উইকিবই
bnwikibooks
https://bn.wikibooks.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE
MediaWiki 1.45.0-wmf.8
first-letter
মিডিয়া
বিশেষ
আলাপ
ব্যবহারকারী
ব্যবহারকারী আলাপ
উইকিবই
উইকিবই আলোচনা
চিত্র
চিত্র আলোচনা
মিডিয়াউইকি
মিডিয়াউইকি আলোচনা
টেমপ্লেট
টেমপ্লেট আলোচনা
সাহায্য
সাহায্য আলোচনা
বিষয়শ্রেণী
বিষয়শ্রেণী আলোচনা
উইকিশৈশব
উইকিশৈশব আলাপ
বিষয়
বিষয় আলাপ
রন্ধনপ্রণালী
রন্ধনপ্রণালী আলোচনা
TimedText
TimedText talk
মডিউল
মডিউল আলাপ
ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid
3
7783
85747
85652
2025-07-06T20:19:22Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/যৌনতা */ নতুন অনুচ্ছেদ
85747
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
<div style="border:solid 5px tan; background:antiquewhite; padding:4px;">প্রিয় Tahmid02016, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley.svg|20px|link=]]
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Emblem-question-green.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কি?|উইকিবই কি]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid02016|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:Insert-signature2.svg|link=]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!
[[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]], ০৫:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৭ (ইউটিসি)
</div>
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৮, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ ==
[[চিত্র:Wikibooks_Autopatrolled.svg|right|80px|link=উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]]
সুপ্রিয় Tahmid, আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণের সুবিধা <span class="plainlinks">[http://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=Special:Log&type=rights&user=&page=User:{{PAGENAMEU}} যোগ করা হয়েছে]</span>, কারণ আপনি বিভিন্ন সময়ে মানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য সব পাতা সৃষ্টি করে চলেছেন। এই অধিকার আপনার সম্পাদনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন পাতা ও সম্পাদনা টহল বা পরীক্ষণের চাপ কমাবে। এই সুবিধাটি সম্পর্কে আরও জানতে [[উইকিবই:স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষণ]] পাতাটি দেখতে পারেন। এছাড়া আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা আমার আলাপ পাতায় রাখতে পারেন। আপনার সম্পাদনা আনন্দময় হোক! —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৯:১৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ ==
[[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|80px|ডান|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
সুপ্রিয় Tahmid,
উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলা উইকিবইয়ে [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] শীর্ষক একটি মাসব্যাপী বই লিখন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজি উইকিবই থেকে নতুন বই তৈরি করা হবে।
উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা আপনাকে উইকিবই সমৃদ্ধ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশগ্রহণকারী সকলকে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। বিস্তারিত জানার জন্য [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|প্রতিযোগীতার মূল পাতা]] দেখুন।
আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল হোসেন]] ১৫:১৬, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=48502-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/হোয়াইল লুপ]] ==
পুনরায় যাচাই করার অনুরোধ রইলো [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৬:১৮, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৭:৩২, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]] লিংক ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:০৪, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]] যান্ত্রিক অনুবাদ ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১৯:১৮, ৬ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৪৩, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{উত্তর|SMontaha32|MS Sakib}} ''[[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/পেশাদার লেখনী সম্বন্ধে]]'' পাতাটি গৃহীত হয়েছে। ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]]'' এবং ''[[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/রাউথ-হারউইটজ মানদণ্ড]]'' পাতাদুটির সমীকরণে ভুল আছে আর কাঠামো ঠিক নেই। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদে যান্ত্রিকতা রয়ে গেছে। তাই, পাতাদুটি গৃহীত হয়নি। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৬:০০, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] ধন্যবাদ। তবে এতদিন দেরি করার কারণ কী? প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছিল। কিন্তু আপনি ২৫+ দিন পর রেসপন্স করেছেন। এখন প্রতিযোগিতা ক্লোজ হয়ে গেলে প্রতিযোগীর কিছুই করার থাকবে না! ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০৬:৪৮, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::{{উত্তর|MS Sakib}} প্রথমত, [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫/পর্যালোচনা নীতিমালা|পর্যালোচনার নিয়মানুযায়ী]] একটি পাতা কেবল একবার সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। তাই, ২য় পর্যালোচনার পরে এখন উক্ত পাতাগুলো যদি ব্যবহারকারী সংশোধন করেনও, তবুও তা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হবে না। দ্বিতীয়ত, পাতা যে আমাকেই পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে এমন না। আপনিও চাইলে পর্যালোচনা করতে পারতেন। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ০৮:৪৬, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] পর্যালোচনার ক্ষেত্রে এই নিয়মটা পুরোপুরি স্ট্রিক্টলি ফলো করা হচ্ছে না। বড় কোনো সমস্যা না থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] পাতায় যেমনটা বললেন, সমীকরণে ভুল (আমি কেবল ১টায় পেলাম), এটা ঠিক করা ১ মিনিটেরর কম সময়ের ব্যাপার। এটা আমরা পর্যালোচকেরাই ঠিক করে দেই। এই তুচ্ছ বিষয়ে পুরো পাতা রিজেক্ট করার কোনো মানে হয় না। তাছাড়া প্রতিযোগী প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে জানিয়েছে।
::::::দ্বিতীয়ত, '''পাতা আপনাকেই পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে'''। একান্তই কোনও সমস্যার কারণে কারণে আপনি পুনঃপর্যালোচনা করতে না পারলে সেটা তো অন্তত জানাতে হবে। আপনাকে প্রতিযোগী এখানে দুইবার মেনশন করেছে, আমি টেলিগ্রামে ২ বার জানিয়েছি, একবারও ন্যূনতম কোনো রেসপন্স করেননি। এটার কারণ কী? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১১:২৪, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::::{{উত্তর|MS Sakib}} আমি যেখানে একবার চোখ বুলিয়ে ১৫টা সমীকরণের কাঠামোয় ভুল পেলাম, সেখানে আপনি মাত্র এক জায়গায় ভুল পেয়েছেন বলার কারণ বুঝলাম না। ইংরেজি উইকির পাতার সাথে বাংলা পাতাটির তুলনা করে দেখুন। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:২৪, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::::::::@[[ব্যবহারকারী:Tahmid|Tahmid]] আচ্ছা, ভুল আছে বুঝলাম। কিন্তু রেসপন্স না করার কারণ কী? আপনাকে বারবার জানানো হচ্ছিল। আপনি ২৫+ দিন পর রেসপন্স করেছেন।
::::::::আপনি ২য়বার পর্যালোচনা করা হবে না, এই নিয়মের উল্লেখ করেছেন। কিন্তু [[নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/স্যাম্পলড ডেটা সিস্টেম]] পাতায় ফাউন্টেনে বলেছেন কেবল "যান্ত্রিক অনুবাদ; Geometric progression = গুণোত্তর ধারা"। সমীকরণে ভুলের কথা একবারও উল্লেখ করেননি। প্রতিযোগী আপনার বলা সমস্যা সমাধানের পর যদি আপনি নতুন সমস্যা পান, সেজন্য প্রতিযোগীকে অবশ্যই সময় দিতে হবে। আপনি যদি শুরুতেই সমীকরণের ভুলের কথা উল্লেখ করতেন, তাহলে নিয়মটা প্রাসঙ্গিক হতো।
::::::::যাইহোক, এখনও আমার মূল প্রশ্ন হচ্ছে, গত ২৫+ দিনে প্রতিযোগী সহ আমিও একাধিক জায়গায় আপনাকে জানানো হলেও রেসপন্স না করার কারণ কী? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১২:৩১, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/স্ট্রিং ডেটা টাইপ]] ==
উক্ত পাতাটির কাঠামো কেউ একজন পরিবর্তন করে ফেলেছে । এটিকে পূর্বাবস্থায় কীভাবে নিয়ে যাবো? যাতে করে পুনরায় যাচাই করতে পারেন? [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৭:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:{{উত্তর|MD Abu Siyam}} পাতাটিকে আমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছি এবং প্রতিযোগিতায় পাতাটি গ্রহণ করেছি। তবে, কোনো সম্পাদনা বাতিল করতে চাইলে ঐ পাতার ইতিহাসে যাবেন। তাহলে সম্পাদনার পাশে "পূর্বাবস্থায় ফেরত" অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে সম্পাদনাটি বাতিল হয়ে যাবে। –– [[ব্যবহারকারী:Tahmid|তাহমিদ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Tahmid|আলাপ]]) ১২:৩৪, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/যৌনতা]] ==
পাতাটি সংশোধন করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ২০:১৯, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
rc47cgtk3bq9hsd4jkkwp63it0gxcrp
ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil
3
10826
85740
84059
2025-07-06T20:00:12Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শীতলকারী পাখার শব্দ */ নতুন অনুচ্ছেদ
85740
wikitext
text/x-wiki
{{সংগ্রহশালাসমূহ}}
== সমাধান প্রয়োজন ==
আমি [[ইউরোপের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস/১৯১৪ সাল থেকে ইউরোপ|একটা পাতা]] নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে ওতে আমার নাম যোগ করে রেখেছিলাম। তখনও পাতাটির শিরোনাম লাল রঙের দেখাচ্ছিল অর্থাৎ পাতাটিতে কেউ তখনও লেখা শুরু করে নি। কিন্তু পরবর্তীতে অনুবাদ শেষ করার পর পাতা সম্পাদনা করতে গিয়ে দেখি অন্য একজন সেটা সম্পাদনা করেছে এবং জমা দিয়ে দিয়েছে। অন্যের নামে যোগ করা পাতা সম্পাদনা করা কি শৃঙ্খলাবহির্ভূত নয়? [[ব্যবহারকারী:কমলেশ মন্ডল|কমলেশ মন্ডল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:কমলেশ মন্ডল|আলাপ]]) ১৩:১১, ৭ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
:আপনার শুরু করার সময় কার কোনো প্রমাণ দিতে পারলে আপনার অনুবাদ তা স্বীকৃতি পাবে [[বিশেষ:অবদান/103.215.227.181|103.215.227.181]] ১৩:২৩, ২১ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== Article check ==
আমার লেখা আর্টিকেলটি পুনরায় পর্যবেক্ষণ করার জন্য অনুরোধ করছি
উইকিশৈশব:মজার বৈজ্ঞানিক গবেষণা/How to make a needle float, and how to make it sink [[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MR.ANABRATA GUCHAIT|আলাপ]]) ০৪:১৫, ৮ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] পাতাটি বাংলা ভাষায় লিখুন —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৮:২৮, ৯ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
::ঠিক আছে [[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MR.ANABRATA GUCHAIT|আলাপ]]) ১৫:৫২, ১১ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== Point ==
'''আমার লেখা প্রতিটি আর্টিক্যালে আপনি শূন্য পয়েন্ট দিচ্ছেন। আপনি পুনরায় ভালো করে আর্টিক্যালগুলি চেক করে দেখুন! কোন ত্রুটি নেই, নিজের লেখা আর্টিক্যাল।
দয়া করে আর্টিকেল গুলির পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে নাম্বার দেবেন।
খাতা সংশোধন করার পরে নম্বর দেওয়ার অনুমতি আছে, কিছু আপনি দিচ্ছেন না।
আমার কর্তব্য সবাইয়ের কাছে সহজ ভাবে বিষযগুলির ব্যাখ্যা দেওয়া, আপনার পছন্দ হলে গ্রহণ করবেন।
সবকিছুই সময়ের উপর নির্ভর করে।
'''
আপনি যখন পয়েন্ট দিচ্ছেন তার টাইম কোন নির্দিষ্ট নেই, খাতা অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই পয়েন্ট দিচ্ছেন, যেগুলো পয়েন্ট দেননি তো দেন-ই-নি।
[[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MR.ANABRATA GUCHAIT|আলাপ]]) ১২:০৫, ১২ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] পাতা সম্পূর্ণ না করে জমা দিবেন না। গৃহিত হয়নি এমন পাতা সংশোধন করে জানালে সেটা পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১২:০৯, ১২ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
::এখনো পর্যন্ত আমি যে কটা আর্টিকেল বা পাতা লিখেছি সবকটি আজকেই সংশোধন করা হয়েছে দেখতে পারেন। [[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MR.ANABRATA GUCHAIT|আলাপ]]) ১২:৪৭, ১২ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:MR.ANABRATA GUCHAIT|MR.ANABRATA GUCHAIT]] আপনার লেখা পাতাগুলো গুগল অনুবাদ বা যান্ত্রিক অনুবাদে পরিপূর্ণ। এগুলো সরল ও প্রাজ্ঞল ভাষায় লিখুন যাতে পড়লেই সহজে বোঝা যায়। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৩:৩৭, ১২ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== ফাউনন্টেন সমাধান ==
উইকিশৈশব:ভাষা/আইসল্যান্ডীয়
যোগ করতে পারছি না ফাউনন্টেনের মাধ্যমে। বলছে-
Another user has already added this article to the editathon [[ব্যবহারকারী:Vilen09|Vilen09]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Vilen09|আলাপ]]) ০৭:২০, ২৬ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Vilen09|Vilen09]] এখন চেষ্টা করুন। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৮:৫১, ২৬ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
::ধন্যবাদ [[ব্যবহারকারী:Vilen09|Vilen09]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Vilen09|আলাপ]]) ০৪:০০, ২৭ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== টুলফোর্জ এ সমস্যা ==
প্রতিযোগিতার সময়সীমা কি বাড়ানো হয়েছে? টুলফোর্জ কিন্তু দেখাচ্ছে এখনো ১৭ ঘণ্টা বাকি আছে। [[ব্যবহারকারী:কমলেশ মন্ডল|কমলেশ মন্ডল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:কমলেশ মন্ডল|আলাপ]]) ০৬:৪৫, ১ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:কমলেশ মন্ডল|কমলেশ মন্ডল]] নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তৈরি পাতাগুলো এই সময়ে শুধুমাত্র জমা দেওয়া যাবে, সময় বৃদ্ধি করা হয়নি। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৬:৪৭, ১ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
== A barnstar for you! ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Original Barnstar Hires.png|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''The Original Barnstar'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | original [[ব্যবহারকারী:Md Aahradul Islam Tasin|Md Aahradul Islam Tasin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Aahradul Islam Tasin|আলাপ]]) ০৯:২৫, ৫ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
== সংশোধন করা হলো ==
জনাব,<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/লেখক<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/তথ্যসূত্র<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/আরো পড়ুন<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/শিক্ষায় আইসিটি একীভূত করার ক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের সমস্যা<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রতিশ্রুতি<br>
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি/ভূমিকা<br>
পাতাগুলো সংশোধন করা হলো<br>
এগুলি ইংরেজি https://en.wikibooks.org/wiki/ICT_in_Education পা্তা থেকে অনুবা্দ করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:Rajan chandra Saha Raju|Rajan chandra Saha Raju]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Rajan chandra Saha Raju|আলাপ]]) ০৭:১০, ৮ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Rajan chandra Saha Raju|Rajan chandra Saha Raju]] পাতাগুলোতে থাকা যান্ত্রিক ও জটিলতায় পরিপূর্ণ অনুবাদ গুলো প্রাঞ্জল ও সরল ভাষায় লিখতে হবে, আমি এখনও পাতাগুলোতে যান্ত্রিক অনুবাদ দেখতে পাচ্ছি। পাতাগুলো নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লিখুন। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৪:২৭, ৮ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
::সবগুলি পাতা সংশোধন করা হয়েছে। এবা্র একটু দেখুন। [[ব্যবহারকারী:Rajan chandra Saha Raju|Rajan chandra Saha Raju]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Rajan chandra Saha Raju|আলাপ]]) ১০:৩৯, ১২ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
== ইলেকট্রনিক্সে হাতেখড়ি/সেমিকন্ডাক্টর ==
ইলেকট্রনিক্সে হাতেখড়ি/সেমিকন্ডাক্টর পাতাটি সংশোধন দেখে জানাবেন ঠিক আছে কিনা। [[ব্যবহারকারী:Rajan chandra Saha Raju|Rajan chandra Saha Raju]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Rajan chandra Saha Raju|আলাপ]]) ১০:২৪, ১২ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
== সংশোধন করা হলো ==
পরিবহনে বিজ্ঞান/সময়সূচী ও সময় নির্ধারণ - এটা যান্ত্রিক অনুবাদ সংশোধন করা হল। [[ব্যবহারকারী:Sourav saha032|Sourav saha032]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Sourav saha032|আলাপ]]) ১৬:১৪, ১৭ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় MdsShakil,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSepliAn9c9o4ISEM6ck_jWW0H_W0pr9596OfZAGy6q_UfTOFw/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১০:৩৩, ২৯ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69608-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় MdsShakil,<br />বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪
<br />১০:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69912-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== টেমপ্লেট:তাক ==
@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] কিছু সমস্যা ছিল টেমপ্লেটে তবে সেগুলো সংশোধন করেছি। সময় পেলে একটু পরীক্ষা করে দেখবেন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১১:৩৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] আপনি না একবার সংশোধন করেছিলেন? কি সমস্যা হয়েছিলো আবার? —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৮:০৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (ইউটিসি)
::বিষয়শ্রেণী যুক্ত হচ্ছিল না। [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০২:১১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (ইউটিসি)
:::টেমপ্লেট:বিভাগ এও কিছু সমস্যা পেয়েছি বিকালে ঠিক করব ইনশাল্লাহ [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০২:২৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (ইউটিসি)
== Notice of expiration of your sysop right ==
<div dir="ltr">Hi, as part of [[:m:Special:MyLanguage/Global reminder bot|Global reminder bot]], this is an automated reminder to let you know that your permission "sysop" (প্রশাসক) will expire on 2025-04-06 14:24:19. Please renew this right if you would like to continue using it. <i>In other languages: [[:m:Special:MyLanguage/Global reminder bot/Messages/default|click here]]</i> [[ব্যবহারকারী:Leaderbot|Leaderbot]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Leaderbot|আলাপ]]) ১৯:৪২, ৩০ মার্চ ২০২৫ (ইউটিসি)</div>
== [[টেমপ্লেট:Printable]] ==
[[টেমপ্লেট:Printable]] কাজ করছে না। দয়া করে নিশ্চিত করুন যে এটি সঠিকভাবে কাজ করা। [[ব্যবহারকারী:Somajyoti|Somajyoti]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Somajyoti|আলাপ]]) ১৪:০৬, ১০ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫: অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ]] ==
{| style="background-color: #f8f9fa; border: 1px solid #ced4da; padding:10px; color: #212529;"
|-
|[[File:Bangla Wikibooks Writing contest 2025 Banner (2).png|frameless|center|300px|link=[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]]]<br/>
সুপ্রিয় MdsShakil,
আশা করি এই গ্রীষ্মের এই রৌদ্রোজ্জ্বল তপ্ত আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ৭ মে থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]''' শীর্ষক একটি বই লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* ১ম স্থান অধিকারকারী ― ৬০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ২য় স্থান অধিকারকারী ― ৪০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৩য় স্থান অধিকারকারী ― ৩০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৪র্থ স্থান অধিকারকারী ― ২৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৫ম স্থান অধিকারকারী ― ২০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৬ষ্ঠ থেকে ১০তম স্থান অধিকারকারী (৫ জন) ― ৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* কমপক্ষে একটি পাতা গৃহীত হলে ― ডিজিটাল সনদপত্র
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৬:৪৪, ১১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=74028-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== [[রন্ধনপ্রণালী:ঘেভার]] ==
পরিবর্তন করা হয়েছে, যাচাই করুন [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০১:২৪, ১২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শীতলকারী পাখার শব্দ]] ==
পাতাটি ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ২০:০০, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
lqud8udywc96kgwvzaulcmb0ph4eepr
ব্যবহারকারী আলাপ:MS Sakib
3
11866
85753
85230
2025-07-06T20:40:02Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/সামাজিক মনোবিজ্ঞান */ নতুন অনুচ্ছেদ
85753
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগতম ==
প্রিয় MS Sakib, উইকিবইয়ে স্বাগতম! [[চিত্র:Smiley oui.gif|30px|link=]] </br>
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Animated tools.gif|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কী?|উইকিবই কী]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:OOjs UI icon signature-ltr.svg|22px|link=|alt=স্বাক্ষর আইকন]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা!<br>
— [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]] [[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৬:৩৮, ১৩ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
== '''উইকি শিশুদের ভালোবাসে''' লিখন প্রতিযোগিতা- ''অংশ নিন ও পুরস্কার জিতুন'' ==
{| style="background-color: #9ee5ff; border: 1px solid #00b0f0; padding:10px;"
|-
|[[File:WLC logo.svg|frameless|right|100px]] সুপ্রিয় {{BASEPAGENAME}},
আশা করি এই গুমোট আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ১৬ অক্টোবর থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' শীর্ষক একটি লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই উন্মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* প্রথম পুরস্কার - ৳১৬০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* দ্বিতীয় পুরস্কার - ৳১২০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* তৃতীয় পুরস্কার - ৳৮০০ গিফট ভাউচার + মুদ্রিত সনদপত্র
* সকল অবদানকারী পাবেন অনলাইন সনদপত্র ও উইকিপদক
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> [[ব্যবহারকারী:Aishik Rehman|Aishik Rehman]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Aishik Rehman|আলাপ]]) ১৮:১৫, ১৭ অক্টোবর ২০২১ (ইউটিসি)
|}
== উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১ <small>(তথ্য প্রদানের অনুরোধ) </small> ==
<div style="border:1px solid #88ddfc;">
<div style=" padding:10px;">
<span style="font-size:180%;">'''উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১'''</span>
<br/>'''১৬ অক্টোবর - ৩১ অক্টোবর, ২০২১'''
</div>
<div style="padding:10px; font-size:1.1em;">[[File:WLC logo.svg|right|frameless]]
'''[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]''' (''উইকি লাভস চিল্ড্রেন'') প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণপূর্বক শিশুতোষ বই রচনা ও অনুবাদের মাধ্যমে বাংলা উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার প্রচেষ্টায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। অনুগ্রহ করে <span class="plainlinks">'''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfHVfa1Aunuqf9O4rCaSYwpzUZYfwGhrThhlCBu9NbwGsxV-A/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি]'''</span> পূরণ করুন এবং পুরস্কার ও সনদপত্র প্রদান সহ পরবর্তী ধাপগুলি সম্পন্ন করতে আমাদেরকে সহযোগিতা করুন৷
<small>আপনার যদি কোনো প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় আয়োজকদের সাথে যোগাযোগ করুন।</small>
শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:Aishik Rehman|Aishik Rehman]]'''
<br />আয়োজক, উইকি লাভস চিল্ড্রেন
<br />০৭:৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২১ (ইউটিসি)
</div>
</div>
== উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১ পদক ==
<div style="display:flex;flex-direction:row; flex-wrap:wrap; justify-content: center; align-items: center; border-radius: 5px; border:1px solid lightblue; padding:10px;gap:10px;">
<div style="flex:0 0 200px; display:inline-block;">[[File:Blue Barnstar.png|200px|link=|পদক]]</div>
<div style="flex:1 0 300px; text-align: left; vertical-align:middle; display:inline-block;">
<span style="font-family: Siyam Rupali; font-size: 1.5em;">'''উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১ পদক'''</span><br>
<p>প্রিয় MS Sakib,<br>
বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, ‘[[উইকিবই:উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১|উইকি শিশুদের ভালোবাসে ২০২১]]’ শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় শিশু বিষয়ক গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:Aishik Rehman|Aishik Rehman]]'''
<br />আয়োজক, উইকি লাভস চিল্ড্রেন
<br />০৭:৫২, ২ ডিসেম্বর ২০২১ (ইউটিসি)
</p>
</div>
</div>
== গণিতে হাতেখড়ি/ঋণাত্মক সংখ্যা ==
জনাব {{BASEPAGENAME}},<br/>
[[উইকিবই: উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]] উপলক্ষে প্রস্তুত করা [[উইকিশৈশব:গণিতে হাতেখড়ি/ঋণাত্মক সংখ্যা]] বইটি পুনঃ পর্যালোচনা করুন। — [[ব্যবহারকারী:MdaNoman|নোমান]] <span>[[User talk:MdaNoman |(আলাপ)]]</span> ১৪:২০, ৫ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় MS Sakib,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]-এ পর্যালোচক হিসেবে কাজ করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনার আন্তরিক সহয়তার জন্য প্রতিযোগীতাটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSe6AjysEkRQO1R86LmhqJxQvt9siyvaCx6__xHbiyGINyvg4A/viewform এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৬:০৭, ২৩ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52127-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== ইউজার লিস্টে নাম আসে না কেন? ==
ভাইয়া আমি সদস্য হয়েছি। বেশ কয়েকটা জমা দিয়েছি কিন্তু এইখানে লিস্টে আমার নাম আসে না কেন? [[ব্যবহারকারী:Robiul islam 50|Robiul islam 50]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Robiul islam 50|আলাপ]]) ১০:০৬, ২২ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় MS Sakib,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfbU0XnUtQltWCaC59XqYCfjFicHrveyMOi_wW_g-I4FRnJMA/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১০:২১, ২৯ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69589-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় MS Sakib,<br />বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪
<br />১০:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69912-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== পুনঃপর্যালোচনা করার অনুরোধ ==
জনাব দয়া করে [[রন্ধনপ্রণালী:চিকেন নাগেট]] পাতাটি পুনঃপর্যালোচনা করুন। আমি আপনার বার্তা মতো যথাসাথ্য সম্পাদনা করেছি। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৩৮, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MS Sakib|MS Sakib]] [[রন্ধনপ্রণালী:চিকেন রোল]] কেও পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ করবো। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৪:৫১, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::[[রন্ধনপ্রণালী:চিকেন রোল]]
::১/২ কাপ + ১ কাপ এটা কী ধরনের মাপ? প্যান এর বাংলা করুন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৫:৪১, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] প্যান এর বাংলা আমার জানা নাই। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৬:১৫, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] তাওয়া হতে পারে [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৬:১৭, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::::একই সমস্যা ২ টেবিল চামচ + ২ টেবিল চামচ [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৬:১৮, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MS Sakib|MS Sakib]] [[রন্ধনপ্রণালী:লাচ্ছা সেমাই]] টাকেও প্লিজ। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৫:১২, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::[[রন্ধনপ্রণালী:লাচ্ছা সেমাই]]
::প্যান শব্দের বাংলা করুন। "দুধ ফুটে মিষ্টি হয়ে যাবে" মানে কী? এই বাক্য সংশোধন করুন। কোনো লেখা গত পরিবর্তন করা হয়নি পর্যালোচনার পর [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৫:৩৫, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::{{ping|Md Mobashir Hossain}} [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১৫:৪৫, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MS Sakib|সাকিব]] ভাই, আমি সব সংশোধন করেছি আর আমাকে সতর্ক করার জন্য @[[ব্যবহারকারী:R1F4T|রিফাত]] ভাইকে অনেক ধন্যবাদ। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১৬:২৬, ১২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MS Sakib|MS Sakib]] ভাই! [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৭:০৭, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] পুনঃপর্যালোচনা করা হবে। অপেক্ষা করুন। বারবার পিং করার প্রয়োজন নেই। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১৯:০২, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::::সাকিব ভাই! মনে হয় ভুলে গিয়েছেন। :/ [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৫:০৬, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] "১/২ কাপ" বলতে ১ থেকে ২ কাপ অথবা ১ বা দুই কাপ বুঝানো হতে পারে। তাই "আধা কাপ" লিখুন। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:১৯, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] {{tl|ভগ্নাংশ}} ব্যবহার করতে পারেন [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ০৬:৪৮, ৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/লেখকের স্বীকৃতি]] ==
পুনরায় যাচাই করবেন [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৮:১২, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] এখনও অত্যন্ত যান্ত্রিক। "কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়, যারা ‘‘Object-Oriented Programming in Python’’ গ্রন্থটিও CC-BY-SA লাইসেন্সে ভাগ করে নিয়ে তাঁদের প্রচেষ্টার ওপর ভিত্তি করে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।" এটা স্বাভাবিক বাক্যগঠন? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ১৯:৩৯, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
::আবার দেখুন [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৬:০১, ৩০ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== ইন্দ্রিয়তন্ত্র/পরিশিষ্ট ==
যদিও বিজ্ঞান শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে আমরা জানি এমনভাবে বিজ্ঞান বইগুলো লেখা হয়। তারপরও সম্পূর্ণ বাংলায় করে দিলাম [[ব্যবহারকারী:Editobd|Editobd]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Editobd|আলাপ]]) ১০:০৯, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[রন্ধনপ্রণালী:ঘোল]] ==
আপনি [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] দেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন, ও সেটি দেখে পরিবর্তন করতে বলেছেন। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কোথায় পরিবর্তন করতে হবে, আমি “সমুচা” পাতাটি দেখেই এই রন্ধনপ্রণালী লিখেছি। কিছু বাড়তি জিনিস যুক্ত করেছি বটে, তবে অপ্রাসঙ্গিক নয়। [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৬:৪৭, ৩১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]]: দুঃখিত, পুরোটাই আগাগোড়া AI লিখিত। বাংলা উইকিবইয়ের রন্ধনপ্রণালীতে "আরও দেখুন" সহ অতিরিক্ত কিছু লেখা হয় না।
:তালিকার উপরে নির্দেশিত কাঠামো হিসেবে [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] দেওয়া ছিল। আপনার সবগুলো পাতা এই অনুযায়ী সংশোধন করুন, নয়তো গৃহীত হবে না। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০০:৫৫, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::শুধু “আরও দেখুন” অংশ নয়, আমি “ঐতিহাসিক ঘটনা”, “সাস্থ্যসচেতনতা” অংশ ও যুক্ত করেছি। আর এটি ইচ্ছে করেই আমার নিজ থেকে যুক্ত করা। এটি AI এর কাজ নয় !!!
::প্রতিযোগিতার আলাপ পাতায় রন্ধনপ্রণালী তে “তথ্যসূত্র” যোগ করা নিয়ে একজন প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেখানেই উত্তর পেয়েছি যে, তথ্যসূত্র বাধ্যতামূলক নয়, তবে [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] থেকে বাড়তি অংশ যোগ করলে আরও ভালো হবে।
::সেজন্যই পাতাকে তথ্যবহুল করতে আমি বিভিন্ন অংশ যুক্ত করেছি। আমি চাইলে ওই সকল অংশ মুছে ফেলতে রাজি।
::তবে এই ব্যপারে আলোচনা প্রয়োজন ও সঠিক কারণও দেওয়া প্রয়োজন। [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৯:০০, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] প্রতিযোগিতায় যেমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেরকম না হলে গ্রহণ করার সুযোগ নেই। আপনি আলাপ পাতায় যার মন্তব্যের কথা বললেন, সে আয়োজক বা পর্যালোচকদের কেউ নয়। সে কেন এমনটা বলেছে, তা কেবল সে-ই বলতে পারে। প্রতিযোগিতার [[উইকিবই আলোচনা:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫#রন্ধনপ্রণালী নাম স্থানের পাতা সমূহ|মূল আয়োজকের বক্তব্য]] দেখুন (১১ মে ২০২৫)। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ০০:১০, ১৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== পরামর্শ গ্রহণ পূর্বক যথাযথ সংশোধন আনা হয়েছে ==
আসসালামুয়ালাইকুম, ঈদ মোবারক। আশা করি পরিবার নিয়ে ভালো আছেন। আমার তৈরীকৃত এবং আপনার দ্বারা একবার পর্যালোচিত [[পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন নির্দেশিকা/শব্দ]] পাতাটির যান্ত্রিকতা দূরীকরণে আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি আমার উক্ত পাতাটি পুনরায় পর্যালোচনা করবেন। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৯:১৭, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:আমি আরো একটি পাতা সংশোধন করেছি, সময় পেলে দেখুন - [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/স্থিতিবিদ্যা]] [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৯:২৩, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] পাস্কাল একক? ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২১:৩৫, ৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] পাস্কাল নামে কোনো একক নেই ওটা হয়তো প্যাসকেল হবে [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১০:৪৬, ৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] আমি দেখলাম নিবন্ধটিতে ইংরেজির কিছু বিষয়বস্তু নেই আবার অনেক জিনিস অন্যভাবে লেখা আপনি অন্যভাবে সহজ করার উদ্দেশ্যে লিখতেই পারেন কিন্তু কিছু বাক্য দেখলাম ইংরেজির সংস্করণে থাকলেও বাংলা নেই আবার কিছু জিনিস আপনি নিজে থেকেও যুক্ত করেছেন কোনো বিশেষ কারণ? কিংবা কেনো এমন হয়েছে তার পেছনে কোনো যুক্তি? [[ব্যবহারকারী:R1F4T|R1F4T]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:R1F4T|আলাপ]]) ১১:০৫, ৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/আসুকা যুগ]] ==
[[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/আসুকা যুগ]] পাতায় কিছু ছোটখাটো সমস্যা ছিল যেগুলো আমি সংশোধন করেছি। কিন্তু এখানে প্রথম কয়েকটি অনুচ্ছেদে একই লেখা দুই তিনবার দেখা যাচ্ছে। এগুলো আমার জন্য শনাক্ত করে মুছে ফেলা কঠিন, এগুলো আপনাকে ঠিক করতে হবে। তারপর আমাকে জানালে আমি আবার পর্যালোচনা করবো। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ২৩:৫৭, ১৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] দুঃখিত। কয়েক দফায় সংশোধন করার ফলে আমার অসাবধানতা বশত এমন হয়েছে। এখন ঠিক করা হয়েছে। বাকি পাতাগুলোও দেখলাম। এই সমস্যা আর কোনোটাতে নেই। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২৩:০০, ১৯ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপান]] ==
ঠিক করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনার জন্য অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৬:৫১, ১৯ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ ==
[[প্রাণীর অঙ্গসংস্থান ও শরীরবিদ্যা/শব্দকোষ/ড-ঢ]] পাতাটিতে সংশোধন করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনার জন্য অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|আলাপ]]) ১৯:৪৭, ২২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] গৃহীত হয়েছে। ≈ <b style="border:1.5px solid #736AFF;font-family:georgia;font-variant:small-caps">[[User:MS_Sakib|<b style="background-color:#FBB117;color:#7E2217">MS Sakib </b>]][[User talk:MS Sakib| «আলাপ»]]</b> ২৩:১২, ২২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/সামাজিক মনোবিজ্ঞান]] ==
পাতাটি ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ২০:৪০, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
4eufioy78k1pnj1b5j5iwh8vhkzauyc
ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS
3
16324
85741
85683
2025-07-06T20:01:59Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ */ নতুন অনুচ্ছেদ
85741
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
প্রিয় NusJaS, উইকিবইয়ে স্বাগত! [[চিত্র:Smiley oui.gif|30px|link=]] </br>
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ; আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিবইকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন।। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে এগুলি দেখুন:
* [[চিত্র:Animated tools.gif|20px|link=]] [[উইকিবই:সহায়িকা|সহায়িকা পাতা]]
* [[চিত্র:Article icon cropped.svg|20px|link=]] [[সাহায্য:কিভাবে একটি নতুন উইকিবই শুরু করবেন|নতুন লেখা শুরু কিভাবে করবেন]]
* [[চিত্র:Notepad icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:রচনাশৈলী নির্দেশিকা|উইকিবইয়ের রচনাশৈলী]]
* [[চিত্র:Books-aj.svg_aj_ashton_01.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:উইকিবই কী?|উইকিবই কী]]
* [[চিত্র:Control copyright icon.svg|20px|link=]] [[উইকিবই:কপিরাইট|কপিরাইট]]
আপনি সম্প্রদায়কে কোন সার্বজনীন প্রশ্ন করতে বা আলোচনা করতে [[উইকিবই:প্রশাসকদের আলোচনাসভা|আলোচনাসভা]] ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার]] আপনাকে কাজের একটি তালিকা দিবে যা দিয়ে আপনি এখানে সাহায্য করতে পারেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে বিনা দ্বিধায় [[ব্যবহারকারী আলাপ:MdaNoman|আমার আলাপের পাতায়]] তা করতে পারেন।
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের [[চিত্র:OOjs UI icon signature-ltr.svg|22px|link=|alt=স্বাক্ষর আইকন]] চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা (<code><nowiki>~~~~</nowiki></code>) চিহ্ন দিয়ে নাম স্বাক্ষর করুন। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার নাম এবং তারিখ যোগ করবে। যদি আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|অভ্যর্থনা কমিটির]] যে-কোনো সদস্যকে প্রশ্ন করুন, বা আপনার আলাপের পাতায় '''<nowiki>{{সাহায্য করুন}}</nowiki>''' লিখুন এবং তার নিচে আপনার প্রশ্নটি লিখুন। একজন সাহায্যকারী কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবেন।<br /> আশা করি আপনি [[উইকিবই:সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বার|বাংলা উইকিবই সম্প্রদায়ের]] একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগত এবং শুভেচ্ছা!<br>
— [[উইকিবই:অভ্যর্থনা কমিটি|উইকিবই অভ্যর্থনা কমিটি]]— [[ব্যবহারকারী:MdaNoman|নোমান]] <span>[[User talk:MdaNoman |(আলাপ)]]</span> ১৪:৪৭, ১ অক্টোবর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS, বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২
<br />১৩:৫৯, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52050-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২২]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLScOFXrwWd6r8bBuutYxDP2CLQaKUQXFpQD4jpwQwmYjIR4f6A/viewform?usp=send_form এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১৬:৩২, ২০ নভেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=52070-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
:আপনি এখনও ফর্মটি পূরণ করেননি। অনুগ্রহ করে আগামী '''দুই দিনের''' মাঝে ফর্মটি পূরণ করুন, এরমাঝে পূরণ না করলে আপনি পুরস্কারের জন্য বিবেচিত নাও হতে পারেন। —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৫:৫৮, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|MdsShakil]] করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ২০:৪৬, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ (ইউটিসি)
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪: তথ্য প্রদানের অনুরোধ ==
{| style="margin: 1em 4em;"
|- valign="top"
| [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest.svg|146px|link=উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]
| <div style="background-color:#f4f3f0; color: #393D38; padding: 0.4em 1em;border-radius:10px;">
সুপ্রিয় NusJaS,<br>[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]-এ অংশগ্রহণের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে, আপনার জমা দেয়া এক বা একাধিক পাতা প্রতিযোগিতায় গৃহীত হয়েছে। আপনাকে অভিনন্দন! আয়োজক দল পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে। তাই আমরা আপনাকে '''[https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSfbU0XnUtQltWCaC59XqYCfjFicHrveyMOi_wW_g-I4FRnJMA/viewform?usp=sf_link এই ফর্মটি পূরণ করতে] অনুরোধ করছি'''। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ফর্মটি পূরণ করে থাকেন, তাহলে দয়া করে দ্বিতীয়বার পূরণ করবেন না। আপনার সম্পাদনা-যাত্রা শুভ হোক। প্রতিযোগিতার আয়োজক দলের পক্ষে —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ১০:২১, ২৯ জুলাই ২০২৪ (ইউটিসি)
</div>
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69589-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক ==
{| style="background-color: #fdffe7; border: 1px solid #fceb92;"
|rowspan="2" style="vertical-align: middle; padding: 5px;" | [[চিত্র:Wikibooks Writing Contest barnstar.svg|100px]]
|style="font-size: x-large; padding: 3px 3px 0 3px; height: 1.5em;" | '''উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪ পদক'''
|-
|style="vertical-align: middle; padding: 3px;" | সুপ্রিয় NusJaS,<br />বাংলা উইকিবইয়ে সম্প্রতি আয়োজিত, '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪]]''' শীর্ষক গ্রন্থলিখন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করায় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় তালিকাভুক্ত গ্রন্থ/গ্রন্থপৃষ্ঠা তৈরির মাধ্যমে বাংলা উইকিবইয়ের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রাখায়, শুভেচ্ছাস্মারক হিসেবে আপনাকে এই উইকিপদকটি প্রদান করা হলো। আশা করি বাংলা উইকিবইয়ের পথচলায় আপনার সরব ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদে থাকুন।
<br />শুভেচ্ছান্তে,
<br />'''[[User:MdsShakil|শাকিল হোসেন]]'''
<br />সমন্বয়ক, উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৪
<br />১০:৩৩, ২৪ আগস্ট ২০২৪ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%98%E0%A6%B0&oldid=69912-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== পুনঃপর্যালোচনা ==
আপনার বার্তা মতো ভুল অনুবাদ সংশোধন ও পরিমার্জিত বাংলায় [[লুইস ক্যারল/থ্রু দ্য লুকিং-গ্লাস]] পাতাটিকে গৃহীত করার মতো পর্যায়ে এনেছি। আশা করি সময় পেলে আমার বার্তাটি ও পাতাটি পুনরায় পর্যালোচনা করবেন। {{Thank you}} -- [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৪:৩৬, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ! [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১২:১৬, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] [[রন্ধনপ্রণালী:চাট]] পাতাটিকেও পুনরায় পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:১৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] নির্দেশনা অনুযায়ী হয়নি। [[রন্ধনপ্রণালী:সমুচা]] দেখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:২৫, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:::মনে হয় সংক্ষিপ্ত করতে বলছেন? [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ০৬:৩৬, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::::@[[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] উক্ত পাতায় যেরকম ফরম্যাটে আছে, সেভাবেই লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৬:৩৯, ২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] দয়া করে [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/অবিচ্ছিন্ন সীমা]] পাতাটি দেখুন! সব ঠিক করেছি। শুরু থেকে শেষ। [[ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain|Md Mobashir Hossain]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Md Mobashir Hossain|আলাপ]]) ১১:০৫, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/শিক্ষা]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১২:১০, ১৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪১, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== লুইস ক্যারল/মিস্টার ডজসন ও মিস্টার ক্যারল ==
পাতাটি সম্পূর্ন অনুবাদ ও ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৩:২৭, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] এখনও ইংরেজি লেখা আছে। Minos, Niemand সহ আরও আছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪২, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/গোষ্ঠী ==
পাতার ফরম্যাটিং ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৫:২২, ২২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] গ্রহণ {{করা হয়েছে}}। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৭:৪৫, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/রেটিনাল ইমপ্লান্ট]] ==
এটা ঠিক করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৪, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৮, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[ইন্দ্রিয়তন্ত্র/স্নায়ুসংবেদী ইমপ্লান্ট/ভেস্টিবুলার ইমপ্লান্ট]] ==
সংশোধন করেছি। [[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:SMontaha32|আলাপ]]) ১০:৫৫, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:SMontaha32|SMontaha32]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১১:০৭, ২৬ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ ==
মহোদয় এই পাতাতে কি যান্ত্রিকতা আছে একটু নির্দিষ্ট করে বলুন [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ০৯:০৫, ২৭ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] কোনো ট্রান্সলেটর টুল বা এআই-এর মাধ্যমে অপরিশোধিত অনুবাদ। complex and compound sentences কে simple করা যান্ত্রিকতা দূর করার একটা সহজ উপায়। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৫:৫৩, ২৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== সংশোধন ==
[[প্রাণীর অঙ্গসংস্থান ও শরীরবিদ্যা/পৌষ্টিকনালী ও পরিপাক/নিজের জ্ঞান যাচাইয়ের উত্তরমালা]] এবং [[তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ/দৃশ্যমান আলো]] অনুবাদ সংশোধন করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|আলাপ]]) ২০:০০, ৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:যুবায়ের হোসাইন কায়েফ|যুবায়ের হোসাইন কায়েফ]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ০৫:৪৪, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== মানব শারীরতত্ত্ব/সংবহন তন্ত্র ==
ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও পাতার ফরমেট ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ০৯:০৬, ১২ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] না, এখনও সব বাংলা পরিভাষা ব্যবহার করা বাকি। পাঠ্যবইয়ে সেমিলুনার কপাটিকা>অর্ধচন্দ্রাকৃতির কপাটিকা, কার্ডিয়াক মাসল>হৃদপেশি, অ্যাওর্টা>মহাধমনী ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। পাতাটিতে এমন আরও ইংরেজি আছে। তাছাড়া অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডকে হৃদয় লেখা হয়না।
:আপনি মাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান বই ডাউনলোড করে সেখানে দেখে পরিভাষাগুলো ব্যবহার করুন। তবে যেগুলোর কোনও বাংলা পরিভাষা ব্যবহৃত হয় না, সেগুলো ইংরেজিতে রাখতে পারেন। আপনি পাঠকের সুবিধার্থে "মহাধমনী বা অ্যাওর্টা"/"মহাধমনী (অ্যাওর্টা)" যেকোনো একভাবে লেখতে পারেন।
:এছাড়াও লেখায় সামান্য যান্ত্রিকতা আছে। Complex and Compound Sentences কে Simple আকারে লিখুন। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১০:২৭, ১৩ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/সংঘর্ষকালীন রাজ্য যুগ ==
ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Asikur.rahman25|আলাপ]]) ১৮:৪৯, ১৭ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Asikur.rahman25|Asikur.rahman25]] গ্রহণ করেছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১৩:৫৭, ১৮ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[চিন্তন ও নির্দেশনা/গণিত শেখা]] ==
ভালো অনুবাদ। তবে এই পাতায় বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ রয়ে গেছে। অনুবাদ ও ব্যাকরণেও কিছু ত্রুটি আছে। এগুলো দ্রুত ঠিক করে আমাকে মেনশন করে জানান। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৭:৪৫, ৩ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] অনেক ধন্যবাদ। আমি সবগুলো ঠিক করেছি। Cognitive Tutor® Algebra I এটাকে ইচ্ছা করেই ইংরেজিতে রেখেছিলাম যাতে হুবুহু নাম হয়। এখন আমি লিপ্যান্তর করেছি।
:আমার বাকি পাতাগুলোও পর্যালোচনা করার অনুরোধ করছি। [[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:NusJaS|আলাপ]]) ১২:১৫, ৪ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::@[[ব্যবহারকারী:NusJaS|NusJaS]] গৃহীত হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:Mehedi Abedin|Mehedi Abedin]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Mehedi Abedin|আলাপ]]) ১৫:৩৯, ৫ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ]] ==
পাতাটি ঠিক করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ২০:০১, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
btot6x11ou5i0e2inttcydrmlz289qq
ব্যবহারকারী:R1F4T/খেলাঘর
2
18619
85770
85718
2025-07-07T05:09:21Z
R1F4T
9121
85770
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৩
|-
| ৪ || R1F4T || ২০৫
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ১৯৯
|-
| ৬ || Ishtiak Abdullah || ১৪৬
|-
| ৭ || Tahmid || ১৪৬
|-
| ৮ || Yahya || ১৩৮
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৭২৮টি
|}
rw5q6ajsuad7xkf16awmmaeyrjxv2r8
85772
85770
2025-07-07T06:20:50Z
R1F4T
9121
85772
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৩
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৭
|-
| ৪ || R1F4T || ২০৭
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ২০০
|-
| ৬ || Ishtiak Abdullah || ১৪৬
|-
| ৭ || Tahmid || ১৪৬
|-
| ৮ || Yahya || ১৩৮
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৭৩৫টি
|}
myawbcx2k8lvyf9795yo2iav5jcd53k
85788
85772
2025-07-07T11:43:11Z
R1F4T
9121
85788
wikitext
text/x-wiki
;পর্যালোচনা পরিসংখ্যান
{| class="wikitable sortable"
! # !! পর্যালোচক !! পর্যালোচনা সংখ্যা
|-
| ১ || MS Sakib || ৩০৪
|-
| ২ || NusJaS || ২৯৮
|-
| ৩ || MdsShakil || ২৯৭
|-
| ৪ || R1F4T || ২০৭
|-
| ৫ || Mehedi Abedin || ২০০
|-
| ৬ || Ishtiak Abdullah || ১৫২
|-
| ৭ || Tahmid || ১৪৬
|-
| ৮ || Yahya || ১৩৮
|-
! colspan="2" | মোট পর্যালোচিত পৃষ্ঠা || ১৭৪২টি
|}
q0ohl7hk5l672hxqnisvojzjvszib24
ব্যবহারকারী আলাপ:Ishtiak Abdullah
3
18996
85728
81827
2025-07-06T19:17:27Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* লুইস ক্যারল/অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড */ উত্তর
85728
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০১:৪০, ১ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== Reminder: Submit Your Local Results for Wiki Loves Ramadan 2025 by 15 May ==
Dear Ishtiak Abdullah,
Thank you for your valuable contributions to '''Wiki Loves Ramadan 2025''' in your communities!
This is a kind reminder that the '''deadline to submit your local results is 15 May 2025'''.
Please make sure to submit the '''complete and detailed results''' of your local contest on the following Meta-Wiki page:
'''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Results]]'''
Additionally, feel free to add a brief summary of your local event under the '''Results''' section in your country/region’s row on the participants page:
'''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Participants]]'''
If you need any assistance during this process, don’t hesitate to reach out.
Thank you for your continued dedication and support!
For, Wiki Loves Ramadan International Team ১১:৫১, ২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
<!-- https://meta.wikimedia.org/w/index.php?title=User:ZI_Jony/MassMessage/WLR/List/Local_organizers&oldid=28651179-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:ZI Jony@metawiki পাঠিয়েছেন -->
== [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫: অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ]] ==
{| style="background-color: #f8f9fa; border: 1px solid #ced4da; padding:10px; color: #212529;"
|-
|[[File:Bangla Wikibooks Writing contest 2025 Banner (2).png|frameless|center|300px|link=[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]]]<br/>
সুপ্রিয় Ishtiak Abdullah,
আশা করি এই গ্রীষ্মের এই রৌদ্রোজ্জ্বল তপ্ত আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ৭ মে থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]''' শীর্ষক একটি বই লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* ১ম স্থান অধিকারকারী ― ৬০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ২য় স্থান অধিকারকারী ― ৪০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৩য় স্থান অধিকারকারী ― ৩০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৪র্থ স্থান অধিকারকারী ― ২৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৫ম স্থান অধিকারকারী ― ২০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৬ষ্ঠ থেকে ১০তম স্থান অধিকারকারী (৫ জন) ― ৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* কমপক্ষে একটি পাতা গৃহীত হলে ― ডিজিটাল সনদপত্র
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৬:৪৪, ১১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=74028-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== Final Reminder – Submit Full Local Results for Wiki Loves Ramadan 2025 by 15 May EOD ==
Dear Ishtiak Abdullah,
This is a final reminder that the deadline to submit your '''full and detailed local results''' for '''Wiki Loves Ramadan 2025''' is '''15 May 2025''' EOD.
Please ensure you complete the following as soon as possible:
* Submit your full results on Meta-Wiki here: '''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Results]]'''
* Add a brief summary of your local event under the "Results" column on: '''[[Wiki Loves Ramadan 2025/Participants]]'''
Failure to submit by the deadline may result in exclusion from the international jury consideration.
If you need help or encounter any issues, feel free to contact the international team.
Thank you once again for your dedication and hard work!
''Warm regards,''<br/>
'''Wiki Loves Ramadan International Team''', ০২:৩৯, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
<!-- https://meta.wikimedia.org/w/index.php?title=User:ZI_Jony/MassMessage/WLR/List/Local_organizers&oldid=28651179-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:ZI Jony@metawiki পাঠিয়েছেন -->
== লুইস ক্যারল/অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড ==
পাতাটি ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৩:১১, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Ishtiak Abdullah|Ishtiak Abdullah]] ঠিক করেছি তো। [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৯:১৭, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[রন্ধনপ্রণালী:চাউমিন]] ==
কিছু ইংরেজি শব্দ ছিলো। সেগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ যুক্ত করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনা করবেন [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৮:০৬, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== চিকেন চিলি ==
চিকেন চিলিতে থাকা সমস্যা সমাধান করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:Editobd|Editobd]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Editobd|আলাপ]]) ১০:০৭, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান/শক্তি]] ==
নিবন্ধটির যান্ত্রিকতা নিরসণ না করেই ভুলবশত আমি জমা দিয়ে দেই।
এখন পরিবর্তন করেছি, দয়া করে পুনরায় যাচাই করবেন — [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৪:৩১, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
axvwwqi9rr9020cc9xj7qzzdebk0rcb
85729
85728
2025-07-06T19:24:29Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* লুইস ক্যারল/অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড */ উত্তর
85729
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০১:৪০, ১ জুন ২০২৪ (ইউটিসি)
== Reminder: Submit Your Local Results for Wiki Loves Ramadan 2025 by 15 May ==
Dear Ishtiak Abdullah,
Thank you for your valuable contributions to '''Wiki Loves Ramadan 2025''' in your communities!
This is a kind reminder that the '''deadline to submit your local results is 15 May 2025'''.
Please make sure to submit the '''complete and detailed results''' of your local contest on the following Meta-Wiki page:
'''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Results]]'''
Additionally, feel free to add a brief summary of your local event under the '''Results''' section in your country/region’s row on the participants page:
'''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Participants]]'''
If you need any assistance during this process, don’t hesitate to reach out.
Thank you for your continued dedication and support!
For, Wiki Loves Ramadan International Team ১১:৫১, ২ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
<!-- https://meta.wikimedia.org/w/index.php?title=User:ZI_Jony/MassMessage/WLR/List/Local_organizers&oldid=28651179-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:ZI Jony@metawiki পাঠিয়েছেন -->
== [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫: অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ]] ==
{| style="background-color: #f8f9fa; border: 1px solid #ced4da; padding:10px; color: #212529;"
|-
|[[File:Bangla Wikibooks Writing contest 2025 Banner (2).png|frameless|center|300px|link=[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]]]<br/>
সুপ্রিয় Ishtiak Abdullah,
আশা করি এই গ্রীষ্মের এই রৌদ্রোজ্জ্বল তপ্ত আবহাওয়াতেও ভালো আছেন। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, গত ৭ মে থেকে বাংলা উইকিবইয়ে '''[[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫]]''' শীর্ষক একটি বই লিখন ও অনুবাদ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতাটি অভিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ও নতুন ব্যবহারকারী সকলের জন্যই মুক্ত।
অন্যান্য ভাষার উইকিবইয়ের চাইতে বাংলা উইকিবইয়ে অবদানকারীর সংখ্যা নিতান্তই কম, এমনকি সংখ্যাটি বাংলা উইকিপিডিয়ার তুলনায়ও নগণ্য। অথচ ডিজিটাল বইয়ের এই যুগে বাংলা উইকিবই যথেষ্ট গুরত্বের দাবি রাখে। এজন্য আমাদের আরও স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। আশা করি আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন ও উইকিবইকে সমৃদ্ধ করবেন। বিস্তারিত [[উইকিবই:উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫|প্রকল্প পাতায়]] দেখুন।
'''শীর্ষ অবদানকারীদের জন্য পুরষ্কার'''
* ১ম স্থান অধিকারকারী ― ৬০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ২য় স্থান অধিকারকারী ― ৪০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৩য় স্থান অধিকারকারী ― ৩০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৪র্থ স্থান অধিকারকারী ― ২৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৫ম স্থান অধিকারকারী ― ২০০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* ৬ষ্ঠ থেকে ১০তম স্থান অধিকারকারী (৫ জন) ― ৫০০ টাকার গিফট ভাউচার ও মুদ্রিত সনদপত্র
* কমপক্ষে একটি পাতা গৃহীত হলে ― ডিজিটাল সনদপত্র
প্রতিযোগিতায় আপনাকে স্বাগত।<br />
শুভেচ্ছান্তে, <br /> —[[ব্যবহারকারী:MdsShakil|শাকিল]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MdsShakil|আলাপ]]) ০৬:৪৪, ১১ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
|}
<!-- https://bn.wikibooks.org/w/index.php?title=%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80:MdsShakil/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE&oldid=74028-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:MdsShakil@bnwikibooks পাঠিয়েছেন -->
== Final Reminder – Submit Full Local Results for Wiki Loves Ramadan 2025 by 15 May EOD ==
Dear Ishtiak Abdullah,
This is a final reminder that the deadline to submit your '''full and detailed local results''' for '''Wiki Loves Ramadan 2025''' is '''15 May 2025''' EOD.
Please ensure you complete the following as soon as possible:
* Submit your full results on Meta-Wiki here: '''[[m:Wiki Loves Ramadan 2025/Results]]'''
* Add a brief summary of your local event under the "Results" column on: '''[[Wiki Loves Ramadan 2025/Participants]]'''
Failure to submit by the deadline may result in exclusion from the international jury consideration.
If you need help or encounter any issues, feel free to contact the international team.
Thank you once again for your dedication and hard work!
''Warm regards,''<br/>
'''Wiki Loves Ramadan International Team''', ০২:৩৯, ১৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
<!-- https://meta.wikimedia.org/w/index.php?title=User:ZI_Jony/MassMessage/WLR/List/Local_organizers&oldid=28651179-এর তালিকা ব্যবহার করে বার্তাটি ব্যবহারকারী:ZI Jony@metawiki পাঠিয়েছেন -->
== লুইস ক্যারল/অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড ==
পাতাটি ঠিক করা হয়েছে। [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৩:১১, ১৯ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
:@[[ব্যবহারকারী:Ishtiak Abdullah|Ishtiak Abdullah]] ঠিক করেছি তো। [[ব্যবহারকারী:M.Asaduzzaman sahed|M.Asaduzzaman sahed]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:M.Asaduzzaman sahed|আলাপ]]) ১৯:১৭, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
::ওকে [[ব্যবহারকারী:Ishtiak Abdullah|Ishtiak Abdullah]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Ishtiak Abdullah|আলাপ]]) ১৯:২৪, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[রন্ধনপ্রণালী:চাউমিন]] ==
কিছু ইংরেজি শব্দ ছিলো। সেগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ যুক্ত করা হয়েছে। পুনরায় পর্যালোচনা করবেন [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ১৮:০৬, ২৪ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== চিকেন চিলি ==
চিকেন চিলিতে থাকা সমস্যা সমাধান করা হয়েছে [[ব্যবহারকারী:Editobd|Editobd]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Editobd|আলাপ]]) ১০:০৭, ২৫ মে ২০২৫ (ইউটিসি)
== [[মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান/শক্তি]] ==
নিবন্ধটির যান্ত্রিকতা নিরসণ না করেই ভুলবশত আমি জমা দিয়ে দেই।
এখন পরিবর্তন করেছি, দয়া করে পুনরায় যাচাই করবেন — [[ব্যবহারকারী:MD Abu Siyam|MD Abu Siyam]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:MD Abu Siyam|আলাপ]]) ০৪:৩১, ৪ জুন ২০২৫ (ইউটিসি)
rbax2ht0ykc3agypzbhjafsmfsxi7ei
লুইস ক্যারল/মিস্টার ডজসন ও মিস্টার ক্যারল
0
22732
85727
77553
2025-07-06T19:11:31Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* "লুইস ক্যারল" দ্বারা প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ন কাজ */
85727
wikitext
text/x-wiki
লুইস ক্যারল সাধারণত তার "বাস্তব জীবনের" পরিচয় সি. এল. ডজসন খুব সতর্কতার সঙ্গে গোপন রাখতেন। তিনি এই বিষয়ে এতটাই সচেতন ছিলেন যে, তিনি একটি মুদ্রিত নোটিশ তৈরি করেছিলেন, যা "Stranger circular" নামে পরিচিত। যখন তিনি সি. এল. ডজসনের নামে লেখা এমন চিঠি পেতেন, যেখানে লুইস ক্যারলের প্রসঙ্গ থাকত, তিনি সেই চিঠিগুলো এই নোটিশসহ ফেরত পাঠাতেন। সেই নোটিশে সংক্ষেপে লেখা ছিল, "মিস্টার ডজসন . . . কোনো ছদ্মনাম বা এমন কোনো বইয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক দাবি করেন না বা স্বীকার করেন না, যা তার নিজের নামে প্রকাশিত হয়নি।"
== ল্যাংফোর্ড রিড এবং এভলিন হ্যাচ ==
ল্যাংফোর্ড রিড তার জীবনীতে এমনকি এই পরামর্শও দেন যে, তাকে যেন দুই জন ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়—"প্রফেসর" (sic) ডজসন, যিনি গাণিতিক বিষয়ে খুবই বিরক্তিকর বই লিখতেন, এবং লুইস ক্যারল, যিনি শিশুদের গল্প লিখতেন। কিন্তু বাস্তবে তা মোটেই সত্য নয়। লুইস ক্যারল নামেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও গম্ভীর লেখা এবং কিছু গাণিতিক কাজ প্রকাশিত হয়েছে। আবার সি. এল. ডজসনের নামে অন্তত একটি হাস্যরসাত্মক কাজও প্রকাশিত হয়েছে। আরও কিছু লেখা অন্যান্য ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
ক্যারলের বন্ধু এভলিন হ্যাচ ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত তার চিঠির সংগ্রহে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন: "এই পৃষ্ঠাগুলিতে 'মিস্টার ডজসন' এর উপস্থিতি আছে, যিনি 'অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড'-এর লেখকের মতোই অনন্য এবং মনোমুগ্ধকর এক চরিত্র।" এই বইতে আছে কল্পনাপ্রসূত হাস্যরস, কিছু 'লুইস ক্যারল', কিছু 'সি. এল. ডজসন' নামে স্বাক্ষরিত, আর একটি ক্ষেত্রে দুজনের নামেই।
== "লুইস ক্যারল" নামেই প্রকাশিত গণিত ও যুক্তিবিদ্যার কাজ ==
=== এ ট্যাংগলড টেল ===
'''এ ট্যাংগলড টেল ''' ছিল একটি ধারাবাহিক গল্প, যা ১৮৮০-৮১ সালে দশটি পর্বে প্রকাশিত হয় এবং ১৮৮৫ সালে বই হিসেবে পুনর্মুদ্রিত হয়। এটি একটি রসিক গল্প, বলা ভাল তিনটি গল্প, যা ধীরে ধীরে উদ্ভাসিত হয় এবং শেষ অধ্যায়ে একত্রিত হয়। প্রতিটি পর্বে গল্পের সঙ্গে এক বা একাধিক গাণিতিক ধাঁধা সংযোজিত ছিল। পাঠকদের উত্তর পাঠাতে আহ্বান জানানো হতো। তিনি এসব উত্তর মূল্যায়ন করতেন—I, II, III বা ফেল হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করতেন এবং নিজের সমাধান ও সমালোচনাও প্রকাশ করতেন। গল্পটি ছিল পুরোপুরি ক্যারলীয় ধাঁচের। কিছু ধাঁধাও রসিকতা ছিল, তবে বেশিরভাগ ধাঁধা ছিল গম্ভীর গাণিতিক সমস্যাভিত্তিক। সুতরাং এটি একধরনের গাণিতিক শিক্ষা উপাদান, যেটি তার অন্যান্য পাঠ্যপুস্তকের মতোই গুরুত্ব বহন করে, পাশাপাশি এটি একটি লুইস ক্যারলের উপন্যাস।
সংক্ষেপে, এই কাজটি ক্যারল এবং ডজসন দুই চরিত্রেরই বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
=== দ্যা গেম অফ লজিক ===
'''দ্যা গেম অফ লজিক''' প্রথমে ১৮৮৬ সালে একটি ব্যক্তিগত সংস্করণে প্রকাশিত হয়, পরে ১৮৮৭ সালে সাধারণ বিক্রির জন্য প্রকাশিত হয়। এটি ছিল শিশুদের যুক্তিবিদ্যার পাঠ শেখানোর একটি চেষ্টা, যাতে বোর্ড ও কাউন্টার ব্যবহার করা হতো। যদিও বিশ্লেষণযোগ্য যুক্তি প্রস্তাবে কিছুটা ক্যারলীয় রসিকতা আছে, যেমন:
:সব ড্রাগন অদ্ভুত
:সব স্কটসম্যান বুদ্ধিমান
:অতএব
:সব ড্রাগন স্কটসম্যান নয়
:সব স্কটসম্যান ড্রাগন নয়
তবুও এটি মূলত প্রাথমিক যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে একটি আলোচনা।
=== সিম্বলিক লজিক ===
'''সিম্বলিক লজিক, প্রথম খন্ড''' ১৮৯৬ সালে লুইস ক্যারলের বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। ক্যারল আরও দুটি পর্ব পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু তা শেষ করতে পারেননি। যে পরিমাণ লেখা পাওয়া যায়, তা ১৯৭৭ সালে W. W. Bartley সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন (২য় সংস্করণ ১৯৮৬)। এটি একটি গুরুত্ববহ যুক্তিবিদ্যার পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনা, যা সাম্প্রতিক কালে এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আবারও, বিশ্লেষণযোগ্য প্রস্তাবে কিছু হাস্যরস রয়েছে, কিন্তু "দুই ব্যক্তির তত্ত্ব" অনুযায়ী এটি মূলত ডজসনের কাজ, যাতে ক্যারলের অবদান সামান্য।
== "লুইস ক্যারল" দ্বারা প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ন কাজ ==
=== কবিতা ===
"লুইস ক্যারল" ছদ্মনামটি শুধু অ্যালিস বইয়ের জন্য তৈরি হয়নি। অনেক বছর আগে তিনি এই নামে "The Train" নামক একটি পত্রিকায় বেশ কয়েকটি কবিতা প্রকাশ করেছিলেন। এর কিছু যেমন—"Solitude", "The Path of Roses", এবং "The Sailor's Wife"—সম্পূর্ণরূপে গম্ভীর কবিতা। তার শেষ বই "Three Sunsets" (তার মৃত্যুর পরপরই প্রকাশিত) এই কবিতাগুলো এবং আরও কয়েকটি গম্ভীর কবিতা অন্তর্ভুক্ত করে।
=== ভিভিসেকশনের বিরোধিতা ===
ক্যারল ভিভিসেকশনের দৃঢ় বিরোধী ছিলেন। তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ সালে ''Pall Mall Gazette''-এ "Vivisection as a sign of the Times" শিরোনামে একটি চিঠি প্রকাশ করেন এবং ''The Fortnightly Review''-এ ১ জুন ১৮৭৫-এ "Some Popular Fallacies about Vivisection" শিরোনামে একটি বিশদ প্রবন্ধ লেখেন। দশ বছর পরে তিনি আবার "Vivisection Vivisected" শিরোনামে ''The St. James's Gazette''-এ ১৯ মার্চ ১৮৮৫-এ লিখেছিলেন। এই সবগুলো লেখা ভিভিসেকশনের বিরুদ্ধে গুরুতর যুক্তি প্রদর্শন করে। সবগুলোতেই স্বাক্ষর ছিল "লুইস ক্যারল" নামে।
=== নির্বাচনে স্বচ্ছতা ===
১৮৮১ সালের ৪ মে ''St. James's Gazette''-এ "Purity of Election" শিরোনামে লুইস ক্যারলের স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। এটি নির্বাচনে ঘুষ ও দুর্নীতি এড়ানোর উপায় নিয়ে একেবারেই গম্ভীর আলোচনা।
== ইউক্লিড এবং তাঁর আধুনিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা ==
এই বইটি ১৮৭৯ সালে (২য় সংস্করণ ১৮৮৫) সি. এল. ডজসনের নামে প্রকাশিত হয়। এটি উনিশ শতকের বিভিন্ন জ্যামিতির পাঠ্যবইয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ। শুনতে বিরক্তিকর মনে হলেও এতে অনেক উপাদান রয়েছে, যা উল্টো দিক নির্দেশ করে। পুরো বইটি একজন পরীক্ষক মিনোসের স্বপ্ন হিসেবে উপস্থাপিত, যার সহকর্মী রাধামান্থাসের মতোই নাম গ্রিক পুরাণের বিচারকদের নাম থেকে নেওয়া। মিনোস ইউক্লিডের ভূতের সঙ্গে দেখা করে এবং একজন জার্মান অধ্যাপক হার নিঅমান্ড (মি. নোবডি) এর সঙ্গে কথা বলেন, যিনি স্পষ্টতই Sylvie and Bruno বইয়ের Mein Herr এর অনুরূপ চরিত্র। বইটিতে প্রচুর রসিকতা আছে, যেমন (পৃষ্ঠা ৩):
:''Minos:'' সে যেমন বলতে পারে, কোনো তরুণী, যদি একজন যুবকের প্রতি আকৃষ্ট হয়, তাহলে সে ‘সমানভাবে ও সদৃশভাবে’ সকল যুবকের প্রতিই আকৃষ্ট!
:''Rhadamanthus:'' সে সম্ভবত সবার সঙ্গে ‘সমান কোণে ঝুঁকে’ থাকতে পারে, যাই হোক।
এবং ''Through the Looking-Glass''-এর আলোচনার অনুরূপ একটি অংশ, যেখানে White King ও Haigha "Nobody" নিয়ে কথা বলেন (পৃষ্ঠা ১৮২):
:''Niemand:'' চূড়ান্ত তালিকাটি? আচ্ছা, আপনার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করুন, সেই তালিকা তৈরি হওয়ার পর থেকে কেউ যুক্ত হয়েছে কি না: সে বলবে ‘কেউ যুক্ত হয়নি।’
:''Minos:'' ঠিক তাই।
:''Niemand:'' আপনি বুঝতে পারছেন না। "Nobody - Niemand - আপনি দেখছেন না?"
:''Minos:'' কী? আপনি বলতে চাইছেন—
:''Niemand (গম্ভীরভাবে):'' হ্যাঁ, আমার বন্ধুরা। আমিই যুক্ত হয়েছি!
:''Minos (নম্রভাবে):'' কমিটি অবশ্যই অত্যন্ত গর্বিত।
:''Niemand:'' তা তো উচিতও, কারণ আমি নিউটনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ গণিতবিদ এবং আমার ম্যানুয়াল ইউক্লিডের চেয়েও বেশি পরিচিত! আমাকে মাফ করবেন, আত্মপ্রশংসা করলাম, তবে যে কোনো নীতিবিদ বলবেন, আমিই একমাত্র মানুষ, যার নিজেকে প্রশংসা করা উচিত।
এই লেখকের কি সত্যিই কোনো হাস্যরস নেই? তিনি কি শুধু একঘেয়ে শিক্ষক ছিলেন?
== অন্যান্য ছদ্মনাম ==
লুইস ক্যারল আরও অনেক ছদ্মনামে লেখালেখি করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ঘটনা নিয়ে D. C. L. নামক স্পষ্ট একটি ছদ্মনামে কিছু ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখেছেন (যা তার নামের আদ্যক্ষরের পুনর্বিন্যাস)। এই লেখাগুলোর কিছু যেমন "The New Method of Evaluation as Applied to Π" এবং "The Dynamics of a Parti-cle" অনেক গণিত নিয়ে আলোচনা করে। এসব কাজ "দুই ব্যক্তি" তত্ত্বে খাপ খায় না, যদি না আমরা ধরে নেই যে D. C. L. ছিল তৃতীয় কোনো ব্যক্তি।
{{Lewis Carroll/Navigation|Child friends and adult friends|References}}
{{BookCat}}'''লুইস ক্যারল
cjyzfb5hkqk7rkt3shio0d1gwqpat6f
সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/মানব বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশ
0
22841
85730
73904
2025-07-06T19:28:23Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* মানব প্রভাব পরিবেশের উপর */
85730
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|অনেক কিছু! এই অধ্যায়টি এখনও সম্পূর্ণ নয়। অনুগ্রহ করে আপনার পরামর্শ দিতে দ্বিধা করবেন না।}}
এই পৃষ্ঠাটি বর্তমানে নির্মাণাধীন। আপাতত, নিচের উইকিপিডিয়া নিবন্ধগুলো পড়ুন:
* [[Wikipedia:urban sociology|শহুরে সমাজবিজ্ঞান]]
* [[Wikipedia:rural sociology|গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান]]
* [[Wikipedia:ecology|পরিবেশবিদ্যা]]
==মানব প্রভাব পরিবেশের উপর==
গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিভিন্ন কারণে একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। এটি পরিবেশের এমন কিছু উপাদানকেও প্রভাবিত করবে, যা সাধারণত আমরা বিবেচনা করি না। উদাহরণস্বরূপ, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে তাপমাত্রা এবং CO2 স্তর বৃদ্ধি পাবে, যা সাধারণত আগাছা হিসেবে বিবেচিত উদ্ভিদের দ্রুত এবং ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটাবে।<ref name="Christopher2008">Christopher, Tom. 2008. “Can Weeds Help Solve the Climate Crisis?.” The New York Times, June 29 http://www.nytimes.com/2008/06/29/magazine/29weeds-t.html (Accessed February 11, 2010).</ref> কিছু গাছকে "অপ্রয়োজনীয় আগাছা" বলা একটি সম্পূর্ণ ব্যক্তি নির্ভর ভাবনা। এটি সামাজিক নির্মাণবাদের একটি ভালো উদাহরণ। আমরা নিজেরাই "আগাছা" নামক ধারণাটি তৈরি করি। যে গাছগুলো আমরা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে চাই না, সেগুলোকে এই শ্রেণিতে ফেলি।আরও একটি বিষয় হলো, আগাছা নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ভালো করেই জানেন—মানুষ যেভাবে আগাছা দমন করার চেষ্টা করে, সেগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগাছাগুলোও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়। এই কারণে, অনেক গাছ যেগুলোকে আমরা সাধারণত আগাছা হিসেবে দেখি, সেগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মানুষ যখন থেকে এগুলোকে নির্মূল করতে চেয়েছে, তখন থেকেই এদের টিকে থাকার ক্ষমতাও বেড়েছে। ।<ref name="Christopher2008"/>
অনেকে ভাবতে পারেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশ দূষণকারী এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম প্রধান উৎস হওয়া সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্র কেন খুব একটা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না—যদিও সরকার নিজেই জানে যে তারা এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এর পেছনে রাজনীতি ও লোভ কাজ করছে—এমন কিছু প্রমাণ রয়েছে।[1] যেসব অঙ্গরাজ্যে প্রচুর পরিমাণে কয়লা মজুত আছে, সেখানকার সিনেটররা জলবায়ু-বান্ধব আইন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রবণতা অন্য রাজ্যের সিনেটরদের চেয়ে অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক প্রচারণাগুলো মূলত দানের ওপর নির্ভর করে চলে। এসব দানের বড় অংশ আসে বড় বড় কোম্পানি ও তাদের কর্মীদের কাছ থেকে।
ফলে কয়লা উত্তোলনকারী বড় কোম্পানিগুলোর লাভের অংশ একরকম রাজনৈতিক প্রভাব হিসেবে কাজ করে। এর ফলে, তারা জলবায়ু সুরক্ষা সংক্রান্ত নীতির বিরোধিতা করে।[1] এইভাবে বলা যায়, স্বল্পমেয়াদী আর্থিক লাভের লোভ দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু ধ্বংসের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রকে পিছিয়ে রাখছে।
আরেকটি বড় কারণ হলো—মানুষের মনস্তত্ত্ব।[2] মানুষ সাধারণত এমন ধরনের ঝুঁকি নিয়ে বেশি ভাবেন, যেখানে সহজে কাউকে দায়ী করা যায়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের দায় পুরো মানবজাতির ওপর ছড়িয়ে আছে। তাই একজন নির্দিষ্ট অপরাধীকে চিহ্নিত করা কঠিন।
এছাড়া, মানুষ সাধারণত যেসব হুমকি তাৎক্ষণিক এবং চোখে দেখা যায়, সেগুলো নিয়ে বেশি চিন্তা করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনেকের জন্যই তাৎক্ষণিক নয়, চোখে পড়েও না। তাই মানুষ সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে না।
==পরিবেশের প্রভাব মানুষের উপর==
যেমন মানুষ পরিবেশকে প্রভাবিত করে, তেমনি পরিবেশও মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, "অস্বস্তিকর" আবহাওয়া - যেমন খুব গরম, আর্দ্র, ভেজা বা ঠান্ডা আবহাওয়া - মানুষ কাকে ফোন করে এবং কতক্ষণ কথা বলে, তা পরিবর্তন করে।<ref name="Phithakkitnukoon2012">Phithakkitnukoon, S., Leong, T. W., Smoreda, Z., & Olivier, P. (2012). Weather Effects on Mobile Social Interactions: A Case Study of Mobile Phone Users in Lisbon, Portugal. PLoS ONE, 7(10), e45745. doi:10.1371/journal.pone.0045745</ref> খারাপ আবহাওয়ার সময় মানুষ ঘনিষ্ঠ পরিবার ও বন্ধুদের সাথে বেশি সময় কথা বলে।
==টেকসই জীবনের সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===টেকসই জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানব জীবনের ভবিষ্যত টিকিয়ে রাখতে, আমাদের প্রযুক্তির সীমা অতিক্রম করতে হবে। গাড়িগুলো এখন আরও জ্বালানি-দক্ষ এবং কম দূষণ সৃষ্টি করে। নথিপত্র এখন ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ, অনুলিপি, বিতরণ এবং তৈরি করা হয়। কপিয়ার মেশিন ভুলে যান, ডান ক্লিক করুন, কপি করুন, তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি, লাইট বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। কে জানত ২১শ শতাব্দী এতটা এগিয়ে থাকবে?
====ভোগ কমানো====
ভবিষ্যতের জীবন টিকিয়ে রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ভোগ কমানো। মানুষ যদি আগামী শতাব্দীগুলোতে পৃথিবীতে বাস করতে চায়, তাহলে আমাদের কম ভোগ করার এবং কম দূষণ করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। বিশ্বজুড়ে শিক্ষিত এবং কর্মরত নারীর সংখ্যা বাড়ছে, যার ফলে জন্মহার ক্রমাগত কমছে। তা সত্ত্বেও, পৃথিবী এখনো তার পূর্ণ ধারণক্ষমতায় রয়েছে। অনেক দেশ ভোগ কমানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু অনেকেই হাল ছেড়ে দিয়েছে অথবা এখনো ইতিবাচক ফলাফল দেখতে পায়নি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, একসঙ্গে গাড়ি ব্যবহার করে, গণপরিবহন ব্যবহার করে এবং পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি দিয়ে ঘর চালায়—তাদের পুরস্কৃত করার ধারণাটি একটি ভালো শুরু হতে পারে। অন্যদিকে, যারা অতিরিক্ত সম্পদ ব্যবহার করে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। আলাদা আলাদা করে গাড়ি চালানো ব্যক্তিদের জরিমানা, টিকিট, কর বা অতিরিক্ত চার্জ করা উচিত। যারা দিনরাত ঘরের আলো জ্বালিয়ে রাখে, তিনশ মাইল দূরে ছুটি কাটাতে এস.ইউ.ভি. চালিয়ে যায়, এবং প্রতিটি আবর্জনা ফেলেও কিছু পুনর্ব্যবহার করে না—তাদের প্রতিও ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থনীতিবিদ রবার্ট ফ্রাঙ্ক,{{ref|Frank1999}} যিনি সামাজিক মনস্তত্ত্বে বিশেষজ্ঞ, তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করতে পারে এবং টেকসই ভোগব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।
আশ্চর্যজনকভাবে, আমেরিকানরা সংরক্ষণ ও কম ভোগকে সমর্থন করে, কিন্তু অনেকেই নিজেরাই তা মেনে চলে না।<ref name="Leiserowitz">Leiserowitz, A. (in press) “Climate change risk perceptions and behavior in the United States,” in S. Schneider, A. Rosencranz, and M. Mastrandrea, eds. Climate Change Science and Policy. Island Press.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ৮৮% আমেরিকান মনে করেন পুনর্ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মাত্র ৫১% প্রায়ই বা সবসময় তা করেন।<ref name="Leiserowitz"/> পরিবেশ সম্পর্কে মনোভাব পরিবর্তন করা অনেক সময় ব্যবহারগত পরিবর্তনের চেয়ে সহজ।
===ভোগবাদ এবং সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====ভোগবাদের বৃদ্ধি====
ভোগবাদের বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে স্পষ্ট, যেমন একটি গ্যালাপ জরিপে দেখা যায়, ২ জন নারীর মধ্যে ১ জন, ৩ জন পুরুষের মধ্যে ২ জন, এবং বছরে $৭৫,০০০ এর বেশি আয়কারী ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ধনী হতে চায়। আরও বেশি মানুষ তাদের জীবনে ধনী হতে চায়, অর্থবহ জীবনযাপন করার চেষ্টা করার পরিবর্তে।
====সম্পদ এবং মঙ্গল====
আপনি কি অর্থ দিয়ে সুখ কিনতে পারেন? বা আপনার মঙ্গল? দুঃখজনকভাবে, না, তা সম্ভব নয়। সম্পদ এবং মঙ্গলের মধ্যে সামান্য, যদি থাকে, সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, একজন ব্যক্তি কতটা ধনী তা নির্বিশেষে, তার মঙ্গল খুব বেশি পরিবর্তিত হয় না। দরিদ্র দেশে, যেখানে নিম্ন আয় মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলে, তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি মঙ্গল ভবিষ্যদ্বাণী করে।{{ref|Argyle1999}} একবার একজন ব্যক্তি ধনী হয়ে গেলে, সুখের একটি বৃদ্ধি ঘটে যা কেবল অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়, তারপর সেই ব্যক্তি আর সুখী থাকে না। তখন আরও বেশি অর্থ এবং সম্পদের প্রয়োজন হয় সেই ব্যক্তির মঙ্গল বজায় রাখতে। ডেভিড লাইকেন{{ref|Lykken1999}} বলেছেন, “যারা ওভারঅল পরে এবং বাসে করে কাজে যায়, তারা গড়ে ঠিক ততটাই সুখী, যতটা স্যুট পরা এবং নিজস্ব মার্সিডিজে করে কাজে যাওয়া লোকেরা” (পৃষ্ঠা ১৭)। এমনকি সুপার-ধনী, ফোর্বস ১০০ ধনী আমেরিকানরাও গড়ের চেয়ে সামান্য বেশি সুখের কথা জানায়।{{ref|Diener1985}}
====কেন ভোগবাদ সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়====
ভোগবাদ সেই ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হয়, যারা জীবনে যতটা সম্ভব অর্জন করতে চায়। যারা ক্ষমতা, অর্থ এবং সম্পদের পেছনে ছোটে, তাদের জীবনযাপনের মান অনেক নিচু থাকে। অন্যদিকে, যারা ব্যক্তিগত উন্নতি, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা অর্জনের চেষ্টা করে, তারা অনেক বেশি পরিপূর্ণ এবং সন্তুষ্ট জীবনযাপন করে।
ভোগবাদী মানসিকতা এবং বস্তুগত জিনিস থেকে মঙ্গল পাওয়ার চেষ্টা শেষ পর্যন্ত নিম্ন মানের জীবনযাপনেই নিয়ে যায়। এমন অনেক কিছু যা একসময় বিলাসিতা ছিল, এখন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। মানুষ এখন সেসব জিনিসের মাধ্যমেই তাদের সুখ এবং মঙ্গল পরিমাপ করে।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন সবাই সেই বিলাসবস্তু পেয়ে যায়, তখন একজন ব্যক্তি নতুন আরেকটি বিলাসবস্তু খোঁজে—যা অন্যদের নেই—শুধুমাত্র নিজের মঙ্গল বাড়ানোর জন্য। এই চক্র চলতেই থাকে। এবং যারা ভোগবাদী, তারা একটার পর একটা আরও জিনিস চাইতে থাকে, যাতে করে নিজের সুখ এবং মঙ্গল অনুভব করতে পারে।
===টেকসইতা ও টিকে থাকার পথে===
আমাদের সমাজকে ভোগবাদী প্রবণতা থেকে মুক্ত করতে হলে, মানুষকে টেকসই জীবনের পথে চলতে হবে। এজন্য এমন কর্মসূচি ও আইন প্রণয়ন করতে হবে যা ভোগ কমায়, প্রযুক্তির উন্নতি অব্যাহত রাখে, দক্ষতার দিকে মনোযোগ দেয়, বুঝতে শেখায় যে সম্পদ ও মঙ্গলের মাঝে কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই, এবং একই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করে।
মানুষকে একত্রিত হয়ে নিজের কেন্দ্রমুখী দৃষ্টিভঙ্গি ছেড়ে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে আরও উন্নত করতে পারে, টেকসইতা এবং টিকে থাকার লক্ষ্যে অবদান রাখতে পারে।
যত দ্রুত মানুষ এই সত্য মেনে নেবে যে ভোগবাদ কখনো প্রকৃত সুখ বা মঙ্গল এনে দিতে পারে না, তত দ্রুত পৃথিবী একটি আরও ভালো জায়গায় রূপ নেবে।
==প্রস্তাবিত পঠন==
**দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস** সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে<ref name="Dewan2009">Dewan, Shaila. 2009. “Clash in Alabama Over Tennessee Coal Ash.” The New York Times, August 30 http://www.nytimes.com/2009/08/30/us/30ash.html?partner=rss&emc=rss (Accessed August 30, 2009).</ref> টেনেসির একটি বড় দুর্ঘটনার পর, আলাবামার [[w:Perry County|পেরি কাউন্টি]]তে [[w:coal ash|কয়লা ছাই]] সংরক্ষণের বিষয়ে। পেরি কাউন্টির প্রায় ৭০% মানুষ কৃষ্ণাঙ্গ এবং এটি একটি দরিদ্র এলাকা।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এটি পরিবেশগত বর্ণবাদের উদাহরণ কি না। কিছু মানুষ বলছে, এই সিদ্ধান্ত আসলে বর্ণবাদেরই প্রতিফলন। আবার অন্যরা যুক্তি দিচ্ছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যেসব আর্থিক সুবিধা এলাকাবাসী পাবে, সেগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
==তথ্যসূত্র==
{{reflist}}
# {{note|Frank1999}} Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
# {{note|Gallup1990}} Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
# {{note|Argyle1999}} Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
# {{note|Lykken1999}} Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
# {{note|Diener1985}} Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
{{BookCat}}
mguj5ugblupot25fdhpveux1ueqli3m
85733
85730
2025-07-06T19:40:11Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* টেকসইতার সামাজিক মনোবিজ্ঞান */
85733
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|অনেক কিছু! এই অধ্যায়টি এখনও সম্পূর্ণ নয়। অনুগ্রহ করে আপনার পরামর্শ দিতে দ্বিধা করবেন না।}}
এই পৃষ্ঠাটি বর্তমানে নির্মাণাধীন। আপাতত, নিচের উইকিপিডিয়া নিবন্ধগুলো পড়ুন:
* [[Wikipedia:urban sociology|শহুরে সমাজবিজ্ঞান]]
* [[Wikipedia:rural sociology|গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান]]
* [[Wikipedia:ecology|পরিবেশবিদ্যা]]
==মানব প্রভাব পরিবেশের উপর==
গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিভিন্ন কারণে একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। এটি পরিবেশের এমন কিছু উপাদানকেও প্রভাবিত করবে, যা সাধারণত আমরা বিবেচনা করি না। উদাহরণস্বরূপ, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ফলে তাপমাত্রা এবং CO2 স্তর বৃদ্ধি পাবে, যা সাধারণত আগাছা হিসেবে বিবেচিত উদ্ভিদের দ্রুত এবং ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটাবে।<ref name="Christopher2008">Christopher, Tom. 2008. “Can Weeds Help Solve the Climate Crisis?.” The New York Times, June 29 http://www.nytimes.com/2008/06/29/magazine/29weeds-t.html (Accessed February 11, 2010).</ref> কিছু গাছকে "অপ্রয়োজনীয় আগাছা" বলা একটি সম্পূর্ণ ব্যক্তি নির্ভর ভাবনা। এটি সামাজিক নির্মাণবাদের একটি ভালো উদাহরণ। আমরা নিজেরাই "আগাছা" নামক ধারণাটি তৈরি করি। যে গাছগুলো আমরা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে চাই না, সেগুলোকে এই শ্রেণিতে ফেলি।আরও একটি বিষয় হলো, আগাছা নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ভালো করেই জানেন—মানুষ যেভাবে আগাছা দমন করার চেষ্টা করে, সেগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগাছাগুলোও ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়। এই কারণে, অনেক গাছ যেগুলোকে আমরা সাধারণত আগাছা হিসেবে দেখি, সেগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মানুষ যখন থেকে এগুলোকে নির্মূল করতে চেয়েছে, তখন থেকেই এদের টিকে থাকার ক্ষমতাও বেড়েছে। ।<ref name="Christopher2008"/>
অনেকে ভাবতে পারেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশ দূষণকারী এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম প্রধান উৎস হওয়া সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্র কেন খুব একটা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না—যদিও সরকার নিজেই জানে যে তারা এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এর পেছনে রাজনীতি ও লোভ কাজ করছে—এমন কিছু প্রমাণ রয়েছে।[1] যেসব অঙ্গরাজ্যে প্রচুর পরিমাণে কয়লা মজুত আছে, সেখানকার সিনেটররা জলবায়ু-বান্ধব আইন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রবণতা অন্য রাজ্যের সিনেটরদের চেয়ে অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক প্রচারণাগুলো মূলত দানের ওপর নির্ভর করে চলে। এসব দানের বড় অংশ আসে বড় বড় কোম্পানি ও তাদের কর্মীদের কাছ থেকে।
ফলে কয়লা উত্তোলনকারী বড় কোম্পানিগুলোর লাভের অংশ একরকম রাজনৈতিক প্রভাব হিসেবে কাজ করে। এর ফলে, তারা জলবায়ু সুরক্ষা সংক্রান্ত নীতির বিরোধিতা করে।[1] এইভাবে বলা যায়, স্বল্পমেয়াদী আর্থিক লাভের লোভ দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু ধ্বংসের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রকে পিছিয়ে রাখছে।
আরেকটি বড় কারণ হলো—মানুষের মনস্তত্ত্ব।[2] মানুষ সাধারণত এমন ধরনের ঝুঁকি নিয়ে বেশি ভাবেন, যেখানে সহজে কাউকে দায়ী করা যায়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের দায় পুরো মানবজাতির ওপর ছড়িয়ে আছে। তাই একজন নির্দিষ্ট অপরাধীকে চিহ্নিত করা কঠিন।
এছাড়া, মানুষ সাধারণত যেসব হুমকি তাৎক্ষণিক এবং চোখে দেখা যায়, সেগুলো নিয়ে বেশি চিন্তা করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনেকের জন্যই তাৎক্ষণিক নয়, চোখে পড়েও না। তাই মানুষ সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে না।
==পরিবেশের প্রভাব মানুষের উপর==
যেমন মানুষ পরিবেশকে প্রভাবিত করে, তেমনি পরিবেশও মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, "অস্বস্তিকর" আবহাওয়া - যেমন খুব গরম, আর্দ্র, ভেজা বা ঠান্ডা আবহাওয়া - মানুষ কাকে ফোন করে এবং কতক্ষণ কথা বলে, তা পরিবর্তন করে।<ref name="Phithakkitnukoon2012">Phithakkitnukoon, S., Leong, T. W., Smoreda, Z., & Olivier, P. (2012). Weather Effects on Mobile Social Interactions: A Case Study of Mobile Phone Users in Lisbon, Portugal. PLoS ONE, 7(10), e45745. doi:10.1371/journal.pone.0045745</ref> খারাপ আবহাওয়ার সময় মানুষ ঘনিষ্ঠ পরিবার ও বন্ধুদের সাথে বেশি সময় কথা বলে।
==টেকসইতার সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===টেকসই জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানবজীবনের ভবিষ্যৎ টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের প্রযুক্তির সীমা ছাড়িয়ে এগোতে হবে। গাড়িগুলো এখন অনেক বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং দূষণও অনেক কম করে। এখন নথিপত্র ডিজিটালি সংরক্ষণ, কপি, পাঠানো এবং তৈরি করা যায়। ফটোকপিয়ার মেশিন ভুলে যান—রাইট ক্লিক করুন, কপি করুন, তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালির যন্ত্রপাতি, লাইট বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন, এবং ওষুধ—সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ভবিষ্যতের পথে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কে জানতো, ২১শ শতক সময়ের এতটা আগেই এগিয়ে যাবে?
====ভোগ হ্রাস====
ভবিষ্যৎ জীবন টিকিয়ে রাখতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ভোগ হ্রাস করা। মানুষ যদি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পৃথিবীতে বসবাস করতে চায়, তাহলে কম খরচ ও কম দূষণের ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। বিশ্বজুড়ে শিক্ষিত ও কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জন্মহার ক্রমাগত কমছে। তবুও, পৃথিবী তার সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতায় পৌঁছে গেছে। অনেক দেশ ভোগ কমানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু অনেকেই হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে, নয়তো ইতিবাচক ফলাফল এখনো দেখতে পায়নি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, একসঙ্গে গাড়ি চড়ে, গণপরিবহন ব্যবহার করে, বা পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি দিয়ে ঘর চালায়—তাদের পুরস্কৃত করা যেতে পারে।
অন্যদিকে, যারা অতিরিক্ত সম্পদ ব্যবহার করে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। যারা আলাদা আলাদা গাড়ি চালায়—তাদের জরিমানা, টিকিট বা কর আরোপ করা যেতে পারে। যারা দিন-রাত ঘরের আলো জ্বালিয়ে রাখে, যারা বিশাল SUV চালিয়ে তিনশো মাইল ভ্রমণ করে, এবং যারা প্রতিটি আবর্জনা ফেলে দেয়, পুনর্ব্যবহার করে না—তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অর্থনীতিবিদ রবার্ট ফ্র্যাঙ্ক,{{ref|Frank1999}} যিনি সামাজিক মনোবিজ্ঞানেও পারদর্শী, তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করেও টেকসই ভোগের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
মজার বিষয় হলো, আমেরিকানরা সংরক্ষণ ও ভোগ হ্রাসের পক্ষে থাকলেও, অনেকে নিজের কথার সাথে কাজ মিলিয়ে চলেন না।<ref name="Leiserowitz">Leiserowitz, A. (in press) “Climate change risk perceptions and behavior in the United States,” in S. Schneider, A. Rosencranz, and M. Mastrandrea, eds. Climate Change Science and Policy. Island Press.</ref> উদাহরণস্বরূপ, ৮৮% আমেরিকান মনে করেন পুনর্ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মাত্র ৫১% নিয়মিত বা প্রায়ই তা করেন।<ref name="Leiserowitz"/> পরিবেশ সম্পর্কে মনোভাব বদলানো সহজ, কিন্তু আচরণ বদলানো অনেক কঠিন।
===বস্তুবাদ ও সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====বস্তুবাদের বৃদ্ধি====
যুক্তরাষ্ট্রে বস্তুবাদ সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। একটি গ্যালাপ জরিপ অনুযায়ী,{{ref|Gallup1990}} প্রতি দুই নারীর একজন, প্রতি তিন পুরুষের দুইজন, এবং প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজন যাদের বার্ষিক আয় $৭৫,০০০-এর বেশি, তারা ধনী হতে চান। আরও বেশি মানুষ এখন অর্থসম্পদ অর্জনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন, অর্থবহ জীবন যাপনের চেয়ে।
====সম্পদ ও মঙ্গল====
অর্থ দিয়ে কি সুখ কেনা যায়? নাকি অন্তত মানসিক শান্তি? দুঃখজনকভাবে, না। অর্থ এবং মানসিক শান্তির মধ্যে খুব কম বা কোনো সম্পর্কই নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি কতটা ধনী তা তেমন একটা প্রভাব ফেলে না তার মঙ্গল বা ভালো থাকার ওপর। তবে গরিব দেশে, যেখানে নিম্ন আয় মৌলিক চাহিদা পূরণে বাধা, সেখানে তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি মঙ্গলজনক হতে পারে।{{ref|Argyle1999}}
কিন্তু যখন কেউ ধনী হয়ে ওঠে, তখন যে আনন্দ বা সুখ আসে তা খুব অল্প সময়েই হারিয়ে যায়। এরপর সেই মানুষকে আরও অর্থ আর সম্পদ প্রয়োজন হয় ভালো থাকার অনুভূতি বজায় রাখতে। ডেভিড লাইকেন অনুযায়ী,{{ref|Lykken1999}} "যারা বাসে করে ওভারঅল পরে কাজ করতে যায়, তারা গড়ে ঠিক ততটাই সুখী, যতটা সেই লোকেরা যারা স্যুট পরে নিজের মার্সিডিজ চালিয়ে কাজ করতে যায়" (পৃষ্ঠা ১৭)। এমনকি ফোর্বসের তালিকাভুক্ত ১০০ জন সবচেয়ে ধনী আমেরিকানও গড় মানের তুলনায় সামান্য বেশি সুখী।{{ref|Diener1985}}
====বস্তুবাদ কেন সন্তুষ্টি দিতে ব্যর্থ====
যারা জীবনের সব কিছু অর্জন করতে চায়, বস্তুবাদ তাদের মনোঃসন্তুষ্টি দিতে পারে না। যারা ক্ষমতা, টাকা ও সম্পদের পেছনে ছুটে, তারা অনেক নিচু মানের মঙ্গলবোধ নিয়ে বাঁচে। যারা ব্যক্তিগত বিকাশ, জ্ঞান, ও প্রজ্ঞার জন্য চেষ্টা করে, তারা অনেক বেশি শান্তিতে থাকে। বস্তুবাদের মাধ্যমে মানসিক শান্তি পাওয়ার চেষ্টা করলে তা ব্যর্থ হয়।
অনেক কিছু, যা এক সময় বিলাসিতা ছিল, এখন প্রয়োজনীয় মনে হয়। এই বিলাসিতার ভিত্তিতে একজন মানুষ তার সুখ পরিমাপ করে। পরে, যখন সবাই সেই জিনিস পেয়ে যায়, তখন ওই ব্যক্তি আবার এমন কিছু চায় যা অন্য কারো নেই। এভাবেই সেই চক্র চলতেই থাকে। বস্তুবাদী মানুষ সব সময় আরও বেশি কিছু চায়, শান্তি পাওয়ার জন্য।
===টেকসইতা ও বেঁচে থাকার দিকে===
আমাদের সমাজকে বস্তুবাদের হাত থেকে মুক্ত করতে হলে, টেকসই জীবনের পথে চলতে হবে। এমন আইন ও প্রোগ্রাম চালু করতে হবে যা ভোগ হ্রাস করবে, প্রযুক্তি উন্নত করবে, দক্ষতায় জোর দেবে, বুঝবে যে সম্পদ ও মানসিক শান্তির মধ্যে কোনো যোগ নেই, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাবে।
মানুষকে একজোট হয়ে বিশ্বের ঘটনাগুলোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে, শুধু নিজেদের নিয়ে ভাবলে চলবে না। সামাজিক মনোবিজ্ঞান অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে উন্নত করতে পারে, টিকিয়ে রাখতে পারে পৃথিবী ও মানবজাতিকে। মানুষ যত দ্রুত বুঝবে বস্তুবাদে সত্যিকারের শান্তি নেই, তত দ্রুত এই পৃথিবী একটি ভালো জায়গা হয়ে উঠবে।
==প্রস্তাবিত পঠন==
**দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস** সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে<ref name="Dewan2009">Dewan, Shaila. 2009. “Clash in Alabama Over Tennessee Coal Ash.” The New York Times, August 30 http://www.nytimes.com/2009/08/30/us/30ash.html?partner=rss&emc=rss (Accessed August 30, 2009).</ref> টেনেসির একটি বড় দুর্ঘটনার পর, আলাবামার [[w:Perry County|পেরি কাউন্টি]]তে [[w:coal ash|কয়লা ছাই]] সংরক্ষণের বিষয়ে। পেরি কাউন্টির প্রায় ৭০% মানুষ কৃষ্ণাঙ্গ এবং এটি একটি দরিদ্র এলাকা।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এটি পরিবেশগত বর্ণবাদের উদাহরণ কি না। কিছু মানুষ বলছে, এই সিদ্ধান্ত আসলে বর্ণবাদেরই প্রতিফলন। আবার অন্যরা যুক্তি দিচ্ছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যেসব আর্থিক সুবিধা এলাকাবাসী পাবে, সেগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
==তথ্যসূত্র==
{{reflist}}
# {{note|Frank1999}} Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
# {{note|Gallup1990}} Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
# {{note|Argyle1999}} Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
# {{note|Lykken1999}} Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
# {{note|Diener1985}} Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
{{BookCat}}
kem7iyyommsgba309oehpy7thbs82db
সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/যৌনতা
0
22868
85745
72599
2025-07-06T20:17:09Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
85745
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|ভবিষ্যতের অধ্যায়সমূহ অনুযায়ী সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি অনুচ্ছেদের বিষয়বস্তু এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।}}
'''নির্মাণাধীন'''
'''মানব যৌনতা''' হল মানুষ কীভাবে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে এবং তারা কীভাবে নিজেদের যৌনসত্তা হিসেবে প্রকাশ করে।<ref name="Rathus2007">Rathus, Spencer A., Jeffrey S. Nevid, and Lois Fichner-Rathus. 2007. Human Sexuality in a World of Diversity. Allyn & Bacon.</ref> মানব যৌনতার অনেক দিক রয়েছে।
[[w:en:Biology|জৈবিকভাবে]], যৌনতা বোঝায় প্রজনন প্রক্রিয়া এবং মৌলিক জৈবিক প্রণোদনাকে, যা সব প্রাণীর মধ্যে বিদ্যমান। এটি যৌন সহবাস ও যৌন সংস্পর্শের সব ধরনের আচরণ অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
যৌনতার আরও একটি দিক আছে, যা আবেগগত বা শারীরিক হতে পারে। এটি বোঝায় দুই ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক বা বন্ধন, যা গভীর অনুভূতি বা আবেগের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে। আবার এটি যৌন আচরণের শারীরবৃত্তীয় বা মনোবৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে চিকিৎসাবিদ্যার আলোচনারও অংশ হতে পারে। সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, যৌনতা সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও আইনি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। আর দর্শনের ক্ষেত্রে, এটি নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতা বা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি জড়িত করে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যৌনতা ব্যক্তিগত পরিচয় গঠনে এবং ব্যক্তির সামাজিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে:
<blockquote> “মানব যৌনতা শুধুমাত্র প্রবৃত্তি বা প্রাণীদের মতো অটোমেটিক আচরণ দ্বারা নির্ধারিত নয়, বরং এটি উচ্চতর মানসিক ক্রিয়া এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও নিয়মতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারণ করে, যে পরিবেশে ব্যক্তি বড় হয় এবং তার ব্যক্তিত্ব গঠিত হয়। সুতরাং যৌনতা বিশ্লেষণ করতে হলে আবেগ, অনুভূতি ও সম্পর্কের মতো একাধিক বিকাশধারার সংমিশ্রণকে গুরুত্ব দিতে হয়।”<ref name= Boccadoro >Boccadoro L., Carulli S. (2009) ''Il posto dell'amore negato. Sessualità e psicopatologie segrete'' ([http://www.sexology.it/abstract_english.html The place of the denied love. Sexuality and secret psychopathologies]). Tecnoprint Editrice, Ancona. <small>{{ISBN|978-88-95554-03-7}}</small> </ref> </blockquote>
অনেক ঐতিহাসিক যুগে, খুঁজে পাওয়া শিল্পকর্ম ও বস্তু সামগ্রী সেই সময়ের মানব যৌনতার ধারণা প্রকাশ করে।<ref name="Rathus2007"/>
==মানব যৌনতাকে প্রভাবিতকারী উপাদানসমূহ==
গর্ভাবস্থার সময় ভ্রূণের বিকাশে হরমোন পরিবর্তনের কারণে মানব যৌনতা প্রভাবিত হতে পারে। কেউ কেউ বলেন, যৌনতা প্রকাশের ধরন অনেকাংশে জিনগত প্রবণতার কারণে হয়ে থাকে। আবার কেউ বলেন, এটি প্রাথমিক জীবনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে, যার মাধ্যমে পছন্দ গড়ে ওঠে। একটি মিশ্র মতামত হলো—এই দুই উপাদানই পারস্পরিকভাবে কাজ করে।
সমকামিতার ক্ষেত্রে জেনেটিক প্রভাবের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ যুক্তি হলো, সমকামী পুরুষরা সাধারণত সন্তান উৎপাদন করে না। ফলে তাদের যৌন পরিচয়ে অবদান রাখা জিনগুলো উত্তরাধিকারসূত্রে ছড়ায় না। এই যুক্তির ফলে ধারণা করা হয়, এই জিনগুলো তাদের সঙ্গেই বিলুপ্ত হয়ে যায়।<ref name="Vasey2010">http://esciencenews.com/articles/2010/02/04/study.reveals.potential.evolutionary.role.same.sex.attraction</ref> তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সমকামিতা "[[w:Kin selection|কিন নির্বাচনের]]" বিবর্তনীয় মডেল অনুসরণ করতে পারে।
কিন নির্বাচনের মূল ধারণা হলো—কোনও ব্যক্তি হয়তো নিজের সন্তান জন্ম দিচ্ছে না, কিন্তু সে তার আত্মীয়দের সন্তান জন্ম ও লালনপালনে সহায়তা করছে। এর ফলে সে পরোক্ষভাবে নিজের জিনগুলোকে বংশপরম্পরায় চালিয়ে যাচ্ছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, [[w:Samoa|সামোয়া]]র [[w:fa'afafine|ফা’আফাফিন]] নামের সমকামী পুরুষেরা, যারা সেখানে নারীর ও পুরুষের বাইরে একটি ভিন্ন লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে বিবেচিত, তাদের নিকটাত্মীয়দের সন্তানদের জীবনে তারা আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, তুলনায় সাধারণ নারীমামা বা পুরুষখালাদের চেয়ে।<ref name="Vasey2010"/> এই গবেষণাটি কিন নির্বাচনের তত্ত্বকে সমর্থন করে এবং ব্যাখ্যা করে কেন সমকামীতা জেনেটিকভাবে থাকতে পারে, যদিও সমকামী ব্যক্তিরা তুলনামূলকভাবে কম সন্তানের জন্ম দেন।
মানব যৌনতা সামাজিক জীবনের অংশ হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়, যেখানে আচরণের অঘোষিত নিয়ম এবং প্রচলিত রীতিনীতি প্রভাব ফেলে। অনেকেই বলেন, যৌনতা সামাজিক নিয়মকে প্রভাবিত করে, এবং সমাজও যৌনতা প্রকাশের ধরনকে নিয়ন্ত্রণ করে। গণমাধ্যম আবিষ্কারের পর যৌনতা আমাদের জীবনের পরিবেশকে আরও বেশি প্রভাবিত করেছে। এটি প্রায়ই স্টিরিওটাইপে পরিণত হয় এবং মুদ্রণ, অডিও ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে উপস্থাপিত হয়।
মানব যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয় এক নয়। লিঙ্গ পরিচয় যৌন পরিচয়ের চেয়ে বিস্তৃত একটি ধারণা। শিশুকালে সামাজিক পরিবেশের প্রভাবে লিঙ্গ গঠিত হতে পারে। যেমন, একটি ছোট ছেলেকে খেলনার ট্রাক দেওয়া হয়, আর একটি মেয়েকে পুতুল। মানব শরীরবৃত্ত এবং এই লিঙ্গ গঠনের পদ্ধতি যৌন প্রকাশের কিছু ধরনকে সম্ভব করে তোলে, এমনকি কখনো তা প্রবণতাও সৃষ্টি করে। তবে ভবিষ্যতের যৌন আচরণ লিঙ্গ উপযুক্ত হবে কি না, তা নির্ধারণ করে না।
মানব যৌনতার সিদ্ধান্ত সাধারণত বর্তমান সংস্কৃতি ও সমাজের নিয়ম অনুযায়ী নেওয়া হয়। যেমন, কেউ কেউ বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে, কারণ তাদের ধর্ম এতে নিষেধ করে। আবার কিছু সংস্কৃতিতে একজন পুরুষ একাধিক স্ত্রী রাখতে পারেন, যেখানে অন্য সংস্কৃতিতে একাধিক বিবাহের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব থাকে। যারা প্রচলিত যৌনতার বাইরে নিজেদের প্রকাশ করতে চান, তারা প্রায়ই মূল সংস্কৃতির ভেতরে উপ-সংস্কৃতি গঠন করেন।
==মানব যৌনতা সম্পর্কিত তত্ত্বসমূহ==
===সোশিওবায়োলজি===
সোশিওবায়োলজির দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের মধ্যে "প্রতারণা" নিয়ে প্রতিক্রিয়ার পার্থক্য রয়েছে।<ref name="Confer2011">Confer, Jaime C., and Mark D. Cloud. 2011. “Sex differences in response to imagining a partner's heterosexual or homosexual affair.” Personality and Individual Differences 50:129-134.</ref> যদি তাদের নারী সঙ্গিনী কোনও পুরুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন, তাহলে তারা সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম দেখায়, তুলনায় যদি সেই নারী একজন নারীর সঙ্গে প্রতারণা করেন।<ref name="Confer2011"/> এটি ইঙ্গিত করে, পুরুষদের কাছে প্রতারণার মূল বিষয়টি যৌনতা নয়, বরং পিতৃত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা; তারা চান না অন্য একজন পুরুষের সন্তানকে নিজেদের সন্তান ভেবে লালন-পালন করতে।<ref name="Confer2011"/>
==যৌনতা ও জীবনধারা==
===শৈশব===
===কিশোরাবস্থা===
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ককেশীয় মহিলাদের ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে [[w:premenstrual dysphoric disorder|প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার]] (PMDD; সাধারণভাবে পরিচিত [[w:PMS|PMS]]) হওয়ার একটি জেনেটিক প্রবণতা রয়েছে।<ref name="Spencer2010">Spencer, J. L., E. M. Waters, T. A. Milner, F. S. Lee, and B. S. McEwen. 2010. “BDNF variant Val66Met interacts with estrous cycle in the control of hippocampal function.” Proceedings of the National Academy of Sciences.</ref> যদিও গবেষণাটি ইঁদুরের উপর করা হয়েছিল, তবুও মানুষের এবং ইঁদুরের একই জিন রয়েছে। এই নির্দিষ্ট জিনবিশিষ্ট ইঁদুরেরা তাদের ইস্ট্রাস চক্রের (যা মানুষের ঋতুচক্রের সমতুল্য) নির্দিষ্ট সময়ে বেশি উত্তেজিত ও অনিরাপদ থাকে। তাদের স্মৃতিশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে।<ref name="Spencer2010"/> এই গবেষণার ফলাফল থেকে বোঝা যায়, এই জিন বৈচিত্র্যসম্পন্ন নারীদের মধ্যে PMDD হওয়ার এটি একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
কিছু গোষ্ঠী তরুণী নারীদের [[w:Human papillomavirus|হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস]]-এর বিরুদ্ধে টিকা দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের বিশ্বাস, এই টিকা নেওয়ার ফলে HPV সংক্রমণের ভয় কমে যাওয়ায় তাদের যৌন কার্যকলাপ বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, HPV-এর বিরুদ্ধে টিকা দেওয়া যৌন আচরণে কোনো প্রভাব ফেলে না।<ref name="Bednarczyk2012">Bednarczyk, R. A., Davis, R., Ault, K., Orenstein, W., & Omer, S. B. (2012). Sexual Activity–Related Outcomes After Human Papillomavirus Vaccination of 11- to 12-Year-Olds. Pediatrics. doi:10.1542/peds.2012-1516</ref> যারা এই টিকা নিয়েছে, তাদের যৌন কার্যকলাপের হার, যারা নেয়নি তাদের তুলনায় বেশি বা কম নয়।
===প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থা===
নতুন বাবা-মায়েরা (অর্থাৎ সদ্যজাত শিশুর সহ-অভিভাবকরা) সাধারণত যৌন কার্যকলাপে একটি পতনের সম্মুখীন হন। কিছু নারীর ক্ষেত্রে প্রসব-পরবর্তী ব্যথার কারণে যৌন আগ্রহ কমে যেতে পারে। তবে অধিকাংশের ক্ষেত্রে এই পতনের প্রধান কারণ নবজাতকের যত্ন নেওয়া নিয়ে সৃষ্ট মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব এবং অন্যান্য নানা দায়িত্ব।<ref name="VanAnders2013">Van Anders, Sari M., Lauren E. Hipp, and Lisa Kane Low. 2013. “Exploring Co-Parent Experiences of Sexuality in the First 3 Months after Birth.” The Journal of Sexual Medicine 10(8):1988–99.</ref>
===বৃদ্ধাবস্থা===
==নারী ও পুরুষের যৌনতার পার্থক্য==
নারী ও পুরুষের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হলো, পুরুষেরা নৈমিত্তিক যৌন সম্পর্কে বেশি আগ্রহী। তারা নারীদের তুলনায় অনেক বেশি এমন সম্পর্ক চায়।<ref name="Schützwohl2009">Schützwohl, Achim, Amrei Fuchs, William McKibbin, and Todd Shackelford. n.d. “How Willing Are You to Accept Sexual Requests from Slightly Unattractive to Exceptionally Attractive Imagined Requestors?.” Human Nature. http://dx.doi.org/10.1007/s12110-009-9067-3 (Accessed August 18, 2009).</ref> পুরুষেরা কেবল বেশি আগ্রহীই নন, তারা যৌন সঙ্গী নির্বাচনেও তুলনামূলকভাবে কম বেছে চলে। নারীরা সাধারণত তখনই নৈমিত্তিক যৌন সম্পর্কে আগ্রহী হন, যদি পুরুষ সঙ্গী খুব আকর্ষণীয় হন। মাঝারি আকর্ষণের পুরুষ হলে, নারীরা তুলনামূলকভাবে কম আগ্রহ দেখান।
অন্যান্য সামাজিক দিকগুলোর মতো, যৌনতার ক্ষেত্রেও নারীরা অবিচারের শিকার হন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোরী এবং তরুণ নারীরা প্রায়ই পুরুষ সঙ্গীদের দ্বারা জন্মনিয়ন্ত্রণের বাধা (যেমন কনডম ছিদ্র করা) মোকাবিলা করেন।<ref name="Chan2009">Chan, Ronna L., and Sandra L. Martin. 2009. “Physical and sexual violence and subsequent contraception use among reproductive aged women.” Contraception 80:276-281.</ref> একে বলা হয় "reproductive coercion" বা প্রজনন সংক্রান্ত জবরদস্তি, যা প্রায়ই শারীরিক বা যৌন সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত। প্রায় প্রতি পাঁচ জন তরুণ নারীর মধ্যে একজন এ ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হন এবং ৫০ শতাংশের বেশি নারীর কোনো না কোনো সময় তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে শারীরিক বা যৌন সহিংসতা সহ্য করতে হয়েছে। এই ধরনের সহিংসতার মূল উদ্দেশ্য সাধারণত ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা।<ref name="Chan2009"/>
আরেকটি পার্থক্য হলো কিছু পুরুষ তিনটি বৈশিষ্ট্য একত্রে ধারণ করে (যাকে বলা হয় "the dark triad"): আত্মমুগ্ধতা, ঝুঁকি নিতে ভালোবাসা এবং প্রতারণা।<ref name="Jonason2009">Jonason, P. K.. Li, N. P., Webster, G. W., & Schmitt, D. P. (2009). The Dark Triad: Facilitating short-term mating in men. European Journal of Personality, 23, 5-18.</ref> যদিও এই ধরনের পুরুষ সমাজে খুব বেশি সংখ্যায় নেই, তবে যারা এই বৈশিষ্ট্য বহন করে, তারা স্বল্পমেয়াদি সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি সফল হয়।<ref name="Jonason2009"/> অর্থাৎ, এই ধারণাটি কিছুটা সত্য যে "খারাপ ছেলেরাই বেশি মেয়ে পায়।"
==যৌনতার সাংস্কৃতিক ভিন্নতা==
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ মার্কিন বাবা-মা বিশ্বাস করেন না যে তাদের সন্তানরা যৌনে আগ্রহী। তবে তারা মনে করেন অন্যসব ছেলেমেয়েরা যৌনে আগ্রহী।<ref name="Elliott2012">Elliott, Sinikka. 2012. Not My Kid: What Parents Believe about the Sex Lives of Their Teenagers. New York: New York University Press. </ref> অবশ্য, অধিকাংশ বাবা-মা ভুল। কিন্তু এই ভুল ধারণার ফলে তারা মনে করেন, তাদের সন্তানরা নিষ্পাপ এবং অন্যদের প্ররোচনায় যৌন কার্যকলাপে যুক্ত হয়।
মার্কিন বাবা-মায়েরা কিশোরদের মধ্যে যৌনতা নিয়ে শঙ্কিত হন এবং প্রায়শই তা নিষিদ্ধ করেন। অপরদিকে, ডাচ বাবা-মায়েরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন। তারা সন্তানদের সাথে যৌনতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং যখন উপযুক্ত মনে করেন, তখন যৌনতা গ্রহণে উৎসাহ দেন। এমনকি, তারা সন্তানদের নিজের ঘরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে উৎসাহিত করেন যেন সেটা নিরাপদ ও আনন্দদায়ক হয়। বাস্তবে, ১০ জন ডাচ অভিভাবকের মধ্যে ৯ জন এতে কোনো সমস্যা দেখেন না। কিন্তু মার্কিন অভিভাবকদের মধ্যে ৯ জন এতে আপত্তি করেন।<ref name="Schalet2011">Schalet, Amy T. 2011. Not under My Roof: Parents, Teens, and the Culture of Sex. Chicago: University of Chicago Press.</ref> এই মনোভাবগত পার্থক্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবহারের হার মাত্র ২৬ শতাংশ, আর নেদারল্যান্ডসে তা ৬৩ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে ৬৩ শতাংশ ছেলে ও ৬৯ শতাংশ মেয়ে পরে অনুশোচনা করে বলে যে তারা ইচ্ছা করেছিল আরও দেরি করে যৌনতা শুরু করতে। নেদারল্যান্ডসে সেই অনুশোচনার হার মাত্র ৫ ও ২০ শতাংশ।<ref name="Schalet2011"/> এর আরও একটি পরিণতি হলো, যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরী গর্ভধারণের হার নেদারল্যান্ডসের তুলনায় তিন গুণ বেশি।<ref name="Schalet2011"/>
==যৌন সম্পর্ক রাখা==
যৌন সম্পর্ক স্বাস্থ্যের উন্নতির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং যাঁদের স্বাস্থ্য ভালো, তাঁদের মধ্যে যৌন সম্পর্কের হারও বেশি।<ref name="Lindau2010">Lindau, S. T., and N. Gavrilova. 2010. “Sex, health, and years of sexually active life gained due to good health: evidence from two US population based cross sectional surveys of ageing.” BMJ 340:c810-c810.</ref> এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩৮.৯ শতাংশ পুরুষ এবং ১৬.৮ শতাংশ নারী যৌনভাবে সক্রিয়। আর এটা সরাসরি স্বাস্থ্যর সাথে সম্পর্কযুক্ত। যাঁদের স্বাস্থ্য ভালো, তাঁদের যৌন আগ্রহ ও কার্যকলাপও বেশি।<ref name="Lindau2010"/> ঐ একই গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ বছর বয়সীদের যৌনভাবে সক্রিয় জীবনের গড় বছর পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৪.৭ বছর এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৩০.৭ বছর। পুরুষেরা যৌনে বেশি আগ্রহ দেখান এবং নারীদের তুলনায় বেশি যৌন সম্পর্ক করেন।<ref name="Lindau2010"/> যারা নিয়মিত যৌনসম্পর্কে লিপ্ত, তারা কাজেও বেশি মনোযোগী এবং খুশি থাকেন, বিশেষ করে যৌন সম্পর্কের পরের দিন।<ref name="Leavitt2017">Keith Leavitt et al, From the Bedroom to the Office, Journal of Management (2017).</ref>
২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকানরা এখন আগের তুলনায় কম যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন। ২০০০-এর দশকের গোড়া ও ৯০-এর দশকের তুলনায় এটা অনেক কম।<ref name="Twenge2017">Jean M. Twenge et al, Declines in Sexual Frequency among American Adults, 1989–2014, Archives of Sexual Behavior (2017).</ref> যৌনতা হ্রাসের নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা না গেলেও, এর একটি কারণ হলো নিয়মিত যৌন সঙ্গীর অভাব। আরেকটি কারণ হলো বয়সভেদে যৌনতা কমে যাওয়া। ২০ বছর বয়সীরা বছরে ৮০ বারের বেশি যৌন সম্পর্ক করে, যেখানে ৬৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র ২০ বার।<ref name="Twenge2017"/>
কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যৌন আনন্দ হ্রাস করতে পারে। যারা কনডম ও হরমোনজনিত জন্মনিয়ন্ত্রণ একসাথে ব্যবহার করেন, তাদের যৌন সন্তুষ্টি সর্বোচ্চ। আর যারা শুধু কনডম ব্যবহার করেন, তাদের সন্তুষ্টি সর্বনিম্ন।<ref name="Higgins2008">Higgins, J.A., S. Hoffman, C.A. Graham, and S.A. Sanders. 2008. “Relationships between condoms, hormonal methods, and sexual pleasure and satisfaction: an exploratory analysis from the Women’s Well-Being and Sexuality Study.” Sex. Health 5:321-330.</ref> যদিও বিভিন্ন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তবে একটি বহুল প্রচলিত অভিযোগ - জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে ওজন বেড়ে যায় - এখন অবৈজ্ঞানিক বলে মনে করা হচ্ছে।<ref name="Edelman2011">Edelman, A., J.T. Jensen, M. Bulechowsky, and J. Cameron. 2011. “Combined oral contraceptives and body weight: do oral contraceptives cause weight gain? A primate model.” Human Reproduction 26:330-336.</ref> বাস্তবে, উল্টোটা ঘটতে পারে। এই বড়ি ব্যবহারে মৌলিক বিপাক হার (basal metabolic rate) বেড়ে যেতে পারে (বানরের ক্ষেত্রে), যা ওজন হ্রাসে সাহায্য করতে পারে।<ref name="Edelman2011"/>
কিছু নারী (পুরুষদের নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা নেই) যৌন সম্পর্কের পর "postcoital dysphoria" নামে পরিচিত এক ধরনের নেতিবাচক অনুভূতির শিকার হন, যদিও সম্পর্কটি সন্তোষজনক হয়।<ref name="Bird2011">Bird, Brian S., Robert D. Schweitzer, and Donald S. Strassberg. 2011. “The Prevalence and Correlates of Postcoital Dysphoria in Women.” International Journal of Sexual Health 23(1):14–25.</ref> কেন কিছু নারী এই অনুভূতি অনুভব করেন, তা পরিষ্কার নয়। তবে এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ১০ শতাংশ নারী প্রায়শই বা নিয়মিতভাবে এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন (প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী কখনো না কখনো এই অনুভূতি অনুভব করেছেন)।
==যৌনকার্য==
যৌনকার্যের অনেক রূপ আছে। কলেজের ফিল্ম শিল্প থেকে বণ্যাবৃত্তি—সবই এর মধ্যে পড়ে।
বণ্যাবৃত্তি নিয়ে সাধারণ ধারণা হলো এটি “অপরিসীম মন্দ” এবং নারীদের ওপর এটি নিপীড়নমূলক।<ref name="weitzer2007">weitzer, ronald. 2007. “prostitution: facts and fictions.” Contexts 6:28-33.</ref> কিছু ক্ষেত্রে এই ধারণা ঠিক হতে পারে। তবে অধিকাংশ বণ্যাবৃত্তির ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য নয়। এমনকি যেখানে আইনত এটি বৈধ, সেখানে ব্যাপারগুলি সম্পূর্ণ আলাদা। যারা “নিপীড়নমূলক মডেল” বিশ্বাস করে, তারা বলেন অধিকাংশ বণ্যপ্রসূ নারী শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার, তাদের চাপ প্রয়োগ করে এ পথে প্রবেশ করানো হয়েছে অল্পবয়সে, তারা পাচারকারীদের নিয়ন্ত্রিত, তারা ড্রাগ-পান, সহিংস আচরণের শিকার, কাজের পরিবেশ ভয়াবহ, এবং আইনত বৈধ হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।<ref name="weitzer2007"/> অন্যদিকে, যারা শৈশবে যৌন আঘাত পেয়েছে, তারা ট্রানজ্যাকশনারি যৌনকে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পথ হিসেবে দেখতে পারে। কারণ তারা নিজে চুক্তি না করলে তা রোখার অধিকার রাখে। “নিপীড়নমূলক মডেল” ধারণা মূলত মিডিয়ায় প্রচারিত অতিরঞ্জিত ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে এবং Straßen (রাস্তার) বণ্যাবৃত্তির ওপর যা দৃষ্টি বেশি, যা ভিতরে বা অন্য মাধ্যমে পরিচালিত কাজের সঙ্গে তুলনীয় নয়। রাস্তার বণ্যপ্রসূদের ২৭% assaulted, ৩৭% লুটপাট ও ২২% ধর্ষণের শিকার।<ref name="weitzer2007"/> তবে অনেকেই পাচারের হাত থেকে আসেননি, কমই কেউ শুরু করেছিলেন ১৬ বছর বয়সের আগে, এবং যদিও কেউ ড্রাগ সেবী তো HIV/AIDS-র ঝুঁকি বেশি, না হলে তাদের ঝুঁকি কম। ছোট বেলায় যৌন নিপীড়নের প্রমাণও খুব সীমিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ২০% বণ্যপ্রসূ রোগীরা রাস্তার পথে কাজ করেন,<ref name="weitzer2007"/> বাকিরা গোপনে ক্লায়েন্টদের সাথে দেখা করেন, অনলাইনে, ম্যাগাজিন/পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও ক্লায়েন্ট পান বা এস্কোর্ট қызметে নিয়োজিত।
বাকি ৮০% বণ্যপ্রসূদের কাজের পরিবেশ কেমন? তারা নিরাপদ পরিবেশে কাজ করে—১% assaulted, ২% ধর্ষণের শিকার, ১০% লুটপাটের বলি।<ref name="weitzer2007"/> শারীরিক স্বাস্থ্য, আত্মসম্মান, মানসিক সুস্থতা ও সামাজিক যোগাযোগের মান। তারা একদম সাধারণ নারীদের মতো। অনেকেই তাঁদের পেশায় শক্তিশালী বোধ করেন। এবং যেসব দেশে বণ্যাবৃত্তি বৈধ, সেখানে এরা আরও স্বাস্থ্যবান, নিরাপদ ও কর্মে সন্তুষ্ট থাকে।<ref name="weitzer2007"/>
দূঃসাহসিক হলেও, প্রায় ৫০% আমেরিকান বণ্যাবৃত্তিকে বৈধ করতে চান।<ref name="weitzer2007"/> যেখানে এটি বৈধ বা ডিক্রিমিনালাইজ করা হয়, যৌনকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অপরাধ তদন্তে সহযোগিতা করেন—যা দণ্ডিত হওয়ার আশঙ্কায় সাধারনত তারা করেন না। আমেরিকান পুরুষদের প্রায় ১৭% একবার বা একাধিকবার বন্যাানুষ্ঠানে অর্থ দিয়ে যৌনসেবা নিয়েছেন।<ref name="weitzer2007"/>
==যৌন অভিমুখ বা পরিচয়==
'''যৌন অভিমুখ''' হলো কারো প্রতি সৌন্দর্য, রোমান্টিক বা যৌন আকর্ষণের নির্দিষ্ট ধারা—পুরুষ, নারী, উভয়, নেই কোনটাই, অথবা অন্য কোনো লিঙ্গ হতে পারে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, অভিমুখ মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিচয়ের অংশ, যা আকর্ষণ, নিয়ে আচরণ প্রকাশ ও সেই সমুদায়ে অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে তৈরি হয়।<ref name="brief">APA California Amicus Brief</ref> সাধারণভাবে ‘বৈরেলিঙ্গ’, ‘সমলিঙ্গ’, ‘উভয়লিঙ্গ’ এই তিন বিভাগে তা ভাগ করা হয়ে থাকে। তবে কেউ কেউ ‘এজেক্স’ বা লেবেল নাও ব্যবহার করে।<ref name="American Psychological Association">American Psychological Association...</ref> এই অভিমুখগুলো একটি লিনিয়ার কন্টিনিউয়ামে অবস্থান করে — একপ্রান্ত একদম বৈরেলিঙ্গ, অন্যপ্রান্ত একদম সমলিঙ্গ, মাঝখানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের উভয়লিঙ্গ। তবে সবাই এই কন্টিনিউয়ামে নিজেকে ফিট করতে পারে না। কারোরা নিজেকে অযৌন (asexual) বলেও চিহ্নিত করেন। অনেক যৌনবিজ্ঞানী এটিকে একটা অত্যন্ত সরলীকৃত ধারণা মনে করেন এবং আরও সূক্ষ্ম পরিচয়ের প্রয়োজনে গুরুত্ব দেন।<ref>Planned Parenthood...</ref>
অভিমুখ সম্পর্কে প্রায় সব সংজ্ঞাতেই মনস্তাত্ত্বিক এবং/অথবা স্ববৃত্তিমূলক উপাদান থাকে—যেমন কার সাথে যৌন ইচ্ছা বা কার সাথে বাস্তব যৌনসম্পর্ক। কেউ কেউ মনে করেন ব্যক্তির নিজের বিচারের ওপর নির্ভর করাই যথেষ্ট।
যৌনবিজ্ঞান, জনসংখ্যাবিজ্ঞান আর ইতিহাসের কিছু গবেষকের মতে, বৈরেলিঙ্গ বা সমলিঙ্গ κοινων সবার জন্য নয়। অনেক সমাজ সম্যকভাবে বিবেচনা করে বয়স, সামাজিক ভূমিকা বা স্তরের ভিত্তিতেও।
'''যৌন পরিচয়''' বলতে বোঝানো হয় ব্যক্তির নিজের লিঙ্গ বা পরিচয়ের ধারণা, যা যৌন অভিমুখ থেকে আলাদা। ‘যৌন পছন্দ’ (‘sexual preference’) শব্দটি অভিমুখের মতো, তবে বৈজ্ঞানিক জায়গায় ‘অভিমুখ’ শব্দ বেশি ব্যবহৃত।
যৌন অভিমুখ পশ্চিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজে উন্নত হয়। এর বৈশ্বিক প্রয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে।<ref>Diamant & McAnulty</ref> যেমন ফুকো বলেন, “‘যৌনতা’ আধুনিক রাষ্ট্র, শিল্প বিপ্লব আর পুঁজিবাদের আবিষ্কার।”<ref>Chinese Femininities...</ref>
'''যৌন সংখ্যালঘু''' বলতে বোঝায়—সমলিঙ্গ, উভয়লিঙ্গ ও অযৌন ব্যক্তিদের। এই গ্রুপের মানসিক স্বাস্থ্য বা মাদকের চিকিৎসার চাহিদা সরলৈঙ্গের তুলনায় দ্বিগুণ।<ref name="Grella2009">Grella et al., 2009</ref> সমলিঙ্গ/উভয়লিঙ্গদের ৪৮.৫% গত বছরে মানসিক চিকিৎসা নিয়েছেন, যেখানে বৈরেলিঙ্গদের ২২.৫%।<ref name="Mustanski2010">Mustanski et al., 2010</ref> LGBT তরুণদের মধ্যে ৩০% মানসিক সমস্যায় ভুগে, যদিও ৭০% ঠিক আছে। ১০% PTSD-তে ভুগে, ১৫% বাৎসরিক বিষণ্ণতায় আক্রান্ত এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এসব হার শহুরে ও সংখ্যালঘু তরুণদের মতো। এই সমস্যার মূল কারণ—অভিমুখের ভিত্তিতে অবিচার ও বৈষম্য। গত ৪০ বছরে আমেরিকানদের মধ্যে সমলিঙ্গ সম্পর্ক মেনে নেওয়া বাড়ছে। অনেকেই সমলিঙ্গ বিয়ের কিংবা নাগরিক অংশীদারিত্বের অধিকার চান।<ref name="Goldberg2006">Goldberg, 2006</ref>
প্রায় ২৫% সমলিঙ্গ কিশোর ও ১৫% উভয়লিঙ্গ কিশোর নিঃস্ব থাকে, যেখানে বৈরেলিঙ্গদের মাত্র ৩%। এছাড়া, এদের অধিকাংশই অভিভাবকদের সঙ্গে নয়।<ref name="Corliss2011">Corliss et al., 2011</ref>
ক্যালিফোর্নিয়ায় সমলিঙ্গ নারীদের অংশীদারি হার ও বৈরেলিঙ্গ নারীদের মতোই; কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে সমলিঙ্গ পুরুষদের তুলনামূলক অংশীদারি কম।<ref name="Carpenter2008">Carpenter & Gates, 2008</ref>
আজ পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ নেই যে কারোর অভিমুখ পরিবর্তন সম্ভব।<ref name="Goldberg2006"/> বরং এমন প্রচেষ্টা হতাশা, উদ্বেগ এবং আত্ম-ধ্বংসী প্রবণতা বাড়াতে পারে।<ref name="Goldberg2006"/>
==যৌনতা এবং রাজনীতি==
==যৌনতা এবং ধর্ম==
==যৌন নির্যাতন==
যৌন নির্যাতনের একটি ধরন হলো ধর্ষণ। এটি অনেক বেশি প্রচলিত, যতটা মানুষ সাধারণত মনে করে না। জাতিসংঘের জন্য গবেষণা করা কিছু গবেষক এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ধর্ষণের ওপর একটি রিপোর্ট তৈরি করেছেন। সেই গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্ষণের হার দেশভেদে ভিন্ন।<ref name="Fulu2013">Fulu, Emma et al. 2013. Why Do Some Men Use Violence against Women and How Can We Prevent It? Quantitative Findings from the United Nations Multi-Country Study on Men and Violence in Asian and the Pacific. Bangkok: UNDP, UNFPA, Un Women, and UNV. Retrieved (http://countryoffice.unfpa.org/timor-leste/drive/p4p-report.pdf).</ref> পাপুয়া নিউ গিনিতে প্রায় ৬০% পুরুষ কোনো নারীকে জোরপূর্বক যৌনসম্পর্কে বাধ্য করেছে। আর কাম্বোডিয়ায় এ হার ১০%-এর নিচে। সামগ্রিকভাবে, প্রায় প্রতি ৪ জন পুরুষের মধ্যে ১ জন কোনো না কোনো সময় একজন নারীকে জোর করে যৌনসম্পর্কে বাধ্য করেছে।<ref name="Fulu2013"/> বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জন ২০ বছরের কম বয়সী মেয়ের মধ্যে ১ জন ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।<ref name="UNICEF2014">Hidden in Plain Sight: A Statistical Analysis of Violence Against Children. Retrieved (http://www.unicef.org/publications/files/Hidden_in_plain_sight_statistical_analysis_EN_3_Sept_2014.pdf).</ref>
যুক্তরাষ্ট্রে করা গবেষণা থেকে জানা গেছে, কলেজ ক্যাম্পাসে যৌন নির্যাতন বেশ উদ্বেগজনক হারে ঘটে। তবে যেসব তরুণ-তরুণী কলেজে পড়ে না, তাদের ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের ঝুঁকি আরও বেশি। খুব কম অথবা একেবারেই কলেজে না যাওয়া নারীরা যৌন নির্যাতন বা জোরপূর্বক যৌনসম্পর্কের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় ২.৫ গুণ বেশি। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৪ গুণ বেশি।<ref name="Axinn2017">William George Axinn et al. General population estimates of the association between college experience and the odds of forced intercourse, Social Science Research (2017). DOI: 10.1016/j.ssresearch.2017.10.006</ref>
যৌন নির্যাতনের পেছনে যেসব কারণ কাজ করে, তার মধ্যে একটি হলো মানুষকে যৌন বস্তু হিসেবে দেখা। অর্থাৎ কাউকে ব্যক্তি হিসেবে না দেখে কেবল যৌনতার দৃষ্টিতে দেখা।<ref name="Gervais2013">Gervais, Sarah J., Arianne M. Holland, and Michael D. Dodd. 2013. “My Eyes Are Up Here: The Nature of the Objectifying Gaze Toward Women.” Sex Roles 69(11-12):557–70.</ref> সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের যৌন বস্তু হিসেবে দেখার প্রবণতা খুব সাধারণ। অন্তত কলেজ ক্যাম্পাসে এমনটা প্রায়ই ঘটে। নারী যখন কারও সঙ্গে কথা বলে, তখন অনেক সময় মানুষ তার চোখের দিকে না তাকিয়ে স্তনের দিকে তাকায়।<ref name="Gervais2013"/> বড় স্তনের নারীদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা আরও বেশি ঘটে। তবে গবেষণায় একটি চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেছে—নারীদের স্তনের দিকে শুধু পুরুষই তাকান না, নারীরাও তাকান। তবে তাদের কারণ ভিন্ন। পুরুষরা তাকায় যৌনভাবে, কিন্তু নারীরা তাকান নিজেদের সঙ্গে তুলনা করার মানসিকতা থেকে। অর্থাৎ নারীরাও নিজের শরীরকে যৌন বস্তু হিসেবে ভাবতে ভাবতে নিজেরাই পরোক্ষভাবে নিজেদের যৌন বস্তুকরণে ভূমিকা রাখে।<ref name="Gervais2013"/>
পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের ঝুঁকি বাড়ায় এমন একটি বড় কারণ হলো শৈশবে শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা। যারা ছোটবেলায় এমন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তারা অন্যদের তুলনায় ৪.৫ গুণ বেশি যৌনভাবে জবরদস্তিমূলক আচরণ করে থাকে।<ref name="Casey2009">Casey, Erin A., Blair Beadnell, and Taryn P. Lindhorst. 2009. “Predictors of Sexually Coercive Behavior in a Nationally Representative Sample of Adolescent Males.” J Interpers Violence 24:1129-1147.</ref> তবে এমন আচরণকারী পুরুষদের অর্ধেকেরও বেশি কোনো ধরনের শৈশবকালীন যৌন নির্যাতনের শিকার ছিল না।<ref name="Casey2009"/>
==References==
{{reflist}}
==External links==
* [http://sexology.it/glossario_sessuologia.html Glossary of clinical sexology]
{{BookCat}}
p306u925q5c1lz79wf1zsrqd4uq28gz
সমাজবিজ্ঞানের পরিচিতি/সামাজিক মনোবিজ্ঞান
0
22871
85748
72612
2025-07-06T20:22:54Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র */
85748
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|সমাজবিজ্ঞান পরিচিতির ভবিষ্যৎ অধ্যায়গুলোর বিষয়বস্তু অনুযায়ী, এই মডিউলটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।}}
'''সামাজিক মনোবিজ্ঞান''' হলো মানুষ কীভাবে একে অপরের সম্পর্কে চিন্তা করে, প্রভাবিত করে এবং সম্পর্ক স্থাপন করে, তার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।
==মডিউল ৫: ইতিবাচক চিন্তার শক্তি==
===নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র===
নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র বলতে বোঝায়, মানুষ কতটা বিশ্বাস করে যে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও কাজের মাধ্যমে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়, অথবা ভাগ্য বা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হয় (মায়ার্স, ৫৬)। কিছু মানুষ মনে করে, তাদের জীবনে যা ঘটে তা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অন্যরা মনে করে, তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও দক্ষতা তাদের জীবনের ঘটনাগুলো নির্ধারণ করে (হান্ট,১৯৯৩, পৃষ্ঠা.৩৩৪)। নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র দুই ধরনের: অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্বাস করে, তারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে। বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা মনে করে, কোনো বাহ্যিক শক্তি তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে।
===শিখিত অসহায়তা বনাম স্ব-নির্ধারণ===
যারা মনে করে তারা নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারা জীবনে অনেক উপকৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণকে উৎসাহিত করে, তা স্বাস্থ্য ও সুখ বাড়ায় (Deci & Ryan, 1987)। বিপরীতভাবে, যারা মনে করে তারা নিয়ন্ত্রণে নেই, তারা সাধারণত বিষণ্ণ হয় এবং তাদের কাজকে অর্থহীন মনে করে। এটিকে বলা হয় শিখিত অসহায়তা। এটি হলো এমন হতাশা ও পদত্যাগ, যা মানুষ বা প্রাণী শিখে যখন তারা বারবার খারাপ ঘটনার উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ অনুভব করে না (Myers, 56)।
===আত্ম-কার্যকারিতার উপর প্রতিফলন===
ইতিবাচক চিন্তার শক্তি
“যদি তুমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করো, তবে ইতিবাচক ফল পাবে” (Myers, 53)। এটি শুধু নিজেকে বোঝানো বা প্রশংসা করার মাধ্যমে ঘটে না। এটি সাধারণত সাফল্য অর্জনের পর ঘটে। ইতিবাচক চিন্তা মানুষকে অনেক কিছু অর্জনে সাহায্য করে। এটি বুঝতে পারলে কিছু পরিস্থিতি এড়ানো যায়। এটি অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
আত্ম-সম্মানের অন্ধকার দিক
বিষণ্নতা ও মাদকাসক্তির মতো ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো নিম্ন আত্ম-সম্মানের ফল। অন্যকে অপমান করা বা সহিংসতা সাধারণত তখন ঘটে, যখন কেউ মনে করে তাদের আত্ম-সম্মান বিপন্ন। অনেকে মনে করে, গুন্ডা বা গ্যাং লিডারদের আত্ম-সম্মান কম। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের আত্ম-সম্মান বেশ উঁচু। উচ্চ আত্ম-সম্মানের অনেক সুবিধা আছে। এটি শিক্ষার্থীদের গ্রেড, চেহারা এবং সামাজিক মর্যাদায় প্রতিফলিত হয়। বিপরীতভাবে, নিম্ন আত্ম-সম্মানের মানুষ বেশি চাপের জীবনযাপন করে। তারা বিষণ্নতা ও মানসিক চাপে ভোগে।
==মডিউল ৮: অযৌক্তিকতার কারণ==
===আমাদের পূর্বধারণা আমাদের ব্যাখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে===
আমাদের পূর্বধারণা আমাদের মন কীভাবে তথ্য গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করে তা নির্দেশ করে। মানুষ বুঝতে পারে না যে পূর্বধারণার প্রভাব কতটা বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্বাসের সমর্থনে প্রমাণ গ্রহণ করে। কিন্তু তারা যে প্রমাণ তাদের বিশ্বাসের বিরোধী, তা সমালোচনা করে। পূর্বধারণা ম্যানিপুলেটও করা যায়। ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের একজন ব্যক্তির মুখের ভাব মূল্যায়ন করতে বলা হয়। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, তারা তার মুখের ভাবকে নিষ্ঠুর বলে মনে করেন। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি নাৎসি-বিরোধী এবং অনেক ইহুদির জীবন বাঁচিয়েছেন, তারা তাকে উষ্ণ ও দয়ালু মনে করেন। এই পরীক্ষা প্রমাণ করে, আমাদের পূর্বধারণা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দৈনন্দিন জীবনেও প্রযোজ্য। কাউকে লাজুক মনে করা থেকে শুরু করে কেউ আমাদের মতো অনুভব করে কিনা তা ভাবা পর্যন্ত, পূর্বধারণা আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করে। যদি আমরা কোনো ধারণাকে বারবার মনে করি, তবে পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার জন্য খুব কম জায়গা থাকে।
===আমরা তথ্যের চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই===
মানুষ প্রায়ই ধরে নেয়, কোনো কিছু সাধারণ কারণ তা সহজে মনে পড়ে। এ কারণে শক্তিশালী গল্প তথ্যের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে (Allison & others, 1992)। এটিকে বলা হয় প্রাপ্যতা হিউরিস্টিক। এটি মানুষকে পরিস্থিতির বাস্তবতা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ৯/১১-এর হামলা অনেকের মনে স্পষ্ট। তাই অনেকে মনে করে, তারা বাণিজ্যিক ভ্রমণের সময় একই ধরনের ঝুঁকিতে আছে। এটি বাস্তবে তাদের ঝুঁকির চেয়ে বেশি। মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কাহনেমান এই বিশ্বাস সমর্থন করেন। তিনি গবেষণা করেন যে আমাদের মন কীভাবে তথ্য কল্পনা করে এবং পুনরুদ্ধার করে তার উপর ভিত্তি করে ঘটনার সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। যখন আমরা অসম্ভব ঘটনা কল্পনা করি, তখন আমাদের মনের ছবি আমাদের এটির সম্ভাবনা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে (Kahneman)।
[http://www.fallacyfiles.org/volvofal.html]
===আমরা সম্পর্ক ও নিয়ন্ত্রণ ভুলভাবে উপলব্ধি করি===
এলোমেলো ঘটনায় শৃঙ্খলার সন্ধান আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। এটি আমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে।
===ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক===
যখন আমরা উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক আশা করি, তখন আমরা প্রায়ই এলোমেলো ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য এলোমেলো ঘটনাগুলোকে ভুলভাবে উপলব্ধি করে (Crocker, 1981)। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে বা কোনো পূর্বাভাস কোনো ঘটনার সাথে সম্পর্কিত, তবে আমরা তাদের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। কিন্তু আমরা যে ঘটনাগুলো ঘটে এবং সম্পর্কিত নয়, তা উপেক্ষা করি। মন যখন ভ্রান্তিমূলক উপলব্ধি ও সম্পর্ক তৈরি করে, তখন এটি আমাদের ধারণা দেয় যে এলোমেলো ঘটনাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের অধীন। এটিকে বলা হয় নিয়ন্ত্রণের ভ্রম। ১৯৭৭ সালে এলেন ল্যাঙ্গারের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিজেরা লটারির নম্বর বেছে নিয়েছিল, তারা তাদের টিকিটের মূল্য চারগুণ বেশি দাবি করেছিল। কারণ তারা নিজেরাই নম্বর বেছে নিয়েছিল। জুয়াড়িরা তাদের জয়কে তাদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কৃতিত্ব দেয় (Gilovich & Douglas, 1986)।
===গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন===
নিয়ন্ত্রণের ভ্রম আরেকটি পরিসংখ্যানগত ঘটনার জন্য দায়ী, যাকে বলা হয় গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন। টভারস্কি ও কাহনেমান উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার স্কোর কখনো কখনো ভাগ্যের কারণে ওঠানামা করে। টিউটররা শিক্ষার্থীর উন্নতির কারণ নাও হতে পারে। যারা প্রথমে ভালো স্কোর করে, তারা সাধারণত গড়ের দিকে ফিরে আসে। যারা প্রথমে খারাপ করে, তারা প্রায়ই টিউটরিং ছাড়াই উন্নতি করে। এটি দেখায় যে আমরা গড়ের দিকে ফিরে যাই। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। বেসবল খেলোয়াড়দের ব্যাটিং গড় বা রান গড়ের মতো ক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রায়ই তাদের দক্ষতাকে অতিরঞ্জিত করে। কিন্তু এরপর তারা গড়ের দিকে ফিরে যায় (Galton)।
[http://www.economics.pomona.edu/GarySmith/BBregress/baseball.html]
===আমাদের বিশ্বাস নিজেদের নিশ্চিতকরণ তৈরি করে===
রবার্ট রোজেনথালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ কখনো কখনো তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জীবনযাপন করে। যখন অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল যে তাদের একটি ছবির উচ্চ রেটিং দেওয়া উচিত, তারা তা করেছিল। যাদের বলা হয়েছিল ছবিটি ব্যর্থ, তারা কম রেটিং দিয়েছিল। এটি স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শন করে। শিক্ষকদের কি একই প্রত্যাশা থাকে? শিক্ষকদের প্রত্যাশা কি শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে? শিক্ষকরা কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চ মান ধরে রাখেন এবং যারা ভালো করে তাদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন (Jussim & Others, 1996)। নিম্ন প্রত্যাশা সবসময় গড় শিশুকে নিরুৎসাহিত নাও করতে পারে। কিন্তু শিক্ষকের উচ্চ প্রত্যাশা কোনো শিশুর সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শিত হয়েছে। ৪৮ থেকে ৬২ বছর বয়সী পুরুষ ও নারীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। একটি গ্রুপ ৭০ বা তার বেশি বয়সীদের বিরুদ্ধে স্মৃতি পরীক্ষায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ ২০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে পরীক্ষা দেয়। তৃতীয় গ্রুপ কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা তরুণদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা গড়ে ১৪টি শব্দ মনে করেছিল। যারা কোনো প্রতিযোগিতায় ছিল না, তাদের ফলাফল একই ছিল। যারা বয়স্কদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা সবচেয়ে কম শব্দ মনে করেছিল। সম্ভবত, বয়স্ক গ্রুপের সাথে থাকার মানসিক ধারণা তাদের অজান্তেই ভাবিয়েছিল যে বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়। এই স্টিরিওটাইপ তাদের পরীক্ষার ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল (Carey)। উচ্চ মান ধরে রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। যে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনা দেখেন, তারা তাদের প্রতি বেশি হাসেন, মাথা নাড়েন, প্রশ্ন করেন এবং উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি সময় দেন (Cooper, 1983)।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষক সম্পর্কে প্রত্যাশা ক্লাসের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যে শিক্ষার্থী শিক্ষক সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে ক্লাসে যায়, সে ক্লাসকে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে। যার প্রত্যাশা কম, তার কাছে ক্লাস কম আকর্ষণীয় মনে হয় (Feldman & Theiss, 1982)।
===আমরা কি অন্যদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করি তা পাই?===
অনেক সময় আমরা অন্যদের দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি করি, এমনকি তাদের না জেনেই। এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত বা ধারণা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে কিছু বলে। আমরা একটি ধারণা তৈরি করি এবং সিদ্ধান্ত নিই যে তারা কেমন মানুষ। আমরা মানুষের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, তারা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমরা যে আচরণ চাই, তা আমাদের ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যদি কেউ দয়ালু, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সুস্থির হয়, তবে তারা অন্যদের কাছে তা প্রতিফলিত করে। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করি, অন্যরা তা ফিরিয়ে দেবে। সাফল্যের জন্য প্রত্যাশা স্থাপন মানুষকে তা পূরণ করতে উৎসাহিত করে। একজন কর্মী উচ্চ প্রত্যাশা পেলে বেশি অর্জন করতে পারে। কাউকে অভদ্র মনে করলে আমরা তাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করি। এটি তাদের প্রতিক্রিয়াকে আমাদের প্রত্যাশার দিকে নিয়ে যায়।
===উপসংহার===
আমরা আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী জিনিসগুলোকে সত্য মনে করি। আমরা অন্যদের আমাদের চিন্তার সাথে সামঞ্জস্য করতে প্ররোচিত করতে পারি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক বা ভুল হতে পারে। আমাদের মন বিচারপ্রবণ। আমাদের বিচার বা সিদ্ধান্তের ফলাফল যাই হোক, আমাদের মন যেভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তা আশ্চর্যজনক। এটি প্রায়ই ভুল ধারণা ও কঠোর বিচারের দিকে নিয়ে যায়। প্ররোচনা এত সহজ হতে পারে যে এটি মনের একটি সাধারণ চিত্র বা সংবাদ শুনে ঘটতে পারে।
==মডিউল ১০: ক্লিনিকাল স্বজ্ঞা==
'''ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক, পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪'''
প্রায়ই আমরা দুটি অনন্য এবং সম্পর্কহীন ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক ধরে ফলাফলের পূর্বাভাস দিই। এই ঘটনাগুলো সঠিক বা অনুপযুক্ত সময়ে একত্রিত হয়। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্কের ঘটনা বোঝার জন্য আমি আমার নিজের পরিবেশের দিকে তাকিয়েছি। গত সপ্তাহে এক রোদেলা সকালে আমি রাস্তা পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা পাচ্ছিলাম। আমি বুঝলাম, আমি অনেকদিন গাড়ি ধোয়নি। তাই আমি ভাবলাম, কেন একটি এক্সপ্রেস ওয়াশে গাড়িটি ধুয়ে না? আমি তাই করলাম এবং রাস্তায় ফিরে গেলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্দেশে, সেই বিকেলে একটি ঠান্ডা ফ্রন্ট এলো এবং প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো। গাড়ি ধোয়ার পর কেন সবসময় বৃষ্টি হয়? আমার স্ত্রী, যিনি শিশু প্রসবের কাজ করেন, পূর্ণিমার সময় ডিউটি নিতে ভয় পান। কারণ তিনি মনে করেন, এই সময়ে বেশিরভাগ নারী প্রসব বেদনায় যান। এটি তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাজ করতে এবং সপ্তাহান্তে ঘুমের অভাবে কষ্ট পেতে হয়। যদি আমি পরীক্ষা করতাম যে গাড়ি ধোয়ার পর কতবার বৃষ্টি হয়েছে, তবে দেখতাম, বেশিরভাগ সময় দিনটি সুন্দর ছিল। আমার স্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু আমি মনে করতে পারি, পূর্ণিমার সময় অনেকবার তিনি কোনো ফোন কল পাননি। লরেন চ্যাপম্যান ও জিন চ্যাপম্যান (১৯৬৯, ১৯৭১) গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক বৈধ মনো-নির্ণয়ের চিহ্ন ব্যবহারে বাধা। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণা ডি. এল. হ্যামিল্টন ও আর. কে. গিফোর্ড (১৯৭৬)-এর কাজের উপর ভিত্তি করে। এটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আরও সঠিক বিচার পাওয়া যায়। ক্লিনিশিয়ানরা মানুষ হিসেবে পর্যবেক্ষিত আচরণের ফ্রিকোয়েন্সির উপর ভিত্তি করে বিচার করতে পারেন। কিছু আচরণ একই রকম হলেও তা এক নয়। এই পর্যবেক্ষণগুলোকে সম্পর্কিত বলে ভুল বোঝা প্রায়ই ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়।
===পশ্চাৎদৃষ্টি, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫===
শৈশবে কতবার আপনি এমন কিছু করার জন্য শাস্তি পেয়েছেন, যা আপনার করা উচিত ছিল না? তখন আপনার ছোট ভাই বা বোন বলেছে, “আমি তো বলেছিলাম!” এটি খুব কষ্টদায়ক ছিল, কারণ তারা ঠিক ছিল। পশ্চাৎদৃষ্টি, বা “আমার আগেই জানা উচিত ছিল” ঘটনা, আমরা প্রতিদিন অনুভব করি। এটি আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি ঘটে। গগিন ও রেঞ্জ (১৯৮৫) আত্মহত্যার শিকারের পরিবার, বন্ধু ও পরিচিতদের দৃষ্টিকোণ থেকে পশ্চাৎদৃষ্টি পরীক্ষা করেছেন। সাধারণ প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে, মানুষ আত্মহত্যার শিকারের পরিবারকে কিছুটা দায়ী মনে করে। ম্যাকইনটোশ ও কেলি (১৯৯২) রিপোর্ট করেছেন, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক মৃত্যুর বেঁচে থাকাদের শোকের প্রতিক্রিয়ায় বেশি মিল রয়েছে। তারা দোষ বা সামাজিক সমর্থনের কোনো পার্থক্য পায়নি। কিন্তু আত্মহত্যার বেঁচে থাকারা তিনটি বিষয়ে আলাদা। তারা বেশি মানুষকে দোষ দেয়, কলঙ্কিত বোধ করে এবং মনে করে তারা কিছু করে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারত। আমি একজন পরিবারের বন্ধুর আত্মহত্যার অভিজ্ঞতা পেয়েছি। আমি দোষের অনুভূতি মনে করি। কিন্তু কোনো স্পষ্ট লক্ষণ বা সতর্কতা ছিল না যে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ক্লিনিকাল বিচারের ক্ষেত্রে, পশ্চাৎদৃষ্টি ক্লিনিশিয়ানদের ভুলের দিকে নিয়ে যায়। নির্ণয়কে অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা প্রকৃত সমস্যাকে ভুল বোঝার দিকে নিয়ে যায়।
===স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়, পৃষ্ঠা ১০৫-১০৭===
হারিয়ে যাওয়া চাবি বা মোজার জোড়া খুঁজতে গিয়ে বেশ হতাশা হয়। ক্লিনিকাল পরিবেশে, ক্লিনিশিয়ানদের কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করা উচিত তা জানা উচিত নয়। সৎ বিচারের জন্য এটি প্রয়োজন। পূর্বানুমানমূলক প্রশ্ন সাক্ষাত্কারকারীকে তার পছন্দের নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আচরণের ধরণ স্পষ্ট করে না। স্নাইডার ও স্বান (১৯৭৮) একটি পরীক্ষায় প্রমাণ করেছেন, একবার তথ্য পাওয়ার পর এবং তা অবৈধ বলা হলেও, মানুষের মনে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা কঠিন। এটি বিচারে ভুল এবং ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আমাকে একজন সচেতন আইনজীবীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আদালতে ঘোষণা করেন যে তার মক্কেল সব অভিযোগে দোষী। বিচারক জুরির দিকে তাকিয়ে বলেন, “সর্বশেষ মন্তব্যটি উপেক্ষা করুন।” এটি প্রায় অসম্ভব।
===ক্লিনিকাল বনাম পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী, পৃষ্ঠা ১০৭-১০৮===
অনেক ক্লিনিশিয়ান ও সাক্ষাত্কারকারী পশ্চাৎদৃষ্টি ও স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়ের ভুল করেন। এটি তাদের নিজেদের ভবিষ্যদ্বাণীর উপর বেশি আত্মবিশ্বাসী করে। এটি পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণীর তুলনায় কম নির্ভরযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, হাইস্কুলের জিপিএ ব্যবহার করে কলেজে শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্স ভবিষ্যদ্বাণী করা। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী মানুষের স্বজ্ঞার চেয়ে বেশি সঠিক। পল মীল (১৯৮৬) লিখেছেন, ফুটবল খেলার ফলাফল থেকে লিভার রোগের নির্ণয় পর্যন্ত ৯০টি তদন্তে পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী বেশি সঠিক। ক্লিনিশিয়ানদের পক্ষে মাত্র কয়েকটি গবেষণা দুর্বল প্রমাণ দেয়। এই গবেষণা সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা স্বজ্ঞা ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ডেভিস (১৯৭৬) বলেন, সাক্ষাত্কারকারীরা তাদের স্বজ্ঞার উপর নির্ভর করে। এটি কলেজে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান জিপিএ-এর মতো পরিসংখ্যানগত তথ্যের চেয়ে কম সঠিক। তিনি বলেন, “আপনি এবং আমি, একটি ফোল্ডার দেখে বা আধা ঘণ্টা সাক্ষাত্কার নিয়ে, ২০-৪০ জন অধ্যাপকের ৩.৫ বছরের ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের চেয়ে ভালো ধারণা তৈরি করতে পারি না।”
===প্রভাব, পৃষ্ঠা ১০৮-১০৯===
ক্লিনিশিয়ানরা ভুল করেন এবং পক্ষপাতিত্ব দেখান। উদাহরণস্বরূপ, যখন তারা কোনো সম্পর্ক দেখতে চান, তারা তা প্রমাণ করার জন্য প্রমাণ খোঁজেন। তারা মনে করেন তাদের স্বজ্ঞাগত ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবের চেয়ে বেশি সঠিক। ভুল ভবিষ্যদ্বাণী এড়াতে কিছু উপায় আছে। পশ্চাৎদৃষ্টি এড়াতে হবে, কারণ এটি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যা আপনার পছন্দের উত্তরের দিকে নিয়ে যায়। আপনার মূল চিন্তাকে ভিন্ন ধারণার সাথে পরীক্ষা করুন। এই পক্ষপাত ও ভুলগুলো দেখায়, মনোবিজ্ঞান জ্ঞানের সমুদ্র থেকে মাত্র এক ফোঁটা তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই জ্ঞানের অভাব পূরণ করতে কিছু মনোবিজ্ঞানী তত্ত্ব তৈরি করেন। এটি আমাদের অজ্ঞতাকে আরও বাড়ায়। বিজ্ঞান সত্য খোঁজার একটি উপায়। এটি সবসময় মানুষের স্বজ্ঞার সাথে যুক্ত থাকবে।
==মডিউল ১১: ক্লিনিকাল থেরাপি: সামাজিক জ্ঞানের শক্তি==
===সামাজিক জ্ঞান এবং বিষণ্নতা, পৃষ্ঠা ১১১-১১৬===
বিষণ্নতার ক্ষেত্রে মানুষ বোঝে না যে তারা কী কী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়। চিকিৎসকদের জন্য বিষণ্নতার নির্ণয় কঠিন হতে পারে, কারণ এটি জটিল। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বিষণ্নতা হঠাৎ দেখা দেয়। এর কোনো শুরু বিন্দু নাও থাকতে পারে। কিন্তু এটি বোঝার উপায় আছে।
ব্যাখ্যামূলক শৈলী এমন একটি উপায়। (Peterson and Steen, 2002; Sweeney and others, 1986)। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে বিষণ্নতা কীভাবে কাজ করে। বিষণ্ণ মানুষ সাধারণত জিনিসের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক দুটোই দেখে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা শুধু ইতিবাচক দিক দেখে। বিষণ্ণ ব্যক্তির জীবনে কিছু নেতিবাচক ঘটলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে দায়ী করে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা ব্যর্থতার জন্য অন্য কিছুকে দায়ী করে। বিষণ্নতার ক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন সবসময় মনে আসে: বিষণ্ণ মেজাজ কি নেতিবাচক চিন্তার কারণ? নাকি নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্ণ মেজাজের কারণ? সাধারণত আমরা ধরে নিই, নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্নতার কারণ। এটি সত্য। কিন্তু এটি দুটোই হতে পারে। আমাদের মেজাজ আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। ভালো মেজাজে আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের খারাপ ঘটনাগুলো মনে করি। তখন আমরা সেগুলো উপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এখন হঠাৎ সেগুলো নিয়ে বিষণ্ণ হই। নেতিবাচক চিন্তাও বিষণ্ণ মেজাজের কারণ হতে পারে। ধরুন, আপনি নতুন চাকরি শুরু করলেন। প্রথম যে ব্যক্তির সাথে দেখা হলো, তিনি দুঃখী ও বিষণ্ণ। পরের ব্যক্তিও একই রকম। তৃতীয় ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়ার আগে আপনি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারেন। এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবায়, বিষণ্নতা কীভাবে ঘোরে? এটি কীভাবে শুরু হয়? এটি কোথায় শেষ হয়? এটি কি শেষ হয়? বিষণ্নতার চক্র আমাদের এই প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের মেজাজ, ভালো বা খারাপ, আমাদের চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত করে। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের ঘটনাকে ভিন্নভাবে মনে করি। এটি মানুষের আমাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণকেও প্রভাবিত করে। আমরা যদি দুঃখী ও হতাশ দেখাই, তবে মানুষ আমাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করে। নিচে বিষণ্নতার চক্র এবং এটি কীভাবে বিকশিত হয় তা দেখানো হয়েছে। (Peter Lewinsohn)(1985)[http://www.alanpriest.f2s.com/images/Cycle_of_Depression.JPG] এই সব কারণে চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করেন। তারা ব্যক্তির চিন্তাভাবনার দিকে বেশি মনোযোগ দেন, তাদের আচরণের চেয়ে। তারা কীভাবে নিজের জীবন ও অন্যদের জীবন দেখে তাও বিবেচনা করে। এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে পারেন।
===সামাজিক জ্ঞান এবং একাকীত্ব, পৃষ্ঠা ১১৬-১১৮===
একাকীত্ব এমন একটি অনুভূতি, যা বেশিরভাগ মানুষ জীবনে অন্তত একবার অনুভব করে। এটি প্রায়ই অজান্তেই ঘটে। একাকী বোধ করা এবং শারীরিকভাবে একা থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে। একাকীত্ব প্রায়ই বিষণ্নতার সাথে যুক্ত। কিন্তু সবসময় নয়। এই দুটির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উচ্চ। এটি একটি নেতিবাচক সম্পর্ক, যা ০.৫-এর বেশি (Anderson et al. 1994: 549-557)।
একাকীত্বও বিষণ্নতার মতো একটি চক্র। যারা একাকী বোধ করে, তারা লাজুকভাবে মানুষের কাছে যায়। একাকীত্ব তাদের অপ্রতুল বোধ করায়। তারা মনে করে, তাদের একাকীত্বের জন্য তারাই দায়ী। “একটি সম্পর্ক অধ্যয়ন স্ব-দোষারোপের ধারণাকে আরও সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি দেখিয়েছে, আচরণগত এবং চরিত্রগত স্ব-দোষারোপ বিষণ্নতা এবং একাকীত্বে অনন্যভাবে অবদান রাখে” (549)। এই স্ব-দোষারোপের কারণে মানুষ একাকীত্বের চক্রে পড়ে। এটি থেকে বের হওয়া কঠিন। মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস তাদের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্দিষ্ট ফলাফল দেয়, যা তাদের পূর্বের চিন্তাকে শক্তিশালী করে (Anderson et al.)।
===সামাজিক জ্ঞান এবং উদ্বেগ, পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯===
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বিভিন্ন কারণে ঘটে। এর বেশিরভাগই ভয় থেকে উৎপন্ন। সামাজিক মূল্যায়নের ভয়, স্ব-প্রকাশের ভয়, এবং অন্যদের মূল্যায়ন করার ভয়। লাজুকতা এবং উদ্বেগের মধ্যে উচ্চ সম্পর্ক রয়েছে। এটি ০.৭৫ (Asendorpf 1987: 542-549)। লাজুক মানুষ অলাজুক মানুষের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়।
===চিকিৎসার জন্য সামাজিক-মনোবৈজ্ঞানিক পন্থা, পৃষ্ঠা ১২০-১২২===
মনোবিজ্ঞানী চিকিৎসকরা রোগীর চিন্তাভাবনা ও মনোভাব পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। তারা প্রথমে রোগীর আচরণ সামঞ্জস্য করে। এই পদ্ধতিগুলো সহায়ক পরিবেশে, যেমন সাপোর্ট গ্রুপ বা স্ব-সহায়ক গ্রুপে, প্রয়োগ করা হয়। আচরণ থেরাপিস্টরা একটি কৌশল ব্যবহার করেন। এতে একজন ব্যক্তি সহায়ক দর্শকদের সামনে নতুন মৌখিক বা শারীরিক আচরণ প্রদর্শন করে। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। যুক্তিবাদী-আবেগীয় থেরাপি অনুসারে, আমরা নিজেরাই আমাদের আবেগ তৈরি করি। স্ব-সহায়ক গ্রুপ এটি ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের নতুন আচরণ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ নিজের সম্পর্কে যা বলে তা তাদের আবেগকে প্রভাবিত করতে পারে (Mirels 1977: 1132-1133)। আত্ম-মূল্য, সুখ এবং একত্রতার মতো ইতিবাচক আবেগ ইতিবাচক অভিজ্ঞতার চক্রের মাধ্যমে বজায় রাখা যায়। বিপরীতভাবে, দুঃখ, রাগ এবং হতাশার মতো নেতিবাচক আবেগ নেতিবাচক ঘটনার চক্রে বজায় থাকে। নেতিবাচক চক্র থেকে মানুষকে বের করতে পরিবেশ পরিবর্তন করতে হয়। ভালো আচরণকে উৎসাহিত করতে হয়। তাদের জ্ঞানগতভাবে ইতিবাচক হতে হয়। নেতিবাচক আবেগ কল্পনার ফসল নয়। এটি সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রকাশ পায়। সাপোর্ট গ্রুপে নতুন আচরণ পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা যায়। তখন ব্যক্তি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও কার্যকরভাবে সাড়া দিতে পারে। ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলতে পারে। ফলে তারা ভালো সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকে এবং ইতিবাচকভাবে আচরণ করে। ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপি একটি প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে। এতে ব্যক্তি তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে, যা তাদের আবেগ পরিবর্তন করে। তারা তাদের ক্রিয়া ও ফলাফলকে সংজ্ঞায়িত করতে শেখে। এটি তাদের পরিস্থিতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম করে। এমনকি ফলাফল নেতিবাচক হলেও, তারা জানে তারা কী ভুল করেছে বা বাহ্যিক কারণ কী ছিল। এটি তাদের নেতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক অনুভব করতে দেয়। ভালো সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ প্রায়ই নিজেদের সামাজিকভাবে অপ্রতুল মনে করেন। এটি তাদের পরিবেশ বা সামাজিক পরিস্থিতির নেতিবাচক উপাদানের কারণে হয়। এই ধরনের ব্যক্তিকে তাদের নেতিবাচক বিশ্বাস উল্টে দিতে সাহায্য করা যায়। এটি ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপির লক্ষ্য। এই থেরাপি ব্যক্তিকে এমন সর্ব-ইতিবাচক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করে না, যাকে সবাই সব পরিস্থিতিতে প্রশংসা করে। প্রতিটি চক্রে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পর্যায় থাকে। ইতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং নেতিবাচক ঘটনায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। এই অর্থে, নেতিবাচক স্ব-ধারণা পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর, স্বাভাবিক এবং অস্থায়ী।
==মডিউল ১৩: লিঙ্গ, জিন এবং সংস্কৃতি==
===লিঙ্গ পার্থক্য===
লিঙ্গ পার্থক্য কি প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা নির্ধারিত? নাকি এটি পৃথক সংস্কৃতির দ্বারা নির্দেশিত? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের সংস্কৃতি পুরুষ ও নারীর উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা পরীক্ষা করতে হবে। শৈশবে সাংস্কৃতিক প্রভাবের পার্থক্য দেখা যায়। ছেলেরা তাদের যত্নকারীর সাথে বিচ্ছেদ খোঁজে। মেয়েরা তাদের সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় দেয়। এই লিঙ্গ পার্থক্য প্রাপ্তবয়স্কতায়ও থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রুপ পরিস্থিতিতে পুরুষরা কাজের উপর মনোযোগ দেয়। নারীরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর বেশি মনোযোগ দেয় (Gabriel & Gardner, 1999)।
সহানুভূতি প্রকাশ বা অন্যের অনুভূতি নিজের মতো অনুভব করার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ পার্থক্য রয়েছে। কেউ দুঃখে থাকলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি আবেগ প্রকাশ করে, যেমন কান্না। এই পার্থক্য সম্ভবত নারীদের অ-মৌখিক ইঙ্গিতের প্রতি উচ্চতর সংবেদনশীলতার কারণে। এটি তাদের আবেগীয় বার্তা সহজে বোঝতে সাহায্য করে।
===সামাজিক প্রভাব===
জন উইলিয়ামস ও ডেবোরা বেস্টের মতে, পুরুষরা বেশি প্রভাবশালী এবং আক্রমণাত্মক (John Williams and Deborah Best, 1990 a.p.15)। এমন কোনো সমাজের প্রমাণ নেই যেখানে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী (Pratto, 1996)। সময়ের সাথে লিঙ্গ পার্থক্য কমছে। নারীরা বেশি ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন।
====আগ্রাসন====
মনোবিজ্ঞানীরা আগ্রাসনকে এমন আচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন, যার উদ্দেশ্য অন্যকে ক্ষতি করা (Myers, 2004)। জরিপে দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আগ্রাসনের কথা স্বীকার করে।
====যৌনতা====
বিষয়গত এবং শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ “ভিন্নতার চেয়ে বেশি মিল” (Griffitt, 1987)। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪৮% পুরুষ এবং ১২% নারী বিভিন্ন সঙ্গীর সাথে নৈমিত্তিক যৌনতায় আরাম ও আনন্দ অনুভব করতে পারে। তারা কতবার যৌনতা নিয়ে ভাবে? ধারণা করা হয়, ১৯% নারী এবং ৫৪% পুরুষ প্রতিদিন বা দিনে কয়েকবার যৌনতা নিয়ে ভাবে (Laumann & others, 1994)।
===বিবর্তন এবং লিঙ্গ: স্বাভাবিকভাবে যা আসে তা করা?===
====লিঙ্গ এবং সঙ্গী নির্বাচনের পছন্দ====
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীদের একটি তত্ত্ব বলে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক এবং প্রভাবশালী। কারণ তারা নারীদের ডিমের তুলনায় অনেক বেশি শুক্রাণু উৎপাদন করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন পুরুষদের আচরণ বেশি আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী। পুরুষরা তাদের জিন ছড়িয়ে দিতে এবং যতটা সম্ভব নারীকে গর্ভবতী করতে চায়। বিপরীতভাবে, নারীরা এমন একজন পুরুষ খোঁজে, যিনি তাকে এবং তার সন্তানকে সমর্থন ও যত্ন নিতে পারে। বিবর্তন পুরুষদের আচরণের কারণ বলে মনে করা হয়। শারীরিকভাবে প্রভাবশালী পুরুষরা বেশি নারীকে আকর্ষণ করে। এটি মনে হয় তারা ভালো সমর্থন ও যত্ন দিতে পারে। এটি অন্য পুরুষদের আরও আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী হতে বাধ্য করে। নারীরা সঙ্গী হিসেবে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত বা সফল পুরুষদের খোঁজে। নারীরা মডেলের মতো সৌন্দর্য পেতে অনাহার পর্যন্ত সহ্য করে। এটি পুরুষরা চায়। নারীরা ধনী বা প্রভাবশালী পুরুষদের পছন্দ করে, কারণ তারা তাদের সন্তানদের জন্য বেশি সরবরাহ করতে পারে।
====লিঙ্গ এবং হরমোন====
অনেকে বিশ্বাস করে, যৌন হরমোন, প্রধানত টেস্টোস্টেরন, লিঙ্গ পার্থক্যের মূল উপাদান। টেস্টোস্টেরন পুরুষালি বৈশিষ্ট্য এবং আগ্রাসনকে প্রভাবিত করে। সহিংস পুরুষ অপরাধীদের সাধারণত উচ্চ টেস্টোস্টেরন মাত্রা থাকে। এটাও লক্ষ্য করা যায়, বেশিরভাগ পুরুষ বয়স বাড়ার সাথে সাথে কম আক্রমণাত্মক হয়। তখন তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কমে যায়।
===বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপর প্রতিফলন===
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান ব্যবহার করে তত্ত্ব ব্যাখ্যা করার সময় দুটি সমস্যা দেখা দেয়: পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত এবং সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ। পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত হলো ইতিহাস পরীক্ষা করে এবং পিছিয়ে গিয়ে আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা বলি নারীরা শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক, তবে পশ্চাৎদৃষ্টিতে বলতে পারি, এটি তাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন ছিল (Myers, 2004)। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ বিবর্তনীয় ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষা করে। এটি আন্তঃসাংস্কৃতিক এবং প্রাণী আচরণ পর্যবেক্ষণ, হরমোন এবং জিনগত অধ্যয়ন ব্যবহার করে (Myers, 2004)। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীরা একমত যে বিবর্তন আমাদের মিল এবং পার্থক্যের কিছু ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু তারা মনে করেন না যে বিবর্তন একমাত্র সাংস্কৃতিক আচরণের পার্থক্য ভবিষ্যদ্বাণী করে (Myers, 2004)।
===সংস্কৃতি এবং লিঙ্গ===
সংস্কৃতি হলো ধারণা, আচরণ, মনোভাব এবং ঐতিহ্য, যা একটি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়। একটি সংস্কৃতির মধ্যে নির্দিষ্ট আচরণগত প্রত্যাশা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, লিঙ্গ ভূমিকা। এটি এমন আচরণ, যা সংস্কৃতি নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে (Myers, 2004)।
===লিঙ্গ ভূমিকা সংস্কৃতি এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়===
গত শতাব্দীর শেষার্ধে লিঙ্গ ভূমিকা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩৮ সালে মাত্র ২০% আমেরিকান একমত ছিলেন যে বিবাহিত নারী শিল্প ও ব্যবসায় অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে ৮০% আমেরিকান এটি সমর্থন করেছেন। এটি প্রমাণ করে, সময় আমেরিকান সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে (Niemi & others, 1989; NORC, 1996)। এই মphysics://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
এই মনোভাব পরিবর্তনের সাথে আচরণগত পরিবর্তনও এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬০ সাল থেকে ৪০ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার দ্বিগুণ হয়েছে (Bureau of the Census, 1999)। এটি স্পষ্ট যে শুধু বিবর্তন এবং জীববিজ্ঞানই লিঙ্গ ভূমিকা পরিবর্তন করে না। সংস্কৃতিও লিঙ্গ ভূমিকাকে প্রভাবিত করে (Myers, 2004)।
===উপসংহার: জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি===
জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি উভয়ই আমাদের মনোভাব ও আচরণকে প্রভাবিত করে। জিন আমাদের নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতি এই আচরণগুলোকে আরও জোরালো করে। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। জীববিজ্ঞানের প্রভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে (Myers, 2004)। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ (পরিবেশ) নির্দিষ্ট জিনগত বৈশিষ্ট্যের মানুষের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক নিয়ম হলো, পুরুষদের তাদের নারী সঙ্গীর চেয়ে লম্বা হওয়া উচিত। একটি গবেষণা অনুসারে, ৭২০ জন দম্পতির মধ্যে মাত্র ১ জন এই সাংস্কৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল (Gillis & Avis, 1980)। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির এই পারস্পরিক সম্পর্ককে মনোবৈজ্ঞানিকভাবে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। পশ্চাৎদৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বলতে পারি, পুরুষ যখন নারীর চেয়ে লম্বা হয়, তখন নারীদের উপর সামাজিক ক্ষমতা বজায় থাকে। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করলে, যদি সঙ্গীরা সমান উচ্চতার সঙ্গী পছন্দ করত, তাহলে লম্বা পুরুষ এবং ছোট নারীদের সঙ্গী থাকত না। অতএব, দম্পতিদের উচ্চতার সাংস্কৃতিক নিয়ম জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হতে পারে। কারণ এটা স্পষ্ট যে বিবর্তন লম্বা পুরুষদের সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কৃতি দম্পতিদের জন্য একই নিয়ম নির্ধারণ করেছে (Myers, 2004)।
==মডিউল ২১: ব্যক্তির ক্ষমতা==
===ব্যক্তি এবং পরিস্থিতির পারস্পরিক সম্পর্ক===
- পারস্পরিক সম্পর্ক তিনটি উপায়ে ঘটে। প্রথমত, যেকোনো সামাজিক পরিস্থিতি প্রত্যেককে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। আমরা সবাই ভিন্নভাবে দেখি এবং চিন্তা করি। তাই আমরা পরিস্থিতি যেভাবে উপলব্ধি করি, তার ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেখাই। কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল। দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সাধারণত ঘটে কারণ মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি বেছে নেয় এবং তার জন্য দায়ী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, শান্ত মানুষ শান্ত বা অসামাজিক পরিবেশ বেছে নিতে পারে। আরেকটি উদাহরণ হলো, মানুষ যখন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্বাচন করে; রক্ষণশীল মানুষ সম্ভবত উদারপন্থী কলেজে ভর্তি হবে না। তৃতীয়ত, প্রায়শই মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা কাউকে অসৌজন্যমূলক মনে করি বা প্রত্যাশা করি, তবে আমরা তাকে যেভাবে আচরণ করি, তা তাকে অসৌজন্যমূলক বা দূরবর্তী আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। আমাদের সামাজিক পরিবেশ আমরা যা তৈরি করি, তাই।
- আমাদের পরিবেশের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো বা কাজ করার বিষয়ে বিতর্কও উঠে। এক দৃষ্টিকোণ থেকে, নিজেকে পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা এবং অন্যদের “স্বাধীন কার্যকর্তা” হিসেবে দেখা যুক্তিযুক্ত। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, এর বিপরীতটাও যুক্তিযুক্ত হতে পারে; নিজেকে কার্যকর্তা এবং অন্যদের পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা অন্যদের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে দেখি, তবে আমরা তাদের বোঝার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আমরা শুধু বলব না যে তারা অলস বা দুর্নীতিগ্রস্ত। উপসংহারে, আমরা আমাদের পরিবেশ এবং সামাজিক জগতের ফল এবং স্রষ্টা উভয়ই।
===সামাজিক চাপ প্রতিরোধ===
====প্রতিক্রিয়াশীলতা====
প্রতিক্রিয়াশীলতার বহুল সমর্থিত তত্ত্ব বলে, “মানুষ তাদের স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা করতে কাজ করে” (Myers, 229)। পরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষ প্রায়ই তাদের স্বাধীনতা প্রকাশ করতে প্রত্যাশার বিপরীত কাজ করে। স্বাধীনতা সব ব্যক্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রায়ই বিদ্রোহ করে যখন মনে করে তাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নাবালকদের মদ্যপান। জরিপে দেখা গেছে, আইনি মদ্যপানের বয়সের নিচে থাকা মানুষ বেশি মাত্রায় মদ্যপান করে, তুলনায় আইনি বয়সের উপরে থাকা মানুষের তুলনায় (Engs & Hanson, 1989)। আরেকটি উদাহরণ হলো, ধর্ষণের কাজ। ধর্ষণের সময় একজন পুরুষ বা নারী অনুভব করতে পারে যে তাদের স্বাধীনতা সঙ্গীর প্রত্যাখ্যানের দ্বারা সীমিত হচ্ছে।
====অনন্যতা প্রকাশ====
“মানুষ অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা অন্যদের থেকে খুব আলাদা মনে হয়..... তারা একইভাবে অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা সবার মতো মনে হয়” (Myers, 230)। ব্যক্তিরা নিজেদের অনন্য মনে করলে উচ্চ মর্যাদা অনুভব করে। কিন্তু তারা এতটা আলাদা হতে চায় না যে তারা বহিষ্কৃত মনে হয়। এই অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা শিশুদের নাম নির্বাচনে স্পষ্ট। শিশুরাও অনেকভাবে অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ম্যাকগুয়ার এবং তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অন্যদের সম্পর্কে বলতে বলা হলে তারা প্রায়ই নিজেদের সম্পর্কে কিছু অনন্য কথা বলে।
ব্যক্তিরা তাদের পার্থক্য বিশেষ করে লিঙ্গের পার্থক্যের ক্ষেত্রে স্বীকার করে (Cota & Dion, 1986)। উদাহরণস্বরূপ, একটি লিঙ্গের মানুষ বিপরীত লিঙ্গের মাঝে থাকলে তাদের পার্থক্য বেশি লক্ষ্য করে। এটি আমাদের বোঝায় কীভাবে সংখ্যালঘুরা তাদের পার্�thক্য এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়।
“যখন দুটি সংস্কৃতির মানুষ প্রায় একই রকম হয়, তখনও তারা তাদের পার্থক্য লক্ষ্য করে, যত ছোটই হোক” (Myers, 231)। এক পক্ষের অন্য পক্ষের প্রতি বেশি সংশ্লিষ্টতা থাকলে সাধারণত বৈরিতা বেশি হয়।
===সংখ্যালঘু প্রভাব===
সংখ্যালঘুকে কী প্রভাবশালী করে? বইয়ে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা সংখ্যালঘুরা অর্জন করে সংখ্যাগরিষ্ঠের মনোযোগ এবং সম্মান পায়। আমরা দেখি, সংখ্যালঘুর অটল বিশ্বাস এবং মতামতের ধারাবাহিকতা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা গৃহীত হয়। আত্মবিশ্বাস, যা ধারাবাহিকতার ফল, সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে প্রতিষ্ঠিত করে যে সংখ্যালঘু তাদের বিশ্বাস এবং দাবিতে দৃঢ় এবং ক্ষমতাশালী। এবং শেষে, সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথম দুটির ফল হিসেবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর উদ্দেশ্যকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
===নেতৃত্ব কি সংখ্যালঘু প্রভাব?===
- কিছু নেতা তাদের গোষ্ঠী এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে উঠে আসে। অন্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত বা নির্বাচিত হয়। ভালো নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, সাঁতার দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা ব্যক্তি বিতর্ক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা নাও হতে পারে। নেতৃত্বের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো কাজভিত্তিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক নেতৃত্ব। কাজভিত্তিক নেতৃত্বে মান নির্ধারণ, সংগঠন, এবং লক্ষ্য অর্জন অন্তর্ভুক্ত। কাজভিত্তিক নেতারা সাধারণত নির্দেশমূলক শৈলী ব্যবহার করে। এটি ভালো কাজ করে যদি নেতা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং ভালো নির্দেশনা বা নির্দেশিকা দিতে সক্ষম হয়। এছাড়া, কাজভিত্তিক নেতৃত্ব লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। তাই তারা গোষ্ঠীকে সঠিক পথে রাখতে এবং কাজ সম্পন্ন করতে ভালো। বিষয়ের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিস্তারিত এবং সম্ভবত কঠিন লক্ষ্য এবং মাঝে মাঝে অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের অর্জনকে উদ্দীপিত করে। সামাজিক নেতৃত্বে সহানুভূতি বা সমর্থন, দলগত কাজের কাঠামো তৈরি, এবং দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রায়ই স্ব-শাসিত পদ্ধতি। অনেক গবেষক মনে করেন, এই ধরনের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসের জন্যও ভালো। এছাড়া, যখন কর্মীরা অনুভব করে যে তারা তাদের কাজের উপর নিয়ন্ত্রণে আছে, তখন তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয় এবং বেশি অর্জন করে।
- গবেষণায় দেখা গেছে, সেরা নেতারা কাজভিত্তিক এবং সামাজিক নেতৃত্ব উভয় বিভাগের অধীনে পড়ে। তারা কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি কর্মীদের চাহিদা এবং অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বোঝাপড়া। কার্যকর নেতারা আত্মবিশ্বাসী ক্যারিশমা প্রকাশ করে। তারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি ধারাবাহিক থাকে। ক্যারিশম্যাটিক নেতারা সাধারণত তাদের ইচ্ছার একটি বিশ্বাসযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি বা ধারণা থাকে। তারা এই ধারণাগুলো স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করতে পারে। তারা তাদের গোষ্ঠীর প্রতি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী, যা অন্যদের অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে।
- গোষ্ঠীও তাদের নেতাদের প্রভাবিত করে। কখনো কখনো একজন নেতা যদি গোষ্ঠীর মান থেকে খুব বেশি বিচ্যুত হয়, তবে তাকে “বহিষ্কার” করা হতে পারে। বুদ্ধিমান নেতারা প্রায়শই সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে থাকে। তারা যা বলে তা নিয়ে সতর্ক থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা মনে রাখতে হবে:
*"প্রতিক্রিয়াশীলতা - স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা বা পুনরুদ্ধারের একটি উদ্দেশ্য। প্রতিক্রিয়াশীলতা উদ্ভূত হয় যখন কেউ আমাদের ক্রিয়ার স্বাধীনতাকে হুমকি দেয়।"
*"নেতৃত্ব - এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গোষ্ঠীর কিছু সদস্য গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে এবং নির্দেশনা দেয়।"
==মডিউল ২৭: ভালোবাসার উত্থান-পতন==
===উত্তপ্ত ভালোবাসা===
ভালোবাসার নীতিগুলো ভালোভাবে বোঝার জন্য প্রথমে এটিকে পরীক্ষা এবং পরিমাপ করতে হবে। মনোবিজ্ঞানী রবার্ট স্টার্নবার্গ (১৯৯৮) ভালোবাসাকে একটি ত্রিভুজ হিসেবে দেখেন। এর তিনটি দিক হলো উত্তেজনা, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসাকে দুই ব্যক্তির সম্পর্কের উল্লেখে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করা যায়। ভালোবাসা তখনই বেশি স্পষ্ট হয় যখন সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকে, একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং গ্রহণ করা হয়, এবং প্রিয়জনের সঙ্গ উপভোগ করা হয়। উত্তপ্ত ভালোবাসা প্রধানত শারীরিকভাবে প্রকাশ পায় এবং একচেটিয়া সম্পর্ক বজায় রাখে। উত্তপ্ত ভালোবাসা এমন একটি ভালোবাসা যা দুই ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয়, যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি তীব্রভাবে মুগ্ধ। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি আবেগময় ভালোবাসা, যা উত্তেজনাপূর্ণ এবং তীব্র। ইলেইন হ্যাটফিল্ড (১৯৯৮) এটিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন “অন্যের সাথে মিলনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষার অবস্থা” হিসেবে (পৃষ্ঠা ১৯৩)। ভালোবাসার অনেক রূপ রয়েছে। সময় এবং সংস্কৃতি উভয়ই সম্পর্কে গঠিত ভালোবাসাকে প্রভাবিত করে। সময় সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিদের বয়স বা তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। সংস্কৃতি ভালোবাসা এবং সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়, পটভূমি, ধর্ম, এমনকি আর্থিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কের ভালোবাসাকে প্রভাবিত করতে পারে।
===সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা===
সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসাকে সবচেয়ে ভালো সংজ্ঞায়িত করা যায় এমন উত্তপ্ত ভালোবাসা হিসেবে, যা দুই সঙ্গীর মধ্যে একটি উষ্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। দুই সঙ্গীর মধ্যে ভাগ করা সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসায় উত্তপ্ত ভালোবাসার তুলনায় কম উত্থান-পতন থাকে। এটি বেশি স্থিতিশীল। সঙ্গীদের মধ্যে গভীর সম্মান এবং স্নেহময় সংযুক্তি বেশি স্পষ্ট। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি জ্বলন্ত আগুনের মতো, যা গরম এবং দ্রুত জ্বলে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা হলো আগুন চলে যাওয়ার পরে থাকা গরম কয়লা। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই বিবাহে পাওয়া যায়। বিবাহে, প্রায়ই উত্তেজনা সম্পর্ক থেকে চলে যায়। কিন্তু অন্য ব্যক্তির প্রতি গভীর স্নেহ এবং প্রতিশ্রুতি তখনও থাকে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই সঙ্গীদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সম্পর্ক যত দীর্ঘ হয়, তত কম আবেগের রোলারকোস্টার থাকে।
===ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা===
যেকোনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায়পরায়ণতা। সম্পর্কে ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। ইলেইন হ্যাটফিল্ড, উইলিয়াম ওয়ালস্টার এবং এলেন বার্শেইড (১৯৭৮) একটি ন্যায়পরায়ণতার নীতি ঘোষণা করেছেন: আপনি এবং আপনার সঙ্গী সম্পর্ক থেকে যা পান, তা আপনারা প্রত্যেকে যা দেন, তার সমানুপাতিক হওয়া উচিত। অন্য কথায়, সম্পর্ক কাজ করার জন্য প্রত্যেক সঙ্গীকে তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট অনুভূতি এবং ক্রিয়া বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী ন্যায়পরায়ণতা অর্জিত হয় সম্পর্কে “কে কার কাছে ঋণী” তা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে। যখন একজন সঙ্গী অন্যের চাহিদা পূরণ করে, তখন তার বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করা হয় না। ঋণের অনুভূতি থেকে উপেক্ষা করতে পারা সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করে। একটি পরিচিত ব্যক্তি যখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে, তখন তার একটি সূত্র হলো, সে অপ্রত্যাশিতভাবে ভাগ করে নেয় (Miller & others, 1989)। সুখী বিবাহিত মানুষ প্রায়ই হিসাব রাখে না যে তারা কতটা দিচ্ছে এবং পাচ্ছে (Buunk & Van Yperen, 1991)।
===সম্পর্কের সমাপ্তি===
সম্পর্ক সাধারণত তখন শেষ হয় যখন সঙ্গীদের মধ্যে ভাগ করা ভালোবাসা আর তাৎপর্যপূর্ণ থাকে না। দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা এবং তৃপ্তির উপর নির্ভর করে। এছাড়া সম্ভাব্য বিকল্প সঙ্গীদের প্রতি মনোযোগ না দেওয়া, সমাপ্তির খরচের ভয়, এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার অনুভূতিও গুরুত্বপূর্ণ (Adams & Jones, 1997)।
====কে বিবাহবিচ্ছেদ করে?====
বিবাহবিচ্ছেদের হার বর্তমানে উচ্চ। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ মূলত সম্পর্কে অসুখ, সঙ্গীদের মধ্যে ভালোবাসার ক্ষতি এবং বিবাহের মধ্যে ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের ফল। বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি এও নির্ভর করে কে কার সাথে বিবাহ করে (Fergusson & others, 1984; Myers, 2000a; Tzeng, 1992)। মানুষ সাধারণত বিবাহিত থাকে যদি তারা:
* ২০ বছর বয়সের পরে বিবাহ করে।
* উভয়ে স্থিতিশীল, দুই পিতামাতার ঘরে বেড়ে ওঠে।
* বিবাহের আগে দীর্ঘ সময় প্রেম করে।
* ভালো এবং একই রকম শিক্ষিত।
* ভালো চাকরি থেকে স্থিতিশীল আয় উপভোগ করে।
* ছোট শহরে বা খামারে বাস করে।
* বিবাহের আগে একসাথে বসবাস বা গর্ভবতী হয়নি।
* ধর্মীয়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
* একই বয়স, বিশ্বাস এবং শিক্ষার।
এই ফলাফল বিবাহ থেকে বিবাহে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদ বা সম্পর্কে ভালোবাসার ক্ষতি এই পরিস্থিতিগুলোর একটির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। স্পষ্টতই, অন্য ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত বা সম্পর্কিত হওয়ার উপায় ছাড়া, একটি সম্পর্ক বা এমনকি বিবাহ বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
==মডিউল ২৮: দ্বন্দ্বের কারণ==
দ্বন্দ্ব- ক্রিয়া বা লক্ষ্যের একটি উপলব্ধ অসঙ্গতি
===সামাজিক দ্বিধা===
আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য যে পছন্দগুলো আমরা করি, তা সমষ্টিগতভাবে শাস্তিমূলক হতে পারে।
====কয়েদির দ্বিধা====
দুই ব্যক্তিকে জেলা অ্যাটর্নি একটি অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তারা অপরাধে দোষী। কিন্তু জেলা অ্যাটর্নির কাছে তাদের কম অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই তিনি তাদের আলাদা করে একে একে কথা বলেন। তিনি তাদের তিনটি পছন্দ দেন:
• স্বীকার করুন। যদি অন্য ব্যক্তি স্বীকার না করে, তবে আপনাকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তাকে তার এবং আপনার শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হবে।
• যদি উভয়ে স্বীকার করে, তবে আপনারা প্রত্যেকে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করবেন।
• যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে উভয়কে খুব হালকা শাস্তি দেওয়া হবে।
এটি দুই ব্যক্তিকে একটি দ্বিধায় ফেলে। কারণ তারা অনিশ্চিত যে অন্যজন মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে কিনা। যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে তাদের দুজনেরই অনেক কম কঠোর শাস্তি হবে। কিন্তু তারা এই ঝুঁকি বিবেচনা করে যে, যদি তারা স্বীকার না করে, তবে তাদের একা দুজনের শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মানুষ স্বীকার করা বেছে নেয়। এটি করা হয় যাতে তারা অন্যের স্বার্থপরতার সাথে মোকাবিলা না করতে হয়। এইভাবে, সামান্য অবিশ্বাসের মতো একটি বিষয় সহযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলতে পারে।
====সাধারণের ট্র্যাজেডি====
বেশিরভাগ সামাজিক দ্বিধায় একাধিক পক্ষ সমস্যায় অবদান রাখার জন্য দায়ী।
উদাহরণ:
পুনরায় ভর্তি করার মধ্যে, একটি কুকি জারে পর্যাপ্ত কুকি থাকে (যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়) যাতে শিশুরা প্রতিদিন তিনটি করে খেতে পারে। কিন্তু কুকিগুলোর সহযোগিতা এবং নিয়ন্ত্রণ খুবই অসম্ভব। পরিবর্তে, শিশুরা যারা একে অপরের দ্বারা শোষিত হওয়ার ভয় পায়, তারা কুকি মুখে ভরতে শুরু করে। ফলে সরবরাহ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হয়ে যায়। একে অপরের উপর অবিশ্বাস এবং সহযোগিতার অভাব এখন তাদের কুকি ছাড়াই রেখে দেয়। এটি পরবর্তী জার ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত চলে (Gifford & Hine, 1997)। এটি একটি নন-জিরো গেমের উদাহরণ। এমন পরিস্থিতি যেখানে যৌক্তিকভাবে কাজ করলেও নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
===সামাজিক দ্বিধা সমাধান===
====নিয়ন্ত্রণ====
যদি গোষ্ঠীর সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখার নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক হয়, তবে সিস্টেমটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
====ছোটই সুন্দর====
যদি একটি গোষ্ঠী ছোট থাকে, তবে সদস্যরা গোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতা বোধ করে। তারা তাদের অবদান বা ইনপুটকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। যদি গোষ্ঠী খুব বড় হয়, তবে অনেক সদস্য মনে করতে পারে তাদের ভূমিকা গুরুত্বহীন। তারা গোষ্ঠীর সমৃদ্ধিতে সক্রিয় থাকার জন্য সামান্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনুভব করে (Kerr, 1989)।
====যোগাযোগ====
যখন একটি গোষ্ঠী যোগাযোগ করে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বা একটি দ্বিধা সমাধান করে, তখন গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই সবার স্বার্থে কাজ করে। এটি অন্য সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে তারা অবদান রাখে। এটি করা হয় যাতে তারা আলাদা না হয় বা সম্ভবত তিরস্কৃত না হয়।
====প্রতিদান পরিবর্তন====
যদি সহযোগিতার পুরস্কার শোষণের পুরস্কারের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়, তবে বেশি মানুষ সহযোগিতা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যস্ত মহাসড়কে কারপুল লেন। এটি করা হয় যাতে ট্রাফিক এবং দূষণ সমস্যায় অবদান রাখা গাড়ির সংখ্যা কমে।
====পরার্থপর নিয়মের আবেদন====
যদি এটি সাধারণ কল্যাণের জন্য উপকারী হয়, তবে মানুষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ বোধ করতে পারে (সামাজিক দায়িত্ব নিয়ম)। এমনকি এটি তাদের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে বা তাদের অসুবিধায় ফেলতে পারে।
চিত্র সরবরাহ করেছে:[http://images.tomshardware.com/2006/06/20/060619_tec. www.tomshardware.com]
[[Image:060619 teched2006 019.jpg]]
উপরের চিত্রটি আমাদের মহাবিশ্বের সাথে সংযোগের একটি পরার্থপর দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ।
===প্রতিযোগিতা===
প্রতিযোগিতার প্রভাব কতটা তীব্র তা পরীক্ষা করার জন্য একটি পরীক্ষায়, মুজাফার শেরিফ (১৯৬৬) দুটি গ্রুপের ছেলেদের ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পরীক্ষা করেছিলেন যে দুটি গ্রুপের মধ্যে সীমিত সম্পদ ভাগ করা দ্বন্দ্বের দিকে নিয়ে যায় কিনা। অন্য গ্রুপ সম্পর্কে না জেনে, শেরিফ প্রতিটি গ্রুপের ছেলেদের তাদের ক্যাম্পসাইট তৈরি করতে একসাথে কাজ করতে দিয়েছিলেন। তাদের একে অপরের সাথে পরিচিত হতে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পর তিনি দুটি গ্রুপকে একে অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এটি করা হয়েছিল একটি গ্রুপকে বেসবল মাঠে রেখে, যখন অন্য গ্রুপটি একই সময়ে মাঠটি ব্যবহার করার কথা ছিল। তাদের সম্পদ অন্য গ্রুপের কাছে হারানোর এই আকস্মিক ভয় ছেলেদের তাদের নিজ নিজ গ্রুপের মধ্যে সংহতি বাড়াতে প্ররোচিত করেছিল। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের প্রতি পারস্পরিক বৈরিতার মাধ্যমে এটি করেছিল। এমনকি গ্রুপের সাথে সংযুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে কালো তালিকাভুক্তির দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
===উপলব্ধ অন্যায়===
যখন কেউ মনে করে তাদের গোষ্ঠীতে অবদান তাদের প্রাপ্য পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান, তখন তারা তিনটি পথের একটি বেছে নেয়। তারা হয় তাদের অপ্রতুলতার কথা মনে করে উর্ধ্বতনদের কাছে নতি স্বীকার করে। অথবা তারা যা চায় তা পেতে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্ল্যাকমেল ব্যবহার করে। অথবা তারা তাদের উর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করে (Elaine Hatfield, William Walster, Ellen Pzersheid, 1978)। অন্যদিকে, যদি কেউ মনে করে তারা তাদের অবদানের চেয়ে বেশি পাচ্ছে, তবে তারা নিজেদের মনোযোগ আকর্ষণ করার সম্ভাবনা কম। এই ক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের বোঝায় যে তাদের কাজ অতিরিক্ত সুবিধার যোগ্য। এছাড়া, যদি কেউ জানতে পারে তাদের দক্ষতা তাদের পুরস্কারের চেয়ে বেশি, তবে তারা তাদের মূল্য নিয়ে তর্ক করার সম্ভাবনা বেশি। “মানুষ যত বেশি যোগ্য এবং মূল্যবান মনে করে (তাদের অবদান যত বেশি মূল্য দেয়), তত বেশি তারা অপ্রতুল বোধ করে এবং তাই প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী হয়” (Ross & others, 1971)।
উদাহরণ:
সবকিছু বিবেচনা করে, এই দেশে কার জীবন ভালো--পুরুষ না নারী?
১৯৭২ ১৯৯৩
পুরুষ ২৯% ৬০%
নারী ৩৫% ২১%
একই ৩০% ১৫%
কোনো মতামত নেই ৬% ৫%
(উৎস: Roper Center for Public Opinion Research, 1997)
===ভুল ধারণা===
[http://www.iwalt.com/static/images/blogpics/misperceptions.gif সংবাদ উৎস অনুযায়ী ভুল ধারণার বৈচিত্র্যের একটি উদাহরণ]
যেহেতু দ্বন্দ্ব একটি উপলব্ধ অসঙ্গতির ফল, তাই অন্যের ক্রিয়ার ভুল ধারণার মাধ্যমে বেশিরভাগ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এটি স্ব-সেবামূলক পক্ষপাতের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা প্রায়ই আমাদের নিজেদের ক্রিয়াকে ন্যায্য করি এবং আমাদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব নিই। কিন্তু আমরা আমাদের ভুলগুলোকে ন্যায্য করি। একই সময়ে আমরা অন্যদের ক্রিয়া বা উদ্দেশ্যকে আমাদের তুলনায় কঠোরভাবে বিচার করি। এটি আমাদের অন্যদের অকালে নিন্দা করতে নিয়ে যায়। আমরা আমাদের ভুল ধারণায় মৌলিক দায়িত্ব ভ্রান্তি দায়ী করতে পারি। আমরা অন্যদের বাহ্যিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে কম প্রবণ হই, যা তাদের ক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের অন্যের একটি একমাত্রিক উপলব্ধি দেয়, যা খুব ভুল হতে পারে।
===আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণা===
[http://www.funnyhub.com/pictures/pages/mirror-image-perceptions.html বিকৃত আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণার একটি উদাহরণ]
দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর জন্য একে অপরকে একই অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং একই কারণে নিজেদের নৈতিক এবং গুণী মনে করা সাধারণ (Morton Deutsch, 1986)। এটি প্রায়ই যুদ্ধকালীন সময়ে দেখা যায়। আমরা মানুষকে শুধুমাত্র দুটি বিভাগে দেখি; “আমাদের পক্ষে বা আমাদের বিরুদ্ধে”। আধুনিক যুদ্ধে এটি আরও কূটনৈতিকভাবে দেখা যায়। আমরা বলি, আমরা সাধারণ জনগণের সাথে যুদ্ধে নেই, বরং দুষ্ট শাসনের বিরুদ্ধে, যা তার জনগণকে দূষিত করেছে। এটি আমাদের একটি উজ্জ্বল বর্মের নাইটের আবেদন দেয়, যিনি “ভালো মানুষ”কে তাদের “দুষ্ট নেতাদের” থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের হস্তক্ষেপের কারণ এখন বৈধ। কারণ এটি তখন জনগণের জন্য একটি সেবা হিসেবে বিবেচিত হয়।
== মডিউল ৩০ - মানুষ কখন সাহায্য করে? ==
=== মানুষ কেন সাহায্য করে? ===
পরার্থপরতা হলো এমন একটি নিঃস্বার্থ কাজ, যা একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অন্যের প্রতি সত্যিকারের যত্ন নেয় এবং কোনো ধরনের পুরস্কার প্রত্যাশা করে না। কিন্তু সাহায্য করার পেছনে কী প্রেরণা থাকে? একটি তত্ত্ব, যাকে বলা হয় সামাজিক-বিনিময়, এতে একজন ব্যক্তি পরিস্থিতিতে কাজ করার আগে সাহায্যের সুবিধা এবং খরচের একটি সম্পর্ক মূল্যায়ন করে। স্পষ্টতই, সাহায্যকারী কম খরচে সর্বোত্তম সুবিধা অর্জন করতে চায়। যদি কেউ জানে যে একজন ব্যক্তি এই কারণে সাহায্য করেছে, তবে সেই “সাহায্যকারী” তার “ভালো কাজের” জন্য স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কিছু মানুষ অন্যের কল্যাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাদের একমাত্র সুখ হলো এই জ্ঞান থেকে যে তারা সত্যিই কাউকে সাহায্য করেছে। প্রায়ই এই ধরনের ব্যক্তি এমন হয়, যে অন্যের কষ্টে নিজে কষ্ট পায় বা অন্যের আনন্দে নিজে আনন্দিত হয়। সাহায্যকে উদ্দীপিত করার আরেকটি এজেন্ট হলো সামাজিক নিয়ম। এর একটি হলো পারস্পরিকতা নিয়ম। সামাজিক নিয়ম আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা নির্দেশ করে। এই নিয়মটি পরামর্শ দেয় যে আমরা অন্যের জন্য সেবা করি কারণ তারা আগে আমাদের জন্য এটি করেছে। এই নিয়মটি পরার্থপর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ এতে নিজের জন্য কিছু প্রেরণা থাকে। আরেকটি নিয়ম যা আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা পরামর্শ দেয় তা হলো সামাজিক-দায়িত্ব নিয়ম। এই এজেন্টটি পারস্পরিকতা নিয়ম থেকে আলাদা। কারণ আমরা একে অপরের জন্য সেবা বিনিময়ের বিষয়ে সচেতন নই। এই নিয়মটি পরার্থপরতাকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিত্রিত করে। কারণ এটি আমাদের প্রয়োজনে থাকা কাউকে সাহায্য করতে অনুপ্রাণিত করে এবং কখনো কিছু চায় বা প্রত্যাশা করে না। এই তত্ত্বগুলো প্রকৃতির অর্থে উন্নীত করা যায়। অন্যের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ মূলত তাদের বেঁচে থাকার জন্য উদ্বেগ। এই অর্থে চিন্তা করা আকর্ষণীয় যে, যে গোষ্ঠী বেশি পরার্থপর, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ভালো।
=== মানুষ কখন সাহায্য করে? ===
সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা উপস্থিত ব্যক্তির আচরণ বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। একটি পরীক্ষা সিরিজের মাধ্যমে তারা অসাধারণ ফলাফল পেয়েছেন। সাহায্য প্রায়ই এমন মানুষ দ্বারা করা হয় যারা নিজেদের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে চায়। তারা তাদের অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে চায় যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে আরও বিশুদ্ধ ধারণা পায়। কখনো কখনো যারা ইতিবাচক মনের অবস্থায় থাকে, তারা সত্যিকারের ইচ্ছা বোধ করে অন্য কাউকে সাহায্য করার। একটি অত্যন্ত বিশেষ ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ধর্মীয় সম্পৃক্ততার মানুষ প্রায়ই অন্যদের সেবা দেয়। সাহায্যের শর্তগুলো বিষয়গত থেকে বস্তুগত শর্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। বিষয়গত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি অন্য কারো দ্বারা একটি ভালো কাজ পর্যবেক্ষণ, সেই নির্দিষ্ট সময়ে তাড়াহুড়ো না অনুভব করা, বা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যক্তি নিজের এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে কিছু মিল দেখে। বস্তুগত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীর প্রয়োজনের তীব্রতা, আমাদের পরিবেশ বা চারপাশ, এবং সাহায্য করার জন্য অন্যদের অনুপস্থিতি।
=== উপস্থিত ব্যক্তির সংখ্যা ===
যখন আমরা শুনি যে কেউ প্রয়োজনে ছিল কিন্তু একজন উপস্থিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেনি, তখন আমরা মনে করি সেই উপস্থিত ব্যক্তি একজন ভয়ানক মানুষ। আমরা নিশ্চিতভাবে কিছু করতাম কারণ আমরা যত্নশীল মানুষ। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে যে উপস্থিত ব্যক্তি সাহায্য করেনি সে একজন যত্নশীল মানুষ ছিল? অগত্যা নয়। অসংখ্য পরীক্ষা করা হয়েছে যা প্রকাশ করে, অদ্ভুতভাবে, একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে যেখানে কেউ সাহায্যের প্রয়োজন, সেখানে যত কম উপস্থিত ব্যক্তি থাকে, সেবা দেওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। একাধিক উপস্থিত ব্যক্তির পরিস্থিতিতে, কেউ প্রয়োজনে থাকা ভুক্তভোগীকে লক্ষ্য করার, তাদের সমস্যা বোঝার এবং পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম (Latane, Darley 1970:364-369)। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি গুরুতর পরিস্থিতির প্রতি উদাসীনতাকে তথ্যগত প্রভাব বলা হয়। একজন ব্যক্তি দেখে অন্য কেউ সাহায্য করার জন্য কাজ করছে না। তখন তারা নিজেও মনে করে সবকিছু ঠিক আছে এবং সাহায্য করে না। অন্যদিকে, যদি কেউ প্রয়োজনে থাকা কাউকে লক্ষ্য করে এবং দেখে কেউ তাড়াহুড়ো করে তাদের সেবা দিতে ছুটে যায়, তবে গুরুতর পরিস্থিতির জন্য জরুরিতার অনুভূতি বেশি হবে। যেভাবেই হোক, আমরা সবসময় এই দ্বিধায় পড়ি যে একটি পরিস্থিতি আমাদের মনোযোগের যোগ্য কিনা। কখনো আমরা নিজেদের উপেক্ষা করে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই। অন্য সময় আমরা এমন পরিস্থিতিতে কোনো পদক্ষেপ নিই না যা আমাদের কাছে অস্পষ্ট মনে হয়। এটিকে উপস্থিত ব্যক্তি প্রভাব বলা হয়। কিন্তু একটি গুরুতর পরিস্থিতির গুরুত্ব না বোঝা সবসময় পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ নয়। কিছু ঘটনায় পরিস্থিতি স্পষ্ট হয় এবং তবুও আমরা কাজ করি না। আমরা একজন ব্যক্তির সাথে কিছু ঘটতে দেখতে পারি এবং কাজ না করতে পারি। কারণ আমরা অন্যদেরও লক্ষ্য করি যারা দেখছে। আমাদের মনোযোগ ভুক্তভোগী থেকে অন্য উপস্থিত ব্যক্তিদের দিকে চলে যায়। তাদের শুধু তাকিয়ে থাকতে দেখে আমরাও কাজ করতে ব্যর্থ হই। এটি আকর্ষণীয় যে অন্য মানুষের উপস্থিতি আমাদের ব্যক্তিগত আবেগ এবং মানসিকতাকে একটি বস্তুগত পরিস্থিতিতে প্রভাবিত করে। পরীক্ষায় যেখানে অংশগ্রহণকারীদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল যেখানে তাদের নিজেদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, অন্য মানুষের সাথে ফোকাস গ্রুপ যারা একই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিল, তারা তুলনায় বেশি ব্যর্থ হয়েছিল। যে ফোকাস গ্রুপে মানুষ মনে করেছিল তারাই একমাত্র গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন, তারা বেশি কাজ করেছে (Latane, Darley 1968:217-221)। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, একই সচেতনতার সাথে অন্যদের উপস্থিতি তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে কিনা। সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছিল যে এটি করেনি। মূলত, একজন ব্যক্তি সবসময় জানে না কেন তারা যা করে তা করে, এই পরীক্ষা এটি নিশ্চিত করেছে। কিছু পরীক্ষার গভীরতা কিছু মানুষকে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে যে এই পরীক্ষাগুলোর নৈতিকতা কী। কিন্তু এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পরীক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণকারীদের রক্ষা করা এবং এই প্রক্রিয়ায় মানুষের কল্যাণ বাড়ানো। এই পরীক্ষার ফলে মানুষ তথ্যবহুল হয়। যারা পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করে তারা এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেশি (Beaman, Barnes, Klentz, McQuirk 1978:407-410)।
*দয়া করে নোট করুন, এই পৃষ্ঠার সমস্ত বিষয়বস্তু ডেভিড মায়ার্সের ''Exploring Social Psychology''-এর মডিউল ৩০-এর একটি প্যারাফ্রেজড সারাংশ। ডেটা যাচাইয়ের জন্য দয়া করে বইটি নিজেই উল্লেখ করুন।
==মডিউল ৩১: স্থায়িত্বের সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===স্থায়ী জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানব জীবনের জন্য একটি ভবিষ্যৎ টিকিয়ে রাখতে, আমাদের প্রযুক্তির সীমানা প্রসারিত করতে হবে। অটোমোবাইলগুলো আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়েছে এবং অনেক কম দূষণ উৎপন্ন করে। নথিগুলো এখন ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ, অনুলিপি, বিতরণ এবং উৎপাদিত হয়। কপিয়ার মেশিন ভুলে যান, ডান ক্লিক করুন, কপি করুন, এবং তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আলোর বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন এবং ওষুধ পর্যন্ত, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করছে। কে জানত ২১শ শতাব্দী এতটা এগিয়ে যাবে?
====ব্যবহার হ্রাস====
ভবিষ্যৎ জীবন টিকিয়ে রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ব্যবহার হ্রাস। মানুষের পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী বসবাস করার জন্য, আমাদের কম ব্যবহার এবং কম দূষণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জন্মহার ক্রমাগত কমছে। এটি বিশ্বে শিক্ষিত এবং কর্মরত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। তবুও, বিশ্ব এখনও তার পূর্ণ ক্ষমতায় রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ব্যবহার হ্রাস করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অনেকে হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে বা এখনও গঠনমূলক ফলাফল দেখেনি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, কারপুল করে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে, এবং তাদের বাড়ির জন্য পরিবেশবান্ধব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের পুরস্কৃত করার মতো ধারণা একটি দুর্দান্ত শুরু হবে। অন্যদিকে, যারা সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার করে তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। যারা আলাদাভাবে গাড়ি চালায়, তাদের জরিমানা, টিকিট, কর, বা চার্জ করতে হবে। যারা তাদের বাড়ির আলো ২৪ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখে, ছুটিতে এসইউভিতে তিনশো মাইল গাড়ি চালায়, এবং প্রতিটি আবর্জনা পুনর্ব্যবহার না করে ফেলে দেয়। রবার্ট ফ্রাঙ্ক (১৯৯৯), একজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানে পারদর্শী অর্থনীতিবিদ, পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করতে পারে এবং আরও স্থায়ী ব্যবহার প্রচার করতে পারে।
===বস্তুবাদ এবং সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====বর্ধিত বস্তুবাদ====
বর্ধিত বস্তুবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে স্পষ্ট। একটি জরিপে এটি স্পষ্টভাবে প্রতিনিধিত্ব করে, Gallup Poll (১৯৯০), ২ জনের মধ্যে ১ জন নারী, ৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, এবং বছরে ৭৫,০০০ ডলারের বেশি উপার্জনকারী ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ধনী হতে চায়। আরও বেশি সংখ্যক ব্যক্তি তাদের জীবনে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের চেষ্টা করার পরিবর্তে ধনী হতে চান।
====সম্পদ এবং কল্যাণ====
টাকা দিয়ে কি সুখ কেনা যায়? অথবা আপনার কল্যাণ? দুঃখের বিষয়, না, তা যায় না। সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে খুব কম সম্পর্ক রয়েছে, যদি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি যতই ধনী হোক না কেন, তার কল্যাণ খুব বেশি (প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য) পরিবর্তন হবে না। দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে কম আয় মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলে, তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি কল্যাণের পূর্বাভাস দেয় (Argyle, 1999)। একজন ব্যক্তি যখন ধনী হয়, তখন সুখের একটি বৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু এটি কেবল স্বল্প সময়ের জন্য থাকে। তারপর সেই ব্যক্তি আর সুখী থাকে না। তখন তার কল্যাণে সন্তুষ্ট থাকার জন্য আরও বেশি টাকা এবং সম্পদের প্রয়োজন হয়। ডেভিড লিকেন (1999, পৃষ্ঠা 17) বলেন, “যারা ওভারঅল পরে বাসে করে কাজে যায়, তারা গড়ে ততটাই সুখী, যতটা সুখী তারা যারা স্যুট পরে নিজেদের মার্সিডিজে করে কাজে যায়।” এমনকি অতি-ধনী ব্যক্তিরা – ফোর্বসের 100 ধনী আমেরিকান – গড়ের তুলনায় কেবল সামান্য বেশি সুখের কথা জানায় (Diener, Horwitz, and Emmons, 1985)।
====কেন বস্তুবাদ তৃপ্তি দেয় না====
বস্তুবাদ তাদের তৃপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, যারা জীবনে যতটা সম্ভব অর্জন করতে চায়। যারা ক্ষমতা, টাকা এবং সম্পদের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক কম কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। যারা ব্যক্তিগত বিকাশ, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক বেশি কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। বস্তুবাদী হওয়া এবং বস্তুগত জিনিস থেকে ব্যক্তিগত কল্যাণ অর্জন করা কেবল কম কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়। অনেক কিছু যা একসময় বিলাসিতা ছিল, তা এখন প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছে। একজন ব্যক্তি এই প্রয়োজনীয়তার মাধ্যমে তাদের কল্যাণ পরিমাপ করে। শেষ পর্যন্ত, সবাই সেই বিলাসিতা পেয়ে যায়। তখন ব্যক্তি মনে করে তাদের আরেকটি বিলাসিতা দরকার, যা অন্য কারো নেই। এটি তাদের নিজস্ব কল্যাণ বাড়াতে। এই চক্র চলতেই থাকে। বস্তুবাদী ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত কল্যাণের উচ্চতর অনুভূতি পেতে ক্রমাগত আরও বেশি প্রয়োজন অনুভব করে।
===স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার দিকে===
আমাদের সমাজকে বস্তুবাদী প্রকৃতি থেকে মুক্ত করতে, মানুষকে স্থায়িত্বের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে। ব্যবহার কমানোর জন্য কর্মসূচি এবং আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নতি চালিয়ে যেতে হবে। দক্ষতার উপর মনোযোগ দিতে হবে। এটা বোঝা দরকার যে সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচার করতে হবে। মানুষকে একত্রিত হতে হবে। তাদের বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে। নিজেদের উপর কেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে আরও উন্নত করতে পারে। এটি বিশ্বের স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য অবদান রাখতে পারে। যত তাড়াতাড়ি মানুষ এটা মেনে নেয় যে বস্তুবাদ ভালো কল্যাণের দিকে নিয়ে যায় না, তত তাড়াতাড়ি বিশ্ব একটি উন্নত জায়গা হয়ে উঠবে।
==তথ্যসূত্র ==
*Abramson, L. Y., Seligman, M. E. P., & Teasdale, J. D. (1978). Learned helplessness in humans: Critique and reformulation. Journal of Abnormal Psychology, 87, 32-48.
*Adams, J.M., & Jones, W.H. (1997). The conceptualization of martial commitment: An integrative analysis. Journal of Personality and Social Psychology, 72, 1177-1196.
*Allison,S. T.,Jordan,M.R.,& Yeatts,C.E.(1992). A cluster-analytic approach toward identifying the structure and content of human decision making. ''Human Relations'',45,49-72.
*Anderson, C.A., Miller, R.S., Riger, A.L.,Dill, J.C., and Sedikides, C. (1994). Behavioral and characterological attributional styles as predictors of depression and lonleliness: Review, refinement, and test. Journal of Personality and Social Psychology, 66, 549-558.
*Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
*Asendorpf, J.B. (1987). Videotape reconstruction of emotions and cognitions related to shyness. Journal of personality and social psychology, 53, 541-549
*Bayer, E. (1929). Beitrage zur zeikomponenten theorie des hungers. Zeitschrift fur Psycholgie, 112, 1-54.
*Beaman, A.L., Barnes, P.J., Klentz, B., & McQuirk, B. (1978). Increasing helping rates through information dissemination: Teaching pays. Personality and Social Psychology Bulletin, 4, 406-411.
*Bureau of the Census. (1999). Statistical abstract of the United States 1996 (Table 65). Washington, D.C.: Superintendent of Documents.
*Buunk, B.P., & van der Eijnden, R.J.J.M. (1997). Perceived prevalence, perceived superiority, and relationship satisfaction: Most relationships are good, but ours is the best. ''Personality and Social Psychology Bulletin'', 23, 219-228.
*Carey,B.,''New York Times''."A Senior Moment' or A Self-Fulfilling Prophecy?"(July,18,2006).
*Chen, S.C. (1937). Social modification of the activity of ants in nest-building. Physiologial Zoology, 10, 420-436.
*Cooper,H.(1983). Teacher expectation effects. In L. Bickman(Ed.), ''Applied social psychology annual,vol 4''.Beverly Hills,CA:Sage.
*Cota, A.A., & Dion, K.L. (1986). Salience of gender and sex composition of ad hoc groups: An experimental test of distinctiveness theory. Journal of Personality and Social Psychology, 50, 770-776.
*Crocker,J. (1981). Judgment of covariation by social perceivers. ''Psychological Bulletin,'' 90, 272-292.
*Dawes,R.M. (1976). Shallow psychology. In J.S. Carroll & J.W. Payne (Eds.), ''Cognition and social behavior''. Hillsdale, NJ: Erlbaum.
*Deci, E. L., & Rayan, R. M. (1987). The support of autonomy and the control of behavior. Journal of Personality and Social Psychology, 53, 1024-1037.
*Deutsch, M. (1993). Educating for a peaceful world. American Psychologist, 48, 510-517.
*Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
*Engs, R., & Hanson,D.J. (1989) Reactance theory: A test with collegiate drinking. Psychological Reports, 64, 1083-1086
*Feldman, R.S., & Theiss, A.J. (1982). The teacher and student as Pygmalions: Joint effects of teacher and student expectations. ''Journal of Education Psychology'',74,217-223.
*Fergusson, D.M., Horwood, L.J., & Shannon, F.T. (1984). A proportional hazards model of family breakdown. Journal of Marriage and the Family, 46, 539-549.
*Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
*Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
*Galton, F.(1886), "Regression Towards Mediocrity in Hereditary Stature," Journal of the Anthropological Institute,15, 246-263.
*Gifford, R., & Hine, D.W. (1997). Crowding: More fearsome than crime-provoking? Comparison of an Asian city and a North American cinty. Psychologia, 22, 79-83
*Gillis, J. S., & Avis, W.E. (1980). The male-taller norm in mate selection. Personality and Social Psychology Bulletin, 6, 396-401.
*Gilovich, T., & Douglas, C.(1986). Biased evaluations of randomly determined gambling outcomes. ''Journal of Experimental''
*Griffitt, W. (1987). Females, males, and sexual responses. In K. Kelley (Ed.), Females, males and sexuality: Theories and research. Albany: State University of New York Press.
*Hamilton, D. L. and R. K. Gifford (1976). Journal of Experimental Psychology 12, 392-407.
*Harris, J.R. (1998). The nurture assumption. New York: Free Press.
*Hatfield (Walster), E., Walster, G.W., & Berscheid, E. (1978). Equity: Theory and research. Boston: Allyn & Bacon.
*Hatfield, E. (1988). Passionate and compassionate love. In R.J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Hunt, M, (1993). The story of psychology. New York: Doubleday.
*Jussim,L. (1986). Self-fulfilling prophecies: A theoretical and integrative review. Psychological Review,93.
*Kahneman,D., Slovic,P.,&Tversky,A,(editors), Judgement Under Uncertainty,Heuristics, and Biases.(Cambridge University Press,1982), Part IV.
*Kerr, N.L. (1989). Illusions of efficacy: The effects of group size on perceived efficacy in social dilemmas. Journal of Experimental Social Psychology, 25, 287-313.
*Larsson, K. (1956). Conditioning and sexual behavior in the male albino rat. Stockholm: Almqvist & Wiksell.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1970). The Unresponsive Bystander: Why Doesn't He Help? New York: Appleton-Century-Crofts.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1968). Group inhibition of bystander intervention in emergencies. Journal of Personality and Social Psychology, 10, 215-221.
*Lewinsohn,P.M.,Hoberman,H.,Teri,L.,& Hautziner,M. (1985) An integrative theroy of depression. In S. Reiss & R. Bootzin (Eds), Theoretical issues in behavior therapy. New York: Acadimic Press
*Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
*McIntosh, J.L. & Kelly, L.D. (1992). Survivors reactions: suicide vs. other causes. Crises, 82-93
*Meehl, P.E. (1954). ''Clinical vs. statistical prediction: A theoretical analysis and a review of evidence''. Minneapolis: University of Minnesota Press.
*Miller, L.C., Berg, J.H., & Rugs, D. (1989). Selectivity and sharing: Needs and norms in developing friendships. Unpublished manuscript, Scripps College.
*Mirels, H.L., & McPeek, R.W. (1977) Self Advocacy and Self Esteem. Journal of Consulting and Clinical Psychology, 45, 1132-1138.
*Myers, D. G., (2004). Exploring Social Psychology: Third Edition. New York: McGraw-Hill.
*Niemi, R. G., Mueller, J., & Smith, T. W. (1989). Trends in public opinion: A compendium of survey data. New York: Greenwood Press.
*Orive, R. (1984). Group similarity, public self-awareness, and opinion extremity: A social projection explanation of deindividuation effects. Journal of Personality and Social Psychology, 47, 727-737
*Peterson, C., & Steen, T.A. (2002). Optimistic explanatory style. In C.R. Snyder & S.J. Lopez (Eds), Handbook of positive psychology. London: Oxford University Press
*Pratto, F. (1996). Sexual politics: The gender gap in the bedroom, the cupboard, and the cabinet. In D. M. Buss & N. M. Malamuth (Eds.), Sex, power, conflict: Evolutionary and feminist perspectives. New York: Oxford University Press.
*Sherif, M. (1966). In common predicament: Social psychology of intergroup conflict and cooperation. Boston: Houghton Mifflin.
*Sigal, J., Gibbs, M. S., Goodrich, C., Rashid, T., Anjum, A., Hsu, D., et al. (2005). Cross-cultural reactions to academic sexual harassment: effects of individualist vs. collectivist culture and gender of participants. Sex Roles: A Journal of Research.
*Snyder, M., & Swann, W. B. (1978). Hypothesis-testing processes in social interaction. Journal of Personality and Social Psychology, 36, 1202-1212
*Stangor, C., Lynch, L., Duan, C., & Glass, B.(1992). Categorization of individuals on the basis of multiple social features. Journal of Personality and Socail Psychology, 62, 207-218.
*Sternberg, R. J. (1988). Triangulating love. In R. J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Sternberg, R. J. (1998). Cupid’s arrow: The course of love through time. New York: Cambridge University Press.
*Thorn, J., Gershman, M., Palmer, P., and Pietrusza, D. (eds.) 1999), Total Baseball, Sixth Edition, New York: Total Sports.
*Triplett, N. (1898). The dynamogenic factors in peacemaking and competition. American Journal of Psychology, 9, 507-533.
*Vallone,R. P., Ross, L & Lepper,M.R.(1985). The hostile media phenomenon: Biased perception and perceptions of media bias in coverage of the "''Beirut Massacre''." and ''Social Psychology Journal''," 49, 577-585.
*Williams, J.E., & Best, D.L. (1990a). Measuring sex stereotypes: A multination study. Newbury Park, CA: Sage.
*Zajonc, R.B. (1965). Social facilitation. ''Science,''149, 269-274.
