "খণ্ডিত" এবং "বহুস্তরীয় পদ্ধতির" "বিলম্ব এবং অসঙ্গতি" এড়াতে এই সিদ্ধান্তগুলো আইআরবি ম্যান্ডেটের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
* আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে সম্মতির উপর ফোকাস করুন: আইআরপিএ কানাডার অভিবাসন আইনে একটি বিধান প্রবর্তন করেছিল যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে এটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হবে এবং প্রয়োগ করা হবে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে মেনে চলে যেখানে কানাডা স্বাক্ষর করে।
* সিআরডিডি থেকে আরপিডিতে স্থানান্তর: কনভেনশন শরণার্থী নির্ধারণ বিভাগ (সিআরডিডি) এর নামকরণ করা হয়েছিল শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ (আরপিডি), এই সত্যটি প্রতিফলিত করার জন্য যে এখন শরণার্থী সুরক্ষার জন্য একীভূত ভিত্তিতে এখতিয়ার রয়েছে। অ্যাডজুডিকেশন ডিভিশনের নামও পরিবর্তন করে ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি) রাখা হয়।
* আরএডি তৈরি: আইআরপিএ শরণার্থী আপিল বিভাগ (আরএডি) তৈরি করেছে। এটি তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতিবাচক সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনা করবে, যদিও এটি পুরোপুরি বাস্তবায়নে দশ বছর সময় লেগেছিল। বিশেষত, আইনটি পাস হওয়ার পর ''নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডা'' ঘোষণা করেছিল যে "সিস্টেমের উপর চাপ" এর ফলে আরএডি বাস্তবায়নে বিলম্ব হবে।
* একক সদস্যের আরপিডি প্যানেলে স্থানান্তর করুন: যেহেতু আইআরবি ব্যাকলগ একটি বিশাল উদ্বেগ ছিল, আরএডিকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীদের সময়টি দুই সদস্যের প্যানেল থেকে একক সদস্যের শুনানিতে (বা, মাঝে মাঝে, তিন সদস্যের আরপিডি প্যানেল) স্থানান্তরের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল যাতে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাধারণত বোর্ডের অর্ধেক সদস্যের প্রয়োজন হয়। এটি দুই সদস্যের সিআরডিডি প্যানেল বা পূর্বে বিদ্যমান সম্মতিতে একক সদস্য সিআরডিডি প্যানেল ব্যবহারের বিপরীতে ছিল।
* পিআরআরএ: আইআরপিএ কানাডা ক্লাসে পোস্ট-ডিটারমিনেশন রিফিউজি ক্লেইমারেন্ট (পিডিআরসিসি) থেকে প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (পিআরআরএ) প্রক্রিয়ায় রূপান্তরিত হয়েছে। পদ্ধতিটি দাবিদারদের দ্বিতীয় শরণার্থী দাবি করতে অক্ষমতার জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়। এমনকি যখন প্রথম দাবি অস্বীকার করার পরে মূল দেশের পরিস্থিতিতে পরিবর্তন ঘটেছিল। পিআরআরএ যেভাবে কাজ করে তা হ'ল একজন প্রত্যাখ্যাত আশ্রয়প্রার্থী তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরে শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিবর্তন হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে পারেন। পিআরআরএ হ'ল লিখিত জমা দেওয়ার ভিত্তিতে করা আবেদনের প্রশাসনিক পর্যালোচনা। ২০০৩ সালে সরকার যখন সিবিএসএ তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল, মূলত পরিকল্পনাটি ছিল পিআরআরএর দায়িত্ব তাদের কাছে হস্তান্তর করা। তবে এনজিওগুলোর চাপের পরিপ্রেক্ষিতে পিআরআরএর দায়িত্ব নাগরিকত্ব এবং ইমিগ্রেশন কানাডার সাথে থেকে যায়। নীচে আলোচনা করা হয়েছে, ২০১২ সালে দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করা হয়েছিল। একই সময়ে, আইআরপিএর আগে, শরণার্থী দাবিদারদের কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য কানাডার বাইরে থাকলে সিআরডিডি-তে দ্বিতীয় দাবি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে দাবিদাররা দেশ ছেড়ে ফিরে এলেও আরপিডিতে কেবল একটি দাবি জমা দিতে পারে।
* চেয়ারপার্সনের ক্ষমতার ব্যাখ্যা: সমন্বয়কারী সদস্যদের মনোনীত করার ক্ষমতা সহ আইআরবি চেয়ারপারসনের ক্ষমতাগুলো স্পষ্ট এবং যুক্ত করা হয়েছিল; কতিপয় ক্ষমতা অর্পণ করা; একটি বিভাগে জিআইসি-নিয়োগকারীদের নিয়োগ করা; আইআরবি সদস্যরা যাতে দক্ষতার সাথে এবং অযৌক্তিক বিলম্ব ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া; এবং, সদস্যদের লিখিতভাবে নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা ছাড়াও চেয়ারপারসনকে এখন সদস্যদের তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য আইআরবি সিদ্ধান্তগুলোকে "আইনশাস্ত্র গাইড" হিসাবে চিহ্নিত করার ক্ষমতাও ছিল।
* নিরাপত্তা বিধান বৃদ্ধি: শারিন আইকেন, এট। আল, লিখেছেন যে আইআরপিএ দ্বারা সংকেত দেওয়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি হ'ল এটি কানাডীয় অভিবাসন আইনে একটি উল্লেখযোগ্য সুরক্ষা মোড় প্রদর্শন করেছে। তারা উল্লেখ করেছেন যে "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ এর হামলার তাত্ক্ষণিক পরিণতিতে পাস হওয়া আইনটিতে এটি খুব কমই আশ্চর্যজনক ছিল। পিটার শোলার লিখেছেন যে সরকার শরণার্থীদের উপর আরও কঠোর আইন প্রবর্তনের জন্য আইআরপিএ প্রায় বাতিল করে দিয়েছিল, কিন্তু অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান শেষ পর্যন্ত আইআরপিএ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই আইনে বেশ কয়েকটি সুরক্ষা সম্পর্কিত ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
** দাবিদারদের আটক করার ক্ষমতা বৃদ্ধি: আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের আটক করার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব প্রসারিত করেছিল যেখানে তারা ফ্লাইটের ঝুঁকি, জনসাধারণের জন্য বিপদ এবং / অথবা তাদের পরিচয় সন্দেহের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। এই প্রসারিত কর্তৃত্বের ফলে ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' অনুসারে আটক ব্যক্তিদের সংখ্যা ২০০০ সালে ৮,০০০ জন থেকে ২০০৩ সালে প্রায় ১১,৫০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
** অপরাধের কারণে শরণার্থী সুরক্ষা দাবি করার অযোগ্যতার বিস্তৃত ভিত্তি: ১৯৭৬ সালের আইনের সাথে তুলনা করলে, আইআরপিএ শরণার্থী দাবিদারদের তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণের যোগ্যতা সীমাবদ্ধ করে বিস্তৃত ভিত্তি অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
** চোরাচালান বিরোধী ব্যবস্থা: গত শতাব্দীতে গিল লোয়েশার মানব পাচার এবং আন্তঃমহাদেশীয় মানব পাচারের ক্ষেত্রে "নাটকীয় বৃদ্ধি" হিসাবে বর্ণনা করেছেন। আইআরপিএর বিধানগুলো প্রথমবারের মতো ''পালেরমো কনভেনশনের'' অধীনে কানাডার বাধ্যবাধকতাগুলো কার্যকর করেছে এবং এর ''চোরাচালান প্রোটোকল'' এবং ''ব্যক্তি, বিশেষত মহিলা ও শিশুদের পাচার প্রতিরোধ, দমন এবং শাস্তি দেওয়ার প্রোটোকল'' সহ। পাচারকারীরা অপরাধমূলক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের যোগ্য হয়ে ওঠে।<ref>Vinh Nguyen and Thy Phu (eds.), ''Refugee States: Critical Refugee Studies in Canada'', 2021, Toronto: University of Toronto Press, <https://tspace.library.utoronto.ca/bitstream/1807/106645/1/Refugee_States_UTP_9781487541392.pdf> (Accessed July 17, 2021), Page 37 (Page 46 of PDF).</ref>
** মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ: আইআরপিএর আবির্ভাবের সাথে সাথে মন্ত্রীকে সমস্ত শরণার্থী দাবিতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
* আপিলের সীমাবদ্ধতা: ২০০২ সাল থেকে, ফেডারেল কোর্টের সিদ্ধান্তগুলো কেবল ফেডারেল কোর্ট অফ আপিলে আপিল করা যেতে পারে যদি ফেডারেল কোর্ট নিজেই প্রত্যয়িত করে যে তারা সাধারণ গুরুত্বের একটি গুরুতর প্রশ্ন জড়িত।<ref>Pia Zambelli, Internal Flight Anarchy: Points of Divergence from UNHCR Guidelines in Canadian Decision Making, ''International Journal of Refugee Law'', 2024;, eeae032, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae032, page 13.</ref>
যদিও সিস্টেমের উপরোক্ত সংস্কারটি যথেষ্ট পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে, এটি ও উল্লেখযোগ্য যে ''নট জাস্ট নাম্বারস'' রিপোর্টে যুক্তিযুক্ত কিছু পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, সেই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছিল যে বিদেশী এবং অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির প্রক্রিয়াকরণকে একটি একক ব্যবস্থার মধ্যে একত্রিত করা উচিত যেখানে উভয়ের জন্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা ভাগ করে নেবেন। একটি একক ব্যবস্থা থাকা শরণার্থীর মর্যাদার বিষয়ে আরও সুসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, কিন্তু শাওনা ল্যাবম্যানের ভাষায়, "বিদেশী পুনর্বাসনে নির্বাচনের দিকের অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তা [উপেক্ষা করা হয়েছে]।" প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।
== আইআরপিএ-পরবর্তী ব্যবস্থা ==
আইআরপিএ প্রবর্তনের পর সিস্টেমের অখণ্ডতা, দক্ষতা এবং আরপিডি-তে ব্যাকলগ কমানোর উপর অব্যাহত দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* <u>বিপরীত ক্রম প্রশ্নোত্তর:</u> আইআরপিএ প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে আইআরবি চেয়ারপারসন শুনানি পরিচালনার উপর নির্দেশিকা ৭ জারি করেন। এটি আরপিডি শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করে। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশ ছিল, যদি মন্ত্রী পক্ষ না হন, তাহলে দাবিদার সহ যেকোনো সাক্ষীকে প্রথমে আরপিডি এবং তারপর দাবিদারের আইনজীবী জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
* রিভার্স-অর্ডার প্রশ্ন: আইআরপিএ প্রবর্তনের পরের বছর, ২০০৩ সালে আইআরবি চেয়ারপারসন একটি শুনানি পরিচালনার বিষয়ে গাইডলাইন ৭ জারি করেছিলেন। এটি আরপিডি শুনানির সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি নতুন আদেশ তৈরি করেছিল। শরণার্থী সুরক্ষার দাবির শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদের নতুন আদেশটি ছিল, মন্ত্রী যদি কোনও পক্ষ না হন তবে দাবিদার সহ যে কোনও সাক্ষীকে প্রথমে আরপিডি এবং তারপরে দাবিদারের পরামর্শদাতা দ্বারা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
* আরএডি প্রবর্তন করতে অস্বীকার: আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরের দশক ধরে, ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে খুব কাছাকাছি সাফল্য সহ আরএডি বাস্তবায়নে বাধ্য করে আরও একটি আইন পাস করার জন্য কিছু সংসদ সদস্যের বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা হয়েছিল।
* সিবিএসএ তৈরি: কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি অংশ হিসাবে কাজ করে জননিরাপত্তা কানাডা বিভাগ, এছাড়াও ২০০৩ সালে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মডেল অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছিল।
* ক্রমবর্ধমান মেধাভিত্তিক সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া: অতিরিক্তভাবে, বিভাগের কাউন্সিল সদস্যদের গভর্নর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ছিল। আইআরবিতে এই জাতীয় জিআইসি নিয়োগগুলো সর্বদা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, যদিও ১৯৯০ এর দশকে বাস্তবায়িত সংস্কারগুলো আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সদস্যদের নির্বাচন ও পুনরায় নিয়োগে অংশ নিতে আইআরবি পরিচালনার জন্য বৃহত্তর সুযোগ সরবরাহ করতে শুরু করে। এই প্রচেষ্টাগুলো ২০০ ২০০৬ সালের শীতে বিপরীত হয়েছিল যখন নবনির্বাচিত সরকার মন্ত্রীকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং বিচক্ষণতা দেওয়ার জন্য পরিবর্তনগুলো প্রবর্তন করেছিল। আইআরবির চেয়ারম্যান, জিন-গাই ফ্লিউরি, তার ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার আট মাস আগে এই সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেছিলেন। এর ফলে জল্পনা শুরু হয়েছিল যে তিনি প্রতিবাদে এটি করেছিলেন, আরও যোগ্যতা-ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে শক্তিশালী উকিল ছিলেন। একইভাবে, একজন ডেপুটি চেয়ার এবং আইআরবি নির্বাহী পরিচালকের প্রাথমিক প্রস্থান ছিল, পাশাপাশি ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডের বিচারকদের নির্বাচিত একটি উপদেষ্টা প্যানেলের পাঁচ সদস্যের পদত্যাগ ছিল। এরা একটি প্রকাশ্য চিঠি প্রকাশ করেছিল যা ইঙ্গিত দিয়েছিল যে তারা প্রতিবাদে পদত্যাগ করছে।
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির ভূমিকা: এসটিসিএ হ'ল দ্বি- বা বহু-পাক্ষিক চুক্তি যা শরণার্থীদের প্রথম দেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এটি তাদের চুক্তির অন্য রাষ্ট্র (গুলো) দলে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে। ১৯৮০ এর দশকে কানাডার ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে'' নিরাপদ তৃতীয় দেশের চুক্তির একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কানাডা পরবর্তী দশকগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই জাতীয় চুক্তি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছিল, প্রাথমিকভাবে সাফল্য ছাড়াই। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৩ সালে কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসাবে ঘোষণা করার অভিপ্রায় নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে প্রবেশ করেছিল,[ তবে ১৯৯৮ সালে কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে সেই স্মারকলিপি অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করা হয়েছিল, আলোচনার লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নিরাপদ তৃতীয় দেশ ডিজাইন করেছে, পরিত্যক্ত হচ্ছিল। ৯/১১ এর পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা সফলভাবে এই জাতীয় আলোচনা শেষ করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষত, ৫ ডিসেম্বর, ২০০২-এ, কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার এসটিসিএ স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিটি ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৪ এ কার্যকর হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডার অভিবাসন আইনে নিরাপদ তৃতীয় দেশের শাসন প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ''সদস্য দেশগুলোর'' মধ্যে বহুপাক্ষিক ডাবলিন রেগুলেশনের উপর ভিত্তি করে এই চুক্তি,[ বেশিরভাগ ব্যক্তিকে উভয় দেশে প্রবেশের নিয়মিত স্থলবন্দরে আশ্রয় চাইতে নিষেধ করে যদি তারা প্রথম অন্য একটিতে অবতরণ করে। এসটিসিএর তাত্ক্ষণিক প্রভাব ছিল কানাডায় অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা; চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে দাবি কমেছে ৪৯ শতাংশ। তবে এই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি। যারা কানাডার সীমান্তে দাবি করেছিলেন, তাদের জন্য বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ চুক্তির ব্যতিক্রমগুলোর মধ্যে একটি ফিট করা হয়েছিল - ২০০৫ সালে সীমান্তে করা ৪০৩৩ টি দাবির মধ্যে কেবল ৩০৩ শরণার্থী দাবিদারকে কানাডায় আবেদনের অযোগ্য হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
* ইউএনএইচসিআর এক্সকমের সম্প্রসারণ: কানাডা ইউএনএইচসিআর এক্সকমে বসা অব্যাহত রেখেছে। এর আকার ১৯৫০ এর দশকে ২৫ টি রাজ্য থেকে আজ ১০৬ এ বেড়েছে। ফলস্বরূপ, গিল লোশার লিখেছেন, এক্সকম খুব বড় এবং রাজনীতিকরণ হয়ে উঠেছে এবং এটি প্রায়ই কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা নয়।
* ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের নিয়ন্ত্রণঃ কানাডীয় সোসাইটি অফ ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস ২০০৪ সালে একটি ফি প্রদানের জন্য ইমিগ্রেশন পরামর্শদাতাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, প্রথমবারের মতো কানাডায় এই জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পাশাপাশি, ২২শে জুন ২০০৬ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী হাউস অফ কমন্সে হেড ট্যাক্স এবং পূর্ববর্তী বর্জনীয় আইন দ্বারা প্রভাবিত চীনা-কানাডীয় সম্প্রদায়ের কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সরকার বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের, অথবা তাদের স্ত্রীদের। এরা হেড ট্যাক্স পরিশোধ করেছিলেন, তাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০,০০০ ডলার দিতে সম্মত হয়েছিল; সেই সময়ে প্রায় ২০ জন জীবিত ছিলেন।
== ২০১০ এবং ২০১২ সালে শরণার্থী সংস্কার ==
২০১০ এবং ২০১২ সালে দুটি আইন শরণার্থী ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছিল, ''ব্যালেন্সড রিফিউজি রিফর্ম অ্যাক্ট'' (বিআরআরএ, ২০১০) এবং ''প্রোটেক্টিং কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট'' (PCISA, জুন ২০১২)। বিআরআরএ ২৯ জুন, ২০১০ তারিখে রাজকীয় সম্মতি লাভ করে। এটি একটি সংখ্যালঘু সরকারের সময় সংসদে পাস হয়েছিল এবং আইআরপিএ-তে এর উল্লেখযোগ্য সংশোধনীর মধ্যে বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাবিত কিছু আপস ছিল। পরবর্তীতে ২রা মে, ২০১১ তারিখে একটি ফেডারেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনের পর ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে বিআরআরএ-এর উল্লেখযোগ্য বিধান কার্যকর হওয়ার আগে, সংসদে নতুন সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার বিআরআরএ সংশোধন করে। পরবর্তী সংশোধনীগুলো পিসিআইএসএ আকারে এসেছিল। পিসিআইএসএ-এর মূল অংশগুলো মূলত ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাক্ট (হিউম্যান স্মাগলার্স অ্যাক্ট) থেকে অপব্যবহার প্রতিরোধের'' অংশ ছিল। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে বিল সি-৪৯ নামে চালু করা হয়েছিল। ২০১১ সালের মে মাসে কানাডীয় ফেডারেল নির্বাচনের ফলে বিল সি-৪৯ অর্ডার পেপারে মারা যাওয়ার পর নবগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ২০১১ সালের জুন মাসে বিল সি-৪ হিসাবে বিধানগুলো পুনরায় চালু করে। এই ''মানব পাচারকারী আইনটি'' ২০১২ সালের জুন মাসে বিল সি-৩১, পিসিআইএসএ-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
নীল ইয়েটস বর্ণনা করেছেন, এই সংস্কারগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল দাবিগুলোর দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ। এর লক্ষ্য ছিল ''প্রকৃত'' দাবিদারদের আরও দ্রুত অনুমোদন দেওয়া এবং ব্যর্থ দাবিদারদের, আইআরবির নতুন শরণার্থী আপিল বিভাগে প্রবেশাধিকারের পর কানাডা থেকে আরও দ্রুত সরিয়ে নেওয়া। এটি কে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* শুনানির জন্য আইনী সময়সীমা: আইনটিতে শরণার্থী শুনানির সময় নির্ধারণের জন্য ত্বরান্বিত সময়সীমা অন্তর্ভুক্ত ছিল,[ তাদের দাবি করার ৬০০ দিনের মধ্যে শুনানি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সহ। আরপিডি শুনানির জন্য এই প্রাথমিক তারিখটি একজন ইমিগ্রেশন অফিসার দ্বারা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
* রিফিউজি আপিল ডিভিশন (আরএডি) বাস্তবায়ন। এই সংস্কারের অংশ হিসাবে, আরএডি ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ এ কার্যকর হয়েছিল। আরএডি, এই মুহুর্তে বাস্তবায়িত হিসাবে, আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার সময় আরএডির আইনী বিধানগুলো মূলত কার্যকর হওয়ার সময় প্রণীত হওয়ার কল্পনার চেয়ে বৃহত্তর ম্যান্ডেট ছিল। উদাহরণস্বরূপ, আইআরপিএ মূলত মন্ত্রী এবং আপিলের বিষয় ব্যক্তিকে কেবল লিখিত জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। পরবর্তীকালে এটি বিআরআরএ দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল যাতে তারা দালিলিক প্রমাণও জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়, যদিও "কেবলমাত্র প্রমাণ যা তাদের দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে উদ্ভূত হয়েছিল বা যা যুক্তিসঙ্গতভাবে উপলভ্য ছিল না, বা উপস্থাপিত পরিস্থিতিতে ব্যক্তিটি যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রত্যাশিত হতে পারে না।
* সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী: আইআরবির শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে প্রথম স্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগকারীদের বিপরীতে ''পাবলিক সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্ট'' অনুসারে নিযুক্ত সরকারী কর্মচারী হতে শুরু করেছিলেন। গভর্নর-ইন-কাউন্সিল নিয়োগপ্রাপ্তদের থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে সরকারের নিজস্ব অভিবাসন-আইন উপদেষ্টা কমিটির একটি মূল সুপারিশ প্রতিফলিত হয়েছে, যথা যোগ্য সরকারী কর্মচারীদের ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে নাম দেওয়া উচিত, রাজনৈতিক নিয়োগকারীদের নয়।
* শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তার পদ বিলোপ: শরণার্থী শ্রবণ কর্মকর্তা (<abbr>আরএইচও),</abbr> শরণার্থী দাবি কর্মকর্তা (<abbr>আরসিও</abbr>) এবং শরণার্থী সুরক্ষা কর্মকর্তা (<abbr>আরপিও</abbr>) নামে বিভিন্নভাবে চলে যাওয়া একটি পদ এই ভিত্তিতে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে সরকারী কর্মচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যে দক্ষতা থাকবে তার ভিত্তিতে এটি আর প্রয়োজন হবে না। এই ভূমিকাগুলো এর আগে শুনানিতে জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করে সদস্যদের সহায়তা করেছিল।
* ডেজিগনেটেড কান্ট্রিজ অফ অরিজিন (ডিসিও) এর একটি তালিকা তৈরি করা, যে দেশগুলো সাধারণত শরণার্থী-উত্পাদনকারী হিসাবে বিবেচিত হতো না এবং যেখানে এই জাতীয় দাবিগুলো প্রতিরোধ ও ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপগুলো ফলস্বরূপ আইন করা হয়েছিল। ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম প্রোটেকটিং অ্যাক্টের'' অংশ হিসাবে ২০১২ সালে ডেজিগনেটেড কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকাটি চালু করা হয়েছিল। এই উদ্যোগটি ইউরোপিয়ান সেফ কান্ট্রি অফ অরিজিন তালিকার আদলে তৈরি করা হয়েছিল। এটি সেই আশ্রয় ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়। ডিসিও থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রভাবগুলোর মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা সহ একটি দ্রুত শুনানি প্রক্রিয়া, শরণার্থী আপিল বিভাগে অ্যাক্সেস না থাকা, বিচারিক পর্যালোচনা চাওয়া ব্যর্থ দাবিদারদের অপসারণের কোনও স্বয়ংক্রিয় স্থগিতাদেশ না থাকা, পিআরআরএতে সীমিত অ্যাক্সেস এবং প্রথম ১৮০ দিনের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা স্বাস্থ্যসেবার জন্য কোনও যোগ্যতা নেই যার মধ্যে তারা তাদের দাবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। একটি নিরাপদ দেশ হিসাবে তকমা দেশগুলোর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং মানবাধিকার রেকর্ডের স্তরের গুণগত পর্যবেক্ষণের সংমিশ্রণের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং দুটি পরিমাণগত থ্রেশহোল্ডের উপর নির্ভরশীল ছিল, যখন কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবিগুলোর ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি আইআরবি প্রত্যাখ্যান করেছিল বা কোনও দেশের নাগরিকদের দ্বারা পূর্ববর্তী দাবির ৬০ শতাংশ বা তারও বেশি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। প্রাথমিক ডিসিও তালিকায় ২৫ টি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ৪২ টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছিল। ১৭ ই মে, ২০১৯, ফেডারেল কোর্টের একাধিক রায় অনুসরণ করে যেখানে ডিসিও নীতির নির্দিষ্ট বিধানগুলো মেনে না চলার জন্য বাতিল করা হয়েছিল অধিকার ও স্বাধীনতার কানাডীয় সনদ, কানাডা সরকার ঘোষণা করেছিল যে এটি সমস্ত দেশকে ডিসিও তালিকা থেকে সরিয়ে দেবে এবং ডিসিও শাসন শেষ পর্যন্ত আইনী সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হবে।
* মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের ধারণা তৈরি করা: পিসিআইএসএ সংস্কারগুলো মনোনীত বিদেশী নাগরিকদের জন্য একটি শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ডিএফএন, আইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, চোরাচালানকারীদের সহায়তায় জননিরাপত্তা মন্ত্রীর দ্বারা 'অনিয়মিত আগমন' সন্দেহভাজন দুই বা ততোধিক শরণার্থী দাবিদারের গ্রুপ। এইভাবে মনোনীত হওয়ার প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে যে ডিএফএনগুলো তাদের ষোল বছর বা তার বেশি বয়সী হলে তাদের শরণার্থী দাবি নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে আটক করা হবে। ২০১০ সালে এমভি ''ওশান লেডি'' এবং এমভি ''সান সাগরে'' তামিল শরণার্থীদের আগমনের পরে কানাডায় বাধ্যতামূলক আটকাদেশ ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছিল। তদুপরি, তাদের দাবি গৃহীত হলেও, ডিএফএনরা পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী বাসিন্দার স্থিতির জন্য আবেদন করতে অক্ষম,[ পাশাপাশি ভ্রমণের নথি পেতে অক্ষম এবং পরিবারের সদস্যদের স্পনসর করতে অক্ষম। আইনে এই বিধানগুলো প্রবর্তনের পরপরই সরকার একাধিক ক্ষেত্রে তাদের প্রয়োগ করেছিল।
* পিআরআরএ সংস্কার: ২০১২ সালে সংসদ একটি দাবি প্রত্যাখ্যানের পরে বারো মাসের মধ্যে পিআরআরএতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করার জন্য আইআরপিএ সংশোধন করে। এখন থেকে, পিআরআরএ যেভাবে কাজ করেছে তা হ'ল যদি কোনও প্রত্যাখ্যানকারী আশ্রয়প্রার্থীকে তাদের শরণার্থী দাবির বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্তের এক বছরের মধ্যে কানাডা থেকে সরানো না হয়। তবে তারা শরণার্থী দাবিদারের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির পরিমাণ সেই বছরের মধ্যে পরিবর্তিত হয়েছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য পিআরআরএর জন্য যোগ্য হতে পারে। ডিসিওদের দাবিদারদের জন্য এই ১২ মাসের বারের ব্যতিক্রম করা হয়েছিল। এরা তাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের পরে ৩৬ মাসের জন্য পিআরআরএর জন্য আবেদন করতে নিষেধ করেছিলেন; এই দীর্ঘ পিআরআরএ বারটি ''ফেহের বনাম কানাডায়'' ''সনদের'' এস ১৫ এর লঙ্ঘন হিসাবে বাতিল করা হয়েছিল। ''সুষম শরণার্থী সংস্কার আইনও পিআরআরএর'' উপর কর্তৃত্ব মন্ত্রীর কাছ থেকে আইআরবিতে স্থানান্তরিত করে, যদিও এই স্থানান্তরটি আসলে কখনও কার্যকর করা হয়নি,[ এবং শেষ পর্যন্ত ২০২২ কার্যকর হয়ে বাতিল করা হয়েছিল।
* অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের সীমাবদ্ধতা: অন্তর্বর্তীকালীন ফেডারেল হেলথ প্রোগ্রাম শরণার্থী দাবিদারদের তাদের দাবি মুলতুবি থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস সরবরাহ করে। শরণার্থী দাবিদারদের কানাডায় আসার জন্য নিরুৎসাহিত করার কৌশলের অংশ হিসাবে, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে সরকার কিছু শ্রেণীর দাবিদারদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেয়। এই নীতি পরিবর্তনটি অর্ডার ইন কাউন্সিলের মাধ্যমে চালু করা হয়েছিল যা কানাডায় স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেসকে সীমাবদ্ধ করেছিল যখন নির্বাচিত শরণার্থী দাবি মুলতুবি ছিল, মূলত ডিসিও থেকে উদ্ভূত দাবিদারদের দাবি। এই জাতীয় দাবিদাররা অন্যান্য দাবিদারদের তুলনায় অনেক কম স্তরের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকারী ছিল। এই নীতিটি ২০১৫ সালে ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছিল, আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে ফলস্বরূপ শাসন ''কানাডীয়'' ''চার্টার অফ রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস'' দ্বারা নিষিদ্ধ "নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণ" ছিল। এই সিদ্ধান্তটি বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ আশ্রয় আইনের বিরুদ্ধে পিছিয়ে যাওয়া আদালতগুলোর অনুরূপ মামলার একটি লাইন। উদাহরণস্বরূপ, ''লিম্বুয়েলায়'' যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডস দেখা গেছে যে আশ্রয়প্রার্থীদের সমর্থন প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্তগুলো অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঝুঁকির কারণে "রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য, সম্ভবত স্বল্প এবং অদূরদর্শী সীমাবদ্ধ সময়ের জন্য বাদে, বা গুরুতরভাবে ক্ষুধার্ত ছিল, বা স্বাস্থ্যবিধির সবচেয়ে প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে অক্ষম ছিল"।
* অবসান: নতুন আইনে বলা হয়েছে, আরপিডি যদি তাদের শরণার্থী সুরক্ষা বন্ধের জন্য মন্ত্রীর আবেদনের অনুমতি দেয় তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা হারাতে হবে। এটি এই জাতীয় ব্যক্তিদের কানাডায় অগ্রহণযোগ্য করে তোলে।
এই আইন কার্যকর হওয়ার পর শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগের নিয়মের বর্তমান সংস্করণটি ২৬ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে কার্যকর হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড, তাদের জনসাধারণের মন্তব্যে, এই নিয়মগুলো এবং সেগুলো দ্বারা পরিচালিত সিদ্ধান্তের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে। এটি সেই সময়কার অভিবাসন মন্ত্রী জেসন কেনির এই ধরণের মন্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল: "আমি মনে করি বেশিরভাগ কানাডীয় স্বজ্ঞাতভাবে বোঝেন যে অভিবাসনের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন।, সত্যি বলতে, আমাদের সমাজের বৈচিত্র্য একটি সুপরিচালিত, নিয়ম-ভিত্তিক, ন্যায্য অভিবাসন ব্যবস্থা থাকার উপর নির্ভরশীল। আমি মনে করি তারা বোঝেন যে এই ধরনের ব্যবস্থা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই ভূমিকা রয়েছে"। ২০১২ সালে এই নতুন আইন এবং আরপিডি নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর আশ্রয় দাবির সংখ্যা ৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উপরোক্ত আইন ছাড়াও ২০১১ সালে বিল সি-৩৫—যাকে মূলত ''ক্র্যাকিং ডাউন অন ক্রুকড কনসালট্যান্টস অ্যাক্ট'' বলা হত—আইআরপিএ-র ধারা ৯১ সংশোধন করে। নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী কর্তৃক প্রণীত প্রবিধানের মাধ্যমে, ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস অফ কানাডা রেগুলেটরি কাউন্সিল (ICCRC) পরবর্তীতে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে।
== ২০১০-এর দশকের শরণার্থী সুরক্ষা উদ্যোগ ==
=== অপরাধমূলক রেকর্ডধারীদের জন্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন ===
২০১৩ সালের আগে, ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে বলা হয়েছিল যে কানাডায় কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে যদি স্থায়ী বাসিন্দা অগ্রহণযোগ্য হন তবে ইমিগ্রেশন আপিল বিভাগে কোনও আপিল করা সম্ভব ছিল না। ১৯ জুন, ২০১৩ তারিখে, ''বিদেশী অপরাধীদের দ্রুত অপসারণ আইন'' রাজকীয় সম্মতি পেয়েছে। এটি আইআরপিএ-এর উপধারা ৬৪(১)-এ গুরুতর অপরাধের ভিত্তিকে "কমপক্ষে দুই বছরের" পরিবর্তে "কমপক্ষে ছয় মাস" এ পরিবর্তন করে, IAD-এর কাছে আপিল সীমাবদ্ধ করে। তাদের অপসারণ কার্যকর করা হবে কিনা সে বিষয়ে বিচক্ষণতা রয়েছে।
=== সুরক্ষিত ব্যক্তিদের নির্ভরশীল শিশুদের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন ===
একবার একজন ব্যক্তি সুরক্ষা ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেলে, কানাডায় অস্থায়ী বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার সময় তার উপর নির্ভরশীল সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে শিশুটিকে অবশ্যই বয়সসীমার মধ্যে হতে হবে এবং নির্ভরশীল সন্তানের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে, এই বয়সসীমা পরিবর্তন করা হয়েছে: "১৯ বছরের কম" থেকে "২২ বছরের কম" করা হয়েছে।
=== পুনর্বাসন কর্মসূচি ===
কানাডা স্বেচ্ছাসেবী বোঝা ভাগাভাগি প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর হাজার হাজার শরণার্থীকে সক্রিয়ভাবে পুনর্বাসিত করে। এই আইনের ফলে কানাডা বিশ্বব্যাপী প্রায় ত্রিশটি দেশের একটি ছোট দলের শীর্ষে স্থান পেয়েছে যারা ''শরণার্থী কনভেনশনে পুনর্বাসনের মাধ্যমে শরণার্থীদের সুরক্ষা প্রদান করতে ইচ্ছুক, পাশাপাশি পুনর্বাসন চুক্তিতে'' ''পুনর্বাসন না'' করার প্রতিশ্রুতিও প্রদান করে। ঐতিহ্যগতভাবে তিনটি রাজ্য পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয়: কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্মিলিতভাবে, তারা ইউএনএইচসিআর-এর পুনর্বাসন রেফারেলের প্রায় ৯০ শতাংশ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ ক্যালেন্ডার বছরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৩৩,৪০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। সেখানে কানাডা ২৬,৬০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে এবং অস্ট্রেলিয়া ১৫,১০০ শরণার্থীকে পুনর্বাসিত করেছে। এই ঐতিহ্যের সাথে সঙ্গতি রেখে, কানাডা ২০১৫ সালে ২৫,০০০ এরও বেশি সিরিয়ান শরণার্থীকে পুনর্বাসনের জন্য একটি কর্মসূচি চালু করে।
=== অভয়ারণ্য শহর চলাচল ===
অনেক মানুষ আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে না কিন্তু গ্রেফতার, নির্বাসন এবং অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ভয়ে অ-নথিভুক্ত স্ব-বসতিবদ্ধ অভিবাসী হিসেবে সমাজের প্রান্তিক স্তরে বাস করে। ১৯০৬ সালের ''অভিবাসন আইন'' পৌর কর্তৃপক্ষের কর্তব্য ছিল যে তারা অপসারণযোগ্য অভিবাসীদের নির্দিষ্ট শ্রেণীর প্রতিবেদন করবে। এর মধ্যে রয়েছে যারা সরকারি তহবিল বা কোনও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উপর দায়বদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরবর্তীতে কানাডার অভিবাসন আইন থেকে এই শুল্কটি বাদ দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কানাডায় বৈধ অভিবাসন মর্যাদাবিহীন ব্যক্তিরা, তা সে শরণার্থী, শরণার্থী দাবিদার, বা অন্য কোনও ব্যক্তিই হোক না কেন, সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হন। কারণ তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হয় না, অথবা তাদের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয় এবং তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়। কানাডায়, ২০১৩ সাল থেকে, টরন্টো, লন্ডন, ভ্যাঙ্কুভার, এডমন্টন, মন্ট্রিল, আয়াক্স, এবং হ্যামিল্টন নিজেদেরকে অভয়ারণ্য শহর ঘোষণা করেছে। এই অভয়ারণ্য শহর নীতিগুলোতে সাধারণত অধ্যাদেশ জারি করা হয় যাতে নথিভুক্ত নয় এমনদের জন্য পৌর পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা যায়, যদিও ফেডারেল সীমান্ত প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সাথে তথ্য ভাগাভাগি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়নি।
=== ফাইভ আইজ দেশগুলোর মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি সম্প্রসারিত হয়েছে ===
২০১০-এর দশকে বিশ্বজুড়ে আশ্রয় ব্যবস্থায় বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা একাই ৭.১ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের রিপোর্ট দিয়েছে। কানাডা দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থী দাবিদারদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে আসছে এবং এই সময়ে তারা অংশীদার দেশগুলোর সাথে এই ধরনের তথ্য আরও বেশি করে বিনিময় করতে শুরু করেছে। কানাডার দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তি রয়েছে যার মাধ্যমে শরণার্থী দাবিদারদের তথ্য বিনিময় করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে কানাডা-মার্কিন স্মার্ট বর্ডার ঘোষণায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে দুটি দেশ সাধারণ বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী তৈরি করবে এবং তথ্য বিনিময়ে জড়িত হবে। ২০০৩ সালে দেশগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি যার শিরোনাম ছিল ''আশ্রয় এবং শরণার্থী স্থিতি দাবি সম্পর্কিত তথ্য ভাগাভাগি'' কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বায়োমেট্রিক এবং জীবনী সংক্রান্ত তথ্য সহ আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে স্বয়ংক্রিয়, পদ্ধতিগত তথ্য ভাগাভাগি করার অনুমতি দেয়।<ref name=":64" /> বিনিময়কৃত তথ্যের মধ্যে রয়েছে: পরিচয়-সম্পর্কিত তথ্য। উদাহরণস্বরূপ জীবনী এবং বায়োমেট্রিক তথ্য; পূর্ববর্তী শরণার্থী দাবির অবস্থা (অস্বীকৃত, পরিত্যক্ত, বা মঞ্জুর); এমন তথ্য যা ইঙ্গিত দেয় যে দাবিটি অগ্রহণযোগ্য; এবং পূর্ববর্তী আবেদনের সমর্থনে জমা দেওয়া যেকোনো প্রমাণ।<ref name=":64" /> ২০০৯ সালে "ফাইভ আইজ" দেশগুলো বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অল্প সংখ্যক "অভিবাসন পরীক্ষা" পরিচালনা করার জন্য একটি ডেটা শেয়ারিং প্রোটোকল স্বাক্ষর করে। এই ব্যবস্থাটি স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এতে বার্ষিক ৩০০০ আঙুলের ছাপ ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর কানাডা যুক্তরাজ্য (২০১৫), অস্ট্রেলিয়া (২০১৬) এবং নিউজিল্যান্ড (২০১৬) এর সাথে তথ্য ভাগাভাগি চুক্তিতে পৌঁছায় যা পাইলট মডেল থেকে তথ্যের স্বয়ংক্রিয় ভাগাভাগিতে স্থানান্তরিত হয়।<ref name=":64" />
== অনিয়মিত সীমান্ত ক্রসিং বিতর্ক ==
১৯৮৯ সালে বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে, কানাডা এবং আন্তর্জাতিকভাবে শরণার্থী দাবিকারীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী সংখ্যার দিকে তাকালে, ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী আশ্রয়ের জন্য ২.৩ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়েছিল। এর বেশিরভাগই পশ্চিম ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়। ১৯৯০-এর দশকে এই সংখ্যা বেড়ে ৬.১ মিলিয়ন আবেদন জমা পড়ে এবং আবেদন গ্রহণকারী দেশগুলোর তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং দক্ষিণ ইউরোপ অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০০ সালের দশকে বিশ্বব্যাপী ৫৫ লক্ষ নতুন আবেদন জমা পড়ে এবং আয়ারল্যান্ড, গ্রীস, পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো জনপ্রিয় নতুন গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠে। আজ, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় দশ লক্ষ ব্যক্তি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন, যাদের শরণার্থী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে তারা বিশ্বব্যাপী অভিবাসী জনসংখ্যার ৭-৮ শতাংশ। একইভাবে, কানাডায়, নতুন দাবির পরিমাণ চক্রাকারে চলে গেলেও, সময়ের সাথে সাথে পরিমাণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ১৯৮৯ সালে আইআরবি শুরু হওয়ার পরপরই, কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বছরে কয়েক হাজার থেকে বেড়ে ১৯৯২ সালে ৩৭,০০০-এ পৌঁছে। তারপর থেকে, তিনটি উল্লেখযোগ্য মামলার সিদ্ধান্তের জন্য স্থগিত মামলা দেখা দিয়েছে: ২০০২ সালে ৫৭,০০০-এরও বেশি দাবি, ২০০৯ সালে ৬২,০০০-এরও বেশি বিচারাধীন দাবি, এবং ২০১৭ সালের পর যেখানে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে ৯০,০০০ দাবি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।
এই প্রেক্ষাপটে, ২০১৭ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় অনিয়মিতভাবে প্রবেশকারী ব্যক্তিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে ওঠে। এই ধরনের ক্রসিং মূলত ক্যুবেক-নিউ ইয়র্ক সীমান্তের রক্সহ্যাম রোড এবং ম্যানিটোবার এমারসনে ঘটেছিল। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫৯,০০০ এরও বেশি মানুষ অনিয়মিতভাবে কানাডা-মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধ এড়াতে কানাডায় আশ্রয় দাবি করেছে,<ref name=":11" /> । এর মধ্যে ২০১৭ সালে ২০,৫৯৩ জন দাবিদার, ২০১৮ সালে ১৯,৪১৯ জন দাবিদার এবং ২০১৯ সালে ১৬,০৭৭ জন দাবিদার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কুইবেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমকারীদের প্রায় ৯৫% পেয়েছে। একইভাবে এই সময়ের মধ্যে কানাডায় মোট আশ্রয় দাবির সংখ্যাও বেড়েছে, ২০১৬ সালে ২৩,৮৭০টি থেকে, ২০১৭ সালে ৫০,৩৯০টি, ২০১৮ সালে ৫৫,০৪০টি এবং ২০১৯ সালে ৬৪,০৪৫টিতে।
শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ (আরএসডি) এর জন্য বিশ্বব্যাপী নিবেদিত সম্পদকে যথাযথভাবে অপরিসীম হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে রাষ্ট্র এবং ইউএনএইচসিআর ১.৫ মিলিয়ন ব্যক্তিগত আশ্রয় দাবির সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং ২০১৮ সালের হিসাবে বিশ্বে ৩.৫ মিলিয়ন আশ্রয়প্রার্থী ছিল। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান নির্ধারণ করা কঠিন, তবুও শিক্ষাবিদরা মনে করেন যে রাষ্ট্র এবং ইউএনএইচসিআর দ্বারা সম্পাদিত আরএসডি-এর সম্মিলিত খরচ ইউএনএইচসিআর দ্বারা শরণার্থীদের সরাসরি মানবিক সহায়তার মোট খরচকে ছাড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে থেরিওল্ট এবং হ্যাথওয়ে অনুমান করে যে গ্লোবাল নর্থ একাই আরএসডি-তে ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, যা ইউএনএইচসিআর-এর বাজেটের একাধিক, এবং তাদের অনুমান অনুসারে, গ্লোবাল সাউথের শরণার্থী জনসংখ্যার যত্ন নেওয়ার জন্য দায়ী সংস্থাগুলোকে দেওয়া বাজেটের চারগুণ, যদিও ৮৫% শরণার্থী সেখানে বাস করে।
বিশ্বজুড়ে, অনিয়মিত আগমনকারীদের আশ্রয় দাবির সাফল্যের হার সাধারণত অন্য কোনও অস্থায়ী ভিসায় আসার পরে আবেদনকারীদের তুলনায় বেশি থাকে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায়, নৌকায় আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ঐতিহাসিক গড় সাফল্যের হার ৮০ শতাংশেরও বেশি। শিক্ষাবিদ ড্যানিয়েল ঘেজেলবাশ বলেছেন যে এটি মূলত সম্ভাব্য আশ্রয় দাবিদার ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ এবং তাদের নিয়মিতভাবে দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয় এমন ভিসা না দেওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা ব্যবস্থার কার্যকারিতার কারণে। এই ধরনের দাবিদারদের তুলনামূলক ''সততা'' সত্ত্বেও দাবিদারদের অনিয়মিতভাবে একটি দেশে আগমন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দ্বারা প্রয়োজনীয় ভ্রমণগুলো প্রায়ই বিপজ্জনক হয়। উদাহরণস্বরূপ, কানাডায় প্রবেশকারী বেশ কয়েকজন ক্রসিংয়ে হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটার পর তুষারপাতের কারণে হাত-পা হারিয়েছেন এবং ২০১৭ সালে কানাডা-মার্কিন সীমান্তের কাছে একটি খাদে হাইপোথার্মিয়ার কারণে মৃত অবস্থায় ঘানার ৫৭ বছর বয়সী দাদী মাভিস ওটুতেয়কে পাওয়া গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্যে সীমান্ত ক্রসিংয়ের এই বৃদ্ধির রাজনৈতিক, পদ্ধতিগত এবং আইনি পরিণতি ছিল। এর মধ্যে রয়েছে:
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির চ্যালেঞ্জ: ২০১৭ সালের পর সেফ থার্ড কান্ট্রি এগ্রিমেন্ট স্থগিত বা শেষ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর মধ্যে এই চুক্তির আইনি চ্যালেঞ্জ ছিল। এটি কানাডার সুপ্রিম কোর্টের ২০২৩ সালের সিদ্ধান্তের পরে ফেডারেল কোর্টে চলছে। ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ# মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির সাংবিধানিকতা।
* দাবি বৃদ্ধি: দাবি বৃদ্ধির ফলে সরকার আইআরবি ক্ষমতা বাড়িয়েছে। শরণার্থী দাবির এই বৃদ্ধির প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি হ'ল কানাডার ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডে প্রক্রিয়া করার দাবির ক্রমবর্ধমান ব্যাকলগ। ২০১৭ সালে আইআরবি ২০ জন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সাথে একটি "অনিয়মিত বর্ডার ক্রসিং রেসপন্স টিম" চালু করেছিল। তার ২০১৯-২০ বিভাগীয় পরিকল্পনায়, আইআরবি উল্লেখ করেছে যে "৭৫,০০০ এরও বেশি দাবির একটি তালিকা জমা হয়েছে। এটি বর্তমান তহবিলের স্তরে দুই বছরেরও বেশি কাজের প্রতিনিধিত্ব করে"। দাবির এই উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় ফেডারেল সরকারের অন্যতম উদ্যোগ ছিল অস্থায়ীভাবে আইআরবির প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা প্রসারিত করা। সরকার শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগে সম্পদ বাড়িয়েছে যাতে ২০২১ সালের মধ্যে বার্ষিক ৫০ হাজার আশ্রয় দাবি মোকাবেলা করতে পারে।
* নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান: পুরো কানাডা-মার্কিন সীমান্ত জুড়ে নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির প্রয়োগ প্রসারিত করার জন্য ২০১৭-পরবর্তী আহ্বান ছিল। ২০১৭ হিসাবে, জরিপগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে যে ৭০ শতাংশ কানাডীয় মনে করেন যে কানাডা-মার্কিন সীমান্তে সুরক্ষা বাড়ানো উচিত। একটি ২০১৮ অ্যাঙ্গাস রিড জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে অর্ধেকেরও বেশি উত্তরদাতারা বলেছেন যে কানাডা অনিয়মিতভাবে কানাডায় প্রবেশ করা আশ্রয়প্রার্থীদের প্রতি খুব উদার ছিল। তাদের ২০১৯ প্ল্যাটফর্মে, কানাডার কনজারভেটিভ পার্টি "অর্থনৈতিক অভিবাসন" কে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং "ভুয়া" শরণার্থী দাবিদারদের চেয়ে "সত্যিকারের নিপীড়নের" মুখোমুখি হওয়া লোকদের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কনজারভেটিভ পার্টি ইঙ্গিত দিয়েছে, নির্বাচিত হলে তারা আরও ২৫০ জন সিবিএসএ কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে এবং প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে আইআরবি সদস্যদের ক্রসিং সাইটগুলোর কাছাকাছি নিয়ে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি বিস্তৃত নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি ২০২৩ সালে কার্যকর হয়েছিল: কানাডীয় শরণার্থী পদ্ধতি / আইআরপিআর এস ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশ # নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির পাঠ্য।
* আইআরবিতে রেফারেলের জন্য যোগ্যতার পরিবর্তন: অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের ফলে সংসদ এমন পরিবর্তন করেছিল যার দাবিদাররা আইআরবির সামনে শুনানির জন্য যোগ্য ছিল। জুন ২০১৯ এ, বিল সি -৯৭, ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' এ ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী সুরক্ষা আইনে সংশোধন করা হয়েছিল। এই পরিবর্তনগুলো শরণার্থী দাবিদারদের জন্য অযোগ্যতার নতুন ভিত্তি প্রবর্তন করেছে যদি তারা পূর্বে এমন কোনও দেশে আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে থাকে যার সাথে কানাডার তথ্য-ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি বা ব্যবস্থা রয়েছে। বাস্তবে এর অর্থ হ'ল যে ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে ("পাঁচ চোখের দেশ") পূর্ববর্তী দাবি করেছেন তারা কানাডায় শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার অযোগ্য এবং তাদের দাবিগুলো ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ড দ্বারা শুনেছেন, যদিও যদি তথ্য ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি অন্যান্য দেশের সাথে করা হয় তবে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পূর্ববর্তী দাবির বিষয়ে কখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিনা তা নির্বিশেষে এটি তাই। যারা আইআরবিতে দাবি করার অযোগ্য বলে মনে করেন তারা পরিবর্তে প্রাক-অপসারণের ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য একটি আবেদন জমা দিতে পারেন। ইদিল আতাক এই অমনিবাস বিলটিকে "অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার বিতর্কের প্রতিক্রিয়া জানাতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ২০১৯ ফেডারেল নির্বাচনের নেতৃত্বে তাড়াহুড়ো করে গৃহীত হয়েছে" হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং এটি নতুন অভিবাসন আইন দিয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে কানাডা সরকারের দক্ষতার উদাহরণ হিসাবে দেখা যেতে পারে।
* আরপিডিতে দাবি উল্লেখ করার প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন: ''বাজেট বাস্তবায়ন আইন, ২০১৯'' আরপিডিতে রেফার করা দাবির যোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন দিনের সময়সীমা অপসারণের জন্য আইআরপিএ সংশোধন করেছে এবং সেই সময়ের মধ্যে যোগ্যতার সিদ্ধান্ত না নিলে আরপিডিতে "গণ্য রেফারেল" সরিয়ে দিয়েছে। কিউবেকে পর্যাপ্ত পরামর্শের অভাবের কারণে, আইআরবি একটি অস্থায়ী অনুশীলন নোটিশ জারি করে নির্দেশ দিয়েছিল যে নির্দিষ্ট দাবিদারদের তাদের স্বাভাবিক সময়সীমার মধ্যে তাদের দাবির ভিত্তিতে কেবলমাত্র কিছু প্রাথমিক তথ্য জমা দিতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ বিবরণ পরবর্তী তারিখে যুক্ত করা যেতে পারে।
* আইআরবি সময়সূচীতে পরিবর্তন: আইআরবিতে দাবির ব্যাকলগ বাড়ার সাথে সাথে আরপিডিতে প্রথম শুনানির জন্য গড় অপেক্ষার সময়টি দুই বছরে বেড়েছে, বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুই মাসের বিধিবদ্ধ সময়সীমার বিপরীতে। দাবির বৃদ্ধি আইআরবি কীভাবে দাবির সময়সূচী এবং অগ্রাধিকার দেয় তাতে পরিবর্তনের সূত্রপাত করেছিল। ''ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন রেগুলেশন'' অপারেশনাল সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রে আরপিডির শুনানি করার সময়সীমার ব্যতিক্রমের অনুমতি দেয়। এর ব্যাকলগ মোকাবেলা করার জন্য, আইআরবি নতুন মামলার আগে সময়সূচী করার জন্য পুরানো মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে এবং প্রবিধানগুলোতে মামলা প্রক্রিয়াকরণের সময়সীমা ত্যাগ করে। পূর্বে, যখন আইআরসিসি বা সিবিএসএ আরপিডিতে একটি ফাইল উল্লেখ করেছিল, দাবিদারকে শুনানির তারিখও সরবরাহ করা হয়েছিল; আরপিডি তখন সময়সীমার মধ্যে এটি করার ক্ষমতা না থাকায় সেই শুনানি স্থগিত করে। আগস্ট ২৯, ২০১৮ পর্যন্ত, দাবিদারদের রেফারেলের সময় আর শুনানির তারিখ সরবরাহ করা হয়নি।
== কোভিড-১৯ ==
২০২০ সালে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিক্রিয়ায়, ৫৭টি দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। প্রথমে, কানাডীয় সরকার ঘোষণা করেছিল যে প্রবেশ বন্দরের বাইরে থেকে আগত সকল আবেদনকারীর ভাইরাসের জন্য স্ক্রিনিং করা হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক হলে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। কানাডীয় সরকার কয়েকদিন পরে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে, ঘোষণা করে যে সমস্ত দাবিদারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হবে। এর অংশ হিসেবে, দুই দেশ একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছে যা কানাডাকে আশ্রয় দাবি করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশকারী ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেয়। চুক্তিটি স্থল সীমান্ত বরাবর সরকারী প্রবেশ বন্দর এবং বিমান ও সামুদ্রিক প্রবেশ বন্দরের মধ্যে প্রযোজ্য। সরকার নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তির উদ্দেশ্যে রক্সহ্যাম রোডকে প্রবেশের বন্দর হিসেবে মনোনীত করে এবং সেই সময়ে শরণার্থী দাবিদারদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো শুরু করে। এই পদক্ষেপগুলোর প্রতিক্রিয়ায়, অনিয়মিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টাকারীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৬ মার্চ, যখন সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং ৮ মে, ২০২০ এর মধ্যে ২৪ জন অনিয়মিত অভিবাসী দাবি করতে চেয়েছিলেন<ref>Monica Boyd & Nathan T.B. Ly (2021) Unwanted and Uninvited: Canadian Exceptionalism in Migration and the 2017-2020 Irregular Border Crossings, American Review of Canadian Studies, 51:1, 95-121, DOI: 10.1080/02722011.2021.1899743 at page 113.</ref>
মহামারীর কারণে বেশ কয়েকটি রাজ্য সাময়িকভাবে আশ্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। কানাডা ছিল তাদের মধ্যে একটি। মহামারীর ফলে শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ কয়েক মাস ধরে সমস্ত শুনানি বন্ধ করে দেয়, ২০২০ সালের গ্রীষ্মে পুনরায় শুরু করে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল (দূরবর্তী) শুনানি চালু করা হয়। আইআরসিসি এবং সিবিএসএ কর্তৃক আইআরবি-তে দাবির রেফারেলগুলো অনেক বেশি সময়ের জন্য বিলম্বিত বা স্থগিত করা হয়েছিল।<ref>Jay Turnbull, ''They want to work, but thousands of asylum seekers are waiting on the sidelines,'' CBC News, Feb 22, 2021 <https://www.cbc.ca/news/canada/montreal/asylum-seekers-work-permits-delay-pandemic-1.5921285> (Accessed March 7, 2021).</ref>
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় কানাডীয় সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পর্যায়ক্রমিক সাধারণ ক্ষমা অভিযান বাস্তবায়ন করেছিল, এই ক্ষেত্রে একটি প্রোগ্রাম যা গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস উদ্যোগ নামে পরিচিতি পেয়েছিল যা মহামারী চলাকালীন ফ্রন্ট-লাইন কেয়ারগিভিংয়ের সাথে জড়িত আশ্রয়প্রার্থীদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা প্রদান করেছিল। ''কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত কিছু শরণার্থী দাবিদারদের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানের সুবিধার্থে এই নীতিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্থায়ী পাবলিক নীতি বলা হত।''<ref>''Kolawole v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1384 (CanLII), at para 7, <https://canlii.ca/t/k0wrg#par7>, retrieved on 2023-12-28.</ref> এই প্রোগ্রামটি ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কার্যকর হয় এবং ৩১ আগস্ট, ২০২১ তারিখে শেষ হয়।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিল S-৮ আইআরপিএ এবং প্রবিধান সংশোধন করেছে, এটিতে ''বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আইনের'' অধীনে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা বিদেশী নাগরিকরা কানাডায় প্রবেশ করতে পারবেন না।<ref>Bill S-8, “An Act to amend the Immigration and Refugee Protection Act, to make consequential amendments to other Acts and to amend the Immigration and Refugee Protection Regulations”, S.C. 2023, c. 19.</ref> এই সংশোধনীগুলো শরণার্থী দাবিকে আরপিডি-তে রেফার করার যোগ্যতাকেও প্রভাবিত করেছে। এর ফলে এটি আরও বিস্তৃত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারী এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পুনরায় শুরু হওয়ার পর দাবির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে সর্বকালের সর্বোচ্চ ১৪৪,৮৬০টি দাবিতে পৌঁছেছে।<ref>Lisa Barkova, Office of the Parliamentary Budget Officer, ''Costing Asylum Claims from Visa-Exempt Countries'', Published on May 31, 2024, <https://www.pbo-dpb.ca/en/publications/RP-2425-007-S--costing-asylum-claims-from-visa-exempt-countries--analyse-couts-demandeurs-asile-pays-dispenses-obligation-visa>.</ref>
== কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস তৈরি করা ==
২০১৭ সালের জুন মাসে, হাউস অফ কমন্সের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি (CIMM) ''"পুনরায় শুরু: অভিবাসন পরামর্শদাতাদের উপর সরকারের নজরদারি উন্নত করা"'' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জারি করে। এটি সুপারিশ করেছে যে অভিবাসন পরামর্শদাতাদের জন্য নতুন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা তৈরি করবে। সেখানে সর্বোচ্চ স্তরটি আইআরবির সামনে মামলার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। পরবর্তী কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে খোলা হয়। ২০১৯ সালে সংসদ একটি আইন পাস করে যা স্তরযুক্ত লাইসেন্সিং বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়। ফলস্বরূপ, কলেজের উপ-আইন অনুসারে, আইআরবি-তে প্রতিনিধিত্বের জন্য "১ জুলাই, ২০২২ এর পর অথবা বোর্ড কর্তৃক রেজুলেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত অন্য কোনও তারিখের পরে" ক্লাস L৩ লাইসেন্স প্রয়োজন হবে। ২০২২ সালের জুন মাসে, কলেজের পরিচালনা পর্ষদ একটি প্রস্তাব পাস করে যার মাধ্যমে ১ জুলাই, ২০২৩ তারিখকে ক্লাস L৩ লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তার নতুন তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই ক্লাস L৩ লাইসেন্সটিকে "আইআরবি-সার্টিফিকেশন" বা "স্পেশালাইজেশন প্রোগ্রাম"ও বলা হয়।<ref>College of Immigration and Citizenship Consultants, 2023, ''Specialization Program'', <https://college-ic.ca/licensee-obligations/ongoing-education-for-rcics/specialization-program> (Accessed December 29, 2023).</ref>
== ওয়েব-ভিত্তিক এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির বর্ধিত ব্যবহার ==
২০২০ সালের দিকে, স্বাভাবিক শরণার্থী গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য পরিবর্তন করা শুরু হয়। এর মধ্যে এটি কে আরও ওয়েব-ভিত্তিক করাও অন্তর্ভুক্ত। ২০২০ সালে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি কানাডায় একটি বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Agency|প্রথমাংশ=Canada Border Services|তারিখ=2019-07-11|শিরোনাম=Entry/Exit initiative|ইউআরএল=https://www.canada.ca/en/border-services-agency/news/2019/07/entryexit-initiative.html|সংগ্রহের-তারিখ=2025-01-07|ওয়েবসাইট=www.canada.ca}}</ref> আইআরসিসি একটি শরণার্থী দাবি পোর্টালও চালু করেছে। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে, আইআরসিসি আইআরসিসি পোর্টালের মাধ্যমে নতুন আশ্রয় অনলাইন আবেদন (eApp) চালু করে। এটি অভ্যন্তরীণ শরণার্থী দাবি করার প্রধান উপায় হিসেবে কানাডীয় শরণার্থী সুরক্ষা পোর্টাল (সিআরপিপি) কে প্রতিস্থাপন করে।<ref>IRCC, ''Program delivery update: Launch of the new asylum eApp via the IRCC Portal'', January 11, 2023, <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/publications-manuals/operational-bulletins-manuals/updates/2022-asylum-eapp.html> (Accessed December 12, 2024).</ref> সিবিএসএ কুইবেক অঞ্চলে কম ঝুঁকিপূর্ণ, যোগ্য দাবিদারদের জন্য "ওয়ান টাচ" নামে একটি নতুন শরণার্থী প্রক্রিয়াকরণ মডেল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে যা ২০২২ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছিল।<ref name=":023">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref> পাইলট শরণার্থী দাবিদারদের যোগ্যতার সাক্ষাৎকার স্থগিত না করে পরবর্তী তারিখে স্থানান্তরিত করেছেন। এটি সেই মডেলের পরিবর্তে এমন একটি মডেল চালু করেছে যেখানে কর্মকর্তারা ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে নির্ধারণ করে যে একজন দাবিদার কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং আইআরবি-তে রেফার করার যোগ্য কিনা। যেসব কর্মকর্তা দাবিদারকে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং শরণার্থী দাবি করার যোগ্য বলে মূল্যায়ন করেন, তারা কাগজ-ভিত্তিক আবেদন (যেমন IMM০০০৮, তফসিল A এবং তফসিল ১২) সম্পূর্ণ না করেই দাবিটি আইআরবি-তে পাঠাবেন। ওয়ান টাচ মডেল ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাত দাবিদারদের তাদের দাবি যোগ্য বলে প্রমাণিত হওয়ার এবং আইআরবি-তে রেফার করার ৪৫ দিনের মধ্যে আইআরসিসি পোর্টাল ব্যবহার করে তাদের শরণার্থী দাবির আবেদন পূরণ করতে হবে। পাইলট প্রকল্পটি সফল বলে বিবেচিত হয় এবং সিবিএসএ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয়ভাবে ওয়ান টাচ মডেলটি চালু করে।<ref name=":022">Canada Border Services Agency, ''Letter to Stakeholders'', September 2023, <https://capicconnect.com/Public/ViewResources?name=Information%20regarding%20One%20Touch%20implementation%20in%20the%20GTA%20Region.pdf> (Accessed December 12, 2024).</ref>
সিবিএসএ ২০২৪ সালে রিপোর্টইন অ্যাপও চালু করে। এটি মুখের স্বীকৃতি প্রযুক্তি এবং অবস্থানের ডেটা ব্যবহার করে পরিচয় এবং ব্যক্তির অবস্থান নিশ্চিত করে। এটি সরকারের পূর্ববর্তী ভয়েস রিপোর্টিং সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করেছে। এটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাতিল করা হয়েছিল।<ref>Nicholas Keung, ''Facial recognition app to help CBSA track immigration status,'' Toronto Star, published: 2024-12-20, <https://www.thestar.com/news/canada/canada-border-agency-launches-facial-recognition-app-to-track-migrants/article_4ddd57ec-bbde-11ef-9f0d-ab0b80692041.html>.</ref>
এই ডিজিটাইজেশন উদ্যোগের অন্যতম চালিকা শক্তি ছিল দাবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি। দাবি প্রক্রিয়ার কিছু অংশ ধীর হতে শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ, দাবির যোগ্যতার সিদ্ধান্তের একটি ব্যাকলগ জমা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত, যোগ্যতার সিদ্ধান্তের জন্য মোট প্রক্রিয়াকরণ সময় ছিল ১৩৬ দিন। সেই সময়ে, ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনগুলো ১০ দিনের মধ্যে অনুমোদিত হবে, ৮০% ক্ষেত্রে, একবার ইতিবাচক যোগ্যতার সিদ্ধান্ত রেকর্ড করা হবে এবং একটি মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।<ref>Government of Canada, ''CIMM – Asylum System Processing and Innovations – October 24, 2023'', <https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/corporate/transparency/committees/cimm-october-24-2023/asylum-processing-innovations.html> (Accessed December 12, 2024).</ref>
== উপসংহার ==
কানাডায় শরণার্থী সুরক্ষা পদ্ধতির গল্পের পরবর্তী অধ্যায়গুলো লেখা বাকি। যা বলা যেতে পারে তা হলো, 'শরণার্থী' ধারণাটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মতোই পুরনো। শিক্ষাবিদ ইভ লেস্টারের ভাষায়, এটি আমাদের সাথে ততদিন থাকবে যতদিন রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকবে। এমা হাদ্দাদ লিখেছেন, শরণার্থীরা রাজনৈতিক সীমানা তৈরি এবং নাগরিক হিসেবে সকল ব্যক্তিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার ফল। এর ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শর্তগুলো প্রযোজ্য - রাজনৈতিক সীমানা পৃথক রাষ্ট্র গঠন করে এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগতদের স্পষ্ট সংজ্ঞা তৈরি করে। সুরক্ষার ব্যর্থতা - ততক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থী থাকবে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, pages 7 and 213.</ref> অ্যালান ন্যাশ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, শরণার্থীদের সুরক্ষার কাঠামো ত্রুটিপূর্ণ এবং একাধিক বিপরীতমুখী উত্তেজনার শিকার। তা সত্ত্বেও এই কাঠামোটি শরণার্থীদের অধিকার এবং বাধ্যবাধকতার একটি সনদ নির্ধারণ করে এবং এর মাধ্যমে তাদের সাথে আচরণের মান নির্ধারণ করে।<ref>Alan Nash, ''International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response'', Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, page 9.</ref>
== তথ্যসূত্র ==
<references responsive="" />
ot72xdqynsnwgpi1j9f7gjzke5th7p1
চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা
0
26205
85679
85647
2025-07-05T15:28:10Z
Mehedi Abedin
7113
85679
wikitext
text/x-wiki
গণিতের বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন জ্যামিতি, বীজগণিত, ক্যালকুলাস এবং সম্ভাব্যতা; প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে বিশেষ ধরনের ধারণা ও পদ্ধতির দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন। শিক্ষাদান এবং শেখার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ থাকে, তা বোঝা ও অতিক্রম করা যায় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই অধ্যায়ে আমরা গণিত শিক্ষায় প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গবেষণা পর্যালোচনা করব। আমরা পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্বের প্রাসঙ্গিক দিক এবং এই তত্ত্বের সমালোচনা আলোচনা করব। আমরা ব্যাখ্যা করব কীভাবে বিভিন্ন বিষয় একজন শিক্ষার্থীর গণিত শেখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে শিক্ষকরা পাঠ পরিকল্পনার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে পারেন।
==গণিত কী?==
গণিত হলো সংখ্যা, পরিমাণ, জ্যামিতি ও স্থান এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কার্যাবলীর অধ্যয়ন। এটি '''ধারণাগত, প্রক্রিয়াগত এবং ঘোষণামূলক জ্ঞান'''-এর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press. </ref> গণিত সমস্যার সফল সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের এই জ্ঞানসমষ্টি অর্জন করতে হয়। গণিতে সঠিকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগে ধারণাগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য পূর্বে শেখা ধারণাগুলোর প্রয়োগ দরকার হয়। গণিতের ধারণাগত জ্ঞান অন্য সব গণিত-সম্পর্কিত দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা করে যেমন: ইতিবাচক মনোভাব, প্রক্রিয়াগত দক্ষতা, কৌশলগত পারদর্শিতা এবং অভিযোজিত যুক্তিশক্তি। একটির বিকাশ অন্যগুলোকেও শক্তিশালী করে এবং এতে সামগ্রিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, ধারণাগত জ্ঞান প্রক্রিয়াগত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে, এবং এই ধারাটি চলতে থাকে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> উদাহরণস্বরূপ, গণিতে অনেক ধরনের অ্যালগরিদম রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন। যখন শিক্ষার্থীরা গণিতের মূলনীতি ও ধারণাগুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে, তখন তারা যেকোনো সমস্যার জন্য যথাযথ অ্যালগরিদম বেছে নিয়ে তা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। এটি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সংযোগ নির্দেশ করে কারণ শিক্ষার্থীরা অনেক কৌশল শিখলেও সঠিকটি বেছে নেওয়া এবং তা প্রয়োগ করাই মূল বিষয়।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> এছাড়াও, জটিল গণিত সমস্যার সমাধানে কোনো প্রক্রিয়া সফল হলে বা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সেখান থেকে আরও শিখতে পারে। ভুলের মাধ্যমে আত্ম-প্রশ্ন করে তারা নিজের বিদ্যমান জ্ঞান পুনর্গঠন করতে পারে এবং ফলে তাদের ধারণাগত জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। ঘোষণামূলক জ্ঞান ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কারণ এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে ধারণা (ধারণাগত জ্ঞান) ও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম (প্রক্রিয়াগত জ্ঞান) পুনরুদ্ধার করতে হয়। এই তিনটি ক্ষেত্রের যেকোনো একটির ঘাটতি গণিত শেখায় অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press.</ref> সুতরাং, এই তিন ধরনের জ্ঞানের সংমিশ্রণ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় তা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
==জ্ঞানীয় তত্ত্ব এবং গণিত==
===পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্ব===
জঁ পাইগেট জন্ম থেকে কৈশোর পর্যন্ত জ্ঞানীয় বিকাশকে চারটি ধাপে ভাগ করেছেন: সংবেদনশীল গতি (জন্ম থেকে ২ বছর), প্রাক-পরিচালন (প্রায় ২ থেকে ৭ বছর), কংক্রিট অপারেশনাল (প্রায় ৭ থেকে ১১ বছর), এবং ফর্মাল অপারেশনাল (প্রায় ১১ থেকে ১৫ বছর)। যদিও সবাই এই ধাপগুলোতে ভিন্নভাবে অগ্রসর হয়, পাইগেট বিশ্বাস করতেন প্রতিটি শিশু পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করবে এবং কেউ কোনো ধাপ বাদ দেবে না কারণ পূর্ববর্তী ধাপ না শেখা পর্যন্ত পরবর্তী ধাপে যাওয়া সম্ভব নয়; এগুলো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পাইগেট আরও বলেন, শিশুর শেখা মূলত জন্ম থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলাফেরা ও পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শিশু বস্তু অনুসরণ এবং ধরার চেষ্টা শুরু করে, যা চোখ ও চলন সংক্রান্ত মস্তিষ্কের অংশগুলোকে বিকশিত করতে সাহায্য করে। একবার শিশু বুঝে যায় যে শেখা পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে হয়, তখন তারা নিজেরা পরিকল্পনা করে কাঙ্ক্ষিত বস্তু পেতে দক্ষ উপায়ে কাজ করে। পাইগেট দাবি করেন যে এই পর্যায়ে শিশুরা সংখ্যাকে বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref> এবং এমনও প্রমাণ আছে যে শিশুরা সংখ্যার ধারণা ও গণনার কিছু ধারণা ইতোমধ্যেই অর্জন করে<ref>Fuson, K. C. (1988). Children’s counting and concepts of numbers. New York: Springer.</ref>। এই পর্যায়ে শিশুদের গণিত দক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকরা এমন কার্যক্রম দিতে পারেন যাতে সংখ্যা ও গণনা যুক্ত থাকে। যেমন, ছবি যুক্ত বই পড়ানো যেতে পারে। এতে শিশুরা বস্তুর ছবি ও সংশ্লিষ্ট সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে শিখবে এবং পড়া ও অনুধাবন ক্ষমতাও বাড়বে। এই সময়ে পাইগেট দেখিয়েছেন যে শিশুরা নিজেরাই বস্তু ও জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করে।<ref>Piaget, J. (1963). The origins of intelligence in children. New York, NY: W.W. Norton & Company, Inc.</ref> যেহেতু পাইগেট মনে করতেন, একজন ব্যক্তির আগে অর্জিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ধাপে যেতে হয়, তাই সংখ্যা সম্পর্কে শিশুদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য এমন কার্যক্রমের মাধ্যমে গণিতের ভিত্তি তৈরি করা উচিত যাতে গণনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।<br />
প্রায় ২ থেকে ৭ বছর বয়সে শিশুরা ভাষা, প্রতীকী চিন্তা, আত্মকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সীমিত যৌক্তিকতা অর্জন করে। এই সময়ে তারা সংখ্যা বা ব্লকের মতো বস্তুর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে শেখে। যদিও তারা সংখ্যার কিছু ধারণা অর্জন করে, তবে তাদের যৌক্তিক ক্ষমতা সীমিত থাকে এবং তারা বিপরীত ক্রমে কার্য পরিচালনা করতে পারে না। যেমন, যারা বুঝতে পারে ৫+৩ = ৮, তারা বুঝতে নাও পারে ৩+৫ = ৮। পাইগেটের মতে, কারণ তারা কোনো একটি দিক বুঝলে অন্য দিক হারিয়ে ফেলে। এই সময়ে শিক্ষকেরা শিশুদের দিয়ে নির্দিষ্ট গঠন তৈরি করতে পারে ব্লক দিয়ে। এতে তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গোষ্ঠীভুক্ত করতে শিখবে এবং বুঝবে একাধিক উপায়ে এটি তৈরি করা যায়।<ref>Thompson, C. S. (1990). Place value and larger numbers. In J. N. Payne (Ed.), Mathematics for young children (pp. 89–108). Reston, VA: National Council of Teachers of Mathematics.</ref> <br />
৭ থেকে ১১ বছর বয়সে শিশুরা জ্ঞানীয়ভাবে দ্রুত বিকশিত হয়। তারা একাধিক দিক বা মাত্রা বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পাইগেট একটি পরীক্ষায় একই পরিমাণ তরলকে ভিন্ন আকারের বোতলে ঢেলে দেখিয়েছিলেন — এই পর্যায়ের শিশুরা বুঝতে পারে তরলের উচ্চতা কেন পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ‘শ্রেণিবিন্যাস’ ও ‘সিরিয়েশন’-এর দক্ষতা গড়ে ওঠে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref>। তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বস্তু শ্রেণিবদ্ধ করতে শেখে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বা হ্রাসপ্রাপ্ত মান অনুযায়ী সাজাতে শেখে। যদিও এই পর্যায়ে তারা মৌলিক গণনাগুলো জানতে পারে, তবে বাস্তব সমস্যায় তা প্রয়োগ করতে পারে না। যেমন, ৩টি সারিতে ৫টি ব্লক দিয়ে তৈরি গঠনের সংখ্যা গণনা করতে বললে, তারা গুণের ধারণা ব্যবহার করে না। অর্থাৎ, এই সময়ে তাদের গাণিতিক ধারণাগুলো বাস্তব বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। তারা এখনো পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করতে সক্ষম নয়।<br />
১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে শিশুরা নিজেরাই তত্ত্ব তৈরি করতে এবং গণিতের ধারণা গঠন করতে পারে। তারা বিমূর্ত ধারণাকে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে। যেমন, তারা এখন বীজগণিতের একটি সমস্যা নিজে নিজে সমাধান করতে পারে, যেখানে আগে শিক্ষককে বাস্তব উদাহরণ দিতে হতো। তারা কারণ নির্ণয়, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং প্রয়োগ করতে শেখে। শিক্ষকেরা তাদের শেখাতে পারেন কীভাবে শব্দের সমস্যা বিশ্লেষণ করতে হয় এবং কোন তথ্য প্রাসঙ্গিক আর কোনটা নয় তা বোঝাতে হয়।<br />
পাইগেট মনে করতেন, যদি কোনো শিশু কোনো ধারণা বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটির কারণ হচ্ছে সমস্যা থেকে সরাসরি গাণিতিক রূপান্তরে যাওয়ার চেষ্টা। তার মতে, শিশুদের শেখাতে হলে এমন পদ্ধতি নিতে হবে যা তাদের নিজে আবিষ্কার করতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা নিজেরাই ধারণা গড়ে তুলতে পারে, শিক্ষক তাদের সরাসরি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে। <ref>Piaget, J. (1968). Genetic epistemology. New York, NY: Columbia University Press Retrieved June 13, 2003 from the World Wide Web: http://www.marxists.org/reference/subject/philosophy/works/fr/piaget.htm</ref>
=== পাইগেট তত্ত্বের সমালোচনা ===
{| class="wikitable"
!পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের বিশ্বাস
!সমালোচনা
|-
|১) শিশুরা বস্তুর স্থায়িত্ব বোঝার বিকাশ শুরু করে
|
* পাইগেট শিশুদের অনুপ্রেরণার প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করেছিলেন
* শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
|-
|২) শিশুদের সংবেদনশীল ক্ষমতা এবং জ্ঞানীয় বিকাশ তাদের জন্মের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ঘটে
|
* সমস্ত শিক্ষার্থী একই নয়, তাদের অনন্য দক্ষতার ভিত্তিতে তাদের উচ্চতর বা নিম্ন বিভাগে স্থাপন করা যেতে পারে
|-
|৩) প্রতিটি শিশু একটি নির্দিষ্ট ক্রমে চারটি পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে
|
* পাইগেট বংশগতি, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার মতো বাহ্যিক কারণগুলোকে অবহেলা করেছিলেন
|-
|৪) পাইগেট জ্ঞানীয় বিকাশকে নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৃথক করে
|
* জ্ঞানীয় বিকাশের পর্যায়গুলো ধীরে ধীরে এবং ক্রমাগত অগ্রগতি হিসাবে দেখা উচিত
|}
যদিও আধুনিককালে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানীয় বিকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য পাইগেটের তত্ত্ব ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবুও এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদ পাইগেটের তত্ত্বের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক শিক্ষার উপযুক্ততা পরিমাপ করেন। অন্যদিকে, হিবার্ট ও কার্পেন্টার মত দিয়েছেন যে, পাইগেটের তত্ত্ব তেমন কার্যকর নির্দেশনা নয়, কারণ বহু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, অনেক শিশু যারা পাইগেটের তত্ত্ব অনুসরণ করতে পারে না তারাও গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম।<ref>Hiebert, J., and T. P. Carpenter. "Piagetian Tasks as Readiness Measures in Mathematics Instruction: A CriticalReview." EDUCATIONAL STUDIES IN MATHEMATICS 13: 329-345, 1982</ref>
পাইগেট যেখানে শিশুর অভ্যন্তরীণ জ্ঞান অনুসন্ধানের উপর গুরুত্ব দেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশু বস্তু স্থায়ীত্ব (যেমন: লুকানো বস্তু খোঁজার ধারণা) শেখে, অন্য গবেষকরা বলেন, পাইগেট শিশুদের প্রেরণার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেছেন। বার্গার মনে করেন বাহ্যিক প্রেরণা ও শিক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
ক্যাগান বিশ্বাস করেন, শিশু যখন স্থান পরিবর্তনের পরও বস্তু স্পর্শ করতে পারে, তখন এর পেছনের কারণ তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতার বৃদ্ধি, পাইগেটের ধারণার মতো নতুন কোনো জ্ঞানীয় গঠনের কারণে নয়।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটকে সমালোচনা করা হয়েছে শিশুদের সামর্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত সাধারণায়নের জন্য। তিনি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন, শিশুর সংবেদনশীলতা ও জ্ঞানীয় বিকাশ জন্মের প্রথম ছয় মাসেই ঘটে। যদিও পাইগেট বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে নির্দিষ্ট ক্রমে অগ্রসর হয়, হেউভেল-পানহুইজে বলেন পাইগেটের তত্ত্ব ছোট শিশুদের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি দেখান যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি শুধুমাত্র পাইগেটের ধাপভিত্তিক তত্ত্বে বিশ্বাস করেন, তবে তারা শিশুদের প্রতীকের জ্ঞান, গণনার ক্রম ও গাণিতিক ক্রিয়ার সামর্থ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করতে পারেন।<ref>Cross, C. (2009). The Early Childhood Workforce and Its Professional Development. In Mathematics learning in early childhood paths toward excellence and equity. Washington, DC: National Academies Press.</ref>
বার্গার আরও বলেন, শিশুদের পার্সেপচুয়াল শেখা (ধারণাগত শেখা) জন্মের আগেই শুরু হতে পারে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref> যদিও একটি নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী একটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে থাকবে, তবুও সব শিক্ষার্থী একরকম নয়। তাদের স্বতন্ত্র দক্ষতার ভিত্তিতে তারা হয়তো কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর ধাপে অবস্থান করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, গেলম্যান ও গ্যালিস্টেল দেখান যে, প্রস্তুতি ধাপে থাকা শিশুরাও বস্তু গণনার ক্ষেত্রে বিমূর্ত চিন্তা করতে পারে। এছাড়াও, পাইগেট শিশুদের আবেগ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেননি। যদিও তিনি বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ মাপার কার্যকর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি সৃজনশীলতা ও সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উপেক্ষা করেছেন।<ref>Papalia, D. E., Olds, S. W., and Feldman, R. D. (1998). Human development(7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
ক্রিস্টিনা এর্নেলিং যুক্তি দেন যে, উন্নয়নের ধারা বোঝা সম্ভব যদি শিশুদের সঠিক পরিবেশে রাখা যায়। তার মতে, যেকোনো শেখার ধারণা বিশদ শিক্ষাতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং জ্ঞানীয় বিকাশ বোঝার জন্য ব্যক্তির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিন্নতা স্বীকৃতি দিতে হবে। অর্থাৎ, পাইগেট সংস্কৃতির প্রভাব উপেক্ষা করেছেন। কারণ তার গবেষণা ছিল পশ্চিমা দেশে, তাই তার তত্ত্ব হয়তো শুধু পশ্চিমা সমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাইগেটের মতে, বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি নির্দিষ্ট ধাপে পৌঁছেই বিকাশ পায়। অন্যদিকে, এডওয়ার্ডস ও অন্যান্য গবেষকরা বলেন, পাইগেটের গবেষণায় নিয়ন্ত্রণ ও নমুনার সীমাবদ্ধতার কারণে তার গবেষণা অবিশ্বস্ত। তারা বলেন, অন্যান্য সংস্কৃতিতে সাধারণ ধাপের অপারেশনগুলো বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।<ref>Edwards, L., Hopgood, J., Rosenberg, K., & Rush, K. (2000). Mental Development and Education. Retrieved April 25, 2009, from Flinders University</ref>
বার্গার পাইগেটের নির্দিষ্ট ধাপের বিপক্ষে যুক্তি দেন। তিনি মনে করেন, পাইগেট শিশুদের অভ্যন্তরীণ জ্ঞানের সন্ধানকে গুরুত্ব দিলেও বংশগতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার মতো বাহ্যিক বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের ধাপগুলোকে বরং একটানা ধাপে ধাপে অগ্রগতির মতো দেখা উচিত, নির্দিষ্ট করে ভাগ না করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটের তত্ত্বের আরও সমালোচনা হয়েছে, কারণ তার সর্বশেষ ধাপে জ্ঞানীয় বিকাশ যথেষ্ট স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। তিনি মনে করতেন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে সবাই বিমূর্ত যুক্তি বিকাশে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, প্যাপালিয়া ও অন্যান্যরা বিশ্বাস করেন, সবাই এই সময়ে আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি অর্জন করতে পারে না, এবং তাতে তারা অপরিণত নয়—বরং তাদের চিন্তাভাবনার পরিপক্বতার ধরণ ভিন্ন।<ref>Papalia, D.E., Olds, S.W., & Feldman, R.D. (1998). Human development (7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
অতএব, জ্ঞানীয় বিকাশকে বরং একটি অনিয়মিত প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যেখানে প্রতিটি শিশু ধাপে ধাপে নিজস্ব গুণাবলি ও আচরণগত দক্ষতা অর্জন করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
=== জ্ঞানীয় ক্ষেত্র= ===
পাইগেটের পর থেকে জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গাণিতিক শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গাণিতিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭৮ সালেই গবেষকেরা মস্তিষ্ক-সম্পর্কিত আচরণ ও একাডেমিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পান। রাউর্ক ও ফিনলেসন ৯-১৪ বছর বয়সী শেখার অসুবিধায় ভোগা শিশুদের নিয়ে গবেষণা করে দেখান, যেসব শিশুর অ্যারিথমেটিক দক্ষতা নেই, তাদের ডান মস্তিষ্কের গোলার অকার্যকারিতার মতো আচরণ দেখা যায়।<ref>Rourke, B. P., & Finlayson, M. A. J. (1978). Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities. Journal of Abnormal Child Psychology, 6, 121–133.</ref>
সম্প্রতিকালে আরও সূক্ষ্ম জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গণিতে ঘাটতির মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত হয়েছে।
২০০১ সালে হ্যানিচ, জর্ডান, কাপলান ও ডিক ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাণিতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেন।<ref>Hanich, L. B., Jordan, N. C., Kaplan, D., & Dick, J. (2001) Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities. Journal of Educational Psychology, 93, 615–626.</ref>
তারা শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করেন: সাধারণভাবে সফল, শুধুমাত্র গণিতে দুর্বল, শুধুমাত্র পড়ায় দুর্বল, এবং উভয় বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থী। প্রত্যেককে সাতটি গাণিতিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বলা হয়:
ক) নির্দিষ্ট গণনা খ) গল্পভিত্তিক সমস্যা গ) আনুমানিক গণনা ঘ) স্থানীয় মান ঙ) গণনার নীতি চ) সংখ্যা স্মরণ ছ) লিখিত গণনা।