==সম্পর্কিত তালিকা==
* [[Wikipedia:List of social psychologists|List of social psychologists]]
* [[Wikipedia:List of publications in psychology#Social psychology|Important publications in social psychology]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.socialpsychology.org/ Social Psychology Network ]
* [http://www.spsp.org/ Society for Personality and Social Psychology]
* [http://www.sesp.org/ Society of Experimental Social Psychology]
* [http://www.apa.org/journals/psp.html Journal of Personality and Social Psychology]
* [http://www.uiowa.edu/~grpproc/crisp/crisp.html Current Research in Social Psychology]
* [http://www.trinity.edu/~mkearl/socpsy.html Social Psychology - brief introduction]
* [http://www.ship.edu/~cgboeree/socpsy.html Social Psychology basics]
* [http://groups.yahoo.com/group/social_psychology/ Social Psychology forum]
* [http://www.birchmore.org/html/scapegoating.html Scapegoating Processes in Groups]
* [http://www.portalpsicologia.org/busqueda.jsp?idDisciplina=6 Portalpsicologia.org]
* [http://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
* [http://de.wikipedia.org/wiki/Thomas-Theorem Thomas-Theorem - in German]
* [http://en.wikipedia.org/wiki/William_I._Thomas W.I.Thomas]
{{BookCat}}
imk45194uozf13kg9enwra9rlokmbly
85750
85748
2025-07-06T20:27:18Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
/* মডিউল ৮: অযৌক্তিকতার কারণ */
85750
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|সমাজবিজ্ঞান পরিচিতির ভবিষ্যৎ অধ্যায়গুলোর বিষয়বস্তু অনুযায়ী, এই মডিউলটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।}}
'''সামাজিক মনোবিজ্ঞান''' হলো মানুষ কীভাবে একে অপরের সম্পর্কে চিন্তা করে, প্রভাবিত করে এবং সম্পর্ক স্থাপন করে, তার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।
==মডিউল ৫: ইতিবাচক চিন্তার শক্তি==
===নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র===
নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র বলতে বোঝায়, মানুষ কতটা বিশ্বাস করে যে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও কাজের মাধ্যমে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়, অথবা ভাগ্য বা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হয় (মায়ার্স, ৫৬)। কিছু মানুষ মনে করে, তাদের জীবনে যা ঘটে তা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অন্যরা মনে করে, তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও দক্ষতা তাদের জীবনের ঘটনাগুলো নির্ধারণ করে (হান্ট,১৯৯৩, পৃষ্ঠা.৩৩৪)। নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র দুই ধরনের: অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্বাস করে, তারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে। বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা মনে করে, কোনো বাহ্যিক শক্তি তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে।
===শিখিত অসহায়তা বনাম স্ব-নির্ধারণ===
যারা মনে করে তারা নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারা জীবনে অনেক উপকৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণকে উৎসাহিত করে, তা স্বাস্থ্য ও সুখ বাড়ায় (Deci & Ryan, 1987)। বিপরীতভাবে, যারা মনে করে তারা নিয়ন্ত্রণে নেই, তারা সাধারণত বিষণ্ণ হয় এবং তাদের কাজকে অর্থহীন মনে করে। এটিকে বলা হয় শিখিত অসহায়তা। এটি হলো এমন হতাশা ও পদত্যাগ, যা মানুষ বা প্রাণী শিখে যখন তারা বারবার খারাপ ঘটনার উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ অনুভব করে না (Myers, 56)।
===আত্ম-কার্যকারিতার উপর প্রতিফলন===
ইতিবাচক চিন্তার শক্তি
“যদি তুমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করো, তবে ইতিবাচক ফল পাবে” (Myers, 53)। এটি শুধু নিজেকে বোঝানো বা প্রশংসা করার মাধ্যমে ঘটে না। এটি সাধারণত সাফল্য অর্জনের পর ঘটে। ইতিবাচক চিন্তা মানুষকে অনেক কিছু অর্জনে সাহায্য করে। এটি বুঝতে পারলে কিছু পরিস্থিতি এড়ানো যায়। এটি অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
আত্ম-সম্মানের অন্ধকার দিক
বিষণ্নতা ও মাদকাসক্তির মতো ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো নিম্ন আত্ম-সম্মানের ফল। অন্যকে অপমান করা বা সহিংসতা সাধারণত তখন ঘটে, যখন কেউ মনে করে তাদের আত্ম-সম্মান বিপন্ন। অনেকে মনে করে, গুন্ডা বা গ্যাং লিডারদের আত্ম-সম্মান কম। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের আত্ম-সম্মান বেশ উঁচু। উচ্চ আত্ম-সম্মানের অনেক সুবিধা আছে। এটি শিক্ষার্থীদের গ্রেড, চেহারা এবং সামাজিক মর্যাদায় প্রতিফলিত হয়। বিপরীতভাবে, নিম্ন আত্ম-সম্মানের মানুষ বেশি চাপের জীবনযাপন করে। তারা বিষণ্নতা ও মানসিক চাপে ভোগে।
==মডিউল ৮: অযৌক্তিকতার কারণ==
===আমাদের পূর্বধারণা আমাদের ব্যাখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে===
আমাদের পূর্বধারণা আমাদের মন কীভাবে তথ্য গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করে তা নির্দেশ করে। মানুষ বুঝতে পারে না যে পূর্বধারণার প্রভাব কতটা বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্বাসের সমর্থনে প্রমাণ গ্রহণ করে। কিন্তু তারা যে প্রমাণ তাদের বিশ্বাসের বিরোধী, তা সমালোচনা করে। পূর্বধারণা ম্যানিপুলেটও করা যায়। ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের একজন ব্যক্তির মুখের ভাব মূল্যায়ন করতে বলা হয়। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, তারা তার মুখের ভাবকে নিষ্ঠুর বলে মনে করেন। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি নাৎসি-বিরোধী এবং অনেক ইহুদির জীবন বাঁচিয়েছেন, তারা তাকে উষ্ণ ও দয়ালু মনে করেন। এই পরীক্ষা প্রমাণ করে, আমাদের পূর্বধারণা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দৈনন্দিন জীবনেও প্রযোজ্য। কাউকে লাজুক মনে করা থেকে শুরু করে কেউ আমাদের মতো অনুভব করে কিনা তা ভাবা পর্যন্ত, পূর্বধারণা আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করে। যদি আমরা কোনো ধারণাকে বারবার মনে করি, তবে পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার জন্য খুব কম জায়গা থাকে।
===আমরা তথ্যের চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই===
মানুষ প্রায়ই ধরে নেয়, কোনো কিছু সাধারণ কারণ তা সহজে মনে পড়ে। এ কারণে শক্তিশালী গল্প তথ্যের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে (এলিসন & অন্যরা,১৯৯২)। এটিকে বলা হয় প্রাপ্যতা হিউরিস্টিক। এটি মানুষকে পরিস্থিতির বাস্তবতা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ৯/১১-এর হামলা অনেকের মনে স্পষ্ট। তাই অনেকে মনে করে, তারা বাণিজ্যিক ভ্রমণের সময় একই ধরনের ঝুঁকিতে আছে। এটি বাস্তবে তাদের ঝুঁকির চেয়ে বেশি। মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কাহনেমান এই বিশ্বাস সমর্থন করেন। তিনি গবেষণা করেন যে আমাদের মন কীভাবে তথ্য কল্পনা করে এবং পুনরুদ্ধার করে তার উপর ভিত্তি করে ঘটনার সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। যখন আমরা অসম্ভব ঘটনা কল্পনা করি, তখন আমাদের মনের ছবি আমাদের এটির সম্ভাবনা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে ( কেহেনম্যান)।
[http://www.fallacyfiles.org/volvofal.html]
===আমরা সম্পর্ক ও নিয়ন্ত্রণ ভুলভাবে উপলব্ধি করি===
এলোমেলো ঘটনায় শৃঙ্খলার সন্ধান আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। এটি আমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে।
===ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক===
যখন আমরা উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক আশা করি, তখন আমরা প্রায়ই এলোমেলো ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য এলোমেলো ঘটনাগুলোকে ভুলভাবে উপলব্ধি করে (ক্রুকার, ১৯৮১)। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে বা কোনো পূর্বাভাস কোনো ঘটনার সাথে সম্পর্কিত, তবে আমরা তাদের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। কিন্তু আমরা যে ঘটনাগুলো ঘটে এবং সম্পর্কিত নয়, তা উপেক্ষা করি। মন যখন ভ্রান্তিমূলক উপলব্ধি ও সম্পর্ক তৈরি করে, তখন এটি আমাদের ধারণা দেয় যে এলোমেলো ঘটনাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের অধীন। এটিকে বলা হয় নিয়ন্ত্রণের ভ্রম। ১৯৭৭ সালে এলেন ল্যাঙ্গারের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিজেরা লটারির নম্বর বেছে নিয়েছিল, তারা তাদের টিকিটের মূল্য চারগুণ বেশি দাবি করেছিল। কারণ তারা নিজেরাই নম্বর বেছে নিয়েছিল। জুয়াড়িরা তাদের জয়কে তাদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কৃতিত্ব দেয় (গিলোভিচ & ডগলাস,১৯৮৬)।
===গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন===
নিয়ন্ত্রণের ভ্রম আরেকটি পরিসংখ্যানগত ঘটনার জন্য দায়ী, যাকে বলা হয় গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন। টভারস্কি ও কাহনেমান উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার স্কোর কখনো কখনো ভাগ্যের কারণে ওঠানামা করে। টিউটররা শিক্ষার্থীর উন্নতির কারণ নাও হতে পারে। যারা প্রথমে ভালো স্কোর করে, তারা সাধারণত গড়ের দিকে ফিরে আসে। যারা প্রথমে খারাপ করে, তারা প্রায়ই টিউটরিং ছাড়াই উন্নতি করে। এটি দেখায় যে আমরা গড়ের দিকে ফিরে যাই। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। বেসবল খেলোয়াড়দের ব্যাটিং গড় বা রান গড়ের মতো ক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রায়ই তাদের দক্ষতাকে অতিরঞ্জিত করে। কিন্তু এরপর তারা গড়ের দিকে ফিরে যায় (গাল্টন)।
[http://www.economics.pomona.edu/GarySmith/BBregress/baseball.html]
===আমাদের বিশ্বাস নিজেদের নিশ্চিতকরণ তৈরি করে===
রবার্ট রোজেনথালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ কখনো কখনো তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জীবনযাপন করে। যখন অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল যে তাদের একটি ছবির উচ্চ রেটিং দেওয়া উচিত, তারা তা করেছিল। যাদের বলা হয়েছিল ছবিটি ব্যর্থ, তারা কম রেটিং দিয়েছিল। এটি স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শন করে। শিক্ষকদের কি একই প্রত্যাশা থাকে? শিক্ষকদের প্রত্যাশা কি শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে? শিক্ষকরা কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চ মান ধরে রাখেন এবং যারা ভালো করে তাদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন (জাস্সিম & অন্যরা,১৯৯৬)। নিম্ন প্রত্যাশা সবসময় গড় শিশুকে নিরুৎসাহিত নাও করতে পারে। কিন্তু শিক্ষকের উচ্চ প্রত্যাশা কোনো শিশুর সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শিত হয়েছে। ৪৮ থেকে ৬২ বছর বয়সী পুরুষ ও নারীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। একটি গ্রুপ ৭০ বা তার বেশি বয়সীদের বিরুদ্ধে স্মৃতি পরীক্ষায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ ২০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে পরীক্ষা দেয়। তৃতীয় গ্রুপ কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা তরুণদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা গড়ে ১৪টি শব্দ মনে করেছিল। যারা কোনো প্রতিযোগিতায় ছিল না, তাদের ফলাফল একই ছিল। যারা বয়স্কদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা সবচেয়ে কম শব্দ মনে করেছিল। সম্ভবত, বয়স্ক গ্রুপের সাথে থাকার মানসিক ধারণা তাদের অজান্তেই ভাবিয়েছিল যে বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়। এই স্টিরিওটাইপ তাদের পরীক্ষার ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল (ক্যারি)। উচ্চ মান ধরে রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। যে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনা দেখেন, তারা তাদের প্রতি বেশি হাসেন, মাথা নাড়েন, প্রশ্ন করেন এবং উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি সময় দেন (কুপার, ১৯৮৩)।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষক সম্পর্কে প্রত্যাশা ক্লাসের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যে শিক্ষার্থী শিক্ষক সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে ক্লাসে যায়, সে ক্লাসকে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে। যার প্রত্যাশা কম, তার কাছে ক্লাস কম আকর্ষণীয় মনে হয় (ফেল্ডম্যান & থেইসস, ১৯৮২)।
===আমরা কি অন্যদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করি তা পাই?===
অনেক সময় আমরা অন্যদের দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি করি, এমনকি তাদের না জেনেই। এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত বা ধারণা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে কিছু বলে। আমরা একটি ধারণা তৈরি করি এবং সিদ্ধান্ত নিই যে তারা কেমন মানুষ। আমরা মানুষের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, তারা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমরা যে আচরণ চাই, তা আমাদের ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যদি কেউ দয়ালু, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সুস্থির হয়, তবে তারা অন্যদের কাছে তা প্রতিফলিত করে। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করি, অন্যরা তা ফিরিয়ে দেবে। সাফল্যের জন্য প্রত্যাশা স্থাপন মানুষকে তা পূরণ করতে উৎসাহিত করে। একজন কর্মী উচ্চ প্রত্যাশা পেলে বেশি অর্জন করতে পারে। কাউকে অভদ্র মনে করলে আমরা তাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করি। এটি তাদের প্রতিক্রিয়াকে আমাদের প্রত্যাশার দিকে নিয়ে যায়।
===উপসংহার===
আমরা আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী জিনিসগুলোকে সত্য মনে করি। আমরা অন্যদের আমাদের চিন্তার সাথে সামঞ্জস্য করতে প্ররোচিত করতে পারি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক বা ভুল হতে পারে। আমাদের মন বিচারপ্রবণ। আমাদের বিচার বা সিদ্ধান্তের ফলাফল যাই হোক, আমাদের মন যেভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তা আশ্চর্যজনক। এটি প্রায়ই ভুল ধারণা ও কঠোর বিচারের দিকে নিয়ে যায়। প্ররোচনা এত সহজ হতে পারে যে এটি মনের একটি সাধারণ চিত্র বা সংবাদ শুনে ঘটতে পারে।
==মডিউল ১০: ক্লিনিকাল স্বজ্ঞা==
'''ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক, পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪'''
প্রায়ই আমরা দুটি অনন্য এবং সম্পর্কহীন ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক ধরে ফলাফলের পূর্বাভাস দিই। এই ঘটনাগুলো সঠিক বা অনুপযুক্ত সময়ে একত্রিত হয়। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্কের ঘটনা বোঝার জন্য আমি আমার নিজের পরিবেশের দিকে তাকিয়েছি। গত সপ্তাহে এক রোদেলা সকালে আমি রাস্তা পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা পাচ্ছিলাম। আমি বুঝলাম, আমি অনেকদিন গাড়ি ধোয়নি। তাই আমি ভাবলাম, কেন একটি এক্সপ্রেস ওয়াশে গাড়িটি ধুয়ে না? আমি তাই করলাম এবং রাস্তায় ফিরে গেলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্দেশে, সেই বিকেলে একটি ঠান্ডা ফ্রন্ট এলো এবং প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো। গাড়ি ধোয়ার পর কেন সবসময় বৃষ্টি হয়? আমার স্ত্রী, যিনি শিশু প্রসবের কাজ করেন, পূর্ণিমার সময় ডিউটি নিতে ভয় পান। কারণ তিনি মনে করেন, এই সময়ে বেশিরভাগ নারী প্রসব বেদনায় যান। এটি তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাজ করতে এবং সপ্তাহান্তে ঘুমের অভাবে কষ্ট পেতে হয়। যদি আমি পরীক্ষা করতাম যে গাড়ি ধোয়ার পর কতবার বৃষ্টি হয়েছে, তবে দেখতাম, বেশিরভাগ সময় দিনটি সুন্দর ছিল। আমার স্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু আমি মনে করতে পারি, পূর্ণিমার সময় অনেকবার তিনি কোনো ফোন কল পাননি। লরেন চ্যাপম্যান ও জিন চ্যাপম্যান (১৯৬৯, ১৯৭১) গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক বৈধ মনো-নির্ণয়ের চিহ্ন ব্যবহারে বাধা। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণা ডি. এল. হ্যামিল্টন ও আর. কে. গিফোর্ড (১৯৭৬)-এর কাজের উপর ভিত্তি করে। এটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আরও সঠিক বিচার পাওয়া যায়। ক্লিনিশিয়ানরা মানুষ হিসেবে পর্যবেক্ষিত আচরণের ফ্রিকোয়েন্সির উপর ভিত্তি করে বিচার করতে পারেন। কিছু আচরণ একই রকম হলেও তা এক নয়। এই পর্যবেক্ষণগুলোকে সম্পর্কিত বলে ভুল বোঝা প্রায়ই ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়।
===পশ্চাৎদৃষ্টি, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫===
শৈশবে কতবার আপনি এমন কিছু করার জন্য শাস্তি পেয়েছেন, যা আপনার করা উচিত ছিল না? তখন আপনার ছোট ভাই বা বোন বলেছে, “আমি তো বলেছিলাম!” এটি খুব কষ্টদায়ক ছিল, কারণ তারা ঠিক ছিল। পশ্চাৎদৃষ্টি, বা “আমার আগেই জানা উচিত ছিল” ঘটনা, আমরা প্রতিদিন অনুভব করি। এটি আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি ঘটে। গগিন ও রেঞ্জ (১৯৮৫) আত্মহত্যার শিকারের পরিবার, বন্ধু ও পরিচিতদের দৃষ্টিকোণ থেকে পশ্চাৎদৃষ্টি পরীক্ষা করেছেন। সাধারণ প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে, মানুষ আত্মহত্যার শিকারের পরিবারকে কিছুটা দায়ী মনে করে। ম্যাকইনটোশ ও কেলি (১৯৯২) রিপোর্ট করেছেন, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক মৃত্যুর বেঁচে থাকাদের শোকের প্রতিক্রিয়ায় বেশি মিল রয়েছে। তারা দোষ বা সামাজিক সমর্থনের কোনো পার্থক্য পায়নি। কিন্তু আত্মহত্যার বেঁচে থাকারা তিনটি বিষয়ে আলাদা। তারা বেশি মানুষকে দোষ দেয়, কলঙ্কিত বোধ করে এবং মনে করে তারা কিছু করে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারত। আমি একজন পরিবারের বন্ধুর আত্মহত্যার অভিজ্ঞতা পেয়েছি। আমি দোষের অনুভূতি মনে করি। কিন্তু কোনো স্পষ্ট লক্ষণ বা সতর্কতা ছিল না যে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ক্লিনিকাল বিচারের ক্ষেত্রে, পশ্চাৎদৃষ্টি ক্লিনিশিয়ানদের ভুলের দিকে নিয়ে যায়। নির্ণয়কে অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা প্রকৃত সমস্যাকে ভুল বোঝার দিকে নিয়ে যায়।
===স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়, পৃষ্ঠা ১০৫-১০৭===
হারিয়ে যাওয়া চাবি বা মোজার জোড়া খুঁজতে গিয়ে বেশ হতাশা হয়। ক্লিনিকাল পরিবেশে, ক্লিনিশিয়ানদের কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করা উচিত তা জানা উচিত নয়। সৎ বিচারের জন্য এটি প্রয়োজন। পূর্বানুমানমূলক প্রশ্ন সাক্ষাত্কারকারীকে তার পছন্দের নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আচরণের ধরণ স্পষ্ট করে না। স্নাইডার ও স্বান (১৯৭৮) একটি পরীক্ষায় প্রমাণ করেছেন, একবার তথ্য পাওয়ার পর এবং তা অবৈধ বলা হলেও, মানুষের মনে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা কঠিন। এটি বিচারে ভুল এবং ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আমাকে একজন সচেতন আইনজীবীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আদালতে ঘোষণা করেন যে তার মক্কেল সব অভিযোগে দোষী। বিচারক জুরির দিকে তাকিয়ে বলেন, “সর্বশেষ মন্তব্যটি উপেক্ষা করুন।” এটি প্রায় অসম্ভব।
===ক্লিনিকাল বনাম পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী, পৃষ্ঠা ১০৭-১০৮===
অনেক ক্লিনিশিয়ান ও সাক্ষাত্কারকারী পশ্চাৎদৃষ্টি ও স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়ের ভুল করেন। এটি তাদের নিজেদের ভবিষ্যদ্বাণীর উপর বেশি আত্মবিশ্বাসী করে। এটি পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণীর তুলনায় কম নির্ভরযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, হাইস্কুলের জিপিএ ব্যবহার করে কলেজে শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্স ভবিষ্যদ্বাণী করা। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী মানুষের স্বজ্ঞার চেয়ে বেশি সঠিক। পল মীল (১৯৮৬) লিখেছেন, ফুটবল খেলার ফলাফল থেকে লিভার রোগের নির্ণয় পর্যন্ত ৯০টি তদন্তে পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী বেশি সঠিক। ক্লিনিশিয়ানদের পক্ষে মাত্র কয়েকটি গবেষণা দুর্বল প্রমাণ দেয়। এই গবেষণা সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা স্বজ্ঞা ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ডেভিস (১৯৭৬) বলেন, সাক্ষাত্কারকারীরা তাদের স্বজ্ঞার উপর নির্ভর করে। এটি কলেজে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান জিপিএ-এর মতো পরিসংখ্যানগত তথ্যের চেয়ে কম সঠিক। তিনি বলেন, “আপনি এবং আমি, একটি ফোল্ডার দেখে বা আধা ঘণ্টা সাক্ষাত্কার নিয়ে, ২০-৪০ জন অধ্যাপকের ৩.৫ বছরের ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের চেয়ে ভালো ধারণা তৈরি করতে পারি না।”
===প্রভাব, পৃষ্ঠা ১০৮-১০৯===
ক্লিনিশিয়ানরা ভুল করেন এবং পক্ষপাতিত্ব দেখান। উদাহরণস্বরূপ, যখন তারা কোনো সম্পর্ক দেখতে চান, তারা তা প্রমাণ করার জন্য প্রমাণ খোঁজেন। তারা মনে করেন তাদের স্বজ্ঞাগত ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবের চেয়ে বেশি সঠিক। ভুল ভবিষ্যদ্বাণী এড়াতে কিছু উপায় আছে। পশ্চাৎদৃষ্টি এড়াতে হবে, কারণ এটি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যা আপনার পছন্দের উত্তরের দিকে নিয়ে যায়। আপনার মূল চিন্তাকে ভিন্ন ধারণার সাথে পরীক্ষা করুন। এই পক্ষপাত ও ভুলগুলো দেখায়, মনোবিজ্ঞান জ্ঞানের সমুদ্র থেকে মাত্র এক ফোঁটা তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই জ্ঞানের অভাব পূরণ করতে কিছু মনোবিজ্ঞানী তত্ত্ব তৈরি করেন। এটি আমাদের অজ্ঞতাকে আরও বাড়ায়। বিজ্ঞান সত্য খোঁজার একটি উপায়। এটি সবসময় মানুষের স্বজ্ঞার সাথে যুক্ত থাকবে।
==মডিউল ১১: ক্লিনিকাল থেরাপি: সামাজিক জ্ঞানের শক্তি==
===সামাজিক জ্ঞান এবং বিষণ্নতা, পৃষ্ঠা ১১১-১১৬===
বিষণ্নতার ক্ষেত্রে মানুষ বোঝে না যে তারা কী কী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়। চিকিৎসকদের জন্য বিষণ্নতার নির্ণয় কঠিন হতে পারে, কারণ এটি জটিল। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বিষণ্নতা হঠাৎ দেখা দেয়। এর কোনো শুরু বিন্দু নাও থাকতে পারে। কিন্তু এটি বোঝার উপায় আছে।
ব্যাখ্যামূলক শৈলী এমন একটি উপায়। (Peterson and Steen, 2002; Sweeney and others, 1986)। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে বিষণ্নতা কীভাবে কাজ করে। বিষণ্ণ মানুষ সাধারণত জিনিসের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক দুটোই দেখে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা শুধু ইতিবাচক দিক দেখে। বিষণ্ণ ব্যক্তির জীবনে কিছু নেতিবাচক ঘটলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে দায়ী করে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা ব্যর্থতার জন্য অন্য কিছুকে দায়ী করে। বিষণ্নতার ক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন সবসময় মনে আসে: বিষণ্ণ মেজাজ কি নেতিবাচক চিন্তার কারণ? নাকি নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্ণ মেজাজের কারণ? সাধারণত আমরা ধরে নিই, নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্নতার কারণ। এটি সত্য। কিন্তু এটি দুটোই হতে পারে। আমাদের মেজাজ আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। ভালো মেজাজে আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের খারাপ ঘটনাগুলো মনে করি। তখন আমরা সেগুলো উপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এখন হঠাৎ সেগুলো নিয়ে বিষণ্ণ হই। নেতিবাচক চিন্তাও বিষণ্ণ মেজাজের কারণ হতে পারে। ধরুন, আপনি নতুন চাকরি শুরু করলেন। প্রথম যে ব্যক্তির সাথে দেখা হলো, তিনি দুঃখী ও বিষণ্ণ। পরের ব্যক্তিও একই রকম। তৃতীয় ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়ার আগে আপনি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারেন। এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবায়, বিষণ্নতা কীভাবে ঘোরে? এটি কীভাবে শুরু হয়? এটি কোথায় শেষ হয়? এটি কি শেষ হয়? বিষণ্নতার চক্র আমাদের এই প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের মেজাজ, ভালো বা খারাপ, আমাদের চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত করে। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের ঘটনাকে ভিন্নভাবে মনে করি। এটি মানুষের আমাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণকেও প্রভাবিত করে। আমরা যদি দুঃখী ও হতাশ দেখাই, তবে মানুষ আমাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করে। নিচে বিষণ্নতার চক্র এবং এটি কীভাবে বিকশিত হয় তা দেখানো হয়েছে। (Peter Lewinsohn)(1985)[http://www.alanpriest.f2s.com/images/Cycle_of_Depression.JPG] এই সব কারণে চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করেন। তারা ব্যক্তির চিন্তাভাবনার দিকে বেশি মনোযোগ দেন, তাদের আচরণের চেয়ে। তারা কীভাবে নিজের জীবন ও অন্যদের জীবন দেখে তাও বিবেচনা করে। এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে পারেন।
===সামাজিক জ্ঞান এবং একাকীত্ব, পৃষ্ঠা ১১৬-১১৮===
একাকীত্ব এমন একটি অনুভূতি, যা বেশিরভাগ মানুষ জীবনে অন্তত একবার অনুভব করে। এটি প্রায়ই অজান্তেই ঘটে। একাকী বোধ করা এবং শারীরিকভাবে একা থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে। একাকীত্ব প্রায়ই বিষণ্নতার সাথে যুক্ত। কিন্তু সবসময় নয়। এই দুটির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উচ্চ। এটি একটি নেতিবাচক সম্পর্ক, যা ০.৫-এর বেশি (Anderson et al. 1994: 549-557)।
একাকীত্বও বিষণ্নতার মতো একটি চক্র। যারা একাকী বোধ করে, তারা লাজুকভাবে মানুষের কাছে যায়। একাকীত্ব তাদের অপ্রতুল বোধ করায়। তারা মনে করে, তাদের একাকীত্বের জন্য তারাই দায়ী। “একটি সম্পর্ক অধ্যয়ন স্ব-দোষারোপের ধারণাকে আরও সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি দেখিয়েছে, আচরণগত এবং চরিত্রগত স্ব-দোষারোপ বিষণ্নতা এবং একাকীত্বে অনন্যভাবে অবদান রাখে” (549)। এই স্ব-দোষারোপের কারণে মানুষ একাকীত্বের চক্রে পড়ে। এটি থেকে বের হওয়া কঠিন। মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস তাদের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্দিষ্ট ফলাফল দেয়, যা তাদের পূর্বের চিন্তাকে শক্তিশালী করে (Anderson et al.)।
===সামাজিক জ্ঞান এবং উদ্বেগ, পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯===
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বিভিন্ন কারণে ঘটে। এর বেশিরভাগই ভয় থেকে উৎপন্ন। সামাজিক মূল্যায়নের ভয়, স্ব-প্রকাশের ভয়, এবং অন্যদের মূল্যায়ন করার ভয়। লাজুকতা এবং উদ্বেগের মধ্যে উচ্চ সম্পর্ক রয়েছে। এটি ০.৭৫ (Asendorpf 1987: 542-549)। লাজুক মানুষ অলাজুক মানুষের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়।
===চিকিৎসার জন্য সামাজিক-মনোবৈজ্ঞানিক পন্থা, পৃষ্ঠা ১২০-১২২===
মনোবিজ্ঞানী চিকিৎসকরা রোগীর চিন্তাভাবনা ও মনোভাব পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। তারা প্রথমে রোগীর আচরণ সামঞ্জস্য করে। এই পদ্ধতিগুলো সহায়ক পরিবেশে, যেমন সাপোর্ট গ্রুপ বা স্ব-সহায়ক গ্রুপে, প্রয়োগ করা হয়। আচরণ থেরাপিস্টরা একটি কৌশল ব্যবহার করেন। এতে একজন ব্যক্তি সহায়ক দর্শকদের সামনে নতুন মৌখিক বা শারীরিক আচরণ প্রদর্শন করে। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। যুক্তিবাদী-আবেগীয় থেরাপি অনুসারে, আমরা নিজেরাই আমাদের আবেগ তৈরি করি। স্ব-সহায়ক গ্রুপ এটি ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের নতুন আচরণ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ নিজের সম্পর্কে যা বলে তা তাদের আবেগকে প্রভাবিত করতে পারে (Mirels 1977: 1132-1133)। আত্ম-মূল্য, সুখ এবং একত্রতার মতো ইতিবাচক আবেগ ইতিবাচক অভিজ্ঞতার চক্রের মাধ্যমে বজায় রাখা যায়। বিপরীতভাবে, দুঃখ, রাগ এবং হতাশার মতো নেতিবাচক আবেগ নেতিবাচক ঘটনার চক্রে বজায় থাকে। নেতিবাচক চক্র থেকে মানুষকে বের করতে পরিবেশ পরিবর্তন করতে হয়। ভালো আচরণকে উৎসাহিত করতে হয়। তাদের জ্ঞানগতভাবে ইতিবাচক হতে হয়। নেতিবাচক আবেগ কল্পনার ফসল নয়। এটি সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রকাশ পায়। সাপোর্ট গ্রুপে নতুন আচরণ পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা যায়। তখন ব্যক্তি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও কার্যকরভাবে সাড়া দিতে পারে। ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলতে পারে। ফলে তারা ভালো সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকে এবং ইতিবাচকভাবে আচরণ করে। ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপি একটি প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে। এতে ব্যক্তি তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে, যা তাদের আবেগ পরিবর্তন করে। তারা তাদের ক্রিয়া ও ফলাফলকে সংজ্ঞায়িত করতে শেখে। এটি তাদের পরিস্থিতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম করে। এমনকি ফলাফল নেতিবাচক হলেও, তারা জানে তারা কী ভুল করেছে বা বাহ্যিক কারণ কী ছিল। এটি তাদের নেতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক অনুভব করতে দেয়। ভালো সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ প্রায়ই নিজেদের সামাজিকভাবে অপ্রতুল মনে করেন। এটি তাদের পরিবেশ বা সামাজিক পরিস্থিতির নেতিবাচক উপাদানের কারণে হয়। এই ধরনের ব্যক্তিকে তাদের নেতিবাচক বিশ্বাস উল্টে দিতে সাহায্য করা যায়। এটি ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপির লক্ষ্য। এই থেরাপি ব্যক্তিকে এমন সর্ব-ইতিবাচক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করে না, যাকে সবাই সব পরিস্থিতিতে প্রশংসা করে। প্রতিটি চক্রে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পর্যায় থাকে। ইতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং নেতিবাচক ঘটনায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। এই অর্থে, নেতিবাচক স্ব-ধারণা পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর, স্বাভাবিক এবং অস্থায়ী।
==মডিউল ১৩: লিঙ্গ, জিন এবং সংস্কৃতি==
===লিঙ্গ পার্থক্য===
লিঙ্গ পার্থক্য কি প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা নির্ধারিত? নাকি এটি পৃথক সংস্কৃতির দ্বারা নির্দেশিত? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের সংস্কৃতি পুরুষ ও নারীর উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা পরীক্ষা করতে হবে। শৈশবে সাংস্কৃতিক প্রভাবের পার্থক্য দেখা যায়। ছেলেরা তাদের যত্নকারীর সাথে বিচ্ছেদ খোঁজে। মেয়েরা তাদের সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় দেয়। এই লিঙ্গ পার্থক্য প্রাপ্তবয়স্কতায়ও থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রুপ পরিস্থিতিতে পুরুষরা কাজের উপর মনোযোগ দেয়। নারীরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর বেশি মনোযোগ দেয় (Gabriel & Gardner, 1999)।
সহানুভূতি প্রকাশ বা অন্যের অনুভূতি নিজের মতো অনুভব করার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ পার্থক্য রয়েছে। কেউ দুঃখে থাকলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি আবেগ প্রকাশ করে, যেমন কান্না। এই পার্থক্য সম্ভবত নারীদের অ-মৌখিক ইঙ্গিতের প্রতি উচ্চতর সংবেদনশীলতার কারণে। এটি তাদের আবেগীয় বার্তা সহজে বোঝতে সাহায্য করে।
===সামাজিক প্রভাব===
জন উইলিয়ামস ও ডেবোরা বেস্টের মতে, পুরুষরা বেশি প্রভাবশালী এবং আক্রমণাত্মক (John Williams and Deborah Best, 1990 a.p.15)। এমন কোনো সমাজের প্রমাণ নেই যেখানে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী (Pratto, 1996)। সময়ের সাথে লিঙ্গ পার্থক্য কমছে। নারীরা বেশি ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন।
====আগ্রাসন====
মনোবিজ্ঞানীরা আগ্রাসনকে এমন আচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন, যার উদ্দেশ্য অন্যকে ক্ষতি করা (Myers, 2004)। জরিপে দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আগ্রাসনের কথা স্বীকার করে।
====যৌনতা====
বিষয়গত এবং শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ “ভিন্নতার চেয়ে বেশি মিল” (Griffitt, 1987)। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪৮% পুরুষ এবং ১২% নারী বিভিন্ন সঙ্গীর সাথে নৈমিত্তিক যৌনতায় আরাম ও আনন্দ অনুভব করতে পারে। তারা কতবার যৌনতা নিয়ে ভাবে? ধারণা করা হয়, ১৯% নারী এবং ৫৪% পুরুষ প্রতিদিন বা দিনে কয়েকবার যৌনতা নিয়ে ভাবে (Laumann & others, 1994)।
===বিবর্তন এবং লিঙ্গ: স্বাভাবিকভাবে যা আসে তা করা?===
====লিঙ্গ এবং সঙ্গী নির্বাচনের পছন্দ====
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীদের একটি তত্ত্ব বলে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক এবং প্রভাবশালী। কারণ তারা নারীদের ডিমের তুলনায় অনেক বেশি শুক্রাণু উৎপাদন করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন পুরুষদের আচরণ বেশি আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী। পুরুষরা তাদের জিন ছড়িয়ে দিতে এবং যতটা সম্ভব নারীকে গর্ভবতী করতে চায়। বিপরীতভাবে, নারীরা এমন একজন পুরুষ খোঁজে, যিনি তাকে এবং তার সন্তানকে সমর্থন ও যত্ন নিতে পারে। বিবর্তন পুরুষদের আচরণের কারণ বলে মনে করা হয়। শারীরিকভাবে প্রভাবশালী পুরুষরা বেশি নারীকে আকর্ষণ করে। এটি মনে হয় তারা ভালো সমর্থন ও যত্ন দিতে পারে। এটি অন্য পুরুষদের আরও আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী হতে বাধ্য করে। নারীরা সঙ্গী হিসেবে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত বা সফল পুরুষদের খোঁজে। নারীরা মডেলের মতো সৌন্দর্য পেতে অনাহার পর্যন্ত সহ্য করে। এটি পুরুষরা চায়। নারীরা ধনী বা প্রভাবশালী পুরুষদের পছন্দ করে, কারণ তারা তাদের সন্তানদের জন্য বেশি সরবরাহ করতে পারে।
====লিঙ্গ এবং হরমোন====
অনেকে বিশ্বাস করে, যৌন হরমোন, প্রধানত টেস্টোস্টেরন, লিঙ্গ পার্থক্যের মূল উপাদান। টেস্টোস্টেরন পুরুষালি বৈশিষ্ট্য এবং আগ্রাসনকে প্রভাবিত করে। সহিংস পুরুষ অপরাধীদের সাধারণত উচ্চ টেস্টোস্টেরন মাত্রা থাকে। এটাও লক্ষ্য করা যায়, বেশিরভাগ পুরুষ বয়স বাড়ার সাথে সাথে কম আক্রমণাত্মক হয়। তখন তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কমে যায়।
===বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপর প্রতিফলন===
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান ব্যবহার করে তত্ত্ব ব্যাখ্যা করার সময় দুটি সমস্যা দেখা দেয়: পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত এবং সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ। পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত হলো ইতিহাস পরীক্ষা করে এবং পিছিয়ে গিয়ে আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা বলি নারীরা শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক, তবে পশ্চাৎদৃষ্টিতে বলতে পারি, এটি তাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন ছিল (Myers, 2004)। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ বিবর্তনীয় ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষা করে। এটি আন্তঃসাংস্কৃতিক এবং প্রাণী আচরণ পর্যবেক্ষণ, হরমোন এবং জিনগত অধ্যয়ন ব্যবহার করে (Myers, 2004)। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীরা একমত যে বিবর্তন আমাদের মিল এবং পার্থক্যের কিছু ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু তারা মনে করেন না যে বিবর্তন একমাত্র সাংস্কৃতিক আচরণের পার্থক্য ভবিষ্যদ্বাণী করে (Myers, 2004)।
===সংস্কৃতি এবং লিঙ্গ===
সংস্কৃতি হলো ধারণা, আচরণ, মনোভাব এবং ঐতিহ্য, যা একটি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়। একটি সংস্কৃতির মধ্যে নির্দিষ্ট আচরণগত প্রত্যাশা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, লিঙ্গ ভূমিকা। এটি এমন আচরণ, যা সংস্কৃতি নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে (Myers, 2004)।
===লিঙ্গ ভূমিকা সংস্কৃতি এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়===
গত শতাব্দীর শেষার্ধে লিঙ্গ ভূমিকা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩৮ সালে মাত্র ২০% আমেরিকান একমত ছিলেন যে বিবাহিত নারী শিল্প ও ব্যবসায় অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে ৮০% আমেরিকান এটি সমর্থন করেছেন। এটি প্রমাণ করে, সময় আমেরিকান সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে (Niemi & others, 1989; NORC, 1996)। এই মphysics://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
এই মনোভাব পরিবর্তনের সাথে আচরণগত পরিবর্তনও এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬০ সাল থেকে ৪০ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার দ্বিগুণ হয়েছে (Bureau of the Census, 1999)। এটি স্পষ্ট যে শুধু বিবর্তন এবং জীববিজ্ঞানই লিঙ্গ ভূমিকা পরিবর্তন করে না। সংস্কৃতিও লিঙ্গ ভূমিকাকে প্রভাবিত করে (Myers, 2004)।
===উপসংহার: জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি===
জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি উভয়ই আমাদের মনোভাব ও আচরণকে প্রভাবিত করে। জিন আমাদের নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতি এই আচরণগুলোকে আরও জোরালো করে। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। জীববিজ্ঞানের প্রভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে (Myers, 2004)। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ (পরিবেশ) নির্দিষ্ট জিনগত বৈশিষ্ট্যের মানুষের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক নিয়ম হলো, পুরুষদের তাদের নারী সঙ্গীর চেয়ে লম্বা হওয়া উচিত। একটি গবেষণা অনুসারে, ৭২০ জন দম্পতির মধ্যে মাত্র ১ জন এই সাংস্কৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল (Gillis & Avis, 1980)। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির এই পারস্পরিক সম্পর্ককে মনোবৈজ্ঞানিকভাবে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। পশ্চাৎদৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বলতে পারি, পুরুষ যখন নারীর চেয়ে লম্বা হয়, তখন নারীদের উপর সামাজিক ক্ষমতা বজায় থাকে। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করলে, যদি সঙ্গীরা সমান উচ্চতার সঙ্গী পছন্দ করত, তাহলে লম্বা পুরুষ এবং ছোট নারীদের সঙ্গী থাকত না। অতএব, দম্পতিদের উচ্চতার সাংস্কৃতিক নিয়ম জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হতে পারে। কারণ এটা স্পষ্ট যে বিবর্তন লম্বা পুরুষদের সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কৃতি দম্পতিদের জন্য একই নিয়ম নির্ধারণ করেছে (Myers, 2004)।
==মডিউল ২১: ব্যক্তির ক্ষমতা==
===ব্যক্তি এবং পরিস্থিতির পারস্পরিক সম্পর্ক===
- পারস্পরিক সম্পর্ক তিনটি উপায়ে ঘটে। প্রথমত, যেকোনো সামাজিক পরিস্থিতি প্রত্যেককে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। আমরা সবাই ভিন্নভাবে দেখি এবং চিন্তা করি। তাই আমরা পরিস্থিতি যেভাবে উপলব্ধি করি, তার ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেখাই। কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল। দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সাধারণত ঘটে কারণ মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি বেছে নেয় এবং তার জন্য দায়ী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, শান্ত মানুষ শান্ত বা অসামাজিক পরিবেশ বেছে নিতে পারে। আরেকটি উদাহরণ হলো, মানুষ যখন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্বাচন করে; রক্ষণশীল মানুষ সম্ভবত উদারপন্থী কলেজে ভর্তি হবে না। তৃতীয়ত, প্রায়শই মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা কাউকে অসৌজন্যমূলক মনে করি বা প্রত্যাশা করি, তবে আমরা তাকে যেভাবে আচরণ করি, তা তাকে অসৌজন্যমূলক বা দূরবর্তী আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। আমাদের সামাজিক পরিবেশ আমরা যা তৈরি করি, তাই।
- আমাদের পরিবেশের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো বা কাজ করার বিষয়ে বিতর্কও উঠে। এক দৃষ্টিকোণ থেকে, নিজেকে পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা এবং অন্যদের “স্বাধীন কার্যকর্তা” হিসেবে দেখা যুক্তিযুক্ত। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, এর বিপরীতটাও যুক্তিযুক্ত হতে পারে; নিজেকে কার্যকর্তা এবং অন্যদের পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা অন্যদের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে দেখি, তবে আমরা তাদের বোঝার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আমরা শুধু বলব না যে তারা অলস বা দুর্নীতিগ্রস্ত। উপসংহারে, আমরা আমাদের পরিবেশ এবং সামাজিক জগতের ফল এবং স্রষ্টা উভয়ই।
===সামাজিক চাপ প্রতিরোধ===
====প্রতিক্রিয়াশীলতা====
প্রতিক্রিয়াশীলতার বহুল সমর্থিত তত্ত্ব বলে, “মানুষ তাদের স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা করতে কাজ করে” (Myers, 229)। পরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষ প্রায়ই তাদের স্বাধীনতা প্রকাশ করতে প্রত্যাশার বিপরীত কাজ করে। স্বাধীনতা সব ব্যক্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রায়ই বিদ্রোহ করে যখন মনে করে তাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নাবালকদের মদ্যপান। জরিপে দেখা গেছে, আইনি মদ্যপানের বয়সের নিচে থাকা মানুষ বেশি মাত্রায় মদ্যপান করে, তুলনায় আইনি বয়সের উপরে থাকা মানুষের তুলনায় (Engs & Hanson, 1989)। আরেকটি উদাহরণ হলো, ধর্ষণের কাজ। ধর্ষণের সময় একজন পুরুষ বা নারী অনুভব করতে পারে যে তাদের স্বাধীনতা সঙ্গীর প্রত্যাখ্যানের দ্বারা সীমিত হচ্ছে।
====অনন্যতা প্রকাশ====
“মানুষ অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা অন্যদের থেকে খুব আলাদা মনে হয়..... তারা একইভাবে অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা সবার মতো মনে হয়” (Myers, 230)। ব্যক্তিরা নিজেদের অনন্য মনে করলে উচ্চ মর্যাদা অনুভব করে। কিন্তু তারা এতটা আলাদা হতে চায় না যে তারা বহিষ্কৃত মনে হয়। এই অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা শিশুদের নাম নির্বাচনে স্পষ্ট। শিশুরাও অনেকভাবে অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ম্যাকগুয়ার এবং তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অন্যদের সম্পর্কে বলতে বলা হলে তারা প্রায়ই নিজেদের সম্পর্কে কিছু অনন্য কথা বলে।
ব্যক্তিরা তাদের পার্থক্য বিশেষ করে লিঙ্গের পার্থক্যের ক্ষেত্রে স্বীকার করে (Cota & Dion, 1986)। উদাহরণস্বরূপ, একটি লিঙ্গের মানুষ বিপরীত লিঙ্গের মাঝে থাকলে তাদের পার্থক্য বেশি লক্ষ্য করে। এটি আমাদের বোঝায় কীভাবে সংখ্যালঘুরা তাদের পার্�thক্য এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়।
“যখন দুটি সংস্কৃতির মানুষ প্রায় একই রকম হয়, তখনও তারা তাদের পার্থক্য লক্ষ্য করে, যত ছোটই হোক” (Myers, 231)। এক পক্ষের অন্য পক্ষের প্রতি বেশি সংশ্লিষ্টতা থাকলে সাধারণত বৈরিতা বেশি হয়।
===সংখ্যালঘু প্রভাব===
সংখ্যালঘুকে কী প্রভাবশালী করে? বইয়ে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা সংখ্যালঘুরা অর্জন করে সংখ্যাগরিষ্ঠের মনোযোগ এবং সম্মান পায়। আমরা দেখি, সংখ্যালঘুর অটল বিশ্বাস এবং মতামতের ধারাবাহিকতা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা গৃহীত হয়। আত্মবিশ্বাস, যা ধারাবাহিকতার ফল, সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে প্রতিষ্ঠিত করে যে সংখ্যালঘু তাদের বিশ্বাস এবং দাবিতে দৃঢ় এবং ক্ষমতাশালী। এবং শেষে, সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথম দুটির ফল হিসেবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর উদ্দেশ্যকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
===নেতৃত্ব কি সংখ্যালঘু প্রভাব?===
- কিছু নেতা তাদের গোষ্ঠী এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে উঠে আসে। অন্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত বা নির্বাচিত হয়। ভালো নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, সাঁতার দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা ব্যক্তি বিতর্ক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা নাও হতে পারে। নেতৃত্বের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো কাজভিত্তিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক নেতৃত্ব। কাজভিত্তিক নেতৃত্বে মান নির্ধারণ, সংগঠন, এবং লক্ষ্য অর্জন অন্তর্ভুক্ত। কাজভিত্তিক নেতারা সাধারণত নির্দেশমূলক শৈলী ব্যবহার করে। এটি ভালো কাজ করে যদি নেতা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং ভালো নির্দেশনা বা নির্দেশিকা দিতে সক্ষম হয়। এছাড়া, কাজভিত্তিক নেতৃত্ব লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। তাই তারা গোষ্ঠীকে সঠিক পথে রাখতে এবং কাজ সম্পন্ন করতে ভালো। বিষয়ের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিস্তারিত এবং সম্ভবত কঠিন লক্ষ্য এবং মাঝে মাঝে অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের অর্জনকে উদ্দীপিত করে। সামাজিক নেতৃত্বে সহানুভূতি বা সমর্থন, দলগত কাজের কাঠামো তৈরি, এবং দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রায়ই স্ব-শাসিত পদ্ধতি। অনেক গবেষক মনে করেন, এই ধরনের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসের জন্যও ভালো। এছাড়া, যখন কর্মীরা অনুভব করে যে তারা তাদের কাজের উপর নিয়ন্ত্রণে আছে, তখন তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয় এবং বেশি অর্জন করে।
- গবেষণায় দেখা গেছে, সেরা নেতারা কাজভিত্তিক এবং সামাজিক নেতৃত্ব উভয় বিভাগের অধীনে পড়ে। তারা কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি কর্মীদের চাহিদা এবং অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বোঝাপড়া। কার্যকর নেতারা আত্মবিশ্বাসী ক্যারিশমা প্রকাশ করে। তারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি ধারাবাহিক থাকে। ক্যারিশম্যাটিক নেতারা সাধারণত তাদের ইচ্ছার একটি বিশ্বাসযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি বা ধারণা থাকে। তারা এই ধারণাগুলো স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করতে পারে। তারা তাদের গোষ্ঠীর প্রতি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী, যা অন্যদের অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে।
- গোষ্ঠীও তাদের নেতাদের প্রভাবিত করে। কখনো কখনো একজন নেতা যদি গোষ্ঠীর মান থেকে খুব বেশি বিচ্যুত হয়, তবে তাকে “বহিষ্কার” করা হতে পারে। বুদ্ধিমান নেতারা প্রায়শই সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে থাকে। তারা যা বলে তা নিয়ে সতর্ক থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা মনে রাখতে হবে:
*"প্রতিক্রিয়াশীলতা - স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা বা পুনরুদ্ধারের একটি উদ্দেশ্য। প্রতিক্রিয়াশীলতা উদ্ভূত হয় যখন কেউ আমাদের ক্রিয়ার স্বাধীনতাকে হুমকি দেয়।"
*"নেতৃত্ব - এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গোষ্ঠীর কিছু সদস্য গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে এবং নির্দেশনা দেয়।"
==মডিউল ২৭: ভালোবাসার উত্থান-পতন==
===উত্তপ্ত ভালোবাসা===
ভালোবাসার নীতিগুলো ভালোভাবে বোঝার জন্য প্রথমে এটিকে পরীক্ষা এবং পরিমাপ করতে হবে। মনোবিজ্ঞানী রবার্ট স্টার্নবার্গ (১৯৯৮) ভালোবাসাকে একটি ত্রিভুজ হিসেবে দেখেন। এর তিনটি দিক হলো উত্তেজনা, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসাকে দুই ব্যক্তির সম্পর্কের উল্লেখে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করা যায়। ভালোবাসা তখনই বেশি স্পষ্ট হয় যখন সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকে, একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং গ্রহণ করা হয়, এবং প্রিয়জনের সঙ্গ উপভোগ করা হয়। উত্তপ্ত ভালোবাসা প্রধানত শারীরিকভাবে প্রকাশ পায় এবং একচেটিয়া সম্পর্ক বজায় রাখে। উত্তপ্ত ভালোবাসা এমন একটি ভালোবাসা যা দুই ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয়, যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি তীব্রভাবে মুগ্ধ। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি আবেগময় ভালোবাসা, যা উত্তেজনাপূর্ণ এবং তীব্র। ইলেইন হ্যাটফিল্ড (১৯৯৮) এটিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন “অন্যের সাথে মিলনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষার অবস্থা” হিসেবে (পৃষ্ঠা ১৯৩)। ভালোবাসার অনেক রূপ রয়েছে। সময় এবং সংস্কৃতি উভয়ই সম্পর্কে গঠিত ভালোবাসাকে প্রভাবিত করে। সময় সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিদের বয়স বা তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। সংস্কৃতি ভালোবাসা এবং সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়, পটভূমি, ধর্ম, এমনকি আর্থিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কের ভালোবাসাকে প্রভাবিত করতে পারে।
===সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা===
সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসাকে সবচেয়ে ভালো সংজ্ঞায়িত করা যায় এমন উত্তপ্ত ভালোবাসা হিসেবে, যা দুই সঙ্গীর মধ্যে একটি উষ্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। দুই সঙ্গীর মধ্যে ভাগ করা সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসায় উত্তপ্ত ভালোবাসার তুলনায় কম উত্থান-পতন থাকে। এটি বেশি স্থিতিশীল। সঙ্গীদের মধ্যে গভীর সম্মান এবং স্নেহময় সংযুক্তি বেশি স্পষ্ট। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি জ্বলন্ত আগুনের মতো, যা গরম এবং দ্রুত জ্বলে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা হলো আগুন চলে যাওয়ার পরে থাকা গরম কয়লা। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই বিবাহে পাওয়া যায়। বিবাহে, প্রায়ই উত্তেজনা সম্পর্ক থেকে চলে যায়। কিন্তু অন্য ব্যক্তির প্রতি গভীর স্নেহ এবং প্রতিশ্রুতি তখনও থাকে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই সঙ্গীদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সম্পর্ক যত দীর্ঘ হয়, তত কম আবেগের রোলারকোস্টার থাকে।
===ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা===
যেকোনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায়পরায়ণতা। সম্পর্কে ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। ইলেইন হ্যাটফিল্ড, উইলিয়াম ওয়ালস্টার এবং এলেন বার্শেইড (১৯৭৮) একটি ন্যায়পরায়ণতার নীতি ঘোষণা করেছেন: আপনি এবং আপনার সঙ্গী সম্পর্ক থেকে যা পান, তা আপনারা প্রত্যেকে যা দেন, তার সমানুপাতিক হওয়া উচিত। অন্য কথায়, সম্পর্ক কাজ করার জন্য প্রত্যেক সঙ্গীকে তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট অনুভূতি এবং ক্রিয়া বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী ন্যায়পরায়ণতা অর্জিত হয় সম্পর্কে “কে কার কাছে ঋণী” তা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে। যখন একজন সঙ্গী অন্যের চাহিদা পূরণ করে, তখন তার বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করা হয় না। ঋণের অনুভূতি থেকে উপেক্ষা করতে পারা সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করে। একটি পরিচিত ব্যক্তি যখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে, তখন তার একটি সূত্র হলো, সে অপ্রত্যাশিতভাবে ভাগ করে নেয় (Miller & others, 1989)। সুখী বিবাহিত মানুষ প্রায়ই হিসাব রাখে না যে তারা কতটা দিচ্ছে এবং পাচ্ছে (Buunk & Van Yperen, 1991)।
===সম্পর্কের সমাপ্তি===
সম্পর্ক সাধারণত তখন শেষ হয় যখন সঙ্গীদের মধ্যে ভাগ করা ভালোবাসা আর তাৎপর্যপূর্ণ থাকে না। দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা এবং তৃপ্তির উপর নির্ভর করে। এছাড়া সম্ভাব্য বিকল্প সঙ্গীদের প্রতি মনোযোগ না দেওয়া, সমাপ্তির খরচের ভয়, এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার অনুভূতিও গুরুত্বপূর্ণ (Adams & Jones, 1997)।
====কে বিবাহবিচ্ছেদ করে?====
বিবাহবিচ্ছেদের হার বর্তমানে উচ্চ। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ মূলত সম্পর্কে অসুখ, সঙ্গীদের মধ্যে ভালোবাসার ক্ষতি এবং বিবাহের মধ্যে ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের ফল। বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি এও নির্ভর করে কে কার সাথে বিবাহ করে (Fergusson & others, 1984; Myers, 2000a; Tzeng, 1992)। মানুষ সাধারণত বিবাহিত থাকে যদি তারা:
* ২০ বছর বয়সের পরে বিবাহ করে।
* উভয়ে স্থিতিশীল, দুই পিতামাতার ঘরে বেড়ে ওঠে।
* বিবাহের আগে দীর্ঘ সময় প্রেম করে।
* ভালো এবং একই রকম শিক্ষিত।
* ভালো চাকরি থেকে স্থিতিশীল আয় উপভোগ করে।
* ছোট শহরে বা খামারে বাস করে।
* বিবাহের আগে একসাথে বসবাস বা গর্ভবতী হয়নি।
* ধর্মীয়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
* একই বয়স, বিশ্বাস এবং শিক্ষার।
এই ফলাফল বিবাহ থেকে বিবাহে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদ বা সম্পর্কে ভালোবাসার ক্ষতি এই পরিস্থিতিগুলোর একটির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। স্পষ্টতই, অন্য ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত বা সম্পর্কিত হওয়ার উপায় ছাড়া, একটি সম্পর্ক বা এমনকি বিবাহ বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
==মডিউল ২৮: দ্বন্দ্বের কারণ==
দ্বন্দ্ব- ক্রিয়া বা লক্ষ্যের একটি উপলব্ধ অসঙ্গতি
===সামাজিক দ্বিধা===
আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য যে পছন্দগুলো আমরা করি, তা সমষ্টিগতভাবে শাস্তিমূলক হতে পারে।
====কয়েদির দ্বিধা====
দুই ব্যক্তিকে জেলা অ্যাটর্নি একটি অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তারা অপরাধে দোষী। কিন্তু জেলা অ্যাটর্নির কাছে তাদের কম অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই তিনি তাদের আলাদা করে একে একে কথা বলেন। তিনি তাদের তিনটি পছন্দ দেন:
• স্বীকার করুন। যদি অন্য ব্যক্তি স্বীকার না করে, তবে আপনাকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তাকে তার এবং আপনার শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হবে।
• যদি উভয়ে স্বীকার করে, তবে আপনারা প্রত্যেকে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করবেন।
• যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে উভয়কে খুব হালকা শাস্তি দেওয়া হবে।
এটি দুই ব্যক্তিকে একটি দ্বিধায় ফেলে। কারণ তারা অনিশ্চিত যে অন্যজন মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে কিনা। যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে তাদের দুজনেরই অনেক কম কঠোর শাস্তি হবে। কিন্তু তারা এই ঝুঁকি বিবেচনা করে যে, যদি তারা স্বীকার না করে, তবে তাদের একা দুজনের শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মানুষ স্বীকার করা বেছে নেয়। এটি করা হয় যাতে তারা অন্যের স্বার্থপরতার সাথে মোকাবিলা না করতে হয়। এইভাবে, সামান্য অবিশ্বাসের মতো একটি বিষয় সহযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলতে পারে।
====সাধারণের ট্র্যাজেডি====
বেশিরভাগ সামাজিক দ্বিধায় একাধিক পক্ষ সমস্যায় অবদান রাখার জন্য দায়ী।
উদাহরণ:
পুনরায় ভর্তি করার মধ্যে, একটি কুকি জারে পর্যাপ্ত কুকি থাকে (যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়) যাতে শিশুরা প্রতিদিন তিনটি করে খেতে পারে। কিন্তু কুকিগুলোর সহযোগিতা এবং নিয়ন্ত্রণ খুবই অসম্ভব। পরিবর্তে, শিশুরা যারা একে অপরের দ্বারা শোষিত হওয়ার ভয় পায়, তারা কুকি মুখে ভরতে শুরু করে। ফলে সরবরাহ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হয়ে যায়। একে অপরের উপর অবিশ্বাস এবং সহযোগিতার অভাব এখন তাদের কুকি ছাড়াই রেখে দেয়। এটি পরবর্তী জার ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত চলে (Gifford & Hine, 1997)। এটি একটি নন-জিরো গেমের উদাহরণ। এমন পরিস্থিতি যেখানে যৌক্তিকভাবে কাজ করলেও নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
===সামাজিক দ্বিধা সমাধান===
====নিয়ন্ত্রণ====
যদি গোষ্ঠীর সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখার নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক হয়, তবে সিস্টেমটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
====ছোটই সুন্দর====
যদি একটি গোষ্ঠী ছোট থাকে, তবে সদস্যরা গোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতা বোধ করে। তারা তাদের অবদান বা ইনপুটকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। যদি গোষ্ঠী খুব বড় হয়, তবে অনেক সদস্য মনে করতে পারে তাদের ভূমিকা গুরুত্বহীন। তারা গোষ্ঠীর সমৃদ্ধিতে সক্রিয় থাকার জন্য সামান্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনুভব করে (Kerr, 1989)।
====যোগাযোগ====
যখন একটি গোষ্ঠী যোগাযোগ করে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বা একটি দ্বিধা সমাধান করে, তখন গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই সবার স্বার্থে কাজ করে। এটি অন্য সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে তারা অবদান রাখে। এটি করা হয় যাতে তারা আলাদা না হয় বা সম্ভবত তিরস্কৃত না হয়।
====প্রতিদান পরিবর্তন====
যদি সহযোগিতার পুরস্কার শোষণের পুরস্কারের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়, তবে বেশি মানুষ সহযোগিতা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যস্ত মহাসড়কে কারপুল লেন। এটি করা হয় যাতে ট্রাফিক এবং দূষণ সমস্যায় অবদান রাখা গাড়ির সংখ্যা কমে।
====পরার্থপর নিয়মের আবেদন====
যদি এটি সাধারণ কল্যাণের জন্য উপকারী হয়, তবে মানুষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ বোধ করতে পারে (সামাজিক দায়িত্ব নিয়ম)। এমনকি এটি তাদের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে বা তাদের অসুবিধায় ফেলতে পারে।
চিত্র সরবরাহ করেছে:[http://images.tomshardware.com/2006/06/20/060619_tec. www.tomshardware.com]
[[Image:060619 teched2006 019.jpg]]
উপরের চিত্রটি আমাদের মহাবিশ্বের সাথে সংযোগের একটি পরার্থপর দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ।
===প্রতিযোগিতা===
প্রতিযোগিতার প্রভাব কতটা তীব্র তা পরীক্ষা করার জন্য একটি পরীক্ষায়, মুজাফার শেরিফ (১৯৬৬) দুটি গ্রুপের ছেলেদের ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পরীক্ষা করেছিলেন যে দুটি গ্রুপের মধ্যে সীমিত সম্পদ ভাগ করা দ্বন্দ্বের দিকে নিয়ে যায় কিনা। অন্য গ্রুপ সম্পর্কে না জেনে, শেরিফ প্রতিটি গ্রুপের ছেলেদের তাদের ক্যাম্পসাইট তৈরি করতে একসাথে কাজ করতে দিয়েছিলেন। তাদের একে অপরের সাথে পরিচিত হতে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পর তিনি দুটি গ্রুপকে একে অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এটি করা হয়েছিল একটি গ্রুপকে বেসবল মাঠে রেখে, যখন অন্য গ্রুপটি একই সময়ে মাঠটি ব্যবহার করার কথা ছিল। তাদের সম্পদ অন্য গ্রুপের কাছে হারানোর এই আকস্মিক ভয় ছেলেদের তাদের নিজ নিজ গ্রুপের মধ্যে সংহতি বাড়াতে প্ররোচিত করেছিল। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের প্রতি পারস্পরিক বৈরিতার মাধ্যমে এটি করেছিল। এমনকি গ্রুপের সাথে সংযুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে কালো তালিকাভুক্তির দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
===উপলব্ধ অন্যায়===
যখন কেউ মনে করে তাদের গোষ্ঠীতে অবদান তাদের প্রাপ্য পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান, তখন তারা তিনটি পথের একটি বেছে নেয়। তারা হয় তাদের অপ্রতুলতার কথা মনে করে উর্ধ্বতনদের কাছে নতি স্বীকার করে। অথবা তারা যা চায় তা পেতে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্ল্যাকমেল ব্যবহার করে। অথবা তারা তাদের উর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করে (Elaine Hatfield, William Walster, Ellen Pzersheid, 1978)। অন্যদিকে, যদি কেউ মনে করে তারা তাদের অবদানের চেয়ে বেশি পাচ্ছে, তবে তারা নিজেদের মনোযোগ আকর্ষণ করার সম্ভাবনা কম। এই ক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের বোঝায় যে তাদের কাজ অতিরিক্ত সুবিধার যোগ্য। এছাড়া, যদি কেউ জানতে পারে তাদের দক্ষতা তাদের পুরস্কারের চেয়ে বেশি, তবে তারা তাদের মূল্য নিয়ে তর্ক করার সম্ভাবনা বেশি। “মানুষ যত বেশি যোগ্য এবং মূল্যবান মনে করে (তাদের অবদান যত বেশি মূল্য দেয়), তত বেশি তারা অপ্রতুল বোধ করে এবং তাই প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী হয়” (Ross & others, 1971)।
উদাহরণ:
সবকিছু বিবেচনা করে, এই দেশে কার জীবন ভালো--পুরুষ না নারী?
১৯৭২ ১৯৯৩
পুরুষ ২৯% ৬০%
নারী ৩৫% ২১%
একই ৩০% ১৫%
কোনো মতামত নেই ৬% ৫%
(উৎস: Roper Center for Public Opinion Research, 1997)
===ভুল ধারণা===
[http://www.iwalt.com/static/images/blogpics/misperceptions.gif সংবাদ উৎস অনুযায়ী ভুল ধারণার বৈচিত্র্যের একটি উদাহরণ]
যেহেতু দ্বন্দ্ব একটি উপলব্ধ অসঙ্গতির ফল, তাই অন্যের ক্রিয়ার ভুল ধারণার মাধ্যমে বেশিরভাগ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এটি স্ব-সেবামূলক পক্ষপাতের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা প্রায়ই আমাদের নিজেদের ক্রিয়াকে ন্যায্য করি এবং আমাদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব নিই। কিন্তু আমরা আমাদের ভুলগুলোকে ন্যায্য করি। একই সময়ে আমরা অন্যদের ক্রিয়া বা উদ্দেশ্যকে আমাদের তুলনায় কঠোরভাবে বিচার করি। এটি আমাদের অন্যদের অকালে নিন্দা করতে নিয়ে যায়। আমরা আমাদের ভুল ধারণায় মৌলিক দায়িত্ব ভ্রান্তি দায়ী করতে পারি। আমরা অন্যদের বাহ্যিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে কম প্রবণ হই, যা তাদের ক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের অন্যের একটি একমাত্রিক উপলব্ধি দেয়, যা খুব ভুল হতে পারে।
===আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণা===
[http://www.funnyhub.com/pictures/pages/mirror-image-perceptions.html বিকৃত আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণার একটি উদাহরণ]
দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর জন্য একে অপরকে একই অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং একই কারণে নিজেদের নৈতিক এবং গুণী মনে করা সাধারণ (Morton Deutsch, 1986)। এটি প্রায়ই যুদ্ধকালীন সময়ে দেখা যায়। আমরা মানুষকে শুধুমাত্র দুটি বিভাগে দেখি; “আমাদের পক্ষে বা আমাদের বিরুদ্ধে”। আধুনিক যুদ্ধে এটি আরও কূটনৈতিকভাবে দেখা যায়। আমরা বলি, আমরা সাধারণ জনগণের সাথে যুদ্ধে নেই, বরং দুষ্ট শাসনের বিরুদ্ধে, যা তার জনগণকে দূষিত করেছে। এটি আমাদের একটি উজ্জ্বল বর্মের নাইটের আবেদন দেয়, যিনি “ভালো মানুষ”কে তাদের “দুষ্ট নেতাদের” থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের হস্তক্ষেপের কারণ এখন বৈধ। কারণ এটি তখন জনগণের জন্য একটি সেবা হিসেবে বিবেচিত হয়।
== মডিউল ৩০ - মানুষ কখন সাহায্য করে? ==
=== মানুষ কেন সাহায্য করে? ===
পরার্থপরতা হলো এমন একটি নিঃস্বার্থ কাজ, যা একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অন্যের প্রতি সত্যিকারের যত্ন নেয় এবং কোনো ধরনের পুরস্কার প্রত্যাশা করে না। কিন্তু সাহায্য করার পেছনে কী প্রেরণা থাকে? একটি তত্ত্ব, যাকে বলা হয় সামাজিক-বিনিময়, এতে একজন ব্যক্তি পরিস্থিতিতে কাজ করার আগে সাহায্যের সুবিধা এবং খরচের একটি সম্পর্ক মূল্যায়ন করে। স্পষ্টতই, সাহায্যকারী কম খরচে সর্বোত্তম সুবিধা অর্জন করতে চায়। যদি কেউ জানে যে একজন ব্যক্তি এই কারণে সাহায্য করেছে, তবে সেই “সাহায্যকারী” তার “ভালো কাজের” জন্য স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কিছু মানুষ অন্যের কল্যাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাদের একমাত্র সুখ হলো এই জ্ঞান থেকে যে তারা সত্যিই কাউকে সাহায্য করেছে। প্রায়ই এই ধরনের ব্যক্তি এমন হয়, যে অন্যের কষ্টে নিজে কষ্ট পায় বা অন্যের আনন্দে নিজে আনন্দিত হয়। সাহায্যকে উদ্দীপিত করার আরেকটি এজেন্ট হলো সামাজিক নিয়ম। এর একটি হলো পারস্পরিকতা নিয়ম। সামাজিক নিয়ম আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা নির্দেশ করে। এই নিয়মটি পরামর্শ দেয় যে আমরা অন্যের জন্য সেবা করি কারণ তারা আগে আমাদের জন্য এটি করেছে। এই নিয়মটি পরার্থপর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ এতে নিজের জন্য কিছু প্রেরণা থাকে। আরেকটি নিয়ম যা আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা পরামর্শ দেয় তা হলো সামাজিক-দায়িত্ব নিয়ম। এই এজেন্টটি পারস্পরিকতা নিয়ম থেকে আলাদা। কারণ আমরা একে অপরের জন্য সেবা বিনিময়ের বিষয়ে সচেতন নই। এই নিয়মটি পরার্থপরতাকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিত্রিত করে। কারণ এটি আমাদের প্রয়োজনে থাকা কাউকে সাহায্য করতে অনুপ্রাণিত করে এবং কখনো কিছু চায় বা প্রত্যাশা করে না। এই তত্ত্বগুলো প্রকৃতির অর্থে উন্নীত করা যায়। অন্যের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ মূলত তাদের বেঁচে থাকার জন্য উদ্বেগ। এই অর্থে চিন্তা করা আকর্ষণীয় যে, যে গোষ্ঠী বেশি পরার্থপর, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ভালো।
=== মানুষ কখন সাহায্য করে? ===
সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা উপস্থিত ব্যক্তির আচরণ বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। একটি পরীক্ষা সিরিজের মাধ্যমে তারা অসাধারণ ফলাফল পেয়েছেন। সাহায্য প্রায়ই এমন মানুষ দ্বারা করা হয় যারা নিজেদের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে চায়। তারা তাদের অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে চায় যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে আরও বিশুদ্ধ ধারণা পায়। কখনো কখনো যারা ইতিবাচক মনের অবস্থায় থাকে, তারা সত্যিকারের ইচ্ছা বোধ করে অন্য কাউকে সাহায্য করার। একটি অত্যন্ত বিশেষ ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ধর্মীয় সম্পৃক্ততার মানুষ প্রায়ই অন্যদের সেবা দেয়। সাহায্যের শর্তগুলো বিষয়গত থেকে বস্তুগত শর্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। বিষয়গত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি অন্য কারো দ্বারা একটি ভালো কাজ পর্যবেক্ষণ, সেই নির্দিষ্ট সময়ে তাড়াহুড়ো না অনুভব করা, বা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যক্তি নিজের এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে কিছু মিল দেখে। বস্তুগত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীর প্রয়োজনের তীব্রতা, আমাদের পরিবেশ বা চারপাশ, এবং সাহায্য করার জন্য অন্যদের অনুপস্থিতি।
=== উপস্থিত ব্যক্তির সংখ্যা ===
যখন আমরা শুনি যে কেউ প্রয়োজনে ছিল কিন্তু একজন উপস্থিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেনি, তখন আমরা মনে করি সেই উপস্থিত ব্যক্তি একজন ভয়ানক মানুষ। আমরা নিশ্চিতভাবে কিছু করতাম কারণ আমরা যত্নশীল মানুষ। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে যে উপস্থিত ব্যক্তি সাহায্য করেনি সে একজন যত্নশীল মানুষ ছিল? অগত্যা নয়। অসংখ্য পরীক্ষা করা হয়েছে যা প্রকাশ করে, অদ্ভুতভাবে, একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে যেখানে কেউ সাহায্যের প্রয়োজন, সেখানে যত কম উপস্থিত ব্যক্তি থাকে, সেবা দেওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। একাধিক উপস্থিত ব্যক্তির পরিস্থিতিতে, কেউ প্রয়োজনে থাকা ভুক্তভোগীকে লক্ষ্য করার, তাদের সমস্যা বোঝার এবং পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম (Latane, Darley 1970:364-369)। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি গুরুতর পরিস্থিতির প্রতি উদাসীনতাকে তথ্যগত প্রভাব বলা হয়। একজন ব্যক্তি দেখে অন্য কেউ সাহায্য করার জন্য কাজ করছে না। তখন তারা নিজেও মনে করে সবকিছু ঠিক আছে এবং সাহায্য করে না। অন্যদিকে, যদি কেউ প্রয়োজনে থাকা কাউকে লক্ষ্য করে এবং দেখে কেউ তাড়াহুড়ো করে তাদের সেবা দিতে ছুটে যায়, তবে গুরুতর পরিস্থিতির জন্য জরুরিতার অনুভূতি বেশি হবে। যেভাবেই হোক, আমরা সবসময় এই দ্বিধায় পড়ি যে একটি পরিস্থিতি আমাদের মনোযোগের যোগ্য কিনা। কখনো আমরা নিজেদের উপেক্ষা করে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই। অন্য সময় আমরা এমন পরিস্থিতিতে কোনো পদক্ষেপ নিই না যা আমাদের কাছে অস্পষ্ট মনে হয়। এটিকে উপস্থিত ব্যক্তি প্রভাব বলা হয়। কিন্তু একটি গুরুতর পরিস্থিতির গুরুত্ব না বোঝা সবসময় পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ নয়। কিছু ঘটনায় পরিস্থিতি স্পষ্ট হয় এবং তবুও আমরা কাজ করি না। আমরা একজন ব্যক্তির সাথে কিছু ঘটতে দেখতে পারি এবং কাজ না করতে পারি। কারণ আমরা অন্যদেরও লক্ষ্য করি যারা দেখছে। আমাদের মনোযোগ ভুক্তভোগী থেকে অন্য উপস্থিত ব্যক্তিদের দিকে চলে যায়। তাদের শুধু তাকিয়ে থাকতে দেখে আমরাও কাজ করতে ব্যর্থ হই। এটি আকর্ষণীয় যে অন্য মানুষের উপস্থিতি আমাদের ব্যক্তিগত আবেগ এবং মানসিকতাকে একটি বস্তুগত পরিস্থিতিতে প্রভাবিত করে। পরীক্ষায় যেখানে অংশগ্রহণকারীদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল যেখানে তাদের নিজেদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, অন্য মানুষের সাথে ফোকাস গ্রুপ যারা একই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিল, তারা তুলনায় বেশি ব্যর্থ হয়েছিল। যে ফোকাস গ্রুপে মানুষ মনে করেছিল তারাই একমাত্র গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন, তারা বেশি কাজ করেছে (Latane, Darley 1968:217-221)। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, একই সচেতনতার সাথে অন্যদের উপস্থিতি তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে কিনা। সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছিল যে এটি করেনি। মূলত, একজন ব্যক্তি সবসময় জানে না কেন তারা যা করে তা করে, এই পরীক্ষা এটি নিশ্চিত করেছে। কিছু পরীক্ষার গভীরতা কিছু মানুষকে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে যে এই পরীক্ষাগুলোর নৈতিকতা কী। কিন্তু এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পরীক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণকারীদের রক্ষা করা এবং এই প্রক্রিয়ায় মানুষের কল্যাণ বাড়ানো। এই পরীক্ষার ফলে মানুষ তথ্যবহুল হয়। যারা পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করে তারা এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেশি (Beaman, Barnes, Klentz, McQuirk 1978:407-410)।
*দয়া করে নোট করুন, এই পৃষ্ঠার সমস্ত বিষয়বস্তু ডেভিড মায়ার্সের ''Exploring Social Psychology''-এর মডিউল ৩০-এর একটি প্যারাফ্রেজড সারাংশ। ডেটা যাচাইয়ের জন্য দয়া করে বইটি নিজেই উল্লেখ করুন।
==মডিউল ৩১: স্থায়িত্বের সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===স্থায়ী জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানব জীবনের জন্য একটি ভবিষ্যৎ টিকিয়ে রাখতে, আমাদের প্রযুক্তির সীমানা প্রসারিত করতে হবে। অটোমোবাইলগুলো আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়েছে এবং অনেক কম দূষণ উৎপন্ন করে। নথিগুলো এখন ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ, অনুলিপি, বিতরণ এবং উৎপাদিত হয়। কপিয়ার মেশিন ভুলে যান, ডান ক্লিক করুন, কপি করুন, এবং তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আলোর বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন এবং ওষুধ পর্যন্ত, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করছে। কে জানত ২১শ শতাব্দী এতটা এগিয়ে যাবে?
====ব্যবহার হ্রাস====
ভবিষ্যৎ জীবন টিকিয়ে রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ব্যবহার হ্রাস। মানুষের পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী বসবাস করার জন্য, আমাদের কম ব্যবহার এবং কম দূষণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জন্মহার ক্রমাগত কমছে। এটি বিশ্বে শিক্ষিত এবং কর্মরত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। তবুও, বিশ্ব এখনও তার পূর্ণ ক্ষমতায় রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ব্যবহার হ্রাস করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অনেকে হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে বা এখনও গঠনমূলক ফলাফল দেখেনি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, কারপুল করে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে, এবং তাদের বাড়ির জন্য পরিবেশবান্ধব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের পুরস্কৃত করার মতো ধারণা একটি দুর্দান্ত শুরু হবে। অন্যদিকে, যারা সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার করে তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। যারা আলাদাভাবে গাড়ি চালায়, তাদের জরিমানা, টিকিট, কর, বা চার্জ করতে হবে। যারা তাদের বাড়ির আলো ২৪ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখে, ছুটিতে এসইউভিতে তিনশো মাইল গাড়ি চালায়, এবং প্রতিটি আবর্জনা পুনর্ব্যবহার না করে ফেলে দেয়। রবার্ট ফ্রাঙ্ক (১৯৯৯), একজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানে পারদর্শী অর্থনীতিবিদ, পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করতে পারে এবং আরও স্থায়ী ব্যবহার প্রচার করতে পারে।
===বস্তুবাদ এবং সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====বর্ধিত বস্তুবাদ====
বর্ধিত বস্তুবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে স্পষ্ট। একটি জরিপে এটি স্পষ্টভাবে প্রতিনিধিত্ব করে, Gallup Poll (১৯৯০), ২ জনের মধ্যে ১ জন নারী, ৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, এবং বছরে ৭৫,০০০ ডলারের বেশি উপার্জনকারী ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ধনী হতে চায়। আরও বেশি সংখ্যক ব্যক্তি তাদের জীবনে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের চেষ্টা করার পরিবর্তে ধনী হতে চান।
====সম্পদ এবং কল্যাণ====
টাকা দিয়ে কি সুখ কেনা যায়? অথবা আপনার কল্যাণ? দুঃখের বিষয়, না, তা যায় না। সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে খুব কম সম্পর্ক রয়েছে, যদি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি যতই ধনী হোক না কেন, তার কল্যাণ খুব বেশি (প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য) পরিবর্তন হবে না। দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে কম আয় মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলে, তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি কল্যাণের পূর্বাভাস দেয় (Argyle, 1999)। একজন ব্যক্তি যখন ধনী হয়, তখন সুখের একটি বৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু এটি কেবল স্বল্প সময়ের জন্য থাকে। তারপর সেই ব্যক্তি আর সুখী থাকে না। তখন তার কল্যাণে সন্তুষ্ট থাকার জন্য আরও বেশি টাকা এবং সম্পদের প্রয়োজন হয়। ডেভিড লিকেন (1999, পৃষ্ঠা 17) বলেন, “যারা ওভারঅল পরে বাসে করে কাজে যায়, তারা গড়ে ততটাই সুখী, যতটা সুখী তারা যারা স্যুট পরে নিজেদের মার্সিডিজে করে কাজে যায়।” এমনকি অতি-ধনী ব্যক্তিরা – ফোর্বসের 100 ধনী আমেরিকান – গড়ের তুলনায় কেবল সামান্য বেশি সুখের কথা জানায় (Diener, Horwitz, and Emmons, 1985)।
====কেন বস্তুবাদ তৃপ্তি দেয় না====
বস্তুবাদ তাদের তৃপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, যারা জীবনে যতটা সম্ভব অর্জন করতে চায়। যারা ক্ষমতা, টাকা এবং সম্পদের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক কম কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। যারা ব্যক্তিগত বিকাশ, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক বেশি কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। বস্তুবাদী হওয়া এবং বস্তুগত জিনিস থেকে ব্যক্তিগত কল্যাণ অর্জন করা কেবল কম কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়। অনেক কিছু যা একসময় বিলাসিতা ছিল, তা এখন প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছে। একজন ব্যক্তি এই প্রয়োজনীয়তার মাধ্যমে তাদের কল্যাণ পরিমাপ করে। শেষ পর্যন্ত, সবাই সেই বিলাসিতা পেয়ে যায়। তখন ব্যক্তি মনে করে তাদের আরেকটি বিলাসিতা দরকার, যা অন্য কারো নেই। এটি তাদের নিজস্ব কল্যাণ বাড়াতে। এই চক্র চলতেই থাকে। বস্তুবাদী ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত কল্যাণের উচ্চতর অনুভূতি পেতে ক্রমাগত আরও বেশি প্রয়োজন অনুভব করে।
===স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার দিকে===
আমাদের সমাজকে বস্তুবাদী প্রকৃতি থেকে মুক্ত করতে, মানুষকে স্থায়িত্বের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে। ব্যবহার কমানোর জন্য কর্মসূচি এবং আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নতি চালিয়ে যেতে হবে। দক্ষতার উপর মনোযোগ দিতে হবে। এটা বোঝা দরকার যে সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচার করতে হবে। মানুষকে একত্রিত হতে হবে। তাদের বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে। নিজেদের উপর কেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে আরও উন্নত করতে পারে। এটি বিশ্বের স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য অবদান রাখতে পারে। যত তাড়াতাড়ি মানুষ এটা মেনে নেয় যে বস্তুবাদ ভালো কল্যাণের দিকে নিয়ে যায় না, তত তাড়াতাড়ি বিশ্ব একটি উন্নত জায়গা হয়ে উঠবে।
==তথ্যসূত্র ==
*Abramson, L. Y., Seligman, M. E. P., & Teasdale, J. D. (1978). Learned helplessness in humans: Critique and reformulation. Journal of Abnormal Psychology, 87, 32-48.
*Adams, J.M., & Jones, W.H. (1997). The conceptualization of martial commitment: An integrative analysis. Journal of Personality and Social Psychology, 72, 1177-1196.
*Allison,S. T.,Jordan,M.R.,& Yeatts,C.E.(1992). A cluster-analytic approach toward identifying the structure and content of human decision making. ''Human Relations'',45,49-72.
*Anderson, C.A., Miller, R.S., Riger, A.L.,Dill, J.C., and Sedikides, C. (1994). Behavioral and characterological attributional styles as predictors of depression and lonleliness: Review, refinement, and test. Journal of Personality and Social Psychology, 66, 549-558.
*Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
*Asendorpf, J.B. (1987). Videotape reconstruction of emotions and cognitions related to shyness. Journal of personality and social psychology, 53, 541-549
*Bayer, E. (1929). Beitrage zur zeikomponenten theorie des hungers. Zeitschrift fur Psycholgie, 112, 1-54.
*Beaman, A.L., Barnes, P.J., Klentz, B., & McQuirk, B. (1978). Increasing helping rates through information dissemination: Teaching pays. Personality and Social Psychology Bulletin, 4, 406-411.
*Bureau of the Census. (1999). Statistical abstract of the United States 1996 (Table 65). Washington, D.C.: Superintendent of Documents.
*Buunk, B.P., & van der Eijnden, R.J.J.M. (1997). Perceived prevalence, perceived superiority, and relationship satisfaction: Most relationships are good, but ours is the best. ''Personality and Social Psychology Bulletin'', 23, 219-228.
*Carey,B.,''New York Times''."A Senior Moment' or A Self-Fulfilling Prophecy?"(July,18,2006).
*Chen, S.C. (1937). Social modification of the activity of ants in nest-building. Physiologial Zoology, 10, 420-436.
*Cooper,H.(1983). Teacher expectation effects. In L. Bickman(Ed.), ''Applied social psychology annual,vol 4''.Beverly Hills,CA:Sage.
*Cota, A.A., & Dion, K.L. (1986). Salience of gender and sex composition of ad hoc groups: An experimental test of distinctiveness theory. Journal of Personality and Social Psychology, 50, 770-776.
*Crocker,J. (1981). Judgment of covariation by social perceivers. ''Psychological Bulletin,'' 90, 272-292.
*Dawes,R.M. (1976). Shallow psychology. In J.S. Carroll & J.W. Payne (Eds.), ''Cognition and social behavior''. Hillsdale, NJ: Erlbaum.
*Deci, E. L., & Rayan, R. M. (1987). The support of autonomy and the control of behavior. Journal of Personality and Social Psychology, 53, 1024-1037.
*Deutsch, M. (1993). Educating for a peaceful world. American Psychologist, 48, 510-517.
*Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
*Engs, R., & Hanson,D.J. (1989) Reactance theory: A test with collegiate drinking. Psychological Reports, 64, 1083-1086
*Feldman, R.S., & Theiss, A.J. (1982). The teacher and student as Pygmalions: Joint effects of teacher and student expectations. ''Journal of Education Psychology'',74,217-223.
*Fergusson, D.M., Horwood, L.J., & Shannon, F.T. (1984). A proportional hazards model of family breakdown. Journal of Marriage and the Family, 46, 539-549.
*Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
*Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
*Galton, F.(1886), "Regression Towards Mediocrity in Hereditary Stature," Journal of the Anthropological Institute,15, 246-263.
*Gifford, R., & Hine, D.W. (1997). Crowding: More fearsome than crime-provoking? Comparison of an Asian city and a North American cinty. Psychologia, 22, 79-83
*Gillis, J. S., & Avis, W.E. (1980). The male-taller norm in mate selection. Personality and Social Psychology Bulletin, 6, 396-401.
*Gilovich, T., & Douglas, C.(1986). Biased evaluations of randomly determined gambling outcomes. ''Journal of Experimental''
*Griffitt, W. (1987). Females, males, and sexual responses. In K. Kelley (Ed.), Females, males and sexuality: Theories and research. Albany: State University of New York Press.
*Hamilton, D. L. and R. K. Gifford (1976). Journal of Experimental Psychology 12, 392-407.
*Harris, J.R. (1998). The nurture assumption. New York: Free Press.
*Hatfield (Walster), E., Walster, G.W., & Berscheid, E. (1978). Equity: Theory and research. Boston: Allyn & Bacon.
*Hatfield, E. (1988). Passionate and compassionate love. In R.J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Hunt, M, (1993). The story of psychology. New York: Doubleday.
*Jussim,L. (1986). Self-fulfilling prophecies: A theoretical and integrative review. Psychological Review,93.
*Kahneman,D., Slovic,P.,&Tversky,A,(editors), Judgement Under Uncertainty,Heuristics, and Biases.(Cambridge University Press,1982), Part IV.
*Kerr, N.L. (1989). Illusions of efficacy: The effects of group size on perceived efficacy in social dilemmas. Journal of Experimental Social Psychology, 25, 287-313.
*Larsson, K. (1956). Conditioning and sexual behavior in the male albino rat. Stockholm: Almqvist & Wiksell.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1970). The Unresponsive Bystander: Why Doesn't He Help? New York: Appleton-Century-Crofts.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1968). Group inhibition of bystander intervention in emergencies. Journal of Personality and Social Psychology, 10, 215-221.
*Lewinsohn,P.M.,Hoberman,H.,Teri,L.,& Hautziner,M. (1985) An integrative theroy of depression. In S. Reiss & R. Bootzin (Eds), Theoretical issues in behavior therapy. New York: Acadimic Press
*Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
*McIntosh, J.L. & Kelly, L.D. (1992). Survivors reactions: suicide vs. other causes. Crises, 82-93
*Meehl, P.E. (1954). ''Clinical vs. statistical prediction: A theoretical analysis and a review of evidence''. Minneapolis: University of Minnesota Press.
*Miller, L.C., Berg, J.H., & Rugs, D. (1989). Selectivity and sharing: Needs and norms in developing friendships. Unpublished manuscript, Scripps College.
*Mirels, H.L., & McPeek, R.W. (1977) Self Advocacy and Self Esteem. Journal of Consulting and Clinical Psychology, 45, 1132-1138.
*Myers, D. G., (2004). Exploring Social Psychology: Third Edition. New York: McGraw-Hill.
*Niemi, R. G., Mueller, J., & Smith, T. W. (1989). Trends in public opinion: A compendium of survey data. New York: Greenwood Press.
*Orive, R. (1984). Group similarity, public self-awareness, and opinion extremity: A social projection explanation of deindividuation effects. Journal of Personality and Social Psychology, 47, 727-737
*Peterson, C., & Steen, T.A. (2002). Optimistic explanatory style. In C.R. Snyder & S.J. Lopez (Eds), Handbook of positive psychology. London: Oxford University Press
*Pratto, F. (1996). Sexual politics: The gender gap in the bedroom, the cupboard, and the cabinet. In D. M. Buss & N. M. Malamuth (Eds.), Sex, power, conflict: Evolutionary and feminist perspectives. New York: Oxford University Press.
*Sherif, M. (1966). In common predicament: Social psychology of intergroup conflict and cooperation. Boston: Houghton Mifflin.
*Sigal, J., Gibbs, M. S., Goodrich, C., Rashid, T., Anjum, A., Hsu, D., et al. (2005). Cross-cultural reactions to academic sexual harassment: effects of individualist vs. collectivist culture and gender of participants. Sex Roles: A Journal of Research.
*Snyder, M., & Swann, W. B. (1978). Hypothesis-testing processes in social interaction. Journal of Personality and Social Psychology, 36, 1202-1212
*Stangor, C., Lynch, L., Duan, C., & Glass, B.(1992). Categorization of individuals on the basis of multiple social features. Journal of Personality and Socail Psychology, 62, 207-218.
*Sternberg, R. J. (1988). Triangulating love. In R. J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Sternberg, R. J. (1998). Cupid’s arrow: The course of love through time. New York: Cambridge University Press.
*Thorn, J., Gershman, M., Palmer, P., and Pietrusza, D. (eds.) 1999), Total Baseball, Sixth Edition, New York: Total Sports.
*Triplett, N. (1898). The dynamogenic factors in peacemaking and competition. American Journal of Psychology, 9, 507-533.
*Vallone,R. P., Ross, L & Lepper,M.R.(1985). The hostile media phenomenon: Biased perception and perceptions of media bias in coverage of the "''Beirut Massacre''." and ''Social Psychology Journal''," 49, 577-585.
*Williams, J.E., & Best, D.L. (1990a). Measuring sex stereotypes: A multination study. Newbury Park, CA: Sage.
*Zajonc, R.B. (1965). Social facilitation. ''Science,''149, 269-274.
==সম্পর্কিত তালিকা==
* [[Wikipedia:List of social psychologists|List of social psychologists]]
* [[Wikipedia:List of publications in psychology#Social psychology|Important publications in social psychology]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.socialpsychology.org/ Social Psychology Network ]
* [http://www.spsp.org/ Society for Personality and Social Psychology]
* [http://www.sesp.org/ Society of Experimental Social Psychology]
* [http://www.apa.org/journals/psp.html Journal of Personality and Social Psychology]
* [http://www.uiowa.edu/~grpproc/crisp/crisp.html Current Research in Social Psychology]
* [http://www.trinity.edu/~mkearl/socpsy.html Social Psychology - brief introduction]
* [http://www.ship.edu/~cgboeree/socpsy.html Social Psychology basics]
* [http://groups.yahoo.com/group/social_psychology/ Social Psychology forum]
* [http://www.birchmore.org/html/scapegoating.html Scapegoating Processes in Groups]
* [http://www.portalpsicologia.org/busqueda.jsp?idDisciplina=6 Portalpsicologia.org]
* [http://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
* [http://de.wikipedia.org/wiki/Thomas-Theorem Thomas-Theorem - in German]
* [http://en.wikipedia.org/wiki/William_I._Thomas W.I.Thomas]
{{BookCat}}
glg0aeg52g7rslnd50a19ah0s65k14x
85751
85750
2025-07-06T20:32:57Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
85751
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|সমাজবিজ্ঞান পরিচিতির ভবিষ্যৎ অধ্যায়গুলোর বিষয়বস্তু অনুযায়ী, এই মডিউলটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।}}
'''সামাজিক মনোবিজ্ঞান''' হলো মানুষ কীভাবে একে অপরের সম্পর্কে চিন্তা করে, প্রভাবিত করে এবং সম্পর্ক স্থাপন করে, তার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।
==মডিউল ৫: ইতিবাচক চিন্তার শক্তি==
===নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র===
নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র বলতে বোঝায়, মানুষ কতটা বিশ্বাস করে যে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও কাজের মাধ্যমে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়, অথবা ভাগ্য বা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হয় (মায়ার্স, ৫৬)। কিছু মানুষ মনে করে, তাদের জীবনে যা ঘটে তা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অন্যরা মনে করে, তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও দক্ষতা তাদের জীবনের ঘটনাগুলো নির্ধারণ করে (হান্ট,১৯৯৩, পৃষ্ঠা.৩৩৪)। নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র দুই ধরনের: অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্বাস করে, তারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে। বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা মনে করে, কোনো বাহ্যিক শক্তি তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে।
===শিখিত অসহায়তা বনাম স্ব-নির্ধারণ===
যারা মনে করে তারা নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারা জীবনে অনেক উপকৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণকে উৎসাহিত করে, তা স্বাস্থ্য ও সুখ বাড়ায় (Deci & Ryan, 1987)। বিপরীতভাবে, যারা মনে করে তারা নিয়ন্ত্রণে নেই, তারা সাধারণত বিষণ্ণ হয় এবং তাদের কাজকে অর্থহীন মনে করে। এটিকে বলা হয় শিখিত অসহায়তা। এটি হলো এমন হতাশা ও পদত্যাগ, যা মানুষ বা প্রাণী শিখে যখন তারা বারবার খারাপ ঘটনার উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ অনুভব করে না (Myers, 56)।
===আত্ম-কার্যকারিতার উপর প্রতিফলন===
ইতিবাচক চিন্তার শক্তি
“যদি তুমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করো, তবে ইতিবাচক ফল পাবে” (Myers, 53)। এটি শুধু নিজেকে বোঝানো বা প্রশংসা করার মাধ্যমে ঘটে না। এটি সাধারণত সাফল্য অর্জনের পর ঘটে। ইতিবাচক চিন্তা মানুষকে অনেক কিছু অর্জনে সাহায্য করে। এটি বুঝতে পারলে কিছু পরিস্থিতি এড়ানো যায়। এটি অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
আত্ম-সম্মানের অন্ধকার দিক
বিষণ্নতা ও মাদকাসক্তির মতো ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো নিম্ন আত্ম-সম্মানের ফল। অন্যকে অপমান করা বা সহিংসতা সাধারণত তখন ঘটে, যখন কেউ মনে করে তাদের আত্ম-সম্মান বিপন্ন। অনেকে মনে করে, গুন্ডা বা গ্যাং লিডারদের আত্ম-সম্মান কম। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের আত্ম-সম্মান বেশ উঁচু। উচ্চ আত্ম-সম্মানের অনেক সুবিধা আছে। এটি শিক্ষার্থীদের গ্রেড, চেহারা এবং সামাজিক মর্যাদায় প্রতিফলিত হয়। বিপরীতভাবে, নিম্ন আত্ম-সম্মানের মানুষ বেশি চাপের জীবনযাপন করে। তারা বিষণ্নতা ও মানসিক চাপে ভোগে।
==মডিউল ৮: অযৌক্তিকতার কারণ==
===আমাদের পূর্বধারণা আমাদের ব্যাখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে===
আমাদের পূর্বধারণা আমাদের মন কীভাবে তথ্য গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করে তা নির্দেশ করে। মানুষ বুঝতে পারে না যে পূর্বধারণার প্রভাব কতটা বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্বাসের সমর্থনে প্রমাণ গ্রহণ করে। কিন্তু তারা যে প্রমাণ তাদের বিশ্বাসের বিরোধী, তা সমালোচনা করে। পূর্বধারণা ম্যানিপুলেটও করা যায়। ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের একজন ব্যক্তির মুখের ভাব মূল্যায়ন করতে বলা হয়। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, তারা তার মুখের ভাবকে নিষ্ঠুর বলে মনে করেন। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি নাৎসি-বিরোধী এবং অনেক ইহুদির জীবন বাঁচিয়েছেন, তারা তাকে উষ্ণ ও দয়ালু মনে করেন। এই পরীক্ষা প্রমাণ করে, আমাদের পূর্বধারণা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দৈনন্দিন জীবনেও প্রযোজ্য। কাউকে লাজুক মনে করা থেকে শুরু করে কেউ আমাদের মতো অনুভব করে কিনা তা ভাবা পর্যন্ত, পূর্বধারণা আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করে। যদি আমরা কোনো ধারণাকে বারবার মনে করি, তবে পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার জন্য খুব কম জায়গা থাকে।
===আমরা তথ্যের চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই===
মানুষ প্রায়ই ধরে নেয়, কোনো কিছু সাধারণ কারণ তা সহজে মনে পড়ে। এ কারণে শক্তিশালী গল্প তথ্যের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে (এলিসন & অন্যরা,১৯৯২)। এটিকে বলা হয় প্রাপ্যতা হিউরিস্টিক। এটি মানুষকে পরিস্থিতির বাস্তবতা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ৯/১১-এর হামলা অনেকের মনে স্পষ্ট। তাই অনেকে মনে করে, তারা বাণিজ্যিক ভ্রমণের সময় একই ধরনের ঝুঁকিতে আছে। এটি বাস্তবে তাদের ঝুঁকির চেয়ে বেশি। মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কাহনেমান এই বিশ্বাস সমর্থন করেন। তিনি গবেষণা করেন যে আমাদের মন কীভাবে তথ্য কল্পনা করে এবং পুনরুদ্ধার করে তার উপর ভিত্তি করে ঘটনার সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। যখন আমরা অসম্ভব ঘটনা কল্পনা করি, তখন আমাদের মনের ছবি আমাদের এটির সম্ভাবনা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে ( কেহেনম্যান)।
[http://www.fallacyfiles.org/volvofal.html]
===আমরা সম্পর্ক ও নিয়ন্ত্রণ ভুলভাবে উপলব্ধি করি===
এলোমেলো ঘটনায় শৃঙ্খলার সন্ধান আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। এটি আমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে।
===ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক===
যখন আমরা উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক আশা করি, তখন আমরা প্রায়ই এলোমেলো ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য এলোমেলো ঘটনাগুলোকে ভুলভাবে উপলব্ধি করে (ক্রুকার, ১৯৮১)। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে বা কোনো পূর্বাভাস কোনো ঘটনার সাথে সম্পর্কিত, তবে আমরা তাদের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। কিন্তু আমরা যে ঘটনাগুলো ঘটে এবং সম্পর্কিত নয়, তা উপেক্ষা করি। মন যখন ভ্রান্তিমূলক উপলব্ধি ও সম্পর্ক তৈরি করে, তখন এটি আমাদের ধারণা দেয় যে এলোমেলো ঘটনাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের অধীন। এটিকে বলা হয় নিয়ন্ত্রণের ভ্রম। ১৯৭৭ সালে এলেন ল্যাঙ্গারের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিজেরা লটারির নম্বর বেছে নিয়েছিল, তারা তাদের টিকিটের মূল্য চারগুণ বেশি দাবি করেছিল। কারণ তারা নিজেরাই নম্বর বেছে নিয়েছিল। জুয়াড়িরা তাদের জয়কে তাদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কৃতিত্ব দেয় (গিলোভিচ & ডগলাস,১৯৮৬)।
===গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন===
নিয়ন্ত্রণের ভ্রম আরেকটি পরিসংখ্যানগত ঘটনার জন্য দায়ী, যাকে বলা হয় গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন। টভারস্কি ও কাহনেমান উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার স্কোর কখনো কখনো ভাগ্যের কারণে ওঠানামা করে। টিউটররা শিক্ষার্থীর উন্নতির কারণ নাও হতে পারে। যারা প্রথমে ভালো স্কোর করে, তারা সাধারণত গড়ের দিকে ফিরে আসে। যারা প্রথমে খারাপ করে, তারা প্রায়ই টিউটরিং ছাড়াই উন্নতি করে। এটি দেখায় যে আমরা গড়ের দিকে ফিরে যাই। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। বেসবল খেলোয়াড়দের ব্যাটিং গড় বা রান গড়ের মতো ক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রায়ই তাদের দক্ষতাকে অতিরঞ্জিত করে। কিন্তু এরপর তারা গড়ের দিকে ফিরে যায় (গাল্টন)।
[http://www.economics.pomona.edu/GarySmith/BBregress/baseball.html]
===আমাদের বিশ্বাস নিজেদের নিশ্চিতকরণ তৈরি করে===
রবার্ট রোজেনথালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ কখনো কখনো তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জীবনযাপন করে। যখন অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল যে তাদের একটি ছবির উচ্চ রেটিং দেওয়া উচিত, তারা তা করেছিল। যাদের বলা হয়েছিল ছবিটি ব্যর্থ, তারা কম রেটিং দিয়েছিল। এটি স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শন করে। শিক্ষকদের কি একই প্রত্যাশা থাকে? শিক্ষকদের প্রত্যাশা কি শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে? শিক্ষকরা কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চ মান ধরে রাখেন এবং যারা ভালো করে তাদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন (জাস্সিম & অন্যরা,১৯৯৬)। নিম্ন প্রত্যাশা সবসময় গড় শিশুকে নিরুৎসাহিত নাও করতে পারে। কিন্তু শিক্ষকের উচ্চ প্রত্যাশা কোনো শিশুর সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শিত হয়েছে। ৪৮ থেকে ৬২ বছর বয়সী পুরুষ ও নারীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। একটি গ্রুপ ৭০ বা তার বেশি বয়সীদের বিরুদ্ধে স্মৃতি পরীক্ষায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ ২০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে পরীক্ষা দেয়। তৃতীয় গ্রুপ কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা তরুণদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা গড়ে ১৪টি শব্দ মনে করেছিল। যারা কোনো প্রতিযোগিতায় ছিল না, তাদের ফলাফল একই ছিল। যারা বয়স্কদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা সবচেয়ে কম শব্দ মনে করেছিল। সম্ভবত, বয়স্ক গ্রুপের সাথে থাকার মানসিক ধারণা তাদের অজান্তেই ভাবিয়েছিল যে বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়। এই স্টিরিওটাইপ তাদের পরীক্ষার ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল (ক্যারি)। উচ্চ মান ধরে রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। যে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনা দেখেন, তারা তাদের প্রতি বেশি হাসেন, মাথা নাড়েন, প্রশ্ন করেন এবং উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি সময় দেন (কুপার, ১৯৮৩)।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষক সম্পর্কে প্রত্যাশা ক্লাসের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যে শিক্ষার্থী শিক্ষক সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে ক্লাসে যায়, সে ক্লাসকে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে। যার প্রত্যাশা কম, তার কাছে ক্লাস কম আকর্ষণীয় মনে হয় (ফেল্ডম্যান & থেইসস, ১৯৮২)।
===আমরা কি অন্যদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করি তা পাই?===
অনেক সময় আমরা অন্যদের দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি করি, এমনকি তাদের না জেনেই। এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত বা ধারণা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে কিছু বলে। আমরা একটি ধারণা তৈরি করি এবং সিদ্ধান্ত নিই যে তারা কেমন মানুষ। আমরা মানুষের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, তারা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমরা যে আচরণ চাই, তা আমাদের ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যদি কেউ দয়ালু, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সুস্থির হয়, তবে তারা অন্যদের কাছে তা প্রতিফলিত করে। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করি, অন্যরা তা ফিরিয়ে দেবে। সাফল্যের জন্য প্রত্যাশা স্থাপন মানুষকে তা পূরণ করতে উৎসাহিত করে। একজন কর্মী উচ্চ প্রত্যাশা পেলে বেশি অর্জন করতে পারে। কাউকে অভদ্র মনে করলে আমরা তাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করি। এটি তাদের প্রতিক্রিয়াকে আমাদের প্রত্যাশার দিকে নিয়ে যায়।
===উপসংহার===
আমরা আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী জিনিসগুলোকে সত্য মনে করি। আমরা অন্যদের আমাদের চিন্তার সাথে সামঞ্জস্য করতে প্ররোচিত করতে পারি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক বা ভুল হতে পারে। আমাদের মন বিচারপ্রবণ। আমাদের বিচার বা সিদ্ধান্তের ফলাফল যাই হোক, আমাদের মন যেভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তা আশ্চর্যজনক। এটি প্রায়ই ভুল ধারণা ও কঠোর বিচারের দিকে নিয়ে যায়। প্ররোচনা এত সহজ হতে পারে যে এটি মনের একটি সাধারণ চিত্র বা সংবাদ শুনে ঘটতে পারে।
==মডিউল ১০: ক্লিনিকাল স্বজ্ঞা==
'''ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক, পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪'''
প্রায়ই আমরা দুটি অনন্য এবং সম্পর্কহীন ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক ধরে ফলাফলের পূর্বাভাস দিই। এই ঘটনাগুলো সঠিক বা অনুপযুক্ত সময়ে একত্রিত হয়। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্কের ঘটনা বোঝার জন্য আমি আমার নিজের পরিবেশের দিকে তাকিয়েছি। গত সপ্তাহে এক রোদেলা সকালে আমি রাস্তা পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা পাচ্ছিলাম। আমি বুঝলাম, আমি অনেকদিন গাড়ি ধোয়নি। তাই আমি ভাবলাম, কেন একটি এক্সপ্রেস ওয়াশে গাড়িটি ধুয়ে না? আমি তাই করলাম এবং রাস্তায় ফিরে গেলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্দেশে, সেই বিকেলে একটি ঠান্ডা ফ্রন্ট এলো এবং প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো। গাড়ি ধোয়ার পর কেন সবসময় বৃষ্টি হয়? আমার স্ত্রী, যিনি শিশু প্রসবের কাজ করেন, পূর্ণিমার সময় ডিউটি নিতে ভয় পান। কারণ তিনি মনে করেন, এই সময়ে বেশিরভাগ নারী প্রসব বেদনায় যান। এটি তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাজ করতে এবং সপ্তাহান্তে ঘুমের অভাবে কষ্ট পেতে হয়। যদি আমি পরীক্ষা করতাম যে গাড়ি ধোয়ার পর কতবার বৃষ্টি হয়েছে, তবে দেখতাম, বেশিরভাগ সময় দিনটি সুন্দর ছিল। আমার স্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু আমি মনে করতে পারি, পূর্ণিমার সময় অনেকবার তিনি কোনো ফোন কল পাননি। লরেন চ্যাপম্যান ও জিন চ্যাপম্যান (১৯৬৯, ১৯৭১) গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক বৈধ মনো-নির্ণয়ের চিহ্ন ব্যবহারে বাধা। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণা ডি. এল. হ্যামিল্টন ও আর. কে. গিফোর্ড (১৯৭৬)-এর কাজের উপর ভিত্তি করে। এটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আরও সঠিক বিচার পাওয়া যায়। ক্লিনিশিয়ানরা মানুষ হিসেবে পর্যবেক্ষিত আচরণের ফ্রিকোয়েন্সির উপর ভিত্তি করে বিচার করতে পারেন। কিছু আচরণ একই রকম হলেও তা এক নয়। এই পর্যবেক্ষণগুলোকে সম্পর্কিত বলে ভুল বোঝা প্রায়ই ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়।
===পশ্চাৎদৃষ্টি, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫===
শৈশবে কতবার আপনি এমন কিছু করার জন্য শাস্তি পেয়েছেন, যা আপনার করা উচিত ছিল না? তখন আপনার ছোট ভাই বা বোন বলেছে, “আমি তো বলেছিলাম!” এটি খুব কষ্টদায়ক ছিল, কারণ তারা ঠিক ছিল। পশ্চাৎদৃষ্টি, বা “আমার আগেই জানা উচিত ছিল” ঘটনা, আমরা প্রতিদিন অনুভব করি। এটি আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি ঘটে। গগিন ও রেঞ্জ (১৯৮৫) আত্মহত্যার শিকারের পরিবার, বন্ধু ও পরিচিতদের দৃষ্টিকোণ থেকে পশ্চাৎদৃষ্টি পরীক্ষা করেছেন। সাধারণ প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে, মানুষ আত্মহত্যার শিকারের পরিবারকে কিছুটা দায়ী মনে করে। ম্যাকইনটোশ ও কেলি (১৯৯২) রিপোর্ট করেছেন, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক মৃত্যুর বেঁচে থাকাদের শোকের প্রতিক্রিয়ায় বেশি মিল রয়েছে। তারা দোষ বা সামাজিক সমর্থনের কোনো পার্থক্য পায়নি। কিন্তু আত্মহত্যার বেঁচে থাকারা তিনটি বিষয়ে আলাদা। তারা বেশি মানুষকে দোষ দেয়, কলঙ্কিত বোধ করে এবং মনে করে তারা কিছু করে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারত। আমি একজন পরিবারের বন্ধুর আত্মহত্যার অভিজ্ঞতা পেয়েছি। আমি দোষের অনুভূতি মনে করি। কিন্তু কোনো স্পষ্ট লক্ষণ বা সতর্কতা ছিল না যে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ক্লিনিকাল বিচারের ক্ষেত্রে, পশ্চাৎদৃষ্টি ক্লিনিশিয়ানদের ভুলের দিকে নিয়ে যায়। নির্ণয়কে অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা প্রকৃত সমস্যাকে ভুল বোঝার দিকে নিয়ে যায়।
===স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়, পৃষ্ঠা ১০৫-১০৭===
হারিয়ে যাওয়া চাবি বা মোজার জোড়া খুঁজতে গিয়ে বেশ হতাশা হয়। ক্লিনিকাল পরিবেশে, ক্লিনিশিয়ানদের কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করা উচিত তা জানা উচিত নয়। সৎ বিচারের জন্য এটি প্রয়োজন। পূর্বানুমানমূলক প্রশ্ন সাক্ষাত্কারকারীকে তার পছন্দের নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আচরণের ধরণ স্পষ্ট করে না। স্নাইডার ও স্বান (১৯৭৮) একটি পরীক্ষায় প্রমাণ করেছেন, একবার তথ্য পাওয়ার পর এবং তা অবৈধ বলা হলেও, মানুষের মনে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা কঠিন। এটি বিচারে ভুল এবং ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আমাকে একজন সচেতন আইনজীবীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আদালতে ঘোষণা করেন যে তার মক্কেল সব অভিযোগে দোষী। বিচারক জুরির দিকে তাকিয়ে বলেন, “সর্বশেষ মন্তব্যটি উপেক্ষা করুন।” এটি প্রায় অসম্ভব।
===ক্লিনিকাল বনাম পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী, পৃষ্ঠা ১০৭-১০৮===
অনেক ক্লিনিশিয়ান ও সাক্ষাত্কারকারী পশ্চাৎদৃষ্টি ও স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়ের ভুল করেন। এটি তাদের নিজেদের ভবিষ্যদ্বাণীর উপর বেশি আত্মবিশ্বাসী করে। এটি পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণীর তুলনায় কম নির্ভরযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, হাইস্কুলের জিপিএ ব্যবহার করে কলেজে শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্স ভবিষ্যদ্বাণী করা। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী মানুষের স্বজ্ঞার চেয়ে বেশি সঠিক। পল মীল (১৯৮৬) লিখেছেন, ফুটবল খেলার ফলাফল থেকে লিভার রোগের নির্ণয় পর্যন্ত ৯০টি তদন্তে পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী বেশি সঠিক। ক্লিনিশিয়ানদের পক্ষে মাত্র কয়েকটি গবেষণা দুর্বল প্রমাণ দেয়। এই গবেষণা সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা স্বজ্ঞা ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ডেভিস (১৯৭৬) বলেন, সাক্ষাত্কারকারীরা তাদের স্বজ্ঞার উপর নির্ভর করে। এটি কলেজে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান জিপিএ-এর মতো পরিসংখ্যানগত তথ্যের চেয়ে কম সঠিক। তিনি বলেন, “আপনি এবং আমি, একটি ফোল্ডার দেখে বা আধা ঘণ্টা সাক্ষাত্কার নিয়ে, ২০-৪০ জন অধ্যাপকের ৩.৫ বছরের ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের চেয়ে ভালো ধারণা তৈরি করতে পারি না।”
===প্রভাব, পৃষ্ঠা ১০৮-১০৯===
ক্লিনিশিয়ানরা ভুল করেন এবং পক্ষপাতিত্ব দেখান। উদাহরণস্বরূপ, যখন তারা কোনো সম্পর্ক দেখতে চান, তারা তা প্রমাণ করার জন্য প্রমাণ খোঁজেন। তারা মনে করেন তাদের স্বজ্ঞাগত ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবের চেয়ে বেশি সঠিক। ভুল ভবিষ্যদ্বাণী এড়াতে কিছু উপায় আছে। পশ্চাৎদৃষ্টি এড়াতে হবে, কারণ এটি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যা আপনার পছন্দের উত্তরের দিকে নিয়ে যায়। আপনার মূল চিন্তাকে ভিন্ন ধারণার সাথে পরীক্ষা করুন। এই পক্ষপাত ও ভুলগুলো দেখায়, মনোবিজ্ঞান জ্ঞানের সমুদ্র থেকে মাত্র এক ফোঁটা তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই জ্ঞানের অভাব পূরণ করতে কিছু মনোবিজ্ঞানী তত্ত্ব তৈরি করেন। এটি আমাদের অজ্ঞতাকে আরও বাড়ায়। বিজ্ঞান সত্য খোঁজার একটি উপায়। এটি সবসময় মানুষের স্বজ্ঞার সাথে যুক্ত থাকবে।
==মডিউল ১১: ক্লিনিকাল থেরাপি: সামাজিক জ্ঞানের শক্তি==
===সামাজিক জ্ঞান এবং বিষণ্নতা, পৃষ্ঠা ১১১-১১৬===
বিষণ্নতার ক্ষেত্রে মানুষ বোঝে না যে তারা কী কী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়। চিকিৎসকদের জন্য বিষণ্নতার নির্ণয় কঠিন হতে পারে, কারণ এটি জটিল। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বিষণ্নতা হঠাৎ দেখা দেয়। এর কোনো শুরু বিন্দু নাও থাকতে পারে। কিন্তু এটি বোঝার উপায় আছে।
ব্যাখ্যামূলক শৈলী এমন একটি উপায়। (পিটারসন &স্টিন , ২০০২; সুইনি &অন্যরা , ১৯৮৬)। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে বিষণ্নতা কীভাবে কাজ করে। বিষণ্ণ মানুষ সাধারণত জিনিসের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক দুটোই দেখে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা শুধু ইতিবাচক দিক দেখে। বিষণ্ণ ব্যক্তির জীবনে কিছু নেতিবাচক ঘটলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে দায়ী করে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা ব্যর্থতার জন্য অন্য কিছুকে দায়ী করে। বিষণ্নতার ক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন সবসময় মনে আসে: বিষণ্ণ মেজাজ কি নেতিবাচক চিন্তার কারণ? নাকি নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্ণ মেজাজের কারণ? সাধারণত আমরা ধরে নিই, নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্নতার কারণ। এটি সত্য। কিন্তু এটি দুটোই হতে পারে। আমাদের মেজাজ আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। ভালো মেজাজে আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের খারাপ ঘটনাগুলো মনে করি। তখন আমরা সেগুলো উপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এখন হঠাৎ সেগুলো নিয়ে বিষণ্ণ হই। নেতিবাচক চিন্তাও বিষণ্ণ মেজাজের কারণ হতে পারে। ধরুন, আপনি নতুন চাকরি শুরু করলেন। প্রথম যে ব্যক্তির সাথে দেখা হলো, তিনি দুঃখী ও বিষণ্ণ। পরের ব্যক্তিও একই রকম। তৃতীয় ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়ার আগে আপনি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারেন। এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবায়, বিষণ্নতা কীভাবে ঘোরে? এটি কীভাবে শুরু হয়? এটি কোথায় শেষ হয়? এটি কি শেষ হয়? বিষণ্নতার চক্র আমাদের এই প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের মেজাজ, ভালো বা খারাপ, আমাদের চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত করে। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের ঘটনাকে ভিন্নভাবে মনে করি। এটি মানুষের আমাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণকেও প্রভাবিত করে। আমরা যদি দুঃখী ও হতাশ দেখাই, তবে মানুষ আমাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করে। নিচে বিষণ্নতার চক্র এবং এটি কীভাবে বিকশিত হয় তা দেখানো হয়েছে। (পিটার লুইনসন)(১৯৮৫)[http://www.alanpriest.f2s.com/images/Cycle_of_Depression.JPG] এই সব কারণে চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করেন। তারা ব্যক্তির চিন্তাভাবনার দিকে বেশি মনোযোগ দেন, তাদের আচরণের চেয়ে। তারা কীভাবে নিজের জীবন ও অন্যদের জীবন দেখে তাও বিবেচনা করে। এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে পারেন।
===সামাজিক জ্ঞান এবং একাকীত্ব, পৃষ্ঠা ১১৬-১১৮===
একাকীত্ব এমন একটি অনুভূতি, যা বেশিরভাগ মানুষ জীবনে অন্তত একবার অনুভব করে। এটি প্রায়ই অজান্তেই ঘটে। একাকী বোধ করা এবং শারীরিকভাবে একা থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে। একাকীত্ব প্রায়ই বিষণ্নতার সাথে যুক্ত। কিন্তু সবসময় নয়। এই দুটির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উচ্চ। এটি একটি নেতিবাচক সম্পর্ক, যা ০.৫-এর বেশি (এন্ডারসন প্রমুখ. ১৯৯৪: ৫৪৯-৫৫৭)।
একাকীত্বও বিষণ্নতার মতো একটি চক্র। যারা একাকী বোধ করে, তারা লাজুকভাবে মানুষের কাছে যায়। একাকীত্ব তাদের অপ্রতুল বোধ করায়। তারা মনে করে, তাদের একাকীত্বের জন্য তারাই দায়ী। “একটি সম্পর্ক অধ্যয়ন স্ব-দোষারোপের ধারণাকে আরও সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি দেখিয়েছে, আচরণগত এবং চরিত্রগত স্ব-দোষারোপ বিষণ্নতা এবং একাকীত্বে অনন্যভাবে অবদান রাখে” (549)। এই স্ব-দোষারোপের কারণে মানুষ একাকীত্বের চক্রে পড়ে। এটি থেকে বের হওয়া কঠিন। মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস তাদের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্দিষ্ট ফলাফল দেয়, যা তাদের পূর্বের চিন্তাকে শক্তিশালী করে (এন্ডারসন প্রমুখ.)।
===সামাজিক জ্ঞান এবং উদ্বেগ, পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯===
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বিভিন্ন কারণে ঘটে। এর বেশিরভাগই ভয় থেকে উৎপন্ন। সামাজিক মূল্যায়নের ভয়, স্ব-প্রকাশের ভয়, এবং অন্যদের মূল্যায়ন করার ভয়। লাজুকতা এবং উদ্বেগের মধ্যে উচ্চ সম্পর্ক রয়েছে। এটি ০.৭৫ (অ্যাসেনডর্প ১৯৮৭: ৫৪২-৫৪৯)। লাজুক মানুষ অলাজুক মানুষের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়।
===চিকিৎসার জন্য সামাজিক-মনোবৈজ্ঞানিক পন্থা, পৃষ্ঠা ১২০-১২২===
মনোবিজ্ঞানী চিকিৎসকরা রোগীর চিন্তাভাবনা ও মনোভাব পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। তারা প্রথমে রোগীর আচরণ সামঞ্জস্য করে। এই পদ্ধতিগুলো সহায়ক পরিবেশে, যেমন সাপোর্ট গ্রুপ বা স্ব-সহায়ক গ্রুপে, প্রয়োগ করা হয়। আচরণ থেরাপিস্টরা একটি কৌশল ব্যবহার করেন। এতে একজন ব্যক্তি সহায়ক দর্শকদের সামনে নতুন মৌখিক বা শারীরিক আচরণ প্রদর্শন করে। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। যুক্তিবাদী-আবেগীয় থেরাপি অনুসারে, আমরা নিজেরাই আমাদের আবেগ তৈরি করি। স্ব-সহায়ক গ্রুপ এটি ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের নতুন আচরণ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ নিজের সম্পর্কে যা বলে তা তাদের আবেগকে প্রভাবিত করতে পারে (মিরেলস ১৯৭৭: ১১৩২-১১৩৩)। আত্ম-মূল্য, সুখ এবং একত্রতার মতো ইতিবাচক আবেগ ইতিবাচক অভিজ্ঞতার চক্রের মাধ্যমে বজায় রাখা যায়। বিপরীতভাবে, দুঃখ, রাগ এবং হতাশার মতো নেতিবাচক আবেগ নেতিবাচক ঘটনার চক্রে বজায় থাকে। নেতিবাচক চক্র থেকে মানুষকে বের করতে পরিবেশ পরিবর্তন করতে হয়। ভালো আচরণকে উৎসাহিত করতে হয়। তাদের জ্ঞানগতভাবে ইতিবাচক হতে হয়। নেতিবাচক আবেগ কল্পনার ফসল নয়। এটি সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রকাশ পায়। সাপোর্ট গ্রুপে নতুন আচরণ পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা যায়। তখন ব্যক্তি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও কার্যকরভাবে সাড়া দিতে পারে। ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলতে পারে। ফলে তারা ভালো সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকে এবং ইতিবাচকভাবে আচরণ করে। ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপি একটি প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে। এতে ব্যক্তি তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে, যা তাদের আবেগ পরিবর্তন করে। তারা তাদের ক্রিয়া ও ফলাফলকে সংজ্ঞায়িত করতে শেখে। এটি তাদের পরিস্থিতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম করে। এমনকি ফলাফল নেতিবাচক হলেও, তারা জানে তারা কী ভুল করেছে বা বাহ্যিক কারণ কী ছিল। এটি তাদের নেতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক অনুভব করতে দেয়। ভালো সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ প্রায়ই নিজেদের সামাজিকভাবে অপ্রতুল মনে করেন। এটি তাদের পরিবেশ বা সামাজিক পরিস্থিতির নেতিবাচক উপাদানের কারণে হয়। এই ধরনের ব্যক্তিকে তাদের নেতিবাচক বিশ্বাস উল্টে দিতে সাহায্য করা যায়। এটি ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপির লক্ষ্য। এই থেরাপি ব্যক্তিকে এমন সর্ব-ইতিবাচক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করে না, যাকে সবাই সব পরিস্থিতিতে প্রশংসা করে। প্রতিটি চক্রে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পর্যায় থাকে। ইতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং নেতিবাচক ঘটনায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। এই অর্থে, নেতিবাচক স্ব-ধারণা পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর, স্বাভাবিক এবং অস্থায়ী।
==মডিউল ১৩: লিঙ্গ, জিন এবং সংস্কৃতি==
===লিঙ্গ পার্থক্য===
লিঙ্গ পার্থক্য কি প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা নির্ধারিত? নাকি এটি পৃথক সংস্কৃতির দ্বারা নির্দেশিত? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের সংস্কৃতি পুরুষ ও নারীর উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা পরীক্ষা করতে হবে। শৈশবে সাংস্কৃতিক প্রভাবের পার্থক্য দেখা যায়। ছেলেরা তাদের যত্নকারীর সাথে বিচ্ছেদ খোঁজে। মেয়েরা তাদের সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় দেয়। এই লিঙ্গ পার্থক্য প্রাপ্তবয়স্কতায়ও থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রুপ পরিস্থিতিতে পুরুষরা কাজের উপর মনোযোগ দেয়। নারীরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর বেশি মনোযোগ দেয় (Gabriel & Gardner, 1999)।
সহানুভূতি প্রকাশ বা অন্যের অনুভূতি নিজের মতো অনুভব করার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ পার্থক্য রয়েছে। কেউ দুঃখে থাকলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি আবেগ প্রকাশ করে, যেমন কান্না। এই পার্থক্য সম্ভবত নারীদের অ-মৌখিক ইঙ্গিতের প্রতি উচ্চতর সংবেদনশীলতার কারণে। এটি তাদের আবেগীয় বার্তা সহজে বোঝতে সাহায্য করে।
===সামাজিক প্রভাব===
জন উইলিয়ামস ও ডেবোরা বেস্টের মতে, পুরুষরা বেশি প্রভাবশালী এবং আক্রমণাত্মক (John Williams and Deborah Best, 1990 a.p.15)। এমন কোনো সমাজের প্রমাণ নেই যেখানে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী (Pratto, 1996)। সময়ের সাথে লিঙ্গ পার্থক্য কমছে। নারীরা বেশি ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন।
====আগ্রাসন====
মনোবিজ্ঞানীরা আগ্রাসনকে এমন আচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন, যার উদ্দেশ্য অন্যকে ক্ষতি করা (Myers, 2004)। জরিপে দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আগ্রাসনের কথা স্বীকার করে।
====যৌনতা====
বিষয়গত এবং শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ “ভিন্নতার চেয়ে বেশি মিল” (Griffitt, 1987)। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪৮% পুরুষ এবং ১২% নারী বিভিন্ন সঙ্গীর সাথে নৈমিত্তিক যৌনতায় আরাম ও আনন্দ অনুভব করতে পারে। তারা কতবার যৌনতা নিয়ে ভাবে? ধারণা করা হয়, ১৯% নারী এবং ৫৪% পুরুষ প্রতিদিন বা দিনে কয়েকবার যৌনতা নিয়ে ভাবে (Laumann & others, 1994)।
===বিবর্তন এবং লিঙ্গ: স্বাভাবিকভাবে যা আসে তা করা?===
====লিঙ্গ এবং সঙ্গী নির্বাচনের পছন্দ====
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীদের একটি তত্ত্ব বলে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক এবং প্রভাবশালী। কারণ তারা নারীদের ডিমের তুলনায় অনেক বেশি শুক্রাণু উৎপাদন করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন পুরুষদের আচরণ বেশি আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী। পুরুষরা তাদের জিন ছড়িয়ে দিতে এবং যতটা সম্ভব নারীকে গর্ভবতী করতে চায়। বিপরীতভাবে, নারীরা এমন একজন পুরুষ খোঁজে, যিনি তাকে এবং তার সন্তানকে সমর্থন ও যত্ন নিতে পারে। বিবর্তন পুরুষদের আচরণের কারণ বলে মনে করা হয়। শারীরিকভাবে প্রভাবশালী পুরুষরা বেশি নারীকে আকর্ষণ করে। এটি মনে হয় তারা ভালো সমর্থন ও যত্ন দিতে পারে। এটি অন্য পুরুষদের আরও আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী হতে বাধ্য করে। নারীরা সঙ্গী হিসেবে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত বা সফল পুরুষদের খোঁজে। নারীরা মডেলের মতো সৌন্দর্য পেতে অনাহার পর্যন্ত সহ্য করে। এটি পুরুষরা চায়। নারীরা ধনী বা প্রভাবশালী পুরুষদের পছন্দ করে, কারণ তারা তাদের সন্তানদের জন্য বেশি সরবরাহ করতে পারে।
====লিঙ্গ এবং হরমোন====
অনেকে বিশ্বাস করে, যৌন হরমোন, প্রধানত টেস্টোস্টেরন, লিঙ্গ পার্থক্যের মূল উপাদান। টেস্টোস্টেরন পুরুষালি বৈশিষ্ট্য এবং আগ্রাসনকে প্রভাবিত করে। সহিংস পুরুষ অপরাধীদের সাধারণত উচ্চ টেস্টোস্টেরন মাত্রা থাকে। এটাও লক্ষ্য করা যায়, বেশিরভাগ পুরুষ বয়স বাড়ার সাথে সাথে কম আক্রমণাত্মক হয়। তখন তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কমে যায়।
===বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপর প্রতিফলন===
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান ব্যবহার করে তত্ত্ব ব্যাখ্যা করার সময় দুটি সমস্যা দেখা দেয়: পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত এবং সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ। পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত হলো ইতিহাস পরীক্ষা করে এবং পিছিয়ে গিয়ে আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা বলি নারীরা শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক, তবে পশ্চাৎদৃষ্টিতে বলতে পারি, এটি তাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন ছিল (Myers, 2004)। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ বিবর্তনীয় ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষা করে। এটি আন্তঃসাংস্কৃতিক এবং প্রাণী আচরণ পর্যবেক্ষণ, হরমোন এবং জিনগত অধ্যয়ন ব্যবহার করে (Myers, 2004)। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীরা একমত যে বিবর্তন আমাদের মিল এবং পার্থক্যের কিছু ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু তারা মনে করেন না যে বিবর্তন একমাত্র সাংস্কৃতিক আচরণের পার্থক্য ভবিষ্যদ্বাণী করে (Myers, 2004)।
===সংস্কৃতি এবং লিঙ্গ===
সংস্কৃতি হলো ধারণা, আচরণ, মনোভাব এবং ঐতিহ্য, যা একটি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়। একটি সংস্কৃতির মধ্যে নির্দিষ্ট আচরণগত প্রত্যাশা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, লিঙ্গ ভূমিকা। এটি এমন আচরণ, যা সংস্কৃতি নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে (Myers, 2004)।
===লিঙ্গ ভূমিকা সংস্কৃতি এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়===
গত শতাব্দীর শেষার্ধে লিঙ্গ ভূমিকা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩৮ সালে মাত্র ২০% আমেরিকান একমত ছিলেন যে বিবাহিত নারী শিল্প ও ব্যবসায় অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে ৮০% আমেরিকান এটি সমর্থন করেছেন। এটি প্রমাণ করে, সময় আমেরিকান সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে (Niemi & others, 1989; NORC, 1996)। এই মphysics://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
এই মনোভাব পরিবর্তনের সাথে আচরণগত পরিবর্তনও এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬০ সাল থেকে ৪০ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার দ্বিগুণ হয়েছে (Bureau of the Census, 1999)। এটি স্পষ্ট যে শুধু বিবর্তন এবং জীববিজ্ঞানই লিঙ্গ ভূমিকা পরিবর্তন করে না। সংস্কৃতিও লিঙ্গ ভূমিকাকে প্রভাবিত করে (Myers, 2004)।
===উপসংহার: জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি===
জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি উভয়ই আমাদের মনোভাব ও আচরণকে প্রভাবিত করে। জিন আমাদের নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতি এই আচরণগুলোকে আরও জোরালো করে। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। জীববিজ্ঞানের প্রভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে (Myers, 2004)। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ (পরিবেশ) নির্দিষ্ট জিনগত বৈশিষ্ট্যের মানুষের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক নিয়ম হলো, পুরুষদের তাদের নারী সঙ্গীর চেয়ে লম্বা হওয়া উচিত। একটি গবেষণা অনুসারে, ৭২০ জন দম্পতির মধ্যে মাত্র ১ জন এই সাংস্কৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল (Gillis & Avis, 1980)। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির এই পারস্পরিক সম্পর্ককে মনোবৈজ্ঞানিকভাবে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। পশ্চাৎদৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বলতে পারি, পুরুষ যখন নারীর চেয়ে লম্বা হয়, তখন নারীদের উপর সামাজিক ক্ষমতা বজায় থাকে। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করলে, যদি সঙ্গীরা সমান উচ্চতার সঙ্গী পছন্দ করত, তাহলে লম্বা পুরুষ এবং ছোট নারীদের সঙ্গী থাকত না। অতএব, দম্পতিদের উচ্চতার সাংস্কৃতিক নিয়ম জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হতে পারে। কারণ এটা স্পষ্ট যে বিবর্তন লম্বা পুরুষদের সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কৃতি দম্পতিদের জন্য একই নিয়ম নির্ধারণ করেছে (Myers, 2004)।
==মডিউল ২১: ব্যক্তির ক্ষমতা==
===ব্যক্তি এবং পরিস্থিতির পারস্পরিক সম্পর্ক===
- পারস্পরিক সম্পর্ক তিনটি উপায়ে ঘটে। প্রথমত, যেকোনো সামাজিক পরিস্থিতি প্রত্যেককে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। আমরা সবাই ভিন্নভাবে দেখি এবং চিন্তা করি। তাই আমরা পরিস্থিতি যেভাবে উপলব্ধি করি, তার ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেখাই। কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল। দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সাধারণত ঘটে কারণ মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি বেছে নেয় এবং তার জন্য দায়ী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, শান্ত মানুষ শান্ত বা অসামাজিক পরিবেশ বেছে নিতে পারে। আরেকটি উদাহরণ হলো, মানুষ যখন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্বাচন করে; রক্ষণশীল মানুষ সম্ভবত উদারপন্থী কলেজে ভর্তি হবে না। তৃতীয়ত, প্রায়শই মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা কাউকে অসৌজন্যমূলক মনে করি বা প্রত্যাশা করি, তবে আমরা তাকে যেভাবে আচরণ করি, তা তাকে অসৌজন্যমূলক বা দূরবর্তী আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। আমাদের সামাজিক পরিবেশ আমরা যা তৈরি করি, তাই।
- আমাদের পরিবেশের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো বা কাজ করার বিষয়ে বিতর্কও উঠে। এক দৃষ্টিকোণ থেকে, নিজেকে পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা এবং অন্যদের “স্বাধীন কার্যকর্তা” হিসেবে দেখা যুক্তিযুক্ত। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, এর বিপরীতটাও যুক্তিযুক্ত হতে পারে; নিজেকে কার্যকর্তা এবং অন্যদের পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা অন্যদের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে দেখি, তবে আমরা তাদের বোঝার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আমরা শুধু বলব না যে তারা অলস বা দুর্নীতিগ্রস্ত। উপসংহারে, আমরা আমাদের পরিবেশ এবং সামাজিক জগতের ফল এবং স্রষ্টা উভয়ই।
===সামাজিক চাপ প্রতিরোধ===
====প্রতিক্রিয়াশীলতা====
প্রতিক্রিয়াশীলতার বহুল সমর্থিত তত্ত্ব বলে, “মানুষ তাদের স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা করতে কাজ করে” (Myers, 229)। পরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষ প্রায়ই তাদের স্বাধীনতা প্রকাশ করতে প্রত্যাশার বিপরীত কাজ করে। স্বাধীনতা সব ব্যক্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রায়ই বিদ্রোহ করে যখন মনে করে তাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নাবালকদের মদ্যপান। জরিপে দেখা গেছে, আইনি মদ্যপানের বয়সের নিচে থাকা মানুষ বেশি মাত্রায় মদ্যপান করে, তুলনায় আইনি বয়সের উপরে থাকা মানুষের তুলনায় (Engs & Hanson, 1989)। আরেকটি উদাহরণ হলো, ধর্ষণের কাজ। ধর্ষণের সময় একজন পুরুষ বা নারী অনুভব করতে পারে যে তাদের স্বাধীনতা সঙ্গীর প্রত্যাখ্যানের দ্বারা সীমিত হচ্ছে।
====অনন্যতা প্রকাশ====
“মানুষ অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা অন্যদের থেকে খুব আলাদা মনে হয়..... তারা একইভাবে অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা সবার মতো মনে হয়” (Myers, 230)। ব্যক্তিরা নিজেদের অনন্য মনে করলে উচ্চ মর্যাদা অনুভব করে। কিন্তু তারা এতটা আলাদা হতে চায় না যে তারা বহিষ্কৃত মনে হয়। এই অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা শিশুদের নাম নির্বাচনে স্পষ্ট। শিশুরাও অনেকভাবে অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ম্যাকগুয়ার এবং তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অন্যদের সম্পর্কে বলতে বলা হলে তারা প্রায়ই নিজেদের সম্পর্কে কিছু অনন্য কথা বলে।
ব্যক্তিরা তাদের পার্থক্য বিশেষ করে লিঙ্গের পার্থক্যের ক্ষেত্রে স্বীকার করে (Cota & Dion, 1986)। উদাহরণস্বরূপ, একটি লিঙ্গের মানুষ বিপরীত লিঙ্গের মাঝে থাকলে তাদের পার্থক্য বেশি লক্ষ্য করে। এটি আমাদের বোঝায় কীভাবে সংখ্যালঘুরা তাদের পার্�thক্য এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়।
“যখন দুটি সংস্কৃতির মানুষ প্রায় একই রকম হয়, তখনও তারা তাদের পার্থক্য লক্ষ্য করে, যত ছোটই হোক” (Myers, 231)। এক পক্ষের অন্য পক্ষের প্রতি বেশি সংশ্লিষ্টতা থাকলে সাধারণত বৈরিতা বেশি হয়।
===সংখ্যালঘু প্রভাব===
সংখ্যালঘুকে কী প্রভাবশালী করে? বইয়ে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা সংখ্যালঘুরা অর্জন করে সংখ্যাগরিষ্ঠের মনোযোগ এবং সম্মান পায়। আমরা দেখি, সংখ্যালঘুর অটল বিশ্বাস এবং মতামতের ধারাবাহিকতা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা গৃহীত হয়। আত্মবিশ্বাস, যা ধারাবাহিকতার ফল, সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে প্রতিষ্ঠিত করে যে সংখ্যালঘু তাদের বিশ্বাস এবং দাবিতে দৃঢ় এবং ক্ষমতাশালী। এবং শেষে, সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথম দুটির ফল হিসেবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর উদ্দেশ্যকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
===নেতৃত্ব কি সংখ্যালঘু প্রভাব?===
- কিছু নেতা তাদের গোষ্ঠী এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে উঠে আসে। অন্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত বা নির্বাচিত হয়। ভালো নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, সাঁতার দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা ব্যক্তি বিতর্ক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা নাও হতে পারে। নেতৃত্বের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো কাজভিত্তিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক নেতৃত্ব। কাজভিত্তিক নেতৃত্বে মান নির্ধারণ, সংগঠন, এবং লক্ষ্য অর্জন অন্তর্ভুক্ত। কাজভিত্তিক নেতারা সাধারণত নির্দেশমূলক শৈলী ব্যবহার করে। এটি ভালো কাজ করে যদি নেতা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং ভালো নির্দেশনা বা নির্দেশিকা দিতে সক্ষম হয়। এছাড়া, কাজভিত্তিক নেতৃত্ব লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। তাই তারা গোষ্ঠীকে সঠিক পথে রাখতে এবং কাজ সম্পন্ন করতে ভালো। বিষয়ের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিস্তারিত এবং সম্ভবত কঠিন লক্ষ্য এবং মাঝে মাঝে অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের অর্জনকে উদ্দীপিত করে। সামাজিক নেতৃত্বে সহানুভূতি বা সমর্থন, দলগত কাজের কাঠামো তৈরি, এবং দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রায়ই স্ব-শাসিত পদ্ধতি। অনেক গবেষক মনে করেন, এই ধরনের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসের জন্যও ভালো। এছাড়া, যখন কর্মীরা অনুভব করে যে তারা তাদের কাজের উপর নিয়ন্ত্রণে আছে, তখন তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয় এবং বেশি অর্জন করে।
- গবেষণায় দেখা গেছে, সেরা নেতারা কাজভিত্তিক এবং সামাজিক নেতৃত্ব উভয় বিভাগের অধীনে পড়ে। তারা কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি কর্মীদের চাহিদা এবং অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বোঝাপড়া। কার্যকর নেতারা আত্মবিশ্বাসী ক্যারিশমা প্রকাশ করে। তারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি ধারাবাহিক থাকে। ক্যারিশম্যাটিক নেতারা সাধারণত তাদের ইচ্ছার একটি বিশ্বাসযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি বা ধারণা থাকে। তারা এই ধারণাগুলো স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করতে পারে। তারা তাদের গোষ্ঠীর প্রতি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী, যা অন্যদের অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে।
- গোষ্ঠীও তাদের নেতাদের প্রভাবিত করে। কখনো কখনো একজন নেতা যদি গোষ্ঠীর মান থেকে খুব বেশি বিচ্যুত হয়, তবে তাকে “বহিষ্কার” করা হতে পারে। বুদ্ধিমান নেতারা প্রায়শই সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে থাকে। তারা যা বলে তা নিয়ে সতর্ক থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা মনে রাখতে হবে:
*"প্রতিক্রিয়াশীলতা - স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা বা পুনরুদ্ধারের একটি উদ্দেশ্য। প্রতিক্রিয়াশীলতা উদ্ভূত হয় যখন কেউ আমাদের ক্রিয়ার স্বাধীনতাকে হুমকি দেয়।"
*"নেতৃত্ব - এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গোষ্ঠীর কিছু সদস্য গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে এবং নির্দেশনা দেয়।"
==মডিউল ২৭: ভালোবাসার উত্থান-পতন==
===উত্তপ্ত ভালোবাসা===
ভালোবাসার নীতিগুলো ভালোভাবে বোঝার জন্য প্রথমে এটিকে পরীক্ষা এবং পরিমাপ করতে হবে। মনোবিজ্ঞানী রবার্ট স্টার্নবার্গ (১৯৯৮) ভালোবাসাকে একটি ত্রিভুজ হিসেবে দেখেন। এর তিনটি দিক হলো উত্তেজনা, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসাকে দুই ব্যক্তির সম্পর্কের উল্লেখে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করা যায়। ভালোবাসা তখনই বেশি স্পষ্ট হয় যখন সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকে, একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং গ্রহণ করা হয়, এবং প্রিয়জনের সঙ্গ উপভোগ করা হয়। উত্তপ্ত ভালোবাসা প্রধানত শারীরিকভাবে প্রকাশ পায় এবং একচেটিয়া সম্পর্ক বজায় রাখে। উত্তপ্ত ভালোবাসা এমন একটি ভালোবাসা যা দুই ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয়, যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি তীব্রভাবে মুগ্ধ। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি আবেগময় ভালোবাসা, যা উত্তেজনাপূর্ণ এবং তীব্র। ইলেইন হ্যাটফিল্ড (১৯৯৮) এটিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন “অন্যের সাথে মিলনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষার অবস্থা” হিসেবে (পৃষ্ঠা ১৯৩)। ভালোবাসার অনেক রূপ রয়েছে। সময় এবং সংস্কৃতি উভয়ই সম্পর্কে গঠিত ভালোবাসাকে প্রভাবিত করে। সময় সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিদের বয়স বা তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। সংস্কৃতি ভালোবাসা এবং সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়, পটভূমি, ধর্ম, এমনকি আর্থিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কের ভালোবাসাকে প্রভাবিত করতে পারে।
===সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা===
সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসাকে সবচেয়ে ভালো সংজ্ঞায়িত করা যায় এমন উত্তপ্ত ভালোবাসা হিসেবে, যা দুই সঙ্গীর মধ্যে একটি উষ্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। দুই সঙ্গীর মধ্যে ভাগ করা সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসায় উত্তপ্ত ভালোবাসার তুলনায় কম উত্থান-পতন থাকে। এটি বেশি স্থিতিশীল। সঙ্গীদের মধ্যে গভীর সম্মান এবং স্নেহময় সংযুক্তি বেশি স্পষ্ট। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি জ্বলন্ত আগুনের মতো, যা গরম এবং দ্রুত জ্বলে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা হলো আগুন চলে যাওয়ার পরে থাকা গরম কয়লা। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই বিবাহে পাওয়া যায়। বিবাহে, প্রায়ই উত্তেজনা সম্পর্ক থেকে চলে যায়। কিন্তু অন্য ব্যক্তির প্রতি গভীর স্নেহ এবং প্রতিশ্রুতি তখনও থাকে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই সঙ্গীদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সম্পর্ক যত দীর্ঘ হয়, তত কম আবেগের রোলারকোস্টার থাকে।
===ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা===
যেকোনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায়পরায়ণতা। সম্পর্কে ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। ইলেইন হ্যাটফিল্ড, উইলিয়াম ওয়ালস্টার এবং এলেন বার্শেইড (১৯৭৮) একটি ন্যায়পরায়ণতার নীতি ঘোষণা করেছেন: আপনি এবং আপনার সঙ্গী সম্পর্ক থেকে যা পান, তা আপনারা প্রত্যেকে যা দেন, তার সমানুপাতিক হওয়া উচিত। অন্য কথায়, সম্পর্ক কাজ করার জন্য প্রত্যেক সঙ্গীকে তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট অনুভূতি এবং ক্রিয়া বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী ন্যায়পরায়ণতা অর্জিত হয় সম্পর্কে “কে কার কাছে ঋণী” তা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে। যখন একজন সঙ্গী অন্যের চাহিদা পূরণ করে, তখন তার বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করা হয় না। ঋণের অনুভূতি থেকে উপেক্ষা করতে পারা সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করে। একটি পরিচিত ব্যক্তি যখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে, তখন তার একটি সূত্র হলো, সে অপ্রত্যাশিতভাবে ভাগ করে নেয় (Miller & others, 1989)। সুখী বিবাহিত মানুষ প্রায়ই হিসাব রাখে না যে তারা কতটা দিচ্ছে এবং পাচ্ছে (Buunk & Van Yperen, 1991)।
===সম্পর্কের সমাপ্তি===
সম্পর্ক সাধারণত তখন শেষ হয় যখন সঙ্গীদের মধ্যে ভাগ করা ভালোবাসা আর তাৎপর্যপূর্ণ থাকে না। দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা এবং তৃপ্তির উপর নির্ভর করে। এছাড়া সম্ভাব্য বিকল্প সঙ্গীদের প্রতি মনোযোগ না দেওয়া, সমাপ্তির খরচের ভয়, এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার অনুভূতিও গুরুত্বপূর্ণ (Adams & Jones, 1997)।
====কে বিবাহবিচ্ছেদ করে?====
বিবাহবিচ্ছেদের হার বর্তমানে উচ্চ। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ মূলত সম্পর্কে অসুখ, সঙ্গীদের মধ্যে ভালোবাসার ক্ষতি এবং বিবাহের মধ্যে ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের ফল। বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি এও নির্ভর করে কে কার সাথে বিবাহ করে (Fergusson & others, 1984; Myers, 2000a; Tzeng, 1992)। মানুষ সাধারণত বিবাহিত থাকে যদি তারা:
* ২০ বছর বয়সের পরে বিবাহ করে।
* উভয়ে স্থিতিশীল, দুই পিতামাতার ঘরে বেড়ে ওঠে।
* বিবাহের আগে দীর্ঘ সময় প্রেম করে।
* ভালো এবং একই রকম শিক্ষিত।
* ভালো চাকরি থেকে স্থিতিশীল আয় উপভোগ করে।
* ছোট শহরে বা খামারে বাস করে।
* বিবাহের আগে একসাথে বসবাস বা গর্ভবতী হয়নি।
* ধর্মীয়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
* একই বয়স, বিশ্বাস এবং শিক্ষার।
এই ফলাফল বিবাহ থেকে বিবাহে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদ বা সম্পর্কে ভালোবাসার ক্ষতি এই পরিস্থিতিগুলোর একটির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। স্পষ্টতই, অন্য ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত বা সম্পর্কিত হওয়ার উপায় ছাড়া, একটি সম্পর্ক বা এমনকি বিবাহ বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
==মডিউল ২৮: দ্বন্দ্বের কারণ==
দ্বন্দ্ব- ক্রিয়া বা লক্ষ্যের একটি উপলব্ধ অসঙ্গতি
===সামাজিক দ্বিধা===
আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য যে পছন্দগুলো আমরা করি, তা সমষ্টিগতভাবে শাস্তিমূলক হতে পারে।
====কয়েদির দ্বিধা====
দুই ব্যক্তিকে জেলা অ্যাটর্নি একটি অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তারা অপরাধে দোষী। কিন্তু জেলা অ্যাটর্নির কাছে তাদের কম অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই তিনি তাদের আলাদা করে একে একে কথা বলেন। তিনি তাদের তিনটি পছন্দ দেন:
• স্বীকার করুন। যদি অন্য ব্যক্তি স্বীকার না করে, তবে আপনাকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তাকে তার এবং আপনার শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হবে।
• যদি উভয়ে স্বীকার করে, তবে আপনারা প্রত্যেকে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করবেন।
• যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে উভয়কে খুব হালকা শাস্তি দেওয়া হবে।
এটি দুই ব্যক্তিকে একটি দ্বিধায় ফেলে। কারণ তারা অনিশ্চিত যে অন্যজন মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে কিনা। যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে তাদের দুজনেরই অনেক কম কঠোর শাস্তি হবে। কিন্তু তারা এই ঝুঁকি বিবেচনা করে যে, যদি তারা স্বীকার না করে, তবে তাদের একা দুজনের শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মানুষ স্বীকার করা বেছে নেয়। এটি করা হয় যাতে তারা অন্যের স্বার্থপরতার সাথে মোকাবিলা না করতে হয়। এইভাবে, সামান্য অবিশ্বাসের মতো একটি বিষয় সহযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলতে পারে।
====সাধারণের ট্র্যাজেডি====
বেশিরভাগ সামাজিক দ্বিধায় একাধিক পক্ষ সমস্যায় অবদান রাখার জন্য দায়ী।
উদাহরণ:
পুনরায় ভর্তি করার মধ্যে, একটি কুকি জারে পর্যাপ্ত কুকি থাকে (যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়) যাতে শিশুরা প্রতিদিন তিনটি করে খেতে পারে। কিন্তু কুকিগুলোর সহযোগিতা এবং নিয়ন্ত্রণ খুবই অসম্ভব। পরিবর্তে, শিশুরা যারা একে অপরের দ্বারা শোষিত হওয়ার ভয় পায়, তারা কুকি মুখে ভরতে শুরু করে। ফলে সরবরাহ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হয়ে যায়। একে অপরের উপর অবিশ্বাস এবং সহযোগিতার অভাব এখন তাদের কুকি ছাড়াই রেখে দেয়। এটি পরবর্তী জার ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত চলে (Gifford & Hine, 1997)। এটি একটি নন-জিরো গেমের উদাহরণ। এমন পরিস্থিতি যেখানে যৌক্তিকভাবে কাজ করলেও নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
===সামাজিক দ্বিধা সমাধান===
====নিয়ন্ত্রণ====
যদি গোষ্ঠীর সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখার নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক হয়, তবে সিস্টেমটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
====ছোটই সুন্দর====
যদি একটি গোষ্ঠী ছোট থাকে, তবে সদস্যরা গোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতা বোধ করে। তারা তাদের অবদান বা ইনপুটকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। যদি গোষ্ঠী খুব বড় হয়, তবে অনেক সদস্য মনে করতে পারে তাদের ভূমিকা গুরুত্বহীন। তারা গোষ্ঠীর সমৃদ্ধিতে সক্রিয় থাকার জন্য সামান্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনুভব করে (Kerr, 1989)।
====যোগাযোগ====
যখন একটি গোষ্ঠী যোগাযোগ করে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বা একটি দ্বিধা সমাধান করে, তখন গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই সবার স্বার্থে কাজ করে। এটি অন্য সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে তারা অবদান রাখে। এটি করা হয় যাতে তারা আলাদা না হয় বা সম্ভবত তিরস্কৃত না হয়।
====প্রতিদান পরিবর্তন====
যদি সহযোগিতার পুরস্কার শোষণের পুরস্কারের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়, তবে বেশি মানুষ সহযোগিতা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যস্ত মহাসড়কে কারপুল লেন। এটি করা হয় যাতে ট্রাফিক এবং দূষণ সমস্যায় অবদান রাখা গাড়ির সংখ্যা কমে।
====পরার্থপর নিয়মের আবেদন====
যদি এটি সাধারণ কল্যাণের জন্য উপকারী হয়, তবে মানুষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ বোধ করতে পারে (সামাজিক দায়িত্ব নিয়ম)। এমনকি এটি তাদের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে বা তাদের অসুবিধায় ফেলতে পারে।
চিত্র সরবরাহ করেছে:[http://images.tomshardware.com/2006/06/20/060619_tec. www.tomshardware.com]
[[Image:060619 teched2006 019.jpg]]
উপরের চিত্রটি আমাদের মহাবিশ্বের সাথে সংযোগের একটি পরার্থপর দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ।
===প্রতিযোগিতা===
প্রতিযোগিতার প্রভাব কতটা তীব্র তা পরীক্ষা করার জন্য একটি পরীক্ষায়, মুজাফার শেরিফ (১৯৬৬) দুটি গ্রুপের ছেলেদের ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পরীক্ষা করেছিলেন যে দুটি গ্রুপের মধ্যে সীমিত সম্পদ ভাগ করা দ্বন্দ্বের দিকে নিয়ে যায় কিনা। অন্য গ্রুপ সম্পর্কে না জেনে, শেরিফ প্রতিটি গ্রুপের ছেলেদের তাদের ক্যাম্পসাইট তৈরি করতে একসাথে কাজ করতে দিয়েছিলেন। তাদের একে অপরের সাথে পরিচিত হতে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পর তিনি দুটি গ্রুপকে একে অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এটি করা হয়েছিল একটি গ্রুপকে বেসবল মাঠে রেখে, যখন অন্য গ্রুপটি একই সময়ে মাঠটি ব্যবহার করার কথা ছিল। তাদের সম্পদ অন্য গ্রুপের কাছে হারানোর এই আকস্মিক ভয় ছেলেদের তাদের নিজ নিজ গ্রুপের মধ্যে সংহতি বাড়াতে প্ররোচিত করেছিল। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের প্রতি পারস্পরিক বৈরিতার মাধ্যমে এটি করেছিল। এমনকি গ্রুপের সাথে সংযুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে কালো তালিকাভুক্তির দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
===উপলব্ধ অন্যায়===
যখন কেউ মনে করে তাদের গোষ্ঠীতে অবদান তাদের প্রাপ্য পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান, তখন তারা তিনটি পথের একটি বেছে নেয়। তারা হয় তাদের অপ্রতুলতার কথা মনে করে উর্ধ্বতনদের কাছে নতি স্বীকার করে। অথবা তারা যা চায় তা পেতে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্ল্যাকমেল ব্যবহার করে। অথবা তারা তাদের উর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করে (Elaine Hatfield, William Walster, Ellen Pzersheid, 1978)। অন্যদিকে, যদি কেউ মনে করে তারা তাদের অবদানের চেয়ে বেশি পাচ্ছে, তবে তারা নিজেদের মনোযোগ আকর্ষণ করার সম্ভাবনা কম। এই ক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের বোঝায় যে তাদের কাজ অতিরিক্ত সুবিধার যোগ্য। এছাড়া, যদি কেউ জানতে পারে তাদের দক্ষতা তাদের পুরস্কারের চেয়ে বেশি, তবে তারা তাদের মূল্য নিয়ে তর্ক করার সম্ভাবনা বেশি। “মানুষ যত বেশি যোগ্য এবং মূল্যবান মনে করে (তাদের অবদান যত বেশি মূল্য দেয়), তত বেশি তারা অপ্রতুল বোধ করে এবং তাই প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী হয়” (Ross & others, 1971)।
উদাহরণ:
সবকিছু বিবেচনা করে, এই দেশে কার জীবন ভালো--পুরুষ না নারী?
১৯৭২ ১৯৯৩
পুরুষ ২৯% ৬০%
নারী ৩৫% ২১%
একই ৩০% ১৫%
কোনো মতামত নেই ৬% ৫%
(উৎস: Roper Center for Public Opinion Research, 1997)
===ভুল ধারণা===
[http://www.iwalt.com/static/images/blogpics/misperceptions.gif সংবাদ উৎস অনুযায়ী ভুল ধারণার বৈচিত্র্যের একটি উদাহরণ]
যেহেতু দ্বন্দ্ব একটি উপলব্ধ অসঙ্গতির ফল, তাই অন্যের ক্রিয়ার ভুল ধারণার মাধ্যমে বেশিরভাগ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এটি স্ব-সেবামূলক পক্ষপাতের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা প্রায়ই আমাদের নিজেদের ক্রিয়াকে ন্যায্য করি এবং আমাদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব নিই। কিন্তু আমরা আমাদের ভুলগুলোকে ন্যায্য করি। একই সময়ে আমরা অন্যদের ক্রিয়া বা উদ্দেশ্যকে আমাদের তুলনায় কঠোরভাবে বিচার করি। এটি আমাদের অন্যদের অকালে নিন্দা করতে নিয়ে যায়। আমরা আমাদের ভুল ধারণায় মৌলিক দায়িত্ব ভ্রান্তি দায়ী করতে পারি। আমরা অন্যদের বাহ্যিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে কম প্রবণ হই, যা তাদের ক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের অন্যের একটি একমাত্রিক উপলব্ধি দেয়, যা খুব ভুল হতে পারে।
===আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণা===
[http://www.funnyhub.com/pictures/pages/mirror-image-perceptions.html বিকৃত আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণার একটি উদাহরণ]
দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর জন্য একে অপরকে একই অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং একই কারণে নিজেদের নৈতিক এবং গুণী মনে করা সাধারণ (Morton Deutsch, 1986)। এটি প্রায়ই যুদ্ধকালীন সময়ে দেখা যায়। আমরা মানুষকে শুধুমাত্র দুটি বিভাগে দেখি; “আমাদের পক্ষে বা আমাদের বিরুদ্ধে”। আধুনিক যুদ্ধে এটি আরও কূটনৈতিকভাবে দেখা যায়। আমরা বলি, আমরা সাধারণ জনগণের সাথে যুদ্ধে নেই, বরং দুষ্ট শাসনের বিরুদ্ধে, যা তার জনগণকে দূষিত করেছে। এটি আমাদের একটি উজ্জ্বল বর্মের নাইটের আবেদন দেয়, যিনি “ভালো মানুষ”কে তাদের “দুষ্ট নেতাদের” থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের হস্তক্ষেপের কারণ এখন বৈধ। কারণ এটি তখন জনগণের জন্য একটি সেবা হিসেবে বিবেচিত হয়।
== মডিউল ৩০ - মানুষ কখন সাহায্য করে? ==
=== মানুষ কেন সাহায্য করে? ===
পরার্থপরতা হলো এমন একটি নিঃস্বার্থ কাজ, যা একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অন্যের প্রতি সত্যিকারের যত্ন নেয় এবং কোনো ধরনের পুরস্কার প্রত্যাশা করে না। কিন্তু সাহায্য করার পেছনে কী প্রেরণা থাকে? একটি তত্ত্ব, যাকে বলা হয় সামাজিক-বিনিময়, এতে একজন ব্যক্তি পরিস্থিতিতে কাজ করার আগে সাহায্যের সুবিধা এবং খরচের একটি সম্পর্ক মূল্যায়ন করে। স্পষ্টতই, সাহায্যকারী কম খরচে সর্বোত্তম সুবিধা অর্জন করতে চায়। যদি কেউ জানে যে একজন ব্যক্তি এই কারণে সাহায্য করেছে, তবে সেই “সাহায্যকারী” তার “ভালো কাজের” জন্য স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কিছু মানুষ অন্যের কল্যাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাদের একমাত্র সুখ হলো এই জ্ঞান থেকে যে তারা সত্যিই কাউকে সাহায্য করেছে। প্রায়ই এই ধরনের ব্যক্তি এমন হয়, যে অন্যের কষ্টে নিজে কষ্ট পায় বা অন্যের আনন্দে নিজে আনন্দিত হয়। সাহায্যকে উদ্দীপিত করার আরেকটি এজেন্ট হলো সামাজিক নিয়ম। এর একটি হলো পারস্পরিকতা নিয়ম। সামাজিক নিয়ম আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা নির্দেশ করে। এই নিয়মটি পরামর্শ দেয় যে আমরা অন্যের জন্য সেবা করি কারণ তারা আগে আমাদের জন্য এটি করেছে। এই নিয়মটি পরার্থপর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ এতে নিজের জন্য কিছু প্রেরণা থাকে। আরেকটি নিয়ম যা আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা পরামর্শ দেয় তা হলো সামাজিক-দায়িত্ব নিয়ম। এই এজেন্টটি পারস্পরিকতা নিয়ম থেকে আলাদা। কারণ আমরা একে অপরের জন্য সেবা বিনিময়ের বিষয়ে সচেতন নই। এই নিয়মটি পরার্থপরতাকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিত্রিত করে। কারণ এটি আমাদের প্রয়োজনে থাকা কাউকে সাহায্য করতে অনুপ্রাণিত করে এবং কখনো কিছু চায় বা প্রত্যাশা করে না। এই তত্ত্বগুলো প্রকৃতির অর্থে উন্নীত করা যায়। অন্যের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ মূলত তাদের বেঁচে থাকার জন্য উদ্বেগ। এই অর্থে চিন্তা করা আকর্ষণীয় যে, যে গোষ্ঠী বেশি পরার্থপর, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ভালো।
=== মানুষ কখন সাহায্য করে? ===
সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা উপস্থিত ব্যক্তির আচরণ বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। একটি পরীক্ষা সিরিজের মাধ্যমে তারা অসাধারণ ফলাফল পেয়েছেন। সাহায্য প্রায়ই এমন মানুষ দ্বারা করা হয় যারা নিজেদের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে চায়। তারা তাদের অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে চায় যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে আরও বিশুদ্ধ ধারণা পায়। কখনো কখনো যারা ইতিবাচক মনের অবস্থায় থাকে, তারা সত্যিকারের ইচ্ছা বোধ করে অন্য কাউকে সাহায্য করার। একটি অত্যন্ত বিশেষ ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ধর্মীয় সম্পৃক্ততার মানুষ প্রায়ই অন্যদের সেবা দেয়। সাহায্যের শর্তগুলো বিষয়গত থেকে বস্তুগত শর্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। বিষয়গত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি অন্য কারো দ্বারা একটি ভালো কাজ পর্যবেক্ষণ, সেই নির্দিষ্ট সময়ে তাড়াহুড়ো না অনুভব করা, বা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যক্তি নিজের এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে কিছু মিল দেখে। বস্তুগত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীর প্রয়োজনের তীব্রতা, আমাদের পরিবেশ বা চারপাশ, এবং সাহায্য করার জন্য অন্যদের অনুপস্থিতি।
=== উপস্থিত ব্যক্তির সংখ্যা ===
যখন আমরা শুনি যে কেউ প্রয়োজনে ছিল কিন্তু একজন উপস্থিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেনি, তখন আমরা মনে করি সেই উপস্থিত ব্যক্তি একজন ভয়ানক মানুষ। আমরা নিশ্চিতভাবে কিছু করতাম কারণ আমরা যত্নশীল মানুষ। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে যে উপস্থিত ব্যক্তি সাহায্য করেনি সে একজন যত্নশীল মানুষ ছিল? অগত্যা নয়। অসংখ্য পরীক্ষা করা হয়েছে যা প্রকাশ করে, অদ্ভুতভাবে, একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে যেখানে কেউ সাহায্যের প্রয়োজন, সেখানে যত কম উপস্থিত ব্যক্তি থাকে, সেবা দেওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। একাধিক উপস্থিত ব্যক্তির পরিস্থিতিতে, কেউ প্রয়োজনে থাকা ভুক্তভোগীকে লক্ষ্য করার, তাদের সমস্যা বোঝার এবং পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম (Latane, Darley 1970:364-369)। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি গুরুতর পরিস্থিতির প্রতি উদাসীনতাকে তথ্যগত প্রভাব বলা হয়। একজন ব্যক্তি দেখে অন্য কেউ সাহায্য করার জন্য কাজ করছে না। তখন তারা নিজেও মনে করে সবকিছু ঠিক আছে এবং সাহায্য করে না। অন্যদিকে, যদি কেউ প্রয়োজনে থাকা কাউকে লক্ষ্য করে এবং দেখে কেউ তাড়াহুড়ো করে তাদের সেবা দিতে ছুটে যায়, তবে গুরুতর পরিস্থিতির জন্য জরুরিতার অনুভূতি বেশি হবে। যেভাবেই হোক, আমরা সবসময় এই দ্বিধায় পড়ি যে একটি পরিস্থিতি আমাদের মনোযোগের যোগ্য কিনা। কখনো আমরা নিজেদের উপেক্ষা করে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই। অন্য সময় আমরা এমন পরিস্থিতিতে কোনো পদক্ষেপ নিই না যা আমাদের কাছে অস্পষ্ট মনে হয়। এটিকে উপস্থিত ব্যক্তি প্রভাব বলা হয়। কিন্তু একটি গুরুতর পরিস্থিতির গুরুত্ব না বোঝা সবসময় পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ নয়। কিছু ঘটনায় পরিস্থিতি স্পষ্ট হয় এবং তবুও আমরা কাজ করি না। আমরা একজন ব্যক্তির সাথে কিছু ঘটতে দেখতে পারি এবং কাজ না করতে পারি। কারণ আমরা অন্যদেরও লক্ষ্য করি যারা দেখছে। আমাদের মনোযোগ ভুক্তভোগী থেকে অন্য উপস্থিত ব্যক্তিদের দিকে চলে যায়। তাদের শুধু তাকিয়ে থাকতে দেখে আমরাও কাজ করতে ব্যর্থ হই। এটি আকর্ষণীয় যে অন্য মানুষের উপস্থিতি আমাদের ব্যক্তিগত আবেগ এবং মানসিকতাকে একটি বস্তুগত পরিস্থিতিতে প্রভাবিত করে। পরীক্ষায় যেখানে অংশগ্রহণকারীদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল যেখানে তাদের নিজেদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, অন্য মানুষের সাথে ফোকাস গ্রুপ যারা একই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিল, তারা তুলনায় বেশি ব্যর্থ হয়েছিল। যে ফোকাস গ্রুপে মানুষ মনে করেছিল তারাই একমাত্র গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন, তারা বেশি কাজ করেছে (Latane, Darley 1968:217-221)। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, একই সচেতনতার সাথে অন্যদের উপস্থিতি তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে কিনা। সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছিল যে এটি করেনি। মূলত, একজন ব্যক্তি সবসময় জানে না কেন তারা যা করে তা করে, এই পরীক্ষা এটি নিশ্চিত করেছে। কিছু পরীক্ষার গভীরতা কিছু মানুষকে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে যে এই পরীক্ষাগুলোর নৈতিকতা কী। কিন্তু এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পরীক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণকারীদের রক্ষা করা এবং এই প্রক্রিয়ায় মানুষের কল্যাণ বাড়ানো। এই পরীক্ষার ফলে মানুষ তথ্যবহুল হয়। যারা পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করে তারা এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেশি (Beaman, Barnes, Klentz, McQuirk 1978:407-410)।
*দয়া করে নোট করুন, এই পৃষ্ঠার সমস্ত বিষয়বস্তু ডেভিড মায়ার্সের ''Exploring Social Psychology''-এর মডিউল ৩০-এর একটি প্যারাফ্রেজড সারাংশ। ডেটা যাচাইয়ের জন্য দয়া করে বইটি নিজেই উল্লেখ করুন।
==মডিউল ৩১: স্থায়িত্বের সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===স্থায়ী জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানব জীবনের জন্য একটি ভবিষ্যৎ টিকিয়ে রাখতে, আমাদের প্রযুক্তির সীমানা প্রসারিত করতে হবে। অটোমোবাইলগুলো আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়েছে এবং অনেক কম দূষণ উৎপন্ন করে। নথিগুলো এখন ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ, অনুলিপি, বিতরণ এবং উৎপাদিত হয়। কপিয়ার মেশিন ভুলে যান, ডান ক্লিক করুন, কপি করুন, এবং তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আলোর বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন এবং ওষুধ পর্যন্ত, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করছে। কে জানত ২১শ শতাব্দী এতটা এগিয়ে যাবে?
====ব্যবহার হ্রাস====
ভবিষ্যৎ জীবন টিকিয়ে রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ব্যবহার হ্রাস। মানুষের পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী বসবাস করার জন্য, আমাদের কম ব্যবহার এবং কম দূষণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জন্মহার ক্রমাগত কমছে। এটি বিশ্বে শিক্ষিত এবং কর্মরত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। তবুও, বিশ্ব এখনও তার পূর্ণ ক্ষমতায় রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ব্যবহার হ্রাস করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অনেকে হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে বা এখনও গঠনমূলক ফলাফল দেখেনি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, কারপুল করে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে, এবং তাদের বাড়ির জন্য পরিবেশবান্ধব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের পুরস্কৃত করার মতো ধারণা একটি দুর্দান্ত শুরু হবে। অন্যদিকে, যারা সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার করে তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। যারা আলাদাভাবে গাড়ি চালায়, তাদের জরিমানা, টিকিট, কর, বা চার্জ করতে হবে। যারা তাদের বাড়ির আলো ২৪ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখে, ছুটিতে এসইউভিতে তিনশো মাইল গাড়ি চালায়, এবং প্রতিটি আবর্জনা পুনর্ব্যবহার না করে ফেলে দেয়। রবার্ট ফ্রাঙ্ক (১৯৯৯), একজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানে পারদর্শী অর্থনীতিবিদ, পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করতে পারে এবং আরও স্থায়ী ব্যবহার প্রচার করতে পারে।
===বস্তুবাদ এবং সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====বর্ধিত বস্তুবাদ====
বর্ধিত বস্তুবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে স্পষ্ট। একটি জরিপে এটি স্পষ্টভাবে প্রতিনিধিত্ব করে, Gallup Poll (১৯৯০), ২ জনের মধ্যে ১ জন নারী, ৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, এবং বছরে ৭৫,০০০ ডলারের বেশি উপার্জনকারী ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ধনী হতে চায়। আরও বেশি সংখ্যক ব্যক্তি তাদের জীবনে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের চেষ্টা করার পরিবর্তে ধনী হতে চান।
====সম্পদ এবং কল্যাণ====
টাকা দিয়ে কি সুখ কেনা যায়? অথবা আপনার কল্যাণ? দুঃখের বিষয়, না, তা যায় না। সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে খুব কম সম্পর্ক রয়েছে, যদি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি যতই ধনী হোক না কেন, তার কল্যাণ খুব বেশি (প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য) পরিবর্তন হবে না। দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে কম আয় মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলে, তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি কল্যাণের পূর্বাভাস দেয় (Argyle, 1999)। একজন ব্যক্তি যখন ধনী হয়, তখন সুখের একটি বৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু এটি কেবল স্বল্প সময়ের জন্য থাকে। তারপর সেই ব্যক্তি আর সুখী থাকে না। তখন তার কল্যাণে সন্তুষ্ট থাকার জন্য আরও বেশি টাকা এবং সম্পদের প্রয়োজন হয়। ডেভিড লিকেন (1999, পৃষ্ঠা 17) বলেন, “যারা ওভারঅল পরে বাসে করে কাজে যায়, তারা গড়ে ততটাই সুখী, যতটা সুখী তারা যারা স্যুট পরে নিজেদের মার্সিডিজে করে কাজে যায়।” এমনকি অতি-ধনী ব্যক্তিরা – ফোর্বসের 100 ধনী আমেরিকান – গড়ের তুলনায় কেবল সামান্য বেশি সুখের কথা জানায় (Diener, Horwitz, and Emmons, 1985)।
====কেন বস্তুবাদ তৃপ্তি দেয় না====
বস্তুবাদ তাদের তৃপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, যারা জীবনে যতটা সম্ভব অর্জন করতে চায়। যারা ক্ষমতা, টাকা এবং সম্পদের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক কম কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। যারা ব্যক্তিগত বিকাশ, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক বেশি কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। বস্তুবাদী হওয়া এবং বস্তুগত জিনিস থেকে ব্যক্তিগত কল্যাণ অর্জন করা কেবল কম কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়। অনেক কিছু যা একসময় বিলাসিতা ছিল, তা এখন প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছে। একজন ব্যক্তি এই প্রয়োজনীয়তার মাধ্যমে তাদের কল্যাণ পরিমাপ করে। শেষ পর্যন্ত, সবাই সেই বিলাসিতা পেয়ে যায়। তখন ব্যক্তি মনে করে তাদের আরেকটি বিলাসিতা দরকার, যা অন্য কারো নেই। এটি তাদের নিজস্ব কল্যাণ বাড়াতে। এই চক্র চলতেই থাকে। বস্তুবাদী ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত কল্যাণের উচ্চতর অনুভূতি পেতে ক্রমাগত আরও বেশি প্রয়োজন অনুভব করে।
===স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার দিকে===
আমাদের সমাজকে বস্তুবাদী প্রকৃতি থেকে মুক্ত করতে, মানুষকে স্থায়িত্বের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে। ব্যবহার কমানোর জন্য কর্মসূচি এবং আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নতি চালিয়ে যেতে হবে। দক্ষতার উপর মনোযোগ দিতে হবে। এটা বোঝা দরকার যে সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচার করতে হবে। মানুষকে একত্রিত হতে হবে। তাদের বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে। নিজেদের উপর কেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে আরও উন্নত করতে পারে। এটি বিশ্বের স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য অবদান রাখতে পারে। যত তাড়াতাড়ি মানুষ এটা মেনে নেয় যে বস্তুবাদ ভালো কল্যাণের দিকে নিয়ে যায় না, তত তাড়াতাড়ি বিশ্ব একটি উন্নত জায়গা হয়ে উঠবে।
==তথ্যসূত্র ==
*Abramson, L. Y., Seligman, M. E. P., & Teasdale, J. D. (1978). Learned helplessness in humans: Critique and reformulation. Journal of Abnormal Psychology, 87, 32-48.
*Adams, J.M., & Jones, W.H. (1997). The conceptualization of martial commitment: An integrative analysis. Journal of Personality and Social Psychology, 72, 1177-1196.
*Allison,S. T.,Jordan,M.R.,& Yeatts,C.E.(1992). A cluster-analytic approach toward identifying the structure and content of human decision making. ''Human Relations'',45,49-72.
*Anderson, C.A., Miller, R.S., Riger, A.L.,Dill, J.C., and Sedikides, C. (1994). Behavioral and characterological attributional styles as predictors of depression and lonleliness: Review, refinement, and test. Journal of Personality and Social Psychology, 66, 549-558.
*Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
*Asendorpf, J.B. (1987). Videotape reconstruction of emotions and cognitions related to shyness. Journal of personality and social psychology, 53, 541-549
*Bayer, E. (1929). Beitrage zur zeikomponenten theorie des hungers. Zeitschrift fur Psycholgie, 112, 1-54.
*Beaman, A.L., Barnes, P.J., Klentz, B., & McQuirk, B. (1978). Increasing helping rates through information dissemination: Teaching pays. Personality and Social Psychology Bulletin, 4, 406-411.
*Bureau of the Census. (1999). Statistical abstract of the United States 1996 (Table 65). Washington, D.C.: Superintendent of Documents.
*Buunk, B.P., & van der Eijnden, R.J.J.M. (1997). Perceived prevalence, perceived superiority, and relationship satisfaction: Most relationships are good, but ours is the best. ''Personality and Social Psychology Bulletin'', 23, 219-228.
*Carey,B.,''New York Times''."A Senior Moment' or A Self-Fulfilling Prophecy?"(July,18,2006).
*Chen, S.C. (1937). Social modification of the activity of ants in nest-building. Physiologial Zoology, 10, 420-436.
*Cooper,H.(1983). Teacher expectation effects. In L. Bickman(Ed.), ''Applied social psychology annual,vol 4''.Beverly Hills,CA:Sage.
*Cota, A.A., & Dion, K.L. (1986). Salience of gender and sex composition of ad hoc groups: An experimental test of distinctiveness theory. Journal of Personality and Social Psychology, 50, 770-776.
*Crocker,J. (1981). Judgment of covariation by social perceivers. ''Psychological Bulletin,'' 90, 272-292.
*Dawes,R.M. (1976). Shallow psychology. In J.S. Carroll & J.W. Payne (Eds.), ''Cognition and social behavior''. Hillsdale, NJ: Erlbaum.
*Deci, E. L., & Rayan, R. M. (1987). The support of autonomy and the control of behavior. Journal of Personality and Social Psychology, 53, 1024-1037.
*Deutsch, M. (1993). Educating for a peaceful world. American Psychologist, 48, 510-517.
*Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
*Engs, R., & Hanson,D.J. (1989) Reactance theory: A test with collegiate drinking. Psychological Reports, 64, 1083-1086
*Feldman, R.S., & Theiss, A.J. (1982). The teacher and student as Pygmalions: Joint effects of teacher and student expectations. ''Journal of Education Psychology'',74,217-223.
*Fergusson, D.M., Horwood, L.J., & Shannon, F.T. (1984). A proportional hazards model of family breakdown. Journal of Marriage and the Family, 46, 539-549.
*Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
*Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
*Galton, F.(1886), "Regression Towards Mediocrity in Hereditary Stature," Journal of the Anthropological Institute,15, 246-263.
*Gifford, R., & Hine, D.W. (1997). Crowding: More fearsome than crime-provoking? Comparison of an Asian city and a North American cinty. Psychologia, 22, 79-83
*Gillis, J. S., & Avis, W.E. (1980). The male-taller norm in mate selection. Personality and Social Psychology Bulletin, 6, 396-401.
*Gilovich, T., & Douglas, C.(1986). Biased evaluations of randomly determined gambling outcomes. ''Journal of Experimental''
*Griffitt, W. (1987). Females, males, and sexual responses. In K. Kelley (Ed.), Females, males and sexuality: Theories and research. Albany: State University of New York Press.
*Hamilton, D. L. and R. K. Gifford (1976). Journal of Experimental Psychology 12, 392-407.
*Harris, J.R. (1998). The nurture assumption. New York: Free Press.
*Hatfield (Walster), E., Walster, G.W., & Berscheid, E. (1978). Equity: Theory and research. Boston: Allyn & Bacon.
*Hatfield, E. (1988). Passionate and compassionate love. In R.J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Hunt, M, (1993). The story of psychology. New York: Doubleday.
*Jussim,L. (1986). Self-fulfilling prophecies: A theoretical and integrative review. Psychological Review,93.
*Kahneman,D., Slovic,P.,&Tversky,A,(editors), Judgement Under Uncertainty,Heuristics, and Biases.(Cambridge University Press,1982), Part IV.
*Kerr, N.L. (1989). Illusions of efficacy: The effects of group size on perceived efficacy in social dilemmas. Journal of Experimental Social Psychology, 25, 287-313.
*Larsson, K. (1956). Conditioning and sexual behavior in the male albino rat. Stockholm: Almqvist & Wiksell.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1970). The Unresponsive Bystander: Why Doesn't He Help? New York: Appleton-Century-Crofts.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1968). Group inhibition of bystander intervention in emergencies. Journal of Personality and Social Psychology, 10, 215-221.
*Lewinsohn,P.M.,Hoberman,H.,Teri,L.,& Hautziner,M. (1985) An integrative theroy of depression. In S. Reiss & R. Bootzin (Eds), Theoretical issues in behavior therapy. New York: Acadimic Press
*Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
*McIntosh, J.L. & Kelly, L.D. (1992). Survivors reactions: suicide vs. other causes. Crises, 82-93
*Meehl, P.E. (1954). ''Clinical vs. statistical prediction: A theoretical analysis and a review of evidence''. Minneapolis: University of Minnesota Press.
*Miller, L.C., Berg, J.H., & Rugs, D. (1989). Selectivity and sharing: Needs and norms in developing friendships. Unpublished manuscript, Scripps College.
*Mirels, H.L., & McPeek, R.W. (1977) Self Advocacy and Self Esteem. Journal of Consulting and Clinical Psychology, 45, 1132-1138.
*Myers, D. G., (2004). Exploring Social Psychology: Third Edition. New York: McGraw-Hill.
*Niemi, R. G., Mueller, J., & Smith, T. W. (1989). Trends in public opinion: A compendium of survey data. New York: Greenwood Press.
*Orive, R. (1984). Group similarity, public self-awareness, and opinion extremity: A social projection explanation of deindividuation effects. Journal of Personality and Social Psychology, 47, 727-737
*Peterson, C., & Steen, T.A. (2002). Optimistic explanatory style. In C.R. Snyder & S.J. Lopez (Eds), Handbook of positive psychology. London: Oxford University Press
*Pratto, F. (1996). Sexual politics: The gender gap in the bedroom, the cupboard, and the cabinet. In D. M. Buss & N. M. Malamuth (Eds.), Sex, power, conflict: Evolutionary and feminist perspectives. New York: Oxford University Press.
*Sherif, M. (1966). In common predicament: Social psychology of intergroup conflict and cooperation. Boston: Houghton Mifflin.
*Sigal, J., Gibbs, M. S., Goodrich, C., Rashid, T., Anjum, A., Hsu, D., et al. (2005). Cross-cultural reactions to academic sexual harassment: effects of individualist vs. collectivist culture and gender of participants. Sex Roles: A Journal of Research.
*Snyder, M., & Swann, W. B. (1978). Hypothesis-testing processes in social interaction. Journal of Personality and Social Psychology, 36, 1202-1212
*Stangor, C., Lynch, L., Duan, C., & Glass, B.(1992). Categorization of individuals on the basis of multiple social features. Journal of Personality and Socail Psychology, 62, 207-218.
*Sternberg, R. J. (1988). Triangulating love. In R. J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Sternberg, R. J. (1998). Cupid’s arrow: The course of love through time. New York: Cambridge University Press.
*Thorn, J., Gershman, M., Palmer, P., and Pietrusza, D. (eds.) 1999), Total Baseball, Sixth Edition, New York: Total Sports.
*Triplett, N. (1898). The dynamogenic factors in peacemaking and competition. American Journal of Psychology, 9, 507-533.
*Vallone,R. P., Ross, L & Lepper,M.R.(1985). The hostile media phenomenon: Biased perception and perceptions of media bias in coverage of the "''Beirut Massacre''." and ''Social Psychology Journal''," 49, 577-585.
*Williams, J.E., & Best, D.L. (1990a). Measuring sex stereotypes: A multination study. Newbury Park, CA: Sage.
*Zajonc, R.B. (1965). Social facilitation. ''Science,''149, 269-274.
==সম্পর্কিত তালিকা==
* [[Wikipedia:List of social psychologists|List of social psychologists]]
* [[Wikipedia:List of publications in psychology#Social psychology|Important publications in social psychology]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.socialpsychology.org/ Social Psychology Network ]
* [http://www.spsp.org/ Society for Personality and Social Psychology]
* [http://www.sesp.org/ Society of Experimental Social Psychology]
* [http://www.apa.org/journals/psp.html Journal of Personality and Social Psychology]
* [http://www.uiowa.edu/~grpproc/crisp/crisp.html Current Research in Social Psychology]
* [http://www.trinity.edu/~mkearl/socpsy.html Social Psychology - brief introduction]
* [http://www.ship.edu/~cgboeree/socpsy.html Social Psychology basics]
* [http://groups.yahoo.com/group/social_psychology/ Social Psychology forum]
* [http://www.birchmore.org/html/scapegoating.html Scapegoating Processes in Groups]
* [http://www.portalpsicologia.org/busqueda.jsp?idDisciplina=6 Portalpsicologia.org]
* [http://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
* [http://de.wikipedia.org/wiki/Thomas-Theorem Thomas-Theorem - in German]
* [http://en.wikipedia.org/wiki/William_I._Thomas W.I.Thomas]
{{BookCat}}
t2w34pwjale3zqpunijubk1iqtp7aw6
85752
85751
2025-07-06T20:37:28Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
85752
wikitext
text/x-wiki
{{TODO|সমাজবিজ্ঞান পরিচিতির ভবিষ্যৎ অধ্যায়গুলোর বিষয়বস্তু অনুযায়ী, এই মডিউলটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।}}
'''সামাজিক মনোবিজ্ঞান''' হলো মানুষ কীভাবে একে অপরের সম্পর্কে চিন্তা করে, প্রভাবিত করে এবং সম্পর্ক স্থাপন করে, তার বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।
==মডিউল ৫: ইতিবাচক চিন্তার শক্তি==
===নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র===
নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র বলতে বোঝায়, মানুষ কতটা বিশ্বাস করে যে তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও কাজের মাধ্যমে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়, অথবা ভাগ্য বা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হয় (মায়ার্স, ৫৬)। কিছু মানুষ মনে করে, তাদের জীবনে যা ঘটে তা বাহ্যিক শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অন্যরা মনে করে, তাদের নিজেদের প্রচেষ্টা ও দক্ষতা তাদের জীবনের ঘটনাগুলো নির্ধারণ করে (হান্ট,১৯৯৩, পৃষ্ঠা.৩৩৪)। নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র দুই ধরনের: অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্বাস করে, তারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে। বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা মনে করে, কোনো বাহ্যিক শক্তি তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে।
===শিখিত অসহায়তা বনাম স্ব-নির্ধারণ===
যারা মনে করে তারা নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারা জীবনে অনেক উপকৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণকে উৎসাহিত করে, তা স্বাস্থ্য ও সুখ বাড়ায় (Deci & Ryan, 1987)। বিপরীতভাবে, যারা মনে করে তারা নিয়ন্ত্রণে নেই, তারা সাধারণত বিষণ্ণ হয় এবং তাদের কাজকে অর্থহীন মনে করে। এটিকে বলা হয় শিখিত অসহায়তা। এটি হলো এমন হতাশা ও পদত্যাগ, যা মানুষ বা প্রাণী শিখে যখন তারা বারবার খারাপ ঘটনার উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ অনুভব করে না (Myers, 56)।
===আত্ম-কার্যকারিতার উপর প্রতিফলন===
ইতিবাচক চিন্তার শক্তি
“যদি তুমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করো, তবে ইতিবাচক ফল পাবে” (Myers, 53)। এটি শুধু নিজেকে বোঝানো বা প্রশংসা করার মাধ্যমে ঘটে না। এটি সাধারণত সাফল্য অর্জনের পর ঘটে। ইতিবাচক চিন্তা মানুষকে অনেক কিছু অর্জনে সাহায্য করে। এটি বুঝতে পারলে কিছু পরিস্থিতি এড়ানো যায়। এটি অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
আত্ম-সম্মানের অন্ধকার দিক
বিষণ্নতা ও মাদকাসক্তির মতো ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো নিম্ন আত্ম-সম্মানের ফল। অন্যকে অপমান করা বা সহিংসতা সাধারণত তখন ঘটে, যখন কেউ মনে করে তাদের আত্ম-সম্মান বিপন্ন। অনেকে মনে করে, গুন্ডা বা গ্যাং লিডারদের আত্ম-সম্মান কম। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের আত্ম-সম্মান বেশ উঁচু। উচ্চ আত্ম-সম্মানের অনেক সুবিধা আছে। এটি শিক্ষার্থীদের গ্রেড, চেহারা এবং সামাজিক মর্যাদায় প্রতিফলিত হয়। বিপরীতভাবে, নিম্ন আত্ম-সম্মানের মানুষ বেশি চাপের জীবনযাপন করে। তারা বিষণ্নতা ও মানসিক চাপে ভোগে।
==মডিউল ৮: অযৌক্তিকতার কারণ==
===আমাদের পূর্বধারণা আমাদের ব্যাখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে===
আমাদের পূর্বধারণা আমাদের মন কীভাবে তথ্য গ্রহণ ও ব্যাখ্যা করে তা নির্দেশ করে। মানুষ বুঝতে পারে না যে পূর্বধারণার প্রভাব কতটা বড়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্বাসের সমর্থনে প্রমাণ গ্রহণ করে। কিন্তু তারা যে প্রমাণ তাদের বিশ্বাসের বিরোধী, তা সমালোচনা করে। পূর্বধারণা ম্যানিপুলেটও করা যায়। ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের একজন ব্যক্তির মুখের ভাব মূল্যায়ন করতে বলা হয়। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিষ্ঠুর কাজ করেছেন, তারা তার মুখের ভাবকে নিষ্ঠুর বলে মনে করেন। যাদের বলা হয়েছিল যে তিনি নাৎসি-বিরোধী এবং অনেক ইহুদির জীবন বাঁচিয়েছেন, তারা তাকে উষ্ণ ও দয়ালু মনে করেন। এই পরীক্ষা প্রমাণ করে, আমাদের পূর্বধারণা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দৈনন্দিন জীবনেও প্রযোজ্য। কাউকে লাজুক মনে করা থেকে শুরু করে কেউ আমাদের মতো অনুভব করে কিনা তা ভাবা পর্যন্ত, পূর্বধারণা আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করে। যদি আমরা কোনো ধারণাকে বারবার মনে করি, তবে পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনার জন্য খুব কম জায়গা থাকে।
===আমরা তথ্যের চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই===
মানুষ প্রায়ই ধরে নেয়, কোনো কিছু সাধারণ কারণ তা সহজে মনে পড়ে। এ কারণে শক্তিশালী গল্প তথ্যের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে (এলিসন & অন্যরা,১৯৯২)। এটিকে বলা হয় প্রাপ্যতা হিউরিস্টিক। এটি মানুষকে পরিস্থিতির বাস্তবতা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ৯/১১-এর হামলা অনেকের মনে স্পষ্ট। তাই অনেকে মনে করে, তারা বাণিজ্যিক ভ্রমণের সময় একই ধরনের ঝুঁকিতে আছে। এটি বাস্তবে তাদের ঝুঁকির চেয়ে বেশি। মনোবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল কাহনেমান এই বিশ্বাস সমর্থন করেন। তিনি গবেষণা করেন যে আমাদের মন কীভাবে তথ্য কল্পনা করে এবং পুনরুদ্ধার করে তার উপর ভিত্তি করে ঘটনার সম্ভাবনা নির্ধারণ করে। যখন আমরা অসম্ভব ঘটনা কল্পনা করি, তখন আমাদের মনের ছবি আমাদের এটির সম্ভাবনা অতিরঞ্জিত করতে প্ররোচিত করে ( কেহেনম্যান)।
[http://www.fallacyfiles.org/volvofal.html]
===আমরা সম্পর্ক ও নিয়ন্ত্রণ ভুলভাবে উপলব্ধি করি===
এলোমেলো ঘটনায় শৃঙ্খলার সন্ধান আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। এটি আমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে।
===ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক===
যখন আমরা উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক আশা করি, তখন আমরা প্রায়ই এলোমেলো ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ তাদের বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য এলোমেলো ঘটনাগুলোকে ভুলভাবে উপলব্ধি করে (ক্রুকার, ১৯৮১)। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে বা কোনো পূর্বাভাস কোনো ঘটনার সাথে সম্পর্কিত, তবে আমরা তাদের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাই। কিন্তু আমরা যে ঘটনাগুলো ঘটে এবং সম্পর্কিত নয়, তা উপেক্ষা করি। মন যখন ভ্রান্তিমূলক উপলব্ধি ও সম্পর্ক তৈরি করে, তখন এটি আমাদের ধারণা দেয় যে এলোমেলো ঘটনাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের অধীন। এটিকে বলা হয় নিয়ন্ত্রণের ভ্রম। ১৯৭৭ সালে এলেন ল্যাঙ্গারের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিজেরা লটারির নম্বর বেছে নিয়েছিল, তারা তাদের টিকিটের মূল্য চারগুণ বেশি দাবি করেছিল। কারণ তারা নিজেরাই নম্বর বেছে নিয়েছিল। জুয়াড়িরা তাদের জয়কে তাদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কৃতিত্ব দেয় (গিলোভিচ & ডগলাস,১৯৮৬)।
===গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন===
নিয়ন্ত্রণের ভ্রম আরেকটি পরিসংখ্যানগত ঘটনার জন্য দায়ী, যাকে বলা হয় গড়ের দিকে প্রত্যাবর্তন। টভারস্কি ও কাহনেমান উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার স্কোর কখনো কখনো ভাগ্যের কারণে ওঠানামা করে। টিউটররা শিক্ষার্থীর উন্নতির কারণ নাও হতে পারে। যারা প্রথমে ভালো স্কোর করে, তারা সাধারণত গড়ের দিকে ফিরে আসে। যারা প্রথমে খারাপ করে, তারা প্রায়ই টিউটরিং ছাড়াই উন্নতি করে। এটি দেখায় যে আমরা গড়ের দিকে ফিরে যাই। খেলাধুলার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। বেসবল খেলোয়াড়দের ব্যাটিং গড় বা রান গড়ের মতো ক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রায়ই তাদের দক্ষতাকে অতিরঞ্জিত করে। কিন্তু এরপর তারা গড়ের দিকে ফিরে যায় (গাল্টন)।
[http://www.economics.pomona.edu/GarySmith/BBregress/baseball.html]
===আমাদের বিশ্বাস নিজেদের নিশ্চিতকরণ তৈরি করে===
রবার্ট রোজেনথালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ কখনো কখনো তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জীবনযাপন করে। যখন অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল যে তাদের একটি ছবির উচ্চ রেটিং দেওয়া উচিত, তারা তা করেছিল। যাদের বলা হয়েছিল ছবিটি ব্যর্থ, তারা কম রেটিং দিয়েছিল। এটি স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শন করে। শিক্ষকদের কি একই প্রত্যাশা থাকে? শিক্ষকদের প্রত্যাশা কি শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে? শিক্ষকরা কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চ মান ধরে রাখেন এবং যারা ভালো করে তাদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন (জাস্সিম & অন্যরা,১৯৯৬)। নিম্ন প্রত্যাশা সবসময় গড় শিশুকে নিরুৎসাহিত নাও করতে পারে। কিন্তু শিক্ষকের উচ্চ প্রত্যাশা কোনো শিশুর সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে স্ব-পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী প্রদর্শিত হয়েছে। ৪৮ থেকে ৬২ বছর বয়সী পুরুষ ও নারীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। একটি গ্রুপ ৭০ বা তার বেশি বয়সীদের বিরুদ্ধে স্মৃতি পরীক্ষায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় গ্রুপ ২০ বছর বয়সীদের বিরুদ্ধে পরীক্ষা দেয়। তৃতীয় গ্রুপ কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই পরীক্ষা দেয়। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা তরুণদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা গড়ে ১৪টি শব্দ মনে করেছিল। যারা কোনো প্রতিযোগিতায় ছিল না, তাদের ফলাফল একই ছিল। যারা বয়স্কদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেছিল, তারা সবচেয়ে কম শব্দ মনে করেছিল। সম্ভবত, বয়স্ক গ্রুপের সাথে থাকার মানসিক ধারণা তাদের অজান্তেই ভাবিয়েছিল যে বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়। এই স্টিরিওটাইপ তাদের পরীক্ষার ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল (ক্যারি)। উচ্চ মান ধরে রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। যে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনা দেখেন, তারা তাদের প্রতি বেশি হাসেন, মাথা নাড়েন, প্রশ্ন করেন এবং উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি সময় দেন (কুপার, ১৯৮৩)।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষক সম্পর্কে প্রত্যাশা ক্লাসের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যে শিক্ষার্থী শিক্ষক সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে ক্লাসে যায়, সে ক্লাসকে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে। যার প্রত্যাশা কম, তার কাছে ক্লাস কম আকর্ষণীয় মনে হয় (ফেল্ডম্যান & থেইসস, ১৯৮২)।
===আমরা কি অন্যদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করি তা পাই?===
অনেক সময় আমরা অন্যদের দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি করি, এমনকি তাদের না জেনেই। এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত বা ধারণা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে কিছু বলে। আমরা একটি ধারণা তৈরি করি এবং সিদ্ধান্ত নিই যে তারা কেমন মানুষ। আমরা মানুষের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি এবং বিশ্বাস করি, তারা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমরা যে আচরণ চাই, তা আমাদের ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। যদি কেউ দয়ালু, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সুস্থির হয়, তবে তারা অন্যদের কাছে তা প্রতিফলিত করে। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা যেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করি, অন্যরা তা ফিরিয়ে দেবে। সাফল্যের জন্য প্রত্যাশা স্থাপন মানুষকে তা পূরণ করতে উৎসাহিত করে। একজন কর্মী উচ্চ প্রত্যাশা পেলে বেশি অর্জন করতে পারে। কাউকে অভদ্র মনে করলে আমরা তাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করি। এটি তাদের প্রতিক্রিয়াকে আমাদের প্রত্যাশার দিকে নিয়ে যায়।
===উপসংহার===
আমরা আমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী জিনিসগুলোকে সত্য মনে করি। আমরা অন্যদের আমাদের চিন্তার সাথে সামঞ্জস্য করতে প্ররোচিত করতে পারি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সঠিক বা ভুল হতে পারে। আমাদের মন বিচারপ্রবণ। আমাদের বিচার বা সিদ্ধান্তের ফলাফল যাই হোক, আমাদের মন যেভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তা আশ্চর্যজনক। এটি প্রায়ই ভুল ধারণা ও কঠোর বিচারের দিকে নিয়ে যায়। প্ররোচনা এত সহজ হতে পারে যে এটি মনের একটি সাধারণ চিত্র বা সংবাদ শুনে ঘটতে পারে।
==মডিউল ১০: ক্লিনিকাল স্বজ্ঞা==
'''ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক, পৃষ্ঠা ১০৩-১০৪'''
প্রায়ই আমরা দুটি অনন্য এবং সম্পর্কহীন ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক ধরে ফলাফলের পূর্বাভাস দিই। এই ঘটনাগুলো সঠিক বা অনুপযুক্ত সময়ে একত্রিত হয়। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্কের ঘটনা বোঝার জন্য আমি আমার নিজের পরিবেশের দিকে তাকিয়েছি। গত সপ্তাহে এক রোদেলা সকালে আমি রাস্তা পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা পাচ্ছিলাম। আমি বুঝলাম, আমি অনেকদিন গাড়ি ধোয়নি। তাই আমি ভাবলাম, কেন একটি এক্সপ্রেস ওয়াশে গাড়িটি ধুয়ে না? আমি তাই করলাম এবং রাস্তায় ফিরে গেলাম। কিন্তু ভাগ্যের নির্দেশে, সেই বিকেলে একটি ঠান্ডা ফ্রন্ট এলো এবং প্রচণ্ড বৃষ্টি হলো। গাড়ি ধোয়ার পর কেন সবসময় বৃষ্টি হয়? আমার স্ত্রী, যিনি শিশু প্রসবের কাজ করেন, পূর্ণিমার সময় ডিউটি নিতে ভয় পান। কারণ তিনি মনে করেন, এই সময়ে বেশিরভাগ নারী প্রসব বেদনায় যান। এটি তাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাজ করতে এবং সপ্তাহান্তে ঘুমের অভাবে কষ্ট পেতে হয়। যদি আমি পরীক্ষা করতাম যে গাড়ি ধোয়ার পর কতবার বৃষ্টি হয়েছে, তবে দেখতাম, বেশিরভাগ সময় দিনটি সুন্দর ছিল। আমার স্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু আমি মনে করতে পারি, পূর্ণিমার সময় অনেকবার তিনি কোনো ফোন কল পাননি। লরেন চ্যাপম্যান ও জিন চ্যাপম্যান (১৯৬৯, ১৯৭১) গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক বৈধ মনো-নির্ণয়ের চিহ্ন ব্যবহারে বাধা। ভ্রান্তিমূলক সম্পর্ক নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণা ডি. এল. হ্যামিল্টন ও আর. কে. গিফোর্ড (১৯৭৬)-এর কাজের উপর ভিত্তি করে। এটি উপসংহারে পৌঁছেছে যে নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আরও সঠিক বিচার পাওয়া যায়। ক্লিনিশিয়ানরা মানুষ হিসেবে পর্যবেক্ষিত আচরণের ফ্রিকোয়েন্সির উপর ভিত্তি করে বিচার করতে পারেন। কিছু আচরণ একই রকম হলেও তা এক নয়। এই পর্যবেক্ষণগুলোকে সম্পর্কিত বলে ভুল বোঝা প্রায়ই ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়।
===পশ্চাৎদৃষ্টি, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫===
শৈশবে কতবার আপনি এমন কিছু করার জন্য শাস্তি পেয়েছেন, যা আপনার করা উচিত ছিল না? তখন আপনার ছোট ভাই বা বোন বলেছে, “আমি তো বলেছিলাম!” এটি খুব কষ্টদায়ক ছিল, কারণ তারা ঠিক ছিল। পশ্চাৎদৃষ্টি, বা “আমার আগেই জানা উচিত ছিল” ঘটনা, আমরা প্রতিদিন অনুভব করি। এটি আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি ঘটে। গগিন ও রেঞ্জ (১৯৮৫) আত্মহত্যার শিকারের পরিবার, বন্ধু ও পরিচিতদের দৃষ্টিকোণ থেকে পশ্চাৎদৃষ্টি পরীক্ষা করেছেন। সাধারণ প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে, মানুষ আত্মহত্যার শিকারের পরিবারকে কিছুটা দায়ী মনে করে। ম্যাকইনটোশ ও কেলি (১৯৯২) রিপোর্ট করেছেন, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক মৃত্যুর বেঁচে থাকাদের শোকের প্রতিক্রিয়ায় বেশি মিল রয়েছে। তারা দোষ বা সামাজিক সমর্থনের কোনো পার্থক্য পায়নি। কিন্তু আত্মহত্যার বেঁচে থাকারা তিনটি বিষয়ে আলাদা। তারা বেশি মানুষকে দোষ দেয়, কলঙ্কিত বোধ করে এবং মনে করে তারা কিছু করে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারত। আমি একজন পরিবারের বন্ধুর আত্মহত্যার অভিজ্ঞতা পেয়েছি। আমি দোষের অনুভূতি মনে করি। কিন্তু কোনো স্পষ্ট লক্ষণ বা সতর্কতা ছিল না যে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ক্লিনিকাল বিচারের ক্ষেত্রে, পশ্চাৎদৃষ্টি ক্লিনিশিয়ানদের ভুলের দিকে নিয়ে যায়। নির্ণয়কে অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা প্রকৃত সমস্যাকে ভুল বোঝার দিকে নিয়ে যায়।
===স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়, পৃষ্ঠা ১০৫-১০৭===
হারিয়ে যাওয়া চাবি বা মোজার জোড়া খুঁজতে গিয়ে বেশ হতাশা হয়। ক্লিনিকাল পরিবেশে, ক্লিনিশিয়ানদের কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করা উচিত তা জানা উচিত নয়। সৎ বিচারের জন্য এটি প্রয়োজন। পূর্বানুমানমূলক প্রশ্ন সাক্ষাত্কারকারীকে তার পছন্দের নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আচরণের ধরণ স্পষ্ট করে না। স্নাইডার ও স্বান (১৯৭৮) একটি পরীক্ষায় প্রমাণ করেছেন, একবার তথ্য পাওয়ার পর এবং তা অবৈধ বলা হলেও, মানুষের মনে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা কঠিন। এটি বিচারে ভুল এবং ভুল নির্ণয়ের দিকে নিয়ে যায়। এটি আমাকে একজন সচেতন আইনজীবীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আদালতে ঘোষণা করেন যে তার মক্কেল সব অভিযোগে দোষী। বিচারক জুরির দিকে তাকিয়ে বলেন, “সর্বশেষ মন্তব্যটি উপেক্ষা করুন।” এটি প্রায় অসম্ভব।
===ক্লিনিকাল বনাম পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী, পৃষ্ঠা ১০৭-১০৮===
অনেক ক্লিনিশিয়ান ও সাক্ষাত্কারকারী পশ্চাৎদৃষ্টি ও স্ব-নিশ্চিত নির্ণয়ের ভুল করেন। এটি তাদের নিজেদের ভবিষ্যদ্বাণীর উপর বেশি আত্মবিশ্বাসী করে। এটি পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণীর তুলনায় কম নির্ভরযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, হাইস্কুলের জিপিএ ব্যবহার করে কলেজে শিক্ষার্থীর পারফরম্যান্স ভবিষ্যদ্বাণী করা। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী মানুষের স্বজ্ঞার চেয়ে বেশি সঠিক। পল মীল (১৯৮৬) লিখেছেন, ফুটবল খেলার ফলাফল থেকে লিভার রোগের নির্ণয় পর্যন্ত ৯০টি তদন্তে পরিসংখ্যানগত ভবিষ্যদ্বাণী বেশি সঠিক। ক্লিনিশিয়ানদের পক্ষে মাত্র কয়েকটি গবেষণা দুর্বল প্রমাণ দেয়। এই গবেষণা সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা স্বজ্ঞা ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ডেভিস (১৯৭৬) বলেন, সাক্ষাত্কারকারীরা তাদের স্বজ্ঞার উপর নির্ভর করে। এটি কলেজে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান জিপিএ-এর মতো পরিসংখ্যানগত তথ্যের চেয়ে কম সঠিক। তিনি বলেন, “আপনি এবং আমি, একটি ফোল্ডার দেখে বা আধা ঘণ্টা সাক্ষাত্কার নিয়ে, ২০-৪০ জন অধ্যাপকের ৩.৫ বছরের ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের চেয়ে ভালো ধারণা তৈরি করতে পারি না।”
===প্রভাব, পৃষ্ঠা ১০৮-১০৯===
ক্লিনিশিয়ানরা ভুল করেন এবং পক্ষপাতিত্ব দেখান। উদাহরণস্বরূপ, যখন তারা কোনো সম্পর্ক দেখতে চান, তারা তা প্রমাণ করার জন্য প্রমাণ খোঁজেন। তারা মনে করেন তাদের স্বজ্ঞাগত ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবের চেয়ে বেশি সঠিক। ভুল ভবিষ্যদ্বাণী এড়াতে কিছু উপায় আছে। পশ্চাৎদৃষ্টি এড়াতে হবে, কারণ এটি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। এমন প্রশ্ন করা উচিত নয় যা আপনার পছন্দের উত্তরের দিকে নিয়ে যায়। আপনার মূল চিন্তাকে ভিন্ন ধারণার সাথে পরীক্ষা করুন। এই পক্ষপাত ও ভুলগুলো দেখায়, মনোবিজ্ঞান জ্ঞানের সমুদ্র থেকে মাত্র এক ফোঁটা তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই জ্ঞানের অভাব পূরণ করতে কিছু মনোবিজ্ঞানী তত্ত্ব তৈরি করেন। এটি আমাদের অজ্ঞতাকে আরও বাড়ায়। বিজ্ঞান সত্য খোঁজার একটি উপায়। এটি সবসময় মানুষের স্বজ্ঞার সাথে যুক্ত থাকবে।
==মডিউল ১১: ক্লিনিকাল থেরাপি: সামাজিক জ্ঞানের শক্তি==
===সামাজিক জ্ঞান এবং বিষণ্নতা, পৃষ্ঠা ১১১-১১৬===
বিষণ্নতার ক্ষেত্রে মানুষ বোঝে না যে তারা কী কী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়। চিকিৎসকদের জন্য বিষণ্নতার নির্ণয় কঠিন হতে পারে, কারণ এটি জটিল। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বিষণ্নতা হঠাৎ দেখা দেয়। এর কোনো শুরু বিন্দু নাও থাকতে পারে। কিন্তু এটি বোঝার উপায় আছে।
ব্যাখ্যামূলক শৈলী এমন একটি উপায়। (পিটারসন &স্টিন , ২০০২; সুইনি &অন্যরা , ১৯৮৬)। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে বিষণ্নতা কীভাবে কাজ করে। বিষণ্ণ মানুষ সাধারণত জিনিসের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক দুটোই দেখে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা শুধু ইতিবাচক দিক দেখে। বিষণ্ণ ব্যক্তির জীবনে কিছু নেতিবাচক ঘটলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে দায়ী করে। যারা বিষণ্ণ নয়, তারা ব্যর্থতার জন্য অন্য কিছুকে দায়ী করে। বিষণ্নতার ক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন সবসময় মনে আসে: বিষণ্ণ মেজাজ কি নেতিবাচক চিন্তার কারণ? নাকি নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্ণ মেজাজের কারণ? সাধারণত আমরা ধরে নিই, নেতিবাচক চিন্তা বিষণ্নতার কারণ। এটি সত্য। কিন্তু এটি দুটোই হতে পারে। আমাদের মেজাজ আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। ভালো মেজাজে আমরা ইতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের খারাপ ঘটনাগুলো মনে করি। তখন আমরা সেগুলো উপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এখন হঠাৎ সেগুলো নিয়ে বিষণ্ণ হই। নেতিবাচক চিন্তাও বিষণ্ণ মেজাজের কারণ হতে পারে। ধরুন, আপনি নতুন চাকরি শুরু করলেন। প্রথম যে ব্যক্তির সাথে দেখা হলো, তিনি দুঃখী ও বিষণ্ণ। পরের ব্যক্তিও একই রকম। তৃতীয় ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়ার আগে আপনি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করতে পারেন। এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবায়, বিষণ্নতা কীভাবে ঘোরে? এটি কীভাবে শুরু হয়? এটি কোথায় শেষ হয়? এটি কি শেষ হয়? বিষণ্নতার চক্র আমাদের এই প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের মেজাজ, ভালো বা খারাপ, আমাদের চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত করে। খারাপ মেজাজে আমরা অতীতের ঘটনাকে ভিন্নভাবে মনে করি। এটি মানুষের আমাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণকেও প্রভাবিত করে। আমরা যদি দুঃখী ও হতাশ দেখাই, তবে মানুষ আমাদের সাথে ভিন্নভাবে আচরণ করে। নিচে বিষণ্নতার চক্র এবং এটি কীভাবে বিকশিত হয় তা দেখানো হয়েছে। (পিটার লুইনসন)(১৯৮৫)[http://www.alanpriest.f2s.com/images/Cycle_of_Depression.JPG] এই সব কারণে চিকিৎসকরা তাদের রোগীদের ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করেন। তারা ব্যক্তির চিন্তাভাবনার দিকে বেশি মনোযোগ দেন, তাদের আচরণের চেয়ে। তারা কীভাবে নিজের জীবন ও অন্যদের জীবন দেখে তাও বিবেচনা করে। এই বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে পারেন।
===সামাজিক জ্ঞান এবং একাকীত্ব, পৃষ্ঠা ১১৬-১১৮===
একাকীত্ব এমন একটি অনুভূতি, যা বেশিরভাগ মানুষ জীবনে অন্তত একবার অনুভব করে। এটি প্রায়ই অজান্তেই ঘটে। একাকী বোধ করা এবং শারীরিকভাবে একা থাকার মধ্যে পার্থক্য আছে। একাকীত্ব প্রায়ই বিষণ্নতার সাথে যুক্ত। কিন্তু সবসময় নয়। এই দুটির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উচ্চ। এটি একটি নেতিবাচক সম্পর্ক, যা ০.৫-এর বেশি (এন্ডারসন প্রমুখ. ১৯৯৪: ৫৪৯-৫৫৭)।
একাকীত্বও বিষণ্নতার মতো একটি চক্র। যারা একাকী বোধ করে, তারা লাজুকভাবে মানুষের কাছে যায়। একাকীত্ব তাদের অপ্রতুল বোধ করায়। তারা মনে করে, তাদের একাকীত্বের জন্য তারাই দায়ী। “একটি সম্পর্ক অধ্যয়ন স্ব-দোষারোপের ধারণাকে আরও সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। এটি দেখিয়েছে, আচরণগত এবং চরিত্রগত স্ব-দোষারোপ বিষণ্নতা এবং একাকীত্বে অনন্যভাবে অবদান রাখে” (549)। এই স্ব-দোষারোপের কারণে মানুষ একাকীত্বের চক্রে পড়ে। এটি থেকে বের হওয়া কঠিন। মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস তাদের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্দিষ্ট ফলাফল দেয়, যা তাদের পূর্বের চিন্তাকে শক্তিশালী করে (এন্ডারসন প্রমুখ.)।
===সামাজিক জ্ঞান এবং উদ্বেগ, পৃষ্ঠা ১১৮-১১৯===
নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বিভিন্ন কারণে ঘটে। এর বেশিরভাগই ভয় থেকে উৎপন্ন। সামাজিক মূল্যায়নের ভয়, স্ব-প্রকাশের ভয়, এবং অন্যদের মূল্যায়ন করার ভয়। লাজুকতা এবং উদ্বেগের মধ্যে উচ্চ সম্পর্ক রয়েছে। এটি ০.৭৫ (অ্যাসেনডর্প ১৯৮৭: ৫৪২-৫৪৯)। লাজুক মানুষ অলাজুক মানুষের চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়।
===চিকিৎসার জন্য সামাজিক-মনোবৈজ্ঞানিক পন্থা, পৃষ্ঠা ১২০-১২২===
মনোবিজ্ঞানী চিকিৎসকরা রোগীর চিন্তাভাবনা ও মনোভাব পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। তারা প্রথমে রোগীর আচরণ সামঞ্জস্য করে। এই পদ্ধতিগুলো সহায়ক পরিবেশে, যেমন সাপোর্ট গ্রুপ বা স্ব-সহায়ক গ্রুপে, প্রয়োগ করা হয়। আচরণ থেরাপিস্টরা একটি কৌশল ব্যবহার করেন। এতে একজন ব্যক্তি সহায়ক দর্শকদের সামনে নতুন মৌখিক বা শারীরিক আচরণ প্রদর্শন করে। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। যুক্তিবাদী-আবেগীয় থেরাপি অনুসারে, আমরা নিজেরাই আমাদের আবেগ তৈরি করি। স্ব-সহায়ক গ্রুপ এটি ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীদের নতুন আচরণ তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ নিজের সম্পর্কে যা বলে তা তাদের আবেগকে প্রভাবিত করতে পারে (মিরেলস ১৯৭৭: ১১৩২-১১৩৩)। আত্ম-মূল্য, সুখ এবং একত্রতার মতো ইতিবাচক আবেগ ইতিবাচক অভিজ্ঞতার চক্রের মাধ্যমে বজায় রাখা যায়। বিপরীতভাবে, দুঃখ, রাগ এবং হতাশার মতো নেতিবাচক আবেগ নেতিবাচক ঘটনার চক্রে বজায় থাকে। নেতিবাচক চক্র থেকে মানুষকে বের করতে পরিবেশ পরিবর্তন করতে হয়। ভালো আচরণকে উৎসাহিত করতে হয়। তাদের জ্ঞানগতভাবে ইতিবাচক হতে হয়। নেতিবাচক আবেগ কল্পনার ফসল নয়। এটি সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রকাশ পায়। সাপোর্ট গ্রুপে নতুন আচরণ পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োগের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা যায়। তখন ব্যক্তি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও কার্যকরভাবে সাড়া দিতে পারে। ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলতে পারে। ফলে তারা ভালো সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকে এবং ইতিবাচকভাবে আচরণ করে। ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপি একটি প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে। এতে ব্যক্তি তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে, যা তাদের আবেগ পরিবর্তন করে। তারা তাদের ক্রিয়া ও ফলাফলকে সংজ্ঞায়িত করতে শেখে। এটি তাদের পরিস্থিতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম করে। এমনকি ফলাফল নেতিবাচক হলেও, তারা জানে তারা কী ভুল করেছে বা বাহ্যিক কারণ কী ছিল। এটি তাদের নেতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক অনুভব করতে দেয়। ভালো সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ প্রায়ই নিজেদের সামাজিকভাবে অপ্রতুল মনে করেন। এটি তাদের পরিবেশ বা সামাজিক পরিস্থিতির নেতিবাচক উপাদানের কারণে হয়। এই ধরনের ব্যক্তিকে তাদের নেতিবাচক বিশ্বাস উল্টে দিতে সাহায্য করা যায়। এটি ব্যাখ্যামূলক শৈলী থেরাপির লক্ষ্য। এই থেরাপি ব্যক্তিকে এমন সর্ব-ইতিবাচক ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করে না, যাকে সবাই সব পরিস্থিতিতে প্রশংসা করে। প্রতিটি চক্রে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পর্যায় থাকে। ইতিবাচক ঘটনায় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং নেতিবাচক ঘটনায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। এই অর্থে, নেতিবাচক স্ব-ধারণা পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর, স্বাভাবিক এবং অস্থায়ী।
==মডিউল ১৩: লিঙ্গ, জিন এবং সংস্কৃতি==
===লিঙ্গ পার্থক্য===
লিঙ্গ পার্থক্য কি প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা নির্ধারিত? নাকি এটি পৃথক সংস্কৃতির দ্বারা নির্দেশিত? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের সংস্কৃতি পুরুষ ও নারীর উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা পরীক্ষা করতে হবে। শৈশবে সাংস্কৃতিক প্রভাবের পার্থক্য দেখা যায়। ছেলেরা তাদের যত্নকারীর সাথে বিচ্ছেদ খোঁজে। মেয়েরা তাদের সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় দেয়। এই লিঙ্গ পার্থক্য প্রাপ্তবয়স্কতায়ও থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রুপ পরিস্থিতিতে পুরুষরা কাজের উপর মনোযোগ দেয়। নারীরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর বেশি মনোযোগ দেয় (গ্যাব্রিয়েল & গার্ডনার, ১৯৯৯)।
সহানুভূতি প্রকাশ বা অন্যের অনুভূতি নিজের মতো অনুভব করার ক্ষেত্রেও লিঙ্গ পার্থক্য রয়েছে। কেউ দুঃখে থাকলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি আবেগ প্রকাশ করে, যেমন কান্না। এই পার্থক্য সম্ভবত নারীদের অ-মৌখিক ইঙ্গিতের প্রতি উচ্চতর সংবেদনশীলতার কারণে। এটি তাদের আবেগীয় বার্তা সহজে বোঝতে সাহায্য করে।
===সামাজিক প্রভাব===
জন উইলিয়ামস ও ডেবোরা বেস্টের মতে, পুরুষরা বেশি প্রভাবশালী এবং আক্রমণাত্মক (জন উইলিয়ামস & ডেবোরাহ বেস্ট, ১৯৯০ a.p.15)। এমন কোনো সমাজের প্রমাণ নেই যেখানে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী (প্রাট্টো, ১৯৯৬)। সময়ের সাথে লিঙ্গ পার্থক্য কমছে। নারীরা বেশি ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন।
====আগ্রাসন====
মনোবিজ্ঞানীরা আগ্রাসনকে এমন আচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন, যার উদ্দেশ্য অন্যকে ক্ষতি করা (মায়ার্স, ২০০৪)। জরিপে দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আগ্রাসনের কথা স্বীকার করে।
====যৌনতা====
বিষয়গত এবং শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ “ভিন্নতার চেয়ে বেশি মিল” (গ্রিফিট, ১৯৮৭)। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৪৮% পুরুষ এবং ১২% নারী বিভিন্ন সঙ্গীর সাথে নৈমিত্তিক যৌনতায় আরাম ও আনন্দ অনুভব করতে পারে। তারা কতবার যৌনতা নিয়ে ভাবে? ধারণা করা হয়, ১৯% নারী এবং ৫৪% পুরুষ প্রতিদিন বা দিনে কয়েকবার যৌনতা নিয়ে ভাবে (লাউম্যান & অন্যরা, ১৯৯৪)।
===বিবর্তন এবং লিঙ্গ: স্বাভাবিকভাবে যা আসে তা করা?===
====লিঙ্গ এবং সঙ্গী নির্বাচনের পছন্দ====
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীদের একটি তত্ত্ব বলে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক এবং প্রভাবশালী। কারণ তারা নারীদের ডিমের তুলনায় অনেক বেশি শুক্রাণু উৎপাদন করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন পুরুষদের আচরণ বেশি আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী। পুরুষরা তাদের জিন ছড়িয়ে দিতে এবং যতটা সম্ভব নারীকে গর্ভবতী করতে চায়। বিপরীতভাবে, নারীরা এমন একজন পুরুষ খোঁজে, যিনি তাকে এবং তার সন্তানকে সমর্থন ও যত্ন নিতে পারে। বিবর্তন পুরুষদের আচরণের কারণ বলে মনে করা হয়। শারীরিকভাবে প্রভাবশালী পুরুষরা বেশি নারীকে আকর্ষণ করে। এটি মনে হয় তারা ভালো সমর্থন ও যত্ন দিতে পারে। এটি অন্য পুরুষদের আরও আক্রমণাত্মক ও প্রভাবশালী হতে বাধ্য করে। নারীরা সঙ্গী হিসেবে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত বা সফল পুরুষদের খোঁজে। নারীরা মডেলের মতো সৌন্দর্য পেতে অনাহার পর্যন্ত সহ্য করে। এটি পুরুষরা চায়। নারীরা ধনী বা প্রভাবশালী পুরুষদের পছন্দ করে, কারণ তারা তাদের সন্তানদের জন্য বেশি সরবরাহ করতে পারে।
====লিঙ্গ এবং হরমোন====
অনেকে বিশ্বাস করে, যৌন হরমোন, প্রধানত টেস্টোস্টেরন, লিঙ্গ পার্থক্যের মূল উপাদান। টেস্টোস্টেরন পুরুষালি বৈশিষ্ট্য এবং আগ্রাসনকে প্রভাবিত করে। সহিংস পুরুষ অপরাধীদের সাধারণত উচ্চ টেস্টোস্টেরন মাত্রা থাকে। এটাও লক্ষ্য করা যায়, বেশিরভাগ পুরুষ বয়স বাড়ার সাথে সাথে কম আক্রমণাত্মক হয়। তখন তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কমে যায়।
===বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপর প্রতিফলন===
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান ব্যবহার করে তত্ত্ব ব্যাখ্যা করার সময় দুটি সমস্যা দেখা দেয়: পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত এবং সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ। পশ্চাৎদৃষ্টি পক্ষপাত হলো ইতিহাস পরীক্ষা করে এবং পিছিয়ে গিয়ে আচরণের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা বলি নারীরা শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক, তবে পশ্চাৎদৃষ্টিতে বলতে পারি, এটি তাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন ছিল (মায়ার্স, ২০০৪)। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণ বিবর্তনীয় ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষা করে। এটি আন্তঃসাংস্কৃতিক এবং প্রাণী আচরণ পর্যবেক্ষণ, হরমোন এবং জিনগত অধ্যয়ন ব্যবহার করে (মায়ার্স, ২০০৪)। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীরা একমত যে বিবর্তন আমাদের মিল এবং পার্থক্যের কিছু ব্যাখ্যা দেয়। কিন্তু তারা মনে করেন না যে বিবর্তন একমাত্র সাংস্কৃতিক আচরণের পার্থক্য ভবিষ্যদ্বাণী করে (মায়ার্স, ২০০৪)
===সংস্কৃতি এবং লিঙ্গ===
সংস্কৃতি হলো ধারণা, আচরণ, মনোভাব এবং ঐতিহ্য, যা একটি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়। একটি সংস্কৃতির মধ্যে নির্দিষ্ট আচরণগত প্রত্যাশা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, লিঙ্গ ভূমিকা। এটি এমন আচরণ, যা সংস্কৃতি নারী ও পুরুষদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে (Myers, 2004)।
===লিঙ্গ ভূমিকা সংস্কৃতি এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়===
গত শতাব্দীর শেষার্ধে লিঙ্গ ভূমিকা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩৮ সালে মাত্র ২০% আমেরিকান একমত ছিলেন যে বিবাহিত নারী শিল্প ও ব্যবসায় অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু ১৯৯৬ সালে ৮০% আমেরিকান এটি সমর্থন করেছেন। এটি প্রমাণ করে, সময় আমেরিকান সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে (Niemi & others, 1989; NORC, 1996)। এই মphysics://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
এই মনোভাব পরিবর্তনের সাথে আচরণগত পরিবর্তনও এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬০ সাল থেকে ৪০ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার দ্বিগুণ হয়েছে (Bureau of the Census, 1999)। এটি স্পষ্ট যে শুধু বিবর্তন এবং জীববিজ্ঞানই লিঙ্গ ভূমিকা পরিবর্তন করে না। সংস্কৃতিও লিঙ্গ ভূমিকাকে প্রভাবিত করে (Myers, 2004)।
===উপসংহার: জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি===
জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি উভয়ই আমাদের মনোভাব ও আচরণকে প্রভাবিত করে। জিন আমাদের নির্দিষ্টভাবে আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। কিন্তু সংস্কৃতি এই আচরণগুলোকে আরও জোরালো করে। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। জীববিজ্ঞানের প্রভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে (Myers, 2004)। উদাহরণস্বরূপ, মানুষ (পরিবেশ) নির্দিষ্ট জিনগত বৈশিষ্ট্যের মানুষের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। একটি উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক নিয়ম হলো, পুরুষদের তাদের নারী সঙ্গীর চেয়ে লম্বা হওয়া উচিত। একটি গবেষণা অনুসারে, ৭২০ জন দম্পতির মধ্যে মাত্র ১ জন এই সাংস্কৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল (Gillis & Avis, 1980)। জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির এই পারস্পরিক সম্পর্ককে মনোবৈজ্ঞানিকভাবে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। পশ্চাৎদৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বলতে পারি, পুরুষ যখন নারীর চেয়ে লম্বা হয়, তখন নারীদের উপর সামাজিক ক্ষমতা বজায় থাকে। অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করলে, যদি সঙ্গীরা সমান উচ্চতার সঙ্গী পছন্দ করত, তাহলে লম্বা পুরুষ এবং ছোট নারীদের সঙ্গী থাকত না। অতএব, দম্পতিদের উচ্চতার সাংস্কৃতিক নিয়ম জীববিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হতে পারে। কারণ এটা স্পষ্ট যে বিবর্তন লম্বা পুরুষদের সৃষ্টি করেছে এবং সংস্কৃতি দম্পতিদের জন্য একই নিয়ম নির্ধারণ করেছে (Myers, 2004)।
==মডিউল ২১: ব্যক্তির ক্ষমতা==
===ব্যক্তি এবং পরিস্থিতির পারস্পরিক সম্পর্ক===
- পারস্পরিক সম্পর্ক তিনটি উপায়ে ঘটে। প্রথমত, যেকোনো সামাজিক পরিস্থিতি প্রত্যেককে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। আমরা সবাই ভিন্নভাবে দেখি এবং চিন্তা করি। তাই আমরা পরিস্থিতি যেভাবে উপলব্ধি করি, তার ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেখাই। কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল। দ্বিতীয়ত, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সাধারণত ঘটে কারণ মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি বেছে নেয় এবং তার জন্য দায়ী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, শান্ত মানুষ শান্ত বা অসামাজিক পরিবেশ বেছে নিতে পারে। আরেকটি উদাহরণ হলো, মানুষ যখন কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য নির্বাচন করে; রক্ষণশীল মানুষ সম্ভবত উদারপন্থী কলেজে ভর্তি হবে না। তৃতীয়ত, প্রায়শই মানুষ নিজেরাই তাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা কাউকে অসৌজন্যমূলক মনে করি বা প্রত্যাশা করি, তবে আমরা তাকে যেভাবে আচরণ করি, তা তাকে অসৌজন্যমূলক বা দূরবর্তী আচরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। আমাদের সামাজিক পরিবেশ আমরা যা তৈরি করি, তাই।
- আমাদের পরিবেশের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো বা কাজ করার বিষয়ে বিতর্কও উঠে। এক দৃষ্টিকোণ থেকে, নিজেকে পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা এবং অন্যদের “স্বাধীন কার্যকর্তা” হিসেবে দেখা যুক্তিযুক্ত। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে, এর বিপরীতটাও যুক্তিযুক্ত হতে পারে; নিজেকে কার্যকর্তা এবং অন্যদের পরিবেশের ফল হিসেবে দেখা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা অন্যদের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হিসেবে দেখি, তবে আমরা তাদের বোঝার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আমরা শুধু বলব না যে তারা অলস বা দুর্নীতিগ্রস্ত। উপসংহারে, আমরা আমাদের পরিবেশ এবং সামাজিক জগতের ফল এবং স্রষ্টা উভয়ই।
===সামাজিক চাপ প্রতিরোধ===
====প্রতিক্রিয়াশীলতা====
প্রতিক্রিয়াশীলতার বহুল সমর্থিত তত্ত্ব বলে, “মানুষ তাদের স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা করতে কাজ করে” (Myers, 229)। পরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষ প্রায়ই তাদের স্বাধীনতা প্রকাশ করতে প্রত্যাশার বিপরীত কাজ করে। স্বাধীনতা সব ব্যক্তির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রায়ই বিদ্রোহ করে যখন মনে করে তাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নাবালকদের মদ্যপান। জরিপে দেখা গেছে, আইনি মদ্যপানের বয়সের নিচে থাকা মানুষ বেশি মাত্রায় মদ্যপান করে, তুলনায় আইনি বয়সের উপরে থাকা মানুষের তুলনায় (Engs & Hanson, 1989)। আরেকটি উদাহরণ হলো, ধর্ষণের কাজ। ধর্ষণের সময় একজন পুরুষ বা নারী অনুভব করতে পারে যে তাদের স্বাধীনতা সঙ্গীর প্রত্যাখ্যানের দ্বারা সীমিত হচ্ছে।
====অনন্যতা প্রকাশ====
“মানুষ অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা অন্যদের থেকে খুব আলাদা মনে হয়..... তারা একইভাবে অস্বস্তি বোধ করে যখন তারা সবার মতো মনে হয়” (Myers, 230)। ব্যক্তিরা নিজেদের অনন্য মনে করলে উচ্চ মর্যাদা অনুভব করে। কিন্তু তারা এতটা আলাদা হতে চায় না যে তারা বহিষ্কৃত মনে হয়। এই অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা শিশুদের নাম নির্বাচনে স্পষ্ট। শিশুরাও অনেকভাবে অনন্যতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ম্যাকগুয়ার এবং তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অন্যদের সম্পর্কে বলতে বলা হলে তারা প্রায়ই নিজেদের সম্পর্কে কিছু অনন্য কথা বলে।
ব্যক্তিরা তাদের পার্থক্য বিশেষ করে লিঙ্গের পার্থক্যের ক্ষেত্রে স্বীকার করে (Cota & Dion, 1986)। উদাহরণস্বরূপ, একটি লিঙ্গের মানুষ বিপরীত লিঙ্গের মাঝে থাকলে তাদের পার্থক্য বেশি লক্ষ্য করে। এটি আমাদের বোঝায় কীভাবে সংখ্যালঘুরা তাদের পার্�thক্য এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়।
“যখন দুটি সংস্কৃতির মানুষ প্রায় একই রকম হয়, তখনও তারা তাদের পার্থক্য লক্ষ্য করে, যত ছোটই হোক” (Myers, 231)। এক পক্ষের অন্য পক্ষের প্রতি বেশি সংশ্লিষ্টতা থাকলে সাধারণত বৈরিতা বেশি হয়।
===সংখ্যালঘু প্রভাব===
সংখ্যালঘুকে কী প্রভাবশালী করে? বইয়ে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যা সংখ্যালঘুরা অর্জন করে সংখ্যাগরিষ্ঠের মনোযোগ এবং সম্মান পায়। আমরা দেখি, সংখ্যালঘুর অটল বিশ্বাস এবং মতামতের ধারাবাহিকতা ধীরে ধীরে সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা গৃহীত হয়। আত্মবিশ্বাস, যা ধারাবাহিকতার ফল, সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে প্রতিষ্ঠিত করে যে সংখ্যালঘু তাদের বিশ্বাস এবং দাবিতে দৃঢ় এবং ক্ষমতাশালী। এবং শেষে, সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথম দুটির ফল হিসেবে, সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্নতা সংখ্যালঘুর উদ্দেশ্যকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
===নেতৃত্ব কি সংখ্যালঘু প্রভাব?===
- কিছু নেতা তাদের গোষ্ঠী এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে উঠে আসে। অন্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত বা নির্বাচিত হয়। ভালো নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, সাঁতার দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা ব্যক্তি বিতর্ক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেরা নাও হতে পারে। নেতৃত্বের সবচেয়ে সাধারণ ধরন হলো কাজভিত্তিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক নেতৃত্ব। কাজভিত্তিক নেতৃত্বে মান নির্ধারণ, সংগঠন, এবং লক্ষ্য অর্জন অন্তর্ভুক্ত। কাজভিত্তিক নেতারা সাধারণত নির্দেশমূলক শৈলী ব্যবহার করে। এটি ভালো কাজ করে যদি নেতা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং ভালো নির্দেশনা বা নির্দেশিকা দিতে সক্ষম হয়। এছাড়া, কাজভিত্তিক নেতৃত্ব লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। তাই তারা গোষ্ঠীকে সঠিক পথে রাখতে এবং কাজ সম্পন্ন করতে ভালো। বিষয়ের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিস্তারিত এবং সম্ভবত কঠিন লক্ষ্য এবং মাঝে মাঝে অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের অর্জনকে উদ্দীপিত করে। সামাজিক নেতৃত্বে সহানুভূতি বা সমর্থন, দলগত কাজের কাঠামো তৈরি, এবং দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রায়ই স্ব-শাসিত পদ্ধতি। অনেক গবেষক মনে করেন, এই ধরনের নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসের জন্যও ভালো। এছাড়া, যখন কর্মীরা অনুভব করে যে তারা তাদের কাজের উপর নিয়ন্ত্রণে আছে, তখন তারা বেশি উদ্বুদ্ধ হয় এবং বেশি অর্জন করে।
- গবেষণায় দেখা গেছে, সেরা নেতারা কাজভিত্তিক এবং সামাজিক নেতৃত্ব উভয় বিভাগের অধীনে পড়ে। তারা কাজের অগ্রগতির পাশাপাশি কর্মীদের চাহিদা এবং অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বোঝাপড়া। কার্যকর নেতারা আত্মবিশ্বাসী ক্যারিশমা প্রকাশ করে। তারা তাদের লক্ষ্যের প্রতি ধারাবাহিক থাকে। ক্যারিশম্যাটিক নেতারা সাধারণত তাদের ইচ্ছার একটি বিশ্বাসযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি বা ধারণা থাকে। তারা এই ধারণাগুলো স্পষ্টভাবে যোগাযোগ করতে পারে। তারা তাদের গোষ্ঠীর প্রতি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী, যা অন্যদের অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে।
- গোষ্ঠীও তাদের নেতাদের প্রভাবিত করে। কখনো কখনো একজন নেতা যদি গোষ্ঠীর মান থেকে খুব বেশি বিচ্যুত হয়, তবে তাকে “বহিষ্কার” করা হতে পারে। বুদ্ধিমান নেতারা প্রায়শই সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে থাকে। তারা যা বলে তা নিয়ে সতর্ক থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ ধারণা মনে রাখতে হবে:
*"প্রতিক্রিয়াশীলতা - স্বাধীনতার অনুভূতি রক্ষা বা পুনরুদ্ধারের একটি উদ্দেশ্য। প্রতিক্রিয়াশীলতা উদ্ভূত হয় যখন কেউ আমাদের ক্রিয়ার স্বাধীনতাকে হুমকি দেয়।"
*"নেতৃত্ব - এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গোষ্ঠীর কিছু সদস্য গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে এবং নির্দেশনা দেয়।"
==মডিউল ২৭: ভালোবাসার উত্থান-পতন==
===উত্তপ্ত ভালোবাসা===
ভালোবাসার নীতিগুলো ভালোভাবে বোঝার জন্য প্রথমে এটিকে পরীক্ষা এবং পরিমাপ করতে হবে। মনোবিজ্ঞানী রবার্ট স্টার্নবার্গ (১৯৯৮) ভালোবাসাকে একটি ত্রিভুজ হিসেবে দেখেন। এর তিনটি দিক হলো উত্তেজনা, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিশ্রুতি। ভালোবাসাকে দুই ব্যক্তির সম্পর্কের উল্লেখে সবচেয়ে ভালো বর্ণনা করা যায়। ভালোবাসা তখনই বেশি স্পষ্ট হয় যখন সম্পর্কে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকে, একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং গ্রহণ করা হয়, এবং প্রিয়জনের সঙ্গ উপভোগ করা হয়। উত্তপ্ত ভালোবাসা প্রধানত শারীরিকভাবে প্রকাশ পায় এবং একচেটিয়া সম্পর্ক বজায় রাখে। উত্তপ্ত ভালোবাসা এমন একটি ভালোবাসা যা দুই ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করা হয়, যারা তাদের সঙ্গীর প্রতি তীব্রভাবে মুগ্ধ। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি আবেগময় ভালোবাসা, যা উত্তেজনাপূর্ণ এবং তীব্র। ইলেইন হ্যাটফিল্ড (১৯৯৮) এটিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন “অন্যের সাথে মিলনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষার অবস্থা” হিসেবে (পৃষ্ঠা ১৯৩)। ভালোবাসার অনেক রূপ রয়েছে। সময় এবং সংস্কৃতি উভয়ই সম্পর্কে গঠিত ভালোবাসাকে প্রভাবিত করে। সময় সম্পর্কে জড়িত ব্যক্তিদের বয়স বা তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। সংস্কৃতি ভালোবাসা এবং সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন ব্যক্তির জাতিগত পরিচয়, পটভূমি, ধর্ম, এমনকি আর্থিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কের ভালোবাসাকে প্রভাবিত করতে পারে।
===সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা===
সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসাকে সবচেয়ে ভালো সংজ্ঞায়িত করা যায় এমন উত্তপ্ত ভালোবাসা হিসেবে, যা দুই সঙ্গীর মধ্যে একটি উষ্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। দুই সঙ্গীর মধ্যে ভাগ করা সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসায় উত্তপ্ত ভালোবাসার তুলনায় কম উত্থান-পতন থাকে। এটি বেশি স্থিতিশীল। সঙ্গীদের মধ্যে গভীর সম্মান এবং স্নেহময় সংযুক্তি বেশি স্পষ্ট। উত্তপ্ত ভালোবাসা একটি জ্বলন্ত আগুনের মতো, যা গরম এবং দ্রুত জ্বলে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা হলো আগুন চলে যাওয়ার পরে থাকা গরম কয়লা। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই বিবাহে পাওয়া যায়। বিবাহে, প্রায়ই উত্তেজনা সম্পর্ক থেকে চলে যায়। কিন্তু অন্য ব্যক্তির প্রতি গভীর স্নেহ এবং প্রতিশ্রুতি তখনও থাকে। সঙ্গীভিত্তিক ভালোবাসা প্রায়ই সঙ্গীদের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সম্পর্ক যত দীর্ঘ হয়, তত কম আবেগের রোলারকোস্টার থাকে।
===ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা===
যেকোনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ন্যায়পরায়ণতা। সম্পর্কে ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। ইলেইন হ্যাটফিল্ড, উইলিয়াম ওয়ালস্টার এবং এলেন বার্শেইড (১৯৭৮) একটি ন্যায়পরায়ণতার নীতি ঘোষণা করেছেন: আপনি এবং আপনার সঙ্গী সম্পর্ক থেকে যা পান, তা আপনারা প্রত্যেকে যা দেন, তার সমানুপাতিক হওয়া উচিত। অন্য কথায়, সম্পর্ক কাজ করার জন্য প্রত্যেক সঙ্গীকে তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট অনুভূতি এবং ক্রিয়া বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী ন্যায়পরায়ণতা অর্জিত হয় সম্পর্কে “কে কার কাছে ঋণী” তা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে। যখন একজন সঙ্গী অন্যের চাহিদা পূরণ করে, তখন তার বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করা হয় না। ঋণের অনুভূতি থেকে উপেক্ষা করতে পারা সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করে। একটি পরিচিত ব্যক্তি যখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে, তখন তার একটি সূত্র হলো, সে অপ্রত্যাশিতভাবে ভাগ করে নেয় (Miller & others, 1989)। সুখী বিবাহিত মানুষ প্রায়ই হিসাব রাখে না যে তারা কতটা দিচ্ছে এবং পাচ্ছে (Buunk & Van Yperen, 1991)।
===সম্পর্কের সমাপ্তি===
সম্পর্ক সাধারণত তখন শেষ হয় যখন সঙ্গীদের মধ্যে ভাগ করা ভালোবাসা আর তাৎপর্যপূর্ণ থাকে না। দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ভালোবাসা এবং তৃপ্তির উপর নির্ভর করে। এছাড়া সম্ভাব্য বিকল্প সঙ্গীদের প্রতি মনোযোগ না দেওয়া, সমাপ্তির খরচের ভয়, এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার অনুভূতিও গুরুত্বপূর্ণ (Adams & Jones, 1997)।
====কে বিবাহবিচ্ছেদ করে?====
বিবাহবিচ্ছেদের হার বর্তমানে উচ্চ। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এটি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ মূলত সম্পর্কে অসুখ, সঙ্গীদের মধ্যে ভালোবাসার ক্ষতি এবং বিবাহের মধ্যে ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের ফল। বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি এও নির্ভর করে কে কার সাথে বিবাহ করে (Fergusson & others, 1984; Myers, 2000a; Tzeng, 1992)। মানুষ সাধারণত বিবাহিত থাকে যদি তারা:
* ২০ বছর বয়সের পরে বিবাহ করে।
* উভয়ে স্থিতিশীল, দুই পিতামাতার ঘরে বেড়ে ওঠে।
* বিবাহের আগে দীর্ঘ সময় প্রেম করে।
* ভালো এবং একই রকম শিক্ষিত।
* ভালো চাকরি থেকে স্থিতিশীল আয় উপভোগ করে।
* ছোট শহরে বা খামারে বাস করে।
* বিবাহের আগে একসাথে বসবাস বা গর্ভবতী হয়নি।
* ধর্মীয়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
* একই বয়স, বিশ্বাস এবং শিক্ষার।
এই ফলাফল বিবাহ থেকে বিবাহে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু প্রতিটি বিবাহবিচ্ছেদ বা সম্পর্কে ভালোবাসার ক্ষতি এই পরিস্থিতিগুলোর একটির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। স্পষ্টতই, অন্য ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত বা সম্পর্কিত হওয়ার উপায় ছাড়া, একটি সম্পর্ক বা এমনকি বিবাহ বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
==মডিউল ২৮: দ্বন্দ্বের কারণ==
দ্বন্দ্ব- ক্রিয়া বা লক্ষ্যের একটি উপলব্ধ অসঙ্গতি
===সামাজিক দ্বিধা===
আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য যে পছন্দগুলো আমরা করি, তা সমষ্টিগতভাবে শাস্তিমূলক হতে পারে।
====কয়েদির দ্বিধা====
দুই ব্যক্তিকে জেলা অ্যাটর্নি একটি অপরাধের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তারা অপরাধে দোষী। কিন্তু জেলা অ্যাটর্নির কাছে তাদের কম অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই তিনি তাদের আলাদা করে একে একে কথা বলেন। তিনি তাদের তিনটি পছন্দ দেন:
• স্বীকার করুন। যদি অন্য ব্যক্তি স্বীকার না করে, তবে আপনাকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং তাকে তার এবং আপনার শাস্তি একসাথে ভোগ করতে হবে।
• যদি উভয়ে স্বীকার করে, তবে আপনারা প্রত্যেকে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করবেন।
• যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে উভয়কে খুব হালকা শাস্তি দেওয়া হবে।
এটি দুই ব্যক্তিকে একটি দ্বিধায় ফেলে। কারণ তারা অনিশ্চিত যে অন্যজন মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে কিনা। যদি কেউ স্বীকার না করে, তবে তাদের দুজনেরই অনেক কম কঠোর শাস্তি হবে। কিন্তু তারা এই ঝুঁকি বিবেচনা করে যে, যদি তারা স্বীকার না করে, তবে তাদের একা দুজনের শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে। তাই বেশিরভাগ মানুষ স্বীকার করা বেছে নেয়। এটি করা হয় যাতে তারা অন্যের স্বার্থপরতার সাথে মোকাবিলা না করতে হয়। এইভাবে, সামান্য অবিশ্বাসের মতো একটি বিষয় সহযোগিতাকে অসম্ভব করে তুলতে পারে।
====সাধারণের ট্র্যাজেডি====
বেশিরভাগ সামাজিক দ্বিধায় একাধিক পক্ষ সমস্যায় অবদান রাখার জন্য দায়ী।
উদাহরণ:
পুনরায় ভর্তি করার মধ্যে, একটি কুকি জারে পর্যাপ্ত কুকি থাকে (যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়) যাতে শিশুরা প্রতিদিন তিনটি করে খেতে পারে। কিন্তু কুকিগুলোর সহযোগিতা এবং নিয়ন্ত্রণ খুবই অসম্ভব। পরিবর্তে, শিশুরা যারা একে অপরের দ্বারা শোষিত হওয়ার ভয় পায়, তারা কুকি মুখে ভরতে শুরু করে। ফলে সরবরাহ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হয়ে যায়। একে অপরের উপর অবিশ্বাস এবং সহযোগিতার অভাব এখন তাদের কুকি ছাড়াই রেখে দেয়। এটি পরবর্তী জার ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত চলে (Gifford & Hine, 1997)। এটি একটি নন-জিরো গেমের উদাহরণ। এমন পরিস্থিতি যেখানে যৌক্তিকভাবে কাজ করলেও নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
===সামাজিক দ্বিধা সমাধান===
====নিয়ন্ত্রণ====
যদি গোষ্ঠীর সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখার নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক হয়, তবে সিস্টেমটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
====ছোটই সুন্দর====
যদি একটি গোষ্ঠী ছোট থাকে, তবে সদস্যরা গোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতা বোধ করে। তারা তাদের অবদান বা ইনপুটকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। যদি গোষ্ঠী খুব বড় হয়, তবে অনেক সদস্য মনে করতে পারে তাদের ভূমিকা গুরুত্বহীন। তারা গোষ্ঠীর সমৃদ্ধিতে সক্রিয় থাকার জন্য সামান্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনুভব করে (Kerr, 1989)।
====যোগাযোগ====
যখন একটি গোষ্ঠী যোগাযোগ করে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বা একটি দ্বিধা সমাধান করে, তখন গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই সবার স্বার্থে কাজ করে। এটি অন্য সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাতে তারা অবদান রাখে। এটি করা হয় যাতে তারা আলাদা না হয় বা সম্ভবত তিরস্কৃত না হয়।
====প্রতিদান পরিবর্তন====
যদি সহযোগিতার পুরস্কার শোষণের পুরস্কারের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়, তবে বেশি মানুষ সহযোগিতা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যস্ত মহাসড়কে কারপুল লেন। এটি করা হয় যাতে ট্রাফিক এবং দূষণ সমস্যায় অবদান রাখা গাড়ির সংখ্যা কমে।
====পরার্থপর নিয়মের আবেদন====
যদি এটি সাধারণ কল্যাণের জন্য উপকারী হয়, তবে মানুষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ বোধ করতে পারে (সামাজিক দায়িত্ব নিয়ম)। এমনকি এটি তাদের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে বা তাদের অসুবিধায় ফেলতে পারে।
চিত্র সরবরাহ করেছে:[http://images.tomshardware.com/2006/06/20/060619_tec. www.tomshardware.com]
[[Image:060619 teched2006 019.jpg]]
উপরের চিত্রটি আমাদের মহাবিশ্বের সাথে সংযোগের একটি পরার্থপর দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ।
===প্রতিযোগিতা===
প্রতিযোগিতার প্রভাব কতটা তীব্র তা পরীক্ষা করার জন্য একটি পরীক্ষায়, মুজাফার শেরিফ (১৯৬৬) দুটি গ্রুপের ছেলেদের ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পরীক্ষা করেছিলেন যে দুটি গ্রুপের মধ্যে সীমিত সম্পদ ভাগ করা দ্বন্দ্বের দিকে নিয়ে যায় কিনা। অন্য গ্রুপ সম্পর্কে না জেনে, শেরিফ প্রতিটি গ্রুপের ছেলেদের তাদের ক্যাম্পসাইট তৈরি করতে একসাথে কাজ করতে দিয়েছিলেন। তাদের একে অপরের সাথে পরিচিত হতে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার পর তিনি দুটি গ্রুপকে একে অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এটি করা হয়েছিল একটি গ্রুপকে বেসবল মাঠে রেখে, যখন অন্য গ্রুপটি একই সময়ে মাঠটি ব্যবহার করার কথা ছিল। তাদের সম্পদ অন্য গ্রুপের কাছে হারানোর এই আকস্মিক ভয় ছেলেদের তাদের নিজ নিজ গ্রুপের মধ্যে সংহতি বাড়াতে প্ররোচিত করেছিল। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের প্রতি পারস্পরিক বৈরিতার মাধ্যমে এটি করেছিল। এমনকি গ্রুপের সাথে সংযুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে কালো তালিকাভুক্তির দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
===উপলব্ধ অন্যায়===
যখন কেউ মনে করে তাদের গোষ্ঠীতে অবদান তাদের প্রাপ্য পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান, তখন তারা তিনটি পথের একটি বেছে নেয়। তারা হয় তাদের অপ্রতুলতার কথা মনে করে উর্ধ্বতনদের কাছে নতি স্বীকার করে। অথবা তারা যা চায় তা পেতে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্ল্যাকমেল ব্যবহার করে। অথবা তারা তাদের উর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তাদের উৎখাত করার চেষ্টা করে (Elaine Hatfield, William Walster, Ellen Pzersheid, 1978)। অন্যদিকে, যদি কেউ মনে করে তারা তাদের অবদানের চেয়ে বেশি পাচ্ছে, তবে তারা নিজেদের মনোযোগ আকর্ষণ করার সম্ভাবনা কম। এই ক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের বোঝায় যে তাদের কাজ অতিরিক্ত সুবিধার যোগ্য। এছাড়া, যদি কেউ জানতে পারে তাদের দক্ষতা তাদের পুরস্কারের চেয়ে বেশি, তবে তারা তাদের মূল্য নিয়ে তর্ক করার সম্ভাবনা বেশি। “মানুষ যত বেশি যোগ্য এবং মূল্যবান মনে করে (তাদের অবদান যত বেশি মূল্য দেয়), তত বেশি তারা অপ্রতুল বোধ করে এবং তাই প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী হয়” (Ross & others, 1971)।
উদাহরণ:
সবকিছু বিবেচনা করে, এই দেশে কার জীবন ভালো--পুরুষ না নারী?
১৯৭২ ১৯৯৩
পুরুষ ২৯% ৬০%
নারী ৩৫% ২১%
একই ৩০% ১৫%
কোনো মতামত নেই ৬% ৫%
(উৎস: Roper Center for Public Opinion Research, 1997)
===ভুল ধারণা===
[http://www.iwalt.com/static/images/blogpics/misperceptions.gif সংবাদ উৎস অনুযায়ী ভুল ধারণার বৈচিত্র্যের একটি উদাহরণ]
যেহেতু দ্বন্দ্ব একটি উপলব্ধ অসঙ্গতির ফল, তাই অন্যের ক্রিয়ার ভুল ধারণার মাধ্যমে বেশিরভাগ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এটি স্ব-সেবামূলক পক্ষপাতের ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা প্রায়ই আমাদের নিজেদের ক্রিয়াকে ন্যায্য করি এবং আমাদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব নিই। কিন্তু আমরা আমাদের ভুলগুলোকে ন্যায্য করি। একই সময়ে আমরা অন্যদের ক্রিয়া বা উদ্দেশ্যকে আমাদের তুলনায় কঠোরভাবে বিচার করি। এটি আমাদের অন্যদের অকালে নিন্দা করতে নিয়ে যায়। আমরা আমাদের ভুল ধারণায় মৌলিক দায়িত্ব ভ্রান্তি দায়ী করতে পারি। আমরা অন্যদের বাহ্যিক পরিস্থিতি বিবেচনা করতে কম প্রবণ হই, যা তাদের ক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের অন্যের একটি একমাত্রিক উপলব্ধি দেয়, যা খুব ভুল হতে পারে।
===আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণা===
[http://www.funnyhub.com/pictures/pages/mirror-image-perceptions.html বিকৃত আয়নার প্রতিবিম্ব ধারণার একটি উদাহরণ]
দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর জন্য একে অপরকে একই অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং একই কারণে নিজেদের নৈতিক এবং গুণী মনে করা সাধারণ (Morton Deutsch, 1986)। এটি প্রায়ই যুদ্ধকালীন সময়ে দেখা যায়। আমরা মানুষকে শুধুমাত্র দুটি বিভাগে দেখি; “আমাদের পক্ষে বা আমাদের বিরুদ্ধে”। আধুনিক যুদ্ধে এটি আরও কূটনৈতিকভাবে দেখা যায়। আমরা বলি, আমরা সাধারণ জনগণের সাথে যুদ্ধে নেই, বরং দুষ্ট শাসনের বিরুদ্ধে, যা তার জনগণকে দূষিত করেছে। এটি আমাদের একটি উজ্জ্বল বর্মের নাইটের আবেদন দেয়, যিনি “ভালো মানুষ”কে তাদের “দুষ্ট নেতাদের” থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের হস্তক্ষেপের কারণ এখন বৈধ। কারণ এটি তখন জনগণের জন্য একটি সেবা হিসেবে বিবেচিত হয়।
== মডিউল ৩০ - মানুষ কখন সাহায্য করে? ==
=== মানুষ কেন সাহায্য করে? ===
পরার্থপরতা হলো এমন একটি নিঃস্বার্থ কাজ, যা একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অন্যের প্রতি সত্যিকারের যত্ন নেয় এবং কোনো ধরনের পুরস্কার প্রত্যাশা করে না। কিন্তু সাহায্য করার পেছনে কী প্রেরণা থাকে? একটি তত্ত্ব, যাকে বলা হয় সামাজিক-বিনিময়, এতে একজন ব্যক্তি পরিস্থিতিতে কাজ করার আগে সাহায্যের সুবিধা এবং খরচের একটি সম্পর্ক মূল্যায়ন করে। স্পষ্টতই, সাহায্যকারী কম খরচে সর্বোত্তম সুবিধা অর্জন করতে চায়। যদি কেউ জানে যে একজন ব্যক্তি এই কারণে সাহায্য করেছে, তবে সেই “সাহায্যকারী” তার “ভালো কাজের” জন্য স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কিছু মানুষ অন্যের কল্যাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাদের একমাত্র সুখ হলো এই জ্ঞান থেকে যে তারা সত্যিই কাউকে সাহায্য করেছে। প্রায়ই এই ধরনের ব্যক্তি এমন হয়, যে অন্যের কষ্টে নিজে কষ্ট পায় বা অন্যের আনন্দে নিজে আনন্দিত হয়। সাহায্যকে উদ্দীপিত করার আরেকটি এজেন্ট হলো সামাজিক নিয়ম। এর একটি হলো পারস্পরিকতা নিয়ম। সামাজিক নিয়ম আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা নির্দেশ করে। এই নিয়মটি পরামর্শ দেয় যে আমরা অন্যের জন্য সেবা করি কারণ তারা আগে আমাদের জন্য এটি করেছে। এই নিয়মটি পরার্থপর হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ এতে নিজের জন্য কিছু প্রেরণা থাকে। আরেকটি নিয়ম যা আমাদের কীভাবে আচরণ করা উচিত তা পরামর্শ দেয় তা হলো সামাজিক-দায়িত্ব নিয়ম। এই এজেন্টটি পারস্পরিকতা নিয়ম থেকে আলাদা। কারণ আমরা একে অপরের জন্য সেবা বিনিময়ের বিষয়ে সচেতন নই। এই নিয়মটি পরার্থপরতাকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিত্রিত করে। কারণ এটি আমাদের প্রয়োজনে থাকা কাউকে সাহায্য করতে অনুপ্রাণিত করে এবং কখনো কিছু চায় বা প্রত্যাশা করে না। এই তত্ত্বগুলো প্রকৃতির অর্থে উন্নীত করা যায়। অন্যের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ মূলত তাদের বেঁচে থাকার জন্য উদ্বেগ। এই অর্থে চিন্তা করা আকর্ষণীয় যে, যে গোষ্ঠী বেশি পরার্থপর, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ভালো।
=== মানুষ কখন সাহায্য করে? ===
সামাজিক মনোবিজ্ঞানীরা উপস্থিত ব্যক্তির আচরণ বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। একটি পরীক্ষা সিরিজের মাধ্যমে তারা অসাধারণ ফলাফল পেয়েছেন। সাহায্য প্রায়ই এমন মানুষ দ্বারা করা হয় যারা নিজেদের সম্পর্কে ভালো বোধ করতে চায়। তারা তাদের অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে চায় যাতে তারা নিজেদের সম্পর্কে আরও বিশুদ্ধ ধারণা পায়। কখনো কখনো যারা ইতিবাচক মনের অবস্থায় থাকে, তারা সত্যিকারের ইচ্ছা বোধ করে অন্য কাউকে সাহায্য করার। একটি অত্যন্ত বিশেষ ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ধর্মীয় সম্পৃক্ততার মানুষ প্রায়ই অন্যদের সেবা দেয়। সাহায্যের শর্তগুলো বিষয়গত থেকে বস্তুগত শর্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। বিষয়গত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি অন্য কারো দ্বারা একটি ভালো কাজ পর্যবেক্ষণ, সেই নির্দিষ্ট সময়ে তাড়াহুড়ো না অনুভব করা, বা সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যক্তি নিজের এবং ভুক্তভোগীর মধ্যে কিছু মিল দেখে। বস্তুগত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীর প্রয়োজনের তীব্রতা, আমাদের পরিবেশ বা চারপাশ, এবং সাহায্য করার জন্য অন্যদের অনুপস্থিতি।
=== উপস্থিত ব্যক্তির সংখ্যা ===
যখন আমরা শুনি যে কেউ প্রয়োজনে ছিল কিন্তু একজন উপস্থিত ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেনি, তখন আমরা মনে করি সেই উপস্থিত ব্যক্তি একজন ভয়ানক মানুষ। আমরা নিশ্চিতভাবে কিছু করতাম কারণ আমরা যত্নশীল মানুষ। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে যে উপস্থিত ব্যক্তি সাহায্য করেনি সে একজন যত্নশীল মানুষ ছিল? অগত্যা নয়। অসংখ্য পরীক্ষা করা হয়েছে যা প্রকাশ করে, অদ্ভুতভাবে, একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে যেখানে কেউ সাহায্যের প্রয়োজন, সেখানে যত কম উপস্থিত ব্যক্তি থাকে, সেবা দেওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। একাধিক উপস্থিত ব্যক্তির পরিস্থিতিতে, কেউ প্রয়োজনে থাকা ভুক্তভোগীকে লক্ষ্য করার, তাদের সমস্যা বোঝার এবং পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম (Latane, Darley 1970:364-369)। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি গুরুতর পরিস্থিতির প্রতি উদাসীনতাকে তথ্যগত প্রভাব বলা হয়। একজন ব্যক্তি দেখে অন্য কেউ সাহায্য করার জন্য কাজ করছে না। তখন তারা নিজেও মনে করে সবকিছু ঠিক আছে এবং সাহায্য করে না। অন্যদিকে, যদি কেউ প্রয়োজনে থাকা কাউকে লক্ষ্য করে এবং দেখে কেউ তাড়াহুড়ো করে তাদের সেবা দিতে ছুটে যায়, তবে গুরুতর পরিস্থিতির জন্য জরুরিতার অনুভূতি বেশি হবে। যেভাবেই হোক, আমরা সবসময় এই দ্বিধায় পড়ি যে একটি পরিস্থিতি আমাদের মনোযোগের যোগ্য কিনা। কখনো আমরা নিজেদের উপেক্ষা করে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিই। অন্য সময় আমরা এমন পরিস্থিতিতে কোনো পদক্ষেপ নিই না যা আমাদের কাছে অস্পষ্ট মনে হয়। এটিকে উপস্থিত ব্যক্তি প্রভাব বলা হয়। কিন্তু একটি গুরুতর পরিস্থিতির গুরুত্ব না বোঝা সবসময় পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ নয়। কিছু ঘটনায় পরিস্থিতি স্পষ্ট হয় এবং তবুও আমরা কাজ করি না। আমরা একজন ব্যক্তির সাথে কিছু ঘটতে দেখতে পারি এবং কাজ না করতে পারি। কারণ আমরা অন্যদেরও লক্ষ্য করি যারা দেখছে। আমাদের মনোযোগ ভুক্তভোগী থেকে অন্য উপস্থিত ব্যক্তিদের দিকে চলে যায়। তাদের শুধু তাকিয়ে থাকতে দেখে আমরাও কাজ করতে ব্যর্থ হই। এটি আকর্ষণীয় যে অন্য মানুষের উপস্থিতি আমাদের ব্যক্তিগত আবেগ এবং মানসিকতাকে একটি বস্তুগত পরিস্থিতিতে প্রভাবিত করে। পরীক্ষায় যেখানে অংশগ্রহণকারীদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল যেখানে তাদের নিজেদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, অন্য মানুষের সাথে ফোকাস গ্রুপ যারা একই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিল, তারা তুলনায় বেশি ব্যর্থ হয়েছিল। যে ফোকাস গ্রুপে মানুষ মনে করেছিল তারাই একমাত্র গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন, তারা বেশি কাজ করেছে (Latane, Darley 1968:217-221)। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, একই সচেতনতার সাথে অন্যদের উপস্থিতি তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে কিনা। সাধারণ প্রতিক্রিয়া ছিল যে এটি করেনি। মূলত, একজন ব্যক্তি সবসময় জানে না কেন তারা যা করে তা করে, এই পরীক্ষা এটি নিশ্চিত করেছে। কিছু পরীক্ষার গভীরতা কিছু মানুষকে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে যে এই পরীক্ষাগুলোর নৈতিকতা কী। কিন্তু এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পরীক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য হলো অংশগ্রহণকারীদের রক্ষা করা এবং এই প্রক্রিয়ায় মানুষের কল্যাণ বাড়ানো। এই পরীক্ষার ফলে মানুষ তথ্যবহুল হয়। যারা পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করে তারা এটি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেশি (Beaman, Barnes, Klentz, McQuirk 1978:407-410)।
*দয়া করে নোট করুন, এই পৃষ্ঠার সমস্ত বিষয়বস্তু ডেভিড মায়ার্সের ''Exploring Social Psychology''-এর মডিউল ৩০-এর একটি প্যারাফ্রেজড সারাংশ। ডেটা যাচাইয়ের জন্য দয়া করে বইটি নিজেই উল্লেখ করুন।
==মডিউল ৩১: স্থায়িত্বের সামাজিক মনোবিজ্ঞান==
===স্থায়ী জীবনযাপন সক্ষম করা===
====দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি====
সমস্ত মানব জীবনের জন্য একটি ভবিষ্যৎ টিকিয়ে রাখতে, আমাদের প্রযুক্তির সীমানা প্রসারিত করতে হবে। অটোমোবাইলগুলো আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী হয়েছে এবং অনেক কম দূষণ উৎপন্ন করে। নথিগুলো এখন ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ, অনুলিপি, বিতরণ এবং উৎপাদিত হয়। কপিয়ার মেশিন ভুলে যান, ডান ক্লিক করুন, কপি করুন, এবং তারপর পেস্ট করুন। গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আলোর বাল্ব, মহাসড়ক, ভবন এবং ওষুধ পর্যন্ত, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করছে। কে জানত ২১শ শতাব্দী এতটা এগিয়ে যাবে?
====ব্যবহার হ্রাস====
ভবিষ্যৎ জীবন টিকিয়ে রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ব্যবহার হ্রাস। মানুষের পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী বসবাস করার জন্য, আমাদের কম ব্যবহার এবং কম দূষণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জন্মহার ক্রমাগত কমছে। এটি বিশ্বে শিক্ষিত এবং কর্মরত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। তবুও, বিশ্ব এখনও তার পূর্ণ ক্ষমতায় রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ব্যবহার হ্রাস করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অনেকে হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে বা এখনও গঠনমূলক ফলাফল দেখেনি। যারা পুনর্ব্যবহার করে, কারপুল করে, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে, এবং তাদের বাড়ির জন্য পরিবেশবান্ধব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের পুরস্কৃত করার মতো ধারণা একটি দুর্দান্ত শুরু হবে। অন্যদিকে, যারা সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার করে তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। যারা আলাদাভাবে গাড়ি চালায়, তাদের জরিমানা, টিকিট, কর, বা চার্জ করতে হবে। যারা তাদের বাড়ির আলো ২৪ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখে, ছুটিতে এসইউভিতে তিনশো মাইল গাড়ি চালায়, এবং প্রতিটি আবর্জনা পুনর্ব্যবহার না করে ফেলে দেয়। রবার্ট ফ্রাঙ্ক (১৯৯৯), একজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানে পারদর্শী অর্থনীতিবিদ, পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে একটি সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল বাজার অর্থনীতি অর্জনকে পুরস্কৃত করতে পারে এবং আরও স্থায়ী ব্যবহার প্রচার করতে পারে।
===বস্তুবাদ এবং সম্পদের সামাজিক মনোবিজ্ঞান===
====বর্ধিত বস্তুবাদ====
বর্ধিত বস্তুবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে স্পষ্ট। একটি জরিপে এটি স্পষ্টভাবে প্রতিনিধিত্ব করে, Gallup Poll (১৯৯০), ২ জনের মধ্যে ১ জন নারী, ৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, এবং বছরে ৭৫,০০০ ডলারের বেশি উপার্জনকারী ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ধনী হতে চায়। আরও বেশি সংখ্যক ব্যক্তি তাদের জীবনে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের চেষ্টা করার পরিবর্তে ধনী হতে চান।
====সম্পদ এবং কল্যাণ====
টাকা দিয়ে কি সুখ কেনা যায়? অথবা আপনার কল্যাণ? দুঃখের বিষয়, না, তা যায় না। সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে খুব কম সম্পর্ক রয়েছে, যদি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি যতই ধনী হোক না কেন, তার কল্যাণ খুব বেশি (প্রায় অনির্দিষ্টকালের জন্য) পরিবর্তন হবে না। দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে কম আয় মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলে, তুলনামূলকভাবে সচ্ছল হওয়া বেশি কল্যাণের পূর্বাভাস দেয় (Argyle, 1999)। একজন ব্যক্তি যখন ধনী হয়, তখন সুখের একটি বৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু এটি কেবল স্বল্প সময়ের জন্য থাকে। তারপর সেই ব্যক্তি আর সুখী থাকে না। তখন তার কল্যাণে সন্তুষ্ট থাকার জন্য আরও বেশি টাকা এবং সম্পদের প্রয়োজন হয়। ডেভিড লিকেন (1999, পৃষ্ঠা 17) বলেন, “যারা ওভারঅল পরে বাসে করে কাজে যায়, তারা গড়ে ততটাই সুখী, যতটা সুখী তারা যারা স্যুট পরে নিজেদের মার্সিডিজে করে কাজে যায়।” এমনকি অতি-ধনী ব্যক্তিরা – ফোর্বসের 100 ধনী আমেরিকান – গড়ের তুলনায় কেবল সামান্য বেশি সুখের কথা জানায় (Diener, Horwitz, and Emmons, 1985)।
====কেন বস্তুবাদ তৃপ্তি দেয় না====
বস্তুবাদ তাদের তৃপ্ত করতে ব্যর্থ হয়, যারা জীবনে যতটা সম্ভব অর্জন করতে চায়। যারা ক্ষমতা, টাকা এবং সম্পদের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক কম কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। যারা ব্যক্তিগত বিকাশ, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, তারা অনেক বেশি কল্যাণের অনুভূতি নিয়ে জীবনযাপন করে। বস্তুবাদী হওয়া এবং বস্তুগত জিনিস থেকে ব্যক্তিগত কল্যাণ অর্জন করা কেবল কম কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়। অনেক কিছু যা একসময় বিলাসিতা ছিল, তা এখন প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছে। একজন ব্যক্তি এই প্রয়োজনীয়তার মাধ্যমে তাদের কল্যাণ পরিমাপ করে। শেষ পর্যন্ত, সবাই সেই বিলাসিতা পেয়ে যায়। তখন ব্যক্তি মনে করে তাদের আরেকটি বিলাসিতা দরকার, যা অন্য কারো নেই। এটি তাদের নিজস্ব কল্যাণ বাড়াতে। এই চক্র চলতেই থাকে। বস্তুবাদী ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত কল্যাণের উচ্চতর অনুভূতি পেতে ক্রমাগত আরও বেশি প্রয়োজন অনুভব করে।
===স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার দিকে===
আমাদের সমাজকে বস্তুবাদী প্রকৃতি থেকে মুক্ত করতে, মানুষকে স্থায়িত্বের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে। ব্যবহার কমানোর জন্য কর্মসূচি এবং আইন প্রণয়ন করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নতি চালিয়ে যেতে হবে। দক্ষতার উপর মনোযোগ দিতে হবে। এটা বোঝা দরকার যে সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচার করতে হবে। মানুষকে একত্রিত হতে হবে। তাদের বিশ্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে। নিজেদের উপর কেন্দ্রীভূত হওয়ার পরিবর্তে। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যয়নের মাধ্যমে বিশ্ব নিজেকে আরও উন্নত করতে পারে। এটি বিশ্বের স্থায়িত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য অবদান রাখতে পারে। যত তাড়াতাড়ি মানুষ এটা মেনে নেয় যে বস্তুবাদ ভালো কল্যাণের দিকে নিয়ে যায় না, তত তাড়াতাড়ি বিশ্ব একটি উন্নত জায়গা হয়ে উঠবে।
==তথ্যসূত্র ==
*Abramson, L. Y., Seligman, M. E. P., & Teasdale, J. D. (1978). Learned helplessness in humans: Critique and reformulation. Journal of Abnormal Psychology, 87, 32-48.
*Adams, J.M., & Jones, W.H. (1997). The conceptualization of martial commitment: An integrative analysis. Journal of Personality and Social Psychology, 72, 1177-1196.
*Allison,S. T.,Jordan,M.R.,& Yeatts,C.E.(1992). A cluster-analytic approach toward identifying the structure and content of human decision making. ''Human Relations'',45,49-72.
*Anderson, C.A., Miller, R.S., Riger, A.L.,Dill, J.C., and Sedikides, C. (1994). Behavioral and characterological attributional styles as predictors of depression and lonleliness: Review, refinement, and test. Journal of Personality and Social Psychology, 66, 549-558.
*Argyle, M. (1999). Causes and correlates of happiness. In D. Kahneman, E. Diener, & N. Schwartz (Eds.), Foundations of hedonic psychology: Scientific perspectives on enjoyment and suffering. New York: Russell Sage Foundation.
*Asendorpf, J.B. (1987). Videotape reconstruction of emotions and cognitions related to shyness. Journal of personality and social psychology, 53, 541-549
*Bayer, E. (1929). Beitrage zur zeikomponenten theorie des hungers. Zeitschrift fur Psycholgie, 112, 1-54.
*Beaman, A.L., Barnes, P.J., Klentz, B., & McQuirk, B. (1978). Increasing helping rates through information dissemination: Teaching pays. Personality and Social Psychology Bulletin, 4, 406-411.
*Bureau of the Census. (1999). Statistical abstract of the United States 1996 (Table 65). Washington, D.C.: Superintendent of Documents.
*Buunk, B.P., & van der Eijnden, R.J.J.M. (1997). Perceived prevalence, perceived superiority, and relationship satisfaction: Most relationships are good, but ours is the best. ''Personality and Social Psychology Bulletin'', 23, 219-228.
*Carey,B.,''New York Times''."A Senior Moment' or A Self-Fulfilling Prophecy?"(July,18,2006).
*Chen, S.C. (1937). Social modification of the activity of ants in nest-building. Physiologial Zoology, 10, 420-436.
*Cooper,H.(1983). Teacher expectation effects. In L. Bickman(Ed.), ''Applied social psychology annual,vol 4''.Beverly Hills,CA:Sage.
*Cota, A.A., & Dion, K.L. (1986). Salience of gender and sex composition of ad hoc groups: An experimental test of distinctiveness theory. Journal of Personality and Social Psychology, 50, 770-776.
*Crocker,J. (1981). Judgment of covariation by social perceivers. ''Psychological Bulletin,'' 90, 272-292.
*Dawes,R.M. (1976). Shallow psychology. In J.S. Carroll & J.W. Payne (Eds.), ''Cognition and social behavior''. Hillsdale, NJ: Erlbaum.
*Deci, E. L., & Rayan, R. M. (1987). The support of autonomy and the control of behavior. Journal of Personality and Social Psychology, 53, 1024-1037.
*Deutsch, M. (1993). Educating for a peaceful world. American Psychologist, 48, 510-517.
*Diener, E., Horowistz, J., & Emmons, R.A. (1985). Happiness of the very wealthy. Social Indicators, 16, 263-274.
*Engs, R., & Hanson,D.J. (1989) Reactance theory: A test with collegiate drinking. Psychological Reports, 64, 1083-1086
*Feldman, R.S., & Theiss, A.J. (1982). The teacher and student as Pygmalions: Joint effects of teacher and student expectations. ''Journal of Education Psychology'',74,217-223.
*Fergusson, D.M., Horwood, L.J., & Shannon, F.T. (1984). A proportional hazards model of family breakdown. Journal of Marriage and the Family, 46, 539-549.
*Frank, R. (1999). Luxury fever: Why money fails to satisfy in an era of excess. New York: Free Press.
*Gallup Poll. (1990, July). Reported by G. Gallup, Jr., & F. Newport, Americans widely disagree on what constitutes “rich.” Gallup Poll Monthly, pp. 28-36.
*Galton, F.(1886), "Regression Towards Mediocrity in Hereditary Stature," Journal of the Anthropological Institute,15, 246-263.
*Gifford, R., & Hine, D.W. (1997). Crowding: More fearsome than crime-provoking? Comparison of an Asian city and a North American cinty. Psychologia, 22, 79-83
*Gillis, J. S., & Avis, W.E. (1980). The male-taller norm in mate selection. Personality and Social Psychology Bulletin, 6, 396-401.
*Gilovich, T., & Douglas, C.(1986). Biased evaluations of randomly determined gambling outcomes. ''Journal of Experimental''
*Griffitt, W. (1987). Females, males, and sexual responses. In K. Kelley (Ed.), Females, males and sexuality: Theories and research. Albany: State University of New York Press.
*Hamilton, D. L. and R. K. Gifford (1976). Journal of Experimental Psychology 12, 392-407.
*Harris, J.R. (1998). The nurture assumption. New York: Free Press.
*Hatfield (Walster), E., Walster, G.W., & Berscheid, E. (1978). Equity: Theory and research. Boston: Allyn & Bacon.
*Hatfield, E. (1988). Passionate and compassionate love. In R.J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Hunt, M, (1993). The story of psychology. New York: Doubleday.
*Jussim,L. (1986). Self-fulfilling prophecies: A theoretical and integrative review. Psychological Review,93.
*Kahneman,D., Slovic,P.,&Tversky,A,(editors), Judgement Under Uncertainty,Heuristics, and Biases.(Cambridge University Press,1982), Part IV.
*Kerr, N.L. (1989). Illusions of efficacy: The effects of group size on perceived efficacy in social dilemmas. Journal of Experimental Social Psychology, 25, 287-313.
*Larsson, K. (1956). Conditioning and sexual behavior in the male albino rat. Stockholm: Almqvist & Wiksell.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1970). The Unresponsive Bystander: Why Doesn't He Help? New York: Appleton-Century-Crofts.
*Latane, B., & Darley, J.M. (1968). Group inhibition of bystander intervention in emergencies. Journal of Personality and Social Psychology, 10, 215-221.
*Lewinsohn,P.M.,Hoberman,H.,Teri,L.,& Hautziner,M. (1985) An integrative theroy of depression. In S. Reiss & R. Bootzin (Eds), Theoretical issues in behavior therapy. New York: Acadimic Press
*Lykken, D.T. (1999). Happiness. New York: Golden Books.
*McIntosh, J.L. & Kelly, L.D. (1992). Survivors reactions: suicide vs. other causes. Crises, 82-93
*Meehl, P.E. (1954). ''Clinical vs. statistical prediction: A theoretical analysis and a review of evidence''. Minneapolis: University of Minnesota Press.
*Miller, L.C., Berg, J.H., & Rugs, D. (1989). Selectivity and sharing: Needs and norms in developing friendships. Unpublished manuscript, Scripps College.
*Mirels, H.L., & McPeek, R.W. (1977) Self Advocacy and Self Esteem. Journal of Consulting and Clinical Psychology, 45, 1132-1138.
*Myers, D. G., (2004). Exploring Social Psychology: Third Edition. New York: McGraw-Hill.
*Niemi, R. G., Mueller, J., & Smith, T. W. (1989). Trends in public opinion: A compendium of survey data. New York: Greenwood Press.
*Orive, R. (1984). Group similarity, public self-awareness, and opinion extremity: A social projection explanation of deindividuation effects. Journal of Personality and Social Psychology, 47, 727-737
*Peterson, C., & Steen, T.A. (2002). Optimistic explanatory style. In C.R. Snyder & S.J. Lopez (Eds), Handbook of positive psychology. London: Oxford University Press
*Pratto, F. (1996). Sexual politics: The gender gap in the bedroom, the cupboard, and the cabinet. In D. M. Buss & N. M. Malamuth (Eds.), Sex, power, conflict: Evolutionary and feminist perspectives. New York: Oxford University Press.
*Sherif, M. (1966). In common predicament: Social psychology of intergroup conflict and cooperation. Boston: Houghton Mifflin.
*Sigal, J., Gibbs, M. S., Goodrich, C., Rashid, T., Anjum, A., Hsu, D., et al. (2005). Cross-cultural reactions to academic sexual harassment: effects of individualist vs. collectivist culture and gender of participants. Sex Roles: A Journal of Research.
*Snyder, M., & Swann, W. B. (1978). Hypothesis-testing processes in social interaction. Journal of Personality and Social Psychology, 36, 1202-1212
*Stangor, C., Lynch, L., Duan, C., & Glass, B.(1992). Categorization of individuals on the basis of multiple social features. Journal of Personality and Socail Psychology, 62, 207-218.
*Sternberg, R. J. (1988). Triangulating love. In R. J. Sternberg & M.L. Barnes (Eds.), The psychology of love. New Haven, CT: Yale University Press.
*Sternberg, R. J. (1998). Cupid’s arrow: The course of love through time. New York: Cambridge University Press.
*Thorn, J., Gershman, M., Palmer, P., and Pietrusza, D. (eds.) 1999), Total Baseball, Sixth Edition, New York: Total Sports.
*Triplett, N. (1898). The dynamogenic factors in peacemaking and competition. American Journal of Psychology, 9, 507-533.
*Vallone,R. P., Ross, L & Lepper,M.R.(1985). The hostile media phenomenon: Biased perception and perceptions of media bias in coverage of the "''Beirut Massacre''." and ''Social Psychology Journal''," 49, 577-585.
*Williams, J.E., & Best, D.L. (1990a). Measuring sex stereotypes: A multination study. Newbury Park, CA: Sage.
*Zajonc, R.B. (1965). Social facilitation. ''Science,''149, 269-274.
==সম্পর্কিত তালিকা==
* [[Wikipedia:List of social psychologists|List of social psychologists]]
* [[Wikipedia:List of publications in psychology#Social psychology|Important publications in social psychology]]
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.socialpsychology.org/ Social Psychology Network ]
* [http://www.spsp.org/ Society for Personality and Social Psychology]
* [http://www.sesp.org/ Society of Experimental Social Psychology]
* [http://www.apa.org/journals/psp.html Journal of Personality and Social Psychology]
* [http://www.uiowa.edu/~grpproc/crisp/crisp.html Current Research in Social Psychology]
* [http://www.trinity.edu/~mkearl/socpsy.html Social Psychology - brief introduction]
* [http://www.ship.edu/~cgboeree/socpsy.html Social Psychology basics]
* [http://groups.yahoo.com/group/social_psychology/ Social Psychology forum]
* [http://www.birchmore.org/html/scapegoating.html Scapegoating Processes in Groups]
* [http://www.portalpsicologia.org/busqueda.jsp?idDisciplina=6 Portalpsicologia.org]
* [http://www.wilderdom.com/psychology/social/Introduction.html/ Introduction to Social Psychology]
* [http://de.wikipedia.org/wiki/Thomas-Theorem Thomas-Theorem - in German]
* [http://en.wikipedia.org/wiki/William_I._Thomas W.I.Thomas]
{{BookCat}}
72gszd5gj0sr28mfokfmlwk11e64m7v
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?/প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ
0
23748
85775
84147
2025-07-07T09:01:46Z
MS Sakib
6561
/* রবার্ট ব্যারো */
85775
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং মিডিয়া এবং দৈনন্দিন সমাজে তাদের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব যে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক যিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
তিনি ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
jbzmxhhjin4ia7islbrsid72h1oosyb
85776
85775
2025-07-07T09:02:06Z
MS Sakib
6561
85776
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং মিডিয়া এবং দৈনন্দিন সমাজে তাদের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব যে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
তিনি ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
ix0qc8yalw3vu8tavc8xmsye4kq3yni
85777
85776
2025-07-07T09:02:21Z
MS Sakib
6561
85777
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং মিডিয়া এবং দৈনন্দিন সমাজে তাদের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব যে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
তিনি ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
i3dn9avl6pit6nlrjq6yzd59cfvsjow
85778
85777
2025-07-07T09:02:49Z
MS Sakib
6561
85778
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং মিডিয়া এবং দৈনন্দিন সমাজে তাদের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব যে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
লেসলি হোয়াইট ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
pikjv58w5d1glcksnx63w7lk7wvlznq
85781
85778
2025-07-07T09:15:04Z
MS Sakib
6561
85781
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ কীভাবে মিডিয়া ও দৈনন্দিন সমাজে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব যে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
লেসলি হোয়াইট ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
navbzcn7ot8fh5wis9tyv2gcpl5es23
85782
85781
2025-07-07T09:16:03Z
MS Sakib
6561
85782
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ কীভাবে মিডিয়া ও দৈনন্দিন সমাজে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব, কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
লেসলি হোয়াইট ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
i2p1u9xyryapxodgh9ildxc6u9s0u4v
85783
85782
2025-07-07T09:16:38Z
MS Sakib
6561
/* সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ */
85783
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ কীভাবে মিডিয়া ও দৈনন্দিন সমাজে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। ইতিহাস বিভাগটিতে মূল তাত্ত্বিকদের নিয়েও আলোচনা করা হবে, যাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব, কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ওসাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে এবং তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগটি 'নতুন গণমাধ্যম' কী ত।-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি ও বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
লেসলি হোয়াইট ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
m10ih9zj4a81ghv9l3v5szejztbgmu4
85784
85783
2025-07-07T09:20:04Z
MS Sakib
6561
85784
wikitext
text/x-wiki
= প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ =
=== ভূমিকা ===
সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?-এর এই অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ কীভাবে মিডিয়া ও দৈনন্দিন সমাজে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিহাস বিভাগে এর ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা কর হবে। কীভাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা নিয়ে একটি প্রভাবশালী বিতর্কে পরিণত হয়েছিল, কিংবা প্রযুক্তি সংস্কৃতি নির্ধারণ করে কিনা তা-ই মূল আলোচ্য বিষয়। যেসব তাত্ত্বিকের সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ব্যাপক ভূমিকা / প্রভাব ছিল, ইতিহাস বিভাগে তাদের নিয়েও আলোচনা করা হবে।
সংজ্ঞা অধ্যায়ে আমরা আলোচনা করব, কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এসব শব্দের সংজ্ঞাগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ বিকশিত হয়েছে। এটি তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের মধ্যে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিভাগে 'নতুন গণমাধ্যম' কী তা-ও দেখবে।
পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের কয়েকটি প্রধান ধারণার পাশাপাশি তাত্ত্বিক উদাহরণ উপস্থাপন করা হবে। অধ্যায়টি প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আলাদাভাবে দেখার পাশাপাশি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য খোঁজার চেষ্টা করা হবে। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য তত্ত্বগুলোর মূল ধারণার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি সাধারণ চিত্র আঁকা।
বিরোধিতা বিভাগে নির্বাচিত সংখ্যক তাত্ত্বিক যারা এই তত্ত্বগুলোর একটি বা উভয়ের বিরোধিতা করেছেন, তাদের নিয়ে আলোচনা করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রস্তাবিত নিজস্ব ধারণাগুলোও দেখানো হবে।
অবশেষে, ভবিষ্যতের অধ্যায়টি আগামী বছরগুলোতে সমাজে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এক্ষেত্রে এসব বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করা হবে: জাতীয় পরিচয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, র্যাডিকাল আন্দোলনের দমনের আইন, কাজের দক্ষতা, কর্মসংস্থান এবং যোগাযোগ।
== ইতিহাস ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করার একটি ভাল উপায় হলো শব্দটি বিভক্ত করা।
সংস্কৃতি কি এবং নির্ধারণবাদ কি? সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি ও বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের লোককে অন্য গ্রুপ থেকে পৃথক করে। নির্ধারণবাদ একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার এমন শর্ত থাকে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। সম্মিলিতভাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এমন একটি তত্ত্ব যা আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত স্তরগুলোকে সেই সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে যেখানে আমরা বেড়ে উঠেছি। এর অর্থ আমাদের সংস্কৃতি এবং সামাজিক প্রভাবগুলো জৈবিক প্রভাবগুলোকে প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের জিজ্ঞাসা করতে দেয় যে আমরা বিশ্বাস করি যে সংস্কৃতি আমাদের কে তৈরি করে। আপনি যদি ভিন্ন সংস্কৃতিতে বড় হয়ে উঠতেন, তাহলে কি আপনি এখনকার সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হতেন? সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তাই বোঝায় যে আমাদের ধারণা, আবেগ এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা আমাদের সমাজের মাধ্যমে যা শিখি তা হয়ে উঠি এবং এর মধ্যে খাওয়া, যোগাযোগ এবং পোশাকের মতো ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।<ref>http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html</ref>
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্ব নিজেই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের চেয়ে অনেক পুরানো।<ref>[[wikipedia:Cultural determinism|Cultural determinism]]</ref> প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার আগে সংস্কৃতিকে সিদ্ধান্তমূলকভাবে আচরণকে আকার দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হত।<ref>[[wikipedia:Technological Determinism|Technological Determinism]]</ref> প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন গ্রীসে একটি জনপ্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে যারা তাদের ভাষায় কথা বলে কেবল তারাই তাদের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সামাজিক ব্যবস্থা বুঝতে পারে। গ্রিকরা অনুভব করেছিল, তাদের সংস্কৃতিই তাদের মানুষ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল এবং এটি এমন কিছু যা আপনাকে তাদের সমাজের অংশ হয়ে শিখতে হবে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটিকে সমর্থন করে যে আমাদের সংবেদনশীল এবং আচরণগত নিদর্শনগুলো আমরা যে সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছি তার দ্বারা গঠিত এবং ছাঁচে ফেলা হয়। এটিও বিশ্বাস করা হয় যে এই তত্ত্বটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং রাজনীতিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।<ref>[http://study.com/academy/lesson/cultural-determinism-definition-and-theory.html]</ref>
ফ্রাঞ্জ বোয়াস ছিলেন একজন জার্মান / আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ। এর অর্থ উত্স এবং আচরণের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তিনি জৈবিক প্রভাবের চেয়ে সাংস্কৃতিক উত্স দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার জন্য মানব আচরণ সম্পর্কিত চিন্তার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিমধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক রীতিনীতিগুলো মেনে চলতে হবে কারণ সংস্কৃতি সূক্ষ্মভাবে আমাদের মানব জীবনের দিকগুলো নির্দেশ করে।
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীরা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহাসিক অবস্থার উপর জোর দেয় এবং এটি কীভাবে আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। এটি পরামর্শ দেয় যে সংস্কৃতি হলো নিয়ামক ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে সমাজ কীভাবে প্রযুক্তি তৈরি করে এবং অগ্রগতি করে এবং উপরন্তু, এটি কীভাবে ব্যবহৃত হয়।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis.</ref> এটি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীদের মতামতের বিরোধিতা করে। অনেক তাত্ত্বিক আছেন যারা এই তত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যেমন রবার্ট ব্যারো, ফ্রিডরিচ শ্লেগেল, ইয়োহান গটলিব ফিচটে। ইয়োহান ওল্ফগ্যাং গ্যোটে।
মানুষের ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে নির্ধারণবাদ বনাম স্ব-সৃষ্টির ধারণার উপরোক্ত ভূমিকাটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলকে মেনে চলে, এতে এটি এমন একটি বিন্দু চিত্রিত করার চেষ্টা করে যেখানে মানুষকে প্রকৃতি থেকে পৃথক করা যায় এবং তাদের নিজস্ব স্রষ্টা তৈরি করা যায়। এটি একটি অন্তর্নিহিত, তবে অব্যক্ত, অনুমান বহন করে যে মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে, এটি কেবল এই অনন্য বৈশিষ্ট্যটি কোন সময়ে কার্যকর হয় তা নির্ধারণ করার প্রশ্ন। সুতরাং আমাদের বলা হয় যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ মানুষকে জৈবিক নির্ধারণবাদ থেকে মুক্তি দেয়। এই রচনায় 'সুপারঅর্গানিজম' শব্দটি মানব সমাজে প্রয়োগ করা হয়েছে, কীভাবে কেউ কেউ সামাজিক শৃঙ্খলার একটি মডেল বিস্তৃত করার চেষ্টা করেছেন যা সম্পূর্ণরূপে নির্ধারণবাদী। উপরে প্রদত্ত 'নির্ধারণবাদ' এর সংজ্ঞাটি প্রকৃতির খপ্পর থেকে মানুষের মুক্তির একটি বিন্দু সমর্থনকারী মডেলগুলোকে সহজতর করে। কারণ এটি বলে, নির্ধারণবাদ মানে 'শর্ত' তাদের ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না, সুতরাং পছন্দের কোনও অতিরিক্ত কারণ প্রাসঙ্গিক নয়, এইভাবে মুক্তইচ্ছার কোনও সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে। নির্ধারণবাদের এই সংজ্ঞাটি তাই পছন্দের নীতির চারপাশে ঘোরে, 'পছন্দ' এর অর্থের সাথে 'নির্ধারণবাদ' অর্থের এই সংযুক্তি স্পষ্ট না করে।
এটি আমাদের মানব জীবনে নির্ধারণবাদ বনাম স্বাধীন ইচ্ছা সম্পর্কিত বিষয়টির মূলে নিয়ে যায়। কারণ মানব সামাজিক জীবনে আজ আমরা যা জানি তার অনেক কিছুই স্বাধীন ইচ্ছার ধারণার উপর ঝুলে থাকে এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপরোক্ত ব্যাখ্যাটি প্রয়োজনীয় সাংস্কৃতিক প্যাটার্ন অনুসরণ করে যার মাধ্যমে স্বাধীন ইচ্ছার দীক্ষা সক্ষম হয়, এক পর্যায়ে। এর সংজ্ঞার উপর ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়া সংজ্ঞায়িত 'নির্ধারণবাদ' বেশ আলাদা হবে। এটি এর অর্থকে বৈজ্ঞানিক বস্তুনিষ্ঠতার বিমূর্ত নীতি দ্বারা নির্ধারিত করার অনুমতি দেবে যা প্রাকৃতিক অস্তিত্বের কোনও বস্তুর সাথে এর অর্থকে সংযুক্ত করে, এই ক্ষেত্রে মানব সমাজকে একটি প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে দেখা হয়, যা প্রকৃতপক্ষে কেবল যেমন আছে তেমন হতে পারে, তবে 'শর্তগুলো' যেমন আছে তেমন হওয়া উচিত বলে নয়, তবে কারণ বস্তুটিকে প্রাকৃতিক বস্তু হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যেখানে প্রাকৃতিক বস্তু কেবল যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই থাকতে পারে; একটি নীতি যা বিজ্ঞানকে সম্ভব করে তোলে। সমাজের অতিজৈব মডেলই একমাত্র মডেল যা এই নির্ধারণবাদী আদর্শকে পূরণ করতে পারে। নির্ধারণবাদের একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিক সংজ্ঞা অনিবার্যভাবে আপোষহীন, এটি কোনও বিকল্প সহ্য করে না কারণ এটি দাবি করে যে মানুষকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রূপ হিসাবে বোঝা যায় এবং আমরা এই রচনায় উত্থাপিত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞার অন্যান্য দিকগুলো খুঁজে পাই যা এই বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার বিরুদ্ধে কাজ করে, যেমন 'হার্ড ডিটারমিনিজম' ধারণা, অত্যন্ত নেতিবাচক ভাষায় অযৌক্তিক ধর্মান্ধতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যখন এমন পরিস্থিতিতে নিযুক্ত করা হয় যা প্রমাণ করা যায় না।
খুব কমপক্ষে, এই কাজের মূল ধারণাগুলোর উপরের সংজ্ঞাটি উল্লেখযোগ্যভাবে অগভীর, এটি বিষয়টির এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যা প্রতিষ্ঠিত একাডেমিক কর্তৃপক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল ধারণাগুলোর মতো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ বোঝার জন্য উন্মুক্ত করে না।
সংস্কৃতি মানুষকে জৈবিক উপাদান থেকে মুক্তি দেয় এটা বলা আলোচিত ধারণার কারসাজি। এটি অনুমান করে যে সংস্কৃতি একটি জৈবিক অপরিহার্যতা নয়, যেখানে এটি স্পষ্টতই, বক্তৃতার শক্তি সংস্কৃতি তৈরি করে, সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মানব জীববিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি আচরণগত ক্রিয়াকলাপ তৈরি করে, বক্তৃতা পৃথক ব্যক্তির একটি শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য। সমাজের উপরোক্ত বিবরণটি পর্যবেক্ষণের একটি পিভট থেকে শুরু হয় যা ধরে নেয় যে ব্যক্তিটি মানব প্রাণী। এই পিভট থেকে সামাজিক সত্তা নিয়ে আলোচনা করতে এগিয়ে যায়, সামনে বা বিপক্ষে পদ্ধতিতে। এর মাধ্যমে উভয় বিকল্পকে সমানভাবে ত্রুটিযুক্ত রেন্ডার করা উচিত, ইতিবাচকভাবে যাতে তারা উভয়ই স্বাধীন ইচ্ছার রাজনৈতিক আদর্শকে কমপক্ষে নীতিগতভাবে বজায় রাখার অনুমতি দেয়। কারণ তারা উভয়েই বলে, ব্যক্তি তাদের নিজস্ব অধিকারে একটি সত্তা। যেখানে সঠিক বিকল্প, যা নির্ধারণবাদকে একটি সত্যিকারের বিকল্প সরবরাহ করার অনুমতি দেবে, অবশ্যই প্রাকৃতিক ধারণার উপর ভিত্তি করে হতে হবে যে মানব প্রাণী একটি সুপারঅর্গানিজম। মানব সামাজিক জীবনের প্রেক্ষাপটে নির্ধারণবাদের সঠিক সংজ্ঞাটি এই নীতিতে প্রকাশ করা হয় যে মানব প্রাণী অতিজীব, ব্যক্তি নয়। এই সংজ্ঞাটি 'নির্ধারণবাদ' এর অর্থকে 'পছন্দ' এর অর্থ থেকে মুক্ত করে, একটি প্রাকৃতিকভাবে ঘটে যাওয়া, শারীরিক সত্তার সাথে নির্ধারণবাদের অর্থ সংযুক্ত করে, যা থেকে নির্ধারণবাদী কারণগুলো চাওয়া যেতে পারে এবং যার সাথে একটি নির্ধারণবাদী প্রকৃতির সমস্ত ফলস্বরূপ ধারণাগুলো সংযুক্ত করা যেতে পারে।
==== রবার্ট ব্যারো ====
আমেরিকান রবার্ট জোসেফ ব্যারো (১৯৪৪-২০১৫) সামষ্টিক অর্থনীতি অধ্যয়ন করেছেন এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। এর আগে ব্যারো ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি অর্থনীতিতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের মতো প্রকাশকদের জন্য সামষ্টিক অর্থনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে অসংখ্য লেখালেখি লিখেছেন।
ব্যারোর আগে, গ্যোটে, ফিচটে, আগস্ট এবং শ্লিগালের মতো লেখকরা রোমান্টিকতাবাদ সম্পর্কে লিখেছিলেন এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের উপর খুব প্রভাবশালী ছিল। এই ধারণাটি ছিল যে ব্যক্তি, মূল্যবোধ এবং রীতিনীতিগুলো সম্পর্কিত এবং ভূগোল এবং আমাদের চারপাশ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
এটি গণমাধ্যম তত্ত্বের সাথে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যা সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক নীতিগুলোর ধারণা যা গণমাধ্যম এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে সংগঠিত করে। এই তত্ত্বটি লেখকদের সমাজে গণমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী তার নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে দেয়। এই অর্থে, গণমাধ্যমের নীতিগুলো সম্পর্কে মূল ধারণাগুলো সমাজে আমাদের যে মূল মূল্যবোধ এবং অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
কিছু লেখক বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা গণমাধ্যম দ্বারা নির্ধারিত হয়। তবে ব্যারো বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের সময় এটি আসলে ব্যক্তির আচরণ এবং মূল্যবোধের বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। সুতরাং ব্যারো যুক্তি দেখাবেন যে সংস্কৃতি সমাজের আচরণকে প্রভাবিত করবে, প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি।
==== ফ্রিডরিখ শ্লেগেল ====
[[File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Franz_Gareis_Portrait_Friedrich_Schlegel.jpg|ডান|থাম্ব|273x273পিক্সেল|ফ্রিডরিখ শ্লেগেল]]
কার্ল ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ শ্লেগাল ১৭৭২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জার্মান কবি এবং উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক এবং দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। এর পাশাপাশি তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের উদ্ভাবক। তিনি জেনা রোমান্টিক্সের অংশ ছিলেন। তত্ত্ব হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিকাশের ক্ষেত্রে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।<ref>http://plato.stanford.edu/entries/schlegel/</ref>
রোমান্টিকতাবাদ পরিবেশ এবং ইতিহাসের উপাসনা ছাড়াও তীব্র অনুভূতি এবং স্বতন্ত্রতার উপর জোর দিয়ে মূর্ত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।<ref>http://www.uh.edu/engines/romanticism/introduction.html</ref> ফ্রিডরিখ শ্লেগেল সহ বিভিন্ন লেখক এই শৈল্পিক ও সাহিত্যিক আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন। রোমান্টিকতা সমাজ ও সংস্কৃতি দ্বারা আকৃতির হয়েছিল, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত। লেখকদের অবস্থানকে সংযুক্ত করার সামাজিক অনুশীলনগুলো বিষয়টির বিষয়গত নিয়মের চেয়ে শিল্পের ফর্মকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। ফ্রিডরিখ শ্লেগেলের কাজ রোমান্টিকতাবাদকে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছিল যে সমাজ ও সংস্কৃতি সামাজিক বিবর্তনকে চালিত করতে পারে। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদীদের দৃষ্টিভঙ্গি যে ক্ষমতা সম্পর্ক তাদের চারপাশের গণমাধ্যম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় যা সামাজিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে।<ref>Lister, M., Dovey, J., Giddings, S., Grant, I., & Kelly, K. (2008). New media: A critical introduction (2nd ed.). New York, NY: Taylor & Francis</ref>
==== ইয়োহান গটলিব ফিচটে ====
[[File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Johann_Gottlieb_Fichte.jpg|বাম|থাম্ব|235x235পিক্সেল|Johann Gottlieb Fichte]]
ইয়োহান গটলিব ফিচটে ছিলেন একজন জার্মান দার্শনিক। তিনি ১৭৬২ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সংশ্লেষণ তৈরি করেছিলেন। ইমানুয়েল কান্টের কাজ দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত এবং উত্সাহিত, বিশেষত নুমেননের অস্তিত্বের উপর - যা তিনি নিজের উপলব্ধি এবং বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিকাশ করেছিলেন - ফিচট চেতনার ধারণায় বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি উইসেনশ্যাফটস্লেহর (বিজ্ঞানের মতবাদ) নামে দর্শনের একটি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে এটি "ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে অবাধে ইচ্ছুক, নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ এজেন্টরা একই সাথে স্থান এবং সময়ের কার্যকারণ শর্তযুক্ত বস্তুগত বস্তুর জগতের অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। ড্যান ব্রেজিল (২০০১) বলেছেন যে:
: "দর্শনের প্রথম কাজ, ফিচট তাই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন, একটি একক, স্বতঃসিদ্ধ সূচনা বিন্দু বা প্রথম নীতি আবিষ্কার করা যা থেকে কেউ কোনওভাবে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দর্শন উভয়ই "প্রাপ্ত" করতে পারে, যা বলতে গেলে, সীমাবদ্ধ জ্ঞানী এবং সীমাবদ্ধ এজেন্ট হিসাবে আমাদের অভিজ্ঞতা।
ফিচট "আমি" এবং আত্ম-চেতনা নিয়ে তাঁর কাজে এতটাই মনোনিবেশ করেছিলেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাঁর রচনাগুলোতেও আসে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বিশ্বাসের পরামর্শ দিতে পারে যে কোনও নির্ধারণবাদ ব্যক্তির উদ্দেশ্য থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাই একটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে। "ফিচট তার কাজের শক্তিকে নির্ধারণবাদের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত করেছিলেন, পরিবর্তে মানব স্বাধীনতা বা এজেন্সির সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছিলেন। এই উদ্ধৃতিটি যে কোনও ধরণের নির্ধারণবাদকে অস্বীকার করতে পারে, তবে এটি স্পষ্টভাবে মানব চেতনাকে কর্মের উত্স হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। এটি বলে, স্বাধীনতা এবং এজেন্সি কর্ম নির্ধারণ করে না, বরং তাদের সামঞ্জস্য করে এবং সহজতর করে। <ref>http://www.enotes.com/topics/johann-gottlieb-fichte/critical-essays</ref> ফিচটের বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত নির্ধারণবাদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, এটিকে প্রযুক্তিগত বা এমনকি সাংস্কৃতিক চেয়ে অনেক বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত করা যুক্তিসঙ্গত - যদিও এটি প্রযুক্তিগত চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। সংস্কৃতি বিকশিত হয় - এবং তাই এর সাথে প্রযুক্তি - মানুষের স্বাধীনতা স্বীকৃত এবং অন্বেষণ করা হয়।<ref name="plato.stanford.edu">http://plato.stanford.edu/entries/johann-fichte/</ref>
==== ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে ====
[[File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Goethe_(Stieler_1828).jpg|থাম্ব|ইয়োহান উলফগাং ফন গ্যোটে]]
ইয়োহান ভোল্ফগাং ফন গ্যোটে ছিলেন একজন জার্মান লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে রোমান্টিক যুগে একজন লেখক ছিলেন; শৈল্পিক, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন। রোমান্টিকতা সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী তত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তবে, গ্যেটে সামাজিক বিকাশের প্রযুক্তিগত বা নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন না। পরিবর্তে তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিশ্ব ক্রমাগত, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ কলহের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পায়।
দর্শন দুই প্রকার; গোঁড়া এবং অ-গোঁড়া গ্যোটে এবং তাঁর কাজ ডগম্যাটিক দর্শনের ছাতায় ছায়াযুক্ত কারণ দর্শনের এই শাখাটি প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু হয় না, বরং প্রকৃতির উপর একটি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখে। গ্যোটের মতামত এবং বিশ্বাস একই রকম ছিল এবং এইভাবে সমাজে একটি অনুমানমূলক এবং গঠনমূলক ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।
প্রাথমিকভাবে গ্যোটে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চিন্তাবিদদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, জিওর্দানো ব্রুনো এবং বারুচ স্পিনোজা, তবে তিনি তখন শাখা প্রশাখা তৈরি করেছিলেন এবং গ্যোটের দার্শনিক লেখাগুলো এমন একটি কাজ হয়ে ওঠে যেখানে মানুষের সত্যিকারের এবং গভীর বোঝার উপস্থাপন করা হয়েছিল।<ref>http://www.tennesseeplayers.org/goethebyschweitz.html</ref> গ্যেটে বিশ্বাস করতেন যে নিজেকে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই যা দাবি করে তা করতে হবে। আপনি যদি আপনার দায়িত্ব পালন করেন তবে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি কে এবং এই কারণেই গ্যেটে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত লেখার সাথে একমত হননি। নির্ধারণবাদী হওয়া এবং আমাদের সংস্কৃতি আমরা কে তা সংজ্ঞায়িত করে এমন ধারণার বাইরে দেখতে ইচ্ছুক না হওয়া এমন একটি অবস্থান যা গ্যেটে একমত হতে পারেননি।
==== প্যাট্রিক বুকানন ====
প্যাট্রিক বুচানান, ডাকনাম "প্যাট" ছিলেন একজন প্যালিওকনজারভেটিভ রাজনৈতিক ভাষ্যকার। প্যালিওকনজারভেটিজম, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত, একটি রাজনৈতিক দর্শন, যা ধর্মীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং পশ্চিমা পরিচয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্যালিওকনজারভেটিস্টদের "পুরানো রক্ষণশীল" হিসাবে দেখা যেতে পারে। বুকানন একজন লেখক, সম্প্রচারক এবং রাজনীতিবিদ হিসাবেও পরিচিত। তিনি রিচার্ড নিক্সন, জেরাল্ড ফোর্ড এবং রোনাল্ড রেগানের সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে এবং পরে ১৯৯৬ সালে রিপাবলিকান রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
আজ, প্যাট্রিক বুকানন দাবি করেছেন যে সমাজে স্থাপিত সাংস্কৃতিক মানগুলো নেতৃস্থানীয় ফ্যাক্টর যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমাদের আচরণ নির্ধারণ করে। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার কারণে বুকাননকে প্যালিওকনসারেটিভ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বিশ্বাস করেন যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আজ রক্ষণশীলদের একটি প্রধান বিতর্ক।
বুচানানের এখনও একটি সক্রিয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যা এখানে পাওয়া যাবে: <nowiki>http://buchanan.org/blog।</nowiki>
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
আবারও, এই জটিল শব্দটি সংজ্ঞায়িত করার জন্য প্রযুক্তিগত এবং নির্ধারণবাদকে বিভক্ত করা সহজ হবে। প্রযুক্তি হলো দক্ষতা এবং পদ্ধতিগুলোর একটি সংগ্রহ যা ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরি করে। নির্ধারণবাদ, যেমনটি আগে বলা হয়েছে, একটি দার্শনিক অবস্থান যার মাধ্যমে প্রতিটি ঘটনার শর্ত রয়েছে যা অন্য কোনও উপায়ে ঘটতে পারে না। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই এমন ঘটনা এবং পরিস্থিতি যার জন্য কেবল প্রযুক্তিই দায়ী হতে পারে।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উন্নয়নকে চালিত করে। এই শব্দটি আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ থরস্টাইন ভেব্লেন (১৮৫৭–১৯২৯) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে মৌলিক প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী ছিলেন সম্ভবত ক্লারেন্স আইরেস যিনি থরস্টাইন ভেব্লেন এবং জন ডিউইয়ের অনুসারী ছিলেন। উইলিয়াম ওগবার্ন তার র্যাডিকাল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের জন্যও পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞানের অভিযোজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, প্রযুক্তি সময়ের সাথে দ্রুত বিকশিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা যুক্তি দেখাবেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন আধুনিক সংস্কৃতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
"প্রযুক্তি" শব্দটি লেখার এবং মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত ছিল - এবং এমনকি শিকারের সরঞ্জাম ইত্যাদি, যদি হাজার হাজার বছর পিছনে ফিরে তাকান - তবে এখন এটি কম্পিউটার এবং টেলিভিশনের সাথে আরও বেশি যুক্ত।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তির এই বিবর্তন সমাজের মূল্যবোধ এবং নিয়মকে আকার দিয়েছে, যা প্রজন্মের মাধ্যমে চলে আসছে।
তাই প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, সমাজে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
সামগ্রিকভাবে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি হ্রাসবাদী তত্ত্ব। এর অর্থ তত্ত্ব সম্পর্কিত অনুরূপ দার্শনিক অবস্থানগুলো একে অপরকে হ্রাস করে। তত্ত্বটি অনুমান করে যে একটি সমাজের প্রযুক্তিগত ড্রাইভ একটি সমাজের সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী তত্ত্ব চিন্তাভাবনার দুটি সাধারণ উপায় উপস্থাপন করে: প্রযুক্তির বিকাশের ইতিমধ্যে সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে একটি অনুমানযোগ্য পথ রয়েছে; এবং, দ্বিতীয়ত, এই প্রযুক্তিগুলো তখন সমাজকে সহজাতভাবে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ সামাজিকভাবে শর্তযুক্ত নয়। এটি প্রযুক্তিকে সমস্ত মানব ক্রিয়াকলাপের ভিত্তি হিসাবে দেখে। প্রযুক্তিকে ইতিহাসের প্রাথমিক প্রবর্তক এবং সামাজিক সংগঠনের নিদর্শনগুলোর অন্তর্নিহিত একটি মৌলিক শর্ত হিসাবে দেখা হয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল থেকে শাখা প্রশাখা হলো হার্ড ডিটারমিনিজম এবং নরম নির্ধারণবাদ। হার্ড ডিটারমিনিজম এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি যা প্রযুক্তি স্বাধীন সামাজিক উদ্বেগ বিকাশ করে, প্রযুক্তি আমাদের সামাজিক ক্রিয়াকলাপ এবং এর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাজ করে এমন শক্তিশালী শক্তির একটি সেট তৈরি করে। নরম নির্ধারণবাদ হলো সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি কীভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি আমাদের বিবর্তনের পথনির্দেশক শক্তি তবে এই পরিস্থিতির ফলাফল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগও আমাদের রয়েছে। নীচে উল্লিখিত অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং প্রভাবিত করেছেন। তাদের প্রত্যেকে কীভাবে তত্ত্বের উপর একটি অনন্য অবস্থান নেয় তা খুব আকর্ষণীয়।
অবশ্যই, থরস্টাইন ভেব্লেনের মতামত অন্যান্য তাত্ত্বিকদের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল। তার মতামত কার্ল মার্কস, মার্শাল ম্যাকলুহান, হ্যারল্ড ইনিস, লেসলি হোয়াইট এবং সিগফ্রিড গিডিয়নের মতো তাত্ত্বিকদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
==== কার্ল মার্কস ====
[[File:Marx1867.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marx1867.jpg|ডান|থাম্ব|302x302পিক্সেল|কার্ল মার্কস]]
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রথম বড় সম্প্রসারণ জার্মান দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্কসের কাছ থেকে এসেছিল। এর তাত্ত্বিক কাঠামোটি এই দৃষ্টিকোণে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে প্রযুক্তি এবং বিশেষত উত্পাদনশীল প্রযুক্তির পরিবর্তনগুলো মানুষের সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংগঠনিক কাঠামোর উপর প্রাথমিক প্রভাব এবং সামাজিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলো শেষ পর্যন্ত একটি প্রদত্ত প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক ভিত্তির চারপাশে ঘোরে। মার্কসের অবস্থান সমসাময়িক সমাজে গেঁথে গেছে, যেখানে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বদলে দেয় এমন ধারণা সর্বব্যাপী। যদিও অনেক লেখক মার্কসের অন্তর্দৃষ্টির জন্য মানব ইতিহাসের একটি প্রযুক্তিগতভাবে নির্ধারিত দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করেন, তবে সমস্ত মার্কসবাদী প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী নন এবং কিছু লেখক প্রশ্ন করেছেন যে মার্কস নিজেই কতটা নির্ধারণবাদী ছিলেন।
কার্ল মার্কস ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করতেন যে প্রযুক্তি সমাজের দিকগুলোর পিছনে মূল ছিল, তাই এটি সামাজিক শৃঙ্খলার পিছনে অন্যতম প্রধান প্রভাবক ছিল। মার্কস পুঁজিবাদী সমাজে বিশ্বাস করতেন এবং সমাজকে উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণকারী একটি উৎপাদিকা শক্তি হিসেবে দেখতেন। এছাড়াও। তিনি প্রযুক্তিকে উত্পাদন শক্তি হিসাবে লক্ষ্য করেছিলেন যা তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে সমাজকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে। তাই সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
অনেক প্রভাবশালী তাত্ত্বিকদের মধ্যে, মার্কসই প্রথম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের উপর বিশদ ব্যাখ্যা করেছিলেন। কার্ল মার্কস বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সামাজিক সম্পর্কগুলো প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির বিকাশের দ্বারা কাঠামোগত হতে পারে।
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
[[File:Marshall_McLuhan.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Marshall_McLuhan.jpg|বাম|থাম্ব|মার্শাল ম্যাকলুহান]]
তবে অন্যান্য তাত্ত্বিকদের মধ্যে যারা অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করতেন, তাদের একজন হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯১১–১৯৮০)। ম্যাকলুহান কানাডায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী ছিলেন, যা সরাসরি প্রযুক্তির সাথে যুক্ত।
দার্শনিক ম্যাকলুহান তার "মাধ্যম হল বার্তা" জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই প্রযুক্তি আমাদের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নিয়মকে চালিত করবে। সুতরাং তার চিন্তাভাবনা ছিল যে প্রযুক্তি সমাজ গঠনে অত্যন্ত প্রভাবশালী হবে, যা ম্যাকলুহানের মতে এখন নেটওয়ার্কিং এবং সংযোগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।
ম্যাকলুহান বিশ্বাস করতেন যে "প্রযুক্তি একটি অনিবার্য, স্বায়ত্তশাসিত শক্তি যা সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে এবং মানবতার পরিত্রাণ হবে (সুরি এবং ফারকুহার, ১৯৯৭)।
এছাড়াও, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত একজন প্রভাবশালী তাত্ত্বিক হিসাবে, ম্যাকলুহানের গবেষণায় "মানবদেহের এক্সটেনশনস", "দ্য গ্লোবাল ভিলেজ" "হট অ্যান্ড কোল্ড গণমাধ্যম" নামে পরিচিত ধারণাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
==== হ্যারল্ড ইনিস ====
[[File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Harold_Innis_public-domain_library_archives-canada.jpg|ডান|থাম্ব|304x304পিক্সেল|হ্যারল্ড ইনিস]]
হ্যারল্ড অ্যাডামস ইনিস ১৮৯৪ সালে জন্মগ্রহণকারী কানাডিয়ান রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি মার্শাল ম্যাকলুহানের কাজকে প্রভাবিত করেছিলেন। ইনিস যোগাযোগ তত্ত্ব সম্পর্কিত একটি মৌলিক এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে রয়ে গেছে। তাঁর জীবনে। তিনি যোগাযোগের সামাজিক ইতিহাস অন্বেষণ করেছিলেন, বিশেষত গত ৪০০০ বছরে গণমাধ্যমের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে।
যোগাযোগ, ''সাম্রাজ্য ও যোগাযোগের'' উপর তাঁর কাজ (১৯৫০) মুদ্রণযন্ত্রের বর্ধনের সাথে প্রাচীন গ্রীস এবং রোমান সাম্রাজ্যের মতো সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পাথর, কাদামাটি, প্যাপিরাস, পার্চমেন্ট এবং কাগজের মতো গণমাধ্যমের প্রভাবগুলো পরীক্ষা করে। মার্শাল ম্যাকলুহান উল্লেখ করেন যে, তার দ্য ''বায়াস অব কমিউনিকেশনস'' (১৯৫১) নামক আরেকটি রচনায় ইনিস ইতিহাসকে দেখার একটি নতুন পদ্ধতির বিকাশ ঘটিয়েছেন।
: অধিকাংশ লেখকই দর্শন, বিজ্ঞান, গ্রন্থাগার, সাম্রাজ্য ও ধর্মের বিষয়বস্তুর বিবরণ প্রদানে ব্যস্ত থাকেন। ইনিস পরিবর্তে আমাদের তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় এই কাঠামোগুলোর দ্বারা প্রয়োগ করা ক্ষমতার আনুষ্ঠানিকতা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তিনি সংগঠিত শক্তির এই প্রতিটি রূপকে কমপ্লেক্সের অন্যান্য উপাদানগুলোর প্রত্যেকটির উপর একটি বিশেষ ধরণের বল প্রয়োগ হিসাবে দেখেন।
প্রাথমিকভাবে নতুন গণমাধ্যম কীভাবে শুরু হয়েছিল তা মূল্যায়ন করে ইনিসের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ম্যাকলুহান স্বীকার করেছেন যে ইনিস ইতিহাসের প্রযুক্তিগত ঘটনাগুলো যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন তা পরীক্ষা করার জন্য সমাজ এটি থেকে কী শিখেছে এবং কীভাবে এটি সংস্কৃতি গঠনে সহায়তা করেছে। ইনিস বিশ্বাস করতেন যে সমাজের পরিবর্তনগুলো যোগাযোগ মাধ্যমের অগ্রগতি এবং কীভাবে এগুলো উন্নত শক্তি সম্পর্কের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
==== লেসলি হোয়াইট ====
লেসলি হোয়াইট ছিলেন একজন নৃবিজ্ঞানী। ১৯০০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি লেসলি হোয়াইট মার্কস এবং ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং "প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তন" সম্পর্কিত তাঁর কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।<ref>https://books.google.co.uk/books?id=lGNQ2gotOVkC&pg=PA52&lpg=PA52&dq=technological+determinism+leslie+white&source=bl&ots=7HaY_JHsFd&sig=pfNCuDXuT9zLHOv7I_lIPCFakI4&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjw_5LDkKLLAhWFbhQKHSS3CHkQ6AEISzAJ#v=onepage&q=technological%20determinism%20leslie%20white&f=false</ref>
আমেরিকান নৃতত্ত্ববিদ-এ প্রকাশিত তাঁর ১৯৩৪ নিবন্ধে "শক্তি এবং সংস্কৃতির বিবর্তন", হোয়াইট একটি আইন প্রবর্তন করেছিলেন যা বলেছিল যে "শক্তি" সময় "প্রযুক্তি" সমান "সংস্কৃতি"। আরেকটি আইন তিনি উত্থাপন করেছিলেন যে "সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রক্রিয়ায়, সামাজিক বিবর্তন প্রযুক্তিগত বিবর্তনের একটি পরিণতি। হোয়াইট বিশ্বাস করতেন যে মানব অগ্রগতির শুরুতে মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদকে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করবে, যা প্রযুক্তিতে আরও বিকাশের অনুমতি দেয়, যা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অনুমতি দেয়। আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিয়ট নাইট এবং কারেন স্মিথ যেমন বলেছেন:
: "শক্তি ক্যাপচার সংস্কৃতির প্রযুক্তিগত দিকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যাতে প্রযুক্তির একটি পরিবর্তন ফলস্বরূপ, বৃহত্তর পরিমাণে শক্তি ক্যাপচার বা শক্তি ক্যাপচারের আরও কার্যকর পদ্ধতির দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এইভাবে সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে পারে।<ref>http://anthropology.ua.edu/cultures/cultures.php?culture=American%20Materialism</ref>
হোয়াইট দাবি করেছিলেন যে সংস্কৃতি প্রযুক্তিগত উপায়ে নির্ধারিত হয় যার মাধ্যমে মানুষ তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। সংস্কৃতি যেভাবে তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং প্রাকৃতিক বিশ্বে তারা যে সমাধানগুলো সরবরাহ করে তা সেই সংস্কৃতির মধ্যে মূল্যবোধ এবং আচরণ নির্ধারণ করে।
==== সিগফ্রিড গিডিয়ন ====
সিগফ্রিড গিডিয়ন ছিলেন একজন সুইস ইতিহাসবিদ এবং স্থাপত্যের সমালোচক এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে একজন অ-মার্কসবাদী তাত্ত্বিক। তিনি মধ্য শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট মানবতাবাদী ছিলেন যিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তির মধ্যে সীমানা অতিক্রম করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন এবং ইতিহাসের সাথে 'বহুবিধ সম্পর্কের' জীবন্ত প্রক্রিয়া হিসাবে জড়িত হওয়ার মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছিলেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্ত বস্তু ব্যবহার করি সেগুলো সম্পর্কে চিন্তা করি যা আমরা মঞ্জুর করে নিচ্ছি।
যে বইটির জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত তা হলো স্পেস, টাইম অ্যান্ড আর্কিটেকচার দ্য গ্রোথ অব নিউ ট্র্যাডিশন। তাঁর বইটি আধুনিক শিল্প ও স্থাপত্যের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট প্রদর্শন এবং অন্বেষণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা এবং সাংস্কৃতিক সীমানার মধ্যে ব্যবধান দূর করার জন্য তাঁর ইচ্ছা দেখতে পাই। গিডিয়নের প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এবং মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে তিনি যে ভারসাম্য চেয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করার আশা ছিল। তাঁর বইয়ের মাধ্যমে আমরা তাঁর অ-মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাই, কিন্তু আমরা এটাও দেখতে পাই যে তিনি কেবল প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অবস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নেননি বরং এটিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গিডিয়ন চায় যে আমরা কেন বসে আছি এবং আমাদের মতো করে দাঁড়িয়ে আছি।<ref>http://muse.jhu.edu/login?auth=0&type=summary&url=/journals/technology_and_culture/v043/43.2molella.html</ref> তিনি উপরোক্ত তাত্ত্বিকদের মতো, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের অগ্রগতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন।<ref>http://wphna.org/wp-content/uploads/2014/06/2011-04-Book-Forum-Tom-Vanderbilt-Mechanization-TC.pdf</ref>
==== লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট, জুনিয়র ====
লিন টাউনসেন্ড হোয়াইট জুনিয়র ১৮৮৭ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৩৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে মধ্যযুগীয় ইতিহাস শিখিয়েছিলেন এবং পরে স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বছর অধ্যাপক ছিলেন।<ref>Hall, Bert S. (1989). "Lynn Townsend White, Jr. (1907–1987)". Technology and Culture 30 (1): 194–213.</ref> তিনি সোসাইটি অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর কলেজের অনেকগুলো বক্তৃতা ১৯৬২ সালে "মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন" শিরোনামে প্রকাশিত একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। এই বইটি বিতর্কিত তত্ত্বে বিতর্ক শুরু করার অন্যতম ট্রিগার ছিল। হোয়াইট তার বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করেছে; তিনি ঘোড়ার স্ট্রাইরাপের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন এবং কীভাবে এটি ইসলামের অগ্রগতিতে কার্যকর ছিল। তিনি আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে ঘোড়াটি ষাঁড়ের চেয়ে ক্ষেতে ব্যবহার করা আরও ভাল হয়ে উঠল, কীভাবে সেই সময়ে ক্র্যাঙ্কটি আবিষ্কার করা দরকার। বাষ্পীয় ট্রেন এবং অটোমোবাইল ছাড়া আমরা কোথায় থাকব? হোয়াইটের বইটি খারাপ পর্যালোচনা পেয়েছে, তবে তার পর থেকে এখনও বিখ্যাত এবং পড়া হচ্ছে।
"মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন" থেকে হোয়াইটের বিশ্বাসগুলো প্রাকৃতিক বিশ্বের শোষণের প্রতি পশ্চিমের মনোভাবকে কীভাবে ধর্ম প্রভাবিত করে তা নিয়ে বিতর্কের দিকে পরিচালিত করে। যারা তার কাজ পর্যালোচনা করেছেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে এটি খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ যা শত শত লোককে ক্ষুব্ধ করেছিল। তাঁর বইটি মার্ক ব্লচকে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি সর্বদা এই বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন যে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষের আচরণের একটি নেতৃস্থানীয় কারণ এবং উপেক্ষিত হয়েছে। হোয়াইট বলেছেন যে "যদি ঐতিহাসিকরা মানবজাতির ইতিহাস লেখার চেষ্টা করতে চান। কেবল মানবজাতির ইতিহাস নয়, যেমনটি আমাদের জাতির ক্ষুদ্র ও বিশেষায়িত অংশের দ্বারা দেখা হয়েছিল যাদের লেখার অভ্যাস ছিল, তাদের অবশ্যই রেকর্ডগুলোর একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হবে, তাদের সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে এবং প্রত্নতত্ত্বের সমস্ত সংস্থান ব্যবহার করতে হবে। সমসাময়িক লেখায় যখন কোনও উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না তখন উত্তর খোঁজার জন্য আইকনোগ্রাফি এবং ব্যুৎপত্তি।
== সংজ্ঞা ==
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সাংস্কৃতিক বিকাশের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে পরিবেশগত প্রভাব একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষেত্র নির্ধারণ করে। বছরের পর বছর ধরে এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত এই শব্দটি তুলে ধরে যে কীভাবে কোনও ব্যক্তির নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ প্রযুক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে এর প্রভাব রয়েছে। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি রেমন্ড উইলিয়ামস তার 'টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম' বইয়ে সিমেন্ট করেছেন যদিও এটি বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে সাংস্কৃতিক হতাশাবাদের সাথে তুলনীয় বলে মনে করেন, যা এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে প্রতিটি সংস্কৃতি একটি সুপারঅর্গানিজম যার একটি উন্নয়নশীল সময় থাকে এবং তারপর মারা যায়। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সংযোগটি এই সত্য দ্বারা দেওয়া হয় যে আমরা সংস্কৃতি গঠনের এজেন্ট নই তবে কেবল এর বিকাশের সাপেক্ষে। অসওয়াল্ড স্পেংলার ছিলেন এই তত্ত্বের সমর্থনে প্রধান বুদ্ধিজীবী।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে পূর্বে বর্ণিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ১৯ শতকের প্রথমার্ধ থেকে বৌদ্ধিক বক্তৃতার রাজ্যে উপস্থিত রয়েছে। ফিশটে, গ্যোটে ও মার্ক্সের মতো দার্শনিকদের রচনা ও ধারণায় এর প্রচলন রয়েছে। ফিচট প্রকৃতিতে একচেটিয়াভাবে নির্ধারণবাদ প্রয়োগ করেছিলেন; তাঁর কাছে মানব অস্তিত্বের কারণ কেবল পরম দ্বারা তার নিজস্ব স্বাধীনতার পরিপূর্ণতায় নির্ধারিত হয়, যাতে মানুষ প্রধানত একটি বস্তু যা আকার ধারণ করতে পারে, অন্যদিকে মার্কস এবং হেগেল সামাজিক ও ঐতিহাসিক নির্ধারণবাদে ফিচটের প্রাকৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রয়োগ করে এটিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যান, মানুষকে একটি নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রেখে যান।
''ভিতরে সাংস্কৃতিক দর্শন: সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রবন্ধ<ref>''Cultural Visions: Essays in the History of Culture'' Edited by Penny Schine Gold and Benjamin C. Sax Publication Date: January 2000</ref>'' ইতিহাসবিদ এরেন্ট গমব্রিচ দাবি করেছেন যে এই দার্শনিকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তার নতুন তরঙ্গ সাংস্কৃতিক ঐক্যের কারণকে শক্তিশালী করেছিল। তিনি বলেন;
''এটা দাবি করা যেতে পারে যে শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অবস্থার বৈচিত্র্যের প্রতি এই জাতীয় আগ্রহ কখনই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উত্থানের দিকে পরিচালিত করত না যদি না এটি একটি অভিনব উপাদান না হত - প্রগতিতে বিশ্বাস, যা কেবল মানবজাতির ইতিহাসকে একত্রিত করতে পারে।''
'''পরিবর্তন'''
বছরের পর বছর ধরে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। রোমান্টিক সময়ের পরে এই শব্দটির ব্যবহার সমাজের আরও অগ্রসর চিন্তাভাবনার দিকগুলোতে প্রয়োগ করতে এসেছিল। বর্তমান সময়ে এটি মিডিয়া এবং প্রযুক্তির সম্ভাব্য ভবিষ্যতে প্রয়োগ করতে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃতি নির্ধারণবাদ আসলে প্রযুক্তি তৈরি করে তার বার্তাগুলো চিত্রিত করার এবং তাদের পরমানন্দ দেওয়ার এবং তাদের আশ্বস্ত করার একটি মাধ্যম রয়েছে। প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি মাত্র, তাই এর নিন্দা করার কিছু নেই, কিন্তু সংস্কৃতি আছে।<ref>Chant, C.,& Goodman, D. (1999). ''Pre-Industrial Cities and Technology''. New York: Open University.</ref>
রেমন্ড উইলিয়ামস এবং ১৯০০ এর দশকের অন্যান্য তাত্ত্বিকদের কাজের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি আগ্রহের পুনরুত্থান ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রভাবের একটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন মতাদর্শের উপর প্রভাবের সাথে আসে। 'বন্দুক মানুষ হত্যা করে না, মানুষ করে' এই বাক্যাংশটি সমাজে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের একটি উদাহরণ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ বা প্রযুক্তির প্রভাব মানুষের জীবনে বেশি প্রভাবশালী কিনা তা নিয়ে একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে। 'সংস্কৃতি'র খুব সংজ্ঞাটি বছরের পর বছর ধরে বিকশিত হয়েছে এবং এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটির সমালোচনা এবং প্রশংসা উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
নতুন গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক পাঠের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ অধ্যায়ে উল্লিখিত হিসাবে, 'নতুন গণমাধ্যম' একটি খুব অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ। আজ আমাদের কাছে যে পরিমাণ প্রযুক্তি রয়েছে, 'নতুন গণমাধ্যম' কী এবং কী নয় তা একটি সার্থক বিতর্কের অংশ। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে সম্পর্কিত, নতুন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্কৃতিকে সমাজকে রূপান্তর করতে সক্ষম করে। আমাদের হাতে গণমাধ্যমের সম্পদ এমন কিছু যা অতীতের তাত্ত্বিকরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি, তাই রেমন্ড উইলিয়ামের সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাটি তারিখ হিসাবে দেখা যেতে পারে, এটি একটি সদা অভিযোজিত মতাদর্শ।
হ্যারল্ড ইনিস নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের দুর্দান্ত উন্নতি হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা কোনওভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়াকে দুর্বল করছে; তিনি গণমাধ্যমতে সময় এবং স্থানের মাত্রা যুক্ত করেছিলেন, নতুন গণমাধ্যমকে যোগাযোগের একটি রূপ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছিলেন যা মূলত স্থান-ভিত্তিক এবং এটি শতাব্দী জুড়ে বিস্তৃত তথ্যের সংক্রমণের দিকে পরিচালিত নয় এবং এর কারণে ইনিস নতুন গণমাধ্যম এবং সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সভ্যতার উপর সত্যই হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছেছিলেন।
আবার, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এবং সাংস্কৃতিক নৈরাশ্যবাদের মধ্যে সাদৃশ্য ফিরে আসে।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ১৯২১ সালে ওয়েলসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রক্রিয়ায় প্রভাবশালী ছিলেন নিউ বাম: সমান অধিকারের প্রচারকারী একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। তিনি পশ্চিমা মার্কসবাদের স্কুলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক গবেষণায় খুব প্রভাবশালী ছিলেন।
মার্শাল ম্যাকলুহানের মতো, উইলিয়ামস নতুন গণমাধ্যম দ্বারা মুগ্ধ ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল যে উইলিয়ামস কীভাবে প্রযুক্তিগুলো প্রথম স্থানে গঠিত হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সমাজকে প্রভাবিত করেছিল তার উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করেছিল। তিনি ম্যাকলুহানের কঠোর সমালোচক ছিলেন। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রতি রেমন্ড উইলিয়ামসের দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসবাদ এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে সংস্কৃতি জাইটজিস্ট দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং এটি সংস্কৃতির একটি উত্পাদন-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা মার্কসবাদের শ্রেণি-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং গ্রামশি, মার্কাস এবং আধিপত্যবাদের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। উইলিয়ামসের কাছে, আমরা যারা এটি প্রথম স্থানে তৈরি করেছি তাদের নৈতিকতা এবং চিন্তাভাবনা ছাড়া প্রযুক্তির কোনও অর্থ নেই। ম্যাকলুহানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভিন্নভাবে, মাধ্যমটি বার্তা নয়, তবে আমরা বার্তা এবং মাধ্যমটি কেবল একটি বাহন।
জন হার্টলি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের প্রবক্তা ছিলেন, তবে বৃহত্তর অর্থে। তিনি লিখেছেন;
"সংস্কৃতি - বিতর্কমূলক, গণমাধ্যম, জ্ঞান-উত্পাদনকারী এবং ইন্দ্রিয়-সৃষ্টিকারী জীবনের ক্ষেত্র - নিজেই শ্রেণি, দ্বন্দ্ব এবং রাষ্ট্রের মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করতে পারে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে আমরা কীভাবে সংজ্ঞায়িত করব? ===
'''ভূমিকা'''
প্রথমত, ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের'' একটি সংক্ষিপ্ত এবং সাধারণ সংজ্ঞা হলো গণমাধ্যম প্রযুক্তিগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট সমাজের মধ্যে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে এটি এক প্রযুক্তিগত যুগ থেকে অন্য প্রযুক্তিগত যুগে সংস্কৃতিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হওয়ার প্রথম বছরগুলো থেকে বাড়তে থাকে, তারপরে পরে এই প্রভাবটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবনের সর্বস্তরের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই অগ্রগতি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর সাথে সংজ্ঞাগুলোতে পরিবর্তন তৈরি করেছিল যেমন টেলিভিশনটি চালু করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্তরের নির্ধারণবাদের সাথে যেমন নরম এবং হার্ড ডিটারমিনিজম: ''নতুন গণমাধ্যমের'' সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এই তত্ত্বটি মূলত অনুমান করে যে সমাজের প্রযুক্তি তার সামাজিক কাঠামো এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিকাশকে চালিত করে। ম্যাকলুহানের মতো তাত্ত্বিকরা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান কারণ তার বিশ্বাস কঠোর নির্ধারণবাদের সাথে মিলে যায়।
'''ইতিহাস ও উৎপত্তি'''
এই অধ্যায়ে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাসটি এখানে সংক্ষেপে দেখা যেতে পারে। ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ'' শব্দটি মূলত আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী থরস্টাইন ভেব্লেন দ্বারা উদ্ভাবিত বলে মনে করা হয়েছিল, এই শিল্প বিপ্লবের সময়কালে ''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে'' প্রযুক্তির চারপাশের ধারণাগুলো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। এই সময়ে ধারণাগুলো ছিল যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর চেয়ে সমাজে বেশি প্রভাব ফেলেছিল, তাই এটি সামগ্রিকভাবে সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
যদিও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বেশিরভাগ শিল্প সংস্কৃতির মধ্যে কেন্দ্রীয় আদর্শের অংশ হয়ে উঠছিল, তবুও সুস্পষ্ট সমালোচক ছিল যা উত্থিত হয়েছিল এবং অন্যরা কীভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখেছিল তা প্রভাবিত করেছিল। এই প্রাথমিক সমালোচনাটি এই চিন্তাভাবনা থেকে এসেছিল যে এই সমাজগুলো কর্মশক্তিকে স্বয়ংক্রিয় ও হ্রাস করার ফলে মানুষের নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। হেনরি অ্যাডামসের মতো সমালোচকরা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণাটিকে অতীতের সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধগুলো অপসারণ এবং মানুষের বিশ্বকে যেভাবে অনুভব করে তা পরিবর্তন হিসাবে দেখেছিলেন।
১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে নতুন প্রযুক্তি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে আরও ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হচ্ছিল, তাই প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো এবং এটি কীভাবে সমাজের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল তা আরও প্রচলিত হয়ে ওঠে কারণ আরও বেশি লোক তাদের প্রতিদিনের জীবনে এই নতুন প্রযুক্তিটি দেখছিল। এই সময়ে অনেক নিবন্ধ এবং বই এই ধারণাগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের এই ধারণার চারপাশে অনেকগুলো সংজ্ঞা উত্থাপন করেছিল। বিংশ শতাব্দী অব্যাহত থাকায় প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাগুলো বিজ্ঞাপনের ফর্মগুলোর মাধ্যমে বাড়তে থাকে: এর অর্থ হলো সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রযুক্তির এই ধারণাগুলো এখন যে কোনও ধরণের গণমাধ্যমের সাথে জড়িত বেশিরভাগ লোকের পক্ষে স্পষ্ট এবং প্রাণবন্ত ছিল।
'''পরিবর্তন'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দ্বন্দ্ব হলো 'নরম' এবং 'কঠিন' নির্ধারণবাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য। হার্ড ডিটারমিনিজমকে প্রযুক্তির সমস্ত সামাজিক সমস্যা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়ার ধারণা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আমাদের সাংস্কৃতিক আচরণগুলো পরিচালনা করে এবং এটি প্রভাবিত করার জন্য আমাদের স্বাধীনতার উপর একটি সীমা রাখে। বিপরীতে, নরম নির্ধারণবাদকে এখনও প্রযুক্তিকে সামাজিক পরিবর্তনের প্রধান চালক হিসাবে দেখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তবে পরামর্শ দেয় যে সম্ভাব্য ফলাফলকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সংজ্ঞাগুলোর মধ্যে পার্থক্যের দিকে পরিচালিত করে এমন আরও কিছু পয়েন্ট হলো প্রশ্নে প্রযুক্তিটির চারপাশে চিন্তাভাবনা এবং দ্বন্দ্ব, যেমন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কিত হতে পারার জন্য বেনামে থাকতে হবে, বা নামহীনতা ব্যতীত আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কিনা তা বিবেচনা করা।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং তাদের মতামতের সমালোচনাকারী তাত্ত্বিকদের মধ্যে পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে, উনিশ শতক থেকে বিংশ শতাব্দীর লেখকদের পরিবর্তনটি স্পষ্ট। প্রথমত, এটি লক্ষ করা যেতে পারে যে দৃষ্টিভঙ্গির এখনও নিবেদিত সমালোচনা ছিল তবে উদ্বেগের জোর রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের ধারণা থেকে নীতি ও নিয়ন্ত্রণের দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল।
টেলিভিশনের প্রবর্তন এবং মানুষের জীবনে এর সংহতকরণ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় তা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিভিকে একটি পুরানো গণমাধ্যম ফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে যা নিজেই নতুন চ্যানেল যুক্ত করা থেকে শুরু করে স্মার্ট টিভিতে এই নতুন গণমাধ্যম সময়ে খাপ খাইয়ে চলেছে। সংজ্ঞাটির এই পরিবর্তনটি দেখা যেতে পারে কারণ টিভি চলমান চিত্র এবং শব্দগুলোর মাধ্যমে প্রযুক্তি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে একটি নতুন বোঝার দিকে পরিচালিত করেছে, যা একসাথে এমন ধারণাগুলো উপস্থাপন করতে পারে যা লোকেরা সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে গ্রহণ করে।
'''নতুন গণমাধ্যম'''
''নতুন গণমাধ্যম'' শব্দটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং অনুশীলনের একটি সম্পূর্ণ পরিসীমাকে বোঝায় যা গত দশকে ব্যাপক মুদ্রা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত অস্পষ্ট এবং বিস্তৃত শব্দ উভয়ই, তবে একই সাথে একটি খুব নির্দিষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট শব্দ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ এটি পরামর্শ দেয় যে 'নতুন গণমাধ্যম' ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে অর্জিত বস্তুগত এবং সামাজিক অনুশীলন হিসাবে বিদ্যমান। যাইহোক, এই প্রস্তাবটি সত্য নয়: কেউ সম্পূর্ণরূপে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু বর্ণনা করার জন্য সাধারণত এই শব্দটি ব্যবহার করে। অনেকে ''নতুন গণমাধ্যমকে'' ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উপলব্ধ করা সামগ্রী হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, বা ইন্টারেক্টিভ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীল অংশগ্রহণ ধারণকারী ডিজিটাল এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য সামগ্রী হিসাবে নতুন গণমাধ্যম হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে - যেমন বিশ্বব্যাপী ঘটনা যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ওয়েবসাইট যেমন অনলাইন সংবাদপত্র, ব্লগ, উইকি এবং ভিডিও গেমস। সুতরাং ''নতুন গণমাধ্যমের'' প্রতি কথায় একটি স্পষ্ট-কাট সংজ্ঞা নেই, বরং এটি এমন একটি শব্দ যা এই সমস্ত বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সামাজিক অনুশীলন, সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং সামগ্রী তৈরির শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য আরও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয় এবং অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে অর্জিত উপাদান নয় কারণ এটি ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং বিকাশ করছে প্রতিদিন পাশাপাশি যেভাবে আমরা, একটি সমাজ হিসাবে সম্মিলিতভাবে, এটি ব্যবহার বা ভোগ।
প্রথমত, আজকাল যখন কেউ কথোপকথনে ''নতুন গণমাধ্যম'' উল্লেখ করে, সাধারণত তারা যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর উল্লেখ করে যেখানে লোকেরা কাজ করে যেমন প্রেস, সিনেমা, সম্প্রচার ইত্যাদি এবং সেই প্রতিষ্ঠানের উপাদান পণ্য যেমন চলচ্চিত্র, বই, ডিস্ক। যাইহোক, এই বিস্তৃত শব্দটির অর্থ প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তনের তীব্রতাকেও বোঝায়: ১৯৮০ এর দশক থেকে একটি বিশাল উন্নয়ন হয়েছিল। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সর্বদা একটি ধ্রুবক প্রবাহে বিকশিত হওয়া সত্ত্বেও, এই সময়টি মুদ্রণ, টেলিভিশনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি, টেলিযোগাযোগের বিকাশের মাধ্যমে আগে যা ঘটেছিল তা চিহ্নিত করেছে। ''নতুন গণমাধ্যমের'' একটি মূল বিষয় হল যে এটি বিষয় (ব্যবহারকারী এবং ভোক্তা) এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্কের বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং দৈনন্দিন জীবনে এবং গণমাধ্যম প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা অর্থগুলোতে চিত্র এবং যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং অভ্যর্থনা পরিবর্তন করেছে।
নেটওয়ার্কযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমে পিসিগুলোর মধ্যে সংযোগটি সমস্ত উত্তেজনা, সমালোচনামূলক মনোযোগ এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের মূল কারণ: ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব সফ্টওয়্যারটির আবিষ্কার হলো সত্যই ইন্টারনেটকে বিকশিত করেছে এবং এর বৃদ্ধি "প্রযুক্তিগত কল্পনা" এর প্রধান বিনিয়োগের সাইট হয়েছে, যা একটি মনোবিশ্লেষক প্রসঙ্গে বোঝায়, চিত্র, উপস্থাপনা, ধারণা এবং পরিপূর্ণতার অন্তর্দৃষ্টি, পূর্ণতা এবং সম্পূর্ণতার একটি ক্ষেত্র হিসাবে যা মানুষ তাদের খণ্ডিত এবং অসম্পূর্ণ সত্তার মধ্যে হয়ে উঠতে চায়। সম্ভবত এ কারণেই মানব জাতি হিসেবে আমরা এটা নিয়ে এত ব্যস্ত।
'''তাত্ত্বিকগণ'''
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত, এই ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক হলেন মার্শাল ম্যাকলুহান যিনি বিশ্বাস করেন যে ''মাধ্যমটি বার্তা।'' এর মূল অর্থ হলো একটি মাধ্যমকে ঘিরে থাকা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত সমস্যা এবং পরিণতিগুলো - আমাদের একটি এক্সটেনশন - নতুন মাধ্যম বা কোনও নতুন প্রযুক্তির কারণে ঘটে যা এখন আমাদের জীবনের একটি অংশ। তিনি বৈদ্যুতিক আলোর উপমা ব্যবহার করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বিশুদ্ধ তথ্যের উত্স এবং কোনও বার্তা ছাড়াই একটি মাধ্যম যদি না এটি কোনও নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন বা নাম বানান করতে ব্যবহৃত হয়। মার্শাল ম্যাকলুহানের মতে, এই ধারণাটিই সব গণমাধ্যমের ভিত্তি: যেকোনো মাধ্যমের বিষয়বস্তু সবসময়ই আরেকটি মাধ্যম। লেখার বিষয়বস্তু বক্তৃতা এবং লিখিত শব্দের বিষয়বস্তু মুদ্রণ, উদাহরণস্বরূপ। ম্যাকলুহানের মতামত উইলিয়ামসের চেয়ে ভিন্ন কারণ তিনি কঠোর নির্ধারণবাদে বিশ্বাস করেন: একটি বৈদ্যুতিক আলো বা একটি হালকা বাল্বের বিষয়বস্তু নেই যেভাবে কোনও বইয়ের অধ্যায় রয়েছে বা একটি টেলিভিশনের প্রোগ্রাম রয়েছে, তবে এটি এমন একটি মাধ্যম যা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে কারণ এটি মানুষকে অন্ধকারের সময় দেখতে দেয় এবং তাদের জন্য এমন একটি পরিবেশ উন্মুক্ত করে যা অন্যথায় বন্ধ হয়ে যায়।
== মূল ধারণা ==
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
গণমাধ্যমতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ হলো দার্শনিক এবং সমাজতাত্ত্বিক ধারণা যে গণমাধ্যমের শক্তি এবং প্রযুক্তি সমাজ গঠনে প্রভাব ফেলে। অধ্যায়ের এই বিভাগে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি মূল ধারণা অন্বেষণ করা হবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে যা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ধারণাটি উপলব্ধি করা সহজ করে তুলবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - মার্শাল ম্যাকলুহান ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের মূল চ্যাম্পিয়ন হলেন কানাডিয়ান বুদ্ধিজীবী মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে আমরা আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এটি তখন আমাদের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে। সেই সময় তাঁর ধারণাগুলো র্যাডিক্যাল এবং বিতর্কিত বলে মনে হয়েছিল, তবে তা সত্ত্বেও তিনি খুব প্রভাবশালী ছিলেন - কেবল পণ্ডিতদের মধ্যে নয়, বৃহত্তর জনগণের কাছেও। তার প্রধান ধারণাগুলো তার মূল গ্রন্থগুলোতে অন্বেষণ করা হয়েছে - ''গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=y4C644zHCWgC&redir_esc=y] McLuhan, M. (1962). ''The Gutenberg Galaxy'', University of Toronto Press: Toronto</ref>'' (১৯৬২),[[wikipedia:Understanding Media: The Extensions of Man|''Understanding Media: The Extensions of Man'']] গণমাধ্যম ''বোঝা: মানুষের এক্সটেনশন<ref>[https://books.google.co.uk/books?id=K4AWBwAAQBAJ&dq=understanding+media+the+extensions+of+man+1964&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwiZ3ZK9y7bLAhXHLQ8KHYNHBMEQ6AEIJjAA] McLuhan, M. (1964). ''Understanding Media: The Extensions of Man'', MIT Press: Massachusetts</ref>'' (১৯৬৪)। ''মিডিয়া ইজ দ্য ম্যাসেজ'' (১৯৬৭)।
কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের আবির্ভাবের আগে ১৯৮০ সালে ম্যাকলুহানের মৃত্যু সত্ত্বেও ম্যাকলুহানের ধারণাগুলো এতটাই আকর্ষণীয় করে তোলে যে তারা প্রযুক্তির ভবিষ্যতের সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে বলে মনে হয়। ম্যাকলুহানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি যুক্তি, যা নীচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে, হ'ল:
* যে কোনও মাধ্যমের বিষয়বস্তু সর্বদা অন্য মাধ্যম এই ধারণাটি
* গণমাধ্যম এবং প্রযুক্তি মানব দেহের একটি এক্সটেনশন এই ধারণাটি
* 'মাধ্যমই বার্তা' এই ধারণা
ম্যাকলুহান প্রযুক্তির বিকাশকে বিকাশের চারটি স্তরের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ থেকে লিখিত যোগাযোগের দিকে স্থানান্তর হিসাবেও দেখেছিলেন:
* একটি আদিম মৌখিক সংস্কৃতি
* শিক্ষিত সংস্কৃতি
* একটি মুদ্রণ সংস্কৃতি
* একটি ইলেকট্রনিক সংস্কৃতি
এটি দেখায় যে কীভাবে প্রযুক্তি ক্রমাগত মানব জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং আজ আমরা এখনও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিকাশের পর্যায়ে রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে, পৃথিবী আগের চেয়ে 'ছোট' বলে মনে হচ্ছে কারণ আমরা এখন আরও বেশি আন্তঃসংযুক্ত।
ম্যাকলুহান মনে করেন, প্রযুক্তিকে তার সামাজিক ব্যবহারে ছোট করা যায় না- প্রযুক্তিই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারণাগুলোর আলোচনা জুড়ে, একটি স্পষ্ট থিম রয়ে গেছে - ম্যাকলুহান জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তির এই প্রভাবশালী শক্তি অন্যদের এবং বিশ্বের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে সক্ষম এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি আচরণ করি। এই ধারণাগুলো কয়েক দশক পুরানো হওয়া সত্ত্বেও, পণ্ডিতরা আজ কীভাবে চিন্তা করেন তার উপর তাদের এখনও অনেক প্রভাব রয়েছে - কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের মতো প্রযুক্তির উপর আধুনিক ব্যক্তির নির্ভরতা এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির সাথে আমাদের আন্তঃসংযোগের সাথে, তার তত্ত্বগুলোর অনেক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মনে হয়।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের একটি উপযুক্ত উদাহরণ হলো ম্যাকলুহান তার মৌলিক কাজ ''দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সিতে'' উদাহরণ দিয়েছেন। এটি ১৪৫২ সালে ইয়োহানেস গুটেনবার্গ দ্বারা মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কারকে মানব ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সন্ধিক্ষণ হিসাবে স্থান দেয়।<ref>[https://ia802302.us.archive.org/4/items/pdfy-SAyhDVrUHD5uvvDE/Marshall%20McLuhan%20-%20The%20Gutenberg%20Galaxy.pdf] McLuhan, Marshall. ''The Gutenberg Galaxy'' (Toronto, 1962) Pp.143 - 155</ref>
ম্যাকলুহান যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুদ্রণযন্ত্র সমাজে এমনভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছে যা সাধারণ সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব নয় এবং ব্যক্তিদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের অনুমতি দিয়ে সমাজ এবং এর মধ্যে ব্যক্তিদের রূপান্তরিত করেছে। এই অধ্যায়ে পূর্বে উত্থাপিত কিছু চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে, মুদ্রণযন্ত্র একটি শিক্ষিত সংস্কৃতি থেকে একটি মুদ্রণ সংস্কৃতিতে রূপান্তরে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপের সময় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় রূপান্তর ঘটতে দেয়। একটি বই মুদ্রণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং প্রচেষ্টা হস্তাক্ষর পাণ্ডুলিপির পূর্ববর্তী পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল। উত্পাদনের বৃহত্তর গতির পাশাপাশি, একটি সমাপ্ত আইটেম উত্পাদন করতে প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণের কাজের কারণে এই জাতীয় প্রক্রিয়াটির ব্যয় সস্তা ছিল। অর্থনৈতিক উদ্বেগ থেকে প্রস্থান করে, মুদ্রণযন্ত্র মূলত মৌখিক বিতরণের মাধ্যমে একটি পাণ্ডুলিপির সীমিত প্রকাশের তুলনায় উপাদানগুলোর একাধিক অনুলিপি দ্রুত তৈরি এবং বিস্তৃত অঞ্চলে বিতরণ করার অনুমতি দেয়। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বই বিতরণের এই নতুন আবিষ্কৃত ক্ষমতা নতুন ধারণা এবং ধারণার শিকড় গাড়তে দেয় এবং সামাজিক বিকাশ এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করে। সেই সময়ের একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য ছাপাখানার গতি এবং ব্যয় ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের অধীনে প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারের বিকাশকে সক্ষম করেছিল। লুথেরান বাইবেলের মতো অনুবাদিত ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর ব্যাপক বিতরণ না থাকলে এটি এতটা সফল হত না, যা ইউরোপের লোকদের মধ্যে সাক্ষরতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়। ম্যাকলুহান যুক্তি দেন যে ইউরোপের জনসংখ্যার বর্ধিত সাক্ষরতার কারণে, ফলস্বরূপ সম্প্রসারণ এবং ধারণার প্রকাশ আধুনিক যুগের সমাজের প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদের মতো বিশিষ্ট রাজনৈতিক ধারণার জন্য প্রয়োজনীয় শিকড় সরবরাহ করেছিল।
==== প্রযুক্তি মানবদেহকে প্রসারিত করে ====
মার্শাল ম্যাকলুহানের তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো গণমাধ্যম সাধারণত মানুষের বিশ্বের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে তা পরিবর্তন করে এবং যে কোনও একটি মাধ্যমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো এই সংবেদনশীল সম্পর্ককে পরিবর্তন করতে পারে, মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোর গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে এবং কেবল এর মাধ্যমে সরবরাহ করা সামগ্রী নয়। তাই এটি সংস্কৃতির চেয়ে প্রযুক্তির উপর বিশেষ জোর দেয়।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কিত ম্যাকলুহানের তত্ত্বটি এই ক্ষেত্রে তৈরি করে যে একটি মাধ্যম "আমাদের যে কোনও সম্প্রসারণ"।<ref>[McLuhan, Marshall. Understanding Media, London: Sphere, 1968]</ref> তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্ণমালা চোখ প্রসারিত করে, চাকা পা প্রসারিত করে এবং কম্পিউটার স্নায়ুতন্ত্রকে প্রসারিত করে। সুতরাং মানবদেহকে প্রসারিত করে এমন এই জিনিসগুলো তার যুক্তিতে গণমাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশেষত যখন তিনি এটি লিখেছিলেন তখন কম্পিউটারগুলো সাধারণ ছিল না, যেমন এখনকার মতো। তিনি আরও দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে আমাদের দেহের এই এক্সটেনশনগুলো শরীরের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অংশগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পর্ককে পরিবর্তন করে এবং আমাদের মন এবং আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করে কারণ তারা মানুষের ইন্দ্রিয়ের পরিসরের মধ্যে অনুপাতকে পরিবর্তন করে যা আমাদের মানসিক ক্রিয়াকলাপগুলোর জন্য প্রভাব ফেলে।
ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে, ভাষা একটি মাধ্যম কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ চেতনার একটি সম্প্রসারণ। অতএব, কথ্য ভাষা মানব চেতনা এবং সংস্কৃতির বিবর্তনের একটি মূল বিকাশ এবং যে মাধ্যম থেকে পরবর্তী প্রযুক্তিগত সম্প্রসারণ বিকশিত হয়েছে। এটি আধুনিক দিনে প্রয়োগ করা অব্যাহত রয়েছে কারণ ভাষার বিবর্তন অব্যাহত রয়েছে যার ফলে প্রযুক্তির সাথে এটির সাথে বিকশিত হতে হবে, অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে "সেলফি" এর মতো শব্দ যুক্ত করা হচ্ছে এবং সামনের মুখী ক্যামেরা সহ আরও ফোন এই ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রকাশিত হচ্ছে।
যদিও তার যুক্তিটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ 'মাধ্যম' শব্দটির ব্যবহারকে কেউ কেউ খুব সরল বলে মনে করেছেন কারণ এটি এই শব্দটির অধীনে চ্যানেল, কোড এবং বার্তাগুলোকে একত্রিত করে, এইভাবে গাড়ি, অভ্যন্তরীণ কোড এবং তার কাঠামোতে প্রদত্ত বার্তার বিষয়বস্তুকে বিভ্রান্ত করে। ম্যাকলুহানকে টেকনোফোব হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে এবং চেতনার বৈদ্যুতিন সম্প্রসারণ নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে দ্বন্দ্বের কারণে সমালোচিত হয়েছেন, যদিও তিনি প্রযুক্তির প্রভাবগুলো ভাল বা খারাপ হিসাবে লেবেল করার পরিবর্তে মানবদেহের সম্প্রসারণ হিসাবে অন্বেষণে বেশি আগ্রহী।
==== মাধ্যমই বার্তা ====
যখন তত্ত্বটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তখন এটি একটি টাইপোর অধীনে ছিল, ''দ্য গণমাধ্যমম ইজ দ্য ম্যাসেজ''। ম্যাকলুহান এটিকে আরও ভাল শিরোনাম হিসাবে বিশ্বাস করেছিলেন কারণ এর অর্থ এটি চারটি ভিন্ন উপায়ে পড়া যেতে পারে: বার্তা, জগাখিচুড়ি বয়স, ম্যাসেজ এবং ভর বয়স।<ref>[http://www.marshallmcluhan.com/common-questions/]</ref>
ম্যাকলুহান তার বই '<nowiki/>''আন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম: দ্য এক্সটেনশনস অব ম্যান'''-এ মাধ্যমের ধারণাটি তুলে ধরেছেন। এর মূল ধারণাটি হলো "বিষয়বস্তু" নির্বিশেষে মাধ্যমটি মানব সমাজে আনা যে কোনও পরিবর্তনকে নির্দেশ করবে। ম্যাকলুহানের তত্ত্বের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হল বিদ্যুৎ এবং আলো। তত্ত্ব অনুসারে, হালকা বাল্ব একটি মাধ্যম কারণ এটি নিজেরাই কোনও "সামগ্রী" ধারণ করে না, এটি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আলো ছাড়া সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে অনেক ক্রিয়াকলাপ বাধাগ্রস্ত হবে, তাই মাধ্যমটি ক্রিয়াকলাপ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি এমন একটি মাধ্যম হিসাবে চলচ্চিত্র যা "লিনিয়াল সংযোগের কারণে "সৃজনশীল কনফিগারেশন এবং কাঠামোর জগতে ক্রম এবং সংযোগের জগতে আমাদের নিয়ে যায়"।
মাঝারি কিউবিজম হিসাবে চলচ্চিত্রের ধারণার মাধ্যমে বিকশিত হয় কারণ এটি নিদর্শন, আলো এবং টেক্সচারে প্লেন এবং অস্পষ্টতা ব্যবহারের মাধ্যমে দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করার চেষ্টা করে। আরও সহজ শর্তে এটি যা করে তা হলো দর্শকের দ্বারা প্রকৃত পণ্য হিসাবে নিবন্ধিত একটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে সমস্ত বিভিন্ন অংশ গ্রহণ করা, এটি একটি ঘনক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নয় যা উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় তবে ঘনক্ষেত্রটি নিজেই। সুতরাং যেহেতু কিউবিজম "বিষয়বস্তু" সম্পর্কে নয়, এটি এই বিষয়ে ম্যাকলুহানের চিন্তাভাবনার জন্য এটি একটি ভাল উদাহরণ তৈরি করে।<ref name="web.mit.edu">http://web.mit.edu/allanmc/www/mcluhan.mediummessage.pdf</ref>
==== হট অ্যান্ড কুল মিডিয়া ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বোঝার মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো মার্শাল ম্যাকলুহানের "উষ্ণ" ো "শীতল" গণমাধ্যমের ধারণার ব্যবহার। এটি তার বিখ্যাত বাক্যাংশ "মাধ্যম হলো বার্তা" এর সাথে সম্পর্কিত কারণ ম্যাকলুহান তাদের শ্রোতাদের ব্যস্ততার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে স্থান দিয়েছেন। তত্ত্বটি সময়ের সাথে সাথে সমালোচনা পেয়েছে তবে তা সত্ত্বেও এটি ম্যাকলুহানের সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দেখা হয়। এই বিষয়ে করা গবেষণা খুব বিরল এবং এই অভিজ্ঞতামূলক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো অস্পষ্ট হয়েছে।
::: '''হট মিডিয়া'''
হট মিডিয়া শ্রোতা বা দর্শককে প্রচুর ডেটা সরবরাহ করে এবং তাদের সাথে এমন একটি স্তরে জড়িত থাকে যেখানে উপস্থাপিত পাঠ্যটি আরও না পড়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলো উদ্দীপিত হতে পারে।<ref name="Bringmann19692">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> শ্রোতাদের কোনও শূন্যস্থান পূরণ করার দরকার নেই কারণ পছন্দসই পড়ার জন্য সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠ্যের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। রেডিও, সংবাদপত্র এবং চলচ্চিত্রগুলো হট মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ তারা এই পদ্ধতিতে শ্রোতাদের সাথে জড়িত। ম্যাকলুহান হট মিডিয়া সম্পর্কে কথা বলার সময় "হাই ডেফিনিশন" শব্দটি ব্যবহার করেন - এতে তিনি বোঝাতে চান যে হট মিডিয়া যে ডেটা সরবরাহ করে তা একটি অনুভূতি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, উদাহরণস্বরূপ ফটোগ্রাফি দৃশ্যত প্রচুর উদ্দীপনা সরবরাহ করে এবং তাই উচ্চ সংজ্ঞা হিসাবে বিবেচিত হয়।<ref name="Fishman2006">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> হট মিডিয়া শ্রোতাদের অংশগ্রহণে একটি সীমাবদ্ধ অ্যাক্সেস সরবরাহ করে কারণ সমস্ত ডেটা সরাসরি দেওয়া হয়।<ref name="McLu1964">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref>
::: '''কুল মিডিয়া'''
অন্যদিকে শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের পর্যবেক্ষণ করতে এবং যে তথ্যের অভাব রয়েছে বলে মনে হয় তা পূরণ করতে বলে। শীতল গণমাধ্যম পাঠ্যগুলো অস্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করে এবং তারা শ্রোতাদের পাঠ্যটি পরিষ্কার করতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হতে বলে।<ref name="Bringmann1969">[http://www.amsciepub.com/doi/pdf/10.2466/pr0.1969.25.2.447] W. G. Bringmann (1969), Experimental Investigation of McLuhan's Ideas Concerning Effects of "Hot" and "Cool" Communications Media, ''Psychological Reports''.</ref> টেলিভিশন এবং টেলিফোন শীতল গণমাধ্যমের অংশ।<ref name="Fishman20062">D. A. Fishman (2006), Rethinking Marshall McLuhan: Reflections on a Media Theorist, ''Journal of Broadcasting & Electronic Media''.</ref> গরম গণমাধ্যমের সাথে শীতল গণমাধ্যমের তুলনা করতে, ম্যাকলুহান বলেছেন যে শীতল গণমাধ্যম গরম গণমাধ্যমের মতো নয়, "কম সংজ্ঞা"।<ref name="McLu19642">M. McLuhan (1964), ''Understanding Media: The Extensions of Man''.</ref> একটি ফোনে কথোপকথন খুব সামান্য তথ্য সরবরাহ করে এবং অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা পূরণ করার জন্য অনেক কিছু ছেড়ে দেয় এবং তাই এটি "কম সংজ্ঞা"। শীতল গণমাধ্যম শ্রোতাদের আরও অবাধে অংশ নিতে দেয়।
==== কেস স্টাডি: প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদী চিন্তার প্রয়োগকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি কেস স্টাডি নিয়োগ করা যা অধ্যায়ের পরে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরাবৃত্তি করা হবে তা একটি সার্থক অনুশীলন হতে পারে। এই বিশেষ কেস স্টাডিতে, ইন্টারনেট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে। একটি বিশুদ্ধরূপে প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে, সমাজ বিভিন্ন রূপে তথ্যের বৃহত্তর অ্যাক্সেস থেকে উপকৃত হতে শুরু করে। ছাপাখানা যেভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, ঠিক একইভাবে এই পরবর্তী জ্ঞান সমাজের ব্যক্তিকে আরও ভালভাবে অবহিত করতে পারে বা - যদি মার্শাল ম্যাকলুহানের যুক্তি মেনে চলে- বিশ্বের বৃহত্তর অভিজ্ঞতাকে রূপান্তরিত করতে পারে। ইন্টারনেট পরবর্তী প্রযুক্তিগুলোর আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে। এটি আধুনিক সমাজে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে; নোটের একটি উদাহরণ স্মার্টফোন। অধ্যায়ের শুরুতে ম্যাকলুহানের করা যুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার যুক্তিযুক্তভাবে মানব স্নায়ুতন্ত্রের একটি এক্সটেনশন হিসাবে কাজ করেছিল। প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যম হিসাবে ইন্টারনেটের সৃষ্টি, এই প্রভাবটিকে বাড়িয়ে তোলে এবং প্রযুক্তির সাথে নতুন সংবেদনশীল সম্পর্ক নিয়ে আসে। এর ফলে মানব দেহের সম্প্রসারণ হিসাবে প্রযুক্তির ধারণাটি প্রায় নিখুঁত হয়। সোশ্যাল গণমাধ্যম নেটওয়ার্কগুলো এখন সমাজের মধ্যে সাধারণ হয়ে উঠেছে এবং লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার এবং গণমাধ্যমের অভিজ্ঞতা অর্জনের উপায় পরিবর্তন করেছে।
==== উপসংহারে ====
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদে ম্যাকলুহান এই ধারণার পক্ষে ছিলেন যে এটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যা সংস্কৃতিকে পরিচালনা করে এবং প্রভাবিত করে। অধ্যায়ে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলোর উপর এই বিভাগে যুক্তি হিসাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক বিকাশ নির্ধারণ করে। ম্যাকলুহান তার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন যা অন্বেষণ করা হয়েছে, যেমন শরীরের এক্সটেনশন হিসাবে প্রযুক্তি, গরম এবং শীতল গণমাধ্যম এবং মাধ্যমটি বার্তা। প্রযুক্তি কীভাবে সংস্কৃতির বিকাশকে নির্ধারণ করেছে তার একটি উদাহরণ হলো ইয়োহানেস গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস, এমন একটি মেশিন যা গণ প্রকাশনাকে সম্ভব করে তুলেছিল এবং ম্যাকলুহানের মতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি করেছিল।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরোধিতা করে, দাবি করে যে একটি জীবন্ত সংস্কৃতি মানুষ এবং তাদের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে এবং তাই প্রযুক্তির বিকাশকে প্রভাবিত করে। মিডিয়াের সাথে সম্পর্কিত, সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই ধারণাটি পরিচালনা করে যে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য কাউকে উপায় দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে থেকে তাদের জন্য ব্যবহার খুঁজে পায়। অধ্যায়ের এই অংশটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের মূল ধারণাগুলো নিয়ে যাবে। এর মধ্যে একটি মূল তাত্ত্বিক এবং কিছু তাত্ত্বিক উদাহরণ রয়েছে যা ধারণাটিকে আরও বাস্তব বলে মনে করবে এবং গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আনবে।
==== মূল তাত্ত্বিক - রেমন্ড উইলিয়ামস ====
একজন তাত্ত্বিক যিনি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ক্ষেত্রে যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন ওয়েলশ একাডেমিক রেমন্ড উইলিয়ামস। উইলিয়ামস ব্রিটিশ গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ম্যাকলুহানের কিছুটা বিতর্কিত বিশ্বাসের চেয়ে তাঁর ধারণাগুলো একাডেমিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়। ম্যাকলুহানের বিপরীত সংখ্যা, উইলিয়ামস তার ধারণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, জোর দিয়েছিলেন যে প্রযুক্তি কেবল ইতিমধ্যে বিদ্যমান কাঠামোকেই প্রভাবিত করে এবং ক্ষমতার সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তিনি ম্যাকলুহানকে একক মনের মানুষ হিসেবে দেখতেন এই বিশ্বাসে যে, সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য প্রযুক্তি দায়ী। উইলিয়ামসের তত্ত্বগুলো, যা নীচে আরও বিশদে আলোচনা করা হয়েছে, অন্বেষণ করা হয়েছে:
* যেসব কারণে প্রযুক্তি বিকশিত হচ্ছে
* সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলোর জটিল যা তাদের আকার দেয়
* প্রযুক্তিগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একত্রিত হওয়ার উপায়গুলো
এই ধারণাগুলো তাঁর বইয়ে বর্ণিত হয়েছে ''টেলিভিশন: প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম'' (১৯৭৪). উইলিয়ামস দাবি করেছিলেন যে প্রযুক্তির উত্থান মানবতার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে - তাদের প্রয়োজন, কাঠামো এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা আমাদের উপর প্রযুক্তির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। সুতরাং প্রযুক্তির বৃদ্ধি শক্তিশালী মানব অভিনেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, প্রযুক্তি দ্বারা নয়। তিনি প্রযুক্তিকে এমন একটি সরঞ্জাম হিসাবে দেখেছিলেন যা মানুষ তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করে। এর অর্থ হলো প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার এবং ফলাফল রয়েছে - যেহেতু বিভিন্ন ধরণের লোকেরা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করে, তাই তাদের কখনই একক ব্যবহার হবে না।
ম্যাকলুহানের বিপরীতে, উইলিয়ামস বিশ্বাস করতেন যে একটি মাধ্যমের বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ - কোনও প্রযুক্তির কার্যকারিতা এটি যা তা থেকে পৃথক করা যায় না। সুতরাং প্রযুক্তি মানুষ এবং তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসের দ্বারা তার অর্থ দেওয়া হয় - এটি আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের ব্যবহার নয়, যা সংস্কৃতি এবং আমরা কীভাবে আচরণ করি তা প্রভাবিত করে।
==== তাত্ত্বিক উদাহরণ ====
রেমন্ড উইলিয়ামস তার বইয়ে, ''টেলিভিশন, প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক ফর্ম টেলিভিশনকে'' প্রযুক্তির একটি অংশ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শেষ পর্যন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কারণগুলোর সৃষ্টি ছিল, খাঁটি প্রযুক্তিগত বিপরীতে। উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে টেলিভিশনটি পূর্বে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল ছিল - যেমন বিদ্যুৎ, টেলিগ্রাফ, ফটোগ্রাফি এবং রেডিও - যা নিজেরাই খুব ভিন্ন উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, উইলিয়ামসের মতে: 'যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক পরিবহন, বা টেলিগ্রাফি, ফটোগ্রাফি, মোশন পিকচার, রেডিও এবং টেলিভিশনে উত্পাদন এবং যোগাযোগের গতিশীলতা এবং স্থানান্তরের এই সিস্টেমগুলো একবারে সাধারণ সামাজিক রূপান্তরের একটি পর্যায়ে উত্সাহ এবং প্রতিক্রিয়া ছিল'।<ref>[http://stuartgeiger.com/williams-television.pdf] Williams, Raymond. ''Television, Technology and Culture'' (New York, 1975) Pp.14-19</ref>
উইলিয়ামস যুক্তি দিয়েছিলেন যে পূর্বোক্ত প্রযুক্তিগুলো সমস্তই সামাজিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ছিল: শিল্পোন্নত বিশ্বের প্রাথমিক সমস্যাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানাতে উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করা হয়েছিল এবং শিল্পায়ন বিশ্ব নিজেই প্রযুক্তিগুলো কী সম্ভব বলে মনে করা হয়েছিল তার নতুন সম্ভাবনা সরবরাহ করেছিল। উদাহরণস্বরূপ, যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ 'রেলপথের বিকাশ, নিজেরাই একটি শিল্প ব্যবস্থার বিকাশ এবং শহরগুলোর সম্পর্কিত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া' এর ফলাফল ছিল। এবং, এর পূর্বসূরীদের মতো, টেলিভিশন শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিক্রিয়া ছিল। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কার রেনেসাঁ ইউরোপ জুড়ে নতুন ধারণা বিতরণের অনুমতি দেয়, যা আরও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন তথ্য এবং মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, মূলত আমরা আজ আধুনিক গণমাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দিই: রেডিও, সংবাদপত্র এবং অবশেষে, টেলিভিশন।
==== সামাজিক গোষ্ঠী ====
১৯৪৫ সালে ভ্যানিভার বুশ দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কম্পিউটারগুলো প্রতিটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের সাথে কাস্টমাইজযোগ্য তথ্যের সংযোগকে সহজতর করবে।<ref>Adrian Athique, Digital Media and Society: An Introduction, Cambridge: Polity Press, 2013</ref> রেমন্ড উইলিয়ামসের কাজের জন্য ধন্যবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্য সফ্টওয়্যার কাস্টমাইজ করার এই ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা হয়েছিল।
মানুষের অভিপ্রায় এবং নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট অবস্থার জন্ম দেয় যার মধ্যে প্রযুক্তিগুলো উদ্ভূত হয় এবং বিদ্যমান সামাজিক অনুশীলনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উইলিয়ামস উল্লেখ করেছেন যে প্রযুক্তির বিকাশে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা এবং ফলাফল রয়েছে যাতে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রয়োজনের জন্য প্রযুক্তির উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারগুলো উপযুক্ত, অভিযোজন, সংশোধন বা ধ্বংস করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যের শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গার সময়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। লোকজনকে "ইচ্ছামতো লুটপাট দেখা এই বিশৃঙ্খলাকে আরও বাড়িয়ে তোলে কারণ এটি মানুষকে একত্রিত করেছিল এবং দাঙ্গাকারীদের অশান্তি সংগঠিত করার অনুমতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মকাণ্ডকে গৌরবান্বিত করার জন্য সোশ্যাল গণমাধ্যমও ব্যবহার করা হয়েছিল, যেমন এক ব্যক্তি টেসকো মূল্যের চালের ব্যাগ চুরি করার মতো ছবি ভাইরাল হয়েছিল।<ref>http://www.theguardian.com/media/2012/mar/28/uk-riots-twitter-facebook</ref>
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে, টুইটারের ১৪০ অক্ষর সীমা এটি ফেসবুক থেকে আলাদা করে কারণ এটি কেবল একজন ব্যক্তির মতামতের সামান্য ঝলক পরিবেশন করার কথা এবং যেমন ফেসবুক আরও বহুমুখী তথ্য যা এটি ধারণ করতে পারে - ফটো অ্যালবাম থেকে আপনার কর্মসংস্থান ইতিহাস পর্যন্ত। এই কারণে, বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী তারা যে উদ্দেশ্যে এটি পরিবেশন করতে চায় তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে বেশি ঝুঁকতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ফেসবুক ব্যবহার করেন কারণ এটি তাদের প্রাক্তন ছাত্র গোষ্ঠী ইত্যাদির মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের অনুমতি দেয় যদিও টুইটার একইভাবে এই প্রয়োজনীয়তাটি পরিবেশন করতে পারে না, বিশেষত তাদের টুইটার হ্যান্ডেলটি কী তার উপর নির্ভর করে কিছু লোককে সনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। অতএব, সোশ্যাল গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত একই উদ্দেশ্যে (বিনোদন, স্ব প্রকাশ ইত্যাদি) পরিবেশন করার জন্য বিদ্যমান থাকতে পারে তবে তারা এই প্রয়োজনগুলো খুব ভিন্ন প্রসঙ্গে পরিবেশন করে এবং প্রায়শই তারা প্রাথমিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তার থেকে আলাদাভাবে ব্যবহৃত হয়।
==== কেস স্টাডি: সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ====
এই অধ্যায়ে পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, চিন্তার বিভিন্ন স্কুলের পদ্ধতির তুলনা করার জন্য একটি কেস স্টাডি একটি সার্থক পদ্ধতি হবে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ বিভাগে, ইন্টারনেট সেই বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছিল। এখানে, এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
ইন্টারনেটকে একটি প্রযুক্তি হিসাবে আবিষ্কার করার জন্য সমাজকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণা অনুসারে তার বিকাশের প্রয়োজন ছিল। সংযোগের ধারণাটি নতুন নয়। এটি ইন্টারনেটের আকারেও এর উপলব্ধি খুঁজে পায়নি: এমনকি যখন আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন থেকে সমসাময়িক সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য প্রযুক্তি চালু করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোর সাথে বিশ্বে দীর্ঘ-দূরত্বের যোগাযোগের দ্রুত উপায় প্রচার করার জন্য বিদেশে শিল্প ও সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা। আরও আধুনিক অর্থে, ইন্টারনেট তৈরির জন্য চালিত সামাজিক কারণগুলোর পরামর্শ দেওয়ার প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোক্তা এবং পেশাদার উভয় মডেলগুলোতে কম্পিউটার প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতা এবং বিদ্যমান যোগাযোগের পদ্ধতিগুলোতে আরও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা। উপরন্তু, ইন্টারনেটের প্রাথমিক রূপ আরপানেট তৈরির প্রাথমিক গবেষণাটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (বা ডারপা) টেলিফোন ব্যবস্থায় বিদেশী আক্রমণের ক্ষেত্রে জরুরী যোগাযোগ সক্ষম করে এমন সম্ভাব্য প্রযুক্তিগুলো তদন্ত করার প্রত্যক্ষ ফলাফল।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== উপসংহারে ====
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে, যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় তা মানুষ এবং সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছু করার আছে। উপরে প্রদর্শিত হিসাবে, প্রযুক্তি তার চারপাশের মানুষকে নির্দেশ করে না, তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মানুষ এবং সংস্কৃতিকে পরিবেশন করে এবং তাদের চাহিদা পূরণ করে। লোকেরা বিকল্প ব্যবহার নিয়ে আসার এবং একই সাথে একাধিক উদ্দেশ্যে একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। এর একটি সাধারণ উদাহরণ হল টুইটার, একটি গণমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে, সংবাদ পড়তে, অনলাইন সক্রিয়তায় অংশ নিতে এবং কয়েকটি উদ্দেশ্যে পণ্য প্রচার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
== বিরোধিতা ==
বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই অনেক তাত্ত্বিকদের বিরোধিতা বা আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে। এই বিভাগটি আরও কিছু প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের কভার করবে যারা প্রতিটি তত্ত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, পাশাপাশি তাদের স্বতন্ত্র যুক্তি এবং বিরোধী মতামত কী।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
অনেক তাত্ত্বিক যারা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের বিরোধিতা করেন তারা পরিবর্তে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের তত্ত্বকে সমর্থন করেন, বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উভয়ই একে অপরের সাথে জড়িত বা সমাজের মধ্যে প্রযুক্তির স্থান এবং বিকাশের বিষয়ে তাদের নিজস্ব বিকল্প তত্ত্ব সরবরাহ করে। প্রযুক্তি এবং / অথবা সমাজের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এমন অধ্যয়নের ক্ষেত্রের মধ্যে অনেক অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছেন এবং কেউ কেউ এই তত্ত্বের সাথে একমত হন এবং সাবস্ক্রাইব করেন, অন্যরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধারণার সাথে এর বিরোধিতা ও বিরোধিতা করেন।
==== লেলিয়া ====
গ্রিন
পার্থের এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার লেলিয়া গ্রিন যুক্তি দেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তত্ত্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তার মতে, প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ কাজ করার জন্য সমাজকে বাস্তবে যে পক্ষপাতদুষ্ট গুণাবলী ধারণ করে তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ প্রকৃতির হওয়া দরকার।
প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং এর ব্যাক আপ তাত্ত্বিকদের প্রতি গ্রিনের অন্যতম প্রধান আপত্তি হলো তাদের কথিত মানসিকতা "'আপনি অগ্রগতি থামাতে পারবেন না', 'আপনি ঘড়িটি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না' এবং 'প্রযুক্তির পলাতক জাগারনট'" যা গ্রিনের মতে, "সবই বোঝায় যে আমরা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম"। গ্রিন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মানুষ প্রযুক্তি উন্নয়নশীল সমাজের পরিবর্তে তারা যে প্রযুক্তি বিকাশ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে।<ref>[http://www.darpa.mil/about-us/timeline/modern-internet] DARPA Official Website</ref>
==== ল্যাংডন উইনার ====
[[File:LangdonWinner.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:LangdonWinner.jpg|ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|ল্যাংডন উইনার]]
ল্যাংডন উইনার প্রযুক্তি এবং সমাজ সম্পর্কিত তার লেখার জন্য পরিচিত অধ্যাপক; এবং তিনি এমন একটি ধারণা সামনে রেখেছেন যা প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের সাথে সাংঘর্ষিক। তার একটি প্রবন্ধ, জীবনের ''রূপ হিসাবে প্রযুক্তি''। তিনি প্রযুক্তিগত সোমনাম্বুলিজমের নিজস্ব তত্ত্বের পরামর্শ দিয়েছেন - এমন একটি তত্ত্ব যা পরামর্শ দেয় যে আমরা প্রজাতি হিসাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে 'স্লিপওয়াকিং' অবস্থায় আছি, আমরা আমাদের প্রযুক্তির সাথে ঠিক কীভাবে জড়িত তা নিয়ে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্বেগের কারণে আমাদের প্রযুক্তি কোন দিকে নিয়ে যায় তার উপর আমাদের খুব কম নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তিনি বিস্তারিতভাবে বলেছেন:<blockquote>প্রযুক্তি দ্বারা আনা দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ পরিবর্তনগুলো পূর্ববর্তী নিদর্শনগুলোর সংস্করণ হিসাবে স্বীকৃত হতে পারে। বাবা-মায়েদের সবসময় বাচ্চাদের বিনোদন এবং নির্দেশ দিতে হয়েছিল এবং তাদের চুল থেকে ছোটদের দূরে রাখার উপায় খুঁজে বের করতে হয়েছিল। তরুণদের টেলিভিশনের কার্টুন দেখতে পাওয়া, এক দিক থেকে দেখলে, এই বৃদ্ধ বয়সের কাজটি পরিচালনা করার জন্য কেবল একটি নতুন পদ্ধতি, যদিও "নিছক" এর কোনও ছোট তাত্পর্য নেই।<ref name="Winner2004">Winner, Langdon. "Technology as Forms of Life". ''Readings in the Philosophy of Technology''. David M. Kaplan. Oxford: Rowman & Littlefield, 2004, {{ISBN|978-0742564015}}. 103-113</ref> </blockquote>উইনারের প্রযুক্তিগত সোমনামবুলিজম তত্ত্ব অনুসারে, এই "স্লিপওয়াক" রাষ্ট্রের অন্যতম কারণ হলো সমাজ প্রযুক্তিকে যেভাবে দেখে; ব্যবহারের একটি বস্তু হিসাবে যা আমরা খুশি যে কোনও সময় নীচে রাখা এবং বাছাই করা যেতে পারে এবং এইভাবে আমরা উল্লিখিত "বস্তুগুলো" ব্যবহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলো বুঝতে পারি না ("এটি সত্য যে জীবনের ক্রিয়াকলাপের পুনরাবৃত্ত নিদর্শনগুলো (তাদের উত্স যাই হোক না কেন) অচেতন প্রক্রিয়াগুলোতে পরিণত হয় ")। সর্বোপরি। তিনি তার প্রবন্ধে বলেছেন যে আরেকটি অবদানকারী কারণ হলো প্রযুক্তি নির্মাতা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দূরত্বের সম্পর্ক - এটি প্রশ্নে প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার এবং বিকাশের পরিণতিগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম বিবেকবোধ বা অনুসন্ধানের দিকে পরিচালিত করে। এই ঘটনাটি কেন ঘটে সে সম্পর্কে উইনার দ্বারা উত্থাপিত একটি চূড়ান্ত ধারণা হলো এই ধারণাটি যে প্রযুক্তি আমাদের চারপাশে একটি ভিন্ন বিশ্ব তৈরি করে এবং এই নতুন বিশ্ব আমাদের চারপাশের বিশ্ব এবং বস্তুর কাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
==== ব্রায়ান উইনস্টন ====
গণমাধ্যম স্টাডিজ তাত্ত্বিক ব্রায়ান উইনস্টনের ''মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং গণমাধ্যম'' বইয়ে র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন নামে একটি ধারণা সামনে রাখা হয়েছিল। এই ধারণাটি বলে, যোগাযোগ-ভিত্তিক প্রযুক্তির বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলোর প্রভাবের মাধ্যমে দমন করা হয়।<ref>Winston, Brian. ''Misunderstanding Media''. Cambridge, Mass: Harvard University Press, 1986, {{ISBN|9780674576636}}</ref> এই তত্ত্বটি সরাসরি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তত্ত্বের সাথে দ্বন্দ্ব করে এবং এর পরিবর্তে পরামর্শ দেয় যে সমাজই নতুন, উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং আকার দেয়। উইনস্টন বলেছেন যে নির্দিষ্ট প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার পিছনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, র্যাডিক্যাল সম্ভাবনার দমনের আইনটি প্রশ্নে প্রযুক্তিটিকে সমাজে বিশাল বিঘ্ন সৃষ্টি করতে বাধা দেয় এবং পরিবর্তে এটি ন্যূনতম ইস্যু সহ স্থিতাবস্থা হিসাবে গৃহীত হয়।
তার আরেকটি বই, গণমাধ্যম'', টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি: এ হিস্ট্রি - ফ্রম দ্য টেলিগ্রাফ টু দ্য ইন্টারনেটে'' তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন:<blockquote>বৈদ্যুতিক এবং বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাসে এমন কিছুই নেই যা নির্দেশ করে যে উল্লেখযোগ্য বড় পরিবর্তনগুলো পূর্ব-বিদ্যমান সামাজিক গঠনের দ্বারা সামঞ্জস্য করা হয়নি। পুনরাবৃত্তিগুলো প্রযুক্তির এই বিচিত্র পরিসর জুড়ে এবং তাদের বিকাশ এবং প্রসারণের দুই শতাব্দী জুড়ে দেখা যায়।<ref>Winston, Brian. ''Media, Technology and Society: A History - From the Telegraph to the Internet''. Psychology Press, 1998, {{ISBN|978-0415142304}}. Pg 2</ref> </blockquote>উপরন্তু, তার গবেষণাপত্রে গণমাধ্যম ''কীভাবে জন্ম নেয় এবং বিকশিত হয়?'' উইনস্টন প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেন এবং এর পরিবর্তে প্রযুক্তির সাথে আজকের সমাজের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে প্রধান তত্ত্ব হিসাবে নির্দেশ করেন।<ref>Winston, Brian. "How are media born and developed?". ''Questioning the Media: A Critical Introduction''. Downing, Mohammadi, & Sreberny-Mohammadi (eds). Sage, Newbury Park, California, 1990, {{ISBN|0803936427}}. pp 55-72</ref>
==== অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ ====
{| class="wikitable"
! colspan="2" |[[চিত্র:Andrew Feenberg by Beatrice Murch.jpg|থাম্ব|অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ]]
|-
| colspan="২" |ফেনবার্গ ইন ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা, ২০১০
|
|-
!জন্ম
|১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩
|-
!পেশা
|দার্শনিক ও লেখক
|-
!পত্নী
|অ্যান-মারি ফেনবার্গ
|}
অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ (বয়স ৭৩) ভ্যাঙ্কুভারের একজন দার্শনিক যিনি ভ্যানকুভারের সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কমিউনিকেশনে প্রযুক্তির দর্শনে কানাডা রিসার্চ চেয়ারে অধিষ্ঠিত। তিনি প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে তার দর্শনের জন্য পরিচিত। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা এমন একটি শব্দ যা ফেনবার্গ তার 'সাবভার্সিভ রেশনালাইজেশন: টেকনোলজি, পাওয়ার অ্যান্ড ডেমোক্রেসি উইথ টেকনোলজি' নিবন্ধে ব্যবহার করেছেন। গণতান্ত্রিক যৌক্তিকতা ক্ষতিকারক পরিণতি, অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত নকশায় নিহিত কমিউনিকেশনের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করে। (অ্যান্ড্রু ফেনবার্গ) তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা নয় এবং তিনি নির্ধারণবাদী তত্ত্বের দুটি স্তম্ভকে আলাদা করে এটি প্রমাণ করেন। তিনি যে দুটি তত্ত্ব চিহ্নিত করেছেন তা হ'ল;
একরৈখিক অগ্রগতির থিসিস যা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তির প্রবাহ তার জটিলতায় অনুমানযোগ্য এবং যে কোনও অগ্রগতি হওয়ার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োজনীয়।
বেস দ্বারা নির্ধারণের থিসিস যা যখন কোনও নতুন প্রযুক্তি নিজেকে উপস্থাপন করে তখন সমাজ পরিবর্তিত হয় এবং প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিজেকে সংগঠিত করে।
ফেনবার্গ বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি সমাজের বিবর্তনের একটি ফ্যাক্টর তবে ড্রাইভিং ফ্যাক্টর নয়। "যোগ্যতা প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা আমি নির্ধারণ বা নিরপেক্ষ হিসাবে দেখি না। আমি তর্ক করব যে আধিপত্যবাদের আধুনিক রূপগুলো বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকলাপের প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতার উপর ভিত্তি করে, এটি উত্পাদন বা চিকিত্সা, শিক্ষা বা সামরিক হোক না কেন। ফলস্বরূপ, আমাদের সমাজের গণতন্ত্রীকরণের জন্য আমূল প্রযুক্তিগত এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
ফেনবার্গ প্রযুক্তি এবং আমাদের সমাজে এর প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে যে সমস্ত বই লিখেছেন যেখানে তিনি তার থিসিস বলেছেন;
- লুকাকস, মার্কস এবং সমালোচনা তত্ত্বের উত্স (রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১; রোম্যান এবং লিটলফিল্ড, ১৯৮১)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৬)
প্রযুক্তির সমালোচনামূলক তত্ত্ব (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯১), পরে ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি হিসাবে পুনরায় প্রকাশিত (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)
বিকল্প আধুনিকতা (ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫)
প্রশ্নবিদ্ধ প্রযুক্তি (রাউটলেজ, ১৯৯৯)।
ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি: একটি সমালোচনা তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০২)।
কারণ এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে: প্রযুক্তি ও আধুনিকতায় প্রবন্ধ (এমআইটি প্রেস, ২০১০)।
ধ্বংসাত্মক যৌক্তিকীকরণ: প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তি, শক্তি এবং গণতন্ত্র
==== মারফি এবং পটস ====
অ্যান্ড্রু মারফি (অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র লেকচারার) এবং জন পটস (অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে) সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বইয়ের লেখক যা ২৫ নভেম্বর ২০০২ এ প্রকাশিত হয়েছিল। পটস এবং মারফি বিশ্বাস করেন যে কেবল প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ সমাজকে পরিবর্তন করার পরিবর্তে এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদও যা সমাজকে আকার দেয়। উভয়ের সংমিশ্রণই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। কালচার অ্যান্ড টেকনোলজি বইয়ে বলা হয়েছে;
"প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-এবং-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয় "(মারফি এবং পটস)।
মারফি এবং পটস (২০০৩) বর্ণনা করে যে প্রযুক্তির বিকাশ অগ্রগতি এবং প্রযুক্তিকে একটি "স্বাধীন ফ্যাক্টর" হিসাবে বর্ণনা করে। এর নিজস্ব "বৈশিষ্ট্য" রয়েছে তারা আরও বলে, প্রযুক্তির বিকাশ "সামাজিক চাপ থেকে সরানো হয়, এটি নিজস্ব যুক্তি বা অপরিহার্যতা অনুসরণ করে"<ref>''Understanding Media'', McGraw-Hill, 1964 p.1</ref>
"প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সংযোগ বৃদ্ধি করেছে এবং ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের হোমোজেনাইজেশনকে চালিত করেছে। তারা ধীরে ধীরে এবং "প্রতিরোধ" ছাড়াই নতুন ডিজিটাল সমাজ তৈরি করেছে - মোবাইল ফোন, প্রথমে, কঠোরভাবে মৌখিক এবং পাঠ্য ভিত্তিতে যোগাযোগের প্রস্তাব দেয়, আজ এটি লাইভ ভিজ্যুয়াল চ্যাট, ইন্টারনেট সংযোগ, ফটো যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সরবরাহ করে, সমস্ত "প্রতিরোধ" ছাড়াই উদ্ঘাটিত হয়। মারফি এবং পটস, ২০০৩"
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে যুক্তি ===
সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ একটি বিতর্কিত যুক্তি। অনেক মূল তাত্ত্বিক সমাজ কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে তা নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিরোধিতা করে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে এমন সংস্কৃতি হওয়ার পরিবর্তে, তারা বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে যে লোকেরা কীভাবে গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করবে। এই বিরোধী তাত্ত্বিকদের মধ্যে অনেকেই সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের ধারণার পুরোপুরি বিরোধিতা করেন না বরং যুক্তি দেন যে সমাজের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের আরও বেশি প্রয়োগ রয়েছে। এই তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছে, মার্শাল ম্যাকলুহান, নীল পোস্টম্যান, ব্রুস বিম্বার এবং আর.এল.
==== মার্শাল ম্যাকলুহান ====
মার্শাল ম্যাকলুহান ছিলেন একজন কানাডিয়ান অধ্যাপক। মিডিয়া নিয়ে তার কাজ এখনও এই মামলায় তর্ক করতে প্রাসঙ্গিক যে সামাজিক পরিবর্তনে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের গুরুত্ব কম। সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের বিরুদ্ধে ম্যাকলুহানের মূল যুক্তিটি তার বইয়ে সংক্ষেপিত হয়েছে''।।''
''"মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেওয়া কিছুটা ধাক্কা লাগে যে, অপারেশনাল এবং ব্যবহারিক বাস্তবতায় মাধ্যমই বার্তা। এটা শুধু এটুকু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যে কোন মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক পরিণতি—অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যে কোনো সম্প্রসারণের ফলে আমাদের বিষয়াদির মধ্যে যে নতুন মাত্রা প্রবর্তিত হয়, অথবা যে কোনো নতুন প্রযুক্তির দ্বারা।''
এটি এই সত্যটি তুলে ধরেছে যে ম্যাকলুহান সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের চেয়ে সমাজ হিসাবে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গণমাধ্যম যা আছে, তা না থাকলে সমাজ এটি থেকে যা চায় তা গ্রহণ করতে এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে না।
==== নিল পোস্টম্যান ====
পোস্টম্যান পরামর্শ দেন যে যখন কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়, তখন এর অন্তর্নিহিত ব্যবহার থাকতে পারে যা এটি যে ব্যবহারের জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল তা প্রতিফলিত করে না। তিনি মামলা করেন যে,
''"একবার একটি প্রযুক্তি স্বীকার করা হয়, এটি তার হাত খেলা; এটি যা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তা করে। আমাদের কাজ হচ্ছে'' সেই নকশা কী তা বোঝা – অর্থাৎ আমরা যখন সংস্কৃতিতে একটি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করি, তখন আমাদের অবশ্যই তা আমাদের চোখ দিয়ে করতে হবে প্রশস্ত খোলামেলা।''<ref>''Technopoly: The Surrender of Culture to Technology'', Vintage Books, Toronto, 1993, p. 7</ref>''
পোস্টম্যান এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে প্রায়শই কোনও প্রযুক্তি তার মূল উদ্দেশ্যযুক্ত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োগ করার ক্ষমতা রাখে এবং এটি এই অ্যাপ্লিকেশন যা প্রযুক্তির অগ্রগতিকে চালিত করে। তিনি যুক্তি দেন যে সমাজগুলো তখন এই প্রযুক্তিটি বিবেচনা করতে সক্ষম হয় এবং বিদ্যমান ধারণার বাইরে অন্যান্য ব্যবহারগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয় যা তাদের অনুপ্রেরণামূলক প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হবে এবং একই সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনও প্রযুক্তির জন্য নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে। তিনি পরামর্শ দেন যে পুরানো প্রযুক্তিকে যৌগিক করে উন্নত করার দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তি অন্তর্নিহিত। এই প্রক্রিয়ার শেষে, প্রযুক্তিকে উন্নত করে ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সম্ভাবনা তৈরি করা যেতে পারে।
==== ব্রুস বিম্বার ====
ব্রুস বিম্বার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা বারবারার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি সমাজকে প্রভাবিত প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের গুরুত্বের সমর্থনে দৃঢ় মতামত রাখেন। এই কারণে, বিম্বার সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্রুত পরিবর্তনের মূল কারণ হিসাবে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে ধরে রাখেন না।
''প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি মুখ'' প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দেখান যে,
'''"মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সামাজিক ফলাফল নির্ধারণে প্রযুক্তিগত বিকাশের ভূমিকা রয়েছে।"<ref>''Three Faces of Technological Determinism'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 85</ref>''
বিম্বার বিশ্বাস করেন যে এটি সংস্কৃতি নয় যা সমাজের অগ্রগতি কীভাবে নির্ধারণ করে বরং সমাজ এমনকি পরিবর্তনটি উপলব্ধি করার আগেই প্রযুক্তির এটি পরিবর্তন করার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের তিনটি বৈচিত্র রয়েছে; আদর্শগত, নামতাত্ত্বিক এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতি অ্যাকাউন্ট। ভিন্ন হলেও, এই সংস্করণগুলোর প্রত্যেকটি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ আমাদের সমাজে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলোকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়।
==== আর.এল. হেইলব্রোনার ====
হেইলব্রোনার '''ডু মেশিনস মেক হিস্ট্রি''?' গ্রন্থে প্রস্তাব করেছেন যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটনাক্রমে নয় বরং এক ধরণের প্রয়োজনীয় ক্রম অনুসারে ঘটে। তিনি যুক্তি দেখান যে,
''"হস্তচালিত কলের যুগ অতিক্রম না করা পর্যন্ত বাষ্প-কলের যুগে অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। এর ফলে কেউ বাষ্প-কল আয়ত্ত করার আগে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যুগে যেতে পারে না, বা বিদ্যুতের মধ্য দিয়ে বেঁচে না যাওয়া পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি যুগে যেতে পারে না।"<ref>''Do Machines Make History?'' in ''Does Technology Drive History?: The Dilemma of Technological Determinism'', The MIT Press, Cambridge Massachusetts, 1994, p. 55</ref>''
হিলব্রোনার প্রস্তাব করেছেন যে সংস্কৃতির জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পূর্ববর্তী পর্যায়ে যাওয়া এবং সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ, সমাজগুলো সম্পর্কিত অনুশীলনের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার আগে এই অগ্রগতিগুলো প্রয়োগে দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তিনি যুক্তি দেন যে প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভব হওয়ার জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর ফলে কোনও অগ্রগতি সমাজের আবিষ্কারের পরিবর্তে যা পাওয়া যায় তার উপর নির্ভরযোগ্য হতে পারে। অতএব, প্রযুক্তির মূল অংশটি দ্বারা গৃহীত দিকটি প্রযুক্তির নতুন উদাহরণটি যে দিকে যাচ্ছে তার অনুরূপ হতে চলেছে এবং নতুন প্রযুক্তিটি প্রথম স্থানে তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এ থেকে হেইলব্রোনারের অবস্থান প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয় বলে প্রমাণিত হয়, যদিও তিনি এই বিষয়টিকে কৃতিত্ব দিতে সতর্ক যে যুক্তির উভয় পক্ষেই অনেকগুলো পৃথক কারণ কাজ করছে।
== ভবিষ্যৎ ==
=== প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ===
মানব প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত প্রভাবশালী এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ককে একা একটি নির্ধারণবাদ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। কিছু যুক্তি এমনকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে ধারণার সংমিশ্রণের পরামর্শ দেয়। প্রযুক্তি এবং সমাজ এবং সম্পর্কিত ক্ষেত্রের আধুনিক তাত্ত্বিকদের গবেষণার প্রথম দিকে, তারা মানব এবং প্রযুক্তির মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে নির্ধারণবাদ দেখেন তার নিখুঁত উপায়টি অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে। তুলনামূলকভাবে হালকা অবস্থান মানুষের গোষ্ঠী দ্বারা আরও বেশি আলিঙ্গন করা হয়, যা মারফি এবং পটস দ্বারা উত্থাপিত তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি, "প্রযুক্তি এবং সমাজের মধ্যে সম্পর্ককে একটি সরল কারণ-ও-প্রভাব সূত্রে হ্রাস করা যায় না। এটি বরং, একটি 'আন্তঃসম্পর্ক'"। এর মাধ্যমে প্রযুক্তি নির্ধারণ করে না তবে "... পরিচালনা করে। একটি জটিল সামাজিক ক্ষেত্রে পরিচালিত হয়"। এটি আজকাল প্রযুক্তি এবং মানব সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লোকেরা যা বিশ্বাস করে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
=== সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ ===
হান্টার কলেজের বায়োসাইকোলজিস্ট নাইজেল বারবার (২০০৮) এর মতে,[ সামাজিক বিজ্ঞানের প্রধান তত্ত্বটি হল সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ। যাইহোক। তিনি বলেছিলেন যে এখনও এটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে এবং এটি প্রায়শই অপ্রমাণিত। যখন পরীক্ষা করা হয়, এটি প্রায়শই ব্যর্থ হয়। এই ধরনের ব্যর্থতা ব্যাপকভাবে উপেক্ষা করা হয় কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা একটি প্রশংসনীয় বিকল্প কল্পনা করতে পারেন না। সুতরাং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ তত্ত্বের ভবিষ্যত অনির্ধারিত বলে মনে হচ্ছে এবং এর বৈধতা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ডোনাল্ড ব্রাউন (১৯৯১ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের এমেরিটাস অধ্যাপক, দেখিয়েছেন যে সমস্ত পরিচিত মানব সমাজে ব্যক্তিরা প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করে, সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, বিবাহ, হিংসা, লিঙ্গ এবং যৌন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শ্রম বিভাজন রয়েছে; পুরুষরা মহিলাদের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক এবং সহিংস অপরাধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নৈতিক অনুভূতি, হিংসা, লজ্জা ও অহংকার পরিলক্ষিত হয়। অতিপ্রাকৃত, ভাগ্য ও ভাগ্যে বিশ্বাস আছে এবং মৃত্যুভয়কে প্রাধান্য দেয়। রূপক, রূপক, প্রবাদ-প্রবচন, সঙ্গীত ও শিল্পকলার পাশাপাশি মৌলিক বিমূর্ততা এবং যৌক্তিক ও গাণিতিক ধারণার কথা জানা যায়। লোভকে উপেক্ষা করা হয় এবং হত্যা ও ধর্ষণকে কঠোরভাবে নিন্দা করা হয়।
স্নায়ুবিজ্ঞানী, জিনতত্ত্ববিদ, ভাষাবিদ এবং বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাগুলো সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদকে খণ্ডন করে এবং তারা ব্রাউন এবং সমাজজীববিজ্ঞানীদের তদন্তকে সমর্থন করে। এরা পরিবেশের সাথে আমাদের জিনের মিথস্ক্রিয়া দ্বারা পরিচালিত একটি মানব প্রকৃতির অস্তিত্বের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
===== জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তন =====
জাতিরাষ্ট্রের মডেলটি বোঝায় যে এর জনসংখ্যা একটি জাতি গঠন করে, একটি সাধারণ বংশোদ্ভূত, একটি সাধারণ ভাষা এবং ভাগ করা সংস্কৃতির অনেক রূপ দ্বারা একতাবদ্ধ। এটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, যা অনুমান করে যে ব্যক্তিদের বাস্তবতা, আচরণ এবং প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্গত সংস্কৃতি (অভিবাসীদের ক্ষেত্রে, উত্সের সংস্কৃতি) দ্বারা নির্ধারিত হয়। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এই ধরণের তত্ত্বগুলো শাস্ত্রীয় বর্ণবাদী তত্ত্বগুলোর পদ্ধতির বিবর্তন ছাড়া আর কিছুই নয়, তারা সংস্কৃতি দ্বারা জাতি ধারণাটি প্রতিস্থাপন করতে চায়। যেখানে অন্তর্নিহিত ঐক্য অনুপস্থিত ছিল, জাতিরাষ্ট্র প্রায়শই শিক্ষার মাধ্যমে একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা প্রচার করে এটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।
যাইহোক, ম্যাকনিল (১৯৮৬) পরামর্শ দেয় যে কেবল ১৭৫০ এবং ১৯২০ এর মধ্যে ইউরোপে জাতিগত একজাতীয়তার উপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্যের এই মডেলটি প্রভাবশালী ছিল। তিনি আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে জার্মানিতে নাৎসি শাসনের অভিজ্ঞতা স্থানীয়ভাবে প্রচলিত জাতীয় গোষ্ঠীগুলোতে আত্তীকরণের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে জাতীয় অভিন্নতার আদর্শকে ক্ষুণ্ন করার ফলে জাতীয় সংখ্যালঘুদের দ্বারা পরিচয়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও ঘটেছিল, যেহেতু অভিন্নতার জন্য প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে পৃথক করার প্রয়োজন হয়েছিল।
জাতিগত গঠনের পরিবর্তন একটি জাতির উপর যে সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলতে পারে সে সম্পর্কে ফুকুয়ামা (২০০৭) সতর্ক করে দিয়েছেন যে "আপেক্ষিকতাবাদের উত্থান উত্তরাধুনিক মানুষের পক্ষে ইতিবাচক মূল্যবোধ এবং তাই নাগরিকত্বের শর্ত হিসাবে অভিবাসীদের যে ধরণের ভাগ করে নেওয়া বিশ্বাস দাবি করে তা দৃঢ় করা কঠিন করে তুলেছে"। তাই মনে হয়, আজকাল উত্তরাধুনিক দেশগুলোতে একীভূত হওয়া খুব একটা কঠিন কাজ নয়।
প্রকৃতপক্ষে, ভাস্তা (২০০৯) উল্লেখ করেছেন যে একটি "শক্তিশালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক" জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতি অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জন্য জাতীয় সংস্কৃতিতে একীকরণের সুবিধাগুলো কম স্পষ্ট করে তোলে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে একীকরণের কানাডিয়ান মডেল, যেখানে বিভিন্ন জাতিগত / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় পরিচয়ের আবাসন এবং জাতীয় পরিচয়ের জন্য তাদের প্রতীকী গুরুত্বকে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পদ্ধতি হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মদুদ (২০০৭) আরও যুক্তি দেয় যে শক্তিশালী বহুসংস্কৃতি বা সংখ্যালঘু পরিচয় এবং দুর্বল সাধারণ বা জাতীয় পরিচয়কে উত্সাহিত করার কোনও অর্থ নেই। তাঁর মতে, সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষণাবেক্ষণ অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের একটি শক্তিশালী কাঠামোর মধ্যে পড়তে হবে যা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো কীভাবে সামগ্রিক জাতীয় পরিচয়ে অবদান রাখে।
বিভিন্ন সংস্কৃতি তাই তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সহাবস্থান করতে পারে। আরেকটি দিক যা বিবেচনা করা উচিত তা হলো মাঝারি মেয়াদে সম্প্রদায়ের সংহতির জন্য ক্রমবর্ধমান জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাবগুলো সম্ভবত অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়ের সংহতির উপর জাতিগত বৈচিত্র্যের প্রভাব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করা হয়। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হলে সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সম্ভাবনা থাকবে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনের জন্য জাতিগত এবং অভিবাসী পটভূমি। এরপরে তাদের সংহত করার আরও বেশি ক্ষমতা থাকতে পারে এবং আরও সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং অবস্থানগুলোতে যাওয়ার পছন্দ থাকতে পারে যেখানে তারা নৈতিক প্রতিবেশীদের সাথে সম্পদের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতায় নেই। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীরও কাজ খুঁজে পাওয়ার এবং এর বস্তুগত অবস্থার উন্নতি করার সুযোগ থাকে, তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধের সুযোগ হ্রাস পাবে। তবে, অব্যাহত মন্দা পরিস্থিতি এবং সস্তা শ্রমের সাথে অভিবাসনের সম্পৃক্ততা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে।
===== রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন =====
অনেক তাত্ত্বিক চিন্তাধারা সংস্কৃতিকে বাকি কারণগুলোর চালিত উপাদান হিসাবে বিবেচনা করে। এটি আসলে অনুধাবনযোগ্য এবং পরে হংকং এবং গ্রীসের ক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে। যেমনটি আমরা উপরে উল্লেখ করেছি, সংস্কৃতি হলো মনোভাব, রীতিনীতি এবং বিশ্বাসের সমষ্টি যা এক গ্রুপের মানুষকে অন্য গ্রুপ থেকে আলাদা করে। আরও সহজ কথায়, অ-একাডেমিকভাবে অনলাইনে সংজ্ঞায়িত হিসাবে, এটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, মনোভাব, অর্থ, শ্রেণিবিন্যাস, ধর্ম, সময়ের ধারণা, ভূমিকা, স্থানিক সম্পর্ক, মহাবিশ্বের ধারণা এবং বস্তুগত বস্তু এবং সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান আমানতকে বোঝায়।
সাধারণত, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ উচ্চতর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিদ্যমান কারণ লোকেরা কী গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কে চিন্তা না করেই আরও গ্রহণযোগ্য হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যোগাযোগ এবং অনুকরণের মাধ্যমে সমাজে স্থানান্তরিত হয়।
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদে আমরা যেভাবে দেখি তা নিম্নলিখিত উদাহরণের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। অনেক গণতান্ত্রিক দেশে, অনেকে গণমাধ্যমকে চতুর্থ শক্তি হিসাবে বিবেচনা করে যা আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের সাধারণ তিনটি পৃথক ক্ষমতার সাথে যায় (মন্টেস্কিউ)। বিচ্ছেদ ক্ষমতার ইতিহাসের সামান্য কথা বলতে গেলে,[ এটি ১৭৮৭ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশু সরকারের কাঠামো তিনটি পৃথক শাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এর প্রত্যেকটির নিজস্ব ক্ষমতা এবং চেক এবং ভারসাম্যের একটি ব্যবস্থা রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনও একটি শাখা কখনই খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে না কারণ অন্য শাখাগুলো সর্বদা অন্য দুটির শক্তি পরীক্ষা করতে সক্ষম হবে। এই শাখাগুলো দেশ পরিচালনার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের সকলকে জীবনযাপনের জন্য গাইডলাইন সেট করে।
নীতি বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য জনসাধারণের আলোচনার জন্য গণমাধ্যমের কার্যকারিতা সম্পর্কে সারা বিশ্বে মামলা ছিল। একটি সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের পূর্ণ সম্পৃক্ততা গণমাধ্যমে দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য হংকংয়ের বাধ্যতামূলক ১২ বছরের বিনামূল্যে শিক্ষার অধীনে জুনিয়র এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে লিবারেল স্টাডিজ একটি বাধ্যতামূলক যা এটি একটি সামাজিক বিকাশ হিসাবে দেখা যেতে পারে। সমাজে প্রকৃতি ও আলোচনার সংস্কৃতি বেশি প্রচলিত। এবং তাই জনসাধারণ এমনকি ২০১২ শিক্ষার সরকারী নীতির বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। গণমাধ্যমের এমন অসাধারণ ভূমিকার জন্য আমরা দেখি, গণমাধ্যমকে অন্য ধরনের সংস্কৃতিতে স্থানচ্যুত করে, তারা রাজনৈতিক বিন্যাস পরিবর্তনে একই গল্প বলে। ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কৃতির বিকাশের ওপর পরিস্থিতি আরও বিরাজমান হতে পারে।
প্রাচীন গ্রিসে সংস্কৃতি কীভাবে রাজনৈতিক বিন্যাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তাও আমরা দেখতে পাই। সেই সময় গ্রিক বিশ্বাস করত যে কেবল তাদের ভাষা জানে এমন লোকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে এবং যোগাযোগ করতে পারে এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারে। যদি তা না হয় তবে তাদের বাবরিয়ান হিসাবে সাজানো হয়েছিল। এইভাবে তারা ভাষা এবং ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাদের সংস্কৃতিকে অত্যন্ত মূল্য দেয় যাতে লোকেরা তাদের প্রকৃতি এবং ধারণাগুলো প্রকাশ করতে পারে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ে তারা সুস্পষ্ট সীমারেখা পেয়েছিল। এবং প্রযুক্তি নির্ধারণবাদ যা পরামর্শ দেয় তা মেনে চলেনি যে প্রযুক্তি অন্যদের বাকি কারণগুলোর নির্ধারক উপাদান হতে পারে। নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি উল্লেখ করেছেন যে সংস্কৃতির উপাদানগুলো, বিশেষত ধর্ম, বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে যা তাদের পক্ষে সুবিধাজনক ছিল।
ভাষ্যকার প্যাট বুকানন এবং অর্থনীতিবিদ রবার্ট ব্যারোও উত্থাপন করেছেন যে সাংস্কৃতিক রীতিনীতি সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এটা সত্য হবে।
==== র ্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইন ====
র্যাডিক্যাল সম্ভাবনা দমনের আইনটি সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের সাথে যুক্ত একটি ধারণা, যেখানে বলা হয়েছে যে সামাজিক বা কর্পোরেট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নতুন প্রযুক্তির যে কোনও উদ্ভাবনী সম্ভাবনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে হ্রাস করা হয়। ব্যাহত করা এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে, নতুন প্রযুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত হয় এবং বিদ্যমান কাঠামোর অংশ হয়ে যায়। এটি ব্রায়ান উইনস্টন তার ১৯৮৬ বইয়ে প্রস্তাব করেছিলেন, গণমাধ্যম ভুল বোঝাবুঝি।
যদিও আইনটি প্রকল্পে আগে বর্ণিত হয়েছে, এটি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের ভবিষ্যতের আলোচনার জন্যও প্রাসঙ্গিক; আইন থেকে এক্সট্রাপোলেট করে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নিয়ে আসা সম্ভব যা নিন্দুক থেকে সরাসরি ডিস্টোপিয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। ম্যাককুইল বলেছেন যে, "সম্ভাবনা যাই হোক না কেন, বাণিজ্য, শিল্প, সামরিক ও আমলাতন্ত্রের চাহিদাগুলো উন্নয়নের প্রচার এবং উদ্ভাবনগুলো আসলে কীভাবে প্রয়োগ করা হয় তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। এটি সমর্থন করার জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে গণতন্ত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবকে সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে সোশ্যাল গণমাধ্যমের। ১৯৯১ সালে নাইসবিট বলেছিলেন যে "তাত্ক্ষণিকভাবে ভাগ করা তথ্যের সাথে, আমরা আমাদের প্রতিনিধিদের মতো কী চলছে সে সম্পর্কে ঠিক ততটাই জানি এবং আমরা এটি ঠিক তত তাড়াতাড়ি জানি। বাস্তবতা হলো, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক উপযোগিতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আরও কি, প্রযুক্তিটি প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ছাড়াই এমনভাবে গণতন্ত্র সংগঠিত করা সম্ভব করে তোলে যা আগে কখনও যৌক্তিকভাবে সম্ভব ছিল না। তবে নাইসবিট তার বইটি লেখার পর আড়াই দশকে যুক্তরাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। নতুন প্রযুক্তি এই প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে উঠেছে, যেমন দমন আইন প্রস্তাব করে – উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা সম্ভব – কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক সরকারের বৃহত্তর কাঠামো পরিবর্তিত হয়নি। অনলাইনে ভোট দেওয়ার ট্রায়াল ''হয়েছে,'' কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। এটি পরামর্শ দেয় যে, গণতান্ত্রিক সরকার এবং বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট উভয় ক্ষেত্রেই, নতুন প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব যে কোনও পরিবর্তন আমূল পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হবে।
আমরা ইতিহাস জুড়ে দমন আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের উদাহরণ দেখতে পাই, যা ভবিষ্যতের দিকেও নির্দেশ করে। এই ধরনের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের একটি খুব সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ড্রোন প্রযুক্তি। এটি মূলত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, প্রথম চালিত মনুষ্যবিহীন বিমান যান ১৯১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল, তবে এখন এমন প্রকল্পগুলোতেও নিযুক্ত করা হচ্ছে যা যুদ্ধের প্রায় বিপরীত মেরুর প্রতিনিধিত্ব করে: বন্যজীবন সংরক্ষণ।
ConservationDrones.org এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময়ে ড্রোনগুলোর ব্যয় নিষিদ্ধ ছিল। এটি তৈরির জন্য তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার জন্য তাদের ২০০০ ডলার ব্যয় হয়েছিল। তারা "স্বল্প ব্যয়" হিসাবে বিবেচনা করলেও দাম তখন থেকে পড়ে গেছে। এখন £ ৫০ এর জন্য একটি ড্রোন কেনা সম্ভব। আবার, এটি দমনের আইনের ধারণার সাথে সম্পর্কিত; এটি প্রাক-বিদ্যমান বাণিজ্যিক কাঠামোর সম্পৃক্ততা যা প্রযুক্তির দামকে যথেষ্ট কম করার সুযোগ দিয়েছে যে যারা ডেভেলপারদের মূল উদ্দেশ্যের বাইরে উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করবে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের সামর্থ্য দিতে পারে। এটি পূর্ববর্তী প্রযুক্তিগুলোতে একটি পর্যবেক্ষণযোগ্য প্যাটার্ন ছিল। মূল বাণিজ্যিকভাবে উপলভ্য কম্পিউটারগুলো নিষিদ্ধভাবে ব্যয়বহুল ছিল, তবে এখন বেশিরভাগ লোকের বাড়িতে একাধিক থাকবে। এটি এমন একটি প্যাটার্ন যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
=== প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ ===
==== ভবিষ্যত কাজের দক্ষতা ====
আমরা একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের মাঝখানে রয়েছি। প্রযুক্তি মানুষের কাজ এবং সাধারণ কাজ সম্পাদনের পদ্ধতিকে পুরোপুরি রূপান্তরিত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, স্বয়ংক্রিয় অফিস সিস্টেমগুলো দক্ষতা এবং তারা কীভাবে চালায় তা পরিবর্তন করেছে। কম্পিউটার এবং প্রযুক্তি প্রতিটি অফিস কর্মীকে সহায়তার আগে তাদের চেয়ে বেশি সম্পাদন করতে সক্ষম করে। নতুন প্রযুক্তির সাথে, তথ্য কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত ব্যাখ্যা করা যায় এবং আগের চেয়ে দ্রুত প্রেরণ করা যায়। প্রযুক্তি কাজের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে এবং অব্যাহত রাখবে। কারণ এটি অফিসগুলো সরবরাহ করে: নিরাপত্তা, ইমেল দক্ষতা, উন্নত গ্রাহক সেবা, সহজ স্টোরেজ, স্বয়ংক্রিয় অডিট ট্রেইল, সময় সঞ্চয়, সরলতা, অ্যাক্সেসযোগ্যতা, ব্যবসা উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের উপর রিটার্ন। এই সমস্ত কারণগুলো সংস্থাগুলোকে আরও কাজ সম্প্রসারণ এবং গ্রহণ করার অনুমতি দেয়, তবে এটি অগত্যা আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রযুক্তি দ্বারা অনুমোদিত বর্ধিত উত্পাদনশীলতা শ্রমিকদের পূর্বে প্রয়োজনীয় ম্যানুয়াল শ্রমকে হ্রাস করতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে এটি অফিস অটোমেশনের সাথে অফিসের পরিবেশকে রূপান্তরিত করতে দেখেছি, তবে ভবিষ্যতে, কারখানার অটোমেশনের পাশাপাশি আরও প্রচলন থাকবে।
==== কর্মসংস্থানে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রভাব ====
প্রযুক্তি কীভাবে কর্মসংস্থান এবং শ্রমশক্তির সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তা নিয়ে এখনও অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিছু তাত্ত্বিক যুক্তি দেন যে উন্নত প্রযুক্তি অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তারা বলছেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় অতীতের মতো বাড়বে না, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো প্রযুক্তি উদ্ভাবন কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সেট পরিবর্তন করতে পারে। একটি রোবটকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একজনকে আরও দক্ষ হতে হবে। তবুও, ভবিষ্যতের প্রযুক্তি / রোবটগুলো বজায় রাখতে এবং ডিজাইন করতে সহায়তা করার জন্য চাকরি তৈরি করা যেতে পারে। অন্যরা বিশ্বাস করেন যে প্রযুক্তি ভবিষ্যতে আমাদের সংস্কৃতি এবং কর্মসংস্থানকে নেতিবাচকভাবে রূপান্তর করতে পারে। তাদের যুক্তি, রোবট ও মেশিন শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে এবং একই কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। নতুন প্রযুক্তি বেকারদের চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলতে পারে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন কম্পিউটার বা রোবটকে টেক্কা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়ায়। এই প্রশস্ত দক্ষতার সেটগুলো বেকারদের অনেক দক্ষতার সেটগুলোর সাথে মেলে না বলে মনে হয়। তাত্ত্বিকরা যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন যে কম্পিউটারের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে সংস্থাগুলো চালানোর জন্য আরও বেশি মূলধন এবং কম শ্রম ব্যবহার করবে। তাদের যুক্তি, ভবিষ্যতে রোবটের পরিবর্তে মানুষকে চাকরি দিতে হলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হারে বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবসা এবং কর্মশক্তির সংস্কৃতির উন্নতি এবং পরিবর্তন অব্যাহত রাখবে এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।
==== মানব যোগাযোগ ====
''"আজ, আমরা বিভিন্ন মহাদেশে আমাদের সহকর্মীদের স্কাইপ করতে পারি, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা ট্র্যাক করতে টুইটার ব্যবহার করতে পারি, আমাদের স্মার্টফোন থেকে আমাদের একাধিক ইমেল অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারি, লিঙ্কডইনে সহকর্মীদের সাথে সমন্বয় করতে পারি, স্ন্যাপচ্যাট এবং হোয়াটসঅ্যাপে গত রাতের ফটো এবং গল্পগুলো ভাগ করতে পারি, ইনস্টাগ্রামে একটি ব্র্যান্ড চালু করতে পারি, ফেসবুকে একটি সম্প্রদায় তৈরি করতে পারি, আমাদের প্রিয় বিশ্বব্যাপী পডকাস্টগুলো স্ট্রিম করতে পারি। আমাদের নিউজ অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে ব্রেকিং আপডেটগুলো পান, উবারের সাথে অফিসে একটি ট্যাক্সি অর্ডার করুন এবং আমাদের ফিটবিট দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের ক্যালোরি ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করুন। এবং আমরা বিছানা থেকে না উঠেও এই সমস্ত জিনিস করতে পারি।''
এটি সর্বজনবিদিত যে ৩০ বছর আগে লোকেরা টেক্সট করত না, ফেস টাইম, অনলাইন শপিং ইত্যাদি যেত না। পৃথিবী সহজ ছিল এবং কম প্রযুক্তি ছিল। যদিও সময় পরিবর্তন হচ্ছে এবং একটি চিঠি মেইল করার মাধ্যমে একটি সেল ফোন এবং টেক্সট থাকা সাধারণ। প্রযুক্তি আমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার সাথে ভবিষ্যতে একটি আশাব্যঞ্জক আলো ধারণ করে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ জরিপে দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৩৯% "টেক্সটিং, সেলফোন ব্যবহার করা এবং ইমেল বার্তাগুলো প্রেরণ এবং পড়া অ-ব্যক্তিগত যোগাযোগের সর্বাধিক ব্যবহৃত ফর্ম। প্রযুক্তি বদলে দিচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন। নিবন্ধে এই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে যে বয়স যোগাযোগের শৈলীতে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ফোনগুলো আরও বেশি ব্যবহার করছে এবং প্রবীণ প্রজন্মের বিপরীতে তাদের উপর প্রচুর নির্ভর করে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এর অর্থ কী? তরুণ প্রজন্ম তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ রাখে। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে সর্বদা অন্যের সংস্পর্শে থাকার প্রয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এটি দীর্ঘকাল অবিবাহিত থাকার সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। প্রজন্মের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারা অচল হয়ে গেলে জিনিসগুলোতে আরও বেশি অ্যাক্সেস পাবে। আজকের প্রবীণ নাগরিকদের বিপরীতে যারা অনেক ক্ষেত্রে মূলত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন, ভবিষ্যতের প্রবীণরা জিনিসগুলোর একটি অংশ থাকবেন। [১৬] এই 'সর্বদা চালু' সংস্কৃতি থেকে প্রচুর ভাল আসতে পারে তবে এর অন্ধকার দিক রয়েছে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে মানুষ আরও যোগাযোগের সরঞ্জাম আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে যা আমাদের কীভাবে যুক্তি করতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে বা এমনকি আমরা কীভাবে অনুভব করব তা পরামর্শ দেবে। যোগাযোগ কেবল আমরা অন্যের সাথে যা যোগাযোগ করি তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেদেরও।
== উপসংহার ==
অতএব, উপসংহারে, এই উইকিবইটিতে অনেকগুলো অধ্যায় রয়েছে যা সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এবং গণমাধ্যম ও সমাজের উপর এর শক্তিশালী প্রভাব সম্পর্কিত অনেকগুলো দিক জুড়ে রয়েছে। পূর্বে উল্লিখিত হিসাবে, সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ সময়ের সাথে অগ্রসর হয়েছে এবং এখনও আজকের বিশ্বে উন্নয়নশীল হচ্ছে।
ইতিহাস অধ্যায়ে এটি কীভাবে সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ এসেছিল এবং ইতিহাসের সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল তার রূপরেখা দেয়। অধ্যায়টি সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের প্রথম দিনগুলোতে প্রধান তাত্ত্বিকদের কেও হাইলাইট করে, যাদের মধ্যে দুটি বিষয় আজ কীভাবে দেখা হয় সে সম্পর্কে খুব প্রভাবশালী ছিল।
সংজ্ঞা অধ্যায়টি নতুন গণমাধ্যম ফর্মগুলোর প্রবর্তন এবং তাত্ত্বিকদের মধ্যে অব্যাহত বিতর্কের সাথে বছরের পর বছর ধরে এই দুটি পদগুলোর সংজ্ঞা কীভাবে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং আলোচনা করে। 'নতুন গণমাধ্যম' শব্দটিও গভীরভাবে দেখা হয় এবং সংজ্ঞায়িত করা হয় কারণ এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যাখ্যা এবং চিন্তা করা যেতে পারে যা এই বিভাগটি অন্বেষণ করে কারণ এটি এত বিস্তৃত শব্দ। এরপরে এটি কঠোর পরিবর্তনগুলো এবং কীভাবে তারা উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং কীভাবে তারা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, ভবিষ্যতে কীভাবে এটি আরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময়।
পরবর্তী অধ্যায়ে, প্রধান ধারণাগুলো প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদের পিছনে মূল তত্ত্বগুলো অন্বেষণ করেছিল এবং তাত্ত্বিক উদাহরণগুলোতে প্রয়োগ করে তাদের প্রসঙ্গে রেখেছিল।
সর্বোপরি, বিরোধী অধ্যায়ে যেমন দেখানো হয়েছে, উভয় তত্ত্বই সমাজবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক প্রসিদ্ধ তাত্ত্বিকদের আপত্তির মুখোমুখি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে বিপরীত তত্ত্বের সাবস্ক্রাইব করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণাও প্রকাশ করেছে।
অবশেষে, ভবিষ্যতে এটি সম্পূর্ণরূপে সম্ভব যে মানুষ এমন কাজগুলো সম্পাদন করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি আবিষ্কার চালিয়ে যাচ্ছে যা আকর্ষণীয় নয় বা নিজেরাই করার পক্ষে যথেষ্ট অর্থবহ নয়, বা করার জন্য রোবট তৈরি করতে সস্তা। সাংস্কৃতিক এবং প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ আমাদের ভবিষ্যতকে দুটি ভিন্ন উপায়ে দেখতে পারে। একমাত্র জিনিস যা আমরা সত্যিই করতে পারি তা হলো ভবিষ্যতের কল্পনা করা কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করলেও কোনও কিছুই আমাদের একটি নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারে না, ভবিষ্যত সর্বদা আমাদের বিশ্বের মতো সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে পরিবর্তিত হবে।
== শব্দকোষ ==
'''ডগম্যাটিক দর্শন।''' অহংকারী পদ্ধতিতে ধারণা বা নীতিগুলোর উপর জোর দেওয়া বা জোর দেওয়া, বিশেষত যখন অপ্রমাণিত বা পরীক্ষিত না হয়।
'''হার্ড ডিটারমিনিজম''' স্বাধীন ইচ্ছার উপর দৃষ্টিভঙ্গি যা ধারণ করে যে নির্ধারণবাদ সত্য। এটি স্বাধীন ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; এবং তাই, স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই।
'''অ-গোঁড়া দর্শন।''' প্রকৃতি থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দর্শনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে।
'''নুমেনন।''' (কান্তীয় দর্শনে) একটি জিনিস যেমন নিজের মধ্যে, তেমনি একটি জিনিস থেকে পৃথক, যেমন এটি অসাধারণ গুণাবলীর মাধ্যমে ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞাতযোগ্য।
'''হ্রাসবাদ।''' ঘটনা বা তত্ত্বগুলোর মধ্যে সংযোগ সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি সম্পর্কিত তবে বিভিন্ন দার্শনিক অবস্থান। একে অপরের সাথে "হ্রাস" করে সাধারণত "সহজ" বা আরও "মৌলিক" হিসাবে বিবেচিত হয়।
'''রোমান্টিসিজম।''' একটি শৈল্পিক, সাহিত্যিক এবং বৌদ্ধিক আন্দোলন যা ১৮ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে উদ্ভূত হয়েছিল। বেশিরভাগ অঞ্চলে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত আনুমানিক সময়কালে শীর্ষে ছিল।
'''সফট ডিটারমিনিজম।''' প্রযুক্তি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে সে সম্পর্কে একটি প্যাসিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
'''থিসিস-অ্যান্টিথিসিস-সিন্থেসিস।''' থিসিসটি একটি বৌদ্ধিক প্রস্তাব; এন্টিথিসিস কেবল থিসিসের প্রত্যাখ্যানবা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া; এবং তিনি থিসিস এবং অ্যান্টিথিসিসের মধ্যে দ্বন্দ্বটি তাদের সাধারণ সত্যগুলোর সমন্বয় করে এবং একটি নতুন থিসিস গঠন করে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করে সমাধান করেন।
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
gp2alxiamf7by42giwogpwki8k6zcw2
ইন্দ্রিয়তন্ত্র/কম্পিউটার মডেল/শ্রবণতন্ত্র সিমুলেশন/প্রত্যক্ষণমূলক অডিও কোডিং
0
24510
85744
83698
2025-07-06T20:14:45Z
Mehedi Abedin
7113
85744
wikitext
text/x-wiki
== কক্লিয়ার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিং এবং ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য ==
এই পৃষ্ঠায় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের মূল প্রক্রিয়াগুলি পর্যালোচনা করা হয়েছে। অন্তর্নিহিত সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতিগুলি ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য এবং উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ের সাথে সম্পর্ক নির্দেশ করা হয়েছে।
=== পারসেপচুয়াল অডিও কোডিং ===
[http://en.wikipedia.org/wiki/MP3 Mp3] (MPEG-1 স্তর 3, MPEG-2 এবং MPEG-4 অ্যাডভান্সড অডিও কোডিং (AAC) এর পূর্বসূরী) সম্ভবত এখনও সর্বাধিক পরিচিত অডিও ফর্ম্যাট যা অডিও সংকেতের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং ব্যবহার করে। [http://en.wikipedia.org/wiki/Advanced_Audio_Coding AAC] একটি আরও দক্ষ এক্সটেনশন, সাধারণত উন্নত শব্দ মানের অর্জন করে, বিস্তৃত ব্যান্ডউইথের অনুমতি দেয় তবে Mp3 এর তুলনায় একই কোডিং নীতির উপর নির্ভর করে। উভয় ফর্ম্যাট ISO এবং IEC দ্বারা প্রমিত করা হয়েছে তবে কেবল ডিকোডার সম্পূর্ণরূপে নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং এনকোডার বাস্তবায়ন খোলা রাখা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন ধরণের উপলব্ধ এনকোডার তৈরি হয়েছে যা প্রজনন গুণমান, অর্জনযোগ্য বিট-রেট, কর্মক্ষমতা এবং কোডিং দক্ষতার ক্ষেত্রে ভিন্ন।<ref name="brandenburg1999mp3">Karlheinz Brandenburg. Mp3 and aac explained. In Audio Engineering Society Conference: 17th International Conference: High-Quality Audio Coding. Audio Engineering Society, 1999.</ref>
ধ্রুপদী সংকেত সংকোচন অ্যালগরিদমের বিপরীতে, যেখানে লক্ষ্য হল সংকেত প্রজনন গুণমান বজায় রেখে ন্যূনতম সংখ্যক বিট সহ তথ্য উপস্থাপন করা, উপলব্ধিযোগ্য অডিও কোডিং মানব শ্রবণ ব্যবস্থা থেকে জ্ঞানকে বিবেচনা করে এবং বেশিরভাগ শ্রোতার জন্য উপলব্ধিযোগ্যভাবে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য সরিয়ে বিট রেট হ্রাস করে। এই [https://en.wikipedia.org/wiki/Lossy_compression ক্ষতিকারক সংকোচন] মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য এবং পরিসংখ্যানগত অপ্রয়োজনীয়তা অন্বেষণ করে অর্জন করা হয়। Mp3 এর জন্য সাধারণত ব্যবহৃত কোডিং বিটরেট হল 128 kbit/s এবং দক্ষ এনকোডারগুলি সাধারণত CD-মানের অডিও সংকুচিত করার সময় ডেটা হ্রাসে 10 এর কাছাকাছি একটি ফ্যাক্টর অর্জন করে (16 বিট PCM, 44.1 kHz, ≈ 1411 kBit/s)। অন্যভাবে বলতে গেলে, [https://en.wikipedia.org/wiki/Compact_disc#Audio_format CD] তে সংরক্ষিত প্রায় 90% ডেটা শ্রোতা দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। ব্যবহারকারীরা সাধারণত সঙ্গীত শোনার সময় CD-মানের প্রত্যাশা করেন (সিডি-মানের অ্যানালগ মূল অডিও পুনরুত্পাদন করার জন্য যথেষ্ট ভাল কিনা তা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মতামতের মধ্যে, এই দুটি উল্লেখ<ref name="brandenburg1999mp3" /><ref name="stuart1995">J. R. Stuart for Acoustic Renaissance for Audio. A proposal for the high-quality audio application of high-density CD carriers. 1995.</ref> আরও পড়ার জন্য আগ্রহের হতে পারে।)। আরও দক্ষ অডিও কোডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নেটওয়ার্ক, মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম এবং স্টোরেজ অ্যাপ্লিকেশন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং Mp3 মূলত অডিওভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের আরও দক্ষ ট্রান্সমিশনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
জনস্টন,<ref name="johnston1988">James D Johnston. Estimation of perceptual entropy using noise masking criteria. In Proceedings of the International Conference on Acoustics, Speech, and Signal Processing of the IEEE 1988.</ref> যা "অনুভূত এনট্রপি" ধারণার দিকে পরিচালিত করে। পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সিডি-মানের অডিওর জন্য প্রতি নমুনায় প্রায় 2 বিট অনুভূত এনট্রপি অনুমান করা হয়েছিল। অত্যাধুনিক এনকোডারগুলি স্বচ্ছ (কাছাকাছি) সিডি-মানের অডিও কোডিংয়ের জন্য এই দক্ষতা নিশ্চিত করে।<ref name="painter1997">Ted Painter and Andreas Spanias. A review of algorithms for perceptual coding of digital audio signals. In Proceedings of the 13th International Conference on Digital Signal Processing of the IEEE 1997.</ref>
একটি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং অ্যালগরিদমের মান সাধারণত শ্রবণ পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয় এবং সম্প্রতি [http://en.wikipedia.org/%20wiki/PEAQ পারসেপচুয়াল ইভালুয়েশন অফ অডিও কোয়ালিটি (PEAQ)] নামক অনুভূত অডিও মানের উদ্দেশ্যমূলক পরিমাপের জন্য একটি প্রমিত অ্যালগরিদমের সাথেও মিলিত হয়।
==== একটি পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারের মৌলিক স্থাপত্য ====
[[File:Basic block diagram perceptual coding system.svg|thumb|একটি পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারের মৌলিক স্থাপত্য]]
বেশিরভাগ পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারকে চিত্রে দেখানো মৌলিক স্থাপত্যের সাহায্যে বর্ণনা করা যেতে পারে। বিশ্লেষণ ফিল্টার ব্যাংকটি মানব শ্রবণ ব্যবস্থার টেম্পোরাল এবং বর্ণালী বিশ্লেষণ বৈশিষ্ট্যের আনুমানিক হিসাব করে। ইনপুটটি ফ্রেমে বিভক্ত, যা প্যারামিটারের একটি সেটে রূপান্তরিত হয় যা কোয়ান্টাইজড এবং এনকোড করা যেতে পারে। কোয়ান্টাইজেশন এবং কোডিং পর্যায় পরিসংখ্যানগত অপ্রয়োজনীয়তা কাজে লাগায় এবং বিট বরাদ্দ এবং কোয়ান্টাইজেশন শব্দ গঠনের জন্য পারসেপচুয়াল মডেল দ্বারা সরবরাহ করা থ্রেশহোল্ডের উপর নির্ভর করে। পারসেপচুয়াল মডেলটি কোডিংয়ের জন্য ফ্রিকোয়েন্সির একটি ফাংশন হিসাবে মাস্কিং থ্রেশহোল্ডকে বর্ণনা করে। অবশেষে, এনকোডিং পর্যায়টি স্ট্যান্ডার্ড [https://en.wikipedia.org/wiki/Lossless_compression লসলেস কোডিং কৌশল] ব্যবহার করে, যেমন [https://en.wikipedia.org/wiki/Huffman_coding]। একটি প্রযুক্তিগত অ্যালগরিদম ব্যাখ্যা এবং উদাহরণ বাস্তবায়নের জন্য আমি [http://ccrma.stanford.edu/%20~jos/bosse/Human_Audio_Perception_Masking.html অনলাইন বই J.O. Smith]-এর উল্লেখ করছি।
=== ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতি ===
ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের মূল ধারণা হল কোয়ান্টাইজেশন নয়েজকে এমনভাবে আকৃতি দেওয়া যাতে এটি অডিও সিগন্যাল দ্বারা আবৃত থাকে এবং তাই শ্রোতা দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। এটি পরম শ্রবণের থ্রেশহোল্ড, সমালোচনামূলক ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণ এবং শ্রবণ মাস্কিং সহ সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতিগুলি কাজে লাগিয়ে অর্জন করা হয়।<ref name="painter1997" /> যেহেতু কোডিং পর্যায়ে প্লেব্যাক স্তর প্রায়শই অজানা থাকে, তাই কোডিং প্রক্রিয়া চলাকালীন সংকেত স্বাভাবিককরণের জন্য সাধারণত পরম শ্রবণ থ্রেশহোল্ড সম্পর্কে রক্ষণশীল অনুমান ব্যবহার করা হয়। শ্রবণ মাস্কিং এমন ঘটনা বর্ণনা করে, যেখানে একটি শব্দের উপলব্ধি অন্য শব্দের উপস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হয়। মাস্কিং প্রভাব ফ্রিকোয়েন্সি ডোমেইনে (একযোগে মাস্কিং), এবং টাইম ডোমেইনে (অ-একযোগে মাস্কিং) ঘটে।
==== একযোগে মাস্কিং ====
[[File:Spreadingfunction adapted.png|thumb|Adapted from Jayant et al.<ref name="jayant1993" /> একযোগে মাস্কিংয়ের জন্য স্প্রেডিং ফাংশন। 1 kHz এ বিভিন্ন তীব্রতার ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড নয়েজ মাস্কর।]]
একযোগে মাস্কিংয়ের জন্য কক্লিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি রেজোলিউশন একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। কক্লিয়ার ভিতরে একটি ফ্রিকোয়েন্সি-টু-প্লেস রূপান্তর ঘটে এবং বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের সাথে সুরক্ষিত স্বতন্ত্র অঞ্চল তৈরি হয়। এই স্বতন্ত্র ফ্রিকোয়েন্সি অঞ্চলগুলিকে শ্রবণশক্তির সমালোচনামূলক ব্যান্ড (বা সমালোচনামূলক ব্যান্ডউইথ) বলা হয়। ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডউইথ ≈ ১০০ হার্জ থেকে ৫০০ হার্জ পর্যন্ত স্থির থাকে এবং ৫০০ হার্জের উপরে কেন্দ্র ফ্রিকোয়েন্সির প্রায় ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।<ref name="painter1997" /> প্রথম ২৪টি ক্রিটিক্যাল ব্যান্ড বার্ক স্কেল দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। একটি স্বরের উপস্থিতি বেসিলার মেমব্রেনের উত্তেজনার দিকে পরিচালিত করে, যা এর ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডের ভিতরে দ্বিতীয় স্বরের জন্য সনাক্তকরণ থ্রেশহোল্ডকে প্রভাবিত করে (ইন্ট্র-ব্যান্ড মাস্কিং)। এছাড়াও, প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলিও প্রভাবিত হয় (ইন্টার-ব্যান্ড মাস্কিং)। প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলির স্নেহ স্প্রেডিং ফাংশন দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। বিভিন্ন তীব্রতার একটি ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড নয়েজ মাস্কারের জন্য একটি পরিমাপিত স্প্রেডিং ফাংশন ডান দিকের চিত্রে দেখানো হয়েছে। চিত্রে যেমন দেখানো হয়েছে, একটি মাস্কার নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের তুলনায় উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলিকে মাস্কিং করতে বেশি দক্ষ, যাকে মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী স্প্রেড বলা হয়। স্প্রেডিং ফাংশনের কারণ কক্লিয়ার যান্ত্রিক ফিল্টার বৈশিষ্ট্যের একটি উপজাত বলে মনে করা হয়, যেখানে বাইরের চুলের কোষগুলি ফ্রিকোয়েন্সি রেজোলিউশন বৃদ্ধির জন্য বেসিলার ঝিল্লির গতিকে প্রশস্ত করে।<ref name="jayant1993">Nikil Jayant, James Johnston, and Robert Safranek. Signal compression based on models of human perception. Proceedings of the IEEE, 81(10):1385-1422, 1993.</ref> মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী বিস্তারের কারণ স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং যান্ত্রিক উত্তেজনার পাশাপাশি দমনও একটি ভূমিকা পালন করে।<ref name="oxenham1998">Andrew J Oxenham and Christopher J Plack. Suppression and the upward spread of masking. The Journal of the Acoustical Society of America, 104(6):3500-3510, 1998.</ref> অধিকন্তু, চিত্রের দ্বিতীয় শিখরটি উচ্চতর শব্দ চাপ স্তরে 2 kHz (1 kHz এর দ্বিতীয় সুরেলা) এর কাছাকাছি উত্থিত হওয়ার সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ এবং মধ্যকর্ণের অরৈখিক স্থানান্তর বৈশিষ্ট্যও ভূমিকা পালন করে।<ref name="jayant1993" />
একটি শক্তিশালী শব্দ বা টোন মাস্কারের উপস্থিতি বেসিলার মেমব্রেনে যথেষ্ট পরিমাণে উত্তেজনা তৈরি করে যা এর ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডে দুর্বল সংকেতের সংক্রমণকে কার্যকরভাবে ব্লক করতে পারে এবং মাস্কিংয়ের বিস্তারের ফলে প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলিও প্রভাবিত হয়। দুই ধরণের যুগপত মাস্কর লক্ষ্য করা গেছে: নয়েজ-মাস্কিং-টোন এবং টোন-মাস্কিং-নয়েজ। একটি নয়েজ-মাস্কিং-টোনের জন্য একটি স্বরের উপস্থিতি মুখোশযুক্ত শব্দ বর্ণালীর জন্য একটি থ্রেশহোল্ড ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেয় এবং টোন-মাস্কিং-নয়েজের জন্য একটি শব্দের উপস্থিতি মুখোশযুক্ত স্বরের জন্য একটি থ্রেশহোল্ড ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেয়। বিশুদ্ধ টোন এবং ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড সীমিত শব্দের জন্য বিভিন্ন থ্রেশহোল্ড রিপোর্ট করা হয়েছে।<ref name="painter1997" /> সঙ্গীতের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং সম্পর্কে, স্প্রেডিং ফাংশনটি বিবেচনায় নেওয়ার আগে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এনকোডারের সময়-ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণের বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে এই থ্রেশহোল্ডগুলিকে ইন্টারপোলেট করা হয়। উদ্দেশ্যমূলক সংকেত-থেকে-শব্দ অনুপাত (SNR) খুব কম হতে পারে, যেমন। ২০ ডিবি, কিন্তু অডিও কন্টেন্টের উপর নির্ভর করে, যখন সাবজেক্টিভ SNR স্বচ্ছ কোডিং অর্জনের জন্য যথেষ্ট বেশি।<ref name="jayant1993" /> তুলনার জন্য, একটি অডিও সিডির SNR 96 ডিবি।
==== অ-একযোগে মাস্কিং ====
[[File:Temporalmasking adapted.png|thumb|জয়ন্ত এবং অন্যান্যদের থেকে অভিযোজিত।<ref name="jayant1993" /> অ-একযোগে মাস্কিং। একটি তীক্ষ্ণ ক্ষণস্থায়ী মাস্কিং প্রভাব তৈরি করে যা সময় ডোমেনে দুটি সংকেতের শ্রবণ উপলব্ধিকে প্রভাবিত করে। ক্ষণস্থায়ী (পূর্ব বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) এর আগে এবং পরে উপলব্ধি (পরবর্তী বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) প্রভাবিত হয়।]]
অডিও সংকেতে আকস্মিক ক্ষণস্থায়ী (বা শক্তিশালী আক্রমণ) সময় ডোমেনে মাস্কিং প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। চিত্রে দেখানো হয়েছে যে, ক্ষণস্থায়ী (পরবর্তী বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) এর আগে এবং পরে উপলব্ধি (পূর্ব বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) প্রভাবিত হয়। পশ্চাদমুখী মাস্কিং অঞ্চলটি মিলিসেকেন্ডের ক্রমানুসারে স্থায়ী হয় এবং সামনের দিকে মাস্কিং অঞ্চলটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং মিলিসেকেন্ডের দশমাংশের ক্রমানুসারে থাকে।<ref name="painter1997" />
টেম্পোরাল মাস্কিং এখনও সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না এবং এটি একটি সক্রিয় গবেষণার বিষয়। তবে, প্রমাণ রয়েছে যে উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ এই ঘটনার সাথে জড়িত। এই প্রভাবটি শব্দের একীকরণ, স্নায়ু প্রক্রিয়াকরণের বাধা বা বাধা এবং/অথবা সংক্রমণ বেগের পার্থক্যের সাথে সম্পর্কিত কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফরোয়ার্ড এবং পিছনের দিকে মাস্কিং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখায় এবং তাই মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়।<ref name="filippini2015">Renata Filippini. Unmasking auditory temporal masking, 2015. http://hearinghealthmatters.org/pathways/2015/unmasking-auditory-temporal-masking/</ref>
==== মাস্কিং এবং জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং ====
অডিও কোডিংয়ে একটি কার্যকর কৌশল হল [https://en.wikipedia.org/wiki/Joint_(audio_engineering) জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং]। যেহেতু একটি সঙ্গীত সংকেতের জন্য বাম এবং ডান অডিও চ্যানেলগুলি সাধারণত অত্যন্ত সম্পর্কিত, তাই কখনও কখনও
অডিও সংকেতের sum/difference (L-R, L+R) কোডিং করা আরও দক্ষ। Mp3 এর ক্ষেত্রে sum/difference কোডিংয়ের সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগানো হয়নি, একটি দক্ষ কৌশল বাম/ডান এবং sum/difference কোডিংয়ের থ্রেশহোল্ডগুলির তুলনা করবে এবং গতিশীলভাবে আরও দক্ষটি বেছে নেবে। মাস্কিং থ্রেশহোল্ড গণনা করার সময় বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত, কারণ জয়েন্ট চ্যানেল কোডিং বাইনোরাল শোনার কারণে শ্রবণযোগ্য আর্টিফ্যাক্ট তৈরি করতে পারে।<ref name="jayant1993" />
=== আর্টিফ্যাক্টস ([[w: Compression_artifact]])===
Mp3 এবং AAC এর জন্য কোডিং বিট রেট বেছে নেওয়া হয় এবং কম্প্রেশন ফ্যাক্টর নয়, কারণ কম্প্রেশন ফ্যাক্টরটি বিষয়বস্তু নির্ভর। কম বিট রেট উচ্চতর কম্প্রেশন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে এবং উচ্চতর বিট রেট সম্ভাব্য আর্টিফ্যাক্টের সম্ভাবনা কম করে এমন কম কম্প্রেশন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে। এটি কার্যকরী অঞ্চলগুলিতে (বা বিট রেট) নিয়ে যায়, যেখানে একটি নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করে এবং উচ্চতর বিট রেটগুলির জন্য সামান্য উন্নতি করে।<ref name="brandenburg1999mp3" /> প্লেব্যাক সরঞ্জাম থেকে শব্দ এবং বিকৃতি আর্টিফ্যাক্টের বিপরীতে, যা আমরা সকলেই সিডি শোনার সময় অভ্যস্ত, উপলব্ধিমূলক এনকোডার থেকে শ্রবণযোগ্য আর্টিফ্যাক্ট বিরক্তিকর হতে পারে। যদি স্বচ্ছ কোডিংয়ের জন্য বিট রেট খুব কম হয়, তাহলে ফলে শব্দ এবং বিকৃতিগুলিকে সময়-পরিবর্তিত সংকেত হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যেখানে বিকৃতিগুলি সুরেলাভাবে সম্পর্কিত নয়, শব্দ ব্যান্ড-সীমাবদ্ধ এবং ব্যান্ডউইথ ফ্রেম থেকে ফ্রেমে পরিবর্তিত হতে পারে তাই সংকেতটি রুক্ষ শোনাতে পারে।<ref name="brandenburg1999mp3" />
==== ব্যান্ডউইথের ক্ষতি ====
যদি এনকোডারে বিট ফুরিয়ে যায় তবে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ এবং কম ফ্রিকোয়েন্সি কন্টেন্টের সঠিক কোডিংয়ের মধ্যে একটি মৌলিক লেনদেন হয়। এর ফলে একটি কোডেড ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ তৈরি হতে পারে যা ফ্রেম থেকে ফ্রেমে পরিবর্তিত হয় যা খুব অপ্রীতিকর শোনাতে পারে। সাধারণত কম বিট রেটের জন্য ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ সীমিত করে এই শিল্পকর্মটি প্রতিহত করা হয়।
==== প্রিচো ====
প্রিচো হল সবচেয়ে কঠিন ত্রুটি যা এড়ানো যায় এবং এটি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এনকোডারের ফ্রেম আকারের সাথে সম্পর্কিত। যদি কোনও ফ্রেমের মাঝখানে কোনও অডিও সিগন্যালের তীব্র আক্রমণ ঘটে তবে ফ্রেমের আকারের কারণে শব্দের জন্য গণনা করা থ্রেশহোল্ডটি পিছনের মাস্কিং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এইভাবে শ্রবণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। প্রিচোসের ঘটনা কমানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল রয়েছে, যেমন একটি পরিবর্তনশীল ফ্রেম আকার বিশ্লেষণ ফিল্টারব্যাঙ্ক।<ref name="brandenburg1999mp3" />
=== কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্ক ===
সংক্ষেপে এবং উপসংহারে, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলির ব্যাপক ব্যবহার করে। পরম শ্রবণ থ্রেশহোল্ড কক্লিয়ার বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্কিত, তবে মধ্য এবং বাইরের কানের অ্যাকোস্টিক এবং যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথেও সম্পর্কিত। একযোগে মাস্কিংয়ে, ইন্ট্রা- এবং ইন্টার-ক্রিটিক্যাল ব্যান্ড মাস্কিং থ্রেশহোল্ড (স্প্রেডিং ফাংশন) কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত হয়। তবে, মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী বিস্তার কেবল কক্লিয়ার বৈশিষ্ট্য দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না এবং দমনের মতো অন্যান্য ঘটনাও ভূমিকা পালন করতে পারে। পরিশেষে, টেম্পোরাল মাস্কিংয়ের ঘটনাটি কেবল শ্রবণতন্ত্রের উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে এবং জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং থেকে উদ্ভূত শিল্পকর্মগুলিও নির্দেশ করে যে এই প্রক্রিয়াটি মানব শ্রবণতন্ত্রের বিভিন্ন স্তরের সাথে জড়িত।
<references />
{{BookCat}}
at3qf9uwbg86ypg7tb2krdd2sgqwp5d
85746
85744
2025-07-06T20:18:14Z
Mehedi Abedin
7113
85746
wikitext
text/x-wiki
== কক্লিয়ার ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিং এবং ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য ==
এই পৃষ্ঠায় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের মূল প্রক্রিয়াগুলি পর্যালোচনা করার পাশাপাশি অন্তর্নিহিত সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতিগুলি ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য এবং উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ের সাথে সম্পর্ক নির্দেশ করা হয়েছে।
=== পারসেপচুয়াল অডিও কোডিং ===
[http://en.wikipedia.org/wiki/MP3 এমপিথ্রি] (এমপিইজি-১ স্তর ৩, এমপিইজি-২ এবং এমপিইজি-৪ অ্যাডভান্সড অডিও কোডিংয়ের (এএসি) পূর্বসূরী) সম্ভবত এখনও সর্বাধিক পরিচিত অডিও ফর্ম্যাট যা অডিও সংকেতের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং ব্যবহার করে। [http://en.wikipedia.org/wiki/Advanced_Audio_Coding এএসি] উন্নত শব্দ মানের অর্জনকারী একটি আরও দক্ষ এক্সটেনশন বিস্তৃত ব্যান্ডউইথের অনুমতি দেয় তবে এমপিথ্রির তুলনায় একই কোডিং নীতির উপর নির্ভর করে। উভয় ফর্ম্যাট আইএসও এবং আইইসি দ্বারা প্রমিত করা হয়েছে তবে কেবল ডিকোডার সম্পূর্ণরূপে নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং এনকোডার বাস্তবায়ন সক্রিয় রাখা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন ধরণের উপলব্ধ এনকোডার তৈরি হয়েছে যার উৎপাদনের গুণমান, অর্জনযোগ্য বিট-রেট, কর্মক্ষমতা এবং কোডিং দক্ষতার ক্ষেত্রে ভিন্ন।<ref name="brandenburg1999mp3">Karlheinz Brandenburg. Mp3 and aac explained. In Audio Engineering Society Conference: 17th International Conference: High-Quality Audio Coding. Audio Engineering Society, 1999.</ref>
ধ্রুপদী সংকেত সংকোচন অ্যালগরিদমের বিপরীতে, যেখানে লক্ষ্য হল সংকেত প্রজনন গুণমান বজায় রেখে ন্যূনতম সংখ্যক বিট সহ তথ্য উপস্থাপন করা, উপলব্ধিযোগ্য অডিও কোডিং মানব শ্রবণ ব্যবস্থা থেকে জ্ঞানকে বিবেচনা করে এবং বেশিরভাগ শ্রোতার জন্য উপলব্ধিযোগ্যভাবে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য সরিয়ে বিট রেট হ্রাস করে। এই [https://en.wikipedia.org/wiki/Lossy_compression ক্ষতিকারক সংকোচন] মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য এবং পরিসংখ্যানগত অপ্রয়োজনীয়তা অন্বেষণ করে অর্জন করা হয়। Mp3 এর জন্য সাধারণত ব্যবহৃত কোডিং বিটরেট হল 128 kbit/s এবং দক্ষ এনকোডারগুলি সাধারণত CD-মানের অডিও সংকুচিত করার সময় ডেটা হ্রাসে 10 এর কাছাকাছি একটি ফ্যাক্টর অর্জন করে (16 বিট PCM, 44.1 kHz, ≈ 1411 kBit/s)। অন্যভাবে বলতে গেলে, [https://en.wikipedia.org/wiki/Compact_disc#Audio_format CD] তে সংরক্ষিত প্রায় 90% ডেটা শ্রোতা দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। ব্যবহারকারীরা সাধারণত সঙ্গীত শোনার সময় CD-মানের প্রত্যাশা করেন (সিডি-মানের অ্যানালগ মূল অডিও পুনরুত্পাদন করার জন্য যথেষ্ট ভাল কিনা তা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মতামতের মধ্যে, এই দুটি উল্লেখ<ref name="brandenburg1999mp3" /><ref name="stuart1995">J. R. Stuart for Acoustic Renaissance for Audio. A proposal for the high-quality audio application of high-density CD carriers. 1995.</ref> আরও পড়ার জন্য আগ্রহের হতে পারে।)। আরও দক্ষ অডিও কোডিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নেটওয়ার্ক, মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম এবং স্টোরেজ অ্যাপ্লিকেশন থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং Mp3 মূলত অডিওভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের আরও দক্ষ ট্রান্সমিশনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
জনস্টন,<ref name="johnston1988">James D Johnston. Estimation of perceptual entropy using noise masking criteria. In Proceedings of the International Conference on Acoustics, Speech, and Signal Processing of the IEEE 1988.</ref> যা "অনুভূত এনট্রপি" ধারণার দিকে পরিচালিত করে। পরিমাপের উপর ভিত্তি করে সিডি-মানের অডিওর জন্য প্রতি নমুনায় প্রায় 2 বিট অনুভূত এনট্রপি অনুমান করা হয়েছিল। অত্যাধুনিক এনকোডারগুলি স্বচ্ছ (কাছাকাছি) সিডি-মানের অডিও কোডিংয়ের জন্য এই দক্ষতা নিশ্চিত করে।<ref name="painter1997">Ted Painter and Andreas Spanias. A review of algorithms for perceptual coding of digital audio signals. In Proceedings of the 13th International Conference on Digital Signal Processing of the IEEE 1997.</ref>
একটি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং অ্যালগরিদমের মান সাধারণত শ্রবণ পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয় এবং সম্প্রতি [http://en.wikipedia.org/%20wiki/PEAQ পারসেপচুয়াল ইভালুয়েশন অফ অডিও কোয়ালিটি (PEAQ)] নামক অনুভূত অডিও মানের উদ্দেশ্যমূলক পরিমাপের জন্য একটি প্রমিত অ্যালগরিদমের সাথেও মিলিত হয়।
==== একটি পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারের মৌলিক স্থাপত্য ====
[[File:Basic block diagram perceptual coding system.svg|thumb|একটি পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারের মৌলিক স্থাপত্য]]
বেশিরভাগ পারসেপচুয়াল অডিও এনকোডারকে চিত্রে দেখানো মৌলিক স্থাপত্যের সাহায্যে বর্ণনা করা যেতে পারে। বিশ্লেষণ ফিল্টার ব্যাংকটি মানব শ্রবণ ব্যবস্থার টেম্পোরাল এবং বর্ণালী বিশ্লেষণ বৈশিষ্ট্যের আনুমানিক হিসাব করে। ইনপুটটি ফ্রেমে বিভক্ত, যা প্যারামিটারের একটি সেটে রূপান্তরিত হয় যা কোয়ান্টাইজড এবং এনকোড করা যেতে পারে। কোয়ান্টাইজেশন এবং কোডিং পর্যায় পরিসংখ্যানগত অপ্রয়োজনীয়তা কাজে লাগায় এবং বিট বরাদ্দ এবং কোয়ান্টাইজেশন শব্দ গঠনের জন্য পারসেপচুয়াল মডেল দ্বারা সরবরাহ করা থ্রেশহোল্ডের উপর নির্ভর করে। পারসেপচুয়াল মডেলটি কোডিংয়ের জন্য ফ্রিকোয়েন্সির একটি ফাংশন হিসাবে মাস্কিং থ্রেশহোল্ডকে বর্ণনা করে। অবশেষে, এনকোডিং পর্যায়টি স্ট্যান্ডার্ড [https://en.wikipedia.org/wiki/Lossless_compression লসলেস কোডিং কৌশল] ব্যবহার করে, যেমন [https://en.wikipedia.org/wiki/Huffman_coding]। একটি প্রযুক্তিগত অ্যালগরিদম ব্যাখ্যা এবং উদাহরণ বাস্তবায়নের জন্য আমি [http://ccrma.stanford.edu/%20~jos/bosse/Human_Audio_Perception_Masking.html অনলাইন বই J.O. Smith]-এর উল্লেখ করছি।
=== ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতি ===
ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অডিও কোডিংয়ের মূল ধারণা হল কোয়ান্টাইজেশন নয়েজকে এমনভাবে আকৃতি দেওয়া যাতে এটি অডিও সিগন্যাল দ্বারা আবৃত থাকে এবং তাই শ্রোতা দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। এটি পরম শ্রবণের থ্রেশহোল্ড, সমালোচনামূলক ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণ এবং শ্রবণ মাস্কিং সহ সাইকোঅ্যাকোস্টিক নীতিগুলি কাজে লাগিয়ে অর্জন করা হয়।<ref name="painter1997" /> যেহেতু কোডিং পর্যায়ে প্লেব্যাক স্তর প্রায়শই অজানা থাকে, তাই কোডিং প্রক্রিয়া চলাকালীন সংকেত স্বাভাবিককরণের জন্য সাধারণত পরম শ্রবণ থ্রেশহোল্ড সম্পর্কে রক্ষণশীল অনুমান ব্যবহার করা হয়। শ্রবণ মাস্কিং এমন ঘটনা বর্ণনা করে, যেখানে একটি শব্দের উপলব্ধি অন্য শব্দের উপস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হয়। মাস্কিং প্রভাব ফ্রিকোয়েন্সি ডোমেইনে (একযোগে মাস্কিং), এবং টাইম ডোমেইনে (অ-একযোগে মাস্কিং) ঘটে।
==== একযোগে মাস্কিং ====
[[File:Spreadingfunction adapted.png|thumb|Adapted from Jayant et al.<ref name="jayant1993" /> একযোগে মাস্কিংয়ের জন্য স্প্রেডিং ফাংশন। 1 kHz এ বিভিন্ন তীব্রতার ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড নয়েজ মাস্কর।]]
একযোগে মাস্কিংয়ের জন্য কক্লিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি রেজোলিউশন একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। কক্লিয়ার ভিতরে একটি ফ্রিকোয়েন্সি-টু-প্লেস রূপান্তর ঘটে এবং বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের সাথে সুরক্ষিত স্বতন্ত্র অঞ্চল তৈরি হয়। এই স্বতন্ত্র ফ্রিকোয়েন্সি অঞ্চলগুলিকে শ্রবণশক্তির সমালোচনামূলক ব্যান্ড (বা সমালোচনামূলক ব্যান্ডউইথ) বলা হয়। ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডউইথ ≈ ১০০ হার্জ থেকে ৫০০ হার্জ পর্যন্ত স্থির থাকে এবং ৫০০ হার্জের উপরে কেন্দ্র ফ্রিকোয়েন্সির প্রায় ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।<ref name="painter1997" /> প্রথম ২৪টি ক্রিটিক্যাল ব্যান্ড বার্ক স্কেল দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। একটি স্বরের উপস্থিতি বেসিলার মেমব্রেনের উত্তেজনার দিকে পরিচালিত করে, যা এর ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডের ভিতরে দ্বিতীয় স্বরের জন্য সনাক্তকরণ থ্রেশহোল্ডকে প্রভাবিত করে (ইন্ট্র-ব্যান্ড মাস্কিং)। এছাড়াও, প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলিও প্রভাবিত হয় (ইন্টার-ব্যান্ড মাস্কিং)। প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলির স্নেহ স্প্রেডিং ফাংশন দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। বিভিন্ন তীব্রতার একটি ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড নয়েজ মাস্কারের জন্য একটি পরিমাপিত স্প্রেডিং ফাংশন ডান দিকের চিত্রে দেখানো হয়েছে। চিত্রে যেমন দেখানো হয়েছে, একটি মাস্কার নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের তুলনায় উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডগুলিকে মাস্কিং করতে বেশি দক্ষ, যাকে মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী স্প্রেড বলা হয়। স্প্রেডিং ফাংশনের কারণ কক্লিয়ার যান্ত্রিক ফিল্টার বৈশিষ্ট্যের একটি উপজাত বলে মনে করা হয়, যেখানে বাইরের চুলের কোষগুলি ফ্রিকোয়েন্সি রেজোলিউশন বৃদ্ধির জন্য বেসিলার ঝিল্লির গতিকে প্রশস্ত করে।<ref name="jayant1993">Nikil Jayant, James Johnston, and Robert Safranek. Signal compression based on models of human perception. Proceedings of the IEEE, 81(10):1385-1422, 1993.</ref> মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী বিস্তারের কারণ স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং যান্ত্রিক উত্তেজনার পাশাপাশি দমনও একটি ভূমিকা পালন করে।<ref name="oxenham1998">Andrew J Oxenham and Christopher J Plack. Suppression and the upward spread of masking. The Journal of the Acoustical Society of America, 104(6):3500-3510, 1998.</ref> অধিকন্তু, চিত্রের দ্বিতীয় শিখরটি উচ্চতর শব্দ চাপ স্তরে 2 kHz (1 kHz এর দ্বিতীয় সুরেলা) এর কাছাকাছি উত্থিত হওয়ার সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ এবং মধ্যকর্ণের অরৈখিক স্থানান্তর বৈশিষ্ট্যও ভূমিকা পালন করে।<ref name="jayant1993" />
একটি শক্তিশালী শব্দ বা টোন মাস্কারের উপস্থিতি বেসিলার মেমব্রেনে যথেষ্ট পরিমাণে উত্তেজনা তৈরি করে যা এর ক্রিটিক্যাল ব্যান্ডে দুর্বল সংকেতের সংক্রমণকে কার্যকরভাবে ব্লক করতে পারে এবং মাস্কিংয়ের বিস্তারের ফলে প্রতিবেশী ব্যান্ডগুলিও প্রভাবিত হয়। দুই ধরণের যুগপত মাস্কর লক্ষ্য করা গেছে: নয়েজ-মাস্কিং-টোন এবং টোন-মাস্কিং-নয়েজ। একটি নয়েজ-মাস্কিং-টোনের জন্য একটি স্বরের উপস্থিতি মুখোশযুক্ত শব্দ বর্ণালীর জন্য একটি থ্রেশহোল্ড ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেয় এবং টোন-মাস্কিং-নয়েজের জন্য একটি শব্দের উপস্থিতি মুখোশযুক্ত স্বরের জন্য একটি থ্রেশহোল্ড ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেয়। বিশুদ্ধ টোন এবং ক্রিটিক্যাল-ব্যান্ড সীমিত শব্দের জন্য বিভিন্ন থ্রেশহোল্ড রিপোর্ট করা হয়েছে।<ref name="painter1997" /> সঙ্গীতের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং সম্পর্কে, স্প্রেডিং ফাংশনটি বিবেচনায় নেওয়ার আগে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এনকোডারের সময়-ফ্রিকোয়েন্সি বিশ্লেষণের বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে এই থ্রেশহোল্ডগুলিকে ইন্টারপোলেট করা হয়। উদ্দেশ্যমূলক সংকেত-থেকে-শব্দ অনুপাত (SNR) খুব কম হতে পারে, যেমন। ২০ ডিবি, কিন্তু অডিও কন্টেন্টের উপর নির্ভর করে, যখন সাবজেক্টিভ SNR স্বচ্ছ কোডিং অর্জনের জন্য যথেষ্ট বেশি।<ref name="jayant1993" /> তুলনার জন্য, একটি অডিও সিডির SNR 96 ডিবি।
==== অ-একযোগে মাস্কিং ====
[[File:Temporalmasking adapted.png|thumb|জয়ন্ত এবং অন্যান্যদের থেকে অভিযোজিত।<ref name="jayant1993" /> অ-একযোগে মাস্কিং। একটি তীক্ষ্ণ ক্ষণস্থায়ী মাস্কিং প্রভাব তৈরি করে যা সময় ডোমেনে দুটি সংকেতের শ্রবণ উপলব্ধিকে প্রভাবিত করে। ক্ষণস্থায়ী (পূর্ব বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) এর আগে এবং পরে উপলব্ধি (পরবর্তী বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) প্রভাবিত হয়।]]
অডিও সংকেতে আকস্মিক ক্ষণস্থায়ী (বা শক্তিশালী আক্রমণ) সময় ডোমেনে মাস্কিং প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। চিত্রে দেখানো হয়েছে যে, ক্ষণস্থায়ী (পরবর্তী বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) এর আগে এবং পরে উপলব্ধি (পূর্ব বা পশ্চাদগামী মাস্কিং) প্রভাবিত হয়। পশ্চাদমুখী মাস্কিং অঞ্চলটি মিলিসেকেন্ডের ক্রমানুসারে স্থায়ী হয় এবং সামনের দিকে মাস্কিং অঞ্চলটি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং মিলিসেকেন্ডের দশমাংশের ক্রমানুসারে থাকে।<ref name="painter1997" />
টেম্পোরাল মাস্কিং এখনও সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায় না এবং এটি একটি সক্রিয় গবেষণার বিষয়। তবে, প্রমাণ রয়েছে যে উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ এই ঘটনার সাথে জড়িত। এই প্রভাবটি শব্দের একীকরণ, স্নায়ু প্রক্রিয়াকরণের বাধা বা বাধা এবং/অথবা সংক্রমণ বেগের পার্থক্যের সাথে সম্পর্কিত কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফরোয়ার্ড এবং পিছনের দিকে মাস্কিং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখায় এবং তাই মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়।<ref name="filippini2015">Renata Filippini. Unmasking auditory temporal masking, 2015. http://hearinghealthmatters.org/pathways/2015/unmasking-auditory-temporal-masking/</ref>
==== মাস্কিং এবং জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং ====
অডিও কোডিংয়ে একটি কার্যকর কৌশল হল [https://en.wikipedia.org/wiki/Joint_(audio_engineering) জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং]। যেহেতু একটি সঙ্গীত সংকেতের জন্য বাম এবং ডান অডিও চ্যানেলগুলি সাধারণত অত্যন্ত সম্পর্কিত, তাই কখনও কখনও
অডিও সংকেতের sum/difference (L-R, L+R) কোডিং করা আরও দক্ষ। Mp3 এর ক্ষেত্রে sum/difference কোডিংয়ের সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগানো হয়নি, একটি দক্ষ কৌশল বাম/ডান এবং sum/difference কোডিংয়ের থ্রেশহোল্ডগুলির তুলনা করবে এবং গতিশীলভাবে আরও দক্ষটি বেছে নেবে। মাস্কিং থ্রেশহোল্ড গণনা করার সময় বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত, কারণ জয়েন্ট চ্যানেল কোডিং বাইনোরাল শোনার কারণে শ্রবণযোগ্য আর্টিফ্যাক্ট তৈরি করতে পারে।<ref name="jayant1993" />
=== আর্টিফ্যাক্টস ([[w: Compression_artifact]])===
Mp3 এবং AAC এর জন্য কোডিং বিট রেট বেছে নেওয়া হয় এবং কম্প্রেশন ফ্যাক্টর নয়, কারণ কম্প্রেশন ফ্যাক্টরটি বিষয়বস্তু নির্ভর। কম বিট রেট উচ্চতর কম্প্রেশন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে এবং উচ্চতর বিট রেট সম্ভাব্য আর্টিফ্যাক্টের সম্ভাবনা কম করে এমন কম কম্প্রেশন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে। এটি কার্যকরী অঞ্চলগুলিতে (বা বিট রেট) নিয়ে যায়, যেখানে একটি নির্দিষ্ট অ্যালগরিদম সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করে এবং উচ্চতর বিট রেটগুলির জন্য সামান্য উন্নতি করে।<ref name="brandenburg1999mp3" /> প্লেব্যাক সরঞ্জাম থেকে শব্দ এবং বিকৃতি আর্টিফ্যাক্টের বিপরীতে, যা আমরা সকলেই সিডি শোনার সময় অভ্যস্ত, উপলব্ধিমূলক এনকোডার থেকে শ্রবণযোগ্য আর্টিফ্যাক্ট বিরক্তিকর হতে পারে। যদি স্বচ্ছ কোডিংয়ের জন্য বিট রেট খুব কম হয়, তাহলে ফলে শব্দ এবং বিকৃতিগুলিকে সময়-পরিবর্তিত সংকেত হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যেখানে বিকৃতিগুলি সুরেলাভাবে সম্পর্কিত নয়, শব্দ ব্যান্ড-সীমাবদ্ধ এবং ব্যান্ডউইথ ফ্রেম থেকে ফ্রেমে পরিবর্তিত হতে পারে তাই সংকেতটি রুক্ষ শোনাতে পারে।<ref name="brandenburg1999mp3" />
==== ব্যান্ডউইথের ক্ষতি ====
যদি এনকোডারে বিট ফুরিয়ে যায় তবে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ এবং কম ফ্রিকোয়েন্সি কন্টেন্টের সঠিক কোডিংয়ের মধ্যে একটি মৌলিক লেনদেন হয়। এর ফলে একটি কোডেড ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ তৈরি হতে পারে যা ফ্রেম থেকে ফ্রেমে পরিবর্তিত হয় যা খুব অপ্রীতিকর শোনাতে পারে। সাধারণত কম বিট রেটের জন্য ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ সীমিত করে এই শিল্পকর্মটি প্রতিহত করা হয়।
==== প্রিচো ====
প্রিচো হল সবচেয়ে কঠিন ত্রুটি যা এড়ানো যায় এবং এটি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এনকোডারের ফ্রেম আকারের সাথে সম্পর্কিত। যদি কোনও ফ্রেমের মাঝখানে কোনও অডিও সিগন্যালের তীব্র আক্রমণ ঘটে তবে ফ্রেমের আকারের কারণে শব্দের জন্য গণনা করা থ্রেশহোল্ডটি পিছনের মাস্কিং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এইভাবে শ্রবণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। প্রিচোসের ঘটনা কমানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল রয়েছে, যেমন একটি পরিবর্তনশীল ফ্রেম আকার বিশ্লেষণ ফিল্টারব্যাঙ্ক।<ref name="brandenburg1999mp3" />
=== কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্ক ===
সংক্ষেপে এবং উপসংহারে, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কোডিং মানব শ্রবণ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলির ব্যাপক ব্যবহার করে। পরম শ্রবণ থ্রেশহোল্ড কক্লিয়ার বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্কিত, তবে মধ্য এবং বাইরের কানের অ্যাকোস্টিক এবং যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথেও সম্পর্কিত। একযোগে মাস্কিংয়ে, ইন্ট্রা- এবং ইন্টার-ক্রিটিক্যাল ব্যান্ড মাস্কিং থ্রেশহোল্ড (স্প্রেডিং ফাংশন) কক্লিয়ার ফিল্টারিং বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত হয়। তবে, মাস্কিংয়ের ঊর্ধ্বমুখী বিস্তার কেবল কক্লিয়ার বৈশিষ্ট্য দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না এবং দমনের মতো অন্যান্য ঘটনাও ভূমিকা পালন করতে পারে। পরিশেষে, টেম্পোরাল মাস্কিংয়ের ঘটনাটি কেবল শ্রবণতন্ত্রের উচ্চতর কর্টিকাল প্রক্রিয়াকরণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে এবং জয়েন্ট স্টেরিও কোডিং থেকে উদ্ভূত শিল্পকর্মগুলিও নির্দেশ করে যে এই প্রক্রিয়াটি মানব শ্রবণতন্ত্রের বিভিন্ন স্তরের সাথে জড়িত।
<references />
{{BookCat}}
3h0sv0vurwhho4l33h8axin29fd96vb
প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শীতলকারী পাখার শব্দ
0
24609
85739
77406
2025-07-06T19:56:30Z
M.Asaduzzaman sahed
11165
85739
wikitext
text/x-wiki
{{merge|Acoustics/Noise from Cooling Fans}}
{{Engineering Acoustics}}
== প্রস্তাবনা ==
যতই বৈদ্যুতিক/ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ছোট ও কার্যকরী হয়ে উঠছে, ততই কুলিং ডিভাইসের শব্দ গুরুত্ব পাচ্ছে। এই পাতায় ডেস্কটপ/ল্যাপটপ কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক পণ্যে ব্যবহৃত ছোট আয়তনের অক্ষীয় কুলিং ফ্যান থেকে উৎপন্ন শব্দের উৎস ব্যাখ্যা করা হবে। ফ্যানের শব্দের উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে বায়ুগতীয় শব্দ এবং ফ্যান চালানোর সময় তৈরি হওয়া অপারেটিং শব্দ। এই পাতায় মূলত বায়ুগতীয় শব্দ সৃষ্টির প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করা হবে।
== পরিচিতি ==
একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারের ভিতরে তিন বা ততোধিক ফ্যান থাকতে পারে। সাধারণত একটি ফ্যান সিপিইউ-র হিটসিঙ্কে থাকে, একটি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিটের পেছনে, একটি কেসের বায়ু চলাচলের ছিদ্রে, একটি গ্রাফিক্স কার্ডে এবং যদি খুব আধুনিক মাদারবোর্ড হয় তবে সেখানে চিপসেটের ওপরেও একটি ফ্যান থাকতে পারে। যদি হার্ডড্রাইভ মোটামুটি নিঃশব্দ হয়, তবে কম্পিউটার থেকে আসা বিরক্তিকর শব্দের প্রধান উৎস কুলিং ফ্যানগুলো। ইন্টেল পেন্টিয়াম প্রসেসর প্রথম যখন বাজারে আসে, তখন সিপিইউতে কোনো ফ্যানের প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু অধিকাংশ আধুনিক সিপিইউ কুলিং ফ্যান ছাড়া কয়েক সেকেন্ডও চলতে পারে না। এমনকি কিছু সিপিইউ (যেমন ইন্টেলের [[Prescott]] কোর) চরম শীতলীকরণের প্রয়োজনীয়তা রাখে, যার ফলে অধিক শব্দ উৎপন্ন হয়।
ডেস্কটপ কম্পিউটারে ব্যবহৃত ফ্যান সাধারণত [[fan (implement)|অক্ষীয় ফ্যান]], আর ল্যাপটপে সেন্ট্রিফিউজাল ফ্যান ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ফ্যানের বৈশিষ্ট্য ও শব্দ উৎপাদনের ধরন আলাদা। এই পাতায় মূলত অক্ষীয় প্রবাহ ফ্যান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
[http://www.etrinet.com/tech/pdf/aerodynamics.pdf এখানে (pdf ফর্ম্যাটে)] বিভিন্ন ফ্যানের ধরন চিত্রসহ দেখা যাবে।
== শব্দ উৎপাদনের প্রক্রিয়া ==
নিচের চিত্রে ১২০ '''মিমি''' ডায়ামিটার একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস কুলিং ফ্যানের সাধারণ শব্দ স্পেকট্রাম দেখানো হয়েছে। একটি মাইক্রোফোন ফ্যানের আপস্ট্রিম পাশে ১ '''মিটার''' দূরত্বে স্থাপন করা হয়েছে। ফ্যানটিতে ৭টি ব্লেড, মোটর মাউন্টিংয়ের জন্য ৪টি স্ট্রাট এবং এটি ১৩ ভোল্টে চালিত হয়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ লোড প্রয়োগ করা হয়েছে। নীল রেখাটি অ্যানেকোইক চেম্বারের ব্যাকগ্রাউন্ড শব্দ এবং সবুজ রেখাটি ফ্যান চালু থাকা অবস্থার শব্দের মাত্রা দেখায়।
<center>[[Image:Noisespectrum.gif]]</center>
(*BPF = Blade Passing Frequency)
এই চিত্রে প্রতিটি শব্দ উপাদান নিচের এক বা একাধিক শব্দ উৎপাদনের প্রক্রিয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছে।
=== ব্লেড পুরুত্বের শব্দ - মনোপোল (তবে খুব দুর্বল) ===
ব্লেড পুরুত্বের শব্দ উৎপন্ন হয় তরলের স্থানচ্যুতির ফলে। ফ্যানের ব্লেডের নিজস্ব পুরুত্ব ও আয়তন থাকে। যখন রোটর ঘোরে, প্রতিটি ব্লেডের আয়তন তরল স্থানচ্যুত করে, যার ফলে আশেপাশের চাপে ওঠানামা হয় এবং শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ চলমান ফ্রিকোয়েন্সিতে সুরেলা হলেও, কুলিং ফ্যানের ক্ষেত্রে সাধারণত খুব দুর্বল, কারণ RPM অপেক্ষাকৃত কম। তাই ব্লেডের পুরুত্ব কুলিং ফ্যানের শব্দে খুব একটা প্রভাব ফেলে না।
(এই ধরনের শব্দ হেলিকপ্টার রোটরের মতো উচ্চ-গতির টারবোমেশিনের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে)
=== বায়ুগতীয় বল দ্বারা সুরেলা শব্দ - ডাইপোল ===
==== অভিন্ন ইনলেট প্রবাহ (উল্লেখযোগ্য নয়) ====
অভিন্ন এবং ধ্রুব বায়ুগতীয় বল দ্বারা শব্দ উৎপাদনের বৈশিষ্ট্য ব্লেড পুরুত্বের শব্দের মতোই। এটি কম-গতির ফ্যানের জন্য খুব দুর্বল এবং RPM এর উপর নির্ভরশীল। একটি ফ্যান কাজ করতে গেলে ন্যূনতম ধ্রুব ব্লেড বল প্রয়োজন। তাই আদর্শ অবস্থাতেও এই শব্দ পুরোপুরি এড়ানো যায় না। তবে ব্লেডের সংখ্যা বাড়ালে এই শব্দ কমানো সম্ভব।
==== অনভিন্ন ইনলেট প্রবাহ ====
অনভিন্ন (তবুও স্থির) ইনলেট প্রবাহ ব্লেডের ঘূর্ণন কোণের সাথে সাথে অনভিন্ন বায়ুগতীয় বল তৈরি করে। এতে ব্লেড পাসিং ফ্রিকোয়েন্সি এবং তার হারমনিক্সে শব্দ তৈরি হয়। এটি ইলেকট্রনিক কুলিং ফ্যানের অন্যতম প্রধান শব্দ উৎস।
==== রোটর-কেসিং ইন্টারঅ্যাকশন ====
যদি ফ্যান ব্লেডগুলি এমন একটি গঠন বা কাঠামোর খুব কাছাকাছি থাকে, যা অসমমিত, তাহলে ব্লেডের উপর অস্থির বল প্রয়োগ হয়। তখন ফ্যানটি এমন পরিবেশে চলে, যেন এটি অনভিন্ন প্রবাহ ক্ষেত্রে রয়েছে।
==== আকস্মিক শব্দ (উল্লেখযোগ্য নয়) ====
এই শব্দটি পূর্ববর্তী ব্লেডের ব্লেড-টিপ-ভর্টেক্সের সাথে পরবর্তী ব্লেডের মিথস্ক্রিয়ার কারণে হয়, তবে কুলিং ফ্যানের ক্ষেত্রে তা গুরুতর নয়।
==== ঘূর্ণন স্টল ====
'''স্টল''' কী তা জানতে [[w:Stall (flight)|এখানে ক্লিক করুন]]।
স্টলের কারণে সৃষ্ট শব্দ একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা কম প্রবাহ হারের সময় ঘটে। কোনো কারণে যদি প্রবাহ স্থানীয়ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে কোনো একটি ব্লেডে স্টল হতে পারে। তখন ব্লেডের উপরের দিকের প্রবাহ আংশিকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং আশেপাশের ব্লেডে প্রবাহ কোণ বেড়ে গিয়ে সেখানে আবার স্টল হয়। অন্যদিকে প্রথম ব্লেডের বিপরীত পাশে স্টল কমে যায়।
<center>[[Image:Stall.gif]]</center>
এভাবে স্টল সেলগুলি রোটরের চারপাশে বারবার ঘুরতে থাকে, চলমান ফ্রিকোয়েন্সির প্রায় ৩০~৫০% হারে এবং ব্লেডের বিপরীত দিকে। এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া অস্থির বল তৈরি করে এবং শব্দ ও কম্পন ঘটায়।
==== অনিয়মিত রোটর জ্যামিতি ====
রোটরের অসমমিত গঠন ঘূর্ণনের ফ্রিকোয়েন্সি ও তার হারমনিক্সে শব্দ তৈরি করে (স্পষ্টতই ব্লেড পাসিং ফ্রিকোয়েন্সি নয়), এমনকি ইনলেট প্রবাহ অভিন্ন এবং ধ্রুব হলেও।
==== অস্থির প্রবাহ ক্ষেত্র ====
অস্থির প্রবাহ ব্লেডে এলোমেলো বল তৈরি করে। এটি পৃথক স্পেকট্রামের শব্দ ছড়িয়ে দিয়ে ধারাবাহিক শব্দ তৈরি করে। কম ফ্রিকোয়েন্সির পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, শব্দ রোটেশনের ফ্রিকোয়েন্সির কাছাকাছি ছড়ায় এবং ন্যারোব্যান্ড শব্দ হয়। ইনলেট প্রবাহের এলোমেলো গতি পরিবর্তন ব্যাপক ব্যান্ড স্পেকট্রামের শব্দ তৈরি করে। এলোমেলো শব্দ উপাদানগুলো নিচের অংশে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
=== অস্থির বায়ুগতীয় বল দ্বারা এলোমেলো শব্দ ===
==== টার্বুলেন্ট বাউন্ডারি লেয়ার ====
অভিন্ন এবং স্থির ইনলেট প্রবাহেও ব্লেডে এলোমেলো বলের ওঠানামা থাকে, যা টার্বুলেন্ট বাউন্ডারি লেয়ারের কারণে। কিছু শব্দ এই কারণে তৈরি হলেও, মূল শব্দটি তৈরি হয় যখন বাউন্ডারি লেয়ার ব্লেডের পেছনের প্রান্তে পৌঁছে যায়। ব্লেডের পেছনের প্রান্ত কাছাকাছি শব্দকে বিস্তার করে একটি সম্প্রসারিত শব্দ ক্ষেত্রে পরিণত করে।
==== ইনসিডেন্ট টার্বুলেন্স ====
ইনলেট প্রবাহের গতি যখন এলোমেলোভাবে ওঠানামা করে, তখন ব্লেডে এলোমেলো বল সৃষ্টি হয় এবং তা একটি ব্যাপক ব্যান্ড স্পেকট্রামের শব্দ তৈরি করে।
==== ভর্টেক্স শেডিং ====
কোনো কারণে একটি ব্লেড থেকে ঘূর্ণাবর্ত আলাদা হতে পারে। তখন ব্লেডের চারপাশে প্রবাহ পরিবর্তিত হয়, এবং ব্লেডে অনিয়মিত বল ও শব্দ তৈরি হয়। এর একটি পরিচিত উদাহরণ হলো [http://www.galleryoffluidmechanics.com/vortex/karman.htm 'কারম্যান ভর্টেক্স স্ট্রিট'] ([http://www2.icfd.co.jp/menu1/karmanvortex/karman.html কিছু ছবি ও অ্যানিমেশন])।
এই প্রক্রিয়া কম-গতির ফ্যানের ল্যামিনার বাউন্ডারি লেয়ার বা উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির ফ্যানের টার্বুলেন্ট বাউন্ডারি লেয়ারে ঘটতে পারে।
==== প্রবাহ বিচ্ছেদ ====
প্রবাহ বিচ্ছেদ উপরের স্টলের কারণ। এটি এলোমেলো শব্দ তৈরি করে, যা পৃথক স্পেকট্রাম শব্দগুলো ছড়িয়ে দেয় এবং শব্দকে ব্যাপক ব্যান্ডে রূপান্তরিত করে।
==== টিপ ভর্টেক্স ====
যেহেতু কুলিং ফ্যানগুলো ডাক্টেড অক্ষীয় ফ্লো মেশিন, তাই ব্লেডের টিপ এবং কেসিংয়ের মাঝে যে রিং আকৃতির ফাঁক থাকে তা শব্দ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ। ঘূর্ণনের সময় ফ্যানের আপস্ট্রিম ও ডাউনস্ট্রিমে চাপ পার্থক্যের কারণে ওই ফাঁক দিয়ে প্রবাহ হয়, যার ফলে টিপ ভর্টেক্স তৈরি হয় এবং ফাঁক যত বড় হয়, শব্দও তত বেশি হয়।
== ইনস্টলেশন ইফেক্ট ==
একটি ফ্যান ইনস্টল করার পরে, এমনকি এটি ভালোভাবে অ্যাকুস্টিকভাবে ডিজাইন করা হলেও, অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ সমস্যা দেখা দিতে পারে। একে ইনস্টলেশন ইফেক্ট বলা হয় এবং দুটি ধরন কুলিং ফ্যানের জন্য প্রযোজ্য।
=== ইনলেট প্রবাহ অবস্থার প্রভাব ===
ফ্যানের ইনলেট প্রবাহে প্রভাব ফেলে এমন যেকোনো কাঠামো ইনস্টলেশন ইফেক্ট তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ Hoppe & Neise [3] দেখিয়েছেন যে ৫০০'''মিমি''' ফ্যানের ইনলেট ফ্ল্যাঞ্জে বেলমাউথ নোজল ব্যবহার করলে এবং না করলে শব্দ ক্ষমতায় ৫০'''dB''' পার্থক্য দেখা যায় (যদিও এটি অনেক বড় ও শব্দযুক্ত ফ্যানের জন্য প্রযোজ্য)।
=== অ্যাকুস্টিক লোডিং ইফেক্ট ===
এই প্রভাবটি ডাক্ট সিস্টেমের অ্যাপ্লিকেশনে দেখা যায়। কিছু উচ্চ-দক্ষতার গ্রাফিক্স কার্ডে সরাসরি নিষ্কাশনের জন্য ডাক্ট সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।
একটি ফ্যান দ্বারা উৎপন্ন শব্দ ক্ষমতা শুধুমাত্র ইমপেলারের গতি ও অপারেটিং অবস্থার উপর নির্ভর করে না, বরং ইনলেট ও আউটলেট সংযুক্ত ডাক্ট সিস্টেমের অ্যাকুস্টিক প্রতিবন্ধকতার উপরও নির্ভর করে। তাই ফ্যান ও ডাক্ট সিস্টেম কেবল বায়ুগতীয় কারণে নয়, অ্যাকুস্টিক কারণে মিল রেখে ডিজাইন করা উচিত।
== উপসংহার ==
কুলিং ফ্যানের শব্দ কমানোর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে:
# অ্যাক্টিভ নয়েজ কন্ট্রোল আর্থিকভাবে কার্যকর নয়। ৮০মিমি কুলিং ফ্যানের দাম মাত্র ৫~১০ মার্কিন ডলার। এটি কেবল উচ্চমানের ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য প্রযোজ্য।
# শব্দ কমাতে নির্দিষ্ট বায়ুগতীয় ঘটনাগুলো সীমিত করা গেলে ফ্যানের পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে। ফ্যানের RPM বাড়ানো শব্দের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রভাবশালী কারণ।
নিচে দেওয়া কিছু লিংকে ফ্যান শব্দ সম্পর্কে বিভিন্ন দিক যেমন অ্যাক্টিভ RPM কন্ট্রোল বা বেয়ারিং টাইপ অনুযায়ী শব্দ তুলনা পাওয়া যাবে।
== ফ্যান শব্দ নিয়ে আকর্ষণীয় কিছু সাইটের লিংক ==
নিচের সাইটগুলোতে পিসির শব্দ সম্পর্কিত কিছু ব্যবহারিক দিক ব্যাখ্যা করা হয়েছে:
*[http://www.silentpcreview.com/files/ball_vs_sleeve_bearing.pdf কুলিং ফ্যান শব্দ তুলনা - স্লিভ বেয়ারিং বনাম বল বেয়ারিং (pdf ফর্ম্যাট)]
*[http://www.jmcproducts.com/cooling_info/noise.shtml ফ্যান শব্দের উৎস এবং শব্দ কমানোর পরামর্শ]
*[http://www.ansys.com/industries/tm-fan-noise.htm সুইপ অ্যাঙ্গেল প্রভাবের তুলনা]
*[http://www.directron.com/noise.html বিভিন্ন ৮০মিমি ফ্যানের শব্দের তুলনা]
*[http://www.xlr8yourmac.com/G4ZONE/G4_fan_noise.html নির্দিষ্ট ডেস্কটপ কেসের শব্দ কমানো]
*[http://www.xlr8yourmac.com/systems/quicksilver_noise/quieting_quicksilver_noise.html আরেকটি নির্দিষ্ট ডেস্কটপ কেসের শব্দ কমানো]
*[http://www.roberthancock.com/dell/fannoise.htm সিপিইউ কুলিং ফ্যান থেকে শব্দের উপর একটি অনানুষ্ঠানিক গবেষণা]
*[http://www.cpemma.co.uk/ পিসি কেস ফ্যানের শব্দ নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক গবেষণা]
*[http://www.tomshardware.com/2004/06/15/fighting_fan_noise_pollution/index.html ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে শব্দ কমানোর জন্য অ্যাক্টিভ ফ্যান স্পিড অপ্টিমাইজার]
*[http://www.diracdelta.co.uk/science/source/f/a/fan%20noise/source.html ফ্যান শব্দ কমানোর কিছু সাধারণ কৌশল]
*[http://www.bkhome.com/ Brüel & Kjær এর বিভিন্ন প্রয়োগ ও প্রশিক্ষণ]
== রেফারেন্স ==
[1] Neise, W., and Michel, U., "Aerodynamic Noise of Turbomachines"<br>
[2] Anderson, J., "Fundamentals of Aerodynamics", 3rd edition, 2001, McGrawHill<br>
[3] Hoppe, G., and Neise, W., "Vergleich verschiedener Gerauschmessverfahren fur Ventilatoren. Forschungsbericht FLT 3/1/31/87, Forschungsvereinigung fur Luft- und Trocknungstechnik e. V., Frankfurt/Main, Germany
[[Engineering Acoustics|'''ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাকুস্টিক্স''' পাতায় ফিরে যান]]
rghjxgqc0r0dzdx6avd8vi3hkahaneg
প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/তারের অনুপ্রস্থ কম্পন
0
24673
85737
81043
2025-07-06T19:48:02Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* তরঙ্গ সমীকরণ কী? */
85737
wikitext
text/x-wiki
{{ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাকোস্টিক্স}}
==ভূমিকা==
এই বিভাগটি এক মাত্রায় সীমাবদ্ধ কম্পনের তরঙ্গ প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করে। এই ধরণের তরঙ্গ গতির উদাহরণ পাইপ এবং টিউব যেমন ছোট ব্যাসের (তরলের অনুপ্রস্থ গতি নেই) বা বাদ্যযন্ত্রের উপর প্রসারিত তারে পাওয়া যায়।
প্রসারিত তারগুলি শব্দ উৎপন্ন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে (যেমন গিটারের মতো সঙ্গীত যন্ত্র)।
প্রসারিত তারগুলি একটি যান্ত্রিক ব্যবস্থা গঠন করে যা এই অধ্যায়ে অধ্যয়ন করা হবে। পরবর্তীতে, এই ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি অ্যাকোস্টিকাল সিস্টেমের উপমা দ্বারা বোঝার জন্য ব্যবহার করা হবে।
== তরঙ্গ সমীকরণ কী? ==
আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরণের তরঙ্গ (অর্থাৎ তড়িৎ চৌম্বকীয়, যান্ত্রিক ইত্যাদি) কাজ করে। এই ধরনের তরঙ্গের আগ্রহের চলকগুলির সময়-স্থান আচরণ বর্ণনা করার জন্য তরঙ্গ সমীকরণ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। তরঙ্গ সমীকরণগুলি গতির মৌলিক সমীকরণগুলিকে এমনভাবে সমাধান করে যা একটি ছাড়া সমস্ত চলককে বাদ দেয়। তরঙ্গগুলি অনুদৈর্ঘ্য বা প্রসারণের দিকের সমান্তরাল বা প্রসারণের দিকের লম্ব (অনুপ্রস্থ) প্রচার করতে পারে। এই ধরনের তরঙ্গের গতি কল্পনা করতে [http://www.kettering.edu/~drussell/Demos/waves/wavemotion.html এখানে ক্লিক করুন] (ডক্টর ড্যান রাসেল, কেটারিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত অ্যাকোস্টিক অ্যানিমেশন)
== এক মাত্রিক কেস ==
অনুমান:
- স্ট্রিং আকার এবং ঘনত্বে অভিন্ন
- ছোট বিকৃতির জন্য স্ট্রিং এর কঠোরতা নগণ্য
- মাধ্যাকর্ষণ প্রভাব উপেক্ষিত
- ঘর্ষণ মত কোন ক্ষয়কারী বল নেই
- একটি সমতলে স্ট্রিং বিকৃত হয়
- একটি একক স্থানিক স্থানাঙ্ক ব্যবহার করে স্ট্রিং এর গতি বর্ণনা করা যেতে পারে
কম্পনে স্ট্রিং এর স্থানিক উপস্থাপনা:
[[File:1Dwave graph1.png|300px]]
নিম্নলিখিত স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় গতিশীল একটি স্ট্রিং এর মুক্ত-বডি চিত্র:
[[File:string dwg.jpg]]
উপরের চিত্র থেকে, এটি লক্ষ্য করা যায় যে স্ট্রিং এর প্রতিটি পাশের টান একই রকম হবে নিম্নলিখিতগুলি হল:
[[File:equations1.jpg]]
টেলর সিরিজ ব্যবহার করে সম্প্রসারণ করলে আমরা পাই:
[[File:equations2.jpg]]
== যান্ত্রিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ==
এক মাত্রিক তরঙ্গ নিম্নলিখিত সমীকরণ দ্বারা বর্ণনা করা যেতে পারে (যাকে তরঙ্গ সমীকরণ বলা হয়):
<math>\left( \frac{\partial^2 y}{\partial x^2} \right)=\left( \frac{1}{c^2} \right)\left( \frac{\partial^2 y}{\partial t^2} \right)</math>
যেখানে,
<math>y(x,t)= f(\xi)+g(\eta)\,</math> একটি সমাধান,
\xi=ct-x\,</math> এবং <math>\eta=ct+x\,</math> সহ
এটি ডি'অ্যালাম্বার্ট সমাধান, আরও তথ্যের জন্য দেখুন: [http://en.wikibooks.org/wiki/Acoustic:Time-Domain_Solutions]
এই সমীকরণটি সমাধান করার আরেকটি উপায় হল চলক পৃথকীকরণের পদ্ধতি। এটি মোডাল বিশ্লেষণের জন্য কার্যকর। এটি ধরে নেয় যে সমাধানটি এই ধরণের:
<math> y(x,t)= f(x)g(t)\ </math>
ফলাফলটি উপরের মতোই, তবে এমন একটি আকারে যা মোডাল বিশ্লেষণের জন্য আরও সুবিধাজনক।
এই পদ্ধতি সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য দেখুন:
এরিক ডব্লিউ. ওয়েইস্টাইন এবং অন্যান্য। "চলক পৃথকীকরণ।" ম্যাথওয়ার্ল্ড—এ উলফ্রাম ওয়েব রিসোর্স থেকে। [http://mathworld.wolfram.com/SeparationofVariables.html]
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের সাথে চলক c সম্পর্কে তথ্যের জন্য দয়া করে [http://en.wikibooks.org/wiki/Acoustic:Boundary_Conditions_and_Forced_Vibrations Wave Properties] দেখুন।
তরঙ্গ সমীকরণ সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য দেখুন:
এরিক ডব্লিউ. ওয়েইস্টাইন। "তরঙ্গ সমীকরণ।" ম্যাথওয়ার্ল্ড—এ উলফ্রাম ওয়েব রিসোর্স থেকে। [http://mathworld.wolfram.com/WaveEquation.html]
<math>f(\xi)</math> ফাংশনের উদাহরণ :
উদাহরণ:
[http://www.kw.igs.net/~jackord/bp/n1.html জাভা স্ট্রিং সিমুলেশন]
এটি স্থির প্রান্ত সহ একটি প্লাকড স্ট্রিংয়ের একটি সহজ সিমুলেশন দেখায়।
[http://en.wikibooks.org/wiki/Engineering_Acoustics মূল পৃষ্ঠায় ফিরে যান]
npzn3a4xz401cxjsdx5oqxc4riaw4if
85738
85737
2025-07-06T19:48:23Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* ভূমিকা */
85738
wikitext
text/x-wiki
{{ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাকোস্টিক্স}}
==ভূমিকা==
এই পাতাটি এক মাত্রায় সীমাবদ্ধ কম্পনের তরঙ্গ প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করে। এই ধরণের তরঙ্গ গতির উদাহরণ পাইপ এবং টিউব যেমন ছোট ব্যাসের (তরলের অনুপ্রস্থ গতি নেই) বা বাদ্যযন্ত্রের উপর প্রসারিত তারে পাওয়া যায়।
প্রসারিত তারগুলি শব্দ উৎপন্ন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে (যেমন গিটারের মতো সঙ্গীত যন্ত্র)।
প্রসারিত তারগুলি একটি যান্ত্রিক ব্যবস্থা গঠন করে যা এই অধ্যায়ে অধ্যয়ন করা হবে। পরবর্তীতে, এই ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি অ্যাকোস্টিকাল সিস্টেমের উপমা দ্বারা বোঝার জন্য ব্যবহার করা হবে।
== তরঙ্গ সমীকরণ কী? ==
আমাদের চারপাশে বিভিন্ন ধরণের তরঙ্গ (অর্থাৎ তড়িৎ চৌম্বকীয়, যান্ত্রিক ইত্যাদি) কাজ করে। এই ধরনের তরঙ্গের আগ্রহের চলকগুলির সময়-স্থান আচরণ বর্ণনা করার জন্য তরঙ্গ সমীকরণ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। তরঙ্গ সমীকরণগুলি গতির মৌলিক সমীকরণগুলিকে এমনভাবে সমাধান করে যা একটি ছাড়া সমস্ত চলককে বাদ দেয়। তরঙ্গগুলি অনুদৈর্ঘ্য বা প্রসারণের দিকের সমান্তরাল বা প্রসারণের দিকের লম্ব (অনুপ্রস্থ) প্রচার করতে পারে। এই ধরনের তরঙ্গের গতি কল্পনা করতে [http://www.kettering.edu/~drussell/Demos/waves/wavemotion.html এখানে ক্লিক করুন] (ডক্টর ড্যান রাসেল, কেটারিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত অ্যাকোস্টিক অ্যানিমেশন)
== এক মাত্রিক কেস ==
অনুমান:
- স্ট্রিং আকার এবং ঘনত্বে অভিন্ন
- ছোট বিকৃতির জন্য স্ট্রিং এর কঠোরতা নগণ্য
- মাধ্যাকর্ষণ প্রভাব উপেক্ষিত
- ঘর্ষণ মত কোন ক্ষয়কারী বল নেই
- একটি সমতলে স্ট্রিং বিকৃত হয়
- একটি একক স্থানিক স্থানাঙ্ক ব্যবহার করে স্ট্রিং এর গতি বর্ণনা করা যেতে পারে
কম্পনে স্ট্রিং এর স্থানিক উপস্থাপনা:
[[File:1Dwave graph1.png|300px]]
নিম্নলিখিত স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় গতিশীল একটি স্ট্রিং এর মুক্ত-বডি চিত্র:
[[File:string dwg.jpg]]
উপরের চিত্র থেকে, এটি লক্ষ্য করা যায় যে স্ট্রিং এর প্রতিটি পাশের টান একই রকম হবে নিম্নলিখিতগুলি হল:
[[File:equations1.jpg]]
টেলর সিরিজ ব্যবহার করে সম্প্রসারণ করলে আমরা পাই:
[[File:equations2.jpg]]
== যান্ত্রিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ==
এক মাত্রিক তরঙ্গ নিম্নলিখিত সমীকরণ দ্বারা বর্ণনা করা যেতে পারে (যাকে তরঙ্গ সমীকরণ বলা হয়):
<math>\left( \frac{\partial^2 y}{\partial x^2} \right)=\left( \frac{1}{c^2} \right)\left( \frac{\partial^2 y}{\partial t^2} \right)</math>
যেখানে,
<math>y(x,t)= f(\xi)+g(\eta)\,</math> একটি সমাধান,
\xi=ct-x\,</math> এবং <math>\eta=ct+x\,</math> সহ
এটি ডি'অ্যালাম্বার্ট সমাধান, আরও তথ্যের জন্য দেখুন: [http://en.wikibooks.org/wiki/Acoustic:Time-Domain_Solutions]
এই সমীকরণটি সমাধান করার আরেকটি উপায় হল চলক পৃথকীকরণের পদ্ধতি। এটি মোডাল বিশ্লেষণের জন্য কার্যকর। এটি ধরে নেয় যে সমাধানটি এই ধরণের:
<math> y(x,t)= f(x)g(t)\ </math>
ফলাফলটি উপরের মতোই, তবে এমন একটি আকারে যা মোডাল বিশ্লেষণের জন্য আরও সুবিধাজনক।
এই পদ্ধতি সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য দেখুন:
এরিক ডব্লিউ. ওয়েইস্টাইন এবং অন্যান্য। "চলক পৃথকীকরণ।" ম্যাথওয়ার্ল্ড—এ উলফ্রাম ওয়েব রিসোর্স থেকে। [http://mathworld.wolfram.com/SeparationofVariables.html]
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের সাথে চলক c সম্পর্কে তথ্যের জন্য দয়া করে [http://en.wikibooks.org/wiki/Acoustic:Boundary_Conditions_and_Forced_Vibrations Wave Properties] দেখুন।
তরঙ্গ সমীকরণ সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য দেখুন:
এরিক ডব্লিউ. ওয়েইস্টাইন। "তরঙ্গ সমীকরণ।" ম্যাথওয়ার্ল্ড—এ উলফ্রাম ওয়েব রিসোর্স থেকে। [http://mathworld.wolfram.com/WaveEquation.html]
<math>f(\xi)</math> ফাংশনের উদাহরণ :
উদাহরণ:
[http://www.kw.igs.net/~jackord/bp/n1.html জাভা স্ট্রিং সিমুলেশন]
এটি স্থির প্রান্ত সহ একটি প্লাকড স্ট্রিংয়ের একটি সহজ সিমুলেশন দেখায়।
[http://en.wikibooks.org/wiki/Engineering_Acoustics মূল পৃষ্ঠায় ফিরে যান]
2m2xbb81ng1hdo5x68lr5qv1hfjv26p
প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/জৈবচিকিৎসীয় আলট্রাসাউন্ড
0
24693
85731
85252
2025-07-06T19:30:38Z
Asikur.rahman25
11164
85731
wikitext
text/x-wiki
{{প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান}}
== জৈব-চিকিৎসা শব্দোত্তর তরঙ্গ ==
প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান উইকিবইয়ের এই অধ্যায়ে জৈব-চিকিৎসা শব্দোত্তর তরঙ্গের প্রয়োগগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং শব্দোত্তর রশ্মির জন্য কিছু প্রাথমিক শব্দতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়েছে। পুরো জৈব-চিকিৎসা শব্দোত্তর তরঙ্গ ক্ষেত্রটি নানা মৌলিক শাস্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত এবং এতে বহু বিষয়ে গবেষণার সুযোগ রয়েছে। তাই এই সংক্ষিপ্ত লেখাটি শব্দোত্তর তরঙ্গের সব দিক আলোচনা করে না। বরং এটি পাঠকদের একটি প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করে, যাতে আগ্রহীরা এই বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে অধ্যয়ন করতে পারেন। যাঁরা আরও গভীরভাবে জানতে চান তাঁদের জন্য কোবোল্ড এর ২০০৭ সালের গ্রন্থটি <ref name="Cobbold"/> সুপারিশ করা হয়েছে।
== রোগনির্ণয়ে প্রয়োগ ==
জৈব-চিকিৎসা শব্দোত্তর তরঙ্গের সবচেয়ে পরিচিত প্রয়োগ হলো চিকিৎসা চিত্রায়ন। একে শব্দোত্তর চিত্রায়ন বা আল্ট্রাসনোগ্রাফি বলা হয়। শব্দোত্তর চিত্রায়নের নির্দিষ্ট প্রয়োগগুলোর তালিকার জন্য সংশ্লিষ্ট [[w:আল্ট্রাসনোগ্রাফি|উইকিপিডিয়া নিবন্ধ]]টি দেখুন। নিচের অংশে শব্দোত্তর চিত্র তৈরির জন্য যে শব্দতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয় তা গুণগতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
একটি শব্দোত্তর তরঙ্গ রূপান্তরক স্বল্পস্থায়ী উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ নির্গত করে। প্রয়োগ অনুযায়ী এই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ১ মেগাহার্টজ থেকে ১৫ মেগাহার্টজ পর্যন্ত হতে পারে।<ref name="Kremkau"/> নির্গত শব্দ তরঙ্গ যখন শরীরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তখন শব্দ প্রতিবন্ধকতার (''ρc'') পার্থক্যের ক্ষেত্রে আংশিক প্রতিফলন বা বিকিরণ ঘটে। চিকিৎসা চিত্রায়নের প্রসঙ্গে, শরীরের যেখানে ঘনত্বের তারতম্য রয়েছে যেমন হাড় ও পেশির সংযোগস্থল, ররক্তকণিকা, ক্ষুদ্রঅঙ্গ ইত্যাদিতে এটি ঘটে।<ref name="Wiki_sono"/>
প্রতিফলক গঠনের আকার ও প্রেরিত শব্দ তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর প্রতিফলিত তরঙ্গের আচরণ নির্ভর করে। তরঙ্গদৈর্ঘ্য ছোট হলে শব্দ পরিবাহিতা ও প্রতিফলনের নিয়ম অনুযায়ী স্বাভাবিক বা তির্যক প্রতিফলন ঘটে।<ref name="Kinsler_rt"/> আর যদি তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলক গঠনের তুলনায় বড় হয়, তখন শব্দ বিকিরণের নিয়ম প্রযোজ্য হয়।<ref name="Pierce_sd"/> এই দ্বিতীয় অবস্থা, যা ছোট প্রতিফলন উৎসের ক্ষেত্রে ঘটে, সেটিই নির্ধারণ করে শব্দোত্তর চিত্রায়নে কোন কম্পাঙ্ক ব্যবহার করা হবে। কোবোল্ড এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী,<ref name="Cobbold_su"/> একটি সমতল তরঙ্গ যখন একটি গোলীয় প্রতিফলক উৎসে পড়ে যার কার্যকর ব্যাসার্ধ ''a'', তখন বিকিরিত তরঙ্গের শব্দ তীব্রতা, ''I<sub>s</sub>'', পরিবর্তিত হয় এই সূত্র অনুযায়ী:
<br>
:<math>
I_s \propto \frac{a^6}{\lambda ^4}
</math>
এই সূত্রটি দেখায়, যখন তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলক উৎসের তুলনায় বড় হয়, তখন প্রতিফলিত শক্তি খুব কম হয়ে যায়। ফলে রূপান্তরকে উল্লেখযোগ্য প্রতিফলিত তরঙ্গ ফেরত আসে না। শব্দোত্তর চিত্রে একটি গঠন স্পষ্টভাবে ধরতে হলে, নির্গত তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সেই গঠনের চেয়ে ছোট হতে হবে। তরঙ্গদৈর্ঘ্য নির্বাচন করতে গিয়ে আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হয়। যেহেতু শব্দ তরঙ্গ পরিবাহনের পথে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাই কম কম্পাঙ্ক বেশি গভীরে ছবি তুলতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, বেশি কম্পাঙ্ক (ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্য) নির্গত রশ্মিকে সরু ফোকাসে কেন্দ্রীভূত করতে সহায়তা করে।<ref name="Kremkau"/> নিচের টেবিলে বিভিন্ন কম্পাঙ্কে পানিতে তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সঙ্গে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে (''λ'' = ''c''/''f'')।
<br>
{| class="wikitable" style="text-align: center;" align="center"
|+ টেবিল ১: চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শব্দোত্তর তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ও সংশ্লিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য।
|-
| কম্পাঙ্ক (মেগাহার্টজ) || ১ || ২ || ৫ || ৮ || ১০ || ১২ || ১৫
|-
| তরঙ্গদৈর্ঘ্য (মিলিমিটার) || ১.৫০ || ০.৭৫ || ০.৩০ || ০.১৯ || ০.১৫ || ০.১৩ || ০.১০
|}
তরঙ্গ নির্গত হওয়ার পর শব্দোত্তর রূপান্তরক একটি গ্রাহকের মতো কাজ করতে পারে—যেমন একটি মাইক্রোফোন বা হাইড্রোফোন। প্রতিফলিত তরঙ্গ বা ঘনত্ব পরিবর্তনের কারণে ফিরে আসা তরঙ্গ রূপান্তরকে এসে রেকর্ড হয়। প্রেরিত ও প্রাপ্ত সংকেতের মধ্যকার সময় ব্যবধান থেকে প্রতিফলন উৎসের দূরত্ব নির্ণয় করা যায়। আর প্রাপ্ত সংকেতের তীব্রতা থেকে প্রতিফলনের শাব্দিক প্রতিবন্ধকতা এবং আকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।<ref name="Wiki_sono"/> যেখানে ডপলার শব্দোত্তর চিত্রায়ন ব্যবহার করা হয়, সেখানে প্রেরিত ও প্রাপ্ত সংকেতের কম্পাঙ্ক পরিবর্তন থেকে প্রতিফলক উৎসের গতি নির্ধারণ করা যায়।
আধুনিক শব্দোত্তর চিত্রায়নে ছোট ছোট অনেক রূপান্তরকের সমষ্টি ব্যবহার করা হয়, যেগুলোর প্রতিটি আলাদাভাবে ইলেকট্রনিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় [[w:বিমফর্মিং|বিমফর্মিং]] নামের একটি কৌশল ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি রূপান্তরকের তরঙ্গের ধাপের সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে নির্গত রশ্মির দিক ও ফোকাস গভীরতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।<ref name="Cobbold_ia"/> একটি দ্বিমাত্রিক শব্দোত্তর চিত্র তৈরি করতে হলে, রশ্মির কেন্দ্রে অবস্থান একটি অঞ্চলের মধ্যে ধীরে ধীরে সরানো হয় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গগুলো রেকর্ড করে সেই নির্দিষ্ট অবস্থানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এই সাধারণ প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন যন্ত্রে ভিন্নভাবে সম্পন্ন হয়। নিচে একটি দ্বি-মাত্রিক শব্দোত্তর চিত্র দেখানো হয়েছে। যা ফোকাস অঞ্চল সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে।
<br>
[[Image:CRL Crown rump length 12 weeks ecografia Dr. Wolfgang Moroder.jpg|thumb|center|420px|চিত্র ১: দ্বি-মাত্রিক গর্ভকালীন শব্দোত্তর তরঙ্গ চিত্র।]]
== রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসামূলক প্রয়োগ ==
উচ্চ তীব্রতাসম্পন্ন কেন্দ্রীভূত শব্দোত্তর তরঙ্গ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসামূলক প্রয়োগে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের প্রয়োগে সাধারণত উচ্চ তীব্রতার শব্দ তরঙ্গের অপচয়ের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় সেটাই চিকিৎসার মূল কার্যকারিতা তৈরি করে। কিছু ক্ষেত্রে যেমন [[w:লিথোট্রিপসি|লিথোট্রিপসি]] তে চিকিৎসামূলক প্রভাব শব্দ তরঙ্গের অরৈখিকতার কারণে সৃষ্টি হয়। এতে [[তরঙ্গ বিকৃতি|তরঙ্গ বিকৃতি]] ও [[ঘাত তরঙ্গের গঠন|ঘাত তরঙ্গ]] তৈরি হয়। এই প্রভাব সম্পর্কে [[#পরবর্তী এক খণ্ডে|পরবর্তী এক খণ্ডে]] আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
নিচে শব্দোত্তর তরঙ্গের কয়েকটি চিকিৎসামূলক প্রয়োগের আংশিক তালিকা দেওয়া হলো:
* [[w:ডেন্টাল হাইজেনিস্ট|ডেন্টাল হাইজেনিস্ট]] পেশায় দাঁত পরিষ্কারের জন্য শব্দোত্তর তরঙ্গ কখনো কখনো ব্যবহার করা হয়।
* কেন্দ্রীভূত শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানে উচ্চ তাপ উৎপন্ন করে সিস্ট ও টিউমার (সৌম্য বা মারাত্মক) চিকিৎসা করা হয়। একে ফোকাসড আল্ট্রাসাউন্ড সার্জারি বা উচ্চ তীব্রতা কেন্দ্রিক শব্দোত্তর বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত চিকিৎসা-নির্ণয়ের শব্দোত্তর তরঙ্গের চেয়ে কম কম্পাঙ্ক (২৫০ কিলোহার্টজ থেকে ২০০০ কিলোহার্টজ পর্যন্ত) ব্যবহার করা হলেও, এর শক্তি অনেক বেশি হয়।
* লিথোট্রিপসি ব্যবহার করে কিডনির পাথর ভাঙার জন্য কেন্দ্রীভূত শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়।
* [[w:ফ্যাকোইমালসিফিকেশন|ফ্যাকোইমালসিফিকেশন]] পদ্ধতিতে ছানির চিকিৎসায় শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়।
* [[W:নিম্ন-তীব্রতার শব্দোত্তর তরঙ্গ|নিম্ন-তীব্রতার শব্দোত্তর তরঙ্গের]] আরও কিছু শারীরবৃত্তীয় প্রভাব সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে, যেমন হাড়ের বৃদ্ধি উদ্দীপিত করা এবং ওষুধ পরিবহনের জন্য [[w:রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক|রক্ত-মস্তিষ্ক প্রতিবন্ধক]] অতিক্রমের সম্ভাবনা।
== শব্দোত্তর রশ্মির শব্দতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ==
প্রাথমিকভাবে ধরে নেওয়া যায় শব্দোত্তর রশ্মি একটি অনন্ত বাফলে একটি সমতল বৃত্তাকার পিস্টন দোলনের ফলে উৎপন্ন হয়। বাস্তবে এ ধরনের ব্যবস্থায় শব্দ রশ্মির অনেক বেশি বিস্তার পার্শ্ব-লোবের তীব্রতা এবং নির্দিষ্ট কেন্দ্রে দৈর্ঘ্য নির্ধারণের অক্ষমতা দেখা দেয়। বর্তমান চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিমফর্মিং নামে পরিচিত একটি সাধারণ পদ্ধতির অংশ হিসেবে ফেজড অ্যারে ব্যবহার করা হয়। যদিও সমতল রূপান্তরকগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে তবে এগুলোর সহজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে গঠিত যে কোনো রশ্মির মৌলিক বৈশিষ্ট্য ও উন্নত প্রযুক্তির নকশার চ্যালেঞ্জ বোঝানো যায়।
সরল বৃত্তাকার রূপান্তরকের জন্য ব্যবহৃত বিশ্লেষণ পদ্ধতিটি পিয়ার্স,<ref name="Pierce"/> কিনসলার <ref name="Kinsler"/> এবং চিকি<ref name="Cheeke"/> এর মতো বহু শব্দতত্ত্ব গ্রন্থে দেখা যায়। এখানে প্রথমে মুক্ত বায়ুতে কম্পমান একটি ছোট গোলকীয় উৎসের হারমোনিক গতি থেকে নির্গত শব্দ বিবেচনা করে শব্দ ক্ষেত্র নির্ধারণ করা হয়। সেই উৎস থেকে প্রাপ্ত শব্দ চাপ ক্ষেত্র নিম্নরূপ:
<br>
:<math>
\boldsymbol{P} = i\left(\frac{\rho_o c U_o k a^2}{r} \right )e^{-ikr}
</math>
:<math>
I(r) = \frac{1}{2}\rho_o c_o U_o^2 \left(\frac{a}{r} \right )^2 \left(ka \right )^2
</math>
এখানে '''''P'''''(''r'') হলো কেন্দ্র থেকে দূরত্ব ''r'' এ হারমোনিক চাপের পরিমাণ ''ρ<sub>o</sub>'' হলো তরলের ঘনত্ব, ''c<sub>o</sub>'' তরলের শব্দের বেগ, ''U<sub>o</sub>'' হলো গোলক উৎসের সর্বাধিক বেগ, ''a'' হলো গোলকের ব্যাসার্ধ, এবং ''k'' = 2''πf''/''c<sub>o</sub>'' হলো তরঙ্গ সংখ্যা। উপরের সমীকরণগুলোতে ''i'' = -1<sup>1/2</sup> যা হারমোনিক চাপ চালকের প্রশস্ততা ও ধাপ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে।
এই ফলাফলটি রূপান্তরককে একটি বৃত্তাকার তাপ বিকিরক হিসেবে প্রয়োগ করতে হলে প্রতিটি অতি ক্ষুদ্র অংশকে একটি আলাদা গোলীয় উৎস হিসেবে ধরতে হবে। এর ফলে গঠিত শব্দ ক্ষেত্র হলো প্রতিটি গোলীয় উৎসের ইন্টিগ্রাল যোগফল। সাধারণভাবে এ ধরনের সমীকরণ বিশ্লেষণমূলকভাবে সমাধান করা যায় না। তবে যখন r >> a (যেখানে ''a'' হলো এখন রূপান্তরকের ব্যাসার্ধ) ধরা হয় তখন একটি সরল ফলাফল পাওয়া যায়। পুরো ডেরিভেশন এখানে না দিয়ে (বিশদ দেখতে কিনসলার <ref name="Kinsler"/> অথবা চিকি <ref name="Cheeke"/> দেখুন) শব্দ ক্ষেত্র এবং শব্দ তীব্রতার সমীকরণগুলো হলো:
<br>
:<math>
\boldsymbol{P}(r, \theta) = i \left( \tfrac{1}{2}\rho_o c_o U_o \frac{a}{r}ka \right ) H(\theta)e^{-ikr},
</math>
:<math>
H(\theta) = \frac{2J_1(ka\sin\theta)}{ka \sin \theta},
</math>
:<math>
I(r,\theta) = \frac{|\boldsymbol{P}(r)|^2}{2\rho_oc_o},
</math>
এখানে ''H''(''θ'') হলো নির্দেশিকা ফাংশন ''J<sub>1</sub>'' হলো [http://en.wikipedia.org/wiki/Bessel_function প্রথম প্রকারের বেসেল ফাংশন] এবং ''I''(''r'') হলো W/m<sup>2</sup> এককে শব্দ তীব্রতা। বাস্তবিক অর্থে নির্দেশিকা ফাংশনটি রশ্মির সেই সকল কোণে চাপের পরিমাণ দেখায় যা রূপান্তরকের অক্ষ বরাবর নয়। বেশেল ফাংশনের মূল যেসব কোণে চাপ শূন্য করে সেগুলো পার্শ্ব-লোব নামে পরিচিত। এই কোণগুলোর মধ্যবর্তী অঞ্চলে থাকে পার্শ্ব-লোব আর অক্ষ বরাবর যে অংশ থাকে তা মূল লোব নামে পরিচিত। বাস্তবে এই লোবগুলো সৃষ্টি হয় রূপান্তরকের বিভিন্ন অংশ থেকে নির্গত তরঙ্গগুলোর ধাপীয় মিথস্ক্রিয়ার ফলে। এটি কিছুটা সরল কম্পাঙ্ক তরঙ্গের চাপ শূন্যচাপ অবস্থার সঙ্গে তুলনীয়।
উদাহরণস্বরূপ ১ মেগাহার্টজ শব্দোত্তর রশ্মি জলীয় মাধ্যমে ১ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের রূপান্তরক দিয়ে প্রেরণ করা হলে নির্দেশিকা ফাংশন এবং শব্দ তীব্রতা কীভাবে পার্শ্ব-লোব তৈরি করে তা দেখা যায়। নিচের চিত্র ২ এ নির্দেশিকা ফাংশন দেখানো হয়েছে এবং চিত্র ৩ এ রূপান্তরকের পৃষ্ঠে তীব্রতার তুলনায় শব্দ তীব্রতা চিত্রায়িত হয়েছে।
<br>
[[Image:Beam_Function_1MHz.png|thumb|center|520px| চিত্র ২: জলীয় মাধ্যমে ১ মেগাহার্টজ শব্দোত্তর তরঙ্গ নির্গতকারী ১ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের রূপান্তরকের জন্য রশ্মি ফাংশন।]]
[[Image:1MHz_Ultrasound_Intensity.png|thumb|center|520px| চিত্র ৩: জলীয় মাধ্যমে ১ মেগাহার্টজ শব্দোত্তর তরঙ্গ নির্গতকারী ১ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের রূপান্তরকের শব্দ তীব্রতার স্বাভাবিকৃত ক্ষেত্র।]]
চিকিৎসা-সংক্রান্ত আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাইড লোব একটি অপ্রত্যাশিত প্রভাব হিসেবে বিবেচিত হয়। ডায়াগনস্টিক ইমেজিংয়ে সাইড লোব থেকে প্রতিফলিত তরঙ্গগুলো প্রধান বিম থেকে প্রতিফলনের মতো ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হতে পারে। এর ফলে ইমেজের গুণমান কমে যায়। চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাজে সাইড লোব এমন এলাকায় শক্তি ছড়িয়ে দেয় যেখানে প্রভাব ফেলার উদ্দেশ্য থাকে না। এই সমস্যাগুলো কমানোর জন্য আল্ট্রাসাউন্ড যন্ত্রে [http://en.wikipedia.org/wiki/Beamforming বিমফর্মিং] তত্ত্বের ভিত্তিতে রূপান্তরক ডিজাইন করা হয়। যা সাধারণ নলাকার রূপান্তরকের তুলনায় বিশ্লেষণকে অনেক জটিল করে তোলে। সাইড লোব কমানোর একটি কৌশল হলো একটি নির্দিষ্ট গভীরতায় প্রধান বিমকে কেন্দ্রীভূত করতে ফেজড অ্যারে ব্যবহার করা। এর ফলে সাইড লোবার আপেক্ষিক তীব্রতা হ্রাস পায়। আরেকটি কৌশল শব্দবিজ্ঞানের প্রতিধ্বনি, রূপান্তরকের কিনারায় অপেক্ষাকৃত কম তীব্রতার তরঙ্গ প্রেরণ করে সাইড লোব কমায়। যেমনটি পরবর্তী অংশে আলোচনা করা হবে সাইড লোব কমানো এবং ফোকাস বৃদ্ধি করার জন্য নতুন একটি কৌশল হলো আল্ট্রাসাউন্ড বিমে ইচ্ছাকৃতভাবে অরৈখিক শব্দ প্রভাবের বিবেচনা।<ref name="Cobbold"/><ref name="Duck"/>
== জীব চিকিৎসাবিষয়ে শব্দোত্তর তরঙ্গে অরৈখিক শব্দবিজ্ঞান ==
অনেক ক্ষেত্রে শব্দতত্ত্ব প্রয়োগে তরঙ্গের রৈখিক সম্প্রসারণের ধারণা যথেষ্ট হয়ে থাকে। কিন্তু জীবচিকিৎসাবিষয়ক আল্ট্রাসাউন্ডে শব্দ তরঙ্গের সম্প্রসারণের সময় প্রায়শই একটি ক্রমাগত বিকৃতির সৃষ্টি হয় যা অরৈখিক এবং সীমিত মাত্রার প্রভাবে ঘটে। ডায়াগনস্টিক আল্ট্রাসাউন্ডে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অরৈখিক প্রভাব হলো তরঙ্গে হারমোনিক তৈরি হওয়া। এই অংশের প্রারম্ভিক প্রস্তুতি হিসেবে [[অরৈখিকতার শব্দ প্যারামিটার|অরৈখিক শব্দ প্যারামিটার]] এবং [[হারমোনিক শব্দ উৎপত্তি|হারমোনিক শব্দ উৎপত্তি]] সম্পর্কে পুনরালোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
জীব চিকিৎসাবিষয়ক শব্দোত্তর তরঙ্গে প্রাসঙ্গিক অরৈখিকতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল। ফলে এদের প্রভাব ধীরে ধীরে দূরত্বের সঙ্গে সঙ্গে জমা হতে থাকে। উল্লেখযোগ্য হারমোনিক তৈরি হওয়ার জন্য চারটি শর্ত পূরণ হওয়া প্রয়োজন:
*প্রচুর পরিমাণে চাপ এবং বেগের তীব্রতা থাকা। জীবচিকিৎসাবিষয়ক প্রায় সব প্রয়োগেই এই শর্ত পূরণ হয়।<ref name="Duck_2010"/>
*পর্যাপ্ত দূরত্ব পর্যন্ত সম্প্রসারণ যেখানে তরঙ্গ প্রায় সমতল থাকে। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ব্যবহৃত নির্দেশিত বিমের ক্ষেত্রে, এই শর্ত সাধারণত রেইলি দূরত্ব ''x'' = 1/2 ''ka<sup>2</sup>'' এর মধ্যে মূল লোবের জন্য প্রযোজ্য।<ref name="Hamilton"/> হারমোনিক শব্দ উৎপত্তি প্রকৃতপক্ষে তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সংখ্যার সমানুপাতিক, পরম দূরত্বের নয়। উদাহরণস্বরূপ ১০ MHz কম্পাঙ্কর তরঙ্গ ১০ সেন্টিমিটার গভীরতা পর্যন্ত পৌঁছাতে ৫০০ তরঙ্গদৈর্ঘ্য অতিক্রম করে।
*[[অরৈখিক প্যারামিটার|অরৈখিক প্যারামিটারে]] B/A এর পর্যাপ্ত মান থাকা। একই শব্দ তীব্রতার জন্য যে পদার্থের B/A মান বেশি তা দ্রুত হারমোনিক তৈরি করে। জলে B/A মান বায়ুর চেয়ে দশগুণ বেশি এবং কিছু জীবতন্তু টিস্যুতে এই মান জলের দ্বিগুণ পর্যন্ত হতে পারে।
*কম শব্দ শোষণ, অনেক জীবতন্তু টিস্যুতে যেখানে B/A এর মান বেশি সেখানে শব্দ শোষণও বেশি হয়ে থাকে। কারণ উচ্চ কম্পাঙ্কতে তরঙ্গ দ্রুত শোষিত হয়। ফলে তৈরি হওয়া হারমোনিক মূল কম্পাঙ্কর তুলনায় সহজেই শোষিত হয়। এই প্রভাবের ফলে জীবতন্তু টিস্যুতে B/A এর প্রভাব কমে যায়।
এই শর্তগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় অনেক ক্ষেত্রে জীব চিকিৎসাবিষয়ক আল্ট্রাসাউন্ডে উল্লেখযোগ্য হারমোনিক তৈরি হয়। এই হারমোনিক তৈরি ব্যবহার করে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ গড়ে উঠছে:
*শব্দোত্তর তরঙ্গে রেকর্ড করা সংকেতে হারমোনিক উপাদান ব্যবহার। কারণ শব্দ তীব্রতা এবং সম্প্রসারণের দূরত্ব মূল লোবেই সবচেয়ে বেশি তাই হারমোনিক মূলত মূল লোবেই বেশি তৈরি হয় এবং সাইড লোবগুলোতে কম হয়। ফলে দ্বিতীয় হারমোনিক দ্বারা তৈরি বিমের দিকনির্দেশনা ক্ষমতা মূল কম্পাঙ্কর বিমের চেয়ে বেশি হয়। এতে ইমেজের মান উন্নত করা সম্ভব হয়।<ref name="Duck"/>
*টিস্যুর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে B/A প্যারামিটার ব্যবহার করে হারমোনিক প্রোফাইল বিশ্লেষণ। [[অরৈখিকতার প্যারামিটার|অরৈখিক প্যারামিটার]] অনুযায়ী একই শব্দ প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন টিস্যুর B/A মান ভিন্ন হয়। এর ফলে আল্ট্রাসাউন্ড তরঙ্গের হারমোনিক উপাদান টিস্যুর B/A মানের ভিত্তিতে চিত্র তৈরি করতে পারে। এই ধারণার ব্যবহারিক প্রয়োগ এখনো উন্নয়ন পর্যায়ে আছে, কারণ বর্তমান ইমেজিং প্রযুক্তি এখনো এই সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারেনি।<ref name="Duck_2010"/>
== বহিঃসংযোগ ==
* [http://www.piezotechnologies.com/Resources/White-Papers.aspx মেডিকেল আল্ট্রাসনিক রূপান্তরক]
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist|refs=
<ref name = "Pierce" >Pierce, A. D. 1989. Radiation from Sources Near and on Solid Surfaces. In Acoustics : An Introduction to its Physical Principles and Applications. Woodbury, N.Y., Acoustical Society of America.</ref>
<ref name = "Pierce_sd" >Pierce, A. D. 1989. Scattering and Diffraction. In Acoustics : An Introduction to its Physical Principles and Applications. Woodbury, N.Y., Acoustical Society of America.</ref>
<ref name="Kinsler">Kinsler, L. E., Frey, A. R., Coppens, A. B., Sanders, J. V. 2000.Radiation and Reception of Acoustic Waves. In Fundamentals of Acoustics. New York, Wiley.</ref>
<ref name="Kinsler_rt">Kinsler, L. E., Frey, A. R., Coppens, A. B., Sanders, J. V. 2000. Reflection and Transmission. In Fundamentals of Acoustics. New York, Wiley.</ref>
<ref name="Cheeke">Cheeke, J. D. N. 2002. Finite Beams, Radiation, Diffraction, and Scattering. In Fundamentals and Applications of Ultrasonic Waves. Boca Raton, CRC Press.</ref>
<ref name="Cobbold">Cobbold, R. S. C. 2007. Foundations of Biomedical Ultrasound. Nonlinear Ultrasonics. Oxford University Press.</ref>
<ref name="Cobbold_ia">Cobbold, R. S. C. 2007. Ultrasound Imaging Arrays. In Foundations of Biomedical Ultrasound. Nonlinear Ultrasonics. Oxford University Press.</ref>
<ref name="Cobbold_su">Cobbold, R. S. C. 2007. Scattering of Ultrasound. In Foundations of Biomedical Ultrasound. Nonlinear Ultrasonics. Oxford University Press.</ref>
<ref name ="Duck">Duck, F. A. 2002. "Nonlinear Acoustics in Diagnostic Ultrasound." Ultrasound in Medicine & Biology 28(1).</ref>
<ref name ="Wiki_sono">Wikipedia, 2010. "Medical Ultrasonography”</ref>
<ref name="Kremkau">Kremkau, F. W. 2002. Diagnostic Ultrasound : Principles and Instruments. Philadelphia, W.B. Saunders</ref>
<ref name="Hamilton">Hamilton, M. F., Blackstock, D. T. 2008. Sound Beams. In Nonlinear Acoustics. Melville, NY, Acoustical Society of America.</ref>
<ref name="Duck_2010">Duck, F. 2010. Tissue non-linearity. Proceedings of the Institution of Mechanical Engineers, Part H: Journal of Engineering in Medicine 224(2).</ref>
}}
kn9wv522lsr1on8pp4ot8ll430xgplr
প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/নেস্টেড ইফ দেন এলস
0
24844
85757
84099
2025-07-06T21:07:26Z
Ishtiak Abdullah
9574
বানান সংশোধন
85757
wikitext
text/x-wiki
==সংক্ষিপ্ত বিবরণ==
কম্পিউটার প্রোগ্রামে কখনো কখনো [[প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/শর্তাধীন অপারেটর|শর্তাধীন অপারেটর]] <code>if-else</code>-এর কাঠামোর ভেতরে আরও একটি <code>if-else</code> কাঠামো থাকতে পারে। এইরকম কাঠামো কম্পিউটার প্রোগ্রামে ব্যাবহার মাধ্যমে একাধিক শর্ত সমৃদ্ধ কোন নির্দেশনা সহজেই কোডের আকারে লেখা যায়। এভাবে গঠিত <code>if-else</code> কাঠামোকে '''নেস্টেড''' বা '''স্তরবদ্ধ''' গঠন কাঠামো বলা হয়। <code>if-else</code>-এর ক্ষেত্রে এই বিশেষ স্তরবদ্ধ কাঠামোকে বলা হয় '''নেস্টেড ইফ দেন এলস''' যার ব্যাবহারের ফলে প্রোগ্রামে শর্তাধীন অপারেটরের ব্যাবহার আরও সহজ করে তোলে।
==আলোচনা==
আমরা প্রথমে কম্পিউটার প্রোগ্রামে ব্যাবহৃত ''নেস্টেড কন্ট্রোল স্ট্রাকচার'' বা ''স্তরযুক্ত গঠন কাঠামো'' -এর ধারণা পরিচয় করিয়ে দেব। কম্পিউটার প্রোগ্রামে, একটি শর্তাধীন অপারেটরের ভিতরে আরেকটি শর্তাধীন অপারেটরের অবস্থান থাকতে পারে। যেমন, নিচের কোডটি লক্ষ্য করুন:
if expression
true action
else
false action
উপরে কম্পিউটার প্রোগ্রামে ব্যাবহৃত ''নেস্টেড'' শর্তাধীন অপারেটরের প্রাথমিক গঠন কাঠামো দেখানো হয়েছে। এই গঠন কাঠামো অনুযায়ী একটি ''নেস্টেড ইফ দেন এলস'' -এর উদাহরন হবে,
if age is less than 18
you can't vote
if age is less than 16
you can't drive
else
you can drive
else
you can vote
if age is less than 21
you can't drink
else
you can drink
উপরের প্রোগ্রামে একটি শর্তাধীন অপারেটর <code>if-else</code> ব্যাবহার হয়েছে। <code>if-else</code> অপারেটরের <code>if</code> এবং <code>else</code> -এই দুই অংশের ভেতরেই আলাদা আলাদা ভাবে একটি <code>if-else</code> কাঠামোর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এইভাবেই একটি <code>if-else</code> অপারেটরের দুটি বিভাগ (<code>if</code> এবং <code>else</code>) -এর ভেতরে অপর <code>if-else</code> গঠন কাঠামোর উপস্থিতিকেই ''নেস্টেড'' কাঠামো হিসাবে অভিহিত করা হয়।
এছাড়াও <code>while</code> লুপের ভিতরেও <code>if-then-else</code> -এর ব্যাবহার সম্ভব। অর্থাৎ, ''নেস্টিং'' -এর ধারণার মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন ধরণের শর্তাধীন অপারেটর একযোগে যুক্ত করে বিভিন্ন কোডিং নির্দেশনা পালনে ব্যাবহার করতে পারি।
===একাধিক বিকল্প নির্বাচন (মাল্টিওয়ে সিলেকশন)===
কম্পিউটার প্রোগ্রামে শর্তাধীন অপারেটর <code>if-else</code> -এর ব্যাবহারের মাধ্যমে আমরা কেবলমাত্র দুইটি বিকল্পের মধ্যে যেকোন একটিকে নির্বাচিত করতে পারি। কিন্তু কিছু কিছু কম্পিউটার প্রোগ্রামে আমাদের দুইয়ের অধিক বিকল্পের মধ্যে যেকোন একটিকে নির্বাচিত করতে হয়। যেমন নিচের কম্পিউটার প্রোগ্রামের উদাহরনটি লক্ষ্য করুন যেখানে চারটি বিকল্পের মধ্যে যেকোন একটিকে নির্বাচন করতে হবে।
if age equal to 18
you can now vote
else
if age equal to 39
you are middle-aged
else
if age equal to 65
you can consider retirement
else
your age is unimportant
উপরের প্রোগ্রামের ''আউটপুট'' হিসাবে <code>age</code> নামক চলক(ভেরিয়েবল) -এর মানের উপর ভিত্তি করে একটি উপযুক্ত ফলাফল পাওয়া যায়। উপরে নেস্টেড <code>if-else</code> -এর শেষের অংশে আমরা <code>default</code> নামক এক বিভাগের উপস্থিতি লক্ষ্য করি। যদি <code>age</code> -এর মান ১৮, ৩৯ বা ৬৫ না হয় তাহলে <code>default</code> বিভাগে লিখিত বার্তাটি প্রোগ্রামের আউটপুটে প্রদর্শিত হবে। উপরিউক্ত কোডকে সহজভাবে নিচের মতো করে লেখা হয়:
if age equal to 18
you can now vote
else if age equal to 39
you are middle-aged
else if age equal to 65
you can consider retirement
else
your age is unimportant
== মূল পরিভাষা ==
;একাধিক বিকল্প নির্বাচন (মাল্টিওয়ে সিলেকশন)
:শর্তাধীন অপারেটরের ক্ষেত্রে দুইয়ের অধিক বিকল্প নির্বাচনের জন্য ব্যাবহার হয়।
;নেস্টেড কন্ট্রোল স্ট্রাকচার (স্তরযুক্ত গঠন কাঠামো)
:কম্পিউটার প্রোগ্রামে কোন ''অপারেটর'' <ref>[[Wikipedia: Operator (computer programming)]]</ref>, বিশেষ করে শর্তাধীন অপারেটরের ক্ষেত্রে এই কথাটি বেশিরভাগ ব্যাবহৃত হয়। একটি অপারেটরের গঠন কাঠামোর মধ্যে অপর একটি অপারেটরের গঠন কাঠামোর উপস্থিতি থাকলে সেটিকে ''নেস্টেড কন্ট্রোল স্ট্রাকচার'' বা ''স্তরযুক্ত গঠন কাঠামো'' বলা হয়।
==তথ্যসূত্র==
* [https://cnx.org/contents/MDgA8wfz@22.2:YzfkjC2r@17 cnx.org: Programming Fundamentals – A Modular Structured Approach using C++]
{{reflist}}
{{BookCat}}
q08m2kpdbts2vtshyoi1cdlltmv4i2n
প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণা/সিকোয়েন্স অপারেটর
0
24953
85732
78242
2025-07-06T19:34:22Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* সংজ্ঞা */
85732
wikitext
text/x-wiki
C++ প্রোগ্রামিং ভাষার মধ্যে সিকোয়েন্স অপারেটরের বেশ কয়েকটি ব্যবহার বর্ণনা করা হয়েছে।
== সাধারণ আলোচনা ==
সিকোয়েন্স (অথবা কমা) অপারেটরটি আইটেমগুলিকে আলাদা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর বেশ কয়েকটি ব্যবহার রয়েছে, যার মধ্যে চারটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং তারপর দেখানো হয়েছে:
# ভেরিয়েবল বা ধ্রুবক ঘোষণা করার সময় শনাক্তকারীর নাম পৃথক করা
# একটি ফাংশনে পাস করা বেশ কয়েকটি প্যারামিটার পৃথক করা
# একটি for লুপে বেশ কয়েকটি প্রাথমিককরণ আইটেম পৃথক করা বা আইটেম আপডেট করা
# একটি অ্যারের প্রাথমিককরণের সময় পৃথক মান
এই প্রথম উদাহরণটি প্রায়শই পাঠ্যপুস্তকে দেখা যায়, তবে ভেরিয়েবল ঘোষণা করার এই পদ্ধতিটি পছন্দনীয় নয়। শনাক্তকারীর নামগুলি দ্রুত পড়া কঠিন।
<syntaxhighlight lang="c++">
int pig, dog, cat, rat;
</syntaxhighlight>
চলক বা ধ্রুবক ঘোষণার জন্য নিম্নলিখিত উল্লম্ব পদ্ধতিটি পছন্দনীয়।
=== উদাহরণ ১: চলক নির্ধারণের জন্য পছন্দের উল্লম্ব পদ্ধতি ===
<syntaxhighlight lang="c++">
int pig;
int dog;
int cat;
int rat;
</syntaxhighlight>
ডেটা টাইপ এবং আইডেন্টিফায়ার নাম (যা প্যারামিটার নামে পরিচিত) একে অপরের থেকে পৃথক করা হয়েছে। এই উদাহরণটি একটি ফাংশন প্রোটোটাইপ।
<syntaxhighlight lang="c++">
double area_trapezoid(double base, double height, double top);
</syntaxhighlight>
একটি for লুপের সিনট্যাক্সে, তিনটি অংশকে একটি সেমি-কোলন দ্বারা পৃথক করা হয়। প্রথমটি হল আরম্ভকরণ এরিয়া যেখানে একাধিক আরম্ভকরণ থাকতে পারে। শেষটি হল আপডেট এরিয়া যেখানে একাধিক আপডেট থাকতে পারে। একাধিক আরম্ভকরণ বা আপডেট তাদের আলাদা করার জন্য কমা ব্যবহার করে। এই উদাহরণটি a for লুপের শুধুমাত্র প্রথম লাইন।
<syntaxhighlight lang="c++">
for(x = 1, y = 5; x < 15; x++, y++)
</syntaxhighlight>
চলক বয়স হল পূর্ণসংখ্যার একটি অ্যারে। প্রাথমিক মানগুলি ব্লক মার্কার ব্যবহার করে বরাদ্দ করা হয় এবং মানগুলি একটি কমা ব্যবহার করে একে অপরের থেকে পৃথক করা হয়।
<syntaxhighlight lang="c++">
int ages[] = {2,4,6,29,32};
</syntaxhighlight>
== সংজ্ঞা ==
; ক্রম
: একটি অপারেটর যা একটি আইটেমের একাধিক ঘটনা পৃথক করতে ব্যবহৃত হয়।
{{subpage navbar}}
{{BookCat}}
p0bkmne3bwp5tt53252995cl4pnhg7a
ব্যবহারকারী:Md Mobashir Hossain/খেলাঘর
2
25114
85767
85581
2025-07-07T04:56:18Z
Md Mobashir Hossain
10853
85767
wikitext
text/x-wiki
==১০০০+ শব্দ ==
{| class="wikitable"
|+
! পৃষ্ঠা !! শব্দ সংখ্যা
|-
| [[প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শব্দীয় গিটার]] || ২২৮৭
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/গতিবিদ্যার মৌলিক নীতিমালা]] || ১৯৩৭
|-
| [[মানব শারীরতত্ত্ব/রক্ত শারীরতত্ত্ব]] || ৩৫৯৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/সম্ভাব্যতা]] || ৪২৩৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/নিউটনের নিয়মের বিকল্প রূপ]] || ১০৯৫
|-
| [[পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন নির্দেশিকা/শব্দ]] || ১২২৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/আংশিক উৎপন্ন]] || ১৪৩৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ক্যালকুলাস]] || ৪২৩৭
|-
| [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/ব্যবসায়িক যোগাযোগ]] || ১৭৯২
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/প্রভাব ও প্রয়োগ/একটি কোয়ান্টাম বাউন্সিং বল]] || ২১৬৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ফেইনম্যান রুট/শেষে শ্রোডিনগার]] || ১৭৭৪
|-
! মোট || ২৬৪৪৩
|}
'''মনে হয় পারবো!'''