তারা দেখেন, যারা গণনা ও পড়া উভয় ক্ষেত্রেই দুর্বল, তারা গল্প সমস্যা ও প্রচলিত গণনায় দুর্বল। তবে যারা শুধু গণিতে দুর্বল, তারা শুধু প্রচলিত গণনায় দুর্বলতা দেখায়। এ থেকে গবেষকেরা সিদ্ধান্তে আসেন, গণিতে একাধিক জ্ঞানীয় ক্ষেত্র রয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্র মস্তিষ্কের ভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।
ফুচস, ফুচস, স্টুয়েবিং, ফ্লেচার, হ্যামলেট ও ল্যাম্বার্ট (২০০৮) লক্ষ্য করেন, প্রচলিত গণনার সফলতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পূর্বাভাসদাতা হচ্ছে: ক) কর্মরত স্মৃতি খ) দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি গ) মনোযোগ রেটিং ঘ) ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ ঙ) শব্দভাণ্ডারের জ্ঞান<ref>Fuchs, L. S., Fuchs, D., Stuebing, K., Fletcher, J.M., Hamlett, C. L. , & Lambert, W. (2008). Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition? Journal of Educational Psychology 100 (1), 30</ref>
তারা এক দীর্ঘমেয়াদি, বৃহৎ পরিসরের গবেষণায় দেখেন, গণনা ও সমস্যার সমাধান—এই দুইটি গণিতের আলাদা ক্ষেত্র হতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন: গণনায় দক্ষতা, শব্দ-সমস্যা সমাধান, ধ্বনি প্রক্রিয়া, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান, কর্মরত স্মৃতি, মনোযোগী আচরণ, প্রক্রিয়ার গতি, এবং পাঠ দক্ষতা ইত্যাদিতে। তারা দেখতে পান, মনোযোগী আচরণ ও প্রক্রিয়ার গতি গণনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও, তারা লক্ষ্য করেন, কর্মরত স্মৃতি, স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (যেমন দৃশ্যের মাধ্যমে প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করা), ধারণা গঠন, এবং ভাষা দক্ষতা (যার মধ্যে পড়াও অন্তর্ভুক্ত) সমস্যা সমাধানের পূর্বাভাসদাতা। ভাষা দক্ষতার ঘাটতি সমস্যার সমাধানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্যকারী একটি উপাদান।
==== প্রত্যেক জ্ঞানীয় গণিত ক্ষেত্রের জন্য মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া ====
{| class="wikitable"
!গণনার জ্ঞানীয় দক্ষতা
!সমস্যা সমাধানের জ্ঞানীয় দক্ষতা
|-
|গণনার সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|সমস্যা সমাধানের সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|-
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
# দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি
• মনোযোগ রেটিং • প্রক্রিয়ার গতি • ভাষা দক্ষতা
# ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ (ধ্বনি শনাক্ত ও পার্থক্য করতে পারা)
# শব্দভাণ্ডার জ্ঞান
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
• স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি • অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (দৃশ্যমান প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করার দক্ষতা) • ধারণা গঠন • ভাষা দক্ষতা
# প্রথম ভাষা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য
# ধ্বনি, শব্দভাণ্ডার
|}
=== গণিত শেখার ক্ষেত্রে কার্যকর স্মৃতির গুরুত্ব ===
'''কার্যকর স্মৃতি''' হলো একটি প্রক্রিয়া যা অস্থায়ীভাবে নতুন বা পূর্বে সঞ্চিত তথ্য ধারণ করে, যা বর্তমান কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর ধারণক্ষমতা সীমিত। কার্যকর স্মৃতির দুটি ধরণ রয়েছে: শ্রাব্য (অডিটরি) স্মৃতি ও দৃশ্য-স্থানিক (ভিজুয়াল-স্প্যাটিয়াল) স্মৃতি। গণিতের গাণিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দৃশ্য-স্থানিক স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। অপরদিকে, শ্রাব্য স্মৃতি সব ধরনের গাণিতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতার পার্থক্য হতে পারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি, ব্যক্তির জ্ঞান বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য উপেক্ষা করার দক্ষতার কারণে।<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref> পরিকল্পনা, সংগঠন এবং নমনীয় চিন্তার মতো নির্বাহী কার্যক্রমগুলো কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে।<ref>Swanson, H. L. (2003)...</ref>
অন্যদিকে, '''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' দায়ী শুধুমাত্র অল্প সময়ের জন্য তথ্য ধারণ করার জন্য, যেগুলো ব্যবহার করতে হবে কিন্তু বিশ্লেষণ বা রূপান্তরের প্রয়োজন নেই। এর ধারণক্ষমতাও সীমিত এবং এটি কয়েক সেকেন্ডের মতোই স্থায়ী হতে পারে। যেমন, একটি টেলিফোন নম্বর আমরা কয়েক সেকেন্ড মনে রাখি শুধু তা ডায়াল করার জন্য।
২০০৪ সালে সোয়ানসন এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গারর একটি গবেষণায় উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, কার্যকর স্মৃতি সমস্যার সমাধানকালে তথ্য একীভূতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের মতে, কার্যকর স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি "(ক) সম্প্রতি প্রক্রিয়াকৃত তথ্যকে নতুন ইনপুটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং (খ) সামগ্রিকভাবে সমস্যার একটি উপস্থাপন গঠনের জন্য তথ্যের সারাংশ সংরক্ষণ করে।"<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref>
এইচ লি সোয়ানসনের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতা সমস্যা সমাধানে কৌশলগত হস্তক্ষেপের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>Swanson, H. L. (August 4,2015)...</ref> লেখক একটি হস্তক্ষেপমূলক গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে কার্যকর স্মৃতির ভূমিকা এবং কৌশল শেখানোর ফলে শব্দভিত্তিক সমস্যা সমাধানে সঠিকতা কেমন হয়, তা যাচাই করা হয়।
গবেষণায় সমস্ত শিশুদের শ্রাব্য ও দৃশ্য-স্থানিক কার্যকর স্মৃতির মাপ নেওয়া হয়। এরপর গণিতে সমস্যাযুক্ত এবং অপ্রতিবন্ধিত শিশুদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করে র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়। ১ম দলকে শব্দভিত্তিক কৌশল শেখানো হয়, ২য় দলকে দৃশ্য-স্থানিক কৌশল, এবং ৩য় দলকে উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ শেখানো হয়। প্রতিটি দলকে এমন পাঠদান দেওয়া হয় যাতে শব্দ সমস্যা ক্রমাগত অপ্রাসঙ্গিক তথ্যে পরিপূর্ণ হতে থাকে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের প্রাসঙ্গিক তথ্যের প্রতি মনোযোগী হতে শেখানো। পূর্ববর্তী অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য আলাদা করতে শেখা গণিত সমস্যার সঠিকতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার ফলাফল দেখায় যে, কৌশল শেখানো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা কৌশল শেখানোর প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে। কম কার্যকর স্মৃতির শিশুরা তেমন উপকার পায়নি। বরং উচ্চ কার্যকর স্মৃতির শিশুরাই—যাঁদের গণিতে প্রতিবন্ধকতা থাকুক বা না থাকুক—এই কৌশল থেকে বেশি উপকার পেয়েছে। তবে, দৃশ্যগত কৌশল ব্যবহৃত হলে সব ধরনের গণিত প্রতিবন্ধী শিশুরাই উপকার পেয়েছে। কিন্তু যাঁদের কার্যকর স্মৃতি দুর্বল, তাঁদের জন্য শব্দ ও দৃশ্য উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। সবশেষে, গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে যে, কার্যকর স্মৃতির উপর ভিত্তি করে মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলোর প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতে কার্যকর স্মৃতির দক্ষতা উন্নত করতে পারে।
এই গবেষণার তাৎপর্য হলো, গণিতে প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা যাচাই করে তার ভিত্তিতে উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল নির্ধারণ করা উচিত।
== গণিত শেখা ও শেখানোর ওপর প্রভাব ফেলা উপাদান ==
=== ব্যক্তিভেদে পার্থক্য ===
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আলাদা দক্ষতা, পূর্বজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং আগ্রহ থাকে। এই বিষয়গুলো গণিত শেখা ও শেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ পাঠদানের কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হয়।
==== দক্ষতার পার্থক্য ====
সব শিক্ষার্থীর নিজস্ব শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। কেউ কোনো নির্দিষ্ট গাণিতিক ক্ষেত্রে ভালো হলেও, অন্য ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারে। শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা সম্পর্কে জানা, যাতে তাদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুর্বলতাকে উন্নত করা যায়। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও দুর্বলতা না জানেন, তবে ভুলভাবে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে, যেটা শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে এবং ব্যর্থতা থেকে "শিক্ষিত অসহায়ত্ব" তৈরি করতে পারে। সঠিক দক্ষতা জানা থাকলে নতুন গাণিতিক জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে না।
উদাহরণস্বরূপ, শব্দ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন মানসিক উপস্থাপনা ও সাধারণ গাণিতিক রূপান্তর। ফলে, যারা গাণিতিক সমীকরণ গঠন করতে জানে না, তারা এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হবে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের প্রাক-দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পাঠদান কৌশল নির্ধারণ করা, কারণ এই দক্ষতাগুলো সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষার্থীরা যত বেশি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত দক্ষতা অর্জন করবে, ততই তারা গণিত শেখায় দক্ষ হয়ে উঠবে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref>
বর্তমান হাইস্কুলে বিভিন্ন স্তরের গণিত কোর্স থাকে—শুরুর, মূল এবং উন্নত স্তর। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগ করা হয় বা তারা নিজেরা স্তর বেছে নিতে পারে। শিক্ষককে উচিত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যে তারা সেই স্তরের উপযোগী কিনা। খুব কঠিন হলে শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়বে, আবার খুব সহজ হলে বিরক্ত হবে। সঠিক স্তর নির্ধারণের জন্য দক্ষতা জানা আবশ্যক।
==== পূর্বজ্ঞানগত পার্থক্য ====
শিক্ষার্থীদের গাণিতিক জ্ঞান তাদের সামাজিক অভিজ্ঞতা থেকে আসে। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন বাজারে কেনাকাটা করার মাধ্যমে টাকা-পয়সা মেলানো শেখা, গাণিতিক প্রতীক কীভাবে ব্যবহার হয়, সেটা বুঝতে সাহায্য করে। এই বাস্তব জ্ঞান ব্যবহার করে যদি গাণিতিক ধারণা শেখানো হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহজে তা বুঝতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিল থাকলে শিক্ষার্থীরা গণিত শেখায় বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এটি তাদের কাছে অর্থবহ ও প্রাসঙ্গিক মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাঠ্যবইয়ের গণিত অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু যদি তা ব্যাংকে সুদের হিসাব বা দৈনন্দিন খরচ হিসাবের মতো জীবনের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে তা সহজ ও আকর্ষণীয় মনে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ গণিত সমস্যার জন্য শুধু গণিত নয়, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো বিষয়ের জ্ঞানও প্রয়োজন হতে পারে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> শব্দ সমস্যার ক্ষেত্রে পাঠ্যাংশ বুঝতে ভাষাগত দক্ষতাও প্রয়োজন, যা পূর্বজ্ঞান থেকে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের অনেক গণিত কোর্সে পূর্বশর্ত কোর্স থাকে, কারণ উন্নত গণিত শেখার জন্য প্রাথমিক ধারণা থাকা আবশ্যক।
==== আগ্রহের পার্থক্য ====
সবার আগ্রহ আলাদা। কেউ গণিত পছন্দ করে কারণ ছোটবেলা থেকেই তারা এই বিষয়ে শক্তিশালী ছিল, আবার কেউ ঘৃণা করে কারণ বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আগ্রহ থাকলে অভ্যন্তরীণ মোটিভেশন তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থী নিজের ইচ্ছায় গণিত শেখে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> এতে শিক্ষার্থীরা কাজের প্রতি মনোযোগী হয় এবং সমাধানে আন্তরিকতা দেখায়। তাদের আগ্রহ নিজের সামর্থ্য, আত্মবিশ্বাস এবং অর্জনের সঙ্গে জড়িত।<ref>Upadyaya, K., & Jacquelynne, S. E. (2014). How do Teachers’ Beliefs predict Children’s Interests in Math from Kindergarten to Sixth Grade? ''Merrill-Palmer Quarterly, 60''(4). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=aaa92fa2-22f8-4cd7-9d94-49896f602e89%40sessionmgr120&vid=0&hid=109</ref>
তাই, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্য বাড়ানোর জন্য তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে, পরিবারের সদস্য, সহপাঠী এবং শিক্ষকসহ অনেক উপায়ে গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref>
পরিবারের সদস্যরা ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের গণিতে সহায়তা ও উৎসাহ দিতে পারেন, যা গণিতের প্রতি তাদের মূল্যবোধ বাড়ায়। শিক্ষার্থীরা সাধারণত সামাজিক তুলনা করতে ভালোবাসে এবং তারা সহপাঠীদের অনুসরণ করতে চায়। তাই সহপাঠীদের প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর বড় ভূমিকা রাখে। যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তাদের সহপাঠীরা সুদোকু বা ধাঁধার মতো কোনো গণিতের সমস্যা উপভোগ করছে, তখন তারাও সমাধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে আনন্দদায়ক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ গেমের আয়োজন করতে পারেন এবং শেখানোর সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারেন।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref> এটি এমন একটি বিষয় শেখার আগ্রহ তৈরি করবে, যা আগে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করতো না। ফলে, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য আনন্দদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যাতে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। যদি শিক্ষার্থীরা গণিতকে ঘৃণা করে, তবে তাদের শেখানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তারা তখন কেবল বাধ্য হয়ে পড়ে, আগ্রহ নিয়ে নয়।
==== সাংস্কৃতিক পার্থক্য ====
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের স্তর ও লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে থাকে।<ref>Tsao, Y-L. (2004). A Comparison of American and Taiwanese Students: Their Math Perception. ''Journal of Instructional Psychology, 31''(3). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=97c91599-4222-4cc8-8717-703e6b774b06%40sessionmgr110&vid=19&hid=109</ref> তদুপরি, তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে গণিতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে। যখন কোনো সংস্কৃতি কোনো বিষয়ে যেমন গণিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তখন সেই সংস্কৃতির শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্কুল ও বাড়িতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফলে, এদের গণিতের দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। যারা নিয়মিত গণিত চর্চা করে, তাদের অটোমেটিসিটি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করার ক্ষমতা) বেশি হয় কারণ তারা বিভিন্ন গণিত সমস্যার যথেষ্ট অনুশীলন করে। তারা উপযুক্ত কৌশল বেছে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> অন্যদিকে, যদি কোনো সংস্কৃতি গণিতকে গুরুত্ব না দেয়, তবে সেই সংস্কৃতির শিশুরা কঠোরভাবে শেখে না এবং তাদের দক্ষতার স্তরও কম হয়। কোনও বিষয়ে ভালো করতে হলে স্কুলের পাশাপাশি বাড়িতেও চর্চা করা প্রয়োজন। যারা শুধুমাত্র স্কুলেই গণিত শেখে এবং বাড়িতে সক্রিয়ভাবে চর্চা করে না, তাদের অনুশীলন পর্যাপ্ত নয়। সেইসঙ্গে, এমন সংস্কৃতি যেখানে উচ্চ মান, পরিশ্রম, এবং ইতিবাচক মনোভাবকে মূল্য দেওয়া হয়, সেগুলোর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref>
বিভিন্ন সংস্কৃতির ভাষাও ভিন্ন। এর অর্থ, তারা গণিত সমস্যা প্রকাশের ধরনেও পার্থক্য থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, চীনা সংখ্যার ভাষাগত কাঠামো (যেমন ১৫ মানে "দশ-পাঁচ") ইংরেজির তুলনায় শেখা সহজ। ইংরেজিতে যেমন ১২ মানে "টুয়েলভ" এবং -টিন শব্দগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা থাকে না।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> চীনা সংখ্যা উচ্চারণ করা ইংরেজির তুলনায় দ্রুত সহজ, যা শিক্ষার্থীদের গণিত দক্ষতাকে প্রভাবিত করে। ফলে, চীনা ভাষায় সংখ্যাগুলো স্বল্প-মেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়, বিশেষ করে বহু-অঙ্কের জটিল সমস্যায়।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> তাই পাঠদানের কৌশল পরিকল্পনার সময় শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া উচিত, কারণ তা গণিত সমস্যার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে পারে।
=== গণিতে আত্ম-দক্ষতা ===
গণিতে শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বলতে বোঝায় তারা নিজের সম্পর্কে কতটা বিশ্বাস রাখে যে তারা গণিতের প্রশ্ন সমাধান করতে পারবে। যারা বেশি আত্মবিশ্বাসী তারা গণিত সংশ্লিষ্ট কাজে আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং তাদের একাডেমিক সাফল্যও বেশি হয়। অন্যদিকে, যারা আত্মবিশ্বাস কম রাখে তারা গণিত সমস্যা সমাধানে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং তাদের পারফরম্যান্স কম হয়। তাই, গণিতে আত্ম-দক্ষতা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
==== গণিতে আত্ম-দক্ষতার প্রভাব ====
আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা, বোঝাপড়া এবং শেখার অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে। যারা নিজেদের দক্ষ মনে করে, তারা গণিতে ভালো করার ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করে।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এই বিশ্বাসের কারণে তারা আরও উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং বেশি পড়াশোনা করে। ফলে, তারা আত্ম-সার্থকতার চক্রে পড়ে, অর্থাৎ তাদের নিজস্ব বিশ্বাস বাস্তব হয়ে ওঠে। বিপরীতে, যারা নিজেকে অদক্ষ মনে করে, তারা ভাবে যতই চেষ্টা করুক, গণিতে সফল হতে পারবে না।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এ কারণে তারা গণিত চর্চায় অনুপ্রাণিত হয় না এবং কয়েকবার চেষ্টা করেই হাল ছেড়ে দেয়। এতে তাদের "আমি পারি না" বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা কাজ করতে থাকে।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়ন ====
শিক্ষার্থীরা গণিতের কোন বিষয় শিখতে আত্মবিশ্বাসী কিনা তা মূল্যায়ন করা জরুরি, কারণ এটি তাদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়নের একটি উপায় হলো, প্রথম পুরুষে কিছু বিবৃতি তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে প্রত্যেকটি বিবৃতির জন্য ০ থেকে ১০০ স্কেলে রেট করতে বলা।<ref>Bandura, A. (1997). Self-efficacy: The exercise of control.New York, NY:Freeman.</ref> প্রথমে শিক্ষককে নির্দিষ্ট একটি টপিক বেছে নিতে হবে, যেমন "পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ"। এরপর সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিবৃতিগুলো তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষার্থীরা সেগুলোর সত্যতা রেট করবে।
{| class="wikitable"
!রেট (০-১০০)
!বিবৃতি
|-
|৮০
|আমি জানি, প্যারালেলোগ্রামের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণে কী তথ্য লাগবে।
|-
|১০০
|আমি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দেওয়া থাকলে একটি আয়তক্ষেত্রের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|-
|৬০
|আমি ট্র্যাপেজিয়ামের ক্ষেত্রফলের সমীকরণ লিখতে পারি।
|-
|৫০
|আমি আমার সহপাঠীকে বোঝাতে পারি কেন ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল bxh ÷2 অর্থাৎ, (ভূমি x উচ্চতা) / ২
|-
|৯০
|আমি ৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|}
এই স্কোরগুলো যোগ করে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীর আত্ম-দক্ষতার একটি সামগ্রিক চিত্র পেতে পারেন। উপরিউক্ত উদাহরণে, মোট স্কোর হবে ৮০+১০০+৬০+৫০+৯০। শিক্ষক চাইলে এই আত্ম-দক্ষতার তুলনা শিক্ষার্থীর গণিত বিষয়ে সামগ্রিক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করতে পারেন। আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের শেখার অনুপ্রেরণা ও আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই শিক্ষকদের উচিত সেই অনুযায়ী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করা।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতার বিকাশ ====
বান্দুরা আত্ম-দক্ষতা বিকাশে চারটি প্রধান উৎস চিহ্নিত করেছেন।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> প্রথমটি হলো শিক্ষার্থীদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> যেমন, যদি শিক্ষার্থী কোনো গণিত পরীক্ষায় ভালো ফল করে, তার সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। দ্বিতীয়টি হলো বিভিন্ন অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> শিক্ষার্থীরা যখন তাদের সমমানের সহপাঠীদের কাজ করতে দেখে, তখন তারা নিজেরও পারবে বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এমনকি গণিতবিদদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি দেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বাড়াতে পারে।<ref>Hekimoglu, S., & Kittrell, E. (2010). Challenging students' beliefs about mathematics: The use of documentary to alter perceptions of efficacy. PRIMUS: Problems, Resources, And Issues In Mathematics Undergraduate Studies, 20(4), 299-331. doi:10.1080/10511970802293956</ref>
তৃতীয় প্রভাবটি হলো সামাজিক প্রভাব।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের ঘনিষ্ঠ মানুষদের (যেমন অভিভাবক, সহপাঠী বা শিক্ষক) কাছ থেকে আসা ইতিবাচক বক্তব্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক যদি বলেন “তুমি বীজগণিতের সমস্যাগুলো এখন আগের থেকে ভালোভাবে সমাধান করতে পারছো,” তাহলে এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে।
চতুর্থ প্রভাবটি হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের কোনো পরিস্থিতির প্রতি আবেগগত প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী মনে করতে পারে যে গণিত পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণ তার অযোগ্যতা, অথচ প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল উদ্বেগের ফল। এই ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থী তার ক্ষমতা ভুলভাবে মূল্যায়ন করে এবং গণিত বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। আবার কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করলেও সেটিকে নিজের দক্ষতা নয়, বরং ভাগ্যের কারণে হয়েছে বলে মনে করতে পারে। এর ফলে, সে আত্মবিশ্বাস গঠনের একটি সুযোগ হারিয়ে ফেলে। সুতরাং, ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেকোনো অভিজ্ঞতার প্রতি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি তার আত্মদক্ষতা গঠনে প্রভাব ফেলে। এই ক্ষেত্রে আত্মদক্ষতা বাড়ানোর উপায় হলো শিক্ষার্থীদের তাদের প্রকৃত দক্ষতা চেনাতে সহায়তা করা এবং তাদের দক্ষতার প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি করা।
উশের একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের গণিত বিষয়ক আত্মদক্ষতার চারটি উৎস যাচাই করেন।<ref>Usher, E. L. (2009). Sources of middle school students’ self-efficacy in mathematics: A qualitative investigation. American Educational Research Journal, 46(1), 275-314. doi:10.3102/0002831208324517</ref> এই গবেষণার ফলাফল বান্দুরার ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে দক্ষতার অভিজ্ঞতা, পরোক্ষ অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রভাব ও মানসিক অবস্থা – সবই শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গঠনের সঙ্গে যুক্ত।
দক্ষতার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আত্মদক্ষতা বিকাশের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। উশের একটি কৌশল প্রস্তাব করেন যেটি গণিত শিক্ষকরা ব্যবহার করতে পারেন শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে—“শিক্ষাদান এমনভাবে করা যাতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সর্বাধিক হয়, তা যত ছোটই হোক না কেন।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক অ্যালগরিদম বা বীজগণিত শেখানোর সময় সঠিকতা যাচাই করার কৌশল শেখাতে পারেন। যেমন প্রশ্ন: ১৮ ÷ ৬ =? শিক্ষক শিখাতে পারেন যে ভাগফলকে গুণ করে যদি ভাগফল × ভাজক = মূল সংখ্যা হয় (৩ × ৬ = ১৮), তবে উত্তর সঠিক। যারা এই কৌশল শিখেছে ও ব্যবহার করেছে, তারা গণিতে দক্ষতার অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে।<ref>Ramdass, D., & Zimmerman, B. J. (2008). ...</ref> শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার মধ্যে থেকে চ্যালেঞ্জিং কাজ দেওয়া তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উশেরের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই চারটি উৎসের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও রয়েছে। পরোক্ষ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে অভিভাবক ও শিক্ষকের গণিত অভিজ্ঞতার প্রভাব আছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো, এক শিক্ষার্থী তার অভিভাবকদের গণিতে ব্যর্থতাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে—“আমি আলাদা হতে পারি।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> এটি বোঝায় যে কেবল সফলতাই নয়, ব্যর্থতাও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা অন্যদের অভিজ্ঞতা কীভাবে তারা ব্যাখ্যা করে, তাতেও প্রভাব ফেলে। সামাজিক প্রভাবের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অভিভাবক ও শিক্ষকের বার্তা শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বিশ্বাসে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, যদি বাবা-মা বলেন গণিত একটি জন্মগত ক্ষমতা—“তোমার আছে বা নেই”—তাহলে সন্তানরা নিজেকে অক্ষম মনে করে আত্মবিশ্বাস হারাতে পারে। এই ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব মানসিক অবস্থাতেও প্রভাব ফেলে।
==== শিক্ষকের আত্মদক্ষতা ====
শিক্ষকের শিক্ষাদানের আত্মদক্ষতা বলতে বোঝায় যে, তারা বিশ্বাস করেন তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেন,<ref>Woolfolk, A. E., & Hoy, W. K. (1990). ...</ref> যেমন একাডেমিক পারফরম্যান্স, আত্মদক্ষতা, অনুপ্রেরণা, মনোভাব এবং আগ্রহ। উচ্চ আত্মদক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন ইতিবাচক মনোভাব, বিষয়বস্তুর প্রতি গভীর জ্ঞান এবং শিক্ষণ কৌশলের জ্ঞান।
গণিত বিষয়ে শিক্ষকের মনোভাব শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় চারটি গ্রুপ—প্রাথমিক শিক্ষক (কে-৪), মাধ্যমিক শিক্ষক, অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এবং বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক—এর মধ্যে সাক্ষাৎকার ও একটি মনোভাব স্কেল পূরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মনোভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।<ref>Kolstad, R. K., Hughes, S., & Briggs, L. D. (1994). ...</ref> এতে দেখা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৬০% অত্যন্ত ইতিবাচক, ৩০% নিরপেক্ষ, ১০% অত্যন্ত নেতিবাচক), এবং প্রাথমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৪৩% ইতিবাচক, ২৩% নিরপেক্ষ, ৩৪% নেতিবাচক)। ফলাফল নির্দেশ করে প্রাথমিক স্তরে গণিতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
নেতিবাচক মনোভাব থাকলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখাতে সক্ষম—এই বিশ্বাসটিও হারিয়ে ফেলেন, যার সঙ্গে আত্মদক্ষতা জড়িত। শিক্ষকের শিক্ষাদান কৌশল ও বিষয়বস্তুর জ্ঞানও তাদের আত্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গণিত বিষয়ক শিক্ষকের জ্ঞান ও আত্মদক্ষতার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, যা দেখায়—যাদের বিষয়বস্তু ও কৌশলগত জ্ঞান বেশি, তারা শিক্ষাদানে বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারার বিশ্বাস রাখেন।<ref>Fox, A. M. (2015). ...</ref>
শিক্ষকের আত্মদক্ষতা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের শেখায় প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীর একাডেমিক সাফল্য। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কে-১২ স্তরের শিক্ষকদের আত্মদক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাফল্যের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত।<ref>Chears-Young, J. B. (2015). ...</ref> এছাড়া, এটি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা, আগ্রহ এবং শেখার কৌশলেও প্রভাব ফেলে। আত্মদক্ষ শিক্ষকরা প্রশংসা ব্যবহার করেন, সমালোচনার বদলে, এবং অধিক গ্রহণযোগ্য ও লক্ষ্যভিত্তিক হন।<ref>Kagan, D.M. (1992). ...</ref> অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ আত্মদক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখার কৌশল শেখান এবং বেশি একাডেমিক সময় দেন, যা পারফরম্যান্স বাড়ায়।<ref>Ghaith, G., & Yaghi, H. (1997). ...</ref>
=== স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা ===
অনেকে মনে করেন, শিক্ষার্থীদের গণিতে খারাপ ফলাফল তাদের অযোগ্যতা বা পড়াশোনার ঘাটতির কারণে হয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। অনেক সময় খারাপ ফলাফল হয় কারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কৌশল ব্যবহার করতে জানে না বা '''স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা'''র অভাব রয়েছে।
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা হলো, শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার সমস্ত দিক নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে—পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরবর্তী মূল্যায়ন পর্যন্ত।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref> এই শেখার তিনটি মূল উপাদান আছে।
প্রথমটি হলো, মেটাকগনিটিভ সচেতনতা—মানে কীভাবে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা তৈরি করে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
দ্বিতীয়টি হলো, কৌশল ব্যবহার—অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কী কী স্ব-নিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগ করতে পারে। দক্ষ শিক্ষার্থীরা বেশি কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে।<ref>Zimmerman, B. J., & Martinez-Pons, M. (1990). ...</ref>
তৃতীয়টি হলো, অনুপ্রেরণা নিয়ন্ত্রণ—যেখানে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তাদের দক্ষতা ও পারফরম্যান্সে ইতিবাচক বিশ্বাস রাখে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শিক্ষার্থীর গণিত সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই দক্ষতা বাড়লে, তারা ভালো কৌশল ব্যবহার করে এবং কীভাবে গণিত পড়তে হয় তা ভালোভাবে বোঝে, ফলে তাদের গণিতের ফলাফল উন্নত হয়।
==== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম নিয়ে একটি গবেষণা ====
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচালিত একটি গবেষণায় একটি গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম গঠিত হয় এবং ফলাফল থেকে দেখা গেছে, যখন শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শেখানো হয়, তখন তাদের গণিতে অর্জনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই গবেষণায় প্রাথমিক স্তরের গণিতে কম ফলাফলপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৩০ জনকে পরীক্ষামূলক দলে রাখা হয়, যারা এই গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রামে অংশ নেয়।
এই প্রোগ্রামটি ৩০টি সেশনে বিভক্ত, যার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা বাড়ানো, তাদের মোটিভেশন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা উন্নত করা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ কৌশল শেখানো। (সেশন ১-৫) প্রোগ্রামটি শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বিশ্বাস ব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমে। এতে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ, আত্ম-দক্ষতা, শেখার লক্ষ্য এবং প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কৃতিত্ব বোঝানোর মূল্য শেখানো হয় গল্প বলার মাধ্যমে এবং দলগত আলোচনায় অংশগ্রহণ করিয়ে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> (সেশন ৬-১১) এরপর তাদের সামনে জিমারম্যানের প্রস্তাবিত ১৪টি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল উপস্থাপন করা হয়।<ref>Zimmerman, B. (2000). Attaining self-regulation: A social cognitive perspective. In M. Boekaerts, P. R. Pintrich, & M. Zeidner (Eds.), Handbook of self-regulation (pp.13-39). San Diego, CA: Academic Press.</ref> প্রতিটি কৌশলের ব্যবহার এবং গণিতে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে কৌশলগুলো চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হয়। (সেশন ১২-৩০) শেষে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গণিত পাঠে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের নিজেদের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হয় লক্ষ্য নির্ধারণ, আত্মমূল্যায়ন এবং আত্ম-প্রতিক্রিয়া ফর্ম পূরণের মাধ্যমে। প্রোগ্রামের ৩০টি সেশন শেষ করার পর শিক্ষার্থীদের একটি গণিত পরীক্ষার পাশাপাশি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ফলাফল থেকে দেখা যায়, যারা প্রোগ্রামে অংশ নেয় তারা উভয় পরীক্ষাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফলাফল করে যাদের অংশগ্রহণ ছিল না তাদের তুলনায়।
===== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ =====
{| class="wikitable"
!কৌশলসমূহ
!গণিতে প্রয়োগ
|-
|আত্ম-মূল্যায়ন
|সঠিক পদ্ধতিতে প্রশ্নের যথার্থ উত্তর মিলিয়ে দেখা।
|-
|সংগঠন ও রূপান্তর
|প্রশ্নকে গুছিয়ে নেয়া, যেমন গ্রাফ, সমীকরণ, চিত্র ব্যবহার করা।
|-
|লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা
|লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা।
|-
|নোট নেয়া ও নজরদারি
|ক্লাসে নোট নেয়া এবং সমীকরণ গুছিয়ে রাখা।
|-
|পরিবেশ গঠন
|উপযুক্ত পরিবেশে অধ্যয়ন করা।
|-
|আত্ম-প্রতিক্রিয়া
|নিজের সাফল্য বা ব্যর্থতার জন্য নিজেই পুরস্কার বা শাস্তি নির্ধারণ।
|-
|অনুশীলন ও মুখস্থকরণ
|বিভিন্ন ধরনের গণিত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শেখা।
|-
|তথ্য অনুসন্ধান
|অ-সামাজিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ।
|-
|সামাজিক সহায়তা চাওয়া
|বন্ধু, শিক্ষক বা অন্য প্রাপ্তবয়স্কদের সাহায্য চাওয়া।
|-
|পুনরায় পর্যালোচনা করা
|পাঠ্যবই, নোট বা হোমওয়ার্ক পুনরায় পড়া।
|}
৩০টি সেশনে অংশ নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের গণিত অর্জন এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতায় লক্ষণীয় উন্নতি দেখা গেছে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এটি প্রমাণ করে যে, কম অর্জনক্ষম শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শিখন কৌশল শেখানো সম্ভব এবং কার্যকর। যখন তারা এই দক্ষতা অর্জন করে এবং প্রক্রিয়াভিত্তিক চিন্তায় মনোযোগ দেয়, তখন তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে। উন্নতির সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে শুরু করে। নিজেদের প্রশংসা ও পুরস্কার প্রদান তাদের আরও উন্নতির দিকে ধাবিত করে। এর ফলে তাদের আত্ম-দক্ষতা এবং গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ইতিবাচক চক্র তৈরি করে: শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারা গণিতে সফল হতে পারে, তখন তারা আরও কঠোর পরিশ্রম করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার সঠিক কৌশল প্রয়োগে সক্ষম হয়।
ঐতিহ্যগত শ্রেণিকক্ষে গণিতকে সাধারণত একটি উত্তর-কেন্দ্রিক বিষয় হিসেবে দেখা হয়, প্রক্রিয়া-কেন্দ্রিক নয়। গতি ও নির্ভুলতার ওপর গুরুত্ব দিলে, শিক্ষার্থীরা কেবল তথ্য মুখস্থ করতে শেখে, কিন্তু গণিত বুঝে না। এছাড়া, ঐ পরিবেশে শেখার প্রবাহ শুধুমাত্র শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীর দিকে হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ তারা যখন তাদের শেখার ওপর নিয়ন্ত্রণ পায় না, তখন তারা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শেখে না কিংবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা প্রয়োগেও আগ্রহী হয় না।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> অতএব, আত্মনিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ন্ত্রণ দিলে তারা শেখার সময় নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে শেখে। গণিত শিক্ষকরা জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যখন লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও নিজেদের কাজ মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে, তখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল চর্চা করার সুযোগ পায় যা তাদের গণিত অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
উচ্চ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিম্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তুলনায় আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল ভালোভাবে প্রয়োগ করতে পারে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এর কারণ হলো, বড় শিক্ষার্থীরা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার ধারণা ও কৌশলগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে। এছাড়া কিছু কৌশল যেমন পরিকল্পনা লেখা, শেখার উপাদান গুছিয়ে রাখা—এসবের জন্য পূর্বজ্ঞান দরকার হয়। ফলে বড়দের এসব কৌশল শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় এবং তারা গণিত অর্জনে তুলনামূলক বেশি উন্নতি করে।
== শিক্ষণ বিষয়ক প্রভাব ==
=== গণিত শেখার অক্ষমতা ===
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো যেগুলো জ্ঞানচর্চা, কার্যস্মৃতি এবং গণিত শেখার অক্ষমতা নিয়ে হয়েছে, সেগুলো দেখায় যে গণিতে “গণনা” এবং “সমস্যা সমাধান” দুটি আলাদা শেখার অক্ষমতা আছে। এতদিন গণিত মূল্যায়ন সাধারণ ছিল এবং এই দুই ডোমেইনের পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া হতো না। শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সময় পেশাদারদের উচিত এই দুটি দক্ষতা আলাদাভাবে বিবেচনা করা। শিক্ষকদেরও উচিত শিশুদের শেখানোর সময় এই আলাদা ডোমেইন দুটি চিন্তা করে পরিকল্পনা করা। গণিত শেখাতে কিছু পরামর্শ ও টুলস শিক্ষার্থীদের উপকারে আসতে পারে:
=== বাহ্যিক উপস্থাপন ===
গণিতে সমস্যা সমাধান অনেক সময় মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে, তাই বাহ্যিক উপস্থাপন অনেক উপকারী হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণিতের ধারণা স্পষ্ট করে তুলে ধরে, যাতে তারা সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বাহ্যিক উপস্থাপনের কিছু উদাহরণ হলো—সমাধানসহ উদাহরণ, অ্যানিমেশন ও চিত্র।
==== সমাধানসহ উদাহরণ ====
ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো একটি দরকারী শিক্ষামূলক পদ্ধতি যা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গণিত শেখার সুবিধার্থে ব্যবহার করেন। গবেষণা দেখায় যে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো ব্যবহার করে এমন শিক্ষার্থীদের বাড়িয়ে তুলতে পারে, যাদের গণিতের কর্মক্ষমতা স্তর কম। একটি কারণ হলো যখন শিক্ষার্থীদের সমাধান করার জন্য কোনও সমস্যা দেওয়া হয়, তখন তাদের সর্বোত্তম লক্ষ্য গণিত শেখার পরিবর্তে সমস্যাটি সমাধান করা। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণ দেওয়া হয়, তখন তারা আসলে শিখে এবং তাদের নিজেরাই উপকরণগুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।<ref>Renkl, A. (1999). Learning Mathematics from worked-out examples: Analyzing and Fostering self-explanations. ''European Journal of Psychology of Education, 14''(4), 477-488.</ref> সুতরাং, কাজ করা উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ইচ্ছাকৃত শিক্ষার উপর আরও বেশি ফোকাস করে। শিক্ষার্থীরা সাধারণত গাণিতিক তত্ত্ব বা প্রমাণ বুঝতে পারে না কারণ তারা বুঝতে জটিল। যাইহোক, পরিশ্রমী উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের শেখার অর্জন এবং গণিতের ধারণাটি বোঝার জন্য সহজ। সুস্পষ্ট নির্দেশনা না দিয়ে, শিক্ষকরা কেবল শিক্ষার্থীদের উল্লেখ করার জন্য উদাহরণ হিসাবে গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করবেন তার পদক্ষেপগুলো দেখায়। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। তারপরে, শিক্ষার্থীদের নিজেরাই একই ধরণের গাণিতিক সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করার স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। সুতরাং, তারা অনেক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রেফারেন্স হিসাবে কাজ করা উদাহরণগুলো ব্যবহার করতে পারে।<ref>Tu, C-T. (2011). An Instructional experiment: Using worked-out examples in mathematics problem-solving of elementary school students. ''Bulletin of Educational Psychology, 43''(1), 25-50.</ref> শিক্ষকরা যে পরিশ্রমী উদাহরণ দিয়েছেন তা উল্লেখ করে তারা কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনাকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করতে পারে। অতএব, এটি শিক্ষার্থীদের স্ব-নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাড়িয়ে তুলতে পারে কারণ তারা সমস্যা সমাধানে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা অনুশীলন করছে। এই '''মেটাকগনিটিভ''' কৌশলটি শিক্ষার্থীদের বিশেষত গাণিতিক শব্দ সমস্যাগুলোতে তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। মেটাকগনিটিভ কৌশলগুলোর মধ্যে স্ব-জিজ্ঞাসা, স্ব-মূল্যায়ন, সংক্ষিপ্তকরণ এবং সমস্যাটি চিত্রিত করা অন্তর্ভুক্ত।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> এই কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান অর্জন করার সময় কাজ করা উদাহরণগুলো থেকে আরও গভীর বোঝার জন্য তৈরি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করতে এবং তাদের সমাধান করতে পারে তাদের উচ্চতর গণিতের কৃতিত্ব রয়েছে। যখন শিক্ষার্থীরা নিজেরাই গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করা যায় তার পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা করে, তখন তারা তাদের প্রতিফলিত চিন্তাভাবনা অনুশীলন করে যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তার বাইরেও বৃহত্তর বোঝার তৈরি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শিক্ষার্থীরা গণিতের নতুন এবং পরিশীলিত জ্ঞান বিকাশ করতে পারে কারণ তারা তাদের পূর্ব জ্ঞানের সাথে নতুন শেখা উপকরণগুলোকে একত্রিত করে।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> উপরন্তু, ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো গ্রুপ সেটিংসেও ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে শিক্ষার্থীরা গাণিতিক সমস্যা সমাধানে তাদের সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করতে পারে। গবেষণায় দুটি উপায় পাওয়া গেছে যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণ ব্যবহার করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1348/000709903322591181</ref> একটা উপায় হলো, যারা কাজের উদাহরণ বোঝে তারা যারা বোঝে না তাদের বোঝাতে পারবে। অন্য উপায়টি হলো শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তি এবং যুক্তি দক্ষতা ব্যবহার করে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী উদাহরণগুলো ব্যাখ্যা করে। উভয় উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণগুলোর বিশদ আলোচনা করে একটি সামাজিক ইন্টারেক্টিভ সেটিংয়ে শেখার সাথে জড়িত। একটি সামাজিক সেটিংয়ে শেখা উপকরণগুলোর বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করতে পারে কারণ শিক্ষার্থীরা উদাহরণগুলো আরও গভীরভাবে প্রসারিত করছে। একটি স্পষ্ট বোঝার জন্য তারা কাজ করা উদাহরণগুলোর সাথে তাদের যে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471.</ref> তাই, শিক্ষার্থীদের উচিত ছোট দলে ভাগ হয়ে উদাহরণগুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া প্রতিফলিত করে নতুন জ্ঞান অর্জন করা।
==== অ্যানিমেশন ====
গণিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে অ্যানিমেশন একটি দারুণ কার্যকর শিক্ষণ উপকরণ হিসেবে বিবেচিত। যেহেতু গণিত অনেক সময় বিরক্তিকর এবং অনাকর্ষণীয় মনে হতে পারে, তাই অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত শেখার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক বলে দাবি করা হয়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
যেকোনো গণিত সমস্যার সমাধান করার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যাটি চিহ্নিত করা এবং কী সমাধান করতে হবে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে, যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সমস্যাটি অনুবাদ বা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন অ্যানিমেশন সবচেয়ে কার্যকর হয়ে ওঠে কারণ এতে চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা থাকে যা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নটি ব্যাখ্যা করা সহজ করে তোলে। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীরা শুধুই সমস্যার নোট নেয়, তখন তারা কেবল পাঠ্য অনুলিপি করে, যার ফলে সমস্যার প্রকৃত অর্থ বোঝা সম্ভব হয় না। তবে যদি সমস্যার ব্যাখ্যার পাশাপাশি একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে সমস্যার পটভূমি।
উদাহরণস্বরূপ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ ও বিয়োগের ধারণা পাঠ্যপাঠের মাধ্যমে বোঝানো কঠিন হতে পারে। কিন্তু, যখন একটি সমস্যার আগের ও পরের অবস্থা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়, তখন এটি একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে পারে। যোগ ও বিয়োগ ভিত্তিক সমস্যার ক্ষেত্রে, অ্যানিমেশন বস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাধান ব্যাখ্যা করতে পারে। এছাড়াও, অ্যানিমেশন বিমূর্ত গণিত তত্ত্বকে দৃশ্যমান বস্তু, নির্দিষ্ট ফলাফল এবং বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে, অ্যানিমেশন ব্যবহার করে গণিতের বিমূর্ত ধারণাগুলোকে নির্দিষ্ট উদাহরণের সঙ্গে যুক্ত করে শেখানো যায়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
অ্যানিমেশন দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে বিমূর্ত নীতিগুলোর অধিগ্রহণ এবং উদাহরণ বিশ্লেষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও উদাহরণ বিশ্লেষণ একটি কার্যকর শিক্ষণ কৌশল হিসেবে পরিচিত, তবুও অ্যানিমেশন এই উদাহরণগুলোকে আরও উন্নত করতে পারে।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref> উদাহরণ বিশ্লেষণ সব সময় চিত্র সহ হয় না, বরং কেবল পাঠ্য থাকতে পারে। তাই, যদি প্রতিটি ধাপের জন্য চিত্র উপস্থাপন থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি কল্পনা করতে পারে। শিক্ষার্থীরা ব্যাখ্যা ও চিত্রের মাধ্যমে উদাহরণগুলো আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। ফলস্বরূপ, শিক্ষকদের উচিত অ্যানিমেশনকে একটি শিক্ষণ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গণিত শিক্ষাকে আরও সুদৃঢ় করা।
==== রেখাচিত্র ====
তথ্যভিত্তিক রেখাচিত্র তৈরি করা একটি কঠিন কাজ, কারণ শিক্ষার্থীদের শুধু মৌখিক তথ্যকে চিত্রে রূপান্তর করলেই হয় না, বরং সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চিহ্নিত ও একত্রিত করে পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করতে হয়।<ref>van Garderen, D., Scheuermann, A., & Poch, A. (2014). Challenges students identified with a learning disability and as high-achieving experience when using diagrams as a visualization tool to solve mathematics word problems. ZDM Mathematics Education, 46, 135–149.</ref>
লারকিন এবং সাইমন বিশ্বাস করতেন যে, অনুচ্ছেদ ভিত্তিক উপস্থাপনার তুলনায় চিত্রভিত্তিক উপস্থাপন আরও সহজ ও কার্যকর, বিশেষত অনুসন্ধান, মেলানো এবং উপসংহারের ক্ষেত্রে। প্রথমত, এটি শব্দ সমস্যার উপাদানগুলোর মধ্যে টপোগ্রাফিক এবং জ্যামিতিক সম্পর্ক স্পষ্টভাবে ধরে রাখে, ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পেতে সহজতর হয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলো একত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ থাকায় এটি বিমূর্ত উপস্থাপনা ও চিত্রচিহ্নের মধ্যে সম্পর্ক পরিষ্কার করে তোলে। তৃতীয়ত, যদি সমস্যাটি চিত্র এঁকে তৈরি করা হয়, তবে মেমরি লোড কমে যায় কারণ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখতে পারে।<ref>Larkin, J., & Simon, H. (n.d.). Why a Diagram is (Sometimes) Worth Ten Thousand Words. Cognitive Science, 65-100.</ref>
অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্রের ব্যবহার সমস্যার সমাধান দক্ষতা বাড়াতে পারে।
বানার্জি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত শব্দ সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহার করার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্র তৈরির পদ্ধতি (যেমন রেখাচিত্র আঁকা ও লেবেলিং) গণিত সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের অর্জন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।<ref>Banerjee, B. (2011). The effects of using diagramming as a representational technique on high school students' achievement in solving math word problems. Dissertation Abstracts International Section A, 71, 394</ref>
[[চিত্র:Percentage_of_correct_answers_between_the_Japanese_and_New_Zealand_students.jpg|থাম্ব|জাপান এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রেখাচিত্র ব্যবহার করে গণিত শব্দ সমস্যার সঠিক উত্তরের শতাংশের তুলনা]]
এক গবেষণায়, উসাকা, মানালো এবং ইচিকাওয়া জাপান ও নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের তুলনা করেন।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref> জাপানি শিক্ষার্থী একটি একক বস্তু ভিত্তিক রেখাচিত্র ব্যবহার করেছিল, এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থী দুটি মাত্রার বস্তু ব্যবহার করেছিল। গবেষণায় দেখা যায় যে, নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের সঠিক উত্তরের হার জাপানি শিক্ষার্থীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর কারণ হলো, রেখাচিত্র উপস্থাপনা সমস্যার বাক্যগুলোকে অবস্থানের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট স্থানে বিস্তারিতভাবে তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং সমস্যা বুঝতে সুবিধা হয়।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref>
শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে হলে, শিক্ষককে প্রথমে তাদের শেখাতে হবে— ১) রেখাচিত্র কী, ২) সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহারের গুরুত্ব, ৩) কখন রেখাচিত্র ব্যবহার করতে হবে, ৪) কোন ধরণের রেখাচিত্র কোন সমস্যায় প্রযোজ্য, ৫) কীভাবে রেখাচিত্র তৈরি করতে হয়, এবং ৬) কীভাবে রেখাচিত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্রের মৌলিক ধারণাগুলো জানা জরুরি কারণ সব গণিত সমস্যায় রেখাচিত্র প্রযোজ্য নয়। উসাকা ও মানালো দেখিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা সাধারণত দৈর্ঘ্য ও দূরত্ব সম্পর্কিত শব্দ সমস্যায় রেখাচিত্র ব্যবহার করে, কারণ এসব সমস্যা সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং বাস্তব সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।<ref>Uesaka, Y., & Manalo, E. (2012). Task-related factors that influence the spontaneous use of diagrams in math word problems. Applied Cognitive Psychology, 26, 251–260.</ref>
এই ধারণাগুলো শেখানোর পর, শিক্ষকরা তিন ধাপের একটি পদ্ধতি— "জিজ্ঞাসা করো, করো, যাচাই করো"— ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।<ref>van Garderen, D., & Scheuermann, A. (2015). Diagramming word problems: A strategic approach for instruction. Intervention in School and Clinic</ref> ভ্যান গার্ডেরেন এবং শুয়ারম্যান পরামর্শ দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কোন সমস্যাটি সমাধান করতে হবে তা শনাক্ত করবে; এরপর একটি রেখাচিত্র আঁকবে; শেষে রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যাটি সমাধান করবে। উদাহরণস্বরূপ, সমস্যার প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে পেতে শিক্ষার্থীরা কী-শব্দ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে এবং সমস্যায় দেওয়া তথ্য সঠিকভাবে স্থাপন করতে পারে।<ref>Walker, D. W., & Poteet, J. A. (1989-90). A comparison of two methods of teaching mathematics story problem-solving with learning disabled students. National Forum of Special Education Journal, 1, 44-51.</ref>
সারসংক্ষেপে, রেখাচিত্র গণিত সমস্যার সমাধানে একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে; এটি শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তায় সহায়তা করে এবং বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
=== অ্যালগরিদম ===
অ্যালগরিদম হলো একাধিক ধাপের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীদের গণিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যদি তারা প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে, তাহলে তারা প্রতি বারই একটি সঠিক উত্তর বের করতে সক্ষম হয়। অ্যালগরিদম সাধারণত পুনরাবৃত্ত ক্রমের উপর ভিত্তি করে এবং এটি যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগে প্রযোজ্য। অ্যালগরিদম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ধাপে কী ঘটছে তা ব্যাখ্যা করতে শেখে এবং ভুল হলে তা শনাক্ত করতে পারে। এটি তাদের সমস্যা সমাধানের সময় প্রতিটি ধাপে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। একাধিক ধাপ বিশিষ্ট সমস্যার সমাধানে, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে অ্যালগরিদম স্মরণ করে মানসিকভাবে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়।
শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখানো যে অ্যালগরিদম সবসময় ধারাবাহিকভাবে সমাধান করতে হবে; কোনও ধাপ বাদ দেওয়া যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, যখন শিক্ষার্থীরা ৫+৮×৬ সমস্যার সমাধান করে, তখন তাদের বুঝতে হবে যে প্রথমে গুণ করতে হবে, এরপর যোগ করতে হবে। যদি তারা সঠিক ক্রম অনুসরণ করে, তাহলে তারা সবসময় সঠিক উত্তর পাবে।
তবে, পল কব একটি গবেষণায় গ্রেড ১ ও ২-এর শিক্ষার্থীদের ডাবল ডিজিট যোগের সমস্যা সমাধান নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি দেখেছেন, ১৬+৯ সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে। কিন্তু যখন তাদের ঐ একই সমস্যা প্রচলিত স্কুল অ্যালগরিদম (সংখ্যা হাতে থাকা সহ) ব্যবহার করে উল্লম্বভাবে সমাধান করতে বলা হয়, তখন অনেকেই ভুল উত্তর দেয়। তিনি উপসংহার টানেন যে, প্রচলিত অ্যালগরিদমে শিক্ষার্থীরা কেবল নিয়ম অনুসরণ করতে চেষ্টা করে, কিন্তু কিভাবে অ্যালগরিদমটি কাজ করে তা প্রকৃতপক্ষে বুঝে না বলেই তাদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Cobb, P. (1991). Reconstructing Elementary School Mathematics. Focus on Learning Problems in Mathematics, 13(2), 3–32.</ref>
জে. এস. ব্রাউন এবং বার্টন দেখেছেন যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে তাদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য এক বা একাধিক ভুল অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে। যদিও অনেক ভুল অ্যালগরিদম সঠিক উত্তর দিতে পারে, তবুও তা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।<ref>Brown, J.S., Burton, R.B. (1978). Diagnostic models for procedural bugs in basic mathematical skills. Cognitive Science, 2, 155-192</ref> উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিশুর মনে একটি পূর্বধারণা ছিল যে বিয়োগ অ্যালগরিদম মানে হলো প্রতিটি কলামে উপরের সংখ্যাটির সঙ্গে নিচের সংখ্যাটি তুলনা করে ছোটটি বড় থেকে বিয়োগ করা, উপরের সংখ্যাটি বড় কি না, তা না জেনেই। বাম পাশের চিত্রটি ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম সবসময় সঠিক সমাধান দিতে পারে না।
[[চিত্র:Faulty_algorithm_of_subtraction.jpg|থাম্ব|একটি চিত্র যা ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম কাজ করে না]]
ব্রাউন এবং বার্টন উল্লেখ করেছেন, এমনকি যেসব শিশু বিয়োগের অ্যালগরিদম সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে, তারা হয়তো মনে করে যে তারা বিয়োগ প্রক্রিয়াটি বুঝে ফেলেছে। এই ভুল ধারণা তাদের (a) ও (c) অংশে সঠিক উত্তর দিতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু (b) ও (d) অংশে ভুল উত্তর দিবে, কারণ সেসব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কলামে উপরের সংখ্যা নিচের চেয়ে ছোট।
নাগেল এবং সুইঙ্গেন মনে করেন, ধারক বা ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো কার্যকারিতা এবং নির্ভুলতা বাড়াতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝার সক্ষমতা বাড়াতে ব্যর্থ হয়।<ref>Nagel, N., & Swingen, C. C. (1998). Students’ explanations of place value in addition and subtraction. Teaching Children Mathematics, 5(3), 164–170.</ref>
সুতরাং, ধারাবাহিক অ্যালগরিদম ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা যাতে সফল হয়, এর জন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জায়গা ভিত্তিক চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে ধাপে ধাপে সমাধান শেখানো উচিত। যেমন, সঠিকভাবে সংখ্যাগুলো সাজানো এবং ফাঁকা জায়গা রেখে লেখা শেখাতে হবে—বিশেষ করে কলামভিত্তিক বিয়োগ, একাধিক অঙ্কের গুণ ইত্যাদিতে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা নিজের অ্যালগরিদম তৈরি করে সমস্যার সমাধান করে। শিক্ষকরা তাদের মনের মধ্যে নিমোনিকস ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন; এই পদ্ধতি সমস্যার ধাপগুলো মনে রাখতে সাহায্য করে।<ref>Nelson, P. M., Burns, M. K., Kanive, R., & Ysseldyke, J. E. (2013). Comparison of a math fact rehearsal and a mnemonic strategy approach for improving math fact fluency. Journal Of School Psychology, 51(6), 659-667. doi:10.1016/j.jsp.2013.08.003</ref> যেমন, PEDMAS শিক্ষার্থীদের বলে দেয় কোন ক্রমে গাণিতিক কাজ করতে হবে। শুধু বাম থেকে ডানে গাণিতিক অপারেশন করলেই চলবে না, আগে বন্ধনীর কাজ শেষ করতে হবে।<ref>Jeon, K. (2012). Reflecting on PEMDAS. Teaching Children Mathematics, 18(6), 370-377.</ref> পাশাপাশি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবেন যেন তারা প্রথমে পুরো সমস্যাটি পড়ে বোঝে, এরপর সেটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কোন অংশে কোন অ্যালগরিদম লাগবে তা নির্ধারণ করে। প্রতিটি ধাপে তাদের উত্তর পুনর্বিবেচনা করতে শেখানো উচিত। ধাপগুলো লিখে রাখলে শিক্ষার্থীরা ভুল ধরতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
=== শব্দভিত্তিক সমস্যার কৌশল ===
শব্দভিত্তিক সমস্যা সব শিশুদের জন্যই একটি বিশেষ ধরণের চ্যালেঞ্জ, তবে যাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে শেখার অসুবিধা রয়েছে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন। গাণিতিক সমস্যা ও শব্দভিত্তিক সমস্যার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো ভাষাগত তথ্যের সংযুক্তি। অর্থাৎ, শিশুদের প্রথমে সমস্যাটির লেখা পড়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য বাছাই করে সেটিকে সংখ্যাগত সমস্যায় রূপান্তর করতে হয়। এরপর তাদের নির্ধারণ করতে হয় কোন তথ্যটি প্রয়োজনীয় এবং কোনটি অনুপস্থিত।
শব্দভিত্তিক সমস্যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বোঝা কঠিন, তবে সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন শিক্ষার্থীর প্রথম ভাষা ইংরেজি না হয়। জ্যান ও রদ্রিগেস (২০১২)<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref> এর মতে, যাদের ইংরেজি দ্বিতীয় ভাষা, তারা ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে সমস্যার বক্তব্য বুঝতে পারে না। তারা প্রায়শই মূল শব্দের উপর নির্ভর করে অথবা বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করে, ফলে ভুল সমাধান আসে। মূল শব্দের উপর নির্ভরশীলতা শিক্ষার্থীদের সমস্যা বোঝা থেকে বিচ্যুত করে। "মূল শব্দের ব্যবহার দৈনন্দিন ভাষা ও গাণিতিক ভাষার মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।"<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, P. 156, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref>
এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে শ্রেণিকক্ষে আলোচনা বা ছোট ছোট দলের আলোচনা শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি কী এবং কী জানতে চাওয়া হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের পড়া, বোঝা, মতামত বিনিময় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা ও সমাধান নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিলে তারা সমস্যাটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে।
শব্দভিত্তিক সমস্যা শেখানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সুযোগ দেবেন যেন তারা সমস্যার অর্থ নিয়ে চিন্তা ও আলোচনা করতে পারে এবং সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে একাধিক সমাধান ভাবতে পারে। এই পদ্ধতি ভাষাগত সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থী এবং গাণিতিক শেখার সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর।
শিক্ষা প্রতিবন্ধী পরিষ <ref>http://www.council-for-learning-disabilities.org/mathematics-disabilities</ref> সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য কিছু কৌশল প্রস্তাব করে:
''ফাস্ট ড্র'' (মার্সার এবং মিলার, ১৯৯২): আপনি কী সমাধান করছেন তা খুঁজে বের করুন।
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, "সমস্যাটির অংশগুলি কী?"
সংখ্যাগুলি সেট আপ করুন।
চিহ্নটি বেঁধে দিন।
চিহ্নটি আবিষ্কার করুন।
সমস্যাটি পড়ুন।
উত্তর দিন, অথবা আঁকুন এবং পরীক্ষা করুন।
উত্তর লিখুন।
<nowiki>''প্রশ্ন এবং ক্রিয়া''</nowiki> (রিভেরা, ১৯৯৪)
পদক্ষেপ
ক. সমস্যাটি পড়ুন।
প্রশ্ন
এমন কোন শব্দ আছে যা আমি জানি না?
আমি কি প্রতিটি শব্দের অর্থ জানি?
আমার কি সমস্যাটি পুনরায় পড়ার প্রয়োজন?
সংখ্যার শব্দ আছে?
ক্রিয়া
শব্দগুলি নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
সংজ্ঞাগুলি খুঁজে বের করুন।
পুনরায় পড়ুন।
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
খ. সমস্যাটি পুনরায় বর্ণনা করুন।
কোন তথ্য গুরুত্বপূর্ণ?
কোন তথ্যের প্রয়োজন নেই?
প্রশ্নটি কী জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে?
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
ক্রস আউট করুন।
নিজের শব্দে লিখুন।
গ. একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
তথ্যগুলো কী কী?
সেগুলো কীভাবে সংগঠিত করা যেতে পারে?
কত ধাপ আছে?
আমি কোন কোন ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করব?
একটি তালিকা তৈরি করুন।
চার্ট তৈরি করুন।
কৌশল ব্যবহার করুন।
ছোট সংখ্যা ব্যবহার করুন।
একটি ক্রিয়াকলাপ নির্বাচন করুন।
ঘ. সমস্যাটি গণনা করুন।
আমি কি সঠিক উত্তর পেয়েছি?
অনুমান করুন।
অংশীদারের সাথে পরীক্ষা করুন।
ক্যালকুলেটর দিয়ে যাচাই করুন।
ঙ. ফলাফল পরীক্ষা করুন।
আমি কি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি?
আমার উত্তর কি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে?
আমি কি প্রশ্ন/উত্তর পুনঃবক্তৃতা করতে পারি?
প্রশ্ন/উত্তর পরীক্ষা করুন।
একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
৩. <nowiki>''টিআইএনএস কৌশল''</nowiki> (ওওয়েন, ২০০৩)
শব্দ সমস্যা বিশ্লেষণ এবং সমাধানের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পদক্ষেপ এই সংক্ষিপ্ত রূপ দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চিন্তা: এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার কী করতে হবে তা নিয়ে ভাবুন এবং মূল শব্দগুলিকে বৃত্তাকার করুন।
তথ্য: এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বৃত্তাকার করুন এবং লিখুন; একটি ছবি আঁকুন; অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিন।
সংখ্যা বাক্য: সমস্যাটি উপস্থাপনের জন্য একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
সমাধান বাক্য: আপনার উত্তর ব্যাখ্যা করে এমন একটি সমাধান বাক্য লিখুন।
উদাহরণ: কাইল ৬টি বেসবল কার্ড কিনেছে। পরের দিন, সে তার সংগ্রহে আরও ১১টি কার্ড যোগ করেছে। তার কাছে মোট কতটি কার্ড আছে?
চিন্তা: +
তথ্য: ৬টি বেসবল কার্ড, ১১টি বেসবল কার্ড
সংখ্যা বাক্য: ৬ + ১১ =
সমাধান বাক্য: কাইলের সংগ্রহে ১৭টি বেসবল কার্ড রয়েছে।
৪. <nowiki>''সমস্যা সমাধান''</nowiki> (বীরশ, লিয়ন, ডেনকলা, অ্যাডামস, মোটস এবং স্টিভস, ১৯৯৭)
প্রথমে সমস্যাটি পড়ো।
প্রশ্নটি হাইলাইট করো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করো।
একটি পরিকল্পনা তৈরি করো।
সংখ্যাগুলো বোঝাতে চিত্র বা বস্তু ব্যবহার করো।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো।
তোমার কাজ যাচাই করো।
==== বীজগণিত শেখানোর জন্য কগনিটিভ টিউটর ====
১৯৮৫ সালে, অ্যান্ডারসন, বয়েল এবং রেইজার বুদ্ধিমান শেখানোর পদ্ধতিতে কগনিটিভ মনস্তত্ত্ব যুক্ত করেন। এরপর থেকে এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্রদের শেখানোর জন্য কগনিটিভ মডেল তৈরি করা হয়। এ নাম রাখা হয় কগনিটিভ টিউটরস।<ref name="anderson et al. 1995">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive Tutors: Lessons learned. Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167.</ref> সবচেয়ে জনপ্রিয় কগনিটিভ টিউটর হলো কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I।<ref name="k&c, 2006">Koedinger, K. R., & Corbett, A. (2006). Cognitive tutors. The Cambridge handbook of the learning sciences, 61-77.</ref> এটি তৈরি করেছে কার্নেগি লার্নিং, ইনকর্পোরেটেড। তারা এখন বীজগণিত I, II, বীজগণিতের সেতু, জ্যামিতি এবং ইন্টিগ্রেটেড ম্যাথ I, II, III সহ সম্পূর্ণ কগনিটিভ টিউটর® তৈরি করছে। কগনিটিভ টিউটর®-এ এখন স্প্যানিশ মডিউলও যুক্ত হয়েছে।
==== কীভাবে শেখাতে হবে ====
দুটি অন্তর্নির্মিত অ্যালগরিদম—'''''মডেল ট্রেসিং''''' এবং '''নলেজ ট্রেসিং''' শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। মডেল ট্রেসিং শিক্ষার্থীর প্রতিটি ধাপের ভিত্তিতে ঠিক সময়ে প্রতিক্রিয়া, অনুরোধে পরামর্শ এবং বিষয়ভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেয়।<ref name="anderson et al. 1995" /> নলেজ ট্রেসিং প্রতিটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান অনুযায়ী শেখার কাজ নির্ধারণ করে।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref name="k&c, 2006" />
তোমরা ''[[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি]]'' অধ্যায়ের ([[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি#কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি|২.৫.২ কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি]]) অংশে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারো কীভাবে কগনিটিভ টিউটর বীজগণিত শেখাতে সাহায্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, অনুরোধভিত্তিক পরামর্শ, বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা ও ব্যক্তিকৃত কাজের মাধ্যমে।
==== কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর মিশ্র প্রভাব ====
কগনিটিভ টিউটরের কার্যকারিতা নিয়ে পূর্ববর্তী গবেষণার প্রমাণ থেকে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানের তুলনায় কগনিটিভ টিউটর অধিক কার্যকর।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref>Koedinger, K. R. & Anderson, J. R. (1993). Effective use of intelligent software in high school math classrooms. In Proceedings of the World Conference on Artificial Intelligence in Education, (pp. 241-248). Charlottesv</ref><ref name="K&A&M">Koedinger, K., Anderson, J., Hadley, W., & Mark, M. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. Human-Computer Interaction Institute.</ref><ref>Corbett, A. T., & Anderson, J. R. (2001). Locus of feedback control in computer-based tutoring: Impact on learning rate, achievement and attitudes. In Proceedings of the SIGCHI Conference on Human Factors in Computing Systems (pp. 245–252). New York, NY, USA: ACM.</ref>
তবে, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন সায়েন্সেস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি সাম্প্রতিক স্বাধীন ও বৃহৎ আকারের গবেষণা ''ক্লিয়ারিংহাউস কী কাজ করে''<ref>What Works Clearinghouse (ED). (2016). Carnegie Learning Curricula and Cognitive Tutor[R]. What Works Clearinghouse Intervention Report. What Works Clearinghouse.</ref> কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I সম্পর্কিত ২২টি গবেষণার মধ্যে ৬টি পর্যালোচনা করে, যেখানে ৮ম থেকে ১৩শ গ্রেড পর্যন্ত ১২,৮৪০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১১৮টি স্থানে। গবেষকরা দেখতে পান, কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর বীজগণিত শেখার ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সাধারণ গণিত দক্ষতার ওপর কোনও উল্লেখযোগ্য বা প্রাসঙ্গিক প্রভাব দেখা যায়নি।
মরগান এবং রিটার,<ref>Morgan, P., & Ritter, S. (2002). An experimental study of the effects of Cognitive Tutor® Algebra I on student knowledge and attitude. Pittsburgh, PA: Carnegie Learning, Inc.</ref> ওকলাহোমার মুর শহরের পাঁচটি ভিন্ন স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত ক্লাসে একটি অভ্যন্তরীণ শিক্ষক-ভিত্তিক পরীক্ষামূলক গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গবেষণায় প্রতিটি শিক্ষককে অন্তত একটি কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ইন্টিগ্রেটেড ক্লাসরুম এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাসরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, যারা কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহার করে শিখেছিল তারা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফল করেছিল এবং গণিত বিষয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল।
কাবালো, জাকিউ এবং ভু<ref>Cabalo, J. V., Jaciw, A., & Vu, M. (2007). Comparative effectiveness of Carnegie Learning’s Cognitive Tutor® Algebra I curriculum: A report of a randomized experiment in the Maui School District. Palo Alto, CA: Empirical Education, Inc.</ref> হাওয়াইয়ের মাউই কাউন্টির পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর কার্যকারিতা পর্যালোচনার জন্য একটি র্যান্ডমাইজড গবেষণা পরিচালনা করেন। ছয় মাসের ব্যবহারের পর ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শেষে শিক্ষার্থীদের এনডব্লিউইএ বীজগণিত কোর্স সমাপ্তির অর্জন স্তর পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কগনিটিভ টিউটর® সফটওয়্যার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করুক বা না করুক, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর গণিতে উন্নতি দেখা যায়। তবে, যারা আগে দুর্বল ছিল, তারা ব্যবহার শুরু করার পর উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে, যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্কোরধারীদের চেয়ে বেশি ছিল।
ক্যাম্পুজানো, ডিনারস্কি, আগোদিনি এবং রাল<ref>Campuzano, L., Dynarski, M., Agodini, R., & Rall, K. (2009). The effectiveness of reading and mathematics software products: Findings from two student cohorts. Washington, DC: U.S. Department of Education, Institute of Education Sciences.</ref> একটি ২ বছরব্যাপী কংগ্রেস-অনুমোদিত গবেষণা পরিচালনা করেন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষণপদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য, যার দ্বিতীয় বছরে নয়টি দরিদ্র স্কুলে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন এবং শিক্ষকদের র্যান্ডমভাবে সফটওয়্যার ব্যবহারে অথবা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে ভাগ করে দেন। সব শিক্ষার্থীদের শরৎ ও বসন্তকালে ETS End-of-Course (ইটিএস এন্ড অফ কোর্স) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। দ্বিতীয় বছরে সফটওয়্যার ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা প্রথম বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখায়, যদিও পরীক্ষার স্কোরে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল সামান্য (p<০.৩)।
প্যান, গ্রিফিন, ম্যাককাফ্রে এবং কারাম<ref>Pane, J. F., Griffin, B. A., McCaffrey, D. F., Karam, R., Daugherty, L., & Phillips, A. (2013). Does an algebra course with tutoring software improve student learning?.</ref> কগনিটিভ টিউটর® যুক্ত বীজগণিত পাঠ্যক্রমের কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন। গবেষণা দুটি ধারাবাহিক শিক্ষাবর্ষজুড়ে চলে এবং সফটওয়্যারটি সপ্তাহে তিন দিন শিক্ষক-নির্দেশিত ক্লাসে এবং দুই দিন কম্পিউটার-নির্দেশিত ক্লাসে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বছর হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে শিক্ষাগত সাফল্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি (p<০.৪৬)। তবে দ্বিতীয় বছরে কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ শক্তিশালী ছিল (p<০.০৪), এবং হস্তক্ষেপকারী দলে যেসব শিক্ষার্থীর সাফল্য আগে কম ছিল, তাদের অগ্রগতি বেশি ছিল।
== শব্দকোষ ==
'''অ্যালগরিদম''' হলো গাণিতিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত একাধিক ধাপবিশিষ্ট একটি প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে সঠিক সমাধান প্রদান করে।
'''প্রয়োগ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা গাণিতিক ধারণার সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
'''স্পষ্টীকরণ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে, ফলে তারা সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাখ্যা করতে পারে।
'''শ্রেণিবিন্যাস''' হলো একই রকম বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বস্তুগুলোকে গোষ্ঠীবদ্ধ করার ক্ষমতা।
'''ধারণাগত জ্ঞান''' হলো মানসিক গঠন যা শিক্ষার্থীদের যুক্তি ও গাণিতিক ধারণা বোঝার ভিত্তি তৈরি করে।
'''ঘোষণামূলক জ্ঞান''' হলো সেই গাণিতিক ধারণা যা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে আহরণ করা হয় এবং যেগুলো ব্যবহার করে জটিল সমস্যা সমাধান করা যায়।
'''মূল্যায়ন''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে সমস্যার সমাধানের সঠিকতা নির্ধারণ করতে পারে।
'''অনুমান''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা সাধারণ ধারণা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করে এবং বস্তুসমূহের মধ্যে পার্থক্য ও সাদৃশ্য নির্ধারণ করতে পারে।
'''অন্তঃপ্রণোদনা''' হলো এমন একটি অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের আগ্রহে কোনো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
'''মেটাকগনিটিভ''' হলো নিজের চিন্তা ও শেখার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত জ্ঞান।
'''পদ্ধতিগত জ্ঞান''' হলো সমস্যা সমাধানের কৌশলের ধাপসমূহ সম্পর্কে জ্ঞান।
'''ক্রমবিন্যাস''' হলো বস্তুগুলোর আকার অনুযায়ী (যেমন: দৈর্ঘ্য, ওজন, আয়তন) ছোট থেকে বড় বা বড় থেকে ছোটভাবে সাজানোর ক্ষমতা।
'''স্বনিয়ন্ত্রিত শেখা''' হলো নিজের শেখা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, শুরু থেকে নিজের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন পর্যন্ত।
'''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' এমন তথ্য সাময়িকভাবে ধারণ করে যা ব্যবহৃত হবে, তবে তা পরিবর্তিত হবে না।
'''কার্যকরী স্মৃতি''' হলো একটি ব্যবস্থাপনা যা নতুন বা পূর্ববর্তী তথ্যকে অস্থায়ীভাবে ধরে রাখে, যাতে তা বর্তমান কাজে ব্যবহার করা যায়।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
# নবীন শিক্ষকদের গণিতের সমস্যা সমাধানের বিশ্বাস এবং উপলব্ধির একটি কেস স্টাডি। ''Baker, C. K. (২০১৫)। নবীন শিক্ষকদের গণিতের সমস্যা সমাধানের বিশ্বাস এবং উপলব্ধির একটি কেস স্টাডি। গবেষণামূলক অ্যাবস্ট্রাক্ট ইন্টারন্যাশনাল সেকশন এ, ৭৫''
# পাইগেট এবং ভাইগটস্কি: অনেক সাদৃশ্য, এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য। ''Lourenço, O. (২০১২)। পাইগেট এবং ভাইগটস্কি: অনেক সাদৃশ্য, এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য। মনোবিজ্ঞানে নতুন ধারণা, ৩০ (৩), ২৮১-২৯৫। doi:10.1016/j.newideapsych.2011.12.006''
== তথ্যসূত্র ==
* ফুচস, এলএস, ফুচস, ডি, স্টুবিং, কে, ফ্লেচার, জেএম, হ্যামলেট, সিএল, এবং ল্যামবার্ট, ডাব্লু (২০০৮)। সমস্যা সমাধান এবং গণনামূলক দক্ষতা: তারা গাণিতিক জ্ঞানের ভাগ বা স্বতন্ত্র দিক? শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল ১০০ (১), ৩০
* হানিচ, এলবি, জর্ডান, এনসি, কাপলান, ডি, এবং ডিক, জে (২০০১)। "শেখার প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে গাণিতিক জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে পারফরম্যান্স"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৩, ৬১৫–৬২৬।
* রাউর্ক, বিপি, এবং ফিনলেসন, এমএজে (১৯৭৮)। "একাডেমিক দক্ষতার নিদর্শনগুলোর বিভিন্নতার নিউরোপাইকোলজিকাল তাত্পর্য: মৌখিক এবং ভিজ্যুয়াল-স্থানিক ক্ষমতা"। অস্বাভাবিক শিশু মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৬, ১২১–১৩৩।
* সোয়ানসন, এইচএল, এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গার, এম (২০০৪)। "গুরুতর গণিতের অসুবিধার ঝুঁকিতে থাকা এবং ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে কার্যকর স্মৃতি এবং গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মধ্যে সম্পর্ক"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৬, ৪৭১–৪৯১।
* সোয়ানসন, এইচ এল (২০০৩)। "শেখার অক্ষম এবং দক্ষ পাঠকদের কাজের মেমরিতে বয়স-সম্পর্কিত পার্থক্য"। পরীক্ষামূলক শিশু মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৮৫, ১–৩১।
{{সূত্র তালিকা}}{{সূত্র তালিকা}}
2w8rnxd3fah95fmxc5mj55bp7csthpy
85680
85679
2025-07-05T15:30:49Z
Mehedi Abedin
7113
85680
wikitext
text/x-wiki
গণিতের বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন জ্যামিতি, বীজগণিত, ক্যালকুলাস এবং সম্ভাব্যতা; প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে বিশেষ ধরনের ধারণা ও পদ্ধতির দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন। শিক্ষাদান এবং শেখার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ থাকে, তা বোঝা ও অতিক্রম করা যায় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই অধ্যায়ে আমরা গণিত শিক্ষায় প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গবেষণা পর্যালোচনা করব। আমরা পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্বের প্রাসঙ্গিক দিক এবং এই তত্ত্বের সমালোচনা আলোচনা করব। আমরা ব্যাখ্যা করব কীভাবে বিভিন্ন বিষয় একজন শিক্ষার্থীর গণিত শেখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে শিক্ষকরা পাঠ পরিকল্পনার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে পারেন।
==গণিত কী?==
গণিত হলো সংখ্যা, পরিমাণ, জ্যামিতি ও স্থান এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কার্যাবলীর অধ্যয়ন। এটি '''ধারণাগত, প্রক্রিয়াগত এবং ঘোষণামূলক জ্ঞান'''-এর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press. </ref> গণিত সমস্যার সফল সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের এই জ্ঞানসমষ্টি অর্জন করতে হয়। গণিতে সঠিকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগে ধারণাগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য পূর্বে শেখা ধারণাগুলোর প্রয়োগ দরকার হয়। গণিতের ধারণাগত জ্ঞান অন্য সব গণিত-সম্পর্কিত দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা করে যেমন: ইতিবাচক মনোভাব, প্রক্রিয়াগত দক্ষতা, কৌশলগত পারদর্শিতা এবং অভিযোজিত যুক্তিশক্তি। একটির বিকাশ অন্যগুলোকেও শক্তিশালী করে এবং এতে সামগ্রিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, ধারণাগত জ্ঞান প্রক্রিয়াগত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে, এবং এই ধারাটি চলতে থাকে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> উদাহরণস্বরূপ, গণিতে অনেক ধরনের অ্যালগরিদম রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন। যখন শিক্ষার্থীরা গণিতের মূলনীতি ও ধারণাগুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে, তখন তারা যেকোনো সমস্যার জন্য যথাযথ অ্যালগরিদম বেছে নিয়ে তা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। এটি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সংযোগ নির্দেশ করে কারণ শিক্ষার্থীরা অনেক কৌশল শিখলেও সঠিকটি বেছে নেওয়া এবং তা প্রয়োগ করাই মূল বিষয়।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> এছাড়াও, জটিল গণিত সমস্যার সমাধানে কোনো প্রক্রিয়া সফল হলে বা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সেখান থেকে আরও শিখতে পারে। ভুলের মাধ্যমে আত্ম-প্রশ্ন করে তারা নিজের বিদ্যমান জ্ঞান পুনর্গঠন করতে পারে এবং ফলে তাদের ধারণাগত জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। ঘোষণামূলক জ্ঞান ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কারণ এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে ধারণা (ধারণাগত জ্ঞান) ও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম (প্রক্রিয়াগত জ্ঞান) পুনরুদ্ধার করতে হয়। এই তিনটি ক্ষেত্রের যেকোনো একটির ঘাটতি গণিত শেখায় অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press.</ref> সুতরাং, এই তিন ধরনের জ্ঞানের সংমিশ্রণ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় তা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