4e5zuq0p1qf9b99tdqtp8mu5j8jnl2x
85768
85767
2025-07-07T04:57:42Z
Md Mobashir Hossain
10853
85768
wikitext
text/x-wiki
{| class="wikitable"
|+
! পৃষ্ঠা !! শব্দ সংখ্যা
|-
| [[প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শব্দীয় গিটার]] || ২২৮৭
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/গতিবিদ্যার মৌলিক নীতিমালা]] || ১৯৩৭
|-
| [[মানব শারীরতত্ত্ব/রক্ত শারীরতত্ত্ব]] || ৩৫৯৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/সম্ভাব্যতা]] || ৪২৩৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/নিউটনের নিয়মের বিকল্প রূপ]] || ১০৯৫
|-
| [[পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন নির্দেশিকা/শব্দ]] || ১২২৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/আংশিক উৎপন্ন]] || ১৪৩৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ক্যালকুলাস]] || ৪২৩৭
|-
| [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/ব্যবসায়িক যোগাযোগ]] || ১৭৯২
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/প্রভাব ও প্রয়োগ/একটি কোয়ান্টাম বাউন্সিং বল]] || ২১৬৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ফেইনম্যান রুট/শেষে শ্রোডিনগার]] || ১৭৭৪
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/অনির্দিষ্ট সমাকলন]] || ৩১১৮
|-
! মোট || ২৯৫৬১
|}
'''মনে হয় পারবো!'''
bzl5geelgdyzybepom309el6n0nl6rr
85771
85768
2025-07-07T05:23:26Z
Md Mobashir Hossain
10853
85771
wikitext
text/x-wiki
{| class="wikitable"
|+
! পৃষ্ঠা !! শব্দ সংখ্যা
|-
| [[প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শব্দীয় গিটার]] || ২২৮৭
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/গতিবিদ্যার মৌলিক নীতিমালা]] || ১৯৩৭
|-
| [[মানব শারীরতত্ত্ব/রক্ত শারীরতত্ত্ব]] || ৩৫৯৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/সম্ভাব্যতা]] || ৪২৩৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/নিউটনের নিয়মের বিকল্প রূপ]] || ১০৯৫
|-
| [[পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন নির্দেশিকা/শব্দ]] || ১২২৮
|-
| [[সাধারণ বলবিজ্ঞান/আংশিক উৎপন্ন]] || ১৪৩৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ক্যালকুলাস]] || ৪২৩৭
|-
| [[পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/ব্যবসায়িক যোগাযোগ]] || ১৭৯২
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/প্রভাব ও প্রয়োগ/একটি কোয়ান্টাম বাউন্সিং বল]] || ২১৬৫
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/ফেইনম্যান রুট/শেষে শ্রোডিনগার]] || ১৭৭৪
|-
| [[কোয়ান্টাম জগৎ/অনির্দিষ্ট সমাকলন]] || ৩১১৮
|-
| [[প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/শব্দীয় লেভিটেশন]] || ৬৫৪১
|-
! মোট || ৩৬০৯৭
|}
'''মনে হয় পারবো!'''
aggrim4zmcj011qux165b8yo7qgjv61
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস/সুপ্রিম কোর্টের মামলাসমূহ
0
25417
85765
85442
2025-07-07T04:20:35Z
SMontaha32
11242
85765
wikitext
text/x-wiki
===মার্কিন সংবিধানিক কাঠামোর পরিচিতি===
যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যা রাজতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্রের বিপরীতে একটি নির্বাচিত ও জনগণের নিকট জবাবদিহিপূর্ণ এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সমিতির মাধ্যমে শাসিত হয়। এই কারণে যুক্তরাষ্ট্র একটি "গণতন্ত্র", অর্থাৎ জনগণ দ্বারা শাসিত একটি দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের এই সমিতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার হিসেবে একগুচ্ছ পূর্বঘোষিত নীতি অনুসারে পরিচালিত হয়। এটি যেকোনো পরিস্থিতিতে সমানভাবে, ধারাবাহিকভাবে ও ন্যায্যভাবে প্রয়োগ করা হয়। এসব নীতি এবং এগুলোর প্রয়োগকেই বলা হয় "আইন"। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র একটি আইনের শাসনভিত্তিক দেশ, অর্থাৎ "আইনের শাসন" আছে এমন দেশ।
কিন্তু কে শাসন করে এই আইনকে? আইনই শাসন করে আইনকে।যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যবস্থায় কিছু আইন অন্যান্য আইনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন বা "দেশের সর্বোচ্চ আইন" হলো"যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান"। এটি একটি আইনসমষ্টি যা অন্যান্য আইন এবং সরকারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্ধারণ করে কী ধরনের আইন প্রণয়ন করা যায় আর সরকার কী করতে পারে। এটি কিছু ধরনের আইন প্রণয়ন নিষিদ্ধ করে এবং সরকারের কিছু কার্যকলাপ স্পষ্টভাবে নিষেধ করে। এটি সরকারের ক্ষমতার উপর মৌলিক সীমা আরোপ করে, এই বলে যে সংবিধানে সরকারকে যেসব ক্ষমতা স্পষ্টভাবে প্রদান (বা সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত) করা হয়নি। সেসব ক্ষমতা সরকারের নেই, সরকার তা প্রয়োগ করতে পারে না পাশাপাশি দাবি করতেও পারে না। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র একটি "সীমিত সরকার"-সম্পন্ন দেশ—এমন কিছু কাজ আছে যা সরকার করতে পারে না, যেমন: কাউকে বিনা কারণে কারাগারে প্রেরণ, একটি ধর্মকে একমাত্র বৈধ ধর্ম ঘোষণা করা, অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ ছাড়াই ঘরে তল্লাশি চালানো, বা কেবল কেউ ভিন্নমত পোষণ করছে বলেই তাকে শাস্তি দেওয়া। পাঠকের বোঝা উচিত, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব কাজ করে না কেবলমাত্র তাদের ইচ্ছার কারণে নয়—বরং কারণ তাদের সেই ক্ষমতা নেই।
তবে কে সংবিধানকে শাসন করে? যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক। তারা চাইলে এটি পরিবর্তন করতে পারে। গত দুই শতকেরও বেশি সময়ে এটি ২৭ বার পরিবর্তিত হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ধীর, কঠিন। বেশিরভাগ মানুষ বিশেষত তুচ্ছ কারণে এমন কিছু পরিবর্তন করতে দ্বিধা বোধ করে, যা দীর্ঘদিন ধরে কার্যকরভাবে চলে আসছে।
===সংবিধানের প্রয়োগ===
সংবিধান নিয়ে কিছু কথা: এটি লেখা হয়েছিল ইন্টারনেট, কম্পিউটার, টেলিভিশন, পারমাণবিক শক্তি, রেডিও, বিমান, মোটরগাড়ি, বিদ্যুৎ এবং বৈদ্যুতিক আলো, ট্রেন বা বাড়ির ভেতরে প্রবাহমান পানির ব্যবস্থা থাকার আগেই—বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৩৭টি রাজ্য যুক্ত হওয়ার আগেই—পৃথিবীতে আর কোনো গণতান্ত্রিক দেশের অস্তিত্বের আগেই—আমাদের দেশে বড় শহর গড়ে ওঠার আগেই—এমনকি শিল্প, কর্পোরেশন, বা আধুনিক জীবনের অন্যান্য সুবিধাগুলোর আগেই। এটি লেখা হয়েছিল মোমবাতির আলোয়, বৈদ্যুতিক আলোয় নয়, এবং এটি ১৩টি রাজ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল ঘোড়সওয়ার বার্তাবাহকদের মাধ্যমে, ওয়েবসাইটে পোস্ট করে নয়। কিন্তু এটি লেখা হয়নি এমন সময়ে যখন অনেক আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বর ছিলেন না, বা যখন মানুষ সমান এবং স্বাধীন হওয়ার অধিকার রাখে—এই ধারণা গড়ে ওঠেনি। অনেকেই সংবিধানকে এমন এক সত্যসমষ্টি হিসেবে দেখেন, যা পরিবর্তনশীল সময়ে নিজেকে সমানভাবে প্রয়োগ করে।
এই কারণে, সংবিধান কখনও কখনও অস্পষ্ট হতে পারে, এবং পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির উপর নির্ভর করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, কিছু ব্যক্তি সংবিধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যাখ্যা করেন; এদের বলা হয় বিচারক; আর সংবিধানের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যাকারীদের বলা হয় বিচারপতি; এদের সংখ্যা নয়জন, এবং তারা মিলে গঠন করেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত—"সুপ্রীম কোর্ট"। যখন কোনো পরিস্থিতিতে সংবিধান অস্পষ্ট হয়ে পড়ে, তখন তার অর্থ কী হবে তা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা নির্ধারণ করেন। এই সিদ্ধান্তগুলো তখন নেওয়া হয় যখন একজন ব্যক্তি দাবি করেন যে অন্য ব্যক্তি যা করছেন (বা করছেন না) তা সংবিধান অনুযায়ী নিষিদ্ধ। এজন্য এসব মামলার নাম হয় "Marbury v. Madison" জাতীয়; মারবারি, একজন ব্যক্তি, ম্যাডিসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, যিনি আরেকজন ব্যক্তি।
যখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বর্তমানের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তখন তারা অতীতের তাদের সিদ্ধান্তগুলোর (যা তারা "নজির" বলেন) দিকে নির্দেশনার জন্য ফিরে তাকান। এটি আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, কারণ আইনকে ধারাবাহিক হতে হয়। তবে কখনও কখনও তারা মনে করেন তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল—অথবা প্রয়োগযোগ্য নয়—এবং তখন তা সংশোধন করেন। কখনও কখনও তারা সেসব সিদ্ধান্তকে বহাল রাখেন বা আরও প্রসারিত করেন। যেভাবেই হোক, এমন অনেক সময় আছে যখন সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পরবর্তী অংশগুলোতে, আমরা সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর নাম করব এবং আলোচনা করব কেন এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল, কী সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, এবং কেন সেই সিদ্ধান্তগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিদ্ধান্তগুলো—যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক সংবিধানের এই ব্যাখ্যাগুলো—যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ গঠন করে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র একটি আইনের শাসনভিত্তিক দেশ।
==প্রাথমিক সাংবিধানিক যুগ (১৭৮৭–১৮৫০)==
কেন্দ্রীয় সংঘ, তার প্রকৃতি, বিচারিক সর্বোচ্চতা, আইনের শাসন, অঙ্গরাজ্যের অধিকার, ফেডারেল ক্ষমতা ও তার সীমা, বিভিন্ন শাখা, অঙ্গরাজ্য এবং জনগণের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন ও বণ্টনের প্রশ্ন, এবং দাসত্বের প্রশ্ন।
===[[w:Marbury v. Madison|মারবুরি বনাম ম্যাডিসন]], ৫ ইউ.এস. ১৩৭ (১৮০৩)===
কার্যালয়ে তাঁর শেষ দিনের আগের দিন, প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস নতুনভাবে তৈরি করা বহু আদালতের জন্য ৪২ জন বিচারক নিয়োগ দেন। তাঁদের একজন ছিলেন উইলিয়াম মারবুরি। সিনেট বিচারকদের অনুমোদন দেয় এবং পররাষ্ট্র সচিব জন মার্শাল তাঁদের নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন, যা প্রত্যেক নিয়োজিত ব্যক্তির জন্য আবশ্যক। তবে যেদিন থমাস জেফারসন শপথ নেন, সেদিন তিনি তাঁর নিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব জেমস ম্যাডিসনকে অনেক বিচারকের নিয়োগপত্র পৌঁছে না দিতে আদেশ দেন—মারবুরি তার মধ্যে ছিলেন। মারবুরি আদালতের মাধ্যমে ম্যাডিসনকে বাধ্য করতে মামলা করেন। তিনি যুক্তি দেন যে ১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন অনুযায়ী, ''ম্যানডামাস রুল'' বা সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশপ্রাপ্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার রয়েছে।
মার্শাল, যিনি ঘটনাক্রমে অ্যাডামসের শেষ দিনে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন, আদালতের সর্বসম্মত রায়ে লেখেন যে কোর্টের মারবুরির মামলায় রায় দেওয়ার এখতিয়ার নেই। মারবুরি যুক্তি দেন যে সংবিধানের ৩য় অনুচ্ছেদ কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতার মৌলিক নিয়ম নির্ধারণ করে এবং কংগ্রেস যে কোনো সময় তা সম্প্রসারিত করতে পারে। মার্শাল একমত হননি। তিনি বলেন, কংগ্রেস যদি আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন করে এমন আইন প্রণয়ন করতে পারে, তবে সংবিধান থাকার অর্থ কী? যদি এইভাবে ৩য় অনুচ্ছেদ পাশ কাটিয়ে আইন প্রণয়ন সম্ভব হয়, তবে কি এমন আইনও তৈরি করা যাবে যার মাধ্যমে আদালত পুরোপুরি সংবিধান অগ্রাহ্য করতে পারে?
তিনি রায় দেন যে বিচার বিভাগীয় আইন সংবিধানের পরিপন্থী, কারণ তা ৩য় অনুচ্ছেদের পরিধি বাড়ায়। এর মাধ্যমে '''বিচারিক পর্যালোচনা''' নামক গুরুত্বপূর্ণ নীতির ঘোষণা করা হয়। এটি হলো: বিচার বিভাগের, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের, ক্ষমতা—যে তারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন বাতিল করতে পারে।
===[[w:Fletcher v. Peck|ফ্লেচার বনাম পেক]], ১০ ইউ.এস. ৮৭ (১৮১০)===
ফ্লেচার বনাম পেক ছিল প্রথম মামলা যেখানে সুপ্রিম কোর্ট একটি অঙ্গরাজ্য আইনের সাংবিধানিক বৈধতা অস্বীকার করে। আমেরিকার পশ্চিমে সম্প্রসারণের সময়, জর্জিয়া রাজ্য ইয়াজু নদী অঞ্চলের ৩.৫ কোটি একর জমি আদিবাসীদের কাছ থেকে দখল করে, যা পরবর্তীতে আলাবামা ও মিসিসিপি রাজ্যে রূপান্তরিত হয়। ১৭৯৫ সালে, জর্জিয়া আইনসভা সেই জমি চারটি ভাগে ভাগ করে চারটি কোম্পানির কাছে মাত্র ৫ লাখ ডলারে বিক্রি করে।
পরে প্রকাশ পায় যে, জমির বিক্রির অনুমোদন দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছিল। জনগণ পরবর্তী নির্বাচনে অধিকাংশ আইনপ্রণেতাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং নতুন আইনসভা সেই আইন বাতিল করে জমির লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা করে।
জন পেক পূর্বে ক্রয়কৃত সেই জমি রবার্ট ফ্লেচারের কাছে বিক্রি করেন। ১৮০৩ সালে ফ্লেচার মামলা করেন, দাবি করে যে পেকের কাছে জমির বৈধ মালিকানা ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট একমত হয় যে আইনসভা পূর্ববর্তী আইনি চুক্তি বাতিল করতে পারে না। প্রধান বিচারপতি মার্শালের রায় অনুযায়ী, বিক্রয়টি একটি বৈধ চুক্তি ছিল, যা সংবিধানের ১ম অনুচ্ছেদ, ১০ম ধারা, ১ম উপধারার অধীনে রক্ষা পায় (এটি "চুক্তি ধারা" নামে পরিচিত)। এটি ছিল প্রথমবার যখন আদালত কোনো অঙ্গরাজ্য আইনকে সংবিধানের পরিপন্থী ঘোষণা করে।
===[[w:Martin v. Hunter's Lessee|মার্টিন বনাম হান্টারের লেসি]], ১৪ ইউ.এস. ৩০৪ (১৮১৬)===
বিপ্লব যুদ্ধ চলাকালীন ভার্জিনিয়া রাজ্য অনুগত ব্রিটিশদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে আইন প্রণয়ন করে। ১৭৮৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ফেডারেল সরকার অঙ্গরাজ্যগুলোকে সেই সম্পত্তি ফেরত দিতে বলবে। একটি মামলায় অনুগত ডেনি মার্টিন ভার্জিনিয়ার আদালতে মামলা করেন, এই যুক্তিতে যে সেই চুক্তি অনুযায়ী তার সম্পত্তি ফেরত দেওয়া উচিত।
ভার্জিনিয়া সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তি খারিজ করে। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে আপিল হয়, যেটি জানায় যে আন্তর্জাতিক চুক্তিটি প্রযোজ্য এবং মামলাটি আবার রাজ্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু রাজ্য আদালত বলে যে সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার নেই। আবার সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় বাতিল করে জানায় যে, মামলাটি ফেডারেল আইনের অধীন এবং ফেডারেল আদালতের সর্বোচ্চ ক্ষমতা রয়েছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট সকল রাজ্য আদালতের ওপর তার সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব ঘোষণা করে।
===[[w:McCulloch v. Maryland|ম্যাককালক বনাম মেরিল্যান্ড]], ১৭ ইউ.এস. ৩১৬ (১৮১৯)===
এই মামলা রাজ্য অধিকার বনাম ফেডারেল সরকারের ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ছিল। ১৮১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুনঃস্থাপন করার পর অনেক রাজ্য এর বিরোধিতা করে, কারণ ব্যাংক তাদের থেকে ঋণ আদায় করত। প্রতিবাদস্বরূপ, মেরিল্যান্ড ব্যাংকের ওপর একটি কর আরোপ করে, যা ব্যাংক দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাংকের বাল্টিমোর শাখার প্রধান জেমস ম্যাককালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
আদালতের সর্বসম্মত মতামতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমত, কংগ্রেস ব্যাংক গঠন করতে পারে, কারণ এটি সংবিধানের "ইম্প্লায়েড পাওয়ার" বা অনুমানিত ক্ষমতার অধীনে পড়ে। দ্বিতীয়ত, মেরিল্যান্ডের কর অসাংবিধানিক, কারণ এটি সর্বোচ্চতা ধারা লঙ্ঘন করে। এই ধারা অনুযায়ী, রাজ্য কখনো ফেডারেল সরকারকে বাধা দিতে পারে না। কর আরোপ করলে ব্যাংক কার্যত ধ্বংস হতে পারে, যা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডারেল সরকারের প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করত।
===[[w:Dartmouth College v. Woodward|ডার্টমাউথ কলেজ বনাম উডওয়ার্ড]], ১৭ ইউ.এস. ৫১৮ (১৮১৯)===
ডার্টমাউথ কলেজ মামলায় ''প্যাক্টা সান্ট সার্ভান্ডা'' বা "চুক্তি মান্য করা আবশ্যক" এই নীতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। ১৭৬৯ সালে রাজা তৃতীয় জর্জ কর্তৃক একটি উপনিবেশিক সনদের মাধ্যমে ডার্টমাউথ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৫ সালে নিউ হ্যাম্পশায়ার আইনসভা কলেজটির সনদ পরিবর্তন করতে চায় যাতে গভর্নর কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ ও ট্রাস্টি বোর্ড নিয়োগ করতে পারেন এবং একটি রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান বোর্ড গঠন করা যায়—অর্থাৎ কলেজটিকে বেসরকারি থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বানানো। আদালত রায় দেয় যে পুরনো সনদ বৈধ, কারণ এটি একটি চুক্তি এবং সংবিধানের চুক্তি ধারা অনুযায়ী সুরক্ষিত।
===[[w:Gibbons v. Ogden|গিবন্স বনাম ওগডেন]], ২২ ইউ.এস. ১ (১৮২৪)===
গিবন্স বনাম ওগডেন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে আন্তঃরাজ্য বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কংগ্রেসের কাছে রয়েছে, যা সংবিধানের বাণিজ্য ধারায় প্রদান করা হয়েছে। মামলাটি তৎকালীন সময়ের কিছু প্রসিদ্ধ আইনজীবী পরিচালনা করেন: ওগডেনের পক্ষে ছিলেন টমাস অ্যাডিস এমেট ও থমাস জে. ওকলি এবং গিবন্সের পক্ষে ছিলেন উইলিয়াম ওয়ার্ট ও ড্যানিয়েল ওয়েবস্টার।
== সাংবিধানিক সংকট এবং সিদ্ধান্ত (১৮৫০–১৮৭১) ==
এই সময়কাল ছিল গভীর সংবিধানিক সংকটের, যেখানে ঐক্যের প্রকৃতি, রাজ্যগুলোর সার্বভৌমত্ব, নাগরিকত্বের অর্থ, এবং রাষ্ট্রপতির অসাধারণ ক্ষমতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক হয়েছিল। যুদ্ধ ক্ষমতা, যুদ্ধে প্রথা ও নিয়ম, হেবিয়াস কর্পাস এবং সংকটকালে এর প্রয়োগ, স্বাধীনতার ঘোষণা-পত্রের নীতির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি, এবং [[w:John Calhoun|কালহুনিয়ান]] গনতন্ত্রবিরোধী দাসপ্রভু শক্তির অত্যাচারী সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মতবাদ প্রত্যাখ্যান—এসব বিষয় এখানে আলোচিত হয়েছে।
এই অংশটি স্বাভাবিক বিচারিক ব্যাখ্যার থেকে ভিন্ন, কারণ সংবিধানে এবং তার ব্যাখ্যায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছিল শুধুমাত্র বিচারালয়ের মাধ্যমে নয়, বরং সংশোধনী অথবা বিজয়ীর অধিকার দ্বারা।
=== [[w:Dred Scott v. Sandford|ড্রেড স্কট বনাম স্যান্ডফোর্ড]], ৬০ ইউ.এস. ৩৯৩ (১৮৫৭) ===
ড্রেড স্কট ছিল আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত সুপ্রিম কোর্টের রায়, যা সম্ভবত গৃহযুদ্ধের প্রধান কারণগুলোর একটি। অধিকাংশ আমেরিকান ইতিহাসবিদ, পণ্ডিত ও আইনজীবীর মতে, এটি ছিল সংবিধানের একটি কালিমা—যখন আমেরিকা স্পষ্টতই পাপ জানল।
ড্রেড স্কট একজন আফ্রিকান-আমেরিকান দাস যিনি মিসৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর মালিক তাঁকে ইলিনয়স (একটি মুক্ত রাজ্য) এ নিয়ে যান। স্কট তার মুক্তির দাবিতে মামলা করেন। বিষয়টি আদালতগুলোকে পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়।
যদিও মামলা কারিগরি কারণে বাতিল করা যেত, প্রধান বিচারপতি রজার টেনি সিদ্ধান্ত নেন দাসপ্রথার প্রশ্ন চূড়ান্তভাবে সমাধান করবেন। টেনি ঘোষণা দেন যে আফ্রিকান-আমেরিকানরা সংবিধানের অর্থে নাগরিক নয় এবং তাদের কোনো অধিকার নেই, শুধুমাত্র যাদের ক্ষমতা আছে তারাই তাদের অধিকার দিতে পারে। তাই তারা নাগরিক নয় বলে তাদের মামলা করার অধিকারও নেই। মামলাটি বাতিল করা হয়।
রায়ের সবচেয়ে কুখ্যাত অংশটি ছিল:
> "‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ’ এবং ‘নাগরিক’ শব্দগুলি সমার্থক এবং একই অর্থ বহন করে। তারা হলেন সেই রাজনৈতিক সমষ্টি যারা আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান অনুসারে সার্বভৌমত্ব গঠন করে, এবং সরকার পরিচালনা করে। আমরা মনে করি তারা (আফ্রিকান-আমেরিকানরা) নয়, এবং সংবিধানে ‘নাগরিক’ শব্দের মধ্যে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তারা তখন অবরোধিত এবং নিম্নমানের শ্রেণীর হিসেবে বিবেচিত হত, যারা আধিপত্যশীল জাতি দ্বারা শাসিত, এবং তাদের কোনো অধিকার ছিল না, শুধু যে অধিকার ক্ষমতাবানরা দিতে চেয়েছে।"
৭০০,০০০ মানুষের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পরই ড্রেড স্কট রায়ের কলঙ্ক ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয় এবং দাসপ্রথা চিরতরে বন্ধ হয়।
=== [[w:Ex parte Merryman|এক্স পার্টে মেরিম্যান]], (১৮৬১) ===
''অপেক্ষমাণ''
মেরিম্যান মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারিত হয়নি, তবে এটি স্পষ্টতার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কারণ এতে রাষ্ট্রপতির অসাধারণ ক্ষমতার বিষয় রয়েছে।
১৮৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি বিশাল, কম জনবহুল, প্রধানত কৃষিভিত্তিক দেশ। সে সময়ের মহান শক্তি ছিল না, কারণ সেই সময়ের মহান শক্তিগুলো ছিল ইউরোপীয় রাষ্ট্রীয় সত্তাগুলো — যেমন লন্ডনের ডকল্যান্ডস, আমস্টারডামের বন্দর, ভার্সাই, দি হেগ এবং ভিয়েনার প্রাসাদগুলোতে তারা বিশ্বের ব্যবসা পরিচালনা করত। যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি ছোট ক্ষমতা, যা নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং সেই সময়ের দার্শনিক ও চিন্তাবিদরা এটিকে গণতান্ত্রিক শাসনের একটি ছোট পরীক্ষা হিসেবে দেখতেন যা বড় কোনো ফলাফল দিচ্ছে না; ইউরোপীয় রাজাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র ছিল তাদের বিপ্লবী বিরোধীদের নির্বাসিত করার একটি সুবিধাজনক স্থান, যারা নির্বাচিত সরকার বা নাগরিক স্বাধীনতার দাবিতে যেত।
কিছু ইউরোপীয়দের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র "সভ্যতার ধাপে না গিয়ে বর্বরতা থেকে অবক্ষয়ের দিকে গিয়েছে"। ওয়াশিংটন, ডি.সি. তখন ছিল একটি অল্প গুরুত্বের সেমি-ট্রপিক্যাল পশ্চাদদেশ; বহু ইউরোপীয় কূটনীতিক, যারা ফ্রান্স ও প্রুশিয়ার সাম্রাজ্যবাদের অভিজাত সভায় অংশ নিতেন অথবা ভার্সাইয়ের হল অফ মিররস-এ গ্র্যান্ড বলের অংশ ছিলেন, তারা এখানে চাকরি করতে গেলে বিশেষ কষ্ট ভোগ করতে হতো।
অনেক পশ্চিমের রাজ্য (গ্রেট প্লেইন্স এবং রকি মাউন্টেইন রাজ্যগুলো) তখন রাজ্য ছিল না, এবং এই অঞ্চলগুলো বেশিরভাগ অনাবাসী ছিল, সরকার এখানে ভূমির মালিক ছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষে তা ন্যায্য ভাবে বণ্টন করা সম্ভব ছিল না। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলো কিছুটা বসতি গড়ে তুলেছিল, তবে শিল্পের মাত্রা কম এবং কৃষি মাঝারি মাত্রায় ছিল ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রেলপথ নির্মাণের আগে (যেগুলোর সমাপ্তির তারিখ ছিল ইউনিয়ন প্যাসিফিক ১৮৭৩, সাউদার্ন প্যাসিফিক ১৮৮২, এবং গ্রেট নর্দান ১৮৯১)। পূর্ব রাজ্যগুলিতে, যুক্তরাষ্ট্রের পুরানো উত্তর-পশ্চিমে ছিল মাঝারি জনসংখ্যা, যেখানে খনি, শিল্প এবং কৃষি ছিল; মধ্য আটলান্টিক ও উত্তর-পূর্বে ছিল তুলনামূলক বেশি জনসংখ্যা, যেখানে জাতীয় শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্রীভূত ছিল; এবং পুরানো দক্ষিণে জনসংখ্যা মাঝারি থেকে বেশি এবং বৃহৎ আকারের কৃষি চালু ছিল। উত্তরাঞ্চলের (যা এখন আমরা আপার মিডওয়েস্ট বলি — অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালা থেকে মিসিসিপি নদীর পর পর্যন্ত) যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিল, যা বাণিজ্য ও শিল্পের প্রয়োজন মেটাতো, এবং রেলপথ শহর থেকে শহরে ২-৩ দিনের মধ্যে যাতায়াত সহজ করত। দক্ষিণের রেল ব্যবস্থা তুলনামূলক কম বিকশিত ছিল এবং সেখানে যাতায়াত প্রায়ই দীর্ঘ সময় নিত। পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে যাতায়াত স্টিমার বা স্থলপথে হতো, যেটা দ্রুত ছিল না। একজন ব্যক্তি এক মাস বা তারও বেশি সময়ে দেশটির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারত। তথ্য অবশ্য অনেক দ্রুত পৌঁছাত—ট্রান্সকন্টিনেন্টাল টেলিগ্রাফ পূর্বের খবর পশ্চিমে মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে দিত, আর আগে থেকে পনি এক্সপ্রেস মিলিত মেইল পৌঁছাত কয়েক দিনের মধ্যে।
এই প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস তখন সারাবছর মিলিত হত না, বরং তখন কংগ্রেস ছিল আংশিক সময়ের আইনসভা; আইন ছিল সীমিত এবং সরল, সময়ের কাজ গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা অতি জরুরি ছিল না, আর অধিবেশন শেষ হলে সদস্যরা তাদের নিজ রাজ্য ও জেলা, কাঠের কুঁড়েঘর, ছোট খামার, শহর ও প্ল্যান্টেশনে ফিরে যেতেন।
উত্তর থেকে নির্বাচিত আব্রাহাম লিনকনের প্রেসিডেন্সির পর যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে, কারণ দক্ষিণের দাসশক্তি আগ্রহী ছিল উত্তরের বিরোধিতাকে আগুন ও তলোয়ার দিয়ে চিরতরে দমন করতে, অথবা অন্ততঃ 'দমনমূলক' ফেডারেল শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার আফ্রিকার উপকূলের মানুষের শরীর বাণিজ্যে ফিরতে এবং এমন একটি দাস সাম্রাজ্য গড়তে, যা কিউবা ও মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃত হতো, যা এক সময়ের দাসশক্তি অংশের নেতা জন কালহুনের পরিকল্পনা ছিল। এই বিদ্রোহ একটি বিক্ষোভে পরিণত হয়, একটি সরকার দাবি করে; সাউথ ক্যারোলিনা, যেখানে দাস প্রথা সবচেয়ে প্রবল ছিল এবং আফ্রিকান-আমেরিকান দাস মানুষের সংখ্যা অন্যান্য জাতির তুলনায় বেশি ছিল, প্রথমে ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং তার পরে গভীর দক্ষিণের অন্যান্য রাজ্যও, যেখানে দাসশক্তি সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল, তাদের অনুসরণ করে। ভার্জিনিয়া ও টেনেসি, যারা তুলনামূলক কম দাস প্রথার অধীনে ছিল, প্রথমদিকে তাদের আইনসভায় বিদ্রোহ উস্কানির মাত্রা দেখা গেলেও তারা ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রচেষ্টা শুরুর আগেই, সাউথ ক্যারোলিনার আগুন-খাওয়ানরা ফোর্ট সাম্টারে প্রথম গুলি চালায়, যা ছিল ফেডারেল ইউনিয়নের সম্পত্তি, এবং এই গুলির সাথে যুদ্ধ শুরু হয় — যাকে আমরা রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধ, দক্ষিণের আগ্রাসনের যুদ্ধ, উত্তরের আগ্রাসনের যুদ্ধ বা পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ নামে জানি।
ফোর্ট সাম্টারে আক্রমণের পরে, আপার সাউথ বিদ্রোহের সাথে যুক্ত হয়, এমনকি মেরিল্যান্ড, কেনটাকি, এবং মিসৌরি—যেগুলো দাসপ্রথার ক্ষতে তুলনামূলক হালকা আঘাত পেয়েছিল—তাদের ভিতরে দাসপ্রেমী ও দাসশক্তি সমর্থকরা ফেডারেল ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কনফেডারেসির হাতে এই রাজ্যগুলো তুলে দিতে চেয়েছিল বলে গুজব ছড়ায়।
১৮৬১ সালের প্রথম ছয় থেকে সাত মাসে, কংগ্রেস ওয়াশিংটন, ডি.সি.-তে একত্রিত হয়নি এবং পুনরায় অধিবেশন শুরু করতে পারেনি, কারণ সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিল, জরুরি খবর ধীরে পৌঁছছিল, এবং মানুষের চলাচল ছিল খুব ধীর।
গৃহযুদ্ধের প্রথম বছরে, রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিনকন...
সংশ্লিষ্ট বিষয় হিসেবে,'''ইয়ংটাউন''' মামলার পরিমিত রায়ের সঙ্গে তুলনা ও পার্থক্যও বিবেচনা করা যেতে পারে।
=== [[w:Ex parte Milligan|এক্স পার্টে মিলিগান]], ৭১ ইউ.এস. ২ (১৮৬৬) ===
মামলাটি কনফেডারেট সমর্থকদের নিয়ে, যারা তথাকথিত ইউনিটারী এক্সিকিউটিভের আদেশে গঠিত "সামরিক কমিশন"-এর মাধ্যমে (ছদ্ম) বিচারাধীন ছিলেন, সম্পর্কিত।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে সামরিক কমিশন বা যেকোনো ধরণের আংশিক প্রক্রিয়াগত ন্যায়বিচারের ব্যবহার অবশ্যই সামরিক প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং তা বাস্তব সামরিক কার্যক্রমের এলাকায় সময় এবং স্থান উভয়ের দিক থেকে সন্নিকটে থাকতে হবে।
== দ্বিতীয় সাংবিধানিক যুগ (১৮৭১-১৯৩৮) ==
গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগত ন্যায়বিচার, "কর্পোরেট পার্সনহুড", "অলাদা কিন্তু সমান", "চুক্তির স্বাধীনতা", একাধিপত্য, কর্পোরেশন, জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ের অর্থনীতি, ব্যক্তিগত লোভ বনাম জনসাধারণের প্রয়োজন।
=== [[w:Slaughter-House Cases|স্লটার-হাউস মামলাসমূহ]], ৮৩ ইউ.এস. ৩৬ (১৮৭৩) ===
=== [[w:The Civil Rights Cases|সিভিল রাইটস মামলাসমূহ]], ১০৯ ইউ.এস. ৩ (১৮৮৩) ===
=== [[w:Santa Clara County v. Southern Pacific Railroad Company|সান্তা ক্লারা কাউন্টি বনাম সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলরোড কোম্পানি]], ১১৮ ইউ.এস. ৩৯৪ (১৮৮৬) ===
এই রায়ে ১৪তম সংশোধনী ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের "ব্যক্তি" শব্দের পরিধি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে আইনি কল্পনাপ্রসূত সত্ত্বা যেমন কর্পোরেশনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ফলে কর্পোরেশনগুলোকে একই অধিকার (যেমন বাকস্বাধীনতা, চুক্তি করার স্বাধীনতা) দেওয়া হয়, যা আগে শুধুমাত্র মানুষের জন্য সংবিধান, অধিকারপত্র ও ১৪তম সংশোধনী অনুসারে প্রযোজ্য ছিল। এই রায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল কারণ এর ফলে কর্পোরেশনগুলো সংবিধানকে আড়াল করে জনপ্রিয় আইন যেমন নূন্যতম মজুরি আইন, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা মানদণ্ড, কর, শ্রম আইন থেকে সুরক্ষা দাবি করতে পারে। এই রায় ছিল পরবর্তী ৫০ বছর ধরে আদালতের আইনজীবন ধারণার মূল ভিত্তি, যা ১৯৩৮ সালে '''কারোলিন প্রোডাক্টস''' মামলার মাধ্যমে পাল্টানো হয়।
=== [[w:In_re_Debs|ইন রে ডেবস]], ১৫৮ ইউ.এস. ৫৬৪ (১৮৯৫) ===
=== [[w:Plessy v. Ferguson|প্লেসি বনাম ফেরগুসন]], ১৬৩ ইউ.এস. ৫৩৭ (১৮৯৬) ===
প্লেসি বনাম ফেরগুসন মামলায় "অলাদা কিন্তু সমান" নীতির অধীনে বর্ণবৈষম্যের আইনকে, বিশেষ করে জনসাধারণের সুবিধাসমূহে (রেলরোডে), সংবিধানসম্মত বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই রায় ছিল দক্ষিণাঞ্চলের জিম ক্রো বর্ণবৈষম্য আইনগুলোর আইনি ভিত্তি।
রায়টি ৭-১ ভোটে দেওয়া হয়, যেখানে প্রধান বিচারপতি হেনরি বিলিংস ব্রাউন সংখ্যালঘু মতামত লিখেছিলেন এবং বিচারপতি জন মার্শাল হারলান অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। বিচারপতি ডেভিড জোসিয়াহ ব্রুয়ার রায়ে অংশ নেননি। "অলাদা কিন্তু সমান" নীতি ১৯৫৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের '''ব্রাউন বনাম বোর্ড অফ এডুকেশন''' রায় পর্যন্ত মার্কিন আইনে প্রচলিত ছিল।
এই রায়ের পরে নিউ অর্লিয়ানসের কমিটি দে সিটোয়েন্স, যারা মামলাটি করেছিল এবং হোমার প্লেসির গ্রেফতার নিশ্চিত করেছিল লুইজিয়ানা রাজ্যের বৈষম্যমূলক আইনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য, বলেছিল, "আমরা, স্বাধীন নাগরিক হিসেবে, এখনও বিশ্বাস করি আমরা সঠিক ছিলাম এবং আমাদের কারণ পবিত্র।"
=== [[w:Insular Cases|ইনসুলার মামলাসমূহ]], (১৯০১-১৯০৫) ===
ইনসুলার মামলাসমূহ ছিল সুপ্রিম কোর্টের এক সিরিজ রায়, যা যুক্তরাষ্ট্র ১৮৯৮ সালের [[w:Spanish-American War|স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ]] এবং পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চল অধিগ্রহণের পর প্রাপ্ত উপনিবেশ বা অঞ্চলগুলোর সংবিধানগত অবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মামলাগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি ছিল "সংবিধান পতাকার সঙ্গে যায় না।" অর্থাৎ, সংবিধান অনুযায়ী আমেরিকান নাগরিকদের অধিকার সব সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের প্রযোজ্য নয়। এই মামলাগুলোকে ইনসুলার মামলা বলা হয় কারণ যুক্তরাষ্ট্র যে অঞ্চলগুলো অধিগ্রহণ করেছিল সেগুলো দ্বীপ ছিল, যেমন ফিলিপাইন, হাওয়াই, পুয়ের্তো রিকো, এবং গুয়াম। এই মামলাগুলো এই নীতিও প্রতিষ্ঠা করেছিল যে সংবিধান কেবলমাত্র "সম্পূর্ণরূপে সংযুক্ত অঞ্চল"-এর জন্য প্রযোজ্য, অর্থাৎ অঞ্চলগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের অধীন পূর্ণাঙ্গভাবে সংযুক্ত হতে হবে।
=== [[w:Lochner v. New York|লোচনার বনাম নিউ ইয়র্ক]], ১৯৮ ইউ.এস. ৪৫ (১৯০৫) ===
=== [[w:Schenck v. United States|শেঙ্ক বনাম ইউনাইটেড স্টেটস]], ২৪৯ ইউ.এস. ৪৭ (১৯১৯) ===
শেঙ্ক বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলাটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়, যা আলোচ্য ছিল যে আসামি বিশ্বযুদ্ধের সময় খসড়া টানা (ড্রাফট) বিরোধিতায় তার প্রথম সংশোধনী অধিকার (বাকস্বাধীনতা) প্রযোজ্য কিনা। চার্লস শেঙ্ক সোশ্যালিস্ট পার্টির সচিব ছিলেন এবং তিনি খসড়া টানার জন্য উপযুক্ত পুরুষদের মধ্যে ১৫,০০০ পত্রিকা ছেপে বিতরণ করেছিলেন যা খসড়া টানার বিরোধিতা করেছিল। এসব পত্রিকায় ছিল যেমন; "ভয়ভীতি মানবেন না", "আপনার অধিকার দাবি করুন", "যদি আপনি আপনার অধিকার দাবি না করেন এবং সমর্থন না করেন, তবে আপনি সেই অধিকারকে নস্যাৎ করতে সহায়তা করছেন যা সব নাগরিকের গম্ভীর কর্তব্য।" এই মামলাটি মূলত "স্পষ্ট ও বর্তমান বিপদের" নিয়মের ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যা প্রধান বিচারপতি অলিভার ওয়েন্ডেল হোমসের সংখ্যালঘু মতামতে প্রথম লিখিত হয়।
=== [[w:United States v. Carolene Products Co.|যুক্তরাষ্ট্র বনাম ক্যারোলিন প্রোডাক্টস কোম্পানি]], ৩০৪ ইউ.এস. ১৪৪ (১৯৩৮) ===
== তৃতীয় সাংবিধানিক যুগ (১৯৩৮) ==
নাগরিক অধিকার, আইনের নিচে সমতা, গোপনীয়তার অধিকার, "উৎস থেকে সৃষ্ট পরছায়া", ন্যায়বিচারের অর্থ, নির্বাহী ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, স্বাধীনতার বহুমুখী সম্ভাবনা।
=== [[w:Hague v. Committee for Industrial Organization|হেগ বনাম সিআইও]], ৩০৭ ইউ.এস. ৪৯৬ (১৯৩৯) ===
তৃতীয় যুগের প্রথম নাগরিক স্বাধীনতা সংক্রান্ত মামলা, যা সমবেত হওয়ার স্বাধীনতা, সংগঠন গঠনের স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত; বিশেষত, নিউ জার্সির কুখ্যাত [[w:Frank Hague|বস হেগ]] কর্তৃক শ্রম ইউনিয়নগুলোর দমন সংক্রান্ত।
=== [[w:Korematsu v. United States|কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র]], ৩২৩ ইউ.এস. ২১৪ (১৯৪৪) ===
[[File:Fred Korematsu.jpg|thumb|upright|ফ্রেড কোরেমাতসু, ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া একজন আমেরিকান যিনি জাপানি ইন্টারনমেন্টের শিকার হন।]]
কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি রায়, যা জাপানি-আমেরিকানদের (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সহ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে কারাগার শিবিরে বন্দী করার বিষয় নিয়ে। নির্বাহী আদেশ ৯০৬৬-এর মাধ্যমে, রাষ্ট্রপতি ফ্র্যাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্ট ১৯৪২ সালে পেরল হারবারে জাপানি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলবর্তী নির্দিষ্ট অঞ্চলের সব জাপানি ও জাপানি-আমেরিকান বাসিন্দাদের স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। এর ফলে প্রায় ১২০,০০০ জাতিগত জাপানিকে (তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক) নির্বাহী আদেশে স্থাপিত সামরিক অঞ্চলে ইন্টারনমেন্ট শিবিরে রাখা হয়। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ৬-৫ ভোটে এই ইন্টারনমেন্টের সংবিধানসম্মততা মেনে নিয়েছিল, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি রোধ করা নাগরিকদের অধিকার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট '''ট্রাম্প বনাম হাওয়াই''' মামলায় কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলাটিকে ভুল রায় হিসেবে ঘোষণা করে।
=== [[w:Youngstown Sheet & Tube Co. v. Sawyer|ইয়াংস্টাউন শীট অ্যান্ড টিউব কো. বনাম সয়্যার]], ৩৪৩ ইউ.এস. ৫৭৯ (১৯৫২) ===
কোরিয়ান যুদ্ধের সময়, স্টীলওয়ার্কার্স (একটি শ্রমিক সংঘ, অর্থাৎ শ্রম ইউনিয়ন) এবং তাদের নিয়োগকর্তা বিভিন্ন স্টীল মিলের মধ্যে শ্রমবিরোধ সৃষ্টি হয়। স্টীল মিলগুলি দাবী করেছিল যে, ওই শ্রমিকদের বেতন খুব বেশি দেওয়া হচ্ছে, এবং কঠিন আলোচনার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় শ্রমিকদের লকআউট করে তাদের বেতন দেওয়া এড়ানোর জন্য। শ্রমিকরা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়, কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের জন্য ট্যাংক ও অস্ত্রের প্রচুর চাহিদা ছিল, যা উৎপাদিত হতে পারছিল না এবং মিল মালিকদের অবস্থানের কারণে উপেক্ষিত ছিল, সম্ভবত তারা কাজ করতে ও বেতন পেতেও পারছিল না।
রাষ্ট্রপতি [[w:Harry Truman|হ্যারি ট্রুম্যান]] হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন, দাবি করে যে যেহেতু যুদ্ধ চলছে, তিনি "কমান্ডার ইন চিফ" হিসেবে সাময়িকভাবে ফেডারেল সরকারের অধীনে স্টীল মিলগুলি জব্দ করে পরিচালনা করতে পারেন যাতে যুদ্ধকালীন উৎপাদন অব্যাহত থাকে। এই সিদ্ধান্ত স্টীল মিল মালিক ও শ্রমিক উভয়েরই রোষাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে; দুই পক্ষই বিশ্বাস করত না সরকার এমন কিছু করতে পারে, কারণ এই ধরনের কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়ার জন্য কোনো আইন পাস হয়নি; অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করত ট্রুম্যানের মতো একতরফা পদক্ষেপই সংবিধান রোধ করার জন্যই তৈরি হয়েছে।
স্টীল মিল মালিকরা সরকারকে স্টীল মিল জব্দের জন্য মামলায় তোলে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, পরিস্থিতির জরুরি প্রকৃতির কারণে মামলা সুপ্রিম কোর্টে আসে।
কোর্ট সরকারবিরোধী রায় দেয়, বলে যে শ্রমবিরোধের সময় সরকার ব্যক্তিগত শিল্প প্রতিষ্ঠান জব্দ করার (অথবা শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করার) কোনো আইনগত বা সংবিধানিক অধিকার নেই। যদিও রায় কিছুটা মিশ্র ছিল — প্রায় প্রতিটি বিচারপতি তাদের নিজস্ব মতামত দিয়েছিলেন — তবুও এটি স্পষ্টভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ছিল। বিচারপতি হারলান? এই মামলার সবচেয়ে পরিচিত মতামত দিয়েছিলেন — যেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার তিনটি স্তর নির্ধারণ করেছিলেন — যা গৃহযুদ্ধের পরপর থেকেই সুপ্রিম কোর্টের রাষ্ট্রপতি ক্ষমতার সর্বাধিক কর্তৃত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা হিসেবে গণ্য হয়; হারলানের মতামত আজও প্রামাণিক হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই মামলা, পাঠকের কাছে ছোট মনে হলেও, মেটা-সংবিধানিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সংবিধান রচনার পর থেকে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে—এবং এর সঠিক সীমা অত্যন্ত বিতর্কিত, বিশেষ করে গত ৩০-৪০ বছরে।
মিলগুলি মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, যারা খুব দ্রুত শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায় এবং বিরোধ মিটে যায়।
=== [[w:Brown v. Board of Education of Topeka|ব্রাউন বনাম টোপেকা শিক্ষা বোর্ড]], ৩৪৭ ইউ.এস. ৪৮৩ (১৯৫৪) ===
'''অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ''' একটি সুপ্রিম কোর্টের মামলা, যা সিদ্ধান্ত দেয় যে [[w:Racial segregation|জাতিগত পৃথকীকরণ]] সরকারি বিদ্যালয়ে সংবিধানের বর্ণনা ও চেতনার বিরুদ্ধে; এটি আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে [[w:civil rights movement|নাগরিক অধিকার আন্দোলন]] শুরু করার এক প্রধান কারণ ছিল।
ব্রাউন বনাম টোপেকা শিক্ষা বোর্ড, ৩৪৭ ইউ.এস. ৪৮৩ (১৯৫৪),[১] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের একটি মাইলফলক রায়, যা ১৮৯৬ সালের প্লেসি বনাম ফেরগুসন মামলার পূর্ববর্তী রায়গুলি উল্টে দেয়। এই রায়ে বলা হয়, যে রাজ্যগুলোর আইন কালো ও সাদা ছাত্রদের জন্য পৃথক সরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, তা কালো শিশুদের সমান শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে।
১৯৫৪ সালের ১৭ মে দেওয়া ওয়ারেন কোর্টের ঐক্যমত (৯-০) রায়ে বলা হয়, "পৃথক শিক্ষা সুবিধাগুলো স্বভাবতই অসম।" ফলস্বরূপ, আইনগত জাতিগত পৃথকীকরণকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চোদ্দতম সংশোধনের সমান সুরক্ষা ধারার লঙ্ঘন ঘোষণা করা হয়। এই বিজয় সংহতি এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পথ প্রশস্ত করে।[২]
=== [[w:Mapp v. Ohio|ম্যাপ বনাম ওহিও]], ৩৬৭ ইউ.এস. ৬৪৩ (১৯৬১) ===
(বর্জনীয় নিয়ম) অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রাপ্ত প্রমাণ আদালতে ব্যবহার না করার সুরক্ষা দেয়, যেমন পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া কোনো বাসা তল্লাশি করে যে জিনিসপত্র জব্দ করে। বহু বছর ধরে এই নিয়ম শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের (ফেডারেল) মামলায় প্রযোজ্য ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল অপরাধ মামলাগুলি মোট অপরাধ মামলার তুলনায় খুবই নগণ্য অংশ, কারণ বেশিরভাগ মামলা হয় রাজ্যের অধীনে, বিশেষত সেরকম গুরুতর অপরাধ যেমন হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের মামলা। (ফেডারেল অপরাধের মধ্যে পড়ে ফেডারেল সম্পত্তি ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অপরাধ, একাধিক রাজ্যে সংঘটিত অপরাধ যেমন ব্যাংক ডাকাতি, আন্তঃরাজ্য ষড়যন্ত্র যেমন মাদক পাচার চক্র, সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার যেমন পুলিশ নির্যাতন বা বিচার বিভাগের দুর্নীতি, এবং সন্ত্রাসবাদ, সামরিক অপরাধ, গুপ্তচরবৃত্তি ও দেশদ্রোহ। বাকি সব অপরাধের জন্য রাজ্যগুলো দায়ী।)
ম্যাপ মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত দেয় যে বর্জনীয় নিয়ম রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত প্রমাণ রাজ্য মামলায়ও ব্যবহার করা যাবে না, কেন্দ্রীয় মামলার পাশাপাশি। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি ছিল চোদ্দতম সংশোধন, যা রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দেয় কোনো ব্যক্তিকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া জীবন, স্বাধীনতা বা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না; এখানে স্বাধীনতার মধ্যে বিল অফ রাইটসের অধীনে সংরক্ষিত অধিকারগুলো অন্তর্ভুক্ত, যা পূর্বে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ছিল।
ম্যাপ রায়ের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে, পুলিশকে এখন প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ওয়ারেন্ট নিতে বাধ্য করা হয়। (এর আগে, পুলিশ ওয়ারেন্ট নিয়ে বাড়ি তল্লাশি করার কথা থাকলেও, ওয়ারেন্ট ছাড়া তল্লাশি করে পাওয়া প্রমাণ আদালতে গ্রহণযোগ্য ছিল বলে এই নিয়ম অগণিতভাবে উপেক্ষিত হতো।) এছাড়াও, ম্যাপ রায় সুপ্রিম কোর্টের পুলিশের কার্যকলাপের প্রতি তীক্ষ্ণ নজরদারির সূচনা করে, যা আজও অব্যাহত আছে।
=== [[w:Gideon v. Wainwright|গাইডিয়ন বনাম ওয়েনরাইট]], ৩৭২ ইউ.এস. ৩৩৫ (১৯৬৩) ===
একটি মামলা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তাদের পক্ষে আইনজীবী থাকার অধিকার রয়েছে, এমনকি তারা যদি তা ভাড়া দিতে না পারেন তবুও।
=== [[w:Escobedo v. Illinois|ইসকোবিডো বনাম ইলিনয়]], ৩৭৮ ইউ.এস. ৪৭৮ (১৯৬৪) ===
মামলা যা অপরাধীর জেরা চলাকালে আইনজীবীর উপস্থিতির অধিকার নিশ্চিত করেছিল, এবং পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তের আত্মরক্ষা অধিকারকে শক্তিশালী করেছিল।
=== [[w:Griswold v. Connecticut|গোরিশওল্ড বনাম কনেটিকাট]], ৩৮১ ইউ.এস. ৪৭৯ (১৯৬৫) ===
এই সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি একটি বিবাহিত দম্পতির পক্ষ থেকে আনা হয়েছিল যারা দাবি করেছিলেন যে কনেটিকাট রাজ্যের জন্মনিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম ও ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করার আইন তাদের মৌলিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট এই দাবিকে মেনে নিয়েছিল এবং বিবাহিত দম্পতিদের জন্য কনেটিকাটের জন্মনিয়ন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর ঘোষণা করেছিল।
জাস্টিস ডগলাস বিখ্যাতভাবে লিখেছিলেন যে গোপনীয়তার অধিকার—যা সংবিধানের পাঠে সরাসরি উল্লেখ নেই—সে অধিকার সংবিধানে উল্লিখিত অন্যান্য অধিকার থেকে "প্রত্যাহারের দ্বারা গঠিত ছায়া" হিসেবে ইঙ্গিতস্বরূপ পাওয়া যায়, যেমন অযাচিত তল্লাশি থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার। রো বনাম ওয়েড মামলার পর থেকে, কিছু রক্ষণশীলেরা এই "পিনাম্বরা" অংশটিকে বিচারিকভাবে নতুন অধিকার সৃষ্টির বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য ব্যবহার করেছেন।
যদিও এই মামলা প্রথমে খুব বেশি বিতর্কিত ছিল না কারণ এটি শুধুমাত্র বিবাহিত দম্পতিদের উপর প্রভাব ফেলেছিল, এটি পরবর্তীতে রো বনাম ওয়েড (১৯৭৩) মামলার জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞাগুলো গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করেছিল, যা অন্যতম বিতর্কিত সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত।
=== [[w:Miranda v. Arizona|মারিন্ডা বনাম অ্যারিজোনা]], ৩৮৪ ইউ.এস. ৪৩৬ (১৯৬৬) ===
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দেয় যে পুলিশ যখন কাউকে গ্রেফতার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার আগে তাকে অবশ্যই পরিচিত করতে হবে তার অধিকারসমূহের সাথে, যা বর্তমানে "মিরান্দা ওয়ার্নিং" নামে পরিচিত। এই ওয়ার্নিংয়ে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জানানো হয় যে তার নীরব থাকার অধিকার আছে, তার পক্ষে একজন আইনজীবী থাকার অধিকার আছে, এবং যদি অর্থের অভাব থাকে তবে সরকারী আইনজীবী নিযুক্ত করার অধিকারও রয়েছে।
=== [[w:Brandenburg v. Ohio|বার্গ বনাম ওহাইও]], ৩৯৫ ইউ.এস. ৪৪৪ (১৯৬৯) ===
মুক্ত বাক্যের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পুরনো "স্পষ্ট ও উপস্থিত বিপদের" পরীক্ষাকে বদলে "তাত্ক্ষণিক আইনবিরোধী কার্যক্রমে উস্কানীমূলক পরীক্ষায় রূপান্তর করে। এই সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত বাক্যের বিচারব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ সৃষ্টি করে।
=== [[w:Roe v. Wade|রো বনাম ওয়েড]], ৪১০ ইউ.এস. ১১৩ (১৯৭৩) ===
১৯৭৩ সালে গৃহীত রো বনাম ওয়েড হল একটি বিখ্যাত এবং অত্যন্ত বিতর্কিত মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের মামলা, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা বা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক ধাপে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা অগ্রহণযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। রো মামলাটি ২০শ শতাব্দীর সবচেয়ে বিতর্কিত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এটি বুশ বনাম গোর (২০০০), সান্তা ক্লারা কাউন্টি বনাম সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলরোড কোম্পানি (১৮৮৬), এবং ড্রেড স্কট বনাম সানফোর্ড (১৮৫৭) এর সঙ্গে তালিকাভুক্ত।
২০২২ সালের ২৪ জুন, সুপ্রিম কোর্টের ডবস বনাম জ্যাকসন মহিলা স্বাস্থ্য সংস্থা মামলার মাধ্যমে রো সিদ্ধান্ত উল্টে দেয়া হয়।
মামলার পটভূমি: রো নামের টেক্সাসের এক মহিলা, যার অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থা হয়। টেক্সাসের তখনকার আইন গর্ভপাত সাধারণত নিষিদ্ধ করেছিল, শুধুমাত্র কিছু বিশেষ মেডিকেল পরিস্থিতিতে যেমন গর্ভবতী নারীর জীবন হুমকির মুখে থাকলে তা অনুমোদিত ছিল। রো টেক্সাসকে মামলা করেন, যুক্তি দিয়ে যে ১৪তম সংশোধনের অধীনে তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মামলাটি বিভিন্ন ফেডারেল আদালত পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। সুপ্রিম কোর্ট রো এর পক্ষে রায় দেন এবং টেক্সাস আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন।
সিদ্ধান্তের মূল দিক:
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যেকোনো কারণে গর্ভপাত গ্রহণযোগ্য।
দ্বিতীয় তিন মাসে স্বাস্থ্যের জন্য নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যেতে পারে, যেমন গর্ভপাত হাসপাতালের মধ্যে করানোর বিধান।
শেষ তিন মাসে, সাধারণত গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা যেতে পারে কারণ গর্ভাবস্থার শেষ ধাপের গুরুত্ব বিবেচনা করে।
=== রো মামলার বিরুদ্ধে ও সমর্থনে যুক্তি ===
সমর্থকরা রো-কে নারীর মৌলিক অধিকার রক্ষায় একটি বড় জয় মনে করেন, বিশেষ করে নারীর নিজের শরীর ও প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার হিসেবে। কেউ কেউ মনে করেন রো-এর ফলে অপরিচ্ছন্ন গর্ভাবস্থার কারণে অপরাধের হার কমেছে, যদিও অন্যরা বলেন এ জন্য কার্যকর গর্ভনিরোধক এবং যৌন শিক্ষা বেশি ভূমিকা রেখেছে। সমালোচকরা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ব্যাখ্যা ছাড়িয়ে বেঞ্চ থেকে আইন প্রণয়ন করেছে, এবং গর্ভপাত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাজনীতির মাধ্যমে, জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা। কিছু সমালোচক গর্ভে থাকা শিশুর অধিকারকেও বিবেচনায় আনার দাবি করেন। ধর্মীয় এবং নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বিরোধীতা রয়েছে, বিশেষ করে ক্যাথলিক ও রক্ষণশীল প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে।
=== রো এর প্রভাব ===
রো সিদ্ধান্তের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংঘাত ব্যাপক হয়েছে, যা আজও অব্যাহত। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ভিতর গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে। রো মামলাটি নিউ ডিল কোয়ালিশনের পতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে ধরা হয়, যেটি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ধারাকে নিয়ন্ত্রিত করত। এর ফলে ধর্মভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠী গঠন পায় এবং তারা ১৯৬০-এর দশকের সামাজিক আন্দোলনের পরে তৈরি বামপন্থী ও আদর্শ ভিত্তিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত শুরু করে। এই দ্বন্দ্বের ধারাকে ১৯৮০-এর দশক থেকে রক্ষণশীলেরা ‘কালচার ওয়ার’ হিসেবে পরিচিতি দিয়েছেন।
=== [[w:United States v. Nixon|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম নিক্সন]], ৪১৮ ইউ.এস. ৬৮৩ (১৯৭৪) ===
এই মামলাটি বিশেষ কৌঁসুলি আর্চিবল্ড কক্সের ওয়াটারগেট তদন্তসংক্রান্ত তথ্যাদি চেয়ে দেওয়া একটি আদালতের সমন (সাবপোনা) নিয়ে বিরোধ থেকে উদ্ভূত হয়। কক্স প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের অডিও টেপকৃত কথোপকথনসমূহ চাওয়ায় নিক্সনের “শনিবার রাতের গণহত্যা”-এর অংশ হিসেবে কক্সকে বরখাস্ত করা হয়। কক্সের উত্তরসূরি লিয়ন জাওরস্কি সমনের কার্যক্রম চালিয়ে যান। নিক্সন তবুও টেপগুলো হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানান এবং তা গোপন রাখার জন্য [[w:executive privilege|এক্সিকিউটিভ প্রিভিলেজ]] দাবি করেন।
জাওরস্কি এরপর সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেন যাতে আদালতের আদেশের মাধ্যমে নিক্সনকে সমন মানতে বাধ্য করা যায়।
যদিও ব্যক্তিগত আলোচনায় বিচারপতিদের মধ্যে মতভেদ ছিল, তারা একযোগে একমত রায় প্রদান করেন, যাতে রায়টি আরও জোরালোভাবে নিক্সনের কাছে উপস্থাপিত হয় এবং তিনি তা উপেক্ষা না করেন। এই রায়ে আদালত বলেছে যে, ''মারবেরি বনাম ম্যাডিসন'' মামলায় যেমন বলা হয়েছে আদালত সংবিধানসম্মততা নির্ধারণের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রাখে, তেমনি আদালত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কীভাবে সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ, তাও নির্ধারণ করতে পারে। আদালত আরও রায় দেয় যে, এক্সিকিউটিভ প্রিভিলেজ ফৌজদারি মামলার প্রাসঙ্গিক প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, আদালত বলেছে যে, তাদের দ্বারা স্বীকৃত ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টসহ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
=== [[w:Regents of the University of California v. Bakke|ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্টস বনাম বাকি]], ৪৩৮ ইউ.এস. ২৬৫ (১৯৭৮) ===
এই সুপ্রিম কোর্টের মামলায় সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় যে, কোটা পদ্ধতি হিসেবে অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন (অর্থাৎ অতীতে বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে আসনের একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম শতাংশ সংরক্ষণ) সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং তাই এটি অবৈধ।
=== [[w:Bowers v. Hardwick|বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক]], ৪৭৮ ইউ.এস. ১৮৬ (১৯৮৬) ===
এই সুপ্রিম কোর্টের মামলায় রায় দেওয়া হয় যে, আইনসভা কোনো যৌন কার্যকলাপকে অনৈতিক বলে বিবেচনা করলে তা নিষিদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে—এমনকি যদি তা ব্যক্তিগত, সম্মতিপূর্ণ, বাণিজ্যিক নয়, এবং অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ঘটে। এই সিদ্ধান্তে বলা হয় যে, এরূপ আইন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ঘোষিত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করে না। তবে, এই রায়কে পরবর্তীকালে ''[[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স বনাম টেক্সাস]]'' (২০০৩) মামলায় ভুল বলে ঘোষণা করে বাতিল করা হয়।
=== [[w:Texas v. Johnson|টেক্সাস বনাম জনসন]], ৪৯১ ইউ.এস. ৩৯৭ (১৯৮৯) ===
এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, মার্কিন জাতীয় পতাকা পোড়ানো—এমনকি যদি তা অনেকের কাছে আপত্তিকর বা অপমানজনক মনে হয়—তবুও এটি [[w:Freedom of speech|মত প্রকাশের স্বাধীনতা]]র অন্তর্ভুক্ত এবং [[w:First Amendment to the United States Constitution|প্রথম সংশোধনী]]র মাধ্যমে সুরক্ষিত। মামলার মূল ইস্যু ছিল যে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি আইন অনুযায়ী, জনসনের পতাকা পোড়ানো ছিল অপরাধ, কিন্তু আদালত মত দেয় যে রাজনৈতিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এটি সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত অভিব্যক্তি।
=== [[w:Planned Parenthood v. Casey|প্ল্যানড প্যারেন্টহুড বনাম কেইসি]], ৫০৫ ইউ.এস. ৮৩৩ (১৯৯২) ===
এই মামলাটি [[w:Roe v. Wade|রো ভি. ওয়েড]] মামলার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। সুপ্রিম কোর্ট Roe-এর মূল সিদ্ধান্ত—যে গর্ভপাতের অধিকার একটি সাংবিধানিক অধিকার—তা বহাল রাখে, তবে সেই অধিকারে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। আদালত “[[w:Undue burden|অযথা বোঝা]]” নামে একটি নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করে, যার অর্থ হলো, কোনো রাজ্য যদি এমন কোনো বিধান করে যা নারীর গর্ভপাতের অধিকার বাস্তবায়নে একটি "অযৌক্তিক বোঝা" সৃষ্টি করে, তবে সেটি অসাংবিধানিক।
এই মামলায় আদালত পেনসিলভানিয়ার একটি আইন পর্যালোচনা করে, যেখানে গর্ভপাত করাতে চাওয়া নারীদের জন্য একাধিক বাধ্যতামূলক নিয়ম (যেমন ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষার সময়, তথ্যাবলী পাঠ, এবং বিবাহিত নারীদের স্বামীর অবগতির বিধান) ছিল। আদালত স্বামীর অবগতির বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, কিন্তু অন্যান্য শর্তসমূহ বৈধ বলে রায় দেয়।
এই রায় রো ভি. ওয়েড-এর নীতিগত ভিত্তি রক্ষা করে, তবে গর্ভপাতের অধিকারে কিছু রাজ্যভিত্তিক নিয়ন্ত্রণকে অনুমোদন দেয়, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন প্রয়োগে জটিলতা বৃদ্ধি পায়।
=== [[w:Romer v. Evans|রোমার বনাম এভান্স]], ৫১৭ ইউ.এস. ৬২০ (১৯৯৬) ===
এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট কলোরাডো রাজ্যের একটি সংবিধান সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, যা সমকামী, উভকামী এবং রূপান্তরিত লিঙ্গের (LGBT) ব্যক্তিদের কোনো বিশেষ আইনি সুরক্ষা পাওয়া থেকে বিরত রাখতো।
"সংশোধনী 2" নামক এই সংশোধনীর মাধ্যমে LGBT ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য নিরোধে স্থানীয় বা রাজ্য পর্যায়ে কোনো আইন পাস করার অধিকার প্রত্যাহার করা হয়েছিল। আদালত রায় দেয় যে, এই সংশোধনী শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতি বৈরিতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে এবং যুক্তিসঙ্গত সরকারী স্বার্থের ভিত্তিতে নয়।
আদালত রায় দেয়, সমান সুরক্ষার অধিকার অনুযায়ী, কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এ ধরনের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না।
গুরুত্ব:
এই রায়টি ছিল সমকামী অধিকার বিষয়ক প্রথম বড় বিজয়গুলোর একটি, এবং এটি [[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স v টেক্সাস (২০০৩)]] এবং [[w:obergefell v. Hodges|ওবারগেফেল v. হজস (২০১৫)]]–এর মতো পরবর্তী মামলাগুলোর জন্য ভিত্তি তৈরি করে।
=== [[w:Bush v. Gore|বুশ বনাম গোর]], ৫৩১ ইউ.এস. ৯৮ (২০০০) ===
এই মামলাটি নতুন কোনো বিচারিক নীতি স্থাপন না করলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কার্যত সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনায় অসংগতি ও বিতর্কের কারণে এই মামলার উদ্ভব হয়। নির্বাচনের ফল নির্ধারণের জন্য ফ্লোরিডার ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আদালত রায় দেয় যে, ফ্লোরিডার পুনর্গণনা পদ্ধতি সমান সুরক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে, কারণ ভোট গণনার মানদণ্ড প্রতিটি কাউন্টিতে একরকম ছিল না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে পুনর্গণনা বন্ধ হয়ে যায় এবং রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ. বুশ ফ্লোরিডার ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
গুরুত্ব:
''বুশ বনাম গোর'' মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ সুপ্রিম কোর্টের একটি বিতর্কিত রায়ের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রপতির ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছিল।
=== [[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স বনাম টেক্সাস]], ৫৩৯ ইউ.এস. ৫৫৮ (২০০৩) ===
লরেন্স, একজন সমকামী ব্যক্তি, তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে তাঁর অবিবাহিত ও সম্মতিসূচক যৌন সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ছিলেন, যখন পুলিশ একটি গুলির শব্দ সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করতে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করে। সেখানে কোনো অস্ত্র না পেলেও, পুলিশ লরেন্স ও তাঁর সঙ্গী গার্ডনারকে যৌন মিলনের সময় হাতে-নাতে ধরে ফেলে। তাঁদের বিরুদ্ধে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের "অপ্রাকৃত যৌন সম্পর্ক" আইন অনুসারে অভিযোগ আনা হয়।
লরেন্স ও গার্ডনার এই অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করেন নিম্নলিখিত দুইটি ভিত্তিতে:
এই আইন কেবল সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের একই ধরনের যৌন আচরণের ক্ষেত্রে নয়, যা সংবিধানের সমান সুরক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে।
এই আইন তাঁদের গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার উপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ, কারণ অভিযুক্ত কার্যকলাপটি পরস্পরের সম্মতিতে, ব্যক্তিগত স্থানে এবং অ-ব্যবসায়িকভাবে সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কোনো অধিকার নেই।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্য পাল্টা যুক্তি দেয় যে, রাজ্যের নৈতিকতা নির্ধারণ ও তা নিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে এবং সমকামিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা সংবিধান সম্মত, যেমনটি পূর্ববর্তী ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' মামলায় স্বীকৃত হয়েছে।
রায়:
আদালত লরেন্স ও গার্ডনারের পক্ষে রায় দেয়। বিচারপতি কেনেডি সংখ্যাগরিষ্ঠ মত লিখে বলেন:
> “এই বিষয়গুলো—যা মানুষের জীবনের সর্বাধিক অন্তরঙ্গ ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং যা ব্যক্তিত্ব, মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু—চতুর্দশ সংশোধনীর দ্বারা সুরক্ষিত স্বাধীনতার অংশ। স্বাধীনতার কেন্দ্রে রয়েছে নিজস্ব অস্তিত্ব, জীবনধারণের তাৎপর্য এবং মানব জীবনের রহস্য সম্পর্কে নিজস্ব ধারণা গড়ে তোলার অধিকার। রাষ্ট্র যদি এই বিশ্বাসগুলো চাপিয়ে দেয়, তাহলে তা ব্যক্তি-সত্ত্বার অবমূল্যায়ন।
> সমকামী সম্পর্কের ব্যক্তিরাও এই ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার ভোগ করতে পারেন, যেমনটি হেটারোসেক্সুয়াল ব্যক্তিরা করেন। ''বাওয়ার্স'' রায় এই অধিকার অস্বীকার করেছিল। সেই রায় তখনও ভুল ছিল, এখনও ভুল, এবং তা আর বজায় রাখা যায় না। ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' এখন বাতিল।
> এই মামলায় কোনো নাবালক জড়িত নয়, কোনো জোর বা আঘাতের ইঙ্গিত নেই, বা এমন সম্পর্ক নয় যেখানে সম্মতি জটিল হতে পারে। এটি জনসমক্ষে সংঘটিত হয়নি, যৌন বাণিজ্য বা রাষ্ট্র কর্তৃক সম্পর্ক স্বীকৃতির দাবি সম্পর্কেও নয়। এটি দুই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্মতিমূলক আচরণ, যেটি রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। সংবিধানের ডিউ প্রোসেস ধারা তাঁদের ব্যক্তিগত যৌন আচরণে হস্তক্ষেপহীন থাকার পূর্ণ অধিকার দেয়।
> “সংবিধান এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে এমন একটি ব্যক্তিস্বাধীনতার ক্ষেত্র থাকবে, যেখানে সরকার প্রবেশ করতে পারবে না।”
গুরুত্ব:
এই মামলাটি পূর্ববর্তী ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' রায় বাতিল করে সমকামীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রে এলজিবিটিকিউ অধিকার সুরক্ষার একটি মাইলফলক রায়।
=== [[w:Hamdi v. Rumsfeld|হামদি বনাম রামসফেল্ড]], ৫৪২ ইউ.এস. ৫০৭ (২০০৪) ===
এই মামলাটি এক মার্কিন নাগরিক, হামদি হামদান ইউসুফ হামদি, যিনি আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের সময় বন্দি হন এবং "শত্রু যোদ্ধা" হিসেবে মার্কিন সেনাবাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়, তাঁকে বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীভূত ছিল।
পটভূমি:
হামদিকে আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার করার পর গুয়ানতানামো বে-তে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক। এরপর তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তর করা হয় এবং বিনা বিচারে বন্দি রাখা হয়। সরকার যুক্তি দেয়, রাষ্ট্রপতি যুদ্ধকালীন সময়ে "শত্রু যোদ্ধা"দের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখার ক্ষমতা রাখেন এবং এই সিদ্ধান্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
প্রধান প্রশ্ন:
একজন মার্কিন নাগরিককে, যাকে সরকার "শত্রু যোদ্ধা" হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, কি বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখা যায়? এবং এ ক্ষেত্রে কি সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকের যথাযথ প্রক্রিয়ার অধিকার প্রযোজ্য?
রায়:
সুপ্রিম কোর্ট ৮-১ ভোটে রায় দেয় যে,
রাষ্ট্রপতি শত্রু যোদ্ধাদের আটক রাখার কিছু সীমিত ক্ষমতা রাখেন, কিন্তু…
একজন মার্কিন নাগরিককে এইভাবে বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখা যায় না।
হামদির মত বন্দিদের অবশ্যই ন্যূনতম প্রক্রিয়াগত সুরক্ষা পাওয়া উচিত, যার মধ্যে রয়েছে প্রমাণ চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ ও নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালে মামলা উপস্থাপন করার অধিকার।
গুরুত্ব:
এই রায় যুদ্ধবন্দি ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সীমা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ঘোষিত করে যে সংবিধান অনুসারে, কোনো মার্কিন নাগরিক আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং বিচার ছাড়া আটকের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রাখে, এমনকি সন্ত্রাসবিরোধী প্রেক্ষাপটেও।
=== [[w:Hamdan v. Rumsfeld|হামদান বনাম রামসফেল্ড]], ৫৪৮ ইউ.এস. ৫৫৭ (২০০৬) ===
এই মামলাটি সালিম আহমেদ হামদান নামক একজন ইয়েমেনি নাগরিককে কেন্দ্র করে, যিনি ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর হাতে আটক হন। তাঁকে গুয়ানতানামো বে-তে স্থানান্তর করা হয় এবং আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের ড্রাইভার হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। মার্কিন সরকার হামদানকে সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ. বুশ ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার পরে গঠন করেছিলেন।
প্রধান প্রশ্ন:
এই মামলায় প্রশ্ন ছিল—রাষ্ট্রপতি একতরফাভাবে যে সামরিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, তা কি মার্কিন আইন ও জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী বৈধ ছিল?
রায়:
সুপ্রিম কোর্ট ৫-৩ ভোটে রায় দেয় যে,
রাষ্ট্রপতির গঠিত সামরিক ট্রাইব্যুনালগুলি অবৈধ ছিল, কারণ সেগুলি কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি এবং
সামরিক ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী মার্কিন আইন এবং জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছিল।
মুখ্য যুক্তি:
কংগ্রেস যুদ্ধকালীন বিচারব্যবস্থা গঠনের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করেছে, যা রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অমান্য করেছিল।
হামদান একজন যুদ্ধবন্দি হিসেবে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী মৌলিক সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
আদালত আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ও নির্বাহী শাখা একতরফাভাবে বিচারব্যবস্থা গঠন করতে পারে না, কারণ এটি ক্ষমতার ভারসাম্য নীতির বিরুদ্ধে যায়।
গুরুত্ব:
এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধকালীন নাগরিক অধিকার, আন্তর্জাতিক আইন এবং নির্বাহী ক্ষমতার সীমা নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করে। এটি দেখায় যে রাষ্ট্রপতি, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটেও, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন মানতে বাধ্য।
=== [[w:Boumediene v. Bush|বৌমেডিয়েন বনাম বুশ]], ৫৫৩ ইউ.এস. ৭২৩ (২০০৮) ===
এই মামলাটি লক্ষিত হয়েছিল যুদ্ধবন্দিদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক প্রশ্নে। লাকদার বৌমেডিয়েন নামক একজন বসনিয়ান আলজেরীয়, যিনি ২০০১ সালের পরে গুয়ানতানামো বে-তে সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে বন্দি হন, তিনি ও অন্যান্য বন্দিরা যুক্তরাষ্ট্রে হেবিয়াস কর্পাস অধিকার (অর্থাৎ বেআইনি আটক চ্যালেঞ্জ করার অধিকার) দাবী করেন।
তবে ২০০৬ সালে সামরিক কমিশন আইন (MCA) পাস করে কংগ্রেস এই অধিকার গৃহীত বন্দিদের থেকে সরিয়ে নেয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে: বিদেশি নাগরিকেরা, যারা আমেরিকার মূল ভূখণ্ডের বাইরে (গুয়ানতানামো বে-তে) বন্দি, তাদের কি সংবিধানিকভাবে হেবিয়াস কর্পাসের অধিকার রয়েছে?
সুপ্রিম কোর্টের রায় (৫–৪ ভোটে):
হ্যাঁ, গুয়ানতানামো বে-র বন্দিদের হেবিয়াস কর্পাসের অধিকার আছে।
আদালত বলেন, যদিও গুয়ানতানামো বে প্রযুক্তিগতভাবে আমেরিকার অংশ নয়, কিন্তু এটি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত একটি এলাকা।
সংবিধানের হেবিয়াস কর্পাস ধারা ভূখণ্ড-নির্ভর নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতা যেখানে পৌঁছে, সেখানেই তা প্রযোজ্য।
রায়ের গুরুত্ব:
কংগ্রেস কর্তৃক পাস করা সামরিক কমিশন আইন-এর হেবিয়াস কর্পাস বাতিলের ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়।
রায়টি নির্বাহী ও আইনসভা কর্তৃক মৌলিক অধিকার সীমাবদ্ধ করার বিরুদ্ধে আদালতের শক্ত ভূমিকা প্রতিস্থাপন করে।
এটি প্রমাণ করে যে, মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার বিদেশি নাগরিকদের প্রতিও প্রযোজ্য হতে পারে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় তারা অবস্থান করেন।
এই মামলাটি মানবাধিকার ও আইনের শাসনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
===[[w:District of Columbia v. Heller|ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া বনাম হেলার]], ৫৫৪ ইউ.এস. ৫৭০ (২০০৮)===
এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী|দ্বিতীয় সংশোধনী]]<nowiki/>র ব্যাখ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি মিলিশিয়া এবং অস্ত্র রাখা ও বহনের অধিকারের সাথে জড়িত। এছাড়াও এটি [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী|চৌদ্দতম সংশোধনী]]<nowiki/>র সঙ্গেও জড়িত। এই সংশোধনী মানুষের কিছু অধিকার, যেমন জীবন, স্বাধীনতা, এবং সম্পত্তি রক্ষা করার সঙ্গে সম্পর্কিত। কোনও রাজ্য সরকার নাগরিকদের এসব অধিকারথেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
মামলাকারী হেলার ছিলেন কলম্বিয়া জেলার বাসিন্দা, যেখানে সেই জেলার আইন হ্যান্ডগানের মালিকানাকে নিষিদ্ধ করেছিল, শুধুমাত্র খুবই স্বল্প কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে এটি অনুমোদিত ছিল, যেগুলোর জন্য হেলার যোগ্য ছিলেন না। হেলার বিশ্বাস করতেন যে দ্বিতীয় সংশোধনী ব্যক্তিগত অধিকার হিসেবে অস্ত্র রাখার ও বহনের অধিকার সুরক্ষা করে। তাই তিনি মামলা করেন, দাবি করে যে কলম্বিয়া জেলার আইন তার অস্ত্র রাখার অধিকার লঙ্ঘন করছে।
সুপ্রীম কোর্ট হেলার এর সঙ্গে একমত হয় এবং সিদ্ধান্ত দেয় যে দ্বিতীয় সংশোধনী ব্যক্তিদের অস্ত্র রাখার ও বহনের অধিকার নিশ্চিত করে, এবং চৌদ্দতম সংশোধনী এই অধিকার রাজ্যগুলোর জন্যও প্রযোজ্য করে। ফলে কলম্বিয়া জেলার হ্যান্ডগান নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়।
==উৎস ও নোট==
{{reflist}}
{{chapnav | রাষ্ট্রপতি | প্রধান বিচারপতি}}
58krnon42ukrnpa9v7dw77772ti3jvn
85766
85765
2025-07-07T04:23:23Z
SMontaha32
11242
85766
wikitext
text/x-wiki
===মার্কিন সংবিধানিক কাঠামোর পরিচিতি===
যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যা রাজতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্রের বিপরীতে একটি নির্বাচিত ও জনগণের নিকট জবাবদিহিপূর্ণ এবং জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সমিতির মাধ্যমে শাসিত হয়। এই কারণে যুক্তরাষ্ট্র একটি "গণতন্ত্র", অর্থাৎ জনগণ দ্বারা শাসিত একটি দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের এই সমিতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার হিসেবে একগুচ্ছ পূর্বঘোষিত নীতি অনুসারে পরিচালিত হয়। এটি যেকোনো পরিস্থিতিতে সমানভাবে, ধারাবাহিকভাবে ও ন্যায্যভাবে প্রয়োগ করা হয়। এসব নীতি এবং এগুলোর প্রয়োগকেই বলা হয় "আইন"। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র একটি আইনের শাসনভিত্তিক দেশ, অর্থাৎ "আইনের শাসন" আছে এমন দেশ।
কিন্তু কে শাসন করে এই আইনকে? আইনই শাসন করে আইনকে।যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যবস্থায় কিছু আইন অন্যান্য আইনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন বা "দেশের সর্বোচ্চ আইন" হলো"যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান"। এটি একটি আইনসমষ্টি যা অন্যান্য আইন এবং সরকারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নির্ধারণ করে কী ধরনের আইন প্রণয়ন করা যায় আর সরকার কী করতে পারে। এটি কিছু ধরনের আইন প্রণয়ন নিষিদ্ধ করে এবং সরকারের কিছু কার্যকলাপ স্পষ্টভাবে নিষেধ করে। এটি সরকারের ক্ষমতার উপর মৌলিক সীমা আরোপ করে, এই বলে যে সংবিধানে সরকারকে যেসব ক্ষমতা স্পষ্টভাবে প্রদান (বা সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত) করা হয়নি। সেসব ক্ষমতা সরকারের নেই, সরকার তা প্রয়োগ করতে পারে না পাশাপাশি দাবি করতেও পারে না। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র একটি "সীমিত সরকার"-সম্পন্ন দেশ—এমন কিছু কাজ আছে যা সরকার করতে পারে না, যেমন: কাউকে বিনা কারণে কারাগারে প্রেরণ, একটি ধর্মকে একমাত্র বৈধ ধর্ম ঘোষণা করা, অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ ছাড়াই ঘরে তল্লাশি চালানো, বা কেবল কেউ ভিন্নমত পোষণ করছে বলেই তাকে শাস্তি দেওয়া। পাঠকের বোঝা উচিত, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব কাজ করে না কেবলমাত্র তাদের ইচ্ছার কারণে নয়—বরং কারণ তাদের সেই ক্ষমতা নেই।
তবে কে সংবিধানকে শাসন করে? যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক। তারা চাইলে এটি পরিবর্তন করতে পারে। গত দুই শতকেরও বেশি সময়ে এটি ২৭ বার পরিবর্তিত হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া ধীর, কঠিন। বেশিরভাগ মানুষ বিশেষত তুচ্ছ কারণে এমন কিছু পরিবর্তন করতে দ্বিধা বোধ করে, যা দীর্ঘদিন ধরে কার্যকরভাবে চলে আসছে।
===সংবিধানের প্রয়োগ===
সংবিধান নিয়ে কিছু কথা: এটি লেখা হয়েছিল ইন্টারনেট, কম্পিউটার, টেলিভিশন, পারমাণবিক শক্তি, রেডিও, বিমান, মোটরগাড়ি, বিদ্যুৎ এবং বৈদ্যুতিক আলো, ট্রেন বা বাড়ির ভেতরে প্রবাহমান পানির ব্যবস্থা থাকার আগেই—বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৩৭টি রাজ্য যুক্ত হওয়ার আগেই—পৃথিবীতে আর কোনো গণতান্ত্রিক দেশের অস্তিত্বের আগেই—আমাদের দেশে বড় শহর গড়ে ওঠার আগেই—এমনকি শিল্প, কর্পোরেশন, বা আধুনিক জীবনের অন্যান্য সুবিধাগুলোর আগেই। এটি লেখা হয়েছিল মোমবাতির আলোয়, বৈদ্যুতিক আলোয় নয়, এবং এটি ১৩টি রাজ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল ঘোড়সওয়ার বার্তাবাহকদের মাধ্যমে, ওয়েবসাইটে পোস্ট করে নয়। কিন্তু এটি লেখা হয়নি এমন সময়ে যখন অনেক আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বর ছিলেন না, বা যখন মানুষ সমান এবং স্বাধীন হওয়ার অধিকার রাখে—এই ধারণা গড়ে ওঠেনি। অনেকেই সংবিধানকে এমন এক সত্যসমষ্টি হিসেবে দেখেন, যা পরিবর্তনশীল সময়ে নিজেকে সমানভাবে প্রয়োগ করে।
এই কারণে, সংবিধান কখনও কখনও অস্পষ্ট হতে পারে, এবং পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির উপর নির্ভর করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, কিছু ব্যক্তি সংবিধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যাখ্যা করেন; এদের বলা হয় বিচারক; আর সংবিধানের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যাকারীদের বলা হয় বিচারপতি; এদের সংখ্যা নয়জন, এবং তারা মিলে গঠন করেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত—"সুপ্রীম কোর্ট"। যখন কোনো পরিস্থিতিতে সংবিধান অস্পষ্ট হয়ে পড়ে, তখন তার অর্থ কী হবে তা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা নির্ধারণ করেন। এই সিদ্ধান্তগুলো তখন নেওয়া হয় যখন একজন ব্যক্তি দাবি করেন যে অন্য ব্যক্তি যা করছেন (বা করছেন না) তা সংবিধান অনুযায়ী নিষিদ্ধ। এজন্য এসব মামলার নাম হয় "মার্বারি v ম্যাডিসন" জাতীয়; মারবারি, একজন ব্যক্তি, ম্যাডিসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, যিনি আরেকজন ব্যক্তি।
যখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বর্তমানের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন, তখন তারা অতীতের তাদের সিদ্ধান্তগুলোর (যা তারা "নজির" বলেন) দিকে নির্দেশনার জন্য ফিরে তাকান। এটি আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, কারণ আইনকে ধারাবাহিক হতে হয়। তবে কখনও কখনও তারা মনে করেন তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল—অথবা প্রয়োগযোগ্য নয়—এবং তখন তা সংশোধন করেন। কখনও কখনও তারা সেসব সিদ্ধান্তকে বহাল রাখেন বা আরও প্রসারিত করেন। যেভাবেই হোক, এমন অনেক সময় আছে যখন সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পরবর্তী অংশগুলোতে, আমরা সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর নাম করব এবং আলোচনা করব কেন এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল, কী সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, এবং কেন সেই সিদ্ধান্তগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সিদ্ধান্তগুলো—যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক সংবিধানের এই ব্যাখ্যাগুলো—যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ গঠন করে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র একটি আইনের শাসনভিত্তিক দেশ।
==প্রাথমিক সাংবিধানিক যুগ (১৭৮৭–১৮৫০)==
কেন্দ্রীয় সংঘ, তার প্রকৃতি, বিচারিক সর্বোচ্চতা, আইনের শাসন, অঙ্গরাজ্যের অধিকার, ফেডারেল ক্ষমতা ও তার সীমা, বিভিন্ন শাখা, অঙ্গরাজ্য এবং জনগণের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন ও বণ্টনের প্রশ্ন, এবং দাসত্বের প্রশ্ন।
===[[w:Marbury v. Madison|মারবুরি বনাম ম্যাডিসন]], ৫ ইউ.এস. ১৩৭ (১৮০৩)===
কার্যালয়ে তাঁর শেষ দিনের আগের দিন, প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস নতুনভাবে তৈরি করা বহু আদালতের জন্য ৪২ জন বিচারক নিয়োগ দেন। তাঁদের একজন ছিলেন উইলিয়াম মারবুরি। সিনেট বিচারকদের অনুমোদন দেয় এবং পররাষ্ট্র সচিব জন মার্শাল তাঁদের নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন, যা প্রত্যেক নিয়োজিত ব্যক্তির জন্য আবশ্যক। তবে যেদিন থমাস জেফারসন শপথ নেন, সেদিন তিনি তাঁর নিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব জেমস ম্যাডিসনকে অনেক বিচারকের নিয়োগপত্র পৌঁছে না দিতে আদেশ দেন—মারবুরি তার মধ্যে ছিলেন। মারবুরি আদালতের মাধ্যমে ম্যাডিসনকে বাধ্য করতে মামলা করেন। তিনি যুক্তি দেন যে ১৭৮৯ সালের বিচার বিভাগীয় আইন অনুযায়ী, ''ম্যানডামাস রুল'' বা সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশপ্রাপ্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার রয়েছে।
মার্শাল, যিনি ঘটনাক্রমে অ্যাডামসের শেষ দিনে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন, আদালতের সর্বসম্মত রায়ে লেখেন যে কোর্টের মারবুরির মামলায় রায় দেওয়ার এখতিয়ার নেই। মারবুরি যুক্তি দেন যে সংবিধানের ৩য় অনুচ্ছেদ কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতার মৌলিক নিয়ম নির্ধারণ করে এবং কংগ্রেস যে কোনো সময় তা সম্প্রসারিত করতে পারে। মার্শাল একমত হননি। তিনি বলেন, কংগ্রেস যদি আদালতের এখতিয়ার পরিবর্তন করে এমন আইন প্রণয়ন করতে পারে, তবে সংবিধান থাকার অর্থ কী? যদি এইভাবে ৩য় অনুচ্ছেদ পাশ কাটিয়ে আইন প্রণয়ন সম্ভব হয়, তবে কি এমন আইনও তৈরি করা যাবে যার মাধ্যমে আদালত পুরোপুরি সংবিধান অগ্রাহ্য করতে পারে?
তিনি রায় দেন যে বিচার বিভাগীয় আইন সংবিধানের পরিপন্থী, কারণ তা ৩য় অনুচ্ছেদের পরিধি বাড়ায়। এর মাধ্যমে '''বিচারিক পর্যালোচনা''' নামক গুরুত্বপূর্ণ নীতির ঘোষণা করা হয়। এটি হলো: বিচার বিভাগের, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের, ক্ষমতা—যে তারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন বাতিল করতে পারে।
===[[w:Fletcher v. Peck|ফ্লেচার বনাম পেক]], ১০ ইউ.এস. ৮৭ (১৮১০)===
ফ্লেচার বনাম পেক ছিল প্রথম মামলা যেখানে সুপ্রিম কোর্ট একটি অঙ্গরাজ্য আইনের সাংবিধানিক বৈধতা অস্বীকার করে। আমেরিকার পশ্চিমে সম্প্রসারণের সময়, জর্জিয়া রাজ্য ইয়াজু নদী অঞ্চলের ৩.৫ কোটি একর জমি আদিবাসীদের কাছ থেকে দখল করে, যা পরবর্তীতে আলাবামা ও মিসিসিপি রাজ্যে রূপান্তরিত হয়। ১৭৯৫ সালে, জর্জিয়া আইনসভা সেই জমি চারটি ভাগে ভাগ করে চারটি কোম্পানির কাছে মাত্র ৫ লাখ ডলারে বিক্রি করে।
পরে প্রকাশ পায় যে, জমির বিক্রির অনুমোদন দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছিল। জনগণ পরবর্তী নির্বাচনে অধিকাংশ আইনপ্রণেতাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং নতুন আইনসভা সেই আইন বাতিল করে জমির লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা করে।
জন পেক পূর্বে ক্রয়কৃত সেই জমি রবার্ট ফ্লেচারের কাছে বিক্রি করেন। ১৮০৩ সালে ফ্লেচার মামলা করেন, দাবি করে যে পেকের কাছে জমির বৈধ মালিকানা ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট একমত হয় যে আইনসভা পূর্ববর্তী আইনি চুক্তি বাতিল করতে পারে না। প্রধান বিচারপতি মার্শালের রায় অনুযায়ী, বিক্রয়টি একটি বৈধ চুক্তি ছিল, যা সংবিধানের ১ম অনুচ্ছেদ, ১০ম ধারা, ১ম উপধারার অধীনে রক্ষা পায় (এটি "চুক্তি ধারা" নামে পরিচিত)। এটি ছিল প্রথমবার যখন আদালত কোনো অঙ্গরাজ্য আইনকে সংবিধানের পরিপন্থী ঘোষণা করে।
===[[w:Martin v. Hunter's Lessee|মার্টিন বনাম হান্টারের লেসি]], ১৪ ইউ.এস. ৩০৪ (১৮১৬)===
বিপ্লব যুদ্ধ চলাকালীন ভার্জিনিয়া রাজ্য অনুগত ব্রিটিশদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে আইন প্রণয়ন করে। ১৭৮৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ফেডারেল সরকার অঙ্গরাজ্যগুলোকে সেই সম্পত্তি ফেরত দিতে বলবে। একটি মামলায় অনুগত ডেনি মার্টিন ভার্জিনিয়ার আদালতে মামলা করেন, এই যুক্তিতে যে সেই চুক্তি অনুযায়ী তার সম্পত্তি ফেরত দেওয়া উচিত।
ভার্জিনিয়া সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তি খারিজ করে। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে আপিল হয়, যেটি জানায় যে আন্তর্জাতিক চুক্তিটি প্রযোজ্য এবং মামলাটি আবার রাজ্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু রাজ্য আদালত বলে যে সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার নেই। আবার সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় বাতিল করে জানায় যে, মামলাটি ফেডারেল আইনের অধীন এবং ফেডারেল আদালতের সর্বোচ্চ ক্ষমতা রয়েছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট সকল রাজ্য আদালতের ওপর তার সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব ঘোষণা করে।
===[[w:McCulloch v. Maryland|ম্যাককালক বনাম মেরিল্যান্ড]], ১৭ ইউ.এস. ৩১৬ (১৮১৯)===
এই মামলা রাজ্য অধিকার বনাম ফেডারেল সরকারের ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ছিল। ১৮১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুনঃস্থাপন করার পর অনেক রাজ্য এর বিরোধিতা করে, কারণ ব্যাংক তাদের থেকে ঋণ আদায় করত। প্রতিবাদস্বরূপ, মেরিল্যান্ড ব্যাংকের ওপর একটি কর আরোপ করে, যা ব্যাংক দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাংকের বাল্টিমোর শাখার প্রধান জেমস ম্যাককালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
আদালতের সর্বসম্মত মতামতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমত, কংগ্রেস ব্যাংক গঠন করতে পারে, কারণ এটি সংবিধানের "ইম্প্লায়েড পাওয়ার" বা অনুমানিত ক্ষমতার অধীনে পড়ে। দ্বিতীয়ত, মেরিল্যান্ডের কর অসাংবিধানিক, কারণ এটি সর্বোচ্চতা ধারা লঙ্ঘন করে। এই ধারা অনুযায়ী, রাজ্য কখনো ফেডারেল সরকারকে বাধা দিতে পারে না। কর আরোপ করলে ব্যাংক কার্যত ধ্বংস হতে পারে, যা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডারেল সরকারের প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করত।
===[[w:Dartmouth College v. Woodward|ডার্টমাউথ কলেজ বনাম উডওয়ার্ড]], ১৭ ইউ.এস. ৫১৮ (১৮১৯)===
ডার্টমাউথ কলেজ মামলায় ''প্যাক্টা সান্ট সার্ভান্ডা'' বা "চুক্তি মান্য করা আবশ্যক" এই নীতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। ১৭৬৯ সালে রাজা তৃতীয় জর্জ কর্তৃক একটি উপনিবেশিক সনদের মাধ্যমে ডার্টমাউথ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৫ সালে নিউ হ্যাম্পশায়ার আইনসভা কলেজটির সনদ পরিবর্তন করতে চায় যাতে গভর্নর কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ ও ট্রাস্টি বোর্ড নিয়োগ করতে পারেন এবং একটি রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান বোর্ড গঠন করা যায়—অর্থাৎ কলেজটিকে বেসরকারি থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বানানো। আদালত রায় দেয় যে পুরনো সনদ বৈধ, কারণ এটি একটি চুক্তি এবং সংবিধানের চুক্তি ধারা অনুযায়ী সুরক্ষিত।
===[[w:Gibbons v. Ogden|গিবন্স বনাম ওগডেন]], ২২ ইউ.এস. ১ (১৮২৪)===
গিবন্স বনাম ওগডেন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে আন্তঃরাজ্য বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কংগ্রেসের কাছে রয়েছে, যা সংবিধানের বাণিজ্য ধারায় প্রদান করা হয়েছে। মামলাটি তৎকালীন সময়ের কিছু প্রসিদ্ধ আইনজীবী পরিচালনা করেন: ওগডেনের পক্ষে ছিলেন টমাস অ্যাডিস এমেট ও থমাস জে. ওকলি এবং গিবন্সের পক্ষে ছিলেন উইলিয়াম ওয়ার্ট ও ড্যানিয়েল ওয়েবস্টার।
== সাংবিধানিক সংকট এবং সিদ্ধান্ত (১৮৫০–১৮৭১) ==
এই সময়কাল ছিল গভীর সংবিধানিক সংকটের, যেখানে ঐক্যের প্রকৃতি, রাজ্যগুলোর সার্বভৌমত্ব, নাগরিকত্বের অর্থ, এবং রাষ্ট্রপতির অসাধারণ ক্ষমতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক হয়েছিল। যুদ্ধ ক্ষমতা, যুদ্ধে প্রথা ও নিয়ম, হেবিয়াস কর্পাস এবং সংকটকালে এর প্রয়োগ, স্বাধীনতার ঘোষণা-পত্রের নীতির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি, এবং [[w:John Calhoun|কালহুনিয়ান]] গনতন্ত্রবিরোধী দাসপ্রভু শক্তির অত্যাচারী সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মতবাদ প্রত্যাখ্যান—এসব বিষয় এখানে আলোচিত হয়েছে।
এই অংশটি স্বাভাবিক বিচারিক ব্যাখ্যার থেকে ভিন্ন, কারণ সংবিধানে এবং তার ব্যাখ্যায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছিল শুধুমাত্র বিচারালয়ের মাধ্যমে নয়, বরং সংশোধনী অথবা বিজয়ীর অধিকার দ্বারা।
=== [[w:Dred Scott v. Sandford|ড্রেড স্কট বনাম স্যান্ডফোর্ড]], ৬০ ইউ.এস. ৩৯৩ (১৮৫৭) ===
ড্রেড স্কট ছিল আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত সুপ্রিম কোর্টের রায়, যা সম্ভবত গৃহযুদ্ধের প্রধান কারণগুলোর একটি। অধিকাংশ আমেরিকান ইতিহাসবিদ, পণ্ডিত ও আইনজীবীর মতে, এটি ছিল সংবিধানের একটি কালিমা—যখন আমেরিকা স্পষ্টতই পাপ জানল।
ড্রেড স্কট একজন আফ্রিকান-আমেরিকান দাস যিনি মিসৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর মালিক তাঁকে ইলিনয়স (একটি মুক্ত রাজ্য) এ নিয়ে যান। স্কট তার মুক্তির দাবিতে মামলা করেন। বিষয়টি আদালতগুলোকে পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়।
যদিও মামলা কারিগরি কারণে বাতিল করা যেত, প্রধান বিচারপতি রজার টেনি সিদ্ধান্ত নেন দাসপ্রথার প্রশ্ন চূড়ান্তভাবে সমাধান করবেন। টেনি ঘোষণা দেন যে আফ্রিকান-আমেরিকানরা সংবিধানের অর্থে নাগরিক নয় এবং তাদের কোনো অধিকার নেই, শুধুমাত্র যাদের ক্ষমতা আছে তারাই তাদের অধিকার দিতে পারে। তাই তারা নাগরিক নয় বলে তাদের মামলা করার অধিকারও নেই। মামলাটি বাতিল করা হয়।
রায়ের সবচেয়ে কুখ্যাত অংশটি ছিল:
> "‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ’ এবং ‘নাগরিক’ শব্দগুলি সমার্থক এবং একই অর্থ বহন করে। তারা হলেন সেই রাজনৈতিক সমষ্টি যারা আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান অনুসারে সার্বভৌমত্ব গঠন করে, এবং সরকার পরিচালনা করে। আমরা মনে করি তারা (আফ্রিকান-আমেরিকানরা) নয়, এবং সংবিধানে ‘নাগরিক’ শব্দের মধ্যে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তারা তখন অবরোধিত এবং নিম্নমানের শ্রেণীর হিসেবে বিবেচিত হত, যারা আধিপত্যশীল জাতি দ্বারা শাসিত, এবং তাদের কোনো অধিকার ছিল না, শুধু যে অধিকার ক্ষমতাবানরা দিতে চেয়েছে।"
৭০০,০০০ মানুষের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পরই ড্রেড স্কট রায়ের কলঙ্ক ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয় এবং দাসপ্রথা চিরতরে বন্ধ হয়।
=== [[w:Ex parte Merryman|এক্স পার্টে মেরিম্যান]], (১৮৬১) ===
''অপেক্ষমাণ''
মেরিম্যান মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারিত হয়নি, তবে এটি স্পষ্টতার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, কারণ এতে রাষ্ট্রপতির অসাধারণ ক্ষমতার বিষয় রয়েছে।
১৮৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি বিশাল, কম জনবহুল, প্রধানত কৃষিভিত্তিক দেশ। সে সময়ের মহান শক্তি ছিল না, কারণ সেই সময়ের মহান শক্তিগুলো ছিল ইউরোপীয় রাষ্ট্রীয় সত্তাগুলো — যেমন লন্ডনের ডকল্যান্ডস, আমস্টারডামের বন্দর, ভার্সাই, দি হেগ এবং ভিয়েনার প্রাসাদগুলোতে তারা বিশ্বের ব্যবসা পরিচালনা করত। যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি ছোট ক্ষমতা, যা নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং সেই সময়ের দার্শনিক ও চিন্তাবিদরা এটিকে গণতান্ত্রিক শাসনের একটি ছোট পরীক্ষা হিসেবে দেখতেন যা বড় কোনো ফলাফল দিচ্ছে না; ইউরোপীয় রাজাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র ছিল তাদের বিপ্লবী বিরোধীদের নির্বাসিত করার একটি সুবিধাজনক স্থান, যারা নির্বাচিত সরকার বা নাগরিক স্বাধীনতার দাবিতে যেত।
কিছু ইউরোপীয়দের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র "সভ্যতার ধাপে না গিয়ে বর্বরতা থেকে অবক্ষয়ের দিকে গিয়েছে"। ওয়াশিংটন, ডি.সি. তখন ছিল একটি অল্প গুরুত্বের সেমি-ট্রপিক্যাল পশ্চাদদেশ; বহু ইউরোপীয় কূটনীতিক, যারা ফ্রান্স ও প্রুশিয়ার সাম্রাজ্যবাদের অভিজাত সভায় অংশ নিতেন অথবা ভার্সাইয়ের হল অফ মিররস-এ গ্র্যান্ড বলের অংশ ছিলেন, তারা এখানে চাকরি করতে গেলে বিশেষ কষ্ট ভোগ করতে হতো।
অনেক পশ্চিমের রাজ্য (গ্রেট প্লেইন্স এবং রকি মাউন্টেইন রাজ্যগুলো) তখন রাজ্য ছিল না, এবং এই অঞ্চলগুলো বেশিরভাগ অনাবাসী ছিল, সরকার এখানে ভূমির মালিক ছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষে তা ন্যায্য ভাবে বণ্টন করা সম্ভব ছিল না। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলো কিছুটা বসতি গড়ে তুলেছিল, তবে শিল্পের মাত্রা কম এবং কৃষি মাঝারি মাত্রায় ছিল ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রেলপথ নির্মাণের আগে (যেগুলোর সমাপ্তির তারিখ ছিল ইউনিয়ন প্যাসিফিক ১৮৭৩, সাউদার্ন প্যাসিফিক ১৮৮২, এবং গ্রেট নর্দান ১৮৯১)। পূর্ব রাজ্যগুলিতে, যুক্তরাষ্ট্রের পুরানো উত্তর-পশ্চিমে ছিল মাঝারি জনসংখ্যা, যেখানে খনি, শিল্প এবং কৃষি ছিল; মধ্য আটলান্টিক ও উত্তর-পূর্বে ছিল তুলনামূলক বেশি জনসংখ্যা, যেখানে জাতীয় শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্রীভূত ছিল; এবং পুরানো দক্ষিণে জনসংখ্যা মাঝারি থেকে বেশি এবং বৃহৎ আকারের কৃষি চালু ছিল। উত্তরাঞ্চলের (যা এখন আমরা আপার মিডওয়েস্ট বলি — অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালা থেকে মিসিসিপি নদীর পর পর্যন্ত) যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিল, যা বাণিজ্য ও শিল্পের প্রয়োজন মেটাতো, এবং রেলপথ শহর থেকে শহরে ২-৩ দিনের মধ্যে যাতায়াত সহজ করত। দক্ষিণের রেল ব্যবস্থা তুলনামূলক কম বিকশিত ছিল এবং সেখানে যাতায়াত প্রায়ই দীর্ঘ সময় নিত। পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে যাতায়াত স্টিমার বা স্থলপথে হতো, যেটা দ্রুত ছিল না। একজন ব্যক্তি এক মাস বা তারও বেশি সময়ে দেশটির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারত। তথ্য অবশ্য অনেক দ্রুত পৌঁছাত—ট্রান্সকন্টিনেন্টাল টেলিগ্রাফ পূর্বের খবর পশ্চিমে মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে দিত, আর আগে থেকে পনি এক্সপ্রেস মিলিত মেইল পৌঁছাত কয়েক দিনের মধ্যে।
এই প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস তখন সারাবছর মিলিত হত না, বরং তখন কংগ্রেস ছিল আংশিক সময়ের আইনসভা; আইন ছিল সীমিত এবং সরল, সময়ের কাজ গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা অতি জরুরি ছিল না, আর অধিবেশন শেষ হলে সদস্যরা তাদের নিজ রাজ্য ও জেলা, কাঠের কুঁড়েঘর, ছোট খামার, শহর ও প্ল্যান্টেশনে ফিরে যেতেন।
উত্তর থেকে নির্বাচিত আব্রাহাম লিনকনের প্রেসিডেন্সির পর যুক্তরাষ্ট্রের কিছু এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে, কারণ দক্ষিণের দাসশক্তি আগ্রহী ছিল উত্তরের বিরোধিতাকে আগুন ও তলোয়ার দিয়ে চিরতরে দমন করতে, অথবা অন্ততঃ 'দমনমূলক' ফেডারেল শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার আফ্রিকার উপকূলের মানুষের শরীর বাণিজ্যে ফিরতে এবং এমন একটি দাস সাম্রাজ্য গড়তে, যা কিউবা ও মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃত হতো, যা এক সময়ের দাসশক্তি অংশের নেতা জন কালহুনের পরিকল্পনা ছিল। এই বিদ্রোহ একটি বিক্ষোভে পরিণত হয়, একটি সরকার দাবি করে; সাউথ ক্যারোলিনা, যেখানে দাস প্রথা সবচেয়ে প্রবল ছিল এবং আফ্রিকান-আমেরিকান দাস মানুষের সংখ্যা অন্যান্য জাতির তুলনায় বেশি ছিল, প্রথমে ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং তার পরে গভীর দক্ষিণের অন্যান্য রাজ্যও, যেখানে দাসশক্তি সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল, তাদের অনুসরণ করে। ভার্জিনিয়া ও টেনেসি, যারা তুলনামূলক কম দাস প্রথার অধীনে ছিল, প্রথমদিকে তাদের আইনসভায় বিদ্রোহ উস্কানির মাত্রা দেখা গেলেও তারা ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রচেষ্টা শুরুর আগেই, সাউথ ক্যারোলিনার আগুন-খাওয়ানরা ফোর্ট সাম্টারে প্রথম গুলি চালায়, যা ছিল ফেডারেল ইউনিয়নের সম্পত্তি, এবং এই গুলির সাথে যুদ্ধ শুরু হয় — যাকে আমরা রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধ, দক্ষিণের আগ্রাসনের যুদ্ধ, উত্তরের আগ্রাসনের যুদ্ধ বা পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ নামে জানি।
ফোর্ট সাম্টারে আক্রমণের পরে, আপার সাউথ বিদ্রোহের সাথে যুক্ত হয়, এমনকি মেরিল্যান্ড, কেনটাকি, এবং মিসৌরি—যেগুলো দাসপ্রথার ক্ষতে তুলনামূলক হালকা আঘাত পেয়েছিল—তাদের ভিতরে দাসপ্রেমী ও দাসশক্তি সমর্থকরা ফেডারেল ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কনফেডারেসির হাতে এই রাজ্যগুলো তুলে দিতে চেয়েছিল বলে গুজব ছড়ায়।
১৮৬১ সালের প্রথম ছয় থেকে সাত মাসে, কংগ্রেস ওয়াশিংটন, ডি.সি.-তে একত্রিত হয়নি এবং পুনরায় অধিবেশন শুরু করতে পারেনি, কারণ সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিল, জরুরি খবর ধীরে পৌঁছছিল, এবং মানুষের চলাচল ছিল খুব ধীর।
গৃহযুদ্ধের প্রথম বছরে, রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিনকন...
সংশ্লিষ্ট বিষয় হিসেবে,'''ইয়ংটাউন''' মামলার পরিমিত রায়ের সঙ্গে তুলনা ও পার্থক্যও বিবেচনা করা যেতে পারে।
=== [[w:Ex parte Milligan|এক্স পার্টে মিলিগান]], ৭১ ইউ.এস. ২ (১৮৬৬) ===
মামলাটি কনফেডারেট সমর্থকদের নিয়ে, যারা তথাকথিত ইউনিটারী এক্সিকিউটিভের আদেশে গঠিত "সামরিক কমিশন"-এর মাধ্যমে (ছদ্ম) বিচারাধীন ছিলেন, সম্পর্কিত।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে সামরিক কমিশন বা যেকোনো ধরণের আংশিক প্রক্রিয়াগত ন্যায়বিচারের ব্যবহার অবশ্যই সামরিক প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে হতে হবে এবং তা বাস্তব সামরিক কার্যক্রমের এলাকায় সময় এবং স্থান উভয়ের দিক থেকে সন্নিকটে থাকতে হবে।
== দ্বিতীয় সাংবিধানিক যুগ (১৮৭১-১৯৩৮) ==
গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগত ন্যায়বিচার, "কর্পোরেট পার্সনহুড", "অলাদা কিন্তু সমান", "চুক্তির স্বাধীনতা", একাধিপত্য, কর্পোরেশন, জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ের অর্থনীতি, ব্যক্তিগত লোভ বনাম জনসাধারণের প্রয়োজন।
=== [[w:Slaughter-House Cases|স্লটার-হাউস মামলাসমূহ]], ৮৩ ইউ.এস. ৩৬ (১৮৭৩) ===
=== [[w:The Civil Rights Cases|সিভিল রাইটস মামলাসমূহ]], ১০৯ ইউ.এস. ৩ (১৮৮৩) ===
=== [[w:Santa Clara County v. Southern Pacific Railroad Company|সান্তা ক্লারা কাউন্টি বনাম সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলরোড কোম্পানি]], ১১৮ ইউ.এস. ৩৯৪ (১৮৮৬) ===
এই রায়ে ১৪তম সংশোধনী ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের "ব্যক্তি" শব্দের পরিধি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে আইনি কল্পনাপ্রসূত সত্ত্বা যেমন কর্পোরেশনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ফলে কর্পোরেশনগুলোকে একই অধিকার (যেমন বাকস্বাধীনতা, চুক্তি করার স্বাধীনতা) দেওয়া হয়, যা আগে শুধুমাত্র মানুষের জন্য সংবিধান, অধিকারপত্র ও ১৪তম সংশোধনী অনুসারে প্রযোজ্য ছিল। এই রায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল কারণ এর ফলে কর্পোরেশনগুলো সংবিধানকে আড়াল করে জনপ্রিয় আইন যেমন নূন্যতম মজুরি আইন, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা মানদণ্ড, কর, শ্রম আইন থেকে সুরক্ষা দাবি করতে পারে। এই রায় ছিল পরবর্তী ৫০ বছর ধরে আদালতের আইনজীবন ধারণার মূল ভিত্তি, যা ১৯৩৮ সালে '''কারোলিন প্রোডাক্টস''' মামলার মাধ্যমে পাল্টানো হয়।
=== [[w:In_re_Debs|ইন রে ডেবস]], ১৫৮ ইউ.এস. ৫৬৪ (১৮৯৫) ===
=== [[w:Plessy v. Ferguson|প্লেসি বনাম ফেরগুসন]], ১৬৩ ইউ.এস. ৫৩৭ (১৮৯৬) ===
প্লেসি বনাম ফেরগুসন মামলায় "অলাদা কিন্তু সমান" নীতির অধীনে বর্ণবৈষম্যের আইনকে, বিশেষ করে জনসাধারণের সুবিধাসমূহে (রেলরোডে), সংবিধানসম্মত বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই রায় ছিল দক্ষিণাঞ্চলের জিম ক্রো বর্ণবৈষম্য আইনগুলোর আইনি ভিত্তি।
রায়টি ৭-১ ভোটে দেওয়া হয়, যেখানে প্রধান বিচারপতি হেনরি বিলিংস ব্রাউন সংখ্যালঘু মতামত লিখেছিলেন এবং বিচারপতি জন মার্শাল হারলান অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। বিচারপতি ডেভিড জোসিয়াহ ব্রুয়ার রায়ে অংশ নেননি। "অলাদা কিন্তু সমান" নীতি ১৯৫৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের '''ব্রাউন বনাম বোর্ড অফ এডুকেশন''' রায় পর্যন্ত মার্কিন আইনে প্রচলিত ছিল।
এই রায়ের পরে নিউ অর্লিয়ানসের কমিটি দে সিটোয়েন্স, যারা মামলাটি করেছিল এবং হোমার প্লেসির গ্রেফতার নিশ্চিত করেছিল লুইজিয়ানা রাজ্যের বৈষম্যমূলক আইনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য, বলেছিল, "আমরা, স্বাধীন নাগরিক হিসেবে, এখনও বিশ্বাস করি আমরা সঠিক ছিলাম এবং আমাদের কারণ পবিত্র।"
=== [[w:Insular Cases|ইনসুলার মামলাসমূহ]], (১৯০১-১৯০৫) ===
ইনসুলার মামলাসমূহ ছিল সুপ্রিম কোর্টের এক সিরিজ রায়, যা যুক্তরাষ্ট্র ১৮৯৮ সালের [[w:Spanish-American War|স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ]] এবং পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চল অধিগ্রহণের পর প্রাপ্ত উপনিবেশ বা অঞ্চলগুলোর সংবিধানগত অবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মামলাগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি ছিল "সংবিধান পতাকার সঙ্গে যায় না।" অর্থাৎ, সংবিধান অনুযায়ী আমেরিকান নাগরিকদের অধিকার সব সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চলগুলোর অধিবাসীদের প্রযোজ্য নয়। এই মামলাগুলোকে ইনসুলার মামলা বলা হয় কারণ যুক্তরাষ্ট্র যে অঞ্চলগুলো অধিগ্রহণ করেছিল সেগুলো দ্বীপ ছিল, যেমন ফিলিপাইন, হাওয়াই, পুয়ের্তো রিকো, এবং গুয়াম। এই মামলাগুলো এই নীতিও প্রতিষ্ঠা করেছিল যে সংবিধান কেবলমাত্র "সম্পূর্ণরূপে সংযুক্ত অঞ্চল"-এর জন্য প্রযোজ্য, অর্থাৎ অঞ্চলগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের অধীন পূর্ণাঙ্গভাবে সংযুক্ত হতে হবে।
=== [[w:Lochner v. New York|লোচনার বনাম নিউ ইয়র্ক]], ১৯৮ ইউ.এস. ৪৫ (১৯০৫) ===
=== [[w:Schenck v. United States|শেঙ্ক বনাম ইউনাইটেড স্টেটস]], ২৪৯ ইউ.এস. ৪৭ (১৯১৯) ===
শেঙ্ক বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলাটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়, যা আলোচ্য ছিল যে আসামি বিশ্বযুদ্ধের সময় খসড়া টানা (ড্রাফট) বিরোধিতায় তার প্রথম সংশোধনী অধিকার (বাকস্বাধীনতা) প্রযোজ্য কিনা। চার্লস শেঙ্ক সোশ্যালিস্ট পার্টির সচিব ছিলেন এবং তিনি খসড়া টানার জন্য উপযুক্ত পুরুষদের মধ্যে ১৫,০০০ পত্রিকা ছেপে বিতরণ করেছিলেন যা খসড়া টানার বিরোধিতা করেছিল। এসব পত্রিকায় ছিল যেমন; "ভয়ভীতি মানবেন না", "আপনার অধিকার দাবি করুন", "যদি আপনি আপনার অধিকার দাবি না করেন এবং সমর্থন না করেন, তবে আপনি সেই অধিকারকে নস্যাৎ করতে সহায়তা করছেন যা সব নাগরিকের গম্ভীর কর্তব্য।" এই মামলাটি মূলত "স্পষ্ট ও বর্তমান বিপদের" নিয়মের ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যা প্রধান বিচারপতি অলিভার ওয়েন্ডেল হোমসের সংখ্যালঘু মতামতে প্রথম লিখিত হয়।
=== [[w:United States v. Carolene Products Co.|যুক্তরাষ্ট্র বনাম ক্যারোলিন প্রোডাক্টস কোম্পানি]], ৩০৪ ইউ.এস. ১৪৪ (১৯৩৮) ===
== তৃতীয় সাংবিধানিক যুগ (১৯৩৮) ==
নাগরিক অধিকার, আইনের নিচে সমতা, গোপনীয়তার অধিকার, "উৎস থেকে সৃষ্ট পরছায়া", ন্যায়বিচারের অর্থ, নির্বাহী ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, স্বাধীনতার বহুমুখী সম্ভাবনা।
=== [[w:Hague v. Committee for Industrial Organization|হেগ বনাম সিআইও]], ৩০৭ ইউ.এস. ৪৯৬ (১৯৩৯) ===
তৃতীয় যুগের প্রথম নাগরিক স্বাধীনতা সংক্রান্ত মামলা, যা সমবেত হওয়ার স্বাধীনতা, সংগঠন গঠনের স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত; বিশেষত, নিউ জার্সির কুখ্যাত [[w:Frank Hague|বস হেগ]] কর্তৃক শ্রম ইউনিয়নগুলোর দমন সংক্রান্ত।
=== [[w:Korematsu v. United States|কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র]], ৩২৩ ইউ.এস. ২১৪ (১৯৪৪) ===
[[File:Fred Korematsu.jpg|thumb|upright|ফ্রেড কোরেমাতসু, ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া একজন আমেরিকান যিনি জাপানি ইন্টারনমেন্টের শিকার হন।]]
কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র ছিল একটি রায়, যা জাপানি-আমেরিকানদের (যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সহ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে কারাগার শিবিরে বন্দী করার বিষয় নিয়ে। নির্বাহী আদেশ ৯০৬৬-এর মাধ্যমে, রাষ্ট্রপতি ফ্র্যাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্ট ১৯৪২ সালে পেরল হারবারে জাপানি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলবর্তী নির্দিষ্ট অঞ্চলের সব জাপানি ও জাপানি-আমেরিকান বাসিন্দাদের স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। এর ফলে প্রায় ১২০,০০০ জাতিগত জাপানিকে (তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক) নির্বাহী আদেশে স্থাপিত সামরিক অঞ্চলে ইন্টারনমেন্ট শিবিরে রাখা হয়। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ৬-৫ ভোটে এই ইন্টারনমেন্টের সংবিধানসম্মততা মেনে নিয়েছিল, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি রোধ করা নাগরিকদের অধিকার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট '''ট্রাম্প বনাম হাওয়াই''' মামলায় কোরেমাতসু বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলাটিকে ভুল রায় হিসেবে ঘোষণা করে।
=== [[w:Youngstown Sheet & Tube Co. v. Sawyer|ইয়াংস্টাউন শীট অ্যান্ড টিউব কো. বনাম সয়্যার]], ৩৪৩ ইউ.এস. ৫৭৯ (১৯৫২) ===
কোরিয়ান যুদ্ধের সময়, স্টীলওয়ার্কার্স (একটি শ্রমিক সংঘ, অর্থাৎ শ্রম ইউনিয়ন) এবং তাদের নিয়োগকর্তা বিভিন্ন স্টীল মিলের মধ্যে শ্রমবিরোধ সৃষ্টি হয়। স্টীল মিলগুলি দাবী করেছিল যে, ওই শ্রমিকদের বেতন খুব বেশি দেওয়া হচ্ছে, এবং কঠিন আলোচনার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় শ্রমিকদের লকআউট করে তাদের বেতন দেওয়া এড়ানোর জন্য। শ্রমিকরা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়, কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের জন্য ট্যাংক ও অস্ত্রের প্রচুর চাহিদা ছিল, যা উৎপাদিত হতে পারছিল না এবং মিল মালিকদের অবস্থানের কারণে উপেক্ষিত ছিল, সম্ভবত তারা কাজ করতে ও বেতন পেতেও পারছিল না।
রাষ্ট্রপতি [[w:Harry Truman|হ্যারি ট্রুম্যান]] হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন, দাবি করে যে যেহেতু যুদ্ধ চলছে, তিনি "কমান্ডার ইন চিফ" হিসেবে সাময়িকভাবে ফেডারেল সরকারের অধীনে স্টীল মিলগুলি জব্দ করে পরিচালনা করতে পারেন যাতে যুদ্ধকালীন উৎপাদন অব্যাহত থাকে। এই সিদ্ধান্ত স্টীল মিল মালিক ও শ্রমিক উভয়েরই রোষাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে; দুই পক্ষই বিশ্বাস করত না সরকার এমন কিছু করতে পারে, কারণ এই ধরনের কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়ার জন্য কোনো আইন পাস হয়নি; অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করত ট্রুম্যানের মতো একতরফা পদক্ষেপই সংবিধান রোধ করার জন্যই তৈরি হয়েছে।
স্টীল মিল মালিকরা সরকারকে স্টীল মিল জব্দের জন্য মামলায় তোলে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, পরিস্থিতির জরুরি প্রকৃতির কারণে মামলা সুপ্রিম কোর্টে আসে।
কোর্ট সরকারবিরোধী রায় দেয়, বলে যে শ্রমবিরোধের সময় সরকার ব্যক্তিগত শিল্প প্রতিষ্ঠান জব্দ করার (অথবা শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করার) কোনো আইনগত বা সংবিধানিক অধিকার নেই। যদিও রায় কিছুটা মিশ্র ছিল — প্রায় প্রতিটি বিচারপতি তাদের নিজস্ব মতামত দিয়েছিলেন — তবুও এটি স্পষ্টভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ছিল। বিচারপতি হারলান? এই মামলার সবচেয়ে পরিচিত মতামত দিয়েছিলেন — যেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার তিনটি স্তর নির্ধারণ করেছিলেন — যা গৃহযুদ্ধের পরপর থেকেই সুপ্রিম কোর্টের রাষ্ট্রপতি ক্ষমতার সর্বাধিক কর্তৃত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা হিসেবে গণ্য হয়; হারলানের মতামত আজও প্রামাণিক হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই মামলা, পাঠকের কাছে ছোট মনে হলেও, মেটা-সংবিধানিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সংবিধান রচনার পর থেকে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে—এবং এর সঠিক সীমা অত্যন্ত বিতর্কিত, বিশেষ করে গত ৩০-৪০ বছরে।
মিলগুলি মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, যারা খুব দ্রুত শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায় এবং বিরোধ মিটে যায়।
=== [[w:Brown v. Board of Education of Topeka|ব্রাউন বনাম টোপেকা শিক্ষা বোর্ড]], ৩৪৭ ইউ.এস. ৪৮৩ (১৯৫৪) ===
'''অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ''' একটি সুপ্রিম কোর্টের মামলা, যা সিদ্ধান্ত দেয় যে [[w:Racial segregation|জাতিগত পৃথকীকরণ]] সরকারি বিদ্যালয়ে সংবিধানের বর্ণনা ও চেতনার বিরুদ্ধে; এটি আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে [[w:civil rights movement|নাগরিক অধিকার আন্দোলন]] শুরু করার এক প্রধান কারণ ছিল।
ব্রাউন বনাম টোপেকা শিক্ষা বোর্ড, ৩৪৭ ইউ.এস. ৪৮৩ (১৯৫৪),[১] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের একটি মাইলফলক রায়, যা ১৮৯৬ সালের প্লেসি বনাম ফেরগুসন মামলার পূর্ববর্তী রায়গুলি উল্টে দেয়। এই রায়ে বলা হয়, যে রাজ্যগুলোর আইন কালো ও সাদা ছাত্রদের জন্য পৃথক সরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, তা কালো শিশুদের সমান শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে।
১৯৫৪ সালের ১৭ মে দেওয়া ওয়ারেন কোর্টের ঐক্যমত (৯-০) রায়ে বলা হয়, "পৃথক শিক্ষা সুবিধাগুলো স্বভাবতই অসম।" ফলস্বরূপ, আইনগত জাতিগত পৃথকীকরণকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চোদ্দতম সংশোধনের সমান সুরক্ষা ধারার লঙ্ঘন ঘোষণা করা হয়। এই বিজয় সংহতি এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পথ প্রশস্ত করে।[২]
=== [[w:Mapp v. Ohio|ম্যাপ বনাম ওহিও]], ৩৬৭ ইউ.এস. ৬৪৩ (১৯৬১) ===
(বর্জনীয় নিয়ম) অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রাপ্ত প্রমাণ আদালতে ব্যবহার না করার সুরক্ষা দেয়, যেমন পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া কোনো বাসা তল্লাশি করে যে জিনিসপত্র জব্দ করে। বহু বছর ধরে এই নিয়ম শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের (ফেডারেল) মামলায় প্রযোজ্য ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল অপরাধ মামলাগুলি মোট অপরাধ মামলার তুলনায় খুবই নগণ্য অংশ, কারণ বেশিরভাগ মামলা হয় রাজ্যের অধীনে, বিশেষত সেরকম গুরুতর অপরাধ যেমন হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের মামলা। (ফেডারেল অপরাধের মধ্যে পড়ে ফেডারেল সম্পত্তি ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অপরাধ, একাধিক রাজ্যে সংঘটিত অপরাধ যেমন ব্যাংক ডাকাতি, আন্তঃরাজ্য ষড়যন্ত্র যেমন মাদক পাচার চক্র, সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার যেমন পুলিশ নির্যাতন বা বিচার বিভাগের দুর্নীতি, এবং সন্ত্রাসবাদ, সামরিক অপরাধ, গুপ্তচরবৃত্তি ও দেশদ্রোহ। বাকি সব অপরাধের জন্য রাজ্যগুলো দায়ী।)
ম্যাপ মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত দেয় যে বর্জনীয় নিয়ম রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত প্রমাণ রাজ্য মামলায়ও ব্যবহার করা যাবে না, কেন্দ্রীয় মামলার পাশাপাশি। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি ছিল চোদ্দতম সংশোধন, যা রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দেয় কোনো ব্যক্তিকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া জীবন, স্বাধীনতা বা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না; এখানে স্বাধীনতার মধ্যে বিল অফ রাইটসের অধীনে সংরক্ষিত অধিকারগুলো অন্তর্ভুক্ত, যা পূর্বে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ছিল।
ম্যাপ রায়ের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে, পুলিশকে এখন প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ওয়ারেন্ট নিতে বাধ্য করা হয়। (এর আগে, পুলিশ ওয়ারেন্ট নিয়ে বাড়ি তল্লাশি করার কথা থাকলেও, ওয়ারেন্ট ছাড়া তল্লাশি করে পাওয়া প্রমাণ আদালতে গ্রহণযোগ্য ছিল বলে এই নিয়ম অগণিতভাবে উপেক্ষিত হতো।) এছাড়াও, ম্যাপ রায় সুপ্রিম কোর্টের পুলিশের কার্যকলাপের প্রতি তীক্ষ্ণ নজরদারির সূচনা করে, যা আজও অব্যাহত আছে।
=== [[w:Gideon v. Wainwright|গাইডিয়ন বনাম ওয়েনরাইট]], ৩৭২ ইউ.এস. ৩৩৫ (১৯৬৩) ===
একটি মামলা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তাদের পক্ষে আইনজীবী থাকার অধিকার রয়েছে, এমনকি তারা যদি তা ভাড়া দিতে না পারেন তবুও।
=== [[w:Escobedo v. Illinois|ইসকোবিডো বনাম ইলিনয়]], ৩৭৮ ইউ.এস. ৪৭৮ (১৯৬৪) ===
মামলা যা অপরাধীর জেরা চলাকালে আইনজীবীর উপস্থিতির অধিকার নিশ্চিত করেছিল, এবং পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তের আত্মরক্ষা অধিকারকে শক্তিশালী করেছিল।
=== [[w:Griswold v. Connecticut|গোরিশওল্ড বনাম কনেটিকাট]], ৩৮১ ইউ.এস. ৪৭৯ (১৯৬৫) ===
এই সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি একটি বিবাহিত দম্পতির পক্ষ থেকে আনা হয়েছিল যারা দাবি করেছিলেন যে কনেটিকাট রাজ্যের জন্মনিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম ও ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ করার আইন তাদের মৌলিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট এই দাবিকে মেনে নিয়েছিল এবং বিবাহিত দম্পতিদের জন্য কনেটিকাটের জন্মনিয়ন্ত্রণ নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর ঘোষণা করেছিল।
জাস্টিস ডগলাস বিখ্যাতভাবে লিখেছিলেন যে গোপনীয়তার অধিকার—যা সংবিধানের পাঠে সরাসরি উল্লেখ নেই—সে অধিকার সংবিধানে উল্লিখিত অন্যান্য অধিকার থেকে "প্রত্যাহারের দ্বারা গঠিত ছায়া" হিসেবে ইঙ্গিতস্বরূপ পাওয়া যায়, যেমন অযাচিত তল্লাশি থেকে রক্ষা পাওয়ার অধিকার। রো বনাম ওয়েড মামলার পর থেকে, কিছু রক্ষণশীলেরা এই "পিনাম্বরা" অংশটিকে বিচারিকভাবে নতুন অধিকার সৃষ্টির বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য ব্যবহার করেছেন।
যদিও এই মামলা প্রথমে খুব বেশি বিতর্কিত ছিল না কারণ এটি শুধুমাত্র বিবাহিত দম্পতিদের উপর প্রভাব ফেলেছিল, এটি পরবর্তীতে রো বনাম ওয়েড (১৯৭৩) মামলার জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞাগুলো গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন হিসেবে অবৈধ ঘোষণা করেছিল, যা অন্যতম বিতর্কিত সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত।
=== [[w:Miranda v. Arizona|মারিন্ডা বনাম অ্যারিজোনা]], ৩৮৪ ইউ.এস. ৪৩৬ (১৯৬৬) ===
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দেয় যে পুলিশ যখন কাউকে গ্রেফতার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার আগে তাকে অবশ্যই পরিচিত করতে হবে তার অধিকারসমূহের সাথে, যা বর্তমানে "মিরান্দা ওয়ার্নিং" নামে পরিচিত। এই ওয়ার্নিংয়ে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জানানো হয় যে তার নীরব থাকার অধিকার আছে, তার পক্ষে একজন আইনজীবী থাকার অধিকার আছে, এবং যদি অর্থের অভাব থাকে তবে সরকারী আইনজীবী নিযুক্ত করার অধিকারও রয়েছে।
=== [[w:Brandenburg v. Ohio|বার্গ বনাম ওহাইও]], ৩৯৫ ইউ.এস. ৪৪৪ (১৯৬৯) ===
মুক্ত বাক্যের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পুরনো "স্পষ্ট ও উপস্থিত বিপদের" পরীক্ষাকে বদলে "তাত্ক্ষণিক আইনবিরোধী কার্যক্রমে উস্কানীমূলক পরীক্ষায় রূপান্তর করে। এই সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত বাক্যের বিচারব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ সৃষ্টি করে।
=== [[w:Roe v. Wade|রো বনাম ওয়েড]], ৪১০ ইউ.এস. ১১৩ (১৯৭৩) ===
১৯৭৩ সালে গৃহীত রো বনাম ওয়েড হল একটি বিখ্যাত এবং অত্যন্ত বিতর্কিত মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের মামলা, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা বা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক ধাপে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা অগ্রহণযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। রো মামলাটি ২০শ শতাব্দীর সবচেয়ে বিতর্কিত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এটি বুশ বনাম গোর (২০০০), সান্তা ক্লারা কাউন্টি বনাম সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলরোড কোম্পানি (১৮৮৬), এবং ড্রেড স্কট বনাম সানফোর্ড (১৮৫৭) এর সঙ্গে তালিকাভুক্ত।
২০২২ সালের ২৪ জুন, সুপ্রিম কোর্টের ডবস বনাম জ্যাকসন মহিলা স্বাস্থ্য সংস্থা মামলার মাধ্যমে রো সিদ্ধান্ত উল্টে দেয়া হয়।
মামলার পটভূমি: রো নামের টেক্সাসের এক মহিলা, যার অনিচ্ছাকৃত গর্ভাবস্থা হয়। টেক্সাসের তখনকার আইন গর্ভপাত সাধারণত নিষিদ্ধ করেছিল, শুধুমাত্র কিছু বিশেষ মেডিকেল পরিস্থিতিতে যেমন গর্ভবতী নারীর জীবন হুমকির মুখে থাকলে তা অনুমোদিত ছিল। রো টেক্সাসকে মামলা করেন, যুক্তি দিয়ে যে ১৪তম সংশোধনের অধীনে তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মামলাটি বিভিন্ন ফেডারেল আদালত পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। সুপ্রিম কোর্ট রো এর পক্ষে রায় দেন এবং টেক্সাস আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন।
সিদ্ধান্তের মূল দিক:
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যেকোনো কারণে গর্ভপাত গ্রহণযোগ্য।
দ্বিতীয় তিন মাসে স্বাস্থ্যের জন্য নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যেতে পারে, যেমন গর্ভপাত হাসপাতালের মধ্যে করানোর বিধান।
শেষ তিন মাসে, সাধারণত গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা যেতে পারে কারণ গর্ভাবস্থার শেষ ধাপের গুরুত্ব বিবেচনা করে।
=== রো মামলার বিরুদ্ধে ও সমর্থনে যুক্তি ===
সমর্থকরা রো-কে নারীর মৌলিক অধিকার রক্ষায় একটি বড় জয় মনে করেন, বিশেষ করে নারীর নিজের শরীর ও প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার হিসেবে। কেউ কেউ মনে করেন রো-এর ফলে অপরিচ্ছন্ন গর্ভাবস্থার কারণে অপরাধের হার কমেছে, যদিও অন্যরা বলেন এ জন্য কার্যকর গর্ভনিরোধক এবং যৌন শিক্ষা বেশি ভূমিকা রেখেছে। সমালোচকরা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ব্যাখ্যা ছাড়িয়ে বেঞ্চ থেকে আইন প্রণয়ন করেছে, এবং গর্ভপাত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাজনীতির মাধ্যমে, জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা। কিছু সমালোচক গর্ভে থাকা শিশুর অধিকারকেও বিবেচনায় আনার দাবি করেন। ধর্মীয় এবং নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বিরোধীতা রয়েছে, বিশেষ করে ক্যাথলিক ও রক্ষণশীল প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে।
=== রো এর প্রভাব ===
রো সিদ্ধান্তের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংঘাত ব্যাপক হয়েছে, যা আজও অব্যাহত। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ভিতর গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে। রো মামলাটি নিউ ডিল কোয়ালিশনের পতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে ধরা হয়, যেটি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ধারাকে নিয়ন্ত্রিত করত। এর ফলে ধর্মভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠী গঠন পায় এবং তারা ১৯৬০-এর দশকের সামাজিক আন্দোলনের পরে তৈরি বামপন্থী ও আদর্শ ভিত্তিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাত শুরু করে। এই দ্বন্দ্বের ধারাকে ১৯৮০-এর দশক থেকে রক্ষণশীলেরা ‘কালচার ওয়ার’ হিসেবে পরিচিতি দিয়েছেন।
=== [[w:United States v. Nixon|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম নিক্সন]], ৪১৮ ইউ.এস. ৬৮৩ (১৯৭৪) ===
এই মামলাটি বিশেষ কৌঁসুলি আর্চিবল্ড কক্সের ওয়াটারগেট তদন্তসংক্রান্ত তথ্যাদি চেয়ে দেওয়া একটি আদালতের সমন (সাবপোনা) নিয়ে বিরোধ থেকে উদ্ভূত হয়। কক্স প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের অডিও টেপকৃত কথোপকথনসমূহ চাওয়ায় নিক্সনের “শনিবার রাতের গণহত্যা”-এর অংশ হিসেবে কক্সকে বরখাস্ত করা হয়। কক্সের উত্তরসূরি লিয়ন জাওরস্কি সমনের কার্যক্রম চালিয়ে যান। নিক্সন তবুও টেপগুলো হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানান এবং তা গোপন রাখার জন্য [[w:executive privilege|এক্সিকিউটিভ প্রিভিলেজ]] দাবি করেন।
জাওরস্কি এরপর সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেন যাতে আদালতের আদেশের মাধ্যমে নিক্সনকে সমন মানতে বাধ্য করা যায়।
যদিও ব্যক্তিগত আলোচনায় বিচারপতিদের মধ্যে মতভেদ ছিল, তারা একযোগে একমত রায় প্রদান করেন, যাতে রায়টি আরও জোরালোভাবে নিক্সনের কাছে উপস্থাপিত হয় এবং তিনি তা উপেক্ষা না করেন। এই রায়ে আদালত বলেছে যে, ''মারবেরি বনাম ম্যাডিসন'' মামলায় যেমন বলা হয়েছে আদালত সংবিধানসম্মততা নির্ধারণের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রাখে, তেমনি আদালত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কীভাবে সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ, তাও নির্ধারণ করতে পারে। আদালত আরও রায় দেয় যে, এক্সিকিউটিভ প্রিভিলেজ ফৌজদারি মামলার প্রাসঙ্গিক প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, আদালত বলেছে যে, তাদের দ্বারা স্বীকৃত ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টসহ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
=== [[w:Regents of the University of California v. Bakke|ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্টস বনাম বাকি]], ৪৩৮ ইউ.এস. ২৬৫ (১৯৭৮) ===
এই সুপ্রিম কোর্টের মামলায় সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় যে, কোটা পদ্ধতি হিসেবে অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন (অর্থাৎ অতীতে বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে আসনের একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম শতাংশ সংরক্ষণ) সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং তাই এটি অবৈধ।
=== [[w:Bowers v. Hardwick|বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক]], ৪৭৮ ইউ.এস. ১৮৬ (১৯৮৬) ===
এই সুপ্রিম কোর্টের মামলায় রায় দেওয়া হয় যে, আইনসভা কোনো যৌন কার্যকলাপকে অনৈতিক বলে বিবেচনা করলে তা নিষিদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে—এমনকি যদি তা ব্যক্তিগত, সম্মতিপূর্ণ, বাণিজ্যিক নয়, এবং অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ঘটে। এই সিদ্ধান্তে বলা হয় যে, এরূপ আইন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ঘোষিত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করে না। তবে, এই রায়কে পরবর্তীকালে ''[[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স বনাম টেক্সাস]]'' (২০০৩) মামলায় ভুল বলে ঘোষণা করে বাতিল করা হয়।
=== [[w:Texas v. Johnson|টেক্সাস বনাম জনসন]], ৪৯১ ইউ.এস. ৩৯৭ (১৯৮৯) ===
এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, মার্কিন জাতীয় পতাকা পোড়ানো—এমনকি যদি তা অনেকের কাছে আপত্তিকর বা অপমানজনক মনে হয়—তবুও এটি [[w:Freedom of speech|মত প্রকাশের স্বাধীনতা]]র অন্তর্ভুক্ত এবং [[w:First Amendment to the United States Constitution|প্রথম সংশোধনী]]র মাধ্যমে সুরক্ষিত। মামলার মূল ইস্যু ছিল যে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি আইন অনুযায়ী, জনসনের পতাকা পোড়ানো ছিল অপরাধ, কিন্তু আদালত মত দেয় যে রাজনৈতিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এটি সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত অভিব্যক্তি।
=== [[w:Planned Parenthood v. Casey|প্ল্যানড প্যারেন্টহুড বনাম কেইসি]], ৫০৫ ইউ.এস. ৮৩৩ (১৯৯২) ===
এই মামলাটি [[w:Roe v. Wade|রো ভি. ওয়েড]] মামলার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। সুপ্রিম কোর্ট Roe-এর মূল সিদ্ধান্ত—যে গর্ভপাতের অধিকার একটি সাংবিধানিক অধিকার—তা বহাল রাখে, তবে সেই অধিকারে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করে। আদালত “[[w:Undue burden|অযথা বোঝা]]” নামে একটি নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করে, যার অর্থ হলো, কোনো রাজ্য যদি এমন কোনো বিধান করে যা নারীর গর্ভপাতের অধিকার বাস্তবায়নে একটি "অযৌক্তিক বোঝা" সৃষ্টি করে, তবে সেটি অসাংবিধানিক।
এই মামলায় আদালত পেনসিলভানিয়ার একটি আইন পর্যালোচনা করে, যেখানে গর্ভপাত করাতে চাওয়া নারীদের জন্য একাধিক বাধ্যতামূলক নিয়ম (যেমন ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষার সময়, তথ্যাবলী পাঠ, এবং বিবাহিত নারীদের স্বামীর অবগতির বিধান) ছিল। আদালত স্বামীর অবগতির বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, কিন্তু অন্যান্য শর্তসমূহ বৈধ বলে রায় দেয়।
এই রায় রো ভি. ওয়েড-এর নীতিগত ভিত্তি রক্ষা করে, তবে গর্ভপাতের অধিকারে কিছু রাজ্যভিত্তিক নিয়ন্ত্রণকে অনুমোদন দেয়, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন প্রয়োগে জটিলতা বৃদ্ধি পায়।
=== [[w:Romer v. Evans|রোমার বনাম এভান্স]], ৫১৭ ইউ.এস. ৬২০ (১৯৯৬) ===
এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট কলোরাডো রাজ্যের একটি সংবিধান সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, যা সমকামী, উভকামী এবং রূপান্তরিত লিঙ্গের (LGBT) ব্যক্তিদের কোনো বিশেষ আইনি সুরক্ষা পাওয়া থেকে বিরত রাখতো।
"সংশোধনী 2" নামক এই সংশোধনীর মাধ্যমে LGBT ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য নিরোধে স্থানীয় বা রাজ্য পর্যায়ে কোনো আইন পাস করার অধিকার প্রত্যাহার করা হয়েছিল। আদালত রায় দেয় যে, এই সংশোধনী শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতি বৈরিতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে এবং যুক্তিসঙ্গত সরকারী স্বার্থের ভিত্তিতে নয়।
আদালত রায় দেয়, সমান সুরক্ষার অধিকার অনুযায়ী, কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এ ধরনের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না।
গুরুত্ব:
এই রায়টি ছিল সমকামী অধিকার বিষয়ক প্রথম বড় বিজয়গুলোর একটি, এবং এটি [[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স v টেক্সাস (২০০৩)]] এবং [[w:obergefell v. Hodges|ওবারগেফেল v. হজস (২০১৫)]]–এর মতো পরবর্তী মামলাগুলোর জন্য ভিত্তি তৈরি করে।
=== [[w:Bush v. Gore|বুশ বনাম গোর]], ৫৩১ ইউ.এস. ৯৮ (২০০০) ===
এই মামলাটি নতুন কোনো বিচারিক নীতি স্থাপন না করলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কার্যত সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা নির্ধারিত হয়।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনায় অসংগতি ও বিতর্কের কারণে এই মামলার উদ্ভব হয়। নির্বাচনের ফল নির্ধারণের জন্য ফ্লোরিডার ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আদালত রায় দেয় যে, ফ্লোরিডার পুনর্গণনা পদ্ধতি সমান সুরক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে, কারণ ভোট গণনার মানদণ্ড প্রতিটি কাউন্টিতে একরকম ছিল না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে পুনর্গণনা বন্ধ হয়ে যায় এবং রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ. বুশ ফ্লোরিডার ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
গুরুত্ব:
''বুশ বনাম গোর'' মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ সুপ্রিম কোর্টের একটি বিতর্কিত রায়ের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রপতির ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছিল।
=== [[w:Lawrence v. Texas|লরেন্স বনাম টেক্সাস]], ৫৩৯ ইউ.এস. ৫৫৮ (২০০৩) ===
লরেন্স, একজন সমকামী ব্যক্তি, তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে তাঁর অবিবাহিত ও সম্মতিসূচক যৌন সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ছিলেন, যখন পুলিশ একটি গুলির শব্দ সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করতে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করে। সেখানে কোনো অস্ত্র না পেলেও, পুলিশ লরেন্স ও তাঁর সঙ্গী গার্ডনারকে যৌন মিলনের সময় হাতে-নাতে ধরে ফেলে। তাঁদের বিরুদ্ধে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের "অপ্রাকৃত যৌন সম্পর্ক" আইন অনুসারে অভিযোগ আনা হয়।
লরেন্স ও গার্ডনার এই অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করেন নিম্নলিখিত দুইটি ভিত্তিতে:
এই আইন কেবল সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের একই ধরনের যৌন আচরণের ক্ষেত্রে নয়, যা সংবিধানের সমান সুরক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে।
এই আইন তাঁদের গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার উপর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ, কারণ অভিযুক্ত কার্যকলাপটি পরস্পরের সম্মতিতে, ব্যক্তিগত স্থানে এবং অ-ব্যবসায়িকভাবে সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কোনো অধিকার নেই।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্য পাল্টা যুক্তি দেয় যে, রাজ্যের নৈতিকতা নির্ধারণ ও তা নিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে এবং সমকামিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা সংবিধান সম্মত, যেমনটি পূর্ববর্তী ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' মামলায় স্বীকৃত হয়েছে।
রায়:
আদালত লরেন্স ও গার্ডনারের পক্ষে রায় দেয়। বিচারপতি কেনেডি সংখ্যাগরিষ্ঠ মত লিখে বলেন:
> “এই বিষয়গুলো—যা মানুষের জীবনের সর্বাধিক অন্তরঙ্গ ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং যা ব্যক্তিত্ব, মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রবিন্দু—চতুর্দশ সংশোধনীর দ্বারা সুরক্ষিত স্বাধীনতার অংশ। স্বাধীনতার কেন্দ্রে রয়েছে নিজস্ব অস্তিত্ব, জীবনধারণের তাৎপর্য এবং মানব জীবনের রহস্য সম্পর্কে নিজস্ব ধারণা গড়ে তোলার অধিকার। রাষ্ট্র যদি এই বিশ্বাসগুলো চাপিয়ে দেয়, তাহলে তা ব্যক্তি-সত্ত্বার অবমূল্যায়ন।
> সমকামী সম্পর্কের ব্যক্তিরাও এই ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার ভোগ করতে পারেন, যেমনটি হেটারোসেক্সুয়াল ব্যক্তিরা করেন। ''বাওয়ার্স'' রায় এই অধিকার অস্বীকার করেছিল। সেই রায় তখনও ভুল ছিল, এখনও ভুল, এবং তা আর বজায় রাখা যায় না। ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' এখন বাতিল।
> এই মামলায় কোনো নাবালক জড়িত নয়, কোনো জোর বা আঘাতের ইঙ্গিত নেই, বা এমন সম্পর্ক নয় যেখানে সম্মতি জটিল হতে পারে। এটি জনসমক্ষে সংঘটিত হয়নি, যৌন বাণিজ্য বা রাষ্ট্র কর্তৃক সম্পর্ক স্বীকৃতির দাবি সম্পর্কেও নয়। এটি দুই প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্মতিমূলক আচরণ, যেটি রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। সংবিধানের ডিউ প্রোসেস ধারা তাঁদের ব্যক্তিগত যৌন আচরণে হস্তক্ষেপহীন থাকার পূর্ণ অধিকার দেয়।
> “সংবিধান এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে এমন একটি ব্যক্তিস্বাধীনতার ক্ষেত্র থাকবে, যেখানে সরকার প্রবেশ করতে পারবে না।”
গুরুত্ব:
এই মামলাটি পূর্ববর্তী ''বাওয়ার্স বনাম হার্ডউইক'' রায় বাতিল করে সমকামীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রে এলজিবিটিকিউ অধিকার সুরক্ষার একটি মাইলফলক রায়।
=== [[w:Hamdi v. Rumsfeld|হামদি বনাম রামসফেল্ড]], ৫৪২ ইউ.এস. ৫০৭ (২০০৪) ===
এই মামলাটি এক মার্কিন নাগরিক, হামদি হামদান ইউসুফ হামদি, যিনি আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের সময় বন্দি হন এবং "শত্রু যোদ্ধা" হিসেবে মার্কিন সেনাবাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়, তাঁকে বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীভূত ছিল।
পটভূমি:
হামদিকে আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার করার পর গুয়ানতানামো বে-তে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক। এরপর তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তর করা হয় এবং বিনা বিচারে বন্দি রাখা হয়। সরকার যুক্তি দেয়, রাষ্ট্রপতি যুদ্ধকালীন সময়ে "শত্রু যোদ্ধা"দের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখার ক্ষমতা রাখেন এবং এই সিদ্ধান্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
প্রধান প্রশ্ন:
একজন মার্কিন নাগরিককে, যাকে সরকার "শত্রু যোদ্ধা" হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, কি বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখা যায়? এবং এ ক্ষেত্রে কি সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকের যথাযথ প্রক্রিয়ার অধিকার প্রযোজ্য?
রায়:
সুপ্রিম কোর্ট ৮-১ ভোটে রায় দেয় যে,
রাষ্ট্রপতি শত্রু যোদ্ধাদের আটক রাখার কিছু সীমিত ক্ষমতা রাখেন, কিন্তু…
একজন মার্কিন নাগরিককে এইভাবে বিচার ছাড়াই অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখা যায় না।
হামদির মত বন্দিদের অবশ্যই ন্যূনতম প্রক্রিয়াগত সুরক্ষা পাওয়া উচিত, যার মধ্যে রয়েছে প্রমাণ চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ ও নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালে মামলা উপস্থাপন করার অধিকার।
গুরুত্ব:
এই রায় যুদ্ধবন্দি ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সীমা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ঘোষিত করে যে সংবিধান অনুসারে, কোনো মার্কিন নাগরিক আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং বিচার ছাড়া আটকের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রাখে, এমনকি সন্ত্রাসবিরোধী প্রেক্ষাপটেও।
=== [[w:Hamdan v. Rumsfeld|হামদান বনাম রামসফেল্ড]], ৫৪৮ ইউ.এস. ৫৫৭ (২০০৬) ===
এই মামলাটি সালিম আহমেদ হামদান নামক একজন ইয়েমেনি নাগরিককে কেন্দ্র করে, যিনি ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর হাতে আটক হন। তাঁকে গুয়ানতানামো বে-তে স্থানান্তর করা হয় এবং আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের ড্রাইভার হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। মার্কিন সরকার হামদানকে সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ. বুশ ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার পরে গঠন করেছিলেন।
প্রধান প্রশ্ন:
এই মামলায় প্রশ্ন ছিল—রাষ্ট্রপতি একতরফাভাবে যে সামরিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, তা কি মার্কিন আইন ও জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী বৈধ ছিল?
রায়:
সুপ্রিম কোর্ট ৫-৩ ভোটে রায় দেয় যে,
রাষ্ট্রপতির গঠিত সামরিক ট্রাইব্যুনালগুলি অবৈধ ছিল, কারণ সেগুলি কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি এবং
সামরিক ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালী মার্কিন আইন এবং জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছিল।
মুখ্য যুক্তি:
কংগ্রেস যুদ্ধকালীন বিচারব্যবস্থা গঠনের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করেছে, যা রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অমান্য করেছিল।
হামদান একজন যুদ্ধবন্দি হিসেবে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী মৌলিক সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
আদালত আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ও নির্বাহী শাখা একতরফাভাবে বিচারব্যবস্থা গঠন করতে পারে না, কারণ এটি ক্ষমতার ভারসাম্য নীতির বিরুদ্ধে যায়।
গুরুত্ব:
এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধকালীন নাগরিক অধিকার, আন্তর্জাতিক আইন এবং নির্বাহী ক্ষমতার সীমা নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করে। এটি দেখায় যে রাষ্ট্রপতি, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটেও, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন মানতে বাধ্য।
=== [[w:Boumediene v. Bush|বৌমেডিয়েন বনাম বুশ]], ৫৫৩ ইউ.এস. ৭২৩ (২০০৮) ===
এই মামলাটি লক্ষিত হয়েছিল যুদ্ধবন্দিদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক প্রশ্নে। লাকদার বৌমেডিয়েন নামক একজন বসনিয়ান আলজেরীয়, যিনি ২০০১ সালের পরে গুয়ানতানামো বে-তে সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে বন্দি হন, তিনি ও অন্যান্য বন্দিরা যুক্তরাষ্ট্রে হেবিয়াস কর্পাস অধিকার (অর্থাৎ বেআইনি আটক চ্যালেঞ্জ করার অধিকার) দাবী করেন।
তবে ২০০৬ সালে সামরিক কমিশন আইন (MCA) পাস করে কংগ্রেস এই অধিকার গৃহীত বন্দিদের থেকে সরিয়ে নেয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে: বিদেশি নাগরিকেরা, যারা আমেরিকার মূল ভূখণ্ডের বাইরে (গুয়ানতানামো বে-তে) বন্দি, তাদের কি সংবিধানিকভাবে হেবিয়াস কর্পাসের অধিকার রয়েছে?