==জ্ঞানীয় তত্ত্ব এবং গণিত==
===পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্ব===
জঁ পাইগেট জন্ম থেকে কৈশোর পর্যন্ত জ্ঞানীয় বিকাশকে চারটি ধাপে ভাগ করেছেন: সংবেদনশীল গতি (জন্ম থেকে ২ বছর), প্রাক-পরিচালন (প্রায় ২ থেকে ৭ বছর), কংক্রিট অপারেশনাল (প্রায় ৭ থেকে ১১ বছর), এবং ফর্মাল অপারেশনাল (প্রায় ১১ থেকে ১৫ বছর)। যদিও সবাই এই ধাপগুলোতে ভিন্নভাবে অগ্রসর হয়, পাইগেট বিশ্বাস করতেন প্রতিটি শিশু পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করবে এবং কেউ কোনো ধাপ বাদ দেবে না কারণ পূর্ববর্তী ধাপ না শেখা পর্যন্ত পরবর্তী ধাপে যাওয়া সম্ভব নয়; এগুলো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পাইগেট আরও বলেন, শিশুর শেখা মূলত জন্ম থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলাফেরা ও পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শিশু বস্তু অনুসরণ এবং ধরার চেষ্টা শুরু করে, যা চোখ ও চলন সংক্রান্ত মস্তিষ্কের অংশগুলোকে বিকশিত করতে সাহায্য করে। একবার শিশু বুঝে যায় যে শেখা পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে হয়, তখন তারা নিজেরা পরিকল্পনা করে কাঙ্ক্ষিত বস্তু পেতে দক্ষ উপায়ে কাজ করে। পাইগেট দাবি করেন যে এই পর্যায়ে শিশুরা সংখ্যাকে বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref> এবং এমনও প্রমাণ আছে যে শিশুরা সংখ্যার ধারণা ও গণনার কিছু ধারণা ইতোমধ্যেই অর্জন করে<ref>Fuson, K. C. (1988). Children’s counting and concepts of numbers. New York: Springer.</ref>। এই পর্যায়ে শিশুদের গণিত দক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকরা এমন কার্যক্রম দিতে পারেন যাতে সংখ্যা ও গণনা যুক্ত থাকে। যেমন, ছবি যুক্ত বই পড়ানো যেতে পারে। এতে শিশুরা বস্তুর ছবি ও সংশ্লিষ্ট সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে শিখবে এবং পড়া ও অনুধাবন ক্ষমতাও বাড়বে। এই সময়ে পাইগেট দেখিয়েছেন যে শিশুরা নিজেরাই বস্তু ও জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করে।<ref>Piaget, J. (1963). The origins of intelligence in children. New York, NY: W.W. Norton & Company, Inc.</ref> যেহেতু পাইগেট মনে করতেন, একজন ব্যক্তির আগে অর্জিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ধাপে যেতে হয়, তাই সংখ্যা সম্পর্কে শিশুদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য এমন কার্যক্রমের মাধ্যমে গণিতের ভিত্তি তৈরি করা উচিত যাতে গণনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।<br />
প্রায় ২ থেকে ৭ বছর বয়সে শিশুরা ভাষা, প্রতীকী চিন্তা, আত্মকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সীমিত যৌক্তিকতা অর্জন করে। এই সময়ে তারা সংখ্যা বা ব্লকের মতো বস্তুর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে শেখে। যদিও তারা সংখ্যার কিছু ধারণা অর্জন করে, তবে তাদের যৌক্তিক ক্ষমতা সীমিত থাকে এবং তারা বিপরীত ক্রমে কার্য পরিচালনা করতে পারে না। যেমন, যারা বুঝতে পারে ৫+৩ = ৮, তারা বুঝতে নাও পারে ৩+৫ = ৮। পাইগেটের মতে, কারণ তারা কোনো একটি দিক বুঝলে অন্য দিক হারিয়ে ফেলে। এই সময়ে শিক্ষকেরা শিশুদের দিয়ে নির্দিষ্ট গঠন তৈরি করতে পারে ব্লক দিয়ে। এতে তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গোষ্ঠীভুক্ত করতে শিখবে এবং বুঝবে একাধিক উপায়ে এটি তৈরি করা যায়।<ref>Thompson, C. S. (1990). Place value and larger numbers. In J. N. Payne (Ed.), Mathematics for young children (pp. 89–108). Reston, VA: National Council of Teachers of Mathematics.</ref> <br />
৭ থেকে ১১ বছর বয়সে শিশুরা জ্ঞানীয়ভাবে দ্রুত বিকশিত হয়। তারা একাধিক দিক বা মাত্রা বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পাইগেট একটি পরীক্ষায় একই পরিমাণ তরলকে ভিন্ন আকারের বোতলে ঢেলে দেখিয়েছিলেন — এই পর্যায়ের শিশুরা বুঝতে পারে তরলের উচ্চতা কেন পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ‘শ্রেণিবিন্যাস’ ও ‘সিরিয়েশন’-এর দক্ষতা গড়ে ওঠে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref>। তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বস্তু শ্রেণিবদ্ধ করতে শেখে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বা হ্রাসপ্রাপ্ত মান অনুযায়ী সাজাতে শেখে। যদিও এই পর্যায়ে তারা মৌলিক গণনাগুলো জানতে পারে, তবে বাস্তব সমস্যায় তা প্রয়োগ করতে পারে না। যেমন, ৩টি সারিতে ৫টি ব্লক দিয়ে তৈরি গঠনের সংখ্যা গণনা করতে বললে, তারা গুণের ধারণা ব্যবহার করে না। অর্থাৎ, এই সময়ে তাদের গাণিতিক ধারণাগুলো বাস্তব বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। তারা এখনো পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করতে সক্ষম নয়।<br />
১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে শিশুরা নিজেরাই তত্ত্ব তৈরি করতে এবং গণিতের ধারণা গঠন করতে পারে। তারা বিমূর্ত ধারণাকে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে। যেমন, তারা এখন বীজগণিতের একটি সমস্যা নিজে নিজে সমাধান করতে পারে, যেখানে আগে শিক্ষককে বাস্তব উদাহরণ দিতে হতো। তারা কারণ নির্ণয়, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং প্রয়োগ করতে শেখে। শিক্ষকেরা তাদের শেখাতে পারেন কীভাবে শব্দের সমস্যা বিশ্লেষণ করতে হয় এবং কোন তথ্য প্রাসঙ্গিক আর কোনটা নয় তা বোঝাতে হয়।<br />
পাইগেট মনে করতেন, যদি কোনো শিশু কোনো ধারণা বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটির কারণ হচ্ছে সমস্যা থেকে সরাসরি গাণিতিক রূপান্তরে যাওয়ার চেষ্টা। তার মতে, শিশুদের শেখাতে হলে এমন পদ্ধতি নিতে হবে যা তাদের নিজে আবিষ্কার করতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা নিজেরাই ধারণা গড়ে তুলতে পারে, শিক্ষক তাদের সরাসরি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে। <ref>Piaget, J. (1968). Genetic epistemology. New York, NY: Columbia University Press Retrieved June 13, 2003 from the World Wide Web: http://www.marxists.org/reference/subject/philosophy/works/fr/piaget.htm</ref>
=== পাইগেট তত্ত্বের সমালোচনা ===
{| class="wikitable"
!পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের বিশ্বাস
!সমালোচনা
|-
|১) শিশুরা বস্তুর স্থায়িত্ব বোঝার বিকাশ শুরু করে
|
* পাইগেট শিশুদের অনুপ্রেরণার প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করেছিলেন
* শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
|-
|২) শিশুদের সংবেদনশীল ক্ষমতা এবং জ্ঞানীয় বিকাশ তাদের জন্মের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ঘটে
|
* সমস্ত শিক্ষার্থী একই নয়, তাদের অনন্য দক্ষতার ভিত্তিতে তাদের উচ্চতর বা নিম্ন বিভাগে স্থাপন করা যেতে পারে
|-
|৩) প্রতিটি শিশু একটি নির্দিষ্ট ক্রমে চারটি পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে
|
* পাইগেট বংশগতি, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার মতো বাহ্যিক কারণগুলোকে অবহেলা করেছিলেন
|-
|৪) পাইগেট জ্ঞানীয় বিকাশকে নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৃথক করে
|
* জ্ঞানীয় বিকাশের পর্যায়গুলো ধীরে ধীরে এবং ক্রমাগত অগ্রগতি হিসাবে দেখা উচিত
|}
যদিও আধুনিককালে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানীয় বিকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য পাইগেটের তত্ত্ব ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবুও এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদ পাইগেটের তত্ত্বের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক শিক্ষার উপযুক্ততা পরিমাপ করেন। অন্যদিকে, হিবার্ট ও কার্পেন্টার মত দিয়েছেন যে, পাইগেটের তত্ত্ব তেমন কার্যকর নির্দেশনা নয়, কারণ বহু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, অনেক শিশু যারা পাইগেটের তত্ত্ব অনুসরণ করতে পারে না তারাও গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম।<ref>Hiebert, J., and T. P. Carpenter. "Piagetian Tasks as Readiness Measures in Mathematics Instruction: A CriticalReview." EDUCATIONAL STUDIES IN MATHEMATICS 13: 329-345, 1982</ref>
পাইগেট যেখানে শিশুর অভ্যন্তরীণ জ্ঞান অনুসন্ধানের উপর গুরুত্ব দেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশু বস্তু স্থায়ীত্ব (যেমন: লুকানো বস্তু খোঁজার ধারণা) শেখে, অন্য গবেষকরা বলেন, পাইগেট শিশুদের প্রেরণার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেছেন। বার্গার মনে করেন বাহ্যিক প্রেরণা ও শিক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
ক্যাগান বিশ্বাস করেন, শিশু যখন স্থান পরিবর্তনের পরও বস্তু স্পর্শ করতে পারে, তখন এর পেছনের কারণ তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতার বৃদ্ধি, পাইগেটের ধারণার মতো নতুন কোনো জ্ঞানীয় গঠনের কারণে নয়।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটকে সমালোচনা করা হয়েছে শিশুদের সামর্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত সাধারণায়নের জন্য। তিনি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন, শিশুর সংবেদনশীলতা ও জ্ঞানীয় বিকাশ জন্মের প্রথম ছয় মাসেই ঘটে। যদিও পাইগেট বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে নির্দিষ্ট ক্রমে অগ্রসর হয়, হেউভেল-পানহুইজে বলেন পাইগেটের তত্ত্ব ছোট শিশুদের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি দেখান যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি শুধুমাত্র পাইগেটের ধাপভিত্তিক তত্ত্বে বিশ্বাস করেন, তবে তারা শিশুদের প্রতীকের জ্ঞান, গণনার ক্রম ও গাণিতিক ক্রিয়ার সামর্থ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করতে পারেন।<ref>Cross, C. (2009). The Early Childhood Workforce and Its Professional Development. In Mathematics learning in early childhood paths toward excellence and equity. Washington, DC: National Academies Press.</ref>
বার্গার আরও বলেন, শিশুদের পার্সেপচুয়াল শেখা (ধারণাগত শেখা) জন্মের আগেই শুরু হতে পারে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref> যদিও একটি নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী একটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে থাকবে, তবুও সব শিক্ষার্থী একরকম নয়। তাদের স্বতন্ত্র দক্ষতার ভিত্তিতে তারা হয়তো কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর ধাপে অবস্থান করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, গেলম্যান ও গ্যালিস্টেল দেখান যে, প্রস্তুতি ধাপে থাকা শিশুরাও বস্তু গণনার ক্ষেত্রে বিমূর্ত চিন্তা করতে পারে। এছাড়াও, পাইগেট শিশুদের আবেগ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেননি। যদিও তিনি বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ মাপার কার্যকর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি সৃজনশীলতা ও সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উপেক্ষা করেছেন।<ref>Papalia, D. E., Olds, S. W., and Feldman, R. D. (1998). Human development(7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
ক্রিস্টিনা এর্নেলিং যুক্তি দেন যে, উন্নয়নের ধারা বোঝা সম্ভব যদি শিশুদের সঠিক পরিবেশে রাখা যায়। তার মতে, যেকোনো শেখার ধারণা বিশদ শিক্ষাতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং জ্ঞানীয় বিকাশ বোঝার জন্য ব্যক্তির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিন্নতা স্বীকৃতি দিতে হবে। অর্থাৎ, পাইগেট সংস্কৃতির প্রভাব উপেক্ষা করেছেন। কারণ তার গবেষণা ছিল পশ্চিমা দেশে, তাই তার তত্ত্ব হয়তো শুধু পশ্চিমা সমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাইগেটের মতে, বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি নির্দিষ্ট ধাপে পৌঁছেই বিকাশ পায়। অন্যদিকে, এডওয়ার্ডস ও অন্যান্য গবেষকরা বলেন, পাইগেটের গবেষণায় নিয়ন্ত্রণ ও নমুনার সীমাবদ্ধতার কারণে তার গবেষণা অবিশ্বস্ত। তারা বলেন, অন্যান্য সংস্কৃতিতে সাধারণ ধাপের অপারেশনগুলো বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।<ref>Edwards, L., Hopgood, J., Rosenberg, K., & Rush, K. (2000). Mental Development and Education. Retrieved April 25, 2009, from Flinders University</ref>
বার্গার পাইগেটের নির্দিষ্ট ধাপের বিপক্ষে যুক্তি দেন। তিনি মনে করেন, পাইগেট শিশুদের অভ্যন্তরীণ জ্ঞানের সন্ধানকে গুরুত্ব দিলেও বংশগতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার মতো বাহ্যিক বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের ধাপগুলোকে বরং একটানা ধাপে ধাপে অগ্রগতির মতো দেখা উচিত, নির্দিষ্ট করে ভাগ না করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটের তত্ত্বের আরও সমালোচনা হয়েছে, কারণ তার সর্বশেষ ধাপে জ্ঞানীয় বিকাশ যথেষ্ট স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। তিনি মনে করতেন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে সবাই বিমূর্ত যুক্তি বিকাশে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, প্যাপালিয়া ও অন্যান্যরা বিশ্বাস করেন, সবাই এই সময়ে আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি অর্জন করতে পারে না, এবং তাতে তারা অপরিণত নয়—বরং তাদের চিন্তাভাবনার পরিপক্বতার ধরণ ভিন্ন।<ref>Papalia, D.E., Olds, S.W., & Feldman, R.D. (1998). Human development (7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
অতএব, জ্ঞানীয় বিকাশকে বরং একটি অনিয়মিত প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যেখানে প্রতিটি শিশু ধাপে ধাপে নিজস্ব গুণাবলি ও আচরণগত দক্ষতা অর্জন করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
=== জ্ঞানীয় ক্ষেত্র= ===
পাইগেটের পর থেকে জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গাণিতিক শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গাণিতিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭৮ সালেই গবেষকেরা মস্তিষ্ক-সম্পর্কিত আচরণ ও একাডেমিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পান। রাউর্ক ও ফিনলেসন ৯-১৪ বছর বয়সী শেখার অসুবিধায় ভোগা শিশুদের নিয়ে গবেষণা করে দেখান, যেসব শিশুর অ্যারিথমেটিক দক্ষতা নেই, তাদের ডান মস্তিষ্কের গোলার অকার্যকারিতার মতো আচরণ দেখা যায়।<ref>Rourke, B. P., & Finlayson, M. A. J. (1978). Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities. Journal of Abnormal Child Psychology, 6, 121–133.</ref>
সম্প্রতিকালে আরও সূক্ষ্ম জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গণিতে ঘাটতির মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত হয়েছে।
২০০১ সালে হ্যানিচ, জর্ডান, কাপলান ও ডিক ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাণিতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেন।<ref>Hanich, L. B., Jordan, N. C., Kaplan, D., & Dick, J. (2001) Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities. Journal of Educational Psychology, 93, 615–626.</ref>
তারা শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করেন: সাধারণভাবে সফল, শুধুমাত্র গণিতে দুর্বল, শুধুমাত্র পড়ায় দুর্বল, এবং উভয় বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থী। প্রত্যেককে সাতটি গাণিতিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বলা হয়:
ক) নির্দিষ্ট গণনা খ) গল্পভিত্তিক সমস্যা গ) আনুমানিক গণনা ঘ) স্থানীয় মান ঙ) গণনার নীতি চ) সংখ্যা স্মরণ ছ) লিখিত গণনা।
তারা দেখেন, যারা গণনা ও পড়া উভয় ক্ষেত্রেই দুর্বল, তারা গল্প সমস্যা ও প্রচলিত গণনায় দুর্বল। তবে যারা শুধু গণিতে দুর্বল, তারা শুধু প্রচলিত গণনায় দুর্বলতা দেখায়। এ থেকে গবেষকেরা সিদ্ধান্তে আসেন, গণিতে একাধিক জ্ঞানীয় ক্ষেত্র রয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্র মস্তিষ্কের ভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।
ফুচস, ফুচস, স্টুয়েবিং, ফ্লেচার, হ্যামলেট ও ল্যাম্বার্ট (২০০৮) লক্ষ্য করেন, প্রচলিত গণনার সফলতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পূর্বাভাসদাতা হচ্ছে: ক) কর্মরত স্মৃতি খ) দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি গ) মনোযোগ রেটিং ঘ) ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ ঙ) শব্দভাণ্ডারের জ্ঞান<ref>Fuchs, L. S., Fuchs, D., Stuebing, K., Fletcher, J.M., Hamlett, C. L. , & Lambert, W. (2008). Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition? Journal of Educational Psychology 100 (1), 30</ref>
তারা এক দীর্ঘমেয়াদি, বৃহৎ পরিসরের গবেষণায় দেখেন, গণনা ও সমস্যার সমাধান—এই দুইটি গণিতের আলাদা ক্ষেত্র হতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন: গণনায় দক্ষতা, শব্দ-সমস্যা সমাধান, ধ্বনি প্রক্রিয়া, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান, কর্মরত স্মৃতি, মনোযোগী আচরণ, প্রক্রিয়ার গতি, এবং পাঠ দক্ষতা ইত্যাদিতে। তারা দেখতে পান, মনোযোগী আচরণ ও প্রক্রিয়ার গতি গণনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও, তারা লক্ষ্য করেন, কর্মরত স্মৃতি, স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (যেমন দৃশ্যের মাধ্যমে প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করা), ধারণা গঠন, এবং ভাষা দক্ষতা (যার মধ্যে পড়াও অন্তর্ভুক্ত) সমস্যা সমাধানের পূর্বাভাসদাতা। ভাষা দক্ষতার ঘাটতি সমস্যার সমাধানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্যকারী একটি উপাদান।
==== প্রত্যেক জ্ঞানীয় গণিত ক্ষেত্রের জন্য মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া ====
{| class="wikitable"
!গণনার জ্ঞানীয় দক্ষতা
!সমস্যা সমাধানের জ্ঞানীয় দক্ষতা
|-
|গণনার সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|সমস্যা সমাধানের সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|-
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
# দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি
• মনোযোগ রেটিং • প্রক্রিয়ার গতি • ভাষা দক্ষতা
# ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ (ধ্বনি শনাক্ত ও পার্থক্য করতে পারা)
# শব্দভাণ্ডার জ্ঞান
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
• স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি • অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (দৃশ্যমান প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করার দক্ষতা) • ধারণা গঠন • ভাষা দক্ষতা
# প্রথম ভাষা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য
# ধ্বনি, শব্দভাণ্ডার
|}
=== গণিত শেখার ক্ষেত্রে কার্যকর স্মৃতির গুরুত্ব ===
'''কার্যকর স্মৃতি''' হলো একটি প্রক্রিয়া যা অস্থায়ীভাবে নতুন বা পূর্বে সঞ্চিত তথ্য ধারণ করে, যা বর্তমান কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর ধারণক্ষমতা সীমিত। কার্যকর স্মৃতির দুটি ধরণ রয়েছে: শ্রাব্য (অডিটরি) স্মৃতি ও দৃশ্য-স্থানিক (ভিজুয়াল-স্প্যাটিয়াল) স্মৃতি। গণিতের গাণিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দৃশ্য-স্থানিক স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। অপরদিকে, শ্রাব্য স্মৃতি সব ধরনের গাণিতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতার পার্থক্য হতে পারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি, ব্যক্তির জ্ঞান বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য উপেক্ষা করার দক্ষতার কারণে।<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref> পরিকল্পনা, সংগঠন এবং নমনীয় চিন্তার মতো নির্বাহী কার্যক্রমগুলো কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে।<ref>Swanson, H. L. (2003)...</ref>
অন্যদিকে, '''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' দায়ী শুধুমাত্র অল্প সময়ের জন্য তথ্য ধারণ করার জন্য, যেগুলো ব্যবহার করতে হবে কিন্তু বিশ্লেষণ বা রূপান্তরের প্রয়োজন নেই। এর ধারণক্ষমতাও সীমিত এবং এটি কয়েক সেকেন্ডের মতোই স্থায়ী হতে পারে। যেমন, একটি টেলিফোন নম্বর আমরা কয়েক সেকেন্ড মনে রাখি শুধু তা ডায়াল করার জন্য।
২০০৪ সালে সোয়ানসন এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গারর একটি গবেষণায় উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, কার্যকর স্মৃতি সমস্যার সমাধানকালে তথ্য একীভূতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের মতে, কার্যকর স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি "(ক) সম্প্রতি প্রক্রিয়াকৃত তথ্যকে নতুন ইনপুটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং (খ) সামগ্রিকভাবে সমস্যার একটি উপস্থাপন গঠনের জন্য তথ্যের সারাংশ সংরক্ষণ করে।"<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref>
এইচ লি সোয়ানসনের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতা সমস্যা সমাধানে কৌশলগত হস্তক্ষেপের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>Swanson, H. L. (August 4,2015)...</ref> লেখক একটি হস্তক্ষেপমূলক গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে কার্যকর স্মৃতির ভূমিকা এবং কৌশল শেখানোর ফলে শব্দভিত্তিক সমস্যা সমাধানে সঠিকতা কেমন হয়, তা যাচাই করা হয়।
গবেষণায় সমস্ত শিশুদের শ্রাব্য ও দৃশ্য-স্থানিক কার্যকর স্মৃতির মাপ নেওয়া হয়। এরপর গণিতে সমস্যাযুক্ত এবং অপ্রতিবন্ধিত শিশুদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করে র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়। ১ম দলকে শব্দভিত্তিক কৌশল শেখানো হয়, ২য় দলকে দৃশ্য-স্থানিক কৌশল, এবং ৩য় দলকে উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ শেখানো হয়। প্রতিটি দলকে এমন পাঠদান দেওয়া হয় যাতে শব্দ সমস্যা ক্রমাগত অপ্রাসঙ্গিক তথ্যে পরিপূর্ণ হতে থাকে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের প্রাসঙ্গিক তথ্যের প্রতি মনোযোগী হতে শেখানো। পূর্ববর্তী অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য আলাদা করতে শেখা গণিত সমস্যার সঠিকতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার ফলাফল দেখায় যে, কৌশল শেখানো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা কৌশল শেখানোর প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে। কম কার্যকর স্মৃতির শিশুরা তেমন উপকার পায়নি। বরং উচ্চ কার্যকর স্মৃতির শিশুরাই—যাঁদের গণিতে প্রতিবন্ধকতা থাকুক বা না থাকুক—এই কৌশল থেকে বেশি উপকার পেয়েছে। তবে, দৃশ্যগত কৌশল ব্যবহৃত হলে সব ধরনের গণিত প্রতিবন্ধী শিশুরাই উপকার পেয়েছে। কিন্তু যাঁদের কার্যকর স্মৃতি দুর্বল, তাঁদের জন্য শব্দ ও দৃশ্য উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। সবশেষে, গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে যে, কার্যকর স্মৃতির উপর ভিত্তি করে মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলোর প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতে কার্যকর স্মৃতির দক্ষতা উন্নত করতে পারে।
এই গবেষণার তাৎপর্য হলো, গণিতে প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা যাচাই করে তার ভিত্তিতে উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল নির্ধারণ করা উচিত।
== গণিত শেখা ও শেখানোর ওপর প্রভাব ফেলা উপাদান ==
=== ব্যক্তিভেদে পার্থক্য ===
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আলাদা দক্ষতা, পূর্বজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং আগ্রহ থাকে। এই বিষয়গুলো গণিত শেখা ও শেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ পাঠদানের কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হয়।
==== দক্ষতার পার্থক্য ====
সব শিক্ষার্থীর নিজস্ব শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। কেউ কোনো নির্দিষ্ট গাণিতিক ক্ষেত্রে ভালো হলেও, অন্য ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারে। শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা সম্পর্কে জানা, যাতে তাদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুর্বলতাকে উন্নত করা যায়। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও দুর্বলতা না জানেন, তবে ভুলভাবে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে, যেটা শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে এবং ব্যর্থতা থেকে "শিক্ষিত অসহায়ত্ব" তৈরি করতে পারে। সঠিক দক্ষতা জানা থাকলে নতুন গাণিতিক জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে না।
উদাহরণস্বরূপ, শব্দ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন মানসিক উপস্থাপনা ও সাধারণ গাণিতিক রূপান্তর। ফলে, যারা গাণিতিক সমীকরণ গঠন করতে জানে না, তারা এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হবে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের প্রাক-দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পাঠদান কৌশল নির্ধারণ করা, কারণ এই দক্ষতাগুলো সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষার্থীরা যত বেশি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত দক্ষতা অর্জন করবে, ততই তারা গণিত শেখায় দক্ষ হয়ে উঠবে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref>
বর্তমান হাইস্কুলে বিভিন্ন স্তরের গণিত কোর্স থাকে—শুরুর, মূল এবং উন্নত স্তর। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগ করা হয় বা তারা নিজেরা স্তর বেছে নিতে পারে। শিক্ষককে উচিত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যে তারা সেই স্তরের উপযোগী কিনা। খুব কঠিন হলে শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়বে, আবার খুব সহজ হলে বিরক্ত হবে। সঠিক স্তর নির্ধারণের জন্য দক্ষতা জানা আবশ্যক।
==== পূর্বজ্ঞানগত পার্থক্য ====
শিক্ষার্থীদের গাণিতিক জ্ঞান তাদের সামাজিক অভিজ্ঞতা থেকে আসে। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন বাজারে কেনাকাটা করার মাধ্যমে টাকা-পয়সা মেলানো শেখা, গাণিতিক প্রতীক কীভাবে ব্যবহার হয়, সেটা বুঝতে সাহায্য করে। এই বাস্তব জ্ঞান ব্যবহার করে যদি গাণিতিক ধারণা শেখানো হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহজে তা বুঝতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিল থাকলে শিক্ষার্থীরা গণিত শেখায় বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এটি তাদের কাছে অর্থবহ ও প্রাসঙ্গিক মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাঠ্যবইয়ের গণিত অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু যদি তা ব্যাংকে সুদের হিসাব বা দৈনন্দিন খরচ হিসাবের মতো জীবনের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে তা সহজ ও আকর্ষণীয় মনে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ গণিত সমস্যার জন্য শুধু গণিত নয়, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো বিষয়ের জ্ঞানও প্রয়োজন হতে পারে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> শব্দ সমস্যার ক্ষেত্রে পাঠ্যাংশ বুঝতে ভাষাগত দক্ষতাও প্রয়োজন, যা পূর্বজ্ঞান থেকে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের অনেক গণিত কোর্সে পূর্বশর্ত কোর্স থাকে, কারণ উন্নত গণিত শেখার জন্য প্রাথমিক ধারণা থাকা আবশ্যক।
==== আগ্রহের পার্থক্য ====
সবার আগ্রহ আলাদা। কেউ গণিত পছন্দ করে কারণ ছোটবেলা থেকেই তারা এই বিষয়ে শক্তিশালী ছিল, আবার কেউ ঘৃণা করে কারণ বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আগ্রহ থাকলে অভ্যন্তরীণ মোটিভেশন তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থী নিজের ইচ্ছায় গণিত শেখে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> এতে শিক্ষার্থীরা কাজের প্রতি মনোযোগী হয় এবং সমাধানে আন্তরিকতা দেখায়। তাদের আগ্রহ নিজের সামর্থ্য, আত্মবিশ্বাস এবং অর্জনের সঙ্গে জড়িত।<ref>Upadyaya, K., & Jacquelynne, S. E. (2014). How do Teachers’ Beliefs predict Children’s Interests in Math from Kindergarten to Sixth Grade? ''Merrill-Palmer Quarterly, 60''(4). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=aaa92fa2-22f8-4cd7-9d94-49896f602e89%40sessionmgr120&vid=0&hid=109</ref>
তাই, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্য বাড়ানোর জন্য তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে, পরিবারের সদস্য, সহপাঠী এবং শিক্ষকসহ অনেক উপায়ে গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref>
পরিবারের সদস্যরা ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের গণিতে সহায়তা ও উৎসাহ দিতে পারেন, যা গণিতের প্রতি তাদের মূল্যবোধ বাড়ায়। শিক্ষার্থীরা সাধারণত সামাজিক তুলনা করতে ভালোবাসে এবং তারা সহপাঠীদের অনুসরণ করতে চায়। তাই সহপাঠীদের প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর বড় ভূমিকা রাখে। যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তাদের সহপাঠীরা সুদোকু বা ধাঁধার মতো কোনো গণিতের সমস্যা উপভোগ করছে, তখন তারাও সমাধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে আনন্দদায়ক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ গেমের আয়োজন করতে পারেন এবং শেখানোর সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারেন।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref> এটি এমন একটি বিষয় শেখার আগ্রহ তৈরি করবে, যা আগে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করতো না। ফলে, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য আনন্দদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যাতে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। যদি শিক্ষার্থীরা গণিতকে ঘৃণা করে, তবে তাদের শেখানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তারা তখন কেবল বাধ্য হয়ে পড়ে, আগ্রহ নিয়ে নয়।
==== সাংস্কৃতিক পার্থক্য ====
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের স্তর ও লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে থাকে।<ref>Tsao, Y-L. (2004). A Comparison of American and Taiwanese Students: Their Math Perception. ''Journal of Instructional Psychology, 31''(3). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=97c91599-4222-4cc8-8717-703e6b774b06%40sessionmgr110&vid=19&hid=109</ref> তদুপরি, তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে গণিতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে। যখন কোনো সংস্কৃতি কোনো বিষয়ে যেমন গণিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তখন সেই সংস্কৃতির শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্কুল ও বাড়িতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফলে, এদের গণিতের দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। যারা নিয়মিত গণিত চর্চা করে, তাদের অটোমেটিসিটি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করার ক্ষমতা) বেশি হয় কারণ তারা বিভিন্ন গণিত সমস্যার যথেষ্ট অনুশীলন করে। তারা উপযুক্ত কৌশল বেছে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> অন্যদিকে, যদি কোনো সংস্কৃতি গণিতকে গুরুত্ব না দেয়, তবে সেই সংস্কৃতির শিশুরা কঠোরভাবে শেখে না এবং তাদের দক্ষতার স্তরও কম হয়। কোনও বিষয়ে ভালো করতে হলে স্কুলের পাশাপাশি বাড়িতেও চর্চা করা প্রয়োজন। যারা শুধুমাত্র স্কুলেই গণিত শেখে এবং বাড়িতে সক্রিয়ভাবে চর্চা করে না, তাদের অনুশীলন পর্যাপ্ত নয়। সেইসঙ্গে, এমন সংস্কৃতি যেখানে উচ্চ মান, পরিশ্রম, এবং ইতিবাচক মনোভাবকে মূল্য দেওয়া হয়, সেগুলোর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref>
বিভিন্ন সংস্কৃতির ভাষাও ভিন্ন। এর অর্থ, তারা গণিত সমস্যা প্রকাশের ধরনেও পার্থক্য থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, চীনা সংখ্যার ভাষাগত কাঠামো (যেমন ১৫ মানে "দশ-পাঁচ") ইংরেজির তুলনায় শেখা সহজ। ইংরেজিতে যেমন ১২ মানে "টুয়েলভ" এবং -টিন শব্দগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা থাকে না।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> চীনা সংখ্যা উচ্চারণ করা ইংরেজির তুলনায় দ্রুত সহজ, যা শিক্ষার্থীদের গণিত দক্ষতাকে প্রভাবিত করে। ফলে, চীনা ভাষায় সংখ্যাগুলো স্বল্প-মেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়, বিশেষ করে বহু-অঙ্কের জটিল সমস্যায়।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> তাই পাঠদানের কৌশল পরিকল্পনার সময় শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া উচিত, কারণ তা গণিত সমস্যার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে পারে।
=== গণিতে আত্ম-দক্ষতা ===
গণিতে শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বলতে বোঝায় তারা নিজের সম্পর্কে কতটা বিশ্বাস রাখে যে তারা গণিতের প্রশ্ন সমাধান করতে পারবে। যারা বেশি আত্মবিশ্বাসী তারা গণিত সংশ্লিষ্ট কাজে আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং তাদের একাডেমিক সাফল্যও বেশি হয়। অন্যদিকে, যারা আত্মবিশ্বাস কম রাখে তারা গণিত সমস্যা সমাধানে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং তাদের পারফরম্যান্স কম হয়। তাই, গণিতে আত্ম-দক্ষতা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
==== গণিতে আত্ম-দক্ষতার প্রভাব ====
আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা, বোঝাপড়া এবং শেখার অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে। যারা নিজেদের দক্ষ মনে করে, তারা গণিতে ভালো করার ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করে।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এই বিশ্বাসের কারণে তারা আরও উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং বেশি পড়াশোনা করে। ফলে, তারা আত্ম-সার্থকতার চক্রে পড়ে, অর্থাৎ তাদের নিজস্ব বিশ্বাস বাস্তব হয়ে ওঠে। বিপরীতে, যারা নিজেকে অদক্ষ মনে করে, তারা ভাবে যতই চেষ্টা করুক, গণিতে সফল হতে পারবে না।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এ কারণে তারা গণিত চর্চায় অনুপ্রাণিত হয় না এবং কয়েকবার চেষ্টা করেই হাল ছেড়ে দেয়। এতে তাদের "আমি পারি না" বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা কাজ করতে থাকে।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়ন ====
শিক্ষার্থীরা গণিতের কোন বিষয় শিখতে আত্মবিশ্বাসী কিনা তা মূল্যায়ন করা জরুরি, কারণ এটি তাদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়নের একটি উপায় হলো, প্রথম পুরুষে কিছু বিবৃতি তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে প্রত্যেকটি বিবৃতির জন্য ০ থেকে ১০০ স্কেলে রেট করতে বলা।<ref>Bandura, A. (1997). Self-efficacy: The exercise of control.New York, NY:Freeman.</ref> প্রথমে শিক্ষককে নির্দিষ্ট একটি টপিক বেছে নিতে হবে, যেমন "পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ"। এরপর সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিবৃতিগুলো তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষার্থীরা সেগুলোর সত্যতা রেট করবে।
{| class="wikitable"
!রেট (০-১০০)
!বিবৃতি
|-
|৮০
|আমি জানি, প্যারালেলোগ্রামের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণে কী তথ্য লাগবে।
|-
|১০০
|আমি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দেওয়া থাকলে একটি আয়তক্ষেত্রের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|-
|৬০
|আমি ট্র্যাপেজিয়ামের ক্ষেত্রফলের সমীকরণ লিখতে পারি।
|-
|৫০
|আমি আমার সহপাঠীকে বোঝাতে পারি কেন ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল bxh ÷2 অর্থাৎ, (ভূমি x উচ্চতা) / ২
|-
|৯০
|আমি ৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|}
এই স্কোরগুলো যোগ করে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীর আত্ম-দক্ষতার একটি সামগ্রিক চিত্র পেতে পারেন। উপরিউক্ত উদাহরণে, মোট স্কোর হবে ৮০+১০০+৬০+৫০+৯০। শিক্ষক চাইলে এই আত্ম-দক্ষতার তুলনা শিক্ষার্থীর গণিত বিষয়ে সামগ্রিক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করতে পারেন। আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের শেখার অনুপ্রেরণা ও আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই শিক্ষকদের উচিত সেই অনুযায়ী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করা।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতার বিকাশ ====
বান্দুরা আত্ম-দক্ষতা বিকাশে চারটি প্রধান উৎস চিহ্নিত করেছেন।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> প্রথমটি হলো শিক্ষার্থীদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> যেমন, যদি শিক্ষার্থী কোনো গণিত পরীক্ষায় ভালো ফল করে, তার সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। দ্বিতীয়টি হলো বিভিন্ন অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> শিক্ষার্থীরা যখন তাদের সমমানের সহপাঠীদের কাজ করতে দেখে, তখন তারা নিজেরও পারবে বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এমনকি গণিতবিদদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি দেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বাড়াতে পারে।<ref>Hekimoglu, S., & Kittrell, E. (2010). Challenging students' beliefs about mathematics: The use of documentary to alter perceptions of efficacy. PRIMUS: Problems, Resources, And Issues In Mathematics Undergraduate Studies, 20(4), 299-331. doi:10.1080/10511970802293956</ref>
তৃতীয় প্রভাবটি হলো সামাজিক প্রভাব।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের ঘনিষ্ঠ মানুষদের (যেমন অভিভাবক, সহপাঠী বা শিক্ষক) কাছ থেকে আসা ইতিবাচক বক্তব্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক যদি বলেন “তুমি বীজগণিতের সমস্যাগুলো এখন আগের থেকে ভালোভাবে সমাধান করতে পারছো,” তাহলে এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে।
চতুর্থ প্রভাবটি হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের কোনো পরিস্থিতির প্রতি আবেগগত প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী মনে করতে পারে যে গণিত পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণ তার অযোগ্যতা, অথচ প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল উদ্বেগের ফল। এই ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থী তার ক্ষমতা ভুলভাবে মূল্যায়ন করে এবং গণিত বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। আবার কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করলেও সেটিকে নিজের দক্ষতা নয়, বরং ভাগ্যের কারণে হয়েছে বলে মনে করতে পারে। এর ফলে, সে আত্মবিশ্বাস গঠনের একটি সুযোগ হারিয়ে ফেলে। সুতরাং, ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেকোনো অভিজ্ঞতার প্রতি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি তার আত্মদক্ষতা গঠনে প্রভাব ফেলে। এই ক্ষেত্রে আত্মদক্ষতা বাড়ানোর উপায় হলো শিক্ষার্থীদের তাদের প্রকৃত দক্ষতা চেনাতে সহায়তা করা এবং তাদের দক্ষতার প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি করা।
উশের একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের গণিত বিষয়ক আত্মদক্ষতার চারটি উৎস যাচাই করেন।<ref>Usher, E. L. (2009). Sources of middle school students’ self-efficacy in mathematics: A qualitative investigation. American Educational Research Journal, 46(1), 275-314. doi:10.3102/0002831208324517</ref> এই গবেষণার ফলাফল বান্দুরার ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে দক্ষতার অভিজ্ঞতা, পরোক্ষ অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রভাব ও মানসিক অবস্থা – সবই শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গঠনের সঙ্গে যুক্ত।
দক্ষতার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আত্মদক্ষতা বিকাশের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। উশের একটি কৌশল প্রস্তাব করেন যেটি গণিত শিক্ষকরা ব্যবহার করতে পারেন শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে—“শিক্ষাদান এমনভাবে করা যাতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সর্বাধিক হয়, তা যত ছোটই হোক না কেন।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক অ্যালগরিদম বা বীজগণিত শেখানোর সময় সঠিকতা যাচাই করার কৌশল শেখাতে পারেন। যেমন প্রশ্ন: ১৮ ÷ ৬ =? শিক্ষক শিখাতে পারেন যে ভাগফলকে গুণ করে যদি ভাগফল × ভাজক = মূল সংখ্যা হয় (৩ × ৬ = ১৮), তবে উত্তর সঠিক। যারা এই কৌশল শিখেছে ও ব্যবহার করেছে, তারা গণিতে দক্ষতার অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে।<ref>Ramdass, D., & Zimmerman, B. J. (2008). ...</ref> শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার মধ্যে থেকে চ্যালেঞ্জিং কাজ দেওয়া তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উশেরের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই চারটি উৎসের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও রয়েছে। পরোক্ষ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে অভিভাবক ও শিক্ষকের গণিত অভিজ্ঞতার প্রভাব আছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো, এক শিক্ষার্থী তার অভিভাবকদের গণিতে ব্যর্থতাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে—“আমি আলাদা হতে পারি।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> এটি বোঝায় যে কেবল সফলতাই নয়, ব্যর্থতাও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা অন্যদের অভিজ্ঞতা কীভাবে তারা ব্যাখ্যা করে, তাতেও প্রভাব ফেলে। সামাজিক প্রভাবের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অভিভাবক ও শিক্ষকের বার্তা শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বিশ্বাসে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, যদি বাবা-মা বলেন গণিত একটি জন্মগত ক্ষমতা—“তোমার আছে বা নেই”—তাহলে সন্তানরা নিজেকে অক্ষম মনে করে আত্মবিশ্বাস হারাতে পারে। এই ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব মানসিক অবস্থাতেও প্রভাব ফেলে।
==== শিক্ষকের আত্মদক্ষতা ====
শিক্ষকের শিক্ষাদানের আত্মদক্ষতা বলতে বোঝায় যে, তারা বিশ্বাস করেন তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেন,<ref>Woolfolk, A. E., & Hoy, W. K. (1990). ...</ref> যেমন একাডেমিক পারফরম্যান্স, আত্মদক্ষতা, অনুপ্রেরণা, মনোভাব এবং আগ্রহ। উচ্চ আত্মদক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন ইতিবাচক মনোভাব, বিষয়বস্তুর প্রতি গভীর জ্ঞান এবং শিক্ষণ কৌশলের জ্ঞান।
গণিত বিষয়ে শিক্ষকের মনোভাব শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় চারটি গ্রুপ—প্রাথমিক শিক্ষক (কে-৪), মাধ্যমিক শিক্ষক, অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এবং বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক—এর মধ্যে সাক্ষাৎকার ও একটি মনোভাব স্কেল পূরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মনোভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।<ref>Kolstad, R. K., Hughes, S., & Briggs, L. D. (1994). ...</ref> এতে দেখা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৬০% অত্যন্ত ইতিবাচক, ৩০% নিরপেক্ষ, ১০% অত্যন্ত নেতিবাচক), এবং প্রাথমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৪৩% ইতিবাচক, ২৩% নিরপেক্ষ, ৩৪% নেতিবাচক)। ফলাফল নির্দেশ করে প্রাথমিক স্তরে গণিতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
নেতিবাচক মনোভাব থাকলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখাতে সক্ষম—এই বিশ্বাসটিও হারিয়ে ফেলেন, যার সঙ্গে আত্মদক্ষতা জড়িত। শিক্ষকের শিক্ষাদান কৌশল ও বিষয়বস্তুর জ্ঞানও তাদের আত্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গণিত বিষয়ক শিক্ষকের জ্ঞান ও আত্মদক্ষতার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, যা দেখায়—যাদের বিষয়বস্তু ও কৌশলগত জ্ঞান বেশি, তারা শিক্ষাদানে বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারার বিশ্বাস রাখেন।<ref>Fox, A. M. (2015). ...</ref>
শিক্ষকের আত্মদক্ষতা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের শেখায় প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীর একাডেমিক সাফল্য। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কে-১২ স্তরের শিক্ষকদের আত্মদক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাফল্যের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত।<ref>Chears-Young, J. B. (2015). ...</ref> এছাড়া, এটি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা, আগ্রহ এবং শেখার কৌশলেও প্রভাব ফেলে। আত্মদক্ষ শিক্ষকরা প্রশংসা ব্যবহার করেন, সমালোচনার বদলে, এবং অধিক গ্রহণযোগ্য ও লক্ষ্যভিত্তিক হন।<ref>Kagan, D.M. (1992). ...</ref> অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ আত্মদক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখার কৌশল শেখান এবং বেশি একাডেমিক সময় দেন, যা পারফরম্যান্স বাড়ায়।<ref>Ghaith, G., & Yaghi, H. (1997). ...</ref>
=== স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা ===
অনেকে মনে করেন, শিক্ষার্থীদের গণিতে খারাপ ফলাফল তাদের অযোগ্যতা বা পড়াশোনার ঘাটতির কারণে হয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। অনেক সময় খারাপ ফলাফল হয় কারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কৌশল ব্যবহার করতে জানে না বা '''স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা'''র অভাব রয়েছে।
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা হলো, শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার সমস্ত দিক নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে—পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরবর্তী মূল্যায়ন পর্যন্ত।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref> এই শেখার তিনটি মূল উপাদান আছে।
প্রথমটি হলো, মেটাকগনিটিভ সচেতনতা—মানে কীভাবে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা তৈরি করে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
দ্বিতীয়টি হলো, কৌশল ব্যবহার—অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কী কী স্ব-নিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগ করতে পারে। দক্ষ শিক্ষার্থীরা বেশি কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে।<ref>Zimmerman, B. J., & Martinez-Pons, M. (1990). ...</ref>
তৃতীয়টি হলো, অনুপ্রেরণা নিয়ন্ত্রণ—যেখানে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তাদের দক্ষতা ও পারফরম্যান্সে ইতিবাচক বিশ্বাস রাখে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শিক্ষার্থীর গণিত সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই দক্ষতা বাড়লে, তারা ভালো কৌশল ব্যবহার করে এবং কীভাবে গণিত পড়তে হয় তা ভালোভাবে বোঝে, ফলে তাদের গণিতের ফলাফল উন্নত হয়।
==== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম নিয়ে একটি গবেষণা ====
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচালিত একটি গবেষণায় একটি গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম গঠিত হয় এবং ফলাফল থেকে দেখা গেছে, যখন শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শেখানো হয়, তখন তাদের গণিতে অর্জনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই গবেষণায় প্রাথমিক স্তরের গণিতে কম ফলাফলপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৩০ জনকে পরীক্ষামূলক দলে রাখা হয়, যারা এই গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রামে অংশ নেয়।
এই প্রোগ্রামটি ৩০টি সেশনে বিভক্ত, যার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা বাড়ানো, তাদের মোটিভেশন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা উন্নত করা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ কৌশল শেখানো। (সেশন ১-৫) প্রোগ্রামটি শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বিশ্বাস ব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমে। এতে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ, আত্ম-দক্ষতা, শেখার লক্ষ্য এবং প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কৃতিত্ব বোঝানোর মূল্য শেখানো হয় গল্প বলার মাধ্যমে এবং দলগত আলোচনায় অংশগ্রহণ করিয়ে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> (সেশন ৬-১১) এরপর তাদের সামনে জিমারম্যানের প্রস্তাবিত ১৪টি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল উপস্থাপন করা হয়।<ref>Zimmerman, B. (2000). Attaining self-regulation: A social cognitive perspective. In M. Boekaerts, P. R. Pintrich, & M. Zeidner (Eds.), Handbook of self-regulation (pp.13-39). San Diego, CA: Academic Press.</ref> প্রতিটি কৌশলের ব্যবহার এবং গণিতে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে কৌশলগুলো চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হয়। (সেশন ১২-৩০) শেষে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গণিত পাঠে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের নিজেদের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হয় লক্ষ্য নির্ধারণ, আত্মমূল্যায়ন এবং আত্ম-প্রতিক্রিয়া ফর্ম পূরণের মাধ্যমে। প্রোগ্রামের ৩০টি সেশন শেষ করার পর শিক্ষার্থীদের একটি গণিত পরীক্ষার পাশাপাশি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ফলাফল থেকে দেখা যায়, যারা প্রোগ্রামে অংশ নেয় তারা উভয় পরীক্ষাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফলাফল করে যাদের অংশগ্রহণ ছিল না তাদের তুলনায়।
===== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ =====
{| class="wikitable"
!কৌশলসমূহ
!গণিতে প্রয়োগ
|-
|আত্ম-মূল্যায়ন
|সঠিক পদ্ধতিতে প্রশ্নের যথার্থ উত্তর মিলিয়ে দেখা।
|-
|সংগঠন ও রূপান্তর
|প্রশ্নকে গুছিয়ে নেয়া, যেমন গ্রাফ, সমীকরণ, চিত্র ব্যবহার করা।
|-
|লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা
|লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা।
|-
|নোট নেয়া ও নজরদারি
|ক্লাসে নোট নেয়া এবং সমীকরণ গুছিয়ে রাখা।
|-
|পরিবেশ গঠন
|উপযুক্ত পরিবেশে অধ্যয়ন করা।
|-
|আত্ম-প্রতিক্রিয়া
|নিজের সাফল্য বা ব্যর্থতার জন্য নিজেই পুরস্কার বা শাস্তি নির্ধারণ।
|-
|অনুশীলন ও মুখস্থকরণ
|বিভিন্ন ধরনের গণিত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শেখা।
|-
|তথ্য অনুসন্ধান
|অ-সামাজিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ।
|-
|সামাজিক সহায়তা চাওয়া
|বন্ধু, শিক্ষক বা অন্য প্রাপ্তবয়স্কদের সাহায্য চাওয়া।
|-
|পুনরায় পর্যালোচনা করা
|পাঠ্যবই, নোট বা হোমওয়ার্ক পুনরায় পড়া।
|}
৩০টি সেশনে অংশ নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের গণিত অর্জন এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতায় লক্ষণীয় উন্নতি দেখা গেছে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এটি প্রমাণ করে যে, কম অর্জনক্ষম শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শিখন কৌশল শেখানো সম্ভব এবং কার্যকর। যখন তারা এই দক্ষতা অর্জন করে এবং প্রক্রিয়াভিত্তিক চিন্তায় মনোযোগ দেয়, তখন তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে। উন্নতির সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে শুরু করে। নিজেদের প্রশংসা ও পুরস্কার প্রদান তাদের আরও উন্নতির দিকে ধাবিত করে। এর ফলে তাদের আত্ম-দক্ষতা এবং গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ইতিবাচক চক্র তৈরি করে: শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারা গণিতে সফল হতে পারে, তখন তারা আরও কঠোর পরিশ্রম করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার সঠিক কৌশল প্রয়োগে সক্ষম হয়।
ঐতিহ্যগত শ্রেণিকক্ষে গণিতকে সাধারণত একটি উত্তর-কেন্দ্রিক বিষয় হিসেবে দেখা হয়, প্রক্রিয়া-কেন্দ্রিক নয়। গতি ও নির্ভুলতার ওপর গুরুত্ব দিলে, শিক্ষার্থীরা কেবল তথ্য মুখস্থ করতে শেখে, কিন্তু গণিত বুঝে না। এছাড়া, ঐ পরিবেশে শেখার প্রবাহ শুধুমাত্র শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীর দিকে হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ তারা যখন তাদের শেখার ওপর নিয়ন্ত্রণ পায় না, তখন তারা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শেখে না কিংবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা প্রয়োগেও আগ্রহী হয় না।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> অতএব, আত্মনিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ন্ত্রণ দিলে তারা শেখার সময় নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে শেখে। গণিত শিক্ষকরা জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যখন লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও নিজেদের কাজ মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে, তখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল চর্চা করার সুযোগ পায় যা তাদের গণিত অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
উচ্চ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিম্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তুলনায় আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল ভালোভাবে প্রয়োগ করতে পারে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এর কারণ হলো, বড় শিক্ষার্থীরা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার ধারণা ও কৌশলগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে। এছাড়া কিছু কৌশল যেমন পরিকল্পনা লেখা, শেখার উপাদান গুছিয়ে রাখা—এসবের জন্য পূর্বজ্ঞান দরকার হয়। ফলে বড়দের এসব কৌশল শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় এবং তারা গণিত অর্জনে তুলনামূলক বেশি উন্নতি করে।
== শিক্ষণ বিষয়ক প্রভাব ==
=== গণিত শেখার অক্ষমতা ===
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো যেগুলো জ্ঞানচর্চা, কার্যস্মৃতি এবং গণিত শেখার অক্ষমতা নিয়ে হয়েছে, সেগুলো দেখায় যে গণিতে “গণনা” এবং “সমস্যা সমাধান” দুটি আলাদা শেখার অক্ষমতা আছে। এতদিন গণিত মূল্যায়ন সাধারণ ছিল এবং এই দুই ডোমেইনের পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া হতো না। শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সময় পেশাদারদের উচিত এই দুটি দক্ষতা আলাদাভাবে বিবেচনা করা। শিক্ষকদেরও উচিত শিশুদের শেখানোর সময় এই আলাদা ডোমেইন দুটি চিন্তা করে পরিকল্পনা করা। গণিত শেখাতে কিছু পরামর্শ ও টুলস শিক্ষার্থীদের উপকারে আসতে পারে:
=== বাহ্যিক উপস্থাপন ===
গণিতে সমস্যা সমাধান অনেক সময় মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে, তাই বাহ্যিক উপস্থাপন অনেক উপকারী হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণিতের ধারণা স্পষ্ট করে তুলে ধরে, যাতে তারা সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বাহ্যিক উপস্থাপনের কিছু উদাহরণ হলো—সমাধানসহ উদাহরণ, অ্যানিমেশন ও চিত্র।
==== সমাধানসহ উদাহরণ ====
ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো একটি দরকারী শিক্ষামূলক পদ্ধতি যা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গণিত শেখার সুবিধার্থে ব্যবহার করেন। গবেষণা দেখায় যে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো ব্যবহার করে এমন শিক্ষার্থীদের বাড়িয়ে তুলতে পারে, যাদের গণিতের কর্মক্ষমতা স্তর কম। একটি কারণ হলো যখন শিক্ষার্থীদের সমাধান করার জন্য কোনও সমস্যা দেওয়া হয়, তখন তাদের সর্বোত্তম লক্ষ্য গণিত শেখার পরিবর্তে সমস্যাটি সমাধান করা। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণ দেওয়া হয়, তখন তারা আসলে শিখে এবং তাদের নিজেরাই উপকরণগুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।<ref>Renkl, A. (1999). Learning Mathematics from worked-out examples: Analyzing and Fostering self-explanations. ''European Journal of Psychology of Education, 14''(4), 477-488.</ref> সুতরাং, কাজ করা উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ইচ্ছাকৃত শিক্ষার উপর আরও বেশি ফোকাস করে। শিক্ষার্থীরা সাধারণত গাণিতিক তত্ত্ব বা প্রমাণ বুঝতে পারে না কারণ তারা বুঝতে জটিল। যাইহোক, পরিশ্রমী উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের শেখার অর্জন এবং গণিতের ধারণাটি বোঝার জন্য সহজ। সুস্পষ্ট নির্দেশনা না দিয়ে, শিক্ষকরা কেবল শিক্ষার্থীদের উল্লেখ করার জন্য উদাহরণ হিসাবে গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করবেন তার পদক্ষেপগুলো দেখায়। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। তারপরে, শিক্ষার্থীদের নিজেরাই একই ধরণের গাণিতিক সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করার স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। সুতরাং, তারা অনেক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রেফারেন্স হিসাবে কাজ করা উদাহরণগুলো ব্যবহার করতে পারে।<ref>Tu, C-T. (2011). An Instructional experiment: Using worked-out examples in mathematics problem-solving of elementary school students. ''Bulletin of Educational Psychology, 43''(1), 25-50.</ref> শিক্ষকরা যে পরিশ্রমী উদাহরণ দিয়েছেন তা উল্লেখ করে তারা কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনাকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করতে পারে। অতএব, এটি শিক্ষার্থীদের স্ব-নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাড়িয়ে তুলতে পারে কারণ তারা সমস্যা সমাধানে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা অনুশীলন করছে। এই '''মেটাকগনিটিভ''' কৌশলটি শিক্ষার্থীদের বিশেষত গাণিতিক শব্দ সমস্যাগুলোতে তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। মেটাকগনিটিভ কৌশলগুলোর মধ্যে স্ব-জিজ্ঞাসা, স্ব-মূল্যায়ন, সংক্ষিপ্তকরণ এবং সমস্যাটি চিত্রিত করা অন্তর্ভুক্ত।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> এই কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান অর্জন করার সময় কাজ করা উদাহরণগুলো থেকে আরও গভীর বোঝার জন্য তৈরি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করতে এবং তাদের সমাধান করতে পারে তাদের উচ্চতর গণিতের কৃতিত্ব রয়েছে। যখন শিক্ষার্থীরা নিজেরাই গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করা যায় তার পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা করে, তখন তারা তাদের প্রতিফলিত চিন্তাভাবনা অনুশীলন করে যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তার বাইরেও বৃহত্তর বোঝার তৈরি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শিক্ষার্থীরা গণিতের নতুন এবং পরিশীলিত জ্ঞান বিকাশ করতে পারে কারণ তারা তাদের পূর্ব জ্ঞানের সাথে নতুন শেখা উপকরণগুলোকে একত্রিত করে।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> উপরন্তু, ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো গ্রুপ সেটিংসেও ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে শিক্ষার্থীরা গাণিতিক সমস্যা সমাধানে তাদের সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করতে পারে। গবেষণায় দুটি উপায় পাওয়া গেছে যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণ ব্যবহার করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1348/000709903322591181</ref> একটা উপায় হলো, যারা কাজের উদাহরণ বোঝে তারা যারা বোঝে না তাদের বোঝাতে পারবে। অন্য উপায়টি হলো শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তি এবং যুক্তি দক্ষতা ব্যবহার করে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী উদাহরণগুলো ব্যাখ্যা করে। উভয় উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণগুলোর বিশদ আলোচনা করে একটি সামাজিক ইন্টারেক্টিভ সেটিংয়ে শেখার সাথে জড়িত। একটি সামাজিক সেটিংয়ে শেখা উপকরণগুলোর বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করতে পারে কারণ শিক্ষার্থীরা উদাহরণগুলো আরও গভীরভাবে প্রসারিত করছে। একটি স্পষ্ট বোঝার জন্য তারা কাজ করা উদাহরণগুলোর সাথে তাদের যে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471.</ref> তাই, শিক্ষার্থীদের উচিত ছোট দলে ভাগ হয়ে উদাহরণগুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া প্রতিফলিত করে নতুন জ্ঞান অর্জন করা।
==== অ্যানিমেশন ====
গণিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে অ্যানিমেশন একটি দারুণ কার্যকর শিক্ষণ উপকরণ হিসেবে বিবেচিত। যেহেতু গণিত অনেক সময় বিরক্তিকর এবং অনাকর্ষণীয় মনে হতে পারে, তাই অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত শেখার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক বলে দাবি করা হয়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
যেকোনো গণিত সমস্যার সমাধান করার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যাটি চিহ্নিত করা এবং কী সমাধান করতে হবে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে, যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সমস্যাটি অনুবাদ বা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন অ্যানিমেশন সবচেয়ে কার্যকর হয়ে ওঠে কারণ এতে চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা থাকে যা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নটি ব্যাখ্যা করা সহজ করে তোলে। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীরা শুধুই সমস্যার নোট নেয়, তখন তারা কেবল পাঠ্য অনুলিপি করে, যার ফলে সমস্যার প্রকৃত অর্থ বোঝা সম্ভব হয় না। তবে যদি সমস্যার ব্যাখ্যার পাশাপাশি একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে সমস্যার পটভূমি।
উদাহরণস্বরূপ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ ও বিয়োগের ধারণা পাঠ্যপাঠের মাধ্যমে বোঝানো কঠিন হতে পারে। কিন্তু, যখন একটি সমস্যার আগের ও পরের অবস্থা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়, তখন এটি একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে পারে। যোগ ও বিয়োগ ভিত্তিক সমস্যার ক্ষেত্রে, অ্যানিমেশন বস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাধান ব্যাখ্যা করতে পারে। এছাড়াও, অ্যানিমেশন বিমূর্ত গণিত তত্ত্বকে দৃশ্যমান বস্তু, নির্দিষ্ট ফলাফল এবং বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে, অ্যানিমেশন ব্যবহার করে গণিতের বিমূর্ত ধারণাগুলোকে নির্দিষ্ট উদাহরণের সঙ্গে যুক্ত করে শেখানো যায়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
অ্যানিমেশন দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে বিমূর্ত নীতিগুলোর অধিগ্রহণ এবং উদাহরণ বিশ্লেষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও উদাহরণ বিশ্লেষণ একটি কার্যকর শিক্ষণ কৌশল হিসেবে পরিচিত, তবুও অ্যানিমেশন এই উদাহরণগুলোকে আরও উন্নত করতে পারে।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref> উদাহরণ বিশ্লেষণ সব সময় চিত্র সহ হয় না, বরং কেবল পাঠ্য থাকতে পারে। তাই, যদি প্রতিটি ধাপের জন্য চিত্র উপস্থাপন থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি কল্পনা করতে পারে। শিক্ষার্থীরা ব্যাখ্যা ও চিত্রের মাধ্যমে উদাহরণগুলো আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। ফলস্বরূপ, শিক্ষকদের উচিত অ্যানিমেশনকে একটি শিক্ষণ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গণিত শিক্ষাকে আরও সুদৃঢ় করা।
==== রেখাচিত্র ====
তথ্যভিত্তিক রেখাচিত্র তৈরি করা একটি কঠিন কাজ, কারণ শিক্ষার্থীদের শুধু মৌখিক তথ্যকে চিত্রে রূপান্তর করলেই হয় না, বরং সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চিহ্নিত ও একত্রিত করে পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করতে হয়।<ref>van Garderen, D., Scheuermann, A., & Poch, A. (2014). Challenges students identified with a learning disability and as high-achieving experience when using diagrams as a visualization tool to solve mathematics word problems. ZDM Mathematics Education, 46, 135–149.</ref>
লারকিন এবং সাইমন বিশ্বাস করতেন যে, অনুচ্ছেদ ভিত্তিক উপস্থাপনার তুলনায় চিত্রভিত্তিক উপস্থাপন আরও সহজ ও কার্যকর, বিশেষত অনুসন্ধান, মেলানো এবং উপসংহারের ক্ষেত্রে। প্রথমত, এটি শব্দ সমস্যার উপাদানগুলোর মধ্যে টপোগ্রাফিক এবং জ্যামিতিক সম্পর্ক স্পষ্টভাবে ধরে রাখে, ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পেতে সহজতর হয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলো একত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ থাকায় এটি বিমূর্ত উপস্থাপনা ও চিত্রচিহ্নের মধ্যে সম্পর্ক পরিষ্কার করে তোলে। তৃতীয়ত, যদি সমস্যাটি চিত্র এঁকে তৈরি করা হয়, তবে মেমরি লোড কমে যায় কারণ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখতে পারে।<ref>Larkin, J., & Simon, H. (n.d.). Why a Diagram is (Sometimes) Worth Ten Thousand Words. Cognitive Science, 65-100.</ref>
অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্রের ব্যবহার সমস্যার সমাধান দক্ষতা বাড়াতে পারে।
বানার্জি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত শব্দ সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহার করার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্র তৈরির পদ্ধতি (যেমন রেখাচিত্র আঁকা ও লেবেলিং) গণিত সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের অর্জন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।<ref>Banerjee, B. (2011). The effects of using diagramming as a representational technique on high school students' achievement in solving math word problems. Dissertation Abstracts International Section A, 71, 394</ref>
[[চিত্র:Percentage_of_correct_answers_between_the_Japanese_and_New_Zealand_students.jpg|থাম্ব|জাপান এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রেখাচিত্র ব্যবহার করে গণিত শব্দ সমস্যার সঠিক উত্তরের শতাংশের তুলনা]]
এক গবেষণায়, উসাকা, মানালো এবং ইচিকাওয়া জাপান ও নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের তুলনা করেন।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref> জাপানি শিক্ষার্থী একটি একক বস্তু ভিত্তিক রেখাচিত্র ব্যবহার করেছিল, এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থী দুটি মাত্রার বস্তু ব্যবহার করেছিল। গবেষণায় দেখা যায় যে, নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের সঠিক উত্তরের হার জাপানি শিক্ষার্থীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর কারণ হলো, রেখাচিত্র উপস্থাপনা সমস্যার বাক্যগুলোকে অবস্থানের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট স্থানে বিস্তারিতভাবে তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং সমস্যা বুঝতে সুবিধা হয়।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref>
শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে হলে, শিক্ষককে প্রথমে তাদের শেখাতে হবে— ১) রেখাচিত্র কী, ২) সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহারের গুরুত্ব, ৩) কখন রেখাচিত্র ব্যবহার করতে হবে, ৪) কোন ধরণের রেখাচিত্র কোন সমস্যায় প্রযোজ্য, ৫) কীভাবে রেখাচিত্র তৈরি করতে হয়, এবং ৬) কীভাবে রেখাচিত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্রের মৌলিক ধারণাগুলো জানা জরুরি কারণ সব গণিত সমস্যায় রেখাচিত্র প্রযোজ্য নয়। উসাকা ও মানালো দেখিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা সাধারণত দৈর্ঘ্য ও দূরত্ব সম্পর্কিত শব্দ সমস্যায় রেখাচিত্র ব্যবহার করে, কারণ এসব সমস্যা সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং বাস্তব সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।<ref>Uesaka, Y., & Manalo, E. (2012). Task-related factors that influence the spontaneous use of diagrams in math word problems. Applied Cognitive Psychology, 26, 251–260.</ref>
এই ধারণাগুলো শেখানোর পর, শিক্ষকরা তিন ধাপের একটি পদ্ধতি— "জিজ্ঞাসা করো, করো, যাচাই করো"— ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।<ref>van Garderen, D., & Scheuermann, A. (2015). Diagramming word problems: A strategic approach for instruction. Intervention in School and Clinic</ref> ভ্যান গার্ডেরেন এবং শুয়ারম্যান পরামর্শ দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কোন সমস্যাটি সমাধান করতে হবে তা শনাক্ত করবে; এরপর একটি রেখাচিত্র আঁকবে; শেষে রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যাটি সমাধান করবে। উদাহরণস্বরূপ, সমস্যার প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে পেতে শিক্ষার্থীরা কী-শব্দ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে এবং সমস্যায় দেওয়া তথ্য সঠিকভাবে স্থাপন করতে পারে।<ref>Walker, D. W., & Poteet, J. A. (1989-90). A comparison of two methods of teaching mathematics story problem-solving with learning disabled students. National Forum of Special Education Journal, 1, 44-51.</ref>
সারসংক্ষেপে, রেখাচিত্র গণিত সমস্যার সমাধানে একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে; এটি শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তায় সহায়তা করে এবং বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
=== অ্যালগরিদম ===
অ্যালগরিদম হলো একাধিক ধাপের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীদের গণিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যদি তারা প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে, তাহলে তারা প্রতি বারই একটি সঠিক উত্তর বের করতে সক্ষম হয়। অ্যালগরিদম সাধারণত পুনরাবৃত্ত ক্রমের উপর ভিত্তি করে এবং এটি যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগে প্রযোজ্য। অ্যালগরিদম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ধাপে কী ঘটছে তা ব্যাখ্যা করতে শেখে এবং ভুল হলে তা শনাক্ত করতে পারে। এটি তাদের সমস্যা সমাধানের সময় প্রতিটি ধাপে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। একাধিক ধাপ বিশিষ্ট সমস্যার সমাধানে, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে অ্যালগরিদম স্মরণ করে মানসিকভাবে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়।
শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখানো যে অ্যালগরিদম সবসময় ধারাবাহিকভাবে সমাধান করতে হবে; কোনও ধাপ বাদ দেওয়া যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, যখন শিক্ষার্থীরা ৫+৮×৬ সমস্যার সমাধান করে, তখন তাদের বুঝতে হবে যে প্রথমে গুণ করতে হবে, এরপর যোগ করতে হবে। যদি তারা সঠিক ক্রম অনুসরণ করে, তাহলে তারা সবসময় সঠিক উত্তর পাবে।
তবে, পল কব একটি গবেষণায় গ্রেড ১ ও ২-এর শিক্ষার্থীদের ডাবল ডিজিট যোগের সমস্যা সমাধান নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি দেখেছেন, ১৬+৯ সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে। কিন্তু যখন তাদের ঐ একই সমস্যা প্রচলিত স্কুল অ্যালগরিদম (সংখ্যা হাতে থাকা সহ) ব্যবহার করে উল্লম্বভাবে সমাধান করতে বলা হয়, তখন অনেকেই ভুল উত্তর দেয়। তিনি উপসংহার টানেন যে, প্রচলিত অ্যালগরিদমে শিক্ষার্থীরা কেবল নিয়ম অনুসরণ করতে চেষ্টা করে, কিন্তু কিভাবে অ্যালগরিদমটি কাজ করে তা প্রকৃতপক্ষে বুঝে না বলেই তাদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Cobb, P. (1991). Reconstructing Elementary School Mathematics. Focus on Learning Problems in Mathematics, 13(2), 3–32.</ref>
জে. এস. ব্রাউন এবং বার্টন দেখেছেন যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে তাদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য এক বা একাধিক ভুল অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে। যদিও অনেক ভুল অ্যালগরিদম সঠিক উত্তর দিতে পারে, তবুও তা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।<ref>Brown, J.S., Burton, R.B. (1978). Diagnostic models for procedural bugs in basic mathematical skills. Cognitive Science, 2, 155-192</ref> উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিশুর মনে একটি পূর্বধারণা ছিল যে বিয়োগ অ্যালগরিদম মানে হলো প্রতিটি কলামে উপরের সংখ্যাটির সঙ্গে নিচের সংখ্যাটি তুলনা করে ছোটটি বড় থেকে বিয়োগ করা, উপরের সংখ্যাটি বড় কি না, তা না জেনেই। বাম পাশের চিত্রটি ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম সবসময় সঠিক সমাধান দিতে পারে না।
[[চিত্র:Faulty_algorithm_of_subtraction.jpg|থাম্ব|একটি চিত্র যা ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম কাজ করে না]]
ব্রাউন এবং বার্টন উল্লেখ করেছেন, এমনকি যেসব শিশু বিয়োগের অ্যালগরিদম সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে, তারা হয়তো মনে করে যে তারা বিয়োগ প্রক্রিয়াটি বুঝে ফেলেছে। এই ভুল ধারণা তাদের (a) ও (c) অংশে সঠিক উত্তর দিতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু (b) ও (d) অংশে ভুল উত্তর দিবে, কারণ সেসব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কলামে উপরের সংখ্যা নিচের চেয়ে ছোট।
নাগেল এবং সুইঙ্গেন মনে করেন, ধারক বা ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো কার্যকারিতা এবং নির্ভুলতা বাড়াতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝার সক্ষমতা বাড়াতে ব্যর্থ হয়।<ref>Nagel, N., & Swingen, C. C. (1998). Students’ explanations of place value in addition and subtraction. Teaching Children Mathematics, 5(3), 164–170.</ref>
সুতরাং, ধারাবাহিক অ্যালগরিদম ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা যাতে সফল হয়, এর জন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জায়গা ভিত্তিক চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে ধাপে ধাপে সমাধান শেখানো উচিত। যেমন, সঠিকভাবে সংখ্যাগুলো সাজানো এবং ফাঁকা জায়গা রেখে লেখা শেখাতে হবে—বিশেষ করে কলামভিত্তিক বিয়োগ, একাধিক অঙ্কের গুণ ইত্যাদিতে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা নিজের অ্যালগরিদম তৈরি করে সমস্যার সমাধান করে। শিক্ষকরা তাদের মনের মধ্যে নিমোনিকস ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন; এই পদ্ধতি সমস্যার ধাপগুলো মনে রাখতে সাহায্য করে।<ref>Nelson, P. M., Burns, M. K., Kanive, R., & Ysseldyke, J. E. (2013). Comparison of a math fact rehearsal and a mnemonic strategy approach for improving math fact fluency. Journal Of School Psychology, 51(6), 659-667. doi:10.1016/j.jsp.2013.08.003</ref> যেমন, PEDMAS শিক্ষার্থীদের বলে দেয় কোন ক্রমে গাণিতিক কাজ করতে হবে। শুধু বাম থেকে ডানে গাণিতিক অপারেশন করলেই চলবে না, আগে বন্ধনীর কাজ শেষ করতে হবে।<ref>Jeon, K. (2012). Reflecting on PEMDAS. Teaching Children Mathematics, 18(6), 370-377.</ref> পাশাপাশি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবেন যেন তারা প্রথমে পুরো সমস্যাটি পড়ে বোঝে, এরপর সেটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কোন অংশে কোন অ্যালগরিদম লাগবে তা নির্ধারণ করে। প্রতিটি ধাপে তাদের উত্তর পুনর্বিবেচনা করতে শেখানো উচিত। ধাপগুলো লিখে রাখলে শিক্ষার্থীরা ভুল ধরতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
=== শব্দভিত্তিক সমস্যার কৌশল ===
শব্দভিত্তিক সমস্যা সব শিশুদের জন্যই একটি বিশেষ ধরণের চ্যালেঞ্জ, তবে যাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে শেখার অসুবিধা রয়েছে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন। গাণিতিক সমস্যা ও শব্দভিত্তিক সমস্যার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো ভাষাগত তথ্যের সংযুক্তি। অর্থাৎ, শিশুদের প্রথমে সমস্যাটির লেখা পড়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য বাছাই করে সেটিকে সংখ্যাগত সমস্যায় রূপান্তর করতে হয়। এরপর তাদের নির্ধারণ করতে হয় কোন তথ্যটি প্রয়োজনীয় এবং কোনটি অনুপস্থিত।
শব্দভিত্তিক সমস্যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বোঝা কঠিন, তবে সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন শিক্ষার্থীর প্রথম ভাষা ইংরেজি না হয়। জ্যান ও রদ্রিগেস (২০১২)<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref> এর মতে, যাদের ইংরেজি দ্বিতীয় ভাষা, তারা ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে সমস্যার বক্তব্য বুঝতে পারে না। তারা প্রায়শই মূল শব্দের উপর নির্ভর করে অথবা বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করে, ফলে ভুল সমাধান আসে। মূল শব্দের উপর নির্ভরশীলতা শিক্ষার্থীদের সমস্যা বোঝা থেকে বিচ্যুত করে। "মূল শব্দের ব্যবহার দৈনন্দিন ভাষা ও গাণিতিক ভাষার মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।"<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, P. 156, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref>
এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে শ্রেণিকক্ষে আলোচনা বা ছোট ছোট দলের আলোচনা শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি কী এবং কী জানতে চাওয়া হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের পড়া, বোঝা, মতামত বিনিময় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা ও সমাধান নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিলে তারা সমস্যাটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে।
শব্দভিত্তিক সমস্যা শেখানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সুযোগ দেবেন যেন তারা সমস্যার অর্থ নিয়ে চিন্তা ও আলোচনা করতে পারে এবং সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে একাধিক সমাধান ভাবতে পারে। এই পদ্ধতি ভাষাগত সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থী এবং গাণিতিক শেখার সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর।
শিক্ষা প্রতিবন্ধী পরিষ <ref>http://www.council-for-learning-disabilities.org/mathematics-disabilities</ref> সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য কিছু কৌশল প্রস্তাব করে:
''ফাস্ট ড্র'' (মার্সার এবং মিলার, ১৯৯২): আপনি কী সমাধান করছেন তা খুঁজে বের করুন।
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, "সমস্যাটির অংশগুলি কী?"
সংখ্যাগুলি সেট আপ করুন।
চিহ্নটি বেঁধে দিন।
চিহ্নটি আবিষ্কার করুন।
সমস্যাটি পড়ুন।
উত্তর দিন, অথবা আঁকুন এবং পরীক্ষা করুন।
উত্তর লিখুন।
<nowiki>''প্রশ্ন এবং ক্রিয়া''</nowiki> (রিভেরা, ১৯৯৪)
পদক্ষেপ
ক. সমস্যাটি পড়ুন।
প্রশ্ন
এমন কোন শব্দ আছে যা আমি জানি না?
আমি কি প্রতিটি শব্দের অর্থ জানি?
আমার কি সমস্যাটি পুনরায় পড়ার প্রয়োজন?
সংখ্যার শব্দ আছে?
ক্রিয়া
শব্দগুলি নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
সংজ্ঞাগুলি খুঁজে বের করুন।
পুনরায় পড়ুন।
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
খ. সমস্যাটি পুনরায় বর্ণনা করুন।
কোন তথ্য গুরুত্বপূর্ণ?
কোন তথ্যের প্রয়োজন নেই?
প্রশ্নটি কী জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে?
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
ক্রস আউট করুন।
নিজের শব্দে লিখুন।
গ. একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
তথ্যগুলো কী কী?
সেগুলো কীভাবে সংগঠিত করা যেতে পারে?
কত ধাপ আছে?
আমি কোন কোন ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করব?
একটি তালিকা তৈরি করুন।
চার্ট তৈরি করুন।
কৌশল ব্যবহার করুন।
ছোট সংখ্যা ব্যবহার করুন।
একটি ক্রিয়াকলাপ নির্বাচন করুন।
ঘ. সমস্যাটি গণনা করুন।
আমি কি সঠিক উত্তর পেয়েছি?
অনুমান করুন।
অংশীদারের সাথে পরীক্ষা করুন।
ক্যালকুলেটর দিয়ে যাচাই করুন।
ঙ. ফলাফল পরীক্ষা করুন।
আমি কি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি?
আমার উত্তর কি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে?
আমি কি প্রশ্ন/উত্তর পুনঃবক্তৃতা করতে পারি?
প্রশ্ন/উত্তর পরীক্ষা করুন।
একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
৩. <nowiki>''টিআইএনএস কৌশল''</nowiki> (ওওয়েন, ২০০৩)
শব্দ সমস্যা বিশ্লেষণ এবং সমাধানের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পদক্ষেপ এই সংক্ষিপ্ত রূপ দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চিন্তা: এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার কী করতে হবে তা নিয়ে ভাবুন এবং মূল শব্দগুলিকে বৃত্তাকার করুন।
তথ্য: এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বৃত্তাকার করুন এবং লিখুন; একটি ছবি আঁকুন; অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিন।
সংখ্যা বাক্য: সমস্যাটি উপস্থাপনের জন্য একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
সমাধান বাক্য: আপনার উত্তর ব্যাখ্যা করে এমন একটি সমাধান বাক্য লিখুন।
উদাহরণ: কাইল ৬টি বেসবল কার্ড কিনেছে। পরের দিন, সে তার সংগ্রহে আরও ১১টি কার্ড যোগ করেছে। তার কাছে মোট কতটি কার্ড আছে?
চিন্তা: +
তথ্য: ৬টি বেসবল কার্ড, ১১টি বেসবল কার্ড
সংখ্যা বাক্য: ৬ + ১১ =
সমাধান বাক্য: কাইলের সংগ্রহে ১৭টি বেসবল কার্ড রয়েছে।
৪. <nowiki>''সমস্যা সমাধান''</nowiki> (বীরশ, লিয়ন, ডেনকলা, অ্যাডামস, মোটস এবং স্টিভস, ১৯৯৭)
প্রথমে সমস্যাটি পড়ো।
প্রশ্নটি হাইলাইট করো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করো।
একটি পরিকল্পনা তৈরি করো।
সংখ্যাগুলো বোঝাতে চিত্র বা বস্তু ব্যবহার করো।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো।
তোমার কাজ যাচাই করো।
==== বীজগণিত শেখানোর জন্য কগনিটিভ টিউটর ====
১৯৮৫ সালে, অ্যান্ডারসন, বয়েল এবং রেইজার বুদ্ধিমান শেখানোর পদ্ধতিতে কগনিটিভ মনস্তত্ত্ব যুক্ত করেন। এরপর থেকে এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্রদের শেখানোর জন্য কগনিটিভ মডেল তৈরি করা হয়। এ নাম রাখা হয় কগনিটিভ টিউটরস।<ref name="anderson et al. 1995">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive Tutors: Lessons learned. Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167.</ref> সবচেয়ে জনপ্রিয় কগনিটিভ টিউটর হলো কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I।<ref name="k&c, 2006">Koedinger, K. R., & Corbett, A. (2006). Cognitive tutors. The Cambridge handbook of the learning sciences, 61-77.</ref> এটি তৈরি করেছে কার্নেগি লার্নিং, ইনকর্পোরেটেড। তারা এখন বীজগণিত I, II, বীজগণিতের সেতু, জ্যামিতি এবং ইন্টিগ্রেটেড ম্যাথ I, II, III সহ সম্পূর্ণ কগনিটিভ টিউটর® তৈরি করছে। কগনিটিভ টিউটর®-এ এখন স্প্যানিশ মডিউলও যুক্ত হয়েছে।
==== কীভাবে শেখাতে হবে ====
দুটি অন্তর্নির্মিত অ্যালগরিদম—'''''মডেল ট্রেসিং''''' এবং '''নলেজ ট্রেসিং''' শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। মডেল ট্রেসিং শিক্ষার্থীর প্রতিটি ধাপের ভিত্তিতে ঠিক সময়ে প্রতিক্রিয়া, অনুরোধে পরামর্শ এবং বিষয়ভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেয়।<ref name="anderson et al. 1995" /> নলেজ ট্রেসিং প্রতিটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান অনুযায়ী শেখার কাজ নির্ধারণ করে।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref name="k&c, 2006" />
তোমরা ''[[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি]]'' অধ্যায়ের ([[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি#কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি|২.৫.২ কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি]]) অংশে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারো কীভাবে কগনিটিভ টিউটর বীজগণিত শেখাতে সাহায্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, অনুরোধভিত্তিক পরামর্শ, বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা ও ব্যক্তিকৃত কাজের মাধ্যমে।
==== কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর মিশ্র প্রভাব ====
কগনিটিভ টিউটরের কার্যকারিতা নিয়ে পূর্ববর্তী গবেষণার প্রমাণ থেকে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানের তুলনায় কগনিটিভ টিউটর অধিক কার্যকর।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref>Koedinger, K. R. & Anderson, J. R. (1993). Effective use of intelligent software in high school math classrooms. In Proceedings of the World Conference on Artificial Intelligence in Education, (pp. 241-248). Charlottesv</ref><ref name="K&A&M">Koedinger, K., Anderson, J., Hadley, W., & Mark, M. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. Human-Computer Interaction Institute.</ref><ref>Corbett, A. T., & Anderson, J. R. (2001). Locus of feedback control in computer-based tutoring: Impact on learning rate, achievement and attitudes. In Proceedings of the SIGCHI Conference on Human Factors in Computing Systems (pp. 245–252). New York, NY, USA: ACM.</ref>
তবে, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন সায়েন্সেস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি সাম্প্রতিক স্বাধীন ও বৃহৎ আকারের গবেষণা ''ক্লিয়ারিংহাউস কী কাজ করে''<ref>What Works Clearinghouse (ED). (2016). Carnegie Learning Curricula and Cognitive Tutor[R]. What Works Clearinghouse Intervention Report. What Works Clearinghouse.</ref> কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I সম্পর্কিত ২২টি গবেষণার মধ্যে ৬টি পর্যালোচনা করে, যেখানে ৮ম থেকে ১৩শ গ্রেড পর্যন্ত ১২,৮৪০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১১৮টি স্থানে। গবেষকরা দেখতে পান, কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর বীজগণিত শেখার ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সাধারণ গণিত দক্ষতার ওপর কোনও উল্লেখযোগ্য বা প্রাসঙ্গিক প্রভাব দেখা যায়নি।
মরগান এবং রিটার,<ref>Morgan, P., & Ritter, S. (2002). An experimental study of the effects of Cognitive Tutor® Algebra I on student knowledge and attitude. Pittsburgh, PA: Carnegie Learning, Inc.</ref> ওকলাহোমার মুর শহরের পাঁচটি ভিন্ন স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত ক্লাসে একটি অভ্যন্তরীণ শিক্ষক-ভিত্তিক পরীক্ষামূলক গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গবেষণায় প্রতিটি শিক্ষককে অন্তত একটি কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ইন্টিগ্রেটেড ক্লাসরুম এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাসরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, যারা কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহার করে শিখেছিল তারা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফল করেছিল এবং গণিত বিষয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল।
কাবালো, জাকিউ এবং ভু<ref>Cabalo, J. V., Jaciw, A., & Vu, M. (2007). Comparative effectiveness of Carnegie Learning’s Cognitive Tutor® Algebra I curriculum: A report of a randomized experiment in the Maui School District. Palo Alto, CA: Empirical Education, Inc.</ref> হাওয়াইয়ের মাউই কাউন্টির পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর কার্যকারিতা পর্যালোচনার জন্য একটি র্যান্ডমাইজড গবেষণা পরিচালনা করেন। ছয় মাসের ব্যবহারের পর ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শেষে শিক্ষার্থীদের এনডব্লিউইএ বীজগণিত কোর্স সমাপ্তির অর্জন স্তর পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কগনিটিভ টিউটর® সফটওয়্যার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করুক বা না করুক, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর গণিতে উন্নতি দেখা যায়। তবে, যারা আগে দুর্বল ছিল, তারা ব্যবহার শুরু করার পর উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে, যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্কোরধারীদের চেয়ে বেশি ছিল।
ক্যাম্পুজানো, ডিনারস্কি, আগোদিনি এবং রাল<ref>Campuzano, L., Dynarski, M., Agodini, R., & Rall, K. (2009). The effectiveness of reading and mathematics software products: Findings from two student cohorts. Washington, DC: U.S. Department of Education, Institute of Education Sciences.</ref> একটি ২ বছরব্যাপী কংগ্রেস-অনুমোদিত গবেষণা পরিচালনা করেন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষণপদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য, যার দ্বিতীয় বছরে নয়টি দরিদ্র স্কুলে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন এবং শিক্ষকদের র্যান্ডমভাবে সফটওয়্যার ব্যবহারে অথবা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে ভাগ করে দেন। সব শিক্ষার্থীদের শরৎ ও বসন্তকালে ETS End-of-Course (ইটিএস এন্ড অফ কোর্স) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। দ্বিতীয় বছরে সফটওয়্যার ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা প্রথম বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখায়, যদিও পরীক্ষার স্কোরে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল সামান্য (p<০.৩)।
প্যান, গ্রিফিন, ম্যাককাফ্রে এবং কারাম<ref>Pane, J. F., Griffin, B. A., McCaffrey, D. F., Karam, R., Daugherty, L., & Phillips, A. (2013). Does an algebra course with tutoring software improve student learning?.</ref> কগনিটিভ টিউটর® যুক্ত বীজগণিত পাঠ্যক্রমের কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন। গবেষণা দুটি ধারাবাহিক শিক্ষাবর্ষজুড়ে চলে এবং সফটওয়্যারটি সপ্তাহে তিন দিন শিক্ষক-নির্দেশিত ক্লাসে এবং দুই দিন কম্পিউটার-নির্দেশিত ক্লাসে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বছর হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে শিক্ষাগত সাফল্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি (p<০.৪৬)। তবে দ্বিতীয় বছরে কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ শক্তিশালী ছিল (p<০.০৪), এবং হস্তক্ষেপকারী দলে যেসব শিক্ষার্থীর সাফল্য আগে কম ছিল, তাদের অগ্রগতি বেশি ছিল।
== শব্দকোষ ==
'''অ্যালগরিদম''' হলো গাণিতিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত একাধিক ধাপবিশিষ্ট একটি প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে সঠিক সমাধান প্রদান করে।
'''প্রয়োগ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা গাণিতিক ধারণার সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
'''স্পষ্টীকরণ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে, ফলে তারা সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাখ্যা করতে পারে।
'''শ্রেণিবিন্যাস''' হলো একই রকম বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বস্তুগুলোকে গোষ্ঠীবদ্ধ করার ক্ষমতা।
'''ধারণাগত জ্ঞান''' হলো মানসিক গঠন যা শিক্ষার্থীদের যুক্তি ও গাণিতিক ধারণা বোঝার ভিত্তি তৈরি করে।
'''ঘোষণামূলক জ্ঞান''' হলো সেই গাণিতিক ধারণা যা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে আহরণ করা হয় এবং যেগুলো ব্যবহার করে জটিল সমস্যা সমাধান করা যায়।
'''মূল্যায়ন''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে সমস্যার সমাধানের সঠিকতা নির্ধারণ করতে পারে।
'''অনুমান''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা সাধারণ ধারণা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করে এবং বস্তুসমূহের মধ্যে পার্থক্য ও সাদৃশ্য নির্ধারণ করতে পারে।
'''অন্তঃপ্রণোদনা''' হলো এমন একটি অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের আগ্রহে কোনো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
'''মেটাকগনিটিভ''' হলো নিজের চিন্তা ও শেখার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত জ্ঞান।
'''পদ্ধতিগত জ্ঞান''' হলো সমস্যা সমাধানের কৌশলের ধাপসমূহ সম্পর্কে জ্ঞান।
'''ক্রমবিন্যাস''' হলো বস্তুগুলোর আকার অনুযায়ী (যেমন: দৈর্ঘ্য, ওজন, আয়তন) ছোট থেকে বড় বা বড় থেকে ছোটভাবে সাজানোর ক্ষমতা।
'''স্বনিয়ন্ত্রিত শেখা''' হলো নিজের শেখা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, শুরু থেকে নিজের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন পর্যন্ত।
'''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' এমন তথ্য সাময়িকভাবে ধারণ করে যা ব্যবহৃত হবে, তবে তা পরিবর্তিত হবে না।
'''কার্যকরী স্মৃতি''' হলো একটি ব্যবস্থাপনা যা নতুন বা পূর্ববর্তী তথ্যকে অস্থায়ীভাবে ধরে রাখে, যাতে তা বর্তমান কাজে ব্যবহার করা যায়।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
# ''বেকার, সি কে (২০১৫)। "A case study of novice teachers' mathematics problem solving beliefs and perceptions"। গবেষণামূলক অ্যাবস্ট্রাক্ট ইন্টারন্যাশনাল সেকশন এ, ৭৫''
# ''লোরেঙ্ক, ও (২০১২)। "Piaget and Vygotsky: Many resemblances, and a crucial difference. New Ideas In Psychology", ৩০ (৩), ২৮১-২৯৫। doi:10.1016/j.newideapsych.2011.12.006''
== তথ্যসূত্র ==
* ফুচস, এলএস, ফুচস, ডি, স্টুবিং, কে, ফ্লেচার, জেএম, হ্যামলেট, সিএল, এবং ল্যামবার্ট, ডাব্লু (২০০৮)। সমস্যা সমাধান এবং গণনামূলক দক্ষতা: তারা গাণিতিক জ্ঞানের ভাগ বা স্বতন্ত্র দিক? শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল ১০০ (১), ৩০
* হানিচ, এলবি, জর্ডান, এনসি, কাপলান, ডি, এবং ডিক, জে (২০০১)। "শেখার প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে গাণিতিক জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে পারফরম্যান্স"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৩, ৬১৫–৬২৬।
* রাউর্ক, বিপি, এবং ফিনলেসন, এমএজে (১৯৭৮)। "একাডেমিক দক্ষতার নিদর্শনগুলোর বিভিন্নতার নিউরোপাইকোলজিকাল তাত্পর্য: মৌখিক এবং ভিজ্যুয়াল-স্থানিক ক্ষমতা"। অস্বাভাবিক শিশু মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৬, ১২১–১৩৩।
* সোয়ানসন, এইচএল, এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গার, এম (২০০৪)। "গুরুতর গণিতের অসুবিধার ঝুঁকিতে থাকা এবং ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের মধ্যে কার্যকর স্মৃতি এবং গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মধ্যে সম্পর্ক"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৬, ৪৭১–৪৯১।
* সোয়ানসন, এইচ এল (২০০৩)। "শেখার অক্ষম এবং দক্ষ পাঠকদের কাজের মেমরিতে বয়স-সম্পর্কিত পার্থক্য"। পরীক্ষামূলক শিশু মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৮৫, ১–৩১।
{{সূত্র তালিকা}}{{সূত্র তালিকা}}
jof6ywlfl4e74u0ckufros8yqprq2m9
85681
85680
2025-07-05T15:33:54Z
Mehedi Abedin
7113
85681
wikitext
text/x-wiki
গণিতের বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন জ্যামিতি, বীজগণিত, ক্যালকুলাস এবং সম্ভাব্যতা; প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে বিশেষ ধরনের ধারণা ও পদ্ধতির দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন। শিক্ষাদান এবং শেখার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ থাকে, তা বোঝা ও অতিক্রম করা যায় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই অধ্যায়ে আমরা গণিত শিক্ষায় প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গবেষণা পর্যালোচনা করব। আমরা পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্বের প্রাসঙ্গিক দিক এবং এই তত্ত্বের সমালোচনা আলোচনা করব। আমরা ব্যাখ্যা করব কীভাবে বিভিন্ন বিষয় একজন শিক্ষার্থীর গণিত শেখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে শিক্ষকরা পাঠ পরিকল্পনার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে পারেন।
==গণিত কী?==
গণিত হলো সংখ্যা, পরিমাণ, জ্যামিতি ও স্থান এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কার্যাবলীর অধ্যয়ন। এটি '''ধারণাগত, প্রক্রিয়াগত এবং ঘোষণামূলক জ্ঞান'''-এর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press. </ref> গণিত সমস্যার সফল সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের এই জ্ঞানসমষ্টি অর্জন করতে হয়। গণিতে সঠিকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগে ধারণাগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য পূর্বে শেখা ধারণাগুলোর প্রয়োগ দরকার হয়। গণিতের ধারণাগত জ্ঞান অন্য সব গণিত-সম্পর্কিত দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা করে যেমন: ইতিবাচক মনোভাব, প্রক্রিয়াগত দক্ষতা, কৌশলগত পারদর্শিতা এবং অভিযোজিত যুক্তিশক্তি। একটির বিকাশ অন্যগুলোকেও শক্তিশালী করে এবং এতে সামগ্রিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, ধারণাগত জ্ঞান প্রক্রিয়াগত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে, এবং এই ধারাটি চলতে থাকে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> উদাহরণস্বরূপ, গণিতে অনেক ধরনের অ্যালগরিদম রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন। যখন শিক্ষার্থীরা গণিতের মূলনীতি ও ধারণাগুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে, তখন তারা যেকোনো সমস্যার জন্য যথাযথ অ্যালগরিদম বেছে নিয়ে তা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। এটি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সংযোগ নির্দেশ করে কারণ শিক্ষার্থীরা অনেক কৌশল শিখলেও সঠিকটি বেছে নেওয়া এবং তা প্রয়োগ করাই মূল বিষয়।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> এছাড়াও, জটিল গণিত সমস্যার সমাধানে কোনো প্রক্রিয়া সফল হলে বা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সেখান থেকে আরও শিখতে পারে। ভুলের মাধ্যমে আত্ম-প্রশ্ন করে তারা নিজের বিদ্যমান জ্ঞান পুনর্গঠন করতে পারে এবং ফলে তাদের ধারণাগত জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। ঘোষণামূলক জ্ঞান ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কারণ এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে ধারণা (ধারণাগত জ্ঞান) ও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম (প্রক্রিয়াগত জ্ঞান) পুনরুদ্ধার করতে হয়। এই তিনটি ক্ষেত্রের যেকোনো একটির ঘাটতি গণিত শেখায় অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press.</ref> সুতরাং, এই তিন ধরনের জ্ঞানের সংমিশ্রণ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় তা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
==জ্ঞানীয় তত্ত্ব এবং গণিত==
===পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্ব===
জঁ পাইগেট জন্ম থেকে কৈশোর পর্যন্ত জ্ঞানীয় বিকাশকে চারটি ধাপে ভাগ করেছেন: সংবেদনশীল গতি (জন্ম থেকে ২ বছর), প্রাক-পরিচালন (প্রায় ২ থেকে ৭ বছর), কংক্রিট অপারেশনাল (প্রায় ৭ থেকে ১১ বছর), এবং ফর্মাল অপারেশনাল (প্রায় ১১ থেকে ১৫ বছর)। যদিও সবাই এই ধাপগুলোতে ভিন্নভাবে অগ্রসর হয়, পাইগেট বিশ্বাস করতেন প্রতিটি শিশু পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করবে এবং কেউ কোনো ধাপ বাদ দেবে না কারণ পূর্ববর্তী ধাপ না শেখা পর্যন্ত পরবর্তী ধাপে যাওয়া সম্ভব নয়; এগুলো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পাইগেট আরও বলেন, শিশুর শেখা মূলত জন্ম থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলাফেরা ও পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শিশু বস্তু অনুসরণ এবং ধরার চেষ্টা শুরু করে, যা চোখ ও চলন সংক্রান্ত মস্তিষ্কের অংশগুলোকে বিকশিত করতে সাহায্য করে। একবার শিশু বুঝে যায় যে শেখা পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে হয়, তখন তারা নিজেরা পরিকল্পনা করে কাঙ্ক্ষিত বস্তু পেতে দক্ষ উপায়ে কাজ করে। পাইগেট দাবি করেন যে এই পর্যায়ে শিশুরা সংখ্যাকে বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref> এবং এমনও প্রমাণ আছে যে শিশুরা সংখ্যার ধারণা ও গণনার কিছু ধারণা ইতোমধ্যেই অর্জন করে<ref>Fuson, K. C. (1988). Children’s counting and concepts of numbers. New York: Springer.</ref>। এই পর্যায়ে শিশুদের গণিত দক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকরা এমন কার্যক্রম দিতে পারেন যাতে সংখ্যা ও গণনা যুক্ত থাকে। যেমন, ছবি যুক্ত বই পড়ানো যেতে পারে। এতে শিশুরা বস্তুর ছবি ও সংশ্লিষ্ট সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে শিখবে এবং পড়া ও অনুধাবন ক্ষমতাও বাড়বে। এই সময়ে পাইগেট দেখিয়েছেন যে শিশুরা নিজেরাই বস্তু ও জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করে।<ref>Piaget, J. (1963). The origins of intelligence in children. New York, NY: W.W. Norton & Company, Inc.</ref> যেহেতু পাইগেট মনে করতেন, একজন ব্যক্তির আগে অর্জিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ধাপে যেতে হয়, তাই সংখ্যা সম্পর্কে শিশুদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য এমন কার্যক্রমের মাধ্যমে গণিতের ভিত্তি তৈরি করা উচিত যাতে গণনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।<br />
প্রায় ২ থেকে ৭ বছর বয়সে শিশুরা ভাষা, প্রতীকী চিন্তা, আত্মকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সীমিত যৌক্তিকতা অর্জন করে। এই সময়ে তারা সংখ্যা বা ব্লকের মতো বস্তুর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে শেখে। যদিও তারা সংখ্যার কিছু ধারণা অর্জন করে, তবে তাদের যৌক্তিক ক্ষমতা সীমিত থাকে এবং তারা বিপরীত ক্রমে কার্য পরিচালনা করতে পারে না। যেমন, যারা বুঝতে পারে ৫+৩ = ৮, তারা বুঝতে নাও পারে ৩+৫ = ৮। পাইগেটের মতে, কারণ তারা কোনো একটি দিক বুঝলে অন্য দিক হারিয়ে ফেলে। এই সময়ে শিক্ষকেরা শিশুদের দিয়ে নির্দিষ্ট গঠন তৈরি করতে পারে ব্লক দিয়ে। এতে তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গোষ্ঠীভুক্ত করতে শিখবে এবং বুঝবে একাধিক উপায়ে এটি তৈরি করা যায়।<ref>Thompson, C. S. (1990). Place value and larger numbers. In J. N. Payne (Ed.), Mathematics for young children (pp. 89–108). Reston, VA: National Council of Teachers of Mathematics.</ref> <br />
৭ থেকে ১১ বছর বয়সে শিশুরা জ্ঞানীয়ভাবে দ্রুত বিকশিত হয়। তারা একাধিক দিক বা মাত্রা বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পাইগেট একটি পরীক্ষায় একই পরিমাণ তরলকে ভিন্ন আকারের বোতলে ঢেলে দেখিয়েছিলেন — এই পর্যায়ের শিশুরা বুঝতে পারে তরলের উচ্চতা কেন পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ‘শ্রেণিবিন্যাস’ ও ‘সিরিয়েশন’-এর দক্ষতা গড়ে ওঠে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref>। তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বস্তু শ্রেণিবদ্ধ করতে শেখে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বা হ্রাসপ্রাপ্ত মান অনুযায়ী সাজাতে শেখে। যদিও এই পর্যায়ে তারা মৌলিক গণনাগুলো জানতে পারে, তবে বাস্তব সমস্যায় তা প্রয়োগ করতে পারে না। যেমন, ৩টি সারিতে ৫টি ব্লক দিয়ে তৈরি গঠনের সংখ্যা গণনা করতে বললে, তারা গুণের ধারণা ব্যবহার করে না। অর্থাৎ, এই সময়ে তাদের গাণিতিক ধারণাগুলো বাস্তব বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। তারা এখনো পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করতে সক্ষম নয়।<br />
১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে শিশুরা নিজেরাই তত্ত্ব তৈরি করতে এবং গণিতের ধারণা গঠন করতে পারে। তারা বিমূর্ত ধারণাকে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে। যেমন, তারা এখন বীজগণিতের একটি সমস্যা নিজে নিজে সমাধান করতে পারে, যেখানে আগে শিক্ষককে বাস্তব উদাহরণ দিতে হতো। তারা কারণ নির্ণয়, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং প্রয়োগ করতে শেখে। শিক্ষকেরা তাদের শেখাতে পারেন কীভাবে শব্দের সমস্যা বিশ্লেষণ করতে হয় এবং কোন তথ্য প্রাসঙ্গিক আর কোনটা নয় তা বোঝাতে হয়।<br />
পাইগেট মনে করতেন, যদি কোনো শিশু কোনো ধারণা বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটির কারণ হচ্ছে সমস্যা থেকে সরাসরি গাণিতিক রূপান্তরে যাওয়ার চেষ্টা। তার মতে, শিশুদের শেখাতে হলে এমন পদ্ধতি নিতে হবে যা তাদের নিজে আবিষ্কার করতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা নিজেরাই ধারণা গড়ে তুলতে পারে, শিক্ষক তাদের সরাসরি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে। <ref>Piaget, J. (1968). Genetic epistemology. New York, NY: Columbia University Press Retrieved June 13, 2003 from the World Wide Web: http://www.marxists.org/reference/subject/philosophy/works/fr/piaget.htm</ref>
=== পাইগেট তত্ত্বের সমালোচনা ===
{| class="wikitable"
!পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের বিশ্বাস
!সমালোচনা
|-
|১) শিশুরা বস্তুর স্থায়িত্ব বোঝার বিকাশ শুরু করে
|
* পাইগেট শিশুদের অনুপ্রেরণার প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করেছিলেন
* শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
|-
|২) শিশুদের সংবেদনশীল ক্ষমতা এবং জ্ঞানীয় বিকাশ তাদের জন্মের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ঘটে
|
* সমস্ত শিক্ষার্থী একই নয়, তাদের অনন্য দক্ষতার ভিত্তিতে তাদের উচ্চতর বা নিম্ন বিভাগে স্থাপন করা যেতে পারে
|-
|৩) প্রতিটি শিশু একটি নির্দিষ্ট ক্রমে চারটি পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে
|
* পাইগেট বংশগতি, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার মতো বাহ্যিক কারণগুলোকে অবহেলা করেছিলেন
|-
|৪) পাইগেট জ্ঞানীয় বিকাশকে নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৃথক করে
|
* জ্ঞানীয় বিকাশের পর্যায়গুলো ধীরে ধীরে এবং ক্রমাগত অগ্রগতি হিসাবে দেখা উচিত
|}
যদিও আধুনিককালে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানীয় বিকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য পাইগেটের তত্ত্ব ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবুও এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদ পাইগেটের তত্ত্বের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক শিক্ষার উপযুক্ততা পরিমাপ করেন। অন্যদিকে, হিবার্ট ও কার্পেন্টার মত দিয়েছেন যে, পাইগেটের তত্ত্ব তেমন কার্যকর নির্দেশনা নয়, কারণ বহু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, অনেক শিশু যারা পাইগেটের তত্ত্ব অনুসরণ করতে পারে না তারাও গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম।<ref>Hiebert, J., and T. P. Carpenter. "Piagetian Tasks as Readiness Measures in Mathematics Instruction: A CriticalReview." EDUCATIONAL STUDIES IN MATHEMATICS 13: 329-345, 1982</ref>
পাইগেট যেখানে শিশুর অভ্যন্তরীণ জ্ঞান অনুসন্ধানের উপর গুরুত্ব দেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশু বস্তু স্থায়ীত্ব (যেমন: লুকানো বস্তু খোঁজার ধারণা) শেখে, অন্য গবেষকরা বলেন, পাইগেট শিশুদের প্রেরণার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেছেন। বার্গার মনে করেন বাহ্যিক প্রেরণা ও শিক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
ক্যাগান বিশ্বাস করেন, শিশু যখন স্থান পরিবর্তনের পরও বস্তু স্পর্শ করতে পারে, তখন এর পেছনের কারণ তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতার বৃদ্ধি, পাইগেটের ধারণার মতো নতুন কোনো জ্ঞানীয় গঠনের কারণে নয়।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটকে সমালোচনা করা হয়েছে শিশুদের সামর্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত সাধারণায়নের জন্য। তিনি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন, শিশুর সংবেদনশীলতা ও জ্ঞানীয় বিকাশ জন্মের প্রথম ছয় মাসেই ঘটে। যদিও পাইগেট বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে নির্দিষ্ট ক্রমে অগ্রসর হয়, হেউভেল-পানহুইজে বলেন পাইগেটের তত্ত্ব ছোট শিশুদের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি দেখান যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি শুধুমাত্র পাইগেটের ধাপভিত্তিক তত্ত্বে বিশ্বাস করেন, তবে তারা শিশুদের প্রতীকের জ্ঞান, গণনার ক্রম ও গাণিতিক ক্রিয়ার সামর্থ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করতে পারেন।<ref>Cross, C. (2009). The Early Childhood Workforce and Its Professional Development. In Mathematics learning in early childhood paths toward excellence and equity. Washington, DC: National Academies Press.</ref>
বার্গার আরও বলেন, শিশুদের পার্সেপচুয়াল শেখা (ধারণাগত শেখা) জন্মের আগেই শুরু হতে পারে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref> যদিও একটি নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী একটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে থাকবে, তবুও সব শিক্ষার্থী একরকম নয়। তাদের স্বতন্ত্র দক্ষতার ভিত্তিতে তারা হয়তো কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর ধাপে অবস্থান করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, গেলম্যান ও গ্যালিস্টেল দেখান যে, প্রস্তুতি ধাপে থাকা শিশুরাও বস্তু গণনার ক্ষেত্রে বিমূর্ত চিন্তা করতে পারে। এছাড়াও, পাইগেট শিশুদের আবেগ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেননি। যদিও তিনি বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ মাপার কার্যকর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি সৃজনশীলতা ও সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উপেক্ষা করেছেন।<ref>Papalia, D. E., Olds, S. W., and Feldman, R. D. (1998). Human development(7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
ক্রিস্টিনা এর্নেলিং যুক্তি দেন যে, উন্নয়নের ধারা বোঝা সম্ভব যদি শিশুদের সঠিক পরিবেশে রাখা যায়। তার মতে, যেকোনো শেখার ধারণা বিশদ শিক্ষাতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং জ্ঞানীয় বিকাশ বোঝার জন্য ব্যক্তির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিন্নতা স্বীকৃতি দিতে হবে। অর্থাৎ, পাইগেট সংস্কৃতির প্রভাব উপেক্ষা করেছেন। কারণ তার গবেষণা ছিল পশ্চিমা দেশে, তাই তার তত্ত্ব হয়তো শুধু পশ্চিমা সমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাইগেটের মতে, বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি নির্দিষ্ট ধাপে পৌঁছেই বিকাশ পায়। অন্যদিকে, এডওয়ার্ডস ও অন্যান্য গবেষকরা বলেন, পাইগেটের গবেষণায় নিয়ন্ত্রণ ও নমুনার সীমাবদ্ধতার কারণে তার গবেষণা অবিশ্বস্ত। তারা বলেন, অন্যান্য সংস্কৃতিতে সাধারণ ধাপের অপারেশনগুলো বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।<ref>Edwards, L., Hopgood, J., Rosenberg, K., & Rush, K. (2000). Mental Development and Education. Retrieved April 25, 2009, from Flinders University</ref>
বার্গার পাইগেটের নির্দিষ্ট ধাপের বিপক্ষে যুক্তি দেন। তিনি মনে করেন, পাইগেট শিশুদের অভ্যন্তরীণ জ্ঞানের সন্ধানকে গুরুত্ব দিলেও বংশগতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার মতো বাহ্যিক বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের ধাপগুলোকে বরং একটানা ধাপে ধাপে অগ্রগতির মতো দেখা উচিত, নির্দিষ্ট করে ভাগ না করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটের তত্ত্বের আরও সমালোচনা হয়েছে, কারণ তার সর্বশেষ ধাপে জ্ঞানীয় বিকাশ যথেষ্ট স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। তিনি মনে করতেন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে সবাই বিমূর্ত যুক্তি বিকাশে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, প্যাপালিয়া ও অন্যান্যরা বিশ্বাস করেন, সবাই এই সময়ে আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি অর্জন করতে পারে না, এবং তাতে তারা অপরিণত নয়—বরং তাদের চিন্তাভাবনার পরিপক্বতার ধরণ ভিন্ন।<ref>Papalia, D.E., Olds, S.W., & Feldman, R.D. (1998). Human development (7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
অতএব, জ্ঞানীয় বিকাশকে বরং একটি অনিয়মিত প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যেখানে প্রতিটি শিশু ধাপে ধাপে নিজস্ব গুণাবলি ও আচরণগত দক্ষতা অর্জন করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
=== জ্ঞানীয় ক্ষেত্র= ===
পাইগেটের পর থেকে জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গাণিতিক শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গাণিতিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭৮ সালেই গবেষকেরা মস্তিষ্ক-সম্পর্কিত আচরণ ও একাডেমিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পান। রাউর্ক ও ফিনলেসন ৯-১৪ বছর বয়সী শেখার অসুবিধায় ভোগা শিশুদের নিয়ে গবেষণা করে দেখান, যেসব শিশুর অ্যারিথমেটিক দক্ষতা নেই, তাদের ডান মস্তিষ্কের গোলার অকার্যকারিতার মতো আচরণ দেখা যায়।<ref>Rourke, B. P., & Finlayson, M. A. J. (1978). Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities. Journal of Abnormal Child Psychology, 6, 121–133.</ref>
সম্প্রতিকালে আরও সূক্ষ্ম জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গণিতে ঘাটতির মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত হয়েছে।
২০০১ সালে হ্যানিচ, জর্ডান, কাপলান ও ডিক ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাণিতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেন।<ref>Hanich, L. B., Jordan, N. C., Kaplan, D., & Dick, J. (2001) Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities. Journal of Educational Psychology, 93, 615–626.</ref>
তারা শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করেন: সাধারণভাবে সফল, শুধুমাত্র গণিতে দুর্বল, শুধুমাত্র পড়ায় দুর্বল, এবং উভয় বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থী। প্রত্যেককে সাতটি গাণিতিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বলা হয়:
ক) নির্দিষ্ট গণনা খ) গল্পভিত্তিক সমস্যা গ) আনুমানিক গণনা ঘ) স্থানীয় মান ঙ) গণনার নীতি চ) সংখ্যা স্মরণ ছ) লিখিত গণনা।
তারা দেখেন, যারা গণনা ও পড়া উভয় ক্ষেত্রেই দুর্বল, তারা গল্প সমস্যা ও প্রচলিত গণনায় দুর্বল। তবে যারা শুধু গণিতে দুর্বল, তারা শুধু প্রচলিত গণনায় দুর্বলতা দেখায়। এ থেকে গবেষকেরা সিদ্ধান্তে আসেন, গণিতে একাধিক জ্ঞানীয় ক্ষেত্র রয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্র মস্তিষ্কের ভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।
ফুচস, ফুচস, স্টুয়েবিং, ফ্লেচার, হ্যামলেট ও ল্যাম্বার্ট (২০০৮) লক্ষ্য করেন, প্রচলিত গণনার সফলতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পূর্বাভাসদাতা হচ্ছে: ক) কর্মরত স্মৃতি খ) দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি গ) মনোযোগ রেটিং ঘ) ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ ঙ) শব্দভাণ্ডারের জ্ঞান<ref>Fuchs, L. S., Fuchs, D., Stuebing, K., Fletcher, J.M., Hamlett, C. L. , & Lambert, W. (2008). Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition? Journal of Educational Psychology 100 (1), 30</ref>
তারা এক দীর্ঘমেয়াদি, বৃহৎ পরিসরের গবেষণায় দেখেন, গণনা ও সমস্যার সমাধান—এই দুইটি গণিতের আলাদা ক্ষেত্র হতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন: গণনায় দক্ষতা, শব্দ-সমস্যা সমাধান, ধ্বনি প্রক্রিয়া, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান, কর্মরত স্মৃতি, মনোযোগী আচরণ, প্রক্রিয়ার গতি, এবং পাঠ দক্ষতা ইত্যাদিতে। তারা দেখতে পান, মনোযোগী আচরণ ও প্রক্রিয়ার গতি গণনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও, তারা লক্ষ্য করেন, কর্মরত স্মৃতি, স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (যেমন দৃশ্যের মাধ্যমে প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করা), ধারণা গঠন, এবং ভাষা দক্ষতা (যার মধ্যে পড়াও অন্তর্ভুক্ত) সমস্যা সমাধানের পূর্বাভাসদাতা। ভাষা দক্ষতার ঘাটতি সমস্যার সমাধানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্যকারী একটি উপাদান।
==== প্রত্যেক জ্ঞানীয় গণিত ক্ষেত্রের জন্য মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া ====
{| class="wikitable"
!গণনার জ্ঞানীয় দক্ষতা
!সমস্যা সমাধানের জ্ঞানীয় দক্ষতা
|-
|গণনার সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|সমস্যা সমাধানের সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|-
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
# দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি
• মনোযোগ রেটিং • প্রক্রিয়ার গতি • ভাষা দক্ষতা
# ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ (ধ্বনি শনাক্ত ও পার্থক্য করতে পারা)
# শব্দভাণ্ডার জ্ঞান
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
• স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি • অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (দৃশ্যমান প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করার দক্ষতা) • ধারণা গঠন • ভাষা দক্ষতা
# প্রথম ভাষা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য
# ধ্বনি, শব্দভাণ্ডার
|}
=== গণিত শেখার ক্ষেত্রে কার্যকর স্মৃতির গুরুত্ব ===
'''কার্যকর স্মৃতি''' হলো একটি প্রক্রিয়া যা অস্থায়ীভাবে নতুন বা পূর্বে সঞ্চিত তথ্য ধারণ করে, যা বর্তমান কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর ধারণক্ষমতা সীমিত। কার্যকর স্মৃতির দুটি ধরণ রয়েছে: শ্রাব্য (অডিটরি) স্মৃতি ও দৃশ্য-স্থানিক (ভিজুয়াল-স্প্যাটিয়াল) স্মৃতি। গণিতের গাণিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দৃশ্য-স্থানিক স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। অপরদিকে, শ্রাব্য স্মৃতি সব ধরনের গাণিতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতার পার্থক্য হতে পারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি, ব্যক্তির জ্ঞান বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য উপেক্ষা করার দক্ষতার কারণে।<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref> পরিকল্পনা, সংগঠন এবং নমনীয় চিন্তার মতো নির্বাহী কার্যক্রমগুলো কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে।<ref>Swanson, H. L. (2003)...</ref>
অন্যদিকে, '''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' দায়ী শুধুমাত্র অল্প সময়ের জন্য তথ্য ধারণ করার জন্য, যেগুলো ব্যবহার করতে হবে কিন্তু বিশ্লেষণ বা রূপান্তরের প্রয়োজন নেই। এর ধারণক্ষমতাও সীমিত এবং এটি কয়েক সেকেন্ডের মতোই স্থায়ী হতে পারে। যেমন, একটি টেলিফোন নম্বর আমরা কয়েক সেকেন্ড মনে রাখি শুধু তা ডায়াল করার জন্য।
২০০৪ সালে সোয়ানসন এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গারর একটি গবেষণায় উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, কার্যকর স্মৃতি সমস্যার সমাধানকালে তথ্য একীভূতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের মতে, কার্যকর স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি "(ক) সম্প্রতি প্রক্রিয়াকৃত তথ্যকে নতুন ইনপুটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং (খ) সামগ্রিকভাবে সমস্যার একটি উপস্থাপন গঠনের জন্য তথ্যের সারাংশ সংরক্ষণ করে।"<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref>
এইচ লি সোয়ানসনের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতা সমস্যা সমাধানে কৌশলগত হস্তক্ষেপের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>Swanson, H. L. (August 4,2015)...</ref> লেখক একটি হস্তক্ষেপমূলক গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে কার্যকর স্মৃতির ভূমিকা এবং কৌশল শেখানোর ফলে শব্দভিত্তিক সমস্যা সমাধানে সঠিকতা কেমন হয়, তা যাচাই করা হয়।
গবেষণায় সমস্ত শিশুদের শ্রাব্য ও দৃশ্য-স্থানিক কার্যকর স্মৃতির মাপ নেওয়া হয়। এরপর গণিতে সমস্যাযুক্ত এবং অপ্রতিবন্ধিত শিশুদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করে র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়। ১ম দলকে শব্দভিত্তিক কৌশল শেখানো হয়, ২য় দলকে দৃশ্য-স্থানিক কৌশল, এবং ৩য় দলকে উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ শেখানো হয়। প্রতিটি দলকে এমন পাঠদান দেওয়া হয় যাতে শব্দ সমস্যা ক্রমাগত অপ্রাসঙ্গিক তথ্যে পরিপূর্ণ হতে থাকে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের প্রাসঙ্গিক তথ্যের প্রতি মনোযোগী হতে শেখানো। পূর্ববর্তী অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য আলাদা করতে শেখা গণিত সমস্যার সঠিকতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার ফলাফল দেখায় যে, কৌশল শেখানো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা কৌশল শেখানোর প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে। কম কার্যকর স্মৃতির শিশুরা তেমন উপকার পায়নি। বরং উচ্চ কার্যকর স্মৃতির শিশুরাই—যাঁদের গণিতে প্রতিবন্ধকতা থাকুক বা না থাকুক—এই কৌশল থেকে বেশি উপকার পেয়েছে। তবে, দৃশ্যগত কৌশল ব্যবহৃত হলে সব ধরনের গণিত প্রতিবন্ধী শিশুরাই উপকার পেয়েছে। কিন্তু যাঁদের কার্যকর স্মৃতি দুর্বল, তাঁদের জন্য শব্দ ও দৃশ্য উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। সবশেষে, গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে যে, কার্যকর স্মৃতির উপর ভিত্তি করে মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলোর প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতে কার্যকর স্মৃতির দক্ষতা উন্নত করতে পারে।
এই গবেষণার তাৎপর্য হলো, গণিতে প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা যাচাই করে তার ভিত্তিতে উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল নির্ধারণ করা উচিত।
== গণিত শেখা ও শেখানোর ওপর প্রভাব ফেলা উপাদান ==
=== ব্যক্তিভেদে পার্থক্য ===
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আলাদা দক্ষতা, পূর্বজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং আগ্রহ থাকে। এই বিষয়গুলো গণিত শেখা ও শেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ পাঠদানের কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হয়।
==== দক্ষতার পার্থক্য ====
সব শিক্ষার্থীর নিজস্ব শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। কেউ কোনো নির্দিষ্ট গাণিতিক ক্ষেত্রে ভালো হলেও, অন্য ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারে। শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা সম্পর্কে জানা, যাতে তাদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুর্বলতাকে উন্নত করা যায়। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও দুর্বলতা না জানেন, তবে ভুলভাবে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে, যেটা শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে এবং ব্যর্থতা থেকে "শিক্ষিত অসহায়ত্ব" তৈরি করতে পারে। সঠিক দক্ষতা জানা থাকলে নতুন গাণিতিক জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে না।
উদাহরণস্বরূপ, শব্দ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন মানসিক উপস্থাপনা ও সাধারণ গাণিতিক রূপান্তর। ফলে, যারা গাণিতিক সমীকরণ গঠন করতে জানে না, তারা এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হবে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের প্রাক-দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পাঠদান কৌশল নির্ধারণ করা, কারণ এই দক্ষতাগুলো সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষার্থীরা যত বেশি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত দক্ষতা অর্জন করবে, ততই তারা গণিত শেখায় দক্ষ হয়ে উঠবে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref>
বর্তমান হাইস্কুলে বিভিন্ন স্তরের গণিত কোর্স থাকে—শুরুর, মূল এবং উন্নত স্তর। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগ করা হয় বা তারা নিজেরা স্তর বেছে নিতে পারে। শিক্ষককে উচিত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যে তারা সেই স্তরের উপযোগী কিনা। খুব কঠিন হলে শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়বে, আবার খুব সহজ হলে বিরক্ত হবে। সঠিক স্তর নির্ধারণের জন্য দক্ষতা জানা আবশ্যক।
==== পূর্বজ্ঞানগত পার্থক্য ====
শিক্ষার্থীদের গাণিতিক জ্ঞান তাদের সামাজিক অভিজ্ঞতা থেকে আসে। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন বাজারে কেনাকাটা করার মাধ্যমে টাকা-পয়সা মেলানো শেখা, গাণিতিক প্রতীক কীভাবে ব্যবহার হয়, সেটা বুঝতে সাহায্য করে। এই বাস্তব জ্ঞান ব্যবহার করে যদি গাণিতিক ধারণা শেখানো হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহজে তা বুঝতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিল থাকলে শিক্ষার্থীরা গণিত শেখায় বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এটি তাদের কাছে অর্থবহ ও প্রাসঙ্গিক মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাঠ্যবইয়ের গণিত অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু যদি তা ব্যাংকে সুদের হিসাব বা দৈনন্দিন খরচ হিসাবের মতো জীবনের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে তা সহজ ও আকর্ষণীয় মনে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ গণিত সমস্যার জন্য শুধু গণিত নয়, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো বিষয়ের জ্ঞানও প্রয়োজন হতে পারে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> শব্দ সমস্যার ক্ষেত্রে পাঠ্যাংশ বুঝতে ভাষাগত দক্ষতাও প্রয়োজন, যা পূর্বজ্ঞান থেকে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের অনেক গণিত কোর্সে পূর্বশর্ত কোর্স থাকে, কারণ উন্নত গণিত শেখার জন্য প্রাথমিক ধারণা থাকা আবশ্যক।
==== আগ্রহের পার্থক্য ====
সবার আগ্রহ আলাদা। কেউ গণিত পছন্দ করে কারণ ছোটবেলা থেকেই তারা এই বিষয়ে শক্তিশালী ছিল, আবার কেউ ঘৃণা করে কারণ বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আগ্রহ থাকলে অভ্যন্তরীণ মোটিভেশন তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থী নিজের ইচ্ছায় গণিত শেখে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> এতে শিক্ষার্থীরা কাজের প্রতি মনোযোগী হয় এবং সমাধানে আন্তরিকতা দেখায়। তাদের আগ্রহ নিজের সামর্থ্য, আত্মবিশ্বাস এবং অর্জনের সঙ্গে জড়িত।<ref>Upadyaya, K., & Jacquelynne, S. E. (2014). How do Teachers’ Beliefs predict Children’s Interests in Math from Kindergarten to Sixth Grade? ''Merrill-Palmer Quarterly, 60''(4). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=aaa92fa2-22f8-4cd7-9d94-49896f602e89%40sessionmgr120&vid=0&hid=109</ref>
তাই, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্য বাড়ানোর জন্য তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে, পরিবারের সদস্য, সহপাঠী এবং শিক্ষকসহ অনেক উপায়ে গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref>
পরিবারের সদস্যরা ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের গণিতে সহায়তা ও উৎসাহ দিতে পারেন, যা গণিতের প্রতি তাদের মূল্যবোধ বাড়ায়। শিক্ষার্থীরা সাধারণত সামাজিক তুলনা করতে ভালোবাসে এবং তারা সহপাঠীদের অনুসরণ করতে চায়। তাই সহপাঠীদের প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর বড় ভূমিকা রাখে। যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তাদের সহপাঠীরা সুদোকু বা ধাঁধার মতো কোনো গণিতের সমস্যা উপভোগ করছে, তখন তারাও সমাধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে আনন্দদায়ক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ গেমের আয়োজন করতে পারেন এবং শেখানোর সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারেন।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref> এটি এমন একটি বিষয় শেখার আগ্রহ তৈরি করবে, যা আগে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করতো না। ফলে, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য আনন্দদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যাতে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। যদি শিক্ষার্থীরা গণিতকে ঘৃণা করে, তবে তাদের শেখানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তারা তখন কেবল বাধ্য হয়ে পড়ে, আগ্রহ নিয়ে নয়।
==== সাংস্কৃতিক পার্থক্য ====
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের স্তর ও লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে থাকে।<ref>Tsao, Y-L. (2004). A Comparison of American and Taiwanese Students: Their Math Perception. ''Journal of Instructional Psychology, 31''(3). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=97c91599-4222-4cc8-8717-703e6b774b06%40sessionmgr110&vid=19&hid=109</ref> তদুপরি, তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে গণিতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে। যখন কোনো সংস্কৃতি কোনো বিষয়ে যেমন গণিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তখন সেই সংস্কৃতির শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্কুল ও বাড়িতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফলে, এদের গণিতের দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। যারা নিয়মিত গণিত চর্চা করে, তাদের অটোমেটিসিটি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করার ক্ষমতা) বেশি হয় কারণ তারা বিভিন্ন গণিত সমস্যার যথেষ্ট অনুশীলন করে। তারা উপযুক্ত কৌশল বেছে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> অন্যদিকে, যদি কোনো সংস্কৃতি গণিতকে গুরুত্ব না দেয়, তবে সেই সংস্কৃতির শিশুরা কঠোরভাবে শেখে না এবং তাদের দক্ষতার স্তরও কম হয়। কোনও বিষয়ে ভালো করতে হলে স্কুলের পাশাপাশি বাড়িতেও চর্চা করা প্রয়োজন। যারা শুধুমাত্র স্কুলেই গণিত শেখে এবং বাড়িতে সক্রিয়ভাবে চর্চা করে না, তাদের অনুশীলন পর্যাপ্ত নয়। সেইসঙ্গে, এমন সংস্কৃতি যেখানে উচ্চ মান, পরিশ্রম, এবং ইতিবাচক মনোভাবকে মূল্য দেওয়া হয়, সেগুলোর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref>
বিভিন্ন সংস্কৃতির ভাষাও ভিন্ন। এর অর্থ, তারা গণিত সমস্যা প্রকাশের ধরনেও পার্থক্য থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, চীনা সংখ্যার ভাষাগত কাঠামো (যেমন ১৫ মানে "দশ-পাঁচ") ইংরেজির তুলনায় শেখা সহজ। ইংরেজিতে যেমন ১২ মানে "টুয়েলভ" এবং -টিন শব্দগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা থাকে না।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> চীনা সংখ্যা উচ্চারণ করা ইংরেজির তুলনায় দ্রুত সহজ, যা শিক্ষার্থীদের গণিত দক্ষতাকে প্রভাবিত করে। ফলে, চীনা ভাষায় সংখ্যাগুলো স্বল্প-মেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়, বিশেষ করে বহু-অঙ্কের জটিল সমস্যায়।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> তাই পাঠদানের কৌশল পরিকল্পনার সময় শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া উচিত, কারণ তা গণিত সমস্যার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে পারে।
=== গণিতে আত্ম-দক্ষতা ===
গণিতে শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বলতে বোঝায় তারা নিজের সম্পর্কে কতটা বিশ্বাস রাখে যে তারা গণিতের প্রশ্ন সমাধান করতে পারবে। যারা বেশি আত্মবিশ্বাসী তারা গণিত সংশ্লিষ্ট কাজে আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং তাদের একাডেমিক সাফল্যও বেশি হয়। অন্যদিকে, যারা আত্মবিশ্বাস কম রাখে তারা গণিত সমস্যা সমাধানে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং তাদের পারফরম্যান্স কম হয়। তাই, গণিতে আত্ম-দক্ষতা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
==== গণিতে আত্ম-দক্ষতার প্রভাব ====
আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা, বোঝাপড়া এবং শেখার অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে। যারা নিজেদের দক্ষ মনে করে, তারা গণিতে ভালো করার ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করে।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এই বিশ্বাসের কারণে তারা আরও উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং বেশি পড়াশোনা করে। ফলে, তারা আত্ম-সার্থকতার চক্রে পড়ে, অর্থাৎ তাদের নিজস্ব বিশ্বাস বাস্তব হয়ে ওঠে। বিপরীতে, যারা নিজেকে অদক্ষ মনে করে, তারা ভাবে যতই চেষ্টা করুক, গণিতে সফল হতে পারবে না।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এ কারণে তারা গণিত চর্চায় অনুপ্রাণিত হয় না এবং কয়েকবার চেষ্টা করেই হাল ছেড়ে দেয়। এতে তাদের "আমি পারি না" বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা কাজ করতে থাকে।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়ন ====
শিক্ষার্থীরা গণিতের কোন বিষয় শিখতে আত্মবিশ্বাসী কিনা তা মূল্যায়ন করা জরুরি, কারণ এটি তাদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়নের একটি উপায় হলো, প্রথম পুরুষে কিছু বিবৃতি তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে প্রত্যেকটি বিবৃতির জন্য ০ থেকে ১০০ স্কেলে রেট করতে বলা।<ref>Bandura, A. (1997). Self-efficacy: The exercise of control.New York, NY:Freeman.</ref> প্রথমে শিক্ষককে নির্দিষ্ট একটি টপিক বেছে নিতে হবে, যেমন "পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ"। এরপর সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিবৃতিগুলো তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষার্থীরা সেগুলোর সত্যতা রেট করবে।
{| class="wikitable"
!রেট (০-১০০)
!বিবৃতি
|-
|৮০
|আমি জানি, প্যারালেলোগ্রামের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণে কী তথ্য লাগবে।
|-
|১০০
|আমি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দেওয়া থাকলে একটি আয়তক্ষেত্রের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|-
|৬০
|আমি ট্র্যাপেজিয়ামের ক্ষেত্রফলের সমীকরণ লিখতে পারি।
|-
|৫০
|আমি আমার সহপাঠীকে বোঝাতে পারি কেন ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল bxh ÷2 অর্থাৎ, (ভূমি x উচ্চতা) / ২
|-
|৯০
|আমি ৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|}
এই স্কোরগুলো যোগ করে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীর আত্ম-দক্ষতার একটি সামগ্রিক চিত্র পেতে পারেন। উপরিউক্ত উদাহরণে, মোট স্কোর হবে ৮০+১০০+৬০+৫০+৯০। শিক্ষক চাইলে এই আত্ম-দক্ষতার তুলনা শিক্ষার্থীর গণিত বিষয়ে সামগ্রিক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করতে পারেন। আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের শেখার অনুপ্রেরণা ও আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই শিক্ষকদের উচিত সেই অনুযায়ী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করা।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতার বিকাশ ====
বান্দুরা আত্ম-দক্ষতা বিকাশে চারটি প্রধান উৎস চিহ্নিত করেছেন।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> প্রথমটি হলো শিক্ষার্থীদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> যেমন, যদি শিক্ষার্থী কোনো গণিত পরীক্ষায় ভালো ফল করে, তার সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। দ্বিতীয়টি হলো বিভিন্ন অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> শিক্ষার্থীরা যখন তাদের সমমানের সহপাঠীদের কাজ করতে দেখে, তখন তারা নিজেরও পারবে বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এমনকি গণিতবিদদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি দেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বাড়াতে পারে।<ref>Hekimoglu, S., & Kittrell, E. (2010). Challenging students' beliefs about mathematics: The use of documentary to alter perceptions of efficacy. PRIMUS: Problems, Resources, And Issues In Mathematics Undergraduate Studies, 20(4), 299-331. doi:10.1080/10511970802293956</ref>
তৃতীয় প্রভাবটি হলো সামাজিক প্রভাব।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের ঘনিষ্ঠ মানুষদের (যেমন অভিভাবক, সহপাঠী বা শিক্ষক) কাছ থেকে আসা ইতিবাচক বক্তব্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক যদি বলেন “তুমি বীজগণিতের সমস্যাগুলো এখন আগের থেকে ভালোভাবে সমাধান করতে পারছো,” তাহলে এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে।
চতুর্থ প্রভাবটি হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের কোনো পরিস্থিতির প্রতি আবেগগত প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী মনে করতে পারে যে গণিত পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণ তার অযোগ্যতা, অথচ প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল উদ্বেগের ফল। এই ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থী তার ক্ষমতা ভুলভাবে মূল্যায়ন করে এবং গণিত বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। আবার কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করলেও সেটিকে নিজের দক্ষতা নয়, বরং ভাগ্যের কারণে হয়েছে বলে মনে করতে পারে। এর ফলে, সে আত্মবিশ্বাস গঠনের একটি সুযোগ হারিয়ে ফেলে। সুতরাং, ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেকোনো অভিজ্ঞতার প্রতি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি তার আত্মদক্ষতা গঠনে প্রভাব ফেলে। এই ক্ষেত্রে আত্মদক্ষতা বাড়ানোর উপায় হলো শিক্ষার্থীদের তাদের প্রকৃত দক্ষতা চেনাতে সহায়তা করা এবং তাদের দক্ষতার প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি করা।
উশের একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের গণিত বিষয়ক আত্মদক্ষতার চারটি উৎস যাচাই করেন।<ref>Usher, E. L. (2009). Sources of middle school students’ self-efficacy in mathematics: A qualitative investigation. American Educational Research Journal, 46(1), 275-314. doi:10.3102/0002831208324517</ref> এই গবেষণার ফলাফল বান্দুরার ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে দক্ষতার অভিজ্ঞতা, পরোক্ষ অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রভাব ও মানসিক অবস্থা – সবই শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গঠনের সঙ্গে যুক্ত।
দক্ষতার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আত্মদক্ষতা বিকাশের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। উশের একটি কৌশল প্রস্তাব করেন যেটি গণিত শিক্ষকরা ব্যবহার করতে পারেন শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে—“শিক্ষাদান এমনভাবে করা যাতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সর্বাধিক হয়, তা যত ছোটই হোক না কেন।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক অ্যালগরিদম বা বীজগণিত শেখানোর সময় সঠিকতা যাচাই করার কৌশল শেখাতে পারেন। যেমন প্রশ্ন: ১৮ ÷ ৬ =? শিক্ষক শিখাতে পারেন যে ভাগফলকে গুণ করে যদি ভাগফল × ভাজক = মূল সংখ্যা হয় (৩ × ৬ = ১৮), তবে উত্তর সঠিক। যারা এই কৌশল শিখেছে ও ব্যবহার করেছে, তারা গণিতে দক্ষতার অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে।<ref>Ramdass, D., & Zimmerman, B. J. (2008). ...</ref> শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার মধ্যে থেকে চ্যালেঞ্জিং কাজ দেওয়া তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উশেরের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই চারটি উৎসের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও রয়েছে। পরোক্ষ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে অভিভাবক ও শিক্ষকের গণিত অভিজ্ঞতার প্রভাব আছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো, এক শিক্ষার্থী তার অভিভাবকদের গণিতে ব্যর্থতাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে—“আমি আলাদা হতে পারি।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> এটি বোঝায় যে কেবল সফলতাই নয়, ব্যর্থতাও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা অন্যদের অভিজ্ঞতা কীভাবে তারা ব্যাখ্যা করে, তাতেও প্রভাব ফেলে। সামাজিক প্রভাবের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অভিভাবক ও শিক্ষকের বার্তা শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বিশ্বাসে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, যদি বাবা-মা বলেন গণিত একটি জন্মগত ক্ষমতা—“তোমার আছে বা নেই”—তাহলে সন্তানরা নিজেকে অক্ষম মনে করে আত্মবিশ্বাস হারাতে পারে। এই ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব মানসিক অবস্থাতেও প্রভাব ফেলে।
==== শিক্ষকের আত্মদক্ষতা ====
শিক্ষকের শিক্ষাদানের আত্মদক্ষতা বলতে বোঝায় যে, তারা বিশ্বাস করেন তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেন,<ref>Woolfolk, A. E., & Hoy, W. K. (1990). ...</ref> যেমন একাডেমিক পারফরম্যান্স, আত্মদক্ষতা, অনুপ্রেরণা, মনোভাব এবং আগ্রহ। উচ্চ আত্মদক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন ইতিবাচক মনোভাব, বিষয়বস্তুর প্রতি গভীর জ্ঞান এবং শিক্ষণ কৌশলের জ্ঞান।
গণিত বিষয়ে শিক্ষকের মনোভাব শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় চারটি গ্রুপ—প্রাথমিক শিক্ষক (কে-৪), মাধ্যমিক শিক্ষক, অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এবং বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক—এর মধ্যে সাক্ষাৎকার ও একটি মনোভাব স্কেল পূরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মনোভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।<ref>Kolstad, R. K., Hughes, S., & Briggs, L. D. (1994). ...</ref> এতে দেখা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৬০% অত্যন্ত ইতিবাচক, ৩০% নিরপেক্ষ, ১০% অত্যন্ত নেতিবাচক), এবং প্রাথমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৪৩% ইতিবাচক, ২৩% নিরপেক্ষ, ৩৪% নেতিবাচক)। ফলাফল নির্দেশ করে প্রাথমিক স্তরে গণিতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
নেতিবাচক মনোভাব থাকলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখাতে সক্ষম—এই বিশ্বাসটিও হারিয়ে ফেলেন, যার সঙ্গে আত্মদক্ষতা জড়িত। শিক্ষকের শিক্ষাদান কৌশল ও বিষয়বস্তুর জ্ঞানও তাদের আত্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গণিত বিষয়ক শিক্ষকের জ্ঞান ও আত্মদক্ষতার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, যা দেখায়—যাদের বিষয়বস্তু ও কৌশলগত জ্ঞান বেশি, তারা শিক্ষাদানে বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারার বিশ্বাস রাখেন।<ref>Fox, A. M. (2015). ...</ref>
শিক্ষকের আত্মদক্ষতা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের শেখায় প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীর একাডেমিক সাফল্য। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কে-১২ স্তরের শিক্ষকদের আত্মদক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাফল্যের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত।<ref>Chears-Young, J. B. (2015). ...</ref> এছাড়া, এটি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা, আগ্রহ এবং শেখার কৌশলেও প্রভাব ফেলে। আত্মদক্ষ শিক্ষকরা প্রশংসা ব্যবহার করেন, সমালোচনার বদলে, এবং অধিক গ্রহণযোগ্য ও লক্ষ্যভিত্তিক হন।<ref>Kagan, D.M. (1992). ...</ref> অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ আত্মদক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখার কৌশল শেখান এবং বেশি একাডেমিক সময় দেন, যা পারফরম্যান্স বাড়ায়।<ref>Ghaith, G., & Yaghi, H. (1997). ...</ref>
=== স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা ===
অনেকে মনে করেন, শিক্ষার্থীদের গণিতে খারাপ ফলাফল তাদের অযোগ্যতা বা পড়াশোনার ঘাটতির কারণে হয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। অনেক সময় খারাপ ফলাফল হয় কারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কৌশল ব্যবহার করতে জানে না বা '''স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা'''র অভাব রয়েছে।
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা হলো, শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার সমস্ত দিক নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে—পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরবর্তী মূল্যায়ন পর্যন্ত।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref> এই শেখার তিনটি মূল উপাদান আছে।
প্রথমটি হলো, মেটাকগনিটিভ সচেতনতা—মানে কীভাবে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা তৈরি করে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
দ্বিতীয়টি হলো, কৌশল ব্যবহার—অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কী কী স্ব-নিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগ করতে পারে। দক্ষ শিক্ষার্থীরা বেশি কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে।<ref>Zimmerman, B. J., & Martinez-Pons, M. (1990). ...</ref>
তৃতীয়টি হলো, অনুপ্রেরণা নিয়ন্ত্রণ—যেখানে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তাদের দক্ষতা ও পারফরম্যান্সে ইতিবাচক বিশ্বাস রাখে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শিক্ষার্থীর গণিত সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই দক্ষতা বাড়লে, তারা ভালো কৌশল ব্যবহার করে এবং কীভাবে গণিত পড়তে হয় তা ভালোভাবে বোঝে, ফলে তাদের গণিতের ফলাফল উন্নত হয়।
==== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম নিয়ে একটি গবেষণা ====
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচালিত একটি গবেষণায় একটি গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম গঠিত হয় এবং ফলাফল থেকে দেখা গেছে, যখন শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শেখানো হয়, তখন তাদের গণিতে অর্জনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই গবেষণায় প্রাথমিক স্তরের গণিতে কম ফলাফলপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৩০ জনকে পরীক্ষামূলক দলে রাখা হয়, যারা এই গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রামে অংশ নেয়।
এই প্রোগ্রামটি ৩০টি সেশনে বিভক্ত, যার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা বাড়ানো, তাদের মোটিভেশন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা উন্নত করা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ কৌশল শেখানো। (সেশন ১-৫) প্রোগ্রামটি শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বিশ্বাস ব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমে। এতে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ, আত্ম-দক্ষতা, শেখার লক্ষ্য এবং প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কৃতিত্ব বোঝানোর মূল্য শেখানো হয় গল্প বলার মাধ্যমে এবং দলগত আলোচনায় অংশগ্রহণ করিয়ে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> (সেশন ৬-১১) এরপর তাদের সামনে জিমারম্যানের প্রস্তাবিত ১৪টি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল উপস্থাপন করা হয়।<ref>Zimmerman, B. (2000). Attaining self-regulation: A social cognitive perspective. In M. Boekaerts, P. R. Pintrich, & M. Zeidner (Eds.), Handbook of self-regulation (pp.13-39). San Diego, CA: Academic Press.</ref> প্রতিটি কৌশলের ব্যবহার এবং গণিতে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে কৌশলগুলো চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হয়। (সেশন ১২-৩০) শেষে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গণিত পাঠে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের নিজেদের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হয় লক্ষ্য নির্ধারণ, আত্মমূল্যায়ন এবং আত্ম-প্রতিক্রিয়া ফর্ম পূরণের মাধ্যমে। প্রোগ্রামের ৩০টি সেশন শেষ করার পর শিক্ষার্থীদের একটি গণিত পরীক্ষার পাশাপাশি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ফলাফল থেকে দেখা যায়, যারা প্রোগ্রামে অংশ নেয় তারা উভয় পরীক্ষাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফলাফল করে যাদের অংশগ্রহণ ছিল না তাদের তুলনায়।
===== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ =====
{| class="wikitable"
!কৌশলসমূহ
!গণিতে প্রয়োগ
|-
|আত্ম-মূল্যায়ন
|সঠিক পদ্ধতিতে প্রশ্নের যথার্থ উত্তর মিলিয়ে দেখা।
|-
|সংগঠন ও রূপান্তর
|প্রশ্নকে গুছিয়ে নেয়া, যেমন গ্রাফ, সমীকরণ, চিত্র ব্যবহার করা।
|-
|লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা
|লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা।
|-
|নোট নেয়া ও নজরদারি
|ক্লাসে নোট নেয়া এবং সমীকরণ গুছিয়ে রাখা।
|-
|পরিবেশ গঠন
|উপযুক্ত পরিবেশে অধ্যয়ন করা।
|-
|আত্ম-প্রতিক্রিয়া
|নিজের সাফল্য বা ব্যর্থতার জন্য নিজেই পুরস্কার বা শাস্তি নির্ধারণ।
|-
|অনুশীলন ও মুখস্থকরণ
|বিভিন্ন ধরনের গণিত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শেখা।
|-
|তথ্য অনুসন্ধান
|অ-সামাজিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ।
|-
|সামাজিক সহায়তা চাওয়া
|বন্ধু, শিক্ষক বা অন্য প্রাপ্তবয়স্কদের সাহায্য চাওয়া।
|-
|পুনরায় পর্যালোচনা করা
|পাঠ্যবই, নোট বা হোমওয়ার্ক পুনরায় পড়া।
|}
৩০টি সেশনে অংশ নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের গণিত অর্জন এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতায় লক্ষণীয় উন্নতি দেখা গেছে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এটি প্রমাণ করে যে, কম অর্জনক্ষম শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শিখন কৌশল শেখানো সম্ভব এবং কার্যকর। যখন তারা এই দক্ষতা অর্জন করে এবং প্রক্রিয়াভিত্তিক চিন্তায় মনোযোগ দেয়, তখন তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে। উন্নতির সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে শুরু করে। নিজেদের প্রশংসা ও পুরস্কার প্রদান তাদের আরও উন্নতির দিকে ধাবিত করে। এর ফলে তাদের আত্ম-দক্ষতা এবং গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ইতিবাচক চক্র তৈরি করে: শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারা গণিতে সফল হতে পারে, তখন তারা আরও কঠোর পরিশ্রম করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার সঠিক কৌশল প্রয়োগে সক্ষম হয়।
ঐতিহ্যগত শ্রেণিকক্ষে গণিতকে সাধারণত একটি উত্তর-কেন্দ্রিক বিষয় হিসেবে দেখা হয়, প্রক্রিয়া-কেন্দ্রিক নয়। গতি ও নির্ভুলতার ওপর গুরুত্ব দিলে, শিক্ষার্থীরা কেবল তথ্য মুখস্থ করতে শেখে, কিন্তু গণিত বুঝে না। এছাড়া, ঐ পরিবেশে শেখার প্রবাহ শুধুমাত্র শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীর দিকে হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ তারা যখন তাদের শেখার ওপর নিয়ন্ত্রণ পায় না, তখন তারা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শেখে না কিংবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা প্রয়োগেও আগ্রহী হয় না।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> অতএব, আত্মনিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ন্ত্রণ দিলে তারা শেখার সময় নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে শেখে। গণিত শিক্ষকরা জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যখন লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও নিজেদের কাজ মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে, তখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল চর্চা করার সুযোগ পায় যা তাদের গণিত অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
উচ্চ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিম্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তুলনায় আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল ভালোভাবে প্রয়োগ করতে পারে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এর কারণ হলো, বড় শিক্ষার্থীরা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার ধারণা ও কৌশলগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে। এছাড়া কিছু কৌশল যেমন পরিকল্পনা লেখা, শেখার উপাদান গুছিয়ে রাখা—এসবের জন্য পূর্বজ্ঞান দরকার হয়। ফলে বড়দের এসব কৌশল শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় এবং তারা গণিত অর্জনে তুলনামূলক বেশি উন্নতি করে।
== শিক্ষণ বিষয়ক প্রভাব ==
=== গণিত শেখার অক্ষমতা ===
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো যেগুলো জ্ঞানচর্চা, কার্যস্মৃতি এবং গণিত শেখার অক্ষমতা নিয়ে হয়েছে, সেগুলো দেখায় যে গণিতে “গণনা” এবং “সমস্যা সমাধান” দুটি আলাদা শেখার অক্ষমতা আছে। এতদিন গণিত মূল্যায়ন সাধারণ ছিল এবং এই দুই ডোমেইনের পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া হতো না। শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সময় পেশাদারদের উচিত এই দুটি দক্ষতা আলাদাভাবে বিবেচনা করা। শিক্ষকদেরও উচিত শিশুদের শেখানোর সময় এই আলাদা ডোমেইন দুটি চিন্তা করে পরিকল্পনা করা। গণিত শেখাতে কিছু পরামর্শ ও টুলস শিক্ষার্থীদের উপকারে আসতে পারে:
=== বাহ্যিক উপস্থাপন ===
গণিতে সমস্যা সমাধান অনেক সময় মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে, তাই বাহ্যিক উপস্থাপন অনেক উপকারী হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণিতের ধারণা স্পষ্ট করে তুলে ধরে, যাতে তারা সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বাহ্যিক উপস্থাপনের কিছু উদাহরণ হলো—সমাধানসহ উদাহরণ, অ্যানিমেশন ও চিত্র।
==== সমাধানসহ উদাহরণ ====
ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো একটি দরকারী শিক্ষামূলক পদ্ধতি যা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গণিত শেখার সুবিধার্থে ব্যবহার করেন। গবেষণা দেখায় যে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো ব্যবহার করে এমন শিক্ষার্থীদের বাড়িয়ে তুলতে পারে, যাদের গণিতের কর্মক্ষমতা স্তর কম। একটি কারণ হলো যখন শিক্ষার্থীদের সমাধান করার জন্য কোনও সমস্যা দেওয়া হয়, তখন তাদের সর্বোত্তম লক্ষ্য গণিত শেখার পরিবর্তে সমস্যাটি সমাধান করা। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণ দেওয়া হয়, তখন তারা আসলে শিখে এবং তাদের নিজেরাই উপকরণগুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।<ref>Renkl, A. (1999). Learning Mathematics from worked-out examples: Analyzing and Fostering self-explanations. ''European Journal of Psychology of Education, 14''(4), 477-488.</ref> সুতরাং, কাজ করা উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ইচ্ছাকৃত শিক্ষার উপর আরও বেশি ফোকাস করে। শিক্ষার্থীরা সাধারণত গাণিতিক তত্ত্ব বা প্রমাণ বুঝতে পারে না কারণ তারা বুঝতে জটিল। যাইহোক, পরিশ্রমী উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের শেখার অর্জন এবং গণিতের ধারণাটি বোঝার জন্য সহজ। সুস্পষ্ট নির্দেশনা না দিয়ে, শিক্ষকরা কেবল শিক্ষার্থীদের উল্লেখ করার জন্য উদাহরণ হিসাবে গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করবেন তার পদক্ষেপগুলো দেখায়। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। তারপরে, শিক্ষার্থীদের নিজেরাই একই ধরণের গাণিতিক সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করার স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। সুতরাং, তারা অনেক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রেফারেন্স হিসাবে কাজ করা উদাহরণগুলো ব্যবহার করতে পারে।<ref>Tu, C-T. (2011). An Instructional experiment: Using worked-out examples in mathematics problem-solving of elementary school students. ''Bulletin of Educational Psychology, 43''(1), 25-50.</ref> শিক্ষকরা যে পরিশ্রমী উদাহরণ দিয়েছেন তা উল্লেখ করে তারা কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনাকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করতে পারে। অতএব, এটি শিক্ষার্থীদের স্ব-নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাড়িয়ে তুলতে পারে কারণ তারা সমস্যা সমাধানে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা অনুশীলন করছে। এই '''মেটাকগনিটিভ''' কৌশলটি শিক্ষার্থীদের বিশেষত গাণিতিক শব্দ সমস্যাগুলোতে তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। মেটাকগনিটিভ কৌশলগুলোর মধ্যে স্ব-জিজ্ঞাসা, স্ব-মূল্যায়ন, সংক্ষিপ্তকরণ এবং সমস্যাটি চিত্রিত করা অন্তর্ভুক্ত।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> এই কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান অর্জন করার সময় কাজ করা উদাহরণগুলো থেকে আরও গভীর বোঝার জন্য তৈরি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করতে এবং তাদের সমাধান করতে পারে তাদের উচ্চতর গণিতের কৃতিত্ব রয়েছে। যখন শিক্ষার্থীরা নিজেরাই গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করা যায় তার পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা করে, তখন তারা তাদের প্রতিফলিত চিন্তাভাবনা অনুশীলন করে যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তার বাইরেও বৃহত্তর বোঝার তৈরি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শিক্ষার্থীরা গণিতের নতুন এবং পরিশীলিত জ্ঞান বিকাশ করতে পারে কারণ তারা তাদের পূর্ব জ্ঞানের সাথে নতুন শেখা উপকরণগুলোকে একত্রিত করে।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> উপরন্তু, ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো গ্রুপ সেটিংসেও ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে শিক্ষার্থীরা গাণিতিক সমস্যা সমাধানে তাদের সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করতে পারে। গবেষণায় দুটি উপায় পাওয়া গেছে যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণ ব্যবহার করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1348/000709903322591181</ref> একটা উপায় হলো, যারা কাজের উদাহরণ বোঝে তারা যারা বোঝে না তাদের বোঝাতে পারবে। অন্য উপায়টি হলো শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তি এবং যুক্তি দক্ষতা ব্যবহার করে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী উদাহরণগুলো ব্যাখ্যা করে। উভয় উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণগুলোর বিশদ আলোচনা করে একটি সামাজিক ইন্টারেক্টিভ সেটিংয়ে শেখার সাথে জড়িত। একটি সামাজিক সেটিংয়ে শেখা উপকরণগুলোর বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করতে পারে কারণ শিক্ষার্থীরা উদাহরণগুলো আরও গভীরভাবে প্রসারিত করছে। একটি স্পষ্ট বোঝার জন্য তারা কাজ করা উদাহরণগুলোর সাথে তাদের যে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471.</ref> তাই, শিক্ষার্থীদের উচিত ছোট দলে ভাগ হয়ে উদাহরণগুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া প্রতিফলিত করে নতুন জ্ঞান অর্জন করা।
==== অ্যানিমেশন ====
গণিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে অ্যানিমেশন একটি দারুণ কার্যকর শিক্ষণ উপকরণ হিসেবে বিবেচিত। যেহেতু গণিত অনেক সময় বিরক্তিকর এবং অনাকর্ষণীয় মনে হতে পারে, তাই অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত শেখার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক বলে দাবি করা হয়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
যেকোনো গণিত সমস্যার সমাধান করার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যাটি চিহ্নিত করা এবং কী সমাধান করতে হবে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে, যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সমস্যাটি অনুবাদ বা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন অ্যানিমেশন সবচেয়ে কার্যকর হয়ে ওঠে কারণ এতে চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা থাকে যা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নটি ব্যাখ্যা করা সহজ করে তোলে। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীরা শুধুই সমস্যার নোট নেয়, তখন তারা কেবল পাঠ্য অনুলিপি করে, যার ফলে সমস্যার প্রকৃত অর্থ বোঝা সম্ভব হয় না। তবে যদি সমস্যার ব্যাখ্যার পাশাপাশি একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে সমস্যার পটভূমি।
উদাহরণস্বরূপ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ ও বিয়োগের ধারণা পাঠ্যপাঠের মাধ্যমে বোঝানো কঠিন হতে পারে। কিন্তু, যখন একটি সমস্যার আগের ও পরের অবস্থা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়, তখন এটি একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে পারে। যোগ ও বিয়োগ ভিত্তিক সমস্যার ক্ষেত্রে, অ্যানিমেশন বস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাধান ব্যাখ্যা করতে পারে। এছাড়াও, অ্যানিমেশন বিমূর্ত গণিত তত্ত্বকে দৃশ্যমান বস্তু, নির্দিষ্ট ফলাফল এবং বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে, অ্যানিমেশন ব্যবহার করে গণিতের বিমূর্ত ধারণাগুলোকে নির্দিষ্ট উদাহরণের সঙ্গে যুক্ত করে শেখানো যায়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
অ্যানিমেশন দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে বিমূর্ত নীতিগুলোর অধিগ্রহণ এবং উদাহরণ বিশ্লেষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও উদাহরণ বিশ্লেষণ একটি কার্যকর শিক্ষণ কৌশল হিসেবে পরিচিত, তবুও অ্যানিমেশন এই উদাহরণগুলোকে আরও উন্নত করতে পারে।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref> উদাহরণ বিশ্লেষণ সব সময় চিত্র সহ হয় না, বরং কেবল পাঠ্য থাকতে পারে। তাই, যদি প্রতিটি ধাপের জন্য চিত্র উপস্থাপন থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি কল্পনা করতে পারে। শিক্ষার্থীরা ব্যাখ্যা ও চিত্রের মাধ্যমে উদাহরণগুলো আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। ফলস্বরূপ, শিক্ষকদের উচিত অ্যানিমেশনকে একটি শিক্ষণ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গণিত শিক্ষাকে আরও সুদৃঢ় করা।
==== রেখাচিত্র ====
তথ্যভিত্তিক রেখাচিত্র তৈরি করা একটি কঠিন কাজ, কারণ শিক্ষার্থীদের শুধু মৌখিক তথ্যকে চিত্রে রূপান্তর করলেই হয় না, বরং সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চিহ্নিত ও একত্রিত করে পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করতে হয়।<ref>van Garderen, D., Scheuermann, A., & Poch, A. (2014). Challenges students identified with a learning disability and as high-achieving experience when using diagrams as a visualization tool to solve mathematics word problems. ZDM Mathematics Education, 46, 135–149.</ref>
লারকিন এবং সাইমন বিশ্বাস করতেন যে, অনুচ্ছেদ ভিত্তিক উপস্থাপনার তুলনায় চিত্রভিত্তিক উপস্থাপন আরও সহজ ও কার্যকর, বিশেষত অনুসন্ধান, মেলানো এবং উপসংহারের ক্ষেত্রে। প্রথমত, এটি শব্দ সমস্যার উপাদানগুলোর মধ্যে টপোগ্রাফিক এবং জ্যামিতিক সম্পর্ক স্পষ্টভাবে ধরে রাখে, ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পেতে সহজতর হয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলো একত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ থাকায় এটি বিমূর্ত উপস্থাপনা ও চিত্রচিহ্নের মধ্যে সম্পর্ক পরিষ্কার করে তোলে। তৃতীয়ত, যদি সমস্যাটি চিত্র এঁকে তৈরি করা হয়, তবে মেমরি লোড কমে যায় কারণ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখতে পারে।<ref>Larkin, J., & Simon, H. (n.d.). Why a Diagram is (Sometimes) Worth Ten Thousand Words. Cognitive Science, 65-100.</ref>
অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্রের ব্যবহার সমস্যার সমাধান দক্ষতা বাড়াতে পারে।
বানার্জি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত শব্দ সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহার করার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্র তৈরির পদ্ধতি (যেমন রেখাচিত্র আঁকা ও লেবেলিং) গণিত সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের অর্জন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।<ref>Banerjee, B. (2011). The effects of using diagramming as a representational technique on high school students' achievement in solving math word problems. Dissertation Abstracts International Section A, 71, 394</ref>
[[চিত্র:Percentage_of_correct_answers_between_the_Japanese_and_New_Zealand_students.jpg|থাম্ব|জাপান এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রেখাচিত্র ব্যবহার করে গণিত শব্দ সমস্যার সঠিক উত্তরের শতাংশের তুলনা]]
এক গবেষণায়, উসাকা, মানালো এবং ইচিকাওয়া জাপান ও নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের তুলনা করেন।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref> জাপানি শিক্ষার্থী একটি একক বস্তু ভিত্তিক রেখাচিত্র ব্যবহার করেছিল, এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থী দুটি মাত্রার বস্তু ব্যবহার করেছিল। গবেষণায় দেখা যায় যে, নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের সঠিক উত্তরের হার জাপানি শিক্ষার্থীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর কারণ হলো, রেখাচিত্র উপস্থাপনা সমস্যার বাক্যগুলোকে অবস্থানের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট স্থানে বিস্তারিতভাবে তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং সমস্যা বুঝতে সুবিধা হয়।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref>
শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে হলে, শিক্ষককে প্রথমে তাদের শেখাতে হবে— ১) রেখাচিত্র কী, ২) সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহারের গুরুত্ব, ৩) কখন রেখাচিত্র ব্যবহার করতে হবে, ৪) কোন ধরণের রেখাচিত্র কোন সমস্যায় প্রযোজ্য, ৫) কীভাবে রেখাচিত্র তৈরি করতে হয়, এবং ৬) কীভাবে রেখাচিত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্রের মৌলিক ধারণাগুলো জানা জরুরি কারণ সব গণিত সমস্যায় রেখাচিত্র প্রযোজ্য নয়। উসাকা ও মানালো দেখিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা সাধারণত দৈর্ঘ্য ও দূরত্ব সম্পর্কিত শব্দ সমস্যায় রেখাচিত্র ব্যবহার করে, কারণ এসব সমস্যা সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং বাস্তব সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।<ref>Uesaka, Y., & Manalo, E. (2012). Task-related factors that influence the spontaneous use of diagrams in math word problems. Applied Cognitive Psychology, 26, 251–260.</ref>
এই ধারণাগুলো শেখানোর পর, শিক্ষকরা তিন ধাপের একটি পদ্ধতি— "জিজ্ঞাসা করো, করো, যাচাই করো"— ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।<ref>van Garderen, D., & Scheuermann, A. (2015). Diagramming word problems: A strategic approach for instruction. Intervention in School and Clinic</ref> ভ্যান গার্ডেরেন এবং শুয়ারম্যান পরামর্শ দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কোন সমস্যাটি সমাধান করতে হবে তা শনাক্ত করবে; এরপর একটি রেখাচিত্র আঁকবে; শেষে রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যাটি সমাধান করবে। উদাহরণস্বরূপ, সমস্যার প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে পেতে শিক্ষার্থীরা কী-শব্দ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে এবং সমস্যায় দেওয়া তথ্য সঠিকভাবে স্থাপন করতে পারে।<ref>Walker, D. W., & Poteet, J. A. (1989-90). A comparison of two methods of teaching mathematics story problem-solving with learning disabled students. National Forum of Special Education Journal, 1, 44-51.</ref>
সারসংক্ষেপে, রেখাচিত্র গণিত সমস্যার সমাধানে একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে; এটি শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তায় সহায়তা করে এবং বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
=== অ্যালগরিদম ===
অ্যালগরিদম হলো একাধিক ধাপের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীদের গণিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যদি তারা প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে, তাহলে তারা প্রতি বারই একটি সঠিক উত্তর বের করতে সক্ষম হয়। অ্যালগরিদম সাধারণত পুনরাবৃত্ত ক্রমের উপর ভিত্তি করে এবং এটি যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগে প্রযোজ্য। অ্যালগরিদম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ধাপে কী ঘটছে তা ব্যাখ্যা করতে শেখে এবং ভুল হলে তা শনাক্ত করতে পারে। এটি তাদের সমস্যা সমাধানের সময় প্রতিটি ধাপে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। একাধিক ধাপ বিশিষ্ট সমস্যার সমাধানে, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে অ্যালগরিদম স্মরণ করে মানসিকভাবে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়।
শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখানো যে অ্যালগরিদম সবসময় ধারাবাহিকভাবে সমাধান করতে হবে; কোনও ধাপ বাদ দেওয়া যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, যখন শিক্ষার্থীরা ৫+৮×৬ সমস্যার সমাধান করে, তখন তাদের বুঝতে হবে যে প্রথমে গুণ করতে হবে, এরপর যোগ করতে হবে। যদি তারা সঠিক ক্রম অনুসরণ করে, তাহলে তারা সবসময় সঠিক উত্তর পাবে।
তবে, পল কব একটি গবেষণায় গ্রেড ১ ও ২-এর শিক্ষার্থীদের ডাবল ডিজিট যোগের সমস্যা সমাধান নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি দেখেছেন, ১৬+৯ সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে। কিন্তু যখন তাদের ঐ একই সমস্যা প্রচলিত স্কুল অ্যালগরিদম (সংখ্যা হাতে থাকা সহ) ব্যবহার করে উল্লম্বভাবে সমাধান করতে বলা হয়, তখন অনেকেই ভুল উত্তর দেয়। তিনি উপসংহার টানেন যে, প্রচলিত অ্যালগরিদমে শিক্ষার্থীরা কেবল নিয়ম অনুসরণ করতে চেষ্টা করে, কিন্তু কিভাবে অ্যালগরিদমটি কাজ করে তা প্রকৃতপক্ষে বুঝে না বলেই তাদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Cobb, P. (1991). Reconstructing Elementary School Mathematics. Focus on Learning Problems in Mathematics, 13(2), 3–32.</ref>
জে. এস. ব্রাউন এবং বার্টন দেখেছেন যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে তাদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য এক বা একাধিক ভুল অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে। যদিও অনেক ভুল অ্যালগরিদম সঠিক উত্তর দিতে পারে, তবুও তা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।<ref>Brown, J.S., Burton, R.B. (1978). Diagnostic models for procedural bugs in basic mathematical skills. Cognitive Science, 2, 155-192</ref> উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিশুর মনে একটি পূর্বধারণা ছিল যে বিয়োগ অ্যালগরিদম মানে হলো প্রতিটি কলামে উপরের সংখ্যাটির সঙ্গে নিচের সংখ্যাটি তুলনা করে ছোটটি বড় থেকে বিয়োগ করা, উপরের সংখ্যাটি বড় কি না, তা না জেনেই। বাম পাশের চিত্রটি ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম সবসময় সঠিক সমাধান দিতে পারে না।
[[চিত্র:Faulty_algorithm_of_subtraction.jpg|থাম্ব|একটি চিত্র যা ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম কাজ করে না]]
ব্রাউন এবং বার্টন উল্লেখ করেছেন, এমনকি যেসব শিশু বিয়োগের অ্যালগরিদম সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে, তারা হয়তো মনে করে যে তারা বিয়োগ প্রক্রিয়াটি বুঝে ফেলেছে। এই ভুল ধারণা তাদের (a) ও (c) অংশে সঠিক উত্তর দিতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু (b) ও (d) অংশে ভুল উত্তর দিবে, কারণ সেসব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কলামে উপরের সংখ্যা নিচের চেয়ে ছোট।
নাগেল এবং সুইঙ্গেন মনে করেন, ধারক বা ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো কার্যকারিতা এবং নির্ভুলতা বাড়াতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝার সক্ষমতা বাড়াতে ব্যর্থ হয়।<ref>Nagel, N., & Swingen, C. C. (1998). Students’ explanations of place value in addition and subtraction. Teaching Children Mathematics, 5(3), 164–170.</ref>
সুতরাং, ধারাবাহিক অ্যালগরিদম ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা যাতে সফল হয়, এর জন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জায়গা ভিত্তিক চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে ধাপে ধাপে সমাধান শেখানো উচিত। যেমন, সঠিকভাবে সংখ্যাগুলো সাজানো এবং ফাঁকা জায়গা রেখে লেখা শেখাতে হবে—বিশেষ করে কলামভিত্তিক বিয়োগ, একাধিক অঙ্কের গুণ ইত্যাদিতে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা নিজের অ্যালগরিদম তৈরি করে সমস্যার সমাধান করে। শিক্ষকরা তাদের মনের মধ্যে নিমোনিকস ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন; এই পদ্ধতি সমস্যার ধাপগুলো মনে রাখতে সাহায্য করে।<ref>Nelson, P. M., Burns, M. K., Kanive, R., & Ysseldyke, J. E. (2013). Comparison of a math fact rehearsal and a mnemonic strategy approach for improving math fact fluency. Journal Of School Psychology, 51(6), 659-667. doi:10.1016/j.jsp.2013.08.003</ref> যেমন, PEDMAS শিক্ষার্থীদের বলে দেয় কোন ক্রমে গাণিতিক কাজ করতে হবে। শুধু বাম থেকে ডানে গাণিতিক অপারেশন করলেই চলবে না, আগে বন্ধনীর কাজ শেষ করতে হবে।<ref>Jeon, K. (2012). Reflecting on PEMDAS. Teaching Children Mathematics, 18(6), 370-377.</ref> পাশাপাশি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবেন যেন তারা প্রথমে পুরো সমস্যাটি পড়ে বোঝে, এরপর সেটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কোন অংশে কোন অ্যালগরিদম লাগবে তা নির্ধারণ করে। প্রতিটি ধাপে তাদের উত্তর পুনর্বিবেচনা করতে শেখানো উচিত। ধাপগুলো লিখে রাখলে শিক্ষার্থীরা ভুল ধরতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
=== শব্দভিত্তিক সমস্যার কৌশল ===
শব্দভিত্তিক সমস্যা সব শিশুদের জন্যই একটি বিশেষ ধরণের চ্যালেঞ্জ, তবে যাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে শেখার অসুবিধা রয়েছে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন। গাণিতিক সমস্যা ও শব্দভিত্তিক সমস্যার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো ভাষাগত তথ্যের সংযুক্তি। অর্থাৎ, শিশুদের প্রথমে সমস্যাটির লেখা পড়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য বাছাই করে সেটিকে সংখ্যাগত সমস্যায় রূপান্তর করতে হয়। এরপর তাদের নির্ধারণ করতে হয় কোন তথ্যটি প্রয়োজনীয় এবং কোনটি অনুপস্থিত।
শব্দভিত্তিক সমস্যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বোঝা কঠিন, তবে সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন শিক্ষার্থীর প্রথম ভাষা ইংরেজি না হয়। জ্যান ও রদ্রিগেস (২০১২)<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref> এর মতে, যাদের ইংরেজি দ্বিতীয় ভাষা, তারা ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে সমস্যার বক্তব্য বুঝতে পারে না। তারা প্রায়শই মূল শব্দের উপর নির্ভর করে অথবা বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করে, ফলে ভুল সমাধান আসে। মূল শব্দের উপর নির্ভরশীলতা শিক্ষার্থীদের সমস্যা বোঝা থেকে বিচ্যুত করে। "মূল শব্দের ব্যবহার দৈনন্দিন ভাষা ও গাণিতিক ভাষার মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।"<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, P. 156, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref>
এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে শ্রেণিকক্ষে আলোচনা বা ছোট ছোট দলের আলোচনা শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি কী এবং কী জানতে চাওয়া হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের পড়া, বোঝা, মতামত বিনিময় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা ও সমাধান নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিলে তারা সমস্যাটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে।
শব্দভিত্তিক সমস্যা শেখানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সুযোগ দেবেন যেন তারা সমস্যার অর্থ নিয়ে চিন্তা ও আলোচনা করতে পারে এবং সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে একাধিক সমাধান ভাবতে পারে। এই পদ্ধতি ভাষাগত সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থী এবং গাণিতিক শেখার সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর।
শিক্ষা প্রতিবন্ধী পরিষ <ref>http://www.council-for-learning-disabilities.org/mathematics-disabilities</ref> সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য কিছু কৌশল প্রস্তাব করে:
''ফাস্ট ড্র'' (মার্সার এবং মিলার, ১৯৯২): আপনি কী সমাধান করছেন তা খুঁজে বের করুন।
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, "সমস্যাটির অংশগুলি কী?"
সংখ্যাগুলি সেট আপ করুন।
চিহ্নটি বেঁধে দিন।
চিহ্নটি আবিষ্কার করুন।
সমস্যাটি পড়ুন।
উত্তর দিন, অথবা আঁকুন এবং পরীক্ষা করুন।
উত্তর লিখুন।
<nowiki>''প্রশ্ন এবং ক্রিয়া''</nowiki> (রিভেরা, ১৯৯৪)
পদক্ষেপ
ক. সমস্যাটি পড়ুন।
প্রশ্ন
এমন কোন শব্দ আছে যা আমি জানি না?
আমি কি প্রতিটি শব্দের অর্থ জানি?
আমার কি সমস্যাটি পুনরায় পড়ার প্রয়োজন?
সংখ্যার শব্দ আছে?
ক্রিয়া
শব্দগুলি নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
সংজ্ঞাগুলি খুঁজে বের করুন।
পুনরায় পড়ুন।
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
খ. সমস্যাটি পুনরায় বর্ণনা করুন।
কোন তথ্য গুরুত্বপূর্ণ?
কোন তথ্যের প্রয়োজন নেই?
প্রশ্নটি কী জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে?
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
ক্রস আউট করুন।
নিজের শব্দে লিখুন।
গ. একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
তথ্যগুলো কী কী?
সেগুলো কীভাবে সংগঠিত করা যেতে পারে?
কত ধাপ আছে?
আমি কোন কোন ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করব?
একটি তালিকা তৈরি করুন।
চার্ট তৈরি করুন।
কৌশল ব্যবহার করুন।
ছোট সংখ্যা ব্যবহার করুন।
একটি ক্রিয়াকলাপ নির্বাচন করুন।
ঘ. সমস্যাটি গণনা করুন।
আমি কি সঠিক উত্তর পেয়েছি?
অনুমান করুন।
অংশীদারের সাথে পরীক্ষা করুন।
ক্যালকুলেটর দিয়ে যাচাই করুন।
ঙ. ফলাফল পরীক্ষা করুন।
আমি কি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি?
আমার উত্তর কি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে?
আমি কি প্রশ্ন/উত্তর পুনঃবক্তৃতা করতে পারি?
প্রশ্ন/উত্তর পরীক্ষা করুন।
একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
৩. <nowiki>''টিআইএনএস কৌশল''</nowiki> (ওওয়েন, ২০০৩)
শব্দ সমস্যা বিশ্লেষণ এবং সমাধানের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পদক্ষেপ এই সংক্ষিপ্ত রূপ দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চিন্তা: এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার কী করতে হবে তা নিয়ে ভাবুন এবং মূল শব্দগুলিকে বৃত্তাকার করুন।
তথ্য: এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বৃত্তাকার করুন এবং লিখুন; একটি ছবি আঁকুন; অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিন।
সংখ্যা বাক্য: সমস্যাটি উপস্থাপনের জন্য একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
সমাধান বাক্য: আপনার উত্তর ব্যাখ্যা করে এমন একটি সমাধান বাক্য লিখুন।
উদাহরণ: কাইল ৬টি বেসবল কার্ড কিনেছে। পরের দিন, সে তার সংগ্রহে আরও ১১টি কার্ড যোগ করেছে। তার কাছে মোট কতটি কার্ড আছে?