সুপ্রিম কোর্টের রায় (৫–৪ ভোটে):
হ্যাঁ, গুয়ানতানামো বে-র বন্দিদের হেবিয়াস কর্পাসের অধিকার আছে।
আদালত বলেন, যদিও গুয়ানতানামো বে প্রযুক্তিগতভাবে আমেরিকার অংশ নয়, কিন্তু এটি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত একটি এলাকা।
সংবিধানের হেবিয়াস কর্পাস ধারা ভূখণ্ড-নির্ভর নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতা যেখানে পৌঁছে, সেখানেই তা প্রযোজ্য।
রায়ের গুরুত্ব:
কংগ্রেস কর্তৃক পাস করা সামরিক কমিশন আইন-এর হেবিয়াস কর্পাস বাতিলের ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়।
রায়টি নির্বাহী ও আইনসভা কর্তৃক মৌলিক অধিকার সীমাবদ্ধ করার বিরুদ্ধে আদালতের শক্ত ভূমিকা প্রতিস্থাপন করে।
এটি প্রমাণ করে যে, মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার বিদেশি নাগরিকদের প্রতিও প্রযোজ্য হতে পারে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় তারা অবস্থান করেন।
এই মামলাটি মানবাধিকার ও আইনের শাসনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
===[[w:District of Columbia v. Heller|ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া বনাম হেলার]], ৫৫৪ ইউ.এস. ৫৭০ (২০০৮)===
এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী|দ্বিতীয় সংশোধনী]]<nowiki/>র ব্যাখ্যার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি মিলিশিয়া এবং অস্ত্র রাখা ও বহনের অধিকারের সাথে জড়িত। এছাড়াও এটি [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী|চৌদ্দতম সংশোধনী]]<nowiki/>র সঙ্গেও জড়িত। এই সংশোধনী মানুষের কিছু অধিকার, যেমন জীবন, স্বাধীনতা, এবং সম্পত্তি রক্ষা করার সঙ্গে সম্পর্কিত। কোনও রাজ্য সরকার নাগরিকদের এসব অধিকারথেকে বঞ্চিত করতে পারে না।
মামলাকারী হেলার ছিলেন কলম্বিয়া জেলার বাসিন্দা, যেখানে সেই জেলার আইন হ্যান্ডগানের মালিকানাকে নিষিদ্ধ করেছিল, শুধুমাত্র খুবই স্বল্প কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে এটি অনুমোদিত ছিল, যেগুলোর জন্য হেলার যোগ্য ছিলেন না। হেলার বিশ্বাস করতেন যে দ্বিতীয় সংশোধনী ব্যক্তিগত অধিকার হিসেবে অস্ত্র রাখার ও বহনের অধিকার সুরক্ষা করে। তাই তিনি মামলা করেন, দাবি করে যে কলম্বিয়া জেলার আইন তার অস্ত্র রাখার অধিকার লঙ্ঘন করছে।
সুপ্রীম কোর্ট হেলার এর সঙ্গে একমত হয় এবং সিদ্ধান্ত দেয় যে দ্বিতীয় সংশোধনী ব্যক্তিদের অস্ত্র রাখার ও বহনের অধিকার নিশ্চিত করে, এবং চৌদ্দতম সংশোধনী এই অধিকার রাজ্যগুলোর জন্যও প্রযোজ্য করে। ফলে কলম্বিয়া জেলার হ্যান্ডগান নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়।
==উৎস ও নোট==
{{reflist}}
{{chapnav | রাষ্ট্রপতি | প্রধান বিচারপতি}}
3s5o3hu6ow1qwwt617g1c8kjpjtw6x7
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা/নিয়ন্ত্রক ও ক্ষতিপূরণকারী
0
25575
85734
79642
2025-07-06T19:41:40Z
Ishtiak Abdullah
9574
85734
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|System Specifications|Compensator}}
== কন্ট্রোলারসমূহ ==
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কিছু মানক ধরন রয়েছে যা ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে। এই কন্ট্রোলারগুলো (বিশেষ করে পি, পিডি, পিআই এবং পিআইডি কন্ট্রোলার) বাস্তব সিস্টেম তৈরিতে খুবই সাধারণ, কিন্তু এদের প্রত্যেকটির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
== প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:P-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার কেবল একটি গেইন মান। এগুলো সাধারণত ''K'' দ্বারা প্রকাশিত গুণক। একটি পি কন্ট্রোলার কেবল সিস্টেম পোলকে রুট লোকাসের নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারে। ইচ্ছেমতো পোল বসানোর জন্য এটি যথেষ্ট নয়।
এই ধরনের কন্ট্রোলারকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়: প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার, গেইন, এবং জিরো-অর্ডার কন্ট্রোলার।
== ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ==
[[Image:D-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে সিগন্যালের ডেরিভেটিভ নিচের মতোভাবে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s) - f(0)</math>
যেহেতু আমাদের অধিকাংশ সিস্টেমের প্রাথমিক অবস্থা শূন্য ধরা হয়, তাই এটি সরলীকৃত হয়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s)</math>
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ভবিষ্যতের মান অনুমান করে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ এটি সিগন্যালের গতিপথের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। তবে, এটি ব্যবহার করতে সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ ছোট উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির নয়েজ বড় ডেরিভেটিভ সৃষ্টি করে, যা বড় নয়েজের মতো আচরণ করে। এছাড়াও, ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন, তাই অনেক সময় ইন্টিগ্রাল বা প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার 'প্রপার' নয়, কারণ এর নিউমেরেটরের অর্ডার ডিনোমিনেটরের চেয়ে বেশি। এর ফলে অনেক গাণিতিক বিশ্লেষণ কঠিন হয়।
=== জেড-ডোমেইন ডেরিভেটিভ ===
নিচের জেড-ডোমেইন সমীকরণটি লাপ্লাস ডোমেইনের ডেরিভেটিভের সমতুল্য:
:<math>D(z) = \frac{z - 1}{Tz}</math>
এখানে T হচ্ছে স্যাম্পলিং টাইম।
== ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:I-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল ব্যবহার করতে চাইলে আমরা ব্যবহার করি:
:<math>\mathcal{L}\left\{ \int_0^t f(t)\, dt \right\} = {1 \over s}F(s)</math>
এই কন্ট্রোলার অতীত মানের ভিত্তিতে কাজ করে। এটি পূর্ববর্তী পারফরমেন্স মূল্যায়ন করে এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন করে।
=== জেড-ডোমেইন ইন্টিগ্রাল ===
জেড-ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার নিচের সমীকরণ দিয়ে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(z) = \frac{z + 1}{z - 1}</math>
== পিআইডি কন্ট্রোলার ==
[[Image:PID.png|thumb|right|একটি PID কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
পিআইডি কন্ট্রোলার প্রোপোরশনাল, ডেরিভেটিভ, ও ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের সমন্বয়। ফলে এটি খুবই নমনীয়। তবে নিচে আমরা দেখব যে PID কন্ট্রোলে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
{{-}}
=== পিআইডি ট্রান্সফার ফাংশন ===
একটি পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো এই তিন অংশের যোগফল:
{{eqn|PID}}
:<math>D(s) = K_p + {K_i \over s} + K_d s</math>
এটি ভিন্নভাবে লেখা যায়:
:<math>D(s) = \frac{A_0 + A_1s}{B_0 + B_1s}</math>
এই রূপটি পলিনোমিয়াল ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
=== পিআইডি সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম ===
[[Image:pid.jpg|center|PID কন্ট্রোলারের সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম]]
=== পিআইডি টিউনিং ===
পিআইডি কন্ট্রোলারের জন্য উপযুক্ত গেইন মান নির্ধারণ করাকে '''PID টিউনিং''' বলে। এটি করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি আছে:<ref>Seborg, Dale E.; Edgar, Thomas F.; Mellichamp, Duncan A. (2003). Process Dynamics and Control, Second Edition. John Wiley & Sons,Inc. {{ISBN|0471000779}}</ref>
১) ডাইরেক্ট সিন্থেসিস (ডিএস) পদ্ধতি
২) ইন্টারনাল মডেল কন্ট্রোল (আইএমসি) পদ্ধতি
৩) কন্ট্রোলার টিউনিং সম্পর্ক
৪) ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স কৌশল
৫) কম্পিউটার সিমুলেশন
৬) সিস্টেম স্থাপনের পরে অন-লাইন টিউনিং
৭) ট্রায়াল অ্যান্ড এরর
'''নোটঃ'''
<references />
=== ডিজিটাল পিআইডি ===
জেড-ডোমেইনে, পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Digital PID}}
:<math>D(z) = K_p + K_i \frac{T}{2} \left[ \frac{z + 1}{z - 1} \right] + K_d \left[ \frac{z - 1}{Tz} \right]</math>
এটিকে রূপান্তর করে পাই:
:<math>D(z) = \frac{a_0 + a_1 z^{-1} + a_2 z^{-2}}{1 + b_1 z^{-1} + b_2 z^{-2}}</math>
যেখানে:
:<math>a_0 = K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{K_d}{T}</math>
:<math>a_1 = -K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{-2 K_d}{T}</math>
:<math>a_2 = \frac{K_d}{T}</math>
:<math>b_1 = -1</math>
:<math>b_2 = 0</math>
এই ট্রান্সফার ফাংশন থেকে ডিজিটাল টাইম-ডোমেইনে রূপান্তর করলে পাই:
:<math>y[n] = x[n]a_0 + x[n-1]a_1 + x[n-2]a_2 - y[n-1]b_1 - y[n-2]b_2</math>
এই ডিফারেন্স সমীকরণ থেকেই ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার তৈরি করা যায়।
{{info|ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার সম্পর্কে আরও জানতে দেখুন [[Digital Signal Processing]]}}
== ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার ==
"ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার" নামটি অব্যবহার্য মনে হলেও, এটি একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা শুধুমাত্র ডিজিটাল উপায়ে সম্ভব। একে অন/অফ কন্ট্রোলারও বলা হয়, যেখানে ডিজিটাল সিস্টেম নির্ধারণ করে কখন কন্ট্রোলার চালু বা বন্ধ হবে। এটি একটি নন-লিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।
উদাহরণ: একটি ঘরের হিটার—যেখানে হিটার নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তেল পুড়িয়ে গরম হয়। থার্মোস্ট্যাট সিদ্ধান্ত নেয় কবে হিটার চালু ও বন্ধ হবে। এটি একটি ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার।
== কম্পেনসেশন ==
যখন কোনও সিস্টেমের কিছু গুণগত বৈশিষ্ট্য অপারেটিং রেঞ্জের বাইরে থাকে, তখন বিভিন্ন ধরণের কম্পেনসেশন ইউনিট ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ফেজ চরিত্রগতিগুলো সংশোধনের প্রয়োজন হয়।
কম্পেনসেশনের চারটি প্রধান ধরন:
1. লিড কম্পেনসেশন
2. লাগ কম্পেনসেশন
3. লিড-লাগ কম্পেনসেশন
4. লাগ-লিড কম্পেনসেশন
== ফেজ কম্পেনসেশন ==
কখনো কখনো ফেজ পরিবর্তনের দরকার হয়, কিন্তু ম্যাগনিটিউড অপরিবর্তিত রাখতে হয়। এজন্য বিশেষ কন্ট্রোলার ব্যবহৃত হয় যাকে '''ফেজ কম্পেনসেটর''' বলা হয়।
দুই ধরনের ফেজ কম্পেনসেটর আছে: '''লিড কম্পেনসেটর''' ও '''লাগ কম্পেনসেটর'''। এদের একত্রে ব্যবহার করলে '''লাগ-লিড কম্পেনসেটর''' তৈরি হয় (লিড-লাগ বাস্তবে সম্ভব নয়)।
ফেজ কম্পেনসেটর ডিজাইন করার সময় গেইন ও ফেজ মার্জিন বিশ্লেষণ জরুরি, যেন সিস্টেম অস্থির না হয়।
ফেজ লিড কম্পেনসেশন: এটি খোলা লুপে একটি জিরো যোগ করার মতো কাজ করে। এখানে জিরো পোলের চেয়ে অরিজিনের কাছাকাছি হওয়ায় জিরোর প্রভাব বেশি হয়।
== ফেজ লিড ==
লিড কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশন:
{{eqn|Lead Compensator}}
:<math>T_{lead}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
সঠিকভাবে কাজ করতে হলে:
:<math>| z | < | p |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং LHP-তে অরিজিনের কাছাকাছি থাকতে হবে।
এটি পোলগুলোকে বাম দিকে সরিয়ে স্থিতিশীলতা বাড়ায়।
== ফেজ লাগ ==
লাগ কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশনও একই:
{{eqn|Lag Compensator}}
:<math>T_{lag}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
তবে এখানে:
:<math>| p | < | z |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং অরিজিনের কাছাকাছি হতে হবে।
ফেজ লাগ কম্পেনসেটর স্টেডি-স্টেট এরর কমাতে সাহায্য করে। পোলগুলো কাছাকাছি থাকলে সিস্টেম বেশি স্থিতিশীল থাকে।
== ফেজ লাগ-লিড ==
{{Wikipedia|Lag-lead compensator}}
'''লাগ-লিড কম্পেনসেটর'''র ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Lag-lead Compensator}}
:<math> T_{Lag-lead}(s) = \frac{(s-z_1)(s-z_2)}{(s-p_1)(s-p_2)}. </math>
যেখানে সাধারণত:
:<math>| p_1 | > | z_1 | > | z_2 | > | p_2 | </math>
{{Control Systems/Nav|System Specifications|Compensators}}
== বহিঃসংযোগ ==
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=Standard_Controller_Forms Standard Controller Forms on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PID_Control PID Control on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PI_Control PI Control on ControlTheoryPro.com]
n8t6l8fmi70hcisb17ihytz28cgfyg1
85735
85734
2025-07-06T19:42:02Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* পিআইডি কন্ট্রোলার */
85735
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|System Specifications|Compensator}}
== কন্ট্রোলারসমূহ ==
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কিছু মানক ধরন রয়েছে যা ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে। এই কন্ট্রোলারগুলো (বিশেষ করে পি, পিডি, পিআই এবং পিআইডি কন্ট্রোলার) বাস্তব সিস্টেম তৈরিতে খুবই সাধারণ, কিন্তু এদের প্রত্যেকটির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
== প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:P-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার কেবল একটি গেইন মান। এগুলো সাধারণত ''K'' দ্বারা প্রকাশিত গুণক। একটি পি কন্ট্রোলার কেবল সিস্টেম পোলকে রুট লোকাসের নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারে। ইচ্ছেমতো পোল বসানোর জন্য এটি যথেষ্ট নয়।
এই ধরনের কন্ট্রোলারকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়: প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার, গেইন, এবং জিরো-অর্ডার কন্ট্রোলার।
== ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ==
[[Image:D-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে সিগন্যালের ডেরিভেটিভ নিচের মতোভাবে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s) - f(0)</math>
যেহেতু আমাদের অধিকাংশ সিস্টেমের প্রাথমিক অবস্থা শূন্য ধরা হয়, তাই এটি সরলীকৃত হয়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s)</math>
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ভবিষ্যতের মান অনুমান করে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ এটি সিগন্যালের গতিপথের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। তবে, এটি ব্যবহার করতে সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ ছোট উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির নয়েজ বড় ডেরিভেটিভ সৃষ্টি করে, যা বড় নয়েজের মতো আচরণ করে। এছাড়াও, ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন, তাই অনেক সময় ইন্টিগ্রাল বা প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার 'প্রপার' নয়, কারণ এর নিউমেরেটরের অর্ডার ডিনোমিনেটরের চেয়ে বেশি। এর ফলে অনেক গাণিতিক বিশ্লেষণ কঠিন হয়।
=== জেড-ডোমেইন ডেরিভেটিভ ===
নিচের জেড-ডোমেইন সমীকরণটি লাপ্লাস ডোমেইনের ডেরিভেটিভের সমতুল্য:
:<math>D(z) = \frac{z - 1}{Tz}</math>
এখানে T হচ্ছে স্যাম্পলিং টাইম।
== ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:I-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল ব্যবহার করতে চাইলে আমরা ব্যবহার করি:
:<math>\mathcal{L}\left\{ \int_0^t f(t)\, dt \right\} = {1 \over s}F(s)</math>
এই কন্ট্রোলার অতীত মানের ভিত্তিতে কাজ করে। এটি পূর্ববর্তী পারফরমেন্স মূল্যায়ন করে এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন করে।
=== জেড-ডোমেইন ইন্টিগ্রাল ===
জেড-ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার নিচের সমীকরণ দিয়ে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(z) = \frac{z + 1}{z - 1}</math>
== পিআইডি কন্ট্রোলার ==
[[Image:PID.png|thumb|right|একটি পিআইডি কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
পিআইডি কন্ট্রোলার প্রোপোরশনাল, ডেরিভেটিভ, ও ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের সমন্বয়। ফলে এটি খুবই নমনীয়। তবে নিচে আমরা দেখব যে পিআইডি কন্ট্রোলে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
{{-}}
=== পিআইডি ট্রান্সফার ফাংশন ===
একটি পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো এই তিন অংশের যোগফল:
{{eqn|PID}}
:<math>D(s) = K_p + {K_i \over s} + K_d s</math>
এটি ভিন্নভাবে লেখা যায়:
:<math>D(s) = \frac{A_0 + A_1s}{B_0 + B_1s}</math>
এই রূপটি পলিনোমিয়াল ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
=== পিআইডি সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম ===
[[Image:pid.jpg|center|PID কন্ট্রোলারের সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম]]
=== পিআইডি টিউনিং ===
পিআইডি কন্ট্রোলারের জন্য উপযুক্ত গেইন মান নির্ধারণ করাকে '''PID টিউনিং''' বলে। এটি করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি আছে:<ref>Seborg, Dale E.; Edgar, Thomas F.; Mellichamp, Duncan A. (2003). Process Dynamics and Control, Second Edition. John Wiley & Sons,Inc. {{ISBN|0471000779}}</ref>
১) ডাইরেক্ট সিন্থেসিস (ডিএস) পদ্ধতি
২) ইন্টারনাল মডেল কন্ট্রোল (আইএমসি) পদ্ধতি
৩) কন্ট্রোলার টিউনিং সম্পর্ক
৪) ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স কৌশল
৫) কম্পিউটার সিমুলেশন
৬) সিস্টেম স্থাপনের পরে অন-লাইন টিউনিং
৭) ট্রায়াল অ্যান্ড এরর
'''নোটঃ'''
<references />
=== ডিজিটাল পিআইডি ===
জেড-ডোমেইনে, পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Digital PID}}
:<math>D(z) = K_p + K_i \frac{T}{2} \left[ \frac{z + 1}{z - 1} \right] + K_d \left[ \frac{z - 1}{Tz} \right]</math>
এটিকে রূপান্তর করে পাই:
:<math>D(z) = \frac{a_0 + a_1 z^{-1} + a_2 z^{-2}}{1 + b_1 z^{-1} + b_2 z^{-2}}</math>
যেখানে:
:<math>a_0 = K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{K_d}{T}</math>
:<math>a_1 = -K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{-2 K_d}{T}</math>
:<math>a_2 = \frac{K_d}{T}</math>
:<math>b_1 = -1</math>
:<math>b_2 = 0</math>
এই ট্রান্সফার ফাংশন থেকে ডিজিটাল টাইম-ডোমেইনে রূপান্তর করলে পাই:
:<math>y[n] = x[n]a_0 + x[n-1]a_1 + x[n-2]a_2 - y[n-1]b_1 - y[n-2]b_2</math>
এই ডিফারেন্স সমীকরণ থেকেই ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার তৈরি করা যায়।
{{info|ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার সম্পর্কে আরও জানতে দেখুন [[Digital Signal Processing]]}}
== ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার ==
"ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার" নামটি অব্যবহার্য মনে হলেও, এটি একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা শুধুমাত্র ডিজিটাল উপায়ে সম্ভব। একে অন/অফ কন্ট্রোলারও বলা হয়, যেখানে ডিজিটাল সিস্টেম নির্ধারণ করে কখন কন্ট্রোলার চালু বা বন্ধ হবে। এটি একটি নন-লিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।
উদাহরণ: একটি ঘরের হিটার—যেখানে হিটার নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তেল পুড়িয়ে গরম হয়। থার্মোস্ট্যাট সিদ্ধান্ত নেয় কবে হিটার চালু ও বন্ধ হবে। এটি একটি ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার।
== কম্পেনসেশন ==
যখন কোনও সিস্টেমের কিছু গুণগত বৈশিষ্ট্য অপারেটিং রেঞ্জের বাইরে থাকে, তখন বিভিন্ন ধরণের কম্পেনসেশন ইউনিট ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ফেজ চরিত্রগতিগুলো সংশোধনের প্রয়োজন হয়।
কম্পেনসেশনের চারটি প্রধান ধরন:
1. লিড কম্পেনসেশন
2. লাগ কম্পেনসেশন
3. লিড-লাগ কম্পেনসেশন
4. লাগ-লিড কম্পেনসেশন
== ফেজ কম্পেনসেশন ==
কখনো কখনো ফেজ পরিবর্তনের দরকার হয়, কিন্তু ম্যাগনিটিউড অপরিবর্তিত রাখতে হয়। এজন্য বিশেষ কন্ট্রোলার ব্যবহৃত হয় যাকে '''ফেজ কম্পেনসেটর''' বলা হয়।
দুই ধরনের ফেজ কম্পেনসেটর আছে: '''লিড কম্পেনসেটর''' ও '''লাগ কম্পেনসেটর'''। এদের একত্রে ব্যবহার করলে '''লাগ-লিড কম্পেনসেটর''' তৈরি হয় (লিড-লাগ বাস্তবে সম্ভব নয়)।
ফেজ কম্পেনসেটর ডিজাইন করার সময় গেইন ও ফেজ মার্জিন বিশ্লেষণ জরুরি, যেন সিস্টেম অস্থির না হয়।
ফেজ লিড কম্পেনসেশন: এটি খোলা লুপে একটি জিরো যোগ করার মতো কাজ করে। এখানে জিরো পোলের চেয়ে অরিজিনের কাছাকাছি হওয়ায় জিরোর প্রভাব বেশি হয়।
== ফেজ লিড ==
লিড কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশন:
{{eqn|Lead Compensator}}
:<math>T_{lead}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
সঠিকভাবে কাজ করতে হলে:
:<math>| z | < | p |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং LHP-তে অরিজিনের কাছাকাছি থাকতে হবে।
এটি পোলগুলোকে বাম দিকে সরিয়ে স্থিতিশীলতা বাড়ায়।
== ফেজ লাগ ==
লাগ কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশনও একই:
{{eqn|Lag Compensator}}
:<math>T_{lag}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
তবে এখানে:
:<math>| p | < | z |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং অরিজিনের কাছাকাছি হতে হবে।
ফেজ লাগ কম্পেনসেটর স্টেডি-স্টেট এরর কমাতে সাহায্য করে। পোলগুলো কাছাকাছি থাকলে সিস্টেম বেশি স্থিতিশীল থাকে।
== ফেজ লাগ-লিড ==
{{Wikipedia|Lag-lead compensator}}
'''লাগ-লিড কম্পেনসেটর'''র ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Lag-lead Compensator}}
:<math> T_{Lag-lead}(s) = \frac{(s-z_1)(s-z_2)}{(s-p_1)(s-p_2)}. </math>
যেখানে সাধারণত:
:<math>| p_1 | > | z_1 | > | z_2 | > | p_2 | </math>
{{Control Systems/Nav|System Specifications|Compensators}}
== বহিঃসংযোগ ==
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=Standard_Controller_Forms Standard Controller Forms on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PID_Control PID Control on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PI_Control PI Control on ControlTheoryPro.com]
tkga5zc7d61vo680jwnexivpg37187m
85736
85735
2025-07-06T19:42:18Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* পিআইডি টিউনিং */ সংশোধন
85736
wikitext
text/x-wiki
{{Control Systems/Page|System Specifications|Compensator}}
== কন্ট্রোলারসমূহ ==
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কিছু মানক ধরন রয়েছে যা ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে। এই কন্ট্রোলারগুলো (বিশেষ করে পি, পিডি, পিআই এবং পিআইডি কন্ট্রোলার) বাস্তব সিস্টেম তৈরিতে খুবই সাধারণ, কিন্তু এদের প্রত্যেকটির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
== প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:P-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার কেবল একটি গেইন মান। এগুলো সাধারণত ''K'' দ্বারা প্রকাশিত গুণক। একটি পি কন্ট্রোলার কেবল সিস্টেম পোলকে রুট লোকাসের নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারে। ইচ্ছেমতো পোল বসানোর জন্য এটি যথেষ্ট নয়।
এই ধরনের কন্ট্রোলারকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়: প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলার, গেইন, এবং জিরো-অর্ডার কন্ট্রোলার।
== ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ==
[[Image:D-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে সিগন্যালের ডেরিভেটিভ নিচের মতোভাবে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s) - f(0)</math>
যেহেতু আমাদের অধিকাংশ সিস্টেমের প্রাথমিক অবস্থা শূন্য ধরা হয়, তাই এটি সরলীকৃত হয়:
:<math>D(s) = \mathcal{L} \left\{ f'(t) \right\} = sF(s)</math>
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার ভবিষ্যতের মান অনুমান করে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ এটি সিগন্যালের গতিপথের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। তবে, এটি ব্যবহার করতে সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ ছোট উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির নয়েজ বড় ডেরিভেটিভ সৃষ্টি করে, যা বড় নয়েজের মতো আচরণ করে। এছাড়াও, ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন, তাই অনেক সময় ইন্টিগ্রাল বা প্রোপোরশনাল কন্ট্রোলারই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ডেরিভেটিভ কন্ট্রোলার 'প্রপার' নয়, কারণ এর নিউমেরেটরের অর্ডার ডিনোমিনেটরের চেয়ে বেশি। এর ফলে অনেক গাণিতিক বিশ্লেষণ কঠিন হয়।
=== জেড-ডোমেইন ডেরিভেটিভ ===
নিচের জেড-ডোমেইন সমীকরণটি লাপ্লাস ডোমেইনের ডেরিভেটিভের সমতুল্য:
:<math>D(z) = \frac{z - 1}{Tz}</math>
এখানে T হচ্ছে স্যাম্পলিং টাইম।
== ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার ==
[[Image:I-controller-symbol-2.svg|center|framed|একটি প্রোপোরশনাল-ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
লাপ্লাস ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল ব্যবহার করতে চাইলে আমরা ব্যবহার করি:
:<math>\mathcal{L}\left\{ \int_0^t f(t)\, dt \right\} = {1 \over s}F(s)</math>
এই কন্ট্রোলার অতীত মানের ভিত্তিতে কাজ করে। এটি পূর্ববর্তী পারফরমেন্স মূল্যায়ন করে এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন করে।
=== জেড-ডোমেইন ইন্টিগ্রাল ===
জেড-ডোমেইনে ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলার নিচের সমীকরণ দিয়ে প্রকাশ করা যায়:
:<math>D(z) = \frac{z + 1}{z - 1}</math>
== পিআইডি কন্ট্রোলার ==
[[Image:PID.png|thumb|right|একটি পিআইডি কন্ট্রোলারের ব্লক ডায়াগ্রাম]]
পিআইডি কন্ট্রোলার প্রোপোরশনাল, ডেরিভেটিভ, ও ইন্টিগ্রাল কন্ট্রোলারের সমন্বয়। ফলে এটি খুবই নমনীয়। তবে নিচে আমরা দেখব যে পিআইডি কন্ট্রোলে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
{{-}}
=== পিআইডি ট্রান্সফার ফাংশন ===
একটি পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো এই তিন অংশের যোগফল:
{{eqn|PID}}
:<math>D(s) = K_p + {K_i \over s} + K_d s</math>
এটি ভিন্নভাবে লেখা যায়:
:<math>D(s) = \frac{A_0 + A_1s}{B_0 + B_1s}</math>
এই রূপটি পলিনোমিয়াল ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী।
=== পিআইডি সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম ===
[[Image:pid.jpg|center|PID কন্ট্রোলারের সিগন্যাল ফ্লো ডায়াগ্রাম]]
=== পিআইডি টিউনিং ===
পিআইডি কন্ট্রোলারের জন্য উপযুক্ত গেইন মান নির্ধারণ করাকে '''পিআইডি টিউনিং''' বলে। এটি করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি আছে:<ref>Seborg, Dale E.; Edgar, Thomas F.; Mellichamp, Duncan A. (2003). Process Dynamics and Control, Second Edition. John Wiley & Sons,Inc. {{ISBN|0471000779}}</ref>
১) ডাইরেক্ট সিন্থেসিস (ডিএস) পদ্ধতি
২) ইন্টারনাল মডেল কন্ট্রোল (আইএমসি) পদ্ধতি
৩) কন্ট্রোলার টিউনিং সম্পর্ক
৪) ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স কৌশল
৫) কম্পিউটার সিমুলেশন
৬) সিস্টেম স্থাপনের পরে অন-লাইন টিউনিং
৭) ট্রায়াল অ্যান্ড এরর
'''নোটঃ'''
<references />
=== ডিজিটাল পিআইডি ===
জেড-ডোমেইনে, পিআইডি কন্ট্রোলারের ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Digital PID}}
:<math>D(z) = K_p + K_i \frac{T}{2} \left[ \frac{z + 1}{z - 1} \right] + K_d \left[ \frac{z - 1}{Tz} \right]</math>
এটিকে রূপান্তর করে পাই:
:<math>D(z) = \frac{a_0 + a_1 z^{-1} + a_2 z^{-2}}{1 + b_1 z^{-1} + b_2 z^{-2}}</math>
যেখানে:
:<math>a_0 = K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{K_d}{T}</math>
:<math>a_1 = -K_p + \frac{K_i T}{2} + \frac{-2 K_d}{T}</math>
:<math>a_2 = \frac{K_d}{T}</math>
:<math>b_1 = -1</math>
:<math>b_2 = 0</math>
এই ট্রান্সফার ফাংশন থেকে ডিজিটাল টাইম-ডোমেইনে রূপান্তর করলে পাই:
:<math>y[n] = x[n]a_0 + x[n-1]a_1 + x[n-2]a_2 - y[n-1]b_1 - y[n-2]b_2</math>
এই ডিফারেন্স সমীকরণ থেকেই ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার তৈরি করা যায়।
{{info|ডিজিটাল ফিল্টার স্ট্রাকচার সম্পর্কে আরও জানতে দেখুন [[Digital Signal Processing]]}}
== ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার ==
"ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার" নামটি অব্যবহার্য মনে হলেও, এটি একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা শুধুমাত্র ডিজিটাল উপায়ে সম্ভব। একে অন/অফ কন্ট্রোলারও বলা হয়, যেখানে ডিজিটাল সিস্টেম নির্ধারণ করে কখন কন্ট্রোলার চালু বা বন্ধ হবে। এটি একটি নন-লিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি।
উদাহরণ: একটি ঘরের হিটার—যেখানে হিটার নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তেল পুড়িয়ে গরম হয়। থার্মোস্ট্যাট সিদ্ধান্ত নেয় কবে হিটার চালু ও বন্ধ হবে। এটি একটি ব্যাং-ব্যাং কন্ট্রোলার।
== কম্পেনসেশন ==
যখন কোনও সিস্টেমের কিছু গুণগত বৈশিষ্ট্য অপারেটিং রেঞ্জের বাইরে থাকে, তখন বিভিন্ন ধরণের কম্পেনসেশন ইউনিট ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ফেজ চরিত্রগতিগুলো সংশোধনের প্রয়োজন হয়।
কম্পেনসেশনের চারটি প্রধান ধরন:
1. লিড কম্পেনসেশন
2. লাগ কম্পেনসেশন
3. লিড-লাগ কম্পেনসেশন
4. লাগ-লিড কম্পেনসেশন
== ফেজ কম্পেনসেশন ==
কখনো কখনো ফেজ পরিবর্তনের দরকার হয়, কিন্তু ম্যাগনিটিউড অপরিবর্তিত রাখতে হয়। এজন্য বিশেষ কন্ট্রোলার ব্যবহৃত হয় যাকে '''ফেজ কম্পেনসেটর''' বলা হয়।
দুই ধরনের ফেজ কম্পেনসেটর আছে: '''লিড কম্পেনসেটর''' ও '''লাগ কম্পেনসেটর'''। এদের একত্রে ব্যবহার করলে '''লাগ-লিড কম্পেনসেটর''' তৈরি হয় (লিড-লাগ বাস্তবে সম্ভব নয়)।
ফেজ কম্পেনসেটর ডিজাইন করার সময় গেইন ও ফেজ মার্জিন বিশ্লেষণ জরুরি, যেন সিস্টেম অস্থির না হয়।
ফেজ লিড কম্পেনসেশন: এটি খোলা লুপে একটি জিরো যোগ করার মতো কাজ করে। এখানে জিরো পোলের চেয়ে অরিজিনের কাছাকাছি হওয়ায় জিরোর প্রভাব বেশি হয়।
== ফেজ লিড ==
লিড কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশন:
{{eqn|Lead Compensator}}
:<math>T_{lead}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
সঠিকভাবে কাজ করতে হলে:
:<math>| z | < | p |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং LHP-তে অরিজিনের কাছাকাছি থাকতে হবে।
এটি পোলগুলোকে বাম দিকে সরিয়ে স্থিতিশীলতা বাড়ায়।
== ফেজ লাগ ==
লাগ কম্পেনসেটরের ট্রান্সফার ফাংশনও একই:
{{eqn|Lag Compensator}}
:<math>T_{lag}(s) = \frac{s-z}{s-p} </math>
তবে এখানে:
:<math>| p | < | z |</math>
পোল ও জিরো দুটোই বাস্তব অক্ষ বরাবর এবং অরিজিনের কাছাকাছি হতে হবে।
ফেজ লাগ কম্পেনসেটর স্টেডি-স্টেট এরর কমাতে সাহায্য করে। পোলগুলো কাছাকাছি থাকলে সিস্টেম বেশি স্থিতিশীল থাকে।
== ফেজ লাগ-লিড ==
{{Wikipedia|Lag-lead compensator}}
'''লাগ-লিড কম্পেনসেটর'''র ট্রান্সফার ফাংশন হলো:
{{eqn|Lag-lead Compensator}}
:<math> T_{Lag-lead}(s) = \frac{(s-z_1)(s-z_2)}{(s-p_1)(s-p_2)}. </math>
যেখানে সাধারণত:
:<math>| p_1 | > | z_1 | > | z_2 | > | p_2 | </math>
{{Control Systems/Nav|System Specifications|Compensators}}
== বহিঃসংযোগ ==
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=Standard_Controller_Forms Standard Controller Forms on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PID_Control PID Control on ControlTheoryPro.com]
*[http://wikis.controltheorypro.com/index.php?title=PI_Control PI Control on ControlTheoryPro.com]
5najjz4t76h7jnu105anvw6pfjdiv35
কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা
0
25653
85769
85104
2025-07-07T05:03:30Z
R1F4T
9121
85769
wikitext
text/x-wiki
মৌলিক ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজন এমন একটি ট্রাইবুনাল, যা কারও অধিকার নিয়ে রায় দিতে হলে সেটিকে অবশ্যই ন্যায্যভাবে, সদিচ্ছা নিয়ে, পক্ষপাতহীনভাবে এবং বিচারিক স্বভাব বজায় রেখে কাজ করবে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে তাদের বক্তব্য যথাযথভাবে উপস্থাপনের সুযোগ দিবে।<ref>Singh, [1985] 1 SCR 177, at 212.</ref> বোর্ডের আচরণবিধি মূলত দুটি নীতির উপর ভিত্তি করে গঠিত এবং সেগুলোকে স্বীকৃতি দেয়: (১) আইআরবি-এর সততা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতার প্রতি জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাস সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন; এবং (২) সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা অপরিহার্য।<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Code of Conduct for Members of the Immigration and Refugee Board of Canada,'' Effective Date: April 9, 2019, <https://irb-cisr.gc.ca/en/members/Pages/MemComCode.aspx> (Accessed May 3, 2020), at section 5.</ref> বইয়ের এই অংশে শরণার্থী সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে এই প্রয়োজনীয়তাগুলোর ব্যাখ্যা দিতে ব্যবহৃত নীতিগুলোর আলোচনা করা হবে।
== মামলা সূত্রে উদ্ভূত শরণার্থী কার্যপ্রণালীর ব্যাখ্যার নীতিসমূহ ==
নিম্নে শরণার্থী বিষয়ক মামলাগুলো থেকে প্রাপ্ত পদ্ধতিগত ন্যায়বিচার সম্পর্কিত ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের কিছু মূল নীতিমালা তুলে ধরা হলো:
=== আইনগত বিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত নীতিমালা ===
প্রথম ধাপে, একটি আইনগত বিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তদাতা সংশ্লিষ্ট টেক্সট, প্রসঙ্গ ও উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ করবেন।<ref>''Benchwood Builders, Inc v Prescott,'' 2025 ONCA 171 (March 6, 2025), para. 5.</ref> এটি করতে গিয়ে তারা "আধুনিক ব্যাখ্যার নীতি" অনুসরণ করবেন, অর্থাৎ, একটি আইনকে তার সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে, ব্যাকরণগত ও প্রচলিত অর্থে, আইনটির কাঠামো, উদ্দেশ্য এবং সংসদের অভিপ্রায়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পড়তে হবে।<ref>''Canada (Minister of Citizenship and Immigration) v. Vavilov'', 2019 SCC 65, [2019] 4 SCR 653 at para. 117.</ref> সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এই পাঠ্যাংশের পরিসরের বাইরে হলেও কিছু সংক্ষিপ্ত মন্তব্য যথেষ্ট হতে পারে:
* '''শব্দের প্রচলিত অর্থ:''' যখন কোনো আইনি বিধানের শব্দগুলো সুনির্দিষ্ট, দ্ব্যর্থহীন ও স্পষ্ট হয়, তখন সেগুলোর সাধারণ/প্রচলিত অর্থ ব্যাখ্যার প্রক্রিয়ায় প্রধান ভূমিকা পালন করে।<ref>''Canada Trustco Mortgage Co. v. Canada'', 2005 SCC 54 at para. 10.</ref> শুধুমাত্র আইনগত উদ্দেশ্য উল্লেখ করে কোনো বিধানের স্পষ্ট ভাষা উপেক্ষা করা ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।<ref>''Dow Chemical Canada ULC v Canada'', 2024 SCC 23 at para 101.</ref> তবে, যদি কোনো বিধানের শব্দ একাধিক যৌক্তিক অর্থ বহন করতে পারে, তখন প্রচলিত অর্থ অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে।<ref>''Canada (Public Safety and Emergency Preparedness) v. Weldemariam,'' 2024 FCA 69 (CanLII), at para 84, <https://canlii.ca/t/k419v#par84>, retrieved on 2024-06-12.</ref> যদি দুটি ব্যাখ্যা সম্ভব হয়, তবে যেটি বিধানের উদ্দেশ্যের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ সেটিকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।<ref>''McBratney v McBratney'', 1919 CanLII 42 (SCC) (per Duff J).</ref> '''একক ও সঙ্গতিপূর্ণ শব্দপ্রয়োগের অনুমান:''' "একরূপ শব্দপ্রয়োগ" নীতিতে বলা হয়েছে, কোনও শব্দ বা বাক্যাংশ আইন এবং এর অধীন প্রবিধানের সর্বত্র কেবল একটি অর্থ বহন করে।<ref>''R v Zeolkowski'', 1989 CanLII 72 (SCC), [1989] 1 SCR 1378 at p 1387.</ref> একটি বিধিবদ্ধ মাধ্যমে একই শব্দকে একই অর্থ প্রদান করা সংবিধিবদ্ধ ব্যাখ্যার একটি মৌলিক নীতি। ভিন্ন শব্দ ব্যবহৃত হলে তা ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে।<ref>''Maurice v Priel'', 1987 CanLII 207 (SK CA), 46 DLR (4th) 416, ''per'' Bayda CJ, at pp. 20-21.</ref> পাশাপাশি, যেসব আইন একই বিষয়ে প্রণীত, তাদের একত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত।<ref>''Sharbern Holding Inc. v. Vancouver Airport Centre Ltd.,'' 2011 SCC 23, [2011] 2 SCR 175 at para. 117.</ref> যেসব মতবাদ উত্থাপিত হতে পারে তার মধ্যে একটি হলো ''প্যারিমেটেরিয়ায় বিধিসমূহ'' (অর্থাৎ একই বিষয় বা বিষয়ের উপর বিধি) সুসংহতভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/গোপনীয়তা আইন]]
* '''''Expressio unius est exclusio alterius''''': এই লাতিন নীতির অর্থ—একটি বিষয়ের স্পষ্ট উল্লেখ মানে অন্যটি বাদ দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আইনসভা স্পষ্টভাবে কোনো বিষয় সম্পর্কিত আইনের কেবলমাত্র নির্দিষ্ট অংশকে প্রণয়ন করে, তখন আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য অন্তর্নিহিত বর্জন যুক্তির উপর নির্ভর করতে পারে বাকি অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।<ref>''Nazifpour v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration) (F.C.A.),'' 2007 FCA 35 (CanLII), [2007] 4 FCR 515, at para 20, <https://canlii.ca/t/1qg9c#par20>, retrieved on 2024-05-24.</ref> অন্য কথায়, যদি আইনসভার ইচ্ছা থাকত কোনো উপাদান অন্তর্ভুক্ত করার, তাহলে আদালত আশা করতে পারে যে সেই উপাদানটিকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে।<ref>''Tesfaye v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 2040 (CanLII), at para 41, <https://canlii.ca/t/k8d50#par41>, retrieved on 2024-12-17.</ref>
* '''শরণার্থী আইনে ব্যতিক্রমসমূহ কঠোরভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।'''<ref>Júlia Zomignani Barboza, International Protection for Criminals: To Grant or Not to Grant? Lessons from Australia, Belgium, and Canada, ''International Journal of Refugee Law'', 2024, eeae026, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae026, at page 21.</ref> কঠোর ব্যাখ্যা নীতি হচ্ছে, কোনো বিধান শরণার্থীদের অবস্থানকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করলে, ব্যাখ্যায় অস্পষ্টতা থাকলে তা আবেদনকারীর পক্ষে ব্যাখ্যা করতে হবে।<ref>''Canada (Citizenship and Immigration) v Heidari Gezik'', 2015 FC 1268 at para 61.</ref> প্রশাসনিক ব্যাখ্যায় সংশ্লিষ্ট বিধানের প্রয়োগে বিরূপ পরিণতি সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে এবং বিচার করতে হবে আইনসভার সত্যিই এমন প্রয়োগের অভিপ্রায় ছিল কিনা।<ref>''Mason v Canada (Citizenship and Immigration)'', 2023 SCC 21 at para 69.</ref> শরণার্থীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এমন বিধান কঠোরভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।<ref>''Canada (Citizenship and Immigration) v Heidari Gezik'', 2015 FC 1268 at para 51.</ref>
* '''পুনরুক্তি বিরোধী অনুমান:''' আইনসভা অপ্রয়োজনীয় ও পুনরাবৃত্ত শব্দ ব্যবহার করে না ধরে নেওয়া হয়।<ref>''Canada (Public Safety and Emergency Preparedness) v. Weldemariam,'' 2024 FCA 69 (CanLII), at para 90, <https://canlii.ca/t/k419v#par90>, retrieved on 2024-06-12.</ref>
* '''অবাস্তবতার বিরুদ্ধে অনুমান:''' আইনসভা এমন কিছু উদ্দেশ্য করেন না যার পরিণতি হবে অযৌক্তিক বা অবাস্তব।<ref>''Rizzo & Rizzo Shoes Ltd (Re)'', 1998 CanLII 837 (SCC), [1998] 1 SCR 27 at para 27.</ref>
* '''ব্যাখ্যা আইন''' অনুযায়ী ব্যাখ্যার অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত, যেমন—''ইন্টারপ্রিটেশন অ্যাক্ট'' এর ধারা ১১ অনুযায়ী “may” শব্দটি নির্দেশ করে ঐচ্ছিকতা,<ref>''Virani v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2017 FC 1083 (CanLII), at para 9, <https://canlii.ca/t/hp4hx#par9>, retrieved on 2024-03-17.</ref> এবং ধারা ১৪ অনুযায়ী, মার্জিনাল নোট ও শিরোনাম আইনের অংশ নয়, শুধুমাত্র রেফারেন্সের জন্য থাকে (তবে ব্যাখ্যার প্রক্রিয়ায় সেগুলো বিবেচনাযোগ্য, যদিও অন্য ব্যাখ্যামূলক উপকরণের তুলনায় কম গুরুত্ব পাওয়া উচিত)।<ref>''Canada (Public Safety and Emergency Preparedness) v. Weldemariam,'' 2024 FCA 69 (CanLII), at para 96, <https://canlii.ca/t/k419v#par96>, retrieved on 2024-06-12.</ref>
* '''গৌণ আইন: বিধিমালা ও আইনের সম্পর্ক''' আরপিডি ও আরএডি-এর কিছু বিধান শুধুমাত্র পদ্ধতিগত, যা আই আর পি এ.-তে নির্ধারিত ডিভিশনের বিস্তৃত সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করতে পারে না বলে বলা হয়ে থাকে।<ref>''Al-Lamy v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1621, para. 21.</ref>
মৌলিক ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজন যে একটি ট্রাইব্যুনাল যা অধিকারের বিষয়ে রায় দেয় তাকে অবশ্যই ন্যায্যভাবে, সরল বিশ্বাসে, পক্ষপাত ছাড়াই এবং বিচারিক মেজাজে কাজ করতে হবে এবং দলগুলোকে তাদের মামলা যথাযথভাবে বিবৃত করার সুযোগ দিতে হবে। বোর্ডের আচরণের মানগুলো মৌলিকভাবে দুটি নীতির উপর ভিত্তি করে এবং স্বীকৃতি দেয়: (i) <abbr>আইআরবির</abbr> সততা, উদ্দেশ্যমূলকতা এবং নিরপেক্ষতার প্রতি জনগণের আস্থা এবং আস্থা অবশ্যই সংরক্ষণ এবং বাড়ানো উচিত; এবং (২) সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা প্রয়োজন। বইয়ের এই বিভাগটি শরণার্থী প্রসঙ্গে এই প্রয়োজনীয়তাগুলো ব্যাখ্যা করার সময় ব্যবহৃত নীতিগুলো অন্বেষণ করবে।
=== বোর্ড সম্পর্কিত যুক্তিসংগত প্রত্যাশাসমূহের নীতিমালা ===
* '''প্রথমত, বোর্ড যেন ক্ষতি না করে।''' বোর্ড তাদের ''শরণার্থী আপিল বিভাগের কার্যক্রমের জন্য তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের নির্দেশাবলীতে'' প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে "নির্ধারিত সদস্য আপিলের বিষয়বস্তু ব্যক্তির সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য চাইবেন এবং সেই তথ্য ব্যবহার করবেন কেবল তখনই, যখন তিনি ঝুঁকি মূল্যায়ন সম্পন্ন করবেন এবং নিশ্চিত হবেন যে এই তথ্য সংগ্রহের ফলে আপিলের বিষয়বস্তু ব্যক্তি অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা বা নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার গুরুতর সম্ভাবনা নেই।"<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Instructions for Gathering and Disclosing Information for Refugee Appeal Division Proceedings'', Effective: May 30, 2016, <https://irb.gc.ca/en/legal-policy/policies/Pages/InstRadSpr0516.aspx> (Accessed October 2, 2023), section D.</ref> এটি একটি সাধারণ নীতিমালা যা অন্যান্য অনুরূপ তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। উদাহরণস্বরূপ, যেকোনো পরিস্থিতিতে এবং সব সময়, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কর্মীদের দায়িত্ব হলো যাতে তারা ভুক্তভোগী, সাক্ষী এবং অন্যান্য সহযোগী ব্যক্তিদের জীবন, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা এবং সুস্থতার ক্ষতি না করে।<ref>United Nations Office of the High Commissioner for Human Rights, ''Manual on human rights monitoring: Chapter 14 (Protection of victims, witnesses and other cooperating persons),''<https://www.ohchr.org/sites/default/files/Documents/Publications/Chapter14-56pp.pdf>, page 8.</ref> একই রকম দায়িত্ব যুক্তিসঙ্গতভাবে কানাডার ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি বোর্ডের কর্মীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। তবে যদি বোর্ড সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বা দেওয়ানি অভিযোগ থেকে আইনগত সুরক্ষা রয়েছে।
* '''রিফিউজি প্রসঙ্গে একটি উচ্চ মাত্রার প্রক্রিয়াগত ন্যায্যতা প্রদান করতে হয়।''' ফেডারেল আপিল আদালত বলেছে, “বোর্ডের স্বাধীনতা, তাদের বিচারিক পদ্ধতি ও কার্যাবলি এবং এ বিষয়টি যে তাদের সিদ্ধান্ত দাবি দাতাদের চার্টার অধিকারকে প্রভাবিত করে—এসবই নির্দেশ করে যে বোর্ডের দায়িত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগত ন্যায্যতা, যার মধ্যে পক্ষপাতহীনতার দায়িত্বও রয়েছে, তা ন্যায্যতার ধারাবাহিকতার উচ্চ স্তরে পড়ে।”<ref name=":0">''Geza v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FCA 124, para. 53.</ref>
* '''ট্রাইব্যুনাল এবং এর পদ্ধতিগুলো যতটা সম্ভব সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া উচিত।'''<ref name=":2">S. Ronald Ellis, ''The Corporate Responsibility of Tribunal Members'', Canadian Journal of Administrative Law & Practice, February 2009, 22 Can. J. Admin. L. & Prac. 1, <http://www.ccat-ctac.org/CMFiles/Ron%20Ellis/21.TheCorporateResponsibilityofTribunalMembers.pdf#page15> (Accessed July 25, 2020), page 10.</ref> ফেডারেল কোর্ট বলেছে যে, রিফিউজি মর্যাদা নির্ধারণ সম্পর্কিত আই আর পি এ.-এর বিধানগুলো আইনসভাগতভাবে সেই উদ্দেশ্য প্রকাশ করে যে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলার শুনানির আনুষ্ঠানিকতা এড়ানো উচিত।<ref>''Benitez v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FC 461 (CanLII), [2007] 1 FCR 107, par. 64, <https://canlii.ca/t/1n3nx#par64>, retrieved on 2021-07-17.</ref> এই লক্ষ্যে, ইউএনএইচসিআর-এর নির্বাহী কমিটি রাষ্ট্রগুলোকে সুপারিশ করেছে যে তারা রিফিউজি আবেদনকারীদের যথাযথভাবে প্রক্রিয়াটি কীভাবে অনুসরণ করতে হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেবে।<ref>Conclusions Adopted by the Executive Committee in the International Protection of Refugees 1975-2009 (Conclusion 1-109). See Conclusion 8 9, <https://www.unhcr.org/en-us/578371524.pdf> (Accessed February 5, 2021).</ref> উদাহরণস্বরূপ, আরপিডি আবেদনকারীদের জানায়: "যদি আপনি আবেদনপত্র পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি অ্যাক্সেস করতে সমস্যা অনুভব করেন, তবে আপনাকে সঙ্গে সঙ্গে <abbr>আরপিডি</abbr> রেজিস্ট্রির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আপনাকে মেইল বা ফ্যাক্সের মাধ্যমে ফর্মটি পাঠাতে পারে। আপনি চাইলে <abbr>আইআরবি</abbr> অফিস থেকে সরাসরি ফর্ম সংগ্রহের অনুরোধও করতে পারেন।"<ref name=":25">Immigration and Refugee Board of Canada, ''Questions and answers: Practice Notice on Procedural Issues,'' Date modified: 2024-09-09 <<nowiki>https://irb.gc.ca/en/legal-policy/procedures/Pages/rpd-pnpi-qa.aspx</nowiki>>, at question 13.</ref> যদি বোর্ড এমন কিছু করে যাতে একজন আবেদনকারী ভুল ধারণা পায় যে তার অধিকার কী বা প্রাসঙ্গিক নিয়মগুলো কী—তাহলে এটি বোর্ডের ত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref>''Nwankwo v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1827 (CanLII), at para 32, <https://canlii.ca/t/k7zdl#par32>, retrieved on 2024-12-12.</ref>
* '''দাবিদারদের আইনি পরামর্শ দেওয়া বোর্ডের কাজ নয়।''' আরপিডি জানায়, তাদের রেজিস্ট্রি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, কিন্তু তারা ফর্মে কী থাকতে হবে সে বিষয়ে (যা আইনগত পরামর্শ) কোনো নির্দেশনা দিতে পারে না।<ref name=":252" /> ''সুন্দরম বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট বলেছে, তারা অভিবাসন ব্যবস্থার মধ্যে কর্মকর্তাদের ওপর অনুশীলন ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে প্রস্তুত নয়। পরামর্শ দেওয়া একেবারেই ভিন্ন বিষয়, যেটি সেইসব কোর্টের সিদ্ধান্ত থেকে আলাদা যেগুলোতে বলা হয়েছে যে, কর্মকর্তাদের আবেদনের জন্য প্রাসঙ্গিক ফর্ম সরবরাহ করতে হবে। মানুষ সরকারের ফর্ম পাওয়ার অধিকার রাখে; কিন্তু তারা আরপিডি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ পাওয়ার অধিকার রাখে না।<ref>''Sundaram v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FC 291 (CanLII), par. 12, <http://canlii.ca/t/1mr2v#par12>, retrieved on 2020-04-11.</ref> ''আইন বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট বলেছে যে, কোনো প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের ওপর এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, তারা আইনজীবী নিয়োগ না দেওয়া কোনো দাবি উপস্থাপনকারীর পক্ষ থেকে কাজ করবে।<ref>''Law v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'' (2007), 2007 FC 1006, 160 A.C.W.S. (3d) 879 at para. 16.</ref> অন্যভাবে বললে, ‘‘বোর্ডের দায়িত্ব নয় যে তারা আবেদনকারীর দাবির সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের আইন ‘শেখাবে’।’’<ref>''Ngyuen v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2005 FC 1001, [2005] F.C.J. No. 1244 (QL), at para. 17.</ref> একইভাবে, কোর্ট বা ট্রাইবুনালের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে তারা আইন বা প্রক্রিয়া সম্পর্কে ছোট খাটো কোর্স করাবে।<ref>''Kerqeli v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2015 FC 475 (CanLII), at para 13, <https://canlii.ca/t/ghc6p#par13>, retrieved on 2024-12-12.</ref> ''সিং বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট বলেছে, "আবেদনকারীদের পক্ষে মামলা তৈরি করা আরএডি-এর দায়িত্ব নয়।"<ref>''Singh v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2021 FC 810 (CanLII), at para 58, <https://canlii.ca/t/jhcg4#par58>, retrieved on 2022-01-21.</ref> তবে স্ব-উপস্থাপনকারী আবেদনকারীদের সম্পর্কে এই পাতাটি দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ১৪-১৬ - আইনজীবীর নিয়োগ]]। একটি দাবিতে কী কী আইনগত বিষয় প্রাসঙ্গিক, তা বোর্ড চিহ্নিত করবে—এ সংক্রান্ত প্রত্যাশা নিয়েও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার]]।
* '''ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত আইনের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।''' মামলার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত সেই সমস্ত আইনের ভিত্তিতে যা বোর্ডের জন্য বাধ্যতামূলক, শুধু সেই আইন নয় যা পক্ষগণ প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করেছে।<ref>''Canada (Citizenship and Immigration) et al. v. The Canadian Council for Refugees et al.,'' 2021 FCA 72, para. 125.</ref> প্যানেলগুলোর উচিত সব আইনি ও প্রক্রিয়াগত শর্ত পালন করা, এবং অন্য প্যানেলের আচরণ পর্যালোচনার সময় ‘‘নিয়মিত কার্যক্রমের অনুমান’’ গ্রহণ করা, যা শুধুমাত্র ‘‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’’ দ্বারা খণ্ডন করা যায়।<ref>''Varela v Canada (Citizenship and Immigration),'' 2017 FC 1157 [Barnes J].</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার]]। এটি কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ; আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বলেছে যে, একটি প্যানেল পক্ষগণের উপস্থাপিত যুক্তি দ্বারা সীমাবদ্ধ নয় এবং প্যানেল আইনগত বিষয় সম্পর্কে বিচারিক জ্ঞানের মাধ্যমে অবহিত থাকবে এবং তাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রাসঙ্গিক সকল নিয়ম বিবেচনা করতে বাধ্য।<ref>Alain Pellet, Judicial Settlement of International Disputes, ''Max Planck Encyclopedia of Public International Law'', July 2013, <https://prawo.uni.wroc.pl/sites/default/files/students-resources/law-9780199231690-e54-1.pdf> (Accessed September 30, 2022).</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ২২ - বিশেষজ্ঞ জ্ঞান'|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ২২ - বিশেষজ্ঞ জ্ঞান]]।
* '''ট্রাইবুনালের উচিত নিজের বিচারধারা গড়ে তোলা।''' আইনের সীমার মধ্যে ফেডারেল কোর্ট মন্তব্য করেছে যে, বোর্ডের নিজস্ব বিচারধারা গড়ে তোলার সম্ভাবনা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।<ref>''M.C.I v. Huruglica,'' 2016 FCA 93 (C.A.F.), para. 74.</ref>
* '''বোর্ডের প্রক্রিয়া পূর্বানুমেয় হওয়া উচিত।''' বোর্ড জানায় যে সদস্যদের উচিত বোঝার চেষ্টা করা যে অন্যান্য প্যানেল কীভাবে বিভিন্ন ইস্যু মোকাবিলা করছে এবং যেখানে সম্ভব, সেই একই পথে চলার চেষ্টা করা উচিত যাতে করে রিফিউজি বিভাগের প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা যায়।<ref name=":23">Immigration and Refugee Board of Canada. ''Mission, Vision, and Values of the Immigration and Refugee Board'', Last updated: 2006 04 20, online <https://web.archive.org/web/20071115151510/http://www.irb-cisr.gc.ca/en/references/legal/rpd/handbook/hbmission_e.htm> (Accessed November 9, 2023).</ref> মানবাধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে ''আমেরিকান ঘোষণাপত্র''-এ প্রতিফলিত সমান সুরক্ষা ও যথাযথ প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিগুলো পূর্বানুমেয় প্রক্রিয়ার দাবি করে।<ref>Inter-American Commission on Human Rights (IACHR), ''Report on the Situation of Human Rights of Asylum Seekers Within the Canadian Refugee Determination System'', 2000, Inter-Am. C.H.R., OEA/Ser.L/V/II.106, Doc. 40 rev. (2000), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/50ceedc72.html</nowiki> [accessed 18 August 2020], para. 52.</ref> কানাডার অবস্থান হলো, তারা আই আর পি এ.-র মান ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ''আমেরিকান'' ঘোষণাপত্রের প্রাসঙ্গিক অংশ বাস্তবায়ন করে।<ref>Inter-American Commission on Human Rights (IACHR), ''Report on the Situation of Human Rights of Asylum Seekers Within the Canadian Refugee Determination System'', 2000, Inter-Am. C.H.R., OEA/Ser.L/V/II.106, Doc. 40 rev. (2000), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/50ceedc72.html</nowiki> [accessed 18 August 2020], para. 36.</ref> একইভাবে, ইউএনএইচসিআর তাদের ''শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য পদ্ধতিগত মানদণ্ড''-এ জানায়, "আরএসডি আবেদনসমূহকে স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে।"<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Procedural Standards for Refugee Status Determination Under UNHCR's Mandate'', 26 August 2020, available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/5e870b254.html</nowiki> [accessed 5 September 2020], page 15.</ref> তবে, ফেডারেল কোর্ট জানিয়েছে, ট্রাইবুনালের অধিকার রয়েছে নির্ধারিত বিধান প্রয়োগে নির্দিষ্ট কেসের প্রেক্ষিতে বেশি বা কম নমনীয়তা প্রদর্শন করার।<ref>''Canada (Citizenship and Immigration) v. Singh,'' 2016 FCA 96 (CanLII), [2016] 4 FCR 230, at para 64, <https://canlii.ca/t/gp31b#par64>, retrieved on 2022-04-22.</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার]]।
* '''বোর্ডের নিজস্ব দোষের জন্য পক্ষগুলোর দোষ খোঁজা উচিত নয়।''' উদাহরণস্বরূপ, ''হুসেইন বনাম কানাডা'' মামলায় সরকার দেখায় যে টরন্টোর আইআরবি অফিস পরিত্যাগ শুনানির একদিন আগে স্থানান্তর অনুরোধ পেয়েছিল। আদালত মন্তব্য করে, "এটি আইআরবি-র আঞ্চলিক অফিসগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের বিষয়। কারণ ক্যালগেরি আইআরবি অফিস তিন সপ্তাহ আগে ব্যক্তিগতভাবে স্থানান্তর অনুরোধটি গ্রহণ করেছিল। আবেদনকারীদের নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবের বাইরে থাকা এই বিলম্বের জন্য তাদের দোষ দেওয়া অন্যায় হবে।"<ref>''Huseen v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2015 FC 845 (CanLII), par. 34, <<nowiki>http://canlii.ca/t/gkmz2#par34</nowiki>>, retrieved on 2020-03-11.</ref>
* '''নীতিনির্ধারকদের উচিত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রস্তুতি নেওয়া''' কানাডার ইমিগ্রেশন ও শরণার্থী বোর্ডের সদস্যদের জন্য আচরণবিধিতে বলা হয়েছে: "মেম্বারদের উচিত প্রতিটি সিদ্ধান্ত কেসের মেরিটের ভিত্তিতে, প্রাসঙ্গিক তথ্যের যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে এবং প্রযোজ্য আইন প্রয়োগ করে গ্রহণ করা।"<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Code of Conduct for Members of the Immigration and Refugee Board of Canada,'' Effective Date: April 9, 2019, <<nowiki>https://irb-cisr.gc.ca/en/members/Pages/MemComCode.aspx</nowiki>> (Accessed May 3, 2020), at section 33.</ref> ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে যে প্রতিটি সুরক্ষা আবেদন একইরকম মনোযোগ পাওয়ার দাবি রাখে।<ref>''Guermache v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2004 FC 870 (CanLII), at para 4, <https://canlii.ca/t/1j2dt#par4>, retrieved on 2022-10-20.</ref> আদালত আরও বলেছে, সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত “মনোযোগ ও যত্নের সঙ্গে।”<ref>''Egenti v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 639 (CanLII), at para 20, <https://canlii.ca/t/jxd96#par20>, retrieved on 2023-09-06.</ref> বিস্তারিত দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/বোর্ডের অনুসন্ধানমূলক দায়িত্ব|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/বোর্ডের অনুসন্ধানমূলক দায়িত্ব#দ্য রিফিউজি প্রোটেকশন ডিভিশনের একটি ইনকুইজিটরিয়াল ম্যান্ডেট রয়েছে]]।
* '''সিদ্ধান্তগ্রহণকারীদের উচিত তাদের সামনে থাকা সমস্ত প্রমাণ বিবেচনা করা।''' কানাডার শরণার্থী আইনে একটি পূর্বধারণা রয়েছে যে সিদ্ধান্তগ্রহণকারীরা তাদের সামনে থাকা সব প্রমাণ বিবেচনা করেছেন।<ref>''Cepeda-Gutierrez v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 1998 CanLII 8667 (FC).</ref> কোনো তথ্য যদি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়, বিশেষ করে যদি তা গৃহীত সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে, তাহলে তা ব্যাখ্যা ও আলাদাভাবে উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা বেশি। এতে সময় প্রয়োজন। আশ্রয়প্রার্থী সম্পর্কিত মামলাগুলোকে বলা হয় ‘অত্যন্ত তথ্যনির্ভর’। সেখানে অনেক বিস্তারিত ও ডকুমেন্ট উপস্থাপন ও বিবেচনা করা লাগে, যা সময়সাপেক্ষ।<ref>J. Ramji‐Nogales et al. (eds), ''Refugee Roulette'' (2009), p. 125, citing Immigration Litigation Reduction Hearing before the S. Comm. on the Judiciary, 109th Cong. 5–7 (2006) (statement of Hon. John M. Walker, Jr., C.J., US Court of Appeals for the Second Circuit).</ref> বিচারসম্পর্কিত সামাজিক মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা গেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যয়িত সময় ও যথার্থতার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে: যেসব বিচারকের মামলার সংখ্যা বেশি, তারা বেশি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, কারণ তারা কম ভাবনাচিন্তা করে এবং বেশি “gut feeling” বা অনুমানের উপর নির্ভর করেন।<ref>C. Guthrie et al., ‘Blinking on the Bench: How Judges Decide Cases’ (2007) 93 ''Cornell Law Rev''. 1.</ref> তবে দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/বোর্ডের অনুসন্ধানমূলক দায়িত্ব|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/বোর্ডের অনুসন্ধানমূলক দায়িত্ব#বোর্ডের সবচেয়ে আপ টু ডেট দেশের অবস্থার প্রমাণ বিবেচনা করা উচিত]]। এছাড়াও, একটি পূর্বধারণা থাকে যে সদস্যরা কেবলমাত্র তাদের সামনে থাকা নথিপত্রের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেন এবং অন্য কোনো ফাইল থেকে তথ্য ব্যবহার করেন না।<ref>''Lopez Aguilar v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2011 FC 908 (CanLII), at para 5, <https://canlii.ca/t/fn552#par5>, retrieved on 2023-11-02.</ref>
* '''বোর্ডের উচিত তাদের দেওয়া ব্যাখ্যার মাধ্যমে পক্ষগুলো যেন নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে পেরেছে বলে মনে করে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা।''' দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার]]।
* '''দাবিগুলো দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করা উচিত।''' বিস্তারিত দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।]]।
* '''বোর্ডের উচিত নিশ্চিত করা যে যারা বোর্ডের সামনে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত হচ্ছেন তারা আইন ও বিধিমালার অধীনে অনুমোদিত কিনা তা যাচাই করা:''' ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে, "বোর্ডের ওপর দায়িত্ব রয়েছে যে যারা তাদের সামনে ক্লায়েন্টদের পক্ষে উপস্থিত হন তারা আইনি প্রতিনিধিত্বের বিধি অনুসারে অনুমোদিত কিনা তা যাচাই করার। অথবা তারা সেবার জন্য কোনো ফি নিচ্ছেন না কি না তা নিশ্চিত করার।"<ref>''Domantay v. Canada (Citizenship and Immigration)'', 2008 FC 755.</ref> আইআরবি-এর উচিত নয় জেনে-শুনে এমন কাউন্সেলের সঙ্গে কাজ করা যারা আই আর পি এ.-র ৯১ ধারা বা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরামর্শদাতাদের কলেজের শর্তাবলি লঙ্ঘন করছে। তবে যদি স্পষ্টভাবে অযোগ্য প্রতিনিধি না হয়, তাহলে এ দায়িত্ব বোর্ডের ওপর বর্তায় না যে তারা একজন দাবিদারের নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অন্য দাবিদারদের অভিযোগের বিষয়ে তাকে অবহিত করবে, যদি না সেই অভিযোগ তার নিজের দাবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়।<ref>''X (Re),'' 2019 CanLII 129885 (CA IRB) at paras. 14 and 25 to 30. Online: http://canlii.ca/t/j59c6</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ৩-১৩ - তথ্য ও দাখিলযোগ্য নথিপত্র|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ৩-১৩ - তথ্য ও দাখিলযোগ্য নথিপত্র#কাউন্সেল ফি ছাড়াই প্রতিনিধি হতে পারে যারা আইনজীবী, প্যারালিগাল বা অভিবাসন পরামর্শদাতা নয়]] এবং আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা এবং প্রয়োগ করা উচিত যা কানাডা সরকার এবং কলেজ অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপের মতো বেসরকারী সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার সুবিধার্থে কনসালট্যান্ট]]।
* '''বোর্ডকে যাচাই করতে হবে যে বোর্ডের সামনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা আইন এবং বিধি অনুসারে অনুমোদিত:''' ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে যে "বোর্ডের উপর একটি কর্তব্য রয়েছে যে ক্লায়েন্টদের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিরা যাদের সাথে লেনদেন রয়েছে তারা প্রবিধান অনুসারে অনুমোদিত প্রতিনিধি, বা তারা তাদের পরিষেবাগুলোর জন্য কোনও ফি পাচ্ছেন না। আইআরবি জেনেশুনে আইআরপিএর ৯১ ধারা বা কলেজ অফ সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টসের প্রয়োজনীয়তা লঙ্ঘন করে কাউন্সেলের সাথে আচরণ করা উচিত নয়। যাইহোক, স্পষ্টতই অযোগ্য প্রতিনিধিত্বের অনুপস্থিতিতে, এটি ট্রাইব্যুনালের উপর কোনও দাবিদারের পরামর্শের পছন্দে হস্তক্ষেপ করার দায়িত্ব অর্পণ করে না যা তাদের নিজস্ব দাবির সাথে সম্পর্কিত নয় এমন সেই পরামর্শের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো সম্পর্কে অবহিত করে।
=== বোর্ড যেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে সে সম্পর্কে নীতিমালা ===
''কানাডার ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি বোর্ডের সদস্যদের আচরণবিধি'' <abbr>আইআরবি</abbr>-এর সততা, সদিচ্ছা, ন্যায়পরতা, জবাবদিহিতা, মর্যাদা, শ্রদ্ধাবোধ, স্বচ্ছতা, উন্মুক্ততা, বিচক্ষণতা, সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা ও আনুগত্য—এই মূল মূল্যবোধগুলোর প্রতি অঙ্গীকারের ভিত্তিতে গঠিত।<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Code of Conduct for Members of the Immigration and Refugee Board of Canada,'' Effective Date: April 9, 2019, <https://irb-cisr.gc.ca/en/members/Pages/MemComCode.aspx> (Accessed May 3, 2020), at section 6.</ref> বোর্ডের সকল কার্যক্রম ও সিদ্ধান্তে এসব মূল্যবোধ প্রতিফলিত হওয়া উচিত। বিশেষভাবে:
* '''ন্যায়বিচার বাস্তবায়িত হওয়া যেমন জরুরি, তেমনি তা যেন স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয় তাও গুরুত্বপূর্ণ।''' বোর্ডের একটি প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব হচ্ছে নিশ্চিত করা যে ট্রাইবুনালের বিচারিক কাজ উচ্চমাত্রার দক্ষতা, ন্যায়পরতা ও বস্তুনিষ্ঠতার সাথে সম্পন্ন হয়েছে এবং তা যেন যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলেই দেখা যায়।<ref name=":22" /> একদিকে দক্ষতার সাথে দ্রুত একাধিক মামলা নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তা, অন্যদিকে বিবেচনাপূর্ণ, মনোযোগী ও ন্যায়সংগত থাকার প্রয়োজনীয়তার মধ্যে একটি টানাপোড়েন বিদ্যমান (এবং তা যেন সেভাবেই প্রতীয়মান হয়)।<ref>Hambly, J. and Gill, N. (2020), Law and Speed: Asylum Appeals and the Techniques and Consequences of Legal Quickening. J. Law Soc., 47: 3-28. doi:10.1111/jols.12220.</ref> প্রথম দিকের দৃষ্টিভঙ্গি যেন দ্বিতীয় দিকের গুরুত্বকে খর্ব না করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি শুনানিতে রিফিউজি প্রোটেকশন ডিভিশন একজন সদস্যকে দ্বৈতভাবে বরাদ্দ করেছিল, যিনি একক শুনানির জন্য নির্ধারিত সময়ে দুটি শুনানি শেষ করতে চেষ্টা করেন; এ বিষয়ে আদালত মন্তব্য করে: "যদিও আমি দক্ষতার দিক থেকে দেখলে প্রশংসা করি যে ওই সদস্য উভয় বিষয়ে শুনানির জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তবে শুনানিতে যে তড়িঘড়ি ভাব দেখা গিয়েছিল তা প্রক্রিয়াটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ট্রান্সক্রিপ্ট পাঠে বোঝা যায় যে ওই সদস্যের মধ্যে শুনানি শেষ করার বিষয়ে কিছুটা অধৈর্যতা ও উদ্বেগ ছিল।"<ref>''Guylas v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2015 FC 202 (CanLII), para. 39.</ref>
* '''পক্ষগণ সঙ্গতভাবে প্রত্যাশা করতে পারে যে একই ধরনের মামলাগুলোর নিষ্পত্তি বোর্ড একইভাবে করবে।''' বিচারিক শিষ্টাচারের নীতি অনুযায়ী, একই আদালতের বিচারকগণ পূর্ববর্তী বিচারকদের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবেন, যদিও সেগুলো বাধ্যতামূলক নয়। একই নীতি আইআরবি-এর একই ডিভিশনের সদস্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। উদাহরণস্বরূপ, ফেডারেল কোর্ট বলেছে যে একটি ডিভিশনের বিধি সকল পক্ষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য এবং ভিন্ন প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় ভিন্ন মানদণ্ডে পক্ষগণকে বিচার করা যুক্তিসঙ্গত নয়।<ref>''Abi-Mansour v Canada (Passport)'', 2015 FC 363, and ''Qita v Immigration Consultants of Canada Regulatory Council'', 2020 FC 671.</ref> সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধারাবাহিকতা সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার]]।
* '''বোর্ডের প্রক্রিয়া শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।''' আদালত স্বীকৃতি দিয়েছে যে আইআরবি-এর মতো প্রশাসনিক সংস্থাগুলোকে “অফিসের ভারী চাপ সামলাতে এবং সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে প্রক্রিয়াগত উদ্ভাবন করতে হয়।”<ref>''Geza v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' [2006] FCJ No 477 at para 1 (CA).</ref> বোর্ডের প্রক্রিয়া “শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোর উপর নির্ভর করে এমন কোনো সুবিচার মডেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয় যা উদ্ভাবন নিরুৎসাহিত করে। তবে গুণগতমান ও ধারাবাহিকতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি প্রক্রিয়াগুলো এমনভাবে প্রয়োগ করা উচিত নয় যাতে প্রতিটি প্যানেল নিজ নিজ ক্ষেত্রে দাবি করার প্রার্থীকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা দিতে ব্যর্থ হয়।”<ref>''Kozak v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FCA 124 (CanLII), [2006] 4 FCR 377, para. 56.</ref> উদাহরণস্বরূপ, আদালত বলেছে: “বোর্ডের একটি শুনানিকে বিচারিক মামলায় পরিণত করা উচিত নয়। যদিও এই শুনানির পরিণতি গুরুতর এবং প্রক্রিয়াগত সুবিচারের মানদণ্ডও উপযুক্ত হওয়া উচিত, তবে তা ফৌজদারি আইনের মতো সম্পূর্ণ প্রকাশের পর্যায়ে পৌঁছায় না।”<ref>''Razburgaj v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2014 FC 151 (CanLII), par. 19, <http://canlii.ca/t/g34tl#par19>, retrieved on 2020-04-01.</ref>
* '''প্রশাসনিক সুবিধা যেন মৌলিক ন্যায়বিচারের উপর প্রাধান্য না পায়''', যার মধ্যে প্রক্রিয়াগত সুবিচার অন্তর্ভুক্ত।<ref>''Singh v. Canada'', 1985 1 SCR 177.</ref> আশ্রয় নির্ধারণ প্রশাসনিক আইনের কাঠামোর মধ্যে অবস্থিত। সেখানে দক্ষতা ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সুবিচার ও ন্যায়পরতার ভারসাম্য রক্ষা অত্যন্ত জটিল একটি কাজ।<ref>Hambly, J. and Gill, N. (2020), Law and Speed: Asylum Appeals and the Techniques and Consequences of Legal Quickening. J. Law Soc., 47: 3-28. doi:10.1111/jols.12220.</ref> যুক্তরাজ্যে তথাকথিত ডিটেইন্ড ফাস্ট ট্র্যাক (DFT) ব্যবস্থাকে বাতিল করে ২০১৫ সালের এক রায়ে লর্ড ডাইসন বলেন, “ন্যায়বিচার ও সুবিচার যেন দ্রুততা ও দক্ষতার বলিদানে পরিণত না হয়।”<ref>''The Lord Chancellor'' v. ''Detention Action'' [2015] EWCA Civ 840 para. 49.</ref> কানাডার ফেডারেল কোর্ট বলেছে, বোর্ড “…একদিকে দ্রুত প্রক্রিয়ার এবং অন্যদিকে প্রক্রিয়াগত সুবিচার বা প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের মধ্যে একটি ভারসাম্য স্থাপন করতে বাধ্য।”<ref>''Pillai v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2001 FCT 1417, [2002] 3 FC 481.</ref>
* '''নিয়মের ব্যাখ্যা যেন অত্যন্ত কঠোর না হয়।''' আদালত বলেছে, রিফিউজি প্রোটেকশন ডিভিশনের নিয়ম ব্যাখ্যা করার সময় “প্রক্রিয়াগত গোঁড়ামির জঞ্জালে না পড়ে”<ref>''Andreoli v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2004 FC 1111 (CanLII), para. 16.</ref> উচিত, কারণ “প্রক্রিয়া যেন ন্যায়বিচারের সেবক হয়, শাসক নয়।”<ref>''Hamel v. Brunelle and Labonté,'' 1975 CanLII 1 (SCC), [1977] 1 SCR 147.</ref> ফেডারেল কোর্ট বলেছে, “যারা সাধারণ প্রক্রিয়াগত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের জন্য দরজা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। এমন একটি কঠোর ব্যাখ্যা কানাডার শরণার্থী ব্যবস্থার প্রতি অঙ্গীকার ও আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতাকে ক্ষুণ্ন করবে।”<ref>''Huseen v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2015 FC 845 (CanLII), par. 16, <<nowiki>http://canlii.ca/t/gkmz2#par16</nowiki>>, retrieved on 2020-03-11.</ref> আদালত আরও বলেছে, “নিপীড়নের কবল থেকে একটি পরিবারকে মুক্ত করার সুযোগ যেন কঠোর প্রক্রিয়াগত শর্তের ভিত্তিতে প্রত্যাখ্যান না করা হয়।”<ref>''Huseen v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2015 FC 845 (CanLII), par. 17, <<nowiki>http://canlii.ca/t/gkmz2#par17</nowiki>>, retrieved on 2020-03-11.</ref> নিয়মের সারবত্তা হলো: ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দিয়ে নমনীয়তা প্রয়োগ করা উচিত যাতে সিদ্ধান্ত গঠনগত বিষয়ে নয় বরং তার বাস্তব ভিত্তিতে গৃহীত হয়।<ref>''Ahmed v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2018 FC 1157 (CanLII), para. 44.</ref> প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও শরণার্থী আবেদন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে।<ref>''Huseen v Canada (Citizenship and Immigration)'', 2015 FC 845, para. 36.</ref> ফেডারেল কোর্ট ''গ্লোওয়াকি বনাম কানাডা'' মামলায় বলেছে, কোনো আইনজীবীর ত্রুটি বা ভুল যেন ন্যায়বিচারের ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে।<ref name=":21" /> এই নীতি কোভিড-১৯ মহামারির সময় আরও জোরালোভাবে প্রযোজ্য ছিল: ২০২০ সালের ''শরণার্থী সুরক্ষা বিভাগ: সশরীরে শুনানি পুনরায় শুরু করার বিষয়ে অনুশীলন বিজ্ঞপ্তি'' অনুযায়ী, বোর্ড নিয়মগুলোর ক্ষেত্রে নমনীয়তা প্রয়োগ করবে।<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Refugee Protection Division: Practice Notice on the resumption of in-person hearings'', June 23, 2020, <https://irb-cisr.gc.ca/en/legal-policy/procedures/Pages/rpd-pn-hearing-resumption.aspx> (Accessed August 1, 2020). This practice notice was revoked following the Covid period on September 9, 2024: <https://irb.gc.ca/en/news/2024/Pages/rpd-pnpi.aspx>.</ref>
* '''আবেদনকারীদের প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং যারা আইনজীবী ছাড়া থাকেন তাদের জন্য নিয়ম শিথিল হওয়া উচিত।''' শরণার্থী আবেদনকারীদের প্রতিনিধিত্ব একটি মৌলিক সাংবিধানিক ও প্রচলিত আইনগত মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ: গুরুতর পরিণতি যুক্ত জটিল আইনি প্রক্রিয়ায় থাকা ব্যক্তিদের যেন পূর্ণাঙ্গ ও ন্যায়সঙ্গত শুনানি নিশ্চিত করতে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকে।<ref>Martin David Jones and Sasha Baglay. ''Refugee Law (Second Edition)''. Irwin Law, 2017, page 328.</ref> আদালত বলেছে, যে পক্ষের কোনো আইনজীবী নেই, তারা “সম্পূর্ণরূপে মামলা উপস্থাপন করার জন্য সর্বোচ্চ সম্ভব ও যুক্তিসঙ্গত সুযোগ পাবে এবং কড়া ও কারিগরি নিয়ম তাদের ক্ষেত্রে শিথিল হওয়া উচিত।”<ref>''Soares v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2007 FC 190, [2007] F.C.J. No. 254 (QL), at para. 22.</ref> ফেডারেল কোর্ট কানাডিয়ান জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ''স্ব-প্রতিনিধিত্বকারী মামলাকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নীতিমালার বিবৃতি'' উদ্ধৃত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, স্ব-প্রতিনিধিত্বকারী পক্ষদের সহায়তা দিতে আদালতেরবিবেচনার এখতিয়ার রয়েছে, তবে তা উপস্থাপিত আইনি দুর্বলতা পূরণের পর্যায়ে পৌঁছায় না।<ref>''Yu v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1189 (CanLII), at para 14, <https://canlii.ca/t/k61w7#par14>, retrieved on 2024-08-20.</ref> আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ১৪-১৬ - আইনজীবী নিয়োগ|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি নিয়ম ১৪-১৬ - আইনজীবীর নিয়োগ#স্ব-প্রতিনিধিত্বকারী দাবিদারদের সাথে আচরণ করার সময় বোর্ডের পদ্ধতিগত ন্যায্যতার উচ্চতর দায়িত্ব থাকতে পারে]]।
* '''সদস্যদের উচিত ন্যায়বোধ ও সংবেদনশীলতার মনোভাব নিয়ে বিচক্ষণতা প্রয়োগ করা।''' বোর্ড তার ''দিকনির্দেশনা ৮''-এ উল্লেখ করেছে যে, আইআরবির সামনে উপস্থিত হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিকে সংবেদনশীলতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আচরণ করতে হবে।<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Guideline 8 - Concerning Procedures with Respect to Vulnerable Persons Appearing Before the Immigration and Refugee Board of Canada'', Amended: December 15, 2012, <https://irb-cisr.gc.ca/en/legal-policy/policies/Pages/GuideDir08.aspx#a1> (Accessed February 9, 2020), at section 1.5.</ref> ফেডারেল কোর্টের মামলাও বলেছে যে, সদস্যদের সব সময় আবেদনকারীদের প্রতি মনোযোগী ও সংবেদনশীল থাকতে হবে।<ref>''Hernandez v. Canada (Minister of Citizenship & Immigration),'' [2010] F.C.J. No. 199, 2010 FC 179 (F.C.), para. 54.</ref> ফেডারেল কোর্ট আরও বলেছে যে, সদস্যদের কাছ থেকে “ভদ্রতা ও সতর্কতা”-র সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা করা হয়।<ref>''Khan v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2022 FC 1330 (CanLII), at para 37, <https://canlii.ca/t/js3dw#par37>, retrieved on 2022-10-20.</ref> শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের কাজ কীভাবে করতে হবে, সে বিষয়ে ইউএনএইচসিআর-এর হ্যান্ডবুকের নিম্নলিখিত মন্তব্যটি শিক্ষণীয়: “কারণ কেসের তথ্য নিয়ে পরীক্ষকের সিদ্ধান্ত ও আবেদনকারীর প্রতি তার ব্যক্তিগত ধারণা এমন এক সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে যা মানবজীবনে প্রভাব ফেলবে, সুতরাং তার উচিত ন্যায়বোধ ও সহানুভূতির মনোভাব নিয়ে মানদণ্ড প্রয়োগ করা এবং অবশ্যই আবেদনকারীকে 'অযোগ্য' মনে করে তার রায়কে প্রভাবিত করা উচিত নয়।”<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Handbook on Procedures and Criteria for Determining Refugee Status and Guidelines on International Protection Under the 1951 Convention and the 1967 Protocol Relating to the Status of Refugees'', April 2019, HCR/1P/4/ENG/REV. 4, available at: https://www.refworld.org/docid/5cb474b27.html [accessed 26 January 2020], para. 202.</ref> জার্মানির আনসবাখ আদালত বলেছে যে, “জেনেভা কনভেনশনের আত্মাকে সম্মান জানাতে হলে, এর বিধানগুলোকে উদার ও মানবিক সহানুভূতির ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা উচিত, এবং তাই উদারভাবে।” [অনূদিত]<ref>R. G. L. Fairweather, ''Canada's New Refugee Determination System'', 27 CAN. Y.B. INT'l L. 295 (1989), page 306.</ref> ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি বোর্ড গঠনের পেছনে যে প্রতিবেদনটি ছিল, তার রচয়িতা রাব্বি প্লাউট লিখেছেন: “শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে একটি স্বাগত জানানো কর্ম হিসেবে দেখা এবং পরিকল্পনা করা উচিত। এটি অবশ্যই আমাদের মানবিক বোধ ও দায়িত্বের প্রতি সাড়া দেবে এবং যেকোনো অপ্রাসঙ্গিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক থাকবে।”<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 17.</ref> ফেডারেল কোর্ট এ বিষয়ে বলে যে, শরণার্থীর আবেদন পদ্ধতিতে আবেদনকারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন না।<ref>''Jaballah (Re),'' 2010 FC 224 (CanLII), [2011] 3 FCR 155, at para 97, <https://canlii.ca/t/28cx7#par97>, retrieved on 2023-11-09.</ref>
* '''বোর্ডের একটি প্যানেলের উচিত সমস্ত প্রমাণ শোনার আগে উন্মুক্ত মনোভাব বজায় রাখা।''' সদস্যদের সবসময় “বিচারিক মেজাজ” বজায় রাখা উচিত।<ref name=":232" /> অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ধৈর্য সহকারে শ্রবণ ও “পেশাদার ভদ্রতা” দেখানো প্রয়োজন।<ref name=":232" /> ফেডারেল কোর্ট ''Ayele v. Canada'' মামলায় বলেছে, “বিচারিক প্রক্রিয়ার মূল বিষয় হলো সমস্ত প্রমাণ শোনার আগ পর্যন্ত উন্মুক্ত মনোভাব রাখা। কোনো প্রমাণের নির্ভরযোগ্যতা নির্ধারিত হয় কেসটির সকল প্রমাণ বিবেচনায় নিয়ে। এ কারণেই একজন সিদ্ধান্তদাতা যতক্ষণ না সমস্ত প্রমাণ ও উপস্থাপন সম্পন্ন হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রভাবিত না হয়ে খোলা মন রাখতে বাধ্য।” প্রাথমিকভাবে অবিশ্বাস্য মনে হওয়া কোনো প্রমাণ পরবর্তীতে নতুন প্রেক্ষাপটে বিশ্বাসযোগ্য মনে হতে পারে।<ref>''Ayele v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'' (2007), 2007 FC 126, 60 Imm. L. R. (3d) 197 at para. 12.</ref> দেখুন : [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/পক্ষপাতহীন সিদ্ধান্তগ্রহণকারীর অধিকার|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর অধিকার # বিবৃতি বা আচরণ যা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর পক্ষ থেকে একটি প্রবণতা নির্দেশ করতে পারে।]]।
* '''বোর্ডের উচিত দাখিলকৃত বক্তব্য ও যুক্তির ব্যাখ্যা “উদার মনোভাব”-এর আলোকে করা।''' ফেডারেল কোর্ট বলেছে, কোনো সিদ্ধান্তে যদি কলমচ্যুতি বা অসতর্ক ভুল হয়ে থাকে, তাহলে শুধু সে কারণে সিদ্ধান্তকে দোষারোপ করা উচিত নয়।<ref>''Aguilar Cedeno, Angel Felipe v. M.C.I.'' (F.C., no. IMM-2360-21), Norris, April 13, 2023; 2023 FC 537.</ref> বোর্ড যখন কোনো উপস্থাপন বা যুক্তির মূল্যায়ন করে, তখন একই নীতিই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। লেখার ভুল হতে পারে, এবং তা কোনো আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যানের একমাত্র ভিত্তি হওয়া উচিত নয়।<ref>''Singh v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1611 (CanLII), at para 6, <https://canlii.ca/t/k1xgj#par6>, retrieved on 2024-02-09.</ref> কানাডিয়ান আদালতের জন্য বলা একটি পর্যবেক্ষণ এখানে সমভাবে প্রযোজ্য: কারণ ব্যাখ্যাগুলো “বিচারকের পূর্ণ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার একটি শব্দ-বিশ্লেষণ” হিসেবে পড়া উচিত নয়।<ref>''R. v. Kruk,'' 2024 SCC 7 (CanLII), at para 84, <https://canlii.ca/t/k39g6#par84>, retrieved on 2024-03-14.</ref> কানাডার সুপ্রিম কোর্টের ভাষায়, বোর্ডের যুক্তির ব্যাখ্যাগুলো “আণবিক পর্যবেক্ষণে” পড়া উচিত নয়।<ref>''Boulis v. Minister of Manpower and Immigration,'' 1972 CanLII 4 (SCC), [1974] SCR 875, <https://canlii.ca/t/1nfn8>, retrieved on 2024-05-22, page 885.</ref>
* '''আবেদনকারীকে অসত্য বলা বা কু-উদ্দেশ্য আরোপ করার আগে বোর্ডের উচিত দৃঢ় কারণ থাকা।''' ফেডারেল কোর্ট বলেছে, “একজন আবেদনকারীকে অসৎ বা কু-উদ্দেশ্যসম্পন্ন আখ্যা দেওয়ার জন্য খুব উচ্চ মাত্রার প্রমাণের প্রয়োজন।”<ref>''A.B. v. M.C.I.'' (F.C., no. IMM-5967-19), Pamel, April 28, 2020; 2020 FC 562.</ref> ফেডারেল কোর্ট আরও বলেছে, “বিশ্বাসযোগ্যতা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি গড়ে ওঠে আমাদের জীবনের ইতিহাস, কর্মকাণ্ড ও কথাবার্তার মাধ্যমে। এই বিশ্বাসযোগ্যতা হারানো মানে আমাদের সুনামের কেন্দ্র হারানো। যারা শরণার্থী সুরক্ষা চান, তাদের জন্য বিশ্বাসযোগ্যতাই তাদের দাবির কেন্দ্রবিন্দু।”<ref>''Amiragova v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2008 FC 64 (CanLII), at para 17, <https://canlii.ca/t/1w3f0#par17>, retrieved on 2024-01-09.</ref>
* '''উপযুক্ত পরিস্থিতিতে আবেদনকারীকে সন্দেহের সুবিধা দেওয়া উচিত।'''<ref>Nicholas Alexander Rymal Fraser, ''Shared Heuristics: How Organizational Culture Shapes Asylum Policy'', Department of Political Science, University of Toronto (Canada), ProQuest Dissertations Publishing, 2020, <<nowiki>https://search.proquest.com/openview/f925dea72da7d94141f0f559633da65a/1</nowiki>> (Accessed August 1, 2020), at page 91 of PDF.</ref> ফেডারেল কোর্ট বলেছে যে, বোর্ডের রয়েছে ব্যাপক স্বাধীনতা, যা দ্বারা তারা প্রয়োজনে শরণার্থী আবেদনকারীর প্রমাণের বোঝা হ্রাস করতে পারে।<ref>''Uppal v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FC 1142 (CanLII), par. 16, <https://canlii.ca/t/1pnxv#par16>, retrieved on 2021-07-14.</ref> <abbr>ইউএনএইচসিআর</abbr>-এর ''শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের জন্য পদ্ধতি এবং মানদণ্ডের হ্যান্ডবুক'' নির্দেশ করে, কিছু পরিস্থিতিতে আবেদনকারীকে সন্দেহের সুবিধা দেওয়া উচিত: “আবেদনকারী যদি আন্তরিকভাবে তার কাহিনি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে, কিন্তু কিছু বক্তব্যে প্রমাণের অভাব থাকে, তবু তার দাবি খারিজ করা উচিত নয়। কারণ যেমনটি আগে বলা হয়েছে (অনুচ্ছেদ ১৯৬), একটি শরণার্থীর পক্ষে তার দাবির প্রতিটি অংশ প্রমাণ করা প্রায় অসম্ভব, এবং যদি এটি বাধ্যতামূলক হতো, তবে অধিকাংশ শরণার্থীই স্বীকৃতি পেত না। তাই আবেদনকারীকে সন্দেহের সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন হয়। তবে, এই সুবিধা দেওয়া উচিত তখনই, যখন সমস্ত উপলভ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও যাচাই করা হয়েছে এবং আবেদনকারীর সার্বিক বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে পরীক্ষক সন্তুষ্ট। আবেদনকারীর বক্তব্য অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া উচিত এবং সাধারণভাবে পরিচিত সত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া উচিত নয়।”<ref>UN High Commissioner for Refugees (UNHCR), ''Handbook on Procedures and Criteria for Determining Refugee Status and Guidelines on International Protection Under the 1951 Convention and the 1967 Protocol Relating to the Status of Refugees'', April 2019, HCR/1P/4/ENG/REV. 4, available at: https://www.refworld.org/docid/5cb474b27.html [accessed 26 January 2020].</ref> কানাডীয় আইন এ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, এবং বলেছে যে, আবেদনকারীর বক্তব্য যদি সাধারণভাবে পরিচিত সত্য বা প্রাপ্ত প্রমাণের বিপরীত হয়, তাহলে সেখানে সন্দেহের সুবিধা প্রযোজ্য নয়।<ref>''Chan <abbr>v.</abbr> <abbr>M.E.I.,</abbr>'' [1995] 3 <abbr>S.C.R.</abbr> 593.</ref><ref>''Noga c Canada (Ministre de la citoyenneté et de l’immigration)'', 2003 CFPI 454 paras 10-12.</ref> আরও উল্লেখযোগ্য যে, “সন্দেহের সুবিধা” নীতিটি অনুমানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।<ref>''Razzaque v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 420 (CanLII), at para 19, <https://canlii.ca/t/jwdhz#par19>, retrieved on 2024-03-04.</ref> কানাডিয়ান বার অ্যাসোসিয়েশন, কুইবেক বিভাগ ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বলেছিল, যা আইনি বাধ্যবাধকতা না হলেও শিক্ষণীয়: “নিশ্চয়ই ভিত্তিহীন কিছু আবেদন আছে এবং থাকবে। কিন্তু এও স্বীকার করা দরকার যে এই বিষয়ে ভুল হওয়ার আশঙ্কা অনেক বড়। মনে রাখা উচিত যে, কয়েক বছর আগেও সালভাদর ও গুয়াতেমালার নাগরিকরা যখন ‘ডেথ স্কোয়াড’-এর কথা বলত, তখন অনেকেই ভাবত এটি তাদের কল্পনায় রয়েছে। এমনটা সবসময়ই থাকবে। শরণার্থীদের আগমন ঢেউয়ের মতো আসে এবং আমাদের যথেষ্ট বিনয়ী হওয়া উচিত নতুন পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা স্বীকার করার এবং দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো থেকে বিরত থাকার।”<ref>W. Gunther Plaut, ''Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration'', April 1985, Government of Canada publication, page 106.</ref>
* '''বোর্ড ন্যায়বিচার পরিচালনার সততা নিশ্চিত করবে।''' আদালত বলেছে যে, কোনো প্রক্রিয়া, এমনকি অভিবাসন সংক্রান্ত প্রক্রিয়াতেও, ন্যায়বিচার পরিচালনার মৌলিক সততা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক।<ref>Mahjoub (Re), 2010 FC 787 (CanLII), <https://canlii.ca/t/2btjw>, para. 51.</ref> আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (ই) - ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি যা অখণ্ডতা বজায় রাখে এবং মানবাধিকার বজায় রাখে।]]
=== দাবি উপস্থাপনকারী ও শরণার্থীদের কাছ থেকে যৌক্তিকভাবে প্রত্যাশিত আচরণসংক্রান্ত নীতিসমূহ ===
* '''দাবি উপস্থাপনকারীদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করা যায় যে তারা আশ্রয় দাবিগুলো যথাসময়ে উপস্থাপন করবেন।''' শরণার্থী সনদপত্রের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রসমূহ আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর কোনো শাস্তি আরোপ করবে না, তবে তা তখনই প্রযোজ্য হবে যদি তারা বিলম্ব না করে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে: "চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রসমূহ এমন শরণার্থীদের বিরুদ্ধে, যারা এমন কোনো এলাকা থেকে সরাসরি এসেছে যেখানে তাদের জীবন বা স্বাধীনতা ১ অনুচ্ছেদের অর্থে হুমকির মুখে ছিল এবং যারা অনুমোদন ছাড়াই ঐ রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে বা অবস্থান করছে, তাদের এই অবৈধ প্রবেশ বা অবস্থানের জন্য শাস্তি আরোপ করবে না, যদি তারা বিলম্ব না করে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের প্রবেশ বা অবস্থানের যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে।"<ref>UN General Assembly, ''Convention relative au statut des réfugiés'', 28 July 1951, available at: https://www.refworld.org/docid/48abd59af.html at Article 31.</ref> একইভাবে, কানাডার ফেডারেল আদালত মন্তব্য করেছে যে দাবি উপস্থাপনকারীদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করা যায় যে তারা আশ্রয় দাবি দ্রুততার সাথে উপস্থাপন করবে: "শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জাতীয় আইন ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় গৃহীত ব্যবস্থাগুলোর প্রতি সম্মান জানানো এবং আশ্রয় প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার দায়িত্ব রয়েছে, যার মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করা এবং আশ্রয় দাবি দ্রুত উপস্থাপন করাও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।"<ref name=":7">''Paulos Teddla v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2020 FC 1109 (CanLII), par. 26, <http://canlii.ca/t/jc709#par26>.</ref> একটি শরণার্থী দাবি উপস্থাপনকারীর ওপর দায়িত্ব বর্তায় যে সে তার দাবি ও তার পক্ষে প্রমাণাদি সময়মতো এবং দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করবে।<ref>''Mohammed v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 713 (CanLII), at para 29, <https://canlii.ca/t/k4jc6#par29>, retrieved on 2024-07-03.</ref>
* '''দাবি উপস্থাপনকারীরা আশ্রয় প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করবে এবং সংশ্লিষ্ট সব তথ্য প্রদান করবে।''' একজন দাবি উপস্থাপনকারীকে শুনানিতে এমন সমস্ত প্রমাণসহ হাজির হতে হবে, যা সে দিতে সক্ষম এবং তার দাবি প্রমাণ করতে প্রয়োজনীয় বলে মনে করে।<ref>''Kante, Abdoulaye v. M.E.I.'' (F.C.T.D., no. IMM-2585-93), Nadon, March 23, 1994.</ref> দাবি উপস্থাপনকারীরা কোনোভাবেই সরাসরি বা পরোক্ষভাবে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন বা বিকৃত করবে না।<ref>''Immigration and Refugee Protection Act,'' SC 2001, c 27, s 109, <https://canlii.ca/t/7vwq#sec109>, retrieved on 2025-01-03.</ref> ফেডারেল আদালত মত দিয়েছে যে কোনো ব্যক্তি যিনি তার দেশ থেকে পালিয়ে নিরাপত্তার খোঁজ করছেন, তিনি অবশ্যই ঐ উদ্দেশ্যে নির্ধারিত আইনি কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সহযোগী হবেন।<ref>''Barrientos v Canada (Ministre de la Citoyenneté et de l’Immigration)'', 1997 CanLII 5278.</ref> জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রকাশিত আইনি বাধ্যবাধকতাহীন দিকনির্দেশনায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে তার কেসের তথ্য নির্ধারণে সম্পূর্ণভাবে সহায়তা করতে হবে এবং তার নিজের সম্পর্কে এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য প্রদান করতে হবে।<ref name=":1">Uçaryılmaz, Talya. (2020). ''The Principle of Good Faith in Public International Law (El principio de buena fe en el Derecho internacional público)''. Estudios de Deusto. 68.43.10.18543/ed-68(1)-2020pp43-59 <https://dialnet.unirioja.es/servlet/articulo?codigo=7483935> (Accessed July 25, 2020), page 13 of the article.</ref> ফেডারেল আদালত বলেছে, "শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জাতীয় আইন ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় গৃহীত ব্যবস্থাগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের দায়িত্ব রয়েছে, যার মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করা, দ্রুত আশ্রয় দাবি উপস্থাপন করা বা তাদের অবস্থান নিয়মিতকরণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করাও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।"<ref name=":7" /> অভিবাসন কার্যক্রমে একজন আবেদনকারীর দায়িত্ব হলো নিশ্চিত করা যে তার দাখিলকৃত কাগজপত্র সম্পূর্ণ এবং সঠিক।<ref>''Malhi v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 392 (CanLII), at para 19, <<nowiki>https://canlii.ca/t/jwbjd#par19</nowiki>>, retrieved on 2023-06-27.</ref> দেখুন দাবি ফরম পূরণের নির্দেশাবলী: [[Canadian Refugee Procedure/RPD Rules 3-13 - Information and Documents to be Provided#Requirement that the information provided be complete, true and correct|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ৩-১৩ - সরবরাহ করা তথ্য এবং নথি# প্রদত্ত তথ্য সম্পূর্ণ, সত্য এবং সঠিক হওয়া প্রয়োজন]][[Canadian Refugee Procedure/RPD Rules 3-13 - Information and Documents to be Provided#Requirement that the information provided be complete, true and correct|। t]]। সত্যিই, যখন মন্ত্রী কোনো মামলায় অংশ নিচ্ছেন না, তখন একতরফা শুনানির (''ex parte'') নিয়ম অনুযায়ী আইনজীবীর ওপর বিশেষ দায়িত্ব আরোপিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আইন সমিতির নিয়মে বলা হয়েছে: “একতরফা শুনানিতে একজন আইনজীবীকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে এবং আদালতকে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য জানাতে হবে, এমনকি প্রতিকূল তথ্যও, যাতে আদালত একটি তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”<ref name=":24">{{Cite web|title=Chapter 5 – Relationship to the Administration of Justice {{!}} The Law Society of British Columbia|url=https://www.lawsociety.bc.ca/support-and-resources-for-lawyers/act-rules-and-code/code-of-professional-conduct-for-british-columbia/chapter-5-%E2%80%93-relationship-to-the-administration-of/#5.1-2.2|access-date=2023-05-05|website=www.lawsociety.bc.ca}}</ref> এই নীতি আরপিডি-এর বিধিমালায় কীভাবে কার্যকর হয় তা বিস্তারিত জানতে দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/RPD Rules 31-43 - Documents#What documents does a party need to provide when?|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ৩১-৪৩- নথি # কোনও দলকে কখন কী নথি সরবরাহ করতে হবে?]]। যখন কোনো দল সহায়ক তথ্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয় তখন বোর্ড কীভাবে এর ফলে নেতিবাচক বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ধারণ করতে পারে, সেটি দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিএ ধারা ১৭০ - কার্যধারা|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিএ ধারা ১৭০ - কার্যধারা # বিভাগটি কীভাবে নির্ধারণ করবে যে প্রমাণগুলো বিশ্বাসযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবে কিনা?]]।
* '''প্রক্রিয়াগত ন্যায়পরায়ণতার ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উত্থাপন করা উচিত।''' সাধারণ নিয়ম হলো, কোনো পক্ষের উচিত যত দ্রুত সম্ভব প্রক্রিয়াগত ন্যায়পরায়ণতা সংক্রান্ত অভিযোগ উত্থাপন করা।<ref>''Mohammadian v Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2000 CanLII 17118 (FC), [2000] 3 FC 371, 185 FTR 144.</ref> বিস্তারিত দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার # পদ্ধতিগত ন্যায্যতার অভাব সম্পর্কে উদ্বেগগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহারিক সুযোগে উত্থাপন করা উচিত|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার # পদ্ধতিগত ন্যায্যতার অভাব সম্পর্কে উদ্বেগগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহারিক সুযোগে উত্থাপন করা উচিত]]।
* '''দাবিদাররা আইন মেনে চলবে এবং সততা বজায় রাখবে।''' ফেডারেল আদালত অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করেছে, "বিচারিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি সুস্পষ্ট যে আবেদনকারীদের সম্পূর্ণ ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে হয়... তাদের দায়িত্ব হচ্ছে নিশ্চিত করা যে তাদের দাখিলকৃত তথ্যসমূহ পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভুল।"<ref name=":5">''Ahmed v. Canada (Citizenship and Immigration)'', 2020 FC 107, at paragraph 34.</ref> আদালত আরও বলেছে, "শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জাতীয় আইন এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখানোর দায়িত্ব রয়েছে।"<ref name=":72" /> কানাডায় এই আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, শরণার্থী দাবিদারকে তাদের দাখিল প্রক্রিয়ায় করা প্রশ্নের সকল উত্তর সত্যভাবে দিতে হয়<ref>''Singh v. Canada,'' IMM-12081-23, decision dated October 1, 2024, para. 14; ''Paulos Teddla v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)'', 2020 FC 1109 (CanLII), par. 20, <http://canlii.ca/t/jc709#par20>, retrieved on 2020-12-21.</ref> এবং প্রাসঙ্গিক সকল তথ্য সততার নীতির আলোকে প্রকাশ করতে হয়, যেটি কানাডায় প্রবেশ প্রত্যাশী বিদেশিদের জন্য প্রযোজ্য।<ref>''Yang v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2019 FC 402 (CanLII), par. 40, <https://canlii.ca/t/hzrhk#par40>, retrieved on 2021-04-28.</ref> আবেদনকারীদের উপর একটি আন্তরিকতার দায়িত্ব আরোপিত থাকে, যাতে তারা সম্পূর্ণ, সৎ ও সত্য তথ্য প্রদান করে।<ref>''Goburdhun v Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2013 FC 971 at paras 28.</ref> আই আর পি এ.-এর ধারা ১৬-এ বলা হয়েছে: "যে ব্যক্তি আবেদন করে, তাকে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে করা সব প্রশ্নের সঠিকভাবে উত্তর দিতে হবে।" একইভাবে, আই আর পি এ.-এর ধারা ১০০(১.১)-এ বলা হয়েছে, "Refugee Protection Division-এ রেফার করার যোগ্যতার প্রমাণের দায়িত্ব দাবিদারের ওপর, এবং তাকে সকল প্রশ্নের সত্য উত্তর দিতে হবে।" এই বাধ্যবাধকতা শরণার্থী কনভেনশনের ২ নং অনুচ্ছেদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে, “প্রত্যেক শরণার্থীর এমন দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে যেখানে সে অবস্থান করছে, এবং এর মধ্যে রয়েছে ঐ দেশের আইন, বিধি এবং জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গৃহীত ব্যবস্থা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা।”<ref name=":12" /> একইভাবে, ইউএনএইচসিআর-এর (আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয় এমন) হ্যান্ডবুকে উল্লেখ আছে যে আবেদনকারীকে সত্য কথা বলতে হবে।<ref name=":12" /> আরও দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/Information and Documents to be Provided#Requirement that the information provided be complete, true and correct|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার # পদ্ধতিগত ন্যায্যতার অভাব সম্পর্কে উদ্বেগগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহারিক সুযোগে উত্থাপন করা উচিত]]।
* '''দাবিদাররা প্রথম শুনানিতেই তাদের সর্বোত্তম প্রমাণ উপস্থাপন করবে।''' ''তাহির বনাম কানাডা'' মামলায়, ফেডারেল আদালত মন্তব্য করেছে, "তার উচিত ছিল আরপিডি-তে তার সর্বোত্তম প্রমাণ উপস্থাপন করা। তা না করায়, মি. তাহির আরএডি-এর সামনে আরও উন্নত প্রমাণ পেশ করতে পারেননি।"<ref>''Tahir v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2021 FC 1202 (CanLII), at para 23, <https://canlii.ca/t/jkd84#par23>, retrieved on 2022-01-26.</ref> প্রকৃতপক্ষে, কোনো বিষয়ে নতুন প্রমাণ না থাকলে, শরণার্থী আপিল বিভাগ-এ নতুন যুক্তি উপস্থাপন করা যায় না যা আপিলে প্রথমবারের মতো উত্থাপিত হয়েছে।<ref>''Ganiyu v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2022 FC 296 (CanLII), at para 10, <https://canlii.ca/t/jmswk#par10>, retrieved on 2022-04-01.</ref> আরপিডি বিধি ৩৪-এ এই বিষয়ে ব্যাখ্যাও দেখুন: [[Canadian Refugee Procedure/Documents#What documents does a party need to provide when?|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/তথ্য এবং নথি সরবরাহ করা হবে#প্রদত্ত তথ্য সম্পূর্ণ, সত্য এবং সঠিক হতে হবে]]।
* '''প্রত্যেক পক্ষ তাদের নিজের কেস ফাইলের জন্য দায়ী।''' ফেডারেল আদালত উল্লেখ করেছে যে "[প্রচুর বিচারিক দৃষ্টান্ত রয়েছে] যেখানে বলা হয়েছে, আবেদনকারীরাই তাদের ফাইলের জন্য দায়ী এবং তারা কোনো প্রক্রিয়াগত ঘাটতির কারণে তাদের ভুলকে ন্যায়সঙ্গত করতে পারে না।"<ref>''Andreoli v Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2004 FC 1111 at para 20.</ref> যদিও "প্রক্রিয়াগত বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো দাবিদারকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে না,=তবে কোনো এক সময়ে দাবিদার নিজেই তার দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবেন।"<ref>''Perez v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2020 FC 1171 (CanLII), par. 26, <http://canlii.ca/t/jc9b0#par26>, retrieved on 2021-01-14.</ref> উদাহরণস্বরূপ, আদালত বলেছে যে বিচারিক পর্যালোচনা অনুমোদনযোগ্য নয় যখন আবেদনকারী “নিজের আবেদনের অগ্রগতির বিষয়ে খুব কম বা কোনো আগ্রহই দেখায়নি।”<ref>''Khan v Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2005 FC 833 (“''Khan”)'' at para 29, citing ''Mussa v Canada (Minister of Employment and Immigration),'' [1994] FCJ No 2047 at para 3.</ref> আদালতের মতে, "যখন কোনো আইনজীবী ডিভিশনের নিয়ম অনুসরণ না করেন, তখন তার নিজের কেসের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।"<ref>''Barrientos, Jorge Enrique Valenzuela v.'' MCI (<abbr>no.</abbr> IMM-2481-96), Noël, June 4, 1997.</ref> তদুপরি, অভিবাসন আবেদন প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর ওপর দায়িত্ব বর্তায় যে সে যথাযথভাবে তথ্য সংগ্রহ করে এবং যেসব বিষয় বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জেনে নেয়।<ref>''Kaur v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 416 (CanLII), at para 25, <https://canlii.ca/t/k3d36#par25>, retrieved on 2024-03-28.</ref> আদালত আরও বলেছে যে আরপিডি-এর দায়িত্ব নয় একজন আবেদনকারী তার কাহিনির পক্ষে প্রমাণ প্রদান করতে ব্যর্থ হলে তা নিজ দায়িত্বে না নিয়ে বোর্ডকে দায়ী করা।<ref>''Ibrahim v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 497 (CanLII), at para 46, <https://canlii.ca/t/k3trv#par46>, retrieved on 2024-05-03.</ref>
* '''পক্ষগুলোর উচিত তাদের ফাইল সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা।''' ফেডারেল আদালতের মতে, আবেদনকারীদের দায়িত্ব হলো তাদের শরণার্থী আবেদন সংক্রান্ত প্রাপ্ত লিখিত যোগাযোগ বুঝে নেওয়া।<ref>''Sainvry v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2013 FC 468 (CanLII), par. 16, <https://canlii.ca/t/fxbpj#par16>, retrieved on 2021-06-26.</ref> বোর্ডের ''জাতীয় ডকুমেন্টেশন প্যাকেজে শরণার্থী নির্ধারণ কার্যক্রম বিষয়ক নীতি'' অনুসারে বলা হয়েছে, "আরপিডি পক্ষগুলোকে জানিয়ে দেয় কোন স্থানে বোর্ডের ওয়েবসাইটে এনডিপি পাওয়া যাবে, এবং এটি পক্ষগুলোর দায়িত্ব যে তারা শুনানির আগে সংশ্লিষ্ট এনডিপি-এর সর্বশেষ সংস্করণ যাচাই করবে।"<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Policy on National Documentation Packages in Refugee Determination Proceedings,'' Effective date: June 5, 2019, <https://irb-cisr.gc.ca/en/legal-policy/policies/Pages/national-documentation-packages.aspx> (Accessed August 30, 2020).</ref> এটি দাবিদাররা তাদের আবেদন করলে পাওয়া "গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী"-এও বলা আছে: “আপনার শুনানির আগে আইআরবি ওয়েবসাইটে গিয়ে এনডিপি-এর সর্বশেষ সংস্করণ যাচাই করা উচিত” এবং একইরূপে এটি দাবিদারদের নির্দেশিকা বইয়েও আছে। ফলে, ফেডারেল আদালত মনে করে যে আশ্রয়প্রার্থীদের বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এনডিপি-এর মতো পাবলিক ডকুমেন্ট সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত বলে ধরা হয়।<ref>''Singh c. Canada (Citoyenneté et Immigration),'' 2025 CF 437 (CanLII), at para 11, <https://canlii.ca/t/k9z4l#par11>, retrieved on 2025-03-28.</ref>
* '''শরণার্থীদের পুনরায় ব্যবহারের প্রভাব সম্পর্কেও সচেতন হওয়া উচিত:''' ''আল বালুশি বনাম কানাডা'' মামলায় আদালত সিদ্ধান্তে আসে যে আবেদনকারীর দায়িত্ব ছিল তার ওমানি পাসপোর্ট ব্যবহারের পরিণতি সম্পর্কে জানা।<ref>''Al Balushi v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2025 FC 567 (CanLII), at para 41, <https://canlii.ca/t/kb9kc#par41>, retrieved on 2025-04-17.</ref>
=== মন্ত্রীর প্রতি একজন যুক্তিসঙ্গতভাবে যেসব প্রত্যাশা করতে পারেন, তা নিয়ে মূলনীতি ===
* '''মন্ত্রীর একটি বিশেষ স্পষ্টবাদিতার দায়িত্ব রয়েছে''': ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে যে, মন্ত্রীর কাছ থেকে অকপটতা প্রত্যাশিত এবং তাঁর একটি স্পষ্টবাদিতার দায়িত্ব রয়েছে।<ref>''Oladipupo v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2024 FC 921 (CanLII), অনুচ্ছেদ 36 ও 40, <https://canlii.ca/t/k5thz#par36>, উদ্ধৃত হয়েছে 2024-08-27 তারিখে।</ref> এটি, উদাহরণস্বরূপ, প্রাসঙ্গিক এবং অভিযুক্তিকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারে এমন প্রমাণ গোপন করা কিংবা তার অস্তিত্ব বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা প্রতিরোধ করবে।<ref>''Canada (Citizenship and Immigration) v. Shen,'' 2025 FC 756, অনুচ্ছেদ 37।</ref> আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার#প্রকাশের অধিকার এবং মন্ত্রীর বাধ্যবাধকতা|কানাডিয়ান শরণার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার#প্রকাশের অধিকার এবং মন্ত্রীর বাধ্যবাধকতা]]। আবেদনকারীর ক্ষেত্রে যেই স্পষ্টবাদিতার দায়িত্ব প্রযোজ্য, তা উপরের অংশে দেখুন। এছাড়াও দেখুন ''একতরফা'' শুনানি সংক্রান্ত নিয়মাবলি সম্পর্কিত আলোচনা। সেখানে মন্ত্রী কোনো মামলায় অংশগ্রহণ করছেন না এবং কিভাবে এ পরিস্থিতিতে কৌঁসুলিদের উপর বিশেষ দায়িত্ব আরোপ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আইন সমিতির নিয়ম অনুযায়ী, “একতরফা শুনানিতে, একজন আইনজীবীকে সর্বোচ্চ সততার সাথে কাজ করতে হবে এবং ট্রাইব্যুনালকে সব প্রাসঙ্গিক তথ্য, এমনকি প্রতিকূল তথ্যও জানাতে হবে, যা ট্রাইব্যুনালকে একটি সুবিবেচিত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।”<ref name=":242" />
* '''কৌঁসুলি ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সৎভাবে কাজ করার প্রবণতা অনুমান করা যেতে পারে''': ফেডারেল কোর্টের একটি দীর্ঘ রায়ধারা আছে যেখানে বলা হয়েছে যে অধিকাংশ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার আবেদনের ফলাফলের প্রতি কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই এবং তাঁদের সরকারি রেকর্ড ও কর্মকাণ্ড সাধারণত নির্ভরযোগ্য।<ref>''Saifullah v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1060 (CanLII), অনুচ্ছেদ 35, <https://canlii.ca/t/jzgzf#par35>, উদ্ধৃত হয়েছে 2023-09-07 তারিখে।</ref> অনুরূপভাবে, কৌঁসুলিরা পেশাগত বাধ্যবাধকতার অধীনে সৎভাবে কাজ করার দায়িত্বে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, অন্টারিও আইন সমিতির পেশাগত আচরণবিধি অনুযায়ী, একজন আইনজীবী যখন একজন ওকালতকারী হিসেবে কাজ করেন, তখন “তাঁকে অবশ্যই আইনের সীমার মধ্যে ক্লায়েন্টের পক্ষে দৃঢ় এবং সম্মানজনকভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে এবং ট্রাইব্যুনালের প্রতি স্পষ্টবাদিতা, ন্যায্যতা, সৌজন্য ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে।”<ref>''Anulur v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1070 (CanLII), অনুচ্ছেদ 41, <https://canlii.ca/t/jzgzs#par41>, উদ্ধৃত হয়েছে 2023-12-28 তারিখে।</ref>
=== আবেদনকারীর কৌঁসুলির প্রতি একজন যুক্তিসঙ্গতভাবে যেসব প্রত্যাশা করতে পারেন, তা নিয়ে মূলনীতি ===
আইন পেশা একটি মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানের পেশা হলেও এর সাথে আসে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।<ref>''Diakité v. Canada (Immigration, Refugees and Citizenship),'' 2024 FC 170 (CanLII), অনুচ্ছেদ 50, <https://canlii.ca/t/k2p18#par50>, উদ্ধৃত হয়েছে 2024-10-01 তারিখে।</ref> লক্ষণীয় কিছু বিষয়:
* '''কৌঁসুলিদের সঠিকভাবে কাজ করেছেন বলে অনুমান করা উচিত''': সাবেক কৌঁসুলির আচরণ যুক্তিসঙ্গত পেশাগত সহায়তার বিস্তৃত পরিসরের মধ্যে পড়েছে বলে একটি দৃঢ় অনুমান থাকে।<ref>''Satkunanathan v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2020 FC 470 (CanLII), অনুচ্ছেদ 87, <http://canlii.ca/t/j65bj#par87>, উদ্ধৃত হয়েছে 2020-04-17 তারিখে।</ref> যদিও এই পেশাগত দক্ষতার অনুমান প্রযোজ্য হতে পারে, আদালত সতর্ক করেছে যে কোনো নির্দিষ্ট কৌঁসুলির অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার ভিত্তিতে অনুমান করা অনুচিত, ঠিক যেমনভাবে আরপিডি-এর জন্য আবেদনকারীদের (বা তাঁদের কৌঁসুলিদের) কাছে সরাসরি এমন গোপনীয় বিষয়ে জিজ্ঞেস করা অনুচিত।<ref>''Anulur v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2023 FC 1070 (CanLII), অনুচ্ছেদ 34, <https://canlii.ca/t/jzgzs#par34>, উদ্ধৃত হয়েছে 2023-12-28 তারিখে।</ref> তবে, অন্যান্য ফেডারেল কোর্ট প্যানেলগুলো সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, আবেদনকারী অভিজ্ঞ কৌঁসুলির প্রতিনিধিত্ব পেয়েছেন, এটি বিবেচনা করা যুক্তিসঙ্গত।<ref>''Mercado v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2010 FC 289 (CanLII), অনুচ্ছেদ 38, <https://canlii.ca/t/2c4vw#par38>, উদ্ধৃত হয়েছে 2024-07-01 তারিখে।</ref> এছাড়া, আইন পেশার অন্যান্য ক্ষেত্রেও এটি সাধারণ চর্চা, যেমন শ্রেণি-অভিযোগ মামলায় প্রতিনিধি আবেদনকারীর কৌঁসুলির দক্ষতা মূল্যায়ন করা আদালতের জন্য প্রত্যাশিত।<ref>''Richard v. The Attorney General of Canada,'' 2024 ONSC 3800 (CanLII), অনুচ্ছেদ 411, <https://canlii.ca/t/k5mx6#par411>, উদ্ধৃত হয়েছে 2024-07-09 তারিখে।</ref>
* '''কৌঁসুলি তাঁদের ক্লায়েন্টকে অন্ততপক্ষে শরণার্থী আবেদন সংক্রান্ত মৌলিক বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছেন বলে ধরে নেওয়া যায়''': ফেডারেল কোর্ট বলেছে, “প্রতিকূল প্রমাণ না থাকলে, এটি ধরে নেওয়া যুক্তিসঙ্গত যে একজন আইনজীবী তাঁর ক্লায়েন্টকে শরণার্থী দাবির অন্তত মৌলিক দিকগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে: পরিচয় সংক্রান্ত গ্রহণযোগ্য কাগজপত্র উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা, আবেদনকারীকে তাঁর দাবি প্রমাণ করার দায়িত্ব, এবং তা করতে গিয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তা।”<ref>''Zerihaymanot, Brhane Ghebrihiwet, v. M.C.I.'' (F.C., no. IMM-3077-21), McHaffie, April 26, 2022; 2022 FC 610।</ref> আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ১৪-১৬ - রেকর্ডের পরামর্শ # 1) অযোগ্যতা|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ১৪-১৬ - রেকর্ডের পরামর্শ # ১) অযোগ্যতা]]।
* '''কৌঁসুলির আচরণের ত্রুটিগুলোর দায় ক্লায়েন্টের উপর বর্তায়''': ফেডারেল কোর্ট বলেছে, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে “বিচারিক রায় অনুযায়ী আবেদনকারীদের অবশ্যই সম্পূর্ণ ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে এবং তাঁদের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের দাখিলকৃত উপস্থাপনাগুলোর দায়ভার তাঁদের নিজেকেই বহন করতে হবে।”<ref name=":52" /> সাধারণ নিয়ম হলো, কৌঁসুলির আচরণ ক্লায়েন্ট থেকে পৃথক করা যায় না। কৌঁসুলি ক্লায়েন্টের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন এবং এটি যতই কঠোর হোক না কেন, একজন দুর্বল কৌঁসুলিকে নিয়োগ দেওয়ার পরিণতি ক্লায়েন্টকে বহন করতে হয়।<ref>''Jouzichin v Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'' (1994), 52 ACWS (3d) 157, 1994 CarswellNat 1592।</ref> এই নীতিটি আবেদনকারীদের প্রদান করা ''বেসিস অব ক্লেইম'' ফর্মের নির্দেশিকাতেও প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “আপনার যদি কোনো কৌঁসুলি থাকে, তবে আপনি নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকবেন যে আপনার কৌঁসুলি সময়সীমাগুলো পূরণ করছে।”<ref>Immigration and Refugee Board of Canada, ''Basis of Claim Form'', নভেম্বর 2012 সংস্করণ <<nowiki>https://irb-cisr.gc.ca/en/forms/Documents/RpdSpr0201_e.pdf</nowiki>>, সংযুক্তি পৃষ্ঠা ২।</ref> অধিকাংশ ক্ষেত্রে, আইনি পরামর্শের উপর নির্ভর করলেও তা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না জমা দেওয়ার অজুহাত হিসেবে গণ্য হবে না।<ref>''Shirzad v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2022 FC 89 (CanLII), অনুচ্ছেদ 37, <https://canlii.ca/t/jm412#par37>, উদ্ধৃত হয়েছে 2022-07-22 তারিখে।</ref> তবে, ব্যতিক্রম রয়েছে যেখানে কৌঁসুলির আচরণ এতটাই অদক্ষতার মধ্যে পড়ে যে তা শুনানিকে অন্যায্য করে তোলে: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ১৪-১৬ - রেকর্ডের পরামর্শ # কোন প্রসঙ্গে অযোগ্যতার পরামর্শ শুনানিকে অন্যায় করে তুলবে?]]। ফেডারেল কোর্ট ''গ্লোওয়াকি বনাম কানাডা'' মামলায় বলেছে, কৌঁসুলির কোনো ভুল বা ত্রুটির ফলে যাতে ন্যায়বিচার ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।<ref name=":212">''Glowacki v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2021 FC 1453 (CanLII), অনুচ্ছেদ 22, <https://canlii.ca/t/jljcw#par22>, উদ্ধৃত হয়েছে 2022-01-06 তারিখে।</ref>
* '''কৌঁসুলিদের স্পষ্টবাদিতার দায়িত্ব রয়েছে এবং ট্রাইব্যুনালকে তাঁদের উপস্থাপনার উপর আস্থা রাখতে পারা উচিত''': বলা হয় যে আদালতে, বিচারপতিরা কৌঁসুলিদের উপস্থাপনার উপর আস্থা রাখতে পারেন, যেহেতু তাঁরা আদালতের অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।<ref>''Sachdeva v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1522 (CanLII), অনুচ্ছেদ 34, <https://canlii.ca/t/k71jm#par34>, উদ্ধৃত হয়েছে 2024-10-01 তারিখে।</ref> ট্রাইব্যুনাল সদস্যদের কাছ থেকেও এমনই প্রত্যাশা করা যেতে পারে। যেমন আদালত ''ডায়াকিটে বনাম কানাডা'' মামলায় উল্লেখ করেছে, আমাদের বিচারব্যবস্থা আংশিকভাবে কাজ করে এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে যে আদালত কৌঁসুলিদের উপস্থাপনার উপর আস্থা রাখতে পারে।<ref>''Diakité v Canada (Citizenship and Immigration)'', 2024 FC 170, অনুচ্ছেদ 48।</ref> একই কথা ট্রাইব্যুনাল সদস্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য — তাঁরা কৌঁসুলিদের উপস্থাপনার উপর নির্ভর করেন। যদিও আইনজীবীদের ক্লায়েন্টের পক্ষে সাহসিকতার সঙ্গে সওয়াল করা উচিত, তবে তা করতে হবে সম্মানজনকভাবে, আইন মেনে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। এর মধ্যে রয়েছে তাঁদের স্পষ্টবাদিতার দায়িত্ব। কৌঁসুলিদের কখনোই বিভ্রান্ত করা বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা উচিত নয়। যদি কৌঁসুলি অনিচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করে থাকেন, তবে তা বুঝতে পারার সাথে সাথেই সংশোধন করতে হবে।
== আইআরপিএ এসএস ৩ (২) এবং ৩ (৩): আইন থেকে প্রাপ্ত ব্যাখ্যা নীতি ==
এই বিভাগটি আইনের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োগের বিধান নির্ধারণ করবে এবং তারপরে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর মন্তব্য সরবরাহ করবে। শ্যারিন আইকেনের ভাষায়, এট। ১৯৭৬ সালের ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের'' পর থেকে কানাডার অভিবাসন আইনের অন্যতম স্থায়ী বৈশিষ্ট্য ছিল "উদ্দেশ্যগুলোর একটি জটিল এবং পরস্পরবিরোধী সেট"।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: 1772556319, at page 27.</ref> এই উদ্দেশ্যগুলো, যতদূর তারা শরণার্থীদের সাথে সম্পর্কিত, বর্তমান আইআরপিএতে নিম্নরূপ:
Objectives — refugees
3...
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are
(a) to recognize that the refugee program is in the first instance about saving lives and offering protection to the displaced and persecuted;
(b) to fulfil Canada’s international legal obligations with respect to refugees and affirm Canada’s commitment to international efforts to provide assistance to those in need of resettlement;
(c) to grant, as a fundamental expression of Canada’s humanitarian ideals, fair consideration to those who come to Canada claiming persecution;
(ডি) to offer safe haven to persons with a well-founded fear of persecution based on race, religion, nationality, political opinion or membership in a particular social group, as well as those at risk of torture or cruel and unusual treatment or punishment;
(ই) to establish fair and efficient procedures that will maintain the integrity of the Canadian refugee protection system, while upholding Canada’s respect for the human rights and fundamental freedoms of all human beings;
(এফ) to support the self-sufficiency and the social and economic well-being of refugees by facilitating reunification with their family members in Canada;
(g) to protect the health and safety of Canadians and to maintain the security of Canadian society; and
(h) to promote international justice and security by denying access to Canadian territory to persons, including refugee claimants, who are security risks or serious criminals.
Application
(৩) This Act is to be construed and applied in a manner that
(a) furthers the domestic and international interests of Canada;
(b) promotes accountability and transparency by enhancing public awareness of immigration and refugee programs;
(c) facilitates cooperation between the Government of Canada, provincial governments, foreign states, international organizations and non-governmental organizations;
(ডি) ensures that decisions taken under this Act are consistent with the Canadian Charter of Rights and Freedoms, including its principles of equality and freedom from discrimination and of the equality of English and French as the official languages of Canada;
(ই) supports the commitment of the Government of Canada to enhance the vitality of the English and French linguistic minority communities in Canada; and
(এফ) complies with international human rights instruments to which Canada is signatory.
উপরের উদ্দেশ্যগুলো আইআরপিএর বিভাগের সাথে তুলনা করা যেতে পারে যা অভিবাসনের জন্য উদ্দেশ্যগুলো নির্ধারণ করে (মানবিক বা শরণার্থীর বিপরীতে) স্ট্রিম:
Objectives — immigration
(j) to work in cooperation with the provinces to secure better recognition of the foreign credentials of permanent residents and their more rapid integration into society.
এই মর্মে একটি বিধিবদ্ধ ব্যাখ্যা কনভেনশন রয়েছে যে আইনে উদ্দেশ্যগুলোর বিবৃতিগুলো আইন বাস্তবায়নে নির্বাহী বিবেচনাকে সীমাবদ্ধ করে। শ্যারিন আইকেনের ভাষায়, তবে, আইআরপিএর উদ্দেশ্যগুলো "এত প্রচুর এবং সুদূরপ্রসারী যে তারা যুক্তিযুক্তভাবে যে কোনও সম্ভাব্য বিবেচনামূলক বাস্তবায়ন পছন্দকে সমর্থন করে।"<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: 1772556319, at page 29.</ref> যেমন, ক্যাথরিন ডাউভার্গনের দৃষ্টিতে, উদ্দেশ্যগুলো "এত জটিল যে তারা পরিচালনা করতে পারে না বা সীমাবদ্ধ করতে পারে না।<ref name=":20">Catherine Dauvergne, Evaluating Canada's New Immigration and Refugee Protection Act in Its Global Context, 2003 41-3 ''Alberta Law Review'' 725, 2003 CanLIIDocs 127, <<nowiki>https://canlii.ca/t/2d8f</nowiki>>, retrieved on 2021-06-25 at page 732.</ref> শাওনা ল্যাবম্যান লিখেছেন, এই আইনের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োগকে সম্বোধন করে পঁচিশটি পৃথক অনুচ্ছেদ আইআরপিএর "দ্বন্দ্ব এবং বিভ্রান্তি" যুক্ত করে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 43.</ref> ডাউভার্গনে লিখেছেন যে এই বিধানগুলো "কানাডার রাজনীতিতে অভিবাসন কতটা কণ্টকাকীর্ণ বিষয় সে সম্পর্কে সরকার সচেতন এবং আইনটি সংশোধন ছাড়াই প্রচলিত রাজনৈতিক মতামতকে প্রতিফলিত করতে সক্ষম তা নিশ্চিত করা ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্য সাধন করে না।<ref name=":20" /> প্রকৃতপক্ষে, ফেডারেল কোর্ট এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে এমনকি যদি কোনও আরপিডি বিধি এই উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হয় তবে এটি আইনে তার সক্ষম বিধানের ''বহির্ভূত'' কাজ করবে।<ref>''Uppal v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2006 FC 1142 (CanLII), par. 13, <https://canlii.ca/t/1pnxv#par13>, retrieved on 2021-07-14.</ref>
এটি বলেছিল, এই উদ্দেশ্যগুলোর কাঠামোটি কানাডিয়ান শরণার্থী বিচারের দীর্ঘকালীন নীতির ইঙ্গিত দেয়: এই ধারণাটি যে অভিবাসন বিবেচনাগুলো শরণার্থী বিচার পরিচালনা করে এমন নীতিগুলো থেকে পৃথক। ১৯৮২ সালে রিফিউজি স্ট্যাটাস অ্যাডভাইজরি কমিটির জন্য জারি করা মন্ত্রিপরিষদ নির্দেশিকার কথায়, "এটি স্বীকৃত যে শরণার্থী সংজ্ঞা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অভিবাসন বিবেচনাগুলো অবশ্যই আনা উচিত নয়। যদি একজনকে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়, তবে আরও অনেকে শরণার্থী মর্যাদা দাবি করার অধিকারী হতে পারে, দাবিদার শরণার্থী কিনা তার সাথে প্রাসঙ্গিক নয়।"<ref>Ministerial Guidelines, Refugee Status Advisory Committee (RSAC Feb 20, 1982), as reproduced at https://refuge.journals.yorku.ca/index.php/refuge/article/view/41404/37052</ref>
=== আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (ক) - শরণার্থী প্রোগ্রামটি জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদানের বিষয়ে ===
Objectives — refugees
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are
(a) to recognize that the refugee program is in the first instance about saving lives and offering protection to the displaced and persecuted;
==== এই আইনে এটি দীর্ঘদিনের বিধান ====
এটি ১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে সন্নিবেশ করা অন্যতম উদ্দেশ্যকে প্রতিফলিত করে, যা ছিল "শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের প্রতি তার মানবিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা।
==== শরণার্থী কর্মসূচির লক্ষ্য হলো সুরক্ষা প্রদান করা, যার মধ্যে ''শরণার্থী কনভেনশন''-এ উল্লিখিত আইনগত অধিকারসমূহ অন্তর্ভুক্ত ====
আই আর পি এ.-এর ধারা ৩(২)(ক)-তে বলা হয়েছে যে শরণার্থীদের বিষয়ে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—প্রথমত, শরণার্থী কর্মসূচিটি মানুষের জীবন রক্ষা করা এবং নির্যাতিত ও বাস্তুচ্যুতদের সুরক্ষা প্রদান করা। এখানে কেবলমাত্র ''ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া''-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষার কথাই বলা হয়নি, বরং শরণার্থী কনভেনশন-এ যে ইতিবাচক অধিকারসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোরও কথা বলা হয়েছে। ডোনাল্ড গ্যালোওয়ের ভাষায়, শরণার্থী কনভেনশন অনুযায়ী কানাডার দায়িত্ব কেবলমাত্র নেতিবাচক অর্থে কাউকে এমন স্থানে ফেরত না পাঠানোর দায়িত্ব নয় যেখানে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়বে বা স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে—যা অনুচ্ছেদ ৩৩-তে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—বরং এটি আরও বিস্তৃত ইতিবাচক দায়িত্বও ধারণ করে, যেমন ব্যক্তির অবস্থান স্বীকৃতি দেওয়া (এবং আরও অনেক অধিকার) যিনি নিজের দেশের সুরক্ষার সুবিধা নিতে অক্ষম বা তা না নেওয়ার যথার্থ কারণ আছে।<ref>Donald Galloway, ''Populism and the failure to acknowledge the human rights of migrants,'' in Dauvergne, C. (ed), ''Research handbook on the law and politics of migration'', April 2021, ISBN: 9781789902259.</ref>
শরণার্থী কনভেনশন শরণার্থীর জন্য কিছু মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করে এবং এরপর শরণার্থীর আশ্রয়প্রদানকারী রাষ্ট্রের সাথে সংযুক্তির প্রকৃতি ও সময়কাল অনুসারে অতিরিক্ত অধিকার পাওয়া যায়। শরণার্থীরা যেই মুহূর্তে কোনো রাষ্ট্রের ''de jure'' বা ''de facto'' বিচারিক এখতিয়ারের মধ্যে আসে, তখন থেকেই কিছু মৌলিক অধিকার প্রযোজ্য হয়; দ্বিতীয় স্তরের অধিকারগুলো প্রযোজ্য হয় যখন শরণার্থী সেই রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে; আরও কিছু অধিকার কেবল তখনই প্রযোজ্য হয় যখন শরণার্থী বৈধভাবে রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে অবস্থান করে; কিছু অধিকার তখনই প্রযোজ্য হয় যখন শরণার্থী সেখানে বৈধভাবে বসবাস শুরু করে; আর কয়েকটি অধিকার কেবল দীর্ঘস্থায়ী আবাসনের শর্ত পূরণ করার পর প্রযোজ্য হয়।<ref>Hathaway, J. (2005). ''The Rights of Refugees under International Law''. Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511614859.</ref>
সারাংশ হিসেবে, কনভেনশন-এ আলোচনা করা অধিকারগুলো নিম্নরূপ:
{| class="wikitable"
|রাষ্ট্রের বিচারিক এখতিয়ারের মধ্যে
|ধারা ৩: বৈষম্য না করা
ধারা ১২: ব্যক্তিগত অবস্থা ধারা ১৩: স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন (বিদেশিদের মতো) ধারা ১৬: আদালতে প্রবেশাধিকার ও আইনি সহায়তা (নাগরিকদের মতো) ধারা ২০: রেশন প্রাপ্তির অধিকার (নাগরিকদের মতো) ধারা ২২(১): প্রাথমিক শিক্ষা (নাগরিকদের মতো) ধারা ২২(২): মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (বিদেশিদের মতো) ধারা ২৯: রাজস্ব ও কর সংক্রান্ত ব্যবস্থা (বিদেশিদের মতো) ধারা ৩০: সম্পদের স্থানান্তর ধারা ৩৩: ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা
|-
|শারীরিক উপস্থিতি
|ধারা ৪: ধর্মীয় স্বাধীনতা (নাগরিকদের মতো)
ধারা ২৫: প্রশাসনিক সহায়তা ধারা ২৭: পরিচয়পত্র ধারা ৩১: অবৈধ প্রবেশের জন্য শাস্তি থেকে মুক্তি
|-
|বৈধ উপস্থিতি
|ধারা ১৮: স্ব-উদ্যোগে কর্মসংস্থান (বিদেশিদের মতো)
ধারা ২৬: চলাচলের স্বাধীনতা (বিদেশিদের মতো) ধারা ৩২: বিতাড়ন না করা
|-
|বৈধভাবে অবস্থান বা অভ্যাসগত বসবাস
|ধারা ১৪: শিল্প ও সৃজনশীল অধিকার (নাগরিকদের মতো)
ধারা ১৫: সংগঠন গঠনের অধিকার (বিদেশিদের জন্য সর্বোত্তম সুবিধা অনুযায়ী) ধারা ১৭: মজুরিভিত্তিক কর্মসংস্থান (বিদেশিদের জন্য সর্বোত্তম সুবিধা অনুযায়ী) ধারা ১৯: পেশাগত স্বাধীনতা (বিদেশিদের মতো) ধারা ২১: আবাসনের অধিকার (বিদেশিদের মতো) ধারা ২৩: জনসেবা ও সাহায্য (নাগরিকদের মতো) ধারা ২৪: শ্রম আইন ও সামাজিক নিরাপত্তা (নাগরিকদের মতো) ধারা ২৮: ভ্রমণ দলিল
|-
|দীর্ঘমেয়াদি বসবাস
|ধারা ৩৪: নাগরিকত্ব গ্রহণ সহজতর করা<ref>Colin Yeo, ''Book review: The Rights of Refugees Under International Law by James Hathaway'', April 15 2021, freemovement.org.uk (blog), <https://www.freemovement.org.uk/book-review-the-rights-of-refugees-under-international-law-by-james-hathaway/> (Accessed April 25, 2021).</ref>
|}
এই অধিকারসমূহ কনভেনশন-এ অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য ছিল শরণার্থীরা যেন আইনিভাবে “অদৃশ্য ব্যক্তি” হয়ে না পড়ে। যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডস-এর ভাষায়, "কনভেনশনের সার্বিক উদ্দেশ্য হলো সেই ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সুরক্ষার জন্য মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া, যে ব্যক্তি নিজের দেশে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার হারিয়েছে।"<ref>''Horvath v. Secretary of State for the Home Department,'' [2000] 3 All ER 577 (UK HL, July 6, 2000), per Lord Hope of Craighead.</ref>
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, অধ্যাপক অ্যালেওয়েল্ড উল্লেখ করেন, শরণার্থীদের সাধারণ সমস্যা ছিল আশ্রয়দাতা রাষ্ট্রে কোনো আইনি অবস্থান না থাকা, যার ফলে তারা অনেক অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো। এজন্য, মানবিক ও পারস্পরিক সহযোগিতার বাস্তব কারণেই, কনভেনশন-এ অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলো শরণার্থীদের এমন একটি অবস্থান প্রদানের চিন্তা করেছিল যা তাদের মানবাধিকার ও স্বাধীনতার একটি মূল সেটকে ধারণ করে।<ref>The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary. Edited by Andreas Zimmermann. Oxford University Press, 2011, 1799 pp. ISBN 978-0-19-954251-2, ''Preamble 1951 Convention,'' Alleweldt, at p. 232 (paras. 26-27).</ref>
সংক্ষেপে বললে, কনভেনশন-এ স্বীকৃত শরণার্থীদের যে অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর উদ্দেশ্য হলো নতুন জীবন শুরু করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় অধিকার প্রদান করা।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 190.</ref>
==== শরণার্থী সুরক্ষা প্রথমত জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদানের বিষয়ে, এই বিষয়টি আই আর পি এ.-তে প্রদত্ত অভিবাসন কর্মসূচির লক্ষ্যগুলির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। ====
আদালত ইঙ্গিত দেয় যে সংসদ যে নির্দেশ দিয়েছে যে আইআরপিএ "বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদানের বিষয়ে [মূল সিদ্ধান্তে জোর দেওয়া]" এই লক্ষ্যটির গুরুত্ব এবং অগ্রাধিকারকে বোঝায়। আইআরপিএ'র ৩(২)(ক) ধারায় বলা হয়েছে, শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্য হলো, অন্যান্য ''বিষয়ের মধ্যে'' এই স্বীকৃতি দেয়া যে, শরণার্থী কর্মসূচি হচ্ছে বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদান করা। এটি আইনের এস ৩ (৩) (১) এ নির্ধারিত কানাডার অভিবাসন প্রোগ্রামগুলোর উদ্দেশ্যগুলোর বৃহত্তর সেটের সাথে বিপরীত হতে পারে, যার মধ্যে অভিবাসীদের সফল একীকরণ এবং কানাডার জন্য অভিবাসনের অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো সর্বাধিক করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বৈপরীত্য আইনের ব্যাখ্যা অবহিত করা উচিত। যদিও অভিবাসন আইনে ''একজন'' অভিবাসীর আকাঙ্ক্ষা (যেমন তাদের কাজের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, ফরাসি বা ইংরেজিতে সাবলীলতা, বা যুবক) সরকার কীভাবে মর্যাদা দিতে পারে তার জন্য যথাযথ বিবেচনা হিসাবে স্বীকৃত, শরণার্থী আইন, বিপরীতে, নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য কাঠামো সরবরাহ করে যেখানে প্রাথমিক বিবেচনাটি হতে হবে, আইআরপিএর এস ৩ (২) (এ) এর ভাষায়, জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদান করা। মলি জোকের ভাষায়, "দুটোকে একত্রিত করা একটি বিপজ্জনক অনুশীলন"।
==== শরণার্থী সুরক্ষা প্রথমত জীবন বাঁচানো এবং সুরক্ষা প্রদানের বিষয়ে, এই সত্যটি সিদ্ধান্তগুলি সঠিক হওয়ার গুরুত্বের দিকে ইঙ্গিত করে ====
বিচারপতি গাউথিয়ার, ''আইআরপিএর'' উদ্দেশ্যগুলো, বিশেষত "জীবন বাঁচানো এবং বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের সুরক্ষা প্রদান" উল্লেখ করে বলেছিলেন যে আরএডি একটি "সুরক্ষা জাল যা আরপিডির সমস্ত ভুল ধরবে, এটি আইন বা বাস্তবতা যাই হোক না কেন। এর জন্য প্রয়োজন ছিল যে আরএডির পর্যালোচনার মান, আইনের প্রশ্ন এবং সত্যের প্রশ্ন উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, সঠিকতা হতে হবে।
=== আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (বি) - শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনী বাধ্যবাধকতা পূরণ করা ===
Objectives — refugees
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are
(b) to fulfil Canada’s international legal obligations with respect to refugees and affirm Canada’s commitment to international efforts to provide assistance to those in need of resettlement;
==== এই আইনে এটি দীর্ঘদিনের বিধান ====
এটি ১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে সন্নিবেশ করা অন্যতম উদ্দেশ্যকে প্রতিফলিত করে, যা ছিল "শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা এবং বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের প্রতি তার মানবিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা।
==== আইআরপিএকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যাতে কানাডা শরণার্থীদের ক্ষেত্রে তার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করে তা নিশ্চিত করা যায় ====
আইনের ধারা ৩ (২) (বি) নির্দিষ্ট করে যে শরণার্থীদের বিষয়ে আইআরপিএর উদ্দেশ্যগুলো অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা। একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধারণা রয়েছে যে। সেখানে সম্ভব, কানাডার অভ্যন্তরীণ আইনটি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ব্যাখ্যা করা উচিত। কানাডার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে আইআরপিএর বিধানগুলো "তারা যে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি প্রতিফলিত করে তা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করা যায় না"। আইনের ধারা ৩ (২) (বি) জোরদার করে যে। সেখানে সম্ভব, আইআরপিএর বিধানগুলো এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যা শরণার্থী ''কনভেনশন'' অনুসারে কানাডার বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করে। এটি ''আইআরপিএর'' ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে একটি সমালোচনামূলক আইনী সীমাবদ্ধতা - এটি সংসদ বাধ্যতামূলক করেছে যে অভিবাসন বিচারকরা আইনটি ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে বিবেচনা করবেন, শরণার্থী ''কনভেনশনের'' মতো আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ে যুক্তি জমা দেওয়ার পক্ষগুলো স্পষ্টভাবে উত্থাপিত হোক বা না হোক।
আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা# আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যা কনভেনশনের অন্যান্য রাষ্ট্রের ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যা কনভেনশনের অন্যান্য রাষ্ট্রের ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ]]।
==== শরণার্থী কনভেনশনে শরণার্থীদের অধিকারের কয়েকটি অধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে ====
দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা# শরণার্থী প্রোগ্রামের লক্ষ্য শরণার্থী কনভেনশনে উল্লিখিত আইনী অধিকার সহ সুরক্ষা প্রদান করা|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থী প্রোগ্রামের লক্ষ্য শরণার্থী কনভেনশনে উল্লিখিত আইনী অধিকার সহ সুরক্ষা প্রদান করা]]। এটি বলেছিল, কনভেনশনটি কানাডার আইনে পুরোপুরি অন্তর্ভুক্ত নয়। যদিও কনভেনশনের শর্তাবলী মূলত আইআরপিএতে প্রতিফলিত হয়, তবে কনভেনশনের কার্যক্রম এবং আইআরপিএ পরিচালনার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
==== চুক্তি আইন সম্পর্কিত ''ভিয়েনা কনভেনশন'' শরণার্থী কনভেনশনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য চুক্তি ব্যাখ্যার পাবলিক আন্তর্জাতিক আইনের নিয়মগুলিকে সংহিতাবদ্ধ করে। ====
শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনী বাধ্যবাধকতার বিষয়বস্তু বোঝার জন্য চুক্তির ব্যাখ্যার নিয়মগুলো ''চুক্তির আইন সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশনে'' কোড করা হয়েছিল। ''ভিয়েনা কনভেনশনের'' ৩১ এবং ৩২ অনুচ্ছেদ সরবরাহ করে যে:
ARTICLE 31: General rule of interpretation
1. A treaty shall be interpreted in good faith in accordance with the ordinary meaning to be given to the terms of the treaty in their context and in the light of its object and purpose.
2. The context for the purpose of the interpretation of a treaty shall comprise, in addition to the text, including its preamble and annexes:
(a) any agreement relating to the treaty which was made between all the parties in connection with the conclusion of the treaty;
(b) any instrument which was made by one or more parties in connection with the conclusion of the treaty and accepted by the other parties as an instrument related to the treaty.
3. There shall be taken into account, together with the context:
(a) any subsequent agreement between the parties regarding the interpretation of the treaty or the application of its provisions;
(b) any subsequent practice in the application of the treaty which establishes the agreement of the parties regarding its interpretation;
(c) any relevant rules of international law applicable in the relations between the parties.
4. A special meaning shall be given to a term if it is established that the parties so intended.
ARTICLE 32: Supplementary means of interpretation
1. Recourse may be had to supplementary means of interpretation, including the preparatory work of the treaty and the circumstances of its conclusion, in order to confirm the meaning resulting from the application of article 31, or to determine the meaning when the interpretation according to article 31:
(a) leaves the meaning ambiguous or obscure; or
(b) leads to a result which is manifestly absurd or unreasonable.
ARTICLE 33: Interpretation of treaties authenticated in two or more languages
1.When a treaty has been authenticated in two or more languages, the text is equally authoritative in each language, unless the treaty provides or the parties agree that, in case of divergence, a particular text shall prevail.
2. A version of the treaty in a language other than one of those in which the text was authenticated shall be considered an authentic text only if the treaty so provides or the parties so agree.
3.The terms of the treaty are presumed to have the same meaning in each authentic text.
4.Except where a particular text prevails in accordance with paragraph 1, when a comparison of the authentic texts discloses a difference of meaning which the application of articles 31 and 32 does not remove, the meaning which best reconciles the texts, having regard to the object and purpose of the treaty, shall be adopted.
এই কথা বলার পরেও, ''ভিয়েনা কনভেনশন'' নিজে থেকে ''শরণার্থী কনভেনশন''-এ প্রযোজ্য নয়, কারণ ''ভিয়েনা কনভেনশন'' শুধুমাত্র সেইসব চুক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যা ১৯৮০ সালের ২৭ জানুয়ারির পরে স্বাক্ষরিত হয়েছে (উক্ত কনভেনশনের ৪নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী)<ref>Leslie Katz, ''The Use of the Vienna Convention on the Law of Treaties in the Interpretation of the Refugee Convention and the Refugee Protocol,'' CanLII Connects, March 27, 2019, <https://canliiconnects.org/en/commentaries/66071> (Accessed August 28, 2020).</ref> এবং ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন ও তার ১৯৬৭ সালের প্রোটোকল এই সময়ের আগেই কার্যকর হয়েছিল। তবে, হাথাওয়ে যেমনটি উল্লেখ করেছেন,<ref>Hathaway, J. (2005). International law as a source of refugee rights. In ''The Rights of Refugees under International Law'' (pp. 15-74). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511614859.002.</ref> ভিয়েনা কনভেনশনে যেভাবে চুক্তি ব্যাখ্যার পদ্ধতি সংরক্ষিত হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক প্রথাগত চুক্তি ব্যাখ্যার নিয়ম হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।<ref>''Kasikili/Seduda Island (Botswana v. Namibia),'' Preliminary Objections, [1996] ICJ Rep 803, at 812.</ref> এসব নিয়ম সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক পাবলিক আইনের অংশ হিসেবে চুক্তি ব্যাখ্যার নিয়মসমূহের সংহিত রূপ হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref>M. Lennard, ‘‘Navigating by the Stars: Interpreting the WTO Agreements,’’ (2002) 5 Journal of International Economic Law 17 (Lennard, ‘‘Navigating by the Stars’’), at 17–18.</ref> এই প্রেক্ষাপটে, ভিয়েনা কনভেনশনের ৩১ থেকে ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের চুক্তি ব্যাখ্যার মূলনীতিগুলোর একটি সাধারণ রূপ।<ref>I. Sinclair, The Vienna Convention and the Law of Treaties (1984) at 153.</ref> ফলে, শরণার্থী কনভেনশন ব্যাখ্যার সময়, ভিয়েনা কনভেনশনে বর্ণিত ব্যাখ্যার নিয়মগুলো প্রযোজ্য বিবেচনা করা হয়, যদিও ''sensu stricto'' বলতে এর অনুচ্ছেদসমূহ সরাসরি শরণার্থী কনভেনশন-এ প্রযোজ্য নয়। এই কারণে, শরণার্থী কনভেনশনের প্রেক্ষিতে নিউজিল্যান্ডের,<ref>''Attorney-General v Zaoui and Inspector-General of Intelligence and Security'' [2006] 1 NCLR 289 (Supreme Court of New Zealand) at para. 24</ref> যুক্তরাজ্যের,<ref>''European Roma Rights Centre & Ors, R (on the application of ) v Immigration Officer at Prague Airport & Anor'' [2004] UKHL 55 (UK House of Lords) at para. 18 (per Lord Bingham), at para. 43 (per Lord Steyn), at para. 63 (per Lord Hope).</ref> এবং কানাডার<ref>''Pushpanathan v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 1998 CanLII 778 (SCC), [1998] 1 SCR 982, par. 52, <http://canlii.ca/t/1fqs6#par52>, retrieved on 2020-11-28.</ref> দেশীয় আদালতসমূহ শরণার্থী কনভেনশন ব্যাখ্যার সময় VCLT-এর ৩১ ও ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করেছেন।
==== কানাডাকে শরণার্থীদের প্রতি আন্তর্জাতিক আইনি দায়িত্ব সদিচ্ছার সঙ্গে পালন করতে হবে ====
আই আর পি এ.-এর ৩(২)(b) ধারা অনুযায়ী, শরণার্থীদের প্রসঙ্গে আইনটির উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটি হল কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি দায়িত্বসমূহ পালন করা। এই দায়িত্বসমূহ সদিচ্ছার সঙ্গে ব্যাখ্যা করতে হবে।<ref name=":3">The terms of the Refugee Convention are to be interpreted pursuant to the principles set out at arts 31–32 of the Vienna Convention on the Law of Treaties (adopted 23 May 1969, entered into force 27 January 1980) 1155 UNTS 331, Can TS 1980 No 37 as noted in Joshua Blum, ''When Law Forgets: Coherence and Memory in the Determination of Stateless Palestinian Refugee Claims in Canada,'' International Journal of Refugee Law, eeaa019, https://doi-org.peacepalace.idm.oclc.org/10.1093/ijrl/eeaa019.</ref> এটি ''ভিয়েনা'' কনভেনশনের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে, "একটি চুক্তিকে সদিচ্ছার সঙ্গে ব্যাখ্যা করতে হবে"। এটি ''ভিয়েনা'' কনভেনশনের ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে রাষ্ট্রগুলোকে তাদের আন্তর্জাতিক চুক্তিগত দায়িত্বগুলো সদিচ্ছার সঙ্গে পালনের কথা বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনে, সদিচ্ছা বা ''bona fides''-এর অর্থের মধ্যে সততা, আনুগত্য এবং যুক্তিযুক্ততার দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত।<ref>Uçaryılmaz, Talya. (2020). ''The Principle of Good Faith in Public International Law (El principio de buena fe en el Derecho internacional público)''. Estudios de Deusto. 68.43.10.18543/ed-68(1)-2020pp43-59 <<nowiki>https://dialnet.unirioja.es/servlet/articulo?codigo=7483935</nowiki>> (Accessed July 25, 2020), page 15 of the article.</ref> তবে, ব্রিটেনে লর্ড বিংহাম মন্তব্য করেছেন যে "একটি রাষ্ট্র যদি চুক্তির অর্থকে তার ভাষাগত মানে হিসেবে ব্যাখ্যা করে এবং সেটির চেয়ে বেশি কিছু না করে, তাহলে সেটি সদিচ্ছার অভাব নয়।"<ref name=":9">''R v. Immigration Officer at Prague Airport, ex parte Roma Rights Centre,'' [2004] UKHL 5, [2005] 2 AC 1 (UK).</ref> এই প্রেক্ষাপটে, কানাডার ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়েছে যে "আই আর পি এ.-এর অতি পাঠনির্ভর এবং সীমিত ব্যাখ্যা, যা আইনটির উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে যায়, তা এড়ানো উচিত।"<ref>''Mwano v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2020 FC 792, para. 23 <https://decisions.fct-cf.gc.ca/fc-cf/decisions/en/item/485650/index.do>.</ref>
==== ''শরণার্থী'' কনভেনশনের ব্যাখ্যা সদিচ্ছার সঙ্গে, এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে করা উচিত ====
''চুক্তির আইন সম্পর্কিত ভিয়েনা'' কনভেনশনের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “একটি চুক্তিকে সদিচ্ছার সঙ্গে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবং এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অনুসারে চুক্তির পরিভাষার স্বাভাবিক অর্থ অনুযায়ী ব্যাখ্যা করতে হবে।”<ref name=":6">Tristan Harley, ''Refugee Participation Revisited: The Contributions of Refugees to Early International Refugee Law and Policy'', Refugee Survey Quarterly, 28 November 2020, https://doi.org/10.1093/rsq/hdaa040, at page 4.</ref> এতে প্রশ্ন আসে, ''শরণার্থী'' কনভেনশনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী? বিচারব্যবস্থায় প্রধান যে উত্তরটি উঠে আসে, তা হল এই চুক্তির মানবিক উদ্দেশ্য। যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডস রায় দিয়েছে যে একটি ‘সদিচ্ছাপূর্ণ’ ব্যাখ্যা এমন একটি ব্যাখ্যা যা চুক্তির সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যকে কার্যকর করে এবং কেবল ভাষাগতভাবে নয় বরং মানবিক লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাখ্যা প্রদান করে।<ref>''Adan v Secretary of State for the Home Department,'' [1999] 1 AC 293.</ref> আই আর পি এ.-এর ৩(২)(ডি) ধারায় বলা হয়েছে, “এই আইনটির উদ্দেশ্য হল, কানাডার মানবিক আদর্শের মৌলিক প্রকাশ হিসেবে, যারা নির্যাতনের দাবি নিয়ে কানাডায় আসে, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন প্রদান করা।” গবেষক মিশেল ফস্টার লিখেছেন, “একটি দৃষ্টিভঙ্গি হল, শরণার্থী কনভেনশনের লক্ষ্য একটি সামাজিক ও মানবাধিকার ভিত্তিক উদ্দেশ্য সাধন করা, অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে সেইসব ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যারা শরণার্থী সংজ্ঞার আওতাভুক্ত।”<ref>Michelle Foster, "A Human Rights Framework for Interpreting the Refugee Convention" in Michelle Foster, ''International Refugee Law and Socio-Economic Rights: Refugee from Deprivation'' (Cambridge: Cambridge University Press, 2007).</ref> কানাডার সুপ্রিম কোর্টও শরণার্থী কনভেনশনের মানবাধিকারমূলক উদ্দেশ্যকে স্বীকার করে বলেছে, এটি “পরিষ্কারভাবে একটি মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্দেশ্য বহন করে” – যেমনটি ''নেমেথ বনাম কানাডা'' মামলায় বলা হয়েছে।<ref>''Németh v. Canada (Justice),'' 2010 SCC 56 (CanLII), [2010] 3 SCR 281, par. 33, <http://canlii.ca/t/2djll#par33>, retrieved on 2020-12-19.</ref> অনুরূপভাবে, ''ইজোকোলা বনাম কানাডা'' মামলায় আদালত ''শরণার্থী'' কনভেনশনের “সার্বিক ও সুস্পষ্ট মানবাধিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য”-এর কথা উল্লেখ করেছে।<ref>''Ezokola v Canada (Citizenship and Immigration)'', 2013 SCC 40, para. 32.</ref> ''কানাডা বনাম ওয়ার্ড'' মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ব্যাখ্যা করেছে, ১৯৫১ সালের কনভেনশনের মূল উদ্দেশ্য হল “বৈষম্য ছাড়াই মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অঙ্গীকার।”<ref>''Canada (Attorney-General) v. Ward'', [1993] 2 SCR 689.</ref>
তবে, অস্ট্রেলিয়ান আদালত এক্ষেত্রে একটি সতর্কতার বার্তা দিয়েছে: “চুক্তির ভাষা ও প্রেক্ষাপটের দাবি থেকে সরে এসে কেবল মানবিক উদ্দেশ্যের দোহাই দিয়ে ব্যাখ্যা করা উচিত নয়, যদি না সেই উদ্দেশ্য অর্জনের ওপর কনভেনশন নিজেই সীমা নির্ধারণ করে দেয়।”<ref>''Applicant A v. Minister for Immigration and Ethnic Affairs'' (1997) 190 CLR 225 (Australia), 231 (Brennan CJ).</ref> বাস্তবতাও হল, যুক্তরাজ্যের লর্ড বিংহামও জোর দিয়ে বলেছেন যে ১৯৫১ সালের কনভেনশন ছিল “বিভিন্ন স্বার্থের মধ্যে একটি আপস – একদিকে নিপীড়নের শিকারদের মানবিক আচরণ নিশ্চিত করার প্রয়োজন এবং অন্যদিকে সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের ভূখণ্ডে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা।”<ref name=":9" /> ফস্টার উল্লেখ করেন, এই দুই দৃষ্টিভঙ্গিকে একত্রিত করা সম্ভব, যদি গুরুত্ব দেওয়া হয় ১৯৫১ সালের কনভেনশনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা “মানবিক সমস্যার সমাধানে সহযোগিতার প্রয়োজন”-কে।<ref name=":10">Foster, M., ''International Refugee Law and Socio-Economic Rights: Refuge from Deprivation'' (2007), p. 44, as cited in Jane McAdam, ‘Interpretation of the 1951 Convention’ in Andreas Zimmermann (ed), The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary (Oxford University Press 2011) at page 92.</ref> কাব্বার্স-এর মতামতের ভিত্তিতে, যদি একটি চুক্তির ধারাগুলো কোনও নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে হয়, তাহলে সেটিই চুক্তির উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচিত হয়, ফস্টার যুক্তি দেন যে ১৯৫১ সালের কনভেনশনের প্রধান উদ্দেশ্যই হল মানবাধিকার। সার্বিকভাবে এই চুক্তিটি শরণার্থীদের অধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে প্রাপ্য সুবিধাগুলো নিশ্চিত করে।<ref name=":10" />
==== ''শরণার্থী কনভেনশন'' স্পষ্টভাবে কোনো নির্দিষ্ট শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণ (আরএসডি) পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে না ====
এই আইনের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা। এই বিষয়টি কীভাবে শরণার্থী সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত? কানাডার শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ প্রক্রিয়াটি ১৯৫১ সালের ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত'' কনভেনশনের মতো আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলোর প্রতিফলন। এই প্রক্রিয়ার মূল চ্যালেঞ্জ হলো কে "শরণার্থী" এবং কে নয়, তা নির্ধারণ করা। এই দায়িত্ব কীভাবে পালন করা হবে, সে বিষয়ে চুক্তি বা আইন কোনোটিই সরাসরি নির্দেশনা দেয় না: ''শরণার্থী কনভেনশন''-এ মোট ৪৬টি অনুচ্ছেদ এবং ''জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সংবিধি''-এ ২২টি অনুচ্ছেদ রয়েছে, যার কোনোটিই আরএসডি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে না।<ref>Jones, M., & Houle, F. (2008). Building a Better Refugee Status Determination System. ''Refuge: Canada’s Journal on Refugees'', ''25''(2), 3-11. Retrieved from https://refuge.journals.yorku.ca/index.php/refuge/article/view/26027, page 3.</ref> ইউএনএইচসিআর-এর ''পদ্ধতি এবং মানদণ্ডের উপর হ্যান্ডবুক'' অনুযায়ী, “চুক্তিটি শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের জন্য কী ধরনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে, তা নির্ধারণ করে না।”<ref>Jones, M., & Houle, F. (2008). Building a Better Refugee Status Determination System. ''Refuge: Canada’s Journal on Refugees'', ''25''(2), 3-11. Retrieved from https://refuge.journals.yorku.ca/index.php/refuge/article/view/26027, page 4.</ref>
==== কানাডা যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করবে, তা অবশ্যই ''শরণার্থী'' কনভেনশনের মৌলিক বিধানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে ====
আইনের ৩(২)(খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, শরণার্থীদের বিষয়ে আই আর পি এ.-র লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করা। ''শরণার্থী কনভেনশন'' অনুস্বাক্ষরের মাধ্যমে কানাডা একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ''ফেরত না দেওয়া'' নীতির প্রতি শ্রদ্ধা, যা ''শরণার্থী'' কনভেনশনের ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত। তাহলে এই প্রতিশ্রুতিগুলো কীভাবে কানাডার শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত? হফম্যান ও লোহর লিখেছেন, ১৯৫১ সালের চুক্তির ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে, এই চুক্তি কোনো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া প্রবর্তন বা নিষেধ করে না, তবে চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোকে এমন কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে বারণ করে যা শরণার্থী আবেদনকারীদের সেই সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে, যেগুলোর প্রতি চুক্তি স্বাক্ষর করে কানাডা সম্মত হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি ''pacta sunt servanda'' থেকে উদ্ভূত—অর্থাৎ চুক্তি মানা আবশ্যক।<ref>Uçaryılmaz, Talya. (2020). ''The Principle of Good Faith in Public International Law (El principio de buena fe en el Derecho internacional público)''. Estudios de Deusto. 68.43.10.18543/ed-68(1)-2020pp43-59 <https://dialnet.unirioja.es/servlet/articulo?codigo=7483935> (Accessed July 25, 2020), page 11 of the article.</ref> প্রক্রিয়াগত বিষয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালতগুলো এমন নীতি প্রতিষ্ঠা করেছে যে, একটি দেশের প্রক্রিয়াগত আইন অবশ্যই তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণের পথ তৈরি করতে হবে। লাগান্ড (জার্মানি বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র'')'' মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) রায় দিয়েছে যে, একটি রাষ্ট্রের ওপর আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলো পুরোপুরি পালনের যে দায়িত্ব রয়েছে, তার অর্থ হলো সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগত আইনগুলো এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যাতে তা রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক আইনি দায়বদ্ধতাকে কার্যকর করে।<ref>ICJ. ''LaGrand'', Judgment, ICJ Reports (2001), pp. 497-498, paras. 89-91.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো দেশ এমন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে যা ''ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া'' ঘটায়, তবে সেই প্রক্রিয়া প্রবর্তন করা নিজেই ''শরণার্থী'' কনভেনশনের ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে।<ref>The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary. Edited by Andreas Zimmermann. Oxford University Press, 2011, 1799 pp, £260 hb. ISBN 978-0-19-954251-2, at p. 1100.</ref> এর ফলে রাষ্ট্রগুলোর বেছে নেওয়া প্রক্রিয়াগুলোর ওপর পরোক্ষভাবে প্রভাব পড়ে; উদাহরণস্বরূপ, ইউএনএইচসিআর বলেছে যে, ''ফেরত না দেওয়া'' বাধ্যবাধকতার ফলে রাষ্ট্রগুলোর ওপর একটি ‘স্বাধীন অনুসন্ধানের দায়িত্ব’ বর্তায়।<ref>UNHCR, UNHCR Intervention before the Court of Final Appeal of the Hong Kong Special Administrative Region in the case between C, KMF, BF (Applicants) and Director of Immigration, Secretary for Security (Respondents) (31 January 2013) para 74 http://www.refworld.org/docid/510a74ce2.html accessed 6 January 2019.</ref> এই দায়িত্ব অনুযায়ী রাষ্ট্রগুলোর অবশ্যই ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রয়োজন কি না, তা নির্ধারণ করতে হবে, তাদের কোনো তৃতীয় দেশে ফেরত পাঠানোর আগে।<ref>Azadeh Dastyari, Daniel Ghezelbash, ''Asylum at Sea: The Legality of Shipboard Refugee Status Determination Procedures'', International Journal of Refugee Law, eez046, https://doi.org/10.1093/ijrl/eez046</ref>
==== ''শরণার্থী কনভেনশন''-কে একটি জীবন্ত দলিল হিসেবে বিবেচনা করা উচিত যা সময়োপযোগী প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম ====
রাষ্ট্রগুলো স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছে যে, শরণার্থী কনভেনশন হলো “আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি [যার] স্থায়ী মূল্য ও ২১শ শতাব্দীতে প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।”<ref>“Ministerial Communiqué,” UN Doc. HCR/MIN/COMMS/2011/16, Dec. 8, 2011, at [2], as cited in James C. Hathaway, ''The Rights of Refugees under International Law,'' April 2021, ISBN: 9781108810913, <<nowiki>https://assets.cambridge.org/97811084/95899/excerpt/9781108495899_excerpt.pdf</nowiki>> (Accessed March 6, 2021), at page 9.</ref> যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডস সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, “এটি স্পষ্ট যে, চুক্তি স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো এমন একটি চুক্তি চেয়েছিল যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। আমাদের মতে, এই চুক্তিকে একটি জীবন্ত দলিল হিসেবে গণ্য করতে হবে।”<ref>''Sepet (FC) and Another (FC) v. Secretary of State for the Home Department'', [2003] UKHL 15, United Kingdom: House of Lords (Judicial Committee), 20 March 2003, available at: <nowiki>https://www.refworld.org/cases,GBR_HL,3e92d4a44.html</nowiki> [accessed 26 December 2020].</ref> এটি কানাডার সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোকে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে।”<ref>''Suresh v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', [2002] 1 SCR 3 (Canada), para. 87.</ref> প্রকৃতপক্ষে, ''চুক্তি আইন সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন''-এ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি যে, চুক্তির শব্দগুলোর অর্থ কেবলমাত্র স্বাক্ষরের সময়কার অর্থেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এর একটি খসড়ায় এমন সীমাবদ্ধতা ছিল, যা পরে মুছে ফেলা হয়, কারণ এতে আইনের বিকাশে বাধা তৈরি হতো এবং “সততার সঙ্গে ব্যাখ্যা” এই মর্মে অনুচ্ছেদটির সঠিক অর্থ নির্ধারণ সম্ভব বলে বিবেচিত হয়।<ref>The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary. Edited by Andreas Zimmermann. Oxford University Press, 2011, 1799 pp. ISBN 978-0-19-954251-2, at p. 103 (para. 84).</ref>
==== ''শরণার্থী'' কনভেনশনের একটি মাত্র সঠিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে ====
দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যা কনভেনশনের অন্যান্য রাষ্ট্রের ব্যাখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।]]।
==== কানাডার আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক কোনো আইনগত দায়িত্ব নেই বিদেশ থেকে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য গ্রহণ করার ====
আইনের ৩(২)(খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শরণার্থীদের বিষয়ে এই আইনের উদ্দেশ্য হলো ১) শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধকতা পূরণ এবং ২) পুনর্বাসনের প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতি কানাডার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা। পুনর্বাসন দ্বিতীয় লক্ষ্যটির অন্তর্ভুক্ত, প্রথমটির নয়, কারণ বিদেশ থেকে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কানাডার কোনো আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। ''শরণার্থী কনভেনশন'' আলোচনার সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বোঝাপড়া ভাগাভাগির গুরুত্ব স্বীকার করেছিল এবং এটি চুক্তির প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল, তবে একে বাধ্যতামূলক আইনি দায়বদ্ধতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press: Vancouver, page 5.</ref> সত্যি বলতে, হ্যাথওয়ে মন্তব্য করেছেন যে, যখন ''শরণার্থী কনভেনশন'' নিয়ে আলোচনা চলছিল, তখন বিভিন্ন সরকার তাদের সীমান্তের বাইরে অবস্থানরত শরণার্থীদের গ্রহণ করার কোনো বাধ্যতামূলক দায়িত্বের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয়, বরং কেবলমাত্র এমন একটি সীমিত বাধ্যবাধকতা গ্রহণ করে যে, তারা শরণার্থীদের এমন দেশে ফেরত পাঠাবে না যেখানে তাদের নির্যাতনের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।<ref>Hathaway, J. (2005). The Rights of Refugees under International Law. Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511614859 at page 161.</ref> পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক আইনে আশ্রয় লাভের ব্যক্তিগত অধিকার নির্ধারণের বিভিন্ন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে—যেমন ১৯৬৭ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ''আঞ্চলিক আশ্রয়ের ঘোষণাপত্র'' বাধ্যতামূলক নয় এবং প্রস্তাবিত ''আঞ্চলিক আশ্রয় সংক্রান্ত কনভেনশন'' কখনো বাস্তবায়িত হয়নি।<ref>Adamu Umaru Shehu, ''Understanding the Legal Rights of Refugee, Migrants, and Asylum Seekers Under International Law'', Journal of Conflict Resolution and Social Issues, Vol 1 No 2 (2021) <http://journal.fudutsinma.edu.ng/index.php/JCORSI/article/viewFile/1824/1275> (Accessed February 13, 2021), pages 40-41.</ref> আরও বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া এবং বোঝা ভাগ করে নেওয়া শরণার্থী কনভেনশনের মৌলিক নীতি]]।
=== আইআরপিএ ধারা ৩(২)(গ) - যারা কানাডায় নির্যাতনের আশঙ্কা থেকে আশ্রয়ের দাবি জানায়, তাদের প্রতি ন্যায্য বিবেচনা প্রাপ্য ===
<pre>Objectives — refugees
(2) The objectives of this Act with respect to refugees are
(c) to grant, as a fundamental expression of Canada’s humanitarian ideals, fair consideration to those who come to Canada claiming persecution;</pre>
==== এই বিধানটি আইনে বহুদিন ধরে অন্তর্ভুক্ত ====
এটি ১৯৭৬ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টে যুক্ত হওয়া লক্ষ্যগুলোর একটি প্রতিফলন। সেখানে বলা হয়েছিল “শরণার্থীদের বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধকতা পূরণ এবং বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িতদের বিষয়ে তার মানবিক ঐতিহ্য বজায় রাখা।”<ref name=":14" /> এটি আইআরবি-এর মিশন স্টেটমেন্টেও প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানে বোর্ডের পক্ষ থেকে কানাডীয়দের প্রতিনিধিত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে: "আমাদের মিশন হলো, কানাডীয়দের পক্ষে অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো দক্ষভাবে, ন্যায্যভাবে এবং আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রহণ করা।"<ref name=":233" />
==== শরণার্থী কর্মসূচি সম্পর্কে জনগণের ধারণায় বোর্ড পদ্ধতিগুলোর ন্যায়সংগত হওয়ার গুরুত্ব ====
সার্বিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাক্ষ্য প্রদানের সুবিধার্থেও পদ্ধতিগত ন্যায়বিচার অপরিহার্য, তবে এটি শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, যদি অংশীজনেরা দেখে যে প্রক্রিয়াটি পক্ষপাতদুষ্ট, পূর্বধারণাপ্রসূত, খামখেয়ালি বা অন্যভাবে অনুপযুক্ত এবং যারা কানাডায় এসে আবেদন করেন তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না, তাহলে তারা এই ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। যেমন আইনতত্ত্ববিদ প্যাট্রিসিয়া মিন্ডাস যুক্তি দেন, খামখেয়ালিপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থার বৈধতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং আইনের প্রতি আস্থা নষ্ট করে, যা সহজে পুনরুদ্ধারযোগ্য নয়।<ref>Mindus, P. (2020). Towards a Theory of Arbitrary Law-making in Migration Policy. ''Etikk I Praksis - Nordic Journal of Applied Ethics'', ''14''(2), 9-33. <nowiki>https://doi.org/10.5324.eip.v14i2.3712</nowiki> at page 16.</ref> এই কারণে, পদ্ধতিগত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা শুনানি ও শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ার নির্ভরযোগ্যতা এবং জনগণের সমর্থন বজায় রাখার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
যারা কানাডায় এসে নির্যাতনের আশঙ্কা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তাদের আবেদন ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচিত হচ্ছে কি না, তা বোর্ডের দায়িত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। থেরিও লেখেন, "যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা জোরদার করে। যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা লিখতে গিয়ে বিচারকরা একটি আত্মনিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে যান, যা সিদ্ধান্তকে যুক্তিনিষ্ঠ করে তোলে। পক্ষগুলো এতে বুঝতে পারে কেন একটি সিদ্ধান্ত এভাবে হয়েছে। আপিল আদালতগুলোও তখন সিদ্ধান্তের গুণগত মান বিচার করতে পারে। একই সঙ্গে, ''stare decisis'' নীতির মাধ্যমে সাধারণ আইন বিকাশেও যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় এবং এটি আইনজীবী সমাজ ও সাধারণ মানুষের কাছে আইনের নিয়মাবলির বিষয়বস্তু ও বিবর্তন তুলে ধরে।"<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf> (Accessed July 10, 2021), page 332.</ref>
==== এই বিধানটি ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতিমালা সম্পর্কিত কানাডিয়ান বিল অব রাইটস-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত ====
আই আর পি এ.-এর ধারা ৩(২)(c) অনুযায়ী, এই আইনের শরণার্থী সংক্রান্ত উদ্দেশ্য হলো নির্যাতনের আশঙ্কায় যারা কানাডায় আসে তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করা। এটি ''কানাডিয়ান বিল অফ রাইটস''-এর ধারা ২(ই)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে যে কানাডার কোনো আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা বা প্রয়োগ করা যাবে না যাতে এখানে স্বীকৃত বা ঘোষিত কোনো অধিকার বা স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় এবং বিশেষভাবে বলা হয়েছে, "(ই) কোনো ব্যক্তিকে তার অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণে ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতিমালার ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু শুনানির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।"<ref>''Canadian Bill of Rights,'' SC 1960, c 44, s 2, <http://canlii.ca/t/7vnh#sec2>, retrieved on 2020-12-22.</ref>
==== এই বিধানটি কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ====
আই আর পি এ.-এর ধারা ৩(২)(c) অনুযায়ী, এই আইনের শরণার্থী সংক্রান্ত উদ্দেশ্য হলো নির্যাতনের আশঙ্কায় যারা কানাডায় আসে তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করা। এই “ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা” করার ধারণার ব্যাপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত দেখতে দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে এমন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা সমস্ত মানুষের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার শ্রদ্ধাকে সমর্থন করবে|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা দেখুন# শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে এমন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা সমস্ত মানুষের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার শ্রদ্ধাকে সমর্থন করবে]]।
==== এই বিধানটি কানাডার অভ্যন্তরে অবস্থানরত দাবি দাতাদের উপর কেন্দ্রিত ====
আই আর পি এ.-এর ধারা ৩(২)(c) অনুযায়ী, এই আইনের শরণার্থী সংক্রান্ত উদ্দেশ্য হলো নির্যাতনের আশঙ্কায় যারা কানাডায় আসে তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করা। এই বিধানটিকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে যে এটি মূলত তাদের লক্ষ্য করে যারা কানাডায় এসে সুরক্ষা দাবি করেন (অভ্যন্তরীণ আশ্রয়প্রার্থী), বহিঃস্থ অবস্থানরতদের (পুনর্বাসনের জন্য অপেক্ষমাণ) তুলনায়। কেননা পুনর্বাসনের জন্য নির্বাচিত শরণার্থীরা সাধারণত আগে থেকেই শরণার্থীর মর্যাদা পেয়ে থাকেন। আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#পুনর্বাসনের জন্য বিদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের গ্রহণ করার জন্য কানাডার বাধ্যতামূলক আইনি বাধ্যবাধকতা নেই]]। আরেকটি ব্যাখ্যায় বলা যেতে পারে, "যারা কানাডায় নির্যাতনের আশঙ্কায় আসে"—এই বাক্যে "কানাডা" শব্দটি দেশের ভূখণ্ডের পরিবর্তে "কানাডা সরকার" বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে; যদিও এ ব্যাখ্যাটি বিতর্কিত।
=== আই আর পি এ. ধারা ৩(২)(ডি) - নিরাপদ আশ্রয় প্রদান ===
<pre>Objectives — refugees (2) The objectives of this Act with respect to refugees are (d) to offer safe haven to persons with a well-founded fear of persecution based on race, religion, nationality, political opinion or membership in a particular social group, as well as those at risk of torture or cruel and unusual treatment or punishment;
উদ্দেশ্য — শরণার্থীরা
(২) এই আইনের অধীনে শরণার্থীদের সংক্রান্ত উদ্দেশ্য হলো—
(d) বর্ণ, ধর্ম, জাতীয়তা, রাজনৈতিক মতামত বা নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার ভিত্তিতে নির্যাতনের যুক্তিসঙ্গত আশঙ্কা রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং নির্যাতন বা নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণ বা শাস্তির ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করা।</pre>
==== শরণার্থী বিধানের উদ্দেশ্য নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করা — এটি উৎস দেশ সম্পর্কে একটি মূল্যায়ন অন্তর্নিহিত করে ====
এই আইনের ধারা ৩(২)(ডি) অনুযায়ী শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় প্রদানের বিষয়টি একটি উদ্দেশ্য। এই নিরাপদ আশ্রয় প্রদান করার ধারণাটিই বোঝায় যে, আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তির উৎস দেশ এই নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন প্লাউট লিখেছেন, এইভাবে শরণার্থীর মর্যাদা প্রদান উৎস দেশ সম্পর্কে একটি রায় প্রদান: "জেনেভা কনভেনশন আসলে অপরাধী দেশগুলোর নীতির উপর একটি নৈতিক রায় নয় কী? যখনই একটি দেশ কোনো ব্যক্তিকে প্রকৃত শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখনই সে দেশ ওই ব্যক্তির উৎস দেশের বিচার করছে।"<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 124.</ref> তিনি আরও লেখেন, "কনভেনশনের অধীনে কোনো ব্যক্তিকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে তার উৎস দেশ তার ভূখণ্ডে শরণার্থী তৈরি করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।"<ref>W. Gunther Plaut, ''Asylum: A Moral Dilemma'', Westport, Conn.: Praeger, 1995, page 140.</ref>
==== এই আইনের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদান — এবং এই অঙ্গীকার স্থায়ী যতক্ষণ না আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা রহিত হয় ====
এই আইনের শরণার্থী সংক্রান্ত উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে, যারা কনভেনশন অনুযায়ী নির্যাতনের যুক্তিসঙ্গত আশঙ্কায় রয়েছেন, কিংবা যারা নির্যাতন বা নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদান। এই দায়বদ্ধতা আংশিকভাবে ''শরণার্থী'' কনভেনশনের মানদণ্ড অনুসরণ করে এবং এই চুক্তিটিকে তৃতীয় পক্ষের জন্য দায়িত্ব নেওয়ার একটি চুক্তি হিসেবে দেখা যেতে পারে। সেখানে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধতা গ্রহণ করে শরণার্থীদের উপকারার্থে।<ref>The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary. Edited by Andreas Zimmermann. Oxford University Press, 2011, 1799 pp. ISBN 978-0-19-954251-2, at p. 40 (para. 2).</ref> হাদ্দাদ লিখেছেন, শরণার্থী হলেন সেই ব্যক্তি যিনি আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে তার নিজ রাষ্ট্র ত্যাগ করেছেন এবং ফলে তিনি এখন আন্তর্জাতিক সমাজের একটি দায়িত্ব।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, page 198.</ref>
শরণার্থীদের প্রদত্ত "নিরাপদ আশ্রয়" কানাডার অন্যান্য অনিশ্চিত অভিবাসন মর্যাদার (যেমন স্থায়ী বাসিন্দা) থেকে স্বাধীন। একজন আবেদনকারীর আশ্রয়প্রার্থী মর্যাদা তার স্থায়ী বসবাসের মর্যাদা হারালে কিংবা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলেও তা প্রভাবিত হয় না।<ref>''Gaspard v Canada (Citizenship and Immigration),'' 2010 FC 29, paras. 15-16.</ref> এমনকি কেউ যদি একটি নিরাপদ রাষ্ট্র থেকে অন্য আরেকটিতে চলে যায়, যে রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সুরক্ষা দিয়েছিল, তবু আগের রাষ্ট্রটির উপর দায়বদ্ধতা বহাল থাকে যতক্ষণ না ব্যক্তিটির মর্যাদা রহিত হয়।<ref>''Paulos Teddla v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2020 FC 1109 (CanLII), par. 21, <http://canlii.ca/t/jc709#par21>, retrieved on 2020-12-21.</ref> বাস্তবিকপক্ষে, এমনও হতে পারে যে কেউ আইআরবি কর্তৃক সুরক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তিনি কানাডায় স্থায়ী বাসিন্দা বা নাগরিক হতে সক্ষম নাও হতে পারেন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ২৬-২৮ - বর্জন, সততা সমস্যা, অগ্রহণযোগ্যতা এবং অযোগ্যতা # আইআরপিএতে অগ্রহণযোগ্যতার অন্যান্য কারণগুলো দাবিদারদের শরণার্থী শুনানির জন্য অযোগ্য করে তোলে না, তবে তবুও যেখানে দাবি গৃহীত হয় সেখানেও পরিণতি হতে পারে]]। তবে, এটি স্পষ্ট যে শরণার্থীর মর্যাদা তখনই শেষ হয় যখন কনভেনশন অনুযায়ী এর জন্য নির্ধারিত ‘cessation clauses’ প্রযোজ্য হয়।<ref>Brid Ni Ghrainne, ''Internally displaced persons and international refugee law'', in Satvinder S. Juss, ''Research Handbook on International Refugee Law'', 2019. Edward Elgar Publishing: Northampton, Massachusetts, page 34.</ref> উদাহরণস্বরূপ, শরণার্থী কনভেনশনের ধারা ১(C)(৩) অনুসারে, নাগরিকত্ব অর্জনের মাধ্যমে—অর্থাৎ "একজন শরণার্থী নতুন নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং তার নতুন দেশের সুরক্ষা উপভোগ করেন"—তখন তার শরণার্থী মর্যাদা বাতিল হয়ে যায়।<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <<nowiki>https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf?sequence=2</nowiki>> (Accessed July 10, 2021), page 38.</ref> একবার কোনো ‘cessation clause’ এর শর্ত পূরণ হয়ে গেলে তখন 'শরণার্থীতা' বৈধভাবে শেষ হয়েছে বলে গণ্য করা যায়। এর আগ পর্যন্ত, এটি বলা যায় যে শরণার্থীত্ব একটি অস্থায়ী অবস্থান—আসলে, আগিয়ার যেমন বলেন, ‘refuge’ শব্দটিই বোঝায় ‘একটি অস্থায়ী আশ্রয়, অপেক্ষা চলতে থাকে আরও ভালো কিছুর জন্য।’<ref>Agier, Michel. 2008. On the Margins of the World: The Refugee Experience Today. Cambridge: Polity Press.</ref> আরও দেখুন, কীভাবে কনভেনশনের ‘cessation clause’ কানাডীয় নাগরিকত্ব অর্জনের সঙ্গে মিলে যায়: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ৬৪ - শরণার্থী সুরক্ষা খালি করার বা বন্ধ করার আবেদন# এই বিধানটি এমনকি যারা কানাডার নাগরিক হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য]]।
=== আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (ই) - ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি যা অখণ্ডতা বজায় রাখে এবং মানবাধিকার বজায় রাখে ===
Objectives — refugees
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are
(ই) to establish fair and efficient procedures that will maintain the integrity of the Canadian refugee protection system, while upholding Canada’s respect for the human rights and fundamental freedoms of all human beings;
==== শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা ====
করা
আইআরপিএ'র ৩(২)(ই) ধারায় বলা হয়েছে, শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সুষ্ঠু ও দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা। আইআরপিএ'র ১৬২(২) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিটি বিভাগ তার সামনে থাকা সকল কার্যক্রম অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং দ্রুততার সাথে মোকাবেলা করবে যতটা পরিস্থিতি এবং ন্যায্যতা ও প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের বিবেচনার অনুমতি দেয়; এই বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য, দেখুন: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/১৬২- বোর্ডের এখতিয়ার এবং পদ্ধতি # আইআরপিএ ধারা ১৬২(২) - অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা।
সাধারণ আইনে এলিয়েনের অবস্থান সম্পর্কিত সূচনা পয়েন্টটি লর্ড ডেনিং নিম্নরূপে সংক্ষিপ্ত করেছিলেন:<blockquote>সাধারণ আইনে ক্রাউনের অনুমতি ব্যতীত কোনও বিদেশীর এই দেশে প্রবেশের কোনও অধিকার নেই; এবং ক্রাউন কোনও কারণ ছাড়াই ছুটি প্রত্যাখ্যান করতে পারে। যদি তিনি ছুটির মাধ্যমে আসেন তবে ক্রাউন তার থাকার সময়কাল বা অন্যথায় উপযুক্ত বলে মনে করে এমন শর্ত আরোপ করতে পারে। তার এখানে থাকার কোনো অধিকার নেই। ক্রাউনের মতে, এখানে তার উপস্থিতি জনসাধারণের মঙ্গলের পক্ষে অনুকূল না হলে তাকে যে কোনও সময় তার নিজের দেশে পাঠানো যেতে পারে; এবং এ উদ্দেশ্যে নির্বাহী বিভাগ তাকে গ্রেফতার করে নিজ দেশের উদ্দেশ্যে কোনো জাহাজ বা বিমানে তুলে দিতে পারেন। সাধারণ আইনে এলিয়েনদের অবস্থান তখন থেকে বিভিন্ন বিধিবিধানের আওতাভুক্ত হয়েছে; কিন্তু নীতি একই রয়ে গেছে। [অভ্যন্তরীণ উদ্ধৃতি বাদ দেওয়া হয়েছে]</blockquote>কানাডায় প্রবেশ বা থাকার আইনগত অধিকার নেই এমন মরিয়া মানুষের অপ্রতিরোধ্য প্রবাহের বাস্তবতা শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থাকে বারবার লড়াই করতে হয়েছে। এইভাবে, হ্যাথাওয়ে শরণার্থী কনভেনশনের ঐতিহাসিক পূর্বসূরিগুলোর মধ্যে একটির জন্ম দেওয়া পরিস্থিতি বর্ণনা করার সময় লিখেছেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নাগরিকদের আর্থ-সামাজিক সুবিধার সীমাবদ্ধতা শরণার্থী কর্মসূচির সাথে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে: সাম্প্রদায়িক বন্ধের আদর্শের প্রয়োজন-ভিত্তিক ব্যতিক্রমকে বৈধতা এবং সংজ্ঞায়িত করে, শরণার্থী আইন সংরক্ষণবাদী আদর্শকে বজায় রাখতে পারে। এইভাবে, "যতক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থীদের প্রবেশের [রাষ্ট্রগুলো] আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত বলে বোঝা যায়, ততক্ষণ তাদের আগমন আইনত অস্থিতিশীল [বন্ধ হয়ে যায়]। এই প্রেরণার বেশ কয়েকটি প্রভাব রয়েছে। ফেডারেল কোর্ট অফ আপিল বলেছে যে "কানাডায় দাবি করার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে জনস্বার্থ বাধ্যতামূলক রয়েছে। কানাডিয়ান বার অ্যাসোসিয়েশন যেমন জমা দিয়েছে, দ্রুততার অভাব "সিস্টেমে বৈধ দাবির দিকে পরিচালিত করে এবং অযৌক্তিক দাবির বিস্তারকে উত্সাহিত করে। কানাডার সুপ্রিম কোর্ট কোনও পদ্ধতি নির্বাচন করার সময় আনুপাতিকতার গুরুত্বের উপর জোর দেয়, কারণ "কোনও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সর্বোত্তম ফোরাম সর্বদা সবচেয়ে শ্রমসাধ্য পদ্ধতির সাথে হয় না"। এই লক্ষ্যগুলো আইনে অন্তর্ভুক্ত কাঠামো এবং পদ্ধতিতে প্রতিফলিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
* সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যে কার্যধারা দেওয়া হয়েছে তার উপর নিয়ন্ত্রণ: শুনানির দক্ষতা বাড়ানোর জন্য, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের শরণার্থী সুরক্ষা কার্যক্রমের উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার জন্য ''সুষম শরণার্থী সংস্কার আইন'' (২০১০) এবং ''কানাডার ইমিগ্রেশন সিস্টেম সুরক্ষা আইন (''২০১২) পাস করার পরে পদ্ধতিগুলো সংশোধন করা হয়েছিল। সত্য যে আইআরবির প্রতিটি বিভাগকে ন্যায্যতা এবং প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের পরিস্থিতি হিসাবে অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং তাড়াতাড়ি তার সামনে সমস্ত কার্যক্রম মোকাবেলা করতে হবে, উদাহরণস্বরূপ, ট্রাইব্যুনাল সদস্যের প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোতে সময় নষ্ট না করার অধিকার। দেখুন: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ৪৪-৪৮ - সাক্ষী # ৪৪ (৫): কোনও সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, বিভাগকে অবশ্যই কোনও প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
* সদৃশ প্রক্রিয়াগুলো আইন থেকে বাদ দেওয়ার উপায়গুলো: শরণার্থী আপিল বিভাগ, দক্ষতার বিষয়গুলো বিবেচনা করার সময়, পর্যবেক্ষণ করেছে যে আইনের একটি ব্যাখ্যা যা কাজের সদৃশতা হ্রাস করবে এবং একটি অতিরিক্ত, অপ্রয়োজনীয়, শুনানি থাকা পছন্দ করা উচিত। ফেডারেল কোর্ট "অপ্রয়োজনীয় পদ্ধতি এড়াতে বিচারিক অর্থনীতি অর্জনের উদ্দেশ্যে যে কোনও যুক্তিতে" সহানুভূতি উল্লেখ করেছে। এই নীতিটি আইনের ধারা 97 এর আইনী ইতিহাসে দেখা যায় ''ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট'' থেকে আইআরপিএতে রূপান্তরের সাথে ধারা 97 চালু করা হয়েছিল এবং এইভাবে আশ্রয় সুরক্ষার পরিধি প্রসারিত করা হয়েছিল এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যারা নির্যাতনের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা তাদের জাতীয়তার দেশে বা প্রাক্তন অভ্যাসগত বাসস্থানে নির্বাসনের পরে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। রেবেকা হ্যামলিন লিখেছেন যে ২০০২ সালে ভোটের আগে সংসদ আইআরপিএ নিয়ে আলোচনা করার সময় অনুচ্ছেদ ৯৭ প্রবর্তনকে স্মরণীয় বলে মনে করেছিল এমন পরামর্শ দেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। বিলটি নিয়ে যখন বিতর্ক চলছিল, তখন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন মন্ত্রী এলিনর ক্যাপলান সংসদ সদস্যদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে আইআরপিএ "আমাদের পদ্ধতিগুলো সহজতর করার ক্ষমতা দেয়, যাতে যাদের আমাদের সুরক্ষার সত্যিকারের প্রয়োজন তাদের আরও দ্রুত কানাডায় স্বাগত জানানো হবে এবং যাদের সুরক্ষার প্রয়োজন নেই তাদের আরও দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হবে। এই স্ট্রিমলাইনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইআরপিএ কার্যকর হওয়ার পরপরই, আইআরবি আইনী পরিষেবা বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য ধারা 97 সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে একটি গাইড তৈরি করেছিল; গাইডটিতে বলা হয়েছে যে পূর্ববর্তী "খণ্ডিত" এবং "বহুস্তরীয় পদ্ধতির" "বিলম্ব এবং অসঙ্গতি" এড়াতে এই সিদ্ধান্তগুলো আইআরবি ম্যান্ডেটের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
* অতিরিক্ত প্রমাণ মুলতুবি রেখে দাবি স্থগিত রাখার ন্যায্যতার প্রয়োজনীয়তা: আদালত বলেছে যে মৌলিক ন্যায়বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করা দরকার যদি তারা জানে যে যুক্তিসঙ্গত সময় দেওয়া হলে, আবেদনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি পেতে পারেন। দেখুন: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার#নতুন প্রমাণ প্রাপ্তির মুলতুবি রেখে শুনানি আহ্বান বা সিদ্ধান্ত জারি করতে বিলম্ব করার অনুরোধ।
==== শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে এমন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা যা কানাডিয়ান শরণার্থী সুরক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখবে ====
আইআরপিএর ধারা ৩ (২) (ই) সরবরাহ করে যে শরণার্থীদের ক্ষেত্রে আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা কানাডিয়ান শরণার্থী সুরক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন যে "''তাদের দুর্বল পরিস্থিতির কারণে, শরণার্থীরা তারা যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে বা প্রত্যক্ষ করেছে সে সম্পর্কে তথ্য অতিরঞ্জিত বা গোপন করার জন্য চাপের মুখোমুখি হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা যদি মনে করে যে, মানবিক সহায়তা বা শরণার্থী মর্যাদা পাওয়ার আরও ভালো সুযোগ তাদের আছে, তাহলে তারা হয়তো সমস্যাগুলোর অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে পারে।"'' হ্যারল্ড ট্রপার যেমন নোট করেছেন, শরণার্থী কর্মসূচিকে অবশ্যই যে উদ্বেগের সমাধান করতে হবে তা হলো উদ্বেগ যে "শরণার্থী দাবিদারদের অনেকেই, যাদের মধ্যে কয়েকজন যারা সফলভাবে নির্ধারণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এটি তৈরি করেছিলেন, তারা সত্যই বৈধ শরণার্থী ছিলেন না তবে এমন ব্যক্তিরা যারা কানাডার কঠোর অভিবাসন বিধিবিধানের আশেপাশে উপায় খুঁজছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, প্রতারণামূলক আবেদনগুলো কানাডার বেশ কয়েকটি অভিবাসন প্রোগ্রামকে "জর্জরিত" করেছে বলে বলা হয় এবং এটি কেবল কানাডার আশ্রয় ব্যবস্থার সাথে উদ্বেগের বিষয় নয়। উদাহরণস্বরূপ, পুনর্বাসনের জন্য আইআরপিএ-তে প্রাক্তন উত্স দেশ শ্রেণির অধীনে, আইসিআরসি ইঙ্গিত দিয়েছিল যে ব্যক্তিরা কানাডিয়ান দূতাবাসে আইসিআরসি থেকে প্রতারণামূলক রেফারেল ব্যবহার করেছিল। ২০০৪ সালে, কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ একটি স্কিম আবিষ্কার করেছিল যেখানে গেরিলা বা আধাসামরিক বাহিনীর কাছ থেকে মৃত্যু বা অপহরণের হুমকির শিকার ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার নথির জন্য কলম্বিয়ার জাতীয় সিনেট কর্তৃক নিযুক্ত বেসামরিক কর্মচারীদের যথেষ্ট পরিমাণে ঘুষ দেওয়া হচ্ছিল। বোগোটায় অবস্থিত কানাডিয়ান দূতাবাসে অন্তত পঞ্চাশ জনের জন্য সোর্স কান্ট্রি ক্লাস রিসেটেলমেন্টের জন্য এসব নথি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড বলেছে যে এটি যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তার মধ্যে একটি হলো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগুলো আমাদের জাতীয় অভিবাসন নীতিকে এড়ানোর উপায় হিসাবে শরণার্থী দাবিগুলো ব্যবহার করতে পারে না তা নিশ্চিত করা। যখন আইআরবি অস্তিত্ব লাভ করে, তখন সরকারী প্রোগ্রাম বিতরণ কৌশলে বলা হয়েছিল যে অ-বিশ্বাসযোগ্য শরণার্থী দাবিদারদের অপসারণ ছিল আইনের "ভিত্তি"। এটি অগত্যা একটি ভারসাম্য জড়িত, যা জেনিফার বন্ড এবং ডেভিড ওয়াইজম্যান আলোচনা করেন যখন তারা লেখেন যে কানাডার আশ্রয় ব্যবস্থা পরিচালনাকারী পদ্ধতিগত কাঠামোতে নমনীয়তা এবং কঠোরতা উভয়ই সক্ষম করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া রয়েছে। এই বিবেচনাগুলো কানাডার সুপ্রিম কোর্ট "শরণার্থী মর্যাদার মর্যাদা" বজায় রাখার গুরুত্ব হিসাবেও উল্লেখ করে। ইউএনএইচসিআর অনুরূপ বিবেচনার কথা উল্লেখ করে যখন এটি লেখে যে "আশ্রয়ের বেসামরিক চরিত্র রক্ষার জন্য, রাষ্ট্র ... আগতদের পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে মূল্যায়ন করা দরকার যাতে সশস্ত্র উপাদানগুলো সনাক্ত করা যায় এবং তাদের বেসামরিক শরণার্থী জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করা যায়। ফেডারেল কোর্ট অফ আপিল লিখেছে যে "কানাডিয়ান শরণার্থী সুরক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখা বিবেচনা করার জন্য একটি বৈধ উদ্দেশ্য এবং এমন একটি যা সিস্টেমের সংশ্লিষ্ট সকলের দ্বারা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া কর্তব্য হিসাবে প্রয়োজন।
আইআরপিএর ধারা ৩ (১) (এফ.১ সরবরাহ করে যে অভিবাসন সম্পর্কিত এই আইনের উদ্দেশ্যগুলো হলো ... ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন সিস্টেমের অখণ্ডতা বজায় রাখা। এটি ধারা ৩ (২) (ই) এর একটি "বোন বিধান" বলা হয়।
==== শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে এমন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা যা সমস্ত মানুষের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার শ্রদ্ধাকে সমর্থন করবে ====
আইআরপিএর ধারা ৩ (২) (ই) সরবরাহ করে যে শরণার্থীদের বিষয়ে আইনের উদ্দেশ্যগুলো হলো ন্যায্য ও দক্ষ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা যা কানাডার শরণার্থী সুরক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা বজায় রাখবে, যখন মানবাধিকার এবং সমস্ত মানুষের মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার শ্রদ্ধা বজায় রাখবে। এটি আইআরপিএর ধারা ৩ (২) (সি) এর সাথে একত্রে বিবেচনা করা যেতে পারে, যা সরবরাহ করে যে শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যগুলো হলো যারা নিপীড়নের দাবি করে কানাডায় আসে তাদের ন্যায্য বিবেচনা দেওয়া। "ন্যায্য বিবেচনা" ধারণার সুযোগ হিসাবে, এটি আইআরপিএর এস ৩ (৩) (এফ) এর সাথে একত্রে বিবেচনা করা উচিত, যা সরবরাহ করে যে আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা এবং প্রয়োগ করা উচিত যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোর সাথে মেনে চলে যার সাথে কানাডা স্বাক্ষরকারী।
এই জাতীয় মানবাধিকার দলিলগুলো বিবেচনা করার সময়, নাগরিক ''ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির'' বিধানের প্রতি সাধারণত বিবেচনা করা যায় না যা কোনও ব্যক্তির "আইনে অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা" নির্ধারণে ন্যায্য বিচারের সাথে সম্পর্কিত বিস্তৃত অধিকার প্রদান করে। কিছু, যেমন মাচারিয়া-মোকোবি, নোট করুন যে এই বিধানটি শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের পদ্ধতিগুলো কভার করতে পারে। নির্বাসন কার্যক্রম নিজেরাই আইসিসিপিআরের সেই নিবন্ধের আওতায় পড়ে না,[ তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বলেছে যে যতদূর দেশীয় আইন বহিষ্কার বা নির্বাসন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে একটি বিচারিক সংস্থাকে (নির্বাহী বিভাগের অংশ হিসাবে ট্রাইব্যুনালের বিপরীতে) অর্পণ করে, আইসিসিপিআরের এই নিবন্ধে অন্তর্ভুক্ত গ্যারান্টিগুলো প্রযোজ্য। তদুপরি, আইসিসিপিআরের অনুচ্ছেদ ১৪ এর সমস্ত প্রাসঙ্গিক গ্যারান্টি প্রযোজ্য যেখানে বহিষ্কার শাস্তিমূলক অনুমোদনের রূপ নেয় বা যেখানে বহিষ্কার আদেশ লঙ্ঘন ফৌজদারি আইনের অধীনে শাস্তি দেওয়া হয়। যেমন, আরপিডি এবং আরএডির আগে কানাডায় সাধারণ শরণার্থী দাবির জন্য, অনুচ্ছেদ ১৪ তাদের সংকল্পের সাথে প্রাসঙ্গিক হবে না। এই উত্তরটি তর্কসাপেক্ষে, ফৌজদারি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ফলে ছুটি বা অবসানের কার্যক্রমের জন্য আলাদা হতে পারে বা যেখানে আইন আদালত আন্তর্জাতিক ''শিশু অপহরণের নাগরিক দিক সম্পর্কিত'' ''হেগ'' কনভেনশন সম্পর্কিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে শরণার্থী অবস্থা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করে: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি 65 - বিসর্জন # কানাডা থেকে দাবিদারের প্রস্থানের পরে একটি দাবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিত্যক্ত হয় না এবং কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি 60-61 - একটি প্রত্যাহার দাবি বা আবেদন পুনর্বহাল #:~:পাঠ্য = একটি হেগ কনভেনশন কার্যক্রম:।
পরিবর্তে, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রাসঙ্গিক বিধানটি প্রায়শই অনুচ্ছেদ ১৩ হবে, যা বিশেষত একটি রাষ্ট্রের অঞ্চলে আইনত এলিয়েনদের অধিকারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে:<blockquote>বর্তমান চুক্তির কোন রাষ্ট্রপক্ষের ভূখণ্ডে আইনসম্মতভাবে অবস্থানকারী কোন বিদেশীকে কেবল আইনানুযায়ী গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে উক্ত রাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা যেতে পারে এবং জাতীয় নিরাপত্তার বাধ্যতামূলক কারণ ব্যতীত, তার বহিষ্কারের বিরুদ্ধে কারণ পেশ করার এবং তার মামলা পর্যালোচনা করার অনুমতি দেওয়া হবে। এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিশেষভাবে মনোনীত কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সম্মুখে উক্ত উদ্দেশ্যে প্রতিনিধিত্ব করিতে হইবে।</blockquote>১৩ নং অনুচ্ছেদের বিশেষ অধিকার কেবল সেই বহিরাগতদের সুরক্ষা দেয় যারা আইনত একটি রাষ্ট্রপক্ষের ভূখণ্ডে রয়েছে। এর অর্থ হলো সেই সুরক্ষার সুযোগ নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রবেশ এবং থাকার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত জাতীয় আইনকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি তার প্রাসঙ্গিক সাধারণ মন্তব্য অনুসারে, "অবৈধ প্রবেশকারী এবং বহিরাগতরা যারা আইন বা তাদের অনুমতিগুলোর চেয়ে বেশি সময় অবস্থান করেছে, বিশেষত, [এই নিবন্ধের] বিধানের আওতায় পড়ে না"। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি তাদের প্রাসঙ্গিক সাধারণ মন্তব্যে লিখেছে, যদি কোনো বিদেশির প্রবেশ বা অবস্থানের বৈধতা নিয়ে বিতর্ক থাকে, তাহলে এ বিষয়ে বিদেশিকে বহিষ্কার বা নির্বাসনের যে কোনো সিদ্ধান্ত ১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিতে হবে। এটি ''শরণার্থী কনভেনশনের'' প্রস্তাবনাকেও প্রতিফলিত করে, যা পড়ে:<blockquote>চুক্তি সম্পাদনকারী দুই পক্ষের... জাতিসংঘ সনদ এবং ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে এই নীতিকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে মানুষ বৈষম্য ছাড়াই মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতা ভোগ করবে ... নিম্নরূপ একমত হয়েছেন: ... </blockquote>এটি ব্যবহৃত পদ্ধতি এবং তাদের মধ্যে গৃহীত প্রমাণগুলোর জন্য প্রভাব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, নির্যাতনের ফলে প্রাপ্ত কোনও বিবৃতি বা প্রমাণ কোনও কার্যধারায় প্রমাণ হিসাবে নির্ভর করা উচিত নয়। যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের লর্ড হফম্যানের ভাষায়, 'নির্যাতনের ব্যবহার অসম্মানজনক। এটি রাষ্ট্রকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অধঃপতিত করে যা এটি ব্যবহার করে এবং যে আইনি ব্যবস্থা এটি গ্রহণ করে। বিচারপতি ব্ল্যানচার্ড লিখেছেন, "এই ধরনের প্রমাণের স্বীকারোক্তি বিচারিক কার্যক্রমের অখণ্ডতার বিরোধী এবং ক্ষতিগ্রস্থ করে। শরণার্থী অবস্থা নির্ধারণের ন্যায্য পদ্ধতি সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য, দেখুন: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার।
=== আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (জি) - কানাডিয়ানদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা রক্ষা এবং কানাডিয়ান সমাজের সুরক্ষা বজায় রাখা ===
Objectives - refugees
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are ...
(g) to protect the health and safety of Canadians and to maintain the security of Canadian society; and
==== এটি আইনের ধারা ৩(১)(জ) এর সাথে অভিন্নভাবে লেখা হয়েছে ====
আইআরপিএর ধারা ৩ (১) (এইচ) অভিন্নভাবে বলা হয়েছে যে "অভিবাসন সম্পর্কিত এই আইনের উদ্দেশ্যগুলো হলো (''জ'') কানাডিয়ানদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা রক্ষা করা এবং কানাডিয়ান সমাজের সুরক্ষা বজায় রাখা"। এই বিধানটি বিবেচনা করা হয়েছিল ''মেডোভারস্কি বনাম কানাডা''। সেখানে কানাডার সুপ্রিম কোর্ট উল্লেখ করেছে যে "আইআরপিএতে প্রকাশিত উদ্দেশ্যগুলো সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিপ্রায় নির্দেশ করে":<blockquote>''আইআরপিএ-তে'' প্রকাশিত উদ্দেশ্যগুলো সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিপ্রায় নির্দেশ করে। এই উদ্দেশ্যটি ফৌজদারি রেকর্ড সহ আবেদনকারীদের প্রবেশ রোধ করে, কানাডা থেকে এই জাতীয় রেকর্ড সহ আবেদনকারীদের অপসারণ করে এবং কানাডায় থাকাকালীন স্থায়ী বাসিন্দাদের আইনত আচরণের বাধ্যবাধকতার উপর জোর দিয়ে কার্যকর করা হয়। এটি পূর্বসূরী সংবিধির ফোকাস থেকে একটি পরিবর্তন চিহ্নিত করে, যা সুরক্ষার চেয়ে আবেদনকারীদের সফল সংহতকরণের উপর জোর দিয়েছিল: উদাঃ, দেখুন এস ৩ (১) (''আই'') এর ''আইআরপিএ'' বনাম এস ৩ (''জে'') এর পূর্ববর্তী আইন; ''আইআরপিএর'' এস ৩(১) (''ই'') বনাম পূর্ববর্তী আইনের এস ৩ (''ডি''); ''আইআরপিএর'' এস ৩ (১) (''এইচ'') বনাম পূর্ববর্তী আইনের এস ৩ (''আই'') সম্মিলিতভাবে দেখলে, ''আইআরপিএর'' উদ্দেশ্যগুলো এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের সম্পর্কিত এর বিধানগুলো অপরাধী এবং সুরক্ষা হুমকির সাথে পূর্ববর্তী আইনের চেয়ে কম নমনীয়ভাবে আচরণ করার দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ </blockquote>এই উদ্দেশ্যটি আইআরপিএর এসএস ৩৪-৪২ এ পাওয়া অগ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হয়। যা দেখুন: কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/৩৩-৪৩ - অগ্রহণযোগ্যতা।
=== আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (এইচ) - শরণার্থী দাবিদার সহ ব্যক্তিদের কানাডার ভূখণ্ডে অ্যাক্সেস অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও সুরক্ষা প্রচার করা, যারা সুরক্ষা ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুতর অপরাধী ===
Objectives - refugees
(২) The objectives of this Act with respect to refugees are ...
(h) to promote international justice and security by denying access to Canadian territory to persons, including refugee claimants, who are security risks or serious criminals.
==== যদিও আইআরপিএ কানাডার ফৌজদারি কোডের অনুরূপ পদ ব্যবহার করতে পারে, তবে তাদের অভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই ====
''রানা বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট মন্তব্য করেছে:
[৪৭] সাধারণভাবে বলতে বলতে, যদিও ফৌজদারি বিধি এবং আইআরপিএ দুই জননিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, তবে তারা “একত্রে রাষ্ট্র” হয় না বা এক নিয়ন্ত্রক গঠনের অংশ হিসাবে একত্রে কাজ করে না, এমনকি সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা না করুন (তুলনা করুন বেল এক্সপ্রেসভি লিমিটেড পার্টনারশিপ বনাম রেক্স, 2002 SCC 42 (CanLII), প্যারা ৪৬ [বেল এক্সপ্রেসভিউ])। এই দুইটি কোনো অভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করা না, আইনস্ত এমন একটি বিষয় যার উপর ভিত্তির প্রয়োগের প্রয়োজন দেখা দেয়—অর্থাৎ যখন শব্দটি একই বিষয়ের উপর প্রণীত হয়, তখন বর্ণকে একত্র ব্যাখ্যা করে। করা যেতে পারে এবং একটির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হতে পারে (দেখুন রুথ সুলিভান, সুলিভান অন কনস্ট্রাকশন অফ স্ট্যাটিউটস, ৬ষ্ঠ সংস্করণ (মার্কহাম: লেক্সিসনেক্সিস, ২০১৪), পৃষ্ঠা ৪১৬-৪২১)।
এর ফলে, আমার দৃষ্টিতে, এই বিরোধিতা- ফৌজদারি বিধিতে “সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অর্থ আইআরপিএ-এর ধারা ৩৪(১)-এ “সন্ত্রাসবাদ” শব্দের প্রযোজ্য করা মানে নয়। এই কারণে আমি শ্রদ্ধার সাথে আমার সহ বিএনপির নেতা ব্রাউনের সাথে এক মতই, আলি বনাম কানাডা (নাগরিকত্ব ও অভিবাসন), 2017 FC 182 (CanLII) [''আলি''] মামলায় এই ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে ফৌজদারি বিধিতে "সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ" শব্দের অর্থ আইআরপিএ- প্রয়োগের চেষ্টা ধারা ৩৪(১)(চ)-এর উদ্দেশ্যে (দেখুন আলী, প্যারা ৪২-৪৪; আরও দেখুন আলম, প্যারা ২৬-২৮)। <ref>''Rana v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2018 FC 1080, প্যারা ৪৭।</ref>
==== আইনের উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি, এবং এই ক্ষেত্রে কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলির বিষয়েও বিবেচনা করা যেতে পারে ====
আইনের উদ্দেশ্যের মধ্যে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত, এবং এই সম্পর্কিত বিষয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলিকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে:
কানাডার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণবাধতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: সন্ত্রাসে অর্থায়ন দমনের জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন, ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৯, ইউএনটিএস ২১৭৮, পৃষ্ঠা ১৯৭; সন্ত্রাসবাদী বোমা হামলার দমনের জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন, ১৫ ডিসেম্বর ১৯৯৭, UNTS 2149, পৃষ্ঠা ২৫৬; জিম্মি করার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কনভেনশন, ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭৯, UNTS 1316, পৃষ্ঠা ২০৫; নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন 1373 (2001) [সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার হুমকির উপর] (UNSC, ৫৬তম অধিবেশন, UN ডক S/RES/1373(2001)); নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ২৩২২ (২০১৬) [সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকির বিষয়ে], UNSC, ২০১৬, S/RES/2322; এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ২১৭৮ (২০১৪) [বিদেশী সন্ত্রাসী যোদ্ধাদের ক্রমবর্ধমান সমস্যা সমাধানের বিষয়ে], (UNSC, ৬৯তম অধিবেশন, UN Doc S/RES/2178 (২০১৪))। এই দলিলগুলো আইআরএ-এর ব্যাখ্যামূলক প্রেক্ষাপটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ (আইআরপিএ, ধারা ৩(১)(i) ৩(২)(h))। <ref>''Talukder v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2024 FC 1489 (CanLII), প্যারা ৭৩, <https://canlii.ca/t/k6zb1#par73>, সংগৃহীত ২০২৪-০৯-২৪।</ref>
=== আইআরপিএ ধারা ৩(৩)(b) - এই আইনকে এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যা অভিবাসন ও শরণার্থী কর্মসূচি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়িয়ে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ===
<pre>Application
(3) This Act is to be construed and applied in a manner that
(b) promotes accountability and transparency by enhancing public awareness of immigration and refugee programs;
প্রয়োগ
(৩) এই আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যা—
(b) অভিবাসন ও শরণার্থী কর্মসূচি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা উন্নীত করে;</pre>
==== জনগণের কাছে আইনের অধীনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বৈধ বলে প্রতিভাত হওয়া জরুরি ====
আইনের ধারা ৩(৩)(b) অনুযায়ী, আইনটি এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যা অভিবাসন ও শরণার্থী কর্মসূচি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে। ''Rezaei'' মামলায় কোর্ট বলেছে, বোর্ডের অংশীদারদের মধ্যে শুধু সেই আবেদনকারীরাই নন যারা বোর্ড ও তার বিভাগসমূহের সামনে হাজির হন, বরং এর মধ্যে কানাডার সাধারণ জনগণও অন্তর্ভুক্ত, যারা অভিবাসন নীতির কার্যকর প্রয়োগ ব্যবস্থার মাধ্যমে উপকৃত হন।<ref>''Rezaei v. Canada'' (''Minister of Citizenship and Immigration''), [2003] 3 FC 421 (TD), প্যারা ৭০।</ref> বোর্ডকে এই উভয় পক্ষের সমর্থন রক্ষা করতে হবে।
কানাডার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, "শরণার্থী সুরক্ষা ব্যবস্থার অখণ্ডতা ও বৈধতা রক্ষা" করা এর "টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জনসমর্থনের" সঙ্গে জড়িত।<ref name=":182" />
শরণার্থী আইনজীবী ডেভিড মাতাস এক নীতিগত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে তিনি বলেন, যদি জনগণ শরণার্থী নির্ধারণ ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারায়, তবে “মানুষ একসময় এই ব্যবস্থার প্রতি সবরকম আশা ছেড়ে দেবে... [যারা শরণার্থীদের রক্ষা করতে চায়] তারা বৈধ পথের পরিবর্তে অবৈধ পথ অবলম্বন করবে—একটি কানাডিয়ান স্যাংচুয়ারি আন্দোলন শুরু হতে পারে।”<ref>David Matas and Ilana Simon, ''Closing the Doors: The Failure of Refugee Protection'', Summerhill Press Ltd., Toronto, 1989, ISBN 0-920197-81-7, পৃষ্ঠা ১৪৬।</ref>
শরণার্থীদের সমস্যা কানাডার জন্য অন্যান্য বিদেশিদের থেকে আলাদা, এবং এই কারণে আশ্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলোতে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা দরকার কেন কাউকে কানাডায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে অথবা কেন তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, পৃষ্ঠা ৭।</ref>
তবে, শরণার্থী ব্যবস্থার উদ্দেশ্য বিদেশি রাষ্ট্রসমূহকে নিন্দা করা নয়।
=== আইআরপিএ ধারা ৩(৩)(c) - এই আইনকে এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যা কানাডার সরকার, প্রাদেশিক সরকার, বিদেশি রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা সহজতর করে ===
<pre>Application (৩) This Act is to be construed and applied in a manner that (b) promotes accountability and transparency by enhancing public awareness of immigration and refugee programs;
প্রয়োগ
(3) এই আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যা—
(c) কানাডার সরকার, প্রাদেশিক সরকার, বিদেশি রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহের মধ্যে সহযোগিতা সহজতর করে;</pre>
==== কানাডা ইউএনএইচসিআর-এর সঙ্গে সহযোগিতার বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ এবং আইআরপিএ-কে এমনভাবে প্রয়োগ ও ব্যাখ্যা করতে হবে যা এই বাধ্যবাধকতাকে সম্মান করে ====
আইনের ধারা ৩(৩)(c) অনুযায়ী, এটি এমনভাবে প্রয়োগ ও ব্যাখ্যা করতে হবে যা কানাডা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের মধ্যে সহযোগিতা সহজতর করে। এই বিধান কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
''শরণার্থী'' কনভেনশনের ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআর-এর ব্যাখ্যা ও মতামত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ইউএনএইচসিআর-এর কনভেনশন বাস্তবায়নের তদারকির দায়িত্বে সহযোগিতা করবে। ''শরণার্থী'' কনভেনশনের ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলের ২(১) অনুচ্ছেদ বলছে: “[প্রত্যক্ষ প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রসমূহ] ইউএনএইচসিআর-এর কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বিশেষ করে এই প্রোটোকলের বিধানসমূহের বাস্তবায়নের তদারকির ক্ষেত্রে।”<ref>United Nations General Assembly. (1967). “Protocol Relating to the Status of Refugees.” United Nations Treaty Series, Volume 606, Page 267।</ref>
এছাড়া, ''শরণার্থী'' কনভেনশনের প্রস্তাবনাতে বলা হয়েছে:
উচ্চ চুক্তিকারী পক্ষগুলো, ... লক্ষ্য করছেন যে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার আন্তর্জাতিক কনভেনশনসমূহের তদারকি দায়িত্বে রয়েছে যা শরণার্থীদের সুরক্ষার জন্য রয়েছে, এবং তারা স্বীকার করছেন যে এই সমস্যার সমাধানে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কার্যকর সমন্বয় নির্ভর করবে হাইকমিশনার-এর সঙ্গে রাষ্ট্রসমূহের সহযোগিতার ওপর, ... এই মর্মে সম্মত হয়েছেন: ... <ref name=":43">UNHCR, ''Convention and Protocol Relating to the Status of Refugees,'' December 2010 <https://www.unhcr.org/3b66c2aa10>, পৃষ্ঠা ১৩।</ref>
ইউএনএইচসিআর-কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ শরণার্থী কনভেনশনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ তদারকির দায়িত্ব দিয়েছে।<ref>Statute of the Office of the United Nations High Commissioner for Refugees, UN General Assembly Resolution 428(V), ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫০।</ref>
তাই, ইউএনএইচসিআর-এর নীতিমালা যেমন তার হ্যান্ডবুকে উল্লেখিত আছে, তা শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, যদিও সেগুলো কানাডায় আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়।<ref>''Canadian Council for Refugees v R,'' 2007 FC 1262 (CanLII), [2008] 3 FCR 606, প্যারা ২০৮, <http://canlii.ca/t/1tz0l#par208>।</ref>
''রহমান বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট অফ আপিল বলেছে:
''জেনেভা কনভেনশন''-এর ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রসমূহ ইউএনএইচসিআর-এর সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেয়, বিশেষ করে কনভেনশনের প্রয়োগ তদারকির ক্ষেত্রে। তাই, শরণার্থী নির্ধারণ ও সুরক্ষার বিষয়ে হাই কমিশনারের নির্বাহী কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশসমূহকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া উচিত।<ref>''Rahaman v. Minister of Citizenship and Immigration,'' 2002 ACWSJ Lexis 1026 (Can. FCA, Mar. 1, 2002), per. Evan’s J.A.</ref>
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের মামলার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ যেখানে বলা হয়েছে ইউএনএইচসিআর-এর নির্দেশনা "যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত"।<ref>''Al-Sirri v Secretary of State for the Home Department,'' [2012] UKSC 54; [2013] 1 AC 745, প্যারা ৩৬।</ref>
যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, “এই সংস্থার সম্মিলিত ও তুলনাহীন দক্ষতা, বিশ্বব্যাপী সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা, উচ্চ মানসম্পন্ন ও ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি উন্নয়ন, প্রচার ও প্রয়োগ করার কার্যক্রম, এ সবই ইউএনএইচসিআর-এর সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট কর্তৃত্ব দেয়।”<ref>''IA (Iran) v Secretary of State for the Home Department,'' [2014] UKSC 6; [2014] 1 WLR 384, প্যারা ৪৪।</ref>
তবে, বোর্ডের প্যানেলকে তাদের সিদ্ধান্তে ইউএনএইচসিআর-এর নির্দেশনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতেই হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।<ref>''Singh v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2021 FC 1410 (CanLII), প্যারা ৩৪, <https://canlii.ca/t/jlcdb#par34>।</ref> উপরন্তু, ইউএনএইচসিআর-এর তদারকি ভূমিকা শরণার্থী কনভেনশনের ব্যাখ্যার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব প্রদান করে না।<ref name=":112">Jane McAdam, ‘Interpretation of the 1951 Convention’ in Andreas Zimmermann (ed), The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary (Oxford University Press 2011), পৃষ্ঠা ৭৯।</ref>
এই কারণে, ইউএনএইচসিআর শুধুমাত্র শরণার্থী কনভেনশনের ব্যাখ্যা নিয়ে “দিকনির্দেশনা” দিতে পারে। ফেডারেল কোর্ট অফ আপিল ''জয়সেকারা বনাম কানাডা'' মামলায় বলেছে, ইউএনএইচসিআর-এর বক্তব্য "কোর্টের ভূমিকার ওপরে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না যা কনভেনশনের শব্দাবলীর ব্যাখ্যার দায়িত্বে রয়েছে।"<ref>''Jayasekara v Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2008 FCA 404, প্যারা ৩৯।</ref>
অতিরিক্তভাবে, ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে প্রচুর সংখ্যক ঘোষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে, যেগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বিভিন্ন মাত্রার। ইংরেজ আইনতত্ত্ব অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটির ঘোষণাগুলোকে ইউএনএইচসিআর-এর স্রেফ স্টাফদের লেখা প্রকাশনার চেয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে—যেমন ইউএনএইচসিআর-এর আন্তর্জাতিক সুরক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত “আন্তর্জাতিক সুরক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকা”।<ref>''Secretary of State for the Home Department v. MA (Somalia),'' [2018] EWCA Civ 994 (Eng. CA, May 2, 2018)।</ref> তবে, বলা উচিত যে ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তগুলোও রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নয়, যদিও সেগুলো ১৯৫১ সালের কনভেনশনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।<ref name=":11" />
==== রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দায়িত্ব ও বোঝা ভাগাভাগি হলো ''শরণার্থী'' কনভেনশনের মৌলিক নীতি ====
আইনের ধারা ৩(৩)(গ) অনুযায়ী, এই আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে কানাডা সরকার ও বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সহজতর হয়। এই বিধানটি উদ্বাস্তু ব্যবস্থায় “বোঝা ভাগাভাগি” ও “দায়িত্ব ভাগাভাগি”র গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। বলা হয়, শরণার্থী কনভেনশন দুটি মূল নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত: ''ফেরত না দেওয়া''—যা অনুসারে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো বা তাদের উৎস দেশে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য করা যায় না; এবং ''দায়িত্ব ভাগাভাগি''—অর্থাৎ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত শরণার্থী সহায়তার খরচ, শ্রম ও ঝুঁকি একসঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।<ref>Mai-Linh K. Hong (2020) ''Navigating the Global Refugee Regime: Law, Myth, Story'', Amerasia Journal, DOI: 10.1080/00447471.2020.1776571, পৃষ্ঠা ৩।</ref> প্রথম নীতিটি কনভেনশনের কার্যকর ধারাগুলোতে স্পষ্টভাবে উল্লিখিত হলেও, দ্বিতীয়টি কনভেনশনের ভূমিকার অংশ হিসেবে অন্তর্নিহিত, যেখানে লেখা আছে:<ref>Srobana Bhattacharya, Bidisha Biswas, ''International Norms of Asylum and Burden-Sharing: A Case Study of Bangladesh and the Rohingya Refugee Population'', Journal of Refugee Studies, ২২ ডিসেম্বর ২০২০, https://doi-org.ezproxy.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa122, পৃষ্ঠা ৩।</ref><blockquote>উচ্চ চুক্তিস্বাক্ষরকারী পক্ষসমূহ, ... বিবেচনা করে যে আশ্রয় প্রদান কিছু কিছু দেশের ওপর অত্যধিক বোঝা চাপাতে পারে, এবং যে সমস্যার আন্তর্জাতিক পরিসর ও প্রকৃতিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে তার একটি সন্তোষজনক সমাধান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যতিরেকে সম্ভব নয়, ... একমত হয়েছে যে: ...<ref name=":4" /></blockquote>জেমস হ্যাথাওয়ে তাঁর ''শরণার্থী মর্যাদা আইন'' গ্রন্থে লিখেছেন যে বোঝা ভাগাভাগি ছিল ''শরণার্থী কনভেনশন'' প্রণয়নের অন্যতম মূল প্রেরণা:<blockquote>... অধিকাংশ রাষ্ট্র যারা এই কনভেনশন খসড়া করেছিল, তারা এমন একটি অধিকারভিত্তিক ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছিল যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শরণার্থী বোঝা ইউরোপের কাঁধ থেকে ভাগ করে নেওয়া সম্ভব করে। ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো অভিযোগ করেছিল যে, যুদ্ধ-পরবর্তী অধিকাংশ মানব বিপর্যয় তাদেরকেই সামলাতে হয়েছে, এবং এখন সময় এসেছে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এই দায়িত্ব ভাগ করে নিক। শরণার্থীরা ইউরোপের বাইরে যেতে বেশি আগ্রহী হবে যদি তারা নিশ্চিত হয় যে বিদেশেও তাদের অধিকার ও সুবিধাসমূহ রক্ষা পাবে। তাই, এই কনভেনশন এমন একটি নিরাপদ কাঠামো তৈরি করেছিল যা ইউরোপীয় শরণার্থী বোঝা ভাগাভাগিকে সহায়তা করবে।<ref>James C Hathaway, ''The Law of Refugee Status'', Markham, Ont: Butterworths, 1991, পৃষ্ঠা ৬-১১।</ref></blockquote>ফলে, কানাডার সিনেটের একটি প্রতিবেদনের ভাষায়, দায়িত্ব ভাগাভাগি হলো বৈশ্বিক শরণার্থী ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।<ref>Senate of Canada, ''Ripped from Home: The Global Crisis of Forced Displacement,'' December 2024, <https://sencanada.ca/content/sen/committee/441/RIDR/Reports/GlobalForcedDisplacement_e.pdf>, পৃষ্ঠা ৫৮।</ref>
বর্তমানে অধিকাংশ শরণার্থী ইউরোপে নয়, বরং নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে অবস্থান করছে; বিশ্বের ছয়টি ধনীতম দেশ মিলে মোট শরণার্থীর ১০ শতাংশেরও কম আশ্রয় দিয়েছে, অন্যদিকে ৮০ শতাংশ শরণার্থী আশ্রয় পেয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে।<ref>Srobana Bhattacharya, Bidisha Biswas, op. cit., পৃষ্ঠা ৪।</ref> এই দেশগুলোর বেশিরভাগই নিজেরাই গুরুতর সম্পদসংকট ও শাসন-সংক্রান্ত সমস্যায় জর্জরিত।<ref>op. cit., পৃষ্ঠা ২।</ref> উদাহরণস্বরূপ, কানাডা ১৯৮০ সাল থেকে ১,০৮৮,০১৫ জন শরণার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে<ref>UNHCR Canada, ''Refugees in Canada'', Data to 2017 <https://www.unhcr.ca/in-canada/refugees-in-canada/> (Accessed December 26, 2020)।</ref>—যার মধ্যে ৭০৭,৪২১ জন পুনর্বাসনের মাধ্যমে এবং বাকি অংশ অভ্যন্তরীণ আশ্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে এসেছে। এই পুনর্বাসিতদের মধ্যে ৩১৩,৪০১ জন ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে, ৩৮৫,০১৪ জন সরকার-সহায়িত শরণার্থী কর্মসূচির মাধ্যমে এবং ৯,০০৬ জন ব্লেন্ডেড ভিসা অফিস রেফারড (BVOR) কর্মসূচির মাধ্যমে এসেছেন।<ref>Pierre-André Thériault, ''Settling the Law: An Empirical Assessment of Decision-Making and Judicial Review in Canada's Refugee Resettlement System'', April 2021, Ph.D Thesis, Osgoode Hall Law School, York University, <https://yorkspace.library.yorku.ca/xmlui/bitstream/handle/10315/38504/Theriault_Pierre-Andre_2021_PhD_v2.pdf> (Accessed July 10, 2021), পৃষ্ঠা ১৫৫।</ref> এই সংখ্যাগুলো সম্মিলিতভাবে কানাডার বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে, জর্ডানে শরণার্থীর সংখ্যা বর্তমান জনসংখ্যার ৯ শতাংশ এবং লেবাননে তা ২০ শতাংশের বেশি, যদিও এসব দেশের অর্থনৈতিক সম্পদ কানাডার তুলনায় অনেক কম।<ref>World Bank, ''Refugee population by country or territory of asylum,'' 2019 <https://data.worldbank.org/indicator/SM.POP.REFG> (Accessed December 26, 2020)।</ref>
“দায়িত্ব ভাগাভাগি” বলতে সাধারণত মানুষ ভাগাভাগিকে বোঝানো হয়, আর “বোঝা ভাগাভাগি” বলতে বোঝানো হয় শরণার্থীদের নিয়ে আর্থিক ও অন্যান্য ব্যয় ভাগাভাগি।<ref>Julian M. Lehmann, ''At the crossroads: The 1951 Geneva Convention today'', in Satvinder S. Juss, ''Research Handbook on International Refugee Law'', 2019. Edward Elgar Publishing, পৃষ্ঠা ৯।</ref> এই নীতিগুলোর অনেকগুলো ফলাফল রয়েছে। প্রথমত, ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটি রাষ্ট্রগুলোকে আঞ্চলিক উদ্যোগে শরণার্থী সুরক্ষা ও টেকসই সমাধানে উৎসাহিত করে যাচ্ছে।<ref>UNHCR Executive Committee Conclusion N° 81(k), 1997।</ref> ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে, "মূলত, আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন শরণার্থীদের নিজ পছন্দমতো আশ্রয় রাষ্ট্র বেছে নেওয়ার অধিকার দেয় না"।<ref>''Paulos Teddla v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness),'' 2020 FC 1109 (CanLII), অনুচ্ছেদ ২৬, <https://canlii.ca/t/jc709#par26>।</ref> আদালত আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক আইন শরণার্থীদেরকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করে কেবল বেশি সুবিধা পাওয়ার আশায় চলাচল করতে অনুমোদন দেয় না।<ref name=":73" /> আদালত ইউএনএইচসিআর-এর ''শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের অনিয়মিত অগ্রসরতার প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত নির্দেশিকা'' (২০১৯) দলিলকেও উল্লেখ করেছে।<ref name=":73" /> এই আইআরপিএ আইনের একটি প্রতিফলন হলো “Five Eyes” দেশগুলোর মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগির চুক্তি (ধারা ১০১(গ.১)): [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/১০০-১০২ - দাবি উল্লেখ করার যোগ্যতার পরীক্ষা]]।
তবুও, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে শরণার্থীদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা নির্দিষ্ট পর্যায়ে আশ্রয় চাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।<ref>Idil Atak, Zainab Abu Alrob, Claire Ellis, Expanding refugee ineligibility: Canada’s response to secondary refugee movements, Journal of Refugee Studies, 14 December 2020, <nowiki>https://doi-org.ezproxy.library.yorku.ca/10.1093/jrs/feaa103</nowiki>, পৃষ্ঠা ১৩।</ref> ১৯৫১ সালের কনভেনশন প্রণয়নের সময় থেকেই এটি দায়িত্ব ভাগাভাগির একটি যন্ত্র হিসেবে দেখা হয়েছিল, এবং এই লক্ষ্যে রাষ্ট্রগুলোর ওপর বাধ্যতামূলক দায়িত্ব আরোপকে কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য অপরিহার্য মনে করা হয়েছিল।<ref>The 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its 1967 Protocol: A Commentary, Andreas Zimmermann (সম্পাদক), Oxford University Press, 2011, পৃষ্ঠা ৪০ (অনুচ্ছেদ ১)।</ref> এইভাবে, অভ্যন্তরীণ আশ্রয় ব্যবস্থাগুলোকে টেকসই দায়িত্ব ভাগাভাগির মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। শাওনা ল্যাবম্যান লিখেছেন যে অভিবাসী পুনর্বাসন কর্মসূচি তুলনামূলকভাবে "অবিন্যস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ", কারণ রাজনীতিবিদরা পুনর্বাসনের সংখ্যা নিয়ে সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, অথচ আশ্রয় চাওয়ার সংখ্যা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না, এবং পুনর্বাসন কর্মসূচি একেবারেই বাতিল হয়ে যেতে পারে।<ref>Shauna Labman, ''Crossing Law’s Border: Canada’s Refugee Resettlement Program,'' 2019, UBC Press, পৃষ্ঠা ৪৬।</ref> আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#পুনর্বাসনের জন্য বিদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের গ্রহণ করার জন্য কানাডার বাধ্যতামূলক আইনি বাধ্যবাধকতা নেই]]। অন্যদিকে, “ফেরত না দেওয়া” নিয়মকে বলা হয়েছে “আন্তর্জাতিক আইনে শরণার্থী দায়িত্ব ভাগাভাগির একমাত্র বাধ্যতামূলক নীতি”।<ref>Philipp Lutz, Anna Stünzi, Stefan Manser-Egli, ''Responsibility-Sharing in Refugee Protection: Lessons from Climate Governance'', International Studies Quarterly, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, https://doi.org/10.1093/isq/sqab016</ref>
যদিও মাঝে মাঝে “asylum shopping” শব্দবন্ধটি ব্যবহৃত হয়, ফেডারেল কোর্ট উল্লেখ করেছে এটি "কোনো আইনি ধারণা নয় এবং আন্তর্জাতিক আইনে এর কোনো সংজ্ঞা নেই।... বাস্তবে এই প্রবণতা, যদি তা থেকে থাকে, তা সাধারণত প্রতিযোগী আশ্রয় ব্যবস্থার মধ্যে বেছে নেওয়ার সুযোগ নয় বরং একজন ব্যক্তি যে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় আছে, তার জন্য অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্য থেকে তুলনামূলকভাবে কম অনিশ্চিত বিকল্পটি বেছে নেওয়ার চেষ্টা মাত্র"।<ref>''Freeman v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1839 (CanLII), অনুচ্ছেদ ৬২, <https://canlii.ca/t/k7zf1#par62>, প্রাপ্তি তারিখ: ২০২৪-১২-০৭।</ref>
==== রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শরণার্থীদের সমস্যা যেন উত্তেজনার কারণ না হয়, সে লক্ষ্যে সবকিছু করা উচিত ====
আইনের ধারা ৩(৩)(গ) নির্ধারণ করে যে আইনটি এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যাতে কানাডা সরকার ও বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ে। এই বিধানটিকে কনভেনশনের ভূমিকাংশের প্রতিফলন হিসেবে দেখা যায়, যেখানে লেখা আছে:<blockquote>উচ্চ চুক্তিস্বাক্ষরকারী পক্ষসমূহ, ... আশা প্রকাশ করে যে সকল রাষ্ট্র, শরণার্থীদের সমস্যাটির সামাজিক ও মানবিক প্রকৃতি স্বীকার করে, এই সমস্যাটি যেন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে উত্তেজনার কারণ না হয় তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে, ... একমত হয়েছে যে: ...<ref name=":4" /></blockquote>এর সাথে সম্পর্কিতভাবে, ১৯৬৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশ্যে ''আঞ্চলিক আশ্রয়ের ঘোষণাপত্র'' গৃহীত করে। সেখানে বলা হয়, আশ্রয় প্রদান একটি শান্তিপূর্ণ ও মানবিক কাজ এবং এটি অন্য কোনো রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অমিত্রতাপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।<ref>UNHCR and Inter-Parliamentary Union, ''Refugee Protection: A Guide to International Refugee Law'', <https://www.academia.edu/36070452/REFUGEE_PROTECTION_A_Guide_to_International_Refugee_Law?email_work_card=view-paper> (Accessed December 13, 2020), পৃষ্ঠা ১৫।</ref> আধুনিক শরণার্থী ব্যবস্থাটিকে এমন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা যায় যা রাষ্ট্র ও তাদের সীমান্তের স্থিতিশীলতাকে সহায়তা করে, কারণ এটি ব্যক্তিকে সীমান্ত অতিক্রম করার পর চিহ্নিত হওয়ার একটি উপায় দেয়, ফলে জাতিগত বা রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে সীমান্ত পুনর্নির্ধারণের দাবি কমে যেতে পারে।<ref>Haddad, E. (2008). The Refugee in International Society: Between Sovereigns (Cambridge Studies in International Relations). Cambridge: Cambridge University Press. doi:10.1017/CBO9780511491351, পৃষ্ঠা ১৩৭।</ref>
==== আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যাতে "অর্বিটে থাকা শরণার্থী" হওয়ার সম্ভাবনা রোধ করা যায় ====
আইনের ধারা ৩(৩)(c) অনুযায়ী, এই আইনটিকে এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে কানাডার সরকার ও বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সহজ হয়। কানাডার সিনেট সংশ্লিষ্ট বিলগুলো সংশোধন করে এই বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে যে, আইআরপিএ-তে (আইআরপিএ) যে নিরাপদ তৃতীয় দেশের ধারা আছে, তা যেন "অর্বিটে থাকা শরণার্থী" সৃষ্টি না করে—অর্থাৎ এমন শরণার্থী, যারা এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হন নিরাপত্তা পাওয়ার আশায়।<ref>David Matas with Ilana Simon, *Closing the Doors: The Failure of Refugee Protection*, Summerhill Press Ltd., Toronto, 1989, ISBN 0-920197-81-7, পৃষ্ঠা ১৬১।</ref> এই শব্দগুচ্ছটির বিভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে।
"অর্বিটে থাকা শরণার্থী"র প্রাচীন উদাহরণ হলেন ইহুদিরা—তারা বহু রাষ্ট্রে সাময়িকভাবে আশ্রয় পেলেও কোনো স্থায়ী আবাস পায়নি। র্যাবাই ডব্লিউ. গুন্তার প্লট-এর ভাষায়, খ্রিষ্টান ইউরোপ তাদের "ভবঘুরে ইহুদি" বলে ডাকত এবং সেই অনুযায়ী আচরণ করত:
ভবঘুরেরা যেন মানুষের চিরাচরিত দৃশ্যের অংশ—তারা আসত, থাকত, আবার চলে যেত। যতক্ষণ তারা "ভিন্ন" রয়ে যেত এবং সমাজে মিশে যেতে পারত না, ততক্ষণ তারা কোনো রাজনৈতিক হুমকি ছিল না। তাদের শুধু কাজে লাগানো হতো, আর প্রয়োজন ফুরালে ফেলে দেওয়া হতো। তাদের স্থায়ী বসবাসের কোনো অধিকার ছিল না, এবং তারা একপ্রকার "অর্বিটে থাকা শরণার্থী" হিসেবেই রয়ে যেত।<ref>W. Gunther Plaut, *Asylum: A Moral Dilemma*, Westport, Conn.: Praeger, 1995, পৃষ্ঠা ৪৪–৪৫।</ref>
এইভাবে, "অর্বিটে থাকা শরণার্থী" বলতে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা বছরের পর বছর, এমনকি দশক বা প্রজন্মব্যাপী ছুটে বেড়াচ্ছেন—কেউ নিরবিচারে, কেউ বিরতিতে।<ref>Siobhán McGuirk, Adrienne Pine, সম্পাদক, *Asylum for Sale: Profit and Protest in the Migration Industry*, PM Press: 2020, ISBN: 9781629637822, পৃষ্ঠা ২।</ref>
অড্রে ম্যাকলিন এই শব্দটির আরও সমসাময়িক উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, "অর্বিটে থাকা শরণার্থী"র অবস্থা তখন সৃষ্টি হয় যখন:
দেশ A দেশ B-কে নিরাপদ তৃতীয় দেশ হিসেবে ঘোষণা করে। এর ফলে দেশ A এমন শরণার্থীর আবেদন গ্রহণ না করার অধিকার পায়, যিনি দেশ B হয়ে A-তে এসেছেন। কিন্তু যদি কোনো পুনঃপ্রবেশ চুক্তি না থাকে, তবে দেশ B ওই ব্যক্তিকে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে এবং তাকে দেশ C-তে পাঠিয়ে দেয়, C আবার তাকে D-তে পাঠায়—এইভাবে চলতেই থাকে।<ref>Audrey Macklin, “Disappearing Refugees: Reflections on the Canada-US Safe Third Country Agreement” (2005) 36 *Colum HRL Rev* 365 at 373-74।</ref>
"অর্বিটে থাকা শরণার্থী" ধারণাটি ১৯৮০-এর দশকে যখন কানাডার অভিবাসন আইনে নিরাপদ তৃতীয় দেশের ধারা সংযোজন হচ্ছিল, তখন এটি একটি প্রচলিত শব্দ ছিল। ১৯৮৮ সালে বিল C-55 পরীক্ষা করে সংসদের স্থায়ী আইনি ও সাংবিধানিক বিষয়ক কমিটি জানায়, এই বিলের ‘নিরাপদ দেশ’ সংক্রান্ত ধারাটি নিয়ে তাদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগ ছিল। অ্যালান ন্যাশ বর্ণনা করেন যে, বিলটিতে যেসব ব্যক্তিকে নিরাপদ তৃতীয় দেশে ফেরত পাঠানো হবে, তাদের ভাগ্য পরীক্ষা করার কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে তাদের অন্যত্র পাঠিয়ে refoulement-এর শিকার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যা তাদের জীবন বিপন্ন করতে পারত।
এজন্য সিনেট কমিটি এমন একটি সংশোধনী প্রস্তাব করে, যাতে বলা হয়: কেবল তখনই কাউকে নিরাপদ তৃতীয় দেশে ফেরত পাঠানো যাবে, যদি শরণার্থী বিভাগের একজন সদস্য ও তদন্তের একজন বিচারক নিশ্চিত হন যে ওই দেশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রহণ করবে অথবা তার আবেদন বিবেচনা করবে। তাদের মতে, এর ফলে শরণার্থীদের "অর্বিটে" পড়ার সম্ভাবনা হ্রাস পেত।<ref>Alan Nash, *International Refugee Pressures and the Canadian Public Policy Response*, Discussion Paper, January 1989, Studies in Social Policy, পৃষ্ঠা ৫৬।</ref> যদিও এই সুপারিশ গৃহীত হয়নি, পরে এই সমস্যার প্রতিকার করার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিস্তারিত জানতে দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আইআরপিআর এস ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় দেশগুলো|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আইআরপিআর এস ১৫৯ - নিরাপদ তৃতীয় বিশ্বের দেশ]], বিশেষত নিরাপদ তৃতীয় দেশের চুক্তি-এর ধারা ৩, যা এই সমস্যার প্রতিরোধে রচিত হয়েছে।
এছাড়াও, শরণার্থী কনভেনশনের ধারা ৩৩(১) দীর্ঘদিন ধরেই এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, এটি শুধু সরাসরি নয়, বরং তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে কোনো শরণার্থীকে সেই দেশে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধেও প্রযোজ্য।<ref>* R v Secretary of State for the Home Department, Ex p Bugdaycay* [1987] AC 514, 532।</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/১১৫-১১৬ - অ-প্রত্যাবাসনের নীতি]]।
==== আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যা কনভেনশনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য রাষ্ট্রের ব্যাখ্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ====
ধারা ৩(৩)(c) অনুসারে, এই আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে কানাডা ও অন্যান্য বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সহজ হয়। গ্রে যুক্তি দেন যে, একজন ব্যক্তির শরণার্থী সুরক্ষা দাবি নির্দিষ্টভাবে কোনো রাষ্ট্রের প্রতি নয়, বরং সেই রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করায় তার প্রতি উত্থাপিত হয়।<ref>Colin Grey, *Cosmopolitan Pariahs: The Moral Rationale for Exclusion under Article 1F*, *International Journal of Refugee Law*, 2024, eeae025, https://doi.org/10.1093/ijrl/eeae025</ref>
এইভাবে, আইআরপিএ-কে এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যাতে তা বিচ্ছিন্ন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি না করে, যা আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।<ref>Mathilde Crepin, *The Notion of Persecution in the 1951 Convention Relating to the Status of Refugees and its Relevance for the Protection Needs of Refugees in the 21st Century,* Dissertation, King’s College London, 2019, https://kclpure.kcl.ac.uk/portal/ (প্রবেশ: ১ আগস্ট ২০২০), পৃষ্ঠা ৭০।</ref>
যুক্তরাজ্যের আদালত এ বাধ্যবাধকতাকে এভাবে বর্ণনা করে: "নীতিগতভাবে কোনো চুক্তির একটি মাত্র প্রকৃত ব্যাখ্যাই থাকতে পারে।"<ref name=":122">* R v Secretary of State for the Home Department, Ex p Adan* [2001] 2 AC 477, 516 (Lord Steyn)।</ref>
ফলে, যুক্তরাজ্যের রায়গুলোতে প্রায়ই বলা হয় যে প্রতিটি রাষ্ট্রকে তার জাতীয় আইন সংস্কৃতির ধারণা থেকে মুক্ত থেকে চুক্তির স্বতন্ত্র ও আন্তর্জাতিক অর্থ অন্বেষণ করতে হবে।<ref name=":122" /> একই কারণে, কানাডার আদালত শরণার্থী কনভেনশন ও আইআরপিএ ব্যাখ্যার সময় প্রায়শই অন্যান্য দেশের রায় বিশ্লেষণ করে।<ref>যেমন, *Ezokola v. Canada (Citizenship and Immigration),* 2013 SCC 40 (CanLII), [2013] 2 SCR 678, প্যারা ৬৯–৭৭, http://canlii.ca/t/fzq5z#par69, উদ্ধৃত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০।</ref>
এটি যথাযথ, কারণ IRB গঠনের পূর্ববর্তী Plaut রিপোর্ট অনুযায়ী: "কেউ শরণার্থী কি না, তা মূলত কানাডার আইনের নয়; এটি আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা ও ন্যায়বিচারের আওতাভুক্ত প্রশ্ন।"<ref>W. Gunther Plaut, *Refugee determination in Canada: A report to the Honourable Flora MacDonald, Minister of Employment and Immigration*, এপ্রিল ১৯৮৫, Government of Canada।</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার # সিদ্ধান্ত গ্রহণ বোর্ড জুড়ে অনুমানযোগ্য এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত]]।
==== আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত যাতে কানাডার সরকার ও কলেজ অফ ইমিগ্রেশন এবং সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টসের মতো বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা সহজ হয় ====
ধারা ৩(৩)(c) অনুযায়ী, এই আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে কানাডার সরকার ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা সহজ হয়। কানাডার অভিবাসন খাতে উল্লেখযোগ্য কিছু বেসরকারি সংস্থা হলো কলেজ অফ ইমিগ্রেশন এবং সিটিজেনশিপ কনসালট্যান্টস এবং কানাডার প্রাদেশিক আইন সমিতিগুলো।
ফলে, বোর্ডের উচিত আইআরপিএ-কে এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করা, যা এসব সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা উন্নত করে। এমন পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে যখন কেউ এসব সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই আইনি পরামর্শ দিচ্ছে, অথবা একজন সদস্য তাদের অনুমোদিত কার্যপরিধির বাইরে কাজ করছে। বিস্তারিত দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/৯১-৯১.১ - প্রতিনিধিত্ব বা পরামর্শ # আইআরপিএ বিভাগ ৯১-৯১.১]]।
=== আইআরপিএ ধারা ৩(৩)(ডি) - আইনটি এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যাতে তা চার্টার অব রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় ===
<pre>Application
(৩) This Act is to be construed and applied in a manner that
(d) ensures that decisions taken under this Act are consistent with the Canadian Charter of Rights and Freedoms, including its principles of equality and freedom from discrimination and of the equality of English and French as the official languages of Canada;
প্রয়োগ
(৩) এই আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে:
(d) আইনটির অধীনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ কানাডিয়ান চার্টার অব রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বৈষম্য থেকে মুক্তি ও সমতার নীতি এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষাকে কানাডার সরকারিভাষা হিসেবে সমতার ভিত্তিতে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি;</pre>
==== বোর্ডের কার্যধারায় চার্টারের অধিকার প্রযোজ্য হওয়ায় আবেদনকারীদের প্রতি উচ্চ পর্যায়ের প্রক্রিয়াগত সুবিচার প্রযোজ্য ====
ফেডারেল কোর্ট অফ অ্যাপিল বলেছে: “বোর্ডের স্বায়ত্তশাসন, এর বিচারিক কার্যপ্রণালী ও কাজের ধরণ, এবং এর সিদ্ধান্তে আবেদনকারীর চার্টার অধিকার প্রভাবিত হওয়ায় বোর্ডের ওপর যে প্রক্রিয়াগত সুবিচারের দায়িত্ব রয়েছে—বিশেষত নিরপেক্ষতার দায়িত্ব—তা প্রক্রিয়াগত সুবিচার ধারাবাহিকতার সর্বোচ্চ প্রান্তে অবস্থান করে।”<ref name=":02" />
এই দায়িত্ব শুধু কানাডার অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক আইন থেকেই নয়, বরং কানাডার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ও বাধ্যবাধকতা থেকেও উদ্ভূত। শরণার্থী কনভেনশন-এ বলা হয়েছে, কোনো শরণার্থীর বহিষ্কার কেবল "আইনানুগ প্রক্রিয়ার" ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই হতে পারে।<ref name=":222">Convention Relating to the Status of Refugees (১৯৫১ সালের ২৮ জুলাই গৃহীত, ১৯৫৪ সালের ২২ এপ্রিল কার্যকর), ১৮৯ UNTS ১৩৭, Article 32।</ref>
* আজিজা বনাম সুইডেন মামলায় জাতিসংঘের কমিটি এগেইনস্ট টর্চার সিদ্ধান্ত দেয় যে CAT-এর অনুচ্ছেদ ৩-এর মাধ্যমে একটি কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আপিলের অধিকার নিহিত রয়েছে।<ref>UN doc CAT/C/34/D/233/2003 (২০ মে ২০০৫)।</ref>
যখন বোর্ড স্ব-উপস্থাপিত আবেদনকারীদের নিয়ে কাজ করে, তখন তার সুবিচারের দায়িত্ব আরও বাড়ে: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ১৪-১৬ - রেকর্ডের পরামর্শ#স্ব-প্রতিনিধিত্বকারী দাবিদারদের সাথে আচরণ করার সময় বোর্ডের পদ্ধতিগত ন্যায্যতার উচ্চতর দায়িত্ব রয়েছে]]।
তবে, যদিও এটি সাধারণ আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য, শরণার্থী প্রক্রিয়ায় প্রযোজ্য প্রক্রিয়াগত সুবিচারের পরিমাণ অনেকক্ষেত্রে আইআরপিএ-র ধারায় নির্ধারিত হয়েছে এবং আদালত উল্লেখ করে যে “এই বিধানগুলো যেকোনো সাধারণ আইনের নিয়মের চেয়েও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।”<ref>* Mohammed v. Canada (Citizenship and Immigration),* 2024 FC 713 (CanLII), প্যারা ২৮, https://canlii.ca/t/k4jc6#par28, উদ্ধৃত: ৩ জুলাই ২০২৪।</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/১৭০ - কার্যক্রম]]।
==== চার্টার সংক্রান্ত বিষয়সমূহ সাধারণত ডিভিশনের পূর্বেই উত্থাপন করা উচিত ====
অভিবাসন প্রসঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে, একজন আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে সেই কার্যক্রমের মধ্যে চার্টার সংক্রান্ত বিষয় উত্থাপন করতে হয়। বর্তমান প্রসঙ্গে, উদাহরণস্বরূপ, IRB (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজ বোর্ড) চার্টার সংক্রান্ত বিষয় বিবেচনা করার জন্য উপযুক্ত। যদি আবেদনকারী সফল না হন, তবে তিনি ফেডারেল কোর্টে সেই সিদ্ধান্তের বিচারিক পর্যালোচনার অনুমতি চাইতে পারেন।<ref>Inter-American Commission on Human Rights (IACHR), ''Report on the Situation of Human Rights of Asylum Seekers Within the Canadian Refugee Determination System'', 2000, Inter-Am. C.H.R., OEA/Ser.L/V/II.106, Doc. 40 rev. (2000), available at: <nowiki>https://www.refworld.org/docid/50ceedc72.html</nowiki> [accessed 18 August 2020], para. 86.</ref> এ বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/আরপিডি বিধি ৬৬ - সাংবিধানিক প্রশ্নের নোটিশ]]।
==== এই আইনের আওতায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহকে সমতা ও বৈষম্যমুক্তির নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে ====
আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(ডি) অনুযায়ী, এই আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে নিশ্চিত হয় যে, আইন অনুযায়ী গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ 'কানাডিয়ান চার্টার অব রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডমস'-এর নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার মধ্যে রয়েছে সমতা ও বৈষম্যমুক্তির নীতি। এই বিধানটি শরণার্থী কনভেনশনের ৩ নম্বর ধারার বাধ্যবাধকতাকে প্রতিফলিত করে, যেখানে বলা হয়েছে, “চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রসমূহ শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই কনভেনশনের বিধানসমূহ প্রয়োগ করবে, বর্ণ, ধর্ম কিংবা জাতিগত উৎসের ভিত্তিতে কোনো প্রকার বৈষম্য না করে।”<ref name=":19">UN General Assembly, ''Convention Relating to the Status of Refugees'', 28 July 1951, United Nations, Treaty Series, vol. 189, p. 137, available at: https://www.refworld.org/docid/3be01b964.html [accessed 25 April 2021].</ref>
গত শতাব্দীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসনের প্রকৃতিতে একটি রূপান্তর লক্ষ্য করা যায়, যেখানে এটি ক্রমবর্ধমানভাবে বহুজাতিক ও বৈশ্বিক চরিত্র ধারণ করেছে। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন যখন আলোচনাধীন ছিল, তখন এর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল মূলত ইউরোপকেন্দ্রিক এবং ইউরোপের বাইরে থেকে ব্যাপক সংখ্যক শরণার্থী আসার সম্ভাবনা অগ্রাহ্যযোগ্য মনে করা হতো। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৫১ সালের কনভেনশন নিয়ে আলোচনাকারী সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি মন্তব্য করেন যে, “[ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো যদি] বিশাল সংখ্যক আরব শরণার্থীর মুখোমুখি হয়, তার সম্ভাবনা এতই নগণ্য যে তা বিবেচনারও যোগ্য নয়।”<ref>Krause, U. Colonial roots of the 1951 Refugee Convention and its effects on the global refugee regime. ''J Int Relat Dev'' (2021). https://doi.org/10.1057/s41268-020-00205-9 at page 17.</ref>
বর্তমানে এই দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, এবং আজ স্বীকৃত যে অধিকাংশ শরণার্থী নিম্ন আয়ের দেশসমূহে অবস্থান করছে এবং কানাডায় শরণার্থী আবেদনকারীরা বিশ্বব্যাপী নানা দেশ থেকে আসে। আসলে, যদিও “শরণার্থী আবেদনকারী” শব্দটি স্বতঃসিদ্ধভাবে বা ''de jure'' কোনো জাতিগত শ্রেণি নয়, সমকালীন কানাডিয় অভিবাসন ব্যবস্থায় এটি একটি ''de facto'' জাতিগত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছে, যেখানে অধিকাংশই অশ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি।<ref>Achiume, E. Tendayi. “Digital Racial Borders.” AJIL Unbound, vol. 115, 2021, pp. 333–338., doi:10.1017/aju.2021.52.</ref>
বোর্ড সদস্যদের তাদের বিবেচনা প্রয়োগ করতে হবে বৈষম্য ও পূর্বধারণা ছাড়াই, কারণ এরূপ আচরণ, ফেডারেল কোর্টের ভাষায়, “এক ধরনের অজ্ঞতা ও পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতা প্রকাশ করে, যা শুধু সাধারণভাবে অস্বাভাবিক নয় বরং বিশেষভাবে বিস্ময়কর যখন তা এমন কারও পক্ষ থেকে আসে যার দায়িত্ব সংবেদনশীল দাবিসমূহের নিষ্পত্তি করা।”<ref>''Herrera v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', 2005 FC 1233.</ref> আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর অধিকার#যেখানে একজন সদস্য বৈষম্যমূলক মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন করার চেষ্টা করেন]]।
==== এই আইনের আওতায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহকে কানাডার সরকারিভাষা হিসেবে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে ====
আইনের ধারা ৩(৩)(ডি)-তে বলা হয়েছে যে, এই আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে এটি কানাডার সরকারিভাষা হিসেবে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার সমতার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এ বিষয়ে আলোচনা দেখতে পারেন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শুনানির অধিকার ও ন্যায্য শুনানির অধিকার#কার্যধারার ভাষা]]।
=== আইআরপিএ ধারা ৩(৩)(এফ) - আইনের প্রয়োগে কানাডা স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংক্রান্ত দলিলসমূহের প্রতি সম্মান জানানো আবশ্যক ===
<pre>প্রয়োগ
(৩) এই আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে
(এফ) এটি কানাডা স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।</pre>
==== সাধারণভাবে, কানাডায় আইন আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই ধরে নেওয়া উচিত ====
কানাডা একটি "দ্বৈততান্ত্রিক রাষ্ট্র", অর্থাৎ আন্তর্জাতিক আইন ও অভ্যন্তরীণ আইন পৃথক ক্ষেত্রে বিবেচিত হয়। সেজন্য রাষ্ট্র কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে যে বাধ্যবাধকতা গ্রহণ করে, তা অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হতে হলে, তা সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়নের মাধ্যমে রূপান্তরিত হতে হয়।<ref>Statement applies ''mutatis mutandis'' to Canada, and is derived from E Macharia-Mokobi, J Pfumorodze, ''Advancing refugee protection in Botswana through improved refugee status determination'', African Human Rights Law Journal 13 (1), 01-26, <<nowiki>http://www.scielo.org.za/scielo.php?pid=S1996-20962013000100008&script=sci_arttext&tlng=es</nowiki>> (Accessed February 5, 2021), page 166.</ref> তা সত্ত্বেও, একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাখ্যাগত নীতি হলো, আইনকে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই ধরে নিতে হবে।<ref>''R. v. Hape,'' 2007 SCC 26 (CanLII), [2007] 2 SCR 292, par. 53, <http://canlii.ca/t/1rq5n#par53>, retrieved on 2020-09-03.</ref> এই ধারনাটি এমন একটি নীতির উপর ভিত্তি করে গঠিত, যার দ্বারা আদালত এমন ব্যাখ্যা এড়াতে চায় যা রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের দিকে ঠেলে দেয়, যদি না আইনের ভাষা স্পষ্টভাবে সেই ব্যতিক্রম নির্দেশ করে।<ref>R. Sullivan, ''Sullivan and Driedger on the Construction of Statutes'' (4th ed. 2002), at p. 422.</ref>
সুপ্রিম কোর্ট অফ কানাডা ''বেকার বনাম কানাডা'' মামলায় ''আইন নির্মাণের উপর ড্রাইডগার'' থেকে নিম্নলিখিত বক্তব্য গ্রহণ করে এই নীতিটি ব্যাখ্যা করেছে:
"সংসদ আন্তর্জাতিক আইনে নিহিত মূল্যবোধ ও নীতিমালার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলে ধরে নেওয়া হয়, তা সে প্রচলিত হোক বা চুক্তিভিত্তিক। এসব আন্তর্জাতিক মূল্যবোধই সেই প্রেক্ষাপট তৈরি করে যার মধ্যে আইন প্রণীত ও ব্যাখ্যা করা হয়। অতএব, যতদূর সম্ভব, এমন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য যা এসব মূল্যবোধ ও নীতিমালার প্রতিফলন ঘটায়।”<ref>''Baker v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 1999 CanLII 699 (SCC), [1999] 2 SCR 817, par. 70, <http://canlii.ca/t/1fqlk#par70>, retrieved on 2020-12-22.</ref>
==== আইআরপিএ-এর ব্যাখ্যায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলসমূহ নির্ধারক ভূমিকা পালন করে, যদি পরিষ্কারভাবে ভিন্ন কোনো আইনগত অভিপ্রায় না থাকে ====
আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ) উপরের সাধারণ ব্যাখ্যাগত নীতির চেয়েও অগ্রসর। আইআরপিএ-এর যেকোনো ধারা ব্যাখ্যার সময় কানাডার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে এবং তা যেখানে সম্ভব, আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। ''ডি গুজম্যান বনাম কানাডা'' মামলায় আদালত মন্তব্য করেন যে “shall be construed and applied in a manner that complies with …” বাক্যাংশটি বাধ্যতামূলক এবং এটি নির্দেশ করে যে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলসমূহ আইআরপিএ ব্যাখ্যায় শুধু প্রাসঙ্গিক নয়, বরং নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। ধারা ৩(৩)(এফ)-এ বলা হয়েছে যে আইনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ হতে হবে আন্তর্জাতিক দলিলসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে—যদি পরিষ্কারভাবে তার বিপরীত কোনো আইনগত অভিপ্রায় না থাকে।<ref>''De Guzman v. Canada (Minister of Citizenship & Immigration),'' [2005] F.C.J. No. 2119 at para. 75 (F.C.A.).</ref> বিচারপতি বাস্তারাচে ''পুষ্পনাথন'' মামলায় মন্তব্য করেন যে, "ব্যক্তিগত ধারাগুলোর ব্যাখ্যার পেছনে মানবাধিকার সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ও প্রাধান্যপ্রাপ্ত উদ্দেশ্যই মূল প্রেক্ষাপট।"<ref>''Pushpanathan v Canada (Minister of Citizenship and Immigration)'', [1998] 1 SCR 982 (Supreme Court of Canada).</ref>
তবে, আইআরপিএ-এর যেসব ধারা দ্ব্যর্থহীন, সেগুলো কার্যকর করতেই হবে, এমনকি তা কানাডার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার পরিপন্থী হলেও।<ref>''Németh v. Canada (Justice),'' 2010 SCC 56, [2010] 3 S.C.R. 281 at para. 35.</ref> অন্যভাবে বললে, আইন এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে তা কানাডা স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক দলিলসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, “যদি না আধুনিক ব্যাখ্যাগত পদ্ধতিতে তা অসম্ভব হয়ে পড়ে।”<ref>''Freeman v. Canada (Citizenship and Immigration),'' 2024 FC 1839 (CanLII), at para 26, <https://canlii.ca/t/k7zf1#par26>, retrieved on 2024-12-07.</ref>
Sharryn Aiken প্রমুখ ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary'' গ্রন্থে লেখেন, আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ) অভিবাসী অধিকারকর্মীদের মধ্যে অনেক আশার সঞ্চার করেছিল, কারণ এতে বলা হয়েছিল যে এই আইনকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যাতে তা “কানাডা স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলসমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।” তারা মনে করেন, এই বিধানটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিতে সরাসরি প্রবেশের একটি সম্ভাব্য সংক্ষিপ্তপথ খুলে দেয়।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: 1772556319, at page 307.</ref> তবে, ''ডি গুজম্যান বনাম কানাডা'' মামলায় ফেডারেল কোর্ট অব অ্যাপিলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে লেখকরা উপসংহারে পৌঁছান যে, “''de Guzman'' সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে যে ধারা ৩(৩)(এফ)-কে শুধু কানাডীয় আইনের প্রতিফলন হিসেবে দেখতে হবে এবং এটি প্রকৃতপক্ষে ব্যাখ্যাগত কাঠামোতে নতুন কিছু যোগ করে না।”<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: 1772556319, at page 309.</ref>
তবে, আদালত রায় দিয়েছে যে এই বিধানটির একটি প্রভাব হলো অভিবাসন বিচারকদের প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক আইন বিবেচনায় নিতে বাধ্য করা, যার মধ্যে ''ফেরত না দেওয়া'' নীতিও অন্তর্ভুক্ত, তা দলগুলোর পক্ষ থেকে উত্থাপিত না হলেও।<ref>''Canada (Public Safety and Emergency Preparedness) v. Weldemariam,'' 2024 FCA 69 (CanLII), at para 52, <https://canlii.ca/t/k419v#par52>, retrieved on 2024-06-12.</ref>
==== কানাডা যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সদস্য, তা অনুমোদন করুক বা না-করুক, তাদের প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়া উচিত ====
''ডি গুজম্যান বনাম কানাডা'' মামলায় আদালত মন্তব্য করে যে, ৩(৩)(এফ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত আন্তর্জাতিক আইনের উৎসগুলোর মধ্যে কিছু এমন আছে যেগুলো আন্তর্জাতিক আইনে কানাডার জন্য বাধ্যতামূলক এবং কিছু এমন আছে যেগুলো নয়। এই অনুচ্ছেদটি তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেসব চুক্তিতে কানাডা স্বাক্ষর করেছে। আন্তর্জাতিক আইনে, কোনো রাষ্ট্র একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও সেটি বাধ্যতামূলক হয় না, যতক্ষণ না তা অনুমোদন করা হয়, যদি না সংশ্লিষ্ট চুক্তিতে উল্লেখ থাকে যে স্বাক্ষরের মাধ্যমেই তা বাধ্যতামূলক। সাধারণভাবে, স্বাক্ষর মানে হলো ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক করার ইচ্ছার প্রকাশ, যদিও তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ার একটি বাধ্যবাধকতাও আরোপ করতে পারে। <ref>''De Guzman v. Canada (Minister of Citizenship & Immigration),'' [2005] F.C.J. No. 2119 at para. 76 (F.C.A.).</ref>
আন্তর্জাতিক আইনে কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষরের একটি নির্দিষ্ট অর্থ আছে, যা সাধারণত সেই চুক্তির সদস্য হওয়ার পূর্ববর্তী একটি ধাপ। ''চুক্তি সম্পর্কিত ভিয়েনা'' কনভেনশনের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যখন কোনো রাষ্ট্র একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বা অনুমোদন, গৃহীত বা অনুমোদনের শর্তসাপেক্ষে চুক্তি গঠনের জন্য দলিল বিনিময় করে, তখন সে চুক্তির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ব্যাহত করে এমন কোনো কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার বাধ্যবাধকতা থাকে, যতক্ষণ না সে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে সে ঐ চুক্তির পক্ষ হতে চায় না...”।<ref name=":132" />
তবে এটি স্পষ্ট যে, এই বিধানে যেসব দলিলের কথা বলা হয়েছে, তা শুধুমাত্র সেই দলিলগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় যেগুলিতে কানাডা স্বাক্ষর করেছে কিন্তু অনুমোদন করেনি। কানাডার সুপ্রিম কোর্ট উল্লেখ করেছে যে, শরণার্থী সংক্রান্ত কনভেনশন নিজেই এমন একটি দলিল যা এই বিধানের আওতায় পড়ে। দেখুন:[[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থী ব্যবস্থা মানবাধিকারের ধারণার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত]]।
যেসব ক্ষেত্রে কানাডা চুক্তি অনুমোদনের সময় কোনো সংরক্ষণ বা ব্যাখ্যামূলক ঘোষণা দিয়েছে, সেই ক্ষেত্রে নির্ভুলভাবে কী কী বাধ্যবাধকতা কানাডা গ্রহণ করেছে, তা বিবেচনায় রাখা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা ''প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন'' অনুমোদন করেছে, তবে ১২ নম্বর অনুচ্ছেদে একটি সংরক্ষণ এবং ব্যাখ্যামূলক ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে “উপযুক্ত পরিস্থিতিতে এবং উপযুক্ত ও কার্যকর সুরক্ষা শর্তসাপেক্ষে” বিকল্প সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যবস্থার ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার অধিকার সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। <ref>United Nations Treaty Series, “15. Convention on the Rights of Persons with Disabilities,” vol. 2515, <nowiki>https://treaties.un.org/doc/Publication/MTDSG/Volume%20I/Chapter%20IV/IV-15.en.pdf</nowiki> (accessed May 15, 2021), p. 4.</ref>
==== কানাডা যেসব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সদস্য? ====
ফেডারেল আপিল আদালত উল্লেখ করেছে যে আইআরপিএ “৩(৩)(এফ) অনুচ্ছেদের আওতায় যেসব ব্যবস্থা পড়ে, তাদের তালিকা দেয়নি, এমনকি তাদের পাঠ্যও দেয়নি।”<ref name=":82">''de Guzman v. Canada (Minister of Citizenship and Immigration),'' 2005 FCA 436 (CanLII), [2006] 3 FCR 655, par. 58, <http://canlii.ca/t/1m8q8#par58>, retrieved on 2020-12-22.</ref> তারা আরও উল্লেখ করেছে, "যেসব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে কানাডা স্বাক্ষর করেছে" — এই বাক্যাংশটি "স্বয়ং-পরিষ্কার নয়"।<ref name=":82" />
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে, শরণার্থী সংক্রান্ত কনভেনশন এই বিধানের আওতায় সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্তযোগ্য দলিলগুলোর মধ্যে একটি। দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#শরণার্থী ব্যবস্থা মানবাধিকারের ধারণার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত]]।
কানাডার বিচার বিভাগ “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি যার কানাডা একটি পক্ষ” শিরোনামে একটি তালিকা প্রদান করে, যা এই বিধানের ব্যাখ্যা দানে সহায়ক হতে পারে:<ref>Government of Canada Department of Justice, ''International Human Rights Treaties to which Canada is a Party'', Date modified: 2019-07-30, <https://www.justice.gc.ca/eng/abt-apd/icg-gci/ihrl-didp/tcp.html> (Accessed April 17, 2020).</ref>
* গণহত্যা প্রতিরোধ ও দমন সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৫২)
* জাতিগত বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন (১৯৭০)
* অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (১৯৭৬)
* নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) (১৯৭৬)
** আইসিসিপিআর-এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল (অভিযোগ প্রক্রিয়া) (১৯৭৬)
** আইসিসিপিআর-এর দ্বিতীয় ঐচ্ছিক প্রোটোকল, মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির লক্ষ্যে (২০০৫)
* নারী প্রতি সকল ধরনের বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত কনভেনশন (সিডও) (১৯৮১)
** সিডও-এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল (অভিযোগ প্রক্রিয়া) (২০০২)
* নির্যাতন ও নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অপমানজনক আচরণ বা শাস্তি বিরোধী কনভেনশন (১৯৮৭)
* শিশু অধিকার কনভেনশন (সিআরসি) (১৯৯১)
** সশস্ত্র সংঘর্ষে শিশুদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত সিআরসি-এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল (২০০০)
** শিশু বিক্রি, শিশু যৌনপল্লী এবং শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত সিআরসি-এর ঐচ্ছিক প্রোটোকল (২০০৫)
* প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (২০১০)
** এই কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকল (২০১৮)
উপরের তালিকায় আরও কিছু চুক্তি যুক্ত করা যেতে পারে, যেমন:
* দাসপ্রথা সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯২৬)<ref>{{Cite web|title=United Nations Treaty Collection|url=https://treaties.un.org/pages/ViewDetails.aspx?src=TREATY&mtdsg_no=XVIII-3&chapter=18&clang=_en|access-date=2024-12-27|website=treaties.un.org|language=EN}}</ref>
* নারীর রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৫৩)
* রাষ্ট্রহীনতা হ্রাস সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৫৪)
* বিবাহিত নারীর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৫৭)
* আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর কনভেনশন:
** সংগঠনের স্বাধীনতা ও সংগঠন প্রতিষ্ঠার অধিকারের সুরক্ষা (নং ৮৭) (১৯৪৮)
** সমমূল্যের কাজের জন্য পুরুষ ও নারীদের সম বেতন (নং ১০০) (১৯৫১)
** জোরপূর্বক শ্রম বিলোপ সংক্রান্ত (নং ১০৫) (১৯৫৭)
** কর্মসংস্থানে বৈষম্য বিরোধী (নং ১১১) (১৯৫৮)
** কর্মসংস্থান নীতিমালা সংক্রান্ত (নং ১২২) (১৯৬৪)<ref>{{Cite web|title=Canada & The UN: Conventions And Treaties|url=https://ccla.org/get-informed/talk-rights/canada-the-un-conventions-and-treaties/|access-date=2024-12-27|website=CCLA|language=en-CA}}</ref>
** শিশুশ্রমের নিকৃষ্টতম রূপ সম্পর্কে কনভেনশন (নং ১৮২)
** ন্যূনতম বয়স সংক্রান্ত কনভেনশন (নং ১৩৮)
* আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধি
* নারীদের ও শিশুদের পাচার প্রতিরোধ ও দমন সংক্রান্ত প্রোটোকল
“আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিল” শব্দগুচ্ছের ব্যাখ্যায় আন্ত-আমেরিকান অঞ্চলভুক্ত দলিলগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত ধরা যেতে পারে, যেগুলোতে কানাডা স্বাক্ষর করেছে। কানাডা যদিও ''আমেরিকান মানবাধিকার'' কনভেনশনের সদস্য নয়, তবে ''আমেরিকান ডিক্লারেশন অফ দ্য রাইটস অ্যান্ড ডিউটিজ অফ ম্যান'' ("আমেরিকান ঘোষণা")-এর আওতায় পড়ে।<ref>Sharryn Aiken, et al, ''Immigration and Refugee Law: Cases, Materials, and Commentary (Third Edition)'', Jan. 1 2020, Emond, ISBN: 1772556319, at page 320.</ref> এই দলিলে প্রতিটি ব্যক্তির মৌলিক অধিকার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং আমেরিকান রাষ্ট্রগুলোর সংস্থা হিসেবে কানাডা এসব অধিকার রক্ষা করতে বাধ্য। ওএএস সনদ এবং আমেরিকান ঘোষণা কানাডার জন্য প্রযোজ্য আইনি বাধ্যবাধকতার উৎস।<ref>IACtHR, Advisory Opinion OC-10/89 of July 14, 1989...</ref>
কানাডা আরও কয়েকটি আন্তঃআমেরিকান মানবাধিকার চুক্তি অনুমোদন করেছে, যেমন:
* নারীদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কনভেনশন (১৯৩৪)<ref>{{Cite web|title=Convention on the Nationality of Women|url=http://hrlibrary.umn.edu/instree/uruguay1933.html|access-date=2024-12-27|website=hrlibrary.umn.edu}}</ref>
* নারীদের রাজনৈতিক অধিকার প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃআমেরিকান কনভেনশন<ref>...OASTS No 3...</ref>
* নারীদের নাগরিক অধিকার প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃআমেরিকান কনভেনশন<ref>...OASTS No 23...</ref>
''জেনেভা কনভেনশন'' ১, ২, ৩ ও ৪ এবং প্রোটোকল ১, ২ ও ৩-ও এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের বিষয়ে আরও ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়া, কানাডার ''আদিবাসীদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র আইন''-এর কথাও বিবেচনায় রাখা যেতে পারে, যা ঘোষণা দেয় যে "এই ঘোষণাটি একটি সার্বজনীন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিল এবং এটি কানাডার আইনে প্রযোজ্য।"<ref>''United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples Act'', SC 2021, c 14, s 4...</ref>
আইআরপিএ-কে এমনভাবে প্রয়োগ করার অন্যতম যৌক্তিক কারণ হলো — আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ‘interim measures requests’ পাঠানো হলে, যাতে বিদেশি নাগরিকদের বহিষ্কার স্থগিত রাখা যায়, মন্ত্রী সেটি বিবেচনা করতে পারেন। এইরকম অনুরোধ পাঠানোর অধিকার রয়েছে চারটি আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে, যেগুলোর সদস্য কানাডা:
* নারী প্রতি সকল বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত কনভেনশন
* নির্যাতন বিরোধী কনভেনশন
* নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি
* আমেরিকান ঘোষণা<ref>Ahouga, Y. (2024) “Legal and Policy Infrastructures of Returns in Canada...”</ref>
এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করার সময় আফ্রিকান মানবাধিকার ও জনগণের অধিকার সনদের আওতায় গঠিত আফ্রিকান আদালতের দৃষ্টান্ত বিবেচনায় রাখা যেতে পারে, যেখানে বলা হয়েছে যে, তারা কেবল তাদের গঠনতন্ত্র নয়, বরং যেসব মানবাধিকার দলিল সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রসমূহ অনুমোদন করেছে, তা-ও বিবেচনা করে।<ref>African Union, ''Protocol to the African Charter on Human and Peoples' Rights on the Establishment of an African Court on Human and Peoples' Rights''...</ref> আদালত ব্যাখ্যা দিয়েছে, কিছু দলিলে মানবাধিকার বিষয়ক ধারা রয়েছে, আবার কিছু ধারা মানবাধিকার সম্পর্কিত নয়।
উল্লিখিত কনভেনশনগুলোর অনেকগুলোর ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট যে আইআরপিএ-এর ব্যাখ্যা এই দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে; যেমন: নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনের একটি অংশ সরাসরি আইআরপিএ-তে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেখুন:[[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/২-৩ - সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য এবং আইআরপিএর প্রয়োগ]]।
এছাড়াও আইআরপিএ-তে "নন-রিফাউলমেন্ট" (ফেরত না দেওয়া) সংক্রান্ত বিধান এবং এই ধারণাটি কিভাবে উপরের কিছু দলিলের সাথে সম্পর্কিত, তা দেখুন:: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইআরপিএ ধারা ৩ (২) (ই) - ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি যা অখণ্ডতা বজায় রাখে এবং মানবাধিকার বজায় রাখে]]।
==== এই বিধানটি সই না-করা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সম্পর্কিত দলিল ও পাঠ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে ====
আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ) অনুযায়ী, আইনটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে তা কানাডা যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোতে স্বাক্ষরকারী, সেগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এই ব্যাখ্যার মাধ্যমে কিছু ধরণের দলিলের ব্যতিক্রম থাকা সম্ভব, যেমন:
* <u>যেসব দলিল মানবাধিকার সংক্রান্ত নয়, বরং মানবিক আইন সংক্রান্ত:</u> কানাডা জেনেভা কনভেনশন ১, ২, ৩, এবং ৪ এবং প্রোটোকল ১, ২, ও ৩-এ স্বাক্ষর করেছে। এসব দলিল শরণার্থী নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় প্রাসঙ্গিক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ''যুদ্ধের সময় বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষা সম্পর্কিত চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন (১৯৪৯)''-এর অনুচ্ছেদ ৪৫, প্যারাগ্রাফ ৪-এ বলা হয়েছে, কোনো সুরক্ষিত ব্যক্তিকে এমন দেশে পাঠানো নিষিদ্ধ যেখানে রাজনৈতিক মতামত বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তার নির্যাতনের আশঙ্কা থাকতে পারে।<ref>UNHCR, ''Refugee Protection: A Guide to International Refugee Law''</ref> তবে এই দলিলটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অংশ, মানবাধিকার আইনের নয়, ফলে আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ)-এর আওতায় না পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আন্তর্জাতিক আইন কমিশন সাধারণত এই দুইটি আইনের ক্ষেত্রকে পৃথক হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।<ref>International Law Commission, 2011</ref> কানাডার আইনে এসব কিভাবে বিবেচিত হয় তা জানতে দেখুন: ''জেনেভা কনভেনশন আইন''।<ref>''Geneva Conventions Act'', RSC 1985, c G-3, Schedule V, subsection 2(2)</ref>
* <u>যেসব দলিলে স্বাক্ষর করা হয়নি:</u> যেমন, ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র একটি চুক্তি নয়, বরং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি অননুগত্যযোগ্য, বাধ্যতামূলক নয় এমন (তবুও উচ্চাকাঙ্ক্ষী) প্রস্তাব।<ref>UNGA Res. 217A(III)</ref> ঘোষণাটির প্রস্তাবনাতে বলা হয়েছে, এটি একটি সাধারণ মান নির্ধারণের প্রচেষ্টা মাত্র, বাধ্যতামূলক নয়।<ref>Zimmermann, Oxford University Press, 2011</ref> ফলে যেহেতু দলিলটি স্বাক্ষরিত নয় এবং দেশগুলোকে এর স্বাক্ষরকারী বলা যায় না, তাই আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ)-এর আওতায় এটি পড়ে না।
* <u>প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন:</u> যদিও অন্যান্য ব্যাখ্যামূলক নীতিমালার মাধ্যমে কানাডিয়ান আইনকে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পড়া যায়, এই ধারা একা থেকে এমন ব্যাখ্যার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে না। যেমন, যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছে যে "ফেরত না দেওয়া নীতি সম্ভবত প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের অংশ", কিন্তু এই সত্য আইআরপিএ-এর এই ধারার জন্য প্রাসঙ্গিক নয়।<ref>R (AAA) v Secretary of State, [2023] UKSC 42</ref> তবে আরও দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা# সাধারণভাবে, কানাডায় আইন আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া উচিত|কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#সাধারণভাবে, কানাডায় আইন আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া উচিত]]।
==== শরণার্থী ব্যবস্থা মানবাধিকারের ধারণার সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে যুক্ত ====
আইনের ধারা ৩(৩)(এফ) অনুযায়ী, এটি এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে হবে যাতে তা কানাডা যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলগুলোতে স্বাক্ষরকারী, তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। কানাডার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে ''শরণার্থী কনভেনশন'' নিজেই একটি “মানবাধিকার দলিল”, আইআরপিএ-এর ধারা ৩(৩)(এফ)-এর অর্থে:
ধারা ৩(৩)(এফ) আদালতকে নির্দেশ দেয় ''আইআরপিএ''-কে এমনভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ করতে যাতে তা “কানাডা যেসব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে স্বাক্ষরকারী, সেগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ” হয়। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ''শরণার্থী কনভেনশন'' একটি মানবাধিকার দলিল, কারণ এটি অন্য দেশে আশ্রয় খোঁজার অধিকারকে কেন্দ্র করে গঠিত, যেমনটি মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের অনুচ্ছেদ ১৪-তে বলা হয়েছে।<ref>''B010 v. Canada'', 2015 SCC 58</ref>
তদ্ব্যতীত, ''শরণার্থীদের অবস্থা সম্পর্কিত প্রোটোকল''-কেও একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।<ref>''Canada v. Weldemariam,'' 2024 FCA 69</ref>
এটি অন্যান্য আদালতের ব্যবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কনভেনশনের প্রস্তাবনাতে বলা হয়েছে: “জাতিসংঘ বিভিন্ন সময়ে শরণার্থীদের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সর্বোচ্চভাবে নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়েছে।”<ref name=":44" /> অস্ট্রেলিয়ার হাই কোর্টের ব্রেনান সিজে মন্তব্য করেছেন, “প্রস্তাবনাটি কনভেনশনকে এমন একটি আন্তর্জাতিক দলিল হিসেবে স্থাপন করে যার উদ্দেশ্য প্রতিটি ব্যক্তির মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার সমান উপভোগ নিশ্চিত করা।”<ref>''Applicant A v Minister'', 1997</ref> ২০১৮ সালে আন্তঃআমেরিকান মানবাধিকার আদালত এক উপদেষ্টা মতামতে বলেছে, আশ্রয় একটি মানবাধিকার।<ref>Advisory Opinion OC-25/18</ref>
এটি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের অবস্থানের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইউএনএইচসিআর এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে যে ''শরণার্থী কনভেনশন'' মানবাধিকার আইনের অংশ এবং ঘোষণা দিয়েছে, “এই কনভেনশনের মানবাধিকারভিত্তি এটিকে মানবাধিকার দলিলগুলোর বিস্তৃত কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করে।”<ref>Hamlin, 2014</ref> হাই কমিশনার নিজে বলেছেন:
মানবাধিকার ও শরণার্থী সমস্যাগুলো এতটাই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত যে একটিকে অন্যটির উল্লেখ ছাড়া আলোচনা করা কঠিন। মানবাধিকার লঙ্ঘনই শরণার্থীর স্রোতের প্রধান কারণ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের পথে প্রধান বাধা। ইতিবাচকভাবে বলতে গেলে, মানবাধিকার রক্ষা করা সেই শর্ত তৈরি করে যার মাধ্যমে মানুষ শরণার্থী হতে বাধ্য হয় না; আশ্রয়প্রার্থী দেশেও মানবাধিকার রক্ষা শরণার্থীদের সুরক্ষার একটি মূল উপাদান; এবং মানবাধিকার মান বজায় রাখার উন্নত অবস্থা শরণার্থী সমস্যার সমাধানের পূর্বশর্ত।<ref>Sadako Ogata, 1993</ref>
একইভাবে, একাডেমিক ব্যাখ্যাগুলোও ''শরণার্থী কনভেনশন''-কে মানবাধিকার দলিল হিসেবে গণ্য করে। ম্যাকঅ্যাডাম যুক্তি দিয়েছেন, শরণার্থী আইন মানবাধিকার আইনের অন্তর্গত একটি বিশেষায়িত ক্ষেত্র।<ref>McAdam, 2010</ref> হাথওয়ে বলেছেন, শরণার্থীদের অধিকার হলো একটি উপায় যার মাধ্যমে মানবাধিকার সুরক্ষার সাধারণ কাঠামোর আওতায় নির্দিষ্ট দুর্বলতাগুলো সমাধান করা যায়। তিনি বলেন, “শরণার্থী অধিকার আলাদা কোনো কাঠামো নয়, বরং মানবাধিকার কাঠামোরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।”<ref>Hathaway, 2021</ref>
আইআরপিএ-এর এই বিধানটি ধারা ৩(২)(ই)-এর সাথে মিলিয়ে পড়তে হবে। সেখানে বলা হয়েছে, শরণার্থীদের প্রতি আইনটির উদ্দেশ্য হলো "মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা"। এই বিধানগুলো প্রমাণ করে, শরণার্থীদের দুর্দশা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত। শরণার্থী আইনজীবী ডেভিড মাতাসের কথায়, “শরণার্থীদের দুর্দশা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন দুটি আলাদা সমস্যা নয়, বরং একই সমস্যার দুটি দিক। মানবাধিকার লঙ্ঘনই গণপর্যায়ে দেশত্যাগের মূল কারণ।”<ref>David Matas, 1989</ref> দেখুন: [[কানাডায় শরনার্থী প্রক্রিয়া/শরণার্থী প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার নীতিমালা#আইআরপিএ ধারা ৩(২)(ই) - ন্যায্য এবং দক্ষ পদ্ধতি যা সততা বজায় রাখে এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখে]]।
সবশেষে, আশ্রয় প্রক্রিয়া মানবাধিকার-ভিত্তিক হলেও এটি অন্যান্য আইনের শাখার সাথেও সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের ভাষায়, আশ্রয়কে ইমিগ্রেশন আইনের একটি দিক হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই বিবেচনা করা যায়।<ref>R (AAA) v Secretary of State, [2023] UKSC 42</ref>
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
cgb3aubo7ish3fbymleuolm9zaprfxc
চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি
0
26201
85722
83564
2025-07-06T14:00:02Z
NusJaS
8394
85722
wikitext
text/x-wiki
যখন একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করে এবং শ্রেণিকক্ষের উপকরণ মুখস্থ করে, তখন সেই তথ্য কোথায় যায়? '''[[#glos_দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি|দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি]]''' শেখার ক্ষেত্রে একেবারে অপরিহার্য এবং গুরুত্বপূর্ণ, কারণ একজন শিক্ষার্থী যা কিছু শেখে, তা হয় স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি কিংবা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়। যদিও উভয় ধরনের স্মৃতিই তথ্য সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবুও এরা মানুষের শেখার ধরন, উপলব্ধি এবং অর্থ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। শেখা ও স্মৃতি একে অপরকে অবিরত প্রভাবিত করে, যেমন পূর্বের অভিজ্ঞতা বা পূর্বজ্ঞান নতুন কোনো বিষয় শেখাকে আরও সহজ করে তোলে। এই অধ্যায়ে, আমরা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান, কার্যকারিতা এবং কাঠামো আলোচনা করব, যা মূলত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ মডেল ভিত্তিক। আমরা এই কাঠামোটিকে জ্ঞানের সঙ্গে সংযুক্ত করব এবং বিশ্লেষণ করব কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে, সেখানে সংরক্ষিত হয় এবং পুনরুদ্ধার করা যায়। সর্বশেষে, আমরা নতুন ও প্রচলিত কিছু মডেল তুলে ধরব, যেগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।
==দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির গঠন ও কার্যকারিতা==
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির ধারণক্ষমতা অসীম এবং স্থায়ী বলে মনে করা হয়, যেখানে একজন মানুষ জীবদ্দশায় যত রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সবই সংরক্ষিত থাকতে পারে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি থাকা আবশ্যক। এটি কীভাবে কাজ করে, এর গঠন ও প্রক্রিয়া বোঝা শিক্ষার্থীদের নিজের শেখা আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়।
আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময়ে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ তথ্য থাকে এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতির (যা অন্য একটি অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে) মতো এটি টিকিয়ে রাখার জন্য ক্রমাগত অনুশীলন বা পুনরাবৃত্তি প্রয়োজন হয় না। এখানে সংরক্ষিত তথ্য '''[[#glos_স্মরণ|স্মরণ]]''' অথবা '''[[#glos_পুনর্গঠন।|পুনর্গঠন]]''' করা হয়, পুনরাবৃত্তি নয়। দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে সাধারণত তিনটি জ্ঞানের বিভাগে ভাগ করা হয়: '''[[#glos_declarative knowledge|ঘোষণামূলক জ্ঞান]]''', '''[[#glos_প্রক্রিয়াগত জ্ঞান|প্রক্রিয়াগত জ্ঞান]]''', এবং '''[[#glos_শর্তাধীন জ্ঞান|শর্তাধীন জ্ঞান]]'''।
ঘোষণামূলক জ্ঞান (বা '''[[#glos_শব্দার্থিক স্মৃতি|শব্দার্থিক]]''' জ্ঞান) হলো এমন তথ্য যা আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি। অন্যদিকে প্রক্রিয়াগত জ্ঞান হলো এমন দক্ষতা ও প্রক্রিয়া যা আমরা অনায়াসে সম্পাদন করতে পারি, কিন্তু স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি না (পরবর্তী অংশে উৎপাদন নিয়ম এবং ACT-R তত্ত্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে)। শর্তাধীন জ্ঞান বোঝায়, কখন ঘোষণামূলক ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞান প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানা।
{| class="wikitable"
!ঘোষণামূলক জ্ঞান
!প্রক্রিয়াগত জ্ঞান
!শর্তাধীন জ্ঞান
|-
|মোবাইল ফোন একটি পোর্টেবল টেলিফোন।
|ফোন কল করতে জানা।
|কখন ফোন রিসিভ বা কেটে দিতে হয়।
|-
|গাড়ির সাধারণত চারটি চাকা থাকে।
|গাড়ি চালাতে জানা।
|কখন সিটবেল্ট বাঁধতে বা খোলার দরকার।
|}
চিত্র ১: ঘোষণামূলক, প্রক্রিয়াগত এবং শর্তাধীন জ্ঞানের উদাহরণ
==জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান==
“জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান” বলতে এমন পাঁচটি মানসিক কাঠামো বোঝানো হয় যা অনেক তাত্ত্বিকদের মতে একত্রে কাজ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত সকল মানসিক কাঠামো ও তথ্যের ভিত্তি গঠন করে।<ref name=“Bruning”>Bruning, R., & Schraw, G. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.). Pearson Education</ref> মূলত, এগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান। যদিও অনেকগুলো উপাদানের মাঝে মিল থাকতে পারে, প্রতিটির কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। প্রথম তিনটি উপাদান ঘনিষ্ঠভাবে ঘোষণামূলক জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, আর শেষ দুটি সাধারণত প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref name=“Bruning” />
===[[#glos_ধারণা|ধারণা]]===
<u>ধারণা কী?</u> ধারণা হলো এমন মানসিক গঠন, যার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাদানকে অর্থবোধক ছোট ছোট ভাগে ভাগ করি এবং শ্রেণিবদ্ধ করি, যা নতুন তথ্য বুঝতে সাহায্য করে।<ref name=“Bruning” /> এগুলোকে বলা হয় “শব্দার্থিক জ্ঞানের অংশবিশেষ”, যেগুলো তথ্য স্মরণ করার সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো সাধারণত ঘোষণামূলক জ্ঞানের আওতায় পড়ে।<ref name=“Khajah”>Khajah, M. M., Lindsey, R. V., & Mozer, M. C. (2014). Maximizing students' retention via spaced review: Practical guidance from computational models of memory. Topics in Cognitive Science, 6(1), 157-169. doi:10.1111/tops.12077</ref>
যেমন, "বিড়াল" সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে বলা যায় এটি এমন এক প্রাণীশ্রেণি যাদের গঠন, আকার ও আচরণে মিল থাকে: তারা ছোট, লোমযুক্ত এবং ‘ম্যাও’ শব্দে যোগাযোগ করে। তাদের রঙ হতে পারে সাদা, কালো, বাদামি ইত্যাদি; আবার তারা গৃহপালিত বা বন্য হতে পারে। তবুও, এরা সবাই "বিড়াল" শ্রেণির মধ্যে পড়ে।
বহুল পরিচিত বা সাধারণ ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি ধারণাকে বলা হয় '''[[#glos_প্রোটোটাইপ|প্রোটোটাইপ]]'''।<ref name="“Bruning”" /> যেমন, উত্তর আমেরিকার একটি আদর্শ বাস্কেটবল লিগের প্রোটোটাইপ হতে পারে “ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (NBA)”।
<u>ধারণা গঠনের উপায় কী?</u> ধারণা গঠনের প্রধান দুটি তত্ত্ব আছে। প্রথমত, কেউ কেউ মনে করেন ধারণা হলো মস্তিষ্কের বিমূর্ত মানসিক গঠন, যেগুলো ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক পদ্ধতির থেকে আলাদাভাবে গঠিত হয়।<ref name="“Bonner”" /> অন্যদিকে, fMRI এর মতো নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ধারণা তৈরি হয় ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক উপাদানের সঙ্গে মিলিয়ে, এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সেগুলো বহু-মাত্রিকভাবে সংরক্ষিত হয়।<ref name="“Bonner”" />
আমরা আমাদের ধারণাকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করি: পদার্থ, প্রক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থা।<ref name=":4">Chi, M.T.H., de Leeuw, N., Chiu, M., & La Vancher, C. (1994). Eliciting self-explanations improves understanding. ''Cognitive Science, 18,'' 439-477.</ref> যেমন, “প্রক্রিয়া” বলতে বোঝায় এমন এক ধারাবাহিক ঘটনা যা থেকে আমরা নির্দিষ্ট ফল প্রত্যাশা করি, যেমন—কিছু ফেলে দিলে তা মাধ্যাকর্ষণজনিত কারণে পড়ে যাবে। “মানসিক অবস্থা” বোঝায় এমন অভ্যন্তরীণ অনুভূতি বা আবেগ, যেমন—দুঃখিত, খুশি বা অনিশ্চিত বোধ করা।
<u>ধারণা তৈরির কৌশল</u> সম্পর্কে তিনটি স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে: (১) সংরক্ষণশীল মনোযোগ কৌশল (conservative focusing), যেখানে ব্যক্তি প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য দেখে সঠিক উদ্দীপনা নির্বাচন করে।<ref>Bruner, J.S., Goodnow, J.J., & Austin, G.A. (1956). ''A study of thinking.'' New York, NY: Wiley</ref> (২) মনোযোগ গেম্বলিং কৌশল (focus gambling), যেখানে ব্যক্তি একবারে সব বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এটা দ্রুত কাজ করে, ভুলের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এবং (৩) স্ক্যানিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একাধিক অনুমান একসঙ্গে পরীক্ষা করে দেখে। এই পদ্ধতিও দ্রুত, কিন্তু মানসিক চাপ বেশি হওয়ায় মনে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।<ref name="“Bruning”" />
===প্রস্তাবনা ===
প্রস্তাবনা এমন মানসিক ধারণা যা দিয়ে ভাষাগত তথ্য এবং অধিকাংশ ঘোষণামূলক জ্ঞান সংরক্ষিত হয় বলে তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন।<ref name=“Bruning” /> প্রস্তাবনা হলো সবচেয়ে ছোট মানসিক বিবৃতি যা অর্থ বহন করে, তবে ধারণার তুলনায় আরও জটিল, কারণ এটি একাধিক ধারণার ভিত্তিতে গঠিত হয় এবং সেগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নির্দেশ করে।<ref name="Remue">Remue, J., De Houwer, J., Barnes-Holmes, D., Vanderhasselt, M., & De Raedt, R. (2013). Self-esteem revisited: Performance on the implicit relational assessment procedure as a measure of self- versus ideal self-related cognitions in dysphoria. Cognition and Emotion, 27(8), 1441-1449. doi:10.1080/02699931.2013.786681</ref> একটি প্রস্তাবনাকে সত্য বা মিথ্যা হিসেবে বিচার করা যায়।<ref>Anderson, J.R. (2005). ''Cognitive psychology and its implications'' (6th ed.). New York: Worth</ref>
উদাহরণ: “লুক মেয়াদোত্তীর্ণ টিকিট কিনেছে।”
১. লুক টিকিট কিনেছে। (ঘটনাটি অতীতে ঘটেছে।)
২. টিকিটটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এই দুটি প্রস্তাবনা মিলিয়ে একটি “প্রস্তাবনামূলক নেটওয়ার্ক” তৈরি হয় যা নির্দিষ্ট তথ্য স্মরণ বা '''[[#glos_পুনরুদ্ধার|পুনরুদ্ধার]]''' করার সময় সক্রিয় হয়।
===[[#glos_স্কিমাটা|স্কিমাটা]]===
<u>স্কিমাটা কী?</u> স্কিমাটা হলো এমন মানসিক কাঠামো যা একজন ব্যক্তির সাধারণ কারণ ও ফলাফলের জ্ঞানকে উপস্থাপন করে।<ref name="Jui">Jui-Pi Chien. (2014). Schemata as the primary modelling system of culture: Prospects for the study of nonverbal communication. Sign Systems Studies, 42(1), 31-41. doi:10.12697/SSS.2014.42.1.02</ref> আমরা যে কোনও জ্ঞান অর্জন করি, তা স্কিমার মাধ্যমে সংগঠিত হয় এবং এটি তথ্যের এনকোডিং, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দায়ী।<ref name=“Bruning” /> স্কিমাটা গঠিত হয় বাহ্যিক পরিবেশ ও পূর্বজ্ঞান একত্রে কাজ করে।<ref name="Le"> Le Grande, M. R., Elliott, P. C., Worcester, M. U. c., Murphy, B. M., Goble, A. J., Kugathasan, V., et al. (2012). Identifying illness perception schemata and their association with depression and quality of life in cardiac patients. Psychology, Health & Medicine, 17(6), 709-722. doi:10.1080/13548506.2012.661865 </ref> ডানদিকে প্রদত্ত চিত্রটি "স্তন্যপায়ী প্রাণীর জ্ঞান" সংক্রান্ত একটি স্কিমার উপস্থাপন হতে পারে।
[[File:Schema111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Schema111.jpg|থাম্ব|চিত্র ২. স্কিমাটা: স্তন্যপায়ী প্রাণী সম্পর্কে জ্ঞান]]
স্কিমাটাকে '''স্ক্যাফোল্ডিংয়ের''' মানসিক সমতুল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অন্য কথায়, আমরা যে স্কিমাটা গঠন করি তা আমাদের জন্য সহায়তা প্রদান করবে যখন আমরা নিজেদেরকে উপন্যাসের পরিস্থিতিতে খুঁজে পাই বা নতুন তথ্য শিখি।<ref name="Sternberg & Sternberg, 2012">Sternberg, R. J., & Sternberg, K. (2012). Cognitive psychology (6th ed.). Belmont, CA: Wadsworth.</ref>
স্কিমাটা কীভাবে গঠিত হয়? একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাক-বিদ্যমান স্কিম্যাটিক জ্ঞান রাখা নতুন এনকোডেড তথ্য স্মরণ করার চেষ্টা করার সময় নতুন তথ্য ধরে রাখার উন্নত স্মৃতির সাথে যুক্ত হয়েছে।<ref name="van">van Kesteren, Marlieke T. R., Rijpkema, M., Ruiter, D. J., Morris, R. G. M., & Fernàndez, G. (2014). Building on prior knowledge: Schema-dependent encoding processes relate to academic performance. Journal of Cognitive Neuroscience, 26(10), 2250-2261. doi:10.1162/jocn_a_00630</ref> এটি ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়। কারণ এটি নতুন তথ্যকে মস্তিষ্কে (এবং এইভাবে সক্রিয় স্কিমাতে) আরও দ্রুত একীভূত করার অনুমতি দেয়।<ref name="van" /> আমাদের স্কিমাতে এনকোড করা তথ্যগুলো স্লট হিসাবে পরিচিত যা সাজানো হয়; নির্দিষ্ট মানসিক "বিভাগগুলো"। এর মধ্যে আমাদের জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এটি সামগ্রিকভাবে কীভাবে অনুভূত হয়।<ref name="“Bruning”" /> যখন একটি স্কিমাটা বিকশিত হয়েছে এবং ঘটনা বা ধারণাগুলোর একটি সাধারণ ঘটনা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, তখন এটি সম্ভবত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি অংশ হয়ে উঠবে যেখানে এটি আমাদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যতের কোনও স্কিম্যাটিক তথ্যের ভিত্তি হিসাবে কাজ করতে থাকবে যা এনকোড করা যেতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> এই প্রক্রিয়াটিকে স্কিম্যাটিক ইনস্ট্যান্টিয়েশন বলা হয়।<ref>Rumelhart, D.E. (1981). The building blocks of cognition. In J.T Guthrie (Ed.), ''Comprehension and teaching: Research reviews'' (pp. 3-26). Newark, DE: International Reading Association.</ref>
=== প্রোডাকশন ===
প্রোডাকশন হলো "যদি-তারপর" বিবৃতি যা কর্মের নিয়মগুলোর একটি সেট হিসাবে কাজ করে। এটি আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানকে পরিচালনা করে।<ref name=":0">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref> এখানে যদি-তারপর প্রোডাকশনর একটি উদাহরণ: "যদি ট্র্যাফিক লাইট সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়। তবে ধীর হয়ে যান"। প্রোডাকশনগুলো তাত্ক্ষণিক, স্বয়ংক্রিয় মানসিক ধারণা যা ঘটনাগুলোর একটি সাধারণ ক্রমের পুনরাবৃত্তিমূলক এক্সপোজারের পরে মানুষের দ্বিতীয় প্রকৃতি হতে শেখা হয়। তারা এই ইভেন্টগুলোর জন্য উৎপাদন বিধি এবং প্রত্যাশার একটি সেট সরবরাহ করে এবং প্রস্তাবগুলোর মতো, উৎপাদন নেটওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত ইন্টারেক্টিভ গ্রুপগুলোতে সংগঠিত হয়। প্রায়ই একটি উৎপাদন সক্রিয় করে, অন্যান্য প্রোডাকশনগুলো ট্রিগার করা হবে, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া এবং ক্রিয়াগুলোর একটি সিরিজে প্রতিক্রিয়া জানায়। পরবর্তী বিভাগটি স্মৃতির তত্ত্ব হিসাবে উৎপাদন এবং উৎপাদন বিধিগুলোর আরও বিশদ আলোচনা সরবরাহ করে।
=== স্ক্রিপ্ট ===
[[File:Script111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Script111.jpg|থাম্ব|চিত্র ৩. হোটেলে চেক-ইন করার জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট]]
স্ক্রিপ্ট হলো মানসিক ধারণা যা আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানের অন্তর্নিহিত কাঠামো হিসাবে কাজ করে। এটি সাধারণত সম্মত হয় যে স্ক্রিপ্টগুলো আমাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের সামাজিক বোঝার জন্য অত্যাবশ্যক, এবং মূলত সামাজিক পরিস্থিতি এবং ঘটনাগুলো পরিচালনা করে এমন তথ্য সরবরাহ করার জন্য কাজ করে, বিশেষত কে কী করে, কখন তারা এটি করে, কার কাছে তারা এটি করে এবং কেন। হোটেলে চেক ইন করার মতো অনেক ধরণের ইভেন্টে লোকেরা স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে। স্ক্রিপ্টগুলো সময়ের সাথে সাথে এবং পুনরাবৃত্ত ইভেন্টগুলোর ক্রমাগত এক্সপোজারের সাথে বিকাশ লাভ করে যা সমস্ত মূলত প্রকৃতির অনুরূপ।<ref name="T">Trillingsgaard, A. (1999). The script model in relation to autism. European Child & Adolescent Psychiatry, 8(1), 45. Retrieved from http://search.ebscohost.com/login.aspx?direct=true&db=aph&AN=4689586&site=ehost-live</ref> উদাহরণস্বরূপ, সময়ের সাথে সাথে কোনও হোটেলে কীভাবে চেক ইন করবেন সে সম্পর্কে আপনি নিজের স্ক্রিপ্টটি বিকাশ করতে পারেন এবং এটি আপনাকে সংগঠিত করতে, জিনিসগুলো মনে রাখতে, পাশাপাশি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য আসন্ন ইভেন্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়তা করতে পারে। ডানদিকের চিত্রটি হোটেলের চেক-ইনের জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট।
=== নির্দেশনার জন্য এই বিল্ডিং ব্লকের প্রভাব ===
সমস্ত শিক্ষাবিদদের (বর্তমানে নিযুক্ত এবং ভবিষ্যতে একইভাবে) এটি নিশ্চিত করা অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে তারা জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লকগুলোর প্রতিটি পৃথক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞানী এবং কীভাবে এই সমস্ত মানসিক ধারণাগুলো শেখার সুবিধার্থে একসাথে কাজ করে, জ্ঞান এবং বিকাশ, পুনরুদ্ধার এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ছাড়াও। এটি করার মাধ্যমে, তারা নিশ্চিত করতে পারে যে তাদের সমস্ত শিক্ষার্থী এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলো পুরোপুরি ব্যবহার করছে (যেমন পূর্ববর্তী প্রোডাকশনগুলো সক্রিয় করার জন্য নতুন পাঠ্যক্রমের আগে "পর্যালোচনা পাঠ" শেখানোর মাধ্যমে, নতুন তথ্যের এনকোডিংয়ের সুবিধার্থে স্কিমাটা প্রস্তাব, পাশাপাশি পরে আরও সহজ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি) যাতে তাদের শিক্ষা থেকে সমস্ত সুবিধা কাটা যায়। এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলোর অভ্যন্তরীণ কাজগুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে, শিক্ষাবিদরা কীভাবে শেখার ঘটনা ঘটে এবং উপন্যাসের উদ্দীপনা এবং তথ্য এনকোড করার সময় কীভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তমভাবে সহায়তা করতে পারে তা আরও ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন।
== এনকোডিং: কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছায় এবং কীভাবে এটি সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করা হয় ==
এই বিভাগটি দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে সম্পর্কিত এনকোডিংয়ের দিকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা। এনকোডিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার জন্য, দয়া করে পরবর্তী অধ্যায়টি দেখুন।
=== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছানোর তথ্য: মোডাল মডেল ===
মোডাল মডেলটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মডেলগুলোর মধ্যে একটি যা বর্ণনা করে যে পরিবেশ থেকে তথ্য কীভাবে অনুভূত হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি পৌঁছানোর আগে জ্ঞানীয় ফাংশনগুলোর একটি সিরিজের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে। এটি একটি সাধারণ চিত্র যা সাম্প্রতিক গবেষণা আমাদের ইন্দ্রিয় থেকে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তরিত হওয়ার ক্রমটি একত্রিত করেছে, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে শেষ হয়। এই মডেলের উপর ভিত্তি করে, তথ্যটি তিনটি "নিম্ন" স্মৃতি সিস্টেমের প্রত্যেকটির মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা হবে বলে মনে করা হয়, প্রতিটি নিজস্ব পৃথক ফাংশন। এই মডেলটি বিভিন্ন স্মৃতি ফাংশন এবং প্রত্যেকের মধ্যে প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য সরবরাহ করে (এই মডেলের আরও বিশদ পরবর্তী বিভাগে স্মৃতির বিভিন্ন তত্ত্বের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে)।
=== তথ্য সংরক্ষণ ===
এনকোডিং হলো ওয়ার্কিং স্মৃতি থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া এবং কোনও কিছু কতটা ভালভাবে মনে রাখা হয় তার তাত্পর্যের। কারণে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীচে কয়েকটি বিভিন্ন এনকোডিং এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি রয়েছে যা সুপরিচিত এবং সুপরিচিত।
==== রিহার্সাল ====
মোডাল মডেলের কথা উল্লেখ করে, রিহার্সাল হলো প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে রাখা হয়, সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে। রক্ষণাবেক্ষণ রিহার্সাল সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তি এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য তথ্যের প্রক্রিয়া নিয়োগ করে (এটি মুখস্থ মুখস্থ হিসাবেও পরিচিত)। তবে এটি এনকোডিংয়ের আরও অগভীর পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হয়। কারণ তথ্যটি সাধারণত অল্প সময়ের জন্য সক্রিয় রাখা হয় এবং পুনরাবৃত্তি বন্ধ হয়ে গেলে বেশ দ্রুত ক্ষয় হয়। বিস্তৃত রিহার্সাল এনকোডিংয়ের আরও অর্থবহ পদ্ধতি, যেখানে পূর্বে শেখা তথ্যের সাথে সম্পর্কিত হয়ে শেখার তথ্যকে অর্থ দেওয়া হয়। যদিও রিহার্সালের এই রূপটি আরও জ্ঞানীয় সংস্থান ব্যবহার করে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার জন্য ভাল এবং গভীর এনকোডিং ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করে।<ref>Craik, F.I.M. (1979). Human memory. ''Annual Review of Psychology, 30'', 63-102.</ref>
==== এলাবোরেশন ====
বেশ কিছু বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল বিদ্যমান, যার সবকটিই নতুন তথ্য প্রক্রিয়াকরণ বা মনে রাখা সহজ করে তোলে। একটি সুপরিচিত এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল হল স্মৃতিবিদ্যা, একটি প্রক্রিয়া যা সুপরিচিত তথ্যের সাথে নতুন তথ্য একত্রিত করে আরও পরিশীলিত কোডিংকে জড়িত করে। এই কৌশলটি সাধারণত ছড়া, হাতের অঙ্গভঙ্গি, সংক্ষিপ্ত রূপ এবং আরও অনেক কিছু ব্যবহার করে।<ref name="“Bruning”" /> উদাহরণস্বরূপ, আপনি স্টেক, ডিম এবং রসুনের আপনার কেনাকাটার তালিকা মনে রাখার জন্য "SEG" সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে মধ্যস্থতা, আরও অর্থপূর্ণ কিছুর সাথে একটি নতুন তথ্যের টুকরো সংযুক্ত করার একটি সহজ কৌশল এবং চিত্রকল্প, যার মধ্যে মনে রাখার জন্য একটি অনুরূপ চিত্রকে একত্রিত করা জড়িত।[১]<ref name="“Bruning”" /> আপনি এই জিনিসগুলির কল্পনাও ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার বাড়ির মতো একটি পরিচিত জায়গার সাথে সম্পর্কিত। আপনার বসার ঘরের দরজা খোলার সময় রসুনের তীব্র গন্ধ, দরজার পাশে ফাটা ডিমের বাক্স এবং ডাইনিং টেবিলে রসালো স্টেকের টুকরো কল্পনা করুন। এই কৌশলটি ব্যবহার করে, আপনি আপনার বসার ঘর থেকে আপনার ডাইনিং রুমে একটি কাল্পনিক হাঁটা দিয়ে জিনিসগুলি মনে রাখতে পারেন।
==== সংশ্লিষ্ট তত্ত্ব ====
===== প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর =====
প্রভাবশালী গঠনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, বিশেষ করে ক্রেইক এবং লকহার্টের তত্ত্ব আজও তাৎপর্যপূর্ণ।<ref>Craik, F.I.M., & Lockhard, R.S. (1986). CHARM is not enough: Comments on Eich's model of cued recall. ''Psychological Review, 93,'' 360-364.</ref> তাদের প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর সবচেয়ে সুনামধন্য। এই তত্ত্ব অনুসারে, শিক্ষার্থীরা শেখা তথ্যের উপর জ্ঞানীয় বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় - এই প্রক্রিয়াগুলির পরে তথ্যের স্মৃতি স্বাভাবিকভাবেই ধরে রাখা হয়। যাইহোক, তথ্যের ধারণক্ষমতা মূলত প্রক্রিয়াজাতকরণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। তত্ত্ব অনুসারে, তথ্য যত গভীরভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং তথ্যের যত বেশি অর্থ দেওয়া হয়, ততই এটি ধরে রাখা যায়, অন্যদিকে আরও ভাসা ভাসা বিবরণের অগভীর প্রক্রিয়াকরণ তথ্যকে আরও দ্রুত ভুলে যাওয়ার প্রবণতা রাখে। <ref name="“Bruning”" />এটি তাত্ত্বিক এবং ব্যাপকভাবে প্রমাণিত যে জাগতিক কাজের চেয়ে আরও অর্থপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের শেখা তথ্য আরও ভালভাবে মনে রাখতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের এজেন্সি এবং পছন্দ প্রদানও ধরে রাখার জন্য উপকারী, কারণ জ্যাকবি এবং আরও অনেকের দ্বারা করা গবেষণা দেখায় যে কীভাবে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার (বিশেষ করে কঠিন সিদ্ধান্ত) কাজটি আরও বেশি মনে রাখে যদি তারা সহজ সিদ্ধান্ত নেয়, অথবা একেবারেই না নেয়।<ref name="“Bruning”" />
===== ডুয়াল কোডিং থিওরি =====
অ্যালান পাইভিও প্রস্তাবিত এই তত্ত্বটি যে জ্ঞান দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দৃশ্যত বা মৌখিকভাবে বা উভয়ই রাখা হয়।<ref name=":5">Paivio, A. (1986). ''Mental representations: A dual-coding approach.'' New York, NY: Oxford University Press.</ref> এটি কিছু পণ্ডিত এবং মনোবিজ্ঞানীদের দ্বারা সমর্থিত। তারা সম্মত হন যে যখন তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং চিত্রের পাশাপাশি মৌখিক আকারে সংরক্ষণ করা হয় তখন এটি বেশিরভাগ সহজেই মনে রাখা যায়। <ref>Butcher, K.R. (2006). Learning from text with diagrams: Promoting mental model development and inference generation. ''Journal of Educational Psychology, 98,'' 182-197.</ref> এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষাগত প্রভাবের জন্য, মস্তিষ্কের বৈশিষ্ট্য এবং অঞ্চলগুলো সম্পর্কে শেখার সময় পাঠ্য তথ্যের পাশাপাশি একটি মানব মস্তিষ্কের গ্রাফিক প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো সহায়ক হতে পারে। এই তত্ত্বটি রিচার্ড মেয়ারের ''কগনিটিভ থিওরি অফ মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের'' সাথে কিছুটা ভিত্তি ভাগ করে।<ref name=":6">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref> এটি পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।
===== মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব =====
রিচার্ড মায়ার চিত্র এবং শব্দের সংমিশ্রণগুলো অন্বেষণ করে আবিষ্কার করেছেন যে উপযুক্তগুলো বিশেষত বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর নির্দেশনা সরবরাহ করতে পারে। <ref name=":62">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref>এই তত্ত্বটি তিনটি নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি: ক) ডুয়াল-কোডিং থিওরি থেকে ধারণা; খ) এই ধারণাটি যে ওয়ার্কিং স্মৃতির চিত্রাবলী এবং মৌখিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য খুব সীমিত ক্ষমতা রয়েছে। এর অর্থ নির্দেশাবলী এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত যা শিক্ষার্থীদের ওয়ার্কিং স্মৃতি সিস্টেমে রাখা জ্ঞানীয় লোডের পরিমাণকে অনুকূল করে। এটি জ্ঞানীয় লোড তত্ত্ব হিসাবেও পরিচিত;<ref>van Merrienboer, J.J.G., & Sweller, J. (2005). Cognitive load and complex learning: Recent developments and future directions. ''Educational Psycholog Review, 17'', 147-177.</ref> এবং গ) এই ধারণাটি যে শেখার সাথে তথ্যকে সংগঠিত এবং সংহত করা জড়িত।<ref name="mayer2008">Mayer, R. E. (2008). Applying the science of learning: Evidence-based principles for the design of multimedia instruction. Cognition and Instruction, 19, 177–213.</ref>
=== তথ্য পুনরুদ্ধার ===
==== সক্রিয়করণের বিস্তার ====
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে প্রচুর পরিমাণে তথ্য সঞ্চিত থাকতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পুনরুদ্ধার বা স্মরণ করা কখনও কখনও কঠিন হতে পারে। এটি '''স্প্রেডিং অ্যাক্টিভেশন''' নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এর অর্থ যখন জ্ঞানের একটি টুকরো বর্তমানে আমাদের মনে থাকে, তখন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্যের আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সম্পর্কিত তথ্যগুলোও সক্রিয় করা যেতে পারে।<ref name=":7">Anderson, J.R. (2010). ''Cognitive Psychology and its implications. (7th ed.).'' New York, NY: Worth.</ref>উদাহরণস্বরূপ, বেন যদি ভাবছেন, "এখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে এটি কতই না চমৎকার হবে"। তবে এটি এক সপ্তাহ পরে বৃষ্টিপাত তার ক্ষেত্রের ভ্রমণকে প্রভাবিত করবে কিনা তা দেখার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার চিন্তাভাবনাকে ট্রিগার করতে পারে। এটি তাকে সেদিন তার ভ্রমণ সঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ করার কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
==== পুনর্গঠন ====
যেহেতু স্মৃতির কিছু টুকরো, যেমন অনেক আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্মরণ করা কঠিন হতে পারে, আমাদের জ্ঞানীয় সিস্টেম কোনও প্রাসঙ্গিক সূত্র ব্যবহার করতে পারে যা আমরা মনে রাখতে পারি এবং যুক্তির মাধ্যমে স্মৃতির এই টুকরোগুলো পুনর্গঠন করতে পারি। এটি এমন স্মৃতি তৈরি করতে পারে যা সঠিক ঘটনার সাথে অভিন্ন নয়। তবে যৌক্তিক এবং যুক্তিসঙ্গত।<ref>Koriat, A., Goldsmith, M. & Pansky, A. (2000). Toward a psychology of memory accuracy, In S.Fiske (Ed.), ''Annual review of psychology'', (pp. 481-537). Palo Alto, CA: Annual Reviews.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ১০ বছর আগে বন্ধুদের সাথে একটি হ্রদের কাছে পিকনিকে গিয়েছিলাম। তবে আমরা ভ্রমণটি স্মরণ করতে সক্ষম হতে পারি। তবে এর উদ্দেশ্যটি মনে রাখতে পারি না এবং আমরা বলতে পারি যে এটি হ্রদের চারপাশে একটি হাইকিং ট্রিপ ছিল। এটি মূল ইভেন্টের মতো কিছু মিল ভাগ করে। তবে অভিন্ন নয়।
==== ভুলে যাওয়া ====
যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য তথ্য অ্যাক্সেস করা না হয়। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত এটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম নাও হতে পারি। এটি ক্ষয় বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ঘটতে পারে। এর অর্থ তথ্য সংকেতকে দুর্বল করা এবং অন্যান্য বিরোধী তথ্য যথাক্রমে আমরা যে স্মৃতির টুকরোটি স্মরণ করার চেষ্টা করছি তাতে হস্তক্ষেপ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা আর মনে করতে পারি না যে আমরা কোনও কনসার্টে কী টি-শার্টটি পরেছিলাম। কারণ তখন থেকে কয়েক বছর হয়ে গেছে, বা যদি আমরা মনে করি এটি নীল ছিল। তবে সম্প্রতি একটি বন্ধু উল্লেখ করেছে যে এটি আসলে সবুজ ছিল। এর একটি স্নায়বিক ব্যাখ্যা হলো আমাদের মস্তিষ্কের কোষ এবং তাদের মধ্যে সংযোগগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এমনকি মারা যেতে পারে যদি আমরা তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার না করি।
ক্ষয় এবং হস্তক্ষেপের প্রক্রিয়া সত্ত্বেও, জ্ঞান অত্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে উপযুক্ত ধরণের প্রম্পট এবং তথ্য মনে রাখার অন্যান্য উপায়ে।<ref>Erdelyi, M.H. (2010). The ups and downs of memory. ''American Psychologist, 65,'' 623-633.</ref> এর মধ্যে পূর্বে উল্লিখিত কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন স্মৃতিবিদ্যা এবং সম্প্রসারণ ব্যবহার করা।
== দক্ষতা এবং দক্ষতার স্বয়ংক্রিয়তা ==
সুস্পষ্ট বা ঘোষণামূলক জ্ঞান অনেকগুলো প্রক্রিয়া যেমন নির্দেশনা, অভিজ্ঞতা এবং তথ্য মনে রাখার জন্য জ্ঞানীয় কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অর্জন এবং তৈরি করা যেতে পারে (পূর্বে উল্লিখিত)।
কিছু পণ্ডিত যুক্তি দেখিয়েছেন যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। কারণ অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার সাথে কোনও কাজে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে, মূলত এর অর্থ হলো সুস্পষ্ট জ্ঞানের স্থাপনা এত স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায় যে এটি একটি অন্তর্নিহিত দক্ষতায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা প্রথমবারের মতো কোনও উপহার মোড়ানোর চেষ্টা করি, আমরা প্রক্রিয়াটির প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট করার চেষ্টা করতে পারি, যেমন: উপহারের জন্য সঠিক আকারের মোড়ানো কাগজের একটি টুকরো সন্ধান করুন; উপহারের চারপাশে এটি মোড়ানো; অতিরিক্ত কাগজ কাটা; মোড়কটি সুরক্ষিত করতে টেপ ব্যবহার করুন। আমরা বারবার কাজটি সম্পাদন করার সাথে সাথে এই পদক্ষেপগুলো স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায়, মূলত প্রতিটি পদক্ষেপকে পৃথকভাবে বিস্তৃত বিবেচনা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এর আরও বিশদ উদাহরণ অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের পরবর্তী বিভাগে পাওয়া যাবে।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং শেখা: উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলোকে উত্সাহিত করা ==
যখন কেউ আরও জটিল তথ্য এনকোড করে উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়া সাধারণত তখন সক্রিয় হয়। উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত উচ্চতর শিক্ষাগত/শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য অর্জনে আরও বেশি সাহায্য করে।<ref name="“Bruning”" /> প্রশিক্ষকদের এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলিকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। যেমনটি আগে দেখানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যত বেশি বিস্তারিতভাবে শিখতে হবে তথ্য এনকোড করবে তত বেশি ভালো পারফর্ম করবে। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ এবং নির্দেশিত সহকর্মীদের প্রশ্ন করার মতো পদ্ধতির মাধ্যমে, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক স্কিমাটা সক্রিয় করতে পারেন এবং বোধগম্যতা এবং চিন্তা-উদ্দীপক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ প্রদান করতে পারেন। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ শিক্ষার্থীদের নতুন শেখার কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে: ইতিমধ্যেই পরিচিত তথ্যের একটি ভিত্তি নতুন শেখার তথ্যকে নির্দেশিত করতে সাহায্য করতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> ধরে রাখার জন্য, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন না করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু কাজ অনুশীলন করতে উৎসাহিত করতে পারেন।<ref name="“Bruning”" /> যতটা সম্ভব, প্রশিক্ষকদের নিষ্ক্রিয় শেখার পরিবর্তে সক্রিয়ভাবে শেখার জন্য শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার ক্ষেত্রে আরও বেশি জড়িত করা উচিত।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির কাজ: মূল্যায়ন এবং গবেষণা ==
দীর্ঘ সময় ধরে সংগৃহীত স্মৃতিগুলো দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার আরও বেশি সম্ভাবনা থাকে। তবে স্মৃতির গুণমানটি পরিমাণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। গুণমান অভিজ্ঞতার সময় ব্যক্তির দ্বারা সংগৃহীত সংবেদনশীল তথ্যকে বোঝাতে পারে, যেমন মুভি থিয়েটারে পপকর্নের গন্ধ নেওয়া, এবং মানের উপাদানগুলোর মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক থাকতে পারে, যেমন পপকর্নের গন্ধ পাওয়া এবং সিনেমাগুলোর কথা চিন্তা করা বা সিনেমাগুলোতে থাকা এবং পপকর্নের স্বাদ মনে রাখা।
এই ক্ষেত্রে করা বেশিরভাগ গবেষণা স্ব-মূল্যায়ন বা স্বতন্ত্র স্মৃতি পরীক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার উভয় ক্ষেত্রেই ত্রুটির সঠিক পরামিতি রয়েছে, যদিও কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং ডিভাইসগুলি কোনও ব্যক্তির মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে আক্রমণাত্মকভাবে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্ডারসন, ফিঞ্চাম, কিন এবং স্টোকো <ref>Anderson, J.R., Fincham, J.M., Qin, T., & Stocco, A. (2008). A central circuit of the mind. ''Trends in Cognitive Psychology, 12,'' 136-143.</ref> এই কৌশলটি ব্যবহার করে একটি পরীক্ষা করেছিলেন যাতে পদ্ধতিগত সম্পাদন, লক্ষ্য নির্ধারণ, ঘোষণামূলক স্মৃতি থেকে নিয়ন্ত্রিত পুনরুদ্ধার এবং চিত্র উপস্থাপনা গঠন এবং মস্তিষ্কের কর্টিকাল অঞ্চলের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এই পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখায় যে এই চারটি অঞ্চলের প্রতিটি ইমেজিং ডিভাইসে একটি ভিন্ন কর্টিকাল অঞ্চল আলোকিত করে। এই প্রমাণগুলি দেখায় যে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চল এই বিভিন্ন অঞ্চল পরিচালনা করে, তবে কৌশলটির সমালোচনাগুলি তুলে ধরে যে আমরা এখনও জানি না কেন এই কার্যকলাপ ঘটে এবং ক্রিয়াকলাপের বিন্যাস তৈরি করার জন্য মনের মধ্যে কোন সংযোগ তৈরি হচ্ছে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, এই ধরণের পরীক্ষাগুলি আমাদের পূর্বের তুলনায় আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বেশি অন্তর্দৃষ্টি দেয় এবং দেখায় যে কীভাবে বিভিন্ন তথ্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে উদ্দীপিত করতে পারে, তাই আমরা জানি যে তারা সব সময় সক্রিয় থাকে না।
== স্মৃতির অন্যান্য পরিবর্তনশীল এবং ক্রমবর্ধমান তত্ত্ব ==
=== নেটওয়ার্ক মডেল ===
[[File:An_example_of_a_network_model.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:An_example_of_a_network_model.jpg|থাম্ব|চিত্র ৫। একটি নেটওয়ার্ক মডেলের উদাহরণ]]
নেটওয়ার্ক মডেলকে মাইন্ড ম্যাপিং বা মস্তিষ্ক-ঝড় জালের সাথে তুলনা করা যেতে পারে কারণ তথ্য একটি ওয়েব-সদৃশ প্যাটার্ন দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়, যা সাধারণত সাধারণ থেকে আরও নির্দিষ্ট তথ্য বা বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। এটি একটি ছোট শিশু যেভাবে ধীরে ধীরে চার পা এবং পশমযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিকাশ করে, তা শেখার অনুরূপ হবে যে একটি কুকুর এবং বিড়ালের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। নেটওয়ার্কিং মডেলগুলি তথ্যের ছোট ইউনিটগুলিকে সংগঠিত করার আরও সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি যখন তারা বিষয়ের মধ্যে অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্কিত করে। এই মডেলটি সরাসরি শিক্ষাদানে ব্যবহার করা হয়েছে - "মাইন্ড ম্যাপিং শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার প্রক্রিয়াগুলি পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল, যা তাদের মেটাকগনিটিভ জ্ঞান অর্জন করতে এবং নতুন সমস্যা এবং পরিস্থিতি সমাধানের জন্য তাদের বোধগম্যতা স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছিল।"<ref>Ismail, M. N., Ngah, N. A., & Umar, I. N. (2010). The effects of mind mapping with cooperative learning on programming performance, problem solving skill and metacognitive knowledge among computer science students. ''Journal Of Educational Computing Research, 42''(1), 35-61. doi:10.2190/EC.42.1.b</ref>
=== সংযোগবাদী মডেল ===
[[File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|alt=A general model of what a Connectionist Model might look like|থাম্ব|চিত্র ৬। একটি সংযোগবাদী মডেল কেমন হতে পারে তার একটি সাধারণ মডেল]]
সংযোগবাদী মডেল হল একটি 'মস্তিষ্কের রূপক' যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চয় এবং পুনরুদ্ধার মডেলের জন্য ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটার রূপককে গ্রহণ করে; এটিকে সমান্তরাল বিতরণ প্রক্রিয়াকরণ মডেলও বলা হয়। এই মডেলটিতে প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে বোঝার ধারণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; এর একটি উদাহরণ হল বাম দিকে একটি সরল রেখা সহ একটি আকৃতি থাকা, ডানদিকে একটি '৩' আকৃতি থাকা। '১২ |৩ ১৪' সিরিজে এটিকে তেরো নম্বর হিসাবে দেখা হবে, তবে 'A |৩ C' ক্রমানুসারে এটি 'B' অক্ষর হিসাবে পড়া যেতে পারে। প্রেক্ষাপটের সাথে অভিযোজনযোগ্যতা এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাথে জ্ঞানীয় কাজগুলিকে একত্রিত করার ক্ষমতার কারণেই সংযোগবাদী মডেলটি এই গতিশীলতাগুলিকে আরও ভালভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই তত্ত্বটি বিভিন্ন সমান্তরাল থেকে মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়াগুলিকে দেখে কারণ মানব মস্তিষ্ক একই সময়ে এবং এমনভাবে একাধিক চিন্তার দিক বিবেচনা করতে সক্ষম হয় যে কম্পিউটার তুলনা বা সংযোগ করার কথা ভাবে না। যেমনটি আগে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যান্য মডেলগুলিতে তথ্য পুনরুদ্ধারের একটি স্টোর-রিট্রিভাল দিক রয়েছে যেখানে তথ্য সংযোগের ধরণ সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করা হয়। বিকল্পভাবে, সংযোগবাদী মডেল তত্ত্ব দেয় যে প্যাটার্ন বা সংযোগের উপাদানগুলিকে তাদের সংযোগের শক্তি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় সংযোগ স্থাপনের জন্য।<ref>McClelland, J. L. (1988). Connectionist models and psychological evidence. ''Journal of Memory and Language, 27'', 107-123.</ref> এই বিষয়ে ভিকার্স এবং লির একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল: "শব্দার্থগত বা অর্থপূর্ণ তথ্যের সংযোগবাদী বিবরণগুলি অর্থকে সীমিত সংখ্যক বৈশিষ্ট্যের সক্রিয়করণ হিসাবে ধারণা করার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, অন্তত ইনপুট স্তরে।"<ref>Vickers, Douglas, & Lee, Michael D. (1997). Towards a dynamic connectionist model of memory. ''Behavioral and Brain Sciences, 20,'' 40-41. doi:10.1017/S0140525X97460016</ref> এর অর্থ হল এই তত্ত্বটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে যদি তথ্যটি কেবল তথ্য মুখস্থ করার চেয়ে গভীর হয়।
=== স্মৃতির উৎপাদন-নিয়ম-সম্পর্কিত তত্ত্ব ===
মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের গবেষণায়, ''উৎপাদন'' (বা কখনও কখনও ''উৎপাদন বিধি'' হিসাবে পরিচিত) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর বা সমস্যা সমাধানের নিয়ম। এগুলো সাধারণত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী মার্মারিতে উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় (নীচের ''জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানের প্রোডাকশন'' বিভাগটি দেখুন)। মূলত, প্রতিটি উৎপাদন চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়ার একটি একক গাইডিং পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি সাধারণত কোন ধরণের পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার একটি প্রেসক্রিপশন হিসাবে উপস্থাপিত হতে পারে - একটি "''শর্ত-ক্রিয়া''" বা "যদি-তারপর" ক্রম।<ref name=":1">Anderson, J. R., & Matessa, M. (1997). A production system theory of serial memory. ''Psychological Review, 104''(4), 728-748. Retrieved from http://www.ebscohost.com/</ref> উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার মূল লক্ষ্যের মধ্যে একটি উৎপাদনকে এভাবে চিত্রিত করা যেতে পারে:
যদি লক্ষ্য হয় একটি ডিম ভাজা,
এবং কাঁচা ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়ে থাকে,
এবং প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য উত্তপ্ত করা হয়,
তারপর কাঁচা ডিমটি প্যানে রাখুন,
এই পরিস্থিতিতে, উৎপাদন অবস্থার উপর নির্ভর করে কর্মের পথ নির্দেশ করে। শর্ত পূরণ হয়ে গেলে (ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়েছে; প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছেছে, ইত্যাদি), নিয়মটি প্রযোজ্য হয় এবং কাজটি (ডিমটি প্যানে রাখা) করা হয়।
==== মূল বৈশিষ্ট্য ====
প্রোডাকশনর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি উৎপাদনকে একটি নিয়ম বা পদক্ষেপ হিসাবে চিন্তা করা যেতে পারে এবং যার শিক্ষা অন্যান্য প্রোডাকশন অর্জন থেকে আলাদাভাবে ঘটতে পারে। এছাড়াও, এই প্রকৃতির। কারণে, যখন একটি বিস্তৃত এবং জটিল দক্ষতা বা জ্ঞানীয় ফাংশন / প্রক্রিয়া অর্জিত হয়, এর অর্থ সম্ভবত এই যে প্রোডাকশনর পুরো সিরিজটি দক্ষতা গঠন করে তা শিখেছে - সংযুক্ত উপলক্ষ্যগুলো একটি বিস্তৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য একত্রিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার উদাহরণে, রান্না প্রক্রিয়াটির আগে আরেকটি কাজ হতে পারে যেমন নিকটতম মুদি দোকানটি সনাক্ত করা এবং ডিম কিনতে সেখানে যাওয়া। এটি ডিম রান্না করার সামগ্রিক লক্ষ্যে নিজেই একটি উপলক্ষ্য। অবশ্যই, একটি প্রক্রিয়াতে প্রোডাকশনর সংখ্যা তার জটিলতার উপর নির্ভর করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে উৎপাদন নিয়মগুলো প্রকৃতির ''বিমূর্ত'' এবং অনুরূপ প্রকৃতির বিভিন্ন কাজের পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার জন্য পূর্বোক্ত প্রোডাকশনগুলো শাকসবজি ভাজার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি প্যানটি যথেষ্ট গরম হওয়ার শর্তে এবং তারপরে প্যানে শাকসবজি রাখার পদ্ধতিতে একই আকস্মিকতা জড়িত।
এছাড়াও, প্রোডাকশনগুলো অনুশীলনের একটি ডোমেনের জন্য নির্দিষ্ট হতে পারে, যেমন গণিতে বীজগণিতের মধ্যে, বা তুলনামূলকভাবে সাধারণ, যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে।<ref>Anderson, J. R. (1990). Cognitive psychology and its implications. New York, NY: Freeman.</ref>
==== জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে প্রোডাকশন ====
সাধারণত, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে, ''ঘোষণামূলক জ্ঞান'' (বা ''ঘোষণামূলক স্মৃতি)'' বনাম ''পদ্ধতিগত জ্ঞানের'' একটি দ্বৈততা জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার ধরণের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হয় যা আমরা সকলেই দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে ধারণ করি। ঘোষণামূলক জ্ঞান এমন ধারণা বা প্রস্তাবগুলোকে বোঝায় যা স্পষ্টভাবে বিবৃত বা স্পষ্ট করা যেতে পারে। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞান কেবল দক্ষতা বা কর্মকে বোঝায় যা একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদন করা যেতে পারে। পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রায়ই শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। এই অর্থে, ''ঘোষণামূলক'' বনাম ''পদ্ধতিগত'' এই দ্বৈততাটিকে ''স্পষ্ট'' বনাম ''অন্তর্নিহিত'' জ্ঞান বা স্মৃতি হিসাবেও উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গটি মাথায় রেখে, প্রোডাকশনগুলো সাধারণত অন্তর্নিহিত, পদ্ধতিগত জ্ঞান বিভাগের অধীনে আসে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদনের নিয়মগুলোকে প্রায়ই পদ্ধতিগত জ্ঞানের বিষয়বস্তু বা "দক্ষতার মূর্ত প্রতীক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়,[। কারণ এগুলো কর্ম বা জ্ঞানের কোর্স পরিচালনার জন্য পৃথক পদক্ষেপ। মূলত, সহজ কথায়, প্রোডাকশনগুলো "কীভাবে জিনিসগুলো করা যায়" সম্পর্কে,[ যা পদ্ধতিগত জ্ঞান সম্পর্কে।
সাধারণভাবে, অনুশীলন এবং আরও অভিজ্ঞতার সাথে, একটি দক্ষতা আরও স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। এর অর্থ যে প্রোডাকশনগুলো দক্ষতা গঠন করে তা দ্রুত এবং আরও ধারাবাহিকভাবে আগুন দেয়। এটি হওয়ার সাথে সাথে অভিনয়কারী প্রতিটি পৃথক উৎপাদন সম্পর্কে কম সচেতন হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে একক তরল ক্রিয়া হিসাবে ফায়ারিং প্রোডাকশনর ক্রমটি উপলব্ধি করতে
==== উৎপাদন নিয়মের প্রমাণ ====
উৎপাদন নিয়মগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাস্তব এই যুক্তি তৈরি করতে গিয়ে অ্যান্ডারসন দাবি করেছেন যে প্রমাণের প্রথম অংশটি হলো উৎপাদন বিধিগুলো দক্ষতা এবং জ্ঞানীয় কাজগুলোর অগ্রগতির একাধিক দিক বর্ণনা করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। অর্থাৎ, তারা কীভাবে কাজগুলো সম্পাদন করা হয় তার একটি যৌক্তিক এবং প্রশংসনীয় ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। অ্যান্ডারসন উদ্ধৃত প্রমাণের আরেকটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো উৎপাদন বিধিগুলো ব্যবহার করে আমরা দক্ষতা বা কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে বলে একজনের আচরণের দিকগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা একটি প্যান গরম হয়ে যাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমরা আশা করতে পারি যে সে এতে খাবার রাখবে (শর্তসাপেক্ষ ক্রিয়া)।
=== অ্যাক্ট-আর মডেল: উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে জ্ঞান এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি মডেল ===
উৎস সম্পাদনা]
একটি অত্যন্ত বিশিষ্ট তত্ত্ব যা উৎপাদন বিধিগুলোর প্রয়োগকে প্রতিফলিত করে তা হলো চিন্তা-যৌক্তিক (এসিটি-আর) তত্ত্বের অভিযোজিত চরিত্র, জন অ্যান্ডারসনের মানব জ্ঞানের তত্ত্ব যা জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিল্ডিং ব্লক হিসাবে উৎপাদন বিধি ব্যবহার করে। এসিটি-আর তত্ত্ব দ্বারা উত্থাপিত কেন্দ্রীয় যুক্তিটি হলো একটি জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা প্রচুর সংখ্যক পৃথক "লক্ষ্য-সম্পর্কিত জ্ঞানের ইউনিট" নিয়ে গঠিত।
==== এসিটি-আর এর ইতিহাস ====
তত্ত্বটি মূলত হিউম্যান অ্যাসোসিয়েটিভ স্মৃতি (এইচএএম) তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল (এই তত্ত্বের অন্যতম স্রষ্টাও ছিলেন জন অ্যান্ডারসন, এসিটি-আর তত্ত্বের স্রষ্টা) যা মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞানের কিছু দিক ব্যাখ্যা করেছিল। এটি ঘোষণামূলক জ্ঞানের ধারণার সাথে জড়িত ছিল। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞানের সাথে মোকাবিলা করেনি।
এটিকে ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করে, জন অ্যান্ডারসন তখন প্রস্তাব করেছিলেন যে পদ্ধতিগত জ্ঞান উৎপাদন বিধি নিয়ে গঠিত। তার তত্ত্বের কয়েকটি রূপকে সূক্ষ্ম-সুর করার পরে, তিনি ১৯৮৩ সালে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটির লক্ষ্য ছিল জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা।
পরবর্তীকালে, জ্ঞানীয় দক্ষতার উপর আরও প্রমাণ এবং উদীয়মান তথ্য বিবেচনায় নেওয়ার পরে, অ্যান্ডারসন বিশ্বাস করেছিলেন যে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াতে ''যুক্তিসঙ্গত বিশ্লেষণের'' একটি উপাদানকে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বের কিছুটা "যান্ত্রিক" প্রকৃতির সাথে একীভূত করা উচিত,[ এবং তাই তিনি অ্যাক্ট-আর (যুক্তিসঙ্গত জন্য আর) তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি তিনি অনুভব করেছিলেন যে পরিবেশের প্রতি বৃহত্তর অভিযোজিত এবং নির্বাচনী দক্ষতার। কারণে মূলটির চেয়ে উন্নতি ছিল।
তত্ত্বটির প্রাথমিক ফোকাস ছিল মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞান। এর সর্বাধিক বিশিষ্ট প্রয়োগ এবং বিকাশের বেশিরভাগই কম্পিউটার মডেল টিউটর (বুদ্ধিমান শিক্ষক) হয়েছে। সংক্ষেপে, এগুলো কম্পিউটার সফ্টওয়্যার যা উৎপাদন-নিয়ম-ভিত্তিক মডেলগুলো উল্লেখ করে সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থী / শিক্ষার্থীদের গাইড করতে পারে যা এই জাতীয় সমস্যার সমাধান তৈরি করে। এই কম্পিউটার টিউটরগুলো মূলত গণিত এবং বিজ্ঞানের মতো ডোমেনগুলোতে বিকশিত এবং ব্যবহৃত হয়। টিউটরিং সিস্টেম হিসাবে এসিটি-আর এর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আরও বিশদ একটি ভিন্ন অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
==== এসিটি-আর এর মূল নীতি[ ====
তিনটি মৌলিক ধারণা রয়েছে যা তত্ত্বটি তৈরি করে: ক) এই জ্ঞান ইউনিটগুলোর প্রতিনিধিত্ব; (খ) তাহাদের অধিগ্রহণ; গ) জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ায় তাদের স্থাপনা। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
===== জ্ঞানের প্রতিনিধিত্ব =====
তত্ত্বের একটি কেন্দ্রীয় মতবাদ হলো জ্ঞান উভয়ই ঘোষণামূলক জ্ঞানের উপাদান (যা প্রস্তাবনামূলক, শব্দার্থিক জ্ঞান, যেমন আগে উল্লেখ করা হয়েছে) এবং পদ্ধতিগত জ্ঞান (যা উৎপাদন বিধি হিসাবে উপস্থাপিত হয়) এবং দুটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াকরণে একসাথে কাজ করে।
ঘোষণামূলক জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয় এবং মানব স্মৃতির ''খণ্ড বা পৃথক'' ইউনিটগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করা হয় যা স্কিমাটা (জ্ঞান কাঠামো) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রতিটি অংশে বিষয় আইটেম সম্পর্কে প্রস্তাব বা বর্ণনামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ''স্লটে'' সঞ্চিত রয়েছে,[ কোন বৃহত্তর বিভাগের অন্তর্গত তা সহ। খণ্ডগুলো একটি পাঠ্য বা গ্রাফিকাল বিন্যাসে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডিম ভাজা সম্পর্কে একটি অংশ পাঠ্যভাবে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে: একটি ডিম ভাজা এক ধরণের রান্নার দক্ষতা; রান্না করার আগে ডিমটি তার শেল থেকে সরানো প্রয়োজন; তাপ দরকার। ডানদিকে একটি অংশের সম্ভাব্য গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।
অন্যদিকে, পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করা হয়। পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে, প্রোডাকশনগুলো উপলক্ষ্যগুলোর একটি আন্তঃসংযুক্ত সিরিজের রূপ নিতে পারে যা একটি বিস্তৃত লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে।
দুই ধরনের জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক হলো ঘোষণামূলক জ্ঞান কাঠামোর অংশগুলো প্রোডাকশন সংঘটিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত এবং কর্মের কোর্স সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম রান্না করার জন্য, একজনকে অবশ্যই তাদের কেনার জন্য জ্ঞানের অংশগুলো থাকতে হবে, তাদের শাঁস থেকে তাদের সরিয়ে ফেলতে হবে এবং প্যান প্রস্তুত করতে হবে ইত্যাদি। এর মধ্যে একটি না থাকলে পদ্ধতিগত জ্ঞানে ফাঁক থাকবে। অতএব, জ্ঞানের আরও বেশি অংশ থাকার অর্থ আরও উপলব্ধ উৎপাদন বিধি এবং আরও ভাল পদ্ধতিগত জ্ঞান। এটিও বিবেচনা করা যেতে পারে যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে, যেমন পরবর্তী বিভাগে আলোচনা করা হবে।
===== জ্ঞান অর্জন =====
ঘোষণামূলক জ্ঞান মোটামুটি সরল উপায়ে অর্জিত হয়, হয় পরিবেশ থেকে তথ্য বা ধারণার উপলব্ধি থেকে বা সরাসরি নির্দেশ থেকে (তথ্য দেওয়া হচ্ছে)। যেহেতু প্রোডাকশনকে অবহিত করার জন্য জ্ঞানের ঘোষণামূলক অংশগুলো প্রয়োজন, তাই অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের এই তত্ত্বটি বোঝায় যে কোনও জ্ঞানীয় বা পদ্ধতিগত কার্য সম্পাদন করার জন্য জ্ঞান থাকা মূলত কার্যটির প্রয়োজনীয় তথ্যের সমস্ত পৃথক অংশ সংগ্রহ করা জড়িত - কাজটি "এর অংশগুলোর যোগফল"। অতএব, জটিল কাজগুলোর জন্য অনেকগুলো খণ্ড সংগ্রহের প্রয়োজন।
অন্যদিকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে উৎপাদন বিধিগুলোর অধিগ্রহণ কিছুটা বেশি কঠিন এবং কম সোজা, যেহেতু এগুলো কেবল বলা বা স্পষ্ট করা যায় না। মূলত, তারা শুধুমাত্র ঘোষণামূলক জ্ঞান মোতায়েন করা হয় হিসাবে শেখা হয়। এর অর্থ হলো শিক্ষার্থীরা যখন ''কাজগুলো করে'' তখন উৎপাদন বিধিগুলো অর্জন করে, কেবল যখন তাদের ঘোষণামূলক তথ্য দেওয়া হয় তখন নয়। এটি লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ যে এই স্থাপনাটি কেবল প্রোডাকশনগুলো সংঘটিত হওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রেক্ষাপট এবং শর্তে ঘটতে পারে। যখন কোনও কার্য সম্পাদনের শর্তগুলো উপযুক্ত হয়, তখন লক্ষ্য-ভিত্তিক জ্ঞানীয় ক্রিয়াকলাপগুলো সংঘটিত হতে পারে, যেখানে ঘোষণামূলক অংশগুলো ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করা হয় (বা "সম্পাদন")। এইভাবে, এটি বিবেচনা করা যেতে পারে যে লক্ষ্যের দিকে ব্যক্তির কর্মকে গাইড করার জন্য তারা মূলত উৎপাদন নিয়মে রূপান্তরিত হয়। অনুশীলনের মাধ্যমে, রূপান্তরের এই প্রক্রিয়াটি গতি এবং নির্ভুলতার ক্ষেত্রে উন্নত বা শক্তিশালী করা যেতে পারে। সুতরাং, অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া জন্য সুযোগ প্রদান উৎপাদন নিয়ম অধিগ্রহণ উত্সাহিত করার একটি অত্যন্ত অনুকূল উপায়।
===== জ্ঞানের প্রয়োগ প্রসঙ্গ =====
এই দিকটি অ্যাক্ট-আর এর ব্যাখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে কীভাবে আমাদের জ্ঞানীয় কাঠামো টাস্ক বা সমস্যা সমাধানের একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে সঠিক ধরণের জ্ঞানকে তলব করতে সক্ষম। এটি যৌক্তিক বিশ্লেষণের কাজ - তত্ত্বের নামের "আর" অংশ। যৌক্তিক বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াটি মনের মধ্যে সক্রিয় হওয়ার জন্য সঠিক অংশ এবং উৎপাদন বিধিগুলো নির্ধারণ করার জন্য দুটি উপাদান চিহ্নিত করে: ক) অতীতে এই জাতীয় পরিস্থিতিতে এই জাতীয় জ্ঞান ভালভাবে কাজ করার সম্ভাবনা; খ) এই জাতীয় জ্ঞান হাতের পরিস্থিতিতে ভাল কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি। কারণকে একত্রিত করে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি জ্ঞানের একটি অংশের প্রদত্ত কার্য প্রসঙ্গে উপযুক্ত এবং প্রযোজ্য হওয়ার সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।
সংক্ষেপে, এটি এটিও বোঝায় যে মানব জ্ঞানীয় সিস্টেম কোন ধরণের কাজগুলোতে কী ধরণের জ্ঞান উপযুক্ত হয়েছে তার একটি রেকর্ড বজায় রাখে, যদিও এটি মনের মধ্যে একটি অবচেতন প্রক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এই দিকটির তত্ত্বের ব্যাখ্যা মূলত একটি পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়া বর্ণনা করে।
==== এসিটি-আর এর তাত্ত্বিক দিকগুলোর সংক্ষিপ্তসার ====
সংক্ষেপে, অ্যাক্ট-আর তত্ত্ব অনুসারে, ঘোষণামূলক জ্ঞান তার আশেপাশের পরিবেশে তথ্যের উপলব্ধি দ্বারা এনকোড করা হয় (একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক, পিতামাতা এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশাবলী সহ) ইত্যাদি); কোনও কার্য সম্পাদন বা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গে এই জাতীয় ঘোষণামূলক জ্ঞান (প্রায়ই এর অনেকগুলো ইউনিট) প্রয়োগ করতে শেখার ফলে পদ্ধতিগত জ্ঞান বিকশিত হয়; এবং প্রদত্ত পরিস্থিতিতে মোতায়েন করার জন্য সঠিক ধরণের জ্ঞানের নির্বাচন জ্ঞানীয় সিস্টেমের অনুমান অনুসারে ঘটে যে জ্ঞানের একটি অংশ দরকারী এবং উপযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য প্রয়োগ এবং অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ ====
এখন পর্যন্ত অ্যাক্ট-আর এর বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে, অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একজোড়া পরীক্ষা উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ দেয় যা তত্ত্বটিকে সমর্থন করে। এই পরীক্ষাগুলো অধ্যয়ন করেছিল যে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকগুলো বিভিন্ন মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোর মধ্য দিয়ে শুরু থেকে চূড়ান্ত গন্তব্যগুলোতে একটি মানচিত্রে (পিটসবার্গ, পেনসিলভেনিয়ার শহরের) সর্বাধিক দক্ষ রুটগুলো কাজ করেছিল, ব্যয় এবং সময়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করে। পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে করা হয়েছিল। কারণ তারা কম্পিউটার স্ক্রিনে মানচিত্রটি দেখেছিল এবং চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তারা যে অবস্থানগুলোতে যেতে বা পাস করতে চেয়েছিল সেগুলোতে ক্লিক করেছিল।
বিষয়গুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো একই নেভিগেশন সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের (উৎপাদন বিধিগুলোর সেট ব্যবহার করে) উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার মডেল দ্বারা উত্পাদিত "চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়া" এবং সমাধানগুলোর সাথে তুলনা করা হয়েছিল। নীচের সারণী এই নেভিগেশন টাস্কে রুট নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত মডেলের উৎপাদন বিধিগুলোর কয়েকটি উদাহরণ দেখায়:
{| class="wikitable"
! colspan="2" |'''''[আদেশে] কম্বিন-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর এখানে location ৩ যাওয়ার একটা রাস্তা আছে, এবং location ৩ location২ এর কাছাকাছি,
|-
|তারপর
|Location ৩ এ রুট নিন,
এবং সেখান থেকে আরও পরিকল্পনা করুন।
|-
! colspan="2" |'''''ডাইরেক্ট-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর location ১ থেকে location ২ পর্যন্ত একটা রুট আছে,
|-
|তারপর
|সেই পথেই যাও।
|}
টেবিল ২. নেভিগেশন টাস্কের রুট নির্ধারণের জন্য উৎপাদন বিধিগুলোর উদাহরণ
এসিটি-আর মডেলের চিন্তাভাবনার উপায়টি স্নাতক শিক্ষার্থীদের একবারে এক ধাপের সাথে তুলনা করা হয়েছিল - মডেল দ্বারা তৈরি রুটের প্রতিটি একক পছন্দ (প্রতিটি একক উৎপাদন) প্রতিটি শিক্ষার্থীর দ্বারা তৈরি প্রতিটি পছন্দের পাশাপাশি রাখা হয়েছিল (তারা যে মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোতে ক্লিক করেছিল)। ফলাফলগুলো দেখিয়েছে যে এসিটি-আর মডেলের রুটের সিদ্ধান্তগুলো "৬৭% সময়" শিক্ষার্থীদের সাথে মেলে,[ এবং এমনকি যদি তারা তা না করে। তবে তারা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শীর্ষ পছন্দগুলোর সাথে মেলে, মানব বিষয়গুলো জ্ঞানীয়ভাবে যেভাবে আচরণ করে তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমান্তরাল।
উপরন্তু, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান ছিল যে রুট পছন্দগুলো করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার মডেলের বিলম্ব (নেওয়া সেকেন্ডের সংখ্যা) বিষয়গুলোর সিদ্ধান্তের গতির সাথে খুব মিল ছিল। যদিও এই সন্ধানটি তুলনামূলকভাবে সাধারণ পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল, এটি সম্ভবত জ্ঞানীয় কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে রায় দেওয়ার জন্য মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কিত অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের ধারণাগুলোকে সমর্থন করে (সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিভিন্ন রুট পছন্দগুলো বিবেচনা করুন এবং মূল্যায়ন করুন)।
চূড়ান্ত ফলাফল যা এসিটি-আর তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা হলো পরীক্ষার সময়কালে (প্রায় এক সপ্তাহ) অনুশীলনের সাথে, মানব বিষয়গুলো রুট পরিকল্পনার অনুকূলকরণের গতিতে উন্নত হয়েছিল, সম্ভবত উন্নত কার্য সম্পাদনে শক্তিশালী উৎপাদন বিধিগুলোর নীতিকে সমর্থন করে।
অ্যান্ডারসন এই মানচিত্র নেভিগেশন ক্রিয়াকলাপের গুরুত্ব এবং এসিটি-আর তত্ত্বকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে এর প্রমাণের কথা উল্লেখ করেছেন,[ দিয়েছিলেন যে এটি একটি বাস্তব জীবনের কাজ জড়িত যেখানে মানুষকে ব্যয় এবং সময়ের মতো বাস্তব। কারণ এবং পরিণতি বিবেচনা করতে হবে, বিমূর্ত, একাডেমিক সমস্যাগুলোর উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার এর বিপরীতে গাণিতিক, যেখানে সত্য পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত খুব কম প্রভাব রয়েছে। তদতিরিক্ত, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন রুট সন্ধানের এই জাতীয় কাজটিতে একাধিক সমাধান জড়িত। এর অর্থ সমাধানগুলো সাফল্যের বিভিন্ন ডিগ্রি। এটি এটিকে আরও বাস্তবসম্মত পরীক্ষা করে তোলে যে এসিটি-আর মডেলটি মানুষের জ্ঞানীয় সিস্টেমের পক্ষে সত্য কিনা।
এই পরীক্ষাগুলো ছাড়াও, এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য অন্যান্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতামূলক সমর্থনের মধ্যে ইন্টেলিজেন্ট টিউটরিং সিস্টেমগুলোতে (আইটিএস) বিনিয়োগ করা কাজটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি রিটার এবং তার সহকর্মীদের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা বিস্তারিতভাবে অন্বেষণ করা হয়েছে। যদিও এই অধ্যায়ের পরিধির মধ্যে নয়, কম্পিউটার টিউটরিং সিস্টেম সম্পর্কিত আরও আলোচনা একটি ভিন্ন অধ্যায়ে দীর্ঘ করা হবে।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের নির্দেশমূলক প্রভাব ====
তত্ত্বের পূর্বোক্ত নীতি এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে, অ্যান্ডারসন এট আল টিউটরিং সিস্টেম ডিজাইনের জন্য নীতিগুলোর একটি তালিকা সরবরাহ করে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণভাবে নির্দেশমূলক নকশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন ধারণাগুলো সহ: ক) প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে একটি দক্ষতার প্রতিনিধিত্ব করা; খ) সমস্যা সমাধানে উপ-লক্ষ্য (প্রোডাকশন) স্পষ্ট করা; (গ) হস্তান্তরযোগ্য উৎপাদন বিধিমালা প্রচারের সময় কতিপয় সমস্যার প্রেক্ষাপটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান; ঘ) স্মৃতি লোড কমাতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় উৎপাদন নিয়মগুলোতে ফোকাস; ঙ) কোন কাজে সূক্ষ্ম দানাদার উৎপাদন বিধি কতটুকু থাকা প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে উপযুক্ত গ্র্যানুলারিটির নির্দেশনা প্রদান; চ) শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথে শিক্ষামূলক সহায়তা যথাযথভাবে প্রত্যাহার করা।
কগনিটিভ টিউটর এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে আপনি ''সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি'' (সমস্যা সমাধানের জন্য ২.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) এবং ''লার্নিং ম্যাথমেটিক্স'' (বীজগণিত শেখানোর জন্য ৪.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) অধ্যায়ে যেতে পারেন।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া ====
ACT-R তত্ত্ব বলে যে কোনও দক্ষতা (বা জ্ঞানীয় কাজ) অর্জন বা বোঝার জন্য কেবল সেই স্বতন্ত্র উৎপাদনগুলি শেখা জড়িত হওয়ায় এটি পূর্ব-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অর্জন করার পরিবর্তেগঠনমূলক শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে যে জ্ঞান বা দক্ষতার বোঝাপড়া শিক্ষার্থী নিজেই তৈরি করে।
এটি, তত্ত্বের ধারণার সাথে মিলিত হয়ে যে শিক্ষার্থীদের উত্তর বা সমস্যার সমাধানগুলি উৎপাদন নিয়মের নির্দিষ্ট সেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত বা কব্জাবদ্ধ করা উচিত, এটি জ্ঞানের প্রতি কিছুটা আচরণগত-ভিত্তিক পদ্ধতি দিয়েছে। এটি মেটাকগনিশনের মতো উপাদানগুলিকে দমিয়ে রেখেছে। অ্যান্ডারসন এবং অন্যান্যরা এই বলে প্রতিক্রিয়া জানান যে ACT-R এর পদ্ধতি আচরণবাদী পদ্ধতির সাথে মিল রাখে যে নির্দেশনা কীভাবে একটি দক্ষতা বা কাজকে উপাদানগুলিতে বিভক্ত করার উপর ফোকাস করা উচিত, তবে তারা যুক্তি দেন যে ACT-R সাধারণ আচরণগত পদ্ধতির তুলনায় আরও বিমূর্ত উপায়ে (সম্ভবত প্রসঙ্গের মধ্যে আরও স্থানান্তরযোগ্য) কাজটি উপস্থাপন করে।<ref name=":2">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned. The Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207. Retrieved from: http://www.jstor.org/</ref>
উপরন্তু, জন অ্যান্ডারসন স্বীকার করেছেন যে, যেহেতু তত্ত্বের একটি মূল শিক্ষাগত বা নির্দেশনামূলক নকশার অন্তর্নিহিত অর্থ হল একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য পৃথক উৎপাদন নিয়ম অর্জনকে উৎসাহিত করা, তাই তত্ত্বের প্রাথমিক জোর শেখার দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই অগ্রাধিকারটি তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে হতে পারে যারা দক্ষতা বা গতির চেয়ে শেখার গভীরতা বা সমৃদ্ধিকে মূল্য দেন। অ্যান্ডারসনের প্রতিক্রিয়া হল যে শেখার গভীরতাকে কেবল ঘোষণামূলক এবং উৎপাদন (পদ্ধতিগত) জ্ঞানকে সমৃদ্ধকারী হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যার মধ্যে অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত।<ref name=":02">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref>
== শব্দকোষ ==
; অর্থের নিয়োগ
: যখন অর্থ একটি অনুভূত উদ্দীপনা বরাদ্দ করা হয়
; স্বয়ংক্রিয়তা
: একটি স্বয়ংক্রিয় স্তরে একটি দক্ষতার বিকাশ যেখানে এটি একটি অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া হয়ে যায় যা অনেক চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয় না
; মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব
: মেয়ারের তত্ত্বটি ডুয়াল-কোডিং তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, এই ধারণাটি যে জ্ঞানীয় লোড অবশ্যই শেখার ক্ষেত্রে পরিচালনা করা উচিত এবং এই ধারণাটি যে শেখার সাথে সংগঠিত এবং সংহতকরণের তথ্য জড়িত
; ধারণা
: মানসিক তথ্যকে অর্থপূর্ণ বিভাগ এবং কাঠামোতে বাছাই করার একটি উপায়; একটি "জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লক"
; শর্তসাপেক্ষ জ্ঞান
: বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান এবং কখন এবং কেন তাদের ব্যবহার করতে হবে; "কেন জানার" জ্ঞান
; ঘোষণামূলক জ্ঞান
: বাস্তব জ্ঞান যেমন রাজধানী শহর এবং বীজগণিতের সূত্র জানা; "কি জানার" জ্ঞান
; ডুয়াল কোডিং থিওরি
: পাইভিওর তত্ত্ব যে ভিজ্যুয়াল এবং পাঠ্য উভয় বিন্যাসে তথ্য সরবরাহ করা শেখার উপকার করতে পারে
; এপিসোডিক স্মৃতি
: স্মৃতি যা প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জন্য নির্দিষ্ট
; অত্যাবশ্যকীয় শিক্ষা
: প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাহিদা
; বহিরাগত জ্ঞানীয় লোড
: মূল জ্ঞানীয় কাজের বাইরে জ্ঞানীয় লোড সৃষ্টি করে এমন কিছু
; এফএমআরআই
: কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং। একটি নিউরোইমেজিং প্রযুক্তি যা মস্তিষ্কের সক্রিয় অঞ্চলে রক্ত প্রবাহের পরিবর্তনগুলো সনাক্ত করে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম
; ভুলে যাওয়া
: স্মৃতি মনে করা যায় না
; আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়াকরণ
: জ্ঞানীয় চাহিদা যা প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য দরকারী। তবে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োজনীয় নয়
; অন্তর্নিহিত জ্ঞানীয় লোড
: যে কোনও প্রদত্ত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় লোড
; দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি
: স্মৃতি যা দিন, মাস, বছর এবং / অথবা দশক ধরে বিকশিত হয়। স্মৃতির স্থায়ী সঞ্চয় সারা জীবন ধরে বিকশিত হয়
; পদ্ধতিগত জ্ঞান
: গাড়ি চালানো, স্কিইং করা বা কফি তৈরির মতো প্রতিদিনের কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সে সম্পর্কে জ্ঞান; "কিভাবে জানার" জ্ঞান
; প্রোটোটাইপ
: একটি অত্যন্ত সাধারণ / বিশিষ্ট ধারণা
; স্মরণ
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য মনে রাখা হয়
; পুনর্গঠন
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য স্মরণে পুনর্গঠন করা হয়। তবে ঠিক মনে রাখা হয় না
; রেফারেন্সিয়াল হোল্ডিং
: যখন কেউ অস্থায়ীভাবে তথ্য ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে রাখে যখন অন্যান্য তথ্য একযোগে প্রক্রিয়া করা হয়
; রিহার্সাল
: জ্ঞানীয় পুনরাবৃত্তি যা তথ্যকে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সক্রিয় থাকতে দেয়
; পুনরুদ্ধার
: দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বাইরে এবং ওয়ার্কিং স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার কাজ
; স্কাফলোডিং
: কোনও বস্তু (বা স্কিমাটা) "নির্মাণাধীন" থাকাকালীন সহায়তার একটি অস্থায়ী কাঠামো যা সম্পন্ন হওয়ার পরে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সহায়তার আর প্রয়োজন হয় না।
; স্কিমাটা বা স্কিমাটা
: জ্ঞানীয় কাঠামো (গুলো) যা জ্ঞান সংগঠিত করতে এবং চিন্তাভাবনা, উপলব্ধি এবং মনোযোগকে গাইড করতে সহায়তা করে
; শব্দার্থিক স্মৃতি
: সাধারণ ধারণা এবং পদ্ধতির অনির্দিষ্ট স্মৃতি; নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত ঘটনা বা অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত নয়
; সেন্সরি রেজিস্টার
: ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে একটি জ্ঞানীয় ফাংশন যেখানে অনুভূত ইনপুটটি অর্থ গ্রহণের জন্য সংরক্ষণ করা হয়
; অ্যাক্টিভেশন ছড়ানো
: অন্য সম্পর্কিত ধারণার স্মরণ দ্বারা উদ্ভূত একটি ধারণার স্মরণ
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
shlwz8pc38fczpkes4g0mkvssqorlyw
85723
85722
2025-07-06T14:04:32Z
NusJaS
8394
85723
wikitext
text/x-wiki
একজন শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করে এবং শ্রেণিকক্ষের পাঠ মুখস্থ করে, তখন সেই তথ্য কোথায় যায়? '''[[#glos_দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি|দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি]]''' শেখার ক্ষেত্রে একেবারে অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন শিক্ষার্থী যা কিছু শেখে, তা হয়তো স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি কিংবা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়। যদিও উভয় ধরনের স্মৃতিই তথ্য সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবুও এগুলো মানুষের শেখার ধরন, উপলব্ধি এবং অর্থ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। শিখন ও স্মৃতি একে অপরকে অবিরত প্রভাবিত করে। যেমনিভাবে পূর্বের অভিজ্ঞতা বা পূর্বজ্ঞান নতুন কোনো বিষয় শেখাকে আরও সহজ করে তোলে। এই অধ্যায়ে আমরা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান, কার্যকারিতা ও কাঠামোর বিষয়ে আলোচনা করব। এটি মূলত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ মডেল ভিত্তিক। আমরা এই কাঠামোটিকে জ্ঞানের সঙ্গে সংযুক্ত করে বিশ্লেষণ করব কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে, সেখানে সংরক্ষিত হয় এবং কীভাবে তা পুনরুদ্ধার করা যায়। সর্বশেষে, আমরা নতুন ও প্রচলিত কিছু মডেল তুলে ধরব, যেগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।
==দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির গঠন ও কার্যকারিতা==
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির ধারণক্ষমতা অসীম এবং স্থায়ী বলে মনে করা হয়, যেখানে একজন মানুষ জীবদ্দশায় যত রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সবই সংরক্ষিত থাকতে পারে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি থাকা আবশ্যক। এটি কীভাবে কাজ করে, এর গঠন ও প্রক্রিয়া বোঝা শিক্ষার্থীদের নিজের শেখা আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়।
আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময়ে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ তথ্য থাকে এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতির (যা অন্য একটি অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে) মতো এটি টিকিয়ে রাখার জন্য ক্রমাগত অনুশীলন বা পুনরাবৃত্তি প্রয়োজন হয় না। এখানে সংরক্ষিত তথ্য '''[[#glos_স্মরণ|স্মরণ]]''' অথবা '''[[#glos_পুনর্গঠন।|পুনর্গঠন]]''' করা হয়, পুনরাবৃত্তি নয়। দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে সাধারণত তিনটি জ্ঞানের বিভাগে ভাগ করা হয়: '''[[#glos_declarative knowledge|ঘোষণামূলক জ্ঞান]]''', '''[[#glos_প্রক্রিয়াগত জ্ঞান|প্রক্রিয়াগত জ্ঞান]]''', এবং '''[[#glos_শর্তাধীন জ্ঞান|শর্তাধীন জ্ঞান]]'''।
ঘোষণামূলক জ্ঞান (বা '''[[#glos_শব্দার্থিক স্মৃতি|শব্দার্থিক]]''' জ্ঞান) হলো এমন তথ্য যা আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি। অন্যদিকে প্রক্রিয়াগত জ্ঞান হলো এমন দক্ষতা ও প্রক্রিয়া যা আমরা অনায়াসে সম্পাদন করতে পারি, কিন্তু স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি না (পরবর্তী অংশে উৎপাদন নিয়ম এবং ACT-R তত্ত্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে)। শর্তাধীন জ্ঞান বোঝায়, কখন ঘোষণামূলক ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞান প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানা।
{| class="wikitable"
!ঘোষণামূলক জ্ঞান
!প্রক্রিয়াগত জ্ঞান
!শর্তাধীন জ্ঞান
|-
|মোবাইল ফোন একটি পোর্টেবল টেলিফোন।
|ফোন কল করতে জানা।
|কখন ফোন রিসিভ বা কেটে দিতে হয়।
|-
|গাড়ির সাধারণত চারটি চাকা থাকে।
|গাড়ি চালাতে জানা।
|কখন সিটবেল্ট বাঁধতে বা খোলার দরকার।
|}
চিত্র ১: ঘোষণামূলক, প্রক্রিয়াগত এবং শর্তাধীন জ্ঞানের উদাহরণ
==জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান==
“জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান” বলতে এমন পাঁচটি মানসিক কাঠামো বোঝানো হয় যা অনেক তাত্ত্বিকদের মতে একত্রে কাজ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত সকল মানসিক কাঠামো ও তথ্যের ভিত্তি গঠন করে।<ref name=“Bruning”>Bruning, R., & Schraw, G. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.). Pearson Education</ref> মূলত, এগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান। যদিও অনেকগুলো উপাদানের মাঝে মিল থাকতে পারে, প্রতিটির কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। প্রথম তিনটি উপাদান ঘনিষ্ঠভাবে ঘোষণামূলক জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, আর শেষ দুটি সাধারণত প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref name=“Bruning” />
===[[#glos_ধারণা|ধারণা]]===
<u>ধারণা কী?</u> ধারণা হলো এমন মানসিক গঠন, যার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাদানকে অর্থবোধক ছোট ছোট ভাগে ভাগ করি এবং শ্রেণিবদ্ধ করি। এটি নতুন তথ্য বুঝতে সাহায্য করে।<ref name=“Bruning” /> এগুলোকে বলা হয় “শব্দার্থিক জ্ঞানের অংশবিশেষ”, যেগুলো তথ্য স্মরণ করার সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো সাধারণত ঘোষণামূলক জ্ঞানের আওতায় পড়ে।<ref name=“Khajah”>Khajah, M. M., Lindsey, R. V., & Mozer, M. C. (2014). Maximizing students' retention via spaced review: Practical guidance from computational models of memory. Topics in Cognitive Science, 6(1), 157-169. doi:10.1111/tops.12077</ref>
যেমন, "বিড়াল" সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে বলা যায় এটি এমন এক প্রাণীশ্রেণি যাদের গঠন, আকার ও আচরণে মিল থাকে: তারা ছোট, লোমযুক্ত এবং ‘ম্যাও’ শব্দে যোগাযোগ করে। তাদের রঙ হতে পারে সাদা, কালো, বাদামি ইত্যাদি; আবার তারা গৃহপালিত বা বন্য হতে পারে। তবুও, এরা সবাই "বিড়াল" শ্রেণির মধ্যে পড়ে।
বহুল পরিচিত বা সাধারণ ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি ধারণাকে বলা হয় '''[[#glos_প্রোটোটাইপ|প্রোটোটাইপ]]'''।<ref name="“Bruning”" /> যেমন, উত্তর আমেরিকার একটি আদর্শ বাস্কেটবল লিগের প্রোটোটাইপ হতে পারে “ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (NBA)”।
<u>ধারণা গঠনের উপায় কী?</u> ধারণা গঠনের প্রধান দুটি তত্ত্ব আছে। প্রথমত, কেউ কেউ মনে করেন ধারণা হলো মস্তিষ্কের বিমূর্ত মানসিক গঠন, যেগুলো ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক পদ্ধতির থেকে আলাদাভাবে গঠিত হয়।<ref name="“Bonner”" /> অন্যদিকে, fMRI এর মতো নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ধারণা তৈরি হয় ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক উপাদানের সঙ্গে মিলিয়ে, এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সেগুলো বহু-মাত্রিকভাবে সংরক্ষিত হয়।<ref name="“Bonner”" />
আমরা আমাদের ধারণাকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করি: পদার্থ, প্রক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থা।<ref name=":4">Chi, M.T.H., de Leeuw, N., Chiu, M., & La Vancher, C. (1994). Eliciting self-explanations improves understanding. ''Cognitive Science, 18,'' 439-477.</ref> যেমন, “প্রক্রিয়া” বলতে বোঝায় এমন এক ধারাবাহিক ঘটনা যা থেকে আমরা নির্দিষ্ট ফল প্রত্যাশা করি, যেমন—কিছু ফেলে দিলে তা মাধ্যাকর্ষণজনিত কারণে পড়ে যাবে। “মানসিক অবস্থা” বোঝায় এমন অভ্যন্তরীণ অনুভূতি বা আবেগ, যেমন—দুঃখিত, খুশি বা অনিশ্চিত বোধ করা।
<u>ধারণা তৈরির কৌশল</u> সম্পর্কে তিনটি স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে: (১) সংরক্ষণশীল মনোযোগ কৌশল (conservative focusing), যেখানে ব্যক্তি প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য দেখে সঠিক উদ্দীপনা নির্বাচন করে।<ref>Bruner, J.S., Goodnow, J.J., & Austin, G.A. (1956). ''A study of thinking.'' New York, NY: Wiley</ref> (২) মনোযোগ গেম্বলিং কৌশল (focus gambling), যেখানে ব্যক্তি একবারে সব বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এটা দ্রুত কাজ করে, ভুলের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এবং (৩) স্ক্যানিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একাধিক অনুমান একসঙ্গে পরীক্ষা করে দেখে। এই পদ্ধতিও দ্রুত, কিন্তু মানসিক চাপ বেশি হওয়ায় মনে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।<ref name="“Bruning”" />
===প্রস্তাবনা ===
প্রস্তাবনা এমন মানসিক ধারণা যা দিয়ে ভাষাগত তথ্য এবং অধিকাংশ ঘোষণামূলক জ্ঞান সংরক্ষিত হয় বলে তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন।<ref name=“Bruning” /> প্রস্তাবনা হলো সবচেয়ে ছোট মানসিক বিবৃতি যা অর্থ বহন করে, তবে ধারণার তুলনায় আরও জটিল। কারণ এটি একাধিক ধারণার ভিত্তিতে গঠিত হয় এবং সেগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নির্দেশ করে।<ref name="Remue">Remue, J., De Houwer, J., Barnes-Holmes, D., Vanderhasselt, M., & De Raedt, R. (2013). Self-esteem revisited: Performance on the implicit relational assessment procedure as a measure of self- versus ideal self-related cognitions in dysphoria. Cognition and Emotion, 27(8), 1441-1449. doi:10.1080/02699931.2013.786681</ref> একটি প্রস্তাবনাকে সত্য বা মিথ্যা হিসেবে বিচার করা যায়।<ref>Anderson, J.R. (2005). ''Cognitive psychology and its implications'' (6th ed.). New York: Worth</ref>
উদাহরণ: “লুক মেয়াদোত্তীর্ণ টিকিট কিনেছে।”
১. লুক টিকিট কিনেছে। (ঘটনাটি অতীতে ঘটেছে।)
২. টিকিটটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এই দুটি প্রস্তাবনা মিলিয়ে একটি “প্রস্তাবনামূলক নেটওয়ার্ক” তৈরি হয় যা নির্দিষ্ট তথ্য স্মরণ বা '''[[#glos_পুনরুদ্ধার|পুনরুদ্ধার]]''' করার সময় সক্রিয় হয়।
===[[#glos_স্কিমাটা|স্কিমাটা]]===
<u>স্কিমাটা কী?</u> স্কিমাটা হলো এমন মানসিক কাঠামো যা একজন ব্যক্তির সাধারণ কারণ ও ফলাফলের জ্ঞানকে উপস্থাপন করে।<ref name="Jui">Jui-Pi Chien. (2014). Schemata as the primary modelling system of culture: Prospects for the study of nonverbal communication. Sign Systems Studies, 42(1), 31-41. doi:10.12697/SSS.2014.42.1.02</ref> আমরা যে কোনও জ্ঞান অর্জন করি, তা স্কিমার মাধ্যমে সংগঠিত হয় এবং এটি তথ্যের এনকোডিং, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দায়ী।<ref name=“Bruning” /> স্কিমাটা গঠিত হয় বাহ্যিক পরিবেশ ও পূর্বজ্ঞান একত্রে কাজ করে।<ref name="Le"> Le Grande, M. R., Elliott, P. C., Worcester, M. U. c., Murphy, B. M., Goble, A. J., Kugathasan, V., et al. (2012). Identifying illness perception schemata and their association with depression and quality of life in cardiac patients. Psychology, Health & Medicine, 17(6), 709-722. doi:10.1080/13548506.2012.661865 </ref> ডানদিকে প্রদত্ত চিত্রটি "স্তন্যপায়ী প্রাণীর জ্ঞান" সংক্রান্ত একটি স্কিমার উপস্থাপন হতে পারে।
[[File:Schema111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Schema111.jpg|থাম্ব|চিত্র ২. স্কিমাটা: স্তন্যপায়ী প্রাণী সম্পর্কে জ্ঞান]]
স্কিমাটাকে '''স্ক্যাফোল্ডিংয়ের''' মানসিক সমতুল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অন্য কথায়, আমরা যে স্কিমাটা গঠন করি তা আমাদের জন্য সহায়তা প্রদান করবে যখন আমরা নিজেদেরকে উপন্যাসের পরিস্থিতিতে খুঁজে পাই বা নতুন তথ্য শিখি।<ref name="Sternberg & Sternberg, 2012">Sternberg, R. J., & Sternberg, K. (2012). Cognitive psychology (6th ed.). Belmont, CA: Wadsworth.</ref>
স্কিমাটা কীভাবে গঠিত হয়? একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাক-বিদ্যমান স্কিম্যাটিক জ্ঞান রাখা নতুন এনকোডেড তথ্য স্মরণ করার চেষ্টা করার সময় নতুন তথ্য ধরে রাখার উন্নত স্মৃতির সাথে যুক্ত হয়েছে।<ref name="van">van Kesteren, Marlieke T. R., Rijpkema, M., Ruiter, D. J., Morris, R. G. M., & Fernàndez, G. (2014). Building on prior knowledge: Schema-dependent encoding processes relate to academic performance. Journal of Cognitive Neuroscience, 26(10), 2250-2261. doi:10.1162/jocn_a_00630</ref> এটি ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়। কারণ এটি নতুন তথ্যকে মস্তিষ্কে (এবং এইভাবে সক্রিয় স্কিমাতে) আরও দ্রুত একীভূত করার অনুমতি দেয়।<ref name="van" /> আমাদের স্কিমাতে এনকোড করা তথ্যগুলো স্লট হিসাবে পরিচিত যা সাজানো হয়; নির্দিষ্ট মানসিক "বিভাগগুলো"। এর মধ্যে আমাদের জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এটি সামগ্রিকভাবে কীভাবে অনুভূত হয়।<ref name="“Bruning”" /> যখন একটি স্কিমাটা বিকশিত হয়েছে এবং ঘটনা বা ধারণাগুলোর একটি সাধারণ ঘটনা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, তখন এটি সম্ভবত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি অংশ হয়ে উঠবে যেখানে এটি আমাদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যতের কোনও স্কিম্যাটিক তথ্যের ভিত্তি হিসাবে কাজ করতে থাকবে যা এনকোড করা যেতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> এই প্রক্রিয়াটিকে স্কিম্যাটিক ইনস্ট্যান্টিয়েশন বলা হয়।<ref>Rumelhart, D.E. (1981). The building blocks of cognition. In J.T Guthrie (Ed.), ''Comprehension and teaching: Research reviews'' (pp. 3-26). Newark, DE: International Reading Association.</ref>
=== প্রোডাকশন ===
প্রোডাকশন হলো "যদি-তারপর" বিবৃতি যা কর্মের নিয়মগুলোর একটি সেট হিসাবে কাজ করে। এটি আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানকে পরিচালনা করে।<ref name=":0">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref> এখানে যদি-তারপর প্রোডাকশনর একটি উদাহরণ: "যদি ট্র্যাফিক লাইট সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়। তবে ধীর হয়ে যান"। প্রোডাকশনগুলো তাত্ক্ষণিক, স্বয়ংক্রিয় মানসিক ধারণা যা ঘটনাগুলোর একটি সাধারণ ক্রমের পুনরাবৃত্তিমূলক এক্সপোজারের পরে মানুষের দ্বিতীয় প্রকৃতি হতে শেখা হয়। তারা এই ইভেন্টগুলোর জন্য উৎপাদন বিধি এবং প্রত্যাশার একটি সেট সরবরাহ করে এবং প্রস্তাবগুলোর মতো, উৎপাদন নেটওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত ইন্টারেক্টিভ গ্রুপগুলোতে সংগঠিত হয়। প্রায়ই একটি উৎপাদন সক্রিয় করে, অন্যান্য প্রোডাকশনগুলো ট্রিগার করা হবে, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া এবং ক্রিয়াগুলোর একটি সিরিজে প্রতিক্রিয়া জানায়। পরবর্তী বিভাগটি স্মৃতির তত্ত্ব হিসাবে উৎপাদন এবং উৎপাদন বিধিগুলোর আরও বিশদ আলোচনা সরবরাহ করে।
=== স্ক্রিপ্ট ===
[[File:Script111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Script111.jpg|থাম্ব|চিত্র ৩. হোটেলে চেক-ইন করার জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট]]
স্ক্রিপ্ট হলো মানসিক ধারণা যা আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানের অন্তর্নিহিত কাঠামো হিসাবে কাজ করে। এটি সাধারণত সম্মত হয় যে স্ক্রিপ্টগুলো আমাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের সামাজিক বোঝার জন্য অত্যাবশ্যক, এবং মূলত সামাজিক পরিস্থিতি এবং ঘটনাগুলো পরিচালনা করে এমন তথ্য সরবরাহ করার জন্য কাজ করে, বিশেষত কে কী করে, কখন তারা এটি করে, কার কাছে তারা এটি করে এবং কেন। হোটেলে চেক ইন করার মতো অনেক ধরণের ইভেন্টে লোকেরা স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে। স্ক্রিপ্টগুলো সময়ের সাথে সাথে এবং পুনরাবৃত্ত ইভেন্টগুলোর ক্রমাগত এক্সপোজারের সাথে বিকাশ লাভ করে যা সমস্ত মূলত প্রকৃতির অনুরূপ।<ref name="T">Trillingsgaard, A. (1999). The script model in relation to autism. European Child & Adolescent Psychiatry, 8(1), 45. Retrieved from http://search.ebscohost.com/login.aspx?direct=true&db=aph&AN=4689586&site=ehost-live</ref> উদাহরণস্বরূপ, সময়ের সাথে সাথে কোনও হোটেলে কীভাবে চেক ইন করবেন সে সম্পর্কে আপনি নিজের স্ক্রিপ্টটি বিকাশ করতে পারেন এবং এটি আপনাকে সংগঠিত করতে, জিনিসগুলো মনে রাখতে, পাশাপাশি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য আসন্ন ইভেন্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়তা করতে পারে। ডানদিকের চিত্রটি হোটেলের চেক-ইনের জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট।
=== নির্দেশনার জন্য এই বিল্ডিং ব্লকের প্রভাব ===
সমস্ত শিক্ষাবিদদের (বর্তমানে নিযুক্ত এবং ভবিষ্যতে একইভাবে) এটি নিশ্চিত করা অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে তারা জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লকগুলোর প্রতিটি পৃথক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞানী এবং কীভাবে এই সমস্ত মানসিক ধারণাগুলো শেখার সুবিধার্থে একসাথে কাজ করে, জ্ঞান এবং বিকাশ, পুনরুদ্ধার এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ছাড়াও। এটি করার মাধ্যমে, তারা নিশ্চিত করতে পারে যে তাদের সমস্ত শিক্ষার্থী এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলো পুরোপুরি ব্যবহার করছে (যেমন পূর্ববর্তী প্রোডাকশনগুলো সক্রিয় করার জন্য নতুন পাঠ্যক্রমের আগে "পর্যালোচনা পাঠ" শেখানোর মাধ্যমে, নতুন তথ্যের এনকোডিংয়ের সুবিধার্থে স্কিমাটা প্রস্তাব, পাশাপাশি পরে আরও সহজ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি) যাতে তাদের শিক্ষা থেকে সমস্ত সুবিধা কাটা যায়। এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলোর অভ্যন্তরীণ কাজগুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে, শিক্ষাবিদরা কীভাবে শেখার ঘটনা ঘটে এবং উপন্যাসের উদ্দীপনা এবং তথ্য এনকোড করার সময় কীভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তমভাবে সহায়তা করতে পারে তা আরও ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন।
== এনকোডিং: কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছায় এবং কীভাবে এটি সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করা হয় ==
এই বিভাগটি দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে সম্পর্কিত এনকোডিংয়ের দিকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা। এনকোডিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার জন্য, দয়া করে পরবর্তী অধ্যায়টি দেখুন।
=== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছানোর তথ্য: মোডাল মডেল ===
মোডাল মডেলটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মডেলগুলোর মধ্যে একটি যা বর্ণনা করে যে পরিবেশ থেকে তথ্য কীভাবে অনুভূত হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি পৌঁছানোর আগে জ্ঞানীয় ফাংশনগুলোর একটি সিরিজের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে। এটি একটি সাধারণ চিত্র যা সাম্প্রতিক গবেষণা আমাদের ইন্দ্রিয় থেকে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তরিত হওয়ার ক্রমটি একত্রিত করেছে, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে শেষ হয়। এই মডেলের উপর ভিত্তি করে, তথ্যটি তিনটি "নিম্ন" স্মৃতি সিস্টেমের প্রত্যেকটির মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা হবে বলে মনে করা হয়, প্রতিটি নিজস্ব পৃথক ফাংশন। এই মডেলটি বিভিন্ন স্মৃতি ফাংশন এবং প্রত্যেকের মধ্যে প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য সরবরাহ করে (এই মডেলের আরও বিশদ পরবর্তী বিভাগে স্মৃতির বিভিন্ন তত্ত্বের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে)।
=== তথ্য সংরক্ষণ ===
এনকোডিং হলো ওয়ার্কিং স্মৃতি থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া এবং কোনও কিছু কতটা ভালভাবে মনে রাখা হয় তার তাত্পর্যের। কারণে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীচে কয়েকটি বিভিন্ন এনকোডিং এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি রয়েছে যা সুপরিচিত এবং সুপরিচিত।
==== রিহার্সাল ====
মোডাল মডেলের কথা উল্লেখ করে, রিহার্সাল হলো প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে রাখা হয়, সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে। রক্ষণাবেক্ষণ রিহার্সাল সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তি এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য তথ্যের প্রক্রিয়া নিয়োগ করে (এটি মুখস্থ মুখস্থ হিসাবেও পরিচিত)। তবে এটি এনকোডিংয়ের আরও অগভীর পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হয়। কারণ তথ্যটি সাধারণত অল্প সময়ের জন্য সক্রিয় রাখা হয় এবং পুনরাবৃত্তি বন্ধ হয়ে গেলে বেশ দ্রুত ক্ষয় হয়। বিস্তৃত রিহার্সাল এনকোডিংয়ের আরও অর্থবহ পদ্ধতি, যেখানে পূর্বে শেখা তথ্যের সাথে সম্পর্কিত হয়ে শেখার তথ্যকে অর্থ দেওয়া হয়। যদিও রিহার্সালের এই রূপটি আরও জ্ঞানীয় সংস্থান ব্যবহার করে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার জন্য ভাল এবং গভীর এনকোডিং ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করে।<ref>Craik, F.I.M. (1979). Human memory. ''Annual Review of Psychology, 30'', 63-102.</ref>
==== এলাবোরেশন ====
বেশ কিছু বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল বিদ্যমান, যার সবকটিই নতুন তথ্য প্রক্রিয়াকরণ বা মনে রাখা সহজ করে তোলে। একটি সুপরিচিত এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল হল স্মৃতিবিদ্যা, একটি প্রক্রিয়া যা সুপরিচিত তথ্যের সাথে নতুন তথ্য একত্রিত করে আরও পরিশীলিত কোডিংকে জড়িত করে। এই কৌশলটি সাধারণত ছড়া, হাতের অঙ্গভঙ্গি, সংক্ষিপ্ত রূপ এবং আরও অনেক কিছু ব্যবহার করে।<ref name="“Bruning”" /> উদাহরণস্বরূপ, আপনি স্টেক, ডিম এবং রসুনের আপনার কেনাকাটার তালিকা মনে রাখার জন্য "SEG" সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে মধ্যস্থতা, আরও অর্থপূর্ণ কিছুর সাথে একটি নতুন তথ্যের টুকরো সংযুক্ত করার একটি সহজ কৌশল এবং চিত্রকল্প, যার মধ্যে মনে রাখার জন্য একটি অনুরূপ চিত্রকে একত্রিত করা জড়িত।[১]<ref name="“Bruning”" /> আপনি এই জিনিসগুলির কল্পনাও ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার বাড়ির মতো একটি পরিচিত জায়গার সাথে সম্পর্কিত। আপনার বসার ঘরের দরজা খোলার সময় রসুনের তীব্র গন্ধ, দরজার পাশে ফাটা ডিমের বাক্স এবং ডাইনিং টেবিলে রসালো স্টেকের টুকরো কল্পনা করুন। এই কৌশলটি ব্যবহার করে, আপনি আপনার বসার ঘর থেকে আপনার ডাইনিং রুমে একটি কাল্পনিক হাঁটা দিয়ে জিনিসগুলি মনে রাখতে পারেন।
==== সংশ্লিষ্ট তত্ত্ব ====
===== প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর =====
প্রভাবশালী গঠনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, বিশেষ করে ক্রেইক এবং লকহার্টের তত্ত্ব আজও তাৎপর্যপূর্ণ।<ref>Craik, F.I.M., & Lockhard, R.S. (1986). CHARM is not enough: Comments on Eich's model of cued recall. ''Psychological Review, 93,'' 360-364.</ref> তাদের প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর সবচেয়ে সুনামধন্য। এই তত্ত্ব অনুসারে, শিক্ষার্থীরা শেখা তথ্যের উপর জ্ঞানীয় বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় - এই প্রক্রিয়াগুলির পরে তথ্যের স্মৃতি স্বাভাবিকভাবেই ধরে রাখা হয়। যাইহোক, তথ্যের ধারণক্ষমতা মূলত প্রক্রিয়াজাতকরণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। তত্ত্ব অনুসারে, তথ্য যত গভীরভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং তথ্যের যত বেশি অর্থ দেওয়া হয়, ততই এটি ধরে রাখা যায়, অন্যদিকে আরও ভাসা ভাসা বিবরণের অগভীর প্রক্রিয়াকরণ তথ্যকে আরও দ্রুত ভুলে যাওয়ার প্রবণতা রাখে। <ref name="“Bruning”" />এটি তাত্ত্বিক এবং ব্যাপকভাবে প্রমাণিত যে জাগতিক কাজের চেয়ে আরও অর্থপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের শেখা তথ্য আরও ভালভাবে মনে রাখতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের এজেন্সি এবং পছন্দ প্রদানও ধরে রাখার জন্য উপকারী। কারণ জ্যাকবি এবং আরও অনেকের দ্বারা করা গবেষণা দেখায় যে কীভাবে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার (বিশেষ করে কঠিন সিদ্ধান্ত) কাজটি আরও বেশি মনে রাখে যদি তারা সহজ সিদ্ধান্ত নেয়, অথবা একেবারেই না নেয়।<ref name="“Bruning”" />
===== ডুয়াল কোডিং থিওরি =====
অ্যালান পাইভিও প্রস্তাবিত এই তত্ত্বটি যে জ্ঞান দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দৃশ্যত বা মৌখিকভাবে বা উভয়ই রাখা হয়।<ref name=":5">Paivio, A. (1986). ''Mental representations: A dual-coding approach.'' New York, NY: Oxford University Press.</ref> এটি কিছু পণ্ডিত এবং মনোবিজ্ঞানীদের দ্বারা সমর্থিত। তারা সম্মত হন যে যখন তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং চিত্রের পাশাপাশি মৌখিক আকারে সংরক্ষণ করা হয় তখন এটি বেশিরভাগ সহজেই মনে রাখা যায়। <ref>Butcher, K.R. (2006). Learning from text with diagrams: Promoting mental model development and inference generation. ''Journal of Educational Psychology, 98,'' 182-197.</ref> এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষাগত প্রভাবের জন্য, মস্তিষ্কের বৈশিষ্ট্য এবং অঞ্চলগুলো সম্পর্কে শেখার সময় পাঠ্য তথ্যের পাশাপাশি একটি মানব মস্তিষ্কের গ্রাফিক প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো সহায়ক হতে পারে। এই তত্ত্বটি রিচার্ড মেয়ারের ''কগনিটিভ থিওরি অফ মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের'' সাথে কিছুটা ভিত্তি ভাগ করে।<ref name=":6">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref> এটি পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।
===== মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব =====
রিচার্ড মায়ার চিত্র এবং শব্দের সংমিশ্রণগুলো অন্বেষণ করে আবিষ্কার করেছেন যে উপযুক্তগুলো বিশেষত বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর নির্দেশনা সরবরাহ করতে পারে। <ref name=":62">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref>এই তত্ত্বটি তিনটি নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি: ক) ডুয়াল-কোডিং থিওরি থেকে ধারণা; খ) এই ধারণাটি যে ওয়ার্কিং স্মৃতির চিত্রাবলী এবং মৌখিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য খুব সীমিত ক্ষমতা রয়েছে। এর অর্থ নির্দেশাবলী এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত যা শিক্ষার্থীদের ওয়ার্কিং স্মৃতি সিস্টেমে রাখা জ্ঞানীয় লোডের পরিমাণকে অনুকূল করে। এটি জ্ঞানীয় লোড তত্ত্ব হিসাবেও পরিচিত;<ref>van Merrienboer, J.J.G., & Sweller, J. (2005). Cognitive load and complex learning: Recent developments and future directions. ''Educational Psycholog Review, 17'', 147-177.</ref> এবং গ) এই ধারণাটি যে শেখার সাথে তথ্যকে সংগঠিত এবং সংহত করা জড়িত।<ref name="mayer2008">Mayer, R. E. (2008). Applying the science of learning: Evidence-based principles for the design of multimedia instruction. Cognition and Instruction, 19, 177–213.</ref>
=== তথ্য পুনরুদ্ধার ===
==== সক্রিয়করণের বিস্তার ====
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে প্রচুর পরিমাণে তথ্য সঞ্চিত থাকতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পুনরুদ্ধার বা স্মরণ করা কখনও কখনও কঠিন হতে পারে। এটি '''স্প্রেডিং অ্যাক্টিভেশন''' নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এর অর্থ যখন জ্ঞানের একটি টুকরো বর্তমানে আমাদের মনে থাকে, তখন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্যের আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সম্পর্কিত তথ্যগুলোও সক্রিয় করা যেতে পারে।<ref name=":7">Anderson, J.R. (2010). ''Cognitive Psychology and its implications. (7th ed.).'' New York, NY: Worth.</ref>উদাহরণস্বরূপ, বেন যদি ভাবছেন, "এখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে এটি কতই না চমৎকার হবে"। তবে এটি এক সপ্তাহ পরে বৃষ্টিপাত তার ক্ষেত্রের ভ্রমণকে প্রভাবিত করবে কিনা তা দেখার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার চিন্তাভাবনাকে ট্রিগার করতে পারে। এটি তাকে সেদিন তার ভ্রমণ সঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ করার কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
==== পুনর্গঠন ====
যেহেতু স্মৃতির কিছু টুকরো, যেমন অনেক আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্মরণ করা কঠিন হতে পারে, আমাদের জ্ঞানীয় সিস্টেম কোনও প্রাসঙ্গিক সূত্র ব্যবহার করতে পারে যা আমরা মনে রাখতে পারি এবং যুক্তির মাধ্যমে স্মৃতির এই টুকরোগুলো পুনর্গঠন করতে পারি। এটি এমন স্মৃতি তৈরি করতে পারে যা সঠিক ঘটনার সাথে অভিন্ন নয়। তবে যৌক্তিক এবং যুক্তিসঙ্গত।<ref>Koriat, A., Goldsmith, M. & Pansky, A. (2000). Toward a psychology of memory accuracy, In S.Fiske (Ed.), ''Annual review of psychology'', (pp. 481-537). Palo Alto, CA: Annual Reviews.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ১০ বছর আগে বন্ধুদের সাথে একটি হ্রদের কাছে পিকনিকে গিয়েছিলাম। তবে আমরা ভ্রমণটি স্মরণ করতে সক্ষম হতে পারি। তবে এর উদ্দেশ্যটি মনে রাখতে পারি না এবং আমরা বলতে পারি যে এটি হ্রদের চারপাশে একটি হাইকিং ট্রিপ ছিল। এটি মূল ইভেন্টের মতো কিছু মিল ভাগ করে। তবে অভিন্ন নয়।
==== ভুলে যাওয়া ====
যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য তথ্য অ্যাক্সেস করা না হয়। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত এটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম নাও হতে পারি। এটি ক্ষয় বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ঘটতে পারে। এর অর্থ তথ্য সংকেতকে দুর্বল করা এবং অন্যান্য বিরোধী তথ্য যথাক্রমে আমরা যে স্মৃতির টুকরোটি স্মরণ করার চেষ্টা করছি তাতে হস্তক্ষেপ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা আর মনে করতে পারি না যে আমরা কোনও কনসার্টে কী টি-শার্টটি পরেছিলাম। কারণ তখন থেকে কয়েক বছর হয়ে গেছে, বা যদি আমরা মনে করি এটি নীল ছিল। তবে সম্প্রতি একটি বন্ধু উল্লেখ করেছে যে এটি আসলে সবুজ ছিল। এর একটি স্নায়বিক ব্যাখ্যা হলো আমাদের মস্তিষ্কের কোষ এবং তাদের মধ্যে সংযোগগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এমনকি মারা যেতে পারে যদি আমরা তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার না করি।
ক্ষয় এবং হস্তক্ষেপের প্রক্রিয়া সত্ত্বেও, জ্ঞান অত্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে উপযুক্ত ধরণের প্রম্পট এবং তথ্য মনে রাখার অন্যান্য উপায়ে।<ref>Erdelyi, M.H. (2010). The ups and downs of memory. ''American Psychologist, 65,'' 623-633.</ref> এর মধ্যে পূর্বে উল্লিখিত কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন স্মৃতিবিদ্যা এবং সম্প্রসারণ ব্যবহার করা।
== দক্ষতা এবং দক্ষতার স্বয়ংক্রিয়তা ==
সুস্পষ্ট বা ঘোষণামূলক জ্ঞান অনেকগুলো প্রক্রিয়া যেমন নির্দেশনা, অভিজ্ঞতা এবং তথ্য মনে রাখার জন্য জ্ঞানীয় কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অর্জন এবং তৈরি করা যেতে পারে (পূর্বে উল্লিখিত)।
কিছু পণ্ডিত যুক্তি দেখিয়েছেন যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। কারণ অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার সাথে কোনও কাজে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে, মূলত এর অর্থ হলো সুস্পষ্ট জ্ঞানের স্থাপনা এত স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায় যে এটি একটি অন্তর্নিহিত দক্ষতায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা প্রথমবারের মতো কোনও উপহার মোড়ানোর চেষ্টা করি, আমরা প্রক্রিয়াটির প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট করার চেষ্টা করতে পারি, যেমন: উপহারের জন্য সঠিক আকারের মোড়ানো কাগজের একটি টুকরো সন্ধান করুন; উপহারের চারপাশে এটি মোড়ানো; অতিরিক্ত কাগজ কাটা; মোড়কটি সুরক্ষিত করতে টেপ ব্যবহার করুন। আমরা বারবার কাজটি সম্পাদন করার সাথে সাথে এই পদক্ষেপগুলো স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায়, মূলত প্রতিটি পদক্ষেপকে পৃথকভাবে বিস্তৃত বিবেচনা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এর আরও বিশদ উদাহরণ অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের পরবর্তী বিভাগে পাওয়া যাবে।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং শেখা: উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলোকে উত্সাহিত করা ==
যখন কেউ আরও জটিল তথ্য এনকোড করে উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়া সাধারণত তখন সক্রিয় হয়। উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত উচ্চতর শিক্ষাগত/শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য অর্জনে আরও বেশি সাহায্য করে।<ref name="“Bruning”" /> প্রশিক্ষকদের এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলিকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। যেমনটি আগে দেখানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যত বেশি বিস্তারিতভাবে শিখতে হবে তথ্য এনকোড করবে তত বেশি ভালো পারফর্ম করবে। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ এবং নির্দেশিত সহকর্মীদের প্রশ্ন করার মতো পদ্ধতির মাধ্যমে, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক স্কিমাটা সক্রিয় করতে পারেন এবং বোধগম্যতা এবং চিন্তা-উদ্দীপক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ প্রদান করতে পারেন। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ শিক্ষার্থীদের নতুন শেখার কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে: ইতিমধ্যেই পরিচিত তথ্যের একটি ভিত্তি নতুন শেখার তথ্যকে নির্দেশিত করতে সাহায্য করতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> ধরে রাখার জন্য, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন না করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু কাজ অনুশীলন করতে উৎসাহিত করতে পারেন।<ref name="“Bruning”" /> যতটা সম্ভব, প্রশিক্ষকদের নিষ্ক্রিয় শেখার পরিবর্তে সক্রিয়ভাবে শেখার জন্য শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার ক্ষেত্রে আরও বেশি জড়িত করা উচিত।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির কাজ: মূল্যায়ন এবং গবেষণা ==
দীর্ঘ সময় ধরে সংগৃহীত স্মৃতিগুলো দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার আরও বেশি সম্ভাবনা থাকে। তবে স্মৃতির গুণমানটি পরিমাণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। গুণমান অভিজ্ঞতার সময় ব্যক্তির দ্বারা সংগৃহীত সংবেদনশীল তথ্যকে বোঝাতে পারে, যেমন মুভি থিয়েটারে পপকর্নের গন্ধ নেওয়া, এবং মানের উপাদানগুলোর মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক থাকতে পারে, যেমন পপকর্নের গন্ধ পাওয়া এবং সিনেমাগুলোর কথা চিন্তা করা বা সিনেমাগুলোতে থাকা এবং পপকর্নের স্বাদ মনে রাখা।
এই ক্ষেত্রে করা বেশিরভাগ গবেষণা স্ব-মূল্যায়ন বা স্বতন্ত্র স্মৃতি পরীক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার উভয় ক্ষেত্রেই ত্রুটির সঠিক পরামিতি রয়েছে, যদিও কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং ডিভাইসগুলি কোনও ব্যক্তির মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে আক্রমণাত্মকভাবে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্ডারসন, ফিঞ্চাম, কিন এবং স্টোকো <ref>Anderson, J.R., Fincham, J.M., Qin, T., & Stocco, A. (2008). A central circuit of the mind. ''Trends in Cognitive Psychology, 12,'' 136-143.</ref> এই কৌশলটি ব্যবহার করে একটি পরীক্ষা করেছিলেন যাতে পদ্ধতিগত সম্পাদন, লক্ষ্য নির্ধারণ, ঘোষণামূলক স্মৃতি থেকে নিয়ন্ত্রিত পুনরুদ্ধার এবং চিত্র উপস্থাপনা গঠন এবং মস্তিষ্কের কর্টিকাল অঞ্চলের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এই পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখায় যে এই চারটি অঞ্চলের প্রতিটি ইমেজিং ডিভাইসে একটি ভিন্ন কর্টিকাল অঞ্চল আলোকিত করে। এই প্রমাণগুলি দেখায় যে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চল এই বিভিন্ন অঞ্চল পরিচালনা করে, তবে কৌশলটির সমালোচনাগুলি তুলে ধরে যে আমরা এখনও জানি না কেন এই কার্যকলাপ ঘটে এবং ক্রিয়াকলাপের বিন্যাস তৈরি করার জন্য মনের মধ্যে কোন সংযোগ তৈরি হচ্ছে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, এই ধরণের পরীক্ষাগুলি আমাদের পূর্বের তুলনায় আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বেশি অন্তর্দৃষ্টি দেয় এবং দেখায় যে কীভাবে বিভিন্ন তথ্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে উদ্দীপিত করতে পারে, তাই আমরা জানি যে তারা সব সময় সক্রিয় থাকে না।
== স্মৃতির অন্যান্য পরিবর্তনশীল এবং ক্রমবর্ধমান তত্ত্ব ==
=== নেটওয়ার্ক মডেল ===
[[File:An_example_of_a_network_model.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:An_example_of_a_network_model.jpg|থাম্ব|চিত্র ৫। একটি নেটওয়ার্ক মডেলের উদাহরণ]]
নেটওয়ার্ক মডেলকে মাইন্ড ম্যাপিং বা মস্তিষ্ক-ঝড় জালের সাথে তুলনা করা যেতে পারে কারণ তথ্য একটি ওয়েব-সদৃশ প্যাটার্ন দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়। এটি সাধারণত সাধারণ থেকে আরও নির্দিষ্ট তথ্য বা বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। এটি একটি ছোট শিশু যেভাবে ধীরে ধীরে চার পা এবং পশমযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিকাশ করে, তা শেখার অনুরূপ হবে যে একটি কুকুর এবং বিড়ালের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। নেটওয়ার্কিং মডেলগুলি তথ্যের ছোট ইউনিটগুলিকে সংগঠিত করার আরও সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি যখন তারা বিষয়ের মধ্যে অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্কিত করে। এই মডেলটি সরাসরি শিক্ষাদানে ব্যবহার করা হয়েছে - "মাইন্ড ম্যাপিং শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার প্রক্রিয়াগুলি পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল। এটি তাদের মেটাকগনিটিভ জ্ঞান অর্জন করতে এবং নতুন সমস্যা এবং পরিস্থিতি সমাধানের জন্য তাদের বোধগম্যতা স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছিল।"<ref>Ismail, M. N., Ngah, N. A., & Umar, I. N. (2010). The effects of mind mapping with cooperative learning on programming performance, problem solving skill and metacognitive knowledge among computer science students. ''Journal Of Educational Computing Research, 42''(1), 35-61. doi:10.2190/EC.42.1.b</ref>
=== সংযোগবাদী মডেল ===
[[File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|alt=A general model of what a Connectionist Model might look like|থাম্ব|চিত্র ৬। একটি সংযোগবাদী মডেল কেমন হতে পারে তার একটি সাধারণ মডেল]]
সংযোগবাদী মডেল হল একটি 'মস্তিষ্কের রূপক' যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চয় এবং পুনরুদ্ধার মডেলের জন্য ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটার রূপককে গ্রহণ করে; এটিকে সমান্তরাল বিতরণ প্রক্রিয়াকরণ মডেলও বলা হয়। এই মডেলটিতে প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে বোঝার ধারণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; এর একটি উদাহরণ হল বাম দিকে একটি সরল রেখা সহ একটি আকৃতি থাকা, ডানদিকে একটি '৩' আকৃতি থাকা। '১২ |৩ ১৪' সিরিজে এটিকে তেরো নম্বর হিসাবে দেখা হবে, তবে 'A |৩ C' ক্রমানুসারে এটি 'B' অক্ষর হিসাবে পড়া যেতে পারে। প্রেক্ষাপটের সাথে অভিযোজনযোগ্যতা এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাথে জ্ঞানীয় কাজগুলিকে একত্রিত করার ক্ষমতার কারণেই সংযোগবাদী মডেলটি এই গতিশীলতাগুলিকে আরও ভালভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই তত্ত্বটি বিভিন্ন সমান্তরাল থেকে মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়াগুলিকে দেখে কারণ মানব মস্তিষ্ক একই সময়ে এবং এমনভাবে একাধিক চিন্তার দিক বিবেচনা করতে সক্ষম হয় যে কম্পিউটার তুলনা বা সংযোগ করার কথা ভাবে না। যেমনটি আগে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যান্য মডেলগুলিতে তথ্য পুনরুদ্ধারের একটি স্টোর-রিট্রিভাল দিক রয়েছে যেখানে তথ্য সংযোগের ধরণ সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করা হয়। বিকল্পভাবে, সংযোগবাদী মডেল তত্ত্ব দেয় যে প্যাটার্ন বা সংযোগের উপাদানগুলিকে তাদের সংযোগের শক্তি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় সংযোগ স্থাপনের জন্য।<ref>McClelland, J. L. (1988). Connectionist models and psychological evidence. ''Journal of Memory and Language, 27'', 107-123.</ref> এই বিষয়ে ভিকার্স এবং লির একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল: "শব্দার্থগত বা অর্থপূর্ণ তথ্যের সংযোগবাদী বিবরণগুলি অর্থকে সীমিত সংখ্যক বৈশিষ্ট্যের সক্রিয়করণ হিসাবে ধারণা করার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, অন্তত ইনপুট স্তরে।"<ref>Vickers, Douglas, & Lee, Michael D. (1997). Towards a dynamic connectionist model of memory. ''Behavioral and Brain Sciences, 20,'' 40-41. doi:10.1017/S0140525X97460016</ref> এর অর্থ হল এই তত্ত্বটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে যদি তথ্যটি কেবল তথ্য মুখস্থ করার চেয়ে গভীর হয়।
=== স্মৃতির উৎপাদন-নিয়ম-সম্পর্কিত তত্ত্ব ===
মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের গবেষণায়, ''উৎপাদন'' (বা কখনও কখনও ''উৎপাদন বিধি'' হিসাবে পরিচিত) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর বা সমস্যা সমাধানের নিয়ম। এগুলো সাধারণত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী মার্মারিতে উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় (নীচের ''জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানের প্রোডাকশন'' বিভাগটি দেখুন)। মূলত, প্রতিটি উৎপাদন চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়ার একটি একক গাইডিং পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি সাধারণত কোন ধরণের পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার একটি প্রেসক্রিপশন হিসাবে উপস্থাপিত হতে পারে - একটি "''শর্ত-ক্রিয়া''" বা "যদি-তারপর" ক্রম।<ref name=":1">Anderson, J. R., & Matessa, M. (1997). A production system theory of serial memory. ''Psychological Review, 104''(4), 728-748. Retrieved from http://www.ebscohost.com/</ref> উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার মূল লক্ষ্যের মধ্যে একটি উৎপাদনকে এভাবে চিত্রিত করা যেতে পারে:
যদি লক্ষ্য হয় একটি ডিম ভাজা,
এবং কাঁচা ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়ে থাকে,
এবং প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য উত্তপ্ত করা হয়,
তারপর কাঁচা ডিমটি প্যানে রাখুন,
এই পরিস্থিতিতে, উৎপাদন অবস্থার উপর নির্ভর করে কর্মের পথ নির্দেশ করে। শর্ত পূরণ হয়ে গেলে (ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়েছে; প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছেছে, ইত্যাদি), নিয়মটি প্রযোজ্য হয় এবং কাজটি (ডিমটি প্যানে রাখা) করা হয়।
==== মূল বৈশিষ্ট্য ====
প্রোডাকশনর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি উৎপাদনকে একটি নিয়ম বা পদক্ষেপ হিসাবে চিন্তা করা যেতে পারে এবং যার শিক্ষা অন্যান্য প্রোডাকশন অর্জন থেকে আলাদাভাবে ঘটতে পারে। এছাড়াও, এই প্রকৃতির। কারণে, যখন একটি বিস্তৃত এবং জটিল দক্ষতা বা জ্ঞানীয় ফাংশন / প্রক্রিয়া অর্জিত হয়, এর অর্থ সম্ভবত এই যে প্রোডাকশনর পুরো সিরিজটি দক্ষতা গঠন করে তা শিখেছে - সংযুক্ত উপলক্ষ্যগুলো একটি বিস্তৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য একত্রিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার উদাহরণে, রান্না প্রক্রিয়াটির আগে আরেকটি কাজ হতে পারে যেমন নিকটতম মুদি দোকানটি সনাক্ত করা এবং ডিম কিনতে সেখানে যাওয়া। এটি ডিম রান্না করার সামগ্রিক লক্ষ্যে নিজেই একটি উপলক্ষ্য। অবশ্যই, একটি প্রক্রিয়াতে প্রোডাকশনর সংখ্যা তার জটিলতার উপর নির্ভর করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে উৎপাদন নিয়মগুলো প্রকৃতির ''বিমূর্ত'' এবং অনুরূপ প্রকৃতির বিভিন্ন কাজের পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার জন্য পূর্বোক্ত প্রোডাকশনগুলো শাকসবজি ভাজার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি প্যানটি যথেষ্ট গরম হওয়ার শর্তে এবং তারপরে প্যানে শাকসবজি রাখার পদ্ধতিতে একই আকস্মিকতা জড়িত।
এছাড়াও, প্রোডাকশনগুলো অনুশীলনের একটি ডোমেনের জন্য নির্দিষ্ট হতে পারে, যেমন গণিতে বীজগণিতের মধ্যে, বা তুলনামূলকভাবে সাধারণ, যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে।<ref>Anderson, J. R. (1990). Cognitive psychology and its implications. New York, NY: Freeman.</ref>
==== জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে প্রোডাকশন ====
সাধারণত, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে, ''ঘোষণামূলক জ্ঞান'' (বা ''ঘোষণামূলক স্মৃতি)'' বনাম ''পদ্ধতিগত জ্ঞানের'' একটি দ্বৈততা জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার ধরণের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হয় যা আমরা সকলেই দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে ধারণ করি। ঘোষণামূলক জ্ঞান এমন ধারণা বা প্রস্তাবগুলোকে বোঝায় যা স্পষ্টভাবে বিবৃত বা স্পষ্ট করা যেতে পারে। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞান কেবল দক্ষতা বা কর্মকে বোঝায় যা একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদন করা যেতে পারে। পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রায়ই শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। এই অর্থে, ''ঘোষণামূলক'' বনাম ''পদ্ধতিগত'' এই দ্বৈততাটিকে ''স্পষ্ট'' বনাম ''অন্তর্নিহিত'' জ্ঞান বা স্মৃতি হিসাবেও উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গটি মাথায় রেখে, প্রোডাকশনগুলো সাধারণত অন্তর্নিহিত, পদ্ধতিগত জ্ঞান বিভাগের অধীনে আসে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদনের নিয়মগুলোকে প্রায়ই পদ্ধতিগত জ্ঞানের বিষয়বস্তু বা "দক্ষতার মূর্ত প্রতীক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়,[। কারণ এগুলো কর্ম বা জ্ঞানের কোর্স পরিচালনার জন্য পৃথক পদক্ষেপ। মূলত, সহজ কথায়, প্রোডাকশনগুলো "কীভাবে জিনিসগুলো করা যায়" সম্পর্কে,[ যা পদ্ধতিগত জ্ঞান সম্পর্কে।
সাধারণভাবে, অনুশীলন এবং আরও অভিজ্ঞতার সাথে, একটি দক্ষতা আরও স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। এর অর্থ যে প্রোডাকশনগুলো দক্ষতা গঠন করে তা দ্রুত এবং আরও ধারাবাহিকভাবে আগুন দেয়। এটি হওয়ার সাথে সাথে অভিনয়কারী প্রতিটি পৃথক উৎপাদন সম্পর্কে কম সচেতন হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে একক তরল ক্রিয়া হিসাবে ফায়ারিং প্রোডাকশনর ক্রমটি উপলব্ধি করতে
==== উৎপাদন নিয়মের প্রমাণ ====
উৎপাদন নিয়মগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাস্তব এই যুক্তি তৈরি করতে গিয়ে অ্যান্ডারসন দাবি করেছেন যে প্রমাণের প্রথম অংশটি হলো উৎপাদন বিধিগুলো দক্ষতা এবং জ্ঞানীয় কাজগুলোর অগ্রগতির একাধিক দিক বর্ণনা করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। অর্থাৎ, তারা কীভাবে কাজগুলো সম্পাদন করা হয় তার একটি যৌক্তিক এবং প্রশংসনীয় ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। অ্যান্ডারসন উদ্ধৃত প্রমাণের আরেকটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো উৎপাদন বিধিগুলো ব্যবহার করে আমরা দক্ষতা বা কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে বলে একজনের আচরণের দিকগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা একটি প্যান গরম হয়ে যাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমরা আশা করতে পারি যে সে এতে খাবার রাখবে (শর্তসাপেক্ষ ক্রিয়া)।
=== অ্যাক্ট-আর মডেল: উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে জ্ঞান এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি মডেল ===
উৎস সম্পাদনা]
একটি অত্যন্ত বিশিষ্ট তত্ত্ব যা উৎপাদন বিধিগুলোর প্রয়োগকে প্রতিফলিত করে তা হলো চিন্তা-যৌক্তিক (এসিটি-আর) তত্ত্বের অভিযোজিত চরিত্র, জন অ্যান্ডারসনের মানব জ্ঞানের তত্ত্ব যা জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিল্ডিং ব্লক হিসাবে উৎপাদন বিধি ব্যবহার করে। এসিটি-আর তত্ত্ব দ্বারা উত্থাপিত কেন্দ্রীয় যুক্তিটি হলো একটি জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা প্রচুর সংখ্যক পৃথক "লক্ষ্য-সম্পর্কিত জ্ঞানের ইউনিট" নিয়ে গঠিত।
==== এসিটি-আর এর ইতিহাস ====
তত্ত্বটি মূলত হিউম্যান অ্যাসোসিয়েটিভ স্মৃতি (এইচএএম) তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল (এই তত্ত্বের অন্যতম স্রষ্টাও ছিলেন জন অ্যান্ডারসন, এসিটি-আর তত্ত্বের স্রষ্টা) যা মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞানের কিছু দিক ব্যাখ্যা করেছিল। এটি ঘোষণামূলক জ্ঞানের ধারণার সাথে জড়িত ছিল। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞানের সাথে মোকাবিলা করেনি।
এটিকে ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করে, জন অ্যান্ডারসন তখন প্রস্তাব করেছিলেন যে পদ্ধতিগত জ্ঞান উৎপাদন বিধি নিয়ে গঠিত। তার তত্ত্বের কয়েকটি রূপকে সূক্ষ্ম-সুর করার পরে, তিনি ১৯৮৩ সালে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটির লক্ষ্য ছিল জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা।
পরবর্তীকালে, জ্ঞানীয় দক্ষতার উপর আরও প্রমাণ এবং উদীয়মান তথ্য বিবেচনায় নেওয়ার পরে, অ্যান্ডারসন বিশ্বাস করেছিলেন যে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াতে ''যুক্তিসঙ্গত বিশ্লেষণের'' একটি উপাদানকে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বের কিছুটা "যান্ত্রিক" প্রকৃতির সাথে একীভূত করা উচিত,[ এবং তাই তিনি অ্যাক্ট-আর (যুক্তিসঙ্গত জন্য আর) তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি তিনি অনুভব করেছিলেন যে পরিবেশের প্রতি বৃহত্তর অভিযোজিত এবং নির্বাচনী দক্ষতার। কারণে মূলটির চেয়ে উন্নতি ছিল।
তত্ত্বটির প্রাথমিক ফোকাস ছিল মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞান। এর সর্বাধিক বিশিষ্ট প্রয়োগ এবং বিকাশের বেশিরভাগই কম্পিউটার মডেল টিউটর (বুদ্ধিমান শিক্ষক) হয়েছে। সংক্ষেপে, এগুলো কম্পিউটার সফ্টওয়্যার যা উৎপাদন-নিয়ম-ভিত্তিক মডেলগুলো উল্লেখ করে সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থী / শিক্ষার্থীদের গাইড করতে পারে যা এই জাতীয় সমস্যার সমাধান তৈরি করে। এই কম্পিউটার টিউটরগুলো মূলত গণিত এবং বিজ্ঞানের মতো ডোমেনগুলোতে বিকশিত এবং ব্যবহৃত হয়। টিউটরিং সিস্টেম হিসাবে এসিটি-আর এর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আরও বিশদ একটি ভিন্ন অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
==== এসিটি-আর এর মূল নীতি[ ====
তিনটি মৌলিক ধারণা রয়েছে যা তত্ত্বটি তৈরি করে: ক) এই জ্ঞান ইউনিটগুলোর প্রতিনিধিত্ব; (খ) তাহাদের অধিগ্রহণ; গ) জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ায় তাদের স্থাপনা। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
===== জ্ঞানের প্রতিনিধিত্ব =====
তত্ত্বের একটি কেন্দ্রীয় মতবাদ হলো জ্ঞান উভয়ই ঘোষণামূলক জ্ঞানের উপাদান (যা প্রস্তাবনামূলক, শব্দার্থিক জ্ঞান, যেমন আগে উল্লেখ করা হয়েছে) এবং পদ্ধতিগত জ্ঞান (যা উৎপাদন বিধি হিসাবে উপস্থাপিত হয়) এবং দুটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াকরণে একসাথে কাজ করে।
ঘোষণামূলক জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয় এবং মানব স্মৃতির ''খণ্ড বা পৃথক'' ইউনিটগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করা হয় যা স্কিমাটা (জ্ঞান কাঠামো) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রতিটি অংশে বিষয় আইটেম সম্পর্কে প্রস্তাব বা বর্ণনামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ''স্লটে'' সঞ্চিত রয়েছে,[ কোন বৃহত্তর বিভাগের অন্তর্গত তা সহ। খণ্ডগুলো একটি পাঠ্য বা গ্রাফিকাল বিন্যাসে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডিম ভাজা সম্পর্কে একটি অংশ পাঠ্যভাবে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে: একটি ডিম ভাজা এক ধরণের রান্নার দক্ষতা; রান্না করার আগে ডিমটি তার শেল থেকে সরানো প্রয়োজন; তাপ দরকার। ডানদিকে একটি অংশের সম্ভাব্য গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।
অন্যদিকে, পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করা হয়। পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে, প্রোডাকশনগুলো উপলক্ষ্যগুলোর একটি আন্তঃসংযুক্ত সিরিজের রূপ নিতে পারে যা একটি বিস্তৃত লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে।
দুই ধরনের জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক হলো ঘোষণামূলক জ্ঞান কাঠামোর অংশগুলো প্রোডাকশন সংঘটিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত এবং কর্মের কোর্স সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম রান্না করার জন্য, একজনকে অবশ্যই তাদের কেনার জন্য জ্ঞানের অংশগুলো থাকতে হবে, তাদের শাঁস থেকে তাদের সরিয়ে ফেলতে হবে এবং প্যান প্রস্তুত করতে হবে ইত্যাদি। এর মধ্যে একটি না থাকলে পদ্ধতিগত জ্ঞানে ফাঁক থাকবে। অতএব, জ্ঞানের আরও বেশি অংশ থাকার অর্থ আরও উপলব্ধ উৎপাদন বিধি এবং আরও ভাল পদ্ধতিগত জ্ঞান। এটিও বিবেচনা করা যেতে পারে যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে, যেমন পরবর্তী বিভাগে আলোচনা করা হবে।
===== জ্ঞান অর্জন =====
ঘোষণামূলক জ্ঞান মোটামুটি সরল উপায়ে অর্জিত হয়, হয় পরিবেশ থেকে তথ্য বা ধারণার উপলব্ধি থেকে বা সরাসরি নির্দেশ থেকে (তথ্য দেওয়া হচ্ছে)। যেহেতু প্রোডাকশনকে অবহিত করার জন্য জ্ঞানের ঘোষণামূলক অংশগুলো প্রয়োজন, তাই অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের এই তত্ত্বটি বোঝায় যে কোনও জ্ঞানীয় বা পদ্ধতিগত কার্য সম্পাদন করার জন্য জ্ঞান থাকা মূলত কার্যটির প্রয়োজনীয় তথ্যের সমস্ত পৃথক অংশ সংগ্রহ করা জড়িত - কাজটি "এর অংশগুলোর যোগফল"। অতএব, জটিল কাজগুলোর জন্য অনেকগুলো খণ্ড সংগ্রহের প্রয়োজন।
অন্যদিকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে উৎপাদন বিধিগুলোর অধিগ্রহণ কিছুটা বেশি কঠিন এবং কম সোজা, যেহেতু এগুলো কেবল বলা বা স্পষ্ট করা যায় না। মূলত, তারা শুধুমাত্র ঘোষণামূলক জ্ঞান মোতায়েন করা হয় হিসাবে শেখা হয়। এর অর্থ হলো শিক্ষার্থীরা যখন ''কাজগুলো করে'' তখন উৎপাদন বিধিগুলো অর্জন করে, কেবল যখন তাদের ঘোষণামূলক তথ্য দেওয়া হয় তখন নয়। এটি লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ যে এই স্থাপনাটি কেবল প্রোডাকশনগুলো সংঘটিত হওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রেক্ষাপট এবং শর্তে ঘটতে পারে। যখন কোনও কার্য সম্পাদনের শর্তগুলো উপযুক্ত হয়, তখন লক্ষ্য-ভিত্তিক জ্ঞানীয় ক্রিয়াকলাপগুলো সংঘটিত হতে পারে, যেখানে ঘোষণামূলক অংশগুলো ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করা হয় (বা "সম্পাদন")। এইভাবে, এটি বিবেচনা করা যেতে পারে যে লক্ষ্যের দিকে ব্যক্তির কর্মকে গাইড করার জন্য তারা মূলত উৎপাদন নিয়মে রূপান্তরিত হয়। অনুশীলনের মাধ্যমে, রূপান্তরের এই প্রক্রিয়াটি গতি এবং নির্ভুলতার ক্ষেত্রে উন্নত বা শক্তিশালী করা যেতে পারে। সুতরাং, অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া জন্য সুযোগ প্রদান উৎপাদন নিয়ম অধিগ্রহণ উত্সাহিত করার একটি অত্যন্ত অনুকূল উপায়।
===== জ্ঞানের প্রয়োগ প্রসঙ্গ =====
এই দিকটি অ্যাক্ট-আর এর ব্যাখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে কীভাবে আমাদের জ্ঞানীয় কাঠামো টাস্ক বা সমস্যা সমাধানের একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে সঠিক ধরণের জ্ঞানকে তলব করতে সক্ষম। এটি যৌক্তিক বিশ্লেষণের কাজ - তত্ত্বের নামের "আর" অংশ। যৌক্তিক বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াটি মনের মধ্যে সক্রিয় হওয়ার জন্য সঠিক অংশ এবং উৎপাদন বিধিগুলো নির্ধারণ করার জন্য দুটি উপাদান চিহ্নিত করে: ক) অতীতে এই জাতীয় পরিস্থিতিতে এই জাতীয় জ্ঞান ভালভাবে কাজ করার সম্ভাবনা; খ) এই জাতীয় জ্ঞান হাতের পরিস্থিতিতে ভাল কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি। কারণকে একত্রিত করে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি জ্ঞানের একটি অংশের প্রদত্ত কার্য প্রসঙ্গে উপযুক্ত এবং প্রযোজ্য হওয়ার সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।
সংক্ষেপে, এটি এটিও বোঝায় যে মানব জ্ঞানীয় সিস্টেম কোন ধরণের কাজগুলোতে কী ধরণের জ্ঞান উপযুক্ত হয়েছে তার একটি রেকর্ড বজায় রাখে, যদিও এটি মনের মধ্যে একটি অবচেতন প্রক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এই দিকটির তত্ত্বের ব্যাখ্যা মূলত একটি পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়া বর্ণনা করে।
==== এসিটি-আর এর তাত্ত্বিক দিকগুলোর সংক্ষিপ্তসার ====
সংক্ষেপে, অ্যাক্ট-আর তত্ত্ব অনুসারে, ঘোষণামূলক জ্ঞান তার আশেপাশের পরিবেশে তথ্যের উপলব্ধি দ্বারা এনকোড করা হয় (একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক, পিতামাতা এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশাবলী সহ) ইত্যাদি); কোনও কার্য সম্পাদন বা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গে এই জাতীয় ঘোষণামূলক জ্ঞান (প্রায়ই এর অনেকগুলো ইউনিট) প্রয়োগ করতে শেখার ফলে পদ্ধতিগত জ্ঞান বিকশিত হয়; এবং প্রদত্ত পরিস্থিতিতে মোতায়েন করার জন্য সঠিক ধরণের জ্ঞানের নির্বাচন জ্ঞানীয় সিস্টেমের অনুমান অনুসারে ঘটে যে জ্ঞানের একটি অংশ দরকারী এবং উপযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য প্রয়োগ এবং অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ ====
এখন পর্যন্ত অ্যাক্ট-আর এর বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে, অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একজোড়া পরীক্ষা উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ দেয় যা তত্ত্বটিকে সমর্থন করে। এই পরীক্ষাগুলো অধ্যয়ন করেছিল যে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকগুলো বিভিন্ন মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোর মধ্য দিয়ে শুরু থেকে চূড়ান্ত গন্তব্যগুলোতে একটি মানচিত্রে (পিটসবার্গ, পেনসিলভেনিয়ার শহরের) সর্বাধিক দক্ষ রুটগুলো কাজ করেছিল, ব্যয় এবং সময়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করে। পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে করা হয়েছিল। কারণ তারা কম্পিউটার স্ক্রিনে মানচিত্রটি দেখেছিল এবং চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তারা যে অবস্থানগুলোতে যেতে বা পাস করতে চেয়েছিল সেগুলোতে ক্লিক করেছিল।
বিষয়গুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো একই নেভিগেশন সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের (উৎপাদন বিধিগুলোর সেট ব্যবহার করে) উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার মডেল দ্বারা উত্পাদিত "চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়া" এবং সমাধানগুলোর সাথে তুলনা করা হয়েছিল। নীচের সারণী এই নেভিগেশন টাস্কে রুট নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত মডেলের উৎপাদন বিধিগুলোর কয়েকটি উদাহরণ দেখায়:
{| class="wikitable"
! colspan="2" |'''''[আদেশে] কম্বিন-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর এখানে location ৩ যাওয়ার একটা রাস্তা আছে, এবং location ৩ location২ এর কাছাকাছি,
|-
|তারপর
|Location ৩ এ রুট নিন,
এবং সেখান থেকে আরও পরিকল্পনা করুন।
|-
! colspan="2" |'''''ডাইরেক্ট-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর location ১ থেকে location ২ পর্যন্ত একটা রুট আছে,
|-
|তারপর
|সেই পথেই যাও।
|}
টেবিল ২. নেভিগেশন টাস্কের রুট নির্ধারণের জন্য উৎপাদন বিধিগুলোর উদাহরণ
এসিটি-আর মডেলের চিন্তাভাবনার উপায়টি স্নাতক শিক্ষার্থীদের একবারে এক ধাপের সাথে তুলনা করা হয়েছিল - মডেল দ্বারা তৈরি রুটের প্রতিটি একক পছন্দ (প্রতিটি একক উৎপাদন) প্রতিটি শিক্ষার্থীর দ্বারা তৈরি প্রতিটি পছন্দের পাশাপাশি রাখা হয়েছিল (তারা যে মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোতে ক্লিক করেছিল)। ফলাফলগুলো দেখিয়েছে যে এসিটি-আর মডেলের রুটের সিদ্ধান্তগুলো "৬৭% সময়" শিক্ষার্থীদের সাথে মেলে,[ এবং এমনকি যদি তারা তা না করে। তবে তারা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শীর্ষ পছন্দগুলোর সাথে মেলে, মানব বিষয়গুলো জ্ঞানীয়ভাবে যেভাবে আচরণ করে তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমান্তরাল।
উপরন্তু, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান ছিল যে রুট পছন্দগুলো করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার মডেলের বিলম্ব (নেওয়া সেকেন্ডের সংখ্যা) বিষয়গুলোর সিদ্ধান্তের গতির সাথে খুব মিল ছিল। যদিও এই সন্ধানটি তুলনামূলকভাবে সাধারণ পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল, এটি সম্ভবত জ্ঞানীয় কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে রায় দেওয়ার জন্য মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কিত অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের ধারণাগুলোকে সমর্থন করে (সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিভিন্ন রুট পছন্দগুলো বিবেচনা করুন এবং মূল্যায়ন করুন)।
চূড়ান্ত ফলাফল যা এসিটি-আর তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা হলো পরীক্ষার সময়কালে (প্রায় এক সপ্তাহ) অনুশীলনের সাথে, মানব বিষয়গুলো রুট পরিকল্পনার অনুকূলকরণের গতিতে উন্নত হয়েছিল, সম্ভবত উন্নত কার্য সম্পাদনে শক্তিশালী উৎপাদন বিধিগুলোর নীতিকে সমর্থন করে।
অ্যান্ডারসন এই মানচিত্র নেভিগেশন ক্রিয়াকলাপের গুরুত্ব এবং এসিটি-আর তত্ত্বকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে এর প্রমাণের কথা উল্লেখ করেছেন,[ দিয়েছিলেন যে এটি একটি বাস্তব জীবনের কাজ জড়িত যেখানে মানুষকে ব্যয় এবং সময়ের মতো বাস্তব। কারণ এবং পরিণতি বিবেচনা করতে হবে, বিমূর্ত, একাডেমিক সমস্যাগুলোর উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার এর বিপরীতে গাণিতিক, যেখানে সত্য পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত খুব কম প্রভাব রয়েছে। তদতিরিক্ত, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন রুট সন্ধানের এই জাতীয় কাজটিতে একাধিক সমাধান জড়িত। এর অর্থ সমাধানগুলো সাফল্যের বিভিন্ন ডিগ্রি। এটি এটিকে আরও বাস্তবসম্মত পরীক্ষা করে তোলে যে এসিটি-আর মডেলটি মানুষের জ্ঞানীয় সিস্টেমের পক্ষে সত্য কিনা।
এই পরীক্ষাগুলো ছাড়াও, এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য অন্যান্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতামূলক সমর্থনের মধ্যে ইন্টেলিজেন্ট টিউটরিং সিস্টেমগুলোতে (আইটিএস) বিনিয়োগ করা কাজটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি রিটার এবং তার সহকর্মীদের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা বিস্তারিতভাবে অন্বেষণ করা হয়েছে। যদিও এই অধ্যায়ের পরিধির মধ্যে নয়, কম্পিউটার টিউটরিং সিস্টেম সম্পর্কিত আরও আলোচনা একটি ভিন্ন অধ্যায়ে দীর্ঘ করা হবে।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের নির্দেশমূলক প্রভাব ====
তত্ত্বের পূর্বোক্ত নীতি এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে, অ্যান্ডারসন এট আল টিউটরিং সিস্টেম ডিজাইনের জন্য নীতিগুলোর একটি তালিকা সরবরাহ করে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণভাবে নির্দেশমূলক নকশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন ধারণাগুলো সহ: ক) প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে একটি দক্ষতার প্রতিনিধিত্ব করা; খ) সমস্যা সমাধানে উপ-লক্ষ্য (প্রোডাকশন) স্পষ্ট করা; (গ) হস্তান্তরযোগ্য উৎপাদন বিধিমালা প্রচারের সময় কতিপয় সমস্যার প্রেক্ষাপটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান; ঘ) স্মৃতি লোড কমাতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় উৎপাদন নিয়মগুলোতে ফোকাস; ঙ) কোন কাজে সূক্ষ্ম দানাদার উৎপাদন বিধি কতটুকু থাকা প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে উপযুক্ত গ্র্যানুলারিটির নির্দেশনা প্রদান; চ) শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথে শিক্ষামূলক সহায়তা যথাযথভাবে প্রত্যাহার করা।
কগনিটিভ টিউটর এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে আপনি ''সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি'' (সমস্যা সমাধানের জন্য ২.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) এবং ''লার্নিং ম্যাথমেটিক্স'' (বীজগণিত শেখানোর জন্য ৪.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) অধ্যায়ে যেতে পারেন।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া ====
ACT-R তত্ত্ব বলে যে কোনও দক্ষতা (বা জ্ঞানীয় কাজ) অর্জন বা বোঝার জন্য কেবল সেই স্বতন্ত্র উৎপাদনগুলি শেখা জড়িত হওয়ায় এটি পূর্ব-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অর্জন করার পরিবর্তেগঠনমূলক শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে যে জ্ঞান বা দক্ষতার বোঝাপড়া শিক্ষার্থী নিজেই তৈরি করে।
এটি, তত্ত্বের ধারণার সাথে মিলিত হয়ে যে শিক্ষার্থীদের উত্তর বা সমস্যার সমাধানগুলি উৎপাদন নিয়মের নির্দিষ্ট সেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত বা কব্জাবদ্ধ করা উচিত, এটি জ্ঞানের প্রতি কিছুটা আচরণগত-ভিত্তিক পদ্ধতি দিয়েছে। এটি মেটাকগনিশনের মতো উপাদানগুলিকে দমিয়ে রেখেছে। অ্যান্ডারসন এবং অন্যান্যরা এই বলে প্রতিক্রিয়া জানান যে ACT-R এর পদ্ধতি আচরণবাদী পদ্ধতির সাথে মিল রাখে যে নির্দেশনা কীভাবে একটি দক্ষতা বা কাজকে উপাদানগুলিতে বিভক্ত করার উপর ফোকাস করা উচিত, তবে তারা যুক্তি দেন যে ACT-R সাধারণ আচরণগত পদ্ধতির তুলনায় আরও বিমূর্ত উপায়ে (সম্ভবত প্রসঙ্গের মধ্যে আরও স্থানান্তরযোগ্য) কাজটি উপস্থাপন করে।<ref name=":2">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned. The Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207. Retrieved from: http://www.jstor.org/</ref>
উপরন্তু, জন অ্যান্ডারসন স্বীকার করেছেন যে, যেহেতু তত্ত্বের একটি মূল শিক্ষাগত বা নির্দেশনামূলক নকশার অন্তর্নিহিত অর্থ হল একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য পৃথক উৎপাদন নিয়ম অর্জনকে উৎসাহিত করা, তাই তত্ত্বের প্রাথমিক জোর শেখার দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই অগ্রাধিকারটি তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে হতে পারে যারা দক্ষতা বা গতির চেয়ে শেখার গভীরতা বা সমৃদ্ধিকে মূল্য দেন। অ্যান্ডারসনের প্রতিক্রিয়া হল যে শেখার গভীরতাকে কেবল ঘোষণামূলক এবং উৎপাদন (পদ্ধতিগত) জ্ঞানকে সমৃদ্ধকারী হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যার মধ্যে অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত।<ref name=":02">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref>
== শব্দকোষ ==
; অর্থের নিয়োগ
: যখন অর্থ একটি অনুভূত উদ্দীপনা বরাদ্দ করা হয়
; স্বয়ংক্রিয়তা
: একটি স্বয়ংক্রিয় স্তরে একটি দক্ষতার বিকাশ যেখানে এটি একটি অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া হয়ে যায় যা অনেক চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয় না
; মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব
: মেয়ারের তত্ত্বটি ডুয়াল-কোডিং তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, এই ধারণাটি যে জ্ঞানীয় লোড অবশ্যই শেখার ক্ষেত্রে পরিচালনা করা উচিত এবং এই ধারণাটি যে শেখার সাথে সংগঠিত এবং সংহতকরণের তথ্য জড়িত
; ধারণা
: মানসিক তথ্যকে অর্থপূর্ণ বিভাগ এবং কাঠামোতে বাছাই করার একটি উপায়; একটি "জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লক"
; শর্তসাপেক্ষ জ্ঞান
: বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান এবং কখন এবং কেন তাদের ব্যবহার করতে হবে; "কেন জানার" জ্ঞান
; ঘোষণামূলক জ্ঞান
: বাস্তব জ্ঞান যেমন রাজধানী শহর এবং বীজগণিতের সূত্র জানা; "কি জানার" জ্ঞান
; ডুয়াল কোডিং থিওরি
: পাইভিওর তত্ত্ব যে ভিজ্যুয়াল এবং পাঠ্য উভয় বিন্যাসে তথ্য সরবরাহ করা শেখার উপকার করতে পারে
; এপিসোডিক স্মৃতি
: স্মৃতি যা প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জন্য নির্দিষ্ট
; অত্যাবশ্যকীয় শিক্ষা
: প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাহিদা
; বহিরাগত জ্ঞানীয় লোড
: মূল জ্ঞানীয় কাজের বাইরে জ্ঞানীয় লোড সৃষ্টি করে এমন কিছু
; এফএমআরআই
: কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং। একটি নিউরোইমেজিং প্রযুক্তি যা মস্তিষ্কের সক্রিয় অঞ্চলে রক্ত প্রবাহের পরিবর্তনগুলো সনাক্ত করে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম
; ভুলে যাওয়া
: স্মৃতি মনে করা যায় না
; আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়াকরণ
: জ্ঞানীয় চাহিদা যা প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য দরকারী। তবে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োজনীয় নয়
; অন্তর্নিহিত জ্ঞানীয় লোড
: যে কোনও প্রদত্ত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় লোড
; দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি
: স্মৃতি যা দিন, মাস, বছর এবং / অথবা দশক ধরে বিকশিত হয়। স্মৃতির স্থায়ী সঞ্চয় সারা জীবন ধরে বিকশিত হয়
; পদ্ধতিগত জ্ঞান
: গাড়ি চালানো, স্কিইং করা বা কফি তৈরির মতো প্রতিদিনের কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সে সম্পর্কে জ্ঞান; "কিভাবে জানার" জ্ঞান
; প্রোটোটাইপ
: একটি অত্যন্ত সাধারণ / বিশিষ্ট ধারণা
; স্মরণ
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য মনে রাখা হয়
; পুনর্গঠন
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য স্মরণে পুনর্গঠন করা হয়। তবে ঠিক মনে রাখা হয় না
; রেফারেন্সিয়াল হোল্ডিং
: যখন কেউ অস্থায়ীভাবে তথ্য ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে রাখে যখন অন্যান্য তথ্য একযোগে প্রক্রিয়া করা হয়
; রিহার্সাল
: জ্ঞানীয় পুনরাবৃত্তি যা তথ্যকে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সক্রিয় থাকতে দেয়
; পুনরুদ্ধার
: দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বাইরে এবং ওয়ার্কিং স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার কাজ
; স্কাফলোডিং
: কোনও বস্তু (বা স্কিমাটা) "নির্মাণাধীন" থাকাকালীন সহায়তার একটি অস্থায়ী কাঠামো যা সম্পন্ন হওয়ার পরে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সহায়তার আর প্রয়োজন হয় না।
; স্কিমাটা বা স্কিমাটা
: জ্ঞানীয় কাঠামো (গুলো) যা জ্ঞান সংগঠিত করতে এবং চিন্তাভাবনা, উপলব্ধি এবং মনোযোগকে গাইড করতে সহায়তা করে
; শব্দার্থিক স্মৃতি
: সাধারণ ধারণা এবং পদ্ধতির অনির্দিষ্ট স্মৃতি; নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত ঘটনা বা অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত নয়
; সেন্সরি রেজিস্টার
: ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে একটি জ্ঞানীয় ফাংশন যেখানে অনুভূত ইনপুটটি অর্থ গ্রহণের জন্য সংরক্ষণ করা হয়
; অ্যাক্টিভেশন ছড়ানো
: অন্য সম্পর্কিত ধারণার স্মরণ দ্বারা উদ্ভূত একটি ধারণার স্মরণ
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
2k0d5wdicc16p2limhilg7mvvdo6ckk
85724
85723
2025-07-06T14:13:58Z
NusJaS
8394
85724
wikitext
text/x-wiki
একজন শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করে এবং শ্রেণিকক্ষের পাঠ মুখস্থ করে, তখন সেই তথ্য কোথায় যায়? '''[[#glos_দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি|দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি]]''' শেখার ক্ষেত্রে একেবারে অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন শিক্ষার্থী যা কিছু শেখে, তা হয়তো স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি কিংবা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়। যদিও উভয় ধরনের স্মৃতিই তথ্য সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবুও এগুলো মানুষের শেখার ধরন, উপলব্ধি এবং অর্থ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। শিখন ও স্মৃতি একে অপরকে অবিরত প্রভাবিত করে। যেমনিভাবে পূর্বের অভিজ্ঞতা বা পূর্বজ্ঞান নতুন কোনো বিষয় শেখাকে আরও সহজ করে তোলে। এই অধ্যায়ে আমরা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান, কার্যকারিতা ও কাঠামোর বিষয়ে আলোচনা করব। এটি মূলত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ মডেল ভিত্তিক। আমরা এই কাঠামোটিকে জ্ঞানের সঙ্গে সংযুক্ত করে বিশ্লেষণ করব কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে, সেখানে সংরক্ষিত হয় এবং কীভাবে তা পুনরুদ্ধার করা যায়। সর্বশেষে, আমরা নতুন ও প্রচলিত কিছু মডেল তুলে ধরব, যেগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।
==দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির গঠন ও কার্যকারিতা==
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির ধারণক্ষমতা অসীম এবং স্থায়ী বলে মনে করা হয়, যেখানে একজন মানুষ জীবদ্দশায় যত রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সবই সংরক্ষিত থাকতে পারে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি থাকা আবশ্যক। এটি কীভাবে কাজ করে, এর গঠন ও প্রক্রিয়া বোঝা শিক্ষার্থীদের নিজের শেখা আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়।
আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময়ে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ তথ্য থাকে এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতির (যা অন্য একটি অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে) মতো এটি টিকিয়ে রাখার জন্য ক্রমাগত অনুশীলন বা পুনরাবৃত্তি প্রয়োজন হয় না। এখানে সংরক্ষিত তথ্য '''[[#glos_স্মরণ|স্মরণ]]''' অথবা '''[[#glos_পুনর্গঠন।|পুনর্গঠন]]''' করা হয়, পুনরাবৃত্তি নয়। দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে সাধারণত তিনটি জ্ঞানের বিভাগে ভাগ করা হয়: '''[[#glos_declarative knowledge|ঘোষণামূলক জ্ঞান]]''', '''[[#glos_প্রক্রিয়াগত জ্ঞান|প্রক্রিয়াগত জ্ঞান]]''', এবং '''[[#glos_শর্তাধীন জ্ঞান|শর্তাধীন জ্ঞান]]'''।
ঘোষণামূলক জ্ঞান (বা '''[[#glos_শব্দার্থিক স্মৃতি|শব্দার্থিক]]''' জ্ঞান) হলো এমন তথ্য যা আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি। অন্যদিকে প্রক্রিয়াগত জ্ঞান হলো এমন দক্ষতা ও প্রক্রিয়া যা আমরা অনায়াসে সম্পাদন করতে পারি, কিন্তু স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি না (পরবর্তী অংশে উৎপাদন নিয়ম এবং ACT-R তত্ত্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে)। শর্তাধীন জ্ঞান বোঝায়, কখন ঘোষণামূলক ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞান প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানা।
{| class="wikitable"
!ঘোষণামূলক জ্ঞান
!প্রক্রিয়াগত জ্ঞান
!শর্তাধীন জ্ঞান
|-
|মোবাইল ফোন একটি পোর্টেবল টেলিফোন।
|ফোন কল করতে জানা।
|কখন ফোন রিসিভ বা কেটে দিতে হয়।
|-
|গাড়ির সাধারণত চারটি চাকা থাকে।
|গাড়ি চালাতে জানা।
|কখন সিটবেল্ট বাঁধতে বা খোলার দরকার।
|}
চিত্র ১: ঘোষণামূলক, প্রক্রিয়াগত এবং শর্তাধীন জ্ঞানের উদাহরণ
==জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান==
“জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান” বলতে এমন পাঁচটি মানসিক কাঠামো বোঝানো হয় যা অনেক তাত্ত্বিকদের মতে একত্রে কাজ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত সকল মানসিক কাঠামো ও তথ্যের ভিত্তি গঠন করে।<ref name=“Bruning”>Bruning, R., & Schraw, G. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.). Pearson Education</ref> মূলত, এগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান। যদিও অনেকগুলো উপাদানের মাঝে মিল থাকতে পারে, প্রতিটির কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। প্রথম তিনটি উপাদান ঘনিষ্ঠভাবে ঘোষণামূলক জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, আর শেষ দুটি সাধারণত প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref name=“Bruning” />
===[[#glos_ধারণা|ধারণা]]===
<u>ধারণা কী?</u> ধারণা হলো এমন মানসিক গঠন, যার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাদানকে অর্থবোধক ছোট ছোট ভাগে ভাগ করি এবং শ্রেণিবদ্ধ করি। এটি নতুন তথ্য বুঝতে সাহায্য করে।<ref name=“Bruning” /> এগুলোকে বলা হয় “শব্দার্থিক জ্ঞানের অংশবিশেষ”, যেগুলো তথ্য স্মরণ করার সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো সাধারণত ঘোষণামূলক জ্ঞানের আওতায় পড়ে।<ref name=“Khajah”>Khajah, M. M., Lindsey, R. V., & Mozer, M. C. (2014). Maximizing students' retention via spaced review: Practical guidance from computational models of memory. Topics in Cognitive Science, 6(1), 157-169. doi:10.1111/tops.12077</ref>
যেমন, "বিড়াল" সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে বলা যায় এটি এমন এক প্রাণীশ্রেণি যাদের গঠন, আকার ও আচরণে মিল থাকে: তারা ছোট, লোমযুক্ত এবং ‘ম্যাও’ শব্দে যোগাযোগ করে। তাদের রঙ হতে পারে সাদা, কালো, বাদামি ইত্যাদি; আবার তারা গৃহপালিত বা বন্য হতে পারে। তবুও, এরা সবাই "বিড়াল" শ্রেণির মধ্যে পড়ে।
বহুল পরিচিত বা সাধারণ ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি ধারণাকে বলা হয় '''[[#glos_প্রোটোটাইপ|প্রোটোটাইপ]]'''।<ref name="“Bruning”" /> যেমন, উত্তর আমেরিকার একটি আদর্শ বাস্কেটবল লিগের প্রোটোটাইপ হতে পারে “ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (NBA)”।
<u>ধারণা গঠনের উপায় কী?</u> ধারণা গঠনের প্রধান দুটি তত্ত্ব আছে। প্রথমত, কেউ কেউ মনে করেন ধারণা হলো মস্তিষ্কের বিমূর্ত মানসিক গঠন, যেগুলো ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক পদ্ধতির থেকে আলাদাভাবে গঠিত হয়।<ref name="“Bonner”" /> অন্যদিকে, fMRI এর মতো নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ধারণা তৈরি হয় ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক উপাদানের সঙ্গে মিলিয়ে, এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সেগুলো বহু-মাত্রিকভাবে সংরক্ষিত হয়।<ref name="“Bonner”" />
আমরা আমাদের ধারণাকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করি: পদার্থ, প্রক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থা।<ref name=":4">Chi, M.T.H., de Leeuw, N., Chiu, M., & La Vancher, C. (1994). Eliciting self-explanations improves understanding. ''Cognitive Science, 18,'' 439-477.</ref> যেমন, “প্রক্রিয়া” বলতে বোঝায় এমন এক ধারাবাহিক ঘটনা যা থেকে আমরা নির্দিষ্ট ফল প্রত্যাশা করি, যেমন—কিছু ফেলে দিলে তা মাধ্যাকর্ষণজনিত কারণে পড়ে যাবে। “মানসিক অবস্থা” বোঝায় এমন অভ্যন্তরীণ অনুভূতি বা আবেগ, যেমন—দুঃখিত, খুশি বা অনিশ্চিত বোধ করা।
<u>ধারণা তৈরির কৌশল</u> সম্পর্কে তিনটি স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে: (১) সংরক্ষণশীল মনোযোগ কৌশল, যেখানে ব্যক্তি প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য দেখে সঠিক উদ্দীপনা নির্বাচন করে।<ref>Bruner, J.S., Goodnow, J.J., & Austin, G.A. (1956). ''A study of thinking.'' New York, NY: Wiley</ref> (২) মনোযোগ গেম্বলিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একবারে সব বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এটা দ্রুত কাজ করে, ভুলের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এবং (৩) স্ক্যানিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একাধিক অনুমান একসঙ্গে পরীক্ষা করে দেখে। এই পদ্ধতিও দ্রুত, কিন্তু মানসিক চাপ বেশি হওয়ায় মনে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।<ref name="“Bruning”" />
===প্রস্তাবনা ===
প্রস্তাবনা এমন মানসিক ধারণা যা দিয়ে ভাষাগত তথ্য এবং অধিকাংশ ঘোষণামূলক জ্ঞান সংরক্ষিত হয় বলে তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন।<ref name=“Bruning” /> প্রস্তাবনা হলো সবচেয়ে ছোট মানসিক বিবৃতি যা অর্থ বহন করে, তবে ধারণার তুলনায় আরও জটিল। কারণ এটি একাধিক ধারণার ভিত্তিতে গঠিত হয় এবং সেগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নির্দেশ করে।<ref name="Remue">Remue, J., De Houwer, J., Barnes-Holmes, D., Vanderhasselt, M., & De Raedt, R. (2013). Self-esteem revisited: Performance on the implicit relational assessment procedure as a measure of self- versus ideal self-related cognitions in dysphoria. Cognition and Emotion, 27(8), 1441-1449. doi:10.1080/02699931.2013.786681</ref> একটি প্রস্তাবনাকে সত্য বা মিথ্যা হিসেবে বিচার করা যায়।<ref>Anderson, J.R. (2005). ''Cognitive psychology and its implications'' (6th ed.). New York: Worth</ref>
উদাহরণ: “লুক মেয়াদোত্তীর্ণ টিকিট কিনেছে।”
১. লুক টিকিট কিনেছে। (ঘটনাটি অতীতে ঘটেছে।)
২. টিকিটটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এই দুটি প্রস্তাবনা মিলিয়ে একটি “প্রস্তাবনামূলক নেটওয়ার্ক” তৈরি হয় যা নির্দিষ্ট তথ্য স্মরণ বা '''[[#glos_পুনরুদ্ধার|পুনরুদ্ধার]]''' করার সময় সক্রিয় হয়।
===[[#glos_স্কিমাটা|স্কিমাটা]]===
<u>স্কিমাটা কী?</u> স্কিমাটা হলো এমন মানসিক কাঠামো যা একজন ব্যক্তির সাধারণ কারণ ও ফলাফলের জ্ঞানকে উপস্থাপন করে।<ref name="Jui">Jui-Pi Chien. (2014). Schemata as the primary modelling system of culture: Prospects for the study of nonverbal communication. Sign Systems Studies, 42(1), 31-41. doi:10.12697/SSS.2014.42.1.02</ref> আমরা যে কোনও জ্ঞান অর্জন করি, তা স্কিমার মাধ্যমে সংগঠিত হয় এবং এটি তথ্যের এনকোডিং, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দায়ী।<ref name=“Bruning” /> স্কিমাটা গঠিত হয় বাহ্যিক পরিবেশ ও পূর্বজ্ঞান একত্রে কাজ করে।<ref name="Le"> Le Grande, M. R., Elliott, P. C., Worcester, M. U. c., Murphy, B. M., Goble, A. J., Kugathasan, V., et al. (2012). Identifying illness perception schemata and their association with depression and quality of life in cardiac patients. Psychology, Health & Medicine, 17(6), 709-722. doi:10.1080/13548506.2012.661865 </ref> ডানদিকে প্রদত্ত চিত্রটি "স্তন্যপায়ী প্রাণীর জ্ঞান" সংক্রান্ত একটি স্কিমার উপস্থাপন হতে পারে।
[[File:Schema111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Schema111.jpg|থাম্ব|চিত্র ২. স্কিমাটা: স্তন্যপায়ী প্রাণী সম্পর্কে জ্ঞান]]
স্কিমাটাকে '''স্ক্যাফোল্ডিংয়ের''' মানসিক সমতুল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অন্য কথায়, আমরা যখন নিজেদেরকে উপন্যাসের পরিস্থিতিতে খুঁজে পাই বা নতুন তথ্য শিখি, তখন আমরা যে স্কিমাটা গঠন করি তা আমাদের জন্য সহায়তা প্রদান করবে ।<ref name="Sternberg & Sternberg, 2012">Sternberg, R. J., & Sternberg, K. (2012). Cognitive psychology (6th ed.). Belmont, CA: Wadsworth.</ref>
স্কিমাটা কীভাবে গঠিত হয়? একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাক-বিদ্যমান স্কিম্যাটিক জ্ঞান রাখা নতুন এনকোডেড তথ্য স্মরণ করার চেষ্টা করার সময় নতুন তথ্য ধরে রাখার উন্নত স্মৃতির সাথে যুক্ত হয়েছে।<ref name="van">van Kesteren, Marlieke T. R., Rijpkema, M., Ruiter, D. J., Morris, R. G. M., & Fernàndez, G. (2014). Building on prior knowledge: Schema-dependent encoding processes relate to academic performance. Journal of Cognitive Neuroscience, 26(10), 2250-2261. doi:10.1162/jocn_a_00630</ref> এটি ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়। কারণ এটি নতুন তথ্যকে মস্তিষ্কে (এবং এইভাবে সক্রিয় স্কিমাতে) আরও দ্রুত একীভূত করার অনুমতি দেয়।<ref name="van" /> আমাদের স্কিমাতে এনকোড করা তথ্যগুলো স্লট হিসাবে পরিচিত যা সাজানো হয়; নির্দিষ্ট মানসিক "বিভাগগুলো"। এর মধ্যে আমাদের জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এটি সামগ্রিকভাবে কীভাবে অনুভূত হয়।<ref name="“Bruning”" /> যখন একটি স্কিমাটা বিকশিত হয়েছে এবং ঘটনা বা ধারণাগুলোর একটি সাধারণ ঘটনা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, তখন এটি সম্ভবত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি অংশ হয়ে উঠবে যেখানে এটি আমাদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যতের কোনও স্কিম্যাটিক তথ্যের ভিত্তি হিসাবে কাজ করতে থাকবে যা এনকোড করা যেতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> এই প্রক্রিয়াটিকে স্কিম্যাটিক ইনস্ট্যান্টিয়েশন বলা হয়।<ref>Rumelhart, D.E. (1981). The building blocks of cognition. In J.T Guthrie (Ed.), ''Comprehension and teaching: Research reviews'' (pp. 3-26). Newark, DE: International Reading Association.</ref>
=== প্রোডাকশন ===
প্রোডাকশন হলো if-then বা "যদি-তারপর" বিবৃতি। এটি কর্মের নিয়মগুলোর একটি সেট হিসাবে কাজ করে। এটি আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানকে পরিচালনা করে।<ref name=":0">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref> এখানে যদি-তারপর প্রোডাকশনর একটি উদাহরণ: "যদি ট্র্যাফিক লাইট সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়, তাহলে ধীর হয়ে যান"। প্রোডাকশনগুলো তাত্ক্ষণিক, স্বয়ংক্রিয় মানসিক ধারণা। এগুলো ঘটনাগুলোর একটি সাধারণ ক্রমের পুনরাবৃত্তিমূলক মুখোমুখী হওয়ার ফলে মানুষের দ্বিতীয় প্রকৃতি হতে শেখা হয়। তারা এই ঘটনাগুলোর জন্য উৎপাদন বিধি এবং প্রত্যাশার একটি সেট সরবরাহ করে। এটি প্রস্তাবগুলোর মতোই উৎপাদন নেটওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত ইন্টারেক্টিভ গ্রুপগুলোতে সংগঠিত হয়। এটি প্রায়ই একটি উৎপাদন সক্রিয় করে, অন্যান্য প্রোডাকশনগুলো ট্রিগার করে। চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া ও ক্রিয়ার একটি ধারায় প্রতিক্রিয়া জানায়। পরবর্তী বিভাগে স্মৃতির তত্ত্ব হিসাবে উৎপাদন এবং উৎপাদন বিধিগুলোর বিষয়ে আরও বিশদ আলোচনা করা হবে।
=== স্ক্রিপ্ট ===
[[File:Script111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Script111.jpg|থাম্ব|চিত্র ৩. হোটেলে চেক-ইন করার জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট]]
স্ক্রিপ্ট হলো মানসিক ধারণা যা আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানের অন্তর্নিহিত কাঠামো হিসাবে কাজ করে। এটি সাধারণত সম্মত হয় যে স্ক্রিপ্টগুলো আমাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের সামাজিক বোঝার জন্য অত্যাবশ্যক, এবং মূলত সামাজিক পরিস্থিতি এবং ঘটনাগুলো পরিচালনা করে এমন তথ্য সরবরাহ করার জন্য কাজ করে, বিশেষত কে কী করে, কখন তারা এটি করে, কার কাছে তারা এটি করে এবং কেন। হোটেলে চেক ইন করার মতো অনেক ধরণের ঘটনাে লোকেরা স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে। স্ক্রিপ্টগুলো সময়ের সাথে সাথে এবং পুনরাবৃত্ত ঘটনাগুলোর ক্রমাগত এক্সপোজারের সাথে বিকাশ লাভ করে যা সমস্ত মূলত প্রকৃতির অনুরূপ।<ref name="T">Trillingsgaard, A. (1999). The script model in relation to autism. European Child & Adolescent Psychiatry, 8(1), 45. Retrieved from http://search.ebscohost.com/login.aspx?direct=true&db=aph&AN=4689586&site=ehost-live</ref> উদাহরণস্বরূপ, সময়ের সাথে সাথে কোনও হোটেলে কীভাবে চেক ইন করবেন সে সম্পর্কে আপনি নিজের স্ক্রিপ্টটি বিকাশ করতে পারেন এবং এটি আপনাকে সংগঠিত করতে, জিনিসগুলো মনে রাখতে, পাশাপাশি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য আসন্ন ঘটনাগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়তা করতে পারে। ডানদিকের চিত্রটি হোটেলের চেক-ইনের জন্য একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট।
=== নির্দেশনার জন্য এই বিল্ডিং ব্লকের প্রভাব ===
সমস্ত শিক্ষাবিদদের (বর্তমানে নিযুক্ত এবং ভবিষ্যতে একইভাবে) এটি নিশ্চিত করা অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে তারা জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লকগুলোর প্রতিটি পৃথক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞানী এবং কীভাবে এই সমস্ত মানসিক ধারণাগুলো শেখার সুবিধার্থে একসাথে কাজ করে, জ্ঞান এবং বিকাশ, পুনরুদ্ধার এবং পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ছাড়াও। এটি করার মাধ্যমে, তারা নিশ্চিত করতে পারে যে তাদের সমস্ত শিক্ষার্থী এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলো পুরোপুরি ব্যবহার করছে (যেমন পূর্ববর্তী প্রোডাকশনগুলো সক্রিয় করার জন্য নতুন পাঠ্যক্রমের আগে "পর্যালোচনা পাঠ" শেখানোর মাধ্যমে, নতুন তথ্যের এনকোডিংয়ের সুবিধার্থে স্কিমাটা প্রস্তাব, পাশাপাশি পরে আরও সহজ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি) যাতে তাদের শিক্ষা থেকে সমস্ত সুবিধা কাটা যায়। এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলোর অভ্যন্তরীণ কাজগুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে, শিক্ষাবিদরা কীভাবে শেখার ঘটনা ঘটে এবং উপন্যাসের উদ্দীপনা এবং তথ্য এনকোড করার সময় কীভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তমভাবে সহায়তা করতে পারে তা আরও ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন।
== এনকোডিং: কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছায় এবং কীভাবে এটি সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধার করা হয় ==
এই বিভাগটি দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে সম্পর্কিত এনকোডিংয়ের দিকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা। এনকোডিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার জন্য, দয়া করে পরবর্তী অধ্যায়টি দেখুন।
=== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছানোর তথ্য: মোডাল মডেল ===
মোডাল মডেলটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মডেলগুলোর মধ্যে একটি যা বর্ণনা করে যে পরিবেশ থেকে তথ্য কীভাবে অনুভূত হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি পৌঁছানোর আগে জ্ঞানীয় ফাংশনগুলোর একটি সিরিজের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে। এটি একটি সাধারণ চিত্র যা সাম্প্রতিক গবেষণা আমাদের ইন্দ্রিয় থেকে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তরিত হওয়ার ক্রমটি একত্রিত করেছে, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সাথে শেষ হয়। এই মডেলের উপর ভিত্তি করে, তথ্যটি তিনটি "নিম্ন" স্মৃতি সিস্টেমের প্রত্যেকটির মাধ্যমে প্রক্রিয়া করা হবে বলে মনে করা হয়, প্রতিটি নিজস্ব পৃথক ফাংশন। এই মডেলটি বিভিন্ন স্মৃতি ফাংশন এবং প্রত্যেকের মধ্যে প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য সরবরাহ করে (এই মডেলের আরও বিশদ পরবর্তী বিভাগে স্মৃতির বিভিন্ন তত্ত্বের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে)।
=== তথ্য সংরক্ষণ ===
এনকোডিং হলো ওয়ার্কিং স্মৃতি থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া এবং কোনও কিছু কতটা ভালভাবে মনে রাখা হয় তার তাত্পর্যের। কারণে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীচে কয়েকটি বিভিন্ন এনকোডিং এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি রয়েছে যা সুপরিচিত এবং সুপরিচিত।
==== রিহার্সাল ====
মোডাল মডেলের কথা উল্লেখ করে, রিহার্সাল হলো প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে রাখা হয়, সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে। রক্ষণাবেক্ষণ রিহার্সাল সাধারণত ধ্রুবক পুনরাবৃত্তি এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য তথ্যের প্রক্রিয়া নিয়োগ করে (এটি মুখস্থ মুখস্থ হিসাবেও পরিচিত)। তবে এটি এনকোডিংয়ের আরও অগভীর পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হয়। কারণ তথ্যটি সাধারণত অল্প সময়ের জন্য সক্রিয় রাখা হয় এবং পুনরাবৃত্তি বন্ধ হয়ে গেলে বেশ দ্রুত ক্ষয় হয়। বিস্তৃত রিহার্সাল এনকোডিংয়ের আরও অর্থবহ পদ্ধতি, যেখানে পূর্বে শেখা তথ্যের সাথে সম্পর্কিত হয়ে শেখার তথ্যকে অর্থ দেওয়া হয়। যদিও রিহার্সালের এই রূপটি আরও জ্ঞানীয় সংস্থান ব্যবহার করে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার জন্য ভাল এবং গভীর এনকোডিং ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করে।<ref>Craik, F.I.M. (1979). Human memory. ''Annual Review of Psychology, 30'', 63-102.</ref>
==== এলাবোরেশন ====
বেশ কিছু বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল বিদ্যমান, যার সবকটিই নতুন তথ্য প্রক্রিয়াকরণ বা মনে রাখা সহজ করে তোলে। একটি সুপরিচিত এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত বিস্তারিত এনকোডিং কৌশল হল স্মৃতিবিদ্যা, একটি প্রক্রিয়া যা সুপরিচিত তথ্যের সাথে নতুন তথ্য একত্রিত করে আরও পরিশীলিত কোডিংকে জড়িত করে। এই কৌশলটি সাধারণত ছড়া, হাতের অঙ্গভঙ্গি, সংক্ষিপ্ত রূপ এবং আরও অনেক কিছু ব্যবহার করে।<ref name="“Bruning”" /> উদাহরণস্বরূপ, আপনি স্টেক, ডিম এবং রসুনের আপনার কেনাকাটার তালিকা মনে রাখার জন্য "SEG" সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করতে পারেন। অন্যান্য কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে মধ্যস্থতা, আরও অর্থপূর্ণ কিছুর সাথে একটি নতুন তথ্যের টুকরো সংযুক্ত করার একটি সহজ কৌশল এবং চিত্রকল্প, যার মধ্যে মনে রাখার জন্য একটি অনুরূপ চিত্রকে একত্রিত করা জড়িত।[১]<ref name="“Bruning”" /> আপনি এই জিনিসগুলির কল্পনাও ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার বাড়ির মতো একটি পরিচিত জায়গার সাথে সম্পর্কিত। আপনার বসার ঘরের দরজা খোলার সময় রসুনের তীব্র গন্ধ, দরজার পাশে ফাটা ডিমের বাক্স এবং ডাইনিং টেবিলে রসালো স্টেকের টুকরো কল্পনা করুন। এই কৌশলটি ব্যবহার করে, আপনি আপনার বসার ঘর থেকে আপনার ডাইনিং রুমে একটি কাল্পনিক হাঁটা দিয়ে জিনিসগুলি মনে রাখতে পারেন।
==== সংশ্লিষ্ট তত্ত্ব ====
===== প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর =====
প্রভাবশালী গঠনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, বিশেষ করে ক্রেইক এবং লকহার্টের তত্ত্ব আজও তাৎপর্যপূর্ণ।<ref>Craik, F.I.M., & Lockhard, R.S. (1986). CHARM is not enough: Comments on Eich's model of cued recall. ''Psychological Review, 93,'' 360-364.</ref> তাদের প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বের স্তর সবচেয়ে সুনামধন্য। এই তত্ত্ব অনুসারে, শিক্ষার্থীরা শেখা তথ্যের উপর জ্ঞানীয় বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় - এই প্রক্রিয়াগুলির পরে তথ্যের স্মৃতি স্বাভাবিকভাবেই ধরে রাখা হয়। যাইহোক, তথ্যের ধারণক্ষমতা মূলত প্রক্রিয়াজাতকরণের পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। তত্ত্ব অনুসারে, তথ্য যত গভীরভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং তথ্যের যত বেশি অর্থ দেওয়া হয়, ততই এটি ধরে রাখা যায়, অন্যদিকে আরও ভাসা ভাসা বিবরণের অগভীর প্রক্রিয়াকরণ তথ্যকে আরও দ্রুত ভুলে যাওয়ার প্রবণতা রাখে। <ref name="“Bruning”" />এটি তাত্ত্বিক এবং ব্যাপকভাবে প্রমাণিত যে জাগতিক কাজের চেয়ে আরও অর্থপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের শেখা তথ্য আরও ভালভাবে মনে রাখতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের এজেন্সি এবং পছন্দ প্রদানও ধরে রাখার জন্য উপকারী। কারণ জ্যাকবি এবং আরও অনেকের দ্বারা করা গবেষণা দেখায় যে কীভাবে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার (বিশেষ করে কঠিন সিদ্ধান্ত) কাজটি আরও বেশি মনে রাখে যদি তারা সহজ সিদ্ধান্ত নেয়, অথবা একেবারেই না নেয়।<ref name="“Bruning”" />
===== ডুয়াল কোডিং থিওরি =====
অ্যালান পাইভিও প্রস্তাবিত এই তত্ত্বটি যে জ্ঞান দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দৃশ্যত বা মৌখিকভাবে বা উভয়ই রাখা হয়।<ref name=":5">Paivio, A. (1986). ''Mental representations: A dual-coding approach.'' New York, NY: Oxford University Press.</ref> এটি কিছু পণ্ডিত এবং মনোবিজ্ঞানীদের দ্বারা সমর্থিত। তারা সম্মত হন যে যখন তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং চিত্রের পাশাপাশি মৌখিক আকারে সংরক্ষণ করা হয় তখন এটি বেশিরভাগ সহজেই মনে রাখা যায়। <ref>Butcher, K.R. (2006). Learning from text with diagrams: Promoting mental model development and inference generation. ''Journal of Educational Psychology, 98,'' 182-197.</ref> এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষাগত প্রভাবের জন্য, মস্তিষ্কের বৈশিষ্ট্য এবং অঞ্চলগুলো সম্পর্কে শেখার সময় পাঠ্য তথ্যের পাশাপাশি একটি মানব মস্তিষ্কের গ্রাফিক প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো সহায়ক হতে পারে। এই তত্ত্বটি রিচার্ড মেয়ারের ''কগনিটিভ থিওরি অফ মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের'' সাথে কিছুটা ভিত্তি ভাগ করে।<ref name=":6">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref> এটি পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।
===== মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব =====
রিচার্ড মায়ার চিত্র এবং শব্দের সংমিশ্রণগুলো অন্বেষণ করে আবিষ্কার করেছেন যে উপযুক্তগুলো বিশেষত বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর নির্দেশনা সরবরাহ করতে পারে। <ref name=":62">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref>এই তত্ত্বটি তিনটি নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি: ক) ডুয়াল-কোডিং থিওরি থেকে ধারণা; খ) এই ধারণাটি যে ওয়ার্কিং স্মৃতির চিত্রাবলী এবং মৌখিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য খুব সীমিত ক্ষমতা রয়েছে। এর অর্থ নির্দেশাবলী এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত যা শিক্ষার্থীদের ওয়ার্কিং স্মৃতি সিস্টেমে রাখা জ্ঞানীয় লোডের পরিমাণকে অনুকূল করে। এটি জ্ঞানীয় লোড তত্ত্ব হিসাবেও পরিচিত;<ref>van Merrienboer, J.J.G., & Sweller, J. (2005). Cognitive load and complex learning: Recent developments and future directions. ''Educational Psycholog Review, 17'', 147-177.</ref> এবং গ) এই ধারণাটি যে শেখার সাথে তথ্যকে সংগঠিত এবং সংহত করা জড়িত।<ref name="mayer2008">Mayer, R. E. (2008). Applying the science of learning: Evidence-based principles for the design of multimedia instruction. Cognition and Instruction, 19, 177–213.</ref>
=== তথ্য পুনরুদ্ধার ===
==== সক্রিয়করণের বিস্তার ====
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে প্রচুর পরিমাণে তথ্য সঞ্চিত থাকতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পুনরুদ্ধার বা স্মরণ করা কখনও কখনও কঠিন হতে পারে। এটি '''স্প্রেডিং অ্যাক্টিভেশন''' নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এর অর্থ যখন জ্ঞানের একটি টুকরো বর্তমানে আমাদের মনে থাকে, তখন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে তথ্যের আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সম্পর্কিত তথ্যগুলোও সক্রিয় করা যেতে পারে।<ref name=":7">Anderson, J.R. (2010). ''Cognitive Psychology and its implications. (7th ed.).'' New York, NY: Worth.</ref>উদাহরণস্বরূপ, বেন যদি ভাবছেন, "এখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে এটি কতই না চমৎকার হবে"। তবে এটি এক সপ্তাহ পরে বৃষ্টিপাত তার ক্ষেত্রের ভ্রমণকে প্রভাবিত করবে কিনা তা দেখার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার চিন্তাভাবনাকে ট্রিগার করতে পারে। এটি তাকে সেদিন তার ভ্রমণ সঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ করার কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
==== পুনর্গঠন ====
যেহেতু স্মৃতির কিছু টুকরো, যেমন অনেক আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্মরণ করা কঠিন হতে পারে, আমাদের জ্ঞানীয় সিস্টেম কোনও প্রাসঙ্গিক সূত্র ব্যবহার করতে পারে যা আমরা মনে রাখতে পারি এবং যুক্তির মাধ্যমে স্মৃতির এই টুকরোগুলো পুনর্গঠন করতে পারি। এটি এমন স্মৃতি তৈরি করতে পারে যা সঠিক ঘটনার সাথে অভিন্ন নয়। তবে যৌক্তিক এবং যুক্তিসঙ্গত।<ref>Koriat, A., Goldsmith, M. & Pansky, A. (2000). Toward a psychology of memory accuracy, In S.Fiske (Ed.), ''Annual review of psychology'', (pp. 481-537). Palo Alto, CA: Annual Reviews.</ref> উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ১০ বছর আগে বন্ধুদের সাথে একটি হ্রদের কাছে পিকনিকে গিয়েছিলাম। তবে আমরা ভ্রমণটি স্মরণ করতে সক্ষম হতে পারি। তবে এর উদ্দেশ্যটি মনে রাখতে পারি না এবং আমরা বলতে পারি যে এটি হ্রদের চারপাশে একটি হাইকিং ট্রিপ ছিল। এটি মূল ঘটনাের মতো কিছু মিল ভাগ করে। তবে অভিন্ন নয়।
==== ভুলে যাওয়া ====
যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য তথ্য অ্যাক্সেস করা না হয়। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত এটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম নাও হতে পারি। এটি ক্ষয় বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ঘটতে পারে। এর অর্থ তথ্য সংকেতকে দুর্বল করা এবং অন্যান্য বিরোধী তথ্য যথাক্রমে আমরা যে স্মৃতির টুকরোটি স্মরণ করার চেষ্টা করছি তাতে হস্তক্ষেপ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা আর মনে করতে পারি না যে আমরা কোনও কনসার্টে কী টি-শার্টটি পরেছিলাম। কারণ তখন থেকে কয়েক বছর হয়ে গেছে, বা যদি আমরা মনে করি এটি নীল ছিল। তবে সম্প্রতি একটি বন্ধু উল্লেখ করেছে যে এটি আসলে সবুজ ছিল। এর একটি স্নায়বিক ব্যাখ্যা হলো আমাদের মস্তিষ্কের কোষ এবং তাদের মধ্যে সংযোগগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এমনকি মারা যেতে পারে যদি আমরা তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার না করি।
ক্ষয় এবং হস্তক্ষেপের প্রক্রিয়া সত্ত্বেও, জ্ঞান অত্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে উপযুক্ত ধরণের প্রম্পট এবং তথ্য মনে রাখার অন্যান্য উপায়ে।<ref>Erdelyi, M.H. (2010). The ups and downs of memory. ''American Psychologist, 65,'' 623-633.</ref> এর মধ্যে পূর্বে উল্লিখিত কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন স্মৃতিবিদ্যা এবং সম্প্রসারণ ব্যবহার করা।
== দক্ষতা এবং দক্ষতার স্বয়ংক্রিয়তা ==
সুস্পষ্ট বা ঘোষণামূলক জ্ঞান অনেকগুলো প্রক্রিয়া যেমন নির্দেশনা, অভিজ্ঞতা এবং তথ্য মনে রাখার জন্য জ্ঞানীয় কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অর্জন এবং তৈরি করা যেতে পারে (পূর্বে উল্লিখিত)।
কিছু পণ্ডিত যুক্তি দেখিয়েছেন যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। কারণ অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার সাথে কোনও কাজে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে, মূলত এর অর্থ হলো সুস্পষ্ট জ্ঞানের স্থাপনা এত স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায় যে এটি একটি অন্তর্নিহিত দক্ষতায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা প্রথমবারের মতো কোনও উপহার মোড়ানোর চেষ্টা করি, আমরা প্রক্রিয়াটির প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট করার চেষ্টা করতে পারি, যেমন: উপহারের জন্য সঠিক আকারের মোড়ানো কাগজের একটি টুকরো সন্ধান করুন; উপহারের চারপাশে এটি মোড়ানো; অতিরিক্ত কাগজ কাটা; মোড়কটি সুরক্ষিত করতে টেপ ব্যবহার করুন। আমরা বারবার কাজটি সম্পাদন করার সাথে সাথে এই পদক্ষেপগুলো স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায়, মূলত প্রতিটি পদক্ষেপকে পৃথকভাবে বিস্তৃত বিবেচনা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এর আরও বিশদ উদাহরণ অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের পরবর্তী বিভাগে পাওয়া যাবে।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং শেখা: উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলোকে উত্সাহিত করা ==
যখন কেউ আরও জটিল তথ্য এনকোড করে উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়া সাধারণত তখন সক্রিয় হয়। উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত উচ্চতর শিক্ষাগত/শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য অর্জনে আরও বেশি সাহায্য করে।<ref name="“Bruning”" /> প্রশিক্ষকদের এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলিকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। যেমনটি আগে দেখানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যত বেশি বিস্তারিতভাবে শিখতে হবে তথ্য এনকোড করবে তত বেশি ভালো পারফর্ম করবে। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ এবং নির্দেশিত সহকর্মীদের প্রশ্ন করার মতো পদ্ধতির মাধ্যমে, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক স্কিমাটা সক্রিয় করতে পারেন এবং বোধগম্যতা এবং চিন্তা-উদ্দীপক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ প্রদান করতে পারেন। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ শিক্ষার্থীদের নতুন শেখার কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে: ইতিমধ্যেই পরিচিত তথ্যের একটি ভিত্তি নতুন শেখার তথ্যকে নির্দেশিত করতে সাহায্য করতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> ধরে রাখার জন্য, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন না করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু কাজ অনুশীলন করতে উৎসাহিত করতে পারেন।<ref name="“Bruning”" /> যতটা সম্ভব, প্রশিক্ষকদের নিষ্ক্রিয় শেখার পরিবর্তে সক্রিয়ভাবে শেখার জন্য শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার ক্ষেত্রে আরও বেশি জড়িত করা উচিত।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির কাজ: মূল্যায়ন এবং গবেষণা ==
দীর্ঘ সময় ধরে সংগৃহীত স্মৃতিগুলো দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার আরও বেশি সম্ভাবনা থাকে। তবে স্মৃতির গুণমানটি পরিমাণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। গুণমান অভিজ্ঞতার সময় ব্যক্তির দ্বারা সংগৃহীত সংবেদনশীল তথ্যকে বোঝাতে পারে, যেমন মুভি থিয়েটারে পপকর্নের গন্ধ নেওয়া, এবং মানের উপাদানগুলোর মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক থাকতে পারে, যেমন পপকর্নের গন্ধ পাওয়া এবং সিনেমাগুলোর কথা চিন্তা করা বা সিনেমাগুলোতে থাকা এবং পপকর্নের স্বাদ মনে রাখা।
এই ক্ষেত্রে করা বেশিরভাগ গবেষণা স্ব-মূল্যায়ন বা স্বতন্ত্র স্মৃতি পরীক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার উভয় ক্ষেত্রেই ত্রুটির সঠিক পরামিতি রয়েছে, যদিও কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং ডিভাইসগুলি কোনও ব্যক্তির মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে আক্রমণাত্মকভাবে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্ডারসন, ফিঞ্চাম, কিন এবং স্টোকো <ref>Anderson, J.R., Fincham, J.M., Qin, T., & Stocco, A. (2008). A central circuit of the mind. ''Trends in Cognitive Psychology, 12,'' 136-143.</ref> এই কৌশলটি ব্যবহার করে একটি পরীক্ষা করেছিলেন যাতে পদ্ধতিগত সম্পাদন, লক্ষ্য নির্ধারণ, ঘোষণামূলক স্মৃতি থেকে নিয়ন্ত্রিত পুনরুদ্ধার এবং চিত্র উপস্থাপনা গঠন এবং মস্তিষ্কের কর্টিকাল অঞ্চলের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এই পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখায় যে এই চারটি অঞ্চলের প্রতিটি ইমেজিং ডিভাইসে একটি ভিন্ন কর্টিকাল অঞ্চল আলোকিত করে। এই প্রমাণগুলি দেখায় যে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চল এই বিভিন্ন অঞ্চল পরিচালনা করে, তবে কৌশলটির সমালোচনাগুলি তুলে ধরে যে আমরা এখনও জানি না কেন এই কার্যকলাপ ঘটে এবং ক্রিয়াকলাপের বিন্যাস তৈরি করার জন্য মনের মধ্যে কোন সংযোগ তৈরি হচ্ছে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, এই ধরণের পরীক্ষাগুলি আমাদের পূর্বের তুলনায় আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বেশি অন্তর্দৃষ্টি দেয় এবং দেখায় যে কীভাবে বিভিন্ন তথ্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে উদ্দীপিত করতে পারে, তাই আমরা জানি যে তারা সব সময় সক্রিয় থাকে না।