চিন্তা: +
তথ্য: ৬টি বেসবল কার্ড, ১১টি বেসবল কার্ড
সংখ্যা বাক্য: ৬ + ১১ =
সমাধান বাক্য: কাইলের সংগ্রহে ১৭টি বেসবল কার্ড রয়েছে।
৪. <nowiki>''সমস্যা সমাধান''</nowiki> (বীরশ, লিয়ন, ডেনকলা, অ্যাডামস, মোটস এবং স্টিভস, ১৯৯৭)
প্রথমে সমস্যাটি পড়ো।
প্রশ্নটি হাইলাইট করো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করো।
একটি পরিকল্পনা তৈরি করো।
সংখ্যাগুলো বোঝাতে চিত্র বা বস্তু ব্যবহার করো।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো।
তোমার কাজ যাচাই করো।
==== বীজগণিত শেখানোর জন্য কগনিটিভ টিউটর ====
১৯৮৫ সালে, অ্যান্ডারসন, বয়েল এবং রেইজার বুদ্ধিমান শেখানোর পদ্ধতিতে কগনিটিভ মনস্তত্ত্ব যুক্ত করেন। এরপর থেকে এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্রদের শেখানোর জন্য কগনিটিভ মডেল তৈরি করা হয়। এ নাম রাখা হয় কগনিটিভ টিউটরস।<ref name="anderson et al. 1995">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive Tutors: Lessons learned. Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167.</ref> সবচেয়ে জনপ্রিয় কগনিটিভ টিউটর হলো কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I।<ref name="k&c, 2006">Koedinger, K. R., & Corbett, A. (2006). Cognitive tutors. The Cambridge handbook of the learning sciences, 61-77.</ref> এটি তৈরি করেছে কার্নেগি লার্নিং, ইনকর্পোরেটেড। তারা এখন বীজগণিত I, II, বীজগণিতের সেতু, জ্যামিতি এবং ইন্টিগ্রেটেড ম্যাথ I, II, III সহ সম্পূর্ণ কগনিটিভ টিউটর® তৈরি করছে। কগনিটিভ টিউটর®-এ এখন স্প্যানিশ মডিউলও যুক্ত হয়েছে।
==== কীভাবে শেখাতে হবে ====
দুটি অন্তর্নির্মিত অ্যালগরিদম—'''''মডেল ট্রেসিং''''' এবং '''নলেজ ট্রেসিং''' শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। মডেল ট্রেসিং শিক্ষার্থীর প্রতিটি ধাপের ভিত্তিতে ঠিক সময়ে প্রতিক্রিয়া, অনুরোধে পরামর্শ এবং বিষয়ভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেয়।<ref name="anderson et al. 1995" /> নলেজ ট্রেসিং প্রতিটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান অনুযায়ী শেখার কাজ নির্ধারণ করে।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref name="k&c, 2006" />
তোমরা ''[[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি]]'' অধ্যায়ের ([[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি#কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি|২.৫.২ কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি]]) অংশে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারো কীভাবে কগনিটিভ টিউটর বীজগণিত শেখাতে সাহায্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, অনুরোধভিত্তিক পরামর্শ, বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা ও ব্যক্তিকৃত কাজের মাধ্যমে।
==== কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর মিশ্র প্রভাব ====
কগনিটিভ টিউটরের কার্যকারিতা নিয়ে পূর্ববর্তী গবেষণার প্রমাণ থেকে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানের তুলনায় কগনিটিভ টিউটর অধিক কার্যকর।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref>Koedinger, K. R. & Anderson, J. R. (1993). Effective use of intelligent software in high school math classrooms. In Proceedings of the World Conference on Artificial Intelligence in Education, (pp. 241-248). Charlottesv</ref><ref name="K&A&M">Koedinger, K., Anderson, J., Hadley, W., & Mark, M. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. Human-Computer Interaction Institute.</ref><ref>Corbett, A. T., & Anderson, J. R. (2001). Locus of feedback control in computer-based tutoring: Impact on learning rate, achievement and attitudes. In Proceedings of the SIGCHI Conference on Human Factors in Computing Systems (pp. 245–252). New York, NY, USA: ACM.</ref>
তবে, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন সায়েন্সেস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি সাম্প্রতিক স্বাধীন ও বৃহৎ আকারের গবেষণা ''ক্লিয়ারিংহাউস কী কাজ করে''<ref>What Works Clearinghouse (ED). (2016). Carnegie Learning Curricula and Cognitive Tutor[R]. What Works Clearinghouse Intervention Report. What Works Clearinghouse.</ref> কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I সম্পর্কিত ২২টি গবেষণার মধ্যে ৬টি পর্যালোচনা করে, যেখানে ৮ম থেকে ১৩শ গ্রেড পর্যন্ত ১২,৮৪০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১১৮টি স্থানে। গবেষকরা দেখতে পান, কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর বীজগণিত শেখার ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সাধারণ গণিত দক্ষতার ওপর কোনও উল্লেখযোগ্য বা প্রাসঙ্গিক প্রভাব দেখা যায়নি।
মরগান এবং রিটার,<ref>Morgan, P., & Ritter, S. (2002). An experimental study of the effects of Cognitive Tutor® Algebra I on student knowledge and attitude. Pittsburgh, PA: Carnegie Learning, Inc.</ref> ওকলাহোমার মুর শহরের পাঁচটি ভিন্ন স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত ক্লাসে একটি অভ্যন্তরীণ শিক্ষক-ভিত্তিক পরীক্ষামূলক গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গবেষণায় প্রতিটি শিক্ষককে অন্তত একটি কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ইন্টিগ্রেটেড ক্লাসরুম এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাসরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, যারা কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহার করে শিখেছিল তারা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফল করেছিল এবং গণিত বিষয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল।
কাবালো, জাকিউ এবং ভু<ref>Cabalo, J. V., Jaciw, A., & Vu, M. (2007). Comparative effectiveness of Carnegie Learning’s Cognitive Tutor® Algebra I curriculum: A report of a randomized experiment in the Maui School District. Palo Alto, CA: Empirical Education, Inc.</ref> হাওয়াইয়ের মাউই কাউন্টির পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I এর কার্যকারিতা পর্যালোচনার জন্য একটি র্যান্ডমাইজড গবেষণা পরিচালনা করেন। ছয় মাসের ব্যবহারের পর ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শেষে শিক্ষার্থীদের এনডব্লিউইএ বীজগণিত কোর্স সমাপ্তির অর্জন স্তর পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কগনিটিভ টিউটর® সফটওয়্যার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করুক বা না করুক, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর গণিতে উন্নতি দেখা যায়। তবে, যারা আগে দুর্বল ছিল, তারা ব্যবহার শুরু করার পর উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে, যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্কোরধারীদের চেয়ে বেশি ছিল।
ক্যাম্পুজানো, ডিনারস্কি, আগোদিনি এবং রাল<ref>Campuzano, L., Dynarski, M., Agodini, R., & Rall, K. (2009). The effectiveness of reading and mathematics software products: Findings from two student cohorts. Washington, DC: U.S. Department of Education, Institute of Education Sciences.</ref> একটি ২ বছরব্যাপী কংগ্রেস-অনুমোদিত গবেষণা পরিচালনা করেন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষণপদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য, যার দ্বিতীয় বছরে নয়টি দরিদ্র স্কুলে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন এবং শিক্ষকদের র্যান্ডমভাবে সফটওয়্যার ব্যবহারে অথবা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে ভাগ করে দেন। সব শিক্ষার্থীদের শরৎ ও বসন্তকালে ETS End-of-Course (ইটিএস এন্ড অফ কোর্স) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। দ্বিতীয় বছরে সফটওয়্যার ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা প্রথম বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখায়, যদিও পরীক্ষার স্কোরে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল সামান্য (p<০.৩)।
প্যান, গ্রিফিন, ম্যাককাফ্রে এবং কারাম<ref>Pane, J. F., Griffin, B. A., McCaffrey, D. F., Karam, R., Daugherty, L., & Phillips, A. (2013). Does an algebra course with tutoring software improve student learning?.</ref> কগনিটিভ টিউটর® যুক্ত বীজগণিত পাঠ্যক্রমের কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন। গবেষণা দুটি ধারাবাহিক শিক্ষাবর্ষজুড়ে চলে এবং সফটওয়্যারটি সপ্তাহে তিন দিন শিক্ষক-নির্দেশিত ক্লাসে এবং দুই দিন কম্পিউটার-নির্দেশিত ক্লাসে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বছর হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে শিক্ষাগত সাফল্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি (p<০.৪৬)। তবে দ্বিতীয় বছরে কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ শক্তিশালী ছিল (p<০.০৪), এবং হস্তক্ষেপকারী দলে যেসব শিক্ষার্থীর সাফল্য আগে কম ছিল, তাদের অগ্রগতি বেশি ছিল।
== শব্দকোষ ==
'''অ্যালগরিদম''' হলো গাণিতিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত একাধিক ধাপবিশিষ্ট একটি প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে সঠিক সমাধান প্রদান করে।
'''প্রয়োগ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা গাণিতিক ধারণার সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
'''স্পষ্টীকরণ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে, ফলে তারা সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাখ্যা করতে পারে।
'''শ্রেণিবিন্যাস''' হলো একই রকম বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বস্তুগুলোকে গোষ্ঠীবদ্ধ করার ক্ষমতা।
'''ধারণাগত জ্ঞান''' হলো মানসিক গঠন যা শিক্ষার্থীদের যুক্তি ও গাণিতিক ধারণা বোঝার ভিত্তি তৈরি করে।
'''ঘোষণামূলক জ্ঞান''' হলো সেই গাণিতিক ধারণা যা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে আহরণ করা হয় এবং যেগুলো ব্যবহার করে জটিল সমস্যা সমাধান করা যায়।
'''মূল্যায়ন''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে সমস্যার সমাধানের সঠিকতা নির্ধারণ করতে পারে।
'''অনুমান''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা সাধারণ ধারণা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করে এবং বস্তুসমূহের মধ্যে পার্থক্য ও সাদৃশ্য নির্ধারণ করতে পারে।
'''অন্তঃপ্রণোদনা''' হলো এমন একটি অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের আগ্রহে কোনো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
'''মেটাকগনিটিভ''' হলো নিজের চিন্তা ও শেখার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত জ্ঞান।
'''পদ্ধতিগত জ্ঞান''' হলো সমস্যা সমাধানের কৌশলের ধাপসমূহ সম্পর্কে জ্ঞান।
'''ক্রমবিন্যাস''' হলো বস্তুগুলোর আকার অনুযায়ী (যেমন: দৈর্ঘ্য, ওজন, আয়তন) ছোট থেকে বড় বা বড় থেকে ছোটভাবে সাজানোর ক্ষমতা।
'''স্বনিয়ন্ত্রিত শেখা''' হলো নিজের শেখা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, শুরু থেকে নিজের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন পর্যন্ত।
'''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' এমন তথ্য সাময়িকভাবে ধারণ করে যা ব্যবহৃত হবে, তবে তা পরিবর্তিত হবে না।
'''কার্যকরী স্মৃতি''' হলো একটি ব্যবস্থাপনা যা নতুন বা পূর্ববর্তী তথ্যকে অস্থায়ীভাবে ধরে রাখে, যাতে তা বর্তমান কাজে ব্যবহার করা যায়।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
# ''বেকার, সি কে (২০১৫)। "A case study of novice teachers' mathematics problem solving beliefs and perceptions"। গবেষণামূলক অ্যাবস্ট্রাক্ট ইন্টারন্যাশনাল সেকশন এ, ৭৫''
# ''লোরেঙ্ক, ও (২০১২)। "Piaget and Vygotsky: Many resemblances, and a crucial difference. New Ideas In Psychology", ৩০ (৩), ২৮১-২৯৫। doi:10.1016/j.newideapsych.2011.12.006''
== তথ্যসূত্র ==
* ফুচস, এলএস, ফুচস, ডি, স্টুবিং, কে, ফ্লেচার, জেএম, হ্যামলেট, সিএল, এবং ল্যামবার্ট, ডাব্লু (২০০৮)। "Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition"? জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ১০০ (১), ৩০
* হানিচ, এলবি, জর্ডান, এনসি, কাপলান, ডি, এবং ডিক, জে (২০০১)। "Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities"। জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ৯৩, ৬১৫–৬২৬।
* রাউর্ক, বিপি, এবং ফিনলেসন, এমএজে (১৯৭৮)। "Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities"। জার্নাল অফ অ্যাবনরমাল চাইল্ড সাইকোলজি, ৬, ১২১–১৩৩।
* সোয়ানসন, এইচএল, এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গার, এম (২০০৪)। "The relationship between working memory and mathematical problem-solving in children at risk and not at risk for serious math difficulties"। জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ৯৬, ৪৭১–৪৯১।
* সোয়ানসন, এইচ এল (২০০৩)। "Age-related differences in learning disabled and skilled readers’ working memory"। জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল চাইল্ড সাইকোলজি, ৮৫, ১–৩১।
{{সূত্র তালিকা}}
{{BookCat}}
teaue0jcgfade9wcpbcurny0tmdvrm6
85682
85681
2025-07-05T15:37:28Z
Mehedi Abedin
7113
85682
wikitext
text/x-wiki
গণিতের বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন জ্যামিতি, বীজগণিত, ক্যালকুলাস এবং সম্ভাব্যতা; প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে বিশেষ ধরনের ধারণা ও পদ্ধতির দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন। শিক্ষাদান এবং শেখার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ থাকে, তা বোঝা ও অতিক্রম করা যায় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই অধ্যায়ে আমরা গণিত শিক্ষায় প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গবেষণা পর্যালোচনা করব। আমরা পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্বের প্রাসঙ্গিক দিক এবং এই তত্ত্বের সমালোচনা আলোচনা করব। আমরা ব্যাখ্যা করব কীভাবে বিভিন্ন বিষয় একজন শিক্ষার্থীর গণিত শেখার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে শিক্ষকরা পাঠ পরিকল্পনার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে পারেন।
==গণিত কী?==
গণিত হলো সংখ্যা, পরিমাণ, জ্যামিতি ও স্থান এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কার্যাবলীর অধ্যয়ন। এটি '''ধারণাগত, প্রক্রিয়াগত এবং ঘোষণামূলক জ্ঞান'''-এর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press. </ref> গণিত সমস্যার সফল সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের এই জ্ঞানসমষ্টি অর্জন করতে হয়। গণিতে সঠিকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের আগে ধারণাগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এজন্য পূর্বে শেখা ধারণাগুলোর প্রয়োগ দরকার হয়। গণিতের ধারণাগত জ্ঞান অন্য সব গণিত-সম্পর্কিত দক্ষতার উন্নয়নে সহায়তা করে যেমন: ইতিবাচক মনোভাব, প্রক্রিয়াগত দক্ষতা, কৌশলগত পারদর্শিতা এবং অভিযোজিত যুক্তিশক্তি। একটির বিকাশ অন্যগুলোকেও শক্তিশালী করে এবং এতে সামগ্রিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, ধারণাগত জ্ঞান প্রক্রিয়াগত জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে, এবং এই ধারাটি চলতে থাকে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> উদাহরণস্বরূপ, গণিতে অনেক ধরনের অ্যালগরিদম রয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন। যখন শিক্ষার্থীরা গণিতের মূলনীতি ও ধারণাগুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারে, তখন তারা যেকোনো সমস্যার জন্য যথাযথ অ্যালগরিদম বেছে নিয়ে তা প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। এটি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সংযোগ নির্দেশ করে কারণ শিক্ষার্থীরা অনেক কৌশল শিখলেও সঠিকটি বেছে নেওয়া এবং তা প্রয়োগ করাই মূল বিষয়।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011). ''Cognitive Psychology and Instruction'' (5th ed.). Boston: Pearson Education.</ref> এছাড়াও, জটিল গণিত সমস্যার সমাধানে কোনো প্রক্রিয়া সফল হলে বা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সেখান থেকে আরও শিখতে পারে। ভুলের মাধ্যমে আত্ম-প্রশ্ন করে তারা নিজের বিদ্যমান জ্ঞান পুনর্গঠন করতে পারে এবং ফলে তাদের ধারণাগত জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। ঘোষণামূলক জ্ঞান ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কারণ এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে ধারণা (ধারণাগত জ্ঞান) ও নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম (প্রক্রিয়াগত জ্ঞান) পুনরুদ্ধার করতে হয়। এই তিনটি ক্ষেত্রের যেকোনো একটির ঘাটতি গণিত শেখায় অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008). ''The ABCs of learning disabilities'' (2nd ed.). Boston: Elsevier Academic Press.</ref> সুতরাং, এই তিন ধরনের জ্ঞানের সংমিশ্রণ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় তা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
==জ্ঞানীয় তত্ত্ব এবং গণিত==
===পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশ তত্ত্ব===
জঁ পাইগেট জন্ম থেকে কৈশোর পর্যন্ত জ্ঞানীয় বিকাশকে চারটি ধাপে ভাগ করেছেন: সংবেদনশীল গতি (জন্ম থেকে ২ বছর), প্রাক-পরিচালন (প্রায় ২ থেকে ৭ বছর), কংক্রিট অপারেশনাল (প্রায় ৭ থেকে ১১ বছর), এবং ফর্মাল অপারেশনাল (প্রায় ১১ থেকে ১৫ বছর)। যদিও সবাই এই ধাপগুলোতে ভিন্নভাবে অগ্রসর হয়, পাইগেট বিশ্বাস করতেন প্রতিটি শিশু পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করবে এবং কেউ কোনো ধাপ বাদ দেবে না কারণ পূর্ববর্তী ধাপ না শেখা পর্যন্ত পরবর্তী ধাপে যাওয়া সম্ভব নয়; এগুলো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পাইগেট আরও বলেন, শিশুর শেখা মূলত জন্ম থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলাফেরা ও পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়। জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শিশু বস্তু অনুসরণ এবং ধরার চেষ্টা শুরু করে, যা চোখ ও চলন সংক্রান্ত মস্তিষ্কের অংশগুলোকে বিকশিত করতে সাহায্য করে। একবার শিশু বুঝে যায় যে শেখা পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে হয়, তখন তারা নিজেরা পরিকল্পনা করে কাঙ্ক্ষিত বস্তু পেতে দক্ষ উপায়ে কাজ করে। পাইগেট দাবি করেন যে এই পর্যায়ে শিশুরা সংখ্যাকে বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref> এবং এমনও প্রমাণ আছে যে শিশুরা সংখ্যার ধারণা ও গণনার কিছু ধারণা ইতোমধ্যেই অর্জন করে<ref>Fuson, K. C. (1988). Children’s counting and concepts of numbers. New York: Springer.</ref>। এই পর্যায়ে শিশুদের গণিত দক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকরা এমন কার্যক্রম দিতে পারেন যাতে সংখ্যা ও গণনা যুক্ত থাকে। যেমন, ছবি যুক্ত বই পড়ানো যেতে পারে। এতে শিশুরা বস্তুর ছবি ও সংশ্লিষ্ট সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে শিখবে এবং পড়া ও অনুধাবন ক্ষমতাও বাড়বে। এই সময়ে পাইগেট দেখিয়েছেন যে শিশুরা নিজেরাই বস্তু ও জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করে।<ref>Piaget, J. (1963). The origins of intelligence in children. New York, NY: W.W. Norton & Company, Inc.</ref> যেহেতু পাইগেট মনে করতেন, একজন ব্যক্তির আগে অর্জিত জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ধাপে যেতে হয়, তাই সংখ্যা সম্পর্কে শিশুদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য এমন কার্যক্রমের মাধ্যমে গণিতের ভিত্তি তৈরি করা উচিত যাতে গণনা অন্তর্ভুক্ত থাকে।<br />
প্রায় ২ থেকে ৭ বছর বয়সে শিশুরা ভাষা, প্রতীকী চিন্তা, আত্মকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সীমিত যৌক্তিকতা অর্জন করে। এই সময়ে তারা সংখ্যা বা ব্লকের মতো বস্তুর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে শেখে। যদিও তারা সংখ্যার কিছু ধারণা অর্জন করে, তবে তাদের যৌক্তিক ক্ষমতা সীমিত থাকে এবং তারা বিপরীত ক্রমে কার্য পরিচালনা করতে পারে না। যেমন, যারা বুঝতে পারে ৫+৩ = ৮, তারা বুঝতে নাও পারে ৩+৫ = ৮। পাইগেটের মতে, কারণ তারা কোনো একটি দিক বুঝলে অন্য দিক হারিয়ে ফেলে। এই সময়ে শিক্ষকেরা শিশুদের দিয়ে নির্দিষ্ট গঠন তৈরি করতে পারে ব্লক দিয়ে। এতে তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গোষ্ঠীভুক্ত করতে শিখবে এবং বুঝবে একাধিক উপায়ে এটি তৈরি করা যায়।<ref>Thompson, C. S. (1990). Place value and larger numbers. In J. N. Payne (Ed.), Mathematics for young children (pp. 89–108). Reston, VA: National Council of Teachers of Mathematics.</ref> <br />
৭ থেকে ১১ বছর বয়সে শিশুরা জ্ঞানীয়ভাবে দ্রুত বিকশিত হয়। তারা একাধিক দিক বা মাত্রা বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পাইগেট একটি পরীক্ষায় একই পরিমাণ তরলকে ভিন্ন আকারের বোতলে ঢেলে দেখিয়েছিলেন — এই পর্যায়ের শিশুরা বুঝতে পারে তরলের উচ্চতা কেন পরিবর্তন হয়। এই সময়ে ‘শ্রেণিবিন্যাস’ ও ‘সিরিয়েশন’-এর দক্ষতা গড়ে ওঠে<ref>Piaget, J. (1977). Epistemology and psychology of functions. Dordrecht, Netherlands: D. Reidel Publishing Company.</ref>। তারা একজাতীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বস্তু শ্রেণিবদ্ধ করতে শেখে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বা হ্রাসপ্রাপ্ত মান অনুযায়ী সাজাতে শেখে। যদিও এই পর্যায়ে তারা মৌলিক গণনাগুলো জানতে পারে, তবে বাস্তব সমস্যায় তা প্রয়োগ করতে পারে না। যেমন, ৩টি সারিতে ৫টি ব্লক দিয়ে তৈরি গঠনের সংখ্যা গণনা করতে বললে, তারা গুণের ধারণা ব্যবহার করে না। অর্থাৎ, এই সময়ে তাদের গাণিতিক ধারণাগুলো বাস্তব বস্তুর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। তারা এখনো পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করতে সক্ষম নয়।<br />
১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে শিশুরা নিজেরাই তত্ত্ব তৈরি করতে এবং গণিতের ধারণা গঠন করতে পারে। তারা বিমূর্ত ধারণাকে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে। যেমন, তারা এখন বীজগণিতের একটি সমস্যা নিজে নিজে সমাধান করতে পারে, যেখানে আগে শিক্ষককে বাস্তব উদাহরণ দিতে হতো। তারা কারণ নির্ণয়, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং প্রয়োগ করতে শেখে। শিক্ষকেরা তাদের শেখাতে পারেন কীভাবে শব্দের সমস্যা বিশ্লেষণ করতে হয় এবং কোন তথ্য প্রাসঙ্গিক আর কোনটা নয় তা বোঝাতে হয়।<br />
পাইগেট মনে করতেন, যদি কোনো শিশু কোনো ধারণা বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে সেটির কারণ হচ্ছে সমস্যা থেকে সরাসরি গাণিতিক রূপান্তরে যাওয়ার চেষ্টা। তার মতে, শিশুদের শেখাতে হলে এমন পদ্ধতি নিতে হবে যা তাদের নিজে আবিষ্কার করতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা নিজেরাই ধারণা গড়ে তুলতে পারে, শিক্ষক তাদের সরাসরি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে। <ref>Piaget, J. (1968). Genetic epistemology. New York, NY: Columbia University Press Retrieved June 13, 2003 from the World Wide Web: http://www.marxists.org/reference/subject/philosophy/works/fr/piaget.htm</ref>
=== পাইগেট তত্ত্বের সমালোচনা ===
{| class="wikitable"
!পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের বিশ্বাস
!সমালোচনা
|-
|১) শিশুরা বস্তুর স্থায়িত্ব বোঝার বিকাশ শুরু করে
|
* পাইগেট শিশুদের অনুপ্রেরণার প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করেছিলেন
* শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
|-
|২) শিশুদের সংবেদনশীল ক্ষমতা এবং জ্ঞানীয় বিকাশ তাদের জন্মের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ঘটে
|
* সমস্ত শিক্ষার্থী একই নয়, তাদের অনন্য দক্ষতার ভিত্তিতে তাদের উচ্চতর বা নিম্ন বিভাগে স্থাপন করা যেতে পারে
|-
|৩) প্রতিটি শিশু একটি নির্দিষ্ট ক্রমে চারটি পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে
|
* পাইগেট বংশগতি, সংস্কৃতি এবং শিক্ষার মতো বাহ্যিক কারণগুলোকে অবহেলা করেছিলেন
|-
|৪) পাইগেট জ্ঞানীয় বিকাশকে নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৃথক করে
|
* জ্ঞানীয় বিকাশের পর্যায়গুলো ধীরে ধীরে এবং ক্রমাগত অগ্রগতি হিসাবে দেখা উচিত
|}
যদিও আধুনিককালে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানীয় বিকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য পাইগেটের তত্ত্ব ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, তবুও এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেক শিক্ষাবিদ পাইগেটের তত্ত্বের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের গাণিতিক শিক্ষার উপযুক্ততা পরিমাপ করেন। অন্যদিকে, হিবার্ট ও কার্পেন্টার মত দিয়েছেন যে, পাইগেটের তত্ত্ব তেমন কার্যকর নির্দেশনা নয়, কারণ বহু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, অনেক শিশু যারা পাইগেটের তত্ত্ব অনুসরণ করতে পারে না তারাও গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা অর্জনে সক্ষম।<ref>Hiebert, J., and T. P. Carpenter. "Piagetian Tasks as Readiness Measures in Mathematics Instruction: A CriticalReview." EDUCATIONAL STUDIES IN MATHEMATICS 13: 329-345, 1982</ref>
পাইগেট যেখানে শিশুর অভ্যন্তরীণ জ্ঞান অনুসন্ধানের উপর গুরুত্ব দেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশু বস্তু স্থায়ীত্ব (যেমন: লুকানো বস্তু খোঁজার ধারণা) শেখে, অন্য গবেষকরা বলেন, পাইগেট শিশুদের প্রেরণার প্রয়োজনীয়তাকে অবহেলা করেছেন। বার্গার মনে করেন বাহ্যিক প্রেরণা ও শিক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
ক্যাগান বিশ্বাস করেন, শিশু যখন স্থান পরিবর্তনের পরও বস্তু স্পর্শ করতে পারে, তখন এর পেছনের কারণ তাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতার বৃদ্ধি, পাইগেটের ধারণার মতো নতুন কোনো জ্ঞানীয় গঠনের কারণে নয়।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটকে সমালোচনা করা হয়েছে শিশুদের সামর্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত সাধারণায়নের জন্য। তিনি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন, শিশুর সংবেদনশীলতা ও জ্ঞানীয় বিকাশ জন্মের প্রথম ছয় মাসেই ঘটে। যদিও পাইগেট বিশ্বাস করতেন, প্রতিটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে নির্দিষ্ট ক্রমে অগ্রসর হয়, হেউভেল-পানহুইজে বলেন পাইগেটের তত্ত্ব ছোট শিশুদের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি দেখান যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি শুধুমাত্র পাইগেটের ধাপভিত্তিক তত্ত্বে বিশ্বাস করেন, তবে তারা শিশুদের প্রতীকের জ্ঞান, গণনার ক্রম ও গাণিতিক ক্রিয়ার সামর্থ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করতে পারেন।<ref>Cross, C. (2009). The Early Childhood Workforce and Its Professional Development. In Mathematics learning in early childhood paths toward excellence and equity. Washington, DC: National Academies Press.</ref>
বার্গার আরও বলেন, শিশুদের পার্সেপচুয়াল শেখা (ধারণাগত শেখা) জন্মের আগেই শুরু হতে পারে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref> যদিও একটি নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী একটি শিশু নির্দিষ্ট ধাপে থাকবে, তবুও সব শিক্ষার্থী একরকম নয়। তাদের স্বতন্ত্র দক্ষতার ভিত্তিতে তারা হয়তো কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর ধাপে অবস্থান করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, গেলম্যান ও গ্যালিস্টেল দেখান যে, প্রস্তুতি ধাপে থাকা শিশুরাও বস্তু গণনার ক্ষেত্রে বিমূর্ত চিন্তা করতে পারে। এছাড়াও, পাইগেট শিশুদের আবেগ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশ নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেননি। যদিও তিনি বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ মাপার কার্যকর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি সৃজনশীলতা ও সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উপেক্ষা করেছেন।<ref>Papalia, D. E., Olds, S. W., and Feldman, R. D. (1998). Human development(7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
ক্রিস্টিনা এর্নেলিং যুক্তি দেন যে, উন্নয়নের ধারা বোঝা সম্ভব যদি শিশুদের সঠিক পরিবেশে রাখা যায়। তার মতে, যেকোনো শেখার ধারণা বিশদ শিক্ষাতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং জ্ঞানীয় বিকাশ বোঝার জন্য ব্যক্তির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিন্নতা স্বীকৃতি দিতে হবে। অর্থাৎ, পাইগেট সংস্কৃতির প্রভাব উপেক্ষা করেছেন। কারণ তার গবেষণা ছিল পশ্চিমা দেশে, তাই তার তত্ত্ব হয়তো শুধু পশ্চিমা সমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
পাইগেটের মতে, বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি নির্দিষ্ট ধাপে পৌঁছেই বিকাশ পায়। অন্যদিকে, এডওয়ার্ডস ও অন্যান্য গবেষকরা বলেন, পাইগেটের গবেষণায় নিয়ন্ত্রণ ও নমুনার সীমাবদ্ধতার কারণে তার গবেষণা অবিশ্বস্ত। তারা বলেন, অন্যান্য সংস্কৃতিতে সাধারণ ধাপের অপারেশনগুলো বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।<ref>Edwards, L., Hopgood, J., Rosenberg, K., & Rush, K. (2000). Mental Development and Education. Retrieved April 25, 2009, from Flinders University</ref>
বার্গার পাইগেটের নির্দিষ্ট ধাপের বিপক্ষে যুক্তি দেন। তিনি মনে করেন, পাইগেট শিশুদের অভ্যন্তরীণ জ্ঞানের সন্ধানকে গুরুত্ব দিলেও বংশগতি, সংস্কৃতি ও শিক্ষার মতো বাহ্যিক বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, পাইগেটের জ্ঞানীয় বিকাশের ধাপগুলোকে বরং একটানা ধাপে ধাপে অগ্রগতির মতো দেখা উচিত, নির্দিষ্ট করে ভাগ না করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
পাইগেটের তত্ত্বের আরও সমালোচনা হয়েছে, কারণ তার সর্বশেষ ধাপে জ্ঞানীয় বিকাশ যথেষ্ট স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। তিনি মনে করতেন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে সবাই বিমূর্ত যুক্তি বিকাশে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, প্যাপালিয়া ও অন্যান্যরা বিশ্বাস করেন, সবাই এই সময়ে আনুষ্ঠানিক চিন্তাশক্তি অর্জন করতে পারে না, এবং তাতে তারা অপরিণত নয়—বরং তাদের চিন্তাভাবনার পরিপক্বতার ধরণ ভিন্ন।<ref>Papalia, D.E., Olds, S.W., & Feldman, R.D. (1998). Human development (7th ed.). Boston: McGraw-Hill.</ref>
অতএব, জ্ঞানীয় বিকাশকে বরং একটি অনিয়মিত প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যেখানে প্রতিটি শিশু ধাপে ধাপে নিজস্ব গুণাবলি ও আচরণগত দক্ষতা অর্জন করে।<ref>Berger, K.S. (1988). The developing person through the life span (2nd ed.). New York: Worth Publishers Ltd.</ref>
=== জ্ঞানীয় ক্ষেত্র= ===
পাইগেটের পর থেকে জ্ঞানীয় তত্ত্ব ও গাণিতিক শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়েছে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গাণিতিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭৮ সালেই গবেষকেরা মস্তিষ্ক-সম্পর্কিত আচরণ ও একাডেমিক দক্ষতার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পান। রাউর্ক ও ফিনলেসন ৯-১৪ বছর বয়সী শেখার অসুবিধায় ভোগা শিশুদের নিয়ে গবেষণা করে দেখান, যেসব শিশুর অ্যারিথমেটিক দক্ষতা নেই, তাদের ডান মস্তিষ্কের গোলার অকার্যকারিতার মতো আচরণ দেখা যায়।<ref>Rourke, B. P., & Finlayson, M. A. J. (1978). Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities. Journal of Abnormal Child Psychology, 6, 121–133.</ref>
সম্প্রতিকালে আরও সূক্ষ্ম জ্ঞানীয় দক্ষতা ও গণিতে ঘাটতির মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত হয়েছে।
২০০১ সালে হ্যানিচ, জর্ডান, কাপলান ও ডিক ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাণিতিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেন।<ref>Hanich, L. B., Jordan, N. C., Kaplan, D., & Dick, J. (2001) Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities. Journal of Educational Psychology, 93, 615–626.</ref>
তারা শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করেন: সাধারণভাবে সফল, শুধুমাত্র গণিতে দুর্বল, শুধুমাত্র পড়ায় দুর্বল, এবং উভয় বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থী। প্রত্যেককে সাতটি গাণিতিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বলা হয়:
ক) নির্দিষ্ট গণনা খ) গল্পভিত্তিক সমস্যা গ) আনুমানিক গণনা ঘ) স্থানীয় মান ঙ) গণনার নীতি চ) সংখ্যা স্মরণ ছ) লিখিত গণনা।
তারা দেখেন, যারা গণনা ও পড়া উভয় ক্ষেত্রেই দুর্বল, তারা গল্প সমস্যা ও প্রচলিত গণনায় দুর্বল। তবে যারা শুধু গণিতে দুর্বল, তারা শুধু প্রচলিত গণনায় দুর্বলতা দেখায়। এ থেকে গবেষকেরা সিদ্ধান্তে আসেন, গণিতে একাধিক জ্ঞানীয় ক্ষেত্র রয়েছে এবং প্রতিটি ক্ষেত্র মস্তিষ্কের ভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।
ফুচস, ফুচস, স্টুয়েবিং, ফ্লেচার, হ্যামলেট ও ল্যাম্বার্ট (২০০৮) লক্ষ্য করেন, প্রচলিত গণনার সফলতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পূর্বাভাসদাতা হচ্ছে: ক) কর্মরত স্মৃতি খ) দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি গ) মনোযোগ রেটিং ঘ) ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ ঙ) শব্দভাণ্ডারের জ্ঞান<ref>Fuchs, L. S., Fuchs, D., Stuebing, K., Fletcher, J.M., Hamlett, C. L. , & Lambert, W. (2008). Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition? Journal of Educational Psychology 100 (1), 30</ref>
তারা এক দীর্ঘমেয়াদি, বৃহৎ পরিসরের গবেষণায় দেখেন, গণনা ও সমস্যার সমাধান—এই দুইটি গণিতের আলাদা ক্ষেত্র হতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন: গণনায় দক্ষতা, শব্দ-সমস্যা সমাধান, ধ্বনি প্রক্রিয়া, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান, কর্মরত স্মৃতি, মনোযোগী আচরণ, প্রক্রিয়ার গতি, এবং পাঠ দক্ষতা ইত্যাদিতে। তারা দেখতে পান, মনোযোগী আচরণ ও প্রক্রিয়ার গতি গণনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও, তারা লক্ষ্য করেন, কর্মরত স্মৃতি, স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি, অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (যেমন দৃশ্যের মাধ্যমে প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করা), ধারণা গঠন, এবং ভাষা দক্ষতা (যার মধ্যে পড়াও অন্তর্ভুক্ত) সমস্যা সমাধানের পূর্বাভাসদাতা। ভাষা দক্ষতার ঘাটতি সমস্যার সমাধানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্যকারী একটি উপাদান।
==== প্রত্যেক জ্ঞানীয় গণিত ক্ষেত্রের জন্য মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া ====
{| class="wikitable"
!গণনার জ্ঞানীয় দক্ষতা
!সমস্যা সমাধানের জ্ঞানীয় দক্ষতা
|-
|গণনার সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|সমস্যা সমাধানের সফলতার পূর্বাভাসদাতা:
|-
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
# দৃশ্য-স্থানিক কর্মরত স্মৃতি
• মনোযোগ রেটিং • প্রক্রিয়ার গতি • ভাষা দক্ষতা
# ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াকরণ (ধ্বনি শনাক্ত ও পার্থক্য করতে পারা)
# শব্দভাণ্ডার জ্ঞান
|• কর্মরত স্মৃতি
# শ্রবণক্ষম কর্মরত স্মৃতি
• স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি • অ-মৌখিক সমস্যা সমাধান (দৃশ্যমান প্যাটার্ন সম্পূর্ণ করার দক্ষতা) • ধারণা গঠন • ভাষা দক্ষতা
# প্রথম ভাষা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য
# ধ্বনি, শব্দভাণ্ডার
|}
=== গণিত শেখার ক্ষেত্রে কার্যকর স্মৃতির গুরুত্ব ===
'''কার্যকর স্মৃতি''' হলো একটি প্রক্রিয়া যা অস্থায়ীভাবে নতুন বা পূর্বে সঞ্চিত তথ্য ধারণ করে, যা বর্তমান কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর ধারণক্ষমতা সীমিত। কার্যকর স্মৃতির দুটি ধরণ রয়েছে: শ্রাব্য (অডিটরি) স্মৃতি ও দৃশ্য-স্থানিক (ভিজুয়াল-স্প্যাটিয়াল) স্মৃতি। গণিতের গাণিতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দৃশ্য-স্থানিক স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। অপরদিকে, শ্রাব্য স্মৃতি সব ধরনের গাণিতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতার পার্থক্য হতে পারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি, ব্যক্তির জ্ঞান বা অপ্রাসঙ্গিক তথ্য উপেক্ষা করার দক্ষতার কারণে।<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref> পরিকল্পনা, সংগঠন এবং নমনীয় চিন্তার মতো নির্বাহী কার্যক্রমগুলো কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে।<ref>Swanson, H. L. (2003)...</ref>
অন্যদিকে, '''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' দায়ী শুধুমাত্র অল্প সময়ের জন্য তথ্য ধারণ করার জন্য, যেগুলো ব্যবহার করতে হবে কিন্তু বিশ্লেষণ বা রূপান্তরের প্রয়োজন নেই। এর ধারণক্ষমতাও সীমিত এবং এটি কয়েক সেকেন্ডের মতোই স্থায়ী হতে পারে। যেমন, একটি টেলিফোন নম্বর আমরা কয়েক সেকেন্ড মনে রাখি শুধু তা ডায়াল করার জন্য।
২০০৪ সালে সোয়ানসন এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গারর একটি গবেষণায় উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, কার্যকর স্মৃতি সমস্যার সমাধানকালে তথ্য একীভূতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের মতে, কার্যকর স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি "(ক) সম্প্রতি প্রক্রিয়াকৃত তথ্যকে নতুন ইনপুটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং (খ) সামগ্রিকভাবে সমস্যার একটি উপস্থাপন গঠনের জন্য তথ্যের সারাংশ সংরক্ষণ করে।"<ref>Swanson, H. L., & Beebe-Frankenberger, M. (2004)...</ref>
এইচ লি সোয়ানসনের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কার্যকর স্মৃতির ধারণক্ষমতা সমস্যা সমাধানে কৌশলগত হস্তক্ষেপের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>Swanson, H. L. (August 4,2015)...</ref> লেখক একটি হস্তক্ষেপমূলক গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে কার্যকর স্মৃতির ভূমিকা এবং কৌশল শেখানোর ফলে শব্দভিত্তিক সমস্যা সমাধানে সঠিকতা কেমন হয়, তা যাচাই করা হয়।
গবেষণায় সমস্ত শিশুদের শ্রাব্য ও দৃশ্য-স্থানিক কার্যকর স্মৃতির মাপ নেওয়া হয়। এরপর গণিতে সমস্যাযুক্ত এবং অপ্রতিবন্ধিত শিশুদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করে র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়। ১ম দলকে শব্দভিত্তিক কৌশল শেখানো হয়, ২য় দলকে দৃশ্য-স্থানিক কৌশল, এবং ৩য় দলকে উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ শেখানো হয়। প্রতিটি দলকে এমন পাঠদান দেওয়া হয় যাতে শব্দ সমস্যা ক্রমাগত অপ্রাসঙ্গিক তথ্যে পরিপূর্ণ হতে থাকে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের প্রাসঙ্গিক তথ্যের প্রতি মনোযোগী হতে শেখানো। পূর্ববর্তী অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য আলাদা করতে শেখা গণিত সমস্যার সঠিকতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার ফলাফল দেখায় যে, কৌশল শেখানো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, ব্যক্তিভেদে কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা কৌশল শেখানোর প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে। কম কার্যকর স্মৃতির শিশুরা তেমন উপকার পায়নি। বরং উচ্চ কার্যকর স্মৃতির শিশুরাই—যাঁদের গণিতে প্রতিবন্ধকতা থাকুক বা না থাকুক—এই কৌশল থেকে বেশি উপকার পেয়েছে। তবে, দৃশ্যগত কৌশল ব্যবহৃত হলে সব ধরনের গণিত প্রতিবন্ধী শিশুরাই উপকার পেয়েছে। কিন্তু যাঁদের কার্যকর স্মৃতি দুর্বল, তাঁদের জন্য শব্দ ও দৃশ্য উভয় কৌশলের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। সবশেষে, গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে যে, কার্যকর স্মৃতির উপর ভিত্তি করে মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলোর প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতে কার্যকর স্মৃতির দক্ষতা উন্নত করতে পারে।
এই গবেষণার তাৎপর্য হলো, গণিতে প্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কার্যকর স্মৃতির ক্ষমতা যাচাই করে তার ভিত্তিতে উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল নির্ধারণ করা উচিত।
== গণিত শেখা ও শেখানোর ওপর প্রভাব ফেলা উপাদান ==
=== ব্যক্তিভেদে পার্থক্য ===
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আলাদা দক্ষতা, পূর্বজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং আগ্রহ থাকে। এই বিষয়গুলো গণিত শেখা ও শেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ পাঠদানের কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হয়।
==== দক্ষতার পার্থক্য ====
সব শিক্ষার্থীর নিজস্ব শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। কেউ কোনো নির্দিষ্ট গাণিতিক ক্ষেত্রে ভালো হলেও, অন্য ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারে। শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা সম্পর্কে জানা, যাতে তাদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুর্বলতাকে উন্নত করা যায়। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও দুর্বলতা না জানেন, তবে ভুলভাবে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে, যেটা শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে এবং ব্যর্থতা থেকে "শিক্ষিত অসহায়ত্ব" তৈরি করতে পারে। সঠিক দক্ষতা জানা থাকলে নতুন গাণিতিক জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে না।
উদাহরণস্বরূপ, শব্দ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন মানসিক উপস্থাপনা ও সাধারণ গাণিতিক রূপান্তর। ফলে, যারা গাণিতিক সমীকরণ গঠন করতে জানে না, তারা এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হবে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের প্রাক-দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে পাঠদান কৌশল নির্ধারণ করা, কারণ এই দক্ষতাগুলো সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষার্থীরা যত বেশি ধারণাগত ও প্রক্রিয়াগত দক্ষতা অর্জন করবে, ততই তারা গণিত শেখায় দক্ষ হয়ে উঠবে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref>
বর্তমান হাইস্কুলে বিভিন্ন স্তরের গণিত কোর্স থাকে—শুরুর, মূল এবং উন্নত স্তর। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাগ করা হয় বা তারা নিজেরা স্তর বেছে নিতে পারে। শিক্ষককে উচিত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যে তারা সেই স্তরের উপযোগী কিনা। খুব কঠিন হলে শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়বে, আবার খুব সহজ হলে বিরক্ত হবে। সঠিক স্তর নির্ধারণের জন্য দক্ষতা জানা আবশ্যক।
==== পূর্বজ্ঞানগত পার্থক্য ====
শিক্ষার্থীদের গাণিতিক জ্ঞান তাদের সামাজিক অভিজ্ঞতা থেকে আসে। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন বাজারে কেনাকাটা করার মাধ্যমে টাকা-পয়সা মেলানো শেখা, গাণিতিক প্রতীক কীভাবে ব্যবহার হয়, সেটা বুঝতে সাহায্য করে। এই বাস্তব জ্ঞান ব্যবহার করে যদি গাণিতিক ধারণা শেখানো হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহজে তা বুঝতে পারে।<ref>Wong, B., Graham, L., Hoskyn, M., & Berman, J. (Eds.). (2008)...</ref> বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিল থাকলে শিক্ষার্থীরা গণিত শেখায় বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এটি তাদের কাছে অর্থবহ ও প্রাসঙ্গিক মনে হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাঠ্যবইয়ের গণিত অনেক শিক্ষার্থীর কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু যদি তা ব্যাংকে সুদের হিসাব বা দৈনন্দিন খরচ হিসাবের মতো জীবনের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে তা সহজ ও আকর্ষণীয় মনে হয়।
গুরুত্বপূর্ণ গণিত সমস্যার জন্য শুধু গণিত নয়, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নের মতো বিষয়ের জ্ঞানও প্রয়োজন হতে পারে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> শব্দ সমস্যার ক্ষেত্রে পাঠ্যাংশ বুঝতে ভাষাগত দক্ষতাও প্রয়োজন, যা পূর্বজ্ঞান থেকে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের অনেক গণিত কোর্সে পূর্বশর্ত কোর্স থাকে, কারণ উন্নত গণিত শেখার জন্য প্রাথমিক ধারণা থাকা আবশ্যক।
==== আগ্রহের পার্থক্য ====
সবার আগ্রহ আলাদা। কেউ গণিত পছন্দ করে কারণ ছোটবেলা থেকেই তারা এই বিষয়ে শক্তিশালী ছিল, আবার কেউ ঘৃণা করে কারণ বারবার ব্যর্থ হয়েছে। আগ্রহ থাকলে অভ্যন্তরীণ মোটিভেশন তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থী নিজের ইচ্ছায় গণিত শেখে।<ref>Bruning, R., Schraw, G., & Norby, M. (2011)...</ref> এতে শিক্ষার্থীরা কাজের প্রতি মনোযোগী হয় এবং সমাধানে আন্তরিকতা দেখায়। তাদের আগ্রহ নিজের সামর্থ্য, আত্মবিশ্বাস এবং অর্জনের সঙ্গে জড়িত।<ref>Upadyaya, K., & Jacquelynne, S. E. (2014). How do Teachers’ Beliefs predict Children’s Interests in Math from Kindergarten to Sixth Grade? ''Merrill-Palmer Quarterly, 60''(4). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=aaa92fa2-22f8-4cd7-9d94-49896f602e89%40sessionmgr120&vid=0&hid=109</ref>
তাই, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্য বাড়ানোর জন্য তাদের মধ্যে গণিতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে, পরিবারের সদস্য, সহপাঠী এবং শিক্ষকসহ অনেক উপায়ে গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো যায়।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref>
পরিবারের সদস্যরা ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের গণিতে সহায়তা ও উৎসাহ দিতে পারেন, যা গণিতের প্রতি তাদের মূল্যবোধ বাড়ায়। শিক্ষার্থীরা সাধারণত সামাজিক তুলনা করতে ভালোবাসে এবং তারা সহপাঠীদের অনুসরণ করতে চায়। তাই সহপাঠীদের প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর বড় ভূমিকা রাখে। যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তাদের সহপাঠীরা সুদোকু বা ধাঁধার মতো কোনো গণিতের সমস্যা উপভোগ করছে, তখন তারাও সমাধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে আনন্দদায়ক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ গেমের আয়োজন করতে পারেন এবং শেখানোর সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারেন।<ref>Frenzel, A.C., Goets T., Pekrun R., & Watt, H.M.G. (2010). Development of Mathematics Interest in Adolescence: Influences of Gender, Family and School Context. ''Journal of Research on Adolescence, 20''(2), 507-537. doi:10.1111/j.1532-7795.2010.00645.x</ref> এটি এমন একটি বিষয় শেখার আগ্রহ তৈরি করবে, যা আগে শিক্ষার্থীরা উপভোগ করতো না। ফলে, শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য আনন্দদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যাতে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। যদি শিক্ষার্থীরা গণিতকে ঘৃণা করে, তবে তাদের শেখানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তারা তখন কেবল বাধ্য হয়ে পড়ে, আগ্রহ নিয়ে নয়।
==== সাংস্কৃতিক পার্থক্য ====
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের স্তর ও লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে থাকে।<ref>Tsao, Y-L. (2004). A Comparison of American and Taiwanese Students: Their Math Perception. ''Journal of Instructional Psychology, 31''(3). Retrieved from http://web.b.ebscohost.com.proxy.lib.sfu.ca/ehost/pdfviewer/pdfviewer?sid=97c91599-4222-4cc8-8717-703e6b774b06%40sessionmgr110&vid=19&hid=109</ref> তদুপরি, তাদের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে গণিতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে। যখন কোনো সংস্কৃতি কোনো বিষয়ে যেমন গণিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, তখন সেই সংস্কৃতির শিশুদের ছোটবেলা থেকেই স্কুল ও বাড়িতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফলে, এদের গণিতের দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। যারা নিয়মিত গণিত চর্চা করে, তাদের অটোমেটিসিটি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করার ক্ষমতা) বেশি হয় কারণ তারা বিভিন্ন গণিত সমস্যার যথেষ্ট অনুশীলন করে। তারা উপযুক্ত কৌশল বেছে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> অন্যদিকে, যদি কোনো সংস্কৃতি গণিতকে গুরুত্ব না দেয়, তবে সেই সংস্কৃতির শিশুরা কঠোরভাবে শেখে না এবং তাদের দক্ষতার স্তরও কম হয়। কোনও বিষয়ে ভালো করতে হলে স্কুলের পাশাপাশি বাড়িতেও চর্চা করা প্রয়োজন। যারা শুধুমাত্র স্কুলেই গণিত শেখে এবং বাড়িতে সক্রিয়ভাবে চর্চা করে না, তাদের অনুশীলন পর্যাপ্ত নয়। সেইসঙ্গে, এমন সংস্কৃতি যেখানে উচ্চ মান, পরিশ্রম, এবং ইতিবাচক মনোভাবকে মূল্য দেওয়া হয়, সেগুলোর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref>
বিভিন্ন সংস্কৃতির ভাষাও ভিন্ন। এর অর্থ, তারা গণিত সমস্যা প্রকাশের ধরনেও পার্থক্য থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, চীনা সংখ্যার ভাষাগত কাঠামো (যেমন ১৫ মানে "দশ-পাঁচ") ইংরেজির তুলনায় শেখা সহজ। ইংরেজিতে যেমন ১২ মানে "টুয়েলভ" এবং -টিন শব্দগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা থাকে না।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> চীনা সংখ্যা উচ্চারণ করা ইংরেজির তুলনায় দ্রুত সহজ, যা শিক্ষার্থীদের গণিত দক্ষতাকে প্রভাবিত করে। ফলে, চীনা ভাষায় সংখ্যাগুলো স্বল্প-মেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়, বিশেষ করে বহু-অঙ্কের জটিল সমস্যায়।<ref>Imbo, I., & LeFevre, Jo-Anne. (2009). Cultural differences in Complex Addition: Efficient Chinese versus Adaptive Belgians and Canadians. ''Journal of Experimental Psychology: Learning, Memory, and Cognition, 35''(6),1465-1476. doi:10.1037/a0017022</ref> তাই পাঠদানের কৌশল পরিকল্পনার সময় শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া উচিত, কারণ তা গণিত সমস্যার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে পারে।
=== গণিতে আত্ম-দক্ষতা ===
গণিতে শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বলতে বোঝায় তারা নিজের সম্পর্কে কতটা বিশ্বাস রাখে যে তারা গণিতের প্রশ্ন সমাধান করতে পারবে। যারা বেশি আত্মবিশ্বাসী তারা গণিত সংশ্লিষ্ট কাজে আরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং তাদের একাডেমিক সাফল্যও বেশি হয়। অন্যদিকে, যারা আত্মবিশ্বাস কম রাখে তারা গণিত সমস্যা সমাধানে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় এবং তাদের পারফরম্যান্স কম হয়। তাই, গণিতে আত্ম-দক্ষতা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
==== গণিতে আত্ম-দক্ষতার প্রভাব ====
আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা, বোঝাপড়া এবং শেখার অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে। যারা নিজেদের দক্ষ মনে করে, তারা গণিতে ভালো করার ক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করে।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এই বিশ্বাসের কারণে তারা আরও উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং বেশি পড়াশোনা করে। ফলে, তারা আত্ম-সার্থকতার চক্রে পড়ে, অর্থাৎ তাদের নিজস্ব বিশ্বাস বাস্তব হয়ে ওঠে। বিপরীতে, যারা নিজেকে অদক্ষ মনে করে, তারা ভাবে যতই চেষ্টা করুক, গণিতে সফল হতে পারবে না।<ref>Schunk, D. H., & Zimmerman, B.J. (2006). Competence and control beliefs: Distinguishing the means and ends. In P.A. Alexander & P.H. Winne (Eds.), Handbook of educational psychology (2nd ed., pp.349-367). Yahweh, NJ: Erlbaum.</ref> এ কারণে তারা গণিত চর্চায় অনুপ্রাণিত হয় না এবং কয়েকবার চেষ্টা করেই হাল ছেড়ে দেয়। এতে তাদের "আমি পারি না" বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা কাজ করতে থাকে।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়ন ====
শিক্ষার্থীরা গণিতের কোন বিষয় শিখতে আত্মবিশ্বাসী কিনা তা মূল্যায়ন করা জরুরি, কারণ এটি তাদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করতে পারে। আত্ম-দক্ষতা মূল্যায়নের একটি উপায় হলো, প্রথম পুরুষে কিছু বিবৃতি তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদেরকে প্রত্যেকটি বিবৃতির জন্য ০ থেকে ১০০ স্কেলে রেট করতে বলা।<ref>Bandura, A. (1997). Self-efficacy: The exercise of control.New York, NY:Freeman.</ref> প্রথমে শিক্ষককে নির্দিষ্ট একটি টপিক বেছে নিতে হবে, যেমন "পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ"। এরপর সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিবৃতিগুলো তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষার্থীরা সেগুলোর সত্যতা রেট করবে।
{| class="wikitable"
!রেট (০-১০০)
!বিবৃতি
|-
|৮০
|আমি জানি, প্যারালেলোগ্রামের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণে কী তথ্য লাগবে।
|-
|১০০
|আমি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দেওয়া থাকলে একটি আয়তক্ষেত্রের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|-
|৬০
|আমি ট্র্যাপেজিয়ামের ক্ষেত্রফলের সমীকরণ লিখতে পারি।
|-
|৫০
|আমি আমার সহপাঠীকে বোঝাতে পারি কেন ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল bxh ÷2 অর্থাৎ, (ভূমি x উচ্চতা) / ২
|-
|৯০
|আমি ৪ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করতে পারি।
|}
এই স্কোরগুলো যোগ করে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীর আত্ম-দক্ষতার একটি সামগ্রিক চিত্র পেতে পারেন। উপরিউক্ত উদাহরণে, মোট স্কোর হবে ৮০+১০০+৬০+৫০+৯০। শিক্ষক চাইলে এই আত্ম-দক্ষতার তুলনা শিক্ষার্থীর গণিত বিষয়ে সামগ্রিক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করতে পারেন। আত্ম-দক্ষতা শিক্ষার্থীদের শেখার অনুপ্রেরণা ও আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই শিক্ষকদের উচিত সেই অনুযায়ী পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করা।
==== শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতার বিকাশ ====
বান্দুরা আত্ম-দক্ষতা বিকাশে চারটি প্রধান উৎস চিহ্নিত করেছেন।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> প্রথমটি হলো শিক্ষার্থীদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> যেমন, যদি শিক্ষার্থী কোনো গণিত পরীক্ষায় ভালো ফল করে, তার সেই বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। দ্বিতীয়টি হলো বিভিন্ন অভিজ্ঞতা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> শিক্ষার্থীরা যখন তাদের সমমানের সহপাঠীদের কাজ করতে দেখে, তখন তারা নিজেরও পারবে বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এমনকি গণিতবিদদের নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি দেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আত্ম-দক্ষতা বাড়াতে পারে।<ref>Hekimoglu, S., & Kittrell, E. (2010). Challenging students' beliefs about mathematics: The use of documentary to alter perceptions of efficacy. PRIMUS: Problems, Resources, And Issues In Mathematics Undergraduate Studies, 20(4), 299-331. doi:10.1080/10511970802293956</ref>
তৃতীয় প্রভাবটি হলো সামাজিক প্রভাব।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের ঘনিষ্ঠ মানুষদের (যেমন অভিভাবক, সহপাঠী বা শিক্ষক) কাছ থেকে আসা ইতিবাচক বক্তব্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক যদি বলেন “তুমি বীজগণিতের সমস্যাগুলো এখন আগের থেকে ভালোভাবে সমাধান করতে পারছো,” তাহলে এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে।
চতুর্থ প্রভাবটি হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা।<ref>Bandura, A. (1986). Social foundations of thought and action: A social cognitive theory. Englewood Cliffs, NJ, US: Prentice-Hall, Inc.</ref> এটি শিক্ষার্থীদের কোনো পরিস্থিতির প্রতি আবেগগত প্রতিক্রিয়াকে বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী মনে করতে পারে যে গণিত পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণ তার অযোগ্যতা, অথচ প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল উদ্বেগের ফল। এই ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থী তার ক্ষমতা ভুলভাবে মূল্যায়ন করে এবং গণিত বিষয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। আবার কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করলেও সেটিকে নিজের দক্ষতা নয়, বরং ভাগ্যের কারণে হয়েছে বলে মনে করতে পারে। এর ফলে, সে আত্মবিশ্বাস গঠনের একটি সুযোগ হারিয়ে ফেলে। সুতরাং, ইতিবাচক বা নেতিবাচক যেকোনো অভিজ্ঞতার প্রতি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি তার আত্মদক্ষতা গঠনে প্রভাব ফেলে। এই ক্ষেত্রে আত্মদক্ষতা বাড়ানোর উপায় হলো শিক্ষার্থীদের তাদের প্রকৃত দক্ষতা চেনাতে সহায়তা করা এবং তাদের দক্ষতার প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি করা।
উশের একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের গণিত বিষয়ক আত্মদক্ষতার চারটি উৎস যাচাই করেন।<ref>Usher, E. L. (2009). Sources of middle school students’ self-efficacy in mathematics: A qualitative investigation. American Educational Research Journal, 46(1), 275-314. doi:10.3102/0002831208324517</ref> এই গবেষণার ফলাফল বান্দুরার ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে দক্ষতার অভিজ্ঞতা, পরোক্ষ অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রভাব ও মানসিক অবস্থা – সবই শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস গঠনের সঙ্গে যুক্ত।
দক্ষতার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আত্মদক্ষতা বিকাশের সাথে দৃঢ়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। উশের একটি কৌশল প্রস্তাব করেন যেটি গণিত শিক্ষকরা ব্যবহার করতে পারেন শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে—“শিক্ষাদান এমনভাবে করা যাতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সর্বাধিক হয়, তা যত ছোটই হোক না কেন।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষক অ্যালগরিদম বা বীজগণিত শেখানোর সময় সঠিকতা যাচাই করার কৌশল শেখাতে পারেন। যেমন প্রশ্ন: ১৮ ÷ ৬ =? শিক্ষক শিখাতে পারেন যে ভাগফলকে গুণ করে যদি ভাগফল × ভাজক = মূল সংখ্যা হয় (৩ × ৬ = ১৮), তবে উত্তর সঠিক। যারা এই কৌশল শিখেছে ও ব্যবহার করেছে, তারা গণিতে দক্ষতার অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে।<ref>Ramdass, D., & Zimmerman, B. J. (2008). ...</ref> শিক্ষার্থীদের সক্ষমতার মধ্যে থেকে চ্যালেঞ্জিং কাজ দেওয়া তাদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উশেরের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই চারটি উৎসের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও রয়েছে। পরোক্ষ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে অভিভাবক ও শিক্ষকের গণিত অভিজ্ঞতার প্রভাব আছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো, এক শিক্ষার্থী তার অভিভাবকদের গণিতে ব্যর্থতাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে—“আমি আলাদা হতে পারি।”<ref>Usher, E. L. (2009). ...</ref> এটি বোঝায় যে কেবল সফলতাই নয়, ব্যর্থতাও শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা অন্যদের অভিজ্ঞতা কীভাবে তারা ব্যাখ্যা করে, তাতেও প্রভাব ফেলে। সামাজিক প্রভাবের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অভিভাবক ও শিক্ষকের বার্তা শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বিশ্বাসে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, যদি বাবা-মা বলেন গণিত একটি জন্মগত ক্ষমতা—“তোমার আছে বা নেই”—তাহলে সন্তানরা নিজেকে অক্ষম মনে করে আত্মবিশ্বাস হারাতে পারে। এই ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব মানসিক অবস্থাতেও প্রভাব ফেলে।
==== শিক্ষকের আত্মদক্ষতা ====
শিক্ষকের শিক্ষাদানের আত্মদক্ষতা বলতে বোঝায় যে, তারা বিশ্বাস করেন তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেন,<ref>Woolfolk, A. E., & Hoy, W. K. (1990). ...</ref> যেমন একাডেমিক পারফরম্যান্স, আত্মদক্ষতা, অনুপ্রেরণা, মনোভাব এবং আগ্রহ। উচ্চ আত্মদক্ষতা গঠনের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজন ইতিবাচক মনোভাব, বিষয়বস্তুর প্রতি গভীর জ্ঞান এবং শিক্ষণ কৌশলের জ্ঞান।
গণিত বিষয়ে শিক্ষকের মনোভাব শিক্ষার্থীদের মনোভাব ও পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় চারটি গ্রুপ—প্রাথমিক শিক্ষক (কে-৪), মাধ্যমিক শিক্ষক, অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এবং বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক—এর মধ্যে সাক্ষাৎকার ও একটি মনোভাব স্কেল পূরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের মনোভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।<ref>Kolstad, R. K., Hughes, S., & Briggs, L. D. (1994). ...</ref> এতে দেখা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৬০% অত্যন্ত ইতিবাচক, ৩০% নিরপেক্ষ, ১০% অত্যন্ত নেতিবাচক), এবং প্রাথমিক শিক্ষকরা সবচেয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন (৪৩% ইতিবাচক, ২৩% নিরপেক্ষ, ৩৪% নেতিবাচক)। ফলাফল নির্দেশ করে প্রাথমিক স্তরে গণিতকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
নেতিবাচক মনোভাব থাকলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখাতে সক্ষম—এই বিশ্বাসটিও হারিয়ে ফেলেন, যার সঙ্গে আত্মদক্ষতা জড়িত। শিক্ষকের শিক্ষাদান কৌশল ও বিষয়বস্তুর জ্ঞানও তাদের আত্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গণিত বিষয়ক শিক্ষকের জ্ঞান ও আত্মদক্ষতার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, যা দেখায়—যাদের বিষয়বস্তু ও কৌশলগত জ্ঞান বেশি, তারা শিক্ষাদানে বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারার বিশ্বাস রাখেন।<ref>Fox, A. M. (2015). ...</ref>
শিক্ষকের আত্মদক্ষতা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের শেখায় প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীর একাডেমিক সাফল্য। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কে-১২ স্তরের শিক্ষকদের আত্মদক্ষতা শিক্ষার্থীদের সাফল্যের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কযুক্ত।<ref>Chears-Young, J. B. (2015). ...</ref> এছাড়া, এটি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা, আগ্রহ এবং শেখার কৌশলেও প্রভাব ফেলে। আত্মদক্ষ শিক্ষকরা প্রশংসা ব্যবহার করেন, সমালোচনার বদলে, এবং অধিক গ্রহণযোগ্য ও লক্ষ্যভিত্তিক হন।<ref>Kagan, D.M. (1992). ...</ref> অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ আত্মদক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখার কৌশল শেখান এবং বেশি একাডেমিক সময় দেন, যা পারফরম্যান্স বাড়ায়।<ref>Ghaith, G., & Yaghi, H. (1997). ...</ref>
=== স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা ===
অনেকে মনে করেন, শিক্ষার্থীদের গণিতে খারাপ ফলাফল তাদের অযোগ্যতা বা পড়াশোনার ঘাটতির কারণে হয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়। অনেক সময় খারাপ ফলাফল হয় কারণ শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত কৌশল ব্যবহার করতে জানে না বা '''স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা'''র অভাব রয়েছে।
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখা হলো, শিক্ষার্থীরা তাদের শেখার সমস্ত দিক নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে—পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরবর্তী মূল্যায়ন পর্যন্ত।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref> এই শেখার তিনটি মূল উপাদান আছে।
প্রথমটি হলো, মেটাকগনিটিভ সচেতনতা—মানে কীভাবে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা তৈরি করে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
দ্বিতীয়টি হলো, কৌশল ব্যবহার—অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কী কী স্ব-নিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগ করতে পারে। দক্ষ শিক্ষার্থীরা বেশি কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে।<ref>Zimmerman, B. J., & Martinez-Pons, M. (1990). ...</ref>
তৃতীয়টি হলো, অনুপ্রেরণা নিয়ন্ত্রণ—যেখানে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্য স্থির করে এবং তাদের দক্ষতা ও পারফরম্যান্সে ইতিবাচক বিশ্বাস রাখে।<ref>Zimmerman, B. (2000). ...</ref>
স্ব-নিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শিক্ষার্থীর গণিত সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই দক্ষতা বাড়লে, তারা ভালো কৌশল ব্যবহার করে এবং কীভাবে গণিত পড়তে হয় তা ভালোভাবে বোঝে, ফলে তাদের গণিতের ফলাফল উন্নত হয়।
==== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম নিয়ে একটি গবেষণা ====
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিচালিত একটি গবেষণায় একটি গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রাম গঠিত হয় এবং ফলাফল থেকে দেখা গেছে, যখন শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা শেখানো হয়, তখন তাদের গণিতে অর্জনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই গবেষণায় প্রাথমিক স্তরের গণিতে কম ফলাফলপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৩০ জনকে পরীক্ষামূলক দলে রাখা হয়, যারা এই গণিতভিত্তিক আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার প্রোগ্রামে অংশ নেয়।
এই প্রোগ্রামটি ৩০টি সেশনে বিভক্ত, যার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা বাড়ানো, তাদের মোটিভেশন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা উন্নত করা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ কৌশল শেখানো। (সেশন ১-৫) প্রোগ্রামটি শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বিশ্বাস ব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমে। এতে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ, আত্ম-দক্ষতা, শেখার লক্ষ্য এবং প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কৃতিত্ব বোঝানোর মূল্য শেখানো হয় গল্প বলার মাধ্যমে এবং দলগত আলোচনায় অংশগ্রহণ করিয়ে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> (সেশন ৬-১১) এরপর তাদের সামনে জিমারম্যানের প্রস্তাবিত ১৪টি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল উপস্থাপন করা হয়।<ref>Zimmerman, B. (2000). Attaining self-regulation: A social cognitive perspective. In M. Boekaerts, P. R. Pintrich, & M. Zeidner (Eds.), Handbook of self-regulation (pp.13-39). San Diego, CA: Academic Press.</ref> প্রতিটি কৌশলের ব্যবহার এবং গণিতে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে কৌশলগুলো চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হয়। (সেশন ১২-৩০) শেষে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গণিত পাঠে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের নিজেদের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হয় লক্ষ্য নির্ধারণ, আত্মমূল্যায়ন এবং আত্ম-প্রতিক্রিয়া ফর্ম পূরণের মাধ্যমে। প্রোগ্রামের ৩০টি সেশন শেষ করার পর শিক্ষার্থীদের একটি গণিত পরীক্ষার পাশাপাশি আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ফলাফল থেকে দেখা যায়, যারা প্রোগ্রামে অংশ নেয় তারা উভয় পরীক্ষাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফলাফল করে যাদের অংশগ্রহণ ছিল না তাদের তুলনায়।
===== গণিতে আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ =====
{| class="wikitable"
!কৌশলসমূহ
!গণিতে প্রয়োগ
|-
|আত্ম-মূল্যায়ন
|সঠিক পদ্ধতিতে প্রশ্নের যথার্থ উত্তর মিলিয়ে দেখা।
|-
|সংগঠন ও রূপান্তর
|প্রশ্নকে গুছিয়ে নেয়া, যেমন গ্রাফ, সমীকরণ, চিত্র ব্যবহার করা।
|-
|লক্ষ্য নির্ধারণ ও পরিকল্পনা
|লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জনের পরিকল্পনা।
|-
|নোট নেয়া ও নজরদারি
|ক্লাসে নোট নেয়া এবং সমীকরণ গুছিয়ে রাখা।
|-
|পরিবেশ গঠন
|উপযুক্ত পরিবেশে অধ্যয়ন করা।
|-
|আত্ম-প্রতিক্রিয়া
|নিজের সাফল্য বা ব্যর্থতার জন্য নিজেই পুরস্কার বা শাস্তি নির্ধারণ।
|-
|অনুশীলন ও মুখস্থকরণ
|বিভিন্ন ধরনের গণিত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শেখা।
|-
|তথ্য অনুসন্ধান
|অ-সামাজিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ।
|-
|সামাজিক সহায়তা চাওয়া
|বন্ধু, শিক্ষক বা অন্য প্রাপ্তবয়স্কদের সাহায্য চাওয়া।
|-
|পুনরায় পর্যালোচনা করা
|পাঠ্যবই, নোট বা হোমওয়ার্ক পুনরায় পড়া।
|}
৩০টি সেশনে অংশ নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের গণিত অর্জন এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার দক্ষতায় লক্ষণীয় উন্নতি দেখা গেছে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এটি প্রমাণ করে যে, কম অর্জনক্ষম শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শিখন কৌশল শেখানো সম্ভব এবং কার্যকর। যখন তারা এই দক্ষতা অর্জন করে এবং প্রক্রিয়াভিত্তিক চিন্তায় মনোযোগ দেয়, তখন তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে। উন্নতির সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে শুরু করে। নিজেদের প্রশংসা ও পুরস্কার প্রদান তাদের আরও উন্নতির দিকে ধাবিত করে। এর ফলে তাদের আত্ম-দক্ষতা এবং গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ইতিবাচক চক্র তৈরি করে: শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারা গণিতে সফল হতে পারে, তখন তারা আরও কঠোর পরিশ্রম করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার সঠিক কৌশল প্রয়োগে সক্ষম হয়।
ঐতিহ্যগত শ্রেণিকক্ষে গণিতকে সাধারণত একটি উত্তর-কেন্দ্রিক বিষয় হিসেবে দেখা হয়, প্রক্রিয়া-কেন্দ্রিক নয়। গতি ও নির্ভুলতার ওপর গুরুত্ব দিলে, শিক্ষার্থীরা কেবল তথ্য মুখস্থ করতে শেখে, কিন্তু গণিত বুঝে না। এছাড়া, ঐ পরিবেশে শেখার প্রবাহ শুধুমাত্র শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীর দিকে হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল প্রয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ তারা যখন তাদের শেখার ওপর নিয়ন্ত্রণ পায় না, তখন তারা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ শেখে না কিংবা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা প্রয়োগেও আগ্রহী হয় না।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> অতএব, আত্মনিয়ন্ত্রিত কৌশল প্রয়োগে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ন্ত্রণ দিলে তারা শেখার সময় নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে শেখে। গণিত শিক্ষকরা জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার্থীরা যখন লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা ও নিজেদের কাজ মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে, তখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল চর্চা করার সুযোগ পায় যা তাদের গণিত অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
উচ্চ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিম্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তুলনায় আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার কৌশল ভালোভাবে প্রয়োগ করতে পারে।<ref>Camahalan, F. G. (2006). Effects of Self-Regulated Learning on Mathematics Achievement of Selected Southeast Asian Children. Journal Of Instructional Psychology, 33(3), 194-205.</ref> এর কারণ হলো, বড় শিক্ষার্থীরা আত্মনিয়ন্ত্রিত শেখার ধারণা ও কৌশলগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে। এছাড়া কিছু কৌশল যেমন পরিকল্পনা লেখা, শেখার উপাদান গুছিয়ে রাখা—এসবের জন্য পূর্বজ্ঞান দরকার হয়। ফলে বড়দের এসব কৌশল শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় এবং তারা গণিত অর্জনে তুলনামূলক বেশি উন্নতি করে।
== শিক্ষণ বিষয়ক প্রভাব ==
=== গণিত শেখার অক্ষমতা ===
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো যেগুলো জ্ঞানচর্চা, কার্যস্মৃতি এবং গণিত শেখার অক্ষমতা নিয়ে হয়েছে, সেগুলো দেখায় যে গণিতে “গণনা” এবং “সমস্যা সমাধান” দুটি আলাদা শেখার অক্ষমতা আছে। এতদিন গণিত মূল্যায়ন সাধারণ ছিল এবং এই দুই ডোমেইনের পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া হতো না। শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সময় পেশাদারদের উচিত এই দুটি দক্ষতা আলাদাভাবে বিবেচনা করা। শিক্ষকদেরও উচিত শিশুদের শেখানোর সময় এই আলাদা ডোমেইন দুটি চিন্তা করে পরিকল্পনা করা। গণিত শেখাতে কিছু পরামর্শ ও টুলস শিক্ষার্থীদের উপকারে আসতে পারে:
=== বাহ্যিক উপস্থাপন ===
গণিতে সমস্যা সমাধান অনেক সময় মানসিকভাবে কঠিন হতে পারে, তাই বাহ্যিক উপস্থাপন অনেক উপকারী হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য গণিতের ধারণা স্পষ্ট করে তুলে ধরে, যাতে তারা সহজেই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বাহ্যিক উপস্থাপনের কিছু উদাহরণ হলো—সমাধানসহ উদাহরণ, অ্যানিমেশন ও চিত্র।
==== সমাধানসহ উদাহরণ ====
ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো একটি দরকারী শিক্ষামূলক পদ্ধতি যা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গণিত শেখার সুবিধার্থে ব্যবহার করেন। গবেষণা দেখায় যে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো ব্যবহার করে এমন শিক্ষার্থীদের বাড়িয়ে তুলতে পারে, যাদের গণিতের কর্মক্ষমতা স্তর কম। একটি কারণ হলো যখন শিক্ষার্থীদের সমাধান করার জন্য কোনও সমস্যা দেওয়া হয়, তখন তাদের সর্বোত্তম লক্ষ্য গণিত শেখার পরিবর্তে সমস্যাটি সমাধান করা। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণ দেওয়া হয়, তখন তারা আসলে শিখে এবং তাদের নিজেরাই উপকরণগুলো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে।<ref>Renkl, A. (1999). Learning Mathematics from worked-out examples: Analyzing and Fostering self-explanations. ''European Journal of Psychology of Education, 14''(4), 477-488.</ref> সুতরাং, কাজ করা উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য ইচ্ছাকৃত শিক্ষার উপর আরও বেশি ফোকাস করে। শিক্ষার্থীরা সাধারণত গাণিতিক তত্ত্ব বা প্রমাণ বুঝতে পারে না কারণ তারা বুঝতে জটিল। যাইহোক, পরিশ্রমী উদাহরণগুলো শিক্ষার্থীদের শেখার অর্জন এবং গণিতের ধারণাটি বোঝার জন্য সহজ। সুস্পষ্ট নির্দেশনা না দিয়ে, শিক্ষকরা কেবল শিক্ষার্থীদের উল্লেখ করার জন্য উদাহরণ হিসাবে গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করবেন তার পদক্ষেপগুলো দেখায়। গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। তারপরে, শিক্ষার্থীদের নিজেরাই একই ধরণের গাণিতিক সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করার স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। সুতরাং, তারা অনেক গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য রেফারেন্স হিসাবে কাজ করা উদাহরণগুলো ব্যবহার করতে পারে।<ref>Tu, C-T. (2011). An Instructional experiment: Using worked-out examples in mathematics problem-solving of elementary school students. ''Bulletin of Educational Psychology, 43''(1), 25-50.</ref> শিক্ষকরা যে পরিশ্রমী উদাহরণ দিয়েছেন তা উল্লেখ করে তারা কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সে সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনাকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করতে পারে। অতএব, এটি শিক্ষার্থীদের স্ব-নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাড়িয়ে তুলতে পারে কারণ তারা সমস্যা সমাধানে তাদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা অনুশীলন করছে। এই '''মেটাকগনিটিভ''' কৌশলটি শিক্ষার্থীদের বিশেষত গাণিতিক শব্দ সমস্যাগুলোতে তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে। মেটাকগনিটিভ কৌশলগুলোর মধ্যে স্ব-জিজ্ঞাসা, স্ব-মূল্যায়ন, সংক্ষিপ্তকরণ এবং সমস্যাটি চিত্রিত করা অন্তর্ভুক্ত।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> এই কৌশলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান অর্জন করার সময় কাজ করা উদাহরণগুলো থেকে আরও গভীর বোঝার জন্য তৈরি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা সমস্যাটি স্ব-ব্যাখ্যা করতে এবং তাদের সমাধান করতে পারে তাদের উচ্চতর গণিতের কৃতিত্ব রয়েছে। যখন শিক্ষার্থীরা নিজেরাই গাণিতিক সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করা যায় তার পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা করে, তখন তারা তাদের প্রতিফলিত চিন্তাভাবনা অনুশীলন করে যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তার বাইরেও বৃহত্তর বোঝার তৈরি করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শিক্ষার্থীরা গণিতের নতুন এবং পরিশীলিত জ্ঞান বিকাশ করতে পারে কারণ তারা তাদের পূর্ব জ্ঞানের সাথে নতুন শেখা উপকরণগুলোকে একত্রিত করে।<ref>Tajika, H., Nakatsu, N., Nozaki H., Neumann, E., & Maruno S. (2007). Effects of Self-Explanation as a Metacognitive Strategy for Solving Mathematical Word Problems. ''Japanese Psychological Research, 49''(3), 222-233.</ref> উপরন্তু, ওয়ার্ক-আউট উদাহরণগুলো গ্রুপ সেটিংসেও ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে শিক্ষার্থীরা গাণিতিক সমস্যা সমাধানে তাদের সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করতে পারে। গবেষণায় দুটি উপায় পাওয়া গেছে যাতে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ওয়ার্ক-আউট উদাহরণ ব্যবহার করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1348/000709903322591181</ref> একটা উপায় হলো, যারা কাজের উদাহরণ বোঝে তারা যারা বোঝে না তাদের বোঝাতে পারবে। অন্য উপায়টি হলো শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তি এবং যুক্তি দক্ষতা ব্যবহার করে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী উদাহরণগুলো ব্যাখ্যা করে। উভয় উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাজের উদাহরণগুলোর বিশদ আলোচনা করে একটি সামাজিক ইন্টারেক্টিভ সেটিংয়ে শেখার সাথে জড়িত। একটি সামাজিক সেটিংয়ে শেখা উপকরণগুলোর বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করতে পারে কারণ শিক্ষার্থীরা উদাহরণগুলো আরও গভীরভাবে প্রসারিত করছে। একটি স্পষ্ট বোঝার জন্য তারা কাজ করা উদাহরণগুলোর সাথে তাদের যে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে।<ref>Mevarech, Z. R., & Kramarski, B. (2003). The Effects of Metacognitive Training versus Worked-out Examples on Students’ mathematical reasoning. ''British Journal of Educational Psychology, 73''(4), 449-471.</ref> তাই, শিক্ষার্থীদের উচিত ছোট দলে ভাগ হয়ে উদাহরণগুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া প্রতিফলিত করে নতুন জ্ঞান অর্জন করা।
==== অ্যানিমেশন ====
গণিত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়াতে অ্যানিমেশন একটি দারুণ কার্যকর শিক্ষণ উপকরণ হিসেবে বিবেচিত। যেহেতু গণিত অনেক সময় বিরক্তিকর এবং অনাকর্ষণীয় মনে হতে পারে, তাই অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত শেখার আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যানিমেশন শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক বলে দাবি করা হয়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
যেকোনো গণিত সমস্যার সমাধান করার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যাটি চিহ্নিত করা এবং কী সমাধান করতে হবে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে, যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সমস্যাটি অনুবাদ বা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন অ্যানিমেশন সবচেয়ে কার্যকর হয়ে ওঠে কারণ এতে চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা থাকে যা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্নটি ব্যাখ্যা করা সহজ করে তোলে। বিপরীতে, যখন শিক্ষার্থীরা শুধুই সমস্যার নোট নেয়, তখন তারা কেবল পাঠ্য অনুলিপি করে, যার ফলে সমস্যার প্রকৃত অর্থ বোঝা সম্ভব হয় না। তবে যদি সমস্যার ব্যাখ্যার পাশাপাশি একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে সমস্যার পটভূমি।
উদাহরণস্বরূপ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যোগ ও বিয়োগের ধারণা পাঠ্যপাঠের মাধ্যমে বোঝানো কঠিন হতে পারে। কিন্তু, যখন একটি সমস্যার আগের ও পরের অবস্থা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখানো হয়, তখন এটি একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে পারে। যোগ ও বিয়োগ ভিত্তিক সমস্যার ক্ষেত্রে, অ্যানিমেশন বস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাধান ব্যাখ্যা করতে পারে। এছাড়াও, অ্যানিমেশন বিমূর্ত গণিত তত্ত্বকে দৃশ্যমান বস্তু, নির্দিষ্ট ফলাফল এবং বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে, অ্যানিমেশন ব্যবহার করে গণিতের বিমূর্ত ধারণাগুলোকে নির্দিষ্ট উদাহরণের সঙ্গে যুক্ত করে শেখানো যায়।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref>
অ্যানিমেশন দৃশ্যমান উপস্থাপনার মাধ্যমে বিমূর্ত নীতিগুলোর অধিগ্রহণ এবং উদাহরণ বিশ্লেষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদিও উদাহরণ বিশ্লেষণ একটি কার্যকর শিক্ষণ কৌশল হিসেবে পরিচিত, তবুও অ্যানিমেশন এই উদাহরণগুলোকে আরও উন্নত করতে পারে।<ref>Scheiter, K., Gerjets, P., & Schuh, J. (2010). The Acquisition of Problem-Solving Skills in Mathematics: How Animations Can Aid Understanding of Structural Problem Features and Solutions Procedures. ''Instructional Science, 38''(5), 487-502. doi: http://dx.doi.org.proxy.lib.sfu.ca/10.1007/s11251-009-9114-9</ref> উদাহরণ বিশ্লেষণ সব সময় চিত্র সহ হয় না, বরং কেবল পাঠ্য থাকতে পারে। তাই, যদি প্রতিটি ধাপের জন্য চিত্র উপস্থাপন থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সমস্যা ও সমাধানের বিষয়টি কল্পনা করতে পারে। শিক্ষার্থীরা ব্যাখ্যা ও চিত্রের মাধ্যমে উদাহরণগুলো আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে। ফলস্বরূপ, শিক্ষকদের উচিত অ্যানিমেশনকে একটি শিক্ষণ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গণিত শিক্ষাকে আরও সুদৃঢ় করা।
==== রেখাচিত্র ====
তথ্যভিত্তিক রেখাচিত্র তৈরি করা একটি কঠিন কাজ, কারণ শিক্ষার্থীদের শুধু মৌখিক তথ্যকে চিত্রে রূপান্তর করলেই হয় না, বরং সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো চিহ্নিত ও একত্রিত করে পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করতে হয়।<ref>van Garderen, D., Scheuermann, A., & Poch, A. (2014). Challenges students identified with a learning disability and as high-achieving experience when using diagrams as a visualization tool to solve mathematics word problems. ZDM Mathematics Education, 46, 135–149.</ref>
লারকিন এবং সাইমন বিশ্বাস করতেন যে, অনুচ্ছেদ ভিত্তিক উপস্থাপনার তুলনায় চিত্রভিত্তিক উপস্থাপন আরও সহজ ও কার্যকর, বিশেষত অনুসন্ধান, মেলানো এবং উপসংহারের ক্ষেত্রে। প্রথমত, এটি শব্দ সমস্যার উপাদানগুলোর মধ্যে টপোগ্রাফিক এবং জ্যামিতিক সম্পর্ক স্পষ্টভাবে ধরে রাখে, ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পেতে সহজতর হয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলো একত্রে গোষ্ঠীবদ্ধ থাকায় এটি বিমূর্ত উপস্থাপনা ও চিত্রচিহ্নের মধ্যে সম্পর্ক পরিষ্কার করে তোলে। তৃতীয়ত, যদি সমস্যাটি চিত্র এঁকে তৈরি করা হয়, তবে মেমরি লোড কমে যায় কারণ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখতে পারে।<ref>Larkin, J., & Simon, H. (n.d.). Why a Diagram is (Sometimes) Worth Ten Thousand Words. Cognitive Science, 65-100.</ref>
অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্রের ব্যবহার সমস্যার সমাধান দক্ষতা বাড়াতে পারে।
বানার্জি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত শব্দ সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহার করার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, রেখাচিত্র তৈরির পদ্ধতি (যেমন রেখাচিত্র আঁকা ও লেবেলিং) গণিত সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের অর্জন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।<ref>Banerjee, B. (2011). The effects of using diagramming as a representational technique on high school students' achievement in solving math word problems. Dissertation Abstracts International Section A, 71, 394</ref>
[[চিত্র:Percentage_of_correct_answers_between_the_Japanese_and_New_Zealand_students.jpg|থাম্ব|জাপান এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রেখাচিত্র ব্যবহার করে গণিত শব্দ সমস্যার সঠিক উত্তরের শতাংশের তুলনা]]
এক গবেষণায়, উসাকা, মানালো এবং ইচিকাওয়া জাপান ও নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের তুলনা করেন।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref> জাপানি শিক্ষার্থী একটি একক বস্তু ভিত্তিক রেখাচিত্র ব্যবহার করেছিল, এবং নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থী দুটি মাত্রার বস্তু ব্যবহার করেছিল। গবেষণায় দেখা যায় যে, নিউজিল্যান্ডের শিক্ষার্থীদের সঠিক উত্তরের হার জাপানি শিক্ষার্থীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর কারণ হলো, রেখাচিত্র উপস্থাপনা সমস্যার বাক্যগুলোকে অবস্থানের ভিত্তিতে চিহ্নিত করে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট স্থানে বিস্তারিতভাবে তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং সমস্যা বুঝতে সুবিধা হয়।<ref>Uesaka, Y., Manalo, E., & Ichikawa, S. (2007). What kinds of perceptions and daily learning behaviors promote students' use of diagrams in mathematics problem solving?. Learning And Instruction, 17(3), 322-335.</ref>
শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে হলে, শিক্ষককে প্রথমে তাদের শেখাতে হবে— ১) রেখাচিত্র কী, ২) সমস্যার সমাধানে রেখাচিত্র ব্যবহারের গুরুত্ব, ৩) কখন রেখাচিত্র ব্যবহার করতে হবে, ৪) কোন ধরণের রেখাচিত্র কোন সমস্যায় প্রযোজ্য, ৫) কীভাবে রেখাচিত্র তৈরি করতে হয়, এবং ৬) কীভাবে রেখাচিত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের রেখাচিত্রের মৌলিক ধারণাগুলো জানা জরুরি কারণ সব গণিত সমস্যায় রেখাচিত্র প্রযোজ্য নয়। উসাকা ও মানালো দেখিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা সাধারণত দৈর্ঘ্য ও দূরত্ব সম্পর্কিত শব্দ সমস্যায় রেখাচিত্র ব্যবহার করে, কারণ এসব সমস্যা সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং বাস্তব সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে।<ref>Uesaka, Y., & Manalo, E. (2012). Task-related factors that influence the spontaneous use of diagrams in math word problems. Applied Cognitive Psychology, 26, 251–260.</ref>
এই ধারণাগুলো শেখানোর পর, শিক্ষকরা তিন ধাপের একটি পদ্ধতি— "জিজ্ঞাসা করো, করো, যাচাই করো"— ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।<ref>van Garderen, D., & Scheuermann, A. (2015). Diagramming word problems: A strategic approach for instruction. Intervention in School and Clinic</ref> ভ্যান গার্ডেরেন এবং শুয়ারম্যান পরামর্শ দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কোন সমস্যাটি সমাধান করতে হবে তা শনাক্ত করবে; এরপর একটি রেখাচিত্র আঁকবে; শেষে রেখাচিত্র ব্যবহার করে সমস্যাটি সমাধান করবে। উদাহরণস্বরূপ, সমস্যার প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে পেতে শিক্ষার্থীরা কী-শব্দ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে এবং সমস্যায় দেওয়া তথ্য সঠিকভাবে স্থাপন করতে পারে।<ref>Walker, D. W., & Poteet, J. A. (1989-90). A comparison of two methods of teaching mathematics story problem-solving with learning disabled students. National Forum of Special Education Journal, 1, 44-51.</ref>
সারসংক্ষেপে, রেখাচিত্র গণিত সমস্যার সমাধানে একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে; এটি শিক্ষার্থীদের সমালোচনামূলক চিন্তায় সহায়তা করে এবং বিকল্প উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
=== অ্যালগরিদম ===
অ্যালগরিদম হলো একাধিক ধাপের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীদের গণিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যদি তারা প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করে, তাহলে তারা প্রতি বারই একটি সঠিক উত্তর বের করতে সক্ষম হয়। অ্যালগরিদম সাধারণত পুনরাবৃত্ত ক্রমের উপর ভিত্তি করে এবং এটি যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগে প্রযোজ্য। অ্যালগরিদম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ধাপে কী ঘটছে তা ব্যাখ্যা করতে শেখে এবং ভুল হলে তা শনাক্ত করতে পারে। এটি তাদের সমস্যা সমাধানের সময় প্রতিটি ধাপে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে। একাধিক ধাপ বিশিষ্ট সমস্যার সমাধানে, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে অ্যালগরিদম স্মরণ করে মানসিকভাবে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়।
শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শেখানো যে অ্যালগরিদম সবসময় ধারাবাহিকভাবে সমাধান করতে হবে; কোনও ধাপ বাদ দেওয়া যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, যখন শিক্ষার্থীরা ৫+৮×৬ সমস্যার সমাধান করে, তখন তাদের বুঝতে হবে যে প্রথমে গুণ করতে হবে, এরপর যোগ করতে হবে। যদি তারা সঠিক ক্রম অনুসরণ করে, তাহলে তারা সবসময় সঠিক উত্তর পাবে।
তবে, পল কব একটি গবেষণায় গ্রেড ১ ও ২-এর শিক্ষার্থীদের ডাবল ডিজিট যোগের সমস্যা সমাধান নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি দেখেছেন, ১৬+৯ সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে। কিন্তু যখন তাদের ঐ একই সমস্যা প্রচলিত স্কুল অ্যালগরিদম (সংখ্যা হাতে থাকা সহ) ব্যবহার করে উল্লম্বভাবে সমাধান করতে বলা হয়, তখন অনেকেই ভুল উত্তর দেয়। তিনি উপসংহার টানেন যে, প্রচলিত অ্যালগরিদমে শিক্ষার্থীরা কেবল নিয়ম অনুসরণ করতে চেষ্টা করে, কিন্তু কিভাবে অ্যালগরিদমটি কাজ করে তা প্রকৃতপক্ষে বুঝে না বলেই তাদের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।<ref>Cobb, P. (1991). Reconstructing Elementary School Mathematics. Focus on Learning Problems in Mathematics, 13(2), 3–32.</ref>
জে. এস. ব্রাউন এবং বার্টন দেখেছেন যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ধারাবাহিকভাবে তাদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য এক বা একাধিক ভুল অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে। যদিও অনেক ভুল অ্যালগরিদম সঠিক উত্তর দিতে পারে, তবুও তা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।<ref>Brown, J.S., Burton, R.B. (1978). Diagnostic models for procedural bugs in basic mathematical skills. Cognitive Science, 2, 155-192</ref> উদাহরণস্বরূপ, কিছু শিশুর মনে একটি পূর্বধারণা ছিল যে বিয়োগ অ্যালগরিদম মানে হলো প্রতিটি কলামে উপরের সংখ্যাটির সঙ্গে নিচের সংখ্যাটি তুলনা করে ছোটটি বড় থেকে বিয়োগ করা, উপরের সংখ্যাটি বড় কি না, তা না জেনেই। বাম পাশের চিত্রটি ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম সবসময় সঠিক সমাধান দিতে পারে না।
[[চিত্র:Faulty_algorithm_of_subtraction.jpg|থাম্ব|একটি চিত্র যা ব্যাখ্যা করে কেন একটি ভুল অ্যালগরিদম কাজ করে না]]
ব্রাউন এবং বার্টন উল্লেখ করেছেন, এমনকি যেসব শিশু বিয়োগের অ্যালগরিদম সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে, তারা হয়তো মনে করে যে তারা বিয়োগ প্রক্রিয়াটি বুঝে ফেলেছে। এই ভুল ধারণা তাদের (a) ও (c) অংশে সঠিক উত্তর দিতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু (b) ও (d) অংশে ভুল উত্তর দিবে, কারণ সেসব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কলামে উপরের সংখ্যা নিচের চেয়ে ছোট।
নাগেল এবং সুইঙ্গেন মনে করেন, ধারক বা ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো কার্যকারিতা এবং নির্ভুলতা বাড়াতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝার সক্ষমতা বাড়াতে ব্যর্থ হয়।<ref>Nagel, N., & Swingen, C. C. (1998). Students’ explanations of place value in addition and subtraction. Teaching Children Mathematics, 5(3), 164–170.</ref>
সুতরাং, ধারাবাহিক অ্যালগরিদম ব্যবহারে শিক্ষার্থীরা যাতে সফল হয়, এর জন্য শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জায়গা ভিত্তিক চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে ধাপে ধাপে সমাধান শেখানো উচিত। যেমন, সঠিকভাবে সংখ্যাগুলো সাজানো এবং ফাঁকা জায়গা রেখে লেখা শেখাতে হবে—বিশেষ করে কলামভিত্তিক বিয়োগ, একাধিক অঙ্কের গুণ ইত্যাদিতে। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা নিজের অ্যালগরিদম তৈরি করে সমস্যার সমাধান করে। শিক্ষকরা তাদের মনের মধ্যে নিমোনিকস ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন; এই পদ্ধতি সমস্যার ধাপগুলো মনে রাখতে সাহায্য করে।<ref>Nelson, P. M., Burns, M. K., Kanive, R., & Ysseldyke, J. E. (2013). Comparison of a math fact rehearsal and a mnemonic strategy approach for improving math fact fluency. Journal Of School Psychology, 51(6), 659-667. doi:10.1016/j.jsp.2013.08.003</ref> যেমন, PEDMAS শিক্ষার্থীদের বলে দেয় কোন ক্রমে গাণিতিক কাজ করতে হবে। শুধু বাম থেকে ডানে গাণিতিক অপারেশন করলেই চলবে না, আগে বন্ধনীর কাজ শেষ করতে হবে।<ref>Jeon, K. (2012). Reflecting on PEMDAS. Teaching Children Mathematics, 18(6), 370-377.</ref> পাশাপাশি শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবেন যেন তারা প্রথমে পুরো সমস্যাটি পড়ে বোঝে, এরপর সেটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে কোন অংশে কোন অ্যালগরিদম লাগবে তা নির্ধারণ করে। প্রতিটি ধাপে তাদের উত্তর পুনর্বিবেচনা করতে শেখানো উচিত। ধাপগুলো লিখে রাখলে শিক্ষার্থীরা ভুল ধরতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
=== শব্দভিত্তিক সমস্যার কৌশল ===
শব্দভিত্তিক সমস্যা সব শিশুদের জন্যই একটি বিশেষ ধরণের চ্যালেঞ্জ, তবে যাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে শেখার অসুবিধা রয়েছে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন। গাণিতিক সমস্যা ও শব্দভিত্তিক সমস্যার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো ভাষাগত তথ্যের সংযুক্তি। অর্থাৎ, শিশুদের প্রথমে সমস্যাটির লেখা পড়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য বাছাই করে সেটিকে সংখ্যাগত সমস্যায় রূপান্তর করতে হয়। এরপর তাদের নির্ধারণ করতে হয় কোন তথ্যটি প্রয়োজনীয় এবং কোনটি অনুপস্থিত।
শব্দভিত্তিক সমস্যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বোঝা কঠিন, তবে সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন শিক্ষার্থীর প্রথম ভাষা ইংরেজি না হয়। জ্যান ও রদ্রিগেস (২০১২)<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref> এর মতে, যাদের ইংরেজি দ্বিতীয় ভাষা, তারা ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে সমস্যার বক্তব্য বুঝতে পারে না। তারা প্রায়শই মূল শব্দের উপর নির্ভর করে অথবা বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা করে, ফলে ভুল সমাধান আসে। মূল শব্দের উপর নির্ভরশীলতা শিক্ষার্থীদের সমস্যা বোঝা থেকে বিচ্যুত করে। "মূল শব্দের ব্যবহার দৈনন্দিন ভাষা ও গাণিতিক ভাষার মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।"<ref>Jan, S. and Rodrigues, S., (2012). Students' difficulties in comprehending mathematical word problems in English language learning contexts. International Researcher, Vol. 1, Issue 3, P. 156, Accessed Dec 4, 2015 from http://www.academia.edu/2078056/STUDENTS_DIFFICULTIES_IN_COMPREHENDING_MATHEMATICAL_WORD_PROBLEMS_IN_ENGLISH_LANGUAGE_LEARNING_CONTEXTS</ref>
এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায় যে শ্রেণিকক্ষে আলোচনা বা ছোট ছোট দলের আলোচনা শিক্ষার্থীদের সমস্যাটি কী এবং কী জানতে চাওয়া হচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের পড়া, বোঝা, মতামত বিনিময় এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যা ও সমাধান নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিলে তারা সমস্যাটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে।
শব্দভিত্তিক সমস্যা শেখানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সুযোগ দেবেন যেন তারা সমস্যার অর্থ নিয়ে চিন্তা ও আলোচনা করতে পারে এবং সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে একাধিক সমাধান ভাবতে পারে। এই পদ্ধতি ভাষাগত সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থী এবং গাণিতিক শেখার সমস্যাযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর।
শিক্ষণ প্রতিবন্ধিকতা পরিষদ <ref>http://www.council-for-learning-disabilities.org/mathematics-disabilities</ref> সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য কিছু কৌশল প্রস্তাব করে:
''ফাস্ট ড্র'' (মার্সার এবং মিলার, ১৯৯২): আপনি কী সমাধান করছেন তা খুঁজে বের করুন।
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, "সমস্যাটির অংশগুলি কী?"