== স্মৃতির অন্যান্য পরিবর্তনশীল এবং ক্রমবর্ধমান তত্ত্ব ==
=== নেটওয়ার্ক মডেল ===
[[File:An_example_of_a_network_model.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:An_example_of_a_network_model.jpg|থাম্ব|চিত্র ৫। একটি নেটওয়ার্ক মডেলের উদাহরণ]]
নেটওয়ার্ক মডেলকে মাইন্ড ম্যাপিং বা মস্তিষ্ক-ঝড় জালের সাথে তুলনা করা যেতে পারে কারণ তথ্য একটি ওয়েব-সদৃশ প্যাটার্ন দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়। এটি সাধারণত সাধারণ থেকে আরও নির্দিষ্ট তথ্য বা বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। এটি একটি ছোট শিশু যেভাবে ধীরে ধীরে চার পা এবং পশমযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিকাশ করে, তা শেখার অনুরূপ হবে যে একটি কুকুর এবং বিড়ালের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। নেটওয়ার্কিং মডেলগুলি তথ্যের ছোট ইউনিটগুলিকে সংগঠিত করার আরও সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি যখন তারা বিষয়ের মধ্যে অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্কিত করে। এই মডেলটি সরাসরি শিক্ষাদানে ব্যবহার করা হয়েছে - "মাইন্ড ম্যাপিং শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার প্রক্রিয়াগুলি পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল। এটি তাদের মেটাকগনিটিভ জ্ঞান অর্জন করতে এবং নতুন সমস্যা এবং পরিস্থিতি সমাধানের জন্য তাদের বোধগম্যতা স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছিল।"<ref>Ismail, M. N., Ngah, N. A., & Umar, I. N. (2010). The effects of mind mapping with cooperative learning on programming performance, problem solving skill and metacognitive knowledge among computer science students. ''Journal Of Educational Computing Research, 42''(1), 35-61. doi:10.2190/EC.42.1.b</ref>
=== সংযোগবাদী মডেল ===
[[File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|alt=A general model of what a Connectionist Model might look like|থাম্ব|চিত্র ৬। একটি সংযোগবাদী মডেল কেমন হতে পারে তার একটি সাধারণ মডেল]]
সংযোগবাদী মডেল হল একটি 'মস্তিষ্কের রূপক' যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চয় এবং পুনরুদ্ধার মডেলের জন্য ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটার রূপককে গ্রহণ করে; এটিকে সমান্তরাল বিতরণ প্রক্রিয়াকরণ মডেলও বলা হয়। এই মডেলটিতে প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে বোঝার ধারণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; এর একটি উদাহরণ হল বাম দিকে একটি সরল রেখা সহ একটি আকৃতি থাকা, ডানদিকে একটি '৩' আকৃতি থাকা। '১২ |৩ ১৪' সিরিজে এটিকে তেরো নম্বর হিসাবে দেখা হবে, তবে 'A |৩ C' ক্রমানুসারে এটি 'B' অক্ষর হিসাবে পড়া যেতে পারে। প্রেক্ষাপটের সাথে অভিযোজনযোগ্যতা এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাথে জ্ঞানীয় কাজগুলিকে একত্রিত করার ক্ষমতার কারণেই সংযোগবাদী মডেলটি এই গতিশীলতাগুলিকে আরও ভালভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই তত্ত্বটি বিভিন্ন সমান্তরাল থেকে মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়াগুলিকে দেখে কারণ মানব মস্তিষ্ক একই সময়ে এবং এমনভাবে একাধিক চিন্তার দিক বিবেচনা করতে সক্ষম হয় যে কম্পিউটার তুলনা বা সংযোগ করার কথা ভাবে না। যেমনটি আগে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যান্য মডেলগুলিতে তথ্য পুনরুদ্ধারের একটি স্টোর-রিট্রিভাল দিক রয়েছে যেখানে তথ্য সংযোগের ধরণ সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করা হয়। বিকল্পভাবে, সংযোগবাদী মডেল তত্ত্ব দেয় যে প্যাটার্ন বা সংযোগের উপাদানগুলিকে তাদের সংযোগের শক্তি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় সংযোগ স্থাপনের জন্য।<ref>McClelland, J. L. (1988). Connectionist models and psychological evidence. ''Journal of Memory and Language, 27'', 107-123.</ref> এই বিষয়ে ভিকার্স এবং লির একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল: "শব্দার্থগত বা অর্থপূর্ণ তথ্যের সংযোগবাদী বিবরণগুলি অর্থকে সীমিত সংখ্যক বৈশিষ্ট্যের সক্রিয়করণ হিসাবে ধারণা করার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, অন্তত ইনপুট স্তরে।"<ref>Vickers, Douglas, & Lee, Michael D. (1997). Towards a dynamic connectionist model of memory. ''Behavioral and Brain Sciences, 20,'' 40-41. doi:10.1017/S0140525X97460016</ref> এর অর্থ হল এই তত্ত্বটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে যদি তথ্যটি কেবল তথ্য মুখস্থ করার চেয়ে গভীর হয়।
=== স্মৃতির উৎপাদন-নিয়ম-সম্পর্কিত তত্ত্ব ===
মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের গবেষণায়, ''উৎপাদন'' (বা কখনও কখনও ''উৎপাদন বিধি'' হিসাবে পরিচিত) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর বা সমস্যা সমাধানের নিয়ম। এগুলো সাধারণত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী মার্মারিতে উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় (নীচের ''জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানের প্রোডাকশন'' বিভাগটি দেখুন)। মূলত, প্রতিটি উৎপাদন চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়ার একটি একক গাইডিং পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি সাধারণত কোন ধরণের পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার একটি প্রেসক্রিপশন হিসাবে উপস্থাপিত হতে পারে - একটি "''শর্ত-ক্রিয়া''" বা "যদি-তারপর" ক্রম।<ref name=":1">Anderson, J. R., & Matessa, M. (1997). A production system theory of serial memory. ''Psychological Review, 104''(4), 728-748. Retrieved from http://www.ebscohost.com/</ref> উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার মূল লক্ষ্যের মধ্যে একটি উৎপাদনকে এভাবে চিত্রিত করা যেতে পারে:
যদি লক্ষ্য হয় একটি ডিম ভাজা,
এবং কাঁচা ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়ে থাকে,
এবং প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য উত্তপ্ত করা হয়,
তারপর কাঁচা ডিমটি প্যানে রাখুন,
এই পরিস্থিতিতে, উৎপাদন অবস্থার উপর নির্ভর করে কর্মের পথ নির্দেশ করে। শর্ত পূরণ হয়ে গেলে (ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়েছে; প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছেছে, ইত্যাদি), নিয়মটি প্রযোজ্য হয় এবং কাজটি (ডিমটি প্যানে রাখা) করা হয়।
==== মূল বৈশিষ্ট্য ====
প্রোডাকশনর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি উৎপাদনকে একটি নিয়ম বা পদক্ষেপ হিসাবে চিন্তা করা যেতে পারে এবং যার শিক্ষা অন্যান্য প্রোডাকশন অর্জন থেকে আলাদাভাবে ঘটতে পারে। এছাড়াও, এই প্রকৃতির। কারণে, যখন একটি বিস্তৃত এবং জটিল দক্ষতা বা জ্ঞানীয় ফাংশন / প্রক্রিয়া অর্জিত হয়, এর অর্থ সম্ভবত এই যে প্রোডাকশনর পুরো সিরিজটি দক্ষতা গঠন করে তা শিখেছে - সংযুক্ত উপলক্ষ্যগুলো একটি বিস্তৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য একত্রিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার উদাহরণে, রান্না প্রক্রিয়াটির আগে আরেকটি কাজ হতে পারে যেমন নিকটতম মুদি দোকানটি সনাক্ত করা এবং ডিম কিনতে সেখানে যাওয়া। এটি ডিম রান্না করার সামগ্রিক লক্ষ্যে নিজেই একটি উপলক্ষ্য। অবশ্যই, একটি প্রক্রিয়াতে প্রোডাকশনর সংখ্যা তার জটিলতার উপর নির্ভর করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে উৎপাদন নিয়মগুলো প্রকৃতির ''বিমূর্ত'' এবং অনুরূপ প্রকৃতির বিভিন্ন কাজের পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার জন্য পূর্বোক্ত প্রোডাকশনগুলো শাকসবজি ভাজার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি প্যানটি যথেষ্ট গরম হওয়ার শর্তে এবং তারপরে প্যানে শাকসবজি রাখার পদ্ধতিতে একই আকস্মিকতা জড়িত।
এছাড়াও, প্রোডাকশনগুলো অনুশীলনের একটি ডোমেনের জন্য নির্দিষ্ট হতে পারে, যেমন গণিতে বীজগণিতের মধ্যে, বা তুলনামূলকভাবে সাধারণ, যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে।<ref>Anderson, J. R. (1990). Cognitive psychology and its implications. New York, NY: Freeman.</ref>
==== জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে প্রোডাকশন ====
সাধারণত, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে, ''ঘোষণামূলক জ্ঞান'' (বা ''ঘোষণামূলক স্মৃতি)'' বনাম ''পদ্ধতিগত জ্ঞানের'' একটি দ্বৈততা জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার ধরণের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হয় যা আমরা সকলেই দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে ধারণ করি। ঘোষণামূলক জ্ঞান এমন ধারণা বা প্রস্তাবগুলোকে বোঝায় যা স্পষ্টভাবে বিবৃত বা স্পষ্ট করা যেতে পারে। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞান কেবল দক্ষতা বা কর্মকে বোঝায় যা একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদন করা যেতে পারে। পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রায়ই শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। এই অর্থে, ''ঘোষণামূলক'' বনাম ''পদ্ধতিগত'' এই দ্বৈততাটিকে ''স্পষ্ট'' বনাম ''অন্তর্নিহিত'' জ্ঞান বা স্মৃতি হিসাবেও উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গটি মাথায় রেখে, প্রোডাকশনগুলো সাধারণত অন্তর্নিহিত, পদ্ধতিগত জ্ঞান বিভাগের অধীনে আসে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদনের নিয়মগুলোকে প্রায়ই পদ্ধতিগত জ্ঞানের বিষয়বস্তু বা "দক্ষতার মূর্ত প্রতীক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়,[। কারণ এগুলো কর্ম বা জ্ঞানের কোর্স পরিচালনার জন্য পৃথক পদক্ষেপ। মূলত, সহজ কথায়, প্রোডাকশনগুলো "কীভাবে জিনিসগুলো করা যায়" সম্পর্কে,[ যা পদ্ধতিগত জ্ঞান সম্পর্কে।
সাধারণভাবে, অনুশীলন এবং আরও অভিজ্ঞতার সাথে, একটি দক্ষতা আরও স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। এর অর্থ যে প্রোডাকশনগুলো দক্ষতা গঠন করে তা দ্রুত এবং আরও ধারাবাহিকভাবে আগুন দেয়। এটি হওয়ার সাথে সাথে অভিনয়কারী প্রতিটি পৃথক উৎপাদন সম্পর্কে কম সচেতন হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে একক তরল ক্রিয়া হিসাবে ফায়ারিং প্রোডাকশনর ক্রমটি উপলব্ধি করতে
==== উৎপাদন নিয়মের প্রমাণ ====
উৎপাদন নিয়মগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাস্তব এই যুক্তি তৈরি করতে গিয়ে অ্যান্ডারসন দাবি করেছেন যে প্রমাণের প্রথম অংশটি হলো উৎপাদন বিধিগুলো দক্ষতা এবং জ্ঞানীয় কাজগুলোর অগ্রগতির একাধিক দিক বর্ণনা করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। অর্থাৎ, তারা কীভাবে কাজগুলো সম্পাদন করা হয় তার একটি যৌক্তিক এবং প্রশংসনীয় ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। অ্যান্ডারসন উদ্ধৃত প্রমাণের আরেকটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো উৎপাদন বিধিগুলো ব্যবহার করে আমরা দক্ষতা বা কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে বলে একজনের আচরণের দিকগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা একটি প্যান গরম হয়ে যাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমরা আশা করতে পারি যে সে এতে খাবার রাখবে (শর্তসাপেক্ষ ক্রিয়া)।
=== অ্যাক্ট-আর মডেল: উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে জ্ঞান এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি মডেল ===
উৎস সম্পাদনা]
একটি অত্যন্ত বিশিষ্ট তত্ত্ব যা উৎপাদন বিধিগুলোর প্রয়োগকে প্রতিফলিত করে তা হলো চিন্তা-যৌক্তিক (এসিটি-আর) তত্ত্বের অভিযোজিত চরিত্র, জন অ্যান্ডারসনের মানব জ্ঞানের তত্ত্ব যা জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিল্ডিং ব্লক হিসাবে উৎপাদন বিধি ব্যবহার করে। এসিটি-আর তত্ত্ব দ্বারা উত্থাপিত কেন্দ্রীয় যুক্তিটি হলো একটি জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা প্রচুর সংখ্যক পৃথক "লক্ষ্য-সম্পর্কিত জ্ঞানের ইউনিট" নিয়ে গঠিত।
==== এসিটি-আর এর ইতিহাস ====
তত্ত্বটি মূলত হিউম্যান অ্যাসোসিয়েটিভ স্মৃতি (এইচএএম) তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল (এই তত্ত্বের অন্যতম স্রষ্টাও ছিলেন জন অ্যান্ডারসন, এসিটি-আর তত্ত্বের স্রষ্টা) যা মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞানের কিছু দিক ব্যাখ্যা করেছিল। এটি ঘোষণামূলক জ্ঞানের ধারণার সাথে জড়িত ছিল। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞানের সাথে মোকাবিলা করেনি।
এটিকে ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করে, জন অ্যান্ডারসন তখন প্রস্তাব করেছিলেন যে পদ্ধতিগত জ্ঞান উৎপাদন বিধি নিয়ে গঠিত। তার তত্ত্বের কয়েকটি রূপকে সূক্ষ্ম-সুর করার পরে, তিনি ১৯৮৩ সালে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটির লক্ষ্য ছিল জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা।
পরবর্তীকালে, জ্ঞানীয় দক্ষতার উপর আরও প্রমাণ এবং উদীয়মান তথ্য বিবেচনায় নেওয়ার পরে, অ্যান্ডারসন বিশ্বাস করেছিলেন যে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াতে ''যুক্তিসঙ্গত বিশ্লেষণের'' একটি উপাদানকে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বের কিছুটা "যান্ত্রিক" প্রকৃতির সাথে একীভূত করা উচিত,[ এবং তাই তিনি অ্যাক্ট-আর (যুক্তিসঙ্গত জন্য আর) তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি তিনি অনুভব করেছিলেন যে পরিবেশের প্রতি বৃহত্তর অভিযোজিত এবং নির্বাচনী দক্ষতার। কারণে মূলটির চেয়ে উন্নতি ছিল।
তত্ত্বটির প্রাথমিক ফোকাস ছিল মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞান। এর সর্বাধিক বিশিষ্ট প্রয়োগ এবং বিকাশের বেশিরভাগই কম্পিউটার মডেল টিউটর (বুদ্ধিমান শিক্ষক) হয়েছে। সংক্ষেপে, এগুলো কম্পিউটার সফ্টওয়্যার যা উৎপাদন-নিয়ম-ভিত্তিক মডেলগুলো উল্লেখ করে সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থী / শিক্ষার্থীদের গাইড করতে পারে যা এই জাতীয় সমস্যার সমাধান তৈরি করে। এই কম্পিউটার টিউটরগুলো মূলত গণিত এবং বিজ্ঞানের মতো ডোমেনগুলোতে বিকশিত এবং ব্যবহৃত হয়। টিউটরিং সিস্টেম হিসাবে এসিটি-আর এর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আরও বিশদ একটি ভিন্ন অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
==== এসিটি-আর এর মূল নীতি[ ====
তিনটি মৌলিক ধারণা রয়েছে যা তত্ত্বটি তৈরি করে: ক) এই জ্ঞান ইউনিটগুলোর প্রতিনিধিত্ব; (খ) তাহাদের অধিগ্রহণ; গ) জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ায় তাদের স্থাপনা। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
===== জ্ঞানের প্রতিনিধিত্ব =====
তত্ত্বের একটি কেন্দ্রীয় মতবাদ হলো জ্ঞান উভয়ই ঘোষণামূলক জ্ঞানের উপাদান (যা প্রস্তাবনামূলক, শব্দার্থিক জ্ঞান, যেমন আগে উল্লেখ করা হয়েছে) এবং পদ্ধতিগত জ্ঞান (যা উৎপাদন বিধি হিসাবে উপস্থাপিত হয়) এবং দুটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াকরণে একসাথে কাজ করে।
ঘোষণামূলক জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয় এবং মানব স্মৃতির ''খণ্ড বা পৃথক'' ইউনিটগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করা হয় যা স্কিমাটা (জ্ঞান কাঠামো) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রতিটি অংশে বিষয় আইটেম সম্পর্কে প্রস্তাব বা বর্ণনামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ''স্লটে'' সঞ্চিত রয়েছে,[ কোন বৃহত্তর বিভাগের অন্তর্গত তা সহ। খণ্ডগুলো একটি পাঠ্য বা গ্রাফিকাল বিন্যাসে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডিম ভাজা সম্পর্কে একটি অংশ পাঠ্যভাবে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে: একটি ডিম ভাজা এক ধরণের রান্নার দক্ষতা; রান্না করার আগে ডিমটি তার শেল থেকে সরানো প্রয়োজন; তাপ দরকার। ডানদিকে একটি অংশের সম্ভাব্য গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।
অন্যদিকে, পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করা হয়। পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে, প্রোডাকশনগুলো উপলক্ষ্যগুলোর একটি আন্তঃসংযুক্ত সিরিজের রূপ নিতে পারে যা একটি বিস্তৃত লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে।
দুই ধরনের জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক হলো ঘোষণামূলক জ্ঞান কাঠামোর অংশগুলো প্রোডাকশন সংঘটিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত এবং কর্মের কোর্স সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম রান্না করার জন্য, একজনকে অবশ্যই তাদের কেনার জন্য জ্ঞানের অংশগুলো থাকতে হবে, তাদের শাঁস থেকে তাদের সরিয়ে ফেলতে হবে এবং প্যান প্রস্তুত করতে হবে ইত্যাদি। এর মধ্যে একটি না থাকলে পদ্ধতিগত জ্ঞানে ফাঁক থাকবে। অতএব, জ্ঞানের আরও বেশি অংশ থাকার অর্থ আরও উপলব্ধ উৎপাদন বিধি এবং আরও ভাল পদ্ধতিগত জ্ঞান। এটিও বিবেচনা করা যেতে পারে যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে, যেমন পরবর্তী বিভাগে আলোচনা করা হবে।
===== জ্ঞান অর্জন =====
ঘোষণামূলক জ্ঞান মোটামুটি সরল উপায়ে অর্জিত হয়, হয় পরিবেশ থেকে তথ্য বা ধারণার উপলব্ধি থেকে বা সরাসরি নির্দেশ থেকে (তথ্য দেওয়া হচ্ছে)। যেহেতু প্রোডাকশনকে অবহিত করার জন্য জ্ঞানের ঘোষণামূলক অংশগুলো প্রয়োজন, তাই অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের এই তত্ত্বটি বোঝায় যে কোনও জ্ঞানীয় বা পদ্ধতিগত কার্য সম্পাদন করার জন্য জ্ঞান থাকা মূলত কার্যটির প্রয়োজনীয় তথ্যের সমস্ত পৃথক অংশ সংগ্রহ করা জড়িত - কাজটি "এর অংশগুলোর যোগফল"। অতএব, জটিল কাজগুলোর জন্য অনেকগুলো খণ্ড সংগ্রহের প্রয়োজন।
অন্যদিকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে উৎপাদন বিধিগুলোর অধিগ্রহণ কিছুটা বেশি কঠিন এবং কম সোজা, যেহেতু এগুলো কেবল বলা বা স্পষ্ট করা যায় না। মূলত, তারা শুধুমাত্র ঘোষণামূলক জ্ঞান মোতায়েন করা হয় হিসাবে শেখা হয়। এর অর্থ হলো শিক্ষার্থীরা যখন ''কাজগুলো করে'' তখন উৎপাদন বিধিগুলো অর্জন করে, কেবল যখন তাদের ঘোষণামূলক তথ্য দেওয়া হয় তখন নয়। এটি লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ যে এই স্থাপনাটি কেবল প্রোডাকশনগুলো সংঘটিত হওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রেক্ষাপট এবং শর্তে ঘটতে পারে। যখন কোনও কার্য সম্পাদনের শর্তগুলো উপযুক্ত হয়, তখন লক্ষ্য-ভিত্তিক জ্ঞানীয় ক্রিয়াকলাপগুলো সংঘটিত হতে পারে, যেখানে ঘোষণামূলক অংশগুলো ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করা হয় (বা "সম্পাদন")। এইভাবে, এটি বিবেচনা করা যেতে পারে যে লক্ষ্যের দিকে ব্যক্তির কর্মকে গাইড করার জন্য তারা মূলত উৎপাদন নিয়মে রূপান্তরিত হয়। অনুশীলনের মাধ্যমে, রূপান্তরের এই প্রক্রিয়াটি গতি এবং নির্ভুলতার ক্ষেত্রে উন্নত বা শক্তিশালী করা যেতে পারে। সুতরাং, অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া জন্য সুযোগ প্রদান উৎপাদন নিয়ম অধিগ্রহণ উত্সাহিত করার একটি অত্যন্ত অনুকূল উপায়।
===== জ্ঞানের প্রয়োগ প্রসঙ্গ =====
এই দিকটি অ্যাক্ট-আর এর ব্যাখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে কীভাবে আমাদের জ্ঞানীয় কাঠামো টাস্ক বা সমস্যা সমাধানের একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে সঠিক ধরণের জ্ঞানকে তলব করতে সক্ষম। এটি যৌক্তিক বিশ্লেষণের কাজ - তত্ত্বের নামের "আর" অংশ। যৌক্তিক বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াটি মনের মধ্যে সক্রিয় হওয়ার জন্য সঠিক অংশ এবং উৎপাদন বিধিগুলো নির্ধারণ করার জন্য দুটি উপাদান চিহ্নিত করে: ক) অতীতে এই জাতীয় পরিস্থিতিতে এই জাতীয় জ্ঞান ভালভাবে কাজ করার সম্ভাবনা; খ) এই জাতীয় জ্ঞান হাতের পরিস্থিতিতে ভাল কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি। কারণকে একত্রিত করে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি জ্ঞানের একটি অংশের প্রদত্ত কার্য প্রসঙ্গে উপযুক্ত এবং প্রযোজ্য হওয়ার সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।
সংক্ষেপে, এটি এটিও বোঝায় যে মানব জ্ঞানীয় সিস্টেম কোন ধরণের কাজগুলোতে কী ধরণের জ্ঞান উপযুক্ত হয়েছে তার একটি রেকর্ড বজায় রাখে, যদিও এটি মনের মধ্যে একটি অবচেতন প্রক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এই দিকটির তত্ত্বের ব্যাখ্যা মূলত একটি পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়া বর্ণনা করে।
==== এসিটি-আর এর তাত্ত্বিক দিকগুলোর সংক্ষিপ্তসার ====
সংক্ষেপে, অ্যাক্ট-আর তত্ত্ব অনুসারে, ঘোষণামূলক জ্ঞান তার আশেপাশের পরিবেশে তথ্যের উপলব্ধি দ্বারা এনকোড করা হয় (একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক, পিতামাতা এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশাবলী সহ) ইত্যাদি); কোনও কার্য সম্পাদন বা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গে এই জাতীয় ঘোষণামূলক জ্ঞান (প্রায়ই এর অনেকগুলো ইউনিট) প্রয়োগ করতে শেখার ফলে পদ্ধতিগত জ্ঞান বিকশিত হয়; এবং প্রদত্ত পরিস্থিতিতে মোতায়েন করার জন্য সঠিক ধরণের জ্ঞানের নির্বাচন জ্ঞানীয় সিস্টেমের অনুমান অনুসারে ঘটে যে জ্ঞানের একটি অংশ দরকারী এবং উপযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য প্রয়োগ এবং অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ ====
এখন পর্যন্ত অ্যাক্ট-আর এর বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে, অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একজোড়া পরীক্ষা উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ দেয় যা তত্ত্বটিকে সমর্থন করে। এই পরীক্ষাগুলো অধ্যয়ন করেছিল যে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকগুলো বিভিন্ন মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোর মধ্য দিয়ে শুরু থেকে চূড়ান্ত গন্তব্যগুলোতে একটি মানচিত্রে (পিটসবার্গ, পেনসিলভেনিয়ার শহরের) সর্বাধিক দক্ষ রুটগুলো কাজ করেছিল, ব্যয় এবং সময়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করে। পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে করা হয়েছিল। কারণ তারা কম্পিউটার স্ক্রিনে মানচিত্রটি দেখেছিল এবং চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তারা যে অবস্থানগুলোতে যেতে বা পাস করতে চেয়েছিল সেগুলোতে ক্লিক করেছিল।
বিষয়গুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো একই নেভিগেশন সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের (উৎপাদন বিধিগুলোর সেট ব্যবহার করে) উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার মডেল দ্বারা উত্পাদিত "চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়া" এবং সমাধানগুলোর সাথে তুলনা করা হয়েছিল। নীচের সারণী এই নেভিগেশন টাস্কে রুট নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত মডেলের উৎপাদন বিধিগুলোর কয়েকটি উদাহরণ দেখায়:
{| class="wikitable"
! colspan="2" |'''''[আদেশে] কম্বিন-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর এখানে location ৩ যাওয়ার একটা রাস্তা আছে, এবং location ৩ location২ এর কাছাকাছি,
|-
|তারপর
|Location ৩ এ রুট নিন,
এবং সেখান থেকে আরও পরিকল্পনা করুন।
|-
! colspan="2" |'''''ডাইরেক্ট-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর location ১ থেকে location ২ পর্যন্ত একটা রুট আছে,
|-
|তারপর
|সেই পথেই যাও।
|}
টেবিল ২. নেভিগেশন টাস্কের রুট নির্ধারণের জন্য উৎপাদন বিধিগুলোর উদাহরণ
এসিটি-আর মডেলের চিন্তাভাবনার উপায়টি স্নাতক শিক্ষার্থীদের একবারে এক ধাপের সাথে তুলনা করা হয়েছিল - মডেল দ্বারা তৈরি রুটের প্রতিটি একক পছন্দ (প্রতিটি একক উৎপাদন) প্রতিটি শিক্ষার্থীর দ্বারা তৈরি প্রতিটি পছন্দের পাশাপাশি রাখা হয়েছিল (তারা যে মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোতে ক্লিক করেছিল)। ফলাফলগুলো দেখিয়েছে যে এসিটি-আর মডেলের রুটের সিদ্ধান্তগুলো "৬৭% সময়" শিক্ষার্থীদের সাথে মেলে,[ এবং এমনকি যদি তারা তা না করে। তবে তারা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শীর্ষ পছন্দগুলোর সাথে মেলে, মানব বিষয়গুলো জ্ঞানীয়ভাবে যেভাবে আচরণ করে তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমান্তরাল।
উপরন্তু, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান ছিল যে রুট পছন্দগুলো করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার মডেলের বিলম্ব (নেওয়া সেকেন্ডের সংখ্যা) বিষয়গুলোর সিদ্ধান্তের গতির সাথে খুব মিল ছিল। যদিও এই সন্ধানটি তুলনামূলকভাবে সাধারণ পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল, এটি সম্ভবত জ্ঞানীয় কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে রায় দেওয়ার জন্য মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কিত অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের ধারণাগুলোকে সমর্থন করে (সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিভিন্ন রুট পছন্দগুলো বিবেচনা করুন এবং মূল্যায়ন করুন)।
চূড়ান্ত ফলাফল যা এসিটি-আর তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা হলো পরীক্ষার সময়কালে (প্রায় এক সপ্তাহ) অনুশীলনের সাথে, মানব বিষয়গুলো রুট পরিকল্পনার অনুকূলকরণের গতিতে উন্নত হয়েছিল, সম্ভবত উন্নত কার্য সম্পাদনে শক্তিশালী উৎপাদন বিধিগুলোর নীতিকে সমর্থন করে।
অ্যান্ডারসন এই মানচিত্র নেভিগেশন ক্রিয়াকলাপের গুরুত্ব এবং এসিটি-আর তত্ত্বকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে এর প্রমাণের কথা উল্লেখ করেছেন,[ দিয়েছিলেন যে এটি একটি বাস্তব জীবনের কাজ জড়িত যেখানে মানুষকে ব্যয় এবং সময়ের মতো বাস্তব। কারণ এবং পরিণতি বিবেচনা করতে হবে, বিমূর্ত, একাডেমিক সমস্যাগুলোর উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার এর বিপরীতে গাণিতিক, যেখানে সত্য পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত খুব কম প্রভাব রয়েছে। তদতিরিক্ত, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন রুট সন্ধানের এই জাতীয় কাজটিতে একাধিক সমাধান জড়িত। এর অর্থ সমাধানগুলো সাফল্যের বিভিন্ন ডিগ্রি। এটি এটিকে আরও বাস্তবসম্মত পরীক্ষা করে তোলে যে এসিটি-আর মডেলটি মানুষের জ্ঞানীয় সিস্টেমের পক্ষে সত্য কিনা।
এই পরীক্ষাগুলো ছাড়াও, এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য অন্যান্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতামূলক সমর্থনের মধ্যে ইন্টেলিজেন্ট টিউটরিং সিস্টেমগুলোতে (আইটিএস) বিনিয়োগ করা কাজটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি রিটার এবং তার সহকর্মীদের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা বিস্তারিতভাবে অন্বেষণ করা হয়েছে। যদিও এই অধ্যায়ের পরিধির মধ্যে নয়, কম্পিউটার টিউটরিং সিস্টেম সম্পর্কিত আরও আলোচনা একটি ভিন্ন অধ্যায়ে দীর্ঘ করা হবে।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের নির্দেশমূলক প্রভাব ====
তত্ত্বের পূর্বোক্ত নীতি এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে, অ্যান্ডারসন এট আল টিউটরিং সিস্টেম ডিজাইনের জন্য নীতিগুলোর একটি তালিকা সরবরাহ করে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণভাবে নির্দেশমূলক নকশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন ধারণাগুলো সহ: ক) প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে একটি দক্ষতার প্রতিনিধিত্ব করা; খ) সমস্যা সমাধানে উপ-লক্ষ্য (প্রোডাকশন) স্পষ্ট করা; (গ) হস্তান্তরযোগ্য উৎপাদন বিধিমালা প্রচারের সময় কতিপয় সমস্যার প্রেক্ষাপটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান; ঘ) স্মৃতি লোড কমাতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় উৎপাদন নিয়মগুলোতে ফোকাস; ঙ) কোন কাজে সূক্ষ্ম দানাদার উৎপাদন বিধি কতটুকু থাকা প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে উপযুক্ত গ্র্যানুলারিটির নির্দেশনা প্রদান; চ) শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথে শিক্ষামূলক সহায়তা যথাযথভাবে প্রত্যাহার করা।
কগনিটিভ টিউটর এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে আপনি ''সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি'' (সমস্যা সমাধানের জন্য ২.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) এবং ''লার্নিং ম্যাথমেটিক্স'' (বীজগণিত শেখানোর জন্য ৪.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) অধ্যায়ে যেতে পারেন।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া ====
ACT-R তত্ত্ব বলে যে কোনও দক্ষতা (বা জ্ঞানীয় কাজ) অর্জন বা বোঝার জন্য কেবল সেই স্বতন্ত্র উৎপাদনগুলি শেখা জড়িত হওয়ায় এটি পূর্ব-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অর্জন করার পরিবর্তেগঠনমূলক শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে যে জ্ঞান বা দক্ষতার বোঝাপড়া শিক্ষার্থী নিজেই তৈরি করে।
এটি, তত্ত্বের ধারণার সাথে মিলিত হয়ে যে শিক্ষার্থীদের উত্তর বা সমস্যার সমাধানগুলি উৎপাদন নিয়মের নির্দিষ্ট সেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত বা কব্জাবদ্ধ করা উচিত, এটি জ্ঞানের প্রতি কিছুটা আচরণগত-ভিত্তিক পদ্ধতি দিয়েছে। এটি মেটাকগনিশনের মতো উপাদানগুলিকে দমিয়ে রেখেছে। অ্যান্ডারসন এবং অন্যান্যরা এই বলে প্রতিক্রিয়া জানান যে ACT-R এর পদ্ধতি আচরণবাদী পদ্ধতির সাথে মিল রাখে যে নির্দেশনা কীভাবে একটি দক্ষতা বা কাজকে উপাদানগুলিতে বিভক্ত করার উপর ফোকাস করা উচিত, তবে তারা যুক্তি দেন যে ACT-R সাধারণ আচরণগত পদ্ধতির তুলনায় আরও বিমূর্ত উপায়ে (সম্ভবত প্রসঙ্গের মধ্যে আরও স্থানান্তরযোগ্য) কাজটি উপস্থাপন করে।<ref name=":2">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned. The Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207. Retrieved from: http://www.jstor.org/</ref>
উপরন্তু, জন অ্যান্ডারসন স্বীকার করেছেন যে, যেহেতু তত্ত্বের একটি মূল শিক্ষাগত বা নির্দেশনামূলক নকশার অন্তর্নিহিত অর্থ হল একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য পৃথক উৎপাদন নিয়ম অর্জনকে উৎসাহিত করা, তাই তত্ত্বের প্রাথমিক জোর শেখার দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই অগ্রাধিকারটি তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে হতে পারে যারা দক্ষতা বা গতির চেয়ে শেখার গভীরতা বা সমৃদ্ধিকে মূল্য দেন। অ্যান্ডারসনের প্রতিক্রিয়া হল যে শেখার গভীরতাকে কেবল ঘোষণামূলক এবং উৎপাদন (পদ্ধতিগত) জ্ঞানকে সমৃদ্ধকারী হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যার মধ্যে অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত।<ref name=":02">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref>
== শব্দকোষ ==
; অর্থের নিয়োগ
: যখন অর্থ একটি অনুভূত উদ্দীপনা বরাদ্দ করা হয়
; স্বয়ংক্রিয়তা
: একটি স্বয়ংক্রিয় স্তরে একটি দক্ষতার বিকাশ যেখানে এটি একটি অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া হয়ে যায় যা অনেক চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয় না
; মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব
: মেয়ারের তত্ত্বটি ডুয়াল-কোডিং তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, এই ধারণাটি যে জ্ঞানীয় লোড অবশ্যই শেখার ক্ষেত্রে পরিচালনা করা উচিত এবং এই ধারণাটি যে শেখার সাথে সংগঠিত এবং সংহতকরণের তথ্য জড়িত
; ধারণা
: মানসিক তথ্যকে অর্থপূর্ণ বিভাগ এবং কাঠামোতে বাছাই করার একটি উপায়; একটি "জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লক"
; শর্তসাপেক্ষ জ্ঞান
: বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান এবং কখন এবং কেন তাদের ব্যবহার করতে হবে; "কেন জানার" জ্ঞান
; ঘোষণামূলক জ্ঞান
: বাস্তব জ্ঞান যেমন রাজধানী শহর এবং বীজগণিতের সূত্র জানা; "কি জানার" জ্ঞান
; ডুয়াল কোডিং থিওরি
: পাইভিওর তত্ত্ব যে ভিজ্যুয়াল এবং পাঠ্য উভয় বিন্যাসে তথ্য সরবরাহ করা শেখার উপকার করতে পারে
; এপিসোডিক স্মৃতি
: স্মৃতি যা প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জন্য নির্দিষ্ট
; অত্যাবশ্যকীয় শিক্ষা
: প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাহিদা
; বহিরাগত জ্ঞানীয় লোড
: মূল জ্ঞানীয় কাজের বাইরে জ্ঞানীয় লোড সৃষ্টি করে এমন কিছু
; এফএমআরআই
: কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং। একটি নিউরোইমেজিং প্রযুক্তি যা মস্তিষ্কের সক্রিয় অঞ্চলে রক্ত প্রবাহের পরিবর্তনগুলো সনাক্ত করে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম
; ভুলে যাওয়া
: স্মৃতি মনে করা যায় না
; আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়াকরণ
: জ্ঞানীয় চাহিদা যা প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য দরকারী। তবে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োজনীয় নয়
; অন্তর্নিহিত জ্ঞানীয় লোড
: যে কোনও প্রদত্ত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় লোড
; দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি
: স্মৃতি যা দিন, মাস, বছর এবং / অথবা দশক ধরে বিকশিত হয়। স্মৃতির স্থায়ী সঞ্চয় সারা জীবন ধরে বিকশিত হয়
; পদ্ধতিগত জ্ঞান
: গাড়ি চালানো, স্কিইং করা বা কফি তৈরির মতো প্রতিদিনের কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সে সম্পর্কে জ্ঞান; "কিভাবে জানার" জ্ঞান
; প্রোটোটাইপ
: একটি অত্যন্ত সাধারণ / বিশিষ্ট ধারণা
; স্মরণ
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য মনে রাখা হয়
; পুনর্গঠন
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য স্মরণে পুনর্গঠন করা হয়। তবে ঠিক মনে রাখা হয় না
; রেফারেন্সিয়াল হোল্ডিং
: যখন কেউ অস্থায়ীভাবে তথ্য ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে রাখে যখন অন্যান্য তথ্য একযোগে প্রক্রিয়া করা হয়
; রিহার্সাল
: জ্ঞানীয় পুনরাবৃত্তি যা তথ্যকে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সক্রিয় থাকতে দেয়
; পুনরুদ্ধার
: দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বাইরে এবং ওয়ার্কিং স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার কাজ
; স্কাফলোডিং
: কোনও বস্তু (বা স্কিমাটা) "নির্মাণাধীন" থাকাকালীন সহায়তার একটি অস্থায়ী কাঠামো যা সম্পন্ন হওয়ার পরে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সহায়তার আর প্রয়োজন হয় না।
; স্কিমাটা বা স্কিমাটা
: জ্ঞানীয় কাঠামো (গুলো) যা জ্ঞান সংগঠিত করতে এবং চিন্তাভাবনা, উপলব্ধি এবং মনোযোগকে গাইড করতে সহায়তা করে
; শব্দার্থিক স্মৃতি
: সাধারণ ধারণা এবং পদ্ধতির অনির্দিষ্ট স্মৃতি; নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত ঘটনা বা অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত নয়
; সেন্সরি রেজিস্টার
: ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে একটি জ্ঞানীয় ফাংশন যেখানে অনুভূত ইনপুটটি অর্থ গ্রহণের জন্য সংরক্ষণ করা হয়
; অ্যাক্টিভেশন ছড়ানো
: অন্য সম্পর্কিত ধারণার স্মরণ দ্বারা উদ্ভূত একটি ধারণার স্মরণ
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
kfij6z9bu1ctaycjz5l83jhrzxnlyns
85726
85724
2025-07-06T19:05:44Z
NusJaS
8394
85726
wikitext
text/x-wiki
একজন শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করে এবং শ্রেণিকক্ষের পাঠ মুখস্থ করে, তখন সেই তথ্য কোথায় যায়? '''[[#glos_দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি|দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি]]''' শেখার ক্ষেত্রে একেবারে অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন শিক্ষার্থী যা কিছু শেখে, তা হয়তো স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি কিংবা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়। যদিও উভয় ধরনের স্মৃতিই তথ্য সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবুও এগুলো মানুষের শেখার ধরন, উপলব্ধি এবং অর্থ নির্মাণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে। শিখন ও স্মৃতি একে অপরকে অবিরত প্রভাবিত করে। যেমনিভাবে পূর্বের অভিজ্ঞতা বা পূর্বজ্ঞান নতুন কোনো বিষয় শেখাকে আরও সহজ করে তোলে। এই অধ্যায়ে আমরা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান, কার্যকারিতা ও কাঠামোর বিষয়ে আলোচনা করব। এটি মূলত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ মডেল ভিত্তিক। আমরা এই কাঠামোটিকে জ্ঞানের সঙ্গে সংযুক্ত করে বিশ্লেষণ করব কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে, সেখানে সংরক্ষিত হয় এবং কীভাবে তা পুনরুদ্ধার করা যায়। সর্বশেষে, আমরা নতুন ও প্রচলিত কিছু মডেল তুলে ধরব, যেগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।
==দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির গঠন ও কার্যকারিতা==
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির ধারণক্ষমতা অসীম এবং স্থায়ী বলে মনে করা হয়, যেখানে একজন মানুষ জীবদ্দশায় যত রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার সবই সংরক্ষিত থাকতে পারে। সকল শিক্ষার্থীর জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি থাকা আবশ্যক। এটি কীভাবে কাজ করে, এর গঠন ও প্রক্রিয়া বোঝা শিক্ষার্থীদের নিজের শেখা আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়।
আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দীর্ঘ সময়ে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ তথ্য থাকে এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতির (যা অন্য একটি অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে) মতো এটি টিকিয়ে রাখার জন্য ক্রমাগত অনুশীলন বা পুনরাবৃত্তি প্রয়োজন হয় না। এখানে সংরক্ষিত তথ্য '''[[#glos_স্মরণ|স্মরণ]]''' অথবা '''[[#glos_পুনর্গঠন।|পুনর্গঠন]]''' করা হয়, পুনরাবৃত্তি নয়। দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিকে সাধারণত তিনটি জ্ঞানের বিভাগে ভাগ করা হয়: '''[[#glos_declarative knowledge|ঘোষণামূলক জ্ঞান]]''', '''[[#glos_প্রক্রিয়াগত জ্ঞান|প্রক্রিয়াগত জ্ঞান]]''', এবং '''[[#glos_শর্তাধীন জ্ঞান|শর্তাধীন জ্ঞান]]'''।
ঘোষণামূলক জ্ঞান (বা '''[[#glos_শব্দার্থিক স্মৃতি|শব্দার্থিক]]''' জ্ঞান) হলো এমন তথ্য যা আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি। অন্যদিকে প্রক্রিয়াগত জ্ঞান হলো এমন দক্ষতা ও প্রক্রিয়া যা আমরা অনায়াসে সম্পাদন করতে পারি, কিন্তু স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি না (পরবর্তী অংশে উৎপাদন নিয়ম এবং ACT-R তত্ত্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে)। শর্তাধীন জ্ঞান বোঝায়, কখন ঘোষণামূলক ও প্রক্রিয়াগত জ্ঞান প্রয়োগ করতে হয় সে সম্পর্কে জানা।
{| class="wikitable"
!ঘোষণামূলক জ্ঞান
!প্রক্রিয়াগত জ্ঞান
!শর্তাধীন জ্ঞান
|-
|মোবাইল ফোন একটি পোর্টেবল টেলিফোন।
|ফোন কল করতে জানা।
|কখন ফোন রিসিভ বা কেটে দিতে হয়।
|-
|গাড়ির সাধারণত চারটি চাকা থাকে।
|গাড়ি চালাতে জানা।
|কখন সিটবেল্ট বাঁধতে বা খোলার দরকার।
|}
চিত্র ১: ঘোষণামূলক, প্রক্রিয়াগত এবং শর্তাধীন জ্ঞানের উদাহরণ
==জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান==
“জ্ঞানের ভিত্তি নির্মাণকারী উপাদান” বলতে এমন পাঁচটি মানসিক কাঠামো বোঝানো হয় যা অনেক তাত্ত্বিকদের মতে একত্রে কাজ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত সকল মানসিক কাঠামো ও তথ্যের ভিত্তি গঠন করে।<ref name=“Bruning”>Bruning, R., & Schraw, G. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.). Pearson Education</ref> মূলত, এগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির উপাদান। যদিও অনেকগুলো উপাদানের মাঝে মিল থাকতে পারে, প্রতিটির কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। প্রথম তিনটি উপাদান ঘনিষ্ঠভাবে ঘোষণামূলক জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, আর শেষ দুটি সাধারণত প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।<ref name=“Bruning” />
===[[#glos_ধারণা|ধারণা]]===
<u>ধারণা কী?</u> ধারণা হলো এমন মানসিক গঠন, যার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাদানকে অর্থবোধক ছোট ছোট ভাগে ভাগ করি এবং শ্রেণিবদ্ধ করি। এটি নতুন তথ্য বুঝতে সাহায্য করে।<ref name=“Bruning” /> এগুলোকে বলা হয় “শব্দার্থিক জ্ঞানের অংশবিশেষ”, যেগুলো তথ্য স্মরণ করার সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এগুলো সাধারণত ঘোষণামূলক জ্ঞানের আওতায় পড়ে।<ref name=“Khajah”>Khajah, M. M., Lindsey, R. V., & Mozer, M. C. (2014). Maximizing students' retention via spaced review: Practical guidance from computational models of memory. Topics in Cognitive Science, 6(1), 157-169. doi:10.1111/tops.12077</ref>
যেমন, "বিড়াল" সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে বলা যায় এটি এমন এক প্রাণীশ্রেণি যাদের গঠন, আকার ও আচরণে মিল থাকে: তারা ছোট, লোমযুক্ত এবং ‘ম্যাও’ শব্দে যোগাযোগ করে। তাদের রঙ হতে পারে সাদা, কালো, বাদামি ইত্যাদি; আবার তারা গৃহপালিত বা বন্য হতে পারে। তবুও, এরা সবাই "বিড়াল" শ্রেণির মধ্যে পড়ে।
বহুল পরিচিত বা সাধারণ ঘটনার ভিত্তিতে তৈরি ধারণাকে বলা হয় '''[[#glos_প্রোটোটাইপ|প্রোটোটাইপ]]'''।<ref name="“Bruning”" /> যেমন, উত্তর আমেরিকার একটি আদর্শ বাস্কেটবল লিগের প্রোটোটাইপ হতে পারে “ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (NBA)”।
<u>ধারণা গঠনের উপায় কী?</u> ধারণা গঠনের প্রধান দুটি তত্ত্ব আছে। প্রথমত, কেউ কেউ মনে করেন ধারণা হলো মস্তিষ্কের বিমূর্ত মানসিক গঠন, যেগুলো ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক পদ্ধতির থেকে আলাদাভাবে গঠিত হয়।<ref name="“Bonner”" /> অন্যদিকে, fMRI এর মতো নিউরোইমেজিং প্রযুক্তির সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ধারণা তৈরি হয় ইন্দ্রিয়-প্রতিবর্তক উপাদানের সঙ্গে মিলিয়ে, এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সেগুলো বহু-মাত্রিকভাবে সংরক্ষিত হয়।<ref name="“Bonner”" />
আমরা আমাদের ধারণাকে সাধারণত তিন শ্রেণিতে ভাগ করি: পদার্থ, প্রক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থা।<ref name=":4">Chi, M.T.H., de Leeuw, N., Chiu, M., & La Vancher, C. (1994). Eliciting self-explanations improves understanding. ''Cognitive Science, 18,'' 439-477.</ref> যেমন, “প্রক্রিয়া” বলতে বোঝায় এমন এক ধারাবাহিক ঘটনা যা থেকে আমরা নির্দিষ্ট ফল প্রত্যাশা করি, যেমন—কিছু ফেলে দিলে তা মাধ্যাকর্ষণজনিত কারণে পড়ে যাবে। “মানসিক অবস্থা” বোঝায় এমন অভ্যন্তরীণ অনুভূতি বা আবেগ, যেমন—দুঃখিত, খুশি বা অনিশ্চিত বোধ করা।
<u>ধারণা তৈরির কৌশল</u> সম্পর্কে তিনটি স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে: (১) সংরক্ষণশীল মনোযোগ কৌশল, যেখানে ব্যক্তি প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য দেখে সঠিক উদ্দীপনা নির্বাচন করে।<ref>Bruner, J.S., Goodnow, J.J., & Austin, G.A. (1956). ''A study of thinking.'' New York, NY: Wiley</ref> (২) মনোযোগ গেম্বলিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একবারে সব বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এটা দ্রুত কাজ করে, ভুলের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এবং (৩) স্ক্যানিং কৌশল, যেখানে ব্যক্তি একাধিক অনুমান একসঙ্গে পরীক্ষা করে দেখে। এই পদ্ধতিও দ্রুত, কিন্তু মানসিক চাপ বেশি হওয়ায় মনে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।<ref name="“Bruning”" />
===প্রস্তাবনা ===
প্রস্তাবনা এমন মানসিক ধারণা যা দিয়ে ভাষাগত তথ্য এবং অধিকাংশ ঘোষণামূলক জ্ঞান সংরক্ষিত হয় বলে তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন।<ref name=“Bruning” /> প্রস্তাবনা হলো সবচেয়ে ছোট মানসিক বিবৃতি যা অর্থ বহন করে, তবে ধারণার তুলনায় আরও জটিল। কারণ এটি একাধিক ধারণার ভিত্তিতে গঠিত হয় এবং সেগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নির্দেশ করে।<ref name="Remue">Remue, J., De Houwer, J., Barnes-Holmes, D., Vanderhasselt, M., & De Raedt, R. (2013). Self-esteem revisited: Performance on the implicit relational assessment procedure as a measure of self- versus ideal self-related cognitions in dysphoria. Cognition and Emotion, 27(8), 1441-1449. doi:10.1080/02699931.2013.786681</ref> একটি প্রস্তাবনাকে সত্য বা মিথ্যা হিসেবে বিচার করা যায়।<ref>Anderson, J.R. (2005). ''Cognitive psychology and its implications'' (6th ed.). New York: Worth</ref>
উদাহরণ: “লুক মেয়াদোত্তীর্ণ টিকিট কিনেছে।”
১. লুক টিকিট কিনেছে। (ঘটনাটি অতীতে ঘটেছে।)
২. টিকিটটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এই দুটি প্রস্তাবনা মিলিয়ে একটি “প্রস্তাবনামূলক নেটওয়ার্ক” তৈরি হয় যা নির্দিষ্ট তথ্য স্মরণ বা '''[[#glos_পুনরুদ্ধার|পুনরুদ্ধার]]''' করার সময় সক্রিয় হয়।
===[[#glos_স্কিমাটা|স্কিমাটা]]===
<u>স্কিমাটা কী?</u> স্কিমাটা হলো এমন মানসিক কাঠামো যা একজন ব্যক্তির সাধারণ কারণ ও ফলাফলের জ্ঞানকে উপস্থাপন করে।<ref name="Jui">Jui-Pi Chien. (2014). Schemata as the primary modelling system of culture: Prospects for the study of nonverbal communication. Sign Systems Studies, 42(1), 31-41. doi:10.12697/SSS.2014.42.1.02</ref> আমরা যে কোনও জ্ঞান অর্জন করি, তা স্কিমার মাধ্যমে সংগঠিত হয় এবং এটি তথ্যের এনকোডিং, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দায়ী।<ref name=“Bruning” /> স্কিমাটা গঠিত হয় বাহ্যিক পরিবেশ ও পূর্বজ্ঞান একত্রে কাজ করে।<ref name="Le"> Le Grande, M. R., Elliott, P. C., Worcester, M. U. c., Murphy, B. M., Goble, A. J., Kugathasan, V., et al. (2012). Identifying illness perception schemata and their association with depression and quality of life in cardiac patients. Psychology, Health & Medicine, 17(6), 709-722. doi:10.1080/13548506.2012.661865 </ref> ডানদিকে প্রদত্ত চিত্রটি "স্তন্যপায়ী প্রাণীর জ্ঞান" সংক্রান্ত একটি স্কিমার উপস্থাপন হতে পারে।
[[File:Schema111.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:Schema111.jpg|থাম্ব|চিত্র ২. স্কিমাটা: স্তন্যপায়ী প্রাণী সম্পর্কে জ্ঞান]]
স্কিমাটাকে '''স্ক্যাফোল্ডিংয়ের''' মানসিক সমতুল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অন্য কথায়, আমরা যখন নিজেদেরকে উপন্যাসের পরিস্থিতিতে খুঁজে পাই বা নতুন তথ্য শিখি, তখন আমরা যে স্কিমাটা গঠন করি তা আমাদের জন্য সহায়তা প্রদান করবে ।<ref name="Sternberg & Sternberg, 2012">Sternberg, R. J., & Sternberg, K. (2012). Cognitive psychology (6th ed.). Belmont, CA: Wadsworth.</ref>
স্কিমাটা কীভাবে গঠিত হয়? একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রাক-বিদ্যমান স্কিম্যাটিক জ্ঞান রাখা নতুন এনকোডেড তথ্য স্মরণ করার চেষ্টা করার সময় নতুন তথ্য ধরে রাখার উন্নত স্মৃতির সাথে যুক্ত হয়েছে।<ref name="van">van Kesteren, Marlieke T. R., Rijpkema, M., Ruiter, D. J., Morris, R. G. M., & Fernàndez, G. (2014). Building on prior knowledge: Schema-dependent encoding processes relate to academic performance. Journal of Cognitive Neuroscience, 26(10), 2250-2261. doi:10.1162/jocn_a_00630</ref> এটি ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়। কারণ এটি নতুন তথ্যকে মস্তিষ্কে (এবং এইভাবে সক্রিয় স্কিমাতে) আরও দ্রুত একীভূত করার অনুমতি দেয়।<ref name="van" /> আমাদের স্কিমাতে এনকোড করা তথ্যগুলো স্লট হিসাবে পরিচিত যা সাজানো হয়; নির্দিষ্ট মানসিক "বিভাগগুলো"। এর মধ্যে আমাদের জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত এটি সামগ্রিকভাবে কীভাবে অনুভূত হয়।<ref name="“Bruning”" /> যখন একটি স্কিমাটা বিকশিত হয়েছে এবং ঘটনা বা ধারণাগুলোর একটি সাধারণ ঘটনা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, তখন এটি সম্ভবত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি অংশ হয়ে উঠবে যেখানে এটি আমাদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যতের কোনও স্কিম্যাটিক তথ্যের ভিত্তি হিসাবে কাজ করতে থাকবে যা এনকোড করা যেতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> এই প্রক্রিয়াটিকে স্কিম্যাটিক ইনস্ট্যান্টিয়েশন বলা হয়।<ref>Rumelhart, D.E. (1981). The building blocks of cognition. In J.T Guthrie (Ed.), ''Comprehension and teaching: Research reviews'' (pp. 3-26). Newark, DE: International Reading Association.</ref>
=== প্রোডাকশন ===
প্রোডাকশন হলো if-then বা "যদি-তারপর" বিবৃতি। এটি কর্মের নিয়মগুলোর একটি সেট হিসাবে কাজ করে। এটি আমাদের সমস্ত পদ্ধতিগত জ্ঞানকে পরিচালনা করে।<ref name=":0">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref> এখানে যদি-তারপর প্রোডাকশনর একটি উদাহরণ: "যদি ট্র্যাফিক লাইট সবুজ থেকে হলুদ হয়ে যায়, তাহলে ধীর হয়ে যান"। প্রোডাকশনগুলো তাত্ক্ষণিক, স্বয়ংক্রিয় মানসিক ধারণা। এগুলো ঘটনাগুলোর একটি সাধারণ ক্রমের পুনরাবৃত্তিমূলক মুখোমুখী হওয়ার ফলে মানুষের দ্বিতীয় প্রকৃতি হতে শেখা হয়। তারা এই ঘটনাগুলোর জন্য উৎপাদন বিধি এবং প্রত্যাশার একটি সেট সরবরাহ করে। এটি প্রস্তাবগুলোর মতোই উৎপাদন নেটওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত ইন্টারেক্টিভ গ্রুপগুলোতে সংগঠিত হয়। এটি প্রায়ই একটি উৎপাদন সক্রিয় করে, অন্যান্য প্রোডাকশনগুলো ট্রিগার করে। চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া ও ক্রিয়ার একটি ধারায় প্রতিক্রিয়া জানায়। পরবর্তী বিভাগে স্মৃতির তত্ত্ব হিসাবে উৎপাদন এবং উৎপাদন বিধিগুলোর বিষয়ে আরও বিশদ আলোচনা করা হবে।
=== স্ক্রিপ্ট ===
[[চিত্র:Script111.jpg|থাম্ব|চিত্র ৩. হোটেলে চেক-ইন করার একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট]]
[[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos Scripts|স্ক্রিপ্ট]] হলো এমন মানসিক গঠন যা আমাদের সব ধরনের প্রক্রিয়াগত জ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।<ref name="“Bruning”2" /> সাধারণভাবে স্বীকৃত যে স্ক্রিপ্ট আমাদের সামাজিক পরিবেশ বুঝতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলো সামাজিক পরিস্থিতি ও ঘটনার নিয়ন্ত্রণে থাকা তথ্য প্রদান করে, যেমন—কে কী করবে, কখন করবে, কাকে করবে এবং কেন করবে।<ref name="T2">Trillingsgaard, A. (1999). The script model in relation to autism. European Child & Adolescent Psychiatry, 8(1), 45. Retrieved from http://search.ebscohost.com/login.aspx?direct=true&db=aph&AN=4689586&site=ehost-live</ref> মানুষ নানা পরিস্থিতিতে, যেমন হোটেলে চেক-ইন করার সময়, স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে থাকে। স্ক্রিপ্ট সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং একই ধরনের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে বিকশিত হয়।<ref name="“Bruning”2" /> উদাহরণস্বরূপ, আপনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে চেক-ইন করার নিজস্ব একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে পারেন, যা আপনাকে সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে আচরণ করতে হবে তা সংগঠিত করতে, মনে রাখতে ও প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহায্য করে। ডানদিকে প্রদর্শিত চিত্রটি হোটেল চেক-ইনের একটি শিশুর স্ক্রিপ্ট।
=== এই ভিত্তি উপাদানগুলোর শিক্ষায় প্রয়োগ ===
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সব শিক্ষকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ যে তারা স্কিমা, ধারণা, প্রস্তাবনা, স্ক্রিপ্ট—এই মানসিক উপাদানগুলোর কার্যকারিতা ভালোভাবে বুঝুক এবং কীভাবে এগুলো একত্রে কাজ করে শেখা, জ্ঞান অর্জন ও বিকাশে ভূমিকা রাখে তা উপলব্ধি করুক। এর মাধ্যমে তারা নিশ্চিত করতে পারে, শিক্ষার্থীরা তাদের এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলোকে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগাচ্ছে (যেমন—নতুন পাঠ্যসূচির আগে রিভিউ পাঠ প্রদান করে পুরনো প্রডাকশন, স্কিমা বা প্রস্তাবনাকে সক্রিয় করা এবং ভবিষ্যতে সহজে পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া)। এই প্রক্রিয়াগুলোর অন্তর্নিহিত কার্যপ্রণালি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে শিক্ষকরা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন কীভাবে শেখা ঘটে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন তথ্য বুঝতে ও স্মরণে রাখতে কীভাবে সহায়তা করতে হবে।
== এনকোডিং: কীভাবে তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে, সংরক্ষিত হয় এবং পুনরুদ্ধার হয় ==
এই অংশে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত এনকোডিং প্রক্রিয়া নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা থাকবে। এনকোডিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তী অধ্যায়ে থাকবে।
=== তথ্য কীভাবে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছায়: মডাল মডেল ===
[[চিত্র:Modal_model.jpg|থাম্ব|চিত্র ৪. মডাল মডেলের চিত্র]]
মডাল মডেল হলো সবচেয়ে বিস্তৃতভাবে গৃহীত মডেলগুলোর একটি, যা ব্যাখ্যা করে কীভাবে পরিবেশ থেকে আসা তথ্য অনুভব করা হয় এবং একটি ধারাবাহিক মানসিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে পৌঁছে। এই মডেল অনুসারে তথ্য তিনটি “নিম্ন স্তরের” স্মৃতি ব্যবস্থা অতিক্রম করে, প্রতিটিই আলাদা কার্যপ্রণালিতে কাজ করে।<ref name="“Bruning”2" /> এই মডেলটি প্রতিটি স্মৃতির ধাপ এবং তাদের মধ্যে সম্পর্কিত প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরে (এই মডেলের আরও বিশদ আলোচনা পরবর্তী অধ্যায়ে রয়েছে)।
=== তথ্য সংরক্ষণ ===
এনকোডিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে তথ্য ওয়ার্কিং মেমরি থেকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে স্থানান্তরিত হয় এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি নির্ধারণ করে তথ্য কতটা ভালোভাবে স্মরণে থাকবে। নিচে কয়েকটি পরিচিত ও ব্যবহৃত এনকোডিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কৌশল আলোচনা করা হয়েছে।
==== [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos পুনরাবৃত্তি|পুনরাবৃত্তি]] ====
মডাল মডেল অনুসারে, পুনরাবৃত্তি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে তথ্য স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে সক্রিয় রাখা হয়, সাধারণত বারবার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে। "মেইনটেন্যান্স রিহার্সাল" বলতে বোঝায় বারবার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে তথ্য রিসাইক্লিং, যাকে রুট মেমোরাইজেশনও বলা হয়। তবে এটি অপেক্ষাকৃত অগভীর এনকোডিং পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ পুনরাবৃত্তি বন্ধ হলে তথ্য দ্রুত ভুলে যাওয়া শুরু হয়। "এলাবরেটিভ রিহার্সাল" হলো একটি অধিক অর্থবোধক এনকোডিং পদ্ধতি, যেখানে নতুন শেখার তথ্য পূর্ববর্তী শেখা তথ্যের সঙ্গে যুক্ত করে অর্থ তৈরি করা হয়। যদিও এটি বেশি মানসিক সম্পদ ব্যবহার করে, তবুও দীর্ঘমেয়াদে তথ্য ধরে রাখতে বেশি কার্যকর।<ref>Craik, F.I.M. (1979). Human memory. ''Annual Review of Psychology, 30'', 63-102.</ref>
==== বিস্তারণ ====
বিভিন্ন এলাবরেটিভ এনকোডিং কৌশল রয়েছে, যেগুলো নতুন তথ্যকে সহজে প্রক্রিয়াজাত বা স্মরণ করতে সহায়তা করে। এর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় কৌশল হলো [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos নিমোনিক্স|নিমোনিক্স]], যা পরিচিত তথ্যের সঙ্গে নতুন তথ্য জুড়ে বেশি পরিশীলিত এনকোডিং সম্পন্ন করে। এই কৌশলে ছন্দ, অঙ্গভঙ্গি, সংক্ষিপ্ত শব্দ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।<ref name="“Bruning”2" /> যেমন, “SEG” (steak, eggs, garlic) দিয়ে একটি বাজার তালিকা মনে রাখা যায়। অন্য কৌশলের মধ্যে আছে “মিডিয়েশন”—নতুন তথ্যকে পূর্ব পরিচিত অর্থবোধক কিছু সঙ্গে যুক্ত করা, এবং “ইমেজারি”—মনে রাখার জন্য উপযুক্ত দৃশ্য কল্পনা করা।<ref name="“Bruning”2" /> আপনি চাইলে এসব তথ্য নিজের বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে কল্পনা করতে পারেন—বসার ঘরের দরজা খুললেই রসুনের গন্ধ, পাশে ডিমের বাক্স, ডাইনিং টেবিলে স্টেক রাখা আছে। এইভাবে, আপনি বসার ঘর থেকে ডাইনিং রুম পর্যন্ত কল্পনাভ্রমণ করে তথ্যগুলো মনে রাখতে পারবেন।
==== সংশ্লিষ্ট তত্ত্বসমূহ ====
===== প্রক্রিয়ার স্তর তত্ত্ব =====
ক্রেইক ও লকহার্টের প্রভাবশালী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, শিক্ষার্থীরা তখনই বেশি লাভবান হয় যখন তারা নতুন তথ্য নিয়ে মানসিক বিশ্লেষণ করে—স্মৃতি তখন প্রাকৃতিকভাবে গঠিত হয়। কিন্তু তথ্য কতটা গভীরভাবে প্রক্রিয়াজাত হয়েছে, তার উপর নির্ভর করে স্মৃতির দীর্ঘস্থায়িত্ব। তত্ত্বটি বলে, যত গভীরভাবে তথ্য প্রক্রিয়াজাত হবে এবং যত বেশি অর্থ দেওয়া হবে, তা তত বেশি সময় মনে থাকবে, আর অগভীর প্রক্রিয়ায় তা দ্রুত ভুলে যাওয়া সম্ভবনা বেশি।<ref name="“Bruning”2" /> আরও অর্থবহ কার্যকলাপে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া, বিশেষ করে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া তাদের শেখাকে আরও টেকসই করে তোলে।<ref name="“Bruning”2" />
===== দ্বৈত-কোডিং তত্ত্ব =====
অ্যালান পাইভো কর্তৃক প্রস্তাবিত এই তত্ত্বে বলা হয়েছে, তথ্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে দৃষ্টিগ্রাহ্য বা মৌখিক অথবা উভয় উপায়ে সংরক্ষিত হতে পারে।<ref name=":52">Paivio, A. (1986). ''Mental representations: A dual-coding approach.'' New York, NY: Oxford University Press.</ref> অনেক গবেষক একমত যে তথ্য চিত্র ও ভাষা উভয় রূপে প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষিত হলে তা বেশি মনে থাকে।<ref>Butcher, K.R. (2006). Learning from text with diagrams: Promoting mental model development and inference generation. ''Journal of Educational Psychology, 98,'' 182-197.</ref> উদাহরণস্বরূপ, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যাবলি শেখানোর সময় চিত্র ও পাঠ্য একসঙ্গে দেখালে শিক্ষার্থীরা ভালো শিখতে পারে। এই তত্ত্ব মাল্টিমিডিয়া শেখার জ্ঞানতাত্ত্বিক তত্ত্বের ভিত্তির সঙ্গে মিল রাখে।<ref name=":63">Mayer, R.E. (2001). ''Multimedia learning.'' New York, NY: Cambridge University Press.</ref>
===== মাল্টিমিডিয়া শেখার জ্ঞানতাত্ত্বিক তত্ত্ব =====
রিচার্ড মায়ার<ref name=":63" /> চিত্র ও ভাষার সংমিশ্রণ নিয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন, উপযুক্তভাবে উপস্থাপন করলে তা অত্যন্ত কার্যকর শিক্ষণ উপায় হতে পারে। এই তত্ত্ব তিনটি মূল ধারার উপর ভিত্তি করে গঠিত: ক) [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos Dual-Coding Theory|দ্বৈত-কোডিং তত্ত্ব]] থেকে ধারণা; খ) [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos Working memory|ওয়ার্কিং মেমরির]] ধারণক্ষমতা সীমিত হওয়ায় [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos Cognitive Load Theory|কগনিটিভ লোড তত্ত্ব]] অনুসারে শিক্ষণ এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে মেমরিতে চাপ কম হয়;<ref>van Merrienboer, J.J.G., & Sweller, J. (2005). Cognitive load and complex learning: Recent developments and future directions. ''Educational Psycholog Review, 17'', 147-177.</ref> এবং গ) শেখা মানে তথ্য সংগঠিত ও একত্রিত করার প্রক্রিয়া।<ref name="mayer20082">Mayer, R. E. (2008). Applying the science of learning: Evidence-based principles for the design of multimedia instruction. Cognition and Instruction, 19, 177–213.</ref>
=== তথ্য পুনরুদ্ধার ===
==== সপ্রসারণ সক্রিয়করণ ====
দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষিত থাকায় কখনও কখনও নির্দিষ্ট তথ্য সময়মতো স্মরণে আনা কঠিন হতে পারে। এটা ঘটে সপ্রসারণ সক্রিয়করণ নামে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, যার মানে হলো—যখন মস্তিষ্কে একটি নির্দিষ্ট তথ্য সক্রিয় হয়, তখন তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্যও সক্রিয় হতে পারে, কারণ স্মৃতির মধ্যে তথ্যগুলো একটি আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্কে গঠিত।<ref name=":72">Anderson, J.R. (2010). ''Cognitive Psychology and its implications. (7th ed.).'' New York, NY: Worth.</ref> যেমন, যদি বেন ভাবছে—"এই মুহূর্তে বৃষ্টি থেমে গেলে কত ভালো হতো", তাহলে এটি তাকে স্মরণ করাতে পারে যে তার এক সপ্তাহ পরে পিকনিকে বৃষ্টি বাধা হতে পারে কিনা, এবং সেটি থেকে মনে পড়তে পারে যে তাকে তার সাথীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে হবে।
==== পুনর্গঠন ====
অনেক সময় পুরনো ঘটনার মতো কিছু স্মৃতি সহজে মনে পড়ে না। তখন আমাদের [[চিন্তন ও নির্দেশনা/দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি#glos cognition|জ্ঞানতাত্ত্বিক]] ব্যবস্থা যেসব সংকেত মনে আছে সেগুলোর সাহায্যে যুক্তিভিত্তিক পুনর্গঠন করে একটি স্মৃতি তৈরি করে, যা হয়তো আসল ঘটনার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না, কিন্তু যুক্তিসঙ্গত।<ref>Koriat, A., Goldsmith, M. & Pansky, A. (2000). Toward a psychology of memory accuracy, In S.Fiske (Ed.), ''Annual review of psychology'', (pp. 481-537). Palo Alto, CA: Annual Reviews.</ref> উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি ১০ বছর আগে বন্ধুদের সঙ্গে একটি লেকের পাশে পিকনিকে গিয়েছিলেন, তাহলে হয়তো আপনি পুরো ভ্রমণ মনে করতে পারবেন কিন্তু ঠিক কী উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন তা না—এবং তখন আপনি সেটিকে “লেকের আশেপাশে হাইকিং ট্রিপ” বলে ব্যাখ্যা করতে পারেন, যা ঘটনাটির সঙ্গে মিল থাকলেও পুরোপুরি এক নয়।
==== ভুলে যাওয়া ====
যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য তথ্য অ্যাক্সেস করা না হয়। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত এটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম নাও হতে পারি। এটি ক্ষয় বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ঘটতে পারে। এর অর্থ তথ্য সংকেতকে দুর্বল করা এবং অন্যান্য বিরোধী তথ্য যথাক্রমে আমরা যে স্মৃতির টুকরোটি স্মরণ করার চেষ্টা করছি তাতে হস্তক্ষেপ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা আর মনে করতে পারি না যে আমরা কোনও কনসার্টে কী টি-শার্টটি পরেছিলাম। কারণ তখন থেকে কয়েক বছর হয়ে গেছে, বা যদি আমরা মনে করি এটি নীল ছিল। তবে সম্প্রতি একটি বন্ধু উল্লেখ করেছে যে এটি আসলে সবুজ ছিল। এর একটি স্নায়বিক ব্যাখ্যা হলো আমাদের মস্তিষ্কের কোষ এবং তাদের মধ্যে সংযোগগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং এমনকি মারা যেতে পারে যদি আমরা তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার না করি।
ক্ষয় এবং হস্তক্ষেপের প্রক্রিয়া সত্ত্বেও, জ্ঞান অত্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে উপযুক্ত ধরণের প্রম্পট এবং তথ্য মনে রাখার অন্যান্য উপায়ে।<ref>Erdelyi, M.H. (2010). The ups and downs of memory. ''American Psychologist, 65,'' 623-633.</ref> এর মধ্যে পূর্বে উল্লিখিত কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন স্মৃতিবিদ্যা এবং সম্প্রসারণ ব্যবহার করা।
== দক্ষতা এবং দক্ষতার স্বয়ংক্রিয়তা ==
সুস্পষ্ট বা ঘোষণামূলক জ্ঞান অনেকগুলো প্রক্রিয়া যেমন নির্দেশনা, অভিজ্ঞতা এবং তথ্য মনে রাখার জন্য জ্ঞানীয় কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে অর্জন এবং তৈরি করা যেতে পারে (পূর্বে উল্লিখিত)।
কিছু পণ্ডিত যুক্তি দেখিয়েছেন যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। কারণ অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার সাথে কোনও কাজে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে, মূলত এর অর্থ হলো সুস্পষ্ট জ্ঞানের স্থাপনা এত স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায় যে এটি একটি অন্তর্নিহিত দক্ষতায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা প্রথমবারের মতো কোনও উপহার মোড়ানোর চেষ্টা করি, আমরা প্রক্রিয়াটির প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট করার চেষ্টা করতে পারি, যেমন: উপহারের জন্য সঠিক আকারের মোড়ানো কাগজের একটি টুকরো সন্ধান করুন; উপহারের চারপাশে এটি মোড়ানো; অতিরিক্ত কাগজ কাটা; মোড়কটি সুরক্ষিত করতে টেপ ব্যবহার করুন। আমরা বারবার কাজটি সম্পাদন করার সাথে সাথে এই পদক্ষেপগুলো স্বয়ংক্রিয় হয়ে যায়, মূলত প্রতিটি পদক্ষেপকে পৃথকভাবে বিস্তৃত বিবেচনা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এর আরও বিশদ উদাহরণ অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের পরবর্তী বিভাগে পাওয়া যাবে।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং শেখা: উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলোকে উত্সাহিত করা ==
যখন কেউ আরও জটিল তথ্য এনকোড করে উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়া সাধারণত তখন সক্রিয় হয়। উচ্চতর এনকোডিং প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত উচ্চতর শিক্ষাগত/শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য অর্জনে আরও বেশি সাহায্য করে।<ref name="“Bruning”" /> প্রশিক্ষকদের এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলিকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। যেমনটি আগে দেখানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যত বেশি বিস্তারিতভাবে শিখতে হবে তথ্য এনকোড করবে তত বেশি ভালো পারফর্ম করবে। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ এবং নির্দেশিত সহকর্মীদের প্রশ্ন করার মতো পদ্ধতির মাধ্যমে, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক স্কিমাটা সক্রিয় করতে পারেন এবং বোধগম্যতা এবং চিন্তা-উদ্দীপক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার সুযোগ প্রদান করতে পারেন। পূর্ব জ্ঞান সক্রিয়করণ শিক্ষার্থীদের নতুন শেখার কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে: ইতিমধ্যেই পরিচিত তথ্যের একটি ভিত্তি নতুন শেখার তথ্যকে নির্দেশিত করতে সাহায্য করতে পারে।<ref name="“Bruning”" /> ধরে রাখার জন্য, প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন না করা পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু কাজ অনুশীলন করতে উৎসাহিত করতে পারেন।<ref name="“Bruning”" /> যতটা সম্ভব, প্রশিক্ষকদের নিষ্ক্রিয় শেখার পরিবর্তে সক্রিয়ভাবে শেখার জন্য শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার ক্ষেত্রে আরও বেশি জড়িত করা উচিত।
== দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির কাজ: মূল্যায়ন এবং গবেষণা ==
দীর্ঘ সময় ধরে সংগৃহীত স্মৃতিগুলো দীর্ঘমেয়াদী ধরে রাখার আরও বেশি সম্ভাবনা থাকে। তবে স্মৃতির গুণমানটি পরিমাণের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। গুণমান অভিজ্ঞতার সময় ব্যক্তির দ্বারা সংগৃহীত সংবেদনশীল তথ্যকে বোঝাতে পারে, যেমন মুভি থিয়েটারে পপকর্নের গন্ধ নেওয়া, এবং মানের উপাদানগুলোর মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক থাকতে পারে, যেমন পপকর্নের গন্ধ পাওয়া এবং সিনেমাগুলোর কথা চিন্তা করা বা সিনেমাগুলোতে থাকা এবং পপকর্নের স্বাদ মনে রাখা।
এই ক্ষেত্রে করা বেশিরভাগ গবেষণা স্ব-মূল্যায়ন বা স্বতন্ত্র স্মৃতি পরীক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার উভয় ক্ষেত্রেই ত্রুটির সঠিক পরামিতি রয়েছে, যদিও কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং ডিভাইসগুলি কোনও ব্যক্তির মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে আক্রমণাত্মকভাবে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্ডারসন, ফিঞ্চাম, কিন এবং স্টোকো <ref>Anderson, J.R., Fincham, J.M., Qin, T., & Stocco, A. (2008). A central circuit of the mind. ''Trends in Cognitive Psychology, 12,'' 136-143.</ref> এই কৌশলটি ব্যবহার করে একটি পরীক্ষা করেছিলেন যাতে পদ্ধতিগত সম্পাদন, লক্ষ্য নির্ধারণ, ঘোষণামূলক স্মৃতি থেকে নিয়ন্ত্রিত পুনরুদ্ধার এবং চিত্র উপস্থাপনা গঠন এবং মস্তিষ্কের কর্টিকাল অঞ্চলের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এই পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখায় যে এই চারটি অঞ্চলের প্রতিটি ইমেজিং ডিভাইসে একটি ভিন্ন কর্টিকাল অঞ্চল আলোকিত করে। এই প্রমাণগুলি দেখায় যে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চল এই বিভিন্ন অঞ্চল পরিচালনা করে, তবে কৌশলটির সমালোচনাগুলি তুলে ধরে যে আমরা এখনও জানি না কেন এই কার্যকলাপ ঘটে এবং ক্রিয়াকলাপের বিন্যাস তৈরি করার জন্য মনের মধ্যে কোন সংযোগ তৈরি হচ্ছে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, এই ধরণের পরীক্ষাগুলি আমাদের পূর্বের তুলনায় আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বেশি অন্তর্দৃষ্টি দেয় এবং দেখায় যে কীভাবে বিভিন্ন তথ্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে উদ্দীপিত করতে পারে, তাই আমরা জানি যে তারা সব সময় সক্রিয় থাকে না।
== স্মৃতির অন্যান্য পরিবর্তনশীল এবং ক্রমবর্ধমান তত্ত্ব ==
=== নেটওয়ার্ক মডেল ===
[[File:An_example_of_a_network_model.jpg|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:An_example_of_a_network_model.jpg|থাম্ব|চিত্র ৫। একটি নেটওয়ার্ক মডেলের উদাহরণ]]
নেটওয়ার্ক মডেলকে মাইন্ড ম্যাপিং বা মস্তিষ্ক-ঝড় জালের সাথে তুলনা করা যেতে পারে কারণ তথ্য একটি ওয়েব-সদৃশ প্যাটার্ন দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়। এটি সাধারণত সাধারণ থেকে আরও নির্দিষ্ট তথ্য বা বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। এটি একটি ছোট শিশু যেভাবে ধীরে ধীরে চার পা এবং পশমযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা বিকাশ করে, তা শেখার অনুরূপ হবে যে একটি কুকুর এবং বিড়ালের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। নেটওয়ার্কিং মডেলগুলি তথ্যের ছোট ইউনিটগুলিকে সংগঠিত করার আরও সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি যখন তারা বিষয়ের মধ্যে অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্কিত করে। এই মডেলটি সরাসরি শিক্ষাদানে ব্যবহার করা হয়েছে - "মাইন্ড ম্যাপিং শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার প্রক্রিয়াগুলি পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল। এটি তাদের মেটাকগনিটিভ জ্ঞান অর্জন করতে এবং নতুন সমস্যা এবং পরিস্থিতি সমাধানের জন্য তাদের বোধগম্যতা স্থানান্তর করতে সহায়তা করেছিল।"<ref>Ismail, M. N., Ngah, N. A., & Umar, I. N. (2010). The effects of mind mapping with cooperative learning on programming performance, problem solving skill and metacognitive knowledge among computer science students. ''Journal Of Educational Computing Research, 42''(1), 35-61. doi:10.2190/EC.42.1.b</ref>
=== সংযোগবাদী মডেল ===
[[File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|সংযোগ=https://en.wikibooks.org/wiki/File:A_general_model_of_what_a_Connectionist_Model_might_look_like_.png|alt=A general model of what a Connectionist Model might look like|থাম্ব|চিত্র ৬। একটি সংযোগবাদী মডেল কেমন হতে পারে তার একটি সাধারণ মডেল]]
সংযোগবাদী মডেল হল একটি 'মস্তিষ্কের রূপক' যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চয় এবং পুনরুদ্ধার মডেলের জন্য ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটার রূপককে গ্রহণ করে; এটিকে সমান্তরাল বিতরণ প্রক্রিয়াকরণ মডেলও বলা হয়। এই মডেলটিতে প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে বোঝার ধারণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; এর একটি উদাহরণ হল বাম দিকে একটি সরল রেখা সহ একটি আকৃতি থাকা, ডানদিকে একটি '৩' আকৃতি থাকা। '১২ |৩ ১৪' সিরিজে এটিকে তেরো নম্বর হিসাবে দেখা হবে, তবে 'A |৩ C' ক্রমানুসারে এটি 'B' অক্ষর হিসাবে পড়া যেতে পারে। প্রেক্ষাপটের সাথে অভিযোজনযোগ্যতা এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাথে জ্ঞানীয় কাজগুলিকে একত্রিত করার ক্ষমতার কারণেই সংযোগবাদী মডেলটি এই গতিশীলতাগুলিকে আরও ভালভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই তত্ত্বটি বিভিন্ন সমান্তরাল থেকে মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়াগুলিকে দেখে কারণ মানব মস্তিষ্ক একই সময়ে এবং এমনভাবে একাধিক চিন্তার দিক বিবেচনা করতে সক্ষম হয় যে কম্পিউটার তুলনা বা সংযোগ করার কথা ভাবে না। যেমনটি আগে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যান্য মডেলগুলিতে তথ্য পুনরুদ্ধারের একটি স্টোর-রিট্রিভাল দিক রয়েছে যেখানে তথ্য সংযোগের ধরণ সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করা হয়। বিকল্পভাবে, সংযোগবাদী মডেল তত্ত্ব দেয় যে প্যাটার্ন বা সংযোগের উপাদানগুলিকে তাদের সংযোগের শক্তি হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়, পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় সংযোগ স্থাপনের জন্য।<ref>McClelland, J. L. (1988). Connectionist models and psychological evidence. ''Journal of Memory and Language, 27'', 107-123.</ref> এই বিষয়ে ভিকার্স এবং লির একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল: "শব্দার্থগত বা অর্থপূর্ণ তথ্যের সংযোগবাদী বিবরণগুলি অর্থকে সীমিত সংখ্যক বৈশিষ্ট্যের সক্রিয়করণ হিসাবে ধারণা করার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, অন্তত ইনপুট স্তরে।"<ref>Vickers, Douglas, & Lee, Michael D. (1997). Towards a dynamic connectionist model of memory. ''Behavioral and Brain Sciences, 20,'' 40-41. doi:10.1017/S0140525X97460016</ref> এর অর্থ হল এই তত্ত্বটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে যদি তথ্যটি কেবল তথ্য মুখস্থ করার চেয়ে গভীর হয়।
=== স্মৃতির উৎপাদন-নিয়ম-সম্পর্কিত তত্ত্ব ===
মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের গবেষণায়, ''উৎপাদন'' (বা কখনও কখনও ''উৎপাদন বিধি'' হিসাবে পরিচিত) একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর বা সমস্যা সমাধানের নিয়ম। এগুলো সাধারণত আমাদের দীর্ঘমেয়াদী মার্মারিতে উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় (নীচের ''জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানের প্রোডাকশন'' বিভাগটি দেখুন)। মূলত, প্রতিটি উৎপাদন চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়ার একটি একক গাইডিং পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি সাধারণত কোন ধরণের পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তার একটি প্রেসক্রিপশন হিসাবে উপস্থাপিত হতে পারে - একটি "''শর্ত-ক্রিয়া''" বা "যদি-তারপর" ক্রম।<ref name=":1">Anderson, J. R., & Matessa, M. (1997). A production system theory of serial memory. ''Psychological Review, 104''(4), 728-748. Retrieved from http://www.ebscohost.com/</ref> উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার মূল লক্ষ্যের মধ্যে একটি উৎপাদনকে এভাবে চিত্রিত করা যেতে পারে:
যদি লক্ষ্য হয় একটি ডিম ভাজা,
এবং কাঁচা ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়ে থাকে,
এবং প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছানোর জন্য উত্তপ্ত করা হয়,
তারপর কাঁচা ডিমটি প্যানে রাখুন,
এই পরিস্থিতিতে, উৎপাদন অবস্থার উপর নির্ভর করে কর্মের পথ নির্দেশ করে। শর্ত পূরণ হয়ে গেলে (ডিমটি তার খোসা থেকে সরানো হয়েছে; প্যানটি সঠিক তাপমাত্রায় পৌঁছেছে, ইত্যাদি), নিয়মটি প্রযোজ্য হয় এবং কাজটি (ডিমটি প্যানে রাখা) করা হয়।
==== মূল বৈশিষ্ট্য ====
প্রোডাকশনর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিটি উৎপাদনকে একটি নিয়ম বা পদক্ষেপ হিসাবে চিন্তা করা যেতে পারে এবং যার শিক্ষা অন্যান্য প্রোডাকশন অর্জন থেকে আলাদাভাবে ঘটতে পারে। এছাড়াও, এই প্রকৃতির। কারণে, যখন একটি বিস্তৃত এবং জটিল দক্ষতা বা জ্ঞানীয় ফাংশন / প্রক্রিয়া অর্জিত হয়, এর অর্থ সম্ভবত এই যে প্রোডাকশনর পুরো সিরিজটি দক্ষতা গঠন করে তা শিখেছে - সংযুক্ত উপলক্ষ্যগুলো একটি বিস্তৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য একত্রিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার উদাহরণে, রান্না প্রক্রিয়াটির আগে আরেকটি কাজ হতে পারে যেমন নিকটতম মুদি দোকানটি সনাক্ত করা এবং ডিম কিনতে সেখানে যাওয়া। এটি ডিম রান্না করার সামগ্রিক লক্ষ্যে নিজেই একটি উপলক্ষ্য। অবশ্যই, একটি প্রক্রিয়াতে প্রোডাকশনর সংখ্যা তার জটিলতার উপর নির্ভর করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে উৎপাদন নিয়মগুলো প্রকৃতির ''বিমূর্ত'' এবং অনুরূপ প্রকৃতির বিভিন্ন কাজের পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম ভাজার জন্য পূর্বোক্ত প্রোডাকশনগুলো শাকসবজি ভাজার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি প্যানটি যথেষ্ট গরম হওয়ার শর্তে এবং তারপরে প্যানে শাকসবজি রাখার পদ্ধতিতে একই আকস্মিকতা জড়িত।
এছাড়াও, প্রোডাকশনগুলো অনুশীলনের একটি ডোমেনের জন্য নির্দিষ্ট হতে পারে, যেমন গণিতে বীজগণিতের মধ্যে, বা তুলনামূলকভাবে সাধারণ, যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে।<ref>Anderson, J. R. (1990). Cognitive psychology and its implications. New York, NY: Freeman.</ref>
==== জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে প্রোডাকশন ====
সাধারণত, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানে, ''ঘোষণামূলক জ্ঞান'' (বা ''ঘোষণামূলক স্মৃতি)'' বনাম ''পদ্ধতিগত জ্ঞানের'' একটি দ্বৈততা জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার ধরণের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হয় যা আমরা সকলেই দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে ধারণ করি। ঘোষণামূলক জ্ঞান এমন ধারণা বা প্রস্তাবগুলোকে বোঝায় যা স্পষ্টভাবে বিবৃত বা স্পষ্ট করা যেতে পারে। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞান কেবল দক্ষতা বা কর্মকে বোঝায় যা একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পাদন করা যেতে পারে। পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রায়ই শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। এই অর্থে, ''ঘোষণামূলক'' বনাম ''পদ্ধতিগত'' এই দ্বৈততাটিকে ''স্পষ্ট'' বনাম ''অন্তর্নিহিত'' জ্ঞান বা স্মৃতি হিসাবেও উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই প্রসঙ্গটি মাথায় রেখে, প্রোডাকশনগুলো সাধারণত অন্তর্নিহিত, পদ্ধতিগত জ্ঞান বিভাগের অধীনে আসে। প্রকৃতপক্ষে, উৎপাদনের নিয়মগুলোকে প্রায়ই পদ্ধতিগত জ্ঞানের বিষয়বস্তু বা "দক্ষতার মূর্ত প্রতীক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়,[। কারণ এগুলো কর্ম বা জ্ঞানের কোর্স পরিচালনার জন্য পৃথক পদক্ষেপ। মূলত, সহজ কথায়, প্রোডাকশনগুলো "কীভাবে জিনিসগুলো করা যায়" সম্পর্কে,[ যা পদ্ধতিগত জ্ঞান সম্পর্কে।
সাধারণভাবে, অনুশীলন এবং আরও অভিজ্ঞতার সাথে, একটি দক্ষতা আরও স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। এর অর্থ যে প্রোডাকশনগুলো দক্ষতা গঠন করে তা দ্রুত এবং আরও ধারাবাহিকভাবে আগুন দেয়। এটি হওয়ার সাথে সাথে অভিনয়কারী প্রতিটি পৃথক উৎপাদন সম্পর্কে কম সচেতন হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে একক তরল ক্রিয়া হিসাবে ফায়ারিং প্রোডাকশনর ক্রমটি উপলব্ধি করতে
==== উৎপাদন নিয়মের প্রমাণ ====
উৎপাদন নিয়মগুলো মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাস্তব এই যুক্তি তৈরি করতে গিয়ে অ্যান্ডারসন দাবি করেছেন যে প্রমাণের প্রথম অংশটি হলো উৎপাদন বিধিগুলো দক্ষতা এবং জ্ঞানীয় কাজগুলোর অগ্রগতির একাধিক দিক বর্ণনা করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। অর্থাৎ, তারা কীভাবে কাজগুলো সম্পাদন করা হয় তার একটি যৌক্তিক এবং প্রশংসনীয় ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। অ্যান্ডারসন উদ্ধৃত প্রমাণের আরেকটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো উৎপাদন বিধিগুলো ব্যবহার করে আমরা দক্ষতা বা কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে বলে একজনের আচরণের দিকগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা একটি প্যান গরম হয়ে যাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি, তখন আমরা আশা করতে পারি যে সে এতে খাবার রাখবে (শর্তসাপেক্ষ ক্রিয়া)।
=== অ্যাক্ট-আর মডেল: উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে জ্ঞান এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির একটি মডেল ===
উৎস সম্পাদনা]
একটি অত্যন্ত বিশিষ্ট তত্ত্ব যা উৎপাদন বিধিগুলোর প্রয়োগকে প্রতিফলিত করে তা হলো চিন্তা-যৌক্তিক (এসিটি-আর) তত্ত্বের অভিযোজিত চরিত্র, জন অ্যান্ডারসনের মানব জ্ঞানের তত্ত্ব যা জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিল্ডিং ব্লক হিসাবে উৎপাদন বিধি ব্যবহার করে। এসিটি-আর তত্ত্ব দ্বারা উত্থাপিত কেন্দ্রীয় যুক্তিটি হলো একটি জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা প্রচুর সংখ্যক পৃথক "লক্ষ্য-সম্পর্কিত জ্ঞানের ইউনিট" নিয়ে গঠিত।
==== এসিটি-আর এর ইতিহাস ====
তত্ত্বটি মূলত হিউম্যান অ্যাসোসিয়েটিভ স্মৃতি (এইচএএম) তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়েছিল (এই তত্ত্বের অন্যতম স্রষ্টাও ছিলেন জন অ্যান্ডারসন, এসিটি-আর তত্ত্বের স্রষ্টা) যা মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞানের কিছু দিক ব্যাখ্যা করেছিল। এটি ঘোষণামূলক জ্ঞানের ধারণার সাথে জড়িত ছিল। তবে পদ্ধতিগত জ্ঞানের সাথে মোকাবিলা করেনি।
এটিকে ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করে, জন অ্যান্ডারসন তখন প্রস্তাব করেছিলেন যে পদ্ধতিগত জ্ঞান উৎপাদন বিধি নিয়ে গঠিত। তার তত্ত্বের কয়েকটি রূপকে সূক্ষ্ম-সুর করার পরে, তিনি ১৯৮৩ সালে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটির লক্ষ্য ছিল জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা।
পরবর্তীকালে, জ্ঞানীয় দক্ষতার উপর আরও প্রমাণ এবং উদীয়মান তথ্য বিবেচনায় নেওয়ার পরে, অ্যান্ডারসন বিশ্বাস করেছিলেন যে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াতে ''যুক্তিসঙ্গত বিশ্লেষণের'' একটি উপাদানকে মূল অ্যাক্ট তত্ত্বের কিছুটা "যান্ত্রিক" প্রকৃতির সাথে একীভূত করা উচিত,[ এবং তাই তিনি অ্যাক্ট-আর (যুক্তিসঙ্গত জন্য আর) তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি তিনি অনুভব করেছিলেন যে পরিবেশের প্রতি বৃহত্তর অভিযোজিত এবং নির্বাচনী দক্ষতার। কারণে মূলটির চেয়ে উন্নতি ছিল।
তত্ত্বটির প্রাথমিক ফোকাস ছিল মানুষের স্মৃতি এবং জ্ঞান। এর সর্বাধিক বিশিষ্ট প্রয়োগ এবং বিকাশের বেশিরভাগই কম্পিউটার মডেল টিউটর (বুদ্ধিমান শিক্ষক) হয়েছে। সংক্ষেপে, এগুলো কম্পিউটার সফ্টওয়্যার যা উৎপাদন-নিয়ম-ভিত্তিক মডেলগুলো উল্লেখ করে সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থী / শিক্ষার্থীদের গাইড করতে পারে যা এই জাতীয় সমস্যার সমাধান তৈরি করে। এই কম্পিউটার টিউটরগুলো মূলত গণিত এবং বিজ্ঞানের মতো ডোমেনগুলোতে বিকশিত এবং ব্যবহৃত হয়। টিউটরিং সিস্টেম হিসাবে এসিটি-আর এর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আরও বিশদ একটি ভিন্ন অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
==== এসিটি-আর এর মূল নীতি[ ====
তিনটি মৌলিক ধারণা রয়েছে যা তত্ত্বটি তৈরি করে: ক) এই জ্ঞান ইউনিটগুলোর প্রতিনিধিত্ব; (খ) তাহাদের অধিগ্রহণ; গ) জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ায় তাদের স্থাপনা। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
===== জ্ঞানের প্রতিনিধিত্ব =====
তত্ত্বের একটি কেন্দ্রীয় মতবাদ হলো জ্ঞান উভয়ই ঘোষণামূলক জ্ঞানের উপাদান (যা প্রস্তাবনামূলক, শব্দার্থিক জ্ঞান, যেমন আগে উল্লেখ করা হয়েছে) এবং পদ্ধতিগত জ্ঞান (যা উৎপাদন বিধি হিসাবে উপস্থাপিত হয়) এবং দুটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াকরণে একসাথে কাজ করে।
ঘোষণামূলক জ্ঞান এনকোড করা হয়, সংরক্ষণ করা হয় এবং মানব স্মৃতির ''খণ্ড বা পৃথক'' ইউনিটগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করা হয় যা স্কিমাটা (জ্ঞান কাঠামো) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রতিটি অংশে বিষয় আইটেম সম্পর্কে প্রস্তাব বা বর্ণনামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ''স্লটে'' সঞ্চিত রয়েছে,[ কোন বৃহত্তর বিভাগের অন্তর্গত তা সহ। খণ্ডগুলো একটি পাঠ্য বা গ্রাফিকাল বিন্যাসে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ডিম ভাজা সম্পর্কে একটি অংশ পাঠ্যভাবে প্রতিনিধিত্ব করা যেতে পারে: একটি ডিম ভাজা এক ধরণের রান্নার দক্ষতা; রান্না করার আগে ডিমটি তার শেল থেকে সরানো প্রয়োজন; তাপ দরকার। ডানদিকে একটি অংশের সম্ভাব্য গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।
অন্যদিকে, পদ্ধতিগত জ্ঞান প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করা হয়। পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে, প্রোডাকশনগুলো উপলক্ষ্যগুলোর একটি আন্তঃসংযুক্ত সিরিজের রূপ নিতে পারে যা একটি বিস্তৃত লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে।
দুই ধরনের জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক হলো ঘোষণামূলক জ্ঞান কাঠামোর অংশগুলো প্রোডাকশন সংঘটিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত এবং কর্মের কোর্স সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ডিম রান্না করার জন্য, একজনকে অবশ্যই তাদের কেনার জন্য জ্ঞানের অংশগুলো থাকতে হবে, তাদের শাঁস থেকে তাদের সরিয়ে ফেলতে হবে এবং প্যান প্রস্তুত করতে হবে ইত্যাদি। এর মধ্যে একটি না থাকলে পদ্ধতিগত জ্ঞানে ফাঁক থাকবে। অতএব, জ্ঞানের আরও বেশি অংশ থাকার অর্থ আরও উপলব্ধ উৎপাদন বিধি এবং আরও ভাল পদ্ধতিগত জ্ঞান। এটিও বিবেচনা করা যেতে পারে যে ঘোষণামূলক জ্ঞানকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে রূপান্তরিত করা যেতে পারে, যেমন পরবর্তী বিভাগে আলোচনা করা হবে।
===== জ্ঞান অর্জন =====
ঘোষণামূলক জ্ঞান মোটামুটি সরল উপায়ে অর্জিত হয়, হয় পরিবেশ থেকে তথ্য বা ধারণার উপলব্ধি থেকে বা সরাসরি নির্দেশ থেকে (তথ্য দেওয়া হচ্ছে)। যেহেতু প্রোডাকশনকে অবহিত করার জন্য জ্ঞানের ঘোষণামূলক অংশগুলো প্রয়োজন, তাই অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের এই তত্ত্বটি বোঝায় যে কোনও জ্ঞানীয় বা পদ্ধতিগত কার্য সম্পাদন করার জন্য জ্ঞান থাকা মূলত কার্যটির প্রয়োজনীয় তথ্যের সমস্ত পৃথক অংশ সংগ্রহ করা জড়িত - কাজটি "এর অংশগুলোর যোগফল"। অতএব, জটিল কাজগুলোর জন্য অনেকগুলো খণ্ড সংগ্রহের প্রয়োজন।
অন্যদিকে পদ্ধতিগত জ্ঞানে উৎপাদন বিধিগুলোর অধিগ্রহণ কিছুটা বেশি কঠিন এবং কম সোজা, যেহেতু এগুলো কেবল বলা বা স্পষ্ট করা যায় না। মূলত, তারা শুধুমাত্র ঘোষণামূলক জ্ঞান মোতায়েন করা হয় হিসাবে শেখা হয়। এর অর্থ হলো শিক্ষার্থীরা যখন ''কাজগুলো করে'' তখন উৎপাদন বিধিগুলো অর্জন করে, কেবল যখন তাদের ঘোষণামূলক তথ্য দেওয়া হয় তখন নয়। এটি লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ যে এই স্থাপনাটি কেবল প্রোডাকশনগুলো সংঘটিত হওয়ার জন্য উপযুক্ত প্রেক্ষাপট এবং শর্তে ঘটতে পারে। যখন কোনও কার্য সম্পাদনের শর্তগুলো উপযুক্ত হয়, তখন লক্ষ্য-ভিত্তিক জ্ঞানীয় ক্রিয়াকলাপগুলো সংঘটিত হতে পারে, যেখানে ঘোষণামূলক অংশগুলো ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করা হয় (বা "সম্পাদন")। এইভাবে, এটি বিবেচনা করা যেতে পারে যে লক্ষ্যের দিকে ব্যক্তির কর্মকে গাইড করার জন্য তারা মূলত উৎপাদন নিয়মে রূপান্তরিত হয়। অনুশীলনের মাধ্যমে, রূপান্তরের এই প্রক্রিয়াটি গতি এবং নির্ভুলতার ক্ষেত্রে উন্নত বা শক্তিশালী করা যেতে পারে। সুতরাং, অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া জন্য সুযোগ প্রদান উৎপাদন নিয়ম অধিগ্রহণ উত্সাহিত করার একটি অত্যন্ত অনুকূল উপায়।
===== জ্ঞানের প্রয়োগ প্রসঙ্গ =====
এই দিকটি অ্যাক্ট-আর এর ব্যাখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে কীভাবে আমাদের জ্ঞানীয় কাঠামো টাস্ক বা সমস্যা সমাধানের একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে সঠিক ধরণের জ্ঞানকে তলব করতে সক্ষম। এটি যৌক্তিক বিশ্লেষণের কাজ - তত্ত্বের নামের "আর" অংশ। যৌক্তিক বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াটি মনের মধ্যে সক্রিয় হওয়ার জন্য সঠিক অংশ এবং উৎপাদন বিধিগুলো নির্ধারণ করার জন্য দুটি উপাদান চিহ্নিত করে: ক) অতীতে এই জাতীয় পরিস্থিতিতে এই জাতীয় জ্ঞান ভালভাবে কাজ করার সম্ভাবনা; খ) এই জাতীয় জ্ঞান হাতের পরিস্থিতিতে ভাল কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি। কারণকে একত্রিত করে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াটি জ্ঞানের একটি অংশের প্রদত্ত কার্য প্রসঙ্গে উপযুক্ত এবং প্রযোজ্য হওয়ার সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়।
সংক্ষেপে, এটি এটিও বোঝায় যে মানব জ্ঞানীয় সিস্টেম কোন ধরণের কাজগুলোতে কী ধরণের জ্ঞান উপযুক্ত হয়েছে তার একটি রেকর্ড বজায় রাখে, যদিও এটি মনের মধ্যে একটি অবচেতন প্রক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং, এই দিকটির তত্ত্বের ব্যাখ্যা মূলত একটি পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়া বর্ণনা করে।
==== এসিটি-আর এর তাত্ত্বিক দিকগুলোর সংক্ষিপ্তসার ====
সংক্ষেপে, অ্যাক্ট-আর তত্ত্ব অনুসারে, ঘোষণামূলক জ্ঞান তার আশেপাশের পরিবেশে তথ্যের উপলব্ধি দ্বারা এনকোড করা হয় (একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক, পিতামাতা এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশাবলী সহ) ইত্যাদি); কোনও কার্য সম্পাদন বা সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গে এই জাতীয় ঘোষণামূলক জ্ঞান (প্রায়ই এর অনেকগুলো ইউনিট) প্রয়োগ করতে শেখার ফলে পদ্ধতিগত জ্ঞান বিকশিত হয়; এবং প্রদত্ত পরিস্থিতিতে মোতায়েন করার জন্য সঠিক ধরণের জ্ঞানের নির্বাচন জ্ঞানীয় সিস্টেমের অনুমান অনুসারে ঘটে যে জ্ঞানের একটি অংশ দরকারী এবং উপযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য প্রয়োগ এবং অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ ====
এখন পর্যন্ত অ্যাক্ট-আর এর বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে, অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একজোড়া পরীক্ষা উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণ দেয় যা তত্ত্বটিকে সমর্থন করে। এই পরীক্ষাগুলো অধ্যয়ন করেছিল যে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকগুলো বিভিন্ন মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোর মধ্য দিয়ে শুরু থেকে চূড়ান্ত গন্তব্যগুলোতে একটি মানচিত্রে (পিটসবার্গ, পেনসিলভেনিয়ার শহরের) সর্বাধিক দক্ষ রুটগুলো কাজ করেছিল, ব্যয় এবং সময়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করে। পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে করা হয়েছিল। কারণ তারা কম্পিউটার স্ক্রিনে মানচিত্রটি দেখেছিল এবং চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তারা যে অবস্থানগুলোতে যেতে বা পাস করতে চেয়েছিল সেগুলোতে ক্লিক করেছিল।
বিষয়গুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো একই নেভিগেশন সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের (উৎপাদন বিধিগুলোর সেট ব্যবহার করে) উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার মডেল দ্বারা উত্পাদিত "চিন্তাভাবনা প্রক্রিয়া" এবং সমাধানগুলোর সাথে তুলনা করা হয়েছিল। নীচের সারণী এই নেভিগেশন টাস্কে রুট নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত মডেলের উৎপাদন বিধিগুলোর কয়েকটি উদাহরণ দেখায়:
{| class="wikitable"
! colspan="2" |'''''[আদেশে] কম্বিন-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর এখানে location ৩ যাওয়ার একটা রাস্তা আছে, এবং location ৩ location২ এর কাছাকাছি,
|-
|তারপর
|Location ৩ এ রুট নিন,
এবং সেখান থেকে আরও পরিকল্পনা করুন।
|-
! colspan="2" |'''''ডাইরেক্ট-রুট'''''
|-
|যদি
|লক্ষ্যটি হলো অবস্থান ১ থেকে অবস্থান ২ এ একটি রুট সন্ধান করা,
আর location ১ থেকে location ২ পর্যন্ত একটা রুট আছে,
|-
|তারপর
|সেই পথেই যাও।
|}
টেবিল ২. নেভিগেশন টাস্কের রুট নির্ধারণের জন্য উৎপাদন বিধিগুলোর উদাহরণ
এসিটি-আর মডেলের চিন্তাভাবনার উপায়টি স্নাতক শিক্ষার্থীদের একবারে এক ধাপের সাথে তুলনা করা হয়েছিল - মডেল দ্বারা তৈরি রুটের প্রতিটি একক পছন্দ (প্রতিটি একক উৎপাদন) প্রতিটি শিক্ষার্থীর দ্বারা তৈরি প্রতিটি পছন্দের পাশাপাশি রাখা হয়েছিল (তারা যে মিড-ওয়ে পয়েন্টগুলোতে ক্লিক করেছিল)। ফলাফলগুলো দেখিয়েছে যে এসিটি-আর মডেলের রুটের সিদ্ধান্তগুলো "৬৭% সময়" শিক্ষার্থীদের সাথে মেলে,[ এবং এমনকি যদি তারা তা না করে। তবে তারা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শীর্ষ পছন্দগুলোর সাথে মেলে, মানব বিষয়গুলো জ্ঞানীয়ভাবে যেভাবে আচরণ করে তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমান্তরাল।
উপরন্তু, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান ছিল যে রুট পছন্দগুলো করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার মডেলের বিলম্ব (নেওয়া সেকেন্ডের সংখ্যা) বিষয়গুলোর সিদ্ধান্তের গতির সাথে খুব মিল ছিল। যদিও এই সন্ধানটি তুলনামূলকভাবে সাধারণ পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল, এটি সম্ভবত জ্ঞানীয় কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে উৎপাদন বিধিগুলোর উপর ভিত্তি করে রায় দেওয়ার জন্য মানব জ্ঞানীয় সিস্টেমের প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কিত অ্যাক্ট-আর তত্ত্বের ধারণাগুলোকে সমর্থন করে (সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিভিন্ন রুট পছন্দগুলো বিবেচনা করুন এবং মূল্যায়ন করুন)।
চূড়ান্ত ফলাফল যা এসিটি-আর তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা হলো পরীক্ষার সময়কালে (প্রায় এক সপ্তাহ) অনুশীলনের সাথে, মানব বিষয়গুলো রুট পরিকল্পনার অনুকূলকরণের গতিতে উন্নত হয়েছিল, সম্ভবত উন্নত কার্য সম্পাদনে শক্তিশালী উৎপাদন বিধিগুলোর নীতিকে সমর্থন করে।
অ্যান্ডারসন এই মানচিত্র নেভিগেশন ক্রিয়াকলাপের গুরুত্ব এবং এসিটি-আর তত্ত্বকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে এর প্রমাণের কথা উল্লেখ করেছেন,[ দিয়েছিলেন যে এটি একটি বাস্তব জীবনের কাজ জড়িত যেখানে মানুষকে ব্যয় এবং সময়ের মতো বাস্তব। কারণ এবং পরিণতি বিবেচনা করতে হবে, বিমূর্ত, একাডেমিক সমস্যাগুলোর উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার এর বিপরীতে গাণিতিক, যেখানে সত্য পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত খুব কম প্রভাব রয়েছে। তদতিরিক্ত, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন রুট সন্ধানের এই জাতীয় কাজটিতে একাধিক সমাধান জড়িত। এর অর্থ সমাধানগুলো সাফল্যের বিভিন্ন ডিগ্রি। এটি এটিকে আরও বাস্তবসম্মত পরীক্ষা করে তোলে যে এসিটি-আর মডেলটি মানুষের জ্ঞানীয় সিস্টেমের পক্ষে সত্য কিনা।
এই পরীক্ষাগুলো ছাড়াও, এসিটি-আর তত্ত্বের জন্য অন্যান্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতামূলক সমর্থনের মধ্যে ইন্টেলিজেন্ট টিউটরিং সিস্টেমগুলোতে (আইটিএস) বিনিয়োগ করা কাজটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি রিটার এবং তার সহকর্মীদের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা বিস্তারিতভাবে অন্বেষণ করা হয়েছে। যদিও এই অধ্যায়ের পরিধির মধ্যে নয়, কম্পিউটার টিউটরিং সিস্টেম সম্পর্কিত আরও আলোচনা একটি ভিন্ন অধ্যায়ে দীর্ঘ করা হবে।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের নির্দেশমূলক প্রভাব ====
তত্ত্বের পূর্বোক্ত নীতি এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে, অ্যান্ডারসন এট আল টিউটরিং সিস্টেম ডিজাইনের জন্য নীতিগুলোর একটি তালিকা সরবরাহ করে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণভাবে নির্দেশমূলক নকশার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন ধারণাগুলো সহ: ক) প্রোডাকশনর একটি সেট হিসাবে একটি দক্ষতার প্রতিনিধিত্ব করা; খ) সমস্যা সমাধানে উপ-লক্ষ্য (প্রোডাকশন) স্পষ্ট করা; (গ) হস্তান্তরযোগ্য উৎপাদন বিধিমালা প্রচারের সময় কতিপয় সমস্যার প্রেক্ষাপটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান; ঘ) স্মৃতি লোড কমাতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় উৎপাদন নিয়মগুলোতে ফোকাস; ঙ) কোন কাজে সূক্ষ্ম দানাদার উৎপাদন বিধি কতটুকু থাকা প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে উপযুক্ত গ্র্যানুলারিটির নির্দেশনা প্রদান; চ) শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথে শিক্ষামূলক সহায়তা যথাযথভাবে প্রত্যাহার করা।
কগনিটিভ টিউটর এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে আপনি ''সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি'' (সমস্যা সমাধানের জন্য ২.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) এবং ''লার্নিং ম্যাথমেটিক্স'' (বীজগণিত শেখানোর জন্য ৪.৫ জ্ঞানীয় শিক্ষক) অধ্যায়ে যেতে পারেন।
==== এসিটি-আর তত্ত্বের সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া ====
ACT-R তত্ত্ব বলে যে কোনও দক্ষতা (বা জ্ঞানীয় কাজ) অর্জন বা বোঝার জন্য কেবল সেই স্বতন্ত্র উৎপাদনগুলি শেখা জড়িত হওয়ায় এটি পূর্ব-নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অর্জন করার পরিবর্তেগঠনমূলক শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে যে জ্ঞান বা দক্ষতার বোঝাপড়া শিক্ষার্থী নিজেই তৈরি করে।
এটি, তত্ত্বের ধারণার সাথে মিলিত হয়ে যে শিক্ষার্থীদের উত্তর বা সমস্যার সমাধানগুলি উৎপাদন নিয়মের নির্দিষ্ট সেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত বা কব্জাবদ্ধ করা উচিত, এটি জ্ঞানের প্রতি কিছুটা আচরণগত-ভিত্তিক পদ্ধতি দিয়েছে। এটি মেটাকগনিশনের মতো উপাদানগুলিকে দমিয়ে রেখেছে। অ্যান্ডারসন এবং অন্যান্যরা এই বলে প্রতিক্রিয়া জানান যে ACT-R এর পদ্ধতি আচরণবাদী পদ্ধতির সাথে মিল রাখে যে নির্দেশনা কীভাবে একটি দক্ষতা বা কাজকে উপাদানগুলিতে বিভক্ত করার উপর ফোকাস করা উচিত, তবে তারা যুক্তি দেন যে ACT-R সাধারণ আচরণগত পদ্ধতির তুলনায় আরও বিমূর্ত উপায়ে (সম্ভবত প্রসঙ্গের মধ্যে আরও স্থানান্তরযোগ্য) কাজটি উপস্থাপন করে।<ref name=":2">Anderson, J. R., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned. The Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207. Retrieved from: http://www.jstor.org/</ref>
উপরন্তু, জন অ্যান্ডারসন স্বীকার করেছেন যে, যেহেতু তত্ত্বের একটি মূল শিক্ষাগত বা নির্দেশনামূলক নকশার অন্তর্নিহিত অর্থ হল একটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য পৃথক উৎপাদন নিয়ম অর্জনকে উৎসাহিত করা, তাই তত্ত্বের প্রাথমিক জোর শেখার দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আশ্চর্যজনকভাবে, এই অগ্রাধিকারটি তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে হতে পারে যারা দক্ষতা বা গতির চেয়ে শেখার গভীরতা বা সমৃদ্ধিকে মূল্য দেন। অ্যান্ডারসনের প্রতিক্রিয়া হল যে শেখার গভীরতাকে কেবল ঘোষণামূলক এবং উৎপাদন (পদ্ধতিগত) জ্ঞানকে সমৃদ্ধকারী হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যার মধ্যে অনুশীলন এবং প্রতিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত।<ref name=":02">Anderson, J. R. (1993). ''Rules of the mind''. Hillsdale, NJ: Lawrence Erlbaum.</ref>
== শব্দকোষ ==
; অর্থের নিয়োগ
: যখন অর্থ একটি অনুভূত উদ্দীপনা বরাদ্দ করা হয়
; স্বয়ংক্রিয়তা
: একটি স্বয়ংক্রিয় স্তরে একটি দক্ষতার বিকাশ যেখানে এটি একটি অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া হয়ে যায় যা অনেক চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয় না
; মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ের জ্ঞানীয় তত্ত্ব
: মেয়ারের তত্ত্বটি ডুয়াল-কোডিং তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, এই ধারণাটি যে জ্ঞানীয় লোড অবশ্যই শেখার ক্ষেত্রে পরিচালনা করা উচিত এবং এই ধারণাটি যে শেখার সাথে সংগঠিত এবং সংহতকরণের তথ্য জড়িত
; ধারণা
: মানসিক তথ্যকে অর্থপূর্ণ বিভাগ এবং কাঠামোতে বাছাই করার একটি উপায়; একটি "জ্ঞানের বিল্ডিং ব্লক"
; শর্তসাপেক্ষ জ্ঞান
: বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান এবং কখন এবং কেন তাদের ব্যবহার করতে হবে; "কেন জানার" জ্ঞান
; ঘোষণামূলক জ্ঞান
: বাস্তব জ্ঞান যেমন রাজধানী শহর এবং বীজগণিতের সূত্র জানা; "কি জানার" জ্ঞান
; ডুয়াল কোডিং থিওরি
: পাইভিওর তত্ত্ব যে ভিজ্যুয়াল এবং পাঠ্য উভয় বিন্যাসে তথ্য সরবরাহ করা শেখার উপকার করতে পারে
; এপিসোডিক স্মৃতি
: স্মৃতি যা প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জন্য নির্দিষ্ট
; অত্যাবশ্যকীয় শিক্ষা
: প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাহিদা
; বহিরাগত জ্ঞানীয় লোড
: মূল জ্ঞানীয় কাজের বাইরে জ্ঞানীয় লোড সৃষ্টি করে এমন কিছু
; এফএমআরআই
: কার্যকরী চৌম্বকীয় অনুরণন ইমেজিং। একটি নিউরোইমেজিং প্রযুক্তি যা মস্তিষ্কের সক্রিয় অঞ্চলে রক্ত প্রবাহের পরিবর্তনগুলো সনাক্ত করে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম
; ভুলে যাওয়া
: স্মৃতি মনে করা যায় না
; আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়াকরণ
: জ্ঞানীয় চাহিদা যা প্রক্রিয়াজাত তথ্য বোঝার জন্য দরকারী। তবে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োজনীয় নয়
; অন্তর্নিহিত জ্ঞানীয় লোড
: যে কোনও প্রদত্ত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় লোড
; দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি
: স্মৃতি যা দিন, মাস, বছর এবং / অথবা দশক ধরে বিকশিত হয়। স্মৃতির স্থায়ী সঞ্চয় সারা জীবন ধরে বিকশিত হয়
; পদ্ধতিগত জ্ঞান
: গাড়ি চালানো, স্কিইং করা বা কফি তৈরির মতো প্রতিদিনের কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন করা যায় সে সম্পর্কে জ্ঞান; "কিভাবে জানার" জ্ঞান
; প্রোটোটাইপ
: একটি অত্যন্ত সাধারণ / বিশিষ্ট ধারণা
; স্মরণ
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য মনে রাখা হয়
; পুনর্গঠন
: যখন পূর্বে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত তথ্য স্মরণে পুনর্গঠন করা হয়। তবে ঠিক মনে রাখা হয় না
; রেফারেন্সিয়াল হোল্ডিং
: যখন কেউ অস্থায়ীভাবে তথ্য ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে রাখে যখন অন্যান্য তথ্য একযোগে প্রক্রিয়া করা হয়
; রিহার্সাল
: জ্ঞানীয় পুনরাবৃত্তি যা তথ্যকে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সক্রিয় থাকতে দেয়
; পুনরুদ্ধার
: দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বাইরে এবং ওয়ার্কিং স্মৃতিতে তথ্য স্থানান্তর করার কাজ
; স্কাফলোডিং
: কোনও বস্তু (বা স্কিমাটা) "নির্মাণাধীন" থাকাকালীন সহায়তার একটি অস্থায়ী কাঠামো যা সম্পন্ন হওয়ার পরে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সহায়তার আর প্রয়োজন হয় না।
; স্কিমাটা বা স্কিমাটা
: জ্ঞানীয় কাঠামো (গুলো) যা জ্ঞান সংগঠিত করতে এবং চিন্তাভাবনা, উপলব্ধি এবং মনোযোগকে গাইড করতে সহায়তা করে
; শব্দার্থিক স্মৃতি
: সাধারণ ধারণা এবং পদ্ধতির অনির্দিষ্ট স্মৃতি; নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত ঘটনা বা অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত নয়
; সেন্সরি রেজিস্টার
: ওয়ার্কিং স্মৃতির মধ্যে একটি জ্ঞানীয় ফাংশন যেখানে অনুভূত ইনপুটটি অর্থ গ্রহণের জন্য সংরক্ষণ করা হয়
; অ্যাক্টিভেশন ছড়ানো
: অন্য সম্পর্কিত ধারণার স্মরণ দ্বারা উদ্ভূত একটি ধারণার স্মরণ
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
grvk1gqisd1szmyx8ks72ry7dqs2qkr
চিন্তন ও নির্দেশনা/শেখার জন্য প্রযুক্তি ও নকশা
0
26211
85789
85709
2025-07-07T11:51:54Z
Tahmid
4464
85789
wikitext
text/x-wiki
শিক্ষণ ও শিক্ষার জন্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে, শিক্ষক ও ডিজাইনারদের এটির সম্ভাব্য উপকারিতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝা প্রয়োজন। এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে কীভাবে মাল্টিমিডিয়া শেখার পরিবেশে মানুষের জ্ঞানগত প্রক্রিয়াগুলোর উপর প্রভাব পড়ে এবং এই ধরনের পরিবেশ ডিজাইনের জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক নীতিমালা। প্রথম অংশে পরিচিতি দেয়া হয়েছে জ্ঞানীয় চাপ থিওরি সম্পর্কে এবং ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া পরিবেশের জ্ঞানগত চাহিদা শিক্ষার্থীদের শেখার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয় অংশে আলোচনা করা হয়েছে ফোর কম্পোনেন্ট ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন মডেল, যা জটিল দক্ষতা শেখানোর জন্য উপকরণ ও প্রযুক্তি ডিজাইন করতে গবেষণা-ভিত্তিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত, এই অধ্যায়ে দেখা হবে কীভাবে প্রযুক্তি সহযোগিতামূলক শেখাকে সহজতর করতে ব্যবহৃত হতে পারে।
== জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব ==
জ্ঞানীয় চাপ থিওরি বা কগনিটিভ লোড থিওরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যখন শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বিবেচনা করা হয়। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব জন সুয়েলার কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব যা কার্যকর স্মৃতি এবং নির্দেশনার উপর গুরুত্ব দেয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> আমাদের কার্যকর স্মৃতি একই সময়ে মাত্র সীমিত পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়া করতে সক্ষম।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> শিক্ষাদান উপকরণ ডিজাইন করার সময় কার্যকর স্মৃতির এই সীমাবদ্ধতাকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে, বিশেষ করে যখন প্রযুক্তিকে নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ যদি একসাথে খুব বেশি তথ্য উপস্থাপন করা হয় তাহলে কার্যকর স্মৃতি অতিভারপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে—ফলে হয়তো সব তথ্য গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুই গ্রহণ করে না। সুয়েলার প্রস্তাব করেন যে জ্ঞানীয় চাপ তিন প্রকার: ইনট্রিনসিক, বাহ্যিক, এবং জারমেইন। এই তিন প্রকার জ্ঞানীয় চাপের পার্থক্য বোঝার মাধ্যমে আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা শেখার জন্য সহায়ক কিনা অথবা তা জ্ঞানীয় চাপের সমস্যা তৈরি করছে কিনা।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>
[[চিত্র:WorkingCogLoad.png|ফ্রেম|জ্ঞানীয় চাপ কীভাবে কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করে]]
=== '''ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ''' বা '''ইনট্রিনসিক কগনিটিভ লোড''' এমন মানসিক প্রক্রিয়া বোঝায় যা কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> সুয়েলারের মতে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায় না, তবে এটি ডিজাইনারদের মাথায় রাখতে হয়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> যেকোনো শেখার উপকরণ কার্যকর স্মৃতির ওপর ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করে; এর মাত্রা নির্ভর করে বিষয়বস্তুর জটিলতার উপর।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো বিষয়ে দক্ষতা বেশি থাকে, তবে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তখনো প্রভাব ফেলবে, তবে কম পরিমাণে।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> সুতরাং, শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান বিবেচনায় নিয়ে নতুন তথ্য উপস্থাপন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যক্তির কমলা ফল সম্পর্কে পূর্বজ্ঞান থাকে, তবে কমলার বিভিন্ন অংশ নিয়ে পাঠের সময় তার কার্যকর স্মৃতির ওপর চাপ কম পড়বে, তুলনায় যদি সে কিছুই না জানত।
=== '''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ বা এক্সট্রেনিয়াস কগনিটিভ লোড''' হলো এমন মানসিক প্রক্রিয়া যা শেখার সহায়ক নয় এবং যেটা কাজের ডিজাইন পরিবর্তনের মাধ্যমে দূর করা যায়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ধারিত হয় শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় শব্দ, ছবি, টেক্সট এবং অ্যানিমেশন বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করতে পারে। যত বেশি কার্যকর স্মৃতিকে মনোযোগ দিতে হয়, তত কম তথ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> বাহ্যিক লোড নিয়ন্ত্রণযোগ্য, ভালো শিক্ষাদান ডিজাইন এই লোড কমায় এবং খারাপ ডিজাইন তা বাড়িয়ে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক প্রজাপতির জীবনচক্র নিয়ে পাঠ দিচ্ছেন এবং স্মার্ট বোর্ডে একটি স্লাইড শো ব্যবহার করছেন। যদি তিনি অপ্রাসঙ্গিক অ্যানিমেশন যোগ করেন, তবে শিক্ষার্থীদের একসাথে তথ্য ও অ্যানিমেশনে মনোযোগ দিতে হয়—ফলে বাহ্যিক লোড বেড়ে যায়।
=== '''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' হচ্ছে কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ যা উপস্থাপিত তথ্যের ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয় এবং এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> সুয়েলার বলেন, এটি কার্যকর স্মৃতির ওপর স্বাধীন চাপ সৃষ্টি করে না, বরং এটি ইনট্রিনসিক ও বাহ্যিক লোডের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, যদি শিক্ষার্থীর প্রেরণা অপরিবর্তিত থাকে, তবে তার জারমেইন লোডের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকে না।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> তাহলে এর সাথে শিক্ষাদানের সম্পর্ক কী? সুয়েলারের মতে, পাঠগুলো এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে কার্যকর স্মৃতি ইনট্রিনসিক লোডের দিকে মনোযোগ দিতে পারে এবং বাহ্যিক লোড কমিয়ে দিলে জারমেইন লোড এবং শেখার মান উভয়ই বৃদ্ধি পায়।
=== গবেষণা ও প্রভাব ===
অভ্যন্তরীণ এবং অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত/অর্থাৎ যদি উভয়ই উচ্চ হয় তাহলে কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্তভাবে চাপগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এর তাৎপর্য হলো, যেহেতু শুধুমাত্র অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই পাঠ পরিকল্পনাকারীদের এটি কম রাখার জন্য কাজ করা উচিত, যাতে করে অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ বেশি থাকলেও কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্ত চাপের শিকার না হয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তত্ত্ব অনুযায়ী, অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বিশাল ধারণক্ষমতার সদ্ব্যবহার করা উচিত, পূর্ববর্তী স্কিমার ব্যবহার এবং নতুন স্কিমা তৈরি করে কার্যকারী স্মৃতির উপর চাপ কমানো যায়<ref>van Merrienboer, J., & Ayres, P. (2005). Research on cognitive load theory and its design implications for e-learning. Educational Technology Research and Development 53(3), 5-13</ref>। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: নির্ধারিত লক্ষ্যবিহীন সমস্যা উপস্থাপন, কার্যকর অতিরিক্ততা, পদ্ধতি, অসম্পূর্ণ সমস্যা প্রভাব, বিভক্ত মনোযোগ প্রভাব এবং অন্যান্য<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>।
শুরু করার জন্য, বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করতে এবং স্কিমা উত্পাদনকে উত্সাহিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রিয়াকলাপ পরিবর্তন করার জন্য লক্ষ্য মুক্ত সমস্যাগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য কোনও শিক্ষার্থী লক্ষ্য সম্পর্কিত কৌশলগুলো ব্যবহার করার সম্ভাবনা হ্রাস করে এটি করে। এটি কোনও সমস্যার শব্দ পরিবর্তন করে করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ট্রায়াল এন্ড এরর পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না করে। অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, একটি সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
প্রারম্ভে, লক্ষ্যবিহীন সমস্যাগুলি ডিজাইন করা হয়েছিল শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার জন্য যাতে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় এবং স্কিমা তৈরি করতে উৎসাহিত করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এটি করার মাধ্যমে, শিক্ষার্থীরা লক্ষ্যভিত্তিক কৌশল অনুসরণ না করে সমস্যার সমাধান করতে পারে। সমস্যার ভাষার গঠন পরিবর্তন করে এটি করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র অনুমান ও পরীক্ষানিরীক্ষার উপর নির্ভর না করে, যা অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। উদাহরণস্বরূপ, একটি গণিত সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
"কার্যকরী উদাহরণ প্রভাব" বলতে বোঝানো হয়, যখন একজন ব্যক্তি ইতোমধ্যে সমাধান করা উদাহরণ অধ্যয়ন করে, যাতে তারা শিখতে পারে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। এটি অনুমান নির্ভর পদ্ধতি কমিয়ে দেয় কারণ এতে শিক্ষার্থীদের একটি স্কিমা তৈরি করার সুযোগ থাকে যে কীভাবে নির্দিষ্ট ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। সাধারণ সমস্যাগুলোর তুলনায়, এই ধরনের উদাহরণগুলো ব্যক্তির মনোযোগ পুরো সমস্যার ওপর নয় বরং ধাপে ধাপে কী করতে হবে সেটার ওপর কেন্দ্রীভূত করে, ফলে তত্ত্বগতভাবে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় কারণ অতিরিক্ত কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এই ক্ষেত্রে, যদি একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নতুন কোনো গণিত সমীকরণ শেখান এবং পাশাপাশি সেই সমীকরণ ব্যবহার করে সমাধান করা কিছু উদাহরণ দেন, তবে শিক্ষার্থীদের কাছে একটি রেফারেন্স থাকবে, যা তাদের জ্ঞানীয় চাপ কমিয়ে দেবে।
উপকারী পুনরাবৃত্তির পেছনের ধারণা হলো, যদি একজন শিক্ষার্থী একই তথ্য বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত দেখতে পান, তাহলে সেই তথ্য স্মরণ রাখার সম্ভাবনা বেশি থাকে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। কারণ এটি একই তথ্য যা কেবল ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাই অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায়, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন তথ্য গ্রহণের জন্য<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, পরবর্তীকালে পরিচালিত গবেষণায় এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে এটি গভীর শেখার পরিবর্তে বরং শেখার মান কমিয়ে দেয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>।
মেয়ার, হাইজার এবং লন পরিচালিত এক গবেষণায়, মাল্টিমিডিয়া শিক্ষায় পুনরাবৃত্তি প্রভাব নিয়ে একাধিক পরীক্ষা চালানো হয়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। তাঁরা পুনরাবৃত্তি প্রভাবকে ব্যাখ্যা করেন এমন এক পরিস্থিতি হিসেবে যেখানে একই তথ্য পাঠ্য ও শ্রুতির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় এবং এর ফলে শেখার মান কমে যায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। প্রথম পরীক্ষায় ৭৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে বজ্রপাত গঠনের বিষয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে তথ্য ধারণ ও স্থানান্তরের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করা হয়। "No-text/no-seductive-details" দলটি এনিমেশন ও সমসাময়িক বর্ণনা পায়, "text/no-seductive-details" দলটি এতে সংক্ষেপিত পাঠ্য পায়, "no-text/seductive-details" দলটি আকর্ষণীয় কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পায় এবং শেষ দলটি এই দুই ধরণের তথ্যই পায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যেসব শিক্ষার্থীরা পর্দায় সংক্ষেপিত পাঠ্য পেয়েছিল তারা কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। একইভাবে যারা আকর্ষণীয় অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পেয়েছিল তারাও কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। এই পরীক্ষার ফলাফল দেখায় যে অতিরিক্ত তথ্য উপস্থাপন শেখার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গবেষকরা ধারণা দেন যে এটি দৃশ্যমান বা শ্রাব্য চ্যানেলে অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয় পরীক্ষায় এই ধারণার পরীক্ষা করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়: একটি দল পাঠ্য ছাড়াই উপস্থাপনা পায়, একটি দল সংক্ষিপ্ত সারাংশ সহ এবং আরেকটি দল হুবহু পাঠ্য সহ<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। দেখা যায় যে যারা কোনো অতিরিক্ত পাঠ্য পায়নি তারা সবচেয়ে বেশি তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। অন্য দুই দলের মধ্যে মনে রাখার ক্ষেত্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তৃতীয় পরীক্ষায় মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হলে কী ঘটে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, ভিডিও ক্লিপে বজ্রপাত সংক্রান্ত তথ্য থাকলেও তা প্রাসঙ্গিক ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। ৩৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে দুটি দলে ভাগ করা হয়। দেখা যায়, ভিডিও যুক্ত দলটি আরও বেশি কিছু মনে রাখতে পারেনি এবং ফলাফল উল্লেখযোগ্য ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। চতুর্থ পরীক্ষায় দেখা হয় যে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার আগে বা পরে ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করলে আগ্রহ বাড়ে কিনা। দেখা যায়, উপস্থাপনার শুরুতে ভিডিও ক্লিপ দিলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা বেশি মনে রাখে, যদিও ফলাফল পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। সামগ্রিকভাবে এই গবেষণা উপসংহার টানে যে, একই তথ্য একাধিক উপায়ে উপস্থাপন করা হলে শিক্ষার্থীরা কম তথ্য মনে রাখতে পারে। যখন একজন শিক্ষার্থীকে কাজের মেমোরি ভাগ করে তথ্য বুঝতে হয়, তখন অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বেড়ে যায়, ফলে শেখার পরিমাণ কমে যায়। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন পাঠ্য উপস্থাপনার সাথে যুক্ত করা হয়। মেয়ার, হাইজার এবং লন পরামর্শ দেন যে, শিক্ষামূলক ডিজাইনারদের উচিত শ্রবণযোগ্য উপস্থাপনায় পাঠ্য না যোগ করা<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>।
কিছু গবেষক মনে করেন যে, শিক্ষাগত ডিজাইনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ কমানোই যথেষ্ট নয়। তাঁদের মতে, শিক্ষার্থী যেন আরও বেশি অর্থবহ স্কিমা তৈরি করতে পারে, সেই জন্য তাদের "জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ" বা প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় চাপ বাড়ানো উচিত<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ স্কিমা নির্মাণে নিবদ্ধ হয়, যা শিক্ষার সময় কাজের মেমোরির ওপর চাপ কমায়।
=== '''সারাংশ''' ===
সারাংশে, Sweller তিন ধরনের জ্ঞানীয় চাপের কথা বলেন এবং এগুলো কীভাবে নতুন তথ্য শেখার সময় কাজের মেমোরির ব্যবহারকে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করেন। জ্ঞানীয় চাপ থিয়োরির আলোকে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার ডিজাইনে বলা হয়েছে যে, প্রযুক্তি একটি কার্যকর শেখার উপায় হতে পারে যদি তা কাজের মেমোরির ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ না সৃষ্টি করে। বিশেষত, শিক্ষকদের উচিত "redundancy effect" নিয়ে করা গবেষণার দিকে মনোযোগ দেওয়া যাতে তারা অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মেমোরি অতিভার না করে। প্রযুক্তির একটি উপযোগী ব্যবহার হতে পারে এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা যা স্কিমা তৈরি করতে সহায়তা করে, যা তথ্যকে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিতে স্থানান্তর করে জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করে।
== চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা ==
চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা বা Four Component Instructional Design (4C/ID) হলো একটি নির্দেশনামূলক ডিজাইন মডেল, যা ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের এবং তাঁর সহকর্মীরা উদ্ভাবন করেছেন। এটি জটিল পরিবেশে শেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। 4C/ID মডেলটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি যে, দক্ষতা সবচেয়ে কার্যকরভাবে শেখা যায় তা ব্যবহার করার মাধ্যমে, শুধু পাঠ্যবইয়ের নির্দেশনা পড়ে নয়। শেখার শর্তাবলি বাস্তব জীবনের প্রয়োগের সাথে মিল রেখে তৈরি হওয়া জরুরি, এবং নির্দেশনার লক্ষ্য হওয়া উচিত তথ্য দেওয়ার চেয়ে অনুশীলনের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা। 4C/ID মডেলটি চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত: ''(১) লার্নিং টাস্ক'', ''(২) সহায়ক তথ্য'', ''(৩) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য'', এবং ''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন'' (ভ্যান মেরিনবোয়ার, ১৯৯৭;<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>; ভ্যান মেরিনবোয়ার এবং কির্সনার, ২০০৭)। এই কাজগুলো জটিলতার ভিত্তিতে সহজ থেকে কঠিন ক্রমে সাজানো থাকে। প্রতিটি উপাদানের শুরুতে অনেক বেশি সহায়ক কাঠামো বা ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ প্রয়োজন হয়, যা শিক্ষার্থীরা অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হয়।
এই অংশে আমরা আলোচনা করব কীভাবে প্রযুক্তি এই শিক্ষার তত্ত্বকে সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে গবেষণা ও তত্ত্ব।
=== '''(১) লার্নিং টাস্ক''' ===
লার্নিং টাস্ক-গুলো চিত্র ১-এ বৃত্তাকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। জটিল শেখা মানে হলো একত্রে একাধিক শেখার লক্ষ্য অর্জন করা। 4C/ID মডেলটি এমন শেখার কাজ ব্যবহারের পক্ষে, যা সম্পূর্ণ, বাস্তবসম্মত ও স্পষ্ট। অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা হিসেবেও পরিচিত এই মডেলের ভিত্তিতে শেখা শুরু করা উচিত অপেক্ষাকৃত সহজ কিন্তু অর্থপূর্ণ কাজের গুচ্ছ দিয়ে। একে '''টাস্ক ক্লাস''' বলা হয়। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের শুরুতেই অত্যন্ত জটিল শেখার কাজ দেওয়া অসম্ভব, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং শেখা ও পারফরম্যান্স উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। একবার শিক্ষার্থীরা সহজ কিন্তু প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো আয়ত্ত করলে, তারা আরও জটিল কাজের দিকে অগ্রসর হয়। একটি কাজের জটিলতা নির্ধারিত হয় এতে থাকা দক্ষতার সংখ্যা, এই দক্ষতাগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে। একই টাস্ক ক্লাসে থাকা শেখার কাজগুলোতে ক্রমান্বয়ে জটিলতা বাড়ানো না হলেও, এতে শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তার পরিমাণে পার্থক্য থাকতে পারে। এই সহায়তাকে বলা হয় ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। যখন শিক্ষার্থীরা নিম্নস্তরের টাস্ক ক্লাস থেকে উচ্চতর স্তরের টাস্ক ক্লাসে অগ্রসর হয়, তখন স্ক্যাফোল্ডিং ব্যবহার করা হয়। চিত্র ১-এ বৃত্তগুলোর চারপাশে ছিদ্রযুক্ত রেখা শেখার উপযুক্ত কাজ নির্বাচন ও উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। শেষ পর্যন্ত এই সহায়তা এবং স্ক্যাফোল্ডিং ধীরে ধীরে কমে আসে। এই সহায়তা হ্রাসের কারণ হলো '''দক্ষতার বিপরীত প্রভাব'''। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে শিক্ষানবিসদের জন্য কার্যকর যে সহায়তা ও নির্দেশনা পদ্ধতি (যেমন কোচিং বা নিয়মিত ধাপ) তা অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। এটি তাদের মানসিক চাপও বাড়ায়। শেখার কাজ শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে ধারণা গঠনে সহায়তা করে, যা তারা শেখার কাজ থেকে প্রাপ্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বিমূর্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শেখার ক্ষেত্রে সাধারণীকরণ ও পার্থক্যকরণ ধারণাগুলো গঠনে সাহায্য করে, যাতে তা নতুন অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের, ক্লার্ক, এবং ক্রুক <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এর মতে, এই গঠিত ধারণাগুলো দুটি রূপে আসে: ''মানসিক মডেলs'': যা শেখার ক্ষেত্রটি কিভাবে সংগঠিত তা প্রতিফলিত করে এবং যুক্তির সহায়তা করে; ''জ্ঞানীয় কৌশল'': যা সমস্যা সমাধানে গাইড করে এবং দেখায় কীভাবে কার্যকরভাবে সমস্যার সমাধানে এগোনো যায়।
শিক্ষার পরিবেশে শেখার কাজ প্রয়োগের দুটি ধরণ রয়েছে—ফলাফল কেন্দ্রিক এবং প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা। ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা সর্বোচ্চ বা নিম্ন স্তরে ভাগ করা যায়। সর্বোচ্চ স্তরের ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা হলো এমন শেখার কাজ যেখানে একটি কেস স্টাডি বা প্রস্তুত উদাহরণ দেওয়া হয় যাতে শিক্ষার্থীকে একটি প্রারম্ভিক অবস্থা, কাঙ্ক্ষিত অবস্থা এবং একটি সমাধান বা মধ্যবর্তী সমাধান দেওয়া হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শিক্ষার্থীদের শেখাতে উদ্ভট ঘটনা, সফলতার গল্প বা চমকপ্রদ উপসংহারসহ গল্প ব্যবহার করা যেতে পারে। এই শিক্ষণীয় কাজগুলিতে শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয় যা তাদের গভীর চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করে এবং দেওয়া উদাহরণ থেকে মানসিক মডেল তৈরিতে সহায়তা করে। বাস্তব উদাহরণ দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্র কীভাবে সংগঠিত। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব উপসংহার বা সমাধানে পৌঁছাতে দেওয়া উচিত। চিত্র ২-এ এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা সরাসরি সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কাজ করে। একটি ''modeling example''-এ একজন বিশেষজ্ঞ কীভাবে একটি কাজ সম্পাদন করছে এবং কেন সে এটি করছে তা ব্যাখ্যা সহ উপস্থাপন করা হয়। এই হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ধারণ সহজ করে তোলে যা শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়ে বোঝা সম্ভব নয়। এই পদ্ধতিতে শেখা তথ্য দীর্ঘস্থায়ীভাবে মনে রাখতেও সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এই উদাহরণ দেখে শিক্ষার্থীরা এমনকি পেশাদাররাও যে প্রণালী ও নীতিমালা অনুসরণ করে তা সহজে অনুধাবন করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। উচ্চস্বরে চিন্তা করাও উপকারী হতে পারে কারণ এটি মস্তিষ্কের ভিতরের সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে প্রকাশ করে। তদ্ব্যতীত, কম্পিউটার-ভিত্তিক শিক্ষার সরঞ্জামগুলো শিক্ষার্থীদের এমনভাবে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে যেন তারা একজন বিশেষজ্ঞের মতো চিন্তা করে।
=== '''(২) সহায়ক তথ্য''' ===
এই ধরনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জটিল দক্ষতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেখার কাজে সাফল্য পেতে এবং সেখান থেকে বাস্তব অর্থে শিখতে শিক্ষার্থীদের '''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' (স্কিমাটা-সদৃশ নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া) সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। প্রক্রিয়াভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকে 4C/ID কাঠামোতে '''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' বলা হয় <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। জটিল জ্ঞান উভয় ধরনের দক্ষতার সমন্বয়ে গঠিত। সহায়ক তথ্য প্রদান করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা অ-পুনরাবৃত্ত দিকগুলো আয়ত্ত করতে পারে। এটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান এবং শেখার কাজের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। শিক্ষকরা সাধারণত যেটিকে 'তত্ত্ব' হিসেবে উল্লেখ করেন, এটি সেই তথ্য এবং এটি সাধারণত লেকচারে বা পাঠ্যপুস্তকে উপস্থাপন করা হয়। এর লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের এমন নমনীয় স্কিমা তৈরি করতে সাহায্য করা যা বাস্তব জীবনের সমস্যা মোকাবেলায় কার্যকর। সহায়ক তথ্য পূর্ববর্তী তথ্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন তথ্য উপাদানের মধ্যে বাস্তবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এটি শিক্ষার্থীদের এমন কাজ করতে সক্ষম করে যা আগে সম্ভব ছিল না। দেখা গেছে, এই ধরনের তথ্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জটিল স্কিমা গঠনে সাহায্য করে যা গভীর অনুধাবন তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা ডেটাবেইস কীভাবে সংগঠিত তা অধ্যয়নের মাধ্যমে কার্যকর মানসিক মডেল তৈরি করতে পারে। কাজের পারফর্মাররা নিজেদের মানসিক মডেল এবং জ্ঞানীয় কৌশল আরও বিকশিত করে যাতে তাদের পারফরম্যান্স উন্নত হয়। উদাহরণস্বরূপ, টাইগার উডস গলফ কোর্সের বিন্যাস বিশ্লেষণ করে কীভাবে এগুলো সংগঠিত তা জানতে মানসিক মডেল তৈরি করেন এবং প্রতিপক্ষের ভিডিও দেখার মাধ্যমে কৌশল তৈরি করেন কীভাবে সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এখানে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি যে সম্পর্কগুলো যেন যথাসম্ভব যুক্তিযুক্ত হয়। এই সম্পর্ক নির্ধারণের পদ্ধতিগুলো উপস্থাপন করা যেতে পারে ব্যাখ্যামূলক বা অনুসন্ধানভিত্তিক উপায়ে। ''ব্যাখ্যামূলক পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্কগুলো সরাসরি উপস্থাপন করে, এবং ''অনুসন্ধান পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের নিজে থেকে এসব সম্পর্ক আবিষ্কার করতে উৎসাহিত করে। এই দুই পদ্ধতির মধ্যে অভিজ্ঞতাভিত্তিক সম্পর্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাধারণ ও বিমূর্ত জ্ঞানকে বাস্তব উদাহরণের সাথে যুক্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। 4C/ID মডেলটি সহায়ক তথ্য উপস্থাপনে প্ররোচনামূলক ও নির্ণয়মূলক কৌশলের মধ্যে পার্থক্য করে। প্ররোচনামূলক কৌশলের দুটি ধরন রয়েছে: ''ইন্ডাকটিভ-ইনকোয়ারি কৌশল''-এ এক বা একাধিক কেস স্টাডি উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সম্পর্ক চিহ্নিত করতে বলা হয়। তবে এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ এবং গভীর বোধের প্রয়োজন হয়, বিশেষত যাদের দক্ষতা নেই তাদের জন্য। এজন্য ভ্যান মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> পর্যাপ্ত সময় না থাকলে এই কৌশল ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন। ''ইন্ডাকটিভ-এক্সপোজিটরি কৌশল'' তে এক বা একাধিক কেস স্টাডি দিয়ে শুরু করে এবং সেখানে চিত্রিত তথ্যগুলোর সম্পর্ক সরাসরি ব্যাখ্যা করা হয়। মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এই কৌশলটি সাধারণভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দেন কারণ এটি বাস্তব কেস দিয়ে শুরু হয় এবং পূর্ব জ্ঞানের অভাব থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর। ''জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া'' সহায়ক তথ্য-এর চূড়ান্ত অংশ হিসেবে পরিচিত। এটি অ-পুনরাবৃত্ত কর্মক্ষমতা-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেহেতু এই ধরনের পারফরম্যান্স কখনো একেবারে সঠিক বা ভুল নয়, বরং বেশি বা কম কার্যকর। জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া কেবল তখনই প্রদান করা যায় যখন শিক্ষার্থী একটি বা একাধিক শেখার কাজ সম্পন্ন করে। ভালোভাবে পরিকল্পিত প্রতিক্রিয়া শিক্ষার্থীদের তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি এবং গৃহীত সমাধান নিয়ে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>।
=== '''(3) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য''' ===
সহায়ক তথ্যের বিপরীতে, জেআইটি তথ্য জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উপর কেন্দ্রীভূত। এটি শেখার কাজ বা অনুশীলনের উপাদানের পুনরাবৃত্ত দিক শেখা ও সম্পাদনের জন্য অপরিহার্য। স্বয়ংক্রিয়তা অনেকাংশে নির্ভর করে ধারাবাহিকতা এবং পুনরাবৃত্ত অনুশীলনের ওপর। জেআইটি তথ্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুসারে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেয় এবং প্রয়োজন না থাকলে দ্রুত ম্লান হয়ে যায়। জেআইটি তথ্যের লক্ষ্য হচ্ছে মৌলিক, কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব স্বয়ংক্রিয় করে তোলা। জ্ঞানগত সম্পদ মুক্ত করা এবং স্বয়ংক্রিয়তা বৃদ্ধি করা উন্নত শিক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এটি ধাপে ধাপে জ্ঞানও প্রদান করে, যেমন শিক্ষক বা টিউটররা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের গাইড করেন, যেন একজন সহকারী তাদের কাঁধের ওপর নজর রাখছে। জেআইটি তথ্য অনেক শেখার কাজের জন্য একই রকম হওয়ায়, এটি সাধারণত প্রথম শেখার কাজের সময় দেয়া হয় যেটার সাথে ওই দক্ষতা সম্পর্কিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। স্ক্যাফোল্ডিংয়ের মতোই, জেআইটি তথ্যের একটি নীতি হলো ফেডিং (fading)। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন শেখার বিষয়ে আরও দক্ষতা অর্জন করে তখন দ্রুত ধীরে ধীরে তথ্যের উপস্থিতি কমে যায়। জেআইটি তথ্যের শিক্ষাদান পদ্ধতি মূলত নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জ্ঞানকে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে জটিলতা বাড়ায় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই নিয়মগুলি বহুবার অনুশীলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠে এবং এই সময় তথ্য সরাসরি আমাদের কার্যকরী স্মৃতিতে উপলব্ধ থাকে যা নিয়ম গঠনের জন্য প্রয়োজন। বাস্তব জীবনে প্রয়োগের উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক কেউ গল্ফ শিখছে, তখন কোচ সাধারণত ক্লাব ধরার পদ্ধতি, স্ট্যান্স নেওয়া এবং ড্রাইভিং রেঞ্জে প্রথম ড্রাইভ করার সময় সুইং করার নিয়ম বুঝিয়ে দেন, শ্রেণিকক্ষে লেকচারের সময় নয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। ''তথ্য প্রদর্শনী'' ছোট ছোট ইউনিটে সংগঠিত থাকে, যা অপরিহার্য কারণ নতুন তথ্যের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে অনুশীলনের সময় প্রক্রিয়াকরণ অতিরিক্ত চাপ কমায়। বাস্তব জীবনে, যেমন একটি জটিল যন্ত্রের ম্যানুয়াল ধাপে ধাপে কাজগুলো ব্যাখ্যা করে, ব্যবহারকারীর পূর্ব জ্ঞান ধরে নিয়ে শুধু কিছু ধাপ উল্লেখ করে না। এই পদ্ধতিতে তথ্য সরাসরি প্রদর্শন করা উচিত যখন শিক্ষার্থীদের সেই তথ্য প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট শেখার কাজের পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে কাজ করার জন্য <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সব সময় কার্যকর নাও হতে পারে। যেমন চাকরির প্রশিক্ষণে, অনলাইন হেল্প সিস্টেম, চেকলিস্ট এবং ম্যানুয়ালসহ বিভিন্ন সহায়তা সহজে পাওয়া যায়। এর কারণ হলো প্রয়োজনীয় সময়ে জেআইটি তথ্য সরাসরি প্রদান না হওয়া। ''ডেমন্সট্রেশন ও ইনস্ট্যান্স'' হল পুনরাবৃত্ত দক্ষতার উপাদান, যা সাধারণত ''সাধারণত্ব'' নামে পরিচিত। যেমন নিয়ম বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করা যায়, সেগুলোকে ''ডেমন্সট্রেশন'' বলা হয়; অন্যদিকে ধারণা, পরিকল্পনা ও নীতিগুলোকে ''ইনস্ট্যান্স'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। ''কগনিটিভ ফিডব্যাক'' জেআইটি তথ্যের একটি চূড়ান্ত অংশ, যা কর্মদক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে প্রদানকৃত প্রতিক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত। এই ফিডব্যাক সংগ্রহ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করে। অর্থাৎ যদি নিয়মগুলো সঠিকভাবে পরিস্থিতিতে প্রয়োগ না হয়, তাহলে শিক্ষার্থী "ত্রুটি" করে বলে ধরা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই ফিডব্যাকগুলি যত দ্রুত সম্ভব প্রদান করার পরামর্শ দেয়া হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা সঠিক তথ্য তাদের কার্যকরী স্মৃতিতে সঠিকভাবে ইনপুট করতে পারে। 4C/ID মডেল বিশ্বাস করে যে শেখার সময় ত্রুটি হওয়া অনিবার্য এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের ভুল চিনতে শিখে এবং সেগুলো থেকে কিভাবে উত্তরণ করতে হয় তা শিখে। ভালোভাবে ডিজাইন করা ফিডব্যাক শিক্ষার্থীদের জানায় কেন ত্রুটি হয়েছে এবং কিভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারে তার পরামর্শ বা ইঙ্গিত দেয়। শেখার প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য সরাসরি উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন''' ===
শেখার কাজগুলো স্কিমা নির্মাণে সহায়ক এবং জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর সংকলন সহজতর করতে ডিজাইন করা হয়। 4C/ID মডেলের শেষ উপাদান, পার্ট-টাস্ক অনুশীলন, নির্বাচিত পুনরাবৃত্ত দক্ষতার অতিরিক্ত অনুশীলন দেয় যাতে প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তা স্তর অর্জন করা যায়। এটি প্রক্রিয়াগত জ্ঞান দ্রুত স্বয়ংক্রিয় করার একটি উপায়। সেখানে শিক্ষার্থীরা একই সময়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করার কারণে সৃষ্ট জ্ঞানগত চাপের সমস্যা এড়িয়ে যায়। দক্ষতা সাধারণত ধীরে ধীরে বিকাশমান একটি প্রক্রিয়া যা আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী উৎপাদনগুলোর স্বয়ংক্রিয়করণের জন্য অনুশীলনের প্রসারনের ওপর নির্ভর করে। জেআইটি তথ্য উপস্থাপন নতুন তথ্যকে সীমাবদ্ধভাবে নিয়মে কোড করার লক্ষ্য রাখে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন উপযুক্ত জেআইটি তথ্য দ্বারা সমর্থিত হবে যতক্ষণ না তারা স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন করে। ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার ও তাঁর সহযোগীরা বিশ্বাস করেন যে কিছু পার্ট-টাস্ক অনুশীলন কাজের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে কারণ এর সময়কাল তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত ও বিরতিপূর্ণ এবং জটিল, প্রামাণিক কাজের সঙ্গে মিশ্রিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের উপদক্ষতাগুলো অনুশীলন করতে এবং সেগুলোকে সামগ্রিক কাজের সাথে সংযুক্ত করতে সাহায্য করে। অনুশীলনকৃত বিষয়গুলো বিভিন্ন পরিস্থিতি বা পরিবেশের জন্য বহুমুখী হওয়া উচিত যাতে অন্তর্নিহিত নিয়মগুলো সব পরিস্থিতিতে প্রয়োগযোগ্য হয়। তবে, যখন পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উচ্চ স্তরের স্বয়ংক্রিয়তা প্রয়োজন হয়, তখন শেখার কাজগুলো পর্যাপ্ত পুনরাবৃত্তি প্রদান করতে পারে না যা শক্তিশালীকরণের জন্য জরুরি। তখন অতিরিক্ত পার্ট-টাস্ক অনুশীলন প্রয়োজন হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। অন্যান্য পরিস্থিতিতে যেমন সাধারণ পরিবেশে শেখার ক্ষেত্রে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন জটিল শেখার জন্য সহায়ক নয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন পদ্ধতি নিয়ম বা প্রক্রিয়ার সংকলন এবং তাদের পরবর্তী শক্তিশালীকরণকে উৎসাহিত করে। এটি একটি খুব ধীর প্রক্রিয়া যা বহুবার অনুশীলনের প্রয়োজন হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের উদাহরণ হিসেবে দেওয়া যায় গুণন তালিকা বা সঙ্গীত যন্ত্রের স্কেল বাজানো। এটি যথাযথ কগনিটিভ প্রসঙ্গে শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কার্যকর প্রমাণিত হয় শুধুমাত্র তখনই যখন শিক্ষার্থীরা জটিল দক্ষতার সহজ সংস্করণে পরিচিত হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। কাজের শ্রেণীবিভাগ নির্দেশ করে যে, এগুলো হয় অনেক উচ্চতর দক্ষতার কার্যকারিতা সক্ষম করে, অথবা একাধিক সমন্বিত দক্ষতার সঙ্গে একই সময়ে সম্পাদিত হতে হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। সুতরাং, প্রথমে কাজের শ্রেণি চিহ্নিত করে তারপরে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শুরু করা উচিত। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের ''প্র্যাকটিস আইটেমস'' শিক্ষার্থীদের অনেকবার অনুশীলন করতে উৎসাহিত করে যেমন প্রবাদ আছে, "অনুশীলনই পারদর্শিতা আনে"। তবে শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে যে সম্পূর্ণ অনুশীলন সেটটি বহুমুখী এবং সব পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হতে হবে। এর ফলে একটি বিস্তৃত পরিস্থিতি-নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি হবে। যেমন অত্যন্ত জটিল অ্যালগরিদমের ক্ষেত্রে, সেগুলোকে সহজ থেকে জটিল অনুশীলন আইটেমে ভাগ করা এবং পরে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ কাজের দিকে এগোনো প্রয়োজন হতে পারে। এই পদ্ধতিকে ''পার্ট-হোল অ্যাপ্রোচ'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের সঠিক ব্যবহার পুনরাবৃত্ত দক্ষতার সঠিক সম্পাদন নিশ্চিত করে। এছাড়াও, দক্ষতাকে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় করতে ব্যাপক অতিরিক্ত অনুশীলন প্রয়োজন হতে পারে। স্বয়ংক্রিয়তার উপর খুব বেশি নির্ভরশীল কাজের ক্ষেত্রে, মাঝে মাঝে চূড়ান্ত লক্ষ্য সঠিকতা নয়। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত গৃহীত সঠিকতা, উচ্চ গতি এবং সম্পাদনের সমন্বয়ই লক্ষ্য হয়। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে, পুনরাবৃত্ত দক্ষতাগুলো প্রথমে গতি চাপের মধ্যে অনুশীলন করা হয়, এরপর গতি মাপকাঠি অর্জিত হলে সময় ভাগাভাগি শর্তে অনুশীলন করা হয়। তারপরই দক্ষতাটি সমগ্র কাজ হিসেবে অনুশীলন করা হয়। অর্থাৎ, সম্পাদনার মানদণ্ড ধীরে ধীরে সঠিকতা থেকে সঠিকতা ও গতি, এবং পরে সঠিকতা, গতি ও সময় ভাগাভাগির শর্তে বা উচ্চ সামগ্রিক কাজের চাপের মধ্যে পরিবর্তিত হয় <ref>Salisbury, D.F., Richards, B.F., & Klein, D. (1985). Designing practice: A review of prescriptions and recommendations from instructional design theories. Journal of InstructionalDevelopment, 8(4), 9- 19.</ref>। সংক্ষিপ্ত, বিরতিপূর্ণ পার্ট-টাস্ক অনুশীলন বা অতিরিক্ত অনুশীলনের ফলাফল দীর্ঘ, ঘনীভূত পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের চেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শেখার কাজগুলোর সাথে মিলিয়ে করানো উচিত, কারণ এতে বণ্টিত অনুশীলন হয় এবং শিক্ষার্থীরা পুনরাবৃত্ত উপাদানকে পুরো জটিল দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''গবেষণা ও বাস্তবায়ন''' ===
ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) কর্তৃক এক-দ্বারা-দ্বি পূর্বপরীক্ষা-পশ্চাত্পরীক্ষাভিত্তিক একটি আধা-প্রায়োগিক নকশা ব্যবহার করে শিক্ষার পরিবেশের কার্যকারিতা নিয়ে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে 4C/ID পদ্ধতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর সাথে একত্রিত হয়ে শিক্ষাগত অগ্রগতিতে সেরা ফলাফল দেখিয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। নির্ভরশীল চলক ছিল শিক্ষাগত অগ্রগতি, যা পূর্বপরীক্ষা স্কোর থেকে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর বিয়োগ করে হিসাব করা হয়েছে। স্বাধীন চলক ছিল তিনটি চিকিৎসা পরিস্থিতি। তিনটি দলের মধ্যে তুলনা করা হয়েছিল; প্রচলিত পাঠদানের পদ্ধতি বনাম আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ বনাম আইসিটি ছাড়াই 4C/ID শিখন পরিবেশ। গবেষণায় ঘানা’র ছয়টি মাধ্যমিক প্রযুক্তি বিদ্যালয় থেকে ১৮ বছর গড় বয়স এবং ১.৩ বছর মান বিচ্যুতি সহ মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূল্যায়নের কাজের মধ্যে ছিল ২৬টি পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষা উপাদান; ১৩টি রক্ষণশীলতা এবং ১৩টি স্থানান্তর পরীক্ষা। ফলাফল দেখিয়েছে যে তিনটি দলের শিক্ষার্থীদের পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষার মধ্যে পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য ছিল। সমস্ত দলের গড় পূর্বপরীক্ষা স্কোর ছিল ৬.২৮। সেখানে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর ছিল ১৪.৩৯। ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) প্রদত্ত ডেটা গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ পূর্ব ও পশ্চাত্পরীক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই উচ্চ স্কোর অর্জন করেছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। গবেষকেরা উপসংহারে বলেছেন, এই ফলাফলগুলি নির্দেশ করে যে পরীক্ষামূলক দল এমন সমস্যা সমাধানে আরও দক্ষ ছিল। সেখানে যুক্তি, প্রতিফলন এবং প্রক্রিয়া, তথ্য ও ধারণা পুনরুদ্ধার করতে হয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>।
শ্রেণিকক্ষে এই চার উপাদানবিশিষ্ট নির্দেশনামূলক নকশা ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষত জটিল পরিবেশে শেখার জন্য উপকারী হবে। এই মডেল প্রয়োগ করতে হলে, যিনি পাঠদান করছেন তার ঐ বিষয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হওয়া আবশ্যক। এতে করে শিক্ষার্থীদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে এবং বিষয়বস্তুর গভীর উপলব্ধি অর্জন সম্ভব হবে। মিডিয়া বা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অতিরিক্ত সহায়তাও প্রয়োজন হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, এই মডেলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী সম্পর্ক একটি সমন্বিত দলের মতো কাজ করা আবশ্যক।
=== '''সারাংশ''' ===
চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল জ্ঞানীয় শেখা এবং দক্ষতার উপর গবেষণার ভিত্তিতে নির্মিত। এটি জটিল দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা নকশার একটি কাঠামো প্রদান করে। মডেল অনুযায়ী, অভিজ্ঞতাগুলো বাস্তবসম্মত এবং ক্রমান্বয়ে আরও প্রামাণ্য কাজ হওয়া উচিত; যেমন প্রকল্প, কেস, ও দৃশ্যপট। শিক্ষার্থীদেরকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয় তা তথ্য দেওয়ার উপর নয়, বরং অনুশীলনের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এই উপাদানগুলো এমনভাবে অনুশীলন করা হবে যতক্ষণ না কেউ প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তার স্তরে পৌঁছায়, কোনো সহায়তা ছাড়াই। যখন শিক্ষার্থীরা চারটি উপাদান সম্পন্ন করে, তখন বলা যায় যে সে ঐ জ্ঞান বা কার্যকলাপে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, 4C/ID মডেল ভুলবিহীন শেখার ধারণাকে সমর্থন করে না<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই মডেলটি জটিল দক্ষতার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিকাশ এবং যেখানে স্থানান্তর একটি প্রধান শিক্ষাগত লক্ষ্য সেখানে ব্যবহার করা উচিত। এই মডেলটি ধারণাগত জ্ঞান বা প্রক্রিয়াগত দক্ষতা শেখানোর জন্য তৈরি নয়, এবং খুব সংক্ষিপ্ত প্রোগ্রামগুলোর জন্যও এটি উপযোগী নয়<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। যদিও এসব গবেষণা হয়েছে, চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল নিয়ে আরও গবেষণা চলছে।
== সমন্বিত শিক্ষা ==
'''প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশের মাধ্যমে সমন্বিত শিক্ষা'''
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, এর ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহ ও শেয়ার করতে পারছে। '''সমন্বিত শিক্ষা'''। অর্থাৎ সহপাঠী বা দলের মাধ্যমে জ্ঞান ভাগাভাগি ও অর্জন এখন প্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্টারঅ্যাকশনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সামাজিক মিথস্ক্রিয়া জ্ঞানীয় বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিক্ষার্থীদের তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকের সাথে মিথস্ক্রিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিনিময়গুলোর মধ্যে পড়ে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, একটি প্রশ্ন উঠে আসে—এই ধরনের মিথস্ক্রিয়াগুলোতে প্রযুক্তি কীভাবে সহায়তা করতে পারে বা তা অন্তর্ভুক্ত করা যায়? একটি ভাল প্রযুক্তি নকশা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারে যদি তা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার কার্যপদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়; যেমন মনোযোগ, কার্যকারী স্মৃতি, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং কীভাবে জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা গড়ে ওঠে। এর একটি উদাহরণ হলো—সহায়ক এবং সময়োপযোগী (জেআইটি) তথ্য, প্রশিক্ষণ এবং ধাপে ধাপে সহায়তা যা কার্যকর শেখার কৌশল হিসেবে কাজ করে। একটি মূল বিষয় হলো—একটি ভালো নকশা ব্যবস্থা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এই অংশটি বিভিন্ন প্রযুক্তি নকশার মডেল এবং সমন্বিত শিক্ষা এই ব্যবস্থার মধ্যে কার্যকর কি না, তার বিশ্লেষণ দ্বারা বিভক্ত করা হবে। যেসব মডেলগুলোর মাধ্যমে এটি বিশ্লেষণ করা হবে তা হলো—বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা, সহপাঠীদের সাথে শেখা, অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা, সৃজনের মাধ্যমে শেখা, এবং গেমসের মাধ্যমে শেখা। সমন্বিত শিক্ষা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন বিষয়বস্তু শেখানো বা ভাগাভাগি করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের একে অপরের সাথে দলগত কাজ করার অভিজ্ঞতা দেয়। তবে, যদিও এটি শ্রেণিকক্ষে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দারুণ একটি ব্যবস্থা হিসেবে দেখা যায়, এটি কিছু সীমাবদ্ধতা বহন করে এবং এখনো পুরোপুরি কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিক্ষকদের এসব প্রযুক্তি ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়, তবে এগুলো সহায়ক এবং তথ্যবহুল হতে পারে।
প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন ধরন ও এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই যা বিবেচনা করতে হয় তা হলো—মানুষ কীভাবে শেখে? প্রায়ই দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী তথ্য শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে কারণ তারা বোঝার চেয়ে মুখস্থ করায় বেশি মনোযোগ দেয়<ref>Bransford, J. D., Brown, A. L., & Cocking, R. R. (2000). How people learn. Washington DC: National Academy Press. (pp. 1-50)</ref>। তবে, নোবেল বিজয়ী হারবার্ট সাইমনের একটি চমৎকার উক্তি আছে—“জানার অর্থ এখন আর কেবল স্মরণ করা ও পুনরাবৃত্তি করা নয়, বরং এটি কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় ও কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা জানা।” বিষয়বস্তুর প্রতি ভালোভাবে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রকৃত তথ্যজ্ঞান, ধারনার কাঠামোতে তথ্য ও ধারণা বোঝা এবং জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে মনে পড়ে ও প্রয়োগ করা যায়। এর মানে হলো—যদি শিক্ষার্থীরা প্রকৃত তথ্যভিত্তিক ভিত্তি রাখে, তবে তারা জানবে কোন তথ্য সত্য এবং তাদের শেখার সাথে প্রাসঙ্গিক। ধারনার কাঠামোতে তথ্য বোঝা মানে হলো শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে শিখছে তার প্রেক্ষাপটে তথ্যের তাৎপর্য বুঝতে পারছে এবং কিভাবে তা ঐ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে উদ্ধার ও প্রয়োগযোগ্য হয়, মানে হলো শিক্ষার্থীরা যা শিখেছে বা শিখছে তা অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োগ করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে এসবের বাস্তবায়নে কিছু অসুবিধা দেখা যায়। শিক্ষকরা সমস্যায় পড়েন কারণ শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে আগে থেকে কিছু ধারণা নিয়ে আসে। একই সঙ্গে, শিক্ষকদের একটি নির্ধারিত পাঠসূচি শেষ করতে হয়, এবং যখন তাদের প্রতিটি বিষয়ে গভীরভাবে যেতে হয় বা কোনো অংশ বারবার শেখাতে হয়, তখন তা কঠিন হয়ে পড়ে। শিক্ষাজীবনে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে অনেক শিক্ষক বিশ্বাস করেন যে পূর্ববর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয় শিখে এসেছে, কিন্তু তা সবসময় সঠিক নয়। কিছু শিক্ষার্থী মনে করতে পারে তারা পিছিয়ে পড়েছে, বা তারা প্রশ্ন করতে কিংবা সাহায্য চাইতে লজ্জা পায়। এখানেই প্রযুক্তি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে এবং শ্রেণিকক্ষে বা শিক্ষার্থীর নিজস্ব সময়ে ব্যবহারের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, এই প্রযুক্তি ব্যবস্থাগুলো শিক্ষকের বিকল্প নয়, বরং শিক্ষকের পাঠের পরিপূরক হিসেবে কাজ করা উচিত। এগুলোর কাজ শেখার ভিত্তি তৈরি করা নয়, বরং পরীক্ষার প্রস্তুতি বা প্রকল্পে সহায়তার জন্য পর্যালোচনার উপকরণ হিসেবে কাজ করা। শিক্ষকরা যদি এগুলোর উপর অতিরিক্ত নির্ভর করে, তবে শিক্ষার্থীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও মিথস্ক্রিয়া হারিয়ে ফেলবে যা শুধুমাত্র একজন বাস্তব শিক্ষক থেকেই পাওয়া সম্ভব। প্রযুক্তিকে শিক্ষকের বিকল্প হিসেবে দেখা সঠিক পন্থা নয়, বরং এটি একটি সহায়ক সরঞ্জাম হিসেবে দেখা উচিত।
এই ব্যবস্থাগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া যাক—
'''বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা: কগনিটিভ টিউটর ও টেলিমেন্টরিং'''
প্রযুক্তি ব্যবস্থার প্রথম ধরণটি হলো বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা। এর দুটি উদাহরণ হলো '''কগনিটিভ টিউটর''' এবং টেলিমেন্টরিং। '''কগনিটিভ টিউটর''' হলো “এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা ‘কার্যকরভাবে শেখা’কে সহায়তা করে” <ref>Bollen, L., Harrer, A., Mclaren, B. M., Seawall, J., & Walker, E. (1995) Collaboration and Cognitive Tutoring: Integration, Empirical Results, and Future Direction</ref>। কগনিটিভ টিউটর জন অ্যান্ডারসনের ACT তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এই তত্ত্বে তিনটি মূলনীতি রয়েছে—প্রথমটি হলো প্রক্রিয়াগত ও ঘোষণামূলক জ্ঞানের পার্থক্য, দ্বিতীয়টি হলো জ্ঞান সংকলন এবং তৃতীয়টি হলো অনুশীলনের মাধ্যমে জ্ঞানকে মজবুত করা। <ref>Anderson, J., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned: Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207.</ref> কগনিটিভ টিউটরের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট প্রসঙ্গভিত্তিক প্রতিক্রিয়া সরবরাহ করা। মূলত গণিত এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিক্ষায় কগনিটিভ টিউটর ব্যবহৃত হয়। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করার সুযোগ দেয়, ফলে তারা বিষয়বস্তুর গভীরতা অনুধাবন করতে পারে এবং অন্যদের সাথে যৌথভাবে সমস্যা সমাধানে অংশ নিতে পারে।
কগনিটিভ টিউটরের ওপর একটি গবেষণা করেছিলেন কেনেথ আর. কোয়েডিংগার। এর শিরোনাম ছিল ''Intelligent Tutoring Goes To School in the Big City'' (বড় শহরের স্কুলে বুদ্ধিসম্পন্ন টিউটরিং চলে)। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, “পিটসবার্গ নগর গণিত প্রকল্" (PUMP) একটি বীজগণিত পাঠক্রম তৈরি করেছে যা বাস্তব জীবনের সমস্যার গাণিতিক বিশ্লেষণ এবং কম্পিউটেশনাল টুল ব্যবহারের ওপর কেন্দ্রীভূত। আমরা PAT নামের একটি বুদ্ধিমান টিউটর তৈরি করেছি, যা এই পাঠক্রমকে সহায়তা করে এবং এটি পিটসবার্গের তিনটি স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। PAT শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক ছিল কারণ এটি শ্রেণিকক্ষে যারা শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ত তাদের সহায়তা করত। ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে PAT পাঠক্রমটি ১০টি পাঠ ও ২১৪টি সমস্যার অন্তর্ভুক্তিতে সম্প্রসারিত হয়। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন কম্পিউটার ল্যাবে PAT-এ কাজ করত, এবং তাদের শেখার সময় আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (প্রায় ২৫ দিন থেকে ৭০ দিনে) বৃদ্ধি পায়।” <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997).Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>
টেলিমেন্টরিং, যা ‘ই-মেন্টরিং’ বা ‘অনলাইন-পরামর্শ’ নামেও পরিচিত <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>, শিক্ষার্থীদের এমন একজন ব্যক্তির সাথে কাজ করার সুযোগ দেয় যিনি তাদের কোর্স উপাদানের সমস্যায় সহায়তা করতে পারেন। এই মেন্টরিং প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন এবং সমস্যার সমাধান কেন্দ্রিক। তবে টেলিমেন্টরিং-এর একটি সীমাবদ্ধতা হলো, শিক্ষার্থীরা একই পরামর্শদাতার সাথে বারবার কাজ করতে পারে না। তারা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করলেও একজন শিক্ষকের সাথে যেরকম ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে, তা হয় না। সরাসরি একজন শিক্ষকের সাথে শিখন এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেখার মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি ভিন্ন, যা শিক্ষার্থী ও পরামর্শকের মধ্যে সংযোগহীনতার অনুভূতি তৈরি করতে পারে। কগনিটিভ টিউটর বা সফটওয়্যার নির্ভর শেখার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
'''সহপাঠীদের সঙ্গে শেখা: নলেজ ফোরাম ও স্টারবার্স্ট'''
নলেজ ফোরাম একটি সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষার্থীরা ধারণাগুলো নিয়ে কাজ করে এবং তা বিকশিত করে। এটি ব্যক্তির পরিবর্তে সম্প্রদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এখানে শিক্ষার্থীরা বা ব্যক্তিরা এমন একটি ডেটাবেস তৈরি করতে পারে যেখানে জ্ঞান গঠিত হয়, আর এখানে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নলেজ ফোরামের মূল উপাদান হলো ‘নোট’ এবং ‘ভিউ’ <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। একটি ভিউ হলো ব্যক্তিরা যে নোট তৈরি করে সেগুলোর একটি সংগঠিত রূপ, যা ধারণা মানচিত্র, চিত্র বা যেকোনো ভিজ্যুয়াল কাঠামো হতে পারে। এই কাঠামোর মধ্যেই নোটগুলো প্রদর্শিত হয়। এটি বিশেষভাবে সহায়ক কারণ এটি ভিজ্যুয়াল লার্নিংকেও অন্তর্ভুক্ত করে। শিক্ষার্থীরা চিত্র ও মানচিত্রের মাধ্যমে ধারণাগুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি করতে এবং তা বোঝার সুযোগ পায়। এটি এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দলগতভাবে কাজ করতে পারে এবং একটি ডেটাবেসে তথ্য যোগ করতে পারে, যা সময়ের সাথে সাথে প্রসারিত হয়।
তবে জ্ঞান অর্জনের জন্য শুধুমাত্র নলেজ ফোরামই একমাত্র মাধ্যম নয়। বই, বক্তৃতা ও শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি পায়। নলেজ ফোরাম মূলত একটি ডেটাবেস যেখানে একটি বিষয় বিকশিত ও রূপান্তরিত হয়। নলেজ ফোরামের অনুরূপ স্টারবার্স্ট নামের আরও একটি পদ্ধতিও রয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে ধারণা ভাগাভাগি করতে পারে। তবে স্টারবার্স্টে ধারণাগুলো একটি জালের মতো বিস্তৃত হয়। এই দুটি পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান গঠন ও সম্প্রসারণ।
নলেজ ফোরাম ব্যবহার করে ক্যারল এবং ইউয়েন ইয়ান চ্যান একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে:
“নমুনায় হংকংয়ের আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফর্ম ওয়ান থেকে সিক্স (বয়স ১২–১৭) পর্যন্ত ৫২১ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা কম্পিউটার-সহায়িত জ্ঞান নির্মাণের ওপর একটি গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিল। নমুনার মধ্যে ৩২২ জন পুরুষ এবং ১৯৯ জন মহিলা শিক্ষার্থী ছিল। সেখানে ২১৬ জন জুনিয়র হাই (গ্রেড ৭–৯, বয়স ১২–১৪) এবং ৩০৫ জন সিনিয়র হাই (গ্রেড ১০–১২, বয়স ১৫–১৭) শ্রেণির। হংকংয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কৃতিত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যান্ডে ভাগ করা হয়; এখানে ২৬৭ জন শিক্ষার্থী উচ্চ ব্যান্ড এবং ২৫৪ জন নিম্ন ব্যান্ডের স্কুল থেকে এসেছে। এই গবেষণাটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়-বিদ্যালয় অংশীদারিত্ব প্রকল্পের অংশ ছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য জ্ঞান নির্মাণ পেডাগজি উন্নয়ন করা। প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক/পরামর্শকগণ শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা করতেন। পুরো বছরজুড়ে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করা হতো যাতে শিক্ষকরা জ্ঞান নির্মাণের দার্শনিক ও পদ্ধতিগত দিকটি ভালোভাবে বুঝতে পারেন; প্রকল্প শিক্ষকদের একটি দল মিলে পাঠক্রম পরিকল্পনা করতেন এবং শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শনে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ও শিক্ষক একসাথে যেতেন।
একটি আদর্শ জ্ঞান নির্মাণশীল শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষার্থীরা সাধারণত অনুসন্ধানের ক্ষেত্র নির্ধারণ করে এবং তাদের নিজস্ব ধারণা ও প্রশ্ন উপস্থাপন করে—‘ধারণাগুলোকে জনসমক্ষে তুলে ধরা’কে সমষ্টিগত উন্নয়নের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয় <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। এশীয় শ্রেণিকক্ষগুলিতে শিক্ষার্থীদের একটি সম্প্রদায় হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা পাওয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পে শ্রেণিকক্ষ ও অনলাইন আলোচনার সমন্বয় ছিল। সেখানে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতামূলক অনুসন্ধানে অংশগ্রহণ করত—প্রশ্ন উপস্থাপন, ধারণা ও তত্ত্ব প্রকাশ, অন্যদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ এবং সমষ্টিগত জ্ঞান উন্নয়নে ব্যাখ্যা গঠন করত।
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল দুটি প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে, যেগুলো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার অভিজ্ঞতা এবং অনলাইন শেখার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করেছিল। বিশ্লেষণের সময় অনলাইন শেখার পরিবর্তনশীল প্রতিক্রিয়াযুক্ত উপাদানগুলো বাদ দিয়ে কেবলমাত্র জ্ঞান নির্মাণ এবং শেখার পদ্ধতির উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের নলেজ ফোরাম ব্যবহারের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের জন্য Analytic Toolkit (বিশ্লেষণাত্মক টুলকিট) ব্যবহার করা হয়েছিল। অ্যানালাইটিক টুলকিট সংস্করণ ৪.৬ শিক্ষার্থীদের অনলাইন ফোরামে পারস্পরিক যোগাযোগের ধরণ বিশ্লেষণের জন্য সর্বোচ্চ ২৭টি বিশ্লেষণ সরবরাহ করে।
আমরা আগের গবেষণাগুলোতে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচক নির্বাচন করেছি, যেমন:
(i) লিখিত নোটের সংখ্যা: এটি অনলাইন অংশগ্রহণ পরিমাপের সবচেয়ে প্রচলিত সূচক। (ii) স্ক্যাফোল্ডস: স্ক্যাফোল্ড হলো চিন্তার সূচক বাক্যাংশ যা শিক্ষার্থীদের চিন্তা গঠনে সহায়তা করে, যেমন “আমি বুঝতে চাই”, “আরও ভালো একটি তত্ত্ব”, “আমাদের জ্ঞান একত্রিত করা”। (iii) সংশোধন: শিক্ষার্থীরা নোট সংশোধনের চেষ্টা করলে তা রেকর্ড করা হয়। জ্ঞান নির্মাণের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ধারণার ওপর গভীর কাজের ইঙ্গিত দেয়। (iv) পড়া নোটের সংখ্যা: এটি কমিউনিটি সচেতনতা যাচাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অন্যদের কী লেখা হয়েছে তা না জেনে আলোচনায় অংশ নেওয়া যায় না। (v) বিল্ড-অন নোটের সংখ্যা: এটি নতুন নোট পোস্ট করার সংখ্যা থেকে আলাদা, এটি পূর্ববর্তী নোটের প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে। এটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার গভীরতা বোঝায়। (vi) কীওয়ার্ড: শিক্ষার্থীরা নোট লেখার সময় কীওয়ার্ড যোগ করতে পারে। এই কীওয়ার্ড ব্যবহার করে অন্যরা সম্পর্কিত বিষয়ে আরও নোট খুঁজে পেতে পারে। কীওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং কমিউনিটি সচেতনতা প্রকাশ পায়।” <ref>Chan, C. Chan, Y. (2010). Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1), Aug, 2011. pp. 1445-1457</ref>
'''অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা: অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশন ও WISE'''
অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে ''দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ জ্যাসপার উডবারি সিরিজ'' নামে পরিচিত ভিডিওভিত্তিক সমস্যা সমাধানের একটি জটিল সিরিজ। এই সিরিজগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন প্রতিটি জ্যাসপার অ্যাডভেঞ্চার একটি জটিল গাণিতিক সমস্যার উপর কেন্দ্রীভূত থাকে, যা সমাধান করতে হয়। যেহেতু এই ধরনের গাণিতিক সমস্যা অনেক জটিল, তাই একা একা সমাধান করা প্রায় অসম্ভব। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাধিক সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং তাদের ধারণাকে সঠিক প্রমাণ করতে প্রমাণ হাজির করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে ওঠে, কারণ এখানে শুধুমাত্র একটি সঠিক উত্তর নেই। শিক্ষার্থীরা আরেকটি উপায়ে একসাথে কাজ করে সমস্যার সমাধান করতে পারে, যার নাম হলো WISE (Web-based Inquiry Science Environment)। এখানে শিক্ষার্থীরা একটি ওয়েবভিত্তিক পরিবেশে একত্রে কাজ করে এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা রিসাইক্লিং সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে। WISE ব্যবহার করে শিক্ষকরা একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা যেসব সমাধান দিচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। “WISE নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রমাণ ও পরামর্শ সরবরাহ করে; নোট, ভিজ্যুয়ালাইজেশন, আলোচনা ও মূল্যায়ন টুলস প্রদান করে; এবং সহযোগিতা, আত্মবিশ্লেষণ ও সমাধান ডিজাইন করার জন্য নির্দেশনা দেয়” <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের মূল ভাবনা হলো, শিক্ষার্থীরা প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতিতে শেখার মাধ্যমে জ্ঞান নির্মাণ করে। এতে উৎপাদনশীল শেখার সুযোগ ঘটে। সেখানে বিভিন্ন উপ-লক্ষ্য তৈরি হয়। WISE-এর মতো প্রোগ্রামে মূল ভাবনাগুলো হলো, শেখার উদ্দেশ্য থাকে নির্ধারিত এবং শিক্ষার্থীরা পূর্বের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে প্রশ্নের উত্তর খোঁজে।
'''সৃষ্টির মাধ্যমে শেখা: স্ক্র্যাচ'''
সৃষ্টির মাধ্যমে শেখার একটি উদাহরণ হলো স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম। এটি একটি ওয়েবসাইট যেখানে মিডিয়া ও ভিজ্যুয়াল উপাদান প্রধান ভূমিকা পালন করে। স্ক্র্যাচ-এ শিক্ষার্থীরা এককভাবে বা দলগতভাবে কাজ করে একটি অনলাইন কমিউনিটির জন্য ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে পারে। তারা একে অপরের সঙ্গে তাদের তৈরি করা কাজগুলো ভাগাভাগি করতে পারে। স্ক্র্যাচ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অবজেক্টের মাধ্যমে চিন্তা করতে পারে, সেইসাথে তাদের কল্পনার জগৎ থেকে কিছু তৈরি করতে পারে। তারা তাদের ভিজ্যুয়াল সৃষ্টির সঙ্গে অডিওও যুক্ত করতে পারে। শিক্ষার্থীরা একসাথে কাজ করে এই প্রজেক্ট তৈরি করে এবং শ্রেণিকক্ষে তা উপস্থাপন করতে পারে, অথবা শিক্ষক নির্দিষ্ট কোনো থিম বা বিষয়ে ভিত্তি করে প্রজেক্ট নির্ধারণ করতে পারেন। এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে এবং সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ধরো তুমি অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস ক্লাসে আছো এবং তোমার চূড়ান্ত প্রজেক্টে সেমিস্টারে শেখা কোনো একটি বিষয় বেছে নিয়ে তার একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে হবে। প্রজেক্টটি দলগত বা এককভাবে করা যেতে পারে। তুমি তোমার দলের সদস্যদের সঙ্গে স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলে এবং শুরু করলে বিভিন্ন চরিত্র যেমন আহত সৈনিক, যোদ্ধা ইত্যাদি তৈরি করতে। তোমরা দলগতভাবে আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করছো এবং একে একে সেগুলো তৈরি করছো। ধীরে ধীরে তোমাদের কল্পনার ইতিহাসচিত্র বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখন তুমি সেই ইতিহাসের অংশটি একটি চিত্র হিসেবে দেখতে পাচ্ছো এবং তা সহপাঠীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছো।
'''গেমের মাধ্যমে শেখা: কোয়েস্ট আটলান্টিস'''
শিক্ষার্থীদের একসাথে কাজ করার আরেকটি উপায় হলো গেম। এর একটি উদাহরণ হলো কোয়েস্ট আটলান্টিস। এই গেমটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতি ও জগত উপস্থাপন করে। সেখানে তারা সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং বিভিন্ন কাজ বেছে নিয়ে সমাধান করতে হয়। এটি একটি আকর্ষণীয় গেম, তবে এটি শ্রেণিকক্ষের জন্য নয়, বরং শিক্ষার্থীদের অবসরের সময়ে খেলার জন্য উপযুক্ত। এই গেমটি '''প্রাসঙ্গিক শিক্ষার''' জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত; এটি এমন এক ধরনের শিক্ষা যেখানে সামাজিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করে শেখা হয়।
কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক শেখা শিক্ষার্থীদের উপকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার একটি চমৎকার উপায়। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে—যেমন শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ডিভাইস না থাকা, শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে শুধু প্রোগ্রামের সঙ্গে খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। আবার যেসব প্রোগ্রাম সমস্যা সমাধানের সময় বারবার সহায়তা বা হিন্ট দেয়, সেগুলোতে শিক্ষার্থীরা চেষ্টাই না করে কেবল সহায়তা নিতে থাকে। যদিও এই প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিগুলো অনেক সুবিধা নিয়ে আসে, তবুও এর নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সব প্রযুক্তি কখনোই শিক্ষার্থীদের শেখার প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত নয়; বরং এগুলো হওয়া উচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পরিপূরক সহায়তা।
== শব্দকোষ ==
'''জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব (Cognitive Load Theory):''' জন সোয়েলারের প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব, যা কার্যকর স্মৃতি ও নির্দেশনার ওপর গুরুত্ব দেয়।
'''জ্ঞানীয় শিক্ষক (Cognitive tutors)''': এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা 'গাইডেড লার্নিং বাই ডুয়িং' বা ‘করতে করতে শেখা’র জন্য দিকনির্দেশনা দেয়।
'''সহযোগী শিক্ষা''': বন্ধু বা দলীয়ভাবে জ্ঞান ভাগাভাগি ও শেখার প্রক্রিয়া।
'''দক্ষতা বিপরীত প্রভাব''': এমন একটি পর্যায়। সেখানে অতিরিক্ত কগনিটিভ লোডের কারণে সহায়তা ও নির্দেশনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
'''বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ (Extraneous Cognitive Load):''' উপস্থাপনার ধরন অনুযায়ী কার্যকর স্মৃতিতে প্রভাব পড়ার প্রক্রিয়া।
'''জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ (Germane Cognitive Load):''' কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ, যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যয় হয় এবং শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ (Intrinsic Cognitive Load):''' তথ্য যেভাবে উপস্থাপিত হয়, তার ভিত্তিতে স্মৃতির ওপর প্রভাব।
'''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা:''' প্রচেষ্টা-নির্ভর, ভুলপ্রবণ, সহজেই অতিভারযুক্ত এবং মনোযোগকেন্দ্রিক কাজ; =
'''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''': পদ্ধতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ; এগুলো অল্প বা কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ঘটে, উপাত্ত-চালিত এবং খুব কম বা কোনও সচেতন মনোযোগের প্রয়োজন হয় না
'''অবস্থিত শিক্ষা:''' সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত করে যে শিক্ষা অর্জিত হয়।
'''টাস্ক ক্লাস''': সহজ থেকে জটিল বা অর্থপূর্ণ কাজের দিকে অগ্রসর হওয়ার নীতিমালা।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
* Sarfo, F., & Elen, J. (2007). - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। How people learn. - মানুষ কিভাবে শেখে। ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1) - জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. - "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। doi:10.1007/s10984-007-9031-2
== তথ্যসূত্র ==
* - অ্যান্ডারসন, জে, কর্বেট, এটি, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং পেলেটিয়ার, আর (১৯৯৫)। জ্ঞানীয় শিক্ষক: শিখেছি পাঠ: লার্নিং সায়েন্সেসের জার্নাল, ৪ (২), ১৬৭-২০৭।
* - অ্যান্ডারসন, জে আর, হ্যাডলি, ডাব্লুএইচ, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং মার্ক, এমএ (১৯৯৭)। বুদ্ধিমান টিউটরিং বড় শহরের স্কুলে যায়। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন এডুকেশন (আইজেএআইইডি), ৮, ৩০-৪৩।
* বারাব, এসএ, ডজ, টি, এবং ইনগ্রাম-গোবল, এ (২০০৮)। রিফ্লেক্সিভ প্লে স্পেস: একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষা। ''গেমস, লার্নিং অ্যান্ড সোসাইটি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ, এমএ।''
* - ব্রুনিং, আর এইচ, শ্রাও, জি জে, এবং নর্বি, এম এম (২০১১)। Cognitive psychology and instruction (English ভাষায়) (৫th সংস্করণ)। পিয়ারসন।
* বোলেন, এল, হ্যারার, এ, ম্যাকলারেন, বিএম, সিওয়াল, জে, এবং ওয়াকার, ই (১৯৯৫) সহযোগিতা এবং জ্ঞানীয় টিউটরিং: ইন্টিগ্রেশন, অভিজ্ঞতামূলক ফলাফল এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
* - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। ''মানুষ কিভাবে শেখে।'' ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* - ক্রেগ, এস, ঘোলসন, বি, এবং ড্রিসকোল, ডি (২০০২)। "মাল্টিমিডিয়া শিক্ষাগত পরিবেশে অ্যানিমেটেড শিক্ষামূলক এজেন্ট: এজেন্ট বৈশিষ্ট্য, চিত্র বৈশিষ্ট্য এবং অপ্রয়োজনীয়তার প্রভাব"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৪ (২), ৪২৮-৪৩৪। ডিওআই:১০.১০৩৭//০০২২-০৬৬৩.৯৪.২.৪২৮
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* ↑ Kevin O'Neil, D., & Harris, J. B. (২০০৪)। পাঠ্যক্রম ভিত্তিক টেলিমেন্টরিং প্রোগ্রামগুলোতে সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উন্নয়নমূলক প্রয়োজনীয়তাগুলো ব্রিজ করা। ''শিক্ষায় প্রযুক্তি সম্পর্কিত গবেষণা জার্নাল, ৩৭ (২),'' ১১১-১২৮
* মায়ার, আর.ই., হাইজার, জে, এবং লন, এস (২০০১)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে জ্ঞানীয় সীমাবদ্ধতা: বেশি উপাদান উপস্থাপন করার সময় কম বোঝার ফলাফল হয়। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল ৯৩'' (১), ১৮৭-১৯৮।
* মেরিয়েনবোয়ার, জে, ক্লার্ক, আর, এবং ক্রুক, এম (২০০২)। জটিল শিক্ষার জন্য ব্লুপ্রিন্ট: ৪ সি / আইডি-মডেল। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫০ (২), ৩৯-৬৪।
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। ডিওআই:১০.১০০৭/s১০৯৮৪-০০৭-৯০৩১-২
* Scardamalia, M., & Bereiter, C. (২০০৬)। জ্ঞান নির্মাণ: তত্ত্ব, শিক্ষাবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি। ভিতরে আর কে সাওয়ার (সম্পাদনা)। ''লার্নিং সায়েন্সেসের কেমব্রিজ হ্যান্ডবুক'' (পৃষ্ঠা ৯৭-১১৮)। নিউ ইয়র্ক: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস।
* স্যালসবারি, ডিএফ, রিচার্ডস, বিএফ, এবং ক্লেইন, ডি (১৯৮৫)। ডিজাইনিং অনুশীলন: নির্দেশমূলক নকশা তত্ত্বগুলো থেকে প্রেসক্রিপশন এবং সুপারিশগুলোর একটি পর্যালোচনা। জার্নাল অফ ইনস্ট্রাকশনাল ডেভেলপমেন্ট, ৮ (৪), ৯-১৯।
* Schnotz, W., & Rasch, T. (২০০৫)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে অ্যানিমেশনগুলোর প্রভাবগুলো সক্ষম, সহজতর করা এবং বাধা দেওয়া: জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস কেন শেখার উপর নেতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫৩ (৩), ৪৭-৫৮।
* Sweller, J. (২০১০)। উপাদান ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি এবং অভ্যন্তরীণ, বহিরাগত এবং জার্মান জ্ঞানীয় চাপ। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা ২২'' (২), ১২৩-১৩৮। ডিওআই: ১০.১০০৭// এস ১০৬৪৮-০১০-৯১২৮-৫।
* , ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং পাস, এফ (১৯৯৮)। জ্ঞানীয় আর্কিটেকচার এবং নির্দেশমূলক নকশা। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা, ১০ (৩), ২৫১-২৯৬। doi:১০৪০-৭২৬X/৯৮/০৯০০-০২৫১S১৫.০০/০
* ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং আইরেস, পি (২০০৫)। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব এবং ই-লার্নিংয়ের জন্য এর নকশার প্রভাব নিয়ে গবেষণা। ''শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন ৫৩'' (৩), ৫-১৩।
{{সূত্র তালিকা}}{{BookCat}}
87s4z6z97xi9ttbfvccs1a60xkn3ldz
85790
85789
2025-07-07T11:52:56Z
Tahmid
4464
85790
wikitext
text/x-wiki
শিক্ষণ ও শিক্ষার জন্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে, শিক্ষক ও ডিজাইনারদের এটির সম্ভাব্য উপকারিতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে ভালোভাবে বোঝা প্রয়োজন। এই অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে কীভাবে মাল্টিমিডিয়া শেখার পরিবেশে মানুষের জ্ঞানগত প্রক্রিয়াগুলোর উপর প্রভাব পড়ে এবং এই ধরনের পরিবেশ ডিজাইনের জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক নীতিমালা। প্রথম অংশে পরিচিতি দেয়া হয়েছে জ্ঞানীয় চাপ থিওরি সম্পর্কে এবং ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া পরিবেশের জ্ঞানগত চাহিদা শিক্ষার্থীদের শেখার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয় অংশে আলোচনা করা হয়েছে ফোর কম্পোনেন্ট ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন মডেল, যা জটিল দক্ষতা শেখানোর জন্য উপকরণ ও প্রযুক্তি ডিজাইন করতে গবেষণা-ভিত্তিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত, এই অধ্যায়ে দেখা হবে কীভাবে প্রযুক্তি সহযোগিতামূলক শেখাকে সহজতর করতে ব্যবহৃত হতে পারে।
== জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব ==
জ্ঞানীয় চাপ থিওরি বা কগনিটিভ লোড থিওরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যখন শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বিবেচনা করা হয়। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব জন সুয়েলার কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব যা কার্যকর স্মৃতি এবং নির্দেশনার উপর গুরুত্ব দেয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> আমাদের কার্যকর স্মৃতি একই সময়ে মাত্র সীমিত পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়া করতে সক্ষম।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> শিক্ষাদান উপকরণ ডিজাইন করার সময় কার্যকর স্মৃতির এই সীমাবদ্ধতাকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে, বিশেষ করে যখন প্রযুক্তিকে নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ যদি একসাথে খুব বেশি তথ্য উপস্থাপন করা হয় তাহলে কার্যকর স্মৃতি অতিভারপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে—ফলে হয়তো সব তথ্য গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় অথবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুই গ্রহণ করে না। সুয়েলার প্রস্তাব করেন যে জ্ঞানীয় চাপ তিন প্রকার: ইনট্রিনসিক, বাহ্যিক, এবং জারমেইন। এই তিন প্রকার জ্ঞানীয় চাপের পার্থক্য বোঝার মাধ্যমে আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা শেখার জন্য সহায়ক কিনা অথবা তা জ্ঞানীয় চাপের সমস্যা তৈরি করছে কিনা।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>
[[চিত্র:WorkingCogLoad.png|ফ্রেম|জ্ঞানীয় চাপ কীভাবে কার্যকর স্মৃতিকে প্রভাবিত করে]]
=== '''ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ''' বা '''ইনট্রিনসিক কগনিটিভ লোড''' এমন মানসিক প্রক্রিয়া বোঝায় যা কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> সুয়েলারের মতে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায় না, তবে এটি ডিজাইনারদের মাথায় রাখতে হয়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> যেকোনো শেখার উপকরণ কার্যকর স্মৃতির ওপর ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করে; এর মাত্রা নির্ভর করে বিষয়বস্তুর জটিলতার উপর।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো বিষয়ে দক্ষতা বেশি থাকে, তবে ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ তখনো প্রভাব ফেলবে, তবে কম পরিমাণে।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> সুতরাং, শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান বিবেচনায় নিয়ে নতুন তথ্য উপস্থাপন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যক্তির কমলা ফল সম্পর্কে পূর্বজ্ঞান থাকে, তবে কমলার বিভিন্ন অংশ নিয়ে পাঠের সময় তার কার্যকর স্মৃতির ওপর চাপ কম পড়বে, তুলনায় যদি সে কিছুই না জানত।
=== '''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ বা এক্সট্রেনিয়াস কগনিটিভ লোড''' হলো এমন মানসিক প্রক্রিয়া যা শেখার সহায়ক নয় এবং যেটা কাজের ডিজাইন পরিবর্তনের মাধ্যমে দূর করা যায়।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ধারিত হয় শিক্ষাদান ডিজাইনের মাধ্যমে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় শব্দ, ছবি, টেক্সট এবং অ্যানিমেশন বাহ্যিক জ্ঞানীয় চাপ তৈরি করতে পারে। যত বেশি কার্যকর স্মৃতিকে মনোযোগ দিতে হয়, তত কম তথ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়।<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref> বাহ্যিক লোড নিয়ন্ত্রণযোগ্য, ভালো শিক্ষাদান ডিজাইন এই লোড কমায় এবং খারাপ ডিজাইন তা বাড়িয়ে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক প্রজাপতির জীবনচক্র নিয়ে পাঠ দিচ্ছেন এবং স্মার্ট বোর্ডে একটি স্লাইড শো ব্যবহার করছেন। যদি তিনি অপ্রাসঙ্গিক অ্যানিমেশন যোগ করেন, তবে শিক্ষার্থীদের একসাথে তথ্য ও অ্যানিমেশনে মনোযোগ দিতে হয়—ফলে বাহ্যিক লোড বেড়ে যায়।
=== '''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' ===
'''জারমেইন জ্ঞানীয় চাপ''' হচ্ছে কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ যা উপস্থাপিত তথ্যের ইনট্রিনসিক জ্ঞানীয় চাপ প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয় এবং এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> সুয়েলার বলেন, এটি কার্যকর স্মৃতির ওপর স্বাধীন চাপ সৃষ্টি করে না, বরং এটি ইনট্রিনসিক ও বাহ্যিক লোডের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, যদি শিক্ষার্থীর প্রেরণা অপরিবর্তিত থাকে, তবে তার জারমেইন লোডের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকে না।<ref>Sweller, J. (2010). Element Interactivity and intrinsic, extraneous, and germane cognitive load. Educational Psychology Review 22(2), 123-138. doi: 10.1007//s10648-010-9128-5</ref> তাহলে এর সাথে শিক্ষাদানের সম্পর্ক কী? সুয়েলারের মতে, পাঠগুলো এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে কার্যকর স্মৃতি ইনট্রিনসিক লোডের দিকে মনোযোগ দিতে পারে এবং বাহ্যিক লোড কমিয়ে দিলে জারমেইন লোড এবং শেখার মান উভয়ই বৃদ্ধি পায়।
=== গবেষণা ও প্রভাব ===
অভ্যন্তরীণ এবং অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত/অর্থাৎ যদি উভয়ই উচ্চ হয় তাহলে কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্তভাবে চাপগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এর তাৎপর্য হলো, যেহেতু শুধুমাত্র অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই পাঠ পরিকল্পনাকারীদের এটি কম রাখার জন্য কাজ করা উচিত, যাতে করে অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ বেশি থাকলেও কার্যকারী স্মৃতি অতিরিক্ত চাপের শিকার না হয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তত্ত্ব অনুযায়ী, অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির বিশাল ধারণক্ষমতার সদ্ব্যবহার করা উচিত, পূর্ববর্তী স্কিমার ব্যবহার এবং নতুন স্কিমা তৈরি করে কার্যকারী স্মৃতির উপর চাপ কমানো যায়<ref>van Merrienboer, J., & Ayres, P. (2005). Research on cognitive load theory and its design implications for e-learning. Educational Technology Research and Development 53(3), 5-13</ref>। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: নির্ধারিত লক্ষ্যবিহীন সমস্যা উপস্থাপন, কার্যকর অতিরিক্ততা, পদ্ধতি, অসম্পূর্ণ সমস্যা প্রভাব, বিভক্ত মনোযোগ প্রভাব এবং অন্যান্য<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>।
শুরু করার জন্য, বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করতে এবং স্কিমা উত্পাদনকে উত্সাহিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্রিয়াকলাপ পরিবর্তন করার জন্য লক্ষ্য মুক্ত সমস্যাগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য কোনও শিক্ষার্থী লক্ষ্য সম্পর্কিত কৌশলগুলো ব্যবহার করার সম্ভাবনা হ্রাস করে এটি করে। এটি কোনও সমস্যার শব্দ পরিবর্তন করে করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ট্রায়াল এন্ড এরর পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না করে। অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে।<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref> উদাহরণস্বরূপ, একটি সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
প্রারম্ভে, লক্ষ্যবিহীন সমস্যাগুলি ডিজাইন করা হয়েছিল শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার জন্য যাতে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় এবং স্কিমা তৈরি করতে উৎসাহিত করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এটি করার মাধ্যমে, শিক্ষার্থীরা লক্ষ্যভিত্তিক কৌশল অনুসরণ না করে সমস্যার সমাধান করতে পারে। সমস্যার ভাষার গঠন পরিবর্তন করে এটি করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র অনুমান ও পরীক্ষানিরীক্ষার উপর নির্ভর না করে, যা অনেক সময় কাজের মেমোরির উপর ব্যাপক চাপ ফেলে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। উদাহরণস্বরূপ, একটি গণিত সমস্যায় বলা হয়: একটি ট্রেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ কিলোমিটার গতিতে চলেছে এবং ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এতে সময় কত লেগেছে? যদি একজন শিক্ষার্থী সময় নির্ণয়ের সঠিক সূত্র না জানে, তাহলে সে অনুমান নির্ভর কৌশলে সমাধান খুঁজে বের করতে যাবে, যা অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, যদি প্রশ্নটি এভাবে করা হয় যে “সমাধানটি বের করার যতগুলো উপায় সম্ভব তা দেখাও”, তাহলে কাজের মেমোরির উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ হ্রাস পায়।
"কার্যকরী উদাহরণ প্রভাব" বলতে বোঝানো হয়, যখন একজন ব্যক্তি ইতোমধ্যে সমাধান করা উদাহরণ অধ্যয়ন করে, যাতে তারা শিখতে পারে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। এটি অনুমান নির্ভর পদ্ধতি কমিয়ে দেয় কারণ এতে শিক্ষার্থীদের একটি স্কিমা তৈরি করার সুযোগ থাকে যে কীভাবে নির্দিষ্ট ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। সাধারণ সমস্যাগুলোর তুলনায়, এই ধরনের উদাহরণগুলো ব্যক্তির মনোযোগ পুরো সমস্যার ওপর নয় বরং ধাপে ধাপে কী করতে হবে সেটার ওপর কেন্দ্রীভূত করে, ফলে তত্ত্বগতভাবে অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায় কারণ অতিরিক্ত কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এই ক্ষেত্রে, যদি একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নতুন কোনো গণিত সমীকরণ শেখান এবং পাশাপাশি সেই সমীকরণ ব্যবহার করে সমাধান করা কিছু উদাহরণ দেন, তবে শিক্ষার্থীদের কাছে একটি রেফারেন্স থাকবে, যা তাদের জ্ঞানীয় চাপ কমিয়ে দেবে।
উপকারী পুনরাবৃত্তির পেছনের ধারণা হলো, যদি একজন শিক্ষার্থী একই তথ্য বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত দেখতে পান, তাহলে সেই তথ্য স্মরণ রাখার সম্ভাবনা বেশি থাকে<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। কারণ এটি একই তথ্য যা কেবল ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাই অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস পায়, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন তথ্য গ্রহণের জন্য<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, পরবর্তীকালে পরিচালিত গবেষণায় এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে এটি গভীর শেখার পরিবর্তে বরং শেখার মান কমিয়ে দেয়<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>।
মেয়ার, হাইজার এবং লন পরিচালিত এক গবেষণায়, মাল্টিমিডিয়া শিক্ষায় পুনরাবৃত্তি প্রভাব নিয়ে একাধিক পরীক্ষা চালানো হয়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। তাঁরা পুনরাবৃত্তি প্রভাবকে ব্যাখ্যা করেন এমন এক পরিস্থিতি হিসেবে যেখানে একই তথ্য পাঠ্য ও শ্রুতির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় এবং এর ফলে শেখার মান কমে যায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। প্রথম পরীক্ষায় ৭৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে বজ্রপাত গঠনের বিষয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে তথ্য ধারণ ও স্থানান্তরের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের চারটি দলে ভাগ করা হয়। "No-text/no-seductive-details" দলটি এনিমেশন ও সমসাময়িক বর্ণনা পায়, "text/no-seductive-details" দলটি এতে সংক্ষেপিত পাঠ্য পায়, "no-text/seductive-details" দলটি আকর্ষণীয় কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পায় এবং শেষ দলটি এই দুই ধরণের তথ্যই পায়<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, যেসব শিক্ষার্থীরা পর্দায় সংক্ষেপিত পাঠ্য পেয়েছিল তারা কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। একইভাবে যারা আকর্ষণীয় অপ্রাসঙ্গিক তথ্য পেয়েছিল তারাও কম তথ্য মনে রাখতে পেরেছে<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। এই পরীক্ষার ফলাফল দেখায় যে অতিরিক্ত তথ্য উপস্থাপন শেখার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গবেষকরা ধারণা দেন যে এটি দৃশ্যমান বা শ্রাব্য চ্যানেলে অতিরিক্ত জ্ঞানীয় চাপ সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয় পরীক্ষায় এই ধারণার পরীক্ষা করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়: একটি দল পাঠ্য ছাড়াই উপস্থাপনা পায়, একটি দল সংক্ষিপ্ত সারাংশ সহ এবং আরেকটি দল হুবহু পাঠ্য সহ<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। দেখা যায় যে যারা কোনো অতিরিক্ত পাঠ্য পায়নি তারা সবচেয়ে বেশি তথ্য মনে রাখতে পেরেছে। অন্য দুই দলের মধ্যে মনে রাখার ক্ষেত্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তৃতীয় পরীক্ষায় মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হলে কী ঘটে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, ভিডিও ক্লিপে বজ্রপাত সংক্রান্ত তথ্য থাকলেও তা প্রাসঙ্গিক ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। ৩৮ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে দুটি দলে ভাগ করা হয়। দেখা যায়, ভিডিও যুক্ত দলটি আরও বেশি কিছু মনে রাখতে পারেনি এবং ফলাফল উল্লেখযোগ্য ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। চতুর্থ পরীক্ষায় দেখা হয় যে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার আগে বা পরে ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করলে আগ্রহ বাড়ে কিনা। দেখা যায়, উপস্থাপনার শুরুতে ভিডিও ক্লিপ দিলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা বেশি মনে রাখে, যদিও ফলাফল পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>। সামগ্রিকভাবে এই গবেষণা উপসংহার টানে যে, একই তথ্য একাধিক উপায়ে উপস্থাপন করা হলে শিক্ষার্থীরা কম তথ্য মনে রাখতে পারে। যখন একজন শিক্ষার্থীকে কাজের মেমোরি ভাগ করে তথ্য বুঝতে হয়, তখন অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ বেড়ে যায়, ফলে শেখার পরিমাণ কমে যায়। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন পাঠ্য উপস্থাপনার সাথে যুক্ত করা হয়। মেয়ার, হাইজার এবং লন পরামর্শ দেন যে, শিক্ষামূলক ডিজাইনারদের উচিত শ্রবণযোগ্য উপস্থাপনায় পাঠ্য না যোগ করা<ref>Mayer, R.E., Heiser, J., & Lonn, S. (2001). Cognitive constraints on multimedia learning: When presenting more material results in less understanding. Journal of Educational Psychology 93(1), 187-198.</ref>।
কিছু গবেষক মনে করেন যে, শিক্ষাগত ডিজাইনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানীয় চাপ কমানোই যথেষ্ট নয়। তাঁদের মতে, শিক্ষার্থী যেন আরও বেশি অর্থবহ স্কিমা তৈরি করতে পারে, সেই জন্য তাদের "জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ" বা প্রাসঙ্গিক জ্ঞানীয় চাপ বাড়ানো উচিত<ref>Sweller, J., van Merrienboer, J., & Paas, F. (1998). Cognitive Architecture and Instructional Design. Educational Psychology Review, 10(3), 251-296. doi:1040-726X/98/0900-0251S15.00/0</ref>। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ স্কিমা নির্মাণে নিবদ্ধ হয়, যা শিক্ষার সময় কাজের মেমোরির ওপর চাপ কমায়।
=== '''সারাংশ''' ===
সারাংশে, Sweller তিন ধরনের জ্ঞানীয় চাপের কথা বলেন এবং এগুলো কীভাবে নতুন তথ্য শেখার সময় কাজের মেমোরির ব্যবহারকে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করেন। জ্ঞানীয় চাপ থিয়োরির আলোকে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার ডিজাইনে বলা হয়েছে যে, প্রযুক্তি একটি কার্যকর শেখার উপায় হতে পারে যদি তা কাজের মেমোরির ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ না সৃষ্টি করে। বিশেষত, শিক্ষকদের উচিত "redundancy effect" নিয়ে করা গবেষণার দিকে মনোযোগ দেওয়া যাতে তারা অপ্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মেমোরি অতিভার না করে। প্রযুক্তির একটি উপযোগী ব্যবহার হতে পারে এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা যা স্কিমা তৈরি করতে সহায়তা করে, যা তথ্যকে দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিতে স্থানান্তর করে জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস করে।
== চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা ==
চার-উপাদান নির্দেশমূলক নকশা বা Four Component Instructional Design (4C/ID) হলো একটি নির্দেশনামূলক ডিজাইন মডেল, যা ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের এবং তাঁর সহকর্মীরা উদ্ভাবন করেছেন। এটি জটিল পরিবেশে শেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। 4C/ID মডেলটি এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি যে, দক্ষতা সবচেয়ে কার্যকরভাবে শেখা যায় তা ব্যবহার করার মাধ্যমে, শুধু পাঠ্যবইয়ের নির্দেশনা পড়ে নয়। শেখার শর্তাবলি বাস্তব জীবনের প্রয়োগের সাথে মিল রেখে তৈরি হওয়া জরুরি, এবং নির্দেশনার লক্ষ্য হওয়া উচিত তথ্য দেওয়ার চেয়ে অনুশীলনের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা। 4C/ID মডেলটি চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত: ''(১) লার্নিং টাস্ক'', ''(২) সহায়ক তথ্য'', ''(৩) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য'', এবং ''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন'' (ভ্যান মেরিনবোয়ার, ১৯৯৭;<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>; ভ্যান মেরিনবোয়ার এবং কির্সনার, ২০০৭)। এই কাজগুলো জটিলতার ভিত্তিতে সহজ থেকে কঠিন ক্রমে সাজানো থাকে। প্রতিটি উপাদানের শুরুতে অনেক বেশি সহায়ক কাঠামো বা ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ প্রয়োজন হয়, যা শিক্ষার্থীরা অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হয়।
এই অংশে আমরা আলোচনা করব কীভাবে প্রযুক্তি এই শিক্ষার তত্ত্বকে সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে গবেষণা ও তত্ত্ব।
=== '''(১) লার্নিং টাস্ক''' ===
লার্নিং টাস্ক-গুলো চিত্র ১-এ বৃত্তাকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। জটিল শেখা মানে হলো একত্রে একাধিক শেখার লক্ষ্য অর্জন করা। 4C/ID মডেলটি এমন শেখার কাজ ব্যবহারের পক্ষে, যা সম্পূর্ণ, বাস্তবসম্মত ও স্পষ্ট। অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা হিসেবেও পরিচিত এই মডেলের ভিত্তিতে শেখা শুরু করা উচিত অপেক্ষাকৃত সহজ কিন্তু অর্থপূর্ণ কাজের গুচ্ছ দিয়ে। একে '''টাস্ক ক্লাস''' বলা হয়। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের শুরুতেই অত্যন্ত জটিল শেখার কাজ দেওয়া অসম্ভব, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং শেখা ও পারফরম্যান্স উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। একবার শিক্ষার্থীরা সহজ কিন্তু প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো আয়ত্ত করলে, তারা আরও জটিল কাজের দিকে অগ্রসর হয়। একটি কাজের জটিলতা নির্ধারিত হয় এতে থাকা দক্ষতার সংখ্যা, এই দক্ষতাগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে। একই টাস্ক ক্লাসে থাকা শেখার কাজগুলোতে ক্রমান্বয়ে জটিলতা বাড়ানো না হলেও, এতে শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তার পরিমাণে পার্থক্য থাকতে পারে। এই সহায়তাকে বলা হয় ‘স্ক্যাফোল্ডিং’ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। যখন শিক্ষার্থীরা নিম্নস্তরের টাস্ক ক্লাস থেকে উচ্চতর স্তরের টাস্ক ক্লাসে অগ্রসর হয়, তখন স্ক্যাফোল্ডিং ব্যবহার করা হয়। চিত্র ১-এ বৃত্তগুলোর চারপাশে ছিদ্রযুক্ত রেখা শেখার উপযুক্ত কাজ নির্বাচন ও উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। শেষ পর্যন্ত এই সহায়তা এবং স্ক্যাফোল্ডিং ধীরে ধীরে কমে আসে। এই সহায়তা হ্রাসের কারণ হলো '''দক্ষতার বিপরীত প্রভাব'''। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে শিক্ষানবিসদের জন্য কার্যকর যে সহায়তা ও নির্দেশনা পদ্ধতি (যেমন কোচিং বা নিয়মিত ধাপ) তা অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। এটি তাদের মানসিক চাপও বাড়ায়। শেখার কাজ শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কে ধারণা গঠনে সহায়তা করে, যা তারা শেখার কাজ থেকে প্রাপ্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বিমূর্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শেখার ক্ষেত্রে সাধারণীকরণ ও পার্থক্যকরণ ধারণাগুলো গঠনে সাহায্য করে, যাতে তা নতুন অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। ভ্যান মেরিয়েনবুয়ের, ক্লার্ক, এবং ক্রুক <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এর মতে, এই গঠিত ধারণাগুলো দুটি রূপে আসে: ''মানসিক মডেলs'': যা শেখার ক্ষেত্রটি কিভাবে সংগঠিত তা প্রতিফলিত করে এবং যুক্তির সহায়তা করে; ''জ্ঞানীয় কৌশল'': যা সমস্যা সমাধানে গাইড করে এবং দেখায় কীভাবে কার্যকরভাবে সমস্যার সমাধানে এগোনো যায়।
শিক্ষার পরিবেশে শেখার কাজ প্রয়োগের দুটি ধরণ রয়েছে—ফলাফল কেন্দ্রিক এবং প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা। ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা সর্বোচ্চ বা নিম্ন স্তরে ভাগ করা যায়। সর্বোচ্চ স্তরের ফলাফল কেন্দ্রিক সহায়তা হলো এমন শেখার কাজ যেখানে একটি কেস স্টাডি বা প্রস্তুত উদাহরণ দেওয়া হয় যাতে শিক্ষার্থীকে একটি প্রারম্ভিক অবস্থা, কাঙ্ক্ষিত অবস্থা এবং একটি সমাধান বা মধ্যবর্তী সমাধান দেওয়া হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। শিক্ষার্থীদের শেখাতে উদ্ভট ঘটনা, সফলতার গল্প বা চমকপ্রদ উপসংহারসহ গল্প ব্যবহার করা যেতে পারে। এই শিক্ষণীয় কাজগুলিতে শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয় যা তাদের গভীর চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করে এবং দেওয়া উদাহরণ থেকে মানসিক মডেল তৈরিতে সহায়তা করে। বাস্তব উদাহরণ দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্র কীভাবে সংগঠিত। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব উপসংহার বা সমাধানে পৌঁছাতে দেওয়া উচিত। চিত্র ২-এ এ বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক সহায়তা সরাসরি সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কাজ করে। একটি ''modeling example''-এ একজন বিশেষজ্ঞ কীভাবে একটি কাজ সম্পাদন করছে এবং কেন সে এটি করছে তা ব্যাখ্যা সহ উপস্থাপন করা হয়। এই হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ধারণ সহজ করে তোলে যা শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়ে বোঝা সম্ভব নয়। এই পদ্ধতিতে শেখা তথ্য দীর্ঘস্থায়ীভাবে মনে রাখতেও সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এই উদাহরণ দেখে শিক্ষার্থীরা এমনকি পেশাদাররাও যে প্রণালী ও নীতিমালা অনুসরণ করে তা সহজে অনুধাবন করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। উচ্চস্বরে চিন্তা করাও উপকারী হতে পারে কারণ এটি মস্তিষ্কের ভিতরের সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে প্রকাশ করে। তদ্ব্যতীত, কম্পিউটার-ভিত্তিক শিক্ষার সরঞ্জামগুলো শিক্ষার্থীদের এমনভাবে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে যেন তারা একজন বিশেষজ্ঞের মতো চিন্তা করে।
=== '''(২) সহায়ক তথ্য''' ===
এই ধরনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জটিল দক্ষতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেখার কাজে সাফল্য পেতে এবং সেখান থেকে বাস্তব অর্থে শিখতে শিক্ষার্থীদের '''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' (স্কিমাটা-সদৃশ নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া) সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। প্রক্রিয়াভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকে 4C/ID কাঠামোতে '''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''' বলা হয় <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। জটিল জ্ঞান উভয় ধরনের দক্ষতার সমন্বয়ে গঠিত। সহায়ক তথ্য প্রদান করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা অ-পুনরাবৃত্ত দিকগুলো আয়ত্ত করতে পারে। এটি শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান এবং শেখার কাজের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011)...</ref>। শিক্ষকরা সাধারণত যেটিকে 'তত্ত্ব' হিসেবে উল্লেখ করেন, এটি সেই তথ্য এবং এটি সাধারণত লেকচারে বা পাঠ্যপুস্তকে উপস্থাপন করা হয়। এর লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের এমন নমনীয় স্কিমা তৈরি করতে সাহায্য করা যা বাস্তব জীবনের সমস্যা মোকাবেলায় কার্যকর। সহায়ক তথ্য পূর্ববর্তী তথ্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন তথ্য উপাদানের মধ্যে বাস্তবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এটি শিক্ষার্থীদের এমন কাজ করতে সক্ষম করে যা আগে সম্ভব ছিল না। দেখা গেছে, এই ধরনের তথ্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জটিল স্কিমা গঠনে সাহায্য করে যা গভীর অনুধাবন তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা ডেটাবেইস কীভাবে সংগঠিত তা অধ্যয়নের মাধ্যমে কার্যকর মানসিক মডেল তৈরি করতে পারে। কাজের পারফর্মাররা নিজেদের মানসিক মডেল এবং জ্ঞানীয় কৌশল আরও বিকশিত করে যাতে তাদের পারফরম্যান্স উন্নত হয়। উদাহরণস্বরূপ, টাইগার উডস গলফ কোর্সের বিন্যাস বিশ্লেষণ করে কীভাবে এগুলো সংগঠিত তা জানতে মানসিক মডেল তৈরি করেন এবং প্রতিপক্ষের ভিডিও দেখার মাধ্যমে কৌশল তৈরি করেন কীভাবে সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। এখানে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি যে সম্পর্কগুলো যেন যথাসম্ভব যুক্তিযুক্ত হয়। এই সম্পর্ক নির্ধারণের পদ্ধতিগুলো উপস্থাপন করা যেতে পারে ব্যাখ্যামূলক বা অনুসন্ধানভিত্তিক উপায়ে। ''ব্যাখ্যামূলক পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের এই সম্পর্কগুলো সরাসরি উপস্থাপন করে, এবং ''অনুসন্ধান পদ্ধতি'' শিক্ষার্থীদের নিজে থেকে এসব সম্পর্ক আবিষ্কার করতে উৎসাহিত করে। এই দুই পদ্ধতির মধ্যে অভিজ্ঞতাভিত্তিক সম্পর্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাধারণ ও বিমূর্ত জ্ঞানকে বাস্তব উদাহরণের সাথে যুক্ত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>। 4C/ID মডেলটি সহায়ক তথ্য উপস্থাপনে প্ররোচনামূলক ও নির্ণয়মূলক কৌশলের মধ্যে পার্থক্য করে। প্ররোচনামূলক কৌশলের দুটি ধরন রয়েছে: ''ইন্ডাকটিভ-ইনকোয়ারি কৌশল''-এ এক বা একাধিক কেস স্টাডি উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সম্পর্ক চিহ্নিত করতে বলা হয়। তবে এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ এবং গভীর বোধের প্রয়োজন হয়, বিশেষত যাদের দক্ষতা নেই তাদের জন্য। এজন্য ভ্যান মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> পর্যাপ্ত সময় না থাকলে এই কৌশল ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন। ''ইন্ডাকটিভ-এক্সপোজিটরি কৌশল'' তে এক বা একাধিক কেস স্টাডি দিয়ে শুরু করে এবং সেখানে চিত্রিত তথ্যগুলোর সম্পর্ক সরাসরি ব্যাখ্যা করা হয়। মেরিনবোয়ার, ক্লার্ক, এবং ক্রোক (২০০২)<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref> এই কৌশলটি সাধারণভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দেন কারণ এটি বাস্তব কেস দিয়ে শুরু হয় এবং পূর্ব জ্ঞানের অভাব থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর। ''জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া'' সহায়ক তথ্য-এর চূড়ান্ত অংশ হিসেবে পরিচিত। এটি অ-পুনরাবৃত্ত কর্মক্ষমতা-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেহেতু এই ধরনের পারফরম্যান্স কখনো একেবারে সঠিক বা ভুল নয়, বরং বেশি বা কম কার্যকর। জ্ঞানীয় প্রতিক্রিয়া কেবল তখনই প্রদান করা যায় যখন শিক্ষার্থী একটি বা একাধিক শেখার কাজ সম্পন্ন করে। ভালোভাবে পরিকল্পিত প্রতিক্রিয়া শিক্ষার্থীদের তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি এবং গৃহীত সমাধান নিয়ে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002)...</ref>।
=== '''(3) জাস্ট-ইন-টাইম (জেআইটি) তথ্য''' ===
সহায়ক তথ্যের বিপরীতে, জেআইটি তথ্য জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উপর কেন্দ্রীভূত। এটি শেখার কাজ বা অনুশীলনের উপাদানের পুনরাবৃত্ত দিক শেখা ও সম্পাদনের জন্য অপরিহার্য। স্বয়ংক্রিয়তা অনেকাংশে নির্ভর করে ধারাবাহিকতা এবং পুনরাবৃত্ত অনুশীলনের ওপর। জেআইটি তথ্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুসারে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেয় এবং প্রয়োজন না থাকলে দ্রুত ম্লান হয়ে যায়। জেআইটি তথ্যের লক্ষ্য হচ্ছে মৌলিক, কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব স্বয়ংক্রিয় করে তোলা। জ্ঞানগত সম্পদ মুক্ত করা এবং স্বয়ংক্রিয়তা বৃদ্ধি করা উন্নত শিক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এটি ধাপে ধাপে জ্ঞানও প্রদান করে, যেমন শিক্ষক বা টিউটররা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের গাইড করেন, যেন একজন সহকারী তাদের কাঁধের ওপর নজর রাখছে। জেআইটি তথ্য অনেক শেখার কাজের জন্য একই রকম হওয়ায়, এটি সাধারণত প্রথম শেখার কাজের সময় দেয়া হয় যেটার সাথে ওই দক্ষতা সম্পর্কিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। স্ক্যাফোল্ডিংয়ের মতোই, জেআইটি তথ্যের একটি নীতি হলো ফেডিং (fading)। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন শেখার বিষয়ে আরও দক্ষতা অর্জন করে তখন দ্রুত ধীরে ধীরে তথ্যের উপস্থিতি কমে যায়। জেআইটি তথ্যের শিক্ষাদান পদ্ধতি মূলত নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জ্ঞানকে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে জটিলতা বাড়ায় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই নিয়মগুলি বহুবার অনুশীলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠে এবং এই সময় তথ্য সরাসরি আমাদের কার্যকরী স্মৃতিতে উপলব্ধ থাকে যা নিয়ম গঠনের জন্য প্রয়োজন। বাস্তব জীবনে প্রয়োগের উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক কেউ গল্ফ শিখছে, তখন কোচ সাধারণত ক্লাব ধরার পদ্ধতি, স্ট্যান্স নেওয়া এবং ড্রাইভিং রেঞ্জে প্রথম ড্রাইভ করার সময় সুইং করার নিয়ম বুঝিয়ে দেন, শ্রেণিকক্ষে লেকচারের সময় নয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। ''তথ্য প্রদর্শনী'' ছোট ছোট ইউনিটে সংগঠিত থাকে, যা অপরিহার্য কারণ নতুন তথ্যের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে অনুশীলনের সময় প্রক্রিয়াকরণ অতিরিক্ত চাপ কমায়। বাস্তব জীবনে, যেমন একটি জটিল যন্ত্রের ম্যানুয়াল ধাপে ধাপে কাজগুলো ব্যাখ্যা করে, ব্যবহারকারীর পূর্ব জ্ঞান ধরে নিয়ে শুধু কিছু ধাপ উল্লেখ করে না। এই পদ্ধতিতে তথ্য সরাসরি প্রদর্শন করা উচিত যখন শিক্ষার্থীদের সেই তথ্য প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট শেখার কাজের পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে কাজ করার জন্য <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি সব সময় কার্যকর নাও হতে পারে। যেমন চাকরির প্রশিক্ষণে, অনলাইন হেল্প সিস্টেম, চেকলিস্ট এবং ম্যানুয়ালসহ বিভিন্ন সহায়তা সহজে পাওয়া যায়। এর কারণ হলো প্রয়োজনীয় সময়ে জেআইটি তথ্য সরাসরি প্রদান না হওয়া। ''ডেমন্সট্রেশন ও ইনস্ট্যান্স'' হল পুনরাবৃত্ত দক্ষতার উপাদান, যা সাধারণত ''সাধারণত্ব'' নামে পরিচিত। যেমন নিয়ম বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করা যায়, সেগুলোকে ''ডেমন্সট্রেশন'' বলা হয়; অন্যদিকে ধারণা, পরিকল্পনা ও নীতিগুলোকে ''ইনস্ট্যান্স'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। ''কগনিটিভ ফিডব্যাক'' জেআইটি তথ্যের একটি চূড়ান্ত অংশ, যা কর্মদক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোতে প্রদানকৃত প্রতিক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত। এই ফিডব্যাক সংগ্রহ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করে। অর্থাৎ যদি নিয়মগুলো সঠিকভাবে পরিস্থিতিতে প্রয়োগ না হয়, তাহলে শিক্ষার্থী "ত্রুটি" করে বলে ধরা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই ফিডব্যাকগুলি যত দ্রুত সম্ভব প্রদান করার পরামর্শ দেয়া হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা সঠিক তথ্য তাদের কার্যকরী স্মৃতিতে সঠিকভাবে ইনপুট করতে পারে। 4C/ID মডেল বিশ্বাস করে যে শেখার সময় ত্রুটি হওয়া অনিবার্য এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের ভুল চিনতে শিখে এবং সেগুলো থেকে কিভাবে উত্তরণ করতে হয় তা শিখে। ভালোভাবে ডিজাইন করা ফিডব্যাক শিক্ষার্থীদের জানায় কেন ত্রুটি হয়েছে এবং কিভাবে লক্ষ্য অর্জন করতে পারে তার পরামর্শ বা ইঙ্গিত দেয়। শেখার প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য সরাসরি উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''(৪) পার্ট-টাস্ক অনুশীলন''' ===
শেখার কাজগুলো স্কিমা নির্মাণে সহায়ক এবং জটিল দক্ষতার পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর সংকলন সহজতর করতে ডিজাইন করা হয়। 4C/ID মডেলের শেষ উপাদান, পার্ট-টাস্ক অনুশীলন, নির্বাচিত পুনরাবৃত্ত দক্ষতার অতিরিক্ত অনুশীলন দেয় যাতে প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তা স্তর অর্জন করা যায়। এটি প্রক্রিয়াগত জ্ঞান দ্রুত স্বয়ংক্রিয় করার একটি উপায়। সেখানে শিক্ষার্থীরা একই সময়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করার কারণে সৃষ্ট জ্ঞানগত চাপের সমস্যা এড়িয়ে যায়। দক্ষতা সাধারণত ধীরে ধীরে বিকাশমান একটি প্রক্রিয়া যা আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী উৎপাদনগুলোর স্বয়ংক্রিয়করণের জন্য অনুশীলনের প্রসারনের ওপর নির্ভর করে। জেআইটি তথ্য উপস্থাপন নতুন তথ্যকে সীমাবদ্ধভাবে নিয়মে কোড করার লক্ষ্য রাখে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন উপযুক্ত জেআইটি তথ্য দ্বারা সমর্থিত হবে যতক্ষণ না তারা স্বয়ংক্রিয়তা অর্জন করে। ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার ও তাঁর সহযোগীরা বিশ্বাস করেন যে কিছু পার্ট-টাস্ক অনুশীলন কাজের জটিলতা কমাতে সাহায্য করে কারণ এর সময়কাল তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত ও বিরতিপূর্ণ এবং জটিল, প্রামাণিক কাজের সঙ্গে মিশ্রিত থাকে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের উপদক্ষতাগুলো অনুশীলন করতে এবং সেগুলোকে সামগ্রিক কাজের সাথে সংযুক্ত করতে সাহায্য করে। অনুশীলনকৃত বিষয়গুলো বিভিন্ন পরিস্থিতি বা পরিবেশের জন্য বহুমুখী হওয়া উচিত যাতে অন্তর্নিহিত নিয়মগুলো সব পরিস্থিতিতে প্রয়োগযোগ্য হয়। তবে, যখন পুনরাবৃত্ত দিকগুলোর উচ্চ স্তরের স্বয়ংক্রিয়তা প্রয়োজন হয়, তখন শেখার কাজগুলো পর্যাপ্ত পুনরাবৃত্তি প্রদান করতে পারে না যা শক্তিশালীকরণের জন্য জরুরি। তখন অতিরিক্ত পার্ট-টাস্ক অনুশীলন প্রয়োজন হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। অন্যান্য পরিস্থিতিতে যেমন সাধারণ পরিবেশে শেখার ক্ষেত্রে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন জটিল শেখার জন্য সহায়ক নয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন পদ্ধতি নিয়ম বা প্রক্রিয়ার সংকলন এবং তাদের পরবর্তী শক্তিশালীকরণকে উৎসাহিত করে। এটি একটি খুব ধীর প্রক্রিয়া যা বহুবার অনুশীলনের প্রয়োজন হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের উদাহরণ হিসেবে দেওয়া যায় গুণন তালিকা বা সঙ্গীত যন্ত্রের স্কেল বাজানো। এটি যথাযথ কগনিটিভ প্রসঙ্গে শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কার্যকর প্রমাণিত হয় শুধুমাত্র তখনই যখন শিক্ষার্থীরা জটিল দক্ষতার সহজ সংস্করণে পরিচিত হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। কাজের শ্রেণীবিভাগ নির্দেশ করে যে, এগুলো হয় অনেক উচ্চতর দক্ষতার কার্যকারিতা সক্ষম করে, অথবা একাধিক সমন্বিত দক্ষতার সঙ্গে একই সময়ে সম্পাদিত হতে হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। সুতরাং, প্রথমে কাজের শ্রেণি চিহ্নিত করে তারপরে পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শুরু করা উচিত। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের ''প্র্যাকটিস আইটেমস'' শিক্ষার্থীদের অনেকবার অনুশীলন করতে উৎসাহিত করে যেমন প্রবাদ আছে, "অনুশীলনই পারদর্শিতা আনে"। তবে শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে যে সম্পূর্ণ অনুশীলন সেটটি বহুমুখী এবং সব পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হতে হবে। এর ফলে একটি বিস্তৃত পরিস্থিতি-নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি হবে। যেমন অত্যন্ত জটিল অ্যালগরিদমের ক্ষেত্রে, সেগুলোকে সহজ থেকে জটিল অনুশীলন আইটেমে ভাগ করা এবং পরে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ কাজের দিকে এগোনো প্রয়োজন হতে পারে। এই পদ্ধতিকে ''পার্ট-হোল অ্যাপ্রোচ'' বলা হয় <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের সঠিক ব্যবহার পুনরাবৃত্ত দক্ষতার সঠিক সম্পাদন নিশ্চিত করে। এছাড়াও, দক্ষতাকে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় করতে ব্যাপক অতিরিক্ত অনুশীলন প্রয়োজন হতে পারে। স্বয়ংক্রিয়তার উপর খুব বেশি নির্ভরশীল কাজের ক্ষেত্রে, মাঝে মাঝে চূড়ান্ত লক্ষ্য সঠিকতা নয়। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত গৃহীত সঠিকতা, উচ্চ গতি এবং সম্পাদনের সমন্বয়ই লক্ষ্য হয়। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে, পুনরাবৃত্ত দক্ষতাগুলো প্রথমে গতি চাপের মধ্যে অনুশীলন করা হয়, এরপর গতি মাপকাঠি অর্জিত হলে সময় ভাগাভাগি শর্তে অনুশীলন করা হয়। তারপরই দক্ষতাটি সমগ্র কাজ হিসেবে অনুশীলন করা হয়। অর্থাৎ, সম্পাদনার মানদণ্ড ধীরে ধীরে সঠিকতা থেকে সঠিকতা ও গতি, এবং পরে সঠিকতা, গতি ও সময় ভাগাভাগির শর্তে বা উচ্চ সামগ্রিক কাজের চাপের মধ্যে পরিবর্তিত হয় <ref>Salisbury, D.F., Richards, B.F., & Klein, D. (1985). Designing practice: A review of prescriptions and recommendations from instructional design theories. Journal of InstructionalDevelopment, 8(4), 9- 19.</ref>। সংক্ষিপ্ত, বিরতিপূর্ণ পার্ট-টাস্ক অনুশীলন বা অতিরিক্ত অনুশীলনের ফলাফল দীর্ঘ, ঘনীভূত পার্ট-টাস্ক অনুশীলনের চেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। পার্ট-টাস্ক অনুশীলন শেখার কাজগুলোর সাথে মিলিয়ে করানো উচিত, কারণ এতে বণ্টিত অনুশীলন হয় এবং শিক্ষার্থীরা পুনরাবৃত্ত উপাদানকে পুরো জটিল দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করতে পারে <ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>।
=== '''গবেষণা ও বাস্তবায়ন''' ===
ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) কর্তৃক এক-দ্বারা-দ্বি পূর্বপরীক্ষা-পশ্চাত্পরীক্ষাভিত্তিক একটি আধা-প্রায়োগিক নকশা ব্যবহার করে শিক্ষার পরিবেশের কার্যকারিতা নিয়ে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে 4C/ID পদ্ধতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর সাথে একত্রিত হয়ে শিক্ষাগত অগ্রগতিতে সেরা ফলাফল দেখিয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। নির্ভরশীল চলক ছিল শিক্ষাগত অগ্রগতি, যা পূর্বপরীক্ষা স্কোর থেকে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর বিয়োগ করে হিসাব করা হয়েছে। স্বাধীন চলক ছিল তিনটি চিকিৎসা পরিস্থিতি। তিনটি দলের মধ্যে তুলনা করা হয়েছিল; প্রচলিত পাঠদানের পদ্ধতি বনাম আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ বনাম আইসিটি ছাড়াই 4C/ID শিখন পরিবেশ। গবেষণায় ঘানা’র ছয়টি মাধ্যমিক প্রযুক্তি বিদ্যালয় থেকে ১৮ বছর গড় বয়স এবং ১.৩ বছর মান বিচ্যুতি সহ মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূল্যায়নের কাজের মধ্যে ছিল ২৬টি পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষা উপাদান; ১৩টি রক্ষণশীলতা এবং ১৩টি স্থানান্তর পরীক্ষা। ফলাফল দেখিয়েছে যে তিনটি দলের শিক্ষার্থীদের পূর্বপরীক্ষা ও পশ্চাত্পরীক্ষার মধ্যে পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য ছিল। সমস্ত দলের গড় পূর্বপরীক্ষা স্কোর ছিল ৬.২৮। সেখানে পশ্চাত্পরীক্ষা স্কোর ছিল ১৪.৩৯। ফ্রেডরিক কে. সারফো এবং জান এলেন (২০০৭) প্রদত্ত ডেটা গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আইসিটি সহ 4C/ID শিখন পরিবেশ পূর্ব ও পশ্চাত্পরীক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই উচ্চ স্কোর অর্জন করেছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>। গবেষকেরা উপসংহারে বলেছেন, এই ফলাফলগুলি নির্দেশ করে যে পরীক্ষামূলক দল এমন সমস্যা সমাধানে আরও দক্ষ ছিল। সেখানে যুক্তি, প্রতিফলন এবং প্রক্রিয়া, তথ্য ও ধারণা পুনরুদ্ধার করতে হয়েছে<ref>Sarfo, F., & Elen, J. (2007). Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. doi:10.1007/s10984-007-9031-2</ref>।
শ্রেণিকক্ষে এই চার উপাদানবিশিষ্ট নির্দেশনামূলক নকশা ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষত জটিল পরিবেশে শেখার জন্য উপকারী হবে। এই মডেল প্রয়োগ করতে হলে, যিনি পাঠদান করছেন তার ঐ বিষয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ হওয়া আবশ্যক। এতে করে শিক্ষার্থীদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে এবং বিষয়বস্তুর গভীর উপলব্ধি অর্জন সম্ভব হবে। মিডিয়া বা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অতিরিক্ত সহায়তাও প্রয়োজন হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, এই মডেলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী সম্পর্ক একটি সমন্বিত দলের মতো কাজ করা আবশ্যক।
=== '''সারাংশ''' ===
চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল জ্ঞানীয় শেখা এবং দক্ষতার উপর গবেষণার ভিত্তিতে নির্মিত। এটি জটিল দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা নকশার একটি কাঠামো প্রদান করে। মডেল অনুযায়ী, অভিজ্ঞতাগুলো বাস্তবসম্মত এবং ক্রমান্বয়ে আরও প্রামাণ্য কাজ হওয়া উচিত; যেমন প্রকল্প, কেস, ও দৃশ্যপট। শিক্ষার্থীদেরকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয় তা তথ্য দেওয়ার উপর নয়, বরং অনুশীলনের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। এই উপাদানগুলো এমনভাবে অনুশীলন করা হবে যতক্ষণ না কেউ প্রয়োজনীয় স্বয়ংক্রিয়তার স্তরে পৌঁছায়, কোনো সহায়তা ছাড়াই। যখন শিক্ষার্থীরা চারটি উপাদান সম্পন্ন করে, তখন বলা যায় যে সে ঐ জ্ঞান বা কার্যকলাপে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, 4C/ID মডেল ভুলবিহীন শেখার ধারণাকে সমর্থন করে না<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। এই মডেলটি জটিল দক্ষতার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিকাশ এবং যেখানে স্থানান্তর একটি প্রধান শিক্ষাগত লক্ষ্য সেখানে ব্যবহার করা উচিত। এই মডেলটি ধারণাগত জ্ঞান বা প্রক্রিয়াগত দক্ষতা শেখানোর জন্য তৈরি নয়, এবং খুব সংক্ষিপ্ত প্রোগ্রামগুলোর জন্যও এটি উপযোগী নয়<ref>Merriënboer, J., Clark, R., & Croock, M. (2002). Blueprints for complex learning: The 4C/ID-model. ETR&D Educational Technology Research and Development, 50(2), 39-64.</ref>। যদিও এসব গবেষণা হয়েছে, চার উপাদান নির্দেশনামূলক নকশা মডেল নিয়ে আরও গবেষণা চলছে।
== সমন্বিত শিক্ষা ==
'''প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশের মাধ্যমে সমন্বিত শিক্ষা'''
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, এর ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহ ও শেয়ার করতে পারছে। '''সমন্বিত শিক্ষা''' তথা সহপাঠী বা দলের মাধ্যমে জ্ঞান ভাগাভাগি ও অর্জন এখন প্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্টারঅ্যাকশনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সামাজিক মিথস্ক্রিয়া জ্ঞানীয় বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শিক্ষার্থীদের তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকের সাথে মিথস্ক্রিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিনিময়গুলোর মধ্যে পড়ে<ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। তবে, একটি প্রশ্ন উঠে আসে—এই ধরনের মিথস্ক্রিয়াগুলোতে প্রযুক্তি কীভাবে সহায়তা করতে পারে বা তা অন্তর্ভুক্ত করা যায়? একটি ভাল প্রযুক্তি নকশা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পারে যদি তা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার কার্যপদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়; যেমন মনোযোগ, কার্যকারী স্মৃতি, দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি এবং কীভাবে জটিল জ্ঞানীয় দক্ষতা গড়ে ওঠে। এর একটি উদাহরণ হলো—সহায়ক এবং সময়োপযোগী (জেআইটি) তথ্য, প্রশিক্ষণ এবং ধাপে ধাপে সহায়তা যা কার্যকর শেখার কৌশল হিসেবে কাজ করে। একটি মূল বিষয় হলো—একটি ভালো নকশা ব্যবস্থা আমাদের জ্ঞানীয় ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এই অংশটি বিভিন্ন প্রযুক্তি নকশার মডেল এবং সমন্বিত শিক্ষা এই ব্যবস্থার মধ্যে কার্যকর কি না, তার বিশ্লেষণ দ্বারা বিভক্ত করা হবে। যেসব মডেলগুলোর মাধ্যমে এটি বিশ্লেষণ করা হবে তা হলো—বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা, সহপাঠীদের সাথে শেখা, অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা, সৃজনের মাধ্যমে শেখা, এবং গেমসের মাধ্যমে শেখা। সমন্বিত শিক্ষা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন বিষয়বস্তু শেখানো বা ভাগাভাগি করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের একে অপরের সাথে দলগত কাজ করার অভিজ্ঞতা দেয়। তবে, যদিও এটি শ্রেণিকক্ষে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দারুণ একটি ব্যবস্থা হিসেবে দেখা যায়, এটি কিছু সীমাবদ্ধতা বহন করে এবং এখনো পুরোপুরি কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিক্ষকদের এসব প্রযুক্তি ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়, তবে এগুলো সহায়ক এবং তথ্যবহুল হতে পারে।
প্রযুক্তি ব্যবস্থার বিভিন্ন ধরন ও এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই যা বিবেচনা করতে হয় তা হলো—মানুষ কীভাবে শেখে? প্রায়ই দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী তথ্য শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে কারণ তারা বোঝার চেয়ে মুখস্থ করায় বেশি মনোযোগ দেয়<ref>Bransford, J. D., Brown, A. L., & Cocking, R. R. (2000). How people learn. Washington DC: National Academy Press. (pp. 1-50)</ref>। তবে, নোবেল বিজয়ী হারবার্ট সাইমনের একটি চমৎকার উক্তি আছে—“জানার অর্থ এখন আর কেবল স্মরণ করা ও পুনরাবৃত্তি করা নয়, বরং এটি কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় ও কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা জানা।” বিষয়বস্তুর প্রতি ভালোভাবে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রকৃত তথ্যজ্ঞান, ধারনার কাঠামোতে তথ্য ও ধারণা বোঝা এবং জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে মনে পড়ে ও প্রয়োগ করা যায়। এর মানে হলো—যদি শিক্ষার্থীরা প্রকৃত তথ্যভিত্তিক ভিত্তি রাখে, তবে তারা জানবে কোন তথ্য সত্য এবং তাদের শেখার সাথে প্রাসঙ্গিক। ধারনার কাঠামোতে তথ্য বোঝা মানে হলো শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ে শিখছে তার প্রেক্ষাপটে তথ্যের তাৎপর্য বুঝতে পারছে এবং কিভাবে তা ঐ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। জ্ঞানকে এমনভাবে সংগঠিত করা যাতে তা সহজে উদ্ধার ও প্রয়োগযোগ্য হয়, মানে হলো শিক্ষার্থীরা যা শিখেছে বা শিখছে তা অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োগ করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে এসবের বাস্তবায়নে কিছু অসুবিধা দেখা যায়। শিক্ষকরা সমস্যায় পড়েন কারণ শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে আগে থেকে কিছু ধারণা নিয়ে আসে। একই সঙ্গে, শিক্ষকদের একটি নির্ধারিত পাঠসূচি শেষ করতে হয়, এবং যখন তাদের প্রতিটি বিষয়ে গভীরভাবে যেতে হয় বা কোনো অংশ বারবার শেখাতে হয়, তখন তা কঠিন হয়ে পড়ে। শিক্ষাজীবনে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে অনেক শিক্ষক বিশ্বাস করেন যে পূর্ববর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বিষয় শিখে এসেছে, কিন্তু তা সবসময় সঠিক নয়। কিছু শিক্ষার্থী মনে করতে পারে তারা পিছিয়ে পড়েছে, বা তারা প্রশ্ন করতে কিংবা সাহায্য চাইতে লজ্জা পায়। এখানেই প্রযুক্তি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে এবং শ্রেণিকক্ষে বা শিক্ষার্থীর নিজস্ব সময়ে ব্যবহারের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, এই প্রযুক্তি ব্যবস্থাগুলো শিক্ষকের বিকল্প নয়, বরং শিক্ষকের পাঠের পরিপূরক হিসেবে কাজ করা উচিত। এগুলোর কাজ শেখার ভিত্তি তৈরি করা নয়, বরং পরীক্ষার প্রস্তুতি বা প্রকল্পে সহায়তার জন্য পর্যালোচনার উপকরণ হিসেবে কাজ করা। শিক্ষকরা যদি এগুলোর উপর অতিরিক্ত নির্ভর করে, তবে শিক্ষার্থীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও মিথস্ক্রিয়া হারিয়ে ফেলবে যা শুধুমাত্র একজন বাস্তব শিক্ষক থেকেই পাওয়া সম্ভব। প্রযুক্তিকে শিক্ষকের বিকল্প হিসেবে দেখা সঠিক পন্থা নয়, বরং এটি একটি সহায়ক সরঞ্জাম হিসেবে দেখা উচিত।
এই ব্যবস্থাগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া যাক—
'''বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা: কগনিটিভ টিউটর ও টেলিমেন্টরিং'''
প্রযুক্তি ব্যবস্থার প্রথম ধরণটি হলো বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা। এর দুটি উদাহরণ হলো '''কগনিটিভ টিউটর''' এবং টেলিমেন্টরিং। '''কগনিটিভ টিউটর''' হলো “এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা ‘কার্যকরভাবে শেখা’কে সহায়তা করে” <ref>Bollen, L., Harrer, A., Mclaren, B. M., Seawall, J., & Walker, E. (1995) Collaboration and Cognitive Tutoring: Integration, Empirical Results, and Future Direction</ref>। কগনিটিভ টিউটর জন অ্যান্ডারসনের ACT তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এই তত্ত্বে তিনটি মূলনীতি রয়েছে—প্রথমটি হলো প্রক্রিয়াগত ও ঘোষণামূলক জ্ঞানের পার্থক্য, দ্বিতীয়টি হলো জ্ঞান সংকলন এবং তৃতীয়টি হলো অনুশীলনের মাধ্যমে জ্ঞানকে মজবুত করা। <ref>Anderson, J., Corbett, A. T., Koedinger, K. R., & Pelletier, R. (1995). Cognitive tutors: Lessons learned: Journal of the Learning Sciences, 4(2), 167-207.</ref> কগনিটিভ টিউটরের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট প্রসঙ্গভিত্তিক প্রতিক্রিয়া সরবরাহ করা। মূলত গণিত এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিক্ষায় কগনিটিভ টিউটর ব্যবহৃত হয়। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করার সুযোগ দেয়, ফলে তারা বিষয়বস্তুর গভীরতা অনুধাবন করতে পারে এবং অন্যদের সাথে যৌথভাবে সমস্যা সমাধানে অংশ নিতে পারে।
কগনিটিভ টিউটরের ওপর একটি গবেষণা করেছিলেন কেনেথ আর. কোয়েডিংগার। এর শিরোনাম ছিল ''Intelligent Tutoring Goes To School in the Big City'' (বড় শহরের স্কুলে বুদ্ধিসম্পন্ন টিউটরিং চলে)। এই গবেষণায় বলা হয়েছে, “পিটসবার্গ নগর গণিত প্রকল্" (PUMP) একটি বীজগণিত পাঠক্রম তৈরি করেছে যা বাস্তব জীবনের সমস্যার গাণিতিক বিশ্লেষণ এবং কম্পিউটেশনাল টুল ব্যবহারের ওপর কেন্দ্রীভূত। আমরা PAT নামের একটি বুদ্ধিমান টিউটর তৈরি করেছি, যা এই পাঠক্রমকে সহায়তা করে এবং এটি পিটসবার্গের তিনটি স্কুলে নবম শ্রেণির বীজগণিত পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। PAT শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক ছিল কারণ এটি শ্রেণিকক্ষে যারা শেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ত তাদের সহায়তা করত। ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে PAT পাঠক্রমটি ১০টি পাঠ ও ২১৪টি সমস্যার অন্তর্ভুক্তিতে সম্প্রসারিত হয়। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুই দিন কম্পিউটার ল্যাবে PAT-এ কাজ করত, এবং তাদের শেখার সময় আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (প্রায় ২৫ দিন থেকে ৭০ দিনে) বৃদ্ধি পায়।” <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997).Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>
টেলিমেন্টরিং, যা ‘ই-মেন্টরিং’ বা ‘অনলাইন-পরামর্শ’ নামেও পরিচিত <ref>Anderson, J. R., Hadley, W. H., Koedinger, K. R., & Mark, M. A. (1997). Intelligent tutoring goes to school in the big city. International Journal of Artificial Intelligence in Education (IJAIED), 8, 30-43.</ref>, শিক্ষার্থীদের এমন একজন ব্যক্তির সাথে কাজ করার সুযোগ দেয় যিনি তাদের কোর্স উপাদানের সমস্যায় সহায়তা করতে পারেন। এই মেন্টরিং প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন এবং সমস্যার সমাধান কেন্দ্রিক। তবে টেলিমেন্টরিং-এর একটি সীমাবদ্ধতা হলো, শিক্ষার্থীরা একই পরামর্শদাতার সাথে বারবার কাজ করতে পারে না। তারা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করলেও একজন শিক্ষকের সাথে যেরকম ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠে, তা হয় না। সরাসরি একজন শিক্ষকের সাথে শিখন এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেখার মধ্যে সম্পর্কের প্রকৃতি ভিন্ন, যা শিক্ষার্থী ও পরামর্শকের মধ্যে সংযোগহীনতার অনুভূতি তৈরি করতে পারে। কগনিটিভ টিউটর বা সফটওয়্যার নির্ভর শেখার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
'''সহপাঠীদের সঙ্গে শেখা: নলেজ ফোরাম ও স্টারবার্স্ট'''
নলেজ ফোরাম একটি সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষার্থীরা ধারণাগুলো নিয়ে কাজ করে এবং তা বিকশিত করে। এটি ব্যক্তির পরিবর্তে সম্প্রদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এখানে শিক্ষার্থীরা বা ব্যক্তিরা এমন একটি ডেটাবেস তৈরি করতে পারে যেখানে জ্ঞান গঠিত হয়, আর এখানে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নলেজ ফোরামের মূল উপাদান হলো ‘নোট’ এবং ‘ভিউ’ <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। একটি ভিউ হলো ব্যক্তিরা যে নোট তৈরি করে সেগুলোর একটি সংগঠিত রূপ, যা ধারণা মানচিত্র, চিত্র বা যেকোনো ভিজ্যুয়াল কাঠামো হতে পারে। এই কাঠামোর মধ্যেই নোটগুলো প্রদর্শিত হয়। এটি বিশেষভাবে সহায়ক কারণ এটি ভিজ্যুয়াল লার্নিংকেও অন্তর্ভুক্ত করে। শিক্ষার্থীরা চিত্র ও মানচিত্রের মাধ্যমে ধারণাগুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি করতে এবং তা বোঝার সুযোগ পায়। এটি এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দলগতভাবে কাজ করতে পারে এবং একটি ডেটাবেসে তথ্য যোগ করতে পারে, যা সময়ের সাথে সাথে প্রসারিত হয়।
তবে জ্ঞান অর্জনের জন্য শুধুমাত্র নলেজ ফোরামই একমাত্র মাধ্যম নয়। বই, বক্তৃতা ও শিক্ষা সফরের মাধ্যমে শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি পায়। নলেজ ফোরাম মূলত একটি ডেটাবেস যেখানে একটি বিষয় বিকশিত ও রূপান্তরিত হয়। নলেজ ফোরামের অনুরূপ স্টারবার্স্ট নামের আরও একটি পদ্ধতিও রয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে ধারণা ভাগাভাগি করতে পারে। তবে স্টারবার্স্টে ধারণাগুলো একটি জালের মতো বিস্তৃত হয়। এই দুটি পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞান গঠন ও সম্প্রসারণ।
নলেজ ফোরাম ব্যবহার করে ক্যারল এবং ইউয়েন ইয়ান চ্যান একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন। তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে:
“নমুনায় হংকংয়ের আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফর্ম ওয়ান থেকে সিক্স (বয়স ১২–১৭) পর্যন্ত ৫২১ জন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা কম্পিউটার-সহায়িত জ্ঞান নির্মাণের ওপর একটি গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিল। নমুনার মধ্যে ৩২২ জন পুরুষ এবং ১৯৯ জন মহিলা শিক্ষার্থী ছিল। সেখানে ২১৬ জন জুনিয়র হাই (গ্রেড ৭–৯, বয়স ১২–১৪) এবং ৩০৫ জন সিনিয়র হাই (গ্রেড ১০–১২, বয়স ১৫–১৭) শ্রেণির। হংকংয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কৃতিত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যান্ডে ভাগ করা হয়; এখানে ২৬৭ জন শিক্ষার্থী উচ্চ ব্যান্ড এবং ২৫৪ জন নিম্ন ব্যান্ডের স্কুল থেকে এসেছে। এই গবেষণাটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়-বিদ্যালয় অংশীদারিত্ব প্রকল্পের অংশ ছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য জ্ঞান নির্মাণ পেডাগজি উন্নয়ন করা। প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক/পরামর্শকগণ শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা করতেন। পুরো বছরজুড়ে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করা হতো যাতে শিক্ষকরা জ্ঞান নির্মাণের দার্শনিক ও পদ্ধতিগত দিকটি ভালোভাবে বুঝতে পারেন; প্রকল্প শিক্ষকদের একটি দল মিলে পাঠক্রম পরিকল্পনা করতেন এবং শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শনে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ও শিক্ষক একসাথে যেতেন।
একটি আদর্শ জ্ঞান নির্মাণশীল শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষার্থীরা সাধারণত অনুসন্ধানের ক্ষেত্র নির্ধারণ করে এবং তাদের নিজস্ব ধারণা ও প্রশ্ন উপস্থাপন করে—‘ধারণাগুলোকে জনসমক্ষে তুলে ধরা’কে সমষ্টিগত উন্নয়নের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয় <ref>Scardamalia, M., & Bereiter, C. (2006). Knowledge building: theory, pedagogy, and technology. In R. K. Sawyer (Ed.), The Cambridge handbook of the learning sciences (pp. 97–119). New York: Cambridge University Press</ref>। এশীয় শ্রেণিকক্ষগুলিতে শিক্ষার্থীদের একটি সম্প্রদায় হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা পাওয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পে শ্রেণিকক্ষ ও অনলাইন আলোচনার সমন্বয় ছিল। সেখানে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতামূলক অনুসন্ধানে অংশগ্রহণ করত—প্রশ্ন উপস্থাপন, ধারণা ও তত্ত্ব প্রকাশ, অন্যদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ এবং সমষ্টিগত জ্ঞান উন্নয়নে ব্যাখ্যা গঠন করত।
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল দুটি প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে, যেগুলো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার অভিজ্ঞতা এবং অনলাইন শেখার প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করেছিল। বিশ্লেষণের সময় অনলাইন শেখার পরিবর্তনশীল প্রতিক্রিয়াযুক্ত উপাদানগুলো বাদ দিয়ে কেবলমাত্র জ্ঞান নির্মাণ এবং শেখার পদ্ধতির উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের নলেজ ফোরাম ব্যবহারের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের জন্য Analytic Toolkit (বিশ্লেষণাত্মক টুলকিট) ব্যবহার করা হয়েছিল। অ্যানালাইটিক টুলকিট সংস্করণ ৪.৬ শিক্ষার্থীদের অনলাইন ফোরামে পারস্পরিক যোগাযোগের ধরণ বিশ্লেষণের জন্য সর্বোচ্চ ২৭টি বিশ্লেষণ সরবরাহ করে।
আমরা আগের গবেষণাগুলোতে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূচক নির্বাচন করেছি, যেমন:
(i) লিখিত নোটের সংখ্যা: এটি অনলাইন অংশগ্রহণ পরিমাপের সবচেয়ে প্রচলিত সূচক। (ii) স্ক্যাফোল্ডস: স্ক্যাফোল্ড হলো চিন্তার সূচক বাক্যাংশ যা শিক্ষার্থীদের চিন্তা গঠনে সহায়তা করে, যেমন “আমি বুঝতে চাই”, “আরও ভালো একটি তত্ত্ব”, “আমাদের জ্ঞান একত্রিত করা”। (iii) সংশোধন: শিক্ষার্থীরা নোট সংশোধনের চেষ্টা করলে তা রেকর্ড করা হয়। জ্ঞান নির্মাণের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ধারণার ওপর গভীর কাজের ইঙ্গিত দেয়। (iv) পড়া নোটের সংখ্যা: এটি কমিউনিটি সচেতনতা যাচাইয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অন্যদের কী লেখা হয়েছে তা না জেনে আলোচনায় অংশ নেওয়া যায় না। (v) বিল্ড-অন নোটের সংখ্যা: এটি নতুন নোট পোস্ট করার সংখ্যা থেকে আলাদা, এটি পূর্ববর্তী নোটের প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে। এটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার গভীরতা বোঝায়। (vi) কীওয়ার্ড: শিক্ষার্থীরা নোট লেখার সময় কীওয়ার্ড যোগ করতে পারে। এই কীওয়ার্ড ব্যবহার করে অন্যরা সম্পর্কিত বিষয়ে আরও নোট খুঁজে পেতে পারে। কীওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং কমিউনিটি সচেতনতা প্রকাশ পায়।” <ref>Chan, C. Chan, Y. (2010). Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1), Aug, 2011. pp. 1445-1457</ref>
'''অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখা: অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশন ও WISE'''
অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে ''দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ জ্যাসপার উডবারি সিরিজ'' নামে পরিচিত ভিডিওভিত্তিক সমস্যা সমাধানের একটি জটিল সিরিজ। এই সিরিজগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন প্রতিটি জ্যাসপার অ্যাডভেঞ্চার একটি জটিল গাণিতিক সমস্যার উপর কেন্দ্রীভূত থাকে, যা সমাধান করতে হয়। যেহেতু এই ধরনের গাণিতিক সমস্যা অনেক জটিল, তাই একা একা সমাধান করা প্রায় অসম্ভব। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাধিক সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং তাদের ধারণাকে সঠিক প্রমাণ করতে প্রমাণ হাজির করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে ওঠে, কারণ এখানে শুধুমাত্র একটি সঠিক উত্তর নেই। শিক্ষার্থীরা আরেকটি উপায়ে একসাথে কাজ করে সমস্যার সমাধান করতে পারে, যার নাম হলো WISE (Web-based Inquiry Science Environment)। এখানে শিক্ষার্থীরা একটি ওয়েবভিত্তিক পরিবেশে একত্রে কাজ করে এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা রিসাইক্লিং সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে। WISE ব্যবহার করে শিক্ষকরা একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা যেসব সমাধান দিচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। “WISE নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রমাণ ও পরামর্শ সরবরাহ করে; নোট, ভিজ্যুয়ালাইজেশন, আলোচনা ও মূল্যায়ন টুলস প্রদান করে; এবং সহযোগিতা, আত্মবিশ্লেষণ ও সমাধান ডিজাইন করার জন্য নির্দেশনা দেয়” <ref>Bruning, R. H., Schraw, G. J., & Norby, M. M. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.) Pearson.</ref>। অ্যাংকার্ড ইনস্ট্রাকশনের মূল ভাবনা হলো, শিক্ষার্থীরা প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতিতে শেখার মাধ্যমে জ্ঞান নির্মাণ করে। এতে উৎপাদনশীল শেখার সুযোগ ঘটে। সেখানে বিভিন্ন উপ-লক্ষ্য তৈরি হয়। WISE-এর মতো প্রোগ্রামে মূল ভাবনাগুলো হলো, শেখার উদ্দেশ্য থাকে নির্ধারিত এবং শিক্ষার্থীরা পূর্বের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে প্রশ্নের উত্তর খোঁজে।
'''সৃষ্টির মাধ্যমে শেখা: স্ক্র্যাচ'''
সৃষ্টির মাধ্যমে শেখার একটি উদাহরণ হলো স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম। এটি একটি ওয়েবসাইট যেখানে মিডিয়া ও ভিজ্যুয়াল উপাদান প্রধান ভূমিকা পালন করে। স্ক্র্যাচ-এ শিক্ষার্থীরা এককভাবে বা দলগতভাবে কাজ করে একটি অনলাইন কমিউনিটির জন্য ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে পারে। তারা একে অপরের সঙ্গে তাদের তৈরি করা কাজগুলো ভাগাভাগি করতে পারে। স্ক্র্যাচ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অবজেক্টের মাধ্যমে চিন্তা করতে পারে, সেইসাথে তাদের কল্পনার জগৎ থেকে কিছু তৈরি করতে পারে। তারা তাদের ভিজ্যুয়াল সৃষ্টির সঙ্গে অডিওও যুক্ত করতে পারে। শিক্ষার্থীরা একসাথে কাজ করে এই প্রজেক্ট তৈরি করে এবং শ্রেণিকক্ষে তা উপস্থাপন করতে পারে, অথবা শিক্ষক নির্দিষ্ট কোনো থিম বা বিষয়ে ভিত্তি করে প্রজেক্ট নির্ধারণ করতে পারেন। এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে এবং সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ধরো তুমি অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস ক্লাসে আছো এবং তোমার চূড়ান্ত প্রজেক্টে সেমিস্টারে শেখা কোনো একটি বিষয় বেছে নিয়ে তার একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন তৈরি করতে হবে। প্রজেক্টটি দলগত বা এককভাবে করা যেতে পারে। তুমি তোমার দলের সদস্যদের সঙ্গে স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলে এবং শুরু করলে বিভিন্ন চরিত্র যেমন আহত সৈনিক, যোদ্ধা ইত্যাদি তৈরি করতে। তোমরা দলগতভাবে আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করছো এবং একে একে সেগুলো তৈরি করছো। ধীরে ধীরে তোমাদের কল্পনার ইতিহাসচিত্র বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এখন তুমি সেই ইতিহাসের অংশটি একটি চিত্র হিসেবে দেখতে পাচ্ছো এবং তা সহপাঠীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছো।
'''গেমের মাধ্যমে শেখা: কোয়েস্ট আটলান্টিস'''
শিক্ষার্থীদের একসাথে কাজ করার আরেকটি উপায় হলো গেম। এর একটি উদাহরণ হলো কোয়েস্ট আটলান্টিস। এই গেমটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতি ও জগত উপস্থাপন করে। সেখানে তারা সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং বিভিন্ন কাজ বেছে নিয়ে সমাধান করতে হয়। এটি একটি আকর্ষণীয় গেম, তবে এটি শ্রেণিকক্ষের জন্য নয়, বরং শিক্ষার্থীদের অবসরের সময়ে খেলার জন্য উপযুক্ত। এই গেমটি '''প্রাসঙ্গিক শিক্ষার''' জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত; এটি এমন এক ধরনের শিক্ষা যেখানে সামাজিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করে শেখা হয়।
কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক শেখা শিক্ষার্থীদের উপকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার একটি চমৎকার উপায়। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে—যেমন শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ডিভাইস না থাকা, শিক্ষার্থীরা মনোযোগ হারিয়ে শুধু প্রোগ্রামের সঙ্গে খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। আবার যেসব প্রোগ্রাম সমস্যা সমাধানের সময় বারবার সহায়তা বা হিন্ট দেয়, সেগুলোতে শিক্ষার্থীরা চেষ্টাই না করে কেবল সহায়তা নিতে থাকে। যদিও এই প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিগুলো অনেক সুবিধা নিয়ে আসে, তবুও এর নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সব প্রযুক্তি কখনোই শিক্ষার্থীদের শেখার প্রধান ভিত্তি হওয়া উচিত নয়; বরং এগুলো হওয়া উচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পরিপূরক সহায়তা।
== শব্দকোষ ==
'''জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব (Cognitive Load Theory):''' জন সোয়েলারের প্রস্তাবিত একটি তত্ত্ব, যা কার্যকর স্মৃতি ও নির্দেশনার ওপর গুরুত্ব দেয়।
'''জ্ঞানীয় শিক্ষক (Cognitive tutors)''': এক ধরনের বুদ্ধিমান টিউটর যা 'গাইডেড লার্নিং বাই ডুয়িং' বা ‘করতে করতে শেখা’র জন্য দিকনির্দেশনা দেয়।
'''সহযোগী শিক্ষা''': বন্ধু বা দলীয়ভাবে জ্ঞান ভাগাভাগি ও শেখার প্রক্রিয়া।
'''দক্ষতা বিপরীত প্রভাব''': এমন একটি পর্যায়। সেখানে অতিরিক্ত কগনিটিভ লোডের কারণে সহায়তা ও নির্দেশনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
'''বহিরাগত জ্ঞানীয় চাপ (Extraneous Cognitive Load):''' উপস্থাপনার ধরন অনুযায়ী কার্যকর স্মৃতিতে প্রভাব পড়ার প্রক্রিয়া।
'''জার্মেইন জ্ঞানীয় চাপ (Germane Cognitive Load):''' কার্যকর স্মৃতির সেই অংশ, যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যয় হয় এবং শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
'''অভ্যন্তরীণ জ্ঞানীয় চাপ (Intrinsic Cognitive Load):''' তথ্য যেভাবে উপস্থাপিত হয়, তার ভিত্তিতে স্মৃতির ওপর প্রভাব।
'''অ-পুনরাবৃত্ত দক্ষতা:''' প্রচেষ্টা-নির্ভর, ভুলপ্রবণ, সহজেই অতিভারযুক্ত এবং মনোযোগকেন্দ্রিক কাজ; =
'''পুনরাবৃত্ত দক্ষতা''': পদ্ধতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ; এগুলো অল্প বা কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ঘটে, উপাত্ত-চালিত এবং খুব কম বা কোনও সচেতন মনোযোগের প্রয়োজন হয় না
'''অবস্থিত শিক্ষা:''' সামাজিক সম্পর্কের মাধ্যমে এবং পূর্ব জ্ঞানকে নতুন প্রেক্ষাপটে সংযুক্ত করে যে শিক্ষা অর্জিত হয়।
'''টাস্ক ক্লাস''': সহজ থেকে জটিল বা অর্থপূর্ণ কাজের দিকে অগ্রসর হওয়ার নীতিমালা।
== প্রস্তাবিত পাঠ ==
* Sarfo, F., & Elen, J. (2007). - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। How people learn. - মানুষ কিভাবে শেখে। ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। Students’ views of collaboration and online participation in Knowledge Forum. Computers & Education, Vol 57(1) - জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। Developing technical expertise in secondary technical schools: The effect of 4C/ID learning environments. Learning Environ Res Learning Environments Research, 207-221. - "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। doi:10.1007/s10984-007-9031-2
== তথ্যসূত্র ==
* - অ্যান্ডারসন, জে, কর্বেট, এটি, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং পেলেটিয়ার, আর (১৯৯৫)। জ্ঞানীয় শিক্ষক: শিখেছি পাঠ: লার্নিং সায়েন্সেসের জার্নাল, ৪ (২), ১৬৭-২০৭।
* - অ্যান্ডারসন, জে আর, হ্যাডলি, ডাব্লুএইচ, কোডিঞ্জার, কেআর, এবং মার্ক, এমএ (১৯৯৭)। বুদ্ধিমান টিউটরিং বড় শহরের স্কুলে যায়। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন এডুকেশন (আইজেএআইইডি), ৮, ৩০-৪৩।
* বারাব, এসএ, ডজ, টি, এবং ইনগ্রাম-গোবল, এ (২০০৮)। রিফ্লেক্সিভ প্লে স্পেস: একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষা। ''গেমস, লার্নিং অ্যান্ড সোসাইটি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ, এমএ।''
* - ব্রুনিং, আর এইচ, শ্রাও, জি জে, এবং নর্বি, এম এম (২০১১)। Cognitive psychology and instruction (English ভাষায়) (৫th সংস্করণ)। পিয়ারসন।
* বোলেন, এল, হ্যারার, এ, ম্যাকলারেন, বিএম, সিওয়াল, জে, এবং ওয়াকার, ই (১৯৯৫) সহযোগিতা এবং জ্ঞানীয় টিউটরিং: ইন্টিগ্রেশন, অভিজ্ঞতামূলক ফলাফল এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
* - ব্রানসফোর্ড, জে ডি, ব্রাউন, এএল, এবং ককিং, আর আর (২০০০)। ''মানুষ কিভাবে শেখে।'' ওয়াশিংটন ডিসি: জাতীয় একাডেমি প্রেস।
* - ক্রেগ, এস, ঘোলসন, বি, এবং ড্রিসকোল, ডি (২০০২)। "মাল্টিমিডিয়া শিক্ষাগত পরিবেশে অ্যানিমেটেড শিক্ষামূলক এজেন্ট: এজেন্ট বৈশিষ্ট্য, চিত্র বৈশিষ্ট্য এবং অপ্রয়োজনীয়তার প্রভাব"। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল, ৯৪ (২), ৪২৮-৪৩৪। ডিওআই:১০.১০৩৭//০০২২-০৬৬৩.৯৪.২.৪২৮
* Chan, C. Chan, Y. (২০১০)। জ্ঞান ফোরামে সহযোগিতা এবং অনলাইন অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত। কম্পিউটার ও শিক্ষা, ভলিউম ৫৭ (১), আগস্ট, ২০১১। পৃষ্ঠা ১৪৪৫–১৪৫৭
* ↑ Kevin O'Neil, D., & Harris, J. B. (২০০৪)। পাঠ্যক্রম ভিত্তিক টেলিমেন্টরিং প্রোগ্রামগুলোতে সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উন্নয়নমূলক প্রয়োজনীয়তাগুলো ব্রিজ করা। ''শিক্ষায় প্রযুক্তি সম্পর্কিত গবেষণা জার্নাল, ৩৭ (২),'' ১১১-১২৮
* মায়ার, আর.ই., হাইজার, জে, এবং লন, এস (২০০১)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে জ্ঞানীয় সীমাবদ্ধতা: বেশি উপাদান উপস্থাপন করার সময় কম বোঝার ফলাফল হয়। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান জার্নাল ৯৩'' (১), ১৮৭-১৯৮।
* মেরিয়েনবোয়ার, জে, ক্লার্ক, আর, এবং ক্রুক, এম (২০০২)। জটিল শিক্ষার জন্য ব্লুপ্রিন্ট: ৪ সি / আইডি-মডেল। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫০ (২), ৩৯-৬৪।
* সারফো, এফ, এবং এলেন, জে (২০০৭)। "মাধ্যমিক প্রযুক্তিগত বিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিকাশ: ৪ সি / আইডি শেখার পরিবেশের প্রভাব"। লার্নিং এনভাইরন রেস লার্নিং এনভায়রনমেন্টস রিসার্চ, ২০৭-২২১। ডিওআই:১০.১০০৭/s১০৯৮৪-০০৭-৯০৩১-২
* Scardamalia, M., & Bereiter, C. (২০০৬)। জ্ঞান নির্মাণ: তত্ত্ব, শিক্ষাবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি। ভিতরে আর কে সাওয়ার (সম্পাদনা)। ''লার্নিং সায়েন্সেসের কেমব্রিজ হ্যান্ডবুক'' (পৃষ্ঠা ৯৭-১১৮)। নিউ ইয়র্ক: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস।
* স্যালসবারি, ডিএফ, রিচার্ডস, বিএফ, এবং ক্লেইন, ডি (১৯৮৫)। ডিজাইনিং অনুশীলন: নির্দেশমূলক নকশা তত্ত্বগুলো থেকে প্রেসক্রিপশন এবং সুপারিশগুলোর একটি পর্যালোচনা। জার্নাল অফ ইনস্ট্রাকশনাল ডেভেলপমেন্ট, ৮ (৪), ৯-১৯।
* Schnotz, W., & Rasch, T. (২০০৫)। মাল্টিমিডিয়া লার্নিংয়ে অ্যানিমেশনগুলোর প্রভাবগুলো সক্ষম, সহজতর করা এবং বাধা দেওয়া: জ্ঞানীয় চাপ হ্রাস কেন শেখার উপর নেতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। ইটিআর অ্যান্ড ডি শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন, ৫৩ (৩), ৪৭-৫৮।
* Sweller, J. (২০১০)। উপাদান ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি এবং অভ্যন্তরীণ, বহিরাগত এবং জার্মান জ্ঞানীয় চাপ। ''শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা ২২'' (২), ১২৩-১৩৮। ডিওআই: ১০.১০০৭// এস ১০৬৪৮-০১০-৯১২৮-৫।
* , ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং পাস, এফ (১৯৯৮)। জ্ঞানীয় আর্কিটেকচার এবং নির্দেশমূলক নকশা। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান পর্যালোচনা, ১০ (৩), ২৫১-২৯৬। doi:১০৪০-৭২৬X/৯৮/০৯০০-০২৫১S১৫.০০/০
* ভ্যান মেরিয়েনবোয়ার, জে, এবং আইরেস, পি (২০০৫)। জ্ঞানীয় চাপ তত্ত্ব এবং ই-লার্নিংয়ের জন্য এর নকশার প্রভাব নিয়ে গবেষণা। ''শিক্ষাগত প্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন ৫৩'' (৩), ৫-১৩।
{{সূত্র তালিকা}}{{BookCat}}
hlhvjin7uqkhb1ariockraz6p5dnqzt
আলাপ:প্রকৌশল শব্দবিজ্ঞান/নমনীয় প্রাচীরযুক্ত সিলিন্ডারাকার নালিতে শব্দ সঞ্চালন
1
26256
85742
81777
2025-07-06T20:12:10Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* বাক্য ভেঙ্গে লিখুন */ নতুন অনুচ্ছেদ
85742
wikitext
text/x-wiki
{{আলাপ পাতা}}
{{আলাপ পাতা/উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫}}
== বাক্য ভেঙ্গে লিখুন ==
মনে রাখবেন, আপনি বাংলা ভাষায় লিখছেন। তাই বাংলা বাক্যের গঠনরীতি অনুসরণ করবেন, ইংরেজি বাক্যের নয়।
যেমন, আপনার এই বাক্যটি দুর্বোধ্য (এবং এ বাক্যটিকে ভেঙ্গে লেখা উচিত):
"অনমনীয় প্রাচীরবিশিষ্ট নালীতে ধ্বনি সম্প্রসারণের বিপরীতে, যেখানে ধ্বনিচাপ ধাবিত হয় নল বরাবর অক্ষীয়ভাবে; নমনীয় প্রাচীরের ক্ষেত্রে এই চাপের একটি অংশ রেডিয়ালি নলটিকে প্রসারিত করতেও ব্যবহৃত হয়।"
আশা করবো আপনি সংশোধনপূর্বক জমা দিবেন (পর্যালোচনা শেষ হবার আগেই)। ধন্যবাদ। [[ব্যবহারকারী:Ishtiak Abdullah|Ishtiak Abdullah]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Ishtiak Abdullah|আলাপ]]) ২০:১২, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
petxguwjx6je8ovrblzlhwh7j31ukyp
85743
85742
2025-07-06T20:12:56Z
Ishtiak Abdullah
9574
/* বাক্য ভেঙ্গে লিখুন */
85743
wikitext
text/x-wiki
{{আলাপ পাতা}}
{{আলাপ পাতা/উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫}}
== বাক্য ভেঙ্গে লিখুন ==
@[[ব্যবহারকারী:Sheikh Mehedi Hassan|Sheikh Mehedi Hassan]] মনে রাখবেন, আপনি বাংলা ভাষায় লিখছেন। তাই বাংলা বাক্যের গঠনরীতি অনুসরণ করবেন, ইংরেজি বাক্যের নয়।
যেমন, আপনার এই বাক্যটি দুর্বোধ্য (এবং এ বাক্যটিকে ভেঙ্গে লেখা উচিত):
"অনমনীয় প্রাচীরবিশিষ্ট নালীতে ধ্বনি সম্প্রসারণের বিপরীতে, যেখানে ধ্বনিচাপ ধাবিত হয় নল বরাবর অক্ষীয়ভাবে; নমনীয় প্রাচীরের ক্ষেত্রে এই চাপের একটি অংশ রেডিয়ালি নলটিকে প্রসারিত করতেও ব্যবহৃত হয়।"
আশা করবো আপনি সংশোধনপূর্বক জমা দিবেন (পর্যালোচনা শেষ হবার আগেই)। ধন্যবাদ। [[ব্যবহারকারী:Ishtiak Abdullah|Ishtiak Abdullah]] ([[ব্যবহারকারী আলাপ:Ishtiak Abdullah|আলাপ]]) ২০:১২, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
t8feagzr2buc747hckty32t0t45poxm
পেশাদার ও কারিগরি লেখনী/অলঙ্করণ/লেখক/রীতিনীতি
0
26302
85764
85628
2025-07-07T03:20:10Z
SMontaha32
11242
/* নির্দেশিকা ১: কী প্রত্যাশিত তা খুঁজে বের করুন */
85764
wikitext
text/x-wiki
=নিজস্ব ভয়েস তৈরি করার নির্দেশিকা=
লেখার শৈলী অনেক কিছু বোঝায়। এক প্রান্তে রয়েছে লেখকের লেখাকে অনন্য করে তোলার বৈশিষ্ট্যসমূহ। অপর প্রান্তে রয়েছে আইনি বা বৈজ্ঞানিক লেখার শৈলী, যা নির্দিষ্ট কিছু পেশাজীবী—যেমন আইনজীবী বা বিজ্ঞানীদের—মধ্যে প্রচলিত লেখার বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে। শৈলী বলতে একটি লেখার পাঠযোগ্যতাও বোঝায়—যদি তা পরিষ্কার, দুর্বোধ্য বা অনুপ্রেরণাদায়কভাবে লেখা হয়।
কর্মক্ষেত্রে আপনি একদিকে আপনার পেশাগত শৈলীর প্রচলিত রীতি এবং আপনার নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের স্টাইল মেনে চলেন, অন্যদিকে ব্যক্তিগত অভিব্যক্তিও প্রকাশ করেন। এতে পাঠকের জন্য পড়া সহজ হয় এবং তারা পড়ার সময় প্রভাবিত হন। আপনার বিকল্পগুলো বিবেচনা করুন এই দৃষ্টিকোণ থেকে যে, তা পাঠকের কাছে আপনার লেখার ব্যবহারযোগ্যতা ও প্রভাবশীলতা কেমনভাবে উপস্থাপন করবে। পাঠক যা দেখেন, তার ভিত্তিতে তারা আপনার সম্পর্কে এবং আপনার মনোভাব নিয়ে একটি ধারণা তৈরি করেন—যা আপনার যোগাযোগের প্রভাব বাড়াতে বা কমাতে পারে। আপনার লেখনীতে নিজের ভয়েস গঠন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আপনার লেখার সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
== নির্দেশিকা ১: কী প্রত্যাশিত তা খুঁজে বের করুন ==
<div style="width:60%; min-width: 550px;">
একটি কার্যকরী ভয়েস বা কণ্ঠস্বর হলো এমন একটি যা পাঠকের দৃষ্টিকোণে প্রাসঙ্গিক ও উপযুক্ত। তবে, আপনি বিষয়বস্তু, শব্দচয়ন এবং আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আপনার শ্রোতাদের নির্ধারণ করতে পারেন। আপনার কণ্ঠস্বর ও শৈলী পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। কণ্ঠস্বরটি স্পষ্ট হওয়া জরুরি যে, এটি কার উদ্দেশ্যে রচিত।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা আনুষ্ঠানিক ভাববে?
: যখন আপনি সংকোচন (যেমন:না) এবং কথ্য শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহার করেন, তখন লেখাটি অনানুষ্ঠানিক, কথোপকথনের মতো শোনায়।
: ''নোট: ছোট শব্দ ব্যবহারে লেখাটি অনানুষ্ঠানিক হয় না। বাস্তবে, অনেকেই সহজ ভাষা পছন্দ করেন যাতে জটিল ধারণাগুলো পড়তে সহজ হয়। বড় শব্দ পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে পারে, বা লেখাটিকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ শোনাতে পারে। এটি দীর্ঘ বাক্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় ধরনের লেখাতেই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।''
: আনুষ্ঠানিক শৈলীতে সঠিক শব্দচয়ন, বাক্যগঠন, আনুষ্ঠানিক
বাক্যরীতি ও উপযুক্ত ভাষা ব্যবহার করা হয়। আপনার লেখার শৈলী নির্ধারণে সবসময় আপনার শ্রোতাদের কথা বিবেচনায় রাখুন।আনুষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহারের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেমন বক্তৃতা, সেবা, শোকবার্তা এবং প্রবন্ধ। এই ধরনের লেখাগুলিতে শ্রোতার বয়স যতই হোক না কেন, আনুষ্ঠানিক ভাষা সব বয়সের জন্য উপযুক্ত হতে পারে। অনানুষ্ঠানিক ভাষার ব্যবহার যেমন বন্ধুকে চিঠি লেখা বা ডায়েরিতে লেখার ক্ষেত্রে উপযুক্ত। কখনও কখনও অনানুষ্ঠানিক লেখা আরও আন্তরিক মনে হতে পারে, কারণ এতে আবেগ স্পষ্ট হয়।
আমার পাঠকেরা আমার লেখাকে কতটা ব্যক্তিক বা নিরপেক্ষ মনে করবে?
: ব্যক্তিগত বা সাবজেকটিভ শৈলীতে আপনি “আমি” ব্যবহার করে নিজের মতামত দেন এবং নিজেকে লেখায় উপস্থাপন করেন। নিরপেক্ষ বা অবজেকটিভ শৈলীতে আপনি নিজের উপস্থিতিকে গোপন করেন, মতামতকে তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং নিজের কাজগুলো তৃতীয় পুরুষে বা নির্বিকার কণ্ঠে বলেন। নিরপেক্ষ লেখা বেশি আনুষ্ঠানিক এবং পেশাদার ও কারিগরি লেখার ক্ষেত্রে এটি প্রত্যাশিত।
আমার পাঠকেরা আমার সাথে কতটা "দূরত্ব" প্রত্যাশা করে?
: ব্যক্তিগত শৈলীতে আপনি পাঠকের খুব কাছাকাছি থাকেন, কারণ আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম ব্যবহার করেন এবং পাঠকদের সরাসরি সম্বোধন করেন। লেখার কথোপকথনধর্মী ধরণও এই ঘনিষ্ঠতা বোঝাতে পারে। অন্যদিকে, অপারসোনাল বা নিঃসঙ্গ শৈলীতে আপনি ব্যক্তিগত সর্বনাম এড়িয়ে যান এবং নিজের ও পাঠকদের তৃতীয় পুরুষে উল্লেখ করেন, যাতে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আপনি কোন শৈলী ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে লেখার উদ্দেশ্য এবং শ্রোতার উপর।
::<u>পাঠকের শৈলীগত প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়সমূহ:</u>
::* পাঠকের সঙ্গে আপনার পেশাগত সম্পর্ক।
::* আপনার উদ্দেশ্য।
::* বিষয়বস্তু।
::* আপনার ব্যক্তিত্ব।
::* আপনার নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানের রীতিনীতি।
::* আপনার ক্ষেত্র, পেশা বা শাখার রীতিনীতি।
যদি প্রত্যাশিত শৈলী অকার্যকর হয়?
: ''নোট: কখনও কখনও প্রত্যাশিত শৈলী অন্যান্য বিকল্প অপেক্ষা কম কার্যকর হতে পারে।''
: উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রত্যাশিত শৈলী একটি বহুল নিন্দিত শৈলী—''ব্যুরোক্রেটিজ'' নামে পরিচিত। এই ধরনের লেখায় অপ্রয়োজনীয় শব্দ ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ঢেকে ফেলা হয়, দুর্বল ক্রিয়া ব্যবহারে কার্যকলাপ অস্পষ্ট হয়, এবং বিমূর্ত শব্দে লেখাটি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
: প্রায়ই এই শৈলীতে অতিরঞ্জিত শব্দভাণ্ডার এবং অহঙ্কারপূর্ণ গাম্ভীর্য থাকে, যা লেখকের বক্তব্য বোঝা কঠিন করে তোলে বা পুরোপুরি বাধাগ্রস্ত করে।
ব্যুরোক্রেটিজ: উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের অনুশীলন অনুসারে, প্রতিটি উপাদানকে তার সরবরাহকারী বা উৎস থেকে পাওয়ার পর কিন্তু চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা ও যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ ভাষা: কার্যকর গুণগত নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি উপাদান চূড়ান্ত সমাবেশের আগে আলাদাভাবে পরীক্ষা করতে হয়।
ব্যুরোক্রেটিজ: সর্বশেষ মাসিক সময়কালে, ধীর গতির পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের করা অভিযোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণ ভাষা: গত মাসে অনেক বেশি গ্রাহক ধীর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
: ব্যুরোক্রেটিজ একটি এতটাই গুরুতর প্রতিবন্ধকতা যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে সরকারি প্রকাশনা এবং অন্যান্য দলিল (যেমন বীমা নীতি)–এ সাধারণ ইংরেজি ব্যবহারের জন্য আইন পাস হয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলো আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ এড়াতে সাহায্য করবে। তবে, কিছু ব্যবস্থাপক ও প্রতিষ্ঠান এখনো ভাবেন যে, এই ফুলানো শৈলী খুবই প্রভাবশালী শোনায়। যদি আপনাকে ব্যুরোক্রেটিজ লেখার অনুরোধ করা হয়, তাহলে আপনি কেন সহজবোধ্য শৈলী বেশি কার্যকর তা বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি বোঝাতে ব্যর্থ হন, তবে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনীয় শৈলী ব্যবহার করুন। এমনকি সাধারণভাবে ব্যুরোক্রেটিক শৈলীর মধ্যেও আপনি কিছু উন্নতি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার নিয়োগকর্তা শব্দবহুল ও বিমূর্ত শৈলী প্রত্যাশা করেন, তবুও আপনি অপেক্ষাকৃত কম ফুলানো শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
</div>
==='''নির্দেশিকা ২: আপনার ক্রিয়াপদে কর্মটি যুক্ত করুন'''===
অধিকাংশ বাক্যই কর্ম নিয়ে। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপকরা অনুমোদন দেন। অথচ অনেকেই কর্মকে লুকিয়ে রাখেন বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে।
নিম্নের বাক্যটি বিবেচনা করুন: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও সক্রিয় করা যায় যদি "রূপান্তর" ক্রিয়াপদে ব্যবহার করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসের মধ্যে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যকে ক্রিয়ার উপর কেন্দ্রীভূত করা</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া বা তার রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
''হতে'' ক্রিয়াটি প্রায়শই বলে কিছু কী *আছে*, কিন্তু কী *করে* তা নয়।
'''মূল''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনরায় সংক্রমণ থেকে <u>সুরক্ষা প্রদান করে</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': কাঁচামালের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণেই সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সমাপ্ত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'''মূল''': বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রকৌশলীদের প্রশ্ন তোলার পেছনে <u>কয়েকটি কারণ রয়েছে</u>।
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' ইত্যাদি প্রত্যয়যুক্ত শব্দে কর্মকে নামজ করে ফেললে তা এড়িয়ে চলুন।
'''মূল''': অতএব, আমি একটি <u>সুপারিশ</u> করতে চাই যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': অতএব, আমি <u>সুপারিশ করছি</u> যে বিভাগটি অতিরিক্ত দুইজন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্য কর্ম সম্পর্কিত, কিছু বাক্য নয়। উদাহরণস্বরূপ, বিষয় এবং পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়শই তালিকা উপস্থাপন বা আলোচনার গঠন ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: এই বাক্যে ''হতে'' উপযুক্ত—
কোম্পানির উচিত প্রধান দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নে বিনিয়োগ করার তিনটি প্রধান কারণ আছে।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন যদি না নিষ্ক্রিয় বাক্য ব্যবহার করার সঙ্গত কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যকে কর্ম এবং কর্মকারীর উপর কেন্দ্রীভূত করার আরেকটি উপায় হলো ''সক্রিয় রচনারীতি'' ব্যবহার করা, নিষ্ক্রিয় রচনারীতি নয়। অ্যাকটিভ বাক্য লেখার জন্য, কর্মকারীর—যিনি কাজটি করেন—তাকে বিষয়বস্তু হিসেবে রাখুন। আপনার ক্রিয়াপদটি তখন সেই কর্মকারীর কাজকে প্রকাশ করবে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলো সুপারিশ করেছেন।
নিষ্ক্রিয় রচনায়, বাক্যের বিষয় এবং কর্মকারী আলাদা। বিষয়টি কোনো কাজের দ্বারা প্রভাবিত হয়।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': এই পরিবর্তনগুলো পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশকৃত হয়েছিল।
'''নিষ্ক্রিয় বাক্য''': কোরিয়ান আকরিকটি আমাদের দ্বারা ক্রয় করা হয়েছিল।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান আকরিকটি ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠকেরা অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। সক্রিয় রচনায় অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা কম থাকে, যা নিষ্ক্রিয় রচনায় বেশি দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ,(বলটি মারা হয়েছিল) ব্যাকরণগতভাবে সঠিক হলেও, কে বলটি মারল তা বলা হয়নি। কিন্তু সক্রিয় রচনায় লেখক এটি পরিষ্কার করেন:(লিন্ডা বলটি মারলেন)।
যদিও নিষ্ক্রিয় রচনায় পাঠযোগ্যতা কমে, কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যবহার উপযোগী। যেমন, আপনি যদি কর্মকারীর নাম গোপন রাখতে চান তবে এটি কার্যকর হতে পারে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে নিষ্ক্রিয় রচনায় কারো পরিচয় ইচ্ছাকৃতভাবে আড়াল করে নৈতিকভাবে ভুল কাজ না করা হয়, বিশেষ করে যখন কোনো দায়িত্ব এড়াতে তা ব্যবহার করা হয়।
===''নির্দেশনা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দিন''===
পরিষ্কার, জোরালো বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হলো আপনার পাঠকদের মনোযোগ আপনার বার্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটির দিকে পরিচালিত করা।
<u>সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জোর দেওয়ার কৌশল</u>
1. গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি বাক্যের শেষে রাখুন
বাক্যের শেষে মূল তথ্য রাখার জন্য কখনও কখনও খসড়া নতুনভাবে সাজাতে হতে পারে।
'''মূল''': বিভাগের কার্যকারিতা সব ক্ষেত্রেই চমৎকার হয়েছে।
'''পরিমার্জিত''': সব ক্ষেত্রেই, বিভাগের কার্যকারিতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল''': <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা</u> হলো কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''পরিমার্জিত''': কলেজ-বয়সী ক্রেতাদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো এর <u>উজ্জ্বল বাহ্যিক নকশা।</u>
2. মূল তথ্যটি প্রধান উপবাক্যে রাখুন
যদি আপনার বাক্যে একাধিক উপবাক্য থাকে, তাহলে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা প্রধান উপবাক্যে রাখুন।
উদাহরণ তুলনা করুন:
যদিও আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে, আমাদের লাভ বেড়েছে।
যদিও আমাদের লাভ বেড়েছে, আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছে।
প্রথম বাক্যে প্রধান উপবাক্যে ''লাভ'' বিষয়বস্তু হওয়ায় জোর পড়েছে লাভের ওপর। দ্বিতীয় বাক্যে জোর পড়েছে উৎপাদনশীলতার ওপর, কারণ সেটি প্রধান উপবাক্যের বিষয়বস্তু।
3. টাইপোগ্রাফি ব্যবহার করে জোর দিন
বোল্ড ও ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে সচেতন থাকুন যেন অতিরিক্তভাবে ব্যবহার না হয়। অনেক কিছু একসাথে জোর দিলে কিছুই আলাদা করে নজরে পড়ে না।
4. পাঠককে সরাসরি বলে দিন কোন তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ
মূল তথ্যের তাৎপর্য পাঠককে সরাসরি জানানোও এক ধরনের জোর দেওয়া।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদেরা শেয়ারবাজারে পতনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ চিহ্নিত করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের মজুদ বৃদ্ধি এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মূল্যস্ফীতির লক্ষণ।
5. অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা পরিহার করুন
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা তথ্য ব্যবসায়িক লেখায় বিশেষভাবে পরিহারযোগ্য। ব্যবসায়িক জগতে সময় মানেই টাকা। আপনার বস বা ক্লায়েন্ট যদি আপনার অতিরিক্ত শব্দে ভরা ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করেন, তাহলে সেটি অপ্রয়োজনীয় ব্যয়। লেখার পর পুনঃপড়ে দেখুন কোনটি সহজবোধ্য বা সুস্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে কি না।
উদাহরণ: ঘড়ির কাঁটায় দেখা গেল যে সে তার কাজে পৌঁছাতে দেরি করেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
এটি স্পষ্ট যে সময় ঘড়ির কাঁটায় দেখায় এবং কাজের জায়গায় মানুষ সাধারণত কাজই করে। এই রূঢ় উদাহরণটি দেখায় যে লেখার দৈর্ঘ্য মান বাড়ানোর গ্যারান্টি নয়। বেশিরভাগ ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য লেখা বেশি কার্যকর।
===''নির্দেশনা ৫: বাক্যের দৈর্ঘ্য ও গঠন বৈচিত্র্যময় করুন''===
একই রকম গঠনের সব বাক্য ব্যবহার করলে দুটি সমস্যা দেখা দেয়। একঘেয়েমি আসে এবং (সব বাক্য একই রকম হওয়ায়) গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলাদা করে জোর দেওয়া যায় না।
এই সমস্যা এড়াতে দুটি উপায় আছে:
• বাক্যের দৈর্ঘ্যে বৈচিত্র্য আনুন।
– দীর্ঘ বাক্য বিভিন্ন ধারণার মধ্যে সম্পর্ক দেখাতে ব্যবহার করা যায়। সংক্ষিপ্ত বাক্যগুলোর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অংশে জোর দেওয়া যায়।
• বাক্য গঠনে বৈচিত্র্য আনুন।
– উদাহরণস্বরূপ, বাক্যের ব্যাকরণগত বিষয়বস্তু সব সময় প্রথম শব্দ হতে হবে না। যদি তা হতো, তাহলে ইংরেজি ভাষা অনেকটা তার গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলত। একটি বিকল্প হলো যুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক বোঝাতে উপবাক্য দিয়ে বাক্য শুরু করা।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমাদের জরিপ সম্পন্ন করার পর</u>, আমরা নিশ্চিতভাবে জানব প্রস্তাবিত নতুন কারখানার স্থানটি এক সময় আদিবাসীদের ক্যাম্পিং এলাকা ছিল কি না।
'''প্রারম্ভিক উপবাক্য''': <u>আমরা সব বিকল্প ভালোভাবে পর্যালোচনা করায়</u>, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে একটি নিউম্যাটিক ড্রাইভই সবচেয়ে ভালো কাজ করবে এবং নির্ভরযোগ্য সেবা দেবে।
===''নির্দেশনা ৬: সার্বিক নির্দেশনা: আপনার পাঠক যদি আপনার ভাষায় দক্ষ না হয়, তাহলেতাদের সুবিধার্থে বাক্যগঠনে পরিবর্তন আনুন''===
আপনার বাক্যের গঠন পাঠকদের—যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয়—বোঝার সুবিধা-অসুবিধাকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও কম্পিউটার শিল্পসহ অনেক খাতে কোম্পানিগুলো বিদেশি পাঠকদের জন্য সরল ইংরেজি রচনার নিয়ম তৈরি করেছে। এই ধরনের ভাষার একটি সীমিত শব্দভাণ্ডার থাকে এবং এটি এমন ব্যাকরণগত নিয়ম অনুসরণ করে যা পাঠকদের বোঝা সহজ করে।
সব পাঠকের জন্য এতটা সরলীকরণ প্রয়োজন নাও হতে পারে। তাই আপনার নির্দিষ্ট পাঠকদের সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, বাক্যের গঠন সরল করার অর্থ এই নয় যে চিন্তাধারাটিকেও সরলীকরণ করতে হবে।
<u>যারা ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকদের জন্য বাক্য লেখার নির্দেশনা</u>
• সহজ বাক্যগঠন ব্যবহার করুন। – যত বেশি জটিল হবে, পাঠকদের বোঝা তত কঠিন হবে।
• বাক্য সংক্ষিপ্ত রাখুন। – দীর্ঘ বাক্য, গঠন সহজ হলেও, বোঝা কঠিন হতে পারে। ২০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
• অ্যাকটিভ ভয়েস ব্যবহার করুন। – ইংরেজিতে দক্ষ নয় এমন পাঠকেরা প্যাসিভ ভয়েসের তুলনায় অ্যাকটিভ ভয়েস অনেক সহজে বোঝে।
==শব্দ বাছাই==
শব্দ বাছাইয়ের সময়, আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত পাঠকেরা যেন দ্রুত ও সঠিকভাবে আপনার বক্তব্য বুঝতে পারে। একইসঙ্গে, মনে রাখবেন, আপনার শব্দের পছন্দ পাঠকের ওপর আপনার এবং আপনার বিষয়ে মনোভাবও প্রভাবিত করে। তাই এমন শব্দ ব্যবহার করুন যা আপনার যোগাযোগকে আরও প্রভাবশালী করে তোলে। শব্দের ব্যবহার আপনার কণ্ঠস্বর কেমন শোনা যায়, কতটা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, তাও নির্ধারণ করতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ১: আপনার বাক্যগুলো সরল করুন'''===
ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনার বাক্যগুলো সরল করা। পড়া একটি '''কঠিন কাজ'''। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এই কাজের অনেকটাই শর্ট-টার্ম মেমোরি করে থাকে। এটি প্রতিটি বাক্যের শব্দগুলো কীভাবে একটি নির্দিষ্ট অর্থ তৈরি করে তা বুঝতে চেষ্টা করে। কম শব্দ মানে কম পরিশ্রম। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে যে যখন '''আমরা''' আমাদের বার্তাটি সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করি, তখন '''আমরা''' এটিকে আরও শক্তিশালী, স্মরণযোগ্য এবং প্রভাবশালী করে তুলি।
<u>বাক্য সরল করার কৌশল</u>
১. অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিন।
সরাসরি অর্থ প্রকাশ করতে পারেন এমন অংশগুলো খুঁজুন।
'''উদাহরণ''': কাজের ঘরের <u>শারীরিক আকার</u> এতটাই ছোট যে এই যন্ত্রপাতি <u>স্থাপন করা সম্ভব নয়</u>।
অপ্রয়োজনীয় শব্দ বাদ দিয়ে, বাক্যটি আগের মতোই স্পষ্ট এবং আরও জোরালো: কাজের ঘরটি এই যন্ত্রপাতির জন্য খুব ছোট।
২. বিশেষণ বা বিশেষ্য বিশেষনের অবস্থান ঠিক রাখুন।
শর্ট-টার্ম মেমোরি অর্থ বোঝাতে শব্দের ক্রমের উপর নির্ভর করে। সম্পর্কযুক্ত শব্দগুলো একত্রে না রাখলে বাক্যটি আপনার আসল অর্থের চেয়ে ভিন্ন কিছু বোঝাতে পারে।
'''বিচ্ছিন্ন''': ফাইল ক্যাবিনেটে একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক পাওয়া গেছে, যেগুলোর মূল্য ছিল ৪১,০০০ ডলারের বেশি।
'''সুসংগঠিত''': ৪১,০০০ ডলারের বেশি মূল্যের একটি বড় সংখ্যক জমা না দেওয়া চেক ফাইল ক্যাবিনেটে পাওয়া গেছে।
৩. ছোট ছোট বাক্য একত্র করুন।
প্রায়শই, দুটি বা ততোধিক ছোট বাক্য একত্র করলে পড়া সহজ হয়, কারণ এতে মোট শব্দের সংখ্যা কমে যায় এবং পাঠক বিষয়বস্তুর মধ্যকার সম্পর্ক সহজে বুঝতে পারে।
'''আলাদা''': মার্চ মাসে হক নদীর পানি মানের অবনতি ঘটে। এই অবনতি ঘটেছিল মাসটির ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে। অতিরিক্ত পানি টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্টকে অতিভার করে তোলে।
'''একত্র''': মার্চ মাসে ভারী বৃষ্টির কারণে টমলিন কাউন্টির পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট অতিভার হয়ে পড়ায় হক নদীর পানির মানের অবনতি ঘটে।
==='''নির্দেশিকা ২: ক্রিয়া পদে কর্ম প্রকাশ করুন'''===
বেশিরভাগ বাক্যই কোনো না কোনো কর্মের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। বিক্রি বৃদ্ধি পায়, যন্ত্রপাতি বিকল হয়, প্রকৌশলীরা ডিজাইন করেন, ব্যবস্থাপক অনুমোদন দেন। কিন্তু অনেকেই এই ক্রিয়াকে বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অন্যান্য পদে লুকিয়ে ফেলেন।
উদাহরণস্বরূপ: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তর সম্পন্ন করেছে।
এই বাক্যটিকে আরও কার্যকর করা যায় যদি "রূপান্তর"কে সরাসরি ক্রিয়ায় রূপান্তর করা হয়: আমাদের বিভাগ দুই মাসে নতুন যন্ত্রপাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
<u>বাক্যে কর্মকে কেন্দ্রে রাখার কৌশল</u>
• ''হতে'' ক্রিয়া এবং এর রূপ (''হয়, ছিল, হবে, ইত্যাদি'') পরিহার করুন।
''হতে'' ক্রিয়া সাধারণত বলে কিছু কী, কিন্তু তা কী করে না।
'''মূল বাক্য''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>একটি সুরক্ষা</u>।
'''পরিবর্তিত''': জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি পুনঃসংক্রমণের বিরুদ্ধে <u>সুরক্ষা দেয়</u>।
• ''এটা'' বা''আছে'' দিয়ে শুরু হওয়া বাক্য পরিহার করুন।
'''মূল বাক্য''':<u>এটা</u> কারণ কাঁচামালের খরচ বেড়েছে যে সমাপ্ত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''পরিবর্তিত''': কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রস্তুত পণ্যের দাম বাড়ছে।
'''মূল বাক্য''': <u>আছে</u>: বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে যা প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে.
'''পরিবর্তিত''': কয়েকটি কারণ প্রকৌশলীদের বাঁধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
• যেসব শব্দের শেষে ''-tion, -ment, -ing, -ion, -ance'' থাকে, সেগুলোতে ক্রিয়া আটকে যায়—এই ধরনের গঠনের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এরা কাজের ভাবটি বিশেষ্যে রূপান্তর করে।
'''মূল বাক্য''': তাই আমি একটি <u>প্রস্তাবনা</u> দিতে চাই যে বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
'''পরিবর্তিত''': তাই আমি <u>প্রস্তাব করছি</u>, বিভাগটি দুইজন অতিরিক্ত প্রোগ্রামার নিয়োগ দিক।
যদিও বেশিরভাগ বাক্যই কোনো কর্ম প্রকাশ করে, কিছু বাক্য কর্ম-ভিত্তিক নয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বিষয়ের সারাংশ বা পূর্বাভাসমূলক বাক্য প্রায়ই তালিকা শুরু করে বা আলোচনার গঠন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
যেমন একটি যথার্থ ''হতে'' ব্যবহার: কোম্পানিকে কেন কর্পোরেট সদর দপ্তর এবং বাইরের রাজ্যের কারখানাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করতে বিনিয়োগ করা উচিত, তার তিনটি প্রধান কারণ <u>আছে</u>।
==='''নির্দেশিকা ৩: অ্যাকটিভ বাক্য ব্যবহার করুন, যদি না প্যাসিভ বাক্য ব্যবহারের ভাল কারণ থাকে'''===
আপনার বাক্যে কর্ম এবং কর্মীকে স্পষ্ট করতে আরেকটি পদ্ধতি হল ''অ্যাকটিভ বাক্য'' ব্যবহার করা, প্যাসিভ বাক্যের পরিবর্তে। সক্রিয় বাক্যে, কর্মী — অর্থাৎ যিনি বা যা কর্মটি করছে — বাক্যের বিষয় হিসেবে থাকে। এরপর ক্রিয়া ওই কর্মীর কর্মকে বর্ণনা করে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': পরামর্শদাতা এই পরিবর্তনগুলি সুপারিশ করেছেন।
প্যাসিভ বাক্যে, বাক্যের বিষয় এবং কর্তা আলাদা হয়। বিষয়ের উপর কর্তা কর্তৃক কাজ করা হয়।
'''প্যাসিভ বাক্য''': পরিবর্তনগুলি পরামর্শদাতার দ্বারা সুপারিশ করা হয়েছিল।
'''প্যাসিভ বাক্য''': কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করা হয়েছে।
'''অ্যাকটিভ বাক্য''': আমরা কোরিয়ান খনিজ ক্রয় করেছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠক প্যাসিভ বাক্যের তুলনায় অ্যাকটিভ বাক্য দ্রুত বুঝতে পারেন। এছাড়াও, অ্যাকটিভ বাক্য অস্পষ্টতা ও দ্ব্যর্থতা দূর করে, যা প্রায়ই প্যাসিভ বাক্যে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, "বলটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে" একটি ব্যাকরণগতভাবে সঠিক প্যাসিভ বাক্য, কিন্তু বলটি কে বা কী আঘাত করেছে তা জানায় না। সক্রিয় বাক্যে লেখক স্পষ্টভাবে কর্মীকে চিহ্নিত করেন: "লিন্ডা বলটি আঘাত করলো।"
যদিও প্যাসিভ বাক্য সাধারণত পড়া কঠিন করে, তবে এর কিছু ভালো ব্যবহারও আছে। যেমন, যখন আপনি কর্মীকে উল্লেখ করতে চান না তখন প্যাসিভ বাক্য কার্যকর হয়। যদি লেখক সিদ্ধান্ত নেন যে, রিপোর্টটি যে করেছে তার নাম না বলে তথ্যটি পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, তখন তিনি প্যাসিভ বাক্য সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন। আবার, নৈতিকতার পরিপন্থী হলে প্যাসিভ বাক্য ব্যবহার করে কর্মীর দায় এড়ানো উচিত নয় — যেমন যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এড়াতে চেষ্টা করা হয়।
==='''নির্দেশিকা ৪: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন'''===
পরিষ্কার এবং শক্তিশালী বাক্য লেখার আরেকটি উপায় হল পাঠকের মনোযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দিকে কেন্দ্রীভূত করা।
<u>গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর জোর দেওয়া</u>
১. বাক্যের শেষে প্রধান তথ্য রাখুন
প্রধান তথ্য বাক্যের শেষে রাখতে চাইলে প্রাথমিক খসড়া কিছুটা পুনর্বিন্যাস করতে হতে পারে।
'''মূল বাক্য''': বিভাগের কর্মক্ষমতা সব ক্ষেত্রে চমৎকার হয়েছে।
'''সংশোধিত বাক্য''': সব ক্ষেত্রে, বিভাগের কর্মক্ষমতা চমৎকার হয়েছে।
'''মূল বাক্য''': উজ্জ্বল বাইরের নকশা কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি।
'''সংশোধিত বাক্য''': কলেজবয়সী গ্রাহকদের কাছে পণ্যের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হল উজ্জ্বল বাইরের নকশা।
২. প্রধান বাক্যে প্রধান তথ্য রাখুন
যদি বাক্যে একাধিক বাক্যাংশ থাকে, তবে প্রধান তথ্য প্রধান বাক্যাংশে রাখুন। নিচের দুইটি বাক্যের তুলনা করুন:
আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল, তবে লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
লাভ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে আমাদের উৎপাদনশীলতা কমেছিল।
প্রথম বাক্যে জোর দেয়া হয়েছে লাভের উপর কারণ ‘লাভ’ প্রধান বাক্যের বিষয়। দ্বিতীয় বাক্যে ‘উৎপাদনশীলতা’ প্রধান বিষয় হওয়ায় তা বেশি গুরুত্ব পায়। (মনোযোগ দিন, গুরুত্বপ্রাপ্ত তথ্যটি প্রধান বাক্যাংশে এবং বাক্যের শেষে থাকে।)
৩. টাইপোগ্রাফিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে হাইলাইট করুন
বোল্ড এবং ইটালিক ব্যবহার করুন। তবে, অতিরিক্ত হাইলাইটিং এড়িয়ে চলুন। অনেক কিছু হাইলাইট করলে কোনো কিছুই আলাদা করে চোখে পড়ে না।
৪. পাঠককে স্পষ্টভাবে জানান কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আপনি পাঠকদের জানিয়ে দিতে পারেন কোন তথ্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণ: অর্থনীতিবিদরা স্টক মার্কেটের পতনের তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন: গত মাসের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, টেকসই পণ্যের ইনভেন্টরির বৃদ্ধি, এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—মুদ্রাস্ফীতির লক্ষণ।
৫. অবাঞ্ছিত বাক্যাংশ এড়িয়ে চলুন
অধিকাংশ লেখায় এটি সত্য হলেও, ব্যবসায়িক লেখায় এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায় সময় অর্থ। যদি আপনার বস বা ক্লায়েন্টরা আপনার অবাঞ্ছিত বাক্যে ভর্তি ইমেইল পড়তে সময় নষ্ট করে, তাহলে সেটি সময়ের অপচয়।
উদাহরণ: ঘড়ির মুখে সময় দেখাচ্ছিল যে সে তার কাজে দেরিতে পৌঁছেছে, যেখানে সে কাজ শুরু করবে।
ঘড়িতে অবশ্যই সময় থাকে এবং কাজের জায়গায় ছাড়া আর কি করা হয়? এটি একটি সরল উদাহরণ, কিন্তু এটি দেখায় যে একটি নথির দৈর্ঘ্য তার গুণগত মান বাড়ায় না। অধিকাংশ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত ও সরল নথি শব্দবহুল, দীর্ঘ নথির তুলনায় ভাল কাজ করে।
==='''নির্দেশিকা ৫: উপযুক্ত সম্বন্ধ বা অনুভূতির সঙ্গে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
গত তিনটি নির্দেশিকা ছিল শব্দের শাব্দিক বা অভিধানগত অর্থ সম্পর্কে। কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে আপনার শব্দগুলোর পাঠকের সঙ্গে কোন ধরনের সম্বন্ধ বা অনুভূতি জড়িত আছে কিনা। বিশেষ করে, শব্দের ''অনুভূতি'' এবং ''নিবন্ধন'' সম্পর্কে বিশেষ যত্নবান হোন।
<u> (অনুভূতি বা ইঙ্গিত)</u>
অনুভূতি হলো কোনো শব্দের শাব্দিক অর্থের বাইরে থাকা প্রস্তাবিত বা বিস্তৃত অর্থ। উদাহরণস্বরূপ, অভিধান অনুযায়ী ''ফ্ল্যাটফুট'' এবং ''পুলিশ গোয়েন্দা'' সমার্থক হলেও, তারা বিভিন্ন অনুভূতি তৈরি করে: ''ফ্ল্যাটফুট'' এমন এক ধরনের পুলিশকে বোঝায় যে ধীর, হয়তো তেমন বুদ্ধিমান নয়, যেখানে ''পুলিশ গোয়েন্দা'' বোঝায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাদারকে।
ক্রিয়াপদগুলোরও অনুভূতি থাকে। যেমন, কারো ভুল তথ্য না দেখার কথা ''পরামর্শ দেওয়া'' করা এবং ''ইঙ্গিত করা'' করা একই নয়। কোনো ক্লায়েন্টের প্রকল্পে সময় ''উৎসর্গ করা'' করা এবং ''অবসর'' করা একই নয়।
আপনার শব্দের অনুভূতি আপনার বিষয়বস্তুর প্রতি শ্রোতাদের ধারণা গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।
'''প্রথম সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চেষ্টা করছে।
'''দ্বিতীয় সংস্করণ''': আমাদের বিক্রয় দল বিভিন্ন পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে ক্রমাগত চালিত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নমনীয় শব্দ ''চেষ্টা'' ব্যবহারে পাঠকরা মনে করেন কোম্পানি কর্মচারীদের মঙ্গল ও উদ্বেগের প্রতি সচেতন, নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য ইতিবাচক কর্মসূচিতে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়, কম শ্রমশিকायत পায় এবং কর্মচারীদের ভালো পারিশ্রমিক দেয়। আর কঠোর শব্দ ''ড্রাইভিং'' ব্যবহারে এই মতামত উল্টো হয়। মাত্র সাতটি শব্দের পার্থক্যে পাঠকদের দৃষ্টিভঙ্গি এতটা বদলায়—এটাই দেখায় শব্দের অনুভূতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
<u>নিবন্ধন(ব্যবহারের প্রসঙ্গ)</u>
নিবন্ধন বলতে বোঝায় শব্দের নির্দিষ্ট ধরনের যোগাযোগ পরিস্থিতি বা প্রসঙ্গে ব্যবহারের সাথে সংযুক্ত ভাব। উদাহরণস্বরূপ, কোনো রেস্তোরাঁর বিজ্ঞাপনে ''আশ্চর্যজনকভাবে '' সুস্বাদু খাবারের কথা আশা করা যায়। কিন্তু গবেষণার প্রস্তাবে কোনো সংস্থার জন্য বলা হবে যে তারা ''আশ্চর্যজনকভাবে '' ভালো গবেষণা করতে পারে, তা আমরা আশা করব না। ''আশ্চর্যজনকভাবে '' শব্দটি ভোক্তা বিজ্ঞাপনের নিবন্ধন-এ পড়ে, গবেষণা প্রস্তাবের নয়।
যদি ভুল নিবন্ধন-এর শব্দ ব্যবহার করেন, পাঠক ভাবতে পারেন আপনি আপনার ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার পদ্ধতি বুঝেন না, আর এতে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
==='''নির্দেশিকা ৬: পাঠকের সাংস্কৃতিক পটভূমি মাথায় রেখে শব্দ নির্বাচন করুন'''===
অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকদের জন্য লিখলে বিশেষ যত্ন নিন। আপনার নিজের সংস্কৃতিতে স্পষ্ট শব্দ অন্য সংস্কৃতির পাঠকের কাছে ভুল বোঝাবুঝি বা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। এমনকি ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য সংস্কৃতির পাঠকের ক্ষেত্রে ও এ সমস্যা হতে পারে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল মানে একটি আন্ডাকারাকৃতির বল নিয়ে গোল করার খেলা, আর ইংল্যান্ড, ভারত ও অনেক স্থানে ফুটবল মানে গোল নেটের মধ্যে গোল করার জন্য গোলাকার বল নিয়ে খেলা।
পাঠকের ভাষাগত দক্ষতা ভিন্ন, তাই নির্দেশিকাগুলো প্রয়োগ করুন যতটুকু তাদের জন্য প্রয়োজন।
'''আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের জন্য শব্দ বাছাইয়ের নির্দেশিকা:'''
১) সহজ শব্দ ব্যবহার করুন। যত বেশি জটিল শব্দ ব্যবহার করবেন, ইংরেজিতে অপ্রভৃত পাঠকের জন্য বোঝা কঠিন হবে।
২) একই বস্তু বা বিষয়ের জন্য একই শব্দ ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ, কোনো যন্ত্রাংশের জন্য একবার “ডায়াল” আরেকবার “কন্টোল” বলবেন না, কারণ অনুবাদে ভিন্ন শব্দ হতে পারে।
৩) পাঠক না-জানার মতো সংক্ষিপ্ত শব্দ এড়িয়ে চলুন। যেমন AI (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা), ACL (পূর্ববর্তী ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট)।
৪) বাগধারা ও সালসলুকি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। যেমন, "আমরা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই" বলার বদলে "আমরা চাই সিদ্ধান্তটা মোটামুটি করা হোক" বলুন।
সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য যেকোনো সংস্কৃতিতে অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিন আপনার শব্দ বাছাই পর্যালোচনার জন্য।
==='''নির্দেশিকা ৭: নৈতিক নির্দেশিকা: অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষা ব্যবহার করুন'''===
আপনার কণ্ঠস্বর গঠন করার সময় এমন ভাষা ব্যবহার করুন যা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে, কারো বঞ্চনা না করে। যেমন, লিঙ্গভিত্তিক বা পক্ষপাতপূর্ণ ভাষা এড়িয়ে চলুন কারণ তা নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থন করে। এটি নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হলেও, পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেমন নার্সিং পেশায়।
নেতিবাচক রূপরেখা সমর্থনকারী ভাষা পাঠকদের সক্ষম মানুষের ক্ষমতা ও সাফল্যের প্রতি অন্ধ করে দিতে পারে। অক্ষমতা, অসুস্থতা বা অন্যান্য সীমাবদ্ধতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংবেদনশীল বর্ণনাও এড়াতে হবে।
'''অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষার ব্যবহার'''
১) লিঙ্গনিরপেক্ষ বিশেষ্য ও সর্বনাম ব্যবহার করুন, “man” শব্দযুক্ত শব্দের পরিবর্তে।
'''বদলে ব্যবহার করুন''': businessman, workman, mailman, salesman
'''ব্যবহার করুন''': businessperson, worker, mail carrier, sales person
'''বদলে ব্যবহার করুন''': man made, man hours, man-sized job
'''ব্যবহার করুন''': synthetic, working hours, large job
২) সাধারণ মানুষের জন্য লিঙ্গভিত্তিক সর্বনাম এড়িয়ে plural pronouns বা he or she ব্যবহার করুন।
'''বদলে বলুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. She looks for premium products and appreciates a stylish design."
'''ব্যবহার করুন''': "Our home electronics cater to the affluent shopper. They look for premium products and appreciate a stylish design."
'''বদলে বলুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he might be wise to seek advice from a certified public accountant."
'''ব্যবহার করুন''': "Before the owner of a new business files the first year's tax returns, he or she might be wise to seek advice from a certified public accountant."
৩) পুরুষ ও নারীদের সমান মাত্রায় উল্লেখ করুন।
'''বদলে বলুন''': "Mr. Sundquist and Anna represented us at the trade fair."
'''ব্যবহার করুন''': "Mr. Sundquist and Ms. Tokagawa represented us at the trade fair" অথবা "Christopher and Anna represented us at the trade fair."
৪) পত্রের শুভেচ্ছা শুরুতে লিঙ্গভিত্তিক সম্বোধন এড়ান।
'''বদলে বলুন''': Dear Sir, Gentlemen
'''ব্যবহার করুন''': সংশ্লিষ্ট বিভাগের নাম, কোম্পানির নাম বা ব্যক্তির পদবী ব্যবহার করুন: Dear Personnel Department, Dear Switzer Plastics Corporation, Dear Director of Research
৫) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বর্ণনায় প্রথমে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করুন, তারপর প্রতিবন্ধকতার কথা।
'''বদলে বলুন''': the disabled, mentally retarded people
'''ব্যবহার করুন''': people with disabilities, people with mental retardation
== “মিস," "মিসেস," এবং "মিসেস” সম্পর্কে ==
অনেকেই নিশ্চিত নন ঐতিহ্যবাহী “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করবেন কি না, নাকি আধুনিক “সুশ্রী.” ব্যবহার করবেন। “মিস” বা “মিসেস.” ব্যবহার করলে মনে হতে পারে কোনো নারীর বৈবাহিক অবস্থা তার কাজের দক্ষতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরুষদের ক্ষেত্রে সব সময় “জনাব.” ব্যবহার হয়, বৈবাহিক অবস্থা নির্বিশেষে। অন্যদিকে, কিছু নারী “মিস” বা “মিসেস.” পছন্দ করেন। ব্যক্তির পছন্দ জানা থাকলে সেটাই অনুসরণ করুন। না জানা থাকলে আধুনিক এবং লিঙ্গপক্ষপাত মুক্ত শব্দ ""সুশ্রী"" ব্যবহার করুন, যা আজকাল কর্মক্ষেত্রে স্বীকৃত।
=উপসংহার=
লিখনশৈলী সুগঠিত করা সফল, প্রযুক্তিগত ও পেশাগত লেখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কণ্ঠস্বর, বাক্যগঠন এবং শব্দ নির্বাচনের প্রতি যত্নবান হলে আপনি পাঠকদের সঙ্গে ভাল সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন এবং তাদের লেখা গুরুত্বসহকারে নেবার জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারবেন।
{{BookCat}}
9lpf0daufda72ptkkicbrzeg85c5q2i
দর্শনের সাথে পরিচয়/বিজ্ঞান দর্শন
0
26520
85763
82492
2025-07-06T21:23:32Z
Mehedi Abedin
7113
85763
wikitext
text/x-wiki
< [[দর্শনের সাথে পরিচয়]]
''বিজ্ঞান'' ও ''দর্শন'' শব্দটির দুটি ভিন্ন অর্থ রয়েছে: প্রথমটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কিত এবং এই লেখায় সেই অর্থটিই বোঝানো হয়েছে; দ্বিতীয়টি কিছু দার্শনিক প্রশ্ন সম্পর্কিত যার উত্তর বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মাধ্যমে পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে পদার্থবিদ্যা আমাদের বাস্তবতার ধারণা পরিবর্তন করেছে এবং জীববিজ্ঞান আমাদের জীবনের ধারণা পরিবর্তন করেছে। এই অর্থে বিজ্ঞানের দর্শনকে 'দর্শনের একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ' শীর্ষক নিবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞানের দর্শনের কিছু উপ-শাখা রয়েছে যা নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক শাখা থেকে উদ্ভূত বিষয়গুলোকে দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে: উদাহরণস্বরূপ, জীববিজ্ঞানের দর্শন বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানে ব্যবহৃত ধারণাগুলোর অর্থ নিয়ে আলোচনা করে, অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞানের দর্শন অর্থনীতি বা সমাজবিজ্ঞানের মতো ক্ষেত্রে 'তত্ত্ব' কী এমন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।
==কার্ল পপার==
বিজ্ঞান দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কার্ল পপারকে সাধারণভাবে সর্বজনস্বীকৃতভাবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ২০শ শতকের শুরুতে এই ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেন। এই ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা মূলত ফ্রয়েডের ইডিপাস কমপ্লেক্স সম্পর্কিত দাবিগুলো পর্যবেক্ষণ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল; ফ্রয়েডের তত্ত্বকে কোনোভাবেই ভুল প্রমাণ করা যায় না। যদিও এটি তত্ত্বের একটি ইতিবাচক দিক মনে হতে পারে, এর অর্থ হলো তত্ত্বটির দাবি যাচাই করার জন্য কোনো পরীক্ষাও নেই।
পপার এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন যে, যেকোনো তত্ত্বে মিথ্যা প্রতিপাদনযোগ্যতার নীতি প্রয়োগ করতে হবে। বৈজ্ঞানিক হতে হলে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীকে তার তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করতে হবে, অথবা অন্তত এমন পরীক্ষা উপস্থাপন করতে হবে যা সঠিক বা ভুল প্রমাণিত হতে পারে। এটি এমন একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে যে কখন একটি তত্ত্বকে সত্যিকার অর্থে বৈজ্ঞানিক এবং প্রাকৃতিক জগতের সঠিক ব্যাখ্যা হিসেবে জানা যাবে। সমালোচনার উত্তরে পপারের জবাব ছিল যে, প্রতিটি পরীক্ষা তত্ত্বটিকে আরও দৃঢ় করে তোলে। অনেকের কাছে এটি আবেশমূলক "সকল রাজহাঁস সাদা" যুক্তির সমতুল্য, অর্থাৎ পর্যবেক্ষণটি সঠিক যতক্ষণ না আপনি অস্ট্রেলিয়ার পাশ দিয়ে যান এবং একটি কালো রাজহাঁস খুঁজে পান।
পরবর্তী তত্ত্বগুলির মধ্যে কুহনের বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের তত্ত্ব অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রস্তাব করে যে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের একটি নির্দিষ্ট মডেল বা প্রতিমান এর মধ্যে কাজ করবেন এবং এটিকে কার্যকর ও ভবিষ্যদ্বাণীমূলক করে তুলবেন, যতক্ষণ না এমন একটি সময় আসে যখন একটি নতুন ধারণা বা তত্ত্ব পুরাতন ব্যবস্থাকে উৎখাত করে, যেমন গ্যালিলিওর সৌরজগতের পর্যবেক্ষণ।
তবে ফেয়ারবেন্ড তার "অ্যাগেইনস্ট মেথড" বইয়ে বিজ্ঞানীদের সম্পূর্ণভাবে যৌক্তিক প্রাণী হওয়ার ধারণাটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেখানে তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে বিজ্ঞানীরা প্রকৃতপক্ষে কোনো একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করেন না বরং তাদের প্রচারণার চেয়েও অনেক কম যৌক্তিক।
==থমাস অ্যাকুইনাস==
পপার, কুন এবং ফেয়ারবেন্ডের প্রস্তাবিত ধারণাগুলো থমাস অ্যাকুইনাস কর্তৃক উল্লিখিত একটি বিষয়ের সাথে সংগ্রাম করে। তিনি বলেছিলেন, "...অন্যান্য বিজ্ঞান তাদের নিজস্ব নীতি প্রমাণ করার জন্য তর্ক করে না বরং তাদের নীতি থেকে বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য বিষয় প্রমাণ করার জন্য তর্ক করে..." (সুমা থিওলজিকা অষ্টম অনুচ্ছেদ [http://www.ccel.org/php/disp.php?authorID=aquinas&bookID=nature_grace&page=44&view=thml] অথবা [http://www.fordham.edu/halsall/source/aquinas1.html])। যদিও তিনি সরাসরি বিজ্ঞানের দর্শন নিয়ে কথা বলছিলেন না, তবে তার কথাগুলো বর্তমান আলোচনার জন্য নির্দেশনামূলক। যদি বিজ্ঞান তার নিজস্ব নীতি প্রমাণ করার জন্য তর্ক করতে না পারে, তাহলে অন্য কিছুকে তা করতে হবে অথবা বিজ্ঞানের কোনো ভিত্তি থাকবে না।
==ইমরে লাকাতোস==
চতুর্থ একজন সমসাময়িক দার্শনিক হলেন ইমরে লাকাটোস। বিজ্ঞানের দর্শন মহলে তিনি যে কারণে সবচেয়ে বেশি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তা হলো তথাকথিত ছদ্ম-বিজ্ঞানের উপর তার আক্রমণ। তার সীমারেখা নির্ধারণের ভিত্তি হলো কোনো নির্দিষ্ট গবেষণা কর্মসূচি প্রগতিশীল নাকি অবক্ষয়ী হচ্ছে। ফলস্বরূপ, যে কর্মসূচি সবচেয়ে বেশি নতুন জ্ঞান উৎপাদন করছে, বিজ্ঞানীরা সেটিকে সত্যের সবচেয়ে কাছাকাছি হিসেবে সমর্থন করবেন।
{{BookCat}}
enp3fp4rjqnuraiswjx6xuct9z96rja
দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব
0
26527
85758
82500
2025-07-06T21:13:41Z
Mehedi Abedin
7113
85758
wikitext
text/x-wiki
তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, মানুষের পতনশীলতা এবং ভুল ধারণাগুলো গত কয়েক সহস্রাব্দ ধরে আধ্যাত্মিকতাকে 'ঈশ্বর' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এই ঈশ্বর এমন একজন সত্তা যিনি প্রাকৃতিক শক্তি এবং মানুষের স্বাধীন ইচ্ছায় হস্তক্ষেপ করেন এবং তার আদেশ অমান্যকারীদের শাস্তির ভয় দেখান।
যদি কেউ এই ধারণাটি মেনে নেন যে, এই ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক অস্তিত্ব সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে না, তবে এই ঈশ্বর কে বা কী, সেই ধারণাটি সমাজের কুসংস্কার দূর হওয়ার সাথে সাথে পরিবর্তিত হওয়া উচিত। এই "ঈশ্বর" কিছুতেই মানুষের গুণাবলী, প্রয়োজন বা আকাঙ্ক্ষা যেমন পূজা করা, প্রার্থনা করা, মহিমান্বিত করা, ভক্তি বা বন্দনা করা, দেবত্ব প্রাপ্তি অথবা মানবজাতির আর যা কিছু দেওয়ার আছে, তাতে আবদ্ধ থাকতে পারেন না। ক্ষমতা, নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য, ধ্বংস, শাস্তি, প্রতিশোধ এবং বিচার—এগুলো মানুষের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী যা তারা অন্যের ওপর প্রয়োগ করে।
সভ্যতার ধ্বংস, বেশিরভাগ দুর্ভোগ এবং অকাল মৃত্যু মানুষের দুর্বলতা, মূর্খতা বা অপূর্ণতার কারণে ঘটে থাকে, এগুলো ঈশ্বরের কাজ নয়। সত্যিকারের "ঈশ্বর" হলেন একটি আধ্যাত্মিক ঐক্য যা একটি আধ্যাত্মিক রাজ্যে বিদ্যমান এবং পৃথিবী বা মহাবিশ্বের কোনো কিছুতে কখনও হস্তক্ষেপ করেননি এবং ভবিষ্যতেও করবেন না। ঈশ্বর মানবজাতির প্রতি আগ্রহী এবং এর সাথে জড়িত, কিন্তু আমাদের শারীরিক জীবনে কোনোভাবেই হস্তক্ষেপ করেন না। ঈশ্বর মহাবিশ্ব এবং এর সবকিছুকে একজন মহাপরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচালনা করেন। আমাদের আত্মা এবং ঈশ্বরের আত্মার মধ্যে সম্পর্ক ও মিথস্ক্রিয়া আমাদের সুবিধার জন্য, ঈশ্বরের সুবিধার জন্য নয়।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পড়ুন ==
উইকিপিডিয়ায় পড়ুন {{w|তুরীয়বাদ}}
{{BookCat}}
fao72peo8yjjao1efx2t3mhr9ykjvnf
85759
85758
2025-07-06T21:14:03Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ]] কে [[দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85758
wikitext
text/x-wiki
তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, মানুষের পতনশীলতা এবং ভুল ধারণাগুলো গত কয়েক সহস্রাব্দ ধরে আধ্যাত্মিকতাকে 'ঈশ্বর' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এই ঈশ্বর এমন একজন সত্তা যিনি প্রাকৃতিক শক্তি এবং মানুষের স্বাধীন ইচ্ছায় হস্তক্ষেপ করেন এবং তার আদেশ অমান্যকারীদের শাস্তির ভয় দেখান।
যদি কেউ এই ধারণাটি মেনে নেন যে, এই ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক অস্তিত্ব সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে না, তবে এই ঈশ্বর কে বা কী, সেই ধারণাটি সমাজের কুসংস্কার দূর হওয়ার সাথে সাথে পরিবর্তিত হওয়া উচিত। এই "ঈশ্বর" কিছুতেই মানুষের গুণাবলী, প্রয়োজন বা আকাঙ্ক্ষা যেমন পূজা করা, প্রার্থনা করা, মহিমান্বিত করা, ভক্তি বা বন্দনা করা, দেবত্ব প্রাপ্তি অথবা মানবজাতির আর যা কিছু দেওয়ার আছে, তাতে আবদ্ধ থাকতে পারেন না। ক্ষমতা, নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য, ধ্বংস, শাস্তি, প্রতিশোধ এবং বিচার—এগুলো মানুষের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী যা তারা অন্যের ওপর প্রয়োগ করে।
সভ্যতার ধ্বংস, বেশিরভাগ দুর্ভোগ এবং অকাল মৃত্যু মানুষের দুর্বলতা, মূর্খতা বা অপূর্ণতার কারণে ঘটে থাকে, এগুলো ঈশ্বরের কাজ নয়। সত্যিকারের "ঈশ্বর" হলেন একটি আধ্যাত্মিক ঐক্য যা একটি আধ্যাত্মিক রাজ্যে বিদ্যমান এবং পৃথিবী বা মহাবিশ্বের কোনো কিছুতে কখনও হস্তক্ষেপ করেননি এবং ভবিষ্যতেও করবেন না। ঈশ্বর মানবজাতির প্রতি আগ্রহী এবং এর সাথে জড়িত, কিন্তু আমাদের শারীরিক জীবনে কোনোভাবেই হস্তক্ষেপ করেন না। ঈশ্বর মহাবিশ্ব এবং এর সবকিছুকে একজন মহাপরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচালনা করেন। আমাদের আত্মা এবং ঈশ্বরের আত্মার মধ্যে সম্পর্ক ও মিথস্ক্রিয়া আমাদের সুবিধার জন্য, ঈশ্বরের সুবিধার জন্য নয়।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পড়ুন ==
উইকিপিডিয়ায় পড়ুন {{w|তুরীয়বাদ}}
{{BookCat}}
fao72peo8yjjao1efx2t3mhr9ykjvnf
আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব
1
26528
85761
82501
2025-07-06T21:14:03Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ]] কে [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
82501
wikitext
text/x-wiki
{{আলাপ পাতা}}
{{আলাপ পাতা/উইকিবই লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫}}
8vxn9zum7n3tju9ayrerhr25vm4kljv
দর্শনের সাথে পরিচয়/জ্ঞানতত্ত্ব কী?
0
26592
85754
82655
2025-07-06T21:00:48Z
Mehedi Abedin
7113
85754
wikitext
text/x-wiki
'জ্ঞানতত্ত্ব' (epistemology) শব্দটি প্রাচীন গ্রীক ভাষা থেকে এসেছে: <i>episteme</i> অর্থ 'জ্ঞান' এবং প্রত্যয় <i>-ology</i> অর্থ 'বিজ্ঞান' বা 'গভীর অধ্যয়ন'। সোজা কথায়, জ্ঞানতত্ত্ব হলো জ্ঞানের নিজস্ব অধ্যয়ন বা অনুসন্ধান। একে প্রায়ই ''জ্ঞানের তত্ত্ব'' বলা হয়। এপিস্টেমিক জ্ঞান বলতে বোঝানো হয় কেবল আমরা কী জানি তা নয়, বরং ''জানা'' মানে কী – সেটিই মূল অনুসন্ধান।
জ্ঞানতত্ত্বের উদ্দেশ্য হলো মানব জাতি কীভাবে পৃথিবীকে উপলব্ধি করে এবং সে সম্পর্কে কীভাবে জ্ঞান অর্জন করে, এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো:
# কি কোনো বহিঃজগৎ আছে? আমরা কীভাবে নিশ্চিত হতে পারি?
# স্মৃতি কীভাবে কাজ করে? আমরা কীভাবে জানি যে আমাদের স্মৃতিগুলো সত্য?
# অনুধাবনের প্রকৃতি কী? বর্তমান জ্ঞান ভবিষ্যৎ অনুধাবনে কতটুকু প্রভাব ফেলে?
# মানুষের কোন জ্ঞান জন্মগত এবং কোনটি জন্মের পরে শেখা হয়? কোন পূর্বধারণা ছাড়াই কি নতুন তথ্য আত্মস্থ করা যায়?
# অনুধাবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক? এ ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সঠিক পদ্ধতি কী?
বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় একটি মৌলিক (সোক্রেটীয়) পার্থক্য হলো: মতামত ধারণ করে বিশ্বাস, কিন্তু 'সত্য' ধারণ করে জ্ঞান। জ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিশ্চিত সত্য যা কখনোই মিথ্যা হতে পারে না (যদিও মতামত প্রায়শই মিথ্যা হতে পারে)। [[w:Karl Popper|কার্ল পপার]] অনুসারে, সত্য আর অসত্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণের একমাত্র উপায় হলো যাচাইকরণযোগ্য বক্তব্যকে পরীক্ষামূলকভাবে খণ্ডনযোগ্য করে তোলা। তবে [[w:Plato|প্লেটো]] এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন; তিনি বিশ্বাস করতেন সত্য কখনো খণ্ডনযোগ্য নয়।
তাহলে এখন জ্ঞানতত্ত্ব মূল প্রশ্ন দাঁড়ায়: আমাদের জ্ঞান কোথা থেকে আসে? এবং আরো গভীরে যেতে চাইলে (যেমন অনেক দার্শনিকই গেছেন): মানব জ্ঞানের সীমা কোথায়? এ বিষয়ে জানতে হলে আধুনিক যুগের দুটি মুখ্য দার্শনিক প্রবাহ সম্পর্কে পড়া জরুরি: [[w:Rationalism|যুক্তিবাদ]] (Rationalism) এবং [[w:Empiricism|অভিজ্ঞতাবাদ]] (Empiricism)। যুক্তিবাদী চিন্তাবিদদের (যেমন [[w:Descartes|দেকার্ত]]) মতে, সব জ্ঞান আসে যুক্তি থেকে এবং মানব মনই জ্ঞানের মূল উৎস। অপরদিকে, অভিজ্ঞতাবাদীরা (বিশেষ করে ব্রিটিশ চিন্তাবিদ [[w:Berkeley|বার্কলি]], [[w:Hume|হিউম]], [[w:Locke|লক]]) মনে করেন, মানুষের প্রকৃত জ্ঞান আসে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। অর্থাৎ মানব ইন্দ্রিয়ই হলো জানার প্রকৃত মাধ্যম।
আরও একটি ধর্মীয় ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি হলো জ্ঞানকে (ঈশ্বরের) ঐশী প্রকাশ হিসেবে দেখা (যেমন ঈশ্বর তাঁর আত্মার মাধ্যমে বাইবেলের লেখকদের জ্ঞান দেন)। এখানে বিশ্বাস এবং জ্ঞানের মধ্যে বিভাজনরেখা কিছুটা অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। [[w:St. Augustine|সেন্ট অগাস্টিন]] এই বিষয়ে যুক্তি ও বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন।
অনেক জ্ঞানতত্ত্ববীদদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়গুলোর একটি হলো জ্ঞানের বিশ্লেষণ, অর্থাৎ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যে, "কেউ কোনো কিছু জানে বলার জন্য কী শর্ত পূরণ হতে হবে?" দীর্ঘদিন ধরে বেশিরভাগ দার্শনিক মনে করতেন: কিছু জানার জন্য আপনাকে সেটি বিশ্বাস করতে হবে, সেটি সত্য হতে হবে এবং সেই বিশ্বাসের জন্য যথাযথ যুক্তি থাকতে হবে। কিন্তু [[w:Gettier problem|গেটিয়ার সমস্যা]] এই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায় এবং এই প্রশ্নটি নতুন করে অনেকের চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে। এই ধরনের প্রশ্ন এপিস্টেমোলজির সবচেয়ে সাধারণ প্রশ্নগুলোর মধ্যে পড়ে, যেখানে জ্ঞানের বিভিন্ন ধরন নিয়ে আলোচনা অপেক্ষাকৃত বিশেষায়িত প্রশ্ন।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পাঠ্য ==
* {{wikipedia-inline|জ্ঞানতত্ত্ব}}
{{BookCat}}
cj44m7b7pfdvg7ksp1tnzft30lfsa9z
85756
85754
2025-07-06T21:02:57Z
Mehedi Abedin
7113
85756
wikitext
text/x-wiki
'জ্ঞানতত্ত্ব' (epistemology) শব্দটি প্রাচীন গ্রিক ভাষা থেকে এসেছে: <i>episteme</i> অর্থ 'জ্ঞান' এবং প্রত্যয় <i>-ology</i> অর্থ 'বিজ্ঞান' বা 'গভীর অধ্যয়ন'। সোজা কথায়, জ্ঞানতত্ত্ব হলো জ্ঞানের নিজস্ব অধ্যয়ন বা অনুসন্ধান। একে প্রায়ই ''জ্ঞানের তত্ত্ব'' বলা হয়। জ্ঞানতত্ত্বীয় জ্ঞান বলতে বোঝানো হয় কেবল আমরা কী জানি তা নয়, বরং ''জানা'' মানে কী – সেটিই মূল অনুসন্ধান।
জ্ঞানতত্ত্বের উদ্দেশ্য হলো মানব জাতি কীভাবে পৃথিবীকে উপলব্ধি করে এবং সে সম্পর্কে কীভাবে জ্ঞান অর্জন করে, এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো:
# বহিঃজগৎ কি আছে? আমরা কীভাবে নিশ্চিত হতে পারি?
# স্মৃতি কীভাবে কাজ করে? আমরা কীভাবে জানি যে আমাদের স্মৃতিগুলো সত্য?
# অনুধাবনের প্রকৃতি কী? বর্তমান জ্ঞান ভবিষ্যৎ অনুধাবনে কতটুকু প্রভাব ফেলে?
# মানুষের কোন জ্ঞান জন্মগত এবং কোনটি জন্মের পরে শেখা হয়? কোন পূর্বধারণা ছাড়াই কি নতুন তথ্য আত্মস্থ করা যায়?
# অনুধাবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক? এ ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সঠিক পদ্ধতি কী?
বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় একটি মৌলিক (সক্রেটীয়) পার্থক্য হলো: মতামত ধারণ করে বিশ্বাস, কিন্তু 'সত্য' ধারণ করে জ্ঞান। জ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিশ্চিত সত্য যা কখনোই মিথ্যা হতে পারে না (যদিও মতামত প্রায়শই মিথ্যা হতে পারে)। [[w:Karl Popper|কার্ল পপার]] অনুসারে, সত্য আর অসত্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণের একমাত্র উপায় হলো যাচাইকরণযোগ্য বক্তব্যকে পরীক্ষামূলকভাবে খণ্ডনযোগ্য করে তোলা। তবে [[w:Plato|প্লেটো]] এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন; তিনি বিশ্বাস করতেন সত্য কখনো খণ্ডনযোগ্য নয়।
তাহলে এখন জ্ঞানতত্ত্ব মূল প্রশ্ন দাঁড়ায়: আমাদের জ্ঞান কোথা থেকে আসে? এবং আরো গভীরে যেতে চাইলে (যেমন অনেক দার্শনিকই গেছেন): মানব জ্ঞানের সীমা কোথায়? এ বিষয়ে জানতে হলে আধুনিক যুগের দুটি মুখ্য দার্শনিক প্রবাহ সম্পর্কে পড়া জরুরি: [[w:Rationalism|যুক্তিবাদ]] (Rationalism) এবং [[w:Empiricism|অভিজ্ঞতাবাদ]] (Empiricism)। যুক্তিবাদী চিন্তাবিদদের (যেমন [[w:Descartes|দেকার্ত]]) মতে, সব জ্ঞান আসে যুক্তি থেকে এবং মানব মনই জ্ঞানের মূল উৎস। অপরদিকে, অভিজ্ঞতাবাদীরা (বিশেষ করে ব্রিটিশ চিন্তাবিদ [[w:Berkeley|বার্কলি]], [[w:Hume|হিউম]], [[w:Locke|লক]]) মনে করেন, মানুষের প্রকৃত জ্ঞান আসে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। অর্থাৎ মানব ইন্দ্রিয়ই হলো জানার প্রকৃত মাধ্যম।
আরও একটি ধর্মীয় ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি হলো জ্ঞানকে (ঈশ্বরের) ঐশী প্রকাশ হিসেবে দেখা (যেমন ঈশ্বর তাঁর আত্মার মাধ্যমে বাইবেলের লেখকদের জ্ঞান দেন)। এখানে বিশ্বাস এবং জ্ঞানের মধ্যে বিভাজনরেখা কিছুটা অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। [[w:St. Augustine|সেন্ট অগাস্টিন]] এই বিষয়ে যুক্তি ও বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন।
অনেক জ্ঞানতত্ত্ববীদদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়গুলোর একটি হলো জ্ঞানের বিশ্লেষণ, অর্থাৎ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যে, "কেউ কোনো কিছু জানে বলার জন্য কী শর্ত পূরণ হতে হবে?" দীর্ঘদিন ধরে বেশিরভাগ দার্শনিক মনে করতেন: কিছু জানার জন্য আপনাকে সেটি বিশ্বাস করতে হবে, সেটি সত্য হতে হবে এবং সেই বিশ্বাসের জন্য যথাযথ যুক্তি থাকতে হবে। কিন্তু [[w:Gettier problem|গেটিয়ার সমস্যা]] এই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায় এবং এই প্রশ্নটি নতুন করে অনেকের চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে। এই ধরনের প্রশ্ন জ্ঞানতত্ত্বের সবচেয়ে সাধারণ প্রশ্নগুলোর মধ্যে পড়ে, যেখানে জ্ঞানের বিভিন্ন ধরন নিয়ে আলোচনা অপেক্ষাকৃত বিশেষায়িত প্রশ্ন।
== তথ্যসূত্র এবং আরও পাঠ্য ==
* {{wikipedia-inline|জ্ঞানতত্ত্ব}}
{{BookCat}}
btd9uigbj9anduukcx2hreedrwhl10l
দর্শনের সাথে পরিচয়/জ্ঞানতত্ত্ব কী
0
26605
85755
82647
2025-07-06T21:01:05Z
Mehedi Abedin
7113
[[সাহায্য:স্বয়ংক্রিয় সম্পাদনা সারাংশ|←]][[দর্শনের সাথে পরিচয়/জ্ঞানতত্ত্ব কী?]]-এ পুনর্নির্দেশ করা হল
85755
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[দর্শনের সাথে পরিচয়/জ্ঞানতত্ত্ব কী?]]
087q7za0xpdbjikudzt4vcxtpm7cfy7
জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/এদো যুগ
0
26668
85749
82797
2025-07-06T20:23:15Z
Mehedi Abedin
7113
85749
wikitext
text/x-wiki
[[Image:Tokugawa Ieyasu2.JPG|thumb|টোকুগাওয়া আইয়াসু]]
এদো যুগ (জাপানি: 江戸時代, Edo jidai) বা তোকুগাওয়া যুগ (徳川時代 Tokugawa jidai) জাপানি ইতিহাসের একটি অংশ যে সময়কাল (১৬০৩ থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত) টোকুগাওয়া পরিবারের শোগুনদের দ্বারা জাপান শাসিত হয়েছিল। এই সময়ের রাজনৈতিক সত্তা ছিল টোকুগাওয়া শোগুনাত। শোগুন টোকুগাওয়া ইয়েয়াসু ১৬০৩ সালের ২৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এদোতে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৬৮ সালের ৩ মে মেইজি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে টোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্রের পতন ঘটে, এদোর পতন হয় এবং পঞ্চদশ ও পূর্ববর্তী শোগুন টোকুগাওয়া ইয়োশিনোবুর শাসনামলে তেন্নোর (সম্রাটের) শাসন পুনরুদ্ধার হয়।
==শোগুন এবং ডাইমিয়োর শাসন==
কামাকুরা শোগুনাতের সময় থেকে টোকুগাওয়া শোগুনাতের সময় পর্যন্ত কয়েক শতাব্দী ধরে একটি বিবর্তন ঘটেছিল। কামাকুরা শোগুনাত তেন্নোর (সম্রাটের) দরবারের সাথে ভারসাম্যে সহাবস্থান করত কিন্তু টোকুগাওয়া যুগে বুশিরা (সামরিক শ্রেণী) অবিসংবাদিত শাসক হয়ে ওঠে, যাকে ইতিহাসবিদ এডউইন ও. রেইশাওয়ার একটি "কেন্দ্রীয় সামন্ততান্ত্রিক" সরকার ব্যবস্থা বলে অভিহিত করেছেন। নতুন বাকুফুর উত্থানে টোকুগাওয়া ইয়েয়াসুর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওদা নোবুনাগা এবং তোয়োতোমি হিদেয়োশির অর্জনের প্রধান সুবিধাভোগী ছিলেন ইয়েয়াসু। ইতোমধ্যেই শক্তিশালী ইয়েয়াসু ধনী কান্তো অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়ে লাভবান হন। তিনি ২.৫ মিলিয়ন কোকু (জাপানি ভূমি পরিমাপের একক) ভূমি এদোতে নতুন সদর দফতর, একটি কৌশলগতভাবে অবস্থিত দুর্গ শহর (ভবিষ্যতে টোকিও) বজায় রেখেছিলেন এবং তার নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত দুই মিলিয়ন কোকু ভূমি ও আটত্রিশজন অনুগত সামন্ত ছিল। হিদেয়োশির মৃত্যুর পর ইয়েয়াসু দ্রুত তোয়োতোমি পরিবারের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিতে পদক্ষেপ নেন।
সেকিগাহারা যুদ্ধে (১৬০০ সালের ২১শে অক্টোবর বা জাপানি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কেইচো যুগের পঞ্চম বছরের নবম মাসের ১৫তম দিনে) পশ্চিমের ডাইমিয়োদের বিরুদ্ধে ইয়েয়াসুর বিজয় তাকে কার্যত সমগ্র জাপানের নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়। তিনি দ্রুত অসংখ্য শত্রু ডাইমিয়ো পরিবারকে বিলুপ্ত করেন, তোয়োতোমির মতো অন্যদের ক্ষমতা হ্রাস করেন এবং যুদ্ধের লুণ্ঠিত সম্পদ তার পরিবার ও মিত্রদের মধ্যে বন্টন করেন। ইয়েয়াসু তখনও পশ্চিমের ডাইমিয়োদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জনে ব্যর্থ হয়েছিলেন কিন্তু শোগুন উপাধি গ্রহণ করে তিনি জোট ব্যবস্থাকে সুসংহত করতে সাহায্য করেন। তার ক্ষমতার ভিত্তি আরও শক্তিশালী করার পর ইয়েয়াসু তার পুত্র হিদেতাদাকে (১৫৭৯-১৬৩২) শোগুন হিসেবে এবং নিজেকে ১৬০৫ সালে অবসরপ্রাপ্ত শোগুন হিসেবে নিযুক্ত করেন। তোয়োতোমিরা তখনও একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি ছিল এবং ইয়েয়াসু পরবর্তী দশক তাদের নির্মূল করার জন্য উৎসর্গ করেন। ১৬১৫ সালে ওসাকার তোয়োতোমি দুর্গ টোকুগাওয়া সেনাবাহিনী দ্বারা ধ্বংস হয়।
টোকুগাওয়া (বা এতো) যুগ জাপানে ২৫০ বছরের স্থিতিশীলতা নিয়ে আসে। রাজনৈতিক ব্যবস্থা বাকুহান-এ রূপান্তরিত হয় যা এই সময়ের সরকার ও সমাজকে বর্ণনা করতে 'বাকুফু' এবং 'হান' (ডোমেইন) শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। বাকুহানে শোগুনের জাতীয় ক্ষমতা ছিল এবং ডাইমিয়োদের আঞ্চলিক ক্ষমতা ছিল। এটি সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোতে একটি নতুন ঐক্য উপস্থাপন করে যেখানে কেন্দ্রীভূত এবং বিকেন্দ্রীভূত কর্তৃপক্ষের মিশ্রণ পরিচালনার জন্য একটি ক্রমবর্ধমান বিশাল আমলাতন্ত্র ছিল। টোকুগাওয়ারা তাদের শাসনের প্রথম শতাব্দীতে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে: ভূমি পুনর্বন্টন তাদের প্রায় সাত মিলিয়ন কোকু ভূমি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির নিয়ন্ত্রণ এবং একটি ভূমি মূল্যায়ন ব্যবস্থা এনে দেয় যা বিপুল রাজস্ব সংগ্রহ করত। সামন্ততান্ত্রিক স্তরবিন্যাস বিভিন্ন শ্রেণীর ডাইমিয়ো দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল।
শিনপান বা "সম্পর্কিত পরিবার" টোকুগাওয়া হাউসের সবচেয়ে কাছাকাছি ছিল। তারা টোকুগাওয়া ভূমির সীমান্তে তেইশজন ডাইমিয়ো ছিল, যারা সকলেই ইয়েয়াসুর সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। শিনপানরা বেশিরভাগই সম্মানসূচক পদ এবং বাকুফুতে উপদেষ্টা পদ ধারণ করত। শ্রেণীবিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণী ছিল ফুদাই বা "হাউস ডাইমিয়ো" যারা তাদের বিশ্বস্ত সেবার জন্য টোকুগাওয়া জমিদারির কাছাকাছি ভূমি দিয়ে পুরস্কৃত হয়েছিল। আঠারো শতকের মধ্যে ১৪৫ জন ফুদাই এমন ছোট হান নিয়ন্ত্রণ করত যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির মূল্যায়ন ছিল ২৫০,০০০ কোকু। ফুদাই শ্রেণীর সদস্যরা বেশিরভাগ প্রধান বাকুফু পদে কাজ করত। সাতানব্বইটি হান তৃতীয় গোষ্ঠী গঠন করেছিল যা তোজামা (বাইরের সামন্ত) নামে পরিচিত ছিল, যারা পূর্বে প্রতিপক্ষ বা নতুন মিত্র ছিল। তোজামাগুলো মূলত দ্বীপপুঞ্জের পরিধিতে অবস্থিত ছিল এবং সম্মিলিতভাবে প্রায় দশ মিলিয়ন কোকু উৎপাদনশীল ভূমি নিয়ন্ত্রণ করত। যেহেতু তোজামা ডাইমিয়োদের মধ্যে সবচেয়ে কম বিশ্বস্ত ছিল, তাই তাদের সবচেয়ে সতর্কতার সাথে পরিচালিত এবং উদারভাবে ব্যবহার করা হতো যদিও তাদের কেন্দ্রীয় সরকারি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
টোকুগাওয়া পরিবার কেবল ঐক্যবদ্ধ জাপানের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করেনি বরং তারা সম্রাট, রাজসভা, সমস্ত ডাইমিয়ো এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোর ওপরও অভূতপূর্ব ক্ষমতা লাভ করেছিল। সম্রাটকে শোগুনের রাজনৈতিক অনুমোদনের চূড়ান্ত উৎস হিসেবে ধরে রাখা হয়েছিল, যদিও শোগুন নামমাত্র রাজপরিবারের অনুগত ছিল। টোকুগাওয়ারা রাজপরিবারের প্রাসাদ পুনর্নির্মাণ করে এবং নতুন জমি প্রদান করে তাদের পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছিল। রাজকীয় বংশ এবং টোকুগাওয়া পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিশ্চিত করার জন্য, ১৬১৯ সালে ইয়েয়াসুর নাতনিকে একজন রাজকীয় সহধর্মিনী করা হয়। ডাইমিয়ো পরিবারগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি আইনের সংকলন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই আইন ব্যক্তিগত আচরণ, বিবাহ, পোশাক, অস্ত্রের প্রকার এবং সৈন্য সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করত; সামন্ত প্রভুদেরকে প্রতি বছর এডোতে বসবাস করতে বাধ্য করত (স্যানকিন কোতাই পদ্ধতি); সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছিল; খ্রিস্ট ধর্মকে নিষিদ্ধ করেছিল; প্রতিটি ডোমেইনে (হান) একটির বেশি দুর্গ নির্মাণে নিষেধ করেছিল এবং নির্ধারণ করেছিল যে বাকুফুর নিয়মাবলীই হবে জাতীয় আইন।
যদিও ডাইমিয়োদের সরাসরি কর দিতে হতো না তবে তাদের সামরিক ও লজিস্টিক্যাল সহায়তা এবং দুর্গ, রাস্তা, সেতু ও প্রাসাদের মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য নিয়মিত চাঁদা দিতে হতো। এই বিভিন্ন নিয়মকানুন এবং লেভি কেবল টোকুগাওয়াদেরই শক্তিশালী করেনি বরং ডাইমিয়োদের সম্পদও হ্রাস করে তাদের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের প্রতি হুমকি কমিয়ে দিয়েছিল। হানগুলো যা একসময় সামরিক-কেন্দ্রিক ডোমেইন ছিল নিছক স্থানীয় প্রশাসনিক ইউনিটে পরিণত হয়। ডাইমিয়োদের তাদের অঞ্চল এবং তাদের অনুগত, আমলা ও সাধারণ মানুষের জটিল ব্যবস্থার ওপর সম্পূর্ণ প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ছিল। নোবুনাগা এবং হিদেয়োশি দ্বারা ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে আনুগত্য আদায় করা হয়েছিল।
==সাকোকুর সূচনা==
হিদেয়োশির মতো ইয়েয়াসুও বৈদেশিক বাণিজ্যকে উৎসাহিত করেছিলেন, তবে বিদেশিদের প্রতি তার সন্দেহও ছিল। তিনি এদোকে একটি প্রধান বন্দরে পরিণত করতে চেয়েছিলেন কিন্তু একবার যখন তিনি জানতে পারলেন যে ইউরোপীয়রা কিউশুর বন্দরগুলোকে পছন্দ করে এবং চীন তার আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে তখন তিনি বিদ্যমান বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের দিকে মনোনিবেশ করেন এবং শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু বন্দরকে নির্দিষ্ট ধরণের পণ্যদ্রব্য পরিচালনা করার অনুমতি দেন।
এদো যুগের শুরু নানবান বাণিজ্য পর্বের শেষ দশকগুলির সাথে মিলে যায়, যে সময়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলির সাথে অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে তীব্র মিথস্ক্রিয়া ঘটেছিল। এদো যগের শুরুতেই জাপান তার প্রথম সমুদ্রগামী পশ্চিমা-শৈলীর যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে, যেমন সান জুয়ান বাউটিস্টা একটি ৫০০-টন গ্যালিয়ন-টাইপ জাহাজ যা হাসেকুরা সুনেসাগা-এর নেতৃত্বে একটি জাপানি দূতাবাসকে আমেরিকা এবং তারপর ইউরোপে নিয়ে গিয়েছিল। এছাড়াও সেই সময়ে বাকুফু আন্তঃ-এশিয়া বাণিজ্যের জন্য প্রায় ৩৫০টি রেড সিল শিপ অর্থাৎ তিন-মাস্তুলযুক্ত এবং সশস্ত্র বাণিজ্য জাহাজ তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিল। ইয়ামাদা নাগামাসার মতো জাপানি অভিযাত্রীরা এশিয়া জুড়ে এই জাহাজগুলো ব্যবহার করতেন।
"খ্রিস্টান সমস্যা" মূলত কিউশুর খ্রিস্টান ডাইমিয়ো এবং ইউরোপীয়দের সাথে তাদের বাণিজ্য উভয়কে নিয়ন্ত্রণ করার একটি সমস্যা ছিল। ১৬১২ সালের মধ্যে শোগুনের অনুগত এবং টোকুগাওয়া ভূমির বাসিন্দাদের খ্রিস্ট ধর্ম ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আরও বিধিনিষেধ আসে ১৬১৬ সালে (বিদেশী বাণিজ্যকে নাগাসাকি এবং হিরাদো, কিউশুর উত্তর-পশ্চিমে একটি দ্বীপে সীমাবদ্ধ করা), ১৬২২ সালে (১২০ জন মিশনারী এবং ধর্মান্তরিতদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা), ১৬২৪ সালে (স্প্যানিশদের বহিষ্কার), এবং ১৬২৯ সালে (হাজার হাজার খ্রিস্টানকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা)। অবশেষে ১৬৩৫ সালের ক্লোজড কান্ট্রি এডিক্ট কোনো জাপানিকে জাপানের বাইরে ভ্রমণ করতে বা কেউ যদি চলে যায় তবে তাকে আর কখনও ফিরে আসতে নিষেধ করে। ১৬৩৬ সালে ডাচদের দেজিমাতে সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল যা নাগাসাকির বন্দরে একটি ছোট কৃত্রিম দ্বীপ ছিল এবং এইভাবে প্রকৃত জাপানি ভূমি ছিল না।
শোগুনাত ক্যাথলিক খ্রিস্টধর্মকে একটি অত্যন্ত অস্থিতিশীল কারণ হিসেবে দেখেছিল, যার ফলস্বরূপ ক্যাথলিক ধর্মের উপর নিপীড়ন শুরু হয়। ১৬৩৭-৩৮ সালের শিমাবারা বিদ্রোহ যেখানে অসন্তুষ্ট ক্যাথলিক খ্রিস্টান সামুরাই এবং কৃষকরা বাকুফুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল — এবং এদো ডাচ জাহাজ ডেকে বিদ্রোহী দুর্গগুলোতে বোমা বর্ষণ করেছিল — যা খ্রিস্টান আন্দোলনের সমাপ্তি চিহ্নিত করে, যদিও কিছু ক্যাথলিক খ্রিস্টান গোপনে টিকে ছিল যাদেরকে 'কাকুরে কিরিশিতান' বলা হয়।
এর পরেই পর্তুগিজদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়, পর্তুগিজ কূটনৈতিক মিশনের সদস্যদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, সমস্ত প্রজাকে বৌদ্ধ বা শিন্তো মন্দিরে নিবন্ধন করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ডাচ ও চীনাদের যথাক্রমে দেজিমা এবং নাগাসাকির একটি বিশেষ কোয়ার্টারে সীমাবদ্ধ করা হয়। জাপানের মূল দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কোরিয়া এবং রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের কিছু বাইরের ডাইমিয়োর ছোটখাটো বাণিজ্য ব্যতীত, ১৬৪১ সালের মধ্যে বৈদেশিক যোগাযোগ সাকোকু নীতি দ্বারা নাগাসাকিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
১৬৫০ সালের মধ্যে খ্রিস্টধর্ম প্রায় সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে গিয়েছিল এবং জাপানের উপর বাহ্যিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাব বেশ সীমিত হয়ে পড়েছিল। এই সময়ে শুধুমাত্র চীন, ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং অল্প সময়ের জন্য ইংরেজরা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জাপানে আসার অধিকার উপভোগ করত এবং তাদের নাগাসাকির দেজিমা বন্দরে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল। জাপানের উপকূলে অবতরণকারী অন্যান্য ইউরোপীয়দের বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো। দেশের এই বন্ধ অবস্থাকেই সাকোকু (鎖国) বলা হয়।
==সমাজ==
দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ সংঘাতের পর নবপ্রতিষ্ঠিত টোকুগাওয়া সরকারের প্রথম লক্ষ্য ছিল দেশকে শান্ত করা। তারা ক্ষমতার একটি ভারসাম্য তৈরি করেছিল যা পরবর্তী ২৫০ বছর ধরে (মোটামুটি) স্থিতিশীল ছিল যা সামাজিক শৃঙ্খলার কনফুসিয়ান নীতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল। অধিকাংশ সামুরাই তাদের জমির প্রত্যক্ষ মালিকানা হারায়: সমস্ত জমির মালিকানা প্রায় ৩০০ জন ডাইমিয়োর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়। সামুরাইদের দুটি বিকল্প ছিল: হয় তাদের তলোয়ার ত্যাগ করে কৃষক হওয়া অথবা তাদের সামন্ত প্রভুর শহরে চলে গিয়ে বেতনভুক্ত অনুগত হওয়া। শুধুমাত্র উত্তর সীমান্তের প্রদেশগুলোতে অল্প সংখ্যক ভূমি সামুরাই রয়ে গিয়েছিল অথবা শোগুনের প্রত্যক্ষ অনুগত হিসেবে ৫,০০০ তথাকথিত হাতামোতো ছিল।
ডাইমিয়োদের শোগুনাত কঠোর নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। তাদের পরিবারগুলোকে এদোতে বসবাস করতে হতো; ডাইমিয়োদের নিজেদেরকে এক বছর এদোতে এবং পরের বছর তাদের প্রদেশে (হান) বসবাস করতে হতো। এই ব্যবস্থাকে স্যানকিন কোতাইবলা হতো।
টোকুগাওয়া যুগে সামাজিক শৃঙ্খলা ছিল কঠোর এবং অত্যন্ত আনুষ্ঠানিক যা ব্যক্তিগত যোগ্যতার চেয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অবস্থানের উপর ভিত্তি করে গঠিত ছিল। শীর্ষে ছিলেন সম্রাট এবং রাজসভার অভিজাতরা (কুগে), শোগুন এবং ডাইমিয়োদের সাথে। তাদের নীচে জনসংখ্যাকে মিবুনসেই (身分制) নামে পরিচিত একটি ব্যবস্থায় চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছিল: সামুরাই শীর্ষে ছিল (জনসংখ্যার প্রায় ৫%)। কৃষকরা দ্বিতীয় স্তরে ছিল (জনসংখ্যার ৮০% এর বেশি)। কৃষকদের নীচে ছিল কারিগররা।
সবচেয়ে নীচে চতুর্থ স্তরে ছিল বণিকরা। শুধুমাত্র কৃষকরা গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করত। সামুরাই, কারিগর এবং বণিকরা ডাইমিয়োদের দুর্গের চারপাশে নির্মিত শহরগুলিতে বসবাস করত, প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব কোয়ার্টারে সীমাবদ্ধ ছিল।
এই চারটি শ্রেণীর বাইরে ছিল তথাকথিত এতা এবং হিনিন, যাদের পেশা বৌদ্ধ ধর্মের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করত। এতা ছিল কসাই, চর্মকার এবং মৃতদেহ সৎকারকারী। হিনিনরা নগর প্রহরী, রাস্তা পরিষ্কারকারী এবং জল্লাদ হিসেবে কাজ করত। অন্যান্য বহিরাগতদের মধ্যে ছিল ভিক্ষুক, বিনোদনকারী এবং পতিতা। 'এতা' শব্দের আক্ষরিক অর্থ "নোংরা" এবং 'হিনিন' শব্দের অর্থ "অ-মানব", যা অন্যান্য শ্রেণী দ্বারা ধারণকৃত মনোভাবের সম্পূর্ণ প্রতিফলন ছিল যে এতা এবং হিনিনরা মানুষই নয়। হিনিনদের শুধুমাত্র শহরের একটি বিশেষ কোয়ার্টারের ভিতরে থাকার অনুমতি ছিল। অভিনেতারা সাধারণত দলবদ্ধভাবে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভ্রমণ করত, প্রতিটি শহরে অভিনয় করে পরবর্তী শহরে চলে যেত। কখনও কখনও এতা গ্রামগুলো সরকারি মানচিত্রেই থাকত না।
টোকুগাওয়া জাপানে ব্যক্তির কোনো আইনি অধিকার ছিল না। পরিবারই ছিল ক্ষুদ্রতম আইনি সত্তা এবং সমাজের সমস্ত স্তরে পারিবারিক মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা বজায় রাখা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, এডো যুগের ফৌজদারি আইনগুলোতে গোটোকে রেইজো (টোকুগাওয়া হাউস লস)-এর ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের নিকটাত্মীয়দের জন্য "অ-মুক্ত শ্রম" বা দাসত্বের বিধান ছিল কিন্তু এই প্রথাটি কখনও ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়নি। ১৭১১ সালের গোটোকে রেইজো ১৫৯৭ থেকে ১৬৯৬ সালের মধ্যে প্রচারিত ৬০০টিরও বেশি আইন থেকে সংকলিত হয়েছিল।
==অর্থনৈতিক উন্নয়ন==
এদো যুগ জাপানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক খাত রেখে গিয়েছিল যা উদীয়মান নগর কেন্দ্রগুলোতে বিকশিত হয়েছিল। এর সাথে ছিল তুলনামূলকভাবে সুশিক্ষিত একটি অভিজাত শ্রেণী, একটি পরিশীলিত সরকারি আমলাতন্ত্র, উৎপাদনশীল কৃষি, অত্যন্ত উন্নত আর্থিক ও বিপণন ব্যবস্থা সহ ঘনিষ্ঠভাবে ঐক্যবদ্ধ একটি জাতি এবং একটি জাতীয় সড়ক অবকাঠামো। টোকুগাওয়া যুগে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে ছিল নগরায়ণ, পণ্যের বর্ধিত পরিবহন, অভ্যন্তরীণ এবং প্রাথমিকভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য প্রসার, এবং বাণিজ্য ও হস্তশিল্প শিল্পের বিস্তার। নির্মাণ ব্যবসাগুলি, ব্যাংকিং সুবিধা এবং বণিক সমিতিগুলির সাথে সমৃদ্ধি লাভ করে। ক্রমশ, হান কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমান কৃষি উৎপাদন এবং গ্রামীণ হস্তশিল্পের বিস্তার তদারকি করছিল।
আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে এদোর জনসংখ্যা এক মিলিয়নেরও বেশি ছিল এবং ওসাকা ও কিয়োটোর প্রত্যেকটির জনসংখ্যা ৪,০০,০০০ এর বেশি ছিল। অন্যান্য অনেক দুর্গ শহরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৭২০ থেকে ১৮২০ সালের মধ্যে জাপানের জনসংখ্যা প্রায় শূন্য বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা প্রায়শই ব্যাপক দুর্ভিক্ষের প্রতিক্রিয়ায় কম জন্মহারের কারণে ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। তবে কিছু ইতিহাসবিদ ভিন্ন তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন যেমন উচ্চ হারে শিশুহত্যা কৃত্রিমভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করত। ওসাকা এবং কিয়োটো ব্যস্ত বাণিজ্য ও হস্তশিল্প উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল, যখন এদো খাদ্য সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় শহুরে ভোগ্যপণ্যের কেন্দ্র ছিল।
ধান ছিল অর্থনীতির ভিত্তি, কারণ ডাইমিয়োরা কৃষকদের কাছ থেকে ধানের আকারে কর আদায় করত। কর ছিল উচ্চ, ফসলের প্রায় ৪০%। ধান এদোর ফুদাসাসি বাজারে বিক্রি হতো। অর্থ সংগ্রহের জন্য ডাইমিয়োরা অগ্রিম চুক্তি ব্যবহার করত, যা এখনও কাটা হয়নি এমন ধান বিক্রি করত। এই চুক্তিগুলো আধুনিক ফিউচার ট্রেডিংয়ের মতো ছিল।
এদো যুগেই জাপান একটি উন্নত বন ব্যবস্থাপনা নীতি তৈরি করেছিল। নির্মাণ, জাহাজ নির্মাণ এবং জ্বালানীর জন্য কাঠের সম্পদের বর্ধিত চাহিদা ব্যাপক বন উজাড়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিল যার ফলে দাবানল, বন্যা এবং মাটি ক্ষয় হয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় শোগুন ১৬৬৬ সালের কাছাকাছি সময়ে লগিং কমানো এবং বৃক্ষরোপণ বৃদ্ধির একটি নীতি চালু করেন। এই নীতিতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল যে কেবল শোগুন এবং ডাইমিয়োই কাঠ ব্যবহারের অনুমোদন দিতে পারবে। ১৮ শতকের মধ্যে জাপান বনপালন এবং বৃক্ষরোপণ বনায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অর্জন করেছিল।
==শৈল্পিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশ==
এই সময়কালে জাপান দেজিমায় ডাচ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য ও বইপত্রের সাহায্যে পশ্চিমা বিজ্ঞান ও কৌশলগুলো (যা রাঙ্গাকু নামে পরিচিত, আক্ষরিক অর্থে "ডাচ গবেষণা") ক্রমশ অধ্যয়ন করে। যে প্রধান ক্ষেত্রগুলো অধ্যয়ন করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ছিল ভূগোল, চিকিৎসা, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, শিল্পকলা, ভাষা, বৈদ্যুতিক ঘটনা অধ্যয়নের মতো ভৌত বিজ্ঞান এবং জাপানি ঘড়ি বা ওয়াদোকি এর বিকাশে পশ্চিমা কৌশল দ্বারা অনুপ্রাণিত যান্ত্রিক বিজ্ঞান। নব্য-কনফুসিয়ানিজমের বিকাশ ছিল টোকুগাওয়া যুগের প্রধান বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রগতি। কনফুসীয় অধ্যয়ন দীর্ঘদিন ধরে জাপানে বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের দ্বারা সক্রিয় রাখা হয়েছিল, কিন্তু টোকুগাওয়া যুগে কনফুসিয়ানিজম বৌদ্ধ ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসে। চিন্তার এই ব্যবস্থা মানুষ ও সমাজের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি মনোযোগ বাড়ায়। নব্য-কনফুসীয় মতবাদের নৈতিক মানবতাবাদ, যুক্তিবাদ এবং ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি সরকারি শ্রেণীকে আকৃষ্ট করেছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, নব্য-কনফুসিয়ানিজম জাপানের প্রভাবশালী আইনি দর্শনে পরিণত হয় এবং সরাসরি কোকুগাকু (জাতীয় শিক্ষা) চিন্তাধারার বিকাশে অবদান রাখে।
নব্য-কনফুসিয়ানিজমের উন্নত অধ্যয়ন এবং ক্রমবর্ধমান প্রয়োগ সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সামন্ততান্ত্রিক রীতিনীতি থেকে শ্রেণী- এবং বৃহৎ-গোষ্ঠী-ভিত্তিক অনুশীলনে রূপান্তরে অবদান রাখে। জনগণের শাসন বা কনফুসীয় মানুষের শাসন ধীরে ধীরে আইনের শাসনে রূপান্তরিত হয়। নতুন আইন তৈরি করা হয় এবং নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারের একটি নতুন তত্ত্ব এবং সমাজের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি বাকুফু দ্বারা আরও ব্যাপক শাসনকে ন্যায্যতা দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়। প্রতিটি ব্যক্তির সমাজে একটি স্বতন্ত্র স্থান ছিল এবং তাকে তার জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করার প্রত্যাশা করা হতো। যাদের নির্ধারিত কর্তব্য ছিল শাসন করা তাদের দ্বারা জনগণকে পরোপকারী মনোভাব নিয়ে শাসন করা হতো। সরকার ছিল সর্বশক্তিমান কিন্তু দায়িত্বশীল ও মানবিক। যদিও শ্রেণী ব্যবস্থা নব্য-কনফুসিয়ানিজম দ্বারা প্রভাবিত ছিল এটি এর সাথে অভিন্ন ছিল না। চীনা মডেলে সৈনিক এবং ধর্মগুরুরা অনুক্রমের সর্বনিম্ন স্তরে থাকলেও জাপানে এই শ্রেণীগুলির কিছু সদস্য শাসক অভিজাত শ্রেণী গঠন করেছিল। সামুরাই শ্রেণীর সদস্যরা জাপানি ইতিহাস এবং কনফুসীয় পণ্ডিত-প্রশাসকদের পথ অনুসরণে নতুন আগ্রহ নিয়ে বুশি ঐতিহ্যের প্রতি অনুগত ছিল যার ফলে বুশিদো (যোদ্ধার পথ) ধারণার বিকাশ ঘটে।
আরেকটি বিশেষ জীবনধারা — চোনিন্দো—ও আবির্ভূত হয়। চোনিন্দো (শহরবাসীর পথ) ছিল ওসাকা, কিয়োটো এবং এডোর মতো শহরগুলিতে গড়ে ওঠা একটি স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। এটি বুশিদো গুণাবলী — যেমন অধ্যবসায়, সততা, সম্মান, আনুগত্য এবং মিতব্যয়িতা — অনুসরণে উৎসাহিত করত, একই সাথে শিন্তো, নব্য-কনফুসীয় এবং বৌদ্ধ বিশ্বাসকে মিশ্রিত করত।
গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, কার্টোগ্রাফি, প্রকৌশল এবং চিকিৎসার অধ্যয়নকেও উৎসাহিত করা হয়েছিল। কারুকার্যের গুণমানের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল বিশেষ করে শিল্পকলায়। প্রথমবারের মতো শহুরে জনগোষ্ঠীর একটি নতুন গণসংস্কৃতিকে সমর্থন করার মতো উপায় এবং অবসর সময় ছিল। তাদের আনন্দের অন্বেষণ উকিয়ো (ভাসমান বিশ্ব) নামে পরিচিতি লাভ করে যা ছিল ফ্যাশন, জনপ্রিয় বিনোদন এবং যৌনতা (শুঙ্গা) সহ দৈনন্দিন জীবনের বস্তু ও কর্মের নান্দনিক গুণাবলীর আবিষ্কারের একটি আদর্শ বিশ্ব। বিনোদনমূলক কার্যক্রমে এই ক্রমবর্ধমান আগ্রহ নতুন শিল্পগুলির একটি সারি বিকাশে সহায়তা করে, যার মধ্যে অনেকগুলি ইয়োশিওয়ারা নামে পরিচিত একটি অঞ্চলে পাওয়া যেত। এই অঞ্চলটি এডোর বিকাশমান কমনীয়তা এবং পরিশীলিততার কেন্দ্র হিসাবে বেশি পরিচিত ছিল। আনন্দ ও বিলাসিতার এই স্থানটি অভিজাত এবং ধনী বণিকদের জন্য একটি গন্তব্যে পরিণত হয়েছিল যারা তাদের ভাগ্য প্রদর্শন করতে চাইত। তাদের অর্থনীতি মূলত এই ধরনের ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতার উপর নির্ভর করত টিকে থাকার জন্য। যারা এই অঞ্চলে বসবাস করত এবং কাজ করত তাদের অনেকের জন্য আভিজাত্যের বিভ্রম বজায় রাখাই তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার একমাত্র উপায় ছিল।
ইয়োশিওয়ারা ছিল এমন নারীদের বাসস্থান যারা দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির কারণে এই বিচ্ছিন্ন পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ভাড়া, তাদের কর্মসংস্থান চুক্তির মূল্য, পোশাকের খরচ, মেক-আপ, উপহার দেওয়া এবং অন্যান্য ব্যয় একত্রিত হয়ে নিশ্চিত করত যে অনেকেই তাদের ঋণ পরিশোধ করতে সারা জীবন কাজ করবে। এই নারীদের নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র বাজানো, গসিপ করা বা সাহচর্য দেওয়ার কথা ছিল যাতে তাদের অতিথিরা আবার ফিরে আসেন। ফলস্বরূপ, এই অঞ্চলটি নিজস্ব একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলে যা পরবর্তীতে দেশের বাকি অংশে কী জনপ্রিয় হবে তা নির্ধারণ করে। এটি ফ্যাশনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সত্য ছিল কারণ একজন নারীর পরিচয় তার পোশাক দ্বারা নির্ধারিত হতো; বিশেষ করে এটি তার পেশা এবং সেই ক্ষেত্রের মধ্যে তার মর্যাদা কী ছিল তা স্পষ্ট করত। তার পোশাকের গুণগত মান নিশ্চিত করত যে সে তার প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা। খ্যাতি অর্জনের এবং তার প্রতিভা বাজারজাত করার এটিই ছিল তার একমাত্র উপায়।
তবে ইয়োশিওয়ারার একটি অন্ধকার দিকও ছিল। এখানে পরিচালিত বেশিরভাগ ব্যবসায় নারীদের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পতিতাবৃত্তি ব্যবহার করা হতো। ফলস্বরূপ, ১৫৮৯ সালে তোয়োতোমি হিদেয়োশি কর্তৃক এর প্রতিষ্ঠা প্রথম অনুমোদিত হওয়ার পর থেকে এই এলাকাটি দেশের সরকার-অনুমোদিত রেড-লাইট জেলায় পরিণত হয়। এই উপাধি প্রায় ২৫০ বছর ধরে স্থায়ী হয়েছিল। পেশাদার নারী বিনোদনকারী (গেইশা), সঙ্গীত, জনপ্রিয় গল্প, কাবুকি এবং বুনরাকু (পুতুল থিয়েটার), কবিতা, একটি সমৃদ্ধ সাহিত্য এবং শিল্পকলা যা সুন্দর কাঠখোদাই প্রিন্ট (যা উকিয়ো-এ নামে পরিচিত) দ্বারা উদাহরণস্বরূপ ছিল সবই এই সংস্কৃতির বিকাশের অংশ ছিল। নাট্যকার চিকামাতসু মনজায়েমন (১৬৫৩-১৭২৪) এবং কবি, প্রাবন্ধিক ও ভ্রমণ লেখক মাৎসুও বাশো (১৬৪৪-৯৪) এর মতো প্রতিভাবানদের লেখাতেও সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছিল।
উকিয়ো-এ প্রিন্ট ১৭শ শতাব্দীর শেষ দিকে তৈরি হতে শুরু করে তবে ১৭৬৪ সালে হারুনোবু প্রথম পলিক্রোম প্রিন্ট তৈরি করেন। পরবর্তী প্রজন্মের প্রিন্ট ডিজাইনাররা যাদের মধ্যে তোরি কিয়োনাগা এবং উতামারো ছিলেন, তারা গণিকাদের মার্জিত এবং কখনও কখনও অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ চিত্র তৈরি করেন। ১৯শ শতাব্দীতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন হিরোশিগে যিনি রোমান্টিক এবং কিছুটা ভাবপ্রবণ ল্যান্ডস্কেপ প্রিন্ট তৈরি করতেন। হিরোশিগে প্রায়শই যে অদ্ভুত কোণ ও আকারের মধ্য দিয়ে ল্যান্ডস্কেপ দেখতেন এবং কিয়োনাগা ও উতামারোর কাজ, যা সমতল পৃষ্ঠ ও শক্তিশালী রৈখিক রূপরেখার উপর জোর দিত, পরবর্তীতে এডগার দেগা এবং ভিনসেন্ট ভ্যান গগ-এর মতো পশ্চিমা শিল্পীদের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
টোকুগাওয়া জাপানে বৌদ্ধধর্ম এবং শিন্তো উভয়ই তখনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বৌদ্ধধর্ম, নব্য-কনফুসিয়ানিজমের সাথে মিলিত হয়ে সামাজিক আচরণের মানদণ্ড প্রদান করত। যদিও রাজনৈতিকভাবে অতীতে যেমন শক্তিশালী ছিল না, তবুও বৌদ্ধধর্ম উচ্চ শ্রেণী দ্বারা সমর্থিত ছিল। ১৬৪০ সালে যখন বাকুফু সবাইকে একটি মন্দিরে নিবন্ধন করার নির্দেশ দেয়, তখন খ্রিস্টধর্মের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বৌদ্ধধর্মকে উপকৃত করে। টোকুগাওয়া সমাজের হান, গ্রাম, ওয়ার্ড এবং পরিবারে কঠোর বিভাজন স্থানীয় শিন্তো সংযুক্তিগুলিকে পুনরায় নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। শিন্তো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আধ্যাত্মিক সমর্থন প্রদান করত এবং ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র ছিল। শিন্তো জাতীয় পরিচয়ের অনুভূতি বজায় রাখতেও সাহায্য করেছিল। নব্য-কনফুসীয় যুক্তিবাদ এবং বস্তুবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শিন্তো অবশেষে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক রূপ ধারণ করে। এই দুটি বিশ্বাস ব্যবস্থার মিথস্ক্রিয়া থেকে কোকুগাকু আন্দোলন আবির্ভূত হয়। কোকুগাকু আধুনিক জাপানের সম্রাট-কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ এবং আঠারো ও উনিশ শতকে শিন্তোর একটি জাতীয় মতবাদ হিসেবে পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখে। কোজিকি, নিহন শোওকি এবং মানয়োশূ সবকিছুই জাপানি আত্মার অনুসন্ধানে নতুন করে অধ্যয়ন করা হয়েছিল। কোকুগাকু আন্দোলনের কিছু বিশুদ্ধতাবাদী, যেমন মোতোওরি নোরিনাগা এমনকি কনফুসীয় এবং বৌদ্ধ প্রভাবকে — প্রকৃতপক্ষে বিদেশী প্রভাবকে — জাপানের প্রাচীন পদ্ধতিকে কলুষিত করার জন্য সমালোচনা করেছিলেন। জাপান ছিল কামিদের ভূমি এবং সেই হিসেবে এর একটি বিশেষ নিয়তি ছিল।
<noinclude>{{Japanese HistoryTOC}}</noinclude>
{{BookCat}}
9eoggally3hug96smtp9wf7epmi1y9l
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)
0
27197
85780
85721
2025-07-07T09:05:09Z
Jonoikobangali
676
85780
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কাব্য পরিচয়|কাব্য পরিচয়]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#গ্রন্থনাম বিচার|গ্রন্থনাম বিচার]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা|পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
e3tf35daxwbkdhmo3vhg3zagn8kqwuj
85786
85780
2025-07-07T11:36:24Z
Jonoikobangali
676
85786
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কাব্য পরিচয়|কাব্য পরিচয়]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#গ্রন্থনাম বিচার|গ্রন্থনাম বিচার]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা|পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#চরিত্রবিচার: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি|চরিত্রবিচার: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
scxz47wq065vhicbsacvl2pgs12ei0l
85787
85786
2025-07-07T11:37:57Z
Jonoikobangali
676
85787
wikitext
text/x-wiki
{| cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="width:100%; border:solid #BBBBBB 5px; background:#EEEEEE"
|-
| style="vertical-align:center" | <div style="margin-left:15px;margin-right:15px">
{{book title|বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)}}
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণ পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে প্রকাশ করা।
এই বইটিতে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের কালানুক্রমিক ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। প্রথম পর্বে আছে সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির রচিত সাহিত্য ও চর্যাপদের বিবরণ। দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য, অনুবাদ কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের বিবরণ। তৃতীয় পর্বে চৈতন্য যুগে রচিত অনুবাদ কাব্য, মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন চৈতন্যজীবনী কাব্যের বিবরণও। চতুর্থ পর্বে বর্ণিত হয়েছে বৈষ্ণব পদাবলি ও পদসংকলন, মঙ্গলকাব্য, অনুবাদ কাব্য, শাক্ত পদাবলি, নাথ সাহিত্য, ময়মনসিংহ ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা এবং চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্যের বিবরণ।
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
|}
{| width="100%" cellspacing="0" cellpadding="4" border="0" style="border:solid #BBBBBB 1px; background:#EEEEEE"
<!-- ### পর্ব ১ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ১''' – প্রাচীন যুগ: দশম-দ্বাদশ শতক</big>
# [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা|সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষা]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য|বাঙালি ও সংস্কৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য|বাঙালি ও প্রাকৃত সাহিত্য]]
## [[/সংস্কৃত, প্রাকৃত ও অপভ্রংশে রচিত বাঙালির সাহিত্য#বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য|বাঙালি ও অপভ্রংশ সাহিত্য]]
# [[/চর্যাপদ|চর্যাপদ]]
## [[/চর্যাপদ#রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার|রচনাকাল ও গ্রন্থনাম বিচার]]
## [[/চর্যাপদ#কবি|কবি]]
### [[/চর্যাপদ#লুইপাদ|লুইপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শবরীপাদ|শবরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভুসুকুপাদ|ভুসুকুপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#সরহপাদ|সরহপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কাহ্নপাদ|কাহ্নপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বিরূপপাদ|বিরূপপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#শান্তিপাদ|শান্তিপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#দারিকপাদ|দারিকপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ডোম্বীপাদ|ডোম্বীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কুক্কুরীপাদ|কুক্কুরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#চাটিলপাদ|চাটিলপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#আর্যদেব|আর্যদেব]]
### [[/চর্যাপদ#কম্বলাম্বরপাদ|কম্বলাম্বরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#বীণাপাদ|বীণাপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ভাদেপাদ|ভাদেপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#মহীধরপাদ|মহীধরপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#ধামপাদ|ধামপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#কঙ্কণ|কঙ্কণ]]
### [[/চর্যাপদ#গুণ্ডরীপাদ|গুণ্ডরীপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তাড়কপাদ|তাড়কপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#জয়নন্দী|জয়নন্দী]]
### [[/চর্যাপদ#ঢেণ্ঢণপাদ|ঢেণ্ঢণপাদ]]
### [[/চর্যাপদ#তন্ত্রীপাদ|তন্ত্রীপাদ]]
## [[/চর্যাপদ#ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব|ধর্মতত্ত্ব ও সাধনতত্ত্ব]]
## [[/চর্যাপদ#ভাষা|ভাষা]]
### [[/চর্যাপদ#সন্ধ্যাভাষা|সন্ধ্যাভাষা]]
## [[/চর্যাপদ#সাহিত্যমূল্য|সাহিত্যমূল্য]]
## [[/চর্যাপদ#সমাজচিত্র|সমাজচিত্র]]
</div>
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
<!-- ### পর্ব ২ ### -->
|-
| style="vertical-align:top;text-align:center" | <div style="margin-top:10px"></div>
| style="vertical-align:top" | <div style="margin-right:15px"><big>'''পর্ব ২''' – আদি মধ্যযুগ: ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতক</big>
# [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি|প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি]]
## [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য|''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কবি: বড়ু চণ্ডীদাস|কবি: বড়ু চণ্ডীদাস]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#কাব্য পরিচয়|কাব্য পরিচয়]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#গ্রন্থনাম বিচার|গ্রন্থনাম বিচার]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা|পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা]]
### [[/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি#চরিত্রবিচার: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি|চরিত্রবিচার: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি]]
</div>
| style="background:#CCCCEE;vertical-align:top" |
|}
===ত্রয়োদশ শতক-পঞ্চদশ শতক===
# [[/শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা|শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ জোলেখা]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ অনুবাদ
# [[/কৃত্তিবাস ওঝা|কৃত্তিবাস ওঝা]]
; মহাভারত অনুবাদ
# [[/কবীন্দ্র পরমেশ্বর|কবীন্দ্র পরমেশ্বর]]
# [[/শ্রীকর নন্দী|শ্রীকর নন্দী]]
; ভাগবত অনুবাদ
# [[/মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়|মালাধর বসুর শ্রীকৃষ্ণবিজয়]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গল====
; মনসামঙ্গল
# [[/হরি দত্ত|হরি দত্ত]]
# [[/নারায়ণ দেব|নারায়ণ দেব]]
# [[/বিজয় গুপ্ত|বিজয় গুপ্ত]]
# [[/বিপ্রদাস পিপলাই|বিপ্রদাস পিপলাই]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/মানিক দত্ত|মানিক দত্ত]]
===ষোড়শ শতক থেকে মধ্য সপ্তদশ শতক===
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর====
; মনসামঙ্গল
# [[/কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ|কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ]]
# [[/ দ্বিজ বংশীদাস|দ্বিজ বংশীদাস]]
; চণ্ডীমঙ্গল
# [[/দ্বিজ মাধব|দ্বিজ মাধব]]
# [[/মুকুন্দ চক্রবর্তী|মুকুন্দ চক্রবর্তী]]
# [[/দ্বিজ রামদেব|দ্বিজ রামদেব]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামাই পণ্ডিত|রামাই পণ্ডিত]]
# [[/রূপরাম চক্রবর্তী|রূপরাম চক্রবর্তী]]
# [[/খেলারাম চক্রবর্তী|খেলারাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামকৃষ্ণ রায়|রামকৃষ্ণ রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/দ্বিজ শ্রীধর|দ্বিজ শ্রীধর]]
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/মুরারি গুপ্ত|মুরারি গুপ্ত]]
# [[/নরহরি সরকার|নরহরি সরকার]]
# [[/শিবানন্দ সেন|শিবানন্দ সেন]]
# [[/জ্ঞানদাস|জ্ঞানদাস]]
# [[/গোবিন্দদাস|গোবিন্দদাস]]
# [[/বাসুদেব ঘোষ|বাসুদেব ঘোষ]]
# [[/রামানন্দ বসু|রামানন্দ বসু]]
# [[/বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়|বংশীবদন চট্টোপাধ্যায়]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/যদুনন্দন দাস|যদুনন্দন দাস]]
# [[/মাধবদাস|মাধবদাস]]
# [[/অনন্ত দাস|অনন্ত দাস]]
====চরিতকাব্য====
# [[/বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত|বৃন্দাবন দাসের চৈতন্যভাগবত]]
# [[/লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল|লোচন দাসের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল|জয়ানন্দের চৈতন্যমঙ্গল]]
# [[/কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত|কৃষ্ণদাস কবিরাজের চৈতন্যচরিতামৃত]]
# [[/গোবিন্দদাসের কড়চা|গোবিন্দদাসের কড়চা]]
# [[/চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়|চূড়ামণি দাসের গৌরাঙ্গ বিজয়]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/অদ্ভুতাচার্য|অদ্ভুতাচার্য]]
# [[/চন্দ্রাবতী|চন্দ্রাবতী]]
; মহাভারত
# [[/কাশীরাম দাস|কাশীরাম দাস]]
; ভাগবত
# [[/রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী|রঘুনাথের শ্রীকৃষ্ণপ্রেমতরঙ্গিনী]]
# [[/মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল|মাধবাচার্যের শ্রীকৃষ্ণমঙ্গল]]
# [[/দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল|দুঃখী শ্যামদাসের গোবিন্দমঙ্গল]]
===মধ্য সপ্তদশ শতক—অষ্টাদশ শতক===
====বৈষ্ণব পদাবলি====
# [[/প্রেমদাস|প্রেমদাস]]
# [[/রাধামোহন ঠাকুর|রাধামোহন ঠাকুর]]
# [[/চন্দ্রশেখর|চন্দ্রশেখর]]
=====বৈষ্ণব পদসংকলন=====
# [[/ক্ষণদাগীতচিন্তামণি|ক্ষণদাগীতচিন্তামণি]]
# [[/গীতচন্দ্রোদয়|গীতচন্দ্রোদয়]]
# [[/গৌরচরিতচিন্তামণি|গৌরচরিতচিন্তামণি]]
# [[/পদামৃতসমুদ্র|পদামৃতসমুদ্র]]
# [[/পদকল্পতরু|পদকল্পতরু]]
====মঙ্গলকাব্য: মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল, কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর ও শিবায়ন====
; মনসামঙ্গল
# [[/তন্ত্রবিভূতি|তন্ত্রবিভূতি]]
# [[/জগজ্জীবন ঘোষাল|জগজ্জীবন ঘোষাল]]
# [[/জীবন মৈত্র|জীবন মৈত্র]]
; ধর্মমঙ্গল
# [[/রামদাস আদক|রামদাস আদক]]
# [[/সীতারাম দাস|সীতারাম দাস]]
# [[/যাদুনাথ বা যাদবনাথ|যাদুনাথ বা যাদবনাথ]]
# [[/শ্রীশ্যাম পণ্ডিত|শ্রীশ্যাম পণ্ডিত]]
# [[/ঘনরাম চক্রবর্তী|ঘনরাম চক্রবর্তী]]
# [[/মানিক গাঙ্গুলী|মানিক গাঙ্গুলী]]
; অন্নদামঙ্গল
# [[/ভারতচন্দ্র রায়|ভারতচন্দ্র রায়]]
; কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর
# [[/কৃষ্ণরাম দাস|কৃষ্ণরাম দাস]]
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/বলরাম চক্রবর্তী|বলরাম চক্রবর্তী]]
; শিবায়ন
# [[/রামেশ্বর ভট্টাচার্য|রামেশ্বর ভট্টাচার্য]]
====অনুবাদ কাব্য: রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত====
; রামায়ণ
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/জগৎরাম রায়|জগৎরাম রায়]]
# [[/রামানন্দ ঘোষ|রামানন্দ ঘোষ]]
; মহাভারত
# [[/দ্বৈপায়ন দাস|দ্বৈপায়ন দাস]]
# [[/নন্দরাম দাস|নন্দরাম দাস]]
# [[/গঙ্গাদাস সেন|গঙ্গাদাস সেন]]
; ভাগবত
# [[/শঙ্কর কবিচন্দ্র|শঙ্কর কবিচন্দ্র]]
# [[/বলরাম দাস|বলরাম দাস]]
# [[/দ্বিজ মাধবেন্দ্র|দ্বিজ মাধবেন্দ্র]]
# [[/দ্বিজ রমানাথ|দ্বিজ রমানাথ]]
====শাক্ত পদাবলি====
# [[/রামপ্রসাদ সেন|রামপ্রসাদ সেন]]
# [[/কললাকান্ত ভট্টাচার্য|কমলাকান্ত ভট্টাচার্য]]
# [[/অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা|অন্যান্য শাক্ত পদকর্তা]]
====নাথ সাহিত্য====
# [[/নাথ সাহিত্য|নাথ সাহিত্য]]
====ময়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা====
# [[/ময়মনসিংহ গীতিকা|ময়মনসিংহ গীতিকা]]
# [[/পূর্ববঙ্গ গীতিকা|পূর্ববঙ্গ গীতিকা]]
====চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য====
# [[/চট্টগ্রাম-রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য|চট্টগ্রাম রোসাঙের রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য]]
{{বিষয়|বাংলা সাহিত্য}}
{{বর্ণানুক্রমিক|ব}}
{{বিষয়|সাহিত্য}}
{{বইয়ের বিষয়শ্রেণী}}
o344lugd73o3tzik6gxtbzrjxtbt1vf
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)/প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি
0
27249
85779
85720
2025-07-07T09:04:30Z
Jonoikobangali
676
/* গ্রন্থনাম বিচার */
85779
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি: বড়ু চণ্ডীদাস===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
===কাব্য পরিচয়===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' রাধাকৃষ্ণের প্রণয়মূলক আখ্যানধর্মী কাব্য। ধ্রুপদি প্রেমকাহিনির মধ্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেম বিশেষত্ব-মণ্ডিত। রামসীতা বা হরপার্বতীর ন্যায় এই প্রেম স্বকীয়া বা বিবাহোত্তর প্রেম নয়, এই প্রেমের প্রকৃতি পরকীয়া। বস্তুত ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ছাড়া আর কোথাও রাধাকৃষ্ণের স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধ দেখানো হয়নি। লোক-ঐতিহ্যে রাধা কৃষ্ণের মাতুলানী। ফলে এই প্রেম নিয়ে অনেক মুখরোচক গালগল্প তৈরি হয়েছিল এক সময়ে। চৈতন্য-পরবর্তী যুগে অবশ্য রাধা তত্ত্বে পরিণত। তখন তিনি কৃষ্ণের স্বকীয়া অন্তরঙ্গা শক্তি। হ্লাদিনীর সারভূত রূপ মহাভাব থেকে রাধার উৎপত্তি ব্যাখ্যাত। কিন্তু বড়ু চণ্ডীদাস প্রাক্-চৈতন্য যুগের কবি। রাধাকে তিনি চিত্রিত করেছেন প্রাকৃত রমণী রূপেই, কোনও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের আলোকে নয়। স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর মাতুলানী-ভাগিনেয় সম্পর্ক। ফলে এই কাব্য লোকরঞ্জনকারী এক কাহিনিতে পর্যবসিত হয়েছে। এর ভাব, ভাষা, আঙ্গিক, পরিবেশ সবই গ্রামীণ। গ্রাম্য রুচির কাছে আত্মসমর্পণ করে পণ্ডিত কবি এই কাব্যে পুরাণকথা ও লোকশ্রুতির মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। তবে তাঁর মধ্যে প্রতিভার অভাব ছিল না। সেই প্রতিভায় রাধা, কৃষ্ণ ও বড়ায়ির চরিত্র হয়ে উঠেছে সমুজ্জ্বল। ভাগবত পুরাণে রাধার উল্লেখ পাওয়া যায় না। জয়দেবই প্রথম রাধাকে নিয়ে বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেন। বড়ু চণ্ডীদাসের অন্যতম আদর্শ এই রচনা। তবে রাধা চরিত্র চিত্রণে তিনি যে প্রখর সমাজবাস্তবতা ও সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন, তা অনবদ্য। দেশীয় ভাষায় এইপ্রকার বৃহদায়তন প্রথম আখ্যানকাব্য রচনার কৃতিত্ব বড়ু চণ্ডীদাসেরই প্রাপ্য।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশ পাওয়া যায়নি। মাঝের কয়েকটি পাতাও অবলুপ্ত। পাওয়া গিয়েছে তেরোটি খণ্ডে বিন্যস্ত মোট ৪১৮টি পদ। কবি প্রথম বারোটি খণ্ডের নাম দিয়েছেন যথাক্রমে (১) জন্মখণ্ড, (২) তাম্বুলখণ্ড, (৩) দানখণ্ড, (৪) নৌকাখণ্ড, (৫) ভারখণ্ড, (৬) ভারখণ্ডান্তর্গত ছত্রখণ্ড, (৭) বৃন্দাবনখণ্ড, (৮) যমুনান্তর্গত কালীয়দমনখণ্ড, (৯) যমুনান্তর্গত বস্ত্রহরণখণ্ড, (১০) যমুনান্তর্গত হারখণ্ড, (১১) বাণখণ্ড ও (১২) বংশীখণ্ড। ত্রয়োদশ খণ্ডটির শেষাংশ পাওয়া যায়নি বলে এই খণ্ডের কবিকৃত নামটি জানা যায় না। সম্পাদক বসন্তরঞ্জন এই খণ্ডের নামকরণ করেছেন ‘রাধাবিরহ’। তেরোটি খণ্ডে অখণ্ড সুস্পষ্ট একটি গল্প বলা হয়েছে। গল্প এগিয়েছে কবির বিবৃতি এবং আখ্যানের মুখ্য তিন চরিত্রের কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে। গল্পটি সংক্ষেপে এইরকম:
অত্যাচারী কংসের পীড়নে ব্যথিতা বসুন্ধরার আর্তিতে স্বর্গের দেবতারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, কংসের বিনাশের জন্য নারায়ণ ‘কৃষ্ণ’ নাম নিয়ে বসুদেবের গৃহে দেবকীর উদরে জন্মগ্রহণ করবেন। তাঁর সম্ভোগের জন্য লক্ষ্মীও প্রেরিত হলেন রাধা রূপে। তার পিতা সাগর, মাতা পদুমা বা পদ্মা। দেবগণের ইচ্ছানুসারে রাধার স্বামী হলেন নপুংসক আইহন। বালিকাবধূ রাধার পরিচর্যার জন্য এলেন পদ্মার বুড়ি পিসি বড়ায়ি। গোপরমণী রাধাকে দুধ-দই বেচতে মথুরার হাটে যেতে হয়। একদা রাধা বড়ায়ির দৃষ্টিপথের বাইরে চলে যায়। তার রূপ-গুণ বর্ণনা করে ব্রজের রাখাল নন্দগোপসুত কৃষ্ণের কাছে বড়ায়ি রাধার সন্ধান জানতে চাইল। সেই রূপের কথা শুনে কৃষ্ণের মনে রাধাসঙ্গের বাসনা জেগে উঠল। বড়ায়ির হাতে তাম্বুল অর্থাৎ পান দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব জানালেন কৃষ্ণ। কিন্তু বিবাহিতা রাধার মনে তখনও স্বামী-সংস্কার তীব্র। পরপুরুষের প্রতি বিরাগ সে ক্রুদ্ধ হয়ে তাম্বুলে লাথি মেরে বড়ায়িকে অপমান করে তাড়িয়ে দিল। অপমানিতা বড়ায়ি এসে কৃষ্ণের কাছে সব জানিয়ে এর প্রতিবিধান করতে বলল। দুজনে পরামর্শ করল, যমুনার ঘাটে কৃষ্ণ দানী সেজে বসবে এবং দানের ছলে দুধ-দই নষ্ট করবে, হার কেড়ে নেবে, কাঁচুলি ছিঁড়বে। পরামর্শ অনুযায়ী কুতঘাটে বসে রইল কৃষ্ণ। রাধা সখীদের নিয়ে এল সেই ঘাটে। কৃষ্ণ দানী হয়ে মহাদান চেয়ে বসল। শুধু পণ্যদ্রব্য পার করার কড়ি নয়, রাধার অঙ্গের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ কড়ি দাবি করল সে। কড়ি না দিলে দিতে হবে আলিঙ্গন। কিন্তু রাধার পক্ষে তা মেনে নেওয়া কখনই সম্ভব নয়। শুরু হল বাগবিতণ্ডা। রাধা কৃষ্ণকে নিবৃত্ত করতে চায় মাতুলানী সম্পর্কের কথা তুলে। কিন্তু কৃষ্ণের বক্তব্য “নহসি মাউলানী রাধা সম্বন্ধে শালী”। কৃষ্ণ রাধাকে পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেও রাধা সেসব বিস্মৃত। শেষে রাধার বাধাদান সত্ত্বেও কৃষ্ণ তার সঙ্গে বনের মধ্যে মিলিত হল। আবারও বড়ায়িয়ের কৌশলে রাধা এল যমুনার ঘাটে। একাকিনী রাধাকে যমুনা পার করার সময় কৃষ্ণ মাঝ-নদীতে ঝড় তুলে রাধার মনে ভীতি সঞ্চার করল। ভয়ার্ত রাধা বাঁচার জন্য কৃষ্ণকে জড়িয়ে ধরতে বাধ্য হল। সেই সুযোগে নদীমধ্যে দুজনের মিলন ঘটল। এতদিনে রাধা বুঝতে পেরেছে কৃষ্ণের দুর্বলতা কোথায়। তাই সে এবার নিজেই অগ্রণী হয়ে মথুরার হাটের জন্য বড়োসড়ো পসরা সাজালো। মথুরার পথে যেতে কৃষ্ণকে ‘সুরতি’ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বইয়ে নিল দুধ-দইয়ের ভার। একইভাবে দেহলোভী কৃষ্ণকে দিয়ে প্রচণ্ড রোদে ছাতাও বহন করালো রাধা। অতঃপর বৃন্দাবনে মহাসমারোহে ঘটল বসন্তের আবির্ভাব। রাধা এবার আড়চোখে চেয়ে ও নানা অঙ্গভঙ্গি করে কৃষ্ণের কামনা জাগিয়ে তুলল। ষোলোশো গোপিনী সঙ্গে বিলাস সমাপ্ত করে কৃষ্ণ রাধার কাছে এসে দেখল সে অভিমানাহত হয়ে বিষণ্ণ মনে নীরবে বসে আছে। কৃষ্ণ মধুর বচনে রাধার মান ভাঙিয়ে লিপ্ত হল সঙ্গমে। রাসলীলায় কৃষ্ণের উৎসাহ বৃদ্ধি পেতে জলক্রীড়ার কথা চিন্তা করে কালীদহের বিষাক্ত জল বিষমুক্ত করতে দহে নেমে পড়ল কৃষ্ণ। বিষের তীব্রতায় কৃষ্ণ অচৈতন্য হয়ে পড়লে নন্দ, যশোদা, বলরাম প্রমুখ আত্মীয়েরা বিলাপ করতে লাগলেন। কৃষ্ণের বিপদ অনুমান করে যাবতীয় লোকলজ্জা ত্যাগ করে রাধা এবার সর্বসমক্ষে ‘পরাণপতি’ বলে কেঁদে উঠল। অবশেষে কালীয় নাগকে দমন করে কৃষ্ণ উঠে এল জল থেকে। একদিন রাধা সখীদের নিয়ে যমুনায় জল ভরতে এসে কৃষ্ণের সঙ্গে জলকেলিতে মত্ত হল। সেই সুযোগে কৃষ্ণ গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করল। রাধার অনুনয়ে কৃষ্ণ বস্ত্র ফিরিয়ে দিলেও তার বক্ষহারটি লুকিয়ে রাখল। হার না পেয়ে রাধা এবার গিয়ে অনুযোগ জানালো কৃষ্ণজননী যশোদার কাছে। যশোদা কৃষ্ণকে ভর্ৎসনা করলে অপমানিত কৃষ্ণ ফুলধনু দিয়ে রাধাকে বাণাহত করে মূর্চ্ছিত করল। কিন্তু এবার বড়ায়ি কৃষ্ণের আচরণে ক্ষুব্ধ হল। সে তিরস্কার করে রাধার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে বলল। তখন কৃষ্ণের হস্তস্পর্শে রাধার চৈতন্য হল। পরিশেষে বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের পুনর্মিলন ঘটল। এখন আর কৃষ্ণের মনে রাধার প্রতি পূর্বের অদম্য আসক্তি কিছুই নেই। বরং শারীরিক মিলনে রাধার মনে জাগ্রত হয়েছে অপূর্ব সুখোন্মাদনা। সে এখন কৃষ্ণ-অন্তপ্রাণ। তার আর কোনও লজ্জা, ভয় বা সতীত্বের বন্ধন নেই। কৃষ্ণ এবার একটি সুন্দর মোহন বাঁশি গড়িয়ে কদমতলায় বসে একমনে বাজাতে থাকে। তার সেই বাঁশির সুর রাধার চিত্তকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সে ঘর-সংসার ভোলে, তার গৃহকর্ম নষ্ট হয়, মনে মনে ভাবে “দাসী হআঁ তোর পাএ নিশিবোঁ আপনা”। বড়ায়িকে সে বারবার বলে কৃষ্ণকে তার কাছে এনে দিতে। বড়ায়ি বিপরীত কথা বলে রাধাকে নিরস্ত করতে চায়। কিন্তু রাধার মন কোনও যুক্তিতেই বশীভূত হয় না। তখন দুজনে মিলে কৃষ্ণের সন্ধানে বৃন্দাবনে যায়। সেখানে কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। রাতে শয্যায় শায়িত রাধার কানে কৃষ্ণের বাঁশির শব্দ এসে প্রবেশ করে। সে নিদ্রিত স্বামীকে ফেলে একাকিনী কৃষ্ণমিলনের উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু কোথাও কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে পথেই মূর্চ্ছিত হয়ে পড়ে রাধা। বড়ায়ি তার মূর্চ্ছাভঙ্গ করে পরামর্শ দেয় কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করতে। তাই-ই করে রাধা। বাঁশি বিহনে কৃষ্ণ ব্যাকুলভাবে বিলাপ করতে থাকে। অবশেষে বড়ায়ির মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ রাধার কাছে করজোড়ে মিনতি করলে রাধা বাঁশি ফিরিয়ে দেয়। রাধার সকল অপরাধ ক্ষমা করে কৃষ্ণ। বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও শর্ত অনুসারে কৃষ্ণ রাধাকে আর দেখা দেয় না। এবার কৃষ্ণ বিহনে রাধার মনে হতে থাকে “এ ধন যৌবন বড়ায়ি সবই অসার”। সে বারবার বড়ায়িকে কৃষ্ণ এনে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বড়ায়ি তাকে পরামর্শ দেয় কদমতলায় কিশলয় শয্যা রচনা করে প্রতীক্ষা করতে। কিন্তু তাতেও কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। অতঃপর তারা বৃন্দাবনে প্রবেশ করে গোচারণরত কৃষ্ণের দেখা পায়। রাধা তখন কাতরভাবে তার কাছে অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে। তবুও কৃষ্ণের মন গলে না। অবশেষে বড়ায়ির অনুরোধে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গে মিলনে সম্মত হয়। বিহারের পর শ্রান্ত হয়ে কৃষ্ণের উরুতে মাথা রেখে রাধা ঘুমিয়ে পড়লে কৃষ্ণ বড়ায়িকে ডেকে তার হাতে রাধার রক্ষণাবেক্ষণের ভার দিয়ে মথুরায় চলে যায়। নিদ্রাভঙ্গের পর কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে আবার বিষণ্ণ হয়ে পড়ে রাধা। রাধার বিলাপে অস্থির হয়ে বড়ায়ি মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণের কাছে রাধার কথা জানায়। কৃষ্ণের বক্তব্য, সে প্রগলভা রাধার কাছে যাবে না। তার মুখদর্শন করতেও সে ইচ্ছুক নয়। আর তাছাড়া সে মথুরায় এসেছে দুরাচারী কংশকে নাশ করতে। তার আর কোনওমতেই বৃন্দাবনে ফিরে যাওয়া চলে না। এরপরই পুথি খণ্ডিত। যতদূর মনে হয়, কবি রাধা ও কৃষ্ণের বিচ্ছেদেই কাব্যটি সমাপ্ত করেছিলেন।
মধ্যযুগীয় কাব্যে প্রক্ষিপ্তি একটি বড়ো সমস্যা। সাহিত্যের সব শাখাতেই কম-বেশি এটি দেখা যায়। যে যুগের লেখকের কর্তৃত্ব সঠিকভাবে চিহ্নিত হত না, সেই যুগে একের রচনায় অন্যের হস্তক্ষেপ স্থান পেয়ে যেত নির্বিরোধে। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের প্রক্ষেপ নিয়ে প্রথম সংশয় জ্ঞাপন করেন যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি। ‘বড়ু’ ও ‘বাসলী’-বিহীন ভণিতাগুলিকে তিনি অন্যের রচনা বলে মনে করেন। দানখণ্ডের তিনটি পদে ড. সুকুমার সেন প্রক্ষেপ দেখেছেন। আবার কেউ কেউ গায়েনের প্রক্ষেপ লক্ষ্য করেছেন কাব্যের নানা স্থানে। প্রখ্যাত সমালোচক বিমানবিহারী মজুমদারের মতে, সমগ্র ‘রাধাবিরহ’ অংশটিই প্রক্ষিপ্ত। তিনি মোট ছয়টি যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু যুক্তিগুলি যে ততটা প্রমাণনির্ভর নয়, সে বিষয়ে একাধিক গবেষক প্রতি-যুক্তি দিয়েছেন। বিশেষত ‘রাধাবিরহ’ যে কাব্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ তার প্রমাণ রয়েছে কাহিনির অভ্যন্তরীণ কাল-পরম্পরায়, কাব্যের গঠনে, রাধার বয়সের অগ্রহতির সাক্ষ্যে, চরিত্রের ক্রম-পরিণামে এবং অবশ্যই কবির ক্রমবিকশিত প্রতিভার স্তরোন্নয়নে। কাব্যের সূচনায় ‘এগার-বরিষ’-এর রাধা এখানে পূর্ণ যুবতীতে পরিণত, কামুক কৃষ্ণ এই পর্যায়ে ভোগতৃপ্ত হয়ে ‘গততৃষ্ণ’ কৃষ্ণে পর্যবসিত। কবি যে ক্রমশ ভাবগভীরতার পথে এগিয়ে এসেছেন, তার প্রমাণ আছে বংশীখণ্ডেই। এই খণ্ডেরই প্রত্যাশিত পরিণাম দেখা যায় ‘রাধাবিরহ’ অংশে। যে গীতিকাব্যিক মূর্চ্ছনার সূচনা হয়েছিল “কেনা বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নঈ কূলে” ইত্যাদি পদে, তার সার্থক পরিণতি ঘটল “দিনের সুরুজ পোড়াআঁ মারে রাতিহো এ দুখ চান্দে” ইত্যাদিতে। রাধার চারিত্রিক বিবর্তনে সম্পূর্ণতা দেখানোর সূত্র ‘রাধাবিরহ’ এই কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য এক অঙ্গ। অন্য কোনও কবির হাত থেকে পূর্বের কাহিনি, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদির এতখানি সঙ্গতিপূর্ণ ধারাবাহিকতা আশা করা যায় না। অতএব কিছু ক্ষেত্রে মৃদু সংশয় থাকলেও কাব্যের অন্তর্বর্তী প্রমাণে ‘রাধাবিরহ’ যে মূল কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ তা স্বীকার করে নেওয়া যায়। এই অংশটি না থাকলে বড়ু চণ্ডীদাসের কবিপ্রতিভার সামগ্রিক মূর্তিটি অনুধাবন করা যেত না।
===গ্রন্থনাম বিচার===
চর্যাপদের পুথির গ্রন্থনাম নিয়ে যেমন বিতর্ক দেখে দিয়েছিল, তেমনই বিতর্ক দেখা দেয় ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথির নামকরণকে কেন্দ্র করেও। ''তেঙ্গুর'' তালিকা থেকে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে চর্যাপদ সম্পর্কে একটি যুক্তিসিদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, পরবর্তীকালের কোনও গ্রন্থে এই কাব্যের নামোল্লেখও করা হয়নি। প্রকৃত সমস্যার সূত্রপাত আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশের পাতা না পাওয়ায়। বইয়ের সূচনায় এবং পুথির শেষে সমাপ্তিসূচক পুষ্পিকাতেই গ্রন্থনাম পাওয়া যায়। এই দুই অংশ না থাকায় পুথিটি থেকে আবিষ্কর্তা ও সম্পাদক বসন্তরঞ্জন কোনও নাম পাননি। গ্রন্থাকারে প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি সম্পাদিত গ্রন্থের নামকরণ করেছিলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''। পূর্বাপর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচ্যতত্ত্ববিদ উইলসনের দেওয়া একটি ভ্রান্ত তথ্যের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই নামকরণের বিষয়টি। তিনি গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি কর্তৃক যৌথভাবে রচিত ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে এক সংস্কৃত কাব্যের কথা জানিয়েছিলেন। সেই তথ্য প্রথম বিকৃত হয় জগদ্বন্ধু ভদ্রের ‘গোবিন্দদাস’ প্রবন্ধে (''বান্ধব'', শ্রাবণ ১২৮২ সংখ্যা)। তিনি লেখেন, “উইলসন সাহেব কৃত উপাসক সম্প্রদায় গ্রন্থে লিখিত আছে যে, চণ্ডীদাস ও গোবিন্দদাস উভয়ে মিলিত হইয়া কৃষ্ণকীর্তন প্রণয়ন করেন।” এই সংবাদই সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করেন রমণীমোহন মল্লিক, ক্ষীরোদচন্দ্র রায়চৌধুরী, ত্রৈলোক্যনাথ ভট্টাচার্য, ব্রজসুন্দর সান্যাল প্রমুখ প্রাবন্ধিকেরা। ক্রমে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামক কাল্পনিক গ্রন্থটির একক রচয়িতায় পরিণত হন চণ্ডীদাস। বড়ু চণ্ডীদাসের পুথি আবিষ্কৃত হওয়ার পর বসন্তরঞ্জনও ভেবেছিলেন যে, তিনি সেই হারিয়ে-যাওয়া বহুশ্রুত গ্রন্থটিই আবিষ্কার করেছেন। তাই অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে গ্রন্থটির নাম দেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' এবং লেখকের নাম হিসেবে উল্লেখ করেন ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’। গ্রন্থপ্রকাশের এগারো বছর পরে ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে গ্রন্থনাম নিয়ে প্রথম সংশয় প্রকাশ করেন রমেশ বসু। ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-য় প্রকাশিত ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ প্রবন্ধে তিনি এও বলেন যে, “এই গ্রন্থ সংস্কৃত ও লৌকিক পুরাণের সমবায়ে গঠিত বলিয়া ইহাও পুরাণ আখ্যা পাইবার সম্পূর্ণ উপযুক্ত। বাস্তবিকই বাঙ্গালায় কৃষ্ণলীলা বিষয়ক যদি কোন মৌলিক পুরাণ থাকে তাহা এই শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।” ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে ''বিশ্ববাণী'' পত্রিকায় দক্ষিণারঞ্জন ঘোষ ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামক আর-একটি প্রবন্ধে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামের কোনও ভিত্তি পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করে প্রশ্ন তোলেন, “শুধু বসন্তবাবুর ধারণা এবং শোনা কথার মূল্য কি?” চার বছর পরে নলিনীনাথ দাশগুপ্ত ''বিচিত্রা'' পত্রিকায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের সামাজিক তথ্য’ প্রবন্ধে নানা দিক আলোচনা করে পুথিটির ''কৃষ্ণমঙ্গল'' নামকরণের পক্ষপাতী হন। ১৩৪২ বঙ্গাব্দের যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ''প্রবাসী'' পত্রিকায় ‘চণ্ডীদাস চরিত’ প্রবন্ধে মন্তব্য করেন, “এক মস্ত ভুলও হয়ে গেছে, রাধাকৃষ্ণলীলার ‘কৃষ্ণকীর্তন’ নাম হয়ে গেছে।” উপরিউক্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৩৪২ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের ''প্রবাসী'' পত্রিকায় সম্পাদক বসন্তরঞ্জন লেখেন ‘চণ্ডীদাস চরিতে সংশয়’। সেখানে তিনি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামকরণের তাৎপর্য ব্যাখ্যায় প্রয়াসী হন। কিন্তু তাঁর মত গবেষকদের মধ্যে ততটা গৃহীত হয়নি।
নামকরণের সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন ১৩৪২ বঙ্গাব্দে বসন্তরঞ্জন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণে পুথির মধ্যে প্রাপ্ত একটি চিরকুট প্রকাশ করেন। তাতে লেখা ছিল: “শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণঃ।। শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্বের ৯৫ পচানই পত্র হইতে একসও দস পত্র পর্য্যন্ত একুন ১৬ শোল পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চাননে শ্রীশ্রী মহারাজা হুজুরকে লইয়া গেলেন পুনশ্চ আনিয়া দিবেন—সন ১০৮৯”। প্রাচীন পুথির মধ্যে এই ধরনের রসিদ পাওয়ায় এমন ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, রসিদটি উক্ত গ্রন্থ-সংক্রান্ত। ফলে নামকরণকে কেন্দ্র করে স্পষ্টত দুটি দল তৈরি হয়ে গেল। একদল পুথিটির ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নাম রাখার পক্ষপাতী, অন্য দলের মতে এর নাম হওয়া উচিত ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব''। দ্বিতীয় দলের মধ্যে ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বিজনবিহারী ভট্টাচার্য, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য। এর পাশাপাশি অধ্যাপক সত্যব্রত দে ১৩৮৬-৮৭ বঙ্গাব্দের ''রবীন্দ্রভারতী পত্রিকা''-য় একটি কূটতর্ক তুললেন, “গ্রন্থটির সঠিক নাম কি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন না কৃষ্ণকীর্তন?... যে চারটি সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে বসন্তরঞ্জন চণ্ডীদাস-রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ কাব্যের অস্তিত্বে দৃঢ়নিশ্চয় হয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকটিতেই গ্রন্থনাম কৃষ্ণকীর্তনরূপে লিখিত।”
নামকরণ সমস্যার নিরিখে কয়েকটি যুক্তি গ্রহণ করা যেতে পারে। ‘কীর্তন’ শব্দটির অর্থ অনেক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ''বঙ্গীয় শব্দকোষ''-এ ‘কীর্তন’ বলতে ঘোষণা, কথন, বর্ণন, বিবরণ, গুণকীর্তন, স্তবন ইত্যাদি অর্থ নির্দেশিত হয়েছে। ‘কীর্তন’ শব্দটির বৈষ্ণবীয় অর্থ-তাৎপর্য থেকে বের করে এনে যদি প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি অযোগ্য হয় না। যেহেতু উইলসন তাঁর উল্লিখিত গ্রন্থের নামে ‘শ্রী’ শব্দটি যুক্ত করেননি এবং বাঙালি গবেষকেরাও ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামটিই উল্লেখ করেছেন, সেহেতু সত্যব্রত দে-র মতে বইটির নাম ''কৃষ্ণকীর্তন'' হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এই যুক্তির গলদ হল এই যে, উইলসন যে সংস্কৃত ''কৃষ্ণকীর্তন''-এর কথা বলেছেন, তার লেখক গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি—চণ্ডীদাস নন। একটি ভুল ধারণার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে এই মতটিকে অযথা গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন। ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামটিও এই প্রসঙ্গে বিচার্য। প্রাপ্ত রসিদটি আবিষ্কৃত পুথির মধ্যে পাওয়া গিয়েছে বটে, কিন্তু সেই রসিদে বর্ণিত তথ্য যে উক্ত পুথি-সংক্রান্ত হবেই এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। রসিদে বলে হয়েছে যে, ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামক একটি পুথির ৯৫ থেকে ১১০ পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চানন নামে এক ব্যক্তি মহারাজের জন্য ধার করে নিয়ে গেলেন ১০৮৯ সালে অর্থাৎ ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে। তারপর মাস দুয়েকের মধ্যেই পাতাগুলি ফেরৎ এল। ফেরৎ আসার পর খোয়া না যাওয়ার সম্ভাবনা, যেহেতু গ্রন্থাগারটিতে পুথি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা নেওয়া হত এবং যার প্রমাণ এই রসিদ। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ধার নেওয়া পাতাগুলির মধ্যে ৯৮/১ এবং ১০৪-১১০ পত্র অর্থাৎ মোট সাড়ে সাতটি পাতা নিখোঁজ। তাহলে অনুমান করতে হয়, অন্য কোনও পুথির ওই ১৬টি পত্র ধার নেওয়া হয়েছিল, যার রসিদটি কোনওভাবে চলে এসেছে এই পুথির মধ্যে। অধ্যাপক তারাপদ মুখোপাধ্যায় এই ক্ষেত্রে অকাট্য যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, জীব গোস্বামী রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ''। এটি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের একটি মূল্যবান গ্রন্থ। বিষ্ণুপুরে শ্রীনিবাস আচার্য রাজগুরু হিসেবে প্রভূত সম্মান পেয়েছিলেন ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে। বৃন্দাবনের শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রীনিবাসের সাক্ষাৎ গুরু ছিলেন জীব গোস্বামী। বিষ্ণুপুরে বৃন্দাবনের গোস্বামীদের গ্রন্থ প্রচারে একদা মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন শ্রীনিবাস। ছোটো চিরকুটটির মধ্যে যে ‘আচার্য প্রভু’-র কথা আছে, তিনি এই শ্রীনিবাস আচার্য ছাড়া আর কেউ নন। তাই তারাপদ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, বিষ্ণুপুরের রাজা কোনও কারণে জীব গোস্বামীর ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ'' গ্রন্থেরই ১৬টি পাতা ধার নিয়েছিলেন এবং পরে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন। অতএব বসন্তরঞ্জনের প্রাপ্ত পুথিটির নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' হতে পারে না। তবু এই বিষয়ে কোনও পাথুরে প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি গ্রহণ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
===পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা===
ভাগবতের কৃষ্ণকে অবলম্বন করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কাহিনি গড়ে উঠলেও এই কাব্যকে কোনও সমালোচকই অনুবাদ কাব্য বলে নির্দেশ করেননি। অথচ অনুবাদের ক্ষেত্রে যেমন সংস্কৃত আদর্শ থেকে আখ্যানভাগ, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদি গৃহীত হয়ে থাকে, ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এর কয়েকটি ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে। আসলে যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রয়োজনে অনুবাদ সাহিত্যের জন্ম বড়ু চণ্ডীদাস সম্ভবত তার তাগিদ অনুভব করেননি। প্রাতিষ্ঠানিক বৈষ্ণবধর্মের প্রতি তাঁর তেমন আনুগত্য ছিল না বলেই মনে হয়। ‘বাসুলী-সেবক’ অভিধাটিই চিনিয়ে দেয় তাঁর নির্দিষ্ট ধর্মবিশ্বাসকে। তাই সেকালের শাক্ত-বৈষ্ণবের দ্বন্দ্বময় প্রেক্ষাপটে এই কাব্যকে উপদলীয় ধর্মবিদ্বেষের উৎসৃষ্টি বলে মনে হতেই পারে। কাব্যের নানা স্থানে তার প্রমাণও আছে।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের নায়ক সম্পর্কে সকলেই প্রায় একবাক্যে স্বীকার করেন যে, এই কৃষ্ণ আদৌ বৈষ্ণবদের আরাধ্য দেবতা নন। পুরাণপুরুষ কৃষ্ণের আবরণে কবি আসলে প্রকাশ করেছেন নারীদেহ-লোলুপ এক ‘কামী’ গ্রাম্য গোপযুবককে, যে ছলনা, প্রতারণা ও বলপ্রয়োগ করে এক অনিচ্ছুক বিবাহিতা নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে ‘গততৃষ্ণ’ হয়ে নির্দ্বিধায় তাকে পরিত্যাগ করে চলে যায়। এমন অমানবিক পাশবিক চরিত্র দেবতার হতে পারে না। অর্বাচীন পুরাণে বর্ণিত রাধাও যেন রক্তমাংসের নারীতে পরিণত হয়েছেন এই কাব্যে, যার মনস্তাত্ত্বিক বিবর্তন ঘটেছে স্বামী-সংস্কারে আবদ্ধা কুলবধূ থেকে পরপুরুষের প্রেমসন্তপ্তা স্বাধীনভর্তৃকা প্রেমিকাতে। উল্লেখ্য, কবি একবারের জন্যও ‘দেবতা’ কৃষ্ণের কাছে প্রণত হচ্ছেন না, যেমন হয়েছিলেন তাঁর আদর্শ জয়দেব। পাঠক যেন তাঁর অঙ্কিত কৃষ্ণকে সম্পূর্ণ স্ব-কল্পিত মনে না করে, তাই যেন কবি প্রচলিত পুরাণের সঙ্গে কৃষ্ণ চরিত্রের সম্পর্ক দেখিয়ে দিয়েছেন। এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পুরাণ-বচন উদ্ধৃত করে কবি তাঁর বর্ণিত গল্পের সঙ্গে পৌরাণিকতার একটি প্রচ্ছন্ন যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। সেই সূত্রেই এসেছে ভাগবত পুরাণ, পদ্মপুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে সন্নিবেশিত নানা তথ্য। বিশেষ করে জন্মখণ্ড বর্ণনায় অনেকগুলি পুরাণ থেকে যে তিনি আখ্যানবস্তু আহরণ করে নিজের মতো করে সেগুলি বিন্যস্ত করেছেন তার প্রমাণ রয়েছে আখ্যান-বিন্যাসে। জন্মখণ্ডে কবি রচিত প্রথম সংস্কৃত শ্লোকটি হল:
<poem>
:: পৃথুভারব্যথাং পৃথ্বী কথয়ামাস নির্জ্জরান্।
:: ততঃ সরভসং দেবাঃ কংসধ্বংসে মনো দধুঃ।।
</poem>
এই প্রসঙ্গ বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ ও ভাগবত পুরাণেও আছে। তবে প্রত্যেকটি কাহিনিই কম-বেশি স্বতন্ত্র। যেমন, বিষ্ণুপুরাণে পৃথিবীকে বহুভারে পীড়িতা হয়ে সুমেরু পর্বতে দেবতাদের কাছে গিয়ে নিজের বেদনার কথা বিবৃত করতে দেখা যায়। পদ্মপুরাণে কংসের নিপীড়নের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। ভাগবত পুরাণে আছে বসুমতীর গোরূপ ধারণ করে ব্রহ্মার কাছে গিয়ে দুঃখ নিবেদনের সংবাদ। পদ্মপুরাণের উত্তরখণ্ডে আছে দেবকীর সপ্তম পুত্রকে রোহিণীর গর্ভে মায়া দ্বারা সংক্রামিত করে অষ্টম গর্ভে নারায়ণের নিজে আবির্ভূত হওয়ার অঙ্গীকার। বড়ু চণ্ডীদাসও সেই তথ্য পরিবেশন করেছেন। এছাড়া নারায়ণ কর্তৃক দেবতাদের হস্তে কৃষ্ণ ও শুভ্রবর্ণের কেশ প্রদানের প্রসঙ্গও বিভিন্ন পুরাণ থেকে গৃহীত। অবশ্য এই প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার যে, রাধার জন্মকাহিনি বর্ণনায় কবি পুরাণের পথ পরিহার করে স্বাধীন কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। নারদের যে রূপ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে অঙ্কিত হয়েছে, তারও উৎস কবির নিজস্ব কল্পনা। জন্মখণ্ড ছাড়া ভাগবতের স্পষ্ট প্রমাণ পড়েছে বৃন্দাবনখণ্ডে। ভাগবতে কথিত হয়েছে যে, ষোলো শত গোপিনী সঙ্গে কৃষ্ণ শরৎকালে একদা বিলাসে মত্ত হয়েছিলেন। এটি রাস নামে কথিত। বড়ু চণ্ডীদাসও এই কাহিনি অনুসরণ করেন। তাঁর রাধা এখন আর মিলনে অনিচ্ছুক নন। বরং বক্রদৃষ্টিতে ও বিচিত্র দেহভঙ্গিতে কৃষ্ণের কামনা উদ্রেক করতে যথেষ্ট পটিয়সী। অন্যান্য গোপিনী থাকা সত্ত্বেও রাধাতেই যেন কৃষ্ণের সফল তৃপ্তি। তবুও রাধার অনুরোধে সব সখীদের তৃপ্ত করার প্রতিশ্রুতির দেন কৃষ্ণ। অতঃপর বনের মধ্যে রাধাকৃষ্ণের মিলন হয়। ভাগবতেও আছে:
<poem>
:: অনয়ারাধিতো নূনং ভগবান হরিরীশ্বর।
:: যন্নো বিহায় গোবিন্দ প্রীত যামনয়দ্রহঃ।।
</poem>
তবে ভাগবতের ঘটনাক্রম অনুসরণ করেননি বড়ু চণ্ডীদাস। ভাগবতের রাস অনুষ্ঠিত হয়েছিল কংসবধের পরে, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ রাস হল কংসবধের পূর্বেই। তাছাড়া ভাগবতের রাস শরৎকালীন এবং নিশাকালে সম্পন্ন, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে দিবাকালীন বাসন্তী রাসের বর্ণনা। এক্ষেত্রে বড়ু চণ্ডীদাস সম্ভবত অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন জয়দেবের দ্বারা। ''গীতগোবিন্দম্''-এর দু-একটি পদের আক্ষরিক গীতানুবাদও রয়েছে বৃন্দাবনখণ্ডে। যেমন, “রতি তোর আশোআশেঁ গেলা অভিসারে” ইত্যাদি। অবশ্য কেউ কেউ বলেন, ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ কৃষ্ণের বৃন্দাবন-বিলাস একান্তভাবেই ভাগবত-বর্ণিত রাতের অনুকরণজাত। ভাগবতের সঙ্গে এই কাব্যের মিল আছে কালীয়দমনখণ্ডের কাহিনিতেও। দুই গ্রন্থেই কালীদহের জলে নেমে কৃষ্ণ কর্তৃক কালীয়নাগ দমনের প্রসঙ্গ আছে। তবে বড়ু চণ্ডীদাস উদ্দেশ্যের ভিন্নতা দেখিয়েছেন। ভাগবতকার যেখানে কালীদহের বিষাক্ত জল বৃন্দাবনবাসীর ব্যবহারোপযোগী করে তোলার জন্য কৃষ্ণকে নাগদমনে নিয়োজিত করেছেন, সেখানে বড়ু চণ্ডীদাস দেখাতে চেয়েছেন যে, সখীদের নিয়ে জলক্রীড়ার করার জন্য কালীদহ বিষমুক্ত করতে কৃষ্ণ সেই জলাশয়ে ঝাঁপ দেন। অচৈতন্য কৃষ্ণের আত্মজ্ঞান ফেরানোর জন্য বলরামের দশাবতার স্তবের মধ্যে ক্রম পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে এই কাব্যে। বরাহপুরাণে কৃষ্ণের নাম আছে অষ্টম স্থানে, সেখানে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ কাহিনির প্রয়োজনে তা সবশেষে উল্লিখিত। বস্ত্রহরণের প্রসঙ্গটিও ভাগবত থেকে নেওয়া। তবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ বস্ত্রের সঙ্গে কৃষ্ণ রাধার হারও চুরি করে নেয় এবং সব কিছু ফিরিয়ে দিলেও হারটি নিজের কাছে রেখে দেয়। এই তথ্য ভাগবতে নেই। আখ্যানের বাইরেও পুরাণের প্রভাব আবিষ্কার করা যায় কবি কর্তৃক নানা পৌরাণিক প্রসঙ্গের অবতারণায়। বিভিন্ন চরিত্রের মুখে উপমা ও উৎপ্রেক্ষা স্বরূপ এগুলি সার্থকভাবে প্রয়োগ করেছেন তিনি। পরদারাসক্তির সমর্থনে কৃষ্ণের উক্তিতে এসেছে কুন্তী, রম্ভা ও গঙ্গার প্রসঙ্গ। এর বিপক্ষে রাধা উদাহরণ দিয়েছেন সোম-তারা, ইন্দ্র-অহল্যা ও চণ্ডী কর্তৃক সুন্দ-উপসুন্দ বধের। পুরাণশাস্ত্রে কবির পাণ্ডিত্যের প্রমাণ এগুলি। কিন্তু এইসব দৃষ্টান্ত সত্ত্বেও ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কৃষ্ণমাহাত্ম্যমূলক কাব্য নয়। পুরাণের পরিচিত গল্পকে আশ্রয় করে কবি এতে লৌকিক জীবনের পরিচয়ই প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। মৌলিকতা দেখিয়েছেন রাধা ও কৃষ্ণের চরিত্র চিত্রণে।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের তেরোটি খণ্ডের মধ্যে মোট চার-পাঁচটি খণ্ডে পুরাণের প্রভাব বাদ দিলে অবশিষ্ট খণ্ডগুলি কম-বেশি কবির স্ব-কল্পিত। বিশেষত তাম্বুলখণ্ড, দানখণ্ড, নৌকাখণ্ড, ছত্রখণ্ড, ভারখণ্ড, হারখণ্ড, বাণখণ্ড পুরোপুরি কবির নিজস্ব উদ্ভাবনা। এগুলির কোনও সাহিত্যিক উৎস নেই। আখ্যান-সূত্রে বোঝা যায়, জন্মখণ্ডের পর কাহিনিকে কবি লোকসমাজের রুচি অনুযায়ী পরিবর্তিত করে নেন। দেবতাদের অনুরোধে কৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন বটে, তবে তাঁর মুখ্য কাজ কংসবধ আপাতত গৌণ হয়ে যায়, পরিবর্তে রাধার দেহসম্ভোগে তিনি মত্ত হয়ে ওঠেন। তার জন্য ছলনা, চাতুরী, কৌশল, বলপ্রয়োগ কোনও কিছুতেই দ্বিধা নেই তাঁর। লম্পট পুরুষের মতোই কৃষ্ণের হাবভাব, গ্রাম্য গোঁয়ারের মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ তাঁর কথাবার্তা। জন্মখণ্ডের কর্তব্যপরায়ণ নারায়ণের সঙ্গে এই কৃষ্ণকে কোথাও মিলিয়ে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি এটাও দেখা যায় যে, কবি কৃষ্ণকে পদ্মনাভ, চক্রপাণি, গদাধর ইত্যাদি নামে সম্বোধন করে পুরাণের অনুসরণ করেছেন, আবার অন্যদিকে মগর-খাড়ু পরিয়ে, হাতে লগুড় ধরিয়ে গ্রাম্য যুবকে রূপান্তরিত করেছেন। এই বিষয়ে ড. সত্যবতী গিরি তাঁর ''বাংলা সাহিত্যে কৃষ্ণকথার ক্রমবিকাশ'' গ্রন্থে লিখেছেন, “গ্রামীণ সাধারণের রুচিকে পরিতৃপ্ত করার জন্যই কবি কৃষ্ণের এই গ্রাম্যরূপ অঙ্কন করেছেন। নিঃসন্দেহে এটিও কবির লোকমুখিতারই প্রমাণ।” (পৃ. ৬৫)
রাধার ক্ষেত্রে কবি অনেকটাই স্বাধীনতা নিয়েছেন। তার জন্মকাহিনি কোনও পুরাণকে অনুসরণ করে গড়ে ওঠেনি। বস্তুত ভাগবত, বিষ্ণুপুরাণ কিংবা হরিবংশে রাধার উল্লেখও করা হয়নি। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে রাধা কৃষ্ণের বিবাহিতা পত্নী, যা অন্য কোনও শাস্ত্রগ্রন্থে দেখা যায় না। এই পুরাণে রাধার পিতামাতার পরিচয়ও আছে। তিনি বৃষভানু ও কলাবতীর কন্যা। আবার পদ্মপুরাণে রাধার মায়ের নাম কীর্তিকা বা কীর্তিদা। বড়ু চণ্ডীদাস এসবের সঙ্গে পরিচিত হয়েও এক নতুন সংবাদ দিলেন—কৃষ্ণের সম্ভোগের জন্য দেবগণের নির্দেশে লক্ষ্মী রাধা হয়ে এলেন। তাঁর পিতা সাগর গোপ, মাতা পদ্মা। রাধাকে কবি প্রথমাবধিই আত্মবিস্মৃত করে রাখলেন। সেই সঙ্গে লৌকিক জনশ্রুতি অনুযায়ী তাঁর বিবাহ দিলেন নপুংসক আইহনের সঙ্গে। ফলে কাহিনির মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টির অবকাশ তৈরি হয়েছে। গড়ে উঠেছে নাটকীয়তা। সতীত্ব-সংস্কারে বাঁধা বিবাহিতা রাধার সঙ্গে দেহলোভী কৃষ্ণের বাগবিতণ্ডা বেশ জমে উঠেছে। রাধার এই কৃষ্ণ-বিমুখতা কবির নিজস্ব কাব্যভাবনার ফসল। তাম্বুলখণ্ডে বড়ায়ির মুখে রাধার রূপবর্ণনা শুনে কৃষ্ণের কামাসক্ত হওয়া এবং বড়ায়িকে দিয়ে তাম্বুল প্রেরণ, রাধা কর্তৃক বড়ায়ির অপমান এবং ক্রুদ্ধ বড়ায়ির কৃষ্ণকে রাধা-লাঞ্ছনার মন্ত্রণা দান কোনও পুরাণেই নেই। আসলে কবি জয়দেবের কাব্য থেকে রাধার পূর্ণায়ত ছবিটি গ্রহণ করলেও তাতে সামাজিকতার রং চড়িয়ে তাঁকে অনেক বেশি বাস্তবের নারী করে তুলেছেন। এই রাধার মধ্যে সংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, কামনা-বাসনা, রিরংসা, লোভ, দুঃখ-বেদনা সবই পুঞ্জীভূত হয়েছে। দানখণ্ডের আখ্যানেও দেখা যায়, কৃষ্ণের দানী সেজে বসা, মথুরার ঘাটে তর্ক করা, রাধার দই-দুধ নষ্ট করা, পরিশেষে তাঁর দেহসম্ভোগ পুরাণ-বহির্ভূত বিষয় হিসেবে কাহিনিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করেছে। নৌকাখণ্ডে নৌকার মাঝি সেজে ছল করে রাধাকে সম্ভোগ করতে, ছত্রখণ্ড ও ভারখণ্ডে সঙ্গমলোভে দই-দুধের পসরা বহন করতে এবং রাধার মস্তকে ছত্রধারণ করতে দেখা যায় কৃষ্ণকে। হারখণ্ডে কৃষ্ণ কর্তৃক রাধার হার চুরি, ক্ষুব্ধ রাধার যশোদার কাছে নালিশ, তিরষ্কৃত কৃষ্ণের বাণ মেরে রাধাকে মূর্চ্ছিত করা এবং বড়ায়ির ভর্ৎসনায় রাধার চেতনা সম্পাদন করাও কবির নিজস্ব কল্পনা। বংশীখণ্ডে বাঁশির শব্দে গৃহস্থালির কাজ-ভোলা রাধার ছবি অনবদ্য। এর জন্য কবির কোথাও কোনও ঋণ নেই। বড়ায়ির পরামর্শে রাধা যে কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করে আবার ফিরিয়ে দেয় তারও কোনও প্রাচীন উৎস নেই। রাধাবিরহ অংশে বড়ায়িকে বারবার কৃষ্ণ এনে দেওয়ার অনুরোধ, এমনকি শেষ সম্ভোগের পর বড়ায়ির হাতে রাধাকে সমর্পণ করে কৃষ্ণের প্রস্থানও কবির স্ব-কল্পিত। এগুলির একটিও পুরাণ-বর্ণিত ঘটনা নয়। আর এই অংশগুলিতে অশ্লীলতা ও গ্রাম্যতা দোষেরও আধিক্য দেখা যায়।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে অশ্লীলতার প্রসঙ্গটিও একটি বিচার্য বিষয়। মনে রাখতে হবে, এই কাব্য রাজসভার সাহিত্য নয়, গ্রাম্যের অখ্যাত অশিক্ষিত অপরিশীলিত সাধারণ মানুষের চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যেই এর রচনা। যে পাশ্চাত্য প্রভাবজাত মার্জিত সাহিত্যবোধের আধুনিক পাঠক সাহিত্যকে বিচার করেন, পঞ্চদশ শতকের বাংলায় তার আবির্ভাব ঘটেনি। বরং ভারতীয় সাহিত্যের আদিরসকেই এই কাব্যে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রাচীন ভারতে যৌনতাকে বিশিষ্ট জ্ঞানশৃঙ্খলা হিসেবে পাঠ করার রীতি ছিল, যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ বাৎস্যায়নের ''কামসূত্রম্''। তাছাড়া ভারতীয় অলংকারশাস্ত্রের রতিই প্রথম ভাব, রসের আদিতে দাঁড়ায় শৃঙ্গার রস। কৃষ্ণের ন্যায় দেবচরিত্রে কলঙ্কের কথা যদি তোলা হয়, তাহলে বলতে হবে সমান দোষে দুষ্ট পুরাণকারও। তাঁরাও দেবরাজ ইন্দ্রকে অগম্যাগামী লম্পট পুরুষ রূপে চিত্রিত করেছেন। মধ্যযুগের ধর্মীয় প্রতিবেশে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের একটি বিশেষ গুরুত্ব আছে। এই কাব্যে ধর্মের আবরণে আসলে কবি শুনিয়েছেন সমকালের জীবনকথা। রাধা ও কৃষ্ণের পৌরাণিক ঐতিহ্যমণ্ডিত নামগুলি সরিয়ে ফেলতে পারলেই সারা কাহিনিতে অনুভব করা যাবে পঞ্চদশ শতকের বাঙালি সমাজকে। তখন কৃষ্ণ আর ঐশী সত্তা থাকেন না, হয়ে পড়েন সামন্ততান্ত্রিক পুরুষ-শাসিত সমাজের ব্যভিচার-দুষ্ট পুরুষ, যে নারীকে লাঞ্ছিত করে কেড়ে নেয় তার নিজস্ব সম্পদ, সামাজিক বলদর্পিতায় পিষ্ট করে নারীর স্বাধীন সত্তা। বুঝতে অসুবিধাই হয় না, বড়ু চণ্ডীদাস আসলে তাঁর কালের ধৃষ্ট কামুক পুরুষ ও লাঞ্ছিতা নারীর কথাই বলতে চেয়েছেন তাঁর কাব্যে, কেবল কালের অনুরোধে তাঁকে গ্রহণ করতে হয়েছে ধর্মের আবরণ। ধর্মের এই অনাবশ্যক অংশটুকু বাদ দিলেই কৃষ্ণকথা পরিণত হতে পারত বিশুদ্ধ মানবকথায়, এবং বাঙালি পাঠক সেদিনই লাভ করতে পারত আধুনিক সাহিত্যের স্বাদ।
6bpuhij2k9gijio0x68qzg8qx2iig63
85785
85779
2025-07-07T11:35:40Z
Jonoikobangali
676
/* পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা */
85785
wikitext
text/x-wiki
পৌরাণিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশিষ্ট একটি ধারা হল কৃষ্ণকথার ধারা। বৈদিক সাহিত্যেই এই কৃষ্ণকথার বীজ নিহিত ছিল। ক্রমে পুরাণগুলির মধ্যে দিয়ে ক্রমবিকাশের নানা পর্যায় পার হয়ে বিষ্ণু, নারায়ণ, হরি, বাসুদেব ইত্যাদি পৌরাণিক চরিত্র একক পুরুষে একীভূত হয়ে যায়। তখন তিনি হন অংশী, অন্যরা অংশ। আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৮০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যবর্তীকালে রচিত ভাগবত পুরাণে সেই অংশী ‘স্বয়ং ভগবান’ কৃষ্ণ নামে কথিত হলেন। এই পুরাণে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হল কৃষ্ণের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কাহিনি। বস্তুত ভাগবতধর্মের বিকাশ ঘটল এই গ্রন্থ রচনার পরে। এরপর একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে ভক্তি আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ল উত্তর ভারতেও। সেই সূত্রে বাংলাতেও এসে উপস্থিত হল কৃষ্ণভক্তিবাদ। সেন আমলে বাংলায় যে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার ঘটেছিল, তার অন্যতম অবলম্বন ছিল কৃষ্ণকথা। জয়দেব তাঁর ''গীতগোবিন্দম্'' কাব্যে কৃষ্ণকে একই সঙ্গে করে তুললেন পরমারাধ্য বিষ্ণুর অবতার এবং কামকেলিকলার নায়ক।
ঠিক এই সময়েই বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটল, যার সুদূরপ্রসারী ফলে বাঙালি সমাজ, বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি এবং বাঙালি হিন্দুর দৈনিক জীবনে এল এক আমূল পরিবর্তন। ঘটনাটি ইতিহাসে তুর্কি আক্রমণ নামে খ্যাত। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে স্বল্পসংখ্যক যোদ্ধা নিতে তুর্কি সেনানায়ক ইখ্তিয়ার-উদ্দিন মহম্মদ বিন বখ্তিয়ার খিলজি আক্রমণ করলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের রাজ্য। বৃদ্ধ রাজা পালিয়ে গেলেন পূর্ববঙ্গে। বিদেশি শাসনে সাধারণ হিন্দুরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন হল। এই সংকটকালে কোনও সাহিত্য রচিত হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আজও পাওয়া যায় না। অনুমান করা হয়, তুর্কি আক্রমণের প্রাথমিক আঘাত কাটিয়ে ওঠার পর সমাজজীবন সুস্থির হলে বাঙালির সাহিত্যচর্চার অবকাশ তৈরি হয়। এই দু-আড়াইশো বছর সময়টিকে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি পর্ব বলা যায়। এই সময়েই বিদেশি শাসকের ধর্মীয় ও সামাজিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলা সাহিত্যকে অবলম্বন করে বাঙালি হিন্দু এক সাংস্কৃতিক বর্ম গড়ে তোলে।
আসলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুসমাজের অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য শ্রেণির মানুষেরা উচ্চবর্ণের নিপীড়ন সহ্য করার পর ইসলামের সাম্যবাদী নীতিতে আকৃষ্ট হতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে শাসকবর্গের প্রলোভন ও দমনপীড়নের নীতি তো ছিলই। ফলে দলে দলে লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছিল ভয়ে, লোভে, পীড়নে ও পিরদের কেরামতিতে আকৃষ্ট হয়ে। এতে হিন্দু সমাজপতিদের টনক নড়ে। নিজেদের ধর্মাদর্শকে দেশীয় ভাষায় সকলের কাছে প্রচারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তারা। সমাজের ভাঙন প্রতিরোধে শাস্ত্রকথা শুনিয়ে লোক-নিস্তারণের দায়িত্ব নেন অনুবাদক কবিরা। অন্যদিকে মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে উঠে আসে অবনমিত সম্প্রদায়ের উপরে ওঠার ইতিহাস। চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর প্রমুখ লোকদেবতা আর অপাংক্তেয় হয়ে থাকেন না, বরং মন্ত্র ও পূজা ইত্যাদি প্রাপ্তির মাধ্যমে তাঁরাও স্বীকৃত হন উচ্চসমাজে। প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলায় প্রচারিত কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য এই প্রেক্ষাপটেই বিবেচ্য।
খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে গুপ্তযুগে কৃষ্ণের নৈষ্ঠিক পূজার্চনার রীতি চালু হয়। তৎকালীন অভিলিখন, ভাস্কর্য ও শাস্ত্রগ্রন্থে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টম শতকে শঙ্করাচার্যের আবির্ভাবে বৈদান্তিক মতের প্রাধান্য ঘটে। সম্ভবত এরই প্রতিক্রিয়ায় একাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের বৈষ্ণব ভক্তিবাদী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়ে উত্তর ভারতে। আরও তিন শতক পরে চতুর্দশ শতকের শেষভাগে মাধবেন্দ্র পুরী সারা ভারতে কৃষ্ণভক্তিবাদ প্রচার করেন। শোনা যায় বাংলায় তিনি কৃষ্ণভক্তির সূচনা করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য ও ঈশ্বর পুরী নামে দুই শিষ্যের মাধ্যমে। ঈশ্বর পুরীই দশাক্ষর গোপালমন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেন নবদ্বীপের বিখ্যাত স্মার্ত নিমাই পণ্ডিতকে—যিনি সন্ন্যাসগ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বা চৈতন্য মহাপ্রভু নামে পরিচিত হন। বস্তুত ভক্তিবাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা চৈতন্যের প্রভাবে বাংলায় কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদাবলি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। তাঁর রাগানুগা ভক্তি প্রচলিত কৃষ্ণার্চনার ধারায় এক অভিনব সংযোজন। প্রাক্-চৈতন্য যুগের তুলনায় তাই চৈতন্য-পরবর্তী যুগের কৃষ্ণকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারা অনেকটাই আলাদা। প্রথম পর্বে যেখানে বৈধী ভক্তির প্রাধান্য দেখা যায়, চৈতন্য-পরবর্তী পর্বে বৈষ্ণব সাধনায় দেখা যায় রাগানুগা প্রেমাভক্তির প্রাধান্য। পূর্ববর্তী বৈষ্ণব পদাবলিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনতত্ত্বের স্পর্শ অথবা ''উজ্জ্বলনীলমণি'' গ্রন্থের ন্যায় বৈষ্ণবীয় অলংকারশাস্ত্রের নিগূঢ় বন্ধন ছিল না; সেই পদ রচিত হয়েছিল কবিদের নিজস্ব প্রাকৃত ও আধ্যাত্মিক চেতনার সংমিশ্রণে, কোথাও আবার সংস্কৃত সাহিত্যের নায়ক-নায়িকা প্রকরণের ছায়া অবলম্বনে। সাহিত্যের ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন প্রমাণের উপর নির্ভর করে জানিয়েছেন, প্রাক্-চৈতন্য যুগে কৃষ্ণকথা ও বৈষ্ণব পদসাহিত্য দেশীয় ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন তিনজন শক্তিমান কবি। এঁরা হলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কবি বড়ু চণ্ডীদাস এবং পদাবলির অন্যতম দুই বিশিষ্ট রূপকার বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস। অবশ্য ভাষা ও জাতিগত বিচারে বিদ্যাপতি বাঙালি ছিলেন না। তিনি পদ রচনা করেন ব্রজবুলি ভাষায়। প্রাক্-চৈতন্য যুগের কৃষ্ণকথা ও পদাবলি সাহিত্য আলোচনায় এই তিন বিশিষ্ট কবির সাহিত্যসম্ভারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে।
==''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্য==
আদি মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দাবি সর্বজনস্বীকৃত। এই কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস আর কোনও বিচ্ছিন্ন পদ রচনা করেছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তিনি যে বাংলা ভাষায় কৃষ্ণকেন্দ্রিক একটি বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেছিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কাব্যটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (১৩১৬ বঙ্গাব্দে) প্রাচীন সাহিত্য-বিশারদ বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা গ্রামে বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র্য-বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়ালঘরের মাচা থেকে অযত্নরক্ষিত এই পুথিটি উদ্ধার করেন। সাত বছর পরে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটিকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামে সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন তিনি। প্রকাশের পর এই গ্রন্থের নানা বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
===কবি: বড়ু চণ্ডীদাস===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস। মধ্যযুগে চণ্ডীদাস নামধারী আরও কবি ছিলেন বলে গবেষকদের ধারণা। তবে বড়ু চণ্ডীদাস যে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। কাব্যের ভণিতা থেকে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। কবি কোথাও নিজেকে ‘অনন্ত বড়ু’, কোথাও ‘অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস’, আবার কোথাও বা কেবল ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা ব্যবহার করেছেন। তার মধ্যে ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ ভণিতাই পাওয়া যায় সর্বাধিক সংখ্যায়—২৯৮ বার, এবং ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা আছে ১০৭ বার। এই পুথি আবিষ্কারের অনেক আগে থেকেই বাঙালি পাঠক ও বৈষ্ণব সমাজ চণ্ডীদাসের পদের সঙ্গে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকে বৈষ্ণব মহাজনদের রচিত পদগুলির সংকলনও প্রকাশিত হয়। ব্রিটিশ প্রাচ্যতত্ত্ববিদ এইচ. এইচ. উইলসন তাঁর ''স্কেচ অফ দ্য রিলিজিয়াস সেক্টস অফ হিন্দুজ'' গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন যে, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির যৌথ কর্তৃত্বে সংস্কৃত ভাষায় ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি গ্রন্থ প্রণীত হয়েছিল। তথ্যটি বাঙালি লেখকদের কলমে বিকৃত হয়ে এই রূপ নেয় যে, চণ্ডীদাস ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে একটি পুথি রচনা করেছিলেন। তাই ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথি আবিষ্কারের পর স্বয়ং আবিষ্কর্তাও বিভ্রান্ত হয়ে কবিকে ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’ বলেই উল্লেখ করেন। তাঁর ধারণা ছিল “দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন”-এর যে অস্তিত্বের কথা তিনি শুনে আসছিলেন, প্রাপ্ত পুথিটি তারই বাস্তব দৃষ্টান্ত। ভণিতায় প্রাপ্ত ‘বড়ু চণ্ডীদাস’ নামটি তিনি উপেক্ষা করে যান। সেই থেকেই চণ্ডীদাস সমস্যার প্রাথমিক সূত্রপাত। দীনেশচন্দ্র সেনও জানান, “কবি চণ্ডীদাস ও কৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা যে অভিন্ন ব্যক্তি, তৎসম্বন্ধে আমাদের সংশয় নেই।” যে চণ্ডীদাস যৌবনে তীব্র আদিরসাত্মক রচনায় সিদ্ধহস্ত, পরিণত বয়সে তিনিই আধ্যাত্মিক রসে বিহ্বল। মনীন্দ্রমোহন বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিশালা থেকে দীন চণ্ডীদাসের পদ আবিষ্কার করলে সমস্যা আরও তীব্র হয়। কারণ পুরোনো পুথিপত্রে একক চণ্ডীদাসের উল্লেখই পাওয়া যায়। যেমন, কৃষ্ণদাস কবিরাজের ''চৈতন্যচরিতামৃত'' বা সনাতন গোস্বামীর ''বৈষ্ণবতোষিণী'' টীকা ইত্যাদিতে কোথাও বড়ু বা দীন চণ্ডীদাসের নামোল্লেখ নেই।
কিন্তু এত জটিলতা সত্ত্বেও কয়েকটি অকাট্য প্রমাণের বলে পদাবলির চণ্ডীদাস থেকে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের রচয়িতাকে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-র ষষ্টিতম ভাগ, দ্বিতীয় সংখ্যায় ‘চণ্ডীদাস সমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করে কোন কোন সূত্রে দুই চণ্ডীদাস স্বতন্ত্র তা দেখিয়েছেন। তাঁর সুচিন্তিত সমাধানগুলি হল:
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে কোথাও ‘দ্বিজ চণ্ডীদাস’ বা ‘দীন চণ্ডীদাস’ ভণিতা নেই।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার পিতামাতার নাম সাগর ও পদুমা বলে উল্লেখ করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস রাধার শাশুড়ি বা ননদের নাম উল্লেখ করেননি। ‘বড়ায়ি’ ছাড়া কোনও সখীকেও সম্বোধন করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে চন্দ্রাবলী রাধারই নামান্তর, পৃথক প্রতিনায়িকা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কৃষ্ণের কোনও সখার নাম উল্লেখ করেননি।
# বড়ু চণ্ডীদাস সর্বত্র প্রেম অর্থে ‘নেহ’ বা ‘নেহা’ ব্যবহার করেছেন।
# বড়ু চণ্ডীদাস কোথাও রাধার বিশেষণে ‘বিনোদিনী’ এবং কৃষ্ণ অর্থে ‘শ্যাম’ ব্যবহার করেননি।
# ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে রাধা গোয়ালিনী মাত্র, রাজকন্যা নন।
# বড়ু চণ্ডীদাস ব্রজবুলি জানতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত তথ্যগুলি বড়ু চণ্ডীদাসের পৃথক অস্তিত্বের প্রমাণ। আসলে মধ্যযুগের অনেক কবির মতোই বড়ু চণ্ডীদাসও নিজের সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন। কেবল তিনি যে ‘বাসলী’ নামে এক দেবীর সেবক ছিলেন, সেই কথাই উল্লিখিত হয়েছে ভণিতায়। এই কবিকে নিয়ে লোক-ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে, ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জনশ্রুতি। কবির জন্মস্থান বাঁকুড়ার ছাতনা না বীরভূমের নানুর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ, দুই স্থানেই বাসলী দেবীর মন্দির আছে, চণ্ডীদাস ও রামী রজকিনীকে নিয়ে লোকপ্রবাদ প্রচলিত, বছরের নির্দিষ্ট দিনে মেলা ও উৎসব হয়। তবে বাঁকুড়ার দিকেই পাল্লা ভারী। কারণ নানুরের কবি চণ্ডীদাসের ভণিতায় মেলে ‘বাশুলী’ দেবীর নাম এবং ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে ‘বাসলী’ দেবীর উল্লেখ। এছাড়া গুরুতর প্রমাণ এই কাব্যের ভাষা। বাঁকুড়ার লোকভাষার আনুনাসিক ধ্বনির প্রাধান্য এবং এই অঞ্চলে প্রচলিত গড়া, চুক, মাকড়, ঝঁট, ভোক ইত্যাদি আঞ্চলিক শব্দ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যেও পাওয়া যায়। কোনও কোনও গবেষক বাঁকুড়ার উপভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ তার প্রাচীন প্রয়োগ দেখিয়েছেন। তাছাড়া এই পুথিটিও পাওয়া গিয়েছে বাঁকুড়া থেকেই। এছাড়া তালশিক্ষার যে পুথিতে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কয়েকটি পদের আধুনিক রূপান্তর পাওয়া যায়, সেটিও আবিষ্কৃত হয়েছে এই জেলাতেই।
বড়ু চণ্ডীদাস লোকরীতির কাব্য রচনা করলেও তিনি যে সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যে অনায়াস দক্ষতায় ভাগবত পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ, ভবিষ্যপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ এবং ''গীতগোবিন্দম্'' ও ''কুট্টিনীমতম্'' ইত্যাদি গ্রন্থের তথ্য কাব্যে ব্যবহার করেছেন এবং দেড় শতাধিক সংস্কৃত শ্লোক রচনা করেছেন তাতে সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি প্রমাণিত হয়। ‘বড়ু’ শব্দটি থেকে কেউ কেউ অনুমান করেন, কবি ব্রাহ্মণ ছিলেন। এটি ‘বটু’ শব্দ থেকেই আসতে পারে। বড়ু হলেন শ্রোত্রীয় শ্রেণির ব্রাহ্মণ। রজকিনী-ঘটিত জনশ্রুতিতে তিনি ব্রাহ্মণ বলেই কথিত। ছাতনার বাসলী আসলে খড়্গ-খর্পরধারিণী দক্ষিণাকালী। সেই সূত্রে কবিকে শাক্ত বলে গণ্য করাই সমীচীন। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ভাষা দেখে ভাষাতাত্ত্বিকেরা একে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের রচনা বলে শনাক্ত করেছেন। সম্ভবত বড়ু চণ্ডীদাস পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধেই আবির্ভূত হন।
===কাব্য পরিচয়===
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' রাধাকৃষ্ণের প্রণয়মূলক আখ্যানধর্মী কাব্য। ধ্রুপদি প্রেমকাহিনির মধ্যে রাধাকৃষ্ণের প্রেম বিশেষত্ব-মণ্ডিত। রামসীতা বা হরপার্বতীর ন্যায় এই প্রেম স্বকীয়া বা বিবাহোত্তর প্রেম নয়, এই প্রেমের প্রকৃতি পরকীয়া। বস্তুত ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ছাড়া আর কোথাও রাধাকৃষ্ণের স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধ দেখানো হয়নি। লোক-ঐতিহ্যে রাধা কৃষ্ণের মাতুলানী। ফলে এই প্রেম নিয়ে অনেক মুখরোচক গালগল্প তৈরি হয়েছিল এক সময়ে। চৈতন্য-পরবর্তী যুগে অবশ্য রাধা তত্ত্বে পরিণত। তখন তিনি কৃষ্ণের স্বকীয়া অন্তরঙ্গা শক্তি। হ্লাদিনীর সারভূত রূপ মহাভাব থেকে রাধার উৎপত্তি ব্যাখ্যাত। কিন্তু বড়ু চণ্ডীদাস প্রাক্-চৈতন্য যুগের কবি। রাধাকে তিনি চিত্রিত করেছেন প্রাকৃত রমণী রূপেই, কোনও আধ্যাত্মিক তত্ত্বের আলোকে নয়। স্বীকার করে নিয়েছেন কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর মাতুলানী-ভাগিনেয় সম্পর্ক। ফলে এই কাব্য লোকরঞ্জনকারী এক কাহিনিতে পর্যবসিত হয়েছে। এর ভাব, ভাষা, আঙ্গিক, পরিবেশ সবই গ্রামীণ। গ্রাম্য রুচির কাছে আত্মসমর্পণ করে পণ্ডিত কবি এই কাব্যে পুরাণকথা ও লোকশ্রুতির মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। তবে তাঁর মধ্যে প্রতিভার অভাব ছিল না। সেই প্রতিভায় রাধা, কৃষ্ণ ও বড়ায়ির চরিত্র হয়ে উঠেছে সমুজ্জ্বল। ভাগবত পুরাণে রাধার উল্লেখ পাওয়া যায় না। জয়দেবই প্রথম রাধাকে নিয়ে বৃহদায়তন গাথাকাব্য রচনা করেন। বড়ু চণ্ডীদাসের অন্যতম আদর্শ এই রচনা। তবে রাধা চরিত্র চিত্রণে তিনি যে প্রখর সমাজবাস্তবতা ও সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন, তা অনবদ্য। দেশীয় ভাষায় এইপ্রকার বৃহদায়তন প্রথম আখ্যানকাব্য রচনার কৃতিত্ব বড়ু চণ্ডীদাসেরই প্রাপ্য।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশ পাওয়া যায়নি। মাঝের কয়েকটি পাতাও অবলুপ্ত। পাওয়া গিয়েছে তেরোটি খণ্ডে বিন্যস্ত মোট ৪১৮টি পদ। কবি প্রথম বারোটি খণ্ডের নাম দিয়েছেন যথাক্রমে (১) জন্মখণ্ড, (২) তাম্বুলখণ্ড, (৩) দানখণ্ড, (৪) নৌকাখণ্ড, (৫) ভারখণ্ড, (৬) ভারখণ্ডান্তর্গত ছত্রখণ্ড, (৭) বৃন্দাবনখণ্ড, (৮) যমুনান্তর্গত কালীয়দমনখণ্ড, (৯) যমুনান্তর্গত বস্ত্রহরণখণ্ড, (১০) যমুনান্তর্গত হারখণ্ড, (১১) বাণখণ্ড ও (১২) বংশীখণ্ড। ত্রয়োদশ খণ্ডটির শেষাংশ পাওয়া যায়নি বলে এই খণ্ডের কবিকৃত নামটি জানা যায় না। সম্পাদক বসন্তরঞ্জন এই খণ্ডের নামকরণ করেছেন ‘রাধাবিরহ’। তেরোটি খণ্ডে অখণ্ড সুস্পষ্ট একটি গল্প বলা হয়েছে। গল্প এগিয়েছে কবির বিবৃতি এবং আখ্যানের মুখ্য তিন চরিত্রের কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে। গল্পটি সংক্ষেপে এইরকম:
অত্যাচারী কংসের পীড়নে ব্যথিতা বসুন্ধরার আর্তিতে স্বর্গের দেবতারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, কংসের বিনাশের জন্য নারায়ণ ‘কৃষ্ণ’ নাম নিয়ে বসুদেবের গৃহে দেবকীর উদরে জন্মগ্রহণ করবেন। তাঁর সম্ভোগের জন্য লক্ষ্মীও প্রেরিত হলেন রাধা রূপে। তার পিতা সাগর, মাতা পদুমা বা পদ্মা। দেবগণের ইচ্ছানুসারে রাধার স্বামী হলেন নপুংসক আইহন। বালিকাবধূ রাধার পরিচর্যার জন্য এলেন পদ্মার বুড়ি পিসি বড়ায়ি। গোপরমণী রাধাকে দুধ-দই বেচতে মথুরার হাটে যেতে হয়। একদা রাধা বড়ায়ির দৃষ্টিপথের বাইরে চলে যায়। তার রূপ-গুণ বর্ণনা করে ব্রজের রাখাল নন্দগোপসুত কৃষ্ণের কাছে বড়ায়ি রাধার সন্ধান জানতে চাইল। সেই রূপের কথা শুনে কৃষ্ণের মনে রাধাসঙ্গের বাসনা জেগে উঠল। বড়ায়ির হাতে তাম্বুল অর্থাৎ পান দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব জানালেন কৃষ্ণ। কিন্তু বিবাহিতা রাধার মনে তখনও স্বামী-সংস্কার তীব্র। পরপুরুষের প্রতি বিরাগ সে ক্রুদ্ধ হয়ে তাম্বুলে লাথি মেরে বড়ায়িকে অপমান করে তাড়িয়ে দিল। অপমানিতা বড়ায়ি এসে কৃষ্ণের কাছে সব জানিয়ে এর প্রতিবিধান করতে বলল। দুজনে পরামর্শ করল, যমুনার ঘাটে কৃষ্ণ দানী সেজে বসবে এবং দানের ছলে দুধ-দই নষ্ট করবে, হার কেড়ে নেবে, কাঁচুলি ছিঁড়বে। পরামর্শ অনুযায়ী কুতঘাটে বসে রইল কৃষ্ণ। রাধা সখীদের নিয়ে এল সেই ঘাটে। কৃষ্ণ দানী হয়ে মহাদান চেয়ে বসল। শুধু পণ্যদ্রব্য পার করার কড়ি নয়, রাধার অঙ্গের জন্যও ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ কড়ি দাবি করল সে। কড়ি না দিলে দিতে হবে আলিঙ্গন। কিন্তু রাধার পক্ষে তা মেনে নেওয়া কখনই সম্ভব নয়। শুরু হল বাগবিতণ্ডা। রাধা কৃষ্ণকে নিবৃত্ত করতে চায় মাতুলানী সম্পর্কের কথা তুলে। কিন্তু কৃষ্ণের বক্তব্য “নহসি মাউলানী রাধা সম্বন্ধে শালী”। কৃষ্ণ রাধাকে পূর্বজন্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেও রাধা সেসব বিস্মৃত। শেষে রাধার বাধাদান সত্ত্বেও কৃষ্ণ তার সঙ্গে বনের মধ্যে মিলিত হল। আবারও বড়ায়িয়ের কৌশলে রাধা এল যমুনার ঘাটে। একাকিনী রাধাকে যমুনা পার করার সময় কৃষ্ণ মাঝ-নদীতে ঝড় তুলে রাধার মনে ভীতি সঞ্চার করল। ভয়ার্ত রাধা বাঁচার জন্য কৃষ্ণকে জড়িয়ে ধরতে বাধ্য হল। সেই সুযোগে নদীমধ্যে দুজনের মিলন ঘটল। এতদিনে রাধা বুঝতে পেরেছে কৃষ্ণের দুর্বলতা কোথায়। তাই সে এবার নিজেই অগ্রণী হয়ে মথুরার হাটের জন্য বড়োসড়ো পসরা সাজালো। মথুরার পথে যেতে কৃষ্ণকে ‘সুরতি’ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বইয়ে নিল দুধ-দইয়ের ভার। একইভাবে দেহলোভী কৃষ্ণকে দিয়ে প্রচণ্ড রোদে ছাতাও বহন করালো রাধা। অতঃপর বৃন্দাবনে মহাসমারোহে ঘটল বসন্তের আবির্ভাব। রাধা এবার আড়চোখে চেয়ে ও নানা অঙ্গভঙ্গি করে কৃষ্ণের কামনা জাগিয়ে তুলল। ষোলোশো গোপিনী সঙ্গে বিলাস সমাপ্ত করে কৃষ্ণ রাধার কাছে এসে দেখল সে অভিমানাহত হয়ে বিষণ্ণ মনে নীরবে বসে আছে। কৃষ্ণ মধুর বচনে রাধার মান ভাঙিয়ে লিপ্ত হল সঙ্গমে। রাসলীলায় কৃষ্ণের উৎসাহ বৃদ্ধি পেতে জলক্রীড়ার কথা চিন্তা করে কালীদহের বিষাক্ত জল বিষমুক্ত করতে দহে নেমে পড়ল কৃষ্ণ। বিষের তীব্রতায় কৃষ্ণ অচৈতন্য হয়ে পড়লে নন্দ, যশোদা, বলরাম প্রমুখ আত্মীয়েরা বিলাপ করতে লাগলেন। কৃষ্ণের বিপদ অনুমান করে যাবতীয় লোকলজ্জা ত্যাগ করে রাধা এবার সর্বসমক্ষে ‘পরাণপতি’ বলে কেঁদে উঠল। অবশেষে কালীয় নাগকে দমন করে কৃষ্ণ উঠে এল জল থেকে। একদিন রাধা সখীদের নিয়ে যমুনায় জল ভরতে এসে কৃষ্ণের সঙ্গে জলকেলিতে মত্ত হল। সেই সুযোগে কৃষ্ণ গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করল। রাধার অনুনয়ে কৃষ্ণ বস্ত্র ফিরিয়ে দিলেও তার বক্ষহারটি লুকিয়ে রাখল। হার না পেয়ে রাধা এবার গিয়ে অনুযোগ জানালো কৃষ্ণজননী যশোদার কাছে। যশোদা কৃষ্ণকে ভর্ৎসনা করলে অপমানিত কৃষ্ণ ফুলধনু দিয়ে রাধাকে বাণাহত করে মূর্চ্ছিত করল। কিন্তু এবার বড়ায়ি কৃষ্ণের আচরণে ক্ষুব্ধ হল। সে তিরস্কার করে রাধার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে বলল। তখন কৃষ্ণের হস্তস্পর্শে রাধার চৈতন্য হল। পরিশেষে বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের পুনর্মিলন ঘটল। এখন আর কৃষ্ণের মনে রাধার প্রতি পূর্বের অদম্য আসক্তি কিছুই নেই। বরং শারীরিক মিলনে রাধার মনে জাগ্রত হয়েছে অপূর্ব সুখোন্মাদনা। সে এখন কৃষ্ণ-অন্তপ্রাণ। তার আর কোনও লজ্জা, ভয় বা সতীত্বের বন্ধন নেই। কৃষ্ণ এবার একটি সুন্দর মোহন বাঁশি গড়িয়ে কদমতলায় বসে একমনে বাজাতে থাকে। তার সেই বাঁশির সুর রাধার চিত্তকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সে ঘর-সংসার ভোলে, তার গৃহকর্ম নষ্ট হয়, মনে মনে ভাবে “দাসী হআঁ তোর পাএ নিশিবোঁ আপনা”। বড়ায়িকে সে বারবার বলে কৃষ্ণকে তার কাছে এনে দিতে। বড়ায়ি বিপরীত কথা বলে রাধাকে নিরস্ত করতে চায়। কিন্তু রাধার মন কোনও যুক্তিতেই বশীভূত হয় না। তখন দুজনে মিলে কৃষ্ণের সন্ধানে বৃন্দাবনে যায়। সেখানে কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। রাতে শয্যায় শায়িত রাধার কানে কৃষ্ণের বাঁশির শব্দ এসে প্রবেশ করে। সে নিদ্রিত স্বামীকে ফেলে একাকিনী কৃষ্ণমিলনের উদ্দেশ্যে পথে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু কোথাও কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে পথেই মূর্চ্ছিত হয়ে পড়ে রাধা। বড়ায়ি তার মূর্চ্ছাভঙ্গ করে পরামর্শ দেয় কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করতে। তাই-ই করে রাধা। বাঁশি বিহনে কৃষ্ণ ব্যাকুলভাবে বিলাপ করতে থাকে। অবশেষে বড়ায়ির মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ রাধার কাছে করজোড়ে মিনতি করলে রাধা বাঁশি ফিরিয়ে দেয়। রাধার সকল অপরাধ ক্ষমা করে কৃষ্ণ। বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও শর্ত অনুসারে কৃষ্ণ রাধাকে আর দেখা দেয় না। এবার কৃষ্ণ বিহনে রাধার মনে হতে থাকে “এ ধন যৌবন বড়ায়ি সবই অসার”। সে বারবার বড়ায়িকে কৃষ্ণ এনে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বড়ায়ি তাকে পরামর্শ দেয় কদমতলায় কিশলয় শয্যা রচনা করে প্রতীক্ষা করতে। কিন্তু তাতেও কৃষ্ণের দর্শন মেলে না। অতঃপর তারা বৃন্দাবনে প্রবেশ করে গোচারণরত কৃষ্ণের দেখা পায়। রাধা তখন কাতরভাবে তার কাছে অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে। তবুও কৃষ্ণের মন গলে না। অবশেষে বড়ায়ির অনুরোধে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গে মিলনে সম্মত হয়। বিহারের পর শ্রান্ত হয়ে কৃষ্ণের উরুতে মাথা রেখে রাধা ঘুমিয়ে পড়লে কৃষ্ণ বড়ায়িকে ডেকে তার হাতে রাধার রক্ষণাবেক্ষণের ভার দিয়ে মথুরায় চলে যায়। নিদ্রাভঙ্গের পর কৃষ্ণকে দেখতে না পেয়ে আবার বিষণ্ণ হয়ে পড়ে রাধা। রাধার বিলাপে অস্থির হয়ে বড়ায়ি মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণের কাছে রাধার কথা জানায়। কৃষ্ণের বক্তব্য, সে প্রগলভা রাধার কাছে যাবে না। তার মুখদর্শন করতেও সে ইচ্ছুক নয়। আর তাছাড়া সে মথুরায় এসেছে দুরাচারী কংশকে নাশ করতে। তার আর কোনওমতেই বৃন্দাবনে ফিরে যাওয়া চলে না। এরপরই পুথি খণ্ডিত। যতদূর মনে হয়, কবি রাধা ও কৃষ্ণের বিচ্ছেদেই কাব্যটি সমাপ্ত করেছিলেন।
মধ্যযুগীয় কাব্যে প্রক্ষিপ্তি একটি বড়ো সমস্যা। সাহিত্যের সব শাখাতেই কম-বেশি এটি দেখা যায়। যে যুগের লেখকের কর্তৃত্ব সঠিকভাবে চিহ্নিত হত না, সেই যুগে একের রচনায় অন্যের হস্তক্ষেপ স্থান পেয়ে যেত নির্বিরোধে। ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের প্রক্ষেপ নিয়ে প্রথম সংশয় জ্ঞাপন করেন যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি। ‘বড়ু’ ও ‘বাসলী’-বিহীন ভণিতাগুলিকে তিনি অন্যের রচনা বলে মনে করেন। দানখণ্ডের তিনটি পদে ড. সুকুমার সেন প্রক্ষেপ দেখেছেন। আবার কেউ কেউ গায়েনের প্রক্ষেপ লক্ষ্য করেছেন কাব্যের নানা স্থানে। প্রখ্যাত সমালোচক বিমানবিহারী মজুমদারের মতে, সমগ্র ‘রাধাবিরহ’ অংশটিই প্রক্ষিপ্ত। তিনি মোট ছয়টি যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু যুক্তিগুলি যে ততটা প্রমাণনির্ভর নয়, সে বিষয়ে একাধিক গবেষক প্রতি-যুক্তি দিয়েছেন। বিশেষত ‘রাধাবিরহ’ যে কাব্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ তার প্রমাণ রয়েছে কাহিনির অভ্যন্তরীণ কাল-পরম্পরায়, কাব্যের গঠনে, রাধার বয়সের অগ্রহতির সাক্ষ্যে, চরিত্রের ক্রম-পরিণামে এবং অবশ্যই কবির ক্রমবিকশিত প্রতিভার স্তরোন্নয়নে। কাব্যের সূচনায় ‘এগার-বরিষ’-এর রাধা এখানে পূর্ণ যুবতীতে পরিণত, কামুক কৃষ্ণ এই পর্যায়ে ভোগতৃপ্ত হয়ে ‘গততৃষ্ণ’ কৃষ্ণে পর্যবসিত। কবি যে ক্রমশ ভাবগভীরতার পথে এগিয়ে এসেছেন, তার প্রমাণ আছে বংশীখণ্ডেই। এই খণ্ডেরই প্রত্যাশিত পরিণাম দেখা যায় ‘রাধাবিরহ’ অংশে। যে গীতিকাব্যিক মূর্চ্ছনার সূচনা হয়েছিল “কেনা বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নঈ কূলে” ইত্যাদি পদে, তার সার্থক পরিণতি ঘটল “দিনের সুরুজ পোড়াআঁ মারে রাতিহো এ দুখ চান্দে” ইত্যাদিতে। রাধার চারিত্রিক বিবর্তনে সম্পূর্ণতা দেখানোর সূত্র ‘রাধাবিরহ’ এই কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য এক অঙ্গ। অন্য কোনও কবির হাত থেকে পূর্বের কাহিনি, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদির এতখানি সঙ্গতিপূর্ণ ধারাবাহিকতা আশা করা যায় না। অতএব কিছু ক্ষেত্রে মৃদু সংশয় থাকলেও কাব্যের অন্তর্বর্তী প্রমাণে ‘রাধাবিরহ’ যে মূল কাব্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ তা স্বীকার করে নেওয়া যায়। এই অংশটি না থাকলে বড়ু চণ্ডীদাসের কবিপ্রতিভার সামগ্রিক মূর্তিটি অনুধাবন করা যেত না।
===গ্রন্থনাম বিচার===
চর্যাপদের পুথির গ্রন্থনাম নিয়ে যেমন বিতর্ক দেখে দিয়েছিল, তেমনই বিতর্ক দেখা দেয় ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' পুথির নামকরণকে কেন্দ্র করেও। ''তেঙ্গুর'' তালিকা থেকে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে চর্যাপদ সম্পর্কে একটি যুক্তিসিদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, পরবর্তীকালের কোনও গ্রন্থে এই কাব্যের নামোল্লেখও করা হয়নি। প্রকৃত সমস্যার সূত্রপাত আবিষ্কৃত পুথিটির প্রথমাংশ ও শেষাংশের পাতা না পাওয়ায়। বইয়ের সূচনায় এবং পুথির শেষে সমাপ্তিসূচক পুষ্পিকাতেই গ্রন্থনাম পাওয়া যায়। এই দুই অংশ না থাকায় পুথিটি থেকে আবিষ্কর্তা ও সম্পাদক বসন্তরঞ্জন কোনও নাম পাননি। গ্রন্থাকারে প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি সম্পাদিত গ্রন্থের নামকরণ করেছিলেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''। পূর্বাপর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, প্রাচ্যতত্ত্ববিদ উইলসনের দেওয়া একটি ভ্রান্ত তথ্যের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই নামকরণের বিষয়টি। তিনি গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি কর্তৃক যৌথভাবে রচিত ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামে এক সংস্কৃত কাব্যের কথা জানিয়েছিলেন। সেই তথ্য প্রথম বিকৃত হয় জগদ্বন্ধু ভদ্রের ‘গোবিন্দদাস’ প্রবন্ধে (''বান্ধব'', শ্রাবণ ১২৮২ সংখ্যা)। তিনি লেখেন, “উইলসন সাহেব কৃত উপাসক সম্প্রদায় গ্রন্থে লিখিত আছে যে, চণ্ডীদাস ও গোবিন্দদাস উভয়ে মিলিত হইয়া কৃষ্ণকীর্তন প্রণয়ন করেন।” এই সংবাদই সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করেন রমণীমোহন মল্লিক, ক্ষীরোদচন্দ্র রায়চৌধুরী, ত্রৈলোক্যনাথ ভট্টাচার্য, ব্রজসুন্দর সান্যাল প্রমুখ প্রাবন্ধিকেরা। ক্রমে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামক কাল্পনিক গ্রন্থটির একক রচয়িতায় পরিণত হন চণ্ডীদাস। বড়ু চণ্ডীদাসের পুথি আবিষ্কৃত হওয়ার পর বসন্তরঞ্জনও ভেবেছিলেন যে, তিনি সেই হারিয়ে-যাওয়া বহুশ্রুত গ্রন্থটিই আবিষ্কার করেছেন। তাই অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে গ্রন্থটির নাম দেন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' এবং লেখকের নাম হিসেবে উল্লেখ করেন ‘মহাকবি চণ্ডীদাস’। গ্রন্থপ্রকাশের এগারো বছর পরে ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে গ্রন্থনাম নিয়ে প্রথম সংশয় প্রকাশ করেন রমেশ বসু। ''সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা''-য় প্রকাশিত ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ প্রবন্ধে তিনি এও বলেন যে, “এই গ্রন্থ সংস্কৃত ও লৌকিক পুরাণের সমবায়ে গঠিত বলিয়া ইহাও পুরাণ আখ্যা পাইবার সম্পূর্ণ উপযুক্ত। বাস্তবিকই বাঙ্গালায় কৃষ্ণলীলা বিষয়ক যদি কোন মৌলিক পুরাণ থাকে তাহা এই শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।” ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে ''বিশ্ববাণী'' পত্রিকায় দক্ষিণারঞ্জন ঘোষ ‘চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামক আর-একটি প্রবন্ধে ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামের কোনও ভিত্তি পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করে প্রশ্ন তোলেন, “শুধু বসন্তবাবুর ধারণা এবং শোনা কথার মূল্য কি?” চার বছর পরে নলিনীনাথ দাশগুপ্ত ''বিচিত্রা'' পত্রিকায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের সামাজিক তথ্য’ প্রবন্ধে নানা দিক আলোচনা করে পুথিটির ''কৃষ্ণমঙ্গল'' নামকরণের পক্ষপাতী হন। ১৩৪২ বঙ্গাব্দের যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ''প্রবাসী'' পত্রিকায় ‘চণ্ডীদাস চরিত’ প্রবন্ধে মন্তব্য করেন, “এক মস্ত ভুলও হয়ে গেছে, রাধাকৃষ্ণলীলার ‘কৃষ্ণকীর্তন’ নাম হয়ে গেছে।” উপরিউক্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে ১৩৪২ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের ''প্রবাসী'' পত্রিকায় সম্পাদক বসন্তরঞ্জন লেখেন ‘চণ্ডীদাস চরিতে সংশয়’। সেখানে তিনি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামকরণের তাৎপর্য ব্যাখ্যায় প্রয়াসী হন। কিন্তু তাঁর মত গবেষকদের মধ্যে ততটা গৃহীত হয়নি।
নামকরণের সমস্যাটি আরও জটিল হয় যখন ১৩৪২ বঙ্গাব্দে বসন্তরঞ্জন ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণে পুথির মধ্যে প্রাপ্ত একটি চিরকুট প্রকাশ করেন। তাতে লেখা ছিল: “শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণঃ।। শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্বের ৯৫ পচানই পত্র হইতে একসও দস পত্র পর্য্যন্ত একুন ১৬ শোল পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চাননে শ্রীশ্রী মহারাজা হুজুরকে লইয়া গেলেন পুনশ্চ আনিয়া দিবেন—সন ১০৮৯”। প্রাচীন পুথির মধ্যে এই ধরনের রসিদ পাওয়ায় এমন ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, রসিদটি উক্ত গ্রন্থ-সংক্রান্ত। ফলে নামকরণকে কেন্দ্র করে স্পষ্টত দুটি দল তৈরি হয়ে গেল। একদল পুথিটির ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নাম রাখার পক্ষপাতী, অন্য দলের মতে এর নাম হওয়া উচিত ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব''। দ্বিতীয় দলের মধ্যে ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বিজনবিহারী ভট্টাচার্য, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য। এর পাশাপাশি অধ্যাপক সত্যব্রত দে ১৩৮৬-৮৭ বঙ্গাব্দের ''রবীন্দ্রভারতী পত্রিকা''-য় একটি কূটতর্ক তুললেন, “গ্রন্থটির সঠিক নাম কি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন না কৃষ্ণকীর্তন?... যে চারটি সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে বসন্তরঞ্জন চণ্ডীদাস-রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ কাব্যের অস্তিত্বে দৃঢ়নিশ্চয় হয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকটিতেই গ্রন্থনাম কৃষ্ণকীর্তনরূপে লিখিত।”
নামকরণ সমস্যার নিরিখে কয়েকটি যুক্তি গ্রহণ করা যেতে পারে। ‘কীর্তন’ শব্দটির অর্থ অনেক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ''বঙ্গীয় শব্দকোষ''-এ ‘কীর্তন’ বলতে ঘোষণা, কথন, বর্ণন, বিবরণ, গুণকীর্তন, স্তবন ইত্যাদি অর্থ নির্দেশিত হয়েছে। ‘কীর্তন’ শব্দটির বৈষ্ণবীয় অর্থ-তাৎপর্য থেকে বের করে এনে যদি প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি অযোগ্য হয় না। যেহেতু উইলসন তাঁর উল্লিখিত গ্রন্থের নামে ‘শ্রী’ শব্দটি যুক্ত করেননি এবং বাঙালি গবেষকেরাও ''কৃষ্ণকীর্তন'' নামটিই উল্লেখ করেছেন, সেহেতু সত্যব্রত দে-র মতে বইটির নাম ''কৃষ্ণকীর্তন'' হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এই যুক্তির গলদ হল এই যে, উইলসন যে সংস্কৃত ''কৃষ্ণকীর্তন''-এর কথা বলেছেন, তার লেখক গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতি—চণ্ডীদাস নন। একটি ভুল ধারণার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে এই মতটিকে অযথা গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন। ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামটিও এই প্রসঙ্গে বিচার্য। প্রাপ্ত রসিদটি আবিষ্কৃত পুথির মধ্যে পাওয়া গিয়েছে বটে, কিন্তু সেই রসিদে বর্ণিত তথ্য যে উক্ত পুথি-সংক্রান্ত হবেই এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। রসিদে বলে হয়েছে যে, ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' নামক একটি পুথির ৯৫ থেকে ১১০ পত্র শ্রীকৃষ্ণ পঞ্চানন নামে এক ব্যক্তি মহারাজের জন্য ধার করে নিয়ে গেলেন ১০৮৯ সালে অর্থাৎ ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে। তারপর মাস দুয়েকের মধ্যেই পাতাগুলি ফেরৎ এল। ফেরৎ আসার পর খোয়া না যাওয়ার সম্ভাবনা, যেহেতু গ্রন্থাগারটিতে পুথি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা নেওয়া হত এবং যার প্রমাণ এই রসিদ। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ধার নেওয়া পাতাগুলির মধ্যে ৯৮/১ এবং ১০৪-১১০ পত্র অর্থাৎ মোট সাড়ে সাতটি পাতা নিখোঁজ। তাহলে অনুমান করতে হয়, অন্য কোনও পুথির ওই ১৬টি পত্র ধার নেওয়া হয়েছিল, যার রসিদটি কোনওভাবে চলে এসেছে এই পুথির মধ্যে। অধ্যাপক তারাপদ মুখোপাধ্যায় এই ক্ষেত্রে অকাট্য যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, জীব গোস্বামী রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ''। এটি গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের একটি মূল্যবান গ্রন্থ। বিষ্ণুপুরে শ্রীনিবাস আচার্য রাজগুরু হিসেবে প্রভূত সম্মান পেয়েছিলেন ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে। বৃন্দাবনের শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রীনিবাসের সাক্ষাৎ গুরু ছিলেন জীব গোস্বামী। বিষ্ণুপুরে বৃন্দাবনের গোস্বামীদের গ্রন্থ প্রচারে একদা মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন শ্রীনিবাস। ছোটো চিরকুটটির মধ্যে যে ‘আচার্য প্রভু’-র কথা আছে, তিনি এই শ্রীনিবাস আচার্য ছাড়া আর কেউ নন। তাই তারাপদ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, বিষ্ণুপুরের রাজা কোনও কারণে জীব গোস্বামীর ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ'' গ্রন্থেরই ১৬টি পাতা ধার নিয়েছিলেন এবং পরে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন। অতএব বসন্তরঞ্জনের প্রাপ্ত পুথিটির নাম ''শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব'' হতে পারে না। তবু এই বিষয়ে কোনও পাথুরে প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' নামটি গ্রহণ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
===পৌরাণিক প্রভাব ও মৌলিকতা===
ভাগবতের কৃষ্ণকে অবলম্বন করে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের কাহিনি গড়ে উঠলেও এই কাব্যকে কোনও সমালোচকই অনুবাদ কাব্য বলে নির্দেশ করেননি। অথচ অনুবাদের ক্ষেত্রে যেমন সংস্কৃত আদর্শ থেকে আখ্যানভাগ, চরিত্র, ভাষা ইত্যাদি গৃহীত হয়ে থাকে, ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এর কয়েকটি ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে। আসলে যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রয়োজনে অনুবাদ সাহিত্যের জন্ম বড়ু চণ্ডীদাস সম্ভবত তার তাগিদ অনুভব করেননি। প্রাতিষ্ঠানিক বৈষ্ণবধর্মের প্রতি তাঁর তেমন আনুগত্য ছিল না বলেই মনে হয়। ‘বাসুলী-সেবক’ অভিধাটিই চিনিয়ে দেয় তাঁর নির্দিষ্ট ধর্মবিশ্বাসকে। তাই সেকালের শাক্ত-বৈষ্ণবের দ্বন্দ্বময় প্রেক্ষাপটে এই কাব্যকে উপদলীয় ধর্মবিদ্বেষের উৎসৃষ্টি বলে মনে হতেই পারে। কাব্যের নানা স্থানে তার প্রমাণও আছে।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের নায়ক সম্পর্কে সকলেই প্রায় একবাক্যে স্বীকার করেন যে, এই কৃষ্ণ আদৌ বৈষ্ণবদের আরাধ্য দেবতা নন। পুরাণপুরুষ কৃষ্ণের আবরণে কবি আসলে প্রকাশ করেছেন নারীদেহ-লোলুপ এক ‘কামী’ গ্রাম্য গোপযুবককে, যে ছলনা, প্রতারণা ও বলপ্রয়োগ করে এক অনিচ্ছুক বিবাহিতা নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে ‘গততৃষ্ণ’ হয়ে নির্দ্বিধায় তাকে পরিত্যাগ করে চলে যায়। এমন অমানবিক পাশবিক চরিত্র দেবতার হতে পারে না। অর্বাচীন পুরাণে বর্ণিত রাধাও যেন রক্তমাংসের নারীতে পরিণত হয়েছেন এই কাব্যে, যার মনস্তাত্ত্বিক বিবর্তন ঘটেছে স্বামী-সংস্কারে আবদ্ধা কুলবধূ থেকে পরপুরুষের প্রেমসন্তপ্তা স্বাধীনভর্তৃকা প্রেমিকাতে। উল্লেখ্য, কবি একবারের জন্যও ‘দেবতা’ কৃষ্ণের কাছে প্রণত হচ্ছেন না, যেমন হয়েছিলেন তাঁর আদর্শ জয়দেব। পাঠক যেন তাঁর অঙ্কিত কৃষ্ণকে সম্পূর্ণ স্ব-কল্পিত মনে না করে, তাই যেন কবি প্রচলিত পুরাণের সঙ্গে কৃষ্ণ চরিত্রের সম্পর্ক দেখিয়ে দিয়েছেন। এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পুরাণ-বচন উদ্ধৃত করে কবি তাঁর বর্ণিত গল্পের সঙ্গে পৌরাণিকতার একটি প্রচ্ছন্ন যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। সেই সূত্রেই এসেছে ভাগবত পুরাণ, পদ্মপুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে সন্নিবেশিত নানা তথ্য। বিশেষ করে জন্মখণ্ড বর্ণনায় অনেকগুলি পুরাণ থেকে যে তিনি আখ্যানবস্তু আহরণ করে নিজের মতো করে সেগুলি বিন্যস্ত করেছেন তার প্রমাণ রয়েছে আখ্যান-বিন্যাসে। জন্মখণ্ডে কবি রচিত প্রথম সংস্কৃত শ্লোকটি হল:
<poem>
:: পৃথুভারব্যথাং পৃথ্বী কথয়ামাস নির্জ্জরান্।
:: ততঃ সরভসং দেবাঃ কংসধ্বংসে মনো দধুঃ।।
</poem>
এই প্রসঙ্গ বিষ্ণুপুরাণ, পদ্মপুরাণ ও ভাগবত পুরাণেও আছে। তবে প্রত্যেকটি কাহিনিই কম-বেশি স্বতন্ত্র। যেমন, বিষ্ণুপুরাণে পৃথিবীকে বহুভারে পীড়িতা হয়ে সুমেরু পর্বতে দেবতাদের কাছে গিয়ে নিজের বেদনার কথা বিবৃত করতে দেখা যায়। পদ্মপুরাণে কংসের নিপীড়নের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। ভাগবত পুরাণে আছে বসুমতীর গোরূপ ধারণ করে ব্রহ্মার কাছে গিয়ে দুঃখ নিবেদনের সংবাদ। পদ্মপুরাণের উত্তরখণ্ডে আছে দেবকীর সপ্তম পুত্রকে রোহিণীর গর্ভে মায়া দ্বারা সংক্রামিত করে অষ্টম গর্ভে নারায়ণের নিজে আবির্ভূত হওয়ার অঙ্গীকার। বড়ু চণ্ডীদাসও সেই তথ্য পরিবেশন করেছেন। এছাড়া নারায়ণ কর্তৃক দেবতাদের হস্তে কৃষ্ণ ও শুভ্রবর্ণের কেশ প্রদানের প্রসঙ্গও বিভিন্ন পুরাণ থেকে গৃহীত। অবশ্য এই প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার যে, রাধার জন্মকাহিনি বর্ণনায় কবি পুরাণের পথ পরিহার করে স্বাধীন কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। নারদের যে রূপ ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে অঙ্কিত হয়েছে, তারও উৎস কবির নিজস্ব কল্পনা। জন্মখণ্ড ছাড়া ভাগবতের স্পষ্ট প্রমাণ পড়েছে বৃন্দাবনখণ্ডে। ভাগবতে কথিত হয়েছে যে, ষোলো শত গোপিনী সঙ্গে কৃষ্ণ শরৎকালে একদা বিলাসে মত্ত হয়েছিলেন। এটি রাস নামে কথিত। বড়ু চণ্ডীদাসও এই কাহিনি অনুসরণ করেন। তাঁর রাধা এখন আর মিলনে অনিচ্ছুক নন। বরং বক্রদৃষ্টিতে ও বিচিত্র দেহভঙ্গিতে কৃষ্ণের কামনা উদ্রেক করতে যথেষ্ট পটিয়সী। অন্যান্য গোপিনী থাকা সত্ত্বেও রাধাতেই যেন কৃষ্ণের সফল তৃপ্তি। তবুও রাধার অনুরোধে সব সখীদের তৃপ্ত করার প্রতিশ্রুতির দেন কৃষ্ণ। অতঃপর বনের মধ্যে রাধাকৃষ্ণের মিলন হয়। ভাগবতেও আছে:
<poem>
:: অনয়ারাধিতো নূনং ভগবান হরিরীশ্বর।
:: যন্নো বিহায় গোবিন্দ প্রীত যামনয়দ্রহঃ।।
</poem>
তবে ভাগবতের ঘটনাক্রম অনুসরণ করেননি বড়ু চণ্ডীদাস। ভাগবতের রাস অনুষ্ঠিত হয়েছিল কংসবধের পরে, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ রাস হল কংসবধের পূর্বেই। তাছাড়া ভাগবতের রাস শরৎকালীন এবং নিশাকালে সম্পন্ন, কিন্তু ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ আছে দিবাকালীন বাসন্তী রাসের বর্ণনা। এক্ষেত্রে বড়ু চণ্ডীদাস সম্ভবত অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন জয়দেবের দ্বারা। ''গীতগোবিন্দম্''-এর দু-একটি পদের আক্ষরিক গীতানুবাদও রয়েছে বৃন্দাবনখণ্ডে। যেমন, “রতি তোর আশোআশেঁ গেলা অভিসারে” ইত্যাদি। অবশ্য কেউ কেউ বলেন, ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ কৃষ্ণের বৃন্দাবন-বিলাস একান্তভাবেই ভাগবত-বর্ণিত রাতের অনুকরণজাত। ভাগবতের সঙ্গে এই কাব্যের মিল আছে কালীয়দমনখণ্ডের কাহিনিতেও। দুই গ্রন্থেই কালীদহের জলে নেমে কৃষ্ণ কর্তৃক কালীয়নাগ দমনের প্রসঙ্গ আছে। তবে বড়ু চণ্ডীদাস উদ্দেশ্যের ভিন্নতা দেখিয়েছেন। ভাগবতকার যেখানে কালীদহের বিষাক্ত জল বৃন্দাবনবাসীর ব্যবহারোপযোগী করে তোলার জন্য কৃষ্ণকে নাগদমনে নিয়োজিত করেছেন, সেখানে বড়ু চণ্ডীদাস দেখাতে চেয়েছেন যে, সখীদের নিয়ে জলক্রীড়ার করার জন্য কালীদহ বিষমুক্ত করতে কৃষ্ণ সেই জলাশয়ে ঝাঁপ দেন। অচৈতন্য কৃষ্ণের আত্মজ্ঞান ফেরানোর জন্য বলরামের দশাবতার স্তবের মধ্যে ক্রম পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে এই কাব্যে। বরাহপুরাণে কৃষ্ণের নাম আছে অষ্টম স্থানে, সেখানে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ কাহিনির প্রয়োজনে তা সবশেষে উল্লিখিত। বস্ত্রহরণের প্রসঙ্গটিও ভাগবত থেকে নেওয়া। তবে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন''-এ বস্ত্রের সঙ্গে কৃষ্ণ রাধার হারও চুরি করে নেয় এবং সব কিছু ফিরিয়ে দিলেও হারটি নিজের কাছে রেখে দেয়। এই তথ্য ভাগবতে নেই। আখ্যানের বাইরেও পুরাণের প্রভাব আবিষ্কার করা যায় কবি কর্তৃক নানা পৌরাণিক প্রসঙ্গের অবতারণায়। বিভিন্ন চরিত্রের মুখে উপমা ও উৎপ্রেক্ষা স্বরূপ এগুলি সার্থকভাবে প্রয়োগ করেছেন তিনি। পরদারাসক্তির সমর্থনে কৃষ্ণের উক্তিতে এসেছে কুন্তী, রম্ভা ও গঙ্গার প্রসঙ্গ। এর বিপক্ষে রাধা উদাহরণ দিয়েছেন সোম-তারা, ইন্দ্র-অহল্যা ও চণ্ডী কর্তৃক সুন্দ-উপসুন্দ বধের। পুরাণশাস্ত্রে কবির পাণ্ডিত্যের প্রমাণ এগুলি। কিন্তু এইসব দৃষ্টান্ত সত্ত্বেও ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কৃষ্ণমাহাত্ম্যমূলক কাব্য নয়। পুরাণের পরিচিত গল্পকে আশ্রয় করে কবি এতে লৌকিক জীবনের পরিচয়ই প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। মৌলিকতা দেখিয়েছেন রাধা ও কৃষ্ণের চরিত্র চিত্রণে।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের তেরোটি খণ্ডের মধ্যে মোট চার-পাঁচটি খণ্ডে পুরাণের প্রভাব বাদ দিলে অবশিষ্ট খণ্ডগুলি কম-বেশি কবির স্ব-কল্পিত। বিশেষত তাম্বুলখণ্ড, দানখণ্ড, নৌকাখণ্ড, ছত্রখণ্ড, ভারখণ্ড, হারখণ্ড, বাণখণ্ড পুরোপুরি কবির নিজস্ব উদ্ভাবনা। এগুলির কোনও সাহিত্যিক উৎস নেই। আখ্যান-সূত্রে বোঝা যায়, জন্মখণ্ডের পর কাহিনিকে কবি লোকসমাজের রুচি অনুযায়ী পরিবর্তিত করে নেন। দেবতাদের অনুরোধে কৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন বটে, তবে তাঁর মুখ্য কাজ কংসবধ আপাতত গৌণ হয়ে যায়, পরিবর্তে রাধার দেহসম্ভোগে তিনি মত্ত হয়ে ওঠেন। তার জন্য ছলনা, চাতুরী, কৌশল, বলপ্রয়োগ কোনও কিছুতেই দ্বিধা নেই তাঁর। লম্পট পুরুষের মতোই কৃষ্ণের হাবভাব, গ্রাম্য গোঁয়ারের মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ তাঁর কথাবার্তা। জন্মখণ্ডের কর্তব্যপরায়ণ নারায়ণের সঙ্গে এই কৃষ্ণকে কোথাও মিলিয়ে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি এটাও দেখা যায় যে, কবি কৃষ্ণকে পদ্মনাভ, চক্রপাণি, গদাধর ইত্যাদি নামে সম্বোধন করে পুরাণের অনুসরণ করেছেন, আবার অন্যদিকে মগর-খাড়ু পরিয়ে, হাতে লগুড় ধরিয়ে গ্রাম্য যুবকে রূপান্তরিত করেছেন। এই বিষয়ে ড. সত্যবতী গিরি তাঁর ''বাংলা সাহিত্যে কৃষ্ণকথার ক্রমবিকাশ'' গ্রন্থে লিখেছেন, “গ্রামীণ সাধারণের রুচিকে পরিতৃপ্ত করার জন্যই কবি কৃষ্ণের এই গ্রাম্যরূপ অঙ্কন করেছেন। নিঃসন্দেহে এটিও কবির লোকমুখিতারই প্রমাণ।” (পৃ. ৬৫)
রাধার ক্ষেত্রে কবি অনেকটাই স্বাধীনতা নিয়েছেন। তার জন্মকাহিনি কোনও পুরাণকে অনুসরণ করে গড়ে ওঠেনি। বস্তুত ভাগবত, বিষ্ণুপুরাণ কিংবা হরিবংশে রাধার উল্লেখও করা হয়নি। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে রাধা কৃষ্ণের বিবাহিতা পত্নী, যা অন্য কোনও শাস্ত্রগ্রন্থে দেখা যায় না। এই পুরাণে রাধার পিতামাতার পরিচয়ও আছে। তিনি বৃষভানু ও কলাবতীর কন্যা। আবার পদ্মপুরাণে রাধার মায়ের নাম কীর্তিকা বা কীর্তিদা। বড়ু চণ্ডীদাস এসবের সঙ্গে পরিচিত হয়েও এক নতুন সংবাদ দিলেন—কৃষ্ণের সম্ভোগের জন্য দেবগণের নির্দেশে লক্ষ্মী রাধা হয়ে এলেন। তাঁর পিতা সাগর গোপ, মাতা পদ্মা। রাধাকে কবি প্রথমাবধিই আত্মবিস্মৃত করে রাখলেন। সেই সঙ্গে লৌকিক জনশ্রুতি অনুযায়ী তাঁর বিবাহ দিলেন নপুংসক আইহনের সঙ্গে। ফলে কাহিনির মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টির অবকাশ তৈরি হয়েছে। গড়ে উঠেছে নাটকীয়তা। সতীত্ব-সংস্কারে বাঁধা বিবাহিতা রাধার সঙ্গে দেহলোভী কৃষ্ণের বাগবিতণ্ডা বেশ জমে উঠেছে। রাধার এই কৃষ্ণ-বিমুখতা কবির নিজস্ব কাব্যভাবনার ফসল। তাম্বুলখণ্ডে বড়ায়ির মুখে রাধার রূপবর্ণনা শুনে কৃষ্ণের কামাসক্ত হওয়া এবং বড়ায়িকে দিয়ে তাম্বুল প্রেরণ, রাধা কর্তৃক বড়ায়ির অপমান এবং ক্রুদ্ধ বড়ায়ির কৃষ্ণকে রাধা-লাঞ্ছনার মন্ত্রণা দান কোনও পুরাণেই নেই। আসলে কবি জয়দেবের কাব্য থেকে রাধার পূর্ণায়ত ছবিটি গ্রহণ করলেও তাতে সামাজিকতার রং চড়িয়ে তাঁকে অনেক বেশি বাস্তবের নারী করে তুলেছেন। এই রাধার মধ্যে সংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, কামনা-বাসনা, রিরংসা, লোভ, দুঃখ-বেদনা সবই পুঞ্জীভূত হয়েছে। দানখণ্ডের আখ্যানেও দেখা যায়, কৃষ্ণের দানী সেজে বসা, মথুরার ঘাটে তর্ক করা, রাধার দই-দুধ নষ্ট করা, পরিশেষে তাঁর দেহসম্ভোগ পুরাণ-বহির্ভূত বিষয় হিসেবে কাহিনিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করেছে। নৌকাখণ্ডে নৌকার মাঝি সেজে ছল করে রাধাকে সম্ভোগ করতে, ছত্রখণ্ড ও ভারখণ্ডে সঙ্গমলোভে দই-দুধের পসরা বহন করতে এবং রাধার মস্তকে ছত্রধারণ করতে দেখা যায় কৃষ্ণকে। হারখণ্ডে কৃষ্ণ কর্তৃক রাধার হার চুরি, ক্ষুব্ধ রাধার যশোদার কাছে নালিশ, তিরষ্কৃত কৃষ্ণের বাণ মেরে রাধাকে মূর্চ্ছিত করা এবং বড়ায়ির ভর্ৎসনায় রাধার চেতনা সম্পাদন করাও কবির নিজস্ব কল্পনা। বংশীখণ্ডে বাঁশির শব্দে গৃহস্থালির কাজ-ভোলা রাধার ছবি অনবদ্য। এর জন্য কবির কোথাও কোনও ঋণ নেই। বড়ায়ির পরামর্শে রাধা যে কৃষ্ণের বাঁশি চুরি করে আবার ফিরিয়ে দেয় তারও কোনও প্রাচীন উৎস নেই। রাধাবিরহ অংশে বড়ায়িকে বারবার কৃষ্ণ এনে দেওয়ার অনুরোধ, এমনকি শেষ সম্ভোগের পর বড়ায়ির হাতে রাধাকে সমর্পণ করে কৃষ্ণের প্রস্থানও কবির স্ব-কল্পিত। এগুলির একটিও পুরাণ-বর্ণিত ঘটনা নয়। আর এই অংশগুলিতে অশ্লীলতা ও গ্রাম্যতা দোষেরও আধিক্য দেখা যায়।
''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যে অশ্লীলতার প্রসঙ্গটিও একটি বিচার্য বিষয়। মনে রাখতে হবে, এই কাব্য রাজসভার সাহিত্য নয়, গ্রাম্যের অখ্যাত অশিক্ষিত অপরিশীলিত সাধারণ মানুষের চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যেই এর রচনা। যে পাশ্চাত্য প্রভাবজাত মার্জিত সাহিত্যবোধের আধুনিক পাঠক সাহিত্যকে বিচার করেন, পঞ্চদশ শতকের বাংলায় তার আবির্ভাব ঘটেনি। বরং ভারতীয় সাহিত্যের আদিরসকেই এই কাব্যে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। মনে রাখতে হবে, প্রাচীন ভারতে যৌনতাকে বিশিষ্ট জ্ঞানশৃঙ্খলা হিসেবে পাঠ করার রীতি ছিল, যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ বাৎস্যায়নের ''কামসূত্রম্''। তাছাড়া ভারতীয় অলংকারশাস্ত্রের রতিই প্রথম ভাব, রসের আদিতে দাঁড়ায় শৃঙ্গার রস। কৃষ্ণের ন্যায় দেবচরিত্রে কলঙ্কের কথা যদি তোলা হয়, তাহলে বলতে হবে সমান দোষে দুষ্ট পুরাণকারও। তাঁরাও দেবরাজ ইন্দ্রকে অগম্যাগামী লম্পট পুরুষ রূপে চিত্রিত করেছেন। মধ্যযুগের ধর্মীয় প্রতিবেশে ''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'' কাব্যের একটি বিশেষ গুরুত্ব আছে। এই কাব্যে ধর্মের আবরণে আসলে কবি শুনিয়েছেন সমকালের জীবনকথা। রাধা ও কৃষ্ণের পৌরাণিক ঐতিহ্যমণ্ডিত নামগুলি সরিয়ে ফেলতে পারলেই সারা কাহিনিতে অনুভব করা যাবে পঞ্চদশ শতকের বাঙালি সমাজকে। তখন কৃষ্ণ আর ঐশী সত্তা থাকেন না, হয়ে পড়েন সামন্ততান্ত্রিক পুরুষ-শাসিত সমাজের ব্যভিচার-দুষ্ট পুরুষ, যে নারীকে লাঞ্ছিত করে কেড়ে নেয় তার নিজস্ব সম্পদ, সামাজিক বলদর্পিতায় পিষ্ট করে নারীর স্বাধীন সত্তা। বুঝতে অসুবিধাই হয় না, বড়ু চণ্ডীদাস আসলে তাঁর কালের ধৃষ্ট কামুক পুরুষ ও লাঞ্ছিতা নারীর কথাই বলতে চেয়েছেন তাঁর কাব্যে, কেবল কালের অনুরোধে তাঁকে গ্রহণ করতে হয়েছে ধর্মের আবরণ। ধর্মের এই অনাবশ্যক অংশটুকু বাদ দিলেই কৃষ্ণকথা পরিণত হতে পারত বিশুদ্ধ মানবকথায়, এবং বাঙালি পাঠক সেদিনই লাভ করতে পারত আধুনিক সাহিত্যের স্বাদ।
===চরিত্রবিচার: কৃষ্ণ, রাধা ও বড়ায়ি===
আখ্যানধর্মী সাহিত্যে চরিত্র এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাহিনি স্থূল ঘটনামাত্রের বিবরণ নয়, তার পিছনে থাকে পাত্রপাত্রীর সচেতন চিন্তা ও ক্রিয়া। চরিত্র বিবর্তিত হয় ঘটনার মধ্যে দিয়ে। কখনও ঘটনা চরিত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে, কখনও চরিত্র নিয়ন্ত্রণ করে ঘটনাকে। এইভাবে তৈরি হয় দ্বন্দ্বময়তা, আখ্যানে আসে গতি। ঘটনা ও চরিত্রের আপেক্ষিক প্রাধান্য বিচার করলে দেখা যায়, মধ্যযুগের কবিরা ঘটনাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, চরিত্রের অন্তঃরহস্য উদ্ঘাটনে ততটা যত্নবান হননি। অথচ চরিত্র-বিশ্লেষণের মাধ্যমেই তাঁদের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ সম্ভব হত, যেহেতু তাঁদের কাব্যের আখ্যানবৃত্ত ছিল পূর্বনির্ধারিত। অল্প যে কয়েকজন কবি এর ব্যতিক্রম বড়ু চণ্ডীদাস তাঁদের অন্যতম। আখ্যান-বিন্যাসে যেমন তিনি পুরাণকে অতিক্রম করে মৌলিকতার সাক্ষর রেখেছেন, তেমনই চরিত্রগুলিও তাঁর হাতে পেয়েছে অন্য মাত্রা।
84jju7tp71mhdg2f13r7m79ukph00cv
ব্যবহারকারী আলাপ:Soham179
3
27251
85725
2025-07-06T14:40:04Z
KanikBot
8129
স্বাগতম!
85725
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ১৪:৪০, ৬ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
cwxejvv9eu18erc6p5wbxayvlcfuv9x
দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ
0
27252
85760
2025-07-06T21:14:03Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ]] কে [[দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85760
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]]
h1ja8q0nvdfai1th4d9f3fx3ly6y8ca
আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ
1
27253
85762
2025-07-06T21:14:03Z
Mehedi Abedin
7113
Mehedi Abedin [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/অতীন্দ্রিয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও অতীন্দ্রিয়বাদ]] কে [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]] শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন
85762
wikitext
text/x-wiki
#পুনর্নির্দেশ [[আলাপ:দর্শনের সাথে পরিচয়/তুরীয়বাদী ধর্মতত্ত্ব]]
m5swjamapbufyty1qclxl65abfvi309
ব্যবহারকারী আলাপ:Malerisch
3
27254
85773
2025-07-07T06:40:20Z
KanikBot
8129
স্বাগতম!
85773
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০৬:৪০, ৭ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
0pq0qkf8jpzduw650legufu3k6bbxzt
ব্যবহারকারী আলাপ:Bhalobashi1971
3
27255
85774
2025-07-07T08:40:19Z
KanikBot
8129
স্বাগতম!
85774
wikitext
text/x-wiki
== বাংলা উইকিবইয়ে স্বাগত ==
{{স্বাগত/২য় সংস্করণ}} ০৮:৪০, ৭ জুলাই ২০২৫ (ইউটিসি)
37aqfwzqlcqwegkwf6v3laycwtygjf4