সংখ্যা বসান।
চিহ্ন বসান।
চিহ্ন আবিষ্কার করুন।
সমস্যাটি পড়ুন।
উত্তর দিন, অথবা আঁকুন এবং পরীক্ষা করুন।
উত্তর লিখুন।
<nowiki>''প্রশ্ন এবং ক্রিয়া''</nowiki> (রিভেরা, ১৯৯৪)
পদক্ষেপ
ক. সমস্যাটি পড়ুন।
প্রশ্ন
এমন কোন শব্দ আছে যা আমি জানি না?
আমি কি প্রতিটি শব্দের অর্থ জানি?
আমার কি সমস্যাটি পুনরায় পড়ার প্রয়োজন?
সংখ্যার শব্দ আছে?
ক্রিয়া
শব্দগুলি নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
সংজ্ঞাগুলি খুঁজে বের করুন।
পুনরায় পড়ুন।
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
খ. সমস্যাটি পুনরায় বর্ণনা করুন।
কোন তথ্য গুরুত্বপূর্ণ?
কোন তথ্যের প্রয়োজন নেই?
প্রশ্নটি কী জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে?
নিম্নরেখাঙ্কিত করুন।
কেটে দিন।
নিজের শব্দে লিখুন।
গ. একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন।
তথ্যগুলো কী কী?
সেগুলো কীভাবে সংগঠিত করা যেতে পারে?
কত ধাপ আছে?
আমি কোন কোন ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করব?
একটি তালিকা তৈরি করুন।
চার্ট তৈরি করুন।
কৌশল ব্যবহার করুন।
ছোট সংখ্যা ব্যবহার করুন।
একটি ক্রিয়াকলাপ নির্বাচন করুন।
ঘ. সমস্যাটি গণনা করুন।
আমি কি সঠিক উত্তর পেয়েছি?
অনুমান করুন।
অংশীদারের সাথে পরীক্ষা করুন।
ক্যালকুলেটর দিয়ে যাচাই করুন।
ঙ. ফলাফল পরীক্ষা করুন।
আমি কি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি?
আমার উত্তর কি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে?
আমি কি প্রশ্ন/উত্তর পুনঃবক্তৃতা করতে পারি?
প্রশ্ন/উত্তর পরীক্ষা করুন।
একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
৩. ''টিআইএনএস কৌশল'' (ওওয়েন, ২০০৩)
শব্দ সমস্যা বিশ্লেষণ এবং সমাধানের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পদক্ষেপ এই সংক্ষিপ্ত রূপ দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
চিন্তা: এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার কী করতে হবে তা নিয়ে ভাবুন এবং মূল শব্দগুলোর চারপাশে বৃত্ত আঁকুন।
তথ্য: এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বৃত্তাকার করুন এবং লিখুন; একটি ছবি আঁকুন; অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিন।
সংখ্যা বাক্য: সমস্যাটি উপস্থাপনের জন্য একটি সংখ্যা বাক্য লিখুন।
সমাধান বাক্য: আপনার উত্তর ব্যাখ্যা করে এমন একটি সমাধান বাক্য লিখুন।
উদাহরণ: কাইল ৬টি বেসবল কার্ড কিনেছে। পরের দিন, সে তার সংগ্রহে আরও ১১টি কার্ড যোগ করেছে। তার কাছে মোট কতটি কার্ড আছে?
চিন্তা: +
তথ্য: ৬টি বেসবল কার্ড, ১১টি বেসবল কার্ড
সংখ্যা বাক্য: ৬ + ১১ =
সমাধান বাক্য: কাইলের সংগ্রহে ১৭টি বেসবল কার্ড রয়েছে।
৪. ''সমস্যা সমাধান'' (বীরশ, লিয়ন, ডেনকলা, অ্যাডামস, মোটস এবং স্টিভস, ১৯৯৭)
প্রথমে সমস্যাটি পড়ো।
প্রশ্নটি হাইলাইট করো।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করো।
একটি পরিকল্পনা তৈরি করো।
সংখ্যাগুলো বোঝাতে চিত্র বা বস্তু ব্যবহার করো।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করো।
তোমার কাজ যাচাই করো।
==== বীজগণিত শেখানোর জন্য কগনিটিভ টিউটর ====
১৯৮৫ সালে অ্যান্ডারসন, বয়েল এবং রেইজার বুদ্ধিমান শেখানোর পদ্ধতিতে কগনিটিভ মনস্তত্ত্ব যুক্ত করেন। এরপর থেকে এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্রদের শেখানোর জন্য কগনিটিভ মডেল তৈরি করা হয়। এ নাম রাখা হয় কগনিটিভ টিউটরস।<ref name="anderson et al. 1995">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive Tutors: Lessons learned. Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167.</ref> সবচেয়ে জনপ্রিয় কগনিটিভ টিউটর হলো কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা I।<ref name="k&c, 2006">Koedinger, K. R., & Corbett, A. (2006). Cognitive tutors. The Cambridge handbook of the learning sciences, 61-77.</ref> এটি তৈরি করেছে কার্নেগি লার্নিং, ইনকর্পোরেটেড। তারা এখন বীজগণিত ১, ২, বীজগণিতের সেতু, জ্যামিতি এবং ইন্টিগ্রেটেড ম্যাথ ১, ২, ৩ সহ সম্পূর্ণ কগনিটিভ টিউটর® তৈরি করছে। কগনিটিভ টিউটর®-এ এখন স্প্যানিশ মডিউলও যুক্ত হয়েছে।
==== কীভাবে শেখাতে হবে ====
দুটি অন্তর্নির্মিত অ্যালগরিদম—'''''মডেল ট্রেসিং''''' এবং '''নলেজ ট্রেসিং''' শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। মডেল ট্রেসিং শিক্ষার্থীর প্রতিটি ধাপের ভিত্তিতে ঠিক সময়ে প্রতিক্রিয়া, অনুরোধে পরামর্শ এবং বিষয়ভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেয়।<ref name="anderson et al. 1995" /> নলেজ ট্রেসিং প্রতিটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান অনুযায়ী শেখার কাজ নির্ধারণ করে।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref name="k&c, 2006" />
তোমরা ''[[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি]]'' অধ্যায়ের ([[চিন্তন ও নির্দেশনা/সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তন ও যুক্তি#কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি|২.৫.২ কগনিটিভ টিউটরের তাত্ত্বিক পটভূমি]]) অংশে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারো কীভাবে কগনিটিভ টিউটর বীজগণিত শেখাতে সাহায্য করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, অনুরোধভিত্তিক পরামর্শ, বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনা ও ব্যক্তিকৃত কাজের মাধ্যমে।
==== কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১-এর মিশ্র প্রভাব ====
কগনিটিভ টিউটরের কার্যকারিতা নিয়ে পূর্ববর্তী গবেষণার প্রমাণ থেকে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের পাঠদানের তুলনায় কগনিটিভ টিউটর অধিক কার্যকর।<ref name="anderson et al. 1995" /><ref>Koedinger, K. R. & Anderson, J. R. (1993). Effective use of intelligent software in high school math classrooms. In Proceedings of the World Conference on Artificial Intelligence in Education, (pp. 241-248). Charlottesv</ref><ref name="K&A&M">Koedinger, K., Anderson, J., Hadley, W., & Mark, M. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. Human-Computer Interaction Institute.</ref><ref>Corbett, A. T., & Anderson, J. R. (2001). Locus of feedback control in computer-based tutoring: Impact on learning rate, achievement and attitudes. In Proceedings of the SIGCHI Conference on Human Factors in Computing Systems (pp. 245–252). New York, NY, USA: ACM.</ref>
তবে, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন সায়েন্সেস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি সাম্প্রতিক স্বাধীন ও বৃহৎ আকারের গবেষণা ''ক্লিয়ারিংহাউস কী কাজ করে''<ref>What Works Clearinghouse (ED). (2016). Carnegie Learning Curricula and Cognitive Tutor[R]. What Works Clearinghouse Intervention Report. What Works Clearinghouse.</ref> কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১ সম্পর্কিত ২২টি গবেষণার মধ্যে ৬টি পর্যালোচনা করে, যেখানে ৮ম থেকে ১৩শ গ্রেড পর্যন্ত ১২,৮৪০ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১১৮টি স্থানে। গবেষকরা দেখতে পান, কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১ এর বীজগণিত শেখার ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সাধারণ গণিত দক্ষতার ওপর কোনও উল্লেখযোগ্য বা প্রাসঙ্গিক প্রভাব দেখা যায়নি।
মরগান এবং রিটার,<ref>Morgan, P., & Ritter, S. (2002). An experimental study of the effects of Cognitive Tutor® Algebra I on student knowledge and attitude. Pittsburgh, PA: Carnegie Learning, Inc.</ref> ওকলাহোমার মুর শহরের পাঁচটি ভিন্ন স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত ক্লাসে একটি অভ্যন্তরীণ শিক্ষক-ভিত্তিক পরীক্ষামূলক গবেষণা পরিচালনা করেন। এই গবেষণায় প্রতিটি শিক্ষককে অন্তত একটি কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১ সমন্বিত ক্লাসরুম এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাসরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, যারা কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহার করে শিখেছিল তারা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফল করেছিল এবং গণিত বিষয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী ও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল।
কাবালো, জাকিউ এবং ভু<ref>Cabalo, J. V., Jaciw, A., & Vu, M. (2007). Comparative effectiveness of Carnegie Learning’s Cognitive Tutor® Algebra I curriculum: A report of a randomized experiment in the Maui School District. Palo Alto, CA: Empirical Education, Inc.</ref> হাওয়াইয়ের মাউই কাউন্টির পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১-এর কার্যকারিতা পর্যালোচনার জন্য একটি র্যান্ডমাইজড গবেষণা পরিচালনা করেন। ছয় মাসের ব্যবহারের পর ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শেষে শিক্ষার্থীদের এনডব্লিউইএ বীজগণিত কোর্স সমাপ্তির অর্জন স্তর পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ফলাফল থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কগনিটিভ টিউটর® সফটওয়্যার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করুক বা না করুক, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর গণিতে উন্নতি দেখা যায়। তবে, যারা আগে দুর্বল ছিল, তারা ব্যবহার শুরু করার পর উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে, যা তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্কোরধারীদের চেয়ে বেশি ছিল।
ক্যাম্পুজানো, ডিনারস্কি, আগোদিনি এবং রাল<ref>Campuzano, L., Dynarski, M., Agodini, R., & Rall, K. (2009). The effectiveness of reading and mathematics software products: Findings from two student cohorts. Washington, DC: U.S. Department of Education, Institute of Education Sciences.</ref> একটি ২ বছরব্যাপী কংগ্রেস-অনুমোদিত গবেষণা পরিচালনা করেন প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষণপদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য, যার দ্বিতীয় বছরে নয়টি দরিদ্র স্কুলে কগনিটিভ টিউটর® অ্যালজেবরা ১ ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন এবং শিক্ষকদের র্যান্ডমভাবে সফটওয়্যার ব্যবহারে অথবা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে ভাগ করে দেন। সব শিক্ষার্থীদের শরৎ ও বসন্তকালে ETS End-of-Course (ইটিএস এন্ড অফ কোর্স) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। দ্বিতীয় বছরে সফটওয়্যার ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা প্রথম বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখায়, যদিও পরীক্ষার স্কোরে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল সামান্য (p<০.৩)।
প্যান, গ্রিফিন, ম্যাককাফ্রে এবং কারাম<ref>Pane, J. F., Griffin, B. A., McCaffrey, D. F., Karam, R., Daugherty, L., & Phillips, A. (2013). Does an algebra course with tutoring software improve student learning?.</ref> কগনিটিভ টিউটর® যুক্ত বীজগণিত পাঠ্যক্রমের কার্যকারিতা নিরীক্ষার জন্য র্যান্ডম কন্ট্রোল ট্রায়াল পদ্ধতি গ্রহণ করেন। গবেষণা দুটি ধারাবাহিক শিক্ষাবর্ষজুড়ে চলে এবং সফটওয়্যারটি সপ্তাহে তিন দিন শিক্ষক-নির্দেশিত ক্লাসে এবং দুই দিন কম্পিউটার-নির্দেশিত ক্লাসে ব্যবহৃত হয়। প্রথম বছর হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে হস্তক্ষেপকারী ও তুলনামূলক দলের মধ্যে শিক্ষাগত সাফল্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি (p<০.৪৬)। তবে দ্বিতীয় বছরে কগনিটিভ টিউটর® ব্যবহারের ইতিবাচক প্রভাবের প্রমাণ শক্তিশালী ছিল (p<০.০৪), এবং হস্তক্ষেপকারী দলে যেসব শিক্ষার্থীর সাফল্য আগে কম ছিল, তাদের অগ্রগতি বেশি ছিল।
== শব্দকোষ ==
'''অ্যালগরিদম''' হলো গাণিতিক সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত একাধিক ধাপবিশিষ্ট একটি প্রক্রিয়া, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে সঠিক সমাধান প্রদান করে।
'''প্রয়োগ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা গাণিতিক ধারণার সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ঘটনার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
'''স্পষ্টীকরণ''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে, ফলে তারা সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাখ্যা করতে পারে।
'''শ্রেণিবিন্যাস''' হলো একই রকম বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বস্তুগুলোকে গোষ্ঠীবদ্ধ করার ক্ষমতা।
'''ধারণাগত জ্ঞান''' হলো মানসিক গঠন যা শিক্ষার্থীদের যুক্তি ও গাণিতিক ধারণা বোঝার ভিত্তি তৈরি করে।
'''ঘোষণামূলক জ্ঞান''' হলো সেই গাণিতিক ধারণা যা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি থেকে আহরণ করা হয় এবং যেগুলো ব্যবহার করে জটিল সমস্যা সমাধান করা যায়।
'''মূল্যায়ন''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে সমস্যার সমাধানের সঠিকতা নির্ধারণ করতে পারে।
'''অনুমান''' ঘটে যখন শিক্ষার্থীরা সাধারণ ধারণা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করে এবং বস্তুসমূহের মধ্যে পার্থক্য ও সাদৃশ্য নির্ধারণ করতে পারে।
'''অন্তঃপ্রণোদনা''' হলো এমন একটি অভ্যন্তরীণ ইচ্ছা যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের আগ্রহে কোনো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
'''মেটাকগনিটিভ''' হলো নিজের চিন্তা ও শেখার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত জ্ঞান।
'''পদ্ধতিগত জ্ঞান''' হলো সমস্যা সমাধানের কৌশলের ধাপসমূহ সম্পর্কে জ্ঞান।
'''ক্রমবিন্যাস''' হলো বস্তুগুলোর আকার অনুযায়ী (যেমন: দৈর্ঘ্য, ওজন, আয়তন) ছোট থেকে বড় বা বড় থেকে ছোটভাবে সাজানোর ক্ষমতা।
'''স্বনিয়ন্ত্রিত শেখা''' হলো নিজের শেখা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, শুরু থেকে নিজের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন পর্যন্ত।
'''স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি''' এমন তথ্য সাময়িকভাবে ধারণ করে যা ব্যবহৃত হবে, তবে তা পরিবর্তিত হবে না।
'''কার্যকরী স্মৃতি''' হলো একটি ব্যবস্থাপনা যা নতুন বা পূর্ববর্তী তথ্যকে অস্থায়ীভাবে ধরে রাখে, যাতে তা বর্তমান কাজে ব্যবহার করা যায়।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
# ''বেকার, সি কে (২০১৫)। "A case study of novice teachers' mathematics problem solving beliefs and perceptions"। গবেষণামূলক অ্যাবস্ট্রাক্ট ইন্টারন্যাশনাল সেকশন এ, ৭৫''
# ''লোরেঙ্ক, ও (২০১২)। "Piaget and Vygotsky: Many resemblances, and a crucial difference. New Ideas In Psychology", ৩০ (৩), ২৮১-২৯৫। doi:10.1016/j.newideapsych.2011.12.006''
== তথ্যসূত্র ==
* ফুচস, এলএস, ফুচস, ডি, স্টুবিং, কে, ফ্লেচার, জেএম, হ্যামলেট, সিএল, এবং ল্যামবার্ট, ডাব্লু (২০০৮)। "Problem solving and computational skill: Are they shared or distinct aspects of mathematical cognition"? জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ১০০ (১), ৩০
* হানিচ, এলবি, জর্ডান, এনসি, কাপলান, ডি, এবং ডিক, জে (২০০১)। "Performance across different areas of mathematical cognition in children with learning disabilities"। জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ৯৩, ৬১৫–৬২৬।
* রাউর্ক, বিপি, এবং ফিনলেসন, এমএজে (১৯৭৮)। "Neuropsychological significance of variations in patterns of academic skills: Verbal and visual-spatial abilities"। জার্নাল অফ অ্যাবনরমাল চাইল্ড সাইকোলজি, ৬, ১২১–১৩৩।
* সোয়ানসন, এইচএল, এবং বিবে-ফ্রাঙ্কেনবার্গার, এম (২০০৪)। "The relationship between working memory and mathematical problem-solving in children at risk and not at risk for serious math difficulties"। জার্নাল অফ এডুকেশনাল সাইকোলজি, ৯৬, ৪৭১–৪৯১।
* সোয়ানসন, এইচ এল (২০০৩)। "Age-related differences in learning disabled and skilled readers’ working memory"। জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল চাইল্ড সাইকোলজি, ৮৫, ১–৩১।
{{সূত্র তালিকা}}
{{BookCat}}
bwyp7jh0uaa2imv8wgum3nc428mdbnj
চিন্তন ও নির্দেশনা/শেখার জন্য প্রযুক্তি ও নকশা
0
26211
85709
84116
2025-07-05T21:22:35Z
MS Sakib
6561
85709
wikitext
text/x-wiki
শিক্ষণ ও শিক্ষার জন্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে, শিক্ষক ও ডিজাইনারদের এটির সম্ভাব্য উপকারিতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝা প্রয়োজন। এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে কীভাবে মাল্টিমিডিয়া শেখার পরিবেশে মানুষের জ্ঞানগত প্রক্রিয়াগুলোর উপর প্রভাব পড়ে এবং এই ধরনের পরিবেশ ডিজাইনের জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক নীতিমালা। প্রথম অংশে পরিচিতি দেয়া হয়েছে জ্ঞানীয় চাপ থিওরি সম্পর্কে এবং ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া পরিবেশের জ্ঞানগত চাহিদা শিক্ষার্থীদের শেখার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয় অংশে আলোচনা করা হয়েছে ফোর কম্পোনেন্ট ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন মডেল, যা জটিল দক্ষতা শেখানোর জন্য উপকরণ ও প্রযুক্তি ডিজাইন করতে গবেষণা-ভিত্তিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত, এই অধ্যায়ে দেখা হবে কীভাবে প্রযুক্তি সহযোগিতামূলক শেখাকে সহজতর করতে ব্যবহৃত হতে পারে।
== '''জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব''' ==
জ্ঞানীয় চাপ থিওরি বা কগনিটিভ লোড থিওরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যখন শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বিবেচনা করা হয়। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব জন সুয়েলার কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব যা কার্যকর স্মৃতি এবং নির্দেশনার উপর গুরুত্ব দেয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> আমাদের কার্যকর স্মৃতি একই সময়ে মাত্র সীমিত পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়া করতে সক্ষম।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> শিক্ষাদান উপকরণ ডিজাইন করার সময় কার্যকর স্মৃতির এই সীমাবদ্ধতাকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে, বিশেষ করে যখন প্রযুক্তিকে নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ যদি একসাথে খুব বেশি তথ্য উপস্থাপন করা হয় তাহলে কার্যকর স্মৃতি অতিভারপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে—ফলে হয়তো সব তথ্য গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুই গ্রহণ করে না। সুয়েলার প্রস্তাব করেন যে জ্ঞানীয় চাপ তিন প্রকার: ইনট্রিনসিক, বাহ্যিক, এবং জারমেইন। এই তিন প্রকার জ্ঞানীয় চাপের পার্থক্য বোঝার মাধ্যমে আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা শেখার জন্য সহায়ক কিনা অথবা তা জ্ঞানীয় চাপের সমস্যা তৈরি করছে কিনা।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>
[[চিত্র:WorkingCogLoad.png|ফ্রেম|জ্ঞানীয় চাপ কীভাবে কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করে]]
=== '''ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ''' বা '''ইনট্রিনসিক কগনিটিভ লোড''' এমন মানসিক প্রক্রিয়া বোঝায় যা কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> সুয়েলারের মতে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায় না, তবে এটি ডিজাইনারদের মাথায় রাখতে হয়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> যেকোনো শেখার উপকরণ কার্যকর স্মৃতির ওপর ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করে; এর মাত্রা নির্ভর করে বিষয়বস্তুর জটিলতার উপর।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো বিষয়ে দক্ষতা বেশি থাকে, তবে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তখনো প্রভাব ফেলবে, তবে কম পরিমাণে।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> সুতরাং, শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান বিবেচনায় নিয়ে নতুন তথ্য উপস্থাপন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যক্তির কমলা ফল সম্পর্কে পূর্বজ্ঞান থাকে, তবে কমলার বিভিন্ন অংশ নিয়ে পাঠের সময় তার কার্যকর স্মৃতির ওপর চাপ কম পড়বে, তুলনায় যদি সে কিছুই না জানত।
=== '''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ বা এক্সট্রেনিয়াস কগনিটিভ লোড''' হলো এমন মানসিক প্রক্রিয়া যা শেখার সহায়ক নয় এবং যেটা কাজের ডিজাইন পরিবর্তনের মাধ্যমে দূর করা যায়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ধারিত হয় শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় শব্দ, ছবি, টেক্সট এবং অ্যানিমেশন বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করতে পারে। যত বেশি কার্যকর স্মৃতিকে মনোযোগ দিতে হয়, তত কম তথ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> বাহ্যিক লোড নিয়ন্ত্রণযোগ্য, ভালো শিক্ষাদান ডিজাইন এই লোড কমায় এবং খারাপ ডিজাইন তা বাড়িয়ে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক প্রজাপতির জীবনচক্র নিয়ে পাঠ দিচ্ছেন এবং স্মার্ট বোর্ডে একটি স্লাইড শো ব্যবহার করছেন। যদি তিনি অপ্রাসঙ্গিক অ্যানিমেশন যোগ করেন, তবে শিক্ষার্থীদের একসাথে তথ্য ও অ্যানিমেশনে মনোযোগ দিতে হয়—ফলে বাহ্যিক লোড বেড়ে যায়।
=== '''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' হচ্ছে কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ যা উপস্থাপিত তথ্যের ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয় এবং এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> সুয়েলার বলেন, এটি কার্যকর স্মৃতির ওপর স্বাধীন চাপ সৃষ্টি করে না, বরং এটি ইনট্রিনসিক ও বাহ্যিক লোডের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, যদি শিক্ষার্থীর প্রেরণা অপরিবর্তিত থাকে, তবে তার জারমেইন লোডের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকে না।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> তাহলে এর সাথে শিক্ষাদানের সম্পর্ক কী? সুয়েলারের মতে, পাঠগুলো এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে কার্যকর স্মৃতি ইনট্রিনসিক লোডের দিকে মনোযোগ দিতে পারে এবং বাহ্যিক লোড কমিয়ে দিলে জারমেইন লোড এবং শেখার মান উভয়ই বৃদ্ধি পায়।
=== গবেষণা ও প্রভাব ===
অভ্যন্তরীণ এবং অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত/অর্থাৎ যদি উভয়ই উচ্চ হয় তাহলে কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্তভাবে চাপগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এর তাৎপর্য হলো, যেহেতু শুধুমাত্র অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই পাঠ পরিকল্পনাকারীদের এটি কম রাখার জন্য কাজ করা উচিত, যাতে করে অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ বেশি থাকলেও কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্ত চাপের শিকার না হয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তত্ত্ব অনুযায়ী, অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বিশাল ধারণক্ষমতার সদ্ব্যবহার করা উচিত, পূর্ববর্তী স্কিমার ব্যবহার এবং নতুন স্কিমা তৈরি করে কার্যকারী স্মৃতির উপর চাপ কমানো যায়<ref>van Merrienboer, J., & Ayres, P. (2005). Research on cognitive load theory and its design implications for e-learning. Educational Technology Research and Development 53(3), 5-13</ref>। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: নির্ধারিত লক্ষ্যবিহীন সমস্যা উপস্থাপন, কার্যকর অতিরিক্ততা, পদ্ধতি, অসম্পূর্ণ সমস্যা প্রভাব, বিভক্ত মনোযোগ প্রভাব এবং অন্যান্য<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>।
শুরু করার জন্য, বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করতে এবং স্কিমা উত্পাদনকে উত্সাহিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রিয়াকলাপ পরিবর্তন করার জন্য লক্ষ্য মুক্ত সমস্যাগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য কোনও শিক্ষার্থী লক্ষ্য সম্পর্কিত কৌশলগুলো ব্যবহার করার সম্ভাবনা হ্রাস করে এটি করে। এটি কোনও সমস্যার শব্দ পরিবর্তন করে করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ট্রায়াল এন্ড এরর পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না করে। অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, একটি সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
প্রারম্ভে, লক্ষ্যবিহীন সমস্যাগুলি ডিজাইন করা হয়েছিল শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার জন্য যাতে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় এবং স্কিমা তৈরি করতে উৎসাহিত করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এটি করার মাধ্যমে, শিক্ষার্থীরা লক্ষ্যভিত্তিক কৌশল অনুসরণ না করে সমস্যার সমাধান করতে পারে। সমস্যার ভাষার গঠন পরিবর্তন করে এটি করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র অনুমান ও পরীক্ষানিরীক্ষার উপর নির্ভর না করে, যা অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। উদাহরণস্বরূপ, একটি গণিত সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
"কার্যকরী উদাহরণ প্রভাব" বলতে বোঝানো হয়, যখন একজন ব্যক্তি ইতোমধ্যে সমাধান করা উদাহরণ অধ্যয়ন করে, যাতে তারা শিখতে পারে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। এটি অনুমান নির্ভর পদ্ধতি কমিয়ে দেয় কারণ এতে শিক্ষার্থীদের একটি স্কিমা তৈরি করার সুযোগ থাকে যে কীভাবে নির্দিষ্ট ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। সাধারণ সমস্যাগুলোর তুলনায়, এই ধরনের উদাহরণগুলো ব্যক্তির মনোযোগ পুরো সমস্যার ওপর নয় বরং ধাপে ধাপে কী করতে হবে সেটার ওপর কেন্দ্রীভূত করে, ফলে তত্ত্বগতভাবে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় কারণ অতিরিক্ত কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এই ক্ষেত্রে, যদি একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নতুন কোনো গণিত সমীকরণ শেখান এবং পাশাপাশি সেই সমীকরণ ব্যবহার করে সমাধান করা কিছু উদাহরণ দেন, তবে শিক্ষার্থীদের কাছে একটি রেফারেন্স থাকবে, যা তাদের জ্ঞানীয় চাপ কমিয়ে দেবে।
উপকারী পুনরাবৃত্তির পেছনের ধারণা হলো, যদি একজন শিক্ষার্থী একই তথ্য বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত দেখতে পান, তাহলে সেই তথ্য স্মরণ রাখার সম্ভাবনা বেশি থাকে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। কারণ এটি একই তথ্য যা কেবল ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাই অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায়, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন তথ্য গ্রহণের জন্য<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, পরবর্তীকালে পরিচালিত গবেষণায় এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে এটি গভীর শেখার পরিবর্তে বরং শেখার মান কমিয়ে দেয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>।
মেয়ার, হাইজার এবং লন পরিচালিত এক গবেষণায়, মাল্টিমিডিয়া শিক্ষায় পুনরাবৃত্তি প্রভাব নিয়ে একাধিক পরীক্ষা চালানো হয়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। তাঁরা পুনরাবৃত্তি প্রভাবকে ব্যাখ্যা করেন এমন এক পরিস্থিতি হিসেবে যেখানে একই তথ্য পাঠ্য ও শ্রুতির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় এবং এর ফলে শেখার মান কমে যায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। প্রথম পরীক্ষায় ৭৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে বজ্রপাত গঠনের বিষয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে তথ্য ধারণ ও স্থানান্তরের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করা হয়। "No-text/no-seductive-details" দলটি এনিমেশন ও সমসাময়িক বর্ণনা পায়, "text/no-seductive-details" দলটি এতে সংক্ষেপিত পাঠ্য পায়, "no-text/seductive-details" দলটি আকর্ষণীয় কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পায় এবং শেষ দলটি এই দুই ধরণের তথ্যই পায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যেসব শিক্ষার্থীরা পর্দায় সংক্ষেপিত পাঠ্য পেয়েছিল তারা কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। একইভাবে যারা আকর্ষণীয় অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পেয়েছিল তারাও কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। এই পরীক্ষার ফলাফল দেখায় যে অতিরিক্ত তথ্য উপস্থাপন শেখার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গবেষকরা ধারণা দেন যে এটি দৃশ্যমান বা শ্রাব্য চ্যানেলে অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয় পরীক্ষায় এই ধারণার পরীক্ষা করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়: একটি দল পাঠ্য ছাড়াই উপস্থাপনা পায়, একটি দল সংক্ষিপ্ত সারাংশ সহ এবং আরেকটি দল হুবহু পাঠ্য সহ<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। দেখা যায় যে যারা কোনো অতিরিক্ত পাঠ্য পায়নি তারা সবচেয়ে বেশি তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। অন্য দুই দলের মধ্যে মনে রাখার ক্ষেত্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তৃতীয় পরীক্ষায় মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হলে কী ঘটে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, ভিডিও ক্লিপে বজ্রপাত সংক্রান্ত তথ্য থাকলেও তা প্রাসঙ্গিক ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। ৩৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে দুটি দলে ভাগ করা হয়। দেখা যায়, ভিডিও যুক্ত দলটি আরও বেশি কিছু মনে রাখতে পারেনি এবং ফলাফল উল্লেখযোগ্য ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। চতুর্থ পরীক্ষায় দেখা হয় যে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার আগে বা পরে ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করলে আগ্রহ বাড়ে কিনা। দেখা যায়, উপস্থাপনার শুরুতে ভিডিও ক্লিপ দিলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা বেশি মনে রাখে, যদিও ফলাফল পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। সামগ্রিকভাবে এই গবেষণা উপসংহার টানে যে, একই তথ্য একাধিক উপায়ে উপস্থাপন করা হলে শিক্ষার্থীরা কম তথ্য মনে রাখতে পারে। যখন একজন শিক্ষার্থীকে কাজের মেমোরি ভাগ করে তথ্য বুঝতে হয়, তখন অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বেড়ে যায়, ফলে শেখার পরিমাণ কমে যায়। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন পাঠ্য উপস্থাপনার সাথে যুক্ত করা হয়। মেয়ার, হাইজার এবং লন পরামর্শ দেন যে, শিক্ষামূলক ডিজাইনারদের উচিত শ্রবণযোগ্য উপস্থাপনায় পাঠ্য না যোগ করা<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>।
কিছু গবেষক মনে করেন যে, শিক্ষাগত ডিজাইনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ কমানোই যথেষ্ট নয়। তাঁদের মতে, শিক্ষার্থী যেন আরও বেশি অর্থবহ স্কিমা তৈরি করতে পারে, সেই জন্য তাদের "জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ" বা প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় চাপ বাড়ানো উচিত<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ স্কিমা নির্মাণে নিবদ্ধ হয়, যা শিক্ষার সময় কাজের মেমোরির ওপর চাপ কমায়।
=== '''সারাংশ''' ===
সারাংশে, Sweller তিন ধরনের জ্ঞানীয় চাপের কথা বলেন এবং এগুলো কীভাবে নতুন তথ্য শেখার সময় কাজের মেমোরির ব্যবহারকে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করেন। জ্ঞানীয় চাপ থিয়োরির আলোকে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার ডিজাইনে বলা হয়েছে যে, প্রযুক্তি একটি কার্যকর শেখার উপায় হতে পারে যদি তা কাজের মেমোরির ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ না সৃষ্টি করে। বিশেষত, শিক্ষকদের উচিত "redundancy effect" নিয়ে করা গবেষণার দিকে মনোযোগ দেওয়া যাতে তারা অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মেমোরি অতিভার না করে। প্রযুক্তির একটি উপযোগী ব্যবহার হতে পারে এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা যা স্কিমা তৈরি করতে সহায়তা করে, যা তথ্যকে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিতে স্থানান্তর করে জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করে।
== চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা ==
চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা বা Four Component Instructional Design (4C/ID) হলো একটি নির্দেশনামূলক ডিজাইন মডেল, যা ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের এবং তাঁর সহকর্মীরা উদ্ভাবন করেছেন। এটি জটিল পরিবেশে শেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। 4C/ID মডেলটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি যে, দক্ষতা সবচেয়ে কার্যকরভাবে শেখা যায় তা ব্যবহার করার মাধ্যমে, শুধু পাঠ্যবইয়ের নির্দেশনা পড়ে নয়। শেখার শর্তাবলি বাস্তব জীবনের প্রয়োগের সাথে মিল রেখে তৈরি হওয়া জরুরি, এবং নির্দেশনার লক্ষ্য হওয়া উচিত তথ্য দেওয়ার চেয়ে অনুশীলনের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা। 4C/ID মডেলটি চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত: ''(১) লার্নিং টাস্ক'', ''(২) সহায়ক তথ্য'', ''(৩) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য'', এবং ''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন'' (ভ্যান মেরিনবোয়ার, ১৯৯৭;<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>; ভ্যান মেরিনবোয়ার এবং কির্সনার, ২০০৭)। এই কাজগুলো জটিলতার ভিত্তিতে সহজ থেকে কঠিন ক্রমে সাজানো থাকে। প্রতিটি উপাদানের শুরুতে অনেক বেশি সহায়ক কাঠামো বা ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ প্রয়োজন হয়, যা শিক্ষার্থীরা অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হয়।
এই অংশে আমরা আলোচনা করব কীভাবে প্রযুক্তি এই শিক্ষার তত্ত্বকে সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে গবেষণা ও তত্ত্ব।
=== '''(১) লার্নিং টাস্ক''' ===
লার্নিং টাস্ক-গুলো চিত্র ১-এ বৃত্তাকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। জটিল শেখা মানে হলো একত্রে একাধিক শেখার লক্ষ্য অর্জন করা। 4C/ID মডেলটি এমন শেখার কাজ ব্যবহারের পক্ষে, যা সম্পূর্ণ, বাস্তবসম্মত ও স্পষ্ট। অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা হিসেবেও পরিচিত এই মডেলের ভিত্তিতে শেখা শুরু করা উচিত অপেক্ষাকৃত সহজ কিন্তু অর্থপূর্ণ কাজের গুচ্ছ দিয়ে। একে '''টাস্ক ক্লাস''' বলা হয়। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের শুরুতেই অত্যন্ত জটিল শেখার কাজ দেওয়া অসম্ভব, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং শেখা ও পারফরম্যান্স উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। একবার শিক্ষার্থীরা সহজ কিন্তু প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো আয়ত্ত করলে, তারা আরও জটিল কাজের দিকে অগ্রসর হয়। একটি কাজের জটিলতা নির্ধারিত হয় এতে থাকা দক্ষতার সংখ্যা, এই দক্ষতাগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে। একই টাস্ক ক্লাসে থাকা শেখার কাজগুলোতে ক্রমান্বয়ে জটিলতা বাড়ানো না হলেও, এতে শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তার পরিমাণে পার্থক্য থাকতে পারে। এই সহায়তাকে বলা হয় ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। যখন শিক্ষার্থীরা নিম্নস্তরের টাস্ক ক্লাস থেকে উচ্চতর স্তরের টাস্ক ক্লাসে অগ্রসর হয়, তখন স্ক্যাফোল্ডিং ব্যবহার করা হয়। চিত্র ১-এ বৃত্তগুলোর চারপাশে ছিদ্রযুক্ত রেখা শেখার উপযুক্ত কাজ নির্বাচন ও উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। শেষ পর্যন্ত এই সহায়তা এবং স্ক্যাফোল্ডিং ধীরে ধীরে কমে আসে। এই সহায়তা হ্রাসের কারণ হলো '''দক্ষতার বিপরীত প্রভাব'''। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে শিক্ষানবিসদের জন্য কার্যকর যে সহায়তা ও নির্দেশনা পদ্ধতি (যেমন কোচিং বা নিয়মিত ধাপ) তা অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। এটি তাদের মানসিক চাপও বাড়ায়। শেখার কাজ শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে ধারণা গঠনে সহায়তা করে, যা তারা শেখার কাজ থেকে প্রাপ্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বিমূর্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শেখার ক্ষেত্রে সাধারণীকরণ ও পার্থক্যকরণ ধারণাগুলো গঠনে সাহায্য করে, যাতে তা নতুন অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের, ক্লার্ক, এবং ক্রুক <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এর মতে, এই গঠিত ধারণাগুলো দুটি রূপে আসে: ''মানসিক মডেলs'': যা শেখার ক্ষেত্রটি কিভাবে সংগঠিত তা প্রতিফলিত করে এবং যুক্তির সহায়তা করে; ''জ্ঞানীয় কৌশল'': যা সমস্যা সমাধানে গাইড করে এবং দেখায় কীভাবে কার্যকরভাবে সমস্যার সমাধানে এগোনো যায়।
শিক্ষার পরিবেশে শেখার কাজ প্রয়োগের দুটি ধরণ রয়েছে—ফলাফল কেন্দ্রিক এবং প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা। ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা সর্বোচ্চ বা নিম্ন স্তরে ভাগ করা যায়। সর্বোচ্চ স্তরের ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা হলো এমন শেখার কাজ যেখানে একটি কেস স্টাডি বা প্রস্তুত উদাহরণ দেওয়া হয় যাতে শিক্ষার্থীকে একটি প্রারম্ভিক অবস্থা, কাঙ্ক্ষিত অবস্থা এবং একটি সমাধান বা মধ্যবর্তী সমাধান দেওয়া হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শিক্ষার্থীদের শেখাতে উদ্ভট ঘটনা, সফলতার গল্প বা চমকপ্রদ উপসংহারসহ গল্প ব্যবহার করা যেতে পারে। এই শিক্ষণীয় কাজগুলিতে শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয় যা তাদের গভীর চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করে এবং দেওয়া উদাহরণ থেকে মানসিক মডেল তৈরিতে সহায়তা করে। বাস্তব উদাহরণ দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্র কীভাবে সংগঠিত। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব উপসংহার বা সমাধানে পৌঁছাতে দেওয়া উচিত। চিত্র ২-এ এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা সরাসরি সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কাজ করে। একটি ''modeling example''-এ একজন বিশেষজ্ঞ কীভাবে একটি কাজ সম্পাদন করছে এবং কেন সে এটি করছে তা ব্যাখ্যা সহ উপস্থাপন করা হয়। এই হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ধারণ সহজ করে তোলে যা শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়ে বোঝা সম্ভব নয়। এই পদ্ধতিতে শেখা তথ্য দীর্ঘস্থায়ীভাবে মনে রাখতেও সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এই উদাহরণ দেখে শিক্ষার্থীরা এমনকি পেশাদাররাও যে প্রণালী ও নীতিমালা অনুসরণ করে তা সহজে অনুধাবন করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। উচ্চস্বরে চিন্তা করাও উপকারী হতে পারে কারণ এটি মস্তিষ্কের ভিতরের সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে প্রকাশ করে। তদ্ব্যতীত, কম্পিউটার-ভিত্তিক শিক্ষার সরঞ্জামগুলো শিক্ষার্থীদের এমনভাবে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে যেন তারা একজন বিশেষজ্ঞের মতো চিন্তা করে।
=== '''(২) সহায়ক তথ্য''' ===
এই ধরনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জটিল দক্ষতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেখার কাজে সাফল্য পেতে এবং সেখান থেকে বাস্তব অর্থে শিখতে শিক্ষার্থীদের '''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' (স্কিমাটা-সদৃশ নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া) সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। প্রক্রিয়াভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকে 4C/ID কাঠামোতে '''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' বলা হয় <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। জটিল জ্ঞান উভয় ধরনের দক্ষতার সমন্বয়ে গঠিত। সহায়ক তথ্য প্রদান করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা অ-পুনরাবৃত্ত দিকগুলো আয়ত্ত করতে পারে। এটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান এবং শেখার কাজের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। শিক্ষকরা সাধারণত যেটিকে 'তত্ত্ব' হিসেবে উল্লেখ করেন, এটি সেই তথ্য এবং এটি সাধারণত লেকচারে বা পাঠ্যপুস্তকে উপস্থাপন করা হয়। এর লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের এমন নমনীয় স্কিমা তৈরি করতে সাহায্য করা যা বাস্তব জীবনের সমস্যা মোকাবেলায় কার্যকর। সহায়ক তথ্য পূর্ববর্তী তথ্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন তথ্য উপাদানের মধ্যে বাস্তবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এটি শিক্ষার্থীদের এমন কাজ করতে সক্ষম করে যা আগে সম্ভব ছিল না। দেখা গেছে, এই ধরনের তথ্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জটিল স্কিমা গঠনে সাহায্য করে যা গভীর অনুধাবন তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা ডেটাবেইস কীভাবে সংগঠিত তা অধ্যয়নের মাধ্যমে কার্যকর মানসিক মডেল তৈরি করতে পারে। কাজের পারফর্মাররা নিজেদের মানসিক মডেল এবং জ্ঞানীয় কৌশল আরও বিকশিত করে যাতে তাদের পারফরম্যান্স উন্নত হয়। উদাহরণস্বরূপ, টাইগার উডস গলফ কোর্সের বিন্যাস বিশ্লেষণ করে কীভাবে এগুলো সংগঠিত তা জানতে মানসিক মডেল তৈরি করেন এবং প্রতিপক্ষের ভিডিও দেখার মাধ্যমে কৌশল তৈরি করেন কীভাবে সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এখানে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি যে সম্পর্কগুলো যেন যথাসম্ভব যুক্তিযুক্ত হয়। এই সম্পর্ক নির্ধারণের পদ্ধতিগুলো উপস্থাপন করা যেতে পারে ব্যাখ্যামূলক বা অনুসন্ধানভিত্তিক উপায়ে। ''ব্যাখ্যামূলক পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্কগুলো সরাসরি উপস্থাপন করে, এবং ''অনুসন্ধান পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের নিজে থেকে এসব সম্পর্ক আবিষ্কার করতে উৎসাহিত করে। এই দুই পদ্ধতির মধ্যে অভিজ্ঞতাভিত্তিক সম্পর্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাধারণ ও বিমূর্ত জ্ঞানকে বাস্তব উদাহরণের সাথে যুক্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। 4C/ID মডেলটি সহায়ক তথ্য উপস্থাপনে প্ররোচনামূলক ও নির্ণয়মূলক কৌশলের মধ্যে পার্থক্য করে। প্ররোচনামূলক কৌশলের দুটি ধরন রয়েছে: ''ইন্ডাকটিভ-ইনকোয়ারি কৌশল''-এ এক বা একাধিক কেস স্টাডি উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সম্পর্ক চিহ্নিত করতে বলা হয়। তবে এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ এবং গভীর বোধের প্রয়োজন হয়, বিশেষত যাদের দক্ষতা নেই তাদের জন্য। এজন্য ভ্যান মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> পর্যাপ্ত সময় না থাকলে এই কৌশল ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন। ''ইন্ডাকটিভ-এক্সপোজিটরি কৌশল'' তে এক বা একাধিক কেস স্টাডি দিয়ে শুরু করে এবং সেখানে চিত্রিত তথ্যগুলোর সম্পর্ক সরাসরি ব্যাখ্যা করা হয়। মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এই কৌশলটি সাধারণভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দেন কারণ এটি বাস্তব কেস দিয়ে শুরু হয় এবং পূর্ব জ্ঞানের অভাব থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর। ''জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া'' সহায়ক তথ্য-এর চূড়ান্ত অংশ হিসেবে পরিচিত। এটি অ-পুনরাবৃত্ত কর্মক্ষমতা-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেহেতু এই ধরনের পারফরম্যান্স কখনো একেবারে সঠিক বা ভুল নয়, বরং বেশি বা কম কার্যকর। জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া কেবল তখনই প্রদান করা যায় যখন শিক্ষার্থী একটি বা একাধিক শেখার কাজ সম্পন্ন করে। ভালোভাবে পরিকল্পিত প্রতিক্রিয়া শিক্ষার্থীদের তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি এবং গৃহীত সমাধান নিয়ে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>।
=== '''(3) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য''' ===
সহায়ক তথ্যের বিপরীতে, জেআইটি তথ্য জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উপর কেন্দ্রীভূত। এটি শেখার কাজ বা অনুশীলনের উপাদানের পুনরাবৃত্ত দিক শেখা ও সম্পাদনের জন্য অপরিহার্য। স্বয়ংক্রিয়তা অনেকাংশে নির্ভর করে ধারাবাহিকতা এবং পুনরাবৃত্ত অনুশীলনের ওপর। জেআইটি তথ্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুসারে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেয় এবং প্রয়োজন না থাকলে দ্রুত ম্লান হয়ে যায়। জেআইটি তথ্যের লক্ষ্য হচ্ছে মৌলিক, কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব স্বয়ংক্রিয় করে তোলা। জ্ঞানগত সম্পদ মুক্ত করা এবং স্বয়ংক্রিয়তা বৃদ্ধি করা উন্নত শিক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এটি ধাপে ধাপে জ্ঞানও প্রদান করে, যেমন শিক্ষক বা টিউটররা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের গাইড করেন, যেন একজন সহকারী তাদের কাঁধের ওপর নজর রাখছে। জেআইটি তথ্য অনেক শেখার কাজের জন্য একই রকম হওয়ায়, এটি সাধারণত প্রথম শেখার কাজের সময় দেয়া হয় যেটার সাথে ওই দক্ষতা সম্পর্কিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। স্ক্যাফোল্ডিংয়ের মতোই, জেআইটি তথ্যের একটি নীতি হলো ফেডিং (fading)। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন শেখার বিষয়ে আরও দক্ষতা অর্জন করে তখন দ্রুত ধীরে ধীরে তথ্যের উপস্থিতি কমে যায়। জেআইটি তথ্যের শিক্ষাদান পদ্ধতি মূলত নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জ্ঞানকে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে জটিলতা বাড়ায় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই নিয়মগুলি বহুবার অনুশীলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠে এবং এই সময় তথ্য সরাসরি আমাদের কার্যকরী স্মৃতিতে উপলব্ধ থাকে যা নিয়ম গঠনের জন্য প্রয়োজন। বাস্তব জীবনে প্রয়োগের উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক কেউ গল্ফ শিখছে, তখন কোচ সাধারণত ক্লাব ধরার পদ্ধতি, স্ট্যান্স নেওয়া এবং ড্রাইভিং রেঞ্জে প্রথম ড্রাইভ করার সময় সুইং করার নিয়ম বুঝিয়ে দেন, শ্রেণিকক্ষে লেকচারের সময় নয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। ''তথ্য প্রদর্শনী'' ছোট ছোট ইউনিটে সংগঠিত থাকে, যা অপরিহার্য কারণ নতুন তথ্যের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে অনুশীলনের সময় প্রক্রিয়াকরণ অতিরিক্ত চাপ কমায়। বাস্তব জীবনে, যেমন একটি জটিল যন্ত্রের ম্যানুয়াল ধাপে ধাপে কাজগুলো ব্যাখ্যা করে, ব্যবহারকারীর পূর্ব জ্ঞান ধরে নিয়ে শুধু কিছু ধাপ উল্লেখ করে না। এই পদ্ধতিতে তথ্য সরাসরি প্রদর্শন করা উচিত যখন শিক্ষার্থীদের সেই তথ্য প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট শেখার কাজের পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে কাজ করার জন্য <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সব সময় কার্যকর নাও হতে পারে। যেমন চাকরির প্রশিক্ষণে, অনলাইন হেল্প সিস্টেম, চেকলিস্ট এবং ম্যানুয়ালসহ বিভিন্ন সহায়তা সহজে পাওয়া যায়। এর কারণ হলো প্রয়োজনীয় সময়ে জেআইটি তথ্য সরাসরি প্রদান না হওয়া। ''ডেমন্সট্রেশন ও ইনস্ট্যান্স'' হল পুনরাবৃত্ত দক্ষতার উপাদান, যা সাধারণত ''সাধারণত্ব'' নামে পরিচিত। যেমন নিয়ম বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করা যায়, সেগুলোকে ''ডেমন্সট্রেশন'' বলা হয়; অন্যদিকে ধারণা, পরিকল্পনা ও নীতিগুলোকে ''ইনস্ট্যান্স'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। ''কগনিটিভ ফিডব্যাক'' জেআইটি তথ্যের একটি চূড়ান্ত অংশ, যা কর্মদক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে প্রদানকৃত প্রতিক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত। এই ফিডব্যাক সংগ্রহ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করে। অর্থাৎ যদি নিয়মগুলো সঠিকভাবে পরিস্থিতিতে প্রয়োগ না হয়, তাহলে শিক্ষার্থী "ত্রুটি" করে বলে ধরা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই ফিডব্যাকগুলি যত দ্রুত সম্ভব প্রদান করার পরামর্শ দেয়া হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা সঠিক তথ্য তাদের কার্যকরী স্মৃতিতে সঠিকভাবে ইনপুট করতে পারে। 4C/ID মডেল বিশ্বাস করে যে শেখার সময় ত্রুটি হওয়া অনিবার্য এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের ভুল চিনতে শিখে এবং সেগুলো থেকে কিভাবে উত্তরণ করতে হয় তা শিখে। ভালোভাবে ডিজাইন করা ফিডব্যাক শিক্ষার্থীদের জানায় কেন ত্রুটি হয়েছে এবং কিভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারে তার পরামর্শ বা ইঙ্গিত দেয়। শেখার প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য সরাসরি উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন''' ===
শেখার কাজগুলো স্কিমা নির্মাণে সহায়ক এবং জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর সংকলন সহজতর করতে ডিজাইন করা হয়। 4C/ID মডেলের শেষ উপাদান, পার্ট-টাস্ক অনুশীলন, নির্বাচিত পুনরাবৃত্ত দক্ষতার অতিরিক্ত অনুশীলন দেয় যাতে প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তা স্তর অর্জন করা যায়। এটি প্রক্রিয়াগত জ্ঞান দ্রুত স্বয়ংক্রিয় করার একটি উপায়। সেখানে শিক্ষার্থীরা একই সময়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করার কারণে সৃষ্ট জ্ঞানগত চাপের সমস্যা এড়িয়ে যায়। দক্ষতা সাধারণত ধীরে ধীরে বিকাশমান একটি প্রক্রিয়া যা আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী উৎপাদনগুলোর স্বয়ংক্রিয়করণের জন্য অনুশীলনের প্রসারনের ওপর নির্ভর করে। জেআইটি তথ্য উপস্থাপন নতুন তথ্যকে সীমাবদ্ধভাবে নিয়মে কোড করার লক্ষ্য রাখে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন উপযুক্ত জেআইটি তথ্য দ্বারা সমর্থিত হবে যতক্ষণ না তারা স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন করে। ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার ও তাঁর সহযোগীরা বিশ্বাস করেন যে কিছু পার্ট-টাস্ক অনুশীলন কাজের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে কারণ এর সময়কাল তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত ও বিরতিপূর্ণ এবং জটিল, প্রামাণিক কাজের সঙ্গে মিশ্রিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের উপদক্ষতাগুলো অনুশীলন করতে এবং সেগুলোকে সামগ্রিক কাজের সাথে সংযুক্ত করতে সাহায্য করে। অনুশীলনকৃত বিষয়গুলো বিভিন্ন পরিস্থিতি বা পরিবেশের জন্য বহুমুখী হওয়া উচিত যাতে অন্তর্নিহিত নিয়মগুলো সব পরিস্থিতিতে প্রয়োগযোগ্য হয়। তবে, যখন পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উচ্চ স্তরের স্বয়ংক্রিয়তা প্রয়োজন হয়, তখন শেখার কাজগুলো পর্যাপ্ত পুনরাবৃত্তি প্রদান করতে পারে না যা শক্তিশালীকরণের জন্য জরুরি। তখন অতিরিক্ত পার্ট-টাস্ক অনুশীলন প্রয়োজন হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। অন্যান্য পরিস্থিতিতে যেমন সাধারণ পরিবেশে শেখার ক্ষেত্রে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন জটিল শেখার জন্য সহায়ক নয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন পদ্ধতি নিয়ম বা প্রক্রিয়ার সংকলন এবং তাদের পরবর্তী শক্তিশালীকরণকে উৎসাহিত করে। এটি একটি খুব ধীর প্রক্রিয়া যা বহুবার অনুশীলনের প্রয়োজন হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের উদাহরণ হিসেবে দেওয়া যায় গুণন তালিকা বা সঙ্গীত যন্ত্রের স্কেল বাজানো। এটি যথাযথ কগনিটিভ প্রসঙ্গে শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কার্যকর প্রমাণিত হয় শুধুমাত্র তখনই যখন শিক্ষার্থীরা জটিল দক্ষতার সহজ সংস্করণে পরিচিত হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। কাজের শ্রেণীবিভাগ নির্দেশ করে যে, এগুলো হয় অনেক উচ্চতর দক্ষতার কার্যকারিতা সক্ষম করে, অথবা একাধিক সমন্বিত দক্ষতার সঙ্গে একই সময়ে সম্পাদিত হতে হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। সুতরাং, প্রথমে কাজের শ্রেণি চিহ্নিত করে তারপরে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শুরু করা উচিত। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের ''প্র্যাকটিস আইটেমস'' শিক্ষার্থীদের অনেকবার অনুশীলন করতে উৎসাহিত করে যেমন প্রবাদ আছে, "অনুশীলনই পারদর্শিতা আনে"। তবে শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে যে সম্পূর্ণ অনুশীলন সেটটি বহুমুখী এবং সব পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হতে হবে। এর ফলে একটি বিস্তৃত পরিস্থিতি-নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি হবে। যেমন অত্যন্ত জটিল অ্যালগরিদমের ক্ষেত্রে, সেগুলোকে সহজ থেকে জটিল অনুশীলন আইটেমে ভাগ করা এবং পরে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ কাজের দিকে এগোনো প্রয়োজন হতে পারে। এই পদ্ধতিকে ''পার্ট-হোল অ্যাপ্রোচ'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের সঠিক ব্যবহার পুনরাবৃত্ত দক্ষতার সঠিক সম্পাদন নিশ্চিত করে। এছাড়াও, দক্ষতাকে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় করতে ব্যাপক অতিরিক্ত অনুশীলন প্রয়োজন হতে পারে। স্বয়ংক্রিয়তার উপর খুব বেশি নির্ভরশীল কাজের ক্ষেত্রে, মাঝে মাঝে চূড়ান্ত লক্ষ্য সঠিকতা নয়। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত গৃহীত সঠিকতা, উচ্চ গতি এবং সম্পাদনের সমন্বয়ই লক্ষ্য হয়। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে, পুনরাবৃত্ত দক্ষতাগুলো প্রথমে গতি চাপের মধ্যে অনুশীলন করা হয়, এরপর গতি মাপকাঠি অর্জিত হলে সময় ভাগাভাগি শর্তে অনুশীলন করা হয়। তারপরই দক্ষতাটি সমগ্র কাজ হিসেবে অনুশীলন করা হয়। অর্থাৎ, সম্পাদনার মানদণ্ড ধীরে ধীরে সঠিকতা থেকে সঠিকতা ও গতি, এবং পরে সঠিকতা, গতি ও সময় ভাগাভাগির শর্তে বা উচ্চ সামগ্রিক কাজের চাপের মধ্যে পরিবর্তিত হয় <ref>Salisbury, D.F., Richards, B.F., & Klein, D. (1985). Designing practice: A review of prescriptions and recommendations from instructional design theories. Journal of InstructionalDevelopment, 8(4), 9- 19.</ref>। সংক্ষিপ্ত, বিরতিপূর্ণ পার্ট-টাস্ক অনুশীলন বা অতিরিক্ত অনুশীলনের ফলাফল দীর্ঘ, ঘনীভূত পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের চেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শেখার কাজগুলোর সাথে মিলিয়ে করানো উচিত, কারণ এতে বণ্টিত অনুশীলন হয় এবং শিক্ষার্থীরা পুনরাবৃত্ত উপাদানকে পুরো জটিল দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''গবেষণা ও বাস্তবায়ন''' ===
ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) কর্তৃক এক-দ্বারা-দ্বি পূর্বপরীক্ষা-পশ্চাত্পরীক্ষাভিত্তিক একটি আধা-প্রায়োগিক নকশা ব্যবহার করে শিক্ষার পরিবেশের কার্যকারিতা নিয়ে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে 4C/ID পদ্ধতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর সাথে একত্রিত হয়ে শিক্ষাগত অগ্রগতিতে সেরা ফলাফল দেখিয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। নির্ভরশীল চলক ছিল শিক্ষাগত অগ্রগতি, যা পূর্বপরীক্ষা স্কোর থেকে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর বিয়োগ করে হিসাব করা হয়েছে। স্বাধীন চলক ছিল তিনটি চিকিৎসা পরিস্থিতি। তিনটি দলের মধ্যে তুলনা করা হয়েছিল; প্রচলিত পাঠদানের পদ্ধতি বনাম আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ বনাম আইসিটি ছাড়াই 4C/ID শিখন পরিবেশ। গবেষণায় ঘানা’র ছয়টি মাধ্যমিক প্রযুক্তি বিদ্যালয় থেকে ১৮ বছর গড় বয়স এবং ১.৩ বছর মান বিচ্যুতি সহ মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূল্যায়নের কাজের মধ্যে ছিল ২৬টি পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষা উপাদান; ১৩টি রক্ষণশীলতা এবং ১৩টি স্থানান্তর পরীক্ষা। ফলাফল দেখিয়েছে যে তিনটি দলের শিক্ষার্থীদের পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষার মধ্যে পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য ছিল। সমস্ত দলের গড় পূর্বপরীক্ষা স্কোর ছিল ৬.২৮। সেখানে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর ছিল ১৪.৩৯। ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) প্রদত্ত ডেটা গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ পূর্ব ও পশ্চাত্পরীক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই উচ্চ স্কোর অর্জন করেছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। গবেষকেরা উপসংহারে বলেছেন, এই ফলাফলগুলি নির্দেশ করে যে পরীক্ষামূলক দল এমন সমস্যা সমাধানে আরও দক্ষ ছিল। সেখানে যুক্তি, প্রতিফলন এবং প্রক্রিয়া, তথ্য ও ধারণা পুনরুদ্ধার করতে হয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>।
শ্রেণিকক্ষে এই চার উপাদানবিশিষ্ট নির্দেশনামূলক নকশা ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষত জটিল পরিবেশে শেখার জন্য উপকারী হবে। এই মডেল প্রয়োগ করতে হলে, যিনি পাঠদান করছেন তার ঐ বিষয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হওয়া আবশ্যক। এতে করে শিক্ষার্থীদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে এবং বিষয়বস্তুর গভীর উপলব্ধি অর্জন সম্ভব হবে। মিডিয়া বা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অতিরিক্ত সহায়তাও প্রয়োজন হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, এই মডেলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী সম্পর্ক একটি সমন্বিত দলের মতো কাজ করা আবশ্যক।
=== '''সারাংশ''' ===
চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল জ্ঞানীয় শেখা এবং দক্ষতার উপর গবেষণার ভিত্তিতে নির্মিত। এটি জটিল দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা নকশার একটি কাঠামো প্রদান করে। মডেল অনুযায়ী, অভিজ্ঞতাগুলো বাস্তবসম্মত এবং ক্রমান্বয়ে আরও প্রামাণ্য কাজ হওয়া উচিত; যেমন প্রকল্প, কেস, ও দৃশ্যপট। শিক্ষার্থীদেরকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয় তা তথ্য দেওয়ার উপর নয়, বরং অনুশীলনের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এই উপাদানগুলো এমনভাবে অনুশীলন করা হবে যতক্ষণ না কেউ প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তার স্তরে পৌঁছায়, কোনো সহায়তা ছাড়াই। যখন শিক্ষার্থীরা চারটি উপাদান সম্পন্ন করে, তখন বলা যায় যে সে ঐ জ্ঞান বা কার্যকলাপে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, 4C/ID মডেল ভুলবিহীন শেখার ধারণাকে সমর্থন করে না<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই মডেলটি জটিল দক্ষতার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিকাশ এবং যেখানে স্থানান্তর একটি প্রধান শিক্ষাগত লক্ষ্য সেখানে ব্যবহার করা উচিত। এই মডেলটি ধারণাগত জ্ঞান বা প্রক্রিয়াগত দক্ষতা শেখানোর জন্য তৈরি নয়, এবং খুব সংক্ষিপ্ত প্রোগ্রামগুলোর জন্যও এটি উপযোগী নয়<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। যদিও এসব গবেষণা হয়েছে, চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল নিয়ে আরও গবেষণা চলছে।
== সমন্বিত শিক্ষা ==
'''প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশের মাধ্যমে সমন্বিত শিক্ষা'''
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, এর ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহ ও শেয়ার করতে পারছে। '''সমন্বিত শিক্ষা'''। অর্থাৎ সহপাঠী বা দলের মাধ্যমে জ্ঞান ভাগাভাগি ও অর্জন এখন প্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্টারঅ্যাকশনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সামাজিক মিথস্ক্রিয়া জ্ঞানীয় বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিক্ষার্থীদের তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকের সাথে মিথস্ক্রিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিনিময়গুলোর মধ্যে পড়ে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, একটি প্রশ্ন উঠে আসে—এই ধরনের মিথস্ক্রিয়াগুলোতে প্রযুক্তি কীভাবে সহায়তা করতে পারে বা তা অন্তর্ভুক্ত করা যায়? একটি ভাল প্রযুক্তি নকশা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারে যদি তা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার কার্যপদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়; যেমন মনোযোগ, কার্যকারী স্মৃতি, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং কীভাবে জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা গড়ে ওঠে। এর একটি উদাহরণ হলো—সহায়ক এবং সময়োপযোগী (জেআইটি) তথ্য, প্রশিক্ষণ এবং ধাপে ধাপে সহায়তা যা কার্যকর শেখার কৌশল হিসেবে কাজ করে। একটি মূল বিষয় হলো—একটি ভালো নকশা ব্যবস্থা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এই অংশটি বিভিন্ন প্রযুক্তি নকশার মডেল এবং সমন্বিত শিক্ষা এই ব্যবস্থার মধ্যে কার্যকর কি না, তার বিশ্লেষণ দ্বারা বিভক্ত করা হবে। যেসব মডেলগুলোর মাধ্যমে এটি বিশ্লেষণ করা হবে তা হলো—বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা, সহপাঠীদের সাথে শেখা, অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা, সৃজনের মাধ্যমে শেখা, এবং গেমসের মাধ্যমে শেখা। সমন্বিত শিক্ষা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন বিষয়বস্তু শেখানো বা ভাগাভাগি করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের একে অপরের সাথে দলগত কাজ করার অভিজ্ঞতা দেয়। তবে, যদিও এটি শ্রেণিকক্ষে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দারুণ একটি ব্যবস্থা হিসেবে দেখা যায়, এটি কিছু সীমাবদ্ধতা বহন করে এবং এখনো পুরোপুরি কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিক্ষকদের এসব প্রযুক্তি ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়, তবে এগুলো সহায়ক এবং তথ্যবহুল হতে পারে।
প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন ধরন ও এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই যা বিবেচনা করতে হয় তা হলো—মানুষ কীভাবে শেখে? প্রায়ই দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী তথ্য শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে কারণ তারা বোঝার চেয়ে মুখস্থ করায় বেশি মনোযোগ দেয়<ref>Bransford, J. D., Brown, A. L., & Cocking, R. R. (2000). How people learn. Washington DC: National Academy Press. (pp. 1-50)</ref>। তবে, নোবেল বিজয়ী হারবার্ট সাইমনের একটি চমৎকার উক্তি আছে—“জানার অর্থ এখন আর কেবল স্মরণ করা ও পুনরাবৃত্তি করা নয়, বরং এটি কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় ও কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা জানা।” বিষয়বস্তুর প্রতি ভালোভাবে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রকৃত তথ্যজ্ঞান, ধারনার কাঠামোতে তথ্য ও ধারণা বোঝা এবং জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে মনে পড়ে ও প্রয়োগ করা যায়। এর মানে হলো—যদি শিক্ষার্থীরা প্রকৃত তথ্যভিত্তিক ভিত্তি রাখে, তবে তারা জানবে কোন তথ্য সত্য এবং তাদের শেখার সাথে প্রাসঙ্গিক। ধারনার কাঠামোতে তথ্য বোঝা মানে হলো শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে শিখছে তার প্রেক্ষাপটে তথ্যের তাৎপর্য বুঝতে পারছে এবং কিভাবে তা ঐ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে উদ্ধার ও প্রয়োগযোগ্য হয়, মানে হলো শিক্ষার্থীরা যা শিখেছে বা শিখছে তা অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োগ করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে এসবের বাস্তবায়নে কিছু অসুবিধা দেখা যায়। শিক্ষকরা সমস্যায় পড়েন কারণ শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে আগে থেকে কিছু ধারণা নিয়ে আসে। একই সঙ্গে, শিক্ষকদের একটি নির্ধারিত পাঠসূচি শেষ করতে হয়, এবং যখন তাদের প্রতিটি বিষয়ে গভীরভাবে যেতে হয় বা কোনো অংশ বারবার শেখাতে হয়, তখন তা কঠিন হয়ে পড়ে। শিক্ষাজীবনে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে অনেক শিক্ষক বিশ্বাস করেন যে পূর্ববর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয় শিখে এসেছে, কিন্তু তা সবসময় সঠিক নয়। কিছু শিক্ষার্থী মনে করতে পারে তারা পিছিয়ে পড়েছে, বা তারা প্রশ্ন করতে কিংবা সাহায্য চাইতে লজ্জা পায়। এখানেই প্রযুক্তি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে এবং শ্রেণিকক্ষে বা শিক্ষার্থীর নিজস্ব সময়ে ব্যবহারের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, এই প্রযুক্তি ব্যবস্থাগুলো শিক্ষকের বিকল্প নয়, বরং শিক্ষকের পাঠের পরিপূরক হিসেবে কাজ করা উচিত। এগুলোর কাজ শেখার ভিত্তি তৈরি করা নয়, বরং পরীক্ষার প্রস্তুতি বা প্রকল্পে সহায়তার জন্য পর্যালোচনার উপকরণ হিসেবে কাজ করা। শিক্ষকরা যদি এগুলোর উপর অতিরিক্ত নির্ভর করে, তবে শিক্ষার্থীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও মিথস্ক্রিয়া হারিয়ে ফেলবে যা শুধুমাত্র একজন বাস্তব শিক্ষক থেকেই পাওয়া সম্ভব। প্রযুক্তিকে শিক্ষকের বিকল্প হিসেবে দেখা সঠিক পন্থা নয়, বরং এটি একটি সহায়ক সরঞ্জাম হিসেবে দেখা উচিত।
এই ব্যবস্থাগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া যাক—
'''বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা: কগনিটিভ টিউটর ও টেলিমেন্টরিং'''
প্রযুক্তি ব্যবস্থার প্রথম ধরণটি হলো বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা। এর দুটি উদাহরণ হলো '''কগনিটিভ টিউটর''' এবং টেলিমেন্টরিং। '''কগনিটিভ টিউটর''' হলো “এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা ‘কার্যকরভাবে শেখা’কে সহায়তা করে” <ref>Bollen, L., Harrer, A., Mclaren, B. M., Seawall, J., & Walker, E. (1995) Collaboration and Cognitive Tutoring: Integration, Empirical Results, and Future Direction</ref>। কগনিটিভ টিউটর জন অ্যান্ডারসনের ACT তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এই তত্ত্বে তিনটি মূলনীতি রয়েছে—প্রথমটি হলো প্রক্রিয়াগত ও ঘোষণামূলক জ্ঞানের পার্থক্য, দ্বিতীয়টি হলো জ্ঞান সংকলন এবং তৃতীয়টি হলো অনুশীলনের মাধ্যমে জ্ঞানকে মজবুত করা। <ref>Anderson, J., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned: Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207.</ref> কগনিটিভ টিউটরের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট প্রসঙ্গভিত্তিক প্রতিক্রিয়া সরবরাহ করা। মূলত গণিত এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিক্ষায় কগনিটিভ টিউটর ব্যবহৃত হয়। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করার সুযোগ দেয়, ফলে তারা বিষয়বস্তুর গভীরতা অনুধাবন করতে পারে এবং অন্যদের সাথে যৌথভাবে সমস্যা সমাধানে অংশ নিতে পারে।
কগনিটিভ টিউটরের ওপর একটি গবেষণা করেছিলেন কেনেথ আর. কোয়েডিংগার। এর শিরোনাম ছিল ''Intelligent Tutoring Goes To School in the Big City'' (বড় শহরের স্কুলে বুদ্ধিসম্পন্ন টিউটরিং চলে)। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, “পিটসবার্গ নগর গণিত প্রকল্" (PUMP) একটি বীজগণিত পাঠক্রম তৈরি করেছে যা বাস্তব জীবনের সমস্যার গাণিতিক বিশ্লেষণ এবং কম্পিউটেশনাল টুল ব্যবহারের ওপর কেন্দ্রীভূত। আমরা PAT নামের একটি বুদ্ধিমান টিউটর তৈরি করেছি, যা এই পাঠক্রমকে সহায়তা করে এবং এটি পিটসবার্গের তিনটি স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। PAT শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক ছিল কারণ এটি শ্রেণিকক্ষে যারা শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ত তাদের সহায়তা করত। ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে PAT পাঠক্রমটি ১০টি পাঠ ও ২১৪টি সমস্যার অন্তর্ভুক্তিতে সম্প্রসারিত হয়। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন কম্পিউটার ল্যাবে PAT-এ কাজ করত, এবং তাদের শেখার সময় আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (প্রায় ২৫ দিন থেকে ৭০ দিনে) বৃদ্ধি পায়।” <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997).Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>
টেলিমেন্টরিং, যা ‘ই-মেন্টরিং’ বা ‘অনলাইন-পরামর্শ’ নামেও পরিচিত <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>, শিক্ষার্থীদের এমন একজন ব্যক্তির সাথে কাজ করার সুযোগ দেয় যিনি তাদের কোর্স উপাদানের সমস্যায় সহায়তা করতে পারেন। এই মেন্টরিং প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন এবং সমস্যার সমাধান কেন্দ্রিক। তবে টেলিমেন্টরিং-এর একটি সীমাবদ্ধতা হলো, শিক্ষার্থীরা একই পরামর্শদাতার সাথে বারবার কাজ করতে পারে না। তারা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করলেও একজন শিক্ষকের সাথে যেরকম ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে, তা হয় না। সরাসরি একজন শিক্ষকের সাথে শিখন এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেখার মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি ভিন্ন, যা শিক্ষার্থী ও পরামর্শকের মধ্যে সংযোগহীনতার অনুভূতি তৈরি করতে পারে। কগনিটিভ টিউটর বা সফটওয়্যার নির্ভর শেখার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
'''সহপাঠীদের সঙ্গে শেখা: নলেজ ফোরাম ও স্টারবার্স্ট'''
নলেজ ফোরাম একটি সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষার্থীরা ধারণাগুলো নিয়ে কাজ করে এবং তা বিকশিত করে। এটি ব্যক্তির পরিবর্তে সম্প্রদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এখানে শিক্ষার্থীরা বা ব্যক্তিরা এমন একটি ডেটাবেস তৈরি করতে পারে যেখানে জ্ঞান গঠিত হয়, আর এখানে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নলেজ ফোরামের মূল উপাদান হলো ‘নোট’ এবং ‘ভিউ’ <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। একটি ভিউ হলো ব্যক্তিরা যে নোট তৈরি করে সেগুলোর একটি সংগঠিত রূপ, যা ধারণা মানচিত্র, চিত্র বা যেকোনো ভিজ্যুয়াল কাঠামো হতে পারে। এই কাঠামোর মধ্যেই নোটগুলো প্রদর্শিত হয়। এটি বিশেষভাবে সহায়ক কারণ এটি ভিজ্যুয়াল লার্নিংকেও অন্তর্ভুক্ত করে। শিক্ষার্থীরা চিত্র ও মানচিত্রের মাধ্যমে ধারণাগুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি করতে এবং তা বোঝার সুযোগ পায়। এটি এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দলগতভাবে কাজ করতে পারে এবং একটি ডেটাবেসে তথ্য যোগ করতে পারে, যা সময়ের সাথে সাথে প্রসারিত হয়।
তবে জ্ঞান অর্জনের জন্য শুধুমাত্র নলেজ ফোরামই একমাত্র মাধ্যম নয়। বই, বক্তৃতা ও শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি পায়। নলেজ ফোরাম মূলত একটি ডেটাবেস যেখানে একটি বিষয় বিকশিত ও রূপান্তরিত হয়। নলেজ ফোরামের অনুরূপ স্টারবার্স্ট নামের আরও একটি পদ্ধতিও রয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে ধারণা ভাগাভাগি করতে পারে। তবে স্টারবার্স্টে ধারণাগুলো একটি জালের মতো বিস্তৃত হয়। এই দুটি পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান গঠন ও সম্প্রসারণ।
নলেজ ফোরাম ব্যবহার করে ক্যারল এবং ইউয়েন ইয়ান চ্যান একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে:
“নমুনায় হংকংয়ের আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফর্ম ওয়ান থেকে সিক্স (বয়স ১২–১৭) পর্যন্ত ৫২১ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা কম্পিউটার-সহায়িত জ্ঞান নির্মাণের ওপর একটি গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিল। নমুনার মধ্যে ৩২২ জন পুরুষ এবং ১৯৯ জন মহিলা শিক্ষার্থী ছিল। সেখানে ২১৬ জন জুনিয়র হাই (গ্রেড ৭–৯, বয়স ১২–১৪) এবং ৩০৫ জন সিনিয়র হাই (গ্রেড ১০–১২, বয়স ১৫–১৭) শ্রেণির। হংকংয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কৃতিত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যান্ডে ভাগ করা হয়; এখানে ২৬৭ জন শিক্ষার্থী উচ্চ ব্যান্ড এবং ২৫৪ জন নিম্ন ব্যান্ডের স্কুল থেকে এসেছে। এই গবেষণাটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়-বিদ্যালয় অংশীদারিত্ব প্রকল্পের অংশ ছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য জ্ঞান নির্মাণ পেডাগজি উন্নয়ন করা। প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক/পরামর্শকগণ শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা করতেন। পুরো বছরজুড়ে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করা হতো যাতে শিক্ষকরা জ্ঞান নির্মাণের দার্শনিক ও পদ্ধতিগত দিকটি ভালোভাবে বুঝতে পারেন; প্রকল্প শিক্ষকদের একটি দল মিলে পাঠক্রম পরিকল্পনা করতেন এবং শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শনে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ও শিক্ষক একসাথে যেতেন।
একটি আদর্শ জ্ঞান নির্মাণশীল শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষার্থীরা সাধারণত অনুসন্ধানের ক্ষেত্র নির্ধারণ করে এবং তাদের নিজস্ব ধারণা ও প্রশ্ন উপস্থাপন করে—‘ধারণাগুলোকে জনসমক্ষে তুলে ধরা’কে সমষ্টিগত উন্নয়নের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয় <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। এশীয় শ্রেণিকক্ষগুলিতে শিক্ষার্থীদের একটি সম্প্রদায় হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা পাওয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পে শ্রেণিকক্ষ ও অনলাইন আলোচনার সমন্বয় ছিল। সেখানে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতামূলক অনুসন্ধানে অংশগ্রহণ করত—প্রশ্ন উপস্থাপন, ধারণা ও তত্ত্ব প্রকাশ, অন্যদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ এবং সমষ্টিগত জ্ঞান উন্নয়নে ব্যাখ্যা গঠন করত।
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল দুটি প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে, যেগুলো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার অভিজ্ঞতা এবং অনলাইন শেখার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করেছিল। বিশ্লেষণের সময় অনলাইন শেখার পরিবর্তনশীল প্রতিক্রিয়াযুক্ত উপাদানগুলো বাদ দিয়ে কেবলমাত্র জ্ঞান নির্মাণ এবং শেখার পদ্ধতির উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের নলেজ ফোরাম ব্যবহারের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের জন্য Analytic Toolkit (বিশ্লেষণাত্মক টুলকিট) ব্যবহার করা হয়েছিল। অ্যানালাইটিক টুলকিট সংস্করণ ৪.৬ শিক্ষার্থীদের অনলাইন ফোরামে পারস্পরিক যোগাযোগের ধরণ বিশ্লেষণের জন্য সর্বোচ্চ ২৭টি বিশ্লেষণ সরবরাহ করে।
আমরা আগের গবেষণাগুলোতে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচক নির্বাচন করেছি, যেমন:
(i) লিখিত নোটের সংখ্যা: এটি অনলাইন অংশগ্রহণ পরিমাপের সবচেয়ে প্রচলিত সূচক। (ii) স্ক্যাফোল্ডস: স্ক্যাফোল্ড হলো চিন্তার সূচক বাক্যাংশ যা শিক্ষার্থীদের চিন্তা গঠনে সহায়তা করে, যেমন “আমি বুঝতে চাই”, “আরও ভালো একটি তত্ত্ব”, “আমাদের জ্ঞান একত্রিত করা”। (iii) সংশোধন: শিক্ষার্থীরা নোট সংশোধনের চেষ্টা করলে তা রেকর্ড করা হয়। জ্ঞান নির্মাণের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ধারণার ওপর গভীর কাজের ইঙ্গিত দেয়। (iv) পড়া নোটের সংখ্যা: এটি কমিউনিটি সচেতনতা যাচাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অন্যদের কী লেখা হয়েছে তা না জেনে আলোচনায় অংশ নেওয়া যায় না। (v) বিল্ড-অন নোটের সংখ্যা: এটি নতুন নোট পোস্ট করার সংখ্যা থেকে আলাদা, এটি পূর্ববর্তী নোটের প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে। এটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার গভীরতা বোঝায়। (vi) কীওয়ার্ড: শিক্ষার্থীরা নোট লেখার সময় কীওয়ার্ড যোগ করতে পারে। এই কীওয়ার্ড ব্যবহার করে অন্যরা সম্পর্কিত বিষয়ে আরও নোট খুঁজে পেতে পারে। কীওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং কমিউনিটি সচেতনতা প্রকাশ পায়।” <ref>Chan, C. Chan, Y. (2010). Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1), Aug, 2011. pp. 1445-1457</ref>
'''অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা: অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশন ও WISE'''
অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে ''দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ জ্যাসপার উডবারি সিরিজ'' নামে পরিচিত ভিডিওভিত্তিক সমস্যা সমাধানের একটি জটিল সিরিজ। এই সিরিজগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন প্রতিটি জ্যাসপার অ্যাডভেঞ্চার একটি জটিল গাণিতিক সমস্যার উপর কেন্দ্রীভূত থাকে, যা সমাধান করতে হয়। যেহেতু এই ধরনের গাণিতিক সমস্যা অনেক জটিল, তাই একা একা সমাধান করা প্রায় অসম্ভব। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাধিক সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং তাদের ধারণাকে সঠিক প্রমাণ করতে প্রমাণ হাজির করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে ওঠে, কারণ এখানে শুধুমাত্র একটি সঠিক উত্তর নেই। শিক্ষার্থীরা আরেকটি উপায়ে একসাথে কাজ করে সমস্যার সমাধান করতে পারে, যার নাম হলো WISE (Web-based Inquiry Science Environment)। এখানে শিক্ষার্থীরা একটি ওয়েবভিত্তিক পরিবেশে একত্রে কাজ করে এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা রিসাইক্লিং সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে। WISE ব্যবহার করে শিক্ষকরা একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা যেসব সমাধান দিচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। “WISE নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রমাণ ও পরামর্শ সরবরাহ করে; নোট, ভিজ্যুয়ালাইজেশন, আলোচনা ও মূল্যায়ন টুলস প্রদান করে; এবং সহযোগিতা, আত্মবিশ্লেষণ ও সমাধান ডিজাইন করার জন্য নির্দেশনা দেয়” <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের মূল ভাবনা হলো, শিক্ষার্থীরা প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতিতে শেখার মাধ্যমে জ্ঞান নির্মাণ করে। এতে উৎপাদনশীল শেখার সুযোগ ঘটে। সেখানে বিভিন্ন উপ-লক্ষ্য তৈরি হয়। WISE-এর মতো প্রোগ্রামে মূল ভাবনাগুলো হলো, শেখার উদ্দেশ্য থাকে নির্ধারিত এবং শিক্ষার্থীরা পূর্বের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে প্রশ্নের উত্তর খোঁজে।
'''সৃষ্টির মাধ্যমে শেখা: স্ক্র্যাচ'''
সৃষ্টির মাধ্যমে শেখার একটি উদাহরণ হলো স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম। এটি একটি ওয়েবসাইট যেখানে মিডিয়া ও ভিজ্যুয়াল উপাদান প্রধান ভূমিকা পালন করে। স্ক্র্যাচ-এ শিক্ষার্থীরা এককভাবে বা দলগতভাবে কাজ করে একটি অনলাইন কমিউনিটির জন্য ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে পারে। তারা একে অপরের সঙ্গে তাদের তৈরি করা কাজগুলো ভাগাভাগি করতে পারে। স্ক্র্যাচ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অবজেক্টের মাধ্যমে চিন্তা করতে পারে, সেইসাথে তাদের কল্পনার জগৎ থেকে কিছু তৈরি করতে পারে। তারা তাদের ভিজ্যুয়াল সৃষ্টির সঙ্গে অডিওও যুক্ত করতে পারে। শিক্ষার্থীরা একসাথে কাজ করে এই প্রজেক্ট তৈরি করে এবং শ্রেণিকক্ষে তা উপস্থাপন করতে পারে, অথবা শিক্ষক নির্দিষ্ট কোনো থিম বা বিষয়ে ভিত্তি করে প্রজেক্ট নির্ধারণ করতে পারেন। এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে এবং সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ধরো তুমি অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস ক্লাসে আছো এবং তোমার চূড়ান্ত প্রজেক্টে সেমিস্টারে শেখা কোনো একটি বিষয় বেছে নিয়ে তার একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে হবে। প্রজেক্টটি দলগত বা এককভাবে করা যেতে পারে। তুমি তোমার দলের সদস্যদের সঙ্গে স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলে এবং শুরু করলে বিভিন্ন চরিত্র যেমন আহত সৈনিক, যোদ্ধা ইত্যাদি তৈরি করতে। তোমরা দলগতভাবে আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করছো এবং একে একে সেগুলো তৈরি করছো। ধীরে ধীরে তোমাদের কল্পনার ইতিহাসচিত্র বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখন তুমি সেই ইতিহাসের অংশটি একটি চিত্র হিসেবে দেখতে পাচ্ছো এবং তা সহপাঠীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছো।
'''গেমের মাধ্যমে শেখা: কোয়েস্ট আটলান্টিস'''
শিক্ষার্থীদের একসাথে কাজ করার আরেকটি উপায় হলো গেম। এর একটি উদাহরণ হলো কোয়েস্ট আটলান্টিস। এই গেমটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতি ও জগত উপস্থাপন করে। সেখানে তারা সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং বিভিন্ন কাজ বেছে নিয়ে সমাধান করতে হয়। এটি একটি আকর্ষণীয় গেম, তবে এটি শ্রেণিকক্ষের জন্য নয়, বরং শিক্ষার্থীদের অবসরের সময়ে খেলার জন্য উপযুক্ত। এই গেমটি '''প্রাসঙ্গিক শিক্ষার''' জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত; এটি এমন এক ধরনের শিক্ষা যেখানে সামাজিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করে শেখা হয়।
কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক শেখা শিক্ষার্থীদের উপকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার একটি চমৎকার উপায়। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে—যেমন শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ডিভাইস না থাকা, শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে শুধু প্রোগ্রামের সঙ্গে খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। আবার যেসব প্রোগ্রাম সমস্যা সমাধানের সময় বারবার সহায়তা বা হিন্ট দেয়, সেগুলোতে শিক্ষার্থীরা চেষ্টাই না করে কেবল সহায়তা নিতে থাকে। যদিও এই প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিগুলো অনেক সুবিধা নিয়ে আসে, তবুও এর নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সব প্রযুক্তি কখনোই শিক্ষার্থীদের শেখার প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত নয়; বরং এগুলো হওয়া উচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পরিপূরক সহায়তা।
== শব্দকোষ ==
'''জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব (Cognitive Load Theory):''' জন সোয়েলারের প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব, যা কার্যকর স্মৃতি ও নির্দেশনার ওপর গুরুত্ব দেয়।
'''জ্ঞানীয় শিক্ষক (Cognitive tutors)''': এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা 'গাইডেড লার্নিং বাই ডুয়িং' বা ‘করতে করতে শেখা’র জন্য দিকনির্দেশনা দেয়।
'''সহযোগী শিক্ষা''': বন্ধু বা দলীয়ভাবে জ্ঞান ভাগাভাগি ও শেখার প্রক্রিয়া।
'''দক্ষতা বিপরীত প্রভাব''': এমন একটি পর্যায়। সেখানে অতিরিক্ত কগনিটিভ লোডের কারণে সহায়তা ও নির্দেশনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
'''বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ (Extraneous Cognitive Load):''' উপস্থাপনার ধরন অনুযায়ী কার্যকর স্মৃতিতে প্রভাব পড়ার প্রক্রিয়া।
'''জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ (Germane Cognitive Load):''' কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ, যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যয় হয় এবং শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ (Intrinsic Cognitive Load):''' তথ্য যেভাবে উপস্থাপিত হয়, তার ভিত্তিতে স্মৃতির ওপর প্রভাব।
'''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা:''' প্রচেষ্টা-নির্ভর, ভুলপ্রবণ, সহজেই অতিভারযুক্ত এবং মনোযোগকেন্দ্রিক কাজ; =
'''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''': পদ্ধতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ; এগুলো অল্প বা কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ঘটে, উপাত্ত-চালিত এবং খুব কম বা কোনও সচেতন মনোযোগের প্রয়োজন হয় না
'''অবস্থিত শিক্ষা:''' সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত করে যে শিক্ষা অর্জিত হয়।
'''টাস্ক ক্লাস''': সহজ থেকে জটিল বা অর্থপূর্ণ কাজের দিকে অগ্রসর হওয়ার নীতিমালা।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
* Sarfo, F., & Elen, J. (2007). - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। How people learn. - মানুষ কিভাবে শেখে। ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1) - জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. - "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। doi:10.1007/s10984-007-9031-2
== তথ্যসূত্র ==
* - অ্যান্ডারসন, জে, কর্বেট, এটি, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং পেলেটিয়ার, আর (১৯৯৫)। জ্ঞানীয় শিক্ষক: শিখেছি পাঠ: লার্নিং সায়েন্সেসের জার্নাল, ৪ (২), ১৬৭-২০৭।
* - অ্যান্ডারসন, জে আর, হ্যাডলি, ডাব্লুএইচ, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং মার্ক, এমএ (১৯৯৭)। বুদ্ধিমান টিউটরিং বড় শহরের স্কুলে যায়। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন এডুকেশন (আইজেএআইইডি), ৮, ৩০-৪৩।
* বারাব, এসএ, ডজ, টি, এবং ইনগ্রাম-গোবল, এ (২০০৮)। রিফ্লেক্সিভ প্লে স্পেস: একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষা। ''গেমস, লার্নিং অ্যান্ড সোসাইটি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ, এমএ।''
* - ব্রুনিং, আর এইচ, শ্রাও, জি জে, এবং নর্বি, এম এম (২০১১)। Cognitive psychology and instruction (English ভাষায়) (৫th সংস্করণ)। পিয়ারসন।
* বোলেন, এল, হ্যারার, এ, ম্যাকলারেন, বিএম, সিওয়াল, জে, এবং ওয়াকার, ই (১৯৯৫) সহযোগিতা এবং জ্ঞানীয় টিউটরিং: ইন্টিগ্রেশন, অভিজ্ঞতামূলক ফলাফল এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
* - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। ''মানুষ কিভাবে শেখে।'' ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* - ক্রেগ, এস, ঘোলসন, বি, এবং ড্রিসকোল, ডি (২০০২)। "মাল্টিমিডিয়া শিক্ষাগত পরিবেশে অ্যানিমেটেড শিক্ষামূলক এজেন্ট: এজেন্ট বৈশিষ্ট্য, চিত্র বৈশিষ্ট্য এবং অপ্রয়োজনীয়তার প্রভাব"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৪ (২), ৪২৮-৪৩৪। ডিওআই:১০.১০৩৭//০০২২-০৬৬৩.৯৪.২.৪২৮
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* ↑ Kevin O'Neil, D., & Harris, J. B. (২০০৪)। পাঠ্যক্রম ভিত্তিক টেলিমেন্টরিং প্রোগ্রামগুলোতে সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উন্নয়নমূলক প্রয়োজনীয়তাগুলো ব্রিজ করা। ''শিক্ষায় প্রযুক্তি সম্পর্কিত গবেষণা জার্নাল, ৩৭ (২),'' ১১১-১২৮
* মায়ার, আর.ই., হাইজার, জে, এবং লন, এস (২০০১)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে জ্ঞানীয় সীমাবদ্ধতা: বেশি উপাদান উপস্থাপন করার সময় কম বোঝার ফলাফল হয়। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল ৯৩'' (১), ১৮৭-১৯৮।
* মেরিয়েনবোয়ার, জে, ক্লার্ক, আর, এবং ক্রুক, এম (২০০২)। জটিল শিক্ষার জন্য ব্লুপ্রিন্ট: ৪ সি / আইডি-মডেল। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫০ (২), ৩৯-৬৪।
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। ডিওআই:১০.১০০৭/s১০৯৮৪-০০৭-৯০৩১-২
* Scardamalia, M., & Bereiter, C. (২০০৬)। জ্ঞান নির্মাণ: তত্ত্ব, শিক্ষাবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি। ভিতরে আর কে সাওয়ার (সম্পাদনা)। ''লার্নিং সায়েন্সেসের কেমব্রিজ হ্যান্ডবুক'' (পৃষ্ঠা ৯৭-১১৮)। নিউ ইয়র্ক: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস।
* স্যালসবারি, ডিএফ, রিচার্ডস, বিএফ, এবং ক্লেইন, ডি (১৯৮৫)। ডিজাইনিং অনুশীলন: নির্দেশমূলক নকশা তত্ত্বগুলো থেকে প্রেসক্রিপশন এবং সুপারিশগুলোর একটি পর্যালোচনা। জার্নাল অফ ইনস্ট্রাকশনাল ডেভেলপমেন্ট, ৮ (৪), ৯-১৯।
* Schnotz, W., & Rasch, T. (২০০৫)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে অ্যানিমেশনগুলোর প্রভাবগুলো সক্ষম, সহজতর করা এবং বাধা দেওয়া: জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস কেন শেখার উপর নেতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫৩ (৩), ৪৭-৫৮।
* Sweller, J. (২০১০)। উপাদান ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি এবং অভ্যন্তরীণ, বহিরাগত এবং জার্মান জ্ঞানীয় চাপ। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা ২২'' (২), ১২৩-১৩৮। ডিওআই: ১০.১০০৭// এস ১০৬৪৮-০১০-৯১২৮-৫।
* , ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং পাস, এফ (১৯৯৮)। জ্ঞানীয় আর্কিটেকচার এবং নির্দেশমূলক নকশা। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা, ১০ (৩), ২৫১-২৯৬। doi:১০৪০-৭২৬X/৯৮/০৯০০-০২৫১S১৫.০০/০
* ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং আইরেস, পি (২০০৫)। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব এবং ই-লার্নিংয়ের জন্য এর নকশার প্রভাব নিয়ে গবেষণা। ''শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন ৫৩'' (৩), ৫-১৩।
{{সূত্র তালিকা}}{{BookCat}}
jdbjc01az5zyvfgal8zs6m6inwpn0g3
দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনের উদ্ভব
0
26301
85687
82160
2025-07-05T16:04:45Z
Mehedi Abedin
7113
85687
wikitext
text/x-wiki
== উৎপত্তি ==
[[File:Socrates BM GR1973.03-27.16.jpg|thumb|দার্শনিক সক্রেটিসের আবক্ষ মূর্তি। মূল গ্রিক মূর্তির রোমান সংস্করণ (আনুমানিক ৩৮০-৩৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)]]
=== ব্যুৎপত্তি ===
দর্শন শব্দটি গ্রিক শব্দদ্বয় 'ফাইলোস' এবং 'সোফি' থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ যথাক্রমে "ভালোবাসা" এবং "প্রজ্ঞা"।
===দর্শনের ভূমিকা ===
ফেডোতে সক্রেটিস লিখেছেন যে দর্শন হল আমাদের সকলের জন্য অপেক্ষা করা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি। মন যখন দর্শনে নিযুক্ত থাকে তখন এটি উদ্বেগমুক্ত থাকে এবং ধারণার ক্ষেত্রে বাস করে। আমাদের মন আমাদের শারীরিক অভিজ্ঞতার মৃত্যুকে অতিক্রম করে একটি আধ্যাত্মিক অঞ্চলে প্রবেশ করে। সক্রেটিসের আরেকটি, সুপরিচিত দৃষ্টিভঙ্গি হল 'জ্ঞানের প্রেম' হিসাবে দর্শন। এই প্রেম সত্য আবিষ্কার করে এবং যা আবিষ্কৃত হয়েছে তার ব্যবহারিক প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা জ্ঞানী হয়ে উঠি।
এই সংজ্ঞাগুলি দার্শনিক অনুসন্ধানের প্রকৃতি তুলে ধরে। দার্শনিকরা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন। এই প্রশ্নগুলি মানুষ এবং তাদের জগৎ সহ আধিভৌতিক এবং ভৌত মহাবিশ্বকে বোঝার চেষ্টা করে।
=== প্রাক-সক্রেটিসীয় ===
পশ্চিমে দর্শনের ইতিহাস শুরু হয় গ্রিকদের মাধ্যমে, বিশেষ করে প্রাক-সক্রেটিসীয় নামে পরিচিত দার্শনিকদের একটি দলের সাথে। এর অর্থ মিশরীয় এবং ব্যাবিলনীয় সংস্কৃতিতে অন্যান্য প্রাক-দার্শনিক গণ্ডগোলের ঘটনা অস্বীকার করা নয়। অবশ্যই এই সংস্কৃতিগুলির প্রতিটিতে মহান চিন্তাবিদ এবং লেখক ছিলেন এবং আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে প্রাচীনতম গ্রিক দার্শনিকদের মধ্যে কেউ কেউ মিশরীয় এবং ব্যাবিলনীয় চিন্তাধারার অন্তত কিছু সামগ্রীর সাথে সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। তবে, প্রাথমিক গ্রিই চিন্তাবিদরা কমপক্ষে একটি উপাদান যুক্ত করেছিলেন যা তাদের চিন্তাভাবনাকে তাদের পূর্ববর্তী সকলের থেকে আলাদা করে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা তাদের লেখায় বিশ্বের ক্রম সম্পর্কে গোঁড়ামিপূর্ণ দাবির চেয়েও বেশি কিছু আবিষ্কার করি - আমরা বিশ্ব সম্পর্কে বিভিন্ন বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তিসঙ্গত যুক্তি খুঁজে পাই।
==== থেলিস ====
মিলেটাসের থেলিস (গ্রিক ভাষায়: Θαλης) (প্রায় ৬২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৫৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) থেলিস দ্য মাইলসিয়ান নামেও পরিচিত, তিনি একজন প্রাক-সক্রেটিস গ্রিক দার্শনিক। অনেকে তাকে গ্রিক ঐতিহ্যের প্রথম দার্শনিক হিসেবেও বিবেচনা করেন। ঐতিহ্যগতভাবে তাকে বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়, যদিও এটাও যুক্তি দেওয়া হয় যে বিজ্ঞানের সূচনা প্রাচীন মিশরে হতে পারে।
===== জীবন =====
থেলিস বর্তমানে পশ্চিম তুরস্কের আইওনিয়ার মিলিটাস শহরে বাস করতেন। হেরোডোটাসের মতে, তিনি ফিনিশীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।
পরিব্রাজক আয়োনীয়দের মিশর এবং ব্যাবিলনের সাথে অনেক যোগাযোগ ছিল; থেলিস হয়তো যুবক বয়সে মিশরে পড়াশোনা করেছিলেন। যাই হোক, থেলিস প্রায় নিশ্চিতভাবেই মিশরীয় পুরাণ, জ্যোতির্বিদ্যা এবং গণিতের পাশাপাশি গ্রীসের হোমেরীয় ঐতিহ্যের বাইরের অন্যান্য ঐতিহ্যের সাথেও যোগাযোগ ছিল। সম্ভবত এই কারণেই, জিনিসের প্রকৃতি সম্পর্কে তার অনুসন্ধান ঐতিহ্যবাহী পুরাণের বাইরেও বিস্তৃত।
বেশ কিছু উপাখ্যান থেকে জানা যায় যে, থেলিস কেবল একজন চিন্তাবিদ ছিলেন না; তিনি ব্যবসা এবং রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। একটি গল্পে বলা হয়েছে যে, তিনি এক বছরের জন্য আবহাওয়া এবং ভালো ফসলের ভবিষ্যদ্বাণী করার পর মিলেটাসের সমস্ত জলপাই প্রেস কিনেছিলেন। একই গল্পের আরেকটি সংস্করণে বলা হয়েছে যে, তিনি তার সহকর্মী মাইলসীয় কাছে প্রমাণ করার জন্য প্রেসগুলি কিনেছিলেন যে, তিনি তার বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। হেরোডোটাস লিপিবদ্ধ করেছেন যে, থেলিস আয়োনিয়া নগর-রাজ্যগুলিকে একটি সংঘ গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
বলা হয়ে থাকে যে, থেলিস একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখার সময় তার আসনে মারা যান।
===== তত্ত্ব এবং প্রভাব =====
থেলিসের আগে গ্রিকরা নৃতাত্ত্বিক দেবতা এবং বীরদের পৌরাণিক কাহিনীর মাধ্যমে পৃথিবীর উৎপত্তি এবং প্রকৃতি ব্যাখ্যা করেছিলেন। বজ্রপাত বা ভূমিকম্পের মতো ঘটনাগুলি দেবতাদের কর্মের জন্য দায়ী করা হত।
অন্যদিকে, থেলিস অতিপ্রাকৃতের উল্লেখ ছাড়াই পৃথিবীর প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ভূমিকম্প ব্যাখ্যা করেছিলেন এই কল্পনা করে যে পৃথিবী জলের উপর ভাসছে এবং যখন পৃথিবী তরঙ্গ দ্বারা কাঁপছে তখন ভূমিকম্প ঘটে। হেরোডোটাস তাকে ৫৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সূর্যগ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন, যা লিডিয়ান এবং মেডিসের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
থেলিসের সবচেয়ে বিখ্যাত বিশ্বাস ছিল তার মহাজাগতিক মতবাদ, যেখানে বলা হয়েছিল যে পৃথিবী জল থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। কখনও কখনও ধারণা করা হয় যে থেলিস সবকিছুকে জল থেকে তৈরি বলে মনে করতেন। তবে অন্যদের মতে, সম্ভবত থেলিস জলকে একটি উৎস হিসেবে দেখলেও, তিনি কখনও চিন্তা করেননি যে জলই বিশ্বের উপাদান কিনা।
অনেক দার্শনিক অতিপ্রাকৃতের পরিবর্তে প্রকৃতিতে ব্যাখ্যা অনুসন্ধানে থেলিসের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন; অন্যরা অতিপ্রাকৃত ব্যাখ্যার দিকে ফিরে এসেছিলেন, কিন্তু পৌরাণিক কাহিনী বা ধর্মের পরিবর্তে দর্শনের ভাষায় ব্যাখ্যা করেছিলেন।
থেলিসকে প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতিতে (প্রধানত স্থানিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে) জ্যামিতিকে প্রথম জনপ্রিয় করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
থেলিসের দৃষ্টিভঙ্গির সর্বোত্তম ব্যাখ্যা হল [[w:অ্যারিস্টটল|অ্যারিস্টটলের]] ''[[w:অধিবিদ্যা|অধিবিদ্যা]]'' (৯৮৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) থেকে নিম্নলিখিত অংশটি। পাঠকের সুবিধার্থে গ্রিক থেকে মূল বাক্যাংশগুলি অনুবাদ করে এই অংশটি দেওয়া হয়েছে। পাঠক পদার্থ এবং রূপের তত্ত্ব থেকে প্রাপ্ত শব্দগুলি লিপ্যন্তরে দেখতে পাবেন যা বিজ্ঞান বেশ ভিন্ন অর্থে গ্রহণ করেছে। নির্ভুলতার উদ্দেশ্যে অনুবাদটি কিছুটা আক্ষরিক।
: "যা থেকে যা কিছু বিদ্যমান (ta onta) এবং যা থেকে এটি প্রথমে (ex hou gignetai protou) হয়ে ওঠে এবং অবশেষে যেখানে এটি অনুবাদ করা হয় (eis ho phtheiretai teleutaion), এর পদার্থ এর অধীনে থাকে (tes men ousias hypomenouses), কিন্তু গুণাবলীতে রূপান্তরিত হয় (pathesi metaballouses), যা তারা বলে যে (ton onton) জিনিসের উপাদান (stoicheion) এবং নীতি (archen)।"
এবং আবার:
:"কারণ এটি (dei) আবশ্যক যে কিছু প্রকৃতি (physin), হয় এক বা একাধিক, যা থেকে (gignetai) বস্তুর অন্যান্য জিনিস (t'alla) সংরক্ষিত হচ্ছে (sozomenes ekeines)... থ্যালিস বলেছেন যে এটি জল (hydor)।"
পরিবর্তন সমস্যার অ্যারিস্টটলের চিত্রণ এবং পদার্থের সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট হতে পারে না। যদি কোনও বস্তু পরিবর্তিত হয়, তবে এটি কি একই বা ভিন্ন? উভয় ক্ষেত্রেই একটি থেকে অন্যটিতে কীভাবে পরিবর্তন (metabollein) হতে পারে? উত্তর হল পদার্থ (ousia বা physis), যা "সংরক্ষিত" হয়, কিন্তু বিভিন্ন গুণাবলী অর্জন করে বা হারায় (pathe, আপনি যে জিনিসগুলি "অভিজ্ঞতা করেন")।
পদার্থ এবং রূপ তত্ত্বের জলে আরও গভীরভাবে ডুব দেওয়া অন্যান্য নিবন্ধের জন্য সঠিকভাবে সংরক্ষিত। এই নিবন্ধের জন্য প্রশ্ন হল, অ্যারিস্টটল থেলিসকে কতদূর প্রতিফলিত করেন? তিনি সম্ভবত খুব বেশি দূরে ছিলেন না, এবং থেলিস সম্ভবত একজন প্রাথমিক পদার্থ-রূপবাদী ছিলেন।
মূলত অ-দার্শনিক ডিএল বলে যে থেলিস নিম্নলিখিতভাবে শিক্ষা দিয়েছিলেন:
:"জল সকল কিছুর মূলনীতি (hypestesato, "অধীনে দাঁড়িয়ে")।"
[[w:Heraclitus Homericus|হেরাক্লিটাস হোমেরিকাস]] (Quaes. Hom. 22, ইফেসাসের হেরাক্লিটাসের মতো নয়) বলে যে থেলিস তার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন আর্দ্র পদার্থ (hygra physis) কে বাতাস, কাদা এবং মাটিতে রূপান্তরিত হতে দেখে। এটা স্পষ্ট যে থেলিস পৃথিবীকে সেই জল থেকে শক্ত হয়ে যাওয়া হিসাবে দেখেছিলেন যার উপর এটি ভাসছিল এবং যা এটিকে মহাসাগর হিসাবে ঘিরে রেখেছিল।
থেলিস তার পদ্ধতিটি এমন বস্তুর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছিলেন যা অন্যান্য বস্তুতে পরিণত হয়েছিল, যেমন জল মাটিতে পরিণত হয়েছিল (তিনি ভেবেছিলেন)। কিন্তু পরিবর্তন সম্পর্কে? থেলিস বিষয়টিকে চুম্বক এবং অ্যাম্বারের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন - যা ঘর্ষণের মাধ্যমে বিদ্যুতায়িত হলে, একইভাবে আকর্ষণ করে।
চালকের পরিবর্তন ছাড়াই অন্যান্য জিনিসকে সরানোর শক্তি কীভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল? থেলিস জীবন্ত জিনিসের কাজ করার ক্ষমতার সাথে একটি মিল দেখেছিলেন। চুম্বক এবং অ্যাম্বার অবশ্যই জীবিত, এবং যদি তাই হয়, তাহলে জীবিত এবং মৃতের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকতে পারে না। যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে যদি কোন পার্থক্য না থাকে তবে তিনি কেন মারা যাননি, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন "কারণ কোন পার্থক্য নেই।"
অ্যারিস্টটল আত্মাকে জীবনের নীতি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন, যা পদার্থকে পরিব্যাপ্ত করে এবং এটিকে জীবিত করে, এটিকে নড়াচড়া বা কাজ করার ক্ষমতা দেয়। ধারণাটি তার কাছ থেকে আসেনি, কারণ গ্রিকরা সাধারণত মন এবং পদার্থের মধ্যে পার্থক্যে বিশ্বাস করত, যা শেষ পর্যন্ত কেবল শরীর এবং আত্মার মধ্যেই নয় বরং পদার্থ এবং শক্তির মধ্যেও পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করত।
যদি জিনিসগুলি জীবিত থাকে, তবে তাদের অবশ্যই আত্মা থাকতে হবে। এই বিশ্বাস কোনও উদ্ভাবন ছিল না, কারণ ভূমধ্যসাগরের সাধারণ প্রাচীন জনগোষ্ঠী বিশ্বাস করত যে প্রাকৃতিক ক্রিয়াগুলি দেবত্বের দ্বারা সৃষ্ট। সেই অনুসারে, সূত্রগুলি বলে যে থেলিস বিশ্বাস করতেন যে সমস্ত জিনিসের মধ্যে দেবত্ব রয়েছে। তাকে সবকিছুতে প্রথম করার জন্য তাদের উৎসাহে তারা বলেছিলেন যে তিনিই প্রথম বিশ্বাস ধারণ করেন, যা তারা অবশ্যই জানত যে সত্য নয়।
যাইহোক, থেলিস আরও সাধারণ কিছু খুঁজছিলেন, মনের একটি সার্বজনীন পদার্থ। সেই সময়ের বহুঈশ্বরবাদের ক্ষেত্রেও এটি সত্য ছিল। জিউস ছিলেন সর্বোচ্চ মনের প্রতীক, যা সমস্ত অধস্তন প্রকাশকে প্রাধান্য দিয়েছিল। তবে, থেলিস থেকে শুরু করে দার্শনিকদের মধ্যে মনকে বস্তুগত রূপ দেওয়ার প্রবণতা ছিল, যেন এটি নিজেই নড়াচড়ার সারবস্তু এবং প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য দেবতাদের মতো কোনও দেবতা নয়। এর পরিণতি ছিল মনকে পদার্থ থেকে সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করা, কর্মের একটি অ-ঐশ্বরিক নীতির দরজা খুলে দেওয়া। আইনস্টাইনের আগ পর্যন্ত এই ঐতিহ্য টিকে ছিল, যার সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং পদার্থ এবং শক্তির মধ্যে পার্থক্য করে না।
তবে, ধ্রুপদী চিন্তাভাবনা সেই পথে খুব সামান্য পথ এগিয়েছিল। ব্যক্তি, জিউসের কথা উল্লেখ না করে, তারা মহান মনের কথা বলেছিলেন:
: "থেলিস", সিসেরো বলেন, "আশ্বস্ত করেন যে জলই সকল কিছুর মূলনীতি; এবং ঈশ্বর হলেন সেই মন যিনি জল থেকে সমস্ত কিছুকে আকৃতি দিয়েছেন এবং সৃষ্টি করেছেন।" (সিসেরো: "De Nat.Deorum,"i.,10.)
সার্বজনীন মন ভার্জিলের একটি রোমান বিশ্বাস হিসাবেও আবির্ভূত হয়:
: "শুরুতে, আত্মা স্বর্গ ও পৃথিবীকে শক্তিশালী করে,
: জলময় ক্ষেত্র এবং লিনার উজ্জ্বল গ্লোব, এবং তারপর --
: টাইটান তারা; এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে মন অনুপ্রাণিত হয়
: সমগ্র ভরকে উত্তেজিত করে, এবং নিজেকে মহান পদার্থের সাথে মিশে যায়"
:(ভার্জিল: "Aeneid," vi., 724 ff.)
=== সক্রেটিস ===
সক্রেটিস (আনু. ৪৭০ - ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্ব) (গ্রিক Σωκράτης সোক্রেটিস) ছিলেন একজন গ্রিক (এথেনীয়) দার্শনিক। থেলিস এবং অন্যান্য প্রাক-সক্রেটিকদের মতো, সক্রেটিসেরও জীবনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। তবে, প্রাক-সক্রেটিসীয়রা যেখানে মহাজাগতিক প্রশ্নগুলির ব্যাপারে বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন, সেখানে সক্রেটিস নিম্নলিখিত প্রকৃতির প্রশ্নগুলির সাথে উদ্বিগ্ন ছিলেন: ধার্মিকতা কী? একজন মানুষের জন্য কোন ধরণের জীবনযাপন করা মূল্যবান? সদ্গুণ শেখানো কি? ন্যায়বিচার কী? ব্যক্তির সদ্গুণের চেয়ে কি বেশি কিছু আছে? মানবিক শ্রেষ্ঠত্ব কী?
সক্রেটিস আসলে এই ধারণাগুলির কোনওটিই লিখে রাখেননি। তাঁর দর্শন সম্পর্কে একমাত্র লিখিত তথ্য প্লেটো এবং জেনোফোনের সংলাপে পাওয়া যায়। এই সংলাপগুলি বেশিরভাগই ভালো জীবন, মানবিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং জ্ঞানের চাষের প্রশ্নগুলির সাথে সম্পর্কিত। প্লেটোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বাধিক পরিচিত রচনাগুলির মধ্যে একটি হল "দ্য রিপাবলিক" যেখানে আমরা "দ্য কেভ" এর রূপকটি পাই যা অনুভূত বাস্তবতা এবং "বাস্তব" বাস্তবতার মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করে যা প্লেটোর মতে, কেবল ধারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আরও: [http://www.wsu.edu:8080/~dee/GREECE/SOCRATES.HTM গ্রিক দর্শন: সক্রেটিস]
<noinclude>{{chapnavtoc|দর্শন কী করছে?|যুক্তিবিদ্যা|Mini TOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
733upa7iw34iughvatd5py3tsb613wj
পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/প্রাথমিক ধারণা/পুনর্লিখন
0
26376
85690
82454
2025-07-05T16:21:49Z
Mehedi Abedin
7113
85690
wikitext
text/x-wiki
=নথিপত্র পুনর্লিখন ও সম্পাদনা=
==কেন পুনর্লিখন করবেন?==
যেকোনো প্রেক্ষাপটেই পুনর্লিখন লেখার প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। খসড়া লেখার সময় পাঠককেন্দ্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করলেও পুনর্লিখনের মাধ্যমে সর্বদা আরও উন্নতি সাধন করা সম্ভব।
একজন সফল লেখক হওয়ার জন্য '''পুনর্লিখন''' অপরিহার্য। লেখার সময় দক্ষ লেখকেরা জানেন বিশেষ করে পেশাগত পরিসরে যোগাযোগের জন্য ব্যবহারযোগ্য নথি রচনায় পাঠককেন্দ্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো নথি ''পুনর্লিখনের'' মাধ্যমে তার ব্যবহারযোগ্যতা ও প্রভাবমূলকতা বৃদ্ধি পায়। তবে এটিও মনে রাখা দরকার যে ''পুনর্লিখন'' কেবল কিছু পরিবর্তন নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা একটি সফল নথি তৈরির ক্ষেত্রে অপরিহার্য। একটি নথি পুনর্লিখনের জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও নীতিমালা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
==পুনর্লিখন বনাম সম্পাদনা==
সম্পাদনা হল একটি নথিতে সামান্য পরিবর্তন আনা বা যা কিছু আগে থেকে রয়েছে সেটির গঠন ও বিন্যাসে কিছুটা হেরফের করা। এর তুলনায় পুনর্লিখন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে নথিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়, যেমন নতুন লেখা বা সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদ যোগ করা। '''পুনর্লিখনের সময় উপস্থাপনাভঙ্গি পরিবর্তন করা যায়। পুনর্লিখন সম্পাদনার তুলনায় অধিক সময়সাপেক্ষ কারণ এতে সাধারণ জ্ঞানের চেয়ে বিশ্লেষণী চিন্তাভাবনার বেশি প্রয়োজন হয়।''' --[[User:Nardi82|Nardi82]] ([[User talk:Nardi82|talk]]) 19:22, 30 April 2010 (UTC)
<u>'''সম্পাদনার উদাহরণসমূহ'''</u>
*ভুল বানান সংশোধন
*দ্ব্যর্থতা বা অস্পষ্ট বাক্য পুনর্গঠন
*বিরামচিহ্ন যোগ করা
<u>'''পুনর্লিখনের উদাহরণসমূহ'''</u>
*মূল প্রতিপাদ্য পরিবর্তন করা
*সহায়ক প্রমাণ সহ নতুন অনুচ্ছেদ যোগ করা
*বিষয়বস্তু সহজে বোঝার জন্য গ্রাফিক্স যোগ করা
*অপ্রয়োজনীয় বা অপ্রাসঙ্গিক অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া
অনেক সময় সম্পাদনা ও পুনর্লিখন একই সাথে করা হলেও এ দুটিকে আলাদা বিষয় হিসেবে চিন্তা করা উপযোগী। লেখকেরা অনেক সময় সম্পাদনার মাঝখানে হঠাৎ করে কোনো অংশ পুনর্লিখনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং এটি অবশ্যই খারাপ কিছু নয়। তবে মনে রাখতে হবে যে নতুন অংশটি যুক্ত করা হয়েছে সেটিও অবশ্যই সম্পাদনার আওতায় আনতে হবে। তা না হলে সম্পাদনার সময় ওই অংশটি ভুলবশত বাদ পড়ে যেতে পারে।
==নিজের খসড়া পুনর্লিখন==
নিজের খসড়া পুনর্লিখনের সময় ''পাঁচটি নির্দেশিকা'' বিবেচনা করা উচিত।
'''১. পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করুন।''' যতটা সম্ভব বিরামচিহ্ন, ব্যাকরণ বা বানান নিয়ে চিন্তা না করে আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ওপর গুরুত্ব দিন। আপনি চান পাঠকরা আপনার খসড়াটি পড়ে কী নিয়ে ভাবুক? আপনি চান তারা কী অনুভব করুক? আপনার উদ্দেশ্যগুলি স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করার পর খসড়াটি ধীরে ধীরে পড়ুন এবং ভাবুন—পাঠকের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? পাঠক কোন কোন অংশ পরিবর্তনের প্রস্তাব দিতে পারে? আপনার খসড়াটি কি একজনকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে? আপনার উদ্দেশ্যগুলি কি পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে? এতে থাকা তথ্য কি পাঠকের জন্য সহায়ক?
এই সব প্রশ্ন বিবেচনায় নিন। চেষ্টা করুন এমনভাবে পড়তে যেন এটি আপনি প্রথমবার পড়ছেন। আগে থেকে কোনো পটভূমি জানা না থাকলেও কি লেখা বুঝতে পারছেন? ধরে নিন আপনি একজন দশ বছরের শিশু—এই লেখার ভাষা কি এতটাই সহজ যে একজন দশ বছরের শিশুও তা বুঝতে পারবে?
'''২. নিয়োগকর্তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করুন।''' কোনো কর্মপরিবেশে আপনি যখন একটি নথি প্রস্তুত করেন তখন আপনাকে ভাবতে হবে—আপনার নিয়োগকর্তা এই নথি সম্পর্কে কী ভাবতে পারেন। নিজেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করুন:
* এটি কি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে?
* আমি কি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি?
* আমি কি প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে লিখছি?
* আমার প্রতি যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে আমি কি সেগুলোর উত্তর দিচ্ছি?
* আমার প্রস্তাবিত সমাধানগুলো কি নৈতিক?
* আমার প্রস্তাবিত সমাধানগুলো কি প্রতিষ্ঠানকে শুধুমাত্র ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করবে?
'''৩. নিজের খসড়া থেকে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করুন।''' নথিটি আবার পড়ার আগে নিজেকে কিছুটা সময় দিন। পরের দিন নতুন মনোভাব নিয়ে পড়ে দেখুন—এবার কেমন লাগে? নথিটি জোরে জোরে পড়ুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন কোন কোন অংশ অর্থহীন বা অসংলগ্ন লাগছে। যখন কোনো বাক্য পড়তে গিয়ে আপনাকে কষ্ট করতে হয় তখন সাধারণত সেটির প্রবাহ ঠিক নেই। যদি তা আপনার নিজের কাছেই অর্থবোধ না করে তবে পাঠকের কাছেও তা অস্পষ্টই থাকবে।
'''৪. আপনার খসড়াটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একাধিকবার পড়ুন।''' আপনার নথিটি অন্তত দুইবার পড়ুন। প্রথমবার অর্থ ও প্রভাবের দিকে নজর দিন, দ্বিতীয়বার ভাষার গঠন, ব্যাকরণ ও রচনাশৈলীর দিকে মনোযোগ দিন। একসাথে সবকিছুর ওপর মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা না করে একবারে একটির দিকে মনোযোগ দিলে আপনি আরও কার্যকরভাবে সংশোধন করতে পারবেন। তবে, শুধু দুইবার পড়ে সংশোধন শেষ করা যথেষ্ট নয়। একটি অর্থবহ নথি তৈরির জন্য নিয়মিত পুনঃপাঠ ও সংশোধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিখুঁততার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই, তবে আপনি আপনার নথিটিকে নিজের জন্য যতটা সম্ভব নিখুঁত করে তুলতে পারেন।
'''৫. সমস্যা চিহ্নিত করতে কম্পিউটার সহায়তা ব্যবহার করুন।''' খসড়া যাচাই করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম রয়েছে যা বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। এই সহায়তাগুলোর মধ্যে রয়েছে: বানান যাচাই, ব্যাকরণ বিশ্লেষণ এবং রচনাশৈলী পর্যালোচক। এগুলো আপনার নথিতে সম্ভাব্য ভুলগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করে এবং আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করে। যদি কোনো ব্যাকরণ বা শৈলী যাচাইকারী এমন কিছু চিহ্নিত করে যা আপনার ঠিক মনে হয় তাহলে অনলাইনে খুঁজে দেখুন সঠিক নিয়মটি কী। এতে আপনি জানতে পারবেন সত্যিই কোনো ভুল হয়েছে কিনা, নাকি কম্পিউটারই ভুল নির্দেশ করছে।
==আপনার খসড়া সম্পাদনা বা পুনর্লিখনের সময় বিবেচ্য কিছু প্রশ্ন==
খসড়া সম্পাদনা ও সংশোধনের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মনে রাখা জরুরি। আপনি যদি খসড়া পর্যালোচনার সময় এসব প্রশ্ন বিবেচনায় রাখেন, তাহলে ভুলগুলো শনাক্ত করা এবং তা ঠিক করা অনেক সহজ হবে, আর এতে আপনার নথিটি আরও কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠবে।
'''১. আপনার নথিটি পড়ে পাঠক কী লাভ করবে?'''
*যদি আপনি মনে রাখেন যে পাঠক আপনার নথি থেকে কী জানতে বা পেতে চায়, তাহলে আপনি সেই বিষয়গুলোর ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে পারবেন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের চেয়ে সেগুলো বেশি করে উপস্থাপন করতে পারবেন। যদি কোনো তথ্য পাঠকের জন্য তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হয়, তবে তা অন্তর্ভুক্ত না করাই ভালো।
'''২. পাঠকের প্রতিষ্ঠান এই নথি থেকে কীভাবে উপকৃত হবে?'''
*যেভাবে পাঠকের উপকারের দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনই পুরো প্রতিষ্ঠানের লাভের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত। এতে করে আপনি এমন তথ্যগুলোর ওপর জোর দিতে পারবেন, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও সাফল্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
'''৩. আপনি কি নথির পুরো অংশে উপযুক্ত ভাষাভঙ্গি বজায় রেখেছেন?'''
*নথির প্রতিটি অংশে একটি সঙ্গত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাষাভঙ্গি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাঠক ও আপনার অবস্থান ও দক্ষতা অনুযায়ী একটি উপযুক্ত ভাষার ধরন নির্বাচন করুন এবং সেটিই পুরো নথিতে অনুসরণ করুন। খসড়া পড়ার সময় খেয়াল রাখুন যেন কোথাও ভাষাভঙ্গির পরিবর্তন না ঘটে, কারণ তা হলে আপনি হয়তো অপেশাদার বা আত্মপ্রশংসাপূর্ণ মনে হতে পারেন।
'''৪. আপনি কি আপনার লেখায় সক্রিয় বাক্য ব্যবহার করেন এবং কর্মবাচ্য এড়িয়ে চলেন?'''
*যোগাযোগে সক্রিয় বাক্য ব্যবহার করলে বাক্যে কর্তা ও কর্ম সম্পাদনকারী একসাথে থাকে, যা বাক্যকে আরও স্বচ্ছ ও প্রাঞ্জল করে তোলে। এতে শুধু বাক্যের গঠন সুন্দর হয় না বরং যিনি কাজটি করছেন তিনি তার কৃতিত্বও গ্রহণ করতে পারেন। নিচের উদাহরণটি বিবেচনা করুন:
<u>অসফল রচিত বাক্য:</u> কোম্পানির ওয়েবসাইটের আপডেট আমাদের প্রধান কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ দ্বারা সম্পন্ন করা হবে।
<u>সফল রচিত বাক্য:</u> আমাদের প্রধান কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ কোম্পানির ওয়েবসাইট আপডেট করবেন।
* লক্ষ্য করুন, প্রথম বাক্যে ''কোম্পানির ওয়েবসাইট আপডেট'' '''বিষয়টি''' আগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারপর সেই কাজটি যিনি করবেন সেই '''কর্তা''' অর্থাৎ ''প্রধান প্রযুক্তিবিদ''-এর কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় বাক্যে এই ভুলটি সংশোধন করা হয়েছে, যেখানে পাঠক প্রথমেই জেনে নিচ্ছে কে কাজটি করবে। এইভাবে কর্তা ও কাজের সম্পর্ক স্পষ্টভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, যা বাক্যকে আরও স্বচ্ছ ও বোধগম্য করে তোলে।
'''৫. আপনি কি অর্থের স্পষ্টতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট শব্দগুলো একসঙ্গে রেখেছেন?'''
*সংশ্লিষ্ট শব্দ বা বাক্যাংশগুলোকে একে অপর থেকে আলাদা করে রাখলে পাঠকের জন্য তা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। খসড়া মনোযোগ সহকারে পড়লে এমন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব। নিচের উদাহরণটি বিবেচনা করুন:
<u>অসফল রচিত বাক্য:</u> ওয়াশার ব্যবহার করা হয় দুটি কাঠের টুকরো একসঙ্গে বল্টু দিয়ে জোড়া লাগানোর জন্য, যা ডোনাটের মতো আকারের ধাতব টুকরো।
<u>সফল রচিত বাক্য:</u> ডোনাট আকৃতির ধাতব টুকরা ওয়াশার দুটি কাঠের টুকরা একসাথে আটকানোর সময় ব্যবহৃত হয়।
*লক্ষ্য করুন, দ্বিতীয় বাক্যটি স্পষ্টভাবে বোঝায় যে "ওয়াশার" হল ডোনাটের মতো আকারের ধাতব টুকরো এবং এটি দুটি কাঠের টুকরো একসঙ্গে বল্টু দিয়ে জোড়া লাগানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। এই স্পষ্টতা প্রথম বাক্যে অনুপস্থিত ছিল, ফলে পাঠকের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। দ্বিতীয় বাক্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য একত্রে উপস্থাপন করায় তা পরিষ্কার ও বোধগম্য হয়েছে।
'''৬. আপনার বাক্যগুলো কি সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল?'''
*কর্মক্ষেত্রে পাঠকেরা সাধারণত ব্যস্ত থাকেন এবং তারা দীর্ঘ অনুচ্ছেদ পড়ে সময় নষ্ট করতে চান না, বিশেষ করে যখন সেই তথ্য একটি বাক্যেই প্রকাশ করা সম্ভব। অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করলে পাঠকের সময় নষ্ট হয় এবং মূল বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। নিশ্চিত হোন আপনি যে তথ্য উপস্থাপন করছেন তা আপনার যুক্তির পক্ষে সত্যিই প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক। সংক্ষিপ্ত, সরল ও স্পষ্ট ভাষায় লেখা সর্বদা বেশি কার্যকর।
==পুনর্লিখনের মূল পদক্ষেপসমূহ==
পুনর্লিখনের সময় সাধারণত '''তিনটি প্রধান কাজ''' সম্পাদন করা হয়। যদিও বাস্তবে এই তিনটি কাজ একসঙ্গে সম্পন্ন হয়, তবুও সামগ্রিকভাবে ভাবলে প্রতিটিকে পৃথকভাবে বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
'''১.''' ''পাঠকের'' '''দৃষ্টিকোণ থেকে খসড়ায় কী কী উন্নতি আনা যায় তা চিহ্নিত করা।'''
এই ধাপে আপনি আপনার নথিটি এমন একজন পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে পড়বেন যিনি সম্পন্ন হওয়ার পর এটি পড়বেন। পুনর্লিখনের সময় এই মানদণ্ডগুলো বিবেচনা করুন: ''আপনার পাঠকের কাছে নথিটি সহায়ক বা প্রয়োজনীয় মনে হবে কি? এটি কি একটি বিশ্বাসযোগ্য নথি? আপনার পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে নথিটি পড়ার সময় কি লেখার উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে?''
'''২. আপনার খসড়াটিতে কী কী উন্নয়ন আনা যেতে পারে তা নির্ধারণ করুন।''' কর্মক্ষেত্রে সাধারণত সময়সীমা ও অন্যান্য দায়িত্বের চাপ থাকে যা সামলাতে হয়। তাই আপনার পুনর্লিখনের জন্য উপলব্ধ সময়টুকু বিজ্ঞতার সাথে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার খসড়াটি পর্যালোচনা করুন এবংসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নতিগুলো চিহ্নিত করুন এবং কোনটি আপনার হাতে থাকা সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উন্নতি ঘটাবে তা নির্ধারণ করুন।
'''৩. আপনি যে যেসব পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন সেগুলো করুন।'''
কর্মক্ষেত্রে কোনো নথির মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে সাধারণত দুটি প্রধান পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়:
*'''ব্যক্তিগতভাবে যাচাইকরণ :''' নিজের খসড়াটি সতর্কভাবে পর্যালোচনা করুন এবং সেখানে কোনো ভুল, অসামঞ্জস্যতা বা বিভ্রান্তিকর বিষয় আছে কি না তা খুঁজে দেখুন।
*'''পর্যালোচনা :''' এমন ব্যক্তিদের মতামত নিন যারা আপনার লক্ষিত পাঠকগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাদের জিজ্ঞাসা করুন যে তারা ডকুমেন্টটি যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন কিনা এবং তারা বিষয়বস্তুটি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন কি না। এ ছাড়া তারা নথির ব্যবহারযোগ্যতা যাচাই করেও মত দিতে পারেন।
==আপনার খসড়া যাচাই করা==
আপনার খসড়া যাচাই করার সময় কী কী দেখতে হবে তা নিশ্চিত করতে এই পাঁচটি সহজ ধাপ ব্যবহার করুন। ভুলসহ একটি অপেশাদার নথি সহকর্মী বা ঊর্ধ্বতনদের কাছে জমা দেওয়া একেবারেই কাম্য নয়।
'''১. নিজের লেখা থেকে সাময়িকভাবে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিন, যাতে পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে তা মূল্যায়ন করতে পারেন।'''
নিজের লেখায় ভুল খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে, কারণ আপনি জানেন আপনি কী বলতে চাচ্ছেন এবং কখনও কখনও আপনি লেখাটিকে সেই ভাবেই পড়ে ফেলেন।
'''২. নিজেকে আপনার লক্ষিত পাঠক হিসেবে কল্পনা করে পড়ুন।'''
*তাদের জ্ঞানের স্তর বিবেচনায় নিন
*লেখাটি কতটা প্রভাবশালী হয়েছে, তা যাচাই করুন
*তাদের সময়সীমার বিষয়টি মাথায় রাখুন
'''৩. আপনার নথিটি একজন নিয়োগকর্তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করুন।'''
*মনে রাখবেন অফিসের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগেও আপনি আপনার নিয়োগকর্তার প্রতিনিধিত্ব করছেন।
*অন্য কারও বক্তব্য তুলে ধরার সময় সতর্ক থাকুন—অন্য কর্মী বা নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি বা মন্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
*নিশ্চিত করুন যে নথিটি সংস্থার রীতি অনুযায়ী উপযুক্ত এবং নির্ধারিত ফরম্যাটে তৈরি করা হয়েছে।
'''৪. নথিটি কোম্পানির বাইরের যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাদের দৃষ্টিকোণ থেকেও খসড়াটি পড়ুন।'''
*আবারও চিন্তা করুন, এই লেখার লক্ষিত পাঠক কারা এবং এতে সংস্থার কোনো অংশীদার বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষের জন্য ক্ষতিকর তথ্য রয়েছে কি না।
'''৫. আপনার খসড়াটি একাধিকবার মনোযোগ সহকারে পড়ুন।'''
*প্রতিবার পড়ার সময় আলাদা আলাদা দিকের ওপর মনোনিবেশ করুন।
*নিশ্চিত করুন যে কোনো ভুল (তা আপনার চোখ এড়িয়ে যাওয়া হোক বা ওয়ার্ড প্রসেসরের ধরতে না পারা) খসড়ায় রয়ে না যায়।
==আপনার খসড়া পর্যালোচনার চেকলিস্ট==
খসড়া পর্যালোচনার সময় সহায়ক নির্দেশিকা হিসেবে এই তিনটি ধাপ ব্যবহার করুন।
'''১। পর্যালোচনার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন'''
*পর্যালোচনার উদ্দেশ্য কী? আপনার নথিটি কয়েকবার পড়ে দেখুন—প্রতিবার সম্পাদনার ভিন্ন ভিন্ন দিকের ওপর গুরুত্ব দিন। উদাহরণস্বরূপ, প্রথমবার পড়ার সময় বানান ও ব্যাকরণ ঠিক আছে কি না দেখুন, দ্বিতীয়বার পড়ার সময় অব্যবহৃত বা কর্মবাচ্য অপসারণে মনোযোগ দিন।
*যোগাযোগের উদ্দেশ্য কী? যোগাযোগের উদ্দেশ্যগুলো মনে রাখলে আপনাকে অপ্রয়োজনীয় বাক্য এবং অনুচ্ছেদ খুঁজে বের করতে ও বাদ দিতে সাহায্য করবে।
'''২। মন্তব্য ও পরামর্শ প্রদান করুন'''
*সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনগুলো চিহ্নিত করুন। বড় ধরনের সমস্যাগুলো আগে সমাধান করাই সর্বোত্তম, বিশেষ করে সময় সীমিত থাকলে।
* পুনর্লিখনের পেছনে যুক্তি দিন। কেন পুনর্লিখন করা হচ্ছে তা উল্লেখ করলে ভবিষ্যতে পর্যালোচনার সময় তা বুঝতে সুবিধা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়।
'''৩. কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।'''
*কম্পিউটার সফটওয়্যার আপনাকে ছোটখাটো ভুল যেমন খারাপ বানান এবং ব্যাকরণ ধরতে সাহায্য করতে পারে, তবে সেগুলোর উপর খুব বেশি নির্ভর করবেন না। মনে রাখবেন যে কম্পিউটার সফটওয়্যার শুধুমাত্র বানান বিবেচনা করে, সঠিক শব্দ ব্যবহার নয়। বানান পরীক্ষা একটি ভালো প্রথম ধাপ, কিন্তু নথিটি নিজে কয়েকবার পড়া সবচেয়ে ভালো এবং ব্যাপক পদ্ধতি।
==তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধকরণ==
আপনার তথ্যের উৎসগুলো নথিভুক্ত করা নৈতিক দায়িত্ব এবং এটি আপনার নথিকে পাঠকদের কাছে আরও বৈধ করে তোলে।
'''আপনার তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধ করার শৈলী নির্বাচন করা'''
কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষাক্ষেত্রে লেখালিখির সময় আপনি যেসব গৌণ উৎস ব্যবহার করছেন, সেগুলোর যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়ার প্রত্যাশা করা হয়। এ ধরনের উৎসের মধ্যে থাকতে পারে—পাঠ্যসামগ্রী, সাক্ষাৎকার, ওয়েবসাইট, বক্তৃতা, প্রিন্ট ও প্রিন্ট-বহির্ভূত মিডিয়া ইত্যাদি। চৌর্যবৃত্তি এড়াতে তথ্যসূত্র সঠিকভাবে এবং নির্ভুলভাবে উল্লেখ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি সরাসরি উদ্ধৃতি দিবেন এবং কারও বক্তব্য পরিভাষিত করেন বা সারাংশ তৈরি করবেন তখন সেই লেখকের উৎস উল্লেখ করাই নিয়ম।
বর্তমানে লেখালেখিতে অসংখ্য তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধকরণ পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, যা লেখকদের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—আপনার কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি শৈলী বেছে নেওয়া এবং পুরো লেখায় সেটিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। দুইটি বহুল ব্যবহৃত ইন-লাইন তথ্যসূত্র পদ্ধতি হলো: লেখক-পৃষ্ঠা এবং লেখক-বছর
*<u>লেখক-পৃষ্ঠা পদ্ধতি :</u> এই পদ্ধতিটি মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাসোসিয়েশন (এমএলএ) দ্বারা ব্যবহৃত হয়। এই শৈলীতে উদ্ধৃত তথ্যের ব্যবহারের পর বন্ধনীর মধ্যে লেখকের শেষ নাম এবং যে পৃষ্ঠা থেকে তথ্যটি নেওয়া হয়েছে সেই পৃষ্ঠার নম্বর অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। ''উদাহরণস্বরূপ'': শিকারি পাখিরা সাধারণত শক্ত কাঠের গাছে অনেক উঁচুতে বড় বাসা বানায় (নেস্টর ২০৪)।
*<u>লেখক-বছর পদ্ধতি :</u> আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) সাধারণত এই লেখক-বছর পদ্ধতি ব্যবহার করে। এই শৈলীতে উদ্ধৃতিতে লেখকের শেষ নাম এবং মূল কাজের প্রকাশনার বছর বন্ধনীর মধ্যে উল্লেখ করতে হয়। ''উদাহরণস্বরূপ'': দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় (মিল্কম্যান ১৯৯৮)।
উভয় শৈলীতেই একটি কার্যাবলীর তালিকা বা তথ্যসূত্র তালিকা প্রদান করা বাধ্যতামূলক। এই তালিকায় পাঠকদের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য থাকতে হবে, যাতে তারা প্রয়োজন অনুযায়ী মূল উৎস খুঁজে পেতে পারেন কিংবা উৎসের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করতে পারেন। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনি [http://writing.wisc.edu/Handbook/Documentation.html The Writing Center Handbook]-এ দেখতে পারেন।
{{BookCat}}
84xh2tou9oqc8625aj3xfuhp737l9lm
দর্শনের সাথে পরিচয়/পরিণামবাদ
0
26504
85688
82707
2025-07-05T16:11:40Z
Mehedi Abedin
7113
85688
wikitext
text/x-wiki
সংক্ষেপে বলতে গেলে, পরিনামবাদ হল এমন ধারণা যে কর্মের সঠিক বা ভুল বৈশিষ্ট্য কর্মের ফলাফল বা প্রভাবের উপর নির্ভর করে এবং এটিকে চারটি উপশ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: নীতিগত আত্মবাদ, নীতিগত পরার্থবাদ, উপযোগিতাবাদ এবং ডিউয়ের মূল্যায়ন তত্ত্ব।
নীতিগত আত্মবাদ বিশ্বাস করে যে কোন কাজ ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিক যতক্ষণ এটি কাজ সম্পাদনকারীর দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থকে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ায়, উপকৃত করে বা অগ্রগতি সাধনে সহায়তা করে। "আত্মস্বার্থ" কে আনন্দ, ক্ষমতা, সম্পদ, জ্ঞান ইত্যাদি বা এই জাতীয় যেকোনো সংমিশ্রণ হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে (অন্যদের উপর প্রভাব অপ্রাসঙ্গিক, যদি না এর প্রভাব কাজ সম্পাদনকারীর স্বার্থের উপর আরও প্রভাব ফেলে।)।
নৈতিক পরার্থবাদ বলে যে একটি কাজ ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিক যতক্ষণ এটি কাজ সম্পাদনকারী ব্যতীত সকলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থকে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ায়, উপকৃত করে বা অগ্রগতি সাধনে সহায়তা করে। কর্ম সম্পাদনকারী ব্যতীত সকলের স্বার্থ নৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক; এজেন্টের নিজস্ব স্বার্থ অপ্রাসঙ্গিক যদি না এর প্রভাব অন্য সকলের পরিণতিকে পরিবর্তন করে।
উপযোগবাদ হল এমন ধারণা যে কোন ব্যক্তি, "ক", নৈতিকভাবে সঠিক বা ভুল যা করেছে তা কেবল "প্রভাবিত প্রত্যেকের" জন্য ক এর কর্মের পরিণতি কতটা ভাল বা খারাপ তার উপর নির্ভর করে। অধিকন্তু, প্রত্যেকের স্বার্থ প্রাসঙ্গিক এবং সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
সর্বশেষে, জন ডিউয়ের মূল্যায়ন তত্ত্ব অনুসারে, আমরা জিনিস এবং কার্যকলাপকে মূল্য (চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা, উপভোগ ইত্যাদি) দিই। সুতরাং, আমরা এগুলিকে "প্রকৃত মূল্য" বলি কারণ আমরা সেগুলি চাই। আরো একটি প্রশ্ন থাকে এটি নির্ধারণ করার জন্য যে যেসব জিনিসের "প্রকৃত মূল্য" আছে, সেগুলো কি "এত মূল্যবান এবং কাঙ্ক্ষিত" হওয়া উচিত? যদি তাই হয়, তাহলে বলা যায় যে তাদের "বিধিসম্মত মূল্য" আছে - অর্থাৎ আমাদের যা চাই তা চাওয়া উচিত। "মূল্যায়ন" হল আমরা যে জিনিসগুলি চাই তা চাওয়া উচিত কিনা তা নির্ধারণের প্রক্রিয়া। অধিকন্তু, মূল্যায়নের প্রক্রিয়াটি চূড়ান্তভাবে নৈতিক বিচারের ওপর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ। পরীক্ষিত অনুমানটি হল এ প্রশ্ন যে যার "কার্যত মূল্য" আছে তা "বিধিসম্মত মূল্য" এরও যোগ্য কিনা। ফলস্বরূপ, সমস্ত নৈতিক মূল্যায়ন "ভ্রমপ্রবণবাদ" নীতির অধীন। সমস্ত নৈতিক লক্ষ্য একটি নৈতিক ধারাবাহিকতার উপর নির্ভর করে যা সর্বদা সংশোধন এবং পরিবর্তনের অধীন। কোন নৈতিক পরমতা নেই; তাই এমন কোন লক্ষ্য নেই যা প্রতিটি উপায়কে ন্যায্যতা দেয়। যাই হোক, এই তত্ত্বটি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে উপরোক্তটি "প্রাকৃতিক ভ্রান্তি" তৈরি করে - যা ঘটনাসমূহের বর্ণনা থেকে একটি নৈতিক "উচিত" আহরণ করে।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পাঠ ==
* {{wikipedia-inline|Consequentialism}}
{{BookCat}}
qza6gtnfztn7p7ebix6zpbmcftwmmvh
85689
85688
2025-07-05T16:11:56Z
Mehedi Abedin
7113
85689
wikitext
text/x-wiki
সংক্ষেপে বলতে গেলে, পরিনামবাদ হল এমন ধারণা যে কর্মের সঠিক বা ভুল বৈশিষ্ট্য কর্মের ফলাফল বা প্রভাবের উপর নির্ভর করে এবং এটিকে চারটি উপশ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: নীতিগত আত্মবাদ, নীতিগত পরার্থবাদ, উপযোগিতাবাদ এবং ডিউয়ের মূল্যায়ন তত্ত্ব।
নীতিগত আত্মবাদ বিশ্বাস করে যে কোন কাজ ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিক যতক্ষণ এটি কাজ সম্পাদনকারীর দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থকে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ায়, উপকৃত করে বা অগ্রগতি সাধনে সহায়তা করে। "আত্মস্বার্থ" কে আনন্দ, ক্ষমতা, সম্পদ, জ্ঞান ইত্যাদি বা এই জাতীয় যেকোনো সংমিশ্রণ হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে (অন্যদের উপর প্রভাব অপ্রাসঙ্গিক, যদি না এর প্রভাব কাজ সম্পাদনকারীর স্বার্থের উপর আরও প্রভাব ফেলে।)।
নৈতিক পরার্থবাদ বলে যে একটি কাজ ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিক যতক্ষণ এটি কাজ সম্পাদনকারী ব্যতীত সকলের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থকে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ায়, উপকৃত করে বা অগ্রগতি সাধনে সহায়তা করে। কর্ম সম্পাদনকারী ব্যতীত সকলের স্বার্থ নৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক; এজেন্টের নিজস্ব স্বার্থ অপ্রাসঙ্গিক যদি না এর প্রভাব অন্য সকলের পরিণতিকে পরিবর্তন করে।
উপযোগবাদ হল এমন ধারণা যে কোন ব্যক্তি, "ক", নৈতিকভাবে সঠিক বা ভুল যা করেছে তা কেবল "প্রভাবিত প্রত্যেকের" জন্য ক এর কর্মের পরিণতি কতটা ভাল বা খারাপ তার উপর নির্ভর করে। অধিকন্তু, প্রত্যেকের স্বার্থ প্রাসঙ্গিক এবং সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
সর্বশেষে, জন ডিউয়ের মূল্যায়ন তত্ত্ব অনুসারে, আমরা জিনিস এবং কার্যকলাপকে মূল্য (চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা, উপভোগ ইত্যাদি) দিই। সুতরাং, আমরা এগুলিকে "প্রকৃত মূল্য" বলি কারণ আমরা সেগুলি চাই। আরো একটি প্রশ্ন থাকে এটি নির্ধারণ করার জন্য যে যেসব জিনিসের "প্রকৃত মূল্য" আছে, সেগুলো কি "এত মূল্যবান এবং কাঙ্ক্ষিত" হওয়া উচিত? যদি তাই হয়, তাহলে বলা যায় যে তাদের "বিধিসম্মত মূল্য" আছে - অর্থাৎ আমাদের যা চাই তা চাওয়া উচিত। "মূল্যায়ন" হল আমরা যে জিনিসগুলি চাই তা চাওয়া উচিত কিনা তা নির্ধারণের প্রক্রিয়া। অধিকন্তু, মূল্যায়নের প্রক্রিয়াটি চূড়ান্তভাবে নৈতিক বিচারের ওপর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ। পরীক্ষিত অনুমানটি হল এ প্রশ্ন যে যার "কার্যত মূল্য" আছে তা "বিধিসম্মত মূল্য" এরও যোগ্য কিনা। ফলস্বরূপ, সমস্ত নৈতিক মূল্যায়ন "ভ্রমপ্রবণবাদ" নীতির অধীন। সমস্ত নৈতিক লক্ষ্য একটি নৈতিক ধারাবাহিকতার উপর নির্ভর করে যা সর্বদা সংশোধন এবং পরিবর্তনের অধীন। কোন নৈতিক পরমতা নেই; তাই এমন কোন লক্ষ্য নেই যা প্রতিটি উপায়কে ন্যায্যতা দেয়। যাই হোক, এই তত্ত্বটি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে উপরোক্তটি "প্রাকৃতিক ভ্রান্তি" তৈরি করে - যা ঘটনাসমূহের বর্ণনা থেকে একটি নৈতিক "উচিত" আহরণ করে।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পাঠ ==
* {{wikipedia-inline|পরিণামবাদ}}
{{BookCat}}
17fc45hu1y3dm0sv91x0det85ib0d9u
দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?
0
26509
85691
82460
2025-07-05T16:24:06Z
Mehedi Abedin
7113
85691
wikitext
text/x-wiki
== দর্শনশাস্ত্র চর্চা ==
বাস্তবে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ব্যবহার না করেও অনেক জ্ঞানের ক্ষেত্র অধ্যয়ন করা যায় এবং শেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, টেস্টটিউব না ব্যবহার করে বা বিভিন্ন আয়নিক যৌগ মিশ্রিত না করেই রসায়নবিদ্যা গভীরভাবে শেখা যায়। তবে দর্শনশাস্ত্র উত্তরগুলো সম্পর্কে নয় বরং উত্তর বের করার পিছনের পদ্ধতি সম্পর্কে বেশি সম্পর্কিত। অতএব, দর্শন অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের তারা যে দর্শন শিখছে তার উপর ভিত্তি করে দর্শনের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। দর্শনশাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজ সমালোচনামূলকভাবে পরীক্ষা করা, রচনা এবং রচনার পিছনের যুক্তি সত্যিকার অর্থে বোঝা এবং সেই পদ্ধতিটি প্রসারিত বা পরীক্ষা করে পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা।
<noinclude>{{chapnavtoc|দর্শনের শাখা|যুক্তি|Mini TOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
fhdxvxkwxbe7l17kae8uvob422vw0yi
85694
85691
2025-07-05T16:26:51Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?]] কে [[দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85691
wikitext
text/x-wiki
== দর্শনশাস্ত্র চর্চা ==
বাস্তবে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ব্যবহার না করেও অনেক জ্ঞানের ক্ষেত্র অধ্যয়ন করা যায় এবং শেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, টেস্টটিউব না ব্যবহার করে বা বিভিন্ন আয়নিক যৌগ মিশ্রিত না করেই রসায়নবিদ্যা গভীরভাবে শেখা যায়। তবে দর্শনশাস্ত্র উত্তরগুলো সম্পর্কে নয় বরং উত্তর বের করার পিছনের পদ্ধতি সম্পর্কে বেশি সম্পর্কিত। অতএব, দর্শন অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের তারা যে দর্শন শিখছে তার উপর ভিত্তি করে দর্শনের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। দর্শনশাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজ সমালোচনামূলকভাবে পরীক্ষা করা, রচনা এবং রচনার পিছনের যুক্তি সত্যিকার অর্থে বোঝা এবং সেই পদ্ধতিটি প্রসারিত বা পরীক্ষা করে পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা।
<noinclude>{{chapnavtoc|দর্শনের শাখা|যুক্তি|Mini TOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
fhdxvxkwxbe7l17kae8uvob422vw0yi
85698
85694
2025-07-05T16:28:10Z
Mehedi Abedin
7113
85698
wikitext
text/x-wiki
== দর্শনশাস্ত্র চর্চা ==
বাস্তবে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ব্যবহার না করেও অনেক জ্ঞানের ক্ষেত্র অধ্যয়ন করা যায় এবং শেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, টেস্টটিউব না ব্যবহার করে বা বিভিন্ন আয়নিক যৌগ মিশ্রিত না করেই রসায়নবিদ্যা গভীরভাবে শেখা যায়। তবে দর্শনশাস্ত্র উত্তর সম্পর্কে নয় বরং উত্তর বের করার পিছনের পদ্ধতি সম্পর্কে বেশি সম্পর্কিত। অতএব, দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিখনের উপর ভিত্তি করে দর্শনের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। দর্শনশাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা, পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজ সমালোচনামূলকভাবে পরীক্ষা করা, রচনা এবং রচনার পিছনের যুক্তি সত্যিকার অর্থে বোঝা এবং সেই পদ্ধতিটি প্রসারিত বা পরীক্ষা করে পূর্ববর্তী দার্শনিকদের কাজের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা।
<noinclude>{{chapnavtoc|দর্শনের শাখা|যুক্তি|Mini TOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
5h4jt99br29ekrw2orsvx5f5zdgg73p
আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?
1
26510
85696
82461
2025-07-05T16:26:51Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?]] কে [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
82461
wikitext
text/x-wiki
{{আলাপ পাতা}}
{{আলাপ পাতা/উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫}}
8vxn9zum7n3tju9ayrerhr25vm4kljv
জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/গ্রন্থপঞ্জি
0
26738
85684
85587
2025-07-05T15:42:20Z
Mehedi Abedin
7113
85684
wikitext
text/x-wiki
==জাপান সম্পর্কিত বই==
যদি আপনি শুধু জাপানের ইতিহাস সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে এখানে কিছু ভালো বই রয়েছে। আরও পড়াশোনার জন্য উইকিপিডিয়াতে কিছু ভালো প্রবন্ধ আছে, যেগুলো একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে।আপনি যদি সত্যিই জাপানের ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী হন, কিংবা নতুন একটি ভাষা শিখতে চান, তাহলে [[জাপানি|এখানে]] জাপানি ভাষার কিছু ভালো পাঠ পাবেন। স্থাননামের আক্ষরিক অর্থ বুঝতে চাইলে কানজি অক্ষরের মানে জানা একটু হলেও কাজে লাগতে পারে। আরও পড়াশোনার জন্য আমি আপনাকে উইকিবই এর কিছু অন্যান্য বই পড়ে দেখার পরামর্শ দেব। এ বইগুলোর কিছুটা এই বইয়ের সঙ্গে মিলও আছে। যেমন [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ]] বিষয়ক বইটি, যেখানে ইতিহাসের বিস্তৃত পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের অবস্থান আরও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
==ইয়ামাতো==
<B>অ্যালেন, সি</B> ২০০৩, 'দ্য এমপ্রেস জিংগু', <I>জাপান ফোরাম</I> ১৫ ৩ ৮১-৯৮ <br>
<B>আওকি, এম. ওয়াই.</B> ১৯৭১, <I>ইজুমো ফুডোকি</I>, (টোকিও : সোফিয়া ইউনিভার্সিটি)<br>
<B>গার্ডিনার, কে</B> ১৯৬৪, <I>দ্য অরিজিন অ্যান্ড রাইজ অফ দ্য কোরিয়ান কিংডম অফ কোগুরিয়ো ফ্রম দ্য ফার্স্ট সেঞ্চুরি বিসি টু ৩১৩ এডি</I> লন্ডন ইউনিভার্সিটি ডক্টরাল ডিসার্টেশন<br>
<B>গার্ডিনার, কে</B> ১৯৬৯, <I>দ্য আর্লি হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (হনোলুলু: ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস) <br>
<B>হান, ডব্লিউ কে</B> ১৯৭০, <I>দ্য হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (হনোলুলু: ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস) <br>
<B>হাতাদা, তাকাহাশি</B> ১৯৬৯, <I>আ হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (সান্তা বারবারা: ক্লিও প্রেস)<br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৬৯, 'আ নোট অন দ্য স্যরনেমস অফ ইমিগ্রান্ট অফিসিয়ালস ইন নারা জাপান', <I>হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ</I> ২৯:১৭৭-১৮৯<br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৭৩, 'স্টেট অ্যান্ড ডাইনাসটি ইন আর্কেইক যামাতো', <I>জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ</I> ৩৩:২৫-৪৯ <br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৭৭, 'উজি অ্যান্ড কাবানে ইন এনসিয়েন্ট জাপান', <I>মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা</I> ৩২:৩৬৫-৩৭৬ <br>
<B>কিম, সঙ-হো</B> ১৯৮৫, 'অরিজিনস অফ দ্য জাপানিজ পলিটি: আ টেক্সচুয়াল রিকনসিডারেশন অফ দ্য হর্স-রাইডার থিওরি', <I>কোরিয়া জার্নাল</I> ২৫.১২:৪-২৩<br>
<B>কার্কল্যান্ড, জে. আর.</B> ১৯৮১, 'দ্য হর্সরাইডার্স ইন কোরিয়া: আ ক্রিটিকাল ইভালুয়েশন অফ আ হিস্টরিকাল থিওরি', <I>কোরিয়ান স্টাডিজ</I> ৫:১০৯-১২৮ <br>
<B>কিতো, কে.</B> ১৯৯৫, 'সাম কোয়েশ্চনস কনসার্নিং এনসিয়েন্ট জাপানিজ হিস্ট্রি: উইথ রেফারেন্স টু স্টেট থিওরি', <I>অ্যাক্টা এশিয়াটিকা</I> ৬৯: ১-১৩ <br>
<B>মুরায়ামা, এস ও মিলার, আর. এ.</B> ১৯৭৯, 'দ্য ইনারিয়ামা টুমুলাস সোর্ড ইনস্ক্রিপশন', <I>জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ</I> ৫:৪০৫-৪৩৮ <br>
<B>সুদে, এইচ.</B> ১৯৯২, 'দ্য কোফুন পিরিয়ড অ্যান্ড স্টেট ফরমেশন', <I>অ্যাক্টা এশিয়াটিকা</I> ৬৩:৬৪-৮৬ <br>
<B>সুদে, এইচ.</B> ১৯৯০, 'চিফলি লিনিয়েজেস ইন কোফুন পিরিয়ড জাপান: পলিটিকাল রিলেশনস বিটুইন সেন্টার অ্যান্ড রিজিয়ন', <I>অ্যান্টিকুইটি</I> ৬৪:৯২৩-৯৩১ <br>
<B>ত্সুনোডা, আর. ও গুডরিচ, এল. সি.</B> ১৯৫১, <I>জাপান ইন দ্য চাইনিজ ডাইনাস্টিক হিস্টরিজ</I> (পারকিন্স, সাউথ পাসাডিনা)<br>
<B>ভারগো, লার্স</B> ১৯৮২, <I>সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কন্ডিশনস ফর দ্য ফরমেশন অফ দ্য আর্লি জাপানিজ স্টেট</I> (স্টকহোম: স্টকহোম ইউনিভার্সিটি জাপানোলজিকাল স্টাডিজ ১)<br>
<B>আনসেলমো, ভালেরিও</B> ১৯৭৪, "http://www.corea.it/kudara_1.htm" দ্য এটিমোলজি অফ কুদারা
==নারা==
<B>আওকি এম. ওয়াই.</B> ১৯৭১, <I>ইজুমো ফুডোকি</I>, মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা মনোগ্রাফস, টোকিও<br>
<B>আওকি এম. ওয়াই.</B> ১৯৯৭, <I>রেকর্ডস অফ উইন্ড অ্যান্ড আর্থ: আ ট্রান্সলেশন অফ ফুডোকি, উইথ ইন্ট্রোডাকশন অ্যান্ড কমেন্টারিজ</I>, অ্যাসোসিয়েশন ফর এশিয়ান স্টাডিজ, অ্যান আরবার, মিশিগান<br>
<B>আসাকাওয়া কে.</B> ১৯০৩, <I>দ্য আর্লি ইনস্টিটিউশনাল লাইফ অফ জাপান: আ স্টাডি ইন দ্য রিফর্ম অফ ৬৪৫ এডি</I>, শুয়েইশা, টোকিও<br>
<B>ব্যাটেন, বি. এল.</B> ১৯৮৬, 'ফরেন থ্রেট অ্যান্ড ডোমেস্টিক রিফর্ম: দ্য ইমারজেন্স অফ দ্য রিৎসুরিও স্টেট', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪১: ১৯৯-২১৯<br>
<B>ব্যাটেন, বি. এল.</B> ১৯৯৩, 'প্রোভিন্সিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন আর্লি জাপান: ফ্রম রিৎসুরিও কোক্কা টু ওচো কোক্কা', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৫৩: ১০৩-১৩৪<br>
<B>বিসলি, ডাব্লিউ. জি. এবং পুলিব্ল্যাঙ্ক, ই. জি.</B> ১৯৬১, <I>হিস্টোরিয়ানস অফ চায়না অ্যান্ড জাপান</I>, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, অক্সফোর্ড<br>
<B>বেন্ডার, আর.</B> ১৯৭৯, 'দ্য হাচিমান কাল্ট অ্যান্ড দ্য ডোক্যো ইনসিডেন্ট', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৩৪: ১২৫-১৫৩<br>
<B>বেন্টলি, জে. আর.</B> ২০০২, <I>হিস্টরিওগ্রাফিক্যাল ট্রেন্ডস ইন আর্লি জাপান</I>, এডউইন মেলেন প্রেস<br>
<B>ব্রাউনলি, জে. এস.</B> ১৯৯১, <I>পলিটিক্যাল থট ইন জাপানিজ হিস্টোরিক্যাল রাইটিং: ফ্রম কোজিকি (৭১২) টু টোকুশি ইয়োরন (১৭১২)</I>, উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রেস, ওয়াটারলু, অন্টারিও<br>
<B>কোলড্রেক, ডাব্লিউ. এইচ.</B> ১৯৯১, 'সিটি প্ল্যানিং অ্যান্ড প্যালেস আর্কিটেকচার ইন দ্য ক্রিয়েশন অফ দ্য নারা পলিটিক্যাল অর্ডার: দ্য অ্যাকোমোডেশন অফ প্লেস অ্যান্ড পারপাস অ্যাট হেইজো-কিও', ইএইচ : ৩৭:৫৪<br>
<B>কোমো, এম.</B> ২০০৭, 'হর্সেস, ড্রাগনস, অ্যান্ড ডিজিজ ইন নারা জাপান', জেজেআরএস ৩৪: ৩৯৫-৪১৫<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৮৫, <I>পপুলেশন, ডিজিজ, অ্যান্ড ল্যান্ড ইন আর্লি জাপান</I>, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৯২, <I>হেভেনলি ওয়ারিয়র্স: দ্য এভল্যুশন অফ জাপান'স মিলিটারি, ৫০০-১৩০০</I>, কাউন্সিল অফ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৯৮, <I>সেক্রেড টেক্সটস অ্যান্ড বিউরিড ট্রেজারস: ইস্যুস ইন দ্য হিস্টোরিক্যাল আর্কিওলজি অফ এনসিয়েন্ট জাপান</I>, ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস, হনোলুলু<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ২০০৭, 'পিসেস ইন আ পাজল: চেইঞ্জিং অ্যাপ্রোচেস টু দ্য শোসইন ডকুমেন্টস', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৬২: ৩৯৭-৪৩৫<br>
<B>ফ্রাইডে, কে. এফ.</B> ১৯৯৭, 'পুশিং বিয়ন্ড দ্য পেইল: দ্য যামাতো কনকুয়েস্ট অফ দ্য এমিশি অ্যান্ড নর্দার্ন জাপান', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ২৩: ১-২৪<br>
<B>ফুনকে, এম. সি.</B> ১৯৯৪, 'হিতাচি নো কুনি ফুডোকি', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৯: ১-২৯<br>
<B>হল, জন ডব্লিউ.</B> ১৯৬৬, <I>গভর্নমেন্ট অ্যান্ড লোকাল পাওয়ার ইন জাপান, ৫০০-১৭০০. আ স্টাডি বেসড অন বিজেন প্রভিন্স</I>, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৭, 'দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টেট ইন আর্লি ইম্পেরিয়াল চায়না অ্যান্ড জাপান', স্টাডিজ ইন চাইনিজ হিস্ট্রি ৫: ৭-৪৪<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৭, 'রিৎসুরিও কনফিউশিয়ানিজম', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৫৭: ৫৪৩-৫৭৪<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৯, 'ট্রেড-বুদ্ধিজম: মেরিটাইম ট্রেড, ইমিগ্রেশন, অ্যান্ড দ্য বুদ্ধিস্ট ল্যান্ডফল ইন আর্লি জাপান', জেএওএস ১১৯: ২৮০-২৯২<br>
<B>ইনোউয়ে মিতসুসাদা</B> ১৯৭৭, 'দ্য রিৎসুরিও সিস্টেম ইন জাপান', এএ ৩১: ৮৩-১১২<br>
<B>ইশিগামি ই.</B> ১৯৯৫, 'স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৬৯: ১৪-৩৮<br>
<B>ইশি আর.</B> ১৯৮০, <I>আ হিস্ট্রি অফ পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউশনস ইন জাপান</I>, ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও প্রেস, টোকিও<br>
<B>কামস্ট্রা, জে. এইচ.</B> ১৯৬৭, <I>এনকাউন্টার অফ সিঙ্ক্রেটিজম; দ্য ইনিশিয়াল গ্রোথ অফ জাপানিজ বুদ্ধিজম</I>, ই. জে. ব্রিল, লাইডেন<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৬৯, 'আ নোট অন দ্য স্যরনেমস অফ ইমিগ্রান্ট অফিসিয়ালস ইন নারা জাপান', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ২৯: ১৭৭-১৮৯<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৭৩, 'স্টেট অ্যান্ড ডাইনাসটি ইন আর্কেইক যামাতো', জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৩৩: ২৫-৪৯<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৭৭, 'উজি অ্যান্ড কাবানে ইন এনসিয়েন্ট জাপান', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ৭: ১-২১<br>
<B>কিতো কে.</B> ১৯৯৫, 'সাম কোয়েশ্চনস কনসার্নিং এনসিয়েন্ট জাপানিজ হিস্ট্রি: উইথ রেফারেন্স টু স্টেট থিওরি', এএ ৬৯: ১-১৩<br>
<B>কোর্নিকি, পি. এফ. এবং ম্যাকমুলেন, আই. জে.</B> ১৯৯৬, <I>রিলিজিয়ন ইন জাপান: অ্যারোস টু হেভেন অ্যান্ড আর্থ</I>, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ক্যামব্রিজ<br>
<B>কুরোডা টি.</B> ১৯৮১, 'শিন্তো ইন দ্য হিস্ট্রি অফ জাপানিজ রিলিজিয়ন', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ৭: ১-২১<br>
<B>মিলার, আর. জে.</B> ১৯৭৪, <I>এনসিয়েন্ট জাপানিজ নোবিলিটি: দ্য কাবানে র্যাঙ্কিং সিস্টেম</I>, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, বার্কলি<br>
<B>মিলার, আর. জে.</B> ১৯৭৮, <I>জাপান'স ফার্স্ট ব্যুরোক্রেসি</I>, ইস্ট এশিয়ান পেপার্স নাম্বার ১৯, করনেল ইউনিভার্সিটি প্রেস<br>
<B>ওবায়াশি টি.</B> ১৯৮৫, 'উজি সোসাইটি অ্যান্ড ইয়ে সোসাইটি ফ্রম প্রিহিস্ট্রি টু মিডিয়েভাল টাইমস', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ১১: ৩-২৭<br>
<B>ওকাদা এস.</B> ১৯৮৩, 'দ্য ডেভেলপমেন্ট অফ স্টেট রিচুয়াল ইন এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৫১: ২২-৪১<br>
<B>পিয়ারসন, আর. জে.</B> ১৯৭৬, 'দ্য কনট্রিবিউশন অফ আর্কিওলজি টু জাপানিজ স্টাডিজ', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ২: ৩০৫-৩৩৩<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৮৯, 'সেক্রেড কিংশিপ অ্যান্ড কনফেডারেসি ইন আর্লি ইজুমো', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৪: ৪৫-৭৪<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৯০, 'মোক্কান: উডেন ডকুমেন্টস ফ্রম দ্য নারা পিরিয়ড', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৫: ৪৪৯-৪৭০<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৯৭, <I>দ্য ইমারজেন্স অফ জাপানিজ কিংশিপ</I>, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, পালো অল্টো<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ২০০৬, <I>ক্যাপিটাল অ্যান্ড কান্ট্রিসাইড ইন জাপান, ৩০০-১১৮০: জাপানিজ হিস্টোরিয়ানস ইন্টারপ্রেটেড ইন ইংলিশ</I>, করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ<br>
<B>পোলাক, ডি.</B> ১৯৮৬, <I>দ্য ফ্র্যাকচার অফ মিনিং: জাপান'স সিনথেসিস অফ চায়না ফ্রম দ্য এইথ থ্রু দ্য এইটিন্থ সেঞ্চুরিজ</I>, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন<br>
<B>সাকামোটো টি.</B> ১৯৯১, <I>দ্য সিক্স ন্যাশনাল হিস্টরিজ অফ জাপান, ট্রান্সলেটেড বাই জে. এস. ব্রাউনলি</I>, ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রেস, ভ্যানকুভার<br>
<B>সাতো এম.</B> ১৯৯৫, 'দ্য উডেন ট্যাবলেটস (মোক্কান) অফ এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৬৯: ৮৪-১১৭<br>
<B>তেকেউচি রিজো</B> ১৯৮৮, 'ডকুমেন্টস অফ লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন দ্য নারা পিরিয়ড. দ্য হাউসহোল্ড রেজিস্টারস অ্যান্ড দ্য ট্যাক্স রেজিস্টারস', ইন এ. ফোর্তে <I>তাং চায়না অ্যান্ড বিয়ন্ড: স্টাডিজ অন ইস্ট এশিয়া ফ্রম দ্য সেভেনথ টু দ্য টেন্থ সেঞ্চুরি</I>, ইস্টিতুতো ইটালিয়ানো দি কালচুরা, কিওটো<br>
<B>তামুরা ই.</B> ১৯৮৫, 'জাপান অ্যান্ড দ্য ইস্টওয়ার্ড পারমিয়েশন অফ বুদ্ধিজম', এএ ৪৭: ১-৩০<br>
<B>টোবি, আর. পি.</B> ১৯৯৩, 'হোয়াই লিভ নারা? কাম্মু অ্যান্ড দ্য ট্রান্সফার অফ দ্য ক্যাপিটাল', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪০: ৩৩১-৩৪৭<br>
<B>ৎসুবোই কে.</B> ১৯৯২, 'দ্য এক্সকাভেশন অফ এনসিয়েন্ট পার্লেন্সেস অ্যান্ড ক্যাপিটালস', এএ ৬৩: ৮৭-৯৮<br>
<B>ৎসুবোই কে. এবং তানাকা এম.</B> ১৯৯১, <I>দ্য হিস্টোরিক সিটি অফ নারা: আন আর্কিওলজিকাল অ্যাপ্রোচ</I>, দ্য সেন্টার ফর ইস্ট এশিয়ান কালচারাল স্টাডিজ, টোকিও<br>
<B>ৎসুরুমি ই. পি.</B> ১৯৮২, 'দ্য মেইল প্রেজেন্ট বনাম দ্য ফিমেল পাস্ট: হিস্টোরিয়ানস অ্যান্ড জাপান'স এনসিয়েন্ট ফিমেল এমপ্রেস', বিসিএএস ১৪.৪: ৭১-৭৫<br>
<B>ওয়াদা এ.</B> ১৯৯৫, 'দ্য অরিজিনস অফ ইসে শ্রাইন', এএ ৬৯: ৬৩-৮৩<br>
<B>ইাসুদা ওয়াই.</B> ১৯৭৬, 'দ্য ডিক্লাইন অফ দ্য রিৎসুরিও সিস্টেম: হাইপোথেসিস অন ইকনমিক অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল চেইঞ্জ', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ, ১: ৩-৩৭<br>
==প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ==
হেইয়ান যুগ নিয়ে বাংলায় যেমন তেমন, ইংরেজিতেও লেখা উপাদান অত্যন্ত অপ্রতুল, যা সত্যিই বিস্ময়কর। যদিও এই সময়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম অনুবাদ হয়েছে, সেগুলো মূলত অভিজাত শ্রেণির জীবন বোঝার প্রাথমিক সূত্র হিসেবে কাজ করে। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ নিয়ে গবেষণার সুযোগ আরও সীমিত। কারণ এই সময়কার উৎস খুবই কম। ফলে ইতিহাসবিদদের জন্য অনুসন্ধানের সুযোগ খুবই সীমাবদ্ধ। মধ্য হেইয়ান যুগ এবং তার পর থেকে ডায়েরি ও অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক লেখালেখি পাওয়া যায়। তবে এই লেখাগুলোও মূলত এই আলোচ্য সময়ের একেবারে শেষদিকে শুরু হয়।প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে প্রায় সবকিছুই নির্ভর করে বেঁচে থাকা সরকারি দলিলপত্র থেকে তথ্য টেনে আনার ওপর।
<b>আডলফসন, এম., কামেনস, ই, এবং মাতসুমোতো, এস</b> (সম্পা.) ২০০৭, <i>হেইয়ান জাপান, সেন্টারস অ্যান্ড পেরিফেরিজ</i> (হনোলুলু: হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>আসাকাওয়া, কে.</b> ১৯২৯, <i>দ্য ডকুমেন্টস অফ ইরিকি</i> (ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস; পুনর্মুদ্রণ গ্রিনউড প্রেস, কানেকটিকাট, ১৯৭৪)
<b>আসাকাওয়া, কে.</b> ১৯৬৫, <i>ল্যান্ড অ্যান্ড সোসাইটি ইন মিডিয়েভাল জাপান</i> (জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রোমোশন অফ সায়েন্স, টোকিও)
<b>ব্যাটেন, বি. এল.</b> ২০০৫, <i>গেটওয়ে টু জাপান: হাকাতা ইন ওয়ার অ্যান্ড পিস, ৫০০-১৩০০</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>বিয়ালক, ডি. টি.</b> ২০০৭, <i>একসেন্ট্রিক স্পেসেস, হিডেন হিস্টরিজ: ন্যারেটিভ, রিচুয়াল, অ্যান্ড রয়্যাল অথরিটি ফ্রম দ্য ক্রনিকলস অফ জাপান টু দ্য টেইল অফ দ্য হেইকে</i> (স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>বক, এফ. জি.</b> ১৯৭০-৭২, <i>দ্য এঙ্গি-শিকি: প্রসিডিউরস অফ দ্য এঙ্গি এরা</i>, ২ খণ্ড, এমএন মনোগ্রাফস (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি, টোকিও)
<b>বোর্গেন, আর. এস.</b> ১৯৮৬, <i>সুগাওয়ারা নো মিচিজানে অ্যান্ড দ্য আর্লি হেইয়ান কোর্ট</i> (হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>আডলফসন, এম. এস.</b> ২০০৬, <i>দ্য টিথ অ্যান্ড ক্লজ অফ দ্য বুদ্ধা: মোনাস্টিক ওয়ারিয়র্স অ্যান্ড সোহেই ইন জাপানিজ হিস্ট্রি</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ব্রাউনলি, জে. এস.</b> ১৯৯১, <i>পলিটিক্যাল থট ইন জাপানিজ হিস্টোরিকাল রাইটিং: ফ্রম কোজিকি (৭১২) টু টোকুশি ইয়োরন (১৭১২)</i> (ওয়াটারলু, অন্টারিও: উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>কার্টার, এস. ডি.</b> ১৯৯৬, <i>রিজেন্ট রিডাক্স: আ লাইফ অফ দ্য স্টেটসম্যান-স্কলার ইচিজো কানেয়োশি</i> (অ্যান আরবার: সেন্টার ফর জাপানিজ স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান)
<b>কবিং, এ.</b> ২০০৯, <i>কিউশু: গেটওয়ে টু জাপান</i> (ফোকস্টোন: গ্লোবাল ওরিয়েন্টাল)
<b>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</b> ১৯৮৫, <i>পপুলেশন, ডিজিজ, অ্যান্ড ল্যান্ড ইন আর্লি জাপান</i> (হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</b> ১৯৯২, <i>হেভেনলি ওয়ারিয়র্স: দ্য এভল্যুশন অফ জাপান'স মিলিটারি, ৫০০-১৩০০</i> (ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস: কাউন্সিল অফ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি)
<b>ফ্রাইডে, কে.</b> ১৯৯২, <i>হায়ার্ড সোর্ডস: দ্য রাইজ অফ প্রাইভেট ওয়ারিয়র পাওয়ার ইন আর্লি জাপান</i> (স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>গ্রাপার্ড, এ. জি.</b> ১৯৯২, <i>দ্য প্রোটোকল অফ দ্য গডস: আ স্টাডি অফ দ্য কাসুগা কাল্ট ইন জাপানিজ হিস্ট্রি</i> (বার্কলি: ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস)
<b>হল, জন হুইটনি.</b> ১৯৬৬, <i>গভর্নমেন্ট অ্যান্ড লোকাল পাওয়ার ইন জাপান, ৫০০-১৭০০. আ স্টাডি বেসড অন বিজেন প্রভিন্স</i> (প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>হেম্পেল, আর.</b> ১৯৮৩, <i>দ্য হেইয়ান সিভিলাইজেশন অফ জাপান</i> (অক্সফোর্ড: ফাইডন)
<b>হার্স্ট, জি. ক্যামেরন</b> ১৯৭৬, <i>ইনসেই: অ্যাবডিকেটেড সোভারেইনস ইন দ্য পলিটিক্স অফ লেট হেইয়ান জাপান, ১০৮৬-১১৮৫</i> (নিউ ইয়র্ক: কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ইশি, আর.</b> ১৯৮০, <i>আ হিস্ট্রি অফ পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউশনস ইন জাপান</i> (টোকিও ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>কোর্নিকি, পি. এফ.</b> ১৯৯৮, <i>দ্য বুক ইন জাপান: আ কালচারাল হিস্ট্রি ফ্রম দ্য বিগিনিংস টু দ্য নাইন্টিন্থ সেঞ্চুরি</i> (লাইডেন: ব্রিল)
<b>মরিস, আইভান</b> ১৯৬৪, <i>দ্য ওয়ার্ল্ড অফ দ্য শাইনিং প্রিন্স</i> (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>মোস্টো, জে. এস.</b> ২০০৪, <i>অ্যাট দ্য হাউস অফ গ্যাদার্ড লিভস: শর্টার বায়োগ্রাফিক্যাল অ্যান্ড অটোবায়োগ্রাফিক্যাল ন্যারেটিভস ফ্রম জাপানিজ কোর্ট লিটারেচার</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>পিগগট, জে. আর.</b> (সম্পা.) ২০০৬, <i>ক্যাপিটাল অ্যান্ড কান্ট্রিসাইড ইন জাপান, ৩০০-১১৮০: জাপানিজ হিস্টোরিয়ানস ইন্টারপ্রেটেড ইন ইংলিশ</i> (করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ)
<b>পোলাক, ডি.</b> ১৯৮৬, <i>দ্য ফ্র্যাকচার অফ মিনিং: জাপান'স সিনথেসিস অফ চায়না ফ্রম দ্য এইথ থ্রু দ্য এইটিন্থ সেঞ্চুরিজ</i> (প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>রাবিনোভিচ, জে. এন.</b> ১৯৮৬, <i>শোমনকি: দ্য স্টোরি অফ মাসাকাডো'স রিবেলিয়ন</i>, এমএন মনোগ্রাফস (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি)
<b>রেইশাওয়ার, এডউইন ও.</b> ১৯৫৫a, <i>এনিন'স ডায়েরি, দ্য রেকর্ড অফ আ পিলগ্রিমেজ টু চায়না ইন সার্চ অফ দ্য ল</i> (রোনাল্ড প্রেস, নিউ ইয়র্ক)
<b>রেইশাওয়ার, এডউইন ও.</b> ১৯৫৫b, <i>এনিন'স ট্রাভেলস ইন তাং চায়না</i> (রোনাল্ড প্রেস, নিউ ইয়র্ক)
<b>সাকামোটো, টি.</b> ১৯৯১, <i>দ্য সিক্স ন্যাশনাল হিস্টরিজ অফ জাপান</i>, অনুবাদ: জে. এস. ব্রাউনলি (ভ্যাঙ্কুভার: ইউবিসি প্রেস; ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও প্রেস)
<b>ফন ভার্সুর, সি.</b> ২০০৬, <i>অ্যাক্রস দ্য পেরিলাস সি: জাপানিজ ট্রেড উইথ চায়না অ্যান্ড কোরিয়া ফ্রম দ্য সেভেনথ টু দ্য সিক্সটিন্থ সেঞ্চুরিজ</i>, অনুবাদ: কে. এল. হান্টার (করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ)
<b>ওয়ালেস, জে. আর.</b> ২০০৫, <i>অবজেক্টস অফ ডিসকোর্স: মেমোয়ার্স বাই উইমেন অফ হেইয়ান জাপান</i> (সেন্টার ফর জাপানিজ স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান)
<b>উইলসন, ডব্লিউ. আর.</b> ১৯৭১, <i>হোগেন মনোগাতারি: টেইল অফ দ্য ডিসঅর্ডার ইন হোগেন</i> (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<noinclude>{{Japanese HistoryTOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
1bd888z1819ow47s0p1we2jeytqu86k
85685
85684
2025-07-05T15:43:47Z
Mehedi Abedin
7113
85685
wikitext
text/x-wiki
==জাপান সম্পর্কিত বই==
যদি আপনি শুধু জাপানের ইতিহাস সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে এখানে কিছু ভালো বই রয়েছে। আরও পড়াশোনার জন্য উইকিপিডিয়াতে কিছু ভালো প্রবন্ধ আছে, যেগুলো একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে।আপনি যদি সত্যিই জাপানের ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী হন, কিংবা নতুন একটি ভাষা শিখতে চান, তাহলে [[জাপানি|এখানে]] জাপানি ভাষার কিছু ভালো পাঠ পাবেন। স্থাননামের আক্ষরিক অর্থ বুঝতে চাইলে কানজি অক্ষরের মানে জানা একটু হলেও কাজে লাগতে পারে। আরও পড়াশোনার জন্য আমি আপনাকে উইকিবই এর কিছু অন্যান্য বই পড়ে দেখার পরামর্শ দেব। এ বইগুলোর কিছুটা এই বইয়ের সঙ্গে মিলও আছে। যেমন [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ]] বিষয়ক বইটি, যেখানে ইতিহাসের বিস্তৃত পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের অবস্থান আরও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
==ইয়ামাতো==
<B>অ্যালেন, সি</B> ২০০৩, 'দ্য এমপ্রেস জিংগু', <I>জাপান ফোরাম</I> ১৫ ৩ ৮১-৯৮ <br>
<B>আওকি, এম. ওয়াই.</B> ১৯৭১, <I>ইজুমো ফুডোকি</I>, (টোকিও : সোফিয়া ইউনিভার্সিটি)<br>
<B>গার্ডিনার, কে</B> ১৯৬৪, <I>দ্য অরিজিন অ্যান্ড রাইজ অফ দ্য কোরিয়ান কিংডম অফ কোগুরিয়ো ফ্রম দ্য ফার্স্ট সেঞ্চুরি বিসি টু ৩১৩ এডি</I> লন্ডন ইউনিভার্সিটি ডক্টরাল ডিসার্টেশন<br>
<B>গার্ডিনার, কে</B> ১৯৬৯, <I>দ্য আর্লি হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (হনোলুলু: ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস) <br>
<B>হান, ডব্লিউ কে</B> ১৯৭০, <I>দ্য হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (হনোলুলু: ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস) <br>
<B>হাতাদা, তাকাহাশি</B> ১৯৬৯, <I>আ হিস্ট্রি অফ কোরিয়া</I> (সান্তা বারবারা: ক্লিও প্রেস)<br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৬৯, 'আ নোট অন দ্য স্যরনেমস অফ ইমিগ্রান্ট অফিসিয়ালস ইন নারা জাপান', <I>হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ</I> ২৯:১৭৭-১৮৯<br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৭৩, 'স্টেট অ্যান্ড ডাইনাসটি ইন আর্কেইক যামাতো', <I>জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ</I> ৩৩:২৫-৪৯ <br>
<B>কাইলি, সি. জে.</B> ১৯৭৭, 'উজি অ্যান্ড কাবানে ইন এনসিয়েন্ট জাপান', <I>মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা</I> ৩২:৩৬৫-৩৭৬ <br>
<B>কিম, সঙ-হো</B> ১৯৮৫, 'অরিজিনস অফ দ্য জাপানিজ পলিটি: আ টেক্সচুয়াল রিকনসিডারেশন অফ দ্য হর্স-রাইডার থিওরি', <I>কোরিয়া জার্নাল</I> ২৫.১২:৪-২৩<br>
<B>কার্কল্যান্ড, জে. আর.</B> ১৯৮১, 'দ্য হর্সরাইডার্স ইন কোরিয়া: আ ক্রিটিকাল ইভালুয়েশন অফ আ হিস্টরিকাল থিওরি', <I>কোরিয়ান স্টাডিজ</I> ৫:১০৯-১২৮ <br>
<B>কিতো, কে.</B> ১৯৯৫, 'সাম কোয়েশ্চনস কনসার্নিং এনসিয়েন্ট জাপানিজ হিস্ট্রি: উইথ রেফারেন্স টু স্টেট থিওরি', <I>অ্যাক্টা এশিয়াটিকা</I> ৬৯: ১-১৩ <br>
<B>মুরায়ামা, এস ও মিলার, আর. এ.</B> ১৯৭৯, 'দ্য ইনারিয়ামা টুমুলাস সোর্ড ইনস্ক্রিপশন', <I>জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ</I> ৫:৪০৫-৪৩৮ <br>
<B>সুদে, এইচ.</B> ১৯৯২, 'দ্য কোফুন পিরিয়ড অ্যান্ড স্টেট ফরমেশন', <I>অ্যাক্টা এশিয়াটিকা</I> ৬৩:৬৪-৮৬ <br>
<B>সুদে, এইচ.</B> ১৯৯০, 'চিফলি লিনিয়েজেস ইন কোফুন পিরিয়ড জাপান: পলিটিকাল রিলেশনস বিটুইন সেন্টার অ্যান্ড রিজিয়ন', <I>অ্যান্টিকুইটি</I> ৬৪:৯২৩-৯৩১ <br>
<B>ত্সুনোডা, আর. ও গুডরিচ, এল. সি.</B> ১৯৫১, <I>জাপান ইন দ্য চাইনিজ ডাইনাস্টিক হিস্টরিজ</I> (পারকিন্স, সাউথ পাসাডিনা)<br>
<B>ভারগো, লার্স</B> ১৯৮২, <I>সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কন্ডিশনস ফর দ্য ফরমেশন অফ দ্য আর্লি জাপানিজ স্টেট</I> (স্টকহোম: স্টকহোম ইউনিভার্সিটি জাপানোলজিকাল স্টাডিজ ১)<br>
<B>আনসেলমো, ভালেরিও</B> ১৯৭৪, "http://www.corea.it/kudara_1.htm" দ্য এটিমোলজি অফ কুদারা
==নারা==
<B>আওকি এম. ওয়াই.</B> ১৯৭১, <I>ইজুমো ফুডোকি</I>, মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা মনোগ্রাফস, টোকিও<br>
<B>আওকি এম. ওয়াই.</B> ১৯৯৭, <I>রেকর্ডস অফ উইন্ড অ্যান্ড আর্থ: আ ট্রান্সলেশন অফ ফুডোকি, উইথ ইন্ট্রোডাকশন অ্যান্ড কমেন্টারিজ</I>, অ্যাসোসিয়েশন ফর এশিয়ান স্টাডিজ, অ্যান আরবার, মিশিগান<br>
<B>আসাকাওয়া কে.</B> ১৯০৩, <I>দ্য আর্লি ইনস্টিটিউশনাল লাইফ অফ জাপান: আ স্টাডি ইন দ্য রিফর্ম অফ ৬৪৫ এডি</I>, শুয়েইশা, টোকিও<br>
<B>ব্যাটেন, বি. এল.</B> ১৯৮৬, 'ফরেন থ্রেট অ্যান্ড ডোমেস্টিক রিফর্ম: দ্য ইমারজেন্স অফ দ্য রিৎসুরিও স্টেট', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪১: ১৯৯-২১৯<br>
<B>ব্যাটেন, বি. এল.</B> ১৯৯৩, 'প্রোভিন্সিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন আর্লি জাপান: ফ্রম রিৎসুরিও কোক্কা টু ওচো কোক্কা', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৫৩: ১০৩-১৩৪<br>
<B>বিসলি, ডাব্লিউ. জি. এবং পুলিব্ল্যাঙ্ক, ই. জি.</B> ১৯৬১, <I>হিস্টোরিয়ানস অফ চায়না অ্যান্ড জাপান</I>, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, অক্সফোর্ড<br>
<B>বেন্ডার, আর.</B> ১৯৭৯, 'দ্য হাচিমান কাল্ট অ্যান্ড দ্য ডোক্যো ইনসিডেন্ট', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৩৪: ১২৫-১৫৩<br>
<B>বেন্টলি, জে. আর.</B> ২০০২, <I>হিস্টরিওগ্রাফিক্যাল ট্রেন্ডস ইন আর্লি জাপান</I>, এডউইন মেলেন প্রেস<br>
<B>ব্রাউনলি, জে. এস.</B> ১৯৯১, <I>পলিটিক্যাল থট ইন জাপানিজ হিস্টোরিক্যাল রাইটিং: ফ্রম কোজিকি (৭১২) টু টোকুশি ইয়োরন (১৭১২)</I>, উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রেস, ওয়াটারলু, অন্টারিও<br>
<B>কোলড্রেক, ডাব্লিউ. এইচ.</B> ১৯৯১, 'সিটি প্ল্যানিং অ্যান্ড প্যালেস আর্কিটেকচার ইন দ্য ক্রিয়েশন অফ দ্য নারা পলিটিক্যাল অর্ডার: দ্য অ্যাকোমোডেশন অফ প্লেস অ্যান্ড পারপাস অ্যাট হেইজো-কিও', ইএইচ : ৩৭:৫৪<br>
<B>কোমো, এম.</B> ২০০৭, 'হর্সেস, ড্রাগনস, অ্যান্ড ডিজিজ ইন নারা জাপান', জেজেআরএস ৩৪: ৩৯৫-৪১৫<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৮৫, <I>পপুলেশন, ডিজিজ, অ্যান্ড ল্যান্ড ইন আর্লি জাপান</I>, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৯২, <I>হেভেনলি ওয়ারিয়র্স: দ্য এভল্যুশন অফ জাপান'স মিলিটারি, ৫০০-১৩০০</I>, কাউন্সিল অফ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ১৯৯৮, <I>সেক্রেড টেক্সটস অ্যান্ড বিউরিড ট্রেজারস: ইস্যুস ইন দ্য হিস্টোরিক্যাল আর্কিওলজি অফ এনসিয়েন্ট জাপান</I>, ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস, হনোলুলু<br>
<B>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</B> ২০০৭, 'পিসেস ইন আ পাজল: চেইঞ্জিং অ্যাপ্রোচেস টু দ্য শোসইন ডকুমেন্টস', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৬২: ৩৯৭-৪৩৫<br>
<B>ফ্রাইডে, কে. এফ.</B> ১৯৯৭, 'পুশিং বিয়ন্ড দ্য পেইল: দ্য যামাতো কনকুয়েস্ট অফ দ্য এমিশি অ্যান্ড নর্দার্ন জাপান', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ২৩: ১-২৪<br>
<B>ফুনকে, এম. সি.</B> ১৯৯৪, 'হিতাচি নো কুনি ফুডোকি', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৯: ১-২৯<br>
<B>হল, জন ডব্লিউ.</B> ১৯৬৬, <I>গভর্নমেন্ট অ্যান্ড লোকাল পাওয়ার ইন জাপান, ৫০০-১৭০০. আ স্টাডি বেসড অন বিজেন প্রভিন্স</I>, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৭, 'দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টেট ইন আর্লি ইম্পেরিয়াল চায়না অ্যান্ড জাপান', স্টাডিজ ইন চাইনিজ হিস্ট্রি ৫: ৭-৪৪<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৭, 'রিৎসুরিও কনফিউশিয়ানিজম', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৫৭: ৫৪৩-৫৭৪<br>
<B>হলকম্ব, সি.</B> ১৯৯৯, 'ট্রেড-বুদ্ধিজম: মেরিটাইম ট্রেড, ইমিগ্রেশন, অ্যান্ড দ্য বুদ্ধিস্ট ল্যান্ডফল ইন আর্লি জাপান', জেএওএস ১১৯: ২৮০-২৯২<br>
<B>ইনোউয়ে মিতসুসাদা</B> ১৯৭৭, 'দ্য রিৎসুরিও সিস্টেম ইন জাপান', এএ ৩১: ৮৩-১১২<br>
<B>ইশিগামি ই.</B> ১৯৯৫, 'স্টেট অ্যান্ড সোসাইটি ইন এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৬৯: ১৪-৩৮<br>
<B>ইশি আর.</B> ১৯৮০, <I>আ হিস্ট্রি অফ পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউশনস ইন জাপান</I>, ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও প্রেস, টোকিও<br>
<B>কামস্ট্রা, জে. এইচ.</B> ১৯৬৭, <I>এনকাউন্টার অফ সিঙ্ক্রেটিজম; দ্য ইনিশিয়াল গ্রোথ অফ জাপানিজ বুদ্ধিজম</I>, ই. জে. ব্রিল, লাইডেন<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৬৯, 'আ নোট অন দ্য স্যরনেমস অফ ইমিগ্রান্ট অফিসিয়ালস ইন নারা জাপান', হার্ভার্ড জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ২৯: ১৭৭-১৮৯<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৭৩, 'স্টেট অ্যান্ড ডাইনাসটি ইন আর্কেইক যামাতো', জার্নাল অফ এশিয়ান স্টাডিজ ৩৩: ২৫-৪৯<br>
<B>কাইলি, কর্নেলিয়াস জে.</B> ১৯৭৭, 'উজি অ্যান্ড কাবানে ইন এনসিয়েন্ট জাপান', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ৭: ১-২১<br>
<B>কিতো কে.</B> ১৯৯৫, 'সাম কোয়েশ্চনস কনসার্নিং এনসিয়েন্ট জাপানিজ হিস্ট্রি: উইথ রেফারেন্স টু স্টেট থিওরি', এএ ৬৯: ১-১৩<br>
<B>কোর্নিকি, পি. এফ. এবং ম্যাকমুলেন, আই. জে.</B> ১৯৯৬, <I>রিলিজিয়ন ইন জাপান: অ্যারোস টু হেভেন অ্যান্ড আর্থ</I>, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ক্যামব্রিজ<br>
<B>কুরোডা টি.</B> ১৯৮১, 'শিন্তো ইন দ্য হিস্ট্রি অফ জাপানিজ রিলিজিয়ন', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ৭: ১-২১<br>
<B>মিলার, আর. জে.</B> ১৯৭৪, <I>এনসিয়েন্ট জাপানিজ নোবিলিটি: দ্য কাবানে র্যাঙ্কিং সিস্টেম</I>, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস, বার্কলি<br>
<B>মিলার, আর. জে.</B> ১৯৭৮, <I>জাপান'স ফার্স্ট ব্যুরোক্রেসি</I>, ইস্ট এশিয়ান পেপার্স নাম্বার ১৯, করনেল ইউনিভার্সিটি প্রেস<br>
<B>ওবায়াশি টি.</B> ১৯৮৫, 'উজি সোসাইটি অ্যান্ড ইয়ে সোসাইটি ফ্রম প্রিহিস্ট্রি টু মিডিয়েভাল টাইমস', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ১১: ৩-২৭<br>
<B>ওকাদা এস.</B> ১৯৮৩, 'দ্য ডেভেলপমেন্ট অফ স্টেট রিচুয়াল ইন এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৫১: ২২-৪১<br>
<B>পিয়ারসন, আর. জে.</B> ১৯৭৬, 'দ্য কনট্রিবিউশন অফ আর্কিওলজি টু জাপানিজ স্টাডিজ', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ ২: ৩০৫-৩৩৩<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৮৯, 'সেক্রেড কিংশিপ অ্যান্ড কনফেডারেসি ইন আর্লি ইজুমো', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৪: ৪৫-৭৪<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৯০, 'মোক্কান: উডেন ডকুমেন্টস ফ্রম দ্য নারা পিরিয়ড', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪৫: ৪৪৯-৪৭০<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ১৯৯৭, <I>দ্য ইমারজেন্স অফ জাপানিজ কিংশিপ</I>, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, পালো অল্টো<br>
<B>পিগগট, জে. আর.</B> ২০০৬, <I>ক্যাপিটাল অ্যান্ড কান্ট্রিসাইড ইন জাপান, ৩০০-১১৮০: জাপানিজ হিস্টোরিয়ানস ইন্টারপ্রেটেড ইন ইংলিশ</I>, করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ<br>
<B>পোলাক, ডি.</B> ১৯৮৬, <I>দ্য ফ্র্যাকচার অফ মিনিং: জাপান'স সিনথেসিস অফ চায়না ফ্রম দ্য এইথ থ্রু দ্য এইটিন্থ সেঞ্চুরিজ</I>, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রিন্সটন<br>
<B>সাকামোটো টি.</B> ১৯৯১, <I>দ্য সিক্স ন্যাশনাল হিস্টরিজ অফ জাপান, ট্রান্সলেটেড বাই জে. এস. ব্রাউনলি</I>, ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রেস, ভ্যানকুভার<br>
<B>সাতো এম.</B> ১৯৯৫, 'দ্য উডেন ট্যাবলেটস (মোক্কান) অফ এনসিয়েন্ট জাপান', এএ ৬৯: ৮৪-১১৭<br>
<B>তেকেউচি রিজো</B> ১৯৮৮, 'ডকুমেন্টস অফ লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন দ্য নারা পিরিয়ড. দ্য হাউসহোল্ড রেজিস্টারস অ্যান্ড দ্য ট্যাক্স রেজিস্টারস', ইন এ. ফোর্তে <I>তাং চায়না অ্যান্ড বিয়ন্ড: স্টাডিজ অন ইস্ট এশিয়া ফ্রম দ্য সেভেনথ টু দ্য টেন্থ সেঞ্চুরি</I>, ইস্টিতুতো ইটালিয়ানো দি কালচুরা, কিওটো<br>
<B>তামুরা ই.</B> ১৯৮৫, 'জাপান অ্যান্ড দ্য ইস্টওয়ার্ড পারমিয়েশন অফ বুদ্ধিজম', এএ ৪৭: ১-৩০<br>
<B>টোবি, আর. পি.</B> ১৯৯৩, 'হোয়াই লিভ নারা? কাম্মু অ্যান্ড দ্য ট্রান্সফার অফ দ্য ক্যাপিটাল', মোনুমেন্তা নিপ্পোনিকা ৪০: ৩৩১-৩৪৭<br>
<B>ৎসুবোই কে.</B> ১৯৯২, 'দ্য এক্সকাভেশন অফ এনসিয়েন্ট পার্লেন্সেস অ্যান্ড ক্যাপিটালস', এএ ৬৩: ৮৭-৯৮<br>
<B>ৎসুবোই কে. এবং তানাকা এম.</B> ১৯৯১, <I>দ্য হিস্টোরিক সিটি অফ নারা: আন আর্কিওলজিকাল অ্যাপ্রোচ</I>, দ্য সেন্টার ফর ইস্ট এশিয়ান কালচারাল স্টাডিজ, টোকিও<br>
<B>ৎসুরুমি ই. পি.</B> ১৯৮২, 'দ্য মেইল প্রেজেন্ট বনাম দ্য ফিমেল পাস্ট: হিস্টোরিয়ানস অ্যান্ড জাপান'স এনসিয়েন্ট ফিমেল এমপ্রেস', বিসিএএস ১৪.৪: ৭১-৭৫<br>
<B>ওয়াদা এ.</B> ১৯৯৫, 'দ্য অরিজিনস অফ ইসে শ্রাইন', এএ ৬৯: ৬৩-৮৩<br>
<B>ইাসুদা ওয়াই.</B> ১৯৭৬, 'দ্য ডিক্লাইন অফ দ্য রিৎসুরিও সিস্টেম: হাইপোথেসিস অন ইকনমিক অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল চেইঞ্জ', জার্নাল অফ জাপানিজ স্টাডিজ, ১: ৩-৩৭<br>
==প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ==
হেইয়ান যুগ নিয়ে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতেও লেখা উপাদান অত্যন্ত অপ্রতুল, যা সত্যিই বিস্ময়কর। যদিও এই সময়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম অনুবাদ হয়েছে, সেগুলো মূলত অভিজাত শ্রেণির জীবন বোঝার প্রাথমিক সূত্র হিসেবে কাজ করে। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ নিয়ে গবেষণার সুযোগ আরও সীমিত। কারণ এই সময়কার উৎস খুবই কম। ফলে ইতিহাসবিদদের জন্য অনুসন্ধানের সুযোগ খুবই সীমাবদ্ধ। মধ্য হেইয়ান যুগ এবং তার পর থেকে ডায়েরি ও অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক লেখালেখি পাওয়া যায়। তবে এই লেখাগুলোও মূলত এই আলোচ্য সময়ের একেবারে শেষদিকে শুরু হয়। প্রারম্ভিক হেইয়ান যুগ সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে প্রায় সবকিছুই নির্ভর করে বেঁচে থাকা সরকারি দলিলপত্র থেকে তথ্য টেনে আনার ওপর।
<b>আডলফসন, এম., কামেনস, ই, এবং মাতসুমোতো, এস</b> (সম্পা.) ২০০৭, <i>হেইয়ান জাপান, সেন্টারস অ্যান্ড পেরিফেরিজ</i> (হনোলুলু: হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>আসাকাওয়া, কে.</b> ১৯২৯, <i>দ্য ডকুমেন্টস অফ ইরিকি</i> (ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস; পুনর্মুদ্রণ গ্রিনউড প্রেস, কানেকটিকাট, ১৯৭৪)
<b>আসাকাওয়া, কে.</b> ১৯৬৫, <i>ল্যান্ড অ্যান্ড সোসাইটি ইন মিডিয়েভাল জাপান</i> (জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রোমোশন অফ সায়েন্স, টোকিও)
<b>ব্যাটেন, বি. এল.</b> ২০০৫, <i>গেটওয়ে টু জাপান: হাকাতা ইন ওয়ার অ্যান্ড পিস, ৫০০-১৩০০</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>বিয়ালক, ডি. টি.</b> ২০০৭, <i>একসেন্ট্রিক স্পেসেস, হিডেন হিস্টরিজ: ন্যারেটিভ, রিচুয়াল, অ্যান্ড রয়্যাল অথরিটি ফ্রম দ্য ক্রনিকলস অফ জাপান টু দ্য টেইল অফ দ্য হেইকে</i> (স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>বক, এফ. জি.</b> ১৯৭০-৭২, <i>দ্য এঙ্গি-শিকি: প্রসিডিউরস অফ দ্য এঙ্গি এরা</i>, ২ খণ্ড, এমএন মনোগ্রাফস (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি, টোকিও)
<b>বোর্গেন, আর. এস.</b> ১৯৮৬, <i>সুগাওয়ারা নো মিচিজানে অ্যান্ড দ্য আর্লি হেইয়ান কোর্ট</i> (হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>আডলফসন, এম. এস.</b> ২০০৬, <i>দ্য টিথ অ্যান্ড ক্লজ অফ দ্য বুদ্ধা: মোনাস্টিক ওয়ারিয়র্স অ্যান্ড সোহেই ইন জাপানিজ হিস্ট্রি</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ব্রাউনলি, জে. এস.</b> ১৯৯১, <i>পলিটিক্যাল থট ইন জাপানিজ হিস্টোরিকাল রাইটিং: ফ্রম কোজিকি (৭১২) টু টোকুশি ইয়োরন (১৭১২)</i> (ওয়াটারলু, অন্টারিও: উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>কার্টার, এস. ডি.</b> ১৯৯৬, <i>রিজেন্ট রিডাক্স: আ লাইফ অফ দ্য স্টেটসম্যান-স্কলার ইচিজো কানেয়োশি</i> (অ্যান আরবার: সেন্টার ফর জাপানিজ স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান)
<b>কবিং, এ.</b> ২০০৯, <i>কিউশু: গেটওয়ে টু জাপান</i> (ফোকস্টোন: গ্লোবাল ওরিয়েন্টাল)
<b>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</b> ১৯৮৫, <i>পপুলেশন, ডিজিজ, অ্যান্ড ল্যান্ড ইন আর্লি জাপান</i> (হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ফ্যারিস, ডব্লিউ. ডব্লিউ.</b> ১৯৯২, <i>হেভেনলি ওয়ারিয়র্স: দ্য এভল্যুশন অফ জাপান'স মিলিটারি, ৫০০-১৩০০</i> (ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুসেটস: কাউন্সিল অফ ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি)
<b>ফ্রাইডে, কে.</b> ১৯৯২, <i>হায়ার্ড সোর্ডস: দ্য রাইজ অফ প্রাইভেট ওয়ারিয়র পাওয়ার ইন আর্লি জাপান</i> (স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>গ্রাপার্ড, এ. জি.</b> ১৯৯২, <i>দ্য প্রোটোকল অফ দ্য গডস: আ স্টাডি অফ দ্য কাসুগা কাল্ট ইন জাপানিজ হিস্ট্রি</i> (বার্কলি: ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস)
<b>হল, জন হুইটনি.</b> ১৯৬৬, <i>গভর্নমেন্ট অ্যান্ড লোকাল পাওয়ার ইন জাপান, ৫০০-১৭০০. আ স্টাডি বেসড অন বিজেন প্রভিন্স</i> (প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>হেম্পেল, আর.</b> ১৯৮৩, <i>দ্য হেইয়ান সিভিলাইজেশন অফ জাপান</i> (অক্সফোর্ড: ফাইডন)
<b>হার্স্ট, জি. ক্যামেরন</b> ১৯৭৬, <i>ইনসেই: অ্যাবডিকেটেড সোভারেইনস ইন দ্য পলিটিক্স অফ লেট হেইয়ান জাপান, ১০৮৬-১১৮৫</i> (নিউ ইয়র্ক: কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>ইশি, আর.</b> ১৯৮০, <i>আ হিস্ট্রি অফ পলিটিক্যাল ইনস্টিটিউশনস ইন জাপান</i> (টোকিও ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>কোর্নিকি, পি. এফ.</b> ১৯৯৮, <i>দ্য বুক ইন জাপান: আ কালচারাল হিস্ট্রি ফ্রম দ্য বিগিনিংস টু দ্য নাইন্টিন্থ সেঞ্চুরি</i> (লাইডেন: ব্রিল)
<b>মরিস, আইভান</b> ১৯৬৪, <i>দ্য ওয়ার্ল্ড অফ দ্য শাইনিং প্রিন্স</i> (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>মোস্টো, জে. এস.</b> ২০০৪, <i>অ্যাট দ্য হাউস অফ গ্যাদার্ড লিভস: শর্টার বায়োগ্রাফিক্যাল অ্যান্ড অটোবায়োগ্রাফিক্যাল ন্যারেটিভস ফ্রম জাপানিজ কোর্ট লিটারেচার</i> (হাওয়াই ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>পিগগট, জে. আর.</b> (সম্পা.) ২০০৬, <i>ক্যাপিটাল অ্যান্ড কান্ট্রিসাইড ইন জাপান, ৩০০-১১৮০: জাপানিজ হিস্টোরিয়ানস ইন্টারপ্রেটেড ইন ইংলিশ</i> (করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ)
<b>পোলাক, ডি.</b> ১৯৮৬, <i>দ্য ফ্র্যাকচার অফ মিনিং: জাপান'স সিনথেসিস অফ চায়না ফ্রম দ্য এইথ থ্রু দ্য এইটিন্থ সেঞ্চুরিজ</i> (প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<b>রাবিনোভিচ, জে. এন.</b> ১৯৮৬, <i>শোমনকি: দ্য স্টোরি অফ মাসাকাডো'স রিবেলিয়ন</i>, এমএন মনোগ্রাফস (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি)
<b>রেইশাওয়ার, এডউইন ও.</b> ১৯৫৫a, <i>এনিন'স ডায়েরি, দ্য রেকর্ড অফ আ পিলগ্রিমেজ টু চায়না ইন সার্চ অফ দ্য ল</i> (রোনাল্ড প্রেস, নিউ ইয়র্ক)
<b>রেইশাওয়ার, এডউইন ও.</b> ১৯৫৫b, <i>এনিন'স ট্রাভেলস ইন তাং চায়না</i> (রোনাল্ড প্রেস, নিউ ইয়র্ক)
<b>সাকামোটো, টি.</b> ১৯৯১, <i>দ্য সিক্স ন্যাশনাল হিস্টরিজ অফ জাপান</i>, অনুবাদ: জে. এস. ব্রাউনলি (ভ্যাঙ্কুভার: ইউবিসি প্রেস; ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও প্রেস)
<b>ফন ভার্সুর, সি.</b> ২০০৬, <i>অ্যাক্রস দ্য পেরিলাস সি: জাপানিজ ট্রেড উইথ চায়না অ্যান্ড কোরিয়া ফ্রম দ্য সেভেনথ টু দ্য সিক্সটিন্থ সেঞ্চুরিজ</i>, অনুবাদ: কে. এল. হান্টার (করনেল ইস্ট এশিয়া সিরিজ)
<b>ওয়ালেস, জে. আর.</b> ২০০৫, <i>অবজেক্টস অফ ডিসকোর্স: মেমোয়ার্স বাই উইমেন অফ হেইয়ান জাপান</i> (সেন্টার ফর জাপানিজ স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান)
<b>উইলসন, ডব্লিউ. আর.</b> ১৯৭১, <i>হোগেন মনোগাতারি: টেইল অফ দ্য ডিসঅর্ডার ইন হোগেন</i> (সোফিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস)
<noinclude>{{Japanese HistoryTOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
ku5wh9pev2boiy9cf6r7phw9b5owq1f
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)
0
27197
85710
85641
2025-07-05T22:18:06Z
Jonoikobangali
676
85710
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
hyasm2n86ed54rjlnes8s3f6s3monpf
85713
85710
2025-07-05T22:20:06Z
Jonoikobangali
676
85713
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
bv36uz98kabluzxtq6tgnbxdkmsnzc6
85715
85713
2025-07-06T03:51:02Z
Jonoikobangali
676
85715
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কাব্য পরিচয়|কাব্য পরিচয়]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
b86rodmt890jqo8aca94t00w959aiis
85721
85715
2025-07-06T10:44:41Z
Jonoikobangali
676
85721
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কাব্য পরিচয়|কাব্য পরিচয়]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#গ্রন্থনাম বিচার|গ্রন্থনাম বিচার]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
frrenetk3qdvl5qf5kbv3vgd3pmppac
টেমপ্লেট:Chapnavtoc
10
27244
85692
2025-07-05T16:25:11Z
Mehedi Abedin
7113
[[সাহায্য:স্বয়ংক্রিয় সম্পাদনা সারাংশ|←]][[টেমপ্লেট:Chapter navigation with TOC]]-এ পুনর্নির্দেশ করা হল
85692
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[টেমপ্লেট:Chapter navigation with TOC]]
mhg21z8huvyfzztmhljujmfd4fr6o1c
দর্শনের সাথে পরিচয়/Mini TOC
0
27245
85693
2025-07-05T16:26:15Z
Mehedi Abedin
7113
"<small>{{nowrap begin}}<!-- -->[[Introduction to Philosophy/Introduction|Introduction]]{{·w}}<!-- -->[[Introduction to Philosophy/Logic|Chapter 1: Logic]]{{·w}}<!-- -->[[Introduction to Philosophy/Epistemology|Chapter 2: Epistemology]]{{·w}}<!-- -->[[Introduction to Philosophy/Metaphysics|Chapter 3: Metaphysics]]{{·w}}<!-- -->[[Introduction to Philosophy/Ethics|Chapter 4: Ethics]]{{·w}}<!-- -->Introduction to Philosophy/Print version|Singl..." দিয়ে পাতা তৈরি
85693
wikitext
text/x-wiki
<small>{{nowrap begin}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Introduction|Introduction]]{{·w}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Logic|Chapter 1: Logic]]{{·w}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Epistemology|Chapter 2: Epistemology]]{{·w}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Metaphysics|Chapter 3: Metaphysics]]{{·w}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Ethics|Chapter 4: Ethics]]{{·w}}<!--
-->[[Introduction to Philosophy/Print version|Single page print version]]<!--
-->{{nowrap end}}</small><!--
--><noinclude>{{bookcat}}</noinclude>
p1vi3cpt526igi4b3k2ixtl1wpdx6ge
দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?
0
27246
85695
2025-07-05T16:26:51Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?]] কে [[দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85695
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]]
t0mz52t1ypblu390e085kduhxvjdeet
আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?
1
27247
85697
2025-07-05T16:26:51Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শন করা বলতে কী বোঝায়?]] কে [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85697
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/দর্শনশাস্ত্র চর্চা বলতে কী বোঝায়?]]
aaq7tb45t3un7ync00qryqi4giwbj1r
টেমপ্লেট:সম্পর্ক/পরিভ্রমণ
10
27248
85703
2025-07-05T16:48:40Z
Mehedi Abedin
7113
"<span id="top-navigation">{{#if: {{{2|}}} | ← [[Relationships/{{{2}}}|{{{2}}}]] · }}{{#if: {{{3|}}} | [[Relationships/{{{3}}}|{{{3}}}]] → }}</span> {| class="collapsible" style="width:100%; border-spacing:5px 1px" align="center" <!--- ####### Title ####### ---> ! colspan="2" | <div style="float:right">{{navbar|Relationships/Navigation|mini=1|nodiv=1}}</div> {{#if: {{{2|}}} | ← [[Relationships/{{{2}}}|{{{2}}}]] · }} '''Rela..." দিয়ে পাতা তৈরি
85703
wikitext
text/x-wiki
<span id="top-navigation">{{#if: {{{2|}}} | ← [[Relationships/{{{2}}}|{{{2}}}]] · }}{{#if: {{{3|}}} | [[Relationships/{{{3}}}|{{{3}}}]] → }}</span>
{| class="collapsible" style="width:100%; border-spacing:5px 1px" align="center"
<!---
####### Title #######
--->
! colspan="2" | <div style="float:right">{{navbar|Relationships/Navigation|mini=1|nodiv=1}}</div> {{#if: {{{2|}}} | ← [[Relationships/{{{2}}}|{{{2}}}]] · }} '''[[Relationships]]''' {{#if: {{{3|}}} | · [[Relationships/{{{3}}}|{{{3}}}]] → }}
|-
<!--
General
-->
|-
| colspan="2" style="font-size:0.8em; text-align:center;" | [[Relationships/About This Book|About This Book]] · [[Relationships/Q&A|Q&A]] · [[Relationships/Recommended Books|Recommended Books]]
<!--
The Science
-->
|- style="font-size:0.8em;" valign="top"
! align="right" | The Science:
| [[Relationships/The Evolution of the Human Brain|The Evolution of the Human Brain]] · [[Relationships/How Women Select Men|How Women Select Men]] · [[Relationships/How Men Select Women|How Men Select Women]] · [[Relationships/How Our Ancestors Lived|How Our Ancestors Lived]] · [[Relationships/Monogamy and Polygamy|Monogamy and Polygamy]] · [[Relationships/Hormones|Hormones]] · [[Relationships/Communication Styles|Communication Styles]]
<!--
Life Stages
-->
|- style="font-size:0.8em;" valign="top"
! align="right" | Life Stages:
| [[Relationships/Childhood|Childhood – Seeking Unconditional Love]] · [[Relationships/Adolescence|Adolescence – Seeking Romantic Love]] · [[Relationships/Adulthood|Adulthood – Families And Forgiveness]] · [[Relationships/Agape|Agape – Altruistic Love]]
<!--
Practical Advice
-->
|- style="font-size:0.8em;" valign="top"
! align="right" | Practical Advice:
| [[Relationships/Where Couples Met|Where Couples Met]] · [[Relationships/Flirting|Flirting]] · [[Relationships/How to Write a Personal Ad|How to Write a Personal Ad]] · [[Relationships/Dating|Dating]] · [[Relationships/Sex|Sex]] · [[Relationships/Couples|Becoming a Couple]] · [[Relationships/Conflict|Conflict In Relationships]]
<!--
Personality Types
-->
|- style="font-size:0.8em;" valign="top"
! align="right" | Personality Types:
| [[Relationships/Emotional Control Systems|Emotional Control Systems]] · [[Relationships/Zeus-Hera|Zeus-Hera]] · [[Relationships/Poseidon-Athena|Poseidon-Athena]] · [[Relationships/Apollo-Artemis|Apollo-Artemis]] · [[Relationships/Hermes-Hestia|Hermes-Hestia]] · [[Relationships/Ares-Hephaestus-Aphrodite|Ares-Hephaestus-Aphrodite]] · [[Relationships/Dionysus-Demeter|Dionysus-Demeter]] · [[Relationships/Hades-Persephone|Hades-Persephone]]
|}<!--
-->{{BookCat}}
r27en7rnmv24yer9zle0h345ky6x7bb
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি
0
27249
85711
2025-07-05T22:18:27Z
Jonoikobangali
676
"পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয..." দিয়ে পাতা তৈরি
85711
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
5u4by7iznccd7vwceusv1e0ybcjtku8
85712
85711
2025-07-05T22:19:49Z
Jonoikobangali
676
/* কবি */
85712
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি: বড়ু চণ্ডীদাস===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
4izva7an0czclabi0duy8xbn3t2f7ye
85714
85712
2025-07-06T03:50:28Z
Jonoikobangali
676
/* কবি: বড়ু চণ্ডীদাস */
85714
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি: বড়ু চণ্ডীদাস===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
===কাব্য পরিচয়===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' রাধাকৃষ্ণের প্রণয়মূলক আখ্যানধর্মী কাব্য। ধ্রুপদি প্রেমকাহিনির মধ্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেম বিশেষত্ব-মণ্ডিত। রামসীতা বা হরপার্বতীর ন্যায় এই প্রেম স্বকীয়া বা বিবাহোত্তর প্রেম নয়, এই প্রেমের প্রকৃতি পরকীয়া। বস্তুত ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ছাড়া আর কোথাও রাধাকৃষ্ণের স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধ দেখানো হয়নি। লোক-ঐতিহ্যে রাধা কৃষ্ণের মাতুলানী। ফলে এই প্রেম নিয়ে অনেক মুখরোচক গালগল্প তৈরি হয়েছিল এক সময়ে। চৈতন্য-পরবর্তী যুগে অবশ্য রাধা তত্ত্বে পরিণত। তখন তিনি কৃষ্ণের স্বকীয়া অন্তরঙ্গা শক্তি। হ্লাদিনীর সারভূত রূপ মহাভাব থেকে রাধার উৎপত্তি ব্যাখ্যাত। কিন্তু বড়ু চণ্ডীদাস প্রাক্-চৈতন্য যুগের কবি। রাধাকে তিনি চিত্রিত করেছেন প্রাকৃত রমণী রূপেই, কোনও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের আলোকে নয়। স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর মাতুলানী-ভাগিনেয় সম্পর্ক। ফলে এই কাব্য লোকরঞ্জনকারী এক কাহিনিতে পর্যবসিত হয়েছে। এর ভাব, ভাষা, আঙ্গিক, পরিবেশ সবই গ্রামীণ। গ্রাম্য রুচির কাছে আত্মসমর্পণ করে পণ্ডিত কবি এই কাব্যে পুরাণকথা ও লোকশ্রুতির মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। তবে তাঁর মধ্যে প্রতিভার অভাব ছিল না। সেই প্রতিভায় রাধা, কৃষ্ণ ও বড়ায়ির চরিত্র হয়ে উঠেছে সমুজ্জ্বল। ভাগবত পুরাণে রাধার উল্লেখ পাওয়া যায় না। জয়দেবই প্রথম রাধাকে নিয়ে বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেন। বড়ু চণ্ডীদাসের অন্যতম আদর্শ এই রচনা। তবে রাধা চরিত্র চিত্রণে তিনি যে প্রখর সমাজবাস্তবতা ও সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন, তা অনবদ্য। দেশীয় ভাষায় এইপ্রকার বৃহদায়তন প্রথম আখ্যানকাব্য রচনার কৃতিত্ব বড়ু চণ্ডীদাসেরই প্রাপ্য।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশ পাওয়া যায়নি। মাঝের কয়েকটি পাতাও অবলুপ্ত। পাওয়া গিয়েছে তেরোটি খণ্ডে বিন্যস্ত মোট ৪১৮টি পদ। কবি প্রথম বারোটি খণ্ডের নাম দিয়েছেন যথাক্রমে (১) জন্মখণ্ড, (২) তাম্বুলখণ্ড, (৩) দানখণ্ড, (৪) নৌকাখণ্ড, (৫) ভারখণ্ড, (৬) ভারখণ্ডান্তর্গত ছত্রখণ্ড, (৭) বৃন্দাবনখণ্ড, (৮) যমুনান্তর্গত কালীয়দমনখণ্ড, (৯) যমুনান্তর্গত বস্ত্রহরণখণ্ড, (১০) যমুনান্তর্গত হারখণ্ড, (১১) বাণখণ্ড ও (১২) বংশীখণ্ড। ত্রয়োদশ খণ্ডটির শেষাংশ পাওয়া যায়নি বলে এই খণ্ডের কবিকৃত নামটি জানা যায় না। সম্পাদক বসন্তরঞ্জন এই খণ্ডের নামকরণ করেছেন ‘রাধাবিরহ’। তেরোটি খণ্ডে অখণ্ড সুস্পষ্ট একটি গল্প বলা হয়েছে। গল্প এগিয়েছে কবির বিবৃতি এবং আখ্যানের মুখ্য তিন চরিত্রের কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে। গল্পটি সংক্ষেপে এইরকম:
অত্যাচারী কংসের পীড়নে ব্যথিতা বসুন্ধরার আর্তিতে স্বর্গের দেবতারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, কংসের বিনাশের জন্য নারায়ণ ‘কৃষ্ণ’ নাম নিয়ে বসুদেবের গৃহে দেবকীর উদরে জন্মগ্রহণ করবেন। তাঁর সম্ভোগের জন্য লক্ষ্মীও প্রেরিত হলেন রাধা রূপে। তার পিতা সাগর, মাতা পদুমা বা পদ্মা। দেবগণের ইচ্ছানুসারে রাধার স্বামী হলেন নপুংসক আইহন। বালিকাবধূ রাধার পরিচর্যার জন্য এলেন পদ্মার বুড়ি পিসি বড়ায়ি। গোপরমণী রাধাকে দুধ-দই বেচতে মথুরার হাটে যেতে হয়। একদা রাধা বড়ায়ির দৃষ্টিপথের বাইরে চলে যায়। তার রূপ-গুণ বর্ণনা করে ব্রজের রাখাল নন্দগোপসুত কৃষ্ণের কাছে বড়ায়ি রাধার সন্ধান জানতে চাইল। সেই রূপের কথা শুনে কৃষ্ণের মনে রাধাসঙ্গের বাসনা জেগে উঠল। বড়ায়ির হাতে তাম্বুল অর্থাৎ পান দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব জানালেন কৃষ্ণ। কিন্তু বিবাহিতা রাধার মনে তখনও স্বামী-সংস্কার তীব্র। পরপুরুষের প্রতি বিরাগ সে ক্রুদ্ধ হয়ে তাম্বুলে লাথি মেরে বড়ায়িকে অপমান করে তাড়িয়ে দিল। অপমানিতা বড়ায়ি এসে কৃষ্ণের কাছে সব জানিয়ে এর প্রতিবিধান করতে বলল। দুজনে পরামর্শ করল, যমুনার ঘাটে কৃষ্ণ দানী সেজে বসবে এবং দানের ছলে দুধ-দই নষ্ট করবে, হার কেড়ে নেবে, কাঁচুলি ছিঁড়বে। পরামর্শ অনুযায়ী কুতঘাটে বসে রইল কৃষ্ণ। রাধা সখীদের নিয়ে এল সেই ঘাটে। কৃষ্ণ দানী হয়ে মহাদান চেয়ে বসল। শুধু পণ্যদ্রব্য পার করার কড়ি নয়, রাধার অঙ্গের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ কড়ি দাবি করল সে। কড়ি না দিলে দিতে হবে আলিঙ্গন। কিন্তু রাধার পক্ষে তা মেনে নেওয়া কখনই সম্ভব নয়। শুরু হল বাগবিতণ্ডা। রাধা কৃষ্ণকে নিবৃত্ত করতে চায় মাতুলানী সম্পর্কের কথা তুলে। কিন্তু কৃষ্ণের বক্তব্য “নহসি মাউলানী রাধা সম্বন্ধে শালী”। কৃষ্ণ রাধাকে পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেও রাধা সেসব বিস্মৃত। শেষে রাধার বাধাদান সত্ত্বেও কৃষ্ণ তার সঙ্গে বনের মধ্যে মিলিত হল। আবারও বড়ায়িয়ের কৌশলে রাধা এল যমুনার ঘাটে। একাকিনী রাধাকে যমুনা পার করার সময় কৃষ্ণ মাঝ-নদীতে ঝড় তুলে রাধার মনে ভীতি সঞ্চার করল। ভয়ার্ত রাধা বাঁচার জন্য কৃষ্ণকে জড়িয়ে ধরতে বাধ্য হল। সেই সুযোগে নদীমধ্যে দুজনের মিলন ঘটল। এতদিনে রাধা বুঝতে পেরেছে কৃষ্ণের দুর্বলতা কোথায়। তাই সে এবার নিজেই অগ্রণী হয়ে মথুরার হাটের জন্য বড়োসড়ো পসরা সাজালো। মথুরার পথে যেতে কৃষ্ণকে ‘সুরতি’ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বইয়ে নিল দুধ-দইয়ের ভার। একইভাবে দেহলোভী কৃষ্ণকে দিয়ে প্রচণ্ড রোদে ছাতাও বহন করালো রাধা। অতঃপর বৃন্দাবনে মহাসমারোহে ঘটল বসন্তের আবির্ভাব। রাধা এবার আড়চোখে চেয়ে ও নানা অঙ্গভঙ্গি করে কৃষ্ণের কামনা জাগিয়ে তুলল। ষোলোশো গোপিনী সঙ্গে বিলাস সমাপ্ত করে কৃষ্ণ রাধার কাছে এসে দেখল সে অভিমানাহত হয়ে বিষণ্ণ মনে নীরবে বসে আছে। কৃষ্ণ মধুর বচনে রাধার মান ভাঙিয়ে লিপ্ত হল সঙ্গমে। রাসলীলায় কৃষ্ণের উৎসাহ বৃদ্ধি পেতে জলক্রীড়ার কথা চিন্তা করে কালীদহের বিষাক্ত জল বিষমুক্ত করতে দহে নেমে পড়ল কৃষ্ণ। বিষের তীব্রতায় কৃষ্ণ অচৈতন্য হয়ে পড়লে নন্দ, যশোদা, বলরাম প্রমুখ আত্মীয়েরা বিলাপ করতে লাগলেন। কৃষ্ণের বিপদ অনুমান করে যাবতীয় লোকলজ্জা ত্যাগ করে রাধা এবার সর্বসমক্ষে ‘পরাণপতি’ বলে কেঁদে উঠল। অবশেষে কালীয় নাগকে দমন করে কৃষ্ণ উঠে এল জল থেকে। একদিন রাধা সখীদের নিয়ে যমুনায় জল ভরতে এসে কৃষ্ণের সঙ্গে জলকেলিতে মত্ত হল। সেই সুযোগে কৃষ্ণ গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করল। রাধার অনুনয়ে কৃষ্ণ বস্ত্র ফিরিয়ে দিলেও তার বক্ষহারটি লুকিয়ে রাখল। হার না পেয়ে রাধা এবার গিয়ে অনুযোগ জানালো কৃষ্ণজননী যশোদার কাছে। যশোদা কৃষ্ণকে ভর্ৎসনা করলে অপমানিত কৃষ্ণ ফুলধনু দিয়ে রাধাকে বাণাহত করে মূর্চ্ছিত করল। কিন্তু এবার বড়ায়ি কৃষ্ণের আচরণে ক্ষুব্ধ হল। সে তিরস্কার করে রাধার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে বলল। তখন কৃষ্ণের হস্তস্পর্শে রাধার চৈতন্য হল। পরিশেষে বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের পুনর্মিলন ঘটল। এখন আর কৃষ্ণের মনে রাধার প্রতি পূর্বের অদম্য আসক্তি কিছুই নেই। বরং শারীরিক মিলনে রাধার মনে জাগ্রত হয়েছে অপূর্ব সুখোন্মাদনা। সে এখন কৃষ্ণ-অন্তপ্রাণ। তার আর কোনও লজ্জা, ভয় বা সতীত্বের বন্ধন নেই। কৃষ্ণ এবার একটি সুন্দর মোহন বাঁশি গড়িয়ে কদমতলায় বসে একমনে বাজাতে থাকে। তার সেই বাঁশির সুর রাধার চিত্তকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সে ঘর-সংসার ভোলে, তার গৃহকর্ম নষ্ট হয়, মনে মনে ভাবে “দাসী হআঁ তোর পাএ নিশিবোঁ আপনা”। বড়ায়িকে সে বারবার বলে কৃষ্ণকে তার কাছে এনে দিতে। বড়ায়ি বিপরীত কথা বলে রাধাকে নিরস্ত করতে চায়। কিন্তু রাধার মন কোনও যুক্তিতেই বশীভূত হয় না। তখন দুজনে মিলে কৃষ্ণের সন্ধানে বৃন্দাবনে যায়। সেখানে কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। রাতে শয্যায় শায়িত রাধার কানে কৃষ্ণের বাঁশির শব্দ এসে প্রবেশ করে। সে নিদ্রিত স্বামীকে ফেলে একাকিনী কৃষ্ণমিলনের উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু কোথাও কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে পথেই মূর্চ্ছিত হয়ে পড়ে রাধা। বড়ায়ি তার মূর্চ্ছাভঙ্গ করে পরামর্শ দেয় কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করতে। তাই-ই করে রাধা। বাঁশি বিহনে কৃষ্ণ ব্যাকুলভাবে বিলাপ করতে থাকে। অবশেষে বড়ায়ির মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ রাধার কাছে করজোড়ে মিনতি করলে রাধা বাঁশি ফিরিয়ে দেয়। রাধার সকল অপরাধ ক্ষমা করে কৃষ্ণ। বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও শর্ত অনুসারে কৃষ্ণ রাধাকে আর দেখা দেয় না। এবার কৃষ্ণ বিহনে রাধার মনে হতে থাকে “এ ধন যৌবন বড়ায়ি সবই অসার”। সে বারবার বড়ায়িকে কৃষ্ণ এনে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বড়ায়ি তাকে পরামর্শ দেয় কদমতলায় কিশলয় শয্যা রচনা করে প্রতীক্ষা করতে। কিন্তু তাতেও কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। অতঃপর তারা বৃন্দাবনে প্রবেশ করে গোচারণরত কৃষ্ণের দেখা পায়। রাধা তখন কাতরভাবে তার কাছে অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে। তবুও কৃষ্ণের মন গলে না। অবশেষে বড়ায়ির অনুরোধে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গে মিলনে সম্মত হয়। বিহারের পর শ্রান্ত হয়ে কৃষ্ণের উরুতে মাথা রেখে রাধা ঘুমিয়ে পড়লে কৃষ্ণ বড়ায়িকে ডেকে তার হাতে রাধার রক্ষণাবেক্ষণের ভার দিয়ে মথুরায় চলে যায়। নিদ্রাভঙ্গের পর কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে আবার বিষণ্ণ হয়ে পড়ে রাধা। রাধার বিলাপে অস্থির হয়ে বড়ায়ি মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণের কাছে রাধার কথা জানায়। কৃষ্ণের বক্তব্য, সে প্রগলভা রাধার কাছে যাবে না। তার মুখদর্শন করতেও সে ইচ্ছুক নয়। আর তাছাড়া সে মথুরায় এসেছে দুরাচারী কংশকে নাশ করতে। তার আর কোনওমতেই বৃন্দাবনে ফিরে যাওয়া চলে না। এরপরই পুথি খণ্ডিত। যতদূর মনে হয়, কবি রাধা ও কৃষ্ণের বিচ্ছেদেই কাব্যটি সমাপ্ত করেছিলেন।
মধ্যযুগীয় কাব্যে প্রক্ষিপ্তি একটি বড়ো সমস্যা। সাহিত্যের সব শাখাতেই কম-বেশি এটি দেখা যায়। যে যুগের লেখকের কর্তৃত্ব সঠিকভাবে চিহ্নিত হত না, সেই যুগে একের রচনায় অন্যের হস্তক্ষেপ স্থান পেয়ে যেত নির্বিরোধে। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের প্রক্ষেপ নিয়ে প্রথম সংশয় জ্ঞাপন করেন যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি। ‘বড়ু’ ও ‘বাসলী’-বিহীন ভণিতাগুলিকে তিনি অন্যের রচনা বলে মনে করেন। দানখণ্ডের তিনটি পদে ড. সুকুমার সেন প্রক্ষেপ দেখেছেন। আবার কেউ কেউ গায়েনের প্রক্ষেপ লক্ষ্য করেছেন কাব্যের নানা স্থানে। প্রখ্যাত সমালোচক বিমানবিহারী মজুমদারের মতে, সমগ্র ‘রাধাবিরহ’ অংশটিই প্রক্ষিপ্ত। তিনি মোট ছয়টি যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু যুক্তিগুলি যে ততটা প্রমাণনির্ভর নয়, সে বিষয়ে একাধিক গবেষক প্রতি-যুক্তি দিয়েছেন। বিশেষত ‘রাধাবিরহ’ যে কাব্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ তার প্রমাণ রয়েছে কাহিনির অভ্যন্তরীণ কাল-পরম্পরায়, কাব্যের গঠনে, রাধার বয়সের অগ্রহতির সাক্ষ্যে, চরিত্রের ক্রম-পরিণামে এবং অবশ্যই কবির ক্রমবিকশিত প্রতিভার স্তরোন্নয়নে। কাব্যের সূচনায় ‘এগার-বরিষ’-এর রাধা এখানে পূর্ণ যুবতীতে পরিণত, কামুক কৃষ্ণ এই পর্যায়ে ভোগতৃপ্ত হয়ে ‘গততৃষ্ণ’ কৃষ্ণে পর্যবসিত। কবি যে ক্রমশ ভাবগভীরতার পথে এগিয়ে এসেছেন, তার প্রমাণ আছে বংশীখণ্ডেই। এই খণ্ডেরই প্রত্যাশিত পরিণাম দেখা যায় ‘রাধাবিরহ’ অংশে। যে গীতিকাব্যিক মূর্চ্ছনার সূচনা হয়েছিল “কেনা বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নঈ কূলে” ইত্যাদি পদে, তার সার্থক পরিণতি ঘটল “দিনের সুরুজ পোড়াআঁ মারে রাতিহো এ দুখ চান্দে” ইত্যাদিতে। রাধার চারিত্রিক বিবর্তনে সম্পূর্ণতা দেখানোর সূত্র ‘রাধাবিরহ’ এই কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য এক অঙ্গ। অন্য কোনও কবির হাত থেকে পূর্বের কাহিনি, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদির এতখানি সঙ্গতিপূর্ণ ধারাবাহিকতা আশা করা যায় না। অতএব কিছু ক্ষেত্রে মৃদু সংশয় থাকলেও কাব্যের অন্তর্বর্তী প্রমাণে ‘রাধাবিরহ’ যে মূল কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ তা স্বীকার করে নেওয়া যায়। এই অংশটি না থাকলে বড়ু চণ্ডীদাসের কবিপ্রতিভার সামগ্রিক মূর্তিটি অনুধাবন করা যেত না।
ru2jb29e58hlhwofq48auxm4xm7ews2
85720
85714
2025-07-06T10:43:56Z
Jonoikobangali
676
/* কাব্য পরিচয় */
85720
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি: বড়ু চণ্ডীদাস===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
===কাব্য পরিচয়===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' রাধাকৃষ্ণের প্রণয়মূলক আখ্যানধর্মী কাব্য। ধ্রুপদি প্রেমকাহিনির মধ্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেম বিশেষত্ব-মণ্ডিত। রামসীতা বা হরপার্বতীর ন্যায় এই প্রেম স্বকীয়া বা বিবাহোত্তর প্রেম নয়, এই প্রেমের প্রকৃতি পরকীয়া। বস্তুত ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ছাড়া আর কোথাও রাধাকৃষ্ণের স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধ দেখানো হয়নি। লোক-ঐতিহ্যে রাধা কৃষ্ণের মাতুলানী। ফলে এই প্রেম নিয়ে অনেক মুখরোচক গালগল্প তৈরি হয়েছিল এক সময়ে। চৈতন্য-পরবর্তী যুগে অবশ্য রাধা তত্ত্বে পরিণত। তখন তিনি কৃষ্ণের স্বকীয়া অন্তরঙ্গা শক্তি। হ্লাদিনীর সারভূত রূপ মহাভাব থেকে রাধার উৎপত্তি ব্যাখ্যাত। কিন্তু বড়ু চণ্ডীদাস প্রাক্-চৈতন্য যুগের কবি। রাধাকে তিনি চিত্রিত করেছেন প্রাকৃত রমণী রূপেই, কোনও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের আলোকে নয়। স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর মাতুলানী-ভাগিনেয় সম্পর্ক। ফলে এই কাব্য লোকরঞ্জনকারী এক কাহিনিতে পর্যবসিত হয়েছে। এর ভাব, ভাষা, আঙ্গিক, পরিবেশ সবই গ্রামীণ। গ্রাম্য রুচির কাছে আত্মসমর্পণ করে পণ্ডিত কবি এই কাব্যে পুরাণকথা ও লোকশ্রুতির মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। তবে তাঁর মধ্যে প্রতিভার অভাব ছিল না। সেই প্রতিভায় রাধা, কৃষ্ণ ও বড়ায়ির চরিত্র হয়ে উঠেছে সমুজ্জ্বল। ভাগবত পুরাণে রাধার উল্লেখ পাওয়া যায় না। জয়দেবই প্রথম রাধাকে নিয়ে বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেন। বড়ু চণ্ডীদাসের অন্যতম আদর্শ এই রচনা। তবে রাধা চরিত্র চিত্রণে তিনি যে প্রখর সমাজবাস্তবতা ও সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন, তা অনবদ্য। দেশীয় ভাষায় এইপ্রকার বৃহদায়তন প্রথম আখ্যানকাব্য রচনার কৃতিত্ব বড়ু চণ্ডীদাসেরই প্রাপ্য।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশ পাওয়া যায়নি। মাঝের কয়েকটি পাতাও অবলুপ্ত। পাওয়া গিয়েছে তেরোটি খণ্ডে বিন্যস্ত মোট ৪১৮টি পদ। কবি প্রথম বারোটি খণ্ডের নাম দিয়েছেন যথাক্রমে (১) জন্মখণ্ড, (২) তাম্বুলখণ্ড, (৩) দানখণ্ড, (৪) নৌকাখণ্ড, (৫) ভারখণ্ড, (৬) ভারখণ্ডান্তর্গত ছত্রখণ্ড, (৭) বৃন্দাবনখণ্ড, (৮) যমুনান্তর্গত কালীয়দমনখণ্ড, (৯) যমুনান্তর্গত বস্ত্রহরণখণ্ড, (১০) যমুনান্তর্গত হারখণ্ড, (১১) বাণখণ্ড ও (১২) বংশীখণ্ড। ত্রয়োদশ খণ্ডটির শেষাংশ পাওয়া যায়নি বলে এই খণ্ডের কবিকৃত নামটি জানা যায় না। সম্পাদক বসন্তরঞ্জন এই খণ্ডের নামকরণ করেছেন ‘রাধাবিরহ’। তেরোটি খণ্ডে অখণ্ড সুস্পষ্ট একটি গল্প বলা হয়েছে। গল্প এগিয়েছে কবির বিবৃতি এবং আখ্যানের মুখ্য তিন চরিত্রের কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে। গল্পটি সংক্ষেপে এইরকম:
অত্যাচারী কংসের পীড়নে ব্যথিতা বসুন্ধরার আর্তিতে স্বর্গের দেবতারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, কংসের বিনাশের জন্য নারায়ণ ‘কৃষ্ণ’ নাম নিয়ে বসুদেবের গৃহে দেবকীর উদরে জন্মগ্রহণ করবেন। তাঁর সম্ভোগের জন্য লক্ষ্মীও প্রেরিত হলেন রাধা রূপে। তার পিতা সাগর, মাতা পদুমা বা পদ্মা। দেবগণের ইচ্ছানুসারে রাধার স্বামী হলেন নপুংসক আইহন। বালিকাবধূ রাধার পরিচর্যার জন্য এলেন পদ্মার বুড়ি পিসি বড়ায়ি। গোপরমণী রাধাকে দুধ-দই বেচতে মথুরার হাটে যেতে হয়। একদা রাধা বড়ায়ির দৃষ্টিপথের বাইরে চলে যায়। তার রূপ-গুণ বর্ণনা করে ব্রজের রাখাল নন্দগোপসুত কৃষ্ণের কাছে বড়ায়ি রাধার সন্ধান জানতে চাইল। সেই রূপের কথা শুনে কৃষ্ণের মনে রাধাসঙ্গের বাসনা জেগে উঠল। বড়ায়ির হাতে তাম্বুল অর্থাৎ পান দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব জানালেন কৃষ্ণ। কিন্তু বিবাহিতা রাধার মনে তখনও স্বামী-সংস্কার তীব্র। পরপুরুষের প্রতি বিরাগ সে ক্রুদ্ধ হয়ে তাম্বুলে লাথি মেরে বড়ায়িকে অপমান করে তাড়িয়ে দিল। অপমানিতা বড়ায়ি এসে কৃষ্ণের কাছে সব জানিয়ে এর প্রতিবিধান করতে বলল। দুজনে পরামর্শ করল, যমুনার ঘাটে কৃষ্ণ দানী সেজে বসবে এবং দানের ছলে দুধ-দই নষ্ট করবে, হার কেড়ে নেবে, কাঁচুলি ছিঁড়বে। পরামর্শ অনুযায়ী কুতঘাটে বসে রইল কৃষ্ণ। রাধা সখীদের নিয়ে এল সেই ঘাটে। কৃষ্ণ দানী হয়ে মহাদান চেয়ে বসল। শুধু পণ্যদ্রব্য পার করার কড়ি নয়, রাধার অঙ্গের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ কড়ি দাবি করল সে। কড়ি না দিলে দিতে হবে আলিঙ্গন। কিন্তু রাধার পক্ষে তা মেনে নেওয়া কখনই সম্ভব নয়। শুরু হল বাগবিতণ্ডা। রাধা কৃষ্ণকে নিবৃত্ত করতে চায় মাতুলানী সম্পর্কের কথা তুলে। কিন্তু কৃষ্ণের বক্তব্য “নহসি মাউলানী রাধা সম্বন্ধে শালী”। কৃষ্ণ রাধাকে পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেও রাধা সেসব বিস্মৃত। শেষে রাধার বাধাদান সত্ত্বেও কৃষ্ণ তার সঙ্গে বনের মধ্যে মিলিত হল। আবারও বড়ায়িয়ের কৌশলে রাধা এল যমুনার ঘাটে। একাকিনী রাধাকে যমুনা পার করার সময় কৃষ্ণ মাঝ-নদীতে ঝড় তুলে রাধার মনে ভীতি সঞ্চার করল। ভয়ার্ত রাধা বাঁচার জন্য কৃষ্ণকে জড়িয়ে ধরতে বাধ্য হল। সেই সুযোগে নদীমধ্যে দুজনের মিলন ঘটল। এতদিনে রাধা বুঝতে পেরেছে কৃষ্ণের দুর্বলতা কোথায়। তাই সে এবার নিজেই অগ্রণী হয়ে মথুরার হাটের জন্য বড়োসড়ো পসরা সাজালো। মথুরার পথে যেতে কৃষ্ণকে ‘সুরতি’ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বইয়ে নিল দুধ-দইয়ের ভার। একইভাবে দেহলোভী কৃষ্ণকে দিয়ে প্রচণ্ড রোদে ছাতাও বহন করালো রাধা। অতঃপর বৃন্দাবনে মহাসমারোহে ঘটল বসন্তের আবির্ভাব। রাধা এবার আড়চোখে চেয়ে ও নানা অঙ্গভঙ্গি করে কৃষ্ণের কামনা জাগিয়ে তুলল। ষোলোশো গোপিনী সঙ্গে বিলাস সমাপ্ত করে কৃষ্ণ রাধার কাছে এসে দেখল সে অভিমানাহত হয়ে বিষণ্ণ মনে নীরবে বসে আছে। কৃষ্ণ মধুর বচনে রাধার মান ভাঙিয়ে লিপ্ত হল সঙ্গমে। রাসলীলায় কৃষ্ণের উৎসাহ বৃদ্ধি পেতে জলক্রীড়ার কথা চিন্তা করে কালীদহের বিষাক্ত জল বিষমুক্ত করতে দহে নেমে পড়ল কৃষ্ণ। বিষের তীব্রতায় কৃষ্ণ অচৈতন্য হয়ে পড়লে নন্দ, যশোদা, বলরাম প্রমুখ আত্মীয়েরা বিলাপ করতে লাগলেন। কৃষ্ণের বিপদ অনুমান করে যাবতীয় লোকলজ্জা ত্যাগ করে রাধা এবার সর্বসমক্ষে ‘পরাণপতি’ বলে কেঁদে উঠল। অবশেষে কালীয় নাগকে দমন করে কৃষ্ণ উঠে এল জল থেকে। একদিন রাধা সখীদের নিয়ে যমুনায় জল ভরতে এসে কৃষ্ণের সঙ্গে জলকেলিতে মত্ত হল। সেই সুযোগে কৃষ্ণ গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করল। রাধার অনুনয়ে কৃষ্ণ বস্ত্র ফিরিয়ে দিলেও তার বক্ষহারটি লুকিয়ে রাখল। হার না পেয়ে রাধা এবার গিয়ে অনুযোগ জানালো কৃষ্ণজননী যশোদার কাছে। যশোদা কৃষ্ণকে ভর্ৎসনা করলে অপমানিত কৃষ্ণ ফুলধনু দিয়ে রাধাকে বাণাহত করে মূর্চ্ছিত করল। কিন্তু এবার বড়ায়ি কৃষ্ণের আচরণে ক্ষুব্ধ হল। সে তিরস্কার করে রাধার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে বলল। তখন কৃষ্ণের হস্তস্পর্শে রাধার চৈতন্য হল। পরিশেষে বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের পুনর্মিলন ঘটল। এখন আর কৃষ্ণের মনে রাধার প্রতি পূর্বের অদম্য আসক্তি কিছুই নেই। বরং শারীরিক মিলনে রাধার মনে জাগ্রত হয়েছে অপূর্ব সুখোন্মাদনা। সে এখন কৃষ্ণ-অন্তপ্রাণ। তার আর কোনও লজ্জা, ভয় বা সতীত্বের বন্ধন নেই। কৃষ্ণ এবার একটি সুন্দর মোহন বাঁশি গড়িয়ে কদমতলায় বসে একমনে বাজাতে থাকে। তার সেই বাঁশির সুর রাধার চিত্তকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সে ঘর-সংসার ভোলে, তার গৃহকর্ম নষ্ট হয়, মনে মনে ভাবে “দাসী হআঁ তোর পাএ নিশিবোঁ আপনা”। বড়ায়িকে সে বারবার বলে কৃষ্ণকে তার কাছে এনে দিতে। বড়ায়ি বিপরীত কথা বলে রাধাকে নিরস্ত করতে চায়। কিন্তু রাধার মন কোনও যুক্তিতেই বশীভূত হয় না। তখন দুজনে মিলে কৃষ্ণের সন্ধানে বৃন্দাবনে যায়। সেখানে কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। রাতে শয্যায় শায়িত রাধার কানে কৃষ্ণের বাঁশির শব্দ এসে প্রবেশ করে। সে নিদ্রিত স্বামীকে ফেলে একাকিনী কৃষ্ণমিলনের উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু কোথাও কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে পথেই মূর্চ্ছিত হয়ে পড়ে রাধা। বড়ায়ি তার মূর্চ্ছাভঙ্গ করে পরামর্শ দেয় কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করতে। তাই-ই করে রাধা। বাঁশি বিহনে কৃষ্ণ ব্যাকুলভাবে বিলাপ করতে থাকে। অবশেষে বড়ায়ির মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ রাধার কাছে করজোড়ে মিনতি করলে রাধা বাঁশি ফিরিয়ে দেয়। রাধার সকল অপরাধ ক্ষমা করে কৃষ্ণ। বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও শর্ত অনুসারে কৃষ্ণ রাধাকে আর দেখা দেয় না। এবার কৃষ্ণ বিহনে রাধার মনে হতে থাকে “এ ধন যৌবন বড়ায়ি সবই অসার”। সে বারবার বড়ায়িকে কৃষ্ণ এনে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বড়ায়ি তাকে পরামর্শ দেয় কদমতলায় কিশলয় শয্যা রচনা করে প্রতীক্ষা করতে। কিন্তু তাতেও কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। অতঃপর তারা বৃন্দাবনে প্রবেশ করে গোচারণরত কৃষ্ণের দেখা পায়। রাধা তখন কাতরভাবে তার কাছে অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে। তবুও কৃষ্ণের মন গলে না। অবশেষে বড়ায়ির অনুরোধে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গে মিলনে সম্মত হয়। বিহারের পর শ্রান্ত হয়ে কৃষ্ণের উরুতে মাথা রেখে রাধা ঘুমিয়ে পড়লে কৃষ্ণ বড়ায়িকে ডেকে তার হাতে রাধার রক্ষণাবেক্ষণের ভার দিয়ে মথুরায় চলে যায়। নিদ্রাভঙ্গের পর কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে আবার বিষণ্ণ হয়ে পড়ে রাধা। রাধার বিলাপে অস্থির হয়ে বড়ায়ি মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণের কাছে রাধার কথা জানায়। কৃষ্ণের বক্তব্য, সে প্রগলভা রাধার কাছে যাবে না। তার মুখদর্শন করতেও সে ইচ্ছুক নয়। আর তাছাড়া সে মথুরায় এসেছে দুরাচারী কংশকে নাশ করতে। তার আর কোনওমতেই বৃন্দাবনে ফিরে যাওয়া চলে না। এরপরই পুথি খণ্ডিত। যতদূর মনে হয়, কবি রাধা ও কৃষ্ণের বিচ্ছেদেই কাব্যটি সমাপ্ত করেছিলেন।
মধ্যযুগীয় কাব্যে প্রক্ষিপ্তি একটি বড়ো সমস্যা। সাহিত্যের সব শাখাতেই কম-বেশি এটি দেখা যায়। যে যুগের লেখকের কর্তৃত্ব সঠিকভাবে চিহ্নিত হত না, সেই যুগে একের রচনায় অন্যের হস্তক্ষেপ স্থান পেয়ে যেত নির্বিরোধে। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের প্রক্ষেপ নিয়ে প্রথম সংশয় জ্ঞাপন করেন যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি। ‘বড়ু’ ও ‘বাসলী’-বিহীন ভণিতাগুলিকে তিনি অন্যের রচনা বলে মনে করেন। দানখণ্ডের তিনটি পদে ড. সুকুমার সেন প্রক্ষেপ দেখেছেন। আবার কেউ কেউ গায়েনের প্রক্ষেপ লক্ষ্য করেছেন কাব্যের নানা স্থানে। প্রখ্যাত সমালোচক বিমানবিহারী মজুমদারের মতে, সমগ্র ‘রাধাবিরহ’ অংশটিই প্রক্ষিপ্ত। তিনি মোট ছয়টি যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু যুক্তিগুলি যে ততটা প্রমাণনির্ভর নয়, সে বিষয়ে একাধিক গবেষক প্রতি-যুক্তি দিয়েছেন। বিশেষত ‘রাধাবিরহ’ যে কাব্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ তার প্রমাণ রয়েছে কাহিনির অভ্যন্তরীণ কাল-পরম্পরায়, কাব্যের গঠনে, রাধার বয়সের অগ্রহতির সাক্ষ্যে, চরিত্রের ক্রম-পরিণামে এবং অবশ্যই কবির ক্রমবিকশিত প্রতিভার স্তরোন্নয়নে। কাব্যের সূচনায় ‘এগার-বরিষ’-এর রাধা এখানে পূর্ণ যুবতীতে পরিণত, কামুক কৃষ্ণ এই পর্যায়ে ভোগতৃপ্ত হয়ে ‘গততৃষ্ণ’ কৃষ্ণে পর্যবসিত। কবি যে ক্রমশ ভাবগভীরতার পথে এগিয়ে এসেছেন, তার প্রমাণ আছে বংশীখণ্ডেই। এই খণ্ডেরই প্রত্যাশিত পরিণাম দেখা যায় ‘রাধাবিরহ’ অংশে। যে গীতিকাব্যিক মূর্চ্ছনার সূচনা হয়েছিল “কেনা বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নঈ কূলে” ইত্যাদি পদে, তার সার্থক পরিণতি ঘটল “দিনের সুরুজ পোড়াআঁ মারে রাতিহো এ দুখ চান্দে” ইত্যাদিতে। রাধার চারিত্রিক বিবর্তনে সম্পূর্ণতা দেখানোর সূত্র ‘রাধাবিরহ’ এই কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য এক অঙ্গ। অন্য কোনও কবির হাত থেকে পূর্বের কাহিনি, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদির এতখানি সঙ্গতিপূর্ণ ধারাবাহিকতা আশা করা যায় না। অতএব কিছু ক্ষেত্রে মৃদু সংশয় থাকলেও কাব্যের অন্তর্বর্তী প্রমাণে ‘রাধাবিরহ’ যে মূল কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ তা স্বীকার করে নেওয়া যায়। এই অংশটি না থাকলে বড়ু চণ্ডীদাসের কবিপ্রতিভার সামগ্রিক মূর্তিটি অনুধাবন করা যেত না।
===গ্রন্থনাম বিচার===
চর্যাপদের পুথির গ্রন্থনাম নিয়ে যেমন বিতর্ক দেখে দিয়েছিল, তেমনই বিতর্ক দেখা দেয় ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথির নামকরণকে কেন্দ্র করেও। ''তেঙ্গুর'' তালিকা থেকে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে চর্যাপদ সম্পর্কে একটি যুক্তিসিদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, পরবর্তীকালের কোনও গ্রন্থে এই কাব্যের নামোল্লেখও করা হয়নি। প্রকৃত সমস্যার সূত্রপাত আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশের পাতা না পাওয়ায়। বইয়ের সূচনায় এবং পুথির শেষে সমাপ্তিসূচক পুষ্পিকাতেই গ্রন্থনাম পাওয়া যায়। এই দুই অংশ না থাকায় পুথিটি থেকে আবিষ্কর্তা ও সম্পাদক বসন্তরঞ্জন কোনও নাম পাননি। গ্রন্থাকারে প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি সম্পাদিত গ্রন্থের নামকরণ করেছিলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''। পূর্বাপর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচ্যতত্ত্ববিদ উইলসনের দেওয়া একটি ভ্রান্ত তথ্যের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই নামকরণের বিষয়টি। তিনি গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি কর্তৃক যৌথভাবে রচিত ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে এক সংস্কৃত কাব্যের কথা জানিয়েছিলেন। সেই তথ্য প্রথম বিকৃত হয় জগদ্বন্ধু ভদ্রের ‘গোবিন্দদাস’ প্রবন্ধে (''বান্ধব'', শ্রাবণ ১২৮২ সংখ্যা)। তিনি লেখেন, “উইলসন সাহেব কৃত উপাসক সম্প্রদায় গ্রন্থে লিখিত আছে যে, চণ্ডীদাস ও গোবিন্দদাস উভয়ে মিলিত হইয়া কৃষ্ণকীর্তন প্রণয়ন করেন।” এই সংবাদই সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করেন রমণীমোহন মল্লিক, ক্ষীরোদচন্দ্র রায়চৌধুরী, ত্রৈলোক্যনাথ ভট্টাচার্য, ব্রজসুন্দর সান্যাল প্রমুখ প্রাবন্ধিকেরা। ক্রমে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামক কাল্পনিক গ্রন্থটির একক রচয়িতায় পরিণত হন চণ্ডীদাস। বড়ু চণ্ডীদাসের পুথি আবিষ্কৃত হওয়ার পর বসন্তরঞ্জনও ভেবেছিলেন যে, তিনি সেই হারিয়ে-যাওয়া বহুশ্রুত গ্রন্থটিই আবিষ্কার করেছেন। তাই অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে গ্রন্থটির নাম দেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' এবং লেখকের নাম হিসেবে উল্লেখ করেন ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’। গ্রন্থপ্রকাশের এগারো বছর পরে ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে গ্রন্থনাম নিয়ে প্রথম সংশয় প্রকাশ করেন রমেশ বসু। ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-য় প্রকাশিত ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ প্রবন্ধে তিনি এও বলেন যে, “এই গ্রন্থ সংস্কৃত ও লৌকিক পুরাণের সমবায়ে গঠিত বলিয়া ইহাও পুরাণ আখ্যা পাইবার সম্পূর্ণ উপযুক্ত। বাস্তবিকই বাঙ্গালায় কৃষ্ণলীলা বিষয়ক যদি কোন মৌলিক পুরাণ থাকে তাহা এই শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।” ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে ''বিশ্ববাণী'' পত্রিকায় দক্ষিণারঞ্জন ঘোষ ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামক আর-একটি প্রবন্ধে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামের কোনও ভিত্তি পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করে প্রশ্ন তোলেন, “শুধু বসন্তবাবুর ধারণা এবং শোনা কথার মূল্য কি?” চার বছর পরে নলিনীনাথ দাশগুপ্ত ''বিচিত্রা'' পত্রিকায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের সামাজিক তথ্য’ প্রবন্ধে নানা দিক আলোচনা করে পুথিটির ''কৃষ্ণমঙ্গল'' নামকরণের পক্ষপাতী হন। ১৩৪২ বঙ্গাব্দের যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ''প্রবাসী'' পত্রিকায় ‘চণ্ডীদাস চরিত’ প্রবন্ধে মন্তব্য করেন, “এক মস্ত ভুলও হয়ে গেছে, রাধাকৃষ্ণলীলার ‘কৃষ্ণকীর্তন’ নাম হয়ে গেছে।” উপরিউক্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৩৪২ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের ''প্রবাসী'' পত্রিকায় সম্পাদক বসন্তরঞ্জন লেখেন ‘চণ্ডীদাস চরিতে সংশয়’। সেখানে তিনি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামকরণের তাৎপর্য ব্যাখ্যায় প্রয়াসী হন। কিন্তু তাঁর মত গবেষকদের মধ্যে ততটা গৃহীত হয়নি।
নামকরণের সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন ১৩৪২ বঙ্গাব্দে বসন্তরঞ্জন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণে পুথির মধ্যে প্রাপ্ত একটি চিরকুট প্রকাশ করেন। তাতে লেখা ছিল: “শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণঃ।। শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্বের ৯৫ পচানই পত্র হইতে একসও দস পত্র পর্য্যন্ত একুন ১৬ শোল পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চাননে শ্রীশ্রী মহারাজা হুজুরকে লইয়া গেলেন পুনশ্চ আনিয়া দিবেন—সন ১০৮৯”। প্রাচীন পুথির মধ্যে এই ধরনের রসিদ পাওয়ায় এমন ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, রসিদটি উক্ত গ্রন্থ-সংক্রান্ত। ফলে নামকরণকে কেন্দ্র করে স্পষ্টত দুটি দল তৈরি হয়ে গেল। একদল পুথিটির ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নাম রাখার পক্ষপাতী, অন্য দলের মতে এর নাম হওয়া উচিত ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব''। দ্বিতীয় দলের মধ্যে ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বিজনবিহারী ভট্টাচার্য, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য। এর পাশাপাশি অধ্যাপক সত্যব্রত দে ১৩৮৬-৮৭ বঙ্গাব্দের ''রবীন্দ্রভারতী পত্রিকা''-য় একটি কূটতর্ক তুললেন, “গ্রন্থটির সঠিক নাম কি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন না কৃষ্ণকীর্তন?... যে চারটি সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে বসন্তরঞ্জন চণ্ডীদাস-রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ কাব্যের অস্তিত্বে দৃঢ়নিশ্চয় হয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকটিতেই গ্রন্থনাম কৃষ্ণকীর্তনরূপে লিখিত।”
নামকরণ সমস্যার নিরিখে কয়েকটি যুক্তি গ্রহণ করা যেতে পারে। ‘কীর্তন’ শব্দটির অর্থ অনেক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ''বঙ্গীয় শব্দকোষ''-এ ‘কীর্তন’ বলতে ঘোষণা, কথন, বর্ণন, বিবরণ, গুণকীর্তন, স্তবন ইত্যাদি অর্থ নির্দেশিত হয়েছে। ‘কীর্তন’ শব্দটির বৈষ্ণবীয় অর্থ-তাৎপর্য থেকে বের করে এনে যদি প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি অযোগ্য হয় না। যেহেতু উইলসন তাঁর উল্লিখিত গ্রন্থের নামে ‘শ্রী’ শব্দটি যুক্ত করেননি এবং বাঙালি গবেষকেরাও ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামটিই উল্লেখ করেছেন, সেহেতু সত্যব্রত দে-র মতে বইটির নাম ''কৃষ্ণকীর্তন'' হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এই যুক্তির গলদ হল এই যে, উইলসন যে সংস্কৃত ''কৃষ্ণকীর্তন''-এর কথা বলেছেন, তার লেখক গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি—চণ্ডীদাস নন। একটি ভুল ধারণার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে এই মতটিকে অযথা গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন। ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামটিও এই প্রসঙ্গে বিচার্য। প্রাপ্ত রসিদটি আবিষ্কৃত পুথির মধ্যে পাওয়া গিয়েছে বটে, কিন্তু সেই রসিদে বর্ণিত তথ্য যে উক্ত পুথি-সংক্রান্ত হবেই এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। রসিদে বলে হয়েছে যে, ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামক একটি পুথির ৯৫ থেকে ১১০ পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চানন নামে এক ব্যক্তি মহারাজের জন্য ধার করে নিয়ে গেলেন ১০৮৯ সালে অর্থাৎ ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে। তারপর মাস দুয়েকের মধ্যেই পাতাগুলি ফেরৎ এল। ফেরৎ আসার পর খোয়া না যাওয়ার সম্ভাবনা, যেহেতু গ্রন্থাগারটিতে পুথি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা নেওয়া হত এবং যার প্রমাণ এই রসিদ। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ধার নেওয়া পাতাগুলির মধ্যে ৯৮/১ এবং ১০৪-১১০ পত্র অর্থাৎ মোট সাড়ে সাতটি পাতা নিখোঁজ। তাহলে অনুমান করতে হয়, অন্য কোনও পুথির ওই ১৬টি পত্র ধার নেওয়া হয়েছিল, যার রসিদটি কোনওভাবে চলে এসেছে এই পুথির মধ্যে। অধ্যাপক তারাপদ মুখোপাধ্যায় এই ক্ষেত্রে অকাট্য যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, জীব গোস্বামী রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ''। এটি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের একটি মূল্যবান গ্রন্থ। বিষ্ণুপুরে শ্রীনিবাস আচার্য রাজগুরু হিসেবে প্রভূত সম্মান পেয়েছিলেন ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে। বৃন্দাবনের শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রীনিবাসের সাক্ষাৎ গুরু ছিলেন জীব গোস্বামী। বিষ্ণুপুরে বৃন্দাবনের গোস্বামীদের গ্রন্থ প্রচারে একদা মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন শ্রীনিবাস। ছোটো চিরকুটটির মধ্যে যে ‘আচার্য প্রভু’-র কথা আছে, তিনি এই শ্রীনিবাস আচার্য ছাড়া আর কেউ নন। তাই তারাপদ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, বিষ্ণুপুরের রাজা কোনও কারণে জীব গোস্বামীর ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ'' গ্রন্থেরই ১৬টি পাতা ধার নিয়েছিলেন এবং পরে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন। অতএব বসন্তরঞ্জনের প্রাপ্ত পুথিটির নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' হতে পারে না। তবু এই বিষয়ে কোনও পাথুরে প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি গ্রহণ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
tqo71yfxbwc9ktgkdo1fjsn4v1hdfcy
ব্যবহারকারী আলাপ:Md Maruf Islam8010
3
27250
85719
2025-07-06T07:40:18Z
KanikBot
8129
স্বাগতম!
85719
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০৭:৪০, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
3305skofyzb4ls7bhhhgei85por45xi